id
stringlengths
3
7
url
stringlengths
31
795
title
stringlengths
1
93
text
stringlengths
13
179k
en_url
stringlengths
30
381
en_title
stringlengths
1
351
en_text
stringlengths
0
21.3k
1364
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%8B%20%E0%A6%A6%E0%A6%BE%20%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE
ভাস্কো দা গামা
ভাস্কো দা গামা (, উচ্চারণ: ভ়াশ্‌কু দ্য গ্যঁম্য; ১৪৬০ – ২৪ ডিসেম্বর ১৫২৪, কোচি, ভারত) একজন পর্তুগীজ অনুসন্ধানকারী এবং পর্যটক যিনি প্রথম পঞ্চদশ শতাব্দীতে সমুদ্রপথে ইউরোপ থেকে ভারতে আসেন। ১৪৯৮ সালের ২০মে ভারতের কালিকটে পৌছান তিনি। সেই সময় কালিকটের রাজা ছিলেন জামোরিনি। তিনি ভাস্কো দা গামা কে সম্বর্ধনা জানান। তিনিই প্ৰথম ইউরোপীয় ব্যক্তি যিনি সম্পূৰ্ণ সাগর পথ পাড়ি দিয়ে ভারতে এসে উপস্থিত হন, তার ভ্ৰমণে এশিয়া এবং ইউরোপকে সংযোগ করার সাথে সাথে আটলান্তিক মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরকে সংযোগ করেছিল এবং এ দিক থেকেই তিনি পশ্চিমা সংস্কৃতির সাথে পাশ্চাত্য দুনিয়ার সেতুবন্ধন গড়ে তোলেন৷ তার প্ৰথম ভারতমুখী ভ্ৰমণে (১৪৯৭-১৪৯৯) এই কাজ সম্পন্ন হয়েছিল৷ ভাস্কো দা গামার এই আবিষ্কার বৈশ্বিক সাম্ৰাজ্যবাদের ইতিহাসে অতি তাৎপৰ্য্যপূৰ্ণ ছিল কারণ এই ভ্ৰমণের দ্বারাই পর্তুগীজদের এশিয়া মহাদেশে দীৰ্ঘকালীন উপনিবেশ স্থাপনের পথ সুগম হয়েছিল৷ তার দ্বারা আবিষ্কৃত পথটি বিবাদপূৰ্ণ ভূমধ্য সাগর এবং বিপদজনক আরব উপদ্বীপ পার হওয়া থেকে রেহাই দিয়েছিল কারণ সমগ্র পথটিই ছিল সাগর পথে৷ তিনি দুটি ভারত অভিমুখী নৌযাত্ৰার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন,প্রথমটি এবং চতুর্থটি, চতুর্থ যাত্ৰাটি ছিল সবচেয়ে বড় যাত্রা যা তিনি তার প্রথম সমুদ্র যাত্রা থেকে ফিরে আসার চার বছর পর পরিচালনা করেন। তার অবদানের জন্য ১৫২৪ সালে ভারতে নিযুক্ত পতুৰ্গীজ সাম্ৰাজ্যের গভৰ্ণর হিসেবে ভাইসরয় উপাধিতে নিযুক্তি করা হয়। এবং ১৫১৯ সালে তাকে নবগঠিত ভিডিগুয়েরা(Vidiguera)র কাউন্ট পদবী প্ৰদান করা হয়েছিল৷ এই দিনটিতে আবিষ্কারের জন্যে তিনি ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে আছেন। তার অন্বেষণ এবং শিক্ষাদীক্ষা উদ্‌যাপন করতে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়েছে। পতুৰ্গীজ মহাকাব্য অস লুইসিয়াডাস, তার সম্মানার্থে লেখা হয়েছে। ভারতে তার প্ৰথম ভ্ৰমণ কে বিশ্ব ইতিহাসে মাইলফলক বলে বিবেচনা করা হয় কারণ এই ভ্ৰমণের ফলেই বিশ্বায়নের বহুসাংস্কৃতিক ধারণাটির প্রচলন হয়৷ আসা যাওয়ার জন্য অতিক্ৰম করা দূরত্বের দৈৰ্ঘ্য সেই সময়কার সৰ্বাধিক ভ্ৰমণ দূরত্ব(সমুদ্র যাত্রা) ছিল এবং এই দূরত্ব বিষুবরেখার দৈৰ্ঘ্য থেকেও বেশি ছিল৷ নৌপথ আবিষ্কারের এক শত বছর পর, ইউরোপীয় শক্তি যেমন ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্স অবশেষে সক্ষম হয় পর্তুগীজদের একাধিপত্য ভেঙ্গে দিতে এমনকি তাদের নৌ শক্তির আধিপত্য আফ্রিকার কাছাকাছি, ভারত মহাসাগর এবং প্রাচ্যের দূরবর্তী স্থানে, যা প্রাচ্যে ইউরোপীয় সাম্ৰাজ্যবাদের এক নতুন যুগ সৃষ্টি করে। হাজার হাজার জীবন এবং ডজন ডজন জাহাজ ডুবি এবং আক্রমণ, নাবিকদের দশকের পর দশক ধরে প্রচেষ্টার পর ভাস্কো দা গামা ১৪৯৮ সালের ২০মে ভারতের কালিকট(Calicut) বন্দরে উপস্থিত হতে সক্ষম হন। দা গামার আবিষ্কারে, পৌরাণিক ভারতীয় মসলা ব্যবসায় এসেই বাধাহীন সহযোগিতায় পর্তুগীজ সাম্ৰাজ্যের অর্থনীতি উন্নত করে তোলে, যা মূলত উত্তর এবং উপকূলীয় পশ্চিম আফ্রিকার সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে হত। প্রথম দিকে যার বেশির ভাগই গোলমরিচ এবং দারুচিনি/ডালচিনি ছিল, তবে শীঘ্রই অন্যান্য পণ্য ও যোগ হয়, যা ইউরোপে সম্পূর্ণ নতুন ছিল এবং কয়েক দশক ধরে ব্যবসায়িক আধিপত্য বজায় রাখতে কার্যকর হয়েছিল। প্রথম জীবন ভাস্কো দা গামা জন্মগ্রহণ করেছিলেন পর্তুগালের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে সিনেস নামক একটি জায়গায় ১৪৬০ কিংবা ১৪৬৯ সালে সম্ভবত চার্চ নোসা সেনিয়োরা দাস সালাস এর কাছে একটি বাড়িতে। সিনেস,আলেনতেজো উপকূলের হাতে গোনা কয়েকটি সমুদ্র বন্দরের একটিতে অবস্থিত,যেখানে কিছু সংখ্যক চুনকাম করা,লাল-টালির কুটির, প্রধানত জেলেরা ভাড়াটিয়া থাকত। তার বাবার নাম ছিলো এস্তেভাঁও দা গামা।তার পিতা এস্তেভাঁও দা গামা(Estevao da Gama) ১৪৬০ সাল থেকে ইনফেন্ট ফাৰ্ডিনান্ড,ডিউক অব ভিসেউ(Infant Ferdinand,Duke of Viseu)র নাইট(Knight) হিসাবে কর্মরত ছিলেন৷ তারপর তিনি অৰ্ডার অব সান্টিয়াগো(Order of Santiago)র সামরিক পদ মৰ্যাদা পান৷ ১৪৬০ সাল থেকে ১৪৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিনেসের গভর্নর ছিলেন, এবং খাজনা গ্রহীতা হিসেবে কাজ চালিয়ে যান। এস্তেভাঁও দা গামা “জোয়াও চড্ৰের”(“জোয়াও দে রেসেন্ডে” নামেও পরিচিত) কন্যা ইসাবেল চড্ৰে(Isabel Sodré)কে বিয়ে করেন, যিনি ইংরেজ বংশোদ্ভূত অভিজাত পরিবারের তরুণী ছিলেন। তার পিতা ভিসেন্তে চড্রে এবং ভাই ব্রাস চড্রের “ইনফেন্ট ডিয়গো,ডিউক অব ভিসেউ” এর সাথে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল এবং মিলিটারি তে বিশেষ পরিচিতি ছিল। এস্তেভাঁও দা গামা এবং ইসাবেল চড্ৰের পাঁচ পুত্রের মধ্যে ভাস্কো দা গামা তৃতীয় ছিলেন৷ তার ভাইদের নাম ছিল পউল’ দা গামা(Paulo de Gama),জোয়াও চড্ৰে,পেড্ৰো দা গামা(Pedro da Gama) এবং আইরেস দা গামা(Aires da Gama)৷ টেরেসা দা গামা(Teresa da Gama) নামে তাদের এক বোন ছিল (যার সাথে “লোপো মেনডেস দে ভাস্কোনসেলোস” এর বিয়ে হয়েছিল) ৷ ভাস্কো দা গামার প্রাথমিক জীবনের খুব কমই জানা যায়৷ পতুৰ্গীজ ইতিহাসবিদ টেক্সেইরা দে আরাগাও(Texeira da Gama)র মতে ভাস্কো দা গামা ইভরা শহরে লেখাপড়া করতেন এবং তিনি সম্ভবত গণিত এবং জাহাজ চালনা বিদ্যা শিখেছিলেন৷ এটাও মনে করা হয় যে তিনি জ্যোতিৰ্বিদ আব্ৰাহাম জাকুটো(Abraham Zacuto)র অধীনে অধ্যয়ন করতেন৷ ১৪৮০ সালে দা গামা পিতাকে অনুসরণ করে অর্ডার অব সান্তিয়াগোতে যোগদান করেন। সে সময়ে সান্তিয়াগোর পণ্ডিত ছিলেন রাজকুমার জন(Prince John)৷ যিনি পরবর্তীতে ১৪৮১ সালে পৰ্তুগাল এর রাজা জন দ্বিতীয়(John II) হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন ৷ ১৪৯২ সালে জন দ্বিতীয় সেতুবাল এবং এলগাৰ্ভ বন্দরে শান্তিকালীন সময়ে পতুৰ্গালের জাহাজে ফ্ৰান্স জাহাজের দ্বারা আক্রমণের প্ৰতিশোধ স্বরূপ ফ্রান্স জাহাজ জব্দ করার প্রয়াসে ভাস্কো দা গামাকে পাঠানো হয় – যা তিনি খুব অল্পসময়ে এবং ফলপ্রসুভাবে সম্পাদন করেন৷ ভাস্কো দা গামার পূর্বের অভিযানসমূহ পনের শতকের প্ৰথম হতেই, রাজা হেনরীর উদ্যোগে আফ্রিকার উপকূলবর্তী অঞ্চলে অভিযান চালানোর জন্য সংঘবদ্ধ হতে থেকে, মূলত পশ্চিম আফ্রিকার সম্পদের(বিশেষত সোনা) অন্বেষণে ৷ তারা তাদের পর্তুগীজ সামুদ্রিক অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করেছিল, তবুও তাদের প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটিয়ে অতি সামান্য মুনাফা অর্জন করে। ১৪৬০ সালে হেনরীর মৃত্যুর পর, পর্তুগীজ রাজা সেই অভিযান চালিয়ে নিতে খুব কমই আগ্রহ দেখান, এবং ১৪৬৯ সালে আফ্রিকার আবিষ্কৃত অংশসমূহে ফের্ণাও গোমেসের নেতৃত্ব দেয়া একটি ব্যক্তিগত লিসবন ব্যবসায়ী সংস্থার নিকট বিক্রী করা হয়৷ কয়েক বছরের মধ্যেই, গোমেসের ক্যাপ্টেন পর্তুগীজ জ্ঞানের আলোকে গৈরিক ব্যবসায়, মেলেগুয়েটা কাগজ, গজদন্ত এবং ক্রীতদাসের ব্যবসায় এর মাধ্যমে গিনি উপসাগর পর্যন্ত তাদের ব্যবসায় কে সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হয়৷ ১৪৮১ সালে রাজা হয়ে, পর্তুগালের জন দ্বিতীয় বহু দীর্ঘকালীন সংস্কার সাধন করে৷ সম্রাটের সামন্ততান্ত্রিক আভিজাত্যের নির্ভরশীলতার হ্রাস করতে, জন দ্বিতীয়ের রাজকীয় কোষাগার স্থাপন করার প্রয়োজন হয়, এবং লক্ষ্য করেন রাজ বাণিজ্য এর আওতাধীন। তার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই আফ্রিকায় সোনা এবং দাস ব্যবসায় বহুলভাবে প্রসারিত হয়৷ তিনি ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে অতি লাভবান মশলা ব্যবসায় এর প্রসারে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। ঐসময়ে, বস্তুত এটা ছিল ভেনিস প্রজাতন্ত্রের দ্বারা একচেটিয়া, যারা লেভ্যাটিনের স্থলপথ এবং মিশরীয় বন্দরগুলোর মাধ্যমে লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতের মশলা বাজারগুলো পরিচালনা করত। জন দ্বিতীয় ক্যাপ্টেনের জন্য একটি নতুন বিষয়বস্তু প্রণয়ন করেন যে: নৌপথে আফ্ৰিকা মহাদেশের কাছাকাছি হয়ে এশিয়ায় আসার রাস্তা অনুসন্ধান করতে হবে। ভাস্কো দা গামা যখন তার ক্যারিয়ারের বিশতম বছরে পৌঁছেন, তখন তার পরিকল্পনার সফলতা আসে। ১৪৮৭ সালে জন দ্বিতীয় দুজন গুপ্তচর, পেরো দা কভিলহা এবং আফন্সো দে পাইভা, স্থলপথে মিশর এবং পূর্ব আফ্রিকা হয়ে ভারত পর্যন্ত ভ্রমণ করে মশলা বাজার এবং বাণিজ্য পথের সন্ধান নিয়ে আসতে পাঠান৷ ১৪৮৮ সালে বারতলমিউ ডায়াস নামের জন দ্বিতীয় ক্যাপ্টেন কেপ অব গুড হোপ ভ্রমণ করে মৎস্য নদী (রিও দো ইনফ্যান্টে) পর্যন্ত ভ্রমণ করে যা বর্তমানকালের দক্ষিণ আফ্রিকায়, এবং এইবলে প্রতিবেদন দেয় যে আফ্রিকার অনাবিষ্কৃত উপকূল উত্তর-পূর্ব দিক পর্যন্ত প্রসারিত ৷ ডায়াস এবং দা কভিলহা ও দে পেইভা উভয়ের তথ্যসমূহের ওপর ভিত্তি করে ভারত মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত করে একটি সুগম সামুদ্রিক বাণিজ্যিক পথ অনুসন্ধান কাজ বাকী রয়৷ প্রথম ভ্রমণ ১৪৯৭ সালের ৮ জুলাই ৪টি জাহাজ এবং ১৭০জনের এক নাবিকদল নিয়ে ভাস্কো দা গামা লিসবন থেকে যাত্রা শুরু করেন। আফ্রিকা থেকে ভারত এবং আবার ফিরে আসার দূরত্ব বিষুবরেখার চারপাশের দূরত্ব থেকে ও বেশি ছিল।Da Gama's Round Africa to India , fordham.edu Retrieved 16 November 2006. নাবিক হিসেবে তাঁর সাথে ছিলেন পর্তুগালের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেরো দি আলেনকুয়ের(Pero de Alenquer),পেড্ৰো ইস্কোবার( Pedro Escobar),জোয়াও দি কইম্ব্রা( João de Coimbra) এবং আফন্সো গনকালেভস(Afonso Gonçalves)৷ প্রতিটা জাহাজে কতজন করে নাবিক ছিলেন তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি তবে যাত্রা শেষে ৫৫জন লোক ফিরে এসেছিলেন এবং দুটি জাহাজ হারিয়ে যায়। ফলে যাত্রার জন্যে দুটি জাহাজ নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল৷ তাদের সাথে যে চারটি জাহাজ ছিল: সাঁও গ্যাব্রিয়েল(Sao Gabriel),নেতৃত্ব দেন ভাস্কো দা গামা; ১৭৮ ওজন, দৈর্ঘ্য ২৭ মিটার, প্রস্থ ৮.৫ মিতার, হলরুম ২.৩ মিটার, পাল ৩৭২ মিটার² সাঁও রাফায়েল(Sao Rafael),নেতৃত্ব দেন ভাস্কো দা গামার ভাই পউল দা গামা; যেটা ছিল সাঁও গ্যাব্রিয়েলের অনুরূপ মালবাহী বেরিও, যা আগের দুটার চেয়ে কিছুটা ছোট (পরবর্তীতে যেটার নাম দেয়া হয় সাও মিগুয়েল),নেতৃত্ব দেন নিকোলউ কোয়েলহো(Nicolau Coelho) একটি নাম না জানা মালবাহী জাহাজ,যা আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে, সাঁও ব্রাস উপসাগরের কাছে ধ্বংস হয়ে যায়,যার নেতৃত্ব দেন গনকালো নানস(Goncalo Nunes) অন্তরীপে যাত্রা ৮ জুলাই, ১৪৯৭ সালে তারা লিসবনের উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রা শুরু করে। ভাস্কো দা গামা পূর্বের ভ্রমণকারীদের দ্বারা বর্ণিত তেনেরিফা এবং ভারডি অন্তরিপের দ্বীপপূঞ্জসমূহ হয়ে আফ্রিকার উপকূল বরাবর অতিক্রম করা পথ অনুসরণ করেন৷ বর্তমানকার সিয়েরা লিয়ন উপকূলে পৌঁছার পর দা গামা দলবল সমেত মুক্ত সাগরের দক্ষিণের পথ ধরে বিষুবরেখা অতিক্রম করে বার্তলমিউ ডায়াস দ্বারা ১৪৮৭ সালে আবিষ্কৃত দক্ষিণ আটলাণ্টিকের পশ্চিমমুখী পথ সন্ধান করেন। এতে তিনি সফল হন এবং ১৪৯৭ সালের ৪ নভেম্বর আফ্রিকা উপকূলের তটরেখায় আসেন৷ তিন মাসের অধিক সময় ধরে যাত্রার পর তারা পথ ভ্রমণ করেন যা ছিল সেইসময়কার দীর্ঘতম সামুদ্রিক ভ্রমণ৷. ১৬ ডিসেম্বর, তারা “বিশাল মৎস্য নদী” পার হয় (প্রাচ্যের অন্তরীপ, দক্ষিণ আফ্রিকা) – যেখান থেকে ডায়াস ফিরে আসে– এবং অজানা সমুদ্রের দিকে যাত্রা করেন যা কোনো ইউরোপীয় ব্যক্তিদের কাছে অপরিচিত ছিল। খ্রীষ্টমাসের সময় হওয়ায়, তারা সেই উপকূল অঞ্চলের নাম দিয়েছিল নাটাল , মানে পতুৰ্গীজ ভাষায় যীশুখ্রীষ্টর জন্ম৷ মোজাম্বিক ভাস্কো দা গামা ১৪৯৮ সালের ২রা মার্চ থেকে ২৯ শে মার্চ পর্যন্ত মোজাম্বিক দ্বীপের নিকটে সময় অতিবাহিত করেন৷ ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যিক অঞ্চলের একটি অংশ ছিল পূর্ব আফ্রিকার উপকূলবর্তী আরব অধ্যুষিত এই অঞ্চল। স্থানীয় মুসলিম লোকেরা খ্রীষ্টানদের প্রতি আক্রমণাত্মক হতে পারে ভেবে দা গামা একজন মুসলিমের বেশে মোজাম্বিকের সুলতানের শরণাপন্ন হন৷ কিন্তু তিনি সুলতানকে সন্তোষজনক উপহার সামগ্রী প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা দা গামা ও তার দলের প্রতি সন্দেহ পোষণ করে৷ অবশেষে একটা আক্ৰমণাত্মক দলের তাড়া খেয়ে সবাই পালাতে বাধ্য হয়৷ তবে যাওয়ার সময় প্রতিশোধস্বরূপ দা গামা শহরে গুলিবর্ষণ করে যান৷ মোম্বাছা আধুনিক কেনিয়ার কাছে, সমুদ্রযাত্রায় তারা জলদস্যুতার পথ অবলম্বন করত, এবং কোন রকম ভারি কামান ছাড়া নিরস্র আরব বাণিজ্যিক জাহাজে লুটপাট করত। পর্তুগীজরা হচ্ছে প্ৰথম ইউরোপীয় যারা ১৪৯৮ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল এর মধ্যে মোম্বাসা বন্দরের পরিচয় পায়৷ কিন্তু তারা স্থানীয় লোকের প্রতিশোধের বলি হয়ে পলায়ন করে। মালিন্দী ভাস্কো দা গামা উত্তরে যাত্রা অব্যাহত রেখে ১৪৯৮ সালের ১৪ এপ্রিল মালিন্দী বন্দরে এসে উপস্থিত হন- যার তৎকালীন নেতা মোম্বাসার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত ছিলেন- সেখানে তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রামাণ্য দেখা পান৷ দা গামা এবং তাঁর সহযোগীরা সেখানে একজন নৌপরিচালক খোঁজে পায় যার ভারতের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের উপকূল, কালিকটে যাবার জন্য অনুকূল মৌসুমী বায়ু সম্বন্ধে জ্ঞান ছিল৷ এই নৌপরিচালকের পরিচয় সম্পর্কে অনেক মতভেদ আছে- কেউ বলেন খ্রিস্টান, কেউ মুসলিম কেউবা আবার গুজরাটি লোক বলেন৷ একটি প্রচলিত কাহিনী মতে এই নৌপরিচালক ছিলেন আরবের মহান নাবিক ইবনে মজিদ, কিন্তু অনেকে এই কাহিনী মানতে নারায , বরং তারা মনে করেন তিনি ঐ সময়টাতে ঐ উপকূলে থাকার কথা না৷ এমনকি তৎকালীন কোন পর্তুগীজ ঐতিহাসিক ইবনে মজিদের নাম উল্লেখ করেন নি। ১৪৯৮ সালের ২৪এপ্রিল দা গামা দলবলসমেত মালিন্দী থেকে ভারত অভিমুখে রাওনা হন৷ কালিকট,ভারত ১৪৯৮ সালের ২০ মে ভাস্কো দা গামা নৌবহরসহ কালিকটের নিকটবর্তী কাপ্পাডুতে এসে উপস্থিত হন৷ কালিকটের রাজা সামুদিরি (জামরিণ) সেইসময়ে তার দ্বিতীয় রাজধানী পোন্নানিতে ছিলেন, তবে বিদেশী নৌবহর আসার খবর শুনে সেখান থেকে তিনি কালিকটে ফিরে আসেন৷ কমপক্ষে তিন হাজার সশস্র নায়ের বাহিনীর বৃহৎ শোভাযাত্রার মাধ্যমে জাহাজের নাবিকদের ঐতিহ্যগতভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়, কিন্তু জামরিনের সাথে সাক্ষাৎ কোন রকম সুসম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ হয়৷ ‘’দা গামা’’ ডোম ম্যানুয়েল এর কাছ থেকে জামরিনকে উজ্জ্বল লাল কাপড়ের চারটি জোব্বা, ছয়টি টুপি, চার ধরনের প্রবাল, বারটি আলমাসার, সাতটি পিতলের পাত্রসহ একটি বাক্স, এক সিন্দুক চিনি, দুই ব্যারেল (পিপা) তেল এবং এক পিপা মধু উপহার স্বরূপ প্রেরণ করেন। এসব উপঢৌকনকে তাচ্ছিল্য করা হয়, এবং সম্রাটের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়। কারণ জামরিনের প্রজাবর্গ উপহার তালিকায় সোনা বা রোপা না দেখে বিস্মিত হয়৷ একজন মুসলিম সওঁদাগর দা গামাকে প্ৰতিপক্ষ বলে ভাবেন এবং সেইসাথে পরামর্শ দেন যে দা গামা কোন রাজ প্ৰতিনিধি নয় বরং সে একজন জলদস্যু। ভাস্কো দা গামা ভারতে ব্যবসায় করার জন্যে অনুমতি চাইলে সম্ৰাট প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার কাছ থেকে জানানো হয় যে ভারতে ব্যবসায় করতে হলে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মতো কর হিসেবে সোনা দিতে হবে৷ এই কথায় ক্ষুণ্ণ হয়ে দা গামা কয়েকজন নায়ার এবং ষোলজন জেলে কে জোর-জবরদস্তি করে ধরে নিয়ে যান৷ অনেক যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকা স্বত্বেও, দা গামার সমুদ্রাভিযান সফল হয়ছিল,প্রত্যাবর্তন কালে জাহাজে যেসব মালামাল ছিল তার মূল্য ছিল অভিযানের খরচের ষাট গুন। প্রত্যাবর্তন ১৪৯৮ সালের ২৯ আগস্ট কালিকট বন্দর থেকে প্রত্যাবর্তন যাত্রা করেন৷ ঐসময় তিনি অনুকূল মৌসুমী বায়ুর জ্ঞান অগ্রাহ্য করে দেশের পথে পাল তুলেন, যা তখনও ডাঙ্গার দিকে প্রবাহিত হচ্ছিল৷ তাদের নৌবহর প্রাথমিক পর্যায়ে ভারতের উপকূলে উত্তর দিক বরাবর খানিকটা যাত্রা করে, পরবর্তীতে আনজেদিভা দ্বীপে নোঙ্গর করে। অবশেষে ঐবছর ৩ অক্টোবর তাদের নৌবহর ভারত মহাসাগর পাড়ি দেয়৷ তবে ঐসময়ে যেহেতু শীতকালীন মৌসুমী জলবায়ু বিরাজ করছিল, সেজন্যে তাদের যাত্রা চরম দুর্দশায় পতিত হয়। অনুকূল মৌসুমী বায়ু থাকায় ভারত মহাসাগর পাড়ি দিতে যেখানে তাদের মাত্র ২৩ দিন সময় লেগেছিল, সেখানে বায়ুর প্রতিকূলে তাদের ফিরে যেতে ১৩২ দিন সময় লাগে৷ ১৪৯৯ সালের ২ জানুয়ারিতে, মোগাদিশুর উপকূলীয় শহর সোমালি পার হবার সময় দা গামা স্থলভাগের দেখা পান,যা আফ্রিকা শৃঙ্গের তৎকালীন আজুরান সম্রাটের অধীনে ছিল। তাদের নৌবহর কোথাও না থামিয়ে তারা যাত্রা অব্যাহত রাখে৷ তাদের একজন অজ্ঞাত দিনলিপি লেখকের কাছ থেকে জানা যায় যে মোগাদিশুতে তখন চার বা পাঁচতলা বাড়িঘর,সুদৃশ্য প্রাসাদ এবং বহু বেলনাকৃতির মিনারবিশিষ্ট মসজিদ ছিল৷ ভাস্কো দা গামার নৌবহর ১৪৯৯ সালের ৭ জানুয়ারি মালিন্দী এসে উপস্থিত হলেও ইতোমধ্যে তাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পরেছিল৷ প্রায় অর্ধ সংখ্যক জাহাজকর্মীর মৃত্যু ঘটেছিল এবং বাকীরা স্কার্ভি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল৷ পর্যাপ্ত জাহাজকর্মী না থাকায় তাদের তিনটি জাহাজ পরিচালনা করা অসুবিধা হয়ে পড়ে৷ সেজন্যে সাঁও রাফায়েল নামের জাহাজটি পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে ডুবিয়ে দিতে আদেশ দেয়া হয়৷ এবং তিনটি জাহাজের কর্মীদের দুটি জাহাজে, সাঁও গ্যাব্রিয়েল এবং বেরিও'' তে ভাগ করে দেয়া হয়৷ এতে জাহাজ স্বচ্ছন্দে চলতে থাকে৷ মার্চের শুরুতেই, তারা মোসেল উপসাগরে এসে পৌঁছে, এবং ২০ মার্চ তারা গুড হোপ অন্তরীপ অতিক্রম করে। ২৫ এপ্রিল তারা পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে এসে উপস্থিত হয়৷ ঐ সমুদ্রযাত্রার দৈনন্দিন লিখিত বিবরণী আকস্মিকভাবে এখানে থেমে যায়। অন্যান্য সূত্রের বরাত থেকে জানা যায়, তারা কেপ ভার্ডি পর্যন্ত অগ্রসর হয়, যেখান থেকে নিকোলাউ কোয়েলহো দ্বারা পরিচালিত “বেরিও” নামের জাহাজটি “ভাস্কো দা গামা”র “সাঁও গেব্রিয়েল” এর থেকে পৃথক হয়ে পরে; এবং নিজে থেকেই চলতে শুরু করে। ১৪৯৯ সালের ১০ জুলাই “বেরিও” লিসবনে এসে পৌঁছে এবং নিকোলাউ কোয়েলহো রাজা প্রথম ম্যানুয়েল এবং রাজকীয় আদালত কে ব্যক্তিগত বার্তা পাঠান এবং পরবর্তীতে সিন্ত্রায় একত্রীত হন। ঐ সময়ে, কেপ ভার্ডি তে ফিরার সময়, দা গামার ভাই পাউলো দা গামা ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দা গামা তার ভাইয়ের সাথে সান্তিয়াগো দ্বীপে কিছুদিন থাকেন এবং জাহাজের কেরাণী “জোয়াও দে সাঁ” কে “সাঁও গেব্রিয়েল” এর সাথে দেশে পাঠিয়ে দেন৷ জুলাইয়ের শেষ বা আগস্টের প্রথম দিকে সাঁও গেব্রিয়েল লিসবনে গিয়ে উপস্থিত হয়৷ গামা এবং তার অসুস্থ ভাই একটি গিনি হাল্কা দ্রুতগামী জাহাজে করে পর্তুগালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন যদিও যাত্রাপথে তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়৷ দা গামা তার ভাইকে সমাধিস্থ করার জন্য এজরেস এ অবতরণ করেন, এবং শোক প্রকাশের জন্য সেখানে কিছুদিন সময় অতিবাহিত করেন৷ অবশেষে তিনি একটি এজোরিয়ান হাল্কা দ্রুতগামী জাহাজে করে প্রস্থান করেন এবং ১৪৯৯ সালের ২৯শে আগস্টে লিসবনে এসে উপস্থিত হন(ব্যারোস এর মতানুযায়ী), বা সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে (৮ বা ১৮ তারিখে, অন্য একটি সূত্রের থেকে)। দা গামাকে দেশের মাটিতে বীরের মতো স্বাগত জানিয়ে,সন্মানের সাথে,শোভাযাত্রা এবং রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বরণ করা হয়। রাজা ম্যানুয়েল দুটি পত্রে ভাস্কো দা গামার প্রথম সমুদ্রযাত্রার বর্ণনা দেন, তার জাহাজগুলো ফিরে আসার পরপরই, জুলাই এবং আগস্ট এর মধ্যে ১৪৯৯ সালে। গিরলামো সারনিগিও তিনটি পত্রে দা গামার প্রথম সমুদ্রযাত্রার বর্ণনা করেন তার যাত্রা থেকে প্রত্যাবর্তনের পরপরই। পুরস্কার এবং সন্মাননা ১৪৯৯ সালের ডিসেম্বর মাসে, ভাস্কো দা গামাকে পর্তুগালের রাজা প্রথম ম্যানুয়েল সিনেস শহরটি বংশগত জায়গীর হিসেবে পুরস্কার প্রদান করেন, যেখানে তার পিতা ইস্তাবাও দা গামা একদা কমেন্ডা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন৷ সিনেস শহরটি অর্ডার অব সান্তিয়াগোর অধীনে থাকায় এটা পেতে তার জন্য জটিল হয়ে পড়ে। কিন্তু সেই শহরটি অর্ডার অব সান্তিয়াগোর প্রধান জর্জ দে লেনকেষ্ট্রির পুরস্কার হিসেবে অনুমোদন করতে সমস্যা ছিলনা, যদিও দা গামা, লেনকেষ্ট্রির একজন সান্তিয়াগো সদস্য এবং খুব অন্তরঙ্গ ছিলেন।৷ কিন্তু প্রকৃত পক্ষে রাজা সিনেস শহরটি পুরস্কার হিসেবে প্রদান করেন, যা নীতির ঊর্ধ্বে লেনকেষ্ট্রিকে প্ররোচিত করেছিল যদিও রাজা অর্ডারের সম্পত্তি অন্যান্য অনুদান হিসেবে দিয়ে দেন। দা গামা পরবর্তী বছরগুলো সিনেস শহরটির দায়িত্ব নিতে অতিবাহিত করেন,এই প্রচেষ্টা তাকে লেনকেষ্ট্রির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল এমনকি দা গামা তার প্রিয় অর্ডার অব সান্তিয়াগো পরিত্যাগ করেন, যা তার অর্ডার অব খ্রিস্ট-এর প্রতিদ্বন্দ্বীকে ১৫০৭ সালে তাড়িত করে। দ্বিতীয় যাত্রা ১৫০০ সালের দ্বিতীয় পর্তুগীজ ভারতীয় নৌবহর অভিযানের নেতৃত্ব দেন পেড্রো আলভারেস কেব্রেল, যে অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল কালিকটের সম্রাট জামরিণের সাথে চুক্তি করে শহরটিতে একটি কারখানা স্থাপন করা৷ যাহোক, পেড্রো আলভারেস কেব্রেল আরব ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়৷ যার ফলশ্রুতিতে কারখানাতে থাকা সত্তরজন পর্তুগীজের মৃত্যু হয়৷ এই ঘটনায় জামরিণের নিন্দা করে প্রতিশোধস্বরূপ পেড্রো আলভারেস কেব্রেল শহরটিতে বোমাবর্ষণ করে ৷ এভাবে পর্তুগাল এবং কালিকটের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ১৫০২ সালে ভাস্কো দা গামা চতুর্থ পর্তুগীজ ভারতীয় নৌবহর অভিযানে যোগদান করতে রাজকীয় পত্র পাঠায়৷ এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল কালিকটের রাজা জামরিণের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া এবং পর্তুগীজদের শর্তে আত্মসমৰ্পণ করার জন্য চাপ দেয়া৷ অস্ত্র-শস্ত্রে সুসজ্জিত পনেরটি জাহাজ এবং আঠশত লোক নিয়ে ১৫০২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তারা লিসবন থেকে যাত্রা করে৷ তার চাচাত ভাই (এস্তাবাও দা গামা, আইরেস দা গামার পুত্র)এপ্রিল মাসে আরো পাঁচটি জাহাজ নিয়ে ভারত অভিমুখে রাওনা হয়, যা ভারত মহাসাগরে এসে তাদের সাথে মিলিত হয়৷ চতুর্থ নৌবহরটি ছিল দা গামা পরিবারের যথার্থ কার্যসিদ্ধ বিষয়। তার দুই চাচা, ভিসেন্ট সড্রে এবং ব্রাস সড্রে, ভারত মহাসাগরে জাহাজের নজরদারির উপর আদেশ দিতে পূর্ব-মনোনীত ছিলেন, যেখানে তার শালা আল্ভারো দা আটাইদে (ক্যাটেরিনার ভাই) এবং লোপো মেন্দেস দা ভাস্কন্সেলস (বোনের স্বামী) প্রধান জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিল। ১৫০২ সালের অক্টোবরে তাদের বিশাল নৌবহরটি ভারতে এসে উপস্থিত হলে সেই সময়ে মক্কা থেকে মিরি নামের একটি তীর্থযাত্রিতে পরিপূর্ণ জাহাজে আক্রমণ চালিয়ে দা গামা সমস্ত যাত্রীদের মুক্ত জলাশয়ে হত্যা করেন৷ তার পর তিনি কালিকটে পেড্রো আলভারেস কেব্রেলের করা চুক্তির সংশোধন করেন৷ যখন জামরিণ নতুন চুক্তিতে সই করার ইচ্ছা পোষণ করেন৷ কিন্তু দা গামা কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে শহর থেকে সকল মুসলিমদের বের করে দেবার জন্য কালিকটের হিন্দু রাজার কাছে দাবী জানালে তা খারিজ করা হয়৷ ফলশ্রুতিতে পর্তুগীজ যুদ্ধ জাহাজ সমুদ্র উপকূল থেকে প্রায় দুদিন ধরে শহরটিতে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করে৷ যার ফলে শহরটিতে বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ তদুপরি দা গামা কিছু ভারতীয় জাহাজ আটক করে কর্মীদের হাত,নাক,কান ইত্যাদি কেটে দেয়, অপমানের চিহ্ন সরূপ জামরিণের নিকট তাদের প্রেরণ করা হয়৷ তীৰ্থযাত্ৰী জাহাজের ঘটনা দ্বিতীয় ভ্রমণের সময় দা গামা ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় লোকদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছিলেন, যা ভারতে তার কুখ্যাতি ছড়িয়ে দেয়। তার দ্বিতীয় সমুদ্র যাত্রার সময় মাদায়ি-তে তিনি কালিকট থেকে মক্কায় যেতে থাকা একটি জাহাজ আটক করেন৷ প্রত্যক্ষদর্শী থম লোপেজ এবং ঘটনাপঞ্জী লেখক গ্যাস্পার করিয়া বিশদভাবে বর্ণনা করেন যে, জাহাজটিতে থাকা চারশ যাত্রীর মধ্যে পঞ্চাশ জন মহিলা ছিল৷ গামা জাহাজটিতে লুটপাত চালায় এবং জাহাজের যাত্রী, মালিক এবং মিশরীয় একজন রাষ্ট্রদূত সহ সকলকে জীবন্ত জ্বালিয়ে হত্যা করে৷ তারা তাদের সম্পদের বিনিময়ে মুক্তিপণ চেয়েছিল যা দিয়ে ফেজ রাজ্যের সকল খ্রিস্টান ক্রীতদাসদের মুক্ত করে আনা এবং আরো অনেক কিছু করা যেত, তবুও তাদের নিষ্কৃতি দেয়া হয়নি। দা গামা দেখেছিল যে মহিলারা তাদের স্বর্ণালংকার এবং তাদের বাচ্চাদের ধরে প্রাণভিক্ষা চাইছিল৷ কালিকট থেকে মুসলিমদের বিতারনের জন্য হিন্দু জামরিনের কাছে দাবির পর, পরবর্তীতে দা গামার কাছে তালাপ্পানা নাম্বুথিরি নামের একজন উচ্চপদস্থ ব্রাহ্মণকে আলোচনার জন্য পাঠানো হয়। দা গামার ব্রাহ্মণকে গুপ্তচর বলে সন্দেহ করে তার ঠোঁট এবং কান কেটে সেই জায়গায় কুকুরের কান লাগিয়ে দেবার নির্দেশ দেন৷ বিরতি এরপরে প্রায় দুই দশক দা গামা নীরবে নির্জনে সময় অতিবাহিত করেন, এবং সবধরনের ভারতীয় রাজকীয় কাজ থেকে দূরে সরে থাকেন। ম্যানুয়েল প্রথম-এর সহায়তায় তার প্রচেষ্টা খুব কমই স্বীকার করা হয়ে থাকে। তৃতীয় ভারত অভিযান এবং মৃত্যু ১৫২১ সালে রাজা প্রথম ম্যানুয়েলের মৃত্যুর পর তার পুত্র এবং উত্তরসূরি, পর্তুগালের তৃতীয় জন ক্ষমতায় এসে বিদেশের সাথে সামুদ্রিক অভিযান চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তিনি পুরাতন আলবুকারক ক্লিক এর থেকে সরে এসে নতুন করে যাত্রার পদক্ষেপ নেন। ফলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ ভাস্কো দা গামাকে নতুন রাজার নিয়োগদাতা এবং কলাকুশলী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টার দায়িত্ব দেবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ পূর্বপুরুষ বিবাহ এবং সন্তানসন্ততি ভাস্কো দা গামা এবং তার স্ত্রী, ক্যাটেরিনা দি এটেইদের ছয় পুত্র ও এক কন্যা সন্তান ছিল: ডোম ফ্রান্সিস্কো দা গামা, তিনি দ্বিতীয় কাউন্ট অব ভিদিগুয়েরা হিসেবে তার বাবার বংশানুক্রমিক উপাধি বহন করেন এবং "ভারত, আরব ও পারস্য সাগরে দ্বিতীয় নৌসেনাপতির" দায়িত্বে ছিলেন। তিনি পর্তুগালে বসবাস করতেন। ডোম এস্তেবাও দা গামা, ১৫২৪-সালে তার ভারতীয় প্রহরী সেনাপতি পদে অকালে সময় শেষ হয়, পরে তিনি তিন বছরের জন্য মালাক্কার সেনাপতি নিযুক্ত হন, এবং ১৫৩৪ থেকে ১৫৩৯ পর্যন্ত ছিলেন (তার ভাই পাউলোর কার্যকালীন শেষ দুই বছর সহ)। পরবর্তী বছর তিনি ১৫৪০ থেকে ১৫৪২ পর্যন্ত ভারতের ১১তম গভর্নর নিযুক্ত হন। ডোম পাউলো দা গামা, ১৫৩৩-৩৪ মালাক্কার সেনাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মালাক্কার নৌবাহিনীর এক কর্মকাণ্ডে নিহত হন। ডোম ক্রিস্টোভাউ দা গামা, ১৫৩৮-৪০ মালাক্কার নৌবহরের সেনাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মালাক্কা জয় করার জন্য নিযুক্ত হন, কিন্তু ১৫৪২ সালের ইথিওপিয়ার আদাল যুদ্ধে আহমেদ ইবনে ইব্রাহীমের হয়ে কাজ করতে হয়। ডোম পেড্রো দা সিলভা দা গামা, ১৫৪৮ থেকে ১৫৫২ পর্যন্ত মালাক্কার সেনাপতির দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। ডোম আলভারো ডি’আটাইদে দা গামা মালাক্কার নৌবহরের সেনাপতির দায়িত্বে নিযুক্ত হন ১৫৪০ সালে। তিনি ১৫৫২ থেকে ১৫৫৪ পর্যন্ত মালাক্কার সেনাপতির দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। ডনা ইসাবেল ডি’আটাইদে দা গামা, তার একমাত্র কন্যা, ইগনাশিও দি নরনহা-র সাথে বিয়ে হয়, প্রথম কাউন্ট অব লিনহারেস এর পুত্র। ১৭৪৭ সালে তার পুরুষ পক্ষের বংশ পরম্পরার অবসান ঘটে, যদিও বর্তমানে তার কন্যা পক্ষের লোকেরা তার উপাধি বহন করছে। বহিঃসংযোগ Vasco da Gama , prominentpeople.co.za Vasco da Gama's Round Africa to India , fordham.edu Vasco da Gama web tutorial with animated maps, ucalgary.ca Brief description of Vasco da Gama's journeys, sify.com তথ্যসূত্র ১৪৬৯-এ জন্ম ১৫২৪-এ মৃত্যু পর্তুগিজ ভারতের ব্যক্তি ম্যালেরিয়ায় মৃত্য পর্তুগিজ রোমান ক্যাথলিক পর্তুগিজ অভিযাত্রী এশিয়ার অভিযাত্রী ভারতের অভিযাত্রী আফ্রিকার অভিযাত্রী ভারতে সংক্রামক রোগে মৃত্যু ১৫শ শতাব্দীর অভিযাত্রী ১৫শ শতাব্দীর পর্তুগিজ ব্যক্তি ১৫শ শতাব্দীর রোমান ক্যাথলিক দক্ষিণ আফ্রিকার সামুদ্রিক ইতিহাস পর্তুগালের সামুদ্রিক ইতিহাস ১৪৬০-এর দশকে জন্ম গোয়ার ইতিহাস
https://en.wikipedia.org/wiki/Vasco_da_Gama
Vasco da Gama
D. Vasco da Gama, 1st Count of Vidigueira ( VAS-koo də GA(H)M-ə, European Portuguese: [ˈvaʃku ðɐ ˈɣɐmɐ]; c. 1460s – 24 December 1524), was a Portuguese explorer and nobleman who was the first European to reach India by sea. His initial voyage to India by way of Cape of Good Hope (1497–1499) was the first to link Europe and Asia by an ocean route, connecting the Atlantic and the Indian oceans. This was a milestone in Portuguese maritime exploration as and marked the beginning of a sea-based phase of globalization. Da Gama's discovery of the sea route to India opened the way for an age of global imperialism and enabled the Portuguese to establish a long-lasting colonial empire along the way from Africa to Asia. Traveling the ocean route allowed the Portuguese to avoid sailing across the highly disputed Mediterranean Sea and traversing the dangerous Arabian Peninsula. The sum of the distances covered in the outward and return voyages made this expedition the longest ocean voyage ever made until then. After decades of sailors trying to reach the Indies, with thousands of lives and dozens of vessels lost in shipwrecks and attacks, da Gama landed in Calicut on 20 May 1498. Unopposed access to the Indian spice routes boosted the economy of the Portuguese Empire, which was previously based along North and coastal West Africa. The main spices at first obtained from Southeast Asia were pepper and cinnamon, but soon included other products, all new to Europe. Portugal maintained a commercial monopoly of these commodities for several decades. It was not until a century later that other European powers were able to challenge Portugal's monopoly and naval supremacy in the Cape Route. Da Gama led two of the Portuguese India Armadas, the first and the fourth. The latter was the largest and departed for India three years after his return from the first one. For his contributions, in 1524 da Gama was appointed Governor of India, with the title of Viceroy, and was ennobled as Count of Vidigueira in 1519. He remains a leading figure in the history of exploration, and homages worldwide have celebrated his explorations and accomplishments. The Portuguese national epic poem, Os Lusíadas, was written in his honour by Luís de Camões.
1365
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%82%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8
বংশাণুবিজ্ঞান
বংশাণুবিজ্ঞান হল বংশাণু, বংশগতিক বৈশিষ্ট্য এবং এক জীব থেকে আরেক জীবের জন্মগত চারিত্রিক সাযুজ্য ও পার্থক্য সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান। বংশাণুবিজ্ঞানের ইংরেজি পরিভাষা হল "জেনেটিকস", যা বিজ্ঞানী উইলিয়াম বেটসন ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রবর্তন করেন। জীবমাত্রই যে তার পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য আহরণ করে তা প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই মানুষের জানা এবং নির্বাচিত প্রজননের মাধ্যমে তারা শস্য ও গৃহপালিত পশুর মধ্যে কাঙ্ক্ষিত গুণাবলীর সমাবেশ ঘটিয়েছেন। তবে বংশগতির মূলসূত্র অনুসন্ধানে অভীষ্ট আধুনিক বংশাণুবিজ্ঞানের বয়স খুব বেশি নয়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে অস্ট্রিয়ান ধর্মযাজক গ্রেগর মেন্ডেলের গবেষণার মধ্য দিয়ে এই বিজ্ঞানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। তখনো মানুষ বংশগতির গাঠনিক ভিত্তি সম্বন্ধে খুব বেশি অবহিত ছিল না। তদসত্ত্বেও মেন্ডেল তার পর্যবেক্ষণ থেকে ধারণা করেছিলেন পিতা-মাতা থেকে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয় বংশগতির কিছু বিচ্ছিন্ন একক দ্বারা, যাদের পরবর্তীতে বংশাণু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বংশাণু ডিএনএ'র নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে। ডিএনএ হল এমন একটি অণু যা কিনা চারটি ভিন্ন প্রকৃতির নিউক্লিওটাইডে তৈরি, যাদের বিন্যাসই কোনো অর্গানিজমের বংশাণুগত বৈশিষ্ট্যাদি নির্ধারণ করে দেয়। ডিএনএ সাধারণতঃ দ্বি-সর্পিল তন্তুর ন্যায় বিন্যাসিত থাকে ; যেখানে কোন একটি নিউক্লিওটাইড অপর তন্তুতে অবস্থিত নিউক্লিওটাইডের পরিপূরক। প্রতিটি তন্তুই ডিএনএ প্রতিলিপিকরণের সময় তার পরিপূরক তন্তুর জন্যে ছাঁচ হিসাবে কাজ করে, যা কি-না উত্তরাধিকার সূত্রে বংশাণু প্রতিলিপিকরণের ভৌত পদ্ধতি। বংশাণুর নিউক্লিওটাইডের পরম্পরা অনুযায়ী জীবকোষ অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করে। অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে দেহসার বা প্রোটিন উৎপন্ন হয় - প্রোটিনে অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রম আর বংশাণুতে নিউক্লিওটাইডের ক্রম অভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নিউক্লিওটাইডের ক্রম আর অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রমের এই সম্পর্ককে বংশগতীয় সঙ্কেত (জেনেটিক কোড) বলে। প্রোটিনে অবস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড নির্ধারণ করে প্রোটিনের ত্রি-মাত্রিক গঠন কী-রূপ হবে; আর এর গঠন প্রোটিনের কাজ কী হবে তা নির্ধারণ করে। বংশাণুতে অবস্থিত ডিএনএ'র একটি ছোট্ট পরিবর্তন প্রোটিন গঠনকারী অ্যামিনো অ্যাসিডের আকার ও কাজে বড় ধরনের পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে, যা কিনা ঐ কোষ ও সম্পূর্ণ জীবদেহে নাটকীয় পরিবর্তন আনতে পারে। যদিও বংশাণুবিজ্ঞান কোন জীবের বাহ্যিক গঠন ও আচরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বংশাণুবিজ্ঞান আর জীবসত্ত্বার অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে তার বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয়। যেমন, যদিও বংশাণু কোন ব্যক্তির উচ্চতা নির্ধারণ করে, তবু তার বাল্যকালের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ব্যাপারটিও এতে বড় প্রভাব ফেলে। ইতিহাস ১৮শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মেন্ডেলের তত্ত্বগত ও ব্যবহারিক কাজের মাধ্যমে বংশাণুবিজ্ঞানের সূচনা হলেও তার আগেও বংশবৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে কিছু ধারণা প্রচলিত ছিলো। মিশ্র উত্তরাধিকার নামক একটি তত্ত্ব মেন্ডেলের আমলে খুব জনপ্রিয় ছিল। এ সরল তত্ত্ব অনুযায়ী কোন জীব তার বাবা-মার বৈশিষ্ট্য সমূহের যথাযথ মিশ্রণের অধিকারী হয়। মেন্ডেলের কাজ এই তত্ত্বকে ভুল প্রমাণিত করে এবং দেখায় যে চরিত্র বৈশিষ্ট্য বংশাণু মিশ্রণ নয়, বরং ভিন্ন ভিন্ন বংশাণুর সমন্বয়। সে সময় আরেকটি মতবাদ প্রচলিত ছিল: পিতা-মাতার শক্তিশালী বংশাণুগুলোই তাদের উত্তরপ্রজন্ম পরিগ্রহ করে। এই তত্ত্বটি (যা কিনা জ্যঁ বাপ্তিস্ত লামার্কের সাথে জড়িত)বর্তমানে ভুল প্রমাণিত হয়েছে: কোন একক সত্ত্বার বৈশিষ্ট্য ও অভিজ্ঞতার ওপর তার ভবিষ্যত প্রজন্মে বংশাণুর অতিক্রমণ নির্ভর করে না। অন্যান্য তত্ত্বের মধ্যে রয়েছে চার্লস ডারউইনের প্যানজেনেসিস (যার মধ্যে উত্তরাধিকার ও আহরণ দুটো প্রক্রিয়াই ছিল) এবং ফ্রান্সিস গ্যালটনের ব্যক্তিগত ও উত্তরাধিকারে প্যানজেনেসিসের পুনর্বিন্যাস। মেন্ডেলিয় ও চিরায়ত বংশাণুবিজ্ঞান আধুনিক বংশাণুবিজ্ঞানের সূচনাপর্ব অনুসন্ধান করলে দেখা যায় গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল নামক এক জার্মান-চেক অগাস্টিনিয়ান সন্ন্যাসী ও বিজ্ঞানী প্রথম উদ্ভিদে বংশবৈশিষ্ট্য প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করেন। তার নিবন্ধ "Versuche über Pflanzenhybriden" (উদ্ভিদ সঙ্করায়নের পরীক্ষা), যা তিনি ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রুনোর Naturforschender Verein (প্রকৃতি গবেষণা সমাজ)-এ উপস্থাপন করেন, তাতে তিনি নির্দিষ্ট কিছু মটরশুঁটি গাছের বৈশিষ্ট্যসমূহের বংশগতিগত উদ্ভব অনুসন্ধান করেন এবং তাদের গাণিতিকভাবে সূত্রাবদ্ধ করেন। যদিও বংশগতির এই বিন্যাস কেবল অল্প কিছু আচরণের ব্যাখ্যা দিতে পারত, এই তত্ত্বটির সাফল্য ছিল তা দেখায় বংশগতি কণাসদৃশ পদার্থে তৈরি এবং তা আহরণযোগ্য নয়। মেন্ডেলের কাজ ১৮৯০'র দশকের পূর্ব পর্যন্ত লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে গিয়েছিল, তার মৃত্যুর পর একই সমস্যা নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীরা তার সূত্রগুলো পুনঃআবিষ্কার করেন। উইলিয়াম বেটসন, মেন্ডেলের কাজের একজন প্রস্তাবক, ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে জেনেটিক্স শব্দটির প্রচলন করেন। (বংশাণুবিজ্ঞান শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ জেনেসিস - γένεσις , "উৎপত্তি" থেকে এবং এই শব্দটির বিশেষ্য জেনো - γεννώ, "জন্ম দেওয়া" আগেই ১৮৬০ সালে জীববিজ্ঞানগত অর্থে ব্যবহার করা হয়।) বেটসন ১৯০৬ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক উদ্ভিদ সংকরায়ণ আলোচনাসভায় তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় বংশগতিবিদ্যার অধ্যয়ন বোঝাতে বংশাণুবিজ্ঞান শব্দটি ব্যবহার করেন। মেন্ডেলের কাজের পুনঃআবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা জীবকোষে বংশগতির বাহক বংশাণুসমূহের শনাক্তকরণের কাজ শুরু করেন। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে টমাস হান্ট মর্গান ফ্রুট ফ্লাইতে সাদা চোখের সেক্স-লিংকড মিউটেশানের ওপর ভিত্তি করে দাবী করেন বংশাণু জীবকোষের অন্তর্গত ক্রোমোসোমে অবস্থান করে। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে তার ছাত্র আলফ্রেড স্টার্টেভান্ট বংশাণুগত লিংকেজ ব্যবহার করে দেখান বংশাণু ক্রোমোসোমে রৈখিকভাবে সাজানো থাকে। আণবিক বংশাণুবিজ্ঞান বংশাণু ক্রোমোসোমে অবস্থিত এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলেও বিজ্ঞানীরা জানতেন না ক্রোমোসমের দুই উপাদান প্রোটিন ও ডিএনএ-এর মধ্যে কোন উপাদানটি বংশবৈশিষ্ট্যেরে ধারক ও বাহক। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রেডেরিক গ্রিফিথ বংশাণুগত রূপান্তর আবিষ্কার করেন (বিস্তারিত: [গ্রিফিথের পরীক্ষা]): মৃত ব্যকটেরিয়া তার বংশাণুাটিক বস্তু জীবিত ব্যাকটেরিয়াতে পাঠিয়ে তাকে রূপান্তর করতে পারে। ষোল বছর পর ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে অসওয়াল্ড থিয়োডর এভারি, কলিন ম্যাকলিওড এবং ম্যাকলিন ম্যাককার্টি এই রূপান্তরের জন্যে দায়ী কণা হিসেবে ডিএনএকে শনাক্ত করেন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে হার্শলে-চেজের পরীক্ষণও প্রতিপাদন করে যে ডিএনএ-ই (প্রোটিন নয়) হল ভাইরাসের সেই জেনেটিক বস্তু যা কিনা ব্যাকটেরিয়াকে সংক্রমণ করে। এই প্রতিপাদন বংশবৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক হিসেবে ডিএনএ'র ভূমিকা আরো নিশ্চিত করে। জেমস ডি. ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিক ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে মরিস উইলকিন্স ও রোসালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি ব্যবহার করে করা কাজ, যা ডিএনএ সর্পিলাকার (অর্থাৎ কর্ক-স্ক্রূর মত) নির্ধারণ করে তা থেকে ডিএনএ'র গঠন উদ্‌ঘাটন করেন। তাদের দ্বি-সর্পিল মডেলে দুটো সুতোর মতো অংশ থাকে , যাতে একট সুতোর নিউক্লিওটাইডগুলো ভেতরের দিকে অপর সুতোয় থাকা নিজ-নিজ সম্পূরক নিউক্লিওটাইডের সাথে যুক্ত হয়, যা দেখতে অনেকটা প্যাঁচানো সিঁড়ির ধাপের মতো হয়। এই গঠন নির্দেশ করে যে বংশাণুগত তথ্য ডিএনএ'র সুতোয় নিউক্লিওটাইডের ক্রমের ওপর নির্ভর করে। এই মডেল ডিএনএ'র দ্বৈতকরণেরও (duplication) একটি সহজ ব্যাখ্যা দেয়: যদি সুতোগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তবে পূর্বের সুতোর গঠন অনুসরণ করেই নতুন সম্পূরক সুতো তৈরি হয়। যদিও ডিএনএ'র গঠন থেকে বংশগতির ব্যাখ্যা প্রদান করা সম্ভব হয়, কিন্তু ডিএনএ কেমন করে কোষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে তা জানা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী বছরগুলোতে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ কী করে প্রোটিন তৈরির কাজটি নিয়ন্ত্রণ করে তা বুঝতে চেষ্টা করেন। জানা যায় ডিএনএ ছাঁচ হিসেবে ব্যবহার করে কোষ অনুরুপ বার্তাবাহক আরএনএ (messenger RNA) (নিউক্লিওটাইড যুক্ত অণু, অনেকটা ডিএনএ'র মতো) তৈরি করে। বার্তাবাহক আরএনএ'র নিউক্লিওটাইড ক্রম থেকে প্রোটিনে অ্যামিনো অ্যাসিডের]] ক্রম তৈরি হয়; নিউক্লিওটাইড ও অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রমের মধ্যে এই রূপান্তরকে বংশগতীয় সঙ্কেত বলে। বংশাণুবিজ্ঞানের এই ব্যাপক অগ্রগতির পর নতুন গবেষণার স্বর্ণদুয়ার খুলে যায়। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণা ছিলো ১৯৭৭ সালে ফ্রেডেরিক স্যাঙ্গারের ডিএনএ সিকুয়েন্সিং এর শৃংখল-পরিসমাপ্তি: এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ অণুর নিউক্লিওটাইড অনুক্রম পড়তে সক্ষম হন। ১৯৮৩ সালে ক্যারি ব্যাংকস মুলিস পলিমারেজ শৃংখল বিক্রিয়া উদ্ভাবন করেন, যা কোন মিশ্রণ থেকে ডিএনএ'র নির্দিষ্ট অংশ আলাদা করার দ্রুত পথ দেখায়। মানব বংশাণুসমগ্র প্রজেক্ট এর সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং পাশাপাশি সেলেরা বংশাণুসমগ্রিক্সের কাজ এবং অন্যান্য কৌশলের মাধ্যমে ২০০৩ সালে মানুষের বংশাণুসমগ্রের নীলনকশা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়। বংশগতির নানা দিক বিচ্ছিন্ন বংশগতি ও মেন্ডেলের সূত্র সবচেয়ে প্রাথমিক স্তরে বংশ হতে বংশান্তরে জীবদেহে বৈশিষ্ট্য স্থানান্তরিত হয় বংশাণুর মাধ্যমে। এই বৈশিষ্ট্যটি প্রথম আবিষ্কার করেন গ্রেগর মেন্ডেল, যখন তিনি মটরশুটিঁর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মে পৃথক হয়ে যাওয়া পর্যবেক্ষণ করছিলেন। ফুলের রঙ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় মেন্ডেল লক্ষ্য করেন যে মটরশুটিঁ ফুলের রঙ হয় সাদা নয়তো বেগুনি হয়, তবে এদের মাঝামাঝি কিছু হয় না। একই বংশাণুর এই ভিন্ন, বিছিন্ন রূপকে অ্যালিল বলে। মটরশুটিঁর ক্ষেত্রে, যা কিনা একটি ডিপ্লয়েড প্রজাতি, প্রতিট স্বতন্ত্র উদ্ভিদের প্রত্যেক বংশাণুর দুটি করে অ্যালিল আছে, যার প্রতিটি পিতা-মাতার কোন একজন থেকে এসেছে। অনেক প্রজাতি, যার মধ্যে মানুষও আছে, বংশগতির এই রূপ অনুসরণ করে। ডিপ্লয়েড জীবে দুটি একই রকম অ্যালিল যুক্ত বংশাণুকে ওই বংশাণু লোকাসে হোমোজাইগাস বলে, আর ভিন্ন অ্যালিল যুক্ত বংশাণুকে হেটারোজাইগাস বলা হয়। কোন নির্দিষ্ট জীবের অ্যালিলগুচ্ছকে তার বংশাণুোটাইপ বলে, আর তার পর্যবেক্ষণযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহকে তার ফিনোটাইপ বলে। কোন একটি বংশাণুতে হেটারোজাইগাস জীবের একটি বংশাণুকে সাধারণতঃ প্রকট বংশাণু বলা হয়, কারণ এর বৈশিষ্ট্যই ওই জীবের ফিনোটাইপে প্রাধান্য বিস্তার করে, অপরদিকে অন্য অ্যালিলটিকে প্রচ্ছন্ন বংশাণু বলে,কারণ তা ওই জীবটির ফিনোটাইপে প্রকাশিত হয় না। কিছু অ্যালিলে সম্পূর্ণ প্রকটতা দেখা যায় না, বরং তারা অসম্পূর্ণ প্রকটতা দেখায়, যাতে একটি মধ্যবর্তী ফিনোটাইপের সৃষ্টি হয়, অথবা সহপ্রকটতার সৃষ্টি হয়। যখন এক জোড়া জীবে যৌন প্রজনন হয় তখন তাদের সন্তানাদি তাদের প্রত্যেকের দুটি অ্যালিল হতে একটি অ্যালিলের অধিকারী হয়। উত্তরাধিকারের এই বিচ্ছিন্নতা এবং অ্যালিলের আলাদা হয়ে যাবার এই ঘটনাটিকে মেন্ডেলের প্রথম সূত্র বা বিচ্ছিন্নতার সূত্র বলে। চিহ্ন ও রেখাচিত্র বংশাণুবিজ্ঞানীরা বংশগতি বর্ণনা করতে ডায়াগ্রাম ও চার্ট ব্যবহার করেন। একটি বংশাণুকে একটি বর্ণ (অথবা একাধিক বর্ণ) দ্বারা প্রকাশ করা হয়-বড় হাতের বর্ণ প্রকট অ্যালিল নির্দেশ করে আর ছোট হাতের বর্ণ প্রচ্ছন্ন অ্যালিলকে নির্দেশ করে। অনেক সময় কোন বংশাণুর সাধারণ, নন-মিউট্যান্ট অ্যালিল বোঝাতে একটি "+" চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। নিষেক ও প্রজনন সংক্রান্ত পরীক্ষণ গুলোতে (এবং বিশেষ করে মেন্ডেলের নিয়মগুলো নিয়ে আলোচনা করার সময়) পিতা-মাতাকে "P" প্রজন্ম দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং তাদের সন্তানাদিকে "F1" (প্রথম প্রজন্ম) দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যখন "F1" প্রজন্ম পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে সন্তান উৎপাদন করে তখন তাকে "F2" (দ্বিতীয় প্রজন্ম) বলা হয়। সঙ্কর প্রজননের ফলাফল দেখাবার জন্যে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হল প্রুনেট বর্গ। মানুষের বংশাণুগত রোগ নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা কোন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার বোঝাতে পেডিগ্রি চার্ট ব্যবহার করেন। এই চার্ট থেকে কোন বংশতালিকায় একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বংশগতি লক্ষ্য করা যায়। মানুষের বংশাণুগত রোগ নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা কোন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার বোঝাতে পেডিগ্রি চার্ট ব্যবহার করেন। এই চার্ট থেকে কোন বংশতালিকায় একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বংশগতি লক্ষ্য করা যায়। বহু সংখ্যক বংশাণুর মিথস্ক্রিয়া কোন জীবের হাজার হাজার বংশাণু থাকে, আর যৌন প্রজনন হওয়া জীবসমূহে এই বংশাণুসমূহের বিন্যাস সাধারণত পরস্পর স্বাধীনভাবে হয়। এই কথাটির মানে হল মটরশুঁটির হলুদ বা সবুজ রঙের অ্যালিলের উত্তরাধিকারের সাথে তার সাদা বা বেগুনি ফুলের উত্তরাধিকারের কোন সম্পর্ক নেই। এই ব্যাপারটিকে মেন্ডেলের দ্বিতীয় সূত্র বা স্বাধীনভাবে সঞ্চারণ সূত্র বলে, যার মানে হল পিতা-মাতার বিভিন্ন বংশাণুর অ্যালিল দৈবচয়ন ভিত্তিতে মিশ্রিত হয়ে নানান রকম বিন্যাস সংবলিত সন্তানাদির জন্ম দেয়। (কিছু বংশাণু সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সঞ্চারিত হয় না, বরং বংশাণুগত লিংকেজ প্রদর্শন করে যা এই নিবন্ধে পরবর্তীতে আলোচনা করা হয়েছে।) প্রায়ই একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য একাধিক বংশাণু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন ব্লু-আইড মেরিতে এমন একটা বংশাণু আছে যার অ্যালিল ফুলের রঙ নীল বা বেগুনি নির্ধারণ করে। আবার এতে আরেকটি বংশাণু আছে যা কিনা একই কাজ করে: সেটি ফুলের রঙ্গিন বা বর্ণহীন হওয়া নির্ধারণ করে। যখন একটি উদ্ভিদের এই বর্ণহীন বংশাণুর দুটি অ্যালিল থাকলে ফুলটি সাদাই হয়, অপর বংশাণুতে যাই থাকুক না কেন। একটি বংশাণুর অপর বংশাণুর বৈশিষ্ট্য বাধা দানের এই ব্যাপারটি এপিস্ট্যাসিস নামে পরিচিত, যেখানে দ্বিতীয় বংশাণুটি প্রথম বংশাণুর প্রতি এপিস্ট্যাটিক। অনেক বৈশিষ্ট্যই (যেমন সাদা আর বেগুনি ফুল) কোন একটা একক বংশাণুর নিয়ন্ত্রণাধীন বিচ্ছিন্ন গুণ নয়, বরং এগুলো অবিচ্ছিন্ন বৈশিষ্ট্য (যেমন মানুষের গায়ের রঙ, উচ্চতা ইত্যাদি) এই জটিল বৈশিষ্ট্যগুলো অনেক কয়টি বংশাণুর মিলিত বহিঃপ্রকাশ। এই বংশাণুগুলোর প্রভাব অনেক উপাদান দ্বারাই প্রভাবিত হয়, বিশেষতঃ পরিবেশের নানান উপাদান দ্বারা। কোন একটি জটিল বৈশিষ্ট্যে কোন বংশাণুর অবদানের পরিমাণকে ঐ বংশাণুর হেরিটিবিলিটি বলে। কোন একটি বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার আপেক্ষিক - দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিবেশে পরিবেশ কোন আচরণের পরিবর্তনে উল্লেখযগ্য ভূমিকা রাখে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় মানুষের উচ্চতা একটি জটিল বৈশিষ্ট্য, আমেরিকাতে যার উত্তরাধিকার ৮৯%। তবে নাইজেরিয়া, যেখানে অপুষ্টির হার অনেক বেশি, সে দেশে এই পরিমাণটি গিয়ে দাঁড়ায় ৬২% এ। বংশগতির আণবিক ভিত্তি ডিএনএ ও ক্রোমোসোম বংশাণুর আণবিক ভিত্তি হল ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিয়িক এসিড (ডিএনএ)। ডিএনএ নিউক্লিওটিডের শৃংখলে তৈরি, যা আবার চার ধরনের: এডেনিন(A), সাইটোসিন(C), গুয়ানিন(G) ও থাইমিন(T)। ডিএনএতে বংশাণুগত তথ্য এই নিউক্লিওটিডগুলোর বিন্যাসের ওপর নির্ভরশীল আর বংশাণু ডিএনএ শৃংখলে ক্রমান্বয়ে সজ্জিত থাকে। একমাত্র "ভাইরাসই এই নিয়মের ব্যতিক্রম - এর বংশাণুগত তথ্য আরএনএতেও তৈরি হতে পারে। ডিএনএ সাধারণভাবে একটি দ্বি-সূত্রক তন্তু, যা কিনা পাকানো দ্বি-সর্পিল অবস্থায় থাকে। ডিএনএ'র প্রতিটি নিউক্লিওটাইড অপর তন্তুতে অবস্থিত তার সহযোগী নিউক্লিওটাইডের সাথে বন্ধনযুক্ত হয়: A জোট বাঁধে T এর সাথে, আর G, C এর সাথে। এভাবে তৈরি দ্বি-সর্পিল আকারে প্রতিটি সূত্রকেই তার পরিপূরক সূত্রকের প্রয়োজনাতিরিক্ত হয়ে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করে। ডিএনএ'র গঠনই বংশগতির ভৌত ভিত্তি: ডিএনএ দ্বিত্বকরণের মাধ্যমে বংশাণুগত তথ্য প্রতিলিপি করা হয়, যখন সূত্রকদুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে প্রতিটি সুতোই নিজের পরিপূরক সুতো তৈরির ছাঁচের মতো কাজ করে। ডিএনএ সূত্রকে বংশাণু মাত্রিকভাবে সজ্জিত থাকে, যাকে ক্রোমোসোম বলে। ব্যাকটেরিয়াতে প্রতিটি কোষেই একক বৃত্তাকার ক্রোমোসোম থাকে, যেখানে সুকেন্দ্রিক জীবে (যার মধ্যে উদ্ভিদ ও প্রাণী অন্তর্ভুক্ত) বহু সংখ্যক মাত্রিক ক্রোমোসোমে ডিএনএ সজ্জিত থাকে। এই ডিএনএ সূত্রকগুলো অনেক লম্বা হয়; উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মানুষের দীর্ঘতম ক্রোমোসোম প্রায় ২৪৭ মিলিয়ন ক্ষার-জোড়া (base pair) নিয়ে গঠিত। কোন ক্রোমোসোমে অবস্থিত ডিএনএ তার গাঠনিক প্রোটিনের সাথে সম্পর্কযুক্ত, যা তাকে সংগঠিত ও বিন্যস্ত রাখে এবং ডিএনএ'র সাথে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করে, যা কিনা ক্রোমাটিন নামক একটি পদার্থের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়; সুকেন্দ্রিক জীবে ক্রোমাটিন সাধারণতঃ নিউক্লিওসোমে তৈরি হয়, যা হল হিস্টোন প্রোটিনের কোরের (core) চারপাশে ডিএনএ পেঁচিয়ে তৈরি হয়। কোন জীবের বংশগতিগত পদার্থের সম্পূর্ণ সেটকে (সাধারণতঃ সব ক্রোমোসোমের সম্মিলিত ডিএনএ অনুক্রম) বংশাণুসমগ্র বলা হয়। যেখানে হ্যাপ্লয়েড জীবের একটি ক্রোমোসোমের কেবল একবারই থাকে সেখানে অনেক ডিপ্লয়েড জীবের (উদ্ভিদ ও প্রাণী) প্রতিটি ক্রোমোসোম দুবার করে আছে, ফলে তাদের প্রতিটি বংশাণুরও দুটি প্রতিলিপি আছে। কোন বংশাণুর অ্যালিলদ্বয় অপত্য ক্রোমাটিডের সদৃশ লোকাইতে অবস্থান করে, আর প্রতিটি অ্যালিল প্রত্যেক পূর্বপুরুষের (পিতা বা মাতা) কাছ থেকে আসে। সেক্স ক্রোমোসোম একটি ব্যতিক্রমধর্মী ক্রোমোসোম, অনেক প্রাণীর লিঙ্গ নির্ধারণে বিশেষ কিছু ক্রোমসোমের ভূমিকা আছে। মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীতে Y ক্রোমোসোমে অল্প কিছু বংশাণু থাকে এবং এটি পুরুষ লিঙ্গিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটায়, যেখানে X ক্রোমোসোম অন্যান্য ক্রোমোসোমের মতই অনেক বংশাণু বহন করে, যার অনেকগুলোর সাথে লিঙ্গ নির্ধারণের কোন সম্পর্ক নেই। মেয়েদের X ক্রোমোসোমের দুটি প্রতিলিপি থাকে, যেখানে ছেলেদের একটি X ও একটি Y ক্রোমোসোম থাকে - X ক্রোমোসোমের প্রতিলিপি সংখ্যার এই পার্থক্যই সেক্স -লিঙ্কড ডিজঅর্ডারের মত অস্বাভাবিক বংশগতির নমুনা সূত্রপাত করে। প্রজনন কোষ বিভাজিত হবার সময় তাদের বংশাণুসমগ্র প্রতিলিপি করা হয় এবং প্রতিটি অপত্য কোষ একটি প্রতিলিপির অধিকারী হয়। এই প্রক্রিয়াটি মাইটোসিস নামে পরিচিত এবং প্রজননের এই সরলতম প্রক্রিয়াটিই অযৌন প্রজননের ভিত্তি। বহুকোষী জীবেও অযৌন প্রজনন ঘটতে পারে, যা কেবলমাত্র পিতা বা মাতার একজনের বংশাণুসমগ্র বিশিষ্ট সন্তানের জন্ম দেয়। পূর্বপুরুষের হুবহু বৈশিষ্ট্য সংবলিত সন্তান ক্লোন হিসেবে পরিচিত। সুকেন্দ্রীক জীবে যৌন প্রজনন হয়, যে প্রক্রিয়ায় সন্তান পিতা-মাতার বংশাণুগত বস্তুর মিশ্রণের উত্তরাধিকারী হয়। যৌন প্রজননের প্রক্রিয়াটি বংশাণুসমগ্রের একটি প্রতিলিপি বিশিষ্ট হ্যাপ্লয়েড ও দুটি প্রতিলিপি বিশিষ্ট ডিপ্লয়েড অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘটে। হ্যাপ্লয়েড কোষ গুলো একত্রিত হয় এবং এদের বংশাণুগত বস্তুর মিলনে ডিপ্লয়েড কোষ সৃষ্টি হয়। ডিপ্লয়েড কোষ ডিএনএ দ্বিত্বঃকরণ ছাড়াই ভাগ হয়ে গিয়ে হ্যাপ্লয়েড কোষ তৈরি করে এবং এই প্রক্রিয়ায় অপত্য কোষ দৈব চয়ন ভিত্তিতে প্রতি জোড়া ক্রোমোসোমের যে কোন একটির উত্তরাধিকারী হয়। বেশির ভাগ উদ্ভিদ ও প্রাণীই ডিপ্লয়েড, যেখানে তাদের একক কোষে তৈরি গ্যামিট হ্যাপ্লয়েড। হ্যাপ্লয়েড বা ডিপ্লয়েড পদ্ধতির যৌন প্রজনন না হলেও ব্যাকটেরিয়ার নতুন বংশাণুগত বৈশিষ্টের অধিকারী হয়বার অনেক পন্থা আছে। কিছু ব্যাকটেরিয়া কনজুগেশন এর মাধ্যমে অপর ব্যাকটেরিয়াতে ক্ষুদ্র বৃত্তাকার ডিএনএ খন্ড পাঠাতে পারে। ব্যাকটেরিয়া পরিবেশ থেকেও ডিএনএ তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করে তা বংশাণুসমগ্রে রূপান্তরিত করতে সক্ষম, যা কিনা রূপান্তর নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়াগুলো সমান্তরাল বংশাণু স্থানান্তর ঘটায়, যার মাধ্যমে এমনিতে সম্পর্কহীন জীবে বংশাণুগত তথ্যের আদান-প্রদান হয়। রিকমবিনেশন ও বংশাণুগত সংযুক্তি ক্রোমোসোমের ডিপ্লয়েড চরিত্র বিভিন্ন ক্রোমোসোমকে যৌন প্রজননের সময় স্বাধীনভাবে সঞ্চারিত হতে দেয়, যা বংশাণুর নতুন নতুন সমাবেশ সৃষ্টি করে। তত্ত্বীয়ভাবে একই ক্রোমোসোমে অবস্থিত বংশাণুর রিকবিনেশন হবার কথা নয়, তবে ক্রোমোসোমাল ক্রসওভার এর কারণে তা ঘটে থাকে। ক্রসওভারের সময় ক্রোমোসোম ডিএনএ'র খন্ড স্থানান্তর করে, এভাবেই ক্রোমোসোমের মধ্যে বংশাণুর অ্যালিল আদান-প্রদান হয়। ক্রোমোসোমাল ক্রসওভারের ব্যাপারটি ঘটে সাধারণতঃ মিয়োসিস বিভাজনের সময়, যা হ্যাপ্লয়েড কোষ তৈরি করে। ক্রোমোসোমের দুটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্যে ক্রোমোসোমাল ক্রসওভার ঘটার সম্ভাবনা তাদের মধ্যে (বিন্দু দুটির) দূরত্বের ওপর নির্ভর করে। কোন একটি বড় দূরত্বের জন্যে ক্রসওভারের সম্ভাবনা এত বেশি থাকে যে বংশাণুর উত্তরাধিকার কার্যকরবভাবে সম্পর্কহীন থাকে। যেসন বংশাণু কাছাকাছি থাকে, যদিও ক্রসওভারের স্বল্প সম্ভাবনা এটা নির্দেশ করে যে বংশাণুগুলো বংশাণুগত লিংকেজ প্রদর্শন করে - দুটি বংশাণুর অ্যালিল একসাথে উত্তরসূরিতে যেতে চায়। এক গুচ্ছ বংশাণুর জন্যে লিংকেজের পরিমাণ একত্রিত হয়ে রৈখিক লিংকেজ ম্যাপ সৃষ্টি করে যা কোন ক্রোমোসোমে বংশাণুর বিন্যাসের একটি প্রাথমিক ধারণা প্রদান করে। বংশাণুর অভিব্যক্তি বংশগতীয় সঙ্কেত বংশাণু সাধারণতঃ প্রোটিন তৈরির মাধ্যমে তাদের প্রকাশ ঘটায়, যেটি কিনা কোষের সবচেয়ে জটিল কাজগূলো সম্পাদনকারী অণু। প্রোটিন হল অ্যামিনো অ্যাসিডের শৃঙ্খল, আর বংশাণুর ডিএনএ ক্রম (আরএনএ অন্তবর্তীর মাধ্যমে) সুনির্দিষ্ট প্রোটিন ক্রম তৈরির জন্যে ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়াটি বংশাণুর ডিএনএ ক্রমের সাথে মিল থাকা আরএনএ অণু তৈরির মাধ্যমে আরম্ভ হয়, যে প্রক্রিয়াটি প্রতিলিপিকরণ (transcription) নামে পরিচিত। এই বার্তাবাহক আরএনএ অণুটি অতঃপর সংশ্লিষ্ট ক্রমিক অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যে প্রক্রিয়াটি ট্রান্সলেশন নামে পরিচিত। প্রতিটি গ্রুপে তিনটি নিউক্লিওটাইডের ক্রম থাকে, যাকে কোডন বলা হয়, যা কিনা প্রোটিনের সম্ভাব্য বিশটি অ্যামিনো অ্যাসিডের একটির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় - এই যোগাযোগ বংশগতীয় সঙ্কেত নামে পরিচিত। তথ্যের প্রবাহ হয় দিক-অনির্দিষ্ট, তথ্য নিউক্লিওটাইডের অনুক্রম থেকে অ্যামিনো অ্যাসিডের অনুক্রম প্রোটিনে স্থানান্তরিত হয়, কিন্তু এটি কখনো প্রোটিন থেকে ডিএনএ অনুক্রমের দিকে ফেরত যায় না, ফ্রান্সিস ক্রিক যাকে বলেছিলেন আণবিক জীববিদ্যার কেন্দ্রীয় মতবাদ। অ্যামিনো এসিডের সুনির্দিষ্ট অনুক্রমের কারণেই প্রোটিনের স্বতন্ত্র ত্রি-মাত্রিক কাঠামো তৈরি হয়,আর এই ত্রি-মাত্রিক কাঠামোর সাথে এর কাজের সম্পর্ক রয়েছে। কিছু হল সরল গাঠনিক অণু, যেমন প্রোটিন কোলাজেন দ্বারা গঠিত তন্তু। প্রোটিন অন্য প্রোটিন এবং সরল অণুর সাথে যুক্ত হতে পারে এবং কখনো কখনো তা এনজাইমের মত কাজ করে রাসায়নিক বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে (নিজের প্রোটিন গঠন পরিবর্তন না করে)। প্রোটিনের গঠন পরিবর্তনশীল; প্রোটিনের হিমোগ্লোবিন বিভিন্ন রূপে পরিবর্তিত হয় এবং স্তন্যপায়ীর রক্তে অক্সিজেন সংগ্রহ, পরিবহন, এবং পরিত্যাগের কাজগুলো করে। ডিএনএতে একটিমাত্র নিউক্লিওটিডের অ্যামিনো এসিডের ক্রমেও একটি পরিবর্তন ঘটায়। যেহেতু প্রোটিন অ্যামিনো এসিডের শিকল দ্বারা তৈরি তাই এর কোন পরিবর্তন প্রোটিনে নাটকীয় পরিবর্তন আন্তে পারে; প্রোটিন পৃষ্ঠের এমন কোন পরিবর্তন ঘটতে পারে যে তা অন্য প্রোটিন ও অণুর সাথে বন্ধন তৈরির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। যেমন, সিকল-সেল এনিমিয়া হল একটি বংশাণুগত অসুখ যা হিমোগ্লোবিনের β-গ্লোবিন সঙ্কেতায়ন অঞ্চলে একটি বেস পরিবর্তনের কারণে ঘটে, যার ফলে একটি অ্যামিনো এসিডের পরিবর্তন ঘটে যা হিমোগ্লোবিনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে। সিকল সেল আক্রান্ত হিমোগ্লোবিন নিজেদের সাথে লেগে থাকে, যা তন্তুময় গঠন সৃষ্টি করে যার ফলে লোহিত রক্ত কণিকাবাহী প্রোটিনের আকার বিকৃত হয়ে যায়। তখন এই কাস্তে আকৃতির হিমোগ্লোবিন আর আগের মত রক্ত নালীর মধ্য দিয়ে স্বচ্ছন্দ্যে চলতে পারে না, এরা জমাট বাঁধে বা বিকৃত হয়ে যাবার প্রবণতা দেখায়, যার ফলে এই অসুখের সাথে জড়িত সমস্যাগুলো দেখা দেয়। কিছু বংশাণু আরএনএতে থাকে কিন্তু তারা প্রোটিন উৎপাদে রূপান্তরিত হয় না - এদের বলা হয় অ-সঙ্কেতায়ক আরএনএ অণু। কিছু ক্ষেত্রে এরা একত্র হয়ে এমন গঠন তৈরি করে যা কোষের জটিল ক্রিয়াগুলো (যেমন: রাইবোজোমীয় আরএনএ এবং হস্তান্তর আরএনএ) সম্পাদন করে। আরএনএ অন্য আরএনএ'র সাথে সংকরণ মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক প্রভাব সৃষ্টি করে (যেমন: অণু-আরএনএ)। প্রকৃতির স্ববিরোধ যদিও বংশাণু কোন জীবের সব প্রয়োজনীয় তথ্য জমা করে রাখে, চূড়ান্ত ফিনোটাইপ নির্ধারণে পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে - এই দ্বৈততাকে অনেক সময় "প্রকৃতির স্ববিরোধ" বলা হয়। কোন জীবের ফিনোটাইপ বংশাণুবিজ্ঞানের সাথে পরিপ্বার্শের মিথস্ক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে। এর একটি উদাহরণ হল তাপমাত্রা-সংবেদী মিউটেশান। প্রায়ই একটি অ্যামিনো এসিডের পরিবর্তন প্রোটিনের গঠন ও অন্যান্য অণুর সাথে তার পারস্পরিক ক্রিয়ার পরিবর্তন করে না, তবে এটি ঠিকই তার গঠন অস্থিতিশীল করে তোলে। উচ্চ তাপমাত্রার পরিবেশে, যখন অণুগুলো খুব দ্রুত ছুটোছুটি করে আর পরষ্পরের সাথে সংঘর্ষ ঘটায়, তখন প্রোটিন তার গঠন হারিয়ে ফেলে এবং এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তবে নিম্ন তাপমাত্রায় তা স্বাভাবিকভাবেই নিজের কাজ সম্পন করে।সিয়ামিজ বিড়ালের পশমের রং নির্ধারণী বংশাণুতে এ ধরনের মিউটেশান লক্ষ্য করা যায়, যখন পিগমেন্ট তৈরিকারী একটি এনজাইমে মিউটেশানের ফলে তা অস্থিতিশীল হয়ে যায় এবং উচ্চ তাপমাত্রায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। প্রোটিনটি ত্বকের অপেক্ষাকৃত শীতল অংশগুলোতে (পা, কান, লেজ এবং মুখমন্ডলে) ভালোভাবেই কাজ করে - ফলে উচ্চ তাপমাত্রাবিশিষ্ট অংশগুলোতে এর লোম হয় গাঢ় বর্ণের। পরিবেশ মানুষের বংশগতিমূলক রোগ ফিনাইলকিটোনিউরিয়ালের প্রভাবেও নাটকীয় ভূমিকা পালন করে। যে মিউটেশানের কারণে ফিনাইলকিটোনিউরিয়াল শরীরের ফিনাইলঅ্যালানিন নামক অ্যামিনো এসিডটি ভাঙ্গার ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত করে, যার ফলে একটি ক্ষতিকর অন্তবর্তী অণু তৈরি হয়, তা পালাক্রমে অগ্রসর মানসিক শ্লথতা ও প্যারালাইসিসের উপসর্গ সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফিনাইলকিটোনিউরিয়াল মিউটেশান আছে এমন রোগী যদি কঠোরভাবে অ্যামিনো এসিড যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলেন, তবে তিনি সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। বংশাণু নিয়ন্ত্রণ কোন নির্দিষ্ট জীবের বংশাণুসমগ্র হাজার হাজার বংশাণু ধারণ করে, তবে কোন নির্দিষ্ট সময়ে তাদের সবাইকেই যে সক্রিয় থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। বংশাণু তখনই প্রকাশিত হয় যখন তা mRNA তে রূপান্তরিত হয় (এবং এর মাধ্যমে প্রোটিনে রূপান্তরিত হয়), বংশাণুর অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকগুলো কোষগত পদ্ধতি আছে যার মাধ্যমে কেবল প্রয়োজনের সময়ই বংশাণুকে প্রকাশিত হতে দেওয়া হয়। ট্রান্সক্রিপশন ফ্যাক্টর হল নিয়ন্ত্রক প্রোটিন, যা বংশাণুর শুরুতে অবস্থান করে এর প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, ইশেরিকিয়া কোলাই ব্যকটেরিয়াতে ট্রিপটোফেন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড সংশ্লেষের জন্যে প্রয়োজনীয় বংশাণুর সমাবেশ বিদ্যমান। কিন্তু কোষে যখন ট্রিপটোফেনের অভাব নেই তখন আর ওই বংশাণুটির কার্যকারিতা কাঙ্ক্ষিত নয়। ট্রিপটোফেনের উপস্থিতি বংশাণুর কার্যক্রমকে সরাসরি ব্যাহত করে— ট্রিপটোফেন অণু ট্রিপটোফেন রিপ্রেসরের সাথে যুক্ত হয়, যা রিপ্রেসরের গঠন এমনভাবে পরিবর্তন করে যে তা বংশাণুর সাথে সংযুক্ত হয়ে যায়। ট্রিপটোফেন রিপ্রেসর অনুলিপিকরণ বাধাগ্রস্ত করে দিয়ে বংশাণুর প্রকাশিত হবার পথ রুদ্ধ করে দেয়, যা ঋণাত্বক ফিডব্যাক সৃষ্টি করে বংশাণুর ট্রিপটোফেন সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। বংশাণু অভিব্যক্তির ভিন্নতা বহুকোষী জীবে স্পষ্ট, যেখানে কোষগুলো একই বংশাণুসমগ্র ধারণ করে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন কাঠামো ও আচরণের অধিকারী হয় যার কারণ হল তাদের মধ্যে প্রকাশিত বংশাণুর ভিন্নতা। একটি বহুকোষী জীবে সব কোষই একটি কোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে, কিন্তু এরা নানারকম কোষে ভাগ হয়ে যায় বহিঃস্থ ও আন্তঃকোষীয় সংকেতের কারণে এবং এভাবে ধীরে ধীরে এরা ভিন্ন ভিন্ন বংশাণু অভিব্যক্তির প্যাটার্ন তৈরি করে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করে থাকে। যেহেতু কোন একক বংশাণু বহুকোষী বংশাণুর উন্নয়নের জন্যে দায়ী নয়, তাই এই প্যাটার্নগুলো বহুসংখ্যক কোষের মধ্যে জটিল মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। ইউক্যারিয়টদের মধ্যে ক্রোমাটিনের কিছু বিশেষ গাঠনিক বৈশিষ্ট্য থাকে যা বংশাণুর প্রতিলিপিকরণকে প্রভাবিত করে, যা প্রায়শই ডিএনএ ও ক্রোমাটিনের পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যা কিনা তাদের অপত্য কোষগুলো দ্বারা দৃঢ়ভাবে অর্জিত হয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে এপিজেনেটিক বলা হয় কারণ এরা ডিএনএ সিকুয়েন্সের ওপরে অবস্থান করে এবং এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে বংশগতিসূত্রে স্থানান্তরিত হয়। এপিজেনেটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে একই মাধ্যম থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকারের কোষ ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকারী হয়। যদিও এপিজেনেটিক বৈশিষ্ট্য সাধারণত গাঠনিক ধারায় গতিশীল একটি প্রক্রিয়া, এর মধ্যে কিছু, যেমন প্যারামিউটেশান এর ব্যাপারটির বহুপ্রজন্ম উত্তরাধিকারের অধিকারী এবং বংশগতির বাহক হিসেবে ডিএনএর ভিত্তির একটি দুর্লভ ব্যতিক্রম হিসেবে অবস্থান করছে। বংশাণুর পরিবর্তন রূপান্তর (মিউটেশন) ডিএনএ প্রতিলিপিকরণের সময় কালেভদ্রে দ্বিতীয় সূত্রকের শৃংখলকরণে ত্রুটি ঘটতে পারে। এই ভুলগুলো, যেগুলো কিনা রূপান্তর বা পরিব্যক্তি (মিউটেশন) নামে পরিচিত, কোন জীবের ফিনোটাইপের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে তা যদি বংশাণুর প্রোটিন সংকেতের ক্রমে ঘটে থাকে। এই ভুলের মাত্রা খুবই ছোট হয়ে থাকে— প্রতি ১০-১০০ মিলিয়ন বেসের মধ্যে ১ টি— ডিএনএ পলিমারেজের মুদ্রণ সংশোধন (প্রুফ-রিডিং) ক্ষমতার কারণে এটি সম্ভব হয়।(মুদ্রণ সংশোধন ক্ষমতা ব্যতীত ভুলের মাত্রা হাজার গুণ বেড়ে যায়; কারণ অনেক ভাইরাস ডিএনএ ও আরএনএ পলিমারেজের সীমাবদ্ধ প্রুফ-রিডিং ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে; যার ফলে তারা দ্রুত রূপান্তরিত হতে পারে।) যেসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডিএনএতে পরিবর্তনের হার বৃদ্ধি পায় সেগুলোকে মিউটাজেনিক বলা হয়; মিউটাজেনিক রাসায়নিক যৌগ ডিএনএ রেপ্লিকেশনে ভুলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, প্রায়শই বেস-পেয়ারের কাঠামোতে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে, যখন অতিবেগুনি তেজস্ক্রিয়তা মিউটেশনের হার বাড়ায় ডিএনএ কাঠামোর ক্ষতি করে। ডিএনএতে স্বাভাবিকভাবে রাসায়নিক ত্রুটিও ঘটে থাকে, এবং যদিও কোষের ডিএনএ মেরামত কৌশল ভুল সংযোগ ও ভাঙ্গা অংশ জোড়া দেবার কাজ করে থাকে, কোন কোন সময় এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং ডিএনএ তার পূর্বের গঠনে ফিরে যেতে পারে না। যেসব জীব ক্রোমোসমাল ক্রসওভারের মাধ্যমে ডিএনএ আদান-প্রদান ও বংশাণু পুনঃসংযোগ করে থাকে, মিয়োসিসের সময় সারিবদ্ধকরণের ত্রুটির ফলে তাদের রূপান্তর ঘটতে পারে। ক্রসওভারের সময় ভুলের সম্ভাবনা বেশি হয় যখন অনুরোপ ক্রমের কারণে অংশীদার ক্রোমসোম ভুলভাবে বিন্যস্ত হয়; এর ফলে বংশাণুসমগ্রের কিছু এলাকায় মিউটেশন হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই ত্রুটি থেকে ডিএনএ সিকুয়েন্সে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটতে পারে— সম্পূর্ণ এলাকার প্রতিলিপিকরণ, ইনভার্সন অথবা বিনষ্টকরণ, অথবা বিভিন্ন ক্রোমোসোমের মধ্যে দুর্ঘটনাবশত পুরো অংশ বিনিময় (যাকে বলা হয় ক্রোমোসোমাল ট্রান্সলোকেশন)। বিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন রূপান্তরের মাধ্যমে ভিন্ন বংশাণুোটাইপ বিশিষ্ট জীব তৈরি হয়, এবং এই পরিবর্তনের ফলে ফিনোটাইপও পরিবর্তিত হয়। বহু সংখ্যক রূপান্তরও একটি জীবের ফিনোটাইপ, স্বাস্থ্য এবং প্রজনন উপযোগীতার ওপর অল্পই প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব রূপান্তর প্রকৃতপক্ষে প্রভাব ফেলতে পারে তার সাধারণত ক্ষতিকর হয়ে থাকে, তবে কখনো কখনো রূপান্তর উপকারীও হতে পারে। ড্রোসোফিলা মেলানোজাস্টার মাছিতে করা গবেষণা থেকে জানা যায় যদি রূপান্তরের মাধ্যমে বংশাণুর তৈরিকৃত প্রোটিন পরিবর্তিত হয়ে যায়, তবে খুব সম্ভবতঃ তা ক্ষতিকর হবে, কারণ শতকরা ৭০ ভাগ রূপান্তরই ক্ষতকর হয়, এবং অবশিষ্টাংশ হয় নিরপেক্ষ নয়তো স্বল্পভাবে উপকারী হয়। জনসংখ্যা বংশাণুবিজ্ঞান গবেষণা কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে বংশাণুগত পরিবর্তন এবং কীভাবে সময়ের সাথে এর বণ্টন পরিবর্তিত হয় তা অনুসন্ধান করে। কোন জনসমষ্টিতে অ্যালিল কম্পাংক প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে, যেখানে একটি অ্যালিলের টিকে থাকার উচ্চ ক্ষমতা এবং প্রজনন ঐ জনসমষ্টিতে এর উপস্থিতির হার বাড়িয়ে দেয়। বহু প্রজন্মান্তরে জীবের বংশাণুসমগ্র পরিবর্তিত হয়ে বিবর্তন ঘটাতে পারে। রূপান্তর ও লাভজনক রূপান্তরের নির্বাচন একটি প্রজাতিকে বিবর্তিত করে পরিবেশে আরো ভালোভাবে টিকে থাকার উপযোগী করে তুলতে পারে, যা অভিযোজন নামে পরিচিত।প্রজাত্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নউন প্রজাতির সৃষ্টি হয়, এই প্রক্রিয়াটি প্রায়শই ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতার সাথে জড়িত যা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে বংশাণুগত পরিবর্তনের সুযোগ দেয়। পপুলেশন বায়োলজি ও বিবর্তনে বংশাণুগত নীতিগুলোর প্রয়োগকে আধুনিক সংশ্লেষ বলা হয়। যেহেতু সিকুয়েন্স অপসারী হয় এবং বিবর্তনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয় , সিকুয়েন্সের এই পরিবর্তন আণবিক ঘড়ি হিসেবে ব্যবহার করে তাদের মধ্যে বিবর্তনগত দূরত্ব পরিমাপ করা যায়। বংশাণুগত তুলনাই ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সম্পর্কতা চরিত্রায়িত করার সর্বোৎকৃষ্ট উপায়। এটি প্রায়শই ত্রুটিপূর্ণ ফিনোটাইপিক তুলনার একটি উৎকৃষ্ট প্রতিস্থাপন। প্রজাতির মধ্যে বিবর্তনগত দূরত্বের ভিত্তিতে বিবর্তন বৃক্ষ তৈরি করা হয় - এই বৃক্ষ সাধারণ বংশক্রমাগমের প্রতিনিধিত্ব করে এবং সময়ের সাথে প্রজাতির অপসারিতার পরিমাপ করে, যদিও এরা সম্বন্ধহীন প্রজাতির মধ্যে বংশাণুগত বস্তুর আদান-প্রদান দেখাতে পারে না (যা সমান্তরাল বংশাণু বদল নামে পরিচিত এবং ব্যাকটেরিয়াতে অহরহ ঘটে থাকে)। গবেষণা ও প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে প্রস্তুতকৃত জীব জেনেটিক্স যদিও বংশাণুতাত্ত্বিকরা সুপ্রচুরসংখ্যক জীবের বংশগতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন, গবেষকরা নির্দিষ্ট ধরনের কিছু জীবের বংশাণুবিজ্ঞানের ওপর বিশেষভাবে নজর দেন। এর কারণ হল কোন একটি জীবের ওপর যদি যথেষ্ট পরিমাণ কাজ করা হয়ে থাকে তবে পরবর্তীতে গবেষকরা ঐ বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ফলে বংশাণুতাত্ত্বিক গবেষণায় কিছু মডেল অর্গানিজমের ওপর গবেষণাই এই ক্ষেত্রে গবেষণার ভিত্তিতে পরিণত হয়েছে। মডেল বা আদর্শ জীবের ওপর করা প্রচলিত গবেষণার মধ্যে রয়েছে বংশাণু নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাজ এবং বিবর্তন ও ক্যান্সারে বংশাণুর ভূমিকা সংক্রান্ত গবেষণা। গবেষণার জন্যে জীবের বাছাইকরণ আংশিকভাবে নির্ভর করে কিছু সুবিধার ওপরও — সংক্ষিপ্ত সংঘটন সময় এবং সহজ বংশাণুগত পরিচালনার কারণে কিছু জীব বংশাণুগত গবেষণায় বিপুল জনপ্রিয়। বহুল ব্যবহৃত মডেল জীবের মধ্যে রয়েছে ব্যাক্টেরিয়াম ইশেরেকিয়া কোলাই, উদ্ভিদ এরাবিডোপসিস থ্যালিয়ানা, ঈস্ট স্যাকারোমাইসিস সেরাভিসি, নেমাটোড ক্যানোরহ্যাবডিটিস এলিগানস, সাধারণ ফলের মাছি (ড্রোসোফিলা মেলানোজেস্টার), এবং গৃহস্থালির ইঁদুর (মাস মাস্কুলাস)। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বংশাণুবিজ্ঞানের গবেষণা চিকিৎসা বংশাণুবিজ্ঞান মানুষের স্বাস্থ্য ও রোগবালাইয়ের সাথে বংশাণুতাত্ত্বিক বৈচিত্রের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করে। কোন রোগের সাথে জড়িত অজানা বংশাণু খুঁজে বের করার লক্ষ্যে গবেষকরা জেনেটিক লিংকেজ ও পেডিগ্রি ছক ব্যবহার করে বংশাণুসমগ্রে এর অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করেন। কোন জনগোষ্ঠীতে রোগের সাথে সম্পর্কিত বংশাণুসমগ্র খুঁজে বের করতে বিজ্ঞানীরা মেন্ডেলীয় রেন্ডমাইজেশানের সাহায্য নেন, যা কিনা বহুবংশাণুগত বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যায় ব্যবহৃত হয়। কোন সম্ভাব্য বংশাণু শনাক্ত করা গেলে মডেল জীবের ওপর পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। বংশগতিমূলক রোগবালাই নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি বংশাণুোটাইপিক কৌশলের ক্রমবর্ধমান উদ্ভাবন ফার্মাকোগেনেটিক্স এর জন্ম দিয়েছে - যেখানে ওষুধের প্রতি বংশাণুোটাইপের সাড়া লক্ষ্য করা হয়। উত্তরাধিকার সূত্রে না ছড়ালেও, ক্যান্সার এক প্রকার বংশগতিমূলক ব্যাধি। মানবশরীরে ক্যান্সার এর বিস্তৃতি বেশ কিছু সংখ্যক ঘটনার ফলাফল। কোষ বিভাজিত হবার সময় কালেভদ্রে পরিব্যক্তি ঘটে। এসব পরিব্যক্তি সন্তানাদিতে না পৌঁছালেও তা কোষের ব্যবহার কিছুটা বদলে দেয়, যার ফলে তাদের বৃদ্ধি ও বিভাজন দ্রুততর হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়া থামানোর জন্যে শরীরের এক ধরনের সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা থাকে: অযথাযথভাবে বিভাজিত কোষে বিশেষ সংকেত পাঠানো হয় যা তাদের কোষীয় মৃত্যু ত্বরান্বিত করে, কিন্তু মাঝে মাঝে কোষে এমন পরিব্যক্তি ঘটে যার পরিণামে এই সংকেত অগ্রাহ্য করা হয়। কোষের অভ্যন্তরে এভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোষসমূহ তাদের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে, যা দেহে টিউমার তৈরি করে যার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন কলা আক্রান্ত হয়। গবেষণার কৌশল ডিএনএ ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করা হয়। ডিএনএ নির্দিষ্ট সিকুয়েন্সে কর্তন করতে বহুল ব্যবহৃত একটি এনজাইম হল রেস্ট্রিকশন এনজাইম, যা ডিএনএকে পরিকল্পিতভাবে ভাগ করতে পারে। জেল ইলেকট্রোফোরেসিস প্রক্রিয়ায় ডিএনএ দেখা যায়। ডিএনএ খন্ডসমূহ তাদের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী বিভক্ত হয়। লাইগেশন এনজাইমের মাধ্যমে ডিএনএ খন্ডসমূহকে পুনঃর্যোজিত করা যেতে পারে এবং বিভিন্ন উৎস থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে গবেষকেরা রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ তৈরি করেন। রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ প্রযুক্তি সাধারণত প্লাজমিডের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে - যাদের স্বল্প কিছু ডিএনএ বিশিষ্ট বৃত্তাকার বংশাণু বিদ্যমান। এ ধরনের প্লাজমিডকে ব্যাক্টেরিয়ার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়ে গবেষকেরা সেই প্রবেশকৃত ডিএনএ খন্ডকটুকুর সংখ্যাবৃদ্ধি করেন, যা কিনা আণবিক ক্লোনিং হিসেবে পরিচিত। পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশনের মাধ্যমেও ডিএনএর সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব। ডিএনএর সুনির্দিষ্ট স্বল্প সিকোয়েন্সে পিসিআরের মাধ্যমে পৃথক করে বহুগুণ বর্ধিত করা যায়। ডিএনএর অতি ক্ষুদ্র অংশ বর্ধিত করতে পারে বিধায় নির্দিষ্ট ডিএনএ সিকোয়েন্সের উপস্থিতি নির্ধারণে পিসিআর বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। ডিএনএ অনুক্রম নির্ণয় ও বংশাণুসমগ্র বিজ্ঞান তথ্যসূত্র পাদটীকা পরিশিষ্ট পরিভাষা অ্যালিল - Allele বিদেশী নাম মেন্ডেল - Mendel বংশাণুবিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Genetics
Genetics
Genetics is the study of genes, genetic variation, and heredity in organisms. It is an important branch in biology because heredity is vital to organisms' evolution. Gregor Mendel, a Moravian Augustinian friar working in the 19th century in Brno, was the first to study genetics scientifically. Mendel studied "trait inheritance", patterns in the way traits are handed down from parents to offspring over time. He observed that organisms (pea plants) inherit traits by way of discrete "units of inheritance". This term, still used today, is a somewhat ambiguous definition of what is referred to as a gene. Trait inheritance and molecular inheritance mechanisms of genes are still primary principles of genetics in the 21st century, but modern genetics has expanded to study the function and behavior of genes. Gene structure and function, variation, and distribution are studied within the context of the cell, the organism (e.g. dominance), and within the context of a population. Genetics has given rise to a number of subfields, including molecular genetics, epigenetics, and population genetics. Organisms studied within the broad field span the domains of life (archaea, bacteria, and eukarya). Genetic processes work in combination with an organism's environment and experiences to influence development and behavior, often referred to as nature versus nurture. The intracellular or extracellular environment of a living cell or organism may increase or decrease gene transcription. A classic example is two seeds of genetically identical corn, one placed in a temperate climate and one in an arid climate (lacking sufficient waterfall or rain). While the average height the two corn stalks could grow to is genetically determined, the one in the arid climate only grows to half the height of the one in the temperate climate due to lack of water and nutrients in its environment.
1366
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%88%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%B0
ঈশ্বর
একেশ্বরবাদী চিন্তাধারায়, ঈশ্বরকে সর্বোচ্চ সত্তা, স্রষ্টা ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের প্রধান উপাস্য হিসাবে কল্পনা করা। ঈশ্বর সাধারণত সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ, সর্বত্র বিরাজমান ও সার্বজনীন হিসাবে ধারণা হয় সেইসাথে তিনি অনন্ত এবং প্রয়োজনীয় অস্তিত্ব থাকেন। ঈশ্বরকে প্রায়শই উৎকর্ষ বা অব্যবস্থা ধারণার সাথে সম্পর্কিত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নিরাকার বলে ধরে নেওয়া হয়। ঈশ্বর কথার আক্ষরিক অর্থ আরাধ্য, ভগবান, স্রষ্ঠা, প্রভু, স্বামী বা প্রধান আশ্রয়। বিভিন্ন ধর্মে ঈশ্বরের সংজ্ঞা বিভিন্ন। আব্রাহামিয় ধর্ম (ইহুদি, খ্রীষ্টান, ইসলাম, জেহোবাস ,উইটনেস ইত্যাদি), অদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত, বহুশ্বরবাদী ইত্যাদিদের মতে ঈশ্বর হলো জাগতিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ অবস্থানে অবস্থানকারী কোনো অস্তিত্ব । অনেকের মতে, এই মহাবিশ্বের জীব ও জড় সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা ও নিয়ন্ত্রক আছে বলে মনে করা হয় । এ অস্তিত্বে বিশ্বাসীগণ ঈশ্বরের উপাসনা করে, তাদেরকে আস্তিক বলা হয়। আর অনেকে এ ধারণাকে অস্বীকার করে, এদেরকে বলা হয় নাস্তিক। অনেকে ঈশ্বর আছে কি নেই তা সম্বন্ধে নিশ্চিত নয় (যেমন বৌদ্ধদের কিছু সম্প্রদায়)। এদের সংশয়বাদী বলে। আস্তিক সমাজে , ঈশ্বরের ধারণা ধর্ম , ভাষা ও সংস্কৃতিভেদে নানারূপী। ভাষাভেদে একে ইংরেজি ভাষায় গড, এবং বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় ঈশ্বর ইত্যাদি শব্দ ব্যবহৃত হয়। সর্বেশ্বরবাদ ও একেশ্বরবাদ হলো ঈশ্বরবাদের প্রধান দুটি শাখা । সর্বেশ্বরবাদে ক্ষমতার তারতম্য অনুযায়ী একাধিক ঈশ্বর বা অনেক সময় ঐশ্বরিক সমাজে বিশ্বাস করা হয় এবং প্রতিমা প্রতিকৃতি আকারে পরোক্ষভাবে এর উপাসনা করা হয় (যেমন প্রাচীন রোমান, গ্রীক, মিশরের ঈশ্বরসমৃহ) । উল্লেখ্য সনাতন ধর্মের (হিন্দুদের) ক্ষেত্রে প্রতীমার মধ্যে এক কিন্তু নাম রূপ ভেদে ভিন্ন রূপে আপতিত ঈশ্বরকে আহ্বান করে পূজা করা হয়। আর শুধুমাত্র একজন সার্বভৌম ঈশ্বরের ধারণাকে বলা হয় একেশ্বরবাদ । বিভিন্ন ধর্মে ঈশ্বর ইহুদী ধর্ম খ্রিস্টান ধর্মে ঈশ্বরের নাম ইহুদি ধর্মের অনুরূপ। তারা ঈশ্বরকে ইয়াহওয়েহ/যিহোবা, এলোহিম বা আদোনাই নামে ডাকে। যারা এলোহিম নামে ঈশ্বরকে ডাকে তাদের এলোহীয়, যারা ইয়াহওয়েহ নামে ডাকে তাদের ইয়াহওয়েহীয় বলে ডাকা হয়। তবে, তারা খ্রিষ্টধর্মের মত ঈশ্বরের ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী নয়। হিব্রু ভাষায় ঈশ্বরের নাম যিহোবা বা এলোহিম হলেও আরবী ভাষী ইহুদিরা ঈশ্বরকে "আল্লাহ" নামে সম্বোধন করে থাকে। ইসলামের বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থ ও সীরাত থেকে যার সত্যতা পাওয়া যায়। আরবী ভাষার বাইবেলে ঈশ্বরের সমার্থক হিসেবে কেবলমাত্র আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করা হয়, তবে সেটি সর্বনাম হিসেবে। সনাতন ধর্ম সনাতন ধর্মে ঈশ্বরের ধারণাকে অনেক ভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়।। কিন্তু সনাতন ধর্ম একেশ্বরবাদী। বিষ্ণু বা কৃষ্ণ হচ্ছেন সনাতন ধর্মের ঈশ্বর। বিভিন্ন দেব-দেবীরা হচ্ছেন বিষ্ণু বা কৃষ্ণের শক্তির আংশিক প্রকাশ। যারা ঈশ্বরের আদেশ অনুযায়ী কাজ করে থাকেন। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী জীব-আত্মা শাশ্বত। অদ্বৈত বেদান্তের ন্যায় অদ্বৈতবাদী বা সর্বেশ্বরময়বাদী দর্শন অনুসারে, জীবনের উদ্দেশ্য হল আত্মা ও পরমাত্মার অভিন্নতা বা একাত্মতা অনুভব করা।আত্মা সর্বশেষে পরমাত্মা বা ব্রহ্মে বিলীন হয়। এই কারণেই এই দর্শন অদ্বৈতবাদ নামে পরিচিত। উপনিষদে বলা হয়েছে, মানুষের পরমসত্ত্বা আত্মাকে যিনি ব্রহ্মের সঙ্গে অভিন্ন রূপে অনুভব করতে সক্ষম হন, তিনিই মোক্ষ বা মহামুক্তি লাভ করেন। পরমসত্ত্বা রূপে ঈশ্বর সনাতন ধর্মে ব্রহ্ম, ঈশ্বর, ভগবান বা পরমেশ্বর নামে আখ্যাত। অবশ্য ঈশ্বর শব্দের একাধিক ব্যাখ্যা রয়েছে। মীমাংসাবাদীরা ঈশ্বরে অবিশ্বাস করেন; অপরদিকে সাংখ্যবাদীরা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে। আবার অদ্বৈতবাদীরা আত্মা ও ব্রহ্মকে অভিন্ন মনে করেন। জৈন ধর্ম বর্তমানে যে ধর্ম গুলো বিদ্যমান আছে সেগুলো একেশ্বরবাদ, বহুশ্বরবাদ আর অনাশ্বরবাদ। যারা ঈশ্বরে বিশ্বাসী তাঁদের মতে ঈশ্বর মানে হলো- জেনেরেটর, অপারেটর & ডিস্ট্রাক্টর (মানে কেউ একজন আপনাকে তার প্রয়োজনে তৈরি করলেন, পরিচালনা করলেন এবং প্রয়োজন শেষে ধ্বংস করে দিলেন)। তাঁদের মতে ঈশ্বর মানে হলো একটা বিংস বা পার্সন। তাঁদের কথায় প্রশ্ন আসতে পারে যদি ওনি একজন হন তার স্বরূপ কি হতে পারে? ওনারা উত্তর দিবেন ওনি তাহার মত, ওনার কোনো শরিক নাই, ওনার কোনো তুলনা নাই। আবারো প্রশ্ন আসতে পারে ওনি যে একজন আপনি বা আপনারা বুঝলেন বা জানলেন কীভাবে? এটা একটা ধারণা মাত্র আর ধারণা দিয়ে কখনো ধর্ম হয়না। এবার বহুশ্বরবাদ/সনাতনী মতবাদে ফেরা যাক- সনাতনী মতে ওদের ঈশ্বর ব্রহ্মা। ওনি খুব আলৌকিক শক্তির অধিকারি ওনি যখন যা চান তাই করতে পারেন। আবার সনাতনী বেদ শাস্ত্রমতানুসারে ওনি মুক্ত পুরুষ নন। এখন আবারো প্রশ্ন আসতে পারে যেখানে ঈশ্বর নিজেই মুক্ত নন সেখানে তিনি আমাদের কীভাবে রক্ষা করবেন? কীভাবে? কেন? কিজন্য? পৃথিবীতে আসছেন সেটা জানা যেমন জরুরী তার চেয়ে আরও অধিক জরুরী এই দুঃখময় জগতসংসার থেকে মুক্ত হবেন কি করে? বৌদ্ধ ধর্ম ঈশ্বর নেই এই হৃদয়ে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে বৌদ্ধধর্ম। সেটা বড় কথা নয়। থাকলে কতটুকু উপকারে আসতো আর্থমানবে? ফেরা যাক বৌদ্ধধর্মের ঈশ্বরে, বৌদ্ধ ত্রিপিটকের ব্রাহ্মাজাল সুত্র পাট করলে জানতে পারবেন এই বিশ্বব্রাহ্মাণ্ড পরিচালিত হয় পাঁচটা ইউনিভার্সাল রোলসের উপর ভিত্তি করে যার দ্বারা এই বিশ্বব্রাহ্মাণ্ড পরিচালিত হয়। যাকে বলে ইউনিভার্সালত্রুথ। আসুন এবার জানা যাক সেই পাঁচটা ইউনিভার্সাল রোলস কি? যার দ্বারা জগতের সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে? ১ঃ চিত্ত নিয়ম। ২ঃ রীত নিয়ম ৩ঃ বীর্য নিয়ম। ৪ঃ ধর্ম নিয়ম। ৫ঃকর্ম নিয়ম। এগুলোই বৌদ্ধধর্মের ঈশ্বর। এই পাঁচটি ইউনিভার্সাল রোলস চক্রাকার নিয়মে চলে। অনেক বৌদ্ধ'রা বলে থাকনে সব কর্মফল আসলে ইহা ভুল বাকি চারটা নিয়ম বা রোলস বাদ দিয়ে কর্মফল একা কিছুই করতে পারেনা। তার মানে আমরা কি জানলাম ঈশ্বর নিরাকার, অপার সমুদ্র, তিনি তার মতন। তার কোনো রুপ আর লিঙ্গ নাই। ঈশ্বর= 0x0=0 তাই সরাসরি বৌদ্ধধর্ম ঈশ্বর অস্বীকার করে। যদি আপনি ঈশ্বরের অবিশ্বাস নাস্তিক আসে বলে মনে করে থাকেন তাহলে জেনে রাখুন বৌদ্ধমতবাদে ঈশ্বর এক কাল্পনিক চরিত্র বা অন্ধবিশ্বাস। বৌদ্ধধর্মে নাস্তিক কাকে বলে জানেন? ত্রিপিটকে বলছেঃ অন্ধবিশ্বাসীগণ নাস্তিক তারা পচাগন্ধ ন্যায়। মাংসভোজী গন নহে। খ্রিস্ট ধর্ম খ্রিস্টান ধর্মে ঈশ্বরের নাম ইহুদি ধর্মের অনুরূপ। তারা ঈশ্বরকে ইয়াহওয়েহ (Yahweh)/যিহোবা (Jehovah), এলোহিম (Elohim) বা আদোনাই (Adonai) নামে ডাকে। যারা এলোহিম নামে ঈশ্বরকে ডাকে তাদের এলোহীয় (Elohim), যারা ইয়াহওয়েহ নামে ডাকে তাদের ইয়াহওয়েহীয় (Yahwist) বলে ডাকা হয়। তবে, তারা ইহুদিদের মত গোঁড়া একেশ্বরবাদী নয়, তারা ঈশ্বরের তিনটি সত্বায় বিশ্বাস করে, যাকে ত্রিত্ববাদ (Trinity) বলা হয়। এ মতবাদ অনুসারে, পিতা যিহোবা, পুত্র যীশু খ্রিষ্ট এবং পবিত্র আত্মা এই তিন সত্বা মিলেই ঈশ্বরের সত্বা গঠিত। যীশু খ্রিস্টকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হলেও তাকে ঈশ্বরের মর্যাদা দেওয়া হয়। যীশুকে রিডিমার, ইমানুয়েল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। আর পবিত্র আত্মাকে ডাকা হয় দেবদূত গাব্রিয়েল নামে। ইসলাম ধর্ম আল্লাহ্ (আরবি: الله‎‎) একটি আরবি শব্দ, ইসলাম ধর্মানুযায়ী যা দ্বারা বিশ্বজগতের একমাত্র স্রষ্টা, প্রতিপালক ও উপাস্যের নাম বোঝায়। "আল্লাহ" শব্দটি প্রধানত মুসলমানরাই ব্যবহার করে থাকেন। "আল্লাহ্" নামটি ইসলাম ধর্মে বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তার সাধারণভাবে বহুল-ব্যবহৃত নাম। এটি ছাড়াও কিছু মুসলিম তাকে আরো কিছু নামে সম্বোধন করে থাকে যেমন ‘খোদা’, ‘মাবুদ’, ‘প্রভূ’। তবে খোদা নামটি উৎপত্তিগতভাবে পারস্যের জরাথুস্ট্র ধর্মের ঈশ্বরকে ডাকতে ব্যবহৃত হয়। তবে আরব খ্রিস্টানরাও প্রাচীনকাল থেকে "আল্লাহ" শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বাহাই, মাল্টাবাসী, মিজরাহী ইহুদি এবং শিখ সম্প্রদায়ও "আল্লাহ" শব্দ ব্যবহার করে থাকেন। মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনে আল্লাহর ৯৯টি নাম উল্লেখ আছে। আরও ১৮টি নামের উল্লেখ রয়েছে হাদীসগ্রন্থগুলোতে। নামগুলোর কয়েকটির অর্থ হল: একমাত্র উপাস্য, একক স্রষ্টা, রিজিকদাতা, অধিক ক্ষমাকারী, অতিদয়ালু, বিচারদিনের মালিক, রাজাধিরাজ, সর্বজ্ঞ, চিরঞ্জীব, প্রার্থনা শ্রবণকারী, অমুখাপেক্ষী প্রভৃতি। আল্লাহর পরিচয় সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে, কুরআনে আরও বলা হয়েছে, ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে আল্লাহর কোনো গুণাবলীই সৃষ্টজীবের মত নয়। সৃষ্টজীব যেভাবে শোনে, আল্লাহ সেভাবে শোনেন না। সৃষ্টজীব যেভাবে দেখে, আল্লাহ সেভাবে দেখেন না। আল্লাহর গুণাবলীর ধরন মানুষের অজানা। কুরআনে বলা হয়েছে, তথ্যসূত্র বহিসংযোগ ধর্ম মূল বিষয়ের নিবন্ধ স্রষ্টা দেবতা দেবদেবী
https://en.wikipedia.org/wiki/God
God
In monotheistic belief systems, God is usually viewed as the supreme being, creator, and principal object of faith. In polytheistic belief systems, a god is "a spirit or being believed to have created, or for controlling some part of the universe or life, for which such a deity is often worshipped". Belief in the existence of at least one god is called theism. Conceptions of God vary considerably. Many notable theologians and philosophers have developed arguments for and against the existence of God. Atheism rejects the belief in any deity. Agnosticism is the belief that the existence of God is unknown or unknowable. Some theists view knowledge concerning God as derived from faith. God is often conceived as the greatest entity in existence. God is often believed to be the cause of all things and so is seen as the creator, sustainer, and ruler of the universe. God is often thought of as incorporeal and independent of the material creation, while pantheism holds that God is the universe itself. God is sometimes seen as omnibenevolent, while deism holds that God is not involved with humanity apart from creation. Some traditions attach spiritual significance to maintaining some form of relationship with God, often involving acts such as worship and prayer, and see God as the source of all moral obligation. God is sometimes described without reference to gender, while others use terminology that is gender-specific. God is referred to by different names depending on the language and cultural tradition, sometimes with different titles of God used in reference to God's various attributes.
1367
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8
গ্রিস
গ্রিস () ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশের একটি রাষ্ট্র যা বলকান উপদ্বীপের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। এর সীমান্তবর্তী রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে উত্তরে বুলগেরিয়া, উত্তর মেসিডোনিয়া এবং আলবেনিয়া; পূর্বে তুরস্ক। গ্রিসের মূল ভূমির পূর্বে ও দক্ষিণে এজিয়ান সাগর অবস্থিত, আর পশ্চিমে রয়েছে আইওনিয়ান সাগর। পূর্ব ভূমধ্যসাগরের উভয় অংশে গ্রিসের অনেকগুলো দ্বীপ রয়েছে। গ্রিস ইউরোপ. এশিয়া এবং আফ্রিকার মিলন স্থলে অবস্থিত। বর্তমান গ্রিকদের পূর্বপুরুষ হচ্ছে এক সময়ের পৃথিবী বিজয়ী প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা, বাইজান্টাইন সম্রাজ্য এবং প্রায় ৪ শতাব্দীর অটোমান সম্রাজ্য। এই দেশ পশ্চিমা বিশ্বের জ্ঞান বিজ্ঞানের সূতিকাগার এবং গণতন্ত্রের জন্মদায়ক স্থান হিসেবে সুপরিচিত। গ্রিসের আরও কিছু বৃহৎ অবদান হচ্ছে পশ্চিমা দর্শন, অলিম্পিক গেম্‌স, পশ্চিমা সাহিত্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং নাটক। সব মিলিয়ে গ্রিসের সভ্যতা সমগ্র ইউরোপে এক সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী সভ্যতা হিসেবে পরিগণিত হত। বর্তমানে গ্রিস একটি উন্নত দেশ এবং ১৯৮১ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।। এছাড়া এটি ২০০১ সন থেকে ইকোনমিক অ্যান্ড মনিটারি ইউনিয়ন অফ দ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ১৯৫১ সাল থেকে ন্যাটো এবং ১৯৬০ সাল থেকে ওইসিডি-এর সদস্য হিসেবে আছে। ইতিহাস প্রাচীন কাল এজিয়ান সাগরের তীরে সুপ্রাচীন কালে ইউরোপের প্রথম উন্নত সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, বর্তমান আধুনিক ইউরোপকে এর ফসল বললে অত্যুক্তি হবে না। Minoan এবং Mycenean সভ্যতার উত্থানের ফলে গ্রিসের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বতন্ত্র জেলা এবং সরকার ও সমাজ কাঠামো বিশিষ্ট রাজ্যের সৃষ্টি হয়। এই রাজ্যগুলো স্পার্টা এবং এথেন্সের অধীনে একত্রিত হয়ে পার্সিয়ানদের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করেছিল। এথেন্সে গ্রিসের প্রথম সমৃদ্ধ সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে এথেন্স ও স্পার্টার মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয় যার পরিণতি পেলোপোনেশীয় যুদ্ধ। এ সময় পার্সিয়ানদের হাতে স্পার্টার পতন হয়। এর পর মাত্র এক শতাব্দীর মধ্যে সকল গ্রিকরা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে পার্সীয়দের প্রতিহত করে। ১৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এখানে রোমান সম্রাজ্যের সূচনা হয়। রোমান যুগ রোমান যুগের সূচনায় হেলেনীয় সমাজ ও সংস্কৃতির কোন পরিবর্তন না হলেও এর ফলে আবশ্যিকভাবেই গ্রিস তার রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারায়। খ্রিস্ট ধর্ম বিকাশের পূর্ব পর্যন্ত এখানে হেলেনীয় সংস্কৃতি টিকে ছিল। গ্রিস রোমের একটি প্রদেশে পরিণত হয় এবং তখনও গ্রিস প্রবল প্রতাপে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সংস্কৃতিকে প্রভাবান্বিত করে চলে। এরপর রোমান সাম্রাজ্য দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়; একভাগের নাম পূর্ব রোমান সম্রাজ্য যা গ্রিকদের সাম্রাজ্য নামে প্রতিষ্ঠা পায় এবং পরবর্তীকালে বাইজান্টাইন সম্রাজ্য নাম ধারণ করে। অন্য অংশ ছিল কনস্টান্টিনোপ্‌ল কেন্দ্রিক যার নাম ছিল বাইজান্টিয়াম। বাইজান্টাইন রাজত্বের সময় গ্রিক আগ্রাসী সকল শক্তির মধ্যে হেলেনীয় ভাবধারার প্রভাব সৃষ্টিতে সমর্থ হয় এবং এ সময়েই সিসিলি ও এশিয়া মাইনর থেকে অনেকে গ্রিসে বসতি স্থাপন করে। একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীকে গ্রিসে বাইজান্টাইন শিল্পকলার স্বর্ণযুগ বলা হয়। তবে ১২০৪ থেকে ১৪৫৮ সালের মধ্যে সংঘটিত ক্রুসেডের সময় ধর্মের নামে প্রতিষ্ঠিত কিছু সেনাদল দ্বারা গ্রিস আক্রান্ত হয়। ১৪৫৩ সালের ২৯ মে তারিখে কনস্টান্টিনোপ্‌লের পতনের পূর্ব পর্যন্ত এখানে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। রাজনীতি গ্রিসের রাজনীতি একটি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক বহুদলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোয় সংঘটিত হয়। সরকারপ্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের উপর ন্যস্ত। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সরকার এবং আইনসভা উভয়ের উপর ন্যস্ত। বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ ও আইনসভা হতে স্বাধীন। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ প্রশাসনিকভাবে গ্রিসে মোট ১৩ টি প্রশাসনিক অঞ্চল রয়েছে। এরা আবার সর্বমোট ৫৪ টি প্রিফেকচারে বিভক্ত। ভূগোল গ্রীস পাহাড়ের একটি দেশ। এগুলি দেশের উত্তর-পশ্চিমে শুরু হয় এবং সমুদ্রের ঢেউয়ের নীচে পিছলে না যাওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চালিত হয়; তাদের শিখর পর্যায়ক্রমে ভূপৃষ্ঠ ভেঙে হাজার হাজার দ্বীপ তৈরি করে যার জন্য গ্রীক জলরাশি বিখ্যাত এই পর্বতমালাগুলি ল্যান্ডস্কেপ জুড়ে গ্রাম এবং শহরগুলির বণ্টন নির্ধারণ করে এবং বৃষ্টিপাতের নিদর্শন এবং রাস্তার নেটওয়ার্ককে আকার দেয়, মূল ভূখণ্ডকে ছোট ছোট বাসযোগ্য উপত্যকা এবং সমভূমিতে বিভক্ত করে। এই ভাঙ্গা আড়াআড়িটি গ্রিসকে বিস্তৃত পরিবেশগত পরিস্থিতি দখল করেছে, যার মধ্যে অনেকগুলি বৃহত্তর আধুনিক কৃষির জন্য উপযুক্ত নয় এবং এগুলি 'বন্য' এবং পাথুরে অবস্থায় ফিরে গেছে। এটি প্রাক-রাফেলাইট চিত্রশিল্পীদের দ্বারা কল্পনা করা কৌতুকময় ব্রুকস এবং ছায়াময় সূর্যের আলোয় বনভূমিতে ভরা আইডলিক গ্রামীণ ভূদৃশ্য নাও হতে পারে, তবে এটি এর কাঁচা এবং শিরোনামহীন রাজ্যে দুর্দান্ত ইউরোপের সৈকত এবং উপসাগর খালি পরিসংখ্যানের ভাষায়, গ্রীস ১৩১,৯৪০ বর্গ কিমি (৫০,৯৪২ বর্গ মাইল) আয়তন এবং ১৩,৬৭৬ কিলোমিটার (৮,৪৯৮ মাইল) উপকূল রেখা রয়েছে। এটিতে প্রায় ২০০০ টিরও বেশি দ্বীপ রয়েছে, যার মধ্যে ১৭০ টি স্থায়ীভাবে বসবাস করে are একটি ভৌগোলিকভাবে জটিল দেশ, এটি বর্ণনার স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য নিম্নলিখিত অঞ্চলগুলিতে বিভক্ত করা যেতে পারে: অ্যাথেন্স এবং অ্যাটিকা রাজধানী এবং এর অভ্যন্তরীণ অঞ্চলটি বিস্তৃত উপদ্বীপে অবস্থিত যা এজিয়ান সাগরে প্রবেশ করে। অ্যাথেন্সে এখন স্বয়ং ৪,৪,০০,০০০ লোক রয়েছে এবং তিনটি পর্বতমালা এবং সমুদ্রের মধ্যবর্তী সমভূমিটি পূর্ণ করেছে বিমানবন্দর (এলিথেরিয়াস ভেনিজেলোস) ইমিটোস রেঞ্জের সুদূর পাশে পূর্বদিকে অবস্থিত তবে এটি রাজধানীর সাথে অত্যন্ত সুসংযুক্ত। অ্যাটিকা তার উৎপাদিত জলপাইয়ের তেলের গুণগতমানের জন্য বিখ্যাত ছিল, তবে রাজধানীতে অফার দেওয়ার কারণে বাসিন্দারা চাকরির সুযোগের দিকে মনোনিবেশ করায় অনেক কৃষিক্ষেত্র ত্যাগ করা হয়েছে। পেলোপনিজ পেলোপনিজ একটি বিশাল উপদ্বীপ যা করিন্থ শহরের কাছে উত্তর-পূর্বে সরু ইস্টমাস দ্বারা সবেমাত্র মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত ছিল। যেহেতু এই ফালাটি এখন করিন্থ খাল দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে (যা উপদ্বীপের চারপাশে বিপজ্জনক ভ্রমণকে তীব্রভাবে সংক্ষিপ্ত করে তোলে) এটি প্রযুক্তিগতভাবে একটি দ্বীপে পরিণত হয়েছে; গ্রীক রাষ্ট্রকে সংজ্ঞায়িত করে এমন অনেকের মধ্যে সর্বশেষতম। এর ভর উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত দুটি দীর্ঘ পর্বত শৃঙ্খল এবং উত্তর উপকূল এবং মধ্য অঞ্চল সহ পূর্ব-পশ্চিমে প্রবাহিত পাহাড়ের আরও একটি ভর দ্বারা বিভক্ত। উত্তর এবং মধ্য পর্বতমালা অত্যন্ত ভাল জল সরবরাহ করা হয়, এবং বন এবং সুন্দর জর্জে ভরা হয়। দক্ষিণে লাকোনিয়া এবং মেসিনিয়ার সমভূমি দ্বারা আধিপত্য রয়েছে, এর উত্তর অংশটি সুন্দর বালুকাময় সৈকতগুলির জন্য বিখ্যাত। এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জগুলি প্রচলিতভাবে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত: আরগো-সারোনিক, সাইক্ল্যাডিক, স্পোরাদিস, ডোডেকানিজ, পূর্ব এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ (সামোস, চিয়স, লেসবোস ইত্যাদি) এবং আরও কয়েকটি যেমন such ক্রিট এবং সামোথ্রেস যা হয় এত বড় যে তারা নিজেরাই দাঁড়াতে পারে বা অন্যের থেকে খুব দূরে একটি সহজে সংজ্ঞায়িত গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এগুলি সাধারণত চুনাপাথর বা গ্রানাইট দিয়ে গঠিত, যদিও দক্ষিণ ডোডেকানিজের কয়েকটি দ্বীপ আগ্নেয় শিল বা বেসাল্ট। তাদের অনেকের ভূগর্ভস্থ জলের সামান্য পরিমাণ রয়েছে, যা তাদের কৃষিক্ষেত্রকে সীমাবদ্ধ করে, যদিও তাদের মধ্যে কিছু চমৎকার ওয়াইন উৎপাদন করে। ট্যুরিজম আবির্ভাবের আগে, তাদের বেশিরভাগই সমুদ্র থেকে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন এবং ফিশিং গ্রামগুলিতে হোয়াইটওয়াশ করা ঘরগুলি হ'ল গ্রীক আর্কিটেকচারের কথা ভাবা হলে মনে করা হয় প্রত্নতাত্ত্বিক দৃশ্য। মধ্য গ্রীস এবং থেসালি থেসালি এবং বোয়েটিয়ার সমভূমিগুলি পুরোপুরি পর্বতমালা এবং এজিয়ান সাগরকে আরোপিত এবং গ্রীসের সবচেয়ে ধনী কৃষিক্ষেত্র: থিসালিয়ান বৃহত্তম, এবং প্রচুর পরিমাণে ভুট্টা, চাল, তামাক এবং ফল উৎপাদন করে; বোটিয়ান সিরিয়াল এবং তুলা উৎপাদন করে এবং এটি তার গবাদি পশুদের জন্য বিখ্যাত। কামভৌনিয়ান পর্বতমালা এই অঞ্চলটি ম্যাসেডোনিয়া থেকে উত্তরে পৃথক করে এবং পিন্ধোস পরিসর এপিরাস থেকে পশ্চিমে বিভক্ত করে, আর পার্নাসসোস পর্বতগুলি দক্ষিণে যায়। এই আধুনিকতম পরিসীমা দুটি অভিজাত স্কিইং রিসর্ট রয়েছে যা এথেন্স থেকে ডে ট্রিপগুলির মাধ্যমে সহজেই অ্যাক্সেস করা যায়। এপিরাস, ম্যাসেডোনিয়া এবং থ্রেস পিন্ধোস পর্বতমালার শিখরগুলির দ্বারা এপিরাসের আধিপত্য রয়েছে, যা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হওয়ার সাথে সাথে মেঘগুলি ধরে ফেলে, ফলস্বরূপ এটি গ্রীসের সবচেয়ে আর্দ্রতম অঞ্চল। রাগড এবং রিমোট, এটি জনবহুল এবং দরিদ্র, তবে চমকপ্রদ সুন্দর দৃশ্যে পূর্ণ। থ্রেসের রোধোপি পর্বতমালা একইভাবে শক্তভাবে আবদ্ধ এবং এই অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশ বনভূমি যা পাহাড় এবং উপত্যকাগুলিকে কম্বল করে। মেসিডোনিয়া বিশেষত খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, তবে এখানে প্রচুর সংখ্যক প্রাণিসম্পদ রয়েছে। এই অঞ্চলের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হ'ল উত্তর-পশ্চিমের হ্রদগুলি, যা আলবেনিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলি এবং ম্যাসেডোনিয়ার প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ান প্রজাতন্ত্রের সাথে ভাগ করা রয়েছে। আয়নিয়ান দ্বীপপুঞ্জ আয়নিয়ান দ্বীপপুঞ্জগুলি গ্রিসের পশ্চিম উপকূলে ছয়টি বড় দ্বীপ নিয়ে গঠিত এবং জলবায়ুর দিক থেকে তারা মূল ভূখণ্ডের এই অংশের সাথে এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জের চেয়ে অনেক বেশি কাছাকাছি রয়েছে। অপেক্ষাকৃত উচ্চ স্তরের বৃষ্টিপাতের অর্থ তারা ভারী বৃক্ষযুক্ত এবং তাদের ভূদৃশ্যটি এপিরিসের মতোই রুক্ষ এবং পর্বতমালা। তারা কিছু ভাল ওয়াইন এবং ফল উৎপাদন করে, এবং বসন্তে পুষ্পিত বন্যফুলগুলি আশ্চর্যজনকভাবে ল্যান্ডস্কেপকে রেন্ডার করে। অর্থনীতি গ্রিসের অর্থনীতি মূলত সেবাখাত নির্ভর। গ্রিস বেশ ধনী একটি দেশ। যদিও শিল্প বিকাশ এবং পর্যটনের কারণে সাম্প্রতিক দশকে গ্রিসের অর্থনীতি উন্নতি হয়েছে , দেশটি একটি বৃহত এবং মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসছে। ২০০২ সালের জানুয়ারী থেকে গ্রীসে টাকার মুদ্রা ইউরো, যা নাটকের পরিবর্তে । ২০০৪ সালের অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি গ্রীক অর্থনীতিকে প্ররোচিত করেছিল। গত বছরগুলিতে, দেশটি একটি মারাত্মক ঋণ সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল এবং এর অনেকগুলি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যেমন উন্নয়নের স্বল্প হার এবং বৃহত বেকারত্ব (ডিসেম্বর ২০১২ সালে ২৫%)। অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য এর অর্থনীতি গ্রীস হয় ১৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতির ১৭ সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং নামমাত্র গ্রস ডোমেস্টিক উৎপাদন (২০১২) দ্বারা বিশ্বের ৩৪তম বৃহত্তম দেশ। একটি উন্নত দেশ, গ্রীস অর্থনীতির পরিষেবা খাত (৮৫%) এবং শিল্প (১২%) উপর ভিত্তি করে, যখন কৃষিক্ষেত্র জাতীয় অর্থনৈতিক আয়ের মাত্র ৩% নিয়ে গঠিত। গ্রিসের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শিল্প হলো পর্যটন এবং বণিক পরিবহন। প্রকৃতপক্ষে, প্রতি বছর প্রায় ২০ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক পর্যটক গ্রিসে যান, যা এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের) ৭ম এবং বিশ্বের ১৬তম অবস্থানে রয়েছে। মার্চেন্ট শিপিংয়ের ক্ষেত্রে, গ্রিস বিশ্বের বৃহত্তম বণিক সামুদ্রিক হিসাবে এটি বিশ্বের মোট ক্ষমতার ১৬% আওতাভুক্ত। ১৯৮২ সালে, গ্রীস ইউরোপীয় সম্প্রদায়ের (পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন) এর সদস্য হয়ে ওঠে। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে ইউরো দেশটির সরকারী মুদ্রায় পরিণত হয়, ৩৪০.৭৫ ড্রাচমে ইউরোর বিনিময় হারে ড্রচমা প্রতিস্থাপন করে। গ্রিস আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা এবং অন্যান্য অনেক বিশ্ব আর্থিক সংস্থারও সদস্য। জনসংখ্যা গ্রিসের জনসংখ্যা ১,১৩,০৫,১১৮ জন (২০১১ সন অনুযায়ী) সংস্কৃতি আরও দেখুন পোমাক মুসলিম মুসলিম স্লাভ গ্রীক মুসলিম তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ গ্রিস ইউরোপের রাষ্ট্র খ্রিস্টান রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র ভূমধ্যসাগরীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য আন্তঃমহাদেশীয় রাষ্ট্র বলকান রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Greece
Greece
Greece, officially the Hellenic Republic, is a country in Southeast Europe. Located on the southern tip of the Balkan peninsula, Greece shares land borders with Albania to the northwest, North Macedonia and Bulgaria to the north, and Turkey to the east. The Aegean Sea lies to the east of the mainland, the Ionian Sea to the west, and the Sea of Crete and the Mediterranean Sea to the south. Greece has the longest coastline on the Mediterranean Basin, featuring thousands of islands. The country comprises nine traditional geographic regions, and has a population of over 10.4 million. Athens is the nation's capital and largest city. Greece is considered the cradle of Western civilization, being the birthplace of democracy, Western philosophy, Western literature, historiography, political science, major scientific and mathematical principles, theatre, and the Olympic Games. From the eighth century BC, the Greeks were organised into various independent city-states known as poleis (singular polis) that spanned the Mediterranean and Black seas. Philip II of Macedon united most of present-day Greece in the fourth century BC, with his son Alexander the Great rapidly conquering much of the known ancient world from the eastern Mediterranean to northwestern India. The subsequent Hellenistic period saw the height of Greek culture and influence in antiquity. Greece was annexed by Rome in the second century BC, becoming an integral part of the Roman Empire and its continuation, the Byzantine Empire, which was predominately Greek in culture and language. The Greek Orthodox Church, which emerged in the first century AD, helped shape modern Greek identity and transmitted Greek traditions to the wider Orthodox world. After the Fourth Crusade in 1204, Latin possessions were established in parts of the Greek peninsula, but most of the area fell under Ottoman rule by the mid-15th century. Following a protracted war of independence, which started in 1821, Greece emerged as a modern nation state in 1830. Over the first hundred years, the Kingdom of Greece sought territorial expansion, which was mainly realized in the early 20th century during the Balkan Wars and up until the catastrophic defeat of its Asia Minor Campaign in 1922. The short-lived republic that was established in 1924 was beset by the ramifications of civil strife and the challenge of resettling refugees from Turkey. In 1936 a royalist dictatorship inaugurated a long period of authoritarian rule, marked by military occupation, civil war and military dictatorship. Democracy was restored in 1974–75, leading to the current parliamentary republic. It was a belligerent on the side of the Greek Cypriots in the Turkish invasion of Cyprus in 1974. Having achieved record economic growth from 1950 through the 1970s, Greece is a developed country with an advanced high-income economy. A founding member of the United Nations, Greece was the tenth member to join what is today the European Union in 1981 and is part of the eurozone. It is a member of other international institutions, including the Council of Europe, NATO (since 1952), the OECD, the WTO, and the OSCE. Greece has a unique cultural heritage, large tourism industry, and prominent shipping sector. The country's rich historical legacy is reflected in part by its 19 UNESCO World Heritage Sites. Greece was the ninth most-visited country in the world in 2022.
1369
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9F%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B8%20%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%B8
টমাস ম্যালথাস
টমাস রবার্ট ম্যালথাস, এফআরএস (FRS) (জন্ম ফেব্রুয়ারি ১৭৬৬ - মৃত্যু ডিসেম্বর ২৩, ১৮৩৪) একজন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ ও জনমিতিবিদ। তিনি অর্থনীতি ও জনসংখ্যা বিষয়ক ম্যালথাসের তত্ত্ব প্রদানের জন্য বিখ্যাত। জীবনী টমাস রবার্ট ম্যালথাসের জন্ম ১৭৬৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এক ধনাঢ্য পরিবারে। তার পিতা ড্যানিয়েল ম্যালথাস ছিলেন দার্শনিক ডেভিড হিউম এবং জাঁ জাক রুসোর বন্ধু। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসাস কলেজে ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ভর্তি হন। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করেন, এবং ইংরেজি বক্তৃতা, লাতিন ভাষা, এবং গ্রিক ভাষায় পুরস্কার পান। তবে তার প্রিয় বিষয় ছিল গণিত। তিনি ১৭৯১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন, এবং দুই বছর পর জেসাস কলেজের ফেলো নির্বাচিত হন। অর্থশাস্ত্রে তার অবদানঃ ১৭৯৮ সালে তিনি বহুল বিতর্কিত ‘An Essays On the Principle of population" অন দ্য প্রিন্সিপল অব পপুলেশ প্রকাশ করার পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এখানে বহুল বিতর্কিত বলার কারণ তিনি এতে এমন ভয়ানক এক ভবিষ্যতের চিত্র তুলে ধরেছেন, যা আলোচনার পাশাপাশি তুমুলভাবে হয়েছে বিতর্কিত। রবার্ট ম্যালথাস তার এসেতে বলেন, মানুষ বাড়ে জ্যামিতিক হারে (২, ৪, ৮, ১৬, ৩২...) আর খাদ্য উৎপাদন বাড়ে গাণিতিক হারে (২, ৩, ৪, ৫, ৬...) আর প্রতি ২৫ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়। যেহেতু খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় অনেক পিছিয়ে পড়বে, নষ্ট হবে ভারসাম্য, এনে দেবে দুর্ভিক্ষ। খাবার না পেয়ে বাড়তি জনসংখ্যা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি লক্ষ করেছেন, সব মনুষ্য সমাজে এমনকি কলুষিত সমাজেও প্রধান প্রবণতা জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটানো। এ সার্বক্ষণিক প্রবণতা মানুষকে অত্যন্ত ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে। এ অবস্থা মোকাবেলার জন্য তিনি দুই ধরনের প্রতিরোধকের কথা বলেছেন। ১.পজেটিভ(এর আওতায় পড়ে দুর্ভিক্ষ, অসুখ-বিসুখ ও মহামারী এবং যুদ্ধ)। ২.প্রিভেন্টিভ বা নিরোধক; (এর মধ্যে রয়েছে— গর্ভপাত, জন্মনিয়ন্ত্রণ, পতিতাবৃত্তির সম্প্রসারণ, কৌমার্য ধরে রাখা, বিয়ে পিছিয়ে দেয়া) ম্যালথাসের সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ১.১ বিলিয়ন, ২৫ বছর পর তা ২ বিলিয়নে পৌঁছবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সর্বনাশা পরিণতির সমাধানের জন্য যদি দুর্ভিক্ষ, অসুখ এবং যুদ্ধের ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে অর্থনীতির চক্র ভেঙে যাবে। তিনি বলেছেন, খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির তুলনায় যদি শ্রমিকের সরবরাহ বেড়ে যায়, তাহলে প্রকৃত মজুরি কমে যাবে, জীবনধারণ ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে সংসার প্রতিপালন দুরূহ হয়ে উঠবে আর তা জনসংখা বৃদ্ধি প্রতিহত করতে সাহায্য করবে। খাদ্য উৎপাদন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির অসামঞ্জস্যপূর্ণ খতিয়ান শেষ পর্যন্ত ডেকে আনবে ‘Malthusian Catastrophe’ বা ম্যালথাসীয় ধ্বংসযজ্ঞ। এ রকম অনিবার্য ধ্বংসযজ্ঞের কথা রবার্ট ম্যালথাস না লিখলেও অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান সাইমন এ ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ম্যালথাস বরং জনসংখ্যার গতিশীলতার একটি অভিব্যক্তিবাদী সামাজিক সমাধান দিতে চেষ্টা করেছেন। তার ১৭৯৮ সালের রচনায় আটটি বিষয় উঠে এসেছে: ১. ‘নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তরের’ অর্থনীতি জনসংখ্যা বৃদ্ধি সীমিত করে আনে। ২. নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তরের উন্নতি ঘটলে জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। ৩. জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ অন্যান্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা প্রদান করে। ৪. উৎপাদন বৃদ্ধি আবার জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে উত্সাহিত করে। ৫. যেহেতু উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, পৃথিবীর ধারণক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গতি রাখার জন্য কঠোরভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হবে। ৬. যৌনতা, কাজকর্ম এবং সন্তানসন্ততির ব্যাপারে ব্যক্তিগত লাভক্ষতির হিসাবই সংসার বড় হবে না সংকুচিত হবে, তা নির্ধারণ করে। ৭. জনসংখ্যার চাপ নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তর পেরিয়ে গেলেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বয়ংক্রিয় বিষয়গুলো কাজ করতে শুরু করে। ৮. এই নিয়ন্ত্রণের বিশেষ প্রভাব পড়বে বৃহত্তর সামাজিক-সাংস্কৃতিক পদ্ধতির ওপর। (ম্যালথাস সামাজিক অনাচার, বিপন্নতা ও দারিদ্র্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।) ছেড়েছে। ম্যালথাস যে দ্রুততায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, বাস্তবে তা ছিল আরো শ্লথ (আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু দেশ বাদে)। অন্যদিকে ম্যালথাসের গাণিতিক হারকে টেক্কা দিয়ে খাবারের উৎপাদন বেড়েছে অবিশ্বাস্য রকম অধিক হারে। কাজেই যে নারকীয় যজ্ঞ দেখার সম্ভাবনা ছিল, তা শেষ পর্যন্ত ঘটেনি। বরং ম্যালথাসের আমলের তুলনায় মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়ে যায়। অন্যদিকে ম্যালথাস তার Principles of Political Economy বইয়ে ডেভিড রিকারড এর যুক্তি খণ্ডন করেছেন এবং সেই সাথে Jean Baptiste Say এর law কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। say’s law অনুসারে কোন পন্যের যোগানই তার চাহিদা কে বৃদ্ধি করে। say এর মতে পন্যের অতিরিক্ত যোগান মন্দা তৈরিতে প্রভাব ফেলেনা। তিনি আর বলেন স্বভাবতই মানুষের চাহিদা সবসময় একটু বেশিই থাকে আর কোন পণ্যের অতিরিক্ত যোগান অন্যান্য পণ্যের উৎপাদনকে তরান্বিত করে আর এইভাবে বাজারে একটা ভারসাম্য তৈরি হয়। কিন্তু ম্যালথাস say এর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন দ্রবের যোগান কখনো চাহিদা বৃদ্ধি বাঁ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আর পন্যের অতিরিক্ত যোগান বাজার কে অস্থিতিশীল করে তোলে। তিনি আর বলেন মানুষের চাহিদা এবং উৎপাদনের কারণ গুল স্বাধীন। আর এইভাবে তিনি "effective demand," এর ধারণা নিয়ে আসেন। যার মানে হচ্ছে মানুষ কোন দ্রব্য বেশি বাঁ কোন দ্রব্য কম কিনবে তা নির্ভর করবে দ্রব্য বাঁ সেবার দামের উপর। তিনি তার Principles of Political Economy বইয়ে আর বলেন চাহিদার তুলনায় দ্রবের যোগানের আধিক্য অর্থব্যাবস্থাকে সর্বদা মন্দার দিকে ধাবিত করে আর সেই জন্য তিনি সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বিলাস বহুল পণ্য আর সেবার জন্য ব্যক্তিগত বিনিয়োগ এর কথা বলেছেন। ম্যালথাস পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানী অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় নাড়া দিয়ে ২৯ ডিসেম্বর ১৮৩৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার জনসংখ্যাতত্ত্বে অনেক দুর্বলতা থাকার পরও প্রথম মহাযুদ্ধোত্তর অর্থনীতিবিদদের মেনে নিতে হয়েছে— ম্যালথাসই ছিলেন সবচেয়ে বস্তুনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ। একালের অর্থনীতিবিদরাও তা-ই মনে করেন। তার তত্ত্বের যথার্থতা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। তথ্যসূত্র ১৭৬৬-এ জন্ম ১৮৩৪-এ মৃত্যু ইংরেজ অর্থনীতিবিদ কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ১৮শ শতাব্দীর অর্থনীতিবিদ ১৮শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক ১৯শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক ইংরেজ প্রাবন্ধিক ইংরেজ ধর্মীয় লেখক চার্লস ডারউইন রয়েল সোসাইটির সভ্য
https://en.wikipedia.org/wiki/Thomas_Robert_Malthus
Thomas Robert Malthus
Thomas Robert Malthus (; 13/14 February 1766 – 29 December 1834) was an English economist, cleric, and scholar influential in the fields of political economy and demography. In his 1798 book An Essay on the Principle of Population, Malthus observed that an increase in a nation's food production improved the well-being of the population, but the improvement was temporary because it led to population growth, which in turn restored the original per capita production level. In other words, humans had a propensity to use abundance for population growth rather than for maintaining a high standard of living, a view and stance that has become known as the "Malthusian trap" or the "Malthusian spectre". Populations had a tendency to grow until the lower class suffered hardship, want and greater susceptibility to war, famine, and disease, a pessimistic view that is sometimes referred to as a Malthusian catastrophe. Malthus wrote in opposition to the popular view in 18th-century Europe that saw society as improving and in principle as perfectible. Malthus considered population growth as inevitable whenever conditions improved, thereby precluding real progress towards a utopian society: "The power of population is indefinitely greater than the power in the earth to produce subsistence for man." As an Anglican cleric, he saw this situation as divinely imposed to teach virtuous behavior. Malthus wrote that "the increase of population is necessarily limited by subsistence", "population does invariably increase when the means of subsistence increase", and "the superior power of population repress by moral restraint, vice, and misery." Malthus criticised the Poor Laws for leading to inflation rather than improving the well-being of the poor. He supported taxes on grain imports (the Corn Laws). His views became influential and controversial across economic, political, social and scientific thought. Pioneers of evolutionary biology read him, notably Charles Darwin and Alfred Russel Wallace. Malthus's failure to predict the Industrial Revolution was a frequent criticism of his theories. Malthus laid the "...theoretical foundation of the conventional wisdom that has dominated the debate, both scientifically and ideologically, on global hunger and famines for almost two centuries." He remains a much-debated writer.
1370
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A6%BE
ব্যবস্থাপনা
ব্যবস্থাপনা () হলো কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কোন গোষ্ঠীর উপর কর্তৃত্ব স্থাপন ও নিয়ন্ত্রণ-এর মাধ্যমে, প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত উপকরণ (মানবীয় ও বস্তুগত) কার্যকর ব্যবহারের একটি ধারাবাহিক, সার্বজনীন (সক্রেটিসের মতে, ব্যবস্থাপনা সার্বজনীন) সামাজিক প্রক্রিয়া, যা একটি মূল্যবান অর্থনৈতিক সম্পদ। ইংরেজি Management ( to handle- চালনা করা বা পরিচালনা করা ) শব্দটি ল্যাটিন বা ইতালীয় Maneggiare ( to train up the horse- অশ্বকে প্রশিক্ষিত করে তোলা বা পরিচালনার উপযোগী করে তোলা) শব্দ থেকে সৃষ্ট, যা কালের বিবর্তনে মানুষকে প্রশিক্ষিত করে তোলে, তার নিকট হতে কাজ আদায় করে নেয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়েছে। সমাজ বা সমাজ সংশ্লিষ্ট পক্ষের সম্পৃক্ততার কারনে 'ব্যবস্থাপনা' জ্ঞানের অন্যতম একটি শাখায় পরিণত হয়েছে। ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাপনা হল সেই প্রক্রিয়া যা ৫টি ফাংশন (planning, organizing,Staffing, leading, controlling) এর মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠানের যে লক্ষ্যগুলো থাকে, তা অর্জন করে। প্রতিষ্ঠান যখন একদল মানুষ একত্রে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে (systematic manner) কিছু কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য (objectives) অর্জনের লক্ষ্যে একসাথে কাজ করে তখন তাকে প্রতিষ্ঠান বলে। প্রতিষ্ঠানের ৪টি মূল বিষয় (issue) থাকেঃ ১) Objective, ২) People, ৩) Structure, ৪) Technology পরিকল্পনা কোন প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যগুলো ঠিক করা আর সেগুল অর্জন করার সবচেয়ে ভাল উপায় আগেই ঠিক করে রাখাই পরিকল্পনা (planning)। লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ভবিষ্যতের অগ্ৰিম সিদ্ধান্ত গ্রহণ হচ্ছে পরিকল্পনা। সংগঠিত করা কোন প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পিত লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য তার সম্পদ (resources) কীভাবে বন্টিত হবে তা ঠিক করা ও সে অনুযায়ী বণ্টন করাই organizing । সম্পদ বলতে মানব সম্পদ (human resource) ও অন্যান্য (non-human resource) বুঝানো হয়েছে। Organizing ঠিকমতো না হলে সম্পদের অপচয় হয়। হেনরি ফেয়লের অবদান আধুনিক ব্যবস্থাপনা কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন। তিনি তুরষ্কের ইস্তানবুল শহরে জন্মগ্রহণ করেন।পরে তার পরিবারের সাথে ফ্রান্সে পাড়ি জমান। তিনি মূলত একজন খনি প্রকৌশলী ছিলেন। ১৯ বছর বয়সে ১৮৬০ সালে "কম্প্যাগনি ডি কমেন্ট্রি-ফোরচ্যাম্ব্যু-ডিকেজেভিল" কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন এবং ১৮৮৮ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পান। তখন কোম্পানির আর্থিক মন্দাবস্থায় চলছিল। ১৯১৮ সালে যখন তিনি ঐ পদ থেকে অবসর নেন তখন কোম্পানি একটি দৃঢ় অর্থনৈতিক অবস্থানে ছিল। তিনি ব্যবস্থাপনার ৫টি কার্যাবলি এবং ১৪টি মূল নীতি প্রবর্তন করেন। হেনরি ফেয়ল ১৯১৬ সালে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার উপর Industrial and General Management নামক একটি বই লিখেন যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৯ সালে প্রকাশিত হয় এবং যা পরবর্তিতে অন্যান্য লেখকদেরকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করে।j ফ্রেডারিক টেলর এর অবদান ফ্রেডারিক উইন্সলো টেলর (Frederic Winslow Taylor: 1856 ~ 1915) Scientific Management এর পিতা বলে স্বীকৃত। তিনি U.S.A তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি Midvale steel company তে একজন শ্রমিক হিসাবে যোগদান করেন এবং ৬ বছরের মধ্যে তার প্রধান প্রকৌশলী হন। ফেভারিট উইন্সলও টেলর কে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্তাপনার‌ জনক বলা হয়। ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য মুখ্য উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন মালিকের কল্যাণ কর্মীদের কল্যাণ অস্তিত্ব রক্ষা গৌণ উদ্দেশ্য উপকরনাদির উন্নয়ন সম্পর্কোন্নয়ন উত্‍পাদনশীলতা বৃদ্ধি নীতিমালা প্রনয়ন উত্‍পাদন মানোন্নয়ন উদ্ভাবন কর্মী পরিচালনা সামাজিক দায়িত্ব পালন বাজার সম্প্রসারণ সুস্থ কার্যপরিবেশ সৃষ্টি তথ্যসূত্র ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান মূল বিষয়ের নিবন্ধ ব্যবস্থাপনা পেশা সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু সম্পর্ক
https://en.wikipedia.org/wiki/Management
Management
Management (or managing) is the administration of organizations, whether they are a business, a nonprofit organization, or a government body through business administration, nonprofit management, or the political science sub-field of public administration respectively. It is the process of managing the resources of businesses, governments, and other organizations. Larger organizations generally have three hierarchical levels of managers, in a pyramid structure: Senior management roles include the board of directors and a chief executive officer (CEO) or a president of an organization. They set the strategic goals and policy of the organization and make decisions on how the overall organization will operate. Senior managers are generally executive-level professionals who provide direction to middle management. Middle management roles include branch managers, regional managers, department managers, and section managers. They provide direction to front-line managers and communicate the strategic goals and policies of senior management to them. Line management roles include supervisors and front-line team leaders, who oversee the work of regular employees, or volunteers in some voluntary organizations, and provide direction on their work. Line managers often perform the managerial functions that are traditionally considered the core of management. Despite the name, they are usually considered part of the workforce and not part of the organization's management class. Management is taught across different disciplines at colleges and universities. Prominent major degree programs in management include Management, Business Administration and Public Administration. Social scientists study management as an academic discipline, investigating areas such as social organization, organizational adaptation, and organizational leadership. In recent decades, there has been a movement for evidence-based management.
1372
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%A7%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE
অধিবিদ্যা
অধিবিদ্যা বা মেটাফিজিক্স (metaphysics) হল দর্শনের একটি শাখা যাতে বিশ্বের অস্তিত্ব, আমাদের অস্তিত্ব, সত্যের ধারণা, বস্তুর গুণাবলী, সময়, স্থান, সম্ভাবনা ইত্যাদির দার্শনিক আলোচনা করা হয়। এই ধারার জনক অ্যারিস্টটল। মেটাফিজিক্স শব্দটি গ্রিক ‘মেটা’(μετά) এবং ‘ফিজিকা’(φυσικά) থেকে উদ্ভূত হয়েছে। অধিবিদ্যায় দুটি মূল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়– সর্বশেষ পরিণাম কি ? কিসের মত ? মেটাফিজিক্স এর একটি মূল শাখা হল. সৃষ্টিতত্ত্ব (cosmology) এবং অন্য একটি শাখা হল- তত্ত্ববিদ্যা (ontology) । তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ দর্শন দর্শনের শাখা
https://en.wikipedia.org/wiki/Metaphysics
Metaphysics
Metaphysics is the branch of philosophy that examines the basic structure of reality. It is often characterized as first philosophy, implying that it is more fundamental than other forms of philosophical inquiry. Metaphysics is traditionally seen as the study of mind-independent features of the world, but some modern theorists understand it as an inquiry into the conceptual schemes that underlie human thought and experience. Many general and abstract topics belong to the subject of metaphysics. It investigates the nature of existence, the features all entities have in common, and their division into categories of being. An influential contrast is between particulars, which are individual unique entities, like a specific apple, and universals, which are general repeatable entities that characterize particulars, like the color red. Modal metaphysics examines what it means for something to be possible or necessary. The nature of space, time, and change is also discussed by metaphysicians. A closely related issue concerns the essence of causality and its relation to the laws of nature. Other topics include how mind and matter are related, whether everything in the world is predetermined, and whether there is free will. Metaphysicians employ various methods to conduct their inquiry. Traditionally, they rely on rational intuitions and abstract reasoning but have more recently also included empirical approaches associated with scientific theories. Due to the abstract nature of its topic, metaphysics has received criticisms questioning the reliability of its methods and the meaningfulness of its theories. Metaphysics is relevant to many fields of inquiry that often implicitly rely on metaphysical concepts and assumptions. The origin of metaphysics lies in antiquity with speculations about the nature of reality and the universe, like those found in the Upanishads in ancient India, Daoism in ancient China, and pre-Socratic philosophy in ancient Greece. The subsequent medieval period in the West discussed the nature of universals as shaped by ancient Greek philosophers Plato and Aristotle. The modern period saw the emergence of various comprehensive systems of metaphysics, many of which embraced idealism. In the 20th century and contemporary period, a "revolt against idealism" was started, and metaphysics was once declared meaningless, then revived with various criticisms of earlier theories and new approaches to metaphysical inquiry.
1374
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8B
মেক্সিকো
মেক্সিকান যুক্তরাষ্ট্র, (), মেহিকো বা সাধারণ নামে মেক্সিকো () ( ) উত্তর আমেরিকার একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশের উত্তর সীমান্তে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; দক্ষিণ ও পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর; দক্ষিণ-পূর্বে গুয়াতেমালা, বেলিজ ও ক্যারিবিয়ান সাগর এবং পূর্বে মেক্সিকো উপসাগর অবস্থিত। প্রায় দুই মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার জুড়ে অবস্থিত মেক্সিকো আয়তনের বিচারে দুই আমেরিকার পঞ্চম বৃহত্তম রাষ্ট্র তথা বিশ্বের চতুর্দশ বৃহত্তম স্বাধীন রাষ্ট্র। দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১০৯ মিলিয়ন; জনসংখ্যার বিচারে মেক্সিকো বিশ্বের একাদশ জনবহুল রাষ্ট্র। মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্র একত্রিশটি রাজ্য ও রাজধানী শহর একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা নিয়ে গঠিত। প্রাককলম্বিয়ান মধ্য আমেরিকায় ইউরোপীয়দের আগমনের পূর্বেই ওলমেক, তোলতেক, তিওতিহুয়াকান, মায়া ও আজটেক সভ্যতার মতো একাধিক উন্নত সভ্যতা বিকাশলাভ করেছিল। ১৫২১ সালে স্পেন নিউ স্পেন প্রতিষ্ঠা করে। এই দেশটিই পরে মেক্সিকো উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৮২১ সালে এক স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে মেক্সিকো স্বাধীনতা অর্জন করে। মেক্সিকোর স্বাধীনতা-উত্তর পর্যায় ছিল অর্থনৈতিক অস্থিরতা, অঞ্চল হস্তচ্যুত হওয়া, গৃহযুদ্ধ এবং বৈদেশিক হস্তক্ষেপ, দুটি সাম্রাজ্য ও দুটি দীর্ঘ অভ্যন্তরীণ একনায়কতন্ত্রের ইতিহাস। সর্বশেষ একনায়কতান্ত্রিক শাসনের শেষে ১৯১০ সালে সংঘটিত হয় মেক্সিকান বিপ্লব। এই বিপ্লবের ফলস্রুতি ১৯১৭ সালের সংবিধান এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান। ২০০০ সালের জুলাই মাসের সাধারণ নির্বাচনে প্রথম বার প্রাতিষ্ঠানিক বিপ্লবী দলের ( পার্তিদ়ো রেভ়োলুসিওনারিও ইন্‌স্তিতুসিওনাল্‌ বা PRI পে, এরে, ই,) হাত থেকে রাষ্ট্রপতির পদ ছিনিয়ে নেয় কোনো বিরোধী দল। একটি আঞ্চলিক শক্তি এবং ১৯৯৪ সাল থেকে অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)-এর একমাত্র লাতিন আমেরিকান দেশ মেক্সিকো উচ্চ মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। মেক্সিকোকে সদ্য শিল্পায়িত দেশ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। জিডিপির বিচারে মেক্সিকো বিশ্বের একাদশ বৃহত্তম অর্থব্যবস্থা। এছাড়াও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের হিসেবে মাথাপিছু জিডিপির বিচারে লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম রাষ্ট্র। দেশের অর্থব্যবস্থা মেক্সিকোর নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (নাফটা) সহযোগীদের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। বর্তমানে মেক্সিকো বিশ্বের এক উত্থানশীল শক্তি হওয়া সত্ত্বেও অসম আয়বণ্টন ও ড্রাগ-সংক্রান্ত হিংসার ঘটনা দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা বলে বিবেচিত হয়। এটি ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে উত্তরে ও সবচেয়ে পশ্চিমে অবস্থিত দেশ, এবং পৃথিবীর বৃহত্তম স্পেনীয় ভাষাভাষী রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম মেক্সিকান যুক্তরাষ্ট্র (স্পেনীয় ভাষায়: Estados Unidos Mexicanos এস্তাদোস উনিদোস মেহিকানোস)। মেক্সিকোর অধিবাসীরা দেশটিকে অনেক সময়মেক্সিকান প্রজাতন্ত্র (República Mexicana; রেপুব্লিকা মেহিকানা) যদিও এই নামটি সরকারি ভাবে স্বীকৃত নয়। ব্যুৎপত্তি স্পেনের অধীনতাপাশ থেকে মুক্তিলাভ করার পর নিউ স্পেন স্থির করে নতুন রাষ্ট্রের নামকরণ করা হবে রাজধানী মেক্সিকো সিটির নামে। ১৫২৪ সালে প্রাচীন আজটেক রাজধানী তেনোচতিৎলান (Mēxihco-Tenōchtitlan আ-ধ্ব-ব: /tenoːtʃˈtitɬan/, মেশি'কো-তেনোচ্‌তিৎলান্‌) উপর এই শহর স্থাপিত হয়। শহরের নামটি এসেছে নাউয়াত ভাষা থেকে। এই ভাষায় মেশ্ত্‌লি (Mextli) বা মেশি'ৎলি (Mēxihtli) আজটেকদের রক্ষাকর্তা ও যুদ্ধদেবতা উইৎসিলোপোচ্‌ৎলির (Huitzilopōchtli, আ-ধ্ব-ব /witsiloˈpoːtʃtɬi/) গোপন নাম। এক্ষেত্রে মেশি'কো (Mēxihco) শব্দের অর্থ "মেশ্ত্‌লি যেখানে বাস করেন"। অন্য এক মতে মেশি'কো শব্দটি এসেছে মেৎস্ত্‌লি (mētztli, চাঁদ) শিক্ত্‌লি (xictli নাভি, কেন্দ্র, বা পুত্র) এবং স্থানবাচক অনুসর্গ -কো (-co) যুক্ত হয়ে। এই ক্ষেত্রে নামের অর্থ "চাঁদের কেন্দ্রের স্থান" বা "চাঁদ হ্রদের কেন্দ্রের স্থান"। এই নামটি তেশকোকো হ্রদটিকে (Texcoco তেশ্‌কোকো) নির্দেশ করছে। যে পরস্পর সংযুক্ত হ্রদব্যবস্থার কেন্দ্রে তেশকোকো হ্রদটি অবস্থিত, সেটি কতকটা খরগোসের আকার বিশিষ্ট। ঠিক একই রকম একটি ছবি আজটেকরা চাঁদের গায়ে দেখতে পেত। তেনোচতিৎলান অবস্থিত ছিল সেই হ্রদের (বা চাঁদ/খরগোস) কেন্দ্রে বা নাভিস্থলে। আবার অন্য একটি মতে শব্দটি মাগেই (স্পেনীয় ও ইংরেজি: maguey) গাছের দেবী মেক্ত্‌লি-র (Mēctli) নাম থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ইতিহাস আমেরিকানদের অন্যতম লাভজনক সংঘাত হলো মেক্সিকো যুদ্ধ। ১৮৪৬ থেকে ১৮৪৮ সালের মধ্যে সংঘটিত মেক্সিকো-আমেরিকা যুদ্ধটি হলো বিদেশের মাটিতে আমেরিকার প্রথম যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি ছিল রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত এবং অপ্রস্তুত মেক্সিকোর বিরুদ্ধে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেমস কে পোলকের চাপিয়ে দেওয়া একটি যুদ্ধ। এর উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার সীমানাকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত করা। তৎকালীন আমেরিকা এবং মেক্সিকোর মধ্যবর্তী রিও গ্র্যান্ডে যুদ্ধ শুরু হয় এবং যুদ্ধে একে একে আমেরিকা জিততে থাকে। চূড়ান্তভাবে জয়ী হওয়ার পর মেক্সিকোর ভূখণ্ডের ৩ ভাগের ১ ভাগ ভূখণ্ড আমেরিকার দখলে চলে আসে। দুই বছরের যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে। দ্বন্দ্বের কেন্দ্র ছিল টেক্সাস, যা মাত্র এক দশক আগে মেক্সিকোর কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল। যুদ্ধটি গুয়াদালাপে-হিডালগো চুক্তির আওতায় ১৮৪৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছিল। আজকের আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া, উটাহ, নেভাডা, এরিজোনা এবং নিউ মেক্সিকোর মতো সমৃদ্ধ প্রদেশগুলো একসময়কার মেক্সিকোর অংশ ছিল। ২ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তুলনায় যা অনেক বেশি। মেক্সিকো যুদ্ধে ১৩ হাজার ২৮৩ মার্কিন সেনা নিহত হয়। রাজনীতি মেক্সিকোতে একটি ফেডারেল বা যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। রাষ্ট্রপতি একাধারে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান। আইনসভা দ্বিকাক্ষিক। নিম্নকক্ষের নাম ফেডারেল চেম্বার অভ ডেপুটিজ, যার সদস্যসংখ্যা ৫০০। উচ্চকক্ষের নাম সেনেট, যার সদস্যসংখ্যা ১২৮। ভোটাধিকারের বয়স ১৮। বর্তমান সংবিধান ১৯১৭ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি প্রণয়ন করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়। মেক্সিকোর সরকারব্যবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতোই তিনটি শাখায় বিভক্ত – নির্বাহী, আইন প্রণয়নকারী এবং বিচার। কিন্তু মেক্সিকোতে নির্বাহী শাখাটি অপর দুইটি শাখার উপর অনেক বেশি আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে মেক্সিকোর রাষ্ট্রপতি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করেন। বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় ধরে একটি মাত্র রাজনৈতিক দল ইন্সটিটিউশনাল রেভোলিউশনারি পার্টি ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। ২০০০ সালে এসে প্রথমবারের মত এর প্রার্থী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজিত হয়। সেইবার ন্যাশনাল অ্যাকশন পার্টির বিসেন্তে ফক্স জয়লাভ করেন। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ পাদটীকা গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ Mexico Travel Guide The Presidency of Mexico Official site of the Government of Mexico Chief of State and Cabinet Members Tourism Board official website Mexico from UCB Libraries GovPubs Mexico on OneWorld Country Guides মেক্সিকো জি১৫ রাষ্ট্র উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ই৭ রাষ্ট্র জি২০ সদস্য স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ সার্বভৌম রাষ্ট্র ১৮১০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল
https://en.wikipedia.org/wiki/Mexico
Mexico
Mexico, officially the United Mexican States, is a country in the southern portion of North America. Covering 1,972,550 km2 (761,610 sq mi), it is the world's 13th largest country by area; with a population of almost 130 million, it is the 10th most populous country and has the most Spanish speakers in the world. Mexico is organized as a federal constitutional republic comprising 31 states and Mexico City, its capital and largest city, which is among the world's most populous metropolitan areas. The country shares land borders with the United States to the north, with Guatemala and Belize to the southeast; as well as maritime borders with the Pacific Ocean to the west, the Caribbean Sea to the southeast, and the Gulf of Mexico to the east. Human presence in Pre-Columbian Mexico dates back to 8,000 BC, making it one of the world's six cradles of civilization. The Mesoamerican region hosted various intertwined civilizations, including the Olmec, Maya, Zapotec, Teotihuacan, and Purepecha. The Aztecs came to dominate the area prior to European contact. In 1521, the Spanish Empire, alongside indigenous allies, conquered the Aztec Empire, establishing the colony of New Spain centered in the former capital, Tenochtitlan (now Mexico City). Over the next three centuries, Spain expanded its territorial control, enforced Christianity, and spread the Spanish language, with the colony's rich silver deposits fueling its empire. The colonial era ended in the early 19th century with the Mexican War of Independence. Following independence, Mexico faced political and socioeconomic upheaval. The United States' invasion during the Mexican–American War resulted in significant territorial losses in 1848. Liberal reforms introduced in the Constitution of 1857 prompted domestic conflict, French intervention, and the establishment of an Empire, countered by the Republican resistance led by Benito Juárez. The late 19th century saw the rise of Porfirio Díaz's dictatorship, sparking the Mexican Revolution in 1910, which led to profound changes, including the 1917 Constitution. A succession of presidents, often former generals, persisted until the emergence of the Institutional Revolutionary Party (PRI) in 1929. Over the next 70 years of PRI rule, Mexico experienced significant economic growth, but also faced issues of repression and electoral fraud. The late twentieth century saw a shift towards neoliberal policies, exemplified by the signing of the North American Free Trade Agreement (NAFTA) in 1994, amidst social unrest and indigenous rebellion in Chiapas. In 2000, the PRI lost the presidency for the first time to the conservative National Action Party (PAN). Mexico is a newly industrialized and developing country, with the world's 12th-largest economy by nominal GDP and 12th-largest by PPP; the United States is its largest economic partner. Mexico ranks first in the Americas and seventh in the world by the number of UNESCO World Heritage Sites. It is also one of the world's 17 megadiverse countries, ranking fifth in natural biodiversity. Mexico's rich cultural and biological heritage, as well as varied climate and geography, makes it a major tourist destination: as of 2022, it is the sixth most-visited country in the world, with 42.2 million international arrivals. Mexico's large economy and population, global cultural influence (particularly in cuisine, media, and art), and steady democratization make it a regional and middle power, and it is increasingly identified as an emerging power by several analysts. Although Mexico has made significant political and socioeconomic gains in recent decades, ranking 77th in the Human Development Index, it continues to struggle with social inequality, poverty, systemic corruption, and extensive crime. Since 2006, an ongoing conflict between drug trafficking syndicates has led to over 120,000 deaths. Mexico is a member of United Nations, the G20, the Organisation for Economic Co-operation and Development (OECD), the World Trade Organization (WTO), the Asia-Pacific Economic Cooperation forum, the Organization of American States, Community of Latin American and Caribbean States, and the Organization of Ibero-American States.
1375
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%20%28%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF%29
অর্থ (অর্থনীতি)
সাধারণভাবে, অর্থ হলো কোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয় বা সেবা গ্রহণ বা ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের উপাদান। অর্থ প্রধানত বিনিময়ের মাধ্যম, আয়-ব্যয়ের একক, মজুত দ্রব্যর মূল্য এবং বিভিন্ন সেবার পরিশোধের মান হিসেবে কাজ করে। যে কোনো উপাদান বা যাচাইযোগ্য স্মারক এ কাজগুলো করে থাকলে তা অর্থ হিসেবে বিবেচিত হবে। ব্যুৎপত্তি ক্যাপিটোলাইন পাহাড়ের জুনো মন্দির থেকে অর্থ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। এই পাহাড়টি রোমের সাত পাহাড়ের অন্যতম একটি পাহাড়। প্রাচীনকালে জুনো প্রায়ই অর্থের সাথে সংযুক্ত হতো। প্রাচীন রোমের টাকশালে রোমের জুনো মনেটার মন্দির অবস্থিত ছিল । পশ্চিমা বিশ্বে কয়েন অর্থের নাম ছিল ধাতব মুদ্রা (স্পেসি) । ল্যাটিন শব্দ স্পেসি থেকে এ নামটি নেওয়া হয়। ইতিহাস এক লাখ বছর আগে পৃথিবীতে পণ্য বিনিময় পদ্ধতি চালু ছিল। সমাজে এবং অর্থনীতিতে এর কোনো নির্ভরশীল প্রমাণ নেই। অ-আর্থিক সমাজ পরিচালিত হতো প্রধানতো উপহার অর্থ এবং ঋণের দ্বারা। অপরিচিতদের অথবা ক্ষমতাবান শত্রুদের মধ্যে পণ্য বিনিময় প্রথা ঘটতো । পরে পৃথিবীর অনেক দেশই অর্থের ব্যবহার শুরু করে। তিন হাজার বছর খ্রিষ্ট পূর্বে মেসোপটেমিয়ায় ওজনের একক ছিল মেসোপটেমিয়ান শেকেল। এটি নির্ভরশীল ছিল কোনো কিছুর ভর যেমন ১৬০ বার্লির শস্যদানার উপর। আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার সমাজে প্রায়ই ব্যবহৃত হতো শেল অর্থ, কড়ির শেল। হেরোডেটাসের মতানুসারে, লিডিয়ানসরা স্বর্ণ এবং সিলভার কয়েনের ব্যবহার করে। আধুনিক পণ্ডিতদের মতে, ৬৫০-৬০০ খ্রিষ্ট পূর্বে আবিষ্কৃত হয় প্রথম স্ট্যাম্প কয়েন। সং ড্যাইন্যাস্টির (সংগীত রাজবংশ) সময়ে চীনে প্রথম টাকা অথবা ব্যাংক নোট ব্যবহৃত হয়। ব্যাংক নোট ‘জিয়াজি’ নামে পরিচিত ছিল। সপ্তম শতাব্দী হতে এর প্রচলন শুরু হয়। তারা পণ অর্থ উৎপাটন করেনি। তারা অর্থের সাথে কয়েন ব্যবহার করতো। ভ্রমণকারী মারকো পোলো এবং উইলিয়াম অব রাবরাকের হিসাবের মাধ্যমে ইউরোপে কাগজের মুদ্রা পরিচিতি পায়। স্টকহোলমস্ ব্যানকো ১৬৬১ সালে ইউরোপে প্রথম ব্যাংক নোট ইস্যু করে। সেখানে একই সাথে কয়েনের ব্যবহারও ছিল। সোনার মানে, আর্থিক ব্যবস্থায় বিনিময়ের মাধ্যম ছিল ব্যাংক নোট, সতের-আঠারো শতাব্দীতে ইউরোপে মুদ্রার মতো যা পরিবর্তন যোগ্য ছিল প্রি-সেটে, সোনার নির্ধারিত পরিমাণে, সোনার কয়েনে প্রতিস্থাপিত হতো। এই সোনার মান নোট তৈরি করেছিল বৈধ মূল্যবেদন পত্র এবং সোনার কয়েনে পুনঃপ্রাপ্তি ছিল নিরুৎসাহিত। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্বের প্রায় সব দেশ সোনার মান গ্রহণ করে। নির্ধারিত পরিমাণ সোনার সাথে তারা তাদের বৈধ মূল্যবেদন পত্র নোট সমর্থন করে । দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ এবং ব্রেটন উডস সম্মেলনের পরে অধিকাংশ দেশ প্রচলন করে ক্ষমতাপ্রদান (ফিয়াট) মুদ্রা। যা নির্ধারিত ছিল আমেরিকান ডলারে। আমেরিকান ডলার পরিবর্তিত হতো নির্ধারিত সোনায়। ১৯৭১ সালে আমেরিকান সরকার বাতিল করে আমেরিকান ডলারের সোনায় পরিবর্তন হওয়া। এর ফলে অনেক দেশ তাদের মুদ্রা আমেরিকান ডলারে স্থির রাখে। এ ছাড়া অধিকাংশ দেশের মুদ্রা সরকারের ক্ষমতাপ্রদান মুল্যবেদন পত্র এবং অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে পণ্য পরিবর্তনের মাধ্যম ব্যতীত যেকোনো কিছু দ্বারা অনবলম্বন হয়। আধুনিক অর্থ তত্ত্ব মতে, কর (ট্যাক্স) এর মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রদান অর্থ উৎসাহিত হয় ।কর (ট্যাক্স) আরোপের মাধ্যমে রাষ্ট্র সৃষ্টি করে ইস্যুকৃত মুদ্রার চাহিদা। অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞান মুদ্রা অর্থ (সম্পদ) মূল বিষয়ের নিবন্ধ মুদ্রা অর্থশাস্ত্র বাণিজ্য (ক্রয়বিক্রয়)
https://en.wikipedia.org/wiki/Money
Money
Money is any item or verifiable record that is generally accepted as payment for goods and services and repayment of debts, such as taxes, in a particular country or socio-economic context. The primary functions which distinguish money are: medium of exchange, a unit of account, a store of value and sometimes, a standard of deferred payment. Money was historically an emergent market phenomenon that possessed intrinsic value as a commodity; nearly all contemporary money systems are based on unbacked fiat money without use value. Its value is consequently derived by social convention, having been declared by a government or regulatory entity to be legal tender; that is, it must be accepted as a form of payment within the boundaries of the country, for "all debts, public and private", in the case of the United States dollar. The money supply of a country comprises all currency in circulation (banknotes and coins currently issued) and, depending on the particular definition used, one or more types of bank money (the balances held in checking accounts, savings accounts, and other types of bank accounts). Bank money, whose value exists on the books of financial institutions and can be converted into physical notes or used for cashless payment, forms by far the largest part of broad money in developed countries.
1376
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%A4
পর্বত
পর্বত হল পৃথিবীর ভূত্বকের একটি উঁচু অংশ, সাধারণত এর খাড়া দিকগুলিতে উন্মুক্ত নিরেট প্রস্তর দেখায়। যদিও এর বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, একটি পর্বত একটি মালভূমি থেকে এদের চূড়ার উচ্চতার জন্য পার্থক্য করা যেতে পারে এবং সাধারণত একটি পাহাড়ের চেয়ে উঁচু হয়, সাধারণত আশেপাশের জমি থেকে কমপক্ষে ৩০০ মিটার (১,০০০ ফুট) উপরে উঠে। কয়েকটি পর্বত বিচ্ছিন্ন চূড়া, তবে বেশিরভাগ পর্বতশ্রেণীতে দেখা যায়। পর্বতগুলি টেকটোনিক শক্তি, ক্ষয় বা আগ্নেয়গিরির মাধ্যমে গঠিত হয়, যেখানে কয়েক মিলিয়ন বছর পর্যন্ত সময়ের স্কেলে কাজ করে। একবার পর্বত নির্মাণ বন্ধ হয়ে গেলে, স্লাম্পিং এবং অন্যান্য ধরনের ব্যাপক অপচয়ের, সেইসাথে নদী এবং হিমবাহের ক্ষয়ের দ্বারা, আবহাওয়ার ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে পর্বত ধীরে ধীরে সমতল হয়। একই অক্ষাংশে সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনায় ঠান্ডা জলবায়ু তৈরি করে পাহাড়ের উচ্চ উচ্চতা। এই ঠান্ডা জলবায়ু পাহাড়ের বাস্তুন্ত্রের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন উচ্চতায় বিভিন্ন গাছপালা এবং প্রাণী রয়েছে। কম অতিথিপরায়ণ ভূখণ্ড এবং জলবায়ুর কারণে, পর্বতমালা কৃষি কাজের জন্য কম এবং সম্পদ আহরণের জন্য বেশি ব্যবহার করা হয়, যেমন খনিজ আহরণ এবং বড় গাছের লগ কাটা, চিত্তবিনোদনের, যেমন পর্বত আরোহণ এবং বরফের উপর পিছলানো খেলার জন্য। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত হল এশিয়ার এভারেস্ট পর্বত হিমালয় পর্বতমালা , যার চূড়ার গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপরে। সৌরজগতের যেকোনো গ্রহের সর্বোচ্চ পরিচিত পর্বত হল মঙ্গল গ্রহে অলিম্পাস মনস যার চূড়ার উচ্চতা । সংজ্ঞা পাহাড়ের কোন সর্বজনস্বীকৃত সংজ্ঞা নেই। উচ্চতা, আয়তন, ত্রাণ, খাড়াতা, ব্যবধান এবং ধারাবাহিকতা একটি পর্বতকে সংজ্ঞায়িত করার মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিতে একটি পর্বতকে "পৃথিবী পৃষ্ঠের একটি প্রাকৃতিক উচ্চতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা আশেপাশের স্তর থেকে কমবেশি আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং একটি উচ্চতা অর্জন করে যা তুলনামূলকভাবে সন্নিহিত উচ্চতার সাথে চিত্তাকর্ষক বা উল্লেখযোগ্য।" ভূমিরূপকে পর্বত বলা হবে কিনা তা স্থানীয় ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। জন হুইটোর ডিকশনারী অফ ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি বলে "কিছু কর্তৃপক্ষ উপরে উচ্চতা বিশিষ্টদের পর্বত হিসাবে বিবেচনা করে , এ উচ্চতার নীচে যেগুলিকে পাহাড় হিসাবে উল্লেখ করা হয়।" যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে, একটি পর্বতকে সাধারণত কমপক্ষে উচ্চতা চূড়া হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, যুক্তরাজ্য সরকারের সরকারী সংজ্ঞার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে একটি পর্বত, প্রবেশের উদ্দেশ্যে, একটি চূড়া বা উচ্চতর। এছাড়াও, কিছু সংজ্ঞায় একটি ভূ-সংস্থান প্রাধান্যের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে, যেমন পর্বতটি উপরে উঠে পার্শ্ববর্তী ভূখণ্ডের উপরে। এক সময় ইউএস বোর্ড অন জিওগ্রাফিক নেমস একটি পর্বতকে লম্বা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল , কিন্তু ১৯৭০ সাল থেকে এ সংজ্ঞা পরিত্যাগ করেছে। এই উচ্চতার চেয়ে কম যেকোন অনুরূপ ভূমিরূপ একটি পাহাড় হিসাবে বিবেচিত হত। যাইহোক, আজ, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ উপসংহারে পৌঁছেছে যে এই পদগুলির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তিগত সংজ্ঞা নেই। ইউএন এনভায়রনমেন্টাল প্রোগ্রামের "পার্বত্য পরিবেশ" এর সংজ্ঞা নিম্নলিখিত যে কোনো একটি অন্তর্ভুক্ত করে: শ্রেণি ১: এর বেশি উচ্চতা । শ্রেণি ২: এর মধ্যে উচ্চতা এবং । শ্রেণি ৩: এর মধ্যে উচ্চতা এবং । শ্রেণি ৪: এর মধ্যে উচ্চতা এবং , ২ ডিগ্রির বেশি ঢাল সহ। শ্রেণি ৫: এর মধ্যে উচ্চতা এবং , ৫ ডিগ্রী এবং/অথবা এর বেশি ঢাল সহ উচ্চতা সীমা এর মধ্যে । শ্রেণি ৬: এর মধ্যে উচ্চতা এবং , একটি সহ উচ্চতা সীমা এর মধ্যে । শ্রেণি ৭: বিচ্ছিন্ন অভ্যন্তরীণ অববাহিকা এবং মালভূমি এর কম এমন এলাকায় যা সম্পূর্ণভাবে শ্রেণি ১ থেকে ৬ পর্বত দ্বারা বেষ্টিত, কিন্তু নিজেরাই শ্রেণি ১ থেকে ৬ পর্বতমালার মানদণ্ড পূরণ করে না। এই সংজ্ঞাগুলি ব্যবহার করে, পর্বতগুলি ইউরেশিয়ার ৩৩%, দক্ষিণ আমেরিকার ১৯%, উত্তর আমেরিকার ২৪% এবং আফ্রিকার ১৪% জুড়ে রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, পৃথিবীর ভূমি ভরের ২৪% পাহাড়ী। প্রকারভেদ ভঙ্গিল পর্বত (fold mountains) হিমালয় পর্বতমালা আল্পস পর্বতমালা আন্দিজ পর্বতমালা কানাডীয় রকি পর্বতমালা স্তূপ পর্বত (block-fault mountains) বিন্ধ্য পর্বত কলোরাডোর রকি পর্বতমালা সঞ্চয়জাত পর্বত বা আগ্নেয়গিরি (Volcano) গম্বুজ পর্বত (domal upliftment) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ক্ষয়জাত পর্বত (residual mountain) আরাবল্লী পর্বত আপালেচিয়ান পর্বতমালা ইউরাল পর্বতমালা ভূতত্ত্ব তিনটি প্রধান ধরনের পর্বত রয়েছে: আগ্নেয়গিরি, ভাঁজ এবং ব্লক। তিনটি প্রকারই প্লেট টেকটোনিক্স থেকে গঠিত হয়: যখন পৃথিবীর ভূত্বকের কিছু অংশ সরে যায়, চূর্ণবিচূর্ণ হয় এবং ডুব দেয়। কম্প্রেশনাল ফোর্স, আইসোস্ট্যাটিক উত্থান এবং আগ্নেয় পদার্থের অনুপ্রবেশ পৃষ্ঠের শিলাকে ঊর্ধ্বমুখী করে, যা আশেপাশের বৈশিষ্ট্যগুলির চেয়ে উচ্চতর ভূমিরূপ তৈরি করে। বৈশিষ্ট্যটির উচ্চতা এটিকে হয় একটি পাহাড় বা, যদি উঁচু এবং খাড়া হয়, একটি পর্বত করে তোলে। প্রধান পর্বতগুলি দীর্ঘ রৈখিক চাপে ঘটতে থাকে, যা টেকটোনিক প্লেটের সীমানা এবং কার্যকলাপ নির্দেশ করে। আগ্নেয়গিরি আগ্নেয়গিরি তৈরি হয় যখন একটি প্লেট অন্য প্লেটের নিচে, অথবা মধ্য-সমুদ্রের রিজ বা হটস্পটে। এবং ম্যাগমা গঠন করে যা পৃষ্ঠে পৌঁছায়। যখন ম্যাগমা পৃষ্ঠে পৌঁছায়, এটি প্রায়শই একটি আগ্নেয়গিরির পর্বত তৈরি করে, যেমন একটি ঢাল আগ্নেয়গিরি বা স্ট্রাটোভোলকানো। আগ্নেয়গিরির উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে জাপানের মাউন্ট ফুজি এবং ফিলিপাইনের মাউন্ট পিনাটুবো। একটি পর্বত তৈরি করার জন্য ম্যাগমাকে পৃষ্ঠে পৌঁছাতে হবে না: মাটির নীচে শক্ত হওয়া ম্যাগমা এখনও গম্বুজ পর্বত গঠন করতে পারে, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাভাজো পর্বত। ভাঁজ পাহাড় ভাঁজ পর্বতগুলি ঘটে যখন দুটি প্লেটের সংঘর্ষ হয়: থ্রাস্ট ফল্ট বরাবর সংক্ষিপ্তকরণ ঘটে এবং ভূত্বকটি অতিরিক্ত ঘন হয়ে যায়৷ যেহেতু কম ঘন মহাদেশীয় ভূত্বক নীচের ঘন ম্যান্টেল শিলাগুলিতে "ভাসতে থাকে", তাই কোনো ভূত্বকের ওজন পাহাড়, মালভূমি বা পর্বত গঠন করতে বাধ্য হয়। ম্যান্টলের মধ্যে নিচের দিকে জোর করে অনেক বেশি আয়তনের উচ্ছ্বাস বল দ্বারা ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে। এইভাবে মহাদেশীয় ভূত্বক সাধারণত পাহাড়ের নীচে অনেক বেশি ঘন হয়, নীচের অংশের তুলনায়। আপফোল্ডগুলি অ্যান্টিলাইন এবং ডাউনফোল্ডগুলি সিঙ্কলাইন: অসমমিত ভাঁজগুলিতে স্থগিত এবং উল্টানো ভাঁজও থাকতে পারে। বলকান পর্বতমালা এবং জুরা পর্বত ভাঁজ মউন্টাইন্সের উদাহরণ। ব্লক পাহাড় ব্লক পর্বত ভূত্বকের ত্রুটির কারণে সৃষ্ট হয়: একটি সমতল যেখানে শিলা একে অপরের উপর দিয়ে চলে গেছে। যখন একটি চ্যুতির একপাশের শিলাগুলি অন্য দিকে আপেক্ষিকভাবে বৃদ্ধি পায়, তখন এটি একটি পর্বত গঠন করতে পারে। উদ্বর্তিত ব্লকগুলি হল ব্লক পর্বত বা হরস্ট । মধ্যবর্তী ড্রপ ব্লকগুলিকে গ্র্যাবেন বলা হয়: এগুলি ছোট হতে পারে বা বিস্তৃত রিফ্ট ভ্যালি সিস্টেম তৈরি করতে পারে। প্রাকৃতিক দৃশ্যের এই রূপটি পূর্ব আফ্রিকা, ভসজেস এবং রাইন উপত্যকা, এবং পশ্চিম উত্তর আমেরিকার অববাহিকা ও রেঞ্জ প্রদেশে দেখা যায়। এই অঞ্চলগুলি প্রায়ই ঘটে যখন আঞ্চলিক চাপ বর্ধিত হয় এবং ভূত্বক পাতলা হয়। ক্ষয় উত্থান পরবর্তী সময়, পর্বতগুলি ক্ষয়ের এজেন্ট (জল, বাতাস, বরফ এবং মাধ্যাকর্ষণ) এর শিকার হয় যা ধীরে ধীরে উত্থিত এলাকাকে নিচের দিকে ধারণ করে। ক্ষয়ের কারণে পাহাড়ের উপরিভাগ সেই পাথরের চেয়ে ছোট হয় যা পাহাড় নিজেই তৈরি করে। হিমবাহী প্রক্রিয়াগুলি বৈশিষ্ট্যযুক্ত ভূমিরূপ তৈরি করে, যেমন পিরামিডাল চূড়া, ছুরি-প্রান্ত আরেটিস এবং বাটি-আকৃতির বৃত্ত যা হ্রদ ধারণ করতে পারে। মালভূমি পর্বত, যেমন ক্যাটসকিলস, একটি উন্নীত মালভূমির ক্ষয় থেকে গঠিত হয়। জলবায়ু বিকিরণ এবং পরিচলনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার কারণে পাহাড়ের জলবায়ু উচ্চ উচ্চতায় ঠান্ডা হয়ে যায়। দৃশ্যমান বর্ণালীতে সূর্যের আলো মাটিতে আঘাত করে এবং এটিকে উত্তপ্ত করে। মাটি তখন পৃষ্ঠের বায়ুকে উত্তপ্ত করে। যদি বিকিরণই মাটি থেকে মহাকাশে তাপ স্থানান্তর করার একমাত্র উপায় হয়, তবে বায়ুমণ্ডলে গ্যাসের গ্রিনহাউস প্রভাব ভূমিকে প্রায় ৩৩৩ কে (৬০ °সে; ১৪০ °ফা) এ রাখত।, এবং তাপমাত্রা উচ্চতার সাথে দ্রুত ক্ষয় হবে। যাইহোক, যখন বাতাস গরম হয়, তখন এটি প্রসারিত হতে থাকে, যা এর ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। এইভাবে, গরম বাতাস বৃদ্ধি পায় এবং তাপকে উপরের দিকে স্থানান্তর করে। এটি পরিচলনের প্রক্রিয়া। পরিচলন ভারসাম্য আসে যখন একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় বায়ুর একটি অংশ এর চারপাশের ঘনত্বের সমান থাকে। বায়ু তাপের একটি দুর্বল পরিবাহী, তাই বায়ুর একটি অংশ তাপ বিনিময় ছাড়াই উঠবে এবং পড়ে যাবে। এটি একটি রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া হিসাবে পরিচিত, যার একটি বৈশিষ্ট্যগত চাপ-তাপমাত্রা নির্ভরতা রয়েছে। চাপ কমার সাথে সাথে তাপমাত্রা কমতে থাকে। উচ্চতার সাথে তাপমাত্রা হ্রাসের হারকে রুদ্ধতাপীয় ভ্রষ্টতার হার বলা হয়, যা প্রায় ৯.৮°সে প্রতি কিলোমিটার (বা ৫.৪ °ফা (৩.০ °সে) প্রতি ১০০০ ফুট) উচ্চতায়। বায়ুমণ্ডলে পানির উপস্থিতি পরিচলন প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে। জলীয় বাষ্পে বাষ্পীভবনের সুপ্ত তাপ থাকে। বায়ু বেড়ে ওঠার সাথে সাথে শীতল হয়, এটি পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ধরে রাখতে পারে না। জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয় ( মেঘ তৈরি করে), এবং তাপ নির্গত করে, যা শুষ্ক রুদ্ধতাপীয় ভ্রষ্টতার হার থেকে আর্দ্র রুদ্ধতাপীয় ভ্রষ্টতার হার এ পরিবর্তিত হয় (৫.৫°সে প্রতি কিলোমিটার বা ৩°ফা (১.৭ °সে) প্রতি ১০০০ফুট) প্রকৃত বিলোপের হার উচ্চতা এবং অবস্থান অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে। অতএব, উপরে চলন্ত একটি পর্বতে মোটামুটিভাবে ৮০ সরানোর সমান কিলোমিটার (৪৫ মাইল বা ০.৭৫° অক্ষাংশ ) নিকটতম মেরুতে। এই সম্পর্কটি শুধুমাত্র আনুমানিক, যদিও, স্থানীয় কারণগুলি যেমন মহাসাগরের নৈকট্য (যেমন আর্কটিক মহাসাগর) জলবায়ুকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করতে পারে। উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃষ্টিপাতের প্রধান রূপ তুষার হয়ে যায় এবং বাতাস বৃদ্ধি পায়। একটি উচ্চতায় বাস্তুসংস্থানের উপর জলবায়ুর প্রভাব মূলত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এবং জৈব তাপমাত্রার সংমিশ্রণের মাধ্যম, যেমনটি লেসলি হোল্ড্রিজ ১৯৪৭ সালে বর্ণনা করেছিলেন। জৈব তাপমাত্রা হল গড় তাপমাত্রা; সমস্ত তাপমাত্রা এর নিচে ০°সে. হিসাবে বিবেচিত হয় যখন তাপমাত্রা ০°সে এর নিচে থাকে, গাছপালা সুপ্ত, তাই সঠিক তাপমাত্রা গুরুত্বহীন। স্থায়ী তুষার সহ পর্বতশৃঙ্গের জৈব তাপমাত্রা এর নিচে থাকতে পারে । জলবায়ু পরিবর্তন পাহাড়ের পরিবেশগুলি নৃতাত্ত্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশেষভাবে সংবেদনশীল এবং বর্তমানে গত ১০,০০০ বছরে অভূতপূর্ব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে বরফের টুপি পর্বত এবং হিমবাহগুলি ত্বরান্বিত বরফের ক্ষতির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। হিমবাহ, ভূগর্ভস্থ চিরহিমায়িত অঞ্চল এবং তুষার গলে যাওয়ার ফলে অন্তর্নিহিত পৃষ্ঠগুলি ক্রমশ ভারসাম্যহীন হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ল্যান্ডস্লিপ বিপদসংখ্যা এবং মাত্রা উভয় ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি পেয়েছে। আলপাইন বাস্তুতন্ত্র বিশেষভাবে জলবায়ুগতভাবে সংবেদনশীল হতে পারে। অনেক মধ্য-অক্ষাংশ পর্বত শীতল জলবায়ুর আশ্রয়স্থল হিসাবে কাজ করে, যেখানে বাস্তুতন্ত্রগুলি ছোট পরিবেশগত কুলুঙ্গিগুলি দখল করে। পাশাপাশি জলবায়ুর পরিবর্তন একটি বাস্তুতন্ত্রের উপর যে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে, স্থিতিশীলতা এবং মাটির বিকাশের পরিবর্তনের ফলে মাটিতেও পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীর নিষ্কাশনের ধরণগুলিও উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়, যার ফলশ্রুতিতে আল্পাইন উৎস থেকে খাবার জলের উপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়ের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে। প্রায় অর্ধেক পার্বত্য অঞ্চল প্রধানত শহুরে জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় বা সহায়ক জলের সংস্থান করে, বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে এবং মধ্য এশিয়ার মতো আধা-শুষ্ক অঞ্চলে। বাস্তুবিদ্যা পাহাড়ের শীতল আবহাওয়া পাহাড়ে বসবাসকারী উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের প্রভাবিত করে। উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের একটি নির্দিষ্ট দল জলবায়ুর তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ পরিসরে অভিযোজিত হতে থাকে। এইভাবে, বাস্তুবিদ্যা মোটামুটি ধ্রুবক জলবায়ুর উচ্চতা ব্যান্ডের সাথে থাকে। একে বলা হয় উচ্চতাগত অঞ্চল। এই অঞ্চলের শুষ্ক জলবায়ু সহ , পর্বতগুলির উচ্চ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা এবং নিম্ন তাপমাত্রাও বিভিন্ন অবস্থার জন্য সরবরাহ করে, যা জোনেশন বাড়ায়। কিছু উদ্ভিদ এবং প্রাণী উচ্চতাযুক্ত অঞ্চলে পাওয়া যায় কারণ তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কারণ একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপরে এবং নীচের অবস্থাগুলি আতিথ্যের অযোগ্য হবে এবং এইভাবে তাদের চলাচল বা বিচ্ছুরণকে সীমাবদ্ধ করে। এই বিচ্ছিন্ন পরিবেশগত ব্যবস্থাগুলি আকাশ দ্বীপ নামে পরিচিত। উচ্চতাবিশিষ্ট অঞ্চলগুলি একটি সাধারণ ধাচ অনুসরণ করে। টুন্ড্রার মতো, সর্বোচ্চ উচ্চতায়, গাছ বাড়তে পারে না, এবং যা কিছু জীবন উপস্থিত থাকতে পারে তা আলপাইন ধরনের হবে,। গাছের রেখার ঠিক নীচে, কেউ নিডল পাতাযুক্ত গাছের সাবলপাইন বন খুঁজে পেতে পারে, যা ঠান্ডা, শুষ্ক অবস্থা সহ্য করতে পারে। তার নীচে পাহাড়ী বন জন্মে। পৃথিবীর নাতিশীতোষ্ণ অংশে, এই বনগুলি নিডল পাতাযুক্ত গাছ হতে থাকে, যখন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে, তারা বৃষ্টির বনে বেড়ে ওঠা বিস্তৃত পাতার গাছ হতে পারে। পাহাড় ও মানুষ সর্বাধিক পরিচিত স্থায়ীভাবে সহনীয় উচ্চতা হলো । খুব উচ্চ উচ্চতায়, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস মানে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য কম অক্সিজেন পাওয়া যায় এবং সৌর বিকিরণের (ইউভি) বিরুদ্ধে কম সুরক্ষা থাকে। উপরে মানবজীবনের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন নেই বলে এটি কখনও কখনও "ত্যু অঞ্চল হিসাবে উল্লেখ করা হয়"। এর সম্মেলন মাউন্ট এভারেস্ট এবং কে ২ মৃত্যু অঞ্চল। পার্বত্য সমাজ এবং অর্থনীতি কঠোর আবহাওয়া এবং সামান্য সমতল ভূমির কৃষির জন্য উপযোগী এ কারণে পাহাড় সাধারণত নিম্নভূমির তুলনায় মানুষের বসবাসের জন্য কম পছন্দনীয়। যদিও পৃথিবীর ভূমির ৭% এর উপরে, মাত্র ১৪০ মিলিয়ন মানুষ এই উচ্চতার উপরে বাস করে এবং মাত্র ২০-৩০ মিলিয়ন মানুষ উচ্চতা। প্রায় অর্ধেক পর্বতবাসী আন্দিজ, মধ্য এশিয়া এবং আফ্রিকায় বাস করে। অবকাঠামোতে সীমিত প্রবেশ সহ, মাত্র কয়েকটি মানব সম্প্রদায় উপরে উচ্চতা বিদ্যমান। অনেকগুলিই ছোট এবং তাদের প্রচুর বিশেষায়িত অর্থনীতি রয়েছে, প্রায়শই কৃষি, খনি এবং পর্যটনের মতো শিল্পের উপর নির্ভর করে। এই ধরনের একটি বিশেষায়িত শহরের উদাহরণ হল লা রিনকোনাডা, পেরু, একটি সোনার খনির শহর এবং উচ্চতায় মানব বাসস্থান। । একটি বিপরীত উদাহরণ হল এল আল্টো, বলিভিয়া, , যার একটি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় পরিষেবা এবং উত্পাদন অর্থনীতি এবং প্রায় ১ মিলিয়ন জনসংখ্যা রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী পর্বত সমাজ কৃষির উপর নির্ভর করে, নিম্ন উচ্চতার তুলনায় শস্য ব্যর্থতার ঝুঁকি বেশি। খনিজগুলি প্রায়শই পাহাড়ে পাওয়া যায়, খনি কিছু পাহাড়ী সমাজের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অতি সম্প্রতি, জাতীয় উদ্যান বা স্কি রিসর্টের মতো আকর্ষণগুলির আশেপাশে কিছু নিবিড় উন্নয়ন সহ পর্যটন পর্বত সম্প্রদায়কে সমর্থন করে৷ প্রায় ৮০% পাহাড়ি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। পৃথিবীর অধিকাংশ নদী পাহাড়ের উৎস থেকে পালিত হয়, তুষার নিম্নধারা ব্যবহারকারীদের জন্য সংরক্ষণ পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে। মানবজাতির অর্ধেকের বেশি পানির জন্য পাহাড়ের ওপর নির্ভরশীল। ভূ-রাজনীতিতে পর্বতগুলিকে প্রায়শই রাজনীতির মধ্যে পছন্দের " প্রাকৃতিক সীমানা " হিসাবে দেখা হয়। পর্বতারোহণ পর্বত আরোহণ, বা আলপিনিজম হল খেলা, শখ বা হাইকিং, স্কিইং এবং পর্বতে আরোহণের পেশা । পর্বতারোহণ শুরু না হওয়া বড় পর্বতমালার সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা হিসাবে এটি বিশেষায়িত হয়েছে যা পর্বতের বিভিন্ন দিককে সম্বোধন করে এবং তিনটি ক্ষেত্র নিয়ে গঠিত: রক-ক্র্যাফ্ট, স্নো-ক্র্যাফ্ট এবং স্কিইং, বেছে নেওয়া রুট শেষ হয়েছে কিনা তার উপর নির্ভর করে। শিলা, তুষার বা বরফ । নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সকলের অভিজ্ঞতা, অ্যাথলেটিক ক্ষমতা এবং ভূখণ্ডের প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন। পবিত্র স্থান হিসেবে পাহাড় পর্বত প্রায়ই ধর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ গ্রীসের অভ্যন্তরে অনেকগুলি পবিত্র পর্বত রয়েছে যেমন মাউন্ট অলিম্পাস যা দেবতাদের আবাসস্থল হিসাবে বিবেচিত ছিল। জাপানি সংস্কৃতিতে, ৩,৭৭৬.২৪মি (১২,৩৮৯ ফিট) মাউন্ট ফুজির আগ্নেয়গিরিকেও পবিত্র বলে মনে করা হয় যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার জাপানি আরোহণ করে। চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কৈলাশ পর্বতকে চারটি ধর্মে পবিত্র বলে মনে করা হয়: হিন্দুধর্ম, বন, বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্ম । আয়ারল্যান্ডে, তীর্থযাত্রাগুলি নিয়ে গঠিত আইরিশ ক্যাথলিকদের দ্বারা মাউন্ট ব্র্যান্ডন । নন্দা দেবীর হিমালয় শিখর হিন্দু দেবী নন্দা ও সুনন্দার সাথে যুক্ত; এটি ১৯৮৩ সাল থেকে পর্বতারোহীদের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। মাউন্ট আরারাত একটি পবিত্র পর্বত, কারণ এটি নোহের জাহাজের অবতরণ স্থান বলে মনে করা হয়। ইউরোপে এবং বিশেষ করে আল্পস পর্বতমালায়, প্রায়শই বিশিষ্ট পর্বতের চূড়ায় সামিট ক্রস তৈরি করা হয়। শ্রেষ্ঠত্ব পাহাড়ের উচ্চতা সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পরিমাপ করা হয়। এই মেট্রিক ব্যবহার করে মাউন্ট এভারেস্ট পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত, । এর বেশি উচ্চতা সহ কমপক্ষে ১০০ টি পর্বত রয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে, যার সবকটিই মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতম পর্বতগুলি সাধারণত আশেপাশের ভূখণ্ডের উপরে নয়। আশেপাশের ঘাঁটির কোন সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, তবে ডেনালি, মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো এবং নাঙ্গা পার্বত এই পরিমাপের দ্বারা ভূমিতে সবচেয়ে উঁচু পর্বতের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী। পর্বত দ্বীপের ঘাঁটি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে, এবং এই বিবেচনায় মাউনা কেয়া ( সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে) বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বত এবং আগ্নেয়গিরি, প্রায় প্রশান্ত মহাসাগরের তল থেকে। সর্বোচ্চ পর্বতগুলি সাধারণত বেশি বড় হয় না। ভিত্তি এলাকার দিক থেকে মাওনা লোয়া () হল পৃথিবীর বৃহত্তম পর্বত (প্রায় ) এবং আয়তন (প্রায় )। মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো হল সবচেয়ে বড় নন-শিল্ড আগ্নেয়গিরি উভয় বেস এলাকা ( ) এবং আয়তন ( )। মাউন্ট লোগান বেস এলাকার বৃহত্তম অ-আগ্নেয় পর্বত ( )। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতম পর্বতমালা সেই নয় যেগুলির শিখরগুলি পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরে, কারণ পৃথিবীর চিত্রটি গোলাকার নয়৷ নিরক্ষরেখার কাছাকাছি সমুদ্রপৃষ্ঠ পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে কয়েক মাইল দূরে। ইকুয়েডরের সর্বোচ্চ পর্বত চিম্বোরাজোর চূড়াটিকে সাধারণত পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যদিও পেরুর সবচেয়ে উঁচু পর্বত হুয়াসকারানের দক্ষিণের চূড়া আরেকটি প্রতিযোগী। উভয়েরই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা রয়েছে এভারেস্টের চেয়ে কম। চিত্রশালা আরও দেখুন পর্বতশ্রেণীর তালিকা বিশিষ্টতা অনুসারে শিখরগুলির তালিকা স্কি এলাকা এবং রিসর্ট তালিকা পাহাড়ের তালিকা সপ্তশৃঙ্গ তথ্যসূত্র ভূগোল ভূগোল পরিভাষা ভূত্বক পর্বত
https://en.wikipedia.org/wiki/Mountain
Mountain
A mountain is an elevated portion of the Earth's crust, generally with steep sides that show significant exposed bedrock. Although definitions vary, a mountain may differ from a plateau in having a limited summit area, and is usually higher than a hill, typically rising at least 300 metres (980 ft) above the surrounding land. A few mountains are isolated summits, but most occur in mountain ranges. Mountains are formed through tectonic forces, erosion, or volcanism, which act on time scales of up to tens of millions of years. Once mountain building ceases, mountains are slowly leveled through the action of weathering, through slumping and other forms of mass wasting, as well as through erosion by rivers and glaciers. High elevations on mountains produce colder climates than at sea level at similar latitude. These colder climates strongly affect the ecosystems of mountains: different elevations have different plants and animals. Because of the less hospitable terrain and climate, mountains tend to be used less for agriculture and more for resource extraction, such as mining and logging, along with recreation, such as mountain climbing and skiing. The highest mountain on Earth is Mount Everest in the Himalayas of Asia, whose summit is 8,850 m (29,035 ft) above mean sea level. The highest known mountain on any planet in the Solar System is Olympus Mons on Mars at 21,171 m (69,459 ft). The tallest mountain including submarine terrain is Mauna Kea in Hawaii from its underwater base at 9,330 m (30,610 ft) and some scientists consider it to be the tallest on earth.
1378
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A3%20%28%E0%A6%AD%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%80%E0%A6%AF%E0%A6%BC%20%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%29
পুরাণ (ভারতীয় শাস্ত্র)
পুরাণ (সংস্কৃত: , "প্রাচীনযুগীয়") হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের গুরুত্বপূর্ণ আখ্যানমূলক ধর্মগ্রন্থ-সমুচ্চয়। পুরাণে সৃষ্টি থেকে প্রলয় পর্যন্ত ব্রহ্মাণ্ডের ইতিহাস, রাজন্যবর্গ, যোদ্ধৃবর্গ, ঋষি ও উপদেবতাগণের বংশবৃত্তান্ত এবং হিন্দু সৃষ্টিতত্ত্ব, দর্শন ও ভূগোলতত্ত্ব আলোচিত হয়েছে। পুরাণে সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো দেবতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং তাতে ধর্মীয় ও দার্শনিক চিন্তার প্রাবল্যও লক্ষিত হয়। এই গ্রন্থগুলি প্রধানত আখ্যায়িকার আকারে রচিত, যা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। লোকমতে, মহাভারত-রচয়িতা ব্যাসদেব পুরাণসমূহের সংকলক। যদিও পুরাণের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন পাঠগুলি গুপ্ত সাম্রাজ্যের (খ্রিস্টীয় তৃতীয়-পঞ্চম শতাব্দী) সমসাময়িক। এর অধিকাংশ উপাদানই ঐতিহাসিক বা অন্যান্য সূত্রাণুযায়ী এই সময়কাল ও তার পরবর্তী শতাব্দীগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত। পুরাণগ্রন্থগুলি ভারতের নানা স্থানে রচিত হয়েছিল। পুরাণের সামগ্রিক পাঠে কিছু সাধারণ ধারণা লক্ষিত হয়; কিন্তু একটি পুরাণের উপর অপর আরেকটি পুরাণের প্রভাব অন্বেষণ দুঃসাধ্য। তাই সাধারণভাবে এগুলিকে সমসাময়িক বলেই ধরে নেওয়া হয়।. লিখিত পাঠ্যগুলির রচনাতারিখ পুরাণের প্রকৃত রচনাতারিখ নয়। কারণ একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে পূর্ববর্তী এক সহস্রাব্দ কাল ধরে এই কাহিনিগুলি মৌখিকভাবে প্রচারিত হয়ে আসে। এবং পরবর্তীকালে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত এগুলির আকার ও রূপ পরিবর্তিত হতে দেখা যায়। কাশীর মহারাজা ডক্টর বিভূতি নারায়ণ সিংহের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধানে অল ইন্ডিয়া কাশীরাজ ট্রাস্ট গঠিত হলে পুরাণ নিয়ে সুসংহত গবেষণার কাজ শুরু হয়। এই সংস্থা থেকে পুরাণের সমালোচনামূলক সংস্করণ এবং পুরাণম্ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হতে থাকে। উৎস খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দে রচিত ছান্দোগ্য উপনিষদে (৭।১।২) পুরাণের একটি প্রাচীন উল্লেখ পাওয়া যায়। বৃহদারণ্যক উপনিষদ পুরাণকে "পঞ্চম বেদ" নামে অভিহিত করে, (ইতিহাসপুরাণং পঞ্চমং বেদম্)। এতে প্রাচীন যুগে পুরাণের ধর্মীয় গুরুত্বের কথা জানা যায়। সম্ভবত সেই যুগে পুরাণ মৌখিকভাবে প্রচারিত হত। অথর্ববেদেও (১১।৭।১৪) এই শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। মৎস্য পুরাণ অনুসারে, পুরাণের মূল বিষয় পাঁচটি। এগুলি পঞ্চলক্ষণ নামে পরিচিত – সর্গ – ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকাহিনি প্রতিসর্গ – পরবর্তীকালের (মুখ্যত প্রলয় পরবর্তী) সৃষ্টিকাহিনি বংশ – দেবতা ও ঋষিদের বংশবৃত্তান্ত মন্বন্তর – মানবজাতির সৃষ্টি ও প্রথম সৃষ্ট মানবজাতির কাহিনি। মনুর শাসনকালের কথা; এই শাসনকাল ৭১টি দিব্য যুগ বা ৩০৮,৪৪৮,০০০ বছরের সমান বংশানুচরিতম্ – রাজবংশের ইতিহাস কোনো কোনো পণ্ডিতের মতে পঞ্চলক্ষণ নামে পরিচিত এই বিশেষ লক্ষণগুলি অন্যান্য ধর্মগ্রন্থেও দৃষ্ট হয়। পুরাণের বক্তব্য অনুসারে একটি পুরাণশাস্ত্র সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা সৃষ্টির পূর্বে রচনা করেছিলেন, প্রত্যেক দ্বাপর যুগে ব্যাসদেব এসে সেটি সংক্ষিপ্ত করে একটি পুরাণ কে ১৮টি ভাগে বিভক্ত করে ১৮টি পুরাণ বিরচিত করেছিলেন। পুরাণে বংশবৃত্তান্ত লিপিবদ্ধ রাখার উপরেও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বায়ু পুরাণ অনুসারে: "পুরাকালে ল দেবতা, ঋষি, গৌরবশালী রাজন্যবর্গের বংশবৃত্তান্ত ও মহামানবদের কিংবদন্তি লিপিবদ্ধ রাখার দায়িত্ব সূতের উপর অর্পিত হয়।" পৌরাণিক বংশবৃত্তান্ত অনুযায়ী মনু বৈবস্বত ভারত যুদ্ধের ৯৫ প্রজন্ম পূর্বে জীবিত ছিলেন। পারগিটার (১৯২২) বলেছেন, "মূল পুরাণগুলি" ("original Purana") সম্ভবত বেদের সর্বশেষ লিখিত রূপের সমসাময়িক। এবং পারগিটার (১৯৭৯) মনে করেন, বায়ু পুরাণে যে যুগগুলি ৪৮০০, ৩৬০০, ২৪০০ ও ১২০০ বছরে বিভক্ত হয়েছে তার মধ্যে পৌরাণিক কৃত যুগ " সমাপ্তি রাম জমদগ্ন্যের দ্বারা হৈহয়দের ধ্বংসপ্রাপ্তিতে; ত্রেতা যুগের সূত্রপাত রাজা সগরের সময়কালে এবং সমাপ্তি রাম দাশরথি কর্তৃক রাক্ষস ধ্বংসে; দ্বাপর যুগের সূত্রপাত অযোধ্যা-প্রত্যাবর্তনে এবং সমাপ্তি ভারতযুদ্ধে।" আরিয়ান রচিত ইন্ডিকায়, মেগাস্থিনিস থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে ভারতীয়রা শিব (ডায়োনিসাস) থেকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য (সান্ড্রাকোটাস) পর্যন্ত "ছয় হাজার তেতাল্লিশ বছরে একশো তিপান্ন জন রাজা" গণনা করে। খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে রচিত বৃহদারণ্যক উপনিষদে (৪।৬) গুরু-পরম্পরায় ৫৭টি যোগসূত্রের কথা বলা হয়েছে। এর অর্থ গুরু-পরম্পরা তারও ১৪০০ বছর আগে থেকে প্রচলিত ছিল। যদিও এই তালিকার যথার্থতা নিয়ে মতদ্বৈধ রয়েছে। কহ্লন রচিত রাজতরঙ্গিনী গ্রন্থে বর্ণিত রাজাবলিতে খ্রিস্টপূর্ব ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত রাজাদের তালিকা পাওয়া যায়। পুরাণ গ্রন্থসমুচ্চয় এমন এক জটিল উপাদান-সংগ্রহ যাতে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী সম্প্রদায়ের উদ্ভবতত্ত্ব বর্ণিত হয়েছে। তাই গেভিন ফ্লাড ঐতিহাসিকভাবে লিখিত পুরাণের উদ্ভবের সঙ্গে গুপ্তযুগে নির্দিষ্ট দেবতাকেন্দ্রিক ধর্মসম্প্রদায়ের উদ্ভবের ঘটনাকে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত মনে করেছেন: যদিও এই গ্রন্থগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং এদের একটিতে অপরটির উপাদান প্রায়শই গৃহীত হয়েছে, তবুও বলতে হয়, প্রতিটি গ্রন্থেই ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিতে জগতকে দেখা হয়েছে। এগুলিকে প্রচলিত উপকথার এলোপাথাড়ি সংকলন মনে করা উচিত নয়। এগুলি সুসংকলিত, বিষয়গতভাবে সুসংবদ্ধ, বিশ্বচেতনার অভিপ্রকাশ এবং ধর্মীয় তত্ত্বকথা। ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট গোষ্ঠী নির্দিষ্ট দর্শনকে তুলে ধরার জন্য এগুলি সংকলন করেছিলেন; কেবল কেউ বিষ্ণু, কেউ শিব, কেউ বা দেবী বা অন্য কোনো দেবতার উপর আলোকপাত করেন। স্থানীয় ভাষার অনুবাদে পুরাণগুলি সহজলভ্য। কথক নামে পরিচিত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে কথকতার মাধ্যমে ভক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে পুরাণের কাহিনিগুলি জনসমাজে প্রচার করে সাধারণ্যে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেন। পুরাণগুলির তালিকা মহাপুরাণ পুরাণ নামাঙ্কিত সাহিত্যধারায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ মহাপুরাণ (সংস্কৃত: महापूराण, s)। সাধারণ বিশ্বাস অনুযায়ী মহাপুরাণের সংখ্যা আঠারো এবং এগুলি ছয়টি করে পুরাণযুক্ত তিনটি পৃথক শ্রেণিতে বিন্যস্ত। যদিও এই সংখ্যা ও শ্রেণিবিভাগ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র অধ্যয়ন করে ডিমিট ও ভ্যান বুইটেনেন ২০টি মহাপুরাণের একটি তালিকা প্রস্তুত করেন: অগ্নিপুরাণ বা আগ্নেয় পুরাণ: সঠিক রচনাকাল জানা যায় না। শ্লোকসংখ্যা ১১৫০০। এটি একটি প্রাচীন পুরাণ এবং একে "পৌরাণিক ও সাহিত্যবিদ্যার কোষগ্রন্থ" বলা হয়। কিংবদন্তি অনুসারে, ঋষি বশিষ্ঠের অনুরোধে অগ্নি এই পুরাণ রচনা করেছিলেন। এই পুরাণে বিষ্ণুর বিভিন্ন অবতারের বর্ণনা, বংশানুচরিত, সৃষ্টিতত্ত্ব, ভূগোল, ছন্দ, অলংকার, ব্যাকরণ, স্মৃতিশাস্ত্র, আয়ুর্বেদ, রাজনীতি, অশ্বচিকিৎসা ইত্যাদির বর্ণনা আছে। এটি বৈষ্ণব পুরাণ; তবে এতে তান্ত্রিক উপাসনা পদ্ধতি, লিঙ্গপূজা, দুর্গাপূজা ইত্যাদি শাক্ত ও শৈব বিষয়বস্তুও সংযোজিত হয়েছে। ভাগবত পুরাণ (১৮,০০০ শ্লোক) – সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় পুরাণ। এই পুরাণের মূল উপজীব্য বিষ্ণুর দশাবতারের কাহিনি। দশম স্কন্দটি গ্রন্থের বৃহত্তম অধ্যায়; এই অধ্যায়ে কৃষ্ণের লীলা বর্ণিত হয়েছে। পরবর্তীকালে একাধিক ভক্তি আন্দোলনের মুখ্য বিষয়বস্তু কৃষ্ণের বাল্যলীলা এই পুরাণেই লিপিবদ্ধ। ভবিষ্য পুরাণ (১৪,৫০০ শ্লোক) ব্রহ্মপুরাণ বা আদিপুরাণ (রচনাকাল আনুমানিক খ্রিস্টীয় অষ্টম-দ্বাদশ শতাব্দী): শ্লোকসংখ্যা ২৪,০০। কিংবদন্তি অনুসারে, সূত লোমহর্ষণ নৈমিষারণ্যে উপস্থিত ঋষিদের কাছে এই পুরাণ প্রথম বর্ণনা করেন। এই পুরাণে ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তি, দেব, মনু চন্দ্র ও সূর্য বংশের বিবরণ, বিশ্বের ভূগোল, স্বর্গ-নরক, তীর্থের মাহাত্ম্য, সূর্য ও বিষ্ণু উপসনার পদ্ধতি, আদিত্যগণের বিবরণ, বিষ্ণু-সংক্রান্ত পৌরাণিক গল্প, শিব-পার্বতীর গল্প, কৃষ্ণের জীবনী, বর্ণাশ্রম ধর্ম, নীতিধর্ম ইত্যাদি বর্ণনা করা হয়েছে। এই পুরাণের প্রক্ষিপ্ত অংশগুলি অন্যান্য পুরাণ থেকে গৃহীত এবং কয়েকটি প্রক্ষিপ্ত তীর্থমাহাত্ম্যের বর্ণনা বৈষ্ণব, শাক্ত, শৈব ও সৌর সম্প্রদায়ের লেখকদের রচনা। ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ (১২,০০০ শ্লোক; হিন্দু প্রার্থনাগাথা ললিত সহস্রনাম এই গ্রন্থের অন্তর্গত) ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ (১৮,০০০ শ্লোক) গরুড় পুরাণ (১৯,০০০ শ্লোক) হরিবংশ পুরাণ (১৬,০০০ শ্লোক; ইতিহাস নামে সমধিক আখ্যাত) কূর্ম পুরাণ (১৭,০০০ শ্লোক) লিঙ্গ পুরাণ (১১,০০০ শ্লোক) মার্কণ্ডেয় পুরাণ (৯,০০০ শ্লোক; পবিত্র শাক্ত ধর্মগ্রন্থ দেবীমাহাত্ম্যম্ এই পুরাণভুক্ত) মৎস্য পুরাণ (১৪,০০০ শ্লোক) নারদ পুরাণ (২৫,০০০ শ্লোক) পদ্ম পুরাণ (৫৫,০০০ শ্লোক) শিব পুরাণ (২৪,০০০ শ্লোক) স্কন্দ পুরাণ (৮১,১০০ শ্লোক) – বৃহত্তম পুরাণ। একাধিক পাঠান্তর সংবলিত এই পুরাণের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বহু কাহিনি-উপকাহিনি ও কিংবদন্তির কথা। একাধিক গ্রন্থে এই পুরাণের উদ্ধৃতি প্রাপ্ত হয়। বামন পুরাণ (১০,০০০ শ্লোক) বরাহ পুরাণ (১০,০০০ শ্লোক) বায়ু পুরাণ (২৪,০০০ শ্লোক) বিষ্ণু পুরাণ (২৩,০০০ শ্লোক) ত্রিমূর্তির বিচারে নিম্নলিখিত তিন শ্রেণিতে পুরাণগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। আবার পদ্ম পুরাণ অনুসারে সত্ত্বগুণ, রজোগুণ ও তমোগুণ – এই ত্রিগুণের আলোকে পুরাণ তিনপ্রকার হয়ে থাকে: উপপুরাণ উপপুরাণ (সংস্কৃত: उपपुराण, ) অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অথবা আনুষঙ্গিক ধর্মগ্রন্থ। কোনো কোনো মতে উপপুরাণ আঠারোটি। কিন্তু মহাপুরাণের সংখ্যার মতোই এই সংখ্যা নিয়েও দ্বিমত রয়েছে। কয়েকটি উপপুরাণ সমালোচনার সহিত সম্পাদিত হয়েছে। গণেশ ও মুদগল পুরাণ গণেশের মহিমাবাচক। দেবীভাগবত পুরাণ দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য কীর্তন করে। মার্কণ্ডেয় পুরাণের দেবীমাহাত্ম্যম্ অংশের সঙ্গে এই পুরাণটিও শক্তি উপাসকদের মূল ধর্মগ্রন্থ বলে বিবেচিত হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে এইরূপ অনেক উপপুরাণের সন্ধান পাওয়া যায়।<ref>'`Verbal Narratives: Performance and Gender of the Padma Purana, by T.N. Sankaranarayana in Chanted Narratives - The Katha Vachana Tradition, Edited by Molly Kaushal, p. 225–234. </ref> তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য বঙ্গদেশ ও অসমে প্রচলিত সর্পদেবী মনসার মহিমাজ্ঞাপক পদ্মপুরাণ। স্থলপুরাণ সংস্কৃতে স্থল শব্দের অর্থ স্থান। পুরাণের এই বিশেষ অংশটি মন্দির বা তীর্থের উৎপত্তি ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করে। স্থলপুরাণ অসংখ্য; বেশিরভাগই স্থানীয় ভাষায় রচিত; যদিও কয়েকটির সংস্কৃত পাঠান্তরও পাওয়া যায়। আবার কোনো কোনো স্থলপুরাণকে মহাপুরাণ বা উপপুরাণেও বর্ণিত হতে দেখা যায়। ডেভিড ডিন শ্যুলম্যান তামিল স্থলপুরাণগুলির উপর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম চালিয়েছেন। কুলপুরাণ সংস্কৃতে কুল শব্দের অর্থ পরিবার বা গোত্র''। কুলপুরাণ সাধারণত নির্দিষ্ট বর্ণের উদ্ভব, আখ্যান ও কিংবদন্তির বর্ণনা দেয়। বর্ণভেদ পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল কুলপুরাণ। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিদ্বন্দ্বী বর্ণের কুলপুরাণের দ্বারা এই পুরাণগুলির বক্তব্য খণ্ডিত হয়েছে। কুলপুরাণ সাধারণত স্থানীয় ভাষায় লিখিত অথবা অনেক ক্ষেত্রে মৌখিক পরম্পরায় প্রচারিত। কুলপুরাণগুলি নিয়ে গবেষণাকর্ম কমই হয়েছে। তবে ব্রিটিশ জনগণনা রিপোর্টে ও বিভিন্ন গেজেটিয়ারে এগুলি নথিবদ্ধ করা হয়। জৈন ও বৌদ্ধ পুরাণ বৌদ্ধ স্বয়ম্ভু পুরাণে কাঠমান্ডু উপত্যকার ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। জৈন পুরাণগুলিতে বর্ণিত হয়েছে জৈন লোকগাথা, ইতিহাস ও কিংবদন্তির কথা। জৈন পুরাণ প্রাচীন কন্নড় সাহিত্যের প্রধান উপাদান। এই পুরাণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আচার্য জিনসেনের মহাপুরাণ। তবে জৈন পুরাণের উপর গবেষণা ও অনুবাদকর্ম কমই হয়েছে। পাদটীকা পুরাণ হিন্দু ধর্মগ্রন্থ সংস্কৃত শব্দ ও শব্দবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Puranas
Puranas
Puranas (; Sanskrit: पुराण, romanized: purāṇa, lit. 'ancient, old', IPA: [pʊˈrɑːɳə]) are a vast genre of Hindu literature about a wide range of topics, particularly about legends and other traditional lore. The Puranas are known for the intricate layers of symbolism depicted within their stories. Composed originally in Sanskrit and in other Indian languages, several of these texts are named after major Hindu gods such as Vishnu, Shiva, Brahma, and Adi Shakti. The Puranic genre of literature is found in both Hinduism and Jainism. The Puranic literature is encyclopedic, and it includes diverse topics such as cosmogony, cosmology, genealogies of gods, goddesses, kings, heroes, sages, and demigods, folk tales, pilgrimages, temples, medicine, astronomy, grammar, mineralogy, humor, love stories, as well as theology and philosophy. The content is highly inconsistent across the Puranas, and each Purana has survived in numerous manuscripts which are themselves inconsistent. The Hindu Maha Puranas are traditionally attributed to "Vyasa", but many scholars considered them likely the work of many authors over the centuries; in contrast, most Jaina Puranas can be dated and their authors assigned. There are 18 Mukhya Puranas (Major Puranas) and 18 Upa Puranas (Minor Puranas), with over 400,000 verses. The first versions of various Puranas were likely to have been composed between 3rd and 10th century CE. While the Puranas do not enjoy the authority of a scripture in Hinduism, but are considered as Smritis, they shaped Hinduism more than the Vedas, providing a "culture synthesis" in weaving and integrating the diverse beliefs of a great number of local traditions into the Vedic-Brahmanic fold. While all Puranas praise many gods and goddesses and "their sectarianism is far less clear cut" than assumed, the religious practices included in them are considered Vaidika (congruent with Vedic literature). The Puranic literature wove with the Bhakti movement in India, and both Dvaita and Advaita scholars have commented on the underlying Vedantic themes in the Maha Puranas.
1380
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%A8
ক্যামেরুন
ক্যামেরুন ( ইংরেজি ভাষায় : Cameroon; ; দুয়ালা: ; ইওন্ডো: ) হল পশ্চিম-মধ্য আফ্রিকার একটি দেশ। এর সরকারি নাম হল ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র। এটির পশ্চিম ও উত্তরে নাইজেরিয়া; উত্তর–পূর্বে চাদ; পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণে নিরক্ষীয় গিনি, গ্যাবন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্র অবস্থিত। এর উপকূলরেখা বিয়াফ্রার বাইট, গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরের অংশে অবস্থিত। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার সংযোগস্থলে এর কৌশলগত অবস্থানের কারণে তাকে কখনও পশ্চিম আফ্রিকীয় ও কখনো মধ্য আফ্রিকীয় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এর প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষ ২৫০ টি স্থানীয় ভাষায় কথা বলে। এই অঞ্চলের প্রাথমিক বাসিন্দাদের মধ্যে ছিল চাদ হ্রদের আশেপাশে সাও সভ্যতা এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেইনফরেস্টের বাকা শিকারী-সংগ্রাহক। পর্তুগিজ অভিযাত্রীরা ১৫ শতকে উপকূলে পৌঁছেছিলেন এবং এলাকার নাম দেন রিও ডস ক্যামারোয়েস (চিংড়ি নদী), যা ইংরেজিতে ক্যামেরুন হয়ে ওঠে। ফুলানি সৈন্যরা ১৯ শতকে উত্তরে আদামাওয়া এমিরেট প্রতিষ্ঠা করে এবং পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী গোত্র-প্রধান শাসন ও ফন শাসন প্রতিষ্ঠা করে। ক্যামেরুন ১৮৮৪ সালে কামেরুন নামে পরিচিত একটি জার্মান উপনিবেশে পরিণত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, লিগ অফ নেশনস ম্যান্ডেট হিসাবে এটি ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিভক্ত হয়েছিল। ইউনিয়ন দেস পপুলেশনস ডু ক্যামেরুন (ইউপিসি) নামের রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার সমর্থনে কাজ করেছিল, কিন্তু ১৯৫০-এর দশকে ফ্রান্স কর্তৃক এটিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছিল, যার ফলে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ফরাসি এবং ইউপিসি জঙ্গি বাহিনীর মধ্যে জাতীয় মুক্তি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। ১৯৬০ সালে, ক্যামেরুনের ফরাসি-শাসিত অংশ। ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র হিসাবে, রাষ্ট্রপতি আহমাদু আহিদজোর অধীনে স্বাধীন হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ ক্যামেরুনের দক্ষিণ অংশ ১৯৬১ সালে ক্যামেরুনের ফেডারেল রিপাবলিক গঠনের জন্য এটির সাথে যুক্ত হয়। ফেডারেশনটি ১৯৭২ সালে পরিত্যক্ত হয়। ১৯৭২ সালে দেশটির নামকরণ করা হয় ইউনাইটেড রিপাবলিক অফ ক্যামেরুন এবং ১৯৮৪ সালে ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র। পল বিয়া, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট, অহিদজোর পদত্যাগের পর ১৯৮২ সাল থেকে দেশটির নেতৃত্ব দিয়েছেন; তিনি এর আগে ১৯৭৫ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ক্যামেরুন একটি একক রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্র হিসাবে শাসিত হয়। ক্যামেরুনের অফিসিয়াল ভাষাগুলি হল ফরাসি এবং ইংরেজি, প্রাক্তন ফরাসি ক্যামেরুন এবং ব্রিটিশ ক্যামেরুনগুলির সরকারী ভাষা। এর ধর্মীয় জনসংখ্যা প্রধানত খ্রিস্টান, একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু ইসলাম ধর্ম পালন করে এবং অন্যান্যরা ঐতিহ্যগত বিশ্বাস অনুসরণ করে। এটি ইংরেজি-ভাষী অঞ্চলগুলি থেকে উত্তেজনা অনুভব করেছে, যেখানে রাজনীতিবিদরা বৃহত্তর বিকেন্দ্রীকরণ এবং এমনকি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা বা স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন (দক্ষিণ ক্যামেরুন জাতীয় কাউন্সিলের মতো)। ২০১৭ সালে, ইংরেজি-ভাষী অঞ্চলগুলিতে একটি অ্যাম্বাজোনিয়ান রাজ্য তৈরির বিষয়ে উত্তেজনা প্রকাশ্য যুদ্ধে পরিণত হয়েছিল। বিপুল সংখ্যক ক্যামেরুনিয়ানরা জীবিকা নির্বাহকারী কৃষক হিসাবে বসবাস করে। ভূতাত্ত্বিক, ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য দেশটিকে প্রায়ই "মিনি অ্যাফ্রিকা" বলা হয়। এর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে সৈকত, মরুভূমি, পর্বতমালা, রেইনফরেস্ট এবং সাভানা। এর সর্বোচ্চ বিন্দু, প্রায় ৪,১০০ মিটার (১৩,৫০০ ফুট), দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মাউন্ট ক্যামেরুন। সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার শহরগুলি হল উউরি নদীর উপর অবস্থিত ডুয়ালা, এর অর্থনৈতিক রাজধানী এবং প্রধান সমুদ্রবন্দর; ইয়াউন্ডে, এর রাজনৈতিক রাজধানী; এবং গারুয়া। ক্যামেরুন তার স্থানীয় সঙ্গীত শৈলী, বিশেষ করে মাকোসা এবং বিকুতসি এবং তার সফল জাতীয় ফুটবল দলের জন্য সুপরিচিত। এটি আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, অর্গানাইজেশন ইন্টারন্যাশনাল দে লা ফ্রাঙ্কোফোনি (ওআইএফ), কমনওয়েলথ অফ নেশনস, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এবং ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্র। শব্দের ব্যুৎপত্তি মূলত, ক্যামেরুন ছিল পর্তুগিজদের দেয়া উউরি নদীকে প্রদত্ত ছদ্মরূপ, যাকে তারা রিও ডস ক্যামারোয়েস বা "চিংড়ি নদী" বলে ডাকত, যা তৎকালীন প্রচুর ক্যামেরুন ভূত চিংড়িকে নির্দেশ করে। বর্তমানে পর্তুগিজ ভাষায় দেশটির নাম 'ক্যামারোয়েস' রয়ে গেছে। ইতিহাস প্রাথমিক ইতিহাস বর্তমান ক্যামেরুন প্রথম নিওলিথিক যুগে বসতি স্থাপন করেছিল। দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন বাসিন্দারা হল বাকা (পিগমি)। সেখান থেকে, পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য আফ্রিকায় বান্টু অভিবাসন প্রায় ২,০০০ বছর আগে ঘটেছে বলে মনে করা হয়। সাও সংস্কৃতির উদ্ভব হয়েছিল লেক চাদকে ঘিরে, প্রায় ৫০০ খ্রিস্টাব্দে, এবং কানেম ও এর উত্তরাধিকারী রাজ্য, বোর্নু সাম্রাজ্যের দিকে ছেড়ে গিয়েছিল। পশ্চিমে কিংডম, ফন্ডম এবং চীফডমের উদ্ভব হয়েছিল। পর্তুগিজ নাবিকরা ১৪৭২ সালে উপকূলে পৌঁছেছিল। তারা উউরি নদীতে ভূত চিংড়ি বা লেপিডোফথালমাস টার্নেরানাসের প্রাচুর্য লক্ষ্য করে এবং এটির নাম দেয় রিও ডস ক্যামারোয়েস (চিংড়ি নদী), যা ইংরেজিতে ক্যামেরুনে পরিণত হয়। পরবর্তী কয়েক শতাব্দীতে, ইউরোপীয়রা উপকূলীয় জনগণের সাথে নিয়মিত বাণিজ্যে আগ্রহী হয় এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলো স্থানান্তরিত হয়। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে, মোদিবো আদামা ফুলানি সৈন্যদের নিয়ে অমুসলিম এবং আংশিকভাবে মুসলিম জনগণের বিরুদ্ধে উত্তরাংশে একটি জিহাদে নেতৃত্ব দেন এবং আদমাওয়া আমিরাত প্রতিষ্ঠা করেন। ফুলানি থেকে পালিয়ে আসা বসতি স্থাপনকারীরা জনসংখ্যার একটি বড় পুনর্বণ্টন ঘটায়। ১৮৯৬ সালে, সুলতান ইব্রাহিম নজোয়া বামুম ভাষার জন্য বামুম লিপি বা শু মম তৈরি করেন। এটি আজ ক্যামেরুনে বামুম স্ক্রিপ্ট এবং আর্কাইভস প্রকল্প দ্বারা শেখানো হয়। জার্মান শাসন জার্মানি ১৮৬৮ সালে ক্যামেরুনে শিকড় স্থাপন শুরু করে যখন হ্যামবুর্গের ওয়্যারম্যান কোম্পানি একটি গুদাম তৈরি করে। এটি উউরি নদীর মোহনায় নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তীতে গুস্তাভ নাচটিগাল স্থানীয় রাজাদের একজনের সাথে জার্মান সম্রাটের জন্য অঞ্চলটি সংযুক্ত করার একটি চুক্তি করেছিলেন। জার্মান সাম্রাজ্য ১৮৮৪ সালে কামেরুনের উপনিবেশ হিসাবে অঞ্চলটিকে দাবি করে এবং অভ্যন্তরীণ প্রবেশ শুরু করে। জার্মানরা স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল যারা জার্মানদের এই ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হতে দিতে চায়নি। জার্মানির প্রভাবে, বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলিকে স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এই বিশেষ ছাড় আফ্রিকানদেরকে লাভের জন্য বাধ্যতামূলক শ্রমে ব্যবহার করেছিল। এ শ্রম কলা, রাবার, পাম তেল, এবং কোকো বাগানে ব্যবহৃত হত। তারা জোরপূর্বক শ্রমের কঠোর ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে উপনিবেশের অবকাঠামো উন্নত করার জন্য প্রকল্পগুলি শুরু করেছিল, যা অন্যান্য ঔপনিবেশিক শক্তি দ্বারা সমালোচিত হয়েছিল। ফরাসি ও ব্রিটিশ শাসন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের মধ্যদিয়ে, কামেরুন একটি লীগ অফ নেশনস ম্যান্ডেট অঞ্চলে পরিণত হয় এবং ১৯১৯ সালে ফ্রেঞ্চ ক্যামেরুন (ফরাসি: ক্যামেরুন) এবং ব্রিটিশ ক্যামেরুনে বিভক্ত হয়। ফ্রান্স ক্যামেরুনের অর্থনীতিকে ফ্রান্সের সাথে একীভূত করে এবং পুঁজি বিনিয়োগ ও দক্ষ শ্রমিক সহ অবকাঠামো উন্নয়ন করে, জোরপূর্বক শ্রমের ঔপনিবেশিক ব্যবস্থাকে সংশোধন করে। ব্রিটিশরা প্রতিবেশী নাইজেরিয়া থেকে তাদের ভূখণ্ড পরিচালনা করত। স্থানীয়দের অভিযোগ যে এটি তাদের অবহেলিত "একটি উপনিবেশের উপনিবেশ" করে তুলেছে। নাইজেরিয়ান অভিবাসী শ্রমিকরা ঝাঁকে ঝাঁকে দক্ষিণ ক্যামেরুনে এসে জোরপূর্বক শ্রম বন্ধ করে দিয়েছিল কিন্তু যা স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষুব্ধ করে, যারা ভুগছিলেন। লিগ অফ নেশনস ম্যান্ডেটগুলি ১৯৪৬ সালে জাতিসংঘের ট্রাস্টিশিপে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং স্বাধীনতার প্রশ্নটি ফরাসি ক্যামেরুনে একটি চাপের বিষয় হয়ে ওঠে। ফ্রান্স ১৩ জুলাই ১৯৫৫-এ স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক দল, ইউনিয়ন অফ দ্য পিপলস অফ ক্যামেরুন (ইউনিয়ন দেস পপুলেশনস ডু ক্যামেরুন; ইউপিসি) বেআইনি ঘোষণা করে। যা ইউপিসি দ্বারা পরিচালিত একটি দীর্ঘ গেরিলা যুদ্ধ এবং রুবেন উম নিওবে, ফেলিক্স-রোল্যান্ড মউমি এবং আর্নেস্ট ওউয়ান্ডি সহ পার্টির বেশ কয়েকজন নেতাকে হত্যার প্ররোচনা দেয়। ব্রিটিশ ক্যামেরুনে, প্রশ্ন ছিল ফরাসি ক্যামেরুনের সাথে পুনর্মিলন বা নাইজেরিয়ায় যোগদান করা; ব্রিটিশরা স্বাধীনতার বিকল্প বাতিল করে দেয়। স্বাধীনতা ১৯৬০ সালের ১ জানুয়ারী, ফরাসি ক্যামেরুন রাষ্ট্রপতি আহমাদউ আহিদজোর নেতৃত্বে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ১ অক্টোবর ১৯৬১-এ, প্রাক্তন ব্রিটিশ দক্ষিণ ক্যামেরুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ফ্রেঞ্চ ক্যামেরুনের সাথে যুক্ত হয়ে ফেডারেল রিপাবলিক অফ ক্যামেরুন গঠন করে, যে দিনটি এখন একীকরণ দিবস ও সরকারী ছুটির দিন হিসাবে পালন করা হয়। অহিদজো ইউপিসির সাথে চলমান যুদ্ধকে প্রেসিডেন্সিতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার জন্য ব্যবহার করেছিলেন, ১৯৭১ সালে ইউপিসি দমনের পরেও এটি অব্যাহত রেখেছিলেন। তার রাজনৈতিক দল, ক্যামেরুন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (সিএনইউ), ১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬-এ একমাত্র আইনি রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠে এবং ২০ মে ১৯৭২-এ, ক্যামেরুনের ইউনাইটেড রিপাবলিক অফ ক্যামেরুনের পক্ষে ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার জন্য একটি গণভোট পাস হয়। এই দিনটি এখন দেশের জাতীয় দিবস, একটি সরকারি ছুটির দিন। অহিদজো পরিকল্পিত উদারনীতির একটি অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করেছিলেন, অর্থকরী ফসল এবং পেট্রোলিয়াম উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। সরকার একটি জাতীয় নগদ রিজার্ভ তৈরি করতে, কৃষকদের বেতন দিতে এবং বড় উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করতে তেলের অর্থ ব্যবহার করেছিল; যাইহোক, অনেক উদ্যোগ ব্যর্থ হয় যখন অহিদজো তাদের পরিচালনার জন্য অযোগ্য মিত্রদের নিয়োগ করেন। অহিদজো ৪ নভেম্বর ১৯৮২-এ পদত্যাগ করেন এবং তার সাংবিধানিক উত্তরসূরি পল বিয়ার কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। যাইহোক, অহিদজো সিএনইউ-এর নিয়ন্ত্রণে ছিলেন বিয়া এবং তার সহযোগীরা তাকে পদত্যাগে চাপ না দেওয়া পর্যন্ত পর্দার আড়ালে থেকে দেশ চালানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিয়া আরও গণতান্ত্রিক সরকারের দিকে অগ্রসর হওয়ার মাধ্যমে তার প্রশাসন শুরু করেন, কিন্তু একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান তাকে তার পূর্বসূরির নেতৃত্বের শৈলীর দিকে ধাবিত করে। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবস্থা, খরা, পেট্রোলিয়ামের দাম কমে যাওয়া এবং বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং স্বজনপ্রীতির ফলে ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে একটি অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হয়। ক্যামেরুন বিদেশী সাহায্যের দিকে ঝুঁকেছিল, সরকারী খরচ কমিয়ে এবং শিল্পকে বেসরকারীকরণ করতে হয়েছিল। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে বহু-দলীয় রাজনীতির পুনঃপ্রবর্তনের সাথে, প্রাক্তন ব্রিটিশ দক্ষিণ ক্যামেরুনের চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের আহ্বান জানায় এবং দক্ষিণ ক্যামেরুন ন্যাশনাল কাউন্সিল অ্যাম্বাজোনিয়া প্রজাতন্ত্র হিসাবে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতার পক্ষে কথা বলে। ক্যামেরুনের ১৯৯২ সালের শ্রম আইন শ্রমিকদের একটি ট্রেড ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বা কোনও ট্রেড ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার স্বাধীনতা দেয়। প্রতিটি পেশায় একাধিক ট্রেড ইউনিয়ন বিদ্যমান থাকায় একজন শ্রমিকের পছন্দ হল তার পেশায় যেকোনো ট্রেড ইউনিয়নে যোগদান করা। ২০০৬ সালের জুনে, বাকাসি উপদ্বীপের একটি আঞ্চলিক বিরোধের বিষয়ে আলোচনার সমাধান করা হয়েছিল। আলোচনায় ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপতি পল বিয়া, নাইজেরিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ওলুসেগুন ওবাসাঞ্জো এবং তৎকালীন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান জড়িত ছিলেন এবং এর ফলে তেল সমৃদ্ধ উপদ্বীপ ক্যামেরুনিয়ান নিয়ন্ত্রণে আসে। আগস্ট ২০০৬ সালে ভূখণ্ডের উত্তর অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যামেরুনিয়ান সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং উপদ্বীপের অবশিষ্টাংশ ২ বছর পরে, ২০০৮ সালে ক্যামেরুনের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। সীমানা পরিবর্তন স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের সূত্রপাত করে, কারণ অনেক বাকাসিয়ান ক্যামেরুনের শাসন মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল। যদিও বেশিরভাগ সংগ্রামী ২০০৯ সালের নভেম্বরে তাদের অস্ত্র জমা দিয়েছিল, কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়েছিল। ফেব্রুয়ারী ২০০৮ সালে, ক্যামেরুন ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার সম্মুখীন হয় যখন ডুয়ালায় একটি পরিবহন ইউনিয়ন ধর্মঘট ৩১টি পৌর এলাকায় সহিংস বিক্ষোভে পরিণত হয়। মে ২০১৪ সালে, চিবোক স্কুল ছাত্রী অপহরণের প্রেক্ষিতে, ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পল বিয়া এবং চাদের ইদ্রিস ডেবি ঘোষণা করেন যে তারা বোকো হারামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছেন এবং নাইজেরিয়ার সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছেন। বোকো হারাম ক্যামেরুনে বেশ কয়েকটি আক্রমণ চালায়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে একটি অভিযানে ৮৪ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করে, কিন্তু জানুয়ারী ২০১৫ সালে একটি অভিযানে ব্যাপক পরাজয়ের সম্মুখীন হয়। ক্যামেরুন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যামেরুনীয় অঞ্চলে বোকো হারামের বিরুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করে। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে, দেশের প্রধানত ইংরেজি-ভাষী উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রতিবাদকারীরা স্কুল এবং আদালতে ইংরেজি ভাষার অব্যাহত ব্যবহারের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। এই বিক্ষোভের ফলে মানুষ নিহত হয় এবং শত শত জেলে যায়। ২০১৭ সালে, বিয়ার সরকার তিন মাসের জন্য অঞ্চলগুলির ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করেছিল। সেপ্টেম্বরে, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অ্যাম্বাজোনিয়া ফেডারেল রিপাবলিক হিসাবে অ্যাংলোফোন অঞ্চলের স্বাধীনতার জন্য গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে। সরকার সামরিক আক্রমণের মাধ্যমে তার জবাব দেয়, এবং বিদ্রোহ উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত, বিচ্ছিন্নতাবাদী গেরিলা এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ২০২০-এর সময়, অসংখ্য সন্ত্রাসী হামলা-যার মধ্যে অনেকগুলিই কৃতিত্বের দাবি ছাড়াই সম্পাদিত হয়েছিল-এবং সরকারী প্রতিশোধ সারা দেশে রক্তপাত ঘটিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে, ৪৫০,০০০ এরও বেশি মানুষ তাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। সংঘাতটি পরোক্ষভাবে বোকো হারামের আক্রমণে একটি উত্থানের দিকে পরিচালিত করে, কারণ ক্যামেরুনের সামরিক বাহিনী মূলত আম্বাজোনিয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উত্তর দিক থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মুসগুম জেলে এবং জাতিগত আরব চোয়া পশুপালকদের মধ্যে জলের প্রবেশাধিকার নিয়ে জাতিগত সংঘর্ষের পর উত্তর ক্যামেরুনের ৩০,০০০ জনেরও বেশি মানুষ চাদে পালিয়ে যায়। রাজনীতি ও সরকার ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং নীতিমালা তৈরি করেন, সরকারী সংস্থাগুলি পরিচালনা করেন, সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দেন, আলোচনা করেন এবং চুক্তি অনুমোদন করেন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রাদেশিক গভর্নর এবং বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সকল স্তরে সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেন। প্রতি সাত বছর পর পর জনগণের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ক্যামেরুনের স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২ জন রাষ্ট্রপতি রয়েছেন। জাতীয় পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। সংস্থাটি ১৮০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত যারা পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয় এবং বছরে তিনবার সম্মিলিত হয়। আইন সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়। ১৯৯৬ সালের সংবিধান পার্লামেন্টের সেকেন্ড হাউস, এবং ১০০ আসনের সিনেট প্রতিষ্ঠা করে। সরকার ঐতিহ্যবাহী প্রধান, ফন এবং লামিবের কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দেয় স্থানীয় পর্যায়ে শাসন করার এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য যতক্ষণ না এই ধরনের রায়গুলি জাতীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়। ক্যামেরুনের আইনি ব্যবস্থা হল দেওয়ানি আইন, সাধারণ আইন এবং প্রথাগত আইনের মিশ্রণ। নামমাত্র স্বাধীন হলেও, বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগের বিচার মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্বের অধীনে পড়ে। রাষ্ট্রপতি সকল স্তরে বিচারক নিয়োগ করেন। বিচার বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাইব্যুনাল, আপিল আদালত এবং সর্বোচ্চ আদালতে বিভক্ত। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ৯-সদস্যের হাইকোর্ট অফ জাস্টিস সদস্যদের নির্বাচন করে যারা সরকারের উচ্চপদস্থ সদস্যদের বিচার করে যদি তারা উচ্চ রাষ্ট্রদ্রোহিতা বা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ক্যামেরুনকে সরকারের সকল স্তরে দুর্নীতিতে ভরপুর বলে মনে করা হয়। ১৯৯৭ সালে, ক্যামেরুন ২৯টি মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি দমন ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করে, কিন্তু মাত্র ২৫% চালু হয়, এবং ২০১২ সালে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ১৭৬টি দেশের তালিকায় ক্যামেরুনকে ১৪৪ নম্বরে রাখে। ১৮ জানুয়ারী ২০০৬-এ, বিয়া ন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন অবজারভেটরির নির্দেশনায় একটি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করে। ক্যামেরুনে বেশ কিছু উচ্চ দুর্নীতির ঝুঁকি রয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, কাস্টমস, জনস্বাস্থ্য খাত এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট। যাইহোক, বিদ্যমান দুর্নীতি দমন ব্যুরো নির্বিশেষে দুর্নীতি আরও খারাপ হয়েছে, কারণ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৮ সালে ১৮০টি দেশের তালিকায় ক্যামেরুনকে ১৫২ তম স্থান দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বিয়ার ক্যামেরুন পিপলস ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (সিপিডিএম) ছিল একমাত্র আইনি রাজনৈতিক দল ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর থেকে অসংখ্য আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল হল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (SDF), যেটি মূলত দেশের অ্যাংলোফোন অঞ্চলে এবং নেতৃত্বে আছে জন ফ্রু এনডি। বিয়া এবং তার দল জাতীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় পরিষদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে, যা প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছিল বিতর্কিত। মানবাধিকার সংস্থাগুলি অভিযোগ করে যে সরকার বিক্ষোভ প্রতিরোধ, সভা ব্যাহত করে এবং বিরোধী নেতা ও সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করে বিরোধী দলগুলির স্বাধীনতাকে দমন করে। বিশেষ করে, ইংরেজিভাষী মানুষদের প্রতি বৈষম্য করা হয়; বিক্ষোভ প্রায়ই সহিংস সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডে পরিণত হয়। ২০১৭ সালে, রাষ্ট্রপতি বিয়া সিলিকন মাউন্টেন স্টার্টআপ সহ পাঁচ মিলিয়ন লোককে বাধা দেওয়ার জন্য ৯৪ দিনের জন্য ইংরেজি-ভাষী অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেন। ফ্রিডম হাউস রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যামেরুনকে "মুক্ত নয়" হিসাবে স্থান দিয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। বিদেশী সম্পর্ক ক্যামেরুন কমনওয়েলথ অফ নেশনস এবং লা ফ্রাঙ্কোফোনি উভয়েরই সদস্য। এর পররাষ্ট্রনীতি ঘনিষ্ঠভাবে তার প্রধান মিত্র ফ্রান্সের (এর প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শাসকদের একজন) অনুসরণ করে। ক্যামেরুন তার প্রতিরক্ষার জন্য ফ্রান্সের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে, যদিও সামরিক ব্যয় সরকারের অন্যান্য খাতের তুলনায় বেশি। রাষ্ট্রপতি বিয়া তেল সমৃদ্ধ বাকাসি উপদ্বীপের দখল নিয়ে নাইজেরিয়ার সরকারের সাথে এক দশক ধরে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন। ক্যামেরুন এবং নাইজেরিয়া ১,০০০-মাইল (১,৬০০ কিমি) সীমান্ত ভাগ করে এবং বাকাসি উপদ্বীপের সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিতর্ক করেছে। ১৯৯৪ সালে ক্যামেরুন বিরোধ সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আবেদন করেছিল। দুই দেশ ১৯৯৬ সালে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল; যাইহোক, যুদ্ধ চলতে থাকে বছর ধরে। ২০০২ সালে, আইসিজে রায় দেয় যে ১৯১৩ সালের অ্যাংলো-জার্মান চুক্তি ক্যামেরুনকে সার্বভৌমত্ব দিয়েছে। রায়ে উভয় দেশই প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় এবং নাইজেরিয়ার দীর্ঘমেয়াদী দখলের কারণে ক্ষতিপূরণের জন্য ক্যামেরুনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। ২০০৪ সালের মধ্যে, নাইজেরিয়া উপদ্বীপ হস্তান্তর করার সময়সীমা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। ২০০৬-এর জুনে জাতিসংঘ-মধ্যস্থিত শীর্ষ সম্মেলন নাইজেরিয়ার জন্য এই অঞ্চল থেকে প্রত্যাহার করার জন্য একটি চুক্তির সুবিধা দেয় এবং উভয় নেতা গ্রিনট্রি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রত্যাহার এবং নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর আগস্ট ২০০৬ দ্বারা সম্পন্ন হয়। জুলাই ২০১৯ সালে, ক্যামেরুন সহ ৩৭ টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা ইউএনএইচআরসিতে জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুরদের প্রতি চীনের আচরণের পক্ষে একটি যৌথ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। সামরিক ক্যামেরুন সশস্ত্র বাহিনী (ফরাসি: Forces armées camerounaises, FAC) দেশটির সেনাবাহিনী (Armée de Terre), দেশটির নৌবাহিনী (Marine Nationale de la République (MNR), নৌ-পদাতিক সৈন্যসহ ), ক্যামেরুনিয়ান বিমান বাহিনী (Armée de l'Air du Cameroun, AAC), এবং জন্দারমেরি নিয়ে গঠিত। ১৮ বছর থেকে ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত বয়সী পুরুষ এবং মহিলারা এবং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্নাতক হয়েছে তারা সামরিক চাকরির জন্য যোগ্য হন। যারা যোগদান করবেন তারা ৪ বছর চাকরি করতে বাধ্য। ক্যামেরুনে বাধ্যতামূলকভাবে সৈন্যদলে কোনো নিয়োগ নেই, তবে সরকার স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য পর্যায়ক্রমে ডেকে থাকে। মানবাধিকার মানবাধিকার সংস্থাগুলি পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্দেহভাজন অপরাধী, জাতিগত সংখ্যালঘু, সমকামী, এবং রাজনৈতিক কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং এমনকি নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে যে ২১,০০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলিতে পালিয়ে গেছে, যখন ১৬০,০০০ জন অভ্যন্তরীণভাবে সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অনেকে বনে লুকিয়ে আছে বলে জানা গেছে। কারাগারগুলি পর্যাপ্ত খাবার এবং সামান্য চিকিৎসা সুবিধার জন্যে ভিড় করে, এবং উত্তরের ঐতিহ্যবাহী শাসকদের দ্বারা পরিচালিত কারাগারগুলিকে সরকারের নির্দেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধরে রাখার অভিযোগ আনা হয়। যাইহোক, ২১ শতকের প্রথম দশক থেকে, অনুপযুক্ত আচরণের জন্য ক্রমবর্ধমান সংখ্যক পুলিশ এবং জেন্ডারমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২৫ জুলাই ২০১৮-এ, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেন ক্যামেরুনের ইংরেজি-ভাষী উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে লঙ্ঘন এবং নির্যাতনের রিপোর্ট সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দণ্ডবিধির ধারা ৩৪৭-১ দ্বারা সমলিঙ্গের যৌন ক্রিয়াকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে যার শাস্তি ৬ মাস থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দাবি করেছে যে ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী বোকো হারাম ক্যামেরুনের সুদূর উত্তর অঞ্চলের শহর ও গ্রামে কমপক্ষে ৮০ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে এবং হামলা বাড়িয়েছে। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ সংবিধান ক্যামেরুনকে ১০টি আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করেছে, প্রতিটি নির্বাচিত আঞ্চলিক পরিষদের প্রশাসনের অধীনে। প্রতিটি অঞ্চলের নেতৃত্বে একজন রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত গভর্নর। এই নেতাদের রাষ্ট্রপতির ইচ্ছা বাস্তবায়ন, অঞ্চলগুলির সাধারণ মেজাজ এবং অবস্থার বিষয়ে রিপোর্ট করা, সিভিল সার্ভিস পরিচালনা করা, শান্তি বজায় রাখা এবং ছোট প্রশাসনিক ইউনিটগুলির প্রধানদের তত্ত্বাবধান করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। গভর্নরদের ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে: তারা তাদের এলাকায় প্রচারের আদেশ দিতে পারে এবং সেনাবাহিনী, জেন্ডারমেস এবং পুলিশকে ডাকতে পারে। সমস্ত স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় সরকারের আঞ্চলিক প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী, যেখান থেকে স্থানীয় সরকারগুলিও তাদের বাজেটের বেশির ভাগ পায়। অঞ্চলগুলি ৫৮টি বিভাগে (ফরাসি বিভাগ) উপবিভক্ত। এগুলির নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত বিভাগীয় কর্মকর্তারা (প্রেফেট)। বিভাগগুলিকে আরও উপ-বিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে (অ্যারনডিসেমেন্ট), যার নেতৃত্বে সহকারী বিভাগীয় কর্মকর্তারা (সাস-প্রিফেট)। জেলাগুলি, জেলা প্রধানদের দ্বারা পরিচালিত হয় (শেফ ডি ডিস্ট্রিক্ট), হল ক্ষুদ্রতম প্রশাসনিক ইউনিট। তিনটি উত্তরের অঞ্চল হল সুদূর উত্তর (এক্সট্রিম নর্ড), উত্তর (নর্ড), এবং আদামাওয়া (আদামাউয়া)। তাদের সরাসরি দক্ষিণে কেন্দ্র (কেন্দ্র) এবং পূর্ব (Est)। দক্ষিণ প্রদেশ (সুদ) গিনি উপসাগর এবং দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত। ক্যামেরুনের পশ্চিম অঞ্চলটি চারটি ছোট অঞ্চলে বিভক্ত: লিটোরাল (লিটোরাল) এবং দক্ষিণ-পশ্চিম (সুদ-আউয়েস্ট) অঞ্চলগুলি উপকূলে রয়েছে এবং উত্তর-পশ্চিম (নর্ড-আউয়েস্ট) এবং পশ্চিম (উয়েস্ট) অঞ্চলগুলি পশ্চিমে রয়েছে। ঘাসক্ষেত্র ভূগোল ৪৭৫,৪৪২ বর্গ কিলোমিটার (১৮৩,৫৬৯ বর্গ মাইল), ক্যামেরুন বিশ্বের ৫৩তম বৃহত্তম দেশ। দেশটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় অবস্থিত, যা আফ্রিকার কব্জা হিসাবে পরিচিত, বনির বাইট, গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরের অংশে। ক্যামেরুন ১° এবং ১৩°N অক্ষাংশ এবং ৮° এবং ১৭°E দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। ক্যামেরুন আটলান্টিক মহাসাগরের ১২ নটিক্যাল মাইল নিয়ন্ত্রণ করে। পর্যটন সাহিত্য ক্যামেরুনকে "মিনি আফ্রিকা" হিসাবে বর্ণনা করে কারণ এটিতে মহাদেশের সমস্ত প্রধান জলবায়ু এবং গাছপালা উপকূল, মরুভূমি, পর্বতমালা, রেইনফরেস্ট এবং সাভানা দেখা যায়। দেশটির প্রতিবেশী হল নাইজেরিয়া এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর; উত্তর-পূর্বে চাদ; পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র; এবং দক্ষিণে নিরক্ষীয় গিনি, গ্যাবন এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। ক্যামেরুনকে পাঁচটি প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে যা প্রভাবশালী শারীরিক, জলবায়ু এবং উদ্ভিজ্জ বৈশিষ্ট্য দ্বারা আলাদা। উপকূলীয় সমভূমি গিনি উপসাগর থেকে ১৫ থেকে ১৫০ কিলোমিটার (৯ থেকে ৯৩ মাইল) অভ্যন্তরীণ বিস্তৃতি এবং গড় উচ্চতা ৯০ মিটার (২৯৫ ফুট)। একটি ছোট শুষ্ক মৌসুমের সাথে অত্যন্ত গরম এবং আর্দ্র, এই বেল্টটি ঘন বনভূমি এবং পৃথিবীর কিছু আর্দ্র স্থান, ক্রস-সানাগা-বায়োকো উপকূলীয় বনের অংশ অন্তর্ভুক্ত করে দক্ষিণ ক্যামেরুন মালভূমি উপকূলীয় সমভূমি থেকে গড়ে ৬৫০ মিটার (২,১৩৩ ফুট) উচ্চতায় উঠেছে। নিরক্ষীয় রেইনফরেস্ট এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করে, যদিও আর্দ্র এবং শুষ্ক ঋতুর মধ্যে এটির পরিবর্তন উপকূলের তুলনায় কম আর্দ্র করে তোলে। এই এলাকা আটলান্টিক নিরক্ষীয় উপকূলীয় বন ইকোরিজিয়নের অংশ। ক্যামেরুন রেঞ্জ নামে পরিচিত পর্বত, পাহাড় এবং মালভূমির একটি অনিয়মিত শৃঙ্খল উপকূলে ক্যামেরুন পর্বত থেকে বিস্তৃত - ক্যামেরুনের সর্বোচ্চ বিন্দু ৪,০৯৫ মিটার (১৩,৪৩৫ ফুট) - প্রায় ক্যামেরুনের উত্তর সীমান্তে চাদ লেক পর্যন্ত ১৩০° এন. এই অঞ্চলে হালকা জলবায়ু রয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিম উচ্চ মালভূমিতে, যদিও বৃষ্টিপাত বেশি। এর মাটি ক্যামেরুনের সবচেয়ে উর্বর, বিশেষ করে আগ্নেয়গিরির মাউন্ট ক্যামেরুনের চারপাশে। এখানে আগ্নেয়গিরির কারণে ক্রেটার লেক তৈরি হয়েছে। ২১ আগস্ট ১৯৮৬, এর মধ্যে একটি, লেক নিওস, কার্বন ডাই অক্সাইড ঢেলে দেয় এবং ১,৭০০ থেকে ২,০০০ জনের মধ্যে মারা যায়। এই এলাকাটিকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড দ্বারা ক্যামেরুনিয়ান হাইল্যান্ডস বন ইকোরিজিয়ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দক্ষিণ মালভূমি উত্তর দিকে ঘাসযুক্ত, রুক্ষ আদামাওয়া মালভূমিতে উঠে গেছে। এই বৈশিষ্ট্যটি পশ্চিম পর্বত এলাকা থেকে প্রসারিত এবং দেশের উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে একটি বাধা তৈরি করে। এর গড় উচ্চতা হল ১,১০০ মিটার (৩,৬০৯ ফুট), এবং এর গড় তাপমাত্রা ২২ °C (৭১.৬ °F) থেকে ২৫ °C (৭৭ °F) এবং এপ্রিল এবং অক্টোবরের মধ্যে উচ্চ বৃষ্টিপাত জুলাই এবং আগস্টে সর্বোচ্চ। উত্তরের নিম্নভূমি অঞ্চলটি আদামাওয়ার প্রান্ত থেকে চাদ হ্রদ পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার (৯৮৪ থেকে ১,১৪৮ ফুট) গড় উচ্চতায় বিস্তৃত। এর বৈশিষ্ট্যযুক্ত গাছপালা হল সাভানা স্ক্রাব এবং ঘাস। এটি বিরল বৃষ্টিপাত এবং উচ্চ মাঝারি তাপমাত্রা সহ একটি শুষ্ক অঞ্চল। ক্যামেরুনে পানি নিষ্কাশনের চারটি প্যাটার্ন রয়েছে। দক্ষিণে, প্রধান নদীগুলি হল এন্তেম , নিওং, সানাগা এবং ওরি। এগুলি সরাসরি গিনি উপসাগরে দক্ষিণ-পশ্চিম বা পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। দিজা এবং কাদেই দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কঙ্গো নদীতে প্রবাহিত হয়। উত্তর ক্যামেরুনে, বেনু নদী উত্তর ও পশ্চিমে প্রবাহিত হয় এবং নাইজারে খালি হয়ে যায়। লগন উত্তর দিকে চাদ হ্রদে প্রবাহিত হয়, যা ক্যামেরুন তিনটি প্রতিবেশী দেশের সাথে ভাগ করে নেয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ২০১৩ সালে, ক্যামেরুনের মোট প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতার হার অনুমান করা হয়েছিল ৭১.৩%। ১৫-২৪ বছর বয়সী যুবকদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ছিল পুরুষদের জন্য ৮৫.৪% এবং মহিলাদের জন্য ৭৬.৪%। বেশির ভাগ শিশুরই সরকারি স্কুলে প্রবেশাধিকার আছে যেগুলো বেসরকারি ও ধর্মীয় সুবিধার চেয়ে সস্তা। শিক্ষাব্যবস্থা হল ব্রিটিশ এবং ফরাসি নজিরগুলির মিশ্রণ ইংরেজি বা ফরাসি ভাষায় বেশিরভাগ নির্দেশনা। আফ্রিকার স্কুলে উপস্থিতির হার ক্যামেরুনের অন্যতম। সাংস্কৃতিক মনোভাব, গার্হস্থ্য কর্তব্য, বাল্যবিবাহ, গর্ভাবস্থা এবং যৌন হয়রানির কারণে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় কম নিয়মিত স্কুলে যায়। যদিও উপস্থিতির হার দক্ষিণে বেশি, সেখানে অপর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়, যা উত্তরের স্কুলগুলিকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে কম কর্মী রেখে দেয়। ২০১৩ সালে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ছিল ৯৩.৫%। ক্যামেরুনে স্কুলে উপস্থিতিও শিশু শ্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার ফাইন্ডিংস অব দ্য ওয়ার্স্ট ফরম অব চাইল্ড লেবার রিপোর্ট করেছে যে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের ৫৬% শ্রমজীবী ​​শিশু এবং ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের প্রায় ৫৩% মিলিত কাজ এবং স্কুল। ডিসেম্বর ২০১৪ সালে, আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ব্যুরো দ্বারা তৈরি করা "শিশু শ্রম বা জোরপূর্বক শ্রম দ্বারা উত্পাদিত পণ্য" এর একটি তালিকায় কোকো উৎপাদনে শিশুশ্রমের আশ্রয় নেওয়া দেশগুলির মধ্যে ক্যামেরুনকে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার মান সাধারণত কম। জন্মের সময় আয়ু ২০১২ সালে ৫৬ বছর অনুমান করা হয়, ৪৮ সুস্থ জীবন বছর প্রত্যাশিত। ক্যামেরুনে উর্বরতার হার উচ্চ রয়ে গেছে যেখানে প্রতি মহিলার গড় ৪.৮ জন্ম এবং প্রথম জন্মের সময় একজন মায়ের গড় বয়স ১৯.৭ বছর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ক্যামেরুনে প্রতি ৫,০০০ জন মানুষের জন্য মাত্র একজন ডাক্তার আছে। ২০১৪ সালে, মোট জিডিপি ব্যয়ের মাত্র ৪.১% স্বাস্থ্যসেবাতে বরাদ্দ করা হয়েছিল। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় আর্থিক হ্রাসের কারণে, অল্প সংখ্যক পেশাদার রয়েছে। ক্যামেরুনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তার এবং নার্সরা দেশত্যাগ করেন কারণ ক্যামেরুনে কাজের চাপ বেশি থাকলেও অর্থ প্রদানের পরিমাণ কম। তাদের সাহায্যের প্রয়োজন হলেও নার্সরা বেকার। তাদের মধ্যে কিছু স্বেচ্ছায় সাহায্য করে যাতে তারা তাদের দক্ষতা হারাতে না পারে। প্রধান শহরগুলির বাইরের অংশে, সুযোগ-সুবিধাগুলি প্রায়ই নোংরা এবং দুর্বলভাবে গোছানো হয়। ২০১২ সালে, শীর্ষ তিনটি মারাত্মক রোগ ছিল এইচআইভি/এইডস, নিম্ন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, এবং ডায়রিয়াজনিত রোগ। স্থানীয় রোগের মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু জ্বর, ফাইলেরিয়াসিস, লেশম্যানিয়াসিস, ম্যালেরিয়া, মেনিনজাইটিস, স্কিস্টোসোমিয়াসিস, এবং ঘুমের অসুস্থতা। ২০১৬ সালে এইচআইভি/এইডস প্রাদুর্ভাবের হার ১৫-৪৯ বছর বয়সীদের জন্য ৩.৮% অনুমান করা হয়েছিল, যদিও অসুস্থতার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কলঙ্ক কৃত্রিমভাবে কম রিপোর্ট করা মামলার সংখ্যা রাখে। ২০১৬ সালে ১৪ বছরের কম বয়সী ৪৬,০০০ শিশু এইচআইভিতে বসবাস করছে বলে অনুমান করা হয়েছিল। ক্যামেরুনে, ৫৮% যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত তাদের অবস্থা জানেন এবং মাত্র ৩৭% এআরভি চিকিত্সা পান। ২০১৬ সালে, ২৯,০০০ এইডসের কারণে প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু উভয়ের মৃত্যু ঘটেছে। স্তন চ্যাপ্টা করা, একটি ঐতিহ্যগত অভ্যাস যা ক্যামেরুনে প্রচলিত, এটি মেয়েদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। ফিমেল জেনিটাল মিটিলেশন (FGM), যদিও ব্যাপক নয়, কিছু জনগোষ্ঠীর মধ্যে চর্চা করা হয়; ২০১৩ এর একটি ইউনিসেফ রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যামেরুনের ১% মহিলা ফিমেল জেনিটাল মিটিলেশন এর মধ্য দিয়ে গেছে। এছাড়াও ২০১৪ সালে মহিলাদের এবং মেয়েদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে, গর্ভনিরোধক প্রাদুর্ভাবের হার অনুমান করা হয়েছে মাত্র ৩৪.৪%। ঐতিহ্যগত নিরাময়কারীরা প্রমাণ-ভিত্তিক ওষুধের একটি জনপ্রিয় বিকল্প হিসাবে রয়ে গেছে। অর্থনীতি এবং অবকাঠামো ২০১৭ সালে ক্যামেরুনের মাথাপিছু জিডিপি (ক্রয় ক্ষমতা সমতা) অনুমান করা হয়েছিল ইউএস $৩,৭০০। প্রধান রপ্তানি বাজারের মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, চীন, বেলজিয়াম, ইতালি, আলজেরিয়া এবং মালয়েশিয়া। ক্যামেরুনের এক দশক শক্তিশালী অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর গড়ে ৪% হারে জিডিপি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্যামেরুন হল ব্যাংক অফ সেন্ট্রাল আফ্রিকান স্টেটস (যার মধ্যে এটি প্রভাবশালী অর্থনীতি), সেন্ট্রাল আফ্রিকার কাস্টমস অ্যান্ড ইকোনমিক ইউনিয়ন (UDEAC) এবং অর্গানাইজেশন ফর দ্য হারমোনাইজেশন অফ বিজনেস ল ইন আফ্রিকা (OHADA)। এর মুদ্রা হল সিএফএ ফ্রাঙ্ক। ২০১৯ সালে বেকারত্ব ৩.৩৮% এ অনুমান করা হয়েছিল, এবং ২৩.৮% জনসংখ্যা ২০১৪ সালে প্রতিদিন ইউএস $১.৯০ এর আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছিলেন। ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিক থেকে, ক্যামেরুন দারিদ্র্য হ্রাস, শিল্প বেসরকারিকরণ, এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) দ্বারা প্রস্তাবিত কর্মসূচি অনুসরণ করছে। দেশে পর্যটনকে উৎসাহিত করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। আনুমানিক ৭০% জনসংখ্যা খামার, এবং কৃষি ২০১৭ সালে জিডিপির আনুমানিক ১৬.৭% নিয়ে গঠিত। স্থানীয় কৃষকরা সাধারণ হাতিয়ার ব্যবহার করে জীবিকা নির্বাহের স্কেলে বেশিরভাগ কৃষিকাজ করেন। তারা তাদের উদ্বৃত্ত পণ্য বিক্রি করে এবং কেউ কেউ বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য আলাদা ক্ষেত্র বজায় রাখে। শহুরে কেন্দ্রগুলি তাদের খাদ্য সামগ্রীর জন্য কৃষকদের কৃষির উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। উপকূলের মাটি এবং জলবায়ু কলা, কোকো, তেল পাম, রাবার এবং চায়ের ব্যাপক বাণিজ্যিক চাষকে উৎসাহিত করে। দক্ষিণ ক্যামেরুন মালভূমিতে অভ্যন্তরীণ অর্থকরী ফসলের মধ্যে রয়েছে কফি, চিনি এবং তামাক। কফি পশ্চিমের উচ্চভূমিতে একটি প্রধান অর্থকরী ফসল এবং উত্তরে, প্রাকৃতিক অবস্থা তুলা, চীনাবাদাম এবং ধানের মতো ফসলের অনুকূল। ফেয়ারট্রেড তুলা উৎপাদন ২০০৪ সালে ক্যামেরুনে শুরু হয়েছিল। সারা দেশে পশুসম্পদ উত্থাপিত হয়। মাছ ধরা ৫,০০০ লোক নিয়োগ করে এবং প্রতি বছর ১০০,০০০ টন সামুদ্রিক খাবার সরবরাহ করে। বুশমিট, দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ ক্যামেরুনবাসীদের প্রধান খাদ্য, আজকে দেশের শহুরে কেন্দ্রগুলিতে একটি সুস্বাদু খাবার। দক্ষিণাঞ্চলীয় রেইনফরেস্টে বিশাল কাঠের মজুদ রয়েছে, যা ক্যামেরুনের মোট ভূমি এলাকার ৩৭% কভার করে। তবে, বনের বিশাল এলাকায় পৌঁছানো কঠিন। লগিং, মূলত বিদেশী মালিকানাধীন সংস্থাগুলি দ্বারা পরিচালিত হয়, সরকারকে বছরে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ট্যাক্স প্রদান করে (১৯৯৮ অনুযায়ী), এবং আইনগুলি কাঠের নিরাপদ এবং টেকসই শোষণকে বাধ্যতামূলক করে। তা সত্ত্বেও, বাস্তবে, ক্যামেরুনে সবচেয়ে কম নিয়ন্ত্রিত একটি হল শিল্প । কারখানা ভিত্তিক শিল্প ২০১৭ সালে জিডিপির আনুমানিক ২৬.৫% জন্য দায়ী। ক্যামেরুনের শিল্প শক্তির ৭৫% এরও বেশি ডুয়ালা এবং বোনাবেরিতে অবস্থিত। ক্যামেরুনে যথেষ্ট পরিমাণে খনিজ সম্পদ রয়েছে, কিন্তু এগুলো ব্যাপকভাবে খনন করা হয় না (ক্যামেরুনে খনির কাজ দেখুন)। ১৯৮৬ সাল থেকে পেট্রোলিয়াম শোষণ হ্রাস পেয়েছে, তবে এটি এখনও একটি উল্লেখযোগ্য খাত যে দামের হ্রাস অর্থনীতিতে একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলে। নদীপ্রপাত এবং জলপ্রপাতগুলি দক্ষিণের নদীগুলিকে বাধা দেয়, তবে এই সাইটগুলি জলবিদ্যুৎ বিকাশের সুযোগ দেয় এবং ক্যামেরুনের বেশিরভাগ শক্তি সরবরাহ করে। সানাগা নদী সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে শক্তি দেয়, এটি এডেতে অবস্থিত। ক্যামেরুনের বাকি শক্তি তেল চালিত তাপ ইঞ্জিন থেকে আসে। দেশের বেশিরভাগ নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়াই রয়ে গেছে। ক্যামেরুনে পরিবহন প্রায়ই কঠিন। সড়কপথের মাত্র ৬.৬% পিচঢালা। রোডব্লকগুলি প্রায়ই যাত্রীদের কাছ থেকে ঘুষ সংগ্রহের জন্য পুলিশ এবং জেন্ডারমেদের অনুমতি দেওয়ার চেয়ে সামান্য অন্য উদ্দেশ্য পরিবেশন করে। সড়ক দস্যুতা দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে পরিবহন ব্যাহত করেছে এবং ২০০৫ সাল থেকে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র আরও অস্থিতিশীল হওয়ার কারণে পূর্বে সমস্যাটি তীব্র হয়েছে। একাধিক বেসরকারী কোম্পানি দ্বারা চালিত আন্তঃনগর বাস পরিষেবাগুলি সমস্ত প্রধান শহরকে সংযুক্ত করে। তারা রেল পরিষেবা ক্যামরাইল অনুসরণ করে পরিবহনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। রেল পরিষেবা পশ্চিমে কুম্বা থেকে পূর্বে বেলাবো পর্যন্ত এবং উত্তরে নগাউন্ডেরে পর্যন্ত চলে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মারোয়া নির্মাণাধীন একটি তৃতীয় সঙ্গে, ডুয়ালা এবং ইয়াউন্ডে অবস্থিত. ডুয়ালা হল দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর উত্তরে, বেনোউ নদী ঋতু অনুসারে গারুয়া থেকে নাইজেরিয়ায় চলাচলের উপযোগী। যদিও ২১ শতকের প্রথম দশক থেকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উন্নতি হয়েছে, সংবাদপত্র দুর্নীতিগ্রস্ত এবং বিশেষ স্বার্থ ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দৃষ্টিতে দেখা যায়। সরকারী প্রতিহিংসা এড়াতে সংবাদপত্র নিয়মিতভাবে স্ব-সেন্সর করে। প্রধান রেডিও এবং টেলিভিশন স্টেশনগুলি হল রাষ্ট্র-চালিত এবং অন্যান্য যোগাযোগ, যেমন ভূমি-ভিত্তিক টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফ, মূলত সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যাইহোক, সেল ফোন নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট প্রদানকারী ২১ শতকের প্রথম দশক থেকে নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যা মূলত অনিয়ন্ত্রিত। জনসংখ্যা ২০১৮ সালে ক্যামেরুনের জনসংখ্যা ছিল ২৫,২১৬,২৬৭ জন। আয়ুষ্কাল ছিল ৬২.৩ বছর (পুরুষদের জন্য ৬০.৬ বছর এবং মহিলাদের জন্য ৬৪ বছর)। ক্যামেরুনে পুরুষদের (৪৯.৫%) তুলনায় কিছুটা বেশি নারী (৫০.৫%) রয়েছে। জনসংখ্যার ৬০% এরও বেশি বয়স ২৫ বছরের কম। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩.১১%। ক্যামেরুনের জনসংখ্যা প্রায় সমানভাবে শহুরে এবং গ্রামীণ বাসিন্দাদের মধ্যে বিভক্ত। জনসংখ্যার ঘনত্ব বৃহৎ নগর কেন্দ্র, পশ্চিম উচ্চভূমি এবং উত্তর-পূর্ব সমভূমিতে সর্বোচ্চ। ডুয়ালা, ইয়াউন্ডে এবং গারুয়া বৃহত্তম শহর। বিপরীতে, আদামাওয়া মালভূমি, দক্ষিণ-পূর্ব বেনোউ ডিপ্রেশন এবং দক্ষিণ ক্যামেরুন মালভূমির অধিকাংশই কম জনবসতিপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.৫৬% সহ ২০১৩ সালে উর্বরতার হার ছিল ৪.৮। অত্যধিক জনবহুল পশ্চিম উচ্চভূমি এবং অনুন্নত উত্তর থেকে মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য উপকূলীয় বৃক্ষরোপণ অঞ্চল এবং নগর কেন্দ্রে চলে যাচ্ছে। ছোট আন্দোলন ঘটছে শ্রমিকরা লাম্বার মিল এবং দক্ষিণ এবং পূর্বে বাগানে কর্মসংস্থান খুঁজছেন. যদিও জাতীয় লিঙ্গ অনুপাত তুলনামূলকভাবে সমান, তবে এই বহিরাগতরা প্রাথমিকভাবে পুরুষ, যা কিছু অঞ্চলে ভারসাম্যহীন অনুপাতের দিকে পরিচালিত করে। একগামী এবং বহুগামী উভয় বিবাহই প্রচলিত, এবং গড়ে ক্যামেরুনিয়ান পরিবার বড় এবং বর্ধিত হয়। উত্তর অংশে, মহিলারা বাড়ির দিকে ঝোঁক, এবং পুরুষরা গবাদি পশু পালন করে বা কৃষক হিসাবে কাজ করে। দক্ষিণে, মহিলারা পরিবারের খাদ্য বাড়ায় এবং পুরুষরা মাংস সরবরাহ করে এবং অর্থকরী ফসল ফলায়। ক্যামেরুনিয়ান সমাজ পুরুষ-শাসিত, এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং বৈষম্য সাধারণ। ক্যামেরুনে স্বতন্ত্র জাতিগত ও ভাষাগত গোষ্ঠীর সংখ্যা ২৩০ এবং ২৮২ এর মধ্যে অনুমান করা হয়। আদামাওয়া মালভূমি বিস্তৃতভাবে এগুলিকে উত্তর এবং দক্ষিণ বিভাগে বিভক্ত করেছে। উত্তরের জনগণ হল সুদানী গোষ্ঠী, যারা কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি এবং উত্তর নিম্নভূমিতে বাস করে এবং ফুলানি, যারা উত্তর ক্যামেরুন জুড়ে বিস্তৃত। চাদ হ্রদের কাছে অল্প সংখ্যক শুওয়া আরব বাস করে। দক্ষিণ ক্যামেরুন বান্টু এবং সেমি-বান্টু ভাষার ভাষাভাষীদের দ্বারা অধ্যুষিত। বান্টু-ভাষী গোষ্ঠীগুলি উপকূলীয় এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলে বাস করে, যখন আধা-বান্টু ভাষার ভাষাভাষীরা পশ্চিম ঘাসক্ষেত্রে বাস করে। প্রায় ৫,০০০ গেইল এবং বাকা পিগমি মানুষ দক্ষিণ-পূর্ব এবং উপকূলীয় রেইনফরেস্টে ঘোরাফেরা করে বা ছোট, রাস্তার পাশের বসতিতে বাস করে। নাইজেরিয়ানরা বিদেশী নাগরিকদের বৃহত্তম দল তৈরি করে। উদ্বাস্তু ২০০৭ সালে, ক্যামেরুন প্রায় ৯৭,৪০০ শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীকে আতিথ্য দিয়েছে। এর মধ্যে, ৪৯,৩০০ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক থেকে (অনেকগুলি যুদ্ধ দ্বারা পশ্চিমে চালিত), ৪১,৬০০ চাদ থেকে, এবং ২,৯০০ নাইজেরিয়া থেকে। সেন্ট্রাল আফ্রিকান দস্যুদের দ্বারা ক্যামেরুনিয়ান নাগরিকদের অপহরণ ২০০৫ সাল থেকে বেড়েছে। ২০১৪ সালের প্রথম মাসে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার শরণার্থী ক্যামেরুনে পৌঁছেছিল। ৪ জুন ২০১৪-এ, এলারটনেট রিপোর্ট করেছে: ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৯০,০০০ মানুষ প্রতিবেশী ক্যামেরুনে পালিয়ে গেছে এবং সপ্তাহে ২,০০০ পর্যন্ত, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, এখনও সীমান্ত অতিক্রম করছে, জাতিসংঘ বলেছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক এরথারিন কাজিন বলেছেন, "মহিলা এবং শিশুরা কয়েক সপ্তাহ, কখনও কখনও মাস, রাস্তায়, খাবারের জন্য চড়ার জন্য একটি মর্মান্তিক অবস্থায় ক্যামেরুনে পৌঁছেছে।" ভাষা ইংরেজি এবং ফরাসি উভয়ই সরকারী ভাষা, যদিও ফরাসি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বোঝা ভাষা (৮০% এরও বেশি)। জার্মান, মূল ঔপনিবেশিকদের ভাষা, অনেক আগেই ফরাসি এবং ইংরেজি দ্বারা স্থানচ্যুত হয়েছে। ক্যামেরুনিয়ান পিডগিন ইংরেজি হল পূর্বে ব্রিটিশ-শাসিত অঞ্চলের লিংগুয়া ফ্রাঙ্কা। ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ এবং পিডগিনের মিশ্রণ ক্যামফ্রাংলাইস নামক ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে নগর কেন্দ্রে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। সরকার ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় দ্বিভাষিকতাকে উৎসাহিত করে, এবং যেমন, সরকারী সরকারি নথি, নতুন আইন, ব্যালট, অন্যদের মধ্যে, উভয় ভাষায় লিখিত এবং সরবরাহ করা হয়। ক্যামেরুনে দ্বিভাষিকতাকে উৎসাহিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে, দেশের আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছয়টি সম্পূর্ণরূপে দ্বিভাষিক। ঔপনিবেশিক ভাষা ছাড়াও, প্রায় ২০ মিলিয়ন ক্যামেরুনিয়ানদের দ্বারা কথা বলা প্রায় ২৫০টি অন্যান্য ভাষা রয়েছে। এই কারণেই ক্যামেরুনকে বিশ্বের সবচেয়ে ভাষাগতভাবে বৈচিত্র্যময় দেশগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জার্মান ভাষার অধ্যয়নের জন্য জার্মানির সাথে অনেক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা এখনও ছাত্রদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়, ২০১০ সালে ক্যামেরুনে ৩০০,০০০ লোক জার্মান ভাষা শিখে বা বলতে পারে৷ আজ, ক্যামেরুন আফ্রিকান দেশগুলির মধ্যে একটি যেখানে সর্বাধিক জার্মান ভাষা জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সংখ্যা রয়েছে৷। সুদূর উত্তর, উত্তর এবং আদামাওয়ার উত্তরাঞ্চলে, ফুলানি ভাষা ফুলফুলদে হল সংযোগস্থাপনকারী ভাষা যেখানে ফরাসি শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক ভাষা হিসাবে কাজ করে। যদিও, লোগোন-এট-চারির সুদূর উত্তর অঞ্চলের চাদিয়ান আরবি নিরপেক্ষভাবে সংযোগস্থাপনকারী ভাষা হিসেবে কাজ করে। ২০১৭ সালে ফ্রাঙ্কোফোন ভাষাভাষিদের দ্বারা বৈষম্যমূলক নিপীড়নের বিরুদ্ধে অ্যাংলোফোন জনগণ ভাষাগত প্রতিবাদ করেছিল। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয় এবং মানুষ নিহত হয়, শত শত কারারুদ্ধ হয় এবং হাজার হাজার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। এটি অ্যাম্বাজোনিয়ার একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্রের ঘোষণায় পরিণত হয়, যেটি তখন থেকে অ্যাংলোফোন সংকটে পরিণত হয়েছে। অনুমান করা হয় যে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে, এই সংকটের ফলে ৭৪০,০০০ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। ধর্ম ক্যামেরুনে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বৈচিত্র্যের উচ্চ স্তর রয়েছে। প্রধান ধর্ম হল খ্রিস্টধর্ম, জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দ্বারা অনুশীলন করা হয়, যেখানে ইসলাম একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু ধর্ম, যা প্রায় এক-চতুর্থাংশ লোক মেনে চলে। উপরন্তু, ঐতিহ্যগত বিশ্বাস অনেক দ্বারা চর্চা করা হয়. মুসলিমদের উত্তরে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, এবং খ্রিস্টানদের প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ এবং পশ্চিম অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়, তবে উভয় ধর্মের অনুশীলনকারীদের সারা দেশে পাওয়া যেতে পারে। বড় শহর উভয় গ্রুপের উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা আছে. ক্যামেরুনের মুসলমানরা সুফি, সালাফি, শিয়া, এবং অ-সাম্প্রদায়িক মুসলমানদের মধ্যে বিভক্ত। উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশের লোকেরা, যারা ব্রিটিশ ক্যামেরুনের একটি অংশ ছিল, তাদের মধ্যে প্রোটেস্ট্যান্টদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দক্ষিণ এবং পশ্চিম অঞ্চলের ফরাসি ভাষী অঞ্চলগুলি মূলত ক্যাথলিক। দক্ষিণের জাতিগত গোষ্ঠীগুলি প্রধানত খ্রিস্টান বা ঐতিহ্যবাহী আফ্রিকান অ্যানিমিস্ট বিশ্বাসকে অনুসরণ করে, অথবা দুটির একটি সমন্বিত সংমিশ্রণ। মানুষ ব্যাপকভাবে জাদুবিদ্যায় বিশ্বাস করে, এবং সরকার এই ধরনের অভ্যাসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সন্দেহভাজন ডাইনিরা প্রায়ই জনতার সহিংসতার শিকার হয়। ইসলামপন্থী জিহাদি গ্রুপ আনসার আল-ইসলাম উত্তর ক্যামেরুনে তাদের কর্মকাণ্ড চালায় বলে জানা গেছে। উত্তরাঞ্চলে, স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ফুলানি জাতিগত গোষ্ঠী বেশিরভাগই মুসলিম, তবে সামগ্রিক জনসংখ্যা মুসলমান, খ্রিস্টান এবং আদিবাসী ধর্মীয় বিশ্বাসের অনুসারীদের (ফুলানিদের দ্বারা কির্দি বা পৌত্তলিক নামে ডাকা হয়) মধ্যে মোটামুটি সমানভাবে বিভক্ত। পশ্চিম অঞ্চলের বামুম জাতিগত গোষ্ঠী মূলত মুসলিম। স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী ধর্মগুলি সারা দেশে গ্রামীণ অঞ্চলে চর্চা করা হয় তবে শহরগুলিতে খুব কমই প্রকাশ্যে চর্চা করা হয়, কারণ অনেক আদিবাসী ধর্মীয় গোষ্ঠী স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্থানীয় চরিত্রের। সংস্কৃতি গান এবং নাচ সঙ্গীত এবং নৃত্য হল ক্যামেরুনীয় অনুষ্ঠান, উৎসব, সামাজিক সমাবেশ এবং গল্প বলার অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঐতিহ্যগত নৃত্যগুলি অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত ও নারী-পুরুষের আলাদা আলাদা ব্যবস্থা করা হয় বা সম্পূর্ণভাবে সম-লিঙ্গের দ্বারা অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ। নাচের উদ্দেশ্য বিশুদ্ধ বিনোদন থেকে ধর্মীয় ভক্তি পর্যন্ত। ঐতিহ্যগতভাবে, সঙ্গীত মৌখিকভাবে আদান প্রদান হয় একটি সাধারণ উপস্থাপনায়, একদল গায়কের একক ধ্বনিতে। বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে হাততালি দেওয়া এবং পায়ে স্ট্যাম্পিং করা সহজ হতে পারে, তবে ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ড্যান্সারদের পরিহিত ঘণ্টা, তালি, ড্রাম এবং কথা বলার ড্রাম, বাঁশি, হর্ন, র‍্যাটল, স্ক্র্যাপার, তারযুক্ত যন্ত্র, শিস, এবং জাইলোফোন; এগুলির সংমিশ্রণ জাতিগত গোষ্ঠী এবং অঞ্চল অনুসারে পরিবর্তিত হয়। কিছু পারফর্মার বীণার মতো বাদ্যযন্ত্র নিয়ে একাই সম্পূর্ণ গান গায়। জনপ্রিয় সঙ্গীত শৈলীর মধ্যে রয়েছে উপকূলের অ্যাম্বাসে বে, বাসার অ্যাসিকো, ব্যাংগাংতে ম্যাঙ্গাম্বেউ এবং বামিলেকের তসামাসি। নাইজেরিয়ান সঙ্গীত অ্যাংলোফোন ক্যামেরুনিয়ান পারফরমারদের প্রভাবিত করেছে এবং প্রিন্স নিকো এমবার্গার হাইলাইফ হিট "সুইট মাদার" ইতিহাসের শীর্ষ-বিক্রীত আফ্রিকান রেকর্ড। দুটি সর্বাধিক জনপ্রিয় সঙ্গীত শৈলী হল মাকোসা এবং বিকুটসি। মাকোসা ডুয়ালায় বিকশিত হয়েছে এবং লোকসংগীত, উচ্চজীবন, আত্মা এবং কঙ্গো সঙ্গীতকে মিশ্রিত করেছে। মনু দিবাঙ্গো, ফ্রান্সিস বেবে, মনি বিলে এবং পেটিট-পেসের মতো অভিনয়শিল্পীরা ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী শৈলীটিকে জনপ্রিয় করেছিলেন। বিকুটসি ইওনডোর মধ্যে যুদ্ধ সঙ্গীত হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল। এন ম্যারি এর মতো শিল্পীরা এটিকে ১৯৪০-এর দশকে শুরু করে একটি জনপ্রিয় নৃত্য সঙ্গীতে বিকশিত করেছিলেন এবং মামা ওহান্ডজা এবং লেস টেটস ব্রুলিসের মতো অভিনয়শিল্পীরা ১৯৬০, ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে এটিকে আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় করেছিলেন। ছুটির দিন ক্যামেরুনে দেশপ্রেমের সাথে যুক্ত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছুটি হল জাতীয় দিবস, যাকে ঐক্য দিবসও বলা হয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় ছুটির মধ্যে রয়েছে অ্যাসাম্পশন ডে এবং অ্যাসেনশন ডে, যা সাধারণত ইস্টারের ৩৯ দিন পরে হয়। উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশ, সম্মিলিতভাবে যাকে আম্বাজোনিয়া বলা হয়, সেখানে ১ লা অক্টোবর জাতীয় ছুটির দিন হিসাবে বিবেচিত হয়, যে তারিখটি এম্বাজোনিয়ানরা ক্যামেরুন থেকে তাদের স্বাধীনতা দিবস হিসাবে বিবেচনা করে। খাবারের ধরন অঞ্চলভেদে খাবারের ধরন ভিন্নরকম হয়, তবে বড় পরিসরের, এক-বেলার, সন্ধ্যার খাবার সারা দেশে প্রচলিত। একটি সাধারণ খাবার কোকোইয়াম, ভুট্টা, কাসাভা (ম্যানিক), বাজরা, কলা, আলু, চাল বা ইয়ামগুলির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, যা প্রায়শই ময়দার মতো ফুফুতে ঢেলে দেওয়া হয়। এটি একটি সস, স্যুপ, বা সবুজ শাক, চীনাবাদাম, পাম তেল, বা অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি স্টু দিয়ে পরিবেশন করা হয়। মাংস এবং মাছ জনপ্রিয় কিন্তু ব্যয়বহুল সংযোজন, মুরগির মাংস প্রায়ই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য সংরক্ষিত থাকে। খাবারগুলো প্রায়ই বেশ মশলাদার হয়; মশলাগুলোতে লবণ, লাল মরিচের সস এবং ম্যাগি দেয়া হয়। কাটলারি সাধারণ খাবার, কিন্তু খাদ্যটি ঐতিহ্যগতভাবে ডান হাত দিয়ে পরিবেশন করা হয়। সকালের নাস্তার মধ্যে থাকে কফি বা চা সহ রুটি এবং ফলের অবশিষ্টাংশ। সাধারণত সকালের নাস্তা গমের আটা দিয়ে বিভিন্ন খাবার যেমন পাফ-পাফ (ডোনাটস), কলা এবং ময়দা দিয়ে তৈরি আকরা কলা, শিমের কেক এবং আরও অনেক কিছুতে তৈরি করা হয়। স্ন্যাকস জনপ্রিয়, বিশেষ করে বড় শহরে যেখানে তারা রাস্তার বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনা যেতে পারে। পানি, পাম ওয়াইন এবং মিলেট বিয়ার হল ঐতিহ্যবাহী খাবারের পানীয়, যদিও বিয়ার, সোডা এবং ওয়াইন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ৩৩ এক্সপোর্ট বিয়ার হল জাতীয় ফুটবল দলের অফিসিয়াল পানীয় এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে একটি। ফ্যাশন ক্যামেরুনের তুলনামূলকভাবে বড় এবং বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যা তার সমসাময়িক ফ্যাশনেও বৈচিত্র্যময়। জলবায়ু; ধর্মীয়, জাতিগত এবং সাংস্কৃতিক বিশ্বাস; এবং উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এবং বিশ্বায়নের প্রভাব আধুনিক ক্যামেরুনিয়ান পোশাকে প্রতিফলিত হয়। পোশাকের উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগুলির মধ্যে রয়েছে: ক্যামেরুনের নারীদের পরিহিত প্যাগনেস, সারং; ঐতিহ্যবাহী টুপি চেচিয়া; পুরুষ হ্যান্ডব্যাগ কোয়া; এবং পুরুষদের প্রচলিত পোষাক গান্ডুরা। লেফাফা এবং কটি কাপড় মহিলা এবং পুরুষ উভয়ের দ্বারা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় তবে তাদের ব্যবহার অঞ্চলভেদে পরিবর্তিত হয়, ফুলানি শৈলীর প্রভাব উত্তরে বেশি এবং ইগবো এবং ইওরুবা শৈলীর প্রভাব দক্ষিণ ও পশ্চিমে বেশি দেখা যায়। ইমানে আইসি ক্যামেরুনের শীর্ষ ফ্যাশন ডিজাইনারদের একজন যিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। স্থানীয় শিল্প ও কারুশিল্প বাণিজ্যিক, আলংকারিক এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যে সারা দেশে ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও কারুশিল্প চর্চা করা হয়। কাঠের খোদাই এবং ভাস্কর্যগুলি বিশেষভাবে সাধারণ পশ্চিম উচ্চভূমির উচ্চ মানের কাদামাটি মৃৎশিল্প এবং সিরামিকের জন্য ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য কারুশিল্পের মধ্যে রয়েছে ঝুড়ি বুনন, পুঁতির কাজ, পিতল ও ব্রোঞ্জের কাজ, ক্যালাব্যাশ খোদাই এবং পেইন্টিং, এমব্রয়ডারি এবং চামড়ার কাজ। ঐতিহ্যবাহী আবাসন শৈলীতে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয় এবং যাযাবর মবোরোর অস্থায়ী কাঠ-এবং-পাতার আশ্রয় থেকে দক্ষিণের জনগণের আয়তক্ষেত্রাকার কাদা-এবং-থ্যাচ ঘর পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। সিমেন্ট এবং টিনের মতো উপকরণের বাসস্থানগুলি ক্রমবর্ধমান সাধারণ। সমসাময়িক শিল্প প্রধানত স্বাধীন সাংস্কৃতিক সংগঠন (ডুয়াল'আর্ট, আফ্রিকা) এবং শিল্পী-চালিত উদ্যোগ (আর্ট ওয়াশ, অ্যাটেলিয়ার ভাইকিং, আর্টবেকারি) দ্বারা প্রচারিত হয়। সাহিত্য ক্যামেরুনিয়ান সাহিত্য ইউরোপীয় এবং আফ্রিকান উভয় থিমগুলিতে মনোনিবেশ করেছে। ঔপনিবেশিক যুগের লেখক যেমন লুই-মারি পাউকা এবং সানকি মাইমো ইউরোপীয় মিশনারি সোসাইটি দ্বারা শিক্ষিত ছিলেন এবং ক্যামেরুনকে আধুনিক বিশ্বে নিয়ে আসার জন্য ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে আত্তীকরণের পক্ষে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, মঙ্গো বেটি এবং ফার্দিনান্দ ওয়োনোর মতো লেখকরা ঔপনিবেশিকতার বিশ্লেষণ ও সমালোচনা করেছিলেন এবং আত্তীকরণকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। চলচ্চিত্র এবং সাহিত্য স্বাধীনতার পরপরই, জিন-পল এনগাসা এবং থেরেসে সীতা-বেলার মতো চলচ্চিত্র নির্মাতারা একইরকম থিম অন্বেষণ করেছিলেন। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি, জাঁ-পিয়েরে ডিকংগুয়ে পিপা এবং ড্যানিয়েল কামওয়া-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাতারা ঐতিহ্যগত এবং উত্তর-ঔপনিবেশিক সমাজের মধ্যে দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করেছিলেন। পরবর্তী দুই দশকে সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে সম্পূর্ণ ক্যামেরুনিয়ান থিমগুলির উপর বেশি মনোযোগ দেয়া হয়। খেলাধুলা জাতীয় নীতিমালা দৃঢ়ভাবে সব ধরনের খেলাধুলার সমর্থন করে। ঐতিহ্যবাহী খেলার মধ্যে রয়েছে ক্যানো রেসিং এবং কুস্তি, এবং প্রতি বছর ৪০ কিমি (২৫ মাইল) মাউন্ট ক্যামেরুন রেস অফ হোপে কয়েক শত দৌড়বিদ অংশগ্রহণ করে। শীতকালীন অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী কয়েকটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশের মধ্যে ক্যামেরুন অন্যতম। ক্যামেরুনে খেলাধুলার প্রাধান্য রয়েছে ফুটবলে। অপেশাদার ফুটবল ক্লাবগুলি প্রচুর, জাতিগত লাইনে বা কর্পোরেট স্পনসরদের অধীনে সংগঠিত। ১৯৮২ এবং ১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপে শক্তিশালী প্রদর্শনের পর থেকে জাতীয় দল আফ্রিকার অন্যতম সফল দল। ক্যামেরুন পাঁচটি আফ্রিকান কাপ অফ নেশনস শিরোপা এবং ২০০০ অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছে। ক্যামেরুন ছিল ২০১৬ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে নারী আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস, ২০২০ আফ্রিকান নেশনস চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০২১ আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস এর আয়োজক দেশ। ক্যামেরুনের মহিলা ফুটবল দল "অদম্য সিংহী" নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণকারী ক্যামেরুন ক্রিকেট ফেডারেশনের সাথে ক্রিকেটও একটি উদীয়মান খেলা হিসেবে ক্যামেরুনে প্রবেশ করেছে। আরও দেখুন মন্তব্য তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Global Integrity Report: Cameroon has reporting on anti-corruption in Cameroon Presidency of the Republic of Cameroon প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ক্যামেরুনের জাতীয় বিধানসভা CRTV — ক্যামেরুন রেডিও টেলিভিশন ক্যামেরুন পর্যটন উত্তর আমেরিকাতে পর্যটন তথ্য দপ্তর। রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Cameroon from UCB Libraries GovPubs Cameroon from CamerPAGES আফ্রিকার রাষ্ট্র ক্যামেরুন ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Cameroon
Cameroon
Cameroon, officially the Republic of Cameroon, is a country in Central Africa. It shares boundaries with Nigeria to the west and north, Chad to the northeast, the Central African Republic to the east, and Equatorial Guinea, Gabon and the Republic of the Congo to the south. Its coastline lies on the Bight of Biafra, part of the Gulf of Guinea and the Atlantic Ocean. Due to its strategic position at the crossroads between West Africa and Central Africa, it has been categorized as being in both camps. Cameroon's population of nearly 31 million people speak 250 native languages, in addition to the national tongues of English and French, or both. Early inhabitants of the territory included the Sao civilisation around Lake Chad and the Baka hunter-gatherers in the southeastern rainforest. Portuguese explorers reached the coast in the 15th century and named the area Rio dos Camarões (Shrimp River), which became Cameroon in English. Fulani soldiers founded the Adamawa Emirate in the north in the 19th century, and various ethnic groups of the west and northwest established powerful chiefdoms and fondoms. Cameroon became a German colony in 1884 known as Kamerun. After World War I, it was divided between France and the United Kingdom as League of Nations mandates. France took 4/5 and the United Kingdom 1/5 of the territory and both ruled it under mandate until independence in 1960 and 1961 respectively. The Union des Populations du Cameroun (UPC) political party advocated independence but was outlawed by France in the 1950s, leading to the national liberation insurgency fought between French and UPC militant forces until early 1971. In 1960, the French-administered part of Cameroon became independent, as the Republic of Cameroun, under President Ahmadou Ahidjo. The southern part of British Cameroons federated with it in 1961 to form the Federal Republic of Cameroon. The federation was abandoned in 1972. The country was renamed the United Republic of Cameroon in 1972 and back to the Republic of Cameroon in 1984 by a presidential decree by president Paul Biya. Biya, the incumbent president, has led the country since 1982 following Ahidjo's resignation; he previously held office as prime minister from 1975 onward. Cameroon is governed as a unitary presidential republic. The official languages of Cameroon are French and English, the official languages of former French Cameroons and British Cameroons. Christianity is the majority religion in Cameroon, with significant minorities practising Islam and traditional faiths. It has experienced tensions from the English-speaking territories, where politicians have advocated for greater decentralisation and even complete separation or independence (as in the Southern Cameroons National Council). In 2017, tensions over the creation of an Ambazonian state in the English-speaking territories escalated into open warfare. Large numbers of Cameroonians live as subsistence farmers. The country is often referred to as "Africa in miniature" for its geological, linguistic and cultural diversity. Its natural features include beaches, deserts, mountains, rainforests, and savannas. Cameroon's highest point, at almost 4,100 metres (13,500 ft), is Mount Cameroon in the Southwest Region. Cameroon's most populous cities are Douala on the Wouri River, its economic capital and main seaport; Yaoundé, its political capital; and Garoua. Limbé in the southwest has a natural seaport. Cameroon is well known for its native music styles, particularly Makossa, Njang and Bikutsi, and its successful national football team. It is a member state of the African Union, the United Nations, the Organisation Internationale de la Francophonie (OIF), the Commonwealth of Nations, the Non-Aligned Movement and the Organisation of Islamic Cooperation.
1382
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%20%E0%A6%86%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
মধ্য আফ্রিকা
মধ্য আফ্রিকা আফ্রিকার মধ্যভাগে অবস্থিত একটি অঞ্চল। এখানে মূলত ১১টি রাষ্ট্র আছে। এরা একত্রে মধ্য আফ্রিকান রাষ্ট্রসমূহের অর্থনৈতিক সম্প্রদায় গঠন করেছে। ২০১১ সাল থেকে দক্ষিণ সুদান স্বাধীনতা লাভের পরে সেই দেশটিকেও সাধারণত এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্রসমূহের তালিকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ মধ্য আফ্রিকা মধ্য আফ্রিকার ভূগোল আফ্রিকার অঞ্চল
https://en.wikipedia.org/wiki/Central_Africa
Central Africa
Central Africa is a subregion of the African continent comprising various countries according to different definitions. Middle Africa is an analogous term used by the United Nations in its geoscheme for Africa and consists of the following countries: Angola, Cameroon, Central African Republic, Chad, Democratic Republic of the Congo, Republic of the Congo, Equatorial Guinea, Gabon, and São Tomé and Príncipe. The United Nations Office for Central Africa also includes Burundi and Rwanda in the region, which are considered part of East Africa in the geoscheme. These eleven countries are members of the Economic Community of Central African States (ECCAS). Six of those countries (Cameroon, Central African Republic, Chad, Equatorial Guinea, Gabon, and Republic of the Congo) are also members of the Economic and Monetary Community of Central Africa (CEMAC) and share a common currency, the Central African CFA franc. The African Development Bank, on the other hand, defines Central Africa as seven countries: Cameroon, Central African Republic, Chad, Republic of the Congo, Democratic Republic of Congo, Equatorial Guinea, and Gabon.
1383
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%B8
কোমোরোস
কমোরোস দ্বীপপুঞ্জ ভারত মহাসাগরে অবস্থিত কতগুলি দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। দেশটি মোজাম্বিক চ্যানেলের উত্তর প্রান্তে মোজাম্বিক থেকে ২৯০ কিলোমিটার দূরে এবং মাদাগাস্কার থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জ ১৯৭৫ সাল থেকে একটি স্বায়ত্তশাসিত এলাকা হিসেবে কাজ করছে। ঐ বছর কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জের চারটি দ্বীপের তিনটি ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এগুলি হল ঞ্জাজিজা (বা বৃহৎ কোমোর দ্বীপ), ঞ্জাওয়ানি এবং মোয়ালি। কমোরোস দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী মোরোনি ঞ্জাজিজা দ্বীপে অবস্থিত। কমর রাষ্ট্র দ্বীপপুঞ্জের চতুর্থ দ্বীপ মায়োতের উপর সার্বভৌমত্ব দাবী করলেও দ্বীপটি এখনও একটি ফরাসি শাসনাধীন এলাকার মর্যাদাপ্রাপ্ত। ইসলাম ধর্ম কমোরোস দ্বীপপুঞ্জের রাষ্ট্রধর্ম। ইতিহাস রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি সামরিক বাহিনী কোমোরোসের সামরিক বাহিনীর নাম Armée nationale de développement বা আর্মে নাসিওনাল দ্য দেভেলপমঁ। এটিতে একটি ক্ষুদ্র স্থলসেনাবাহিনী, ৫০০ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ বাহিনী এবং ৫০০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা বাহিনী আছে। ফ্রান্স কোমোরোসের নৌ প্রতিরক্ষা প্রদান করে, সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয় এবং আকাশপথ নজরদারির কাজ করে। কোমোরোস সরকারের অনুরোধে এখানে ফ্রান্সের একটি ছোট সামরিক দলের ঘাঁটি আছে। আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জের সরকারি ওয়েবসাইট রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Comoros Humanitarian news and analysis from IRIN Country Profile from BBC News Comoros from UCB Libraries GovPubs Drs. Martin and Harriet Ottenheimer - Comoro Islands আফ্রিকার রাষ্ট্র ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র আরব লিগের সদস্য রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল কোমোরোস আরবিভাষী দেশ ও অঞ্চল পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র ফেডারেল প্রজাতন্ত্র ভারত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র দ্বীপ রাষ্ট্র স্বল্পোন্নত দেশ ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র ১৯৭৫-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Comoros
Comoros
The Comoros, officially the Union of the Comoros, is an archipelagic country made up of three islands in Southeastern Africa, located at the northern end of the Mozambique Channel in the Indian Ocean. Its capital and largest city is Moroni. The religion of the majority of the population, and the official state religion, is Sunni Islam. Comoros proclaimed its independence from France on 6 July 1975. The Comoros is the only country of the Arab League which is entirely in the Southern Hemisphere. It is a member state of the African Union, the Organisation internationale de la Francophonie, the Organisation of Islamic Co-operation, and the Indian Ocean Commission. The country has three official languages: Shikomori, French and Arabic. At 1,659 km2 (641 sq mi), the Comoros is the third-smallest African country by area. In 2019, its population was estimated to be 850,886. The sovereign state consists of three major islands and numerous smaller islands, all of the volcanic Comoro Islands with the exception of Mayotte. Mayotte voted against independence from France in a referendum in 1974, and continues to be administered by France as an overseas department. France has vetoed a United Nations Security Council resolution that would have affirmed Comorian sovereignty over the island. Mayotte became an overseas department and a region of France in 2011 following a referendum which was passed overwhelmingly. The Comoros were likely first settled by Austronesian/Malagasy peoples, Bantu speakers from East Africa, and seafaring Arab traders. It became part of the French colonial empire during the 19th century, before its independence in 1975. It has experienced more than 20 coups or attempted coups, with various heads of state assassinated. Along with this constant political instability, it has one of the highest levels of income inequality of any nation, and ranks in the medium quartile on the Human Development Index. Between 2009 and 2014, about 19% of the population lived below the international poverty line of US$1.90 a day by purchasing power parity.
1384
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%95%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%8B%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র বা ডিআরসি ( ফরাসি: République démocratique du Congo; কঙ্গো : Repubilika ya Kôngo ya Dimokalasi )–যা পূর্বে জায়ার নামে পরিচিত ছিল– মধ্য আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। ভূমি এলাকা অনুসারে ডিআরসি হল আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ এবং বিশ্বের ১১ তম বৃহত্তম দেশ । প্রায় ১১২ মিলিয়ন জনসংখ্যা বসবাসকারী এই দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলির একটি। জাতীয় রাজধানী ও বৃহত্তম শহর হল কিনশাসা, যা অর্থনৈতিক কেন্দ্রও বটে। দেশটি কঙ্গো প্রজাতন্ত্র , মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, তানজানিয়া, বুরুন্ডি, জাম্বিয়া, অ্যাঙ্গোলা এবং দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সীমান্তে অবস্থিত। ইতিহাস তৎকালীন কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৬০ সালের ৩০ জুন বেলজিয়াম থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে এবং জাতীয়তাবাদী পাত্রিস লুমুম্বা প্রথম কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কঙ্গো সঙ্কটের সময় জোসেফ-ডিসিরে মোবুতু (পরবর্তীতে নিজের নাম পরিবর্তন করেছিলেন মোবুতু সেসে সেকো) আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে এবং রাজনীতিগত দ্বন্দের কারণে লুমুম্বাকে গ্রেপ্তার করে লিওপোডভিল থেকে দূরে Thysville military barracks Camp Hardy তে চালান করে দেয়। ক্যাম্প হারডির পরিচালনা ব্যাবস্থা খুবই নিম্নমানের এবং কর্মচারীরা বেতন না পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করলে ১৯৬১ সালের ১৭ জানুয়ারি বেলজিয়ান কলোনি মন্ত্রী Harold Charles d'Aspremont Lynden লুমুম্বাকে জোরপূর্বক কাতাঙ্গাতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি Tshombe এবং তার মন্ত্রীপরিষদের পরিকল্পনা অনুযায়ী লুমুম্বাকে একটি গোপন স্থানে নিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়। মোবুতু ১৯৭১ সালে দেশটির নাম পরিবর্তন করে জাইর রাখে। কিন্তু মোবুতু দেশের একমাত্র জাতীয় দল হওয়ায় দেশটি একটি স্বৈরাচারী একদলীয় রাষ্ট্র হিসাবে পরিচালিত হচ্ছিলো। ফলে ১৯৯০ এর প্রথম দিকে, মোবুতুর সরকার দুর্বল হতে শুরু করে। ১৯৯৪-এ রুয়ান্ডার গণহত্যা এবং পূর্বের অস্থিতিশীলতা ১৯৯৬ সালে রুয়ান্ডার নেতৃত্বে একটি আগ্রাসনের দিকে পরিচালিত করে, যার ফলে পরের বছর প্রথম কঙ্গো যুদ্ধে মোবুতুকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ভূগোল অবস্থানঃ দেশটির উত্তরে রয়েছে 'কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র'(Central African Republic) এবং দক্ষিণ সুদান। এর পূর্বে রয়েছে উগান্ডা,বুরুন্ডি এবং তানজানিয়া। দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে জাম্বিয়া,দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে অ্যাঙ্গোলা। দেশটির পশ্চিমে রয়েছে সীমিত সমুদ্রসীমা। ভৌগোলিক স্থানাঙ্কঃ ০ ডিগ্রি ০০ মিনিট উ. ২৫ ডিগ্রি ০০ মিনিট পূ. মহাদেশঃ আফ্রিকা ক্ষেত্রফলঃ মোট: ২,৩৪৪,৮৫৮ বর্গ কিমি ভূমি: ২,২৬৭,০৪৮ বর্গ কিমি পানি: ৭৭,৮১০ বর্গ কিমি প্রাকৃতিক সম্পদঃ কোবাল্ট,তামা,পেট্রোলিয়াম,ডায়মন্ড,সোনা,রুপা,জিংক/দস্তা,টিন,ইউরেনিয়া,কয়লা,নিয়োবিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ আবাদী জমিঃ ৩.০৯ শতাংশ সেচসম্পন্ন ভূমিঃ ১০৫ বর্গ কিমি (২০০৩) মোট ব্যবহারযোগ্য পানিসম্পদঃ ১২৮৩ ঘন কিমি (২০১১) আবহাওয়া ও জলবায়ুঃ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র নিরক্ষরেখার উপর অবস্থিত। এর এক-তৃতীয়াংশ দেশের উত্তরে এবং দুই-তৃতীয়াংশ দক্ষিণে রয়েছে। নদীর অববাহিকায় জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র এবং দক্ষিণের উঁচু অঞ্চলগুলো শীতল ও শুষ্ক। রেনজুরি পাহাড়ে আল্পাইন জলবায়ু বিদ্যমান। নিরক্ষরেখার দক্ষিণে বর্ষাকাল অক্টোবর-মে এবং উত্তরে তা এপ্রিল-নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। পুরোদেশে গড় বৃষ্টিপাত ১০৭০ মিমি (৪২ ই)। এই অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সরাসরি পরে এবং সমুদ্রের পানি দ্রুত বাষ্পে পরিণত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় বলে এখানকার জলবায়ু 'নিরক্ষীয় জলবায়ু' নামে পরিচিত। মিঠাপানি উত্তোলনঃ (দেশীয়/শিল্পজাত/কৃষিজ) মোট উত্তোলন - ০.৬৮ ঘন কিমি/বছর (৬৮℅/২১℅/১১℅) মাথাপিছু উত্তোলন- ১১.২৫ ঘন কিমি/বছর (২০০৫) প্রাকৃতিক দুর্যোগঃ দেশটির দক্ষিণে নির্দিষ্ট সময় পর পর খরা হয়। মৌসুমি কঙ্গো নদীর বন্যা সংঘটিত হয় এবং পূর্বদিকে আলবার্টিনের ফাটলে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। পরিবেশগত বর্তমান সমস্যাঃ - শিকারী বন্যপ্রাণীরা (যেমনঃ শিকারী কুকুর/lycon pictus) বসবাসরত মানুষদের কাছে হুমকিস্বরূপ; ফলে বর্তমানে এসব প্রাণী নির্মূলিত। -পানি দূষণ -বন উজাড় (কৃষিকাজের জন্য আদিবাসীরা বন কেটে ধ্বংস করছে) -উদ্বাস্তু কর্তৃক পরিবেশ দূষণ -খনিজগুলো খননও পরিবেশগত ক্ষতির কারণ। পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহঃ জীববৈচিত্র্য,মরুভূমি,বিপন্ন প্রজাতি,হানিকর বর্জ্য,সামুদ্রিক আইন,সমুদ্র দিয়ে পাচার নিষিদ্ধকরণ,পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ,ওজোন স্তর সুরক্ষা,ক্রান্তীয় কাঠ ৮৩,ক্রান্তীয় কাঠ ৯৪,জলাভূমি সংরক্ষণ ইত্যাদি স্বাক্ষরিত। কিন্তু পরিবেশগত পরিবর্তন চুক্তিটি এখনও অনুমোদিত নয়। প্রান্তবিন্দুসমূহঃ (extreme points) প্রান্তবিন্দু হলো এমন স্থানসমূহ যা অন্যান্য সব স্থান থেকে সবচেয়ে উত্তর,দক্ষিণ,পূর্ব,পশ্চিমে অবস্থিত। উত্তরতম বিন্দুঃ ওরিয়েন্টাল অঞ্চলের 'কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের' এমবাগা শহরের পশ্চিমে বোমু নদীর মধ্যে অবস্থিত একটি নামহীন স্থান। পূর্বতম বিন্দুঃ স্থানটি উগান্ডার সীমান্তে ওরিয়েন্টাল প্রদেশের মহাগি বন্দরের পশ্চিমে অ্যালবার্ট হ্রদের প্রবেশ অংশে অবস্থিত। দক্ষিণতম বিন্দুঃ স্থানটি জাম্বিয়ার সীমান্তে কাটাঙ্গা প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। পশ্চিমতম বিন্দুঃ স্থানটি আটলান্টিক মহাসাগরে ক্যাবিন্ডার সীমান্তে 'বাস-কঙ্গো' প্রদেশে অবস্থিত। সামরিক বাহিনী গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর সামরিক বাহিনীর নাম ফরাসিতে Forces Armées de la République Démocratique du Congo (FARDC) ফর্স আর্মে দ্য লা রেপ্যুব্লিক দেমোক্রাতিক দ্যু কঙ্গো। ২০০৩ সালের জুলাই মাসে দ্বিতীয় কঙ্গো যুদ্ধের অবসানের পর এটিকে শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সামরিক বাহিনীর বেশির ভাগ সেনাই স্থল সেনাবাহিনীর সদস্য। তবে একটি ক্ষুদ্র বিমান বাহিনী এবং ক্ষুদ্রতর নৌবাহিনীও বিদ্যমান। সব মিলিয়ে এই তিন বাহিনীতে সদস্যসংখ্যা প্রায় ১,৩০,০০০। এছাড়া রিপাবলিকান গার্ড নামের একটি রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা বাহিনী আছে। আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকার রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Country Profile from the BBC News কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র from UCB Libraries GovPubs কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র at WorldWikia Crisis briefing on Congo from Reuters AlertNet সংঘাতের খবর প্রতিবেদন প্রচার BBC DR Congo: Key facts BBC Q&A: DR Congo conflict BBC Timeline: কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র BBC In pictures: Congo crisis "Rape of a Nation" by Marcus Bleasdale on MediaStorm Maps of Congo before and after independence আফ্রিকার রাষ্ট্র মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল স্বল্পোন্নত দেশ প্রজাতন্ত্র ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Democratic_Republic_of_the_Congo
Democratic Republic of the Congo
The Democratic Republic of the Congo is a country in Central Africa. By land area, the Congo is the second-largest country in Africa and the 11th-largest in the world. With a population of around 109 million, the Democratic Republic of the Congo is the most populous Francophone country in the world. The national capital and largest city is Kinshasa, which is also the economic center. The country is bordered by the Republic of the Congo, Central African Republic, South Sudan, Uganda, Rwanda, Burundi, Tanzania (across Lake Tanganyika), Zambia, Angola, the Cabinda exclave of Angola, and the South Atlantic Ocean. Centered on the Congo Basin, the territory of the Congo was first inhabited by Central African foragers around 90,000 years ago and was reached by the Bantu expansion about 3,000 years ago. In the west, the Kingdom of Kongo ruled around the mouth of the Congo River from the 14th to 19th centuries. In the northeast, center, and east, the kingdoms of Azande, Luba, and Lunda ruled from the 16th and 17th centuries to the 19th century. King Leopold II of Belgium formally acquired rights to the Congo territory from the colonial nations of Europe in 1885 and declared the land his private property, naming it the Congo Free State. From 1885 to 1908, his colonial military forced the local population to produce rubber and committed widespread atrocities. In 1908, Leopold ceded the territory, which thus became a Belgian colony. Congo achieved independence from Belgium on 30 June 1960 and was immediately confronted by a series of secessionist movements, the assassination of Prime Minister Patrice Lumumba, and the seizure of power by Mobutu Sese Seko in a 1965 coup d'état. Mobutu renamed the country Zaire in 1971 and imposed a harsh personalist dictatorship until his overthrow in 1997 by the First Congo War. The country then had its name changed back and was confronted by the Second Congo War from 1998 to 2003, which resulted in the deaths of 5.4 million people. The war ended under President Joseph Kabila, who governed the country from 2001 to 2019 and under whom human rights in the country remained poor and included frequent abuses such as forced disappearances, torture, arbitrary imprisonment and restrictions on civil liberties. Following the 2018 general election, in the country's first peaceful transition of power since independence, Kabila was succeeded as president by Félix Tshisekedi, who has served as president since. Since 2015, eastern Congo has been the site of an ongoing military conflict. The Democratic Republic of the Congo is extremely rich in natural resources but has suffered from political instability, a lack of infrastructure, corruption, and centuries of both commercial and colonial extraction and exploitation, followed by more than 60 years of independence, with little widespread development. Besides the capital Kinshasa, the two next largest cities, Lubumbashi and Mbuji-Mayi, are both mining communities. The DRC's largest export is raw minerals, with China accepting over 50% of its exports in 2019. In 2021, DR Congo's level of human development was ranked 179th out of 191 countries by the Human Development Index and is classed as a least developed country by the UN. As of 2018, following two decades of various civil wars and continued internal conflicts, around 600,000 Congolese refugees were still living in neighbouring countries. Two million children risk starvation, and the fighting has displaced 4.5 million people. The country is a member of the United Nations, Non-Aligned Movement, African Union, COMESA, Southern African Development Community, Organisation Internationale de la Francophonie, and Economic Community of Central African States.
1385
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%8B%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ( , ) হচ্ছে মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি দেশ। দেশটি কঙ্গো-ব্রাজাভিল, কঙ্গো রিপাবলিক বা কেবল কঙ্গো নামেও পরিচিত। দেশটির পশ্চিমে গ্যাবন, উত্তর-পশ্চিমে ক্যামেরুন এবং উত্তর-পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ-পূর্বে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণে অ্যাঙ্গোলার ছিটমহল ক্যাবিন্দা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। দীর্ঘদিন ফ্রান্সের উপনিবেশ থাকায় ফরাসি হল কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা। এই অঞ্চলটি কমপক্ষে ৩,০০০ বছর আগে বান্টু-ভাষী উপজাতিদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তারা কঙ্গো নদীর অববাহিকার দিকে অগ্রসর হয়ে বাণিজ্য সংযোগ তৈরি করেছিল। কঙ্গো পূর্বে নিরক্ষীয় আফ্রিকার ফরাসি উপনিবেশের অংশ ছিল। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৫৮ সালের ২৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এটি ১৯৬৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একটি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ছিল। দেশটি তখন গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯২ সাল থেকে সার্বভৌম রাষ্ট্রটিতে বহুদলীয় নির্বাচন হয়েছে। যদিও ১৯৯৭ সালের কঙ্গো গৃহযুদ্ধে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ১৯৭৯ সালে প্রথম ক্ষমতায় আরোহণ করেন। এর পর থেকে তিনি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এখনও দেশটি শাসন করে আসছেন। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, লা ফ্রাঙ্কোফোনি, মধ্য আফ্রিকান রাজ্যগুলোর অর্থনৈতিক সম্প্রদায় এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য। এটি গিনি উপসাগরের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশ হয়ে উঠেছে। কিছু এলাকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং দেশব্যাপী তেলের রাজস্বের অসম বন্টন সত্ত্বেও এই সুবিধা দেশটিকে কিছুটা সমৃদ্ধি প্রদান করেছে। কঙ্গোর অর্থনীতি তেল খাতের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তাই ২০১৫-এর পরে তেলের দাম কমে যাওয়ার পর থেকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট মন্থর হয়েছে। এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৫২ লক্ষ। এর মধ্যে ৮৮.৫% মানুষ খ্রিস্টান ধর্ম পালন করে। ব্যুৎপত্তি কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গো নদীর নামানুসারে। আবার এই নদীর নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গো নামেরই একটি বান্টু রাজ্য থেকে। ১৪৮৩ বা১৪৮৪ সালে পর্তুগিজদের আফ্রিকা আবিষ্কারের সময় তারা এই রাজ্য ও নদীর মুখ দখল করেছিল। ফলে তারা নদীটির এরূপ নামকরণ করে। আবার এই কঙ্গো রাজ্যের নামটি এর জনগণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। সেখানখার অধিবাসীদের নাম বাকঙ্গোর শেষাংশ থেকে এর উৎপত্তি। এর অর্থ হচ্ছ "শিকারী" (, এনকঙ্গো )। যে সময়কালে ফ্রান্স কঙ্গোতে উপনিবেশ করে, তখন এটি ফরাসি কঙ্গো বা মধ্য কঙ্গো নামে পরিচিত ছিল। প্রতিবেশী ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো থেকে আলাদা করার জন্য এটিকে কখনও কখনও কঙ্গো (ব্রাজাভিল) বা কঙ্গো-ব্রাজাভিল নামেও উল্লেখ করা হয়। ব্রাজাভিল উপনিবেশের প্রতিষ্ঠাতা পিয়েরে সাভোর্গনান ডি ব্রাজ্জার কাছ থেকে উদ্ভূত একজন ইতালীয় অভিজাত ব্যক্তি, যার শিরোনামটি মোরুজ্জোর কমুনে ব্রাজাস্কো শহরকে উল্লেখ করে। এর নাম ল্যাটিন ব্রাটিউস বা ব্র্যাকসিয়াস থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। দুটো শব্দেরই অর্থ "বাহু"। ইতিহাস প্রাক-ঔপনিবেশিক বান্টু-ভাষী লোকেরা বান্টু সম্প্রসারণের সময় উপজাতি প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা মূলত বাস্তুচ্যুত হয়েছিল এবং প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলের প্রাচীনতম বাসিন্দা পিগমি জনগোষ্ঠীকে শোষণ করেছিল। বাকঙ্গো হচ্ছে একটি বান্টু জাতিগত গোষ্ঠী। তারা বর্তমান অ্যাঙ্গোলা, গ্যাবন এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কিছু অংশ দখল করেছিল এবং সেই দেশগুলোর মধ্যে জাতিগত ঘনিষ্ঠতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভিত্তি গঠন করেছিল। বেশ কয়েকটি বান্টু রাজ্য, বিশেষ করে কঙ্গো, লোয়াঙ্গো এবং টেকের রাজ্যগুলো কঙ্গো নদী অববাহিকার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাণিজ্য সংযোগ তৈরি করেছিল। পর্তুগিজ অভিযাত্রী ডিয়োগো কাও ১৪৮৪ সালে কঙ্গোর মুখে পৌঁছেছিলেন। এর পর সেখানকার অভ্যন্তরীণ বান্টু সাম্রাজ্য এবং ইউরোপীয় বণিকদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তারা বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করত। তারা উৎপাদিত দ্রব্য তৈরি করত এবং পশ্চিমাঞ্চলে বন্দী ও দাসত্ব করা মানুষদের মধ্যেও এই ব্যবসা চালিয়ে যেত। ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে বহু শতাব্দী পরে, কঙ্গো নদীর ব-দ্বীপের সরাসরি ইউরোপীয় উপনিবেশ ১৯ শতকের শেষের দিকে শুরু হয়। পরবর্তীকালে এই অঞ্চলে বান্টু সমাজের শক্তি হ্রাস পায়। ফরাসি ঔপনিবেশিক যুগ কঙ্গো নদীর উত্তরের এলাকাটি ১৮৮০ সালে বাটেকের রাজা মাকোকোর সাথে পিয়েরে ডি ব্রাজার চুক্তির ফলে ফরাসি সার্বভৌমত্বের অধীনে আসে। মাকোকোর মৃত্যুর পর, তার বিধবা রানী এনগালিফুরউ চুক্তির শর্তাবলী বহাল রাখেন এবং উপনিবেশকারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হয়ে ওঠেন। এই কঙ্গো উপনিবেশটি প্রথমে ফরাসি কঙ্গো নামে পরিচিত হয়, তারপর ১৯০৩ সালে মধ্য কঙ্গো নামে পরিচিত হয়। ১৯০৮ সালে ফ্রান্স মধ্য কঙ্গো, গ্যাবন, শাদ এবং ওবাঙ্গুই-চারি (আধুনিক মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ) নিয়ে গঠিত ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকা (এইএফ) সংগঠিত করে। ফরাসিরা এই উপনিবেশের ফেডারেল রাজধানী হিসেবে ব্রাজাভিলকে মনোনীত করে। কঙ্গোতে ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথম ৫০ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়। তবে এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো প্রায়ই নৃশংস ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে কঙ্গো মহাসাগর রেলওয়ে নির্মাণে কমপক্ষে ১৪,০০০ প্রাণ হারিয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্সের নাৎসি দখলের সময়, ব্রাজাভিল ১৯৪০ থেকে ১৯৪৩ সালের মধ্যে মুক্ত ফ্রান্সের প্রতীকী রাজধানী হিসেবে কাজ করেছিল। ১৯৪৪ সালের ব্রাজাভিল সম্মেলন ফরাসি ঔপনিবেশিক নীতিতে বড় সংস্কারের সময়কালের সূচনা করে। কঙ্গো এইএফ এবং ফেডারেল রাজধানী ব্রাজাভিলের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভৌগোলিক অবস্থানের ফলে ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক এবং অবকাঠামো ব্যয়ের যুদ্ধোত্তর সম্প্রসারণ থেকে উপকৃত হয়েছে। ১৯৪৬ সালের সংবিধান গৃহীত হওয়ার পরে এটির একটি স্থানীয় আইনসভাও ছিল যা চতুর্থ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১৯৫৮ সালে পঞ্চম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারী ফরাসি সংবিধানের সংশোধনের পর, ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকা বা এইএফ এর অংশগুলোতে বিভক্ত হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এর ফলে ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকার প্রতিটি অংশ ফরাসি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত উপনিবেশে পরিণত হয়। এই সংস্কারের সময় মধ্য কঙ্গো ১৯৫৮ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র হিসাবে পরিচিত হয় ১৯৫৯ সালে দেশটি এর প্রথম সংবিধান প্রকাশ করে। এমবোচিস (তিনি জ্যাক ওপানগল্টের পক্ষে ছিলেন) এবং লরিস এবং কঙ্গোস (তারা ফরাসি নিরক্ষীয় আফ্রিকায় নির্বাচিত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মেয়র ফুলবার্ট ইউলুকে সমর্থন করেছিলেন) মধ্যে বৈরিতার ফলে ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজাভিলে ধারাবাহিক দাঙ্গা হয়। এটি ফরাসি সেনাবাহিনী পরাজিত করে। ১৯৫৯ সালের এপ্রিলে দেশটিতে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালের আগস্টে কঙ্গো স্বাধীন হওয়ার সময়, ইউলুর প্রাক্তন প্রতিপক্ষ ওপাংল্ট তার অধীনে কাজ করতে সম্মত হন। এর ফলে ইউলু কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন। তখন পোয়াঁত-নোয়ারের রাজনৈতিক উত্তেজনা নেক বেশি হওয়ায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইউলু দেশটির রাজধানী ব্রাজাভিলে স্থানান্তরিত করেছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর যুগ কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৬০ সালের ১৫ ই আগস্ট তারিখে ফ্রান্স থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়। ইউলু দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শাসন করেছিলেন। পরবর্তীতে শ্রমিক উপাদান এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো তিন দিনের অভ্যুত্থানকে উস্কে দেয় যা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তখন কঙ্গোর সামরিক বাহিনী সংক্ষেপে দেশটি দখল করে নেয় এবং আলফোন্স মাসাম্বা-ডেবাতের নেতৃত্বে একটি বেসামরিক অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৬৩ সালের সংবিধান অনুযায়ী, মাসাম্বা-ডেবাত পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। মাসাম্বা-ডেবাতের ক্ষমতায় থাকার সময়, সরকার "বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র" কে দেশের সাংবিধানিক মতাদর্শ হিসাবে গ্রহণ করেছিল। ১৯৬৫ সালে কঙ্গো সোভিয়েত ইউনিয়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, উত্তর কোরিয়া এবং উত্তর ভিয়েতনামের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। ১৯৬৫ সালের ১৪ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের তিনজন বিশিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়। তারা ছিলেন: কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রসিকিউটর লাজারে মাতসোকোটা, সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট জোসেফ পুয়াবো এবং কঙ্গোর তথ্য সংস্থার পরিচালক আনসেলমে মাসুমেমে। এর মধ্যে দু'জনের লাশ পরে কঙ্গো নদীর তীরে বিকৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। মাসাম্বা-ডেবাতের সরকার তার দলের মিলিশিয়া ইউনিটকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কয়েকশত কিউবান সেনাকে দেশটিতে আমন্ত্রণ জানায়। এই সৈন্যরা তার সরকারকে ১৯৬৬ সালে একটি অভ্যুত্থান থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছিল। এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রপতি মারিয়ান নগুয়াবির অনুগত প্যারাট্রুপাররা। তা সত্ত্বেও, মাসাম্বা-ডেবাত দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক, উপজাতীয় এবং মতাদর্শগত দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে অক্ষম ছিলেন। এর ফলে ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বরে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার শাসনের আকস্মিক সমাপ্তি ঘটে। অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী মারিয়েন এনগুয়াবি ১৯৬৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরে দেশটির রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করেন। এক বছর পরে এনগুয়াবি কঙ্গো আফ্রিকার প্রথম "গণ প্রজাতন্ত্র" হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো ঘোষণা করেন এবং কঙ্গো লেবার পার্টি (পিসিটি) নাম পরিবর্তন করে জাতীয় বিপ্লবী আন্দোলনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি ১৯৭২ সালে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টায় বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৭ সালের ১৬ মার্চ তাকে হত্যা করা হয়েছিল। পার্টির ১১ সদস্যের সামরিক কমিটি (সিএমপি) তখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে মনোনীত হয়েছিল। তখন জোয়াকিম ইয়োম্বি-ওপাঙ্গো রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দুই বছর পরে ইয়োম্বি-ওপাঙ্গোকে ক্ষমতা থেকে বাধ্য করা হয় এবং এরপর ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নগুয়েসো নতুন রাষ্ট্রপতি হন। ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নগুয়েসো দেশটিকে পূর্ব ব্লকের সাথে সংযুক্ত করেছিলেন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে বিশ বছরের বন্ধুত্ব-চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বছরের পর বছর ধরে, ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে তার একনায়কত্ব বজায় রাখার জন্য রাজনৈতিক নিপীড়নের উপর বেশি এবং পৃষ্ঠপোষকতার উপর কম নির্ভর করতে হয়েছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে সোভিয়েত সহায়তা শেষ হয়ে যায় এবং এটি ক্ষমতা ত্যাগ করে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের সময়কালে কঙ্গোর প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি (১৯৯২-১৯৯৭) হয়ে ওঠা পাস্কাল লিসুবা অর্থনীতিকে উদারীকরণের জন্য আইএমএফের সহায়তায় অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের জুনে আইএমএফ তিন বছরের এসডিআর ৬৯.৫ মিলিয়ন (মার্কিন $ ১০০ মিলিয়ন) বর্ধিত কাঠামোগত সমন্বয় সুবিধা (ইএসএএফ) অনুমোদন করে। ১৯৯৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে কঙ্গোতে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে এটি একটি নতুন বার্ষিক চুক্তি ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে ছিল। কঙ্গোর গণতান্ত্রিক অগ্রগতি ১৯৯৭ সালে লাইনচ্যুত হয়। তখন লিসুবা এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসো গৃহযুদ্ধে ক্ষমতার জন্য লড়াই শুরু করে। ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে নির্ধারিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে সাথে লিসুবা এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসোউ শিবিরের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ৫ ই জুনে রাষ্ট্রপতি লিসুবার সরকারি বাহিনী ব্রাজাভিলে ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর কম্পাউন্ডটি ঘিরে ফেলে এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসো তার ব্যক্তিগত মিলিশিয়ার ("কোবরাস" নামে পরিচিত) সদস্যদের প্রতিরোধ করার আদেশ দেয়। এইভাবে চার মাসের একটি সংঘাত শুরু হয়েছিল যা ব্রাজাভিলের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল। এর ফলে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়। অক্টোবরের প্রথম দিকে অ্যাঙ্গোলা সরকার ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কঙ্গো আক্রমণ শুরু করে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে লিসুবা সরকারের পতন ঘটে। এর পরপরই ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। ২০০২ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো প্রায় ৯০% ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। তার দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লিসোবা এবং বার্নার্ড কোলেলাসকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। একমাত্র অবশিষ্ট বিশ্বাসযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী, আন্দ্রে মিলনগো তার সমর্থকদের নির্বাচন বয়কট করার পরামর্শ দেন এবং তারপরে নির্বাচন থেকে সরে আসেন। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে গণভোটের মাধ্যমে সম্মত হওয়া একটি নতুন সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে নতুন ক্ষমতা প্রদান করে। এছাড়াও সংশোধিত নতুন সংবিধানের মাধ্যমে তার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়ে এবং একটি নতুন দ্বি-কক্ষীয় সংসদ ব্যবস্থা চালু করা হয়। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং সাংবিধানিক গণভোটের আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। উভয়ই তাদের একদলীয় রাষ্ট্রের কঙ্গোর যুগের সংগঠনের কথা মনে করিয়ে দেয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর, পুল অঞ্চলে সরকারি বাহিনী এবং যাজক নটুমির নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই পুনরায় শুরু হয়। ২০০৩ সালের এপ্রিলে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ডেনিস সাসও এনগুয়েসোও ২০০৯ সালের জুলাই মাসে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের একটি মানবাধিকার বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা কঙ্গোলিজ অবজারভেটরি অফ হিউম্যান রাইটসের মতে, নির্বাচনে "খুব কম" ভোটারের উপস্থিতি এবং নির্বাচনজুড়ে "জালিয়াতি ও অনিয়ম" চিহ্নিত করা হয়েছিল। ২০০৯ সালের জুলাই মাসে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও জয়ী হন। একটি বেসরকারি সংস্থা কঙ্গোজ অবজারভেটরি অব হিউম্যান রাইটসের মতে, এই নির্বাচনে "খুব কম" ভোট এবং "জালিয়াতি ও অনিয়ম" দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। মার্চ ২০১৫ সালে, ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আরও একটি মেয়াদে ক্ষমতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান এবং অক্টোবরে একটি সাংবিধানিক গণভোটের ফলে একটি পরিবর্তিত সংবিধান তৈরি হয়। সংবিধানের এই নতুন সংশোধিত রূপ তাকে ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়। তিনি সেই নির্বাচনেও জয়ী হয়েছিলেন। তাই অনেকে মনে করেন এটি প্রতারণামূলক নির্বাচন ছিলে। নির্বাচনের পর রাজধানীতে সহিংস বিক্ষোভের পর, ডেনিস সাসও এনগুয়েসো পুল অঞ্চলে আক্রমণ করে। সেখানে গৃহযুদ্ধের নিনজা বিদ্রোহীরা ঘাঁটি ছিল। তবে এটিকে একটি বিভ্রান্তি বলে মনে করা হত। এর ফলে নিনজা বিদ্রোহীদের পুনরুজ্জীবন ঘটে। তারা ২০১৬ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে ৮০,০০০ লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকার প্রজাতন্ত্রের সরকার হল একটি আধা-প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থা। এখানে একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মন্ত্রী পরিষদ বা মন্ত্রিসভা নিয়োগ করেন। সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রীসহ কাউন্সিল নির্বাচিত হয়। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে দেশটিতে বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে; যদিও এই ব্যবস্থাটি রাষ্ট্রপতি ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর দ্বারা প্রবলভাবে আধিপত্যে রয়েছে। তার শাসনামলে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গুরুতর প্রতিযোগিতার অভাব রয়েছে। ডেনিস সাসও এনগুয়েসো তার নিজস্ব কঙ্গোলিজ লেবার পার্টির ( ) পাশাপাশি ছোট দলগুলোর একটি পরিসর দ্বারা সমর্থিত। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা সত্ত্বেও ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর শাসনামল অনেক দুর্নীতির প্রকাশ দেখা গিয়েছে। একটি ফরাসি তদন্ত ফ্রান্সে ১১০ টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং কয়েক ডজন বিলাসবহুল সম্পত্তি খুঁজে পেয়েছে। ডেনিস সাসও এনগুয়েসো এই আত্মসাতের তদন্তকে "বর্ণবাদী" এবং "ঔপনিবেশিক" বলে নিন্দা করেছেন। ডেনিস ক্রিস্টেল সাসও এনগুয়েসো-এনগুয়েসো ও ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর ছেলের নাম পানামা পেপার্সের সহযোগিতায় তালিকায় অন্তর্ভূক্ত ছিল। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ তারিখে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ঘোষণা করেন, তার সরকার তাকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য দেশের ২০০২ সালের সংবিধান পরিবর্তন করার জন্য একটি গণভোট করবে। ২৫ অক্টোবরে সরকার ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য একটি গণভোট আয়োজন করে। সরকার দাবি করেছে যে প্রস্তাবটি ৯২% ভোটার দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল। উক্ত গণভোটে ৭২% যোগ্য ভোটার অংশগ্রহণ করেছিলেন। গণভোট বর্জনকারী বিরোধীরা বলেছে যে সরকারের পরিসংখ্যান মিথ্যা এবং বিপুল পরিমাণে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশে ও দেশের বাইরে এই নির্বাচন প্রশ্ন বিদ্ধ হয়। এছাড়াও এর ফলে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে বেসামরিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। অস্থিরতা কমাতে বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশ গুলি বর্ষণ করে। অক্টোবরে অনুষ্ঠিত গণভোটের আগে বিরোধী দলের সমাবেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হন। প্রশাসনিক বিভাগ কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১২টি ডিপার্টমেন্টে (বিভাগ) বিভক্ত। বিভাগগুলো কমিউন এবং জেলায় বিভক্ত। এগুলো হলো: সামরিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনী ( ), এছাড়াও কম আনুষ্ঠানিকভাবে Forces armées congolaises বা এর সংক্ষিপ্ত নাম FAC হিসাবে চিহ্নিত। এটি কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সামরিক বাহিনী। তারা কঙ্গোলিজ আর্মি, কঙ্গোলিজ এয়ার ফোর্স, কঙ্গোলিজ মেরিন (নৌবাহিনী) এবং কঙ্গোলিজ ন্যাশনাল জেন্ডারমেরি নিয়ে গঠিত। মানবাধিকার অনেক পিগমি জন্ম থেকেই বান্টুদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অনেকে এই বিষয়টি দাসত্ব হিসাবে উল্লেখ করে থাকে। কঙ্গোলিজ হিউম্যান রাইটস অবজারভেটরি বলে যে, পিগমিদের পোষা প্রাণীর মতোই সম্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বরে কঙ্গোলিজ সংসদ আদিবাসীদের অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার জন্য একটি আইন গ্রহণ করে। এই আইনটি আফ্রিকায় এই ধরনের প্রথম আইন এবং এটি গ্রহণ করা মহাদেশের আদিবাসীদের জন্য একটি ঐতিহাসিক উন্নয়ন। মিডিয়া ২০০৮ সালে প্রাথমিক গণমাধ্যম সরকারের মালিকানাধীন ছিল। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত গণমাধ্যম ধরন তৈরি করা হচ্ছে। এখানে একটি সরকারি মালিকানাধীন টেলিভিশন স্টেশন এবং প্রায় ১০টি ছোট ছোট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। ভূগোল কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দৃশ্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর নিয়ারির বন্যাকবলিত বনের সাভানা সমভূমি থেকে শুরু করে বিশাল কঙ্গো নদী, মায়াম্বের দুর্গম পর্বতমালা ও বন এবং আটলান্টিক উপকূল বরাবর ১৭০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত। কঙ্গো সাব-সাহারান আফ্রিকার মধ্য-পশ্চিম অংশে নিরক্ষরেখা বরাবর, ৪° উত্তর এবং ৫°দক্ষিণ অক্ষাংশ এবং ১১° এবং ১৯°পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এর দক্ষিণে এবং পূর্বে রয়েছে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। এছাড়াও এর পশ্চিমে গ্যাবন, উত্তরে ক্যামেরুন এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে অ্যাঙ্গোলার কাবিন্দা অবস্থিত। আটলান্টিক মহাসাগরে এর একটি ছোট উপকূল রয়েছে। এই দেশের রাজধানী ব্রাজাভিল দেশের দক্ষিণে কঙ্গো নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর ঠিক অপর পাড়েই গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কিনশাসা অবস্থিত। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম হচ্ছে একটি উপকূলীয় সমভূমি। এর জন্য প্রাথমিক নিষ্কাশন পথ হল কৌইলো-নিয়ারি নদী। এটি দেশের অভ্যন্তর দক্ষিণ এবং উত্তরে দুটি অববাহিকার মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় মালভূমি নিয়ে গঠিত। এখানকার বনগুলো ক্রমবর্ধমান শোষণের চাপের মধ্যে রয়েছে। কঙ্গোর একটি ২০১৮ ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টিগ্রিটি ইনডেক্স মানে ৮.৮৯/১০ স্কোর ছিল। এটি ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১২তম স্থানে রয়েছে। কঙ্গো চারটি ইকো রিজিয়নের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো: আটলান্টিক নিরক্ষীয় উপকূলীয় বন, উত্তর-পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান নিম্নভূমি বন, পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান সোয়াম্প ফরেস্ট এবং পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান বন-সাভানা মোজাইক। যেহেতু দেশটি নিরক্ষরেখায় অবস্থিত, তাই সারা বছর জলবায়ু সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। এই দেশের দিনের গড় তাপমাত্রা আর্দ্র এবং রাত সাধারণত -এর মধ্যে এবং । কঙ্গোর গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত দক্ষিণে নিয়ারি উপত্যকায় দেশের কেন্দ্রীয় অংশে। কঙ্গোর শুষ্ক ঋতু জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্যদিকে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে আর্দ্র ঋতুতে দুটি সময়ে বৃষ্টিপাতের সর্বোচ্চ পরিমাণ থাকে। এর মধ্যে একটি সময় হচ্ছে মার্চ-মে মাসে এবং আরেকটি হচ্ছে সেপ্টেম্বর-নভেম্বরে। ২০০৬-০৭ সালে, ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির গবেষকরা সাংঘা অঞ্চলের ওয়েসো জেলাকে কেন্দ্র করে ভারী বনাঞ্চলে গরিলাদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা ১২৫,০০০ পশ্চিমের নিম্নভূমি গরিলাদের ক্রম অনুসারে একটি সংখ্যার পরামর্শ দেয়, যাদের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্নতা মূলত আতিথ্যযোগ্য জলাভূমি দ্বারা সংরক্ষণ করা হয়েছে। অর্থনীতি কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের অর্থনীতি হল গ্রামীণ কৃষি এবং হস্তশিল্প, প্রধানত পেট্রোলিয়ামের উপর ভিত্তি করে একটি শিল্প খাত, সহায়তা পরিষেবা, এবং বাজেট সমস্যা এবং অতিরিক্ত স্টাফিং দ্বারা চিহ্নিত সরকারের মিশ্রণ। পেট্রোলিয়াম উত্তোলন অর্থনীতির মূল ভিত্তি হিসাবে বনায়নকে প্রতিস্থাপন করেছে। ২০০৮ সালে, তেল খাত জিডিপির ৬৫%, সরকারের রাজস্বের ৮৫% এবং রপ্তানির ৯২% পরিমাণ অবদান রেখেছে। দেশটিতে প্রচুর অব্যবহৃত খনিজ সম্পদও রয়েছে। ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে, দ্রুত ক্রমবর্ধমান তেলের রাজস্ব সরকারকে বড় আকারের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সক্ষম করে। দেশটির স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক গড়ে ৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আফ্রিকার সর্বোচ্চ হারগুলোর মধ্যে একটি। সরকার তার পেট্রোলিয়াম আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বন্ধক রেখেছে। এই পদক্ষেপ রাজস্বের ঘাটতিতে অবদান রেখেছে। ১২ জানুযারি ১৯৯৪-এ, ফ্রাঙ্ক অঞ্চলের মুদ্রার ৫০% অবমূল্যায়নের ফলে ১৯৯৪ সালে ৪৬% মূল্যস্ফীতি হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তায় দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। কিন্তু ১৯৯৭ সালের জুন মাসে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে সংস্কার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের অক্টোবরে যুদ্ধের শেষে যখন ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তখন তিনি প্রকাশ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার ও বেসরকারিকরণে এগিয়ে যাওয়ার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সহযোগিতা পুনর্নবীকরণে আগ্রহ প্রকাশ করেন। যাইহোক, তেলের দাম কমে যাওয়া এবং ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে সশস্ত্র সংঘাত পুনরায় শুরু হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই সমস্যা প্রজাতন্ত্রের বাজেট ঘাটতিকে আরও খারাপ করেছিল। বর্তমান প্রশাসন একটি অস্বস্তিকর অভ্যন্তরীণ শান্তির সভাপতিত্ব করে এবং ২০০৩ সাল থেকে রেকর্ড-উচ্চ তেলের দাম থাকা সত্ত্বেও পুনরুদ্ধারকে উদ্দীপিত করা এবং দারিদ্র্য হ্রাস করার কঠিন অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। প্রাকৃতিক গ্যাস এবং হীরাও সাম্প্রতিক প্রধান কঙ্গো রপ্তানি। যদিও কঙ্গোকে ২০০৪ সালে কিম্বারলে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল যে তার বেশিরভাগ হীরা রপ্তানি বাস্তবে প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো থেকে পাচার করা হয়েছিল; এটি ২০০৭ সালে পুনরায় দলে ভর্তি হয়। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রেও বড় অব্যবহৃত বেস মেটাল, সোনা, লোহা এবং ফসফেটের মজুদ রয়েছে। দেশটি অর্গানাইজেশন ফর দ্য হারমোনাইজেশন অফ বিজনেস ল ইন আফ্রিকা (ওহাডা) এর সদস্য। কঙ্গো সরকার আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতে দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষকদের ২০০,০০০ হেক্টর জমি ইজারা দেওয়ার জন্য ২০০৯ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জিডিপি ২০১৪ সালে ৬% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০১৫ সালে ৭.৫% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থায় যোগ দেয়। পরিবহন কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পরিবহনের মধ্যে রয়েছে স্থল, বিমান এবং জল পরিবহন। দেশের রেল ব্যবস্থা ১৯৩০-এর দশকে বাধ্যতামূলক শ্রমিকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালু রয়েছে। এছাড়াও ১০০০ এর উপরে আছে কিমি পাকা রাস্তা, এবং দুটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ( মায়া-মায়া বিমানবন্দর এবং পয়েন্টে-নয়ার বিমানবন্দর ) যেখানে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্যে ফ্লাইট রয়েছে। দেশটির আটলান্টিক মহাসাগরে পয়েন্টে-নোয়ারে এবং কঙ্গো নদীর তীরে ব্রাজাভিল এবং ইম্পফন্ডোতে একটি বড় বন্দর রয়েছে। জনসংখ্যা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বিরল জনসংখ্যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে কেন্দ্রীভূত, উত্তরে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জঙ্গলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলগুলো কার্যত জনবসতিহীন। এইভাবে, কঙ্গো আফ্রিকার সবচেয়ে নগরায়িত দেশগুলোর মধ্যে একটি, এর মোট জনসংখ্যার ৭০% কিছু শহুরে অঞ্চলে বাস করে, যথা ব্রাজাভিল, পয়েন্টে-নয়ারে, বা এর আস্তরণে থাকা ছোট শহর বা গ্রামগুলোর মধ্যে একটি।, রেলপথ যা দুটি শহরকে সংযুক্ত করে। গ্রামীণ অঞ্চলে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিল্প ও বাণিজ্যিক কার্যকলাপ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতিগুলোকে সহায়তা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকারের উপর নির্ভরশীল করে রেখেছে। জাতিগত এবং ভাষাগতভাবে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জনসংখ্যা বেশ বৈচিত্র্যময়। এথনোলগ দেশে ৬২টি কথ্য ভাষাকে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এই ভাষাগুলোকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। কঙ্গো হল এই দেশের বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী এবং তাদের সংখ্যা জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। কঙ্গোর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপগোষ্ঠী হল লারি, ব্রাজাভিল এবং পুল অঞ্চলে এবং ভিলি, পয়েন্টে-নয়ারের আশেপাশে এবং আটলান্টিক উপকূল বরাবর। দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী হল টেকে, যারা ব্রাজাভিলের উত্তরে বাস করে, জনসংখ্যার ১৬.৯%। এমবোচি উত্তর, পূর্ব এবং ব্রাজাভিলে বাস করে এবং জনসংখ্যার ১৩.১% গঠন করে। কঙ্গোর জনসংখ্যার ২% পিগমি। ১৯৯৭ সালের যুদ্ধের আগে, প্রায় ৯,০০০ ইউরোপীয় এবং অন্যান্য অ-আফ্রিকানরা কঙ্গোতে বাস করত। তাদের অধিকাংশই ছিল ফরাসি। এই সংখ্যার মাত্র একটি অল্প অংশ অবশিষ্ট আছে। প্রায় ৩০০ মার্কিন প্রবাসী কঙ্গোতে বসবাস করে। সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুসারে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের লোকেরা মূলত ক্যাথলিক (৩৩.১%), জাগ্রত লুথারান (২২.৩%) এবং অন্যান্য প্রোটেস্ট্যান্ট (১৯.৯%) এর মিশ্রণ। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ইসলাম ধর্মের অনুসারী ১.৬%/ মূলত শহুরে কেন্দ্রগুলোতে বিদেশী শ্রমিকদের আগমনের কারণে মুসলিমদের এই সংখ্যা দেখা যায়। স্বাস্থ্য ২০০৪ সালে সরকারি ব্যয় স্বাস্থ্য জিডিপির ৮.৯% ছিল, যেখানে ব্যক্তিগত ব্যয় ছিল ১.৩%। , ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস এর প্রকোপ ছিল ২.৮%। ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য ব্যয় ছিল মাথাপিছু ৩০ মার্কিন ডলার। জনসংখ্যার একটি বড় অংশ অপুষ্টির শিকার। তাই কঙ্গো-ব্রাজাভিলে অপুষ্টি একটি বড়ো সমস্যা। ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে এই দেশে প্রতি ১০০,০০০ জনে মাত্র ২০ জন চিকিৎসক ছিলেন। , ২০১০ সালের হিসাবে, প্রতি ১০০,০০০ টি জীবিত জন্মে মাতৃ মৃত্যুর হার ছিল ৫৬০ টি এবং শিশু মৃত্যুর হার ছিল প্রতি ১০০,০০০ টি জীবিত জন্মে ৫৯.৩৪ টি। নারীদের যৌনাঙ্গ বিকৃতকরণ (নারী খৎনা) দেশে বিরল। এটি শুধু এই দেশের দেশের সীমিত ভৌগোলিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। সংস্কৃতি অসংখ্য জাতিগোষ্ঠী, শিল্পের রূপ এবং রাজনৈতিক কাঠামো এই দেশের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য প্রকাশ করে। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে পরিচিত সাংস্কৃতিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে, ভিলি পেরেক ফেটিশ, বেমবে মূর্তি যা অভিব্যক্তিতে পূর্ণ; পুনু এবং কুয়েলের মুখোশ, কোটা রেলিকুয়ারি, টেকে ফেটিশ, এবং স্মৃতিস্তম্ভ সমাধি সহ কবরস্থানগুলো এই বৈচিত্র্যের উদাহরণ। লারি জনগোষ্ঠীরও রয়েছে অনন্য নিদর্শন। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের যথেষ্ট উপনিবেশিক স্থাপত্য ঐতিহ্য রয়েছে। দেশটি এসব নিদর্শন সংরক্ষণ করছে। ব্রাজাভিলে বিভিন্ন পুরোনো স্থাপত্য কর্মের পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। উদাহরণস্বরূপ, সেন্ট-অ্যান ডু কঙ্গোর ব্যাসিলিকার নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। এটি ২০১১ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে দেশটি ঐতিহ্যগত পর্যটন গড়ে তুলতে প্রস্তুত নয়। এটি পয়েন্ট নোয়ার এবং ব্রাজাভিলে তার হোটেল এবং সম্পর্কিত পর্যটন সুবিধাগুলো সমর্থন করে এমন নেটওয়ার্ককে উন্নত করার জন্য কাজ করছে। অনেক সাইট ওভারল্যান্ড ভিজিটে পৌঁছানো কঠিন। দক্ষিণের সবচেয়ে জনবহুল এবং উন্নত অবস্থানগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রায়ই সবচেয়ে কম অ্যাক্সেসযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, বিশাল ছাইলু পর্বতমালা পরিদর্শন করা প্রায় অসম্ভব। কলা ফ্রাঙ্কো-কঙ্গোর র‍্যাপার পাসি এখানে বেশ কয়েকটি হিট অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। যেমন: টেম্পটেশনস, বিখ্যাত গান "আই জাপ অ্যান্ড আই মেট"। তার কাজ আন্তর্জাতিক ভাবে সম্প্রচারিত হয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে রয়েছে এম'পাসি, প্রাক্তন গ্রুপের গায়ক মেলগ্রুভ, আর্সেনিকের র‍্যাপার ক্যালবো, নেগের মারনসের বেন-জে, মিস্টিক, আরসিএফএ, গ্রুপ বিসো না বিসো এবং ক্যাসিমির জাও। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বেশ কয়েক জন লেখক আফ্রিকা এবং ফরাসি-ভাষী বিশ্বের অন্য কোথাও স্বীকৃত হয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যালাইন মাব্যানকৌ, জিন-ব্যাপটিস্ট তাতি লুটার্ড, জ্যানেট বালো টিচিচেল, হেনরি লোপেস, ল্যাসি এমবাউইটি, এবং চিকায়া উ তামসি। এই দেশের শিল্পীরা একটি চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম করেছেন। ১৯৭০-এর দশকে একটি আশাব্যঞ্জক সূচনার পরে, অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সিনেমা হলগুলো বন্ধ করে দেয় এবং চলচ্চিত্র নির্মাণকে কঠিন করে তোলে। প্রেক্ষাগৃহে বিতরণের জন্য ফিচার ফিল্ম তৈরির পরিবর্তে, দেশটির চলচ্চিত্র নির্মাতারা সাধারণত সরাসরি ইন্টারনেটে তাদের ভিডিও প্রযোজনাগুলো স্ট্রিম করে। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং যুদ্ধের কারণে কঙ্গোলিজ সংস্কৃতি, শিল্প এবং মিডিয়া বিনিয়োগের অভাবের শিকার হয়েছে। শিক্ষা ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০০২-০৫ সালে স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) সরকারি ব্যয় কম ছিল। পাবলিক শিক্ষা তাত্ত্বিকভাবে বিনামূল্যে এবং অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সীদের জন্য বাধ্যতামূলক, কিন্তু বাস্তবে, খরচ বিদ্যমান। ২০০৫ সালে সাকুল্যে প্রাথমিক তালিকাভুক্তির হার ছিল ৪৪%, যা ১৯৯১ সালে ৭৯% থেকে একটি উল্লেখযোগ্য হ্রাস। নয় থেকে ষোল বছর বয়সের মধ্যে শিক্ষা বাধ্যতামূলক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় বছর এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাত বছর পূর্ণ করা শিক্ষার্থীরা স্নাতক পায়। দেশে এমন বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা তিন বছরে স্নাতক ডিগ্রি এবং পাঁচ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে পারে। মারিয়েন এনগুয়াবি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিন, আইন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোর্স অফার করে। এটি দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সমস্ত স্তরে নির্দেশনা ফরাসি ভাষায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ফরাসি সিস্টেমের মডেল। সাহিত্য কঙ্গোলিজ লেখক অ্যালেন মাবাঙ্কো ২০০৬ সালে "মেমোয়ার্স অফ আ পোর্কুপাইন" নামে একটি বিখ্যাত উপন্যাস প্রকাশ করেছিলেন। এর ঘটনা কঙ্গোর একটি গ্রামে সংঘটিত হয়। আরও দেখুন কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রূপরেখা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সূচক-সম্পর্কিত নিবন্ধ তথ্যসূত্র আরও পড়ুন Maria Petringa, Brazza, A Life for Africa (2006) বহিঃসংযোগ সরকার প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্সি রাজ্যের প্রধান এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা সাধারণ বিবিসি নিউজ থেকে দেশের প্রোফাইল কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইউসিবি লাইব্রেরি গভপাবস থেকে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সার্বজনীন পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনা, ৬ মে ২০০৯ দ্বারা কঙ্গোর পর্যালোচনা। IRIN - কঙ্গো থেকে মানবিক সংবাদ এবং বিশ্লেষণ পর্যটন আফ্রিকার রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশ মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র উদ্ধৃতি শৈলীতে ফরাসি ভাষার উৎস (fr) এইচঅডিওর মাইক্রোবিন্যাসের সাথে নিবন্ধসমূহ ফরাসি ভাষার লেখা থাকা নিবন্ধ অপর্যালোচিত অনুবাদসহ পাতা আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ওপেকের সদস্য রাষ্ট্র ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Republic_of_the_Congo
Republic of the Congo
Congo, officially the Republic of the Congo or Congo Republic, is a country located on the western coast of Central Africa to the west of the Congo River. It is bordered to the west by Gabon, to the northwest by Cameroon, to the northeast by the Central African Republic, to the southeast by the Democratic Republic of the Congo, to the south by the Angolan exclave of Cabinda, and to the southwest by the Atlantic Ocean. The region was dominated by Bantu-speaking tribes at least 3,000 years ago, who built trade links leading into the Congo River basin. Congo was formerly part of the French colony of Equatorial Africa. The Republic of the Congo was established on 28 November 1958 and gained independence from France in 1960. It was a Marxist–Leninist state from 1969 to 1992, under the name People's Republic of the Congo (PRC). The country has had multi-party elections since 1992, but a democratically elected government was ousted in the 1997 Republic of the Congo Civil War. President Denis Sassou Nguesso, who first came to power in 1979, ruled until 1992 and then again since after his reinstatement. The Republic of the Congo is a member of the African Union, the United Nations, La Francophonie, the Economic Community of Central African States, and the Non-Aligned Movement. It has become the 4th-largest oil producer in the Gulf of Guinea, providing the country with a degree of prosperity, with political and economic instability in some areas, and unequal distribution of oil revenue nationwide. Its economy is dependent on the oil sector. and economic growth has slowed since the post-2015 drop in oil prices. Christianity is the most widely professed faith in the country. According to World Happiness Report 2024, Congo (Brazzaville) is on 89th rank among 140 nations.
1386
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE%20%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
কোস্টা রিকা
কোস্টা রিকা (স্পেনীয়: Costa Rica কোস্তা রিকা) দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের এক‌টি রাষ্ট্র। এর উত্তরে নিকারাগুয়া, দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে পানামা, পশ্চিমে ও দক্ষিণে প্রশান্ত মহাসাগর, এবং পূর্ব দিকে ক্যারিবিয়ান সাগর। কোস্টা রিকা পৃথিবীর প্রথম দেশ যেটি তার সেনাবাহিনীর অবসান ঘটিয়েছে। ইতিহাস রাজনীতি কোস্টা রিকাতে একটি গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। রাষ্ট্রপতি যুগপৎ রাষ্ট্র ও সরকারের প্রধান। দেশটিতে একটি এককাক্ষিক আইনসভা বিদ্যমান যার সদস্যসংখ্যা ৫৭। ভোটাধিকার ১৮ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সের নারী-পুরুষ সবার জন্য উন্মুক্ত। বর্তমান সংবধানটি ১৯৪৯ সালের ৯ই নভেম্বর গৃহীত হয়। সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ কোস্টা রিকা দেশটির নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী নেই । এটিই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যার কোনও সেনাবাহিনী নেই এবং দেশটির সমস্ত নিরাপত্তা দায়িত্ব দেশটির পুলিশ বাহিনীর হাতে ন্যাস্ত । ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি তথ্যসূত্র আরও দেখুন বহিঃসংযোগ কোস্টা রিকা মধ্য আমেরিকা খ্রিস্টান রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য মধ্য আমেরিকার রাষ্ট্র প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র ১৮২১-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল ১৮২১-এ উত্তর আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত
https://en.wikipedia.org/wiki/Costa_Rica
Costa Rica
Costa Rica (UK: , US: ; Spanish: [ˈkosta ˈrika]; literally "Rich Coast"), officially the Republic of Costa Rica, is a country in the Central American region of North America. Costa Rica is bordered by Nicaragua to the north, the Caribbean Sea to the northeast, Panama to the southeast, and the Pacific Ocean to the southwest, as well as maritime border with Ecuador to the south of Cocos Island. It has a population of around five million in a land area of nearly 51,180 km2 (19,760 sq mi). An estimated 352,381 people live in the capital and largest city, San José, with around two million people in the surrounding metropolitan area. The sovereign state is a presidential republic. It has a long-standing and stable constitutional democracy and a highly educated workforce. The country spends roughly 6.9% of its budget (2016) on education, compared to a global average of 4.4%. Its economy, once heavily dependent on agriculture, has diversified to include sectors such as finance, corporate services for foreign companies, pharmaceuticals, and ecotourism. Many foreign manufacturing and services companies operate in Costa Rica's Free Trade Zones (FTZ) where they benefit from investment and tax incentives. Costa Rica was inhabited by indigenous peoples before coming under Spanish rule in the 16th century. It remained a peripheral colony of the empire until independence as part of the First Mexican Empire, followed by membership in the Federal Republic of Central America, from which it formally declared independence in 1847. Following the brief Costa Rican Civil War in 1948, it permanently abolished its army in 1949, becoming one of only a few sovereign nations without a standing army. The country has consistently performed favorably in the Human Development Index (HDI), placing 58th in the world as of 2022, and fifth in Latin America. It has also been cited by the United Nations Development Programme (UNDP) as having attained much higher human development than other countries at the same income levels, with a better record on human development and inequality than the median of the region. It also performs well in comparisons of democratic governance, press freedom, subjective happiness and sustainable wellbeing. It has the 8th freest press according to the Press Freedom Index, it is the 35th most democratic country according to the Freedom in the World index, and it is the 23rd happiest country in the 2023 World Happiness Report. It is also a major tourist destination in the continent.
1387
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A4%20%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%AD%E0%A7%8B%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0
কোত দিভোয়ার
কোত দিভোয়ার ( কোৎ দিভ়ুয়ার্‌ অর্থাৎ "হস্তিদন্তের উপকূল") বা আইভরি কোস্ট ( আইভরি কোস্ট) পশ্চিম আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। এই দেশের রাজধানীর নাম ইয়ামুসুক্রো (অর্থনৈতিক) ও আবিজান (প্রশাসনিক)। কোত দিভোয়ার বা আইভরি কোস্টের আয়তন ৩২২,৪৬২ বর্গ কিমি। এর পশ্চিমে লাইবেরিয়া ও মালি, উত্তরে মালি ও বুর্কিনা ফাসো, পূর্বে ঘানা, এবং দক্ষিণে গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে এদেশের জনসংখ্যা ছিলো ১৫,৩৬৬,৬৭২।। ২০০৮ সালের অনুমিত জনসংখ্যা হলো ১৮,৩৭৩,০৬০। ইতিহাস রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল কোত দিভোয়ার বা আইভরি কোস্টের আয়তন ৩২২,৪৬২ বর্গ কিমি। এর পশ্চিমে লাইবেরিয়া ও মালি, উত্তরে মালি ও বুর্কিনা ফাসো, পূর্বে ঘানা, এবং দক্ষিণে গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে এদেশের জনসংখ্যা ছিলো ১৫,৩৬৬,৬৭২।[৭]। ২০০৮ সালের অনুমিত জনসংখ্যা হলো ১৮,৩৭৩,০৬০। অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Présidence de la République de Côte d'Ivoire কোত দিভোয়ার বা আইভরি কোস্টের রাষ্ট্রপতির ওয়েবসাইট। জাপানে কোত দিভোয়ার দূতাবাস সরকারি তথ্য এবং লিঙ্ক। রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Country Profile from BBC News Cote-D'Ivoire from the Encyclopaedia Britannica Cote d'Ivoire from UCB Libraries GovPubs সংবাদ allAfrica - Côte d'Ivoire news headline links Abidjan.Net news forum links পর্যটন অন্যান্য Cote D'Ivoire literature Map of Côte d'Ivoire Parti Ivoirien du Peuple Akwaba in Ivory Coast French intervention in Ivory Coast 2002-2003 Crisis briefing on Ivory Coast's recovery from war from Reuters AlertNet আফ্রিকার রাষ্ট্র ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল কোত দিভোয়ার জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র পশ্চিম আফ্রিকার রাষ্ট্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Ivory_Coast
Ivory Coast
Ivory Coast, also known as Côte d'Ivoire and officially the Republic of Côte d'Ivoire, is a country on the southern coast of West Africa. Its capital city of Yamoussoukro is located in the centre of the country, while its largest city and economic centre is the port city of Abidjan. It borders Guinea to the northwest, Liberia to the west, Mali to the northwest, Burkina Faso to the northeast, Ghana to the east, and the Atlantic Ocean's Gulf of Guinea to the south. With 30.9 million inhabitants in 2023, Ivory Coast is the third-most populous country in West Africa. Its official language is French, and indigenous languages are also widely used, including Bété, Baoulé, Dioula, Dan, Anyin, and Cebaara Senufo. In total, there are around 78 different languages spoken in Ivory Coast. The country has a religiously diverse population, including numerous followers of Islam, Christianity, and traditional faiths often entailing animism. Before its colonization, Ivory Coast was home to several states, including Gyaaman, the Kong Empire, and Baoulé. The area became a protectorate of France in 1843 and was consolidated as a French colony in 1893 amid the Scramble for Africa. It achieved independence in 1960, led by Félix Houphouët-Boigny, who ruled the country until 1993. Relatively stable by regional standards, Ivory Coast established close political-economic ties with its West African neighbours while maintaining close relations with the West, especially France. Its stability was diminished by a coup d'état in 1999 and two civil wars—first between 2002 and 2007 and again during 2010–2011. It adopted a new constitution in 2016. Ivory Coast is a republic with strong executive power vested in its president. Through the production of coffee and cocoa, it was an economic powerhouse in West Africa during the 1960s and 1970s, then experienced an economic crisis in the 1980s, contributing to a period of political and social turmoil that extended until 2011. Ivory Coast has experienced again high economic growth since the return of peace and political stability in 2011. From 2012 to 2023, the economy grew by an average of 7.1% per year in real terms, the second-fastest rate of economic growth in Africa and fourth-fastest rate in the world. In 2023, Ivory Coast had the second-highest GDP per capita in West Africa, behind Cape Verde. Despite this, as of the most recent survey in 2016, 46.1% of the population continues to be affected by multidimensional poverty. In 2020, Ivory Coast was the world's largest exporter of cocoa beans and had high levels of income for its region. The economy still relies heavily on agriculture, with smallholder cash-crop production predominating.
1388
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
ক্রোয়েশিয়া
ক্রোয়েশিয়া (, ক্রোয়েশীয় ভাষায় Hrvatska হ্র্‌ভ়াৎস্কা) ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর সরকারি নাম প্রজাতন্ত্রী ক্রোয়েশিয়া (Republika Hrvatska রেপুব্লিকা হ্র্‌ভ়াৎস্কা)। এটির রাজধানী জাগ্রেব। দেশটির আয়তন ৫৬,৫৯৪ বর্গ কি.মি. (২১,৮৫১ বর্গ মাইল) এবং জনসংখ্যা ৪.২৮ মিলিয়ন, যাদের অধিকাংশই রোমান ক্যাথলিক। ক্রোটরা ৬ষ্ঠ শতকে এখানে আসে এবং নবম শতাব্দির মধ্যেই তারা অঞ্চলটিকে দুইটি জমিদারিত্বের মাধ্যমে সুসংগঠিত করে তোলে। ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তোমিসলাভ প্রথম রাজা হিসেবে আভির্ভূত হন এবং তিনি ক্রোশিয়াকে রাজ্যে উন্নীত করেন, যেটি প্রায় দুই শতকেরও বেশি সময় ধরে তার সার্বভৌমত্ব ধরে রেখেছিল। রাজা চতুর্থ পিটার ক্রেসিমির এবং দিমিতার জভনমিরির আমলে দেশটি তার উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছায়। ইতিহাস হাব্সবুর্গ সাম্রাজ্য এবং অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি (১৫৩৮-১৯১৮) যুগোস্লাভিয়া (১৯১৮-১৯৯১) স্বাধীনতা (১৯৯১-বর্তমান) ক্রোয়েশিয়ার রাজনীতি ক্রোয়েশিয়ার রাজনীতি একটি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোতে পরিচালিত হয়। প্রধানমন্ত্রী একটি বহুদলীয় ব্যবস্থাতে সরকার প্রধান। নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে এবং আইন প্রণয়ন ক্ষমতা ক্রোয়েশীয় সংসদ বা সাবর-এর হাতে ন্যস্ত। বিচার ভাগ নির্বাহী ও আইন প্রণয়ন বিভাগ হতে স্বাধীন। ক্রোয়েশিয়ার বর্তমান সংবিধান ১৯৯০ সালের ২২ ডিসেম্বর গৃহীত হয়। দেশটি ১৯৯১ সালের ২৫ জুন প্রাক্তন ইউগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ ইউরোপের রাষ্ট্র ১৯৯১-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল ক্রোয়েশিয়া জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র থ্রি সিস ইনিশিয়েটিভের সদস্য রাষ্ট্র ভূমধ্যসাগরীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বলকান রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Croatia
Croatia
Croatia ( , kroh-AY-shə; Croatian: Hrvatska, pronounced [xř̩ʋaːtskaː]), officially the Republic of Croatia (Croatian: Republika Hrvatska ), is a country in Central and Southeast Europe, on the coast of the Adriatic Sea. Croatia borders Slovenia to the northwest, Hungary to the northeast, Serbia to the east, Bosnia and Herzegovina and Montenegro to the southeast, and shares a maritime border with Italy to the west. Its capital and largest city, Zagreb, forms one of the country's primary subdivisions, with twenty counties. Other major urban centers include Split, Rijeka and Osijek. The country spans 56,594 square kilometres (21,851 square miles), and has a population of nearly 3.9 million. The Croats arrived in modern-day Croatia in the late 6th century, then part of Roman Illyria. By the 7th century, they had organized the territory into two duchies. Croatia was first internationally recognized as independent on 7 June 879 during the reign of Duke Branimir. Tomislav became the first king by 925, elevating Croatia to the status of a kingdom. During the succession crisis after the Trpimirović dynasty ended, Croatia entered a personal union with Hungary in 1102. In 1527, faced with Ottoman conquest, the Croatian Parliament elected Ferdinand I of Austria to the Croatian throne. In October 1918, the State of Slovenes, Croats, and Serbs, independent from Austria-Hungary, was proclaimed in Zagreb, and in December 1918, it merged into the Kingdom of Yugoslavia. Following the Axis invasion of Yugoslavia in April 1941, most of Croatia was incorporated into a Nazi-installed puppet state, the Independent State of Croatia. A resistance movement led to the creation of the Socialist Republic of Croatia, which after the war became a founding member and constituent of the Socialist Federal Republic of Yugoslavia. On 25 June 1991, Croatia declared independence, and the War of Independence was successfully fought over the next four years. Croatia is a republic and has a parliamentary system. It is a member of the European Union, the Eurozone, the Schengen Area, NATO, the United Nations, the Council of Europe, the OSCE, the World Trade Organization, a founding member of the Union for the Mediterranean, and is currently in the process of joining the OECD. An active participant in United Nations peacekeeping, Croatia contributed troops to the International Security Assistance Force and was elected to fill a non-permanent seat on the United Nations Security Council in the 2008–2009 term for the first time. Croatia is a developed country with an advanced high-income economy and ranks highly in the Human Development Index. Service, industrial sectors, and agriculture dominate the economy. Tourism is a significant source of revenue for the country, with nearly 20 million tourist arrivals as of 2019. Since the 2000s, the Croatian government has heavily invested in infrastructure, especially transport routes and facilities along the Pan-European corridors. Croatia has also positioned itself as a regional energy leader in the early 2020s and is contributing to the diversification of Europe's energy supply via its floating liquefied natural gas import terminal off Krk island, LNG Hrvatska. Croatia provides social security, universal health care, and tuition-free primary and secondary education while supporting culture through public institutions and corporate investments in media and publishing.
1389
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8
সাইপ্রাস
সাইপ্রাস ( ; }} (), আনুষ্ঠানিকভাবে সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র (, ) ভূমধ্যসাগরের একটি দ্বীপ দেশ। ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপগুলোর মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ এটি। এর পশ্চিমে গ্রিস, পূর্বে লেবানন, সিরিয়া এবং ইসরাইল, উত্তরে তুরস্ক ও দক্ষিণে মিশর। ভৌগোলিক দিক দিয়ে সাইপ্রাস ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত হলেও দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম সদস্য। ইতিহাস সাইপ্রাসকে বলা হয় দেবী আফ্রোদিতির জন্মস্থান। এখানে মানব বসতির আদিভূমি হচ্ছে দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকা ‘ইতোকরেমনস’। খ্রিষ্টজন্মের ১০ হাজার বছর আগে এখানে শিকারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারীদের বসতি ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। তারা খ্রিষ্টপূর্ব আট হাজার ২০০ বছর আগে স্থায়ীভাবে গ্রামীণ জীবনের আওতায় আসে। এখানে প্রথম সভ্য মানুষ আসে আনাতোলিয়া থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ২ হাজার ৪০০ বছর আগে। আর গ্রিকরা আসে খ্রিষ্টপূর্ব এক হাজার ৬০০ বছর আগে। এর পর আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন সময় নানা জাতি ও বর্ণের লোক এখানে এসেছে। সাইপ্রাস ইতিহাসের বিভিন্ন সময় গ্রিক, রোমান, পারসীয় এবং মিসরীয় শাসকদের অধীনে শাসিত হয়। ৩৯৫ সালে এ দ্বীপটি বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায়। আরবরা এটি দখল করে ৬৪৩ সালে। ১১৯১ সালে তৃতীয় ক্রুসেডের সময় এটি দখল করে ইংল্যান্ডের রাজা রিচার্ড। ১৫৩৯ সালে অটোমানরা এটি দখলে নেয়। ১৮৭৮ সালে দ্বীপটি ব্রিটেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হয়। ১৯২৫ সালে দ্বীপটিকে ব্রিটিশরা নিজেদের একটি কলোনি বলে দাবি করে। অবশেষে ১৯৬০ সালের ১৬ আগস্ট এক চুক্তির মাধ্যমে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। রাজনীতি সাইপ্রাসের রাজনীতি একটি রাষ্ট্রপতিশাসিত, বহুদলীয়, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোয় সংঘটিত হয়। রাষ্ট্রপতি হলেন একাধারে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। সরকারের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত। সরকার ও আইনসভা একত্রে আইন প্রণয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত। বিচার বিভাগ নির্বাহী ও আইন প্রণয়ন বিভাগ হতে স্বাধীন। সাইপ্রাস বর্তমানে একটি বিভক্ত রাষ্ট্র। ১৯৭০-এর দশক থেকে দ্বীপের উত্তরের এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে তুর্কি সাইপ্রিটরা। এই ঘটনাটি সাইপ্রাসের রাজনীতিতে আজ অবধি গভীর প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। সরকার পদ্ধতি দেশটির সরকারব্যবস্থা হচ্ছে রাষ্ট্রপতিশাসিত। দেশটির সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। যিনি প্রতি পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। নির্বাহী বিভাগ পরিচালনা করেন সরকার, আইন বিভাগ পরিচালনা করেন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। ১৯৬০ সালে প্রণীত সংবিধানে বলা হয়, দেশটির প্রেসিডেন্ট হবেন অবশ্যই একজন গ্রিক সাইপ্রিয়ট বা জাতিগত গ্রিক এবং তুর্কি সাইপ্রিয়ট একজন হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট যিনি ওই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। ১৯৮৩ সালে তুর্কি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অংশ স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তবে এ পর্যন্ত তুরস্ক ছাড়া আর কোনো দেশে তাদের সমর্থন করেনি। দেশটির হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্যসংখ্যা ৫৯ জন। এর মধ্যে ৫৬ জন সরাসরি নির্বাচিত হন এবং বাকি তিনটি আসন মেরোনাইট, আর্মেনিয়ান এবং ল্যাটিন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ সাইপ্রাস এর রাজধানী নিকোসিয়া। এই শহরটি দুই ভাগে বিভক্ত। ভূগোল এখানকার আবহাওয়া সাধারণত গরম এবং শুষ্ক। নভেম্বর থেকে মার্চ অর্থাৎ শীতকাল হচ্ছে চাষাবাদের মৌসুম। শীতের এ মৌসুমে এখানে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালে এখানে নানা ধরনের সাইক্লোনও দেখা দেয়। এ সাইক্লোনগুলো উৎপন্ন হয় ভূমধ্যসাগরে। আর মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে এখানকার আবহাওয়া থাকে শুষ্ক। এখানকার গড় বৃষ্টিপাত ৫৫০ মিলিমিটার। গড় তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। তাপমাত্রার এ অবস্থা দেশটিতে বিশাল পর্যটন শিল্প বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। অর্থনীতি সাইপ্রাসের অর্থনীতি দক্ষিণের সাইপ্রীয় গ্রিক সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকা এবং উত্তরের তুর্কি সাইপ্রীয় নিয়ন্ত্রিত এলাকার দ্বিবিধ অর্থনীতি নিয়ে গঠিত। গ্রিক নিয়ন্ত্রিত এলাকাটির অর্থনীতি উন্নত বলে স্বীকৃত। আইএমএফ’র মতে, দেশটির মাছাপিছু আয় হচ্ছে ২৮ হাজার ৩৮১ ডলার। তারা অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি অনুসরণ করছে। ২০০৭ সালের ১লা মে থেকে তারা ইউরো মুদ্রাকে তাদের নিজস্ব মুদ্রা হিসেবে গ্রহণ করে। এ ছাড়া দেশটির আয়ের প্রধান খাতগুলো হচ্ছে পর্যটন, শিক্ষা, বাণিজ্য ইত্যাদি। পর্যটন দেশটির আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটন। সাইপ্রাসে প্রতি বছর গড়ে ২৪ লাখ বিদেশী পর্যটক আসেন। ২০০৬ সালে মোট জিডিপি’র ১০ দশমিক ৭ শতাংশ এসেছে পর্যটন শিল্প থেকে। ১ লাখ ১৩ হাজারের বেশি লোকের অর্থাৎ দেশের মোট চাকরীজীবীর ২৯ দশমিক ৭ শতাংশের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে এ শিল্পে। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম এর ২০০৭ সালের সূচকে পর্যটন শিল্পে সাইপ্রাসের অব¯'ান বিশ্বে ২০তম। দ্য সাইপ্রাস ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন (সিটিও) নামের একটি সংগঠন সরকারের পক্ষে সাইপ্রাসের পর্যটন শিল্পের তত্ত্বাবধানে করে থাকে। প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দেশটির প্রধান প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘সাইপ্রিয়ট ন্যাশনাল গার্ড’। স্থল, নৌ এবং বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে এটি একটি যৌথ প্রতিরক্ষা বাহিনী। সাইপ্রিয়ট ন্যাশনাল গার্ডের বর্তমান প্রধান হচ্ছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কনস্টান্টিনস বিসবিকাস। জনসংখ্যা ধর্ম গ্রিক সাইপ্রিয়টদের বেশিরভাগই গ্রিক অর্থোডক্স চার্চের সদস্য এবং তুর্কি সাইপ্রিয়টদের বেশিরভাগই মুসলিম। ইউরোবেরোমিটার ২০০৫ অনুসারে, সাইপ্রাস হচ্ছে ইউরোপের প্রধান পাঁচটি ধার্মিক দেশের একটি। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যে পাঁচটি দেশে রাষ্ট্রধর্ম আছে সাইপ্রাস তাদেরও একটি। সাইপ্রাসের রাষ্ট্রধর্ম হচ্ছে ‘সাইপ্রিয়ট অর্থোডক্স চার্চ’। শিক্ষা সাইপ্রাসের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। সাইপ্রাসের মোট জিডিপি’র ৭ শতাংশ ব্যয় হয় শিক্ষার জন্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর ক্ষেত্রে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। সাইপ্রাসে একাধিক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে সাইপ্রাসের উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারীদের অনেকেই গ্রিস, ব্রিটেন, তুরস্ক, ইউরোপের অন্যান্য দেশ এবং উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। সংস্কৃতি খেলাধুলা, গান, সাহিত্য, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ পদ্ধতি এবং পরিবহনব্যবস্থাসহ জীবনের নানা ক্ষেত্রে সাইপ্রিয়টদের রয়েছে সম্পূর্ণ নিজস্ব ঐতিহ্য। তথ্যসূত্র টীকা বহিঃসংযোগ ইউরোপের রাষ্ট্র সাইপ্রাস কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ভূমধ্যসাগরীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র একাধিক দাপ্তরিক ভাষা সহ ইউরোপের দেশ পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় আন্তর্জাতিক দ্বীপ দ্বীপ রাষ্ট্র এশিয়ার দ্বীপ ইউরোপের দ্বীপ ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র নিকট প্রাচ্যের রাষ্ট্র পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র এশিয়ার রাষ্ট্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Cyprus
Cyprus
Cyprus ( ), officially the Republic of Cyprus, is an island country in the eastern Mediterranean Sea. It is geographically a part of West Asia, but its cultural ties and geopolitics are overwhelmingly Southeast European. Cyprus is the third largest and third-most populous island in the Mediterranean. It is east of Greece, north of Egypt, south of Turkey, and west of Lebanon and Syria. Its capital and largest city is Nicosia. The northeast portion of the island is de facto governed by the self-declared Turkish Republic of Northern Cyprus. Cyprus was settled by Mycenaean Greeks in two waves in the 2nd millennium BC. As a strategic location in the Eastern Mediterranean, it was subsequently occupied by several major powers, including the empires of the Assyrians, Egyptians and Persians, from whom the island was seized in 333 BC by Alexander the Great. Subsequent rule by Ptolemaic Egypt, the Classical and Eastern Roman Empire, Arab caliphates for a short period, the French Lusignan dynasty and the Venetians was followed by over three centuries of Ottoman rule between 1571 and 1878 (de jure until 1914). Cyprus was placed under the United Kingdom's administration based on the Cyprus Convention in 1878 and was formally annexed by the UK in 1914. The future of the island became a matter of disagreement between the two prominent ethnic communities, Greek Cypriots and Turkish Cypriots. From the 19th century onwards, the Greek Cypriot population pursued enosis, union with Greece, which became a Greek national policy in the 1950s. The Turkish Cypriot population initially advocated the continuation of the British rule, then demanded the annexation of the island to Turkey, and in the 1950s, together with Turkey, established a policy of taksim, the partition of Cyprus and the creation of a Turkish polity in the north. Following nationalist violence in the 1950s, Cyprus was granted independence in 1960. The crisis of 1963–64 brought further intercommunal violence between the two communities, displaced more than 25,000 Turkish Cypriots into enclaves: 56–59  and brought the end of Turkish Cypriot representation in the republic. On 15 July 1974, a coup d'état was staged by Greek Cypriot nationalists and elements of the Greek military junta. This action precipitated the Turkish invasion of Cyprus on 20 July, which led to the capture of the present-day territory of Northern Cyprus and the displacement of over 150,000 Greek Cypriots and 50,000 Turkish Cypriots. A separate Turkish Cypriot state in the north was established by unilateral declaration in 1983; the move was widely condemned by the international community, with Turkey alone recognising the new state. These events and the resulting political situation are matters of a continuing dispute. Cyprus is a major tourist destination in the Mediterranean. The country has an advanced high-income economy. The Republic of Cyprus has been a member of the Commonwealth since 1961 and was a founding member of the Non-Aligned Movement until it joined the European Union on 1 May 2004. On 1 January 2008, Cyprus joined the eurozone.
1390
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A7%87%E0%A6%95%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
চেক প্রজাতন্ত্র
চেক প্রজাতন্ত্র,(সংক্ষিপ্ত নাম চেকিয়া এবং ঐতিহাসিকভাবে বোহেমিয়া নামে পরিচিত) মধ্য ইউরোপের একটি ভূবেষ্টিত রাষ্ট্র। দেশটির দক্ষিণে অস্ট্রিয়া, পশ্চিমে জার্মানি, উত্তর-পূর্বে পোল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পূর্বে স্লোভাকিয়া অবস্থিত। চেক প্রজাতন্ত্র দেশটিতে রয়েছে পাহাড়ি ভূমি যা প্রায় অঞ্চলে বিস্তৃত এবং এর অধিকাংশেই নাতিশীতোষ্ণ মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় জলবায়ু বিদ্যমান। দেশের মধ্যভাগে অবস্থিত বৃহত্তম শহর ও রাজধানীর নাম প্রাগ। অন্যান্য শহরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বার্নো ও অস্ত্রাভা। নবম শতাব্দীর শেষের দিকে মোরাভিয়ার অধীনে বোহেমিয়ার ডাচি প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্বে ১০০২ সালে রোমান সাম্রাজ্যের একটি ইম্পেরিয়াল রাজ্য হিসাবে এটি স্বীকৃত হয়েছিলো এবং ১১৯৮ সালে এটি একটি রাজ্যে পরিণত হয়। ১৫২৬ সালে মোহাচের যুদ্ধের পর, বোহেমিয়ার পুরো সাম্রাজ্যটি ধীরে ধীরে হাবসবার্গ রাজতন্ত্রের সাথে একীভূত হয়। এসময় প্রোটেস্ট্যান্ট বোহেমিয়ান বিদ্রোহ ত্রিশ বছরব্যাপী হোয়াইট মাউন্টেনের যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়। যুদ্ধের পর হাবসবার্গরা তাদের শাসনকে সুসংহত করে। ১৮০৬ সালে রোমান সাম্রাজ্যের বিলুপ্তির সাথে সাথে এসব ভূমি অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে, চেক ভূমি আরও শিল্পোন্নত হয়ে ওঠে এবং ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির পতনের পরে এর বেশিরভাগ অংশ প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্রের অংশ হয়ে ওঠে। চেকোস্লোভাকিয়া মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের একমাত্র দেশ ছিল যা আন্তঃযুদ্ধকালীন সময়কালে সংসদীয় গণতন্ত্র বজায় রেখেছিল। ১৯৩৮ সালের মিউনিখ চুক্তির পর নাৎসি জার্মানি পদ্ধতিগতভাবে চেক ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। ১৯৪৫ সালে চেকোস্লোভাকিয়া পুনরুদ্ধার করা হয় এবং ১৯৪৮ সালে একটি অভ্যুত্থানের পরে এটি পূর্ব ব্লকের কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সরকার ও অর্থনীতির উদারীকরণের প্রচেষ্টা ১৯৬৮ সালের প্রাগ বসন্তের সময় সোভিয়েত-নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের মাধ্যমে দমন করা হয়। ১৯৮৯ সালের নভেম্বরের মখমল বিপ্লব দেশে কমিউনিস্ট শাসনের অবসান ঘটায়। ১ জানুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে যায় এবং এর সাংবিধানিক রাজ্যগুলি চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভাকিয়ার স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। চেক প্রজাতন্ত্র একটি একক সংসদীয় গণতন্ত্র দেশ এবং একটি অগ্রসর, উচ্চ আয়ের সামাজিক বাজার অর্থনীতির উন্নত দেশ। ইউরোপীয় সামাজিক মডেল, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা এবং বেতন-মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসহ এটি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র। এটি জাতিসংঘের অসমতা-সামঞ্জস্যমূলক মানব উন্নয়ন সূচকে ১২তম এবং বিশ্বব্যাংকের মানব মূলধন সূচকে ২৪তম স্থানে রয়েছে। এটি ৯ম নিরাপদ ও সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ৩১তম। চেক প্রজাতন্ত্র ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি), ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা (ওএসসিই) এবং কাউন্সিল অব ইউরোপ (সিওই) এর সদস্য। নাম প্রথাগত ইংরেজি নাম বোহেমিয়া শব্দটি ল্যাটিন বয়োহেমাম () থেকে এসেছে যার অর্থ বোইই (Boii;গ্যালিক উপজাতি) দের বাড়ি। বর্তমান ইংরেজী নামটি (Czech) এই অঞ্চলের সাথে যুক্ত পোলিশ নৃবিজ্ঞান থেকে এসেছে, যা শেষ পর্যন্ত এসেছে চেক ভাষার শব্দ চেক() থেকে। নামটি এসেছে স্লেভিয় উপজাতি ) থেকে এবং কথিত আছে তাদের নেতা চেক (Čech) এর নাম থেকে এই নামের উৎপত্তি, যিনি রিপ মাউন্টেনে(Říp Mountain) বসতি স্থাপনের জন্য তাদের বোহেমিয়াতে নিয়ে আসেন। শব্দটির ব্যুৎপত্তি খুঁজে পাওয়া যায় প্রোটো-স্লেভীয় মূলশব্দ এ, যার অর্থ "জনগণের সদস্য(kinsman)", এইভাবে এটি চেক শব্দ (একজন ব্যক্তি) এর অনুরূপ উৎপত্তি বহন করে। ঐতিহ্যগতভাবে দেশটি তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত ছিলো: পশ্চিমে বোহেমিয়া(), পূর্বে মোরাভিয়া() এবং উত্তর-পূর্বে চেক সিলেসিয়া (; ঐতিহাসিক সিলেসিয়ার ক্ষুদ্র , দক্ষিণ-পূর্ব অংশ যার অধিকাংশই এখন পোল্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত)। দেশটি ১৪শ শতাব্দী থেকে বোহেমিয় সাম্রাজ্যের ভূমি নামে পরিচিত ছিলো। এছাড়াও বিভিন্ন সময় এটি অন্য নামেও পরিচিত ছিলো, যেমন: চেক/বোহেমিয় ভূমি, বোহেমিয় সাম্রাজ্য, চেকিয়া, সেন্ট ওয়েনচেসলাস সাম্রাজ্যের ভূমি। ১৯১৮ সালে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর যখন দেশটি তার স্বাধীনতা ফিরে পায় তখন একই দেশে চেক ও স্লোভাক জাতির মিলনকে প্রতিফলিত করার জন্য দেশটির নাম রাখা হয় চেকোস্লোভাকিয়া। ১৯৯২ সালে চেকোস্লোভাকিয়া বিলুপ্ত হওয়ার পর চেকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সংক্ষিপ্ত নাম হিসেবে চেকিয়া সুপারিশ করে। এই রূপ তখন গৃহীত না হওয়ায় দীর্ঘ নাম চেক প্রজাতন্ত্র সমস্ত পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হতে থাকে। ২০১৬ সালে চেক সরকার দাপ্তরিক সংক্ষিপ্ত নাম হিসেবে চেকিয়া নাম অনুমোদন করে। সংক্ষিপ্ত নামটি জাতিসংঘ কর্তৃক তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সিআইএ এবং গুগল ম্যাপসের মতো অন্যান্য সংস্থা দ্বারাও এটি ব্যবহৃত হয়। ভৌগোলিক পরিবেশ চেক প্রজাতন্ত্র মূলত ৪৮° উত্তর থেকে ৫১° উত্তর অক্ষাংশ এবং ১২° পূর্ব থেকে ১৯° পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। দেশটির পশ্চিমদিকের অংশ বোহেমিয়া এলবে ও ভলতাভা নদীর অববাহিকার সমন্বয়ে গঠিত, যা নিচু পর্বতমালা যেমন, সুদেতের ক্রোকনোস অংশ দ্বারা বেষ্টিত। দেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ উচ্চতার স্নেজকা (Sněžka) এখানে অবস্থিত। পূর্বদিকের অংশ মোরাভিয়াও পাহাড়ি। এর মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে মোরাভা নদী। এছাড়া ওডার () নদীর উৎপত্তিও এখানে। চেক প্রজাতন্ত্রের পানি তিনটি ভিন্ন সাগরে প্রবাহিত হয়: উত্তর সাগর, বাল্টিক সাগর এবং কৃষ্ণ সাগর। চেক প্রজাতন্ত্র হামবুর্গ ডকের মাঝখানে আকারের ভূমি মোলদাউহাফেন ইজারা দেয়। এটি ভার্সাই চুক্তির অনুচ্ছেদ ৩৬৩ দ্বারা চেকোস্লোভাকিয়াকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল, যাতে ভূমিবেষ্টিত দেশটি সমুদ্রগামী জাহাজে তাদের পণ্য স্থানান্তরিত করতে পারে। অঞ্চলটি ২০২৮ সালে জার্মানির কাছে ফেরত আসবে। উদ্ভিদ-ভৌগোলিকভাবে, চেক প্রজাতন্ত্র বোরিয়াল রাজ্যের অন্তর্গত সার্কামবোরিয়াল অঞ্চলের মধ্য ইউরোপীয় প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার এর তথ্যমতে, চেক প্রজাতন্ত্রের এলাকাটি চারটি বাস্তু অঞ্চলে বিভক্ত করা যায়: পশ্চিম ইউরোপীয় প্রশস্তপত্র বন, মধ্য ইউরোপীয় মিশ্র বন, প্যানোনীয় মিশ্র বন, কার্পাথীয় মন্টেন কনিফার বন। জলবায়ু চেক প্রজাতন্ত্রের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ ধরনের। উষ্ণ গ্রীষ্মকাল এবং ঠাণ্ডা, মেঘলা ও তুষারময় শীতকালবিশিষ্ট এ দেশের জলবায়ু মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় জলবায়ুর মধ্যবর্তী পর্যায়ে অবস্থিত। দেশটির স্থলবেষ্টিত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে গ্রীষ্ম ও শীতকালের তাপমাত্রার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। জানুয়ারি বছরের শীতলতম মাস; এর পরেই রয়েছে ফেব্রুয়ারি ও ডিসেম্বর। এসময় পাহাড়ে এবং মাঝেমধ্যে শহর ও নিম্নভূমিতেও তুষারপাত হয়। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের দিকে তাপমাত্রা সাধারণত বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে এপ্রিল মাসে দিনের তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বসন্তে বরফ গলে গিয়ে নদীর পানির উচ্চতা বাড়িয়ে তোলে। বছরের উষ্ণতম মাস হচ্ছে জুলাই; এর পরেই রয়েছে আগস্ট ও জুন। গ্রীষ্মকালের গড় তাপমাত্রা শীতকালের তুলনায় প্রায় বেশি। এছাড়া গ্রীষ্মকালে ঝড় ও বৃষ্টি দেখা যায়। উষ্ণ এবং শুষ্ক শরৎকাল সাধারণত সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। অক্টোবরে, তাপমাত্রা বা এর নিচে নেমে যায় এবং পর্ণমোচী গাছের পাতা ঝরে পড়া শুরু হয়। নভেম্বরের শেষের দিকে তাপমাত্রা সাধারণত হিমাঙ্কের কাছাকাছি থাকে। এখানে সর্বকালের শীতলতম তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছিলো ১৯২৯ সালে চেসকে বুদেইয়োভিসের কাছে লিতভিনোভিসে অঞ্চলে এবং উষ্ণতম তাপমাত্রা ২০১২ সালে দোব্রিখোভিসে অঞ্চলে । বছরের বেশিরভাগ বৃষ্টিপাত গ্রীষ্মকালে হয়। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত যদিও সারাবছর ধরে চলে (প্রাগে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে গড়ে প্রায় ১২ দিন কমপক্ষে বৃষ্টিপাত হয়, নভেম্বরে যা দাঁড়ায় প্রায় ১৬ দিনে)। কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাত (দিনে এর বেশি) সাধারণত মে থেকে আগস্ট মাসে বেশি দেখা যায় (প্রতি মাসে গড়ে প্রায় দুই দিন)। মাঝেমধ্যে তীব্র বজ্রপাত, বাতাস, শিলাবৃষ্টি ও টর্নেডো তৈরি হয়, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। পরিবেশ ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী পরিবেশগত অগ্রগতি সূচকে (EPI) চেক প্রজাতন্ত্র বিশ্বের ২০তম দেশ (কানাডা ও ইতালির সাথে যৌথভাবে)। ২০১৮ সালের ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টেগ্রিটি সুচকে ১.৭১/১০ স্কোর নিয়ে বিশ্বের ১৭২টি দেশের মধ্যে এর অবস্থান ছিলো ১৬০তম। চেক প্রজাতন্ত্রে চারটি জাতীয় উদ্যান (বোহেমিয় সুইজারল্যান্ড জাতীয় উদ্যান, প্রদিয়ি জাতীয় উদ্যান, শুমাভা জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত ল্যান্ডস্কেপ, কারকোনোশ জাতীয় উদ্যান) এবং ২৫টি সংরক্ষিত ল্যান্ডস্কেপ এলাকা বিদ্যমান। ইতিহাস প্রাক-ইতিহাস প্রত্নতত্ত্ববিদরা এই অঞ্চলে প্রাগৈতিহাসিক মানব বসতির প্রমাণ পেয়েছেন, যা পুরা প্রস্তর যুগের। ধ্রুপদী যুগে, খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীর সেল্টিক অভিবাসনের ফলে বোহেমিয়া অঞ্চল বোইয়ের সাথে সংযুক্ত হয়। বোইরা আধুনিক প্রাগের কাছে একটি ক্ষুদ্র বসতির প্রতিষ্ঠা করেছিলো। পরবর্তীতে খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতকে মার্কোমানি ও কাদির জার্মান উপজাতিরা সেখানে বসতি স্থাপন করে। কৃষ্ণ সাগর-কার্পেথীয় অঞ্চলের স্লাভরা এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। সাইবেরিয়া ও পূর্ব ইউরোপের হুন, আভার, বুলগার ও হাঙ্গেরীয় লোকজন কর্তৃক তাদের ভূমিতে আগ্রাসন তাদের অভিবাসনকে ত্বরান্বিত করে। ৬ষ্ট শতাব্দীতে হুনরা পশ্চিমদিকে বোহেমিয়া, মোরাভিয়া এবং বর্তমান অস্ট্রিয়া ও জার্মানির দিকে সরে যায়। ৭ম শতাব্দীতে ফ্রাঙ্ক বণিক সামো, আভারদের বিরুদ্ধে লড়াইরত স্লাভদের সমর্থন করে এবং সামো সাম্রাজ্যের শাসক হয়ে ওঠে। এটি মধ্য ইউরোপের প্রথম নথিভুক্ত স্লাভিক রাজ্য। ৮ম শতাব্দীতে মোইমির রাজবংশ নিয়ন্ত্রিত মোরাভিয়া রাজত্বের উত্থান ঘটে। ৯ম শতাব্দীতে মোরাভিয়ার প্রথম স্বাতপ্লুকের সময় এটি শীর্ষে ওঠে। তখন পর্যন্ত এটি ফ্রাঙ্গদের প্রভাবমুক্ত ছিলো। সিরিল ও মেথোডিয়াসের বাইজেন্টাইন অভিযানের মাধ্যমে মোরাভিয়ায় খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারিত হয়। তারা পুরাতন স্লাভনিয় ভাষা (স্লাভদের সাহিত্যিক ও ধর্মীয়ভাবে ব্যবহৃত প্রথম ভাষা) ও গ্লাটোলিয় লিপি কোড করে। বোহেমিয়া নবম শতাব্দীর শেষভাগে পেমিস্লিভ রাজবংশের মাধ্যমে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে বোহেমিয়ার ডাচি আবির্ভূত হয়। বোহেমিয়া ১০০২ থেকে ১৮০৬ সাল পর্যন্ত রোমান সাম্রাজ্যের একটি ইম্পেরিয়াল রাজ্য ছিল। ১২১২ সালে প্রথম রোমিসল অটোকার সম্রাটের কাছ থেকে সিসিলির গোল্ডেন বুল মুক্ত করেন এবং বোহেমিয়ার ডাচিকে একটি রাজ্যে উন্নীত করা হয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে জার্মান অভিবাসীরা বোহেমিয়ার সীমানায় বসতি স্থাপন করে। ইউরোপ আক্রমণের সময় মঙ্গোলরা মোরাভিয়াতেও আক্রমণ চালিয়েছিলো, কিন্তু অলোমুস নামক স্থানে এসে তারা পরাজিত হয়। একের পর এক সাম্রাজ্যের লড়াই শেষে লুক্সেমবার্গ হাউজ বোহেমিয়ার সিংহাসন লাভ করে। বোহেমিয়ায় গির্জা সংস্কারের প্রচেষ্টা চতুর্দশ শতাব্দীর শেষের দিকে শুরু হয়। ইয়ান হুসের অনুসারীরা রোমান চার্চ থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং হুসাইট যুদ্ধে (১৪১৯-১৪৩৪) সিগিসমান্ড কর্তৃক সংগঠিত পাঁচটি ক্রুসেডকে দমন করে। পরবর্তী দুই শতাব্দীব্যাপী, বোহেমিয়া এবং মোরাভিয়ার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে হুসাইট হিসাবে বিবেচনা করা হয়। শান্তিবাদী চিন্তাবিদ পেট্রা সেলশিস্কি, মোরাভিয়ান ভাইদের আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন (১৫ শতকের মাঝামাঝি সময়ে) যা রোমান ক্যাথলিক চার্চ থেকে পুরোপুরি আলাদা হয়ে গিয়েছিলো। ১৪২১ সালের ২১ শে ডিসেম্বর তারিখে সামরিক কমান্ডার এবং বেতনভুক্ত সৈনিক ইয়ান জিজ্কা, কুতনা হোরার যুদ্ধে তার বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন, যার ফলে হুসাইটদের বিজয় ঘটে। তিনি আজ জাতীয় বীর হিসেবে সম্মানিত। ১৫২৬ সালের পরে বোহেমিয়া হাবসবার্গের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। হাবসবার্গরা প্রথমে নির্বাচিত এবং পরে ১৬২৭ সালে বোহেমিয়ার বংশগত শাসক হয়ে ওঠে। ১৫৮৩ থেকে ১৬১১ সালের মধ্যে প্রাগ ছিল রোমান সম্রাট দ্বিতীয় রুডলফ এবং তার দরবারের সরকারি আসন। প্রাগের প্রতিরক্ষা এবং পরবর্তীতে ১৬১৮ সালের হাবসবার্গের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, 'ত্রিশ বছরের যুদ্ধ' এর সূচনা করে। ১৬২০ সালে হোয়াইট মাউন্টেনের যুদ্ধে বোহেমিয়ার বিদ্রোহ দমন হয়। ফলে বোহেমিয়া এবং অস্ট্রিয়ায় অবস্থিত হাবসবার্গের বংশগত ভূমির মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার হয়। ১৬২১ সালে বোহেমিয়া বিদ্রোহের নেতাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। আভিজাত্য এবং মধ্যবিত্ত প্রোটেস্ট্যান্টদের হয় ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হয়েছিলো অথবা দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিলো। ১৬২০ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগের "অন্ধকার যুগে" প্রটেস্ট্যান্টদের বহিষ্কারের পাশাপাশি যুদ্ধ, রোগ ও দুর্ভিক্ষের কারণে চেক ভূখণ্ডের জনসংখ্যা এক তৃতীয়াংশ হ্রাস পায়। হাবসবার্গরা ক্যাথলিক ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত খ্রিস্টান মতবাদ নিষিদ্ধ করেছিলো। বারোক সংস্কৃতির সমৃদ্ধি এই ঐতিহাসিক সময়ের অস্পষ্টতা প্রদর্শন করে। উসমানীয় তুর্কি ও তাতাররা ১৬৬৩ সালে মোরাভিয়া আক্রমণ করে। ১৬৭৯-১৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে চেক ভূখন্ড ভিয়েনার গ্রেট প্লেগ এবং সার্ফদের অভ্যুত্থানের মুখোমুখি হয়। দুর্ভিক্ষের কারণে কৃষক বিদ্রোহ দানা বেধে ওঠে। ১৭৮১ থেকে ১৮৪৮ সালের মধ্যে ভূমিদাসত্ব বিলুপ্ত করা হয়। নেপলীয় যুদ্ধের বেশ কয়েকটি লড়াই বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। ১৮০৬ সালে রোমান সাম্রাজ্যের সমাপ্তির ফলে বোহেমিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ফলে বোহেমিয়া রোমান সাম্রাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলীতে তার অবস্থান এবং ইম্পেরিয়াল ডায়েটে তার নিজস্ব রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব হারিয়ে ফেলে। বোহেমিয়ান ভূখন্ড অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে চেকের জাতীয় পুনরুজ্জীবনের উত্থান শুরু হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল চেক ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিচয়কে পুনরুজ্জীবিত করা। অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের মধ্যে বোহেমিয়ান শাসনের উদার সংস্কার এবং স্বায়ত্তশাসনের জন্য প্রাগের ১৮৪৮ সালের বিপ্লব ও সংগ্রাম দমন করা হয়। প্রথমদিকে বোহেমিয়াকে কিছু ছাড় দেওয়া হবে মনে হলেও, শেষ পর্যন্ত সম্রাট প্রথম ফ্রাঞ্জ জোসেফ শুধুমাত্র হাঙ্গেরির সাথে একটি সমঝোতায় আসেন। ১৮৬৭ সালের অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সমঝোতা এবং বোহেমিয়ার রাজা হিসাবে ফ্রাঞ্জ জোসেফের অনুপলব্ধ রাজ্যাভিষেক কিছু চেক রাজনীতিবিদের হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বোহেমিয়া শাসনের ভূমিগুলি তথাকথিত সিসলেথানিয়ার অংশ হয়ে ওঠে। চেক সামাজিক গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল রাজনীতিবিদরা সার্বজনীন ভোটাধিকারের জন্য লড়াই শুরু করেন। ১৯০৭ সালে সার্বজনীন পুরুষ ভোটাধিকারের অধীনে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। চেকোস্লোভাকিয়া ১৯১৮ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে হাবসবার্গ রাজতন্ত্রের পতনের সময়, টমাশ গেরিক মাসারিকের নেতৃত্বে চেকোস্লোভাকিয়ার স্বাধীন প্রজাতন্ত্র তৈরি করা হয়, যা বিজয়ী মিত্রশক্তিতে যোগ দিয়েছিলো। বোহেমিয়ান রাজত্বও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্রে প্রাক্তন অস্ট্রো-হাঙ্গেরির জনসংখ্যার মাত্র ২৭% অন্তর্ভুক্ত হলেও শিল্পকারখানার প্রায় ৮০% অন্তর্ভুক্ত ছিলো। ফলে এর পশ্চিমা শিল্প রাজ্যগুলির সাথে প্রতিযোগিতা করার সামর্থ ছিলো। ১৯১৩ সালের তুলনায় ১৯২৯ সালে মোট দেশজ উৎপাদন ৫২% এবং শিল্প উৎপাদন ৪১% বৃদ্ধি পায়। ১৯৩৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়া বিশ্ব শিল্প উৎপাদনে ১০ম স্থান অধিকার করে। চেকোস্লোভাকিয়া মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের একমাত্র দেশ যা সমগ্র আন্তঃযুদ্ধের সময়কালে গণতন্ত্র বজায় রেখেছে। যদিও প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্র একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ছিল, তবে এটি তার সংখ্যালঘুদের কিছু অধিকার প্রদান করেছিলো। সংখ্যালঘুদের মধ্যে বৃহত্তম জার্মান (১৯২১ সালে ২৩.৬%), হাঙ্গেরীয় (৫.৬%) এবং ইউক্রেনীয়রা (৩.৫%)। পশ্চিম চেকোস্লোভাকিয়া নাৎসি জার্মানিরা দখল করে। ফলে বেশিরভাগ অঞ্চল বোহেমিয়া ও মোরাভিয়ার প্রটেকটরেট এর অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রাগের উত্তরে চেক অঞ্চলের মধ্যে, টেরেজিন নামক স্থানে একটি নাৎসি বন্দিশিবির অবস্থিত ছিলো। প্রোটেক্টরেটের অন্তর্ভুক্ত ইহুদিদের বেশিরভাগ অংশকে নাৎসি-পরিচালিত বন্দিশিবিরে হত্যা করা হয়েছিলো। নাৎসি জেনারেলপ্লান ওস্ট জার্মান জনগণের জন্য আরও বেশি বসবাস স্থান প্রদানের লক্ষ্যে বেশিরভাগ বা সমস্ত চেকদের নির্মূল, বহিষ্কার, জার্মানীকরণ বা দাসত্বের আহ্বান জানায়। নাৎসি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে চেকোস্লোভাক প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিলো। এর পাশাপাশি চেকোস্লোভাকদের নাৎসি-বিরোধী প্রতিরোধের জন্য তাদের বিরুদ্ধেও নাৎসিরা প্রতিশোধ নেয়। ১৯৪৫ সালের ৯ মে সোভিয়েত ও আমেরিকান সেনাবাহিনীর আগমন এবং প্রাগ বিদ্রোহের মাধ্যমে জার্মান দখলদারিত্বের অবসান ঘটে। চেকোস্লোভাকিয়ার বেশিরভাগ জার্মান-ভাষীকে দেশ থেকে জোরপূর্বক বহিষ্কার করা হয়। প্রথমদিকে স্থানীয় সহিংসতার কারণে এবং পরবর্তীতে পোটসডাম সম্মেলনে সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন কর্তৃক গঠিত "সংগঠিত স্থানান্তর" এর পৃষ্ঠপোষকতায় এটি করা হয়। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে, কমিউনিস্ট পার্টি ৩৮% ভোট লাভ করে এবং চেকোস্লোভাক পার্লামেন্টের বৃহত্তম দল হয়ে ওঠে। এটি অন্যান্য দলগুলির সাথে একটি জোট গঠন করে এবং ক্ষমতা সংহত করে। ১৯৪৮ সালে একটি অভ্যুত্থান ঘটে এবং একটি এক-দলীয় সরকার গঠিত হয়। পরবর্তী ৪১ বছর ধরে, চেকোস্লোভাক কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটিতে পূর্ব ব্লকের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে। ১৯৬৮ সালের চেকোস্লোভাকিয়ায় ওয়ার'শ আক্রমণের মাধ্যমে প্রাগ বসন্ত রাজনৈতিক উদারীকরণ বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে এই আগ্রাসনের ফলে কমিউনিস্ট আন্দোলন ভেঙে যায়, যা শেষ পর্যন্ত ১৯৮৯ সালের বিপ্লবের দিকে পরিচালিত হয়। চেক প্রজাতন্ত্র ১৯৮৯ সালের নভেম্বরে মখমল বিপ্লবের মাধ্যমে চেকোস্লোভাকিয়া একটি উদার গণতন্ত্রে ফিরে আসে। ১৯৯৩ সালের ১ জানুয়ারি, দেশটি শান্তিপূর্ণভাবে চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভাকিয়া নামক দুটি দেশে বিভক্ত হয়ে যায়। উভয় দেশই একটি বাজার অর্থনীতি তৈরির উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার এবং বেসরকারীকরণের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছিল; ২০০৬ সালে বিশ্বব্যাংক চেক প্রজাতন্ত্রকে "উন্নত দেশ" হিসাবে স্বীকৃতি দেয় এবং ২০০৯ সালে মানব উন্নয়ন সূচকে দেশটি "সমুন্নত মানব উন্নয়ন" এর জাতি হিসেবে স্থান লাভ করে। চেক প্রজাতন্ত্র ১৯৯১ সাল থেকে চেকোস্লোভাকিয়ার অংশ হিসেবে এবং ১৯৯৩ সাল থেকে তার নিজস্ব অধিকারে, ভিসেগ্রাদ গ্রুপ এর সদস্য ছিলো। ১৯৯৫ সাল থেকে এটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ও.ই.সি.ডি) এর সদস্য। দেশটি ১৯ সালের ১২ মার্চ ন্যাটোতে এবং ২০০৪ সালের ১ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করে। ২০০৭ সালের ২১ শে ডিসেম্বর চেক প্রজাতন্ত্র শেঙেন এরিয়াতে যোগদান করে। ২০১৭ সাল নাগাদ, চেক সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টি পর্যায়ক্রমে চেক প্রজাতন্ত্রের সরকারগুলোর নেতৃত্ব দেয়। ২০১৭ এর অক্টোবরে দেশের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি আন্দ্রেয়ি বাবিশের নেতৃত্বে এএনও ২০১১ দল তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ে তিনগুণ বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চেক প্রেসিডেন্ট মিলোশ জেমান আন্দ্রেয়ি বাবিশকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০২১ সালের অক্টোবরে নির্বাচনে পেট্রা ফিয়ালা নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তিনি স্পোলু জোট এবং পাইরেটস অ্যান্ড মেয়রস জোটের মেলবন্ধনে একটি সরকারি জোট গঠন করেন। জোটটি বাবিসের নেতৃত্বাধীন এএনও দলকে সংকীর্ণভাবে পরাজিত করে। সরকার চেক প্রজাতন্ত্র একটি বহুত্ববাদী বহুদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র। দেশটির সংসদ (Parlament České republiky) দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট; চেম্বার অব ডেপুটিজ (, ২০০ জন সদস্য) এবং সিনেট (, ৮১ জন সদস্য)। চেম্বার অফ ডেপুটিজ এর সদস্যরা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে (৫% নির্বাচনী সীমা) চার বছর মেয়াদে নির্বাচিত হন। এখানে ১৪টি নির্বাচনী জেলা রয়েছে, যা দেশের প্রশাসনিক অঞ্চলের অনুরূপ। চেক ন্যাশনাল কাউন্সিল এর উত্তরসূরী হচ্ছে চেম্বার অব ডেপুটিজ। প্রাক্তন চেকোস্লোভাকিয়ার বর্তমানে বিলুপ্ত ফেডারেল পার্লামেন্টের সব ক্ষমতা এবং দায়িত্ব এর রয়েছে। সিনেটের সদস্যরা একক-আসনের নির্বাচনী এলাকায় ছয় বছরের মেয়াদ দুই-ধাপের রানঅফ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নির্বাচিত হন প্রতি জোড় বছরের শরৎকালে। ব্যবস্থাটি মার্কিন সিনেটের আদলে তৈরি করা হয়েছে, তবে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা প্রায় সমান আকারের এবং ব্যবহৃত ভোটিং সিস্টেমটি একটি দুই-ধাপের রানঅফ। রাষ্ট্রপতি সীমিত এবং নির্দিষ্ট ক্ষমতাবিশিষ্ট একজন আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান, যিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুসারে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের নিযুক্ত করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান নিয়মে, চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের মেয়াদে সংসদের একটি যৌথ অধিবেশন দ্বারা নির্বাচিত হন এবং পরপর দুইবারের (ভাস্লাভ হাভেল দুইবার, ভাস্লাভ ক্লাউস দুইবার) চেয়ে বেশি নির্বাচিত হতে পারেন না। ২০১৩ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সরাসরি সংঘটিত হয়। কেউ কেউ যুক্তি দেখিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির সরাসরি নির্বাচন প্রবর্তনের সাথে সাথে চেক প্রজাতন্ত্র সংসদীয় ব্যবস্থা থেকে দূরে সরে গিয়ে একটি আধা-রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থার দিকে চলে গেছে। সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা সংবিধান থেকে উদ্ভূত। সরকারের সদস্য হলেন প্রধানমন্ত্রী, উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীগণ। সরকার চেম্বার অফ ডেপুটিজ এর কাছে দায়বদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান। বেশিরভাগ বিদেশী ও অভ্যন্তরীণ নীতিনির্ধারণ এবং সরকারী মন্ত্রী নির্বাচন করার ক্ষমতা তার রয়েছে। |রাষ্ট্রপতি |মিলোশ জেমান |পার্টি অব সিভিক রাইটস (এসপিজেড) |৮ মার্চ ২০১৩ |- |সিনেটের প্রধান |মিলোশ ভিস্ট্রিসিল |সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টি (ওডিএস) |১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ |- |চেম্বার অব ডেপুটিজ এর প্রধান |মার্কেটা পেকারোভা আডামোভা |টপ জিরোনাইন |১০ নভেম্বর ২০২১ |- |প্রধানমন্ত্রী |পেট্রা ফিয়ালা |সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টি (ওডিএস) |২৮ নভেম্বর ২০২১ |} আইন চেক প্রজাতন্ত্র একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র। এর দেওয়ানি আইন ব্যবস্থা, মহাদেশীয় ধরনের উপর ভিত্তি করে রচিত যা জার্মান আইনি সংস্কৃতি থেকে উদ্ভুত। আইনি ব্যবস্থার ভিত্তি হল ১৯৯৩ সালে গৃহীত চেক প্রজাতন্ত্রের সংবিধান। ২০১০ সাল থেকে দণ্ডবিধি এবং ২০১৪ সাল থেকে একটি নতুন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হয়। আদালত ব্যবস্থায় জেলা, প্রশাসনিক বিভাগ (county) এবং সর্বোচ্চ আদালত (supreme court) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং এটি দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং প্রশাসনিক শাখায় বিভক্ত। চেক বিচার বিভাগের রয়েছে তিনটি সর্বোচ্চ আদালত। সাংবিধানিক আদালত ১৫ জন সাংবিধানিক বিচারক নিয়ে গঠিত এবং আইনসভা বা সরকার কর্তৃক যেকোনো সংবিধান লঙ্ঘন তত্ত্বাবধান করে। সর্বোচ্চ আদালত ৬৭ জন বিচারক নিয়ে গঠিত এবং এটি চেক প্রজাতন্ত্রের বেশিরভাগ আইনী মামলার জন্য সর্বোচ্চ আপিলের আদালত। সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত প্রক্রিয়াগত এবং প্রশাসনিক আনুগত্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। এর কিছু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বিষয়ের উপর এখতিয়ার রয়েছে। যেমন, রাজনৈতিক দল গঠন ও বন্ধ করা, সরকারী সংস্থাগুলির মধ্যে এখতিয়ারগত সীমানা এবং সরকারী অফিসের সদস্যপদে দাঁড়ানোর জন্য ব্যক্তির যোগ্যতা নির্ধারণ। সর্বোচ্চ আদালত, সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত এবং সর্বোচ্চ সরকারি অভিশংসকের (supreme public prosecutor) কার্যালয় বার্নোতে অবস্থিত। বৈদেশিক সম্পর্ক চেক প্রজাতন্ত্র গত কয়েক দশক ধরে সবচেয়ে নিরাপদ বা সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্থান পেয়েছে। এটি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো, ওইসিডি ও কাউন্সিল অব ইউরোপের সদস্য এবং অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস এর পর্যবেক্ষক। চেক প্রজাতন্ত্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক যুক্ত বেশিরভাগ দেশের দূতাবাসগুলি প্রাগে অবস্থিত এবং কনস্যুলেটগুলি সারা দেশব্যাপী অবস্থিত। চেক পাসপোর্ট ভিসায় সীমাবদ্ধ। ২০১৮ সালের হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স ভিসা সীমাবদ্ধতা সূচক অনুযায়ী, চেক নাগরিকদের ১৭৩ টি দেশে ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে। এ সূচকে দেশটি মাল্টা এবং নিউজিল্যান্ডের সাথে যৌথভাবে ৭ম স্থানে রয়েছে। বিশ্ব পর্যটন সংস্থা চেক পাসপোর্টকে ২৪তম স্থান দিয়েছে। মার্কিন ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম চেক নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রাথমিক ভূমিকা রয়েছে, যদিও এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির বিশেষ প্রভাব রয়েছে এবং বিদেশে তিনিই দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর সদস্যপদ চেক প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রীয় বিষয়। বৈদেশিক সম্পর্ক ও তথ্য অফিস (ইউজেডএসআই) গুপ্তচরবৃত্তি এবং বিদেশী নীতি ব্রিফিংয়ের জন্য বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এটি বিদেশে চেক প্রজাতন্ত্রের দূতাবাসের সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে। ভিসেগ্রাড গ্রুপের সদস্য হিসাবে চেক প্রজাতন্ত্রের স্লোভাকিয়া, পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির সাথে সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া জার্মানি, ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্যদের সাথে সম্পর্ক বিদ্যমান। চেক কর্মকর্তারা বেলারুশ, মলদোভা, মিয়ানমার ও কিউবায় ভিন্নমতাবলম্বীদের সমর্থন জানিয়েছেন। অতীতের বিখ্যাত চেক কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন শিনিজ ও টেত্তাউ এর কাউন্ট ফিলিপ কিনস্কি, শোয়ার্জেনবার্গের রাজকুমার কার্ল ফিলিপ, এডভার্দ বেনেস, ইয়ান মাসারিক, জিরি ডিয়েনস্টবিয়ার এবং রাজকুমার কারেল শোয়ার্জেনবার্গ। সামরিক খাত চেক সশস্ত্র বাহিনী ভূমি বাহিনী, বিমান বাহিনী এবং বিশেষায়িত সহযোগী ইউনিট নিয়ে গঠিত। সশস্ত্র বাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত হয়। চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ। ২০০৪ সালে সেনাবাহিনী নিজেদের একটি সম্পূর্ণ পেশাদার সংস্থায় রূপান্তরিত করে এবং বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা বিলুপ্ত করা হয়। দেশটি ১৯৯৯ সালের ১২ মার্চ থেকে ন্যাটোর সদস্য। প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপির প্রায় ১.২৮ শতাংশ (২০২১)। সশস্ত্র বাহিনী চেক প্রজাতন্ত্র এবং তার মিত্রদের রক্ষা করা, বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা স্বার্থ প্রচার করা এবং ন্যাটোতে অবদান রাখার দায়িত্ব পালন করে। বর্তমানে, ন্যাটোর সদস্য হিসাবে চেক সামরিক বাহিনী রিসোলিউট সাপোর্ট এবং কেএফওআর অপারেশনে অংশ নিচ্ছে। আফগানিস্তান, মালি, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, কসোভো, মিশর, ইসরায়েল এবং সোমালিয়ায় এর সেনা নিয়োজিত রয়েছে। চেক বিমান বাহিনী বাল্টিক রাষ্ট্র এবং আইসল্যান্ডেও কাজ করেছিল। চেক সামরিক বাহিনীর প্রধান সরঞ্জামগুলির মধ্যে রয়েছে জেএএস ৩৯ গ্রিপেন মাল্টি-রোল ফাইটারস, এরো এল-১৫৯ অ্যালকা যুদ্ধ বিমান, এমআই-৩৫ অ্যাটাক হেলিকপ্টার, সাঁজোয়া যানবাহন (পান্ডুর দ্বিতীয়, ওটি-৬৪, ওটি-৯০, বিভিপি-২) এবং ট্যাংক (টি-৭২ এবং টি-৭২এম৪সিজেড)। অতীতের বিখ্যাত চেক এবং চেকোস্লোভাক সেনা এবং সামরিক নেতারা হলেন ইয়ান জিজকা, আলব্রেখট ভন ওয়ালেনস্টাইন, কার্ল ফিলিপ, শোয়ার্জেনবার্গের রাজকুমার, জোসেফ রাডেস্কি ভন রাডেজ, জোসেফ রাডেটস্কি ভন রাডেটজ, জোসেফ শ্নেইদারেক, হেলিওডর পিকা, লুডভক স্ভোবোদা, জ্যান কুবিশ, যোসেফ গাবচিক ফ্রানটিশেক ফাইটল এবং পেট্রা পাভেল। প্রশাসনিক বিভাগ ২০০০ সাল থেকে চেক প্রজাতন্ত্র তেরোটি অঞ্চলে (Czech: kraje, singular kraj) বিভক্ত। এছাড়া রয়েছে রাজধানী প্রাগ। প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব নির্বাচিত আঞ্চলিক পরিষদ এবং একটি আঞ্চলিক গভর্নর রয়েছে। প্রাগে পরিষদ ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কার্যকর করা হয় সিটি কাউন্সিল এবং মেয়রের মাধ্যমে। ১৯৯৯ সালে একটি প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে তিনটি "সংবিধিবদ্ধ শহর" সহ (প্রাগ ব্যতীত, যার বিশেষ মর্যাদা ছিল) পুরানো ৭৬ টি জেলা (ওক্রেসি, একবচনে ওকরা) তাদের বেশিরভাগ গুরুত্ব হারিয়েছে। তারা আঞ্চলিক বিভাগ এবং রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন শাখার আসন হিসাবে রয়ে গেছে। ক্ষুদ্রতম প্রশাসনিক একক হল ওবেক (পৌরসভা)। ২০২১ সালের হিসাবে, চেক প্রজাতন্ত্র ৬,২৫৪ টি পৌরসভায় বিভক্ত। শহর ও নগরীগুলোও পৌরসভা। প্রাগের রাজধানী শহর একইসাথে একটি অঞ্চল এবং পৌরসভা। অর্থনীতি চেক প্রজাতন্ত্রের পরিষেবা, উৎপাদন ও উদ্ভাবন ভিত্তিক একটি উন্নত, উচ্চ-আয়ের রপ্তানি-ভিত্তিক সামাজিক বাজার অর্থনীতি রয়েছে। এটি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র এবং এটি ইউরোপীয় সামাজিক মডেল বজায় রাখে। চেক প্রজাতন্ত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে ইউরোপীয় একক বাজারে অংশগ্রহণ করে এবং এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতির একটি অংশ। কিন্তু মুদ্রা হিসেবে এটি ইউরোর পরিবর্তে নিজস্ব মুদ্রা চেক কোরুনা ব্যবহার করে। দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড় জিডিপির শতকরা ৯১ ভাগ এবং দেশটি ওইসিডির সদস্য। চেক ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃক দেশটির মুদ্রানীতি পরিচালিত হয়, যার স্বাধীনতা সংবিধান দ্বারা নিশ্চিতকৃত। চেক প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘের অসমতা-সামঞ্জস্যকৃত মানব উন্নয়ন সূচকে ১২শ এবং বিশ্বব্যাংকের মানব মূলধন সূচকে ২৪শ স্থানে রয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা এটিকে "ইউরোপের সবচেয়ে সমৃদ্ধ অর্থনীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম" হিসেবে বর্ণনা করেছে। কোভিড-১৯ মহামারী চেক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিলো। তবে অর্থনীতিবিদরা ২০২১ সালে ৩.৯ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৪.৩ শতাংশ অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন। , ক্রয় ক্ষমতার সমতায় দেশের মাথাপিছু জিডিপি ৪০,৭৯৩ ডলার এবং ন্যুনতম মূল্যে ২২,৯৪২ ডলার। আলিয়াঞ্জ এ.জি. এর মতে, ২০১৮ সালে দেশটি একটি এমডব্লিউসি (গড় সম্পদ দেশ) ছিল, যা নিট আর্থিক সম্পদের ক্ষেত্রে ২৬ তম স্থান অর্জন করেছিলো। ২০১৭ সালে দেশটি ৪.৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০১৬ সালের বেকারত্বের হার ছিলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সর্বনিম্ন (২.৪ শতাংশ) এবং ২০১৬ সালের দারিদ্র্যের হার ছিল ওইসিডি সদস্যদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। চেক প্রজাতন্ত্র ২০২১ সালের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে ২৭শ, ২০১৬ সালের গ্লোবাল ইনোভেশন সূচকে ২৪শ, গ্লোবাল কম্পিটিটিভনেস রিপোর্টে ২৯শ, ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকে ৪১শ এবং গ্লোবাল এবলিং ট্রেড রিপোর্টে ২৫শ স্থানে রয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রের একটি বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি রয়েছে যা ২০১৬ সালের অর্থনৈতিক জটিলতা সূচকে ৭ম স্থানে রয়েছে। শিল্প খাত অর্থনীতির ৩৭.৫ শতাংশ এর জন্য দায়ী; এছাড়া পরিষেবাগুলি ৬০ শতাংশ এবং কৃষি রয়েছে ২.৫ শতাংশ। আমদানি ও রপ্তানি উভয় ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হল জার্মানি এবং সাধারণভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০১৭ সালে চেক কোম্পানীর বিদেশী মালিকদের ২৭০ বিলিয়ন চেক কোরুনা মূল্যের লভ্যাংশ প্রদান করা হয়, যা একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছিলো। ২০০৪ সালের ১ মে থেকে দেশটি শেনজেন অঞ্চলের সদস্য। ২১ ডিসেম্বর ২০০৭ সালে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বিলুপ্ত করে দেশটি তার প্রতিবেশীদের সাথে সীমানা সম্পূর্ণরূপে খুলে দেয়। শিল্প রাজস্বের হিসাবে ২০১৮ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের বৃহত্তম কোম্পানিগুলো ছিলো: অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক স্কোডা অটো, ইউটিলিটি কোম্পানি সিইজেড গ্রুপ, অ্যাগ্রোফার্ট , শক্তি বাণিজ্য কোম্পানি ইপিএইচ, তেল প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা ইউনিপেট্রোল, ইলেকট্রনিক্স প্রস্তুতকারক ফক্সকন সিজেড এবং ইস্পাত প্রস্তুতকারক মোরাভিয়া স্টিল। অন্যান্য চেক পরিবহন সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে: এসকোডা ট্রান্সপোর্টেশন (ট্রামওয়েজ, ট্রলিবাস, মেট্রো), টাট্রা (ভারী ট্রাক, বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম গাড়ি নির্মাতা), এভিয়া (মাঝারি ট্রাক), কারোসা এবং এসওআর লিবচাভি (বাস), এরো ভডোচোডি (সামরিক বিমান), লেট কুনোভিস (বেসামরিক বিমান), জেটর (ট্রাক্টর), জাওয়া মোটো (মোটরসাইকেল) এবং চেজেটা (বৈদ্যুতিক স্কুটার)। এসকোডা ট্রান্সপোর্টেশন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ট্রাম উৎপাদক। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ট্রাম চেক কারখানা থেকে আসে। এছাড়া চেক প্রজাতন্ত্র বিশ্বের বৃহত্তম ভিনাইল রেকর্ড প্রস্তুতকারক। জিজেড মিডিয়া লোডিনিসে বার্ষিক প্রায় ৬ মিলিয়ন টুকরা রেকর্ড উৎপাদন করে। চেস্কা ব্রোয়োভকা বিশ্বের দশটি বৃহত্তম আগ্নেয়াস্ত্র উৎপাদকের মধ্যে অন্যতম এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উৎপাদকদের মধ্যে পঞ্চম। খাদ্য শিল্পে সফল কোম্পানিগুলো হলো অ্যাগ্রোফার্ট, কোফোলা এবং হামে। শক্তি চেক প্রজাতন্ত্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার তুলনায় প্রায় ১০ টেরাওয়াট ঘন্টা বেশি। অতিরিক্ত এ অংশ অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়। পারমাণবিক শক্তি বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ সরবরাহ করে, যা ৪০ শতাংশে উন্নীত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ২০০৫ সালে, উৎপাদিত বিদ্যুতের ৬৫.৪ শতাংশ বাষ্প ও জ্বলন কেন্দ্র (বেশিরভাগ কয়লা) দ্বারা, ৩০ শতাংশ পারমাণবিক কেন্দ্র দ্বারা এবং ৪.৬ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস (জলবিদ্যুৎ সহ) দ্বারা উৎপাদিত হয়েছিলো । চেক প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র টেমেলিন নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশন। এছাড়া ডুকোভানিতে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্র শক্তির উৎস হিসাবে অত্যন্ত দূষিত নিম্ন-মানের বাদামী কয়লার উপর নির্ভরতা ক্রমাগত হ্রাস করছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের বেশিরভাগ অংশ (গার্হস্থ্য প্রয়োজনের প্রায় তিন চতুর্থাংশ) রুশ গ্যাজপ্রম থেকে আসে এবং অবশিষ্টাংশের বেশিরভাগ অংশ নরওয়েজীয় কোম্পানীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। রাশিয়ার গ্যাস ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে এবং নরওয়েজীয় গ্যাস জার্মানির মধ্য দিয়ে পরিবহন করা হয়। সাধারণত গ্যাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করা হয়। দক্ষিণ মোরাভিয়ায় ছোট ছোট তেল ও গ্যাসের খনি রয়েছে। পরিবহন অবকাঠামো , চেক প্রজাতন্ত্রের সড়কপথ দীর্ঘ, যার মধ্যে মোটরওয়ে। গতিসীমা শহরে ৫০ কিমি/ঘন্টা, শহরের বাইরে ৯০ কিমি/ঘন্টা এবং মোটরওয়েতে ১৩০ কিমি/ঘন্টা। চেক প্রজাতন্ত্রে বিশ্বের অন্যতম ঘন রেল পরিবহন রয়েছে। ২০২০ সালের হিসাবে, দেশে রেলপথ রয়েছে, যার মধ্যে বিদ্যুতায়িত, একক রেলপথ এবং দ্বৈত ও বহু-লাইন বিশিষ্ট। রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য , যার মধ্যে বিদ্যুতায়িত। চেস্কে ড্রাহি (চেক রেলপথ) দেশের প্রধান রেলপথ পরিচালক, যার মাধ্যমে বার্ষিক প্রায় ১৮০ মিলিয়ন যাত্রী চলাচল করে। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। প্রাগের ভাস্লাভ হাভেল বিমানবন্দরটি দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ২০১৯ সালে এটি ১৭.৮ মিলিয়ন যাত্রী পরিচালনা করেছে। চেক প্রজাতন্ত্রে মোট ৯১ টি বিমানবন্দর রয়েছে, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা সরবরাহ করে ছয়টি। পাবলিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলি ব্রানো, কার্লোভি ভ্যারি, মনিকোভো হার্ডিসটিজি, মোসনভ (অস্ট্রাভার কাছে), পারডুবিস এবং প্রাগে অবস্থিত। এয়ারলাইন পরিচালনায় সক্ষম নন-পাবলিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলি কুনোভিস এবং ভডোচডিতে অবস্থিত। যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি চেক প্রজাতন্ত্র সর্বোচ্চ গড় ইন্টারনেট গতিবিশিষ্ট শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে। ২০০৮ সালের শুরুতে, ৮০০ টিরও বেশি স্থানীয় ডব্লিউআইএসপি এবং ২০০৭ সালে প্রায় ৩৫০,০০০ গ্রাহক ছিলো। পরিকল্পনাগুলি তিনটি মোবাইল ফোন অপারেটর (টি-মোবাইল, ওটু, ভোডাফোন) এবং ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউ-ফন জিপিআরএস, এজ, ইউএমটিএস বা সিডিএমএ ২০০০ ভিত্তিক পরিষেবা প্রদান করছে। সরকারী মালিকানাধীন চেস্কি টেলিকম আস্র পর ব্রডব্যান্ডের অনুপ্রবেশকে হ্রাস পায়। ২০০৪ সালের শুরুতে, লোকাল-লুপ আনবান্ডলিং শুরু হয় এবং বিকল্প অপারেটররা অপ্রতিসম ডিজিটাল গ্রাহক লাইন (এডিএসএল) এবং প্রতিসম ডিজিটাল গ্রাহক লাইন (এসডিএসএল) সরবরাহ করা শুরু করে। এই ঘটনা এবং পরবর্তীকালে চেস্কি টেলিকমের বেসরকারীকরণ ইন্টারনেটের দাম কমাতে সাহায্য করেছে। ১ জুলাই ২০০৬ তারিখে, বৈশ্বিক (স্পেনীয় মালিকানাধীন) কোম্পানি টেলিফোনিকা গ্রুপ (বর্তমানে ওটু চেক প্রজাতন্ত্র) এসকিউ টেলিকম ক্রয় করে। , ভিডিএসএল এবং এডিএসএলটু+, সেকেন্ডে ৫০ মেগাবিট পর্যন্ত ডাউনলোড গতি এবং সেকেন্ডে ৫ মেগাবিট পর্যন্ত আপলোড গতি প্রদান করে। কেবল ইন্টারনেট তার উচ্চতর ডাউনলোড গতির কারণে (সেকেন্ডে ৫০ মেগাবিট থেকে সেকেন্ডে ১ গিগাবিট পর্যন্ত) জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। দুটি কম্পিউটার নিরাপত্তা সংস্থা, অ্যাভাস্ট এবং এভিজি চেক প্রজাতন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৬ সালে পাভেল বাউডিসের নেতৃত্বে অ্যাভাস্ট তার প্রতিদ্বন্দ্বী এভিজি কোম্পানিকে ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেয়। সেসময়ে সংস্থা দুটির প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী বেস ছিলো এবং চীনের বাইরে ভোক্তা বাজারের শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ এদের দখলে ছিলো। অ্যাভাস্ট হচ্ছে অ্যান্টি-ভাইরাস সরবরাহকারীদের মধ্যে নেতৃত্বস্থানীয়, যার ২০.৫ শতাংশ বাজার শেয়ার রয়েছে। পর্যটন লন্ডন, প্যারিস, ইস্তাম্বুল এবং রোমের পরে প্রাগ ইউরোপের পঞ্চম সর্বাধিক পরিদর্শিত শহর। ২০০১ সালে পর্যটন থেকে মোট আয় ছিলো ১১৮ বিলিয়ন চেক কোরুনা, যা জিএনপির ৫.৫ শতাংশ এবং সামগ্রিক রপ্তানি আয়ের ৯ শতাংশ। এই শিল্পে ১,১০,০০০ এরও বেশি লোক কাজ করে (জনসংখ্যার ১% এরও বেশি)। ভ্রমণপঞ্জিতে এবং পর্যটকদের কাছে প্রাগে ট্যাক্সিচালক কর্তৃক অতিরিক্ত ভাড়াগ্রহণ এবং পকেটমার সমস্যা বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যেত। ২০০৫ সাল থেকে প্রাগের মেয়র পাভেল বেম ছোটখাটো অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এই সমস্যাগুলি বাদে প্রাগ একটি "নিরাপদ" শহর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য বিভাগ চেক প্রজাতন্ত্রের অপরাধ হার "কম" হিসাবে বর্ণনা করেছে। চেক প্রজাতন্ত্রের পর্যটন আকর্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম অস্ট্রাভার নেথার জেলা ভিটকোভিস। চেক প্রজাতন্ত্রে ১৬টি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে, যার মধ্যে ৩টি আন্তর্জাতিক। , আরও ১৪ টি স্থান অস্থায়ী তালিকায় রয়েছে। স্থাপত্য ঐতিহ্য দর্শকদের আগ্রহের একটি বস্তু - যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়ের দুর্গ, যেমন কার্লস্টেইন দুর্গ, চেস্কি ক্রামলভ এবং লেডনিস-ভাল্টিস সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট। এখানে ১২টি ক্যাথিড্রাল এবং ১৫টি গির্জা রয়েছে যা পোপ কর্তৃক ব্যাসিলিকা পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। শহর থেকে দূরে, বোহেমিয়ান প্যারাডাইস, বোহেমীয় অরণ্য ও জায়ান্ট পর্বতমালার মতো অঞ্চলগুলো বহিরঙ্গন সন্ধানকারী দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। এখানে বেশ কয়েকটি বিয়ার উৎসব উদযাপিত হয়। দেশটি এর অসংখ্য জাদুঘরের জন্যও পরিচিত। সারা দেশে বেশ কয়েকটি পুতুল নাচ প্রদর্শনী ও পুতুল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। চেস্টলিসের অ্যাকোয়াপ্যালেস প্রাগ দেশের বৃহত্তম সলিলপার্ক। বিজ্ঞান চেক ভূমির বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের একটি দীর্ঘ এবং সু-নথিভুক্ত ইতিহাস রয়েছে। বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রের একটি অত্যন্ত পরিশীলিত, উন্নত, উচ্চ-সম্পাদনশীল, উদ্ভাবন-ভিত্তিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় বিদ্যমান। সরকার, শিল্প এবং নেতৃস্থানীয় চেক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এর পৃষ্ঠপোষক। চেক বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের সদস্য। তারা প্রতি বছর একাধিক আন্তর্জাতিক একাডেমিক সাময়িকীতে অবদান রাখে এবং দেশ ও ক্ষেত্রের সীমানা পেড়িয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সাথে একত্রে কাজ করে থাকে। চেক প্রজাতন্ত্র ২০১৯ সালে বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে ২৬শ স্থানে ছিল; ২০২০ ও ২০২১ সালে যা উন্নীত হয় ২৪শ স্থানে। ঐতিহাসিকভাবে, চেক ভূমি বিশেষ করে প্রাগ, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের অন্যতম জন্মস্থল ছিলো, যা টাইকো ব্রাহে, নিকোলাস কোপার্নিকাস এবং ইয়োহানেস কেপলার সহ প্রারম্ভিক আধুনিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত। ১৭৮৪ সালে রয়েল চেক সোসাইটি অফ সায়েন্সেস নামের অধীনে বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়টি প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠিত হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস নামে পরিচিত। একইভাবে, চেক ভূমিতে বিজ্ঞানীদের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ইতিহাস রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী জৈব রসায়নবিদ গার্টি এবং কার্ল ফার্দিনান্দ কোরি, রসায়নবিদ ইয়ারোস্লাভ হেরোভস্কি, রসায়নবিদ অটো উইচটারলে, পদার্থবিদ পিটার গ্রুনবার্গ এবং রসায়নবিদ অ্যান্টোনিন হোলি। মনোবিশ্লেষণের প্রতিষ্ঠাতা সিগমুন্ড ফ্রয়েড প্রিবোরে জন্মগ্রহণ করেন, জিনতত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল হাইনচিসে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছিলেন বার্নোতে। [[File:ELI Beamlines building in Dolní Břežany.jpg|thumb|ডোলনি ব্রেজানিতে অবস্থিত এলি বিমলাইনস সায়েন্স সেন্টার, যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লেজার অবস্থিত]] বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক গবেষণা লাতিন বা জার্মান ভাষায় রেকর্ড করা হয়েছিল এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং অন্যান্য সম্প্রদায় কর্তৃক পরিচালিত গ্রন্থাগারগুলিতে সংরক্ষণাগারভুক্ত করা হয়েছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক স্থান যেমন স্ট্রাহভ মঠ এবং প্রাগের ক্লেমেন্টিনামে এর প্রমাণ রয়েছে। ক্রমান্বয়ে চেক বিজ্ঞানীরা তাদের কাজ এবং তাদের ইতিহাস ইংরেজিতে প্রকাশ করা শুরু করে। বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান হল চেক একাডেমী অব সায়েন্সেস, বার্নোতে অবস্থিত সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ডলনি বিওয়েনিতে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লেজার কেন্দ্র এলি বিমলাইনস। প্রাগ হল জিএসএ এজেন্সির প্রশাসনিক কেন্দ্রের আসন যা ইউরোপীয় নেভিগেশন সিস্টেম গ্যালিলিও (স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম) এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এজেন্সি ফর দ্য স্পেস প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। জনসংখ্যাতত্ত্ব ২০২০ সালের অনুমিত মোট উর্বরতার হার (টিএফআর) ছিল ১.৭১, যা প্রতিস্থাপন হার ২.১ এর চেয়ে কম। চেক প্রজাতন্ত্রের জনসংখ্যার গড় বয়স ৪৩.৩ বছর। ২০২১ সালে অনুমিত গড় আয়ু ৭৯.৫ বছর (পুরুষ ৭৬.৫৫ বছর, মহিলা ৮২.৬১ বছর)। বছরে প্রায় ৭৭,০০০ জন মানুষ চেক প্রজাতন্ত্রে অভিবাসী হয়। ভিয়েতনামী অভিবাসীরা কমিউনিস্ট আমলে দেশটিতে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে, যখন চেকোস্লোভাক সরকার তাদের অতিথি শ্রমিক হিসেবে আমন্ত্রণ জানায়। ২০০৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্রে প্রায় ৭০,০০০ ভিয়েতনামী ছিল। বেশিরভাগই স্থায়ীভাবে দেশে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২১ সালের জনশুমারির ফলাফল অনুযায়ী, চেক প্রজাতন্ত্রের বেশিরভাগ অধিবাসী চেক (৫৭.৩ শতাংশ)। এছাড়া রয়েছে মোরাভীয় (৩.৪ শতাংশ), স্লোভাক (০.৯ শতাংশ), ইউক্রেনীয় (০.৭ শতাংশ), ভিয়েত (০.৩ শতাংশ), পোল (০.৩ শতাংশ), রুশ (০.২ শতাংশ), সিলেসিয়ান (০.১ শতাংশ) এবং জার্মান (০.১ শতাংশ)। অন্য ৪.০ শতাংশ দ্বৈত জাতীয়তার (৩.৬ শতাংশ চেক এবং অন্যান্য জাতীয়তার সংমিশ্রণ) পরিচয় দিয়েছে। যেহেতু 'জাতীয়তা' একটি ঐচ্ছিক বিষয় ছিল, তাই বেশ কিছু লোক এই ক্ষেত্রটি খালি (৩১.৬ শতাংশ) রেখেছিল। কিছু অনুমান অনুসারে, চেক প্রজাতন্ত্রে প্রায় ২৫০,০০০ রোমানি লোক রয়েছে। পোলিশ সংখ্যালঘুরা প্রধানত জাওলজি অঞ্চলে বাস করে। চেক পরিসংখ্যান কেন্দ্রের মতে, ২০১৬ সালে দেশটিতে ৪,৯৬,৪১৩ জন (জনসংখ্যার ৪.৫ শতাংশ) বিদেশী বসবাসরত ছিল, যার মধ্যে বৃহত্তম দল ইউক্রেনীয় (২২ শতাংশ), স্লোভাক (২২ শতাংশ), ভিয়েত (১২ শতাংশ), রুশ (৭ শতাংশ) এবং জার্মান (৪ শতাংশ)। বিদেশী জনসংখ্যার বেশিরভাগই প্রাগ অঞ্চলে (৩৭.৩ শতাংশ) এবং কেন্দ্রীয় বোহেমিয়া অঞ্চলে (১৩.২ শতাংশ) বাস করে। বোহেমিয়া এবং মোরাভিয়ার ইহুদি জনসংখ্যা (১৯৩০ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ১,১৮,০০০ জন) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদি গণহত্যার সময় নাৎসি জার্মানি দ্বারা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ২০২১ সালে চেক প্রজাতন্ত্রে প্রায় ৩,৯০০ জন ইহুদি ছিল। সাবেক চেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ান ফিশার ইহুদি ধর্মাবলম্বী। চেক অধিবাসীদের জাতীয়তা (যারা ২০২১ সালের জনশুমারিতে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে): বৃহত্তর শহরসমূহ ধর্ম জরিপে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ থেকে ৭৯% ভাগ অধিবাসী কোন ধর্ম বা বিশ্বাস অন্তর্ভুক্ত করে না। বসবাসরত নিশ্চিত নাস্তিক জনসংখ্যার অনুপাত (৩০ শতাংশ), চীন (৪৭ শতাংশ) ও জাপান (৩১ শতাংশ ) এর পরে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ। চেক জনগণ ঐতিহাসিকভাবে "সহনশীল এবং এমনকি ধর্মের প্রতি উদাসীন" হিসেবে চিহ্নিত। ৯ম ও ১০ম শতাব্দীর খ্রিষ্টীয়করণের মাধ্যমে ক্যাথলিক মণ্ডলীর প্রবর্তন হয়। বোহেমিয়ান সংস্কারের পর চেক জনগণের বেশিরভাগ ইয়ান হুস, পেট্রা খেলচিস্কি ও অন্যান্য আঞ্চলিক প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারকদের অনুসারী হয়ে ওঠে। ট্যাবোরাট এবং ইউট্রাকুইস্টরা হুসাইট গ্রুপ ছিল। হুসাইট যুদ্ধের শেষের দিকে, উট্রাকুইস্টরা পক্ষ পরিবর্তন করে এবং ক্যাথলিক চার্চের সাথে মিত্রতা করে। যৌথ উট্রাকুইস্ট-ক্যাথলিক বিজয়ের পরে, ক্যাথলিক চার্চ বোহেমিয়াতে অনুশীলনের জন্য উট্রাকুইজমকে খ্রিস্টধর্মের একটি স্বতন্ত্র রূপ হিসাবে গ্রহণ করে এবং অবশিষ্ট সমস্ত হুসাইট গ্রুপকে নিষিদ্ধ করে। সংস্কারের পর, কিছু বোহেমিয়ান (বিশেষ করে সুদাতেন জার্মানরা) মার্টিন লুথারের শিক্ষা গ্রহণ করে। সংস্কারের পরিপ্রেক্ষিতে, উট্রাকুইস্ট হুসাইটরা নতুন ক্রমবর্ধমান ক্যাথলিক বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে এবং কিছু পরাজিত হুসাইট দল পুনরুজ্জীবিত হয়। হাবসবার্গরা বোহেমিয়ার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর পুরো জনসংখ্যাকে জোর করে ক্যাথলিক ধর্মে রূপান্তরিত করা হয়। উট্রাকুইস্ট হুসাইটরাও এর থেকে বাদ যায়নি। ক্রমাগত, চেকরা ধর্মের ব্যাপারে আরও সতর্ক ও হতাশাবাদী হয়ে ওঠে। ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এটি ১৯২০ সালে নব্য-হুসাইট চেকোস্লোভাক হুসাইট চার্চের সাথে একটি বিভেদের শিকার হয়। কমিউনিস্ট যুগে অনুসারীদের বেশিরভাগ অংশই হারিয়ে গিয়েছে এবং আধুনিক চলমান ধর্মনিরপেক্ষতার সময়কালেও তারা হারিয়ে যাচ্ছে। ১৬২০ সালে অস্ট্রিয় হাবসবার্গ কর্তৃক সংস্কারবিরোধী আন্দোলন প্রবর্তনের পরে প্রোটেস্ট্যান্টিজম আর কখনও পুনরুদ্ধার হয়নি। ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশ কোন ধর্ম বিহীন, ১০.৩ শতাংশ ক্যাথলিক, ০.৮ শতাংশ প্রোটেস্ট্যান্ট (০.৫ শতাংশ চেক ভ্রাতৃদ্বয় এবং ০.৪ শতাংশ হুসাইট) এবং ৯ শতাংশ ধর্মের অন্যান্য সম্প্রদায়গত বা অসম্প্রদায়গত রূপ অনুসরণ করে (যার মধ্যে ৮৬৩ জন উত্তর দিয়েছিল যে তারা পৌত্তলিক)। ৪৫ শতাংশ মানুষ ধর্ম বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। ১৯৯১ থেকে ২০০১ এবং পরে ২০১১ সাল পর্যন্ত ক্যাথলিকধর্মের প্রতি আনুগত্য ৩৯ শতাংশ থেকে ২৭ শতাংশ এবং পরে ১০ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রোটেস্ট্যান্টবাদ একইভাবে ৩.৭ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ এবং তারপরে ০.৮ শতাংশে নেমে আসে। মুসলিম জনসংখ্যা আনুমানিক ২০,০০০ জন (জনসংখ্যার শতকরা ০.২ ভাগ)। দেশব্যাপী ধর্মীয় বিশ্বাসীদের অনুপাত উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়; জিলিন অঞ্চলে অনুপাত ৫৫ শতাংশ এবং উস্তি নাদ লাবেম অঞ্চলে ১৬ শতাংশ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা চেক প্রজাতন্ত্রে শিক্ষা নয় বছরের জন্য বাধ্যতামূলক এবং নাগরিকদের জন্য অবৈতনিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসুবিধা বিদ্যমান। শিক্ষার সময়কাল গড়ে ১৩.১ বছর। উপরন্তু, ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় চেক প্রজাতন্ত্রে একটি "তুলনামূলকভাবে সমান" শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। ১৩৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত চার্লস বিশ্ববিদ্যালয় মধ্য ইউরোপের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের অন্যান্য প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হল মাসারিক বিশ্ববিদ্যালয়, চেক প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পালাস্কি বিশ্ববিদ্যালয়, একাডেমি অফ পারফর্মিং আর্টস এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইকোনমিক্স। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) কর্তৃক সমন্বিত আন্তর্জাতিক ছাত্র মূল্যায়নের প্রোগ্রাম, চেক প্রজাতন্ত্রের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ১৫শ সবচেয়ে সফল হিসেবে স্থান দিয়েছে, যা ওইসিডি গড়ের চেয়ে বেশি। জাতিসংঘের শিক্ষা সূচকে ২০১৩ সালের হিসাবে চেক প্রজাতন্ত্র ১০ম স্থানে রয়েছে (ডেনমার্কের পিছনে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে এগিয়ে)। চেক প্রজাতন্ত্রের স্বাস্থ্যসেবা অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর মানের অনুরূপ। চেক বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা একটি বাধ্যতামূলক বীমা মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক 'কর্মসংস্থান সম্পর্কিত বীমা' দ্বারা অর্থায়নকৃত অর্থের বিনিময়ে সেবা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ২০১৬ ইউরো স্বাস্থ্য ভোক্তা সূচক (ইউরোপে স্বাস্থ্যসেবার তুলনার মাধ্যম) অনুযায়ী, চেক স্বাস্থ্যসেবা ১৩শ স্থানে রয়েছে (সুইডেনের থেকে এক ধাপ পিছনে এবং যুক্তরাজ্যের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে)। সংস্কৃতি শিল্প ডলনি ভিস্টোনিসের ভেনাস প্রাগৈতিহাসিক শিল্পের একটি সম্পদ। গথিক যুগের একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন প্রাগের থিওডোরিক যিনি কার্লস্টেইন দুর্গ সজ্জিত করেন। বারোক যুগের কিছু শিল্পী হলেন ভাস্লাভ হলার, ইয়ান কুপেস্কি, কারেল স্ক্রেটা, আন্তন রাফায়েল মেংস অথবা পেট্রা ব্রান্ডেল, ভাস্কর ম্যাথিয়াস ব্রন এবং ফার্ডিনান্ড ব্রকফ। উনিশ শতকের প্রথমার্ধে যোসেফ মানেস রোমান্টিক আন্দোলনে যোগ দেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের প্রধান ব্যক্তিবর্গ তথাকথিত "জাতীয় থিয়েটার প্রজন্ম": ভাস্কর জোসেফ ভাস্লাভ মাইসলবেক এবং চিত্রশিল্পী মিকোলাশ আলেশ, ভাস্লাভ ব্রোজিক, ভোইটেখ হিনাইস অথবা জুলিয়াস মারাক। শতাব্দীর শেষের দিকে আধুনিক শিল্পের একটি জোয়ার আসে। আলফন্স মুকা হয়ে ওঠেন এর প্রধান প্রতিনিধি। তিনি আধুনিক শিল্পের অন্তর্ভুক্ত পোস্টার এবং স্লাভ এপিক নামে ২০টি বড় ক্যানভাসের শিল্পকর্মের জন্য পরিচিত, যা চেক এবং অন্যান্য স্লাভদের ইতিহাসকে চিত্রিত করে। , স্লাভ এপিকটি প্রাগের জাতীয় গ্যালারীর ভেলেট্রিনি প্যালেসে প্রদর্শিত হয়। স্থাপনাটি চেক প্রজাতন্ত্রের শিল্পের বৃহত্তম সংগ্রহশালা পরিচালনা করে। ম্যাক্স শ্ভাবিনস্কি ছিলেন আরেকজন আধুনিক চিত্রশিল্পী। বিংশ শতাব্দীতে একটি নিরীক্ষাধর্মী বিপ্লব (আভান্ট-গার্ডে) ঘটে। এসময় চেক শিল্পে অভিব্যক্তিবাদী এবং কিউবিস্ট (জ্যামিতিক চিত্রকার) ছিলেন জোসেফ উপেক, এমিল ফিলা, বোহুমিল কুবিস্তা এবং ইয়ান জারজাভি। মূলত টয়েন, জোসেফ শিমা এবং কারেল টেইগের কাজের মাধ্যমে পরাবাস্তববাদের আবির্ভাব ঘটে। এছাড়া ফ্রান্টিশেক কুপকা ছিলেন বিমূর্ত শিল্পের অগ্রদূত। বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে জোসেফ লাডা, জেনেক বারিয়ান কিংবা এমিল ওরলিক অঙ্কনশিল্পী ও কার্টুনিস্ট হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ফ্রানটিশেক ডরটিকোল, জোসেফ সুডেক এবং পরবর্তীতে ইয়ান সাউডেক কিংবা জোসেফ কুডেলকার হাত ধরে আলোকচিত্র শিল্প নামের এক নতুন ক্ষেত্র গড়ে ওঠে। চেক প্রজাতন্ত্র এর স্বতন্ত্রভাবে তৈরি, মুখ-বিস্ফোরিত এবং সজ্জিত বোহেমিয়ান গ্লাসের জন্য পরিচিত। স্থাপত্য বোহেমিয়া এবং মোরাভিয়ার প্রাচীনতম সংরক্ষিত পাথরের ভবনগুলো নবম ও দশম শতাব্দীতে খ্রিস্টীয়করণের সময়কালে নির্মিত। মধ্যযুগ থেকে, চেক ভূমি পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপের মতো একই স্থাপত্য শৈলী ব্যবহার করে আসছে। বিদ্যমান প্রাচীনতম গির্জাগুলি রোমান শৈলীতে নির্মিত হয়েছিল। ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে তার স্থান দখল করে গথিক শৈলী। চতুর্দশ শতাব্দীতে সম্রাট চতুর্থ চার্লস ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে স্থপতিদের (আরাসের ম্যাথিয়াস এবং পিটার পার্লার) প্রাগে তার দরবারে আমন্ত্রণ জানান। মধ্যযুগে, রাজা এবং অভিজাতবর্গের হাত ধরে কিছু দুর্গ ও মঠ তৈরি হয়। ১৫ শতকের শেষের দিকে বোহেমীয় সাম্রাজ্যে রেনেসাঁ শৈলী প্রবেশ করে এবং এর উপাদানগুলো পুরানো গথিক শৈলীর সাথে মিশ্রিত হতে শুরু করে। বোহেমিয়ার বিশুদ্ধ রেনেসাঁ স্থাপত্যের একটি উদাহরণ হল রানী অ্যানের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ, যা প্রাগ প্রাসাদের বাগানে অবস্থিত ছিল। তোরণ আঙ্গিনা এবং জ্যামিতিকভাবে সাজানো বাগানযুক্ত প্রশস্ত বাগানবাড়ির স্থাপনায় ইতালীয় স্থপতিদের স্পষ্ট অবদান রেনেসাঁর সাধারণ পরিগ্রহণের উদাহরণ। নির্মাণের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল এবং বিনোদনের উদ্দেশ্যে ভবন নির্মাণ এসময় শুরু হয়। সপ্তদশ শতাব্দীতে বোহেমিয়া সাম্রাজ্যজুড়ে বারোক শৈলী ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে বোহেমিয়া বারোক-গথিক শৈলী নামের একটি বিশেষ স্থাপত্যশৈলী গঠন করে যা গথিক ও বারোক শৈলীর সংশ্লেষণে তৈরি হয়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে স্থাপত্য শৈলী পুনরুজ্জীবন শুরু হয়। কিছু গির্জায় তাদের অনুমিত মধ্যযুগীয় চেহারা পুনরুদ্ধার করা হয় এবং নব্য-রোমান, নব্য-গথিক এবং নব্য-রেনেসাঁ শৈলীতে ভবন নির্মিত হয়। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে চেক ভূমিতে নতুন শিল্প শৈলী আবির্ভূত হয় যার নাম আধুনিক শিল্প। বোহেমিয়া বিশ্বের স্থাপত্য ঐতিহ্যে একটি অস্বাভাবিক শৈলী উপহার দিয়েছিল আর চেক স্থপতিরা অঙ্কন ও ভাস্কর্যের কিউবিজমকে স্থাপত্যে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে কার্যসর্বস্বতা (ফাংশনালিজম) তার শান্ত, প্রগতিশীল রুপ নিয়ে প্রধান স্থাপত্য শৈলীর স্থান অধিগ্রহণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৪৮ সালের কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের পর চেকোস্লোভাকিয়ার শিল্প সোভিয়েত-প্রভাবিত হয়ে ওঠে। চেকোস্লোভাক আভান্ট-গার্ডে শৈল্পিক আন্দোলনটি ব্রাসেলস শৈলী হিসাবে পরিচিত যা ১৯৬০-এর দশকে চেকোস্লোভাকিয়ার রাজনৈতিক উদারীকরণের সময় উত্থিত হয়। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে নিষ্ঠুরতা শৈলী আধিপত্য বিস্তার করে। চেক প্রজাতন্ত্র আন্তর্জাতিক স্থাপত্যের অত্যাধুনিক প্রবণতা থেকেও নিজেকে দূরে রাখেনি, যার একটি উদাহরণ হল প্রাগের ডান্সিং হাউস (তানশিকি ডেম), প্রাগের গোল্ডেন এঞ্জেল বা জিলিন এর কংগ্রেস সেন্টার। প্রভাবশালী চেক স্থপতিদের মধ্যে রয়েছে পিটার পার্লার, বেনেডিক্ট রেইট, ইয়ান সান্টিনি আইচেল, কিলিয়ান ইগনাজ ডিয়েনজেনহফার, যোসেফ ফান্টা, জোসেফ হ্লাভকা, যোসেফ গশার, পাভেল ইয়ানাক, ইয়ান কোটেরা, ভেরা মাখোনিনোভা, কারেল প্রাগার, কারেল হুবাশেক, ইয়ান কাপলিস্কি, ইভা জিউকিনা, ইভা ইরিশ্না, যোসেফ প্লেস্কট। সাহিত্য বর্তমান চেক অঞ্চলের সাহিত্য বেশিরভাগই চেক ভাষায় লেখা হয়েছিল। তবে লাতিন ও জার্মান কিংবা ওল্ড চার্চ স্লাভোনিকেও লেখা হয়েছিল। ফ্রাঞ্জ কাফকা চেক ও জার্মান ভাষায় দ্বিভাষিক হলেও তার লেখাগুলো (দ্য ট্রায়াল, দ্য ক্যাসেল) ছিলো জার্মান ভাষায়। ত্রয়োদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে প্রাগের রাজকীয় আদালত জার্মান মিনেসাং ও কোর্টলি সাহিত্যের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে। চেকের জার্মান ভাষার সাহিত্য বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে লেখা হয়। চেক সাহিত্যের বিকাশে বাইবেলের অনুবাদগুলো ভূমিকা পালন করেছিল। গীতসংহিতার (psalms) প্রাচীনতম চেক অনুবাদটি ১৩শ শতকের শেষের দিকে উদ্ভূত হয় এবং বাইবেলের প্রথম সম্পূর্ণ চেক অনুবাদ ১৩৬০ সালের দিকে শেষ হয়। ১৪৮৮ সালে প্রথম সম্পূর্ণ মুদ্রিত চেক বাইবেল প্রকাশিত হয়। মূল ভাষা থেকে অনূদিত প্রথম সম্পূর্ণ চেক বাইবেল প্রকাশিত হয় ১৫৭৯ থেকে ১৫৯৩ সালের মধ্যে। ১২শ শতকের কোডেক্স জিগাস বিশ্বের বৃহত্তম মধ্যযুগীয় পাণ্ডুলিপি যা এখনো বর্তমান। চেক ভাষার সাহিত্যকে বেশ কয়েকটি সময়কালে ভাগ করা যেতে পারে: মধ্যযুগ; হুসাইট যুগ; রেনেসাঁ মানবতাবাদ; বারোক যুগ; ১৯শ শতাব্দীর প্রথমার্ধের বোধন ও চেক পুনর্জাগরণ, ১৯শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে আধুনিক সাহিত্য; আন্তঃযুদ্ধকালীন সময়ের আভান্ট-গার্ডে; কমিউনিজমের অন্তর্গত সময় এবং চেক প্রজাতন্ত্র। যুদ্ধবিরোধী হাস্যরসাত্মক উপন্যাস "দ্য গুড সোলজার 'শ্ভেয়িক" ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি অনূদিত চেক ভাষার বই। আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার ফ্রান্‌ৎস কাফকা পুরস্কার চেক প্রজাতন্ত্রে প্রদান করা হয়। চেক প্রজাতন্ত্রে ইউরোপের সবচেয়ে ঘনসন্নিবিষ্ট গ্রন্থাগার বিদ্যমান। চেক সাহিত্য ও সংস্কৃতি জনজীবনে দুইবার বিরাট ভূমিকা পালন করেছিল, যখন চেকরা নিপীড়নের অধীনে বাস করছিল এবং রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ দমন করা হয়েছিল। উভয় ক্ষেত্রে (১৯শ শতাব্দীর শুরুর দিকে এবং ১৯৬০-এর দশকে) চেকরা তাদের সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক প্রচেষ্টাকে রাজনৈতিক স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং একটি আত্মবিশ্বাসী ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন জাতি প্রতিষ্ঠাকল্পে ব্যবহার করেছিল। সংগীত চেক ভূমির সংগীত প্রথা গীর্জার স্তোত্রগানের মাধ্যমে সূচনা লাভ করে; ১০ম থেকে ১১শ শতাব্দীতে যার প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: সংগীত "প্রভু, আমাদের কৃপা করুন" (চেক: Hospodine, pomiluj ny) ও স্তোত্র "সেন্ট ওয়েন্সেসলাস" বা "সেন্ট ওয়েনসেসলাস করাল"। কিছু ইতিহাসবিদ "প্রভু, আমাদের কৃপা করুন" এর লেখক হিসেবে প্রাগের বিশপ সেন্ট অ্যাডালবার্ট (ভোইটেক নামেও পরিচিত) এর নাম উল্লেখ করেন। তিনি ৯৫৬ থেকে ৯৯৭ সালে বর্তমান ছিলেন। সংগীত সংস্কৃতির ঐশ্বর্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়কালের সঙ্গীত শাখা বিশেষত বারোক, ধ্রুপদী , রোমান্টিকতা, আধুনিক ধ্রুপদী এবং বোহেমিয়া, মোরাভিয়া ও সিলেসিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতে নিহিত। কৃত্রিম সংগীতের প্রারম্ভিক যুগ থেকে, চেক সঙ্গীতশিল্পী এবং সুরকাররা এই অঞ্চলের লোকসংগীত ও নৃত্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। চেক সংগীত ইউরোপ ও বিশ্ব এই উভয় প্রেক্ষাপটেই "উপকারী" হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। উচ্চাঙ্গসংগীত এবং বারোক, রোমান্টিকতা ও আধুনিক ধ্রুপদী সংগীতের ঊর্ধ্বেও এটিকে সংগীত কলার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূত্রপাত হিসেবে বিবেচনা করা সম্ভব। কিছু চেক সংগীতশিল্প হলো দ্য বার্টার্ড ব্রাইড, নিউ ওয়ার্ল্ড সিম্ফনি, সিনফোনিয়েটা এবং জেনুফা। দেশটির অন্যতম সঙ্গীত উৎসব প্রাগের বসন্তকালীন আন্তর্জাতিক উচ্চাঙ্গসংগীতের সঙ্গীতায়োজন, যা বৈশ্বিক শিল্পী, সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা এবং চেম্বার সঙ্গীত শিল্পীদের জন্য একটি স্থায়ী প্রদর্শনী। নাট্যশালা চেক নাট্যশালার শিকড় খুঁজে পাওয়া যায় মধ্যযুগে, বিশেষত গথিক যুগের সাংস্কৃতিক জীবনে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে নাট্যশালাটি জাতীয় জাগরণ আন্দোলনে ভূমিকা পালন করে এবং পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দীতে এটি আধুনিক ইউরোপীয় নাট্যশিল্পের একটি অংশ হয়ে ওঠে। ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে মূল চেক সাংস্কৃতিক ঘটনাটি রচিত হয়। এই প্রকল্পটি ল্যাটারনা ম্যাগিকা নামে পরিচিত, যা নাট্য শিল্প, নৃত্যশিল্প এবং চলচ্চিত্রকে কাব্যিক পদ্ধতিতে একত্রিত করে প্রযোজনা করা হয়। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এটি প্রথম বহুমাত্রিক শিল্প প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়। কারেল শাপেকের আর. ইউ. আর. নাটকে প্রথমবারের মতো রোবট শব্দটি ব্যবহৃত হয়। চেক প্রজাতন্ত্রে পুতুল নাচের ঐতিহ্য রয়েছে। ২০১৬ সালে চেক এবং স্লোভাক পুতুলনাচকে ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চলচ্চিত্র চেক চিত্রগ্রহণের ঐতিহ্য ১৮৯০-এর দশকের দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হয়েছিল। নিরব চলচ্চিত্রের যুগের প্রযোজনার মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক নাটক দ্য বিল্ডার অব দ্য টেম্পল এবং গুস্তাভ মাচাতি পরিচালিত সামাজিক ও প্রেমমূলক নাটক ইরোটিকন। শব্দযুক্ত চলচ্চিত্রের যুগ ছিল মূলধারার বিভিন্ন চলচ্চিত্র যেমন মার্টিন ফ্রিশ অথবা কারেল লামাশের হাস্যরসাত্মক প্রযোজনা দিয়ে পরিপূর্ণ। এছাড়া ছিলো নাটকীয় চলচ্চিত্র যা আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় ছিল। হার্মিনা তুর্লোভা (১১ ডিসেম্বর ১৯০০ — ৩ মে ১৯৯৩) ছিলেন একজন বিশিষ্ট চেক অ্যানিমেটর, চিত্রনাট্যকার এবং চলচ্চিত্র পরিচালক। তাকে প্রায়শই চেক অ্যানিমেশনের জননী বলা হত। তার কর্মজীবনে তিনি পুতুল এবং স্টপ মোশন অ্যানিমেশন কৌশল ব্যবহার করে ৬০ টিরও বেশি শিশুতোষ অ্যানিমেটেড ক্ষুদ্র চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। জার্মান দখলদারিত্বের পূর্বে, ১৯৩৩ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অ্যানিমেটর ইরেনা ডোদালোভা তার স্বামী ক্যারেল ডোডালের সাথে প্রথম চেক অ্যানিমেশন স্টুডিও "আইআরই ফিল্ম" প্রতিষ্ঠা করেন। নাৎসি দখলদারিত্বের সময়কাল এবং ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকের চলচ্চিত্রে সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতা প্রতিফলনের (কিছু ব্যতিক্রম যেমন, "ক্রাকাটিট" বা ১৯৪৬ সালে পাম ডি'অর বিজয়ী "মেন উইদআউট উইংস") প্রারম্ভিক কমিউনিস্ট আনুষ্ঠানিক নাটকীয়তা শেষ হওয়ার পর, অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র দিয়ে চেক চলচ্চিত্র শিল্পের একটি নতুন যুগ শুরু হয়। এগুলো ১৯৫৮ সাল থেকে "জুলস ভার্নের কল্পনাপ্রসূত বিশ্ব" শিরোনামে অ্যাংলোফোন দেশগুলিতে সঞ্চালিত হয়েছিল যাতে অভিনীত নাটক ও অ্যানিমেশনের এক সংমিশ্রণ ছিলো। এছাড়া আধুনিক পুতুল চলচ্চিত্রের প্রতিষ্ঠাতা জিজি ট্রানকাও এতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এই ঘটনা অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র (করটেক বা মোল চরিত্র ইত্যাদি) নির্মাণের একটি ঐতিহ্য শুরু করে। ১৯৬০-এর দশকে চেকোস্লোভাক নবজোয়ারের চলচ্চিত্রগুলোতে তাৎক্ষণিককৃত সংলাপ, তিক্ত এবং অযৌক্তিক হাস্যরস এবং অপেশাদার অভিনেতাদের দখল বিদ্যমান ছিল। পরিচালকরা দৃশ্যের পরিমার্জনা ও কৃত্রিম বিন্যাস ছাড়াই প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার চেষ্টা করতেন। ১৯৬০-এর দশক এবং ১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকের মৌলিক পাণ্ডুলিপি এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রভাববিশিষ্ট একজন ব্যক্তিত্ব হলেন ফ্রানটিশেক ভ্লাশিল। আরেকজন আন্তর্জাতিক লেখক হলেন ইয়ান শ্বাঙ্কমায়ের, যিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং শিল্পী, যার কাজ বিভিন্ন ক্ষেত্রব্যাপী বিস্তৃত। তিনি অ্যানিমেশনের জন্য পরিচিত একজন স্বঘোষিত পরাবাস্তববাদী। প্রাগের ব্যারান্ডভ স্টুডিয়োগুলি দেশের বৃহত্তম চিত্রধারণ স্থানযুক্ত চলচ্চিত্র স্টুডিয়ো। চলচ্চিত্র নির্মাতারা বার্লিন, প্যারিস এবং ভিয়েনায় পাওয়া যায় না এমন দৃশ্য ধারণের জন্য প্রাগে আসেন। কার্লোভি ভেরি শহর ২০০৬ সালের জেমস বন্ড চলচ্চিত্র ক্যাসিনো রয়েল এর দৃশ্যধারণের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। চলচ্চিত্রে বিশেষ অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ চেক পুরস্কার দ্য চেক লায়ন। কার্লোভি ভেরি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অন্যতম চলচ্চিত্র উৎসব যাকে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির আন্তর্জাতিক সংঘ (এফআইএপিএফ) প্রতিযোগিতামূলক মর্যাদা দিয়েছে। দেশে অনুষ্ঠিত অন্যান্য চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যে রয়েছে ফেবিওফেস্ট, জিহলাভা আন্তর্জাতিক ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ওয়ান ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, জিলিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং ফ্রেশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। গণমাধ্যম চেক সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের এক বিশেষ মাত্রার স্বাধীনতা রয়েছে। নাৎসিবাদ, বর্ণবাদ বা চেক আইন উল্লঙ্ঘনের সমর্থনে লেখার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। ২০২১ সালে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস কর্তৃক বিশ্ব স্বাধীনতা সূচকে চেক গণমাধ্যমকে ৪০তম সর্বাধিক স্বাধীন গণমাধ্যম হিসেবে স্থান দেওয়া হয়েছিল। রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি এর সদর দপ্তর প্রাগে অবস্থিত। জাতীয় পাবলিক টেলিভিশন পরিষেবা হল চেক টেলিভিশন যা ২৪ ঘন্টাব্যাপী খবরের চ্যানেল শেটে ২৪ (ČT24) এবং খবরের ওয়েবসাইট সিটি২৪.সিজেড (ct24.cz) পরিচালনা করে। , চেক টেলিভিশন সবচেয়ে বেশি দেখা টেলিভিশন, যার পরের স্থানে রয়েছে বেসরকারী টেলিভিশন টিভি নোভা এবং প্রাইমা টিভি। যাইহোক, টিভি নোভায় প্রচারিত প্রধান সংবাদ প্রোগ্রাম এবং প্রাইম টাইম প্রোগ্রাম সবচেয়ে বেশি দেখা হয়। অন্যান্য পাবলিক পরিষেবাগুলির মধ্যে রয়েছে চেক রেডিও এবং চেক সংবাদসংস্থা। ২০২০-২০২১ সালে সর্বাধিক বিক্রিত দৈনিক জাতীয় সংবাদপত্রগুলো হল ব্লেস্ক (গড় দৈনিক পাঠক ৭,০৩,০০০), ম্লাদা ফ্রন্টা ডিএনইএস (গড় দৈনিক পাঠক ৪,৬১,০০০), প্রাভো (গড় দৈনিক পাঠক ১,৮২,০০০), লিডোভে নোভিনি (গড় দৈনিক পাঠক ১,৬৩,০০০) এবং হোসপোদারস্কে নোভিনি (গড় দৈনিক পাঠক ১,৬২,০০০)। অধিকাংশ চেক জনগণ (৮৭ শতাংশ) সংবাদ পড়ার ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে। যার মধ্যে ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণকৃত ওয়েবসাইট শেনজাম (Seznam.cz), আইডিএনইএস (iDNES.cz), নোভিংকি (Novinky.cz), আইপ্রাইমা (iPrima.cz) এবং সেজানাম জেডপ্রাভি (Zprávy.cz)। খাদ্যাভ্যাস চেক রন্ধনপ্রণালীতে শুয়োরের মাংস, গরুর মাংস এবং মুরগির মাংসের খাবারের উপর জোর দেয়া হয়। রাজহাঁস, হাঁস, খরগোশ এবং ভেনিসন পরিবেশন করা হয়। মাছ সাধারণত কম দেখা যায়। তবে বড়দিনের মতো বিশেষ কিছু অনুষ্ঠানে তাজা ট্রাউট এবং কার্প মাছ পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় সসেজ, উর্স্ট, পেটিস, এবং ধূমায়িত ও কিউরিংকৃত মাংস প্রচলিত রয়েছে। চেক মিষ্টান্নের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হুইপড ক্রিম, চকোলেট, ফলের পেস্ট্রি এবং টার্ট, ক্রেপস, ক্রেম ডেজার্ট এবং পনির, পোস্ত-বীজ-ভরা ও অন্যান্য ধরনের ঐতিহ্যবাহী কেক যেমন বুচি, কোলাশ এবং স্ট্রুডল। চেক বিয়ারের ইতিহাস এক সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত; প্রাচীনতম পরিচিত মদের কারখানা ৯৯৩ সালে বিদ্যমান ছিল। বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রে মাথাপিছু বিয়ারের ব্যবহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। পিলজেনার ধরনের বিয়ার (পিলস) এর উৎপত্তি হয়েছে পিলজেন অঞ্চলে, যেখানে বিশ্বের প্রথম সোনালি ল্যাগার পিলজেনার উরকেল এখনও উৎপাদিত হয়। বর্তমানে বিশ্বে উৎপাদিত বিয়ারের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশির অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে এটি। চেস্কে বুদেজোভিসে শহর একই পদ্ধতিতে তাদের বিয়ারকে নাম দিয়েছে, যা বুডোয়েজার বুডভার নামে পরিচিত। দক্ষিণ মোরাভিয়া অঞ্চল মধ্যযুগ থেকে ওয়াইন উৎপাদন করে আসছে। চেক প্রজাতন্ত্রের প্রায় ৯৪% দ্রাক্ষাক্ষেত্র মোরাভিয়। বিয়ার, স্লিভোভিজ এবং ওয়াইন ছাড়াও চেক প্রজাতন্ত্র দুই ধরনের মদ, ফার্নেট স্টক এবং বেচেরোভকা তৈরি করে। কোফোলা হচ্ছে একটি অ্যালকোহলমুক্ত গার্হস্থ্য কোলাজাতীয় কোমল পানীয় যা কোকা-কোলা এবং পেপসির প্রতিদ্বন্দ্বী। খেলাধুলা চেক প্রজাতন্ত্রের দুটি শীর্ষ খেলা ফুটবল এবং আইস হকি। সবচেয়ে বেশি দেখা ক্রীড়ানুষ্ঠান হচ্ছে অলিম্পিক টুর্নামেন্ট এবং আইস হকির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। অন্যান্য সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলাগুলির মধ্যে রয়েছে টেনিস, ভলিবল, ফ্লোরবল, গল্‌ফ, বল হকি, অ্যাথলেটিকস, বাস্কেটবল এবং স্কিইং। দেশটি গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ১৫ টি এবং শীতকালীন অলিম্পিকে নয়টি স্বর্ণপদক জিতেছে। (অলিম্পিকের ইতিহাস দেখুন।) চেক আইস হকি দল ১৯৯৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছিল এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বারোটি স্বর্ণ পদক জিতেছিল (১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত একটানা তিনবার)। স্কোডা মোটরস্পোর্ট ১৯০১ সাল থেকে রেসিং প্রতিযোগিতার সাথে জড়িত এবং বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটি যানবাহনের ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করেছে। এমটিএক্স অটোমোবাইল কোম্পানি পূর্বে ১৯৬৯ সাল থেকে রেসিং গাড়ি এবং ফর্মুলা রেসিং গাড়ি তৈরির সাথে জড়িত ছিল। হাইকিং একটি জনপ্রিয় খেলা। চেক ভাষায় 'টুরিস্ট' শব্দটির অর্থ 'তুরিস্তা', যার অর্থ 'ট্রেকার' বা 'হাইকার'। হাইকারদের জন্য, (১২০ বছরেরও বেশি পুরোনো ঐতিহ্যের কারণে) পথ চিহ্নিতের জন্য একটি চেক হাইকিং মার্কার্স সিস্টেম রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী সব দেশ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। প্রায় ৪০,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ চিহ্নিত করা ক্ষুদ্র এবং দীর্ঘ দূরত্বের ট্রেইলের একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে যা পুরো দেশ এবং সমস্ত চেক পর্বতমালাব্যাপী বিস্তৃত। আরও দেখুন চেক প্রজাতন্ত্র সম্পর্কিত বিষয়াবলি চেক প্রজাতন্ত্রের রূপরেখা নোট তথ্যসূত্র উদ্ধৃতি সাধারণ উৎস আরো পড়ুন হকমান, যিরি (১৯৯৮)। Historical dictionary of the Czech State. scarecrow press. ব্রায়ান্ট, চাদ (২০২১)। Prague: Belonging and the Modern City Cambridge MA: Harvard University Press. বহিঃসংযোগ সরকারি ওয়েবসাইট রাষ্ট্রপতির ওয়েবসাইট সিনেট জনপ্রশাসন প্রবেশদ্বার চেক পর্যটন চেক প্রজাতন্ত্রের আনুষ্ঠানিক পর্যটন ওয়েবসাইট চেকিয়া. দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক''. সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি. চেক প্রজাতন্ত্র ১৯৯৩-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ইউরোপ কাউন্সিলের সদস্য রাষ্ট্র ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র থ্রি সিস ইনিশিয়েটিভের সদস্য রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য মধ্য ইউরোপ ইউরোপের রাষ্ট্র স্থলবেষ্টিত দেশ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Czech_Republic
Czech Republic
The Czech Republic, also known as Czechia, is a landlocked country in Central Europe. Historically known as Bohemia, it is bordered by Austria to the south, Germany to the west, Poland to the northeast, and Slovakia to the southeast. The Czech Republic has a hilly landscape that covers an area of 78,871 square kilometers (30,452 sq mi) with a mostly temperate continental and oceanic climate. The capital and largest city is Prague; other major cities and urban areas include Brno, Ostrava, Plzeň and Liberec. The Duchy of Bohemia was founded in the late 9th century under Great Moravia. It was formally recognized as an Imperial State of the Holy Roman Empire in 1002 and became a kingdom in 1198. Following the Battle of Mohács in 1526, all of the Crown lands of Bohemia were gradually integrated into the Habsburg monarchy. Nearly a hundred years later, the Protestant Bohemian Revolt led to the Thirty Years' War. After the Battle of White Mountain, the Habsburgs consolidated their rule. With the dissolution of the Holy Roman Empire in 1806, the Crown lands became part of the Austrian Empire. In the 19th century, the Czech lands became more industrialized, and in 1918 most of it became part of the First Czechoslovak Republic following the collapse of Austria-Hungary after World War I. Czechoslovakia was the only country in Central and Eastern Europe to remain a parliamentary democracy during the entirety of the interwar period. After the Munich Agreement in 1938, Nazi Germany systematically took control over the Czech lands. Czechoslovakia was restored in 1945 and three years later became an Eastern Bloc communist state following a coup d'état in 1948. Attempts to liberalize the government and economy were suppressed by a Soviet-led invasion of the country during the Prague Spring in 1968. In November 1989, the Velvet Revolution ended communist rule in the country and restored democracy. On 31 December 1992, Czechoslovakia was peacefully dissolved, with its constituent states becoming the independent states of the Czech Republic and Slovakia. The Czech Republic is a unitary parliamentary republic and developed country with an advanced, high-income social market economy. It is a welfare state with a European social model, universal health care and free-tuition university education. It ranks 32nd in the Human Development Index. The Czech Republic is a member of the United Nations, NATO, the European Union, the OECD, the OSCE, the Council of Europe and the Visegrád Group.
1391
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%20%E0%A6%94%E0%A6%AA%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
বাংলা ঔপন্যাসিক তালিকা
বাংলা ঔপন্যাসিক তালিকা অ অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত অমর মিত্র অনিতা অগ্নিহোত্রী আ আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আনিসুল হক আবু ইসহাক আবুল বাশার আশাপূর্ণা দেবী আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আহমেদ ছফা ই ইমদাদুল হক মিলন ক কমলকুমার মজুমদার কালকূট কাজী ইমদাদুল হক কাজী নজরুল ইসলাম চ জ জয় গোস্বামী ত তসলিমা নাসরিন তিলোত্তমা মজুমদার দ দেবেশ রায় দিব্যেন্দু পালিত দুলেন্দ্র ভৌমিক দিলারা হাশেম ন নবারুণ ভট্টাচার্য নিমাই ভট্টাচার্য নীহাররঞ্জন গুপ্ত প প্রফুল্ল রায় প্রেমেন্দ্র মিত্র ব বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বুদ্ধদেব গুহ বাণী বসু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বিমল কর বিমল মিত্র ভ ভগীরথ মিশ্র ম মতি নন্দী মলয় রায়চৌধুরী মহাশ্বেতা দেবী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় মামুন হুসাইন মীর মশাররফ হোসেন মৈত্রেয়ী দেবী র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রমাপদ চৌধুরী ল লীলা মজুমদার শ শওকত আলী শক্তিপদ রাজগুরু শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় শংকর শহীদুল জহির শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় স সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় সত্যজিৎ রায় সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় সমরেশ বসু সমরেশ মজুমদার সুচিত্রা ভট্টাচার্য সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সুবিমল বসাক সুবিমল মিশ্র সুবোধ ঘোষ সেলিনা হোসেন সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সৈয়দ শামসুল হক হ হুমায়ুন আজাদ হুমায়ূন আহমেদ হেমেন্দ্র কুমার রায় আরো দেখুন বাঙালি কবিদের তালিকা বাঙালি সাহিত্যিকদের তালিকা (বর্ণানুক্রমিক) বাঙালি সাহিত্যিকদের তালিকা (কালানুক্রমিক) বাংলা ভাষার উপন্যাস পেশা অনুযায়ী বাংলাদেশী ব্যক্তিবর্গের তালিকা
null
null
null
1393
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%8F%E0%A6%A8%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8B%20%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BF
এনরিকো ফের্মি
এনরিকো ফার্মি (সেপ্টেম্বর ২৯, ১৯০১ - নভেম্বর ২৮, ১৯৫৪) একজন ইতালীয় পদার্থবিদ। তিনি ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম পারমাণবিক বিভাজন ঘটাতে সক্ষম হন। এই গবেষণা পরবর্তীকালে পারমাণবিক বোমা, এবং পারমাণবিক চুল্লী (শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত) তৈরির কাজের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়। তিনি১৯৩৮ সালে রেডিওঅ্যাকটিভিটির উপর কাজের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ম্যানহাটন প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ফার্মি হলেন পৃথিবীর প্রথম নিউক্লিয়ার চুল্লী নির্মাতা। সে চুল্লীটির নাম ছিল শিকাগো পাইল- ১। তাকে বলা হয় নিউক্লিয়ার যুগের স্থপতি এবং একই সাথে নিউক্লিয়ার বোমারও স্থপতি। তিনি হলেন অল্প সংখ্যক পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন যাঁরা একই সাথে তাত্ত্বিক ও পরীক্ষণ পদার্থবিজ্ঞানে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ইউরেনিয়াম পরবর্তী মৌলসমূহে নিউট্রনের গোলাবর্ষণের মাধ্যমে প্রবর্তিত তেজস্ক্রিয়তার কাজের জন্য তিনি ১৯৩৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। প্রাথমিক জীবন এনরিকো ফার্মি ইতালির রোমে ২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আলবার্তো ফার্মি এবং ইডা ডি গেট্টিস এর তৃতীয় সন্তান। বাবা আলবার্তো ফার্মি ছিলেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় প্রধান এবং মা ছিলেন একজন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা। তার বোন মারিয়া ছিলেন তার থেকে দুই বছরের বড় আর ভাই জুলিও (Giulio) ছিলেন এক বছরের বড়। ফার্মি এবং তার ভাই দুজনকেই দুধমার কাছে পাঠানো হয়েছিল গ্রামীণ এলাকায়। ফার্মি আড়াই বছর বয়সে তার পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। শিক্ষাজীবন ফার্মি ১৯১৮ সালে পিসাতে অবস্থিত সুপিরিয়র নরমাল স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। ১৯২৩ সালে রকফেলার বৃত্তি পেয়ে তিনি জার্মানির গটিঞ্জেনে বিজ্ঞানী ম্যাক্স বর্নের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর গবেষণাকর্মে নিযুক্ত ছিলেন। তথ্যসূত্র ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী ১৯০১-এ জন্ম ১৯৫৪-এ মৃত্যু শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাক্স প্লাংক পদক বিজয়ী ইতালীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি মার্কিন অজ্ঞেয়বাদী পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিদ মার্কিন নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞানী পাকস্থলীর ক্যান্সারে মৃত্যু পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানী আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির বিশিষ্ট সভ্য রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য ইতালীয় নোবেল বিজয়ী মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী মাতেউচি পদক বিজয়ী
https://en.wikipedia.org/wiki/Enrico_Fermi
Enrico Fermi
Enrico Fermi (Italian: [enˈriːko ˈfermi]; 29 September 1901 – 28 November 1954) was an Italian and naturalized American physicist, renowned for being the creator of the world's first nuclear reactor, the Chicago Pile-1, and a member of the Manhattan Project. He has been called the "architect of the nuclear age" and the "architect of the atomic bomb". He was one of very few physicists to excel in both theoretical physics and experimental physics. Fermi was awarded the 1938 Nobel Prize in Physics for his work on induced radioactivity by neutron bombardment and for the discovery of transuranium elements. With his colleagues, Fermi filed several patents related to the use of nuclear power, all of which were taken over by the US government. He made significant contributions to the development of statistical mechanics, quantum theory, and nuclear and particle physics. Fermi's first major contribution involved the field of statistical mechanics. After Wolfgang Pauli formulated his exclusion principle in 1925, Fermi followed with a paper in which he applied the principle to an ideal gas, employing a statistical formulation now known as Fermi–Dirac statistics. Today, particles that obey the exclusion principle are called "fermions". Pauli later postulated the existence of an uncharged invisible particle emitted along with an electron during beta decay, to satisfy the law of conservation of energy. Fermi took up this idea, developing a model that incorporated the postulated particle, which he named the "neutrino". His theory, later referred to as Fermi's interaction and now called weak interaction, described one of the four fundamental interactions in nature. Through experiments inducing radioactivity with the recently discovered neutron, Fermi discovered that slow neutrons were more easily captured by atomic nuclei than fast ones, and he developed the Fermi age equation to describe this. After bombarding thorium and uranium with slow neutrons, he concluded that he had created new elements. Although he was awarded the Nobel Prize for this discovery, the new elements were later revealed to be nuclear fission products. Fermi left Italy in 1938 to escape new Italian racial laws that affected his Jewish wife, Laura Capon. He emigrated to the United States, where he worked on the Manhattan Project during World War II. Fermi led the team at the University of Chicago that designed and built Chicago Pile-1, which went critical on 2 December 1942, demonstrating the first human-created, self-sustaining nuclear chain reaction. He was on hand when the X-10 Graphite Reactor at Oak Ridge, Tennessee went critical in 1943, and when the B Reactor at the Hanford Site did so the next year. At Los Alamos, he headed F Division, part of which worked on Edward Teller's thermonuclear "Super" bomb. He was present at the Trinity test on 16 July 1945, the first test of a full nuclear bomb explosion, where he used his Fermi method to estimate the bomb's yield. After the war, he helped establish the Institute for Nuclear Studies at Chicago, and served on the General Advisory Committee, chaired by J. Robert Oppenheimer, which advised the Atomic Energy Commission on nuclear matters. After the detonation of the first Soviet fission bomb in August 1949, he strongly opposed the development of a hydrogen bomb on both moral and technical grounds. He was among the scientists who testified on Oppenheimer's behalf at the 1954 hearing that resulted in the denial of Oppenheimer's security clearance. Fermi did important work in particle physics, especially related to pions and muons, and he speculated that cosmic rays arose when material was accelerated by magnetic fields in interstellar space. Many awards, concepts, and institutions are named after Fermi, including the Fermi 1 (breeder reactor), the Enrico Fermi Nuclear Generating Station, the Enrico Fermi Award, the Enrico Fermi Institute, the Fermi National Accelerator Laboratory (Fermilab), the Fermi Gamma-ray Space Telescope, the Fermi paradox, and the synthetic element fermium, making him one of 16 scientists who have elements named after them.
1397
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
পদার্থবিজ্ঞানী তালিকা
অ অন্দের্শ ইয়োনাস অংস্ট্রের্ম অঁরি বেকেরেল আ আইজাক নিউটন আমাদিও আভোগাদ্রো আর্কিমিডিস আর্থার কম্পটন আর্নেস্ট রাদারফোর্ড আলবার্ট আইনস্টাইন আঁদ্রে মারি এম্পিয়ার আর্নেস্ট কার্ল অ্যাবে হাসান ইবনে আল-হাইসাম বা আলহাজেন আব্রাহাম আলিখানভ আর্যভট্ট আল-বাত্তানি আল-ফাজারি আল-মাসুদি আব্দুল কালাম উ উইলিয়াম আলিচ-যুক্তরাষ্ট্র(১৯০০-১৯৬৫) এ এনরিকো ফের্মি এর্ভিন শ্র্যোডিঙার এরিস্টটল ও ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ ক ক্রিস্টিয়ান ডপলার চ চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন জ জন বার্ডীন জন স্টুয়ার্ট বেল জর্জ সায়মন ও'ম জঁ-বাপ্তিস্ত বিও জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল জগদীশচন্দ্র বসু ন নিলস বোর আইজ্যাক নিউটন প পল ডিরাক ফ ফাউলা ভ ভিলহেল্ম ভেবার ম মারি ক্যুরি র রিচার্ড ফাইনম্যান রেনে দেকার্ত রবার্ট এডলার রোনাল্ড আর্নেস্ট আইচিসন ল লুই দ্য ব্রয় (faithful to the correct French pron. of Luis de Broglie) লুট‌উইখ বোল্ট্‌স্‌মান লিওনার্ট অয়লার স স্টিফেন এল এডলার স্যামুয়েল কিং অ্যালিসন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৯০০-১৯৬৫) ড ডেরেক অ্যাবট ডেভিড জে আলবার্ট ডেভিড বোম ডেভিড ব্রুস্টার আরও দেখুন রসায়নবিজ্ঞানীদের তালিকা পদার্থবিজ্ঞানী পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কিত তালিকা
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_physicists
List of physicists
Following is a list of physicists who are notable for their achievements.
1398
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%20%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8
আলবার্ট আইনস্টাইন
আলবার্ট আইনস্টাইন ( ) (১৪ মার্চ ১৮৭৯ - ১৮ এপ্রিল ১৯৫৫) জার্মানিতে জন্মগ্রহণকারী একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি মূলত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব (আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের দুটি স্তম্ভের একটি) এবং ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র, ( যাকে "বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমীকরণ" হিসেবে খেতাব দেওয়া হয়েছে ) আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। তিনি ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। আইনস্টাইন জার্মান সাম্রাজ্যে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তার পিতা একটি তড়িৎরাসায়নিক কারখানা পরিচালনা করতেন। তবে আইনস্টাইন ১৮৯৫ সালে সুইজারল্যান্ডে চলে আসেন এবং পরের বছর জার্মান নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে বিশেষায়িত হওয়ায় ১৯০০ সালে জ্যুরিখের ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল থেকে একাডেমিক শিক্ষা ডিপ্লোমা অর্জন করেন। পরের বছর তিনি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব অর্জন করেছিলেন, যা তিনি আর ত্যাগ করেন নি। প্রাথমিকভাবে কাজ সন্ধানের জন্য সংগ্রাম করতে হলেও ১৯০২ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত বার্নের সুইজারল্যান্ডীয় পেটেন্ট অফিসে পেটেন্ট পরীক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা করেছেন এবং নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারে তার অবদান অনেক। সবচেয়ে বিখ্যাত অবদান আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব (যা বলবিজ্ঞান ও তড়িচ্চৌম্বকত্বকে একীভূত করেছিল) এবং আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব (যা অসম গতির ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নতুন মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছিল)। তার অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে আপেক্ষিকতাভিত্তিক বিশ্বতত্ত্ব, কৈশিক ক্রিয়া, ক্রান্তিক উপলবৎ বর্ণময়তা, পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ও কোয়ান্টাম তত্ত্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান যা তাকে অণুর ব্রাউনীয় গতি ব্যাখ্যা করার দিকে পরিচালিত করেছিল, আণবিক ক্রান্তিকের সম্ভ্যাব্যতা, এক-আণবিক গ্যাসের কোয়ান্টাম তত্ত্ব, নিম্ন বিকরণ ঘনত্বে আলোর তাপীয় ধর্ম (বিকিরণের একটি তত্ত্ব যা ফোটন তত্ত্বের ভিত্তি রচনা করেছিল), একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্বের প্রথম ধারণা দিয়েছিলেন এবং পদার্থবিজ্ঞানের জ্যামিতিকীকরণ করেছিলেন। ১৯৩৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকাকালীন সময়ে এডলফ হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় আসে। ইহুদী হওয়ার কারণে আইনস্টাইন আর জার্মানিতে ফিরে যান নি। আমেরিকাতেই তিনি থিতু হোন এবং ১৯৪০ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে আগে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি জার্মান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচী সম্পর্কে সতর্ক করেন এবং আমেরিকাকেও একই ধরনের গবেষণা শুরুর তাগিদ দেন। তার এই চিঠির মাধ্যমেই ম্যানহাটন প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়। আইনস্টাইন মিত্রবাহিনীকে সমর্থন করলেও পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিলেন। পরে ব্রিটিশ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল সঙ্গে মিলে পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদের কথা তুলে ধরে রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার রচনা করেন। ১৯৫৫ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর এডভান্সড স্টাডির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আইনস্টাইন ৩০০টিরও অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং ১৫০টির বেশি বিজ্ঞান-বহির্ভূত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে "শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি" হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীদের একটি ভোটের মাধ্যমে জানা গেছে, তাকে প্রায় সকলেই সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। দৈনন্দিন জীবনে মেধাবী এবং প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন কাউকে প্রায়শই "আইনস্টাইন" বলে সম্বোধন করা হয়। অর্থাৎ এটি প্রতিভা শব্দের সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইউজিন উইগনার তাকে তাঁর সমসাময়িকদের সাথে তুলনা করতে গিয়ে লিখেছিলেন যে "জেনসি ভন নিউম্যানের চেয়ে আইনস্টাইনের বোধশক্তি আরও বেশি প্রখর ছিল। তার চিন্তাশক্তি নিউম্যানের চেয়ে ভেদ্য এবং বাস্তবিক ছিল।" জীবনী বাল্যকাল ও প্রাথমিক শিক্ষা আইনস্টাইন ১৮৭৯ সালের (ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বিখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল-এর মৃত্যুর বছর) ১৪ মার্চ উল্‌ম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে মিউনিখে। আইনস্টাইনের বাবা-মা ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ মধ্যবিত্ত ইহুদি। বাবা হেরমান আইনস্টাইন মূলত পাখির পালকের বেড তৈরি ও বাজারজাত করতেন। পরবর্তীতে তাদের পরিবার মিউনিখে চলে এলে হেরমান তার ভাই জ্যাকবের সাথে একমুখী বিদ্যুৎ নির্ভর বৈদ্যুতিক যন্ত্র নির্মাণের একটি কারখানা স্থাপন করে মোটামুটি সফলতা পান। তার মা পলিন কখ পরিবারের অভ্যন্তরীণ সব দায়িত্ব পালন করতেন। তার এক বোন ছিল যার নাম মাজা। আইনস্টাইনের জন্মের দুই বছর পরই তার জন্ম হয়। ছোটবেলায় দুইটি জিনিস তার মনে অপার বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল, প্রথমত পাঁচ বছর বয়সে একটি কম্পাস হাতে পান এবং তার ব্যবহার দেখে বিস্মিত হন। অদৃশ্য শক্তির কারণে কীভাবে কম্পাসের কাঁটা দিক পরিবর্তন করছে? তখন থেকে আজীবন অদৃশ্য শক্তির প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। এরপর ১২ বছর বয়সে তিনি জ্যামিতির একটি বইয়ের সাথে পরিচিত হন। এই বইটি অধ্যয়ন করে এত মজা পেয়েছিলেন যে একে আজীবন "পবিত্র ছোট্ট জ্যামিতির বই" বলে সম্বোধন করেছেন। আসলে বইটি ছিল ইউক্লিডের এলিমেন্ট্‌স। আইনস্টাইন ৫ বছর বয়সে ক্যাথলিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ৩বছর সেখানেই পড়াশোনা করেন। তার কথা বলার ক্ষমতা খুব একটা ছিল না, তথাপি স্কুলে বেশ ভালো ফলাফল করেছিলেন। এরপর ৮ বছর বয়সে তাকে লুইটপোল্ড জিমনেসিয়ামে (বর্তমানে আলবার্ট আইনস্টাইন জিমনেসিয়াম নামে পরিচিত) স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে তিনি উন্নত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। সেখানে ৭বছর পড়াশোনা করা শেষে তিনি জার্মান সাম্রাজ্য ত্যাগ করেন। ১০ বছর বয়সে তার উপর মাক্স টালমুড নামক চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক ছাত্রের বিশেষ প্রভাব পড়েছিল। তাদের বাসায় সে মাঝে মাঝেই নিমন্ত্রণ খেতে যেতো। এভাবে এক সময় সে আইনস্টাইনের অঘোষিত প্রশিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। টালমুড তাকে উচ্চতর গণিত ও দর্শন বিষয়ে শিক্ষা দিত। টালমুড তাকে অ্যারন বার্নস্টাইন লিখিত শিশু বিজ্ঞান সিরিজের (Naturwissenschaftliche Volksbucher, ১৮৬৭-৬৮) সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এই বইয়ে লেখক বিদ্যুতের সাথে ভ্রমণ তথা একটি টেলিগ্রাফ তারের ভিতর দিয়ে চলাচলের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। আইনস্টাইন তখন নিজেকে প্রশ্ন করেন, এভাবে যদি আলোর সাথে ভ্রমণ করা যেত তাহলে কি ঘটত? এই প্রশ্নটি পরবর্তী ১০ বছর তার মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। তিনি ভেবে দেখেন, আলোর সাথে একই গতিতে ভ্রমণ করলে আলোকে স্থির দেখা যাবে, ঠিক যেন জমাটবদ্ধ তরঙ্গ। আলো যেহেতু তরঙ্গ দিয়ে গঠিত সেহেতু তখন স্থির আলোক তরঙ্গের দেখা দিবে। কিন্তু স্থির আলোক তরঙ্গ কখনও দেখা যায়নি বা দেখা সম্ভব নয়। এখানেই একটি হেয়ালির জন্ম হয় যা তাকে ভাবিয়ে তোলে। ১৩ বছর বয়সে যখন তিনি দর্শন (এবং সঙ্গীতের) প্রতি আরও গুরুতর আগ্রহী হয়েছিলেন টালমুডই তাকে ইউক্লিডের এলিমেন্টস এবং ইমানুয়েল কান্টের ক্রিটিক অফ পিউর রিজন বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এরপরেই কান্ট তার প্রিয় দার্শনিক হয়ে ওঠেন। এলিমেন্ট্‌স পড়ে আইনস্টাইন অবরোহী কারণ অনুসন্ধান প্রক্রিয়া জানতে পারেন। স্কুল পর্যায়ে ইউক্লিডীয় জ্যামিতি আয়ত্ত করার পর তিনি ক্যালকুলাসের প্রতি মনোযোগী হন। দুই বছরের মাথায় তিনি দাবি করেন যে তিনি সমাকলন এবং অন্তরকলন ক্যালকুলাস আয়ত্ত করে ফেলেছেন। ১২ বছর বয়সে আইনস্টাইন হঠাৎ বেশ ধার্মিক হয়ে উঠেছিলেন। স্রষ্টারগুণকীর্তণ করে বিভিন্ন গান ও পঙ্‌ক্তি আয়ত্ত করেছিলেন স্কুলে। কিন্তু বিজ্ঞান বিষয়ক বই পড়ার পর থেকে তার ধর্মীয় চেতনা কমে যেতে থাকে। কারণ বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের সাথে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধ লেগে যাচ্ছিলো। আর বিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো ছিল নিশ্চিতরূপে প্রমাণিত। এহেন অবস্থায় তৎকালীন ইহুদি নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায়তনের কর্তৃপক্ষ তার উপর বিশেষ সন্তুষ্ট ছিল না। মায়ের আগ্রহে মাত্র ৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন বেহালা হাতে নেন। বেহালা বাজানো খুব একটা পছন্দ করেন নি তিনি, তাই তখন তা ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি মোৎসার্টের বেহালার সুরের প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি এ সময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিজে নিজে তৈরি করে অন্যদের দেখাতেন। এ সময় থেকেই গণিতের প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ ও মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। আইনস্টাইনের বয়স যখন ১৫ তখন তার বাবা প্রতিনিয়ত ব্যবসায় ক্ষতির শিকার হতে থাকেন। ১৮৯৪ সালে হেরমান এবং জ্যাকবের কোম্পানি মিউনিখ শহরে বৈদ্যুতিক আলো সরবরাহের একটি চুক্তি হেরে যায় কারণ তাদের সরঞ্জামগুলিকে একমুখী বিদ্যুতের (ডিসি) মানদণ্ড থেকে আরও দক্ষ পরিবর্তী বিদ্যুতের (এসি) মানদণ্ডে রূপান্তর করার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট মূলধন ছিল না। এই ক্ষতির কারণে তারা মিউনিখের কারখানা বিক্রি করতে বাধ্য হন। অগত্যা হেরমান সপরিবারে ইতালির মিলানে পাড়ি জমান। সেখানে এক আত্মীয়ের সাথে কাজ শুরু করেন। মিলানের পর কয়েক মাস তারা পাভিয়া-তে থাকেন। তার বাবা পড়াশোনার জন্য তাকে মিউনিখে একটি বোর্ডিং হাউজে রেখে গিয়েছিলেন। তার বাবা চেয়েছিলেন ছেলে তড়িৎ প্রকৌশলী হবে, কিন্তু তিনি বিশুদ্ধ জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। সে সময়েই আইনস্টাইন জীবনের প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখেন যার নাম "চৌম্বক ক্ষেত্রে ইথারের অবস্থা সংক্রান্ত অনুসন্ধান" (The Investigation of the State of Aether in Magnetic Fields)। বোর্ডিং হাউজে একা একা তার জীবন দুঃসহ হয়ে উঠে। একে স্কুলের একঘেয়ে পড়াশোনা তার উপর ১৬ বছর বয়স হয়ে যাওয়ায় সামরিক দায়িত্ব পালনের চাপ তাকে হাপিয়ে তোলে। এছাড়া আইনস্টাইন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন এবং বিদ্যালয়ের নিয়ম ও শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে বিরক্তি প্রকাশ করেন। প্রুশীয় ধরনের শিক্ষার প্রতি তিনি উদাসীন হয়ে যান। তার মতে সেই শিক্ষা সৃজনশীলতা ও মৌলিকত্ব নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। এক শিক্ষক অবশ্য আইনস্টাইনকে বলেই বসেছিলেন যে তাকে দিয়ে মহৎ কিছু হবে না। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মাত্র ৬ মাস পরেই তাই মিউনিখ ছেড়ে পাভিয়াতে তার বাবা-মার কাছে চলে যান। হঠাৎ একদিন দরজায় আলবার্টকে দেখে তারা বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন। তার উপর স্কুলের চাপের বিষয়টি বাবা-মা বুঝতে পারেন। ইতালিতে তাকে কোন স্কুলে ভর্তি করাননি তারা। তাই মুক্ত জীবন কাটাতে থাকেন আইনস্টাইন। তার যোগ্যতা খুব একটা আশাব্যঞ্জক বলে কারও মনে হয়নি। ডাক্তারের চিকিৎসাপত্রের অজুহাত দেখিয়ে তিনি স্কুল থেকে চলে এসেছিলেন। জুরিখের দিনগুলি ১৮৯৫ সালে ১৬ বছর বয়সে তিনি জুরিখের সুইজারল্যান্ডীয় ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল (১৯০৯ সালে একে বিবর্ধিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিণত করা হয়েছিল এবং ১৯১১ সালে নাম পরিবর্তন করে Eidgenössische Technische Hochschule রাখা হয়েছিল) থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ফরাসি ভাষা, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ে অকৃতকার্য হলেও পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে তার অর্জিত গ্রেড অতুলনীয় ছিল। ১৮৯৫ সালে ইটিএইচ এর প্রধান শিক্ষকের উপদেশে তার মাধ্যমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করতে তাকে সুইজারল্যান্ডের আরাইতে জোস্ট উইন্টেলার কর্তৃক পরিচালিত একটি বিশেষ ধরনের স্কুল আরগোভিয়ান ক্যান্টনাল স্কুলে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মূলত ম্যাক্সওয়েলের তাড়িতচৌম্বক তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। প্রফেসর জোস্ট উইন্টেলারের পরিবারের সাথে থাকার সময় তিনি উইন্টেলারের মেয়ে সোফিয়া মেরি-জিন আমান্ডা উইন্টেলার (ডাকনাম মেরি) এর প্রেমে পড়ে যান। তার ছোট বোন মাজা উইন্টেলারের ছেলে পলকে বিয়ে করেছিল এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিশেল বেসো তাদের বড় মেয়ে আনাকে বিয়ে করেছিল। জুরিখের দিনগুলি তার খুব সুখে কেটেছিল। ১৮৯৬ সালের জানুয়ারিতে তার বাবার অনুমোদন সহকারে আইনস্টাইন সামরিক পরিষেবা এড়ানোর জন্য জার্মান কিংস্টম অফ উরটেমবার্গের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন। এরপর প্রায় ৫ বছর তিনি কোন দেশেরই নাগরিক ছিলেন না। ১৯০১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুইজার‌ল্যান্ডের নাগরিকত্ব লাভ করেন যা তিনি কখনই ত্যাগ করেননি। ১৮৯৬ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ১-৬ স্কেলের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান এবং গাণিতিক বিষয়ে শীর্ষ গ্রেড ৬ সহ বেশিরভাগ বিষয়েই ভাল গ্রেড সহ সুইজারল্যান্ডীয় মতুরা (মাধ্যমিক পরীক্ষা) পাস করেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি জুরিখ পলিটেকনিক স্কুলের চার বছরব্যাপী গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকতা ডিপ্লোমায় ভর্তি হন। মেরি উইন্টেলার শিক্ষকতার জন্য সুইজারল্যান্ডের অলসবার্গে চলে যান। জুরিখে তিনি অনেক বন্ধুর সাথে পরিচিত হন যাদের সাথে তার ভাল সময়ে কেটেছে। যেমন গণিতজ্ঞ মার্সেল গ্রসম্যান এবং বেসো যার সাথে তিনি স্থান-কাল নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করতেন। সেখানেই তার সাথে মিলেভা মেরিকের দেখা হয়। মেরিক ছিল তার পদার্থবিজ্ঞানের সহপাঠী। প্রকৃতপক্ষে মিলেভা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র ছাত্রী। পরের কয়েক বছরে আইনস্টাইন এবং মেরিকের বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয় এবং তারা উভয়েরই আগ্রহের বিষয় পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে বিতর্ক করে এবং বই পড়ে অগণিত সময় একে অপরের সাথে কাটিয়েছিল। আইনস্টাইন মেরিককে চিঠি পাঠিয়ে লিখেছিলেন যে তিনি তাঁর সাথে পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন। ১৯০০ সালে আইনস্টাইন গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বহু বছরের প্রত্যক্ষদর্শী প্রমাণ এবং বেশ কয়েকটি চিঠি রয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে মেরিক সম্ভবত ১৯০৫ সালে তার প্রবন্ধ Annus Mirabilis এর প্রকাশে সহযোগিতা করেছিলেন এবং এর কিছু ধারণা তারা একসাথে বিকশিত করেছিলেন। যদিও কিছু ঐতিহাসিক পদার্থবিদ, যারা এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন তারা এই ব্যাপারে সহমত নয় যে মেরিকের এই ব্যাপারে কোনো উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। বিবাহ এবং দাম্পত্য জীবন আইনস্টাইন এবং মিলেভার বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় এবং এই মিলেভাকেই তিনি পরবর্তীকালে বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্কটি শুধুমাত্র আবেগকেন্দ্রিক ছিলনা, তাতে যথেষ্ট পরিমাণ বুদ্ধিবৃত্তিক অংশীদারত্বের উপাদান মিশে ছিল।। তাই পরবর্তীকালে তিনি মিলেভা সম্বন্ধে বলেছিলেন, "মিলেভা এমন এক সৃষ্টি যে আমার সমান এবং আমার মতই শক্তিশালী ও স্বাধীন"। তাদের ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়। আইনস্টাইনের মা অবশ্য চেহারা বেশি ভাল না থাকা, অ-ইহুদি এবং বয়স্ক হওয়ার কারণে মিলেভাকে প্রথমে পছন্দ করেননি। ১৯৮৭ সালে আইনস্টাইন এবং মেরিকের সম্পর্কের প্রথম দিকে আদানপ্রদানকৃত চিঠিপত্রগুলি আবিষ্কৃত হয় যা তাদের একটি কন্যা সন্তানের তথ্য প্রকাশ করে। মেয়েটির নাম ছিল লিসেল এবং তার জন্ম হয়েছিল ১৯০২ সালে যখন মেরিক তার বাবা মায়ের সাথে নোভি সাদে ছিল। মেরিক শিশুটিকে ছাড়াই সুইজারল্যান্ডে ফিরে আসেন, যার আসল নাম এবং পরিণতি অজানা। ১৯০৩ সালের সেপ্টেম্বরে মেরিককে লেখা আইনস্টাইনের চিঠির বিষয়বস্তু থেকে বোঝা যায় যে মেয়েটি হয় কাউকে দত্তক দেওয়া হয়েছিল বা শৈশবকালে আরক্ত জ্বরে মারা গিয়েছিল। এ সময় মিশেল বেসো তাকে আর্নস্ট মাখ-এর লেখার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এর পর পরই তার গবেষণাপত্র Annalen der Physik প্রকাশিত হয় যার বিষয় ছিল নলের মধ্য দিয়ে কৈশিক বল। আইনস্টাইন এবং মেরিক ১৯০৩ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেছিলেন। ১৯০৪ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের বার্নে তাদের ছেলে হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইন জন্ম নেয়। এবং তাদের ছেলে এডুয়ার্ড ১৯১০ সালের জুলাই মাসে জুরিখে জন্মগ্রহণ করেছিল। তারা সকলে ১৯১৪ সালে তারা বার্লিনে চলে আসলেও মেরিক কিছুদিন পরেই ছেলেদের নিয়ে জুরিখে ফিরে আসে। এর কারণ তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও আইনস্টাইন তার চাচাতো বোন এলসার প্রেমে পরে গিয়েছিল। পাঁচ বছর আলাদা থাকার পরে ১৯১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ২০ বছর বয়সে এডুয়ার্ডের শরীর খারাপ হয় এবং তার সিজোফ্রিনিয়া ধরা পরে। তার মা তার যত্ন নিতো এবং তাকে প্রায়ই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হতো। তার মায়ের মৃত্যুর পর তাকে স্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ২০১৫ সালে আইনস্টাইন তার প্রথম প্রেম মেরি উইন্টেলারকে লেখা কিছু চিঠি প্রকাশিত হয়। চিঠিগুলোতে তাঁর বিবাহ এবং তার প্রতি আইনস্টাইনের দৃঢ় অনুভূতি সম্পর্কে লিখেছিলেন। ১৯১০ সালে যখন তার স্ত্রী দ্বিতীয়বার গর্ভবতি হন তখন আইনস্টাইন লিখেছিলেন, "আমি তোমার কথা প্রতি মুহুর্তে চিন্তা করি এবং একজন মানুষ যতটা অসুখী হতে পারে আমি ঠিক ততোটাই অসুখী।" তিনি মেরির প্রতি তার ভালবাসার সম্পর্কে "বিপথগামী ভালবাসা" এবং "হারিয়ে ফেলা জীবন" বলে উল্লেখ করেছেন। ১৯১২ সাল থেকে লম্বা সম্পর্কের পর ১৯১৯ সালে আইনস্টাইন এলসা লভেন্থালকে বিয়ে করেন। তিনি জন্মের দিক থেকে আইনস্টাইনের প্রথম এবং পৈতৃকভাবেভাবে দ্বিতীয় চাচাতো বোন ছিলেন। ১৯৩৩ সালে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। ১৯৩৩ সালে এলসার হার্ট ও কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে এবং ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি মারা যান। ১৯২৩ সালে আইনস্টাইন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হ্যান্স মুহসামের ভাগ্নী বেটি নিউম্যান নামে এক সচিবের প্রেমে পড়েন। ২০০৬ সালে জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত কিছু চিঠিতে আইনস্টাইন ছয়জন নারীর কথা বর্ণনা করেছেন যাদের সাথে তিনি এলসার সাথে বিবাহিত থাকা অবস্থায় সময় কাটিয়েছেন এবং তাদের থেকে উপহার গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে এস্টেলা কাটজেনেলেনবোজেন (ধনী ফুল ব্যবসায়ী), টনি মেন্ডেল (একজন ধনী ইহুদি বিধবা) এবং এথেল মিশানোভস্কিও (বার্লিনের একজন সমাজসেবী) ছিলেন। দ্বিতীয় স্ত্রী এলসার মৃত্যুর পরে আইনস্টাইন মার্গারিটা কোনেনকোভার সাথে সংক্ষিপ্ত সম্পর্কের মধ্যে ছিলেন। কোনেনকোভা ছিলেন একজন রাশিয়ান গুপ্তচর, যিনি বিখ্যাত রাশিয়ান ভাস্কর সের্গেই কোনেনকভের (যিনি প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে আইনস্টাইনের ব্রোঞ্জ মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন) সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। বন্ধুবান্ধব আইনস্টাইনের সুপরিচিত বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন মিশেল বেসো, পল এরেনফেস্ট, মার্সেল গ্রসম্যান, জ্যানোস প্ল্যাশ, ড্যানিয়েল পসিন, মরিস সলোভাইন এবং স্টিফেন স্যামুয়েল ওয়াইজ। পেটেন্ট অফিস স্নাতক হবার পর আইনস্টাইন শিক্ষকতার কোন চাকরি খুঁজে পাননি। প্রায় ২ বছর চাকরির জন্য ঘোরাঘুরি করেন। তিনি ১৯০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব অর্জন করেছিলেন, তবে চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণে তাকে কোথাও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু ২ বছর ঘোরাঘুরির পর তার প্রাক্তন এক সহপাঠীর বাবা তাকে বার্নে ফেডারেল অফিস ফর ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি নামক একটি পেটেন্ট অফিসে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। তার চাকরি ছিল সহকারী পরীক্ষকের। নুড়ি বাছাইকরণ যন্ত্র, বৈদ্যুতিন টাইপরাইটারসহ আগত বিভিন্ন ধরনের পেটেন্ট মুল্যায়ন করাই আইনস্টাইনের কাজ ছিল। ১৯০৩ সালে সুইস পেটেন্ট অফিসে তার এই চাকরি স্থায়ী হয়ে যায়। অবশ্য যন্ত্রের কলা-কৌশল সম্পর্কে পূর্ণ দক্ষতা অর্জন না করা পর্যন্ত তার পদোন্নতি হবেনা বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। আইনস্টাইনের কলেজ সহপাঠী মিশেল বেসোও এই পেটেন্ট অফিসে কাজ করতো। তারা দুজন অন্য বন্ধুদের সাথে বার্নের এক জায়াগায় নিয়মিত মিলিত হতেন। তাদের মিলিত হবার উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান এবং দর্শন বিষয়ে আলোচনা করা, এবং এভাবেই একটি ক্লাবের জন্ম হয়। কৌতুকভরে তারা এই ক্লাবের নাম দিয়েছিলেন "দ্য অলিম্পিয়া একাডেমি"। এদের সাথে প্রায়ই মিলেভা যুক্ত হতো, তবে সে শুধু মনোযোগ দিয়ে শুনতোই কিন্তু অংশ নিতো না। সেখানে তারা সবচেয়ে বেশি যাদের লেখা পড়তেন তারা হলেন, অঁরি পয়েনকেয়ার, আর্নস্ট মাখ এবং ডেভিড হিউম। এরাই মূলত আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক চিন্তাধারায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিল। সাধারণ বিশেষজ্ঞ এবং ইতিহাসবিদরা মনে করেন পেটেন্ট অফিসের দিনগুলিতে আইনস্টাইনের মেধার অপচয় হয়েছে। কারণ পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে তার আগ্রহের সাথে এই চাকরির কোন সংযোগ ছিলনা এবং ‌এ সময়ে তিনি অনেক এগিয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু বিজ্ঞান ইতিহাসবিদ পিটার গ্যালিসন এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তার মতে, সেখানে অবস্থানকালীন কাজকর্মের সাথে আইনস্টাইনের পরবর্তী জীবনের আগ্রহের বিষয়গুলোর যোগসূত্র রয়েছে। যেমন, পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তিনি বৈদ্যুতিক সংকেতের সঞ্চালন এবং সময়ের বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক সামঞ্জস্য বিধান বিষয়ে কিছু গবেষণা করেছিলেন। তখন সঙ্কালিক সময় বিষয়ক চিন্তাধারায় দুটি প্রধান কৌশলগত সমস্যা ছিল। এই সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করতে গিয়েই সে সময়ে তিনি আলোর প্রকৃতি এবং স্থান ও কালের মধ্যে মৌলিক যোগসূত্র বুঝতে পেরেছিলেন। প্রথম বৈজ্ঞানিক পেটেন্ট ১৯০০ সালে Annalen der Physik জার্নালে আন্তঃআণবিক শক্তির উপর আইনস্টাইনের প্রথম গবেষণাপত্র "Folgerungen aus den Capillaritätserscheinungen" প্রকাশিত হয়। ১৯০৫ সালের ৩০ এপ্রিল আইনস্টাইন পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনারের তত্ত্বাবধানে তার থিসিস সম্পন্ন করেন। ফলস্বরূপ "A New Determination of Molecular Dimensions" প্রবন্ধের জন্য আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ১৯০৫ সালে পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকলিন সময়ে আইনস্টাইন Annalen der Physik নামক জার্মান বিজ্ঞান সাময়িকীতে যুগান্তকারী চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তখনও তিনি পেটেন্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন। জার্মানির নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রগুলোকে ইতিহাসে অ্যানাস মিরাবিলিস গবেষণাপত্রসমূহ নামে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে। গবেষণাপত্র চারটির বিষয় ছিল: আলোক তড়িৎ ক্রিয়া প্রতিপাদন। ব্রাউনীয় গতি - আণবিক তত্ত্বের সমর্থন। আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব আবিষ্কার। ভর-শক্তি সমতা - বিখ্যাত সূত্র প্রতিপাদন। চারটি গবেষণাপত্র বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত এবং এগুলোর কারণেই ১৯০৫ সালকে আইনস্টাইনের জীবনের "চমৎকার বছর" হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য সে সময় তার গবেষণাপত্রের অনেকগুলো তত্ত্বই প্রমাণিত হয়নি এবং অনেক বিজ্ঞানী কয়েকটি আবিষ্কারকে ভ্রান্ত বলে উড়িয়ে দেন। যেমন আলোর কোয়ান্টা বিষয়ে তার মতবাদ অনেক বছর ধরে বিতর্কিত ছিল। ২৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার উপদেষ্টা ছিলেন পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনার। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের নাম ছিল, "আ নিউ ডিটারমিনেশন অফ মলিক্যুলার ডাইমেনশন্‌স" তথা আণবিক মাত্রা বিষয়ে একটি নতুন নিরুপণ। পদোন্নতি ও অধ্যাপনা শুরু ১৯০৬ সালে পেটেন্ট অফিস আইনস্টাইনকে টেকনিক্যাল পরীক্ষকের পদে উন্নীত করে। কিন্তু তিনি তখনও পড়াশোনার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯০৮ সালে বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পরের বছর, তিনি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িচ্চুম্বকত্ব এবং আপেক্ষিকতা নীতির উপর একটি বক্তৃতা দেওয়ার পরে আলফ্রেড ক্লাইনার তাকে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে সদ্য নির্মিত প্রোফেসর পদের জন্য অনুষদে সুপারিশ করেছিলেন। আইনস্টাইন ১৯০৯ সালে জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।। অবশ্য ১৯১১ সালের এপ্রিলে চার্লস ইউনিভার্সিটি অফ প্রাগে পূর্ণ অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। তখন অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অধিনে অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। প্রাগে অবস্থানকালে তিনি ১১ টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখেছিলেন, এর মধ্যে পাঁচটি বিকিরণ গণিত এবং কঠিন বস্তুর কোয়ান্টাম তত্ত্বের উপর। ১৯১২ সালের জুলাইয়ে তিনি জুরিখে তার মাতৃশিক্ষায়নে ফিরে আসেন। ১৯১২ সাল থেকে ১৯১৪ অবধি তিনি ইটিএইচ জুরিখের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক ছিলেন, যেখানে তিনি বিশ্লেষণাত্মক বলবিদ্যা এবং তাপগতিবিদ্যা বিষয়ে পড়িয়েছিলেন। তিনি কন্টিনিউয়াম বলবিদ্যা, তাপের আণবিক তত্ত্ব অধ্যয়ন করেছিলেন এবং মহাকর্ষের একটি সমস্যা নিয়ে, যার গণিতবিদ এবং তার বন্ধু মার্সেল গ্রোসমানের সাথে কাজ করেছিলেন। ১৯১০ সালে তিনি ক্রান্তীয় অনচ্ছতা বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র লেখেন। এতে পরিবেশে একক অণু কর্তৃক বিচ্ছুরিত আলোর ক্রমপুঞ্জিত প্রভাব বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমেই আকাশ কেন নীল দেখায় তার রহস্য উন্মোচিত হয়। ১৯০৯ সালে আরও দুটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। প্রথমটিতে তিনি বলেন, ম্যাক্স প্লাংকের শক্তি-কোয়ান্টার অবশ্যই সুনির্দিষ্ট ভরবেগ থাকতে হবে এবং তা একটি স্বাধীন বিন্দুবৎ কণার মতো আচরণ করবে। এই গবেষণাপত্রেই ফোটন ধারণাটির জন্ম হয়। অবশ্য ফোটন শব্দটি ১৯২৬ সালে গিলবার্ট এন লুইস প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। তবে আইনস্টাইনের গবেষণাতেই ফোটনের প্রকৃত অর্থ বোঝা যায় এবং এর ফলে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা বিষয়ক ধারণার উৎপত্তি ঘটে। তার অন্য গবেষণাপত্রের নাম ছিল "Über die Entwicklung unserer Anschauungen über das Wesen und die Konstitution der Strahlung" (বিকিরণের গাঠনিক রূপ এবং আবশ্যকীয়তা সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়ন) যা আলোর কোয়ান্টায়ন বিষয়ে রচিত হয়। আলোর উপর মহাকর্ষের প্রভাব বিশেষত মহাকর্ষীয় লাল সরণ এবং আলোর মহাকর্ষীয় বিচ্যুতি বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র লেখেন। এর মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যগ্রহণের (Solar eclipse) সময় আলোর বিচ্যুতির কারণ খুঁজে পান। এ সময় জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী Erwin Freundlich বিজ্ঞানীদের প্রতি আইনস্টাইনের চ্যালেঞ্জগুলো প্রচার করতে শুরু করেন। ১৯১৩ সালের ৩ জুলাই তিনি বার্লিনের প্রুশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ সদস্যপদের জন্য নির্বাচিত হন। পরের সপ্তাহে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এবং ভালটার নের্ন্‌স্ট তাকে একাডেমিতে যোগদানে প্ররোচিত করার জন্য জুরিখে যান, পাশাপাশি কাইজার ভিলহেল্ম ইনস্টিটিউট ফর ফিজিক্সে পরিচালক পদও প্রদান করেছিলেন, যা শীঘ্রই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। একাডেমির সদস্যপদের সুবিধা হিসেবে বেতন এবং বার্লিনের হাম্বল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ছাড়াই অধ্যাপকত্ব অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২৪ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে একাডেমিতে নির্বাচিত হওয়ার পরের বছরই তিনি বার্লিনে চলে আসেন। তার বার্লিনে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তটির পিছনে তার চাচাত বোন এলসার কাছাকাছি থাকার প্রত্যাশার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল, কারণ এলসার সাথে তার একটি প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। তিনি ১৯১৪ সালের ১ এপ্রিল একাডেমী এবং বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করলেও ওই একই বছর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে কাইজার ভিলহেল্ম ইন্সটিটিউট ফর ফিজিক্সের পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছিল। ইনস্টিটিউটটি ১৯১৭ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর পরিচালক ছিলেন আইনস্টাইন। ১৯১৬ সালে আইনস্টাইন জার্মান ফিজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি (১৯১৬-১৯১৮) নির্বাচিত হন । আইনস্টাইন ১৯১১ সালে তার সাধারণ আপেক্ষিকতার নতুন তত্ত্ব ব্যবহার করে তার গণনা অনুযায়ী অন্য একটি নক্ষত্রের আলো সূর্যের মাধ্যাকর্ষণের কারণে বেঁকে যাওয়া উচিত। ১৯১৯ সালের ১৯ মে এর সূর্যগ্রহণের সময় এই গণনাটি স্যার আর্থার এডিংটন নিশ্চিত করেছিলেন। এই পর্যবেক্ষণগুলি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছিল, যা আইনস্টাইনকে বিশ্বখ্যাত করে তুলেছিল। ১৯১৯ সালের নভেম্বরে শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টাইমস একটি ব্যানার শিরোনাম ছাপায় যেটিতে লেখা ছিল: "Revolution in Science – New Theory of the Universe – Newtonian Ideas Overthrown" (বিজ্ঞানের বিপ্লব - মহাবিশ্বের নতুন তত্ত্ব - নিউটনিয় ধারণা নিপাতিত)। ১৯২০ সালে তিনি রয়্যাল নেদারল্যান্ড একাডেমী অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর একজন বিদেশী সদস্য হন। ১৯২২ সালে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদান এবং বিশেষত আলোক তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কিত সুত্র আবিষ্কারের জন্য ১৯২১ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। যদিও আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বটি তখনও কিছুটা বিতর্কিত হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। এমনকি আলোক তড়িৎ সম্পর্কিত উদ্ধৃত গবেষণাকে ব্যাখ্যা হিসেবে বিবেচনা না করে শুধুমাত্র একটি সূত্রের আবিষ্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এর কারণ ১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসু কর্তৃক প্ল্যাঙ্ক স্পেকট্রাম আবিষ্কারের পূর্বে ফোটনের ধারণাকে উদ্ভট মনে করা হতো এবং এর সর্বজনীন স্বীকৃতি ছিল না। আইনস্টাইন ১৯২১ সালে রয়্যাল সোসাইটির বিদেশি সদস্য (ForMemRS) নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ১৯২৫ সালে রয়েল সোসাইটি থেকে কপলি পদকও পেয়েছিলেন। ১৯২১–১৯২২: বিদেশ ভ্রমণ আইনস্টাইন ১৯২১ সালের ২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো নিউইয়র্ক শহর সফর করেছিলেন। সেখানের মেয়র জন ফ্রান্সিস হিলান তাকে সরকারীভাবে স্বাগত জানান এবং তারপরে তিন সপ্তাহ বিভিন্ন বক্তৃতা এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি হন। তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। এছাড়া ওয়াশিংটনে তিনি ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সের প্রতিনিধিদের সাথে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন। ইউরোপে ফিরে তিনি লন্ডনে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং দার্শনিক ভিসকাউন্ট হালদেনের অতিথি হন। সেখানে তিনি বেশ কয়েকজন নামী বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন এবং কিংস কলেজ লন্ডনে একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। ১৯২১ সালের জুলাই মাসে তিনি "মাই ফার্স্ট ইম্প্রেশন অফ দ্য ইউএসএ" নামের একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যেখানে তিনি সংক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিনীদের বৈশিষ্ট বর্ণনা করার চেষ্টা করেন। আইনস্টাইন তার কিছু পর্যবেক্ষণে স্পষ্টভাবে অবাক হয়েছিলেন: " একজন দর্শনার্থীর কাছে আকর্ষণের বিষয় হলো আনন্দময়, ইতিবাচক মনোভাব...মার্কিনীরা বন্ধুত্বপূর্ণ, আত্মবিশ্বাসী, আশাবাদী এবং তাদের মধ্যে হিংসা নেই।" ১৯২২ সালে ছয় মাসের ভ্রমণ এবং বক্তৃতা সফরের অংশ হিসাবে তিনি এশিয়া ও পরে ফিলিস্তিনে ভ্রমণ করেন। তিনি সিঙ্গাপুর, সিলন এবং জাপানে গিয়েছিলেন এবং কয়েক হাজার জাপানীদের কয়েকটি ধারাবাহিক বক্তৃতা দিয়েছিলেন। প্রথম বক্তৃতার পরে তিনি ইম্পেরিয়াল প্রাসাদে সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞীর সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। সেখানে হাজার হাজার মানুষ তাকে দেখতে এসেছিল। ছেলেদের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে তিনি জাপানিদের সম্পর্কে নিজের ধারণা ব্যক্ত করতে গিয়ে তাদের বিনয়ী, বুদ্ধিমান, বিবেচ্য এবং শিল্পের প্রতি সত্য অনুভূতি থাকার কথা বর্ণনা করেছিলেন। ১৯২২-২৩ সালের এশিয়ার সফর সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব ভ্রমণ ডায়েরিতে তিনি চীনা, জাপানি এবং ভারতীয় জনগণের সম্পর্কে কিছু মতামত প্রকাশ করেছেন, যা ২০১৮ সালে পুনরায় আবিষ্কারের পর জেনোফোবিক এবং বর্ণবাদী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯২২ সালের ডিসেম্বরে স্টকহোমে ব্যক্তিগতভাবে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল গ্রহণ করতে পারেননি কারণ তিনি সুদূর প্রাচ্যে ভ্রমণরত ছিলেন। একজন জার্মান কূটনীতিক তার জায়গায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি আইনস্টাইনকে কেবল একজন বিজ্ঞানী হিসাবেই নয়, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী কর্মী হিসাবেও প্রশংসা করেছিলেন। ফিরতি ভ্রমণে তিনি ফিলিস্তিনে ১২ দিন কাটিয়েছিলেন। সেখানে তাকে এমনভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যেন তিনি কোনো পদার্থবিদ নন বরং কোনো দেশের রাষ্ট্রপতি। হাই কমিশনার স্যার হারবার্ট স্যামুয়েল এর বাসায় পৌঁছানোর পরে তাকে সামরিক অভিবাদন জানানো হয়েছিল। তাকে সংবর্ধনা জানানোর সময় ভবনটিতে তাকে দেখা এবং তার কথা শোনার জন্য মানুষের ভীর হয়ে গিয়েছিল। দর্শকদের সাথে আলাপকালে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন যে ইহুদি জনগণ বিশ্বে একটি শক্তি হিসাবে স্বীকৃতি পেতে শুরু করেছে। ১৯২৩ সালে দুই সপ্তাহের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে স্পেনে ভ্রমণ করেছিলেন যেখানে তিনি রাজা দ্বাদশ আলফোনসোর কাছ থেকে ডিপ্লোমা গ্রহণ করেছিলেন এবং তাকে স্প্যানিশ একাডেমী অফ সায়েন্সেস এর সদস্যপদ প্রদান করা হয়েছিল। ১৯২২ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত আইনস্টাইন জেনেভায় লীগ অফ নেশনস এর বুদ্ধিজীবী সহযোগিতা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ছিলেন (১৯২৩–১৯২৪ সালে কয়েক মাসের বিরতি সহ)। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষক, শিল্পী এবং বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিনিময় প্রচার করা। মূলত সুইস প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করার কথা থাকলেও সেক্রেটারি-জেনারেল এরিক ড্রামন্ডকে ক্যাথলিক কর্মী ওসকার হেলেকি এবং জিউসেপ মোত্তা জার্মান প্রতিনিধি হওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিলেন যেকারণে গনজাগে ডি রেনল্ড সুইস প্রতিনিধির স্থান গ্রহণ করেছিলেন এবং সেখান থেকে তিনি সনাতনবাদী ক্যাথলিক মূল্যবোধ প্রচার করেছিলেন। আইনস্টাইনের প্রাক্তন পদার্থবিজ্ঞান অধ্যাপক হেনড্রিক লরেঞ্জ এবং পোলিশ রসায়নবিদ মেরি কুরিও এই কমিটির সদস্য ছিলেন। বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন আইনস্টাইন তার জীবনে শত শত বই এবং গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। তিনি তিন শতাধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং ১৫০ টি অবৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। ২০১৪ সালের ৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংরক্ষণাগারগুলি ঘোষণা করেছিল যে আইনস্টাইনের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে ৩০,০০০ এরও বেশি অনন্য নথি রয়েছে। আইনস্টাইনের বুদ্ধিগত কৃতিত্ব এবং মৌলিকত্ব "আইনস্টাইন" শব্দটিকে "প্রতিভা" শব্দের সমার্থক করে তুলেছে। নিজে যা যা করেছিলেন সেগুলো ছাড়াও তিনি বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান, আইনস্টাইন রেফ্রিজারেটর সহ বিভিন্ন প্রকল্পে অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সহযোগিতা করেছিলেন। ১৯০৫ - অ্যানাস মিরাবিলিস এর গবেষণাপত্র অ্যানাস মিরাবিলিস এর গবেষণাপত্র হল ১৯০৫ সালে আইনস্টাইনের প্রকাশিত চারটি গবেষণাপত্র। এগুলো হলো আলোক তড়িৎ ক্রিয়া, ব্রাউনীয় গতি, বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং E = mc2 যা বৈজ্ঞানিক সাময়িকী Annalen der Physik এ প্রকাশিত হয়েছিল। এই চারটি গবেষণাপত্র আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি গঠনে যথেষ্ট অবদান রেখেছিল এবং স্থান, সময় এবং পদার্থ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়। চারটি গবেষণাপত্র হলো: পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা তাপগতীয় অস্থিরতা এবং পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা আইনস্টাইনের প্রথম গবেষণাপত্রটি ১৯০০ সালে Annalen der Physik সাময়িকীতে জমা দেয়েছিলেন। এই পত্রটি ছিল কৈশিক ক্রিয়ার উপর। এটি ১৯০১ সালে "Folgerungen aus den Capillaritätserscheinungen" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল, যাকে অনুবাদ করলে "কৈশিকতা ঘটনার উপসংহার" হয়। ১৯০২-১৯০৩ সালে তার প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্রের (থার্মোডায়নামিক্স) মাধ্যমে পারমাণবিক ঘটনাকে একটি পরিসংখ্যানগত দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই গবেষণাপত্রগুলি ছিল ব্রাউনীয় গতি সম্পর্কিত ১৯০৫ সালের গবেষণাপত্রের ভিত্তি, যা দেখিয়েছিল যে ব্রাউনীয় গতিকে অণু পরমাণুর অস্তিত্বের দৃঢ় প্রমাণ হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। তাঁর ১৯০৩ এবং ১৯০৪ সালের গবেষণা মূলত পরমাণুর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার উপর সীমাবদ্ধ পারমাণবিক আকারের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। বিশেষ আপেক্ষিকতা আইনস্টাইনের গবেষণাপত্র "Zur Elektrodynamik bewegter Körper" (গতিশীল বস্তুর তড়িৎগতিবিজ্ঞান সম্পর্কিত) ১৯০৫ সালের ৩০ জুন সংগ্রহ হরা হয়েছিল এবং একই বছর ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল। এটি বলবিদ্যার সুত্রে কিছু পরিবর্তন সাধন করার মাধ্যমে ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণসমূহ (বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বকীয়তার সূত্র) এবং নিউটনীয় বলবিদ্যার সূত্রগুলোর মধ্যে বিরোধের মীমাংসা করে। পর্যবেক্ষণমূলকভাবে, এই পরিবর্তনগুলির প্রভাব উচ্চ গতিসম্পন্ন (আলোর গতিবেগের নিকটে) বস্তুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পষ্ট বুঝা যায়। এই গবেষণাপত্রে বিকশিত তত্ত্ব পরে আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। আইনস্টাইনের লেখা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলেভা মেরিক এই গবেষণাপত্রে তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। এই গবেষণাপত্র অনুযায়ী, আপেক্ষিকভাবে চলমান পর্যবেক্ষকের কাঠামো থেকে যখন পরিমাপ করা হয়, তখন একটি চলন্ত বস্তুতে বহন করা একটি ঘড়ি ধীরে চলবে এবং বস্তুটি নিজেও তার গতির দিক বরাবর দৈর্ঘ্য সংকুচিত হবে। এই ঘটনা দুইটিকে সাধারণত কাল দীর্ঘায়ন এবং দৈর্ঘ্য সংকোচন বলে অভিহিত করা হয়। এছাড়া বেগ বৃদ্ধির সাথে সাথে বস্তুটির ভর বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এই গবেষণাপত্রে এই যুক্তিও দেওয়া হয়েছিল যে লুমিনিফেরাস ইথার (তৎকালীন পদার্থবিজ্ঞানে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক সত্তা) এর ধারণা অনাবশ্যক ছিল। ভর-শক্তির সমতুল্যতার বিষয়ে তাঁর গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন তাঁর বিশেষ আপেক্ষিকতা সমীকরণের ফলস্বরূপ E = mc2 সমীকরণটির প্রবর্তন করেছিলেন। আইনস্টাইনের ১৯০৫ সালের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনেক বছর ধরেই বিতর্কিত থেকে গেলেও, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এর মাধ্যমে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় পদার্থবিদরা তার এই তত্ত্বকে গ্রহণ করেছিলেন। আইনস্টাইন মূলত গতিবিদ্যার (চলমান বস্তুর অধ্যয়ন) পদগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতার প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯০৮ সালে হারমান মিনকোভস্কি জ্যামিতিক ক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতাকে স্থান-কালের তত্ত্ব হিসাবে পুনরায় ব্যাখ্যা করেছিলেন। আইনস্টাইন তাঁর ১৯১৫ সালের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে মিনকোভস্কির ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছিলেন। সাধারণ আপেক্ষিকতা সাধারণ আপেক্ষিকতা এবং সমতা নীতি সাধারণ আপেক্ষিকতা একটি মহাকর্ষ তত্ত্ব যা আইনস্টাইন ১৯০৭ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে বিকাশ করেছিলেন। সাধারণ আপেক্ষিকতা অনুসারে, কোনো ভরের কারণে সৃষ্ট মহাকর্ষীয় বলের ফলে ওই ভর কর্তৃক স্থান-কাল বেঁকে যায়। সাধারণ আপেক্ষিকতা আধুনিক জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যায় একটি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হিসাবে বিকাশ লাভ করেছে। এটি কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে বর্তমান বোধগম্যতার ভিত্তি প্রদান করে, যেখানে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল এতই শক্তিশালী যে সেখান থেকে আলো পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারে না। আইনস্টাইন পরবর্তীতে বলেছিলেন যে, সাধারণ আপেক্ষিকতা বিকাশের কারণ বিশেষ আপেক্ষিকতায় গতির বিষয়টি সন্তোষজনক ছিল না এবং এমন একটি তত্ত্ব যা গোড়া থেকেই গতির কোনও অবস্থা উপস্থাপন করে না (এমনকি ত্বরিত বস্তুরও) তা অধিক সন্তোষজনক ছিল। ফলস্বরূপ ১৯০৭ সালে তিনি বিশেষ আপেক্ষিকতার অধীনে ত্বরণ সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। "আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং এর থেকে প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত" (অনুবাদিত) শিরোনামের এই গবেষণাপত্রে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুক্ত পতন একধরনের অন্তর্বর্তী গতি (inertial motion) এবং মুক্তভাবে পতনশীল পর্যবেক্ষকের ক্ষেত্রেও আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব প্রযুক্ত হবে এবং এই যুক্তিকেই সমতা নীতি বলা হয়। একই গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন মহাকর্ষীয় সময় প্রসারণ, মহাকর্ষীয় লোহিত সরণ এবং আলোর অবনমনের ঘটনাও গণনা করেছিলেন। ১৯১১ সালে আইনস্টাইন "আলোর বিস্তারের উপর মহাকর্ষের প্রভাব সম্পর্কিত" নামে আরেকটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন যেখানে তিনি ১৯০৭ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু সম্প্রসারিত করে বৃহৎ বস্তু কর্তৃক আলোর অবনমনের পরিমাণ অনুমান করেন। সুতরাং এভাবে সাধারণ আপেক্ষিকতার তাত্ত্বিক গণনা প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে পরীক্ষা করা যেতে পারে। মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ১৯১৬ সালে আইনস্টাইন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ গণনা করেছিলেন, স্থান-কালের বক্রতায় উৎপন্ন ঢেউ যা তরঙ্গ হিসাবে বিস্তার লাভ করে এবং এর উৎস থেকে বাইরের দিকে সরে যাওয়ার সময় মহাকর্ষীয় বিকিরণ হিসেবে শক্তি পরিবহন করে। সাধারণ আপেক্ষিকতার অধীনে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব লরেন্টজ আগ্রাসনের কারণে সম্ভব যা মহাকর্ষের ভৌত মিথস্ক্রিয়া প্রচারের সসীম গতির ধারণা বহন করে। ১৯৭০ এর দশকে ঘনিষ্ঠভাবে ঘুরে বেড়ানো একজোড়া নিউট্রন তারকা (পিএসআর বি১৯১৩+১৬) পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সর্বপ্রথম পরোক্ষভাবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করা গিয়েছিল। তাদের কক্ষপথ ক্ষয়ের ব্যাখ্যা ছিল তাদের মধ্য থেকে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নির্গত হওয়া। আইনস্টাইনের এই তত্ত্বটি ২০০৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিশ্চিত হয়েছিল যখন লিগো-এর গবেষকরা মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রথম পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছিলেন যা এই তত্ত্বটি প্রকাশের প্রায় একশত বছর পর ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে শনাক্ত করা হয়েছে। হোল আর্গুমেন্ট এবং এন্টওয়ার্ফ তত্ত্ব সাধারণ আপেক্ষিকতা বিকাশের সময়, আইনস্টাইন তত্ত্বের গেজ আগ্রাসন সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি একটি যুক্তি গঠন করেছিলেন যার ফলে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে একটি সাধারণ আপেক্ষিক ক্ষেত্র তত্ত্ব অসম্ভব। তিনি সম্পূর্ণরূপে সাধারণ সমবায় টেনসর সমীকরণের সন্ধান পরিত্যাগ করেন এবং এমন সমীকরণের সন্ধান করেন যা কেবল সাধারণ রৈখিক রূপান্তরের অধীনে অদম্য হবে। ১৯১৩ সালের জুনে প্রকাশিত এন্টওয়ার্ফ ('খসড়া') তত্ত্বই এই তদন্তগুলির ফলাফল ছিল। এর নাম আনুসারেই এটি একটি তত্ত্বের নকশা ছিল, যা সাধারণ আপেক্ষিকতার তুলনায় কম মার্জিত এবং এর থেকে আরও কঠিন ছিল। দুই বছরেরও বেশি নিবিড় পরিশ্রমের পরে আইনস্টাইন বুঝতে পেরেছিলেন যে হোল আর্গুমেন্ট একটি ভুল ছিল এবং ১৯১৫ সালের নভেম্বরে তত্ত্বটি ত্যাগ করেছিলেন। ভৌত বিশ্বতত্ত্ব ১৯১৭ সালে আইনস্টাইন মহাবিশ্বের সামগ্রিক কাঠামোর সাথে আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব প্রয়োগ করেছিলেন এবং এর মাধ্যমে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে মহাবিশ্ব গতিশীল এবং এটি সংকুচিত বা প্রসারিত হচ্ছে। গতিশীল মহাবিশ্ব সম্পর্কে পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণ না থাকায় তত্ত্বটি যেন স্থির মহাবিশ্বের গণনা করে এজন্য আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণে মহাজাগতিক ধ্রুবকের ব্যবহার করেছিলেন। মাকের নীতি সম্পর্কে আইনস্টাইনের ধারণা অনুযায়ী পরিবর্তিত ক্ষেত্র সমীকরণটি বদ্ধ বক্রতার স্থির মহাবিশ্বের পূর্বাভাস দিয়েছিল। এই মডেলটি আইনস্টাইন মহাবিশ্ব বা আইনস্টাইনের স্থির মহাবিশ্ব হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল। ১৯২৯ সালে এডউইন হাবল নীহারিকার মন্দা আবিষ্কার করলে আইনস্টাইন মহাবিশ্বের স্থির মডেলটি ত্যাগ করেন এবং ১৯৩১ সালে ফ্রিডম্যান-আইনস্টাইন মহাবিশ্ব[127][127] এবং ১৯৩২ সালে আইনস্টাইন-ডি সিটার মহাবিশ্ব নামের দুটি গতিশীল মডেল প্রস্তাব করেছিলেন। উভয় মডেলে আইনস্টাইন মহাজাগতিক ধ্রুবকের ব্যবহার ত্যাগ করেছিলেন এবং এটিকে "তাত্ত্বিকভাবে অ-সন্তোষজনক" বলে দাবি করেছিলেন। আইনস্টাইনের অনেক জীবনীগ্রন্থে দাবি করা হয় যে আইনস্টাইন পরবর্তী বছরগুলিতে মহাজাগতিক ধ্রুবকে তাঁর "বৃহত্তম ভুল" বলে উল্লেখ করেছিলেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানী মারিও লিভিও সম্প্রতি এই দাবির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন যে এটি অতিরঞ্জিত হতে পারে। ২০১৩ সালের শেষদিকে আইরিশ পদার্থবিদ করম্যাক ও'রাইফার্টেঘ এর নেতৃত্বে একটি দল প্রমাণ পেয়েছে যে নীহারিকা মন্দার বিষয়ে হাবলের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে জানার পরপরই আইনস্টাইন মহাবিশ্বের একটি স্থির-অবস্থা মডেল বিবেচনা করেছিলেন। ১৯৩১ সালের প্রথম দিকে লেখা আপাতদৃষ্টিতে অবহেলিত একটি পাণ্ডুলিপিতে আইনস্টাইন প্রসারিত হওয়া মহাবিশ্বের এমন একটি মডেল আবিষ্কার করেছিলেন যেখানে পদার্থের ক্রমাগত সৃষ্টির কারণে পদার্থের ঘনত্ব স্থির থাকে। এই প্রক্রিয়াটিকে তিনি মহাজাগতিক ধ্রুবকের সাথে যুক্ত করেছিলেন। যেমনটি তিনি গবেষণাপত্রে বলেছিলেন, "এরপরে আমি সমীকরণের (১) এমন একটি সমাধানের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যা হাবলের মূল বিষয়গুলির কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবে, এবং যেখানে সময়ের সাথে ঘনত্ব স্থির থাকে "..." যদি ভৌতভাবে সীমাবদ্ধ একটি আয়তন বিবেচনা করা হয় তবে পদার্থের কণা অবিচ্ছিন্নভাবে এটি ছেড়ে চলে যাবে। ঘনত্ব স্থিতিশীল থাকার জন্য আয়তনটিতে মহাশুন্য থেকে অবিরত পদার্থের নতুন কণা গঠিত হতে হবে। " দেখা যায় যে আইনস্টাইন হয়েল, বন্ডি এবং গোল্ডের বহু বছর আগে প্রসারিত হতে থাকা মহাবিশ্বের একটি স্থির-অবস্থা মডেল বিবেচনা করেছিলেন। তবে আইনস্টাইনের স্থির-অবস্থা মডেলটিতে একটি মৌলিক ত্রুটি ছিল এবং একারণে তিনি দ্রুত এই ধারণাটি ত্যাগ করেছিলেন। শক্তি ভরবেগ সিউডোটেনসর সাধারণ আপেক্ষিকতায় স্থানকাল গতিশীল থাকায় কীভাবে সংরক্ষিত শক্তি এবং গতিবেগ শনাক্ত করা যায় তা দেখা মুশকিল। নোয়েথারের উপপাদ্য মাধ্যমে ট্রান্সলেশন ইনভ্যারিয়েন্সসহ এই পরিমাণগুলি ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান থেকে নির্ধারিত করা যায়, তবে সাধারণ কোভ্যারিয়েন্স ট্রান্সলেশন ইনভ্যারিয়েন্সকে কিছুটা গেজ প্রতিসাম্য করে তোলে। এই কারণে নোয়েথারের উপপাদ্য অনুযায়ী সাধারণ আপেক্ষিকতায় উদ্ভূত শক্তি এবং ভরবেগ একটি সত্যিকারের টেনসর তৈরি করে না। আইনস্টাইন যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি একটি মৌলিক কারণে সত্য এবং তা হলো, নির্দিষ্ট বিকল্প স্থানাঙ্কের মাধ্যমে মহাকর্ষ ক্ষেত্র বিলুপ্ত করা যায়। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন যে, প্রকৃতপক্ষে অ-সমবায় শক্তি ভরবেগ সিউডোটেনসরই মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে শক্তি ভরবেগের বণ্টনের সর্বোত্তম ব্যাখ্যা। এই পদ্ধতিটি লেভ ল্যান্ডো এবং এভজেনি লিফশিটস অনুরণিত করেছিলেন এবং এটি একটি মানদণ্ডে পরিণত হয়েছে। ১৯১৭ সালে এরভিন শ্রোডিঙার এবং অন্যরা সিউডোটেনসরের মতো অ-সমবায় বস্তুর ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। ক্ষুদ্রবিবর ১৯৩৩ সালে আইনস্টাইন নাথান রোসেনের সাথে একটি ওয়ার্মহোলের মডেল তৈরি করেছিলেন, যা প্রায়শই আইনস্টাইন-রোসেন ব্রিজ নামে পরিচিত। তাঁর অনুপ্রেরণা ছিল গবেষণাপত্রে বর্ণিত "মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র কি প্রাথমিক কণিকাগুলি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে?" বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র সমীকরণের সমাধান হিসাবে প্রাথমিক কণাগুলির মডেল উপস্থাপন করা। এই সমাধানগুলি দুটি শূন্যস্থানের দুটি স্থানে ছিদ্র করে শোয়ার্জচাইল্ড কৃষ্ণগহ্বরের সাহায্যে যুক্ত করে একটি ব্রিজ তৈরি করেছিল। যদি ক্ষুদ্রবিবরের এক প্রান্ত ধনাত্মক চার্জসম্পন্ন হয় তবে অপর প্রান্ত ঋণাত্মক চার্জসম্পন্ন হবে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই আইনস্টাইন বিশ্বাস করেছিলেন যে এভাবে কণা এবং বিপরীত কণার জোড়াও ব্যাখ্যা করা সম্ভব। আইনস্টাইন – কার্টান তত্ত্ব ঘূর্ণনশীল বিন্দু কণার ক্ষেত্রে সাধারণ আপেক্ষিকতা প্রয়োগের জন্য একটি অপ্রতিসম অংশ দরকার ছিল। তবে এর জন্য অ্যাফাইন সংযোগকে সর্বজনীন করা প্রয়োজন। আইনস্টাইন এবং কার্টান ১৯২০ এর দশকে এই পরিবর্তনটি করেছিলেন। গতির সমীকরণ সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের একটি মৌলিক সূত্র হচ্ছে আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণ, যা স্থানের বেঁকে যাওয়া বর্ণনা করে। জিওডেসিক সমীকরণ, যা আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণের সাহায্যে কণাসমূহ কীভাবে স্থানান্তরিত হয় তা বর্ণনা করে। যেহেতু সাধারণ আপেক্ষিকতার সমীকরণগুলি রৈখিক নয়, তাই কৃষ্ণগহ্বরের মতো খাঁটি মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রগুলি থেকে তৈরি প্রচুর পরিমাণে শক্তি একটি প্রক্ষেপণ পথের দিকে অগ্রসর হয় যা আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণগুলি দ্বারাই নির্ধারিত হয়, কোনও নতুন সূত্র দ্বারা নয়। তাই আইনস্টাইন প্রস্তাব করেছিলেন যে কৃষ্ণগহ্বরের মতো একক সমাধানের পথটি সাধারণ আপেক্ষিকতার থেকে জিওডেসিক হবে। কৌণিক গতিবিহীন বিন্দু বস্তুর জন্য আইনস্টাইন, ইনফিল্ড এবং হফম্যান এবং ঘূর্ণনশীল বস্তুর জন্য রয় কের এটি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। পুরাতন কোয়ান্টাম তত্ত্ব ফোটন এবং শক্তি কোয়ান্টা ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন দাবি করেছিলেন যে আলো নিজেই স্থানীয়ীকৃত কণা (কোয়ান্টা) নিয়ে গঠিত। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এবং নিলস বোরসহ সকল পদার্থবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আলো কোয়ান্টা সার্বজনীনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। রবার্ট মিলিকানের আলোকতড়িৎ ক্রিয়ার উপর বিস্তারিত গবেষণা এবং কম্পটন ক্রিয়া পরিমাপের পর ১৯১৯ সালে সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত হয়েছিল। আইনস্টাইন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে f কম্পাঙ্কবিশিষ্ট প্রত্যেক তরঙ্গ hf শক্তিবিশিষ্ট ফোটনের সমষ্টির সাথে সম্পর্কিত, যেখানে h হলো প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক। তিনি বেশি কিছু বলেন নি কারণ তরঙ্গের সাথে কণা কীভাবে সম্পর্কিত তা তিনি জানতেন না। তবে তার মতে এই ধারণাটি কিছু পরীক্ষামূলক ফলাফল ব্যাখ্যা করবে, বিশেষত আলোকতড়িৎ ক্রিয়া। বসু-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা পদার্থ তরঙ্গ আইনস্টাইন লুই ডি ব্রগলির তত্ত্ব আবিষ্কারের পর তাঁর ধারণাকে সমর্থন করেছিলেন, যা প্রথমে সন্দেহজনকভাবে গৃহীত হয়েছিল। সেই যুগের অন্য একটি প্রধান গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন ডি ব্রগলি তরঙ্গগুলির জন্য একটি তরঙ্গ সমীকরণ দিয়েছেন, যা আইনস্টাইনের মতে বলবিদ্যার হ্যামিল্টন-জ্যাকোবি সমীকরণ ছিল। এই গবেষণাপত্রটি এরভিন শ্রোডিঙারকে তার ১৯২৬ সালের আবিষ্কারের জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল। আরো পড়ুন আলবার্ট আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক অ্যানাস মিরাবিলিস গবেষণাপত্র আপেক্ষিকতা তত্ত্ব তথ্যসূত্র ও মন্তব্য উদ্ধৃতি উদ্ধৃত কাজ বহিঃসংযোগ অনলাইনে আইনস্টাইন আর্কাইভ "আইনস্টাইন: ভাবমূর্তি ও প্রভাব", পদার্থ বিজ্ঞানের ইতিহাসে। "AIP Center for the History of Physics" site: biography, audio and full site as downloadable PDF for classroom use. American Institute of Physics "এমিলিও সেগ্রী ভিজ্যুয়াল আর্কাইভ: আলবার্ট আইনস্টাইন", আমেরিকান ইনিষ্টিটউট অব ফিজিক্স "ম্যাক টিউটর গণিত আর্কাইভের ইতিহাস": আলবার্ট আইনস্টাইন সেইন্ট অ্যান্ড্রিউ বিশ্ববিদ্যালয়, গণিত ও পরিসংখ্যান স্কুল (huge bibliography for further reading) "আইনস্টাইনের বৃহত চিন্তাচেতনা" NOVA television documentary series website, Public Broadcasting Service (preview available online) নোবেল প্রাইজ সংস্থা:১৯২১ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার Mathematics Genealogy Project:আলবার্ট আইনস্টাইন, Mathematics Genealogy Project (a service of the NDSU Department of Mathematics, in association with the American Mathematical Society) আলবার্ট আইনস্টাইনের ছায়া বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে আইনস্টাইনের অবদানর উপর ৪ পর্বের ধারাবিহিক: বিবিসি রেডিও ১৮৭৯-এ জন্ম ১৯৫৫-এ মৃত্যু নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী সুইজারল্যান্ডীয় পদার্থবিজ্ঞানী মার্কিন নোবেল বিজয়ী জার্মান নোবেল বিজয়ী সুইজারল্যান্ডীয় নোবেল বিজয়ী মার্কিন ইহুদি জার্মান ইহুদি সুইজারল্যান্ডীয় ইহুদি তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী বিশ্বতত্ত্ববিদ মানবতাবাদী ইহুদি দার্শনিক ইহুদি বিজ্ঞানী মাক্স প্লাংক পদক বিজয়ী রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি বিজ্ঞানের দার্শনিক ইউএসএসআর-এর বিজ্ঞান একাডেমির সম্মানিত সদস্য মার্কিন অজ্ঞেয়বাদী আইনস্টাইন পরিবার জার্মান সমাজতন্ত্রী জ্যোতির্বিজ্ঞানী জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইহুদি অজ্ঞেয়বাদী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিদ ২০শ শতাব্দীর মার্কিন লেখক মার্কিন চিঠি লেখক মার্কিন শান্তিবাদী মার্কিন বিজ্ঞান লেখক জার্মান মানবতাবাদী রয়্যাল নেদারল্যান্ডস কলা ও বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য বিজ্ঞানের দর্শন কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী কপলি পদক বিজয়ী মাতেউচি পদক বিজয়ী জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জার্মান নাগরিকত্ব হারানো ব্যক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/Albert_Einstein
Albert Einstein
Albert Einstein ( EYEN-styne; German: [ˈalbɛɐt ˈʔaɪnʃtaɪn] ; 14 March 1879 – 18 April 1955) was a German-born theoretical physicist who is widely held as one of the most influential scientists. Best known for developing the theory of relativity, Einstein also made important contributions to quantum mechanics. His mass–energy equivalence formula E = mc2, which arises from special relativity, has been called "the world's most famous equation". He received the 1921 Nobel Prize in Physics "for his services to theoretical physics, and especially for his discovery of the law of the photoelectric effect", a pivotal step in the development of quantum theory. Born in the German Empire, Einstein moved to Switzerland in 1895, forsaking his German citizenship (as a subject of the Kingdom of Württemberg) the following year. In 1897, at the age of seventeen, he enrolled in the mathematics and physics teaching diploma program at the Swiss federal polytechnic school in Zürich, graduating in 1900. In 1901, he acquired Swiss citizenship, which he kept for the rest of his life. In 1903, he secured a permanent position at the Swiss Patent Office in Bern. In 1905, he submitted a successful PhD dissertation to the University of Zurich. In 1914, he moved to Berlin in order to join the Prussian Academy of Sciences and the Humboldt University of Berlin. In 1917, he became director of the Kaiser Wilhelm Institute for Physics; he also became a German citizen again, this time as a subject of the Kingdom of Prussia. In 1933, while Einstein was visiting the United States, Adolf Hitler came to power in Germany. Horrified by the Nazi war of extermination against his fellow Jews, Einstein decided to remain in the US, and was granted American citizenship in 1940. On the eve of World War II, he endorsed a letter to President Franklin D. Roosevelt alerting him to the potential German nuclear weapons program and recommended that the US begin similar research. Einstein supported the Allies but generally viewed the idea of nuclear weapons with great dismay. Einstein's work is also known for its influence on the philosophy of science. In 1905, he published four groundbreaking papers, sometimes described as his annus mirabilis (miracle year). These papers outlined a theory of the photoelectric effect, explained Brownian motion, introduced his special theory of relativity—a theory which addressed the inability of classical mechanics to account satisfactorily for the behavior of the electromagnetic field—and demonstrated that if the special theory is correct, mass and energy are equivalent to each other. In 1915, he proposed a general theory of relativity that extended his system of mechanics to incorporate gravitation. A cosmological paper that he published the following year laid out the implications of general relativity for the modeling of the structure and evolution of the universe as a whole. In the middle part of his career, Einstein made important contributions to statistical mechanics and quantum theory. Especially notable was his work on the quantum physics of radiation, in which light consists of particles, subsequently called photons. With the Indian physicist Satyendra Nath Bose, he laid the groundwork for Bose-Einstein statistics. For much of the last phase of his academic life, Einstein worked on two endeavors that proved ultimately unsuccessful. First, he advocated against quantum theory's introduction of fundamental randomness into science's picture of the world, objecting that "God does not play dice". Second, he attempted to devise a unified field theory by generalizing his geometric theory of gravitation to include electromagnetism too. As a result, he became increasingly isolated from the mainstream modern physics. His intellectual achievements and originality made Einstein broadly synonymous with genius. In 1999, he was named Time's Person of the Century. In a 1999 poll of 130 leading physicists worldwide by the British journal Physics World, Einstein was ranked the greatest physicist of all time.
1399
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
অর্থনীতিবিদদের তালিকা
এটি বিশ্বের উল্লেখযোগ্য অর্থনীতিবিদদের নামের তালিকা। এখানে শুধুমাত্র উইকিপিডিয়ায় নিবন্ধ রয়েছে এমন অর্থনীতিবিদদের নাম তাদের শেষ নাম অনুযায়ী বর্ণানুক্রমিকভাবে যোগ করা হয়েছে। অর্থনীতিবিদ অ-অ্যা-আ কেনেথ অ্যারো ল্যাজারাস অ্যারোনসন রবার্ট আউমান মোজাফফর আহমদ আকবর আলি খান অমর্ত্য সেন ই-ঈ মুহাম্মদ ইউনূস - বাংলাদেশের এক মাত্র নোবেল বিজয়ী। এ-ঐ জর্জ একারলফ ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস ও-ঔ বিয়াট্রিস ওয়েব ক-খ ড্যানিয়েল কানেমান আহমাদ তেজন কাব্বাহ জন মেনার্ড কেইনস পল ক্রুগম্যান কাজী খলিকুজ্জামান গ-ঘ জন কেনেথ গলব্রেইথ ক্লাইভ গ্রেঞ্জার জ-ঝ জাহিদ হোসেন ট-ঠ জেমস টোবিন ড-ঢ পিটার আর্থার ডায়মন্ড আঙ্গুশ ডিয়াটোন ত-থ জ্যাঁ তিরোল ন জন ফর্ব্‌স ন্যাশ প-ফ পিয়েরে জোসেফ প্রুধোঁ ভিলফ্রেডো পারেটো ক্রিস্টোফার এ. পিসারাইডস রুফস পোলক এডমন্ড এস ফেল্পস ফরাসউদ্দিন আহমেদ ব-ভ আবুল বারকাত জেমস ম্যাকগিল বিউকানান গ্যারি বেকার ম বার্নার্ড ম্যান্ডেভিল টমাস ম্যালথাস কার্ল মার্ক্‌স আলফ্রেড মার্শাল জন স্টুয়ার্ট মিল র ডেভিড রিকার্ডো লিওনেল চার্লস রবিন্স রেহমান সোবহান ল আর্থার লিউইস শ-স ইয়োজেফ শুম্‌পেটার পল স্যামুয়েলসন হার্বার্ট সাইমন হার্নান্দো ডি সোতো রেহমান সোবহান জোসেফ স্টিগলিত্স অ্যাডাম স্মিথ হ ফ্রিড‌রিশ ফন হায়ক পেশা অনুযায়ী ব্যক্তিদের তালিকা
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_economists
List of economists
This is an incomplete alphabetical list by surname of notable economists, experts in the social science of economics, past and present. For a history of economics, see the article History of economic thought. Only economists with biographical articles in Wikipedia are listed here.
1400
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%B8%20%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%97%E0%A6%BF%E0%A6%B2%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8
জেমস ম্যাকগিল বিউকানান
জেমস ম্যাকগিল বিউকানান জুনিয়র (;জন্ম: ৩ অক্টোবর ১৯১৯ - ৯ জানুয়ারি ২০১৩ ) একজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ। তিনি ১৯৮৬ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। জীবনী বিউকানান মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৪০ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৪১ সালে ইউনিভার্সিটি অফ টেনেসি হতে মাস্টার্স এবং ১৯৪৮ সালে ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো হতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বিউকানান দীর্ঘ সময় ধরে জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয় এ অধ্যাপনা করেন। তিনি ভার্জিনি স্কুল অফ পলিটিকাল ইকনমি-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া তিনি ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়া (এখানে টমাস জেফারসন সেন্টার স্থাপন করেন), ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট লস অ্যাঞ্জেলেস, ফ্লরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ টেনেসি, এবং ভার্জিনিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে শিক্ষকতা করেছেন। অর্থনীতিতে বিউকানানের অবদান হলো লগ-রোলিং, তথা আইন পাস ও অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য রাজনীতিবিদদের একজন-অন্যকে সাহায্য করার প্রথার উপরে বিশ্লেষণ ও তত্ত্ব প্রদান করা। তথ্যসূত্র ১৯১৯-এ জন্ম নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মার্কিন নোবেল বিজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী স্কটিশ-আইরিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি ২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ ২০১৩-এ মৃত্যু ২০শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক ২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক ২১শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মার্কিন নৌ কর্মকর্তা
https://en.wikipedia.org/wiki/James_M._Buchanan
James M. Buchanan
James McGill Buchanan Jr. (; October 3, 1919 – January 9, 2013) was an American economist known for his work on public choice theory originally outlined in his most famous work, The Calculus of Consent, co-authored with Gordon Tullock in 1962. He continued to develop the theory, eventually receiving the Nobel Memorial Prize in Economic Sciences in 1986. Buchanan's work initiated research on how politicians' and bureaucrats' self-interest, utility maximization, and other non-wealth-maximizing considerations affect their decision-making. He was a member of the Board of Advisors of The Independent Institute as well as of the Institute of Economic Affairs, a member of the Mont Pelerin Society (MPS) and MPS president from 1984 to 1986, a Distinguished Senior Fellow of the Cato Institute, and professor at George Mason University.
1401
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8B%20%E0%A6%A1%E0%A6%BF%20%E0%A6%B8%E0%A7%8B%E0%A6%A4%E0%A7%8B
হার্নান্দো ডি সোতো
হার্নান্দো ডি সোতো (Hernando de Soto; জন্ম: ৩রা জুন ১৯৪১) একজন পেরুভীয় অর্থনীতিবিদ, যিনি তার অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির জন্য পরিচিত। তিনি পেরুর লিমায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট অফ লিবার্টি এন্ড ডেমোক্রেসি (আইএলডি) এর প্রধান। দে সোতো ১৯৪১ সালের ৩রা জুন পেরুর আরেকুইপায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন পেরুভীয় কূটনীতিক। ১৯৪৮ সালে পেরুতে সেনা সংঘর্ষের পর তার পিতামাতা ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে যান। দে সোতো সুইজারল্যান্ডে জেনাভার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়াশুনা করেন এবং জেনেভার গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পরবর্তীতে অর্থনীতিবিদ, করপোরেট নির্বাহী ও কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেন। ৩৮ বছর বয়সে তিনি পেরুতে ফিরে আসেন। তার ছোট ভাই আলভারো লিমা, নিউ ইয়র্ক সিটি ও জেনেভায় পেরুভীয় কূটনীতিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পদ থেকে অবসর নেন। তথ্যসূত্র ১৯৪১-এ জন্ম জীবিত ব্যক্তি পেরুভীয় অর্থনীতিবিদ পেরুভীয় লেখক উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ
https://en.wikipedia.org/wiki/Hernando_de_Soto_(economist)
Hernando de Soto (economist)
Hernando de Soto Polar (commonly known Hernando de Soto ; born June 2, 1941) is a Peruvian economist known for his work on the informal economy and on the importance of business and property rights. His work on the developing world has earned him praise worldwide by numerous heads of state, particularly for his publication The Mystery of Capital and The Other Path. He is the current president of the Institute for Liberty and Democracy (ILD), a think tank devoted to promoting economic development in developing countries located in Lima, Peru. In Peru, de Soto's advisory has been recognized as inspiring the economic guidelines—including the loosening of economic regulation, the introduction of austerity measures and the utilization of neoliberal policies—that were ultimately adopted by the government of Alberto Fujimori and established in the 1993 Constitution of Peru. The policies prescribed by de Soto resulted with Peru becoming macro-economically stable following the period of price controls and increased regulation established during the Lost Decade. De Soto would go on to support Alberto's daughter, Keiko Fujimori, serving as an advisor during her presidential campaigns. De Soto worked closely with various Peruvian governments, even serving as a negotiator for the Peru-United States Free Trade Agreement. After years of speculation, de Soto ran for the Peruvian presidency in the 2021 presidential election, placing fourth in an atomized race of 18 nominees. Internationally, de Soto helped inspire the Washington Consensus macroeconomic prescriptions and was credited by economist John Williamson, who coined the consensus' name. He also supported the creation of the North American Free Trade Agreement (NAFTA), with George H.W. Bush praising his promotion of free trade when announcing the North American agreement. Other heads of state have recognized de Soto, including Bill Clinton, Vladimir Putin, Emmanuel Macron, Ronald Reagan and Margaret Thatcher. The ILD has received praise from other people including Nobel laureate Milton Friedman, World Bank President James Wolfensohn, and former UN Secretary-General Javier Pérez de Cuéllar.
1402
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%B2%20%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8
পল ক্রুগম্যান
পল রবিন ক্রুগম্যান () (জন্ম ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩) একজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থশাস্ত্র ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন অধ্যাপক। তিনি অর্থনীতির ওপর প্রচুর বইয়ের লেখক ও ২০০০ সাল থেকে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স পত্রিকাতে নিয়মিত কলাম লেখক। তার লেখা International Economics: Theory and Policy (বর্তমানে বইটির সপ্তম সংস্করণ চলছে) আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ওপর লেখা একটি প্রামাণ্য পাঠ্যপুস্তক। ১৯৯১ সালে অ্যামেরিকান একোনমিক অ্যাসোসিয়েশন তাকে জন বেট্‌স ক্লার্ক মেডেল প্রদান করে। ক্রুগম্যানকে একজন নব্য-কেইন্‌সীয় অর্থনীতিবিদ মনে করা হয়। ক্রুগম্যান ২০০-রও বেশি প্রবন্ধ ও বিশটির মত বই রচনা করেছেন — এদের মধ্যে কিছু অ্যাকাডেমীয়, কিছু সাধারণ জনগণের জন্য লেখা। তথ্যসূত্র মার্কিন অর্থনীতিবিদ ১৯৫৩-এ জন্ম নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জন বেটস ক্লার্ক মেডেল বিজয়ী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন প্রাবন্ধিক মার্কিন ব্লগার ২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক মার্কিন নোবেল বিজয়ী ২১শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক মার্কিন কলাম লেখক ইহুদি মার্কিন সাংবাদিক ইউক্রেনীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বেলারুশীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি জীবিত ব্যক্তি মার্কিন পুরুষ প্রাবন্ধিক বিশ্বায়ন বিষয়ক লেখক ফোর ফ্রিডমস পুরস্কার প্রাপক
https://en.wikipedia.org/wiki/Paul_Krugman
Paul Krugman
Paul Robin Krugman ( KRUUG-mən; born February 28, 1953) is an American economist who is the Distinguished Professor of Economics at the Graduate Center of the City University of New York and a columnist for The New York Times. In 2008, Krugman was the sole winner of the Nobel Memorial Prize in Economic Sciences for his contributions to new trade theory and new economic geography. The Prize Committee cited Krugman's work explaining the patterns of international trade and the geographic distribution of economic activity, by examining the effects of economies of scale and of consumer preferences for diverse goods and services. Krugman was previously a professor of economics at MIT, and, later, at Princeton University. He retired from Princeton in June 2015, and holds the title of professor emeritus there. He also holds the title of Centennial Professor at the London School of Economics. Krugman was President of the Eastern Economic Association in 2010, and is among the most influential economists in the world. He is known in academia for his work on international economics (including trade theory and international finance), economic geography, liquidity traps, and currency crises. Krugman is the author or editor of 27 books, including scholarly works, textbooks, and books for a more general audience, and has published over 200 scholarly articles in professional journals and edited volumes. He has also written several hundred columns on economic and political issues for The New York Times, Fortune and Slate. A 2011 survey of economics professors named him their favorite living economist under the age of 60. According to the Open Syllabus Project, Krugman is the second most frequently cited author on college syllabi for economics courses. As a commentator, Krugman has written on a wide range of economic issues including income distribution, taxation, macroeconomics, and international economics. Krugman considers himself a modern liberal, referring to his books, his blog on The New York Times, and his 2007 book The Conscience of a Liberal. His popular commentary has attracted widespread praise and criticism.
1403
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AB%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%B8
জোসেফ স্টিগ্‌লিট্‌স
জোসেফ স্টিগ্‌লিট্‌স‌ ইংরেজি ভাষায়: Joseph Eugene "Joe" Stiglitz) (ফেব্রুয়ারি ৯, ১৯৪৩) এক্কজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ৷ ২০০১ সালে জর্জ অ্যাকারলফ এবং মাইকেল স্পেন্স-এর সাথে তথ্য অর্থনীতি (ইনফরমেশন ইকনমিকস) ক্ষেত্রে অবদানের জন্য অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান৷ মার্কিন অর্থনীতিবিদ ১৯৪৩-এ জন্ম নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জন বেটস ক্লার্ক মেডেল বিজয়ী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ জীবিত ব্যক্তি মার্কিন নোবেল বিজয়ী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক ২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক ২১শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ অ্যামহার্স্ট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ব্রিটিশ অ্যাকাডেমির সভ্য রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য রুশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির বিদেশী সদস্য ইহুদি মার্কিন লেখক শ্রমিক দল (যুক্তরাজ্য) এর ব্যক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিশ্বায়ন বিষয়ক লেখক ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য ফুলব্রাইট বৃত্তিধারী
https://en.wikipedia.org/wiki/Joseph_Stiglitz
Joseph Stiglitz
Joseph Eugene Stiglitz (; born February 9, 1943) is an American New Keynesian economist, a public policy analyst, political activist, and a full professor at Columbia University. He is a recipient of the Nobel Memorial Prize in Economic Sciences (2001) and the John Bates Clark Medal (1979). He is a former senior vice president and chief economist of the World Bank. He is also a former member and chairman of the US Council of Economic Advisers. He is known for his support for the Georgist public finance theory and for his critical view of the management of globalization, of laissez-faire economists (whom he calls "free-market fundamentalists"), and of international institutions such as the International Monetary Fund and the World Bank. In 2000, Stiglitz founded the Initiative for Policy Dialogue (IPD), a think tank on international development based at Columbia University. He has been a member of the Columbia faculty since 2001, and received the university's highest academic rank (university professor) in 2003. He was the founding chair of the university's Committee on Global Thought. He also chairs the University of Manchester's Brooks World Poverty Institute. He was a member of the Pontifical Academy of Social Sciences. In 2009, the President of the United Nations General Assembly Miguel d'Escoto Brockmann, appointed Stiglitz as the chairman of the U.N. Commission on Reforms of the International Monetary and Financial System, where he oversaw suggested proposals and commissioned a report on reforming the international monetary and financial system. He served as the chair of the international Commission on the Measurement of Economic Performance and Social Progress, appointed by the French President Sarkozy, which issued its report in 2010, Mismeasuring our Lives: Why GDP doesn't add up, and currently serves as co-chair of its successor, the High Level Expert Group on the Measurement of Economic Performance and Social Progress. From 2011 to 2014, Stiglitz was the president of the International Economic Association (IEA). He presided over the organization of the IEA triennial world congress held near the Dead Sea in Jordan in June 2014. In 2011, Stiglitz was named as one of the 100 most influential people in the world by Time magazine. Stiglitz's work focuses on income distribution from a Georgist perspective, asset risk management, corporate governance, and international trade. He is the author of several books, the latest being People, Power, and Profits (2019), The Euro: How a Common Currency Threatens the Future of Europe (2016), The Great Divide: Unequal Societies and What We Can Do About Them (2015), Rewriting the Rules of the American Economy: An Agenda for Growth and Shared Prosperity (2015), and Creating a Learning Society: A New Approach to Growth Development and Social Progress (2014). He is also one of the 25 leading figures on the Information and Democracy Commission launched by Reporters Without Borders. According to the Open Syllabus Project, Stiglitz is the fifth most frequently cited author on college syllabi for economics courses.
1404
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%AB%20%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0
ইয়োজেফ শুম্পেটার
ইয়োজেফ আলইস শুম্পেটার (; ৮ই ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৩ – ৮ই জানুয়ারি, ১৯৫০) একজন প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। তিনি বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্রের, তৎকালীন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের মোরাভিয়া অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অস্ট্রীয় ঘরানার অর্থনীতিবিদদের একজন ছিলেন। তিনি পুঁজিবাদী বিকাশ ও ব্যবসা চক্রের উপর তাঁর তত্ত্বগুলির জন্য পরিচিতি লাভ করেন। শুম্পেটার ভিয়েনাতে উচ্চশিক্ষালাভ করে চেরনোভিৎস, গ্রাৎস ও বন শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অধ্যাপনা করেন। ১৯১৯ সালে তিনি স্বল্প সময়ের জন্য অস্ট্রিয়ার সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৩২ থেকে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আমৃত্যু তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ১৯৪২ সালে তিনি একটি বহুল পঠিত অর্থনীতি বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যার নাম ছিল ক্যাপিটালিজম, সোসিয়ালিজম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ("পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র"); বইটিতে তিনি যুক্তি দেন যেন পুঁজিবাদ তার নিজের সাফল্যের কারণেই এক সময় শেষ হয়ে যাবে এবং এর পরিবর্তে সরকারী নিয়ন্ত্রণ বা সমাজতন্ত্রের কোনও একটি প্রকারভেদ প্রতিষ্ঠা পাবে। ১৯৫৪ সালে তিনি হিস্টরি অভ একোনমিক অ্যানালিসিস নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যেখানে অর্থশাস্ত্রের বিশ্লেষণী পদ্ধতিগুলির বিকাশ বিষয়ে একটি বিস্তারিত গবেষণা উপস্থাপন করেন। ১৯১১ সালে তাঁর রচিত টেওরিয়ে ডের ভির্টশাফটলিশেন এন্টভিকলুং ("অর্থনৈতিক উন্নয়নের তত্ত্ব") এবং ১৯৩৯ সালে দুই খণ্ডে প্রকাশিত বিজনেস সাইকেলস: আ থিওরেটিকাল, হিস্টরিকাল, অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকাল অ্যানালিসিস অভ দ্য ক্যাপিটালিস্ট প্রসেস ("ব্যবসা চক্র: পুঁজিবাদী প্রক্রিয়ার একটি তাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণ") গ্রন্থগুলিও উল্লেখ্য। শুম্পেটার ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের টেকোনিক শহরে মৃত্যুবরণ করেন। পাদটীকা বহিঃসংযোগ Retrieved on December 4, 2007. Retrieved on December 4, 2007. Retrieved on April 29, 2013. Retrieved on December 4, 2007. Retrieved on December 4, 2007. Joseph Schumpeter, Selected Writings ১৮৮৩-এ জন্ম ১৯৫০-এ মৃত্যু অস্ট্রীয় অর্থনীতিবিদ অস্ট্রীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ ২০শ শতাব্দীর অস্ট্রীয় লেখক ২০শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক জার্মানিতে অস্ট্রীয় প্রবাসী হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মার্কিন নাগরিকত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/Joseph_Schumpeter
Joseph Schumpeter
Joseph Alois Schumpeter (German: [ˈʃʊmpeːtɐ]; February 8, 1883 – January 8, 1950) was an Austrian political economist. He served briefly as Finance Minister of Austria in 1919. In 1932, he emigrated to the United States to become a professor at Harvard University, where he remained until the end of his career, and in 1939 obtained American citizenship. Schumpeter was one of the most influential economists of the early 20th century, and popularized the term "creative destruction", coined by Werner Sombart.
1405
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%AE%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A5
অ্যাডাম স্মিথ
অ্যাডাম স্মিথ () (১৭২৩-১৭৯০) আধুনিক অর্থশাস্ত্রের জনক হিসেবে পরিচিত৷ তিনি ১৭৭৬ সালে An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations নামক গ্রন্থ লিখে অর্থনীতির মূল বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা দেন৷ অ্যাডাম স্মিথ স্কটল্যান্ডের ফিফের ক্রিকক্যাল্ডি শহরের একজন রাজস্ব নিয়ন্ত্রকের পুত্র ছিলেন। স্মিথের সঠিক জন্মতারিখ অজানা, কিন্তু তিনি ১৭২৩ সালের ৫ই জুন ক্রিকক্যাল্ডি শহরে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। ৪ বছর বয়সে একদল ইহুদী তাকে অপহরণ করে। কিন্তু তিনি তার চাচার সহযোগিতায় দ্রুত মুক্ত হন এবং মায়ের কাছে ফেরত যান। ১৪ বছর বয়সে স্মিথ গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, সেখানে তিনি ফ্রান্সিস হাচিসনের (যাকে স্মিথ বলতেন "the never-to-be-forgotten") অধীনে দর্শনশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। তিনি গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় ওর তার সহকর্মী স্কটল্যান্ডের জন স্নেল কর্তৃক চালু হওয়া বৃত্তি প্রাপ্ত প্রথম ছাত্র ছিলেন। এই গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যাপনাকালীন সময়ে তিনি "The Theory of Moral Sentiments" রচনা করেন। পরবরতী জীবনে তিনি সমগ্র ইউরোপ পরিভ্রমণ করেন এবং এসময়ে তিনি তৎকালীন সময়ের বুদ্ধিজীবী নেতাদের সান্নিধ্য লাভ করেন। স্মিথ তার নিজের সময়ে বিতর্কিত ছিলেন। তার সাধারণ লিখন পদ্ধতি ও শৈলীর কারণে তিনি প্রায়ই উইলিয়াম হোগার্থ ও জোনাথন সুইফট কর্তৃক সমালোচিত হয়েছেন। তবে, ২০০৫ সালে অ্যাডাম স্মিথ রচিত "The Wealth of Nations" বইটি সর্বকালের সেরা ১০০ স্কটিশ বইয়ের তালিকায় স্থান পায়। বলা হয়ে থাকে,সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার স্মিথের লিখা এই বই সর্বদা হাত ব্যাগে বহন করতেন। প্রাথমিক জীবন এডামের জন্ম ফিফের কিরক্যালডি নামক স্থানে। তার বাবার নামও ছিল এডাম স্মিথ যিনি স্কটিশ সিনেটের একজন লেখক উকিল এবং অভিশংসক ছিলেন। এছাড়াও তিনি কিরক্যালডির শুল্ক বিভাগের নিয়ামক ছিলেন। ১৭২০সালে তিনি মার্গারেট ডগলাসকে বিবাহ করেন যে জমিদার রবার্ট ডগলাসের কন্যা ছিলেন। তার বয়স যখন ২ মাস তখন তার বাবা মারা যান তার মা কে রেখে। তার ধর্ম শিক্ষা হয় কিরক্যালডির চার্চ অফ স্কটল্যান্ডে ৫ই জুন ১৭২৩ সালে এবং এই সালকেই সবসময় তার জন্মসাল হিসেবে মনে করা হয়। তার জীবনীর লেখক স্কটিস সাংবাদিক জন রে এর কাছ থেকে জানা যায় তাকে শৈশবে একবার বেদুইনের দল ধরে নিয়ে যায় এবং পরে অনেক খোঁজা-খুঁজির পর তাকে পাওয়া যায়। স্মিথ তার মায়ের সাথে অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলেন, এবং তিনিই স্মিথের পড়ালেখা সম্পর্কিত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে উৎসাহ দেন। ১৭২৯ থেকে ১৭৩৭ সাল পর্যন্ত স্মিথ কিরক্যাল্ডির বার্গ স্কুলে ভর্তি হন যাকে জন রে "স্কটল্যান্ডের তৎকালীন সর্বোত্তম স্কুলগুলোর একটি" বলেছেন, সেখানে তিনি ল্যাটিন, গণিত, ইতিহাস এবং লেখা চর্চা করেন। তথ্যসূত্র ১৭২৩-এ জন্ম ১৭৯০-এ মৃত্যু ইংরেজ অর্থনীতিবিদ অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক ১৮শ শতাব্দীর দার্শনিক ১৮শ শতাব্দীর অর্থনীতিবিদ আলোকিত যুগ পুঁজিবাদ রয়েল সোসাইটির সভ্য রয়েল সোসাইটি অব এডিনবার্গের সভ্য স্কটল্যান্ডীয় দার্শনিক স্কটল্যান্ডীয় পণ্ডিত ও শিক্ষায়তনিক সামাজিক দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Adam_Smith
Adam Smith
Adam Smith (baptised 16 June [O.S. 5 June] 1723 – 17 July 1790) was a Scottish economist and philosopher who was a pioneer in the thinking of political economy and key figure during the Scottish Enlightenment. Seen by some as "The Father of Economics" or "The Father of Capitalism", he wrote two classic works, The Theory of Moral Sentiments (1759) and An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations (1776). The latter, often abbreviated as The Wealth of Nations, is considered his magnum opus and the first modern work that treats economics as a comprehensive system and as an academic discipline. Smith refuses to explain the distribution of wealth and power in terms of God's will and instead appeals to natural, political, social, economic, legal, environmental and technological factors and the interactions among them. Among other economic theories, the work introduced Smith's idea of absolute advantage. Smith studied social philosophy at the University of Glasgow and at Balliol College, Oxford, where he was one of the first students to benefit from scholarships set up by fellow Scot John Snell. After graduating, he delivered a successful series of public lectures at the University of Edinburgh, leading him to collaborate with David Hume during the Scottish Enlightenment. Smith obtained a professorship at Glasgow, teaching moral philosophy and during this time, wrote and published The Theory of Moral Sentiments. In his later life, he took a tutoring position that allowed him to travel throughout Europe, where he met other intellectual leaders of his day. As a reaction to the common policy of protecting national markets and merchants through minimizing imports and maximizing exports, what came to be known as mercantilism, Smith laid the foundations of classical free market economic theory. The Wealth of Nations was a precursor to the modern academic discipline of economics. In this and other works, he developed the concept of division of labour and expounded upon how rational self-interest and competition can lead to economic prosperity. Smith was controversial in his own day and his general approach and writing style were often satirised by writers such as Horace Walpole.
1407
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%A1%20%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A7%8B
ডেভিড রিকার্ডো
ডেভিড রিকার্ডো (; এপ্রিল ১৮, ১৭৭২-সেপ্টেম্বর ১১, ১৮২৩) ছিলেন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ এবং রাজনীতিবিদ। তিনি তার থিওরি অফ রেন্ট-এর জন্য বিখ্যাত। থমাস ম্যালথাস, অ্যাডাম স্মিথ ও জেমস মিলের পাশাপাশি রিকার্ডো ধ্রুপদী অর্থনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম। প্রারম্ভিক জীবন রিকার্ডো ইংল্যান্ডের লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার জন্মের কিছুদিন পূর্বে ওলন্দাজ প্রজাতন্ত্র থেকে আসা একটি পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত সেপার্ডিক ইহুদি পরিবারের ১৭ সন্তানের তৃতীয়। তার পিতা আব্রাহাম রিকার্ডো ছিলেন একজন সফল স্টকব্রোকার। রিকার্ডো ১৪ বছর বয়সে তার পিতার সাথে কাজ শুরু করেন। ২১ বছর বয়সে রিকার্ডো প্রিসিলা অ্যান উইলকিনসনকে নিয়ে পালিয়ে যান এবং তার পিতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইউনিটারিয়ান বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। এই ধর্মীয় পার্থক্যের কারণে তাদের পরিবারের মধ্যে তফাৎ দেখা দেয়, এবং এই স্বাধীনভাবে কোন অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তার পিতা তাকে ত্যাজ্য করেন এবং তার মা তার সাথে আর কখনো কথা বলেন নি। মৃত্যু অবসরের দশ বছর পর এবং সংসদের যোগ দেওয়ার চার বছর পরে রিকার্ডো কানে সংক্রমণে মারা যান। এই সংক্রমণ তার মস্তিস্কে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। তাকে হার্ডেনহুইশের সেন্ট নিকোলাস গির্জায় সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬০০,০০০ পাউন্ড। আরও দেখুন ধ্রুপদী অর্থনীতি তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জী Hollander, Samuel (1979). The Economics of David Ricardo. University of Toronto Press. G. de Vivo (1987). "Ricardo, David," The New Palgrave: A Dictionary of Economics, v. 4, pp. 183–98 Samuelson, P. A. (2001). "Ricardo, David (1772–1823)," International Encyclopedia of the Social & Behavioral Sciences, pp. 13330–34. Abstract. Éric Pichet, David RICARDO, le premier théoricien de l'économie, Les éditions du siècle, 2004* বহিঃসংযোগ Biography at New School University Biography at EH.Net Encyclopedia of Economic History The Works of David Ricardo (McCulloch edition 1888) at the Online Library of Liberty The Works and Correspondence of David Ricardo (Sraffa edition) 11 vols at the Online Library of Liberty Timeline of the Life of David Ricardo (1772–1823) at the Online Library of Liberty On the Principles of Political Economy and Taxation, by David Ricardo. Complete, fully searchable text at the Library of Economics and Liberty. Ricardo on Value: the Three Chapter Ones. A presentation tracing the changes in the Principles' (University of Southampton). ১৭৭২-এ জন্ম ১৮২৩-এ মৃত্যু ১৯শ শতাব্দীর অর্থনীতিবিদ ১৯শ শতাব্দীর ইংরেজ লেখক ধ্রুপদী অর্থনীতিবিদ ইংরেজ ইহুদি ইংরেজ অর্থনীতিবিদ ইংরেজ রাজনীতিবিদ পর্তুগিজ-ইহুদি বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি ইহুদি বিজ্ঞানী
https://en.wikipedia.org/wiki/David_Ricardo
David Ricardo
David Ricardo (18 April 1772 – 11 September 1823) was a British political economist, politician, and member of Parliament. He is recognized as one of the most influential classical economists, alongside figures such as Thomas Malthus, Adam Smith and James Mill. Ricardo was born in London as the third surviving child of a successful stockbroker and his wife. He came from a Sephardic Jewish family of Portuguese origin. At 21, he eloped with a Quaker and converted to Unitarianism, causing estrangement from his family. He made his fortune financing government borrowing and later retired to an estate in Gloucestershire. Ricardo served as High Sheriff of Gloucestershire and bought a seat in Parliament as an earnest reformer. He was friends with prominent figures like James Mill, Jeremy Bentham, and Thomas Malthus, engaging in debates over various topics. Ricardo was also a member of The Geological Society, and his youngest sister was an author. As MP for Portarlington, Ricardo advocated for liberal political movements and reforms, including free trade, parliamentary reform, and criminal law reform. He believed free trade increased the well-being of people by making goods more affordable. Ricardo notably opposed the Corn Laws, which he saw as barriers to economic growth. His friend John Louis Mallett described Ricardo's conviction in his beliefs, though he expressed doubts about Ricardo's disregard for experience and practice. Ricardo died at 51 from an ear infection that led to septicaemia (sepsis). He left behind a considerable fortune and a lasting legacy, with his free trade views eventually becoming public policy in Britain. Ricardo wrote his first economics article at age 37, advocating for a reduction in the note-issuing of the Bank of England. He was also an abolitionist and believed in the autonomy of a central bank as the issuer of money. Ricardo worked on fixing issues in Adam Smith's Labour Theory of Value, stating that the value of a commodity depends on the labour necessary for its production. He contributed to the development of theories of rent, wages, and profits, defining rent as the difference between the produce obtained by employing equal quantities of capital and labour. Ricardo's Theory of Profit posited that as real wages increase, real profits decrease due to the revenue split between profits and wages. Ricardian theory of international trade challenges the mercantilism concept of accumulating gold or silver by promoting industry specialization and free trade. Ricardo introduced the concept of "comparative advantage," suggesting that nations should concentrate resources only in industries where they have the greatest efficiency of production relative to their own alternative uses of resources. He argued that international trade is always beneficial, even if one country is more competitive in every area than its trading counterpart. Ricardo opposed protectionism for national economies and was concerned about the short-term impact of technological change on labour.
1408
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C%20%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B2
জর্জ অরওয়েল
এরিক আর্থার ব্লেয়ার (জুন ২৫, ১৯০৩ - জানুয়ারি ২১, ১৯৫০) একজন কালোত্তীর্ণ ইংরেজ সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক লেখক। অবিভক্ত ভারতের বাংলা প্রদেশের মতিহারিতে জন্ম হয়েছিল তার। বিশ্ব সাহিত্য অঙ্গনে তিনি জর্জ অরওয়েল ছদ্মনামে সমধিক পরিচিত। তার দুটি উপন্যাস - এনিমেল ফার্ম ও নাইন্টিন এইটি-ফোর্‌ - বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের তালিকায় স্থান পেয়েছে। তিনি আজীবন স্বৈরাচার ও একদলীয় মতবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। রিচার্ড ওয়ামেসলে ব্লেয়ার ও ইদা মাবেল লিমুজিন দম্পতির একমাত্র সন্তান অরওয়েল মাত্র ৪৬ বছর বয়সে যক্ষ্মারোগে মৃত্যুবরণ করেন। জীবন শৈশব ও কৈশোর এরিক আর্থার ব্লেয়ার ১৯০৩ সালের ২৫ জুন ব্রিটিশ ভারতের বাংলার মতিহারিতে জন্মগ্রহণ একটি সুখী 'নিম্ন-উচ্চ-মধ্যবিত্ত' পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রপিতামহ চার্লস ব্লেয়ার ডরসেটের জ্যামাইকান প্ল্যান্টেশনের অনুপস্থিত মালিক ছিলেন। অরওয়েলের পিতা ছিলেন রিচার্ড ওয়ালমেসলে ব্লেয়ার, যিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের আফিম বিভাগে সাব-ডেপুটি আফিম এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন, চীনে বিক্রির জন্য আফিম উৎপাদন ও মজুত করার তত্ত্বাবধান করতেন। তার মা, ইডা মেবেল ব্লেয়ার (নি লিমুজিন), বার্মার মৌলমেইনে বেড়ে ওঠেন। এরিকের দুই বোন: মার্জোরি, পাঁচ বছরের বড়; এবং এভ্রিল, পাঁচ বছরের ছোট। এরিক যখন এক বছর বয়সে, তার মা তাকে এবং মার্জোরিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। এরিক তার মা এবং বোনদের সাথে বেড়ে ওঠেন এবং ১৯০৭ সালের মাঝামাঝি একবার ছাড়া, তিনি ১৯১২ সাল পর্যন্ত তার বাবাকে দেখেন নি। পাঁচ বছর বয়সী, এরিককে হেনলি-অন-টেমসের একটি কনভেন্ট স্কুলে ডে-বয় হিসাবে পাঠানো হয়েছিল। তার মা তাকে পাবলিক স্কুলে পড়াতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার পরিবার ফি বহন করতে সক্ষম হয় নি। তার মামা চার্লস লিমুজিনের মাধ্যমে, ব্লেয়ার সেন্ট সাইপ্রিয়ানস স্কুল, ইস্টবোর্ন, ইস্ট সাসেক্সে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯১১ সালের সেপ্টেম্বরে এসে তিনি পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য স্কুলে থাকেন, শুধুমাত্র স্কুল ছুটির সময় বাড়িতে ফিরতেন। যদিও তিনি হ্রাসকৃত ফি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, তবে তিনি "শীঘ্রই বুজতে পারলেন যে তিনি একজন দরিদ্র ঘর থেকে এসেছেন। উল্লেখযোগ্য বইসমূহ জর্জ অরওয়েল বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে লেখালেখি থেকে শুরু করে উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, কবিতা রচনা করেছেন। উপন্যাসসমূহ বার্মিজ ডেজ (১৯৩৪) এ ক্লার্জিম্যানস ডটার (১৯৩৫) কিপ দ্য এসপিডিস্ট্রা ফ্লাইং (১৯৩৬) কামিং আপ ফর এয়ার (১৯৩৯) অ্যানিম্যাল ফার্ম (১৯৪৫) নাইন্টিন এইটি-ফোর (১৯৪৯) প্রবন্ধসমূহ ডাউন এন্ড আউট ইন প্যারিস এন্ড লন্ডন (১৯৩৩) দ্য রোড টু উইগান পিয়ের (১৯৩৭) হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া (১৯৩৮)‌ তবে তার বেশিরভাগ লেখাই ছিল সংবাদপত্রের জন্য লেখা সভ্যতা ও রাজনৈতিক সমালোচনামূলক নিবন্ধ। আরও দেখুন https://bn.wikiquote.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C_%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B2 তথ্যসূত্র ১৯০৩-এ জন্ম ১৯৫০-এ মৃত্যু ইংরেজ সাহিত্যিক ধর্মের সমালোচক ২০শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ ঔপন্যাসিক ইংরেজ সমাজতাত্ত্বিক ঔপনিবেশিক ভারতে ব্রিটিশ ব্যক্তি ২০শ শতাব্দীর নাস্তিক ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ ইতিহাসবিদ ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ কবি ২০শ শতাব্দীর ছদ্মনামধারী লেখক নাস্তিক দার্শনিক ব্রিটিশ সমাজতান্ত্রিক বিরোধী ব্রিটিশ হোম গার্ডের সৈনিক ইংরেজ নাস্তিক ইংরেজ প্রাবন্ধিক ইংরেজ পুরুষ সাংবাদিক ফরাসি বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি মুক্তচিন্তার লেখক বিহারের সাংবাদিক আধুনিকতাবাদী লেখক সংস্কৃতির দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক ভাষার দার্শনিক সাহিত্যের দার্শনিক সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক যুদ্ধের দার্শনিক রাজনৈতিক দার্শনিক সামাজিক দার্শনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক সাম্যবাদ সম্পর্কে লেখক ইংরেজ দিনলিপিকার ব্রিটিশ অনুসন্ধানী সাংবাদিক
https://en.wikipedia.org/wiki/George_Orwell
George Orwell
Eric Arthur Blair (25 June 1903 – 21 January 1950) was a British novelist, poet, essayist, journalist, and critic who wrote under the pen name of George Orwell, a name inspired by his favourite place River Orwell. His work is characterised by lucid prose, social criticism, opposition to all totalitarianism (i.e. to both left-wing authoritarian communism and to right-wing fascism), and support of democratic socialism. Orwell is best known for his allegorical novella Animal Farm (1945) and the dystopian novel Nineteen Eighty-Four (1949), although his works also encompass literary criticism, poetry, fiction, and polemical journalism. His non-fiction works, including The Road to Wigan Pier (1937), documenting his experience of working-class life in the industrial north of England, and Homage to Catalonia (1938), an account of his experiences soldiering for the Republican faction of the Spanish Civil War (1936–1939), are as critically respected as his essays on politics, literature, language and culture. Orwell's work remains influential in popular culture and in political culture, and the adjective "Orwellian"—describing totalitarian and authoritarian social practices—is part of the English language, like many of his neologisms, such as "Big Brother", "Thought Police", "Room 101", "Newspeak", "memory hole", "doublethink", and "thoughtcrime". In 2008, The Times named Orwell the second-greatest British writer since 1945.
1409
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের তালিকা
আ আলোন্‌জো চার্চ আলফ্রেড আহো আদি শামির উ উলাহ্‌-ইয়োহান ডাল এ এট্‌সখার ডেইক্‌স্ট্রা এডগার কড এডা লাভলেস এরিক ডিমাইন ক কনরাড ৎসুজে ক্লদ শ্যানন কার্ভার মিড কেনেথ আইভার্সন কেন টম্পসন ক্রিস্টেন নিগার্ড গ গ্রেস হপার গর্ডন বেল চ চার্লস ব্যাবেজ জ জন ককি জন টুকি জন ভন নিউম্যান জন ভিনসেন্ট আটানসফ জিন আম্‌ডাল জেমস কুলি জন বাকাস জন হেনেসি জেমস গসলিং ট টোনি হোর ড ডনাল্ড কানুথ ডেভিড হুইলার ডেভিড প্যাটার্সন ডেনিস রিচি ন নিকলাউস ভির্ট প পিটার নরভিগ ফ ফ্রেড ব্রুক্‌স ব বাটলার ল্যাম্পসন বিয়ারনে স্ট্রোভস্ট্রুপ ভ ভিন্টন সার্ফ ম মরিস উইল্ক্‌স মাইকেল স্টোনব্রেকার মারভিন মিন্‌স্কি র রন রিভেস্ট রবার্ট কান রিচার্ড হ্যামিং ল লিন কন্‌ওয়ে লেনার্ড এডলম্যান লিনুস তোরভাল্দ্‌স স স্টিভ উয়োজনিয়াক হ হুইটফিল্ড ডিফি কম্পিউটার বিজ্ঞানী পেশা অনুযায়ী ব্যক্তিদের তালিকা
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_computer_scientists
List of computer scientists
This is a list of computer scientists, people who do work in computer science, in particular researchers and authors. Some persons notable as programmers are included here because they work in research as well as program. A few of these people pre-date the invention of the digital computer; they are now regarded as computer scientists because their work can be seen as leading to the invention of the computer. Others are mathematicians whose work falls within what would now be called theoretical computer science, such as complexity theory and algorithmic information theory.
1410
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%89%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A7%8D%E2%80%8C-%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%8B%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%B2
উলাহ্‌-ইয়োহান ডাল
উলাহ্‌-ইয়োহান ডাল (১২ অক্টোবর ১৯৩১ - ২৯ জুন ২০০২) ছিলেন একজন নরওয়েজীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানী, যাকে ক্রিস্টেন নাইগার্ড-এর সাথে যৌথ ভাবে সিমুলা এবং অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং-এর জনক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জীবনী ডাল ১৯৩১ সালে নরওয়ের মানডাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাকে নরওয়ের অন্যতম সেরা কম্পিউটার বিজ্ঞানী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তিনি ক্রিস্টেন নাইগার্ড-এর সাথে যৌথ ভাবে ২০০১ সালে টুরিং পুরস্কার এবং ২০০২ সালে আইইইই জন ভন ন্যুম্যান পদক লাভ করেন। and was named Commander of the Royal Norwegian Order of St. Olav in 2000. প্রাথমিক গবেষণা-পত্রাবলী Multiple index countings on the Ferranti Mercury computer / by O.-J. Dahl. Oslo: Norwegian Defence Research Establishment, 1957. Programmer's handbook for the Ferranti Mercury Computer, Frederic at the Norwegian Defense Research Establishment / By O.-J. Dahl, and Jan V. Garwick. – 2nd ed., Kjeller: Norwegian Defence Research Establishment, 1958. Automatisk kodning: et prosjekt ved Forsvarets forskningsinstitutt. Simscript implementation / by Vic Bell and Ole-Johan Dahl. Oslo: Norwegian Computing Center, 1963. Basic concepts of SIMULA: an ALGOL based simulation language / by Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. Oslo: Norsk Regnesentral, [1965?]. SIMULA: a language for programming and description of discrete event systems : introduction and user's manual. Oslo: Norsk Regnesentral, 1965. Discrete event simulation languages: lectures delivered at the NATO summer school, Villard-de-Lans, September 1966 / by Ole-Johan Dahl. Oslo: Norsk Regnesentral/Norwegian Computing Center, 1966. SIMULA: an ALGOL based simulation language / by Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. Oslo: Norsk Regnesentral, 1966. Simula: an ALGOL-based simulation language / Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. New York: Association for Computing Machinery, 1966. I: Communications of the ACM; 9(1966). Class and subclass declarations / Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. Amsterdam: North-Holland, c1968. I: Simulation programming languages: proceedings of the IFIP working conference on simulation programming languages, Oslo, May 1967 / O.-J. Dahl, conference chairman; organized by IFIP Technical Committee 2, programming languages; edited by J.N. Buxton. Discrete event simulation languages / Ole-Johan Dahl. London: Academic Press, 1968. (Programming languages : NATO Advanced Study Institute / edited by G. Genuys.) SIMULA 67: common base language / by Ole-Johan Dahl, Bjørn Myhrhaug and Kristen Nygaard. Oslo: Norsk Regnesentral, 1968. (Publication S / Norwegian Computing Center; 2) Rev. 1970: Common base language (Publ.; 22). তথ্যসূত্র অন্যান্য উৎস From Object-Orientation to Formal Methods: Essays in Memory of Ole-Johan Dahl, Olaf Owe, Stein Krogdahl and Tom Lyche (eds.), Springer, Lecture Notes in Computer Science, Volume 2635, 2004. . . Pioneer who Prepared the Ground for Road to Java, Jonathan Bowen. The Times Higher Education Supplement, 1677:34, 4 February 2005. বহিঃসংযোগ ব্যক্তিগত তথ্য। তথ্যসূত্র। নরওয়েজীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানী ১৯৩১-এ জন্ম ২০০২-এ মৃত্যু টুরিং পুরস্কার বিজয়ী অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
https://en.wikipedia.org/wiki/Ole-Johan_Dahl
Ole-Johan Dahl
Ole-Johan Dahl (12 October 1931 – 29 June 2002) was a Norwegian computer scientist. Dahl was a professor of computer science at the University of Oslo and is considered to be one of the fathers of Simula and object-oriented programming along with Kristen Nygaard.
1411
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%A8%20%E0%A6%9F%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A6%BF
জন টুকি
জন ওয়াইল্ডার টুকি (১৬ই জুন, ১৯১৫ - ২৬শে জুলাই, ২০০০) একজন মার্কিন পরিসংখ্যানবিদ। তিনি নিউ বেডফোর্ড, ম্যাসাচুসেটস-এ জন্মগ্রহণ করেন। সাধারণত ১৯৫৮ সালে 'বিট' শব্দটি চালু করার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়। জীবনী টুকি ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে ১৯৩৬ সালে ব্যাচেলর অব আর্টস এবং ১৯৩৭ সালে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে পিএইচ ডি অর্জন করেন। পুরস্কার ও সম্মাননা ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭৩) আইইইই মেডেল অব অনার (১৯৮২) তথ্যসূত্র ১৯১৫-এ জন্ম ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মার্কিন পরিসংখ্যানবিদ মার্কিন জাতীয় বিজ্ঞান পদকপ্রাপ্ত এর্ডশ নম্বর ২ প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ২০০০-এ মৃত্যু ২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য আইইইই মেডেল অব অনার বিজয়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য ন্যাশনাল মেডেল অফ সাইন্স বিজয়ী ম্যাসাচুসেট্‌সের ব্যক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/John_Tukey
John Tukey
John Wilder Tukey (; June 16, 1915 – July 26, 2000) was an American mathematician and statistician, best known for the development of the fast Fourier Transform (FFT) algorithm and box plot. The Tukey range test, the Tukey lambda distribution, the Tukey test of additivity, and the Teichmüller–Tukey lemma all bear his name. He is also credited with coining the term bit and the first published use of the word software.
1412
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8B%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%9C%E0%A7%8B%20%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9A
আলোন্‌জো চার্চ
আলোন্‌জো চার্চ (জুন ১৮, ১৯০৩ – আগস্ট ১১, ১৯৯৫) ছিলেন একজন মার্কিন গণিতবিদ এবং যুক্তিবিদ। তত্ত্বীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর পিছনে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। অ্যালান টুরিংয়ের পাশাপাশি চার্চকে কম্পিউটার বিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি ওয়াশিংটন, ডিসি তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৪ সালে ব্যাচেলর ডিগ্রী এবং ১৯২৭ সালে ওসওয়াল্ড ভেবলেন এর তত্ত্বাবধানে পিএইচ ডি ডিগ্রী অর্জন করেন। গটিংগেনের গেয়র্গ আউগুস্ট বিশ্ববিদ্যালয়-এ পোস্টডক করার পর তিনি ১৯২৯-১৯৬৭ প্রিন্সটনে পড়ান এবং ১৯৬৭-১৯৯০ পড়ান ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট লস অ্যাঞ্জেলেস-এ। তথ্যসূত্র ১৯০৩-এ জন্ম ১৯৯৫-এ মৃত্যু মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী শহর অনুযায়ী গণিতবিদ গণিতবিদ ২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লস অ্যাঞ্জেলসের শিক্ষক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Alonzo_Church
Alonzo Church
Alonzo Church (June 14, 1903 – August 11, 1995) was an American mathematician, computer scientist, logician, and philosopher who made major contributions to mathematical logic and the foundations of theoretical computer science. He is best known for the lambda calculus, the Church–Turing thesis, proving the unsolvability of the Entscheidungsproblem ("decision problem"), the Frege–Church ontology, and the Church–Rosser theorem. Alongside his doctoral student Alan Turing, Church is considered one of the founders of computer science.
1413
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B8
জন বাকাস
জন বাকাস(জন্ম: ৩ ডিসেম্বর, ১৯২৪ - মৃত্যু: ১৭ মার্চ, ২০০৭) হলেন একজন মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন সর্বপ্রথম উচ্চ-পর্যায় প্রোগ্রামিং ভাষা ফোরট্রান, বাকাস-নর আকার(বিএনএফ, যা সিনট্যাক্স এর সংজ্ঞায় প্রায় সার্বজনীনভাবে ব্যবহৃত চিহ্ন-পদ্ধতি), এবং ফাংশান-পর্যায় প্রোগ্রামিং ধারণা উদ্ভাবণ করবার জন্য। তিনি ১৯৭৭ সালে এই অসামান্য সব অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এসিএম টুরিং পুরস্কার অর্জন করেন। বাকাস'র টুরিং বিবৃতিটি এরকম: ফোরট্রান এর উপর কাজের মাধ্যমে তিনি উচ্চ-পর্যায় প্রোগ্রামিং ব্যবস্থা তৈরিতে যে সুগভীর, প্রভাবশালী এবং অমর অবদান রেখেছেন এবং পোগ্রামিং ভাষার প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির উপর তাঁর অসাধারণ প্রকাশনাবলীর স্বীকৃতিস্বরূপ। জন্ম ও শিক্ষাজীবন বাকাস পেন্সিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে গণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৫০ সালে আইবিএম এ যোগদান করেন। সম্মাননা ও পুরস্কার ১৯৭৭ সালের এসিএম প্রদত্ত টুরিং পুরস্কার বিজয়ী। তথ্যসূত্র বহি:সংযোগ মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী টুরিং পুরস্কার বিজয়ী ১৯২৪-এ জন্ম ২০০৭-এ মৃত্যু ন্যাশনাল মেডেল অফ সাইন্স বিজয়ী চার্লস স্টার্ক ড্র্যাপার প্রাইজ বিজয়ী আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য ২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ ২১শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মার্কিন সেনা কর্মকর্তা ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
https://en.wikipedia.org/wiki/John_Backus
John Backus
John Warner Backus (December 3, 1924 – March 17, 2007) was an American computer scientist. He led the team that invented and implemented FORTRAN, the first widely used high-level programming language, and was the inventor of the Backus–Naur form (BNF), a widely used notation to define syntaxes of formal languages. He later did research into the function-level programming paradigm, presenting his findings in his influential 1977 Turing Award lecture "Can Programming Be Liberated from the von Neumann Style?" The IEEE awarded Backus the W. W. McDowell Award in 1967 for the development of FORTRAN. He received the National Medal of Science in 1975 and the 1977 Turing Award "for profound, influential, and lasting contributions to the design of practical high-level programming systems, notably through his work on FORTRAN, and for publication of formal procedures for the specification of programming languages". John Backus retired in 1991. He died at his home in Ashland, Oregon on March 17, 2007.
1414
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%B8%20%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%9C
চার্লস ব্যাবেজ
চার্লস ব্যাবেজ () (২৬শে ডিসেম্বর, ১৭৯১-১৮ই অক্টোবর, ১৮৭১) একজন ইংরেজ যন্ত্র প্রকৌশলী, গণিতবিদ, আবিষ্কারক ও দার্শনিক। তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক মনে করা করা হয়। তিনি ডিফারেন্স ইঞ্জিন ও অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে দুইটি যান্ত্রিক কম্পিউটার তৈরি করেছিলেন। তার তৈরি অ্যানালিটিকাল ইঞ্জিন যান্ত্রিকভাবে গাণিতিক কাজ সম্পাদন করতে পারত এবং এই ইঞ্জিনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য আজকের কম্পিউটারের ডিজাইনে এখনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ অর্থায়নের অভাবে ব্যাবেজ তার এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি। শৈশব চার্লসের জন্মস্থান নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে, অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ বায়োগ্রাফির তথ্য অনুযায়ী, তিনি সম্ভবত ৪৪ ক্রসবি রো, ওয়ালওয়ার্থ রোড,লন্ডন,ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। লারকম স্ট্রিট এবং ওয়ালওয়ার্থ রোডের জংশনে একটি নীল ফলক এই ঘটনা স্মরণ করায়। তার জন্ম তারিখটি ‘দ্যা টাইমসে, মৃত্যুর সংবাদে ২৬ ডিসেম্বর ১৭৯২ সাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর তার ভাইপো জানান যে, এক বছর আগে অর্থাৎ চার্লস ১৭৯১ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেন্ট ম্যারি নিউইংটন, লন্ডনের প্যারিস রেজিস্টারে দেখানো হয়েছে যে, চার্লস ৬ জানুয়ারি ১৭৯১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বেঞ্জামিন ব্যাবেজ এবং বেটসি প্লামলি টিপের চার সন্তানের মধ্যে চার্লস ছিলেন একজন।তার স্বাস্থ্যের কারণে তিনি বেশীরভাগ সময় ব্যক্তিগত মাস্টারমশাই এর কাছে পড়াশুনে করতে হয় এবং তা উচ্চ পর্যায়ের স্তরে পৌঁছান যা কিনা ক্যামব্রিজ কর্তৃক গ্রহণযোগ্য ছিল।১৮১০ সালে,অক্টোবর তিনি টকেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে পরতে আসেন। তিনি ইতিমধ্যে সমসাময়িক গণিতের কিছু অংশে স্ব-শিক্ষিত ছিলেন; তিনি রবার্ট উডহাউস,জোসেফ লউইস লেগারজন এবং মারিয়া এগনেসি লেখা পড়েছিলেন।ফলস্বরূপ,বিশ্ববিদ্যালয়ে উপলব্ধ মান গাণিতিক নির্দেশনায় তিনি হতাশ হন। 2004 সালে চার্লস,জন হার্শেল,জর্জ পিকক এবং আরও কয়েকজন বন্ধু আনালিটিকাল সোসাইটি গঠন করেন;তিনি এডওয়ার্ড র‍য়ানের কাছের ব্যক্তি ছিলেন।১৮১২ সালে চার্লস পিটারহাউস,কেমব্রিজে স্থানান্তরিত হন।তিনি সেখানে শীর্ষ গণিতবিদ ছিলেন,কিন্তু সম্মানসূচক সংখ্যা দিয়ে স্নাতক হয়নি।১৮১৪ সালে পরীক্ষা ছাড়াই তিনি স্নাতক হন। পরিবার ২৫ জুলাই ১৮১৪, চার্লস জর্জিয়া হোয়াইটমোরের সাথে সেন্ট মাইকেল চার্চ টিনব্রিজ,ডেভুনে বিয়ে করেন। তাদের আটটি সন্তান ছিল কিন্তু মাত্র চারটি - বেঞ্জামিন হার্সেল, জর্জিয়ানা হোয়াইটমোর, ডগল্ড ব্রোমহেড এবং হেনরি প্রিভোস্ট - শৈশবে বেঁচে ছিলেন। তার স্ত্রী জর্জিয়া ১ সেপ্টেম্বর ১৮২৫ সালে, ওয়ারসেস্টারে, একই বছর তার পিতা, দ্বিতীয় পুত্র (চার্লস নামেও পরিচিত) এবং তার নবজাত পুত্র আলেকজান্ডার মারা যান। বেঞ্জামিন হারশেল ব্যাবেজ (১৮১৫-১৮৭৮) চার্লস ভাইটমোর ব্যাবেজ (১৮১৭-১৮২৭) জর্জিয়ানা হোয়াইটমোর ব্যাবেজ (১৮১৮- ??) এডওয়ার্ড স্টুয়ার্ট ব্যাবেজ (১৮১৯-১৮২১) ফ্রান্সিস মুর ব্যাবেজ (১৮২১- ??) ডগল্ড ব্রোমহেড (ব্রোমহেল্ড?)ব্যাবেজ (১৮২৩-১৯০১) (মেজ-জেন) হেনরি প্রিভস্ট ব্যাবেজ (১৮২৪-১৯১৮) আলেকজান্ডার ফোর্বস ব্যাবেজ (১৮২৭-১৮২৭) কর্মজীবন ১৮২৮ সালে তিনি লুকাসিয়ান প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৮৩৯ সাল পর্যন্ত এ পদে আসীন ছিলেন।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতে পছন্দ করতেন না ,তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকে আরও সংহত দেখতে চেয়েছিলেন,বিশেষ করে গবেষণা ও বৃহত্তর পাঠ্যক্রম আরও বেশি করে নজর দেওয়া।ছয় বছর ধরে রিচার্ড জোনসের সাথে তার এই নিয়ে বিতর্ক চলে। তিনি কখনও অধ্যাপনা করেনি।এই সময়ের তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন।তিনি বেরা অফ ফিনসবারীর প্রার্থী হিসেবে দুবার সংসদে দাঁড়িয়েছিলেন। ১৮৩২ সালে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে তিনি তৃতীয় স্থান পান।১৮৩৪ সালে তিনি চারজনের মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন।১৮৩৯ সালের শেষে তিনি লুকাসিয়ান অধ্যাপক হিসাবে পদত্যাগ করেন।ভ্যাভেলের সাথে কেমব্রিজের সংগ্রাম থেকেও দূরে চলে যান।গণিত ও গুনতি এবং আন্তর্জাতিক পরিচিতিগুলির উপর তিনি আরও মনোযোগী হয়ে ওঠেন।তিনি ১৮২২ সালে ডিফারেন্স ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন এবং তৈরির বর্ণনা লিখে রেখেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে তার বর্ণনা অনুসারে একটি ইঞ্জিন তৈরি করা হয় এবং দেখা যায় সেটি সঠিকভাবে কাজ করছে। অন্তকাল ১,ডরসেট স্ট্রিট, মারলেবনে, তিনি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেন এবং থাকতেন;১৮ অক্টোবর ১৮৭১ সালে,৭৯ বছর বয়সে এখানেই চার্লস মারা যান।তাকে লন্ডনের কেন্সাল গ্রিন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছিল।তিনি নাইটহুড এবং ব্যারনেটের খেতাব উভয়ই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আরও পড়ুন (Reissued by Cambridge University Press 2009, .) (The LOCOMAT site contains a reconstruction of this table.) তথ্যসূত্র ১৭৯১-এ জন্ম ১৮৭১-এ মৃত্যু ব্রিটিশ গণিতবিদ ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য ট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইংরেজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী রাজোচিত জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থার সভ্য রয়েল সোসাইটি অব এডিনবার্গের সভ্য রয়েল সোসাইটির সভ্য শিল্প বিপ্লবের ব্যক্তিত্ব
https://en.wikipedia.org/wiki/Charles_Babbage
Charles Babbage
Charles Babbage (; 26 December 1791 – 18 October 1871) was an English polymath. A mathematician, philosopher, inventor and mechanical engineer, Babbage originated the concept of a digital programmable computer. Babbage is considered by some to be "father of the computer". He is credited with inventing the first mechanical computer, the Difference Engine, that eventually led to more complex electronic designs, though all the essential ideas of modern computers are to be found in his Analytical Engine, programmed using a principle openly borrowed from the Jacquard loom. Babbage had a broad range of interests in addition to his work on computers covered in his 1832 book Economy of Manufactures and Machinery. He was an important figure in the social scene in London, and is credited with importing the "scientific soirée" from France with his well-attended Saturday evening soirées. His varied work in other fields has led him to be described as "pre-eminent" among the many polymaths of his century. Babbage, who died before the complete successful engineering of many of his designs, including his Difference Engine and Analytical Engine, remained a prominent figure in the ideating of computing. Parts of his incomplete mechanisms are on display in the Science Museum in London. In 1991, a functioning difference engine was constructed from the original plans. Built to tolerances achievable in the 19th century, the success of the finished engine indicated that Babbage's machine would have worked.
1415
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%A8%20%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A1
ক্রিস্টেন নিগার্ড
ক্রিস্টেন নিগার্ড (আগস্ট ২৭, ১৯২৬ - আগস্ট ২, ২০০২) ছিলেন নরওয়েজীয় গণিতবিদ এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা মুঘল এবং রাজনীতিবিদ। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং নিগার্ড ১৯৫৬ সালে অসলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। নিগার্ড ১৯৬০ এর দশকে আন্তর্জাতিকভাবে উলাহ্‌-ইয়োহান ডালের সাথে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ও প্রোগ্রামিং ভাষা সিমুলার সহ-উদ্ভাবক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। নিগার্ড ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত নরওয়েজীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান-এ পূর্ণ সময়ে কাজ করতেন। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৪ সালে কম্পিউটিং ও প্রোগ্রামিং এবং ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত কার্য গবেষণা বিষয়ের দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক জীবন নিগার্ড নরওয়ের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬০ এর দশকের মাঝামাঝি ও শেষের দিকে তিনি নরওয়ের লিবারেল পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং দলের কৌশল প্রণয়ন কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৪৯ সালের নরওয়ের সংসদীয় নির্বাচনের প্রার্থী ছিলেন। ১৯৭১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত নিগার্ড লেবার পার্টির সদস্য ছিলেন এবং এই দলের গবেষণা নীতি কমিটির সদস্য ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবন নিগার্ড ১৯৫১ সালে জোহানা নিগার্ডকে বিয়ে করেন। জোহানা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রসমূহের জন্য প্রদত্ত নরওয়েজীয় সহযোগিতা এজেন্সিতে কর্মরত ছিলেন। তাদের তিন সন্তান ও সাত নাতি-নাতনী ছিল। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Kristen Nygaard bibliography Resources on Ole-Johan Dahl, Kristen Nygaard and SIMULA ১৯২৬-এ জন্ম ২০০২-এ মৃত্যু অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক টুরিং পুরস্কার প্রাপক নরওয়েজীয় একাডেমি অব সায়েন্সেস অ্যান্ড লেটার্সের সদস্য নরওয়েজীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানী নরওয়েজীয় গণিতবিদ নরওয়েজীয় রাজনীতিবিদ প্রোগ্রামিং ভাষা গবেষক প্রোগ্রামিং ভাষা নকশাকার টুরিং পুরস্কার বিজয়ী
https://en.wikipedia.org/wiki/Kristen_Nygaard
Kristen Nygaard
Kristen Nygaard (27 August 1926 – 10 August 2002) was a Norwegian computer scientist, programming language pioneer, and politician. Internationally, Nygaard is acknowledged as the co-inventor of object-oriented programming and the programming language Simula with Ole-Johan Dahl in the 1960s. Nygaard and Dahl received the 2001 A. M. Turing Award for their contribution to computer science.
1416
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF
কম্পিউটার স্থাপত্য
কম্পিউটার স্থাপত্য () কম্পিউটার সিস্টেমের ধারণাগত গঠন ও কার্যপ্রণালি সংজ্ঞা দেওয়ার বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান একটি ভবনের স্থাপত্যের মতোই যা দিয়ে তার সার্বিক গঠন, তার বিভিন্ন অংশের কাজ, এবং সে সব অংশকে একত্রিত করার পদ্ধতি হলো এই বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান কম্পিউটার বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট কিন্তু তার থেকে মৌলিকভাবে ভিন্ন। স্থাপত্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সেই সব বৈশিষ্ট্য যা সফটওয়্যার প্রোগ্রামগুলোর নকশা এবং উন্নয়ন ডিজাইন নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে বাস্তবায়নের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সেই সব বৈশিষ্ট্য যা দিয়ে আপেক্ষিক ব্যয় ও সিস্টেমের কার্যসম্পাদন নির্বাচিত হয়। উদ্দেশ্য কম্পিউটার স্থাপত্যের প্রধান উদ্দেশ্য হলো এমন একটি কম্পিউটার তৈরি করা যা নির্দিষ্ট ব্যয়ের সীমাবদ্ধতার মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব কাজ করতে পারবে। পরে সঙ্গে আরো উদ্দেশ্য যোগ করা হয়েছে। যেমন- অনেকগুলো প্রোগ্রাম একই সাথে চালানো অথবা উচ্চতর ভাষায় লেখা প্রোগ্রামের ক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি করা। গঠন কম্পিউটার সিস্টেমের মধ্যে চারটি মূল অংশ থাকে: স্মৃতি, প্রসেসর, আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি এবং তথ্য প্রবেশ ও নির্গমন ব্যবস্থা (ইনপুট-আউটপুট ) . স্মৃতির মধ্যে তথ্য ও প্রোগ্রামগুলো গচ্ছিত রাখা হয়। প্রসেসর হলো সেই অংশ যা দিয়ে সিস্টেমের কাজকে নিয়ন্ত্রণণ করা হয় এবং বিভিন্ন গণনা করা সম্ভব হয়। আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ব্যবহারকারীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। ইনপুট-আউটপুট সিস্টেম দিয়ে পূর্বে বর্ণিত ঐ অংশগুলোর পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। আরও দেখুন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার আর্কিটেকচার তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট
https://en.wikipedia.org/wiki/Computer_architecture
Computer architecture
In computer science and computer engineering, computer architecture is a description of the structure of a computer system made from component parts. It can sometimes be a high-level description that ignores details of the implementation. At a more detailed level, the description may include the instruction set architecture design, microarchitecture design, logic design, and implementation.
1418
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8
পিথাগোরাস
সামোসের পিথাগোরাস (, অথবা শুধু পিথাগোরাস; ৫২৭– ৪৯৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ ) ছিলেন একজন আয়োনীয় গ্রিক দার্শনিক, গণিতবিদ এবং পিথাগোরাসবাদী ভ্রাতৃত্বের জনক যার প্রকৃতি ধর্মীয় হলেও তা এমন সব নীতির উদ্ভব ঘটিয়েছিল যা পরবর্তীতে প্লেটো এবং এরিস্টটলের মত দার্শনিকদের প্রভাবিত করেছে। তিনি এজিয়ান সাগরের পূর্ব উপকূল অর্থাৎ বর্তমান তুরস্কের কাছাকাছি অবস্থিত সামোস দ্বীপে জন্মেছিলেন। ধারণা করা হয় শৈশবে জ্ঞান অন্বেষণের তাগিদে মিশরসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। ৫৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত গ্রিক কলোনি ক্রোতোনে চলে যান, এবং সেখানে একটি আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক ভ্রাতৃত্বমূলক সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। তার অনুসারীরা তারই নির্ধারিত বিধি-নিষেধ মেনে চলত এবং তার দার্শনিক তত্ত্বসমূহ শিখতো। এই সম্প্রদায় ক্রোতোনের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে যা তাদের নিজেদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাড়ায়। এক সময় তাদের সভাস্থানগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং পিথাগোরাসকে বাধ্য করা হয় ক্রোতোন ছেড়ে যেতে। ধারণা করা হয় জীবনের শেষ দিনগুলো তিনি দক্ষিণ ইতালিরই আরেক স্থান মেতাপোন্তুমে কাটিয়েছিলেন। পিথাগোরাস কিছু লিখেননি এবং সমসাময়িক কারও রচনাতেও তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না। উপরন্তু ১ম খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে তাকে বেশ অনৈতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হতে থাকে। সে সময় ভাবা হতো পিথাগোরাস একজন স্বর্গীয় সত্তা এবং গ্রিক দর্শনে যা কিছু সত্য (এমনকি প্লেটো এবং এরিস্টটলের অনেক পরিণত চিন্তাধারা) তার সবই তিনি শুরু করেছেন। এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে এমনকি কিছু গ্রন্থ পিথাগোরাস ও পিথাগোরাসবাদীদের নামে জাল করা হয়েছিল। তাই তার সম্পর্কে সত্যটা জানার জন্য মোটামুটি নির্ভেজাল এবং প্রাচীনতম প্রমাণগুলোর দিকে তাকাতে হবে কারণ স্পষ্টতই পরবর্তীরা তার ব্যাপারে তথ্য বিকৃতি ঘটিয়েছিল। বর্তমানে পিথাগোরাস প্রধাণত গণিতবিদ ও বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত হলেও প্রাচীনতম প্রমাণ বলছে, তার সময় বা তার মৃত্যুর দেড় শত বছর পর প্লেটো ও এরিস্টটলের সময়ও তিনি গণিত বা বিজ্ঞানের জন্য বিখ্যাত ছিলেন না। তখন তিনি পরিচিত ছিলেন, প্রথমত মৃত্যুর পর আত্মার পরিণতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ যিনি ভাবতেন আত্মা অমর এবং ধারাবাহিকভাবে তার অনেকগুলো পুনর্জন্ম ঘটে, দ্বিতীয়ত, ধর্মীয় আচারানুষ্ঠান বিষয়ে পণ্ডিত, তৃতীয়ত একজন ঐন্দ্রজালিক যার স্বর্ণের ঊরু আছে এবং যিনি একইসাথে দুই স্থানে থাকতে পারেন এবং চতুর্থত, একটি কঠোর জীবন ব্যবস্থা যাতে খাদ্যাভ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং আচারানুষ্ঠান পালন ও শক্ত আত্ম-নিয়ন্ত্রয়ণের নির্দেশ আছে তার জনক হিসেবে। কোনগুলো পিথাগোরাসের কাজ আর কোনগুলো তার উত্তরসূরিদের কাজ তা নির্ধারণ করা বেশ কষ্টকর। তারপরও ধারণা করা হয় পিথাগোরাস বস্তুজগৎ ও সঙ্গীতে সংখ্যার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা বিষয়ক তত্ত্বের জনক। অন্যান্য প্রাক-সক্রেটীয় দার্শনিকের মতো তিনিও বিশ্বতত্ত্ব নিয়ে ভেবেছিলেন কিনা এবং আসলেই তাকে গণিতবিদ বলা যায় কিনা এ নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে প্রাচীনতম নিদর্শন বলছে, পিথাগোরাস এমন একটি বিশ্বজগতের ধারণা দিয়েছিলেন যা নৈতিক মানদণ্ড এবং সাংখ্যিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত। প্লেটোর মহাজাগতিক পুরাণে যেসব ধারণা পাওয়া যায় তার সাথে এর বেশ মিল আছে। বিভিন্ন সংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে তিনি খুব আগ্রহী ছিলেন যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ পিথাগোরাসের উপপাদ্য। যার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে গণিতের ত্রিকোণমিতি নামক একটি শাখা।কিন্তু এই উপপাদ্য তিনি প্রমাণ করেছিলেন বলে মনে হয় না। সম্ভবত পিথাগোরীয় দর্শনের উত্তরসূরিরাই এর প্রকৃত প্রতিপাদক। এই উত্তরসূরিরা তাদের গুরুর বিশ্বতত্ত্বকে দিনদিন আরও বৈজ্ঞানিক ও গাণিতিক দিকে নিয়ে গেছে যাদের মধ্যে ফিলোলাউস এবং Archytas উল্লেখযোগ্য। পিথাগোরাস মৃত্যু-পরবর্তী আত্মার অপেক্ষাকৃত আশাবাদী একটি চিত্র দাঁড় করিয়েছিলেন এবং জীবন যাপনের এমন একটি পদ্ধতি প্রদান করেছিলেন যা দৃঢ়তা ও নিয়মানুবর্তিতার কারণে অনেককে আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে তিনিই প্রথম যে নিজেকে দার্শনিক বা প্রজ্ঞার প্রেমিক হিসেবে দাবি করেছিলেন। জীবন হিরোডটাস, আইসোক্রেটস এবং আরো অনেক প্রাচীন লেখকেরা একমত যে, পিথাগোরাস পূর্ব এজিয়ান সাগরের গ্রিক দ্বীপ সামোসে জন্মেছিলেন। আমরা এও জানি যে তিনি ম্নেসারকাসের-এর সন্তান ছিলেন। যিনি একজন রত্ন খোদাইকার অথবা বণিক ছিলেন। পিথিয়ান অ্যাপোলো এবং আরিস্তিপাস-এর সাথে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয়েছিল পিথাগোরাস। প্রবাদ আছে, "তিনি পিথিয়ান-এর মতোই সত্যবাদী ছিলেন" তাই পিথিয়ান থেকে তার নামের প্রথম অংশ পিথ পাওয়া যায় আর "বলা" অর্থে পাওয়া যায় আগোর। ইয়ামব্লিকাস-এর গল্প অনুসারে পিথিয়ান দৈববাণী করেছিলেন যে পিথাগোরাসের গর্ভবতী মা অসম্ভব সুন্দর, প্রজ্ঞাবান ও মানুষের জন্য কল্যাণকর একজন সন্তান প্রসব করবে। একটি পরবর্তী সূত্র জানায় যে তার মায়ের নাম ছিল পিথাইস, তার জন্মবছর সম্পর্কে বলতে গিয়ে আরিস্তোক্সেনাস বলেন, পিথাগোরাস তার ৪০ বছর বয়সে যখন সামোস ছেড়ে যান তখন পলিক্রেটস-এর রাজত্ব, সে হিসাবে তিনি ৫৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে জন্মেছিলেন। স্বভাবতই আদি জীবনীকারগন খুঁজে দেখতে চেয়েছিলেন পিথাগরাসের এহেন প্রজ্ঞার উৎস। যদিও নির্ভরযোগ্য তথ্য তেমন নেই, কিন্তু পিথাগরাসের শিক্ষকদের একটা লম্বা তালিকা পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কেউ পুরাদস্তুর গ্রিক, আবার কেউ পুরাদস্তুর মিশরীয় কিংবা পূর্বদেশীয়। তালিকায় রয়েছেন Creophylus of Samos, Hermodamas of Samos, বায়াস, থেলেস, আনাক্সিম্যান্ডার, এবং Pherecydes of Syros.। শোনা যায় তিনি Themistoclea নামের এক আধ্যাত্মিক সাধুর কাছে নীতিশাস্ত্রের প্রথম পাঠ নিয়েছিলেন। বলা হয়, মিশরীয় দের কাছে তিনি শিখেছিলেন জ্যামিতি, ফনিশিয়ানদের কাছে পাটিগণিত, ক্যালডীয়ানদের কাছে জ্যোতির্বিজ্ঞান, মাগিয়ানদের কাছে শিখেছিলেন ধর্মতত্ত্ব এবং জীবনযাপনের শিল্প। অন্যান্য সকল শিক্ষকদের মধ্যে তার গ্রিক শিক্ষক Pherecydes এর নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। Diogenes Laertius প্রদত্ত তথ্য অনুসারে পিথাগোরাস ব্যাপক পরিসরে ভ্রমণ করেছিলেন। জ্ঞান আহরণ আর বিশেষত সূফী দলগুলোর কাছ থেকে ইশ্বরের স্বরূপ সন্ধান এর উদ্দেশ্যে তিনি মিশর, ছাড়াও আরবদেশগুলো, ফোনেশিয়া, Judaea, ব্যাবিলন, ভারতবর্ষ পর্যন্ত ভ্রমণ করেন। প্লুতার্ক তার On Isis and Osiris নামক বইতে জানান, মিশর ভ্রমণ কালে পিথাগোরাস Oenuphis of Heliopolis এর কাছ থেকে মূল্যবান নির্দেশনা পান। অন্যান্য প্রাচীন লেখকরাও তার মিশর ভ্রমণের কথা উল্লেখ করেছেন। মিশরীয় পুরোহিতদের কাছে পিথাগোরাস কতটুকু কী শিখেছিলেন বা আদৌ কিছু শিখেছিলেন কিনা তা বলা কঠিন। যে প্রতীকীবাদ পিথাগোরিয়ানরা আয়ত্ত করেছিলেন তার সাথে মিশরের সুনির্দিষ্ট কোন যোগাযোগ খুঁজে পাওয়া যায় না। যে সব গোপন ধর্মীয় প্রথা পিথাগোরিয়ানগন পালন করতেন সেটা গ্রিসের ধর্মীয় মানসের ভেতরে নিজে নিজেই বিকাশিত হতে পারত, প্রাচীন মিশরীয় ঐন্দ্রজালিকতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত থেকেই। যে দর্শন ও প্রতিষ্ঠান সমূহ পিথাগোরাস গড়ে তুলেছিলেন, সেটা সে সময়ের প্রভাবপুষ্ট যে কোন গ্রিক মনীষী সেটা সম্ভব করে তুলতে পারতেন। প্রাচীন গ্রন্থকারগণ পিথাগোরাসের ধর্মীয় এবং নান্দনিক স্বকীয়তার সাথে অর্ফিক কিংবা ক্রিটান রহস্যের কিংবা Delphic oracle সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করে গিয়েছিলেন। অবদান গণিতে পিথাগোরাসের উপপাদ্য বা পিথাগোরিয়ান থিউরেম হল ইউক্লিডীয় জ্যামিতির অন্তর্ভুক্ত সমকোণী ত্রিভুজের তিনটি বাহু সম্পর্কিত একটি সম্পর্ক। এই উপপাদ্যটি গ্রিক গণিতবিদ পিথাগোরাসের নামানুসারে করা হয়েছে, যাকে ঐতিহ্যগতভাবে এই উপপাদ্যদের আবিষ্কারক ও প্রমাণকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে উপপাদ্যটির ধারণা তার সময়ের আগে থেকেই প্রচলিত ছিল তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Pythagoras of Samos, The MacTutor History of Mathematics archive, School of Mathematics and Statistics, University of St Andrews, Scotland Pythagoras and the Pythagoreans, Fragments and Commentary, Arthur Fairbanks Hanover Historical Texts Project, Hanover College Department of History Pythagoras and the Pythagoreans , Department of Mathematics, Texas A&M University Pythagoras and Pythagoreanism, The Catholic Encyclopedia Tetraktys Golden Verses of Pythagoras Pythagoras on Vegetarianism Quotes from primary source historical literature on Pythagoras' view on Vegetarianism, Justice and Kindness Homage to Pythagoras Occult conception of Pythagoreanism Pythagoreanism Web Article 45-minute documentary about Pythagoras Io and Pi – theatrical play on Pythagoras' life The Symbols of Pythagoras at The Sacred Texts online গ্রিক গণিতবিদ গ্রিক দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫৮০-এ জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-এ মৃত্যু শিক্ষার দার্শনিক ধর্ম প্রবর্তক তপস্বী পিথাগোরাস নিরামিষবাদ ও ধর্ম অলৌকিক ক্ষমতাধর খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/Pythagoras
Pythagoras
Pythagoras of Samos (Ancient Greek: Πυθαγόρας; c. 570 – c. 495 BC) was an ancient Ionian Greek philosopher, polymath and the eponymous founder of Pythagoreanism. His political and religious teachings were well known in Magna Graecia and influenced the philosophies of Plato, Aristotle, and, through them, the West in general. Knowledge of his life is clouded by legend; modern scholars disagree regarding Pythagoras's education and influences, but they do agree that, around 530 BC, he travelled to Croton in southern Italy, where he founded a school in which initiates were sworn to secrecy and lived a communal, ascetic lifestyle. In antiquity, Pythagoras was credited with many mathematical and scientific discoveries, including the Pythagorean theorem, Pythagorean tuning, the five regular solids, the Theory of Proportions, the sphericity of the Earth, and the identity of the morning and evening stars as the planet Venus. It was said that he was the first man to call himself a philosopher ("lover of wisdom") and that he was the first to divide the globe into five climatic zones. Classical historians debate whether Pythagoras made these discoveries, and many of the accomplishments credited to him likely originated earlier or were made by his colleagues or successors. Some accounts mention that the philosophy associated with Pythagoras was related to mathematics and that numbers were important, but it is debated to what extent, if at all, he actually contributed to mathematics or natural philosophy. The teaching most securely identified with Pythagoras is the "transmigration of souls" or metempsychosis, which holds that every soul is immortal and, upon death, enters into a new body. He may have also devised the doctrine of musica universalis, which holds that the planets move according to mathematical equations and thus resonate to produce an inaudible symphony of music. Scholars debate whether Pythagoras developed the numerological and musical teachings attributed to him, or if those teachings were developed by his later followers, particularly Philolaus of Croton. Following Croton's decisive victory over Sybaris in around 510 BC, Pythagoras's followers came into conflict with supporters of democracy, and Pythagorean meeting houses were burned. Pythagoras may have been killed during this persecution, or he may have escaped to Metapontum and died there. Pythagoras influenced Plato, whose dialogues, especially his Timaeus, exhibit Pythagorean teachings. Pythagorean ideas on mathematical perfection also impacted ancient Greek art. His teachings underwent a major revival in the first century BC among Middle Platonists, coinciding with the rise of Neopythagoreanism. Pythagoras continued to be regarded as a great philosopher throughout the Middle Ages and his philosophy had a major impact on scientists such as Nicolaus Copernicus, Johannes Kepler, and Isaac Newton. Pythagorean symbolism was also used throughout early modern European esotericism, and his teachings as portrayed in Ovid's Metamorphoses would later influence the modern vegetarian movement.
1419
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%81%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B8
মিলেতুসের আনাক্সিমেনিস
এনাক্সিমেনিস (খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫-খ্রিস্টপূর্ব ৫২৫) () ছিলেন ষষ্ঠ শতকের গ্রিক দার্শনিক। তথ্যসূত্র গ্রিক দার্শনিক গ্রিক গণিতবিদ খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫-এ জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৫২৫-এ মৃত্যু খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/Anaximenes_of_Miletus
Anaximenes of Miletus
Anaximenes of Miletus (; Greek: Ἀναξιμένης ὁ Μιλήσιος; c. 586/585 – c. 526/525 BC) was an Ancient Greek, Pre-Socratic philosopher from Miletus in Anatolia (modern-day Turkey). He was the last of the three philosophers of the Milesian School, after Thales and Anaximander. These three are regarded by historians as the first philosophers of the Western world. Anaximenes is known for his belief that air is the arche, or the basic element of the universe from which all things are created. Little is known of Anaximenes's life and work, as all of his original texts are lost. Historians and philosophers have reconstructed information about Anaximenes by interpreting texts about him by later writers. All three Milesian philosophers were monists who believed in a single foundational source of everything: Anaximenes believed it to be air, while Thales and Anaximander believed it to be water and an undefined infinity, respectively. It is generally accepted that Anaximenes was instructed by Anaximander, and many of their philosophical ideas are similar. While Anaximenes was the preeminent Milesian philosopher in Ancient Greece, he is often given lower importance than the others in the modern day. Anaximenes held that air could change into other forms through either rarefaction or condensation. Condensation would make the air denser, turning it into wind, clouds, water, earth, and finally stone. Rarefaction would make the air less dense as it eventually becomes fire. Anaximenes also developed a model of the Earth, describing it as a flat disc floating atop the air while the Sun and stars are also flat and float alongside it. He described the Sun as revolving around the Earth, causing it to be obscured by higher lands during the night. As one of the Milesian philosophers, Anaximenes was one of the earliest figures to develop science. He influenced many of the Pre-Socratic philosophers that succeeded him, such as Heraclitus, Anaxagoras, Diogenes of Apollonia, and Xenophanes. He also provided early examples of concepts such as natural science, physical change, and scientific writing.
1421
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%B8
পার্মেনিদিস
এলেয়া'র পার্মেনিদিস (গ্রিক ভাষায়: Παρμενίδης ὁ Ἐλεάτης) প্রাচীন বৃহত্তর গ্রিসের অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণ ইতালির এলেয়া নগররাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী একজন সক্রেটিসপূর্ব দার্শনিক ও কবি যাকে এলেয়াবাদের (Eleaticism) জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। একটি জটিল অধিবিদ্যক কবিতা রচনা করে তিনি প্রাচীন গ্রিসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সবচেয়ে দুর্বোধ্য দার্শনিকদের একজন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এই কবিতাটি ছাড়া তার আর কোনো লেখা আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি, এবং আসলে এই কবিতারও পুরোটা আমাদের হাতে নেই, কিছু খণ্ডাংশ আছে কেবল। তার দার্শনিক চিন্তাধারাকে দুই শব্দে প্রকাশ করতে হলে বলতে হয় সেটা ছিল এক ধরনের অধিবিদ্যক একত্ববাদ (metaphysical monism) — যা বলে বিশ্বে কেবল একটিই বা এক ধরনেরই জিনিস আছে। তিনি তার আগের দার্শনিকদের আনাড়ি বিশ্বতাত্ত্বিক মডেলগুলোর এত কড়া সমালোচনা করেছিলেন যে তার পরবর্তীকালের সব গ্রিক বিশ্বতাত্ত্বিক মডেলগুলোকে তার যুক্তির বিরুদ্ধে দেয়া জবাব হিসেবে ধরে নেয়া যায়। তাকে অনেক সময় ক্সেনোফানিসের শিষ্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং তিনি নিঃসন্দেহে হেরাক্লেইতোসের পর লেখা শুরু করেছিলেন, কারণ তার চিন্তাধারাকে খুব স্পষ্টভাবেই হেরাক্লেইতোসের চিন্তাধারার প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচনা করা যায়; পার্মেনিদিস যদি একত্ববাদের পুরোধা হয়ে থাকেন তবে হেরাক্লেইতোস ছিলেন বহুত্ববাদের পুরোধা। জীবন ও কর্ম পার্মেনিদিসের জন্মের বছর অনুমান করার একমাত্র উপায় প্লেটোর সংলাপ পার্মেনিদিস পাঠ। এই সংলাপে দেখানো হয় যে, ৬৫ বছর বয়স্ক পার্মেনিদিস তার শিষ্য জিনোকে সাথে নিয়ে পানাথানাইয়া ক্রীড়া-উৎসব দেখতে এথেন্সে এসেছেন এবং আসার পর তাদের সাথে "কম বয়স্ক" সক্রেটিসের দেখা হয়েছে। "কম বয়স্ক" বলতে প্লেটো সম্ভবত ২০ বছর বুঝিয়েছিলেন, এবং ৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মৃত্যুর সময় সক্রেটিসের বয়স যেহেতু আনুমানিক ৭০ বছর ছিল সেহেতু ধরে নেয়া যায় যে, পার্মেনিদিস আনুমানিক ৫১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর শুরু থেকে মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত দর্শনজগতে সক্রিয় ছিলেন। পার্মেনিদিস যে তার জন্মনগরী এলেয়াতে খুব বিখ্যাত ছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় প্লেটোর পরে আকাদেমি-র প্রধান হওয়া স্পেউসিপ্পোস-এর একটি লেখা থেকে। পরবর্তী লেখকদের সূত্রে জানা গেছে স্পেউসিপ্পোস তার On Philosophers বইয়ে লিখেছিলেন যে পার্মেনিদিস এলেয়া শহরের নাগরিকদের জন্য আইন রচনা করেছিলেন, যদিও পার্মেনিদিসের জন্ম হয়েছিল এলেয়া নগরী পত্তনের প্রায় ত্রিশ বছর পর। প্রাচীন ইতিহাসবিদরা সঙ্গত কারণেই পার্মেনিদিসকে তার এক প্রজন্ম আগের দার্শনিক ক্সেনোফানিস ও পিথাগোরাসবাদীদের সাথে যুক্ত করেন; ক্সেনোফানিসের সাথে তার খুব সম্ভবত দেখাও হয়েছিল। ১৯৬০-এর দশকে প্রাচীন এলেয়া নগরীর ধ্বংসাবশেষের নিকটে পার্মেনিদিসের খ্রিস্টীয় ১ম শতকের একটি আবক্ষমূর্তি পাওয়া গিয়েছিল যাতে খোদিত আছে, "পার্মেনিদিস, পিরেস এর পুত্র, ঔলিয়াদিস, প্রাকৃতিক-দর্শন-বিদ"; বুঝাই যাচ্ছে যে এখানে তাকে দেবতা অ্যাপোলো'র ভিষক (গ্রিক ভাষায় ঔলিওস মানে ভিষক) রূপের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। প্রাচীন গ্রিক জীবনীকার দিয়োগেনিস লায়ের্তিওস এর বই থেকে জানা যায় পার্মেনিদিস জীবনে কেবল একটি বইই লিখেছিলেন — হোমারীয় ষড়মাত্রিক ছন্দে লেখা একটি অধিবিদ্যক ও বিশ্বতাত্ত্বিক কাব্যগ্রন্থ। বইটি পরবর্তীতে পেরি ফিসেওস (Περί φύσεως — On Nature) নামে পরিচিত হলেও পার্মেনিদিসের দেয়া নাম সম্ভবত এটা ছিল না। কবিতাটিতে সম্ভবত ৮০০ পঙ্‌ক্তি ছিল যার মধ্যে বর্তমানে মাত্র ১৬০টি পঙ্‌ক্তি সংরক্ষিত আছে, যেগুলো ছড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি টুকরোতে। একেক টুকরোতে সংরক্ষিত পঙ্‌ক্তির সংখ্যা একেক রকম — একটিতে যেখানে মাত্র একটি শব্দ পাওয়া যায় সেখানে ৮ নং টুকরোটিতে পাওয়া যায় ৬২টি অবিচ্ছিন্ন পঙ্‌ক্তি। এই পঙ্‌ক্তিগুলো সংরক্ষিত থাকার একমাত্র কারণ প্লেটো থেকে শুরু করে পরবর্তী অনেক লেখক তাদের লেখায় কবিতাটির বিভিন্ন অংশ সরাসরি উদ্ধৃত করেছেন। যেমন ১ম টুকরোর ৩২টি পঙ্‌ক্তির মধ্যে ৩০টি-ই পাওয়া গেছে সেক্সতুস এম্পিরিকুসের লেখা থেকে। আলেকজান্দ্রিয়ার নব্য-প্লেটোবাদী দার্শনিক সিমপ্লিকিউসের হাতে সম্ভবত পার্মেনিদিসের বইটির একটি অখণ্ড সংস্করণ ছিল এবং এরিস্টটলের বইয়ের ভাষ্য লিখতে গিয়ে তিনি তা থেকে অনেক কিছু উদ্ধৃত করেছেন। সিমপ্লিকিউসের ভাষ্যের এসব উদ্ধৃতির কারণেই "প্রকৃত বাস্তবতা" সম্পর্কে পার্মেনিদিসের অধিবিদ্যক যুক্তিগুলো আমরা প্রায় পুরোপুরি জানি। "কিসের অস্তিত্ব আছে" সে সম্পর্কে পার্মেনিদিসের ধারণাগুলো অনেকটা জানলেও কবিতাটির শেষের দিকে তিনি যে বিশ্বতত্ত্ব তুলে ধরেছেন তা তার কবিতার বিদ্যমান অংশ থেকে অতটা বুঝা যায় না; এর জন্য কবিতাটির পাশাপাশি নির্ভর করতে হয় পরবর্তী লেখকদের সাক্ষ্যের উপর। পার্মেনিদিসের কবিতা পেরি ফিসেওস এর উপক্রমণিকাতে পার্মেনিদিস তার একটি রূপক ভ্রমণের বৃত্তান্ত শোনান। বর্ণনা করেন কীভাবে সূর্যদেবতার কুমারী কন্যারা তার রথকে পথ দেখিয়ে দেবালয়ে নিয়ে যায়। কুমারীরা যে "রাত্রির ঘর" থেকে এসেছে সেদিকেই তাকে নিয়ে যাচ্ছে এবং ঘরটিতে প্রবেশের পথে আছে "দিবা এবং রাত্রির পথে যাওয়ার দরজা।" কুমারীরা দরজাটির পাহারাদার ন্যায়বিচারকে পার্মেনিদিসকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিতে রাজি করায়। প্রবেশের পর দেবালয়ের দেবী পার্মেনিদিসকে কীভাবে স্বাগত জানায় তা তিনি বর্ণনা করেছেন এভাবে, "দেবী আমায় সদয়ভাবে গ্রহণ করেন, এবং তার হাতে নেন আমার ডান হাত, এবং আমাকে সম্বোধন করে বলেন: 'হে তরুণ, যে এসেছ অমর সারথিদের সাথে এবং আমাদের দেবালয়ে তোমায় বয়ে আনা ঘোটকীদের সাথে, স্বাগতম, কারণ সে নিশ্চয়ই কোনো মন্দভাগ্য নয় যে তোমায় এনেছে এই দিকে (কারণ নিঃসন্দেহে এটা মানুষের পথ থেকে বহুদূরে), বরং সে হলো সদাচার ও ন্যায়বিচার।'" (টুকরো ১.২২–২৮) তথ্যসূত্র গ্রিক দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫১০-এ জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০-এ মৃত্যু খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Parmenides
Parmenides
Parmenides of Elea (; Greek: Παρμενίδης ὁ Ἐλεάτης; fl. late sixth or early fifth century BC) was a pre-Socratic Greek philosopher from Elea in Magna Graecia. Parmenides was born in the Greek colony of Elea, from a wealthy and illustrious family. His dates are uncertain; according to doxographer Diogenes Laërtius, he flourished just before 500 BC, which would put his year of birth near 540 BC, but in the dialogue Parmenides Plato has him visiting Athens at the age of 65, when Socrates was a young man, c. 450 BC, which, if true, suggests a year of birth of c. 515 BC. He is thought to have been in his prime (or "floruit") around 475 BC. The single known work by Parmenides is a poem whose original title is unknown but which is often referred to as On Nature. Only fragments of it survive. In his poem, Parmenides prescribes two views of reality. The first, the Way of "Aletheia" or truth, describes how all reality is one, change is impossible, and existence is timeless and uniform. The second view, the way of "Doxa", or opinion, describes the world of appearances, in which one's sensory faculties lead to conceptions which are false and deceitful. Parmenides has been considered the founder of ontology and has, through his influence on Plato, influenced the whole history of Western philosophy. He is also considered to be the founder of the Eleatic school of philosophy, which also included Zeno of Elea and Melissus of Samos. Zeno's paradoxes of motion were developed to defend Parmenides's views. In contemporary philosophy, Parmenides's work has remained relevant in debates about the philosophy of time.
1422
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B8
আনাক্সাগোরাস
এনাক্সাগোরাস (প্রাচীন গ্রিক: Αναξαγόρας আনাক্সাগোরাস্‌, আনু খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-খ্রিস্টপূর্ব ৪২৮) ছিলেন প্রাক-সক্রেটীয় যুগের গ্রিক দার্শনিক। এনাক্সাগোরাস প্রথম দার্শনিক যিনি এথেন্সে দর্শন এনেছিলেন। জীবনের শেষের দিকে তিনি নাস্তিকতা প্রচারের দায়ে নির্বাসিত হন। যদিও এই অভিযোগ রাজনৈতিক হতে পারে কারণ পেরিক্লিস এর সাথে তার যোগাযোগ ছিল।. তথ্যসূত্র গ্রিক গণিতবিদ গ্রিক দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-এ জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৪২৮-এ মৃত্যু দর্শনের ইতিহাস বিজ্ঞানের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক শিক্ষার ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক প্রাচীন গ্রিক গণিতবিদ প্রাকৃতিক দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Anaxagoras
Anaxagoras
Anaxagoras (; Greek: Ἀναξαγόρας, Anaxagóras, "lord of the assembly"; c. 500 – c. 428 BC) was a Pre-Socratic Greek philosopher. Born in Clazomenae at a time when Asia Minor was under the control of the Persian Empire, Anaxagoras came to Athens. In later life he was charged with impiety and went into exile in Lampsacus. Responding to the claims of Parmenides on the impossibility of change, Anaxagoras introduced the concept of Nous (Cosmic Mind) as an ordering force. He also gave several novel scientific accounts of natural phenomena, including the notion of panspermia, that life exists throughout the universe and could be distributed everywhere. He deduced a correct explanation for eclipses and described the Sun as a fiery mass larger than the Peloponnese, and also attempted to explain rainbows and meteors.
1423
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%8F%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%A6%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B8
এম্পেদোক্লেস
এম্পেদোক্লেস (প্রাচীন গ্রিক Εμπεδοκλής এম্পেদোক্ল্যাস্‌, খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০ - খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০) ছিলেন সক্রেটিস পূর্ববর্তী সময়কালীন একজন গ্রিক দার্শনিক। তিনি গ্রিক নগর শহর সিসিলির অ্যাগেজন্টামের নাগরিক ছিলেন। এমপেডোক্লিসের দর্শনে বলা হয় চারটি ধ্রুপদী উপাদানের সমন্বয়ে সৃষ্টিতত্ত্বের উৎপত্তি হয়েছে। চারটি উপাদান হল পানি, মাটি, বায়ু ও আগুন। তিনি বলেন ভালোবাসা ও বিবাদ নামক দুটি বল উপাদানসমূহকে একত্রিত ও আলাদা করে থাকে।কোন এক ধরনের জীব অপর এক প্রকার জীব হতে উৎপত্তি লাভ করতে পারে এমন ধারণা এনাক্সিম্যান্ডার ও এম্পেডকলসের মত প্রাথমিককালের কয়েকজন সক্রেটিস-পূর্ব গ্রিক দার্শনিক সর্বপ্রথম প্রস্তাব করে থাকেন। রোমান যুগে এমন কিছু প্রস্তাবনার অস্তিত্ব ছিল। কবি ও দার্শনিক লুক্রেটিয়াস তার বৃহৎকর্ম দে রেরাম ন্যাচুরা (অন দ্য ন্যাচার অব থিংস )-এ এম্পেডকালসের চিন্তাধারাকে অনুসরণ করেন। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Empedocles Fragments, translated by Arthur Fairbanks, 1898. Empedocles by Jean-Claude Picot with an extended and updated bibliography Empedocles Fragments at demonax.info গ্রিক দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তিত্ব প্রকৃতিবাদী দার্শনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক প্রাকৃতিক দার্শনিক প্রেমের দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Empedocles
Empedocles
Empedocles (; Greek: Ἐμπεδοκλῆς; c. 494 – c. 434 BC, fl. 444–443 BC) was a Greek pre-Socratic philosopher and a native citizen of Akragas, a Greek city in Sicily. Empedocles' philosophy is best known for originating the cosmogonic theory of the four classical elements. He also proposed forces he called Love and Strife which would mix and separate the elements, respectively. Empedocles challenged the practice of animal sacrifice and killing animals for food. He developed a distinctive doctrine of reincarnation. He is generally considered the last Greek philosopher to have recorded his ideas in verse. Some of his work survives, more than is the case for any other pre-Socratic philosopher. Empedocles' death was mythologized by ancient writers, and has been the subject of a number of literary treatments.
1424
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%8F%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8B
এলেয়ার জিনো
এলেয়ার জিনো (প্রাচীন গ্রিক: Ζήνων Έλεάτης জ়্দ্যানন্‌ এলেয়াত্যাস্‌, আধুনিক গ্রিক: Ζήνων ο Ελεάτης জ়িনন্‌ অ এলেয়াতিস্‌) (খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০ – খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০) একজন গ্রিক দার্শনিক ছিলেন। জীবনী জিনোর জীবনী সম্পর্কে খুব অল্প জানা গেছে। যদিও জিনোর মৃত্যুর প্রায় এক শতাব্দী পরে লেখা হয়েছে, জিনো সম্পর্কে জীবনীমূলক তথ্যের প্রারম্ভিক উৎস হল প্লেটোর পার্মিনিদিস। এবং এরিস্টটলের ফিজিক্স বইতেও তার উল্লেখ রয়েছে। পার্মিনিদিস-এর সংলাপে প্লেটো জিনো ও পার্মেনিদিসের ধ্রুপদী এথেন্সে ভ্রমণের বর্ণনা করেন, যখন পার্মিনিদিসের বয়স ছিল "প্রায় ৬৫", জিনোর "৪০-এর কাছাকাছি" এবং সক্রেটিস "খুবই তরুণ" ছিলেন। ধারণা করা হয় সক্রেটিস তখন ২০ বছরের কাছাকাছি ছিলেন এবং সক্রেটিসের জন্ম ৪৬৯ খ্রিস্টপূর্ব ধরে জিনোর সম্ভাব্য জন্মের সাল ধরা হয় ৪৯০ খ্রিস্টপূর্ব। প্লেটো বলেন জিনো দেখতে লম্বা ও সুন্দর ছিলেন এবং তার তারুণ্যের দিনগুলিতে পার্মেনিদিস তাকে পছন্দ করতেন। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০-এ জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০-এ মৃত্যু গ্রিক দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Zeno_of_Elea
Zeno of Elea
Zeno of Elea (; Ancient Greek: Ζήνων ὁ Ἐλεᾱ́της; c. 490 – c. 430 BC) was a pre-Socratic Greek philosopher. He was a student of Parmenides and one of the Eleatics. Born in Elea, Zeno defended his instructor's belief in monism, the idea that only one single entity exists that makes up all of reality. He rejected the existence of space, time, and motion. To disprove these concepts, he developed a series of paradoxes to demonstrate why they are impossible. Though his original writings are lost, subsequent descriptions by Plato, Aristotle, Diogenes Laertius, and Simplicius of Cilicia have allowed study of his ideas. Zeno's arguments are divided into two different types: his arguments against plurality, or the existence of multiple objects, and his arguments against motion. Those against plurality suggest that for anything to exist, it must be divisible infinitely, meaning it would necessarily have both infinite mass and no mass simultaneously. Those against motion invoke the idea that distance must be divisible infinitely, meaning infinite steps would be required to cross any distance. Zeno's philosophy is still debated in the present day, and no solution to his paradoxes has been agreed upon by philosophers. His paradoxes have influenced philosophy and mathematics, both in ancient and modern times. Many of his ideas have been challenged by modern developments in physics and mathematics, such as atomic theory, mathematical limits, and set theory.
1425
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%89%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%B8
লেউকিপ্পোস
লিউকিপ্পাস (প্রাচীন গ্রিক: Λεύκιππος লেউকিপ্পোস্‌, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর প্রথমার্ধ) ছিলেন প্রথম দিকের পরমাণুবাদী দার্শনিকদের অন্যতম। তিনি মাইলেটাসে (মতান্তরে অ্যাবডেরায়) জন্মগ্রহণ করেন। গ্রিক দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Leucippus
Leucippus
Leucippus (; Λεύκιππος, Leúkippos; fl. 5th century BCE) was a pre-Socratic Greek philosopher. He is traditionally credited as the founder of atomism, which he developed with his student Democritus. Leucippus divided the world into two entities: atoms, indivisible particles that make up all things, and the void, the nothingness that exists between the atoms. He developed his philosophy as a response to the Eleatics, who believed that all things are one and the void does not exist. Leucippus's ideas were influential in ancient and Renaissance philosophy. Leucippus was the first Western philosopher to develop the concept of atoms, but his ideas only bear a superficial resemblance to modern atomic theory. Leucippus's atoms come in infinitely many forms and exist in constant motion, creating a deterministic world in which everything is caused by the collisions of atoms. Leucippus described the beginning of the cosmos as a vortex of atoms that formed the Earth, the Sun, the stars, and other celestial bodies. As Leucippus considered both atoms and the void to be infinite, he presumed that other worlds must exist as cosmoses are formed elsewhere. Leucippus and Democritus described the soul as an arrangement of spherical atoms, which are cycled through the body through respiration and create thought and sensory input. The only records of Leucippus come from Aristotle and Theophrastus, ancient philosophers who lived after him, and little is known of his life. Most scholars agree that Leucippus existed, but some have questioned this, instead attributing his ideas purely to Democritus. Contemporary philosophers rarely distinguish their respective ideas. Two works are attributed to Leucippus (The Great World System and On Mind), but all of his writing has been lost with the exception of one sentence.
1427
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B8
হিপোক্রেটিস
কসের হিপোক্রেটিস (; Ἱπποκράτης ইপ্পোক্রাতেস্‌); ) (৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ - ৩৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), যিনি দ্বিতীয় হিপোক্রেটিস নামেও পরিচিত, পেরিক্লেসের যুগের একজন প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসক ছিলেন, যাঁকে চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করা হয়। হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাশৈলীর উদ্ভাবনের স্বীকৃতিতে তাঁকে পশ্চিমী চিকিৎসাশাস্ত্রের পিতা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। তাঁর শৈলী দর্শন ও ধর্মীয় রীতিনীতি থেকে পৃথক করে চিকিৎসাশাস্ত্রকে একটি পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসাশাস্ত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। কর্পাস হিপোক্রেটিকামের লেখক ও হিপোক্রেটীয় চিকিৎসকদের কৃতিত্ব এবং স্বয়ং হিপোক্রেটিসের কার্যকলাপ প্রায়শঃই জনমানসে একাকার হলেও, হিপোক্রেটিস কি ভাবতেন, লিখতেন বা করতেন, তা নিয়ে খুব অল্পই জানা যায়। বর্তমানকালেও গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যবহৃত হিপোক্রেটীয় শপথ রচনার কৃতিত্বও হিপোক্রেটিসকে দেওয়া হয়ে থাকে। মনে করা হয়ে থাকে, তিনি পুরাতন চিকিৎসাশৈলীগুলিকে একত্র করে এবং চিকিৎসকদের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি করে নিদানিক চিকিৎসাবিদ্যার পদ্ধতিগত অধ্যয়নকে বহুলাংশে অধ্যয়ন করেন। জীবনী হিপোক্রেটিসের সমসাময়িক প্লেটো রচিত প্রোতাগোরাস এবং ফাইদ্রোস এবং অ্যারিস্টটল রচিত পলিটিক্স নামক গ্রন্থে তাঁর উল্লেখ রয়েছে। হিপোক্রেটিসের প্রথম জীবনীকার দ্বিতীয় শতাব্দীর গ্রিক স্ত্রীরোগবিশারদ এফেসোসের সোরানোসের রচনা থেকেই তাঁর সম্বন্ধীয় ব্যক্তিগত তথ্য জানান যায়। দশম শতাব্দীতে রচিত সুদা এবং দ্বাদশ শতাব্দীতে জন জেটজেসের রচনা তাঁর পরবর্তী জীবনী। ঐতিহাসিকদের মতে, হিপোক্রেটিস আনুমানিক ৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কস নামক একটি গ্রিক দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। সোরানোস লিখেছেন যে হিপোক্রেটিসের পিতা হেরাক্লিদেস একজন চিকিৎসক ছিলেন এবং মাতা প্রাক্সিতেলা ছিলেন তিজানের কন্যা। হিপোক্রেটিসের দুই পুত্র থেসালোস ও দ্রাকো এবং জামাতা পলিবোস তাঁর ছাত্র ছিলেন। গ্যালেনের মতে, পলিবোস ছিলেন হিপোক্রেটিসের প্রকৃত উত্তরাধিকারী এবং থেসালোস ও দ্রাকো উভয়েরই হিপোক্রেটিস (তৃতীয় ও চতুর্থ হিপোক্রেটিস) নামে একটি করে পুত্রসন্তান ছিল। সোরানোসের মতে, পিতামহ প্রথম হিপোক্রেটিস ও পিতা হেরাক্লিদেসের নিকট হতে হিপোক্রেটিস চিকিৎসাশাস্ত্র সম্বন্ধে শিক্ষালাভ করেন। এছাড়া তিনি দিমোক্রিতাস ও গোর্গিয়াসের সঙ্গে অন্যান্য বিষয় অধ্যয়ন করেন। সম্ভবত তিনি কসের আসক্লেপিয়েইওনে থ্রেসের চিকিৎসক হেরোদিকোসের নিকট শিক্ষালাভ করেন। প্লেটো রচিত প্রোতাগোরাস গ্রন্থে হিপোক্রেটিসকে আসক্লেপিয়াদ উপাধিধারী কসের হিপোক্রেটিস নামে উল্লেখ করেছেন। তিনি তাঁর ফাইদ্রোস গ্রন্থে বলেছেন যে আসক্লেপিয়াদ হিপোক্রেটিস মনে করতেন, চিকিৎসাবিদ্যায় শরীরের প্রকৃতির সম্পূর্ণ জ্ঞান প্রয়োজন। হিপোক্রেটিস সারা জীবন চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন ও শিক্ষাদান করেন। তিনি কমপক্ষে থেসালি, থ্রেস ও মার্মারা সমুদ্র পর্য্যন্ত ভ্রমণ করেন। তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অনেক রকম তথ্য পাওয়া যায়। সম্ভবতঃ তিনি ৮৩, ৮৫ বা ৯০ বছর বয়সে লারিসায় মারা যান, যদিও কেউ কেউ মনে করেন, তিনি শতাধিক বছর জীবিত ছিলেন। তত্ত্ব হিপোক্রেটিসকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা হয় যিনি বিশ্বাস করতেন যে, কুসংস্কার বা ঈশ্বর থেকে নয়, বরং প্রাকৃতিক উপায়ে রোগের প্রকোপ ঘটে পিথাগোরাসের শিষ্যদের মতে, হিপোক্রেটিস দর্শন ও চিকিৎসাশাস্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেন কিন্তু বস্তুতঃ তিনি ধর্ম হতে চিকিৎসাবিদ্যাকে পৃথক করেন এবং মতপ্রকাশ করেন যে, রোগ দেবতাদের দ্বারা ঘটে না বরং, জীবনযাপনপদ্ধতি, খাদ্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের দ্বারা নিরূপিত হয়। এমনিকি কর্পাস হিপোক্রেটিকামে কোথাও রহস্যজনক অসুস্থতার উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি। প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসাপদ্ধতি নিডোস ও কস এই দুই অঞ্চলের প্রচলিত পদ্ধতিতে বিভক্ত ছিল। নিডোস অঞ্চলের চিকিৎসাপদ্ধতি রোগনির্ণয়ের ওপর নির্ভর করত, কিন্তু একটি রোগেরই বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে এই পদ্ধতি বিফল হত। অন্যদিকে কস অঞ্চলে প্রচলিত হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাপদ্ধতি রোগনির্ণয়ের ওপর নির্ভর না করে রোগীর সেবা ও আরোগ্য সম্ভাবনাকে প্রাধান্য দিত, যা রোগ নিরাময়ে অধিক সাফল্যের কারণ হয়ে ওঠে। রোগীর নিকট হতে বিশদে রোগের ইতিহাস জেনে তাঁর আরোগ্য সম্ভাবনা বোঝার চেষ্টা করা হত। হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাপদ্ধতিতে সঙ্কটমুহুর্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। সঙ্কটমুহুর্ত এমন একটি সময় যখন হয় রোগীর মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয় অথবা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় রোগনিরাময় ঘটার ফলে রোগী বেঁচে যান। সঙ্কটমুহুর্ত পেরোলে আবার একটি এরকম মুহুর্ত আশার সম্ভাবনা থাকে, যা রোগীর জীবনমৃত্যুর ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। হিপোক্রেটীয় তত্ত্বানুসারে, রোগ শুরু হওয়ার একটি বিশেষ সময় পরেই সঙ্কটের সময় শুরু হয়। এই নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে যদি সঙ্কটমুহুর্ত আসে, তবে তা বারবার ফিরে আসতে পারে। গ্যালেনের মতে, এই ধারণা হিপোক্রেটিস প্রথম প্রচলন করেন, যদিও তাঁর পূর্ব থেকেই এই ধারণা প্রচলিত ছিল এমন মত রয়েছে। হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাপদ্ধতি একটি নিরীহ ও নিষ্ক্রিয় পদ্ধতি বিশেষ। প্রকৃতির নিরাময়শক্তির ওপর এই পদ্ধতি নির্ভর করত। এই তত্ত্বানুসারে, চারটি ধাতুর ভারসাম্য রক্ষা করার ক্ষমতা শরীরের রয়েছে যা নিরাময়ের জন্য প্রয়োজনীয়। সেই কারণে এই চিকিৎসাপদ্ধতি এই প্রাকৃতিক উপায়কে আরও সহজ করার দিকে মনোযোগ দেয়। রোগীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও শরীরের বিশ্রামের গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। হিপোক্রেটীয় পদ্ধতি সাধারণভাবে রোগীদের একদমই কষ্ট দিত না। যেমন, বিশুদ্ধ জল বা মদ দিয়ে ক্ষত পরিষ্কার করা হত। কখনও বা আরামদায়ক মলম লাগানোও হয়ে থাকত। হিপোক্রেটিস ওষুধ প্রদান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা প্রদান করতে চাইতেন না। সাধারণ রোগনির্ণয়ের পর সাধারণ চিকিৎসা করা হত। তিনি সাধারণ চিকিৎসা হিসেবে উপবাস ও আপেলসুরার সির্কা পান করার পথয় দিতেন। তাঁর মতে রোগের সময় খাদ্যগ্রহণ করলে তা রোগকেই খাবার দেওয়ার মত হয়। তথ্যসূত্র উৎস . . . . . . PMID 3959439 . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . আরও পড়ুন . . . . বহিঃসংযোগ The Harvard Classics Volume 38 with "The Oath of Hippocrates", project gutenberg Hippocrates entry in the Internet Encyclopedia of Philosophy First printed editions of the Hippocratic Collection at the Bibliothèque Interuniversitaire de Médecine of Paris (BIUM) studies and digitized texts by the BIUM (Bibliothèque interuniversitaire de médecine et d'odontologie, Paris) see its digital library Medic@. Wesley D. Smith. Hippocrates. Free full-text article from Encyclopædia Britannica Online. Last accessed 24 April 2012. চিকিৎসক গ্রিক সভ্যতা দর্শনের ইতিহাস
https://en.wikipedia.org/wiki/Hippocrates
Hippocrates
Hippocrates of Kos (, Greek: Ἱπποκράτης ὁ Κῷος, translit. Hippokrátēs ho Kôios; c. 460 – c. 370 BC), also known as Hippocrates II, was a Greek physician and philosopher of the classical period who is considered one of the most outstanding figures in the history of medicine. He is traditionally referred to as the "Father of Medicine" in recognition of his lasting contributions to the field, such as the use of prognosis and clinical observation, the systematic categorization of diseases, and the (however misguided) formulation of humoral theory. The Hippocratic school of medicine revolutionized ancient Greek medicine, establishing it as a discipline distinct from other fields with which it had traditionally been associated (theurgy and philosophy), thus establishing medicine as a profession. However, the achievements of the writers of the Hippocratic Corpus, the practitioners of Hippocratic medicine, and the actions of Hippocrates himself were often conflated; thus very little is known about what Hippocrates actually thought, wrote, and did. Hippocrates is commonly portrayed as the paragon of the ancient physician and credited with coining the Hippocratic Oath, which is still relevant and in use today. He is also credited with greatly advancing the systematic study of clinical medicine, summing up the medical knowledge of previous schools, and prescribing practices for physicians through the Hippocratic Corpus and other works.
1428
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B8
সক্রেটিস
সক্রেটিস (প্রাচীন গ্রিক ভাষায় Σωκράτης সক্রাত্যাস্‌) (৪৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ - ৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। এই মহান দার্শনিকের সম্পর্কে তথ্য লিখিতভাবে পাওয়া যায় কেবলমাত্র তাঁর শিষ্য প্লেটোর ডায়ালগ এবং সৈনিক জেনোফনের রচনা থেকে। তৎকালীন শাসকদের কোপানলে পড়ে তাঁকে হেমলক বিষ পানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাকে পশ্চিমি দর্শনের ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি এমন এক দার্শনিক চিন্তাধারার জন্ম দিয়েছেন যা দীর্ঘ ২০০০ বছর ধরে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, দর্শন ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছে। সক্রেটিস ছিলেন এক মহান সাধারণ শিক্ষক, যিনি কেবল শিষ্য গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে বিশ্বাসী ছিলেন না। তার কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষায়তন ছিলনা। যেখানেই যাকে পেতেন তাকেই মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর বোঝানোর চেষ্টা করতেন। তিনি মানব চেতনায় আমাদের ইচ্ছাকে নিন্দা করেছেন, কিন্তু সৌন্দর্য দ্বারা নিজেও আনন্দিত হয়েছেন। জীবনী জীবন ও কর্ম সক্রেটিসের জীবনের বিস্তৃত সূত্র হিসেবে বর্তমানকালে তিনটি উৎসের উল্লেখ করা যেতে পারে: প্লেটোর ডায়ালগসমূহ, এরিস্টোফেনিসের নাটকসমূহ এবং জেনোফেনোর ডায়ালগসমূহ। সক্রেটিস নিজে কিছু লিখেছেন বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এরিস্টোফেনিসের নাটক দ্য ক্লাউডে সক্রেটিসকে দেখানো হয়েছে একজন ভাঁড় হিসেবে যে তার ছাত্রদের শিক্ষা দেয় কীভাবে ঋণের দায় থেকে বুদ্ধি খাটিয়ে মুক্তি পাওয়া যায়। এরিস্টোফেনিসের অধিকাংশ রচনাই যেহেতু ব্যঙ্গাত্মক ছিল সেহেতু এই রচনায় সক্রেটিসকে যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে গ্রহণযোগ্য নয়। প্লেটোর বর্ণনামতে সক্রেটিসের বাবার নাম সফ্রোনিস্কাস এবং মায়ের নাম ফিনারিটি যিনি একজন ধাত্রী ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম জানথিপি যার বয়স ছিল সক্রেটিসের থেকে অনেক কম। সংসার জীবনে তাঁদের তিন পুত্রসন্তানের জন্ম হয় যাঁদের নাম ছিল লামপ্রোক্লিস, সফ্রোনিস্কাস এবং মেনেজেনাস। সক্রেটিস তাঁর শাস্তি কার্যকর হওয়ার পূর্বে পালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ ফিরিয়ে দেন। এর পর নিজ পুত্রদের ত্যাগ করার জন্য সক্রেটিসের বন্ধু ক্রিটো তার সমালোচনা করেছিলেন। সক্রেটিসের জন্ম ৪৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিসের এথেন্স নগরীতে এলোপাকি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি ঠিক কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন তা পরিষ্কার নয়। ফিলাসের টিমোন এবং পরবর্তী আরো কিছু উৎস অনুসারে প্রথম জীবনে তিনি তাঁর বাবার পেশা অবলম্বন করেছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন একজন ভাস্কর। সে হিসেবে তাঁর প্রথম জীবন কেটেছে ভাস্করের কাজ করে। প্রাচীনকালে অনেকেই মনে করত গ্রিসের অ্যাক্রোপলিসে দ্বিতীয় শতাব্দী পর্যন্ত বিরাজমান ঈশ্বরের করুণা চিহ্নিতকারী মূর্তিগুলো সক্রেটিসের হাতে তৈরি। অবশ্য বর্তমান কালের বুদ্ধিজীবীরা এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ খুঁজে পাননি। অপরদিকে সক্রেটিস কোনো পেশা অবলম্বন করেননি এমন প্রমাণও রয়েছে। জেনোফোন রচিত সিম্পোজিয়ামে সক্রেটিসকে বলতে শোনা যায়, তিনি কখনো কোনো পেশা অবলম্বন করবেন না, কারণ তিনি ঠিক তা-ই করবেন যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন আর তা হচ্ছে দর্শন সম্বন্ধে আলোচনা। এরিস্টোফেনিসের বর্ণনায় দেখা যায় সক্রেটিস শিক্ষার বিনিময়ে অর্থ নিতেন এবং গ্রিসের চেরিফোনে একটি সোফিস্ট বিদ্যালয়ও পরিচালনা করতেন। তার দ্য ক্লাউডস্‌ রচনায় এই ভাষ্য পাওয়া গিয়েছে। আবার প্লেটোর অ্যাপোলজি এবং জেনোফোনের সিম্পোজিয়ামে দেখা যায় সক্রেটিস কখনোই শিক্ষার বিনিময়ে অর্থ নেননি। বরঞ্চ তিনি তার দারিদ্র্যের দিকে নির্দেশ করেই প্রমাণ দিতেন যে, তিনি কোনো পেশাদার শিক্ষক নন। তাকে বলতে শোনা যায়: প্লেটোর ডায়ালগগুলোর বিভিন্ন স্থানে লেখা হয়েছে যে, সক্রেটিস কোনো এক সময় সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। প্লেটোর বর্ণনায় সক্রেটিস বলেন, তিনি তিন তিনটি অভিযানে এথেনীয় সেনাবাহিনীর সাথে যোগ দিয়েছেন। এই অভিযানগুলো সংঘটিত হয়েছিল যথাক্রমে পটিডিয়া, অ্যাম্‌ফিপোলিস এবং ডেলিয়ামে। সিম্পোজিয়ামে আলসিবিয়াডিস নামক চরিত্র বর্ণনা করে পটিডিয়া এবং ডেলিয়ামের যুদ্ধে সক্রেটিসের বীরত্বের কথা এবং এর আগের যুদ্ধে তিনি কীভাবে নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন সেকথা। ডেলিয়ামের যুদ্ধে তাঁর অসাধারণ অবদানের কথা লাকিস নামক রচনাতেও বর্ণীত হয়েছে। মাঝেমধ্যেই সক্রেটিস বিচারালয়ের সমস্যাকে যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন একজন বিচারক দর্শন থেকে সরে আসবেন কী-না তা ভেবে দেখা তেমনই প্রয়োজন যেমন উপযুক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করবে কী-না তা একজন সৈন্যের ভেবে দেখা প্রয়োজন। সক্রেটিস দেখতে মোটেও সুদর্শন ছিলেননা। টাকবিশিষ্ট মাথা, চ্যাপ্টা অবনত নাক, ছোটো ছোটো চোখ, স্ফীত উদর এবং অস্বাভাবিক গতিভঙ্গির সমন্বয়ে গঠিত ছিল তার সামগ্রিক চেহারা। দেহের শ্রী তেমন না-থাকলেও তার রসবোধ ছিল প্রখর। রঙ্গ করে প্রায়শই বলতেন: "নাসারন্ধ্রটি বড়ো হওয়ায় ঘ্রাণ নেওয়ার বিশেষ সুবিধা হয়েছে; নাকটি বেশি চ্যাপ্টা হওয়াতে দৃষ্টি কোথাও বাধা পায়না।" কথাবার্তা ও আচার-আচরণে তিনি ছিলেন মধুর ব্যক্তি। তাই যে-ই তার সঙ্গে কথা বলত সে-ই তার কথাবার্তা ও চরিত্রসৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যেতো। অধিকাংশের বর্ণনামতেই তিনি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রদান করতেননা। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারই ছিল তার শিক্ষায়তন। দর্শন অনুশীলন করতে গিয়ে সংসার ও জীবিকা সম্পর্কে খুবই উদাসীন হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এ কারণে শেষ জীবনে তাঁর পুরো পরিবারকেই দারিদ্র্য ও অনাহারের মধ্যে জীবন যাপন করতে হয়। বেশির ভাগ সময়েই তিনি তাঁর শিষ্যদের বাড়িতে পানাহার করতেন। স্ত্রী জানথিপির কাছে তিনি ছিলেন অবজ্ঞার পাত্র। জানথিপি প্রায়ই বলতেন, তার নিষ্কর্মা স্বামী পরিবারের জন্য সৌভাগ্য না-এনে দুঃখ কষ্টই এনেছেন বেশি। তবে বাইরে বাইরে যতই তিক্ততা থাকুক অন্তরের অন্তস্থলে স্বামীর জন্য ভালোবাসা ছিল জানথিপির। সক্রেটিসের মৃত্যুতে তিনি যেভাবে শোক প্রকাশ করছেন তা থেকেই এই ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়। উৎস এবং সক্রেটিক সমস্যা সক্রেটিস তার শিক্ষা নথিভুক্ত করেননি। আমরা তাঁর সম্পর্কে যা জানি তা অন্যদের বিবরণ থেকে আসে: প্রধানত দার্শনিক প্লেটো এবং ঐতিহাসিক জেনোফোন, যারা উভয়েই তাঁর ছাত্র ছিলেন; এথেনীয় কমিক নাট্যকার অ্যারিস্টোফেনেস (সক্রেটিসের সমসাময়িক); এবং প্লেটোর ছাত্র অ্যারিস্টটল, যিনি সক্রেটিসের মৃত্যুর পরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এই প্রাচীন বিবরণগুলি থেকে প্রায়শই পরস্পরবিরোধী গল্পগুলি শুধুমাত্র পণ্ডিতদের সক্রেটিসের সত্যিকারের চিন্তাগুলিকে নির্ভরযোগ্যভাবে পুনর্গঠনের ক্ষমতাকে জটিল করে তোলে, যা সক্রেটিক সমস্যা হিসাবে পরিচিত। প্লেটো, জেনোফোন এবং অন্যান্য লেখকদের কাজ যারা সক্রেটিসের চরিত্রটিকে একটি অনুসন্ধানী হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেন, সক্রেটিস এবং তার কথোপকথনের মধ্যে একটি কথোপকথনের আকারে রচিত এবং সক্রেটিসের জীবন ও চিন্তার তথ্যের মূল উৎস প্রদান করে। সক্রেটিক সংলাপ (লোগোস সোক্র্যাটিকোস) এই নবগঠিত সাহিত্য ধারাকে বর্ণনা করার জন্য অ্যারিস্টটল দ্বারা উদ্ভাবিত একটি শব্দ। যদিও তাদের রচনার সঠিক তারিখ অজানা, কিছু সম্ভবত সক্রেটিসের মৃত্যুর পরে লেখা হয়েছিল। অ্যারিস্টটল যেমন প্রথম উল্লেখ করেছিলেন, সংলাপগুলি সক্রেটিসকে কতটা প্রামাণিকভাবে চিত্রিত করেছে তা কিছু বিতর্কের বিষয়। প্লেটো এবং জেনোফোন (অসুখ) একজন সৎ মানুষ, জেনোফোন প্রশিক্ষিত দার্শনিক ছিলেন না। তিনি সক্রেটিসের যুক্তিকে ধারণা বা ব্যাখ্যা করতে পারেননি। যুদ্ধক্ষেত্রে তার বুদ্ধিমত্তা, দেশপ্রেম এবং সাহসের জন্য তিনি সক্রেটিসের প্রশংসা করেছিলেন। তিনি চারটি রচনায় সক্রেটিস নিয়ে আলোচনা করেছেন: মেমোরাবিলিয়া, দ্য ইকোনমিকাস, সিম্পোজিয়াম এবং সক্রেটিসের ক্ষমা। তিনি তার অ্যানাবাসিস-এ সক্রেটিসকে সমন্বিত একটি গল্প উল্লেখ করেছেন। অইকোনমিকাস ব্যবহারিক কৃষি বিষয়ক আলোচনার বর্ণনা দেয়। প্লেটোর এপোলজির মতো, জেনোফোনের এপোলজিয়া সক্রেটিসের বিচারের বর্ণনা দেয়, কিন্তু কাজগুলি উল্লেখযোগ্যভাবে ভিন্ন হয়ে যায় এবং ডব্লিউ কে সি গুথরির মতে, জেনোফোনের বিবরণ সক্রেটিসকে "অসহনীয় ধোঁয়া ও আত্মতুষ্টি" চিত্রিত করে। সিম্পোজিয়াম হল ডিনার-পরবর্তী আলোচনার সময় অন্যান্য বিশিষ্ট এথেনিয়ানদের সাথে সক্রেটিসের একটি কথোপকথন, কিন্তু প্লেটোর সিম্পোজিয়াম থেকে একেবারেই আলাদা: অতিথি তালিকায় কোন ওভারল্যাপ নেই, এবং দেবতাদের বিরুদ্ধে; মূলত, এটি সক্রেটিসের জন্য একটি নতুন ক্ষমা প্রার্থনার জন্য একত্রিত বিভিন্ন গল্পের একটি সংগ্রহ। প্লেটোর সক্রেটিসের প্রতিনিধিত্ব সহজবোধ্য নয়। প্লেটো সক্রেটিসের একজন ছাত্র ছিলেন এবং পাঁচ দশক ধরে তাকে ছাড়িয়ে গেছেন। সক্রেটিসের গুণাবলী উপস্থাপনে প্লেটো কতটা বিশ্বস্ত তা বিতর্কের বিষয়; তিনি সক্রেটিসের নিজস্ব মতামত ব্যতীত অন্য কোন মতের প্রতিনিধিত্ব করেননি এমন দৃষ্টিভঙ্গি অনেক সমসাময়িক পণ্ডিতদের দ্বারা শেয়ার করা হয়নি। এই সন্দেহের চালক হল সক্রেটিসের চরিত্রের অসঙ্গতি যা তিনি উপস্থাপন করেছেন। এই অসামঞ্জস্যতার একটি সাধারণ ব্যাখ্যা হল যে প্লেটো প্রাথমিকভাবে ঐতিহাসিক সক্রেটিসকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছিলেন, পরে তার লেখায় তিনি সক্রেটিসের কথায় তার নিজস্ব মতামত সন্নিবেশিত করতে পেরে খুশি ছিলেন। এই বোঝাপড়ার অধীনে, প্লেটোর আগের রচনাগুলির সক্রেটিক সক্রেটিস এবং প্লেটোর পরবর্তী লেখাগুলির প্লেটোনিক সক্রেটিসগুলির মধ্যে একটি পার্থক্য রয়েছে, যদিও উভয়ের মধ্যে সীমানাটি অস্পষ্ট বলে মনে হয়। জেনোফোন এবং প্লেটোর বিবরণ ব্যক্তি হিসাবে সক্রেটিসের উপস্থাপনায় ভিন্ন। জেনোফোনের সক্রেটিস প্লেটোর চেয়ে নিস্তেজ, কম হাস্যকর এবং কম বিদ্রুপাত্মক। জেনোফোনের সক্রেটিসেরও দার্শনিক বৈশিষ্ট্যের অভাব রয়েছে- প্লেটোর সক্রেটিসের অজ্ঞতা, সক্রেটিক পদ্ধতি বা এলেঞ্চাস- এবং মনে করেন এনক্রেটিয়া (আত্ম-নিয়ন্ত্রণ) গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্ব, যা প্লেটোর সক্রেটিসের ক্ষেত্রে নয়। মূলত, ঐতিহাসিক সক্রেটিসকে পুনর্গঠন করতে আমাদের সাহায্য করতে পারে না এমনকি তাদের বর্ণনাগুলি ওভারল্যাপ করার ক্ষেত্রেও, কারণ লেখকরা একে অপরের বিবরণকে প্রভাবিত করতে পারেন। অ্যারিস্টোফেনস এবং অন্যান্য উৎস অ্যারিস্টোফেনেস সহ অ্যাথেনিয়ান কমেডির লেখকরাও সক্রেটিস সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন। সক্রেটিসকে নিয়ে অ্যারিস্টোফেনেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কমেডি হল দ্য ক্লাউডস, যেখানে সক্রেটিস একটি কেন্দ্রীয় চরিত্র। এই নাটকে, অ্যারিস্টোফেনেস সক্রেটিসের একটি ব্যঙ্গচিত্র উপস্থাপন করেন যা সফিজমের দিকে ঝুঁকে পড়ে,[23] সক্রেটিসকে একজন অযৌক্তিক নাস্তিক বলে উপহাস করে। সক্রেটিস ইন ক্লাউডস প্রাকৃতিক দর্শনে আগ্রহী, যা প্লেটোর ফায়েডোতে তাকে চিত্রিত করেছে। কি নিশ্চিত যে ৪৫ বছর বয়সে, সক্রেটিস ইতিমধ্যেই একজন দার্শনিক হিসাবে এথেনিয়ানদের আগ্রহকে ধরে ফেলেছিলেন। ঐতিহাসিক সক্রেটিসের পুনর্গঠনে অ্যারিস্টোফেনেসের কাজ কার্যকর কিনা তা স্পষ্ট নয়। অন্যান্য প্রাচীন লেখক যারা সক্রেটিস সম্পর্কে লিখেছেন তারা হলেন স্ফেটাস, অ্যান্টিসথেনিস, অ্যারিস্টিপাস, ব্রাইসন, সেবেস, ক্রিটো, ইউক্লিড অফ মেগার, ফেডো এবং অ্যারিস্টটল, যাদের সকলেই সক্রেটিসের মৃত্যুর পরে লিখেছিলেন। অ্যারিস্টটল সক্রেটিসের সমসাময়িক ছিলেন না; তিনি প্লেটোর অধীনে বিশ বছর অধ্যয়ন করেন। অ্যারিস্টটল জেনোফোন এবং প্লেটোর পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই সক্রেটিসের সাথে আচরণ করেন, যার সক্রেটিসের সাথে মানসিক বন্ধন ছিল এবং তিনি একজন দার্শনিক হিসাবে সক্রেটিসের মতবাদগুলি যাচাই করেন। অ্যারিস্টটল সক্রেটিসের বিভিন্ন লিখিত ও অলিখিত গল্পের সাথে পরিচিত ছিলেন। সক্রেটিসকে বোঝার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা সীমিত। তিনি সক্রেটিসের উপর ব্যাপকভাবে লেখেন না; এবং, যখন তিনি করেন, তিনি প্রধানত প্লেটোর প্রথম দিকের সংলাপগুলি নিয়েই ব্যস্ত থাকেন৷[31] দর্শনের ইতিহাসে তার নির্ভরযোগ্যতা নিয়েও সাধারণ সন্দেহ রয়েছে। তবুও, সক্রেটিসকে বোঝার জন্য তার সাক্ষ্য গুরুত্বপূর্ণ। সক্রেটিক সমস্যা "দার্শনিক হিসাবে সক্রেটিস এর মূল্য" (১৮১৮) শিরোনামের একটি মূল রচনায়, দার্শনিক ফ্রেডরিখ শ্লেইরমাচার জেনোফোনের বিবরণ আক্রমণ করেছিলেন; তার আক্রমণ ব্যাপকভাবে গৃহীত হয় এবং সক্রেটিক সমস্যার জন্ম দেয়। শ্লেইরমাচার জেনোফোনের সমালোচনা করেছিলেন সক্রেটিসের নির্বোধ উপস্থাপনার জন্য। জেনোফন একজন সৈনিক ছিলেন, শ্লেইরমাকার যুক্তি দিয়েছিলেন, এবং তাই সক্রেটিক ধারণাগুলিকে প্রকাশ করার জন্য তাকে ভালভাবে স্থাপন করা হয়নি। তদুপরি, জেনোফোন তার প্রাক্তন বন্ধু এবং শিক্ষকের চিত্রণে পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন: তিনি বিশ্বাস করতেন সক্রেটিসকে এথেন্সের দ্বারা অন্যায়ভাবে আচরণ করা হয়েছিল, এবং একটি নিরপেক্ষ বিবরণ দেওয়ার পরিবর্তে তার দৃষ্টিভঙ্গি প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন। শ্লেইরমাকার বলেন, ফলাফল হল যে জেনোফন সক্রেটিসকে একজন অনুপ্রেরণাদায়ক দার্শনিক হিসাবে চিত্রিত করেছিলেন। ২০ শতকের গোড়ার দিকে, জেনোফোনের অ্যাকাউন্ট মূলত প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। দার্শনিক কার্ল জোয়েল, অ্যারিস্টটলের লোগো সোক্র্যাটিকোসের ব্যাখ্যার উপর ভিত্তি করে তার যুক্তি তুলে ধরেন যে সক্রেটিক সংলাপগুলি বেশিরভাগই কাল্পনিক: জোয়েলের মতে, সংলাপের লেখকরা সংলাপের কিছু সক্রেটিক বৈশিষ্ট্যের অনুকরণ করছিলেন। ২০ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, জোয়েলের যুক্তির ভিত্তিতে ওলোফ গিগন এবং ইউজিন ডুপ্রেলের মতো দার্শনিকরা প্রস্তাব করেছিলেন যে সক্রেটিসের অধ্যয়ন একটি ঐতিহাসিক সক্রেটিসকে পুনর্গঠনের লক্ষ্য না করে তার চরিত্র এবং বিশ্বাসের বিভিন্ন সংস্করণের উপর ফোকাস করা উচিত।[38] পরে, প্রাচীন দর্শনের পণ্ডিত গ্রেগরি ভ্লাস্টোস পরামর্শ দেন যে প্লেটোর প্রথম দিকের সক্রেটিক কথোপকথনগুলি তার পরবর্তী লেখাগুলির চেয়ে ঐতিহাসিক সক্রেটিসের পক্ষে অন্যান্য প্রমাণের সাথে বেশি সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, একটি যুক্তি যা সক্রেটিসের নিজস্ব বিবর্তিত চিত্রণে প্লেটোর অসঙ্গতির উপর ভিত্তি করে। প্লেটোর সাথে সম্মত হওয়া ছাড়া ভ্লাস্টোস জেনোফোনের অ্যাকাউন্টকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছিলেন। অতি সম্প্রতি, চার্লস এইচ কান অমীমাংসিত সক্রেটিক সমস্যার উপর সংশয়বাদী অবস্থানকে শক্তিশালী করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন যে শুধুমাত্র প্লেটোর ক্ষমা প্রার্থনার কোনো ঐতিহাসিক তাৎপর্য রয়েছে। জীবনী সক্রেটিস ৪৭০ বা ৪৬৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে অ্যালোপেসের অ্যাথেনিয়ান ডেমে যথাক্রমে সোফ্রোনিস্কাস এবং ফেনারেতে, একজন পাথরকর্মী এবং একজন ধাত্রী হিসাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন; অতএব, তিনি একজন এথেনীয় নাগরিক ছিলেন, তুলনামূলকভাবে সমৃদ্ধ এথেনিয়ানদের কাছে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি তার পিতার আত্মীয়দের কাছাকাছি থাকতেন এবং উত্তরাধিকারসূত্রে, প্রথা অনুযায়ী, তার পিতার সম্পত্তির অংশ, আর্থিক উদ্বেগমুক্ত একটি জীবন রক্ষা করেছিলেন। তার শিক্ষা এথেন্সের আইন ও রীতিনীতি অনুসরণ করে। তিনি পড়া এবং লেখার মৌলিক দক্ষতা শিখেছিলেন এবং বেশিরভাগ ধনী এথেনিয়ানদের মতো, জিমন্যাস্টিকস, কবিতা এবং সঙ্গীতের মতো অন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পাঠ পেয়েছিলেন। তিনি দুবার বিয়ে করেছিলেন (যা প্রথম এসেছে তা স্পষ্ট নয়): জ্যানথিপের সাথে তার বিয়ে হয়েছিল যখন সক্রেটিসের বয়স পঞ্চাশে, এবং আরেকটি বিয়ে হয়েছিল অ্যারিস্টিডেসের কন্যার সাথে, একজন এথেনীয় রাষ্ট্রনায়ক। এখানে এক্সাথিপির সঙ্গে তার তিনটি পুত্র ছিল. প্লেটোর মতে সক্রেটিস পেলোপনেশিয়ান যুদ্ধের সময় তার সামরিক সেবা সম্পন্ন করেন এবং তিনটি অভিযানে নিজেকে আলাদা করেন। আরেকটি ঘটনা যা আইনের প্রতি সক্রেটিসের শ্রদ্ধাকে প্রতিফলিত করে তা হল লিওন দ্য সালামিনিয়ানের গ্রেফতার। প্লেটো যেমন তার ক্ষমাপ্রার্থীতে বর্ণনা করেছেন, সক্রেটিস এবং অন্য চারজনকে থলোসের কাছে তলব করা হয়েছিল এবং ত্রিশ অত্যাচারীদের (যা 404 খ্রিস্টপূর্বাব্দে শাসন শুরু করেছিল) প্রতিনিধিদের দ্বারা লিওনকে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য গ্রেপ্তার করার জন্য বলা হয়েছিল। আবার সক্রেটিসই একমাত্র বিরত ছিলেন, তিনি যাকে অপরাধ বলে মনে করেন তাতে অংশ নেওয়ার পরিবর্তে অত্যাচারীদের ক্রোধ এবং প্রতিশোধের ঝুঁকি নেওয়া বেছে নিয়েছিলেন। সক্রেটিস এথেনীয় জনসাধারণের এবং বিশেষ করে এথেনীয় যুবকদের কাছ থেকে প্রচুর আগ্রহ আকর্ষণ করেছিলেন। তিনি কুখ্যাতভাবে কুৎসিত ছিলেন, তার একটি চ্যাপ্টা নাক, চোখ বুলিয়ে যাওয়া এবং একটি বড় পেট ছিল; তার বন্ধুরা তার চেহারা নিয়ে মজা করে। সক্রেটিস তার নিজের চেহারা এবং ব্যক্তিগত আরাম সহ বস্তুগত আনন্দের প্রতি উদাসীন ছিলেন। তিনি ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি অবহেলা করতেন, খুব কমই স্নান করতেন, খালি পায়ে হাঁটতেন, এবং শুধুমাত্র একটি ন্যাকড়াযুক্ত কোটের মালিক ছিলেন। তিনি তার খাওয়া, মদ্যপান, এবং যৌনতা সংযত করেছিলেন, যদিও তিনি সম্পূর্ণ বিরত থাকার অভ্যাস করেননি। যদিও সক্রেটিস তারুণ্যের প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন, যেমনটি প্রাচীন গ্রীসে সাধারণ এবং গৃহীত ছিল, তিনি যুবকদের প্রতি তার আবেগকে প্রতিরোধ করেছিলেন কারণ প্লেটো বর্ণনা করেছেন, তিনি তাদের আত্মাকে শিক্ষিত করতে আরও আগ্রহী ছিলেন। সক্রেটিস তার শিষ্যদের কাছ থেকে যৌনতা কামনা করেননি, যেমনটি প্রায়শই এথেন্সে বয়স্ক এবং কম বয়সী পুরুষদের মধ্যে ছিল। রাজনৈতিকভাবে, তিনি এথেন্সের গণতন্ত্রী এবং অলিগার্চদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পক্ষ নেননি; তিনি উভয়ের সমালোচনা করেন। অ্যাপোলজি, ক্রিটো, ফেডো এবং সিম্পোজিয়ামে প্রদর্শিত সক্রেটিসের চরিত্রটি অন্যান্য উত্সের সাথে একমত হয় যা প্লেটোর সক্রেটিসকে বাস্তব সক্রেটিসের প্রতিনিধি হিসাবে চিত্রিত করার আস্থা দেয়। সক্রেটিস ৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এথেন্সে অশুভতা এবং তরুণদের দুর্নীতির বিচারের পর মারা যান যা মাত্র একদিনের জন্য স্থায়ী হয়েছিল। তিনি তার শেষ দিনটি কারাগারে বন্ধু এবং অনুসারীদের মধ্যে কাটিয়েছেন যারা তাকে পালানোর পথ প্রস্তাব করেছিলেন, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। পরের দিন সকালে তার সাজা অনুসারে হেমলক বিষ পান করে তিনি মারা যান। তিনি কখনোই এথেন্স ছেড়ে যাননি, শুধুমাত্র সামরিক অভিযানের সময় যা তিনি অংশগ্রহণ করেছিলেন। বিচার ও মৃত্যু এথেনীয় সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ ক্ষমতার যুগ থেকে পেলোপনেশীয় যুদ্ধে স্পার্টা ও তার মিত্রবাহিনীর কাছে হেরে যাওয়া পর্যন্ত পুরো সময়টাই সক্রেটিস বেঁচে ছিলেন। পরাজয়ের গ্লানি ভুলে এথেন্স যখন পুনরায় স্থিত হওয়ার চেষ্টা করছিল তখনই সেখানকার জনগণ একটি কর্মক্ষম সরকার পদ্ধতি হিসেবে গণতন্ত্রের সঠিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করেছিল। সক্রেটিসও গণতন্ত্রের একজন সমালোচক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তাই অনেকে সক্রেটিসের বিচার ও মৃত্যুটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এথেনীয় সরকার সক্রেটিসকে এমন দোষে দোষী বলে সাব্যস্ত করেছিল যাতে তাঁর মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হতে পারে। কিন্তু তাঁর গুণাবলি ও সত্যের প্রতি অটল মনোভাব সত্যিকার অর্থেই তৎকালীন সরকারি নীতি ও সমাজের সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টিতে সমর্থ হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে থুসিডাইডিস বলেছেন: "এক কথায় তার উদ্দেশ্যে হাততালি দেয়া যেতে পারে যে, প্রথমবারের মতো কোনো একটি অনৈতিক আইন প্রণয়ন করেছে এবং যে অন্য এমন একজনকে কোনো একটি অপরাধ করতে উৎসাহিত করে যে, অপরাধের চিন্তা সে নিজেই কখনো করেনি।" সক্রেটিস সরাসরি বা অন্য কোনোভাবে বিভিন্ন সময়ে স্পার্টার অনেক নীতির প্রশংসা করেছে যে, স্পার্টা ছিল এথেন্সের ঘোর শত্রু। এসব সত্ত্বেও ঐতিহাসিকভাবে সমাজের চোখে তার সবচেয়ে বড়ো অপরাধ ছিল সামাজিক ও নৈতিক ক্ষেত্রসমূহ নিয়ে তীব্র সমালোচনা। প্লেটোর মতে সক্রেটিস সরকারের জন্য একটি বিষফোঁড়ার কাজ করেছিলেন যার মূলে ছিল বিচার ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ও ভালোর উদ্দেশ্য নিয়ে সমালোচনা। এথেনীয়দের সুবিচারের প্রতি নিষ্ঠা বাড়ানোর চেষ্টাকেই তাঁর শাস্তির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে। প্লেটোর অ্যাপোলজি গ্রন্থের ভাষ্যমতে, সক্রেটিসের বন্ধু চেরিফোন একদিন ডেলফির ওরাক্‌লের কাছে গিয়ে প্রশ্নে করে যে, সক্রেটিসের চেয়ে প্রাজ্ঞাবান কেউ আছে কী-না। উত্তরে ওরাক্‌ল জানায় সক্রেটিসের চেয়ে প্রাজ্ঞ কেউ নেই। এর পর থেকেই সক্রেটিসকে সমাজের চোখে একজন রাষ্ট্রীয় অপরাধী ও সরকারের জন্য বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা হতে থাকে। সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন ওরাক্‌লের কথাটি ছিল নিছক হেঁয়ালি। কারণ ওরাক্‌ল কখনো কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জ্ঞান অর্জনের কারণে প্রশংসা করেনা। এটি আদৌ হেঁয়ালি ছিল কী-না তা পরীক্ষা করার জন্য সক্রেটিস সাধারণ এথেনীয়রা যে লোকদের জ্ঞানী বিবেচনা করত তাদের কাছে গিয়ে কিছু প্রশ্ন করতে শুরু করেন। তিনি এথেন্সের মানুষদেরকে উত্তম, সৌন্দর্য এবং গুণ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। উত্তর শুনে তিনি বুঝতে পারেন এদের কেউই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানেনা কিন্তু মনে করে যে তারা সব জানে। এ থেকে তিনি সিদ্ধান্তে উপনীত হন এই দৃষ্টিভঙ্গিতে সক্রেটিস সবচেয়ে প্রাজ্ঞ ও জ্ঞানী যে, সে যা জানে না তা জানে বলে কখনো মনে করেনা। তার এ ধরনের হেঁয়ালিসূচক প্রজ্ঞা ও জ্ঞান তখনকার স্বনামধন্য এথেনীয়দের বিব্রত অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়। সক্রেটিসের সামনে গেলে তাদের মুখ শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কারণ তারা কোনো প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারতনা। এ থেকেই সবাই তাঁর বিরোধিতা শুরু করে। এছাড়াও সক্রেটিসকে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে চরিত্রহীনতা ও দুর্নীতি প্রবেশ করানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। সব অভিযোগ বিবেচনায় এনে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। মৃত্যুর মাধ্যম নির্দিষ্ট হয় হেমলক বিষ পান। প্লেটোর ফিডো গ্রন্থের শেষে সক্রেটিসের মৃত্যুর পর্বের বর্ণনা উদ্ধৃত আছে। কারাগার থেকে পালানোর উদ্দেশ্যে সক্রেটিস ক্রিটোর অনুরোধ ফিরিয়ে দেন। বিষ পানের পর সক্রেটিসকে হাঁটতে আদেশ করা হয় যতক্ষণ না তাঁর পদযুগল ভারী মনে হয়। শুয়ে পড়ার পর যে লোকটি সক্রেটিসের হাতে বিষ তুলে দিয়েছিল সে তাঁর পায়ের পাতায় চিমটি কাটে। সক্রেটিস সে চিমটি অনুভব করতে পারেননি। তার দেহ বেয়ে অবশতা নেমে আসে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। মৃত্যুর পূর্বে তার বলা শেষ বাক্য ছিল: "ক্রিটো, অ্যাসক্লেপিয়াস আমাদের কাছে একটি মোরগ পায়, তার ঋণ পরিশোধ করতে ভুলোনা যেন।" অ্যাসক্লেপিয়াস হচ্ছে গ্রিকদের আরোগ্য লাভের দেবতা। সক্রেটিসের শেষ কথা থেকে বোঝা যায়, তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন মৃত্যু হল আরোগ্য এবং দেহ থেকে আত্মার মুক্তি। রোমান দার্শনিক সেনেকা তাঁর মৃত্যুর সময় সক্রেটিসের নকল করার চেষ্টা করেছিলেন। সেনেকাও সম্রাট নিরোর আদেশে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। দার্শনিক পদ্ধতি সক্রেটিসের পদ্ধতি সক্রেটিস দার্শনিক জেনোর মত দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। এই পদ্ধতিতে প্রথমে প্রতিপক্ষের মত স্বীকার করে নেওয়া হয়, কিন্তু এর পর যুক্তির মাধ্যমে সেই মতকে খণ্ডন করা হয়। এই পদ্ধতির একটি প্রধান বাহন হল প্রশ্ন-উত্তর। সক্রেটিস প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমেই দার্শনিক আলোচনা চালিয়ে যেতেন। প্রথমে প্রতিপক্ষের জন্য যুক্তির ফাঁদ পাততেন এবং একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকতেন। যতক্ষণ না প্রতিপক্ষ পরাজিত হয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে নেয় ততক্ষণ প্রশ্ন চলতেই থাকত। সক্রেটিসের এই পদ্ধতির অপর নাম সক্রেটিসের শ্লেষ (Socratic irony)। সংজ্ঞার সক্রেটিক অগ্রাধিকার সক্রেটিস সংজ্ঞার অনুসন্ধানকে অগ্রাধিকার দিয়ে তার আলোচনা শুরু করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, সক্রেটিস একটি বিষয়ের একজন বিশেষজ্ঞের সাথে একটি সংজ্ঞা খোঁজার মাধ্যমে তার বক্তৃতা শুরু করেন - উদাহরণস্বরূপ, পুণ্য, মঙ্গল, ন্যায়বিচার বা সাহস কী তা জিজ্ঞাসা করে। একটি সংজ্ঞা প্রতিষ্ঠার জন্য, সক্রেটিস প্রথমে একটি গুণের স্পষ্ট উদাহরণ সংগ্রহ করেন এবং তারপরে তাদের মধ্যে কী মিল ছিল তা প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেন। গুথরির মতে, সক্রেটিস এমন এক যুগে বাস করতেন যখন সোফিস্টরা বিভিন্ন গুণের অর্থকে চ্যালেঞ্জ করেছিল, তাদের পদার্থ নিয়ে প্রশ্ন করেছিল; একটি সংজ্ঞার জন্য সক্রেটিসের অনুসন্ধান ছিল তাদের আমূল সংশয়বাদ থেকে বায়ুমণ্ডল পরিষ্কার করার একটি প্রচেষ্টা। কিছু পণ্ডিত যুক্তি দিয়েছেন যে সক্রেটিস একটি নীতি হিসাবে সংজ্ঞার অগ্রাধিকারকে সমর্থন করেন না, কারণ তারা এমন ক্ষেত্রে চিহ্নিত করেছেন যেখানে তিনি তা করেন না।[93] কেউ কেউ যুক্তি দিয়েছেন যে সংজ্ঞার এই অগ্রাধিকারটি সক্রেটিসের পরিবর্তে প্লেটো থেকে এসেছে। দার্শনিক পিটার গেচ, স্বীকার করেছেন যে সক্রেটিস সংজ্ঞার অগ্রাধিকারকে সমর্থন করেছেন, কৌশলটিকে ভুল বলে মনে করেন। Α Geach-এর মতে, কেউ একটি প্রস্তাব জানতে পারে এমনকি যদি কেউ সেই শর্তগুলিকে সংজ্ঞায়িত করতে না পারে যেখানে প্রস্তাবটি বলা হয়েছে৷ সক্রেটিক অজ্ঞতা ডেলফির অ্যাপোলো মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, যেখানে পিথিয়া ছিল। ডেলফিক অ্যাফোরিজম সক্রেটিসের কাছে নিজেকে জানুন গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যা প্লেটোর অনেক সক্রেটিক সংলাপে, বিশেষ করে ক্ষমাপ্রার্থীতে স্পষ্ট। প্লেটোর সক্রেটিস প্রায়ই দাবি করেন যে তিনি তার নিজের জ্ঞানের অভাব সম্পর্কে সচেতন, বিশেষ করে যখন নৈতিক ধারণা যেমন আরেটে (অর্থাৎ, ভালতা, সাহস) নিয়ে আলোচনা করেন কারণ তিনি এই ধরনের ধারণার প্রকৃতি জানেন না। [97] উদাহরণস্বরূপ, তার বিচারের সময়, তার জীবন ঝুঁকির মধ্যে দিয়ে, সক্রেটিস বলেছেন: "আমি ভেবেছিলাম ইভেনস একজন সুখী মানুষ, যদি সে সত্যিই এই শিল্পের অধিকারী হয় (টেকনে), এবং এত মাঝারি পারিশ্রমিকে শেখায়। অবশ্যই আমি গর্ব করব এবং নিজেকে প্রিপেইন করব যদি আমি এই জিনিসগুলি (এপিস্তামাই) জানতাম, কিন্তু ভদ্রলোক, আমি সেগুলি (এপিস্তামাই) জানি না।"[98] প্লেটোর কিছু কথোপকথনে, সক্রেটিস নিজেকে কিছু জ্ঞানের সাথে কৃতিত্ব দিয়েছেন বলে মনে হয়, এবং এমনকি এমন একজন ব্যক্তির পক্ষে দৃঢ়ভাবে মতপ্রকাশিত বলে মনে হতে পারে যে তার নিজের অজ্ঞতা স্বীকার করে।[99] সক্রেটিক অসামঞ্জস্যতার বিভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে (যা ছাড়া সক্রেটিস কেবল অসামঞ্জস্যপূর্ণ হচ্ছেন) [100] একটি ব্যাখ্যা হল যে সক্রেটিস শিক্ষাগত উদ্দেশ্যে বিদ্রূপাত্মক বা বিনয়ী হচ্ছেন: তিনি তার দার্শনিক প্রশ্নের একটি প্রিফিক্সড উত্তরের জন্য তাকে গাইড করার পরিবর্তে তার কথোপকথককে নিজের জন্য চিন্তা করতে দিতে চান। আরেকটি ব্যাখ্যা হল যে সক্রেটিস "জ্ঞান" এর অর্থের বিভিন্ন ব্যাখ্যা ধারণ করেছেন। জ্ঞান, তার জন্য, একটি নৈতিক বিষয়ের পদ্ধতিগত বোঝার অর্থ হতে পারে, যার উপর সক্রেটিস দৃঢ়ভাবে কোনো ধরনের প্রভুত্ব প্রত্যাখ্যান করেন; অথবা নিম্ন-স্তরের জ্ঞানকে উল্লেখ করতে পারে, যা সক্রেটিস স্বীকার করতে পারে যে তার অধিকার রয়েছে। যাই হোক না কেন, সক্রেটিস স্বীকার করেছেন যে নিজের জ্ঞানের অভাব স্বীকার করা প্রজ্ঞার দিকে প্রথম পদক্ষেপ। সক্রেটিক বিড়ম্বনা একটি বিস্তৃত অনুমান রয়েছে যে সক্রেটিস একজন লৌহবাদী ছিলেন, বেশিরভাগ প্লেটো এবং অ্যারিস্টটল দ্বারা সক্রেটিসের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে। সক্রেটিসের বিড়ম্বনা এত সূক্ষ্ম এবং সামান্য হাস্যকর যে এটি পাঠককে প্রায়ই ভাবতে থাকে যে সক্রেটিস ইচ্ছাকৃত শ্লেষ করছেন কিনা। প্লেটোর ইউথিফ্রো সক্রেটিক বিড়ম্বনায় ভরা। গল্পটি শুরু হয় যখন সক্রেটিস ইউথিফ্রোর সাথে দেখা করেন, একজন ব্যক্তি যিনি তার নিজের পিতাকে হত্যার জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন। সক্রেটিস যখন প্রথম গল্পের বিশদটি শুনেন, তখন তিনি মন্তব্য করেন, "এটি নয়, আমার মনে হয়, কোন এলোমেলো ব্যক্তি যে এটি [একজনের পিতার বিচার] সঠিকভাবে করতে পারে, তবে অবশ্যই একজন যিনি ইতিমধ্যেই জ্ঞানে অনেক এগিয়ে গেছেন"। যখন ইউথিফ্রো তার দেবত্ব বোঝার বিষয়ে গর্ব করেন, তখন সক্রেটিস উত্তর দেন যে "আমি আপনার ছাত্র হওয়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ"। সক্রেটিসকে সাধারণত বিদ্রূপাত্মক হিসাবে দেখা হয় যখন প্রশংসা করার জন্য বা তার কথোপকথনকে সম্বোধন করার সময়। কেন সক্রেটিস বিদ্রুপ ব্যবহার করেন তা নিয়ে পণ্ডিতরা বিভক্ত। হেলেনিস্টিক সময়কাল থেকে উন্নত একটি মতামত অনুসারে, সক্রেটিক বিড়ম্বনা হল দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করার একটি কৌতুকপূর্ণ উপায়। চিন্তার আরেকটি লাইন ধরে রাখে যে সক্রেটিস তার দার্শনিক বার্তাকে বিদ্রুপের সাথে লুকিয়ে রেখেছেন, এটি কেবল তাদের কাছেই অ্যাক্সেসযোগ্য করে তোলে যারা তার বক্তব্যের অংশগুলিকে আলাদা করতে পারে যা বিদ্রূপাত্মক সেগুলি থেকে যা নয়। গ্রেগরি ভ্লাস্টোস সক্রেটিসের বিড়ম্বনার আরও জটিল প্যাটার্ন চিহ্নিত করেছেন। ভ্লাস্টোসের দৃষ্টিভঙ্গিতে, সক্রেটিসের কথার দ্বৈত অর্থ রয়েছে, উভয়ই বিদ্রূপাত্মক এবং নয়। একটি উদাহরণ হল যখন সে জ্ঞান থাকাকে অস্বীকার করে। ভ্লাস্টোস পরামর্শ দেন যে সক্রেটিস বিদ্রূপাত্মক আচরণ করছেন যখন তিনি বলেছেন যে তার কোন জ্ঞান নেই (যেখানে "জ্ঞান" অর্থ জ্ঞানের নিম্ন রূপ); অন্যদিকে, "জ্ঞান" এর আরেকটি অর্থ অনুসারে, সক্রেটিস যখন বলেন যে তার নৈতিক বিষয়ে কোন জ্ঞান নেই তখন তিনি গুরুতর। এই মতামত অন্যান্য অনেক পণ্ডিত দ্বারা ভাগ করা হয় না। সক্রেটিক ইউডাইমনিজম এবং বুদ্ধিবৃত্তিকতা সক্রেটিসের জন্য, ইউডাইমোনিয়ার সাধনা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সমস্ত মানুষের কর্মকে অনুপ্রাণিত করে। সক্রেটিসের দৃষ্টিতে সদগুণ এবং জ্ঞান ইউডাইমোনিয়ার সাথে যুক্ত, কিন্তু তিনি তাদের কতটা ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত মনে করেছিলেন তা নিয়ে এখনও বিতর্ক রয়েছে। কেউ কেউ যুক্তি দেন যে সক্রেটিস মনে করতেন যে পুণ্য এবং ইউডাইমোনিয়া অভিন্ন। অন্য একটি মতানুসারে, সদগুণ ইউডাইমোনিয়ার একটি উপায় হিসেবে কাজ করে (যথাক্রমে "অভিন্ন" এবং "পর্যাপ্ততা" থিসিস)। বিতর্কের আরেকটি বিষয় হল, সক্রেটিসের মতে, মানুষ প্রকৃতপক্ষে যা ভালো তা-ই চায় বা, বরং, তারা যা ভালো বলে মনে করে তা চায় কিনা। নৈতিক বুদ্ধিবৃত্তিকতা বলতে সক্রেটিস জ্ঞানের ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ভূমিকাকে বোঝায়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে সমস্ত গুণাবলী জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে (তাই সক্রেটিসকে একজন গুণী বুদ্ধিজীবী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়)। তিনি আরও বিশ্বাস করতেন যে মানুষ যা ইচ্ছা করে তা বোঝার জন্য জ্ঞানীয় শক্তি দ্বারা পরিচালিত হয়, যখন আবেগের ভূমিকা হ্রাস করে (একটি দৃষ্টিভঙ্গি যাকে উদ্দেশ্যমূলক বুদ্ধিবৃত্তি বলে)। প্লেটোর প্রোটাগোরাসে (345c4–e6), সক্রেটিস ইঙ্গিত করেছেন যে "কেউ স্বেচ্ছায় ভুল করে না", যা সক্রেটিক সদগুণ বুদ্ধিবৃত্তির বৈশিষ্ট্য হয়ে উঠেছে। [114] সক্রেটিক নৈতিক দর্শনে, বুদ্ধিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় একটি ভাল জীবনযাপনের উপায় হিসাবে; সক্রেটিস অযৌক্তিক বিশ্বাস বা আবেগ deemphasises. [115] প্লেটোর কথোপকথন যা সক্রেটিসের বুদ্ধিবৃত্তিক প্রেরণাবাদকে সমর্থন করে—যেমন এই থিসিসটির নামকরণ করা হয়েছে—প্রধানত গর্গিয়াস (467c–8e, যেখানে সক্রেটিস একজন অত্যাচারীর ক্রিয়াকলাপ নিয়ে আলোচনা করেছেন যা তার উপকারে আসে না) এবং মেনো (77d–8b, যেখানে সক্রেটিস মেনোকে ব্যাখ্যা করেন তার দৃষ্টিভঙ্গি যে কেউ খারাপ জিনিস চায় না, যদি না তারা প্রথম স্থানে ভাল এবং মন্দ কি জানেন না) [116] পণ্ডিতরা সক্রেটিসের দৃষ্টিভঙ্গি দেখে বিস্মিত হয়েছেন যে আক্রাসিয়া (কারুর অযৌক্তিক আবেগের কারণে, কারও জ্ঞান বা বিশ্বাসের বিপরীতে অভিনয় করা) অসম্ভব। বেশিরভাগই বিশ্বাস করেন যে সক্রেটিস অযৌক্তিক আকাঙ্ক্ষার জন্য কোন স্থান ছেড়ে দেননি, যদিও কেউ কেউ দাবি করেন যে সক্রেটিস অযৌক্তিক প্রেরণার অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন, কিন্তু অস্বীকার করেছেন যে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রাথমিক ভূমিকা পালন করে। ধর্ম প্রাচীন গ্রীসে, সংগঠিত ধর্ম খণ্ডিত ছিল, নির্দিষ্ট দেবতাদের জন্য বেশ কয়েকটি উৎসবে উদযাপন করা হতো, যেমন সিটি ডায়োনিসিয়া বা ঘরোয়া আচার-অনুষ্ঠানে, এবং সেখানে কোনো পবিত্র গ্রন্থ ছিল না। ধর্ম নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিশে যায়, যারা তাদের ব্যক্তিগত ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করে মূলত বিভিন্ন দেবতাকে বলি দিয়ে। সক্রেটিস একজন ধর্মের চর্চাকারী মানুষ নাকি একজন 'উস্কানিকারী নাস্তিক' ছিলেন তা প্রাচীনকাল থেকেই বিতর্কের বিষয়। তার বিচারের মধ্যে অশ্লীলতার অভিযোগ রয়েছে, এবং বিতর্ক এখনও থামেনি।[122] সক্রেটিস বেশিরভাগ আলসিবিয়াডেস, ইউথিফ্রো, এবং অ্যাপোলজিতে দেবত্ব এবং আত্মা নিয়ে আলোচনা করেছেন। অ্যালসিবিয়াডেস সক্রেটিস মানব আত্মাকে দেবত্বের সাথে যুক্ত করেছেন, উপসংহারে বলেছেন "তারপর তার এই অংশটি ঈশ্বরের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, এবং যে কেউ এটিকে দেখে, এবং যা ঐশ্বরিক তা জানতে পারে, সে এর মাধ্যমে নিজের সম্পর্কে সর্বোত্তম জ্ঞান লাভ করবে।"[124] তার আলোচনা ধর্মের উপর সবসময় তার যুক্তিবাদের লেন্সের নিচে পড়ে। সক্রেটিস, ইউথিফ্রোতে, একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছান যা তাকে যুগের স্বাভাবিক অনুশীলন থেকে অনেক দূরে নিয়ে যায়: তিনি দেবতাদের উদ্দেশ্যে বলিদানকে অকেজো বলে মনে করেন, বিশেষ করে যখন তারা বিনিময়ে পুরস্কার পাওয়ার আশায় চালিত হয়। পরিবর্তে তিনি দর্শন এবং জ্ঞানের সাধনাকে দেবতাদের উপাসনা করার প্রধান উপায় হিসাবে ডাকেন।[126] ধর্মপরায়ণতার ঐতিহ্যগত রূপকে তার প্রত্যাখ্যান, তাদের আত্ম-স্বার্থের সাথে সংযুক্ত করে, ইঙ্গিত করে যে এথেনীয়দের আত্ম-পরীক্ষার মাধ্যমে ধর্মীয় অভিজ্ঞতা অর্জন করা উচিত। সক্রেটিস যুক্তি দিয়েছিলেন যে দেবতারা সহজাতভাবে জ্ঞানী এবং ন্যায়পরায়ণ ছিলেন, সেই সময়ে প্রচলিত ধর্ম থেকে অনেক দূরে একটি উপলব্ধি। ইউথিফ্রোতে, ইউথিফ্রো দ্বিধা দেখা দেয়। সক্রেটিস তার কথোপকথককে ধার্মিকতা এবং শক্তিশালী ঈশ্বরের ইচ্ছার মধ্যে সম্পর্ক সম্পর্কে প্রশ্ন করেন: কিছু ভাল কারণ এটি এই ঈশ্বরের ইচ্ছা, নাকি এই ঈশ্বরের ইচ্ছা কারণ এটি ভাল?[129] অন্য কথায়, কি? ধার্মিকতা ভাল অনুসরণ, নাকি ঈশ্বর? সক্রেটিক চিন্তার গতিপথ ঐতিহ্যগত গ্রীক ধর্মতত্ত্বের সাথে বৈপরীত্য, যা লেক্স ট্যালিওনিস (চোখের নীতির জন্য চোখ) গ্রহণ করেছে। সক্রেটিস মনে করতেন যে ধার্মিকতা দেবতাদের থেকে স্বাধীন, এবং দেবতাদের অবশ্যই ধার্মিক হতে হবে। সক্রেটিস প্লেটোর এপোলজিতে দেবতাদের প্রতি বিশ্বাসের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যেখানে তিনি বিচারকদের বলেন যে তিনি তার অভিযুক্তদের চেয়ে বেশি ঈশ্বরকে স্বীকার করেন। প্লেটোর সক্রেটিসের জন্য, দেবতাদের অস্তিত্বকে মঞ্জুর করা হয়; তার কোনো কথোপকথনে তিনি ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে কিনা তা পরীক্ষা করেননি। [132] অপোলজিতে, সক্রেটিসকে অজ্ঞেয়বাদী হওয়ার একটি মামলা করা যেতে পারে, মৃত্যুর পরের মহান অজানা সম্পর্কে তার আলোচনার ভিত্তিতে,[133] এবং ফেডোতে (তার শেষ দিনে তার ছাত্রদের সাথে কথোপকথন) সক্রেটিস একটি স্পষ্ট বিশ্বাসের অভিব্যক্তি দেন। আত্মার অমরত্ব [134] তিনি ওরাকল, ভবিষ্যদ্বাণী এবং দেবতাদের অন্যান্য বার্তাগুলিতেও বিশ্বাস করতেন। এই লক্ষণগুলো তাকে নৈতিক বিষয়ে কোনো ইতিবাচক বিশ্বাসের প্রস্তাব দেয়নি; বরং, তারা প্রতিকূল ভবিষ্যতের ঘটনাগুলির ভবিষ্যদ্বাণী ছিল। জেনোফোনের মেমোরাবিলিয়ায়, সক্রেটিস সমসাময়িক টেলিলজিক্যাল বুদ্ধিমান-নকশা যুক্তির কাছাকাছি একটি যুক্তি তৈরি করেছেন। তিনি দাবি করেন যে যেহেতু মহাবিশ্বে এমন অনেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা "পূর্বচিন্তার লক্ষণ" (যেমন, চোখের পাতা) প্রদর্শন করে, একজন ঐশ্বরিক স্রষ্টা অবশ্যই মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। [132] তারপর তিনি অনুমান করেন যে সৃষ্টিকর্তা সর্বজ্ঞ এবং সর্বশক্তিমান হওয়া উচিত এবং এটি মানবজাতির অগ্রগতির জন্য মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছে, যেহেতু মানুষের স্বাভাবিকভাবেই অনেক ক্ষমতা রয়েছে যা অন্যান্য প্রাণীদের নেই। [136] কখনও কখনও, সক্রেটিস একক দেবতার কথা বলেন, অন্য সময়ে তিনি বহুবচন "দেবতা" উল্লেখ করেন। এর অর্থ ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে তিনি হয় বিশ্বাস করতেন যে একজন সর্বোচ্চ দেবতা অন্য দেবতাদের আদেশ দিয়েছেন, অথবা বিভিন্ন দেবতা এই একক দেবতার অংশ, বা প্রকাশ। সক্রেটিসের ধর্মীয় বিশ্বাস যুক্তিবাদের সাথে তার কঠোর আনুগত্যের সাথে কীভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে পারে তা বিভ্রান্তির একটি উৎস। দর্শনের অধ্যাপক মার্ক ম্যাকফেরান পরামর্শ দেন যে সক্রেটিস নিশ্চিতকরণের জন্য ধর্মনিরপেক্ষ যুক্তিবাদের মাধ্যমে প্রতিটি ঐশ্বরিক চিহ্নকে ব্যাখ্যা করেছেন। প্রাচীন দর্শনের অধ্যাপক A. A. লং পরামর্শ দেন যে সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন যে ধর্মীয় এবং যুক্তিবাদী ক্ষেত্রগুলি পৃথক ছিল বলে অনুমান করা অনাক্রম্য। সক্রেটিক ডাইমনিয়ন বেশ কয়েকটি গ্রন্থে (উদাহরণস্বরূপ, প্লেটোর ইউথিফ্রো 3b5; ক্ষমা 31c–d; জেনোফোনের স্মৃতিচিহ্ন 1.1.2) সক্রেটিস দাবি করেছেন যে তিনি একটি ডাইমোনিক চিহ্ন শুনেছেন - একটি অভ্যন্তরীণ কণ্ঠস্বর সাধারণত শোনা যায় যখন তিনি ভুল করতে চলেছেন। সক্রেটিস তার বিচারে এই ডাইমনিয়নের একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়েছিলেন (অ্যাপোলজি 31c–d): "...এর কারণ হল এমন কিছু যা আপনি আমাকে প্রায়শই বিভিন্ন জায়গায় উল্লেখ করতে শুনেছেন - যথা, এই সত্য যে আমি ঐশ্বরিক এবং ডাইমনিক কিছু অনুভব করি, যেমনটি মেলেটাস তার অভিযোগে খোদাই করেছেন, উপহাসের উপায়ে। এটি আমার শৈশব থেকে শুরু হয়েছিল, একটি নির্দিষ্ট কণ্ঠের সংঘটন। যখনই এটি ঘটে, এটি আমাকে সর্বদা সেই ক্রিয়াকলাপের পথ থেকে বিরত করে যা আমি জড়িত করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু এটি কখনই দেয় না। আমাকে ইতিবাচক পরামর্শ। এটা আমার রাজনীতির অনুশীলনের বিরোধিতা করেছে, এবং আমি মনে করি এটা করা একেবারেই সূক্ষ্ম হয়েছে। এমনকি একজন তপস্বী সক্রেটিস দ্বারা অনুভূত একটি অলৌকিক অভিজ্ঞতা। পুণ্য ও জ্ঞান সক্রেটিস জ্ঞান প্রত্যাখ্যান করার জন্য পরিচিত, "আমি জানি যে আমি কিছুই জানি না" এই কথার মধ্যে একটি দাবি অন্তর্ভুক্ত। প্লেটোর ক্ষমার একটি বিবৃতির ভিত্তিতে এটি প্রায়ই সক্রেটিসকে দায়ী করা হয়, যদিও একই দৃষ্টিভঙ্গি বারবার প্লেটোর সক্রেটিসের প্রথম দিকের লেখার অন্য কোথাও পাওয়া যায়। [144] অন্যান্য বিবৃতিতে, যদিও, তিনি বোঝান বা এমনকি দাবি করেন যে তার জ্ঞান আছে। উদাহরণ স্বরূপ, প্লেটোর এপোলজিতে সক্রেটিস বলেছেন: "...কিন্তু অন্যায় করা এবং আমার ঊর্ধ্বতন, ঈশ্বর বা মানুষের অবাধ্য হওয়া, এটা আমি মন্দ এবং ভিত্তি বলে জানি..." (ক্ষমাজ্ঞান, 29b6–7)[145] ক্যালিক্লিসের সাথে তার বিতর্কে, তিনি বলেছেন: "...আমি ভাল করেই জানি যে আপনি যদি আমার সাথে সেই বিষয়গুলির সাথে একমত হন যা আমার আত্মা বিশ্বাস করে, তবে সেগুলিই সত্য হবে..."[145] সক্রেটিস সত্যিকার অর্থে ভেবেছিলেন যে তার জ্ঞানের অভাব ছিল নাকি নিছক তার নিজের অজ্ঞতায় বিশ্বাসের ভুয়া ছিল তা বিতর্কের বিষয়। একটি সাধারণ ব্যাখ্যা হল যে তিনি প্রকৃতপক্ষে শালীনতার ভুয়া ছিলেন। নরম্যান গলির মতে, সক্রেটিস তার কথোপকথনকারীদের সাথে কথা বলার জন্য প্রলুব্ধ করার জন্য এটি করেছিলেন। অন্যদিকে, টেরেন্স আরউইন দাবি করেন যে সক্রেটিসের কথা আক্ষরিক অর্থে নেওয়া উচিত। গ্রেগরি ভ্লাস্টোস যুক্তি দেন যে উভয় দাবি খণ্ডন করার জন্য যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তার দৃষ্টিতে, সক্রেটিসের জন্য, "জ্ঞান" এর দুটি পৃথক অর্থ রয়েছে: জ্ঞান-সি এবং জ্ঞান-ই (সি-এর অর্থ "নির্দিষ্ট" এবং ই-এর অর্থ ইলেঞ্চাস, অর্থাৎ সক্রেটিক পদ্ধতি)। নলেজ-সি প্রশ্নাতীত কিছু যেখানে নলেজ-ই হল সক্রেটিসের এলেঞ্চাস থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান। এইভাবে, সক্রেটিস সত্য কথা বলেন যখন তিনি বলেন যে তিনি-C কিছু জানেন, এবং তিনি সত্যবাদী যখন বলেন যে তিনি জানেন-ই, উদাহরণস্বরূপ যে কেউ তার উর্ধ্বতনদের অবাধ্য হওয়া মন্দ, যেমন তিনি ক্ষমাতে দাবি করেছেন। সমস্ত পণ্ডিত এই শব্দার্থিক দ্বৈতবাদের সাথে একমত নন। জেমস এইচ. লেশার যুক্তি দিয়েছেন যে সক্রেটিস বিভিন্ন সংলাপে দাবি করেছেন যে একটি শব্দ একটি অর্থের সাথে যুক্ত (অর্থাৎ হিপিয়াস মেজর, মেনো এবং ল্যাচেস)। [149] লেশার পরামর্শ দেন যে যদিও সক্রেটিস দাবি করেছিলেন যে তিনি গুণাবলীর প্রকৃতি সম্পর্কে কোন জ্ঞান রাখেননি, তিনি মনে করতেন যে কিছু ক্ষেত্রে, মানুষ কিছু নৈতিক প্রস্তাব জানতে পারে। [150] সক্রেটিসের সদগুণের তত্ত্ব বলে যে সমস্ত গুণাবলী মূলত এক, যেহেতু তারা জ্ঞানের একটি রূপ। [151] সক্রেটিসের জন্য, একজন ব্যক্তি ভালো না হওয়ার কারণ হল তাদের জ্ঞানের অভাব। যেহেতু জ্ঞান একত্রিত, গুণগুলিও একত্রিত। আরেকটি বিখ্যাত উক্তি- "কেউ স্বেচ্ছায় ভুল করে না"-ও এই তত্ত্ব থেকে উদ্ভূত হয়। [152] প্রোটাগোরাসে, সক্রেটিস সাহসের উদাহরণ ব্যবহার করে গুণাবলীর ঐক্যের পক্ষে যুক্তি দিয়েছেন: যদি কেউ জানে যে প্রাসঙ্গিক বিপদ কী, তারা ঝুঁকি নিতে পারে। [151] অ্যারিস্টটল মন্তব্য করেছেন: "... অগ্রজ সক্রেটিস মনে করতেন যে জীবনের সমাপ্তি হল পুণ্যের জ্ঞান, এবং তিনি ন্যায়বিচার, সাহস এবং পুণ্যের প্রতিটি অংশের সংজ্ঞা খুঁজতেন, এবং এটি একটি যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতি ছিল, যেহেতু তিনি ভেবেছিলেন যে সমস্ত গুণাবলীই বিজ্ঞান, এবং যত তাড়াতাড়ি কেউ [উদাহরণস্বরূপ] ন্যায়বিচার জানবে, সে ন্যায়পরায়ণ হবে..." ভালবাসা সক্রেটিস এবং অ্যালসিবিয়াডস, ক্রিস্টোফার উইলহেম একার্সবার্গ দ্বারা, 1813-1816 কিছু গ্রন্থ থেকে জানা যায় যে সক্রেটিসের আলসিবিয়াডস এবং অন্যান্য যুবকদের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল; অন্যরা পরামর্শ দেয় যে অল্পবয়সী ছেলেদের সাথে সক্রেটিসের বন্ধুত্ব শুধুমাত্র তাদের উন্নতি করতে চেয়েছিল এবং যৌন ছিল না। গর্গিয়াসে, সক্রেটিস দাবি করেন যে তিনি অ্যালসিবিয়াডস এবং দর্শনের দ্বৈত প্রেমিক ছিলেন এবং প্রোটাগোরাস, মেনো (76a–c) এবং Phaedrus (227c–d) তে তার ফ্লার্টেটিসতা স্পষ্ট। তবে, আলসিবিয়াডসের সাথে তার সম্পর্কের সঠিক প্রকৃতি স্পষ্ট নয়; সক্রেটিস তার আত্মসংযমের জন্য পরিচিত ছিলেন, যখন আলসিবিয়াডস সিম্পোজিয়ামে স্বীকার করেছেন যে তিনি সক্রেটিসকে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু ব্যর্থ হন। প্রেমের সক্রেটিক তত্ত্বটি বেশিরভাগই লাইসিস থেকে অনুমান করা হয়, যেখানে সক্রেটিস লাইসিস এবং তার বন্ধুদের সাথে একটি রেসলিং স্কুলে প্রেম নিয়ে আলোচনা করেন। তারা পিতামাতার ভালবাসা এবং পিতামাতারা তাদের সন্তানদের জন্য যে স্বাধীনতা এবং সীমানা নির্ধারণ করে তার সম্মানের সাথে কীভাবে এটি প্রকাশ করে তা তদন্ত করে তাদের সংলাপ শুরু করে। সক্রেটিস উপসংহারে পৌঁছেছেন যে যদি লাইসিস একেবারেই অকেজো হয়, কেউ তাকে ভালোবাসবে না-এমনকি তার বাবা-মাকেও না। যদিও বেশিরভাগ পণ্ডিতরা বিশ্বাস করেন যে এই পাঠ্যটি হাস্যকর হওয়ার উদ্দেশ্যে ছিল, এটিও প্রস্তাবিত হয়েছে যে লাইসিস দেখায় যে সক্রেটিস প্রেমের প্রতি অহংকারী দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন, যার মতে আমরা কেবলমাত্র সেই ব্যক্তিদেরই ভালবাসি যারা আমাদের জন্য কিছু উপায়ে উপযোগী। অন্যান্য পণ্ডিতরা এই মতের সাথে একমত নন, যুক্তি দেন যে সক্রেটিসের মতবাদ স্বামী/স্ত্রীর জন্য অ-অহংকারী প্রেমের জন্য জায়গা ছেড়ে দেয়; এখনও অন্যরা অস্বীকার করে যে সক্রেটিস কোনো অহংবোধমূলক প্রেরণার পরামর্শ দেন। সিম্পোজিয়ামে, সক্রেটিস যুক্তি দেন যে শিশুরা তাদের পিতামাতার কাছে অমরত্বের মিথ্যা ধারণা দেয়, এবং এই ভুল ধারণা তাদের মধ্যে একতা তৈরি করে। [158] পণ্ডিতরাও উল্লেখ করেন যে সক্রেটিসের জন্য প্রেম যুক্তিযুক্ত। এটি উল্লেখযোগ্য যে সক্রেটিস, যিনি দাবি করেন যে তিনি জানেন না শুধুমাত্র জানেন, তিনি একটি ব্যতিক্রম করেছেন (প্লেটোর সিম্পোজিয়ামে), যেখানে তিনি বলেছেন যে তিনি প্রেম সম্পর্কে সত্য বলবেন, যা তিনি একজন 'চতুর মহিলা' থেকে শিখেছিলেন। ক্ল্যাসিসিস্ট আরমান্ড ডি'অ্যাঙ্গোর মামলা করেছেন যে সক্রেটিস তার যৌবনে আসপাসিয়ার কাছাকাছি ছিলেন, এবং ডায়োটিমা, যাকে সক্রেটিস সিম্পোজিয়ামে তার ভালবাসার বোঝার জন্য দায়ী করেছেন, তার উপর ভিত্তি করে। রাজনীতির সক্রেটিক দর্শন যদিও সক্রেটিস জনসাধারণের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিতর্কে জড়িত ছিলেন, তার সঠিক রাজনৈতিক দর্শনকে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন। প্লেটোর গর্জিয়াসে, তিনি ক্যালিক্লিসকে বলেন: "আমি বিশ্বাস করি যে আমি কয়েকজন এথেনিয়ানদের মধ্যে একজন - তাই বলে না যে আমিই একমাত্র, কিন্তু আমাদের সমসাময়িকদের মধ্যে একমাত্র - সত্যিকারের রাজনৈতিক নৈপুণ্য এবং অনুশীলন গ্রহণ করার জন্য সত্যিকারের রাজনীতি। এই কারণে যে আমি প্রতিটি অনুষ্ঠানে যে বক্তৃতা করি তা সন্তুষ্টির লক্ষ্যে নয় বরং সর্বোত্তম কি।' জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করার কৌশল ব্যবহার করে। তিনি অফিসের জন্য দৌড়েনি বা কোনো আইনের পরামর্শ দেননি। বরং, তিনি তার নাগরিকদের "উন্নতি" করে শহরের উন্নতিতে সাহায্য করার লক্ষ্য রেখেছিলেন। [162] একজন নাগরিক হিসেবে তিনি আইন মেনেছেন। তিনি নিয়ম মেনে বিদেশে যুদ্ধ করে তার সামরিক দায়িত্ব পালন করেন। তার সংলাপ, তবে, সিসিলিয়ান অভিযানের মতো সমসাময়িক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সামান্য উল্লেখ করে। সক্রেটিস তার সময় কাটিয়েছেন নাগরিকদের সাথে, তাদের মধ্যে এথেনিয়ান সমাজের শক্তিশালী সদস্যদের সাথে কথোপকথন করতে, তাদের বিশ্বাসগুলি যাচাই করে এবং তাদের ধারণার দ্বন্দ্বগুলিকে আলোতে আনতে। সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন যে তিনি তাদের একটি উপকার করছেন, যেহেতু তার জন্য, রাজনীতি ছিল নির্বাচনী পদ্ধতির পরিবর্তে দর্শনের মাধ্যমে শহরের নৈতিক ল্যান্ডস্কেপ গঠনের বিষয়ে। অলিগার্চ এবং ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে বিভক্ত মেরুকৃত এথেনিয়ান রাজনৈতিক জলবায়ুতে সক্রেটিস কোথায় দাঁড়িয়েছিলেন তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। যদিও কোন সুস্পষ্ট পাঠ্য প্রমাণ নেই, একটি ব্যাপকভাবে প্রচলিত তত্ত্বের মতে সক্রেটিস গণতন্ত্রের দিকে ঝুঁকেছিলেন: তিনি ত্রিশ অত্যাচারীদের অলিগারিক সরকার তাকে যে আদেশ দিয়েছিলেন তা তিনি অমান্য করেছিলেন; তিনি এথেন্সের আইন ও রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সম্মান করতেন (যা গণতন্ত্রীরা প্রণয়ন করেছিলেন); এবং, এই যুক্তি অনুসারে, গণতান্ত্রিক এথেন্সের আদর্শের প্রতি তার সখ্যতা ছিল একটি কারণ কেন তিনি কারাগার এবং মৃত্যুদণ্ড থেকে পালাতে চাননি। অন্যদিকে, কিছু প্রমাণ রয়েছে যে সক্রেটিস অলিগার্কির দিকে ঝুঁকেছিলেন: তার বেশিরভাগ বন্ধুই অলিগার্কিকে সমর্থন করেছিলেন, তিনি অনেকের মতামতকে অবজ্ঞা করেছিলেন এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সমালোচক ছিলেন এবং প্রোটাগোরাস কিছু গণতান্ত্রিক বিরোধী উপাদান দেখান। ] একটি কম মূলধারার যুক্তি প্রস্তাব করে যে সক্রেটিস গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রবাদের পক্ষে ছিলেন, একটি তত্ত্ব যা জনজীবনে সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং শহরের জন্য উদ্বেগকে অগ্রাধিকার দেয়। [166] তবুও আরেকটি পরামর্শ হল যে সক্রেটিস উদারতাবাদের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ মতামতকে সমর্থন করেছিলেন, একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ যা আলোকিতকরণের যুগে গঠিত হয়েছিল। এই যুক্তিটি বেশিরভাগই ক্রিটো এবং ক্ষমার উপর ভিত্তি করে, যেখানে সক্রেটিস শহর এবং এর নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক উপকারী সম্পর্কের কথা বলেছেন। সক্রেটিসের মতে, নাগরিকরা নৈতিকভাবে স্বায়ত্তশাসিত এবং তারা ইচ্ছা করলে শহর ছেড়ে চলে যেতে পারে-কিন্তু, শহরের মধ্যে থেকে, তারা আইন এবং তাদের উপর শহরের কর্তৃত্বও স্বীকার করে। অন্যদিকে, সক্রেটিসকে নাগরিক অবাধ্যতার প্রথম প্রবক্তা হিসাবে দেখা হয়েছে। অন্যায়ের প্রতি সক্রেটিসের তীব্র আপত্তি, লিওনকে গ্রেপ্তার করার জন্য ত্রিশ অত্যাচারীদের আদেশ পালনে তার অস্বীকৃতি, এই লাইনের ইঙ্গিত দেয়। যেমন তিনি ক্রিটিয়াসে বলেছেন, "একজন কখনোই অন্যায়ভাবে কাজ করা উচিত নয়, এমনকি নিজের প্রতি করা অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতেও।" অনেক চিন্তা-ভাবনার পর তারা তাদের অন্যায় বলে মনে করে। উত্তরাধিকার হেলেনিস্টিক যুগ মৃত্যুর পর দর্শনে সক্রেটিসের প্রভাব অপরিসীম। Epicureans এবং Pyrrhonists বাদে, সক্রেটিসের পরে প্রায় সব দার্শনিক স্রোত তার শিকড় খুঁজে পায়: প্লেটোর একাডেমী, এরিস্টটলের লিসিয়াম, সিনিকস এবং স্টোইক্স। [170] খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতাব্দী পর্যন্ত সক্রেটিসের প্রতি আগ্রহ বাড়তে থাকে। জীবনের উদ্দেশ্য বা অরেটে (গুণ) এর প্রকৃতির মতো মৌলিক প্রশ্নের উত্তরে বিভিন্ন স্কুল ভিন্ন ভিন্ন ছিল, যেহেতু সক্রেটিস তাদের কোনো উত্তর দেননি, এবং সেই কারণে, দার্শনিক স্কুলগুলি পরবর্তীকালে তার চিন্তাধারার ব্যাখ্যায় ব্যাপকভাবে ভিন্ন হয়ে যায়। ] তিনি প্রাকৃতিক বিশ্বের একটি অধ্যয়ন থেকে দর্শনের কেন্দ্রবিন্দু স্থানান্তরিত বলে মনে করা হয়, যেমনটি প্রাক-সক্রেটিক দার্শনিকদের ক্ষেত্রে ছিল, মানব বিষয়ক অধ্যয়নের দিকে। সক্রেটিসের অবিলম্বে অনুসারীরা ছিলেন তার ছাত্র, মেগারার ইউক্লিড, অ্যারিস্টিপাস এবং অ্যান্টিসথেনিস, যারা নিজেদের মধ্যে ভিন্ন সিদ্ধান্তে উপনীত হন এবং স্বাধীন ট্রাজেক্টরি অনুসরণ করেন। [174] সক্রেটিসের ছাত্রদের সম্পূর্ণ মতবাদ পুনর্গঠন করা কঠিন। [175] অ্যান্টিসথেনিসের বস্তুগত দ্রব্যের প্রতি গভীর অবজ্ঞা ছিল। তার মতে, পুণ্যই ছিল সব কিছুর ব্যাপার। ডায়োজেনিস এবং সিনিকরা এই চিন্তাধারা অব্যাহত রেখেছেন। বিপরীত প্রান্তে, অ্যারিস্টিপাস সম্পদ সঞ্চয়কে সমর্থন করেছিলেন এবং বিলাসবহুল জীবনযাপন করেছিলেন। এথেন্স ত্যাগ করে এবং তার নিজ শহর সাইরেনে ফিরে আসার পর, তিনি সিরেনিক দার্শনিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন যা হেডোনিজমের উপর ভিত্তি করে এবং শারীরিক আনন্দের সাথে একটি সহজ জীবনযাপনকে সমর্থন করে। তার স্কুলটি তার নাতির কাছে, একই নাম বহন করে। জেনোফোনের কাজের মধ্যে একটি সংলাপ রয়েছে যেখানে অ্যারিস্টিপাস দাবি করেছেন যে তিনি শাসন করতে বা অন্যদের দ্বারা শাসিত না হয়ে বাঁচতে চান। উপরন্তু, অ্যারিস্টিপাস জ্ঞানতত্ত্বের উপর একটি সংশয়বাদী অবস্থান বজায় রেখেছিলেন, দাবি করেছিলেন যে আমরা কেবল আমাদের নিজস্ব অনুভূতি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি। এই দৃষ্টিভঙ্গি অজ্ঞতা সক্রেটিক বোঝার সঙ্গে অনুরণিত. [178] ইউক্লিড ছিলেন সক্রেটিসের সমসাময়িক। সক্রেটিসের বিচার ও মৃত্যুর পর, তিনি এথেন্স ত্যাগ করেন নিকটবর্তী শহর মেগারার উদ্দেশ্যে, যেখানে তিনি একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন, যার নাম ছিল মেগারিয়ান। তার তত্ত্বটি পারমেনিডিসের প্রাক-সক্রেটিক মনবাদের উপর নির্মিত হয়েছিল। ইউক্লিড সক্রেটিসের চিন্তাধারা অব্যাহত রেখেছিলেন, সদগুণের প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে। স্টোইকস সক্রেটিসের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করত। তারা অসঙ্গতি এড়াতে একটি হাতিয়ার হিসাবে সক্রেটিক পদ্ধতি প্রয়োগ করেছিল। তাদের নৈতিক মতবাদগুলি জ্ঞান এবং গুণের মাধ্যমে কীভাবে একটি মসৃণ জীবনযাপন করা যায় তার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। স্টোইকস সুখ অর্জনে সদগুণকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিযুক্ত করেছেন এবং ভালতা এবং নৈতিক উৎকর্ষের মধ্যে সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়েছেন, যার সবকটিই সক্রেটিক চিন্তাধারার প্রতিধ্বনি করেছে। [180] একই সময়ে, প্লেটোনিজমের দার্শনিক স্রোত সক্রেটিসকে তার পূর্বসূরি, নীতিশাস্ত্র এবং জ্ঞানের তত্ত্বে দাবি করেছিল। প্লেটো দ্বারা প্রতিষ্ঠার প্রায় 80 বছর পর অ্যাকাডেমির প্রধান হয়েছিলেন আর্সেসিলাস, আমূল পরিবর্তন করেছিলেন একাডেমীর মতবাদ যা এখন একাডেমিক সংশয়বাদ নামে পরিচিত, যা অজ্ঞতার সক্রেটিক দর্শনকে কেন্দ্র করে। একাডেমিক সংশয়বাদীরা নৈতিকতার বিষয়ে সক্রেটিসের প্রকৃত উত্তরাধিকারী কে তা নিয়ে স্টোইকদের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। [181] যখন স্টোইকস জ্ঞান-ভিত্তিক নীতিশাস্ত্রের উপর জোর দিয়েছিলেন, আর্সেসিলাস সক্রেটিক অজ্ঞতার উপর নির্ভর করেছিলেন। আর্সেসিলাসের কাছে স্টোইক্সের উত্তর ছিল যে সক্রেটিক অজ্ঞতা ছিল সক্রেটিক বিড়ম্বনার অংশ (তারা নিজেরাই বিড়ম্বনার ব্যবহারকে অস্বীকার করেছিল), একটি যুক্তি যা শেষ পর্যন্ত পরবর্তী প্রাচীনকালে সক্রেটিসের প্রভাবশালী আখ্যান হয়ে ওঠে। [182] অ্যারিস্টটল সক্রেটিসকে একজন গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক হিসেবে বিবেচনা করলেও সক্রেটিস অ্যারিস্টটলীয় চিন্তাধারার কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন না। অ্যারিস্টটলের একজন ছাত্র, অ্যারিস্টোক্সেনাস এমনকি সক্রেটিসের কেলেঙ্কারির বিবরণ দিয়ে একটি বই লিখেছেন। এপিকিউরিয়ানরা সক্রেটিসের বিরোধী ছিল। তারা তাকে কুসংস্কারের জন্য আক্রমণ করেছিল, তার ডেমোনিয়নে তার বিশ্বাস এবং ডেলফির ওরাকলের প্রতি তার সম্মানের সমালোচনা করেছিল। তারা সক্রেটিসকে তার চরিত্র এবং বিভিন্ন দোষের জন্যও সমালোচনা করেছিল এবং বেশিরভাগই তার বিদ্রুপের উপর ফোকাস করেছিল, যা একজন দার্শনিকের জন্য অনুপযুক্ত এবং একজন শিক্ষকের জন্য অনুপযুক্ত বলে মনে করা হয়েছিল। [185] পাইরহোনিস্টরাও সক্রেটিসের বিরোধী ছিল, তাকে অভিযুক্ত করেছিল যে তিনি নৈতিকতা সম্পর্কে একজন অনুরাগী ছিলেন, যিনি উপহাস নম্রতায় জড়িত ছিলেন এবং যারা লোকেদের উপহাস ও উপহাস করেছিলেন। মধ্যযুগীয় বিশ্ব সিক্রেটিক চিন্তাধারা অ্যারিস্টটল এবং স্টোনিক্সের পাশাপাশি ইসলামী মধ্য প্রাচ্যের দিকে তার পথ খুঁজে পেয়েছিল। সোক্রেটিস, পাশাপাশি অন্যান্য প্রাচীন গ্রিক সাহিত্যে প্লেটোর কাজগুলি আল-কিলি, জাবির ইবনে হায়ান এবং মুতাজিলার প্রাথমিক মুসলিম পণ্ডিতদের দ্বারা আরবিতে অনুবাদ করা হয়েছিল। মুসলিম পণ্ডিতদের জন্য, সোক্রেটসকে তাঁর নীতিশাস্ত্রের সাথে মিলিত করার জন্য প্রশংসিত হয়েছিল এবং মুহাম্মদের ব্যক্তিত্বের সাথে এই বিষয়ে অনুরূপতার কারণে তার নীতিশাস্ত্রকে একত্রিত করার জন্য প্রশংসিত হয়েছিল। [187] সোক্রেটিক মতবাদ ইসলামিক বিশ্বাসের সাথে মেলে পরিবর্তিত হয়েছিল: মুসলিম পণ্ডিতদের মতে, সক্রেটিস একেশ্বরবাদের জন্য এবং এই জগতের সাময়িকতার জন্য এবং পরবর্তী জীবনে পুরস্কারের জন্য আর্গুমেন্ট তৈরি করেছে। [188] আরবী ভাষী বিশ্বের তার প্রভাব বর্তমান দিন চলতে থাকে। [189] মধ্যযুগীয় সময়ে, সোক্রেটের চিন্তাধারা সম্পূর্ণ খ্রিস্টান বিশ্বের মধ্যে বেঁচে থাকে; যাইহোক, মিশান্টিন, ইউসিবিয়াস এবং অগাস্টাইনের মতো খ্রিস্টান পণ্ডিতদের মতো সোক্রেটসের উপর কাজ করে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে, যেখানে সোক্রেটস একটি খ্রিস্টান লেন্সের অধীনে অধ্যয়ন করা হয়। [190] কনস্ট্যান্টিনোপলের পতনের পর, অনেক গ্রন্থে রোমান খ্রিস্টানতার জগতে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল, যেখানে তারা ল্যাটিন ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে, প্রাচীন সমাজতান্ত্রিক দর্শন, নবজাগরণের আগে শাস্ত্রীয় সাহিত্যের মতো, প্রথমে খ্রিস্টান জগতে সন্দেহের সাথে মোকাবেলা করা হয়েছিল। [191] প্রাথমিক ইতালীয় নবজাগরণের সময়, সক্রেটিসের দুটি ভিন্ন বিবরণ বিকশিত হয়। [192] একদিকে, মানবতাবাদী আন্দোলন শাস্ত্রীয় লেখকদের আগ্রহ পুনরুজ্জীবিত করে। লিওনার্দো ব্রুনি প্লেটোর সিক্র্যাটিক ডায়ালোগের অনেকগুলি অনুবাদ করেছেন, তার ছাত্রী জায়িয়ানোজো মেনটি একটি ভাল-সার্কুলেটেড বই, সক্রেটিসের একটি জীবন রচনা করেছিলেন। তারা উভয় সক্রেটিসের একটি নাগরিক সংস্করণ উপস্থাপন করে, যার মধ্যে সোক্রেটস একটি মানবতাবাদী এবং রিপাবলিকানবাদ সমর্থক ছিল। ব্রুনি এবং মানেটি জীবনের একটি পাপী উপায় হিসাবে ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করতে আগ্রহী ছিল; খ্রিস্টান নৈতিকতা সঙ্গে সংলগ্ন ছিল socrates একটি দৃশ্য উপস্থাপন তাদের কারণ সাহায্য। এভাবে, তাদের সংলাপের অংশগুলি বোঝাতে হয়েছিল, বিশেষ করে যারা সমকামীতা বা পেডেরাস্টিস (আলসিবিয়াডেসের সাথে) এর সম্ভাবনাকে প্রকাশ করার জন্য হাজির হয়েছিল, অথবা যা পরামর্শ দিয়েছিল যে সোশ্র্যাটিক ডাইমোন একটি ঈশ্বর ছিল। [193] অন্যদিকে, ইতালীয় Neoplatonists দ্বারা, দার্শনিক Neoplatonists দ্বারা সোক্রেটস একটি ভিন্ন ছবি উপস্থাপন করা হয়, দার্শনিক এবং পুরোহিত Marsilio Ficino নেতৃত্বে। Ficino Socrates এর অ-অনুক্রমিক এবং অনানুষ্ঠানিক উপায় শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত ছিল, যা তিনি প্রতিলিপি করার চেষ্টা করেছিলেন। Ficino সমাজের একটি পবিত্র ছবি চিত্রিত, যীশু খ্রীষ্টের জীবনের সাথে সমান্তরাল খুঁজে বের করে। Ficino এবং তার অনুগামীদের জন্য, Socratic অজ্ঞতা তার স্বীকৃতি সংকেত যে সমস্ত জ্ঞান ঈশ্বর দেওয়া হয় (Socratic Daimon মাধ্যমে)। [194] আধুনিক সময় প্রারম্ভিক আধুনিক ফ্রান্সে, বিভিন্ন উপন্যাস এবং ব্যঙ্গ নাটকে সক্রেটিসের চিত্র তার দার্শনিক চিন্তার পরিবর্তে তার ব্যক্তিগত জীবনের বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রাধান্য পেয়েছে। কিছু চিন্তাবিদ সক্রেটিসকে হাইলাইট করতে এবং তাদের নিজস্ব যুগের বিতর্কের উপর মন্তব্য করতে ব্যবহার করতেন, যেমন থিওফিল ডি ভায়াউ যিনি একজন খ্রিস্টধর্মী সক্রেটিসকে নাস্তিকতার জন্য অভিযুক্ত চিত্রিত করেছিলেন,[197] যখন ভলতেয়ারের জন্য, সক্রেটিসের চিত্রটি একটি যুক্তি-ভিত্তিক আস্তিকের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। মিশেল দে মন্টেইগন সক্রেটিসের উপর বিস্তৃতভাবে লিখেছেন, সমসাময়িক ধর্মীয় গোঁড়াদের প্রতি কাউন্টারওয়েট হিসাবে যুক্তিবাদের সাথে তাকে যুক্ত করেছেন। 18 শতকে, জার্মান ভাববাদ প্রধানত হেগেলের কাজের মাধ্যমে সক্রেটিসের প্রতি দার্শনিক আগ্রহকে পুনরুজ্জীবিত করেছিল। হেগেলের জন্য, সক্রেটিস মানবজাতির ইতিহাসে মুক্ত আত্মনিবেদন বা আত্ম-নিয়ন্ত্রণের নীতির প্রবর্তনের মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় চিহ্নিত করেছিলেন। যদিও হেগেল তার অবদানের জন্য সক্রেটিসকে প্রশংসা করেন, তবুও তিনি এথেনিয়ান আদালতকে ন্যায্যতা দেন, কারণ আত্ম-নিয়ন্ত্রণের উপর সক্রেটিসের জেদ সিটলিচকিটের ধ্বংসাত্মক হবে (একটি হেগেলীয় শব্দ যা রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান এবং আইন দ্বারা আকৃতির জীবনধারাকে নির্দেশ করে)। 200] এছাড়াও, হেগেল যুক্তিবাদের সক্রেটিক ব্যবহারকে মানব যুক্তির উপর প্রোটাগোরাসের ফোকাসের ধারাবাহিকতা হিসাবে দেখেন (যেমন মূলমন্ত্র হোমো মেনসুরাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে: "মানুষই সমস্ত কিছুর পরিমাপ"), তবে সংশোধিত: এটি আমাদের যুক্তি যা আমাদের সাহায্য করতে পারে। বাস্তবতা সম্পর্কে উদ্দেশ্যমূলক সিদ্ধান্তে পৌঁছান। এছাড়াও, হেগেল সক্রেটিসকে পরবর্তী প্রাচীন সংশয়বাদী দার্শনিকদের পূর্বসূরি হিসাবে বিবেচনা করেছিলেন, যদিও তিনি কেন স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেননি। [202] সোরেন কিয়েরকেগার্ড সক্রেটিসকে তার শিক্ষক হিসেবে বিবেচনা করতেন,[203] এবং তার উপর তার মাস্টারের থিসিস, সক্রেটিসের ক্রমাগত রেফারেন্স সহ বিদ্রুপাতের ধারণাটি রচনা করেন। সেখানে তিনি যুক্তি দেন যে সক্রেটিস একজন নৈতিক দার্শনিক নন কিন্তু তিনি সম্পূর্ণরূপে একজন লৌহবাদী। তিনি সক্রেটিসের লেখা পরিহারের দিকেও মনোনিবেশ করেছিলেন: কিয়েরকেগার্ডের জন্য, এই পরিহার ছিল নম্রতার একটি চিহ্ন, যা সক্রেটিসের তার অজ্ঞতার স্বীকৃতি থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। কিয়েরকেগার্ডের মতে সক্রেটিস শুধু কিছুই লিখেননি, কিন্তু তার সমসাময়িকরা তাকে একজন দার্শনিক হিসেবে ভুল ব্যাখ্যা করেছিলেন এবং ভুল বুঝেছিলেন, যার ফলে সক্রেটিস চিন্তাভাবনা বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের প্রায় অসম্ভব কাজ ছিল। কিয়েরকেগার্ডের দৃষ্টিতে শুধুমাত্র প্লেটোর ক্ষমাই প্রকৃত সক্রেটিসের কাছাকাছি ছিল। তার লেখায়, তিনি সক্রেটিসকে ঘন ঘন পুনর্বিবেচনা করতেন; তার পরবর্তী কাজ, Kierkegaard সক্রেটিক চিন্তাধারা নৈতিক উপাদান খুঁজে পাওয়া যায়. সক্রেটিস কিয়েরকেগার্ডের জন্য কেবল অধ্যয়নের বিষয়ই ছিলেন না, তিনি একজন মডেলও ছিলেন: কিয়েরকেগার্ড তার কাজকে সক্রেটিসের দার্শনিক হিসাবে সমান্তরাল করেছিলেন। তিনি লিখেছেন, "আমার সামনে একমাত্র উপমা আছে সক্রেটিস; আমার কাজ হল একটি সক্রেটিক কাজ, খ্রিস্টান হওয়া কী তার সংজ্ঞা নিরীক্ষা করা", তার লক্ষ্য ছিল সমাজকে খ্রিস্টান আদর্শের কাছাকাছি নিয়ে আসা, যেহেতু তিনি বিশ্বাস করতেন যে খ্রিস্টধর্ম একটি আনুষ্ঠানিকতা হয়ে উঠেছে, কোনো খ্রিস্টান সারাংশের অকার্যকর। কিয়েরকেগার্ড খ্রিস্টান হতে অস্বীকার করেছিলেন, যেমন সক্রেটিস কোনো জ্ঞানের অধিকারী হতে অস্বীকার করেছিলেন। ফ্রেডরিখ নিটশে পশ্চিমা সংস্কৃতিতে সক্রেটিসের অবদানের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করেন। তার প্রথম বই, দ্য বার্থ অফ ট্র্যাজেডি (1872), নিটশে খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীতে এবং তার পরে প্রাচীন গ্রীক সভ্যতার অবনতির জন্য সক্রেটিসকে দায়ী করেছিলেন। নিটশের জন্য, সক্রেটিস দর্শনের সুযোগকে প্রাক-সক্রেটিক প্রকৃতিবাদ থেকে যুক্তিবাদ এবং বুদ্ধিবৃত্তিতে পরিণত করেছিলেন। তিনি লিখেছেন: "আমি গ্রীকদের সংস্কারের অগ্রদূত হিসাবে [প্রিসোক্র্যাটিকস]কে কল্পনা করি: কিন্তু সক্রেটিসের নয়"; "এম্পেডোক্লিস এবং ডেমোক্রিটাসের সাথে গ্রীকরা মানুষের অস্তিত্ব, এর অযৌক্তিকতা, এর যন্ত্রণার সঠিক পরিমাপ নেওয়ার পথে তাদের পথে ভাল ছিল; সক্রেটিসকে ধন্যবাদ, তারা কখনই এই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি"[211] প্রভাব, নীটশে প্রস্তাব করেছিলেন, একটি বিকৃত পরিস্থিতি যা তার দিন পর্যন্ত অব্যাহত ছিল: আমাদের সংস্কৃতি একটি সক্রেটিক সংস্কৃতি, তিনি বিশ্বাস করতেন। পরবর্তী প্রকাশনা, দ্য টোয়াইলাইট অফ দ্য আইডলস (1887), নিটশে সক্রেটিসের বিরুদ্ধে তার আক্রমণ চালিয়ে যান, সক্রেটিক চিন্তাধারায় সদগুণ এবং সুখের সাথে যুক্তির নির্বিচারে সংযোগের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। তিনি লিখেছেন: "আমি বোঝার চেষ্টা করি সক্রেটিক সমস্যাটি কোন আংশিক এবং আদর্শিক অবস্থা থেকে উদ্ভূত: তার কারণের সমীকরণ = গুণ = সুখ। পরিচয়ের মতবাদের এই অযৌক্তিকতা দিয়ে তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন: প্রাচীন দর্শন আর কখনও মুক্তি পায়নি। নিজেই [এই মুগ্ধতা থেকে]"[212] 19 শতকের শেষ থেকে 20 শতকের গোড়ার দিকে, সক্রেটিসের প্রতি নীটশের শত্রুতার সবচেয়ে সাধারণ ব্যাখ্যা ছিল তার যুক্তিবাদ বিরোধী; তিনি সক্রেটিসকে ইউরোপীয় যুক্তিবাদের জনক মনে করতেন। 20 শতকের মাঝামাঝি, দার্শনিক ওয়াল্টার কফম্যান একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন যে যুক্তি দিয়ে যে নিটশে সক্রেটিসকে প্রশংসা করেছিলেন। বর্তমান মূলধারার মতামত হল যে নিটশে সক্রেটিসের প্রতি দ্বিধাবিভক্ত ছিলেন। উরুগুয়ের জাতীয় গ্রন্থাগারের বাইরে সক্রেটিসের মূর্তি, মন্টেভিডিও মহাদেশীয় দার্শনিক হান্না আরেন্ড্ট, লিও স্ট্রস এবং কার্ল পপার, সর্বগ্রাসী শাসনের উত্থানের মধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা অনুভব করার পরে, সক্রেটিসকে স্বতন্ত্র বিবেকের আইকন হিসাবে দেখেছিলেন। জেরুজালেমের ইখম্যান (1963) গ্রন্থে আরেন্ড্ট পরামর্শ দেন যে সক্রেটিসের ক্রমাগত প্রশ্ন এবং আত্ম-প্রতিফলন মন্দের অস্বাভাবিকতাকে প্রতিরোধ করতে পারে। স্ট্রস সক্রেটিসের রাজনৈতিক চিন্তাকে প্লেটোর সমান্তরাল বলে মনে করেন। তিনি প্লেটোর প্রজাতন্ত্রের একজন অভিজাত সক্রেটিসকে উদাহরণ হিসাবে দেখেন যে কেন পলিস জীবনকে সংগঠিত করার একটি আদর্শ উপায় নয়, এবং হতে পারে না, যেহেতু দার্শনিক সত্য জনগণের দ্বারা হজম করা যায় না। [216] পপার বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেন: তিনি যুক্তি দেন যে সক্রেটিস প্লেটোর সর্বগ্রাসী ধারণার বিরোধিতা করেন। পপারের জন্য, এথেনিয়ান গণতন্ত্রের সাথে সক্রেটিক ব্যক্তিবাদ, পপারের "ওপেন সোসাইটি" এর ধারণাকে বোঝায় যেমনটি তার ওপেন সোসাইটি অ্যান্ড ইটস এনিমিজ (১৯৪৫) এ বর্ণিত। কিছু দার্শনিক উক্তি অপরীক্ষিত জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা গ্লানিকর। পোশাক হল বাইরের আবরণ, মানুষের আসল সৌন্দর্য হচ্ছে তার জ্ঞান। নিজেকে জানো। জ্ঞানের শিক্ষকের কাজ হচ্ছে কোনো ব্যক্তিকে প্রশ্ন করে তার কাছ থেকে উত্তর জেনে দেখানো যে জ্ঞানটা তার মধ্যেই ছিল। পৃথিবীতে শুধুমাত্র একটি-ই ভালো আছে, জ্ঞান। আর একটি-ই খারাপ আছে, অজ্ঞতা। আমি কাউকে কিছু শিক্ষা দিতে পারবনা, আমি শুধু তাদের চিন্তা করাতে পারব। বিস্ময় হল জ্ঞানের শুরু। টাকার বিনিময়ে শিক্ষা অর্জনের চেয়ে অশিক্ষিত থাকা ভালো। বন্ধু হচ্ছে দুটি হৃদয়ের একটি অভিন্ন মন। প্রকৃত জ্ঞান নিজেকে জানার মধ্যে, অন্য কিছু জানার মধ্যে নয়। তুমি কিছুই জানোনা এটা জানা-ই জ্ঞানের আসল মানে। যাই হোক বিয়ে করো। তোমার স্ত্রী ভালো হলে তুমি হবে সুখী, আর খারাপ হলে হবে দার্শনিক। ব্যস্ত জীবনের অনুর্বরতা সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। আমাদের প্রার্থনা হওয়া উচিত সাধারণের ভালোর জন্য। শুধু ঈশ্বরই জানেন কীসে আমাদের ভালো। সত্যিকারের জ্ঞান আমাদের সবার কাছেই আসে, যখন আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা আমাদের জীবন, আমাদের নিজেদের সম্পর্কে এবং আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তার সম্পর্কে কত কম জানি। সেই সাহসী যে পালিয়ে না গিয়ে তার দায়িত্বে থাকে এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। নিজেকে উন্নয়নের জন্য অন্য মানুষের লেখালেখিতে কাজে লাগাও এই জন্য যে অন্য মানুষ কিসের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে তা তুমি যাতে সহজেই বুঝতে পারো। সুখ্যাতি অর্জনের উপায় হল তুমি কী হিসেবে আবির্ভূত হতে চাও তার উপক্রম হওয়া। তুমি যা হতে চাও তা-ই হও। কঠিন যুদ্ধেও সবার প্রতি দয়ালু হও। শক্ত মন আলোচনা করে ধারণা নিয়ে, গড়পড়তা মন আলোচনা করে ঘটনা নিয়ে, দুর্বল মন মানুষ নিয়ে আলোচনা করে। বন্ধুত্ব করো ধীরে ধীরে, কিন্তু যখন বন্ধুত্ব হবে এটা দৃঢ় করো এবং স্থায়ী করো। মৃত্যুই হল মানুষের সর্বাপেক্ষা বড়ো আশীর্বাদ। তথ্যসূত্র প্রাসঙ্গিক অধ্যয়ন প্রাচীন ও মধ্যযুগের পাশ্চাত্য দর্শন : অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শিখা প্রকাশনী; Bruell, C. (1994). “On Plato’s Political Philosophy,” Review of Politics, 56: 261-82. Bruell, C. (1999). On the Socratic Education: An Introduction to the Shorter Platonic Dialogues, Lanham, MD: Rowman and Littlefield. for review of socratic irony see Kieran Egan The educated mind : how cognitive tools shape our understanding. (1997) University of Chicago Press, Chicago. p. 137-144 Hanson, V.D. (2001). "Socrates Dies at Delium, 424 B.C.," What If? 2, Robert Cowley, editor, G.P. Putnam's Sons, NY. Luce, J.V. (1992). An Introduction to Greek Philosophy, Thames & Hudson, NY. Maritain, J. (1930, 1991). Introduction to Philosophy, Christian Classics, Inc., Westminster, MD. Robinson, R. (1953). Ch. 2: "Elenchus", Plato's Earlier Dialectic, 2nd edition (Clarendon Press, Oxford). Robinson, R. (1953). Ch. 3: "Elenchus: Direct and Indirect," Plato's Earlier Dialectic, 2nd edition (Clarendon Press, Oxford). Taylor, C.C.W., Hare, R.M. & Barnes, J. (1998). Greek Philosophers — Socrates, Plato, and Aristotle, Oxford University Press, NY. Taylor, C.C.W. (2001). Socrates: A very short introduction. Oxford: Oxford University Press. G.M.A Grube,(2002). " Plato, Five Dialogues". Hackett Publishing Company, Inc. বহিঃসংযোগ Apology of Socrates, by Plato. Greek Philosophy: Socrates Project Gutenberg e-texts on Socrates, amongst others: The Dialogues of Plato (see also Wikipedia articles on Dialogues by Plato) The writings of Xenophon, such as the Memorablia and Hellenica. The satirical plays by Aristophanes Aristotle's writings Voltaire's Socrates A free audiobook of the Socratic dialogue Euthyphro at LibriVox Socratic Method Research Portal Socrates, from Stanford Encyclopedia of Philosophy (2005) খ্রিস্টপূর্ব ৪৬৯-এ জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯-এ মৃত্যু গ্রিক দার্শনিক দার্শনিক সাংস্কৃতিক সমালোচক দর্শনের ইতিহাস পশ্চিমা সংস্কৃতি পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক ধর্মের সমালোচক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক শিক্ষার ইতিহাস প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক পশ্চিমা দর্শন সুবিবেচক চিন্তন রাজনৈতিক দার্শনিক যুক্তিবিজ্ঞানের ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর এথেন্সবাসী খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০-এর দশকে জন্ম প্রেমের দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Socrates
Socrates
Socrates (; Greek: Σωκράτης; c. 470 – 399 BC) was a Greek philosopher from Athens who is credited as the founder of Western philosophy and as among the first moral philosophers of the ethical tradition of thought. An enigmatic figure, Socrates authored no texts and is known mainly through the posthumous accounts of classical writers, particularly his students Plato and Xenophon. These accounts are written as dialogues, in which Socrates and his interlocutors examine a subject in the style of question and answer; they gave rise to the Socratic dialogue literary genre. Contradictory accounts of Socrates make a reconstruction of his philosophy nearly impossible, a situation known as the Socratic problem. Socrates was a polarizing figure in Athenian society. In 399 BC, he was accused of impiety and corrupting the youth. After a trial that lasted a day, he was sentenced to death. He spent his last day in prison, refusing offers to help him escape. Plato's dialogues are among the most comprehensive accounts of Socrates to survive from antiquity. They demonstrate the Socratic approach to areas of philosophy including epistemology and ethics. The Platonic Socrates lends his name to the concept of the Socratic method, and also to Socratic irony. The Socratic method of questioning, or elenchus, takes shape in dialogue using short questions and answers, epitomized by those Platonic texts in which Socrates and his interlocutors examine various aspects of an issue or an abstract meaning, usually relating to one of the virtues, and find themselves at an impasse, completely unable to define what they thought they understood. Socrates is known for proclaiming his total ignorance; he used to say that the only thing he was aware of was his ignorance, seeking to imply that the realization of our ignorance is the first step in philosophizing. Socrates exerted a strong influence on philosophers in later antiquity and has continued to do so in the modern era. He was studied by medieval and Islamic scholars and played an important role in the thought of the Italian Renaissance, particularly within the humanist movement. Interest in him continued unabated, as reflected in the works of Søren Kierkegaard and Friedrich Nietzsche. Depictions of Socrates in art, literature, and popular culture have made him a widely known figure in the Western philosophical tradition.
1429
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%AA%E0%A7%8B
স্টিল্‌পো
স্টিল্‌পো ছিলেন গ্রিক দার্শনিক। তিনি থিওফ্রাস্টাস এবং সক্রেটিসের সমসাময়িক কালের দার্শনিক ছিলেন। তার কোন লেখাই সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায় নাই। তিনি মূলত যুক্তিবিদ্যার উপর বিষদ আলোচনা করেছেন। তার দর্শনের মুলে রয়েছে বৈরাগ্যবাদ ও স্টয়িকবাদ। তার উল্লেখযোগ্য শিষ্যের মধ্যে জেনো অন্যতম, যিনি স্টয়িকবাদের গুরু হিসেবে পরিচিত।. তথ্যসূত্র গ্রিক দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Stilpo
Stilpo
Stilpo or Stilpon (Greek: Στίλπων, Stílpōn; c. 360 – c. 280 BC), in Latin sources also Stilbo or Stilbon, was a Greek philosopher of the Megarian school. He was a contemporary of Theophrastus, Diodorus Cronus, and Crates of Thebes. None of his writings survive, but he is described in the writings of others as being interested in logic and dialectic, and he argued that the universal is fundamentally separated from the individual and concrete. His ethical teachings approached that of the Cynics and Stoics. His most important followers were Pyrrho, the founder of Pyrrhonism, and Zeno of Citium, the founder of Stoicism.
1430
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A7%8B
প্লেটো
প্লেটো (প্রাচীন গ্রিক ভাষায় Πλάτων প্লাতন্‌) (খ্রিষ্টপূর্ব ৪২৭ - খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৮) বিশ্ববিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক। তিনি দার্শনিক সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন এবং দার্শনিক এরিস্টটল তার ছাত্র ছিলেন। এ হিসেবে প্রাচীন গ্রিসের সবচেয়ে প্রভাবশালী তিনজন দার্শনিকের মধ্যে প্লেটো দ্বিতীয়। প্রথম সক্রেটিস এবং শেষ এরিস্টটল। এরাই পশ্চিমা দর্শনের ভিত রচনা করেছেন বলা যায়। প্লেটো একাধারে গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক ভাষ্যের রচয়িতা হিসেবে খ্যাত। তিনিই পশ্চিমা বিশ্বে উচ্চ শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এটি ছিল এথেন্সের আকাদেমি। প্লেটো সক্রেটিসের অনুরক্ত ছাত্র ছিলেন, সক্রেটিসের অনৈতিক মৃত্যু তার জীবনে প্রগাঢ় প্রভাব ফেলেছে। জীবনী জন্ম প্লেটোর সঠিক জন্ম তারিখ সম্পর্কে জানা যায়নি। প্রাচীন তথ্যসূত্রগুলো অধ্যয়নের মাধ্যমে আধুনিকতম বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছেন প্লেটো ৪২৮ থেকে ৪২৭ খ্রীস্টপূর্বাব্দের কোন এক সময়ে গ্রিসের এথেন্স বা এজিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এরিস্টন। ডায়োজিনিস লিরটিয়াসের প্রদত্ত তথ্যমতে এরিস্টনের পূর্বপুরুষ ছিল এথেন্সের রাজা কডরাস এবং মেসেনিয়ার রাজা মেলানথাস। প্লেটোর মা'র নাম পেরিকটিওন যার পারিবারিক পূর্বপুরুষ ছিল বিখ্যাত এথেনীয় আইনজ্ঞ এবং কবি সোলন। এ হিসেবে প্লেটো মা ও বাবা উভয় দিক দিয়েই বিশেষ বংশমর্যাদার অধিকারী ছিলেন। এছাড়াও প্লেটো সুদর্শন ও স্বাস্থ্যবান ছিলেন। বলা হয়ে থাকে, আয়তাকার কাঁধের অধিকারী ছিলেন বলেই সবাই তাকে প্লেটো নামে ডাকতো। দর্শনের প্রতি অনন্যসাধারণ নিষ্ঠা ছাড়াও তার বেশ কিছু গুণ ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তিনি সৈনিক ও ক্রীড়াবিদ হিসেবে প্রভূত সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শৈশব ও শিক্ষা প্লেটো যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তা শিক্ষা গ্রহণের জন্য ছিল সুবিশেষ অনুকূল। এই সুযোগের সঠিক সদ্ব্যবহার করেতে পেরেছিলেন প্লেটো। সমকালীন শিক্ষার সবরকম সুযোগ-সুবিধাই তিনি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। হেরাক্লিটাসের একটি বিখ্যাত দার্শনিক মত ছিল, পরিবর্তনশীল ইন্দ্রিয়জগৎ সম্পর্কে কোন স্থিত জ্ঞান সম্ভব নয়। এরিস্টটলের মতে, এই দার্শনিক মতের সাথে প্লেটো বাল্যকালেই পরিচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও প্লেটোর জীবনে এসময় প্রভাব পড়েছিল পারমেনাইডিস এবং পিথাগোরাসের দর্শনের। প্লেটো ও সক্রেটিস প্লেটোর জীবনে সবচেয়ে বেশি যিনি প্রভাব ফেলেছিলেন তিনি হলেন তার শিক্ষক মহামতি সক্রেটিস। তার জীবনে সক্রেটিসের প্রভাব অতি সুস্পষ্ট কারণ সক্রেটিসের সব কথোপকথন প্লেটোই লিখে গেছেন। শৈশবকাল থেকেই প্লেটোর সাথে সক্রেটিসের পরিচয় ছিল। গ্রন্থাবলি প্লেটো রচিত গ্রন্থাবলির নাম ও বিষয়বস্তুঃ এপোলজি (Apology) এথেন্সের আদালতে সক্রেটিস কীভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন, এ গ্রন্থে প্লেটো তারই বর্ণনা দিয়েছেন, ক্রিটো (Crito) তে সক্রেটিসকে একজন বিশ্বস্ত রাজভক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে ; ইউথ্রিফ্রনে (Euthyphron) ধর্মের প্রকৃতি, ল্যচেস (Laches) এ সাহসিকতা, আইয়নে (Ion) অনুধ্যানবিহীন সেনাপতি ও কবি ব্যক্তি সম্পর্কিত, প্রোটাগোরাস (Protagoras) এ তার অযথার্থবাদ ও সক্রেটিসের যথার্থবাদের আলোচনা, চারমাইডিসে (Charmydes) মিতাচার সম্পর্কে, লাইসিসে (Lysis) বন্ধুত্ব সম্পর্কে, রিপাবলিক (Republic) গ্রন্থে আদর্শ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে, জর্জিয়াসে (Gorgias) জ্ঞান ও শক্তির তুলনামূলক উৎকৃষ্টতা সম্বন্ধে, মেনোতে (Meno) সত্যতা ও জ্ঞানের মাত্রাভেদ, সহজাত ও লৌকিক ধারণার প্রয়োগিক মূল্য সম্পর্কে, ইউথিডেমাসে (Euthydemus) সোফিস্টদের ক্ষেত্রে সঠিক আদর্শগত মানদ- বিষয়ক, ক্রেটিলাসে (Cratylus) ভাষাতত্ত্ব সম্পর্কে, ফিডোতে (Phaedo) আত্মার অমরতা, ফিড্রাসে (Phaedrus) তার্কিকদের বিচারের প্রতিবাদ, থিয়্যাটেটাসে (Theaetetus) রাষ্ট্র ও দর্শন তথা ইন্দ্রিয়লব্ধ ও বৌদ্ধিক জ্ঞানের অসঙ্গতি সম্পর্কে, পারমেনাইডিসে (Parmenides) সত্তা ও জগতের সম্পর্ক, সোফিস্টে (Sophist) তাদের ইন্দ্রিয়লব্ধ বিচ্ছিন্ন জ্ঞানের অসারতা এবং সার্বিক প্রজ্ঞালব্ধ জ্ঞানের যৌক্তিকতা প্রদর্শিত হয়, ফাইলিবাসে (Philebus) সুখ ও শুভের ধারণা, টাইমীয়াসে (Timaeus) সৃষ্টিতত্ত্ব এবং লজে (Laws) রিপাবলিকে স্বীয় মন্তব্যের আংশিক প্রত্যাহার এবং রাষ্ট্র ও আইন বিষয়ে মূল্যবান আলোচনা সংযোজিত হয়েছে। দর্শন সাম্যবাদ প্লেটো তার দি রিপাবলিক গ্রন্থে সাম্যবাদ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি তৎকালীন আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সাম্যবাদ-এর ধারণা দিয়েছিলেন। আধুনিক সাম্যবাদ হলো প্লেটোর কাছ থেকে ধার করা সাম্যবাদ। আধুনিক সাম্যবাদে শুধু ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিলোপের কথা বলা হয়। আসলে দেখা যায়, প্লেটোর সাম্যবাদের কিছু অংশ বর্তমানেও বাস্তব। মৃত্যু মহান রাষ্ট্রচিন্তাবিদ প্লেটো খ্রাষ্টপূর্ব ৩৪৭অব্দে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। একটি বিকৃত গল্পের পাণ্ডুলিপির সূত্র থেকে জানা যায়, একটি ছোট মেয়ে তার কাছে বাঁশি বাজানো অবস্থায় প্লেটো তার বিছানায় স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। আরেক বর্ণনা অনুযায়ী, প্লেটো একটি বিয়ের ভোজ খেতে গেলে সেখানেই মারা যান। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ খ্রিষ্টপূর্ব ৪২৭-এ জন্ম খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৭-এ মৃত্যু গ্রিক দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ-শতাব্দীর দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ-শতাব্দীর কবি সাংস্কৃতিক সমালোচক পশ্চিমা সংস্কৃতি পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক শিক্ষার ইতিহাস ভাববাদী খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক প্লেটো খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তি খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর গ্রীক ব্যক্তি খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর লেখক যুক্তিবিজ্ঞানী প্রাকৃতিক দার্শনিক প্রেমের দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Plato
Plato
Plato ( PLAY-toe; Greek: Πλάτων), born Aristocles (Ἀριστοκλῆς; c. 427 – 348 BC), was an ancient Greek philosopher of the Classical period who is considered a foundational thinker in Western philosophy and an innovator of the written dialogue and dialectic forms. He raised problems for what became all the major areas of both theoretical philosophy and practical philosophy, and was the founder of the Platonic Academy, a philosophical school in Athens where Plato taught the doctrines that would later become known as Platonism. Plato's most famous contribution is the theory of forms (or ideas), which has been interpreted as advancing a solution to what is now known as the problem of universals. He was decisively influenced by the pre-Socratic thinkers Pythagoras, Heraclitus, and Parmenides, although much of what is known about them is derived from Plato himself. Along with his teacher Socrates, and Aristotle, his student, Plato is a central figure in the history of philosophy. Plato's entire body of work is believed to have survived intact for over 2,400 years—unlike that of nearly all of his contemporaries. Although their popularity has fluctuated, they have consistently been read and studied through the ages. Through Neoplatonism, he also greatly influenced both Christian and Islamic philosophy. In modern times, Alfred North Whitehead famously said: "the safest general characterization of the European philosophical tradition is that it consists of a series of footnotes to Plato."
1431
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A6%93%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B8
দিওগেনেস
দিওগেনেস ছিলেন একজন গ্রিক দার্শনিক। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৪১২ অব্দে (মতান্তরে খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯) সিনোপে (বর্তমান তুরস্ক) জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ অব্দে করিন্থে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বিরাগীদের মধ্যে সব চেয়ে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি ছিলেন অ্যান্টিস্থেনিসের একজন ছাত্র। ইতিহাসবিদদের ভাষ্য মতে, দিওগেনেস একটি পিপার মধ্যে থাকতেন এবং তার জীবনদশায় উল্লেখযোগ্য সম্পত্তির মধ্যে একটি আলখাল্লা, একটি লাঠি আর রুটি রাখার একটি থলে ছিল। তথ্যসূত্র গ্রিক দার্শনিক তপস্বী দার্শনিক সাংস্কৃতিক সমালোচক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩-এ মৃত্যু
https://en.wikipedia.org/wiki/Diogenes
Diogenes
Diogenes ( dy-OJ-in-eez; Ancient Greek: Διογένης, romanized: Diogénēs [di.oɡénɛːs]), also known as Diogenes the Cynic (Διογένης ὁ Κυνικός, Diogénēs ho Kynikós) or Diogenes of Sinope, was a Greek philosopher and one of the founders of Cynicism. He was born in Sinope, an Ionian colony on the Black Sea coast of Anatolia, in 412 or 404 BC and died at Corinth in 323 BC. Diogenes was a controversial figure. He was banished, or he fled, from Sinope over debasement of currency. He was the son of the mintmaster of Sinope, and there is some debate as to whether it was he, his father, or both who had debased the Sinopian currency. After his hasty departure from Sinope he moved to Athens where he proceeded to criticize many conventions of Athens of that day. There are many tales about him following Antisthenes and becoming his "faithful hound". Diogenes was captured by pirates and sold into slavery, eventually settling in Corinth. There he passed his philosophy of Cynicism to Crates, who taught it to Zeno of Citium, who fashioned it into the school of Stoicism, one of the most enduring schools of Greek philosophy. No authenticated writings of Diogenes survive, but there are some details of his life from anecdotes (chreia), especially from Diogenes Laërtius' book Lives and Opinions of Eminent Philosophers and some other sources. Diogenes made a virtue of poverty. He begged for a living and often slept in a large ceramic jar, or pithos, in the marketplace. He used his simple lifestyle and behavior to criticize the social values and institutions of what he saw as a corrupt, confused society. He had a reputation for sleeping and eating wherever he chose in a highly non-traditional fashion and took to toughening himself against nature. He declared himself a cosmopolitan and a citizen of the world rather than claiming allegiance to just one place. He modeled himself on the example of Heracles, believing that virtue was better revealed in action than in theory. He became notorious for his philosophical stunts, such as carrying a lamp during the day, claiming to be looking for a "man" (often rendered in English as "looking for an honest man", as Diogenes viewed the people around him as dishonest and irrational). He criticized Plato, disputed his interpretation of Socrates, and sabotaged his lectures, sometimes distracting listeners by bringing food and eating during the discussions. Diogenes was also noted for having mocked Alexander the Great, both in public and to his face when he visited Corinth in 336 BC.
1432
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B8%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
আসপাসিয়া
আসপাসিয়া (প্রাচীন গ্রিক: আস্পাসিয়া আনুমানিক খ্রিস্ট পূর্ব ৪৭০– খ্রিস্টপূর্ব ৪০০,) প্রাচীন গ্রিসের একজন খ্যাতনামা মহিলা, যিনি অ্যাথেন্সের রাজনীতিবিদ পেরিক্লিস এর সাথে সম্পর্কের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। তার জন্ম এশিয়া মাইনরের মিলেতুস শহরে, কিন্তু তিনি পরে অ্যাথেন্সে চলে আসেন, ও আমৃত্যু সেখানেই কাটান। পেরিক্লিসের মরণের পর তিনি লাইসিক্লেস এর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পেরিক্লিস ও তার একটি পুত্র সন্তান হয়েছিল, যিনি ছোট পেরিক্লিস নামে খ্যাত ছিলেন যিনি সেনাপতি পদে অধিষ্ঠিত হন, এবং আরগুনুসির যুদ্ধের পর তাকে হত্যা করা হয়। তথ্যসূত্র গ্রিসের ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০-এর দশকে জন্ম খ্রিস্টপূর্ব ৪০০-এর দশকে মৃত্যু খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর এথেন্সবাসী অলঙ্কারশাস্ত্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Aspasia
Aspasia
Aspasia (; Greek: Ἀσπασία Greek: [aspasíaː]; c. 470 – after 428 BC) was a metic woman in Classical Athens. Born in Miletus, she moved to Athens and began a relationship with the statesman Pericles, with whom she had a son named Pericles the Younger. According to the traditional historical narrative, she worked as a courtesan and was tried for asebeia (impiety), though modern scholars have questioned the factual basis for either of these claims, which both derive from ancient comedy. Though Aspasia is one of the best-attested women from the Greco-Roman world, and the most important woman in the history of fifth-century Athens, almost nothing is certain about her life. Aspasia was portrayed in Old Comedy as a prostitute and madam, and in ancient philosophy as a teacher and rhetorician. She has continued to be a subject of both visual and literary artists until the present. From the twentieth century, she has been portrayed as both a sexualised and sexually liberated woman, and as a feminist role model fighting for women's rights in ancient Athens.
1433
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B8
পেরিক্লিস
পেরিক্লিস (প্রাচীন গ্রিক ভাষা: Περικλῆς পেরিক্ল্যাস্‌, অর্থাৎ "মহিমান্বিত", ৪৯৫ খ্রীস্টপূর্ব-৪২৯ খ্রীস্টপূর্ব) ছিলেন গ্রিক সভ্যতার স্বর্ণযুগে এথেন্স নগরের একজন প্রভাবশালী ও মান্যগণ্য নেতা, বক্তা এবং সেনাপতি। পারস্য ও পেলোপনেস যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি আল্কমেনিডি পরিবারের সদস্য ছিলেন। গ্রিক সভ্যতা খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর এথেন্সবাসী গ্রিসের সংস্কৃতি
https://en.wikipedia.org/wiki/Pericles
Pericles
Pericles (, Greek: Περικλῆς; c. 495 – 429 BC) was a Greek politician and general during the Golden Age of Athens. He was prominent and influential in Ancient Athenian politics, particularly between the Greco-Persian Wars and the Peloponnesian War, and was acclaimed by Thucydides, a contemporary historian, as "the first citizen of Athens". Pericles turned the Delian League into an Athenian empire and led his countrymen during the first two years of the Peloponnesian War. The period during which he led Athens as Archon (ruler), roughly from 461 to 429 BC, is sometimes known as the "Age of Pericles", but the period thus denoted can include times as early as the Persian Wars or as late as the following century. Pericles promoted the arts and literature, and it was principally through his efforts that Athens acquired the reputation of being the educational and cultural center of the ancient Greek world. He started an ambitious project that generated most of the surviving structures on the Acropolis, including the Parthenon. This project beautified and protected the city, exhibited its glory, and gave work to its people. Pericles also fostered Athenian democracy to such an extent that critics called him a populist. Pericles was descended, through his mother, from the powerful and historically influential Alcmaeonid family. He, along with several members of his family, succumbed to the Plague of Athens in 429 BC, which weakened the city-state during a protracted conflict with Sparta.
1434
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%87%E0%A6%89%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%A1
মেগারার ইউক্লিড
মেগারার ইউক্লিড (প্রাচীন গ্রিক Ευκλείδης এউক্লেইদ্যাস্‌) খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৪০০ বছর আগের সময়কালের দার্শনিক যিনি মেগারিক দর্শন নামে দর্শনের একটি ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি সক্রেটিসের শিষ্য এবং তিনি তার মৃত্যুর সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন জগতের সবচেয়ে ভাল বিষয় এক, অনন্ত ও অপরিবর্তনশীল এবং ভালর বিপরীত কোন কিছুকে তিনি অস্বীকার করেন। জীবনী ইউক্লিড আনুমানিক ৪৩৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেগারায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এথেন্সে এসে সক্রেটিসের শিষ্য হন। তিনি সক্রেটিসের পাঠ ও বক্তৃতা শুনার জন্য এতই উৎসুক ছিলেন যে মেগারার নাগরিকদের এথেন্সে ঢোকার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে তিনি খুব ভোরে নারীর ছদ্মবেশে এথেন্সে চোরের মত ঢোকে যেতেন। সক্রেটিস ও থিয়েটেটাসের মধ্যকার আলাপ লিখে রাখার জন্য প্লাতোর থিয়েটেটাস-এর ভূমিকায় তার নাম উল্লেখ রয়েছে। সক্রেটিসের মৃত্যুর সময় (৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) তিনিও উপস্থিত ছিলেন। এর পরে তিনি মেগারায় ফিরে আসেন এবং প্লাতোসহ সক্রেটিসের অন্যান্য ভীতসন্ত্রস্ত শিষ্যদের তিনি আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তাব দেন। পাদটীকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর দার্শনিক গ্রিক দার্শনিক প্রাচীন গ্রিক শিক্ষাবিদ প্রাচীন মেগারীয় মেগারীয় দার্শনিক সক্রেটিসের শিষ্য
https://en.wikipedia.org/wiki/Euclid_of_Megara
Euclid of Megara
Euclid of Megara (; Greek: Εὐκλείδης Eucleides; c. 435 – c. 365 BC) was a Greek Socratic philosopher who founded the Megarian school of philosophy. He was a pupil of Socrates in the late 5th century BC, and was present at his death. He held the supreme good to be one, eternal and unchangeable, and denied the existence of anything contrary to the good. Editors and translators in the Middle Ages often confused him with Euclid of Alexandria when discussing the latter's Elements.
1435
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%97%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%20%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%A1
সিগমুন্ড ফ্রয়েড
সিগমুন্ড ফ্রয়েড (মে ৬, ১৮৫৬-সেপ্টেম্বর ২৩, ১৯৩৯) ছিলেন একজন অস্ট্রিয় মানসিক রোগ চিকিৎসক এবং মনস্তাত্ত্বিক। তিনি "মনোসমীক্ষণ" (Psychoanalysis) নামক মনোচিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবক। ফ্রয়েড "মনোবীক্ষণের জনক" হিসেবে পরিগণিত। তার বিভিন্ন কাজ জনমানসে বিরাট প্রভাব ফেলেছে। মানব সত্বার 'অবচেতন', 'ফ্রয়েডিয় স্খলন', 'আত্মরক্ষণ প্রক্রিয়া' এবং 'স্বপ্নের প্রতিকী ব্যাখ্যা' প্রভৃতি ধারণা জনপ্রিয়তা পায়। একই সাথে ফ্রয়েডের বিভিন্ন তত্ত্ব সাহিত্য, চলচ্চিত্র, মার্ক্সবাদী আর নারীবাদী তত্ত্বের ক্ষেত্রেও গভীর প্রভাব বিস্তার করে। তিনি ইডিপাস কমপ্লেক্স ও ইলেক্ট্রা কমপ্লেক্স নামক মতবাদ সমূহের জন্য অধিক আলোচিত। অবদান ১৯০০ থেকে ১৯৩০-এর দশক অর্থাৎ তার চুয়াল্লিশ বছর বয়েস থেকে আশি, এই সময়টায় ফ্রয়েড পরিণত হয়েছিলেন কিংবদন্তিতে। প্রকাশিত হয়েছে তার এমন সব তত্ত্বের বই যা পড়ে চমৎকৃত হয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা, তাক লেগে গেছে মধ্যবিত্ত সমাজের। তিনি বলেছিলেন যে মানুষের মনের মধ্যে আছে অজানা অচেনা এক অবচেতন, যার সিংহভাগ জুড়ে নানান গোলমেলে যৌন ইচ্ছে, ভীতি আর হিংসার প্রবণতা! পৃথিবীর নানান প্রান্ত থেকে ভিয়েনার ১৯ নম্বর বের্গেসি— যা কিনা ফ্রয়েডের বসতবাড়ি এবং ক্লিনিক, সেখানে যায় রোগীরা। মুগ্ধ হয় তার চিকিৎসা দেখে। ফ্রয়েড নিজেকে বিজ্ঞানীর চেয়ে বেশি এক জন ‘কন্‌কুইস্তাদর’ বলে ভাবেন— অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এক মানুষ, যে অতিক্রম করতে চায় একের পর এক বাধা। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে ভিয়েনাবাসী তাঁকে জেনেছেন এক জন সহানুভূতিশীল, সংস্কৃতিমনস্ক, বিত্তবান, তীক্ষ্ণ মেধার মানুষ বলে, নিজের সামাজিক প্রতিপত্তি বিষয়ে যিনি সজাগ। স্বদেশ ত্যাগ অবস্থা বদলাতে শুরু করল ১৯৩৩-এ জার্মান রাইখের অপ্রতিরোধ্য নেতা ও নায়ক অ্যাডল্ফ হিটলারর উত্থানের সঙ্গে। দুঃসময় যে আসছে তার অশনি সঙ্কেত ছিল হিটলার-সমর্থক নাৎসিদের বামপন্থা, গণতন্ত্র বা মানুষের অধিকার সংক্রান্ত বইয়ের প্রতি আক্রোশ। কার্ল মার্ক্স, টমাস মান, কাফকা, অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের বইয়ের সঙ্গে তার বইও স্তূপাকার করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে শুনে ফ্রয়েড নাকি একটু শ্লেষের হাসি হেসে বলেছিলেন, ‘‘মধ্যযুগ হলে আমাকেও পুড়িয়ে মারত, এখন তো শুধু আমার লেখা কেতাব জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এরা কতটা অগ্রসর হয়েছে ভাবো।’’ ফ্রয়েড কি ভাবতে পেরেছিলেন, এর কয়েক বছরের মধ্যেই নাৎসিরা হাজার হাজার ইহুদি ও অন্যান্য ‘খুঁতো’দের গ্যাস চেম্বারে চালান করবে? ভিয়েনা ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শে কান দেননি ফ্রয়েড। বলেছিলেন, এ শহর ছেড়ে যাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব। একে তিনি বৃদ্ধ, তায় চোয়ালের ক্যানসারে ভুগছেন এক দশক ধরে। বার বার যন্ত্রণাদায়ক অস্ত্রোপচারের পর কাবু, তবু সিগার ছাড়তে নারাজ জেদি মানুষটি বলেছিলেন, এই অবস্থায় অন্য দেশে ‘রিফিউজি’ হয়ে থাকার কোনও বাসনা তার নেই। তা ছাড়া জার্মানিতে যা হয়েছে, সত্যি কি তা অস্ট্রিয়ায় হবে? কিন্তু সেই দুঃস্বপ্ন সত্যি হল, পাঁচ বছরের মধ্যে। ১৯৩৮ সালের ১৪ মার্চ হুডখোলা মার্সিডিজ়ে চেপে হিটলারের ভিয়েনা প্রবেশের দৃশ্যে আহ্লাদে ফেটে পড়েছিল রাস্তার দু’ধারে কাতারে কাতারে জড়ো হওয়া মানুষ। তাদের হাতে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা পতাকা, মুখে একটাই বুলি, ‘হাইল হিটলার’। অস্ট্রীয় নাৎসিরা, যারা এত দিন ঘাপটি মেরে দিন গুনছিল তাদের প্রিয় ফ্যুয়েরারের, তাদের চোখেমুখে ফুটে উঠেছিল নারকীয় উল্লাস। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছিল ইহুদিদের দোকান লুঠপাট, ভাঙচুর, রাস্তায় টেনে নামিয়ে অপমান, মারধর। এতেও ভীত, সন্ত্রস্ত হননি ফ্রয়েড। এমনকি যে দিন বাড়িতে হাজির হল নাৎসি বাহিনী, শোনা যায়, নিজের স্টাডিতে পড়াশোনায় মগ্ন অশীতিপর মনস্তত্ত্ববিদ প্রথমে টেরই পাননি তাদের উপস্থিতি। বুঝতে পেরে ধীর পায়ে হেঁটে এসে, স্থির চোখে তাকিয়ে ছিলেন লুঠতরাজ করা নাৎসিদের দিকে। ফ্রয়েডের সেই বিখ্যাত চাউনিতে নাকি চুপসে গেছিল মস্তানরা। কিন্তু তারও বিশ্বাসের ভিত নড়ে গেল ২২ মার্চ, যে দিন বাড়িতে গেস্টাপো এসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে গেল তার কনিষ্ঠ সন্তান অ্যানা ফ্রয়েডকে। যদিও অ্যানা এক বারের জন্যও বিচলিত হননি নিষ্ঠুর জার্মান পুলিশকে দেখে। শান্ত ভাবে হুডখোলা গাড়িতে চেপে চলে গিয়েছিলেন সিগমুন্ড-কন্যা, যিনি শুধু পিতার ভালবাসার পাত্রীই নন, ছিলেন তার প্রিয় শিষ্যা ও সচিব, তার নিশ্চিন্ত নির্ভরতার মানুষও। ব্যক্তিগত ব্যাপারে তো বটেই, নিজের সমস্ত চিন্তাভাবনা অ্যানার সঙ্গে ভাগ করে নিতেন ফ্রয়েড। সেই অ্যানাকে গেস্টাপো তুলে নিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। অনেক রাতে অ্যানা ফিরে আসার পর স্বস্তির গভীর নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন বৃদ্ধ পিতা। সেই রাতের পর থেকেই ফ্রয়েড বুঝতে পারেন, ভিয়েনা আর নিরাপদ নয়। অন্য কোনওখানে ডেরা খুঁজতে হবে। কিন্তু যাবেন কোথায়? আমেরিকায় তার বহু ভক্ত। অথচ ফ্রয়েডের সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে ঘোর অনীহা। কাছেপিঠের মধ্যে ইংল্যান্ড, সেখানেও তার গুণগ্রাহীর অভাব নেই। তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রধান আর্নেস্ট জোন্স ঠিক করলেন, হাল ধরতে হবে তাঁকেই। প্রচুর ব্রিটিশ হোমরাচোমরাদের সঙ্গে ওঠাবসার সূত্রে সরকারকে রাজি করিয়ে ফেললেন জোন্স। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মিলল ছাড়পত্র। ১৯৩৮ সালের ৪ জুন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে উঠল ফ্রয়েড পরিবার। ট্রেন যখন ধীর গতিতে জার্মানির সীমানা পেরিয়ে ফ্রান্সে প্রবেশ করল, তখন নাকি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন ফ্রয়েড। রাইন নদীর ওপর দিয়ে ঝুকঝুক করে চলেছে ট্রেন। জল যেখানে ছুঁয়েছে আকাশের বিস্তার, সেই সীমারেখার দিকে তাকিয়ে মাতৃভাষা জার্মানে ফ্রয়েড উচ্চারণ করেছিলেন তিনটি শব্দ, ‘‘এখন আমরা স্বাধীন।’’ ৬ জুন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া স্টেশনে ভিড় জমিয়েছিল লন্ডনবাসী, প্রিয় সিগমুন্ড ফ্রয়েডকে দেখার জন্য। বস্তুত জীবনের শেষ একটি বছর লন্ডনে স্বস্তিতে আর আরামেই কেটেছিল ফ্রয়েডের। আর্নেস্ট জোন্স ফ্রয়েড ও তার পরিবারের জন্য খুঁজে বার করেছিলেন ১৯২০ সালে তৈরি পুরনো দিনের স্থাপত্যরীতিতে গড়া বিশাল এক ম্যানসন। সেই বাড়ি কিনে অনেক অদলবদল করেছিলেন পেশায় স্থাপত্যবিদ আর্নেস্ট, বাবার প্রয়োজনকে মাথায় রেখে। এমনকি সিঁড়ি ভাঙতে ফ্রয়েডের কষ্ট হয় বলে বাড়িতে বসেছিল সুন্দর ছোট্ট লিফ্‌টও। ২০ নম্বর ম্যারস্ফিল্ড গার্ডেনস-এর আলো-হাওয়া মাখা সেই বিশাল বাড়িকে বড় সুন্দর মনে হয়েছিল ফ্রয়েডের। মনে হয়েছিল, এ তাঁদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত। লন্ডনের সাধারণ মানুষদের থেকে অকুণ্ঠ ভালবাসা পেয়ে তৃপ্ত বোধ করেছিলেন তিনি। ‘এই ব্রহ্মাণ্ডে আমার শেষ ঠিকানা’ বলে অভিহিত করেছিলেন বাড়িটিকে। লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমের হ্যাম্পস্টেড এলাকায় হ্যাম্পস্টেড মেট্রো স্টেশনকে নিচে রেখে ডানে মোড় নিলেই ফিট্‌সজন্স অ্যাভিনিউয়ের গড়ানে রাস্তা। খানিক এগোলেই ম্যারস্ফিল্ড গার্ডেন্স রাস্তার ২০ নম্বর বাড়িতে জীবনের শেষ এক বছরের একটু বেশি সময় কাটিয়েছিলেন সিগমুন্ড , তার কর্মস্থল ও প্রিয় শহর ভিয়েনা থেকে অনেক দূরে। ইংল্যান্ড চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন আধুনিক সময়ের সবচেয়ে দাপুটে মনস্তত্ত্ববিদ। শেষ জীবন ফ্রয়েড ২৪ বছর বয়স থেকে তামাকজাত ধূমপান সেবন শুরু করেন; শুরুতে তিনি সিগারেট খেতেন, এরপর তিনি সিগার (চুরুট বা বিড়ি) সেবনকারী হয়ে ওঠেন। তিনি বিশ্বা‌স করতেন যে, ধূমপান তার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতো এবং পরিমিত ধূমপানের মাধ্যমে তিনি আত্ম-নিয়ন্ত্রণের চর্চা‌ চালিয়ে যেতে সক্ষম হন। সহকর্মী উইলহেম ফ্লিয়েস-এর কাছ থেকে স্বাস্থ্যগত সতর্ক‌বার্তা‌ পাওয়ার পরেও তিনি ধূমপান অব্যহত রাখেন, এবং অবশেষে মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। ফ্রয়েড ১৮৯৭ সালে ফ্লিয়েসকে পরামর্শ দেন যে, তামাকসহ অন্যান্য আসক্তিমূলক কর্ম‌কান্ডগুলো হল স্ব‌মেহন নামক "অনন্য চমৎকার অভ্যাস"-এর বিকল্প ১৯২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ফ্রয়েড তার মুখগহ্ব‌রে অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে সৃষ্ট লিউকোপ্লাকিয়া নামক একটি মৃদু জমাট মাংসপিন্ড দেখতে পান। ফ্রয়েড শুরুতে তা গোপন রাখেন, কিন্তু ১৯২৩ সালের এপ্রিলে তিনি আরনেস্ট জোনসকে জানান যে, জমাট মাংসপিন্ডটি কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝির দিকে, ফ্রয়েড তার চোয়ালের ক্যান্সারের কারণে ব্যাপক যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন এবং চিকিৎসক তার এই যন্ত্রণাকে অনিয়ন্ত্রণযোগ্য বলে ঘোষণা করেন। ফ্রয়েড তার সর্বশেষ পঠিত বই বালজাক-এর লা পিউ দ্য চ্যাগরিন-এ তার নিজস্ব ক্রমবর্ধ‌নশীল ভগ্নদশাকে আরও দ্রুতগতিতে বাড়িয়ে তোলে এবং এর পরপরই তিনি তার বন্ধু চিকিৎসক ও প্রাক্তন সহ-শরণার্থী‌ ম্যাক্স স্কার-এর সঙ্গে স্বেচ্ছামৃত্যুর ব্যাপারে যোগাযোগ করেন, যার সঙ্গে পূর্বে‌ তিনি তার শেষ পর্যা‌য়ের অসুস্থাবস্থা নিয়ে কথা বলেছিলেন। ম্যাক্স স্কার ও কন্যা আনা ফ্রয়েডের সঙ্গে যৌথ পরামর্শ‌ করে অবশেষে ১৯৩৯ সালের ২৩শে ডিসেম্বর অধিক মরফিন গ্রহণের মাধ্যমে স্বে‌চ্ছামৃত্যু হিসেবে আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করেন। তার চিকিৎসক জানিয়েছিলেন যে, আত্মহত্যার প্ররোচনায় ধূমপানজনিত কারণে মুখের ক্যান্সারই এর জন্যে দায়ী। চিত্রমালা তথ্যসূত্র মনস্তত্ববিদ ১৮৫৬-এ জন্ম ১৯৩৯-এ মৃত্যু ইহুদি নাস্তিক অস্ট্রীয় ইহুদি নাস্তিক লেখক ধর্মের সমালোচক ২০শ শতাব্দীর অস্ট্রীয় লেখক রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য মনোরোগ বিজ্ঞানের ইতিহাস
https://en.wikipedia.org/wiki/Sigmund_Freud
Sigmund Freud
Sigmund Freud ( FROYD, German: [ˈziːkmʊnt ˈfrɔʏt]; born Sigismund Schlomo Freud; 6 May 1856 – 23 September 1939) was an Austrian neurologist and the founder of psychoanalysis, a clinical method for evaluating and treating pathologies seen as originating from conflicts in the psyche, through dialogue between patient and psychoanalyst, and the distinctive theory of mind and human agency derived from it. Freud was born to Galician Jewish parents in the Moravian town of Freiberg, in the Austrian Empire. He qualified as a doctor of medicine in 1881 at the University of Vienna. Upon completing his habilitation in 1885, he was appointed a docent in neuropathology and became an affiliated professor in 1902. Freud lived and worked in Vienna having set up his clinical practice there in 1886. Following the German annexation of Austria in March 1938, Freud left Austria to escape Nazi persecution. He died in exile in the United Kingdom in 1939. In founding psychoanalysis, Freud developed therapeutic techniques such as the use of free association and discovered transference, establishing its central role in the analytic process. Freud's redefinition of sexuality to include its infantile forms led him to formulate the Oedipus complex as the central tenet of psychoanalytical theory. His analysis of dreams as wish-fulfilments provided him with models for the clinical analysis of symptom formation and the underlying mechanisms of repression. On this basis, Freud elaborated his theory of the unconscious and went on to develop a model of psychic structure comprising id, ego and super-ego. Freud postulated the existence of libido, sexualised energy with which mental processes and structures are invested and which generates erotic attachments, and a death drive, the source of compulsive repetition, hate, aggression, and neurotic guilt. In his later work, Freud developed a wide-ranging interpretation and critique of religion and culture. Though in overall decline as a diagnostic and clinical practice, psychoanalysis remains influential within psychology, psychiatry, psychotherapy, and across the humanities. It thus continues to generate extensive and highly contested debate concerning its therapeutic efficacy, its scientific status, and whether it advances or hinders the feminist cause. Nonetheless, Freud's work has suffused contemporary Western thought and popular culture. W. H. Auden's 1940 poetic tribute to Freud describes him as having created "a whole climate of opinion / under whom we conduct our different lives".
1436
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%AE%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A6%B2%E0%A7%8B
আব্রাহাম মাসলো
আব্রাহাম মাসলো (; এপ্রিল ১, ১৯০৮ - জুন ৮, ১৯৭০) একজন মার্কিন মনোবিজ্ঞানী। মানুষের চাহিদার ঊধ্বর্গামী শ্রেণিবিন্যাসের জন্য তিনি একটি তত্ত্ব পেশ করেন যার কারণে তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন। এই তত্ত্ব নিডস্‌ হায়ারার্কি থিওরী অব মোটিভেশন নামে সুপরিচিত। ২০০২ সালে প্রকাশিত সাধারণ মনোবিজ্ঞান সমীক্ষার একটি পর্যালোচনায় বিংশ শতাব্দীর দশম সর্বাধিক উদ্ধৃত মনোবিজ্ঞানী হিসাবে মাসলোকে স্থান দিয়েছে। তথ্যসূত্র মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ১৯০৮-এ জন্ম ১৯৭০-এ মৃত্যু ইউক্রেনীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি মার্কিন নাস্তিক রুশ ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ইহুদি মার্কিন নাস্তিক ইহুদি মার্কিন লেখক মার্কিন মনোবিদ্যা সমিতির সভাপতি
https://en.wikipedia.org/wiki/Abraham_Maslow
Abraham Maslow
Abraham Harold Maslow (; April 1, 1908 – June 8, 1970) was an American psychologist who created Maslow's hierarchy of needs, a theory of psychological health predicated on fulfilling innate human needs in priority, culminating in self-actualization. Maslow was a psychology professor at Brandeis University, Brooklyn College, New School for Social Research, and Columbia University. He stressed the importance of focusing on the positive qualities in people, as opposed to treating them as a "bag of symptoms". A Review of General Psychology survey, published in 2002, ranked Maslow as the tenth most cited psychologist of the 20th century.
1437
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
মনস্তত্ত্ববিদের তালিকা
এই তালিকায়, উল্লেখযোগ্য মনস্তত্ত্ববিদ এবং মনোবিজ্ঞানে অবদানকারী অন্তর্ভুক্ত। মনস্তত্ত্ববিদদের নিচে তালিকাভুক্ত করা হলোঃ আ আব্রাহাম মাসলো উ উইলিয়াম জেমস ই ইবনে রুশদ ইভান পাভলভ ক ক্যারল গিলিগ্যান জ জঁ পিয়াজেঁ ন নোম চম্‌স্কি ভ ভি এস রামচন্দ্রন ম মার্টিন ডেইলি র রবিন ডানবার স সিগমুন্ড ফ্রয়েড স্টিভেন পিংকার আরোও দেখুন মনস্তত্ববিদ মনোবিজ্ঞানী
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_psychologists
List of psychologists
This list includes notable psychologists and contributors to psychology, some of whom may not have thought of themselves primarily as psychologists but are included here because of their important contributions to the discipline. Specialized lists of psychologists can be found at the articles on comparative psychology, list of clinical psychologists, list of developmental psychologists, list of educational psychologists, list of evolutionary psychologists, list of social psychologists, and list of cognitive scientists. Many psychologists included in those lists are also listed below:
1440
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%A8%20%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF
মার্টিন ডেইলি
মার্টিন ডেইলি কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপক, এবং বিবর্তন মনস্তত্ত্ববিদ্যার গবেষক। তিনি ও মার্গো উইলসন ইভোলিউশন অ্যান্ড হিউম্যান বিহেভিয়ার নামক গবেষণা জার্নালের প্রাক্তন সম্পাদক। বই (সবগুলি বই মার্গো উইলসনের সাথে লেখা) Sex, Evolution, and Behaviour (১৯৭৮) Homicide (১৯৮৮) The truth about Cinderella: A Darwinian view of parental love. (১৯৯৮) আরও দেখুন সিন্ডারেলা এফেক্ট বহিঃসংযোগ M2 গবেষণা গ্রুপ কানাডীয় মনস্তত্ত্ববিদ ১৯৪৪-এ জন্ম জীবিত ব্যক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/Martin_Daly_(professor)
Martin Daly (professor)
Martin Daly (born November 15, 1944) is an Emeritus Professor of Psychology at McMaster University in Hamilton, Ontario, Canada, and author of many influential papers on evolutionary psychology. His current research topics include an evolutionary perspective on risk-taking and interpersonal violence, especially male-male conflict and family violence. He and his wife, the late Margo Wilson, were formerly editors-in-chief of the journal Evolution and Human Behavior and presidents of the Human Behavior and Evolution Society. He was named a Fellow of the Royal Society of Canada in 1998. Daly is one of the main researchers of the Cinderella effect.
1441
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A1%20%E0%A6%A1%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8
রিচার্ড ডকিন্স
ক্লিন্টন রিচার্ড ডকিন্স (জন্ম: ২৬ মার্চ ১৯৪১) একজন ইংরেজ বিবর্তনবাদ বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞান লেখক। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চার্লস সিম্নোয়ি চেয়ার ইন দি পাবলিক আন্ডারস্ট্যান্ডিং অফ সায়েন্স-এ অধিষ্ঠিত ছিলেন; ২০০৮ সালে তিনি এই পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। অধ্যাপক ডকিন্স 'সেলফিশ জিন' গ্রন্থটির জন্য বিদ্বৎসমাজে পরিচিত। তার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বই - এক্সটেডেড ফেনোটাইপ, ব্লাইন্ড ওয়াচমেকার, রিভার আউট অব ইডেন, ক্লাইম্বিং মাউন্ট ইম্প্রবেবল, আনউইভিং দ্য রেইনবো, ডেভিলস চ্যাপ্লিন, অ্যান্সেস্টর টেল, দ্য গড ডিলুশন এবং দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ। তিনি আধুনিক বিশ্বে সাধারণ মানুষদের মধ্যে বিবর্তনকে জনপ্রিয়করণে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। প্রাথমিক জীবন ডকিন্স ১৯৪১ সালের ২৬শে মার্চ ব্রিটিশ কলম্বিয়ার নাইরোবিতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতা ইয়ান ম্যারি ভিভিয়ান (নি ল্যাডনার) এবং পিতা ক্লিনটন জন ডকিন্স (১৯১৫-২০১০) একজন প্রাক্তন সরকারি কৃষি কর্মকর্তা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে তার পিতা রাজার আফ্রিকান রাইফেলে যোগ দানের জন্য ডাক পান। এবং ১৯৪৯ সালে ডকিন্সের বয়স যখন ৮ বছর, তখন তিনি ফিরে আসেন। অক্সফোর্ডশায়রে ডকিন্সের বাবা উত্তরাধিকার সূত্রে বেশ কিছু জমি পেয়েছিলেন, যা তিনি কৃষিকাজে ব্যবহার করতেন। ডকিন্স নিজেকে ইংরেজ দাবী করেন এবং ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে বাস করেন। ডকিন্সের একজন ছোট বোন আছে। ডকিন্সের পিতামাতা দুইজনই প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে আগ্রহী ছিলেন এবং তারা সব সময়ই ডকিন্সের প্রশ্নের বৈজ্ঞানিকভাবে উত্তর দিতেন। ডকিন্স নিজের শৈশবকে আর দশজন সাধারণ ইংরেজদের মতোই বলেছেন। তিনি টিনেজ বয়স অব্দি খ্রিষ্টান ধর্মালম্বী ছিলেন কিন্তু এক পর্যায়ে তিনি অনুভব করেন আধুনিক বিবর্তনবাদ তার জীবনের জটিলতাকে আরো সহজভাবে ব্যাখ্যা করে এবং তিনি ঈশ্বরে বিশ্বাস থেকে সরে আসেন। ডকিন্স বলেন, "প্রাণের জটিলতা দেখে এর সবকিছুর একজন স্রষ্টা আছেন ভাবতে সহজ হয় বলেই আমি ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। কিন্তু, আমি মনে করি, যখন আমি বুঝতে পারলাম, ডারউইনিজম এই জটিলতার আরো উন্নত ব্যাখ্যা দেয় তখন তা আমাকে সৃষ্টিতত্ত্বের জাল থেকে বেড়িয়ে আসতে সাহায্য করলো।" মিডিয়া নির্বাচিত প্রকাশনা প্রামানিক ছায়াছবি Nice Guys Finish First (1986) The Blind Watchmaker (1987) Growing Up in the Universe (1991) Break the Science Barrier (1996) The Root of All Evil? (2006) The Enemies of Reason (2007) The Genius of Charles Darwin (2008) Faith School Menace? (2010) অন্যান্য হাজির Doctor Who: "The Stolen Earth" (2008) – as himself Expelled: No Intelligence Allowed (2008) – as himself The Purpose of Purpose (2009) – Lecture tour among American universities তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সাধারণ Official website The Richard Dawkins Foundation for Reason and Science ভিডিও National Geographic Interviews – A series of video interviews with National Geographic Channel with Richard Dawkins on Darwin, Evolution and God. Video interview with Riz Khan for Al Jazeera English Video interview at Big Think নির্বাচিত লেখা Viruses of the Mind (1993) – Religion as a mental virus. The Real Romance in the Stars (1995) – A critical view of astrology. The Emptiness of Theology at RDFRS.(1998) – A critical view of theology. Snake Oil and Holy Water (1999) – Suggests that there is no convergence occurring between science and theism. What Use is Religion? (2004) – Suggests that religion may have no survival value other than to itself. Race and Creation (2004) – On race, its usage and a theory of how it evolved. The giant tortoise's tale, The turtle's tale and The lava lizard's tale (2005) – A series of three articles written after a visit to the Galápagos Islands. Dawkins' Huffington Post articles অডিও 2011 Interview on io9's Geek's Guide to the Galaxy podcast Richard Dawkins on RadioLIVE's Weekend Variety Wireless – Richard Dawkins appears live on New Zealand's Radio Live, taking calls from the audience. ১৯৪১-এ জন্ম জীবিত ব্যক্তি ইংরেজ বিজ্ঞান লেখক ইংরেজ জীববিজ্ঞানী ২০তম-শতাব্দীর জীববিজ্ঞানীরা ২১তম-শতাব্দীর জীববিজ্ঞানীরা নিরীশ্বরবাদ কর্মী ব্রিটিশ নাস্তিক ব্রিটিশ রিপাবলিকান ধর্মের সমালোচক ইংরেজি নাস্তিক ইংরেজি জীববিজ্ঞানীরা ইংরেজি সংশয়বাদী ইংরেজি বিজ্ঞান লেখক বিবর্তনমূলক জীববিজ্ঞানীরা সাহিত্যের রয়েল সোসাইটির ফেলোগণ রয়েল ইন্সটিটিউশন ক্রিসমাসের প্রযোজক বক্তৃতা ইতালীয় রিপাবলিক অফ প্রেসিডেন্সির পদক প্রাপকরা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধিবদ্ধ অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলে অনুষদ পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক সামাজিক সমালোচক বিজ্ঞানের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক ২০শ শতাব্দীর নাস্তিক ২১শ শতাব্দীর নাস্তিক রয়েল সোসাইটির সভ্য ২০শ শতাব্দীর ইংরেজ লেখক নাস্তিক নারীবাদী ব্রিটিশ নাস্তিকতা কর্মী ইসলামের ব্রিটিশ সমালোচক বিকল্প চিকিৎসার সমালোচক ইংরেজ সক্রিয়কর্মী ইংরেজ নাস্তিক ইংরেজ নারীবাদী নারীবাদী পুরুষ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলির শিক্ষক
https://en.wikipedia.org/wiki/Richard_Dawkins
Richard Dawkins
Richard Dawkins (born 26 March 1941) is a British evolutionary biologist, zoologist, science communicator and author. He is an emeritus fellow of New College, Oxford, and was Professor for Public Understanding of Science in the University of Oxford from 1995 to 2008. His 1976 book The Selfish Gene popularised the gene-centred view of evolution, as well as coining the term meme. Dawkins has won several academic and writing awards. Dawkins is well known for his criticism of creationism and intelligent design as well as for being a vocal atheist. Dawkins wrote The Blind Watchmaker in 1986, arguing against the watchmaker analogy, an argument for the existence of a supernatural creator based upon the complexity of living organisms. Instead, he describes evolutionary processes as analogous to a blind watchmaker, in that reproduction, mutation, and selection are unguided by any sentient designer. In 2006, Dawkins published The God Delusion, writing that a supernatural creator almost certainly does not exist and that religious faith is a delusion. He founded the Richard Dawkins Foundation for Reason and Science in 2006. Dawkins has published two volumes of memoirs, An Appetite for Wonder (2013) and Brief Candle in the Dark (2015).
1442
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8%20%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0
রবিন ডানবার
রবিন ইয়ান ম্যাকডোনাল্ড ডানবার (জন্ম: ২৮ জুন, ১৯৪৭) একজন ব্রিটিশ নৃতত্ত্ববিদ ও বিবর্তনবাদী জীববিজ্ঞানী। তার গবেষণার প্রধান বিষয় হলো বানর-গণভুক্ত প্রাণী সমূহের ব্যবহার। তিনি "ডানবারের সংখ্যা"র প্রণেতা। তিনি বর্তমানে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান। শিক্ষাজীবন ডানবার ম্যাগডালেন কলেজ স্কুল, ব্র্যাকলিতে পড়াশুনা করেন। পরে তিনি ম্যাগডালেন কলেজ, অক্সফোর্ড এ ভর্তি হন। সেখানে তার শিক্ষক ছিলেন নিকো টিনবার্জেন। তিনি ১৯৬৯ সালে মনোবিজ্ঞান ও দর্শন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৪ সালে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পুরস্কার ও সম্মাননা ২০১৪, হাক্সলি স্মারক পদক, রয়্যাল অ্যান্‌থ্রোপলজিকাল ইনস্টিটিউট অফ গ্রেট ব্রিটেন অ্যান্ড আয়ারল্যান্ড। ১৯৯৮, ব্রিটিশ একাডেমির ফেলোশিপ। ১৯৯৪, লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Dunbar's research areas at the Evolutionary Psychology and Behavioural Ecology Research Group, University of Liverpool ১৯৪৭-এ জন্ম জীবিত ব্যক্তি ব্রিটিশ জীববিজ্ঞানী ম্যাগডালেন কলেজ, অক্সফোর্ডের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ব্রিটিশ একাডেমির ফেলো ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের শিক্ষক ব্রিটিশ নৃবিজ্ঞানী ব্রিটিশ অ্যাকাডেমির সভ্য ব্রিটিশ ভাষাবিজ্ঞানী
https://en.wikipedia.org/wiki/Robin_Dunbar
Robin Dunbar
Robin Ian MacDonald Dunbar (born 28 June 1947) is a British biological anthropologist, evolutionary psychologist, and specialist in primate behaviour. Dunbar is professor emeritus of evolutionary psychology of the Social and Evolutionary Neuroscience Research Group in the Department of Experimental Psychology at the University of Oxford. He is best known for formulating Dunbar's number, a measurement of the "cognitive limit to the number of individuals with whom any one person can maintain stable relationships".
1443
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%9F%20%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%A1%E0%A6%B2%E0%A6%BF
ম্যাট রিডলি
ম্যাথু (ম্যাট) রিডলি (জন্ম ফেব্রুয়ারি ৭, ১৯৫৮) একজন ইংরেজ বিজ্ঞান লেখক। তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জীববিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করে পরে বিজ্ঞান বিষয়ক সাংবাদিকতাকে পেশা হিসাবে বেছে নেন। তিনি দি ইকনমিস্ট এবং দি ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার বিজ্ঞান বিষয়ক সাংবাদিক হিসাবে কাজ করেছেন। বিজ্ঞান জনপ্রিয়করণ বিষয়ে তার লেখা বইগুলি হলো - ১৯৯৪ - দি রেড কুইনঃ সেক্স অ্যান্ড দি ইভোলিউশন অফ হিউম্যান নেচার ১৯৯৭ - দি অরিজিন্‌স অফ ভারচু ১৯৯৯ - জিনোম ২০০৩ - নেচার ভায়া নার্চার: জিন্‌স, এক্সপিরিয়েন্স, অ্যান্ড হোয়াট মেইক্‌স আস হিউম্যান ২০০৬ - ফ্রান্সিস ক্রিক: ডিস্কাভারার অফ দি জেনেটিক কোড তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ ম্যাট রিডলির ওয়েবসাইট ম্যাট রিডলি সাক্ষাতকার ম্যাট রিডলির জীবনী Matt Ridley, "We've never had it so good - and it's all thanks to science," The Guardian, 3 April 2003. Article in newspaper. ১৯৫৮-এ জন্ম ইংরেজ লেখক ইংরেজ সাংবাদিক ২১শ শতাব্দীর নাস্তিক আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য জীবিত ব্যক্তি ২১শ শতাব্দীর সাংবাদিক ব্রিটিশ নাস্তিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Matt_Ridley
Matt Ridley
Matthew White Ridley, 5th Viscount Ridley, (born 7 February 1958), is a British science writer, journalist and businessman. He is known for his writings on science, the environment, and economics, and has been a regular contributor to The Times newspaper. Ridley was chairman of the UK bank Northern Rock from 2004 to 2007, during which period it experienced the first run on a British bank in 130 years. He resigned, and the bank was bailed out by the UK government; this led to its nationalisation. Ridley is a libertarian, and a staunch supporter of Brexit. He inherited the viscountcy in February 2012 and was a Conservative hereditary peer from February 2013, with an elected seat in the House of Lords, until his retirement in December 2021.
1444
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A8%E0%A6%AD%E0%A7%8B%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%80
নভোচারী
"নভোচর" এখানে পুনঃনির্দেশ করে। অন্যান্য ব্যবহারের জন্য, মহাকাশচারী (দ্ব্যর্থতা নিরসন) এবং মহাকাশচারী (দ্ব্যর্থতা নিরসন) দেখুন। একজন মহাকাশচারী ( প্রাচীন গ্রীক থেকে ( অ্যাস্ট্রন ), মানে 'স্টার', এবং ( নাটেস্ ), যার অর্থ 'নাবিক' ) হলেন একজন ব্যক্তি যিনি একটি মহাকাশযানটিতে চকমান্ডার বা ক্রু সদস্য হিসাবে কাজ করার জন্য একটি মানব স্পেসফ্লাইট প্রোগ্রাম দ্বারা প্রশিক্ষণ, সজ্জিত এবং নিযুক্ত করেন। যদিও সাধারণত পেশাদার মহাকাশ ভ্রমণকারীদের জন্য সংরক্ষিত, তবে শব্দটি কখনও কখনও বিজ্ঞানী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং পর্যটক সহ মহাকাশে ভ্রমণকারী যেকোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। "মহাকাশচারী" প্রযুক্তিগতভাবে জাতীয়তা বা আনুগত্য নির্বিশেষে সমস্ত মানব মহাকাশ ভ্রমণকারীদের জন্য প্রযোজ্য; যাইহোক, রাশিয়া বা সোভিয়েত ইউনিয়নের দ্বারা নিযুক্ত নভোচারীদেরকে আমেরিকান বা অন্যথায় ন্যাটো -ভিত্তিক মহাকাশ থেকে আলাদা করার জন্য সাধারণত মহাকাশচারী হিসাবে পরিচিত হয় (রাশিয়ান "কসমস" (космос), যার অর্থ "মহাকাশ", গ্রিক থেকেও ধার করা হয়েছে। ভ্রমণকারীদের চীনের তৈরি ক্রুড স্পেসফ্লাইটের তুলনামূলকভাবে সাম্প্রতিক উন্নয়নের ফলে টাইকোনট শব্দটির উত্থান ঘটেছে ( ম্যান্ডারিন "tàikōng" থেকে ( ), যার অর্থ "স্পেস"), যদিও এর ব্যবহার কিছুটা অনানুষ্ঠানিক এবং এর উৎপত্তি অস্পষ্ট। চীনে, পিপলস লিবারেশন আর্মি অ্যাস্ট্রোনট কর্পস মহাকাশচারী এবং তাদের বিদেশী সমকক্ষদের সকলকে আনুষ্ঠানিকভাবে হাংটিয়ানিউয়ান () বলা হয়, যার অর্থ "স্বর্গের নৌযান" বা আক্ষরিক অর্থে " স্বর্গে-সেলিং স্টাফ")। ১৯৬১ সাল থেকে, ৬০০ নভোচারী মহাকাশে উড়েছেন। ২০০২ সাল পর্যন্ত, মহাকাশচারীরা সামরিক বা বেসামরিক মহাকাশ সংস্থার দ্বারা একচেটিয়াভাবে সরকার দ্বারা স্পনসর এবং প্রশিক্ষিত ছিল। ২০০৪ সালে বেসরকারীভাবে অর্থায়িত স্পেসশিপওয়ানের সাবঅরবিটাল ফ্লাইটের সাথে, নভোচারীর একটি নতুন বিভাগ তৈরি করা হয়েছিল: বাণিজ্যিক মহাকাশচারী। সংজ্ঞা মানুষের মহাকাশযান যা গঠন করে তার মাপকাঠি পরিবর্তিত হয়, যেখানে বায়ুমণ্ডল এতটাই পাতলা হয়ে যায় যে বিন্দুতে কিছু ফোকাস করে যে কেন্দ্রাতিগ শক্তি, এরোডাইনামিক শক্তির পরিবর্তে, ফ্লাইট বস্তুর ওজনের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বহন করে। মহাকাশচারীদের জন্য ফেডারেশন অ্যারোনাটিক ইন্টারন্যাশনাল (এফএআই) স্পোর্টিং কোড ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) উচ্চতায় কার্মন লাইন অতিক্রম করে এমন ফ্লাইটগুলিকে স্বীকৃতি দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, পেশাদার, সামরিক এবং বাণিজ্যিক নভোচারীরা যারা ) উচ্চতার উপরে ভ্রমণ করেন মহাকাশচারী ডানা প্রদান করা হয়। ১৭ নভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত, ৩৬টি দেশের ৫৫২ জন মানুষ ১০০ কিমি (৬২ মাই) বা তার বেশি উচ্চতায় পৌঁছেছেন, যাদের মধ্যে ৫৪৯ জন নিম্ন পৃথিবীর কক্ষপথে বা তার বাইরে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে ২৪ জন মানুষ পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথ অতিক্রম করে চন্দ্রের কক্ষপথে, চন্দ্রপৃষ্ঠে, অথবা একটি ক্ষেত্রে, চাঁদের চারপাশে একটি লুপ ভ্রমণ করেছে। ২৪-এর মধ্যে তিনজন—জিম লাভেল, জন ইয়ং এবং ইউজিন সারনান—দুবার তা করেছিলেন। ১৭ নভেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত, মার্কিন সংজ্ঞা অনুসারে, ৫৫৮ জন ব্যক্তি ৫০ মাইল (৮০ কিমি) উচ্চতায় মহাকাশে পৌঁছেছেন বলে যোগ্য৷ আটটি X-১৫ পাইলটের মধ্যে যারা উচ্চতায় ৫০ মাইল (৮০ কিমি) অতিক্রম করেছিল, শুধুমাত্র একজন, জোসেফ এ. ওয়াকার, ১০০ কিলোমিটার (প্রায় ৬২.১ মাইল) অতিক্রম করেছিলেন এবং তিনি এটি দুইবার করেছিলেন, দুইবার মহাকাশে প্রথম ব্যক্তি হয়েছিলেন। মহাকাশযাত্রীরা ১০০ টিরও বেশি মহাকাশচারী-দিনের স্পেসওয়াক সহ মহাকাশে ৪১,৭৯০ মানব-দিন (১১৪.৫ মানব-বছর) ব্যয় করেছেন। ২০১৬ সালের হিসাবে, মহাকাশে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে থাকা মানুষটি হলেন গেনাডি প্যাডালকা, যিনি মহাকাশে ৮৭৯ দিন কাটিয়েছেন। পেগি এ. হুইটসন একজন মহিলার দ্বারা মহাকাশে সবচেয়ে বেশি সময়, ৩৭৭ দিন থাকার রেকর্ড করেছেন। পরিভাষা ১৯৫৯ সালে, যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন উভয়ই পরিকল্পনা করছিল, কিন্তু এখনও মানুষকে মহাকাশে পাঠাতে পারেনি, তখন নাসার প্রশাসক টি. কিথ গ্লেনান এবং তার ডেপুটি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর, হিউ ড্রাইডেন, মহাকাশযানের ক্রু সদস্যদের মহাকাশচারী বা মহাকাশচারী বলা উচিত কিনা তা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। ড্রাইডেন "মহাকাশচারী" পছন্দ করেছিলেন, এই কারণে যে ফ্লাইটগুলি বৃহত্তর মহাজাগতিক এবং বৃহত্তর মহাবিশ্বে ঘটবে, যখন "অ্যাস্ট্রো" উপসর্গটি বিশেষভাবে নক্ষত্রের জন্য উড়ানের পরামর্শ দিয়েছে। বেশিরভাগ NASA স্পেস টাস্ক গ্রুপের সদস্যরা "মহাকাশচারী" পছন্দ করেন, যা পছন্দের আমেরিকান শব্দ হিসাবে সাধারণ ব্যবহারের মাধ্যমে বেঁচে থাকে। ১৯৬১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন যখন প্রথম মানুষ ইউরি গ্যাগারিনকে মহাকাশে প্রেরণ করেছিল, তখন তারা একটি শব্দ বেছে নিয়েছিল যা " মহাকাশচারী " বলে অভিহিত করে। মহাকাশচারী একজন পেশাদার মহাকাশ ভ্রমণকারীকে মহাকাশচারী বলা হয়। আধুনিক অর্থে "মহাকাশচারী" শব্দটির প্রথম পরিচিত ব্যবহারটি ছিল নীল আর জোন্স তার ১৯৩০ সালের ছোট গল্প "দ্য ডেথস হেড মিটিওর"-এ। শব্দ নিজেই আগে পরিচিত ছিল; উদাহরণস্বরূপ, পার্সি গ্রেগের ১৮৮০ সালের বই অ্যাক্রোস দ্য জোডিয়াক -এ "মহাকাশচারী" একটি মহাকাশযানকে উল্লেখ করেছে। লেস নেভিগেটার্স দে ল'ইনফিনিতে (১৯২৫) জে.-এইচ. Rosny aîné, astronautique (অ্যাস্ট্রোনটিক) শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছিল। শব্দটি "বিমানচালক" দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে পারে, একটি বিমান ভ্রমণকারীর জন্য একটি পুরানো শব্দ যা ১৭৮৪ সালে বেলুনিস্টদের জন্য প্রথম প্রয়োগ করা হয়েছিল। একটি নন-ফিকশন প্রকাশনায় "মহাকাশচারী" এর প্রাথমিক ব্যবহার হল এরিক ফ্র্যাঙ্ক রাসেলের কবিতা "দ্য অ্যাস্ট্রোনট", যা নভেম্বর ১৯৩৪ -এর ব্রিটিশ ইন্টারপ্ল্যানেটারি সোসাইটির বুলেটিনে প্রকাশিত হয়েছে। বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ে মহাকাশবিজ্ঞান শব্দটির প্রথম পরিচিত আনুষ্ঠানিক ব্যবহার ছিল ১৯৫০ সালে বার্ষিক আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা এবং পরের বছর আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী ফেডারেশনের পরবর্তী প্রতিষ্ঠা। NASA পৃথিবী কক্ষপথে বা তার বাইরের জন্য আবদ্ধ NASA মহাকাশযানটিতে থাকা যেকোনো ক্রু সদস্যের জন্য মহাকাশচারী শব্দটি প্রয়োগ করে। NASA তাদের মহাকাশচারী কর্পসে যোগদানের জন্য নির্বাচিতদের জন্য একটি শিরোনাম হিসাবেও শব্দটি ব্যবহার করে৷ ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা একইভাবে তার মহাকাশচারী কর্পসের সদস্যদের জন্য মহাকাশচারী শব্দটি ব্যবহার করে। কসমোনট নিয়ম অনুসারে, রাশিয়ান ফেডারেল স্পেস এজেন্সি (বা এর সোভিয়েত পূর্বসূরি) দ্বারা নিযুক্ত একজন মহাকাশচারীকে ইংরেজি গ্রন্থে মহাকাশচারী বলা হয়। শব্দটি কোসমোনাভটের একটি ইংরেজিকরণ ( )। প্রাক্তন পূর্ব ব্লকের অন্যান্য দেশ রাশিয়ান কোসমোনাভ্টের বৈচিত্র ব্যবহার করে, যেমন পোলিশ: kosmonauta (যদিও ব্যবহার করে, এবং দুটি শব্দ সমার্থক হিসাবে বিবেচিত হয়)। শব্দটির মুদ্রা সোভিয়েত অ্যারোনটিক্স (বা " মহাজাগতিক ") অগ্রগামী মিখাইল টিখোনরাভভ (১৯০০-১৯৭৪) কে কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রথম মহাকাশচারী ছিলেন সোভিয়েত বিমান বাহিনীর পাইলট ইউরি গ্যাগারিন, যিনি মহাকাশে প্রথম ব্যক্তিও ছিলেন। তিনি জার্মান টিটোভ, ইয়েভজেনি ক্রুনভ, আন্দ্রিয়ান নিকোলায়েভ, পাভেল পপোভিচ এবং গ্রিগরি নেলিউবভের সাথে প্রথম ছয় রাশিয়ানদের অংশ ছিলেন, যাদেরকে ১৯৬১ সালের জানুয়ারিতে পাইলট-কসমোনট উপাধি দেওয়া হয়েছিল। ভ্যালেন্টিনা তেরেশকোভা ছিলেন প্রথম মহিলা মহাকাশচারী এবং প্রথম এবং সর্বকনিষ্ঠ মহিলা যিনি ১৯৬৩ সালে ভস্টক ৬ -এ একক মিশনে মহাকাশে উড়েছিলেন। ১৪ই মার্চ ১৯৯৫ সালে, নরম্যান থাগার্ড প্রথম আমেরিকান যিনি একটি রাশিয়ান লঞ্চ ভেহিকেলে চড়ে মহাকাশে যান এবং এইভাবে প্রথম "আমেরিকান মহাকাশচারী" হন। তাইকোনট চীনা ভাষায়, শব্দটি (, "মহাকাশ-মহাবিশ্ব নেভিগেটিং কর্মী") সাধারণভাবে মহাকাশচারী এবং মহাকাশচারীদের জন্য ব্যবহৃত হয়, যখন (, "ন্যাভিগেটিং আউটার স্পেস কর্মী") চীনা মহাকাশচারীদের জন্য ব্যবহৃত হয়। এখানে, (, আক্ষরিক অর্থে "স্বর্গ-নেভিগেটিং", বা স্পেসফ্লাইট ) কঠোরভাবে স্থানীয় তারা সিস্টেমের মধ্যে বাইরের মহাকাশের নেভিগেশন হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়, যেমন সৌরজগত। শব্দগুচ্ছ (, "স্পেসম্যান") প্রায়ই হংকং এবং তাইওয়ানে ব্যবহৃত হয়। টাইকোনট শব্দটি কিছু ইংরেজি-ভাষার সংবাদ মিডিয়া সংস্থা চীন থেকে পেশাদার মহাকাশ ভ্রমণকারীদের জন্য ব্যবহার করে। শব্দটি লংম্যান এবং অক্সফোর্ড ইংরেজি অভিধানে বৈশিষ্ট্যযুক্ত, এবং শব্দটি ২০০৩ সালে আরও সাধারণ হয়ে ওঠে যখন চীন তার প্রথম মহাকাশচারী ইয়াং লিওয়েইকে শেনঝো ৫ মহাকাশযানে চড়ে মহাকাশে পাঠায়। চীনা মহাকাশ কর্মসূচির আবির্ভাবের পর থেকে চীনা পিপলস ডেইলির ইংরেজি সংস্করণে সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি এই শব্দটি ব্যবহার করেছে। শব্দটির উৎপত্তি অস্পষ্ট; মে ১৯৯৮ এর প্রথম দিকে, চিউ লি ইহ () মালয়েশিয়া থেকে, এটি নিউজগ্রুপে ব্যবহার করেছে। প্যারাস্ট্রোনট এর ২০২২ মহাকাশচারী গোষ্ঠীর জন্য, ESA একটি শারীরিক অক্ষমতা সহ একজন মহাকাশচারী নিয়োগের কল্পনা করে, একটি বিভাগ যাকে তারা "প্যারাস্ট্রোনট" বলে, উদ্দেশ্য কিন্তু মহাকাশযানের গ্যারান্টি নয়। প্রোগ্রামের জন্য বিবেচিত অক্ষমতার বিভাগগুলি ছিল নিম্ন অঙ্গের ঘাটতি (হয় অঙ্গচ্ছেদ বা জন্মগতভাবে), পায়ের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য, বা একটি ছোট উচ্চতা ( এর কম) )। অন্যান্য পদ মহাকাশ পর্যটনের উত্থানের সাথে সাথে, NASA এবং রাশিয়ান ফেডারেল স্পেস এজেন্সি " স্পেসফ্লাইট অংশগ্রহণকারী " শব্দটি ব্যবহার করতে সম্মত হয় যাতে এই দুটি সংস্থার সমন্বয়ে মিশনে পেশাদার নভোচারীদের থেকে মহাকাশ ভ্রমণকারীদের আলাদা করা যায়। যদিও রাশিয়া (এবং পূর্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন ছাড়া অন্য কোন দেশ একটি ক্রুযুক্ত মহাকাশযান চালু করেনি, অন্যান্য কয়েকটি দেশ এই দেশগুলির একটির সহযোগিতায় মহাকাশে লোক পাঠিয়েছে, যেমন সোভিয়েত নেতৃত্বাধীন ইন্টারকোসমস প্রোগ্রাম। এই মিশনের দ্বারা আংশিকভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে, মহাকাশচারীর অন্যান্য প্রতিশব্দ মাঝে মাঝে ইংরেজি ব্যবহারে প্রবেশ করেছে। উদাহরণস্বরূপ, স্পেশনআট শব্দটি ( ) কখনও কখনও ফরাসি মহাকাশ ভ্রমণকারীদের বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়, ল্যাটিন শব্দ থেকে "স্পেস" এর জন্য; মালয় শব্দ ( আংকাসা থেকে উদ্ভূত যার অর্থ 'স্পেস') আংকাসাওয়ান প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের বর্ণনা করতে ব্যবহৃত হয়েছিল ( ইন্দোনেশিয়ান শব্দ antariksawan এর সাথে এর মিল লক্ষ্য করুন); এবং, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ২০২২ সালে একটি মহাকাশযান উৎক্ষেপণের আশা করছে যা সংস্কৃত শব্দ ব্যোমনাট বহন করবে। ( যার অর্থ 'আকাশ' বা 'মহাকাশ')। ফিনল্যান্ডে, NASA মহাকাশচারী টিমোথি কোপরা, একজন ফিনিশ আমেরিকান, কখনও কখনও হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ফিনিশ শব্দ থেকে . জার্মানিক ভাষা জুড়ে, "মহাকাশচারী" স্থানীয়ভাবে প্রাপ্ত শব্দগুলির সাথে ব্যবহার করা হয় যেমন জার্মানের রাউমফাহরার, ডাচের রুইমটেভার্ডার, সুইডিশের রিমডফারার এবং নরওয়েজিয়ানের রোমফারার। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২০২১ সালের হিসাবে, অনুমোদনকারী সংস্থার উপর নির্ভর করে একজন ব্যক্তিকে মহাকাশচারী মর্যাদা প্রদান করা হয়: যিনি উপরে যানবাহনে উড়ে যান NASA বা সেনাবাহিনীর জন্য একজন মহাকাশচারী হিসাবে বিবেচিত হয় (কোন যোগ্যতা ছাড়াই) যিনি NASA এবং Roscosmos দ্বারা সমন্বিত একটি মিশনে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে যানবাহনে উড়ে যান তিনি হলেন একজন মহাকাশযান অংশগ্রহণকারী যিনি একজন নন-নাসা যানবাহনে একজন ক্রুমেম্বার হিসেবে এবং ফ্লাইটের সময় ক্রিয়াকলাপ প্রদর্শন করে যা জননিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য, বা মানুষের মহাকাশ ফ্লাইট সুরক্ষায় অবদান রাখে, ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন দ্বারা বাণিজ্যিক মহাকাশচারী হিসাবে বিবেচিত হয় মিশনের জন্য নিবেদিত একটি বাণিজ্যিক লঞ্চ ভেহিকেলে "ব্যক্তিগতভাবে অর্থায়নকৃত, নিবেদিত বাণিজ্যিক স্পেসফ্লাইটের অংশ হিসাবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে উড়ে আসা একজন... মহাকাশ স্টেশনে অনুমোদিত বাণিজ্যিক এবং বিপণন কার্যক্রম পরিচালনা করতে (বা এর সাথে সংযুক্ত একটি বাণিজ্যিক বিভাগে) স্টেশন)" NASA দ্বারা একজন ব্যক্তিগত মহাকাশচারী হিসাবে বিবেচিত হয় (২০২০ সালের হিসাবে, কেউ এখনও এই মর্যাদার জন্য যোগ্য নয়) এর উপরে একটি ব্যক্তিগত নন-নাসা বা সামরিক যানবাহন ফ্লাইটকারী নন-ক্রু যাত্রীর জন্য একটি সাধারণত-স্বীকৃত কিন্তু অনানুষ্ঠানিক শব্দ একজন মহাকাশ পর্যটক (২০২০ সালের হিসাবে, কেউ এখনও এই মর্যাদার জন্য যোগ্যতা অর্জন করেনি) ২০শে জুলাই, ২০২১-এ, FAA জেফ বেজোস এবং রিচার্ড ব্র্যানসনের ব্যক্তিগত সাবঅরবিটাল স্পেসফ্লাইটের প্রতিক্রিয়া হিসাবে নভোচারী হওয়ার যোগ্যতার মানদণ্ডকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করে একটি আদেশ জারি করেছে। নতুন মাপকাঠিতে বলা হয়েছে যে একজন নভোচারী হিসাবে যোগ্যতা অর্জনের জন্য একজনের অবশ্যই "[d]উড্ডয়নের সময় এমন ক্রিয়াকলাপগুলি প্রদর্শিত হতে হবে যা জননিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য ছিল, বা মানব মহাকাশ ফ্লাইটের সুরক্ষায় অবদান রাখে"। এই নতুন সংজ্ঞা বেজোস এবং ব্র্যানসনকে বাদ দেয়। মহাকাশ ভ্রমণের মাইলফলক মহাকাশে প্রথম মানুষ ছিলেন সোভিয়েত ইউরি গ্যাগারিন, যিনি ১২ই এপ্রিল ১৯৬১ সালে ভোস্টক ১ -এ চড়ে ১০৮ মিনিটের জন্য পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করেছিলেন। মহাকাশে প্রথম মহিলা ছিলেন সোভিয়েত ভ্যালেন্টিনা তেরেশকোভা, যিনি ১৬ই জুন ১৯৬৩ সালে ভোস্টক 6৬ -এ চড়ে প্রায় তিন দিন পৃথিবী প্রদক্ষিণ করেছিলেন। অ্যালান শেপার্ড ১৯৬১ সালের ৫ই মে, ফ্রিডম ৭ -এ ১৫ মিনিটের সাব-অরবিটাল ফ্লাইটে মহাকাশে প্রথম আমেরিকান এবং দ্বিতীয় ব্যক্তি হন। পৃথিবী প্রদক্ষিণকারী প্রথম আমেরিকান ছিলেন জন গ্লেন, ২০ই ফেব্রুয়ারি ১৯৬২ তারিখে বন্ধুত্ব ৭ -এ চড়ে। মহাকাশে প্রথম আমেরিকান মহিলা ছিলেন স্যালি রাইড, স্পেস শাটল <i id="mwAdQ">চ্যালেঞ্জারের</i> মিশন STS-৭ এর সময়, ১৮ জুন ১৯৮৩ সালে। ১৯৯২ সালে, Mae Jemison STS-৪৭ জাহাজে মহাকাশে ভ্রমণকারী প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান মহিলা হয়ে ওঠেন। মহাকাশচারী আলেক্সি লিওনভ ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি ১৮ই মার্চ ১৯৬৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভোসখড ২ মিশনে একটি বহির্মুখী কার্যকলাপ (ইভিএ), (সাধারণত যাকে "স্পেসওয়াক" বলা হয়) পরিচালনা করেন। এটি আড়াই মাস পরে নভোচারী এড হোয়াইট দ্বারা অনুসরণ করা হয়েছিল যিনি নাসার জেমিনি ৪টি মিশনে প্রথম আমেরিকান ইভা তৈরি করেছিলেন। চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার প্রথম ক্রু মিশন, অ্যাপোলো ৮, আমেরিকান উইলিয়াম অ্যান্ডার্সকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল যিনি হংকংয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, যা তাকে ১৯৬৮ সালে প্রথম এশিয়ান-জন্ম মহাকাশচারী করে তোলে। সোভিয়েত ইউনিয়ন, তার ইন্টারকসমস প্রোগ্রামের মাধ্যমে, অন্যান্য " সমাজতান্ত্রিক " (যেমন ওয়ারশ প্যাক্ট এবং অন্যান্য সোভিয়েত-মিত্র দেশগুলি তার মিশনে উড়ে যাওয়ার জন্য, ফ্রান্স এবং অস্ট্রিয়ার উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রমগুলি যথাক্রমে Soyuz TM-7 এবং Soyuz TM-13- এ অংশগ্রহণ করে। একটি উদাহরণ হল চেকোস্লোভাক ভ্লাদিমির রেমেক, সোভিয়েত ইউনিয়ন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্য কোনো দেশের প্রথম মহাকাশচারী, যিনি ১৯৭৮ সালে একটি সয়ুজ-ইউ রকেটে মহাকাশে যান। রাকেশ শর্মা প্রথম ভারতীয় নাগরিক যিনি মহাকাশে ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি ২ই এপ্রিল ১৯৮৪ সালে সয়ুজ T-11- এ লঞ্চ করেছিলেন। ২৩ জুলাই ১৯৮০-এ, ভিয়েতনামের ফাম তুয়ান মহাকাশে প্রথম এশিয়ান হয়েছিলেন যখন তিনি সয়ুজ ৩৭ -এ চড়েছিলেন। এছাড়াও ১৯৮০ সালে, কিউবান আর্নাল্ডো তামায়ো মেন্ডেজ হিস্পানিক এবং কালো আফ্রিকান বংশোদ্ভূত প্রথম ব্যক্তি যিনি মহাকাশে উড়েছিলেন এবং ১৯৮৩ সালে, গুইওন ব্লুফোর্ড মহাকাশে উড়ে প্রথম আফ্রিকান আমেরিকান হয়েছিলেন। এপ্রিল ১৯৮৫ সালে, টেলর ওয়াং মহাকাশে প্রথম জাতিগত চীনা ব্যক্তি হয়েছিলেন। মহাকাশে উড়ে আফ্রিকায় জন্মগ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন প্যাট্রিক বউড্রি (ফ্রান্স), ১৯৮৫ সালে। ১৯৮৫ সালে, সৌদি আরবের যুবরাজ সুলতান বিন সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল-সৌদ মহাকাশে প্রথম আরব মুসলিম মহাকাশচারী হন। ১৯৮৮ সালে, আবদুল আহাদ মহমান্দ মহাকাশে পৌঁছানোর প্রথম আফগান হন, মীর মহাকাশ স্টেশনে নয় দিন কাটান। স্পেস শাটলে আসন বৃদ্ধির সাথে সাথে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক মহাকাশচারী নিতে শুরু করে। ১৯৮৩ সালে, পশ্চিম জার্মানির উলফ মারবোল্ড মার্কিন মহাকাশযানে উড়ে প্রথম অ-মার্কিন নাগরিক হয়েছিলেন। ১৯৮৪ সালে, মার্ক গার্নিউ আটটি কানাডিয়ান নভোচারীর মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন যিনি মহাকাশে উড়েছিলেন (২০১০ সালের মধ্যে)। ১৯৮৫ সালে, রোডলফো নেরি ভেলা মহাকাশে প্রথম মেক্সিকান বংশোদ্ভূত ব্যক্তি হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে, হেলেন শারম্যান মহাকাশে উড়ে যাওয়া প্রথম ব্রিটিশ হন। ২০০২ সালে, মার্ক শাটলওয়ার্থ একটি অর্থপ্রদানকারী মহাকাশযান অংশগ্রহণকারী হিসাবে মহাকাশে উড়ে যাওয়া আফ্রিকান দেশের প্রথম নাগরিক হয়েছিলেন। ২০০৩ সালে, ইলান রেমন মহাকাশে উড়ে যাওয়া প্রথম ইসরায়েলি হয়ে ওঠেন, যদিও তিনি পুনঃপ্রবেশ দুর্ঘটনার সময় মারা যান। ১৫ই অক্টোবর ২০০৩-এ, ইয়াং লিওয়েই শেনঝো ৫ মহাকাশযানে চীনের প্রথম মহাকাশচারী হন। ৩০শে মে ২০২০-এ, ডগ হার্লি এবং বব বেহেনকেন প্রথম নভোচারী হয়েছিলেন যারা একটি ব্যক্তিগত ক্রুযুক্ত মহাকাশযান, ক্রু ড্রাগন -এ লঞ্চ করেছিলেন। বয়সের মাইলফলক মহাকাশে পৌঁছানো সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি হলেন অলিভার ডেমেন, যিনি ২০শে জুলাই, ২০২১-এ ৭ মিনিট স্থায়ী একটি সাবঅরবিটাল স্পেসফ্লাইট করার সময় ১৮ বছর ১১ মাস বয়সী ছিলেন। ডেমেন, যিনি নিউ শেপার্ডে একজন বাণিজ্যিক যাত্রী ছিলেন, তিনি সোভিয়েত মহাকাশচারী ঘেরম্যান টিটোভের রেকর্ড ভেঙেছিলেন, যার বয়স ২৫ বছর ছিল যখন তিনি ভোস্টক ২ উড়েছিলেন। টিটোভ কক্ষপথে পৌঁছানো সবচেয়ে কম বয়সী মানব; তিনি ১৭ বার গ্রহ বৃত্তাকার. টিটভও প্রথম ব্যক্তি যিনি স্পেস সিকনেসে ভুগেছিলেন এবং প্রথম ব্যক্তি যিনি মহাকাশে ঘুমান, দুবার। ডেমেনের মতো একই ফ্লাইটে ছিল ৮২ বছর বয়সী, ৬ মাস বয়সী ওয়ালি ফাঙ্ক, একজন মহিলা যার নাম বুধ ১৩, এবং এখন মহাকাশে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি। তিনিই বুধ ১৩-এর মধ্যে প্রথম যিনি মহাকাশে পৌঁছান, যদিও এই দলটিকে সমস্ত পুরুষ বুধ ৭ -এর সাথে একযোগে প্রশিক্ষিত করা হয়েছিল, যারা সবাই মহাকাশ ভ্রমণে নিয়োজিত হবে। কক্ষপথে পৌঁছানো সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হলেন জন গ্লেন, বুধ ৭-এর একজন, যিনি STS-95- এ উড়ার সময় ৭৭ বছর বয়সী ছিলেন। সাবঅরবিটাল বয়সের রেকর্ডের জন্য, স্পেসফ্লাইট রেকর্ডের তালিকা দেখুন § বয়স রেকর্ড। সময়কাল এবং দূরত্বের মাইলফলক ৪৩৮ দিন মহাকাশে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কাটান, রাশিয়ান ভ্যালেরি পলিয়াকভ। ২০০৬ সালের হিসাবে, একজন স্বতন্ত্র মহাকাশচারীর দ্বারা সর্বাধিক সাতটি মহাকাশযান, জেরি এল. রস এবং ফ্র্যাঙ্কলিন চ্যাং-ডিয়াজ উভয়েরই রেকর্ড। একজন নভোচারী পৃথিবী থেকে সবচেয়ে দূরত্ব ভ্রমণ করেছেন ৪,০১,০৫৬ কিমি (২,৪৯,২০৫ মাইল), যখন জিম লাভেল, জ্যাক সুইগার্ট, এবং ফ্রেড হাইস অ্যাপোলো ১৩ জরুরি সময়ে চাঁদের চারপাশে গিয়েছিলেন। বেসামরিক এবং বেসরকারি মাইলফলক মহাকাশে প্রথম বেসামরিক নাগরিক ছিলেন ভ্যালেন্টিনা তেরেশকোভা ভস্টক ৬ -এ (তিনি সেই মিশনে মহাকাশে প্রথম মহিলাও হয়েছিলেন)। তেরেশকোভাকে শুধুমাত্র ইউএসএসআর-এর বিমান বাহিনীতে সম্মানজনকভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল, যা সেই সময়ে মহিলা পাইলটদের গ্রহণ করেনি। এক মাস পরে, জোসেফ অ্যালবার্ট ওয়াকার মহাকাশে প্রথম আমেরিকান বেসামরিক নাগরিক হয়ে ওঠেন যখন তার X-১৫ ফ্লাইট ৯০ লাইন অতিক্রম করে, যা তাকে মহাকাশযানের আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুসারে যোগ্যতা অর্জন করে। ওয়াকার ইউএস আর্মি এয়ারফোর্সে যোগ দিয়েছিলেন কিন্তু তার ফ্লাইটের সময় সদস্য ছিলেন না। মহাকাশে প্রথম ব্যক্তি যারা কখনও কোনো দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ছিলেন না তারা হলেন কনস্ট্যান্টিন ফেওকটিস্টভ এবং বরিস ইয়েগোরভ দুজনেই ভসখড ১ -এ। প্রথম বেসরকারী মহাকাশ ভ্রমণকারী ছিলেন বায়রন কে. লিচটেনবার্গ, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির একজন গবেষক যিনি ১৯৮৩ সালে STS-9 এ উড়েছিলেন। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে, তোয়োহিরো আকিয়ামা টোকিও ব্রডকাস্টিং সিস্টেমের জন্য প্রথম অর্থ প্রদানকারী মহাকাশ ভ্রমণকারী এবং মহাকাশে প্রথম সাংবাদিক হয়েছিলেন, আনুমানিক $১২ এর অংশ হিসাবে মির সফর। একটি জাপানি টিভি স্টেশনের সাথে মিলিয়ন ( USD ) চুক্তি, যদিও সেই সময়ে, আকিয়ামাকে বোঝাতে ব্যবহৃত শব্দটি ছিল "রিসার্চ কসমোনট"। আকিয়ামা তার মিশনের সময় গুরুতর মহাকাশ অসুস্থতায় ভোগেন, যা তার উত্পাদনশীলতাকে প্রভাবিত করেছিল। ২৮ এপ্রিল ২০০১-এ রাশিয়ান মহাকাশযান Soyuz TM-3-এ প্রথম স্ব-অর্থায়নকৃত মহাকাশ পর্যটক ছিলেন ডেনিস টিটো। স্ব-অর্থায়নকারী ভ্রমণকারীরা সম্পূর্ণ ব্যক্তিগতভাবে অর্থায়িত মিশনে উড়ে আসা প্রথম ব্যক্তি ছিলেন মাইক মেলভিল, একটি উপবর্গীয় যাত্রায় SpaceShipOne ফ্লাইট ১৫P এর পাইলট করেছিলেন, যদিও তিনি স্কেলড কম্পোজিট দ্বারা নিযুক্ত একজন পরীক্ষামূলক পাইলট ছিলেন এবং প্রকৃত অর্থ প্রদানকারী মহাকাশ পর্যটক ছিলেন না। অন্য সাতজন রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থাকে মহাকাশে যাওয়ার জন্য অর্থ প্রদান করেছেন: ডেনিস টিটো (আমেরিকান): ২৮শে এপ্রিল - ৬ই মে ২০০১ ( ISS ) মার্ক শাটলওয়ার্থ (দক্ষিণ আফ্রিকান): ২৫শে এপ্রিল - ৫ই মে ২০০২ (ISS) গ্রেগরি ওলসেন (আমেরিকান): ১-১১ই অক্টোবর ২০০৫ (ISS) আনুশেহ আনসারি (ইরানীয়/আমেরিকান): ১৮-২৯শে সেপ্টেম্বর ২০০৬ (ISS) চার্লস সিমোনি (হাঙ্গেরিয়ান / আমেরিকান): ৭-২১ই এপ্রিল ২০০৭ (ISS), ২৬শে মার্চ - ৮ই এপ্রিল ২০০৯ (ISS) রিচার্ড গ্যারিয়ট (ব্রিটিশ/আমেরিকান): ১২-২৪ই অক্টোবর ২০০৮ (ISS) গাই লালিবার্টে (কানাডিয়ান): ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০০৯ - ১১ই অক্টোবর ২০০৯ (ISS) জ্যারেড আইজ্যাকম্যান (আমেরিকান): ১৫-১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২১ (ফ্রি ফ্লিয়ার) ইউসাকু মায়েজাওয়া (জাপানি): ৮ - ২৪ই ডিসেম্বর ২০২১ (ISS) প্রশিক্ষণ ১৯৫৯ সালে প্রথম NASA মহাকাশচারীদের প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছিল। মহাকাশ কর্মসূচীর প্রথম দিকে, সামরিক জেট পরীক্ষা পাইলটিং এবং প্রকৌশল প্রশিক্ষণকে প্রায়শই নাসাতে একজন মহাকাশচারী হিসাবে নির্বাচনের পূর্বশর্ত হিসাবে উদ্ধৃত করা হত, যদিও জন গ্লেন বা স্কট কার্পেন্টার ( বুধ সেভেনের ) কারোরই প্রকৌশল বা অন্য কোন বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি ছিল না। তাদের নির্বাচনের সময়। নির্বাচন প্রাথমিকভাবে সামরিক পাইলটদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউএসএসআর উভয়েরই প্রথম দিকের নভোচারীরা জেট ফাইটার পাইলট হওয়ার প্রবণতা ছিল এবং প্রায়শই তারা পরীক্ষামূলক পাইলট ছিলেন। একবার নির্বাচিত হলে, NASA মহাকাশচারীরা NASA-এর নিরপেক্ষ বুয়ান্সি ল্যাবরেটরির মতো সুবিধাগুলিতে বহির্মুখী কার্যকলাপের প্রশিক্ষণ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশ মাস প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যায়। মহাকাশচারী-ইন-ট্রেনিং (মহাকাশচারী প্রার্থীরা) " ভমিট ধূমকেতু " নামক একটি বিমানে স্বল্প সময়ের ওজনহীনতা ( মাইক্রোগ্রাভিটি ) অনুভব করতে পারে, যা এক জোড়া পরিবর্তিত কেসি-১৩৫ (যথাক্রমে ২০০০ এবং ২০০৪ সালে অবসরপ্রাপ্ত, এবং ২০০৫ সালে একটি C-৯ ) দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয় যা প্যারাবোলিক ফ্লাইট সম্পাদন করে। মহাকাশচারীদের উচ্চ-ক্ষমতাসম্পন্ন জেট বিমানে অনেকগুলি ফ্লাইট ঘন্টা জমা করতে হয়। জনসন স্পেস সেন্টারের নিকটবর্তী হওয়ার কারণে এটি বেশিরভাগই T-৩৮ জেট বিমানে করা হয় এলিংটন ফিল্ডের বাইরে। এলিংটন ফিল্ডও যেখানে শাটল ট্রেনিং এয়ারক্রাফ্ট রক্ষণাবেক্ষণ এবং বিকাশ করা হয়, যদিও বিমানের বেশিরভাগ ফ্লাইট এডওয়ার্ডস এয়ার ফোর্স বেস থেকে পরিচালিত হয়। প্রশিক্ষণে থাকা মহাকাশচারীদের অবশ্যই শিখতে হবে কীভাবে স্পেস শাটল নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এবং উড়তে হয় এবং, এটি অত্যাবশ্যক যে তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের সাথে পরিচিত যাতে তারা সেখানে পৌঁছালে তাদের কী করতে হবে তা তারা জানে। NASA প্রার্থীতার প্রয়োজনীয়তা প্রার্থীকে অবশ্যই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হতে হবে। প্রার্থীকে অবশ্যই ইঞ্জিনিয়ারিং, জীববিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান বা গণিত সহ একটি STEM ক্ষেত্রে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করতে হবে। প্রার্থীর অবশ্যই ডিগ্রী সমাপ্তির পরে প্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট পেশাদার অভিজ্ঞতার কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে বা জেট বিমানে কমপক্ষে ১,০০০ ঘন্টা পাইলট-ইন-কমান্ড সময় থাকতে হবে। প্রার্থীকে অবশ্যই NASA দীর্ঘ-মেয়াদী ফ্লাইট নভোচারী শারীরিক পাস করতে সক্ষম হতে হবে। প্রার্থীর অবশ্যই নেতৃত্ব, দলগত কাজ এবং যোগাযোগের দক্ষতা থাকতে হবে। স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রয়োজনীয়তা এছাড়াও পূরণ করা যেতে পারে: একটি সম্পর্কিত বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল বা গণিত ক্ষেত্রে ডক্টরাল প্রোগ্রামের দিকে দুই বছরের কাজ। একটি সম্পূর্ণ ডক্টর অফ মেডিসিন বা অস্টিওপ্যাথিক মেডিসিন ডিগ্রির ডক্টর। একটি জাতীয়ভাবে স্বীকৃত পরীক্ষা পাইলট স্কুল প্রোগ্রামের সমাপ্তি। মিশন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ আবেদনকারীদের অবশ্যই শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতা সহ স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে, যার মধ্যে দ্বাদশ গ্রেড স্তরের কিন্ডারগার্টেনে কাজ সহ। একটি স্নাতকোত্তর ডিগ্রি বা ডক্টরাল ডিগ্রির মতো একটি উন্নত ডিগ্রির প্রয়োজন নেই, তবে দৃঢ়ভাবে কাঙ্ক্ষিত। মিশন স্পেশালিস্ট এডুকেটরস, বা "শিক্ষক মহাকাশচারী" ২০০৪ সালে প্রথম নির্বাচিত হয়েছিল, এবং ২০০৭ সাল পর্যন্ত, তিনজন নাসা শিক্ষাবিদ মহাকাশচারী রয়েছেন: জোসেফ এম. আকাবা, রিচার্ড আর. আর্নল্ড এবং ডরোথি মেটকাল্ফ-লিন্ডেনবার্গার। বারবারা মরগান, ১৯৮৫ সালে ক্রিস্টা ম্যাকঅলিফের ব্যাক-আপ শিক্ষিকা হিসাবে নির্বাচিত, মিডিয়া দ্বারা তাকে প্রথম শিক্ষাবিদ মহাকাশচারী হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে তিনি একটি মিশন বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। দ্য এডুকেটর অ্যাস্ট্রোনট প্রোগ্রামটি ১৯৮০ এর দশক থেকে টিচার ইন স্পেস প্রোগ্রামের উত্তরসূরি। মহাকাশ ভ্রমণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি মহাকাশচারীরা ডিকম্প্রেশন সিকনেস, ব্যারোট্রমা, ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি, হাড় ও পেশীর ক্ষতি, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস, অর্থোস্ট্যাটিক অসহিষ্ণুতা, ঘুমের ব্যাঘাত এবং বিকিরণ আঘাত সহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির জন্য সংবেদনশীল। ন্যাশনাল স্পেস বায়োমেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এনএসবিআরআই) এর মাধ্যমে মহাকাশে বিভিন্ন ধরনের বৃহৎ মাপের চিকিৎসা অধ্যয়ন করা হচ্ছে এই সমস্যাগুলোর সমাধানের জন্য। এর মধ্যে বিশিষ্ট হল মাইক্রোগ্রাভিটি স্টাডিতে অ্যাডভান্সড ডায়াগনস্টিক আল্ট্রাসাউন্ড যেখানে মহাকাশচারীরা (প্রাক্তন আইএসএস কমান্ডার লেরয় চিয়াও এবং গেনাডি প্যাডালকা সহ) দূরবর্তী বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনায় আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান করে মহাকাশে শত শত মেডিক্যাল অবস্থার সম্ভাব্য চিকিৎসার জন্য। এই অধ্যয়নের কৌশলগুলি এখন পেশাদার এবং অলিম্পিক ক্রীড়ার আঘাতের পাশাপাশি মেডিকেল এবং উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে অ-বিশেষজ্ঞ অপারেটরদের দ্বারা সম্পাদিত আল্ট্রাসাউন্ড কভার করার জন্য প্রয়োগ করা হচ্ছে। এটা প্রত্যাশিত যে দূরবর্তী নির্দেশিত আল্ট্রাসাউন্ড জরুরী এবং গ্রামীণ পরিচর্যা পরিস্থিতিতে পৃথিবীতে প্রয়োগ হবে, যেখানে একজন প্রশিক্ষিত চিকিত্সকের অ্যাক্সেস প্রায়ই বিরল। ২০০৬ সালের একটি স্পেস শাটল পরীক্ষায় দেখা গেছে যে সালমোনেলা টাইফিমুরিয়াম, একটি ব্যাকটেরিয়া যা খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে, মহাকাশে চাষ করার সময় এটি আরও মারাত্মক হয়ে ওঠে। অতি সম্প্রতি, ২০১৭ সালে, ব্যাকটেরিয়াগুলি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি আরও বেশি প্রতিরোধী এবং স্থানের কাছাকাছি ওজনহীনতায় উন্নতি করতে দেখা গেছে। অণুজীবগুলি মহাশূন্যের শূন্যতায় টিকে থাকতে দেখা গেছে। ৩১ ডিসেম্বর ২০১২-এ, একটি NASA- সমর্থিত সমীক্ষা রিপোর্ট করেছে যে মানুষের স্পেসফ্লাইট মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে এবং আলঝেইমার রোগের সূত্রপাতকে ত্বরান্বিত করতে পারে। ২০১৫ সালের অক্টোবরে, NASA অফিস অফ ইন্সপেক্টর জেনারেল মঙ্গল গ্রহে মানব মিশন সহ মহাকাশ অনুসন্ধান সম্পর্কিত একটি স্বাস্থ্য ঝুঁকির প্রতিবেদন জারি করে। গত এক দশক ধরে, NASA-এর ফ্লাইট সার্জন এবং বিজ্ঞানীরা দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ মিশনে নভোচারীদের দৃষ্টি সমস্যার একটি প্যাটার্ন দেখেছেন। সিনড্রোম, যা ভিজ্যুয়াল ইম্যামমেন্ট ইন্ট্রাক্রানিয়াল প্রেসার (VIIP) নামে পরিচিত, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করার পর প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মহাকাশ অভিযাত্রীর মধ্যে রিপোর্ট করা হয়েছে। ২ই নভেম্বর ২০১৭-এ, বিজ্ঞানীরা রিপোর্ট করেছেন যে এমআরআই গবেষণার উপর ভিত্তি করে মহাকাশচারী যারা মহাকাশে ভ্রমণ করেছেন তাদের মস্তিষ্কের অবস্থান এবং গঠনে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন পাওয়া গেছে। মহাকাশচারী যারা দীর্ঘ মহাকাশ ভ্রমণ করেছিলেন তাদের মস্তিষ্কের বৃহত্তর পরিবর্তনের সাথে যুক্ত ছিল। মহাকাশে থাকা শরীরে শারীরবৃত্তীয়ভাবে ডিকন্ডিশনিং হতে পারে। এটি কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অটোলিথ অঙ্গ এবং অভিযোজিত ক্ষমতাকে প্রভাবিত করতে পারে। শূন্য মাধ্যাকর্ষণ এবং মহাজাগতিক রশ্মি মহাকাশচারীদের জন্য অনেক প্রভাব ফেলতে পারে। অক্টোবর ২০১৮-এ, NASA- এর অর্থায়নে গবেষকরা দেখেছেন যে মঙ্গল গ্রহে ভ্রমণ সহ বাইরের মহাকাশে দীর্ঘ যাত্রা মহাকাশচারীদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল টিস্যুগুলিকে যথেষ্ট ক্ষতি করতে পারে। গবেষণাগুলি পূর্বের কাজগুলিকে সমর্থন করে যা দেখেছিল যে এই ধরনের ভ্রমণগুলি মহাকাশচারীদের মস্তিষ্কের উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতি করতে পারে এবং তাদের অকাল বয়সী হতে পারে। ২০১৮ সালে গবেষকরা রিপোর্ট করেছেন, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (ISS) পাঁচটি Enterobacter bugandensis ব্যাকটেরিয়া স্ট্রেনের উপস্থিতি শনাক্ত করার পর, কোনোটিই মানুষের জন্য প্যাথোজেনিক নয়, যে ISS-এর অণুজীবগুলি মহাকাশচারীদের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। এপ্রিল ২০১৯ সালে প্রকাশিত রাশিয়ান বিজ্ঞানীদের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে মহাকাশ বিকিরণের মুখোমুখি মহাকাশচারীরা তাদের স্মৃতি কেন্দ্রগুলির অস্থায়ী বাধার সম্মুখীন হতে পারে। যদিও এটি তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে না, এটি সাময়িকভাবে মস্তিষ্কের স্মৃতি কেন্দ্রে নতুন কোষ গঠনে বাধা দেয়। মস্কো ইনস্টিটিউট অফ ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইপিটি) দ্বারা পরিচালিত গবেষণাটি এই উপসংহারে পৌঁছেছে যে তারা পর্যবেক্ষণ করেছে যে নিউট্রন এবং গামা বিকিরণের সংস্পর্শে থাকা ইঁদুরগুলি ইঁদুরদের বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে না। আট পুরুষ রাশিয়ান মহাকাশচারীর মস্তিষ্কের উপর পরিচালিত একটি ২০২০ গবেষণায় দেখা গেছে যে তারা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে দীর্ঘ অবস্থান থেকে ফিরে আসার পরে দেখা গেছে যে দীর্ঘ সময়ের স্পেসফ্লাইট ম্যাক্রো- এবং মাইক্রোস্ট্রাকচারাল পরিবর্তন সহ অনেক শারীরবৃত্তীয় অভিযোজন ঘটায়। যদিও বিজ্ঞানীরা এখনও মস্তিষ্কের গঠনের উপর স্পেসফ্লাইটের প্রভাব সম্পর্কে খুব কমই জানেন, এই গবেষণায় দেখা গেছে যে মহাকাশ ভ্রমণ নতুন মোটর দক্ষতা (দক্ষতা) নিয়ে যেতে পারে, তবে দৃষ্টিশক্তি কিছুটা দুর্বল হতে পারে, উভয়ই সম্ভবত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এটি ছিল প্রথম গবেষণা যা সেন্সরিমোটর নিউরোপ্লাস্টিসিটির স্পষ্ট প্রমাণ প্রদান করে, যা মস্তিষ্কের বৃদ্ধি এবং পুনর্গঠনের মাধ্যমে পরিবর্তন করার ক্ষমতা। খাদ্য ও পানীয় আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে একজন নভোচারীর জন্য প্রায় প্রয়োজন প্রতিদিন খাবার প্রতি ভর (প্রায় সহখাবার প্রতি প্যাকেজিং ভর)। স্পেস শাটল নভোচারীরা পুষ্টিবিদদের সাথে কাজ করেছেন মেনু নির্বাচন করতে যা তাদের স্বতন্ত্র স্বাদের জন্য আবেদন করে। ফ্লাইটের পাঁচ মাস আগে, শাটল ডায়েটিশিয়ান দ্বারা পুষ্টি বিষয়বস্তুর জন্য মেনুগুলি নির্বাচন এবং বিশ্লেষণ করা হয়েছিল। খাদ্যগুলিকে পরীক্ষা করা হয় যে তারা হ্রাসকৃত মাধ্যাকর্ষণ পরিবেশে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। ক্যালরির প্রয়োজনীয়তা একটি বেসাল এনার্জি এক্সপেন্ডিচার (BEE) সূত্র ব্যবহার করে নির্ধারিত হয়। পৃথিবীতে, গড় আমেরিকান প্রায় প্রতিদিন জল। বোর্ডে আইএসএস মহাকাশচারীরা জল ব্যবহার সীমিত করে মাত্র প্রতিদিন। চিহ্ন রাশিয়ায়, মহাকাশচারীকে তাদের মিশন শেষ করার পরে রাশিয়ান ফেডারেশনের পাইলট-কসমোনট প্রদান করা হয়, প্রায়শই রাশিয়ান ফেডারেশনের হিরোর পুরস্কার সহ। এটি ইউএসএসআর-এ প্রতিষ্ঠিত অনুশীলন অনুসরণ করে যেখানে মহাকাশচারীদের সাধারণত সোভিয়েত ইউনিয়নের হিরো উপাধিতে ভূষিত করা হয়। NASA-তে, যারা মহাকাশচারী প্রার্থীর প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করে তারা একটি সিলভার ল্যাপেল পিন পায়। একবার তারা মহাকাশে উড়ে গেলে, তারা একটি সোনার পিন পায়। মার্কিন মহাকাশচারী যাদের সক্রিয়-ডিউটি সামরিক মর্যাদা রয়েছে তারা একটি স্পেসফ্লাইটে অংশগ্রহণের পরে একটি বিশেষ যোগ্যতা ব্যাজ পায়, যা অ্যাস্ট্রোনট ব্যাজ নামে পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী অতিক্রমকারী তার পাইলটদের একটি মহাকাশচারী ব্যাজও প্রদান করে উচ্চতায়। মৃত্যু ২০২০-এর হিসাবে, চারটি মহাকাশ ফ্লাইটের সময় আঠারোজন নভোচারী (চৌদ্দ পুরুষ ও চারজন মহিলা) প্রাণ হারিয়েছেন। জাতীয়তা অনুসারে, তেরো জন আমেরিকান, চারজন রাশিয়ান (সোভিয়েত ইউনিয়ন) এবং একজন ইসরায়েলি ছিলেন। ২০২০-এর হিসাবে, ১১ জন (সমস্ত পুরুষ) স্পেসফ্লাইটের প্রশিক্ষণে প্রাণ হারিয়েছে: আট আমেরিকান এবং তিনজন রাশিয়ান। এর মধ্যে ছয়টি প্রশিক্ষণ জেট বিমানের দুর্ঘটনায়, একটি জল পুনরুদ্ধার প্রশিক্ষণের সময় ডুবে যায় এবং চারটি বিশুদ্ধ অক্সিজেন পরিবেশে আগুনের কারণে হয়েছিল। মহাকাশচারী ডেভিড স্কট তার ১৯৭১ সালের অ্যাপোলো ১৫ মিশনের সময় চাঁদের পৃষ্ঠে পড়ে যাওয়া মহাকাশচারী শিরোনামের একটি মূর্তি সমন্বিত একটি স্মারক রেখে গিয়েছিলেন, সেই সাথে আটটি মহাকাশচারীর নামের তালিকা এবং ছয়জন মহাকাশচারী যে সময়ে সেবারত অবস্থায় মারা গিয়েছিল বলে পরিচিত ছিল। . মন্তব্য অ্যাপোলো ১৩ একটি উদ্দেশ্যমূলক চন্দ্র অবতরণ বাতিল করতে হয়েছিল, এবং তার তিন মহাকাশচারীকে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনতে চাঁদের চারপাশে লুপ করেছিল। আরও দেখুন জন ইয়ং (মহাকাশচারী) তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ NASA: কীভাবে একজন মহাকাশচারী হবেন ১০১ করা আন্তর্জাতিক অংশীদারি সংস্থাগুলির তালিকা এনসাইক্লোপিডিয়া অ্যাস্ট্রোনটিকা: ফ্যান্টম কসমোনটস CollectSPACE: মহাকাশচারীর উপস্থিতি ক্যালেন্ডার spacefacts Spacefacts.de মনুষ্যবাহিত মহাকাশবিজ্ঞান: তথ্য এবং পরিসংখ্যান মহাকাশচারী প্রার্থীর ব্রোশার অনলাইনে নভোচারী অপর্যালোচিত অনুবাদসহ পাতা বিজ্ঞান পেশা
https://en.wikipedia.org/wiki/Astronaut
Astronaut
An astronaut (from the Ancient Greek ἄστρον (astron), meaning 'star', and ναύτης (nautes), meaning 'sailor') is a person trained, equipped, and deployed by a human spaceflight program to serve as a commander or crew member aboard a spacecraft. Although generally reserved for professional space travelers, the term is sometimes applied to anyone who travels into space, including scientists, politicians, journalists, and tourists. "Astronaut" technically applies to all human space travelers regardless of nationality. However, astronauts fielded by Russia or the Soviet Union are typically known instead as cosmonauts (from the Russian "kosmos" (космос), meaning "space", also borrowed from Greek κόσμος). Comparatively recent developments in crewed spaceflight made by China have led to the rise of the term taikonaut (from the Mandarin "tàikōng" (太空), meaning "space"), although its use is somewhat informal and its origin is unclear. In China, the People's Liberation Army Astronaut Corps astronauts and their foreign counterparts are all officially called hángtiānyuán (航天员, meaning "heaven navigator" or literally "heaven-sailing staff"). Since 1961, 600 astronauts have flown in space. Until 2002, astronauts were sponsored and trained exclusively by governments, either by the military or by civilian space agencies. With the suborbital flight of the privately funded SpaceShipOne in 2004, a new category of astronaut was created: the commercial astronaut.
1445
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95
ডেনমার্ক
ডেনমার্ক () উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি রাষ্ট্র। ডেনীয় ভাষায় এর সরকারি নাম Kongeriget Danmark (Kingdom of Denmark)। ভাইকিংয়েরা ১,১০০ বছর আগে ডেনীয় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে। এটি ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী রাজত্বগুলির একটি। ডেনমার্কের বর্তমান জাতীয় পতাকা Dannebrog ১২১৯ সাল থেকে প্রচলিত। কোপেনহেগেন ডেনমার্কের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। এছাড়াও আরাফাস, আলব্রোগা দেশটির বৃহত্তম শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ডেনমার্ক স্ক্যান্ডিনেভিয়ার একটি অংশ। বিগত শতাব্দীগুলিতে ডেনমার্কের রাজারা সমগ্র নরওয়ে ও সুইডেন কিংবা এদের কিয়দংশ শাসন করেছেন। তারা দ্বীপরাষ্ট্র আইসল্যান্ডও শাসন করেছেন। ভৌগলিকভাবে ডেনমার্ক উত্তরের স্ক্যান্ডিনেভীয় দেশগুলির সাথে মহাদেশীয় ইউরোপের সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করে। বর্তমানে ডেনমার্ক জুটলান্ড উপদ্বীপের অধিকাংশ এলাকার উপর অবস্থতি একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। এছাড়াও রাষ্ট্রটি ডেনীয় দ্বীপপুঞ্জের বহু শত দ্বীপ নিয়ন্ত্রণ করে। জুটলান্ডের দক্ষিণ সীমান্ত জার্মানিকে স্পর্শ করেছে। এই সীমান্তের দৈর্ঘ্য মাত্র ৬৮ কিমি। পূর্বে জুটলান্ড ও সুইডেনের মাঝে ডেনমার্কের প্রধান দ্বীপগুলি অবস্থিত। এদের মধ্যে জেলান্ড দ্বীপটি সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ। ডেনমার্কের ৬০০ বছরের রাজধানী কোপেনহাগেনের বৃহত্তর অংশ জেলান্ডের পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। এছাড়াও স্কটল্যান্ডের উত্তর-পশ্চিমে ১৮টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত ফারো দ্বীপপুঞ্জ এবং তারও অনেক উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অধীন। রাজনৈতিকভাবে ফারো দ্বীপপুঞ্জ ও গ্রিনল্যান্ড ডেনমার্কের অংশ হলেও প্রতিরক্ষা ও বৈদেশিক সম্পর্কের ব্যাপারগুলি বাদে এরা স্বশাসিত। অনেক উত্তরে অবস্থিত হলেও উষ্ণ উত্তর আটলান্টিক সমুদ্রস্রোতের কারণে ডেনমার্কের জলবায়ু তুলনামূলকভাবে বেশ মৃদু। ডেনমার্ক একটি নিচু দেশ। এখানে রয়েছে ঢেউ খেলানো পাহাড়ের সারি, সাজানো গোছানো খামার, এবং বিস্তৃত গ্রামীণ সবুজ চারণভূমি। ডেনমার্কের কোন অংশ থেকেই সাগরের দূরত্ব ৬৪ কিমি-র বেশি নয়, ফলে সমগ্র দেশেই উপকূলীয় আবহাওয়া বিরাজমান। বর্ষা, কুয়াশা ও মেঘাচ্ছন্ন আকাশ স্বাভাবিক ঘটনা। ডেনমার্ক ধনী ও অত্যন্ত আধুনিক একটি দেশ। এখানকার নাগরিকেরা ইউরোপের সবচেয়ে উঁচু জীবনযাত্রার মানগুলির একটি উপভোগ করেন। ডেনীয়রা তাদের সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদের সদ্ব্যবহারে চাতুর্য ও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এটি ইউরোপের সবচেয়ে প্রাচীন ও ব্যাপক সমাজকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগুলির একটি। ফ্যাশন, শিল্পকারখানার ডিজাইন, চলচ্চিত্র ও সাহিত্য ডেনীয়রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ডেনমার্কের বিখ্যাত লেখকদের মধ্যে আছেন হান্স ক্রিস্টিয়ান আণ্ডারসন, যিনি তাঁর রূপকথাগুলির জন্য সারা বিশ্বে বিখ্যাত, এবং বিখ্যাত দার্শনিক সরেন কিয়ের্কেগর। ইতিহাস রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি তথ্যসূত্র ইউরোপের রাষ্ট্র স্ক্যান্ডিনেভিয়া খ্রিস্টান রাষ্ট্র ডেনমার্ক জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ইউরোপ কাউন্সিলের সদস্য রাষ্ট্র ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র নর্ডিক কাউন্সিলের সদস্য ভূমধ্যসাগরীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য ডেনিশভাষী দেশ ও অঞ্চল সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Denmark
Denmark
Denmark (Danish: Danmark, pronounced [ˈtænmɑk] ) is a Nordic country in the south-central portion of Northern Europe with a population of nearly 6 million; 767,000 live in Copenhagen (1.9 million in the wider area). It is the metropolitan part of and the most populous constituent of the Kingdom of Denmark, a constitutionally unitary state that includes the autonomous territories of the Faroe Islands and Greenland in the North Atlantic Ocean. Metropolitan Denmark is the southernmost of the Scandinavian countries, lying south-west and south of Sweden, south of Norway, and north of Germany, with which it shares a short border. As of 2013, the Kingdom of Denmark, including the Faroe Islands and Greenland, had a total of 1,419 islands greater than 100 square metres (1,100 sq ft) in area; 443 of these have been named and 78 are inhabited. Spanning a total area of 42,943 km2 (16,580 sq mi), metropolitan Denmark consists of the northern part of the Jutland peninsula and an archipelago of 406 islands. Of these, the most populated island is Zealand, on which the capital and largest city, Copenhagen, is situated, followed by Funen, the North Jutlandic Island, and Amager. Denmark has flat, arable land, sandy coasts, low elevations, and a temperate climate. Denmark exercises hegemonic influence in the Danish Realm, devolving powers to handle internal affairs. Home rule was established in the Faroe Islands in 1948 and in Greenland in 1979; the latter obtained further autonomy in 2009. The unified Kingdom of Denmark emerged in the 8th century AD as a proficient maritime power amid the struggle for control of the Baltic Sea. In 1397, it joined Norway and Sweden to form the Kalmar Union, which persisted until the latter's secession in 1523. The remaining Kingdom of Denmark–Norway endured a series of wars in the 17th century that resulted in further territorial cessions. A surge of nationalist movements in the 19th century were defeated in the First Schleswig War of 1848. The adoption of the Constitution of Denmark on 5 June 1849 ended the absolute monarchy and introduced the current parliamentary system. An industrialised exporter of agricultural produce in the second half of the 19th century, Denmark introduced social and labour-market reforms in the early 20th century, which formed the basis for the present welfare state model and advanced mixed economy. Denmark remained neutral during World War I; Danish neutrality was violated in World War II by a rapid German invasion in April 1940. During occupation, a resistance movement emerged in 1943, while Iceland declared independence in 1944; Denmark was liberated after the end of the war in May 1945. In 1973, Denmark, together with Greenland but not the Faroe Islands, became a member of what is now the European Union, but negotiated certain opt-outs, such as retaining its own currency, the krone. Denmark is a developed country with a high standard of living, and was the first country to legally recognise same-sex partnerships. It is a founding member of NATO, the Nordic Council, the OECD, the OSCE, and the United Nations, and is part of the Schengen Area. Denmark maintains close political, cultural, and linguistic ties with its Scandinavian neighbours. The Danish political system is used in political science as a reference point for near-perfect governance and the term "getting to Denmark" is used to describe how other countries can improve their governments.
1446
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%A4%E0%A6%BF
জিবুতি
জিবুতি আনুষ্ঠানিকভাবে 'জিবুতি প্রজাতন্ত্র', ( | , , ) আফ্রিকার শৃঙ্গর একটি রাষ্ট্র। এটি সামরিক কৌশলগত একটি অবস্থানে বাব এল মান্দেব প্রণালীর তীরে, লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত। দেশটির রাজধানী ও বৃহত্তম শহরের নামও জিবুতি। ভারত মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযোগকারী বাণিজ্যপথগুলির সংযোগস্থলে এবং আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের একটি সংযোগস্থলে অবস্থিত এই দেশটি বহুকাল যাবৎ বিভিন্ন সংস্কৃতি ও বাণিজ্যের মিলনস্থল। ভৌগোলিক তাৎপর্য এটি লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগর এর সংযোগস্থলে অবস্থিত যা ভারত মহাসাগর-এর ই অংশ। ইতিহাস জিবুতি ফ্রান্সের উপনিবেশ হিসেবে গণ্য ছিল। ১৮৯৬ থেকে ১৯৬৭ এই সময়টায় একে বলা হতো ফরাসি সোমালিল্যান্ড। জুলাই ৫, ১৯৬৭ তে নতুন নামকরণ হয় আফার এবং ইস্যাসের ফরাসি অঞ্চল। জুন ২৭, ১৯৭৭ এ নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। রাজনীতি ২০০১ সালে, জিবুতি সরকার যৌথ যুগ্ম টাস্ক ফোর্স হর্ন আফ্রিকার (সিজেটিএফ-হোয়্যা) সাথে সম্পর্কিত অপারেশনগুলির জন্য সাবেক ফরাসি সামরিক বেস ক্যাম্প লেমননিয়ার -কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের ইজারায় দেয়। সংস্কৃতি নিজেদের নিজস্ব পল্লী সংস্কৃতি থাকলেও যেহেতু মিসর , ভারত ও চীন-এর সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল তাই সংস্কৃতিতে এই তিন দেশের প্রভাব দেখা যায়। খাদ্যাভাস তাদের খাদ্যাভাসে সোমালিয়া , ইয়ামেন , ফরাসি ও ভারতীয় প্রভাব দেখা যায়। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারী সরকারি ওয়েবসাইট রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Djibouti from al-Bab Country Profile from BBC News Djibouti from UCB Libraries GovPubs DjibNet directory, mostly in French সংবাদ মিডিয়া allAfrica news headline links DjibNet daily press review in French and English পর্যটন জিবুতির ছবি আফ্রিকার রাষ্ট্র ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র ১৯৭৭-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল জিবুতি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র আরব লিগের সদস্য রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল আরবিভাষী দেশ ও অঞ্চল পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশ স্বল্পোন্নত দেশ প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Djibouti
Djibouti
Djibouti, officially the Republic of Djibouti, is a country in the Horn of Africa, bordered by Somalia to the south, Ethiopia to the southwest, Eritrea in the north, and the Red Sea and the Gulf of Aden to the east. The country has an area of 23,200 km2 (8,958 sq mi). In antiquity, the territory, together with Ethiopia, Eritrea and Somaliland, was part of the Land of Punt. Nearby Zeila, now in Somaliland, was the seat of the medieval Adal and Ifat Sultanates. In the late 19th century, the colony of French Somaliland was established after the ruling Dir Somali sultans signed treaties with the French, and its railroad to Dire Dawa (and later Addis Ababa) allowed it to quickly supersede Zeila as the port for southern Ethiopia and the Ogaden. It was renamed the French Territory of the Afars and the Issas in 1967. A decade later, the Djiboutian people voted for independence. This officially marked the establishment of the Republic of Djibouti, named after its capital city. The new state joined the United Nations in its first year. In the early 1990s, tensions over government representation led to armed conflict, which ended in a power-sharing agreement in 2000 between the ruling party and the opposition. Djibouti is a multi-ethnic nation with a population of over 920,000 (the smallest in mainland Africa). French and Arabic are its two official languages, Afar and Somali are national languages. About 94% of Djiboutians adhere to Islam, which is the official religion and has been predominant in the region for more than 1,000 years. The Somalis and Afar make up the two largest ethnic groups, with the former comprising the majority of the population. Both speak a language of the Cushitic branch of the Afroasiatic languages. Djibouti is near some of the world's busiest shipping lanes, controlling access to the Red Sea and Indian Ocean. It serves as a key refuelling and transshipment center, and the principal maritime port for imports from and exports to neighboring Ethiopia. A burgeoning commercial hub, the nation is the site of various foreign military bases. The Intergovernmental Authority on Development (IGAD) regional body also has its headquarters in Djibouti City.
1448
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A1%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র
ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র ( রেপুব্লিকা দোমিনিকানা IPA [re'puβlika domini'kana]) ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। এটি হিস্পানিওলা দ্বীপের দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে অবস্থিত। এর রাজধানীর নাম সান্তো দোমিঙ্গো। ইতিহাস ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রেকর্ডকরা ইতিহাস ১৪৯২ সালে শুরু হয়েছিল যখন জেনোয়া-বংশোদ্ভূত নেভিগেটর ক্রিস্টোফার কলম্বাস, ক্যাস্টিলের মুকুটের জন্য কাজ করছিলেন, পশ্চিম আটলান্টিক মহাসাগরের অঞ্চলের একটি বড় দ্বীপে ঘটেছিল যা পরে ক্যারিবিয়ান নামে পরিচিতি লাভ করে। এটি তাইনো, আরাওয়াকান জনগোষ্ঠী দ্বারা বাস করত, যারা দ্বীপের পূর্ব অংশকে কুইসকেয়া (কিসকেয়া) নামে অভিহিত করেছিল, যার অর্থ "সমস্ত ভূমির মা"। কলম্বাস তৎক্ষণাৎ স্প্যানিশ মুকুটের জন্য দ্বীপটি দাবি করেছিলেন, এটির নামকরণ করেছিলেন লা ইসলা এস্পানিওলা ("স্প্যানিশ দ্বীপ"), পরে ল্যাটিন হয়ে হিস্পানিওলা। ইউরোপীয় সংক্রামক রোগের কারণে তাইনোরা প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। অন্যান্য কারণগুলি ছিল নির্যাতন, আত্মহত্যা, পরিবার ভেঙে যাওয়া, দুর্ভিক্ষ, মধ্যযুগীয় ইউরোপের সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার অনুরূপ এনকোমিয়েন্ডা সিস্টেম, ক্যাস্টিলিয়ানদের সাথে যুদ্ধ, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং অন্যান্য মানুষের সাথে মিশে যাওয়া। ভারতীয়দের সুরক্ষার জন্য পাস করা আইনগুলি (বার্গোসের আইন, 1492-1512 থেকে শুরু করে) কখনই সত্যিকারঅর্থে প্রয়োগ করা হয়নি। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে পরিণত হবে ১৮২১ সাল পর্যন্ত সান্তো ডোমিঙ্গোর স্প্যানিশ অধিনায়ক জেনারেল, ১৭৯৫ থেকে ১৮০৯ সাল পর্যন্ত ফরাসি উপনিবেশ হিসাবে একটি সময় ব্যতীত। এটি ১৮২১ থেকে ১৭৯৫ সাল পর্যন্ত হাইতির সাথে একীভূত হিস্পানিওলার অংশ ছিল। ১৮০৯ সালে, ডোমিনিকান স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল এবং প্রজাতন্ত্র, যা প্রায়শই বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে সান্তো ডোমিঙ্গো নামে পরিচিত ছিল, ১৮২২ থেকে ১৮৪৪ সাল পর্যন্ত একটি সংক্ষিপ্ত স্প্যানিশ দখল এবং ১৮৪৪ থেকে ২০ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দখল ব্যতীত তার স্বাধীনতা বজায় রেখেছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীতে, ডোমিনিকানরা প্রায়শই যুদ্ধে লিপ্ত ছিল, ফরাসি, হাইতিয়ান, স্প্যানিশ বা নিজেদের মধ্যে লড়াই করেছিল, যার ফলে কাউডিলোস দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত একটি সমাজ তৈরি হয়েছিল, যারা দেশটি শাসন করেছিল যেন এটি তাদের ব্যক্তিগত রাজ্য। ১৮৬১ এবং ১৮৬৫ এর মধ্যে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের ১৯১৬ জন রাষ্ট্রপতি ছিলেন (যার মধ্যে মাত্র ১৯২৪ জন তাদের মেয়াদ শেষ করেছিলেন) এবং ১৯ টি সংবিধান ছিল। বেশিরভাগই বন্দুকের নল দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল এবং একই পথে চলে গিয়েছিল। ১৯৩০ সালের দিকে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র নিজেকে স্বৈরশাসক রাফায়েল ট্রুজিলোর নিয়ন্ত্রণে পেয়েছিল, যিনি ১৯৬১ সালে তার হত্যার আগ পর্যন্ত দেশ শাসন করেছিলেন। হুয়ান বোশ ১৯৬২ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন কিন্তু ১৯৬৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। ১৯৩০ সালে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বোশ পুনরুদ্ধারের জন্য একটি অভ্যুত্থান দ্বারা সৃষ্ট রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের মধ্যে হস্তক্ষেপের নেতৃত্ব দেয়। ১৯৬১ সালে, কৌডিলো জোয়াকিন বালাগুয়ের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বোশকে পরাজিত করেছিলেন। বালাগুয়ের পরবর্তী ৩০ বছরের বেশিরভাগ সময় ক্ষমতার উপর শক্ত দখল বজায় রেখেছিলেন যখন ত্রুটিযুক্ত নির্বাচনের প্রতি মার্কিন প্রতিক্রিয়া তাকে ১৯৯৬ সালে তার মেয়াদ হ্রাস করতে বাধ্য করেছিল। তারপর থেকে, নিয়মিত প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে বিরোধী প্রার্থীরা প্রেসিডেন্সিতে। রাজনীতি ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র একটি প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র, যেখানে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি সরকার প্রধান এবং বহুদলীয় ব্যবস্থার প্রধান হিসাবে কাজ করেন। নির্বাহী ক্ষমতা সরকার দ্বারা প্রয়োগ করা হয়। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট জাতীয় কংগ্রেসের হাতে ন্যস্ত। বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ এবং আইনসভা থেকে স্বাধীন। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ইতিহাস ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের একটি বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে যেখানে প্রতি চার বছরে জাতীয় নির্বাচন হয়। ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দুই রাউন্ডে, প্রায় ৮০% যোগ্য ডোমিনিকান ভোটাররা নির্বাচনে গিয়েছিলেন। ১৯৯৪ সালে নেতৃস্থানীয় দলগুলি ছিল পিআরএসসি, আন্তর্জাতিক খ্রিস্টান গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে যুক্ত, যার প্রার্থী ছিলেন রাষ্ট্রপতি জোয়াকিন বালাগুয়ের; পিআরডি, সোশ্যালিস্ট ইন্টারন্যাশনালের সাথে যুক্ত, যার প্রার্থী ছিলেন জোসে ফ্রান্সিসকো পেনা গোমেজ; এবং পিএলডি, যার প্রার্থী ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুয়ান বোশ। ১৯৯৪ সালের নির্বাচনে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ভোটার তালিকায় অনেক অনিয়ম লক্ষ্য করেছিলেন এবং বিরোধী পিআরডি অবিলম্বে কেন্দ্রীয় নির্বাচনী বোর্ড এবং পিআরএসসির বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল। সেন্ট্রাল ইলেক্টোরাল বোর্ড কর্তৃক নিযুক্ত একটি যাচাইকরণ কমিশন অবশ্য পিআরডির অভিযোগ গ্রহণ করেনি। সমস্ত অনুমান অনুসারে, মোট বঞ্চিত ভোটাররা ১৯৯৪ সালের ২ আগস্ট রাষ্ট্রপতি বালাগুয়েরের পক্ষে বিজয়ের ২২,২৮১ ভোটের ব্যবধানকে ছাড়িয়ে গেছে। তীব্র রাজনৈতিক কার্যকলাপের পরে, প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলি ১০ আগস্ট গণতন্ত্রের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে, রাষ্ট্রপতি বালাগুয়েরের মেয়াদ ৪ বছর থেকে কমিয়ে ২ বছর করে, আগাম নির্বাচন নির্ধারণ করে এবং সংবিধানসংস্কার করে। নির্বাচনী সংস্কারে কাজ করার জন্য একটি নতুন কেন্দ্রীয় নির্বাচনী বোর্ড নামকরণ করা হয়েছিল। ১০ সালে প্রধান প্রার্থীরা ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট জ্যাসিন্টো পেনাডো (পিআরএসসি), জোসে ফ্রান্সিসকো পেনা গোমেজ (পিআরডি), এবং লিওনেল ফার্নান্দেজ (পিএলডি)। দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকরা ১৯৯৬ সালের নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হিসেবে দেখেছেন। প্রথম রাউন্ডে জ্যাসিন্টো পেনাডো (পিআরএসসি) বাদ পড়ার পরে, জোয়াকিন বালাগুয়েরের সাথে পিআরএসসি লিওনেল ফার্নান্দেজকে (পিএলডি) সমর্থন করেছিল। দ্বিতীয় রাউন্ডের ফলাফল, ১৯৯৬ দিন পরে ৪৫ শে জুন, দ্রুত সারণীভুক্ত করা হয়েছিল এবং যদিও জয়ের ব্যবধান সংকীর্ণ ছিল (৩০.১%), এটি কখনই প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি। বর্তমান প্রশাসন থেকে আগত প্রশাসনে রূপান্তর মসৃণ ছিল এবং ডোমিনিকান রাজনৈতিক জীবনে একটি নতুন, আধুনিক যুগের সূচনা করেছিল। ফার্নান্দেজের রাজনৈতিক এজেন্ডা ছিল অর্থনৈতিক ও বিচার বিভাগীয় সংস্কার। তিনি অর্গানাইজেশন অফ আমেরিকান স্টেটস এবং মিয়ামি শীর্ষ সম্মেলনের ফলো-আপের মতো গোলার্ধীয় বিষয়গুলিতে ডোমিনিকান অংশগ্রহণ বাড়াতে সহায়তা করেছিলেন। ২০ সালের ১৬ মে বিপ্লবী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হিপোলিটো মেজিয়া আরেকটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। তিনি ডোমিনিকান লিবারেশন পার্টির প্রার্থী ড্যানিলো মেদিনাকে ৪৯.৮% থেকে ২৪.৮৪% পরাজিত করেন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বালাগুয়ের ২৪.৬৮% ভোট পেয়েছিলেন। মেজিয়া ১৬ আগস্ট চারটি অগ্রাধিকার নিয়ে ক্ষমতায় আসেন: শিক্ষা সংস্কার, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য বিমোচন। মেজিয়া মধ্য আমেরিকান এবং ক্যারিবিয়ান অর্থনৈতিক সংহতকরণ এবং অভিবাসনের কারণকেও সমর্থন করে, বিশেষত যখন এটি হাইতির সাথে সম্পর্কিত। ২০০৪ সালের ১৬ ই মে, ডোমিনিকান লিবারেশন পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কারী লিওনেল ফার্নান্দেজ প্রায় ৫৭% ভোট পেয়েছিলেন। ২০০৮ সালের ১৬ ই মে, ডোমিনিকান লিবারেশন পার্টির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা কারী লিওনেল ফার্নান্দেজ টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার জন্য প্রায় ৫৪% ভোট পেয়েছিলেন। ২০১২ সালে, ড্যানিলো মেদিনা হিপোলিটো মেজিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি হিসাবে অল্প ব্যবধানে জয়ী হন। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফার্নান্দেজের সাথে একটি চুক্তি, বিস্তৃত পিএলডি নেতৃত্ব দ্বারা অনুমোদিত, রাষ্ট্রপতি হিসাবে টানা দ্বিতীয় মেয়াদের অনুমতি দেওয়ার জন্য সংবিধানপরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছিল, তবে লিওনেল ফার্নান্দেজকে ২০২০ সালে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে তার পালা না হওয়া পর্যন্ত পিএলডির প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। সংবিধান পরিবর্তন করা হয়েছিল, এবং মদিনা আধুনিক বিপ্লবী পার্টির (পিআরএম) লুইস আবিনাদারের বিরুদ্ধে বিস্তৃত ব্যবধানে পুনর্নির্বাচন জিতেছিলেন। ২০২০ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে, রাষ্ট্রপতি মদিনার সমর্থকরা তৃতীয় মেয়াদের অনুমতি দেওয়ার জন্য দেশটির সংবিধানে অতিরিক্ত পরিবর্তনের জন্য চাপ দিয়েছিলেন। যদিও মদিনা নিজে প্রকাশ্যে অন্য একটি মেয়াদের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলেন না, পিএলডির মধ্যে একটি তীব্র সংগ্রাম শুরু হয়েছিল। লিওনেল ফার্নান্দেজের নেতৃত্বে কংগ্রেসের বাইরে বিক্ষোভ এবং পরবর্তীকালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপের পরে (বিশেষত পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর আহ্বানের জনসমক্ষে পাঠের মাধ্যমে), রাষ্ট্রপতি মেদিনা ২২ জুলাই, ২০১৯ তারিখে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না, পরিবর্তে "নতুন রক্ত" (অর্থাৎ, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফার্নান্দেজকে সমর্থন না করার) আহ্বান জানান। মেদিনা ৬ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় পিএলডি মনোনয়নের প্রাইমারিতে ফার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী গনসালো কাস্তিলোকে সমর্থন করেন। পিআরএম-এর মধ্যে আবিনাদারকে মনোনয়নের জন্য চ্যালেঞ্জ করছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট মেজিয়া। নির্বাচন ও রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক ডোমিনিকান বিপ্লবী পার্টি (পার্টিডো রেভোলুসিওনারিও ডোমিনিকানো, পিআরডি) ডোমিনিকান বিপ্লবী পার্টি মূলত জুয়ান বোশ, জুয়ান ইসিড্রো জিমেনেস গ্রুলোন এবং রাফায়েল মাইনার্দি রেনা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, অন্যান্য ট্রুজিলো-যুগের নির্বাসিতদের মধ্যে ২১ শে জানুয়ারী, ১৯৩৯ সালে কিউবার হাভানায়। ট্রুজিলোর মৃত্যুর পরে, জুয়ান বোশ, ১৯২১ সালে পিআরডির পক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথম গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কর্মকর্তা হয়েছিলেন।  দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে চারবার রাষ্ট্রপতি জিতেছে, ১৯৪২,১৯৪৭ ১৯৬৩ এবং ১৯৭৮ সালের নির্বাচনে জিতেছে। পিআরডি বর্তমানে সিনেটে একটি আসন, ১৯৮২ মেয়রের মধ্যে ২০০০ টি এবং ডেপুটিদের চেম্বারে ৫৭ টি আসনের মধ্যে ১৫৫ টি আসন ধারণ করে। পিআরডির প্রধান মতাদর্শ হল কেন্দ্র, দলের কিছু অংশ মধ্য-বাম এবং মধ্য-ডান, যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দলটি পিআরডির চেয়ে বেশি রক্ষণশীল হিসাবে বিবেচিত হয়েছে। দলের বর্তমান নেতা, যিনি স্বরাষ্ট্র বিভাগের বর্তমান মন্ত্রীও, হলেন মিগুয়েল ভার্গাস মালদোনাদো।  দলের সাধারণ সম্পাদক হলেন টনি পেনা গুয়াবা। ডোমিনিকান বিপ্লবী দলের রঙ হালকা নীল এবং সাদা। ডোমিনিকান লিবারেশন পার্টি (পিএলডি) পিএলডি ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৭৩ সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জুয়ান বোশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পরের বছর, দলটি প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] দলটি ১৯৯৬ সালে তার প্রথম জাতীয় বিজয় পেয়েছিল, লিওনেল ফার্নান্দেজ দলের প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি এবং সামগ্রিকভাবে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের ৫০ তম রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন। দলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে চারবার ক্ষমতায় নির্বাচিত হয়েছে, ১৯৯৬, ২০০৪, ২০০৮ এবং ২০১২ সালের নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জিতেছে। বর্তমানে সিনেটে ৩২টি আসনের মধ্যে ২৬টি, ১৫৫টি মেয়রের মধ্যে ১০৬টি এবং চেম্বার অব ডেপুটিদের ১৯০টির মধ্যে ১০৬টি আসন রয়েছে পিএলডির।  পার্টির অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, পিএলডি নিজেকে প্রাথমিকভাবে মধ্য-বাম হিসাবে বিবেচনা করে, পপুলিজম এবং নিওলিবারলিজমকে প্রত্যাখ্যান করে। দলের বর্তমান নেতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ড্যানিলো মেদিনা সানচেজ। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ডোমিনিকান লিবারেশন পার্টির প্রতিনিধি রঙ হিসাবে হলুদ এবং বেগুনি রয়েছে। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র তিনটি ম্যাক্রো-অঞ্চলে বিভক্ত, যা দশটি অঞ্চলে বিভক্ত। ১৮৫৮ সালে দেশটি ৩ টি বিভাগে বিভক্ত হয়েছিল: সিবাও (উত্তর), ওজামা (দক্ষিণ-পশ্চিম), এবং সেবো (দক্ষিণ-পূর্ব)। জনসংখ্যা ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস হিস্পানিওলা দ্বীপে অবস্থান করলে এই অঞ্চলটি প্রথম বিশ্ব বাণিজ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৪৯৬ সালে স্পেন যখন দেশটি দখল করে, তখন জনসংখ্যা ছিল (আরাওয়াক, তাইনো ইন্ডিয়ানস)। ১৪৯২ সালে স্পেন ফিরে আসার পরে, তারা আমেরিকার প্রথম ইউরোপীয় শহর হিসাবে বর্তমান রাজধানী সান্তো ডোমিঙ্গো প্রতিষ্ঠা করেছিল। দেশটি স্প্যানিশ শাসনের অধীনে আসে। ফ্রান্স হিস্পানিওলার অংশটি দখল করে নেয় যা বর্তমানে হাইতি। উপনিবেশ যুগে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র স্পেন এবং ফ্রান্সে চিনি সরবরাহকারী হিসাবে কাজ করেছিল। এই সময়ের মধ্যে অনেক শ্বেতাঙ্গ দেশটিতে চলে আসেন। ১৪৯৬ সালে, সান্তো ডোমিঙ্গো নির্মিত হয়েছিল এবং নতুন রাজধানী হয়ে ওঠে এবং আমেরিকার প্রাচীনতম ক্রমাগত বসতিপূর্ণ ইউরোপীয় শহর হিসাবে রয়ে গেছে। আজ, আরও দুটি বৃহৎ গোষ্ঠী যোগ দিয়েছে, যখন আদিবাসী জনগোষ্ঠী পুরোপুরি অদৃশ্য হয়ে গেছে। ডোমিনিকানদের ১৪৯৬% নিজেকে স্থানীয় বলে মনে করে, ৯৬% সাদা ৪৫% কালো এবং ১৮% মুলাটো। মহান অভিবাসনের পর অনেক বছর অতিবাহিত হয়েছে, জাতি মিশ্রিত হয়েছে এবং এটি আলাদা করা কঠিন হতে পারে। জাতিগত দিক থেকে, তারা সমস্ত অন্যান্য ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের অনুরূপ। স্পেনীয়রা ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে খ্রিস্টধর্ম নিয়ে এসেছিল এবং আজ জনসংখ্যার ১৬% ক্যাথলিক। জনসংখ্যার উপর স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক যুগের একটি শেষ স্পষ্ট অবশিষ্টাংশ হ'ল ভাষা। তারা স্প্যানিশ ভাষায় কথা বলে। সংস্কৃতি ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের সংস্কৃতি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন প্রভাবের একটি বৈচিত্র্যময় মিশ্রণ। ডোমিনিকান জনগণ এবং তাদের রীতিনীতিগুলি মূলত ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক ভিত্তিতে গঠিত, স্থানীয় তাইনো এবং আফ্রিকান প্রভাবসহ। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র পশ্চিম গোলার্ধে প্রথম ইউরোপীয় বসতি স্থাপনের স্থান ছিল, যার নাম সান্তো ডোমিঙ্গো ১৪৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত। দ্বীপে পাঁচ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে স্প্যানিশ উপস্থিতির ফলস্বরূপ, ডোমিনিকান সংস্কৃতির মূলটি স্পেনের সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত। ইউরোপীয় উত্তরাধিকারগুলির মধ্যে রয়েছে পূর্বপুরুষ, ভাষা, ঐতিহ্য, আইন, প্রধান ধর্ম এবং ঔপনিবেশিক স্থাপত্য শৈলী। ইউরোপীয়দের আগমনের পরপরই, আফ্রিকান লোকদের দাস শ্রম হিসাবে পরিবেশন করার জন্য দ্বীপে আমদানি করা হয়েছিল। ইউরোপীয়, স্থানীয় তাইনো এবং আফ্রিকান ঐতিহ্য এবং রীতিনীতির সংমিশ্রণ বর্তমান ডোমিনিকান সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রেখেছিল। ভাষা মূল নিবন্ধ: ডোমিনিকান স্পেনীয় ঔপনিবেশিক সান্তো ডোমিঙ্গোতে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের মূর্তি। স্প্যানিশ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের সরকারী ভাষা। দেশটিতে বিভিন্ন উচ্চারণ রয়েছে যার বেশিরভাগই ক্যানারি দ্বীপপুঞ্জ এবং দক্ষিণ স্পেনের পশ্চিম আন্দালুসিয়ায় কথিত স্প্যানিশ থেকে উদ্ভূত। সিবাও অঞ্চলে কথিত উচ্চারণ দুটি উপভাষার মিশ্রণ: সিবাও উপত্যকায় ষোড়শ এবং সপ্তদশ শতাব্দীর পর্তুগিজ উপনিবেশবাদীদের এবং অষ্টাদশ শতাব্দীর ক্যানারিয়ান বসতি স্থাপনকারীদের। ডোমিনিকান স্প্যানিশ আরাওয়াক ভাষা থেকে শব্দভান্ডারও ধার নিয়েছে। তাইনো আদিবাসীদের কাছ থেকে উদ্ভূত কিছু সাধারণ শব্দগুলির মধ্যে রয়েছে: বারবিকিউ, ক্যানো, ক্যারিবিয়ান, হ্যামক, হারিকেন, ইগুয়ানা, ম্যানেটি, ম্যানগ্রোভ, সাভানা এবং তামাক। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্কুলগুলি একটি স্প্যানিশ শিক্ষাগত মডেলের উপর ভিত্তি করে। ইংরেজি এবং ফরাসি উভয়ই বেসরকারী এবং সরকারী স্কুলে মাধ্যমিক ভাষা হিসাবে শেখানো হয়। হাইতিয়ান ক্রিওল হাইতিয়ান বংশোদ্ভূত জনসংখ্যা দ্বারা কথা বলা হয়। সামানা উপদ্বীপে প্রায় ৮,০০০ সামানা ইংরেজি ভাষীর একটি সম্প্রদায় রয়েছে। তারা পূর্বে দাসত্বের শিকার আফ্রিকানদের বংশধর যারা ঊনবিংশ শতাব্দীতে এসেছিল। পর্যটন, আমেরিকান পপ সংস্কৃতি, ডোমিনিকান আমেরিকানদের প্রভাব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক অন্যান্য ডোমিনিকানদের ইংরেজি শিখতে অনুপ্রাণিত করে। ধর্ম সান্তা মারিয়া লা মেনোরের ক্যাথেড্রাল, সান্তো ডোমিঙ্গো, আমেরিকার প্রথম ক্যাথেড্রাল, ১৫১২–১৫৪০ সালে নির্মিত হয়েছিল। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র ৬৮.৯% রোমান ক্যাথলিক, ১৮.২% ইভাঞ্জেলিকাল, ১০.৬% কোনও ধর্ম নেই এবং ২.৩% অন্যান্য।  সাম্প্রতিক অভিবাসন, পাশাপাশি ধর্মান্তরিতকরণ, জনসংখ্যার নিম্নলিখিত অংশসহ অন্যান্য ধর্মকে নিয়ে এসেছে: স্পিরিটিস্ট: ২.২%, লেটার-ডে সেন্টদের যীশু খ্রীষ্টের চার্চ: ১.১%, বৌদ্ধ: ০.১%, বাহাই: ০.১%,  চীনা লোকধর্ম: ০.১%, ইসলাম: ০.০২%, ইহুদিধর্ম: ০.০১%। জাতির দুটি পৃষ্ঠপোষক সাধু রয়েছে: নুয়েস্ট্রা সেনোরা দে লা আলতাগ্রাসিয়া (আওয়ার লেডি অফ হাই গ্রেস) এবং নুয়েস্ট্রা সেনোরা ডি লাস মার্সিডিজ (আওয়ার লেডি অফ মার্সি)। ক্যাথলিক চার্চ ১৯ শতকের শেষের দিকে জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করে। এটি তহবিলের অভাব, পুরোহিতদের এবং সহায়তা কর্মসূচির অভাবের কারণে হয়েছিল। একই সময়ে, প্রোটেস্ট্যান্ট ইভাঞ্জেলিকাল আন্দোলন সমর্থন পেতে শুরু করে। দেশটিতে ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্টদের মধ্যে ধর্মীয় উত্তেজনা বিরল। সারা দেশে ধর্মীয় স্বাধীনতা সবসময়ই ছিল। ১৯৫০ এর দশক পর্যন্ত ট্রুজিলো দ্বারা গির্জার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। সরকারী প্রতিপক্ষের গণগ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ পত্র প্রেরণ করা হয়েছিল। ট্রুজিলো গির্জার বিরুদ্ধে একটি প্রচারণা শুরু করেছিলেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারকারী যাজক এবং বিশপদের গ্রেপ্তার করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এই প্রচারাভিযানটি তার হত্যার সাথে এমনকি স্থাপনের আগেই শেষ হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, নাৎসি জার্মানি থেকে পালিয়ে আসা একদল ইহুদি ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে পালিয়ে যায় এবং সোসুয়া শহর প্রতিষ্ঠা করে। তখন থেকে এটি ইহুদি জনসংখ্যার কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে রয়ে গেছে। সঙ্গীত বাদ্যযন্ত্রগতভাবে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র একাধিক বাদ্যযন্ত্র শৈলী এবং শৈলী তৈরির জন্য পরিচিত, তবে বেশিরভাগক্ষেত্রে আফ্রিকান ড্রাম, পিতল, পিয়ানো, কর্ডেড বাদ্যযন্ত্রের মতো বাদ্যযন্ত্রের উপর ভিত্তি করে প্রতি মিনিটে প্রায় ১২০ থেকে ১৬০ বিট (যদিও এটি পরিবর্তিত হয়) নিয়ে গঠিত এক ধরনের প্রাণবন্ত, দ্রুত গতির ছন্দ এবং নৃত্য সংগীতের জন্য স্বীকৃত। এবং ঐতিহ্যগতভাবে অ্যাকর্ডিয়ন, পাশাপাশি ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের জন্য অনন্য কিছু উপাদান, যেমন তাম্বোরা এবং গুইরা। এর সিঙ্কোপেটেড বিটগুলিতে ল্যাটিন পারকুশন, পিতলের যন্ত্র, বেস এবং পিয়ানো বা কীবোর্ড ব্যবহার করা হয়। ১৯৩৭ এবং ১৯৫০ এর মধ্যে মারেঙ্গু সংগীত আন্তর্জাতিকভাবে ডোমিনিকান গ্রুপ যেমন চ্যাপুসেক্স এবং ড্যামিরন "লস রেয়েস ডেল মেরেঙ্গু", জোসেইতো মাতেও এবং অন্যান্যদের দ্বারা প্রচারিত হয়েছিল। রেডিও, টেলিভিশন এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়া এটিকে আরও জনপ্রিয় করে তোলে। কিছু সুপরিচিত মেরিঙ্গু পারফর্মারদের মধ্যে রয়েছে জনি ভেনচুরা, গায়ক / গীতিকার হুয়ান লুইস গুয়েরা, ফার্নান্দো ভিলালোনা, এডি হেরেরা, সার্জিও ভার্গাস, টোনো রোজারিও, মিলি কুইজাদা এবং চিচি পেরেলতা। ১৯৮০ এবং ১৯৯০ এর দশকে মেরিঙ্গু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, বেশিরভাগ ইস্ট কোস্টে,যখন অনেক ডোমিনিকান শিল্পী, তাদের মধ্যে ভিক্টর রোক ওয়াই লা গ্রান মানজানা, হেনরি হিয়েরো, জাকারিয়াস ফেরেইরা, আভেন্তুরা এবং মিলি জোসেলিন ওয়াই লস ভেসিনোস, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (বিশেষত নিউ ইয়র্ক) বসবাসকারী লাতিন ক্লাব দৃশ্যে অভিনয় শুরু করেছিলেন এবং রেডিও এয়ারপ্লে অর্জন করেছিলেন। নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, ফ্লোরিডা এবং ম্যাসাচুসেটসে অন্যান্য ল্যাটিনো গোষ্ঠীর মধ্যে বসবাসকারী ডোমিনিকানদের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাচাতার উত্থান ডোমিনিকান সংগীতের জনপ্রিয়তার সামগ্রিক বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছিল। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের নৃত্য সংস্কৃতি। বাচাতা, সংগীত এবং নৃত্যের একটি ফর্ম যা ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের গ্রামাঞ্চল এবং গ্রামীণ প্রান্তিক পাড়াগুলিতে উদ্ভূত হয়েছিল, সাম্প্রতিক বছরগুলিতে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর বিষয়গুলি প্রায়শই রোমান্টিক হয়; বিশেষত প্রচলিত হৃদয়বিদারক এবং দুঃখের গল্প। প্রকৃতপক্ষে, এই ঘরানার মূল নাম ছিল অমরগ ("তিক্ততা", বা "তিক্ত সংগীত", বা ব্লুজ সংগীত), যতক্ষণ না বরং অস্পষ্ট (এবং মেজাজ-নিরপেক্ষ) শব্দটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বাচাতা বোলেরো নামক প্যান-ল্যাটিন আমেরিকান রোমান্টিক শৈলী থেকে বেড়ে উঠেছে এবং এখনও ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। সময়ের সাথে সাথে, এটি মেরেঙ্গু এবং বিভিন্ন ল্যাটিন আমেরিকান গিটার শৈলী দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। ডোমিনিকান মেরেঙ্গু নাচ। পালো একটি আফ্রো-ডোমিনিকান পবিত্র সংগীত যা দ্বীপের মাধ্যমে পাওয়া যায়। ড্রাম এবং মানুষের কন্ঠ প্রধান বাদ্যযন্ত্র। পালো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাজানো হয় - সাধারণত সাধু দিবসের সাথে মিলে যায় - পাশাপাশি ধর্মনিরপেক্ষ দল এবং বিশেষ অনুষ্ঠানেও। এর শিকড় মধ্য-পশ্চিম আফ্রিকার কঙ্গো অঞ্চলে রয়েছে, তবে এটি সুরগুলিতে ইউরোপীয় প্রভাবের সাথে মিশ্রিত। পালোস ডোমিনিকান লোক ক্যাথলিক ধর্মের সাথে সম্পর্কিত, যার মধ্যে রয়েছে দেবদেবী / সাধুদের একটি প্যান্থিয়ন (এখানে মিস্টারিওস বলা হয়) কিউবা, ব্রাজিল, হাইতি এবং অন্য কোথাও আফ্রিকান উদ্ভূত সমন্বিত ধর্মীয় ঐতিহ্যের মতো। পালোস সাধারণত নিম্নবিত্ত, কালো এবং মিশ্র জনসংখ্যার সাথে যুক্ত। এগুলি ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন অঞ্চলে দেখা যায়, তবে বৈচিত্রের সাথে। সালসা সঙ্গীত দেশে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। ১৯৬০ এর দশকের শেষের দিকে ডোমিনিকান নেটিভ জনি পাচেকো, বিখ্যাত ফানিয়া অল স্টারসের স্রষ্টা, সংগীতের বিকাশ এবং জনপ্রিয়করণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং শৈলীটি বোঝাতে "সালসা" শব্দটি তৈরি করার জন্যও কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ডোমিনিকান রক ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের তরুণ এবং এত কম বয়সী জনতার মধ্যেও জনপ্রিয়। ডোমিনিকান রক ব্রিটিশ এবং আমেরিকান রক দ্বারা প্রভাবিত, তবে অনন্য শৈলীর নিজস্ব অনুভূতিও রয়েছে। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রক দৃশ্যটি সাম্প্রতিক বছরগুলিতে খুব প্রাণবন্ত হয়েছে, পপ রক, রেগে / রক এবং পাঙ্কের মতো রকের শৈলীতে বিস্তৃত। এছাড়াও বেশ কয়েকটি ভূগর্ভস্থ ধাতব কনসার্ট মাঝে মাঝে সান্তো ডোমিঙ্গো এবং সান্তিয়াগো শহরে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে কিশোর এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্করা সাধারণত অন্যান্য শৈলীর সাথে সন্তুষ্ট হয় না। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] রন্ধনশৈলী মূল নিবন্ধ: ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রন্ধনপ্রণালী চিচারন মিক্সটো, দক্ষিণ স্পেনের আন্দালুসিয়া থেকে উদ্ভূত দেশের একটি সাধারণ খাবার। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রন্ধনশৈলী মূলত স্প্যানিশ, আদিবাসী তাইনো এবং আফ্রিকান প্রভাবের সংমিশ্রণে গঠিত। অনেক মধ্য-প্রাচ্যের খাবার ডোমিনিকান রান্নায় গ্রহণ করা হয়েছে, যেমন "কুইপ" যা লেবানিজ কিব্বেহ থেকে আসে। ডোমিনিকান রন্ধনশৈলী ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ, পুয়ের্তো রিকো এবং কিউবার নিকটবর্তী দ্বীপপুঞ্জের সাথে, যদিও খাবারের নামগুলি কখনও কখনও পৃথক হয়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] একটি ঐতিহ্যবাহী প্রাতঃরাশের মধ্যে মাঙ্গু, ভাজা পেঁয়াজ, ভাজা ডিম, ভাজা সালামি, ভাজা পনির এবং কখনও কখনও অ্যাভোকাডো থাকে। একে "লস ট্রেস গোলপেস" বা "দ্য থ্রি হিটস" বলা হয়। স্পেনের মতো, দিনের বৃহত্তম, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার হ'ল মধ্যাহ্নভোজ। এর সর্বাধিক সাধারণ রূপ, ডাকনাম লা বান্দেরা ("পতাকা"), ভাত, লাল মটরশুটি এবং মাংস (গরুর মাংস, মুরগি, শুয়োরের মাংস বা মাছ) নিয়ে গঠিত, কখনও কখনও সালাদের পাশে থাকে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] খাবারগুলি দুগ্ধজাত পণ্য এবং শাকসব্জির চেয়ে মাংস এবং স্টার্চকে পছন্দ করে। অনেক গুলি খাবার সোফ্রিটো দিয়ে তৈরি করা হয়, যা মাংসের জন্য ভেজা ঘষা হিসাবে ব্যবহৃত স্থানীয় ভেষজগুলির মিশ্রণ এবং কোনও খাবারের সমস্ত স্বাদ বের করার জন্য ভাজা হয়। দক্ষিণ-মধ্য উপকূল জুড়ে, বুলগুর বা পুরো গম, কুইপ বা টিপিলি (বুলগুর সালাদ) এর একটি প্রধান উপাদান। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] অন্যান্য প্রিয় ডোমিনিকান খাবারগুলি হ'ল চিচারন, ইউকা, ক্যাসাবে, পেস্টলিটোস (এম্পানাডাস), বাটাটা, ইয়াম, চাকা (মাইজ ক্যাকুয়াও / ক্যাস্কোয়াডো, মাইজ কন ডুলস এবং মাইজ কন লেচে নামেও পরিচিত), চিমিচুরিস, টোস্টোন। ডোমিনিকানরা উপভোগ করে এমন কিছু খাবার হ'ল অ্যারোজ কন লেচে (বা অ্যারোজ কন ডুলস), বিজকোকো ডোমিনিকানো (লিট ডোমিনিকান কেক), হাবিচুয়েলাস কন ডুলস, ফ্ল্যান, ফ্রিও ফ্রিও (তুষার শঙ্কু), ডুলস ডি লেচে এবং কানা (আখ)। ডোমিনিকানরা যে পানীয়গুলি উপভোগ করে সেগুলির মধ্যে রয়েছে মোরির সোনান্দো, রাম, বিয়ার, মামা জুয়ানা, বাতিদা (স্মুদি), জুগোস ন্যাচারালস (তাজা সংকুচিত ফলের রস), মাবি এবং কফি। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] খেলাধুলা ডোমিনিকান নেটিভ এবং মেজর লীগ বেসবল খেলোয়াড় অ্যালবার্ট পুজোলস। বেসবল ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। দেশটিতে ছয়টি দলের একটি বেসবল লীগ রয়েছে। মিলওয়াকি ব্রিউয়ার্সের এখানে বেসবল একাডেমি নামে একটি গ্রীষ্মকালীন লীগ রয়েছে।  বেসবল মরসুম সাধারণত অক্টোবরে শুরু হয় এবং জানুয়ারীতে শেষ হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক মেজর লিগ বেসবল (এমএলবি) খেলোয়াড় রয়েছে। ওজি ভার্জিল, সিনিয়র ২৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৫৬ এ এমএলবিতে প্রথম ডোমিনিকান বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় হয়েছিলেন। জুয়ান মারিচল বেসবল হল অফ ফেমের প্রথম ডোমিনিকান বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়। সর্বকালের তিন সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত বেসবল খেলোয়াড় অ্যালেক্স রদ্রিগেজ, অ্যালবার্ট পুজোলস এবং রবিনসন ক্যানো ডোমিনিকান বংশোদ্ভূত। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বেসবল খেলোয়াড়রা হলেন: জুলিয়ান জাভিয়ের, পেদ্রো মার্টিনেজ, ফ্রান্সিসকো লিরিয়ানো, ম্যানি রামিরেজ, জোসে বাউটিস্তা, হ্যানলি রামিরেজ, ডেভিড অর্টিজ, উবাল্ডো জিমেনেজ, জোসে রেয়েস, আলসিডেস এসকোবার, প্লাসিডো পোলাঙ্কো এবং স্যামি সোসা। ফিলিপে আলু ম্যানেজার হিসাবেও সাফল্য উপভোগ করেছেন, এবং ওমর মিনায়া একজন মহাব্যবস্থাপক হিসাবে। ২০১৩ সালে, ডোমিনিকান দল বিশ্ব বেসবল ক্লাসিক জয়ের পথে অপরাজিত ছিল। বক্সিংয়ে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র বিশ্বমানের যোদ্ধা এবং বেশ কয়েকটি বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন তৈরি করেছে।  বাস্কেটবল তুলনামূলকভাবে উচ্চ স্তরের জনপ্রিয়তা উপভোগ করে। আল হরফোর্ড, ফেলিপে লোপেজ এবং ফ্রান্সিসকো গার্সিয়া বর্তমানে বা পূর্বে জাতীয় বাস্কেটবল অ্যাসোসিয়েশনে (এনবিএ) ডোমিনিকান বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের মধ্যে রয়েছেন। অলিম্পিক স্বর্ণপদক জয়ী এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাধাদাতা ফেলিক্স সানচেজ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের বাসিন্দা, যেমন এনএফএল ডিফেন্সিভ শেষ লুইস কাস্তিলো। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খেলাগুলির মধ্যে রয়েছে, ভলিবল, যা ১৯১৬ সালে মার্কিন মেরিন দ্বারা প্রবর্তিত হয়েছিল, ডোমিনিকান ভলিবল ফেডারেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। অন্যান্য খেলাগুলির মধ্যে রয়েছে তাইকোয়ান্দো, যেখানে গ্যাব্রিয়েল মার্সিডিজ একটি অলিম্পিক রৌপ্য পদক বিজয়ী, এবং জুডো। স্থাপত্য সান্তো ডোমিঙ্গোতে জাতীয় প্যান্থিয়ন। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্থাপত্য বিভিন্ন সংস্কৃতির একটি জটিল মিশ্রণ উপস্থাপন করে। ইউরোপীয় উপনিবেশবাদীদের গভীর প্রভাব সারা দেশে সবচেয়ে স্পষ্ট। অলংকৃত নকশা এবং ব্যারোক কাঠামো দ্বারা চিহ্নিত, শৈলীটি রাজধানী শহর সান্তো ডোমিঙ্গোতে সর্বোত্তমভাবে দেখা যায়, যা পুরো আমেরিকার প্রথম ক্যাথেড্রাল, দুর্গ, মঠ এবং দুর্গের আবাসস্থল, শহরের ঔপনিবেশিক অঞ্চলে অবস্থিত, ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসাবে ঘোষিত একটি অঞ্চল।  ডিজাইনগুলি সারা দেশ জুড়ে ভিলা এবং বিল্ডিংগুলিতে বহন করে। এটি এমন বিল্ডিংগুলিতেও দেখা যায় যেখানে স্টুকো বাহ্যিক, খিলানযুক্ত দরজা এবং জানালা এবং লাল টিলযুক্ত ছাদ রয়েছে। সান্তো ডোমিঙ্গোর কাছে একটি বোহিও। অনেক ডোমিনিকান - বিশেষত গ্রামাঞ্চলের লোকেরা - বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি অবধি বোহিওসে বাস করত, যেমন স্থানীয় তাইনোরা। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের আদিবাসীরাও দেশের স্থাপত্যে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। তাইনো লোকেরা কারুশিল্প, শিল্পকর্ম, আসবাবপত্র এবং ঘরগুলি একত্রিত করার জন্য মেহগনি এবং গুয়ানো (শুকনো খেজুর গাছের পাতা) এর উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করেছিল। কাদা, ছাদ এবং মেহগনি গাছ ব্যবহার করে বিল্ডিং এবং আসবাবপত্রকে একটি প্রাকৃতিক চেহারা দেয়, দ্বীপের আশেপাশের সাথে নির্বিঘ্নে মিশে যায়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সম্প্রতি, পর্যটন বৃদ্ধি এবং ক্যারিবিয়ান ছুটির গন্তব্য হিসাবে ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার সাথে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্থপতিরা এখন বিলাসিতার উপর জোর দেওয়া অত্যাধুনিক নকশাগুলি অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করেছেন। অনেক উপায়ে একটি স্থাপত্য খেলার মাঠ, ভিলা এবং হোটেলগুলি নতুন শৈলী প্রয়োগ করে, যদিও এখনও পুরানোগুলিতে নতুন গ্রহণএর প্রস্তাব দেয়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ডোমিনিকান স্থপতি রাফায়েল কালভেন্টি দ্বারা মাস্ট্রোলিলি আবাসিক অভ্যন্তর। এই নতুন শৈলী, যদিও বৈচিত্র্যময়, সরলীকৃত, কৌণিক কোণ এবং বড় জানালা দ্বারা চিহ্নিত করা হয় যা বহিরঙ্গন এবং অভ্যন্তরীণ স্থানগুলি মিশ্রিত করে। সামগ্রিকভাবে সংস্কৃতির মতো, সমসাময়িক স্থপতিরা নতুন কিছু তৈরি করতে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং বিভিন্ন সংস্কৃতিকে আলিঙ্গন করেন। আধুনিক ভিলাগুলি জরিপ করে, কেউ তিনটি প্রধান শৈলীর যে কোনও সংমিশ্রণ খুঁজে পেতে পারে: একটি ভিলায় কৌণিক, আধুনিকতাবাদী বিল্ডিং নির্মাণ, স্প্যানিশ ঔপনিবেশিক শৈলীর আর্চযুক্ত জানালা এবং শয়নকক্ষের বারান্দায় একটি ঐতিহ্যবাহী তাইনো হ্যামক থাকতে পারে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ভিজ্যুয়াল আর্টস রেইন ইন দ্য মার্কেট, ১৯৪২ (মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট, সান্তো ডোমিঙ্গো)। ডোমিনিকান শিল্প সম্ভবত উজ্জ্বল, প্রাণবন্ত রঙ এবং চিত্রগুলির সাথে যুক্ত যা সারা দেশ জুড়ে প্রতিটি পর্যটক উপহারের দোকানে বিক্রি হয়। যাইহোক, দেশে চারুকলার একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে যা ১৮০০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফিরে যায় যখন দেশটি স্বাধীন হয়েছিল এবং একটি জাতীয় শিল্প দৃশ্যের সূচনা হয়েছিল। ঐতিহাসিকভাবে, এই সময়ের চিত্রকর্মগুলি জাতীয় স্বাধীনতা, ঐতিহাসিক দৃশ্য, প্রতিকৃতির সাথে সংযুক্ত চিত্রগুলিকে কেন্দ্র করে ছিল তবে ল্যান্ডস্কেপ এবং স্থির জীবনের চিত্রগুলিও কেন্দ্রীভূত ছিল। চিত্রকলার শৈলীগুলি নিওক্লাসিসিজম এবং রোমান্টিকতার মধ্যে বিস্তৃত ছিল। ১৯২০ এবং ১৯৪০ এর মধ্যে শিল্প দৃশ্যটি বাস্তববাদ এবং প্রভাববাদের শৈলী দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। ডোমিনিকান শিল্পীরা আরও স্বাধীন এবং স্বতন্ত্র শৈলী বিকাশের জন্য পূর্ববর্তী, একাডেমিক শৈলী থেকে ভেঙে যাওয়ার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। সেই সময়ের শিল্পীরা ছিলেন সেলেস্টে ওস ওয়াই গিল (১৮৯০–১৯৮৫), জাইম কলসন (১৯০১–১৯৭৫), ইয়োরি ও মোরেল (১৯০৬–১৯৭৯) এবং দারিও সুরো (১৯১৭–১৯৯৭)। ১৯৪০ এর দশক ডোমিনিকান শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ের প্রতিনিধিত্ব করে। রাষ্ট্রপতি রাফায়েল লিওনিডাস ট্রুজিলো স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন এবং ইউরোপীয়দের একটি দল (বিখ্যাত শিল্পীসহ) পরবর্তীকালে ডিআর-এ এসেছিলেন। তারা তরুণ ডোমিনিকান শিল্পীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে যাদের শিল্পের উপর আরও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি দেওয়া হয়েছিল। আর্ট স্কুল এসকুয়েলা ন্যাসিওনাল ডি বেলাস আর্টস শিল্প শিক্ষার জন্য প্রথম অফিসিয়াল কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। দেশটি ইউরোপে ঘটে যাওয়া প্রবণতাদ্বারা ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত হয়ে নবজাগরণের মধ্য দিয়ে গেছে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৫০ এবং ১৯৭০ এর মধ্যে ডোমিনিকান শিল্প সেই সময়ের সামাজিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রকাশ করেছিল। চিত্র ভাষার পুনর্নবীকরণের প্রয়োজন দেখা দেয় এবং ফলস্বরূপ, চিত্রগুলি অ-রূপক, বিমূর্ত, জ্যামিতিক এবং কিউবিস্টিক শৈলীতে তৈরি করা হয়েছিল। সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য শিল্পীদের মধ্যে ছিলেন পল গিউডিসেলি (১৯২১-১৯৬৫), ক্লারা লেডেসমা (১৯২৪-১৯৯৯), গিলবার্তো হার্নান্দেজ ওর্তেগা (১৯২৪-১৯৭৯), গ্যাসপার মারিও ক্রুজ (১৯২৫-২০০৬), লুইচি এম রিচিজ (১৯২৮-২০০০), এলিজিও পিচারদো (১৯২৯–১৯৮৪), ডোমিঙ্গো লিজ (১৯২৯–১৯৮৪), সিলভানো লোড (১৯৩৪)।। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ১৯৭০ এবং ১৯৮০ এর দশকে শিল্পীরা নতুন শৈলী, ফর্ম, ধারণা এবং থিম নিয়ে আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন। অ্যাডা বালকাসার (জন্ম ১৯৩০), ফার্নান্দো পেনা ডিফিলো (জন্ম ১৯২৮) এবং রামন ওভিয়েদো (জন্ম ১৯২৭) এর মতো শিল্পীরা দশকের সবচেয়ে প্রভাবশালী হিসাবে গণ্য হন। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সিনেমা ডোমিনিকান সিনেমা একটি উদীয়মান চলচ্চিত্র শিল্প, ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম দেশগুলির মধ্যে একটি যেখানে লুমিয়ার ভাইয়েরা ১৯০০ সালে শতাব্দীর শুরুতে সান ফেলিপ দে পুয়ের্তো প্লাটায় কুরিয়েল থিয়েটার নিয়ে এসেছিলেন, শিল্পের সূচনা ১৯১৫ সাল থেকে শুরু হয়েছিল যেখানে ডোমিনিকান অঞ্চলে প্রথম চলচ্চিত্র টি নির্মিত হয়েছিল। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ডোমিনিকান ফিল্ম মার্কেট আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের ইতিহাসে প্রথম চলচ্চিত্র বাজার, ডিএফএম অডিওভিজুয়াল ডোমিনিকানা নির্বাহী চলচ্চিত্র নির্মাতা রডি পেরেজ এবং নুরগুল শায়খমেতোভা দ্বারা তৈরি এবং প্রযোজনা করা হয়েছিল। এর প্রথম সংস্করণে, ডিএফএম প্যানাসনিক, নিকন এবং ব্ল্যাকম্যাজিক ডিজাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলির সমর্থন পেয়েছিল, পাশাপাশি সিনেমা মহাপরিচালক ডিজিসিআইএন, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের রফতানি ও বিনিয়োগ কেন্দ্র সিইআই-আরডি এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহ-স্পনসরশিপ পেয়েছিল। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ফ্যাশন ডোমিনিকান বংশোদ্ভূত, ফ্যাশন ডিজাইনার এবং পারফিউম প্রস্তুতকারক অস্কার দে লা রেন্টা মাত্র সাত বছরে, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের ফ্যাশন সপ্তাহ সমগ্র ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে তার ধরনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট এবং সমগ্র ল্যাটিন আমেরিকান ফ্যাশন বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান ফ্যাশন ইভেন্টগুলির মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। দেশটি এই অঞ্চলের দশটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডিজাইন স্কুলগুলির মধ্যে একটি, লা এসকুয়েলা ডি ডিসেনো ডি আলটোস ডি চাভোন, যা দেশটিকে ফ্যাশন এবং ডিজাইনের বিশ্বের একটি মূল খেলোয়াড় করে তুলছে। বিশ্ববিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার অস্কার দে লা রেন্টা ১৯৩২ সালে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৭১ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব লাভ করেন। তিনি নেতৃস্থানীয় স্পেনীয় ডিজাইনার ক্রিস্টোবাল বালেনসিয়াগার অধীনে পড়াশোনা করেছিলেন এবং তারপরে প্যারিসে ল্যানভিনের বাড়িতে কাজ করেছিলেন। তারপরে ১৯৩২ সালের মধ্যে, ডি লা রেন্টার নিজস্ব লেবেল বহনকারী ডিজাইন ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পরে, ডি লা রেন্টা সারা দেশে বুটিক খুলেছিলেন। তার কাজ আমেরিকান শৈলীর সাথে ফরাসি এবং স্প্যানিশ ফ্যাশনের মিশ্রণ। যদিও তিনি নিউ ইয়র্কে বসতি স্থাপন করেছিলেন, ডি লা রেন্টা ল্যাটিন আমেরিকাতেও তার কাজ বাজারজাত করেছিলেন যেখানে এটি খুব জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তিনি তার জন্মভূমি ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে সক্রিয় ছিলেন, যেখানে তার দাতব্য কার্যক্রম এবং ব্যক্তিগত কৃতিত্ব তাকে জুয়ান পাবলো দুয়ার্তে অর্ডার অফ মেরিট এবং অর্ডার অফ ক্রিস্টোবাল কোলন অর্জন করেছিল। ফ্যাশন ডিজাইনার জেনি পোলানকো মহিলাদের পোশাক এবং হ্যান্ডব্যাগের জন্য পরিচিত ছিলেন যা তার ডিজাইনে ডোমিনিকান এবং ক্যারিবিয়ান প্রভাবঅন্তর্ভুক্ত করেছিল। উৎসব ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের শিক্ষার্থীরা ঐতিহাসিক জাতীয় পতাকা সহ। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে কার্নিভাল উদযাপন প্রতি ফেব্রুয়ারিতে প্যারেড, স্ট্রিট নাচ, খাদ্য উত্সব এবং সংগীতের সাথে অনুষ্ঠিত হয়। ইস্টার সানডে পর্যন্ত সপ্তাহেও উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। প্যারেড, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা এবং সারা দেশের প্রতিটি শহরে বিভিন্ন উত্সব সপ্তাহ পূর্ণ করে। জুন মাসে দেশটি দ্বীপের বহু-জাতিগত ঐতিহ্যকে সম্মান জানাতে ঐতিহ্যবাহী সংগীতের বৈশিষ্ট্যযুক্ত দেশব্যাপী উত্সবের সাথে এস্পিরিতু সান্তো উদযাপন করে। ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের মেয়ে নেটিভ তাইনো পোশাকে। কনসার্ট, নৃত্য দল, শিল্প ও কারুশিল্প বুথ এবং শেফরাও প্রতি জুনে পুয়ের্তো প্লাটায় একটি বার্ষিক সাংস্কৃতিক উত্সবের মাধ্যমে ডোমিনিকান ঐতিহ্য উদযাপন করে। ফিয়েস্তা প্যাট্রিয়া দে লা রেস্টাউরাসিয়ন বা পুনরুদ্ধার দিবস, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের স্পেন থেকে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে, যা 1863 সালে ঘটেছিল। দেশব্যাপী ইভেন্টগুলির মধ্যে প্যারেড, সংগীত উত্সব, রাস্তার উত্সব এবং খাদ্য উত্সব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সান্তো ডোমিঙ্গোতে লাতিন সঙ্গীত উৎসবের জন্য প্রতি জুনে তিন দিন আলাদা রাখা হয়। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক উভয় ল্যাটিন সংগীতশিল্পী এবং ব্যান্ড মঞ্চে আসে। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ এবং আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সান্তো ডোমিঙ্গো ফেস্টিভ্যাল ডেল মেরেঙ্গুতে বিশ্বের শীর্ষ স্থানীয় কিছু মেরিঙ্গু ব্যান্ড হোস্ট করে। দুই সপ্তাহব্যাপী এই পার্টিতে অন্যান্য ইভেন্টের মধ্যে রয়েছে ফুড ফেস্টিভ্যাল এবং একটি আর্টস অ্যান্ড ক্রাফটস ফেস্টিভ্যাল। ডোমিনিকান কার্নাভালের ঐতিহ্যবাহী কোজুয়েলো মুখোশ সান্তো ডোমিঙ্গো এবং পুয়ের্তো প্লাটা উভয় শহরেই জুলাই মাসে মেরিঙ্গু উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।  এই সপ্তাহব্যাপী বাচনাল "মেরেঙ্গু" এবং নৃত্যশিল্পীদের দ্বারা পরিহিত পোশাকগুলিকে একটি শিল্পরূপে উন্নীত করে। নৃত্যশিল্পীরা রাস্তায় এবং উন্মুক্ত মঞ্চে নৃত্য করে এবং কোরিওগ্রাফির মৌলিকতা, তরলতা এবং সৌন্দর্যকে স্বীকৃতি দেয় এমন বিভিন্ন সম্মানের জন্য প্রতিযোগিতা করে। উত্সবের বিজ্ঞাপনের জন্য ডিজাইন করা পোস্টারগুলি মৌলিকতা এবং সৌন্দর্যের জন্য প্রতিযোগিতা করে। সন্ধ্যায় নাচ এবং কুচকাওয়াজ দেখতে আসা জনতাও নাচছে। অক্টোবরের পুয়ের্তো প্লাটা ফেস্টিভ্যাল সারা দেশ থেকে সংগীতশিল্পীদের একত্রিত করে বিভিন্ন শৈলীতে লাইভ সংগীত পরিবেশন করে। ব্লুজ, জ্যাজ, ফোক, সালসা এবং মেরেঙ্গু সবচেয়ে সাধারণ। অক্টোবরে কলম্বাস ডে উইকেন্ডের সময় আরেকটি সংগীত ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হয়: ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র জাজ উত্সব। পুয়ের্তো প্লাটা, সোসুয়া এবং কাবারেটে কনসার্ট অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় জাজ সংগীতশিল্পী এবং ব্যান্ডগুলি উপস্থিত থাকে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] অন্যান্য উত্সবগুলির মধ্যে রয়েছে নববর্ষের দিনে ডেল সান্তো ক্রিস্টো ডি বায়াগুয়ানা উৎসব। ম্যাসের দিকে পরিচালিত ইভেন্টগুলির মধ্যে একটি প্যারেড, সংগীত এবং নৃত্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রতি বছর জানুয়ারিতে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র জুয়ান পাবলো দুয়ার্তেকে সান্তো ডোমিঙ্গোতে বন্দুকের সালাম এবং সারা দেশে অসংখ্য কার্নিভাল দিয়ে সম্মানিত করে। দুয়ার্তেকে ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের জন্য হাইতি থেকে স্বাধীনতা অর্জনকারী ব্যক্তি হিসাবে উদযাপন করা হয়। সমস্ত ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে প্রধান রান্নার ইভেন্ট হ'ল টেস্ট এসডি, যা প্রতি বছর অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হয়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] ইভেন্ট চলাকালীন, শত শত রেস্তোঁরা, খাদ্য বিক্রেতা, শেফ এবং রন্ধন দৃশ্যে অন্যান্যরা উপস্থাপনা, স্বাদ এবং আরও অনেক কিছুর আয়োজন করে। ইভেন্টটি বেশ কয়েক দিন এবং স্থান জুড়ে বিস্তৃত এবং কয়েক হাজার অতিথিকে আকৃষ্ট করার জন্য পরিচিত। ২০১২ সালে উন্মোচিত মূল ইভেন্টটি হ'ল আমেরিকার কুলিনারি কাপ যেখানে শেফরা শীর্ষ পুরস্কার জয়ের আশায় বেশ কয়েকটি রান্না এবং বেকিং ইভেন্টে অংশ নেয়। আরেকটি ইভেন্ট ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। প্রতি ডিসেম্বরে চার দিন, স্বাধীন চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য এবং ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন] আরও দেখুন ছুটির দিন আরও তথ্যের জন্য দেখুন: ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে সরকারী ছুটির দিন দ্রষ্টব্য: অ-কর্মক্ষম ছুটি অন্য দিনে সরানো হয় না। যদি কোনও চলমান ছুটি শনি, রবিবার বা সোমবার পড়ে তবে এটি অন্য দিনে সরানো হয় না। যদি এটি ম অন্যান্য https://en.wikipedia.org/wiki/Culture_of_the_Dominican_Republic#cite_ref-1:~:text=%E0%A6%A1%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF,%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%A8%20%E0%A6%86%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ ক্যারিবীয় দ্বীপ উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র খ্রিস্টান রাষ্ট্র স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল ক্যারিবীয় রাষ্ট্র প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশ প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ বৃহত্তর আন্তিলীয় দ্বীপপুঞ্জ দ্বীপ রাষ্ট্র ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র সার্বভৌম রাষ্ট্র ১৮৪৪-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল ১৮৪৪-এ উত্তর আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত
https://en.wikipedia.org/wiki/Dominican_Republic
Dominican Republic
The Dominican Republic is a North American country on the island of Hispaniola in the Greater Antilles archipelago of the Caribbean Sea, bordered by the Atlantic Ocean to the north. It occupies the eastern five-eighths of the island, which it shares with Haiti, making Hispaniola one of only two Caribbean islands, along with Saint Martin, that is shared by two sovereign states. It is the second-largest nation in the Antilles by area (after Cuba) at 48,671 square kilometers (18,792 sq mi), and second-largest by population, with approximately 11.4 million people in 2024, of whom approximately 3.6 million live in the metropolitan area of Santo Domingo, the capital city. The native Taíno people had inhabited Hispaniola before the arrival of Europeans, dividing it into five chiefdoms. Christopher Columbus claimed the island for Castile, landing there on his first voyage in 1492. The colony of Santo Domingo became the site of the first permanent European settlement in the Americas. In 1697, Spain recognized French dominion over the western third of the island, which became the independent state of Haiti in 1804. A group of Dominicans deposed the Spanish governor and declared independence from Spain in November 1821, but were annexed by Haiti in February 1822. Independence came 22 years later in 1844, after victory in the Dominican War of Independence. Over the next 72 years, the Dominican Republic experienced several civil wars, failed invasions by Haiti, and a brief return to Spanish colonial status, before permanently ousting the Spanish during the Dominican War of Restoration of 1863–1865. From 1930 the dictatorship of Rafael Leónidas Trujillo ruled until his assassination in 1961. Juan Bosch was elected president in 1962 but was deposed in a military coup in 1963. A civil war in 1965 was followed by the authoritarian rule of Joaquín Balaguer (1966–1978 and 1986–1996). Since 1978, the Dominican Republic has moved toward representative democracy. The Dominican Republic has the largest economy in the Caribbean region and the seventh-largest in Latin America. Over the last 25 years, the Dominican Republic has had the fastest-growing economy in the Western Hemisphere – with an average real GDP growth rate of 5.3% between 1992 and 2018. GDP growth in 2014 and 2015 reached 7.3 and 7.0%, respectively, the highest in the Western Hemisphere. Recent growth has been driven by construction, manufacturing, tourism, and mining. The country is the site of the third largest (in terms of production) gold mine in the world, the Pueblo Viejo mine. The Dominican Republic is the most visited destination in the Caribbean. The year-round golf courses and resorts are major attractions. A geographically diverse nation, the Dominican Republic is home to both the Caribbean's tallest mountain peak, Pico Duarte, and the Caribbean's largest lake and lowest point, Lake Enriquillo. The island has an average temperature of 26 °C (78.8 °F) and great climatic and biological diversity. The country is also the site of the first cathedral, castle, monastery, and fortress built in the Americas, located in Santo Domingo's Colonial Zone, a World Heritage Site.
1449
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%89%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%AE%20%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%AE%E0%A6%B8
উইলিয়াম জেমস
উইলিয়াম জেমস (জানুয়ারী ১১, ১৮৪২ - আগস্ট ২৬, ১৯১০) একজন আমেরিকান দার্শনিক এবং মনোবিজ্ঞানী এবং যুক্তরাষ্ট্রে মনোবিজ্ঞান কোর্স সরবরাহকারী প্রথম শিক্ষাবিদ ছিলেন। জেমসকে উনিশ শতকের শেষভাগের একজন শীর্ষস্থানীয় চিন্তাবিদ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী দার্শনিক এবং "আমেরিকান মনোবিজ্ঞানের জনক" হিসাবে বিবেচনা করা হয়। চার্লস স্যান্ডার্স পিয়ার্সের সাথে, উইলিয়াম জেমস একটি দার্শনিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন যা বাস্তববাদ হিসাবে পরিচিত, এবং কার্যকরী মনোবিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। ২০০২ সালে প্রকাশিত জেনারেল সাইকোলজি বিশ্লেষণের একটি পর্যালোচনায়, বিংশ শতাব্দীর ১৪ তম সর্বাধিক বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী হিসাবে জেমসকে স্থান দিয়েছে। ১৯৯১ সালে আমেরিকান সাইকোলজিস্টে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় জেমসের সুনাম দ্বিতীয় স্থানে রেখেছিল, উইলহেলাম ওয়ান্ড্টকের পরে যিনি ব্যাপকভাবে পরীক্ষামূলক মনোবিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে বিবেচিত হন। জেমস দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গিও বিকাশ করেছিলেন যা র‌্যাডিক্যাল এমিরিকিজম নামে পরিচিত। জেমসের কাজ ইমেল ডুরখাইম, এডমন্ড হুসারেল, বার্ট্র্যান্ড রাসেল, লুডভিগ উইটজেনস্টাইন, হিলারি পুতনম, রিচার্ড রুর্টি এবং মেরিলিন রবিনসনের মতো দার্শনিক ও শিক্ষাবিদকে প্রভাবিত করেছে। ধনী পরিবারে জন্মগ্রহণকারী জেমস ছিলেন সুইডেনবর্গিয়ান ধর্মতত্ত্ববিদ হেনরি জেমস সিনিয়র এবং বিশিষ্ট উপন্যাসিক হেনরি জেমস এবং ডায়রিস্ট অ্যালিস জেমস উভয়েরই ভাই। জেমস চিকিৎসক হিসাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন এবং হার্ভার্ডে অ্যানাটমি শিখিয়েছিলেন, কিন্তু কখনও চিকিৎসা করেননি। পরিবর্তে তিনি মনোবিজ্ঞান এবং তারপরে দর্শনে তাঁর আগ্রহগুলি অনুসরণ করেছিলেন। জেমস জ্ঞানবিজ্ঞান, শিক্ষা, অধিবিদ্যা, মনোবিজ্ঞান, ধর্ম এবং রহস্যবাদ সহ অনেকগুলি বিষয়ে ব্যাপকভাবে লিখেছিলেন। তাঁর সবচেয়ে প্রভাবশালী বইগুলির মধ্যে হ'ল দ্য প্রিন্সিপালস অফ সাইকোলজি, মনোবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি গ্রাউন্ডব্রেকিং পাঠ; র‌্যাডিকাল এম্পিরিকিজমে প্রবন্ধ, দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ; এবং ধর্মীয় অভিজ্ঞতার ধরন, মন-নিরাময়ের তত্ত্ব সহ বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় অভিজ্ঞতার তদন্ত। জেমসের থিউরি অব সেল্ফ জেমসের এই থিওরিটি একটি ব্যক্তির মানসিক ছবি দুটি ভাগে বিভক্ত করেছে: "আমাকে" এবং "আমি"। আধ্যাত্মিকতা এবং সমিতিবাদ সম্পর্কে মতামত জেমস সমিতিবাদ এবং আধ্যাত্মিকতা হিসাবে পরিচিত চিন্তার স্কুলগুলি ঘনিষ্ঠভাবে অধ্যয়ন করেছিলেন। স্বাধীন ইচ্ছা সত্য এবং মনস্তত্ত্বের নীতিগত নীতিগুলির সন্ধানে, উইলিয়াম জেমস তার স্বাধীন-ইচ্ছার দ্বি-পর্যায়ের মডেল তৈরি করেছিলেন প্রবৃত্তি সিগমন্ড ফ্রয়েডের মতো জেমসও চার্লস ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্ব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। লেখা উইলিয়াম জেমস তাঁর জীবনকাল জুড়ে লেখেন। জন ম্যাকডার্মট সংকলিত তাঁর লেখাগুলির একটি অব্যক্ত গ্রন্থপরিচয় রয়েছে যা ৪৭ পৃষ্ঠার দীর্ঘ। জ্ঞান বিজ্ঞান অধিবিদ্যা সম্পর্কে জেমসের অভিমত ইতিহাসের দর্শনের দীর্ঘস্থায়ী একটি কৌশল সামাজিক পরিবর্তনে ব্যক্তিদের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। আবেগ তত্ত্ব জেমস হলো জেমস-ল্যাঞ্জ আবেগতত্তের দুটি নামের মধ্যে একটি, যা তিনি ১৮৮০ এর দশকে কার্ল ল্যাঞ্জের সাথে স্বাধীনভাবে রচনা করেছিলেন। রহস্যবাদ উইলিয়াম জেমস তার বিভিন্ন রহস্যজনক অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিয়েছেন তার ১৯০২ সালের লেকচারের কালেকশনে যা প্রকাশিত হয় দ্যি ভ্যারাইটিজ অব রিলিজিয়াস এক্সপেরিয়েন্স নামে। ধর্মের দর্শনশাস্ত্র জেমস ধর্মের দর্শনশাস্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন পরিবার উইলিয়াম জেমস অ্যালবানির হেনরি জেমস সিনিয়রের এবং মেরি রবার্টসন ওয়ালশের পুত্র ছিলেন । তারা চার ভাইবোন ছিলেন: হেনরি (ঔপন্যাসিক), গার্থ উইলকিনসন, রবার্টসন, এবং এলিস। উইলিয়াম ১০ মে, ১৮৭৮ সালে অ্যালিস হেই গিবসনেের সাথে বাগদান সম্পন্ন করেন ; তারা ১০ জুলাই বিয়ে করেছিল। তাদের ৫ টি সন্তান ছিল: হেনরি (জন্ম ১৮ মে, ১৯৭৯), উইলিয়াম ( ১৭ জুন, ১৮৮২ - ১৯৬১), হারম্যান (জন্ম ১৮৮৪), মার্গারেট (জন্মগ্রহণ করেন ১৮৮৭), আলেকজান্ডার (জন্মগ্রহণ করেন ২২ ডিসেম্বর, ১৮৯০)। কর্মজীবন জেমস প্রায় সব একাডেমিক কর্মজীবন কাটিয়েছেন হার্ভার্ডে । ১৮২৩ সালে তিনি হার্ভার্ডে শরীরবৃত্তীয় প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। প্রথম জীবন উইলিয়াম জেমস ১১ ই জানুয়ারী, ১৮৪২সালে নিউইয়র্ক শহরের অস্টোর হাউসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি হেনরি জেমস সিনিয়রের এর পুত্র ছিলেন, যিনি ছিলেন সুপরিচিত এবং স্বাধীন ধনী সুইডেনবার্গিয় ও থিওলজিয় এবং তিনি তার দিনের সাহিত্য ও বুদ্ধিজীবী অভিজাতদের সাথে পরিচিত ছিলেন। জেমস ফ্যামিলির বুদ্ধিজীবী উজ্জ্বলতা এবং এর কয়েকজন সদস্যের অসাধারণ আকাশচুম্বী প্রতিভা ঐতিহাসিক, জীবনীবিদ এবং সমালোচকদের আগ্রহের বিষয়ে পরিণত করেছে। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Emory University: William James – major collection of essays and works online Stanford Encyclopedia of Philosophy: William James William James biblliography at Emory University, URL accessed August 12, 2006 Great Men and the Environment: William James "Biological Consciousness and the Experience of the Transcendent: William James and American Functional Psychology" "Oh Those Fabulous James Boys!" article from Psychology Today March/April 1995 James' gravesite "Streams of William James", a publication of the William James Society William James Society William James Studies The William James Cybrary William James on the Mystical Site www.mysticism.nl A short interview with Robert D. Richardson, author of the biography William James: In the Maelstrom of American Modernism Biography of William James European William James Project & Chromatiques whiteheadiennes website : http://www.chromatika.org উইলিয়াম জেমস এর লেখাসমূহ The Principles of Psychology Essays in Radical Empiricism The Will to Believe The Varieties of Religious Experience The Moral Equivalent of War Talks to Teachers The Subjective Effects of Nitrous Oxide ১৮৪২-এ জন্ম ১৯১০-এ মৃত্যু সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক বিশ্লেষক দার্শনিক শিক্ষা মনোবিজ্ঞানী হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থী তত্ত্ব বিজ্ঞানী পরামনোবিজ্ঞানী নিউ ইয়র্ক (অঙ্গরাজ্য)-এর দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক যুদ্ধের দার্শনিক মার্কিন মনোবিদ্যা সমিতির সভাপতি ধর্মের মনোবিজ্ঞানী ১৯শ শতাব্দীর মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন মনোবিজ্ঞানী ১৯শ শতাব্দীর মার্কিন লেখক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন লেখক ১৯শ শতাব্দীর মার্কিন দার্শনিক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন দার্শনিক সামাজিক দর্শন অস্তিত্ববাদী হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিজ্ঞানের দার্শনিক আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড লেটার্সের সদস্য
https://en.wikipedia.org/wiki/William_James
William James
William James (January 11, 1842 – August 26, 1910) was an American philosopher and psychologist, and the first educator to offer a psychology course in the United States. James is considered to be a leading thinker of the late 19th century, one of the most influential philosophers of the United States, and the "Father of American psychology." Along with Charles Sanders Peirce, James established the philosophical school known as pragmatism, and is also cited as one of the founders of functional psychology. A Review of General Psychology analysis, published in 2002, ranked James as the 14th most eminent psychologist of the 20th century. A survey published in American Psychologist in 1991 ranked James's reputation in second place, after Wilhelm Wundt, who is widely regarded as the founder of experimental psychology. James also developed the philosophical perspective known as radical empiricism. James's work has influenced philosophers and academics such as Émile Durkheim, W. E. B. Du Bois, Edmund Husserl, Bertrand Russell, Ludwig Wittgenstein, Hilary Putnam, Richard Rorty, and Marilynne Robinson. Born into a wealthy family, James was the son of the Swedenborgian theologian Henry James Sr. and the brother of both the prominent novelist Henry James and the diarist Alice James. James trained as a physician and taught anatomy at Harvard, but never practiced medicine. Instead, he pursued his interests in psychology and then philosophy. He wrote widely on many topics, including epistemology, education, metaphysics, psychology, religion, and mysticism. Among his most influential books are The Principles of Psychology, a groundbreaking text in the field of psychology; Essays in Radical Empiricism, an important text in philosophy; and The Varieties of Religious Experience, an investigation of different forms of religious experience, including theories on mind-cure.
1451
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%AE%20%E0%A6%9A%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A6%BF
নোম চম্‌স্কি
নোম চম্‌স্কি (পূর্ণনাম আভ্রাম নোম চম্‌স্কি; ); জন্ম ৭ই ডিসেম্বর, ১৯২৮) একজন মার্কিন তাত্ত্বিক ভাষাবিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, দার্শনিক ও সমাজ সমালোচক। তিনি বর্তমানে ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি নামক মার্কিন প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আজীবন অধ্যাপক (Emeritus professor) এবং একই সাথে ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা নামক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক হিসেবে কাজ করছেন। চম্‌স্কি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়া শহরে এক মধ্যবিত্ত আশকেনাজি ইহুদী অভিবাসী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করেছেন। সেখান থেকে তিনি পরবর্তীতে ১৯৫৫ সালে ভাষাবিজ্ঞানে ডক্টরেট সনদ লাভ করেন। তিনি সেখানে মার্কিন ভাষাবিজ্ঞানী জেলিগ হ্যারিসের অধীনে কাজ করেন। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পড়াশোনা করার সময় চম্‌স্কি ১৯৫১ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী গবেষক(Junior research fellow) হিসেবে কাজ করেন। ১৯৫৫ সালে তিনি ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি নামক প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরাসি ও জার্মান ভাষার প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭৬ সালে তিনি সেখানকার ভাষাবিজ্ঞানের ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক পদ লাভ করেন। বিগত অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ভাষাবিজ্ঞান শাস্ত্রে চম্‌স্কির কাজ গভীর প্রভাব বিস্তার করে আসছে। তিনি ১৯৫৭ সালে তার সিন্ট্যাকটিক স্ট্রাকচার্স গ্রন্থে "রূপান্তরমূলক উৎপাদনশীল ব্যাকরণ" নামক তত্ত্বটির অবতারণা করেন, যা অনেকের মতে আধুনিক ভাষাবিজ্ঞানে এক "বিপ্লবের" সূচনা করে। চম্‌স্কি ভাষাবিজ্ঞানকে মানবমন-সংক্রান্ত বিষয় গবেষণার কেন্দ্রে স্থাপন করেন। চম্‌স্কির পূর্বে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে ভাষাবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ভাষার বহিঃস্থ কাঠামোর মিল-অমিল নিয়ে বেশি গবেষণা করতেন। তিনি ভাষা ও মানবমনের গবেষণাতে এই অভিজ্ঞতাধর্মী ধারার সমালোচনা করেন এবং যুক্তিবাদী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সমর্থন প্রদান করেন। তার মতে, প্রতিটি মানব শিশু জন্মের সময়েই যেকোন ভাষা আয়ত্বকরণের মূল সৃজনশীল বৈশিষ্টগুলি নিয়ে জন্মগ্রহণ করে। এই সা্র্বজনীন বৈশিষ্টগুলি মানুষের অবচেতন মনে অবস্থান করে।ভাষাবিজ্ঞানীদের কাজ হল, সংজ্ঞা ও যৌক্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই বৈশিষ্টগুলির আসল রূপ উদ্ঘাটন করা। কেবল ভাষাবিজ্ঞান নয়, চম্‌স্কি সংজ্ঞানাত্মক বিজ্ঞান এবং মন ও ভাষার দর্শন শাস্ত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তার এই তাত্ত্বিক অবদানগুলি বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে "সংজ্ঞানাত্মক বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের" সূচনা করে এবং এর ক্রমবিকাশে শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। চম্‌স্কি রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী হিসেবে মার্কিন অভ্যন্তরীণ রাজনীতি, বৈদেশিক নীতি ও বুদ্ধিজীবী সংস্কৃতির উপর তথাকথিত মার্কিন "অর্থনৈতিক অভিজাতদের" ক্ষতিকর প্রভাব বিশ্লেষণ করেন; যার সুবাদে তিনি বিশ্বব্যাপী অসংখ্য ভক্ত ও অনুরাগী অর্জন করেন। তিনি কিশোর বয়সেই স্থানীয় সংবাদপত্রে রাজনীতির উপর লিখতেন। কিন্তু রাজনীতি নিয়ে বেশি লেখালেখি শুরু করেন ১৯৬০-এর দশক থেকে। সেসময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি ছিল তার সমালোচনার বিষয়। এরপর মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ব্যাপারে সাধারণ মার্কিন জনগণের ঐকমত তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকার তীক্ষ্ণ সমালোচনা করে অনেকগুলি বই লিখেন। চম্‌স্কি মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির ধ্বংসাত্মক ফলাফলগুলি নিয়ে নিয়মিত খোলাখুলি সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, "মার্কিন বুদ্ধিজীবীদের দায়িত্ব হল, মার্কিন সরকারের অনৈতিক নীতিগুলির যৌক্তিক সমালোচনা করা এবং এই নীতিগুলিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে ব্যবহারযোগ্য রাজনৈতিক কৌশল অনুসন্ধান করা। রাজনৈতিকভাবে চম্‌স্কি ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যভিত্তিক সমাজতন্ত্র ও নৈরাজ্যমূলক শ্রমিকসংঘবাদের অনুসারী। শৈশব: ১৯২৮–১৯৪৫ আব্রাম নোম চমস্কি পেনসিলভেনিয়ার ফিলাডেলফিয়ার পূর্ব ওকলেনে ১৯২৮ সালের ৭ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার বাবা উইলিয়াম চম্‌স্কি ছিলেন এক হিব্রু পণ্ডিতের সন্তান। তিনি ইউক্রেনের এক শহর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। অন্যদিকে তার মা এলজি চম্‌স্কি (পূর্বনাম সিমনফস্কি)ইউরোপের বেলারুস থেকে মা-বাবার সাথে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। তার মা যুক্তরাষ্ট্রেই বেড়ে ওঠেন এবং তিনি সাধারণ নিউইয়র্কের স্থানীয় ভাষায় কথা বলতেন। তাঁর বাবা, জেয়েভ "উইলিয়াম" চমস্কি এবং এলসি সাইমনোফস্কি ছিলেন ইহুদি অভিবাসী। উইলিয়াম ১৯১৩ সালে রাশিয়ান সাম্রাজ্য থেকে পালিয়ে বাল্টিমোর সোয়েটশপ এবং হিব্রু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাজ করেছিলেন। ফিলাডেলফিয়ায় চলে আসার পরে, উইলিয়াম মিকভেহ ইস্রায়েল ধর্মীয় বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন এবং গ্র্যাটজ কলেজে যোগদান করেন। নোম ছিলেন উইলিয়ামের প্রথম সন্তান। চমস্কির ছোট ভাই ডেভিড এলি চমস্কি পাঁচ বছর পরে ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। দুই ভাই কাছাকাছি থাকতো, যদিও ডেভিড খুব চঞ্চল ছিল, যদিও নোম খুব কম চঞ্চল ছিলনা। চমস্কি এবং তার ভাই ইহুদীদের মধ্যে বড় হয়েছিল, ছোটবেলায় তাদের হিব্রু ভাষা শেখানো হয় এবং নিয়মিত জায়নিজমের রাজনৈতিক তত্ত্ব শিক্ষা দেওয়া হয়। তাদের পরিবার 'আহাদ হাম' এর বাম জায়নিস্ট রচনাবলী দ্বারা বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। চমস্কি শৈশবে জাতিগত বিদ্বেষের শিকার হন ফিলাডেলফিয়ার আইরিশ এবং জার্মান সম্প্রদায় থেকে। চমস্কি ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ডিউইয়েট ওকলেন কান্ট্রি ডে স্কুল এবং ফিলাডেলফিয়ার সেন্ট্রাল হাই স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। যেখানে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। তিনি বিভিন্ন ক্লাব এবং সোসাইটিতে যোগদান করতেন। তবে বিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রিত শিক্ষা ও পুরোহিত ধাচের শিক্ষার জন্য সমস্যায় পড়েছিলেন। তিনি গ্রেটজ কলেজের হিব্রু হাই স্কুলেও পড়াশোনা করেছিলেন;যেখানে তার বাবা পড়াশোনা করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়: ১৯৪৫–১৯৫৫ ১৯৪৫ সালে ১৬ বছর বয়সে, চমস্কি পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। সেখানে তিনি দর্শন, যুক্তিবিদ্যা এবং ভাষা বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন।সেই সময় তিনি আরবি শিখতে চেয়েছিলেন। এর আগে তিনি বাড়িতে হিব্রু ভাষা শিখেছিলেন। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত চমস্কি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসাইটি অফ ফেলো-এর সদস্য ছিলেন, যেখানে তিনি তাঁর পিএইচডি এর গবেষণার কাজ করছিলেন। চমস্কি তখন হার্ভার্ডের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন কারণ সেখানে দার্শনিক উইলার্ড ভ্যান অরম্যান কুইন ছিলেন। কুইন এবং আরও একজন দার্শনিক, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জে এল। অস্টিন, চমস্কিকে দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। ১৯৫২ সালে চমস্কি তাঁর প্রথম একাডেমিক নিবন্ধ 'সিস্টেমস অফ সিনট্যাকটিক' অ্যানালাইসিস প্রকাশ করেন; যা ভাষাতত্ত্বের জার্নালে নয়, 'জার্নাল অফ সিম্বলিক লজিক'-এ প্রকাশিত হয়েছিল। পেনসিলভেনিয়ায় ছাত্র হিসাবে নিবন্ধিত হন নি, তবে ১৯৫৫ সালে তিনি রূপান্তর ব্যাকরণ সম্পর্কে তার ধারণাগুলি স্থাপনের জন্য একটি থিসিস জমা দিয়েছিলেন; এটির জন্য তাঁকে একজন ফিল্টারস অফ ডিগ্রি ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছিল। হার্ভার্ডের অধ্যাপক জর্জ আর্মিটেজ মিলার চমস্কির থিসিস দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন এবং গাণিতিক ভাষাতত্ত্বের বেশ কয়েকটি প্রযুক্তিগত গবেষণাপত্রে তাঁর সাথে সহযোগিতা করেছিলেন। ১৯৪৪ সালে চমস্কি ক্যারল ডরিস স্ক্যাটজের সাথে প্রেমের সম্পর্ক শুরু করেছিলেন, যাকে তিনি শৈশবকাল থেকেই চিনতেন। তারা ১৯৪৯ সালে বিয়ে করেছিলেন। হার্ভার্ডে চমস্কির ফেলো হওয়ার পরে, এই দম্পতি বোস্টনের অলস্টন অঞ্চলে চলে গিয়েছিলেন। এমআইটিতে তিনি ১৯৫৫ সালে একজন সহকারী অধ্যাপকের পদ লাভ করেন। এমআইটি-তে চমস্কি তার অর্ধেক সময় ব্যয় করেছিলেন যান্ত্রিক অনুবাদের কাজে। ১৯৫৭থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। চমস্কিদের একই বছর তাদের প্রথম মেয়ে সন্তান হয়েছিল,মেয়ের নাম রাখেন আভিভা। ১৯৫৮ থেকে ১৯৫৯ অবধি চমস্কি নিউ জার্সির প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে একটি জাতীয় বিজ্ঞান ফাউন্ডেশনের সহযোগী ছিলেন। গ্রন্থতালিকা ভাষাবিজ্ঞান চম্‌স্কির সম্পূর্ণ গ্রন্থতালিকা দেখুন তাঁর এমআইটি-র পাতায়। চম্‌স্কি (১৯৫১)। Morphophonemics of Modern Hebrew। স্নাতকোত্তর সন্দর্ভ, ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া। চম্‌স্কি (১৯৫৫)। Logical Structure of Linguistic Theory। এমআইটি মানববিদ্যা লাইব্রেরি। মাইক্রোফিল্ম। চম্‌স্কি (১৯৫৫)। Transformational Analysis. পিএইচডি অধিসন্দর্ভ , ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়া। চম্‌স্কি, নোম, মরিস হালে ও ফ্রেড লুকফ (১৯৫৬)। "On accent and juncture in English"। For Roman Jakobson-এ। দ্য হেগ: মুতঁ। চম্‌স্কি (১৯৫৭)। Syntactic Structures. The Hague: Mouton. Reprint. Berlin and New York (1985). চম্‌স্কি (১৯৬৪)। Current Issues in Linguistic Theory. চম্‌স্কি (১৯৬৫)। Aspects of the Theory of Syntax. Cambridge: The MIT Press. চম্‌স্কি (১৯৬৫)। Cartesian Linguistics. New York: Harper and Row. Reprint. Cartesian Linguistics. A Chapter in the History of Rationalist Thought. Lanham, Maryland: University Press of America, 1986. চম্‌স্কি (১৯৬৬)। Topics in the Theory of Generative Grammar. চম্‌স্কি, নোম, এবং মরিস হালে (১৯৬৮). The Sound Pattern of English. New York: Harper & Row. চম্‌স্কি (১৯৬৮)। Language and Mind. চম্‌স্কি (১৯৭২)। Studies on Semantics in Generative Grammar. চম্‌স্কি (১৯৭৫)। The Logical Structure of Linguistic Theory. চম্‌স্কি (১৯৭৫)। Reflections on Language. চম্‌স্কি (১৯৭৭)। Essays on Form and Interpretation. চম্‌স্কি (১৯৭৯)। Morphophonemics of Modern Hebrew. চম্‌স্কি (১৯৮০)। Rules and Representations. চম্‌স্কি (১৯৮১)। Lectures on Government and Binding: The Pisa Lectures. Holland: Foris Publications. Reprint. 7th Edition. Berlin and New York: Mouton de Gruyter, 1993. চম্‌স্কি (১৯৮২)। Some Concepts and Consequences of the Theory of Government and Binding. চম্‌স্কি (১৯৮২)। Language and the Study of Mind. চম্‌স্কি (১৯৮২)। Noam Chomsky on The Generative Enterprise, A discussion with Riny Hyybregts and Henk van Riemsdijk. চম্‌স্কি (১৯৮৪)। Modular Approaches to the Study of the Mind. চম্‌স্কি (১৯৮৬)। Knowledge of Language: Its Nature, Origin, and Use. চম্‌স্কি (১৯৮৬)। Barriers. Linguistic Inquiry Monograph Thirteen. Cambridge, MA and London: The MIT Press. চম্‌স্কি (১৯৯৩)। Language and Thought. চম্‌স্কি (১৯৯৫)। The Minimalist Program. Cambridge, MA: The MIT Press. চম্‌স্কি (১৯৯৮)। On Language. চম্‌স্কি (২০০০)। New Horizons in the Study of Language and Mind. চম্‌স্কি (২০০০)। The Architecture of Language (Mukherji, et al, eds.). চম্‌স্কি (২০০১)। On Nature and Language (Adriana Belletti and Luigi Rizzi, ed.). কম্পিউটার বিজ্ঞান Chomsky (1956)। Three models for the description of language. I.R.E. Transactions on Information Theory, vol. IT-2, no. 3: 113-24. রাজনীতি (1969)। American Power and the New Mandarins (1970)। "Notes on Anarchism," New York Review of Books (1970)। At war with Asia (1970)। Two essays on Cambodia (1971)। Chomsky: selected readings (1971)। Problems of knowledge and freedom (1973)। For reasons of state (1974)। Peace in the Middle East? Reflections on justice and nationhood (1976)। Intellectuals and the state (1978)। Human Rights and American Foreign Policy (1979)। With Edward Herman, After the cataclysm: postwar Indochina and the reconstruction of imperial ideology (1979)। Language and responsibility (1979)। With Edward Herman, The Washington connection and Third World fascism (1981)। Radical priorities (1982)। Superpowers in collision: the cold war now (1982)। Towards a new cold war: essays on the current crisis and how we got there (1983)। The fateful triangle: the United States, Israel, and the Palestinians (1985)। Turning the tide : U.S. intervention in Central America and the struggle for peace (1986)। Pirates & emperors: international terrorism in the real world (1986)। The race to destruction: its rational basis (1987)। The Chomsky reader (1987)। On Power and Ideology (1987)। Turning the tide: the U.S. and Latin America (1988)। The Culture of Terrorism (1988)। Language and Politics (1988)। With Edward Herman, Manufacturing consent: the political economy of the mass media (1989)। Necessary Illusions (1991)। Terrorizing the Neighborhood (1992)। What Uncle Sam really wants (1992)। Chronicles of dissent (1992)। Deterring democracy (1993)। Letters from Lexington: reflections on propaganda (1993)। The prosperous few and the restless many (1993)। Rethinking Camelot: JFK, the Vietnam War, and U.S. political culture (1993)। World order and its rules: variations on some themes (1993)। Year 501: the conquest continues (1994)। Keeping the rabble in line (1994)। Secrets, lies, and democracy (1994)। World orders, old and new (1995)। Secrets, lies, and democracy (1996)। Powers and prospects: reflections on human nature and the social order (1996)। Class warfare (1997)। Media control: the spectacular achievements of propaganda (1997)। One chapter, The Cold War and the University (1998)। The Culture of Terrorism (1999)। The new military humanism: lesssons from Kosovo (1999)। Profits over people (1999)। The fateful triangle (2000)। Rogue States (2001)। Propaganda and the public mind (2001)। 9-11 (2002)। Understanding Power: the indispensable Noam Chomsky (2002)। Media control (2003)। Hegemony or Survival: America's Quest for Global Dominance (2005)। Chomsky on anarchism (2006)। Failed States : The Abuse of Power and the Assault on Democracy চলচ্চিত্র Manufacturing Consent: Noam Chomsky and the Media (1992) Distorted Morality — America's War On Terror?, Director: John Junkermann, Japan 2003 Noam Chomsky: Rebel Without a Pause (TV), Director: Will Pascoe, 2003 The Corporation Director: Jennifer Abbott and Mark Achbar (2003) সাক্ষাৎকার By David Barsamian Keeping the Rabble in Line (1994) Class Warfare (1996) The Common Good (1998) Propaganda and the Public Mind (2001) Imperial Ambitions - Conversations With Noam Chomsky On The Post-9/11 World (2005) By Others See complete list of interviews here: chomsky.info আরও দেখুন Politics of Noam Chomsky Criticism of Noam Chomsky Language acquisition Chomskybot Chomsky hierarchy Important publications in computability "Colorless green ideas sleep furiously." Intellectual worker Nim Chimpsky Chomsky torrents Propaganda model The Professors: The 101 Most Dangerous Academics in America by David Horowitz তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ চম্‌স্কির নিজস্ব ওয়েবসাইট চম্‌স্কির এমআইটি-র পাতা জি নেটের আলোচনাচক্রে দেয়া সাম্প্রতিক উত্তরগুলো চম্‌স্কির জি.নেট ব্লগ (জি নেটের আলোচনাচক্রে দেয়া উত্তর থেকে বাছাইকৃত) চম্‌স্কির জি নেট আর্কাইভ - রাজনৈতিক রচনাবলীর সংগ্রহ ১৯২৮-এ জন্ম জীবিত ব্যক্তি ২০শ শতাব্দীর দার্শনিক মার্কিন নৈরাজ্যবাদী মার্কিন ভাষাবিজ্ঞানী মার্কিন সমাজতন্ত্রী ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিরোধী যুদ্ধবিরোধী কর্মী নাস্তিক দার্শনিক বোধিবিজ্ঞানী সৃষ্টিশীল ভাষাবিজ্ঞান ইহুদি-মার্কিন লেখক ইহুদি নৈরাজ্যবাদী ইহুদি বিজ্ঞানী ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজির অধ্যাপক ফিলাডেলফিয়া থেকে আগত ব্যক্তি মনের দার্শনিক যুক্তিবাদী বাক্যতাত্ত্বিক ইউনিভার্সিটি অফ পেনসিলভেনিয়ার প্রাক্তন শিক্ষার্থী পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক সামাজিক সমালোচক বিজ্ঞানের দার্শনিক সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী ইউক্রেনীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি ২০শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক ইহুদি মার্কিন লেখক ইহুদি অ-কল্পকাহিনী লেখক মার্কিন বিসংবাদী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন দার্শনিক ২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক ২১শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক মার্কিন পুরুষ প্রাবন্ধিক বেলারুশীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বিশ্লেষক দার্শনিক কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুক্তচিন্তার লেখক হার্ভার্ড সভ্য বিশ্বের শিল্পকৌশল কর্মীদের সদস্য ইহুদি মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক ইহুদি দার্শনিক ইহুদি সমাজতান্ত্রিক মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য নয়া বাম সংস্কৃতির দার্শনিক অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক ভাষার দার্শনিক সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক প্রযুক্তির দার্শনিক সামাজিক দার্শনিক পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিশ্বায়ন বিষয়ক লেখক
https://en.wikipedia.org/wiki/Noam_Chomsky
Noam Chomsky
Avram Noam Chomsky ( nohm CHOM-skee; born December 7, 1928) is an American professor and public intellectual known for his work in linguistics, political activism, and social criticism. Sometimes called "the father of modern linguistics", Chomsky is also a major figure in analytic philosophy and one of the founders of the field of cognitive science. He is a laureate professor of linguistics at the University of Arizona and an institute professor emeritus at the Massachusetts Institute of Technology (MIT). Among the most cited living authors, Chomsky has written more than 150 books on topics such as linguistics, war, and politics. In addition to his work in linguistics, since the 1960s Chomsky has been an influential voice on the American left as a consistent critic of U.S. foreign policy, contemporary capitalism, and corporate influence on political institutions and the media. Born to Ashkenazi Jewish immigrants in Philadelphia, Chomsky developed an early interest in anarchism from alternative bookstores in New York City. He studied at the University of Pennsylvania. During his postgraduate work in the Harvard Society of Fellows, Chomsky developed the theory of transformational grammar for which he earned his doctorate in 1955. That year he began teaching at MIT, and in 1957 emerged as a significant figure in linguistics with his landmark work Syntactic Structures, which played a major role in remodeling the study of language. From 1958 to 1959 Chomsky was a National Science Foundation fellow at the Institute for Advanced Study. He created or co-created the universal grammar theory, the generative grammar theory, the Chomsky hierarchy, and the minimalist program. Chomsky also played a pivotal role in the decline of linguistic behaviorism, and was particularly critical of the work of B. F. Skinner. An outspoken opponent of U.S. involvement in the Vietnam War, which he saw as an act of American imperialism, in 1967 Chomsky rose to national attention for his anti-war essay "The Responsibility of Intellectuals". Becoming associated with the New Left, he was arrested multiple times for his activism and placed on President Richard Nixon's list of political opponents. While expanding his work in linguistics over subsequent decades, he also became involved in the linguistics wars. In collaboration with Edward S. Herman, Chomsky later articulated the propaganda model of media criticism in Manufacturing Consent, and worked to expose the Indonesian occupation of East Timor. His defense of unconditional freedom of speech, including that of Holocaust denial, generated significant controversy in the Faurisson affair of the 1980s. Chomsky's commentary on the Cambodian genocide and the Bosnian genocide also generated controversy. Since retiring from active teaching at MIT, he has continued his vocal political activism, including opposing the 2003 invasion of Iraq and supporting the Occupy movement. An anti-Zionist, Chomsky considers Israel's treatment of Palestinians to be worse than South African–style apartheid, and criticizes U.S. support for Israel. Chomsky is widely recognized as having helped to spark the cognitive revolution in the human sciences, contributing to the development of a new cognitivistic framework for the study of language and the mind. Chomsky remains a leading critic of U.S. foreign policy, contemporary capitalism, U.S. involvement and Israel's role in the Israeli–Palestinian conflict, and mass media. Chomsky and his ideas are highly influential in the anti-capitalist and anti-imperialist movements. Since 2017, he has been Agnese Helms Haury Chair in the Agnese Nelms Haury Program in Environment and Social Justice at the University of Arizona.
1452
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%81%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8
স্নায়ুবিজ্ঞান
স্নায়ুবিজ্ঞান () জ্ঞানের একটি ক্ষেত্র যেখানে স্নায়ুতন্ত্রের বৈজ্ঞানিক গবেষণা করা হয়। এই গবেষণার বিষয়বস্তুর মধ্যে আছে স্নায়ুতন্ত্রের কাঠামো, কাজ, বিবর্তনের ইতিহাস, গঠন, জীনতত্ত্ব, প্রাণরসায়ন, শারীরবিদ্যা, ঔষধবিদ্যা, তথ্যবিজ্ঞান, গণনামূলক স্নায়ুবিজ্ঞান, এবং রোগ নির্ণয়। ঐতিহাসিকভাবে এটিকে জীববিজ্ঞানের একটি শাখা হিসেবে গণ্য করা হয়। কিন্তু বর্তমানে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন শাস্ত্র যেমন বোধগত মনোবিজ্ঞান, স্নায়ুমনোবিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, পরিসংখ্যান, পদার্থবিজ্ঞান এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের সাথে এর সম্মিলন ঘটেছে। ১৯৭৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামহার্স্ট কলেজ প্রথম স্নায়ুবিজ্ঞানে স্নাতক পর্যায়ে ডিগ্রী প্রদান শুরু করে। পরবর্তী দিকনির্দেশনা আরও দেখুন স্নায়ুবিজ্ঞানের আলোচ্য বিষয়বস্তুর তালিকা স্নায়ুবিজ্ঞানী তালিকা স্নায়ুবিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনাসমূহ স্নায়ুবিজ্ঞানের ডেটাবেস সমুহ স্নায়ুবিজ্ঞানের গবেষণা সাময়িকীসমূহ স্নায়ুবিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ স্নায়ুচিকিৎসাবিজ্ঞান স্নায়ুতন্ত্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Neuroscience
Neuroscience
Neuroscience is the scientific study of the nervous system (the brain, spinal cord, and peripheral nervous system), its functions, and its disorders. It is a multidisciplinary science that combines physiology, anatomy, molecular biology, developmental biology, cytology, psychology, physics, computer science, chemistry, medicine, statistics, and mathematical modeling to understand the fundamental and emergent properties of neurons, glia and neural circuits. The understanding of the biological basis of learning, memory, behavior, perception, and consciousness has been described by Eric Kandel as the "epic challenge" of the biological sciences. The scope of neuroscience has broadened over time to include different approaches used to study the nervous system at different scales. The techniques used by neuroscientists have expanded enormously, from molecular and cellular studies of individual neurons to imaging of sensory, motor and cognitive tasks in the brain.
1454
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%81%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%89%20%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%89
আঁতনিউ দামাজিউ
আঁতনিউ দামাজিউ () (জন্ম ১৯৪৪, লিসবন, পর্তুগাল) একজন পর্তুগিজ আচরণবাদী স্নায়ুচিকিৎসক ও স্নায়ুবিজ্ঞানী। তিনি ১৯৭৬ সাল থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত আছেন। ১৯৭৬ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের হসপিটাল ও ক্লিনিকসমূহের স্নায়ুচিকিৎসা বিভাগের প্রধান ছিলেন। বর্তমানে তিনি সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মস্তিষ্ক ও সৃষ্টিশীলতা ইন্সটিটিউটের প্রধান। এর আগে তিনি ২০ বছর ধরে আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নায়ুবিদ্যার চেয়ারের দায়িত্বে ছিলেন। দামাজিউ অনুভূতি ও আবেগের সাথে মস্তিষ্কের সম্পর্কের উপর অনেকগুলি জনপ্রিয় বই লিখেছেন। ১৯৯৪ সালে রচিত Descartes' Error: Emotion, Reason and the Human Brain বইটি লস অ্যাঞ্জেলেস গ্রন্থ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়; এটি ৩০টিরও বেশি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তার দ্বিতীয় বইয়ের নাম The Feeling of What Happens: Body and Emotion in the Making of Consciousness; নিউ ইয়র্ক টাইমস বুক রিভিউ এটিকে ২০০১ সালের সেরা দশটি বইয়ের একটির মর্যাদা দেয়। এই বইটিরও ৩০টির মত আন্তর্জাতিক সংস্করণ বেরিয়েছে। ২০০৩ সালের দামাজিউর সর্বশেষ বইটি ছাপা হয়, যার শিরোনাম Looking for Spinoza: Joy, Sorrow, and the Feeling Brain; এই বইতে তিনি দর্শন এবং স্নায়ুজীববিজ্ঞানের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ করেছেন এবং বলেছেন এ থেকে মানুষের নৈতিকতার ভিত্তি সম্পর্কে নির্দেশনা পাওয়া সম্ভব। তথ্যসূত্র ১৯৪৪-এ জন্ম জীবিত ব্যক্তি পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার শিক্ষক আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য পর্তুগিজ বিজ্ঞানী লিসবনের ব্যক্তি পর্তুগিজ স্নায়ুবিজ্ঞানী বিজ্ঞান লেখক বিজ্ঞানের দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Antonio_Damasio
Antonio Damasio
Antonio Damasio (Portuguese: António Damásio) is a Portuguese neuroscientist. He is currently the David Dornsife Chair in Neuroscience, as well as Professor of Psychology, Philosophy, and Neurology, at the University of Southern California, and, additionally, an adjunct professor at the Salk Institute. He was previously the chair of neurology at the University of Iowa for 20 years. Damasio heads the Brain and Creativity Institute, and has authored several books: his work, Self Comes to Mind: Constructing the Conscious Brain (2010), explores the relationship between the brain and consciousness. Damasio's research in neuroscience has shown that emotions play a central role in social cognition and decision-making.
1455
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%AB%20%E0%A6%95%E0%A6%96
ক্রিস্টফ কখ
ক্রিস্টফ কখ (; জন্ম: ১৩ই নভেম্বর, ১৯৫৬, ক্যানসাস সিটি, মিসৌরি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) একজন মার্কিন স্নায়ুবিজ্ঞানী। তিনি উত্তর আফ্রিকা ও ইউরোপে শিক্ষালাভ করেন৷ অ-রৈখিক তথ্য প্রক্রিয়াকরণ (non-linear information processing) বিষয়ে গবেষণার জন্য জার্মানির মাক্স প্লাংক ইন্সটিটিউট থেকে ১৯৮২ সালে তিনি পিএইচ. ডি. ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনলজি বা ক্যালটেকের সাথে ১৯৮৬ সাল থেকে জড়িত এবং বর্তমানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির বোধ ও আচরণিক জীববিজ্ঞান (cognitive and behavioral biology) বিভাগে লোয়া অ্যান্ড ভিক্টর ট্র্যোন্ডল অধ্যাপক। ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি ক্যালটেকের "Computation and Neural Systems" (গণন ও স্নায়ুতন্ত্রসমূহ) প্রকল্পের নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কখ নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিক থেকে সক্রিয়ভাবে প্রচার করতে থাকেন যে চেতনাকে (consciousness) একটি বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষণীয় সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি যুক্তি দেন যে, আধুনিক স্নায়ুবিজ্ঞানে ব্যবহৃত নানা সরঞ্জামের সাহায্যে চেতনা নিয়ে গবেষণা করা সম্ভব। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী জীববিজ্ঞানী প্রয়াত ফ্রান্সিস ক্রিক তার গবেষণার প্রধান সহযোগী ছিলেন। কখ Association for the Scientific Study of Consciousness-এর ২০০৫ সালের সভার আঞ্চলিক আয়োজক ছিলেন। কখের প্রকাশিত গ্রন্থাবলি Biophysics of Computation: Information Processing in Single Neurons, Oxford U. Press, (1999), The Quest for Consciousness: a Neurobiological Approach, Roberts and Co., (2004), তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ কখের ওয়েব হোমপেজ কখের পরীক্ষাগারের হোমপেজ কখের লেখা The Quest for Consciousness বইটির নিজস্ব ওয়েবসাইট কখের শ্রেণীকক্ষে পাঠদানের ভিডিও, ২০০৪ সালে ক্যালটেকে তার পড়ানো একটি স্নাতক কোর্স থেকে৷ Association for the Scientific Study of Consciousness ফ্রান্সিস ক্রিক ও কখের ২০০১ সালে দেয়া একটি সাক্ষাৎকার মার্কিন স্নায়ুবিজ্ঞানী ১৯৫৬-এ জন্ম জার্মান বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষক জীবিত ব্যক্তি ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিদ
https://en.wikipedia.org/wiki/Christof_Koch
Christof Koch
Christof Koch ( KOKH; born November 13, 1956) is a German-American neurophysiologist and computational neuroscientist best known for his work on the neural basis of consciousness. He was the president and chief scientist of the Allen Institute for Brain Science in Seattle. He remains at the Institute as a Meritorious Investigator. He is also the Chief Scientist of the Tiny Blue Dot Foundation in Santa Monica, that funds research meant to alleviate suffering, anxiety and other forms of distress in all people. From 1986 until 2013, he was a professor at the California Institute of Technology.
1456
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%A1%20%E0%A6%8F%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8
জেরাল্ড এডেলম্যান
জেরাল্ড মরিস এডেলম্যান (জন্ম: জুলাই ১, ১৯২৯, নিউ ইয়র্ক শহর) একজন মার্কিন জীববিজ্ঞানী৷ তিনি দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে গবেষণার জন্য ১৯৭২ সালে চিকিৎসা/শারীরবিদ্যা বিষয়ে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন৷ এন্টিবডি অণুসমূহের গঠন আবিষ্কারের জন্য তাকে এ পুরস্কার দেয়া হয়৷ উত্সপঞ্জি The Nobel Prize in Physiology or Medicine 1972 Structural differences among antibodies of different specificities by G. M. Edelman, B. Benaceraf, Z. Ovary and M. D. Poulik in Proc Natl Acad Sci U S A (1961) volume 47, pages 1751-1758. প্রকাশিত গ্রন্থাবলি Neural Darwinism: The Theory of Neuronal Group Selection (Basic Books, New York 1987). Topobiology: An Introduction to Molecular Embryology (Basic Books, 1988, Reissue edition 1993) The Remembered Present: A Biological Theory of Consciousness (Basic Books, New York 1990). Bright Air, Brilliant Fire: On the Matter of the Mind (Basic Books, 1992, Reprint edition 1993). The Brain, Edelman and Jean-Pierre Changeux, editors, (Transaction Publishers, 2000). A Universe of Consciousness: How Matter Becomes Imagination, Edelman and Giulio Tononi, coauthors, (Basic Books, 2000, Reprint edition 2001). Wider than the Sky: The Phenomenal Gift of Consciousness (Yale Univ. Press 2004) মার্কিন স্নায়ুবিজ্ঞানী ১৯২৯-এ জন্ম পেনসিলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ২০১৪-এ মৃত্যু মার্কিন নোবেল বিজয়ী মার্কিন জীববিজ্ঞানী মার্কিন ভৌত রসায়নবিদ ইহুদি রসায়নবিদ ইহুদি মার্কিন বিজ্ঞানী মার্কিন বিজ্ঞান লেখক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন লেখক ২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য ফরাসি বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য নিউ ইয়র্ক (অঙ্গরাজ্য)-এর বিজ্ঞানী মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য
https://en.wikipedia.org/wiki/Gerald_Edelman
Gerald Edelman
Gerald Maurice Edelman (; July 1, 1929 – May 17, 2014) was an American biologist who shared the 1972 Nobel Prize in Physiology or Medicine for work with Rodney Robert Porter on the immune system. Edelman's Nobel Prize-winning research concerned discovery of the structure of antibody molecules. In interviews, he has said that the way the components of the immune system evolve over the life of the individual is analogous to the way the components of the brain evolve in a lifetime. There is a continuity in this way between his work on the immune system, for which he won the Nobel Prize, and his later work in neuroscience and in philosophy of mind.
1457
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A6%BF.%20%E0%A6%8F%E0%A6%B8.%20%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%9A%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A8
ভি. এস. রামচন্দ্রন
ভি এস রামচন্দ্রন সেন্টার ফর ব্রেইন অ্যান্ড কগনিশন-এর পরিচালক। এছাড়াও তিনি ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, সান ডিয়েগো বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোবিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক। রামচন্দ্রনের রচনাবলী :en:A Brief Tour of Human Consciousness : From Impostor Poodles to Purple Numbers :en:Phantoms in the Brain : Probing the Mysteries of the Human Mind, coauthor Sandra Blakeslee, 1998, The :en:Encyclopedia of Human Behaviour (editor-in-chief) :en:The Emerging Mind, 2003, বহিঃসংযোগ Vilayanur S. Ramachandran (official webpage) All in the Mind interview Interview with Australian Financial Review 10 June 2005 Reith Lectures 2003 The Emerging Mind by Ramachandran মার্কিন স্নায়ুবিজ্ঞানী ১৯৫১-এ জন্ম মার্কিন অজ্ঞেয়বাদী ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় চিকিৎসক ট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় অভিবাসী ভারতীয় স্নায়ুবিজ্ঞানী জীবিত ব্যক্তি বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে পদ্মভূষণ প্রাপক ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ডিয়েগোর শিক্ষক মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
https://en.wikipedia.org/wiki/V._S._Ramachandran
V. S. Ramachandran
Vilayanur Subramanian Ramachandran (born 10 August 1951) is an Indian-American neuroscientist. He is known for his wide-ranging experiments and theories in behavioral neurology, including the invention of the mirror box. Ramachandran is a distinguished professor in UCSD's Department of Psychology, where he is the director of the Center for Brain and Cognition. After earning a medical degree in India, Ramachandran studied experimental neuroscience at Cambridge, obtaining his PhD there in 1978. Most of his research has been in the fields of behavioral neurology and visual psychophysics. After early work on human vision, Ramachandran turned to work on wider aspects of neurology including phantom limbs and phantom pain. Ramachandran also performed the world's first "phantom limb amputation" surgeries by inventing the mirror therapy, which is now widely used for reducing phantom pains (and eliminating phantom sensations altogether in long term), and also for helping to restore motor control in stroke victims with weakened limbs. Ramachandran's popular books Phantoms in the Brain (1998), The Tell-Tale Brain (2010), and others describe neurological and clinical studies of people with synesthesia, Capgras syndrome, and a wide range of other unusual conditions. Ramachandran has also described his work in many public lectures, including lectures for the BBC, and two official TED talks. Both his scientific research and his popularization of science have been recognized with multiple awards.
1458
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%8F%E0%A6%A1%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A1%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95
এডমান্ড বার্ক
এডমান্ড বার্ক (জানুয়ারি ১২, ১৭২৯ - জুলাই ৯, ১৭৯৭) ছিলেন একজন ইঙ্গ-আইরিশ লেখক, রাজনৈতিক তত্ত্ববিদ, এবং দার্শনিক। অনেক বছর সময় ধরে তিনি ব্রিটিশ হাউজ অফ কমন্সে ব্রিটিশ হুইগ পার্টি সংসদ সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকাতে ব্রিটিশ উপনিবেশ ও রাজা তৃতীয় জর্জের মধ্যকার বিরোধে তিনি উপনিবেশগুলোকে সমর্থন দিয়েছিলেন। তিনি ফরাসি বিপ্লবের চরম বিরোধী ছিলেন। উনিশ শতকে বার্ক রক্ষণশীল এবং উদারপন্থি উভয়ের মাঝে প্রশংসিত হয়েছিলেন। বিশ শতক থেকে বার্ক সাধারণের কাছে 'রক্ষণশীলতার জনক' বলে অভিহিত হয়েছেন। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Edmund Burke Society at Columbia University Spanish foundation based on Burke's thoughts Edmund Burke Papers at Gettysburg College Burke's works at The Online Library of Liberty BBC – History – Edmund Burke "Edmund Burke for a Postmodern Age", William F. Byrne, Berfrois, 29 June 2011 আয়ারল্যান্ডীয় রাজনীতিবিদ আয়ারল্যান্ডীয় দার্শনিক ১৭২৯-এ জন্ম ১৭৯৭-এ মৃত্যু সাংস্কৃতিক সমালোচক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার ইতিহাসের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক ১৮শ শতাব্দীর দার্শনিক ট্রিনিটি কলেজ ডাবলিনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রক্ষণশীলতা নাস্তিকতার সমালোচক আইরিশ বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি ধর্মের দার্শনিক রাজনৈতিক দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Edmund_Burke
Edmund Burke
Edmund Burke (; 12 January [NS] 1729 – 9 July 1797) was an Anglo-Irish statesman and philosopher who spent most of his career in Great Britain. Born in Dublin, Burke served as a member of Parliament (MP) between 1766 and 1794 in the House of Commons of Great Britain with the Whig Party. Burke was a proponent of underpinning virtues with manners in society and of the importance of religious institutions for the moral stability and good of the state. These views were expressed in his A Vindication of Natural Society (1756). He criticised the actions of the British government towards the American colonies, including its taxation policies. Burke also supported the rights of the colonists to resist metropolitan authority, although he opposed the attempt to achieve independence. He is remembered for his support for Catholic emancipation, the impeachment of Warren Hastings from the East India Company, and his staunch opposition to the French Revolution. In his Reflections on the Revolution in France (1790), Burke asserted that the revolution was destroying the fabric of "good" society and traditional institutions of state and society, and he condemned the persecution of the Catholic Church that resulted from it. This led to his becoming the leading figure within the conservative faction of the Whig Party which he dubbed the Old Whigs as opposed to the pro-French Revolution New Whigs led by Charles James Fox. In the 19th century, Burke was praised by both conservatives and liberals. Subsequently, in the 20th century, he became widely regarded, especially in the United States, as the philosophical founder of conservatism, along with his more conservative counterpart, Joseph de Maistre.
1459
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%87
মুম্বই
মুম্বই (; , ) (পূর্বনাম বোম্বাই বা বম্বে অথবা বোম্বে) ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের রাজধানী। মুম্বই ভারতের সর্বাধিক জনবহুল শহর এবং বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল শহরগুলিরও অন্যতম। এই শহরের জনসংখ্যা প্রায় এক কোটি চল্লিশ লক্ষ। নবি মুম্বই ও থানে সহ মুম্বাই মহানগরীয় অঞ্চল বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল মহানগরীয় অঞ্চলগুলির অন্যতমও বটে। ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত মুম্বই একটি স্বাভাবিক সমুদ্রবন্দর। ২০০৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, এই শহর আলফা বিশ্ব নগরী হিসেবে ঘোষিত। যে সাতটি দ্বীপকে কেন্দ্র করে আধুনিক মুম্বই মহানগরী গড়ে উঠেছে, সুদূর অতীতে সেই সাতটি দ্বীপ ছিল মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের বসতি। ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে এই দ্বীপগুলি নানান দেশীয় রাজ্য ও সাম্রাজ্যের অধীনস্থ ছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে মুম্বাই একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য নগরী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই শহরের গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও শিক্ষাসংক্রান্ত প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদে বোম্বাই ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের এক উল্লেখযোগ্য ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছিল। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের পর বোম্বাই শহর তদনীন্তন বোম্বাই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৬০ সালে সংযুক্ত মহারাষ্ট্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন রাজ্য মহারাষ্ট্র গঠিত হলে বোম্বাই উক্ত রাজ্যের রাজধানীতে পরিণত হয়। ১৯৯৫ সালে শহরের নাম পরিবর্তিত করে মুম্বই রাখা হয়। মুম্বাই ভারতের বাণিজ্য ও বিনোদনের অন্যতম কেন্দ্র। দেশের ৫ শতাংশ জিডিপি এই শহর থেকেই উৎপাদিত হয়। এছাড়া ভারতীয় অর্থনীতির ২৫ শতাংশ শিল্প উৎপাদন, ৪০ শতাংশ সমুদ্রবাণিজ্য ও ৭০ শতাংশ পুঁজি লেনদেন মুম্বাইতেই সাধিত হয়। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ, ভারতের জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক সংস্থা এবং বিভিন্ন ভারতীয় কোম্পানি ও বহুজাতিক সংস্থার প্রধান কার্যালয় এই শহরেই অবস্থিত। বলিউড নামে পরিচিত ভারতের হিন্দি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পকেন্দ্রটিও এই শহরে অবস্থিত। মুম্বইয়ের ব্যবসাগত সুযোগসুবিধা এবং এখানকার জীবনযাত্রার উচ্চ মান সমগ্র দেশের মানুষকে আকৃষ্ট করে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এসে এই শহরে বসবাস শুরু করেন। ফলে মুম্বই বর্তমানে ভারতের নানা সম্প্রদায় ও ভারতীয় সংস্কৃতির মহামিলনভূমিতে পরিণত হয়েছে। ব্যুৎপত্তি মুম্বই শব্দটির প্রচলন হয় স্থানীয় মারাঠিদের উচ্চারণবিকৃতি থেকে। তারা মারাঠি ভাষায় বোম্বাই শব্দটি উচ্চারণ করতে পারতেন না। বোম্বাই কথাটির উদ্ভব হয় খ্রিষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে এই অঞ্চলে পর্তুগিজদের আগমনের পর। তারা এই অঞ্চলকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করতেন। এই নামগুলির মধ্য থেকে বোম্বাইম (Bombaim) কথাটি লেখ্য আকারে প্রচলন লাভ করে। পর্তুগিজ ভাষায় শব্দটি আজও প্রচলিত। সপ্তদশ শতাব্দীতে ব্রিটিশরা এই অঞ্চলের অধিকার অর্জন করে। মনে করা হয়, শহরের বোম্বাই নামটি পর্তুগিজ বোম্বাইম শব্দটির ইংরেজিকৃত রূপ। এই শহর মারাঠি ও গুজরাতিভাষীদের নিকট মুম্বাই বা মম্বাই এবং হিন্দি, পারসি ও উর্দুভাষীদের নিকট বম্বই নামে পরিচিত। কখনও কখনও এই শহরকে আরও পুরনো ককমুচী বা গলজুঙ্কজা নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। ১৯৯৫ সালের নভেম্বরে শিবসেনা মারাঠি উচ্চারণ অনুসারে শহরের নাম পরিবর্তন করে রাখে মুম্বই। হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল শিবসেনা এই নাম পরিবর্তন নিয়ে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করে মহারাষ্ট্রের বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। এরপর মুম্বইয়ের দেখাদেখি দেশের অনেক শহরেরই ইংরেজি নাম পরিবর্তন করে স্থানীয় উচ্চারণ অনুযায়ী নামকরণ করা হয়। যদিও শহরে বসবাসকারী অনেকেই এখনও এই শহরকে বোম্বাই নামে অভিহিত করে থাকেন। তাছাড়া ভারতের অন্যান্য অনেক অঞ্চলেও বোম্বাই নামটির চল রয়েছে। শহরের প্রথাগত ইংরেজি নাম বম্বে শব্দটি যে আসলে পর্তুগিজ শব্দ থেকে আগত তার একটি বহুপ্রচলিত ব্যাখ্যা রয়েছে। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, পর্তুগিজ ভাষায় কথাটির অর্থ ভালো উপসাগর। ভালো শব্দের পর্তুগিজ প্রতিশব্দ bom (পুংলিঙ্গ) ও ইংরেজি bay শব্দটির নিকটবর্তী পর্তুগিজ প্রতিশব্দ baía (স্ত্রীলিং, পুরনো বানানে bahia)। তবে সাধারণভাবে পর্তুগিজ ভাষায় ভালো উপসাগর কথাটির প্রতিশব্দ হিসেবে bom bahia কথাটি ব্যাকরণগতভাবে ভুল। সঠিক শব্দটি হল boa bahia। যদিও ষোড়শ শতাব্দীর পর্তুগিজ ভাষায় "ছোটো উপসাগর" অর্থে baim শব্দটি প্রচলন অসম্ভব ছিল না। পর্তুগিজ পণ্ডিত জোসে পেদ্রো মাকাদো তার Dicionário Onomástico Etimológico da Língua Portuguesa (Portuguese Dictionary of Onomastics and Etymology) গ্রন্থে "Bom Bahia" নামতত্ত্বটি খারিজ করে দিয়েছেন। তার মতে, পর্তুগিজ নথিপত্রে এই অঞ্চলে একটি উপসাগরের উল্লেখ ছিল। সেই উল্লেখ থেকে ইংরেজরা ধরে নেয় যে bahia বা "bay" শব্দটি পর্তুগিজ নামের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এইভাবেই পর্তুগিজ নাম থেকে ইংরেজি Bombay কথাটি প্রচলন হয়। ১৫০৭ সালে মিরাদ-ই-আহমেদি গ্রন্থে এই অঞ্চলটিকে মানবাই নামে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৫০৮ সালে গ্যাসপার কোরিয়া নামে এক পর্তুগিজ লেখক তার Lendas da Índia ("Legends of India") গ্রন্থে এই শহরকে Bombaim নামে উল্লেখ করেন। তিনিই প্রথম পর্তুগিজ লেখক যাঁর রচনায় এই শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়। ১৫১৬ সালে পর্তুগিজ আবিষ্কারক দুয়ার্তে বারবোসা একটু জটিল আকারে এই অঞ্চলের নাম Tana-Maiambu বা Benamajambu বলে উল্লেখ করেন। Tana পার্শ্ববর্তী থানে শহরের নাম। Maiambu নামটি সম্ভবত [[মুম্বা দেবী|মুম্বা নামে এক হিন্দু দেবীর নাম থেকে আগত; তার নামেই মারাঠিরা এই অঞ্চলের নামকরণ করেছিলেন। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে এই শহরের অন্যান্য যে নামগুলি নথিভুক্ত হয়েছিল সেগুলি হল: Mombayn (১৫২৫), Bombay (১৫৩৮), Bombain (১৫৫২), Bombaym (১৫৫২), Monbaym (১৫৫৪), Mombaim (১৫৬৩), Mombaym (১৬৪৪), Bambaye (১৬৬৬), Bombaiim (১৬৬৬), Bombeye (১৬৭৬), ও Boon Bay (১৬৯০). ইতিহাস বর্তমান মুম্বই অঞ্চলটি অতীতে সাতটি দ্বীপবিশিষ্ট একটি দ্বীপপুঞ্জ ছিল। এই সাতটি দ্বীপের নাম বোম্বাই দ্বীপ, পারেল, মাজাগাঁও, মাহিম, কোলাবা, বরলি ও ওল্ড ওম্যান’স আইল্যান্ড (অপরনামে লিটল কোলাবা)। ১৯৩৯ সালে পুরাতাত্ত্বিক টড উত্তর মুম্বইয়ের কান্ডিবলির উপকূলবর্তী অঞ্চলে খননকার্য চালিয়ে কিছু প্লেইস্টোসিন নিদর্শন আবিষ্কার করেন। তা থেকেই জানা যায় প্রস্তর যুগ থেকেই এই অঞ্চলে জনবসতির অস্তিত্ব ছিল। তবে এই অঞ্চলে প্রথম কবে জনবসতি স্থাপিত হয়েছিল তা জানা যায় না। সম্ভবত দুই হাজার বছর বা তারও আগে মৎস্যজীবী কোলি সম্প্রদায় এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে মৌর্য সাম্রাজ্যের দক্ষিণে প্রসারের সময় এই অঞ্চল উক্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। মগধের বৌদ্ধ মৌর্যসম্রাট মহামতি অশোক এই অঞ্চলেরও শাসনকর্তা ছিলেন। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীর মধ্যভাগেই বোরিবলির কানহেরি গুহা খোদিত হয়েছিল। এই গুহা ছিল প্রাচীনকালে পশ্চিম ভারতে বৌদ্ধধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। ১৫০ খ্রিষ্টাব্দে গ্রিক ভূগোলবিদ টলেমির রচনায় এই অঞ্চলটি হেপটানেসিয়া (Heptanesia; প্রাচীন গ্রিক: সপ্তদ্বীপখণ্ড) নামে উল্লিখিত হয়েছে। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে খ্রিষ্টীয় নবম শতাব্দীর মধ্যে এই দ্বীপগুলি যে সকল দেশীয় রাজ্য ও সাম্রাজ্যের অধিকারভুক্ত হয়েছিল, সেগুলি হল: সাতবাহন, পশ্চিম ক্ষত্রপ, আভীর, বাকাটক, কলচুরি, কোঙ্কণ মৌর্য, চালুক্য ও রাষ্ট্রকূট। এরপর ৮১০ থেকে ১২৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই অঞ্চল শাসন করে সিলহর রাজবংশ। এই যুগে নির্মিত শহরের কয়েকটি প্রাচীন স্থাপত্য নিদর্শন হল যোগেশ্বরী গুহা (৫২০-২৫ খ্রিষ্টাব্দ), এলিফান্টা গুহা (ষষ্ঠ-সপ্তম শতাব্দী), বলকেশ্বর মন্দির (দশম শতাব্দী), ও বনগঙ্গা দিঘি (দ্বাদশ শতাব্দী)। দ্বাদশ অথবা ত্রয়োদশ শতাব্দীতে রাজা ভীমদেব এই অঞ্চলে তার রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তার রাজধানী ছিল মাহিকাবতী (অধুনা মাহিম)। ভীমদেব গুজরাতের সৌরাষ্ট্র থেকে মাহিকাবতীতে যে পাথারে প্রভু সম্প্রদায়কে এই অঞ্চলে নিয়ে আসেন। এই সম্প্রদায় শহরের প্রাচীনতম অধিবাসীদের অন্যতম। ১৩৪৮ সালে গুজরাতের মুসলমান শাসকগণ এই অঞ্চল অধিকার করে নেন। পরে ১৩৯১ থেকে ১৫৩৪ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল গুজরাত সুলতানির অধীনে থাকে। সুলতানের পৃষ্ঠপোষকতায় এই অঞ্চলে অনেক মসজিদ নির্মিত হয়েছিল। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ১৪৩১ সালে মুসলিম সন্ত হাজি আলির সম্মানে নির্মিত মাহিমের হাজি আলি দরগা। ১৪২৯ থেকে ১৪৩১ সাল পর্যন্ত এই দ্বীপপুঞ্জের অধিকার নিয়ে গুজরাত সুলতানি ও দাক্ষিণাত্যের বাহমনি সুলতানির মধ্যে বিবাদ বর্তমান ছিল। ১৪৯৩ সালে বাহমনি শাসক বাহাদুর খান গিলানি এই দ্বীপগুলি জয় করার লক্ষ্যে অভিযান চালিয়েছিলেন। তবে তিনি পরাজিত হন। ১৫২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত মুঘল সাম্রাজ্য ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রধান শক্তিতে পরিণত হয়। মুঘল সম্রাট হুমায়ুনের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতায় ভীত হয়ে গুজরাত সুলতানির সুলতান বাহাদুর শাহ ১৫৩৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর পর্তুগিজ অভিবাসীদের সঙ্গে বাসেইনের চুক্তি সাক্ষর করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই চুক্তি অনুযায়ী পরিকল্পিত ভাসাই শহর ও তার অধীনস্থ অঞ্চলগুলি পর্তুগিজদের প্রদান করার কথা বলা হয়। পরে ১৫৩৫ সালের ২৫ অক্টোবর এই অঞ্চলগুলি প্রত্যর্পণ করা হয়। বোম্বাইতে রোমান ক্যাথলিক ধর্মমতের প্রতিষ্ঠা ও প্রসারের জন্য প্রত্যক্ষভাবে দায়ী পর্তুগিজরাই। শহরের পর্তুগিজ আমলের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য গির্জা হল মাহিমের সেন্ট মাইকেলস চার্চ (১৫৩৪), আন্ধেরির সেন্ট জন দ্য ব্যাপটিস্ট চার্চ (১৫৭৯), বান্দ্রার সেন্ট অ্যান্ড্রিউজ চার্চ (১৫৮০), ও বাইকুল্লার গ্লোরিয়া চার্চ (১৬৩২)। ১৬৬১ সালের ১১ মে, ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় চার্লস ও ক্যাথেরিন অফ ব্র্যাগাঞ্জার বিবাহ চুক্তি অনুসারে চার্লসকে ক্যাথেরিনের দেয় পণের অংশ হিসেবে এই দ্বীপগুলি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে প্রদান করা হয়। যদিও স্যালস্যাট, ভাসাই, মাজাগাঁও, পারেল, বরলি, সিমন, ধারাবি ও বাদালা পর্তুগিজদের অধিকারেই রয়ে যায়। ১৬৬৫-৬৬ সালে ব্রিটিশরা মাহিম, সিয়ন, ধারাবি ও বাদালা নিজ অধিকারে আনতে সক্ষম হয়েছিল। ১৬৬৮ সালের ২৭ মার্চের রাজকীয় সনদ অনুসারে, ১৬৬৮ সালে বার্ষিক ১০ পাউন্ডের বিনিময়ে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে এই দ্বীপগুলি লিজ দেওয়া হয়। ১৬৬১ সালে এই অঞ্চলের জনসংখ্যা ছিল ১০,০০০; এই জনসংখ্যা ১৬৭৫ সালে বেড়ে হয় ৬০,০০০। ১৬৭২ সালের অক্টোবরে মুঘল সাম্রাজ্যের সিদ্দি নৌপ্রধান ইয়াকুত খান, ১৬৭৩ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির গভর্নর-জেনারেল রিকলফ ভন গিয়ন, এবং ১৬৭৩ সালের ১০ অক্টোবর সিদ্দি নৌপ্রধান সম্বল এই দ্বীপগুলি আক্রমণ করেন। ১৬৮৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সদর সুরাট থেকে বোম্বাইতে সরিয়ে আনা হয়। এরপরই এই শহর বোম্বাই প্রেসিডেন্সির সদরে পরিণত হয়। এই স্থানান্তরণের পর ভারতে কোম্পানির সকল সংস্থার প্রধান কার্যালয়ই বোম্বাইতে সরিয়ে আনা হয়। ১৬৮৯-৯০ সাল নাগাদ আর একবার ইয়াকুত খান এই দ্বীপগুলি আক্রমণ করেছিলেন। পেশোয়া প্রথম বাজি রাওয়ের অধীনে মারাঠারা ১৭৩৭ সালে স্যালস্যাট ও ১৭৩৯ সালে ভাসাই দখল করে নিলে বোম্বাই অঞ্চলে পর্তুগিজ উপস্থিতির পরিসমাপ্তি ঘটে। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যভাগ থেকেই বোম্বাই এক প্রধান বাণিজ্য নগরী রূপে আত্মপ্রকাশ করতে শুরু করে। এই সময় ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করতেও শুরু করেন। পরে ১৭৭৪ সালের ২৮ ডিসেম্বর ব্রিটিশরা স্যালস্যাট দখল করে নেয়। সুরাটের চুক্তির (১৭৭৫) পর স্যালস্যাট ও ভাসাইয়ের উপর ব্রিটিশরা আনুষ্ঠানিকভাবে অধিকার অর্জন করে। এর ফলে প্রথম ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধ সূচিত হয়। ১৭৭৬ সালে পুরন্দরের চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটিশরা স্যালস্যাট রক্ষা করতে সক্ষম হয়। পরে ১৭৮২ সালের সালবাইয়ের চুক্তি সাক্ষরের মাধ্যমে প্রথম ইঙ্গ-মারাঠা যুদ্ধের মীমাংসা হয়। ১৭৮২ সালের পর থেকে শহরের সাতটি দ্বীপকে সুসংবদ্ধ একক অঞ্চলে পরিণত করার জন্য একটি বৃহদাকার গণপুর্ত প্রকল্প গৃহীত হয়। হর্নবি ভেলার্ড নামে এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হয় ১৭৮৪ সালে। ১৮১৭ সালে মাউন্টস্টুয়ার্ট এলফিনস্টোনের নেতৃত্বে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কিরকীর যুদ্ধে শেষ মারাঠা পেশোয়া দ্বিতীয় বাজি রাওকে পরাজিত করেন। এই পরাজয়ের সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র দাক্ষিণাত্যে ব্রিটিশদের আধিপত্য স্থাপিত হয়। সমগ্র দক্ষিণ ভারত এরপর বোম্বাই প্রেসিডেন্সির অধিভুক্ত হয়েছিল। অন্যদিকে দাক্ষিণাত্যে ব্রিটিশদের সাফল্য বোম্বাইকে সকল প্রকার দেশীয় শক্তির আক্রমণের হাত থেকে মুক্তি দেয়। ১৮৪৫ সালের মধ্যে হর্নবি ভেলার্ড প্রকল্পের কল্যাণে বোম্বাইয়ের সাতটি দ্বীপ একক ভূখণ্ডে পরিণত হয়। ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল বোম্বাই ও পার্শ্ববর্তী শহর থানের মধ্যে ভারতের প্রথম যাত্রীবাহী রেল পরিষেবা চালু হয়। আমেরিকার গৃহযুদ্ধের (১৮৬১-৬৫) সময় বোম্বাই বিশ্বের প্রধান কার্পাস বাণিজ্য বাজারে পরিণত হয়। এর ফলে শহরের ব্যাপক অর্থনৈতিক উন্নতি সাধিত হয় এবং তা শহরের গুরুত্বও বহুলাংশে বৃদ্ধি করে। ১৮৬৯ সালে সুয়েজ খাল উদ্বোধনের পর বোম্বাই আরব সাগরের বৃহত্তম সমুদ্রবন্দরে পরিণত হয়। ১৮৯৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শহরে বিউবনিক প্লেগ মহামারীর প্রাদুর্ভাব ঘটলে প্রতি সপ্তাহে ১,৯০০ লোকের মৃত্যু হতে শুরু করে। এই সময় প্রায় ৮৫০,০০০ লোক বোম্বাই ছেড়ে পলায়ন করেন। এখানকার বস্ত্রবয়ন শিল্পও ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বোম্বাই প্রেসিডেন্সির রাজধানী হিসেবে এই শহর ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনার সাক্ষী। এগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলন এবং ১৯৪৬ সালের ভারতীয় নৌবিদ্রোহ। ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর বোম্বাই প্রেসিডেন্সির অঞ্চলগুলি বোম্বাই রাজ্য নামে ভারতের অন্তর্গত হয়। একাধিক দেশীয় রাজ্যের অন্তর্ভুক্তির ফলে বোম্বাই রাজ্যের আয়তন বৃদ্ধি পায়। ১৯৫০ সালের এপ্রিল মাসে বোম্বাই উপনগর জেলা ও বোম্বাই নগরীকে একত্রিত করে বৃহত্তর বোম্বাই পৌরসংস্থা গঠিত হয়। বৃহত্তর বোম্বাই রাজস্ব জেলা ও বৃহত্তর বোম্বাই পৌরসংস্থার ভৌগোলিক সীমানা এই সময় একই ছিল। ১৯৯০ সালের ১ অক্টোবর বৃহত্তর বোম্বাই জেলা দ্বিধাখণ্ডিত করে মুম্বই জেলা ও মুম্বই উপনগর জেলা গঠিত হয়। যদিও এই দুই জেলা একই পৌরসংস্থার অধিভুক্ত। ১৯৫৫ সালের একটি লোকসভা আলোচনায় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস মুম্বই শহরকে নিয়ে একটি স্বশাসিত নগররাজ্য স্থাপনের দাবি জানায়। ১৯৫৬ সালে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন বোম্বাই শহরকে রাজধানী করে দ্বিভাষিক মহারাষ্ট্র-গুজরাত রাজ্য গঠনের সুপারিশ করে। বোম্বাই সিটিজেনস কমিটি নামে নেতৃস্থানীয় গুজরাতি শিল্পপতিদের একটি সংস্থা বোম্বাইয়ের স্বশাসনের পক্ষে মতপ্রকাশ করে। ১৯৫৭ সালের নির্বাচনে সংযুক্ত মহারাষ্ট্র সমিতি এই সব প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। তারা বোম্বাইকে মহারাষ্ট্রের রাজধানী ঘোষণা করার দাবি জানায়। এই নিয়ে আন্দোলন শুরু হয়। ফ্লোরা ফাউন্টেনে একটি প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের গুলি চালনায় ১০৫ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ১৯৬০ সালের ১ মে ভাষার ভিত্তিতে বোম্বাই রাজ্য দ্বিধাবিভক্ত হয়। বোম্বাই রাজ্যের গুজরাতি-ভাষী অঞ্চলগুলি নিয়ে গঠিত হয় গুজরাত রাজ্য। অবশিষ্ট বোম্বাই রাজ্যের মারাঠি-ভাষী অঞ্চল, মধ্য প্রদেশ ও বেরার রাজ্যের আটটি জেলা, হায়দরাবাদ রাজ্যের পাঁচটি জেলা এবং উভয় রাজ্যের মধ্যবর্তী অসংখ্য ছোটো ছোটো দেশীয় রাজ্য নিয়ে গঠিত হয় মহারাষ্ট্র রাজ্য। বোম্বাই এই রাজ্যের রাজধানী ঘোষিত হয়। সংযুক্ত মহারাষ্ট্র আন্দোলনের স্মরণে ফ্লোরা ফাউন্টেনের নামকরণ করা হয় হুতাত্মা চক (শহিদের চক); নির্মিত হয় একটি শহিদস্তম্ভও। পরবর্তী দশকগুলিতে বোম্বাই শহরের ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। ১৯৬০-এর দশকের শেষ দিকে সমুদ্রোত্থিত ভূভাগ নরিমন পয়েন্ট ও কফ প্যারেডের বিকাশ ঘটানো হয়। ১৯৭৫ সালের ২৬ জানুয়ারি মহারাষ্ট্র সরকার বোম্বাই মহানগরীয় অঞ্চলের সুসংহত পরিকল্পনা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বোম্বাই মেট্রোপলিটান রিজিওন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিএমআরডিএ) নামে একটি সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৯ সালের অগস্ট মাসে সিটি অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (সিআইডিসিও) থানে ও রায়গডের সীমানায় বোম্বাই শহরের জনসংখ্যার চাপ কমাতে নিউ বোম্বাই নামে একটি উপনগরী স্থাপন করে। বোম্বাই হারবারের চাপ কমাতে ১৯৮৯ সালের ২৬ মে নব সেবায় জওহরলাল নেহেরু বন্দর কমিশন করা হয়। মুম্বইয়ের কেন্দ্রীয় বন্দর হিসেবে ব্যবহৃত এই বন্দর বর্তমানে ভারতের কন্টেনারাইজড কার্গোর ৫৫-৬০ শতাংশ বহন করে থাকে। অতীতের বোম্বাই একটি শান্তিপূর্ণ শহর হলেও বিগত দুই বছরে শহরে সন্ত্রাসের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৯৯২-৯৩ সালে অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর শহরে হিন্দু-মুসলমানের দাঙ্গা বাধে। এই দাঙ্গায় এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন। ১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ ইসলামি সন্ত্রাসবাদী ও বোম্বাই অন্ধকার জগতের যোগসাজেশে শহরের প্রধান প্রধান দর্শনীয় স্থানগুলিতে ১৩টি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এই বিস্ফোরণে ২৫৭ জন মারা যান এবং ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। ২০০৬ সালে শহরের যাত্রীবাহী ট্রেনগুলিতে সাতটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হলে ২০৯ জন মারা যান এবং ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হন। ২০০৮ সালে সশস্ত্র জঙ্গিদের দশটি পরস্পর সংযুক্ত হামলায় ১৭৩ জনের মৃত্যু হয়, ৩০৮ জন আহত হন, একাধিক ঐতিহাসিক স্থান ও গুরুত্বপূর্ণ হোটেল ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বর্তমানে মুম্বই ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী এবং বিশ্ব অর্থনীতির একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। কয়েক দশক ধরে দেশের প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক সংস্থাগুলির প্রধান কার্যালয় এই শহরে অবস্থিত। এই কারণে এখানকার পরিকাঠামো উন্নয়ন ও ব্যক্তিগত বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও বিশেষ উন্নতি সাধিত হয়েছে। এইভাবে প্রাচীন মৎস্যজীবী সম্প্রদায়ের বসতি ও ঔপনিবেশিক যুগের বাণিজ্য নগরী থেকে মুম্বই আজ পরিণত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম শহর এবং বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বর্ণময় চলচ্চিত্র কেন্দ্রের পাদপীঠে। ভূগোল ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্রে অক্ষ-দ্রাঘিমাংশে মুম্বই শহরটি অবস্থিত। এই শহর মুম্বই শহর জেলা ও মুম্বই উপনগরী জেলা নামে মহারাষ্ট্রের দুটি পৃথক রাজস্ব জেলা নিয়ে গঠিত। মূল শহরাঞ্চলটিকে দ্বীপশহর বা আইল্যান্ড সিটি নামেও অভিহিত করা হয়। মুম্বইয়ের মোট আয়তন ৬০৩.৪ বর্গকিলোমিটার। এর ৪৩৭.৭১ বর্গকিলোমিটার অঞ্চলের মধ্যে দ্বীপশহরের আয়তন ৬৭.৭৯ বর্গকিলোমিটার এবং উপনগর জেলার আয়তন ৩৭০ বর্গকিলোমিটার। এই দুই অঞ্চল বৃহন্মুম্বই পৌরসংস্থার (বিএমসি) এক্তিয়ারভুক্ত। অবশিষ্ট অঞ্চল প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, মুম্বই বন্দর কর্তৃপক্ষ, পরমাণু শক্তি কমিশন ও বোরবলি জাতীয় উদ্যানের এক্তিয়ারভুক্ত, যা বিএমসি-র এক্তিয়ারের বাইরে অবস্থিত। ভারতের পশ্চিম উপকূলের কোঙ্কণ অঞ্চলে উলহাস নদীর মোহনায় সাষ্টী দ্বীপে মুম্বই অবস্থিত। সাষ্টী দ্বীপের কিয়দংশ আবার থানে জেলার অন্তর্গত। মুম্বইয়ের পশ্চিমে আরব সাগর দ্বারা বেষ্টিত। শহরের অনেক অঞ্চলই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সামান্য উচ্চতায় অবস্থিত। শহরের উচ্চতা মোটামুটি ১০ থেকে ১৫ মিটারের মধ্যে; গড় উচ্চতা ১৪ মিটার। উত্তর মুম্বই (সাষ্টী) অঞ্চলটি পর্বতময়। সাষ্টীতে পোবাই-কানহেরি পর্বতশ্রেণির ৪৫০ মিটার উচ্চতায় শহরের উচ্চতম স্থানটি অবস্থিত। সঞ্জয় গান্ধী জাতীয় উদ্যান (বোরিবলি জাতীয় উদ্যান) কিছুটা মুম্বই উপনগর জেলায়, কিছুটা থানে জেলায় অবস্থিত। এই উদ্যানের আয়তন ১০৩.০৯ বর্গকিলোমিটার। ভাস্তা জলাধার ছাড়া আরও যে ছয়টি প্রধান হ্রদ থেকে শহরের জল সরবরাহ করা হয় সেগুলি হল বিহার, নিম্ন বৈতর্ণ, উচ্চ বৈতর্ণ, তুলসী, তানসা ও পবই হ্রদ। তুলসী ও বিহার হ্রদ শহরের সীমানার মধ্যেই বোরিবলি জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত। পোবাই হ্রদটিও শহরের সীমানার মধ্যেই অবস্থিত; তবে এই হ্রদের জল কেবলমাত্র কৃষি ও শিল্পকারখানাগুলির প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হয়। উদ্যানের মধ্যেই তিনটি ছোটো নদীর উৎস অবস্থিত। এগুলি হল দহিসর, পইসর বা পইনসর ও ওহিয়ারা বা ওশিয়ারা। বর্তমানে দুষিত মিঠি নদীর উৎস তুলসী হ্রদ; এই নদী বিহার ও পোবাই হ্রদের অতিরিক্ত জল ধারণ করে থাকে। শহরের উপকূলভাগে অসংখ্য খাঁড়ি অবস্থিত। এগুলি পশ্চিমে থানে খাঁড়ি থেকে পূর্বে মধ মার্ভে পর্যন্ত প্রসারিত। সাষ্টী দ্বীপের পূর্ব উপকূলভাগে একটি জৈববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ বৃহৎ ম্যানগ্রোভ জলাভূমি অবস্থিত। অন্যদিকে পশ্চিমের উপকূলভাগ বালুকাময় ও পাথুরে। সমুদ্রের নৈকট্যের কারণে মুম্বই শহর অঞ্চলের মাটি প্রধানত বেলে প্রকৃতির। উপনগর অঞ্চলের মাটি অবশ্য পলল ও দোঁয়াশ প্রকৃতির। এই অঞ্চলের ভূগর্ভস্ত শিলাস্তরটি কালো দাক্ষিণাত্য ব্যাসাল্ট প্রকৃতির। এর অ্যাসিডিক ও মৌলিক উপাদানগুলি পরবর্তী ক্রিটোসিয়াস থেকে আদি ইয়োসিন যুগীয়। মুম্বই একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে অবস্থিত; শহরের নিকটবর্তী এলাকায় ২৩টি চ্যুতিরেখার উপস্থিতি লক্ষিত হয়। অঞ্চলটিকে ভূমিকম্পপ্রবণ ক্ষেত্র ৩ অঞ্চল বর্গভুক্ত করা হয়। এর অর্থ রিখটার স্কেলে ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প এখানে স্বাভাবিক। জলবায়ু মুম্বইয়ের জলবায়ু ক্রান্তীয় প্রকৃতির। কোপেন জলবায়ু বর্গীকরণ অনুযায়ী এই জলবায়ু ক্রান্তীয় আর্দ্র ও শুষ্ক প্রকৃতির। এখানে সাত মাস শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে ও জুলাই মাসে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত শীতকাল এবং মার্চ থেকে জুন মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে। জুন থেকে সেপ্টেম্বরের শেষ ভাগ পর্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এখানে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে এখানে বিরাজ করে শরৎকাল। মে মাসে এই অঞ্চলে প্রাকবর্ষা বৃষ্টিপাত দেখা যায়। আবার অক্টোবর-নভেম্বর মাসে উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর প্রভাবেও কিছু বৃষ্টিপাত সংঘটিত হয়। ১৯৫৪ সালে মুম্বইতে সর্বোচ্চ বার্ষিক বৃষ্টিপাত নথিভুক্ত হয়েছিল ৩৪৫২ মিলিমিটার। ২০০৫ সালের ২৬ জুলাই শহরে একদিনে বৃষ্টিপাত হয় ৯৪৪ মিলিমিটার। এটিই মুম্বইয়ের একদিনের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। শহরের গড় মোট বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দ্বীপশহরে ২১৪৬.৬ মিলিমিটার ও উপনগর অঞ্চলে ২৪৫৭ মিলিমিটার। মুম্বইয়ের গড় বার্ষিক তাপমাত্রা ২৭.২° সেন্টিগ্রেড এবং গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ২১৬.৭ সেন্টিমিটার। দ্বীপশহরের বার্ষিক সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যথাক্রমে ৩১.২° সেন্টিগ্রেড ও ২৩.৭° সেন্টিগ্রেড। উপনগর অঞ্চলে দৈনিক সাধারণ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ২৯.১° সেন্টিগ্রেড থেকে ৩৩.৩° সেন্টিগ্রেডের মধ্যে থাকে; অন্যদিকে দৈনিক সাধারণ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকে ১৬.৩° সেন্টিগ্রেড থেকে ২৬.২° সেন্টিগ্রেড। ১৯৮২ সালের ২৮ মার্চ শহরের তাপমাত্রা ছিল ৪০.২° সেন্টিগ্রেড; এটিই শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। অন্যদিকে ১৯৬২ সালের ২৭ জানুয়ারি শহরের তাপমাত্রা ছিল ৭.৪° সেন্টিগ্রেড; এটি শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। অর্থনীতি মুম্বই ভারতের বৃহত্তম শহর ও অর্থনৈতিক রাজধানী। দেশের সামগ্রিক জিডিপির ৫ শতাংশ উৎপাদিত হয় এই শহরে। এছাড়া মুম্বই ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্রও বটে। দেশের সামগ্রিক কারখানা শ্রমিক নিয়োগের ১০ শতাংশ, শিল্পোৎপাদনের ২৫ শতাংশ, আয়কর সংগ্রহের ৩৩ শতাংশ, বহিঃশুল্কের ৬০ শতাংশ, কেন্দ্রীয় অন্তঃশুল্কের ২০ শতাংশ বৈদেশিক বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ এবং ৪ হাজার কোটি টাকা কর্পোরেট করের উৎস হল মুম্বই। মুম্বইয়ের জিডিপি ২০০,৪৮৩ কোটি টাকা এবং মাথাপিছু আয় ১২৮,০০০ টাকা। মুম্বইয়ের মাথাপিছু আয় ভারতের জাতীয় গড় মাথাপিছু আয়ের তিন গুণ। ভারতের অসংখ্য শিল্পগোষ্ঠী (লারসেন অ্যান্ড টব্রো, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক, ভারতীয় স্টেট ব্যাংক, ভারতীয় জীবন বিমা নিগম, টাটা গোষ্ঠী, গোদরেজ গোষ্ঠী, রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ সহ) এবং পাঁচটি ফরচুন গ্লোবাল ৫০০ কোম্পানির প্রধান কার্যালয় মুম্বইতে অবস্থিত। এই অঞ্চলে অনেক বিদেশি ব্যাংক ও বাণিজ্যিক সংস্থার শাখাও রয়েছে। এগুলির মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ১৯৭০-এর দশক পর্যন্ত মুম্বইয়ের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পশ্চাতে ছিল বস্ত্রবয়ন শিল্প ও বৈদেশিক বাণিজ্য। কিন্তু তার পর থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং, হিরে-পালিশ, স্বাস্থ্য পরিষেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের অভাবনীয় বিকাশের ফলে এখানকার স্থানীয় অর্থনীতিরও প্রভূত উন্নতি ঘটে। ২০০৮ সালে, গ্লোবালাইজেশন অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড সিটিজ স্টাডি গ্রুপ (জিএডব্লিউসি) তাদের বিশ্ব নগরী বর্গীকরণের তৃতীয় বর্গের "আলফা বিশ্ব নগরী" রূপে মুম্বইকে ঘোষণা করেছে। কেন্দ্রীয় ও মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা শহরের মূল কর্মীশক্তি। অনিপূণ ও অর্ধনিপূণ স্বনিযুক্তদের সংখ্যাও মুম্বইয়ে প্রচুর। এরা মূলত হকার, ট্যাক্সি ড্রাইভার, মেকানিক ও অন্যান্য ব্লু কলার কাজে নিযুক্ত। শহরের বন্দর ও জাহাজনির্মাণ শিল্প সুবিখ্যাত। মুম্বই বন্দর ভারতের অন্যতম প্রাচীন ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। মধ্য মুম্বইয়ের ধারাবিতে একটি ক্রমবর্ধমান পুনর্নবীকরণ শিল্প বিদ্যমান। এখানে শহরের অন্যান্য অংশ থেকে সংগৃহীত বর্জ্য পদার্থ পুনর্নবীকরণ করা হয়। জেলায় প্রায় ১৫,০০০ সিঙ্গল-রুম কারখানা রয়েছে। ভারতের প্রধান টেলিভিশন ও স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক এবং দেশের প্রধান কয়েকটি প্রকাশনা সংস্থার প্রধান কার্যালয়ও মুম্বইতে অবস্থিত। মুম্বইতে অবস্থিত বলিউড নামে হিন্দি চলচ্চিত্র শিল্পকেন্দ্রটি ভারতের বৃহত্তম ও বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ চলচ্চিত্র প্রস্তুতকারক। ভারতের অন্যান্য অংশের মতো মুম্বইও ১৯৯১ সালের অর্থনৈতিক উদারীকরণের সুফল ভোগ করেছে। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগ থেকে শহরের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। ২০০০-এর দশকে মুম্বই তথ্যপ্রযুক্তি, বৈদেশিক বাণিজ্য, পরিষেবা ও আউটসোর্সিং-এর ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি লাভ করে। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যকেন্দ্র সূচি ২০০৮-এ মুম্বই ৪৮তম স্থানটি অধিকার করে। ২০০৮ সালের এপ্রিল মাসে ফোর্বস পত্রিকার "টপ টেন সিটিজ ফর বিলিয়নেয়ারস" তালিকায় সপ্তম এবং ওই সকল বিলিয়নেয়ারদের গড় সম্পত্তির হিসেব অনুযায়ী প্রথম স্থানটি দখল করে। নগর প্রশাসন দক্ষিণে কোলাবা থেকে উত্তরে মুলুন্দ, মানখুর্দ ও দহিসর পর্যন্ত বিস্তৃত মুম্বইয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব বৃহন্মুম্বই পৌরসংস্থার (বিএমসি; পূর্বনাম বোম্বাই পৌরসংস্থা) হাতে ন্যস্ত। শহরের নাগরিক পরিষেবা ও পরিকাঠামোগত পরিষেবার দায়িত্বও বিএমসি-র হাতে ন্যস্ত। পৌরসংস্থার কাউন্সিলরগণ আড়াই বছরের মেয়াদে একজন মেয়রকে নির্বাচিত করেন। মিউনিসিপ্যাল কমিশনার পৌরসংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক ও প্রশাসনিক শাখার প্রধান। যাবতীয় প্রশাসনিক ক্ষমতা তার হাতেই ন্যস্ত। ইনি মহারাষ্ট্র সরকার কর্তৃক নিয়োজিত একজন আইএএস স্তরীয় আধিকারিক। পৌরসংস্থা শহরের স্থানীয় স্বায়ত্তশাসন সংস্থা। এই সংস্থা শহরের প্রশাসনিক নীতিনির্ধারণের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেও, এই নীতিগুলি কার্যকর করার যাবতীয় ক্ষমতা মিউনিসিপ্যাল কমিশনারের হাতে ন্যস্ত। রাজ্য আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট জন্য এই কমিশনার নিযুক্ত করা হয়ে থাকে। উক্ত আইন এবং পৌরসংস্থা অথবা স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রতিনিধিদের দ্বারা কমিশনারের ক্ষমতাও বিধিবদ্ধ করা রয়েছে। মুম্বইয়ের দুটি রাজস্ব জেলাই একজন করে জেলা কালেকটরের অধীনস্থ। এই কালেকটরগণ সম্পত্তি নিবন্ধন, ভারত সরকারের হয়ে রাজস্ব আদায় এবং শহরে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনগুলির তত্ত্বাবধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত। মুম্বই পুলিশের প্রধান পুলিশ কমিশনার একজন আইপিএস স্তরীয় আধিকারিক। মুম্বই পুলিশ রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ। মুম্বই সাতটি পুলিশ ক্ষেত্র ও সতেরোটি ট্র্যাফিক পুলিশ ক্ষেত্রে বিভক্ত। প্রত্যেক ক্ষেত্রের দায়িত্বে থাকেন একজন করে ডেপুটি পুলিশ কমিশনার। মুম্বই ট্র্যাফিক পুলিশ মুম্বই পুলিশের অধীনস্থ একটি অর্ধ-স্বশাসিত সংস্থা। মুম্বই দমকল পরিষেবা একজন মুখ্য দমকল আধিকারিক, চারজন উপমুখ্য দমকল আধিকারিক এবং ছয়জন বিভাগীয় আধিকারিকের নেতৃত্বাধীন। বোম্বাই হাইকোর্ট মুম্বইতে অবস্থিত। মহারাষ্ট্র ও গোয়া রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ এই হাইকোর্টের এক্তিয়ারভুক্ত। এছাড়া দেওয়ানি বিচারের জন্য একাধিক ছোটো আদালত এবং ফৌজদারি অপরাধের বিচারের জন্য একাধিক দায়রা আদালতও রয়েছে। মুম্বইয়ে সন্ত্রাসের ষড়যন্ত্র ও সংগঠনের বিচারের জন্য একটি বিশেষ টাডা (টেরোরিজম অ্যান্ড ডিসরাপটিভ অ্যাকটিভিটজ) আদালত রয়েছে। রাজনীতি মুম্বই ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জন্মস্থান এবং অতীতের এক শক্ত ঘাঁটি। ১৮৮৫ সালের ২৮-৩১ ডিসেম্বর বোম্বাই শহরেই জাতীয় কংগ্রেসের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কংগ্রেসের প্রথম পঞ্চাশ বছরে মোট ছয়বার এখানেই কংগ্রেস অধিবেশন আয়োজিত হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীতে বোম্বাই তাই ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অন্যতম প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়। ১৯৬০-এর দশকে বোম্বাইতে আঞ্চলিকতাবাদী রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটে। ১৯৬৬ সালের ১৯ জুন শিবসেনা দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দল মহারাষ্ট্রের স্থানীয় অধিবাসী মারাঠিদের অধিকারের স্বপক্ষে মতপ্রকাশ করে এবং মুম্বই থেকে উত্তর ভারতীয় ও দক্ষিণ ভারতীয় অভিবাসীদের বলপূর্বক বিতাড়িত করার অভিযান শুরু করে। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৮০-এর দশকের মধ্যভাগ পর্যন্ত শহরের রাজনীতিতে কংগ্রেসের একাধিপত্য বজায় ছিল। ১৯৮৫ সালে বোম্বাই পৌরসংস্থা নির্বাচনে শিবসেনা জয়লাভ করলে এই একাধিপত্যে ছেদ পড়ে। ১৯৮৯ সালে ভারতীয় জনতা দল ও শিবসেনা একজোটে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়ে কংগ্রেসকে পরাজিত করে মহারাষ্ট্র বিধানসভায় ক্ষমতা দখল করে। ১৯৯৯ সালে জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) কংগ্রেস ভেঙে বেরিয়ে আসে। পরে এই দল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বেঁধে গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গঠন করে। বর্তমানে মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস), সমাজবাদী পার্টি (এসপি), বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) প্রভৃতি দল ও একাধিক নির্দল প্রার্থীও মুম্বইতে নির্বাচনে অবতীর্ণ হয়ে থাকে। মুম্বই ছয়টি লোকসভা (সংসদীয়) কেন্দ্র নিয়ে গঠিত। এগুলি হল: মুম্বই উত্তর, মুম্বই উত্তর পশ্চিম, মুম্বই উত্তর পূর্ব, মুম্বই উত্তর মধ্য, মুম্বই দক্ষিণ মধ্য ও মুম্বই দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্র। ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে এই কেন্দ্রগুলির মধ্যে পাঁচটিতে কংগ্রেস ও একটিতে এনসিপি জয়লাভ করে। অন্যদিকে মুম্বইয়ে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ৩৬টি কেন্দ্র অবস্থিত। ২০০৯ সালের রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রগুলির মধ্যে ১৭টিতে কংগ্রেস, ৬টিতে এমএনএস, ৫টিতে বিজেপি, ৪টিতে শিবসেনা ও একটিতে এসপি জয়লাভ করে। বৃহন্মুম্বই পৌরসংস্থার কর্পোরেটররা প্রতি পাঁচ বছর বাদে নির্বাচিত হন। এই পৌরসংস্থা ২৪টি মিউনিসিপ্যাল ওয়ার্ডের ২২৭ জন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, পৌরপ্রশাসনের বিশেষ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন পাঁচ জন মনোনীত কাউন্সিলর এবং একজন মেয়রকে নিয়ে গঠিত। মুম্বইয়ের মেয়র পদটি প্রধানত নামসর্বস্ব। ২০০৭ সালের পৌরনির্বাচনে ২২৭টি আসনের মধ্যে শিবসেনা-বিজেপি জোট ১১১টি আসন সহ ক্ষমতা দখল করে। অন্যদিকে কংগ্রেস-এনসিপি জোট পায় ৮৫টি আসন। মুম্বইয়ের মেয়র, ডেপুটি মেয়র ও মিউনিসিপ্যাল কমিশনারের কার্যকালের মেয়াদ আড়াই বছর। পরিবহণ ব্যবস্থা গণ পরিবহন ব্যবস্থা মুম্বইয়ের গণ পরিবহন ব্যবস্থার অন্তর্গত পরিবহন মাধ্যমগুলি হল মুম্বই শহরতলি রেল, বৃহন্মুম্বই ইলেকট্রিক সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট (বিইএসটি) বাস, ট্যাক্সি, অটো রিকশা ও ফেরি। ২০০৮ সালের হিসেব অনুযায়ী, শহরতলি রেল ও বিইএসটি বাস পরিষেবার মাধ্যমে শহরের ৮৮ শতাংশ যাত্রী পরিবহন হয়ে থাকে। কালো ও হলুদ মিটার ট্যাক্সি পরিষেবা সারা শহরেই পাওয়া যায়। উল্লেখ্য, ট্যাক্সি মুম্বইয়ের সর্বত্র প্রবেশ করতে পারলেও, অটো রিকশা চলাচলের অনুমতি কেবলমাত্র শহরের উপনগর অঞ্চলেই রয়েছে। আইনানুসারে, মুম্বইয়ের ট্যাক্সি ও অটো রিকশাকে ঘন প্রাকৃতিক গ্যাস জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে হয়। এই দুই পরিষেবা শহরের সুলভ ও কম খরচের যাত্রী পরিষেবা। ২০০৮ সালের হিসেব অনুযায়ী, মুম্বই শহরে মোট যানবাহনের সংখ্যা ১৫,৩০০,০০০। আবার ২০০৫ সালের একটি হিসেব অনুযায়ী, শহরে কালো ও হলুদ ট্যাক্সির সংখ্যা ৫৬,৪৫৯ এবং অটো রিকশার সংখ্যা ১,০২,২২৪। নবি মুম্বইয়ের এনএমএমটি মুম্বইতে ভলভো বাস চালিয়ে থাকে। এই বাসগুলি নবি মুম্বই থেকে বান্দ্রে, দিনদোশি ও বোরিবলি পর্যন্ত চলাচল করে। সড়কপথ ভারতের জাতীয় সড়ক ব্যবস্থার ৩ নং জাতীয় সড়ক, ৪ নং জাতীয় সড়ক ও ৮ নং জাতীয় সড়ক মুম্বইকে দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে যুক্ত করেছে। মুম্বই-পুনে এক্সপ্রেসওয়ে ভারতে নির্মিত প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে। এছাড়া মুম্বই-ভদোদরা এক্সপ্রেসওয়েটি বর্তমানে নির্মাণাধীন। মাহিম কজওয়ে ও সদ্যনির্মিত রাজীব গান্ধী সমুদ্রসেতু দ্বীপশহরের সঙ্গে পশ্চিম উপনগরের সংযোগ রক্ষা করছে। শহরের তিনটি প্রধান রাস্তা হল সিয়ন থেকে থানে পর্যন্ত প্রসারিত ইস্টার্ন এক্সপ্রেস হাইওয়ে, সিওন থেকে পানভেল পর্যন্ত প্রসারিত সিওন পানভেল এক্সপ্রেসওয়ে এবং বান্দ্রা থেকে বোরিবালি পর্যন্ত প্রসারিত ওয়েস্টার্ন এক্সপ্রেস হাইওয়ে। ২০০৮ সালের হিসেব অনুযায়ী, মুম্বইয়ের বাস পরিষেবা প্রতিদিন পঞ্চান্ন লক্ষ যাত্রী বহন করে। শহরের সকল অঞ্চলে এবং নবি মুম্বই, মীরা-ভায়ান্দর ও থানে অঞ্চলেও বিইএসটি-এর পাবলিক বাস পরিষেবা সুলভ। স্বল্পপাল্লার ভ্রমণের জন্য যাত্রীরা বাস ব্যবহারই পছন্দ করেন। যদিও দুরপাল্লার ভ্রমণের ক্ষেত্রে ট্রেনই বেশি সস্তা। বিইএসটি মোট ৪,০১৩টি বাস চালায়। এগুলির মধ্যে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো থাকে। এই বাসগুলি ৩৯০টি রুটে দৈনিক ৪৫ লক্ষ যাত্রী পরিবহন করে থাকে। এই বাসগুলির মধ্যে রয়েছে সিঙ্গল-ডেকার, ডাবল-ডেকার, ভেস্টিবিউল, লো-ফ্লোর, প্রতিবন্ধী-সহায়ক, বাতানুকূল ও ইউরো থ্রি মানসম্মত ঘন প্রাকৃতিক গ্যাস চালিত বাস। মহারাষ্ট্র রাজ্য সড়ক পরিবহন সংস্থা (এমএসআরটিসি) বাসগুলি আন্তঃনগরীয় পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয়। এই বাসগুলি মহারাষ্ট্রের অন্যান্য শহরের সঙ্গে মুম্বইয়ের যোগাযোগ রক্ষা করে। মুম্বই দর্শন নামে একটি পর্যটক বাস পরিষেবা পর্যটকদের মুম্বইয়ের দর্শনীয় স্থানগুলি ঘুরে দেখতে সাহায্য করে। মুম্বই বিআরটিএস (বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট সিস্টেম) লেনগুলি সারা মুম্বইয়ের সুবিধার্থে পরিকল্পিত হয়েছে। ২০০৯ সালের মার্চ মাস অবধি এই জাতীয় সাতটি রুটে বাস চলাচল শুরু করেছে। শহরের ৮৮ শতাংশ যাত্রী গণ পরিবহন মাধ্যমগুলি ব্যবহার করলেও মুম্বইয়ে যানজট এখনও একটি অন্যতম জটিল সমস্যা। মুম্বই আজও বিশ্বের সর্বাধিক যানজটবহুল শহরগুলির অন্যতম। মুম্বইয়ের যানজটের অন্যতম কারণ হল হকার কর্তৃক রাস্তা বেদখল ও যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং সমস্যা। এমএমআরডিএ পথচারীদের সহজ ও নিরাপদ ব্যবহারের জন্য মুম্বই স্কাইওয়ে প্রকল্প গ্রহণ করেছে। মুম্বই উপনগরীয় রেল স্টেশনের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান থেকে যেসব স্থান মানুষের অহরহ গন্তব্য সেই সব স্থান পর্যন্ত এই স্কাইওয়ে তৈরি করা হচ্ছে। রেলপথ মুম্বাই ভারতীয় রেলের দুটি জোন বা অঞ্চলের সদর দপ্তর: মধ্য রেল ও পশ্চিম রেল। মধ্য রেলের সদর ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস ও পশ্চিম রেলের সদর চার্চগেট। শহরের পরিবহন ব্যবস্থার মেরুদণ্ড হল মুম্বই উপনগরীয় রেল। মধ্য, পশ্চিম ও হারবার লাইন নামে তিনটি নেটওয়ার্ক নিয়ে গঠিত এছাড়াও নবগঠিত ট্রান্স হারবার লাইন এই রেল ব্যবস্থা শহরের উত্তর-দক্ষিণ বরাবর প্রসারিত। ২০০৭ সালের একটি হিসেব অনুসারে, মুম্বই শহরতলি রেল নেটওয়ার্ক প্রতিদিন ৬৩ লক্ষ যাত্রী পরিবহন করে থাকে, যা ভারতীয় রেলের দৈনিক যাত্রী পরিবহন ক্ষমতার অর্ধেকেরও বেশি। ব্যস্ত সময়ে এই ট্রেনগুলি জনাকীর্ণ হয়ে থাকে। একটি নয়-কামরা বিশিষ্ট ট্রেনের যাত্রীধারণ ক্ষমতা লিখিতভাবে ১,৭০০ হলেও, ট্রেনগুলিকে ব্যস্ত সময়ে ৪,৫০০ যাত্রী বহন করতে হয়। এই যানজটকে মাথায় রেখে উপনগরীয় রেল ব্যবস্থায় নতুন ১৫টি বগি বিশিষ্ট ট্রেন চালু করা হয়েছে। ভূগর্ভস্থ ও উড়ালপথে দ্রুত পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে মুম্বই মেট্রো বর্তমানে নির্মাণাধীন। নির্মাণাধীণ অপর এক প্রকল্প মুম্বই মনোরেল জাকোব সার্কেল থেকে ওড়ালা পর্যন্ত চালু হওয়ার কথা আছে। ভারতীয় রেল মুম্বইয়ের সঙ্গে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সুসংযোগ রক্ষা করছে। দূরপাল্লার ট্রেনগুলি ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, দাদর স্টেশন, লোকমান্য তিলক টার্মিনাস, মুম্বই সেন্ট্রাল স্টেশন, ও বান্দ্রা টার্মিনাস থেকে ছাড়ে। আকাশপথ ছত্রপতি শিবাজী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মুম্বইয়ের প্রধান তথা দেশের ব্যস্ততম বিমানবন্দর। ২০০৭ সালের একটি হিসেব অনুযায়ী, এই বিমানবন্দরে ২ কোটি ৫০ লক্ষ যাত্রী চলাচল করে। ২০০৬ সালে এই বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণের একটি পরিকল্পনা গৃহীত হয়। এর ফলে ২০১০ সাল নাগাদ এই কাজ শেষ হলে এই বিমানবন্দর ৪ কোটি যাত্রী ধারণে সক্ষম হবে। জুহু বিমানঘাঁটি ভারতের প্রথম বিমানবন্দর। বর্তমানে এটি একটি ফ্লাইং ক্লাব ও হেলিপোর্টের কাজ করে। কোপরা-পানভেল অঞ্চলে প্রস্তাবিত নবি মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি ভারত সরকারের ছাড়পত্র পেয়েছে। এটি বর্তমান বিমানবন্দরের যাত্রী চাপ কমাতে সাহায্য করবে। সমুদ্রপথ মুম্বইয়ের দুটি প্রধান বন্দর হল: মুম্বই বন্দর ও জওহরলাল নেহেরু বন্দর। মুম্বই বন্দর বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাকৃতিক বন্দর। এই বন্দরে অনেকগুলি ওয়েট ও ড্রাই ডকের সুবিধা বিদ্যমান। ১৯৮৯ সালের ২৬ মে কমিশন কৃত জওহরলাল নেহেরু বন্দর ভারতের ব্যস্ততম বন্দর। দেশের মোট পণ্যবাহী জাহাজের ৫৫-৬০ শতাংশ এই বন্দরে যাতায়াত করে। মুম্বই ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ বেস ও পশ্চিম নৌ কম্যান্ডের সদর দপ্তর। মাজাগাঁওয়ের ফেরি হোয়ার্ফ থেকে শহরের নিকটবর্তী দ্বীপসমূহে ফেরি পরিষেবাও চালু রয়েছে। নাগরিক পরিষেবা ঔপনিবেশিক শাসনকালে মুম্বইয়ের জলের একমাত্র উৎস ছিল জলাশয়গুলি। অনেক অঞ্চলের নামকরণও হয়েছে এই জলাশয়গুলির নামানুসারে। বৃহত্তর মুম্বই পৌর নিগম বর্তমানে ছয়টি হ্রদ থেকে মুম্বইতে পানীয় জল সরবরাহ করে থাকে। এর বেশিরভাগ অংশই আসে তুলসী ও বিহার হ্রদ থেকে। তানসা লেক পশ্চিম উপনগর, দ্বীপশহরের বন্দর অঞ্চল ও পশ্চিম রেলকে জল সরবরাহ করে থাকে। ভান্ডুপে জল সংশোধনাগার রয়েছে। এটি এশিয়ার বৃহত্তম জল সংশোধনাগার। ভারতের প্রথম ভূগর্ভস্থ জল সুড়ঙ্গপথটি বর্তমানে মুম্বইতে নির্মীয়মান। শহরে প্রতিদিন সরবরাহকৃত ৩৫০০ মিলিয়ন লিটার জলের মধ্যে ৭০০ মিলিয়ন লিটার জলই জলচুরি, অবৈধ সংযোগ অথবা ছিদ্রপথে বহির্গমনের কারণে নষ্ট হয়ে যায়। মুম্বইয়ের দৈনিক কঠিন বর্জ্যের পরিমাণ ৭,৮০০ মেট্রিক টন; এর মধ্যে ৪০ মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য। এই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য উত্তরপশ্চিমে গোরাই, উত্তরপূর্বে মুলুন্দ ও পূর্বে দেওনার বর্জ্যভূমিতে ফেলা হয়। বান্দ্রে ও বরলীর পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা দুটি পৃথক সামুদ্রিক নালার মাধ্যমে নিষ্কাশিত হয়। বান্দ্রে ও বরলীর নালাদুটির দৈর্ঘ্য যথাক্রমে ৩.৪ কিলোমিটার ও ৩.৭ কিলোমিটার। বৃহন্মুম্বই ইলেকট্রিক সাপ্লাই অ্যান্ড ট্রান্সপোর্ট (বিইএসটি) দ্বীপশহরে বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে। অন্যদিকে উপনগর অঞ্চলে এই দায়িত্ব পালন করে রিলায়েন্স এনার্জি, টাটা পাওয়ার ও মহাবিতরণ (মহারাষ্ট্র রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি লিমিটেড)। মুম্বইয়ে উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে শহরের বিদ্যুতের চাহিদা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। মুম্বইয়ের বৃহত্তম টেলিফোন পরিষেবা প্রদাতা সরকারি সংস্থা এমটিএনএল। ২০০০ সাল অবধি এই সংস্থা ফিক্সড লাইন, সেলুলার ফোন ও মোবাইল ওয়ারলেস লোকাল লুপ লাইনে একচেটিয়া ক্ষমতা ভোগ করত। সেলুলার ফোন এখানে ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হয়। এই ক্ষেত্রে প্রধান পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলি হল ভোডাফোন এসার, এয়ারটেল, এমটিএনএল, বিপিএল গোষ্ঠী, রিলায়েন্স কমিউনিকেশন, আইডিয়া সেলুলার ও টাটা ইন্ডিকম। শহরে জিএসএম ও সিডিএমএ উভয় পরিষেবাই সুলভ। এমটিএনএল ও এয়ারটেল শহরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবাও প্রদান করে থাকে। জনপরিসংখ্যান ২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে, মুম্বইয়ের জনসংখ্যা ১১,৯১৪,৩৯৮। ২০০৮ সালের ওয়ার্ল্ড গেজেটিয়ার-এর প্রাককলন অনুসারে এই শহরের জনসংখ্যা ১৩,৬৬২,৮৮৫ এবং মুম্বমুম্বনগরীয় এলাকার জনসংখ্যা ২১,৩৪৭,৪১২। এই শহরের জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২২,০০০ জন। ২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, বৃহত্তর মুম্বই অর্থাৎ বৃহন্মুম্বই পৌরসংস্থার এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় সাক্ষরতার হার ৭৭.৪৫ শতাংশ যা জাতীয় গড় অর্থাৎ ৬৪.৮ শতাংশের চেয়ে বেশি। লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ পুরুষে দ্বীপশহরে ৭৭৪ জন, উপনগরে ৮২৬ এবং সামগ্রিকভাবে ৮১১ জন নারী। জাতীয় লিঙ্গানুপাত প্রতি ১০০০ পুরুষের ৯৩৩ জন নারীর তুলনায় অবশ্য মুম্বইয়ের লিঙ্গানুপাত পরিসংখ্যান পশ্চাদবর্তী। এই নিম্ন লিঙ্গানুপাতের কারণ এই যে, শহরে প্রচুর পুরুষ কাজের সন্ধানে এসে বসতি স্থাপন করেছেন। ২০০৮ সালে মুম্বই শহরের অপরাধের হার ৫.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ওই বছরের হিসেব অনুযায়ী, দোষী সাব্যস্তকরণের হার সারা দেশের মধ্যে মুম্বইতেই সবচেয়ে কম। এই শহরের সাধারণ অপরাধগুলি হল হত্যা, হত্যার চেষ্টা, অপরাধমূলক গণহত্যা, পণপ্রথা জনিত কারণে মৃত্যু, অপহরণ, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও ডাকাতি। মুম্বই শহরের প্রধান ধর্মাবলম্বী গোষ্ঠীগুলি হল হিন্দু (৬৭.৩৯%), মুসলমান (১৮.৫৬%), বৌদ্ধ (৫.২২%), জৈন (৩.৯৯%), খ্রিষ্টান (৩.২২%) ও শিখ (০.৫৮%); পারসি ও ইহুদিরা জনসংখ্যার অবশিষ্টাংশ। মুম্বইয়ের ভাষাগত জনপরিসংখ্যান নিম্নরূপ: মারাঠি (৬০%), গুজরাতি (১৯%), এবং অবশিষ্টাংশ ভারতের অন্যান্য অঞ্চল থেকে আগত। মুম্বইয়ের সবচেয়ে পুরনো মুসলমান সম্প্রদায়গুলি হল দাউদি বোহরা, খোজা ও কোঙ্কণি মুসলমান। স্থানীয় খ্রিষ্টানদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পূর্ব ভারতীয় ক্যাথলিকেরা; ষোড়শ শতাব্দীতে পর্তুগিজেরা এদের ধর্মান্তরিত করেন। শহরে একটি ছোটো বনি ইসরায়েলি ইহুদি সম্প্রদায়ও বাস করেন; তারা সম্ভবত ১৬০০ বছর আগে পারস্য উপসাগর বা ইয়েমেন অঞ্চল থেকে ভারতে এসে বসতি স্থাপন করেন। পারসিরা এসেছিলেন পারস্য থেকে। মুম্বইতে বর্তমানে প্রায় ৮০,০০০ পারসির বাস। মুম্বইয়ের অধিবাসীরা নিজেদের মুম্বইকর বা মুম্বাইট বা বম্বেইট নামে অভিহিত করেন। মুম্ব্বাই ভারতের প্রধান বহুভাষিক শহর। ভারতের প্রধান ভাষাগুলির মধ্যে ১৬টি এই শহরে কথিত হয়ে থাকে। সরকারি ভাষা মারাঠি; অন্যান্য ভাষাগুলি হল হিন্দি, গুজরাতি ও ইংরেজি। উন্নয়নশীল দেশগুলির দ্রুত বর্ধমান শহরগুলিতে যে সমস্যাগুলি দেখা যায়, তার অনেকগুলিই মুম্বইতে বিদ্যমান। ব্যাপক দারিদ্র্য ও বেকারত্ব, অনুন্নত স্বাস্থ্যব্যবস্থা, অনুন্নত জীবনযাত্রা ও শিক্ষার মান এই শহরের মূল সমস্যা। বসবাসের সুবন্দোবস্ত সত্ত্বেও মুম্বইবাসীরা অনেক সময়ই কর্মস্থল থেকে দূরে জনাকীর্ণ ও তুলনামূলকভাবে ব্যয়বহুল আবাসনে বাস করেন। এই কারণে গণ পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমগুলি সর্বদা ভিড়ে আকীর্ণ থাকে এবং যানজট নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কেউ কেউ বাস অথবা ট্রেন স্টেশনের কাছে বসবাস করেন। যদিও উপনগরের বাসিন্দাদের দক্ষিণে প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রে পৌঁছতে অনেক সময় লেগে যায়। এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বস্তি ধারাবি মধ্য মুম্বইতে অবস্থিত; এখানে বসবাস করেন প্রায় ৮০০,০০০ মানুষ। ১৯৯১-২০০১ দশকে মহারাষ্ট্রের বাইরে থেকে মুম্বইতে অভিনিবেশকারীদের সংখ্যা ছিল ১,১২০,০০০ জন; যা মুম্বইয়ের জনসংখ্যার সঙ্গে আরও ৫৪.৮ শতাংশ যোগ করে। ২০০৭ সালে মুম্বইয়ের অপরাধের হার (ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারায় নথিভুক্ত) ১০০,০০০ জনে ১৬২.৯৩ যা জাতীয় গড়ের (১৭৫.১) তুলনায় সামান্য কম হলেও ভারতের দশ লক্ষাধিক জনসংখ্যাযুক্ত শহরগুলির গড় হারের (৩১২.৩) তুলনায় অনেক কম। শহরের প্রধান ও প্রাচীনতম সংশোধনাগারটি হল আর্থার রোড জেল। সংস্কৃতি টিভি অফিস ডিডি সহ্যাদ্রি, কালার্স মারাঠি, স্টার প্রবাহ, জি মারাঠি, জি টকিজ, নিউজ১৮ লোকমত, জয় মহারাষ্ট্র, এবিপি মাঝা, জি ২৪ তাস, সাম টিভি, টিভি৯ মহারাষ্ট্র, সিএনবিসি আওয়াজ, কালার্স টিভি, সনি এন্টারটেইনমেন্ট টেলিভিশন, জি টিভি, স্টার প্লাস, স্টার স্পোর্টস এবং সিএনবিসি আওয়াজ প্রভৃতি টিভি চ্যানেলের অফিস অবস্থিত এই শহরে। গণমাধ্যম মুম্বাই থেকে একাধিক সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়; এখানে একাধিক টেলিভিশন ও রেডিও স্টেশনও অবস্থিত। মুম্বাইয়ের জনপ্রিয় ইংরেজি দৈনিক পত্রিকাগুলি হল টাইমস অফ ইন্ডিয়া, মিড ডে, হিন্দুস্তান টাইমস, ডি এন এ ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস। জনপ্রিয় মারাঠি সংবাদপত্রগুলি হল নবকাল, মহারাষ্ট্র টাইমস, লোকসত্তা, লোকমত ও সকাল। এছাড়া অন্যান্য ভারতীয় ভাষাতেও সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়ে থাকে। এশিয়ার প্রাচীনতম সংবাদপত্র বোম্বাই সমাচার ১৮২২ সাল থেকে মুম্বই শহরে একটানা প্রকাশিত হয়ে আসছে। ১৮৩২ সালে বালশাস্ত্রী জাম্ভেকর মুম্বইতেই প্রথম বোম্বাই দর্পণ নামে একটি মারাঠি সংবাদপত্র চালু করেন। শিক্ষাব্যবস্থা মুম্বইয়ের বিদ্যালয়গুলি হয় "মিউনিসিপ্যাল স্কুল" (বৃহন্মুম্বই পৌরসংস্থা পরিচালিত) অথবা প্রাইভেট স্কুল (অছি অথবা ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত)। প্রাইভেট স্কুলগুলি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য পেয়ে থাকে। বিদ্যালয়গুলির অনুমোদন করেন মহারাষ্ট্র রাজ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ (এমএসবিএসএইচএসই) অথবা সর্বভারতীয় কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট একজামিনেশন (সিআইএসসিই), কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ (সিবিএসই) বা জাতীয় মুক্ত বিদ্যালয় সংস্থা (এনআইওএস)। সাধারণত মারাঠি ও ইংরেজি মাধ্যমে শিক্ষা দান করা হয়ে থাকে। সরকারি স্কুলগুলিতে সুযোগ সুবিধা কম পাওয়া গেলেও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের কাছে এই স্কুলগুলিই একমাত্র ভরসা। ১০+২+৩/৪ পরিকল্পনার অধীনে ছাত্রছাত্রীরা দশ বছরের বিদ্যালয় শিক্ষা পরিসমাপ্ত করে দুই বছরের জন্য জুনিয়র কলেজে ভরতি হয়। সেখানে তারা কলা, বাণিজ্য অথবা বিজ্ঞান বিভাগের মধ্য থেকে যে কোনো একটিকে নির্বাচন করে নেয়। এরপর তারা কোনো নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে সাধারণ ডিগ্রি পাঠক্রমে ভরতি হয়, অথবা আইন, ইঞ্জিনিয়ারিং বা মেডিসিনের যে কোনো একটিতে পেশাদার ডিগ্রি পাঠক্রমে ভরতি হয়। শহরের অধিকাংশ কলেজই মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অনুমোদিত। এই বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক ছাত্রদের সংখ্যার বিচারে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ বিশ্ববিদ্যালয়। মুম্বইতে অবস্থিত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (বোম্বাই), বীরমাতা জিজাবাই টেকনোলজিক্যাল ইনস্টিটিউট (ভিজেআইটি), ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ কেমিক্যাল টেকনোলজি (ইউআইসিটি), ভারতের অগ্রণী ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসএনডিটি ইউমেনস ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি মুম্বইয়ের অন্যান্য স্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া ন্যাশানাল ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং (এনআইটিআইই), যমনালাল বাজাজ ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ (জেবিআইএমএস), এস পি জৈন ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ এবং একাধিক ম্যানেজমেন্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মুম্বইতে অবস্থিত। দেশের প্রাচীনতম আইন ও কমার্স কলেজ যথাক্রমে গভর্নমেন্ট ল কলেজ ও সিডেনহ্যাম কলেজ মুম্বইতেই অবস্থিত। মুম্বইয়ের প্রাচীনতম শিল্পকলা প্রতিষ্ঠানটি হল স্যার জে. জে. স্কুল অফ আর্ট। মুম্বইয়ের দুটি বিশিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠান হল টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর) ও ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র (বিএআরসি)। বিএআরসি ট্রম্বেতে সাইরাস নামে একটি ৪০ মেগাওয়াটের নিউক্লিয়ার রিসার্চ রিঅ্যাক্টর চালায়। খেলাধুলা ক্রিকেট এই শহরের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। খেলার মাঠের অভাবে সর্বত্র এই খেলাটিকে সংক্ষেপিত রূপে খেলা হয়ে থাকে; যা সাধারণত গলি ক্রিকেট নামে পরিচিত। বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই) ও ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) মুম্বইতেই অবস্থিত। রনজি ট্রফিতে শহরের প্রতিনিধিদল মুম্বই ক্রিকেট দল ৩৯টি পুরস্কার জিতেছে, যা কোনো একক দলের ক্ষেত্রে সর্বাধিক সংখ্যক। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ- এ এই শহরের প্রতিনিধিদল যথাক্রমে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। শহরের দুটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম হল ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম ও ব্রাবোর্ন স্টেডিয়াম। শহরে অদ্যাবধি সংঘটিত বৃহত্তম ক্রিকেট অনুষ্ঠানটি হল ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ফাইনাল; যেটি ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়াম-এ অনুষ্ঠিত হয়। শহরের বিশিষ্ট ক্রিকেটারদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সচিন তেন্ডুলকর ও সুনীল গাভাস্কার। ফুটবল এই শহরের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা। শহরের বহু মানুষ ফিফা বিশ্বকাপ ও ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দর্শক। আই-লিগে মুম্বইয়ের প্রতিনিধিত্ব করে তিনটি দল: মুম্বই ফুটবল ক্লাব, মহিন্দ্র ইউনাইটেড, ও এয়ার ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়ান সুপার লিগ- এ মুম্বাই সিটি এফসি নামের একটি দল শহরটিকে প্রতিনিধিত্ব করে। ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফিল্ড হকির জনপ্রিয়তা অবশ্য কমে গেছে। প্রিমিয়ার হকি লিগে (পিএইচএল) অংশগ্রহণকারী মহারাষ্ট্রের একমাত্র দলটি হল মুম্বইয়ের মারাঠা ওয়ারিওরস। প্রতি ফেব্রুয়ারি মাসে মহালক্ষ্মী রেসকোর্সে ডারবি রেসের আয়োজন করা হয়। মুম্বইয়ের টার্ফ ক্লাবে ফেব্রুয়ারিতে ম্যাকডাওয়েলের ডারবিও অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ফরমুলা ওয়ান রেসিং-এর ব্যাপারেও জনগণের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৮ সালে ফোর্স ইন্ডিয়া এফ ওয়ান টিম কারের উদ্বোধন হয় মুম্বইতে। ২০০৪ সালের মার্চে মুম্বই গ্র্যান্ড প্রিক্স এফ ওয়ান পাওয়ারবোট ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে। ২০০৪ সালে ভারতীয় জনগণের মধ্যে খেলাধূলার আগ্রহ বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে বার্ষিক মুম্বই ম্যারাথনের সূচনা ঘটানো হয়। ২০০৬ ও ২০০৭ সালে কিংফিশাস এয়ারলাইনস টেনিস ওপেন নামে এটিপি ওয়ার্ল্ড ট্যুরের একটি ইন্টারন্যাশানাল সিরিজ টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয় মুম্বইতে। আরও দেখুন গ্র্যান্ড হাইয়্যাট মুম্বাই পাদটীকা তথ্যসূত্র অতিরিক্ত পঠন বহিঃসংযোগ Official site of the Municipal Corporation of Greater Mumbai Official City Report ভারতের শহর মহারাষ্ট্র ভারতের পৌর এলাকা ভারতের পৌর নিগম ১৫০৭-এ ভারতে প্রতিষ্ঠিত মহারাষ্ট্রের শহর ভারতের রাজধানী শহর ভারতের মহানগর ভারতের জনবহুল উপকূলীয় স্থান ভারতের বন্দরনগরী আরব সাগরের বন্দর শহর ও নগর সাবেক পর্তুগিজ উপনিবেশ মুম্বই শহর জেলা শহর ও নগর
https://en.wikipedia.org/wiki/Mumbai
Mumbai
Mumbai ( , Marathi: [ˈmumbəi], ISO: Muṁbaī; formerly known as Bombay) is the capital city of the Indian state of Maharashtra. Mumbai is the financial capital and the most populous city of India with an estimated population of 12.5 million (1.25 crore). Mumbai is the centre of the Mumbai Metropolitan Region, the sixth-most populous metropolitan area in the world with a population of over 23 million (2.3 crore). Mumbai lies on the Konkan coast on the west coast of India and has a deep natural harbour. In 2008, Mumbai was named an alpha world city. Mumbai has the highest number of billionaires out of any city in Asia. The seven islands that constitute Mumbai were earlier home to communities of Marathi language-speaking Koli people. For centuries, the seven islands of Bombay were under the control of successive indigenous rulers before being ceded to the Portuguese Empire, and subsequently to the East India Company in 1661, through the dowry of Catherine Braganza when she was married off to Charles II of England. Beginning in 1782, Mumbai was reshaped by the Hornby Vellard project, which undertook reclamation of the area between the seven islands from the Arabian Sea. Along with the construction of major roads and railways, the reclamation project, completed in 1845, transformed Mumbai into a major seaport on the Arabian Sea. Mumbai in the 19th century was characterised by economic and educational development. During the early 20th century it became a strong base for the Indian independence movement. Upon India's independence in 1947 the city was incorporated into Bombay State. In 1960, following the Samyukta Maharashtra Movement, a new state of Maharashtra was created with Mumbai as the capital. Mumbai is the financial, commercial, and entertainment capital of South Asia. Mumbai is often compared to New York, and the city is home to the Bombay Stock Exchange, situated on Dalal Street. It is also one of the world's top ten centres of commerce in terms of global financial flow, generating 6.16% of India's GDP, and accounting for 25% of the nation's industrial output, 70% of maritime trade in India (Mumbai Port Trust, Dharamtar Port and JNPT), and 70% of capital transactions to India's economy. The city houses important financial institutions and the corporate headquarters of numerous Indian companies and multinational corporations. The city is also home to some of India's premier scientific and nuclear institutes and the Hindi and Marathi film industries. Mumbai's business opportunities attract migrants from all over India.
1460
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%20%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%81%E0%A7%8E
অগাস্ট কোঁৎ
অগাস্ট কোঁৎ (; ১৯শে জানুয়ারি, ১৭৯৮ – ৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৫৭) ঊনবিংশ শতাব্দীর একজন ফরাসি দার্শনিক, নীতিশাস্ত্রবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী। যাকে সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি সমাজবিজ্ঞানকে একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সৃষ্টি করতে প্রথমে এই বিজ্ঞানকে সোশ্যাল ফিজিক্স নামকরণ করেন। পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয় সমাজবিজ্ঞান। সমাজবিজ্ঞানে প্রথম বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহারের জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। জীবন ও কর্ম অগাস্ট কোঁৎ যাঁর পিতৃ প্রদত্ত নাম হচ্ছে, ইসিডোর অগাস্ট মেরি ফ্রাঙ্কোস এক্সেভিয়ার কোঁতে (Isidore Auguste Marie Francoise Xavier Comte)। তিনি ১৯ জানুয়ারি ১৭৯৮ সালে ফ্রান্সের মন্টপেলিয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। অসাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিভা তাঁর মধ্যে দেখা যায়। যৌবনে তাঁর আদর্শ ছিল বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন, যাকে তিনি আধুনিক সক্রেটিস বলে অভিহিত করেন। বিখ্যাত ইউটোপিয়াবাদী সেন্ট সাইমনের সেক্রেটারির পদাভিষিক্ত হয়ে তিনি তার চিন্তাধারার সাথে সম্পৃক্ত হন। অনেকে মনে করেন, সেন্ট সাইমনের সাহচর্যে থাকাকালীন সময়ে অর্থাৎ ১৮১৯ থেকে ১৮২৪ সালের মধ্যে কোঁৎ-এর চিন্তাধারা প্রকাশে সেন্ট সাইমনের প্রভাব ছিল। তাদের মধ্যে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটে মতাদর্শগত কারণে। মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সেই অগাস্ট কোঁৎ-এর মধ্যে সমাজ পুনর্গঠনের চিন্তা লক্ষ করা যায়। ১৮২২ সালে তিনি সত্যি সত্যি সমাজ পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় বৈজ্ঞানিক কার্যপদ্ধতির পরিকল্পনা তৈরি করেন। সেজন্য ১৮২৬ সালে তিনি এ পরিকল্পনা কাঠামো তৈরি করেন। ১৮৩০ সাল থেকে ১৮৪২ সালের মধ্যে তাঁর 'PositivePhilosophy' গ্রন্থটির ৬টি খণ্ড প্রকাশিত হয় এবং ১৮৩৯ সালে উক্ত গ্রন্থের ৪র্থ খণ্ডে তিনি Sociology শব্দটি ব্যবহার করেন। ১৮৫৪ সালের মধ্যে তাঁর Positive Polity, Positive Vision এর ছয় খণ্ডই প্রকাশিত হয়। তাঁর দার্শনিক ও সমাজতাত্ত্বিক চিন্তা প্রতিফলিত হয়েছে প্রধানত তিনটি বিখ্যাত গ্রন্থে। এই তিনটি গ্রন্থই ফরাসি ভাষায় প্রকাশিত হয়। এই তিনটি গ্রন্থ হলো: Opuscules de philosophie sociale Course de philosophie positive and Systeme de Politique Positive, এ ছাড়াও তাঁর অন্যান্য গ্রন্থ 'Discourse sur lensemble du positivism', 'Traite Philosophiqued', 'Artronomic Populaire' বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। Opuscules-এ কোঁৎ ইউরোপীয় সমাজ ইতিহাসের প্রেক্ষাপটে তাঁর চিন্তার প্রতিফলন, বর্ণনা ও বিশ্লেষণ দিয়েছেন। 'Cours de Philosophie Positive' গ্রন্থে প্রগতির ধারণার ব্যাপকতর পরিধি রচনা করেন এবং 'The System de politique Positive' গ্রন্থে মানব ঐক্যের দার্শনিক ভিত্তি প্রস্তুত করেছেন। মানব ঐক্যের জন্য কোঁৎ মানবতার ধর্মের কথা বলেছেন। কোঁতের পজিটিভ ভিশন (Positive Vision) শুধু বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ পুনর্গঠন চিন্তাই ছিল না, এটা ছিল একটা ধর্ম। তাঁর চিন্তার গভীরে যে সুপ্ত বাণীটি ছিল তা হলো, সমাজ পুনর্গঠন এমনভাবে করতে হবে যাতে সেখানে বিজ্ঞান সুপ্রতিষ্ঠিত হয়। তাহলে অহংবাদের উপরে মানুষের মধ্যে বিশ্ব কল্যাণবাদ দেখা দিবে এবং সামাজিক শৃঙ্খলার ভিত্তিতে সামাজিক অগ্রগতি হবে। তিনি বিশ্বাস করতেন বিশ্বে নতুন মানবধর্ম প্রতিষ্ঠিত হবে। অগাস্ট কোঁতের জীবন ও চিন্তা-চেতনা ছিল কণ্টকাকীর্ণ এবং অনেক ক্ষেত্রে বিষাদময়। এই বিষাদময় একান্ত ব্যক্তিগত দাম্পত্য জীবন যেমনটা তাকে সীন নদীতে আত্মহত্যার প্রচেষ্টা অতল তলে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিল, তেমনটি আবার 'ক্লথাইল্ড দ্য ভক্স' (Clotilde de Vaux) নামক এক উচ্চবংশীয় ভদ্র মহিলার প্রণয়াসক্ত হয়ে জীবনের কিছুটা সময় চিন্তা ও চেতনায় পুনর্জীবন লাভ তার দীপশিখা জ্বেলে দিতেও সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু তাও ছিল ক্ষণস্থায়ী। ক্লথাইল্ডের মৃত্যুর পর কোঁৎ বোধশক্তির থেকে আবেগকে, মনের থেকে অনুভূতিকে এবং পুরোষোচিত কঠোর বুদ্ধিমত্তার থেকে স্ত্রীসুলভ উষ্ণ আবেগ-অনুরাগের ক্ষমতাকে প্রাধান্য দিতে শুরু করেন। ১৮৪৮ সালে 'পজিটিভিস্ট সোসাইটি' নামক একটি সংগঠন গড়ে তোলেন, যার মূলমন্ত্র ছিল মানব প্রচেষ্টায় এবং বিজ্ঞান সাধনায় মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন। এ দর্শনের সাথে পরজাগতিক কোনকিছুর সম্পর্ক নেই; পজিটিভ রাজনীতির মাধ্যমে গোটা ইউরোপকে নিয়ে কমনওয়েলথ গঠন করা ছিল উদ্দেশ্য। এই সংগঠনটি তাঁর পাঠক্রমের কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। তাঁর জীবনের বিভিন্ন উত্থান-পতন তাকে যেন মানুষের আরো আপন করে তুলেছিল জীবনের সায়াহ্নে এসে। তাঁর দেশ-বিদেশে অসংখ্য অনুরাগী, ভক্ত ও অনুসারী ছিল। ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে ঊনষাট বছর বয়সে ৫ সেপ্টেম্বর ১৮৫৭ সালের সেপ্টেম্বরের পাঁচ তারিখে অগাস্ট কোঁৎ পরলোক গমন করেন। জীবনের এই সীমাবদ্ধ পরিসরে তিনি চিন্তাজগতে মৌলিক অবদান রেখে গেছেন। সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিতি ফরাসি বিপ্লবের পরবর্তী সময়ের মানুষ হিসেবে অগাস্ট কোঁৎ তাঁর কৈশোর এবং যৌবনে সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চরম বিশৃঙ্খলা এবং বিপর্যয় অবলোকন করেন। ফরাসি বিপ্লবের ফলে সামন্তবাদীদের অবসান ঘটে। পূর্বের শ্রেণিবৈষম্যজনিত সমাজকাঠামো কিছুটা বিলুপ্ত হয় বটে; কিন্তু সরকার ও প্রশাসনের ভার অনভিজ্ঞ ব্যক্তিদের উপর অর্পিত হওয়ার ফলে সামাজিক পরিস্থিতির মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে। যার পরিণতিতে সমাজে নৈরাজ্য এবং বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। ফরাসি বিপ্লবোত্তর সমাজের স্থিতিশীলতা ও সংহতি ফিরিয়ে আনার প্রয়াস হিসেবে অগাস্ট কোঁৎ সমাজবিজ্ঞান নামক একটি পৃথক বিজ্ঞানের কথা উল্লেখ করেন এবং সমাজবিজ্ঞানকে একটি স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। তিনি প্রথমে এই বিজ্ঞানকে 'সোশ্যাল ফিজিক্স' (Social Physics) নামকরণ করেন। পরবর্তীকালে এর নামকরণ করা হয় 'সমাজবিজ্ঞান' (Sociology)। অগাস্ট কোঁৎ সমাজবিজ্ঞানকে পদার্থবিদ্যার অনুসরণে মানবসমাজের স্থিতিশীলতার বিষয়কে সোশ্যাল স্ট্যাটিক্স (Social Statics) এবং সমাজের গতিশীলতার বিষয়কে সোশ্যাল ডায়নামিক্স (Social Dynamics) এ দু'ভাগে বিভক্ত করেন। সমাজকাঠামো এবং সমাজকাঠামোর স্থিতি ও ঐক্যের অধ্যয়ন ও অনুসন্ধান হলো সোশ্যাল স্ট্যাটিকস-এর আলোচ্যবিষয়। অপরদিকে, সমাজের পরিবর্তন ও প্রগতির সাথে সম্পর্কযুক্ত বিষয়াদির অধ্যয়ন ও অনুসন্ধান হলো 'সোশ্যাল ডায়নামিক্স' এর বিষয়বস্তু। এ প্রসঙ্গে তিনি সমাজের স্থিতিশীল (Static) এবং গতিশীল (Dynamic) বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করেন। শৃঙ্খলা বলতে সমাজের স্থিতিশীল এবং প্রগতি বলতে সমাজের গতিশীল দিককে বুঝায়। অগাস্ট কোঁতের মতে, সামাজিক স্থিতিশীলতা সমাজের গঠন এবং কাঠামোর সাথে সম্পৃক্ত। অপরদিকে, সামাজিক গতিশীলতা বা চলমানতা মানবসমাজের প্রগতি এবং উন্নতির বিশ্লেষণ করে। তাঁর মতে, সব সমাজেই এ দুটি লক্ষণ দেখা যাবে। কারণ যুগপৎ সমাজ স্থিতিশীল ও গতিশীল। স্থিতিশীলতা বলতে অচল, অনড় অবস্থা বুঝায় না; স্থিতিশীলতা বলতে সুশৃঙ্খল সমাজ বুঝায়। সুশৃঙ্খল সমাজে পরিবর্তন ঘটে নানা কারণে। তবে ধারাবাহিকতা নষ্ট করে দিয়ে নয়, বরং ধারাবাহিকতার সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করে। কোঁৎ সুশৃঙ্খল সমাজের পরিবর্তনকে গতিশীলতা বলেছেন। পরিবর্তনশীল জগতে কী কী কারণে সমাজের গতিশীলতা ত্বরান্বিত বা বিলম্বিত হয় এ বিষয়টির বিশ্লেষণের উপরও তিনি আলোকপাত করেছেন। তাঁর মতে, একদল দার্শনিক সামাজিক শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার উপর অধিক গুরুত্বারোপ করেন। এঁরা রক্ষণশীল ধারণার প্রবক্তা। এ শ্রেণির চিন্তাবিদরা সামাজিক প্রগতি ও গতিশীলতার বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করেন। আবার দার্শনিকদের মধ্যে বিপরীতক্রমে সামাজিক প্রগতি ও সমাজের গতিশীলতার উপর অধিক জোর দিতে গিয়ে সামাজিক শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার বিষয়টিকে অবহেলা করেন। কিন্তু কোঁৎ এর মতে, এ দু'য়ের মধ্যে কোনরকম স্ববিরোধ নেই। তাঁর মতে, সামাজিক শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতার সাথে সামাজিক প্রগতি ও গতিশীলতার সংযোগ সাধন সম্ভব এবং উভয়ের সহাবস্থান একান্ত ভাবে অপরিহার্য। শৃঙ্খলার সাথে সংহতি বজায় রেখে স্থিতিশীল সমাজকে গতিশীল করা যায় এবং এভাবে শৃঙ্খলার সাথে প্রগতির সামঞ্জস্য সাধন সম্ভবপর হয়। তিনি মনে করেন, সুসংগঠিত ও সুসংহত মানবসমাজের স্বার্থে শৃঙ্খলা এবং প্রগতি উভয়ই অপরিহার্য। প্রগতির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, "Progress is the development of order." অর্থাৎ, নিয়ম-শৃঙ্খলার উন্নয়নই হচ্ছে প্রগতি। তাই তিনি মনে করেন, নিয়ম-শৃঙ্খলার উন্নতি হলেই সে সমাজ প্রগতির পথে এগিয়ে যাবে। প্রগতি সম্বন্ধে কোঁতের ধারণা হলো এই যে, বস্তুগত উন্নতির চাইতে অজ্ঞতা ও কুসংস্কার থেকে মানুষের মুক্তি ও তার মধ্যে সামাজিকতাবোধের বেশি প্রয়োজন। প্রগতি মূলত শৃঙ্খলা; স্থিতিশীলতার অর্থে ব্যবহৃত হয়। সামাজিক স্থিতিশীলতা সম্ভব। কেননা মানুষ বুদ্ধিবৃত্তিক ও নৈতিক উন্নতিতে সক্ষম, একমাত্র মানুষই ভালোবাসার দ্বারা চালিত হয়। উন্নতি বলতে ধর্মীয় চেতনা বিকাশ ও অহংবোধের উপর বিশ্বপ্রেমের স্থান পাওয়াকে বুঝায়। সামাজিক উন্নতি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে- এটি চলমান। এ চিন্তার প্রেক্ষাপটে তিনি সমাজের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের যোগসূত্র ক্রমান্বয়ে উন্নতির বিবর্তন হিসেবে দেখিয়েছেন। অগাস্ট কোঁৎ সমাজকে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের যোগসূত্র হিসেবে কতকগুলো বাস্তব পদ্ধতি অনুশীলনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। বিমূর্ত নীতি (Abstract principle) বা অনুমাননির্ভর তত্ত্বের (Speculative theories) পরিবর্তে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি অনুসরণ করে সামাজিক ঘটনাবলি বিশ্লেষণ করার প্রতি তিনি গুরুত্ব দেন। এ অনুশীলনের ভিত্তি হচ্ছে পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ ও তুলনামূলক পর্যালোচনা। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রাসঙ্গিকতা এবং গুরুত্ব সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণ অবহিত ছিলেন। অর্থাৎ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমেই সমাজ সম্পর্কিত বিষয়সমূহের স্বরূপ নির্ণয় করা সম্ভব বলে তিনি মনে করেন। প্রাসঙ্গিকভাবে এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে যে, একদিকে তাঁর পদ্ধতি বিজ্ঞানে প্রগতিশীল দৃষ্টিভঙ্গির যেমন পরিচয় মেলে তেমনি আবার তাঁর দৃষ্টবাদী বিবর্তনবাদ রক্ষণশীল চিন্তাধারা হিসেবে অভিহিত। কোঁৎ প্রদত্ত পদ্ধতি বিজ্ঞানে বিচিত্র প্রবণতা বিদ্যমান থাকায় তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে খণ্ডিত বলা যায় না। দৃষ্টবাদী সমাজবিজ্ঞানী অগাস্ট কোঁৎ দৃষ্টবাদের ব্যাখ্যায় বলেন, পৃথিবীটা বহুবিধ অপরিবর্তনীয় প্রাকৃতিক নিয়ম দ্বারা শৃঙ্খলার কাঠামোয় বিন্যস্ত। মানবসমাজকে পরিবর্তনের অপরিবর্তনীয় সূত্রটি আবিষ্কার করে কিভাবে সমাজকে সুসংগঠিত এবং স্থিতিশীল করে প্রগতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তা ছিল দৃষ্টবাদের মৌল উদ্দেশ্য। আর এ লক্ষ্য অর্জন করতে জ্ঞানের যে শাখার প্রয়োজন, তা হলো সমাজবিজ্ঞান। তিনি বলেন, সমাজবিজ্ঞান হচ্ছে এমন একটি জ্ঞানের শাখা, যার মাধ্যমে যৌক্তিক ধারণা ও বৌদ্ধিক চিন্তাকে কেন্দ্র করে মানবজীবন তথা মানবসমাজের অগ্রগতি সাধনের দিকনির্দেশনা খুঁজে পাওয়া যায়। অগাস্ট কোঁৎ তাঁর যুগ পর্যন্ত জ্ঞানের সমগ্র বিকাশের একটা ইতিহাস তৈরির চেষ্টা করেন। এ প্রচেষ্টায় ইতিহাসের যে ব্যাখ্যা তিনি উপস্থাপন করেন সে ব্যাখ্যাকে দৃষ্টবাদ বলে আখ্যায়িত করেন। অগাস্ট কোঁৎ মনে করেন যে, দৃষ্টবাদ বিজ্ঞানসম্মত। কারণ পৃথিবী এক অমোঘ অপরিবর্তিত প্রাকৃতিক নিয়ম-শৃঙ্খলার দ্বারা পরিচালিত এবং এসব নিয়মকে কেবল বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে জানা সম্ভব। এভাবেই দৃষ্টবাদ প্রয়োজনীয় জ্ঞানের সাথে সম্পৃক্ত। অগাস্ট কোঁতের ধারণায় দৃষ্টবাদ কেবল সেসব ঘটনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ যেসব ঘটনায় পরিণাম দর্শন সম্ভব। কোঁতের দৃষ্টবাদের ধারণায় বিজ্ঞানসম্মত প্রায়োগিক ও নৈতিক দিক যেমনটি রয়েছে ঠিক তেমনটি রয়েছে বৃদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত মানবসমাজের উন্নতি সাধনার দিকনির্দেশনা। সেজন্য তিনি মানুষ ও সমাজ সম্পর্কে ধর্মতাত্ত্বিক ও অধিবিদ্যাসংক্রান্ত ধ্যান-ধারণা বর্জন করেছিলেন। তিনি বলেন, সমাজবিজ্ঞানে অবৈজ্ঞানিক যুক্তি, ধ্যান-ধারণা ও সিদ্ধান্তের স্থান ও গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাঁর মতে, বিপ্লব বা বিদ্রোহ চরম সংকটকালীন সমাজের পুনর্গঠনে মোটেই সাহায্য করে না বা মানবমনের ক্ষোভ প্রশমিত করার সমাধান দেয় না। সমাজ পুনর্গঠন সম্ভব শুধু বিভিন্ন বিজ্ঞানের সমন্বয় এবং সংশ্লেষণের মাধ্যমে এবং দৃষ্টবাদী রাজনীতি সৃষ্টির মাধ্যমে। যদিও কোঁৎ এর এ দৃষ্টবাদকে অনেকে সমালোচনা করে বলেছেন, তিনি দৃষ্টবাদ এর ধারণায় শাশ্বত সত্যকে আপেক্ষিক সত্যের সাথে সম্পৃক্ত করেছেন। তা সত্ত্বেও কোঁতের দৃষ্টবাদকে সমাজ পুনর্গঠনের হাতিয়ার হিসেবে মনে করা যায়। কারণ সমাজ পুনর্গঠন করার নৈতিক দৃষ্টিকোণ 'অন্যের জন্য জীবন' এ মূল বক্তব্য তুলে ধরে। তিনি দৃষ্টবাদী বিজ্ঞানের বিশেষ করে সামাজিক বিজ্ঞানের তাত্ত্বিক এবং প্রবক্তা ছিলেন। এই বিজ্ঞানকেই তিনি সমাজবিজ্ঞান নামকরণ করেন। ত্রয়োস্তরের সূত্র: অগাস্ট কোঁতের সমাজতাত্ত্বিক ধারণা বিকাশে অন্যতম অবদান হচ্ছে ত্রয়োস্তরের সূত্র। এ সূত্রে মানবজ্ঞানের ক্রমোন্নতি এবং সমাজের উন্নতি ও ক্রমবিকাশে বিবর্তনিক ব্যাখ্যা করা হয়। এ স্তরের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে মানুষের মৌলিক ধারণা তিনটি বৈবর্তনিক পর্যায় অতিক্রান্ত করেছে, যথা: ধর্মীয় যুগের স্তর, অধিবিদ্যা সম্বন্ধীয় স্তর ও দৃষ্টবাদ। অর্থাৎ অগাস্ট কোঁৎ মনে করেন যে, মানুষের জ্ঞান ও বুদ্ধি প্রথমে ধর্মীয় বা থিউলজিক্যাল ধারণা থেকে উৎপন্ন হয়ে অধিবিদ্যাগত বা মেটাফিজিক্যাল হয়ে দৃষ্টবাদে বা পজিটিভিজমে আসে। সে অনুযায়ী তিনি মনে করেন, সমাজবিজ্ঞানের পরিধি এবং এর বিষয় সন্ধানের পদ্ধতি হবে নিরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ ও সামঞ্জস্যের মাধ্যমে। ধর্মতত্ত্ব সম্বন্ধীয় স্তর থেকে অধিবিদ্যা সম্বন্ধীয় স্তর হয়ে দৃষ্টবাদে আসতে যে ধ্যান-ধারণা অতিক্রম করতে হয় তা সম্মিলিতভাবে জ্ঞানের উৎস হিসেবে কাজ করে। অগাস্ট কোঁতের মতে, মানুষের চিন্তাধারার পরিবর্তনের সাথে সাথে অনিবার্যভাবে সমস্ত সমাজই এই তিনটি পর্যায়ের ভিতর দিয়ে অভিব্যক্তি লাভ করে। তাঁর মতে, প্রথম দিকে মানুষ সকল ঘটনাবলির উৎস ঐশ্বরিক শক্তিতে আরোপ করতো। প্রথমত, অতিপ্রাকৃত শক্তিতে বিশ্বাস; দ্বিতীয়ত, বহু দেব-দেবীর অস্তিত্ব স্বীকার এবং পরিশেষে একেশ্বরবাদের বিশ্বাস গড়ে উঠে। এরপর তাদের সকল উৎসের ঐশ্বরিক শক্তির ধারণা অধিবিদ্যাগত চিন্তায় রূপান্তরিত হয়। অর্থাৎ বিমূর্ত নীতি এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা সমাজ ও সামাজিক ঘটনাবলি নিয়ন্ত্রিত হয়, এই ধারণা প্রাধান্য পায়। দৃষ্টবাদী স্তরে যুক্তি এবং পর্যবেক্ষণ হচ্ছে জ্ঞানের উৎস। কোঁতের মতে, এ পর্যায়ে সামাজিক ঘটনাবলিকে বিজয়গত উপায়ে বিশ্লেষণ করার উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। যুক্তির ভিত্তিতে সবকিছু যাচাই করা দৃষ্টবাদ চিন্তার বৈশিষ্ট্য। সেজন্য অগাস্ট কোঁৎ মনে করেন যে, এ ত্রয়োস্তরের মধ্য দিয়ে চিন্তার পরিবর্তন সমাজব্যবস্থায় প্রতিফলিত হয়। কোঁৎ মনে করেন যে, দৈবশক্তির প্রাধান্য মেনে নেয়ার অর্থই হলো সবকিছু সৃষ্টিকর্তার অনুগ্রহনির্ভর বলে স্বীকার করা। এরূপ মনোভাব সামরিক মেজাজ বিশিষ্ট রাজতন্ত্রের সৃষ্টির সহায়ক এবং মূলত এ স্তরে সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠার সাথে সাথে পুরোহিতদের প্রাধান্য গড়ে উঠে। এরপর প্রকৃতিপ্রদত্ত অধিকার, প্রাকৃতিক আইন, মানুষের কাল্পনিক ও বস্তুনিরপেক্ষ শক্তিসমূহে বিশ্বাস প্রভৃতি ধারণার সৃষ্টি হয়। এরূপ মনোভাবের ফলে সুসংগঠিত এবং আইনসম্মত শাসনব্যবস্থা, সামরিক মনোভাবসম্পন্ন সামন্ত সমাজকাঠামো ও রাজতন্ত্রভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠে। এ পর্যায়কে কোঁৎ আইনভিত্তিক ও আনুষ্ঠানিক সমাজ (Legalistic and formal society) বলে আখ্যায়িত করেন এবং তৃতীয় স্তরে দৃষ্টবাদমূলক চিন্তার প্রভাবে আধুনিক শিল্পযুগের সূচনা হয়। এ সময় দৃষ্টবাদী (Positivist) চিন্তাধারার বিকাশ ও বিস্তার ঘটে। এ স্তরে বিজ্ঞানসম্মত চিন্তাধারা বিকশিত হয়ে শিল্প যুগের সূচনা ঘটে এবং দৃষ্টবাদী মানবসভ্যতার মূলভিত্তি হলো এ শিল্প সভ্যতা। শিল্পনির্ভর সমাজে দৃষ্টবাদী নীতির প্রয়োগ পরিলক্ষিত হয়। তার ফলে সমাজে শৃঙ্খলা ও প্রগতির মধ্যে সমন্বয় সাধিত হয়। মানব ঐক্যের প্রবক্তা অগাস্ট কোঁৎ মানব ঐক্যের প্রবক্তা। তাঁর 'The System de Politique Positive' শীর্ষক শেষ গ্রন্থে মানব ঐক্যের দার্শনিক ভিত্তি প্রস্তুত করেছেন। কোঁৎ মনে করেন, যেভাবে ধর্মীয় চিন্তা-ভাবনা অতীত সমাজব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে তেমনি আধুনিক সমাজব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করবে বৈজ্ঞানিক ধ্যান-ধারণা। কোঁৎ জীবন সায়াহ্নে এসে 'পজিটিভিজমকে' মানবতার ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। মানবতার ধর্মের কথা বলতে গিয়ে কোঁৎ যে ধারণাটির উপর জোর দিয়েছেন তা হলো 'মানব ঐক্য'। তাঁর মতে, মানবসমাজের বিবর্তনের দৃষ্টবাদী পর্যায়ে মানবতার ধর্মের সৃষ্টি মানব ঐক্য সম্পাদনে সফল হবে। এ প্রসঙ্গে রেমন্ড অ্যারন বলেন, "I have said, Comte is the sociologist of human unity and one of the possible if not inevitable, results of this sociology of human unity is the religion of human unity." (Raymond Aron : 1987 : 109)। কোঁৎ বলেন, একমাত্র ঐক্যের অভাবে মানবিক মূল্যবোধ নেই এবং মানবিক মূল্যবোধের অভাবে মানুষের মধ্যে ভালোবাসা নেই। আর তাই তিনি হারিয়ে যাওয়া ঐক্য ফিরিয়ে আনার জন্য একটি নির্দিষ্ট ধর্মের কথা বলেছেন। তা হলো 'মানবতার ধর্ম' (Religion of human unity)। মানবসমাজের নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা দূর করা এবং সামাজিক পুনর্গঠনকে সুনিশ্চিত করাই হলো কোঁতের সামাজিক চিন্তা- ভাবনার মূল লক্ষ্য। কোঁৎ-এর এই নতুন ধর্মে ঈশ্বরের পরিবর্তে মানবতাকে স্থান দিয়েছেন। অর্থাৎ এ ধর্মে ঈশ্বরের প্রশংসা না করে মানবতা ও সরকারি সেবকদের প্রশংসা করতে হবে। এখানে যারা পুরোহিতের দায়িত্বে থাকবে তারা বিজ্ঞানের সব শাখায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করবে এবং বৈজ্ঞানিকদের বুদ্ধিবৃত্তিক স্বার্থগুলো সমাজের কল্যাণে ব্যয়িত হবে। এ কারণে কোঁৎ-এর প্রত্যেক পুরোহিত হবে একজন সমাজবিজ্ঞানী। কোঁতের বিশ্বজনীন ভালোবাসা ও মানবতার ধর্ম তাঁর কর্মজীবন ও চিন্তাজগতে চমক সৃষ্টি করলেও আধুনিক সমাজতাত্ত্বিকরা অবশ্য নীতি ও নৈতিকতার সমাজবিজ্ঞান রচনার প্রয়াস ত্যাগ করেছেন। আধুনিক সমাজতাত্ত্বিকগণ মনে করেন, কোঁৎ এর মানবতার ধর্ম সমাজবিজ্ঞানের বিষয়গুলোকে ধর্ম বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন। ফলে এর মাধ্যমে যুক্তির সাথে আবেগের সমন্বয় ঘটেছে। মূল্যায়ন সমাজতাত্ত্বিক চিন্তাধারার ক্রমবিকাশে কোঁৎ এর মূল্যায়ন করার সময় তার চিন্তার কয়েকটি বিষয়ের উল্লেখ করা হলো: প্রথমত, অগাস্ট কোঁৎ 'সমাজবিজ্ঞান' শব্দটির প্রবর্তক। সমাজবিজ্ঞান শব্দটি ব্যবহার করে সমাজবিজ্ঞানকে 'সামাজিক বিজ্ঞানের রানী' হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনি সমাজবিজ্ঞানের আলোচনায় সমাজকে একটা গঠনতন্ত্র হিসেবে ভাবা এবং সমাজের অংশসমূহকে এ প্রক্রিয়ায় পরস্পর নির্ভরশীল অঙ্গ বলে গণ্য করা তাঁর মৌলিক চিন্তার সাক্ষর বহন করে। দ্বিতীয়ত, তিনি সমাজবিজ্ঞানকে সোশ্যাল স্ট্যাটিকস ও সোশ্যাল ডায়নামিকস এ দু'ভাবে বিভক্ত করার মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন যে, সমাজকে যুগপৎ স্থিতিশীল এবং গতিশীল বলে ভাবা যায়। তৃতীয়ত, ইউটোপীয় সমাজচিন্তাবিদ সাঁ সিমো এর প্রভাবে সমাজ বিকাশের তিনস্তরের সূত্র অনুযায়ী মানুষের ধারণা এবং জ্ঞানের প্রতিটি শাখা বিকাশের একটা ইতিহাস তৈরির প্রচেষ্টা সমাজতাত্ত্বিক আলোচনার ক্রমবিকাশে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। চতুর্থত, বিমূর্ত নীতি (Abstract principles) বা অনুমাননির্ভর তত্ত্বের (Speculative theories) পরিবর্তে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি প্রয়োগ করে সামাজিক ঘটনাবলিকে বিশ্লেষণ করার উপর গুরুত্ব দেন। পর্যবেক্ষণ (Observation), পরীক্ষা- নিরীক্ষা (Experimentation) এবং তুলনামূলক বিচার (Comparison) সমাজবিজ্ঞানের এই তিনটি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রাসঙ্গিকতা এবং গুরুত্ব সম্বন্ধে তিনি সম্পূর্ণ অবগত ছিলেন। ফলে সমাজবিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। পঞ্চমত, অগাস্ট কোঁৎ যদিও বৌদ্ধিক উৎকর্ষের ক্রমবিকাশে তাঁর যুক্তিসিদ্ধ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির উপর জোর দিয়েছিলেন কিন্তু তিনি মূলত তাঁর দার্শনিক মতবাদের দ্বারা পরিচালিত হয়েছিলেন। তাঁর কল্পিত সমাজব্যবস্থায় ভালো-মন্দ যাই হোক না কেন সবকিছু বিনা তর্কে না মেনে গত্যান্তর নেই। কারণ যে নিয়মের দ্বারা সমাজের পর্যায়ক্রমিক অভিব্যক্তি ঘটে তা অমোঘ মানুষের নিয়ন্ত্রণাতীত। সুতরাং কোঁৎ এর নিকট স্বাধীনতা, অধিকার, সাম্য, জনগণের সার্বভৌমত্ব প্রভৃতি আদর্শ এবং নীতি নিরর্থক ও অপ্রাসঙ্গিক। (পরিমল ভূষণ কর: ১৯৯২ ৪৩) অনেকে কোঁৎ এর দৃষ্টবাদের সমালোচনা করেছেন, তা সত্ত্বেও কোঁতের দৃষ্টবাদের ধারণায় বিজ্ঞানসম্মত প্রায়োগিক ও নৈতিক দিক যেমনটি রয়েছে ঠিক তেমনি রয়েছে বুদ্ধিবৃত্তি সংক্রান্ত মানবসমাজের উন্নতি সাধনের দিকনির্দেশনা। পরিশেষে বলা যায়, কোঁৎ-এর সমাজতাত্ত্বিক চিন্তা সমাজ বিশ্লেষণে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারতা ঘটিয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর দৃষ্টবাদী দর্শনের প্রতি বুদ্ধিজীবী মহলের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। বিশেষকরে অনেক নেতৃস্থানীয় প্রকৃতি বিজ্ঞানী নিজেদের দৃষ্টবাদী বলে একই ধারণার দাবি করতে থাকেন। এছাড়া আধুনিক বুর্জোয়া সমাজবিজ্ঞানীগণ অগাস্ট কোঁতের অধিকাংশ ধ্যান-ধারণার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন, যার আলোচনা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Auguste Comte: Stanford Encyclopaedia of Philosophy Review materials for studying Auguste Comte J.H. Bridges, The Seven New Thoughts of the Positive Polity 1915 Auguste Comte quotes ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ১৭৯৮-এ জন্ম ১৮৫৭-এ মৃত্যু বস্তুবাদী সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক ১৯শ শতাব্দীর ফরাসি গণিতবিদ ধর্মের সমালোচক সংস্কৃতির দার্শনিক অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক সামাজিক দার্শনিক মোঁপ্যলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
https://en.wikipedia.org/wiki/Auguste_Comte
Auguste Comte
Isidore Auguste Marie François Xavier Comte (French: [oˈɡyst kɔ̃t] ; 19 January 1798 – 30 September 1857) was a French philosopher, mathematician and writer who formulated the doctrine of positivism. He is often regarded as the first philosopher of science in the modern sense of the term. Comte's ideas were also fundamental to the development of sociology, with him inventing the very term and treating the discipline as the crowning achievement of the sciences. Influenced by Henri de Saint-Simon, Comte's work attempted to remedy the social disorder caused by the French Revolution, which he believed indicated imminent transition to a new form of society. He sought to establish a new social doctrine based on science, which he labelled positivism. He had a major impact on 19th-century thought, influencing the work of social thinkers such as John Stuart Mill and George Eliot. His concept of Sociologie and social evolutionism set the tone for early social theorists and anthropologists such as Harriet Martineau and Herbert Spencer, evolving into modern academic sociology presented by Émile Durkheim as practical and objective social research. Comte's social theories culminated in his "Religion of Humanity", which presaged the development of non-theistic religious humanist and secular humanist organisations in the 19th century. He may also have coined the word altruisme (altruism).
1461
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE
সমাজবিজ্ঞানীদের তালিকা
সমাজবিজ্ঞানী তালিকা নিবন্ধে প্রথিতযশা সমাজবিজ্ঞানী এবং সমাজবিজ্ঞানে অবদান রেখেছেন এমন ব্যক্তিত্বের তালিকা অন্তর্ভুক্ত হল। A এন্ড্রু এ্যাবট্ (Andrew Abbott), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী ন্যান্সি এ্যামারম্যান (Nancy Ammerman), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী জেইন এ্যাডামস (Jane Addams (1860-1935), মার্কিন সমাজকর্মী ও সমাজ সংস্কারক থিওডোর এ্যাডোর্নো (Theodor Adorno (1903-1969), জার্মান সাংস্কৃতিক সমাজবিজ্ঞানী জেফরী সি. আলেক্সজেন্ডার (Jeffrey C. Alexander), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী লুইস অলথুসের (Louis Althusser (1918-1990), আলজেরিয়ান-ফরাসি দার্শনিক ও সমাজবিজ্ঞানী মার্গারেট আর্চার (Margaret Archer), ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী হানা এ্যারেন্ডট (Hannah Arendt (1906-1975), জার্মান রাজনৈতিক তাত্ত্বিক রেমন্ড এ্যারন (Raymond Aron (1905-1983), ফরাসি দার্শনিক ও সমাজবিজ্ঞানী জোহান এ্যাসপ্লান্ড (Johan Asplund (জন্ম. 1937), সুইডিশ সমাজবিজ্ঞানী সারাহ এ্যালের্ড (Sarah Allred), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী B আর্ল ব্যাবী (Earl Babbie), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট ব্যালখ (Robert Balch), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী এইলীন বার্কার (Eileen Barker), ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী ব্যারী বার্নেস (Barry Barnes), ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী গ্রেগরী বেইটসন (Gregory Bateson 1904-1980), ইংলিশ / এ্যামেরিকান সাইবারনেটিক্যান জ্যাঁ বোদলেয়ার (Jean Baudrillard (1929-2007), ফরাসি সাংস্কৃতিক তাত্ত্বিক জিগমুন্ড ব্যম্যান (Zygmunt Bauman (b. 1925), পোলিশ / ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী পিটার বিয়ারম্যান (Peter Bearman (b. 1956), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী ইউলরিখ বেক (Ulrich Beck (b. 1944), জার্মান সমাজবিজ্ঞানী হাওয়ার্ড এস. বেকার (Howard S. Becker (b. 1928), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী ড্যানিয়েল বেল (Daniel Bell (b. 1919), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট এন. বেলাহ্ (Robert N. Bellah), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী ওয়াল্টার বেনজামিন (Walter Benjamin (1892-1940), জার্মান সাংস্কৃতিক তাত্ত্বিক ও সমাজবিজ্ঞানী জোসেফ বার্জার (Joseph Berger), মার্কিন তাত্ত্বিক সমাজবিজ্ঞানী পিটার এল. বার্জার (Peter L. Berger (b. 1929), অস্ট্রীয়-মার্কিন তাত্ত্বিক সমাজবিজ্ঞানী হেনরী বার্গসন (Henri Bergson (1859-1941), ফরাসি দার্শনিক পিটার ব্লাউ (Peter Blau (1918-2002), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী ডেভিড ব্লোর (David Bloor), ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী হার্বার্ট ব্লুমার (Herbert Blumer (1900-1987), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী লাক বোল্টানস্কি (Luc Boltanski) ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী ফিলিপ বোনাসিচ (Phillip Bonacich), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী স্কট বূরম্যান (Scott Boorman (b. 1949), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী টমাস বটোমোর (Thomas Bottomore (1920-1992), ব্রিটিশ সমাজবিজ্ঞানী পিয়েরে বোর্দিও (Pierre Bourdieu (1930-2002), ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী রোনাল্ড ব্রেইজার (Ronald Breiger), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী ডেভিড জি. ব্রুমলী (David G. Bromley), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী মাইকেল বুরাওউ (Michael Burawoy), মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী আর্নেষ্ট বার্জেস (Ernest Burgess (1886-1966), ক্যানাডিয়ান সমাজবিজ্ঞানী যুডিথ বাটলার (Judith Butler (b. 1956), মার্কিন সামাজিক লিঙ্গ তাত্ত্বিক কার্টার বাটস্ (Carter Butts), মার্কিন গাণিতিক সমাজবিজ্ঞানী M রবার্ট কিং মের্টন N নাজমুল করিম, এ কে ( Najmul Karim, A K), বাংলাদেশী সমাজবিজ্ঞানী সমাজবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞানী
https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_sociologists
List of sociologists
This list of sociologists includes people who have made notable contributions to sociological theory or to research in one or more areas of sociology.
1462
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%20%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%82%20%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%A8
রবার্ট কিং মের্টন
রবার্ট কিং মের্টন (জুলাই ৪, ১৯১০ – ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০০৩) মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের বেশিরভাগ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করে কাটিয়েছিলেন, যেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পদ লাভ করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে তিনি এই ক্ষেত্রে অবদানের জন্য এবং ''বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সমাজবিজ্ঞান'' প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় বিজ্ঞান পদক লাভ করেন। তিনি আধুনিক সমাজবিজ্ঞানের একজন প্রতিষ্ঠাতা জনক এবং অপরাধ শাস্ত্রের প্রধান অবদানকারী হিসাবে বিবেচিত হন। আরও দেখুন ঐতিহাসিক পুনরাবৃত্তি একাধিক আবিষ্কারের তালিকা একাধিক আবিষ্কার বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সমাজবিজ্ঞান স্ট্রেন তত্ত্ব (সমাজবিজ্ঞান) ট্যালকোট পার্সনস তথ্যসূত্র ১৯১০-এ জন্ম ২০০৩-এ মৃত্যু মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী রবার্ট কে মের্টন রুশ ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রয়েল সুয়েডীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য ন্যাশনাল মেডেল অফ সাইন্স বিজয়ী
https://en.wikipedia.org/wiki/Robert_K._Merton
Robert K. Merton
Robert King Merton (born Meyer Robert Schkolnick; July 4, 1910 – February 25, 2003) was an American sociologist who is considered a founding father of modern sociology, and a major contributor to the subfield of criminology. He served as the 47th president of the American Sociological Association. He spent most of his career teaching at Columbia University, where he attained the rank of University Professor. In 1994 he was awarded the National Medal of Science for his contributions to the field and for having founded the sociology of science. Merton's contribution to sociology falls into three areas: (1) sociology of science; (2) sociology of crime and deviance; (3) sociological theory. He developed notable concepts, such as "unintended consequences", the "reference group", and "role strain", but is perhaps best known for the terms "role model" and "self-fulfilling prophecy". The concept of self-fulfilling prophecy, which is a central element in modern sociological, political, and economic theory, is one type of process through which a belief or expectation affects the outcome of a situation or the way a person or group will behave. More specifically, as Merton defined, "the self-fulfilling prophecy is, in the beginning, a false definition of the situation evoking a new behavior, which makes the originally false conception come true". Merton's concept of the "role model" first appeared in a study on the socialization of medical students at Columbia University. The term grew from his theory of the reference group, the group to which individuals compare themselves but to which they do not necessarily belong. Social roles were central to Merton's theory of social groups. Merton emphasized that, rather than a person assuming just one role and one status, they have a status set in the social structure that has, attached to it, a whole set of expected behaviors.
1464
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
গণতন্ত্র
গণতন্ত্র বলতে কোনও জাতিরাষ্ট্রের (অথবা কোনোও সংগঠনের) এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় যেখানে নীতিনির্ধারণ বা সরকারি প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিক বা সদস্যের সমান ভোটাধিকার থাকে। ইংরেজি 'Democracy' শব্দটি গ্রিক শব্দ Demo Kratia থেকে উদ্ভূত হয়েছে যা গ্রিক শব্দ 'Demos' এবং 'Kratia' শব্দ দুটির সমন্বয়ে সৃষ্ট। 'Demos'শব্দের অর্থ হল 'জনগন' এবং 'Kratia'শব্দের অর্থ হল 'শাসন'। গণতন্ত্রে আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন ও তৈরীর ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের অংশগ্রহণের সমান সু্যোগ রয়েছে, যা সরাসরি বা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়ে থাকে। "গণতন্ত্র" পরিভাষাটি সাধারণভাবে একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হলেও অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠনের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক ইউনিয়ন, রাষ্ট্র-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। ব্যুৎপত্তি বাংলা "গণতন্ত্র" পরিভাষাটি ইংরেজি ডেমোক্রেসি (Democracy) থেকে এসেছে। এই ইংরেজি শব্দটি আবার এসেছে গ্রিক শব্দ (দেমোক্রাতিয়া) থেকে, যার অর্থ "জনগণের শাসন" শব্দটির দুইটি মূল হচ্ছে δῆμος (দেমোস) "জনগণ" ও κράτος (ক্রাতোস) "ক্ষমতা" থেকে। খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতকে অ্যাথেন্স ও অন্যান্য গ্রিক নগররাষ্ট্রে বিদ্যমান রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে বোঝাতে শব্দটির প্রথম ব্যবহার হয়। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে ক্লিসথেনিসের নতুন ধরনের সরকার চালু হয় এবং সেই সঙ্গে বিশ্বের প্রথম গণতন্ত্র সৃষ্টি হয় গ্রিসের ছোট একটি শহর-রাষ্ট্র এথেন্সে। এই শহর-রাষ্ট্রটি ছিলো এথেন্স শহর এবং তার আশপাশের গ্রামাঞ্চল নিয়ে গঠিত। রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন উপজাতির মধ্য থেকে নেতাদের বেছে নেয়ার যে সনাতনী রীতি চালু ছিলো, ক্লিসথেনিস তার অবসান ঘটান। তার বদলে তিনি মানুষের নতুন জোট তৈরি করেন এবং প্রতিটি জোটকে ডিময় (Demoi) অথবা প্যারিশ (Parish)- এ বিভক্ত করেন। প্রতিটি মুক্ত নাগরিককে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নেয়ার সময়ে শহর-রাষ্ট্রের সরকার পরিচালনায় সরাসরি অংশগ্রহণের অধিকার দেয়া হয়। সাধারণভাবে এই ঘটনাকেই গণতন্ত্রের প্রথম উন্মেষরূপে গণ্য করা হয় যার পরে নাম হয় ডেমক্রেশিয়া (Democratia) যার অর্থ হচ্ছে জনগণের (demos) শক্তি (Kratos)। সংজ্ঞা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উপায়ে গণতন্ত্রকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৪২২ সালে ক্লিয়ান ডেমোক্রেসিকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এভাবে- That shall be the democratic which shall be the people, for the people. অনেক পরে আব্রাহাম লিঙ্কন তার এক ভাসনের মধ্যে ঠিক এমনই এক জনপ্রিয় সংজ্ঞা প্রদান করেন। আব্রাহাম লিংকন (Abraham Lincoln) November 19, 1863 তারিখে তার দেয়া Pennsylvania state এর গেটিসবার্গ বক্তৃতাতে (Gettysburg Address) গণতন্ত্রের সংজ্ঞা দিয়েছিলেন এভাবে 'Government of the people, by the people, for the people.' যার অর্থ হলো-গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের অংশগ্রহণ, জনগণের দ্বারা ও জনগণের জন্য। অধ্যাপক গেটেলের মতে,' যে শাসন ব্যবস্থায় জনগণ সার্বভৌম ক্ষমতার প্রয়োগে অংশ নেওয়ার অধিকারী তাই গণতন্ত্র। আরও দেখুন আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস তথ্যসূত্র গণতন্ত্র রাজনীতি রাজনৈতিক আদর্শ মতাদর্শ নির্বাচন গ্রিক উদ্ভাবন পশ্চিমা সংস্কৃতি গণতন্ত্রের ধরন
https://en.wikipedia.org/wiki/Democracy
Democracy
Democracy (from Ancient Greek: δημοκρατία, romanized: dēmokratía, dēmos 'people' and kratos 'rule') is a system of government in which state power is vested in the people or the general population of a state. Under a minimalist definition of democracy, rulers are elected through competitive elections while more expansive definitions link democracy to guarantees of civil liberties and human rights in addition to competitive elections. In a direct democracy, the people have the direct authority to deliberate and decide legislation. In a representative democracy, the people choose governing officials through elections to do so. Who is considered part of "the people" and how authority is shared among or delegated by the people has changed over time and at different rates in different countries. Features of democracy oftentimes include freedom of assembly, association, personal property, freedom of religion and speech, citizenship, consent of the governed, voting rights, freedom from unwarranted governmental deprivation of the right to life and liberty, and minority rights. The notion of democracy has evolved considerably over time. Throughout history, one can find evidence of direct democracy, in which communities make decisions through popular assembly. Today, the dominant form of democracy is representative democracy, where citizens elect government officials to govern on their behalf such as in a parliamentary or presidential democracy. Most democracies apply in most cases majority rule, but in some cases plurality rule, supermajority rule (e.g. constitution) or consensus rule (e.g. Switzerland) are applied. They serve the crucial purpose of inclusiveness and broader legitimacy on sensitive issues—counterbalancing majoritarianism—and therefore mostly take precedence on a constitutional level. In the common variant of liberal democracy, the powers of the majority are exercised within the framework of a representative democracy, but a constitution and supreme court limit the majority and protect the minority—usually through securing the enjoyment by all of certain individual rights, such as freedom of speech or freedom of association. The term appeared in the 5th century BC in Greek city-states, notably Classical Athens, to mean "rule of the people", in contrast to aristocracy (ἀριστοκρατία, aristokratía), meaning "rule of an elite". Western democracy, as distinct from that which existed in antiquity, is generally considered to have originated in city-states such as those in Classical Athens and the Roman Republic, where various degrees of enfranchisement of the free male population were observed. In virtually all democratic governments throughout ancient and modern history, democratic citizenship was initially restricted to an elite class, which was later extended to all adult citizens. In most modern democracies, this was achieved through the suffrage movements of the 19th and 20th centuries. Democracy contrasts with forms of government where power is not vested in the general population of a state, such as authoritarian systems. World public opinion strongly favors democratic systems of government. According to the V-Dem Democracy indices and The Economist Democracy Index, less than half the world's population lives in a democracy as of 2022.
1466
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%A1%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%96%20%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A7%87
ফ্রিডরিখ নিচে
ফ্রিডরিখ ভিলহেল্ম নিচে বা নিৎশে (, বা ; ১৫ই অক্টোবর ১৮৪৪ – ২৫শে আগস্ট ১৯০০) একজন জার্মান দার্শনিক, কবি ও ভাষাতত্ত্ববিদ ছিলেন। নিচে তার পেশাজীবন শুরু করেন একজন ভাষাতাত্ত্বিক হিসেবে। ১৮৬৯ সালে, ২৪ বছর বয়সে তিনি ব্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষাতাত্ত্বিক হিসেবে যোগ দেন। কিন্তু ১৮৭৯ সালে স্বাস্হ্যগত কারণে পদত্যাগ করেন যা তাকে জীবনের অধিকাংশ সময় পীড়িত রেখেছিল। ১৮৮৯ সালে, ৪৫ বছর বয়সে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তিনি ১৯০০ সালে মৃত্যুবরণ করেন। নিচে-র বিখ্যাত "ঈশ্বর মৃত এবং আমরাই তাকে হত্যা করেছি।" দর্শন ছিলো ওই আমলের ধর্মীয় অনুশাসনের বিরুদ্ধে একটি বড় প্রতিবাদ। তিনি পশ্চিমা সনাতন ধর্মীয় বিশ্বাস কে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। সাম্রাজ্যবাদ বিস্তারে ধর্মকে যখন ব্যবহার করা হচ্ছিল, যখন আফ্রিকার "কালো মানুষকে" 'শিক্ষিত' করার 'মহান দায়িত্ব' নিয়ে ধর্ম প্রচারকরা আফ্রিকায় তাদের কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ঘটিয়েছিলেন, তখন নিৎসের লেখনীতে এর সমালোচনা করা হয়েছিলো। তিনি তথাকথিত গণতন্ত্রকে ঘৃণা করতেন। গণতন্ত্রে যে সমতার কথা বলা হয়, তা তার পছন্দ ছিলো না। তিনি ভবিষ্যতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা,বিপ্লব,যুদ্ধ,ও সংঘর্ষের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।। টীকা তথ্যসূত্র জার্মান দার্শনিক সাংস্কৃতিক সমালোচক রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি ১৮৪৪-এ জন্ম ১৯০০-এ মৃত্যু ধর্মের সমালোচক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক ১৯শ শতাব্দীর জার্মান দার্শনিক ১৯শ শতাব্দীর প্রুসীয় ব্যক্তি মহাদেশীয় দার্শনিক নাস্তিক দার্শনিক নিউমোনিয়ায় মৃত্যু অস্তিত্ববাদী ১৯শ শতাব্দীর জার্মান ঔপন্যাসিক ১৯শ শতাব্দীর দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক সাহিত্যের দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক লাইপ্‌ৎসিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
https://en.wikipedia.org/wiki/Friedrich_Nietzsche
Friedrich Nietzsche
Friedrich Wilhelm Nietzsche (15 October 1844 – 25 August 1900) was a German classical scholar, philosopher, and critic of culture, who became one of the most influential of all modern thinkers. He began his career as a classical philologist before turning to philosophy. He became the youngest person to hold the Chair of Classical Philology at the University of Basel in 1869 at the age of 24, but resigned in 1879 due to health problems that plagued him most of his life; he completed much of his core writing in the following decade. In 1889, at age 44, he suffered a collapse and afterward a complete loss of his mental faculties, with paralysis and probably vascular dementia. He lived his remaining years in the care of his mother until her death in 1897 and then with his sister Elisabeth Förster-Nietzsche. Nietzsche died in 1900, after experiencing pneumonia and multiple strokes. Nietzsche's work spans philosophical polemics, poetry, cultural criticism, and fiction while displaying a fondness for aphorism and irony. Prominent elements of his philosophy include his radical critique of truth in favour of perspectivism; a genealogical critique of religion and Christian morality and a related theory of master–slave morality; the aesthetic affirmation of life in response to both the "death of God" and the profound crisis of nihilism; the notion of Apollonian and Dionysian forces; and a characterisation of the human subject as the expression of competing wills, collectively understood as the will to power. He also developed influential concepts such as the Übermensch and his doctrine of eternal return. In his later work, he became increasingly preoccupied with the creative powers of the individual to overcome cultural and moral mores in pursuit of new values and aesthetic health. His body of work touched a wide range of topics, including art, philology, history, music, religion, tragedy, culture, and science, and drew inspiration from Greek tragedy as well as figures such as Zoroaster, Arthur Schopenhauer, Ralph Waldo Emerson, Richard Wagner, Fyodor Dostoevsky, and Johann Wolfgang von Goethe. After his death, Nietzsche's sister Elisabeth became the curator and editor of his manuscripts. She edited his unpublished writings to fit her German ultranationalist ideology, often contradicting or obfuscating Nietzsche's stated opinions, which were explicitly opposed to antisemitism and nationalism. Through her published editions, Nietzsche's work became associated with fascism and Nazism. 20th-century scholars such as Walter Kaufmann, R. J. Hollingdale, and Georges Bataille defended Nietzsche against this interpretation, and corrected editions of his writings were soon made available. Nietzsche's thought enjoyed renewed popularity in the 1960s and his ideas have since had a profound impact on 20th- and early 21st-century thinkers across philosophy—especially in schools of continental philosophy such as existentialism, postmodernism, and post-structuralism—as well as art, literature, music, poetry, politics, and popular culture.
1467
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%B2%E0%A7%8B%20%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%AD%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BF
নিক্কোলো মাকিয়াভেল্লি
নিক্কোলো দি বের্নার্দো দেই মাকিয়াভেল্লি বা নিকোলো মেকিয়াভেলি (ইতালীয় Niccolò di Bernardo dei Machiavelli, ৩রা মে, ১৪৬৯-২১শে জুন, ১৫২৭) ছিলেন রেনেসাঁস বা ইউরোপীয় নবজাগরণ যুগের একজন রাজনৈতিক দার্শনিক, সঙ্গীতকার, কবি এবং রোমান্টিক কমেডি ধাঁচের নাট্যকার। ইতালীয় রেনেসাঁসের অন্যতম পুরোধা এবং রেনেসাঁসকালীন রাজনৈতিক পরিবর্তনের রূপকার। জীবন নিক্কোলো ম্যাকিয়াভেলির জীবনী মাকিয়াভেল্লি ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৫২৭ সালে ৫৮ বছর বয়সে শেষকৃত্যের কাজ শেষ করার পর মারা যান। রচনাবলী গ্রন্থ দ্য প্রিন্স মাকিয়াভেল্লি রচিত ইল প্রিঞ্চিপে (বাংলায় রাজকুমার ও ইংরেজিতে দ্য প্রিন্স নামেও পরিচিত) গ্রন্থে যেমন তার বাস্তবতাদাবাদ সমর্থক ("রিয়েলিস্ট") রাজনৈতিক তত্ত্ব প্রকাশ পেয়েছে। গ্রন্থটি তার সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী এবং বহুল পঠিত গ্রন্থ। এই গ্রন্থটিকে অভিহিত করা হয় বিশ্বসাহিত্যের অন্যতম অর্থপূর্ণ, ভীতিজনক, প্ররোচনামূলক, হিংসাত্মক ও কঠিন আঘাত দিতে সক্ষম রচনা বলে। প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই বইটি বহুল সমালোচিত ও নিন্দিত হওয়ার পাশাপাশি প্রশংসিতও হয়েছে অনেক বিদগ্ধজনের কাছে। ১৫১৩ সালে ম্যাকিয়াভেলি এই বইটি লিখেছিলেন ফ্লোরেন্সের তৎকালিন রাজা পিয়ারো ডি মেডিচির পুত্র প্রিন্স লরেঞ্জোর প্রতি উপদেশমূলক গ্রন্থ হিসেবে। লরেঞ্জো যদিও সেই সময় এই উপদেশ গ্রহণ করেন নি; কিন্তু পরবর্তিতে দুনিয়াতে যত স্বৈরশাসক ও ডিকটেটর এসেছেন তারা সকলই দ্য প্রিন্সকে মূল উপজীব্য হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। একথা সুবিদিত যে, মুসোলিনি 'দ্য প্রিন্স' এর এক সংস্করণে ভূমিকা পর্যন্ত লিখেছিলেন। হিটলার তার শয্যাপাশে সবসময় এক খণ্ড দ্য প্রিন্স রাখতেন বলে শোনা যায়। ডিসকোর্সেস অন লিভাই গ্রন্থ মাকিয়াভেল্লি রচিত অন্য গ্রন্থ ডিসকোর্সেস অন লিভাইতে তার প্রজাতান্ত্রিক মানসিকতার প্রকাশ ঘটে। আরও দেখুন নিক্কোলো ম্যাকিয়াভেলির জীবনী পঞ্চম জর্জ তথ্যসূত্র ইতালীয় সাহিত্যিক ইতালীয় গীতিকার ইতালীয় দার্শনিক ১৪৬৯-এ জন্ম ১৫২৭-এ মৃত্যু সামরিক তাত্ত্বিক যুদ্ধের দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Niccol%C3%B2_Machiavelli
Niccol%C3%B2_Machiavelli
null
1468
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%97%20%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AE%20%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%A1%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%96%20%E0%A6%B9%E0%A7%87%E0%A6%97%E0%A7%87%E0%A6%B2
গেয়র্গ ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ হেগেল
গেয়র্গ ভিলহেল্ম ফ্রিডরিখ হেগেল () (আগস্ট ২৭, ১৭৭০ – নভেম্বর ১৪, ১৮৩১) একজন জার্মান দার্শনিক এবং জার্মান ভাববাদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। বাস্তবতার ক্ষেত্রে তার ঐতিহাসিক ও ভাববাদী অবস্থান ইউরোপীয় দর্শনকে বিপ্লবী করে এবং মহাদেশীয় দর্শন ও মার্কসবাদের গুরুত্বপূর্ণ অগ্রদূত হিসবে বিবেচিত হয়। জগত বা সত্যের ক্ষেত্রে জ্ঞেয় ও অজ্ঞেয়'র দ্বৈত রূপ হেগেল অস্বীকার করলেও তার নিকট মূল হচ্ছে ভাব; বস্তু নয়। যা কিছু জ্ঞেয় বা দৃশ্যমান সবই হচ্ছে ভাবের প্রকাশ ও বিকাশ। এছাড়া ভাবের চরম বিকাশ জার্মান রাষ্ট্রযন্ত্রে ঘটেছে বলে হেগেলের রাজনৈতিক ব্যাখ্যা পরবর্তীকালে স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রযন্ত্রের আদর্শগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পেরেছে। বস্তুত হেগেল দর্শন থেকে উত্তরকালে দুটি পরস্পরবিরোধী ধারার বিকাশ ঘটেছে; এর একটি হচ্ছে মার্কসবাদ বা দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ আর অন্যটি হচ্ছে নবভাববাদ ও স্বৈরতান্ত্রিক রাজনৈতিক মতবাদ। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Hegel page in 'The History Guide' Hegel.net - freely available resources (under the GNU FDL) « Der Instinkt der Vernünftigkeit » and other texts - Works on Hegel in Université du Québec site (in French) Lowenberg J., (1913) "The Life of Georg Wilhelm Friedrich Hegel". in German classics of the nineteenth and twentieth centuries. New York: German Publication Society. Hegel, as the National Philosopher of Germany (1874) Karl Rosenkranz, Granville Stanley Hall, William Torrey Harris, Gray, Baker & Co. 1874 ১৭৭০-এ জন্ম ১৮৩১-এ মৃত্যু জার্মান দার্শনিক জার্মান ভাববাদ দর্শনের ইতিহাস সামাজিক দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক ১৯শ শতাব্দীর জার্মান দার্শনিক ১৯শ শতাব্দীর জার্মান লেখক ভাববাদী জার্মান লুথারান জার্মান রাজনৈতিক দার্শনিক ঐতিহাসিক তত্ত্ব কলেরায় মৃত্যু ১৮শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক ১৮শ শতাব্দীর জার্মান দার্শনিক ১৮শ শতাব্দীর জার্মান লেখক ১৮শ শতাব্দীর ইতিহাসবিদ ১৯শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক ১৯শ শতাব্দীর ইতিহাসবিদ হামবোল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ভাষার দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Georg_Wilhelm_Friedrich_Hegel
Georg Wilhelm Friedrich Hegel
Georg Wilhelm Friedrich Hegel (27 August 1770 – 14 November 1831) was a German philosopher and one of the most influential figures of German idealism and 19th-century philosophy. His influence extends across the entire range of contemporary philosophical topics, from metaphysical issues in epistemology and ontology, to political philosophy, the philosophy of history, philosophy of art, philosophy of religion, and the history of philosophy. Born in 1770 in Stuttgart, Holy Roman Empire, during the transitional period between the Enlightenment and the Romantic movement in the Germanic regions of Europe, Hegel lived through and was influenced by the French Revolution and the Napoleonic wars. His fame rests chiefly upon The Phenomenology of Spirit, The Science of Logic, his teleological account of history, and his lectures at the University of Berlin on topics from his Encyclopedia of the Philosophical Sciences. Throughout his work, Hegel strove to address and correct the problematic dualisms of modern philosophy, Kantian and otherwise, typically by drawing upon the resources of ancient philosophy, particularly Aristotle. Hegel everywhere insists that reason and freedom are historical achievements, not natural givens. His dialectical-speculative procedure is grounded in the principle of immanence, that is, in assessing claims always according to their own internal criteria. Taking skepticism seriously, he contends that people cannot presume any truths that have not passed the test of experience; even the a priori categories of the Logic must attain their "verification" in the natural world and the historical accomplishments of humankind. Guided by the Delphic imperative to "know thyself", Hegel presents free self-determination as the essence of humankind – a conclusion from his 1806–07 Phenomenology that he claims is further verified by the systematic account of the interdependence of logic, nature, and spirit in his later Encyclopedia. He asserts that the Logic at once preserves and overcomes the dualisms of the material and the mental – that is, it accounts for both the continuity and difference marking the domains of nature and culture – as a metaphysically necessary and coherent "identity of identity and non-identity".
1469
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A6%E0%A7%8B%20%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A7%8B
ভিলফ্রেদো পারেতো
ভিলফ্রেদো পারেতো (ইতালীয় Vilfredo Pareto, পূর্ণ নাম Vilfredo Federico Damaso Pareto ভ়িল্‌ফ্রেদো ফ়েদেরিকো দামাসো পারেতো) ইতালীয় শিল্পপতি, প্রকৌশলী, অর্থনীতিবিদ, দার্শনিক। অর্থশাস্ত্রে তিনি প্যারেতো ভারসাম্য ধারনার জন্য প্রসিদ্ধ। তাকে লসান অর্থশাস্ত্রীয় ঘরানার অর্থনীতিবিদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ওয়ালরাসের দৃষ্টিভঙ্গী তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। গণিত ও সমাজতত্ত্বেও তার উল্লেখ্যযোগ্য অবদান রয়েছে। উপযোগ তত্ত্ব তিনি বলেছিলেন যে পণ্যের মূল্যায়ন সম্ভব নয়। পণ্যের উপযোগিতা কী এ প্রসঙ্গে তার বক্তব্য যে মানুষ আম ও কলার মধ্যে কোনটিকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে এর চেয়ে প্রাসঙ্গিক হলো একজন ব্যক্তি কয়টি আমের তুলনায় কয়টি কলা খেতে আগ্রহী এই তথ্য। এই বক্তব্য আধুনিক মাইক্রোইকনমিক্স-এর (ব্যষ্টিক অর্থশাস্ত্রের) ভিত্তিমূল। পারেতো ভারসাম্য তত্ত্ব কল্যাণ অর্থনীতি ও গেইম থিওরি তে পারেতো ভারসাম্য তত্ত্ব সর্বদাই প্রয়োগ করা হয়। পারেতো ভারসাম্য এমন একটি সৌষাম্য যে অবস্থায় একজন মানুষের ক্ষতি না করে আরেকজনের উপকার করা সম্ভব নয়। ভিলফ্রেদো পারেতো বলেন যে যতক্ষণ না এরকম সৌষাম্য অর্জিত হবে ততক্ষণ পর্যন্ত পুনর্বণ্টন করে যেতে হবে। প্যারেতিয়ান লিব্যারেল “প্যারেতিয়ান লিব্যারেল” কথাটি অর্থনীতিবিদ ও দার্শনিক অমর্ত্য সেন এর উদ্ভাবন। তিনি বলেন যে, একজন ব্যক্তি একই সঙ্গে প্যারেতিয়ান ভারসাম্য তত্ত্বে বিশ্বাসী এবং উদারনৈতিক হতে পারে না। এটি অসম্ভব। তথ্যসূত্র অর্থনীতিবিদ ইতালীয় অর্থনীতিবিদ কল্যাণ অর্থনীতি ইতালীয় দার্শনিক বিপ্লব তাত্ত্বিক ২০শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক ১৮৪৮-এ জন্ম ১৯২৩-এ মৃত্যু ১৯শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক ২০শ শতাব্দীর ইতালীয় লেখক ইতালীয় সমাজতান্ত্রিক বিরোধী
https://en.wikipedia.org/wiki/Vilfredo_Pareto
Vilfredo Pareto
Vilfredo Federico Damaso Pareto (born Wilfried Fritz Pareto; 15 July 1848 – 19 August 1923) was an Italian polymath, whose areas of interest included sociology, civil engineering, economics, political science, and philosophy. He made several important contributions to economics, particularly in the study of income distribution and in the analysis of individuals' choices. He was also responsible for popularising the use of the term "elite" in social analysis. He introduced the concept of Pareto efficiency and helped develop the field of microeconomics. He was also the first to claim that income follows a Pareto distribution, which is a power law probability distribution. The Pareto principle was named after him, and it was built on his observations that 80% of the wealth in Italy belonged to about 20% of the population. He also contributed to the fields of sociology and mathematics.
1475
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B8%20%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A6%A8
ফ্রান্সিস বেকন
স্যার ফ্রান্সিস বেকন (ইংরেজি Francis Bacon ফ্র্যান্সিস্‌ বেক‌ন্‌, ২২শে জানুয়ারি, ১৫৬১ - ৯ই এপ্রিল, ১৬২৬) একাধারে একজন ইংরেজ দার্শনিক, আইনজ্ঞ, কূটনৈতিক এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার পথপ্রদর্শক। আইনজীবী হিসেবে পেশাগত জীবন শুরু করলেও তিনি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের প্রবক্তা এবং জ্ঞানান্ধতা ও গোঁড়ামি বিরোধী হিসেবে সুখ্যাত হন। ফ্রান্সিস বেকনকে অভিজ্ঞতাবাদের জনক বলা হয়। তিনি দর্শনিক চিন্তাধারার কিছু মৌলিক তত্ব প্রবর্তন করেন যেগুলোকে বেকনিয়ান মেথডও বলা হয়ে থাকে। কোন জিনিসের উৎস অনুসন্ধানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের প্রক্রিয়াগুলো তিনিই প্রবর্তন করেন। এইসব প্রক্রিয়াকে সংক্ষেপে বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া বলা হয়। ফ্রান্সিস বেকন ১৬০৩ সালে নাইটহুড পান। এছাড়াও ১৬১৮ এবং ১৬২১ সালে ব্যারন ভিরলাম এবং ভিসকাউন্ট সেন্ট এলবান উপাধি পান। যেহেতু মৃত্যুর সময় তার কোন উত্তরসূরী ছিল না, তাই পরবর্তীকালে তার উপাধিগুলো বিলীন হয়ে যায়। প্রাথমিক জীবন ও শিক্ষা ফ্রান্সিস বেকন ২২ জানুয়ারি ১৫৬১ সালে লন্ডনের স্ট্রান্ডের নিকট অবস্থিত ইয়র্ক হাউজে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি স্যার নিকোলাস বেকনের দ্বিতীয় স্ত্রী, অ্যান (কুক) বেকনের পুত্র ছিলেন। তাদের কন্যা এন্থোনি কুক একজন খ্যাতনামা মানবতাবাদী ছিলেন। তার মার বোন, উইলিয়াম চেসিল প্রথম বেরন বার্গলেইকে বিয়ে করেন। জীবনীকারগণ মনে করেন, বেকন ঘরে থেকেই পড়াশোনা করেন। কারণ তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল ছিলেন এবং ধারণা ছিলো সারা জীবন ধরে তাকে তা ভুগতে হতে পারে। তিনি অক্সফোর্ড থেকে গ্রাজুয়েটেড জন ওয়ালসাল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরে ৫ এপ্রিল, ১৫৭৩ সালে যখন যখন তার বয়স বারো বছর, তিনি ক্যামব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে প্রবেশ করেন। সেখানে তার বড় ভাই এন্থোনি বেকনের সাথে তিন বছর ডক্টর জন হুইটগিফটের অভিভাবকত্বে শিক্ষা গ্রহণ করেন। বেকনের শিক্ষা ল্যাটিন এবং মধ্যযুগীয় পন্থায় ছিল। তিনি পটিয়া বিশ্ববিদ্যালয়তেও পড়াশোনা করেন। ক্যাম্ব্রিজে থাকাকালীন সময়ে প্রথম রানী এলিজাবেথের সাথে তার দেখা হয়। রানী এলিজাবেথ তার অকালপক্ক পাণ্ডিত্যে মুগ্ধ হন এবং তাকে "দ্যা ইয়ং লর্ড কিপার" নামে সম্বোধিত করেন। শিক্ষা গ্রহণ চলাকালীন তৎকালীন বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা নিরীক্ষা পদ্ধতি এবং ভুল প্রয়োগ সম্মন্ধে তার উপলব্ধি ঘটেছিল। এরিস্টলীয় দর্শন তত্বের সাথেও তিনি একমত ছিলেন না, সেইজন্য তাকে বিতর্কিত হতে হয়। তিনি এবং এন্থোনি ২৭ জুন, ১৫৭৬ সালে গ্রেইস ইন এর দ্যা সোসাইটি ম্যাজিস্টার এ প্রবেশ করেন। তার কয়েকমাস পর, স্যার এমিয়াস পলেটের সাথে বিদেশ যান। তৃতীয় হেনরির অধীনে ফ্রান্সের সরকার এবং সমাজ তাকে রাজনীতি বিষয়ক জ্ঞান প্রদান করে। তার ঠিক পরের তিন বছর, তিনি ব্লোইস, পটিয়া, ফ্রান্সের ট্যুরস, ইতালি এবং স্পেন ভ্রমণ করেন। এই ভ্রমণের সময় তিনি যখন কূটনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেন এবং ভাষা, রাজনীতি, সিভিল ল, বিষয়ে পড়াশুনা করেন। অন্তত কোন একটা উপলক্ষে, ইংল্যান্ডের বার্গলেই, লেস্টার সহ রানীর সাথে তার কূটনৈতিক বার্তালাপ হতো। ১৫৭৯ সালে তার বাবার হঠাৎ মৃত্যুতে বেকন ইংল্যান্ডে ফিরে আসেন। স্যার নিকোলাসের ছোট ছেলের জন্য কিছু জমি কিনতে টাকা সংগ্রহ করেন। কিন্তু তার মৃত্যুর আগে সম্পত্তির মাত্র পাঁচভাগ ফ্রান্সিসের নামে রেখে যান। বেকন অনেক টাকা ধার করায় ঋণী হয়ে পড়েছিলেন। নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য ১৫৭৯ সালে গ্রেইস ইন এ বাড়ি কিনেন। তার মা, মার্ক্স এর জমিদার লেডি অ্যান এর কাছ থেকে খরচপাতি পেতেন। তথ্যসূত্র Contains English translations of বহিঃসংযোগ Bacon by Thomas Fowler (1881) public domain @GoogleBooks The Francis Bacon Society Lord Macaulay's essay Lord Bacon (Edinburgh Review, 1837) মহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী ফ্রান্সিস বেকন। বাংলা ডন Bangla Don ১৫৬১-এ জন্ম ১৬২৬-এ মৃত্যু ইংরেজ দার্শনিক কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিজ্ঞানের দার্শনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ইতিহাস ১৭শ শতাব্দীর ইংরেজ ঔপন্যাসিক ১৬শ শতাব্দীর ইংরেজ ঔপন্যাসিক নিউমোনিয়ায় মৃত্যু আলোকিত যুগ ট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী পরমাণুবাদী খ্রিস্টান দার্শনিক খ্রিস্টান লেখক ইংরেজ প্রাবন্ধিক নাইটস ব্যাচেলর যুক্তিবিজ্ঞানী প্রাকৃতিক দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক প্রযুক্তির দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Francis_Bacon
Francis Bacon
Francis Bacon, 1st Viscount St Alban, 1st Lord Verulam, PC (; 22 January 1561 – 9 April 1626) was an English philosopher and statesman who served as Attorney General and Lord Chancellor of England under King James I. Bacon argued the importance of natural philosophy, guided by scientific method, and his works remained influential throughout the Scientific Revolution. Bacon has been called the father of empiricism. He argued for the possibility of scientific knowledge based only upon inductive reasoning and careful observation of events in nature. He believed that science could be achieved by the use of a sceptical and methodical approach whereby scientists aim to avoid misleading themselves. Although his most specific proposals about such a method, the Baconian method, did not have long-lasting influence, the general idea of the importance and possibility of a sceptical methodology makes Bacon one of the later founders of the scientific method. His portion of the method based in scepticism was a new rhetorical and theoretical framework for science, whose practical details are still central to debates on science and methodology. He is famous for his role in the scientific revolution, promoting scientific experimentation as a way of glorifying God and fulfilling scripture. Bacon was a patron of libraries and developed a system for cataloguing books under three categories – history, poetry, and philosophy – which could further be divided into specific subjects and subheadings. About books he wrote: "Some books are to be tasted; others swallowed; and some few to be chewed and digested." The Shakespearean authorship thesis, a fringe theory which was first proposed in the mid-19th century, contends that Bacon wrote at least some and possibly all of the plays conventionally attributed to William Shakespeare. Bacon was educated at Trinity College at the University of Cambridge, where he rigorously followed the medieval curriculum, which was presented largely in Latin. He was the first recipient of the Queen's counsel designation, conferred in 1597 when Elizabeth I reserved him as her legal advisor. After the accession of James I in 1603, Bacon was knighted, then created Baron Verulam in 1618 and Viscount St Alban in 1621. He had no heirs, and so both titles became extinct on his death of pneumonia in 1626 at the age of 65. He is buried at St Michael's Church, St Albans, Hertfordshire.
1476
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E2%80%8D%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%A8%E0%A7%87%20%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4
র‍্যনে দেকার্ত
র‍্যনে দেকার্ত () একজন ফরাসি দার্শনিক, গণিতজ্ঞ এবং বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি পাশ্চাত্য দর্শনে আধুনিক দর্শনের জনক হিসেবে স্বীকৃত। তিনি একজন দ্বৈতবাদী দার্শনিক ছিলেন। তাছাড়া তিনি জ্যামিতি ও বীজগণিতের মধ্যকার সম্পর্ক নিরূপণ করেন, যার দ্বারা বীজগণিতের সাহায্যে জ্যামিতিক সমস্যা সমাধান সম্ভব হয় (স্থানাঙ্ক জ্যামিতি)। তিনি বস্তু সম্পর্কে এক নতুন ধারণা দেন। জন্ম ও শৈশব দেকার্ত ১৫৯৬ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ শে মার্চ লা হায়ে অ ত্যুরাইন এ জন্ম গ্রহণ করেণ। তার পিতা জোয়াকিম দেকার্ত এবং মাতা জান ব্রোশার। তার আরো এক ভাই (পিয়ের) ও এক বোন (জান) ছিল। দেকার্তের পিতা একধারে একজন উকিল ও ম্যাজিস্ট্রট ছিলেন, ফলে সংসারে তিনি বেশি সময় দিতে পারতেন না। জান ব্রোশার দেকার্তের জন্মের দুই মাস পর মে মাসে মারা যান; তখন দেকার্ত এবং তার অন্য দুই ভাই ও বোন লা এ-তে তাদের দাদীর কাছে চলে যান। জীবনের বিভিন্ন সময়ে তিনি ইউরোপের বিভিন্ন জায়গায় বাস করেছেন। শিক্ষা প্রায় দশ বছর বয়সে ১৬০৬ সালে দেকার্তকে কলেজ রইয়াল অঁরি-ল্য-গ্রঁ (ফরাসি Collège Royal Henry-Le-Grand) জেসুইট কলেজে পাঠানো হয়। তিনি সেখানে ১৬১৪ সাল পর্যন্ত পড়েন এবং ১৬১৫ সালে পোয়াতিয়ে (Poitiers) বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। একবছর পর তিনি ধর্মীয় অনুশাসন ও দেওয়ানি আইনে বাকালোরেয়া (baccalauréat, অর্থাৎ "উচ্চ-মাধ্যমিক সনদ") ও লাইসেন্স লাভ করেন। কর্মজীবন তরুণ বয়সেই মানুষ এবং মহাবিশ্বের স্বরূপ জানার জন্য একটি অন্তর্দৃষ্টি পাবার প্রবল ইচ্ছা জাগে তার মনে। গভীর অধ্যয়নের পরে দেকার্ত এই সিদ্ধান্তে আসেন যে ইউরোপীয় মধ্যযুগ থেকে যে জ্ঞান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে এসেছে তা খুব নির্ভরযোগ্য নয়। তিনি ঠিক করলেন সারা ইউরোপ ঘুরে বেড়াবেন, ঠিক যেমন সক্রেটিস অ্যাথেন্সের লোকের সাথে কথা বলে জীবন কাটিয়েছিলেন। এ কারণে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে যুদ্ধে চলে গেলেন তিনি, তার ফলে মধ্য ইউরোপে কিছু দিন থাকার সুযোগ হল তার। সেনাবাহিনীতে তিনি কী করতেন তা সঠিক ভাবে জানা যায় না। ১৬১৯ সালে তিনি সেনাবাহিনী ত্যাগ করেন। এর পর প্যারিসে কাটান কিছু বছর, তারপর ১৬২৯ সালে চলে যান হল্যান্ড। সেখানে গণিত আর দর্শন বিষয়ক লেখালেখি নিয়ে কাটিয়ে দেন প্রায় বিশ বছর। ১৬৪৯ সালে রাণী ক্রিস্টিনার আমন্ত্রনে সুইডেন যান এবং সেখানে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৪ বছর বয়সে ১৬৫০ খ্রিষ্টাব্দের শীতকালে মৃত্যুবরণ করেন। দর্শন দেকার্ত দার্শনিক সমস্যা সমাধানের একটি পদ্ধতির প্রস্তাব করেন। দেকার্তের মত অনুযায়ী, কোনো কিছুকে পরিষ্কারভাবে এবং ইন্দ্রিয় দিয়ে প্রত্যক্ষ না করা পর্যন্ত আমরা সেটাকে সত্য বলে ধরে নিতে পারি না। সেজন্য, কোনো জটিল সমস্যাকে যতগুলো সম্ভব একক সমস্যায় ভেঙে নেওয়া বা ছোট করে নেওয়া দরকার। তখন সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে সহজ ভাব থেকে আমরা চিন্তা শুরু করতে পারি। দেকার্ত বিশ্বাস করতেন দর্শনের অগ্রসর হওয়া উচিত সরল থেকে জটিলের দিকে। দেকার্ত বললেন যে দুই ধরনের বাস্তবতা বা সারবস্তু রয়েছে। একটি সারবস্তু হচ্ছে চিন্তা বা মন অন্যটি ব্যাপ্তি বা বস্তু। মন পুরোপুরি সচেতন এবং স্থানগত দিক দিয়ে কোনো জায়গা দখল করে না, ফলে এটাকে ছোট ছোট খণ্ডে বিভক্ত করা যায় না। অন্যদিকে বস্তু জায়গা দখল করে এবং একে ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর অংশে ভাগ করা চলে। বস্তুর কোনো চেতনা নেই। দেকার্তের মতে দুই সারবস্তুই ঈশ্বর থেকে এসেছে, যদিও এ দুই সারবস্তুর মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই। এজন্য দেকার্তকে দ্বৈতবাদী বলা হয়। পাদটীকা ফরাসি দার্শনিক ফরাসি বিজ্ঞানী ১৫৯৬-এ জন্ম ১৬৫০-এ মৃত্যু দর্শনের ইতিহাস পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক শিক্ষার ইতিহাস নিউমোনিয়ায় মৃত্যু আলোকিত যুগ রোমান ক্যাথলিক দার্শনিক ফরাসি রোমান ক্যাথলিক লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রাকৃতিক দার্শনিক সামাজিক দার্শনিক পোয়াতিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
https://en.wikipedia.org/wiki/Ren%C3%A9_Descartes
Ren%C3%A9_Descartes
null
1479
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9F%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B8%20%E0%A6%B9%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%B8
টমাস হব্‌স
টমাস হব্‌স (ইংরেজি Thomas Hobbes টমাস্‌ হব্‌জ়্‌, এপ্রিল ৫, ১৫৮৮-ডিসেম্বর ৪, ১৬৭৯) ষোড়শ শতকের ইংরেজ দার্শনিক যিনি বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক দর্শনের বিষয়ে তার তত্ত্ব ও বিশ্লেষণের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। টমাস হব্‌স আধুনিক যুগের দার্শনিক ছিলেন। ১৬৫১ সালে প্রকাশিত লেভিয়েথন গ্রন্থে তিনি সামাজিক চুক্তি তত্ত্বের ধারণা প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তিতে পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক দর্শনের গোড়াপত্তন করে। জন্ম ও কর্মজীবন থমাস হবস ১৫৮৮ সালের ৫ এপ্রিল ইংল্যান্ডের Malmesbury-এর এক ধর্মযাজক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কথিত আছে, স্পেনীয় নৌবাহিনী যে সময় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করে, সে সময় হবসের গর্ভধারিনী মাতা ভয়ে ভীত হয়ে জন্মের নির্ধারিত সময়ের আগেই হবসকে জন্ম দেন। এ কারণে পণ্ডিতগণের মতে, সমকালীন পরিবেশ ও পরিস্থিতি তার উপর বেশ প্রভাব ফেলেছিল। হবস খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৬০৮ সালে হবস মাত্র ২০বছর বয়সে অক্সফোর্ড হতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। অতঃপর তিনি ইংল্যান্ডের অন্যতম অভিজাত ও প্রসিদ্ধ কেভেনসিস পরিবারের গৃহশিক্ষক নিযুক্ত হন। হবস ফরাসি ও ইতালিয় ভাষায় শিক্ষকতা করেন। তিনি প্রথমে কেভেনডিসের এবং আর্ল অব ডিভেনশায়ারের পুত্রের সাথে সমগ্র ইউরোপ পরিভ্রমণ করেন। ফ্রান্সে ভ্রমণকালে প্রথমে রনে দেকার্তের সাথে, পরে ফ্লোরেন্সে গ্যালিলিওর সাথে পরিচিতি ঘটে এবং তাদের চিন্তাধারায় বিশেষভাবে প্রভাবিত হন। হব্‌স ১৬৩১ সালের দিকে পুনরায় ইউরোপ ভ্রমণে যান এবং ১৬৩৭ সালে দেশে ফিরে আসেন। এ সময় তার দেশে গৃহযুদ্ধ চলছিল। সে সময়ও তিনি শারীরিকভাবে খুব বলিষ্ঠ ছিলেন। কথিত আছে যে তিনি ৭০ বছর বয়সেও দিব্যি টেনিস খেলতেন। ১৬৭৯ সালের ৪ ডিসেম্বর তিনি ইংল্যান্ডে ৯০ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। প্রকাশিত গ্রন্থাবলী The Media of Europides Decorpore Hoprinc Decive The elements of Laws লেভিয়াথন লেভিয়াথন এ গ্রন্থে হবস পদার্থবিদ্যা ও মানবপ্রকৃতি সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। এছাড়া এতে নৈতিকতা ও রাজনৈতিক তত্ত্ব গুরুত্ব সহকারে বিশ্লেষিত হয়েছে।তিনি মানষকে নোংড়া, পাশবিক, ইত্যাদি বলে ব্যাখ্যা করেছেন । তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Hobbes Texts English translations by George Mac Donald Ross Contains Leviathan, lightly edited for easier reading Thomas Hobbes, A minute or first Draught of the Optiques at Digitised Manuscripts Clarendon Edition of the Works of Thomas Hobbes Richard A. Talaska (ed.), The Hardwick Library and Hobbes's Early Intellectual Development Hobbes studies Online edition Bulletin Hobbes in the Journal Archives de Philosophie Thomas Hobbes at the Stanford Encyclopedia of Philosophy Hobbes's Moral and Political Philosophy at the Stanford Encyclopedia of Philosophy Hobbes: Methodology at the Internet Encyclopedia of Philosophy Hobbes: Moral and Political Philosophy at the Internet Encyclopedia of Philosophy A Brief Life of Thomas Hobbes, 1588–1679 by John Aubrey at Oregon State University Brief biography at Oregon State University A short biography of Thomas Hobbes Hobbes at The Philosophy pages Thomas Hobbes nominated by Steven Pinker for the BBC Radio 4 programme Great Lives. ইংরেজ দার্শনিক বস্তুবাদী ১৫৮৮-এ জন্ম ১৬৭৯-এ মৃত্যু সাংস্কৃতিক সমালোচক পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক ধর্মের সমালোচক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক ফ্রান্সে ইংরেজ প্রবাসী পরমাণুবাদী ইংরেজ গণিতবিদ ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী ভাষার দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক রাজনৈতিক দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Thomas_Hobbes
Thomas Hobbes
Thomas Hobbes ( HOBZ; 5 April 1588 – 4 December 1679) was an English philosopher. Hobbes is best known for his 1651 book Leviathan, in which he expounds an influential formulation of social contract theory. He is considered to be one of the founders of modern political philosophy. Hobbes was born prematurely due to his mother's fear of the Spanish Armada. His early life, overshadowed by his father's departure following a fight, was taken under the care of his wealthy uncle. Hobbes's academic journey began in Westport, leading him to Oxford University, where he was exposed to classical literature and mathematics. He then graduated from the University of Cambridge in 1608. He became a tutor to the Cavendish family, which connected him to intellectual circles and initiated his extensive travels across Europe. These experiences, including meetings with figures like Galileo, shaped his intellectual development. After returning to England from France in 1641, Hobbes witnessed the destruction and brutality of the English Civil War from 1642 to 1651 between Parliamentarians and Royalists, which heavily influenced his advocacy for governance by an absolute sovereign in Leviathan, as the solution to human conflict and societal breakdown. Aside from social contract theory, Leviathan also popularized ideas such as the state of nature ("war of all against all") and laws of nature. His other major works include the trilogy De Cive (1642), De Corpore (1655), and De Homine (1658) as well as the posthumous work Behemoth (1681). Hobbes contributed to a diverse array of fields, including history, jurisprudence, geometry, optics, theology, classical translations, ethics, as well as philosophy in general, marking him as a polymath. Despite controversies and challenges, including accusations of atheism and contentious debates with contemporaries, Hobbes's work profoundly influenced the understanding of political structure and human nature.
1481
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B2%20%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%9F
ইমানুয়েল কান্ট
ইমানুয়েল কান্ট (জার্মান Immanuel Kant ইমানুয়েল্‌ কান্ট্‌, জন্ম এপ্রিল ২২, ১৭২৪ - মৃত্যু ফেব্রুয়ারি ১২, ১৮০৪) অষ্টাদশ শতকের একজন বিখ্যাত প্রাশিয়ান জার্মান দার্শনিক। কান্টের জন্ম পূর্ব প্রাশিয়ার কোনিগ্সবার্গে, যা বর্তমানে রাশিয়ার অন্তর্গত ও কালিনিনগ্রাদ নামে পরিচিত। কান্টকে আধুনিক ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী চিন্তাবিদ হিসাবে গণ্য করা হয়, এবং ইউরোপের Age of Enlightenment বা আলোকিত যুগের শেষ গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক বলে অভিহিত করা হয়। তিনি তার "Critique of Pure Reason" (1781) বইটির জন্য স্বনামধন্য। জীবনী কান্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে। তার বাবা ছিলেন ঘোড়ার জিনের ব্যবসায়ী। বাবার নয় ছেলেমেয়ের মধ্যে কান্ট ছিলেন চতুর্থ । তার পরিবার ছিল প্রটেস্টান্ট খ্রিস্টান ধর্মমতের পাইটিস্ট শাখার অনুসারী। শৈশব ও কিশোরজীবন কান্ট প্রথমে একটি পাইটিস্ট স্কুলে লেখাপড়া করেন। তিনি ১৩ বছর বয়সে মাকে হারান। ২১ বছর বয়সে বাবাকে হারান। স্কুলজীবনে কান্ট নিয়মানুবর্তিতা, সময়নিষ্ঠা, মিতব্যয়িতা ও কঠোর পরিশ্রমের অভ্যাস গড়ে তোলেন। স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় কান্ট ল্যাটিন ভাষায় তার দখলদারিত্ব দেখিয়ে সবাইকে বিস্মিত করে তোলেন। ওখান থেকে পরে ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দে ১৬ বছর বয়সে তিনি কোনিগ্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু শীঘ্রই তিনি গণিতশাস্ত্র ও পদার্থবিজ্ঞানে আকৃষ্ট হয়ে ওঠেন। ল্যাটিন ও গ্রিক ভাষায় দখল নেয়া সহ গণিত, ভূগোল ও পদার্থবিদ্যায় ব্যাপক বিদ্যা অর্জন করেন। ১৭৪৬ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয়। এর পর তিনি প্রায় ১০ বছর এক ধনী পরিবারে গৃহশিক্ষকতা করেন। এ সময় তিনি "যুক্তিবাদ" ও "প্রয়োগবাদ" এর মধ্যকার বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন নিয়ে কিছু লেখা প্রকাশ করেন। প্রাথমিক গবেষণা ও অধ্যাপনা ১৭৫৫ সালে কান্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন এবং ওই একই বছরে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তী ১৫ বছর তিনি সেখানকার প্রভাষক হিসেবে থাকা অবস্থায় দর্শনশাস্ত্রের উপর তার বিখ্যাত কিছু কাজ সম্পন্ন করেন। তিনি ১৭৭০ সালে কোনিগ্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে অধিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যার উপর অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৭৮১ সালে কান্ট তার Critique of Pure Reason নামক গ্রন্থটি প্রকাশ করেন যা কিনা পশ্চিমা দর্শনশাস্ত্রের অন্যতম সেরা গ্রন্থ। এটিতে তিনি কারণ ও অভিজ্ঞতাসমূহ কীভাবে আমাদের চিন্তা ও বোধশক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন। তথ্যসূত্র জার্মান দার্শনিক আলোকিত যুগ ১৭২৪-এ জন্ম ১৮০৪-এ মৃত্যু ১৮শ শতাব্দীর দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক ভাববাদী জার্মান লুথারান জার্মান রাজনৈতিক দার্শনিক ১৮শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক ১৮শ শতাব্দীর জার্মান দার্শনিক ১৮শ শতাব্দীর জার্মান লেখক ১৯শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক ১৯শ শতাব্দীর জার্মান দার্শনিক ১৯শ শতাব্দীর জার্মান লেখক ১৯শ শতাব্দীর প্রুসীয় ব্যক্তি কান্টবাদ যুক্তিবিজ্ঞানী প্রাকৃতিক দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক সাহিত্যের দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক বিজ্ঞানের দার্শনিক সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক যুদ্ধের দার্শনিক সামাজিক দার্শনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Immanuel_Kant
Immanuel Kant
Immanuel Kant (born Emanuel Kant; 22 April 1724 – 12 February 1804) was a German philosopher and one of the central Enlightenment thinkers. Born in Königsberg, Kant's comprehensive and systematic works in epistemology, metaphysics, ethics, and aesthetics have made him one of the most influential and controversial figures in modern Western philosophy, being called the "father of modern ethics", the "father of modern aesthetics", and for bringing together rationalism and empiricism earned the title of "father of modern philosophy". In his doctrine of transcendental idealism, Kant argued that space and time are mere "forms of intuition" that structure all experience and that the objects of experience are mere "appearances". The nature of things as they are in themselves is unknowable to us. In an attempt to counter the philosophical doctrine of skepticism, he wrote the Critique of Pure Reason (1781/1787), his best-known work. Kant drew a parallel to the Copernican Revolution in his proposal to think of the objects of experience as conforming to our spatial and temporal forms of intuition and the categories of our understanding, so that we have a priori cognition of those objects. These claims have proved especially influential in the social sciences, particularly sociology and anthropology, which regard human activities as pre-oriented by cultural norms. Kant believed that reason is the source of morality, and that aesthetics arises from a faculty of disinterested judgment. Kant's religious views were deeply connected to his moral theory. Their exact nature remains in dispute. He hoped that perpetual peace could be secured through an international federation of republican states and international cooperation. His cosmopolitan reputation is called into question by his promulgation of scientific racism for much of his career, although he altered his views on the subject in the last decade of his life.
1483
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%A8%20%E0%A6%B2%E0%A6%95
জন লক
জন লক (ইংরেজি John Locke, আগস্ট ২৯, ১৬৩২ – অক্টোবর ২৮, ১৭০৪) ইংরেজ দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ আলোকিত যুগের অন্যতম চিন্তাবিদ, এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকার। জ্ঞানতত্ত্বের আলোচনায় পদ্ধতিগত দিক থেকে নতুনভাবে অভিজ্ঞতাবাদের প্রয়োগ করেছেন এবং বস্তুবাদী দার্শনিক চিন্তাধারাতে মৌলিক প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। তার লেখনী যেমন আধুনিক রাজনৈতিক দর্শনের আকর গ্রন্থসমূহ রূপে বিবেচিত, তৎকালীন রাজনৈতিক পালাবদলের একজন সক্রিয় কর্মী হিসাবে নাগরিক অধিকার ও বুর্জোয়া শ্রেণীর ক্রমবিকাশে তেমনি রয়েছে তার প্রত্যক্ষ অবদান। পুরুষতান্ত্রিক সামাজিক কাঠামোতে নারীর অবস্থান ও ভূমিকা বিষয়ে লকের মতামত ছিল আধুনিক নারীবাদী চিন্তার অনুকূল, এবং পরবর্তীকালের অসংখ্য দার্শনিক ও রাষ্ট্রচিন্তাবিদের উপর রয়েছে তার আসামান্য প্রভাব। জীবনপঞ্জি ১৬৩২ সালে ব্রিস্টলের নিকটবর্তী রিংটনে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নামও ছিল জন লক এবং তিনি ছিলেন একজন সফল আইনজীবী। ১৬৪৭ সালে লক বিখ্যাত ওয়েস্ট মিনিস্টার সকুলে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শুরু করেন। ১৬৫২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে ভর্তি হন। অক্সফোর্ডে লক দর্শন, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা, চিকিৎসাশাস্ত্র প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেন। ১৬৫৯ সালে ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে সিনিয়র স্টুডেন্টশীপ লাভ করেন। পরের বছর গ্রিক ভাষার অধ্যাপক নিযুক্ত হন। পরে অলঙ্কার শাস্ত্রের রিডার ও দর্শন শাস্ত্রের অধ্যাপক পদ লাভ করেন। পেশাগত জীবনে অধ্যাপনা, চিকিৎসা সহ রাজকিয় কূটনৈতিক ও বাণিজ্য পরিষদের নানা গুরত্বপূর্ণ পদে আধিষ্টিত ছিলেন। ১৬৭১ সালের দিকে তিনি মানবিক জ্ঞান ও রাষ্ট্র সমাজ সম্পর্কিত তার প্রবন্ধাবলী রচনা শুরু করেন। ১৬৯০ তে তার বিখ্যাত ‘মানবিক জ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধ’ () প্রথম সংস্করন বের হয়। লকের জীবদ্দশাতেই এই গ্রন্থের আরো তিনটি সংস্করন প্রকাশিত হয়। একই বছর আরও একটি বিখ্যাত গ্রন্থ ‘সমাজ সরকার সম্পর্কিত দুটি গবেষণা পত্র’ () প্রকাশিত হয়। ১৬৯৩ তে বের হয় ‘শিক্ষা বিষয়ক কিছু চিন্তা’ ()। জন লকের বিখ্যাত উক্তি- ()।চীরকুমার জন লকের জীবনের শেষ দিকে তার স্বাস্থ্য বেশ খারাপ হয়ে যায় এবং ১৭০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। ব্যক্তিগত জীবনে লক ছিলেন অকৃতদার। বহিঃসংযোগ John Locke (1632–1704), "the philosopher of freedom" Free, full-text works by John Locke Stanford Encyclopedia of Philosophy entry on Locke John Locke Bibliography John Locke Manuscripts More easily readable versions of the Essay Concerning Human Understanding and the Second Treatise of Government John Locke’s Theory of Knowledge by Caspar Hewett The Digital Locke Project Portraits of Locke Locke links দার্শনিক ১৬৩২-এ জন্ম ১৭০৪-এ মৃত্যু ইংরেজ দার্শনিক ক্রাইস্ট চার্চ, অক্সফোর্ডের প্রাক্তন শিক্ষার্থী নাস্তিকতার সমালোচক রয়েল সোসাইটির সভ্য ভাষার দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক
https://en.wikipedia.org/wiki/John_Locke
John Locke
John Locke (; 29 August 1632 – 28 October 1704) was an English philosopher and physician, widely regarded as one of the most influential of Enlightenment thinkers and commonly known as the "father of liberalism". Considered one of the first of the British empiricists, following the tradition of Francis Bacon, Locke is equally important to social contract theory. His work greatly affected the development of epistemology and political philosophy. His writings influenced Voltaire and Jean-Jacques Rousseau, and many Scottish Enlightenment thinkers, as well as the American Revolutionaries. His contributions to classical republicanism and liberal theory are reflected in the United States Declaration of Independence. Internationally, Locke's political-legal principles continue to have a profound influence on the theory and practice of limited representative government and the protection of basic rights and freedoms under the rule of law. Locke's theory of mind is often cited as the origin of modern conceptions of identity and the self, figuring prominently in the work of later philosophers such as Jean-Jacques Rousseau, David Hume, and Immanuel Kant. He postulated that, at birth, the mind was a blank slate, or tabula rasa. Contrary to Cartesian philosophy based on pre-existing concepts, he maintained that we are born without innate ideas, and that knowledge is instead determined only by experience derived from sense perception, a concept now known as empiricism. Locke is often credited for describing private property as a Natural Law principle, arguing that when a person mixes their labour with nature, the labour enters the object conferring individual ownership.
1484
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%96%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A6%BE
বারুখ স্পিনোজা
বারুখ স্পিনোজা (হিব্রু: ברוך שפינוזה, ওলন্দাজ: Baruch Spinoza বারুখ়্‌ স্পিনোজ়া) (নভেম্বর ২৪, ১৬৩২ – ফেব্রুয়ারি ২১, ১৬৭৭), একজন ওলন্দাজ দার্শনিক। তিনি আধুনিক যুগের শুরুর একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও মূলত সবচেয়ে মৌলিক দার্শনিক। দার্শনিক হিসেবে তিনি মুক্ত ও স্বাধীন চিন্তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন এবং একই সাথে কর্ম আচরণের ক্ষেত্রে নিজেকে নীতিনিষ্ঠ, নির্ভীক ও নিষ্কলঙ্ক মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি নির্জনতা পছন্দ করতেন। কিন্তু মানুষের প্রতি তার অকৃত্রিম ভালোবাসা ছিল যার প্রমাণ, মানুষ কীভাবে পৃথিবীতে সুখ লাভ করতে পারে তা স্থির করার পেছনে তার সাধনা। তার মতে জীব জগতে সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করে পৃথিবীতে শান্তি ও সুখের প্রতিষ্ঠা করার জন্য মানুষের যা করা দরকার তার স্বরূপ অনুসন্ধান করাই দার্শনিকের মূল লক্ষ্য। ব্যাপক পাণ্ডিত্যের অধিকারী হওয়া সত্ত্বেও তার মধ্যে কোন অহংকার ছিলনা। বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়দের কাছে তিনি ছিলেন সদালাপী ও অমায়িক একজন মানুষ। নিজের মত তিনি কখনও অন্যের উপর চাপিয়ে দেননি। সবারই চিন্তা করার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে, এ ধারণায় তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন। জীবনী প্রাথমিক জীবন ও পরিবার বারুখ স্পিনোজা ১৬৩২ সালের নভেম্বর ২৪ তারিখে নেদারল্যান্ডের আমস্টারডাম শহরে এক ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পর্তুগাল থেকে নির্যাতিত হয়ে ইহুদিদের যে দলটি নেদারল্যান্ড আশ্রয় গ্রহণ করেছিল তার পরিবার সে দলেরই অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিছু ইতিহাসবেত্তা দ্বিমত পোষণ করে বলেছেন, স্পিনোজার বংশের আদি নিবাস ছিল স্পেন দেশে। অন্যদের মতে তাদের পরিবার মূলত পর্তুগিজ যারা স্পেনে স্থানান্তরিত হন এবং পরবর্তীকালে ১৪৯২ সালে আবার স্বদেশে ফিরে। তাদেরকে পর্তুগালে ফিরিয়ে এনে ১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ক্যাথলিকবাদ গ্রহণে বাধ্য করা হয়েছিল। তার বাবা-মা পর্তুগিজ ইনকুইজিশন থেকে বাঁচার জন্যই পালিয়ে এসেছিল এবং নেদারল্যান্ড এসে তারা ইহুদি ধর্মেই প্রত্যাবর্তন করেন। ধর্মন্তরিত হতে বাধ্য করার এই ঘটনার প্রায় এক শতাব্দী পর স্পিনোজার বাবা পর্তুগালের Vidigueira নামক ছোট্ট শহরে জন্মগ্রহণ করেন। এই শহরটি Alentejoতে অবস্থিত Beja শহরের নিকটবর্তী ছিল। তার দাদা আইজাক ডি স্পিনোজা তখন লিসবনে থাকতেন। তার বাবার বাল্য বয়সেই আইজাক সপরিবারে ফ্রান্সের Nantes-এ চলে যান। ১৬১৫ সালে তারা এখান থেকে বিতাড়িত হয়ে রটারডামে চলে যান। ১৬২৭ সালে সেখানে তার দাদা মারা যান। এরপর স্পিনোজার বাবা তার দুই ভাই মিগুয়েল ও ম্যানুয়েলকে নিয়ে আমস্টারডামে ফিরে যান এবং সেখানে তারা সবাই আবার ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা Miguel de Espinosa সে সময়কার ইতুদি সম্প্রদায়ের একজন সফল ব্যবসায়ী ছিলেন। এ কারণে শৈশব থেকেই স্পিনোজা শিক্ষা-দীক্ষা ও বেড়ে উঠার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ধরনের সুযোগ-সুবিধা লাভ করেছিলেন। তার মা'র নাম Ana Débora। বাবা-মা উভয়েই সেফার্ডীয় ইহুদি বংশের ছিলেন। Débora ছিলেন Espinosa'র দ্বিতীয় স্ত্রী এবং স্পিনোজার জন্মের ছয় মাসের মাথায় তিনি মারা যান। ১৬৩৮ সালে আমস্টারডামে ইহুদিদের জন্য একটি স্কুল খোলা হয়। স্পিনোজা এই স্কুলে তার পড়াশোনা শুরু করেন। সেখানে মূলত ধর্মীয় বিষয়ে শিক্ষা দেয়া হতো। এখানে ইহুদি ধর্ম সম্পর্কে তিনি জ্ঞান লাভ করেন। এরপর ইবন এজরা ও মাইমোনাইড্‌স সহ বিভিন্ন ইহুদি দার্শনিকের জীবনী রচনার সাথে পরিচিত হন। এ সময়েই তিনি কাব্বালার মরমী মতবাদের সাথে পরিচিত হন যা তার দার্শনিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করেছিল। অনেকের মতে তার দর্শনে নব্য-প্লেটোবাদী চিন্তাধারার মূলে ছিল কাব্বালার দর্শন। স্কুলের গণ্ডীবদ্ধ পড়াশোনার পাশাপাশি স্পিনোজা বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করতেন। এ বিষয়গুলোতে তিনি গভীর বুপত্তিও অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বিভিন্ন ভাষা শিক্ষার প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। তার পারিবারিক ভাষা ছিল স্পেনীয় ভাষা। স্পেনীয় ছাড়াও তিনি যে ভাষাগুলো আয়ত্ত করেছিলেন সেগুলো হল: লাতিন, পর্তুগীজ, ইতালীয়, ওলন্দাজ এবং ফরাসি ভাষা। ফ্রান্সিসকাস ফান ডেন এন্ডেন নামক একজন পণ্ডিতের কাছে তিনি লাতিন ভাষা শিক্ষা করেন। তিনি স্বাধীন চিন্তার অধিকারী একজন চিকিসক ছিলেন। প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে তার গভীর জ্ঞান ছিল। ১৬৭৪ সালে প্রান্সের সম্রাট চতুর্দশ লুইয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে প্রাণদণ্ড দেয়া হয়। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান বিষয়ে স্পিনোজার গভীর জ্ঞানের কারণ এই ফান ডেন এন্ডেন। এছাড়া তার মাধ্যমেই তিনি প্রথম জর্দানো ব্রুনো ও রনে দেকার্তের রচনার সাথে পরিচিত হন। কর্মজীবন বাল্যকাল থেকেই স্পিনোজা বিশেষ মেধার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। এ দেখে তার সম্প্রদায়ের লোকেরা ধারণা করেছিল যে তিনি বড় হয়ে নিজ সম্প্রদায়ের উন্নতি সাধন করবেন এবং ইহুদি ধর্মের জয়গান করবেন। কিন্তু তাদের এ ধারণা আর কার্যকর হয়নি। ২৩ বছর বয়স থেকেই তিনি ইহুদি ধর্মের গোড়া ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ও বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করতে শুরু করেন। এসবের যথার্থতা সম্পবন্ধে তিনি প্রশ্ন তোলেন। ধর্মবিরোধী প্রচারণা থেকে বিরত থাকার জন্য তাকে অর্থের লোভ দেখানো হয়। কিন্তু স্পিনোজা নিজ মতে অটল থাকেন। এরপর তাকে হত্যার চেষ্টা করা ব্যর্থ হয় এই সম্প্রদায়ের লোকেরা। পরিশেষে তাকে ইহুদি সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার করা হয়। বহিষ্কার করার কারণ হিসেবে বলা হয়: "ঈশ্বরের দেহ আছে, স্বর্গদূতদের ধারণা কল্পনাবিলাস মাত্র এবং অমরত্ব সম্পবন্ধে বাইবেল কিছুই বলতে পারে না- এসব মত প্রচার করে তিনি ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ করেছেন।" বহিষ্কার হওয়ার সংবাদ স্পিনোজা শান্তভাবে গ্রহণ করেন। তার বিরুদ্ধে যে এ ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হবে তা তিনি আগে থেকেই জানতেন। বহিষ্কৃত হওয়ার পর তিনি নিজের বাল্য নাম বারুখ পরিবর্তন করে এই শব্দেরই লাতিন প্রতিশব্দ বেনেডিক্টাস রাখেন। বহিষ্কারের ঘটনার পর স্পিনোজা আমস্টারডামে নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করতে থাকেন। এ সময় তার পেশা ছিল চশমার কাচ পরিষ্কার করা। তার একটি দোকান ছিল যেখানে তিনি দিনের অনেকটা সময় কাজ করতেন। চার বছর তিনি এই পেশা নিয়েই আমস্টারডামে বসবাস করেন। এরপর নেদারল্যান্ডেরই হেগ শহরের উপকণ্ঠে নতুন আবাস গড়ে তোলেন। ১৬৬০-এর দশকের প্রথম দিকে স্পিনোজার নাম ছড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থ প্রকাশই ছিল এর কারণ। তার প্রথম প্রকাশনা ছিল Tractatus de intellectus emendatione। ১৬৬৩ সালে তিনি "কজিটা মেটাফিজিকা" শিরোনামে রনে দেকার্তের প্রিন্সিপিয়া ফিলোসফিয়া গ্রন্থের দ্বিতীয় খণ্ডের একটি সার-সংক্ষেপ প্রকাশ করেন। তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়া তকালীয়ন বিখ্যাত দার্শনিক ও বিজ্ঞানী গটফ্রিড লাইবনিজ এবং হেনরি অলডেনবুর্গ তার সাথে সাক্ষাৎ করেন। জীবদ্দশায় প্রকাশিত তার অপর দুইটি বিখ্যাত গ্রন্থ হল "ট্র্যাকটাটাস থিওলোজিকো-পলিটিকাস" (১৬৭০) এবং "ট্র্যাকটাটাস পলিটিকাস"। ট্র্যাকটাটাস থিওলোজিকো-পলিটিকাস নামক বইটিতে বাইবেলের সমালোচনার পাশাপাশি তার রাষ্ট্রনৈতিক মতবাদের সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটেছে। দৃষ্টিভঙ্গির দিক থেকে এই বইটি এতোটাই উদারনৈতিক ছিল যে, নেদারল্যান্ডের মতো একটি সহিষ্ণু দেশেও তাকে এটি ছদ্মনামে প্রকাশ করতে হয়েছিল। এতো কিছু করেও তিনি পার পাননি। বইটি সেদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল। সরকার কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত এবং ইহুদি ও ক্যাথলিক মহলে বিরোধিতার সম্মুখীন হলেও বইটি শিক্ষিত ও মুক্ত সমাজে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। এই গ্রন্থের জনপ্রিয়তা এবং গুরুত্ব লক্ষ্য করেই তখন তাকে হাইডেলবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক পদে যোগ দানের জন্য আহ্বান জানানো হয়। তাকে একথা জানানো হয় যে, প্রতিষ্ঠিত ধর্মের বিরুদ্ধাচরণ না করলে তাকে শিক্ষাদানের ব্যাপারে পূর্ণ স্বাধীনতা দেয়া হবে। শিক্ষকতার কাজে যথেষ্ট সময় দানে সক্ষম হবেননা এবং উল্লেখিত শর্তটি তার পক্ষে পালন করা সম্ভব নয় ভেবে স্পিনোজা এই আহ্বান উপেক্ষা করেন। এরপর তার জীবদ্দশায় তিনি আর কোন গ্রন্থ প্রকাশ করেননি। তবে বন্ধু, শুভাকাঙ্ক্ষী এবং সমালোচকদের সাথে তিনি পত্র যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছিলেন। মৃত্যু ১৬৭০ সালের পর স্পিনোজা পত্র যোগাযোগ ছাড়া আর তেমন কিছু প্রকাশ করেননি। কিন্তু এ সময় তিনি দু্ইটি বই লেখার কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। "বোধের সযশোধন সম্বন্ধে" নামক একটি অসমাপ্ত বই শেষ করার কাজে তিনি মনোনিবেশ করেন। এছাড়া প্রতিদিন সন্ধ্যায় দোকান বন্ধ করার পর তিনি তার প্রধান গ্রন্থ এথিক্‌স রচনার কাজে লেগে যেতেন। এভাবে লেখালেখি করে ১৬৭৪ সালে তিনি এই বিখ্যাত গ্রন্থ রচনার কাজ সমাপ্ত করেন। পাণ্ডুলিপিটি তিনি লাইবনিজ সহ তার কয়েকজান বন্ধুকে দেখান। ১৬৭৫ সালে বইটি প্রকাশ করবেন বলে ভেবেছিলেন। কিন্তু প্রকাশের আগেই ধর্মানুরাগী সমাজে ছড়িয়ে পড়ে যে তিনি আরেকটি নিরীশ্বরবাদী গ্রন্থ প্রকাশ করতে যাচ্ছেন। এর ফলে তার আর এই বই প্রকাশ করা হয়ে উঠেনি। ১৬৭৭ সালের ফেব্রুয়ারি ২১ তারিখে নেদারল্যান্ডের হেগ শহরের উপকণ্ঠে নিজস্ব বাসভবনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর অসংখ্য চিঠিপত্র এবং কিছু অপ্রকাশিত রচনাবলীর সাথে তার বিখ্যাত এথিক্‌স গ্রন্থটি তার কক্ষে পাওয়া যায়। এ সব ছিল স্পিনোজার সারা জীবনের সঞ্চয়। স্পিনোজার দর্শনের উৎস স্পিনোজার দর্শন বেশ কয়েকটি উৎস থেকে অনুপ্রেরণা লাভ করেছে। এগুলোকে উৎস হিসেবে উল্লেখ করলেও এটি মানতেই হবে যে, তার দর্শন ছিল অনন্য এবং মৌলিক। ১৬৬০ সালে তিনি যখন আমস্টারডামে প্রত্যাবর্তন করেন তখন থেকেই একজন স্বাধীন, নির্ভীক ও মৌলিক দার্শনিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছিলেন। বার্ট্রান্ড রাসেলের মতে, দার্শনিক দক্ষতার দিক থেকে কেউ কেউ হয়তো স্পিনোজাকে অতিক্রম করে থাকতে পারেন, কিন্তু নীতিনিষ্ঠার দিক থেকে তিনি ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ। যাহোক তার দর্শনের উৎসগুলো এখানে আলোচিত হচ্ছে: স্পিনোজা সর্বপ্রথম ঐতিহ্যবাহী ইহুদি দার্শনিকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন মাইমোনাইড্‌স এবং এবিসেব্রন। এদের প্রেরণায়ই তিনি মধ্যযুগীয় আরব দর্শনের সাথে পরিচয় লাভের সূত্র খুঁজে পান। আরবীয় এরিস্টটলবাদ, নব্য-প্লেটোবাদ এবং সক্রিয় বুদ্ধি সম্পর্কে মুসলিম দার্শনিকদের মতের সাথে তিনি পরিচিত হন। তিনি যে স্বতঃসিদ্ধ ও প্রতিজ্ঞা থেকে সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার পদ্ধতি অনুশীলন করতেন তা মধ্যযুগীয় দর্শন সম্বন্ধে সুস্পষ্ট থাকারই ফলশ্রুতি। জর্দানো ব্রুনোর মতের সাথে তিনি বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন। ব্রুনোর মতে সকল পদার্থ একই আদিম পদার্থ থেকে উৎপন্ন। সমগ্র বিশ্বজগৎ এক; জড় এবং চেতনা এক এবং অভিন্ন। ব্রুনোর দর্শন দ্বারা স্পিনোজা কতখানি প্রভাবিত হয়েছিলেন তা বাংলাদেশী দর্শন শিক্ষক ডঃ আমিনুল ইসলামের উক্তি থেকে বোঝা যায়: স্পিনোজার দর্শন স্পিনোজার দর্শনকে যুক্তিবাদী চিন্তাধারার অংশ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, যার অর্থ হল এর হৃদয়ে ধারণা গুলি বাস্তবতার সাথে পুরোপুরি মিলে যায়, একইভাবে গণিতকে বিশ্বের একটি সঠিক উপস্থাপনা বলে মনে করা হয়। রেনে দেকার্তকে অনুসরণ করে, তিনি 'স্পষ্ট এবং স্বতন্ত্র ধারণা' থেকে যৌক্তিক বাদ দিয়ে সত্যকে বোঝার লক্ষ্য নিয়েছিলেন, এমন একটি প্রক্রিয়া যা সর্বদা স্বতঃসিদ্ধের 'স্বতঃস্ফূর্ত সত্য' থেকে শুরু হয়। মুক্তবুদ্ধি ও বন্ধনমুক্তি শাশ্বত শুভ ও অশুভ রাষ্ট্রবিজ্ঞান তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি স্পিনোজা লিখিত Short Treatise on God, Man and His Well-Being. ১৬৬২. On the Improvement of the Understanding. Project Gutenberg ১৬৬৩. Principia philosophiae cartesianae. Gallica. Principles of Cartesian Philosophy, translated by Samuel Shirley, with an Introduction and Notes by Steven Barbone and Lee Rice, Indianapolis, 1998. ১৬৭০. Tractatus Theologico-Politicus A Theologico-Political Treatise Project Gutenberg: Part 1 Part 2 Part 3 Part 4 ১৬৭৭. Ethica Ordine Geometrico Demonstrata (The Ethics) Project Gutenberg. Another translation, by Jonathan Bennett. ১৬৭৭. Hebrew Grammar. স্পিনোজা সম্পর্কে Gabriel Albiac, 1987. La sinagoga vacía: un estudio de las fuentes marranas del espinosismo. Madrid: Hiperión D.L. Etienne Balibar, 1985. Spinoza et la politique ("Spinoza and politics") Paris: PUF. Boucher, Wayne I., 1999. Spinoza in English: A Bibliography from the Seventeenth Century to the Present. 2nd edn. Thoemmes Press. Boucher, Wayne I., ed., 1999. Spinoza: Eighteenth and Nineteenth-Century Discussions. 6 vols. Thommes Press. Damásio, António 2003. Looking for Spinoza: Joy, Sorrow, and the Feeling Brain, Harvest Books, Gilles Deleuze, 1968. Spinoza et le problème de l'expression. Trans. "Expressionism in Philosophy: Spinoza". ———, 1970. Spinoza - Philosophie pratique. Transl. "Spinoza: Practical Philosophy". Della Rocca, Michael. 1996. Representation and the Mind-Body Problem in Spinoza. Oxford University Press. Garrett, Don, ed., 1995. The Cambridge Companion to Spinoza. Cambridge Uni. Press. Gatens, Moira, and Lloyd, Genevieve, 1999. Collective imaginings : Spinoza, past and present. Routledge. , Gullan-Whur, Margaret, 1998. Within Reason: A Life of Spinoza. Jonathan Cape. Hampshire, Stuart 1951. Spinoza and Spinozism, OUP, 2005 Lloyd, Genevieve, 1996. Spinoza and the Ethics. Routledge. , Kasher, Asa, and Shlomo Biderman. "Why Was Baruch de Spinoza Excommunicated?" Arthur O. Lovejoy, 1936. "Plenitude and Sufficient Reason in Leibniz and Spinoza" in his The Great Chain of Being. Harvard University Press: 144-82 (). Reprinted in Frankfurt, H. G., ed., 1972. Leibniz: A Collection of Critical Essays. Anchor Books. Pierre Macherey, 1977. Hegel ou Spinoza, Maspéro (2nd ed. La Découverte, 2004). ———, 1994-98. Introduction à l'Ethique de Spinoza. Paris: PUF. Matheron, Alexandre, 1969. Individu et communauté chez Spinoza, Paris: Minuit. Nadler, Steven, 1999. Spinoza: A Life. Cambridge Uni. Press. Antonio Negri, 1991. The Savage Anomaly: The Power of Spinoza's Metaphysics and Politics. ———, 2004. Subversive Spinoza: (Un)Contemporary Variations. Michael Hardt, trans., University of Minnesota Press. Preface, in French, by Gilles Deleuze, available here. Pierre-Francois Moreau, 2003, Spinoza et le spinozisme, PUF (Presses Universitaires de France) Stoltze, Ted and Warren Montag (eds.), The New Spinoza Minneapolis: University of Minnesota Press, 1997. Yovel, Yirmiyahu, "Spinoza and Other Heretics", Princeton, Princeton University Press, 1989. বহিঃসংযোগ Refutation of Spinoza by Leibniz In full at Google Books The Ethics An easily readable version. Vereniging Het Spinozahuis The Spinoza Net Spinoza and Spinozism - BDSweb A Theologico-Political Treatise -English Translation HyperSpinoza Internet Encyclopedia of Philosophy - Spinoza Immortality in Spinoza Biography of Spinoza An Interview With Rebecca Goldstein, Author of "Betraying Spinoza: The Renegade Jew Who Gave Us Modernity" California Literary Review Spinoza Mind of the Modern.Audio from Radio Opensource Stanford Encyclopedia of Philosophy: Spinoza Spinoza's Psychological Theory Dutch Spinoza Museum in Rijnsburg ১৬৩২-এ জন্ম ১৬৭৭-এ মৃত্যু ওলন্দাজ দার্শনিক সাংস্কৃতিক সমালোচক দর্শনের ইতিহাস ধর্মের সমালোচক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার বিজ্ঞানের দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক সংস্কৃতির দার্শনিক আলোকিত যুগ ইহুদি দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক ধর্মনিরপেক্ষতা
https://en.wikipedia.org/wiki/Baruch_Spinoza
Baruch Spinoza
Baruch (de) Spinoza (24 November 1632 – 21 February 1677), also known under his Latinized pen name Benedictus de Spinoza, was a philosopher of Portuguese-Jewish origin. A forerunner of the Age of Enlightenment, Spinoza significantly influenced modern biblical criticism, 17th-century rationalism, and Dutch intellectual culture, establishing himself as one of the most important and radical philosophers of the early modern period. Influenced by Stoicism, Thomas Hobbes, René Descartes, Ibn Tufayl, and heterodox Christians, Spinoza was a leading philosopher of the Dutch Golden Age. Spinoza was born in Amsterdam to a Marrano family that fled Portugal for the more tolerant Dutch Republic. He received a traditional Jewish education, learning Hebrew and studying sacred texts within the Portuguese Jewish community, where his father was a prominent merchant. As a young man, Spinoza challenged rabbinic authority and questioned Jewish doctrines, leading to his permanent expulsion from the Jewish community in 1656. Following his excommunication, he distanced himself from all religious affiliations and devoted himself to philosophical inquiry and lens grinding. Spinoza attracted a dedicated circle of followers who gathered to discuss his writings and joined him in the intellectual pursuit of truth. Spinoza published little to avoid persecution and bans on his books. In his Tractatus Theologico-Politicus, described by Steven Nadler as "one of the most important books of Western thought", Spinoza questioned the divine origin of the Hebrew Bible and the nature of God while arguing that ecclesiastic authority should have no role in a secular, democratic state. Ethics argues for a pantheistic view of God and explores the place of human freedom in a world devoid of theological, cosmological, and political moorings. Rejecting messianism and the emphasis on the afterlife, Spinoza emphasized appreciating and valuing life for oneself and others. By advocating for individual liberty in its moral, psychological, and metaphysical dimensions, Spinoza helped establish the genre of political writing called secular theology. Spinoza's philosophy spans nearly every area of philosophical discourse, including metaphysics, epistemology, political philosophy, ethics, philosophy of mind, and philosophy of science. His friends posthumously published his works, captivating philosophers for the next two centuries. Celebrated as one of the most original and influential thinkers of the seventeenth century, Rebecca Goldstein dubbed him "the renegade Jew who gave us modernity."
1486
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9F%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B8%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B2%20%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%A8
টমাস স্যামুয়েল কুন
থমাস স্যামুয়েল কুন (ইংরেজি Thomas Samuel Kuhn, জুলাই ১৮, ১৯২২-জুন ১৭, ১৯৯৬) ছিলেন একজন মার্কিন বুদ্ধিজীবী। তিনি ব্যাপক দৃষ্টিকোণ থেকে বিজ্ঞানের ইতিহাস রচনা করেছিলেন। তিনি বিজ্ঞানের দর্শন সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মতবাদের প্রবক্তা। তথ্যসূত্র মার্কিন ইতিহাসবিদ মার্কিন দার্শনিক ১৯২২-এ জন্ম ১৯৯৬-এ মৃত্যু বিজ্ঞানের দার্শনিক ইহুদি মার্কিন ইতিহাসবিদ ইহুদি দার্শনিক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন ইতিহাসবিদ ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক ২০শ শতাব্দীর মার্কিন দার্শনিক প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ফুসফুসের ক্যান্সারে মৃত্যু মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য
https://en.wikipedia.org/wiki/Thomas_Kuhn
Thomas Kuhn
Thomas Samuel Kuhn (; July 18, 1922 – June 17, 1996) was an American historian and philosopher of science whose 1962 book The Structure of Scientific Revolutions was influential in both academic and popular circles, introducing the term paradigm shift, which has since become an English-language idiom. Kuhn made several claims concerning the progress of scientific knowledge: that scientific fields undergo periodic "paradigm shifts" rather than solely progressing in a linear and continuous way, and that these paradigm shifts open up new approaches to understanding what scientists would never have considered valid before; and that the notion of scientific truth, at any given moment, cannot be established solely by objective criteria but is defined by a consensus of a scientific community. Competing paradigms are frequently incommensurable; that is, they are competing and irreconcilable accounts of reality. Thus, our comprehension of science can never rely wholly upon "objectivity" alone. Science must account for subjective perspectives as well, since all objective conclusions are ultimately founded upon the subjective conditioning/worldview of its researchers and participants.
1487
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%B2%20%E0%A6%AA%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%B0
কার্ল পপার
স্যার কার্ল রেইমন্ড পপার, কম্প্যানিয়ন অব অনার, ফেলো অব দ্য ব্রিটিশ একাডেমী, ফেলো অব দ্য রয়েল সোসাইটি(২৮ জুলাই ১৯০২ - ১৭ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪) ছিলেন একজন অস্ট্রিয়-ব্রিটিশ দার্শনিক এবং অধ্যাপক। তাকে সাধারণত বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সেরা 'বিজ্ঞানের দার্শনিক' হিসেবে ধরা হয়। পপার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির ক্ষেত্রে পূর্ববর্তী তর্কশাস্ত্র প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, তিনি প্রায়োগিক জালকরণের পক্ষে ছিলেন, একটি তত্ত্ব যা অভিজ্ঞতাবাদী বিজ্ঞানে কখনোই প্রমাণিত হতে পারেনা, কিন্তু এটা মিথ্যা বর্ণিত হতে পারে, অর্থাৎ এটা পারে এবং অবেক্ষিত হবে ধোঁকার পরীক্ষণ দ্বারা। পপার যে কোনো কাজ বা সত্যতার প্রতিপাদকের বিরোধিতা করতেন, যেটাকে তিনি সমালোচনামূলক যুক্তিবাদ দ্বারা প্রতিস্থাপন করেন, নাম দেন "দর্শনের ইতিহাসে সমালোচনার প্রথম অ-প্রতিপাদ্য দর্শন"। রাজনৈতিক বক্তৃতার ক্ষেত্রে, তিনি উদারনৈতিক গণতন্ত্রের পক্ষের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠবান ছিলেন, এবং 'সামাজিক সমালোচনা' মতবাদের ক্ষেত্রে তিনি বিশ্বাস করতে পেরেছিলেন যে সতেজভাবে একটি মুক্তসমাজের বেড়ে ওঠা সম্ভব। তার রাজনৈতিক দর্শনগুলো সব মুখ্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মতাদর্শের ধারণাগুলো গ্রহণ করে এবং পুনরায় সামঞ্জস্যবিধান করার চেষ্টা করেঃ সমাজতন্ত্র/সামাজিক গণতন্ত্র, উদারতাবাদ/প্রাচীন উদারনীতিবাদ এবং রক্ষণশীলতাবাদ। ব্যক্তিগত জীবন পরিবার ও প্রশিক্ষণ কার্ল পপার ১৯০২ সালে ভিয়েনাতে (ভিয়েনা তখন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির মধ্যে, ১৮৬৭-১৯১৮) জন্ম গ্রহণ করেন, তার বাবা-মা ছিলেন উচ্চ মধ্যবিত্ত। কার্ল পপারের পিতামহ-মহীরা সবাই ইহুদী ধর্মের অনুসারী ছিলেন কিন্তু গোঁড়া ছিলেন না, এবং কার্লের জন্মের আগে সংস্কৃতি-পুঞ্জীভূতকরণের অংশ হিসেবে তারা লুথেরীনবাদ ধর্মে দীক্ষা নেন এবং কার্লও লুথেরীয় ব্যাপ্টিজমের বিশ্বাস লাভ করেন। কার্লের পিতা সাইমন সিগমুণ্ড কার্ল পপার ছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের বোহেমিয়া এলাকার একজন আইনজীবী এবং ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন আইনের ডক্টরেট, এবং মাতা জেনী শিফ ছিলেন পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত। কার্ল পপারের কাকা ছিলেন অস্ট্রীয় দার্শনিক জোসেফ পপার-লিংকেউস। ভিয়েনাতে আবাস গড়ার পর, পপাররা ভিয়েনার সমাজের উঁচু অবস্থানের উঠে যান, সাইমন সিগমুণ্ড হার্ল গ্রুবল নামক একজন উদারনৈতিক আইনজীবীর সঙ্গী হয়ে যান, এবং ১৮৯৮ সালে হার্লের মৃত্যু হলে তার ব্যবসা নিজের হাতে নেন সাইমন। এই হার্ল গ্রুবলের আরেক নাম ছিল রেইমন্ড, এই রেইমন্ড পরে কার্লের নামেও স্থান পায়। পপার নিজেই তার জীবন-কাহিনীতে বলেন তার এই রেইমন্ড নামের কথা যে এটা হার্ল গ্রুবল নামক এক ব্যক্তি থেকে এসেছে। তার পিতা ছিলেন একজন বইপোকা যার ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারে ১২,০০০ থেকে ১৪,০০০ এর মত বই ছিলো এবং তার দর্শন, প্রাচীন যুগ এবং সামাজিক এবং রাজনৈতিক বিষয়গুলো আগ্রহের ছিলো। পপার গ্রন্থাগার এবং বই পড়ার স্বভাব তার বাবার কাছ থেকেই পান। কার্ল পরে বর্ণনা দেন যে তিনি বইয়ের মধ্যেই বড় হয়েছেন। পপার ১৬ বছর বয়সে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন এবং ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিত, পদার্থবিদ্যা, দর্শন, মনোবিজ্ঞান এবং সঙ্গীতের ইতিহাসের অতিথি ছাত্র হিসেবে যোগ দেন। ১৯১৯ সালে তিনি মার্ক্সবাদের প্রতি আকর্ষিত হন এবং সঙ্গে সঙ্গে যোগ দেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্র-সংঘতে (এ্যাসোসিয়েশন অব সোশালিস্ট স্কুল স্টুডেন্টস)। তিনি রাজনৈতিক দল 'সোশাল ডেমোক্রেটিক ওয়ার্কার্স পার্টি অব অস্ট্রিয়া' (অস্ট্রিয়ার সমাজবাদী গণতন্ত্রী পার্টি) এর সদস্যও বনে যান, যেটি পুরোপুরি মার্ক্সবাদী মতাদর্শ দ্বারা গঠিত ছিলো। ১৫ জুন ১৯১৯ তারিখে পুলিশ হর্লগ্যাসে এলাকায় এই রাজনৈতিক দলের কর্মীদের উপর হামলা চালালে আটজন নিহত হয়, তার এই ঘটনার পর কার্ল মার্ক্সের 'ছদ্ম বৈজ্ঞানিক' (ঐতিহাসিক বস্তুবাদ) মতাদর্শ মন থেকে মুছে যায় এবং তিনি তখন থেকে সামাজিক উদারনীতি মতবাদের আজীবন সমর্থকে রূপান্তরিত হন। তিনি সড়ক নির্মাণের কাজে কিছু সময়ের জন্য নিয়োজিত হন, তবে কঠোর পরিশ্রম করতে পারেননি। ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি ছাত্র হিসেবে তিনি জীবন চালিয়ে যাচ্ছিলেন, এরই মধ্যে আসবাবপত্র নির্মাতা ছুতারমিস্ত্রীর কাজ শিখে নিজেকে ঠিকা মজুর হিসেবে প্রস্তুত করেন। তিনি ঐ সময়ে বাচ্চাদের জন্য প্রতিদিনকার সেবার চিন্তা করেন, যেটার জন্য তিনি ধারণা করেছিলেন যে তার আসবাবপত্র বানানোর সক্ষমতা কাজে আসবে। এরপর তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আলফ্রেড এ্যাডলারের বাচ্চাদের জন্য ক্লিনিকে কাজ করেন। ১৯২২ সালে তিনি ম্যাচুরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন দ্বিতীয় বার দেওয়ার পরে এবং ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অবশেষে একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীর মর্যাদা পান। তিনি প্রাথমিক শিক্ষক হবার যোগ্যতা পান ১৯২৪ সালে এবং সমাজের নিম্ন শ্রেণীর শিশুদের একটি স্কুলে তিনি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। তিনি ১৯২৫ সালে দর্শন এবং মনোবিজ্ঞান পড়েন নবগঠিত একটি প্রতিষ্ঠানে। তিনি এই সময়ের মধ্যে জোসেফিন এ্যান্না হেনিঙ্গার নামের এক তরুণীর সঙ্গে প্রেম করা শুরু করেন যিনি পরে তার পত্নী হয়েছিলেন। ১৯২৮ সালে তিনি কার্ল বাহলারের (জার্মান মনোবিজ্ঞানী) তত্ত্বাবধানে মনোবিজ্ঞানে ডক্টরেট উপাধি অর্জন করেন। তার গবেষণামূলক দীর্ঘ নিবন্ধের শিরোনাম ছিলো "দার্শনিক মনোবিজ্ঞানে প্রশ্ন করার পদ্ধতি"। তিনি ১৯২৯ সালে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গণিত এবং পদার্থবিদ্যা পড়ানোর অনুজ্ঞা পান এবং যেটা তিনি শুরু করে দেন। ১৯৩০ সালে তিনি জোসেফিন এ্যান্না হেনিঙ্গার (তার সহকর্মীও) এর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। জোসেফিন ১৯০৬ সালে জন্ম নেন এবং '৮৫ সালে মারা যান। নাৎসিবাদের উত্থান এবং অস্ট্রিয়ার জার্মানির মধ্যে ঢুকে যাওয়ার সময় তিনি ভয় পেয়ে যান এবং দিন-রাত ব্যয় করে তার প্রথম বই "জ্ঞানের তত্ত্বের দুটি মৌলিক সমস্যা" লেখতে থাকেন। ইহুদীদের জন্য নিরাপদ এমন একটি দেশে তার শিক্ষাগত মর্যাদা পাওয়ার জন্য একটি বই প্রকাশের দরকার ছিলো। যদিও তিনি দ্বি-সংখ্যা বিশিষ্ট বইটি প্রকাশ করেননি, কিন্তু বইটির একটি সংক্ষিপ্ত সংস্করণ বের করে এবং কিছু নতুন উপাদান যোগ করে 'বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের যুক্তি' নামে প্রকাশ করেন ১৯৩৪ সালে। এখানে তিনি মনস্তত্ত্ববাদ, প্রকৃতিবাদ, তর্কশাস্ত্রবাদ এবং যৌক্তিক ধনাত্মকতাবাদ এর সমালোচনা করেন এবং অবিজ্ঞান থেকে বিজ্ঞানের সীমানানির্দেশের নির্ণায়ক হিসেবে তার সম্ভাবনাময় জালকরণের তত্ত্ব প্রয়োগ করেন। ১৯৩৫ এবং ১৯৩৬ সালে তিনি অপরিশোধিত ছুটিতে শিক্ষা সফরে যুক্তরাজ্য গমন করেন। শিক্ষা জীবন ১৯৩৭ সালে কার্ল এমন একটি অবস্থানে আসেন যেটি তাকে নিউজিল্যান্ডে স্থানান্তরিত হওয়ার সক্ষমতা যোগায়, তিনি ক্রাইস্টচার্চে অবস্থিত নিউজিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্যান্টারবেরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে দর্শনের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি সে দেশে 'মুক্ত সমাজ এবং এটার দুশমনেরা' নামের একটি বই লেখেন (যুক্তরাজ্যে ১৯৪৫ সালে প্রকাশিত হয়)। কার্ল নিউ জীল্যান্ডের ডুনেডিন শহরে শরীরতত্ত্ববিদ্যার অধ্যাপক জন ক্যারু এ্যাকলেসের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ১৯৪৬ সালে কার্ল যুক্তরাজ্যে যান যুক্তিবিদ্যা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিয়ে পড়তে, সেখানে তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে অধ্যায়ন করেন। তিন বছর পর ১৯৪৯ সালে তাকে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তিবিদ্যা এবং বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বিষয়ের অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি ১৯৫৮ থেকে ১৯৫৯ পর্যন্ত লন্ডনের 'ব্লুম্সবারী স্কয়ার' এর 'এ্যারিস্টোটোলীয় সমাজ' এর সভাপতি ছিলেন। ১৯৮৫ সালে তিনি তার অসুস্থ পত্নীকে দেখার জন্য অস্ট্রিয়া আসেন, জোসেফিন ঐ বছরের নভেম্বরে মারা যান। অস্ট্রিয়ার পদার্থবিদ এবং দার্শনিক লুডউইগ বোল্টয্মানের নামের গবেষণা প্রতিষ্ঠান কার্লকে বিজ্ঞানের দর্শনের নতুন গবেষণা শাখার পরিচালক বানাতে ব্যর্থ হলে, তিনি '৮৬ সালে যুক্তরাজ্যের কেনলীতে চলে আসেন। মৃত্যু পপার ১৯৯৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তারিখে মারা যান যুক্তরাজ্যের কেনলীতে, তার কিডনীতে সমস্যা ছিলো এবং নিউমোনিয়া ও ক্যান্সার রোগেও ভুগছিলেন তিনি। মৃত্যুর দুই সপ্তাহ আগেও তিনি তার দর্শন নিয়ে কাজ করছিলেন কিন্তু হঠাৎ তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার শবদেহ আগুনে পড়ানোর পর ছাইগুলো ভিয়েনাতে নিয়ে যাওয়া হয় 'অস্ট্রীয় ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন' এর সদর দপ্তরের কাছের একটি এলাকায় যেখানে তার পত্নী জোসেফিনকে আগেই সমাধিত করা হয়েছে। পপারের ভূসম্পত্তি তার সচিব এবং ব্যক্তিগত সহকারী মেলিটা মিউ এবং তার পতি রেইমন্ড দ্বারা ব্যবস্থিত হয়ে আসছে। পপারের গ্রন্থ বা প্রবন্ধাদির হস্তলিখিত অনুলিপি যুক্তরাষ্ট্রের 'স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়' এর হুভার ইন্সটিটিউশনে যায়, আংশিকভাবে তার জীবদ্দশায় এবং আংশিকভাবে অতিদিষ্ট বস্তু হিসেবে তার মৃত্যুর পর। অস্ট্রিয়ার ক্লাগেনফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয় পপারের গ্রন্থাগারের স্বত্বাধিকারিত্ব রেখেছে, এর মধ্যে রয়েছে তার মূল্যবান প্রিয় গ্রন্থগুলো, সাথে সাথে আসল হুভার ম্যাটেরিয়ালগুলোর হার্ডকপি এবং অতিরিক্ত ম্যাটেরিয়ালগুলোর মাইক্রোফিল্ম। তার অবশিষ্ট ভূসম্পত্তিগুলোর অধিকাংশ 'দ্য কার্ল পপার চ্যারিটেবল ট্রাস্ট' স্থানান্তর করা হয়েছিল। ২০০৮ এর অক্টোবরে ক্লাগেনফুর্ট বিশ্ববিদ্যালয় তার ভূসম্পত্তি থেকে আইনগত অধিকার নেয়। পপার এবং তার পত্নী বাচ্চা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যুদ্ধের পরিস্থিতি দেখে তাদের বিয়ের প্রথম কয়েক বছরে। পপার এ ব্যাপারে মন্তব্য করেন যে "এটি সম্ভবত ছিলো কাপুরুষতা কিন্তু একদিক দিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত"। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Karl Popper on Stanford Encyclopedia of Philosophy Popper, K. R. "Natural Selection and the Emergence of Mind", 1977. The Karl Popper Web Influence on Friesian Philosophy Sir Karl R. Popper in Prague, May 1994 Synopsis and background of The poverty of historicism "A Skeptical Look at Karl Popper" by Martin Gardner "A Sceptical Look at 'A Skeptical Look at Karl Popper'" by J C Lester. The Liberalism of Karl Popper by John N. Gray Karl Popper on Information Philosopher History of Twentieth-Century Philosophy of Science, BOOK V: Karl Popper Site offers free downloads by chapter available for public use. Karl Popper at Liberal-international.org A science and technology hypotheses database following Karl Popper's refutability principle কার্ল পপার ১৯০২-এ জন্ম ১৯৯৪-এ মৃত্যু ২০শ শতাব্দীর দার্শনিক ২০শ শতাব্দীর অস্ট্রীয় লেখক ২০শ শতাব্দীর ব্রিটিশ লেখক অস্ট্রীয় অজ্ঞেয়বাদী অস্ট্রীয় দার্শনিক ব্রিটিশ দার্শনিক সাংস্কৃতিক সমালোচক ধর্মের সমালোচক সামাজিক সমালোচক সামাজিক দার্শনিক সামাজিক ভাষ্যকার বিজ্ঞানের দার্শনিক ব্রিটিশ অজ্ঞেয়বাদী যুক্তরাজ্যের স্বাভাবিক নাগরিক ২০শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক অস্ট্রীয় যুক্তিবিদ ব্রিটিশ যুক্তিবিজ্ঞানী অস্ট্রীয়-ইহুদি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ব্যক্তি ব্রিটিশ অ্যাকাডেমির সভ্য দর্শনের ইতিহাসবিদ ইহুদি অজ্ঞেয়বাদী ইহুদি দার্শনিক নাইটস ব্যাচেলর যুক্তিবিজ্ঞানী সংস্কৃতির দার্শনিক অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক শিক্ষার দার্শনিক ইতিহাসের দার্শনিক ধর্মের দার্শনিক প্রযুক্তির দার্শনিক রাজনৈতিক দার্শনিক পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক বিশ্বায়ন বিষয়ক লেখক
https://en.wikipedia.org/wiki/Karl_Popper
Karl Popper
Sir Karl Raimund Popper (28 July 1902 – 17 September 1994) was an Austrian–British philosopher, academic and social commentator. One of the 20th century's most influential philosophers of science, Popper is known for his rejection of the classical inductivist views on the scientific method in favour of empirical falsification. According to Popper, a theory in the empirical sciences can never be proven, but it can be falsified, meaning that it can (and should) be scrutinised with decisive experiments. Popper was opposed to the classical justificationist account of knowledge, which he replaced with critical rationalism, namely "the first non-justificational philosophy of criticism in the history of philosophy". In political discourse, he is known for his vigorous defence of liberal democracy and the principles of social criticism that he believed made a flourishing open society possible. His political philosophy embraced ideas from major democratic political ideologies, including libertarianism/classical liberalism, socialism/social democracy and conservatism, and attempted to reconcile them.
1489
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%80%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%82%E0%A6%B9
ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণসমূহ
তড়িৎ-চৌম্বকীয় তত্ত্বে, জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল বর্ণিত চারটি সমীকরণ ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণসমূহ নামে পরিচিত। এই সমীকরণ গুলো তড়িৎ ক্ষেত্র এবং চৌম্বক ক্ষেত্রএর বৈশিষ্ট্য এবং পদার্থের আন্তঃসংযোগসমূহ বর্ণনা করে। সমীকরণসমূহের সাধারণ রূপ {| class="wikitable" |- ! scope="col" | ধরন ! scope="col" style="width: 15em;" | নাম ! scope="col" | মাইক্রোস্কোপিক সমীকরণ ! scope="col" | ম্যাক্রোস্কোপিক সমীকরণ |- ! scope="row" rowspan="4" | সমাকলন ! scope="row" | গাউসের সূত্র | | |- ! scope="row" | গাউসের চুম্বকত্বের সূত্র | | মাইক্রোস্কোপিকের মতোই |- ! scope="row" | ম্যাক্সওয়েল-ফ্যারাডে সমীকরণ (ফ্যারাডের সূত্র) | | মাইক্রোস্কোপিকের মতোই |- ! scope="row" | অম্পেয়্যারের বর্তনী সূত্র (ম্যাক্সওয়েলের সংশোধন সহ) | | |- ! scope="row" rowspan="4" | অন্তরক ! scope="row" | গাউসের সূত্র | | |- ! scope="row" | গাউসের চুম্বকত্বের সূত্র | | মাইক্রোস্কোপিকের মতোই |- ! scope="row" | ম্যাক্সওয়েল-ফ্যারাডে সমীকরণ (ফ্যারাডের আবেশ সূত্র) | | মাইক্রোস্কোপিকের মতোই |- ! scope="row" | আম্পেরের বর্তনী সূত্র (ম্যাক্সওয়েলের সংশোধন সহ) | | |} ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণগুলোতে নিচের সংকেতগুলো ব্যবহার করা হয়েছে: {| class="wikitable" |- ! scope="col" style="width: 10em" | ধরন ! scope="col" | সংকেত ! scope="col" style="width: 30em" | অর্থ ! scope="col" style="width: 15em" | আন্তর্জাতিক একক |- ! rowspan="3" scope="row" | অন্তরক অপারেটর |   | ডাইভারজেন্স অপারেটর | প্রতি মিটার (অপারেটরটি প্রয়োগ করলেই কেবল একক পাওয়া যাবে) |- |   | কার্ল অপারেটর | প্রতি মিটার |- |   | সময়ের সাপেক্ষে আংশিক অন্তরক | প্রতি সেকেন্ড |- ! rowspan="6" scope="row" | ক্ষেত্র |  E | তড়িৎ ক্ষেত্র বা তড়িৎ ক্ষেত্রের তীব্রতা | ভোল্ট প্রতি মিটার বা নিউটন প্রতিক কুলম্ব |- |  B | চৌম্বক ক্ষেত্র বা চৌম্বক আবেশ বাচৌম্বক ক্ষেত্রের তীব্রতা বাচৌম্বক ফ্লাক্স ঘনত্ব | টেসলাভেবার প্রতি বর্গমিটারভোল্ট-সেকেন্ড প্রতি বর্গমিটার |- |  D | তড়িৎ আবেশ বা electric displacement field বা তড়িৎ ফ্লাক্স ঘনত্ব | কুলম্ব প্রতি বর্গমিটারনিউটন প্রতি ভোল্ট-মিটার |- |  H | চুম্বকায়ন ক্ষেত্র বা অক্সিলারি চৌম্বক ক্ষেত্রচৌম্ব ক্ষেত্রের তীব্রতাচৌম্ব ক্ষেত্র | আম্পেরে প্রতি মিটার |- |  ε0 | শূন্য স্থানের প্রবেশ্যতা বা তড়িৎ ধ্রুবক | ফ্যারাড প্রতি মিটার |- |  μ0 | শূন্য স্থানের ভেদনযোগ্যতা বা চৌম্বক ধ্রুবক | হেনরি প্রতি মিটারনিউটন প্রতি বর্গআম্পেরে |- ! rowspan="6" scope="row" | আধান এবং তড়িৎ প্রবাহ | Qf(V) | V আয়তনের মাঝে মোট মুক্ত তড়িৎ আধান | কুলম্ব |- |  Q(V) | V আয়তনের মোট মুক্ত এবং বদ্ধ আধান | কুলম্ব |- |  ρf | মুক্ত আধানের ঘনত্ব | কুলম্ব প্রতি ঘনমিটার |- |  ρ | মোট আধান ঘনত্ব | কুলম্ব প্রতি ঘনমিটার |- |  Jf | মুক্ত তড়িৎ প্রবাহের ঘনত্ব | আম্পেরে প্রতি বর্গমিটার |- |  J | মোট তড়িৎ প্রবাহ | আম্পেরে প্রতি বর্গমিটার |- ! rowspan="11" scope="row" | রেখা এবং পৃষ্ঠ সমাকলন |  Σ and ∂Σ | Σ যেকোন পৃষ্ঠ এবং ∂Σ সেই পৃষ্ঠের বাউন্ডারি কার্ভ। পৃষ্ঠটি সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয় না। | |- |  d | পথ বা বক্রের সাথে স্পর্শক হিসেবে থাকা পথদৈর্ঘ্যের ভেক্টর উপাদানের অন্তরক | মিটার |- |   | Σ পৃষ্ঠের ∂Σ বাউন্ডারি বরাবর তড়িৎ ক্ষেত্রের রেখা সমাকলন (∂Σ সর্বতা একটি বদ্ধ বক্র) | জুল প্রতি কুলম্ব |- |  | Σ পৃষ্ঠের ∂Σ বদ্ধ বাউন্ডারি বরাবর চৌম্বক ক্ষেত্রের রেখা সমাকলন | টেসলা-মিটার |- |  Ω এবং ∂Ω | Ω যেকোন আয়তন, এবং ∂Ω হচ্ছে তার বাউন্ডারি পৃষ্ঠ। আয়তন সময়ের সাথে অপরিবর্তনীয়। | |- |  dS | Σ পৃষ্ঠের সাথে লম্ব ক্ষেত্র S এর অন্তরক ভেক্টর উপাদান (S এর বদলে A ও ব্যবহার করা হয় কিন্তু তা চৌম্বক বিভবের সাথে গুলিয়ে ফেলার সম্ভাবনা আছে) | বর্গমিটার |- |   | বদ্ধ পৃষ্ঠ বাউন্ডারি ∂Ω বরাবর তড়িৎ ফ্লাক্স (তথা তড়িৎ ক্ষেত্রের পৃষ্ঠ সমাকলন) | জুল-মিটার প্রতি কুলম্ব |- |   | বদ্ধ পৃষ্ঠ বাউন্ডারি ∂Ω বরাবর চৌম্বক ফ্লাক্স (তথা চৌম্বক ক্ষেত্রের পৃষ্ঠ সমাকলন) | টেসলা-বর্গমিটার বা ভেবার |- |   | বদ্ধ পৃষ্ঠ বাউন্ডারি ∂Ω বরাবর তড়িৎ সরণ ক্ষেত্রের ফ্লাক্স | কুলম্ব |- | | Σ পৃষ্ঠ বরাবর মোট মুক্ত তড়িৎ প্রবাহ | আম্পেরে |- |   | Σ পৃষ্ঠ বরাবর মোট (বদ্ধ+মুক্ত) তড়িৎ প্রবাহ | আম্পেরে |} তড়িৎচুম্বকত্ব সমীকরণ আংশিক অন্তরক সমীকরণ ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণসমূহ বৈজ্ঞানিক সূত্র পদার্থবিজ্ঞানের সমীকরণ জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল
https://en.wikipedia.org/wiki/Maxwell%27s_equations
Maxwell%27s_equations
null
1490
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B6%20%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
ফ্যারাডের আবেশ সূত্র
১৮৩১ সালে বিখ্যাত ইংরেজ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে তড়িচ্চুম্বকীয় আবেশ বিষয়ে মৌলিক সূত্র আবিষ্কার করেন। তার নামানুসারে এই সূত্রকে ফ্যারাডের আবেশ সূত্র () বা ফ্যারাডের তড়িচ্চুম্বকীয় আবেশের সূত্র বলা হয়। চারটি স্বীকার্যের মাধ্যমে ফ্যারাডের এই সূত্রকে বর্ণনা করা যায়: যখনই কোন বদ্ধ তার কুণ্ডলীতে আবদ্ধ চৌম্বক বলরেখার সংখ্যা বা চৌম্বক ফ্লাক্সের পরিবর্তন ঘটে তখনই উক্ত কুণ্ডলীতে একটি তড়িচ্চালক শক্তি আবিষ্ট হয়। তার কুণ্ডলীতে আবিষ্ট এই তড়িচ্চালক শক্তির মান সময়ের সাথে কুণ্ডলীর মধ্য দিয়ে অতিক্রান্ত চৌম্বক বলরেখার সংখ্যা বা চৌম্বক ফ্লাক্সের পরিবর্তনের হারের সমানুপাতিক। তার কুণ্ডলীতে আবদ্ধ চৌম্বক ফ্লাক্সের বাড়তি বিপরীত তড়িচ্চালক শক্তি এবং এর ঘাটতি সমমুখী তড়িচ্চালক শক্তি উৎপন্ন হয়। তার কুণ্ডলীতে আবিষ্ট তড়িচ্চালক বলের মান গৌণ কুণ্ডলীর পাক সংখ্যার সমানুপাতিক। তথ্যসূত্র পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা তড়িৎচুম্বকত্ব তড়িৎগতিবিজ্ঞান মাইকেল ফ্যারাডে ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণসমূহ
https://en.wikipedia.org/wiki/Faraday%27s_law_of_induction
Faraday%27s_law_of_induction
null
1491
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A7%82%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0
লেন্‌জের সূত্র
লেনজ এর সুত্র একটি সহজ উপায় যার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি কীভাবে তড়িৎ চুম্বকীয় বর্তনী নিউটনের ৩য় সুত্র এবং শক্তির সংরক্ষণ সুত্র মেনে চলে । লেনজ এর সুত্র হেনরিক লেনজ এর নামানুসারে করা হয়েছে। এতে বলা হয় তড়িৎ চুম্বকীয় আবেশের সময় আবিষ্ট তড়িৎ প্রবাহের জন্য সৃষ্ট চৌম্বক ক্ষেত্রের দিক এমন হয়, যে চৌম্বক ফ্লাক্সের পরিবর্তনের আবিষ্ট তড়িৎপ্রবাহ উৎপন্ন হয়, যা সেই চৌম্বক ফ্লাক্সের পরিবর্তনকেই বাধা প্রদান করে। অন্যভাবে বললে, আবিষ্ট তড়িচ্চালক শক্তি বা তড়িৎ প্রবাহের দিক এমনভাবে হয় যে এটি উৎপন্ন হওয়ার মূল কারণের বিরুদ্ধে ক্রিয়া করে। লেনজ এর সুত্র ফ‍্যারাডের সুত্রের আবেশ ঋণাত্মক চিহ্ন দেয় এর থেকে বুঝা যায় যে আবেশিত তড়িচ্চালক বল (ℰ) এবং চৌম্বক প্রবাহ (∂ΦB) এর মধ্যে বিপরীত চিহ্ন আছে । বিপরীত তড়িৎ যদি পরিবর্তিত কোন চুম্বকীয় ক্ষেত্রের আবেশিত তড়িৎ i1 এবং অন্য তড়িৎ প্রবাহ i2 হয় তবে i2 এর দিক হবে i1 এর বিপরীত দিকে । যদি তড়িৎ গুলো দুটি গোলাকার অক্ষের পরিবাহী ℓ1 এবং ℓ2 হয় তবে তাদের প্রাথমিক অবস্থায় তারা শূন্য হবে এবং পরে তারা বিপরীতভাবে ঘুরবে । বিপরীত তড়িৎ একে অন্যকে বিকর্ষণ করে । এই সুত্র থাকে জানা যায়, প্রবাহ পরিবর্তনে বা গতির পরিবর্তনে কারণে চৌম্বক ক্ষেত্রের পরিবর্তন অথবা গতি একটি বর্তনীর মধ্যে দিয়ে আবেশিত হয়ে পরিচালিত হয়। উদাহরণ শক্তিশালী চুম্বকের পরমাণুর ভিতরে আবদ্ধ তড়িৎ একটি তামা অথবা এলুমিনিয়ামের নল এর মধ্যে বিপরীতভাবে আবর্তিত হতে পারে।এটি নলের মধ্যে দিয়ে ফোটা ফোটা দারা দেখা যায় । পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, নলের ভিতর চুম্বকের উৎপত্তি অনেক ধীর গতিতে যেখানে বাইরের গতি অনেক বেশি । ফারাডের সূত্রানুসারে যখন তড়িচ্চালক বল তৈরি হয় চুম্বকীয় প্রবাহ দ্বারা তখন তড়িচ্চালক আবেশ এর পোলারিটি এমন হয় যে এটি একটি চুম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে বা পরিবর্তনের বিরোধিতা করে আরেকটি তৈরি করে। তার সব সময় লুপের ধ্রুবকের চুম্বকীয় প্রবাহে রাখতে কাজ করে আবেশিত চুম্বক ক্ষেত্রের লুপের ভিতর। নিচের উদাহরণে যদি ক্ষেত্র B বৃদ্ধি পায় তবে আবেশিত ক্ষেত্র এর বিপরীতে এমন ভাবে কাজ করে যেন প্রায়োগিক ক্ষেত্র ধ্রুবক হয়। তড়িৎ এর মধ্যে চার্জ বিশ্লেষণ তড়িৎ চুম্বক ক্ষেত্রে যখন তড়িৎ ক্ষেত্রের পথে চার্জ এর পরিবর্তন হয়, কাজ তাদের দারাই সম্পাদিত হয়।ঋণাত্মক কাজের ক্ষেত্রে এটি স্থিতি শক্তি জমা করে এবং ধনাত্মক কাজের ক্ষেত্রে গতি শক্তি বৃদ্ধি করে। যখন মোট ধনাত্মক চার্জ q1 এর উপর প্রয়োগ করা হয়, এটি ভরবেগ লাভ করে।মোট কাজ q1 চুম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে যার শক্তি (চুম্বক প্রবাহের ঘনত্ব একক 1টেসলা = ১ ভোল্ট /সেকেন্ড বর্গ ) সরাসরি q1 এর গতির সাথে বৃদ্ধি পায়। এই চুম্বক ক্ষেত্র তার নিকট চার্জ q2 এর সাথে আকর্ষণ করে, ভরবেগ অতিক্রম করে এবং q1 এ ফিরে এসে ভরবেগ হারায়। q2 এবং q1 এর কাজ একইভাবে করে যখন কিছু তড়িচ্চালক বল ফিরে আসে এবং তা q1 হতে গ্রহণ করে। তড়িচ্চালক বল এর এই ফিরে আসা ৪র্থ উপাংশ চুম্বক আবেশ তৈরি করে । নিকটবর্তী q1 এবং q2 হল এর বড় প্রভাব । যখন q2 পরিবাহী মাধমের ভিতর যেমন পুরু স্লাব তৈরি হয় তামা বা অ্যালুমিনিয়াম দ্বারা,এটি আর ও তড়িচ্চালক বল q1 দ্বারা কাজ করে। q1 শক্তি সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায় না যেহেতু q2 দ্বারা তাপ উৎপন্ন হয় কিন্তু এটি দুটি বিপরীত চুম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে । চুম্বক ক্ষেত্রের শক্তির ঘনত্ব চুম্বক ক্ষেত্রের বর্গের প্রাবল্যর উপর নির্ভর করে। যাই হোক এই সব চুম্বকের ক্ষেত্রে উপাদান সরল রৈখিক নয় যেমন ফেরমেগনেটিক এবং সুপারমেগনেটিক এই সম্পর্ক মেনে চলে না । শক্তির ক্ষেত্র তড়িৎ ক্ষেত্র শক্তি সঞ্চয় করে। তড়িৎ ক্ষেত্রের শক্তির ঘনত্ব সাধারণত প্রতি একক কাজে ক্রমবর্ধমান প্রয়োজন ক্ষুদ্র একটি অপরিবর্তনীয় চুম্বকীয় ক্ষেত্র δB হলে ভরবেগের সংরক্ষণশীলতা ভরবেগ অবশ্যই এই পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হতে হবে। সুতরাং q1 যদি একটি দিকে ধাক্কা দেয়, q2 অন্য দিকে ধাক্কা দিবে এবং সমান শক্তি ও সমান সময়ে দিবে। কিন্তু এই পরিস্থিতি আর জটিল হয় যখন তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গ এর সীমাবদ্ধ গতির প্রসারণ জানা হয়। এর মানে হল অনেক সময়ের জন্য দুটি ভরবেগ এর চার্জ সংরক্ষিত হয় না। এটি বুঝায় যে, ক্ষেত্রের পার্থক্য বিবেচনা করা হবে ভরবেগ এর জন্য এবং এটা রিচার পি জেনমেন প্রমাণ করেন।১৯ শতাব্দীর সেরা তড়িৎ চুম্বকবিদ জেমস ক্লার্ক মাক্সওয়েল এর নাম দেন তড়িৎ চুম্বকীয় ভরবেগ তখনও সম্ভবত লেনজ এর সুত্রের বিপরীত চার্জ প্রয়োগের চেয়েও ক্ষেত্রের কিছু ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল । এটা অনুমান করা হয় যে,চার্জ এর প্রশ্নের মধ্যে চিহ্ন অভিন্ন। যদি অভিন্ন না হয় তাহলে তারা একটি প্রোটন এবং অন্যটি ইলেকট্রন। যাদের আকর্ষণ ভিন্ন । একটি চুম্বক ক্ষেত্র থেকে উৎপন্ন একটি ইলেকট্রন একটি তড়িৎচালক বল তৈরি করে। যার কারণ একটি প্রোটন এর গতি পরিবর্তন করে একই দিকে যেভাবে ইলেকট্রন করে। প্রথমে, এটি ভরবেগের সংরক্ষণের সুত্র মানবে না বলে মনে হয় ,কিন্তু অবশ্যই,এর একটি অন্তর্বর্তী ক্রিয়া কমপক্ষে একবার তড়িৎ চুম্বক ক্ষেত্রের ভরবেগ সংরক্ষণ করবে। তথসূত্র পদার্থবিজ্ঞান তড়িৎ-গতিবিজ্ঞান বৈজ্ঞানিক সূত্র তড়িৎগতিবিজ্ঞান
https://en.wikipedia.org/wiki/Lenz%27s_law
Lenz%27s_law
null
1494
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8
সংবিধান
সংবিধান হলো কোন শাসনব্যবস্থার মূল গ্রন্থ যাতে, স্বায়ত্তশাসিত কোন রাজনৈতিক সত্তার কর্তব্য নির্ধারণের মৌলিক নিয়ম ও সূত্রসমূহ লিপিবদ্ধ থাকে। কোন দেশের ক্ষেত্রে এই শব্দ সেই দেশের জাতীয় সংবিধানকে বোঝায়, যা রাজনৈতিক মৌলিক নিয়ম ও সরকারের পরিকাঠামো, পদ্ধতি, ক্ষমতা ও কর্তব্যকে প্রতিস্থাপিত করে। সংবিধান দুই ধরনের হতে পারে এক, লিখিত দুই, অলিখিত৷ অলিখিত সংবিধানঃ যেই সংবিধনের কিছু অংশ লিখিত, কিছু অংশ প্রথা দ্বারা প্রচলিত এবং যা একটি নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা পাশ হয় না তাকে অলিখিত সংবিধান বলে। যেমন-গ্ৰেট ব্রিটেনের সংবিধান,সৌদি আরবের সংবিধান,বাংলাদেশের সংবিধান,ভারতের সংবিধান,মিশরের সংবিধান,পাকিস্তানের সংবিধান,প্যালেস্টাইনের সংবিধান,ব্রাজিলের সংবিধান,আর্জেন্টিনার সংবিধান,ইসরাইলের সংবিধান,লেবাননের সংবিধান,ইরানের সংবিধান,মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান,জাপানের সংবিধান,চীনের সংবিধান,সংযুক্ত আরব আমিরাতের সংবিধান ইতিহাস প্রাচীন সংবিধান ২৩০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে লাগাশের সুমেরীয় রাজা উরুকাগিনা দ্বারা জারি করা প্রাচীনতম সংবিধানের প্রমাণ পাওয়া যায় ইরাকে খননকালে।এই নথিটি বিধবা এবং এতিমদের কর থেকে মুক্তি দিয়েছে এবং ধনীদের সুদ থেকে দরিদ্রদের রক্ষা করে। এর পরে, অনেক সরকার, লিখিত সংবিধান দ্বারা শাসিত হয়। এই ধরনের প্রাচীনতম নথি ২০৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ উর-এর উর-নাম্মুর সংবিধান । কিছু সুপরিচিত প্রাচীন সংবিধান হল ইসিনের লিপিট-ইশতার সংবিধান, ব্যাবিলোনিয়ার হামুরাবির সংবিধান, হিট্টাইট সংবিধান, অ্যাসিরিয়ান সংবিধান এবং মোজাইক আইন। ৬২১ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, ড্রাকো নামে একজন লেখক এথেন্সের নগর-রাজ্যের মৌখিক আইনগুলিকে সংহিতাবদ্ধ করেছিলেন; এই সংবিধানটি অনেক অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড নির্ধারণ করে (এইভাবে অত্যন্ত কঠোর নিয়মের জন্য আধুনিক শব্দ "ড্রাকোনিয়ান" তৈরি করা হয়েছে)।৫৯৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, এথেন্সের শাসক সোলন নতুন সলোনীয় সংবিধান তৈরি করেন। এটি শ্রমিকদের বোঝা লাঘব করে এবং যে শাসক শ্রেণির সদস্যপদ জন্মের (অভিজাততন্ত্র) পরিবর্তে সম্পদের উপর ভিত্তি করে হতে হবে স্থির করে। ৫০৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ক্লিসথেনিস আবার এথেনীয় সংবিধান সংস্কার করেন। ৩৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ অ্যারিস্টটল প্রথম সাধারণ আইন এবং সাংবিধানিক আইনের মধ্যে আনুষ্ঠানিক পার্থক্য তৈরি করেন। ৪৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে রোমানরা তাদের সংবিধানকে দ্বাদশ টেবিল বলত । ভারতে খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে অশোকের এডিক্টগুলি মৌর্য রাজার শাসনের জন্য সাংবিধানিক নীতি প্রতিষ্ঠা করে। প্রাচীন সাংবিধানিক নীতি মনুর সংবিধান প্রায় হারিয়ে গেছে। প্রাথমিক মধ্যযুগ প্রাথমিক মধ্যযুগে অনেক জার্মানিক তাদের আইনকে সংহিতাবদ্ধ করে। এই জার্মানিক আইন সংবিধানগুলির মধ্যে প্রথম লেখা হয়েছিল ৪৭১ ইউরিকের ভিসিগোথিক সংবিধান। ৬০৪ সালে জাপানের প্রিন্স শোতোকু কর্তৃক সতেরো-ধারার সংবিধান লেখা হয়। বৌদ্ধ শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত, নথিটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সামাজিক নৈতিকতার উপর বেশি ফোকাস করে। নবী হযরত মুহাম্মদ (স) মদিনার সংবিধান,মদিনার সনদ তৈরি করেছিলেন। এটি মুসলিম, ইহুদি এবং পৌত্তলিক এর সমস্ত উল্লেখযোগ্য গোত্র ও পরিবারের মধ্যে একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি। মদিনার অভ্যন্তরে আওস (আউস) এবং খাজরাজের গোষ্ঠীর মধ্যে তিক্ত আন্তঃগোত্রীয় লড়াইয়ের অবসান ঘটাতে দলিলটি তৈরি করা হয়েছিল। ইবনে হিশামের মতে এ সনদে ৫৩টি ধারা রয়েছে। উইলিয়াম মন্টগোমারি ওয়াটের মতে এই সনদের ধারার সংখ্যা ৪৭টি। 1000 সালের পর মধ্যযুগ প্রাভদা ইয়ারোস্লাভা, ১০৫৪ সালে কিয়েভান রাশিয়ার আইন হয়ে উঠে। ইংল্যান্ডে, হেনরি ১১০০ সালে স্বাধীনতার সনদের ঘোষণা দেন।এটি ইংরেজ ব্যারনি দ্বারা সম্প্রসারিত এবং পরিমার্জিত হয় যখন তারা ১২১৫ সালে রাজা জনকে, ম্যাগনা কার্টা স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেছিল। ম্যাগনা কার্টার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একক নিবন্ধ, "হেবিয়াস কর্পাস" রাজাকে, কাউকে বন্দী করার অধিকার দেওয়া হয়নি।আইনের যথাযথ প্রক্রিয়ায় বহিরাগত বা নির্বাসিত কাউকে ফাসি দেয়া যেত। আরও দেখুন বাংলাদেশের সংবিধান ভারতের সংবিধান তথ্যসূত্র সংবিধান সাংবিধানিক আইন জরুরি আইন সরকারি সংস্থা রাজনৈতিক দর্শন আইনের দর্শন
https://en.wikipedia.org/wiki/Constitution
Constitution
A constitution is the aggregate of fundamental principles or established precedents that constitute the legal basis of a polity, organization or other type of entity, and commonly determines how that entity is to be governed. When these principles are written down into a single document or set of legal documents, those documents may be said to embody a written constitution; if they are encompassed in a single comprehensive document, it is said to embody a codified constitution. The Constitution of the United Kingdom is a notable example of an uncodified constitution; it is instead written in numerous fundamental Acts of a legislature, court cases, and treaties. Constitutions concern different levels of organizations, from sovereign countries to companies and unincorporated associations. A treaty that establishes an international organization is also its constitution, in that it would define how that organization is constituted. Within states, a constitution defines the principles upon which the state is based, the procedure in which laws are made and by whom. Some constitutions, especially codified constitutions, also act as limiters of state power, by establishing lines which a state's rulers cannot cross, such as fundamental rights. Changes to constitutions frequently require consensus or supermajority. The Constitution of India is the longest written constitution of any country in the world, with 146,385 words in its English-language version, while the Constitution of Monaco is the shortest written constitution with 3,814 words. The Constitution of San Marino might be the world's oldest active written constitution, since some of its core documents have been in operation since 1600, while the Constitution of the United States is the oldest active codified constitution. The historical life expectancy of a constitution since 1789 is approximately 19 years.
1495
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A7%E0%A7%80%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%BE%20%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
{{তথ্যছক সামরিক সংঘর্ষ | conflict = বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধমুক্তিযুদ্ধ | partof = ভারত-পাকিস্তান আঞ্চলিক দ্বন্দ্ব ও স্নায়ুযুদ্ধ | image = BangladeshLiberationWarMontage.jpg | image_size = 280px | caption = প্রথম সারি: শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ ও মুক্তিবাহিনী ব্যবহৃত কামানদ্বিতীয় সারি: ডুবোজাহাজ এবং লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরার উপস্থিতিতে ভারত ও বাংলাদেশের কাছে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করছেন লে. জেনারেল নিয়াজী | place = পূর্ব পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তান–ভারত সীমান্ত পূর্ব পাকিস্তান–ভারত ছিটমহল পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতের অংশবিশেষ ভারত মহাসাগর: বঙ্গোপসাগর | coordinates = | map_type = | map_relief = | latitude = | longitude = | map_size = | map_marksize = | map_caption = | map_label = | date = ২৫ মার্চ-১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ | territory = পাকিস্তান থেকে পূর্ব পাকিস্তান স্বতন্ত্র বা আলাদা হয়ে যায় এবং স্বাধীন-সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। | result = বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন | combatant1 = মুজিবনগর সরকার মুক্তিবাহিনী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সমর্থনকারী দেশ এবং পূর্ব ব্লকভুক্ত রাষ্ট্রসমূহ | combatant2 = পাকিস্তান পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী আধা-সামরিক বাহিনী / মিলিশিয়া: সমর্থনকারী দেশ | commander1 = শেখ মুজিবুর রহমান সৈয়দ নজরুল ইসলাম তাজউদ্দীন আহমদ এম. এ. জি. ওসমানী মোহাম্মদ আবদুর রব গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ. কে. খন্দকার মেজর কে. এম. শফিউল্লাহ মেজর জিয়াউর রহমান মেজর খালেদ মোশাররফ ভি. ভি. গিরি ইন্দিরা গান্ধী জেনারেল স্যাম মানেকশ লে. জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা লে. জেনারেল সগত সিং মেজর জেনারেল ইন্দ্রজিৎ সিং গিল মেজর জেনারেল ওম প্রকাশ মালহোত্রা মেজর জেনারেল জে. এফ. আর. জ্যাকব মেজর জেনারেল সাবেগ সিং ভাইস অ্যাডমিরাল নীলকান্ত কৃষ্ণন এয়ার মার্শাল হরি চাঁদ দেওয়ান | commander2 = ইয়াহিয়া খান নূরুল আমিন আবদুল মুতালিব মালেক জেনারেল আব্দুল হামিদ খান লে. জেনারেল টিক্কা খান লে. জেনারেল এ. এ. কে. নিয়াজী মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজামেজর জেনারেল মোহাম্মদ জামশেদ রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শরীফ ক্যাপ্টেন আহমদ জামির) কমান্ডার জাফর মুহাম্মদ এয়ার কমোডর ইনামুল হক খান এয়ার কমোডর জাফর মাসুদ সৈয়দ খাজা খায়েরউদ্দিনগোলাম আযমমতিউর রহমান নিজামীফজলুল কাদের চৌধুরী | units1 = | units2 = | strength1 = ১,৭৫,০০০ জন ২,৫০,০০০ | strength2 = ~৩,৬৫,০০০ জন নিয়মিত সৈন্য (পূর্ব পাকিস্তানে ~৯৭,০০০+ জন)~২৫,০০০ জন আধা-সামরিক ব্যক্তি | casualties1 = ~৩০,০০০ জন নিহত ১,৪২৬–১,৫২৫ জন নিহত৩,৬১১–৪,০৬১ জন আহত | casualties2 = ~৮,০০০ জন নিহত~১০,০০০ জন আহত৯০,০০০—৯৩,০০০ জন যুদ্ধবন্দী (৭৯,৬৭৬ জন সৈন্য ও ১০,৩২৪–১২,১৯২ জন স্থানীয় আধা-সামরিক ব্যক্তিসহ)কর্নেল এস পি সালুংকে কর্তৃক “পাকিস্তানি প্রিজনার্স অব দ্য ওয়ার ইন ইন্ডিয়া”য় প্রদত্ত সংখ্যা। কেসি প্রাভেল কর্তৃক ইন্ডিয়ান আর্মি আফটার ইন্ডিপেন্ডেনস বইয়ে উদ্ধৃত; প্রকাশক: লেন্সার, ১৯৮৭। () | casualties3 = বেসামরিক প্রাণহানি: আনুমানিক ৩,০০,০০০ থেকে ৩০,০০,০০০ জন | notes = | campaignbox = }}বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ' হলো ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে সংঘটিত একটি বিপ্লব ও সশস্ত্র সংগ্রাম। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থান ও স্বাধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এবং বাঙালি গণহত্যার প্রেক্ষিতে এই জনযুদ্ধ সংঘটিত হয়। যুদ্ধের ফলে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। পশ্চিম পাকিস্তান-কেন্দ্রিক সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনা করে এবং নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা শুরু করে। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সাধারণ বাঙালি নাগরিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, পুলিশ ও ইপিআর কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়। সামরিক জান্তা সরকার ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের সাধারণ নির্বাচনের ফলাফলকে অস্বীকার করে এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পশ্চিম পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনের পর অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে গণবিদ্রোহ দমনে পূর্ব পাকিস্তানব্যাপী শহর ও গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সামরিক অভিযান ও বিমানযুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী অধিকাংশ ইসলামি দলগুলোর সমর্থন লাভ করে। সেনাবাহিনীর অভিযানে সহায়তার জন্য তারা বিভিন্ন দলের লোকজন বিশেষ করে পাকিস্তান সমর্থনকারী ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী নিয়ে আধা-সামরিক বাহিনী— রাজাকার, আল বদর ও আল শামস বাহিনী গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানের উর্দু-ভাষী বিহারিরাও সেনাবাহিনীকে সমর্থন করে। পাকিস্তানি সৈন্য ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী কর্তৃক গণহত্যা, উচ্ছেদ ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রাজধানী ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণহত্যাসহ একাধিক গণহত্যা সংঘটিত হয়। প্রায় এক কোটি বাঙালি শরণার্থী হিসেবে ভারতে আশ্রয় নেয় এবং আরও তিন কোটি মানুষ দেশের অভ্যন্তরে উদ্বাস্তু হয়। বাঙালি ও উর্দুভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে দাঙ্গার সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি বাহিনীর নৃশংসতাকে বুদ্ধিজীবীরা গণহত্যা হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। বাঙালি সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মুক্তিবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রচার করে। ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জেনারেল এম. এ. জি. ওসমানী ও ১১ জন সেক্টর কমান্ডারের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করে। তাদের তৎপরতায় যুদ্ধের প্রথম কয়েক মাসেই বেশকিছু শহর ও অঞ্চল মুক্তি লাভ করে। বর্ষাকালের শুরু থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী আরও তৎপর হয়ে উঠতে থাকে। বাঙালি গেরিলা যোদ্ধারা নৌবাহিনীর ওপর অপারেশন জ্যাকপট সহ ব্যাপক আক্রমণ চালাতে থাকে। নবগঠিত বাংলাদেশ বিমান বাহিনী পাকিস্তানি ঘাঁটিগুলোর উপর বিমান হামলা চালাতে থাকে। নভেম্বরের মধ্যে মুক্তিবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীকে রাতের বেলায় ব্যারাকে আবদ্ধ করে ফেলে। একই সময়ের মধ্যে তারা শহরের বাইরে দেশের অধিকাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতেও সক্ষম হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে অস্থায়ী প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার শপথ গ্রহণ করে এবং কলকাতা থেকে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করতে থাকে। তাই একে প্রবাসী সরকারও বলা হয়। বাঙালি সামরিক, বেসামরিক ও কূটনৈতিক ব্যক্তিবর্গ মুজিবনগর সরকারের পক্ষ অবলম্বন করে। পশ্চিম পাকিস্তানে বসবাসরত হাজার হাজার বাঙালি পরিবার আফগানিস্তানে পালিয়ে যায়। সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ গোপনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র চালু করে। যুদ্ধে বাঙালি উদ্বাস্তুদের দুর্দশা বিশ্ববাসীকে চিন্তিত ও আতঙ্কিত করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রয়োজনীয় কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক সহায়তা প্রদান করেন। ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কয়েকজন সঙ্গীতজ্ঞ বাংলাদেশিদের সহায়তার জন্য নিউ ইয়র্কে তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বিশ্বের প্রথম কনসার্ট আয়োজন করেন। মার্কিন সিনেটর টেড কেনেডি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে মার্কিন কংগ্রেসে ক্যাম্পেইন শুরু করেন। অন্যদিকে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন উপরাষ্ট্রদূত আর্চার ব্লাড পাকিস্তানি স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খানের সাথে মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সনের সুসম্পর্কের বিরোধিতা করেন। উত্তর ভারতে পাকিস্তানের বিমান হামলার পর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা ডিসেম্বর ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে যোগদান করে। ফলশ্রুতিতে পূর্ব ও পশ্চিম— দুই ফ্রন্টে আরেকটি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সূচনা ঘটে। উপর্যুপরি বিমান হামলা ও বাংলাদেশ-ভারত যৌথ বাহিনীর তৎপরতায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ে। অবশেষে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর ঢাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে দীর্ঘ নয় মাসের এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধের ফলে বিশ্বের সপ্তম-জনবহুল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্থান ঘটে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপট বদলে দেয়। জটিল আঞ্চলিক সম্পর্কের কারণে যুদ্ধটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের মধ্যে চলমান স্নায়ুযুদ্ধের অন্যতম প্রধান পর্ব ছিল। জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্যরাষ্ট্র ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যেই বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। প্রেক্ষাপট ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারত বিভাজনের আগে পূর্ব ও উত্তর-পশ্চিম ভারতের মুসলিম-প্রধান অঞ্চল নিয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রস্তাব আনা হয়। বাংলার প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী যুক্তবঙ্গ গঠনের প্রস্তাব দিলেও ঔপনিবেশিক শাসকেরা তা নাকচ করে দেয়। পূর্ব পাকিস্তান রেনেসাঁ সোসাইটি পূর্ব ভারতে আলাদা সার্বভৌম রাষ্ট্রের প্রস্তাব করে। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও বহু রাজনৈতিক আলোচনার পর ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে ব্রিটিশরা ভারতের শাসনভার ত্যাগ করে এবং হিন্দু ও মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র হিসেবে যথাক্রমে ভারত ও পাকিস্তান নামে দুইটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হয়। মুসলিম অধ্যুষিত বাংলার পূর্ব অংশ পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। ভারত প্রজাতন্ত্র দ্বারা বিভক্ত নবগঠিত পাকিস্তান অধিরাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিম দুইটি অংশের ভৌগোলিক দূরত্ব ছিল দুই হাজার মাইলের অধিক। দুই অংশের মানুষের মধ্যে কেবল ধর্মে মিল থাকলেও, জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতিতে প্রচুর অমিল ছিল। পাকিস্তানের পশ্চিম অংশ অনানুষ্ঠানিকভাবে (পরে আনুষ্ঠানিকভাবে) “পশ্চিম পাকিস্তান” এবং পূর্ব অংশ প্রথম দিকে “পূর্ব বাংলা” ও পরবর্তীতে “পূর্ব পাকিস্তান” হিসেবে অভিহিত হতে থাকে। পাকিস্তানের দুই অংশের জনসংখ্যা প্রায় সমান হওয়া সত্ত্বেও, রাজনৈতিক ক্ষমতা পশ্চিম পাকিস্তানে কেন্দ্রীভূত হতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে ধারণা জন্মাতে থাকে যে, অর্থনৈতিকভাবে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে, এবং এরকম বিভিন্ন কারণে অসন্তোষ দানা বাঁধতে থাকে। ভৌগোলিকভাবে বিচ্ছিন্ন দুইটি অঞ্চলের প্রশাসন নিয়েও মতানৈক্য দেখা দেয়। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানকেন্দ্রিক রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও, পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী তা মেনে নেয়নি। এর ফলস্বরূপ পূর্ব পাকিস্তানে সৃষ্ট রাজনৈতিক অসন্তোষ ও সাংস্কৃতিক জাতীয়তাবাদ অবদমনে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকেরা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে নৃশংস গণহত্যা আরম্ভ করে, যা অপারেশন সার্চলাইট নামে পরিচিত। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নির্মম আক্রমণের পর ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। অধিকাংশ বাঙালি স্বাধীনতার ঘোষণাকে সমর্থন করলেও, কিছু ইসলামপন্থী ব্যক্তিবর্গ ও পূর্ব পাকিস্তানে বসবাসরত বিহারিরা এর বিরোধিতা করে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ অবলম্বন করে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান সেনাবাহিনীকে দেশের পূর্ব অংশে পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণ পুনর্প্রতিষ্ঠার নির্দেশ দেন, যার ফলে কার্যত গৃহযুদ্ধের সূচনা ঘটে। যুদ্ধের ফলে প্রায় এক কোটি মানুষ ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যসমূহে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। ক্রমবর্ধমান মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে ভারত মুক্তিবাহিনীর সহযোগিতায় ও এর গঠনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে থাকে। দেশভাগ রাষ্ট্রভাষা বিতর্ক ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঘোষণা করেন যে: তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে বাঙালিরা এই ঘোষণার বিরুদ্ধে বিক্ষুব্ধ প্রতিবাদ জানায়। ঐতিহাসিকভাবে উর্দু শুধুমাত্র ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর, মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে প্রচলিত ছিল। অন্যদিকে উপমহাদেশের পূর্ব অংশের মানুষের প্রধান ভাষা ছিল বাংলা। পাকিস্তানের ৫৬% জনসংখ্যার মাতৃভাষা ছিল বাংলা। পাকিস্তান সরকারের এই পদক্ষেপ পূর্ব বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতি বৈষম্য হিসেবে দেখা হতে থাকে। পূর্ব বাংলার মানুষ উর্দু ও ইংরেজির পাশাপাশি বাংলাকেও রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানাতে থাকে। ব্রিটিশ ভারতের সময় থেকে মুদ্রা ও ডাকটিকিটে বাংলা লেখা থাকলেও, পাকিস্তানের মুদ্রা ও ডাকটিকিটে বাংলা লেখা না থাকায় বাঙালিরা এর প্রতিবাদ জানায়। এর মাধ্যমে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দেই বাংলা ভাষা আন্দোলনের সূচনা ঘটে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্দোলন তীব্র রূপ লাভ করে। এদিন বিক্ষোভ মিছিলে পুলিশের গুলিতে সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ কয়েকজন ছাত্র ও সাধারণ মানুষ নিহত হন। তীব্র আন্দোলনের ফলে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে সরকার বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশে ২১শে ফেব্রুয়ারি দিনটি শহীদ দিবস হিসেবে পালিত হয়। পরবর্তীতে, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দের ২১শে ফেব্রুয়ারির শহিদদের স্মরণে দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। বৈষম্য পাকিস্তানের পূর্ব অংশে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী থাকলেও, দ্বিধাবিভক্ত দেশটিতে পশ্চিম অংশ রাজনৈতিকভাবে আধিপত্য বিস্তার করছিল; এমনকি পাকিস্তানের মোট অর্থবরাদ্দ থেকেও পশ্চিম অংশ বেশি অর্থ পাচ্ছিল। পাকিস্তান সৃষ্টির আগে থেকেই পূর্ব বাংলা অর্থনৈতিকভাবে অনগ্রসর ছিল। পাকিস্তান শাসনামলে এই অনগ্রসরতা আরও বৃদ্ধি পায়। কেন্দ্রীয় সরকারের ইচ্ছাকৃত রাষ্ট্রীয় বৈষম্যই কেবলমাত্র এর পেছনে দায়ী ছিল না। পশ্চিম অংশে দেশের রাজধানী, দেশভাগের ফলে সেখানে অভিবাসী ব্যবসায়ীদের সংখ্যাধিক্য প্রভৃতিও পশ্চিম পাকিস্তানে সরকারের অধিক বরাদ্দকে প্রভাবিত করেছিল। বিনিয়োগের জন্য স্থানীয় ব্যবসায়ীর অভাব, শ্রমিকদের মধ্যে অস্থিরতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা প্রভৃতি কারণেও পূর্ব পাকিস্তানে বিদেশি বিনিয়োগ তুলনামূলক কম ছিল। এছাড়া পাকিস্তান রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা নগর শিল্পের দিকে কেন্দ্রীভূত ছিল, যা পূর্ব পাকিস্তানের কৃষিনির্ভর অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে পাকিস্তানের মোট রপ্তানি আয়ের ৭০% এসেছিল পূর্ব পাকিস্তানের রপ্তানি থেকে; তাসত্ত্বেও, পূর্ব পাকিস্তান উক্ত অর্থের মাত্র ২৫% বরাদ্দ পেয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের শিল্প প্রতিষ্ঠান কমতে থাকে, অথবা পশ্চিমে স্থানান্তরিত হতে থাকে। ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব পাকিস্তানে ১১টি পোশাক কারখানা ছিল, পশ্চিম পাকিস্তানের ছিল নয়টি। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পশ্চিম অংশে পোশাক কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৫০টিতে, যেখানে পূর্ব অংশের কারখানার সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ২৬টিতে। পাশাপাশি, এই সময়ে প্রায় ২৬ কোটি ডলার মূল্যমানের সম্পদ পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে পাচার হয়ে যায়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতেও পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা সংখ্যালঘু ছিল। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন শাখায় বাঙালি বংশোদ্ভূত অফিসার ছিলেন মাত্র ৫%। এর মধ্যেও কয়েকজনমাত্র কমান্ডে ছিলেন; বাকিরা ছিলেন কারিগরি কিংবা প্রশাসনিক পদে। পশ্চিম পাকিস্তানিরা বাঙালিদের “দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক” মনে করত। তারা ভাবত, পাঞ্জাবি ও পাঠানদের মতো বাঙালিদের লড়াই করার ক্ষমতা নেই। “যোদ্ধা জাতি” বা “মার্শাল রেস”-এর জাতিগত যোগ্যতার বিষয়টি বাঙালিরা হাস্যকর ও অপমানজনক বলে উড়িয়ে দিয়েছিল। তদুপরি, বিশাল প্রতিরক্ষা ব্যয় সত্ত্বেও পূর্ব পাকিস্তান ক্রয়, চুক্তি ও সামরিক সহায়তামূলক চাকরির মতো কোনও সুবিধা পাচ্ছিল না। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে কাশ্মীর নিয়ে সংঘটিত পাক-ভারত যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানিরা সামরিকভাবে নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করে। যুদ্ধের সময় ভারতীয় আক্রমণ ঠেকানোর জন্য একমাত্র নিম্নশক্তিসম্পন্ন পদাতিক বিভাগ বিদ্যমান ছিল। এছাড়া ১৫টি কমব্যাট যুদ্ধবিমান কোন ট্যাঙ্কের সমর্থন ছাড়াই অনিরাপদভাবে পূর্ব পাকিস্তানে রাখা ছিল। ১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দের যুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্ত এতটাই অরক্ষিত ছিল যে, ভারত চাইলে খুব সহজেই, প্রায় বিনা বাধায় পূর্ব পাকিস্তান দখল করে নিতে পারতো। এ ঘটনায় পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা ধরে নিয়েছিল যে, পাকিস্তানিরা শাসকেরা দেশের পূর্ব অংশের চেয়ে কাশ্মীরকে নিজেদের অংশ হিসেবে বেশি গুরুত্ব দেয়; এমনকি কাশ্মীরকে পাওয়ার জন্য তারা পূর্ব পাকিস্তানকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে কিংবা হাতছাড়া করতেও রাজি আছে। আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক পার্থক্য ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে ভারতভাগের সময় পূর্ব বাংলার মুসলিম জনগণ পাকিস্তানের ইসলামি ভাবমূর্তির সাথে একাত্মতা অনুভব করে। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পর, পূর্ব বাংলার জনগণ ক্রমে দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের মূলনীতিগুলোকে পূর্ব বাংলার সার্বজনীন নাগরিক তথা রাজনৈতিক অধিকার এবং আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক বলে অনুভব করতে থাকে এবং ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দ নাগাদ পূর্ব পাকিস্তানিরা তাদের মুসলমান পরিচয়ের চেয়ে বাঙালি জাতিসত্ত্বার পরিচয়কে অধিক গুরুত্ব দিতে থাকে। তারা পাকিস্তানের ধর্মীয় ভাবধারার বিপরীতে ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র প্রভৃতি পাশ্চাত্য মূলনীতির সমন্বয়ে একটি সমাজ কামনা করতে থাকে। অনেক বাঙালি মুসলমান পাকিস্তানের চাপিয়ে দেওয়া ইসলামি ভাবমূর্তির বিরুদ্ধে তীব্র আপত্তি জানায়। পাকিস্তানের অভিজাত শাসকশ্রেণির অধিকাংশও উদারপন্থী সমাজব্যবস্থার পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানের জন্ম ও বহুমাত্রিক আঞ্চলিক পরিচয়কে একক জাতীয় পরিচয়ে রূপান্তরের জন্য সাধারণ মুসলমান পরিচয়কে তারা প্রধান নিয়ামক বলে মনে করতেন। পশ্চিম পাকিস্তানের অধিবাসীরা পূর্ব পাকিস্তানিদের তুলনায় পাকিস্তানের ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থার প্রতি অধিক আস্থাশীল ছিলেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের পরও তাদের সেই আস্থা অক্ষুণ্ণ থাকে। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত পার্থক্য পাকিস্তানের ধর্মীয় ঐক্যের গুরুত্বকে ছাপিয়ে যায়। বাঙালিরা তাদের সংস্কৃতি, ভাষা, বর্ণমালা ও শব্দসম্ভার নিয়ে গর্ববোধ করত। পাকিস্তানের অভিজাত শ্রেণির ধারণা ছিল, বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিতে হিন্দুয়ানির প্রভাব লক্ষণীয়। এই কারণে তাদের কাছে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির গ্রহণযোগ্যতা ছিল না। পশ্চিম পাকিস্তানিরা পূর্ব পাকিস্তানের ইসলামিকীকরণের উদ্যোগ হিসেবে চাইছিল, পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরাও উর্দুকে তাদের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করুক। কিন্তু ভাষা আন্দোলন বাঙালিদের মধ্যে পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িকতার বিপক্ষে ও ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির সপক্ষে একটি আবেগের জন্ম দেয়। এরই মাঝে আওয়ামী লীগ নিজস্ব প্রচারপত্রের মাধ্যমে বাঙালি পাঠকদের মধ্যে সংগঠনটির ধর্মনিরপেক্ষতার বার্তা প্রচার করতে শুরু করে। ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি গুরুত্বারোপ আওয়ামী লীগকে মুসলিম লীগ থেকে পৃথক করে দেয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে ধর্মনিরপেক্ষ নেতারাই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে পরিচালনা করেন। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা বাংলাদেশের বিজয়কে ধর্মকেন্দ্রিক পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদের বিজয় হিসেবে অভিহিত করেন। একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম হয়, যেখানে পাকিস্তান সরকার তখনও ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় হিমশিম খাচ্ছিল। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ সরকার ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্র পরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে এবং পাকিস্তানপন্থী ইসলামি রাজনৈতিক দলগুলোকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পূর্ব পাকিস্তানের উলামাবৃন্দ পাকিস্তানের ভাঙনকে ইসলামের জন্য ক্ষতিকারক হিসেবে দেখতেন। তাই স্বাধীনতার প্রশ্নে হয় তারা নিরপেক্ষতা অবলম্বন করেছেন, অন্যথায় পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করেছিলেন। রাজনৈতিক পার্থক্য পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতা পশ্চিম পাকিস্তান কুক্ষিগত করে রাখে। জনসংখ্যার ভিত্তিতে ক্ষমতার বণ্টন পূর্ব পাকিস্তানের অনুকূলে যাওয়ায় “এক ইউনিট” নামে একটি অভিনব ধারণার সূত্রপাত করে, যেখানে সমগ্র পশ্চিম পাকিস্তান একটিমাত্র প্রশাসনিক একক হিসেবে বিবেচিত হবে। এর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল পূর্ব পাকিস্তানের ভোটের ভারসাম্য আনা। ১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলি খানের হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষমতা গভর্নর জেনারেল, রাষ্ট্রপতি ও পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর হাতে স্থানান্তরিত হয়। রাষ্ট্রপতি চালিত কেন্দ্রীয় সরকার নামেমাত্র নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারের প্রধান নির্বাহীদের পদচ্যুত করতে থাকে। পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিরা প্রত্যক্ষ করে যে, পূর্ব পাকিস্তান থেকে বিভিন্ন সময়ে খাজা নাজিমুদ্দিন, মোহাম্মদ আলী বগুড়া, হোসেন শহীদ সোহ্‌রাওয়ার্দী প্রমুখ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও, পশ্চিম পাকিস্তানি রাষ্ট্রযন্ত্র তাদের বিভিন্ন অজুহাতে পদচ্যুত করতে থাকে। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শাসনের নামে ষড়যন্ত্র শুরু হয়; আর এই ষড়যন্ত্রে মূল ভূমিকা পালন করে সামরিক বাহিনী। নানা টালবাহানার পর ১৯৫৮ খ্রিষ্টাব্দে সামরিক শাসন জারি হওয়ার পর পশ্চিম পাকিস্তানি দুই স্বৈরশাসক আইয়ুব খান (২৭ অক্টোবর ১৯৫৮ – ২৫ মার্চ ১৯৬৯) ও ইয়াহিয়া খানের আমলে (২৫ মার্চ ১৯৬৯ – ২০ ডিসেম্বর ১৯৭১) সন্দেহ আরও দানা বাঁধে। পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক শাসকদের এই অনৈতিক ক্ষমতা দখল পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব বাড়িয়েই চলে। ১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড়ের প্রতিক্রিয়া ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ১২ই নভেম্বর বিকেলে একটি প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় পূর্ব পাকিস্তানের ভোলা উপকূলে আঘাত হানে। স্থানীয় জোয়ার ও ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত হানার সময় যুগপৎ হওয়ায় প্রায় ৩ লক্ষ থেকে ৫ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। ঘূর্ণিঝড়ে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা জানা না গেলেও, এই ঘূর্ণিঝড়কে ইতিহাসের ভয়াবহতম ঘূর্ণিঝড় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় সরকার ত্রাণকার্যে গড়িমসি করতে থাকে। এতে খাবার ও পানির অভাবে অনেক মানুষ মারা যায়। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার এক সপ্তাহ পর রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান স্বীকার করেন যে, সরকার ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা বুঝতে না পারার কারণেই ত্রাণকার্য সঠিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার দশ দিন পর পূর্ব পাকিস্তানের এগারো নেতার বিবৃতিতে প্রাণহানির জন্য সরকারের প্রতি “অপরাধমূলক অবহেলা ও বৈষম্য এবং সচেতনভাবে মানুষ মারার” অভিযোগ করা হয়। তারা সংবাদে বিপর্যয়ের ভয়াবহতা প্রচার না করার জন্যও রাষ্ট্রপতিকে অভিযুক্ত করেন। সরকারের ধীরগতির প্রতিক্রিয়ায় ক্ষুব্ধ ছাত্ররা ১৯শে নভেম্বর ঢাকায় মিছিল করেন। ২৪শে নভেম্বর আবদুল হামিদ খান ভাসানী প্রায় ৫০,০০০ মানুষ নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং রাষ্ট্রপতির অক্ষমতার অভিযোগ তোলেন এবং অবিলম্বে তার পদত্যাগের দাবি জানান। মার্চ থেকে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় ত্রাণকার্যে জড়িত ঢাকার দুইটি সরকারি প্রতিষ্ঠান অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ ছিল। প্রথমবার হরতাল ডাকায় সাময়িক বন্ধ থাকার পর, আওয়ামী লীগের ডাকা অসহযোগে ত্রাণকার্য আরও বিলম্বিত হয়। উত্তেজনা বাড়তে থাকায় ক্রমান্বয়ে ঘূর্ণিঝড় উপদ্রুত স্থান থেকে বিদেশি কর্মকর্তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। মাঠপর্যায়ে ত্রাণকার্য সচল থাকলেও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে তা সীমিত হয়ে পড়ে। এই সংঘাত শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার দিকে ধাবিত করে। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ভোলা ঘূর্ণিঝড়কে “পাকিস্তানের প্রতি বাঙালিদের বিশ্বাসে কফিনে শেষ পেরেক” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ একটি দেশের গৃহযুদ্ধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৭০-এর নির্বাচন ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পূর্ব পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি চূড়ান্ত নাটকীয়তা লাভ করে। দলটি পূর্ব পাকিস্তানের জন্য বরাদ্দকৃত ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসনেই বিজয়ী হয়। এর ফলে পশ্চিম পাকিস্তানে কোনো আসন না পেয়েও আওয়ামী লীগ ৩১৩ আসনবিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে এবং সরকার গঠনের সাংবিধানিক অধিকার লাভ করে। কিন্তু নির্বাচনে দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল পাকিস্তান পিপলস‌ পার্টির নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো (সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী) শেখ মুজিবের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিরোধিতা করেন। এর পরিবর্তে তিনি পাকিস্তানের দুই অংশের জন্য দুইজন প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব করেন। “এক ইউনিট কাঠামো” নিয়ে ক্ষুব্ধ পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে এরূপ অভিনব প্রস্তাব নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার করে। ভুট্টো শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা প্রত্যাখ্যান করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১লা মার্চ রাষ্ট্রীয় ঘোষণায় ইয়াহিয়া খান ৩রা মার্চ অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। ৩রা মার্চ রাষ্ট্রপতি জেনারেল ইয়াহিয়া খানসহ দুই প্রদেশের দুই নেতা দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ঢাকায় সাক্ষাৎ করেন। এই আলোচনায় কোনো সন্তোষজনক ফলাফল না আসায় শেখ মুজিবুর রহমান দেশব্যাপী হরতাল আহ্বান করেন এবং অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ভুট্টো গৃহযুদ্ধ সংগঠিত হওয়ার আশঙ্কা করেন, ফলস্বরূপ তিনি তার বিশ্বস্ত সঙ্গী মুবাশির হাসানকে পাঠান। ভুট্টোর পক্ষ থেকে একটি বার্তা পাঠানো হয় এবং শেখ মুজিবুর রহমান ভুট্টোর সাথে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেন। ভুট্টোর ঢাকায় আগমনের পর শেখ মুজিবুর রহমান তার সাথে দেখা করেন। এই সময়ে শেখ মুজিবকে প্রধানমন্ত্রী ও ভুট্টোকে রাষ্ট্রপতি করে সম্মিলিত সরকার গঠনে দুজনেই সম্মত হয়েছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু ৫ই মার্চ প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে শেখ মুজিব তা অস্বীকার করেন। তবে সেনাবাহিনী এসব ব্যাপারে অজ্ঞাত ছিল এবং সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর জন্য ভুট্টো রহমানের উপর চাপ বৃদ্ধি করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৭ই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহ্‌রাওয়ার্দী উদ্যান) এক ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন। ভাষণে তিনি ২৫ মার্চের অধিবেশনের পূর্বেই বাস্তবায়নের জন্য আরও চার দফা দাবি পেশ করেন: অবিলম্বে সামরিক আইন প্রত্যাহার করতে হবে; অবিলম্বে সেনাবাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নিতে হবে; গণহত্যার তদন্ত করতে হবে; নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে অবিলম্বে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। শেখ মুজিব তার ভাষণে বাংলার “ঘরে ঘরে দুর্গ” গড়ে তোলার আহ্বান জানান। ভাষণের শেষে শেখ মুজিব বলেন, “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।” এই ভাষণটিই মূলত বাঙালিদের স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে। মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক ইয়াহিয়া খান ঢাকায় এসে শেখ মুজিবের সঙ্গে সরকার গঠন ও ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেন। কিন্তু একই সঙ্গে সামরিক বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানে সশস্ত্র অভিযান চালানোর পূর্বপ্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসের ১০ থেকে ১৩ তারিখ পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স পূর্ব পাকিস্তানে “সরকারি যাত্রী” বহনের জন্য জরুরি ভিত্তিতে তাদের সমস্ত আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করে। এই “সরকারি যাত্রী”রা ছিলেন মূলত সাদা পোশাকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর পদে অধিষ্ঠানের জন্য জেনারেল টিক্কা খানকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। কিন্তু বিচারপতি সিদ্দিকসহ পূর্ব পাকিস্তানের কোনো বিচারপতি তার শপথ পাঠ করাতে রাজি হননি। পাকিস্তান নৌবাহিনীর অস্ত্র ও গোলাবারুদ বোঝাই জাহাজ এমভি সোয়াত চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়। কিন্তু বন্দরের বাঙালি কর্মী ও নাবিকেরা জাহাজ থেকে মালামাল খালাস করতে অস্বীকার করে। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের এক দল বাঙালি সৈন্য বিদ্রোহ শুরু করে এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালাতে অস্বীকার করে। অনেক আশা সত্ত্বেও মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক সফল হয়নি। সুখরঞ্জন দাসগুপ্তের মতে, শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের প্রধান চার নেতা পরিকল্পনা করেছিলেন যে, ক্ষমতা হাতে পাওয়ার পরপরই সংসদে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রস্তাব পাশের মাধ্যমে বৈধ আইনগত প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত করবেন। কিন্তু খন্দকার মোশতাক আহমেদ তা গোপনে ভুট্টোকে জানিয়ে দেন, যার কারণে ভুট্টো ক্ষমতা হস্তান্তর না করে অপারেশন সার্চলাইটের গোপন পরিকল্পনা করতে থাকেন। ২৫শে মার্চ ইয়াহিয়া খান পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সশস্ত্র অপারেশনের গোপন সংকেত প্রদান করে সন্ধ্যায় গোপনে পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করেন। অপারেশন সার্চলাইট বাঙালি জাতীয়তাবাদী স্বাধিকার আন্দোলনকে অবদমিত করতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাতে ঢাকায় গণহত্যা শুরু করে, যা অপারেশন সার্চলাইট নামে পরিচিত। অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিল ২৬শে মার্চের মধ্যে প্রধান প্রধান শহরগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়া এবং পরবর্তী এক মাসের মধ্যে রাজনৈতিক ও সামরিক প্রতিপক্ষদের নিশ্চিহ্ন করা। পাকিস্তান সরকার মার্চের শুরু থেকে পূর্ব পাকিস্তানে চলমান বিহারী-বিরোধী দাঙ্গা প্রশমনে অপারেশন সার্চলাইট শুরু করেছিল বলে দাবি করে। মে মাসের মাঝামাঝি বাঙালিদের হাত থেকে অধিকাংশ শহর দখল করার মাধ্যমে অপারেশন সার্চলাইটের প্রধান অংশের সমাপ্তি ঘটে। এই অপারেশনকে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের গণহত্যার প্রারম্ভ হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়। এই নিয়মতান্ত্রিক গণহত্যা বাঙালিদের আরও ক্ষুব্ধ করে এবং শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ প্রশস্ত করে। বাংলাদেশের গণমাধ্যম ও প্রকাশিত গ্রন্থাবলিতে ঢাকায় গণহত্যায় নিহতের সংখ্যা ৫,০০০ থেকে ৩৫,০০০ এবং সারাদেশে নিহতের সংখ্যা ২,০০,০০০ থেকে ৩০,০০,০০০ বলে উল্লেখ করা হয়। তবে, ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল ও কয়েকজন স্বাধীনতা-গবেষক গণহত্যায় ১,২৫,০০০ থেকে ৫,০৫,০০০ জন নিহত হন বলে উল্লেখ করেন। অন্যদিকে, মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রুডল্ফ রুমেল মোট মৃতের সংখ্যা ১৫ লক্ষ বলে উল্লেখ করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নৃশংসতাকে ব্যাপকভাবে “পরিকল্পিত গণহত্যা” বা “গণহত্যা” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এশিয়া টাইমসের ভাষ্য অনুযায়ী, ২৫শে মার্চের নৃশংসতার মূল কেন্দ্র ছিল প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকা। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে আক্রমণ চালানো হয়। সেনাবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র হিন্দু আবাসিক হল জগন্নাথ হল সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেয় এবং হলের প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ ছাত্রকে হত্যা করে। সেনাবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ডের কথা অস্বীকার করলেও, যুদ্ধপরবর্তীতে হামুদুর রহমান কমিশন সাব্যস্ত করে যে, সেনাবাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইপুয়েট, বর্তমানে বুয়েট) অধ্যাপক নূরুল উলা জগন্নাথ হল ও এর আশেপাশের হলগুলোতে হত্যাযজ্ঞের চিত্র গোপনে ভিডিয়োটেপে ধারণ করেন। এছাড়া ঢাকার বাইরেও গণহত্যা শুরু হয় এবং সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে হিন্দু জনগোষ্ঠীরা আতঙ্কে ভারতে শরণার্থী হতে থাকে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২ আগস্ট টাইম সাময়িকীতে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, “হিন্দুরা ছিল মোট শরণার্থীদের তিন-চতুর্থাংশ; তারা পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর ক্রোধ ও আক্রোশ বহন করছিল।” অপারেশন সার্চলাইট শুরুর পূর্বেই পূর্ব পাকিস্তান থেকে সকল বিদেশি সাংবাদিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাংবাদিক সাইমন ড্রিং ঢাকায় অবস্থান করেন এবং ওয়াশিংটন পোস্টের মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে ২৫শে মার্চের গণহত্যার খবর জানিয়েছিলেন। এরপর পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তারা তাদের পক্ষে সংবাদ পরিবেশনের জন্য আটজন সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তানে প্রেরণ করে। তাদের অন্যতম অ্যান্থনি মাসকারেনহাস পূর্ব পাকিস্তান থেকে ফিরেই, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ জুন লন্ডনে পালিয়ে যান এবং পশ্চিমা বিশ্বের কাছে সর্বপ্রথম গণহত্যার ভয়াবহতা তুলে ধরেন। লন্ডনভিত্তিক সাপ্তাহিক সংবাদপত্র দ্য সানডে টাইমসে পূর্ব পাকিস্তানের গণহত্যা বিষয়ে সর্বপ্রথম সংবাদ ছাপা হয়। প্রতিবেদন সম্পর্কে বিবিসি লিখে: “এ বিষয়ে মোটামুটি নিঃসন্দেহ যে মাসকারেনহাসের প্রতিবেদনটি যুদ্ধের সমাপ্তিতে ভূমিকা রাখে। এই প্রতিবেদন সারা বিশ্বকে পাকিস্তানের বিপক্ষে ক্ষুব্ধ আর ভারতকে শক্ত ভূমিকা রাখতে উৎসাহিত করেছিল।” এমনকি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দ্য সানডে টাইমসের সম্পাদক হ্যারল্ড ইভান্সকে বলেছিলেন যে, লেখাটি তাকে গভীরভাবে নাড়া দেয় এবং “ভারতের সশস্ত্র হস্তক্ষেপের” সিদ্ধান্ত নেন। ২৫শে মার্চ অপারেশন সার্চলাইট শুরুর পরপরই পাঁচজন বিশ্বস্ত সহযোগীসহ শেখ মুজিবুর রহমানকে তার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে শেখ মুজিব বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবের বিচারের জন্য ব্রিগেডিয়ার রহিমুদ্দিন খানকে প্রধান করে একটি সামরিক ট্রাইবুনাল গঠন করেন। রহিমুদ্দিন খানের ট্রাইবুনালের রায় কখনোই প্রকাশ করা হয়নি; তবে ইয়াহিয়া খান যেকোনো মূল্যে শেখ মুজিবের ফাঁসি চাইছিলেন। এছাড়া অন্যান্য আওয়ামী লীগ নেতাকেও গ্রেফতার করা হয়। কয়েকজন গ্রেফতার হওয়া ঠেকাতে ঢাকা থেকে পালিয়ে যান। ইয়াহিয়া খান আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। স্বাধীনতার ঘোষণা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ মার্চ সেনাবাহিনীর আক্রমণের পর পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে সমস্যা নিষ্পত্তির সর্বশেষ প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়ে যায়। সেই রাতে শুরু হওয়া গণহত্যার প্রেক্ষিতে শেখ মুজিবুর রহমান ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে প্রচারিত এক বেতার ভাষণে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পূর্বেই বেতার ভাষণের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে জনগণকে প্রতিরোধের আহ্বান জানান। শেখ মুজিবুর রহমানের ঘোষণাটি তৎকালীন ইপিআরের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পাকিস্তান রেডিওতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ মার্চ প্রকাশিত খবর অনুযায়ী শেখ মুজিবুর রহমানকে ২৫-২৬ মার্চ রাত আনুমানিক দেড়টায় গ্রেফতার করে ঢাকা সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের বার্তা দিয়ে পাঠানো টেলিগ্রাম চট্টগ্রামে কিছু ছাত্রের কাছে পৌঁছায়। মঞ্জুলা আনোয়ার সেই বার্তাটিকে বাংলায় অনুবাদ করেন। ছাত্ররা পাকিস্তান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনের নিকটবর্তী আগ্রাবাদ স্টেশন থেকে বার্তাটি প্রচারের অনুমতি চাইলেও সেটি প্রত্যাখ্যাত হয়। কালুরঘাট বেতারকেন্দ্রের কয়েকজন বাঙালি কর্মচারী “স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র” চালু করলে বার্তাটি বেশ কয়েকবার প্রচারিত হয়। ২৬শে মার্চ স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার করা হয়। তবে বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচারক্ষমতা কম হওয়ায় খুব কম সংখ্যক মানুষই সেই ঘোষণাটি শুনেছিলেন। চট্টগ্রামের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এম. এ. হান্নান ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে মার্চ স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাটি প্রথম পাঠ করেন বলে মনে করা হয়। ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-প্রধান মেজর জিয়াউর রহমান বেতারকেন্দ্রে নিরাপত্তা নিশ্চিতের অনুরোধ জানান এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ মার্চ তিনিও স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচারে তিনি বলেন: জিয়াউর রহমানের ২৭শে মার্চের ঘোষণা বিদেশি গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচারিত হয়। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত একটি জাপানি জাহাজ বার্তাটি ধারণ করে। সেখান থেকে রেডিও অস্ট্রেলিয়া এবং পরবর্তীতে বিবিসি বার্তাটি পুনঃপ্রচার করে। ২৬শে মার্চের সকালে কলকাতায় পৌঁছানো শেখ মুজিবুর রহমানের বার্তা এবং বিকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের ঘোষণার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাটি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে মার্চকে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং এই দিন থেকেই রাষ্ট্রের নাম হিসেবে “বাংলাদেশ” কার্যকর হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সাবেক পূর্ব পাকিস্তানকে সরাসরি বাংলাদেশ নামে অভিহিত করা শুরু করেন। তবে পাকিস্তানিরা এবং কিছু ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তা ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত “পূর্ব পাকিস্তান” ব্যবহার করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ মার্চ থেকে জুন ঢাকায় গণহত্যা চালানোর পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১০ এপ্রিলের মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশ নিজেদের আয়ত্তে আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করে। কিন্তু বাঙালিরা তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে থাকে। যুদ্ধের প্রথম দিকে বাঙালিদের প্রতিরোধ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত, কিন্তু অসংগঠিত। এই প্রতিরোধ দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। তবে, পাকিস্তানি বাহিনী সাধারণ নাগরিকদের ওপর আক্রমণ শুরু করলে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যায় এবং প্রতিরোধ তীব্রতর হয়ে উঠে। ক্রমশ মুক্তিবাহিনীর তৎপরতা বাড়তে থাকে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাদের দমনে সর্বাত্মক চেষ্টা করে। কিন্তু অধিকাংশ বাঙালি সৈনিক পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে “গুপ্ত সেনাবাহিনী”তে যোগদান করে। সেনাবাহিনী ও ইপিআর সদস্যরা বিদ্রোহ করে চট্টগ্রাম শহরের একটি বড় অংশ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। চট্টগ্রাম শহরের নিয়ন্ত্রণ পেতে পাকিস্তানি বাহিনীকে যুদ্ধজাহাজ থেকে গোলাবর্ষণ করতে হয় এবং বিমানে আক্রমণ চালাতে হয়। বিদ্রোহী সেনারা কুষ্টিয়া, পাবনা, বগুড়া, দিনাজপুর ইত্যাদি জেলারও নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। বাঙালি সেনারা একসময় মুক্তিবাহিনীর সাথে মিলিত হয়ে তাদের অস্ত্র সরবরাহ করে। পাশাপাশি ভারত থেকেও অস্ত্রের চালান আসতে থাকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কর্তৃপক্ষ দুই ডিভিশন সেনা পূর্ব পাকিস্তানে পাঠিয়ে সেনাবাহিনীকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয়। বিপুল সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্রের মাধ্যমে সেনাবাহিনী মে মাসের শেষ নাগাদ অধিকাংশ মুক্তাঞ্চলের দখল নিয়ে নেয়। এই সময়ে রাজাকার, আল বদর, আল শামস প্রভৃতি আধা-সামরিক বাহিনী গঠন করা হয়। মূলত মুসলিম লীগ ও অন্যান্য ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের সদস্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী বাঙালি এবং দেশভাগের সময় আসা বিহারি মুসলিমদের নিয়ে এই দলগুলো গঠিত হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার মেহেরপুর মহকুমার (বর্তমানে জেলা) বৈদ্যনাথতলার ভবেরপাড়ায় (বর্তমানে মুজিবনগর) মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, তার অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি, তাজউদ্দীন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী এবং এম. এ. জি. ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মার্চের শেষদিক থেকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক ও সংখ্যালঘুরা বিশেষভাবে তাদের রোষের শিকার হয়। আক্রমণ থেকে বাঁচতে দলে দলে মানুষ ভারতের সীমান্তের দিকে এগিয়ে আসতে থাকে। এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া শরণার্থীদের এই স্রোত নভেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এই সময়ে প্রায় এক কোটি শরণার্থী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম রাজ্যে আশ্রয় নেয়। পাকিস্তানি সেনাদের ওপর মুক্তিবাহিনীর গেরিলা আক্রমণ অব্যাহত থাকে। কিন্তু অস্ত্র ও প্রশিক্ষণের অভাবে যুদ্ধ পরিকল্পিত রূপ লাভ করতে করতে জুন মাস পার হয়ে যায়। জুন থেকে সেপ্টেম্বর ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ জুলাই বাংলাদেশের সামরিক কমান্ড গঠিত হয়। এম এ জি ওসমানীকে মন্ত্রীপদমর্যাদায় মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রবকে চিফ অফ স্টাফ, গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে ডেপুটি চিফ অফ স্টাফ এবং মেজর এ আর চৌধুরীকে সহকারী চিফ অফ স্টাফ ঘোষণা করা হয়। যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ভারতীয় সেনানায়কদের সাথে জেনারেল ওসমানীর মতভেদ ছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা ছিল ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনাদের নেতৃত্বে ৮,০০০ সদস্যের একটি প্রশিক্ষিত গেরিলা দল গঠন করা, যারা ছোট ছোট দলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হামলা চালাবে এবং যুদ্ধে ভারতের হস্তক্ষেপের পথকে সুগম করবে। কিন্তু প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের সমর্থনে জেনারেল ওসমানী ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন: বাঙালি সেনারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিছু এলাকা দখল করে নেবে এবং সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কূটনৈতিক স্বীকৃতি এবং হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানাবে। প্রাথমিকভাবে অভিযান শুরু করার জন্য ময়মনসিংহকে নির্বাচিত করা হলেও পরবর্তীতে জেনারেল ওসমানী সিলেটকে নির্বাচন করেন। যত বেশি সম্ভব গেরিলা যোদ্ধাদের বাংলাদেশের ভেতরে পাঠানো, যারা কিছু নির্ধারিত কাজ করবে: গেরিলা অভিযান ও আক্রমণের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীর ক্ষতিগ্রস্ত করা। শক্তি উৎপাদনকেন্দ্র, রেল ও সড়কপথ, পণ্য সংরক্ষণাগার প্রভৃতিতে আক্রমণ চালিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বাধাগ্রস্ত করা। ব্রিজ/কালভার্ট, জ্বালানি তেলের গুদাম, ট্রেন ও জলযান উড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে সারাদেশে পাকিস্তানি বাহিনীর চলাচলকে বাধাগ্রস্ত করা। এই ধরনের কৌশলগত আক্রমণের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানি বাহিনীকে সমগ্র বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়তে বাধ্য করা এবং বিচ্ছিন্ন সেনাবাহিনীর ওপর আরও কার্যকরভাবে আক্রমণ চালানো। জুলাই মাসেই বাংলাদেশকে এগারোটি সেক্টরে ভাগ করা হয়। পাকিস্তানি বাহিনী ছেড়ে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দিয়ে গেরিলা অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সামরিক কর্মকর্তাদের প্রতি সেক্টরে কমান্ডারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী গেরিলা যুদ্ধের জন্য মুক্তিবাহিনীর বাঙালি সৈন্যদের দুই থেকে পাঁচ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেয়। অধিকাংশ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প ছিল সীমান্তের নিকটবর্তী। এগুলো পরিচালনায় ভারত প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করে। জেনারেল ওসমানীর অধীনে নৌ-কমান্ডো এবং বিশেষ বাহিনী নিয়ে ১০ নং সেক্টর গঠন করা হয়। যুদ্ধের জন্য তিনটি ব্রিগেড, এগারোটি ব্যাটালিয়ন গঠন করা হয় এবং প্রায় এক লক্ষ বাঙালিকে গেরিলা যুদ্ধের জন্য প্রশিক্ষিত করা হয়। জুলাই এবং সেপ্টেম্বর মাসে তিন ব্রিগেড (আট ব্যাটালিয়ন পদাতিক সৈন্য এবং তিন ব্যাটারি গোলন্দাজ বাহিনী) সৈন্য যুদ্ধে পাঠানো হয়। জুন–জুলাই মাসে অপারেশন জ্যাকপটের উদ্দেশ্যে সীমান্তের দিকে মুক্তিবাহিনীকে পুনর্গঠন করা হয় এবং ভারতের সহায়তায় ২০০০–৫০০০ জন গেরিলাযোদ্ধা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। কিন্তু “তথাকথিত” অতিবর্ষণ এবং অন্যান্য কারণে (যথেষ্ট প্রশিক্ষণের অভাব, সরবরাহব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যোগাযোগের অসুবিধা প্রভৃতি) মুক্তিবাহিনী কাঙ্ক্ষিত সাফল্য লাভ করতে পারছিল না। বাঙালি নিয়মিত সেনারা ময়মনসিংহ, কুমিল্লা ও সিলেটের সীমান্ত ফাঁড়িগুলোতে আক্রমণ করতে থাকে। কোনো কোনো অভিযান সফল হলেও অনেকগুলো ব্যর্থও হয়। পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ দাবি করতে থাকে যে তারা “মুনসুন অফেনসিভ” বা বর্ষাকালকে ঘিরে মুক্তিবাহিনীর পরিকল্পনা সফলভাবে অবদমন করতে পেরেছে। কর্তৃপক্ষের এই দাবি প্রায় সঠিক বলেই প্রতীয়মান হয়। গেরিলা যোদ্ধারা প্রশিক্ষণকালে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেও আগস্টের পর থেকে আবার সক্রিয় হতে শুরু করে। রাজধানী ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনাগুলো মুক্তিযোদ্ধাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। ঢাকার অভ্যন্তরে ক্র্যাক প্লাটুন কয়েকটি দুঃসাহসী অভিযান চালায়। এরপর ১৫ই আগস্ট অপারেশন জ্যাকপটের মাধ্যমে মুক্তিবাহিনীর সবচেয়ে বড় সাফল্য আসে। নৌ-কমান্ডোরা এইদিন চট্টগ্রাম, মোংলা, নারায়ণগঞ্জ ও চাঁদপুর বন্দরে নোঙর করা জাহাজে মাইন পেতে উড়িয়ে দেয়। অক্টোবর–ডিসেম্বর এই সময়ে মুক্তিবাহিনী সীমান্তঘাঁটিগুলোতে আক্রমণ করে দখল করে নিতে থাকে। কামালপুর, বিলোনিয়া ও বয়রার যুদ্ধ এগুলোর মধ্যে অন্যতম। পাকিস্তানি বাহিনীর ৩৭০টি সীমান্তঘাঁটির মধ্যে ৯০টিই মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে চলে আসে। পাশাপাশি গেরিলা বাহিনীর আক্রমণও আরও তীব্র হয়। পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগী রাজাকার বাহিনীও সাধারণ মানুষদের ওপর নির্যাতন করতে থাকে। এ অবস্থায় পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আট ব্যাটালিয়ন সৈন্য পূর্ব পাকিস্তানে নিয়ে আসা হয়। মুক্তিবাহিনী কিছুদিনের জন্য লালমনিরহাট ও সিলেটের শালুটিকর বিমানঘাঁটিও দখলে নিয়ে নেয়। মুক্তিবাহিনী দুইটি বিমানঘাঁটিই ভারত থেকে ত্রাণ ও অস্ত্র আনায় ব্যবহার করে। পশ্চিম পাকিস্তান থেকে জরুরি ভিত্তিতে আরও পাঁচ ব্যাটালিয়ন সৈন্য নিয়ে আসা হয়। সেক্টরসমূহ বাংলাদেশকে সর্বমোট ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয় এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে আসা কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে প্রতিটি সেক্টরের জন্যে একজন করে অধিনায়ক নির্বাচন করা হয়।১নং সেক্টর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী জেলার মুহুরী নদীর পূর্বাংশ পর্যন্ত মেজর জিয়াউর রহমান (এপ্রিল - জুন) মেজর রফিকুল ইসলাম (জুন-ফেব্ৰুয়ারি)২নং সেক্টর চাঁদপুর জেলা, নোয়াখালী জেলা, কুমিল্লা জেলার আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন পর্যন্ত এবং ফরিদপুর ও ঢাকার অংশবিশেষ মেজর খালেদ মোশাররফ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) মেজর এ.টি.এম. হায়দার (সেপ্টেম্বর-ফেব্ৰুয়ারি)৩নং সেক্টর সিলেট জেলার হবিগঞ্জ মহকুমা, কিশোরগঞ্জ মহকুমা, আখাউড়া-ভৈরব রেললাইন থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে কুমিল্লা ও ঢাকা জেলার অংশবিশেষ মেজর কে.এম. শফিউল্লাহ (এপ্রিল-সেপ্টেম্বর) মেজর এ.এন.এম. নুরুজ্জামান (সেপ্টেম্বর-ফেব্ৰুয়ারি)৪নং সেক্টর সিলেট জেলার পূর্বাঞ্চল এবং খোয়াই-শায়েস্তাগঞ্জ রেললাইন বাদে পূর্ব ও উত্তর দিকে সিলেট-ডাউকি সড়ক পর্যন্ত মেজর সি.আর. দত্ত৫নং সেক্টর সিলেট-ডাউকি সড়ক থেকে সিলেট জেলার সমগ্র উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল মীর শওকত আলী৬নং সেক্টর সমগ্র রংপুর জেলা এবং দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমা উইং কমান্ডার এম.কে. বাশার৭নং সেক্টর দিনাজপুর জেলার দক্ষিণাঞ্চল, বগুড়া, রাজশাহী এবং পাবনা জেলা মেজর কাজী নুরুজ্জামান৮নং সেক্টর সমগ্র কুষ্টিয়া ও যশোর জেলা, ফরিদপুরের অধিকাংশ এলাকা এবং দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়কের উত্তরাংশ মেজর আবু ওসমান চৌধুরী (এপ্রিল- আগস্ট) মেজর এম.এ. মনজুর (আগস্ট-ফেব্ৰুয়ারি)৯নং সেক্টর দৌলতপুর-সাতক্ষীরা সড়ক থেকে খুলনার দক্ষিণাঞ্চল এবং সমগ্র বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলা মেজর এম.এ. জলিল (এপ্রিল-ডিসেম্বর প্রথমার্ধ) মেজর জয়নুল আবেদীন (ডিসেম্বরের অবশিষ্ট দিন)১০নং সেক্টর কোনো আঞ্চলিক সীমানা নেই। নৌবাহিনীর কমান্ডো দ্বারা গঠিত। শত্রুপক্ষের নৌযান ধ্বংসের জন্য বিভিন্ন সেক্টরে পাঠানো হত১১নং সেক্টর কিশোরগঞ্জ মহকুমা বাদে সমগ্র ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল জেলা এবং নগরবাড়ি-আরিচা থকে ফুলছড়ি-বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত যমুনা নদী ও তীর অঞ্চল মেজর জিয়াউর রহমান (জুন - অক্টোবর) মেজর আবু তাহের (অক্টোবর-নভেম্বর) স্কোয়ড্ৰণ লীডাৱ এম হামিদুল্লাহ খান (নভেম্বর-ফেব্ৰুয়ারি) ১০ নং সেক্টরটি ছিল কমান্ডার-ইন-চিফের (সি-ইন-সি) সরাসরি তত্ত্বাবধানে, যার মধ্যে নৌ-বাহিনী ও সি-ইন-সির বিশেষ বাহিনীও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে উপযুক্ত কোনো কর্মকর্তা ছিলেননা বলে ১০ নম্বর সেক্টরের (নৌ সেক্টর) কোনো সেক্টর অধিনায়ক ছিলনা; এ সেক্টরের গেরিলারা যখন যে সেক্টরে অভিযান চালাতেন, তখন সে সেক্টরের সেক্টর অধিনায়কের অধীনে থাকতেন। গেরিলাদেৱ বেশির ভাগ প্রশিক্ষণ শিবির ছিল সীমান্ত এলাকায় এবং ভারতের সহায়তায় গেরিলা প্রশিক্ষণ লাভ করত। সম্মুখ যুদ্ধে লড়াই করার জন্যে তিনটি ব্রিগেড (১১ ব্যাটালিয়ন) তৈরি করা হয়। এছাড়াও প্রায় ১,০০০ গেরিলা প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশের ভেতরে নিয়মিত বিভিন্ন অভিযানে পাঠানো হতো। ভারতের অংশগ্রহণ ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বলেন যে, অর্থনৈতিকভাবে লক্ষ লক্ষ শরণার্থীর ভার কাঁধে নেওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়াই বরং ভারতের জন্য অধিক উত্তম। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৮শে এপ্রিল ভারতীয় মন্ত্রীসভা সেনাসভাধ্যক্ষ জেনারেল শ্যাম মানেকশ’কে “পূর্ব পাকিস্তানের গভীরে” যেতে বলে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বৈরী সম্পর্ক “পাকিস্তানের গৃহযুদ্ধে” ভারতের হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্তকে আরও ত্বরান্বিত করে। ফলস্বরূপ ভারত সরকার মুক্তিবাহিনীকে সমর্থন করে জাতিগতভাবে বাঙালিদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনে সমর্থন প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (র) পূর্ব পাকিস্তানের বিদ্রোহী বাঙালিদের সংগঠিত করে, প্রশিক্ষণ দেয় এবং অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে সহায়তা করে। এই প্রশিক্ষিত গেরিলারা দেশের ভেতরে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে নাস্তানাবুদ করে এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে ভারতের সামরিক হস্তক্ষেপের পক্ষে অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা ডিসেম্বর পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভারতের সীমান্তবর্তী বিমানঘাঁটিগুলোতে অতর্কিতে হামলা চালায়। বিমানঘাঁটিতে থাকা ভারতীয় বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলোকে ধ্বংস উদ্দেশ্য নিয়ে এই আক্রমণ চালায়। ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েলি বিমানবাহিনীর অপারেশন ফোকাসের আদলে এই হামলা চালানো হয়। ভারত এই হামলাকে স্পষ্টত তাদের দেশের ওপর আগ্রাসন হিসেবে দেখে এবং পাল্টা হামলা চালায়। এই হামলা-পাল্টা হামলার মধ্য দিয়ে উভয় দেশ সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং পাক-ভারত যুদ্ধের সূচনা ঘটে, যদিও কোনো দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিন কোর ভারতীয় সৈন্য অংশগ্রহণ করে। মুক্তিবাহিনীর আরও প্রায় তিন ব্রিগেড সৈন্য এবং আরও অসংখ্য অনিয়মিত সেনা তাদের সহায়তা করে। এই সেনারা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তিন ডিভিশন সৈন্যের তুলনায় অনেক গুণ বড় ছিল। যৌথবাহিনী দ্রুত বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে পড়তে থাকে। পাকিস্তানি বাহিনীর ঘাঁটিগুলো দখল করে যৌথবাহিনী দ্রুত রাজধানী ঢাকার দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। মুক্তিবাহিনীর গেরিলা আক্রমণ ঠেকাতে সীমান্তের দিকে ছড়িয়ে থাকা পাকিস্তানি সেনারা এত দ্রুত আক্রমণ সামাল দিতে পারেনি। যৌথবাহিনীর হাতে শীঘ্রই ঢাকার পতন ঘটে এবং ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। বিমান ও নৌযুদ্ধ ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের বিপক্ষে একের পর এক আক্রমণ চালায় এবং এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের আকাশে আধিপত্য বিস্তার করে। ভারত ও বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর যৌথ অভিযানে তেজগাঁও, কুর্মিটোলা, লালমনিরহাট ও শমসেরনগরে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর ১৪ নং স্কোয়াড্রনের সমস্ত যুদ্ধবিমান ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ফলে প্রথম সপ্তাহান্তে বাংলাদেশের আকাশসীমার প্রায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে সক্ষম হয়। আইএনএস বিক্রান্ত থেকে সি হক চট্টগ্রাম, বরিশাল ও কক্সবাজারে আক্রমণ চালিয়ে পাকিস্তান নৌবাহিনীর পূর্ব শাখাকে ধ্বংস করে দেয় এবং পূর্ব পাকিস্তানের একমাত্র সমুদ্রবন্দর দিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের পালানোর পথ বন্ধ করে দেয়। পাকিস্তান নৌবাহিনীর বিদ্রোহী কর্মকর্তা ও নৌসেনাদের নিয়ে নবগঠিত বাংলাদেশ নৌবাহিনী জলপথে আক্রমণ চালাতে ভারতকে সহায়তা করে; বিশেষ করে অপারেশন জ্যাকপট বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আত্মসমর্পণ এবং ফলাফল ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্ব কমান্ডের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল আমির আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। আত্মসমর্পণের সময়ে কেবলমাত্র কয়েকটি দেশই বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল। প্রায় ৯৩,০০০ যুদ্ধবন্দি যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভের জন্য আবেদন করে। অধিকাংশ সদস্যের সমর্থন সত্ত্বেও পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন বাংলাদেশের আবেদনে ভেটো প্রদান করে। পাকিস্তানের অপর মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও এর অনেক পরে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। যুদ্ধবন্দিদের স্থানান্তরের প্রক্রিয়া সহজ করতে ভারত ও পাকিস্তান ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে সিমলা চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই চুক্তি যুদ্ধবন্দিদের ফেরত পাওয়ার বিনিময়ে পাকিস্তানের কাছ থেকে স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বীকৃতি নিশ্চিত করে। ভারত যুদ্ধবন্দিদের প্রতি আচরণের ক্ষেত্রে জেনেভা কনভেনশনের ১৯২৫ নম্বর নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করে। মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যে ভারত ৯৩,০০০-এরও বেশি যুদ্ধবন্দিদের মুক্তি দেয়। এছাড়াও সম্প্রীতি স্থাপনের লক্ষ্যে ভারত বাঙালিদের প্রতি যুদ্ধাপরাধের দায়ে বন্দি ২০০ জনের প্রতি ক্ষমা ঘোষণা করেন। এর পাশাপাশি ভারত যুদ্ধে দখল করে নেওয়া পশ্চিম পাকিস্তানের ভূমি পাকিস্তানকে ফেরত দেয়। তবে কার্গিলের মতো কৌশলগত ভূমি ভারত নিজের আয়ত্ত্বে রাখে, যা পরবর্তীতে, ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে, দুই দেশের মধ্যে আরেকটি যুদ্ধের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই চুক্তিটি সম্পাদিত হয় এবং অনেকের মতে, এই চুক্তিটি ভারতের কূটনৈতিক ধীশক্তির পরিচয় বহন করে। আবার, ভারতের মধ্যেই কেউ কেউ মনে করেন, চুক্তিটি পাকিস্তানের প্রতি ভারতের অত্যধিক উদারতার পরিচয় দিয়েছে। তাদের মতে, পাকিস্তানের ভঙ্গুর গণতন্ত্রের জন্য ভুট্টো চুক্তির বিষয়ে ভারতের প্রতি উদার হতে আহ্বান জানায়; এর অন্যথায় চুক্তিতে ভারত কঠিন শর্ত দিলে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারতো। পশ্চিম পাকিস্তানে যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া যুদ্ধে পরাজয় ও দেশের অর্ধেক অংশের বিচ্ছেদে পশ্চিম পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক উভয় মহলই মর্মাহত হয়ে পড়ে। আনুষ্ঠানিক যুদ্ধ শুরুর মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে পরাজয় পাকিস্তানিদের কাছে অবিশ্বাস্য ছিল। পূর্ব পাকিস্তানে সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের অর্থও তাদের কাছে সম্পূর্ণ পরিষ্কার ছিল না। যুদ্ধে পরাজয়ের ফলে ইয়াহিয়া খানের একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং ভুট্টো এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় আসীন হন। ৯৩,০০০ যুদ্ধবন্দির সাথে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানে ফিরে আসা জেনারেল নিয়াজীকে পাকিস্তানিরা সন্দেহ ও ঘৃণার চোখে দেখতে থাকেন। তাকে একঘরে করে ফেলা হয় এবং দেশদ্রোহীর তকমা দেওয়া হয়। এই যুদ্ধের পরিণামে পাকিস্তানের স্বীকৃত সামরিক কৌশলগত মতবাদ, “পশ্চিম পাকিস্তানের হাতে পূর্ব পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা”-এর অসারতা প্রমাণিত হয়। নৃশংসতা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও নৃশংসতা চালানো হয়। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে ঢাকায় গণহত্যা চালানোর পর যুদ্ধ শুরু হলে বাংলাদেশে (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) বহু বেসামরিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় এবং যুদ্ধের পুরোটা সময় সেনাবাহিনীর হাতে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে থাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধকালে সামরিক বাহিনী ও তাদের সহায়তাকারী আধা-সামরিক বাহিনী প্রায় ৩,০০,০০০ থেকে ৩০,০০,০০০ মানুষকে হত্যা করে এবং প্রায় ২,০০,০০০ থেকে ৪,০০,০০০ নারীকে ধর্ষণ করা হয়। পাকিস্তানের ধর্মীয় নেতারা সংঘটিত অপরাধকে প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়ে বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের “হিন্দু” বলে ফতোয়া জারি করে এবং তাদের সম্পদ ও বাঙালি নারীদের “গনিমতের মাল” বা যুদ্ধলব্ধ সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের শতকরা ৮০ ভাগই ছিল মুসলিম। যুদ্ধের চলাকালীন বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের একটি বড় অংশকে হত্যা করা হয়। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর নির্দেশনায় আল শামস ও আল বদর বাহিনী এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করে। আত্মসমর্পণের ঠিক দুই দিন পূর্বে, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ই ডিসেম্বর, পাকিস্তান সেনাবাহিনী তাদের স্থানীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর সহায়তায় ঢাকা থেকে অন্তত ১০০ জন চিকিৎসক, অধ্যাপক, লেখক ও প্রকৌশলীকে তুলে নিয়ে হত্যা করে এবং তাদের মৃতদেহ একটি বধ্যভূমিতে ফেলে রাখে। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে বহু বধ্যভূমি আবিষ্কৃত হয়েছে। যুদ্ধের প্রথম রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও সাধারণ নাগরিকদের ওপর নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস থেকে সেই দেশের পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো টেলিগ্রামে তার উল্লেখ পাওয়া যায়। পাকিস্তানি সেনারা অসংখ্য নারীর ওপর নিপীড়ন চালায়, হত্যা ও ধর্ষণ করে; এর প্রকৃত সংখ্যা এখনও অজানা এবং এটি বহুল বিতর্কিত একটি বিষয়। যুদ্ধের সময়ে এবং পরে ধর্ষিতা নারীদের গর্ভে হাজারো যুদ্ধশিশুর জন্ম নেয়। ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরে পাকিস্তান সেনারা অনেক বাঙালি নারীকে যৌনদাসী হিসেবে বন্দি করে রাখে। তাদের অধিকাংশই ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অথবা সাধারণ পরিবারের মেয়ে। তবে পাকিস্তানি সেনা ও তাদের দোসরদের উৎসাহে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ছাড়াও বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের হাতে সংখ্যালঘু অবাঙালিরাও, বিশেষ করে বিহারিরা, নিপীড়িত হন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে একজন বিহারি প্রতিনিধির ভাষ্যমতে, বাঙালিদের হাতে প্রায় ৫,০০,০০০ বিহারি প্রাণ হারায়। রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আর জে রুমেলের মতে যুদ্ধকালীন সহিংসতায় প্রায় ১,৫০,০০০ হাজার বিহারি প্রাণ হারিয়েছেন। ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ই ডিসেম্বর জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভ কিছু গোপন নথি প্রকাশ করে, যার অধিকাংশই ছিল ওয়াশিংটন ডিসির কর্মকর্তাদের সাথে ঢাকা ও ভারতের মার্কিন দূতাবাস এবং মার্কিন তথ্যসেবা কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে আদানপ্রদানকৃত খবরের নথি। এসব প্রকাশিত নথিতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা মার্কিন কর্মকর্তাদের পূর্ব পাকিস্তানের ঘটনা বর্ণনায় “নির্বাচনমূলক গণহত্যা” () “গণহত্যা” () শব্দগুলো ব্যবহার করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রকাশনা ও গণমাধ্যমে এখনও “গণহত্যা” শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তবে বাংলাদেশের গণহত্যায় সেনাবাহিনীর ভূমিকার বিষয়টি পাকিস্তানে এখনও বিতর্কিত হিসেবে গণ্য। আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিলে এপ্রিল মাসে মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়। অস্থায়ী সরকার বাংলাদেশের স্বীকৃতি, রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন এবং মানবিক সাহায্যের জন্য বহির্বিশ্বে প্রচারণা শুরু করে। ভারতে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাপক রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন প্রদান করেন। বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানিদের নৃশংসতা বহির্বিশ্বের কাছে তুলে ধরার জন্য তিনি সে সময় বিভিন্ন দেশে সফর করেন। তার এই প্রচেষ্টা বাংলাদেশের পক্ষে যুদ্ধের যৌক্তিকতা এবং পরবর্তীতে ভারতীয় হস্তক্ষেপের পক্ষে সমর্থন আদায়ে অত্যন্ত কার্যকর বলে প্রতীয়মান হয়। পাশাপাশি পাকিস্তানে পরাজয়ের পর স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের দ্রুত স্বীকৃতি লাভে তার এই প্রয়াস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। জাতিসংঘ পূর্ব পাকিস্তান সংকটে জাতিসংঘের নিরবতা ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। জাতিসংঘ পূর্ব পাকিস্তানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা জানালেও যুদ্ধ শুরুর আগেই সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়। যুদ্ধে ভারতের জড়িয়ে পড়ার পর পাকিস্তান নিশ্চিত পরাজয়ের ভয়ে জাতিসংঘের শরণাপন্ন হয় এবং ভারতের সাথে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে জাতিসংঘকে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানায়। দক্ষিণ এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ ৪ঠা ডিসেম্বর অধিবেশন আহ্বান করে। দীর্ঘ আলোচনার পর ৭ই ডিসেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনতিবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও উভয় দেশের সৈন্যদের পূর্বের অবস্থানে ফিরে যাওয়ার প্রস্তাব দেয়। পরিষদের অধিকাংশের সমর্থন সত্ত্বেও সোভিয়েত ইউনিয়ন সেই প্রস্তাবে দুইবার ভেটো দেয়। বাঙালিদের প্রতি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর নৃশংসতা বিবেচনায় যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স ভোটদানে বিরত থাকে। ১২ই ডিসেম্বর পাকিস্তানের আসন্ন পরাজয় বুঝতে পেরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুনরায় নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশন আহ্বানের অনুরোধ জানায়। পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টো যুদ্ধবিরতির ব্যবস্থা করতে নিউ ইয়র্কে যান। পরিষদে চার দিন আলোচনার পর প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়। প্রস্তাব পাশের আগেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী ঢাকায় আত্মসমর্পণ করে এবং যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ব্যর্থ হয়ে এবং জাতিসংঘের নিষ্ক্রিয়তায় হতাশ হয়ে ভুট্টো তার ভাষণ ছিঁড়ে ফেলে নিরাপত্তা পরিষদ ত্যাগ করেন। স্বাধীনতা লাভের কয়েক মাসের মধ্যেই জাতিসংঘের অধিকাংশ সদস্য দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। ভুটান পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে চলে গেলে হিমালয়ের দেশ ভুটান ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে ভুটানের চতুর্থ রাজা জিগমে সিংয়ে ওয়াংচুকের অভিষেক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান অংশ নেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকালে মার্কিন সরকার পাকিস্তানকে সবধরনের কূটনৈতিক ও সামরিক সহায়তা প্রদান করে। মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন ও তার জাতীয় নিরাপত্তা পরামর্শক হেনরি কিসিঞ্জার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা করেন। পাকিস্তান চীনের আঞ্চলিক ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের মধ্যস্থতায় চীনের সাথে সমস্যা মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছিল। ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সনের চীন সফরের কথা ছিল। নিক্সনের আশঙ্কা ছিল ভারত পশ্চিম পাকিস্তান দখল করে নেবে এবং এর মাধ্যমে দক্ষিণ এশিয়ায় সোভিয়েত আধিপত্য বিস্তৃত হবে। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবস্থান এবং তার নতুন মিত্র চীনের আঞ্চলিক আধিপত্য খর্বিত হবে। চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বস্ততা দেখানোর জন্য নিক্সন মার্কিন কংগ্রেসের বাজেট বরাদ্দ লঙ্ঘন করে পাকিস্তানকে অস্ত্র সরবরাহ করেন, যা জর্ডান ও ইরান হয়ে পাকিস্তানের কাছে পৌঁছায়। নিক্সন চীনকেও পাকিস্তানে অস্ত্র সরবরাহ বাড়াতে উদ্বুদ্ধ করেন। নিক্সন প্রশাসন পূর্ব পাকিস্তানের মার্কিন দূতাবাস থেকে সেনাবাহিনীর গণহত্যার বিষয়ে পাঠানো বার্তাগুলো উপেক্ষা করে। এই বার্তাগুলোর মধ্যে ব্লাড টেলিগ্রাম ছিল উল্লেখযোগ্য। নিক্সন মুক্তিযুদ্ধকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করে এতে সম্পৃক্ত হতে অস্বীকৃতি জানান। কিন্তু পাকিস্তানের পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেলে তিনি সপ্তম নৌবহরকে রণতরী ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ-এর সাথে বঙ্গোপসাগরে যেতে নির্দেশ দেন। ভারতীয়রা একে পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি হিসেবে গ্রহণ করে। এন্টারপ্রাইজ ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই ডিসেম্বর বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করে। ৬ ও ১৩ই ডিসেম্বর সোভিয়েত নৌবাহিনী ভ্লাদিভস্টক থেকে দুই ধাপে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বোঝাই জাহাজ প্রেরণ করে। তারা ১৮ই ডিসেম্বর থেকে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জানুয়ারি ভারত মহাসাগরে সপ্তম নৌবহরের টাস্ক ফোর্স ৭৪-কে অনুসরণ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন শুরু থেকেই যুদ্ধে বাংলাদেশ ও ভারতের পক্ষ নেয়। তারা মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন প্রদান করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন বুঝতে পেরেছিল স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জন্ম তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রভাবকে খর্বিত করবে। তারা ভারতকে আশ্বাস দেয় যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা চীন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তারাও পাল্টা ব্যবস্থা নেবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই আগস্ট ভারত–সোভিয়েত মৈত্রী চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভারত মহাসাগরে ইউএসএস এন্টারপ্রাইজ-কে নিবৃত্ত করার জন্য একটি নিউক্লিয়ার ডুবোজাহাজও প্রেরণ করে। যুদ্ধের শেষে ওয়ারশ চুক্তিভুক্ত দেশগুলো খুব দ্রুত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে জানুয়ারি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। কয়েক মাস পর ৮ই এপ্রিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। চীন পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে চীন পূর্ব পাকিস্তানের ক্রমপরিবর্তনশীল পরিস্থিতি এবং পশ্চিম পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ভারতের আগ্রাসনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১০ই ডিসেম্বর নিক্সন ভারত-সীমান্তের দিকে সেনা মোতায়েনের জন্য চীনকে রাজি করাতে কিসিঞ্জারকে নির্দেশ দেন। কিসিঞ্জার সেদিনই জাতিসংঘে নিযুক্ত চীনের স্থায়ী প্রতিনিধি হুয়াং হুয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের প্ররোচনায় সাড়া না দিয়ে তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি কার্যকরে চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। ভারত পূর্বেই চীনের সীমান্ত বরাবর আটটি মাউন্টেন ডিভিশন মোতায়েন করে যেকোনো আক্রমণ প্রতিরোধে প্রস্তুত থাকায় চীন বুঝতে পেরেছিল ১৯৬২ খ্রিষ্টাব্দের চীন–ভারত যুদ্ধের মতো হঠাৎ আক্রমণ করে সুবিধা করা যাবে না। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার আবেদন জানালে চীন তাতে ভেটো দেয়। বাংলাদেশে যুদ্ধবন্দি হিসেবে থাকা সেনাসদস্য ও বেসামরিক ব্যক্তিদের ফেরত পাঠানোর জন্য জাতিসংঘের দুইটি প্রস্তাব তখনও কার্যকর না হওয়ায় চীন ভেটো প্রদান করে। বাংলাদেশকে স্বীকৃতিদানকারী সর্বশেষ দেশগুলোর অন্যতম হিসেবে ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ আগস্ট চীন বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। শ্রীলঙ্কা শ্রীলঙ্কা পাকিস্তানের বিভাজনকে তাদের দেশের ঐক্যের জন্য ভীতিজনক বলে মনে করে আসছিল। তাদের ধারণা ছিল, ভারত ভবিষ্যতে শ্রীলঙ্কার ওপরও তার বর্ধিত শক্তি প্রয়োগ করতে চাইবে। সিরিমাভো বন্দরনায়েকের নেতৃত্বাধীন শ্রীলঙ্কার বামপন্থী সরকার নিরপেক্ষ বৈদেশিক নীতি অনুসরণ করলেও যুদ্ধে পাকিস্তানকে সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভারতের সীমানায় পাকিস্তানি বিমান উড্ডয়ন নিষিদ্ধ হওয়ায় সেগুলোকে ভারতের চারপাশে অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ পথ ভ্রমণ করতে হতো এবং শ্রীলঙ্কার বন্দরনায়েকে বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি দিয়ে জ্বালানি পূর্ণ করে সেগুলো পূর্ব পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করত। আরব বিশ্ব অধিকাংশ আরব দেশের সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পাকিস্তানের মৈত্রী সম্পর্ক থাকায় কিসিঞ্জারের পক্ষে তাদের যুদ্ধে যোগদানে আমন্ত্রণ জানানো সহজ ছিল। কিসিঞ্জার জর্ডানের রাজা হুসাইন ও সৌদি আরবের বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ উভয়ের কাছেই পত্র পাঠান। মার্কিন রাষ্ট্রপতি রিচার্ড নিক্সন জর্ডানকে দশটি এফ-১০৪ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানে পাঠানোর অনুমতি দেন এবং সেগুলো পূরণ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন। লেখক মার্টিন ব্যোম্যানের মতে, “পাকিস্তানি পাইলটদের জন্য মানসম্মত প্রশিক্ষণ ইউনিট হিসেবে গড়ে তোলার জন্য সম্ভবত লিবিয়া থেকে আনা এফ-৫ বিমান সারগোদা বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন করা হয়। এরপর প্রয়োজন অনুসারে সৌদি আরব থেকে আরও এফ-৫ নিয়ে আসা হয়।” লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধের আগ্রাসনের অভিযোগে অভিযুক্ত করে কঠিন ভাষায় একটি পত্র লেখেন। এই কারণে গাদ্দাফি সেই সময় পাকিস্তানিদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। এই তিন দেশের বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের অন্য আরেকটি মিত্রদেশ পাকিস্তানকে মিরেজ ৩ যুদ্ধবিমান সরবরাহ করে। তবে সিরিয়া, তিউনিসিয়া প্রভৃতি দেশ বাংলাদেশের ঘটনাকে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে হস্তক্ষেপে রাজি হয়নি। ইরান যুদ্ধের সময় ইরান রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের পক্ষে দাঁড়ায়। দেশটি পাকিস্তানের সম্ভাব্য ভাঙন নিয়ে চিন্তিত ছিল। তাদের ভয় ছিল, যুদ্ধের ফলে পাকিস্তান খণ্ড খণ্ড হয়ে ভেঙে যাবে এবং ইরান চারদিক থেকে শত্রু বেষ্টিত হয়ে পড়বে। যুদ্ধের শুরুতে ইরান পাকিস্তানের আঞ্চলিক অখণ্ডতা অটুট রাখার জন্য পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ফাইটার জেটগুলোকে তাদের দেশের ভেতরে আশ্রয় দেয় ও বিনামূল্যের জ্বালানি সরবরাহ করে যুদ্ধে অংশগ্রহণের উপযোগী করে রাখে। কিন্তু পাকিস্তান একতরফা যুদ্ধবিরতি ও আত্মসমর্পণের ঘোষণা দিলে ইরানের শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভি ইরানের সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত করেন, যাতে অন্য কোনো দেশ পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশ দখল করে নেওয়ার আগেই জোরপূর্বক পাকিস্তান আক্রমণ করে যেকোনো মূল্যে প্রদেশটিকে ইরানের বেলুচিস্তান অংশের সাথে একীভূত করে নেওয়া যায়। জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে বাংলাদেশে এবং বিদেশে যুদ্ধের সময় থেকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ চিত্রিত অসংখ্য শিল্পকর্ম রয়েছে। কনসার্ট ফর বাংলাদেশ বিটলসের সদস্যদের দ্বারা সংগঠিত কনসার্টটি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিবাদ সঙ্গীতের জন্য একটি বড় ঘটনা ছিল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র এর জন্য রেকর্ড করা এবং সম্প্রচারিত গানগুলিকে এখনও বাংলাদেশী প্রতিবাদ গানগুলির মধ্যে সেরা বলে মনে করা হয়। যুদ্ধের সময় নির্মিত চারটি তথ্যচিত্র হচ্ছে জহির রায়হান এর 'স্টপ জেনোসাইড' এবং 'এ স্টেট ইজ বোর্ন', বাবুল চৌধুরীর 'ইনোসেন্ট মিলিয়নস', আলমগীর কবিরের 'মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্মিত চলচ্চিত্র মুক্তিযোদ্ধা '- বাংলাদেশ এ তৈরি প্রথম চলচ্চিত্র, যেমনটি পূর্ব পাকিস্তানে বা ভারতে তৈরি হয়েছিল, বাংলাদেশের বড় বড় সংস্থাগুলিও ছিল। মুক্তির গান হল যুদ্ধের সময় লেয়ার লেভিনের ফুটেজ শটের উপর ভিত্তি করে নির্মিত সবচেয়ে প্রশংসিত বাংলাদেশী ডকুমেন্টারি, এর নির্মাতা তারেক মাসুদ এবং ক‍্যাথরিন মাসুদ। পরিচালকরা দুটি ধারাবাহিকে চলচ্চিত্রটি তৈরি করেছেন- স্বাধীনতার গল্প এবং 'নারীর কথা'। একই বিষয়ের উপর তাদের আরেকটি চলচ্চিত্র, মাটির ময়না , কান চলচ্চিত্র উৎসবে FIPRESCII পুরস্কার জিতেছে। মুক্তিযুদ্ধে লিখিত বহু কবিতা ও উপন্যাস রয়েছে, যার মধ্যে যুদ্ধের সময় শামসুর রহমানের বিখ্যাত কবিতা রয়েছে। এটি ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে বাংলাদেশী সাহিত্যের জন্য সর্বাধিক ব্যবহৃত বিষয়। যুদ্ধ স্মরণে নির্মিত স্মৃতিগুলি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সম্মানিত স্মৃতিস্তম্ভ। আরও দেখুন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ইসলাম ন্যাপ-কমিউনিস্ট পার্টি-ছাত্র ইউনিয়নের বিশেষ গেরিলা বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বীরত্বসূচক পদক মুজিব বাহিনী মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনসমূহ টীকা তথ্যসূত্র উৎস আরও পড়ুন গ্রন্থপঞ্জি প্রতিবেদন মুখার্জি, নয়নিকা, A Lot of History Sexual Violence, Public Memories and the Bangladesh Liberation War of 1971'', (ইংরেজি ভাষায়) সামাজিক নৃবিজ্ঞান বিষয়ে ডক্টর অব ফিলোসফির অভিসন্দর্ভ, স্কুল অব অরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ (এসওএএস), লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়, ২০০২। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, অফিস অব দ্য হিস্টোরিয়ান, Foreign Relations of the United States, 1969–1976, Volume XI, South Asia Crisis, 1971 (ইংরেজি ভাষায়) ন্যাশনাল সিকিউরিটি আর্কাইভ, The Tilt: the U.S. and the South Asian Crisis of 1971 (ইংরেজি ভাষায়) বহিঃসংযোগ চিরন্তন ১৯৭১, প্রথম আলো ফ্রিডম ইন দি এয়ার, দ্য ডেইলি স্টার বাংলাদেশ জেনোসাইড আর্কাইভ বাংলাদেশের (পূর্ব পাকিস্তানের) গণহত্যা নিয়ে গবেষণা, জেন্ডারসাইড , গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর সংগ্রামের নোটবুক যুদ্ধ পাকিস্তান জড়িত যুদ্ধ পাকিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদ পাকিস্তানের ইতিহাস বাংলাদেশ জড়িত যুদ্ধ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বাংলাদেশের ইতিহাস বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাস বাংলার ইতিহাস স্বাধীনতা যুদ্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Bangladesh_Liberation_War
Bangladesh Liberation War
The Bangladesh Liberation War (Bengali: মুক্তিযুদ্ধ, pronounced [mukt̪iɟud̪d̪ʱo]), also known as the Bangladesh War of Independence and known as the Liberation War in Bangladesh, was an armed conflict sparked by the rise of the Bengali nationalist and self-determination movement in East Pakistan, which resulted in the independence of Bangladesh. The war began when the Pakistani military junta based in West Pakistan—under the orders of Yahya Khan—launched Operation Searchlight against the people of East Pakistan on the night of 25 March 1971, initiating the Bangladesh genocide. In response to the violence, members of the Mukti Bahini—a guerrilla resistance movement formed by Bengali military, paramilitary and civilians—launched a mass guerrilla war against the Pakistani military, liberating numerous towns and cities in the war's initial months. At first, the Pakistan Army regained momentum during the monsoon, but, Bengali guerrillas counterattacked by carrying out widespread sabotage, including through Operation Jackpot against the Pakistan Navy, while the nascent Bangladesh Air Force flew sorties against Pakistani military bases. India joined the war on 3 December 1971, after Pakistan launched preemptive air strikes on northern India. The subsequent Indo-Pakistani War involved fighting on two fronts; with air supremacy achieved in the eastern theatre, and the rapid advance of the Allied Forces of Mukti Bahini and the Indian military, Pakistan surrendered in Dhaka on 16 December 1971, in what remains to date the largest surrender of armed personnel since the Second World War. Rural and urban areas across East Pakistan saw extensive military operations and air strikes to suppress the tide of civil disobedience that formed after the 1970 election stalemate. The Pakistan Army, backed by Islamists, created radical religious militias—the Razakars, Al-Badr and Al-Shams—to assist it during raids on the local populace. Members of the Pakistani military and supporting militias engaged in mass murder, deportation and genocidal rape, pursuing a systematic campaign of annihilation against nationalist Bengali civilians, students, intelligentsia, religious minorities and armed personnel. The capital, Dhaka, was the scene of numerous massacres, including the Dhaka University massacre. Sectarian violence also broke out between Bengalis and Urdu-speaking Biharis. An estimated 10 million Bengali refugees fled to neighbouring India, while 30 million were internally displaced. The war changed the geopolitical landscape of South Asia, with the emergence of Bangladesh as the world's seventh-most populous country. Due to complex regional alliances, the war was a major episode in Cold War tensions involving the United States, the Soviet Union and the People's Republic of China. The majority of member states in the United Nations recognised Bangladesh as a sovereign nation in 1972.
1497
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A6%AC%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97
পশ্চিমবঙ্গ
পশ্চিমবঙ্গ ভারতের একটি রাজ্য পূর্ব ভারতে বঙ্গোপসাগরের উত্তর দিকে বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থিত। ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, এই রাজ্যের জনসংখ্যা ৯ কোটি ১৩ লক্ষেরও বেশি। জনসংখ্যার নিরিখে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের চতুর্থ সর্বাধিক জনবহুল রাজ্য (প্রথম-উত্তর প্রদেশ, দ্বিতীয়- মহারাষ্ট্র, তৃতীয়-বিহার )। এই রাজ্যের আয়তন প্রায় ৮৮,৭৫২ বর্গ কি. মি.। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা ভাষী বাঙালি জাতি অধ্যুষিত অবিভক্ত বাংলার একটি অংশ। এই রাজ্যের পূর্ব দিকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র এবং উত্তর দিকে নেপাল ও ভুটান রাষ্ট্র অবস্থিত। ভারতের ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, সিকিম ও আসাম রাজ্যও পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী। রাজ্যের রাজধানী কলকাতা শহরটি হল ভারতের সপ্তম বৃহত্তম মহানগরী৷ ভৌগোলিক দিক থেকে দার্জিলিং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল, গাঙ্গেয় বদ্বীপ, রাঢ় অঞ্চল ও উপকূলীয় সুন্দরবনের অংশবিশেষ এই রাজ্যের অন্তর্গত। বাঙালিরাই এই রাজ্যের প্রধান জাতিগোষ্ঠী এবং রাজ্যের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই বাঙালি হিন্দু। প্রাচীন বাংলা ছিল একাধিক প্রধান জনপদের কেন্দ্রস্থল। খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীতে সম্রাট অশোক এই অঞ্চলটি জয় করেন। খ্রিস্টীয় ৪র্থ শতাব্দীতে এই অঞ্চল গুপ্ত সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৩শ শতাব্দীর পর থেকে ১৮শ শতাব্দীতে ব্রিটিশ শাসনের সূচনালগ্ন পর্যন্ত একাধিক সুলতান, শক্তিশালী হিন্দু রাজন্যবর্গ ও বারো ভুঁইয়া এবং সামন্ত রাজা জমিদারেরা এই অঞ্চল শাসন করেন। দিল্লী সালতানাত এবং শাহী বাংলার সালতানাত-এর সময়, ইউরোপবাসীরা বাংলাকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী বাণিজ্য প্রদেশ হিসেবে ধরতো মুঘল সাম্রাজ্য আমলে বিশ্বের মোট উৎপাদনের (সাকুল্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) ১২ শতাংশ উৎপন্ন হত সুবে বাংলায় যা এখনকার দিনের বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, আসাম, ত্রিপুরা ও বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত ছিল। যা সে সময় সমগ্র ইউরোপের চেয়ে জিডিপির চেয়ে বেশি ছিল। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এই অঞ্চলের উপর নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করে। এরপর দীর্ঘকাল কলকাতা ছিল ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। দীর্ঘকাল ব্রিটিশ প্রশাসনের কেন্দ্রস্থলে থাকার সুবাদে বাংলায় প্রাতিষ্ঠানিক পাশ্চাত্য শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এবং ধর্মীয় ও সামাজিক সংস্কারের সূচনা ঘটে। এই ঘটনা পরবর্তীকালে বাংলার নবজাগরণ নামে পরিচিত হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগে বাংলা ছিল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। ১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতা লাভের সময় ধর্মের ভিত্তিতে এই অঞ্চল দ্বিখণ্ডিত হয়। বাংলার পূর্ব ভূখণ্ড নিয়ে নবগঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের পূর্ব বাংলা (পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান প্রদেশ) এবং অধুনা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র) গঠিত হয়। অন্যদিকে পশ্চিম ভূখণ্ড নিয়ে গঠিত হয় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য। রাজ্যের রাজধানী হয় কলকাতা। ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত একটি কমিউনিস্ট সরকার পশ্চিমবঙ্গ শাসন করেছিল। বিশ্বের ইতিহাসে এই সরকারটিই ছিল সর্বাপেক্ষা দীর্ঘস্থায়ী নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকার। পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপ্রধান রাজ্য। ভারতের সাকুল্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে অবদানের অনুপাতে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ষষ্ঠ। লোকসংস্কৃতির বৈচিত্র্য ছাড়াও সাহিত্য, সংগীত, নাটক, চলচ্চিত্র, শিল্পকলা ও উৎসব-অনুষ্ঠান পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ। নোবেল পুরস্কারজয়ী বাঙালি সাহিত্যিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিকর্ম এই রাজ্যে বিশেষ সমাদৃত ও জনপ্রিয়। কলকাতাকে "ভারতের সাংস্কৃতিক রাজধানী" বলেও অভিহিত করা হয়। খেলাধূলার ক্ষেত্রে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যটি হলো, এই রাজ্যের মানুষের মধ্যে জাতীয় স্তরে বিশেষ জনপ্রিয় খেলা ক্রিকেট ছাড়াও ফুটবলের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় । নাম বঙ্গ বা বাংলা নামের সঠিক উৎসটি অজ্ঞাত। এই নামের উৎস সম্পর্কে একাধিক মতবাদ প্রচলিত। একটি মতে এটি খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ অব্দে এই অঞ্চলে বসবাসকারী দ্রাবিড় উপজাতির ভাষা থেকে এসেছে। সংস্কৃত সাহিত্যে বঙ্গ নামটি অনেক জায়গাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু এই অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাস সম্পর্কে বিশেষ কিছুই জানা যায় না। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ভারতের বাংলা প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চল স্বাধীন ভারতের অঙ্গরাজ্যে পরিণত হলে এই রাজ্যের নামকরণ পশ্চিমবঙ্গ করা হয়েছিল। ইংরেজিতে অবশ্য West Bengal (ওয়েস্ট বেঙ্গল) নামটিই সরকারিভাবে প্রচলিত। ২০১১ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যের ইংরেজি নামটি পালটে Paschimbanga রাখার প্রস্তাব দেয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পরিবর্তন করে বাংলা বিষয়টি ২০১৬ থেকে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ তথা বাংলা রাজ্যের বিধানসভায় এই নাম পরিবর্তনের আইন পাস করা হয়। ২০১৬ সালের আগস্টে পশ্চিমবঙ্গের নাম বদলে নতুন নাম রাখার প্রস্তাব করা হয় বাংলা, ইংরেজিতে বেঙ্গল আর হিন্দিতে বঙ্গাল্। রাজ্য বিধানসভায় নাম পরিবর্তনের এই প্রস্তাব বিপুল ভোটের ব্যবধানে পাস হয়। প্রস্তাবের পক্ষে ১৮৯ ভোট পড়ে আর বিপক্ষে পড়ে ৩১ ভোট। পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পেশ করেন সংসদবিষয়ক ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের নাম পরিবর্তন নিয়ে রাজ্য মন্ত্রিসভায় ২ আগস্ট ২০১৬ তারিখে দুটি প্রস্তাব গৃহীত হয়- বাংলা অথবা বঙ্গ। পরবর্তীকালে ভারত সরকার তিনটির পরিবর্তে একটি মাত্র নাম নির্ধারণের পক্ষে পরামর্শ প্রদান করে। এই পরামর্শ অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় ২০১৮’এর ২৬ জুলাই দুপুরে সকল ভাষার জন্য ‘বাংলা’ নামটিই সর্বসম্মতভাবে পাশ হয়েছে। বিধানসভার বাদল অধিবেশনে রাজ্যের নাম বদলের প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে নামবদলের প্রস্তাব রাষ্ট্রীয়ভাবে কার্যকর হবে। ইতিহাস প্রাচীন যুগ বৃহত্তর বঙ্গদেশে সভ্যতার সূচনা ঘটে আজ থেকে ৪,০০০ বছর আগে। এই সময় দ্রাবিড়, তিব্বতি-বর্মি ও অস্ত্রো-এশীয় জাতিগোষ্ঠী এই অঞ্চলে এসে বসতি স্থাপন করেছিল। বঙ্গ বা বাংলা শব্দের প্রকৃত উৎস অজ্ঞাত। তবে মনে করা হয়, ১০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নাগাদ যে দ্রাবিড়-ভাষী বং জাতিগোষ্ঠী এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল, তারই নামানুসারে এই অঞ্চলের নামকরণ হয় বঙ্গ। গ্রিক সূত্র থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১০০ অব্দ নাগাদ গঙ্গারিডাই নামক একটি অঞ্চলের অস্তিত্বের কথা জানা যায়। সম্ভবত এটি বৈদেশিক সাহিত্যে বাংলার প্রাচীনতম উল্লেখগুলির অন্যতম। মনে করা হয়, এই গঙ্গারিডাই শব্দটি গঙ্গাহৃদ (অর্থাৎ, গঙ্গা যে অঞ্চলের হৃদয়ে প্রবাহিত) শব্দের অপভ্রংশ। খ্রিষ্টপূর্ব সপ্তম শতাব্দীতে বাংলা ও বিহার অঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠে মগধ রাজ্য। একাধিক মহাজনপদের সমষ্টি এই মগধ রাজ্য ছিল মহাবীর ও গৌতম বুদ্ধের সমসাময়িক ভারতের চারটি প্রধান রাজ্যের অন্যতম। মৌর্য রাজবংশের রাজত্বকালে প্রায় সমগ্র দক্ষিণ এশিয়া মগধ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে এই সাম্রাজ্যের সর্বশ্রেষ্ঠ নরপতি মহামতি অশোকের রাজত্বকালে আফগানিস্তান ও পারস্যের কিছু অংশও এই সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রাচীনকালে জাভা, সুমাত্রা ও শ্যামদেশের (অধুনা থাইল্যান্ড) সঙ্গে বাংলার বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ মহাবংশ অনুসারে, বিজয় সিংহ নামে বঙ্গ রাজ্যের এক রাজপুত্র লঙ্কা (অধুনা শ্রীলঙ্কা) জয় করেন এবং সেই দেশের নতুন নাম রাখেন সিংহল। প্রাচীন বাংলার অধিবাসীরা মালয় দ্বীপপুঞ্জ ও শ্যামদেশে গিয়ে সেখানে নিজেদের উপনিবেশ স্থাপন করেছিলেন। আদিমধ্য ও মধ্যযুগ খ্রিষ্টীয় তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে মগধ রাজ্য ছিল গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রধান কেন্দ্র। বঙ্গের প্রথম সার্বভৌম রাজা ছিলেন শশাঙ্ক। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীর প্রথম ভাগে তিনি একাধিক ছোটো ছোটো রাজ্যে বিভক্ত সমগ্র বঙ্গ অঞ্চলটিকে একত্রিত করে একটি সুসংহত সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। শশাঙ্কের রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ (অধুনা মুর্শিদাবাদ জেলার রাঙামাটি অঞ্চল)। তার মৃত্যুর অব্যবহিত পরে বঙ্গের ইতিহাসে এক নৈরাজ্যের অবস্থা সৃষ্টি। ইতিহাসে এই সময়টি "মাৎস্যন্যায়" নামে পরিচিত। এরপর চারশো বছর বৌদ্ধ পাল রাজবংশ এবং তারপর কিছুকাল হিন্দু সেন রাজবংশ এই অঞ্চল শাসন করেন। পাল সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল পাটলিপুত্র (অধুনা পাটনা, বিহার) এবং পরে গৌড় (মালদহ জেলা)। সেন সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল নবদ্বীপ (নদিয়া জেলা)। এরপর ভারতে ইসলামের আবির্ভাব ঘটলে বঙ্গ অঞ্চলেও ইসলাম ধর্মে প্রসার ঘটে। বকতিয়ার খলজি নামে দিল্লি সুলতানির দাস রাজবংশের এক তুর্কি সেনানায়ক সর্বশেষ সেন রাজা লক্ষ্মণসেনকে পরাস্ত করে বঙ্গের একটি বিরাট অঞ্চল অধিকার করে নেন। এরপর কয়েক শতাব্দী এই অঞ্চল দিল্লি সুলতানির অধীনস্থ সুলতান রাজবংশ অথবা সামন্ত প্রভুদের দ্বারা শাসিত হয়। ষোড়শ শতাব্দীতে মুঘল সেনানায়ক ইসলাম খাঁ বঙ্গ অধিকার করেন। যদিও মুঘল সাম্রাজ্যের রাজদরবার সুবা বাংলার শাসকদের শাসনকার্যের ব্যাপারে আধা-স্বাধীনতা প্রদান করেছিলেন। এই অঞ্চলের শাসনভার ন্যস্ত হয়েছিল মুর্শিদাবাদের নবাবদের হাতে। নবাবেরাও দিল্লির মুঘল সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। ব্রিটিশ শাসন পঞ্চদশ শতাব্দীর শেষভাগে বঙ্গ অঞ্চলে ইউরোপীয় বণিকদের আগমন ঘটে। এই সব বণিকেরা এই অঞ্চলে নিজ নিজ প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হন। অবশেষে ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি পলাশীর যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজদ্দৌলাকে পরাজিত করেন। এর পর সুবা বাংলার রাজস্ব আদায়ের অধিকার কোম্পানির হস্তগত হয়। ১৭৬৫ সালে বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি স্থাপিত হয়। ধীরে ধীরে সেন্ট্রাল প্রভিন্সের (অধুনা মধ্যপ্রদেশ) উত্তরে অবস্থিত গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্রের মোহনা থেকে হিমালয় ও পাঞ্জাব পর্যন্ত সকল ব্রিটিশ-অধিকৃত অঞ্চল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত হয়। ছিয়াত্তরের মন্বন্তরে লক্ষাধিক সাধারণ মানুষের মৃত্যু ঘটে। ১৭৭২ সালে কলকাতা ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী ঘোষিত হয়। বাংলার নবজাগরণ ও ব্রাহ্মসমাজ-কেন্দ্রিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্কার আন্দোলন বাংলার সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। ১৮৫৭ সালের মহাবিদ্রোহের সূচনা কলকাতার অদূরেই হয়েছিল। এই বিদ্রোহ ব্যর্থ হলেও এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের শাসনভার কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটিশ রাজশক্তি স্বহস্তে গ্রহণ করে। ভারত শাসনের জন্য একটি ভাইসরয়ের পদ সৃষ্টি করা হয়। ১৯০৫ সালে ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) অঞ্চলটিকে পূর্ববঙ্গ থেকে পৃথক করা হয়। কিন্তু বঙ্গবিভাগের এই প্রয়াস শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয় এবং ১৯১১ সালে বঙ্গপ্রদেশকে পুনরায় একত্রিত করা হয়। ১৯৪৩ সালে পঞ্চাশের মন্বন্তরে বাংলায় ৩০ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে বাংলা এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। অনুশীলন সমিতি ও যুগান্তর দলের মতো বিপ্লবী দলগুলি এখানে অতিসক্রিয় হয়ে ওঠে। বাংলায় ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় যখন সুভাষচন্দ্র বসু আজাদ হিন্দ ফৌজ গঠন করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। ১৯২০ সাল থেকে এই রাজ্যে বামপন্থী আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করে। সেই ধারা আজও অব্যাহত আছে। ১৯৪৭ সালে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের চক্রান্তে ভারত স্বাধীনতা অর্জন ধর্মের ভিত্তিতে বাংলা দ্বিধাবিভক্ত হয়। হিন্দুপ্রধান পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয় এবং মুসলমানপ্রধান পূর্ববঙ্গ নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তানে যোগ দেয় (এই অঞ্চলটি পরে পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত হয় এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে)। স্বাধীনোত্তর যুগ দেশভাগের পর পূর্ববঙ্গ থেকে লক্ষ লক্ষ হিন্দু পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন। এই ব্যাপক অভিবাসনের ফলে পশ্চিমবঙ্গে খাদ্য ও বাসস্থানের সমস্যা দেখা দেয়। ১৯৫০ সালে দেশীয় রাজ্য কোচবিহারের রাজা জগদ্দীপেন্দ্র নারায়ণ ভারত সরকারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলে কোচবিহার পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলায় পরিণত হয়। ১৯৫৫ সালে ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগর পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয়। বিহারের কিছু বাংলা-ভাষী অঞ্চলও এই সময় পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিপর্যয়, ধর্মঘট ও সহিংস মার্ক্সবাদী-নকশালবাদী আন্দোলনের ফলে রাজ্যের শিল্প পরিকাঠামো ভেঙে পড়ে। এর ফলে এক অর্থনৈতিক স্থবিরতার যুগের সূত্রপাত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় প্রায় এক কোটি শরণার্থী পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নেয়। সেই সময় নকশালবাদের সাথে কংগ্রেসের চক্রান্তের ফলে রাজ্যের পরিকাঠামোয় গভীর চাপ সৃষ্টি হয়। ১৯৭৪ সালের বসন্ত মহামারীতে রাজ্যে সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ১৯৭৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসকে পরাজিত করে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় এলে রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ এক রাজনৈতিক পরিবর্তন সূচিত হয়। এরপর তিন দশকেরও বেশি সময় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) (সিপিআই(এম)) নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে শাসনভার পরিচালনা করে। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগে ভারত সরকারের অর্থনৈতিক সংস্কার এবং ২০০০ সালে সংস্কারপন্থী নতুন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নির্বাচনের পর রাজ্যের অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত হয়। বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে ছোটোবড়ো বেশ কয়েকটি সশস্ত্র জঙ্গিহানার ঘটনা ঘটেছে। আবার শিল্পায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের সঙ্গে স্থানীয় অধিবাসীদের একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ২০০৬ সালে হুগলির সিঙ্গুরে টাটা ন্যানো কারখানার জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে তীব্র গণ-অসন্তোষ দেখা যায়। জমি অধিগ্রহণ বিতর্কের প্রেক্ষিতে সিঙ্গুর থেকে টাটা গোষ্ঠী কারখানা প্রত্যাহার করে নিলে, তা রাজ্য রাজনীতিতে গভীর প্রভাব বিস্তার করে। ২০০৭ সালে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য জমি অধিগ্রহণকে কেন্দ্র করে অশান্তির জেরে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন মারা গেলে রাজ্য রাজনীতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এরপর ২০০৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন, ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচন ও ২০১০ সালের পৌরনির্বাচনে শাসক বামফ্রন্টের আসন সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। অবশেষে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে বিপুল ভোটে পরাজিত হয়ে রাজ্যের ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের অবসান হয়। ভূগোল ও জলবায়ু পূর্ব ভারতে হিমালয়ের দক্ষিণে ও বঙ্গোপসাগরের উত্তরে এক সংকীর্ণ অংশে পশ্চিমবঙ্গ অবস্থিত। ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ একমাত্র রাজ্য যেটি উত্তরে হিমালয় এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরকে স্পর্শ করেছে। রাজ্যের মোট আয়তন ৮৮,৭৫২ বর্গকিলোমিটার (৩৪,২৬৭ বর্গমাইল)। রাজ্যের সর্বোত্তরে অবস্থিত দার্জিলিং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল পূর্ব হিমালয়ের একটি অংশ। পশ্চিমবঙ্গের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ সান্দাকফু (৩,৬৩৬ মিটার বা ১১,৯২৯ ফুট) এই অঞ্চলে অবস্থিত। এই পার্বত্য অঞ্চলকে দক্ষিণে গাঙ্গেয় বদ্বীপ অঞ্চলের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে সংকীর্ণ তরাই অঞ্চল। অন্যদিকে রাঢ় অঞ্চল গাঙ্গেয় বদ্বীপকে বিচ্ছিন্ন করেছে পশ্চিমের মালভূমি ও উচ্চভূমি অঞ্চলের থেকে। রাজ্যের সর্বদক্ষিণে একটি নাতিদীর্ঘ উপকূলীয় সমভূমিও বিদ্যমান। অন্যদিকে সুন্দরবন অঞ্চলের ম্যানগ্রোভ অরণ্য গাঙ্গেয় বদ্বীপের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য। পশ্চিমবঙ্গের প্রধান নদী গঙ্গা রাজ্যকে দুটি ভাগে ভাগ করেছে। এই নদীর একটি শাখা পদ্মা নাম ধারণ করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে; অপর শাখাটি ভাগীরথী ও হুগলি নামে পশ্চিমবঙ্গের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তিস্তা, তোরষা, জলঢাকা, ফুলহার ও মহানন্দা উত্তরবঙ্গের প্রধান নদনদী। পশ্চিমের মালভূমি অঞ্চল থেকে উৎপন্ন নদনদীগুলির মধ্যে প্রধান হল দামোদর, অজয় ও কংসাবতী। গাঙ্গেয় বদ্বীপ ও সুন্দরবন অঞ্চলে অজস্র নদনদী ও খাঁড়ি দেখা যায়। নদীতে বেপরোয়া বর্জ্য নিক্ষেপের ফলে গঙ্গার দূষণ পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান সমস্যা। রাজ্যের অন্তত নয়টি জেলায় আর্সেনিক দূষিত ভৌমজলের সমস্যা রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত ১০ µg/লিটারের অধিক মাত্রার আর্সেনিক দূষিত জল পান করে ৮৭ লক্ষ মানুষ। পশ্চিমবঙ্গ গ্রীষ্মপ্রধান উষ্ণ জলবায়ু অঞ্চলের অন্তর্গত। এই রাজ্যের প্রধান ঋতু চারটি - শুষ্ক গ্রীষ্মকাল, আর্দ্র গ্রীষ্মকাল বা বর্ষাকাল, শরৎকাল ও শীতকাল। বদ্বীপ অঞ্চলের গ্রীষ্মকাল আর্দ্র হলেও, পশ্চিমের উচ্চভূমি অঞ্চলে উত্তর ভারতের মতো শুষ্ক গ্রীষ্মকাল। রাজ্যে গ্রীষ্মকালের গড় তাপমাত্রা ৩৮° সেলসিয়াস (১০০° ফারেনহাইট) থেকে ৪৫° সেলসিয়াস (১১৩° ফারেনহাইট)। রাত্রিকালে বঙ্গোপসাগর থেকে শীতল আর্দ্র দক্ষিণা বায়ু প্রবাহিত হয়। গ্রীষ্মের শুরুতে স্বল্পস্থায়ী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে যে প্রবল ঝড়, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টি হয় তা কালবৈশাখী নামে পরিচিত। বর্ষাকাল স্থায়ী হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত। ভারত মহাসাগরীয় মৌসুমি বায়ুর বঙ্গোপসাগরীয় শাখাটি উত্তরপশ্চিম অভিমুখে ধাবিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টিপাত ঘটায়। রাজ্যে শীতকাল (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) আরামদায়ক। এই সময় রাজ্যের সমভূমি অঞ্চলের গড় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হয় ১৫° সেলসিয়াস (৫৯° ফারেনহাইট)। শীতকালে শুষ্ক শীতল উত্তরে বাতাস বয়। এই বায়ু তাপমাত্রার সঙ্গে সঙ্গে আর্দ্রতার মাত্রাও কমিয়ে দেয়। যদিও দার্জিলিং হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। এই সময়ে এই অঞ্চলের কোথাও কোথাও তুষারপাতও হয়। জীবজগৎ পশ্চিমবঙ্গ জৈব বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। এর প্রধান কারণ হিমালয় পার্বত্য অঞ্চল থেকে উপকূলীয় সমভূমি পর্যন্ত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ভূপৃষ্ঠের উচ্চতার তারতম্য। রাজ্যের ভৌগোলিক এলাকার মাত্র ১৪ শতাংশ বনভূমি; যা জাতীয় গড় ২৩ শতাংশের চেয়ে অনেকটাই কম। রাজ্যের আয়তনের ৪ শতাংশ সংরক্ষিত এলাকা। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য সুন্দরবনের একটি অংশ পশ্চিমবঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত। উদ্ভিজ্জভৌগোলিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণাঞ্চলকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন: গাঙ্গেয় সমভূমি ও সুন্দরবনের লবনাক্ত ম্যানগ্রোভ অরণ্যভূমি। গাঙ্গেয় সমভূমির পললমৃত্তিকা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত এই অঞ্চলকে বিশেষভাবে উর্বর করে তুলেছে। রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের উদ্ভিদপ্রকৃতি পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের ছোট নাগপুর মালভূমির উদ্ভিদপ্রকৃতির সমরূপ। এই অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী বৃক্ষ হল শাল। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের উদ্ভিদপ্রকৃতি উপকূলীয় ধরনের। এই অঞ্চলের প্রধান বৃক্ষ হল ঝাউ। সুন্দরবন অঞ্চলের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান বৃক্ষ সুন্দরী গাছ। এই গাছ এই অঞ্চলের সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায় এবং সুন্দরবনের নামকরণও এই গাছের নামেই হয়েছে। উত্তরবঙ্গের উদ্ভিদপ্রকৃতির প্রধান তারতম্যের কারণ এই অঞ্চলের উচ্চতা ও বৃষ্টিপাত। উদাহরণস্বরূপ, হিমালয়ের পাদদেশে ডুয়ার্স অঞ্চলে ঘন শাল ও অন্যান্য ক্রান্তীয় চিরহরিৎ বৃক্ষের বন দেখা যায়। আবার ১০০০ মিটার উচ্চতায় উদ্ভিদের প্রকৃতি উপক্রান্তীয়। ১,৫০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত দার্জিলিঙে ওক, কনিফার, রডোডেনড্রন প্রভৃতি গাছের নাতিশীতোষ্ণমণ্ডলীয় অরণ্য দেখা যায়। সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্পের জন্য বিখ্যাত। রাজ্যে মোট ছয়টি জাতীয় উদ্যান আছে — সুন্দরবন জাতীয় উদ্যান, বক্সা জাতীয় উদ্যান, গোরুমারা জাতীয় উদ্যান, নেওড়া উপত্যকা জাতীয় উদ্যান, সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যান ও জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান। রাজ্যের অন্যান্য বন্যপ্রাণীর মধ্যে ভারতীয় গণ্ডার, এশীয় হাতি, হরিণ, বাইসন, চিতাবাঘ, গৌর ও কুমির উল্লেখযোগ্য। রাজ্যের পক্ষীজগৎও বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ। পরিযায়ী পাখিদের শীতকালে এ রাজ্যে আসতে দেখা যায়। সিঙ্গালীলা জাতীয় উদ্যানের মতো উচ্চ পার্বত্য বনভূমি অঞ্চলে বার্কিং ডিয়ার, রেড পান্ডা, চিঙ্কারা, টাকিন, সেরো, প্যাঙ্গোলিন, মিনিভেট, কালিজ ফেজান্ট প্রভৃতি বন্যপ্রাণীর সন্ধান মেলে। বেঙ্গল টাইগার ছাড়া সুন্দরবন অঞ্চলে গঙ্গা নদী শুশুক, নদী কচ্ছপ, স্বাদুজলের কুমির ও লোনা জলের কুমির প্রভৃতি বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির বন্যপ্রাণীও দেখা যায়। ম্যানগ্রোভ অরণ্য প্রাকৃতিক মৎস্য উৎপাদন কেন্দ্রের কাজও করে। এখানে বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় মাছ দেখা যায়। সরকার ব্যবস্থা ও রাজনীতি ভারতের অন্যান্য রাজ্যের মতো পশ্চিমবঙ্গও প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্রের সংসদীয় পদ্ধতিতে শাসিত হয়। রাজ্যের সকল নাগরিকের জন্য সার্বজনীন ভোটাধিকার স্বীকৃত। পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা বিধানসভা নামে পরিচিত। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে এই বিধানসভা গঠিত। বিধানসভার সদস্যরা একজন অধ্যক্ষ ও একজন উপাধ্যক্ষকে নির্বাচিত করেন। অধ্যক্ষ অথবা (অধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে) উপাধ্যক্ষ বিধানসভা অধিবেশনে পৌরোহিত্য করেন। কলকাতা হাইকোর্ট ও অন্যান্য নিম্ন আদালত নিয়ে রাজ্যের বিচারবিভাগ গঠিত। শাসনবিভাগের কর্তৃত্বভার ন্যস্ত রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভার উপর। রাজ্যপাল রাজ্যের আনুষ্ঠানিক প্রধান হলেও, প্রকৃত ক্ষমতা সরকারপ্রধান মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই ন্যস্ত থাকে। রাজ্যপালকে নিয়োগ করেন ভারতের রাষ্ট্রপতি। বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতাকে রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেন; এবং মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাজ্যপালই অন্যান্য মন্ত্রীদের নিয়োগ করে থাকেন। মন্ত্রিসভা বিধানসভার নিকট দায়বদ্ধ থাকে। পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা এককক্ষীয়। এই সভার সদস্য সংখ্যা ২৯৫ জন; এঁদের মধ্যে ২৯৪ জন নির্বাচিত এবং একজন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায় থেকে মনোনীত। বিধানসভার সদস্যদের বিধায়ক বলা হয়। বিধানসভার স্বাভাবিক মেয়াদ পাঁচ বছর; তবে মেয়াদ শেষ হবার আগেও বিধানসভা ভেঙে দেওয়া যায়। গ্রাম ও শহরাঞ্চলে স্থানীয় স্বায়ত্বশাসন সংস্থাগুলি যথাক্রমে পঞ্চায়েত ও পুরসভা নামে পরিচিত। এই সকল সংস্থাও নিয়মিত নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) থেকে ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ৪২ জন ও উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় ১৬ জন সদস্য প্রতিনিধিত্ব করেন। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে দুই প্রধান প্রতিপক্ষ শক্তি হল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ও ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ২৩৫টি আসন দখল করে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসে। বিগত ৩৪ বছর এই বামফ্রন্ট পশ্চিমবঙ্গ শাসন করেছে। এই সরকার ছিল বিশ্বের দীর্ঘতম মেয়াদের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিউনিস্ট সরকার। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে, ২২৬টি আসন দখল করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস জাতীয় কংগ্রেস জোট বামফ্রন্টকে পরাজিত করে পশ্চিমবঙ্গে সরকার গঠন করছে। এরপর থেকে তিন মেয়াদে রাজ্যের শাসনক্ষমতায় আছে তৃণমূল কংগ্রেস। ২০২১ এর নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ২১৩ টি আসনে জয়লাভ করে, বিজেপি পায় ৭৭ আসন। প্রশাসনিক বিভাগ প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য পশ্চিমবঙ্গকে পাঁচটি বিভাগ ও ২৩টি জেলায় বিভক্ত করা হয়েছে। প্রতিটি জেলার শাসনভার একজন জেলাশাসক বা জেলা কালেক্টরের হাতে ন্যস্ত থাকে। তিনি "ভারতীয় প্রশাসনিক কৃত্যক" (আইএএস) বা "পশ্চিমবঙ্গ প্রশাসন কৃত্যক" (ডব্লিউবিসিএস) কর্তৃক নিযুক্ত হন। প্রতিটি জেলা মহকুমার বিভক্ত। মহকুমার শাসনভার মহকুমা-শাসকের হাতে ন্যস্ত থাকে। মহকুমাগুলি আবার ব্লকে বিভক্ত। ব্লকগুলি গঠিত হয়েছে পঞ্চায়েত ও পুরসভা নিয়ে। কলকাতা পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী তথা বৃহত্তম শহর। কলকাতা ভারতের তৃতীয় বৃহৎ মহানগর। এবং বৃহত্তর কলকাতা দেশের তৃতীয় বৃহত্তম নগরাঞ্চল। উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি রাজ্যের অপর এক অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন মহানগর। শিলিগুড়ি করিডোরে অবস্থিত এই শহর উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে অবশিষ্ট দেশের সংযোগ রক্ষা করছে। আসানসোল ও দুর্গাপুর রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের শিল্পতালুকে অবস্থিত অপর দুটি মহানগর। রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হাওড়া, রাণীগঞ্জ, হলদিয়া, জলপাইগুড়ি, খড়গপুর, বর্ধমান, দার্জিলিং, মেদিনীপুর, তমলুক, ইংরেজ বাজার , কোচবিহার ও আরামবাগ । অর্থনীতি পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ মানুষ কৃষিজীবী। রাজ্যের প্রধান খাদ্যফসল হল ধান। অন্যান্য খাদ্যফসলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ডাল, তৈলবীজ, গম, তামাক, আখ ও আলু। এই অঞ্চলের প্রধান পণ্যফসল হল পাট। চা উৎপাদনও বাণিজ্যিকভাবে করা হয়ে থাকে; উত্তরবঙ্গ দার্জিলিং ও অন্যান্য উচ্চ মানের চায়ের জন্য বিখ্যাত। যদিও রাজ্যের মোট আভ্যন্তরিণ উৎপাদনে প্রধান অবদানকারী হল চাকুরিক্ষেত্র; এই ক্ষেত্র থেকে রাজ্যের মোট আভ্যন্তরিণ উৎপাদনের ৫১ শতাংশ আসে; অন্যদিকে কৃষিক্ষেত্র থেকে আসে ২৭ শতাংশ ও শিল্পক্ষেত্র থেকে আসে ২২ শতাংশ। রাজ্যের শিল্পকেন্দ্রগুলি কলকাতা ও পশ্চিমের খনিজসমৃদ্ধ উচ্চভূমি অঞ্চলে কেন্দ্রীভূত। দুর্গাপুর-আসানসোল কয়লাখনি অঞ্চলে রাজ্যের প্রধান প্রধান ইস্পাতকেন্দ্রগুলি অবস্থিত। ইঞ্জিনিয়ারিং দ্রব্যাদি, ইলেকট্রনিকস, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, কেবল, ইস্পাত, চামড়া, বস্ত্র, অলংকার, যুদ্ধজাহাজ, অটোমোবাইল, রেলওয়ে কোচ ও ওয়াগন প্রভৃতি নির্মাণশিল্প রাজ্যের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। স্বাধীনতার বেশ কয়েক বছর পরও খাদ্যের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী ছিল। ভারতের সবুজ বিপ্লব পশ্চিমবঙ্গে কোনো প্রভাব বিস্তার করতে না পারায় এই রাজ্যের খাদ্য উৎপাদন অপর্যাপ্তই রয়ে যায়। তবে ১৯৮০-এর দশক থেকে রাজ্যে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায় এবং বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদিত হয়ে থাকে। ১৯৮০-৮১ সালে ভারতের সামগ্রিক শিল্প উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গের অংশ ছিল ৯.৮ শতাংশ; ১৯৯৭-৯৮ সালে এই অংশ কমে দাঁড়ায় ৫ শতাংশ। তবে চাকুরিক্ষেত্র জাতীয় হারের তুলনায় অধিক হারে প্রসারিত হয়েছে এই রাজ্যে। ২০০৩-২০০৪ সালের হিসেব অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থব্যবস্থা। রাজ্যের নিট আভ্যন্তরীন উৎপাদন ২১.৫ মার্কিন ডলার। ২০০১-২০০২ সালে রাজ্যের গড় রাজ্য আভ্যন্তরীন উৎপাদন ছিল ৭.৮ শতাংশেরও বেশি — যা জাতীয় জিডিপি বৃদ্ধির হারকেও ছাপিয়ে যায়। রাজ্য প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এই বিনিয়োগ মূলত আসে সফটওয়্যার ও ইলেকট্রনিকস ক্ষেত্রে। কলকাতা বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের একটি অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। কলকাতা তথা রাজ্যের সামগ্রিক আর্থিক উন্নতির দৌলতে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) দেশের তৃতীয় দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থব্যবস্থা। যদিও, এই কৃষিভিত্তিক রাজ্যে দ্রুত শিল্পায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রশ্নে নানারকম বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ন্যাসকম-গার্টনার পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যুৎ পরিকাঠামোকে দেশের মধ্যে শ্রেষ্ঠ আখ্যা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য আভ্যন্তরিন উৎপাদন বেড়ে ২০০৪ সালে ১২.৭ শতাংশ এবং ২০০৫ সালে ১১.০ শতাংশ হয়। চীনের দৃষ্টান্ত থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য কমিউনিস্ট পদ্ধতির পরিবর্তে ধনতান্ত্রিক পন্থায় রাজ্যের উচ্চাকাঙ্ক্ষী অর্থনৈতিক সংস্কারের পথ গ্রহণ করেছিলেন। শিল্প বাণিজ্য ও উদ্যোগ এই মন্ত্রকের অধীনে দুটি শাখা হলো শিল্প ও বাণিজ্য এবং রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠন। শিল্প ও বাণিজ্য পশ্চিমবঙ্গ ব্যবসা, বাণিজ্য ও শিল্পের প্রসারে ও নিয়ন্ত্রণে এই মন্ত্রক দায়িত্বপ্রাপ্ত। দ্রুত পরিবর্তনশীল ভারতীয় অর্থনীতির প্রেক্ষিতে এই দফতরের ভূমিকা ও কার্যধারা অবিরত বিস্তৃত হচ্ছে ; প্রাথমিকভাবে এর মধ্যে রয়েছে :- রাজ্যে শিল্প বিকাশের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা। শিল্পনীতি প্রণয়ন ও তার রূপায়ণ। শিল্প পরিকাঠামোর বিকাশ উৎসাহ ভাতা প্যাকেজের মাধ্যমে শিল্পোন্নয়নে সহায়তা করা এই দফতরের নিম্নলিখিত নয়টি সক্রিয় সংস্থার মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনা করে :- রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠন রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগ ও শিল্প পুনর্গঠন শাখার দায়িত্ব হলো রাজ্যে যে সমস্ত শিল্প রুগ্ন হয়ে গেছে অথবা ওই শিল্পের বেহাল দশার জন্য কারখানা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে সেক্ষেত্রে ওই সব শিল্পের পুনরুজ্জীবনের লক্ষ্যে শিল্পের রুগ্নতার মোকাবিলা করা রাজ্যের রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগগুলির পুনর্গঠনে সমন্বয়কারী সংস্থার ভূমিকা পালন শাখার প্রধান কাজগুলি হলো :- পশ্চিমবঙ্গ শিল্প নবীকরণ পরিকল্প (২০০১) (ডব্লু বি আই আর এম)- এ বিধিবদ্ধ নির্দিষ্ট কিছু ছাড় ও বিশেষ সুবিধা -র সাহায্যে পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ রূপায়ণ প্রচেষ্টা কে সক্রিয় পথনির্দেশ ও সুসমন্বিত রূপায়ণের মাধ্যমে রাজ্যে বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রে ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনাল (এন সি এল টি) - এর হস্তক্ষেপে বা হস্তক্ষেপ ব্যতীত বন্ধ ও রুগ্ন শিল্প ইউনিট গুলি (বৃহৎ / মাঝারি) র পুনরুজ্জীবন ও পুনর্বাসনের জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করা। কৃষি পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিকভাবেই কৃষিভিত্তিক রাজ‍্য। যদিও এই রাজ‍্য ভারতের ভৌগোলিক এলাকার মাত্র ২.৭% জুড়ে আছে, কিন্তু জনসংখ‍্যার ৮% খাদ‍্যের ক্ষেত্রে এই রাজ‍্যের উপর নির্ভরশীল। ৭১.২৩ লক্ষ কৃষিজীবী পরিবারের ৯৬%-ই ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষী। জোতের গড় আয়তন ০.৭৭ হেক্টর। সর্বোপরি এই রাজ‍্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ এবং কৃষি-আবহাওয়ার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ, ফলত: বিভিন্ন ধরনের খাদ‍্যশস‍্য এখানে উৎপাদন করা সম্ভব। ধান এবং সব্জী উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশের মধ‍্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। আলু উৎপাদনে এই রাজ‍্য দ্বিতীয় স্থানে আছে (উত্তরপ্রদেশের পরেই)। এছাড়া পাট, আনারস, লিচু, আম এবং খুচরো ফুলের উৎপাদনেও এই রাজ‍্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আছে। ডাল, তৈলবীজ ও ভুট্টার উৎপাদনের ক্ষেত্রেও দ্রুত অগ্রগতি ঘটছে। নিট কৃষিক্ষেত্রের পরিমাণ ৫২.০৫ লক্ষ হেক্টর। এই পরিমাণটি মোট ভৌগোলিক এলাকার ৬৮% এবং কর্ষণযোগ‍্য জমির ৯২%। এছাড়া কৃষি নিবিড়তার পরিমাণ ৯৮৪%। অবশ‍্য যেহেতু এই রাজ‍্য আর্দ্র-ক্রান্তীয় অঞ্চলে অবস্থিত এবং বঙ্গোপসাগরের নিকটবর্তী তাই মাঝে মাঝেই বন‍্যা, ঘূর্ণিঝড়, শিলাবৃষ্টির মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয়। যদিও এই রাজ‍্য চাল, সব্জী ও আলুর উৎপাদন উদ্বৃত্ত হয়, ডাল, তৈলবীজ ও ভুট্টার উৎপাদনের ক্ষেত্রে চাহিদা ও যোগানে বিপুল পার্থক‍্য আছে। কৃষির উন্নয়নে প্রধান বাধাগুলি হল রাসায়নিক সার ব‍্যবহারে ভারসাম‍্যের অভাবের দরুন ভূমিস্বাস্থ‍্যের অবনমন, প্রয়োজনীয় উন্নত মানের বীজ পাবার অসুবিধা, জোত যন্ত্রায়ণের অপ্রতুলতা, অসংগঠিত বাজার ইত‍্যাদি। কৃষির উন্নয়ন সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী: উপরের প্রতিবন্ধকতাগুলিকে মেনে নিয়েও বলা যায় পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলের জনসাধারণের ক্রেত্রে কৃষি এখনো এককভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জীবিকা এবং জীবনযাপনের মাধ‍্যম। এজন‍্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কৃষি বিভাগ, কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে, ‘‘২০২০ সালের মধ‍্যে দক্ষতা, কৃৎকৌশল, বাজার ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে কৃষকদের আয়ের দ্বিগুণ বৃদ্ধি এই সামগ্রিক উদ্দেশ‍্য নিয়ে কাজ করে চলেছে। এই উদ্দেশ‍্যকে পরিপূর্ণতা দেবার জন‍্য XII এফ ওয়াই পি- রাজ‍্য কৃষি পরিকল্পনায় নিচের লক্ষ‍্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে: ১। উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতায় পরিমাপযোগ‍্য উন্নয়নকে নিশ্চিত করা। ২। সুনির্দিষ্ট হস্তক্ষেপের মাধ‍্যমে উৎপাদনের পার্থক‍্য হ্রাস করা। ৩। কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের কৃষিজীবীদের আয় সর্ব্বোচ্চ পরিমাণে নিয়ে যাওয়া। ৪। বিপণনে হস্তক্ষেপ ও রপ্তানি বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলির বর্ধিতকরণ। ৫। কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের বৃদ্ধি এবং ৬। আবহাওয়া পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলির মোকাবিলা করা এবং খরা ও বন‍্যা ব‍্যবস্থাপনের ক্ষেত্রে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ। সম্মুখগতি: উপরের লক্ষ‍্যমাত্রাগুলি পূরণের জন‍্য কৃষি বিভাগ কৃষি সম্পর্কিত অন‍্যান‍্য বিভাগের সঙ্গে যেমন, প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন, মৎস‍্য, কৃষি বিপণন, উদ‍্যানপালন, সমবায়, জলসম্পদ অনুসন্ধান, সেচ ও জলপথ, বন, রেশমশিল্প, খাদ‍্য ও সরবরাহ এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের অধীন ডব্লিউ বি সি এ ডি সি-র সঙ্গে সমণ্বয় রেখে কাজ করে। সাম্প্রতিক কালে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের প্রচেষ্টার প্রতি লক্ষ‍্য রেখে এবং তারা আরও বেশি প্রতিফল পান সেই উদ্দেশ‍্যে বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে যেমন উন্নততর অনুশীলন, উন্নতমানের কাঁচামাল, বিভিন্ন শস‍্যের উৎপাদন, কৃষি যন্ত্রায়ণে প্রথম পর্যায়ে ভরতুকি প্রদান, জল সংরক্ষণ ও জলবিভাজিকা ব‍্যবস্থাপনের মাধ‍্যমে সেচ ব‍্যবস্থার উন্নয়ন এবং বিপণনজ্ঞানের প্রয়োগ; এছাড়া তপশিলি জাতি, তপশিলি উপজাতি ও অনগ্রসর শ্রেণির কৃষকদের উন্নতি, কৃষিক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন, এফ পি ও এবং এন জিও-গুলির সাহায‍্যে সাকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব আনয়ণ ইত‍্যাদি। এই বিভাগ আই সি টি ভিত্তিক কৃষি সংক্রান্ত পোর্টাল মাটির কথা নিয়ে এসেছে, এই পোর্টাল কৃষকদের তাৎক্ষণিক সমস‍্যা সমাধানের ক্ষেত্রে একটি গতিশীল ভূমিকা পালন করে। কৃৃষি বিপণন কৃষিখামারের উৎপন্ন দ্রব‍্য ও উপকরণ উভয়ের বিপণন ব‍্যবস্থার উন্নতির জন‍্য প্রয়োজন উপযুক্ত নীতি ও আইনপ্রণয়ন সংক্রান্ত কাঠামো এবং শক্তিশালী সরকারি সহায়তা মূলক পরিষেবা। বাজার পরিকাঠামো, বাজার সংক্রান্ত তথ‍্য সরবরাহ এবং কৃষকদের বিপণন বিষয়ে পরামর্শদানে সক্ষম কৃষি সম্প্রসারণ পরিষেবাকে এই ধরনের সরকারি পরিষেবার অর্ন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। কৃষিজ উৎপন্নের সহায়কমূল‍্য ও উৎপাদনশীলতা পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। সর্বস্তরে বিপণনের প্রশিক্ষণ এখন যুগের দাবি। কৃষক গোষ্ঠী থেকে শুরু করে কৃষিজ উৎপন্ন দ্রব‍্যের বিপণনকে জীবিকা হিসাবে গ্রহণ করতে ইচ্ছুক নবীন শিক্ষার্থী-সকলের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ‍্য। বিগত শতকের সাতের দশক থেকে পশ্চিমবঙ্গ কৃষি উৎপাদনে অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে মূলতঃ ভূমি সংস্কার, কৃষি প্রকৌশলের বিপ্লবাত্মক পরিবর্তন, নিবিড় গবেষণা ও সরকারি সংস্থাগুলোর সদর্থক অংশগ্রহণের কারণে। কৃষি বিপণন হচ্চে একটা প্রক্রিয়া যার শুরু বিক্রয়য়োগ‍্য কৃষিখামারের উৎপন্ন দ্রব্য উৎপাদনের সিদ্ধান্তের মধ‍্যে। প্রযুক্তি ও অর্থনীতির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা কার্যগত ও প্রাতিষ্ঠানিক উভয় দিকেরই বাজার কাঠামোর সকল দিক এর মধ‍্যে যুক্ত। কৃষি বিপণন রাজ‍্যের বিষয় হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের দ্বারা উৎপন্ন কৃষিজ পণ‍্যের বিপণন কৌশল নিয়ন্ত্রণ করার জন‍্য দ‍্য ওয়েস্ট বেঙ্গল এগ্রিকালচারাল প্রোডিউস মার্কেটিং রেগুলেশন অ‍্যাক্ট, ১৯৭২ প্রণয়ন করে। কৃষিজ উৎপন্নের বিপণন বিষয়ে আলোকপাত করার উদ্দেশ‍্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কৃষি বিপণন বিভাগ তৈরি করে যা এই সমস্ত সকল বিষয় নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করে। কৃষিজ পণ‍্যের বাণিজ‍্য নিয়ন্ত্রণ এবং প্রয়োজনীয় বাজার পরিকাঠমো উন্নয়নের জন‍্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ‍্য নিয়ে উক্ত আইন রূপায়নের জন‍্য মুখ‍্যত দায়ী হচ্ছে এই আইনের অধীনে গঠিত বিধিবদ্ধ সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ রাজ‍্য বিপণন পর্ষদ এবং কৃষি বিপণন অধিকার। বনাঞ্চল বাংলা সরকারের অধীনে ১৮৬৪ সালে পশ্চিমবঙ্গে বন সংরক্ষণের কাজ চালু করা হয়।পশ্চিমবঙ্গ বেসরকারি বন (সংশোধন) আইন,১৯৫৪-এর সাথে সাথে পশ্চিমবঙ্গ ভূস্বত্ত অধিগ্রহণ আইন,১৯৫৩ এবং ১৯৫৫ সালে জমিদারি প্রথা বিলোপ করা এবং চা বাগানের উদ্ধৃত জমির পুনর্গ্রহণ বিধিবদ্ধ হওয়ার ফলে এই রাজ্যে বনাঞ্চল বৃদ্ধি পেয়েছে।উপরের বিষয়গুলির পূর্বেকারদুটি ঘটনার উল্লেখ প্রয়োজন,যেমন ১৯৫০ সালে কোচবিহার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হওয়া এবং রাজ্যের যথাযথ পুনর্গঠন,বিহারের পূর্বতন মানভূম জেলার কিছু অংশ ১৯৪৬ সালের ১ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গে অন্তর্ভুক্তির ফলে পুরুলিয়া জেলা সৃষ্টি হওয়া,বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য উত্তরে হিমালয় থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত।এই রাজ্য ২১ ডিগ্রি ২০ মিনিট উত্তর এবং ২৭ ডিগ্রি ৩২ মিনিট উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৪ডিগ্রি ৫০ মিনিট এবং ৮৯ ডিগ্রি ৫২ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এবং ৮৮,৭৪২ বর্গ কিলোমিটার ভৌগোলিক অঞ্চল জুড়ে রয়েছে।পাঁচটি রাজ্য সিকিম,অসম,বিহার,ঝাড়খণ্ড এবং উড়িষ্যা এবং তিনটি দেশ ভুটান, নেপাল এবং বাংলাদেশ পশ্চিমবঙ্গকে ঘিরে রয়েছে।উত্তরে সিকিম,উত্তরপূর্বে ভুটান,পূর্বে অসম এবং বাংলাদেশ,পশ্চিমে নেপাল,বিহার এবং ঝাড়খণ্ড এবং দক্ষিণ পশ্চিমে ঝাড়খণ্ড ও উড়িষ্যা অবস্থিত। বর্তমানে এই রাজ্যে নথিভুক্ত মোট বনাঞ্চলের পরিমাণ হল ১১,৮৭৯ বর্গ কিলোমিটার,যার মধ্যে ৭,০৪৪ বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল সংরক্ষিত বনাঞ্চল,৩৭৭২ বর্গ কিলোমিটার সুরক্ষিত বনাঞ্চল এবং ১০৫৩ বর্গকিলোমিটার শ্রেণীভুক্ত বিহীন সরকারি বনাঞ্চল,যা এই রাজ্যের ভৌগোলিক অঞ্চলের ১৩.৩৮ শতাংশ জুড়ে রয়েছে।বিগত চার দশকে এই রাজ্যে বিভিন্ন কারণে প্রশাসনিক পরিকাঠামোতে আমূল পরিবর্তন ঘটেছে।স্বাভাবিকভাবেই বর্তমান সময়ের প্রশাসনিক প্রয়োজন অনুসারে সামগ্রিকভাবে বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কৃষি জলবায়ু অঞ্চলে বনাঞ্চল ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে সুসংহতকরণ এবং বৃহৎ আকারে এই রাজ্যের বনাঞ্চল বিহীন অংশে সামাজিক/খামার/নগর বনাঞ্চলের প্রয়োগ সাধন ঘটেছে।বৃহৎ আকারে বনজ ফসল উৎপাদন ,পরিবেশ-বান্ধব নতুন পর্যটন কেন্দ্র গঠন ,উৎপাদন ও বনজ দ্রব্য বিপণন এবং এই ধরনের সহায়ক কাজকর্মের জন্য ১৯৭৪ সালে ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড আত্মপ্রকাশ করে।বিভিন্ন পর্যায়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল ফরেস্ট ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড-এর প্রশাসনিক কাজ বন অধিকারের ডেপুটেশনে থাকা অধিকারিকগণদ্বারা পরিচালিত হয়। খনিজ সম্পদ পূর্তবিভাগ পূর্ত বিভাগ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অন‍্যতম মর্যাদাসম্পন্ন বিভাগ। পূর্ত বিভাগের অধীনস্থ পূর্ত অধিকার ও পূর্ত (সড়ক) অধিকার- এর উপর সমগ্র রাজ‍্যে পরিকল্পনা, জরিপ, নকসা, রাস্তা, সেতু ও ভবন নির্মাণ ও তত্ত্বাবধান, তৎসহ আপৎকালীন বিভিন্ন দায়দায়িত্ব ও ত্রাণ সংক্রান্ত কাজের দায়িত্ব ন‍্যস্ত করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন বিভাগকে সরাসরি এবং তৎসহ বিভিন্ন আধা সরকারি বা সরকার পরিচালনাধীন সংস্থাগুলিকে মূল কাজ ও মেরামতির কাজে পুর্ত বিভাগ পরিকাঠামোগত সহায়তা প্রদান করে থাকে। জাতীয় ও রাজ‍্য সড়ক সমূহ সহ বিভিন্ন ভবন ও সেতু নির্মাণের পাশাপাশি পুর্ত বিভাগ স্টেডিয়াম, সুইমিং পুল, অডিটোরিয়াম, বিমানবন্দর, হেলিপ‍্যাড, খাদ‍্যগুদাম, বাস টার্মিনাস, পে আ‍্যণ্ড ইউজ টয়লেট, মোটেল, বিদ‍্যুদায়ন, স‍্যাদিটারি, প্লাম্বিং, শীততাপ নিয়ন্ত্রণের ব‍্যবস্থা, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ ও চিহ্নিতকরণ, লিফট্, জল সরবরাহ, জেনারেপর, ই.পি.বি.এ.এক্স, তথ‍্যপ্রযুক্তি প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাদের করণীয় কাজ সম্পন্ন করে থাকে। পূর্ত বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের উপরে যে অত‍্যন্ত গুরুদায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে- একথা সহজেই অনুমান করা যায়। এই বিভাগের প্রধান হলেন একজন ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী। নীতিগত সিন্ধান্ত রুপায়ণ ও প্রশাসন বিষয়ে তত্ত্বাবধান করেন বিভাগের সচিব। ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ক ক্ষেত্রে দেখাশোনা করেন ইঞ্জিনিয়ার-ইন-চিফ। পুর্ত বিভাগ দুটি অংশে বিভক্ত। একটি হল সচিবালয় ও পূর্ত অধিকার। এই বিভাগের দুটি অধিকার পূর্ত অধিকার ও পূর্ত (সড়ক) অধিকার। রাজ‍্যে পূর্ত বিভাগের কাজের পরিধি তিনটি অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছে। এগুলো হল উত্তর অঞ্চল, দক্ষিণ অঞ্চল এবং পশ্তিম অঞ্চল। পূর্ত অধিকারের প্রধান হলেন মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (চিফ ইঞ্জিনিয়ার), সদর, পূর্ত অধিকার। তার অধীনে কাজ করেন মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (পরিকল্পনা), মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ(তড়িৎ), মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (সামাজিক ক্ষেত্র), মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (উত্তরাঞ্চল), মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (পশ্চিমাঞ্চল), মুখ‍্য প্রযুক্তবিদ(দক্ষিণাঞ্চল), এবং মুখ‍্য সরকারি স্থপতি। পূর্ত অধিকারের তিনটি শাখা। এগুলো হল বাস্তু (Civil) শাখা, তড়িৎ (Electrical) শাখা ও স্থাপত‍্য শাখা। পূর্ত (সড়ক) অধিকারের প্রধান হলেন মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (চিফ ইঞ্জিনিয়ার), সদর, পূর্ত (সড়ক) অধিকার। তার অধীনে কাজ করেন মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ, পরিকল্পনা, মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ, জাতীয় সড়ক, মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ, আার.বি.আর.আই, মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (উত্তরাঞ্চল), মুখ‍্য প্রযুক্তবিদ (পশ্চিমাঞ্চল), মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ (দক্ষিণাঞ্চল)। পূর্ত (সড়ক) অধিকারের তিনটি শাখা; এগুলো হচ্ছে বাস্তু শাখা, জাতীয় সড়ক শাখা এবং যন্ত্রবিদ‍্যা শাখা। সদর, আঞ্চলিক মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদের কার্যালয় এবং শাখা কার্যালয়, ভুক্তি কার্যালয়, উপ-ভুক্তি কার্যালয় এবং শাখা কার্যালয় দিয়ে এই বিভাগের গঠন সম্পন্ন হয়েছে। আঞ্চলিক মুখ‍্য প্রযুক্তিবিদ কোনও একটি বিশেষ অঞ্চলের প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। আঞ্চলিক প্রযুক্তিবিদ প্রত‍্যেক মন্ডল কার্যালয়ের প্রধান। অন‍্যদিকে নির্বাহী প্রযুক্তিবিদ, সহ প্রযুক্তিবিদ এবং কনিষ্ঠ প্রযুক্তিবিদেরা যথাক্রমে ভুক্তি, উপ-ভুক্তি ও শাখা কার্যালয়গুলির প্রধানের দায়িত্ব পালন করে থাকেন। এই বিভাগের অধীনে চারটি রাষ্ট্রীয় উদ‍্যোগাধীন সংস্থা আছে। এগুলো হল পশ্চিমবঙ্গ সড়ক উন্নয়ন নিগম লিমিটেড, ম‍্যাকিনটোস বার্ন লিমিটেড, ওয়েস্টিংহাউস স‍্যাক্সবি ফার্মার লিমিটেড এবং ব্রিটানিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। এই বিভাগ সারা রাজ‍্যে ১৭,২৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কপথের তত্ত্বাবধান করে থাকে যার মধ‍্যে ১৭৪০ কিলোমিটার জাতীয় সড়ক, ৩৬১২ কিলোমিটার রাজ‍্য সড়ক, ৯৪৯৫ কিলোমিটার জেলার প্রধান সড়কপথ এবং ২৪১৮ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়কপথ। পূর্ত বিভাগের প্রধান লক্ষ‍্য হল সারা রাজ‍্যের আর্থিক কর্মকাণ্ডকে ত্বরাণ্বিত করা, সামগ্রিক পরিবহন সংক্রান্ত ব‍্যবস্থাদির উন্নয়ণের মাধ‍্যমে সম্পদ সৃষ্টি এবং বিভিন্ন সেতু, রাস্তা ও সরকারি ভবন নির্মাণ তৎসহ পরিবহন সক্রান্ত ব‍্যবস্থাদির উন্নয়ণের ক্ষেত্রে সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করে দারিদ্র দূরীকরণ। এছাড়া এই বিভাগ সামাজিক ক্ষেত্রে কিছু সম্প্রসারিত দায়দায়িত্বের ভারও গ্রহণ করে থাকে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এই বিভাগ বরাদ্দ অর্থরাশির সাহায‍্যে রাস্তা, সেতু, ভবন ও অন‍্যান‍্য নির্মাণকার্যের মাধ‍্যমে রাজ‍্যের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন‍্য যেকোনও দায়িত্বগ্রহণে উজ্জীবিত হয়েছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার ১৭৯৩ সালের ১নং প্রবিধান অনুসারে প্রণীত চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইন অনুসারে রাজস্ব সংগ্রহের ব‍্যবস্থা সুসংহত করার লক্ষ‍্যে স্থাপিত রাজস্ব পর্ষদ গঠন, যার উদ্দেশ‍্য ছিল ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক স্বার্থ পরিপূরণের জন‍্য জমি থেকে সর্বাধিক রাজস্ব সংগ্রহ - তার মধ‍্যেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার বিভাগের উৎসের সন্ধান পাওয়া যায়। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর যুক্তিসঙ্গত কারণেই রাজস্ব প্রশাসনের দিক থেকে কল‍্যাণমূলক প্রশাসনের দিকেই গুরুত্ব ঘুরে যায়। দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গতি বজায় রেখে এই বিভাগটি যা স্বাধীনতার পূর্বে ভূমি ও ভূমি সংস্কার বিভাগ নামে পরিচিত ছিল, তা উপযোগিতা ও সংস্কার এবং ভূমি ও ভূমি রাজস্ব নামে পরিচিত হওয়ার পর শেষপর্যন্ত ভূমি ও ভূমি সংস্কার নাম গ্রহণ করে যার মধ‍্যে রাজ‍্যের অগ্রাধিকার প্রতিফলিত হয়েছে। ভূমি সংস্কার স্বাধীন ভারতের একটি ধারণা। স্বাধীন ভারতের যোজনা প্রণেতাগণ কোনও না কোনওভাবে টিকে থাকা জমিদারদের শোষণের জাঁতাকল থেকে কৃষকদের মুক্ত করার আশু প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। স্বাধীন ভারতে সদ‍্য প্রতিষ্ঠিত কৃষিভিত্তিক শিল্পগুলির প্রয়োজন মেটানো, খাদ‍্য সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা এবং কৃষি উপকরণের সরবরাহ ছিল তখনকার জ্বলন্ত সমস‍্যা। শিল্পে কৃষির উদ্বৃত্ত বিনিয়োগ করার জন‍্য কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। জমি মুষ্টিমেয় ব‍্যক্তির হাতে কেন্দ্রীভূত থাকবে না এবং ন‍্যায‍্যতার নীতি অনুসরণ করে ভূমিহীনদের মধ‍্যে তা বণ্টন করে দেওয়া হবে-এটাই সামাজিক ন্যায়ের দাবি। ভূমি সংস্কারের অভিমুখে প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে ভূমি অধিগ্রহণ আইন, ১৯৫৩ প্রণয়ন করা হয়, যার দ্বারা জমিদারি ব‍্যবস্থার উচ্ছেদ ঘটে। অত:পর জোতের ঊর্ধ্বসীমা, খাস জমি ভূমিহীনদের মধ‍্যে বণ্টন করা, অর্থনৈতিক জোত সৃষ্টি, খাজনা হ্রাস, প্রজা ও বর্গাদারদের উচ্ছেদ বন্ধ করা, প্রজাদের মালিকানা স্বত্ব প্রদান, ছদ্ম স্বত্বভোগী ও অন‍্যান‍্য নিয়মবহির্ভূত ব‍্যবস্থা বন্ধ করার মতো বিষয়গুলি বিবেচনা করার প্রয়োজন হয়। এই ধরনের জ্বলন্ত সমস‍্যা সমাধানের জন‍্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার ১৯৫৫ সালে ভূমি সংস্কার আইন প্রণয়ন করে। উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন ভারতের ইতিহাসে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে আসা বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুরা একটি বড় সমস্যার সৃষ্টি করেছিল । ১৯৪৬-এ এই প্রবনতার সূচনা এবং দেশবিভাগের পর তা বাড়তে বাড়তে প্লাবনের আকার নেয় । ১৯৬৪-তে আবার একবার বাস্তুহারাদের ভিড় দেখা যায় এবং ১৯৭১-এ বিপুল পরিমানে শরণার্থী আসতে থাকেন । ১৯৭১-এর ভিতর হিসাবমতো প্রায় ৫৮ লক্ষ উদ্বাস্তু ভারতে আসেন এই ১৯৭১-এর শরণার্থীরা যারা থেকে গিয়েছিলেন তাদের বাদ দিয়ে । ১৯৭৪-এর ভারতের পরিকল্পনা কমিশনে পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রদত্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী রাজ্যে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬০ লক্ষ । আর আর কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ১৯৮১-তে এই সংখ্যা হয় ৮০ লক্ষ । তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে আগত বিপুল সংখ্যক উদ্বাস্তুর চাপ সামলানোর উদ্দেশ্যে জেলা ও মহকুমা উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরগুলি স্থাপিত হয় । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এইসব জেলা ও মহকুমা উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরগুলিকে সুসংহতভাবে গড়ে তোলা গিয়েছে। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও জৈবপ্রযুক্তি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ১৯৮৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ স্থাপিত হয়। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সংসদ একটি স্বশাসিত সংস্থা যেটি সমিতি আইন দ্বারা রেজিস্ট্রিকৃত এবং এই বিভাগের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণের অধীন, যা সর্বভারতীয় আঙ্গিকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্ট এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের পরামর্শ অনুসারে এই বিভাগের কার্যাবলী সাবলীল ভাবে পরিচালনা করার জন্য। এই বিভাগ বৈজ্ঞানিক ও শিক্ষাবিদদের সহায়তায় নিজের কার্যাবলী বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত করেছে। গত দু-দশক ধরে এই বিভাগ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বৈজ্ঞানিক কার্যকলাপে উৎসাহ প্রদানের জন্য বহু কঠিন পথ অতিক্রম করেছে এবং বিভিন্ন নামী বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা কেন্দ্র, কলেজ এবং নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ও উদ্ভাবনমূলক প্রকল্পের উন্নতিসাধনের পথে সহায়তা প্রদান করেছে। এই বিভাগের ‘রিমোট সেনসিং এণ্ড জিও-ইনফরমেশন সিস্টেমস্'- এর মাধ্যমে সরকারি বিভিন্ন বিভাগ এবং সংস্থার পরিকল্পনাগুলির উন্নতি সাধন এবং কলাকৌশলের নজরদারির জন্য সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি এবং মূল তথ্যের সরবরাহ করার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই ক্ষেত্রের কিছু প্রকল্প ভারত সরকারের ‘‘ন্যাশনাল রিমোট সেনসিং সেন্টার এবং ‘‘ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অরগানাইজেশন- এর সঙ্গে অংশীদার হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। এই রাজ্যের বিভিন্ন সুপ্রতিষ্ঠিত সংস্থার সঙ্গে অংশীদার হিসাবে এই বিভাগ বিভিন্ন জরুরি ক্ষে্ত্র যেমন: বিশ্ব উষ্ণায়ণ ও আবহাওয়া পরিবর্তন, সবুজ প্রযুক্তি, জল সংরক্ষণ, বর্জ্য পদার্থের পরিশোধন, জীব বৈচিত্র্য, উদ্ভাবনী গ্রামীণ প্রযুক্তি, কৃষি উন্নয়ন, মেধাসত্ব অধিকার, - প্রসঙ্গে সেমিনার, কর্মশালা এবং সচেতনতা প্রকল্পগুলির উদ্যোগে সহায়তা দেয়। জৈবপ্রযুক্তি ২০০৬-২০০৭ সালে জৈবপ্রযুক্তি বিভাগ খোলার ফলে পশ্চিমবঙ্গে ‘স্টেট অফ আর্ট' ও প্রথাগত জৈবপ্রযুক্তির উন্নয়নে নতুন জোয়ার এলো যার লক্ষ্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন।বিভাগের লক্ষ জৈবপ্রযুক্তির উন্নতির বিপণন,পরিপোষণ এবং আরো যা গুরুত্বপূর্ণ সৌন্দর্যসাধন করা।যেহেতু জৈবপ্রযুক্তি একটি জ্ঞান-নির্ভর কেন্দ্র,যেখানে উন্নয়ন সম্পূর্ণভাবে ‘গবেষণা ও উদ্ভাবনের' ওপর নির্ভরশীল, সেই কারণে এই বিভাগ সক্রিয়ভাবে গবেষণা ও উন্নয়নে সহায়তা করে, উন্নত মানব সম্পদে প্রেরণা যোগায় এবং জৈবপ্রযুক্তি নির্ভর শিল্পের পরিকাঠামোগত সুযোগসুবিধা যোগায়।কৃষি, স্বাস্থ্যপরিষেবা, পশু বিজ্ঞান, পরিবেশ এবং শিক্ষা-শিল্প মিলিত উদ্যোগ ইত্যাদিতে জৈবপ্রযুক্তির বৃদ্ধি ও স্থায়িত্বের ক্ষেত্রে এই বিভাগ উল্লেখযোগ্য কাজ করে। আ্যসোচাম (অ্যাসোসিয়েটেড চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টি অব ইন্ডিয়া) পশ্চিমবঙ্গকে সম্ভাবনাময় বাণিজ্য বিকাশ কেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে জৈবপ্রযুক্তি হচ্ছে সম্ভাবনাময় লগ্নির ক্ষেত্র। বিনিয়োগের আকর্ষণীয় ফেরত এবং সামাজিক বিকাশের বড় সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লক্ষ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জৈবপ্রযুক্তি ভিত্তিক কাজকর্মকে আরো ছড়িয়ে দেওয়া যেমন স্বাস্থ্য পরিষেবা (জেনোমিকস,প্রোটিওমিকস, ডায়গোনসটিকস, দেশীয় ঔষধটির ডি.এন.এ ফিংগারপ্রিন্টিং ইত্যাদি) কৃষি (ফুল চাষ,রেশম চাষ ইত্যাদি),বাংলার জীববৈচিত্রের মানচিত্র তৈরি এবং পরিবেশ সুরক্ষা। পরিবহন ব্যবস্থা পশ্চিমবঙ্গে ভূতল সড়কপথের মোট দৈর্ঘ্য ৯২,০২৩ কিলোমিটার (৫৭,১৮০ মাইল)। এর মধ্যে জাতীয় সড়ক ২,৩৭৭ কিলোমিটার (১,৪৭৭ মাইল), এবং রাজ্য সড়ক ২,৩৯৩ কিলোমিটার (১,৪৮৭ মাইল)। রাজ্যে সড়কপথের ঘনত্ব প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে ১০৩.৬৯ কিলোমিটার (প্রতি ১০০ বর্গমাইলে ১৬৬.৯২ মাইল); যা জাতীয় ঘনত্ব প্রতি ১০০ বর্গকিলোমিটারে ৭৪.৭ কিলোমিটারের (প্রতি ১০০ বর্গমাইলে ১২০ মাইল) থেকে বেশি। রাজ্যের সড়কপথে যানবাহনের গড় গতিবেগ ৪০-৫০ কিলোমিটার/ঘণ্টার (২৫-৩১ মাইল/ঘণ্টা) মধ্যে থাকে। গ্রাম ও শহরাঞ্চলে গতিবেগ ২০-২৫ কিলোমিটার/ঘণ্টার (১২-১৬ মাইল/ঘণ্টা) মধ্যে থাকে। এই মূল কারণ রাস্তার নিম্নমান ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। রাজ্যে রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৪১৩৫.১৯ কিলোমিটার (২৫৬৯ মাইল)। ভারতীয় রেলের পূর্ব রেল ও দক্ষিণ পূর্ব রেল ক্ষেত্রদুটির সদর কলকাতায় অবস্থিত। রাজ্যের উত্তরভাগের রেলপথ উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অন্তর্গত। কলকাতা মেট্রো ভারতের প্রথম ভূগর্ভস্থ মেট্রো রেল পরিষেবা। উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের অংশ দার্জিলিং হিমালয়ান রেল একটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত। পশ্চিমবঙ্গের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কলকাতার উপকণ্ঠ দমদমে অবস্থিত। শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দর রাজ্যের অপর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর; সাম্প্রতিককালে এটিকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের স্তরে উন্নীত করা হয়েছে। উত্তর-পশ্চিমবঙ্গের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর হল কোচবিহার বিমানবন্দর। এটি বৃহত্তর আসাম-বাংলা সীমান্ত এলাকায় পরিষেবা দেয়। কলকাতা বন্দর পূর্ব ভারতের একটি প্রধান নদীবন্দর। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট ট্রাস্ট কলকাতা ও হলদিয়া ডকের দায়িত্বপ্রাপ্ত। কলকাতা বন্দর থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের পোর্ট ব্লেয়ার পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন পরিষেবা ও ভারত ও বহির্ভারতের বন্দরগুলিতে শিপিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার মাধ্যমে পণ্য পরিবহন পরিষেবা চালু আছে। রাজ্যের দক্ষিণাঞ্চলে, বিশেষত সুন্দরবন অঞ্চলে, নৌকা পরিবহনের প্রধান মাধ্যম। কলকাতা ভারতের একমাত্র শহর যেখানে আজও ট্রাম গণপরিবহনের অন্যতম মাধ্যম। ২০১৬ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম এই ট্রাম পরিষেবার দায়িত্বে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের বাস পরিষেবা অপর্যাপ্ত। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা ও পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগম। এছাড়া বেসরকারি কোম্পানিগুলিও বাস পরিষেবা প্রদান করে। শহরের বিশেষ বিশেষ রুটে মিটার ট্যাক্সি ও অটোরিকশা চলে। কম দুরত্বের যাত্রার জন্য রাজ্যের সর্বত্র সাইকেল রিকশা ও কলকাতাতে সাইকেল রিকশা ও হাতে-টানা রিকশা ব্যবহার করা হয়। জনপরিসংখ্যান পশ্চিমবঙ্গের জনঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১০২৮ জন। এই রাজ্য জনঘনত্বের বিচারে ভারতের রাজ্যগুলির মধ্যে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী। ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭.৫৪ শতাংশ বাস করে পশ্চিমবঙ্গে। ২০০১-২০১১ সময়কালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১৩.৮৪ শতাংশ; যা জাতীয় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১৭.৬৪ শতাংশের থেকে কম। রাজ্যে লিঙ্গানুপাতের হার প্রতি ১০০০ পুরুষে ৯৫০ জন মহিলা। পশ্চিমবঙ্গের সাক্ষরতার হার ৭৬.২৬%, যা জাতীয় গড় ৭৪.০৪%-এর চেয়ে বেশি। ১৯৯১-১৯৯৫ সালের তথ্য থেকে জানা যায়, এই রাজ্যের মানুষের গড় আয়ু ৬৩.৪ বছর, যা জাতীয় স্তরে গড় আয়ু ৬১.৭ বছরের থেকে কিছু বেশি। রাজ্যের ৭০ শতাংশ মানুষ বাস করেন গ্রামাঞ্চলে। ১৯৯৯-২০০০ সালের হিসেব অনুযায়ী, রাজ্যের ৩১.৮৫ শতাংশ মানুষ বাস করেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। তফসিলি জাতি ও উপজাতিগুলি গ্রামীণ জনসংখ্যার যথাক্রমে ২৮.৬ শতাংশ ও ৫.৮ শতাংশ এবং নগরাঞ্চলীয় জনসংখ্যার ১৯.৯ শতাংশ ও ১.৫ শতাংশ। রাজ্যে অপরাধের হার প্রতি এক লক্ষে ৮২.৬; যা জাতীয় হারের অর্ধেক। ভারতের ৩২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে এই হার চতুর্থ নিম্নতম। যদিও রাজ্যের বিশেষ ও স্থানীয় আইন সংক্রান্ত অপরাধের হার সর্বোচ্চ বলেই জানা যায়। রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে কৃত অপরাধের হার ৭.১; উল্লেখ্য এই ক্ষেত্রে জাতীয় হার ১৪.১। পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) ভারতের প্রথম রাজ্য যেটি নিজস্ব মানবাধিকার কমিশন গঠন করেছিল। ধর্মবিশ্বাস ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী, হিন্দুধর্ম পশ্চিমবঙ্গের প্রধান ধর্মবিশ্বাস। হিন্দুধর্মাবলম্বীরা রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ। অন্যদিকে ইসলাম দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মবিশ্বাস এবং বৃহত্তম সংখ্যালঘু ধর্ম। মুসলমানরা রাজ্যের জনসংখ্যার মোট জনসংখ্যার ২৭ শতাংশ। শিখ, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, জৈন ও সারি ধরম ধর্মাবলম্বীরা জনসংখ্যার অবশিষ্ট অংশ। সংখ্যালঘুসঙ্কুল জেলাগুলি হলো- মুর্শিদাবাদ জেলা, উত্তর দিনাজপুর জেলা ও মালদহ জেলা৷ পৌর ও নগরোন্নয়ন ও পৌর বিষয়ক নগরোন্নয়ন বিভাগ নগরোন্নয়ন বিভাগ পুর্বে মহানগর উন্নয়ন বিভাগ নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এই বিভাগের তিনটি শাখা যথা, মেট্রোপলিটন শাখা, টাউন এন্ড কান্ট্রি প্লানিং শাখা এবং আরবান ল‍্যান্ড সিলিং শাখা। প্রতিটি শাখারই পৃথক পৃথক নিজস্ব ইতিহাস আছে। পঞ্চাশের দশকে সেচ বিভাগ কলকাতার উত্তর-পূর্ব শহরতলিতে সল্টলেক সিটি নামে একটি উপনগরী তৈরির পরিকল্পনা হাতে নেয়। ১৯৬১ সালে কলকাতা মহানগরীর একটি সার্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করার জন‍্য উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের প্রস্তাব অনুসারে কলকাতা মেট্রোপলিটন প্লানিং অর্গানাইজেশন গঠন করা হয়। ভারতবর্ষে এটি ছিল এই ধরনের প্রথম সংস্থা। পরবর্তীকালে, উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগ শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি, আসানসোল-দুর্গাপুর, দীঘা, হলদিয়া, শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন ও জিয়াগঞ্জের জন‍্য পৃথক উন্নয়ন সংস্থা এবং বর্ধমান, মেদিনীপুর-খড়গপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, মিরিক, বক্রেশ্বর, বরজোড়া-গঙ্গাজলঘাটি, ফারাক্কা, গঙ্গাসাগর-বকখালি, তারাপীঠ-রামপুরহাট, ফুরফুরা শরীফের জন‍্য পৃথক পরিকল্পনা সংস্থা গঠন করে। এর উদ্দেশ‍্য ছিল সার্বিক উন্নয়ন এবং স্থানীয় এলাকার জন‍্য জমির সদব‍্যবহার ও উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনা (Land ‍Use and Development Control Plan – LUDCP) রচনা করা। উপরে বর্ণিত সকল উন্নয়ন ও পরিকল্পনা সংস্থাই গঠিত হয়েছিল উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের শহর ও গ্রাম পরিকল্পনা শাখা (Town & Country Planning Branch) এর অধীনে। অন‍্যান‍্য কয়েকটি স্থানীয় এলাকার সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে উন্নয়ণ ও পরিকল্পনা বিভাগ কাঁচরাপাড়া এলাকা উন্নয়ন পরিকল্প (কল‍্যাণী উপনগরী) ও পাতিপুকুর উপনগরী তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে। পরবর্তী সময়ে, এই দুটি ক্ষেত্রের কর্মকাণ্ড গতিলাভ করলে উন্নয়ন ও পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে কল‍্যাণী এস্টেট অফিস ও পাতিপুকুর এস্টেট অফিস নামে দুটি পূর্ণাঙ্গ কার্যালয় স্থাপন করা হয়। পরবর্তীকালে, বৃহদায়তন নগর পরিকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণের স্বার্থে ১৯৬৬ সালে কলকাতা মেট্রোপলিটন ওয়াটার এন্ড স‍্যানিটেশন অথরিটি (KMW & SA) এবং পুনরায় ১৯৭০ সালে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভলপমেন্ট অথরিটি (KMDA) স্থাপিত হয়। এর উদ্দেশ‍্য ছিল কলকাতা মহানগরী এলাকার নগর সংযুক্তির দ্রুত অবনমনের গতিরোধ করা এবং শহরে বসবাসকারি জনসাধারণের জন‍্য প্রকাশমান শহুরে উচ্চাভিলাষের যথাসম্ভব সুরাহা করা। ১৯১২ সালে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট অ‍্যাক্ট, ১৯১১(K.I.Act) অনুসারে কলকাতা শহরের নগর পরিকাঠামো উন্নয়নের কর্মসূচি হাতে নিয়ে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাষ্ট (KIT) কাজ শুরু করে। পরবর্তীকালে, কলকাতা মহনগরী এলাকায় বিভিন্ন নগরোণ্নয়ন পরিকল্পনার দ্রুত রূপায়ণ ও সংহতির স্বার্থে কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাষ্ট (KIT) ও কলকাতা মেট্রোপলিটন ওয়াটার এন্ড স‍্যানিটেশন অথরিটি (KMW & SA) কে কলকাতা মিউনিসিপ‍্যাল ডেভলপমেন্ট অথরিটি (KMDA) এর প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ ও তত্ত্ববধানে নিয়ে আসা হয়। আরবান ল‍্যান্ড(সিলিং এন্ড রেগুলেশন) অ‍্যাক্ট, ১৯৭৬ অনুযায়ী কলকাতায় একটি অধিকার ও জেলাগুলিতে মহকুমা কার্যালয়সহ আরবান ল‍্যান্ড সিলিং শাখাকে ভূমি ও ভূমি সংস্কার বিভাগের অধীনে নিয়ে আসা হয়। পরবর্তীকালে, এটি নগরোণ্নয়ন বিভাগের অধীনস্থ হয়। পৌর বিষয়ক ১৯৯২ সালে ৭৪ তম সংবিধান সংশোধন আইন বলবত করার মধ‍্যে দিয়ে দেশের সমগ্র শাসন পরিচালন ব‍্যবস্থাকে তিনটি স্তরে বিভক্ত করা হয়েছে।প্রথম স্তর হল কেন্দ্রীয় সরকার, দ্বিতীয় স্তর হল রাজ‍্য সরকার এবং তৃতীয় স্তর হল স্থানীয় শাসনমূলক সংস্থা। এই বিভাগ সরকারি প্রশাসনে বর্ণিত তৃতীয় স্তরটি তথা রাজ‍্যের শহরাঞ্চলে অবস্থিত শহরের স্থানীয় শাসনমূলক সংস্থাগুলি(পৌর নিগম, পৌরসভা ও প্রঞ্জপিত অঞ্চলসমূহ) পরিচালনা করে থাকে। ১৯৭২ সালে রাজ‍্য সরকার পৌর পরিষেবা বিভাগ স্থাপন করে। পরবর্তীকালে ১৯৭৮ সালে পৌর পরিষেবা বিভাগের নামবদল করে নতুন নামকরণ হয় স্থানীয় শাসন ও নগরোন্নয়ন বিভাগ। স্থানীয় শাসন ও নগরোন্নয়ন বিভাগকে দু' ভাগ করে [দ্রষ্টব‍্য: স্বরাষ্ট্র(সংবিধান ও নির্বাচন) বিভাগের আদেশনামা নং ১৬১৩৩-এ আর, তাং ২৯ জুন ১৯৯১] ১৯৯১ সালে বর্তমান পৌরবিষয়ক বিভাগ তৈরি করা হয়। রাজ‍্য সরকারের কার্য নিয়মাবলী অনুসারে এই বিভাগ রাজ‍্য সরকারের ২২১৫,২২১৭,২২১১,৪২১৭,৬২১৭ এবং ৩৬০৩ মুখ‍্য খাতগুলির বাজেট নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। ভাষাসমূহ ২০১১ সালের জনগণনার তাৎক্ষণিক ফলাফল অনুযায়ী, পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা ৯১,৩৪৭, ৭৩৬ (ভারতের মোট জনসংখ্যার ৭.৫%)। জনসংখ্যার ভিত্তিতে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের পঞ্চম বৃহত্তম রাজ্য। জনসংখ্যার সিংহভাগই বাংলাভাষী। মাড়োয়ারি, বিহারি ও ওড়িয়া সংখ্যালঘুরা রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়েছিটিয়ে বাস করে। দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে শেরপা ও তিব্বতিদের দেখা যায়। দার্জিলিঙে নেপালি গোর্খা জাতির লোকও প্রচুর সংখ্যায় বাস করে। পশ্চিমবঙ্গে সাঁওতাল, কোল, কোচ রাজবংশী ও টোটো আদিবাসীরাও বাস করে। রাজ্যের রাজধানী কলকাতায় চীনা, তামিল, গুজরাতি, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান, আর্মেনিয়ান, পাঞ্জাবি ও পারসি সংখ্যালঘুদেরও খুব অল্প সংখ্যায় বাস করতে দেখা যায়। ভারতের একমাত্র চায়নাটাউনটি পূর্ব কলকাতায় অবস্থিত। রাজ্যের সরকারি ভাষা বাংলা ও ইংরেজি। দার্জিলিং জেলার তিনটি মহকুমায় সরকারি ভাষা হল নেপালি। ২০০১ সালের জনগণনা অনুসারে, ভাষাগত জনসংখ্যার বৃহত্তম থেকে ক্ষুদ্রতম ক্রম অনুযায়ী ভাষাগুলি হল বাংলা, হিন্দি, সাঁওতালি, উর্দু, নেপালি ও ওড়িয়া। রাজ্যের কোনো কোনো অংশে রাজবংশী ও হো ভাষাও প্রচলিত। সংস্কৃতি সাহিত্য বাংলা ভাষায় রচিত সাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ ও প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহক। বাংলা ভাষার প্রাচীনতম নিদর্শন চর্যাপদের (দশম-দ্বাদশ শতাব্দী) কবিরা পশ্চিমবঙ্গের রাঢ় অঞ্চলের কথ্য ভাষারীতিকে সাহিত্যের ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। বাংলা সাহিত্যের দ্বিতীয় প্রাচীনতম নিদর্শন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন (পঞ্চদশ শতাব্দী) কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস ছিলেন অধুনা বাঁকুড়া জেলার ছাতনার বাসিন্দা। মধ্যযুগে মঙ্গলকাব্য ধারাতেও রাঢ়ের বহু কবির রচনা পাওয়া যায়। মনসামঙ্গল ধারার কবি নারায়ণ দেব পূর্ববঙ্গের কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের বাসিন্দা হলেও আদতে রাঢ়বঙ্গের মানুষ ছিলেন। এই ধারার কবি কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ ছিলেন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চলের বাসিন্দা। চণ্ডীমঙ্গল ধারার সর্বশ্রেষ্ঠ কবি মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ছিলেন বর্ধমান জেলার দামুন্যা গ্রামের অধিবাসী। এই সাহিত্যের নিদর্শন মঙ্গলকাব্য, শ্রীকৃষ্ণকীর্তন, ঠাকুরমার ঝুলি, ও গোপাল ভাঁড়ের গল্পগুলি। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে বাংলা সাহিত্যের আধুনিকীকরণ সম্পন্ন হয় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, মাইকেল মধুসূদন দত্ত, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, সৈয়দ মুজতবা আলি, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, জীবনানন্দ দাশ, হাছন রাজা, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শেখ ফজলুল করিম, তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মীর মোশাররফ হোসেন, বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহাশ্বেতা দেবী, আশাপূর্ণা দেবী প্রমুখ সাহিত্যিকের হাত ধরে। মহাশ্বেতা দেবী, সনেট মন্ডল, বেন্সাধর মজুমদার, শ্রী অরবিন্দ, হরি মোহন ব্যানার্জি, সঞ্জীব চৌধুরী ও নলিনী কুমার মুখার্জি প্রমুখ সাহিত্যিক সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। অন্যদিকে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সরোজিনী চট্টোপাধ্যায় ও কাজী নজরুল ইসলামকে বিশ্ব ইতিহাসের সেরা কবিদের মধ্যে গণ্য করা হয়। সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বাংলা সংগীতের এক স্বতন্ত্র ঐতিহ্যবাহী ধারা হল বাউল গান। লোকসঙ্গীতের অন্যান্য বিশিষ্ট ধারাগুলি হল গম্ভীরা ও ভাওয়াইয়া। অন্যদিকে বাংলা ধর্মসঙ্গীতের দুটি জনপ্রিয় ধারা হল কীর্তন ও শ্যামাসংগীত। পশ্চিমবঙ্গের বিষ্ণুপুর শহর হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের বিষ্ণুপুরী ঘরানার প্রধান কেন্দ্র। রবীন্দ্রসংগীত ও নজরুলগীতি অত্যন্ত জনপ্রিয় দুটি সঙ্গীত ধারা। অন্যান্য ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ধারাগুলির মধ্যে অতুলপ্রসাদী, দ্বিজেন্দ্রগীতি, রজনীকান্তের গান ও বাংলা আধুনিক গান উল্লেখযোগ্য। ১৯৯০-এর দশকে বাংলা লোকসঙ্গীত ও পাশ্চাত্য সঙ্গীতের সংমিশ্রণে বাংলা গানের এক নতুন যুগের সূত্রপাত ঘটে। এই গান জীবনমুখী গান নামে পরিচিত ছিল। বাংলার নৃত্যকলায় মিলন ঘটেছে আদিবাসী নৃত্য ও ভারতীয় ধ্রুপদি নৃত্যের। পুরুলিয়ার ছৌ নাচ একপ্রকার দুর্লভ মুখোশনৃত্যের উদাহরণ। তাছাড়া গৌড়ীয় নৃত্য একধরনের বাঙালী ঐতিহ্যগত শাস্ত্রীয় নৃত্যকলা যা প্রাচীন বঙ্গের রাজধানী গৌড়ে উৎপন্ন ৷ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় দ্বারা বৃৃত্তিপ্রদানযোগ্য এই নৃত্যধারাটি শ্রীযুক্তা মহুয়া মুখোপাধ্যায় দ্বারা পুণঃনির্মিত ৷ চলচ্চিত্র কলকাতার টালিগঞ্জ অঞ্চলে বাংলা চলচ্চিত্রের প্রধান কেন্দ্রটি অবস্থিত। এই কারণে এই কেন্দ্রটি হলিউডের অনুকরণে "টলিউড" নামে পরিচিত হয়ে থাকে। বাংলা চলচ্চিত্র শিল্প আর্ট ফিল্ম বা শিল্পগুণান্বিত চলচ্চিত্রে সুসমৃদ্ধ। সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, তপন সিংহ, ঋত্বিক ঘটক প্রমুখ বিশিষ্ট পরিচালকের চলচ্চিত্র বিশ্ববন্দিত। সমসাময়িককালের বিশিষ্ট পরিচালকদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, গৌতম ঘোষ, অপর্ণা সেন ও ঋতুপর্ণ ঘোষ। বাংলা সিনেমার পাশাপাশি এই রাজ্যে অবশ্য হিন্দি সিনেমাও অত্যন্ত জনপ্রিয়। ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা পরিচালক ও সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার সবচেয়ে বেশি পেয়েছেন বাঙালি পরিচালকেরা। সত্যজিৎ রায় তার পথের পাচালি, দেবী, কাঞ্চনজঙ্ঘা এসব চলচ্চিত্রের জন্য বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। তিনি ১৯৯২ সালে সম্মানসূচক অস্কার পান। তার প্রধান দুই অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শর্মিলা ঠাকুর সমগ্র বিশ্বে নন্দিত তাদের অনবদ্য অভিনয়ের জন্য। শর্মিলা ২০০৯ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত চলচ্চিত্র উৎসব কান-এ বিচারকের ভূমিকা পালন করেছেন। তার অভিনীত ও সত্যজিত রায় পরিচালিত অপু ট্রিলজি চলচ্চিত্র সিরিজটি যুক্তরাষ্ট্রের সাইট এন্ড সাউন্ড ম্যাগাজিন কর্তৃক ঘোষিত পৃথিবীর ইতিহাসের সেরা ১০০ টি চলচ্চিত্রের তালিকায় স্থান পায়। সত্যজিত রায় দেবী (শর্মিলা-সৌমিত্র অভিনীত) ও কাঞ্চনজঙ্ঘা চলচ্চিত্রের জন্য বিশ্বের একমাত্র পরিচালক হিসেবে জার্মানির বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে দুবার সেরা পরিচালকের পুরস্কার পান। শিল্পকলা বাংলা ভারতীয় শিল্পকলার আধুনিকতার পথপ্রদর্শক। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বলা হয় আধুনিক ভারতীয় শিল্পকলার জনক। বঙ্গীয় শিল্প ঘরানা ইউরোপীয় রিয়্যালিস্ট ঐতিহ্যের বাইরে এমন একটি নিজস্ব ধারা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিল যা ব্রিটিশ সরকারের ঔপনিবেশিক শিক্ষাব্যবস্থার আর্ট কলেজগুলিতে শেখানো হত। এই ধারার অন্যান্য বিশিষ্ট চিত্রকরেরা হলেন গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামকিঙ্কর বেইজ ও যামিনী রায়। স্বাধীনতার পরে কলকাতা গোষ্ঠী ও সোসাইটি অফ কনটেম্পোরারি আর্টিস্টস-এর শিল্পীরা ভারতীয় শিল্পকলার জগতে বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী হন। উৎসব ও মেলা দুর্গাপূজা পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম উৎসব এবং সেখানে এটি "দুর্গাপুজো" বা কেবল "পুজো" নামে পরিচিত। শরৎকালে আশ্বিন–কার্তিক মাসে (সেপ্টেম্বর–অক্টোবর) চারদিনব্যাপী এই উৎসব আয়োজিত হয়ে থাকে। পশ্চিমবঙ্গের অপর একটি বহুপ্রচলিত হিন্দু উৎসব হল কালীপুজো। এই পুজো অনুষ্ঠিত হয় দুর্গাপুজোর পরবর্তী অমাবস্যা তিথিতে। এই রাজ্যের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য হিন্দু উৎসবগুলি হল পয়লা বৈশাখ, অক্ষয় তৃতীয়া, দশহরা, রথযাত্রা, ঝুলনযাত্রা, জন্মাষ্টমী, বিশ্বকর্মা পুজো, মহালয়া, কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো, রাসযাত্রা, নবদ্বীপের শাক্তরাস, ভ্রাতৃদ্বিতীয়া, নবান্ন, জগদ্ধাত্রী পুজো, সরস্বতী পুজো, দোলযাত্রা, শিবরাত্রি ও চড়ক–গাজন। রথযাত্রা উপলক্ষে হুগলি জেলার মাহেশ ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলে বিশেষ মেলা ও জনসমাগম হয়ে থাকে। হুগলি জেলার চন্দননগর ও নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজো ও জগদ্ধাত্রী বিসর্জন শোভাযাত্রা বিখ্যাত। মকর সংক্রান্তির দিন বীরভূম জেলার কেন্দুলিতে জয়দেব মেলা উপলক্ষে বাউল সমাগম ঘটে। প্রতি বছর মকর সংক্রান্তির দিন এখানে বীরভূমপুত্র জয়দেবের উদ্দেশ্যে জয়দেব-কেন্দুলি মেলা হয়ে থাকে। পৌষ সংক্রান্তির দিন হুগলি নদীর মোহনার কাছে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার গঙ্গাসাগরে আয়োজিত গঙ্গাসাগর মেলায় সারা ভারত থেকেই পুণ্যার্থী সমাগম হয়। ৪ঠা মাঘ বাঁকুড়ার কেঞ্জেকুড়া গ্রামে দ্বারকেশ্বর নদীর তীরে এক বিশাল মুড়ি মেলা হয়। শিবরাত্রি উপলক্ষে জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির নিকটে প্রাচীন জল্পেশ্বর শিবমন্দিরকে কেন্দ্র করে আয়োজিত হয় বিখ্যাত জল্পেশ্বর মেলা। শ্রাবণ সংক্রান্তির সর্পদেবী মনসার পুজোর উপলক্ষে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলে আয়োজিত হয় ঝাঁপান উৎসব। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের ঝাঁপান উৎসব সবচেয়ে বিখ্যাত। বাঁকুড়া জেলার রাইপুর ব্লকের অন্তর্গত মটগোদা গ্রামে ধর্মরাজ পুজো উপলক্ষে মাঘ মাসের শেষ শনিবারে অনুষ্ঠিত হয় শনিমেলা; কোচবিহার শহরের মদনমোহন মন্দিরকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত রাসমেলা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বৃহত্তম মেলা। ইসলামি উৎসব মধ্যে ঈদুল আজহা, ঈদুলফিতর, মিলাদ-উন-নবি, শবেবরাত ও মহরম বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে পালিত হয়। খ্রিস্টান উৎসব বড়দিন ও গুড ফ্রাইডে; বৌদ্ধ উৎসব বুদ্ধপূর্ণিমা; জৈন উৎসব মহাবীর জয়ন্তী এবং শিখ উৎসব গুরু নানক জয়ন্তীও মহাধুমধামের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়। পশ্চিমবঙ্গের সাংস্কৃতিক উৎসবগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস, পঁচিশে বৈশাখ, নেতাজি জয়ন্তী ইত্যাদি। প্রতি বছর পৌষ মাসে শান্তিনিকেতনে বিখ্যাত পৌষমেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। বইমেলা পশ্চিমবঙ্গের একটি গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক উৎসব আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলা রাজ্যে একমাত্র তথা বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বইমেলা। আঞ্চলিক বইমেলাগুলি রাজ্যের সকল প্রান্তেই বছরের নানা সময়ে আয়োজিত হয়। এছাড়া সারা বছরই রাজ্য জুড়ে নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। শিক্ষা পশ্চিমবঙ্গের বিদ্যালয়গুলি রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে অথবা বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হয়ে থাকে। বেসরকারি উদ্যোগের মধ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনও বিদ্যালয় পরিচালনা করে। প্রধানত বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমেই শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত; তবে সাঁওতালি, নেপালি, হিন্দি ও উর্দু ভাষাতেও পঠনপাঠন করার সুযোগ এ-রাজ্যে অপ্রতুল নয়। মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলি পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদ অথবা কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদ (সিবিএসসি) অথবা কাউন্সিল ফর ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট একজামিনেশন (আইসিএসই) দ্বারা অনুমোদিত। ১০+২+৩ পরিকল্পনায় মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করার পর ছাত্রছাত্রীদের দুই বছরের জন্য প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় জুনিয়র কলেজে পড়াশোনা করতে হয়। এছাড়াও তারা পশ্চিমবঙ্গ উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ অথবা কোনো কেন্দ্রীয় বোর্ড অনুমোদিত উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়েও প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে পারে। এই ব্যবস্থায় তাদের কলাবিভাগ, বাণিজ্যবিভাগ অথবা বিজ্ঞানবিভাগের যেকোনো একটি ধারা নির্বাচন করে নিতে হয়। এই পাঠ্যক্রম সম্পূর্ণ করার পরই তারা সাধারণ বা পেশাদার স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করতে পারে। ২০০৬ সালের হিসেব অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা আঠারো। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ভারতীয় উপমহাদেশের প্রাচীনতম ও অন্যতম বৃহৎ আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রয়েছে প্রায় ২০০টি কলেজ। বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটি, শিবপুর ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় রাজ্যের দুটি প্রসিদ্ধ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। শান্তিনিকেতনে অবস্থিত বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতীয় গুরুত্বসম্পন্ন এক প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (কলকাতা), বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় (বর্ধমান), বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় (বাঁকুড়া), বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (মেদিনীপুর), উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (রাজা রামমোহনপুর, শিলিগুড়ি), বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয় (কল্যাণী, নদিয়া), পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য। ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আরও তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় – আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পশ্চিমবঙ্গ রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে খ্যাতিসম্পন্ন রাজ্যের অন্যান্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি হল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়গপুর, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট, কলকাতা, রাষ্ট্রীয় প্রযুক্তিক প্রতিষ্ঠান, দুর্গাপুর (পূর্বতন আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ), ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশানাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস, ভারতীয় বিজ্ঞান শিক্ষা ও অনুসন্ধান সংস্থান, কলকাতা; IISER-K) ও ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউশন,বসু বিজ্ঞান মন্দির । পশ্চিমবঙ্গের একটি বিখ্যাত মহাবিদ্যালয় হলো কোচবিহার মহাবিদ্যালয় এটি ন্যাক প্রাপ্ত বি++,এই মহাবিদ্যালয়টি কোচবিহার শহরে প্রতিষ্ঠিত। গণমাধ্যম ২০০৫ সালের হিসেব অনুসারে, পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) থেকে প্রকাশিত সংবাদপত্রের সংখ্যা ৫০৫। এগুলির মধ্যে ৩৮৯টি বাংলা সংবাদপত্র। কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা ভারতে একক-সংস্করণে সর্বাধিক বিক্রিত বাংলা পত্রিকা। এই পত্রিকার দৈনিক গড় বিক্রির পরিমাণ ১,২৩৪,১২২টি কপি। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য বাংলা সংবাদপত্রগুলি হল আজকাল, বর্তমান, সংবাদ প্রতিদিন, উত্তরবঙ্গ সংবাদ, জাগো বাংলা, দৈনিক স্টেটসম্যান ও গণশক্তি। দ্য টেলিগ্রাফ, দ্য স্টেটসম্যান, এশিয়ান এজ, হিন্দুস্তান টাইমস ও দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া'' কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ইংরেজি দৈনিকের নাম। এছাড়াও হিন্দি, গুজরাটি, ওড়িয়া, উর্দু ও নেপালি ভাষাতেও সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়ে থাকে। দূরদর্শন পশ্চিমবঙ্গের সরকারি টেলিভিশন সম্প্রচারক। এছাড়া কেবল টেলিভিশনের মাধ্যমে মাল্টিসিস্টেম অপারেটরগণ বাংলা, নেপালি, হিন্দি, ইংরেজি সহ বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যানেল সম্প্রচার করে থাকেন। বাংলা ভাষায় সম্প্রচারিত ২৪ ঘণ্টার বাংলা টেলিভিশন সংবাদ-চ্যানেলগুলি হল স্টার আনন্দ, কলকাতা টিভি, ২৪ ঘণ্টা, এনই বাংলা, নিউজ টাইম, চ্যানেল টেন, আর-প্লাস ও তারা নিউজ; ২৪ ঘণ্টার টেলিভিশন বিনোদন-চ্যানেলগুলি হল স্টার জলসা, ইটিভি বাংলা, জি বাংলা, আকাশ বাংলা ইত্যাদি। এছাড়া চ্যানেল এইট টকিজ নামে একটি ২৪ ঘণ্টার চলচ্চিত্র-চ্যানেল এবং তারা মিউজিক ও সঙ্গীত বাংলা নামে দুটি উল্লেখনীয় ২৪ ঘণ্টার সংগীত-চ্যানেলও দৃষ্ট হয়। আকাশবাণী পশ্চিমবঙ্গের সরকারি বেতার কেন্দ্র। বেসরকারি এফএম স্টেশন কেবলমাত্র কলকাতা, শিলিগুড়ি ও আসানসোল শহরেই দেখা যায়। বিএসএনএল, ইউনিনর, টাটা ডোকোমো, আইডিয়া সেলুলার, রিলায়েন্স ইনফোকম, টাটা ইন্ডিকম, Jio 4Gরিলায়েন্স জি 4জি, ভোডাফোন এসার, এয়ারসেল ও এয়ারটেল সেলুলার ফোন পরিষেবা দিয়ে থাকে। সরকারি সংস্থা বিএসএনএল ও বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ব্রডব্যান্ড ও ডায়াল-আপ অ্যাকসেস ইন্টারনেট পরিষেবা পাওয়া যায়। খেলাধুলা ক্রিকেট ও ফুটবল এই রাজ্যের দুটি জনপ্রিয় খেলা। কলকাতা ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। মোহনবাগান ও ইস্ট বেঙ্গল ক্লাবের মতো দেশের প্রথম সারির জাতীয় ক্লাবগুলি রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। খো খো, কবাডি প্রভৃতি দেশীয় খেলাও এখানে খেলা হয়ে থাকে। ক্যালকাটা পোলো ক্লাব বিশ্বের প্রাচীনতম পোলো ক্লাব বলে পরিগণিত হয়। অন্যদিকে রয়্যাল ক্যালকাটা গলফ ক্লাব গ্রেট ব্রিটেনের বাইরে এই ধরনের ক্লাবগুলির মধ্যে প্রথম। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ-এ কলকাতা নাইট রাইডার্স দল এই রাজ্যের প্রতিনিধিত্ব করে। পশ্চিমবঙ্গে একাধিক সুবৃহৎ স্টেডিয়াম অবস্থিত। সারা বিশ্বে যে দুটি মাত্র লক্ষ-আসন বিশিষ্ট ক্রিকেট স্টেডিয়াম রয়েছে কলকাতার ইডেন গার্ডেনস তার অন্যতম। অন্যদিকে বিধাননগরের বহুমুখী স্টেডিয়াম যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফুটবল স্টেডিয়াম। ক্যালকাটা ক্রিকেট অ্যান্ড ফুটবল ক্লাব বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম ফুটবল ক্লাব। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয় দুর্গাপুর, শিলিগুড়ি ও খড়গপুর শহরেও। পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্বেরা হলেন প্রাক্তন জাতীয় ক্রিকেট অধিনায়ক তালিকা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, অলিম্পিক টেনিস ব্রোঞ্জ পদকজয়ী লিয়েন্ডার পেজ, দাবা আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া প্রমুখ। আবার অতীতের খ্যাতমানা ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ফুটবলার চুনী গোস্বামী, পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, শৈলেন মান্না, সাঁতারু মিহির সেন, অ্যাথলেট জ্যোতির্ময়ী শিকদার প্রমুখ। পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে প্রচুর সাংস্কৃতিক সংস্থা। কলকাতার জোকায় রয়েছে বাংলার ব্রতচারী সমিতি। ব্রতচারী কেন্দ্রীয় নায়কমন্ডলী, কবি সুকান্তের কিশোর বাহিনী, সব পেয়েছির আসর, মনিমেলা মহাকেন্দ্র ইত্যাদি শিশু কিশোর সংস্থা। পর্যটন পার্বত্য অঞ্চল দার্জিলিং দার্জিলিং দার্জিলিং জেলার সদর শহর৷ শহরটি সবুজাবৃত এবং চারদিকে তুষারশৃঙ্গদ্বারা পরিবেষ্টিত৷ মনোরম দৃৃশ্য ও গ্রীষ্মকালীন আবহাওয়ার জন্য এটি অন্যতম৷ কার্শিয়াং দার্জিলিং জেলার ১৪৫৮ মিটার উচ্চতাতে অবস্থিত একটি সুদৃৃশ্য পর্বতস্টেশন(হিলস্টেশন) ও মহকুমা সদর হলো কার্শিয়াং৷ লাভা-লোলেগাঁও-রিশপ রিম্বিক লাভা, লোলেগাঁও ও রিশপ রিম্বিক হলো কার্শিয়াং মহকুমাতে ২৩০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত তিনটি পর্যটন গ্রাম৷ গ্রাম তিনটি পাইনগাছ দ্বারা বেষ্টিত, মাঝে মাঝে মেঘের সমাহার একে আরো সুন্দর করে তোলে৷ শান্ত পরিবেশের জন্যও এটি সমাদৃত৷ মিরিক মিরিক হলো দার্জিলিং জেলার একটি দৃশ্যপট পর্যটনস্থল৷ প্রাকৃৃতিক সৌন্দর্য, আবহাওয়া ও সহজলভ্যতার জন্য এটি পর্যটকদের অন্যতম প্রিয় স্থান৷ এছাড়া সুমেংদু হ্রদ এখানকার বিশেষ আকর্ষণ৷ সান্দাকফু সান্দাকফু,এটি পশ্চিমবঙ্গে সর্বোচ্চ শৃঙ্গ যার উচ্চতা প্রায় ৩৬৩৬ মিটার৷ দার্জিলিং জেলার সিঙ্গলিলা পর্বতশ্রেণীর দার্জিলিং নেপাল সীমান্তে অবস্থিত এই পর্বতটি থেকে মাকালু,কাঞ্চনজংঘা ইত্যাদি পর্বতশৃৃঙ্গ সুদৃৃশ্য৷ এছাড়া এখান থেকে উত্তরে পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় উচ্চতম শৃঙ্গ ফালুট অবস্থিত৷ ডুয়ার্স অঞ্চল পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্স অঞ্চল মূলত বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ, অভয়ারণ্য ও চা-বাগানের জন্য বিখ্যাত৷ এটি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার মধ্যে বিস্তৃৃত৷ বিখ্যাত কিছু বন্যপ্রাণী বিচরণক্ষেত্রগুলি হলো- ঐতিহাসিক পর্যটন উপকূলীয় আরও দেখুন পশ্চিমবঙ্গ (ভারতীয় বঙ্গ) সম্পর্কিত বিষয়গুলি ভারতের ইতিহাস বাংলা ভাষা বাংলার নবজাগরণ বেঙ্গল আর্মি বাংলা পঞ্জিকা বাংলা ভাষা আন্দোলন পশ্চিমবঙ্গের ব্যক্তিত্ব তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওয়েবসাইট ভারতের মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গের জেলাসমূহের মানচিত্র পশ্চিমবঙ্গের রেল মানচিত্র পশ্চিমবঙ্গ ভারতের রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল বাংলাভাষী দেশ ও অঞ্চল ১৯৪৭-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল ১৯৪৭-এ ভারতে প্রতিষ্ঠিত বঙ্গোপসাগর বঙ্গ
https://en.wikipedia.org/wiki/West_Bengal
West Bengal
West Bengal (, Bengali: Poshchim Bongo, pronounced [ˈpoʃtʃim ˈbɔŋɡo] , abbr. WB) is a state in the eastern portion of India. It is situated along the Bay of Bengal, along with a population of over 91 million inhabitants within an area of 88,752 km2 (34,267 sq mi) as of 2011. The population estimate as of 2023 is 102,552,787. West Bengal is the fourth-most populous and thirteenth-largest state by area in India, as well as the eighth-most populous country subdivision of the world. As a part of the Bengal region of the Indian subcontinent, it borders Bangladesh in the east, and Nepal and Bhutan in the north. It also borders the Indian states of Jharkhand, Odisha, Bihar, Sikkim and Assam. The state capital is Kolkata, the third-largest metropolis, and seventh largest city by population in India. West Bengal includes the Darjeeling Himalayan hill region, the Ganges delta, the Rarh region, the coastal Sundarbans and the Bay of Bengal. The state's main ethnic group are the Bengalis, with the Bengali Hindus forming the demographic majority. The area's early history featured a succession of Indian empires, internal squabbling, and a tussle between Hinduism and Buddhism for dominance. Ancient Bengal was the site of several major Janapadas, while the earliest cities date back to the Vedic period. The region was part of several ancient pan−Indian empires, including the Vangas, Mauryans, and the Guptas. The citadel of Gauḍa served as the capital of the Gauḍa Kingdom, the Pala Empire, and the Sena Empire. Islam was introduced through trade with the Abbasid Caliphate, but following the Ghurid conquests led by Bakhtiyar Khalji and the establishment of the Delhi Sultanate, the Muslim faith spread across the entire Bengal region. During the Bengal Sultanate, the territory was a major trading nation in the world, and was often referred by the Europeans as the "richest country to trade with". It was absorbed into the Mughal Empire in 1576. Simultaneously, some parts of the region were ruled by several Hindu states, and Baro-Bhuyan landlords, and part of it was briefly overrun by the Suri Empire. Following the death of Emperor Aurangzeb in the early 1700s, the proto-industrialised Mughal Bengal became a semi-independent state under the Nawabs of Bengal, and showed signs of the first Industrial Revolution. The region was later annexed into the Bengal Presidency by the British East India Company after the Battle of Buxar in 1764. From 1772 to 1911, Calcutta was the capital of all of East India Company's territories and then the capital of the entirety of India after the establishment of the Viceroyalty. From 1912 to India's Independence in 1947, it was the capital of the Bengal Province. The region was a hotbed of the Indian independence movement and has remained one of India's great artistic and intellectual centres. Following widespread religious violence, the Bengal Legislative Council and the Bengal Legislative Assembly voted on the Partition of Bengal in 1947 along religious lines into two independent dominions: West Bengal, a Hindu-majority Indian state, and East Bengal, a Muslim-majority province of Pakistan which later became the independent Bangladesh. The state was also flooded with Hindu refugees from East Bengal (present-day Bangladesh) in the decades following the 1947 partition of India, transforming its landscape and shaping its politics. The early and prolonged exposure to British administration resulted in an expansion of Western education, culminating in developments in science, institutional education, and social reforms in the region, including what became known as the Bengali Renaissance. Several regional and pan−Indian empires throughout Bengal's history have shaped its culture, cuisine, and architecture. Post-Indian independence, as a welfare state, West Bengal's economy is based on agricultural production and small and medium-sized enterprises. The state's cultural heritage, besides varied folk traditions, ranges from stalwarts in literature including Nobel-laureate Rabindranath Tagore to scores of musicians, film-makers and artists. For several decades, the state underwent political violence and economic stagnation after the beginning of communist rule in 1977 before it rebounded. In 2023–24, the economy of West Bengal is the sixth-largest state economy in India with a gross state domestic product (GSDP) of ₹17.19 lakh crore (US$210 billion), and has the country's 20th-highest GSDP per capita of ₹121,267 (US$1,500) as of 2020–21. Despite being one of the fastest-growing major economies, West Bengal has struggled to attract foreign direct investment due to adverse land acquisition policies, poor infrastructure, and red tape. It also has the 26th-highest ranking among Indian states in human development index, with the index value being lower than the Indian average. The state government debt of ₹6.47 lakh crore (US$78 billion), or 37.67% of GSDP, has dropped from 40.65% since 2010–11. West Bengal has three World Heritage sites and ranks as the eight-most visited tourist destination in India and third-most visited state of India globally.
1498
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%AC
বৈজ্ঞানিক বিপ্লব
বৈজ্ঞানিক বিপ্লব হল কয়েকটি ক্রমিক ঘটনাবলী,যা প্রাক আধুনিক যুগে আধুনিক বিজ্ঞানের আবির্ভাবের সূচনা করেছিল,এইসময় গণিত, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা, জীববিদ্যা (মানব শারীরস্থান সহ) এবং রসায়নের বিকাশ প্রকৃতি সম্পর্কে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটায়। রেনেসাঁ পর্বের শেষের দিকে ইউরোপে বৈজ্ঞানিক বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল এবং ১৮ শতকের শেষের দিক পর্যন্ত এটি অব্যাহত ছিল যা পরবর্তী বৌদ্ধিক সামাজিক আন্দোলন জ্ঞানদীপ্তির যুগকে প্রভাবিত করে। যদিও বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের আক্ষরিক সূচনাপর্ব নিয়ে বিতর্ক রয়েছে,তবে ১৫৪৩ সালে নিকোলাস কোপার্নিকাসের ডি রেভেলিউসনিবাস অর্বিয়াম কোয়েলেস্টিয়াম (অন দ্য রেভোলিউশনস অফ দ্য হেভেনলি স্ফিয়ারস) এর প্রকাশনাকেই সাধারণত বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সূচনা হিসাবে উল্লেখ করা হয়। বৈজ্ঞানিক বিপ্লব, যা দীর্ঘ সময় ধরে পরিব্যাপ্ত, এই ধারণাটি আঠারো শতকে জিন সিলভাইন বেলির কাজের মধ্যে গড়ে উঠেছিল, যিনি পুরানোকে সরিয়ে নতুনকে প্রতিষ্ঠা করার একটি দ্বি-পর্যায়ের প্রক্রিয়ার কথা বলেছেন। বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সূচনায় ঘটেছিল একপ্রকার 'বৈজ্ঞানিক নবজাগরণ', যেখানে লক্ষ্য ছিল প্রাচীনদের জ্ঞান পুনরুদ্ধার করা এবং মনে করা হয় যার সমাপ্তি ঘটে ১৬৩২ সালে গ্যালিলিওর 'ডায়লগ কনসার্নিং দ্য টু চিফ ওয়ার্ল্ড সিস্টেম'-এর প্রকাশের মধ্য দিয়ে। আর, বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সমাপ্তি ঘটে ১৬৮৭ সালে স্যার আইজ্যাক নিউটনের প্রিন্সিপিয়ার "গ্র্যান্ড সিনথেসিস" এর প্রকাশের মধ্য দিয়ে। এর মাধ্যমে গতির সূত্র ও মাধ্যাকর্ষণ সূত্রের উন্মোচন ঘটে যা কসমোলজি শাখার নতুন দিগন্তের সন্ধান দেয়। ১৮ শতকের শেষের দিকে, বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের হাত ধরে আলোকিতকরণের তথি জ্ঞানদীপ্তির যুগের আবির্ভাব ঘটে যা আরো পরবর্তীতে "প্রতিফলনের যুগ"-এর আবির্ভাবের পথ করে দিয়েছিল। তথ্যসূত্র বিজ্ঞানের ইতিহাস বৈজ্ঞানিক বিপ্লব
https://en.wikipedia.org/wiki/Scientific_Revolution
Scientific Revolution
The Scientific Revolution was a series of events that marked the emergence of modern science during the early modern period, when developments in mathematics, physics, astronomy, biology (including human anatomy) and chemistry transformed the views of society about nature. The Scientific Revolution took place in Europe in the second half of the Renaissance period, with the 1543 Nicolaus Copernicus publication De revolutionibus orbium coelestium (On the Revolutions of the Heavenly Spheres) often cited as its beginning. The era of the Scientific Renaissance focused to some degree on recovering the knowledge of the ancients and is considered to have culminated in Isaac Newton's 1687 publication Principia which formulated the laws of motion and universal gravitation, thereby completing the synthesis of a new cosmology. The subsequent Age of Enlightenment saw the concept of a scientific revolution emerge in the 18th-century work of Jean Sylvain Bailly, who described a two-stage process of sweeping away the old and establishing the new. There continues to be scholarly engagement regarding the boundaries of the Scientific Revolution and its chronology.