author
stringclasses
36 values
text
stringlengths
86
1.25M
কবিকঙ্কন মুকুন্দ
শ্রী সুকুমার সেন প্রথম প্রকাশ বৈশাখ ১৩৬২ সাহিত্য অকাদেমি রবীন্দ্র ভবন ৩৫ ফিরোজশাহ রোড নয়াদিল্লী ১ ব্লক ৫বি রবীন্দ্র স্টেডিয়াম কলিকাতা ২৯ ২১ হ্যাডোস রোড মাদ্রাজ ২৭২ নইগাঁও ক্রুশ রোড বোম্বাই ১৪ প্রচ্ছদ: শ্রীঅধর লস্কর ল্রীঅপর্ণাপ্রসাদ সেনগুপ্ত এম, এ. কর্তৃক গ্রন্থপরিক্রমা প্রেস ৩০/১ব কলেজ রো কলিকাতা ৯ হইতে মুদ্রিত সাহিত্য অকাদেম নয়াদল্লী কর্তক:প্রকাশিত অপাঁরকলিতপৃৰং বশ চমৎকানসকাতী হাকত জুভগাষ এ৩ন্‌ মজঙ্াং চ্গীতম্ । ভাবচরাদাববদভিস্‌ সঙ্গতং তৈ বনান্তে সহৃদকসুমনোভির্‌ কন্দনীক্ে। মুকুন্দঃ ॥ অগ্রেসরতরশ জাম্মসন্ন কর্তব্য নবকর্মাশি | আঁম্বকাচরণো পান্ডে গুপ্ায় মামকী নাতি ॥ জহর-আকির-রাধাকৃষক্ুষ্টে সশাষ্টে সদাস শিরা ধার্ষে বাগৃবিধো ভারতীয়ে । 1দাঁশ 'দাশি শ্রুতকীতং শ্রীসুনীতং দ্বিজাগ্র্যমূ আঁশ চ রাঁসকবর্গং ষাচে তে হধিরুবস্তু ॥ অুষ্ঠুতান্থ ইপৃসম্ানেন কুশল সমব্গ্তন়ে | মানসং তদ্‌ ইদং প্রীতি- রসেন সফলং কৃতমু ॥ বেদাঙ্গানাধাবদ্যাক্ষ-সমারাং শকভূপতেই । কাতিন্থ এব মুকুন্দস্য প্রণদীতা নবকর্সণা ॥ ১৭১৭ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে লেখা —আমার দেখা পুথির মধ্যে তারিখযুক্ত প্রাচীনতম— চন্ডীমঙ্গলের পুথি অবলম্বনে এই সংস্করণের পাঠ গৃহীত হইয়াছে । সংশ্করণটিকে একটি definitive guide ধরা যাইতে পারে । গৃহীত পাঠই যে মুকুন্দের কাব্যের মূল পাঠ সে দাবি কার না, করাও যায় না। তবে মুকুন্দের কাব্যের মূল রূপ সপ্তদশ শতাব্দীর অস্তভাগে কেমন দাঁড়াইয়া ছিল তাহার স্পষ্ট ধারণা ইহা হইতে পাওয়া যাইবে । ভাষায়, বিশেষ করিয়া শব্দ ব্যবহারে, প্রাচীনত্ব পারিস্ফুট । রচনার মধ্যে পরিবর্জনের চিহ্ন আছে, তাহা পাঠান্তরে দেখানো গিয়াছে । অল্পস্বল্প পরিবর্তনের ইঙ্গিতও আছে, তাহা মন্তব্যে দেখাইয়াছি । কবিকঙ্কন-চন্ডীর মূল পাঠ আবিষ্কার করিবার চেষ্টায় আমি প্রায় চল্লিশ বছর ধরিয়া নিষুক্ত ছিলাম । ১৯৬৪ সালের আগে পর্ষস্ত এ কাজে ধারাবাহক মনঃসংষোগ করিতে পারি নাই ॥। সাহিত্য অকাদেমির উদ্যোগে, বিশেষ কারয়া তদানীম্তন সেক্রেটরি শ্রীযুক্ত কৃষ্ণ কৃপালনীর উৎসাহে, কয়েক বছর ধরিয়া একটানা মনঃসংযোগ করিয়া কাজটি শেষ করিতে পারিয়াছি। বলা বাহুল্য মুকুন্দের কাব্যের মূল রূপ আবিষ্ফার করিতে পারি নাই, তবে সে রূপ যে কেমন'ছিল তাহার আদল প্রতিফলিত করিতে পারিয়াছি বলিয়া মনে করি। এই সংস্করণ পড়িলে কাহার কতটুকু লাভ হইবে তাহা বলিতে পারি না, শুধু বলিব যে চন্ডীমঙ্গলের ঘাঁটাঘাঁটি করিয়া আমার লাভ হইয়াছে এইটুকু জ্ঞান যে রবীন্দ্রনাথের আগে এমন দক্ষতায় আমাদের ভাষা আর কোন লেখক বিশুদ্ধ সাহিতারচনায় ব্যবহার করেন নাই ॥ চন্ডীমঙ্গলের পাঠসমাধানে হাত দিয় আমি শিপ্পী-শ্রেষ্ঠ নন্দলাল বসু মহাশয়কে অনুরোধ করিয়াছিলাম তাহার গুরু অবনীন্দ্রনাথের মতো তিনিও যেন কবিকঙ্কন মুকুন্দের কাব্যকহিনী অবলম্বনে দুই একটি ছবি আঁকিয়া দেন । (ইতিপূরে তিনি বর্ধমান সাহিত্যসভা প্রকাশিত রূপরামের ধর্মমঙ্গল কাহিনীর কয়েকটি ছবি অনুগ্রহ করিয়া আঁকিয়া দিয়েছিলেন, সেই সাহসে এই অনুরোধ করিয়াছিলাম ।) তাহার অঙ্কিত সেই ছাবিগুল এই গ্রন্থের মর্যাদা বাড়াইয়াছে । পুথি মিলাইবার কাজে আমি নানা সময়ে দুই চার জনের কাছে অল্পস্বল্প সাহায্য পাইয়াছিলাম । তাহা আমি স্মরণ করি । কিস্তু শেষ পর্যস্ত কাজ আমাকে একলাই চালাইতে হইয়াছে । সুতরাং বইটির দোষ ত্রুটির দায়িত্ব আমারই। কাজটি শেষ করিতে যত না কষ্ট করিয়াছি তাহার চতুর্গুণ উদ্বেগ পাইয়াছ প্রকাশপ্রযত্নে । যাই হোক, সব ভালে যার শেষ ভালে ॥ সুচীপত্র ভূমিকা ১৩৬ | চণ্ডীমঙ্গল প্রথম দিবস দিবা চ্থাপন। বন্দনা ১ কাঁবত্বের বিবরণ ৩ প্রথম দিবস নিশা দেব-খণ্ড আবাহন ও সৃষ্টিকথ৷ ৫ সতীর কথা ৮ উমার কথা ১৪ ঘিতীয় দিবস : দিবা দেব-খণ্ড উমার সংসার ২৪ উমার সংসারত্যাগ ২৭ কাঁলঙ্গ-অরণ্যে প্রতিষ্ঠা ২৮ নীলাময়ের শাপপ্রাপ্তি ৩২ আখেটিক-খণ্ড ঃ কালকেতুর জন্ম ৩৮ তৃতীয় দিবস দিবা | আখেটিক-খণ্ড কালকেতুর বিবাহ ৪২ কালকেতুর সংসার ৪৪ অরণ্যে পশুর দুরবস্থা ৪৯ কালকেতুকে দেবীর ছলন। ৫৩ কালকেতুর ধনপ্রান্তি ৬৩ তৃতীয় দিবস ; নিশ! আখেটিক-খণ্ড গুজরাট-স্থাপনের উদ্যোগ ৬৪ নগরস্ছাপন ৭৫ চতুর্থ দিবস; দিবা আখেটিক-খণ্ডঃ ভাড়ুদন্ত ৮২ গুজরাট আরুমণ ৮৬ কালকেতুর পরাজয় ও বন্ধন ৯৩ পরি্লাশ ৯৯ নীলাম্বরের শাপমোচন ১০৫ চতুর্থ দিবস নিশা বণিক-খণ্ড রত্রমালার শাপপ্রাপ্তি ১০৮ খুল্লনার জন্ম ১০৯ পায়রা-বাঁজ ১১১ খুল্পনার বিধাহপ্রস্তাব ১১২ [ববাহ ১১৯ শুক-সারির কথা ১২৩ ধনপাঁতর গোঁড়-যারা ১২৭ পঞ্চম দিবস; দিবা বণিক-খণ্ড খুলনার নির্যাতন ১২৮ ছাগল চরানো৷ ১৩৬ দেবাঁর অনুগ্রহ ১৪১ পঞ্চম দিবস নিশা বাণক-খণ্ড ধনপতিতর প্রত্যাবর্তন ১৪৮ সংসারসুখ ১৫৪ ষষ্ঠ দিবস ; দিবা | বণিক-খণ্ড খুল্লনার উৎসব ১৬৮ মালাধরের শাপপ্রাপ্তি ১৭০ স্বজাতির ঘেোট ১৭৩ থুল্লনার পরীক্ষা ১৮০ ধনপাঁতর সিংহলযাত্রার প্রস্তাব ১৮৭ | ষষ্ঠ দিবস ; নিশা বণিক-খণ্ড ধনপাতির সিংহলযাত্া ১৯২ পথের আভজ্ঞতা ১১৬ কমলে-কামিনী দৃশ্য ২০০ ধনপাতির নিগ্রহ ২০৬ শ্রীপাতির জম্ম ২০৯ সপ্ুম দিবস: দিবা বণিক-খণ্ড শ্রীপতির বালাকথা ২১১ সিংহল-যান্নার উদ্যোগ ২২২ সম দিবস : নিশা—জাগরণ বণিক-খণ্ড শ্রীপাতির সিংহল-যায়া ২২৮ সপ্তগ্রাম অবাধ পথ ২২৯ অপ্চগ্রাম হইতে মগরা ২৩২ সগর- বংশের উপাখ্যান ২৩৪ নীলাগাঁরর কথা৷ ২৩৮ সেতুবন্ধের ঘটনা ২৩৯ সেতুভঙ্গের ঘটনা ২৪২ কমলে-কামিনী দৃশ্য ২৪২ সংহলে শ্রীপতির নিগ্রহ ২৫০ শ্রীপাতির পার্তাণে দেবার উদ্যোগ ২৫৫ 'সিংহলের রাজার নাতর্থীকার ২৬৫ অষ্টম দিবম ? দিব! বণিক-খণ্ড ধনপাঁতর উদ্ধার ২৭৫৬ পিতাপুন্রের মিলন ২৭৮ রাজকন্যার সহিত বিবাহ ২৫১ দেশে ফিরিবার ব্যাকুলত। ২৮২ সিংহল-ত্যাগ ২৮৮ দেশে প্রত্যাবর্তন ২৯১ রাজসভায় সন্কট ২৮৫ দেবীর আনুকুল) ও শ্রীপতির দ্বিতীয় বিবাহ ২৯৩ প্রথম পত্রীর দুঃখ ২৯৬ অষ্টমঙ্গলা ২৯৭ কলিকালের পাপাচার ২৯৯ হরিনাম-মাহাত্ব্য ৩০০ খুল্লনার ও সপ্তরীক শ্রীপাতির শাপমোচন ৩০১ দেবীর কৈলাসে প্রত্যাবর্তন ৩০২ পরিশিষ্ট গঙ্গা-বন্দনা ৩০৫ পাঠীস্তর ও মন্তব্য রাম-বন্দনা ৩০৮ সদাশিব-বন্দনা ৩০৬ ভগবতী-বন্দন। ৩০৭ শুকদেব-বন্দনা ৩০৮ দকৃ-কন্দনা ৩০৮ সূর্য-বন্দনা ৩১০ বংশ-পাঁরচয় ৩১১ দক্ষষজ্জের পর ৩১৪ শিবের ধামালি ৩১৬ বিভু-বন পত্তন ৩১৮ ইন্দ্রের শিব-পৃজা ৩৯৯ কালকেতুর মৃগয়া৷ ৩২০ পশুগণের গোহারি ৩২১ প্রাতকার ৩২২ কালকেতুর হতাশা ৩২ দেবার শতনাম ৩২৫ কালকেতুর ভান্ত ৩২৬ হাট হইতে দুব্য আনয়ন ৩২৭ বেরুনিয়াদের নাম ৩২৭ বন-কাটা ৩২৮ কালকেতুর যুদ্ধসজ্জা ৩৩২ কালকেতুর যুদ্ধ ৩৩৩ পায়রার তালিক৷ ৩৩৫ সারর খেদ ৩৩৬ প্রহেলিকা ৩৩৮ থুল্পনার সম্তাপ ৩৪০ ধনপাতির গৃহপ্রত্যাগ্নমন ও বিস্ময় ৩৪১ খুল্লনার দ্বামসন্দর্শন ৩৪১ পলো পরীক্ষা ৩৪৫ জৌঘর ৩৪৬ খুলনার অরুচি ৪৪৮ সাধ-ভক্ষণ ৪৪৯ সাধে উপহার ৪৫০ লহনার ক্ষোভ ৪৫০ শ্রীমন্তের শিক্ষা ৪৫১ শ্রীমন্তের পিতৃদর্শনেচ্ছ। ৪৫২ উজানি-সংহল যান্রাপথ ৩৫৩ শ্রীমন্তের টোপর ফেল! ৩৫৪ বাঙ্গাল-কাদন ৩৫৬ শ্রীমস্তের চৌতিশা ৩৫৭ পিতাপুত্রের মিলন ৩৫৯ গজেন্দ্র-মোক্ষণ ৩৬০ বিষুদূত-যমদূতের বাগড়া ৩৬০ কৈলাসে রিপোর্ট ৩৬১ আদর্শ পুথির পুষ্পিক৷ ৩৬২ ফলশ্রুতি ৩৬৩ আদর্শ পুথির একটি পৃষ্ঠ। মাধবপুর পুথির একটি পৃষ্ঠ! মাধবপুর পুর আর একটি পৃষ্ঠ। কালিকাপুর পুথির একটি পৃষ্ঠা কালিকাপুর পাথির আর একটি পৃষ্ঠা নন্দলাল বসু আঙ্কত । “চণ্ডী দেখা দিলেন স্বপনে" নন্দলাল বসু আক্কত । “হদে বিষ মুখে মধু 'জিজ্ঞাসে ফুল্লরা? নন্দলাল বসু আক্ষত । নবদলে শাশিমুখী - উগারি গালিছে কারবরে' একটি 'চান্তত পাথর পৃষ্ঠাংশ । গ্ছাগ রাখ্য খাই ভাত" রামজয়-সংহ্রেণের চিত্র । শীনজ মুর্তি ধারতে অভয়। কল মন" রামজয়-সংন্করণের গত “কমল কুঙ্জর কাস্তা দোখি সদাগর, রামজয়-সংস্করণের চিত্র । “হাথে হাতে শ্রীমন্তে কারল সমর্পণ, রামজয়-সংগ্করণের চিত্র । ণ্ধীরে ধীরে জায় রাম। লইয়া ছাগল, ব্ামজয়-সংদ্করণের চিত্র । শশ্রীমস্ত কারয়া কোলে বাঁসল। ভবানী" কালিদাসের কাব্যের অনেক ব্যাখ্যা প্রচালত ছিল। তবুও কেন যে মল্লনাথ সঞ্জীবনী টীকা লিখিতে গেলেন তাহার কৈফিয়ত দিয়াছেন । ১৭৪৫ শকাব্দ (১৮২৩-২৪) থেকে এ পর্যন্ত্য কবিকঙ্কণের চন্ডীকাব্যের অনেক “সংস্করণ” বাহির হইয়াছে, তবুও কেন যে এই পাঠ ( অর্থাৎ সংস্করণ ) প্রস্তুত করিলাম তাহার কৈফিয়ত আমিও দিই । আমার প্রচেষ্টা দুরবযাখ্যা-ীবষমূছ? থেকে উদ্ধার নয়, দুষ্পাঠের কুয়াসা-ঘোচানো৷ এবং কুপাঠের জঙ্জালমোচন । এই প্রায় দেড় শ বছরের মধ্যে মুকুন্দের কাব্য অনেকবার মুদ্রিত হইয়াছে, প্রচলিত কথায় বহু সংস্করণ বাহির হইয়াছে । কিন্তু এগুলির মধ্যে দুই তিনটি ছাড়া কোনটিরই পাঠ অনেক ক্ষেত্রেই সংশয়মুস্ত নয়, কখনে। কখনে। একেবারে অবোধ্য । বোঝা যায়, সে সব ছাপা গ্রন্থের পাঠ প্রয়োজন মতে। পাঁরবার্তত ও পারবার্ধত হইয়াছে । দুই একটি ছাড়।৷ কোন সংঙ্করণই একটি-দুইটি নির্দিষ্ট পুথর উপর নির্ভর কাঁয়। প্রস্তুত বলিয়৷ উীল্লখিত নয়, এবং সে দুই- একটি সংদ্করণেও অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকের পুথর পাঠই প্রদত্ত হইয়াছে । অবশ্য একথা মানিতে হয় ষে পুথ অধাচীন হইলেই যে পাঠ অধাচীন সুতরাং আগ্রাহ্য হইবে এমন কথা নয় । কোন পদে কোন শব্দের ব শব্দাবলীর আধুনিক বানান দৌখলেই যে তাহ। সরাসার পরিত্যাগ করিতে হইবে তাও বলা চলে না । কিন্তু এমন অনেক পাঠ পাওয়৷ যায় যা আপাতদৃষ্টিতে নবীন নয় অথচ আসলে অত্যন্ত আধুনিক । গায়কের (চন্ডীমঙ্গলের ভালো পুথগুলি আঁধকাংশ গায়কের প্রয়োজনে লেখা, ) অথবা লাপকরের ( চণ্ডীমঙ্গলের পুথি ধাহার৷ লিখিতেন তাহারা নিতান্ত মূর্খ ছিলেন না, ) অজান৷ শব্দ সঙ্গত কারণেই পুথিতে প্রচলিত অথবা অনুমিত প্রতিশব্দে রূপাস্তারত হইয়াছে। এই সব অজ্ঞান-জনিত বিকৃতি ও পরিবর্তন, প্রামাণিক পাঠ পাইলে, অগ্রাহ্য করিতে হয় । একট। উদাহরণ দিই । যে ডাবরে ( আশ৷ কার তরল দ্রব্যের আধার ধাতুপান্র “ডাবর” এখনই অপাঁরচিত হইয়৷ পড়ে নাই,) অনেক সময় কুলকুচা করা হইত অথব৷ উদৃগার ফেলা হইত বাঁলয়া সেই কাজে তাহ। ষোড়শ শতাব্দীতে “উলটি ডাবর” ( অথব৷ “আলবাটি” ) নামে উল্লিখত হইত । এখানে “উজটি” শব্দের অর্থ সংস্কৃত “উদশগীণ”। শব্দটির আরও একটি আনুষঙ্গিক এবং বহুব্যবহৃত অর্থ ছিল “পরিবর্তিত” । পরবর্তী কালের গায়ক-লিপিকরের প্রথম অর্থটি জান। ছিল না দ্বিতীয়টি ছিল, কিন্তু দ্বিতীয় অর্থটিকে এখানে খাপখাওয়ানো যায় না । সুতরাং সকলের বুঝবার জন্য “উলটি” পরিবর্তিত হইল সমার্থক “ফিরিয়া” দিয়। ।| আহারের পর “ফিরিয়া ডাবরে সাধু কৈল আচমন,” এই পাঠ পুথিতে ও ছাপা বইয়ে যথেষ্ট মলিয়াছে। ভালে কোন 'কোন পুথিতে এবং সংস্করণে খাঁটি পাঠ পাই-“উলটি ডাবরে সাধু কৈল আচমন+, । ( উলটি [বিশেষণ দিবার কারণ ছিল, ডাবরের মতো আধারে ডাল ও অন্য তরল ব্ঞজনও ঢাল।'হইত । ) আধুনিক কালের ছাপমার৷ “পাঁগুত”ঃ ব্যস্ত সম্পাঁদত কোন কোন সংস্করণেও পাঠভ্রান্তির ফলে বািঁচত বশ্রাস্তির সৃষ্টি হইয়াছে । যেমন, কোন এক বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান প্রকাশিত সংস্করণে ছাপা হইয়াছে, শিশু শ্রীপাঁতির শৈশববেশের বর্ণনায়—“বর্ণমাজা। দোলে গলে" । সম্পাদকের খেয়াল হয় নাই যে সেকালে কিগারগার্টেন ছিল না, সুতরাং বর্ণমাল। লইয়৷ খেলাধূলার সৃষ্টি হয় নাই, গলায় বর্ণমালার () মালা দোলানো তে দূরের কথ (বোধ কারি এ বাঁচত্র ভাবনা এখনে। কোন শিশুশিক্ষা-বিশারদ পাঁগুতের মনে উাঁদত হয় নাই)। আসলে পাঠ ৯ হইল “বনামালা দোলে গলে” ৷ বন্মাল৷ মানে “বনমালা” ।১ বাংল৷ পুথি পড়ায় ধাহাদের কিছুমা অভিজ্ঞত। আছে ঠাহার৷ জানেন যে 'ন্য, ণা, ৭” তিনটি অক্ষরই লিপিকরের কলমে একই রূপ পাইত—প্তু, শু । কবিকঙ্কন-চক্রবর্তী মুকুন্দ প্রাচীন কবি। তিনি ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগে জীবিত ছিলেন । কাবির জীবংকালে অবশ্যই তাহার কাব্য সাদরে ব্তুবার গাঁত এবং অনুলিখিত হইয়াছিল । কাব্যটির সমাদর কালক্লমে বাড়িয়াই গিয়াছিল—উনাবংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ অবধি । একারণে মুকুন্দের চন্ডীমঙ্গলের পুথি দুর্লভ নয় । তবে আফশোসের বিষয় এই যেপ্রাপ্ত পাথর পনের আনারও বেশী ভাগই অপ্পাবস্তর খাঁওত, সুতরাং অসম্পূর্ণ । পুধির শেষপাতা৷ না থাকিলে লাপকাল জানা যায় না। কোন কোন পুথিিতে আবার 'লাপকালের উল্লেখ" নাই । এমন অবস্থায় পুথির লাঁপকাল-নির্ণয় অনুমানসাধ্য হয় । সে অনুমান নির্ভর করে তিনটি বিষয়ের উপর, _-লাপষ্থাদ, কাগজের প্রকৃতি ও উপাদান, এবং কালির রঙ ও তরলতা । বাংল অক্ষর যোড়শ-সপ্তদশ হইতে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম পাদ পর্যস্ত—অর্থাৎ ছাপার অক্ষর পরাঁচত হইবার আগে পর্যস্ত—আগণ্লিক ও ব্যান্তগত লেখনী-চালনার ভঙ্গ স্বীকার করিলেও—প্রায় একই ছাদের ছিল, এবং প্রযয়ে লেখার ও অয লেখার বিভিন্ন ছাদ যুগপৎ চলিত ছিল । সুতরাং লাপষ্াদের উপর খুব নির্ভর করা যায় না। তবে কাগজের উপর কিছু পরিমাণে নির্ভর কর৷ যায়, কেননা পাতলা মাড়ের কাগজ অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগের আগে দেখা যায় নাই এবং উনবিংশ শতাব্দীর আরম্ভ হইবার পূর্ব হইতেই কলের কাগজ বাবহারে আনিয়াছিল । কালির ওুজ্জল্য ও জলীয়ত। ধরিয়। অষ্টাদশ-উনাবিংশ শতাব্দীর পার্থক্বিচার করা যায় না। সুতরাং লাপকাল না থাকিলে পুথির প্রাচীনত্ব নিঃসন্দিগ্ধ নয় । দীর্ঘকাল ধরিয়া কবিকঙ্কনের কাব্যের পুথির সন্ধানে ও তাহার অনুশীলনে ব্যাপৃত আছি। সমসাময়িক পথ নাই, সুতরাং মূল পাঠে পৌঁছিবার সরাসরি উপায় নাই । অতএব এখন আসল পাঠ উদ্ধারের কথা উঠে না। আমি চেষ্টা কারয়াছি—প্রাপ্ত পাঠাবালর মধ্যে প্রাচীনতম পাঠ কপ্পনা করতে নয়, নির্ণয় করতে । আপাতত তাহাতেই খাটি পাঠের কাজ চালাইতে হইবে । আমার সন্ধানে যে পুথি প্রাচীনতম বাঁলয়া লব্ধ হইয়াছে তাহাই আমি আদর্শ ধরিয়। নির্ভর কারয়াছি এবং ঘনিষ্ঠসম্বন্ধ অপর কয়েকটি পুথির সাহায্য লইয়াছি। প্রাচীনতম পুথিটির লিপিসমাপন- কাল ১৭১৭ খ্রীষ্টাব্দ । সহযোগী প্রধান প্রধান পুথির মধ্যে একাঁটর শেষাংশ নাই, সুতরাং লাপকাল অজ্ঞাত । আর একটিতে প্রথমার্ধ নাই শুধু শেষার্ধ, এটির লাপ-সমাপ্তকাল ১৮১৬ খ্রীষ্টাব্দ । আর দুইটি সহযোগী ভালো পুথির মধ্যে একটির শেষ কয় পাত। পাওয়া যায় নাই, এবং অপরটির লাঁপকাল ১২০০ সাল । সহযোগী প্রধান পুথিগুলির পাঠের সঙ্গে আদর্শ পাথর পাঠের মিল ও গরমিল দেখিয়৷ আদর্শ পুথর পাঠের উপর আমার আস্ছ৷ দৃঢ়তর হইয়াছে । তবে আদর্শ পুথতেও যে কিছু পারবর্জন ঘটিয়াছে তাহাতেও সন্দেহ নাই । পাঁরবার্জত বালর। অনুমিত অংশ মূল-পাঠে যোগ না কারয়। পাঠান্তরে 'দিয়াছি। কবিকঙ্কনের কাব্য বহুবার ছাপ হইয়াছে । প্রথম ছাপ। হইয়াছিল ১২৩০ সালে অর্থাৎ ১৮২৩-২৪ খ্রীষ্টাব্দ ( “কবিকঙ্কন চক্রবর্তীর কৃত চন্ডীর পুস্তক শ্রীষুন্ত রামজয় বিদ্যাসাগর ভট্টাচার্যের দ্বার৷ শুদ্ধানুশুদ্ধ করিয়৷ কলিকাতায় শ্রীবশ্বনাথ দেবের ছাপাখানায় মুদ্রিত হইল শকাব্দা ১৭৪৫” )। বইটিতে কতকগুলি ছাব ছিল, তাহা অন্র পুনমু্দ্রত হইল । এই সংস্করণটি পরবর্তী কালের সংস্কর্তা ও প্রকাশক, বিশেষ করিয়৷ বটতলার প্রকাশক, অনেকেই অবলম্বন কাঁরয়াছিলেন । সংস্থরেণটি ভালো, 'কিস্তু আদর্শ কোন্‌ পুথির এবং পাঠ কোথায় কোথায় কিভাবে “*শুদ্ধানুশুদ্ধ” ১ অর্থ শব্দার্থে দ্রষ্টব্য । ২ “মুকুন্দরাম এই বড় মামটি কবির রনামধ্যে ভনিতাক়্ একবারও পাই নাই। পাই—মুকুন্দ, “শ্রীমুকুন্দ", “কবিকঙ্কন', “চক্রবর্তী কবিকঙ্কন', 'কবিচত্রের ভাই', ইত্যাদি । পিতামহ জগল্লাথ, পিতা হাদয়, পুত্র মুকুন্দ—সব একশব নাম। ৬ করা হইয়াছে তাহা বুঝবার উপায় না থাকায় তাহাতে আননির্ষিচারে নির্ভর করা যায় না । (এই মন্তব্য পরবর্তী প্রাথ সব সংহরেণগুঁলি সম্বন্ধেও প্রযোজ্য । ) ইওিয়ান প্রেস এলাহাবাদ হইতে ১৯১১ খ্রীষ্টাব্দে প্রকাশিত সংস্করণের ভাঁমকায় প্রকাশক 'লাথয়াছিলেন যে তাহার৷ বসম্তরঞ্জন রায়ের নিকট হইতে ১২৩৫ সালের ছাপা সংঙ্করণ পাইয়াছিলেন । এই ছাপা সংস্করণ দেখি নাই এবং এ সংস্করণের সম্পর্কে আর কোন খবরও পাই নাই । রামজয়ের সংস্করণ প্রকাশের বিশ বছর পরে ১২৫০ সালে (১৮৪৩ খ্রীষ্টাব্দে) সিদ্ধেশ্বর ঘোষ চস্তীমঙ্গস প্রকাশ কাঁরয়াছিলেন মদনমোহন তর্কবাগীশের সংশোধনে । ইহার কিছুকাল পরে (১৮৫১ খ্রীষ্টাব্দে ) বাহির হইয়াছিল ঈশ্বরচন্দ্র তর্কচূড়ামণির সংশোধন । তাহার পর একটি ভালো সংস্করণ প্রকাশিত হইয়াছিল _নীলমণি চক্রবর্তীর দ্বারা সংশোধিত “কবিকষ্কণ চণ্ডী সুকবিবর এমুকুন্দরাম চক্রবর্তী কর্তৃক যাহ। গৌড়ীয় সাধু ভাষায় বিরচিত” (১৮৬৮)। তাহার পর উল্লেখযোগ্য অক্ষয়চন্দ্র সরকারের সংস্করণ (ছু'্চুড়া ১৮৭৮) এবং তাহার পরে বঙ্গবাসী কার্যালায় প্রকাশিত সংস্করণ (১৩০৯, দ্বিতীয় সংস্করণ ১৩১৩ )। বঙ্গবাসী সংস্করণে বিস্তৃতভাবে এবং অনেক পাঠান্তর দেওয়া আছে, কিন্তু পুথির পরিচয়, [বিশেষ কাঁরয়। লিাপকাল দেওয়া ন৷ থাকায়, বঙ্গবাসী সংস্করণটিকে সর্বত্র কাজে লাগানো যায় না । কাঁবর পাঁরচয় উদ্ধার এবং কাব্যের নষ্টোদ্ধার কাজে প্রথম ব্রতী হইয়াছলেন দামনের (- দামন)-দামুন্য। নামের আধুনিক রূপ ) অঞ্চলের, সাহিত্যপাঁরষদূ এবং বটতল। উভয় মণ্ডলে একদ। পাঁরাঁচত লেখক, আত্বকাচরণ গুপ্ত (১৮৫২-১৯১৫)। ইনি দানে গ্রামে চক্রব্তীদের গৃহে “মূল পুথি” বাঁলিয়৷ সযকে রাক্ষিত পুথখানির পাঁরচয় প্রথম ছাপাইয়।৷ দেন । বহু পাঠাস্তর মিলাইয়। প্রথম আত্মপাঁরচয় পদের পাঠও উদ্ধার করতে তিনি যত্রবান হইয়াছিলেন (প্রদীপ ১৩১২, 'কবিকঙ্কণ ও তাহার চণ্ভীকাব্য,, পৃষ্ঠা ২৯১:৩০২)। আশ্বকাচরণের আগে শুধু রামগাঁত ন্যায়রর মুকুন্দের মূল পুথির খোজ লইয়াছিলেন। ইনি রঘুনাথ-বায়ের রাজ্যপ্রাপ্তি-কাল উদ্ধার কারিয়া মুকুন্দ-গবেষণার ভীত্তপ্রপ্তর স্থাপন কারয়াছিলেন—বাঁলতে পারি। আম্বকাচরণের আবিষ্কৃত দামিনের পুথিটিকে কবির মূল পুথি মনে করিয়৷ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ্‌ তাহ। ছাপাইতে একদা থৃব চেষ্টা করিয়াছিলেন । সে গ্রযর্র ব্যর্থ হয়। অনেক কাল পরে চাবুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ও হষীঁকেশ বসুর সাহায্যে দীনেশচন্দ্র সেন পুনরায় সে চেষ্ট। কারয়াছিলেন । সে অসফল প্রযত্ের ফল কলিকাত৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত হইয়াছিল দুই খণ্ডে (১৯২৪, ১৯২৬ )। সেই সংস্করণে দীনেশচন্দ্রের ভূমিকায় পরিষদের বার্থ-প্রযত্ের ইতিহাস বিবৃতি আছে। (এই সংস্করণের সহকর্মরূপে চারুচন্দ্ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিস্তৃত "চন্ডীমঙ্গল-বোধিনী' রচিত ও প্রকাশিত হয় )। অন্র পাঁরগৃহীত পাঠ চারপাঁচটি পুথির উপর নির্ভর করিয়াছে । তাহার মধ্যে একটিকে—যেটি সবাপেক্ষা প্রাচীন ( তারিখ ধাঁরয়৷ ) এবং শুধু একখানি পাত৷ বাদে সম্পূর্ণ—আদর্শ ধারয়াছি। বাকি কয়টিকে কবিকঙ্কণ্রের ষে সব পুথি আমি নিরীক্ষণ করিয়াছি সেগুলির মধ্যে সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য মনে করিয়াছি এবং পাঠসহায়করুপে গ্রহণ কাঁরয়াছ। চণ্ডীমঙ্গলের কোন পুথির পাঠই সর্বদা এবং সবন্ন প্রাচীন এবং খাঁটি নয়। আধাচীন পুথিতেও এমন পাঠ পাওয়। যায় য৷ পুরানে। পু থর পাঠের তুলনায় খ।টি । সেই কারণে অন্যান্য কয়েকখানি পুথির সাহায্যও আবশ্যক মতে। গ্রহণ কারতে হইয়াছে । এই মন্তব্য কোন কোন ছাপ৷ সংস্করণ সন্বন্ধেও অল্পন্ব্প খাটে । প্রধান পুথিগুলির এই আলোচনায় যথাক্রমে আদর্শ (সংক্ষেপে আণ), মাধবপুর ( সংক্ষেপে মা”), গ্োঁহাটী ( সংক্ষেপে গোঁ”), সোনামুখী (সংক্ষেপে সো”) এবং আরাগ-মাধবপুরের পুথি (সংক্ষেপে আরা ) বলিয়৷ উল্লিখিত হইয়াছে । প্রথম পুথটি কলিকাত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পাত্ত (পুথিসংখ্য ১০৮৬), দ্বিতীয় পুথিখানি বর্ধমান সাহিত্য সভার সম্পত্তি শ্রীপণ্ানন মগুল সংগৃহাত ), তৃতীয় পুথিখানি স্বর্গীয় অধ্যাপক বিরিপিকুমার বুয়ার সৌজন্যে প্রাপ্ত, চতুর্থ পুথিটি শ্রীসুনীল কুমার চট্টোপাধ্যায়ের সৌজন্যে পাওয়া, আর পঞ্চম পুথিখানি বর্ধমান সাহত্যসভার সম্পর্ত। আর একটি পুথিও কাজে লাগিয়াছে, তাহাও সাহিত্য সভার (শ্রীঅক্ষয়কুমার কয়ালের সংগ্রহ )। ১. আদর্শ পুথিটি ভুরশুট অঞ্চল হইতে সংগৃহীত । লিপিসমাপ্ত কাল ১৬৩৮ শকাব্দ ১১২৪ সাল ১৭ আষাঢ় (১৭১৭ খ্রীষ্টাব্দ )। 'লাপিস্থান 'মোকাম রাধানগর পড়ুয়া পরগনে ভূরশীট তালুক শ্রীজুত 'কাশ্তচন্দ্ রায়ের” । পুথি যেখানে লেখা হইয়াছিল তা রামমোহন রায়ের পিতৃভামি, এবং পুষ্পিকায় ীল্লাথত কৃষচন্দ্র রায় রামমোহন রায়ের প্র্পতামহ ছিলেন বালিয়াই আমার ধারণা । পুিটিতে এমন একটি বৈশিষ্ট আছে যা আমি অন্য কোন পুরানে। পুথতে দোখ নাই । কোন কোন পৃষ্ঠায় মার্জনে অন্য পুথ হইতে রূপান্তর, পাঠাস্তর—এমন কি গোটাগোটা পদ—উদ্ধৃত দেখা যায় । পুথিটিকে তাই একরকম সংকলিত (০0119154) পথ বলিতে পারি। পৃথিতে ভাষায় এবং বানানে আগাগোড়া সামঞ্জস্য—যথাসন্ভব_ আছে । এ বাপারও দুল'ভ । একটি উদাহরণ দিই । মিল-ধাতু সর্বদা মিলনার্থক, আর মেল-ধাতু সর্বদ৷ ত্যাগার্থক। [লাপতে এবং বানানে পুথিটি 'িশেষত্ববর্জত নয়। কখনো কখনো অ-কারের তলায় উ-কারের কলা দিয়া উ-কার লেখা হইয়াছে । বিসর্গযোগে প্রায়ই ব্যঞজনধবনির যুগাতা আভব্যন্ত। খ-কার ও র-ফলার মধ্যে ভেদ প্রায়ই নাই । পদাস্ত এ-কার সর্বদাই "য় । যেমন “হদয়' -'হদএ, (হদয়ে)। পদমধ্যে অনেক সময় প্রত/াশিত চন্দ্রাবদু দেখা যায় না । কিন্তু “মহা” সর্বদাই “মহা” । অন্যান্য অনেক পুথিতে যেমন, ন-কারে ণ-কারে ও ল-কারে, জ-কারে ও য-কারে, এবং তিন শ-কারে ভেদ নাই। ব-ফল৷ দিয়া ব্ঞ্জনের যুগ্যাত। অথব৷ উ-কার প্রকাশিত । যেমন, 'ফুম্বর৷ চন্বক সাথে" _ 'ফুল্লরা চলুক সাথে” । সমসাময়িক উচ্চারণ অনুসারে 'ধ* প্রায়ই “দ' এবং অ্ত্য আ-কার কোন কোন স্থানে “আযা' । যেমন 'অবাঁদ'-“অবাঁধ, ; “রক্ষ্যা-রক্ষা” ; 'সুশিল্যা'_"সুশীলা” ৷ দৈবাৎ আঁপানাহাতি দেখ! যায় । যেমন “বাইনানি,-“বান্যানি' ; “ঘোষ-বোউষের*-“ঘোষ-বসুর' ; 'কুড়াইর'-'কুড়ার ; 'বাইষ'- “বাস । পদাঁদিতে প্র সদাই প্রে”। মাঝে মাঝে ও-কার স্থানে উ-কার এবং উ-কার স্থানে ও-কার পাওয়। যায়। ইহা হইতে মনে হয় যে লেখক হয় পূর্ববঙ্গের লোক ছিলেন, নয় তিনি শ্রুতিলিখন কারয়াছিলেন এবং যানি পাঁড়য়া৷ যাইতেন হয্সত তিনি প্রবঙ্গের লোক ছিলেন । যেমন, “কুটি'- “কোটি? ; “মতরোতি'-“শ্রুতি' ; "সুনিত'ন “শোণিত' । শবে প্রত্যাশিত চত্দ্রবিন্দুর বর্জনেও এই অনুমান সমার্থত হয়। গো” পুথর শেষ কয়াট পাত৷ ন৷ থাকায় লাপকাল জান। গেল না । তবে কাগজ ও লাপছ্থাদ দেখিয়া মনে হয় যে লিিকাল অফ্টাদশ শতাব্দীর শেষার্ধের কাছাকাছি । কাগজ লালচে রঙের তামাক-পাতার মতো, আকারে দীর্ঘ । উত্তরপৃধ-বঙ্গে প্রচালিত ধরণের লিপিতে লেখা, তবে কিছু কিছু বৌশিষ্ট্য আছে । অস্কার আ-্কার ও ই-কার মোৌথাল অক্ষরের মতো । ব-কারের তলায় ফুটাক আছে । র-কার ঈষৎ পেটকাটা, অনেক সময় বোঝাই যায় না । পদান্তে সর্ধদ। ঈ-কার ব্যবহৃত । 'লাঁপকর প্রায় সর্বদা ক্রিয়াপদে আণ্লিক ( অর্থাৎ উত্তরপৃরবঙ্গীয় ) রূপ চড়াইয়াছেন, এবং মাঝে মাঝে অপাঁরিচিত ( পশ্চিমবঙ্গীয়) শব্দের বদলে পাঁরাচিত (উত্তরপূর্ববঙ্গীয় ) প্রাতশব্দ ব্যবহার কাঁরয়াছেন । যেমন, “দোঁখলাঙ” স্থানে “দোখিলেন', 'কাঁরঞ' স্থানে “কৈরে', “বাঘহাতা” স্থানে 'হাতাকাঁড়' (5হাতকাঁড় ), ণসউাি' স্থানে 'গুড়াতি' - খেজুর গুড় প্রস্থুতকারী )। পুথিাট নোয়াখালি-চাটিগ। অঞ্চলের হওয়া মসন্ভব নয়। মা” পথ আরামবাগ অঞ্চলের । অস্তাথাত, থুল্লনার পরীক্ষার আগে পর্যন্ত আছে। 'লাঁপকাল অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ ভাগের পরে নয় বাঁয়া৷ মনে হয়। আদর্শ পুথর সঙ্গে বেশ মিল আছে। তবে শব্দের বাবহারে দুইটি পুথির মধ্যে কিছু কিনতু তফাৎ দেখা যায় । যেমন, 'বাগৃতি' (মা) “বাগাঁদ' (আ”); “ছাতানাটা' (মাণ) “টোকাছাতা' (আণ); "মালঝখপঃ? (মা”) 'মালঝখাপা আণ); ইত্যাদি। বসি ৪ সে” পুথির লাঁপকাল ১৮১৬ খ্রীষ্টাব্দ । পুম্পিকা—“লাখতং শ্রীশ্রিনাথ মীর মজুমদার এ পুস্তক ্রীশ্রীনিবাস আড্য পোতদারের সাঃ সোনামুখর আঁভড্যপাড়ার। সন ১২২৩ সাল তারিখ ২৫ কার্তিক সাঁনবারি চারিদও বেল। থাকতে সংপুন্ন হেল হীত ॥” পুথিটি সম্পূর্ণ, পাতা ১-১৭৪। ইহাতে শুধু খুলনার উপাখ্যান আছে। আরভ্ত—“অথ বণিক খণ্ড লিক্ষতে ॥ দীর্ঘ ছন্দ ॥ অর্থচন্দ্র রাগ ॥ ধার মনোহর নিল। নাচে রাম। রঙ্লমালা" ইত্যাদি । ষে পথ হইতে লেখা তাহা সম্পূর্ণ ছিল, কেন না মধ্যে মধ্যে গোড়।৷ হইতে টানা পদসংখ্যা দেওয়া আছে । সপ্তম পদের শেষে সংখা আছে ২০৬ । সুতরাং ধাঁরতে পারি যে আক্ষটি-খণ্ডে কবিতা-সংখ্যা ছিল ১৯৯। পুথিটির পাঠ খুব ভালো । সম্পূর্ণ মিললে এইটিই আদর্শ করা যাইত । পুথিটি কোন গায়কের পথ হইতে গানের উদ্দেশ্যে লেখা হইয়াছিল বলিয়া মনে হয়। গান কারবার ধারার যে সব 'নির্দেশ আছে তাহার অনেকগুলি অন্য কোথাও দেখি নাই । যেমন “চালান' অর্থাৎ একটানা সুরে তালে আউড়িয়৷ যাওয়া ; “ধাবাড়' অর্থাং দ্ুতবেগে গাহিয়া যাওয়া । “ছুট মান”, 'ঝিখপা মান”, ছছুটা জতি' (পাঠ “জাত” )—এগুলি তালের নির্দেশ । অনেকগুল প্রাচীন এবং ভালো৷ ধুয়৷ পদ আছে । পণ্টম পুথিখানি মা-পুথর অণ্চলের। লাপিসমাপ্তি-কাল ২২ আশ্বন ১২০০ সাল। “লিখিতং শ্রীগদাধর সরকার নিবাস পরগনে বায়ড়া। মৌজে আরা ॥...পাঠক শ্রীজুত্ত বিপ্রচরণ রায় নিবাস পরগনে বায়ড়। মৌজে মাধবপুর” । বষ্ঠ পুথিখানি (পৈয়ালি পুথি) বজবজ অণ্চলের । 'লাঁপসমাপ্তিকাল ১২৪৮ সাল । কবিকঙ্কনের কাব্যের পথ অনেক পাওয়া গিয়াছে । বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য সংগ্রহ হইল কাঁলিকাতা বশ্বাবদ্যালয়ের, বঙ্গীয় সাহত্যপারষদের, বর্ধমান সাহত্যসভার, বিশ্বভারতীর এবং রাজশাহী বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিরমের । পদসংখ্া ধাঁরয়া সম্পূর্ণ পাঁথগুলিকে দুই শ্রেণীতে ফেলা যায়_হুদ্ধ ও দী্থ। মোটামুটি ভাবে বালিতে গেলে হৃদ্ব শ্রেণীর পুিগুলিতে প্রক্ষেপের ভাগ কম, দীর্ঘ শ্রেণীতে প্রক্ষেপের ভাগ বেশি । গোঁ” পুথি, কাঁলকাতা বিশ্বাবদ্যালয়ের-৬১৪১ সংখ্যক পুথি এবং বর্ধমান সাহিত্যসভার পৈয়ালি পুথি দীর্ঘ শ্রেণীর পুিগুলির মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য । বিষয়বস্তুর উপস্থাপনের দিক দিয়৷ দেখলেও কবিকঙ্কণ-চন্ডীর পুথিগুলি দুইটি থাকে পড়ে । একটি কিছু সংক্ষিপ্ত, অপরটি কিছু বিস্তৃত । এই বিস্তার-সংক্ষেপ ধরিয়। প্রাচীনত্বের বিচার আপাতত নির্ভরযোগ্য নয়, তবে কিছু কিছু বিস্তার যে পরবর্তাঁ কালের তাহা বুঝিতে অসুবিধা হয় না। অবাচীন বিস্তার দেব-খণ্ডে এবং বণিক-খণ্ডেই বোঁশ ঘটিয়াছে। কালকেতু-উপাখ্যানের তুলনায় ধনপাতি-উপাখ্যান বোঁশ জনাপ্রয় ছিল, অর্থাং ধনপাতশ্্রীপাঁতির কাহনীটাই প্রধানত গীত হইত । তাই এই উপাখ্যানটির পুথি বোঁশ পাওয়া যায় । শুধু কালকেতু-উপাখ্যানের পুথি দেখিয়াছি বাঁলয়। মনে পড়ে না ॥ কাব্য নাম ও রীতি মুকুন্দের কাব্যে পদাবলীর ভনিতায় কোন সুনার্দি একটি নাম ব্যবহৃত নয়। 'অভয়ামঙগল", 'আস্বকা- মঙ্গল", চন্ডিকামঙ্গল”, অথবা “হমবতীশঙ্কর-মঙ্গল”, “নৃতন মঙ্গল", 'চাওকার ব্রতকথা' ইত্যাঁদ পাই ভানতায়। কাব্যটিতে যে-তিনটি কাহিনী বার্ণত আছে তাহাতে দেবা অভয়ার পূর্ব ইীতহাস এবং মত্যভূমিতে ঠাহার পূজ। ২ ারস্স্ম ৫ প্রচারের কথা পাই । দেবী চণ্ডী এখানে মঙ্গলময়ী, তিনি অভয়দাতী মঙ্গলচণ্ডী | তাই এমন দেবাঁমাহাত্থ্য কাব্য “চন্ডীমঙ্গল , নামেই সমধিক পারিচিত হুইয়।৷ আসিয়াছে । পুরানো বাঙ্গাল। সাহিত্যে, ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগ পর্যস্ত, রচন৷ মাত্রই গেয় বন্তু ছিল। অর্থাং তাহা সুরসংযোগে উচ্চারিত অথবা পঠিত হইত । ষোড়শ শতাব্দীর মধ্যভাগের পরে কোন কোন বৈফবাঁয় রচনায় এই রীতির তাষ্পন্থপ্প ব্যাতক্রম দেখা গেলেও এ লক্ষণ অক্টাদশ শতাব্দীর শেষ পর্যস্ত খাটে । সুতরাং পুরানো বাংলা সাহিত্য গীতনির্ভর বাঁললে অন্যায় হয় না । প্রাচীন ভারতীয় আর ভাষায় (অর্থাং বোদকে ও সংস্কতে) পদ্যের একক ( ইউনিট ) ছিল গ্লোক। ক্লোকের ইউনিট চরণ । দুই অথব৷ চার চরণে ক্লোক। প্রত্যেক চরণে অক্ষরসংখ্যা সমান, এবং চরণে অক্ষরের তৃষ্ক- দার্ঘতার ক্রম সুনির্দিষ্ট । মধ্য ভারতীয় আর্য ভাষার প্রথম অবস্থায় ( অর্থাং পালিতে ) দেখ! গেল পূর্বেরই গ্লোফবন্ধ- রীতি প্রায় অবিচালিত। কিন্তু দ্বিতীয় স্তরে (অর্থাং প্রাকৃতে ) পাওয়া গেল গ্লোকবন্ধের এক নৃতন রীতি, যাহাতে শ্লোকের দুই অংশের মধ্যে ভারসামা—অর্থাধ অক্ষরের বা মান্তার সমতা- নাই । ইতিমধ্যে ভাষায় ধীরে ধীরে অক্ষরের লঘুগুরুত্বের মান বদলাইয়া আসিয়াছে এবং তাহার ফলে পদ্যের ইউনিট চরণে স্বরধ্বনির অথব৷ অক্ষরের সংখ্য। ও সে ক্রধবনির লঘুগুরুত্বের ব্রমাবন্যাসের উপর নির্ভরশীল হইয়াছে । ্লোকের চরণে মান্রাবৈষম্য আসিয়াছিল গান হইতে । অনুমান কার, বৌদকে কোন কোন ধরণের গানে এ রীতি ছিল। এবং সে রীতি গানের মধ্য দিয়াই কথ্য ভাষায় সম্টারত ছিল | সে কথ্যভাষা ছিল প্রাকৃত। সংস্কৃতে এ রীতি হয়ত সমসামাঁয়ক কথ্য ভাষ৷ অর্থাং প্রাচীন প্রাকৃত হইতেই আ'সিয়াছিল। বোঁদকে গান অর্থে “গাথা, শব্দটি প্রচলিত ছিল। প্রাকৃতে এই গানের ছন্দের নাম হইয়াছিল “গাহা” (গাথা )। অর্বাচীন সংস্কৃতে এই ছন্দের নাম (এবং প্রাকৃতে নামান্তর ) হয় “আধা (অর্থাৎ প্রান গাথারীতি- আধা গাথা )। ছন্দরীতিকে বদলাইয়া দিলেও গান প্রাকৃত সাহিত্যে কবিতার বাহ্য রূপে বোঁশ পরিবর্তন আনিতে পারে নাই, কিন্তু ভিতরে ভিতরে সে রূপান্তর-কর্ম চলিতোঁছল । তাই আর্ধ ভাষার তৃতীয় স্তরে (অর্থাৎ লোিকে- অপন্রংশে ) পৌঁছিয়া দেখিতে পাই যে কাঁবত৷ প্রায় সম্পূর্ণ গীঁতিনির্ভর হইয়াছে এবং ছন্দের চরণে অক্ষরসমত। আসিয়াছে এবং উপরম্তু জোড়া জোড়া চরণের শেষ অক্ষরে মিল ঘটিতেছে। এই অস্ত্যানুপ্রাস সংস্কৃতে ও প্রাকৃতে অজ্ঞাত। কাঁবতা ও গানের অবিচ্ছেদ্য সংযোগও এই ভাবে লৌকিক স্তর হইতে শুরু । ষোড়শ শতাব্দীর আগে কাঁবতা ও গানের এই গাঁটছড়। 'শাথিল হয় নাই । তবে একেবারে খুলিয়া গিয়াছে উনাবংশ শতাব্বীতে । ছবি ও গানের, গল্প ও কাঁবতার, সমযোগ সংস্কৃত সাহিত্যে অজ্ঞাত নয় । তবে সংস্কৃত ভাষার এমনি দুর্বার শান্ত যে সে ভাষার সাহিত্যে বাচনই সর্বদ। প্রধান, বাচ্য নয়। অর্থাৎ কী বল৷ হইতেছে তাহার অপেক্ষা কেমন করিয়া বল। হইতেছে সেই দিকেই কবির মন নিমগ্ন । সেকারণে সংস্কৃত সাহিতো, এমন কি উপদেশকথা পুরাণেও, কথন সর্বদা কথাকে খর্ব করিয়৷ রাখে । যেখানে কথা বালিতে বড়সড় কিছু নাই কথনই সর্বস্ব, সেখানে সংস্কৃত সাহিত্য কাবিতারচনায় সার্থক, কিন্তু কথাসব্বন্ব গপ্পরচনায় তা বার্থ । সংস্কৃত সাহত্যে এই দিক দিয় “মেঘদূত” ও “কাদদ্বরী” সার্থকতার ও ব্যর্থতার ভালো উদাহরণ । (বলা বাহুল্য কাদস্বরীকে আম গণ্পের বই বালয়াই এখানে ধারতোছি, কাব্য বলিয়। নয় । ) কবিত্ব-বালাই বর্জত গল্পকথার বই পরবর্তী কালের সংস্কৃত সাহিত্যে পাওয়৷ যায় বটে, কিন্তু তাহা প্রাফৃত-অপভ্রংশ রচনার হয় অনুবাদ নতুষ৷ অনুসরণ । যেমন কথাসারংসাগর ও বেতালপণ্চবিংশতি। প্রবীণ সং্কৃত-সাহত্যের মধো এ রচনাগুলি গণা নয় । যাংলার মতে কোন কোন নব্য-ভারতীয় আর্ধ ভাষায় প্রথম হইতেই কাঁবত। সুরের বাহনে আঁবভুতি (ছি ঙ হইয়াছিল । গানই হোক অথব৷ আখ্যায়িকা হোক শাপ্পিত রচনামান্রেই হয় গাওয়। হইত (ব্রিপদী, নাচাঁড়) নয় সুরে ভালে আওড়ানে৷ হইত (পয়ার)। এই ধার৷ চলিয়া আসিয়াছিল সোঁদন পর্যস্ত। বিশিষ্ট ,দেবপৃজায় দেবতার মাহাস্মকাহিনী আবৃত্ত অথব৷ গাঁত হইবার রীতি এ দেশে বহুকালের । অন্যত্র যেমন এদেশেও তেমনি বৌদ্ধ বিহারে স্তুপমূলে অথবা বোধিসত্ত-প্রতিমার সম্মুখে সন্ধ্যাবন্দনায় স্তো্ন এবং উদাত্ত আখ্যায়িকা উদৃগীত হইত । চীনীয় পরিব্লাজদের ভ্রমণকাহিনীতে তাহার উল্লেখ আছে। উজ্জয়িনীতে মহাকাল মন্দিরে দেবদাসীদের দ্বার শিবের ব্রিপুর-বিজয় কাঁহনী গীত হইবার কথ কালিদাস মেঘদূতে উল্লেখ কাঁরয়াছেন। এই দেবগ্গীতির ধারা যে এদেশেও জনসমাজে চলিয়। আসিয়াছিল যে কথ মানিতে হয় । সেই ধারারই বাংল৷ ভাষায় সবচেয়ে বিশিষ্ট উদাহরণ পাই কবিকঙ্কণের কাব্যে। কাব্যের ভনিতায় একাধিকবার উল্লেখ আছে যে রচনাটি "ব্রতগীত”, “মঙ্গল”, “পাণ্চালিকা” বো “পাচাল')। 'বুতগীত” বোঝায় যে কোন বিশিষ্ট দেবারাধনায় গেয় রচনা | “মঙ্গল বোঝায় যে রচনাটি আনুষ্ঠানিক ভাবে গান কারলে যজমানের (ও শ্রোতাদের ) মঙ্গল হয়। 'পাণ্খালকা” বোঝায় যে রচনাটি গান কারবার সময় কাহিনীর পান্রপান্রীর পুত্তালকা অথব৷ চিন্ন প্রদর্শিত হইত। “মঙ্গল“ আখায়িকা-গানে পুন্তলিকা অথব৷ চিত্র প্রদর্শন রীতি অনেক কাল আগেই লুপ্ত হইয় গিয়াছিল, তবে 'পাণ্টালিক।” নামাটি রচনার সৌষ্ঠব ও আকর্ষণ-জ্ঞাপক বিয়। টাকিয়া যায়, শুধু বাংল৷ দেশে নয় অন্যর্ও । গোড়ার দিকে মুকুন্দের কাব্যও যে চিন্র-প্রদর্শন অথব৷ পুত্তীল-নর্ভন সহকারে গীত হইত তাহার কিং প্রমাণ সে” পাথর একটি ভনিতায় (৭৭ ক) পাইয়াছি,_“রচিয়। ব্রিপদী ছন্দ গান কাঁব শ্রীমুকুন্দ চিত্রের পাঁচালি মনোহর ॥” মধ্য ভারতীয় আধ সাহিত্যে লৌকিক স্তরে বিশুদ্ধ রোমান্টিক গপ্প কিছু কিছু লেখ হইতে থাকে । জৈন কবির এই রকম কয়েকটি কাহণী ধর্মকথা ও নীতিকথা রূপে তাহাদের ( ধর্ম-) সাহিত্োর মধ্যে জুঁড়িয়া দিয়াছিলেন । একটি ভালো উদাহরণ ধনপালের রচিত “ভবিসৃসয়ত্তকহা” । এই ধরণের রচনাই কবিকঙ্কণের কাব্যের মতো আখায়িকা-পাণ্তালিকার বোধ করি প্রাচীনতম সূ । এই ধরণের বৃহৎ আখ্যায়কার মধ্যে কবির বিদ্যাবুদ্ধির পরিচয় থাঁল উজ্জাড় কাঁরয়। দিতে পারা যাইত । রাজসভাবর্ণনা নগরবর্ণন। অরপণ্যবর্ণনা জীবজন্তু গাছপাল! ইত্যাঁদর তালিকা ও দেশ-বিদেশের হাট-বাজারের পরিচয় মায় নদী নালা সমুদ্র পরত পর্যস্ত জ্ঞান-ভাগারের বত কিছু সামগ্রী তখনকার দিনের কাবির পক্ষে জান৷ সম্ভব ছিল সব কিছুর 'ফারাস্ত যথাসাধ্য দেওয়া হইত। তুলনীয়, প্রাচীন রাজদ্ছানীতে লেখা গণপতির “মাধবানল-কামকন্দলা' । এই রকম বুদ্ধিবিদ্যাজ্ঞানের সংক্ষিপ্তসার কড়চার মতে৷ বই একদা কাব ও কথকদের ব্যবহারের জন্য লেখা হইয়াছিল । যেমন মৈথিলী ভাষায় লেখা জ্যোতিরীশ্বয়ের “বর্ণনরক্কাকর' ( আনুমানিক চতুর্দশ শতাব্দীর প্রথমভাগ )। সংস্কৃতে ও গুজরাটীতে লেখা এই রকম কয়েকটি প্রাস্তক৷ (ষোড়শ শতাব্দী ) “বর্ণকসমুচ্চয়' নামে প্রকাশিত হইয়াছে ( বড়োদা ১৯৫৬, সম্পাদক ভোগীলাল জ. সাণ্ডেসর৷ )। প্রাচীন কাব-কথকের মালমসলার এই রকম কোন এক ঝুল যে মুকুন্দের ব্যবহারেও লাগিয়াছিল তাহার প্রমাণ আছে চণ্ডীমঙ্গলে । বিশেষ কাঁরয়া কালকেতু-উপাখ্যানে—কীচুলি নির্মাণ, বন-কর্তন, নগর-পত্তন ইত্যাদিতে তাহা৷ সুস্পষ্টরূপে প্রতিভাত ॥ ৩ কথা -বন্তু কবিকঙ্কনের কাব্যে চারাটি ভাগ-—বন্দনা, সতী-পার্তীর উপখ্যান (বা দেব-খণ্ড), কালকেতু-ফুল্লরার উপাখান (বা আক্ষটি-খণ্ড ) ও ধনপাঁত-খুল্লনা-শ্রীপাঁতর উপাখ্যান (ব৷ বণিক-খও্ড)। বন্দনা অংশের সাঁহত কাব্কাহিনীর ৭ কোন যোগ নাই, আনুষ্ঠানিকভাবে গাঁত হইবার বেলায় দেবতা-বন্দনা প্রথমেই আবশ্যক, তাই এই অংশ “চ্ছাপনা পালা"? । দেব-খও্ড আরম্ভ হইয়াছে সৃষ্টবর্ণনা করিয়া । (এই রীতি পুরাণ হইতে চাঁলয়া আসিয়াছে ।) শ্লিভুবন ও দেষাসুর-নর সৃষ্টির পর দক্ষের কন্য৷ সতীর সহিত শিবের বিবাহ, শ্বশুর-জামাতার মনাস্তর, বিনা নিমন্ত্রণে দক্ষের যজ্জোংসবে সতীর আগমন ও আত্মোৎসর্গ, শিব-অনুচরের হাতে দক্ষের নিগ্রহ, তপস্যা করিতে হিমালয়ে শিবের গমন এবং তাহার পর, প্রধানত কালিদাসের কুমারসন্ভবের অনুসরণে, শিবের তপস্যা-ভঙ্গ, পার্বতীর তপস্যা এবং শিবেয় সহিত পার্বতীর বিবাহ, তাহার পর শিবের ঘরজামাই রূপে শ্বশুরালয়ে বাস, গণেশের ও কার্তিকেয়ের উৎপত্তি, মাতার সাহত পার্ধতীর মনান্তর, সপরিবারে শিবের কৈলাসে প্রন্থান, সেখানে দারিদ্রের সংসারে পাবতীর ক্লেশ । 'তখন মর্ত্যলোকে পৃজ। পাইয়। যুগপৎ যশঃপ্রাপ্তি ও দারিদ্রা-ক্লেশ নিবারণের প্রচেষ্টায় পাবতীঁকে সখার পরামর্শ দান । এই্খানে প্রথম উপাখ্যান শেষ । পবত-রাজপুরী দেবী আসলে অক্পপ্যানী । 'তাঁন অরণ্যভূমিপূর্ণ কালঙ্গ জনপদের অধিপাঁতকে সপ্ন দিলেন । সেই অনুসারে রাজা কংসনদের তাঁরে অরণ্যভুমির প্রান্তে দেবীর বিচির দেউল নির্মাণ করাইয়৷ তাহাতে একক দেবী মূর্তি প্রীতষ্ঠ। করলেন । ভালোরকম পূজার ব্যবস্থাও হইল । দেবী সশরাঁরে আসিয়৷ পৃজ। লইলেন। পূজা পাইয়া খুশ হুইয়। দেবী দ্স্থানে প্রস্থান করিতেছেন এমন সময়ে আরণ্য প্রাণীরা তাহাকে দেখিতে পাইয়। নিজেদের দেবত৷ জানয়। সাধ্যমত পূৃঞ্জ। দিস। দেবী অভয়। তাহাদের সকনকে ভরস। 'দিলেন এবং 'সিংহকে রাজা কািয়া অন্য পশুদের তাহার অধীনে যথাযোগ্য নিয়োগ বাবস্থা করিয়। কৈলাসে চলিয়া গেলেন । পৃজ। পাওয়া গেল, কিন্তু আরণ্য রাজার ও পশুর সে পূজায় দেবার খুব সস্তোষ হইল না,-জনাবরল সমাজে দেবমাহাত্থ্য যেন গুণ্ত হইয়া রহিল । সর্থী পদ্মাবতী তখন আবার পরামর্শ দিলেন ৷ শিবভন্ত ইন্দ্রের পুন অরণ্যরাঁসক নীলাম্বরকে দেবী শিবের শাপ দেওয়াইয়। মনুষ্যজম্ম লইতে বাধ্য কারলেন । সে তাহার মাহাত্ম্/প্রচারের হেতু হইবে। কাঁলঙ্গ জনপদে ব্যাধের ঘরে নীলাম্বর জম্ম লইল, নাম হইল কালকেতু । যথাসময়ে তাহার বিবাহ হইল, পত্ীর নাম ফুল্লরা ৷ হ্বমী-স্রীর সংসার । কালকেতু বনে বনে ঘুরিয়৷ পশু শিকার করে, ফুল্পরা হাটে পসার 'দদিয়৷ অথব। লোকের বাঁড় বাঁড় ঘুঁরয়া মাংস বেচে । দারিদ্রের সংসার তবে স্বচ্ছল চলে । কিন্তু দিন দিন কালকেতুর পশু- জিঘাংসা বাঁড়তে লাগল, তাহার ফলে বনের পশু অযথা বিনষ্ট হইতে থাকে । পশুরা একজোট হইয়াও তাহার প্রীতরোধ কারতে পারল না। অবশেষে পশুরা দেবীর শরণ লইল। দেবী তাহাদের পুনরায় অভয় দিয়া কালকেতুর শিকার-দৃষ্টি হরণ কাঁরয়৷ লইলেন। তাহার চোখে আর কোন শিকারই পড়ে না। ব্যাধ-দম্পী মুশীকলে পাঁড়ল । একাঁদন কালকেতু একটি সোনারঙের গোসাপ ছাড়৷ বনে আর কোন পশুই দেখিতে পাইল না। সেই গোধাকেই ধাঁরয়া আনিল। বাড়তে আসিয়া দোখল ফুল্লর৷ ঘরে নাই । সে গোসাপটিকে চালার থু*টিতে বাধিয়। রাখিরা পর্মীকে খুজতে গেল। দেবী তখন গ্োধিকা-রুপ তআগ কাঁরয়। মোহনী যোড়শী মুর্তি ধারণ কাঁরলেন। অন্য দিক হইতে ফুল্লর। ঘরে 'ফাঁরয়। দোথয়। অবাক । স্বামী আসিয়। পাঁড়বার আগেই যাহাতে মেয়েটি চলিয়৷ যায় সেজন্য সে অশেষ নির্বন্ধ করল । দেবী কিন্তু অনড়। তখন ফুল্লরা আভমান করিয়। স্বামীর সন্ধানে ছুঁটিল। একটু পরে দ্বামীকে লইয়৷ আসিল । কালচকতুও মেয়েটিকে দেখিয়া বিস্মিত হইল এবং তাহাকে চাঁলয়া যাইতে বিনীতভাবে অনুরোধ কারল । দেবী যখন কিছুতেই উঠিবার চেষ্ঠ। করতেছেন না তখন কালকেতু কুদ্ধ হইয়। তাহাকে হত্যা কাঁরতে ধনুকে তীর জুড়ি । কিন্তু তীর ছোড়া গেল না, দেবার মায়ায় কালকেতুর হন্ত-স্তনত হইল । অতঃপর দেবী হতবুঁদ্ধ দম্পতীকে আত্মপারিচয় দিয়। কালকেতুকে একটি সোনায় আংটি এবং বনের মধ্যে সাত ঘড়া ধনের সন্ধান দিলেন, সে যেন পশুহংস৷ ত্যাগ কারয়। অহিংস সন্মান্ত জীবন স্বচ্ছন্দে যাপন করে। সেই ধন সিন ৮ পাইয়া কালকেতু বন কাটাইয়। নিজ রাজা গুজরাট নগর স্থাপন কাঁরল । দেবার সহায়তায় কালকেতু গুজরাটে ভালো প্রজা! বসতি করাইয়া নগর জণকাইয়া তুলিল । নবাগত প্রজাদের মধ্যে একজন ছিল জুয়াচোর ঠক, নাম ভড়ু দত্ত । আহার অতাচারে হাটের বাটের লোকেরা ঝাঁতবযস্ত হইয়া কলকেতুর কাছে নালিস করিলে পর কালকেতু তাড়ুকে অপমান করিয়া তাড়াইয়৷ দিল। ভড়ু কালিঙ্গ রাজার কাছে গিয়া কালকেতুর বিরুদ্ধে উদ্ানি দিল। রাজ সৈন্য পাঠাইয়। কালকেতুকে ধারয়া আনিতে কোটালকে হুকুম দিলেন । কালকেতুর সঙ্গে যুদ্ধে কোটাল হারিয়া গেল । ভাড়ু তাহাকে দ্বিতীয়বার আক্রমণ কাঁরতে যুন্ত দিল। এবারে পরীর পরামর্শে কালকেতু যুদ্ধ ন৷ কাঁরয়া আত্মগোপন করিল এবং শেষে ধর৷ পাঁড়ল। রাজ। তাহাকে নিপীড়ন কাঁরয়।৷ কারাগারে নিক্ষেপ করিলেন । নিশীথে দেবী রাজাকে ভয় দেখাইয়। স্বপ্ন দিলেন । প্রভাতে রাজ। কালকেতুকে মুন্ত দিয়। এবং প্রচুর সম্মান করিয়। গুজরাটে পাঠাইয়। দিলেন । তখন ভাড়ু দত্ত আবার কালকেতুর দরবারে ভালো মানুষ সাজিয়। আসিল | কালকেতু তাহাকে ভর্খসনা ও অপমান করিয়।৷ সভ৷ হইতে দূর করিয়া দিল কিন্তু দেশ হইতে তাড়াইয়। দিল না । তাহার পর যথাকালে কালকেতুর শাপান্ত হইল। ইন্দ্র ও শাচী ঠাহাদের পুত্রকে স্বর্গলোকে ফিরিয়া পাইলেন । এই হইল দ্বিতীয় উপাখ্যান । দেবীর পৃজ। প্রচার হইল বটে |কন্তু ত৷ প্রত্যন্ত ও সঙ্কীর্ণ অণ্লে, কালঙ্গ জনপদে, এবং দরিদ্রের সমাজে । এমন পূজায় দেবী সম্পূর্ণ খুশি হইতে পারিলেন না । তখন পদ্মা পরামর্শ দিল দেশের উন্নেত শহর উজানিতে ধনী বণিক এবং পরম শিবভস্ত ধনপাঁতিকে অবলম্বন কাঁরয়। নৃতন পৃজা-খেল৷ দেখাইতে । ধনপাঁতির কাছে পূজা আদায় করিতে পারিলে নামযশ তো খুবই হইবে, উপরন্তু শিবকেও কিছু শিক্ষা দেওয়। যাইবে । সথীর পরামর্শ পাবতী গ্রহণ কারলেন। আগ্েবার তাহার শুধু 'এক ব্রতদাস ছিল-ইন্দরপুন্ন নীলাম্বর। এবারে তাহার ব্রতদাসী ও ব্রতদাস দুইই হইল । ব্রতদাসী হইল ইন্দ্রসভার নর্তকী রত্মালা, ব্রতদাস হইল দেবনট মালাধর—কাহিনীতে যথাকুমে ধনপাতির দ্বিতীয় পরী ও তাহার গর্ভজাত পুন্ন। ধনপাতি বিবাহিত পুরুষ, পত্রী লহন৷ উজ্ানির অনাঁতদূরবর্তী ইছানি নগরের অধিবাসী বণিকের কন্যা । একদিন পায়র৷ উড়াইতে উড়াইতে ধনপাঁত ইছানিতে গিয়া পাঁড়ল এবং পরী লহনার খুল্লতাত ভগিনী খুল্লনাকে দেখিল। দেখিয়। তাহাকে বিবাহ কারবার প্রবৃত্তি জাগল। ধনপাত পুরোহিত ও পরামর্শদাত। জনার্দন ওঝার সহিত চক্রান্ত করিয়৷ তাড়া-হুড়ার মধ্যে খুল্পনাকে বিবাহ করিয়া ফেলিল। [বিবাহের পরাদনই সে রাজাদেশে গোঁড় যাইতে বাধ্য হইল । সেখানে সোনার খঁঠ৷ গড়াইবার জন্য তাহাকে এক- বছর থাকিতে হইল । লহন৷ প্রথমে সপত্লীকে ভালোভাবেই লইয়াছিল । তাহাদের সংসারের দাসী এবং আঁভন্ভাবক দ্বলার (০ দু-বোল। 2) বাক। কথায় লহনার ধারণা হইল যে খুল্লনা হইতে তাহার দ্বামী-সৌভাগ্য নষ্ট হইবে, সুতরাং সে তাহার শনু। থুল্পনা৷ অলক্ষণা এই অপবাদ দিয়া ধনপাঁতির লেখা জালাচঠি দেখাইয়া, দুগ্রহ কাটাইবাক্ক ছল কারয়া, থুল্লনার নীচ বেশ নীচ আহার নীচ শখ্য৷ ইত্যাদ বিধান কারয়৷ তাহাকে প্রত্যহ নগরের বাহিরে গিয়। ছাগল : চরাইতে বাধ্য করা হইল । এইভাবে প্রায় বংসর কাল কাটিলে দেবী প্রসন্ন হইয়া বিদযাধরীদের দিয় খুল্লনাকে আপনার পৃজাব্রত শিখাইয়। দিলেন। তাহার পর দেবা ধনপাতিকে স্বপ্ন দিলেন। অবিলম্বে ধনপতি দেশে ফারিয়৷ আসিল । থুল্পনাও দ্বামীর আদরে প্রাতষ্ঠিত হইল। তাহার পর ধনপাঁতর পিতার শ্রান্ধকাল আিলে ধনপাতি নিমন্ত্রণ দিয়া দেশবিদেশের দ্বজাতি-গোষ্ঠী আনাইল । তাহার! সবাই আসিল কিন্তু ধনপাতির গৃহে অন্নাহার কাঁরতে রাজ হইল না, কেনন৷ থুল্লনা অরক্ষিত অবস্থায় একবছর ছাগল চরাইয়াছে, তাহাতে তাহার চরিঘরদ্রংশ অবশ্যই ঘটিয়া থাকবে । নিজের চ'িবশুদ্ধি প্রমাণ কারবার জন্য খুল্পন৷ পরপর অনেক রকম পরীক্ষা দিল কিনতু জ্ঞাতিরা তাহ। স্বীকার কারল না। অবশেষে যখন অগ্মিপরীক্ষা দিয়৷ উত্তীর্ণ হইল তখন সকলে ধন্য ধন্য কাঁরয়। বিবাদ মিটাইয়। 8 আ0 কনক টি লইল । মাস কতক পরে রাজভাগ্ডারের প্রয়োজনে ধনপাঁতিকে সিংহলে যাইতে হইল । খুল্লনা তখন পাচমাস গর্ভবতী, তাহার গর্ভে দেবীর বরপুণের সঞ্চার হইয়াছে । (শিবের প্রদত্ত পুরস্কার হাড়মাল৷ অবজ্ঞ। করায় দেবনট মালাধর ঘুল্পনার গর্ভে আশ্রয় করিয়াছে ।) সাত ভিঙ্গা লইয়৷ বাণিজ্যান্রায় বাহির হইবার আগে ধনপাঁত থুনল্লনাকে ঘটে দেবীর পূজা কাঁরতে দেখিয়। কুদ্ধ হয় এবং সে ঘট পায়ে ঠোঁলয়৷ দেয় । এই অপরাধে তাহাকে শিক্ষ। দিবার জন্য দেবাঁ বড়বৃষ্টি করিয়া ও বান ডাকাইয়া সাগরসঙ্গমে তাহার ছয় 'ডিঙ্গ। ডুবাইলেন । অবাঁশষ্ট এক ডঙ্গ। লইয়া সাধু সিংহলে পৌছিল। সিংহল বন্দরের অবিদূরে সমুদ্রবক্ষে দেবী তাহাকে এক মায়াদৃশা দেখাইয়া বগন। করিলেন । সমুদ্রের মাঝখানে এক বিপুল পদ্রবন, তাহাতে এক বিশাল প্রস্ফুটিত পর্ন । সেই পদ্রের উপর বনিয়৷ এক অপূ্ব-সুন্দরী ষোড়শী কম্যা একটি হাতিকে ধারয়৷ বারবার গিলিতেছে ও উগরাইতেছে । (এই দশা ধনপাঁত ছাড়া কাহারও দৃষ্টি- গোচয় হয় নাই ।) দিংহলের রাজসভায় ধনপাতির অভ্যর্থনা ভালোই হইয়াছিল কিন্তু কমলে-কামনী দৃশ্যের কথা বালয়া ফেলিয়৷ সে মুদ্ধিলে পাঁড়ল । রাজাকে এ দৃশ্য দেখানে৷ গেল না। তাহার কথ। মিথ্য জানিয়। কুদ্ধ হইয়। রাজ৷ তাহার সম্পান্ত বাজেয়াপ্ত এবং তাহাকে কারাগারে আবদ্ধ করিলেন । এদিকে উজানিতে খুল্পন৷ পুন প্রসব কারয়াছে। নাম রাখিয়াছে শ্রীগাত (শ্রীমন্ত) । ছেলেকে সে সযয়ে লালন করিয়৷ পুরোহিত পাণ্ডত জনার্দনের কাছে পাঁড়তে পাঠাইয়াছে । লেখাপড়ায় শ্রীপাতির খুব আগ্রহ, এগার বছর বয়সেই সে পাঁগুত হইয়াছে এবং গুরুর সহিত শাস্ত্র বিচার কাঁরতে চায় । একাঁদন গুরুশিষ্যের তর্কা- তার্কতে বালক শ্রীপাঁত মাথা গরম কারিয়। ব্রাহ্মাণজাতির প্রাতি কটাক্ষ কারল । কুদ্ধ জনার্দন তাহাকে জারজ বাঁলয়। গালি দিলেন। মর্মাহত হইয়৷ শ্রীপাতি ঠিক করিল, সে পিতার সন্ধান করিয়া আপনার জম্ম-অপবাদ ঘুচাইবে । অনেক নির্ধন্ধের পর মাতার সম্মাত ও রাজার অনুমতি পাইয়া সে সাত [ডঙ্গ। ভাসাইয়। বাণিজ্য উপলক্ষ্য কাঁরয়। পিতার উদ্দেশে [সংহল আঁভমুখে চলিল। দেবীর প্রসন্নতায় যান্রাপথে কোন বিষ্প ঘটিল না। তবে সিংহল কদরের মোহনায় সেই মায়াদৃশ্য কমলে-কামিনী সেও দোঁখল, তাহার সঙ্গী আর কেহ দেখিল না। তাহার পর শ্রীপতির অদৃষ্টে পিতার লাঞ্ছনার অনুরূপ ঘটিল । তবে এবারে বিদেশী বণিকের মিথ্য৷ কথায় রাজ। অধিকতর কৃদ্ধ হইয়৷ শ্রীপাঁতর প্রাণদণ্ডের আজ্ঞা দলেন। কিন্তু দেবীর বিরোধিতায় সে আজ্ঞ৷ পালন কর৷ গেল না । উপরম্তু দেবীর রোষে রাজবল সমূলে ধবংস হইল । অগত্যা 'সিংহলের রাজ৷ সালবান ( শাঁলবাহন ) মহামায়া-দেবীকে প্রসন্ন করিতে তাহার পৃজাঅঙ্গীকার করিলেন এবং শ্রীপতিকে তাহার একমান্র কন্য। সমর্পণ কারলেন ৷ সে ঘটনার পূর্বে দেবী নিহত সিংহল বীরদের সব পুনজাঁবিত কাঁরয়৷ দিলেন । কারাগার হইতে বন্দাঁদের মুক্তি দেওয়া হইল। অনেক কষ্টে শ্রীপাঁত ঠাহার পিতাকে থুণঁজয়। পাইল । রাজা ধনপাতিকে খুবই খাতির কারলেন। তাহার পর শ্রীপতি পিতা ও পত্রী সিংহল-রাজকনয। সুশীলাকে লইয়া দেশে প্রত্যাবর্তন কারল। পথে সাগরসঙ্গমের কাছে মগরায় দেবী ধনপাতির নিমাঁজ্জত ছয় 'ডিঙ্গা যথাযথ উদ্ধার করিয়া দিলেন । দেশে ফিরিয়। শ্রীপাঁতিকে শেষ পরীক্ষার সম্মুখীন হইতে হইল । উজানির রাজা বিক্রমকেশরী আবদার কাঁরলেন যে তাহাকে সেই দেশে মাটির উপর কমলে- কামিনী দেখাইতে হইবে। শ্রীপাঁতর খাতিরে চ্ছলভূমিতে, মশানে দেবী তাহার কমলে-কামিনী রূপ সকলকে দেখাইলেন । রাজা বিক্রমকেশরী তাহার কন্যাকে শ্রীপাতির হাতে সমর্পণ করিলেন । কলিকানে মত্যভূমিতে দীর্ঘকাল থাকা বড়ই কষ্টকর, এই সত্য বুঝাইয়। দেবী অবশেষে খুন্পনা শ্রীপাঁত ও তাহার দুই পতী- স্ব্গম্রষট এই চারজনকে লইয়া দ্বর্গে চাঁলয়া গেলেন । তিন ধনপাঁতকে এই সান্ত্বনা দিলেন যে লহনার গর্ভে তাহার বংশধর পুর জল্মিবে। তৃতীয় ও শেষ কাঁহনীর এইখানেই সমাপ্তি । তাহার পর “অষ্টমঙ্গল।” নামে "অনুবাদ" (সংক্ষপ্তসার) এবং প্রার্থনাদির পর গ্রন্থ শেষ । বণিক-খণ্ডের কাহিনী দুটি পৃথক গল্পের সংযোগে গড় বাঁলয়। অনুমান কার । এই অনুমানের কয়েকটি সূ আছে। প্রথমত, দুই পুরুষের—মাতার ও পুতের_আভিশাপপ্রাপ্তি একসঙ্গে নয়, মতেশ অবতার ভে৷ একসঙ্গে নয়ই। মনে হয়, রয্বমালার আভিশাপপ্রাপ্তি ও থুল্লনার দুর্গাত কালকেতুর ও শ্রীমন্তের কাহনীর মধ্য 'নাক্ষগ্ন ৷ ঘ্তীয়ত, কালকেতু ও শ্রীপাঁত, দুই জনেরই জন্ম শিবের আভশাপে, কিন্তু খুল্লনার জম্ম দেবার আঁভশাপে । নীলাস্বরকে ও মালাধরকে শাপ দিবার কারণ বোঝা যায়, রক্রমালাকে শাপ দিবার কারণ স্পন্ট নয় । দেখাঁ অকারণেই কামদেবকে দিয়। রত্রমালার নাচে তালভঙ্গ করাইয়াছিলেন। বণিকৃ-থণ্ডের খুল্লনা আখেটিক-খতের ফুল্পরার প্রতিযোগী, সন্দেহ নাই। খুল্পন। দেবীর অনুগৃহীতা, ফুল্লরা যেন দেবার প্রাতিদ্বন্থী । সোদিক দিয়া খুল্লনার গণ্পে সার্থকত৷ বোশ। কিন্তু আখেটিক-খণ্ডের দেবী আর বণিক-খণ্ডের দেবী তো এক নয় । অথচ খুব ভিন্বও নয়। কালকেতুকে যিনি অনুগ্রহ করিয়াছিলেন তান অরণ্যানী চণ্ডী, আরণ্য জীবের মাতা ও ধান্্ী। গভীর অরণোর প্রাণদের হিতের জন্যই তান “ছল গোঁধিকা” হইয়৷ কলিকেতুকে এশ্বর্যবর দিয়াছিলেন । খুল্পনাকে যান বর দিয়াছিলেন তিনিও বনদেবত। তবে অরগ্যানী বা গ্রভীর বনের ধান্রী-মাত৷ নন, তান সকল পশুর রক্ষায় নন, প্রাণীর বিশেষ দুর্গাতর— রণে-বনে হারানো-পাওয়ার দেবতা, মাঠে-ঘাটে 1দশাহারার উদ্ধারকারিণী । তৃতীয়ত, খুনল্পনার দুর্গাতহারিপী ও ধনপাঁতর দুর্গাতকারী এবং শ্রীপাঁতর জয়দায়িনী দেবী এক নন। খুল্পনার দেবাঁ চ্থছলদেবতা, আর ধনপাঁতকে বিড়ান্থত কাঁরয়াছিলেন এবং শ্রীপাঁতকে সৌভাগ্য দিয়াছিলেন যে দেবী তিনি জলদেবত। । শ্রীপাঁতির দেবীর সঙ্গে কালকেতুর দেবীর যোগাযোগ আছে বৈপরীত্য । কালকেতুর দেবী স্থুলদেবতা, তার প্রতীক গোধা, শ্রীমন্তের দেবী জলদেবতা, তাব প্রতীক —কুস্ভীর-মকর নয়_-পন্ন ও হস্তী। একজ্রন অভয়৷ দুর্গা আর একজন গজলক্ষী (বা মনসা )। এই দুই দেবতা যাহারা বাঙ্গালীর পুরাণকথায় চন্ডী ও মনসা রূপে দেখ৷ দিয়াছেন তাহারা গোড়ায় একটি দেবতা ছিলেন—বিষ্ক-মাধবের শক্তি দেবতা । প্রাচীন পুরাণকাহনীতে ইনি “একানংসা' নামে আঁভাহত ॥ ৪ দেবতা-কথা কবিকঙ্কনের দেব-থণ্ডের কাঁহনীর পূর্বভাগ পুরাণ-কাহিনী হইতে নেওয়া । মধাভাগ কালিদাসের কুমারসন্ভব হইতে গৃহীত। শেষভাগের মূল-ভাগ্ডার লৌকিক গণ্প ও ছড়া । নিজের গৃহস্থালির দারিদ্যে শিবগৃহিণী যে কতটা কাতর ছিলেন তাহার একটু ছবি প্রাকৃতপৈঙ্গলে ধৃত একটি লৌকিক ছড়ায় প্রাতীবাস্বত আছে । ছড়াটি এই বালে কুমার ছঅমুগুধারী উবাআহাণ৷ মুই এব্ধণারী । অহংিসং খাই বিসং ভিখারী গঈ ভাঁবন্তী কিল কা হমারী ॥ “ছেলে ছোট, তার ছটা মুখ ( অর্থাং ছজনের খাবার খায় ), আমি একলা মেয়েমানুষ (সংসারে, তায় ) সম্লহান । (কর্তা) ভিক্ষাবৃত্তি, দিনরান্রি বিষ (ভাঙ ) খায় । কাঁ হইবে আমার গাঁত !* আখেটিক-থণ্ডের কাহনী মুকুন্দ লৌকিক গপ্পের মধ্যে পাইয়। থাঁকবেন। ২৯ সংখাক পদের ভানিতার পাঠাস্তর, “মুকুন্দ রাচিল গোরীর, লৌকিকের ভাষা” এবং ১০১ সংখ্যক পদের ভনিতা, “শ্লীকীবকন্কণ গান গীত ভূগুবংশ।” অনুধাবননীয় । তবে ভূঙগুবংশের এখন কোন সন্ধান নাই । কংস ( কাসাই ) নদের তীরে তিনি যে-দেবীর প্রথম মন্দির সাপটি ১১ প্রতিষ্ঠার উল্লেখ করিয়াছেন তাহা হয়ত তমলুকের বর্গভীমা১ মন্দিরের প্রাচীন এঁতিহ্যবহ । সুক্গদেশে দামলিগ্ত নগরে (এই চ্ছান প্রাচীন কংসনদের তীরে ) অবা্ছত দেবী বিশ্ধ্যবাসিনীর মাহাত্মের গণ্প আছে দশকুমারচারিতের ষষ্ঠ উচ্ছ্বাসে । সুতরাং সে দেবীর এমন মাহাত্মযকাহিনীর লৌকিক ভাষা হইতে আগত অসঙ্গত অনুমান নয় ফুল্পরা নামটিও সাক্ষাং লৌকিক ( অবহট্ু ) হইতে নেওয়। বলিয়৷ বোধ কাঁরি। দেবী গোধা রৃপ ধাঁরিয়া কালকেতুর ঘরে আনীত হইয়। তাহাকে ধনদান করিয়াছিলেন, এই ব্যাপারটুকুও খুব প্রাগনকালের এক বিস্মৃত কাঁহনীর রেশ টানিয়াছে বালয়া মনে করি । বৌদ্ধ-সংস্কতে রচিত প্রাসদ্ধ অবদান- গ্রন্থ মহাবন্তুতে যে 'গোধা জাতক" আছে তাহার সঙ্গে মুকুন্দ-বার্ণত গোধা বৃত্তান্তের অন্তরঙ্গ এক্য পাঁরলক্ষিত হয় ৭ বৌদ্ধ-কাহিনীটি এখানে সংক্ষেপে অনুবাদ কাঁরিয়া দিতোছি। বহুকাল পূর্বে বারাণসীতে রাজ৷ ছিলেন সুপ্রভ । তাহার একমান্র পুর সুতেজ । রাজকুমারের অশেষ গুণ । অমাত্যবর্গ, সৈন্য-সামস্ত ও শ্রেষ্ীর৷ এবং সহরের ও গ্রামের লোকেরা সকলেই তাহাকে ভালোবাসে । জানিয়া রাজার একান্ত ভয় হইল, আমাকে মারিয়৷ ইহারা কুমারকে রাজ। কারিতে পারে । তিনি কুমারকে বনবাসে পাঠাইলেন । সঙ্গে রাহল তাহার ভার্যা। তাহারা হিমালয় খণ্ডের এক বনভূঁমিতে তৃণকুটীর আশ্রম নিম্নাণ কারয়৷ বাস করিতে লাগিলেন। বনজাত ফলমূল ও শিকার-কর৷ মূগ-বরাহের মাংস ভক্ষণ কাঁরয়া তাহারা কাল কাট্াইতে লাগিলেন । সুতেজ একাঁদন আশ্রমের বাহিরে গিয়াছেন এমন সময় এক 'বিড়াল এক কুণ্রী গোধ। মারিয়া আনিয়৷ সুতেজের পড়ীর নিকট ফোলিয়া 'দিয়৷ গেল। মৃত কুশ্রী পশুটিকে মহিল৷ হাতেও ছু'ইলেন না । ফল মূল পাত৷ আহরণ কারয়। কুগীরে আসিয়। কুমার গোধাটিকে দোখিলেন, পর়ীকে জিজ্ঞাস৷ কাঁরয়৷ জানিলেন যে ওট। বিড়ালে ফেলিয়া গিয়াছে । কুমার বাললেন, এটাকে সিদ্ধ কারিয়। রাখ নাই কেন। পত্রী বলিলেন, গোবর ডেল৷ মনে কারয়। পাক কার নাই। কুমার বাললেন, এ তে। অভক্ষ্য নয়, মানুষের ভক্ষ্য । এই বালয়। কুমার ছাল ছাড়াইয়া গোধাটি আস্ত সিদ্ধ কারলেন এবং উঠানে গাছের ডালে ঝুলাইয়৷ রাখিলেন ৷ পত্রী ঘড়। লইয়া জল আনতে গেলেন । বাঁলয়া গেলেন, জল আনিয়া আসিয। আহার করিব। সিদ্ধ করা গোধ। দেখিয়৷ তাহার খাইবার ইচ্ছ৷ হইয়াছিল । ইহ। বুঝিয়া রাজকুমার ভাবল, যতক্ষণ সিদ্ধ করা হয় নাই ততক্ষণ এই রাজকন্যা গোধাকে ছু'ইতেও চাহে নাই, থম সিদ্ধ হইল তখন থাইতে উৎসুক । আমার উপর ইহার যাঁদ ভালোবাসা থাকিত তবে আম যখন ফলমূল আহরণে গিয়াঁছলাম তখনই রীধিয়া রাখিতে পারিত। সুতরাং আমি ইহাকে ভাগ ন৷ 'দিয়৷ গোটা গোধাটাই খাইব। রাজকন্যা জল আনিতে গেলে রাজকুমার গোধাটি খাইল । কুমারপত্রী ফিরিয়া আসিয়া দ্বামীকে জিজ্ঞাসা করিল, গোধা কই? স্বামী বাঁলল, পলাইয়া গিয়াছে । কুমার পড়ী ভাবিল গাছে ঝোলানো আস্ত সিদ্ধ কর৷ গোধা পলাইল কি কাঁরয়৷ | তাহার ধারণা হইল, স্বামী তাহাকে আর পছন্দ করেন না। তাহার মন খারাপ হইয়। গেল ॥ কিছুদিন পরে রাজ। সুপ্রভ কালগত হইলেন । অমাত্যের৷ আসিয়া কুমার সুতেজকে লইয়া গিয়৷ রাজ- [সিংহাসনে বসাইল । রাজরানী হইয়। রাজার সর্যষের অধিকার পাইয়াও কুমারপত্ীর মনের আগুন নিবিল না । (এই গণ্পের প্রসঙ্গে বুদ্ধ বাঁলয়াছলেন, সে জম্মে তানই ছিলেন সুতেজ, আর তার যে গত্মী তান ছিলেন যশোধরা | ) এই জাতক-কাহনীর সঙ্গে কবিকষ্কণের বার্ণত কাহিনীর মিল এই ভাবে দেখানে যায়, ১ নামটি অদ্ভুত রকমের। অনুমান করি এখানে “বর্গ' ফারসী শব, অর্থ, (১) “বর্গ হইলে—বাছাযনত ঘন্টা, (২) “বহ্রগান্‌ হইলে—নাবিক। ছুইটি অর্থই থাটে। অরণ্যানীর ঘণ্টার উল্লেখ খগ্‌বেদে আছে। মমুদ্রপথের অদুরে চণ্ডী নৌপারগিনী হওয। স্বাভাবিক। আচ টিক ১ ১ দুই কাহিনীতেই নায়ক-নায়িক৷ তৃণকুটীরশনবাসী এবং বন্যফলমূলাশী ও মৃগয়াজীবী ২ দুই কাহনীতেই নায়ক গোধার ( ব৷ দেবীর) প্রাত অপ্রসম্ন নয়, নারিক। অপ্রসা ৩ দুই কাহিনীতেই গোধা-্প্রাপ্তির পর নায়কের রাজালাভ । জাতক-কাহনীতে গোধা স্বেচ্ছায় আসে নাই অনিচ্ছায়ও আসে নাই । তাহার মৃতদেহ আনীত হইয়াছিল । কালকেতু গোধাকে মারিয়া আনে নাই, ধরিয়৷ বীধিয়া৷ আনিয়াছিল এবং গোধিকা স্বেচ্ছায় ধর দিয়াছিল। মনে হয় মুকুন্দের গণ্পের পুরানো রূপে গোধিকা৷ কালকেতুর মৃগয়ার পশু হইয়। মৃতাবস্থায় আনীত হইয়াছিল । আর জাতক গম্পটির প্রাচীনতর রূপেও সম্ভবত সুতেজই শিকার কাঁরয়। আনিয়াছিল। এই অনুমানের দুইটি সূ প্রথমত কোন বিড়ালের পক্ষে “বঠর৷ রৌদ্রী গোধা” কে মারিয়া আনা সম্ভব নয়। বোধ হয় জাতক-কাহিনীটি যিনি লিখিয়াছলেন তিনি গোধা বালিতে গৃহগোধিকা অথবা গিরাগিটি বুঝিয়াছিলেন ৷ গৃহগোধিক৷ ও গিরগিটি নিতান্ত ক্ষুদ্রকায়, এবং মানুষের খাদ্য কখনই ছিল না। গোধ! সুখাদ্য এবং আযুর্বেদে প্রশস্ত মাংস বলিয়া উাল্লাখত । দ্বিতীয়, রাজকুমার যাঁদ শিকার করিয়াই না আনবেন তাহা হইলে এমন প্রত্যাশা করেন কিসে যে তাহার আগমনের আগেই পত্রী জন্তুটিকে রীধিয়া৷ রাখিবেন 2 সুতরাং রাজপুর প্রথমে গোধ। [শিকার করিয়৷ আনেন তাহার পর ফলমূলের জোগাড়ে "দ্বতীয়বার বাহির হন, কালকেতু যেমন ঘরে গোধা আনিয়। ফুল্পরাকে সরাগৃহে “খুদসের” ধার কারতে পাঠাইয়াছিল । দেবী চন্ডীর সহিত গোধার সম্পর্ক অনেকাঁদনের । প্রথমে গোধা-গোধিক। ছিল দেবীর এক অন্ত্—দুর্গম [শখরে গমনপথের দিশারী অথবা সপ্গহস্ত। । প্রাচীন বাদশার অদূরবর্তাঁ উদয়গার পর্বতের গুহায় যে অব্টাদশভুজ। বিরাট দেবীমূ্তি আঙ্কত আছে সে মৃতির এক হাতে আছে গোধা । এই গুহা খোদাই হইয়াছিল গৃপ্ত সম্াট দ্বিতীয় ন্তরুপ্তের আমলে খ্রীষ্ফীয় পণ্টম শতাব্দীতে । একাদশ-দ্বাদশ শতাব্দীতে উৎকীর্ণ দেবীমুর্ততে গোধা সাধারণত পাদপাঁঠর্‌পে আকা থাকে । মুকুন্দের কাব্যে বন্দিত৷ দেবী দশভুজ। নহেন, ছ্বিডুজ৷। তানি 'অভয়া চত্তী (দুর্গা) পদ্াসনস্থা,—প্রাঈীন বৌদক সাহিত্যে তানি অরণ্যানী, সংস্কৃত সাহিত্যে বিদ্ধাবাঁসিনী দুর্গা । অভয়া দুর্গার মৃতিতে পাদপঁঠে গোধিকা আক্কত দেখা যায়। (কালকেতু দেবার ছর্প দেখিতে চাঁহলে দেবী দশভুজা মহিষমার্দনী রূপ দেখাইয়াছিলেন। এ দেবীর ঠিক “ছ্কর্প" নয়, লোকালয়ে পৃঁজিত, সর্জনপরিচিত, দুর্গার রূপ । দেবীর এই রৃপই কালকেতুর জান৷ ছিল । অন্য রূপ দেখলে তাহার বিশ্বাস হইত না। রি আখেটিক-খণ্ডে যেমন, বণিক-খণ্েও তেমনি দেবী অভয় চন্ডী—অরণ্যানী বিন্ধ্বাসিনী ( বিদ্বয বা “বিজু” বন মানে ষে অরণ্যে পথঘাট নাই, দিশাহারা )। “মৃগাণাং মাতা” তিনি অরণ্যে হারা পশুর, সংসারে হার! মানুষেরও [বিপদনাশিনী । কালকেতুর চত্তী তেজদ্বী পৌরুষের পক্ষপাঁতিনী, তিনি সোজাসুজি পুরুষের পূজা চান । খুল্লনার চণ্ডী অসহায় নারীর পক্ষপাতিনী, তিনি চান পৌরুষকে দমন কারতে | অন্তঃপুরের খিড়কি দরজ। দিয়া প্রবেশ করিয়। তিনি সদর মহলে পৃ প্রত্যাশা করেন । তবে খুল্লনার চণ্ডী পুরাপুরি অরণ্যানী নহেন তান অংশত পদ্লা। (এবং মনসা )— জলদেবত। ৷ মনসার মতে৷ তিনি ভরাডুবি করান, পুরুষকে কামের ছলন৷ করিতে তাহার বাধে না। এ চণ্ডী যেন পুরাণ-কা হিনীবানিগ্গত নন, ইনি আসিয়াছেন লৌকিক কাঁহনী হইতে । খুল্পনাকে যিনি অরণ্যে সহায়ত। কারয়া অহাকে পাঁতির ভালোবাসায় প্রতিষ্ঠিত কারয়াছিলেন তিনি আথেটিক-থণ্ডের চণ্ডীরই আর এক রূপ । কিন্তু তাহার পরে এই কাহনীতে দেবাঁর ষে প্রকাশ তাহার মধ্যে অরপ্যানী-বিস্ধ্যবাঁসনীর সন্ধান নাই । চন্ডীমঙ্গলের ধনপাতির উপাথ্যানের সঙ্গে মনসামঙ্গলের চাদে। রাজার উপাখ্যানের কাঠামোর বেশ মিল আছে । বাণিজো ভরাডুবি দুই উপাখ্যানেই সাধারণ ঘটনা । মনসামঙ্গলের উপাখ্যান প্রথমে নাথপন্থী যোগীঁদের গাথায় রূপ কউ কট ১ পাইয়াছল১ তাই কাহিনীর পাঁরণাঁত বংশলোপে । এবং সেই কারণে উপাখ্যানটি ভ্রু সমাজের গাহস্থ্য আসরে সমাদৃত হয় নাই । মুকুন্দের মতো৷ কোন সুশাক্ষিত কাবও তাই মনসামঙ্গল রচনায় অগ্রসর হন নাই। মনসামঙ্গল-কাহিনী কবিকঙ্কণের আবদিত ছিল না। চাদ বেনের প্রসঙ্গে তাহার এই উল্লেখই প্রমাণ “ছয় বধ্‌ জার গৃহে নিবসয়ে রীড়” । বণিকৃ-খণ্ডের একটি ব্যাপার আতশয় 'বাঁচন্র এবং খুব প্রাচীন । ধীাহারা মিথলজি-ঘটিত অলোৌকিকের চর্চা করেন তাহাদের কাছে ইহা মৃূলাবান্‌ ঠোকবে । ভারতবর্ষে শ্রীর ও লঙ্গ্মীর ( অথাং কাস্তর ও পুষ্টির ) প্রতীক ছিল পদ্ম এবং প্লা শ্রুত। দেবা, আর সগয়ের প্রতীক ছিল হস্তী (নাগ)। খ্রীষ্টপৃৰ দ্বিতীয় শর্তাব্দী হইতে কাস্ত ও ধাঁ্ধজ্রাপক যে স্থাপত্য চিন্র আবচ্ছেদে পাওয়া যাইতেছে সে হইল কমলবনে প্রস্ফুটিত পদ্মেব উপরে আসীন। শোভন৷ নারী, তাহার দুই পাশে দুই হাত শু'ড়ে জলকুদ্ত লইয়। তাহাকে আঁভযষেক করিতেছে । পরবতাঁ কালে এই মৃর্ত মনসার বিকল্প মূর্তি গজলক্মী বলিয়া গৃহীত হইয়াছিল । মনে হয় গজলম্ষ্মীর মৃর্ত বণিকদের জাতবৃন্তির লাঞ্থনরূপে দ্বীকৃত ছিল এবং পরে ইহাই তাহাদের উপাস্য বিশিষ্ট দেবীমূর্তি রূপে পুঁজিত হইতে থাকে । ধনপতি ও শ্রীপাঁতিকে দেবী নিজের যে মায়ামুর্ত দেখাইয়াছলেন তাহাতে হস্তী দেবীকে অভিষেক কাঁরতেছে না, দেবীই হস্তীকে বার বার নিগৃহীত কাঁরতেছেন। বণিকদের লাগ্নের এই বীভৎস রূপ দেখাইয়। দেবী ধনপাত ও শ্রীপাতিকে পরীক্ষ। কাঁরতে চাহিয়াছিলেন। আঁনিষ্টসূচক দুঃ্বপ্ন প্রকাশ করিতে নাই, কাঁরলে তাহা। ফলিয়া যাইতে পারে,_-এই ছিল তখনকার লোকের ধারণা । ধনপতি ও শ্রীপতি এই মায়াদৃশ্যের কথ৷ রাজসভায় প্রকাশ না করিলে তাহাদের বিপান্ত ঘটিত না, প্রকাশ কাঁরয়াই তাহার৷ নিদারুণ সঙ্কটে পাঁড়িয়া গেল। কমলে-কামনী মৃর্তকে তাহাদের ভাগ্যদেবীর ছলন। বর [িতাপুন্র বুঝতে পারে নাই । দেবীকে ধনপাঁত কামদৃঞ্টিতে দেখিয়াছিল । আখেটিক-খণ্ডের দেবীর আসল ( অর্থাং প্রাচীনতম ) রূপ যে কি ছিল সে দেবীর টীন্ততেই আছে । তবে [কিছু ?বকৃত ভাবে থাকায় এবং প্রাচীন দেবতত্ত সম্বন্ধে আমাদের যথেষ্ট জ্ঞান না থাকায় এতাঁদন ধাঁরতে পারা মায় নাই। আরণ্য কালঙ্গভূমির দেউলে পৃজ। লইয়া শঙ্কর-সদনে চণী জান নিজ বেশে অংশরূপে পৃজ। নিল কালঙ্গের দেশে । ৪৯। এখানে দেবী একাকী পৃজিত হইয়াছিলেন, শিষের শান্ত রূপে নয়, শিবের সঙ্গে তে৷ নয়ই । তবুও “অংশ” বালিবার কোন আপাত সার্থকতা দেখ যায় না । আসলে এখানে দেবী কৌমারী রূপে পূজা লইয়াছিলেন ৷ এই রূপে ষ্ঠাহার প্রাচীন ও বাশষ্ট আভিধা পাই 'একানংসা' (একানংশ। )। ইহার অর্থ হইল, আইবড় সমর্থ মেয়ে । ধঅনংসা" উৎপন্ন হইয়াছে সুপ্রাচীন নসৃ-ধাতু হইতে (মানে দেহ-সংযোগ করা বা হওয়া )। এই হইতে খুব প্রাচীন দেবতাদ্য়ের নাম, 'নাসত্য' আসিয়াছে । তাই চন্ডীর একটি নাম কৌমারী । এই নামের একটুমাত সার্থকতা দেখা যায় দুর্গোৎসবে কুমারী-পৃজ। অনুষ্ঠানে " ] তৌলন-কথ। মুকুন্দের রচন৷ ছাড়াও বাংলায় চন্ডীমঙ্গল আরও দুই চারথানি পাওয়। গিয়াছে । এ চন্ডীমঙ্গলগুলি আলোচনা কাঁরলে বিষয়বন্ুর পারকপ্পনা ও বিন্যাস অনুসারে এগুলকে তিন থাকে ফেল। যায়,—পাশ্চমবঙ্গের পুি, উত্তরবঙ্গের 7৯. এসিয়াটিক সোসাইটি, কলিকাতা কর্তৃক প্রকাপিত বিগ্রদাসের মনসামঙ্গল গ্রন্থের ভূমিকা জষ্টবা | সালেক ১৪ পুথি, পূর্ববঙ্গের পুথি । পশ্চিমবঙ্গের সব চেয়ে পুরাতন চশ্ডীমঙ্গল কাবিকষণ মুকুন্দের । উত্তরবঙ্গে পুরানো চন্ডীমঙ্গল তথাকাঁধত মানিক দত্তের । পূর্ববঙ্গের পুরানে৷ চ্ভীমণ্ডল মায়বানন্দ বা মাধধের এবং রামদেবের । দুই জনেই ব্রাহ্ম ছিলেন । তিন থাকে মূল কাহনী দুইটিতে মোটামুটি ভিন্নতা নাই । স্পষ্ট ভিন্নত৷ আছে উপক্লম অংশে এবং নীলাদ্বরের ও দেব-নটনটীর স্বগ্ন্্ংশের মূল কারণে । মানিক দত্তের চণ্ডীমঙ্গলের প্রথম অংশ হইল চন্ডীমঙ্গলের আদি কাব এবং চ্ডীপৃজার আদ পুরোহিত মানিক দত্তের কাহিনী । দেবার বাসন। মত্যলোকের পৃজা৷। তাহাতে বাধ! ধূম্লোচন মহিযাসুর । তাহার ভয়ে দেবতারা মর্তাভূমে নামিতে সাহস পান না। অতএব দেবা ধূম্নকে বধ কাঁরলেন। দেবাঁর আদেশে হনুমান তাহার পূজা-প্রাতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে দিব্য সরোবরের ধারে বিচি দেউল তুলির দিল । দেবা সে মন্দিরে পূজা লইতে আিলেন, কিন্তু ভক্তের ভিড় ন। দেখিয়। খুঁস হইতে পারিলেন না। তিনি নারদকে বাললেন, প্রতাহ নৃতাগীতে তাহার পূজার বাবস্থা কারিয়া দেউল জশাকাইয়৷ তুলিতে হইবে । নারদ বলিলেন, এ কাজ পারিবে কাল৷ খোড়। মানিক দত্ত । দেবা মানিক দত্তকে স্বপ্নে দেখা দিয়া তাহার শিয়রে নিজের পৃজাপদ্ধীত—ব্রতকথার পুথিখানি রাখিয়া আসলেন । দেবার কৃপায় মানিক দত্তের সব ব্যাধি দূর হইল । মানিক দত্ত লেখাপড়৷ জানে না। সে শ্রীকান্ত প্ডিতের কাছে পুথির মর্ম বুঝিয়া লইল | বাংলায় লেখা হইল তিন শ ষাট পদে চন্ডীমঙ্গল । (রচাঁয়ত। শ্রীকান্ত ও মানিক উভয়ে, কিং একলা শ্রীকাস্ত এ কাজ করিয়াছিলেন কিন৷ বোঝা যায় না। ) তাহার পর গানের দল ধাধ৷ হইল । মানিক দত্ত মূল গায়েন, রঘু আর রাঘব দুইজন দোহার, এবং শ্রীকান্ত পাত মার্দন্গিক । কলিঙ্গ নগরে আসিয়া তাহারা চগ্ীর গান গাঁহয়৷ ফিরিতে লাগলেন ৷ নূতন ছাদের গান শুনিয়৷ লোকে মুগ্ধ হইয়া গেল এবং সেই গানের লোভে ঘরে ঘরে মঙ্গলচণ্ভীর ব্রত অনুষ্ঠিত লাগিল । অঁচিরে এ খবর রাজার কানে গেল । রাজ। মানিককে সভায় আনাইলেন। সে দেবাঁর অনুগ্রহ পাইয়াছে, তাহার এই কথায় কুদ্ধ হইয়া রাজ! তাহাকে কারাগারে আটক কাঁরয়। রাখলেন । রাতে দেবা স্বপ্নে রাজাকে ভয় দেখাইলেন । রাজার মতি ফিরিয়া গেল। মানিক দত্তকে খাতির করিয়া রাজ! ফোড়শোপচারে দেবীর পৃজ। দিলেন দেউলে। দেবী প্রসম্ন হইযা৷ বর 'দিতে চাহিলে রাজা বলিলেন, আমার তে৷ কিছু শারীরিক কষ্ট ও সংসারিক অভাব নাই, তবে দিবে যাঁদ তে। নবধা-লক্ষণ ভন্তি ও ভালো জ্ঞান দাও । এই হুইল মর্ভ্যল্লোকে চ্জীপৃজা প্রবর্তনের হীতিহাস।১ নাঁলাম্বরের শাপপ্রা্ড উপলক্ষ্যে কালকেতুব পূর্বপুরুষ ধবলকেতু-সবলকেতুর উৎপান্ত বার্ণত হইয়াছে। নীলাম্বর দেবাঁর প্রিয় ছিল । শিব তাহাকে শাপ দেওয়ায় দেবী অভিমান করিয়া বাপের বাড়ির দিকে প৷ বাড়াইলেন । নারদ ও শিব বাধা দিতে গেলে দেবী হাতের একগাছি কাকন তাহাদের দিকে ছুপড়য়। দিলেন । কন্কণের দীণ্িড়ে [শিব ভয় পাইলেন । তাহার কপাল ঘামিষ৷ টস টস কারয়৷ দুই ফোটা ঘাম মাটিতে পাঁড়ল। তাহাতে তখনি জগ্ম লইল দুই পালোয়ান বার ধবলকেতু ও সবলকেতু । ধাবমান দেবী ও তাহার পশ্চাৎ ধাবমান নারদকে দেখাইয়া শিব তাহাদের বাঁললেন, যাও ওই দুইজনকে ধর গিয়। । দেবী ক্ুদ্ধ হইযা তাহাদের শাপ দিলেন, তোমর৷ ব্যাধবৃত্তি করিয়া জীবন ধারণ কর। তাহারা শিবের কাছে ফাঁরয়া আসলে শিব বাললেন, আম 'কিছু কাঁরতে পারিব না যেহেতু মায়ের শাপের কাটান নাই । তবে তোমাদের বংশে কালকেতু জ্মিবে, তাহার বিবাহের সময়ে তোময়া কর্গে আসিবে । এই কালকেতুর কাহিনীতে আর কোন বিশেষত্ব নাই, তবে শিব-দুর্গার প্রচ্ছন্ন বিরোধ তলায় তলায় রাহয়া গিয়াছে । তাড়ু দত্ত শুধু ঠক নয় । ভাড়ও বটে। ধনপাতির কাহিনী বিশেষস্ববার্জত | “মানিক দত্ত" শুধু এই নামটি ছাড়া উত্তরবঙ্গের চন্ডীমঙ্গলে- যে পুথি আমি দেখিয়াছি—তাহাতে এমন কিছু ১ বাঙ্গাল! সাহিত্যের ইতিহাস প্রথম খণ্ড পূর্বার্ধ পঞ্চম সংস্করণ পূ ৫০৮*৫১৯। চিল আজ ১৫ পাই নাই যাহা মুকুন্দের পরবর্তাঁ কালের নয় বলা যায় ৷ মুকুন্দের কাব্যরচনার কালে চন্ডীমঙ্গলের কথাবস্তু হয়ত যে মানিকদত্তের পদ্ধাতি (“মানিক দত্তের দাও” ) নামে অভাহত ছিল তাহ। কবিকঙ্কণের কাব্যের কোন কোন পুথ ও ছাপা সংগ্করণ হইতে জানা যায় ।১ কিন্তু সে উল্লেখ মুকুন্দের নহে, গায়নের উল্লেখ এবং 'দিগবন্দনায় । 1দগবন্দনা গায়নদেরই বন্ধু । সুতরাং উপরে বর্ণিত মাঁনক দত্তের কাহিনী অর্বাচীন হইতে বাধা নাই । এই গণ্পের মধ্যে যাঁদ কিছু সত্য নিহত থাকে তবে বুঝিতে হইবে যে মানিক দত্ত কাব ছিলেন না, প্রাচীন গায়ন ছিলেন মাত্র । ধর্মমঙ্গল- কাহনীকে মানিকরাম গাঙ্গুলি “লাউসেনি দাড়া” বলিয়াছেন । সেই ভাবে “মানিকদত্তের দাড়া” মানিকদত্ত-ঘটিত কাহিনীটিই বুঝাইবে, সমগ্র চন্ডীমঙ্গল -কাহনী নয় । ৮ মানিক দত্তের চণ্ডীমঙ্গলের পুথি উত্তরবঙ্গের, বিশেষ করিয়৷ মালদহ দিনাজপুর অণ্চলেই পাওয়া গিয়াছে । দু একটি ছাড়া সবই খাত এবং অর্বাচীন প্রাথ । প্রাচীনতম পুথি অস্টাদশ শতাব্দীর আগেকার নয় । পূর্ববঙ্গের পুরানে৷ চন্ডীমঙ্গল কবি দুইজন, “দ্বিজ" মাধবানন্দ (মাধব ) ও “দ্বজ” রামদেব । মাধবানন্দের রচনার পুথি সবই চাটিগ্রাম অঞ্চলের, রামদেবেরত পুথি সবই নোয়াখালি-ন্রিপুরা৷ অণ্লের। দুই কবির রচন৷ এতটা ঘনিষ্ঠ যে একই মূল রচনার দুই রূপান্তর বাঁলতে ইচ্ছ। হয় । মাধবানন্দের রচনার বিশিষ্ট কোন নাম নাই, তবে শেষের ভাঁনত৷ হইতে “সারদাচারিত' বলা যাইতে পারে । রামদেবের রচনার নাম “অভয়ামঙ্গল? ৷ মাধবানন্দের সব চেয়ে পুরানো পুথি দুইটির লিপিকাল যথাক্রমে ১৭৫৯ ও ১৭৭৭ ধীষ্টাব্দ । কোন কোন পুথিতে রচনাকাল দ্যোতক পয়ার আছে, কিন্তু তাহ। হইতে ঠিক তারিখ উদ্ধার করা যায় না । রামদেবের তিনখানি পুথি পাওয়া গিয়াছে, তাহার মধ্যে একখানি অধুন। বিলুপ্ঠ, অপর দুই খানির লাঁপকাল যথাক্রমে ১১৮১ সাল (5১৭৭৪ খীষ্টাব্দ ) ও ১২২৮ ন্রিপূরাব্দ (১৮২৪ থীষ্টাব্দ)। শেষের পুথিটিতে শকাঙ্ক দেওয়া আছে (“ইন্দু বাণ খাঁষ বাণ বেদ” ) পাঁচটি সংখ্যায়_-১৫৭৫৪, ঠিক নির্দেশ পাই না। দুইটি রচনাই মুকুন্দের রচনার তুলনায় অনেক সংক্ষিপ্ত । মাধবানন্দ-রামদেবের বর্ণিত কথাবন্তুতে প্রধান বিশেষত্ব হইল উপক্রমে শিবদুর্গার আখ্যান পরিবর্তে মঙ্গল দৈত্যের কাহিনী । , দেবীর মঙ্গলচণ্ডী নামের ও তাহার মাহাত্ম্যকাব্যের চীমঙ্গল নামের “মঙ্গল” অংশের অর্থ ভুলিয়া না৷ গেলে এই ব্যাখ্য-কাহিনীর উত্তব হইত না। (মনে হয় মঙ্গল দৈতোর ভাবনার নীচে সপ্তদশ শতাব্দীতে মোগল- বাদশাহদের প্রতপের উত্তেজন৷ ছিল।) এই কাহনী মানিক দত্তের ধূয্লোচন-কাহিনীর স্থানীয় । তাহার পর আভিনবত্ব হইল দেবী-আরাধনার ফলে ইন্দ্রের দুর্গাতদূর । তাহার পর নীলান্বরের ব্যাপার । দেবতাদের আয়ু সুদীর্ঘ, তবে ঠাহারা অমর নহেন । লোমশ মুনির কাছে এই জ্ঞান পাইয়৷ নীলাম্বর অমর হইবার জন্য শিবের কাছে যোগতত্ত শাখতে চাহল। শিব তাহাকে তাহার বিষ্ুপ্জায় ফুল যোগাইবার ভার দিয়াছিলেন। শাপমুন্তির পর নীলাস্বর 1শবের কাছে যোগ-উপদেশ পাইয়াছিল। কালকেতুর উপাখ্যানে অল্প ঘপ্প ব্যাতক্রম আছে । কালকেতুর পিতা সিংহের কবলে পাড়িয়া নিহত হয় এবং তাহার পত়ী সহমরণে যায় । সিংহের সঙ্গে কালকেতুর যুদ্ধের কারণ হিসাবেই সঞ্জমকেতুর বিনিপাত পারকীষ্পিত। কালকেতু-ফুল্পরার সংসারের বর্ণনায় অত্যন্ত অসঙ্গতি আছে। ঘরে কিছুমান্র সংস্থান নাই, তাই ১ বাঙ্গাল! সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম খণ্ড, পুর্বর্ধ, পঞ্চম সংস্করণ পৃ ৫০৮। ২ প্রথম ছাপা চগ্রকান্ত চক্রবভীর সংস্করণ (দ্বিতীয় মুদ্রণ ১৯০৫ ), তাহার পর ত্রীসধীভূষণ ভটাচাধের সংস্করণ “মঙ্গলচণ্ডীর গীত" নামে (কলিকাতা বিশ্ববিচ্যালয়, ১৯৫২ ))। ৩ ্রীআশুতোধ দাস সম্পাদিত ( কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, ১৯৫৭ )। ॥ বাঙ্গাল। সাহিত্যের ইতিহাস, প্রথম থণ্ড, পূর্বার্ধ পঞ্চম সংস্করণ পূ ৫২৭ ইতাদি। এ অপয়াধ, তৃতীয় সংস্করণ পৃ ৩*৫। মৃগয়ায় গোধাই সই । এ দিকে ফুল্পরা হাটে মাংস বিক্রয় করিয়া কড়ি আনিয়।৷ দিতেছে চাল কিনিবার জনা, অথচ সার কাছে সে গিয়াছে ধাটি চাহিয়া আনিতে! আর একটি আঁভনবত্ব বন-কর্তনে গোদা-বাঘের বিরোধ । আপাতত মনে হয় গোদ। বেরুনিয়াদের দলপাঁতির নাম । মূলে হয়ত গোধা ও বাঘের লড়াই ছিল। তৃতীয় অভিনবত্ব, কারামুস্ত কালকেতুর রাজার কাছে মাথ নোগাইতে অন্ীকার। হস্তী আনিয়া তাহার মাথা নীচু কাঁরতে বাধ্য কাঁরলে হস্তী বিদীর্ণ হইয়া গেল। তখন রাজ। কালকেতুকে দেবীর বরপুর বালিয়৷ উপলদ্ধি কাঁরলেন। ধনপতির উপাথ্যানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য আভনবত্ব হইল এই যে ধনপাতি লহন৷ ও থুল্লনা তিন জনেই শাপম্রষ্ট দ্বগ্ণবাসী । প্রথমে অভিশাপ পাইল মণিকর্ণ ও তংপড়ী চন্দ্ররেখা । ইহারা যথক্রমে ধনপাঁত ও লহন। রূপে জন্ম লইল। তাহার পরে শাপপ্রস্ত হইল আর এক অপসরা-নর্তকী, সে হইল খুল্পন৷ । দ্বিতীয় অভিনবত্ব হইল রাঘব দত্তের সহিত প্রাতিযোগিত৷ করিয়। পায়র। উড়ানো । লক্ষপতির কোনই আপাতত হয় নাই থুল্লনাকে দোজবরে বিবাহ দিতে । ধনপাঁতর পিতৃশ্রাদ্ধের উল্লেখ নাই, পায়রা-বাজিতে পরাজত রাঘব দত্তের শনুতাই ধনপাতির জ্ঞাতিগোষ্ঠীকে খুল্পনার পরীক্ষা গ্রহণে বাধ্য করিয়াছিল । অপর উল্লেখযোগ্য ব্ঁতক্রম মালাধর শিবের শাপ পায় নাই, দেবীর শাপ পাইয়ছিল । পিতা-পুত্রের বাঁণজ্য-যান্তা পথে একবারও নীলাচলের উল্লেখ নাই । মাধবনন্দ ও রামদেবের রচনায় মুকুন্দের দাড়। হইতে কিছু কিছু বরুত৷ ও চু/ঁত থাকিলেও মুকুন্দের রচন৷ যে পূর্ববঙ্গের কাবিদ্বয়ের সম্পূর্ণ অজ্ঞাত ছিল এমন বাঁলতে পাঁর না । “সোন। রূপা নহে বাপ এ বেঙ্গা পিতল"— কবিকঙ্কণ-চন্ডীর এই ছত্র আমাদের আদর্শ পুথিতে না থাকলেও আঁধকাংশ পুথতেই আছে । সুতরাং এ ছর মুকুন্দের মৌলিক রচনা বাঁলয়া৷ নেওয়া যায়। এই ছন্র মাধবানন্দ ও রামদেবের শোন! ছিল কিন্তু মানে জান ছিল ন৷। তাহারা ইহা৷ কালকেতুর মুখে দিয়াছেন । মুদ্রুত (১৯৫২) পাঠ অনুসারে মাধবানন্দ 'লাখয়ছিলেন, “বেক িতল- খানি ভাঙ্গামু কথায়ে” । রামদেবের ছাপা (১১৫৭) বইয়ে পাঠ, “রাঙ্গ পিতনখানি মোরে দিলা কর্মফলে” । রামদেবের মতে দেবী কালকেতুকে দয়াছিলেন হাতের একগাছ কাকন, মাধবানন্দেগ মতে “ধন”—আনির্দিষ্ট মূল্যবান বন্তু। এই "ধন” লইয়৷ কালকেতু ভাঙাইতে গিয়াছিল সোমদত্তের ঘরে । কাকণ লইয়৷ গিয়াছিল সে সুশীল বেনের কাছে । উভয়ই দেবীর নির্দেশে । বেনের “সুশীল” নামটি মুকুন্দের “দুঃশীল” মুরারি শীলের অবোধ প্রীতধ্বানর মতে। । কোটালের কথায় কুদ্ধ শ্রীপতি উত্তেজনার বশে মূল্যবান টোপর জলে ফোঁলয়। দিয়াছিল,_এ কাহিনী আমাদের আদর্শ পুথতে না থাকিলেও মুকুন্দের মূল রচনায় ছিল বাঁলয়। স্বীকার কারয়াছি। এই কাহিনী রামদেবের রচনায় নাই, কিন্তু মাধবনন্দের রচনায় জলে টোপর ভাসানোর উল্লেখ আছে । এখানে কোটাল টোপর লইয়া রাজাকে দেখাইয়াছিল । কিন্তু তাহাতে জলে ফেলার কোন অর্থই হয় না। অতএব বস্তুটুকু মুকুন্দের রচন। হইতে নেওয়।৷ এবং ব্যাপারটির আসল তাৎপর্য—দেবী কর্তৃক শঙ্খাঁচলরূপ ধাঁরয়া৷ তাহ। উদ্ধার কর৷ এবং খুল্পনাকে দেওয়া— সম্পূর্ণ হারাইয়৷ গিয়াছে । | দেবী চন্ডীর দেবলোকে আঁদ কীর্তির প্রসঙ্গে মুকুন্দ মঙ্গলদৈতোর উল্লেখ করেন নাই, কাঁরয়াছেন মধুকৈটত বধ। করিয়া ব্রহ্মার নিস্তার । তাহার পর দেবতাদের এবং ইন্দ্রের নিস্তারের হীঙ্গত আছে বটে কিন্তু সে গোঁতমের শাপে নয়, দুর্বাসার শাপৈ ॥ এ সবই পুরাথ-কাহিনা । মধুকৈটভের ভয়ে ব্রহ্মার শরণ দুর্ধবাসার শাপে দুঃখী হইল দেবগণ । ১৭ সুরলোকে সুগ্ছির কাঁরলে সুররায় প্রথমে সম্মান পাইলে ইন্দ্রের সভায় । ৩৭৮ ॥ ১৬ গীত-কথ! আগেই বালিয়াছি, সে কালে—যখন অবহত্র-লৌকিক হইতে নব্য আর্য সাহিত্যের বাঁজ প্রথম “অক্কারত হইতোছল তখন—সব ভদ্র রচনাই যথোচিত সুর ও তাল যুন্ত ছিল। সে সব রচনা ছিল দুই রকমের—“গীত' অর্থাং গান, এবং 'প্রবন্ধ' অর্থাধ আখ্যায়িকা । গীত ছোট রচনা, আগাগোড়া তানে তালে আভিবান্ত। প্রবন্ধ দীত্ঘ রচনা, কিছু অংশ সুরে গান করা হইত, কিছু অংশ ছন্দে আওড়ানে৷ হইত, কিছু পড়া হইত । গাঁতগোবিন্দ যে 'প্রবন্ধ' সে কথা গ্স্থমধ্যে উল্লিখিত আছে ।১ বইটি গানের ও গ্লোকের সমষ্টি, সংহত রচনা । কবিকন্কণ-চন্ডীর ভানিতায়ও বহুবার রচনাটি 'পাঁচালি প্রবন্ধ” (ব৷ 'পাণ্টালকা—প্রবন্ধ' ) বাঁলয়৷ উল্লাথিত আছে। কবিকঙ্কনের রচনাটি প্রায় সাড়ে পাঁচ শ পদের সমষ্টি (“প্রবন্ধ )। (প্রস্তুত সংস্করণে পদের সংখা। ৫২৩, তাহার মধ্যে কিছু মূল হইতে বাদ পড়া। সম্ভব, কিছু প্রাক্ষপ্ত থাকাও সন্ভব। সব পুথিতে পদসংখ্যা সমান নয়, তবে কোন পুরানে। পুথিতেই পদের সংখ্যা পৌনে ছশ'র বৌশ নয়। প্রত্যেক পদের শেষে কাঁবর ভনিতা। কিন্তু কি পুথিতে কি ছাপা বইয়ে ( এবং প্রন্থুত সংস্করণেও ) সব ভনিতা-ছেদই মৌলিক অর্থাং কবিকৃত নয়। গায়নেরা প্রয়োজন মতো দাঁর্থ পদকে ছাটিয়া ছোট করিয়াছেন এবং একাধিক ছোট পদ জুড়িয়৷ দী্ঘ পদে পরিণত করিয়াছেন । সেইজন্য কোন ভালো পুথর দুইটি পদ অপর কোন ভালে পুথিতে ঠিক দুইটি পদ নাও হইতে পারে । যেমন প্রস্তুত সংক্ষরণে ৭১ এৰং ৭২ সংখ্যক পদ দুইটি মা-পুথতে একটি পদ । প্রাচীন পুথতে গানের রাগরাগিনীর নির্দেশ থাকে, তবে সব পদে নয়। কোন প্রবন্ধের সব পদই যে গানের মতো গাওয়া হইত তাহা নয় । কোন কোন পদ আসরে প্রয়োজন মতে দুত আওড়ানে। হইত । কোন কোন পদে যেগুলির ভাবার্থ সংক্ষেপে বাঁলয়। দেওয়া হইত সেখানে গায়নের পুথিতে রাগরাগিনীর উল্লেখ থাকত না। আমার এই অনুমানের সমর্থন পাই “জাগরণ” অংশে । এই সুদীর্ঘ পালাটি গাওয়। হইত সপ্তম দিবসে সারারাত জাগিয়া প্রভাত পর্যস্ত। এত বড় পাল৷ সার। রাত ধাঁরয়া একটান৷ গান কাঁরয়৷ যাওয়৷ যে-কোন গায়নের পক্ষেই অসন্ভব, অথচ এমন আনুষ্ঠানিক আসরে একটান৷ পালার মধ্যে গানে সাময়িক বিরতিও চলে না। সুতরাং এ পালায় অনেক পদ পয়াররূপে আওড়ানো হইত অথবা বচনিকারুপে সেগুলর মর্মার্থ বলিয়া দেওয়া হইত । এই কারণেই আমাদের আদর্শ পুথিতে ( এবং অন্য প্রাচীন পুথতেও ) জাগরণ পালার খুব কম পদেই রাগের নিদেশ দেখ যায় । রাগের নির্দেশে বাভন্ন প্রাচীন পুথির মধ্যে এক নাই, কিং এঁক্য আছে শুধু “মঙ্গল+, “করুণ।” ও “লালিত” এই তিনটি নির্দেশে । এই কারণে প্রস্তুত সংদ্ধরণে রাগের উল্লেখ অনাবশ্যক মনে কারয্লাছি। পারিগৃহীত আদর্শ পুথি কোন গায়নের ব্যবহারের উদ্দেশ্যে লেখ৷ হয় নাই। এই পুথতে এই রাগগুলির নির্দেশ আছে, সারোগ, বসম্ত, মালাঁস, ভূপাল, বিভাষ, পঠমঞ্জরী, সিম্থুড়া, করুণা, বারাঁড়, লালত, ধানশি, মঙ্গল, শ্রী ও মল্লার | প্রথম পাঁচটি রাগের উল্লেখ আছে একবার কাঁরয়া, পঠমঞজরী দুইবার, সিদ্ধড়া ও করুণা চারবার, বরাড়ি পাচবার, লালত ছয়বার, ধানাশ সাতবার, মঙ্গল আটবার, শ্রীরাগ আটদশবার, মল্লার প্লাগের পদগুল দুইচারটি বাদে সবই পয়ায়ে "এতং করোতি জয্নদেবক বিঃ প্রবন্ধম্”। ১৮ লেখা, অনারাগের আঁধিকাংশ পদই ন্রিপদীতে ৷ “ছন্দ' আছে চারবার, 'লালতছন্দ' তিনবার, “ঝাপ? দুইবার, “মালবশপ' একবার । চত্তীমঙ্গল যেভাবে গাওয়া হইত তাহার কিছু নির্দেশের সূ পাওয়া যায় সো-পুথিতে । এই সু হইল “চালন” (বা “চালান” ), “চৌপাঁদি ছন্দ", “পআর ছন্দ গিতে”, প্ধাবাড়ি”, “ছটা মান”, “চৌপাঁদ তিন জনে”, “ঝ'খক৷ মান”, “গছুটা জাত (-জতি 7)”, “বারারি রাগ পআর ছন্দ” “পয়ার ছন্দ ভুপালি রাগ,” “চৌপাঁদ ছন্দ ভাট্যালি রাগ", “বারমাস ছন্দ”, “নঙ্গল রাগ সটরপাঁদ ছন্দ”, “আলিসা কামোদ রাগ!” ইত্যাদি উল্লেখ । এখানে ছন্দ কবিতার ছাদ (05116) নয়, গাইবার অথবা নাচের কিংবা বাজনার অথব। নাচ ও বাজনার ঢঙ বাঁলয়৷ মনে হয় । কবিকঙ্কণের মূল রচনায় এই অর্থে “ছন্দ” শব্দটির অনেকবার প্রয়োগ আছে । যেমন, “রচিয়। মধুর পদে একপদী ছন্দ” । পুথিতে তালের উল্লেখ নাই, আছে মানের । মুকুন্দ নিজে 'তালমান' শব্দ বাবহার কারয়াছেন । এই সমস্ত শব্দটি ভাঙ্গিয়াই “তাল, ও 'মান' শব্দ আধুনিক অর্থে ব্যবহাত হইতেছে । অনুমান কার 'তাল' মানে ছিল আঘাত (ইংরেজী ৮৩৪৫) আর মান” মানে ফাক (ইংরোজী ১৪) । "ছুটী মান” মনে হয় ছোট অর্থাং দুততর তাল, 'ছুটা জাত? ছোট বিরাম । "চালন" আলস্ভরে অর্থাৎ টািয়৷ টানয়া গাওয়া মুকুন্দের কাব্য সর্গ, পাঁরচ্ছেদ, উচ্ছাস ইত্যাদি কোন রকম গ্রাস্থৃতে গাথা ছিল না । “দেব-খণ্ড', 'আখেটিক- খণ্ড ও “বাণক-খণও্'—এই থণ্ভাগগুল মুকুন্দ-কৃত কি ন৷ বাঁলতে পার না । তবে যেভাবে এক কাঁহনী আর এক কাহিনীতে গড়াইয়। গিয়াছে তাহাতে এই খণ্ডাবভাগ মৃলগত নয় বলিয়া মনে হয়। আসলে রচনাটি আট দিন ধাঁরয়। প্রয়োন্তব্য একটি দেবতাগাহাত্ম্য গান। যজ্ঞে ও দেবারাধনায় যেমন কর্মকাণ্ড সমাপ্তির পূর্বেকোন বিরতি হইতে পারে ন৷ দেবতার মাহাত্মকীর্ভনেও তাই । সুতরাং সমগ্র কাবযটি এই [হসাবে অথণড। আনুষ্ঠানিকভাবে গাঁত হইলে কাব্যটি গাইতে আট দিন লাগিত ( আট- দিনের মঙ্গল-গান বলিয়া নামান্তর “অষ্টমঙ্গলা” ), সাধারণত মঙ্গলবার দিবা হইতে পরবর্তী মঙ্গলবার দিবা পর্যস্ত । কবিকঙ্কণের চন্ডীমঙ্গল ের প্রায় সব ভালে পুথিতে ও অনেক সংস্করণে সাধারণত গাইবার দিন ও কাল অনুসারে “পালা” ভাগ দেখা যায়। তবে যে পুর “পতনার্থ'-যেমন সাহিত্য সভার আরাও পুথি—তাহাতে পাল। বিভাগ নাই। প্রথম দিনে ( মঙ্গলবারে ) দিনের বেলায় স্থাপনা, রাধিতে বস্তু আরস্তভ। দ্বিতীয় দিনে (বুধবারে ) শুধু রান্রিকালে ৷ তৃতীয় হইতে সপ্তম দিনে (বৃহস্পাত হইতে সোমবার ) দিন ও রানি দুই বেলায়ই গান হইত, তবে সোমবারে চলিত সারারান্রি ধাঁরয়।৷ (—তাই এই পালার নাম জাগরণ—) এবং অষ্টমঙ্গলা গাইবার কালে অষ্টম দিনে (মঙ্গলবারে ) সকাল হইয়া যাইত । এইভাবে আট দিনে (মঙ্গলবার হইতে মঙ্গলবার পর্যস্ত ) গীঁত-অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হইত । এমানি দিবা-রান্রির পালা অনুসারেই প্রস্তুত সংস্করণে কাব্যটি বিভন্ত হইয়াছে ॥ এ কবি-কথা কবির নাম যে “রাম”-সংযুন্ত মুকুন্দ ছিল, তাহার কোন প্রমাণ নাই । কোন পুথতে একবারও এ নাম উল্লিখিত দেখি নাই। অথচ রামগতি নযায়রক্ষ লিখিয়াছেন, কাঁবর প্রকৃত নাম “মুকুন্দরাম" (পৃ ৯১১)। কাব্য মধ্যে মুকুন্দ নামটিই পাওয়া যায়, আর পাঁওয়। ষায় “কবিকঙ্কণ” ও 'শ্রীকবিকঙ্কণ”—কখনো৷ কখনে। ৷ কাঁব ভনিতাগুলির মধ্যে নিজের পারচয় সম্পূর্ণভাবে ছড়াইয়া দিয়াছেন । তাহ হইতে জানিতে পারষে ভাহার পৈতৃক নিবাস ছিল দামিন্যা বে৷ দামুন্যা) ১৪ “নগরে” (অর্থাং দেবাধিষ্টিত গ্রামে ) এবং তিনি গ্রন্থরচনা কালে সুখে বাস কাঁরতোছিলেন আরড়া (বা আড়ুরা ) নগরে (অর্থাং রাজাধ্যাষত গ্রামে )। আরড়া (এখন আড়র! ) ব্রাহ্মণভূমের অন্তর্গত । সেখানকার রাজার অর্থাং ভূষ্ধামীর পুর ( পরে রাজ। ) রঘুনাথের সভাসদ ছিলেন তিনি, এবং সেই রঘুনাথই কবির রচনা জকজমকে গীত হইবার সুযোগ কারয়৷ দিয়াছিলেন । কবির পিতার নান হৃদয়, খ্যাত ছিলেন তান “গুণরাজ ( বা গুণরাজ ) মিশ্র” নামে । কবির বড় ভাই ছিলেন “কাবচন্দ্র” । "ইনি নিশ্চয়ই খ্যাতনামা ব্যন্তি ছিলেন তাই তাহার উপাধিটিকেই কাব যথেষ্ট মনে কারয়৷ একবারও আসল নাম করেন নাই । পিতামহ ছিলেন “মহামিশ্র” জগন্নাথ । ইনি বহুকাল আমিষ আহার পরিত্যাগ করিয়া দশাক্ষর মন্ত্রে গোপালের উপাসনায় নিরত ছিলেন । ইহার কয়ন্ডি গাইয়ের ছোটতরফের (“অনুজজাত” ) বংশের ব্রাহ্মণ ছিলেন, রাটী শ্রেণীর অন্তগ'ত ?, গোত্র সাবর্ণ। প্রাপতামহ মাধব ওঝার নিবাস ছিল কর্ণপুরে। ইনি কোন এক রাজসভায় ধর্মাধিকরণিক ছিলেন । তাহাকে বীরাদগর দত্ত নিজের পুরোহিত কাঁরয়া দামিন্যায় আনাইয়া৷ দেবসেবার আধিকারী করিয়া দেন। একাধিকবার ভনিতায় এই চারটি ম্নেহাস্পদের নাম পাওয়া যায় যাহাদের জন্য কাঁব দেবাঁর দয়। কামন। কীরয়াছেন_ শিবরাম (অনেক ভনিতায় প্রাপ্ত ), চিন্রলেখা, যশোদ। এবং মহেশ । রামগাঁত ন্যায়রত্র বালয়াছেন, “কবিকঙ্কণের দুই পুত্র ও দুই কন্যা ছিলেন । পুন্রদ্বয়ের নাম শিবরাম ও মহেশ এবং কন্য। দুইটির নাম চিত্রলেখা ও যশোদা (পৃ ৯৭)।” শেষের দিকে ভনিতায় এক আধবার “রক্ষ পুন পৌঁত্রে ভ্রিনয়ান” পাওয়া গিয়াছে । উপরের আলিকায় পুত্রের নাম অবশাই আহে, পৌন্রের নামও থাকিতে পারে। কাঁবরা পৈতৃকসূত্ে দামিন্যায় জমি ভোগ কাঁরতেন। ভনিতায় দুই তন বার দাঁমন্যার তাহাদের সেবিত দেবতার সম্রদ্ধ উল্লেখ আছে—চক্রাঁদত্য', “রামাদিত্য' । ইনি কাবদের গৃহদেবতার মতে। ছিলেন। নাম হইতে অনুমান হয় বিষুঃ কিংবা সূর্য। গ্রামদেবত। ছিলেন শিব (বা ধর্মঠাকুর)। (চক্রাদিত্য ইহার নামও হইতে পারে ।) দামিন্যার তালুকদার ছিলেন গোপীনাথ নন্দী । নিকটস্থ সৌলমাবাদ সহরে ইনি থাকিতেন। একটি ভনিতা হইতে জানা যায় যে কবির সঙ্গে ইহার সখ্য ছিল। একটি পুথিতে প্রাপ্ত একবার ভনিতায় কাব নিজেকে ''দৈবকীনন্দন” বাজয়। উল্লেখ কাঁরয়াছেন। এ ভানত৷ খাটি হইলে বুঝব মুকুন্দের মাতার নাম ছিল দৈবকী । দামিনাা— অধুন। বর্ধমান জেলার রায়ন। থানার দক্ষিণ সীমানায় অবাশ্ছিত এই দানে গ্রামের মধ্য দিয়া বর্ধমান ও হুগলি জেলার সীমারেখা চলিয়৷ গিয়াছে )_ গ্রাম হইতে মুকুন্দ আরড়া—( অধুন৷ মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল থানার অন্তর্গত, শালবান রেলফ্টেশন হইতে চারপাঁচ মাইল পৃবদক্ষিণে )- গ্রামে [গয়া সেখানকার ব্লাহ্মাণ রাজ। পালাঁধ- গীই বীরবাকুড়া দেবের আশ্রয় লাভ করেন। বীকুড়া। রায়ের পিতার নাম বীরমাধব। পত্রীর নাম দনা, শ্বশুরের নাম দুলাল সিংহ । ইহাদের পুন্ত রঘুনাথ । বীকুড়া দেব আশ্রয়প্রার্থা মুকুন্দকে ছেলে-পড়ানোয় নিষুন্ত কাঁরয়াছিলেন। রঘুনাথ মুকুন্দকে গুরুবৎ শ্রদ্ধা করিতেন । তেপাস্তর বিলের ধারে দেবী গ্বপ্নে গাঁত' রচন৷ করিতে কবিকে আদেশ । দিয়াছলেন সেই আদেশ অনুসারে এবং রঘুনাথের আগ্রহে মুকুন্দ চত্তীমঙ্গল রচনা সম্পূর্ণ করেন । গান কারবার সমস্ত বন্দোবস্ত রঘুনাথ করিয়। 'দিয়াছলেন। গ্রন্থরচন৷ কালে বীকুড়। রায় ও দন৷ দেবী জীবিত ছিলেন । এই পর্যন্ত উপলান্ধ করা যায় ভনতাগুলি হইতে । এই সব তথ্যের সমর্থন এবং আরও কিছু আতারিম্ত খবর পাওয়া যায় দুইটি “আত্মপরিচয়” বা "গ্রস্থোৎপাত্তধিবরণ” পদে । প্রথমটি অপ্প দুই চারটি পুথিতেই পাওয়া গিয়াছে, দ্বিতীয়টি প্রায় সর্প্র । কাঁবিকঙ্কণের পৈতৃক বাসভুমি দামিনে গ্রামে যে পুথটি তাহার দ্বহস্তালাথত বালিয়া দাবি করা হয় তাহাতে প্রথম পদটিই আছে দ্বিতীয়টি নাই । আমাদের পারিগৃহীত আদর্শ পুথিতে দ্বিতীয় পদটিই আছে, প্রথমটি নাই। অন্য প্রায় সব পুথিতেই তাই। কেবল একটি পুরানো পুথতে (স ৩৩; অত্স্ত খত; কাঁলকাপুরে প্রাপ্ত) পর পর দুইটি পদই র্লাহয়াছে। প্রথম পদটি আসলে দামিন্য৷ গ্রামের প্রশীস্তি, সুতরাং এ পদটি প্রথমে দামিন্যায থাকিতে রচিত বাঁলযা আপাতত মনে হইতে পারে, কিন্তু এ অনুমানের 'বিবুদ্ধে প্রবল আপাতত হইল— দামিনেব পুথির এই শেষ ছন—“বক্ষ পুর্ন পৌর ব্রিনযান”। এ ভনিতা কবির বচন। হইলে তাহার বেশী বযসের । দ্বিতী পদটি লেখ৷ হয চন্ডীমঙ্গণ বচন। শেষ হইবার পবে, এমন কি, কিছু কাল গান হইবাবও পরে । এই কবিতাটি আমাদেব আদর্শ পৃথিতে সর্ধাগ্রে আছে, গণেশ-বন্দনাবও আগে । আব সব পুথিতে এ পদটি আছে স্থাপনা পালাব শেষে অর্থাং বন্দনা-পদগুণির পবে, মুল কাহিণী শুবু হইবার ঠিক আগে । কেবল একটি পুথতে ( কলিকাত। বিশ্বাবদ্যালয ৬১৪১, লিপিকাল ১১৯১ সাল, 'লাপদ্থান কাঁলকাত৷ ) পদটি দুইবাব আছে । একবাব আগে স্থাপন।-পালাব শেষে, আব একবাব পরে- সবশেষে । প্রথম পদে কবিব যে বংশ-পবিচয দেওয়া আছে-তপন ওঝা, ০ তংপুন্ন উমাপাতি, -তৎপুন্ন মাধব তংপুন্র জগন্নাথ, ১তৎপু্ন গুণিবাজ মিশ্র, তংপুন্ন হদয় মিশ্র, ১তদৃদ্বিতীয পুত—তাহ। প্রাচীন মা” পুথিিতে একটি ভনিতায কিছু বিকৃত বৃপে মিলিযাছে। প্রথম পদটিতে আতবিস্ত আছে গ্রামেব ও আঁধবাসীদেব প্রশংসা । দামিনের পথ হইতে এই পদটি উদ্ধাব কাঁবিষ৷ প্রথম প্রকাশ কবিযাছিলেন আঁম্বকাচবণ গুপ্ত “প্রদীপ" পন্লিকায ১৩১২ সালে । দ্বিতীয পদটি কৌতৃহলোদ্দীপক এবং সর্জন-পাবাচিত। ইহাতে শ্রোতাদেব সম্ভাষণ কারিয়৷ কাব আত্ম- কথ। ও কাব্যবচনাব ইতিহাস দিযাছেন। দেশেব শাসনকা। বদণা হওয়াতে তখন প্রজাবা সবিশেষ দুর্দশাগ্রস্ত । কাঁবব বন্ধু তালুকদাব গোপ্পীনাথ নন্দী নিযোগী বাজবোষে পড়িযা কাবাবুদ্ধ ইইযাছেন। তাই কাব গ্রামের মাতব্ববেব সঙ্গে পরামর্শ কাবযা জীবিকাব উদ্দেশ্যে 07) সপাবিবাবে দামিন্য। ছাঁড়িযা চলিলেন। পত্বীপুন্ন ছাড়। সঙ্গ লইযাছিল ভাই” (নাম রমানাথ, বাম। নন্দী অথব। বামনিধি) এবং/অথব৷ দামোদর ( ব। ডামাল ) নন্দী । গ্রাম ছাঁ়য়া ক্লোশ দেডেক গিবা পৌছিযাছিলেন তাহাবা ভালিয৷ (আধুনিক তেলো গ্রামেব নিকটবতাঁ ভেলো। ) গ্রামে । সেখানে বৃপ বায নামে এক ব্যাস্ত তাহাদেব যংকাণৎ পথসম্বল অপহবণ কাঁবাল পর যদু কুণ্ড নামে এক তোঁল ভদ্রলোক এই নিঃসম্বল পাঁথকদেব দ্বগৃহে আশ্রষ দিষা তিন দিন বাখিযাছিলেন । এই চমৎকাব গম্পাটিতে মুস্কিল হইতেছে সব পুথিতে বৃপবাধেব দসু/তাব উল্লেখ নাই । রামগতি ন্যাষবন্ণেব পাঠে আছে, বৃপবায কেণ হিত”। আব এক পাঠে আছে, ভাই নহে উপযুস্ত” । (ভেলে গ্রামে যদু কুণ্ডেব বংশধবেরা অদ্যাপি”' বর্তমান বালিয। আম্বকাচরণ গুপ্ত লিখিয়াছিলেন ১৩১২ সালে ।) সেখান হইতে খুবুন্দ চলিলেন গোড়াই ঝ৷ মুড়াই (সম্প্রতি মুণডেশ্ববী” ) নদী বাহিয়া তেউটা বা ভেউটিষ৷ (বা কেঁউটিযা ) গ্রামে । (আম্বকাচবণ বলিষাছেন এই গ্রামে কবিব শ্বশুবালয ছিল ।) সেখান হইতে তাহাঝ৷ দ্বাবকেশ্বব পাব হইযা গেলেন পাতুপি পুবী” (আধুনিক পাতুল গ্রামে )। অনেক পুথিতে পাঠান্তব আছে মাতুলী পুবী” অর্থাং মাতুলালয । এই পাঠই ধর্তঝ। “পাতুল” হইলে গ্রাম * পুবী” বলাব হেতু কি মামার বাড় বালিয৷ 2 (আম্বকাচবণেব মতেও এই গ্রামে কবিব মাতুলালয ছিল । ) সেখানে (মাতুলবংশের ? ) গঙ্গাদাস তাহাদের বিশেষ সাহায্য কবিযাছিলেন। সেইখান হইতে কাঁববা পরাশব ও আমোদব উত্তীর্ণ হইযা পৌছিয়াছিলেন গোথড়। বা কৌচাঁড়িয। (বা গোচডিয। ) গ্রামে । সেথানে বিশ্রাম লইলেন এক বলেব মতে। বিস্তীর্ণ জলাশয়ের পাড়ে । এখন কাঁবর৷ একেবাবে সম্বলহীন । সেইখানে বুখু ম্লান কবিষা মুবুন্দ শালুক-মূল নৈবেদা দিয। ফোট৷ শালুক ফুলে ঠাকুর পৃজ। কারলেন। কানে গেল শিশুপুন্তব বাধন, ভাত খাইতে চায সে। বিলেব জলে উদব পূরণ কারিয়৷ কবি গাছের তলায় শুইয। পড়িলেন । ঘুমাইযা ঘৃমাইয৷ স্বপ্ন দেখলেন, ঠাহাব মা যেন আসি! মাথার কাছে বাঁসয়। [তান ঘুমেব ঘোরেই বুঝলেন ইনি ম৷ নন দেবা মহামাযা, তাহাকে দষ। কাবিষা আশীর্বাদ দিয়। নিজের মাহাত্থ্যগীতি রচনা কবিতে বলিতেছেন । দেবা তাহাব কানে এক অজান৷ মন্ত্র দিলেন । দেবী আজ্ঞ৷ 'দিযাই ক্ষান্ত হইলেন না, সেইখানেই যেন এক হাতে তাড়পণ্র আব এক হাতে দোষাত ধবিয়৷ মুকুন্দের হাতে কলম গুধজষ। 'দিয়৷ এবং সেই আসিস ৯ কলমে নিজে ভর করিয়া গীতি রচনার সূত্রপাত করিলেন । (কিন্তু রামগাঁত ন্যায়রর্রের এবং কোন কোন পুথির পাঠে এ ব্যাপার ঘটিয়াছিল পরে । ) ঘুম ভাঙ্গলে পর এই স্বপ্নের কথা তিনি সঙ্গী রামানন্দ (রাম। নন্দী বা দামোদর নন্দী ) ছাড়া আর কাহারে৷ কাছে ব্যন্ত করলেন না। “ভাই” এর প্রসঙ্গে রামগাঁতর পাঠই এখানে গ্রহীতব্য, “দামুন্য। ছাঁড়য়৷ যাই সঙ্গে রামানন্দ ভাই পথে দেখ৷ হৈল তার সনে” । ইনি সম্ভবত গ্রাম সুবাদে ভাই, নাম রাম। নন্দী (বা ডামাল ব৷ দামোদর নন্দী )। আঁম্বকাচরণের মতে ইনি ছিলেন তস্তৃবায়, নিবাস ধনেখালির কাছে আলা গ্রামে । সেম্থান ছাড়িয়। মুকুন্দ [শলাই নদী পার হইয়া কোন কোন পুথির পাঠে শিলাই পার হইবার উল্লেখ নাই—) ব্রা্গণভাঁমির রাজধানী আরড়ায় (বা আড়রায় ) গিয়া রাজা বাকুড়া রায়ের সভায় উপনীত হইলেন । পরিচয় পাইয়া রাজ। মুকুন্দকে আশ্রয় ও ভরস। দিলেন। মুকুন্দ রাজকুমারের শিক্ষক নিযুন্ত হইলেন । আরড়। “নগরে” সুখে থাকিয়৷ কাব চন্ডীমঙ্গল রচনা করিতে লাগিলেন ।—এই হইল দ্বিতীয় পদটির মর্ম । আত্মকথা-ঘটিত পদ দুইটিকে অবলম্বন কাঁরয়াই পাঁওতের৷ মুকুন্দের কালনির্ণয় কাঁরতে চেষ্ট। করিয়াছেন । অতএব কাঁবত৷ দুইটির অকৃিমত্ব—অর্থাং মূলরচনার সমকালত্ব ও সহযোগিত্ববিচার করা আবশ/ক । এই আলোচনাকালে মনে রাখতে হইবে, যে-তথ্য বা সংবাদ ভানিতায় বারবার অথবা অসীন্দিপ্ধভাবে পাওয়া গিয়াছে তাহার প্রামাণিকত। সবাগ্রে গ্রাহ্য । প্রথম পদটিকে কবির আত্মপারচয় না বলিয়া দামিন্যা-প্রশান্ত বলাই উচিত। কবির আত্মকথা যেটুকু আছে, তাহাতে অভিনবত্ব কিছুই নাই, তাহা সবই ভনিতায় মিলিতেছে ৷ দামিনের পুথিতে শুধু এই পদ্টিই আছে, দ্বিতীয়টি নাই । রাজধানী আরড়ায় সুখে বাঁসয়া৷ লেখ গ্রন্থে এ পরি প্রত্যাশিত নয় । পরে সংযোজিত মনে কাঁরলেই সঙ্গাত হয় । তবে পদটিতে দামিন্যার পরিচয়ের মধ্যে কিছু অসঙ্গতি ও অরবাচীনত্বের ইঙ্গিত আছে। দাঁমনে পুথির শেষ ছত্রের পাঠ (যাহা কালিকাপুরের পুথিতে নাই )-“রক্ষ পুন্রপোন্রে ন্রিনয়ান”—যথার্থ হইলে পদটি কবির প্রোঢবয়সের সংযোজন বাঁলতেই হয় । তাহার পর চক্রাদিত্য ঠাকুরের কথা ধাঁর। ভাঁনিতায় একাধিকবার "্নক্রাদতা” বা “রামচক্রাদিত্য”১ অথবা “রামাদিত্য'* ঠাকুরের উল্লেখ আছে, কিন্তু কোথাও ঠাকুর শিবের সঙ্গে সনান্ত নহেন। “রাম” আর “আদিত্য” শিব ঠাকুরের নামে দেখা যায় না। তৃতীয়ত গ্রন্থমধ্যে আখানে ধূসদত্তের উল্লেখ আছে শীর্ষস্থানীয় বণিকৃদের তালিকায় সবাগ্রে। কিন্তু সেখানে দেউলের কোন প্রসঙ্গই নাই । চতুর্থত কবির যজমান ও বন্ধু গোপীনাথ নন্দীর নাম নাই, শুধু আছে “হার নন্দী ভাগ্যবান্‌ শিবে দিল। ভীমদান" | পণ্চমত “পাবখ্যাত স্থান" নামদার দত্ত বংশের ““সতাবানূ কপ্পতরু”” উমাপাঁতর নাম আছে, কিন্তু বারাদগর দত্ত যিনি কবির পূর্বপুরুষ উমাপাঁতিকে দা মিন্যায় প্রাতষিত কারয়াছিলেন তাহার উল্লেখই নাই । যষ্ঠত খাঁষ ও সবানন্দ নাগের ৫) নাম অন্যন্ কোথাও নাই। “বেদান্ত নিগম,পাঠী” কুসান (কুশাল ?) পাঁওতের কথাও অন্য মলে না । কোন্‌ তিন মহাশয়ের—বন্দঘটি ও বার্গালপাঁশ গাইয়ের—কুলক্রম কিভাবে হইয়াছিল তাহ। অনুমানেরও বাহিরে । (বন্তুত এই ছত্রদ্বয়ই দুষ্ট—““মহাশয়” “মহাশয়” মিল ! ) সপ্তমত, পিতামহ জগন্নাথ যে গোপালের ভন্ত উপাসক ছিলেন সে কথা মুকুন্দ ভনিতায় অসংখাবার বাঁলয়। গিয়াছেন। কিন্তু এখানে পাই—“মহামিশ্র জগন্নাথ একভাবে পৃজিল শঙ্কর ।” মনে হয় পদটি দামন্যার গ্রামদেবত৷ শিবের বন্দনার উপলক্ষ্যে রাচত অথবা তদর্থে সংশোধিত হইয়াছিল । প্রথম পদটির শেষ কয় ছন্র ছাড়া, মুকুন্দের রচন৷ বলিয়া মনে করিতে পাঁর না। বিশেষ করিয়া দামন্যার প্রয়োজনেই যেন এই পদটি প্রস্তুত হইয়াছিল বলিয়৷ বোধ হয় । কাঁলকাপুরের পুথিতে পদ দুইটি পরপর আছে । প্রথমে ধানসী রাগে গ্ধবান্ব ধবান্থ কঁলিকালে রঙ্লানদের সজল ১৬ কুলে অবতার কাঁরল। শঙ্কর” ইত্যাদি, তার পরেই—রাগরাগিনীর উল্লেখ ন৷ কাঁরয়া—“সুন ভাই সভাজন কাঁবত্বের বিবরণ এই কাব হইল জেমতে” ইত্যাদি । দুইটি পদের মধ্যে ছন্দ ছাড়াও ধারাবাহিকতা আছে, সুতরাং সহস৷ একসঙ্গে রচিত ( এবং প্রাক্ষপ্ত ) বলিয়া মনে হইতে পারে । হয়ত সঙ্গত কারণেই প্রথম পদটির প্রচার হয় নাই, তাই তেমন পাঠাস্তরও মিলে না । দ্বিতীয় পদটি সবিশেষ পাঁরিচিত ছিল, এবং বিষয়েও চিত্তাকর্ষক, বলিয়৷ এই পদটির ছোটথাট অজন্্র পাঠাস্তর পাওয়া যায় । এই পাঠান্তর-বাহুল্য হইতে পদটির প্রাচীনত্বেরও দিশ। মিলে । দ্বিতীয় পদের সর্বাপেক্ষা লক্ষণীয় ছতটি, 'ধন্য রাজা মানাসিংহ” ইত্যাদি, মুকুন্দের কালনির্ণয়ে ঠীতহাসিফেরা চাবিকাঠি করিয়াছেন । (প্রথমেই বল৷ ভালে যে কোন কোন পুথিতে এবং রামগাঁত ন্যায়রডের পাঠে মানসিংহের নামই নাই, “অধর্মী রাজার কালে” পাঠ আছে। বলা বাহুল্য এ পাঠ গ্বীকার করলেও মানাঁসংহের নেঠ৷ সম্প্্ণ চকয়া যায় না।) মানাঁসংহের উল্লেখে বোঝা যায় যে পদটি রচনার সময়ে কবির দেশত্যাগ অনেক পূর্ববর্তী ঘটনা । তান দেশের কর্তা, অর্থাৎ সুবেদার (১৫১৪ হইতে ১৬০৫ ফেব্ুয়ার পর্যন্ত )। সুতরাং পদটির রচনাকাল ১৮৯৪ শ্রীষ্টাব্দের আগে নয়। পদটি যাঁদ মূল রচনার অর্থাৎ মুকুন্দ কাঝটি প্রথমে যেমন লিখিয়াছিলেন সেই পাঠের অন্তর্গত হয় তবে সমগ্র চত্তীমঙ্গল সম্বন্ধেও এই কালসীম। স্বীকার কাঁরতে হইবে, নাহলে নয়। কিন্তু পদটিকে মূলরচনার (অর্থাং প্রথম রচিত সমগ্র পাঠের ) অন্তর্গত বািয়া গ্রহণ কারবার বিরুদ্ধে বিস্তর আপান্ত আছে। সে আপন্তি উত্থাপন করিতেছি । প্রথমেই গোপীনাথ নন্দীর ব্যপার । সৌলমাবাদ নিবাসী গোপীনাথ নন্দী নিয়োগী দামিন্যার তালুকদার ছিলেন, মুকুন্দের সঙ্গে তাহার সন্তাব ছিল। (সম্ভবত কাবিগোষ্ঠী তাহাদের পুরোহিত ছিল ।) গোপানাথ নন্দী বিপাক বশে রাজদ্বারে আটক পড়ায় তাহার তালুক দামিন্যার প্রজার৷ বিষম সঙ্কটে পাঁড়য়াছিল। তখন সুহদবর্গের পরামর্শক্মে মুকুন্দ সপরিবারে অন্যন্ন গমনের সঙ্কপ্প করিয়াছিলেন ।—এই ব্যাপার পদটি হইতে বুঝতে পার । দেশ ছাড়িয়া যাইবার সময়ে দীর্ঘ পথের অন্ত/ভাগে ক্লান্ত মুকুন্দ স্বপ্নে দেবীর আদেশ পাইয়াছিলেন এবং পরে আরড়ায় গিয়৷ বারবাকুড়। দেবের আশ্রয় পাইয়া সেখানে থাকিয়। দেবীমাহাত্ম্-কাব্যখাঁন রচনা কাঁরয়াছিলেন।—এই সংবাদও পদটিতে আছে। স্বপ্নে দেবী-আদেশ পাওয়ার কথা একাধিক ভালো পুথতে ভানিতায় পুনঃপুন পাওয়া গিয়াছে । যেমন, "গ্বপ্নে আদেশ পান শ্রীকবিকঙ্কণ গান পাঁরতুষ্ট। জাহারে ভবানী”, “সপনে আদেশ পান শ্রীকাবকঙ্কণ গান দামিন্যায় জাহার বসাতি,” “বনে তেপান্তরে আজ্ঞা কৈল মোরে সঙ্গীত হৈল নিম্মাণ”, “তেপাস্তর বিলে মোরে আজ্ঞ৷ কৈলে”। কিন্তু গোপীনাথ নন্দীর দুর্গাতি এবং মুকুন্দের পিতৃভূমি পারত্যাগ কোন পুথির কোন ভনিতায়ই সমার্থত নয়। বরং বিপরীত কথা আছে। একাধিক ভালো পুথতে পাওয়৷ (খুল্পনার দুর্গাতি প্রসঙ্গের শেষে ) একটি ভানতা৷ হইতে প্রমাণত হয় যে কাব্যরচন। কালে—ধনপাতির কাহিনীর গোড়ার দিকে অন্তত—গোপানাথ নন্দী গ্বচ্ছন্দে তালুক ভোগ কারতোছলেন এবং দামিন্যার সাহত কবির যোগ আঁবাচ্ছিন্ন ছিল । ভনিতাটি এই দামিন্যা-নগরে চক্রাঁদত্য সুর সেবনে জাঁড়ম। করয়ে দূর । নন্দী গোপাঁনাথ জাহে ঠাকুর কোতুকে রচিল মুকুন্দ পুর ।১ 5. সরলয অথবা দেবতা । পুর-্পুরুত, পুরোহিত। মুকুদ্দেরা নন্দীদের যাজক ছিলেন, মনে হয়৷ শিব পুজার জন্ত মুকুন্দের পূর্বপুরুষকে যিনি ভূমি-দান করিয় ছিলেন সেই হরি নন্দী গ্লোপীনা থেরই পূর্বপুরুষ হওয়া সম্ভব । ২৩ বন্তুত মুকুন্দ দামিনযা৷ হইতে আরড়া গিয়াছিলেন ঠিকই এবং সুখে থাকিবার জন্য যাওয়া সুতরাং সেখানে সুখে ছিলেনও, কিন্তু পিতৃভুমিকে পরিত্যাগ করিয়াছিলেন এমন ধারণা সঙ্গত নয় । ভনিতায় তিনি বারবার বলিয়াছেন,_“দামিন্যায় জাহার বসাঁত”। আরড়ার প্রসঙ্গে বলিয়াছেন, “সুখে থাকি আরড়া নগরে” । মনে হয়, দামিন্য। ছিল তাহার নিবাস সাকিন, আরড়া ছিল তাহার কণস্থল মোকাম । পদটিতে টীল্লাখত আছে দামন্য। ছাঁড়িয়। যাইবার সময়ে ছিল “সঙ্গে ভাই রামানন্দ” । নামটির পাঠান্তর পাওয়। ষায় “রাম৷ নন্দী”, “রামনাথ", অথব৷ “রামনাধ”, । মুকুন্দ শুধু তাহার বড়ভাই কাঁবচন্দ্রের উল্লেখ করিয়াছেন । “কাঁবিচন্দ্র'” উপাধি, নাম নয় । সে বড় ভাই ইনি অবশ্যই নহেন। আরও একটু বন্তব্য কাছে । পরে, স্বপ্নদর্শন প্রসঙ্গে এই কথা আছে, “সঙ্গে দামোদর নন্দী জে জানে গ্বপ্লের সন্ষি, পাঠাস্তর “ডামাল (ব৷ দামাল অথব। মড়াল ) নন্দী” ।১ বিদেশ যাত্রার প্রারস্তে ও উপান্তে উল্লিখিত নাম দুইটি নিশ্য়ই একই ব্যান্তকে নির্দেশ কারতেছে। এ বিষয়ে আগে আলোচন। কাঁরয়াছি । তাহার পর রূপ রায় ও যদ কুণ্তর ঘটনা । প্রচলিত পাঠে আছে, “রূপ রায় নিল বিত্ত যদু কু তোল কৈল রক্ষা” । কোন কোন পুথতে পাই “রূপ রায় দিল বিত্ত” । আর গোহাটীর পুথিতে যদু কু তোলর কোন উল্লেখই নাই (“ভাঈলায়ে উপনীত রূপরায় দিল 'বিস্ত জাতকুল সোঁহ কৈল রক্ষা” )। যদু কুণ্ডঁকে স্বীকার কাঁরলেও খটুক। রাহয়৷ যায়। যদু কুণ্ু কাঁবদের আশ্রয় এবং “তন দিবসের দিল ভিক্ষা” । মুকুন্দ ব্রাহ্মণ ছিলেন, সুতরাং এখানে “ভিক্ষা” শব্দের ব্যবহার তাহার লেখনীতে প্রত্যাশিত নয়, প্রত্যাশিত ছিল “"সিধা” । অতএব এখানে রক্ষার সঙ্গে মিলাইবার জন্যই “ভিক্ষা” শব্দটির ব্যবহার হইয়াছে । এবং সে মিল ভালোও নয় । রূপরায় ব্রাহ্মণ হইলে অন্য কথা । সমস্ত পদটির মধ্যে আতিশয্যের দ্বারা চমৎকাতি জাগাইবার যে চেষ্টা মাঝে মাঝে আছে তাহ। কবিকঙ্কনের কাবা মধ্যে কোথাও দেখ। যায় না। এই চমৎকাতি-চেষ্ট। অংশ—দেশের লোকের দুরবস্থা ও পথে মুকুন্দের দুর্গাতির জলন্ত ছাবগুলি—বাদ দিলে যেটুকু বাঁক থাকে তা মুকুন্দের রচনা হইতে কোন বাধা নাই, এবং তাহা হইলে কোন ভনিতার সঙ্গেও মিরোধ ঘটে না ॥ ৮ রচনা-কাল গ্রশ্থোৎপাঁন্তাববরণ' কবিতাটির প্রাত দৃষ্টি আকৃষ্ট হইবার পূর্ব পর্যস্ত মুকুন্দের কাব্য-রচনার কাল লইয়া কোন মতভেদ ছিল না। তাহার কারণ রামজয় বিদ্যাসাগরের সম্পাদিত কবিকঙ্কনের চন্ডীকাব্যের প্রথম প্রকাশিত সংস্করণে সবশেষে কালজ্ঞাপক চার ছন্র ছিল। (পরে ছাপা সংস্করণগুলিতে এবং এক-আধটি পুথিতেও ইহা মিলিয়াছে।) ছত্রগুল এই শাকে রস রস বেদ শশাঙ্ক গণিত। কতাঁদনে দিলা গীত হরের বাঁনত৷ । অভয়ামঙ্গল গীত গাইল মুকুন্দ আসোর সাঁহত মাত৷ হইবে সানন্দ ॥ শক ১৪৬৬ ॥ ১ ঈশানচন্দ্র ভট্টাচাধের কাছে অন্বিকাচরণ গুপ্ত শুনিয়াছিলেন যে দামাল নন্দী ছিলেন তত্তবায়-জাতীয় । জলে ৪ প্রথম দুই ছলের অর্থ-'রস (-৬)১ রস (৬) বেদ (৪) শশাঙ্ক (-১), এই গাণিত বর্ষে, কতাঁদন আগে, হরগহণী দেবী গানরচনার আদেশ দিয়াছিলেন ।" কোন প্রাচীন পুথিতে না পাওয়াটাই এই তারিথ সরাসার অগ্রাহ্য করিবার একমান্র কারণ নয় । গ্রশ্থোৎপাত্তি- বিবরণের বর্ণনা সত্য বাঁলিয়। মানলে মুকুন্দ ষোড়শ শতাব্দীর শেষ দশকের আগে দেশত্যাগ কাঁরিতে পারেন না, কেন না তাহা হইলে কোন ক্রমেই মানসিংহকে পাওয়া তো দূরের কথা, ছোওয়াও যায় না। মানসিংহের কথা ছাড়িয়া দিলেও ১৪৬৬ শকাব্দ (-5১৫৪৪-৪৫ খ্রীষ্টাব্দ ) সম্বন্ধে কিন্তু আপত্তি উঠে। রামগাঁত ন্যায়রহ্র খোজ করিয়া বাকুড়া দেবের পুত্র রঘুনাথ দেবের রাজ্যপ্রাপ্তি কাল পাইয়।ছিলেন ১৪৯৫ শকাব্দ (১৫৭৩-৭৪ খ্রীষ্টাব্দ )। চন্ডীমঙ্গলের ভনিতায় রঘুনাথকে অনেক সময় “রাজা” অথবা “ক্রাহ্মণভূমির পুরন্দর" বলা হইয়াছে । সুতরাং ভাবা যাইতে পারে যে ১৫৭৩-৭৪ শ্রীষ্টাব্দের আগে কৰি গ্রন্থ রচনা করেন নাই । ১৫৪৪-৪৫ হইতে ১৫৭৩-৭৪ খ্রীষ্টাব্দ ২৯ বছরের তফাৎ । কিন্তু তাহাতে খুব হানি নাই। কালিকাপুরের পুথির ভনিতায় আছে যে কাবারচনায় মুবুন্দ দী্ঘসৃত্রিত৷ দেখাইয়াছিলেন এবং তাহা তাহার পক্ষে শুভকর হয় নাই । “গীত না করিয়া মৈলা ছাল্যা”। কিন্তু এহো৷। বাহা। মুকুন্দ যখন কাব্যরচন৷ করিতোছলেন তখন যে বীকুড়া রায় গ্বর্গত এমন মনে করায় বাধতা নাই । রাজবংশের একমাত্র পুত্রের, যুবরাজের, শিক্ষক ও সভাসদ ছিলেন মুকুন্দ। যুবরাজকে রাজার মতে৷ সম্মান দেখানে। তাহার পক্ষে কিছুমাত্র অগ্াভাবিক নয় । কিন্তু সে কথ যাক । চত্তীমঙ্গল রচন৷ কালে বাকুড়৷ রায় যে জীবিত এবং রঘুনাথ যে যুবরাজ তাহার দৃঢ় প্রমাণ রাঁহয়াছে ধনপতি-উপাখ্যানে দুইটি-অন্তত তন চারটি একাধিক ভালে পুথিতে একাধিকবার প্রাপ্ত—ভনিতায় । দুলাল [সিংহের সুতা দনাদেবী পাট-মাত। কুলে শীলে গুণে অবদাত তার সুত নৃপরর করিল অনেক যর বোরশল্যৎ দেব রঘুনাথ | আড়র৷ তরিয়। ভূমি পুগুষে পুরুষে দ্বামী ৃ্‌ সেবেন গোপাল কামেশ্বর শৃতন কবিত্বরসে নৃপাঁতির আভলাষে গাইল মুকুন্দ কবিবর ॥ পুলাল সংহের সুতা . দনাদেবা পাটমাত। রঘুনাথ তাহার নন্দন তার আজ্ঞা পরমান মুকুন্দে করয় গান চক্রবর্তী শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥ ১ মুকুন্দরামের সময়ে নাধাবণ ও পণ্ডিত সমাজে শ্রকান্ক হিসাবে “রস' ছখ (১) বুঝাইত। বৈধ'ব অলঙ্কার শাস্ত্রের “অষ্ট নায়িকা” হইতে "অষ্ট রস” উৎপন্ন | তাহ! হইতে অষ্ট-৮ হইতে পারে, কিন্তু কোন সিদ্ধ প্রয়োগ নাই | “নব রস” ও “নব রসিক” - আসলে নুতন বস, নুতন রসিক-ছিল। পরে লোকবুাৎপত্তিতে সংখ্যা অর্থ আসিয়া গিয়াছে। নয় অর্থেও রসেব শিষ্ট প্রয়োগ নাই । ২ পাঠাস্তর 'বৈরিশৃচ্য' । পর ৫ ম। যেখানে পাটরানী সেখানে ছেলে পাটে-বস৷ রাজা হইতে পারে ন। । এত ভাবি ধনপাতি মুকুন্দ করএ নাতি [গারিজার চরণকমলে বীর-বাকুড়া কার ছন্দ মৃর্খে লাগএ ধন্দ পাগুত বুঝএ কুতৃহলে ॥ এই ভনিতায় কাব রাজ৷ বার-ধাকুড়৷ রায়কে সৃক্ষমভাবে প্রশংসা করিয়াছেন । চন্ডীমঙ্গল রচনার কালে রঘুনাথের পুত্র হয় নাই, হইলে অবশ্যই উল্লেখ থাকিত ৷ ,শেষের দিকে ভনিতায় অনেকবার পাই রঘুনাথের কামনাপৃরণের জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা । মনে হয় এ কামনা পুনুসম্তানের জন্যই, পাটে বসিবার জন্য নয়। রথুনাথের পুর সন্তান হইয়াছিল, নাম চক্রধর । তিনি ১৫২৬ শকাব্দে (- ১৬০৪ খ্রীষ্টাব্দে) পিতার মৃত্যুর পর রাজ৷ হইয়াছিলেন (রামগতি ), এবং রাজা হইবার পরে এই সালেই কেশিয়াড়ীতে সবমঙ্গলার দেউল নিমাণ- কাধ শেষ হইয়াছিল। উঁড়িয়৷ অক্ষরে উৎকীর্ণ মন্দির-প্রতিষ্ঠালপিতে১ চক্রধরের নাম আছে রাজ। হিসাবে, মানসিংহের উল্লেখ আছে রাজোশ্বর হিসাবে । মানাঁসংহ বাঙ্গালা-ডীঁড়ষ্যার সুবেদার ছিলেন ১৫৯৪ হইতে ১৬০৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত । আমার অবলাম্বত আদর্শ পুথতে পাঠ আছে—“সে মানসিংহের কালে”। ইহার পরিবর্তে—“রাজ। মানসিংহ গেলে” এই পাঠ গ্রহণ কালে গ্রন্থোৎপান্ত বিবরণ' পদটিকে ১৬০৪—০৫ শ্রীষ্টাব্দের পূর্বে রাঁচিত বলাই যায় না। 1কস্তু ১৬০৪-০৫ খ্রীষ্টাব্দে রচন৷ সাঙ্গ হইলে চক্রধরের উল্লেখ নাই কেন? চ্ীমঙ্গল প্রথম গীত হইবার সময়ে যে পদটির পূর্ণ আস্তত্ব ছিল না তাহা শেবের দিকে উল্লাখত কাব ও গায়েনকে পুরদ্কার দানের বিবরণ হইতে বোঝা যায় । অতএব “শুন ভাই সভাজন কবিত্বের বিবরণ” ইত্যাদি পদটি পরে রচিত ও সংযুন্ত হইয়াছিল । এ সংযোজন যে কাব নিজে করেন নাই, তাহ। জোর করিয়।৷ বাঁলতে পারি না । তবে কাঁবর নিজকৃত সংযোজন সবট। নয়, পদটির গোড়ার দিকে অপরের প্রক্ষেপ থাকা আধিকতর সম্ভব । “উজির “হইল রায়জাদা”_-হয়ত এই উন্তিতে উাজর খা-র (৬/8211 171)21)) কথা বলা হইয়াছে । ইনি ১৫৮৬ খ্রীষ্টাব্দে রাজপ্রাতানাঁধ নিযুস্ত হন, এবং ১৫৮৭ ধ্রীষ্টাব্দের আগস্ট মাসে তাহার মৃতু; হয় । তাহা হইলে, এই পাঠ ধাঁরলে, এই প্রাক্ষপ্ত অংশের রচনাকাল ১৫৮৬ শ্রীষ্টাব্দের আগে যাইবে না । এখন কাব্যরচন৷ কালের আলোচন৷ করি । প্রথমেই ধাঁরতে হয় শকাঙ্ক পদটি । পদটি রামজয় বিদ্যাসাগরের সংস্করণে আছে কিন্তু এটি তাহার প্রক্ষেপ নয় । ১২৪৮ সালে (১৮৪২ খীষ্টাব্দে) লেখ। শেষ করা এক পুথিতে ( পৈয়াঁল পথ ) এই শকাঙ্ক আছে । রামজয়ের ছাপা বই দেখিয়৷ এ পুথটি লেখা হয় নাই। দুইটি পুস্তকের মধ্যে পাঠেও যথেষ্ট পার্থক্য আছে। সুতরাং এই পুথর আদর্শ পুথিতে_এবং তাহা রামজয়ের আদর্শ পুথ নয়—এই শকাঙ্ক-নির্দেশ নিশ্চয়ই ছিল । বিকর্তন 'মশ্রের ও হারাবতীর পুন এক মুকুন্দ মিশ্র মার্কওেয়- ১ লিপিটি এই (বিনয় ঘোষের প্রবন্ধ, যুগান্তর ২৬ শ্রাবণ ১৩৬২ সংখা? ) ঞ মানসিংহ মহারাজ শুভরাজ্যে নিজকুলে কুমুদানন্দ শ্রীল রঘুনাথ শর্মা ভূমিপন্থত এচক্রধর শরম প্রকাশিলে সর্বমঙ্গল। প্রতিম। স্থিতি । শকাব। ১৫২৬। কামিল! রতু পাত্র। বিশ্বভারতী পত্রিক1 ( ১৩৬৩ সালের তৃতীয় সংখ্য।) পৃ ২৫১ রষ্টব্য। ২৬ চন্ডী অবলম্বনে “বাশুলীমঙ্গল' রচন। কাঁরয়াছিলেন 1১ এই রচনাটি যে-পুথতে পাওয়া গিয়াছে তাহা ১১৪২ সালে (১৭৩৫ খ্রীষ্টাব্দে ) অনুলিখিত । শকাঙ্ক পদটি মুকুন্দ মিশ্রেরও জানা ছিল । তাই তানি 'লিখিয়াছেন শাকে রস রস বেদ শশাঙ্ক গণিতে বাশুলীমঙ্গল গীত হৈল সেই হইতে । দ্বিতীয় ছন্রটি হইতে জানা যাইতেছে যে এই মুকুন্দ মিশ্র জানিতেন যে চন্ডীমাহাত্ম্য (“বাসূলী-মঙ্গল” ) গাঁত রচনার সূন্পপাত হইয়াছিল অনেক কাল আগে, ১৪৬৬ শকাব্দ হইতে । অন্য দিক দিয়া বিচার কারলেও ১৫৪৪ খ্রীষ্টাব্দ মুকুন্দের আরড়া-গমন কাল ধাঁরতে পারা যায় । মুকুন্দেরা সোলমাবাদ-নিবাসী নিয়োগী গোপীনাথ নন্দীর তালুকে বাস কারিতেন এবং তালুকদারের প্রদত্ত ভূমবৃত্তি ভোগ কারতেন। ১৫৩৮ খ্রীষ্টাব্দে শের খান গোঁড়ের সুলতান মামুদশাহকে পরাজিত করেন এবং পর বংসর শেরশাহ নাম ধাঁরয়া দিল্লীর তন্তে বসেন। এই সময়ে পুরানে। জাঁমদারদের খুবই অসুবিধা হওয়া প্রত্যাশিত । মনে হয়, গোপানাথ নন্দী তেমানি অসুবিধায়ই পাঁড়য়াছিলেন এবং মুকুন্দের বৃত্তিও সেই সঙ্গে ক্ষীণ অথব৷ লুপ্ত হইয়াছিল । সুতরাং সাংসারিক দ্বচ্ছলত৷ পুনরুদ্ধারের আশায় ১৫৪৪ ঘ্রীষ্টাব্দের দিকে কাবির অন্যত্র গমন অগ্থাভাঁবক নয় । আরও এক দিক বিবেচন৷ কাঁরলে এই তাঁরখের সমর্থন পাই ।২ মুকুন্দের [তার উপাধি ছিল “গুণিরাজ" ব৷ “গুণরাজ" ব্রাহ্মণ বলিয়া “মিশ্র” _অন্রাহ্মণ হইলে “খান” হইতেন )। গোঁড় দরবারের এমন উপাঁধ গণ্চদশ-যোড়শ শতাব্দীতে পাঠান আমলেই পাওয়া গিয়াছে । পাঠান দরবারের সঙ্গে যোগাযোগ ন৷ থাকিলে এমন উপাঁধ মিলিত না। সুতরাং মুকুন্দের পিত। "গুণিরাজ-মিশ্র” হৃদয় যে গোঁড়ের সুলতান হোসেন শাহের অথবা তাহার প্্বর্তী সুলতানের হিন্দু কর্মচারী-পুষ্ট সভায় সংবর্ধনা পাইয়াছিলেন এমন অনুমান অযৌন্তক নয় । মুকুন্দের কাব্য পাঠ কারলে তাহার যে ফ।রসী ভাষায় বেশ জ্ঞান ছিল এ ধারণ৷ জন্মায় । গুজরাট নগর-পন্তন বিবরণ পাড়িলে মনে হয় যে গোঁড়ের মতে। কোন পুরাতন রাজধানী হয়ত তাহার দেখা অথব৷ জান। ছিল । মুসলমান সমাজের সম্বন্ধে মুকুন্দের আভজ্ঞতা৷ যে সাধারণ ভ্রাহ্মণ পাঁওতের অপেক্ষা অনেক ঘানিষ্ট ছিল তাহাও দুর্লক্ষা নয় । আরও একটা কথা । মুকুন্দের পিতামহ “মহা মিশ্র” জগন্নাথ নিরামিষ চর্ধ্য৷ কাঁরয়। দশাক্ষর মন্ত্র জিয়া গোপালের উপাসনা কারিতেন। দশাক্ষর মন্ত্রে গোপাল উপাসনার উপদেশ চৈতন্যের দাদাগুরু মাধবেদ্দ্রপুরী এদেশে প্রচলিত কারিয়াছিলেন। জগন্নাথ হয়ত মাধবেন্দ্রপুরীর ( অথব৷ তাহার সম্প্রদায়ের কাহারও ) ঘনিষ্ট সঙ্গ পাইয়াছিলেন। জগন্নাথের সম্পর্কে চৈতন্যের উল্লেখ নাই, অথচ চেতন্যের মাহাত্ম্য সম্যকূরূপে অবগত ছিলেন মুকুন্দ । সুতরাং জগন্নাথকে চৈতনের অগ্রজন্ম। ধারতে হয়। এই বিবেচনায়ও মুকুন্দের দেশত্যাগ কাল হিসাবে ১৫৪৪ খ্রীষ্টাব্দ সমার্থিত হয় । মুকুন্দ যখন দামিন্য৷ ছাড়িয়া যান তখন হয়ত তাহার পুর হইয়াছিল । সে কালে উচ্চবর্ণের সমাজে অপ্প- বয়সে বিবাহ হইত। সুতরাং প্রথম সন্তান জন্মের সময়ে তাহার বয়স বিশ-বাইশ বৎসর ধাঁরতে পারি । মুকুন্দ দামিন্যার গ্রামদেবতার বন্দনায় একবার বলিয়াছেন, “কাব হইয়৷ শিশুকালে রচিলাঙ তোমার সঙ্গীতে" ৷ এ "সঙ্গীত" ১ শারদীয় সখ্য 'বর্ধমান' ১৩৫৯ পৃ ৬৭৬ ভ্রষ্টব্য। ২ এ আলোচন] সম্পূর্ণ নুতন, সেই জন্য মদীয় 'বাঙ্লাল। নাহিত্যের ইতিহাস" প্রথম খণ্ড প্রথমার্ধের আলোচন! সংশোধন করিয়া লইতে হইবে । ০ যে সব পুথিতে বন্দন৷ পালায় চৈতন্যবন্দনাষ্টী নাই সেখানে তাহা শীপতির বাণিজ্য-যাত্রার কালে মবধ্ীপের প্রসঙ্গে আছে ( সো-পুধি, গৌ-পুখি ইত্যাদি )। হয়ত তাহার কাব্যের দেবখণ্—যাহাতে শিব-সতী-পাবতীর কাহিনী আছে । অতএব মুকুন্দের জম্ম ১৫২২-২৪ ধীষ্টাব্দের কাছাকাছি অনুমান কাঁরতে পারা যায় । শকাঙ্ক পদটির প্রসঙ্গে আরও একটু বালবার আছে । চন্ডীমঙ্গলৈর কোন কোন পু'থতে পুষ্পিকার মধ্যে অথবা আগে এমন ধরণের শকাঙ্ক পদ পাওয়া যায় যা আপাতদৃষ্টিতে রচনাকাল বাঁলয়া মনে হইতে পারে । যেমন কলিকাতায় “বৈটকখানার বাজারের কাছারিতে বাঁসয়৷ সন ১১৯১ সালের মাহ ফাল্গুনে ৪ চোঁঠ। তারিখে শনিবার” লেখ সাঙ্গ করা পুথিতে (কলিকাত৷ বিশ্বাবদ্যালয় ৬১৪১) সকে বধু পুষ্প রস চন্দেতে গণিয়া আসত ষুক্লা অস্টম মেষ জে জিনিয়৷ অষ্টাদবসেতে ক্ষিত রবিবার চতুর্বিংশ জ্ঞান তৰে কাঁরল প্রচার ॥ ১৬৫৮ শকাব্দ (অর্থাং ১৭৩৬ খ্রীষ্টাব্দ ) নিশ্চয়ই আদর্শ পুথির িপিকাল। তবে তারিখাটি অন্যপুথর (“চতুবিশজ্ঞান” পুথির ) হওয়াই সম্ভব । রাজশাহী বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়মের সংগ্রহের একটি পুথতে—বিষুপুরে লেখ ১২১৩ সালে_ শেষ পাতায় আছে১ সাল শাকে বসু পৃষ্ঠে ঠোকল অন্থর নিধাত মারল বাণ চন্দ্রের উপর | এই শাকে পুথি হইল চণ্ডী অনুভব ডিল্লীর তন্তেতে তখন বাদস৷ আরংজেব ॥ শকাঙ্ক সংখ্যায় ভাঙ্গলে (আরংজেবের খাতিরে ) হয় ১৫৮০ শকাব্দ, অর্থাং ১৬৫৮-৫৯ খ্রীষ্টা্ | ইহা। অবশ্যই আদর্শ পুথর অনুিপিকাল। মূল রচনার শতাবাধ কাল পরবর্তী । মুকুন্দরামের কাব্য-রচনাসমাপ্তি কালের উল্লেখ তাহার রচনার মধ্যেই আছে । এতাঁদন তাহাতে চোখ পড়ে নাই মানাঁসংহের ঠুপি আটা ছিল বাঁলয়। । সে কথা বাঁল। তাহার পাণ্ালিক৷ প্রবন্ধ যিনি প্রথম গান কাঁরয়াছিলেন তাহার উল্লেখ আছে দুইটি ভানতায় । ইহা হইতে জানি যে বিক্রমদেবের (_বীকুড়। দেবের জ্ঞাতি ?) পুত্র, তালমানে বিজ্ঞ, প্রসাদ (দেব ) ছিলেন মূল গায়েন। এই মননে ভানত৷ পাই গোৌ-পুথতে আত্মকথা পদে । বিক্রম দেবের সুত গান করে অন্ত বাখান করয়ে সবজ্ন তালমানে বিজ্ঞ দড় [বনয়-সুন্দর বড় নাঁতমান মধুরবচন । ১ পরী মণীল্রামোহন চৌধুবী কাব্াতীর্থ সংকলিত 'বরেক্র রিসার্চ মিউজিয়মের বাংলা! পুধিক্স শালিক", রাজশাহী ১৯৫৬, পৃ ২৫ দ্রষ্টব্য। দ্বিতীয় ভনিতাটি সব পুথতে এবং ছাপা বইয়ে আছে কাহিনীর উপসংহারে অষ্টমঙ্গলায় । অষ্টমঙ্গল। সায় শ্রীকাবকন্কণ গায় অমর সাগর মুনিবরে ১ চাঁর প্রহর রাতি জালিয়। ঘৃতের বাতি গাইলেন প্রসাদ আদরে ॥ এইখানেই প্রথম গাওয়ার তারিখও পাওয়া গেল, _অমর (১৪ ) সাগর ( -৭) মুনিবর (৭ ), অর্থাং ১৪৭৭ শকাব্দ (- ১৫৫৫-৫৬ খ্রীষ্টাব্দ | ) পাঠান্তরের বিভ্রান্তি বশে মান্দরের ধশধায় পাঁড়য়। এই স্পষ্ট তারিখটি এতাঁদন চোখ এড়াইয়া আসিয়াছে ।৩ অতএব দৃঢ়তর বিরুদ্ধ প্রমাণ উপস্থাঁপত না হওয়া পর্যন্ত মানিতে হইবে যে মুকুন্দের আড়র৷ গমনের (দেশত্যাগ বলিব না ) কাল ১৫৪৪-৪৫ খ্রীষ্টাব্দ, এবং কাব্/রচনা-সমািকাল ১৫৫৫-৫৬ খ্রীষ্টান্দের পরে নয় । এইখানে মুকুন্দের উপনাম কবিকঙ্কনের আলোচন৷ কার । “কাবকঙ্কণ' উপাধি নয়, উপাধি হইলে দাতার উল্লেখ অবশ্যই কোন না কোন ভনিতায় থাকিত। এটি স্বয়ংগৃহীত উপনাম । সেকালে পাণ্টাঁলকা-প্রবন্ধের গায়ন পায়ে নৃপুরের সঙ্গে হাতে কড়াইভরা৷ অথবা ঘুঙুর দেওয়৷ মলের মতে৷ বালা পাঁরিত। চত্ীমঙ্গলের মূল গায়েন অদ্যাঁপ হাতে এমনি “কষ্কণ” পরিয়া থাকেন, মন্দিরার মতো তাল দিবার জন্য । মুকুন্দ তাহার চত্ীগানের দলের আধকারী ছিলেন । তাই এই উপনাম গ্রহণ কারয়াছিশেন । এই আমার অনুমান ॥ ৪১ প্রশস্তি বদ্যাবান্‌ না হইলে ভাষ৷ ব্যবহারে দক্ষতা না থরিকিলে ঝড় কাব হওয়। যায় না । কাঁবকল্কণ-চক্রবত মুকুন্দ বদ্যাবান্‌ ছিলেন, সে পাঁরিচয় তাহার রচনায় প্রচুর ছড়াইয়৷ আছে । কত [তান ভালে কারয়। জানিতেন, তৎসম শব্দের নিপুণ ব্যবহারে (যেমন, ব্ক্গবন্দনায়, “হেতু অন্তরায় পাতি” ) বোঝা যার । ফারসী শব্দের নিপুণ ব্যবহারে এবং গুজরাটে মুসলমান প্রজার পত্তন বিবরণে তাহার ফারসী ভাযাজ্ঞানের প্রমাণ আছে । তাহার কবিপ্রাতিভার কথা বল! বাহুল্য । যে বিশ্বস্ত অস্তরঙ্গতার সুর বৈষব পদাবলীকে 'বাশষ্ট ও দ্বতন্ত্র কারয়াছে তাহ। মুকুন্দের রচনায় আগাগোড়া অপর্যাপ্ত না৷ থাকিলেও মাঝে মাঝে অশ্রুত নয়। সেকালের কাবিত্বের কারুশিস্পের সব সূননই তাহার অধিগত ছিল । তিনি সংস্কৃতে পাঁওত ছিলেন কিন্তু সংস্কৃত-পাঁওত মান্র ছিলেন না, সংস্কৃত সাঁহত্যের বিদগ্ধ রাঁসক পাঠক ছিলেন তান । তাহার প্রমাণ রাহয়াছে পাবতীর তপস্যায়, বিবাহে নারীদের হুড়াহুড়তে, রতির বিলাপে, সারির খেদে এবং অন্যত্র কাঁলদাসের অনুসরণে । প্রাকৃতপৈঙ্গল তাহার অধাঁত ছিল, তাহা বুঝি ছন্দপ্রয়োগের দক্ষতায় । জ্যোতিষশাস্ত্রও তিনি ভালোই জানিতেন, হয়ত ইহাতে তাহার আধকার কুলগত ছিল। (পিতার ১ পাঠীন্তর “গরঅমর সোমের মন্দিরে” "অমর সাগব মশিবে”, ইতা[দি | "আ্বালিয। ঘৃতের বাতি” নুকুন্দ কাব্যমধ্যে অনেকবার লিখিয়াছেন, সমুজ্জল উৎসবেব বর্ণনাধ। মনে হয় এখানে “ঘুতের বাতি” জন্যই “মুনিবরে” মন্দিরে পবিণত হইয়াছিল কোন কোন পুখিতে | পাঠান্তর “গায়েন, 'গায়ন' | ৩ বাঙ্গাল! সাহিত্যের ইতিহাস প্রথম খণ্ড পৃরার্ধ, পঞ্চম সংস্করণ ১৯৭৯, পু ৫৩৫ দ্রষ্টব্য । ২৯ “গুঁণিরাজ মিশ্র” আভিধা কি রাজ-দরবারে জ্যোতষা ছিলেন' বলিয়া ? )ফারসী যে তাহার অক্জাত ছিল না সে-কথা আগে বািয়াছি। মুকুন্দের কাঝের প্রশংসা অনেকে এখনকার পাঠ্যপুস্তকে করিয়াছেন, এখানে সে সব পুনরুন্তর প্রয়োজন দেখি না । * এখানে শুধু এই কথাই বল যে দেশ ও দেশের ভালো তাবং বস্তু মানুষ পশু গাছপালা নদনদী সব—তিনি গভীর অনুভূতির সূত্রে গিয়া যেন শ্রোতা-পাঠকের প্রতাক্ষ গোচরে সাজাইয়। ধারয়াছেন । তাহার কাব্যপটে চিএ ও চরিত্র মিলিয়। গিয়াছে । তাহার রচনায় সেই সবই জীবন্ত । এবং সে সজীবত। মানবীয় । দেবতা-উপদেবতা পশৃপক্ষী এমন কি নদনদী তাহারাও যেন মানুষ । কাব্যটি চ্ীমঙ্গজল, দেবতার ব্রীড়াকাওড মানুষের মতো। এবং মানু'কে লইয়া । তাই দেবতাকেও মানুষ সাজতে হইয়াছে । তাই কাব্যের সব চারব্লই মানুষ, ভিন্ন [ভিন্ন নাজ পরা ।* দেব-খণ্ড, আখেটিক-খও ও বণিক-খও্— তিনটি আখ্যানেরই মর্মবাণী [বিবাহত নারীর, বেদনা । ধদেব-খণ্ডে নারীচারিতর তিনটি, পুরুষচারত্র একটি । সতী গোরা ও মেনকা, এবং শিব । সতী ও গোঁরী উভয়েই ধনী মানী ঘরের মেয়ে, তাহাদের গ্বামী শিব ধনী তে৷ নহেনই মানীও স্তর নন। ধনী শ্বশুরের ঘরে, দারদ্রু কুলীন-সম্তান জামাইয়ের মতে। তাহার যথেষ্ট খাতির হয় নাই। সতী মনাঙ্ছনী আত্মমর্াদাবতী তাই জামাতা-বিদ্বেষী পিতার [িতৃত্বকে উড়াইয়া দিলেন কায়োৎসর্গ কাঁরয়া । গৌরী নিজে পছন্দ করিয়া শিবকে বিবাহ করিয়াছিলেন । সুতরাং ঘরজামাই রূপে শিবদম্প্তীর বাস মেনকার বোঁশাঁদন ভালে লাঁগবার কথ৷ নয় । তাই সামান্য অছিলায় মানিনী গোরী স্বামী ও সন্তান লইয়। পতৃগৃহ ত্যাগ করিয়াছিলেন । কিন্তু ্ধামীর ঘরে দারিপ্ন্য তাহাকে শীঘ্রই পাঁড়ত করিল । স্কার্মীর দ্বারা কিছু হইবে না দেখিয়া তানি নিজেই সংসারের সংস্থানের জোগাড়ে বাহির হইলেন । বুঝিলেন, মানুষের প্জ। পাইলে তাহার উদ্দেশ্য সফল হইবে । কিস্তু বড়মানুষে তখন মেয়ে-দেবতার পৃজ। করিত না। তাই মর্ত। ভূমিতে মাহাত্ম্য প্রচারের জন্য দেবী প্রথমে বনের পশুদের আকৃষ্ট করিয়া কিছু পৃজা পাইলেন । তাহার পর তিনি বনের মানুষকে বশ কাঁরতে প্রযত্র কারলেন । এই হইল আখথেটিক-খণ্ডের কথা । এ কাহিনীতে ফুল্লরা নায়িক। নয়, সে যেন প্রাতি- নায়কা, দেবীর প্রাতিন্ধী ৷ নায়ক কালকেতুর উপরেই দেবীর নজর । ফুল্লুরার চরিত সবল ও পারস্ফুট | স্বার্ী-্ীর ঘর, দরিদ্র সংসার, কিন্তু তাহার মনে অসন্তুষ্টি নাই । তাহার ইচ্ছ৷ নয় যে কালকেতু দেবীর কাছে ধন নেয়। কৈলাসে দেব-দম্পতীর সংসার দরিদ্র এবং অসন্তুষ্ট আর কালঙ্গের অরণ্যে ব্যাধ-দম্পর্তীর সংসার আরও দারিদ্র কিন্তু সম্তৃষ্ট ও সুখী । গোরীর ছ্বামী ধনের চেষ্টা কারতেন ন৷ তবে ধনভোগ্ে তাহার অস্পৃহা ছিল না। কালকেতুর পত্সীর মনে কোনরকম লোভ তে ছিলই না উপরস্ত ধনের সম্পর্কে ভয়ই ছিল (—“সারিতে নারিবে প্রভু ধনের দুর্নাম” )। বণিক-খণ্ডের কাহনীতে দোখ যে দেবী নির্ভর কারতেছেন এবার নারীর উপর | খুল্লনা (5 ছোট মেয়ে ) বোন-সতীনের ঘরে আসল । দ্বামী যো কিবন্তু তাহ বুঝবার আগে তাহার দিদি লহনার (লোহনা- লোভনীয় মেয়ে) সঙ্গে তাহার বিরোধ ঘটিবার কথা নয় । তবুও সে বিরোধ লাগিল, এবং তীব্র ভাবে, দাসী দুবলার (55দু- বোলার) চক্রান্তে । আখেটিক-খণ্ডের ভগাডু-দত্তের মতে। নিপট শঠ নয় দুবলা ৷ সে ভাবয়াছিল, দু-সতীনে ভাব থাকিলে তাহাকে দ্বিগুণ খাটিয়া মারতে হইবে এবং দুপক্ষই তাহার দোষ ধারবে। দু-সতীনে অসন্তাব থাকিলে সংসারে সে-ই মধ্যস্থ হইবে এবং তাহারই কর্তৃত্ব খাটিবে। তাই সে লহনাকে কানভাঙ্গানি দিয়াছিল । অকস্মাৎ খুড়তুত৷ ভগ্গিনীকে বিবাহ কাঁরয়৷ আনায় লহন৷ ক্ষুন্ধ ছিল। কিস্তু সরলহদয় সে পাঁতর মিষ্ট কথায় ও অলঙ্কার দানে তুষ্ট হইয়াছল। স্বামীর অনুপস্থিতিতে দুবলার কথায় তাহার চোখ ফু্টিল। খুল্পনার বয়স অল্প, সেও বিশ্বাসী )/ তবে নিবোধ নয়। ধনপতির চিঠি যে জাল ত৷ সে পাড়িয়াই বুঝিতে পারিয়াছিল ৷ তাহার প্রধান গুণ সহিফুতা । ৩৩ এই গুণেই সে তাঁরয়৷ গিয়াছে । সতীমের জালা আর তনয়ের তাপ দুইই খুল্লন। ভোগ কারয়াছিল। তাহাই তাহার তপস্যা । বণক-খণ্ডের আর একটি নারী-চারন্ন উল্লেখযোগ্য, তবে সে ডমিকার আবির্ভাব যবনিক। পাঁড়বার প্রায় পূর্ব মুহূর্তে, ক্ষাণকের জন্য । সিংহলের রাজকন্যা সুশীলা উজানিতে আসিয়। ঘরে পা দিবার সঙ্গে সঙ্গেই তাহার সপত্রীসংযোগ ঘটিয়া গেল। তাহার দৈব লহনার তুলনায় আরও নিষ্ঠুর । কিন্তু ভদ্র, সবনীত বিদেশী মেয়োটর সহজাত সৌজন্য ও সহদয়তা তাহার মৃদ্ব মন্দ করুণ বচনে (এবং সিংহল ত্যাগের পূবে স্বামীকে আটকাইয়৷ রাখিবার বাগিতায় ) আভিব্যন্ত। চিরকাল থাক জয়া আব কর সাত বিয়। শিল। মাগে সিংহলে বিদায় বাল প্রভু শুন কাম অন্তরে নহিবে বাম সাজন কাঁরয়৷ দেহ নায় । মুকুন্দের কাব্য পরবর্তাঁ কালে বৈষ্ণব কবিদের ছাড় সকল উল্লেখযোগ্য কাঁবকে কমবোঁশ প্রভাবিত কাঁরয়া আসিয়াছে । চন্ডীমঙ্গলের “কাবত্বের [িবরণ” পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী কাঁব ধাহার৷ মনসামঙ্গল, ধর্সমঙ্গন প্রভাতি দেবদেবীর বৃহৎ মাহাত্ম-আখ্যায়ক৷ রচনা কাঁরয়াছিলেন, তাহাদের আত্মকথায় অনুসরণ করিয়াছেন । কবিকঙ্কণের কাব্যের সমাদরের ফলে তাহার পর তাই খুব কম লেখকই এ কাবঝ/ রচনায় হাত দিতে সাহস কারয়াছলেন। এইরকম একজন কাঁব রামানন্দ যতী, ভারতচন্দ্রের বয়ঃকনিষ্ঠ সমসাময়িক । দুইশত বৎসরের প্রাচীন কবির রচনার অটুট সমাদরে এই নবান কাঁব ঈর্যযান্িত ছিলেন বাঁপয়া মনে হয়, তাই প্রাচীন কাঁবির প্রতি কটাক্ষ করিয়৷ িখিয়াছেন যে মুকুন্দ ইন্দ্রপুরে কাটাবনের আস্তত্ব, দেবী কর্তৃক নীচ ব্যাধকে রাজত্ব দেওয়া, গুজরাটে ছাপান্ন গাই বাঙ্গালী ব্রাহ্মণের বসতি, দেবীর কাচলিতে পশুপক্ষী চিএণ— ইত্যাদি ইত্যাদি বালিয়। অন্যায় কারয়াছেন। রামানন্দ বলিয়াছেন, তাহার এই মত অন্য লোকেও সমর্থন করে । শিষ্য ও বন্ধুবর্গের অনুরোধে তাই [তান মুকুন্দের দোষ সংশোধন করিয়া নৃতন চন্ডীমঙ্গল লিখিলেন ।১ চণ্ডী যদি দেন দেখা তবে কি তা যায় লেখা পাচালীর অমাঁন রচন বুদ্ধ নাই জার ঘটে তার৷ বলে সত্য বটে পথে চণ্ডী দিলা দরশন । এত দোষ উদ্ধারিতে লোকের চৈতন] দিতে চণ্ডী রচে রামানন্দ যতী অনেকের উপরোধ। কেহ না করিহ ক্রোধ অনেক শিষ্টের অনুমাতি । উনাবিংশ শতাব্দীর আগেকার বাঙ্গাল। সাহিত্যে কঠিন কাব্য-সমালোচনার এই একমান্র নিদর্শন | উনাবংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে শহরে ও সম্পন্ন পল্লীতে সাধারণ জনগণের মধ্যে অবসর সময়ে কাশীরামের মহাভারত ও কুত্তবাসের রামায়ণ পাঠ ও শ্রবণ প্রায় নিত্য কৃত্যে পরিণত হইয়াছিল । কাশীরামের কাব্য প্রথম হইতেই পাঁড়বার জন্য লেখা । কুীত্তবাসের কাব্য গাহিবার জন্য লেখ৷ হইলেও শ্রীরামপুর মিশন প্রেস কর্তৃক প্রথম ছাপা হইবার ১ শ্রীঅনিলবরণ গঙ্গোপাধ্যায় সম্পাদিত, ১৯৬৯। (১৮০২ ) পর হইতে কাশীরামের মহাভারতের মতোই যুগপৎ ধর্মকথা ও চিত্তরঞ্জন কাহিনীর্পে শ্রোতব্ গ্রন্থে পারণত হইয়াছিল ( যাঁদও রামায়ণ গানও খুব চলিত ছিল )। মুকুন্দের চত্ীমঙ্গল কৃত্তিবাসের কাব্যের মতে৷ একাধারে ধর্মকথ। ও চিন্তরঞ্জক উপন্যাস, তবে গানেই প্রচলিত ছিল । শুধু মুদ্রিত হইবার বিলম্বেই (১৮২৩) যে চর্ভীমঙ্গল মহাভারত-রাম।য়ণের মতে। জনাপ্রয় পাঠ্গ্রস্থ হইতে পারে নাই তাহা নহে । রামায়ণ-গান কখনোই কোন ধর্মানুষ্ঠানের অঙ্গ অথব। উপাঙ্গ ছিল না, কিন্তু চত্ভীমঙ্গল ত৷ ছিল এবং ধর্মানুষ্ঠানের বাহিরে গান কারতে হইলেও ঘস্থাপন ইত॥দ পৃজাকার্ষের আড়ম্বর কিছু দেখানো হইত । এইজন্য চন্ডীমঙগল রামায়ণ-মহাভারতের মতে। সহজগ্রাহ; নয়, বৈষব-পদাবলীর মতো অপ্পবিস্তর ভন্ত শ্রোতার অবধানযোগ্য রচনা । এই কারণে ইংরেজী-শিক্ষিত ব্যান্তদের কাছে মুকুন্দের চন্ডী-কাব্য সহস৷ পাঁরচিত হইতে পারে নাই। (বর্তমানে যতটুকু পাঁরচিত তা পাঠ্য পুস্তকের খাতিরেই ।) এখন পর্যস্ত খুব কম হ্বেচ্ছা-পাঠকই (যাঁদ কেউ থাকেন ) রচনাটিতে মনঃদংযোগ কাঁরয়া ইহার মূল্য বুঝিতে পারয়।ছেন। কবিকঙ্কণের চন্ডী-কাব্য যখন প্রথম মুদ্রুত হয় তখনও পশ্চিম বঙ্গে চন্ডীমঙ্গল গানের বেশ আদর ছিল । তবে সে সমাদর ছিল সমাজের উচ্চতর, শিক্ষিত—ইংরেজীতে নহে—জনগণের মধ্যে, যেমন মনসার ভাসানের আদর ছিল সমাজের নিমুতর, অশিক্ষিত সমাজে । ভালে। চর্ভী-গায়কের খ্যাতিপ্রাতপান্ত ভালে৷ কীর্তন-গায়কের তুলনায় কম ছিল না । সুতরাং প্রথম মুদ্রত চন্ডীমঙ্গলের বটতলা কাঁপ অথবা সংদ্করণ অনাতাঁবলম্বে বাহির হইয়াছিল। তবে কৃন্তিবাস-কাশীরামের গ্রন্থের তুল/ কবিকঙ্কনের গ্রন্থের চাহিদা কখনোই হয় নাই । হইবার কথাও নয়, কেন ন। বইটিকে হালক৷ বল! চলে না । ছাপ৷ হইলে পর কবিকঙ্কণের বই কলিকাতা অণ্চলের শিক্ষিত সমাজের গোচরে আসিয়াছিল নিশ্চয়ই । কিন্তু দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পারে নাই । ঈশ্বর গুপ্তের কলমে কবিকঙ্কণের কিছু প্রশংস৷ প্রত্যাশিত ছিল। তিনি অবশ্যই চন্ডীর গান শুনিয়াছিলেন, হয়ত এ গান তাহার ভালোও লাগয়াহল । কিন্তু তাহার রসিক মন ভারতচন্দ্রের মধুভাণ্ডে লিপ্ত হইয় পাড়য়াছিল, তাই বৈষ্ণব পদকর্তাদের মতো কবিকঙ্কণকেও তান “প্রাচীন” কাঁবদের মধ্যে গণ্য করেন নাই। ব্রাহ্মণ পাঁগতেরাও সকলে মুকুন্দরামের সমজদার ছিলেন না। সংগ্কৃতজ্ঞ পাঁওতদের মধ্যে রাম- গতি ন্যায়রত্র প্রধান ব্যতিক্রম । [তিনি (১৮৭২) লাখয়াছিলেন, “কবিকঙ্কণ বাঙ্গাল। ভাষার সর্ধপ্রধান কবি ।” ইংরেজী-পড়৷ বাঙ্গালীকে যিনি সর্বপ্রথম [ব্দ্যাপতি ও কৃষদাস কবিরাজের নাম শুনাইয়া৷ সত্যকার প্রাচীন সাঁহত্ের প্রাত দৃষ্টি আকর্ষণ কাঁরয়াছিলেন সেই মনস্কবী সাহত্যাববেচক রাজেন্্লাল মত্রের লেখনীতেই কবিকন্কণ মুকুন্দের কাব্যের প্রশংসা সর্বপ্রথম ব্যাহর হইয়াছিল । বাবিধার্থ-সংগ্রহে (১৮৫৮-৫৯) মাইকেল মধুসুদন দত্তের শামষ্ঠা নাটকের সমালোচনার উপক্রমে রাজেব্্রপাল এই কথা 'লিখিয়াছিলেন “বাঙ্গালি কবির মধো কবিকঙ্কণকে অবশ্যই শ্রেষ্ঠ বাঁলয়। মানিতে হইবে; যেহেতু কবির ষে প্রধান ক্ষমত৷ কপ্পনা-শন্তি তাহাতে যে প্রকার তাহার প্রাচ্য্য ছিল সে প্রকার অন্য লক্ষা হয় না; অথচ তাহার সমাদর তাদৃশ প্রগাঢ় দেখা যায় না ।” রাজেন্রলালের পরে কবিকল্কণের প্রশংস৷ করিয়াছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত । ইনি চণ্জীর গান নিশয় শুনয়াছিলেন । তদুপার বাবধার্থ-সংগ্রহের পাঠক, রাজেন্দ্রলালের বন্ধু, তিনি, নিজের নাটকের সমালোচনার উপক্রমাঁণকায় কবিকঙ্কনের প্রশৎস। 'নশ্চয়ই তাহার নজর এড়ায় নাই । পরে মাইকেলও কাবকল্কণের প্রশস্ত কাঁরয়াছেন _-“চতুর্দশপদী কবিতাবলী'-র দুইটি কবিতায়, একটি প্রথমের দিকে (“কমলে কাঁমনী' ), দ্বিতীয়টি শেষের দিকে ('ন্রীমস্তের টোপর' )। ৃ্‌ প্রথম কবিতায় মাইকেল লিখিয়াছেন কবিতা-পঙ্কজ-রাব, শ্রীকবিকষ্কণ, ধন্য তুমি বঙ্গভূমে ! যশঃ-সুধাদানে অমর কাঁরলা তোমা অমরকারিণী বাগদেবী ভোগিল৷ দুখ জীবনে, ব্রাহ্মণ, এবে কে ন৷ পৃজে তোমা, মাজ তব গানে 2 বঙ্গ-হৃদ-হুদে চণ্ডী কমলে কামিনী ॥ দ্বিতীয় কাবতাটির বিষয়ানধাচনে মাইকেলের আত্মচিস্তার গাঁত লক্ষ্য কার। শ্রীমন্তের মতো৷ মাইকেলও শৈশবে ও কৈশোরে প্রশ্রয়লালিত এবং অবিবেচনাশীল ছিলেন । কোটালের উত্তেজনা-বাক্যে কুদ্ধ হইয়া শ্রীমন্ত মাথার মূলাবান্‌ টোপর জলে ফোলিয়। দিয়াছল । সে টোপর দেবী শঙ্খাচণ (“ক্ষেমঙ্করী” ) রূপ ধরিয়া ছে৷ মারিয়া ঠোটে তুলিয়৷ খুল্পনার কাছে পৌঁছিয়৷ দিয়াছিলেন । এই নাট্যোচিত ঘটনাটি মাইকেলের মনে দাগ কাটিয়াছিল । তিনি কবিতাটির শীর্ষে উদ্ধৃতি দিয়াছিলেন _শ্রীপাতি_ শিরে হৈতে ফেলে দিল লক্ষের টোপর ॥” চণ্ডী । মাইকেলের এই উদ্ধীত কোন বটতল৷ সংস্করণ অবলম্বনে, রামজয়ের সংস্করণ হইতে নয়, কেননা এই ঘটনাটুকুর কোন উল্লেথ ব৷ ইঙ্গিত সেখানে নাই । চণ্ডীমঙ্গল হইতে প্রাসাঙ্গক অংশ উদ্ধৃত কারতোছি । প্রত্যয় দেহ যাঁদ জান সদাগর তবে জান সাধু ফেলে লক্ষের টোপর । এত শুনি শ্রীপাতি সক্কোধ অন্তর শিরে হেতে ফেলি দিল। লক্ষের টোপর । কবিকঙ্কণ-চণ্ডীর তৃতীয় ইংরেজী-শিক্ষিত বাঙ্গালী সমজদার ছিলেন বিদগ্ধ সাহিত্যরাঁসক গোবিন্দচন্দ্র দত্ত | (অনু ও তরু দত্তের পিতা বাঁলয়াই এখন তাহার পরিচয় । ইনি সপারিবারে খ্রীষ্টধর্ম অবলম্বন কাঁরয়াছিলেন । ) সপারবারে গোঁবন্দচন্দ্র বিলাতে কিছুকাল কাটাইয়াছিলেন। সেইসময়ে কাওয়েল (2.8. 0০৬৩1 )—ধানি আগে এদেশে প্রোসডেন্দি কলেজে অধ্যাপক (১৮৫৬-১৮৫৮ ) এবং পরে সংস্কৃত কলেজের প্রিনীসপ্যাল ছিলেন (১৮৫৮-১৮৬৪)—তখন কোম্বজে সংঙ্কৃতের অধ্যাপক (১৮৬৭ হইতে )। গোবিন্দচন্দ্র কিছুদিন কোম্ব,জে ছিলেন । সেখানে কাওয়েলের সঙ্গে আলাপে কথাপ্রসঙ্গে তিনি কবিকঙ্কণ-চন্ডীর প্রশংসা করিয়াছিলেন । কাওয়েলের জ্ঞান-স্পৃহা সংস্কৃত ও প্রাকৃতের চর্চাতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। আধুনিক ভাষার সাহিত্যও তাহার আগ্রহ ছিল । কেস্ব.জে গোবিন্দচন্দ্রের সঙ্গে (অর্থাৎ সাহায্যে ) চ্জীকাব্যের আধাআধি পড়া হইবার পর গোবিন্দচন্দ্র দেশে ফিরিয়া আসায় কাওয়েল নিজেই চন্ডীমঙ্গল পাঠ চালাইতে থাকেন । কঠিন শব্দ ও ছন্র পাইলে তিনি চিঠি লিখিয়৷ গোবিন্দ- চন্দ্রকে জানাইতেন । গোঁবন্দচন্দ্র বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ কাঁরয়৷ তাহার ব্যাখ্যা 'লাঁখয়৷ পাঠাইতেন। কাওয়েল সেই সময়ে চন্ডীমঙ্গলের কিছু কিছু অংশ ইংরাজী অনুবাদ কারতেছিলেন । তখন তাহ! ছাপাইবার কথ৷ চিন্ত। করেন নাই । অন্য কাজে তাহার মন পাঁড়য়াছিল। পরে হঠাৎ একদিন ঠাহার নজরে পড়ে গ্রীয়র্সনের একটি প্রবন্ধে এই পুরানে। (০ ৩৩ বাঙ্গাল কাবাটির উচ্ছীসত প্রশংসা ।১ তখন তাহার উংসাহ পুনবুদ্দীপিত হইয়া উঠে এবং তিনি অনুদিত অংশটুকু এসিয়ারটিক সোসাটির পন্রিকায় প্রকাশের জন্য প্রস্তুত করিতে থাকেন । কাওয়েল বলিয়াছেন যে তিনি চুচুড়া হইতে প্রকাশিত (১৮৭৮ ) ছাড়।৷ আর দুইটি প্রচালত সংস্করণ (১৮৬৭, ১৮৭৯) ব্যবহার কারয়াছলেন । কাওয়েলের অনুবাদ তিনটি অংশের, তবে ধারাবাহক নয়। প্রথম অংশ আখেটিক-খণ্ড হইতে— বযধদম্পতী ও দেবীর সাক্ষাৎ বিবরণ, মরার শীলের ব্যাপার, তাড়ুদত্তের কাণ্ড । দ্বিতীয় অংশ বণিকৃ-খণ্ড হইতে— খুল্পনার জন্ম হইতে সাধুর গোঁড হইতে প্রত্যাগমন ও খুল্পনার পুনবাসন পর্যন্ত । তৃতীয় অংশও বণিক-খও হইতে_ খুল্লনার পৰীক্ষা । ডীঁমিকায় “কবিত্বেব বিবরণ” পদটির অন্বাদ আছে । , কাওয়েল মস্তব। করিয়াছেন যে মুকুন্দের কপ্পনার জীবন্ত খাস্তবতা ঙহাব বর্ণনায় স্থায়ী মূল্য অর্পণ কারয়াছে। ভারতবধের কবিদের মধ্যে মুকুন্দকে তিনি ইংরেজ কবি পর্যাবের (১৭৫৪-১৭৩১) তুল্য বাঁপিয়াছেন । শিবের কৈলাসে হোক, ভারতভূমিতে হোক, সিংহলে হোক মুকুন্দ সর্বত্র তাহার প্রথমজীবনের গ্রামবাসের অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা লইয়। ফারয়াছেন। তাহার আঙ্কত বিচিএ চরিব্রগঁল দৃশ॥বলীর মধে; চকিত দর্শন দিলেও পাঠকের মনের উপর তাহারা যেন সত্/কার জীবন ও ব্যস্তিত্বের স্থায়ী ছাপ ফেলিয়৷ যায়। যথং৫থ বলিতে কি, কাওয়েলের কথায়, স্যর ওয়াল্টার হ্কটের কাছে স্কটল্যাণ্ড য৷ ছিপ মুকুন্দের কাছে বঙ্গভূমি তাই ; গ্রামের জীবনস্মীত যাহা তান মনে মনে পোষণ কাঁরতেন তাহ। হইতে সর্বদা রচনার পাথেষ খুশজতেন ৷ ভাড়ুদত্তের প্রসঙ্গে কাওয়েল ডিকেন্সের রচনা স্মরণ করিয়াছেন রবীন্দ্রনাথের পক্ষে নোবেল প্রাইজ প্রাপ্তি যেমন মুকুন্দের পক্ষে কাওয়েল ও গ্রীযর্সনের প্রশংসালাভ প্রায় তেমনি ফলপ্রসূ হইয়াছিল । অর্থাধ, ইংরেজী-শাক্ষিত বাঙ্গালী সমাজে মুবুন্দ' এমানই অপঠিত থাকিয়াও একজন ভালো কবি বলিয়া স্বীকৃত হইয়াঁছলেন । কাওয়েলের অনুবাদ প্রকাশের পর হইতেই সাঁহত্যপাঁওত-সমাজে মুকুন্দের কবিপ্রাতষ্ঠ। । রবীন্দ্রনাথ মুঁকুন্দের কাব্য ভালে৷ করিয়৷ পাঁড়িয়াছলেন এবং কাঝটিকে যথাযোগ্য মধাদ। 'দিয়।ছিলেন । বিশ্বসাহিত্য ভাড়দত্তের যথার্থ স্থানটি রবীন্দ্রনাথ নির্দেশ কাঁরয়া গিয়়াছেন। তিনি লিখিয়াছিলেন (বৈশাখ ১৩১৪) “কবিকঙ্কণ-চণ্ডীতে ভাড়ুদত্তের যে বর্ণনা আছে সে বর্ণনায় মানুষের চাঁরত্রের যে একট। বড়ো দিক দেখানো হইয়াছে তাহা৷ নহে : এই রকম চতুর স্বার্থপর এবং গায়ে পাঁড়য়।৷ মোড়াল কারতে মজবৃত লোক আমর৷ অনেক দেখিয়াছি । তাহাদের সঙ্গ যে সুখকর তাহাও বাঁলতে পাঁর না। কিন্তু কবিকঙ্কণ এই ছাদের মানুষটিকে আমাদের কাছে যে মৃতিমান কাঁরতে পারিয়াছেন তাহার একটি বশেষ কারণ আছে। ভাষায় এমন একটি কৌতুকরস লইয়া সে জাগিয়৷ উঠিয়াছে যে, সে শুধু কালকেতুর সভায় নয়, আমাদেরও হৃদয়ের দরবারে অনায়াসে স্থান পাইয়াছে। ভাডুদত্ত প্রত্যক্ষ সংসারে ঠিক এমন করিয়া আমাদের গোচর হইত না। আমাদের মনের কাছে সুসহ করিবার পক্ষে ভাড়ুদত্তের যতটুকু আবশ্যক কাব তাহার চেয়ে বোৌশ কিছুই দেন নাই। কিন্ত প্রত্যক্ষ সংসারের ৩৪ ভাড়ুদত্ত ঠিক ওইটুকু মান্র নয় , এইজন্যই সে আমাদের কাছে অমন কারয়া গোচর হইবার অবকাশ পায় না। কোনো একটা সমগ্রভাবে সে আমাদের গোচর হয় না বলিয়াই আমর তাহাতে আনন্দ পাই না। কবিকঙ্কণ-চণ্ডীতে ভাড়ুদত্ত তাহার সমস্ত অনাবশ্যক বাহুল্য বর্জন করিয়া কেবল একটি সমগ্র রসের মৃর্তিতে আমাদের কাছে প্রকাশ পাইয়াছে।” শেষ জীবনে এক জন্মাদনের ভাষণেও রবীন্দ্রনাথ আবার ভাড়ুদত্তকে স্মরণ কারয়াছিলেন (সাহিতোর ফ্র্প ১৩৫০) । লোড ম্যাকবেথ, কিং লীয়র, আন্টান ও 'করিওপেট্রা, সখীপাঁরবৃত। শকুস্তলা ইত্যাঁদ বিশ্ব সাহত্ের কয়েকাট অমর চরিন্র উল্লেখের পর তান বাঁলয়াছিলেন “তাই বলছি, সাহিত্যের আসরে এই রূপ সৃষ্টির আসন ধুব। কাঁবিকম্কণের সমস্ত বাক্যরাশি কালে কালে অনাদূত হতে পাবে । কিন্তু রইল তার ভণড়ুদত্ত। মিড্সামার নাইটন্‌ ড্রীম নাট্যের মৃল্য কমে যেতে পাবে, কিন্তু ফল্স্টাফের প্রভাব বরাবর থাকবে অবিচালিত।" মুকুন্দের রচনা “পাঁচালী প্রবন্ধ” । পণ্চদশ-ষোড়শ শতাব্দীতে, এবং তাহার পরেও এই ধরণের 'পাণ্চালিক৷ প্রবন্ধ” ভারতবর্ষের অনান্র_গুজরাট-রাজন্ছান অণ্চলে—অজানা ছিল না । তবে বাঙ্গালা দেশের বাহিরের রচনাগুলিতে পূর্বতন, অলন্ধ, অপন্রংশ-অবহট্ট আদর্শই অনুকৃত, কোন নিজদ্ বিবর্তনের পরিচয় নাই । বাঙ্গালায়, মুকুন্দের কাবো তানয়। অপদ্রংশ-অবহট্রের মূল১ ছাড়িয়া অনেক উধের্ প্রসারত হইয়াছে মুকুন্দের "নৌতন মঙ্গল" । তবে মূল হইতে যে ত৷ বিচ্ছিন্ন নয় তাহার প্রমাণ—পেশাদারী কাব-কথকদের বর্ণনায়,_বৃক্ষবর্ণনায়, পশুপক্ষীবর্ণনায়, যুদ্ধবর্ণনায় ইত্যাদ । মুকুন্দের হাতে এইসব বর্ণনা বাক্যজালমান্র হয় নাই। এখনকার উদৃভিদ্তত্বের ও প্রাণি- বিদ্যা কৌতুহলী বৈজ্ঞানিকের৷ মুকুন্দের তালিক৷ পর্যালোচনা করিলে মূল্যবান্‌ তথ্য কিছু কিছু পাইতেও পারেন । মুকুন্দের রচনার প্রশংসা আর বোশ বল৷ নিম্পয়োজন । সংক্ষেপে কিছু পুনরাবৃত্ত কারয়৷ ভূমিকা-পালা শেষ কার। মুকুন্দের আঁধকার ছিল সংস্কৃত সাহিত্যে । কালিদাসের রচনা তিনি আত্মসাৎ করিতে পারিয়াছিলেন এবং তাহার বিশেষ জ্ঞান ছিল ফারসী ভাষায় ৷ বাংল! শব্দের প্রচুর ও বিচিত্র ব্যবহারে তাহার জুড়ি নাই । এ বিষয়ে বাঁলতে পার যে শুধু চন্ডীমঙ্গল অবলম্বনেই পুরানো বাংলা ভাষার অভিধান সংকলিত হইতে পারে, ব্যাকরণ গঠিত হইতে পারে । (তবে সে ব্যাকরণ আধুনিক ভাষার হইতে বোশ ভিন্ন নয় ।) মুকুন্দ ভন্ত এবং বৈষণব ছিলেন, কিন্তু তাহার দৃষ্টি ছিল গোলোক-বৃন্দাবনে নয় ইহলোকে নিবদ্ধ । যে দেশে ও কালে 'তাঁন জন্মিয়াছিলেন ও বাচিয়াছিলেন সে জীবন ও পথের উপর তাহার টান ছিল। মুকুন্দের ভাবন৷ তাহার শিস্পবোধকে সংযত ও নিপুণ কারয়াছিল। চর্লচিন্রনে তিনি পেশাদারি বর্ণনা ফাদেন নাই, একটি আধটি কথাধ হীঙ্গতে ও ভাঙ্গতে তানি ছোটখাট ক্ষাণক- দৃষ্ট পান্নকে নিমেষে প্রন্ফৃটিত করিয়াছেন । মুকুন্দের আকা ছবি—দেবতার হে।ক, ধনী বা নির্ধন মানুষের হোক হিংস্র বা নিরীহ পশুর হোক—সবাই নিজের ঠিক ঠিক কথ। অপ্পে বাঁলয়৷ গিযাছে। সংযমের সাঁবশেষ দক্ষ পারচয় ১ সফুলপরা ও “খুললনা' নাম ছুইটি সবা!সরি এপত্রশ-অবহট্ট হইতে আগত! কুল্লরাব সহিত আধুনিক বাংল! (হিন্দী হইতে আগত?) “ফুলুরি' ও “ফুলেল" সংপুক্ত। ধুল্লন।' মানে ছোট মেয়ে (ক্ষুদ্রকন্যা ), খাঁটি বাংল। হইলে "খুড়না' হইত । 'লহনা' নামটি 'লোহনা” রূপেও পাওয়া যায় (যেমন দো-পুখিতে )। "এই পাঠ ঠিক হইলে নামটির মূল হয় 'লোভনা" (লোভনীয় কগ্ঠা)। প্রাকৃত পৈঙ্গল হইতে জানা যায় থে চতু্শি শতা্বীতে অবহট্টে শিবের সংমারকা হিনীর ছডা প্রচলিত ছিল। এমনি কিছু ছড়া মুকুন্দের হয়ত জানা ছিল।, আরা পুথিতে দেব-৭০ও এক ভনিতায়ও এই হঙ্গিত পাই,—“নুকুন্দ রচিল গৌরীর লৌকিকের ভাষা” (১৮ খ) ৩৫ পাই এক ছত্রের রেখাঁঙ্কত দুইটি নারীর চকিত দর্শনে ।১ ঘরে চাল বাড়ন্ত, ফুল্লরা গেল সইয়ের বাড়িতে চাল-খুদ ধার করিতে । সই বলিল, বেশ ত৷ কালই শোধ দিয়ো_-তবে এখন গোটাকত উকুন বাছিয়। 'দিয়৷ যাও । কালি দিহ বল্া সই কৈল অঙ্গীকার । আইসহ প্রাণের সই বৈস গে বাহনি । মোর মাথে গোটা কধে দেখহ উ।কনি । কালকেতু সোনার-বেনের বাড়ীতে দেবাঁদত্ত আংটি ভাঙ্গাইতে গিয়াছে । তাহাদেগ কাছে মা?সের দাম কিছু পাওন। ছিল। কালকেতুর সাড়া পাইয়৷ বেনে খিড়াকি দরজ। 1দয়৷ সাঁরয়া পাঁড়ল, আর বেনেনি বাঁলয়৷ উঠিল, কর্ত। ঘরে নাই, তুমি কাল আসয়ে৷ দাম লইতে, আর অমান মিষ্ট কুল কিছু আনিয়া দিযে । “মিষ্ট কিছু আনহ বদর”—এই কথ টুকৃতেই নারীচরিত্রের স্বাভাবিক স্বার্থপরতার ক্ষণোদ্ভাস ॥ [ পুন চন্ডীমঙ্গলের দেবী একানংসা, অরণ্যানী-দুর্গ এবং জগন্মাতা (“উত্তরে বাদত বিশ্বকায়।” )। কাহিনীর বিশ্লেষণে দেবীর জগগম্মাতৃত্ব-রূপ উল্লেখ করা হয় নাই। মুকুন্দের কাব্কাহনীতে এই রূপের প্রকাশ দেখা যায ধাত্রীরূপে দেবীর 'নিদয়াকে পুত্র দান প্রসঙ্গে এবং খুল্পনার প্রসবকালে সাহায্য। শ্রীপাতির মাতামহী বৃদ্ধা জরতীর ডামকায়ও এই ভাবের আর এক রূপ প্রকাশিত । কালকেতুর কুটীরে সমাগত দেবী যে অরণ্যানী তাহা খগ্‌দেবের অরণ্যানী সৃত্তের (১০-১৪৬ ) প্রথম গ্লোকেই বোঝ৷ যায় । দেবী যাঁদ গোধিকা রূপ ধারণ ন৷ কাঁরয়। স্বরূপে কালকেতুকে অরণ্যে ছলন৷ করিতেন তাহ হইলে কালকেতুর প্রয়াস এই রকমই হইত । বারবার দেখ৷ 'দিয়। চলিয়া যাওয়া সুন্দরী নারীর প্রাত শিকারী পুরুষের উীন্ত ৪ অরণ্যান্যরণ্যান্যসৌ যা প্রেব নশ্যাস | কথ। গ্রামং ন পৃচ্ছাস ন ত্বাভীরব বন্দতীও ॥ “অরণ্যানি, অরণ্যানি, তুমি যে উধাও হইতেছ। গ্রামের সন্ধান কর না কেন? তোমার কি ভয় লাগে না? এই শ্লোকের মধ্যে যে গপ্পটুকু অনুভূত হয় তাহার নায়ক হয়ত কালকেতুর মতো মৃগয়ু ছিল ॥ ১ ছুইটি চরিত্রই কালকেতু-উপাখ্যানে আছে। কাবোর এই খণ্ডে মুকুলৌর লেখনীর ধার ও দীপ্তি বেশি পরিপ্চুট | মনে হয় আখেটিক-খণ্ডট পরে লেখ হইয়াছিল । মনে রাখিতে হইযে, দন! এবং বাকুড়া রায়ের উল্লেখ ধনপতি-উপাধ্যানেই পাওয়া যায়। প্রথম দিবস স্থাপনা ১ ॥ ভাঁয় ॥ ব্দোন্ত দরশনে রক্ষা জারে বাঘানে আনে বলে পুরুষ প্রধান বিশ্বের পরমগতি হেতু-অস্তরায়-পতি তারে মোর লাথ পরণাম ॥ ২ শিবসুত লম্বোদর অজ্ানুলাস্বত কর গণপাঁতি দেবের প্রধান রে জয়ী জে তোমা সমগুরে। নাস আদি জত কাব তোমার চরণ সেবি গারধান দাঁপ্ নিরতর জপ-কা প্রকাঁশল। আগম পুরাণ । হৈমবী-হদননদন ারুঅ-জঙজন রা গাইয়া তোমার আগে গোবিন্দ-ডকতি মাগে দা চক্রবর্তী শ্রীকাবকন্কণ ॥ প্ত-জনের নিয় দূর কর মোর বি তব পদ করিল বন্দন। রর অর্বান লোটায় কায়ে প্রথমে তোমার পায়ে কর মোরে কুপাবলোকন অবাঁনতে অবতাঁর টৈতনা ঠাকুর হরি তোমারে কাঁরয়া ভান্ত মুনিগণ গাইল মুন বন্দ; সনযাসী ড়ামণি চাঁর পুরুষার্থের সাধন। সথে সথা নিত্যানন্দ ভুবনে আনন্দকন্দ অঙ্গের বন্ধুক-ছটা অজানুলাম্বত জটা মুকাঁতর দেখালযা সরণি । শাশকলা মুকুটমণ্রন প্রণমহ শচাঁর নন্দন টরণ-পস্কজরাজে কনক নূপুর বাজে হয়া অকিঞন-বশ দিয়৷ জীবে প্রেমরস অঙ্গদ বলয়৷ বিড়ৃষণ। নিস্তার করিল৷ সবজন। কৃপ্ুমচার্চত অঙ্গ | শুণ্ডে শোভে মাতুনুঙ্গ ভুবনবিথ্াত নাম সুধন্য নায় গ্রাম শূলদণ্ড ইযু পাশ করে জমুদ্বীপ-সার নবন্বীপ মহ। কলি-অন্ধকারে চৈতন্য-অবতারে প্রকাশিলা হরিনাম-দীপ। ধন্য মশ্র পুরন্দর ধন্য ধন্য শচাঁ ঠাকুরাণী হইয়৷ প্রভু জার বশ ত্রাণ কৈণা আখল পবাণী । মাবভোম সান্দীপনী বড়ভূজ দেখি কৈলা স্তুতি আঁখলতন্ত্রের গুরু গুর কৈল কেশব ভারতী । কপটে সন্যামী-বেশ জাঁমল। অনেক দেশ সঙ্গে পারিষদ পুণ্যশালী গোঁবী বাসু পুরন্দর মুকুন্দ মুরারি বনমালী । তপ্ত কলধোত-গোঁর ভুবনলোচন-চৌর করঙ্ক কৌপীন দণঁ-ধারী কপটে লোচনে লোর গলে শোভে নামডোর সদত বলেন হরি হারি। কাঁলকালে কেব৷ আর নদাঁয়া৷ নগরে ঘর ন্রিভুবনে এবতংস উট্রার্য-শিবেমণি প্রেমতান্ত-কষ্পতবু রাম লক্ষ্মী গদাধর কুপাময় অবতার পাষওদলন বারবান। জগাই মাধাই আদ অশেষ পাপেব নাঁধ হারভাবে হেলা দৃঢ়মন। । মহামিশ্র জগন্নাথ একভাবে পৃঁজিল গোপাল জাঁপ মন্ত্র দশাক্ষর মীন মাংস তাজ বহুকাল। বিকাইনু রাঙ্গ। পায় আজ মোর সফল জীবন গাইয়৷ তোমার আগে গোঁবন্দ-ভকাত মাগে চরবর্তী শ্রীকাবকস্কণ ॥ কয়ডি অনুজ-জাত বিনয়ে মাগল বর শ্রীকাবকন্কণ গায় ৪ বান্দে৷ দেবা বীণাপাণি ইন্দু কুন্দ তুষার-সঙ্কাশ। বিধিমুখে বেদবাণী চন্ডীমঙ্গল ্লোক্যতারিণী য়ৌ বিষুরুপা বর্ণময়ী কবিমুখে অদশ ভাষা । শ্বেতপন্নে অধিষ্ঠান শুরু ধূতি পারধান কণ্ঠে শোভে মাঁণময়-হার শ্রবণে কুগুল দোলে কপালে বিজুলি লোলে তন্রাচ খণ্ডে অন্ধকার । শিরে শোভে ইন্দুকলা করে শোভে জাপ্যমাল৷ শুকীশশু শোভে বাম করে মসী পত্র পুথি খুঙ্গি স্মরনে জীড়ম৷ জায় দূরে । দিবা নিশি কাব ভাগ সেবে ভুয়। ছয় রাগ অনুকূল ছাত্তশ রাগনী সপ্তদ্ধর৷ পিনাকিনী বাঁণা বেণু মুদ্ঈ-বাঁদনা । সঙ্গীত কাঁবত্ব-রসে আসরে করহ অধিষ্টান করৌ গে। অঞ্জলি পুটে দূর কব দুর্মীত বিজ্ঞান । দেবত৷ অসুর নর যক্ষ বক্ষ ।বদ্যাধ' সেবে তুয়া চরণসরোজে তুমি জারে কর দধ। সেই বুঝে দেবমায়। নরম্তর আছে সঙ্গী রবাব খমক বোন সঙ্গে বিদা চতুর্দশে উবহ আমার ঘটে বৈসে সেই পাঁওতসমাজে | নিশি দাস তোম। পেবি রাঁচল মুকুন্দ কাব নৌতন মঙ্গল আভলাষে উর গে কাঁবর ধামে দয়া কর শিবরামে চিন্রলেখা যশোদা মহেশে | ৫ আঁজত-বল্লভ৷ দেবী ব্হ্ধার জননী তোমার চরণ সৌঁব জোড় করি পাণি। জখন আঁছল৷ হরি অনন্তশয়নে তাহার উদরে গে৷ আছিল ঘ্রিভুবনে । প্রথম দিবস স্থাপনা জন্ম জরা মৃত্যু তোমা নহে কোন কালে সেই কালে ছিলে তুমি হার-পদতলে । অনল গরল আদি কুন্তীর মকর কত কত নাহ আছে সমুদ্র-ভিতর । তুমি গে৷ পরম রত্র সকল সংসারে তোম৷ লক্ষ্মী হইতে র্লাকর বাঁল তারে । ধম জন যৌবন নগর নিকেতন পদাতি বারণ বাজি রথ সিংহাসন । তাহার অহঙ্কার তাব' শোভা করে কৃপাময়ী লক্ষ্মী জাবদ থাক ঘরে । সেই জনে প্রশংসা সেই আঁিরাম সেই জন কুলীন গো সকল গুণধাম । তুমি গো বল্লভা কৃপা নাঞ কর জারে আছুক অনে/র কাজ স্ত্রী মন্দ বলে তারে । লক্ষ্মীরে চণ্তলা কার বশে জেই জনে লক্ষ্মীর মাহম৷ তারা কনুই না জানে । ছাড়হ সে জনে তাহার দোষ দেখি অদোষী পুরুষে কর চিরকাল সুখী । তুমি গো থাকিলে মান সকল ভুবনে তুমি লক্ষ্মী বাম হইলে [বিজয়ী নহে রণে। সেই জন পাঁওত সেজন মহাবীর জাহার মন্দিরে লঙ্গ্মী তাম হও স্থির । লক্ষ্মীর বন্দন৷ কবিকঙ্কণে ভণে ভন্ত নায়কে মাতা হও সুগ্রসম্নে ॥ শূন ভাই সভাজন কাঁবত্বের বিবরণ এই গাঁত হইল জেমতে উরিয়া মায়ের বেশে আসিয়া শিয়র দেশে চ্ডক৷ বাঁসল৷ আচম্বিতে৯। সহর সোঁলমাবাজ তাহাতে সঙ্জনরাজ নিবসে নেউগি গোপানাথ তাহার তালুকে বাঁস দামন্যায় চাষ চাঁষ মিরাস পুরুষ ছয় সাত। ধন্য রাজা মানসিংহ গোৌঁড় বঙ্গ উংকল মহীপ রাজা মানসিংহ গেলে প্রজার পাপের ফলে বিলাত পাইল মাধুদ সরিপ। উজির হইল রামজাদ। বেপার বৈশ্যের খদা ব্রাহ্মণ বৈষবের হইল এীর মাপে কোণে দিয়া দড়া পনর কাঠায় কুড়া নাঁঞ মানে প্রজার গোহারি। সরকার হইল কাল খিল ভুঁরি লিখে লাল বান উবগারে খায় ধুতি পোতদার হইল ধম টাক। আড়াই আনি কম পাই লভ্য খায় দিন প্রাত। 'ডাহদার আবুদ খোজ টাক দিলে নাঁঞ রোজ ধান) গরু কেহ নাঁঞ কেনে প্রভু গোপীনাথ নন্দী বিপাকে হইল বান্দ সেই হেতু নাঞ পাঁরন্রাণে। জানদার সভার আছে প্রজাগণ পলায় পাছে দুয়ার চাঁপয়। দিল থান৷ প্রজা হইল বিকালত বেচে ঘর কোট নিত টাকা দ্রব্য দশ দশ আনা । চাওবাটি জার গা যুক্তি কইল৩ গভির খাঁঞ্র সনে দাঁমন্য।৫ ছাড়িয়া জাই সঙ্গে রমানাথ* ভাই পথে চত্ী দিলা দরশনে । ভেলিঞাতে৭ উপনীত রুপ রায় নিল৯ বিত্ত যদু কুও তোল কৈল রক্ষা৯১ দিয়া আপনার ঘর নিবারণ কৈল ডর [তিন দিবসের দিল ভিক্ষা । বাহিয়া মুড়াই নদী সদাই স্মগারল বিধি ভেউঠিয়ায়৯২ হৈলাঙ উপনীত পাইলাঙ পাতুলি পুরী৯ৎ গঙ্গাদাস বত কৈল হিত। বিপদে লোল ভূঙ্গ সহায় শ্রীমন্ত খা দারুকেশ্চর তাঁর ৪ নৌক। বায় পরাশর৯৪ এড়াইয়া আমোদর উপনীত কৌোচড়িয়া৯৫ নগরে তৈল 'বিনে কার প্লান (কবল উদক৯* পান শিশু কান্দে ওদনের তরে। আশ্রম পৃথুর-আড়া৯ নৈবেদ্য শালুক-নাড়া১ধ গৃজ। কৈল কুমুদ প্রসূনে** ক্ষুধা ভয় পাঁরশ্রমে২০ নিদ্রা জাই সেই ধামে চণ্ডী দেখ দিলেন স্বপনে । মাত। কাঁরলং৯ পরম দয়া দিল৷ চরণের ছায়া আজ্ঞ৷ দিল৷ রচিতে কাঁবন্ব হাথে লৈল পন মসী আপানি২২ কলমে বাঁস নানা ছন্দে লিখল সঙ্গীত । পাঁড়িয়াছলাও১ নানা তত নাহি তাঁথ সেই মনু আজ্ঞা দিলা জাঁপ নিতে নিত২৪ চন্ডীর আদেশ পাই শিলাই বাহিয়া জাই আরড়ায়২৫ হইল উপনীত ।২ আড়রা ব্রা্মাডামি রান্মণ জাহার দ্বামী নরপতি ব্যাসের সমান চন্ডীমঙ্গল পাড়য়৷ কাঁবতববাণী সপ্তাষিল নৃপমুনি রাজা দিল দশ আড়া ধান। সুধন্য বাকুড়া রায় খণ্ডাল্য৭ সকল দায় সুত পাঠে কৈল নিয়োজিত তার সুত রঘুনাথ রাজকুলে২* অব্দাত গুরু বাল কাঁরল পৃঁজত।০০ সঙ্গে দামোদর ৯ নন্দী ” জেজানে দ্বপ্নের সান্ধ অনু'দিন কারল জতন নিতে* দিল অনুমতি রঘুনাথ নরপাঁত গায়নেরে দিলেন ভূষণ 1৩৩ বিরমদেবের সুত গান করে অদতুত বাথান করয়ে স্জন তাল মানে বিজ্ঞ দড় বিনয়সুন্দর বড় নতিমান মধুরবচন। ধন্য রাজ রঘুনাথ কুলে শীলে অবদাত প্রকাশিল নৃতন মঙ্গল ঠাহার আদেশ পান শ্রীকাবকন্কণ গান সমূভাষ৷ কারয়৷ কুশল ॥ প্রথম তিবস নিশা তেজিয৷ কৈপাস গাব উর গো মবত-পুবী ভতোব কবিতে গাাণ বিশ্রাম দিবস আট শুন গীত দখ না) আসবে কখহ আধষ্ঠান। লাখ পাঁডি ণানা গ্রন্থ নাহ পাণডতের গাস্থ কৃপা কাব দিলে গুব্ঙাব অনাভজ্ঞ তালমানে কেমনে শখাব আনে দোষ গুণ সকল তোমাব। জে বোল বলাহ তুম সে বোল বালব আমি তোম। সোঁব প্রজাপাত গাষে তাহে অব্যাহতি তুমি কবি মোর উপদেশ বিপদনাশিনী তোমা ঘোষে। 1৯ প্রচার যেমন কাব্য শুনযে তেমন ভাব তুম শ্রদ্ধা তুমি তুি তুমি ক্ষমা তুমি পুষ্টিং কাব চিন্ত। হর মোর ক্লেশ। গিরিকন্যা ঈশান-গৃহিণী বলি হোম ধৃপদীপে তোমা পৃজে মগ্ত্ধীপে আগম নগম তত বাঁজরূপা মহামন্তর তোমাব সেবক জগজন বেদমাত। বিশ্বের জননী । নায়েকের থাকে দোষ দূর করহ আভরোয গ্রোকুলে গোমতী নামা৪ তমুলোকে বর্গভীমা কর মোবে কৃপাবলোকন। উত্তবে বাদিত বিশ্বকাহা তুম বমা তুমি বাণী যোগনিদ্র নাবাধণী জ্যন্তী হস্তিনাপুরে বিজযা নন্দের ঘরে নুীবিদ্যা অনাদিবাসন। হরি-সিধানে মহামযা | মহাযোগ কালরান্তি গাযতরী তুবনধাত্ী দানবকুলেব দর্পে দৈবকী-অষ্টম গর্ভে ক্রিযাশান্ত সংসারকারণা। হৈলা সৃষ্টি ক্ষিতভাব-নাশে সলিলে ডুবিল মহী আশ্রয কাঁরযা আহ হরিতে তাহান ভাঁতি যোগনিদ্রা ভগবরতী শয়ন কারল। নারায়ণ থুইল৷ যশোদা ৫-গর্ভবাসে। সোঁহ অবম!নকালে প্রভুর শ্রবণমূলে.. ভোজরাজ-মহাতন্কে ্রীহার করিয়া অঙ্কে দুই দৈত্য হইল মহাবলল বসুদেব গেলা নন্দাগার [ নাভপন্ে প্রজাপতি দেখিযা কাপিত মাত. আগম যমুনাজল মায়া পাতি কৈলে স্থল রহ্ষাকে হানিতে যায় রোষে। শিবারুপ। নদী কৈলে পার। ঙ হরিতে অবনীভার কৃপাময় অবতার যদুকুলে হৈলা নারায়ণ যশোদা জঠরে জাতা হইলা নন্দের সুত৷ বিরাচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৮ আদাদেব নিরঞ্জন জার সৃষ্টি ঘ্রিভুবন পরমপুনুষ পুরাতন শূন্যে কারয়া স্থিতি চান্তল মহামতি সৃষ্টির উপায় কারণ। নাহি কেহ সহচর অসুর দেবতা নর সিদ্ধ নাগ মরণ কিন্নর নাঁঞ তথা দবানিশি না উদয় রবি শশী অন্ধকার আছে নিরন্তর । কোটি ভানু পরকাশ পাঁরধান পাঁতবাস অভিনব তনু ঘনশ্যাম৯ কনক কি্কনী হার দূর করে অন্ধকার পুরটমুকুট মাণিদাম । কণ্ঠে কোম্ুভ-আভা কোটি চাদ নখ-শোভ। কুলে মাওত দুই গণ্ড নবীন জলদ-কাস্তি চাদ [জনি মুখপাতি অজানুলম্বিত ভুজদণ্ড। অচিম্ত্য অনন্ত শান্ত হৃদয়ে ভাবিয়া যুক্তি জলে স্থলে নাঁঞ অধিষ্ঠান কথায় সঙ্গাত না চাস্তলেন গোসাঞ আপনারে অশন্ত সমান । চিন্তিতে এতেক কাজ একাচত্তে দেবরাজ তনু-বাহির হইল প্রকৃতি রাচিয়া তিপদী ছন্দ গান কাঁব শ্রীমুকুন্দ পাঁচালি অন্ভুত নামীত ॥ চণ্ডীমঙ্গল মাদ্যদেবের নিত্যশান্ত উরিলেন সৃষ্টির কারিণী কাঁরয়। সম্পুট পাণি মৃদুমন্দ-ভাষিণী সমুখে রাহল৷ নারায়ণী। রাজহংস-রব জিনি চরণে নুপুরধবনি দশনথে দশ ঠাদ ভাসে কোকনদ-দর্পহর ভূবনমোহন-ৃর্তি বেষ্টিত জাবক৯ কর অঙ্গুলি চম্পক-পরকাশে । রামরস্ভ। জানি উরু নাবড় নিতন্ক গুরু কেশরী জিনিএ। মধ্যদেশে মধুর কাক্কগী বাজে বচন-গোচর নহে বেশ। রাজহংস জনি কাতি গজকুদ্ত চারু পয়োধরে তাহে শোভে অনুপান যেন গঙ্গা সুমেরু-শিখরে | মণিময় হার ছলে কিঝ৷ শোভে তার গলে স্থির হয়৷ সৌদামিনী ভাসে২ নিরুপামা পরকাশে মন্দ মধুর হাসে ভঙ্গী নব শাখবার আশে । বিদ্বুকৎ কুসুম ছটা প্রভাতকালের যেন রাঁব অধর বিশ্বক জুতি দন্ত মুকুতার পাতি তিমির দহন করে ছবিঃ । কপালে সন্দুর-কিছু তাহে ঘর্ম বিন্দু বিন্দু তাহে শোভে চন্দনের বিদদু কয়া তামর মেল ধারয়। কুম্তল ছলা বন্দী করিলে রবি ইন্দু। িলফুল জনি নাস। ভুরু যুগ চাপ-সহোদর পারধান পাট-সাজে হেম জান দেহজ্যোতি মণি মুকুতার দাম লল্লাটে 'সিন্দুর-ফোটা বল্পকী 'জানিঞা ভাষা প্রথম দিবস; নিশা খঞ্জনগঞ্জন আখি রাক৷ সুধাকর-মুখী শিবোবুৃহ আসত চামর। অঙ্গদ বলযা শঙ্খ ভুবনে উপাম বন্ধ মণিনয মুকুট মণ্ন৫ হাসিতে বিজ্জীল খেলে কপালে কুল দোলে মুখবুচি ভুবনমোহন । প্রভুব ইঙ্গিত পাযা আঁদিদেবী মহামাষ। সৃষ্টি সাজতে কৈল মন উম্নাপদ-হিতাচত বচিল নতুন গীত চক্রবর্তী শ্রীকাঁবকন্কণ* ॥ ১০ এক দেব নানামৃতি হইল মহাশয হেম হইতে কুগুল বস্তুত ভিন্ন নয । প্রকতিতে তেজ প্রভু কাবলা আধান বৃপবান্‌ হইল তাতে তনষ মহান । মহতেব পুত্র হেল নামে অহঙ্কাব যাহা হৈতে হৈল সৃষ্টি সকল সংসাব অহস্কাব হইতে হইল এই পগ্চজন পৃঁথবী উদক তেজ আকাশ পবন । এই পণজনে লোক বলে পণ্ভূত ইহা হৈতে প্রার্বর্গ হইল বহুত । গুণভেদ এক দেহ হৈল। তিনজন বজোগুণে পিতামহ মবালবাহন। সত্ৃগুণে বিষুরুপে কৰেন পালন তমগুণে মহাদেব বিনাশ কারণ । ক্মাব মানসপুত্র হইলা চাবিজন সনংকুমাব যে সনক সনাতন । সনন্দ হইল তাঁথ পবেব পুবণ কৃষকথা বিনে তার অন্যে নহী মন। পতৃবাক্ ন৷ শুনিল৷ সংসাব বিমুখ চাবিজন বুঝলেন হবিভন্তি-সুখ । প্রপণ% সকল বাঁধ হার হব সত্য চাবি ভাই কৃষণনাম গান সাবাহত । চাবি পুত্র যদি তাব তেজে অনুরোধ বিধাতার হদযে বাড়িল বড় ক্রোধ। সেই ক্রোধে হূভাঙ্গ হইল বিধাতা তাহ তে জাম্মিল নীলশোহিত কুমার ॥ বাল্যভাবে মহাদেব মবেন বোদন নাম ধাম জায৷ মোব কব নিজোজন । বিচাবিষা বুদ্র নাম থুইল প্রজাপাঁতি মৃত্যুঞ্জয মহেশ ঈশান পশুপাতি১। দাযতে তেজ ইন্দ্রী বাযু বাহ জঞ। ইন্দ্র ধর দিবাকব দিব তোবে স্থল । ধাত বুদ্ধ ঈশী বশী শিবা আব অণিম। একভানে ছয নাবী ৬জিবেক তোমা । সৃষ্টি কব পুর তোমাবে বাডুক পরমা আজ্ঞ। পাঁঙ্ঘল তোব জোয্ঠ চাঁব ভাই | পিতৃধাক্য দিল শিব তপস্যায মন সাজলা প্রমথ প্রেত ভূত দানাগণ । জঠাঙাবে হাডমালা বিভূতি ডুষশ দেখিযা বিধাত। কিল সৃষ্টি নিবাবণ । ওযঙ্কব সৃষ্টি পূত্র না৷ কব গঠন তপস্যা কবি পুত্র ওজ নাবাধণ । পিতৃবাক্যে শিব দিল তপস্যায মন একভাবে মহাদেব ভজে নাবাযণ। তবে জন্মাইলা ব্ষ। এহি দশ সুত আচাব বিনয বিদ্যা বৃপ গুণ যুত। মবাঁচি অঙ্গিবা অনি ভূগু দক্ষ ব্রতু পৌলহ পোলস্ত হইল৷ সংসাবেব হেতু । বশিষ্ঠ হইল! দেবমুনি মহাতপা নাবদ হইল৷ জাবে হইল হরিকৃপা । আপনাব অঙ্গ ব্রহ্ধ কৈল্য দুইখান বামাদগে হইল নারী দক্ষিণে পুমান। নাবী শতর্পা নাম ধাঁবলেক তনু পুবুষ হইল দ্বষস্তুব নামে মনু । মনুকে বলিল ব্রহ্মা শুন মোর কথ। প্রজা সৃজিয়া। মোর ঘুচাহ বাথা । সৃষ্টি করিবারে ভাল বলিল গোসাঞাী কোথায় বাঁগবেক প্রজা এমত স্থল নাঞ । যুগে যৃগে প্রজা-সৃষ্চি আছিল ধবণী অসুর হরিয়৷ লৈল পাতাল-সরাণি । এ বোল শুনিযা রক্ষা হইল ান্তত নাসাপথে বরাহ হইলা আচাম্িত। অভযার চরণে মজুক নিজচিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১১ আঁন্ত্য অনন্ত মায়া ধাঁরয়া বরাহ-কাঘা অঙ্গে শোভে যজ্ঞপানুজাল ধনূর্ঘার মহারন্ত* প্রলয়জলধি-অন্ত প্রবৌশয়৷ পাইল পাতাল । সেবকবংসল ভগবান দনে ধরণী ধার হিরণ্যাক্ষ বাবে মারি পাতণ হইতে করিল৷ উদ্থান। দশন কুন্দের আভা তাঁথ দেবী পাইল শোও। তমালশ্যামল বসুমতী জেন কারদস্ত-মাঝে সপন পদ্দিনী সাজে বাঁধ সাদ্ধ ধাঁষ কৈল স্তীত। জলের উপরো ক্ষত আরোপি ভুবনপতি শরীর বাড়েন ঘনে ঘন উঠি বিন্দু সটাধৃত ভুবন করয়ে পৃত সর্পেত [ তপঃ ] সত্য জন। জল তোঁজ দেবরায় সঘনে ঝাড়েন কায অঙ্গে হৈতে লোম ছয় খসে পাইয়া ধরণীগর্ভ তাঁথ হৈতে ছয় দর্ভ বিশ্রমথ ঘুচে সেই কুশে। চন্ডীমঙ্গল আঁখল পবতগুরু মধ্যে আরোপিলা মেরু মন্দার-প্রমুখ গারচয় গঞ্ধমাদন মালাবান নীল শ্বেত শূঙ্গবান হেম হিমকুট হিমালয় । প্রথমে উদিতাঁগাঁর পাছে অন্তাশখরী চোঁদিগে বোঁড়িত লোকালোক বাহরে কাণ্নক্ষিতি তাঁথ যোগেশ্বরপাত দেখি বিধাতার ঘুচে শোক। সুমেরু উপর ভাগে রবি-চন্দ্র রথ লাগে বৌড়য়া ফিরেন দিবাকর গতাযাত কাঁর লক্ষ দিন নিশা মাস পক্ষ হইল ধতু আয়ন বংসর। কৃপাময় অবতার হইল প্রভু শিশুমার উদ্দাপুচ্ছ হেট জার মাথা তাঁথ রাশিচকভর ফিরে প্রভু নিরন্তর গ্রহতারাগণ বৈসে তথা । উর্ধালোকে বহে গ্গ। প্রবলচপলভঙ্গা মেরুশৃঙ্গে হেল চারিধারা সীতা ভদ্র বঙ্খ; নাম অশেষ পুণ্যের ধাম অলকানন্দিনী তীর্থবরা । বৃহস্পতি রাজধানী তাঁথ মনু নৃপমাঁণ শতরুপা সঙ্গে কৈল বাস। রিয়া প্রিপদাঁ ছন্দ পাচাঁল কাঁরল বন্ধ নৃপমণি মঙ্গল প্রকাশ ॥ ১২ শতরপা মনু সঙ্গে ক্রীড়া কৃতৃহলে পুণাযুত দুই পুত্র হইল কথ কালে । জ্যেষ্ঠ সুত প্রিয়ন্রত হইল নৃপবর। রথচক্রে হেল জার এ সাত সাগর । কনিষ্ঠ উত্থানপাদ বিখ্যাত ভুবনে ঘুব নামে পুন্ন জার বাঁদিত পুরাণে। প্রথম দিবস ? নিশা তিন কন্যা হইল তার বৃপগুণবতী আকৃতি প্রসূতি হৈল। আব দেবহৃতি । আকৃতিবে বভা দল বুঁচ মুনিববে দিলেন যৌতুক বথ তুবঙ্গ খৃঞ্জবে। কর্দম মনকে মনু দিল দেবহৃতি দিলেন যৌতুক নান৷ *ন প্রজাপাতি। প্রসৃতিবে পাণিগ্রহণ কৈল দ্গাশি জন্মিল তাহান নোলো তনবা বঁপণী | ষোড়শ কনাব মনধ। নখ সৃত। সতী ধমমোগ্ন হেতু ভৈপা আপনে প্রকীতি। বদের উপাদশ দদ্ষ প্রজাপাতি চহানদবে |বনাহ পিলেন কণগ সভা | নাণাধন জৌতুকে পবিণা আি।াৰ ববকনযা দর্গমুন পঠাল্ল। 'কাাস। এমন সগনণে ৬গ বিবিষ্টিনন্দন | লহস্পাতি আনি যজ্ঞ (কন অ বন্তুণ। চাঁববদে শাণতত আঙ্গিবা জাব হোতা গদসা 5ইলা তাঁথ আপনি বশ | “দপগাণ নিমন্ত্রণ পিন ভগশনি ঘবে ঘণব বাতা দি নস আগাঁন | আইন /“ব চরুপাণি ঢাপঘা ণনঙ বষতে চাপিযা আউলা দেব চন্দ্রচড | মহিষে চাপঘা আইলা যম চোদ্দজন 5বণে চাঁপথা উনপণ্টাশ পবন | বাশিচক চাঁপযা আইল গ্রহগণ বথে চি দিকপাল কাবল গমন | কেহো বথে কেহে। গজে কেহ তুবঙ্গমে চাঁড়য়। বিমানে আইলা ভূগ্গুব সদনে । লহ্গ্মী সবস্থতী আদ যত দেবাগণ চাঁড়যা বিমানে আইলা ভূগুর সদন । পাদা অথ্য দিল মুনি বাঁসতে আসন মধুপর্ক আদি দিল নানা মাওজন | সিদ্ধান্ত কবএ কেহ কবে পূর্বপক্ষ এমন সময় তথা মুনি আইলা দক্ষ । দক্ষ দেখ দেবগণ কাবিল উথ্থান বাঁধ বিষণ শিব বিনে কৈল পরনাম। অন।চাব দেখি শিবেব দক্ষ কাপে বেষে দেপগণে শিবেদিল গদগদ ভাবে । স৬্যাব চবণে নজুক নিজ ত শ্লীকাবকন্কণ গান মধুব সঙ্গীত ॥ ১৩ শখ বে55116 প ৭ বড দাবুণ শোক এই শন শামাৰ ভাম।ত। গাহাও খন্দ্েব স্থান না কবে আমাব মান [মা নম না নোঙাতেঞ মাথা । নাবাদ কাঠব কী তাব বাকো দিলাঙ ঝি "মন ভা্ড-১তি পাপে ন্রিভৃবান এক ধন।। পাত্রে 1দলাঙ কনা তা শুখ হল পাঁণতাশে। [শিবেব নতি আনিভাদমূ। কীথাজাত কীবাকুল ন1ঞ জান কেবা মতা |গিত। আগি ছার আন্দণী শনসে পৌলল বি সঙা মণ লাজে হেট মাথা । শিবেব অঙ্গবাগ চিতাধাল কান্ধেতে ভাগের ঝুল বিষধব উত্তবি-বসন হেন এমঙ্গল-ধাম কে থুইল শিব নাম দেববুদ্ধি কবে কোন জন । চাহতে চাহিতে ভাল কুল করিলাঙ কাল নাম হৈল মামাবে বিধাত৷ ভূষণ হাডেব মাণ। শ্মশানে বিনোদশালা হেন জন আমার জামাতা । ধক্ষ দানা প্রেত ভুত বসতি সভাব জুত সহনোগ শযন ভোজন ১৬ জাতের নাহিক স্থিতি সে জন কন্যাব পাত দেবকুলে কেবল গঞ্জন । সর্তী ঝি গুণনাধি তাবে বিডাস্বল বিধি পতি সে দাবিদ্র দিগস্বব কুলে হইল দোষ মনে নাহি সন্তোষ অপযশে কান দগান্তব৯ | শ্বশুব জেমন তাও তাবে ণা ভাঁডন হাথ সভায কাবল মপমান নএ২ লোকে অনুবাগ ঘুচযে মাজ্ঞব ভাগ বেদপথে নযেও অবধান। গুণবাজমিশ্র-সৃত সঙ্গীতকলাষ বত বচাবি। আনেক পবাণ দাঁমিনা। নগববাসী সঙ্গীতে অভলাষা শ্বীকাবকন্ধণ ধস গান ॥ ১৪ এমন শুঁনিয। নন্দি দাক্ষেব বচন কম্পমান দেহ হইল লোহিত লোচন । দক্ষে সাপ দিতে নন্দি জল নিল হাতে নাঞ্ি হইএ দঞ্ তোমাব মতি মুস্তিপণে | মহাদেবে দক্ষ কেন বল কুবচন আঁচরাত হইয দক্ষ ছাগলবদন । বিমনা হইয়া শিব চলিলা কৈলাস দক্ষ প্রজাপতি গেলা আপনাব বাস । পবপব দুইজনে হইল প্রাতকূল স্মুর-জামাত৷ হইল ভূজঙ্গ-নকুল। জামাঞ শ্বশুর দ্বন্দ হইল বহুকাল দক্ষেব হদযে কোপ বাড়িল বিশাল । কথে৷ কালে কৈল রহ্গা। দক্ষের সম্মান সকল পুণের মাঝে কবেন'প্রধান। ব্রাহ্মণের রাজ! কাব ধরাইল ছাতা প্রসাদ কাঁধল তাবে কনক-পইতা । চণ্ডীমঙ্গল ব্রাহ্মণ পালিতে তাকে বুদ্ধি দিল 'বাঁধ সেই হইতে কুলে ওঝা হইল পালধি । রক্ষার প্রসাদে দক্ষ হইল বড় দন্ত বৃহস্পতি আনি যক্স কবিল আবন্ত ৷ নিমন্ত্রণ দিল দক্ষ সুব নাগ নবে কহিল শাবদমু্ন সভাকাব ঘাব । বাধ বিষ্ক ণিনে আইলা সর্ব দেবগণ নাগলোক 'বাঁস আইপা দক্ষেব সদন | আকাশেত শুনিধা বিমানেব কোলাহল দক্ষেব দঁহত৷ চণ্ডী হইলা চণ্চল । লোকমুখে শ্ীনিষা দক্ষেব ক্লতুধব নিবোদিশ শঙ্কবে কাবআ জোডকব। দগগ, প্রজাপতি গোসাঞ তোমাব শ্বশব তাব ঘবে তিন লোক চলিল প্রচুব। তুমি আজ্ঞ। দিলে আম জাই পিতৃবাম বাপেব উৎসব শান বড আডলাষ । এমন বালিযা ধাঁব 1শবেব চবণ নযনে নিকলে লো৷ গদগদ বচন । নিমন্ত্রণ বিনে জাবে এই মাথা-কাট। আমার প্রসঙ্গে তুমি বড পাবে খোটা। নিমন্ত্রণ |বনে জাবে বাপের সদন ইথে দোষ নাঞি গোসাঞ লোকৰ গঞ্জন | অভযাব চবণে মজুক নিজ চিত গোঁবাব প্রসঙ্গে নাচাঁড বাঁচিত১ | ১৫ অনুমাত দেহ হর জাই বাপাব ঘর যজ্-মহোতসর দেখিবাবে ন্রিডুষনে জত বৈসে চলিল বাপেব বাসে তনধা কেমনে প্রাণ ধবে। চবণে ধারযা সাধি কুপা কব কৃপানিধি জাব প% দিবসের তবে প্রথম দিবস ণিশা চিরদিন আছে আশ জাইব বাপার পাশ নিবেদন নাঞ্জ কার ডরে। সুমঙ্গল-সৃঘ করে আহ্লাও তোমার ঘরে পূর্ণ "হণ বংসর সাত দূপ কর বিবাদ পুরহ আমার সাধ মাএর বন্ধনে খাব ভাত । ' ধত কননে বাপ লাঞ পাট-পড়াস সামন্ডে [সন্দূ দতে সখী ভু়াইতে নাঞ ঠাঞ্ি বাধ খোবে কেণ জন্মদৃঃখী | কাঁতল জথা জাই 1৩] মোৰ পুণাবান দিবেন অনেক দান কন্যাগ?ণ কাঁববেন বেভাব তাতরণ পারধাণ আগে আমি পাব মান ভেদবুদ্ধি খাহিক খাপার । শাণয। সতীর বাণা শুন প্রয়ে আমার বচন বগ ঘবে জবে চল ভাবষাং বহু বিড়ম্বন | কহিলেন শূলপাণি ঙবে না হইবে ভাল “হানহ্র জগশ্াথ ধ্দয়মশ্রের তা৩ কাঁবচন্দ্র হদয়-নন্দশ তহাব অনুজ ভাই ৮ওকা-আদেশ পাই বরাচণ শ্রীকাবকন্কণ ॥ যাইবারে অনুমতি নাহি দিলা পশুপতি দাক্ষায়ণী হইলা কোপমতি গভাবে হইআ। বামা ৮লিল! জুকু্টী ভীম। একাকিনী বাপের বসাঁত। ইমা উম্মস্তবেশা যান চত্তী মুস্তকেশা না শুনিা শিবের বচন 'শিবেব ইঙ্গিত পায। বৃষবর করিয়া সাজন । পাছে নন্দী যায় ধা ১১ পারিকা সিন্দূর-পোড় পিছে লৈয়া ধায় চৌঁড় কেহ লইল চিরান দর্পণ পুরিয়। সুগান্ধ বার কেহ লয়া জায় ঝারি শ্বেতছতর ধরে কোনজন । আইল সকপ সেনা সঙ্গে প্রেত ভূত দানা নেক। জোক দুই সেনাপাতি আগ গাছ দানা ধায় রাঙ্গ। ধুলা মাথে গায় দেখিয়া হরিষ হইল সতী । বৃষ জোগাইল ণান্দি চাপিয়৷ চলিণ চণ্ডী শিরে ছু ন্দি ধরান না জাণি চাপল কত [তন দিবসের পথ দুই প্রহরে কৈল পথান। পাইল বাপের গ্রাম শুনিঞা সতীর নাম প্রসূতি ধাইল বেগবতী কোলেতে করিয়৷ সতী প্রসথৃত পুলকমাতি কইল দোঁব মাএরে প্রণাত । আনিয়া আপন থরে প্রস্থাত দলেন তারে পাদ অধ্যকণক আসন গতেক বাহনীগণ সভে কইল আলিঙ্গন ঘরের কুশল [জজ্ঞাসন | আর যত সখীগণ আসিলেক ততক্ষণ শৃনিয়া চণ্ডীর আগমন রচিয়া ন্রুপদী ছন্দ চক্রবর্তী শ্রীকাঁবকল্কণ ॥ পাঁচাল কারল বন্ধ ৯৭ মাব্রিখাহন সঙ্গে কার সম্ভাষণ সত্বরে চালল৷ চণ্ডী যজ্জের সদন | দক্ষের চরণে চ্তী কারিল৷ প্রণাত হেটমুখে আশিষ করেন প্রজাপাতি। আয়্যাতে জাউক কাল ঘুঢুক দুর্গাতি চিরজীবী হোক স্বামীর সুস্থির সুমাতি । ১৯ না দোখয়া। য্জে দেবী শিবের প্জন (কোপে কম্পচান ভু বাপে নিবেদন | শুন পাপা তোম।বে করিএ আমান সতী ঝিএ তোগার ট্রটিণ মবধান | ধর্ম আদি তোমাৰ জতেক বন্ধীজন সবাবে আসতে যজ্জে কৈলা নিমন্ত্রণ | অন্য জামাতারে দিপা বস্ত্র অলঙ্কার শিবপচক্ষে ভান শহে তোমার ব্যবহাব | দুষ্ট দৈফলেতে তোমার আমি ঝি ন। কাঁধল পুণ্যকর্ম নিবোঁদিব কাঁ। এমত শ্রানণ্ দক্ষ সতীর বচন সকে”প বলেন বাণী শুনে সবজন | অশয়া-চরণে মজজুক নিজচিত গ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৮ উচিত কাহতে কথা ননে গাছে পাও বাথ ভোবা ৩৭ কপালে লিখন তোমার কর্মের গাঁত ধাশী হইণ বামপাঁথ তারে যঙ্জে আনি কী কারণ । শিবের গারধান বাথথাল গণাএ হাড়ের মালা ৯ বি৬াত ডষণ জার অঙ্গে শ্মশানে জাহার স্থান কেধা করে তার মান প্রেত ৬ত চলে তার সঙ্গে । আরোহণ বৃষবরে সঙ্গ ডম্থুর করে ভক্ষণ ধৃতুরার ফল নাগে বড় আভপাৰ ফাঁণ-উত্তীর বাস ফাঁণহার ফণির কুগল | তোমার কর্মের ফল ফ্ামী হইল পাগল ডোঁড় সম্বণ নাহ বাসে অনুচিত তাহার মাথায় জটার ভার জজ হজ চণীমলল ঝিএ সোবআ পশুপতি পাইলে পশুর গাঁত আহি মঙ্গে এক শয়নে হরশিরে শাশিকলা আঁহ সঙ্গে জার মেলা এই দুই বাত ভুধনে । দ্ষ দানা। প্রেত ভূত সভাএ বসতি জু সহযোগে শয়ণ তেন জাতের শ।হক স্থিত হেন জন দিগপাত দেবকুশে কেবণ গর্জন | আশি ধঙ্গার সুত তিড়বনে পাঁজিত তর খন আ'খাবে প্তাৰ ৬গুর যজ্জরস্থানে দেব মুনি বিদামাণে গামাবে না কেলে *নষ্কার | শুন ঝিএ মোর খাণাঁ যজ্ঞে যাঁদ তায় আহি অবশো হইব যজ্জনাশ দেখিযা শিবের গুণ আর ঞত মুনিগণ একস্থানে ন৷ করে নিবাস । এতেক দক্ষের কথ। শান ভুবনমাতা ক্লোধমুখে দিশেশ উওর বাঁচযা ব্রিপদা ছন্দ পাচালি করিয়। ব গাইল মকন্দ কাবধর ॥ ১০ সমুদ্রমথনে ঘোর উঠিল গরণ তিন ণোকে দহে থেন প্রপয়-অনল | হেন বিষ পিয়া শিব রাখল জগত সম্পদে বিদুঃমাত না জানে মহত । (শিবনিন্দ। শ্রবণে করিব প্রাতিকার তোমার অহঙ্কারে তনু না রাখব আর পিণাক ধনুক জার অনন্ত শার্জনী আপনে হইল শর জাথে চক্রপাণি । লোকারপু ব্রিপুর দহন কৈল হর হেন জনে কী কারণে বল অনুতর | ভধ৩জভুত বং অজ বুধ প্রথম দিবস নিশা দুর্লভ মানিঞএ॥ জার আস করে অজ । দেব নর নাগ [শবে কবযে পৃজন তোমা বিনে দোষ তারে না দেয কোনজন গুরুজনের নিন্দা শৃনিঞ। আসাদ শ্রবণে জেই নিন্দা করে তার কারব শাসনে । সেইস্থান ছাড়িযা কীষ্বা জাই অন্য স্থাণ বাপ-প্রাতকার হেতু তোজব পবাণ । দযসবোজে চিন্ত শিবেব চবণ দট কবি মহাদেবী পবিল বসন । যোগেতে ছাডিন তন জগতেব মাত। সূক্ন্দ বচিল গৌবীমঙ্গলৈব গাথা ॥ ৪. দেবাসুন নর সভে কৈল হাহাকাৰ কেহো৷ বলে দক্ষযজ্ঞে হইল মহামাব । যত বন্ধুজনে সভে কৈন কোলাহল যোগবলে ভাব গায জলিল অনল । সতী যঙ্জস্থানে জদি তেজিণ ভ্তীবন যঞ্জনাশ কারতে ধাধ জত দানাগণ । আগে নান্দি জায দুদকে নেকা জোক শত শত দান। ধায নাঁঞ লেখা জোখা । [বিপক্ষ নাঁশতে ভূগ দিলেক আহুতি যক্জ হইতে উঠিল অনেক সেনাপতি । রথ তুরঙ্গ সেনা উঠিল পু্জব খরশরে দানাগণ হইণ জবজর | রণে ভঙ্গ দিয়া দান।১ পলায় সবে বৃষভ চড়িয়া নান্দ জান এড়ি সমবে। শিবের কিঙ্কর জত সব হইল হৃতাশ ধাইআ মেলিল 'গিয়৷ পৰত কৈলাম । সহম্রমুখে বার্তা নন্দি কাঁহল মহেশ্ববে লোটাইআ কান্দে নন্দি মহাঁর উপবে | ছিগডিয়৷ পেলিল শিব মাহতলে জটা বীবৃভদ্ু হইল তথ সঙ্গে বীরঘট। । ১৩ [তন সূর্য সম বীরের তিনটা লোন মাথার মুকুট বারের ঠোঁকআছে গগন* । জোড় হস্তে কৃতাঞ্জলি রহিলা সমুখে নমানে নিকলে আগ্ন ঝলকে ঝলকে । প্রণাম কাঁপ্আ৷ কইল নিজ নিবেদন কি কাধ কারব নাথ কহ না এখন । আত দিম শি তাবে যজ্ঞ নাশিতে [বশেম কাহিল তাবে দক্ষ বাঁধতে । চ ৩৪ গইঘ লাঁব৬প্ু জাম পখুগাতি স্ ক। তিশা সাদি ধাএ সেনাপতি । ০ যো | কোটী পাও প্রেত ৬ত দান। দ1মাঠ। দড়দসা বাজে ঝানশিস বাজনা । দনাণণেব কোলাং লে কিছুই ন। শান আংসাঁদত ধূলাএ হইণা দমন । যজ্ঞশালাব বাঁরগদ্রু দলা দরশন হজ্্রশালা ভাগে জতেক দানাগণ | প্রাণভযে প্রাঙ্গণ দেখান পইতা পবাণে না মারে [ দানা ] মাবে নাথানে থ। এ।ওজন। এাশিতে হইল বীরের প্রুযাণ আাম্বকামগ্গরশ কাবকঙ্কণ গান ] ১ প্রপাবণ বীব৬পু হু নাশিবারে৯ দ্র নিজ পু ভাঙ্গিয়। করে চুর কেহ নাঁঞ |নবারিতে পারে । ণামনে ধাঁবযা গুঁথ নিল কাঁ়য়া ;ডান দিয। দুই ডুঁজ বান্ছে ডে জ৭ গাপাই জাগ তাড়াতাড়ি ধরে তায় পৈত৷ দেখার কান্ধে । বেগে হোত। ধায তাড়া ধরে তায় গাড়িয়। উপাড়এ দাড়ি ছিঁগুপ বসন ভাঙ্গল দশন শ্রপের মাঁরয৷ বাড়ি । ১৪ হইযা বচেত। ধাইল প্রচেতা বাঁব তাবে ধাবিযা বাদে বাসনেব জিউ রাখ বামনেব জিউ বাথ বলিধ। প্রাচতা কান্দ।২ দক্ষের বীববৰ ছোঙযে খব শব মেঘ জেন পানায পসল। বাজিআ৷ দাণ।ব গাধ পাছখাই পুন জাম পুষ্পের জেহ মাল। | দক্ষের আগুদণ বাইল গজবল পোহাব মুদ্গব শু রষয়া বীববর কাঁবল জর্জ মুঠকী মামা মুণ্ড। ধাঁরআ রণে তুরঙ্গ চরণ তুলিআ দেই নাড়া অঙ্গ ছাড়িযা তুবঙ্গ পিল হাতে বাঁহল ফড়া। বীরবর ল্ফে বসুধা কম্পে অস্ট কুল্গাচল ফি? ফাণগণ ছাড়িযা এাঁণগণ পাঁডল ফাঁণপাঁতি মাথায় ঘাব। ভূগুর লোপ করিল মাচন পৃষাব ভাঙ্গল দত্ত সৃধের ঘোড়া ছিওযা দড়। দিগব পাইল অস্ত । উভ কাঁব পাণি নাচস্তি বীবমণি কারবব গাঁথব। শূলে গঁধরেব পান কারযা পাঞ্জলা দানা [পযে কুতৃহলে । সঙ্গে দানাঘটা ধাইল লাঙ্গটা মুতিযা ভাবল কুণ্ডেও কপাট ভাঙ্গযা ভাডার লুটিযা ঘৃত মধু ঢলে তুণ্ডে। দক্ষের কা্টী শিব আনিল মহাবীব পেলিল যজ্ঞেব কুণ্ডে চন্ডীমঙ্গল মুকুন্দ নিবেদণ শুন হে মভাজন মহাদেবাণন্দাব দণ্ডে ॥ এঃএ দক্ষেব য্জ কবিষ। বিনাশ দণযাণ্রে বীবঙদ্রু চালল কৈলাস । সঙ্গ সিংহনাদ কবে প্রেত ভূত দান। দামা দড়মসা বাজে ব্ালিস বাজনা । প্রণাম কারযা কৈল নজ নিবেদন প্রসা” কারন 111 তাবে নানা দন । দক্ষযজ্ঞে সতী যাঁদ তোজল জীবন তপস্যাযে মন 'দল। দেব পণ্টানন | এমন দক্ষেব যজ্ঞ কার িবনাশন৯ বিধাতা আইল তথা দেব নারাষণ | ছাগমাথ। দক্ষ-কন্দে কাঁবযা জোড়ন পুষের কৃপায দক্ষ পাইল জীবন । এমন দক্ষেব যজ্ঞ বিনাশ কবিযা পুণাজুত দোখ ঠমালযে কৈল দা । তুধাবাশখাঁব-ভাগা নিবোদব কা ভূবনজননী দেবী জাব "হল ঝি। কি পারে মেনকাব পুণ্য কবিতে গণন জাহাব উদবে চণ্ডী লিলা! জনম । 'মনাক জাহাব ভাই ভূবনে সুন্দব জাব পাখা কাটিতে নাবিলা পুরন্দর । লোকপুণা হেতু তাব হৈল জম্মাদন হিমালযেব যশে লোক হৈল অমলিন। দিনে দিনে বৃদ্ধিমতী সবমঙ্গল। সিতপক্ষে জেমন বাড়েন শশিকলা । পর্তবাজেব ছিল জত কুলাচার অন্নপ্রাশন আঁদ কাঁবল তাহাব । কাঁবল শ্রবণ-বেধ পণ্টম ববষে মনোহব-বেশ চণ্ডী দিবসে দিবসে | প্রথম দিবস 2 নিশা অভয়াব চবণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গায মধুব সঙ্গীত ॥২ ৩ হিমালায বাডেন চাঁওক। সাণ বেশ পিন দিনে শোভা ঘলঙ্কা পিন দোখ সুখী হইলা মেণকা উবুধগ কাঁবকব ন।ভ গভীব সব দুই ভুজ মুণাল সঙ্কাশ প*শ অঙ্গেব আভা ণানা অশঙ্ক র শোহ। অন্ধকার করধযে বিন শ ণাঁখীব দশনবুি দেখিয। দাউ পি মাঁগিন হইল সজ্জাঞাব ৮খ লাথ অনুমানে অই শোক ক বাণ পাকাক .ল পাড়িস্ব থিদবে। “বীর ধদনশোভা লাথিতে নাঁবিএ কিশ। দিনে ঠাদ নাঞও দিঘ দেখা “গণ হএ চাদ শোকে এ] বিচাণ এ 1/4 মিথ্যা বলে কলহ্কেণ নেছা । ' বাণিস্বক নী লদন। শবদ ঠনদু বৃখঙ্গগাঁঞ্িত পা শাচন সতনীকুসুম তনু ভূবু-যুগ কানধণ। সুগন্ধি চন্দন বপেপন । সাব উপবে মুত হরাযে জাডত তথ বদনকমলে ভাল সাজে তুলনা জে দিতে নাঁব আতি শোভা মনোহাবি শোভে তাবা সুধাকব মাঝে। হেম মুকালক। ভাসে কৃটিন* কুণ্চিত কেশ পাশে আযাডিযা মেঘম।বে জেমন বিজলি সাজে পাধতাব ঢাপপ। দোষে । শবণ উপর-দশে স্শও| উদবে ছিপ বলেতে হাবিয। নিন উনুযূগ জঘন দুজনে ১৫ নয়ান-কমল তার নবনৃপ আসিতে যৌবনে ।২ গোঁবীর দেখিয়া বৃপ চান্তত পৰতভূগ কাবে দিব এই কন| দান চরণচাগল/-তার দিন৷ এগববাসী সঙ্গীতে অভিলাষা শ্বীকপিকঙ্কণ বস গাণ ॥ ৪ [হমাপম অনাদিন চন্তেন অন্তব “ গশীল রূপবাণ নিজবংশ সমান কোথা পাব কন্যাযোগা নব । অবূপীনে দিলে সুতা মভামাঝে হেটমাথা বংশে বংশে থাকিব গর্জন মণ নাহ গপ্তোধ লোকমুখে ধমদোষ ব৬ পুণো পাই কুপজন । বিদ্নাণিবোশ ও মন যাঁদ হয কুলজন সদাঞ।ব নয ভিত শক গেনণ মাঝে সেই আতশব সাজে কাণদন্ত কণ/ঝ হড়ত। মাল জত বন্থীজন দশ [দকে দেহ মন কোথা পাব অমলিন কুল তভুবান এক ধন্য সমার্পয৷ জথা কন্য। তবে আমি হব নিরাকুল । বন্ধজন মৌন কাঁব [বিচার করেন গিরি সঙ।র অস্তর দিনে দিনে ভ্রামতে এমন কালে নারদ কৃতৃহমে তথ। আসি দলা দরশনে | পাদ্য অথ আচমন দিল হেম-আসন [এবেধন কাঁবল অঞ্জাল ১প্ভীব আ।াদশ পাঠ গীকাবকল্কণে গাই সঙ্গীতবস-কুতৃহলী ॥ ১৬ ৫ কৃতাঞ্জাণ মুনিধবে [জিজ্ঞসেন গাব (কান ণবে রিবা প্রিমো কখণ গোবা ঠেমন্ডেব বপন আশ বগেন শখ “াবী ০৩ পাঁঠবেক তোদ। | সম্পণ | ৮91৩ 50 দোবী |শবের ঘবান এধ আদ [দার হণ গোবীকে শাপান। এই উতাদেশ কঠি গেলা হাশিশাশ (তাজন হেমন্ত এনা বব আগাম । এমন এময়ে হর তপস।] কণণে গঞ্গ।ব নিকট হইল [মগ নে | দেখি হবাঁথত পঠ হল্পা। ঠিএ এম ঞ্খপি কাঁপনা 1নবেদন সাঁপনম | মাগাব মাশম এজ হঠণ। পুণণাণী সংযোগ হিপ তত তব পদ্ধাপ । আমার শুন নাথ কব হে সফণ খোব কণ॥ নিতা দিব কশ পম্প জণ। হেমপ্তেব বিষ শৃনিণ পশনাতি গোঁবীকে কাঝতে সেব। দিপ অনমাত | এান। ৩ঠাবে গোবী পৃঁজেণ শঙ্কবে নকলে পেত এয হৈ ন সুবগুবে | তাবকেব থণে ইন্দ্র পাইল পবাজষ দেবগণ মেপি গে) বরহ্জাৰ নিলষ | তারকের ওয় ইন্দ্র কাবণ গোচব ধেয়ানে জানয়৷ রঙ্গ দিলেন উত্তব। সহাদেবের পুর হবে নামে ষড়ানন পাবতীর গর্ভে তার হবেক জনম | তার বাণে তারকের হবেক নিধন সবে মোণি শিবের বিবাহে দেহ মন | রহ্মাব বনে ইন্দ্র হে কৈল মাথ। হেন উপদেশ তারে বঝাইল বিধাতা । তায়োধা। নগরে আছে নৃপতি মান্ধ।ত। সূর্যের সমান কল্পতবু সম দাতা । কামকাস্ত। কান্দে বাত চগ্তীমজল তাহার তনয় আছে বার মুচকুন্দ৯ বণ পাইআ জে হয হদয়-আনন্দ । জত কাল নাঞ হয় কার্তিক অবতাব তত কাল মুওকন্দে দেহ নিজ ভাব । বঙ্গাব বচনে ইন্দ্র জদয-আ নন্দ বর্গ বক্ষাব হেতু আনিল মচধুন্দ | মন্কন্দে তাঝকে রজনী দিবা' বণ কামদেবে পান দিষা ইন্দ্র নিবেদন | সম্মোহন বাণ লইয। জাহ হিমাঁগাবি তপস্যা কবেন তথা দেন ত্রিপুবা | শাছেন পর্বতী তথা ঠৈঘা অনচাঁৰ /তাতা হইতে শিব তাবে হইব কামাচাবি [ন্দ্রর ধচনে কামদেবে ত্ববাজুত সঙ্গে নিল সগচব বসম্তমাবত | শইলেন ফুলময ধনু পণ্বাণ মধুকব কোকিলে কবযে মধু গান । প্রণাম কাবআ৷ ইীন্ডরে চলিল। মদন দণ্মাবে আইলা বীব জথা পঞ্চানন । পেগানে গাছিলা বাউল স্বপ্তিক আসনে ঝাঁনহাতে পাবতী আছেন সলিধানে মাকর্ণ পৃবিশ। বাব ছাড়ি ধনুশবে সত চণ্চল দেব হইলা অন্তবে | তপভঙ্গ দোখ শিব দশাঁদগ চান নিকটে দেখিল চাপধারাঁ পঞুবাণ । কোপদৃষ্টে মহেশের বাঁরষে দহন দেখিতে দেখিতে ভস্ম হইল মদন । তপভঙ্গ হৈল শিব জান অন্যস্থান পবতনান্দননী গেল৷ পিতৃসন্নিধান । অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত রৃতির বিষাদে জে নাচাঁড় গাব গাঁত। ২৬ কোলে কাব মত পাত ধুলায় ধূসর কলেবর গ্রথম দিবস নিশ! তেজে নানা অলঙ্কাব সঘনে ডাকেন প্রাণেশ্বব৯ । চিযাইআ উত্তব দেহ বতিরে সংহতি লেহ পাসবিলে পৃবেব পাঁবাতি ভুমি দাহ জথা জথা আমি আগে জাই তথ ইবে নাথ কৈলে২ বপাবাত। বাতি সকবৃণ পল লোটায কুস্তলভাব “াড়যা চবণতলে প্রাণনাথ কব অবধান [তানকে নিদযা হইযা দূব কৈ'ন (সাহাগ সম্মান । পাসাঁঝল নিজ জাযা বনসুন্দব তথু (তানাব পসুমপনু সম্মোহন আদি পঞ্্বাণ গম লণীত77া 'মাব পাপকম ফান নিদাবুণ ?দব পবাণ । /ান বাই পাইয়া 1চবকাশ থাক জীয। আগ গাব (তামার পল জশতি পাইলে তান (সাহ গাতি হীল। আম বাহব (তামাব পদতাল। “ধ বত মাবিতে বাণ পাইল হীন্দ্রব পান বাঁতব কবিণি অনাথিনী [থা শিশাবুণ শোক পে” । গ্রহ পঝন্নাক মোব তব পোহাপ্য বজীন | হব কোপাননে তোশাবে কাবশ খাল না লইল বাতিব জীবন “তম বিনে প্রাণপাতি [তিলোক না জীয বাতি এই বড বাহন গঞ্জান । “দহযোগ নহে সত্য কেবল মবণ নিত সবলোকে এই কথ৷ জানে হদযে বহন শাল না মানে প্রবোধ পবাণে । জীবন যৌবন ধন যৌবান মবণকাল কুল শীল বৃপ গুণ [বধবাব সকলি বিফল বসন্ত স্কামীব সখ মোবে আস দেহ দেখা কু কুডিৎ জালিব আনল । ১৭ সুরঙ্গ 'সন্দুব ভালে চরান কুম্তলজালে সঘনে নাড়েন আমর-ডাল রাঁতি চতুর্দোলে চড়ে ইন্দরেব হদযে বাজে শাল । হেনকালে সবস্বতী সঘনে হুলুই পড়ে এনুমূত। হণ বাতি আকাশে পালন হিতবাণী শ্রীকাবকঙ্কণ গাই পবিতুষ্টা& জাহাবে ভবানী ॥ ১ঙীব আদেশ পা ২৭ [হওবাণী তোে কাঁহ শ্শ সহ বাত আঅমাব ঝচনে তুমি কব অবগাঁতি। আনলে প্ডযা নষ্ট না কাঁবহ তনু আঁধণস্থে পাবে তুমি স্বামী ফুলধনু। কথোকাল থাক গিয। সম্ববেব ঘবে তথায তোমাব স্কামী মিলিব তোমাবে আপনাব নাম ভুমি না বলিহ বাঁত আজ ?হতে নাশ তুমি ধব মায়াবতী | ণন্ধণণব শান তুমি হবে আবধকাবাঁ ওঘথা বাঁনবে তোবে সম্ববেব নাবী । ণণণাত তে।খাবে কবিব সেই জণ সেইকালে হব তাৰ অবশ্য মবণ যদুবুলে শ্রীহাব কাঁবৰ অবতাৰ হাবব অসুব বাধ অবনীব ভাব দৈবুকী উদবে বসুদেবেব নন্দন কংসকাবাগাবে তাৰ হঠব জনম | বাণী বিবাহ প্রভু কাবণ প্রথম তাব গে হইবেক ামদেবেব জনম | সম্বব পাইয৷ নাবদেব উপদেশ কৃষেব সৃতিকাশালে কবিব প্রবেশ । দীব কবিধা লইআ। জাব কৃষেব নন্দনে সমুদ্রে পোণিযা জাবে আপন ভুবনে | ১৮ বিশাল বোদালি তারে কাঁরবেক গ্রাস কৃষের নন্দন তাহ নাঞ পাব নাশ । পাঁড়ব বোদালি বান্দ ধীবরের জালে পাবেন স্বর ভেট রঙ্ধনের শালে। বোদালি বুটিতে তুমি পানে নিজ দ্বামী সকল খিশেষ কথ। কাহআ। দিব আম । তৈল হারিদ্রা দিনা তাব কারবে পাণন অতি অপ্পকালে মদন পাইবেন যৌনন । খবে ম৷ বাঁপিয়া তোমারে কাঁরব সম্বোধন সেইকালে আংসাদন করিহ শ্রবণ । তার বিদ্যা তাবে দিষা দিহ পারিচয় সম্ববে বাঁধয়। জেন চণেন নিপয । বপবৃত্ত যাঁদ তোমাঞ করে কোন জন সেইক্ষণ হব সেই অবশ্য নিধন । সবস্থতীব ৪বণে কারধ। প্রণাম ধরায় চালল দেবী সন্বরের ধাম | অভযার চরণে মজুক নিজ চিত তপসা প্রসঙ্গে লাচাড়ি গাব গীত ॥ ৮ তনু তোর জেন কাচ। নন রৌদ্রে মিলায় হেন জান । স্বভাবে তুমি সে কম।পনী হিমপ্রাতে হারাবে পরানি। তপেরে না ঘাই আগো উমা গলায়ে বাধিআ থাকিব তোমা । আঠ পণ বংসর বয়সে বনে জাবে কেমন সাহসে । কী বুদ্ধি জম্মিল তোর বাপে কিলাগি পাঠায় তোমা তপে। শিবের কঠিন বড় সেবা সেবায় মানাতে পারে কেবা । চন্ডীমঙ্গল বর কি নাহিক ন্রিভূবনে কেমনে ইছিল গিরি ভ্রিলোচনে । এ বএষ দেঁখআ দিব বরে বসাইব অদারদ্র ঘরে । শ্রীকীবকঙ্ধণ বিরচনে মাগ্কা নিমেধ নাহ মনে | ৭৯ তপস্য। করেন গোরী |শবপদআশে হার টুটান মতা দিবসে দিপসে । দনেক উপবাগ শাতা দিনেক ভোজন তোঁজস তাস্বল তৈল ভুএণ চন্দন । একগায় কৃতাঞ্জা। 1দবনে থাকন বজানতভে করে দেবী বশোত শঙনট | দুই উপবাস কা কলেন গাবণা মহেশ প্জন গৌরী ধেমানে ভাবনা । চিন্তেন শিবের পদ মরিত লোচন মাঘ মাসে নিশাকালে উদকে শষন । রত কৈম গিবিসুত। তিন উপধাস পারণা কাঁরল। দেবী সঙে তন গ্রাস । অলপ তোঁজ খান মাতা কাগথ বদণ কথোকাল পান বৈপা কেন পু্কর । পণ্টতপ৷ করেন জালয়া হৃতাশন ৬দ্ধীমুখে দৃষ্টি কৈল অরুণ লোচন২ । বন্ধবাস পঙ্গল কেশ অবুণ মুরাতি বৈশাখ জৈষ্ঠেতে কৈল রতের নিয়াতি। [শিবপদ ধ্যান দেবা করেন অনুক্ষণ বৃক্ষের গলিত পত্র করেন ভক্ষণ । তোঁজলা বৃক্ষের পন্ন ছাড়ি অম্নপান এই হেতু অপর্ণ। ধারলা আভিধান৩ । ঘলিতে আইলা শিব দ্বিজবেশ ধার জিজ্ঞাঁসতে উত্তর দিলেন তারে গোৌরী৪ প্রথম দিবস নিশ! তপস্থী হইয়া কাব শিবপদ আশ মুকুন্দ রাঁচল গাঁত আম্বকার দাস ॥ ৩০ “৭৯1 নিবৃপমা বাহাণ বোলে রামা হলে ৫৯ তাম জটাধে ১ঠঘা স্রনারী ৬২ িথারী দার বর দিগস্ববে। পণ গে। চন্দ্রমুখী তি!মাবে আশি দোখ বৃপেতে ভুবনমোহনা কতেক আছে বৰ ভুবনে মনোহর হাঁছলে বৃডধরে কেনি । চন দো রূপবতী দেহের হেমজীত ম।ানকবুঁচির দশনা ৩ণ শাহ ঘরে হালে হেন বরে হইলে বা তভুষণা | ₹হ।ণ পু হর ণ ভান কোথা ঘব না দোখ ৩।ই বনুজনে খ/বয। গনপাণ হহবে দুঠাথনী দরুণ (দিবেন বারণেই | 1ভধনর এঅনঙগারে এনরে ঘরে হবে কারধ। ওস্বর ব।জন। * বুণ কমগ৩ হালে হেন গাও তোমারে বাঁধ বড়ন্বনা | ণসন ঝাধছাল গলায় হাড়মাণ উত্তরা গার বিষধরে চিতাধৃপি অঙ্গে ৈ হত সঙ্গে ইছিলে কোন হেন বরে । থাঁকম। হরাশরে ভিক্ষুক দেখি তারে মিলিণ। গঙ্গা রঙ্লাকরে গন গো গুণময়ীও তোম|রে হিত কাহ দারিদ্রে কেহ না আদরে । ১৯ দারদ্রু পাত জার বিফল জন্ম তার দারদ্রে গুণরাশি নাশে গাহণী হইবে ভিক্ষে জর্ম যাইবে দুঃখে দারিদ্রে কেহ না সন্তাষে। থিজের শনি কথা বলেন গারসুত৷ তপা্ক কর অবধান ,জ ভার মনে আাষ সে নারী ভজে তায় মুখন্দ হহ রস? গান ॥ ৩১ আমার কপালে হর লিখিয়াছে বাঁধ তাহার সৌঁবিব পদ জনম অবাঁধ। আগ কাঁরয়া জার আছে অস্ট সাধ জাহার ষোড়শ অংশে তনু ধরে বাধ । জগৎ রক্ষিল শিব কাঁর বিষপান মৃত্যুঞ্জয় বিনু বণ কেবা৷ আছে আন । বন্ধ আঁদ দেবে জারে করেন অঞ্জণি ইঞন্্ জার বাঞ্িত করেন পদধূলি । প্রিভূবনে দেখ জার পরম সম্পদ বেধা নাঁঞ কবে সেব। মহেশের পদ | এমন গোরীর কথা শন তপোধন পুন্রাঁপ কাছ নিবেদিতে কেল মন । তপস্কীর দোখ গৌরী ৮প অধর সেই স্থান ছাড় ৮প্তী জান অন্যত্র । এমন সময়ে হর নিজমৃর্তি ধার পার্বতীর সমুখে রাহলা ব্লিপুরারি | সমুখে দেঁখিলা গৌরী 'ন্রজগত-নাথ অষ্টাঙ্গ লোটাইয়৷ গোরী করিল৷ প্রাণপাত। মদনমোহন হর দেখ বিদ্যমান সন্ত্রমে পাসবে দেবা পূজার বিধান । সভিপ্রায় বুঝি শিব বর দেন তারে প্রস্ন তোমারে গোরী মাল্য দেহ মোরে। ১০ তপস্যায় বশ আমি হইপ।ও তোমারে অঞ্জালি কারয়। গোরী বণেন শঙ্করে । কৃপা করি যাঁদ মোরে দিবে বরধান আমার পিতারে নাথ করহ প্রমাণ | এতেক শুনঞ| হর গোবীর বিনয় শারদ মনরে হর পাঠান হিমাণয় | আঁসয়৷ নারদ মুনি কাহল সকণ শান হিমাণয় হৈল আণন্দে তরল২ । অশয়ার ৯বণে ম্জুক নিজ চিত শ্রীকাণকর্ধণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩২ হেগস্ত হারিয়ে কাবল নিজ দেশে আনন্দে দুন্ুভি ঘোষণ অমর নাগ নর আসিব মোর ঘর জে মোর হএ খন্ধুজন | আপিন মনগণ কারল শুভ্মণ বাঞ্ধিণ 'বাচ৫ ছান্দলা মুকুতায় মণি বান্দ। নাইল পা ঠাদা চোঁদিগে জালেন দীপমালা । সকল দেষহী৭। আজ শৃঙভ দিন গোরীর বিবাহমঙ্গণ শঙ্খ বৌন বীণ। মূদ্গ তেরি নানা বাজনে হইল কোপাহল পাত রূপবতী হরিপ্রাুত ধুত পারয়। বাঁসলা আসনে মোলয়৷ জত মুশি কারল গন্ধাধিবাসনে | কাঁরআ বেদধবান মহা গন্ধ শিলা দুর্বা পুজ্পমালা ধান্য ঘৃত ফুল দাঁধ ্বাস্তক সন্দূর কজ্জল কর্পূর শঙ্খ দিল যথাবাধ । চন্ডীমঙ্গল বাঁধন কৰে মৃত প্রশস্ত দীঁপপান্র২ মস্তকে করিল বন্দনা কনক-সিথি শিরে অঙ্গার দিয়া করে কারল আশষ যোজনা । নৈবিদ্) দিয়। ভর মাতৃক৷ পৃজ। কাঁর দিলেন বসুধাবা দান, বসুর পৃজা কার হরিষে হেমগিরি নান্দিমুখের বিধান । আনিপ আইঅগণ কারয়। মঙ্গণন আইল শত আইঅজন তুলসা মালাবতী কৌশল অবুষ্কৃতী আইলা খাঁযভুবন । সাধু মাধু হার গ্গ। দুর্া পারি কমলা কলাবতী রাণ চিন্নলেখ৷ নীলা সুভদ্রা তারা [শিল। শ্রীমতী সাবিনরী ৬বাণী । চিণ্রা কালী জয়া গোরা সতী মায়া করুণ। তার হীরাতী বিজয়৷ সত্/ঙাম। রুষ্মিণী সুরত্তমা ইন্দু সিন্ধু [রূপবতী] । ইন্দ্রণী সতী শিলা চিন্রলেখা অবুষ্ধতা ভারতী শাঁশকলা ফুল্লগা পুরহঘাঁর [বিমল বিদ্যাধরী সুমিণা বেঁকই গাবতী | কক্ষেতে হেমবারি জল সহে ঘরে ঘরে আইঅ সব মোল মঙ্গলমূ্ বান্ধে করে। মেনক৷ সুন্দরী কারআ হুলাহুণি আঁধবাস আদ মহেশ যথাবাধ কারআ৷ বেদের বিধান কণ্ঠে হাড়মাল পাঁরআ বাঘছাল বৃষভে কইল আরোহণ । প্রমথ পাছে ধায় চলিলা দেবরায় দেউ্চী ধরে দানাগণ গ্রথম দিবস নিশা [শঙ্গার বাজনা আইলা ত্রিপুরার করএ ভূতদানা ০লাএ ঝড়খাঁরসন | হেমন্ত হাথে ধাঁর বসাইল কনক-আসনে বসন অঙ্গ মাল) দিআ। গোবা কারল বরের বরণে । পবন-্থল করি মেশকা সুন্দবা বাঁবল ববীনমৌস্থন ণাঁচয়। নানা হুন্দ গাইল মুখুন্দ পাঠাল [বনোদরচন ॥ ৩৩ মেনকা সুন্দরী দীধ ফেলিল চরণে অঙ্গের ভূষণ দৌখ বষধরগণে আস্থভস্ম িভূষণ দোঁখ কলেবর হইআ বিরসণুখি৯ চীন্তত অন্তর | কান্দে মেনক৷ গোরীর মায়। মোহ ঝলকে ঝলকে নয়নে গড়ে লোহ । চরণে নূপুর সাপ সাপ কটিবন্ প1রধান বাঘছাল দেখি লাগে ধন্ধ | অঙ্গদ কঙ্কণ সাপ সাপের পইতা ১ক্ষু খাইয়া এমন বরে দিলাঙ দুহিত। গৌরীর কপালে 'ছিল বাদিআর পো কপালে চন্দন দতে সাপে মারে ছো। গুঁধধ সারিআ ঘৃত 'দিলেন কপালে ঘৃতজুত ললাটে লোচনে বাহন জলে । দেখিআ বরের রূপ মনে লাগে ধাদা কোন ভাগ্যে সাপের মাঝে উদয় কইল টাদা হেন বরে গোরা দিল কি দেখি সম্পদ বাপ হইআ মূমাত কইল কন্যাধধ । অঙ্গুলিজড়িত মোর আছে গরুড়মাণ এই হেতু হাথে মোর না খাইল ফণী । ২১ বর দৌঁখ আইঅগণ করে কানাকানি আস্ত যাউক কন্যার পিতারং চক্ষে পড়ুক ছানি। গবন দশনে নড়ে হেন বুড়া বর বর দেখিয়া মেনক৷ জ্বালল অস্তর | মেনকার দাসী আমে ওষধের ডাল আছিল ইসর মূণ তাঁথ এক ফালি । ইসর মূলের গন্ধে পালাএ তুজঙ্গ এন্গশাসমাজে হর হইলা উলঙ্গ । লাজে মেনক। পাপন দড়বাঁড় নান্দ বুঝিয়।৷ কাজ নবাইল দেউড়ী। নান্দি বলেন শুন দেব শূলপাণ মদনমোহন রূপ ধরহ আপানি। এমন নন্দির বোল শন ত্িলোচন হেমকায় বর-রূপ মদনমোহন । যোগবলে কইল এপ মনোহর বেশ জটাার হইল 19ত চারু কেশ । আছিণ ঝাপ্রের চন হইল বসন অঙ্গের বি৬তি হইল সুগার্ধ চন্দন । হাঙমাণ হইণ কণ্ঠ-র্সমাল হাঁরতাল-তিণকে শুঁভত হইল ভাল । বাসুকি হইণ মাথে করীণ ভূষণ অঙ্গদ বলন। হইল ভুজঙগমগণ । নুকুট উপরে শোতে সুধাকর-কণা। ধাঁণল মদনরূপ মনোহর লীঁপা। কণক পদক হইণা গলে শুঙ্গনাদ (দোঁখিয়৷ মেনকা বরে তৌজল বিষাদ । দেখিয়া বরের রূপ জতেক যুবাত মনে মনে নিন্দা করে আপনাব পাঁত। গঁচয়। মধুরপদে একপদাঁ ছন্দ শ্রীকাবকঙ্কণ গীত গাইল মুঝুন্দ ॥ ৩৪ সভে বলে গৌরী বর পাইয়াছে ভাল মদনমোহন রূপে ঘর কারআছে আল। ২ এক আইয় লে হেদে গোদ৷ মোর পতি কোয়া জরের উ্ষধ সদাই পাব কাত। ভাপ মাসের পাকই বড় দুরবাব গোদে তৈশ দিতে কত তুনণিব নেকাব । এক আইয় বলে স্বামী বার্জতদশন শক সুন্ডা ঘণ্ট বিনে না করে ভোজন । জে দিবস আমি দ্রড় ব্যঞজন পাধি মাবএ পিওার বাড কোণে বসা কান্দ | এক আইয় ঝাপ আমার কর্ম মন্দ মভাগিয়। স্বামী মোর দুই চক্ষু অন্ধ । কোন দেশে নাঞক দুখিনী মোর পারা কাছে৯ কাছে থাকিতে সদাই হয হারা । আর যুবাঁত বশে মোর স্বামী বড কাল৷ আনের সংসার ভাল মোর হইল জ্বালা | ঠারে ঠোরে কাই কথা দশে পাতির সথে রানে নিদ্রা জাই জেন পশ্র শয়নে । আর যুবতী বলে মোন মুওে পড়ু ঝাজ আব রমণী বলে সই কহিতে বাসি লান্ত | নগরে বারাতে নার সত্য মার লাজে থাট ভাতার ০ মাগু দেখ্যা দক গঞ্জে । এমন সময় আইল খুঁড়ি একণান 'দখিয়। বরের পৃপ জাগিগ মদন । পোএর হইআছে পো। তার হইয়াছে ঝি পোড়গ তেলে চুল পাকীআছে বয়েস বে ক । নাঁতনের বেচীর বিভা মো মনহার হের আইস সাগাতিয়৷ বর তোরে কোদে কার । এমন সময় আইল বিধবা জন সাত দেখিয়। বরের রূপ নাকে দল হাত। রূপে গুণে নাতিনী আমার ঘরে আছে হেন বরে বিভা দিআ৷ রাখি নিজ কাছে । দেখিয়া বরের রূপ জতেক যুবতী মনে মনে নিন্দা করে আপনার পাতি । নাবষ্ট কারয়। চিন্ত শিবের চরণে আস্বকামঙ্গল কবিকঙ্কণ ভনে ॥ জয় বিজয়া মোঁল চন্ডীমঙল ৩৫ বৃষ আরোহণ কৈল দেব পণ্ানন শধ্যে কাগারগট্ ধরে কোন জন । শিবে প্রদাক্ষিণ গৌরী কইল সাতবার নিছিয়। পেঁণপিপ পান কইল নমস্কার । “হেশের কণ্ঠে গৌরী দিল রগ দোখ দ্বেতার সুখ ঝড়িল বশান। হরিষে পুলকতনু দুজনে ছামনি হলাহুলি দিণ জত দেবতারমণী । বহ্ধা পুরোহিত ফল বাকোর বিধান হিমালয় আনন্দে করেন কন্যাদাণ । হরগৌরা একাসনে বাস দুই জনে রন্তচুড়া পিতামহ কাঁরল বন্ধনে । গদধপুষ্প দিয় বাঁ পুজিপ দম্পতী হরগোরী সানন্দে দেখিণ এবুগ্ঠূতী | ঝাবী থালা ধেনু শয্য। দল নানা দান উত্তম আওয়াস শিবে দল হেমদান | জয়া বিজয়া সাঁখ দিলি পন্লাবতী সমাঁপণ গাররাজ বিনয়ে পাবতী । 1খর ভোজন কাঁরল দুহে মহেণ ভবাণী বুসুমশয্যায় দুহে বণ্টিল রজনী । বাবরী মহাদেব রহিণা নিলয় নানা খেলা-রঙ্গে গেণা অনেক সময় | টিয়া মধুর পদে একপদী ছন্দ গ্রীকাবকষ্কণ গীত গাইল মুকুন্দ ॥ ৩৬ গৌরীর তুলিণ মণি কুমুকুমু চন্দন দিয়৷ অঙ্গে এক এক মাল জড় গনহর পুস্তাণ গৌরী নিমাণ কৈল রঙ্গে । বরনে প্রভাত-ভানু খব পীবরতনু চারি ভুজ অজানুল স্ব প্রথম দিবস : নিশ। নখপাতি জিনি কুন্দ চাবু লঙ্বান তুন্দ যোগপাটা হৃদবে ডঁষিত। গর্বধান ঝঘছাল গলাএ বাঙ্গন মাল চাবি ভূজে নানা অভবণ নকাঁণত /কাকনদ নান্দিণ। উভভযপ। তাহে চ।বু মঞ্জীব সাজন | ৫ খাভিগত বব শূল* ? এ ৮1 নির্নাণ কাবিযা দল হাথে শত! আসব অলঙ্কার নাঁঞ গলা শিব শিবামিতে | নিমাণ কা সাব ॥. এম ঠব [5গন ১ তি আহ | ঘৰ পাল্জ ঘব প্রবণ গার্রতী দ্র ণ' শুণশাণ কঃ জয়া সভাবাণ। শানভীঞ্জ কাহাব 'নার্সীত। ""* [দশ উন্তব এন দেব মাহশ্ব গোঁবী 'কপা পথালি শিমাণ ” *ন॥ এগববাশী সঙ্গীতে আন 7 শ্রীকাবকন্ধণ বসগাথ | ৩৭ ন্যোব শনগা কথ| ঝপেন শঙ্কব আভিগ্রাযে জানিএ] গোবীঁকে দিলা বধ । গৃত্ন আশা বুঁঝলাও গুতাণ নিমাণে সঙ্গে শিশ নাঁঞ তাব খেলাবাব সদানে | ২৩ ইহা৷ বলি নান্দরে দিলেন আখি ঠাব নান্দি চলিলা আসি লইযা খুরধাব কথ দূরে গিষা নন্দি দৌখল কুরে লীলাসুখে 'নন্দাযে গজ উত্তবাশষরে | এক চোটে গজশিব কাঁবযা ছেদন মাথা আনি দিন শন্দি যথা পঞ্তানন | পুতীপিব কাদ্ধে মাথা জোড়াইল শিব শিব অঙ্গে পবসে পৃতাল পাইল জীব । [শববাক্যে জযা পুত্র গইযা কৃতৃহলে ববপৃত্র দিল নিএন। পাবতীব কোলে । /পাখ ববপুর গোঁখী বুক্ববদণ কানন” ও হা মাবি কবেন কন্দন | শোঁবীবে কাঁহল শিব ন। ভাপয দুঃখ বড ভগে। পাইলে তুমি পুন গজমুখ | এই পুন -তামাব ভুবনে বি্বাজ ইহাবে পজিব জত দেবতাসমাজ | ১কন নেবতা মাঝে আগে পাবে পৃজা [ঞ্হাবে পজিবে পুবন্দব আ|দ বাজা । গকল দেবতা ম।ঝে হইব প্রধান এই হেতু ঞিহাবে গণেশ অভিধান । এতেক বচন যাঁদ বৈণ শ।গাণ সুরবদ্ধ গণাধিপে কাবিল ৬্বানী । এএযাচবণে মঞজুক নিও চিত কাকে জণমে নাঠ1ড গাব গাঁত ॥ দ্বিতীয় দিবস দিবা ৩ কুসুমরাচিত ঘরে গাবতী শঙ্করে কুসুমশয়নে নিয়োজিত দুঃসহ মদনশর দুই আঙ্গ জরজব দুই তনু পলকে পারত । কার্তকের শুনহ জনম শুন পাপহন কথা জেই হেতু ছয মাথা দুই পুর তিন দাসী দেখি হব আঁভলাষী মনিলে কলুধ ব্ঘাতন । রাহলেন শ্বশুরের বাসে রঙ্গ কৃতৃহলে মহেশের বিদু লে. গোঁরী দৈব-নিযোজনে কাল হইল মাতা মনে গোঁরী নারিপা ধাঁববাবে শীকবিকন্কণ রস ভাবে | অনলে পেলিল গৌরী শনল সহিতে নার পেলাইল গঙ্গাব নীবে। প্রবল চপলভঙ্গ সাহতে নারলা গঙ্গা শরবনে* কৈল নিয়োজিত ৪ অমোঘ শিবের বন্দ তাঁথ হইল গুণাসন্থ কালি রা্গ পাশা সারি আনিল পার্বতী ছয়মুখ কুমার কাঁতিক। আপনি লইল কাল রাঙ্গি পন্লাবতী । কাণ্চনবরণ তনু আঁভনব হেমভানু হাথে পাচী কার গোরী ডাকেন দশ দশ শরমূল কৈল বিভীষত হেন কালে মেনকার বাড়ল বিরস। 'কার্তক৷ আদি করি চন্দ্রের ছয় নারী তোমা বি হইতে মোর মজিল গার্যাল কুমারে দৌখল আচান্বত। ঘরে জাওঙাঁঞ রাখি পুষিব কতকাল । কির্িকা ধারয়া তোলে রোহিণী কারিল কোলে প্রভাতে ভাতেরে কান্দে* কার্তিক গণাই মৃগাঁশরা করিল চুম্বন চারি কড়ার সন্ভাবন।ৎ তোমার ঘরে নাঞি। আন্দর গুনসু মানিঞ৷ পরম অংশুং মিথ্যা কাজে ফিরে পাতি নাজ চাষবাস পুষা৷ কৈল অনেক পালন । ভাত কাপড় কত ন৷ জোগাব বার মাস। সঙরিয়। পূর্বকথা হইআ দেব ছয়মাথা দুধ উত্তলিআ পড়ে নাঞ দেহ পানি | ছয়মুখে কইল স্তন পান সাঁথ সঙ্গে খেল পাশ। দিবস রজনী । সকল ভূষণজুত গুষয়। পালিআ সুত দারিদ্র তোমার পাতি পরে বাঘছাল গৌরী-কোলে করিল আধান। সবে ধন বুড়া বৃষ গলে হাড়মাল। দ্বিতীয় দিবস : দিবা প্রেত ভূত পিশাচ মোলিআ৷ তাব সঙ্গ অনূদিন কত না কিনিঞ দিব ভঙ্গ । লোক-লাজে গ্বামী মোব কিছু নাঁঞ কণ জামাতাব পাকে হইল ঘবে সাপেব ভয । দুই পুত্র তন দাসী স্বামী শনপাণি প্রেত ৬ত পিশাচেব নেখা শাঞি। জাণি | অণাদন কতেক সাঁহব উৎপাত বাঁধিযা পাডিযা মোব কাকানে হিএ২ বাত জামাতাব পিতা মোব দিল ভূমিদান তায ফলে মাব সাঁবস। তিল কাবাস ধান । ব।ধ্যা বাঁড়য। মাত কত দেহ খোটা 'জ হইতে তোমাব দ্াবে দিনা বাট । 'মণাক ৩শয পই | সুখে কৰ ঘব কঙ ন। সাঁহন খোটা জাই অনান্তব | এত গলি জান গোঁপী হাঙিআ মায়া গোহ ঝনকে ঝশকে নঅনে পে গোহ । শঙ্কণে কাহল গোবী এসব বিবৰণ বাঁচল পচাঁণ পি শ্রীকপিকঙ্কণ ॥ ”্20 থা সঙ্গে যু কাখ ৮াঁপল। কশাস গার শ্বশৃবেব ছাডিয। বসাঁত ৬বাণ সম্বল নাহি চান্তণেন গোসাঞ ভিক্ষা উপদেশ কৈশ মতি । ভিক্ষা মাগেন হব আরোহণ কাব বৃষববে শৃনিথা বাডযে বঙ্গ 107শব প্শ্বব বাজন ডস্বুব শুঙ্গ নগরিযা জোগান ধবে। ভিক্ষা মাগেন ঘবে ঘব বাসাক গলাএ পাটা বিড়াতিড়ুষণ কলেবর । শাথাএ বোডল ফাঁণ কৃণ্ডাল-কুণ্ুল দোলে কানে কপালে চাদেব ফৌট৷ অমূল্য জাহাব মা ত্৫ কর্ণে ধৃতুবার ফুল অতুশ জাহাব মূল বাসুকি (কিবাঁট বিভষণে। দ্রমেন৯ উঞ্জানি তার্ট গোঁদিকে কৌচেখ বাটীং (কা৯-বধ্‌ ভন প্ইে থালে থল হইতে চালগাপ পবআা গড়েন ঝাণি ৭1দশা দাম 5 শান দোলে । (কহ দিদা শশ কঙি (ক দিন ডাগি বা বাপ ভাব (৩৭1৮1 তেন এানাণি ণথ 105 /1ন ঘঠ।ধি গোপগণ পাথ)া দেই 1৮ৰ পছান। খযবা মুডাক দেহ সৃণ বে ই খট তামাপাত পেশ গহ। গান বেন। ১ইল দুইপ | ম১।দশ গাইলেন ঘব কাওুক আইল। আগথান। খহেশ বাডিন ঝাল ১ হইগ কখোগুণি নানা পন্ত থইণ নানা গাই দোঁখব। মডাক খই দ/5 ভইল। ধ1১যাধ|ই বঙ্থ * বাঁডণ দই ভাই | দইগান প্রাবাপ কাব বাটিও। দিলেন শৌবা নন্ধন কাবগ। শবানী 1৬ জন কাঁপল হ৭ গাঁধী গত বাখ।দন সুখ গেল সেইও বজান। নহামশ্র জগনাথ হদযামিশ্রেব তাত কাবচন্দ্র জ্দয-নন্দন তাহাব অনজ ভাই ওীব আদেশ পাই ববাঁ৮ণ শ্রীকাবিকঙ্চণ ॥ ৪১ বাম বাম স্মঃরনে পোহাইল রজানি শয্যা থাঁকয়া প্রভাতে উঠিস। শূলপাণ। নতানিযামত কর্ম কাব সমাপনে পঁসিলেন মহাদেব কুঞ্জব-আঁজনে । ৬ ডানি বামে বাঁসলেন কার্তিক লাম্বাদব গুহণী বাঁপয। ডাকা দালন শঙ্কব | সম্মখ বাহণা। গোঁবী কাবিষা আঞ্জাপি কহিপ শঙ্বন কী তাহাক বৃতৃহণী । কাল দুঃখ পাইআ ফিবিশাঙ নান। ধাম ম|ঁজ সকাপ ডাজন কাযা থাকব বিশাম গ।াদে গণোশব মা পান্ধাবে নাব হত গি'ম শিমে বাগ্যান বাঞ্ধআা |দবোতিত | সকৃত। শীতেব কালে নডই মধ্ব মুড বাগান দিম বান্ধি?ব প্রচুব। নটিআ বাঠাণ বিচি সাবি গোটা দশ নুগবডি দিহ তায শাণ আদাবস। বডাই৯ কাঁবিয। বাৰ সাঁবসাব শাক ক& তৈ'শ বাথুআ কাঝব দূড় পাক । বাঁঙ্ধীবে ঘুসুঁবি সপ দিআ। টাবাজণা খণ্ডে মিসাইয। বান্ধ কবগ্রাব ফল । ঘুতি ভাজ ফৌঁলিবে খাণডাত ফুলবাড চোঙা চোঙা কাবিষ। তাজা পেল বঁডি। বান্ধিবে ছোলাব ডাণি দিবে তথি খণ্ড আলিশ্ব তেজিষা জাল দিবে দৃই দণ্ড । মানেন বেসাব দিআ৷ তএ বমুডাব বাঁড ভাঁজম। কাঠাল-াবচি দিবে দূই কডি। ঘৃত জীব৷ সাস্তলনে বাদ্ধবে পালঙ্গ ট প্লান কব গোৌবী ন। কবা বলম্ব । গোটা কাসান্দ তাষ জামিবেব বস এবেলা আমাব মত বান্ধ বেঞ্জান দশ | আপনি উজ্জোগ যাঁদ কব তুমি গোঁখা ভোজন কাঁবআ খাই হাড়ি দশ খাঁখি। এমন শুনিঞ। গোবী শিবেব বচন কৃতাঞ্জলি কাঁবয৷ কবেন নিবেদন । কাঁলিকার ভিক্ষা দিযা উধাব শুরিণা অবশেষে জেবা ছিল বন্ধন কবিল। বন্ধন কবিতে ভাল কাহণে গোসাঁণ প্রথম পন্রে২ জাহা দিব তাহা ঘবে ণাঞ্জি। চন্ডীমঙ্গল আজিকাব মত যাঁদ বান্ধ। সেহ শূল তাব সে আনিতে নাথ পাবি হে তওল অভযাব চবণে মজুক নিজ চিত হবঝগ।বীব কন্দন নাচাঙি গাব গাঁত ॥ 5২ আমি ছাঁডব থব গাইব দেশান্তব ক খোব ঘবকবাণ হইআ| পতজ্তব তাশ কবহ ঘণ [ইথা ণৃহ গভ। সত | কতক ঘব নানি /নখা নাঞি জাঁগ ডাড় সণ নাহ থাক কাতক ইনাব ববফে দবদুব গনাণি মসাব পাক । গুহাব মউণ খাইীতি বড শব সাপ (খাদ খেদি খান হন লগ শো এ৯ পাপ খন বাহাত ন। জআণ। কন্দশ দেখআ বানর খুলে ধাইআ৷ (দাখ তাহ।ব চ।হনি বনদ দুধন কবে টনটল নাঁঞ খাএ ঘাস পানি। আন বাঘছাল সংহ। হাড়মাল ডম্ুব বিভূতি ঝুঁণি আইস বে নান্দ জাইবে সাঙ্গ ঘবে না থাকিব শূলী। এত বলি ঘব ছাডিল শঙ্কব চাঁপল৷ বৃষবাহনে বাঁচআ সুছন্দ গাইল মুকুন্দ শ্ীকাবকঙ্কণ ভনে ॥ দ্বিতীয় দিবস; দিব! ৪৩ কি জান তণের ফপে হর মেল্যাছে ধব সই সাঙ্গ।তিন নাঞ আইসে দোথআ দিগস্বর | বাপেব সাপ পোএর মউর সদাহ কবে ঝাঁপ গনার মৃযা ঝুঁণ কাঠে আমি খাই গাঁলি। বাগ বলদে সদাই দ্বন্দ নিবারিব কত অঙাঁগি গোরীব কপালে দারুণ দৈবে হত । মোব মৃষায় ঘন্ধ সদাই কন্দণ অই শাগিত্তে সাই কাল মোর কর্মেব ফণ। দারুণ কর্মের দোষে হইলাও দুঃখিনী ৬ম্সব ভাতে দাবুণ বাধ কারণ গৃহিণী । উন্মও লাঙ্গট জটা্নব৯ চিতাধূলি গায় দাগ্ডাইলে মাথার জট অবাঁন লোটায । এক শয়নে শুতে নার সাপেব নিশ্বাসে ও!বে আঁধক প্রাণ 'পিড়ে খাঘছালের বাসে । পাষ পাঁবগা উধাণ কাব শধিতে কন্দণ পুনধাবং উপাণ কাঁরতে নাঞ স্থল । উচিত বাঁণতে আমি সাকার এীণ খ জৌতুক1দঅ। বাপা বিভা দিণ গোঁবী। দোষ থাটী কিছুঠ নাঁঞ পাপ পবম।দ কি কারণে পাই পদ্মা এত অপবাদ | দোষ বিনে প্রভু মোবে দেন অনৃত্তব এক শিব থাকহে ছাঁডআ৷ জাই ঘব। জা |বজম। পদ্য গুহ লম্বোদবে সঙ্গে লইআ জ!ন মাত বাপের মন্দিরে । এমন সময় পঞ্মা দুর্ারে বুঝান আঁম্বকামঙ্গল কবিকঙ্কণ গান ॥ 8৪ ণণগো। শিখাৰ সুতা কাঁহযে ভাবষ্যকথা তেমার পূজার ইতিহাস *প্রথাগে মুগে যুগে তেমার অন্চন৷ আগে আপাঁন করহ পরকাশ । ২৭ ধাপর যুগের শেষে কণিঙ্গ-রাজার দেশে বিশ্বকমে র৮৩৯ দেহারা মখণ৮াওক। বৃপে স্বপ্ন বীহআ ডুপে পূজা ণিবে দেবদুঃখহরা । সংহেরে কাঁরবে রাজ। নিজ খাণ্ড পরবে নিদর্শন দাধু দর্বা করহ ভি কাননে স্থাপিরে পশুগণে । জন্মাবে আক্ষণটি বংশে পশুব শহবে পৃজ। সম্পদ [বগদ তুমি প্রথমে কাঁলব অংশ ইক্েব কুমার নীগাস্ববে হালআ অবাঁণ ।আি। শবে তার ফুণ পান তাবাশেযে নিবে সুবপুবে তালভঙ্গ কার ছা দিবে কন্যা রঃমাল। ছণিআ আনবে বসুমতী খুল্লনা হইব খাও হব গঙ্ধাবান্য। জাতি বিবাহ কাঁবব ধনপতি গাঁত জাব দেশান্তর ঘরে মতা সওস্তর বহাবাধ দিব তারে দুঃখ কাননে পুজিব তোম। হব পতি-প্রাণসম। তাঁম তার হইবে সমুখ | ৩বনে আব পারি গাঁও সনে ডগি রাও সুও গে হব মালাধব কুটন্ব ধাবব ৪৭ পরাতে অনুবণ সংকটে হইব শুকব | বাজ-আাগু] শিরে ধবি।খ সঙ্গে পইয়। সাত তাঁর ধনপাঁতি চলব সংহলে পাঁত্খবা তোমার ঘ্ হয় ডিঙ্গা হইব নঠ পন্দি হব রাজ-বন্দিশালে | শ্রীপাও হইব সুত সঙ্গে ইআ তার সাত পিবেন বাপের উদ্দেশে আ।পাঁন কাণআ দথ। নাজকন|॥ দিআ বিহ। আনাইবে আপনার দেশে । শানএ/ পদ্মার বাণা আননিও নারায়ণী বিশ্বকর্মে করিল। স্মঙরন টে উমাপদ-হিতাচিত ণাঁচল নোতণ গীত ঢকবত শ্রীকাপকঙ্কণ ॥ ৪৫ মনে লাগে ঢাণুক্যর পদ্মার উপদেশ মৃণ্তড কশ সখী সঙ্গে উপায় বিশেষ । [বশ্বকমে ৬গবতী কারলা ধেয়ান ততক্ষণে বশ্বকর্ম আইল। সন্ধান । অফ্টাঙ্গ পোটাইআ বিগ্নকর্ম হইল। নৃতিমান প্রশংসআ। ভগবতী হাতে দল পান । তারা দল তোমারে নিজ পৃজামূল কলিঙ্গনগরে মোর রিবে দেউল । তবে সে কাঁরতে পার দেউল নির্মাণ মোর সঙ্গে দেহ যাঁদ বীর হন্মান । প্রসঙ্গ করিতে তথা আইলা মারুত হাতে পান দিআ চণ্ডী দিলেন আরাতি। উপাশ্থৃত বিশ্বকর্ম কংসনদ-কুলে শৃ৬্গ'ণ আগন্ত ৩ম।লতব্র মূলে । সাত। নম। ণন্দে িশাই ধারলেন সুত। হম্রণীণ গাযাণে রাঁচিত কৈন পোত। | মৃণ্ড এআণো|পধ। গার আনে হনমাণ [নাশখস |৬তর কণে দেউল নিমাণ | হর নিলা মগকতে শিমাইল চূড়। পসান দর্পণ লাগে চারাঁদকে বেড়া। ঘণণ চামর দশ এিসক পতকা বাকাপাঁও বোড জেন ফিরএ বলকা । নানা পরমৃ্ত কৈল বাচিএ জগাত হেমময় তাঁথ আরোপিল ৬গবতী । কাণ্নের দুরী [বার] বুবডে মহেশ মউরে কার্তিক লেখে মাকে গণেশ । হনুমান অওয়ার লইয়। অনুমাতি গাযাণে নিশান লিখে প্জার পদ্ধাত। নখে কোড়ে হন্মান দাঘ সরোবর চাঁরখান আড়৷ কৈল জেন মহাঁধর। চন্ডীমগল পাষাণে রচিত কৈল চারিখান ঘাট নান। চিত্রে রচিত কৈল পাষাণে নাছবাট । শূন্য দেখ সরোবর বীর মহাবল পাতাল ভেদিআ তোলে ভোগবতীর জল । সরোবর বোৌঁড় বিশাই রিল উদ্যান রসাল পনস রম্ত। রাপল হনুমান । তাল নারকেল গুয়। দাড়ি খাজুর করুণা কমল৷ টাব৷ নারেঙ্গ বীজপুর | নেহাঁল বান্ধাল টাপা গর তুলসী রঙ্গন মালতি জাতি সিঅলি অতসী । সতবর্গ মালতি জুথি কুন্দ কুরুবক পন্ন বাকস 'ঝটী পারুপি অশোক । রাঁ্র দিন জাগর্ক পবননন্দন মলয়া লুটিআ আনন রূপিল চন্দন । নম্মাণ করিতে হইল নাশি অবসান বিদায় কারল চণ্ডী করিআ সম্মান । দিতে জান শী নৃপতিব পাশ প্লীকাবকঙ্কণ গান অশয়াব দাস) যাগিনী অবশো রাণাব সয়র দেশে ্বগ্নী কহেন ৬পব্তী সফল উভয় নে লোমাণাসাণ৩ গান শ্রবণ করেন নরপাত। [শুন শুন নররায় কাহ দৃঢ় সুনিশ্চয় শুনহ কাপঙ্গ মহীপাল।১ গাঁড় দক্ষষজ্ঞে অঙ্গ কৈল তার মখ ভঙ্গ অবাঁন না আসি বু কাল। কার বহু পরামর্শ ২ আইপলাও তোমার দেশ লইব তোমার পৃজ। আগে করিব রিপুর ধংস বাড়াব তোমার বংশ নৃপাঁত করিব নরভাগে । দ্বিতীয় দিবস ; দিবা হইয়া তোমারে কৃপাময়ী একছন্লে পালিবে অবাঁন বাড়িব তোমার যশ কারব নৃপাঁতি-চুড়ামাণ। কংসনদের তীরে নিরমিল দেহারা আপনি পা পান্র পুরোহিত আজ পুঁজবে নৃপমুন। “সত আম দাক্ষী লিঙ্গহরা নৌমস-কাননে প্রযাগে ললিত৷ নাখে কাণবাঁত গন্ধমাদনে | গোলে গোমতী নাম। উত্তরে বাঁদত বিশ্বকায়া শয়ন্তী হাস্তিনাপুরে হার-সাল্লিধানে মহামায়। । শাধচয পাইয়া রায় কাগ্কণী পণ্চম-সুর পুরে ইল প্রভাতকাশ আনন্দ হহণ প্রতি ঘরে । কাঁবচন্দ্র হদয়-নন্দন হাহ।ব অন্জ ভাই [বরাচল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ 89 শুঙোদয় গ্বগ্ন দেখি দিলেন দুন্দৃভি ঘোষণ। কপিঙ্গের ঘরে ঘরে পাঁজব দেবী হিলোচন। । প্রঞাতে কারয়৷ প্লান ভাটেরে দিলেন গজ ঘোড়। সমরে করাইব জয়ী কাশীপুরে বিশালাঙ্গা তমুলুকে বর্ীভম। বিজযা নন্দের ঘরে ধারন চত্তীর পাষ [সঙ্গারঙ্গে কোলাহল হ্য়ামশ্রের ৩ত চতীর আদেশ পা নৃূপাত পবমসুখী ব্রাহ্ণে দিলেন দান ২৪ দরাক্ষ কষ্ঠমাল পাইআ শুভকাল পূজেন হেমবারি জোড়া । পৃজেন নরপাঁত আনন্দে হৈমবতী র্রা্মণ মৌল বেদ গান শঙ্খ ঘণ্ট। উচ্ষ খমক জগবঝম্প বাজযে ডমুরু বিধান । দেউল অচাম্বত কা্চন-কলাস ত হইল পভে সাবস্ায়মাত জতেক বৃদ্ধ যুবা বিহঙ্গম পশ্‌ কিবা দেখিতে ধায় পঘুগতি । কংসনদী ত) নিকটে উদভট পবট-বাঁচত দেহারা হহআ অদ্/তনী শাঁনঞা কুলজনী দেখিতে ধায় সতন্তরা । আদ। পুরোহিত কুটুম জ্ঞাতি জত বন্দেন নৃূপ বরাবরে প্রশপ্ত নানাবাঁধ খণ্ড মধু দাঁধ খোবেদ। নিন ভারে ভারে। নুদ্গ শঙ্খ পড় মাত৮- পচে বাজে দাখা পুরণানত।দনী দোঁখতে আইসে গজগম। | অষ্ট নঙ্গলঝরে নৃগাঁত পুজে পুণাবান মাহৰ ছাগ মেধ শতেক দিল বপিদান । তত্ডল অন্থ দু কাণ্টনাবরচিত বারি অঞ্জাপ-সরাসিজে নাচে গায়ে বিাধরী । পুজিয়৷ পারবারে নৃপাত করয়ে অঞ্জাল প্রদাক্ষণ করে নুতি অঙ্গ পুলুক-পুটাঞজাল। দোঘণী বাজে জোড়া বদনে জরধ্বনি বোড়শ উপচারে রোহত রাজহংস জাহ্বী-জলগতা চ্ঁকা রাজ। পুজে প্রণাত বারে বারে নৃপাঁত করে সত শ্রীরঘুনাথ নাম গশেষ গৃণধাম রান্মণভমি-প্রন্দব তাহার সঙাসদং বারা চারু প। নুকুনধ গান কারবর ॥ 91) গুগ। ঘুর্গ। গর তুশি দুর্গতিশাশিণী গোকুল রাখিলে জয়া যশোদানান্দিনী | শিপ্পাণৃপা হইআ। তুম ভাগুনে প্রহরী জখন দেবকী গে জঞ্মলা শ্রীহারি | নান। অবতারে তুনি বিষু-স্বহায়নি দুরিতনাশনী দুর্গা দুর্গাতিহারণী । যমুনায় আবর্তশালী বিষম করালী পুরঃসর৷ হইয়। তুমি হইলে শৃগালী । ভূভারথগুনে কেলে আপুন প্রকাশ কংসভয়ে কৃষ্ণ কেলে কালিন্দীর পার । কৌওুঁকে শাতআছিণে দৈবকীর কোপে করে পদে ধরিয়। বাঁধতে কংস তোলে । বিপদনাশিনী তোমা গান হরিবংনে কঁফের কারলে কাজ ঙাণ্তাইয়৷ কংসে। নন্দগোপসুত। শৃন্তনিশ্ম্তনাশনী ভুবনবন্দিত বিদ্ধাশিখাঁরবাসিনী । নানা পুষ্পাবভীষত অষ্ট-মহীভুজা বলি দিয়৷ দশ লোকপাপ করে পৃজ। | রাবণের বধহেতু মিশিয়। দেবত৷ তোমার বোধন কইল অকালে বিধাতা । নানা উপচারে পৃজিলেন রঘুনাথ তবেত রাবণ হৈলা সমরে নিপাত। হইল মধুকৈটভ হাঁর-কর্ণমূলে রঙ্ধারে হানিতে জায় নিজ বাহুবলে । শাঁ৬পদ্মে বিধাত।৷ পৃঁজিআ৷ ভগবতী দুই অসুরের বধ নারায়ণে মতি । চন্ডীমঙ্গল জেই জন না করে তোমার স্বহায়ন সেইজন কিবা হাঁর-সেবার ভাজন । কাত্যায়নী পৃজ৷ কারআ। পাইল বরদান নন্দগোগ ব্লজকন্যা হইতে গ্রমাণ। এও স্তুতি কৈলা যাঁদ কালঙ্গ-ভূপতি বর দিআ৷ কৈলাসে ৯পিলা ভগবতী । রায় মধুর পদে একপদা ছন্দ প্লীকবিকঙ্কণ গাঁত গাইল মুুন্দ ॥ ৪৯ প্জার দাঁক্ষণা দল দিজে হেম তোলা [শিরে নিল রাজ৷ ব্রাহ্মণের পদধূলা । দ্বিজে নিয়োজিল নিতাপ্জাএ নৃপতি শতেক ব্রা্গণ নিত্য পড়ে সপ্তশতী । শঙ্কর সদনে চণ্ডী জান নিজ বেশে অংশরূপে পৃজ। নিল কাঁপিঙ্গের দেশে । বিজুবনে নিকটে শতেক পশুগণ পথে জাইতে চাওকার পাইল দরশন | কেশরী শাদূলি গঞ্ড তুরঙ্গ বারণ শর করও হয় গবয়৯ হারণ। একে একে পশুগণের কত নব নাম অভয়ার পাএ সভে কারল প্রণাম । উদ্ধমখ হইআ পশু করএ গোহারি কপ কার পূজা মোর লহ মাহেশ্বরী । অপরাধ বিনে পশু সদাই সশঙ্ক বর দিয়। ভগবতী করহ নিরাতন্ক । পশুগণে কৃপাময়ী হইল৷ ভগবতী আত্মপ্জা-বধানে দিলেন অনুমাত। আজ্ঞ৷ পাইয়৷ পশুগণে হরিষ আকুল বনে বনে চাহয়। আনিল বনফুল । আম জাম সিয়াকুলি কালচিত২ ফল নৈবিদ্য দিলেন পাদ্য কংসনদীর জল । দ্বিতীয় দিবস; দিবা প্রদক্ষিণ নমস্কার কৈল৷ বারে বারে নিরাতন্ক আশীর্বাদ কইল সভাকারে । বাঘে না খাইবেক মুগ কেশরী বারণে তুরঙ্গ মহিষ দূহে থাক এক বনে । অবিরোধে থাক দুহে সষারু কটাস স্বাউবন কবিলে দুঃখ করিব বিনাশ । অভয়াব চরণে মজ্ক নিজ চিত পশ্স্থাপনে বনে ছমপদী নীত ॥ ৫০0 ইঘা পশুব পূজ। [সংহাবে কাবসা নাজ। ণ নিজ খও।১ দিন এঠামায। 1ব।জে] উচিত হয তাবে দিল সে বিষ টন চওী পশুগণে দখা । সন্হ বীর মহাতেজ। টিকা দিল ভবানী পলা? ধাঁববে ধবল ছাত। পশ মধ্যে তুমি বাজা ৩ণঞ্ শুনহ কথা গাক তম রাজার নিকটে । এণভ কুণীন তুমি সকশ পশর মানং বাহ্মণ জেনন নরমাঝে বে তম পুরাহত মঙ্গল টাস্তরে নিতা এই কর্ম অন্যে নাহ সাজে । [র কর সব শোক শাল ওপ্গুক কোক বনবরা গণ্ড। মহাবীর গুরু সঙ্গে-জেন ছাত্র হও তুমি মহাপাত্র প্রতীদন দিবে পুষ্পনীর | সত্য কার মৃগরাজে অভয় করিল গজে কাঁরলেন সিংহের বাহন আন তথা জোড়৷ জোড়া বাহন করিল ঘোড়। বারণেণ করিল কপিগণ । নজেজ তোমারে আমি শৃনহ চামর তুখি চামর ঢুলাবে রাজ-অঙ্গে ৩, আমি তোরে দিল ভার ভেউর হবে রায়বার তোর পিঠে চাপ আমি রঙ্গে । খাইবে বার্তন-ভমি চাক] কাববে রাজপ্রে করিবে পশুর রক্ষা ৬জঙ্গ শা জিশিন তোমারে | খাইবে প্রজার শসা বৈদ্য নকুল তুমি পথোব সঞ্জম দীর্ঘ পশব হ।জবা এস। হবে তুমি বাজার দুয়াবি ।শশাঘ জাতিম। থাক প্রহরে প্রহরে ডাক কোটাল শগাল প্রহরী । শীলকষ্ঠ ণড়ান পারাঁসংহ। চোলকান পাজা মেলা কাবফরম। আমাব প্জাণ ফলে বনে থাক কুতৃতলে নাঘে আব না খাইব তোমা । উ০ গারা খেম খানে বাজার নফর হবে সম্পদাবপদে ববে ভাব গার জত গশগণ সাভে হব প্রজাজন মণ্ডল হইবে কালসাণ । শহামশ্র জগন্াথ কাবচন্্র হদম-নন্দন হদয়ামশ্রেব তাত ভহাব আশল ভাই 5ণীব আদেশ পাই পবািল শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥৪ ৫১ জেকালে অভয়। আইল কালঙ্গের দেশে সেকালে মরতে পূজ। নিলেন মহেশে । সপ্তগাতাণে পূজে* জত নাগলোক বর দিঅ৷ হর তার দূর কৈল শোক। অবানমগলে পূজা ধর্মশীল নর জীবন্যাস কাঁরৎ পৃজে ঘুত্তকা-শঙ্বর ৷ পুর মধ্যে দেই নর শিবের মন্দির নর পাইআ নরলোক বলে হয় বীর। ৩২ চত্তীমঙ্গল চৈপ্নমাসে পৃজে হব নানা উপহানে শ্রীজযন্ত নীলাঙ্বর দুই ভাই ম্মমক্মব১ ঢাকটোল বাদা বাজে শিবেব মন্দিবে। চোঁদিগে শতেক কুমাব জিব কাটে জণ ফোডে কবএ চডকত সেবক প্রধান জোগায গৃধ। পান আঁ৬মত গর্গ জাখ না জাম নব । মাপত কবে ঘনসাব। ঠেঙাফুগে সনম কবিণ দশানন ণসাযে সশুখণ্ড হেমবতন দও তেশনন মবতে কবখে নবগণ । মণ টুপায মাতুপ [পশা দানবে শিব গজ প্রাণাদিন আগে ণান্দ ভাট ৰা কবান শ্রুতি পাঠ তে ভান শঙ্কব পৃজে নহে ধনহীন । মাথায ধবিআা আঞ্জাল। মমববতীতে শিব পুজে প্বন্দব পানঝ আদি কাব [দগেব অধিক।বা ওাব সুত কুসুম জোগায নীলাম্বব। ববৃণ 'নাবতি শমন পূজা লইয। শূলপাণি আইসেন কৈলাস কবেব প্রভঞ্জন আদ দেবগণ হেনকাশে আইসে দেবী শিবেন নিবাস আইলা মহেন্দ্রসদন | কবজোড়ে কাঁধ দুর্গ কাঁধল প্রণাও দূবাস। 'জমীন আঁঙ্গিব। আদি গণী আশষ কাঁবআ জিজ্ঞাঁসণ। পশুপাত । আইলা মহেন্দ্রসদন কহিলা ভবানী তাবে পজাণ নবতা এমন সময আইলা মহাশয চবণে ধবিআ। আব কহেন কীছু কগা। নাবদ বাবপ্িনন্দন | অষ্টা দন পূজা মোব অনা তব উঠিযা প্র!ণপাত্ত কাঁবযা সুবনাথ তিন দিনেব কথ। তাব লই নীলাম্বব । বসাইল কণক-আসনে শীলাম্ববে সাপ দআ যাঁদ পহ ক্ষাও ঝাবম। প্রিষজণ বার্তা জিন্ঞাসন ওবে প্রচাব হয গৃজাব পদ্ধাতি। গ্রীকাবকঙ্কণ ভনে ॥ 'তিপার্ধ নীলাম্ববেব নাই দোঁখ পাপ কেমন কাবণে তাবে দিব অভিশ।প | যাঁদ আপান ইছষে মহা ইঞ্ডে কুমাব রি তবে সাপ দিলে প্রভু নিদোষ তোমাব । অঙ্গীকাব কইল শিব নল দুর্গ। পান আম্বকামঙ্গল কাবকন্কণ গান ॥ কহ ন৷ নারদ মুন দেশের বারত। কহ না সকল কথা ছিলে জথা জথা। এ তিন ভুবনে নাহি তোমার সমান ভূত ভবিষ্যত* তুমি জান বর্তমান । ভাগ্যে তব পদরেণু আমার ভুবনে /% আজ পবিত্র আমি তোম। দরশনে । সুধর্ম সভায বাঁসল৷ ইন্দ্রবায দেখিআ৷ তোমার কৃপা হেন লষে মনে বিচিত্র হেগাসংহাসনে চিরদিন লক্ষ্মী রহিবেন আমাব ভবনে লইআ পাজি পুথ সমখে বৃহস্পতি সেই জন রিপুজয়ী সকল তুবনে বাঁসলা বাজ। সন্নিধানে। জেই জন তোমার মধুর বাঁণা শূনে। দ্বিতীয় দিবস; দিবা ইন্ড্রে বচন শুনি বলেন নাবদ মুকুন্দ বচিল গাঁত মনোহব পদ ॥ ৫৪ *ন্দ্রকি আব কাহব কথা কাঁহতে পাগযে ব্যথ৷ নিবোদতে বড ভয কি নপাতক ০৩ জন্ত আব শুম্ত নিশৃদ্ত বাডিল তেমাব বড় এব । 71 উপাভাগ হান শতফুল প্রাতাঁদন দশপাও মহাদব পৃ ন কব বায অসুব প্রবণ তায শৃন্ত নিশ্স্ত স।গ জুনঝ। ”5 মহাবন জন্ত কি কর তাহাব দগ্ত ভজন পরত উপান্ড সণ ভুজবল মহাণ্দব পূজাব ফল ৬৩ কবি ধবিঅ। কাছা7ড। * ফুশা ঝাস গা্ধ বুমবুম কন্তাবি সঙ্গে নাবদা ক বালব ৩ব 1” কি পাশব তাখ তাঁগ সালা উপচাব দাক্ষণা কাণ্চন শতঙাব | "বব কাঁবাত প্রীত প্রাতাদন নাটগীত সন্ধ্যাকালে ব্াাপিস বাজন। [দ প।ষ চতুর্দশী থাকে বাঁব উপবাসী নিশাকালে কবযে পাবনা । কব সন্ধষ্প কাব গৃঁজে দৈত্য ত্রিপুবাবি এ বড় সন্দেহ মোব মনে বুঝলাঙ দৈতে;ব কার্য হেন আমি অনুমানি মনে | (৬৭ কবহ নানা বাঙ্গ বাজভোগে পাঁড়আগ্ছ ভোলে 1শাবব পাইআ বব দৈত্য হইল ধনুধব কোন দিন পড়ে গগগোলে । নিবেক কাহাব বাজ্য থাকহ কামিনী সঙ্গে চ ম-& নাবদেব কথ! শুনি বাসব মনেতে গুঁণি শিবেব পৃজায দিল মন মাতুলি বচন ধব ডাক্য৷ আন নীলাম্বর বিবাঁচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৫৫ নীলাম্বব পুষ্প তুলিতে নেহ পান আনন্দ হইআ মনে মমোব বাক্যে কব অবধান। নাহি যোজন বাণ দুবন্ত অসুব সনে না পাঠাইব (তাম। দূব দেশ কুসুম আনিঞা দিবে ইহা?থ ভাবহ মনে কেশ । প্রবেশ নন্দনবনে সবে দণ্ডচাব জাব যযাতিব পুণ পুবু তাহাব চারন্র চাবু জারা নিলেক বাপেব বলে শান্তিবাস দিআ মন দিল নিজ যৌবন যশ তাব ঘোষে ভ্রিভুবনে । আজ্ঞা দাশন তাত বনে গেলা বঘুনাথ ছাড়িআ কণক সিংহামন জানকী লক্ষ্মণ স।থে প্রবোশ কাননপথে যাশ পূর্ণ হইল ঘ্ঙ্ুবন। বাপে আজ্ঞা সু৩ কার্য করে অনুচিত নিদর্শন ভূগুপাঁত ইথে বাপের শুনিঞ৷ কথ। মাষের কাটিল মাথা এই যশ ঘোষে ব্িজগতে | [বিষম আবতি নষ সবে জাবে দণ্ড ছয নন্দনকাননেব ভিতব নিকটে কুসুম আছে উঠিতে না হবে গাছে আবাধন কাঁবব শঙ্কব ৷ দেখ বালা-নীলাম্বর অঞ্জলি কাঁবযা নিল পান সাজী আকুড়ি হাতে শ্রীকাবকঙ্কণ বস গান ॥ বোষজুত পুবন্দব চলিলা কাননপথে ৩৪ ৫৬ গঙ্গাজলে করি ম্লান শুরু ধুতি পাঁরধান প্রভাতে চলিল৷ নীলাম্বর সাজী অণকুড়ি হাথে প্রবেশে কাননপথে স্মঙরণ করিয়। শঙ্কর । গুনিএা তেলে শত ফুপ প্রবোশি নন্দনবনে তমার হরিবমনে হয় রিতু দোখল সঙ্কুল। কহলার কৈরব কাল৷ পাঁনাসিউলি পাঁনকল। কমল কন্দর ইন্দীবর অশোক [কংশুক ঝাটি রঙ্গন তুপল নাগেশ্বর | কুন্দ তোলে মরুবক জাতী জাত দুইবটী ১ কুরুবক পুরুণ্টক কদগ্ন কনক করবীর ঘলঘাধি বাকসন৷ প্রত্যাঙ্গরা তুণিল ঘুস্তুর ৷ ধুলকদস্ব তোলে বনে আউচও ঠাপা কাণ্চন কেশর তুলিল মাল্লিক৷ জোড় লবঙ্গ তুলসী দনা কুমার হরিষমনে শ্বেত রন্তু তোলে ওড় ্দকুসুম তৃঁলিল টগর । নেহালী বান্ধুলী দুধা বনকরবার মুর অতসী সিউাল পারজাত অপামাগ্গ বাঘনলা সাঞ্ী তোলে ভদ্রুকল।ঃ রন্ত-উৎপল অবদাত। বিষলাঙ্গলিয়। তোলে জটা বিরতি ঘুচাইআ কীটা ভূমিচাম্প। তুলিল" সপ্তদলা” আঙল৷ কুড়চি কিমা মদন বাকস জয়া কুবিদার তুঁলিল পাটল। । কাল্যাকড়া তোলে মৌল বাসাস্তক। আখও শ্রীফল নোঞাঞ'এম ধার ডালে তমাল পিয়াল সালে দুই আকড় তুলিল হিজল । কণ্টকারি১* শ্বেতজটা স্যামলত। ঘাটুফুল* আকন্দ তপন নাট সূ্যমণি তুপিল গুলাল চন্ডীমঙগল বিসসোল।১১ ভারদ্বাজি তুলিয়া পরল সাজি কোকিলাক্ষ তুলিল১* দুলাল । সেবতি কান্ত জুঁতি ইন্জ মূল তোলে জাতি রঙ্গন তুলিল সদাবার করঞ্জা যুগল গণা ১৩ দাঁড়ন্ব মুদিতমনা রাঙ্গ-তুলসী তুলিল বিচারি। হইল প্জাব বেল গাথিল শতেক মাল। নীলাম্বর আইসে ধাওয়াধাই আচ্ছাদন পদ্মদলে থুইল পূজার স্থণে প্রীকাবকঙ্কণ রস গাই ॥ ৫৭ চৌদিগে জয় জয় গৃজেন হরিষময অনন্যভাবে ভূতনাথে দোখাঁও শঙ্খ জোড়। মুদঙ্গ বাজে পড়। শতেক পু লইআ সাথে । বাগীশ গায় সাম দিবস পূর্ব যাম রুদ্রের অধ্যাষ মাহমা নারদ বাঁণাপাণি গাঞ্জেন দ্বিজমুণি শঙ্করগুণের গারিএ।। শঙ্কর প্রেমাদঠে বসাইল হেমপাঁঠে পাখালিল শিবের চরণ বসনে পদ পুছ নিছনি করে শা বসন অমূলযরতন । শিবের মহা্লান করিল যন্পবান শতেক ভার গঙ্গাজলে মুগাঙ্গ জনি ভাস পরাইল দিব্য বাস স্তর ফোটা দিল ভালে । কন্থুর লেপন কুমকুমচন্দন বাসব দিল হর-অঙ্গে ষোড়শ উপচারে গৃঁজিল পুরহরে সকল পুরজন সঙ্গে । দ্বিতীয় দিরস দিবা ডম্বুব দীঁমিদীঁমি বাজান দেবন্বামী সুযন্্র ঘনঘন সঙ্গা িদশপাতি নাচে ডন্ক বাজে তাধিধাধঙ্গা । সঘন মুখবাদো প্রমথপতি কাছে গ্রবন গদ্যপদ্যে অষ্টাঙ্গ দণ্তপ্রণতি একাস্ত ভাবাচত্ত তুঁষল। দেব উমাপতি। পৃূজেন দিনে দিনে নিযমে দ্বাযাদশ বংসব (িবিষ৷ বনে বনে 1 সব পৃজে নিত্য এনন ধবনে শতক ফুল আনে প্রাতদিন নীলাম্বব। ওথ। আপন ব্রতকথ। কাননে উবিলা ৬বানী পাচালি বিবচন বদনে নাচে জার খাণী ॥ স।ধিতে সাবাহত। শীকাবকঙ্কণ ৫৮ পল্পাবতী সনে যুন্ত কবিআ অতয। নন্দনকাননে আস পাতিলেন মায। । ফুপহীন কইল চন্ডী নন্দনকানন ফলফুলহীন হইল জত উপবন । বাম কবে কবাঁও আকুডি সাজ কবে প্রবেশিল নীলাম্বব মালণ ভিতবে। ফুলহাীন দেখিযা ভাবেন নীলাম্বব কোথা পাব শত ফুল প্রহর ভিতব। অভাব ফুলেব চিন্ত। নীলাস্বব পা বথ চাঁড় নীলাম্বব বসুমতী জায । যাত্রার সমযে ডোমচিণ ফিবে মাথে কাঠুরিযা কাঠভাব লইয়া আইসে পথে । উপনীত নীপান্বব হইল বিজুবনে ওথা ধর্মকেতু তাড়৷ দিয়াছে হাবণে। ৩৫ রূপসী হারিণাঁ হইয়া আগুনি অভয় ব্যাধের সমুখে আস পাঁতিলেন মায়া । রাহয়া রহিষ৷ জান দেবা দীঘল তরঙ্গ তার পাছে ব্যাধ জেন উড়িছে পতঙ্গ । আকর্ণ পুাঁরযা ধনু বীর ছাড়ে শর শর ছাড়িয। দিতে দেবী উঠিল। অন্বব। অনিমেখে লোচনে দেখেন নীলাম্বব ফুল চিন্তা দূর হইল ভাবেন কোঙুর। অভযাব চবণে মঞজুক নিজ চিত প্রীকাবিকঙ্কণ গান মধুব সঙ্গীত ॥ ৫১ বাঁসআ তরুর তলে ভাঁসিআ৷ লোচনজলে বিষাদ ভাবেন নীলাম্বব হৃদযে বাঁহল শাল ব্যাধজনম ভাল কেন হইলাঙ ইন্দ্রের কুমাব। এই ব্যাধ তালে জিএ ন্রিষায পানি পিএ যথাকালে কবএ ভোজন বিশ্বনাথেব পৃজ। জাবদ না কবে বাজ ততক্ষণ উদরদহন । এই ব্যাধ বৃপবান বনবাসী জেন বাম মূগ দোঁথ মাবীচসমান সিংহ জনি মধ্যদেশ লতাষ বেঁড়িত কেশ অভিনব জেন পণুবাণ । না কাঁবল কোন কর্ম বিফল দেবতার বিদ্যাব না কৈল্য অন্বেষণ না কইল ধনু শিক্ষা হবেক কেমনে রক্ষা যাঁদ হব দেবাসুবে বণ। সাঁজ দণ্ড হাথে করি প্রভাতে প্রভাতে ফার অন্দিন যেন মালাকাব চবণে কণ্টক ভুকে শতেক আচড় বুকে কি দারুণ দৈব আমাব। ৩৬ হইআ৷ বড় আকুল সন্্রমে তুঁলিল ফুল শ্রীফলকণ্টক রহে তাঁথ ভাঁবআ আস্বিকা পায় শ্রীকবিকঙ্কণ গায় বেগে রথ চালাএ সারাথ ॥ ৬০ বাহল পৃজার বেগ 'চাঁন্তত কোঙর দুই করে তোলে ফুল কানন ভিতর । ঘন বেলা পানে চায় ব্রিষায় আকুল জত পায় তত তোলে না ছাড়ে মুকুল । কুসুম ভিতরে চণ্ডী পাঁতিলেন মায়। পলাশে রাঁহল দারুণ 'পপাঁলিকা হইআ|। ব্যাজ জান লঘুগাঁতি আইসে নীঁলাম্বর সুতের বিলম্ব দোখ ভাবে পুরন্দর । খেলায় উন্মন্ত সুত কইল জত পাপ আজ অবশ্য হর দিব আভসাপ। ধূপদীপ নোবদ্য রাঁচআ। সাবলস্ব নীলাম্বর আইল পূজার কাঁরপ আরম্ত। কুসুম-অঞ্জাল ইন্দ্র দিল হরাশিরে কণ্টক ফুটিল দুঃখ পাইপ অন্তবে । দারুণ পিপাঁণিক। তার প্রবেশে কুস্তলে মরমে দধাশলা হর হইল আকুলে । অনল সমান পোড়ে পিপীলিকার বিষ অভিমানে করে হর মনে বিমরিষ । শুন ইন্দ্র তুমি প্্দশের আঁধকারী কিসের কারণে পূজ জনমভিখারি। করহ আমারে ইন্দ্র কপট অর্চন৷ কপট ভকাতি মোরে কর বিড়ম্বনা । পাট নেত বস্ত্র পর গলে রহ্বমাল হাড়মাল মোর গলে পার বাঘছাল । অচল। কমল৷ তোর সম্পান্ত বিশাল পারহাস কর বেটা দৌখআ৷ কাঙ্গাল । চণ্ডীমঙ্গল স্মরহর নিঠুর ভূকুটি ভীম মুখে নয়নে নিকলে বাহু ঝলকে ঝলকে । অঞ্জাল করিআ কিছু বলে পুরন্দর মোর দোষ নাঞ্জ পুষ্প তোলে নীলাম্বর | নীলাগ্বরে !তবে] জিজ্ঞাসেন শূলপাণি ভয় তোঁজ নীলাস্বর কহ সত্য বাণী । কহেন কুমার সত্য জে দেখিল বনে চাওকার সত) কথা হর কেল মনে । মোর সেবা তেজি ইচ্ছা কর অন্য সাধ বসুমতী চল ঝণট হও গিয়। ব্যাধ । হেন বাকা হৈণ জবে মহেশের তৃণ্ডে পরত ভাঙিআ পড়ে কুমারের মুণ্ডে। এতেক বচন জবে বৈল পুরহর চরণে ধরিয়া কীছু বলে নীলাম্বর ॥ অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত শীকাবকঙ্কণ গ।ণ মধুর সঙ্গীত ॥ ৬১ চরণে ধাঁরআ হরে কুমার বিনয় করে অপপ্াধ ক্ষম কৃপাময় অতি পঘু মোর পাপ দিলে গুরুতর সাপ ব্যালে জনম নিশ্চয় । অবহেলে পাণিপুটে পান কৈলে কালকুঁটে ত্রিভূবনেব কৈলে পরিএাণ সেবকে হইশে বাম মোর দেব ইহাতে নিদান। সুর নর নাগ জেবা করএ তোমার সেব৷ অধগাঁত কার নাঁঞ হয় না দৌখ এমত সৃষ্টি চন্দন প্রসবে ধনঞ্জয় । অভিমত ইচ্ছা কার ফল যোগে হবে প্রাতকুল তুমি সর্গুণধাম চন্দ্র হইতে বিষবৃ্ধি সেবিলাঙ কাম-এার দ্বিতীয় দিবস : দিব! নিবন্ধ দৈবের পাশে ভর! দল লাভ আশে হার হারি নাশ গেল মূল। (বচিল তোমার পায় জেই ইচ্ছা করহ তেমন কৃপা কর দেববর্গ তেমার চরণে রহে মন । 'পাখআ তাহার দুঃখ আজ্ঞা দিলা দেব পণ্টানন তান তোরে দিবে মাও আসবে আপন নিকেতন । আইল জর মাহেশ্বর নীলাম্বর নিজ কায় ন৷ যাই নরক দ্বর্ণ লাজে শিব হেটমুখ কব্হ চন্ডীর ভান্ত এমন বলিতে হর নীলাম্বরে কৈল অধিষ্ঠান চোঁদাগে বান্ধব মেলা গলায় তৃলসীমাল। গঙ্গাজলে কাঁরল শয়ন । বাতি দিন তুয়৷ সোঁব রচিল মুকুন্দ কাব নোতন মঙ্গল অভিলাষে উর গো কবির কামে চন্তলেখা যশোদা মহেশে ॥ কৃপা কর শবরামে ৬ৎ মন্দাকিনী জলে শযা৷ পাতে নীলাম্বর প্জা সাঙ্গ কার স্তুতি করে পুরন্দর । প্রদাক্ষণ নৃতি সতত হইল বারেবার তোমার চরণ বিনে গাতি নাহ আর। পান্র মন্ত্র পাঁরবার শোকের নিদান তুমি সত্য তোম। বিনে সোবি নাহি আন ক্ষমা কর মহাপ্রভু বালকের দোষ শিশুমতি নীলাস্বর না কাঁরবে রোষ। অভান্ত তোমার পদে কেবল নিদান ব্রহ্মার তনয় দক্ষ ইহাতে প্রমাণ । কালকুট পান করি মৃত্যু কৈল জয় জে জন শঙ্কর ভজে তার কিবা ভয়। ৩৭ তোমার চরণে জার আছয়ে ভকতি ব্লিভুবনে জিনিলে তার কি করে দুর্গাত। জর! মৃত্যু বাধি শোক আর দৈন্য দোষ তাবদ জাবদ নহে তোমার সন্তোষ । মোর নিবেদন প্রভু কর অবধান পুষ্প তুলিবারে দেহ প্রবরেরে পান । ইন্দ্রের চনে অনুমতি দিলা হর অঞ্জলি করিআ পান লৈলা প্রবর | হরপদকগলে মজুক নিজ চিত ছায়ার প্রসঙ্গে নাচাঁড় গাব গীত ॥ ৬৩ হৈল জলসাই পতি ইন্্রবধূ ছায়াবতী লোকমুখে পাইপ বারত৷ ' চোৌঁদকে বেষ্টিত সখী সন্তাপে মলিনমুখী হার হার স্মঙরে ধধাত৷ । আলুয়াইল কেশভার তেজে বালা অলঙ্কার সথনে নাড়য়ে আম্নডাল সুবপুরে কোলাহল মভার লোচনে জল শচীর হ্দয়ে বাজে শাল । গ্লামী মৈল প্রথম জীবনে নীলাস্বর কার কোলে বাঁসয়া গঙ্গার জলে যুগ মুটকি হদে হানে । পাঁড়য়া চরণতলে ছায়া সকরুণ বলে প্রাণনাথ কর অবধান [তিলে নিদারুণ হইআ পাসারলে নিজ জায়া দূর কৈলে সোহাগ সম্মান । আরতি তুলিতে ফুল বিধি হৈল৷ নিরাকুল জীবন তোজলে হর-সাপে খণ্কপািনী ছায়া শঙ্কর ছাড়িল দয়া ডুবিনু পরম পাঁরতাপে। দেহযোগ নহে নিত্য কেবল মরণ সত্য সবলোক এই কথা জানে ৩৮ যৌবনে মরণকাল হদযে রাহল শাল নাঞ মানে প্রবোধ পরাণে। ঢালি বহু ঘুত ভাও জ্ঞালিল অগ্নির কুও সুরনদাঁতীরে সুরগাঁি দুই কুলে দিযা বাত জীবন তেজিল সতী পাঁতির আনলে ছাযাবতী । বিদায় কারিয। শিবে গেল চত্তী ঝাধের নিবাস দুজনার লইয়া জীবে রাঁচয়া এপদী ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুন্দ রাজা কৈল মঙ্গ প্রকাশ । ৬৪ প্রাতে যুক্তি সথি সঙ্গে দ্বাদশী-পাবণরঙ্গে হইল দেবী জরাতী রাহ্মণী আইলা ভিক্ষের আশে ধর্মকেতুর বাসে নিদয়। দিলেন পিড়া পানি । কল্যাণ করেন ভগবতী পারণার হেতৃ-ভিক্ষ আঁবাতে হবে পুএবতাঁ । হইআছে প কন্যা ঘটক ফরএ স্থানে স্থানে'১ দেখিল পুণের বলে কেবল কল্যাণ নদানে । দেহ গে পবাণরক্ষী সে সব গ্বামীর ধন্য শিদয়া এই স্থলে সফল করহ মোর আশ তোমার পাইয়৷ বর তোমার কাঁরয়া দিব দাস। হয় যাঁদ বংশধর কাঁহ গে সত্যবাণী ওষধ আমি জানি কুমার জনম কারণ দিব গো নানাপুটে হইব পুত্রের জনম । বচন মিথ্যা নহে মোর সোহাগ নাঁঞ টুটে শ্লান করহ তুমি ওঁষধ খুণজ আমি হইব বংশধর তোর। চন্ডীমঙ্গল ত্বরায় পুত্ন আশে ল্লান কার বৈসে নিদয়া কার উদ্ধণ মুখে মাক্ষিকা রূপধর, প্রবেশে নীলান্বর ওষধ দিল! দেবা নাকে । নিদয়৷ পাএ পাড় তুল ডালি বাঁড় দিলেন কাড় চারিপণ দেবীর আদেশে হিরার গর্ভবাসে ছায়াবতী লভিল জনম । ্লীবঘুনাথ নাম অশেষ গুণের ধাম রাহ্মণভুমে পুরন্দর তার সভাসদ রচিয়৷ চারু পদ মুকুন্দ রচে কাঁববর ॥ ৬৫ সেই দিন ধর্নকেতু রাতিরঙ্গ মনে দৈবযোগে গর্ভ তার রহে সেই দিনে । প্রথম মাসের গর্ভ জানি বা না জাঁন দ্বিতীয় মাসের বেলা করে কানাকানি । তৃতীয় মাসের বেলা করে ভূতলে শয়ন চার মাসে করে রাম। মুত্তকা ভক্ষণ । পাচ মাসে নিদয়ারে না রুচে উদন হয় মাসে কাঞ্জী করঞ্জায় জায় মন। সাত মাসে রসবাস 'দিল ধর্মকেতু জ্তাতি বন্ধু সভে সাধ দেই শুভ হেতু । আট মাসে নিদয়ার বাড়া যায় পেট চলিতে ন৷ পারে না চাহিতে পারে হেট । নয় মাসে নিদয়ারে সাধ দেই ব্যাধ নিদয়া স্কামীরে কহে ভাবিআ বিষাদ । রাঁচয়৷ মধুর পদে একপদা ছন্দ প্রীকবিকম্ষণ গাঁত গাইল মুকুন্দ ॥ দ্বিতীয় দিবস ; দিবা ৬৬ প্রাণনাথ কাল গর্ভ হইল কোন ফলে উদন বেঞ্জন জল পেটে ভোক মুখে নাহি চলে । "7৩ব “দখিযা ভব মনে বড লগে ডব খুধা ন্তিষা নাহি দিন৷ দশ আপনাব মত পাই তবে গ্রাস কত খাই "পাড় মীনে জামিবেব বস। তাঁথ মহিষেব দই কাল কবঞ্জ! প্রাণ হেন বাস দ পাই মিঠা ঘোল পাকা চালিতাব ঝোল প্রাণ পাই পাইলে আমাঁস। মামার সাধেব সীমা ইা্চ৷ পলতা গিমা বোআলি ঘশাটিযা কব পাক বন কাঠি খব জালে সান্তালাব ক? 'তশে দিবে তায পলতাব শাক। ফুলনডি দিবে কীছু পবুচা কিল বল শধানী কাবিষা খই গৃই ডাগ থুপি কছু দিবে তায মাবচেব ঝ।ল হবদ্রাবাঞ্জত কাঞ্তি উদব পুঁবিয। ভুষ্জ প্রাণ পাই পাইলে পাক। তাল । "শান কিছু দিবে বাড নেউল গোধিকা৷ গোড়া হাসাঁড়ম্বে কিছু তোল বড়া কীছু ভাজ বাণিকড়া চিঙ্গাড়ব তোল বড় সসাব্‌ কবহ শিকপোড়া। সদাই নাকাব উঠে দিনে দিনে বল টুটে বদনে সদাই উঠে জল মুশাতে বাাকু সিম আব দেহ ডহ্ুরের ফল । নদযাব সাধ হেতু ঘবে জায ধর্মকেতু চাহিযা আনিল আযোজন আপনি বাধিষা ব্যাধ নিদযাবে দিল সাধ [ববাঁচল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ তাহে 'দিআ বান্ধ নিম ৩৯ ৬৭ নিকটে নাহিক মাতা কাবে কব দুঃখ কথা পাস মাসি বাহনী মাতুলী জ্ঞাতি বন্ধু নাহি আব জে সহে ঘবেব ভাব বাধ মোব কবিল প্রাতিকলী । পূর্ণ হইল দশ মাস ইন্্রসুত গঙবাস ভু্জেন আপন কম্মফলে প্রসীত১ মাবৃত নডে অনুক্ষণ বেথা বাড়ে লোটায নিদযা মহাঁতলে । সখি-কান্দ দিআ ৬ব আস জাষ বাঁড়ঘব কেহে। অঙ্গে দেই তৈলপান আ'ন কেহে। প্রিযসই মুখে তৃলিআ৷ দেই খই নিদয। প্রভুবে বলে বাণী । প্রাণনাথ হেট হই ধব মোব কেশ কেশমূলে পডে টান ব্যাবায আমাৰ প্রাণ কি কাব কোন উপদেশ । বাঁসলে উঠিতে না মইলে ফিবাইতে নাবি পাশ সুচে যেন বিদ্ধে পেট হইল উঠব ঠাঁব চাহতে না পাবি হেট দৃব হইণ জীবনের আশ । হইল মবণদশা বুকে পিঠে বিদ্ধে যেন বাণ কেবল তোমার দযা সংশয জীবন আশা শতশঙ্কা আম জায। জীবনেব আমাব নিদান। পাথিরেও ডাকআ৷ আন জেবা জানে প্রসব সন্ধান খুঁজআ৷ নগবে জ্ঞানী নিদযাব বাখহ পবান । নিদযাৰ শুনি কথা চলে বাধ কলিঙ্গনগবে আমাব বচন শুন করহ ওধধপানি হদযে পরম বেথা ব্াঙ্মণীব বেশে চর্ী উাবলেন ব্যাধের গোচবে। সেবক সন্তাপ খাণ্ ৪৬ কাঁ কব পুণের লেখা বাধ সনে পথে দেখা ধর্মকেতু পড়িল চরণে কৃপা কর ঠাকুরাণি জে জান ওষধ পানি নিদযার বাখহ জীবনে । জানী জিজ্ঞাসেন কথা কপটে মান্ত্ুীত কৈলা জলে নিদয। খাইল জল শৃনিল প্রসববেথা কেবল পুণের ফল কুম্যব পড়িল ভাঁমতলে | উঙ। উঙা ডাকে সুত দুহে হইলা প্রমোহিতঃ জাযাপতি সফপগানস সুতের কল্যাণ হেতু প্লান কার ধর্মকেতু দ্ধিজ দিল মুগ গোটা দশ । রাত্রি দিবা তুযা সোনি বাঁচল মুকুন্দ কাব নৌতন মঙ্গল অভিলাষে উরহ কাঁবর কামে বন্দ কব শিববামে চিপলেখা যশোদা মহেশে ॥ ৬৮ পু৫ হইল ধর্মকেতু হরাঁষত মনে ঝোমযানে নারাষণা উঠিল৷ গগণে। চাল ফুঁড়ি আতুঁডি জালল ততক্ষণে সঘনে হুলুই পড়ে নাভির ছেদনে । গোমুণ্ডে স্থ।পিল। ষষ্ষি দ্বার ডানিভাগে গৃজ্া কাঁর ধর্মকেতু তারে বর মাগে। তিন দিনে করে রামা সুপথ্য পাচন ছয় দিনে যাঠ্যার৷ করল জাগরণ । আট দিনে আট-কড়াইয়৷ করিল ধর্মকেতু নয় দিনে নর্তা কৈলা সুত-শুভহেতু । আনরৃপ ব্যাধসুত দিবসে দিবসে ষাঞ্টপৃজা একিসা কৈল একমাসে। পৃজ। কাঁর সোমাই ওঝা দিল বাঁলদান ঘোড়ার্‌ দাক্ষিণে বাল বামে ঢোলকান । চন্ডীমঙ্গল শয্যায় নিদ্রা জায় বাল৷ করএ দেহালা ক্ষণে কান্দে ক্ষণে হাসে সেই ব্যাধবালা । নিরাতক্কে জায় তার দুই তিন মাস কিরাতনন্দন দেই উলটিআ পাশ । চারি পাঁচ মাস গেল ছয় পরবেশ অন্নপ্রাশন কৈল দিআ৷ ছাগ মেষ । গণক আইয়া নাম থৃইল কা্লকেতু গণকে দাক্ষণা দিল পরমাই হেতু । সাত আট মাস গেল হইল নয মাস মুকুত৷ জানঙা দুই দশন প্রকাশ । দশমাসে ধায় বাল৷ দিয়া হামাগুড়ি ধারতে ধাঁরতে ধায নাকৃড় বাকুড়ি। একাদশ মাস গেল হইল বংসর ঝাড় বাঁড় ফিরে বাল নাহি বাসে ডব। দুই তিন সমা গেল শিশুগণ-মেলে ভল্লুক সবভ ধার কালকেতু খেলে । পণ্টম বরষে কৈলা শ্রবণ বিন্দন মভযামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৬৯ দিনে দিনে বাড়ে কালকেত বুলে মন্তগজ-গাঁত যেন নব রাঁতপাঁতি সভার লোচনসুখ হেতু । নাক মুখ চক্ষু কান কুন্দে জেন নিরমান দুই বাহু লোহার সাবল শীল রূপ গুণ বাড়া বাড়ে জেন হাথি-কড়া জান শ্যাম চামর কুন্তল । গলাঅ জালের কাঠি করে জুত লোহার সিকালি উরে শোভে বাগনখে অঙ্গে রাঙ্গা ধাল মাথে তনু মাঝে শোভিছে ঘিবলি । [বিচিত্র কপালতটি দ্বিতীয় দিবস; দিবা কপার্টাবশাল বুক নীল ইন্দীঁবর মুখ আকর্ণ দিঘল বিলোচন গতি জান মুগরাজ কেশরী জিনিঞা মাঝ ুস্তাপাতি 'জানঞ। দশন । দুই চক্ষু জেন নাটা খেলে টিকা কোট তেঁটা, কানে শোভে ফটিক কুণ্ড গাধিধান বাঁবধাঁড় মাথায জালেব দাড় শিশুমাঝে জেমন মণ্ডল । নইআ। পাবড়া চেল। জাব সনে কবে খেল। তাৰ হয জীবনসংশয ৷ জনে আকাড়ি কবে পাঁড়যা ধবাঁণ ধবে ৩যে কেহ নিকটে না বয। গাঙ্গ শিশুগণ ফিবে ত|ডআ সসাবু ধবে দৃবে গেলে হুলায২ কুকুবে বহন্দ বাটুলে বধে লতাষ সাজুাড় বাধে কান্দে-তাবে কালু আইসে ঘবে। গণক আদসিএঃ। ঘবে শুভদিন শুভবাবে ধনু পিল ব্যাধসুত-কবে ঘটা দিযা বিদ্ধে বেজ। ছাড়তে শিখএ নেজা চামেব টৌতুলা শোভে শিবে। চা জা জেই দিনে বন জীষ বাপ সনে আগে ধান 'জীনএ৷ পবনে চ. ম-৬ ৪১ তাড়িয়া হরিণ ধরে কি কাজ ধনুক শরে বিভা হেতু ব্যাধ চিন্তে মনে । দৈবষোগে একবার পিতাপুত্রে লইআ৷ তার হাট গেলা নিদআর সনে হিবা নিদযার কাছে ফুল্পবা বস্যাছে সন্নিধানে । হিরা নিদযাবে বলে কি হয্যাছে পুর* কোলে তাবে কিছু বলেন নিদযা অই জিআ থাকু গ সই বব দেহ ঝা্ট হউক বিভ। । দুইজনে হৈল জড় মাশের পশার বেচে হউক বহুত পরমাই দৈবানিবন্ধ বঙ মনে মনে ভাবে হিবাবতী ফুল্লবা সেব্যাছে হব তারে মিলে এই বর কাম সম জিনিঞ মুবাতি। কুলে ওঝা কুসুমথুলি হাথে কুশ কান্দে ঝুলি আইল ধর্মকেতুব সান্নধান জরট কমট ভেট দিঅ। কৈল মাথা হেট সোমাঞ ওঝ। করিল কল্যাণ । হাথে লইআ পত্রমসী আপাঁন কলমে বাঁস জে বলান জেই ব৷ িখান নাঞ জানি কি কৌতুকে নিজ সঙ্কীর্তনবস গান ॥ অস্থিকা মুবুন্দমুখে তৃতীয় দিবস দিবা ৫. সোমাঞ পাণ্ডত সনে বাঁস এক স্থলে চরণে ধারআ ধর্মকেতু কিছু বলে । সপ্ত পুরুষে ওঝ৷ তুমি পুরোহিত দৈবের সমান বুঝি তোমার হীঙ্গত। সুতের বিভার হেতু কাঁর অভিলাষ িরাতনগরে কর কন্যার তপাষ । এত যাঁদ বৈল ব্যাধ দ্বিজের চরণে লিখা কার গেল ওঝা জথা ধর্মকেতু ফুল্পরা সঞ্জম-সুত৷ পড়ে তার মনে । কহিল নির্ণয় জত বিবাহের হেতু । আঁঙ্গকার কার ওঝা চলিল৷ বৈরাট ভক্ষ দ্রব্য করি জড় বান্ধবের মেল৷ সভে গেলা নিকেতনে সমাপিআ হাট । সঞ্জম আনিএ বরে দিল বরমালা । সঞ্জমকেতুর ঘরে উত্তরিল দ্বিজ তিনটা পাটন কাড় দিল জামাতারে বাঁরল সঞ্জম তার পদ১ সরাসিজ। দুই বেহাই কোলাকুলি সভে গেলা ঘরে । কহেন সঞ্জমকেতু দিব কিছু ভার গোলাহাটে সোধ দিল দ্বাদশ কাহন ফুল্পরার বর খোঁজ উজ্জবোগ তোমার । কন্যাদরশনি দআ৷ করিল লগন । চদ্দ্রকেতু পিতামহ পিতা ধর্মকেতু প্িয়োদাশ রবিবার তারকা রেবতী তার পুন্ন কালকেতু গুণযশ-হেতু । বিভায় সঞ্জমকেতু দিল অনুমতি । দশম বংসর জুঝে জেন মত্ত হাথি অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত অর্জুন সমান জার ধনুকের খ্যাত২ । শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ সেই বর-জুগ্য কন্যা তোমার ফুল্লরা থুঁজিয়া পাইল জেন হাড়র মুঞের সরা । একে চাহে আরে পায় বলে হিরাবতী সঞ্জমকেতুর সনে নিবাড়ল যুক্তি । ই পণের নিয়ম কৈল দ্বাদশ কাহন নানা বস্তু আনে হাটে হরিণ মহিষ কাটে ঘটকালী পাবে ওঝা দ্বাদশ পণ। নিমন্ত্রণে আনে বন্ধুজনে পাঁচগা গুবাক 'দিব গুড় তিন সের লৈয়া অধিবাস-ডাল৷ কিরাতনগরে গেলা ইহা নিআ৷ আর কাঁছু না 'দিবে ফের । বন্ধু মেলে সোমার ব্রাহ্মণে। তৃতীয় দিবস ; দিবা আসনে বসিআ দ্বিজ শৃভ মুখসরসিজ শৃভক্ষণে বান্ধেন ছান্দলা গোমঞ্জে লোপিআ মাটি আলিপনা পাঁরপাটী চাঁরাদকে বান্ধবের মেলা । ফুল্পরার গন্ধ-অধিবাস ছাযামণ্ডপের মাঝে ঢেমচ৷ দগাঁড় বাজে হিরাবতী হদয়ে উল্লাস । পাঁধআ হরিদ্রাবাসে কটাক্ষ কারআ আইসে জত ছিল পারহাসী জন মু'বশে ফুল্পর৷ নারী সঙ্গে সাখ পাচ চার বাঁসিলা পিতার সন্নিধান। াক্মাণ বসিল পাঁঠে বেদমন্ত্র পড় ঘটে গণেশ কারল আবাহন পুঁজ পণ% উপচারে পুজে অনা দেবতারে শৃভক্ষণে গন্ধাধিবাসন | হী গন্ধ ধান্য শিলা শত দুর্বা পুষ্পমালা দধি দুগ্ধ সবস সিন্দূব শঙ্খ কজ্জল সোন। [তাম্্] দ্রঃ গোরোচন৷ চামর দর্পণ কর্ণপৃব । দি সুতা বান্ধে হাথে মুড়্যাল৷ বাধিল মাথে আইয় দেই জয় চারাভতে যোড়শ মাতৃকা-পৃজ। ঘৃতধারে চোতি রাজ। একে একে কৈল পুরোহতে । কর্ম কার্য ছিল জত পুরোহিত সমাঁপত ধর্মকেতু শুনি সকৌতুক শান্রমত জেবা ছিল একে একে নিবাড়ল পশ্চাং কাঁরল নান্দীমুখ । এমন মঙ্গলকর্ম জেবা ছিল কুলধর্ম ধর্মকেতু কেলা সমাপন মুকুটমাওত শির কালকেতু মহাবাঁর বন্দে কালু দ্বিজের চরণ । পিত৷ পুর বন্ধু জাতি আনন্দে পৃর্ণিতমাত বরযাত্রী কারল সাজন বান্রি দিন তুয়া সো রচিল নৌতন কাব চক্রবর্তী শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ৪৩ ৭২ গমনের শুভ বেলা বাউার জোগায় দোলা তাঁথ বীর কৈনল আরোহণ বরযাতী পড়ে সাড়া ঢেমচা দগাঁড় পড়া বর বোঁড় করএ গমন । কালকেতুর বিবাহমঙ্গল চোঁদকে হুলুই ধ্বনি দেই জত নিতন্বিনী হিবাবতীর মানস সফল । চৌদিকে দেউটি জলে বাঁসল কুঞ্জর-ছালে বন্ধুজন মোঁণ কুতৃহলে ্বাম্তবাক্য দ্বিজ করে বরণ করিল বরে বীরধাঁড় ফটিক-কুগুলে । বিরণ কারয়া স্থান জামাতার করে মান প্রেমবতী ব্যাধের অবল৷ | [শবে 'দিয়৷ দুর্বা ধান [নিছিআ৷ পোলল পান গলে তুলি১ দিল ফুলমালা । চারাদকে গীতনাটে ফুল্পরা চাঁড়ল পাটে কুঞ্জরের ছাল মাঝে ধরে চোঁদকে ব্যাধেব নারী উচ্চস্থরে বলে হরি ছামনী হইল কন্যাবরে। বাপে পুণোর হেতু আনন্দে সঞ্জমকেতু করে কুশে করে কন্যাদান জৌতুক ধনুকখান খর তিন গোট। বাণ মুর্গাগুণ অঙ্গুলর তান । ঢেমচা বাজয়ে পড় দ্থিজ বান্ধে গ্স্তচড়াং বরকন্যা দেখে অনুন্ধতী বান্দআ রোহণী সোম লাজহোন কৈলা হোম দুহে কৈল্য অনলে প্রণতি। দুহে প্রবেশিয়। ঘরে মীনমাংস ভোগ করে রানি গেল কুসুমশয্যায় সাঁচাম্তত ধর্মকেতু কুচুম্ব জিজ্ঞাসা হেতু বেহাইকে মাগিল বিদায় । বৈবাহিকঃ চরণে পাঁড় ব্যেহার কৈল বাঁড় সাতনল। জাল আঠা ফান্দে 88 পাথরে আমানি ভার দিল সঞ্জমের নারী ফুল্লরারে কোলে করি কান্দে। ইবটকুচুন্ব জাতি সঞ্জমের জত জ্ঞাত অভিলাষ পুরিল জৌতুকে রাঁচয়। ভ্রিপদী ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ রাজা রঘুনাথের কোতুকে ॥ ৭৩ শ্বশুরে বিদায় কাঁর আইল বীর নিজ পুরা ফুল্পরা সহিত সাবিনয় শিরে দিয়া দুবা ধান নিছিয়া পৌলল পান নিদয়া দিলেন জয়জয় । ছায়ামগ্ডপের মাঝে ঢেমচা দগাড় বাজে ব্ধুজন দিলেন জৌতুকে অন্নপানে কৈল সুখী পণ্চাদন ঘরে রাখি বিদায় দিলেন সকৌতুকে । সম্বল আর্জনে বাঁর১ কালকেতু মহাবীর দেখি সুখী হইল ধর্মকেতু নিদয়ার সুখ বড় গৃহকার্ষে বধ্‌ দড় বুঁলিযশ রক্ষণের হেতু । জেই দিন জেমন পায় তাহা সে দিবসে খায় ডেড়ি অন্ন না রাখে আগারে তিন বাণ শরাসন বিনে আর নাঁঞ ধন বাধা দিতে ধারে বা উধারে২ । প্রভাতে সঘনত ত্বরা বধে খল্পা মুগ বরা গ্রাতিদন করএ মৃগয়া পুর হইতে ধর্মকেতু নাচন্দঃ সম্ধল হেতু আনন্দিত হৃদয়ে নিদয়। । নিদয়। বাঁসল খাটে মাংস লইয়া জায় হাটে ৃ অনুদিন বেচয়ে ফুল্লরা সাষুঁড়ি জেমন ভনে তেনমত বেচে কিনে শিরে কাধে মাংসের পসরা । চশীমঙ্ল মাস বেচি আনয়ে কাড় চালু লয়ে ডালি বাড়ি তৈল লোন আনয়ে বেসাত। সাক বাগ্যন কচু মূলা আঠ্যা থোড় কাচকলা নানা মজৎ পুরিয়া লয়ে পাথী। ফুল্পর৷ আইল ঘরে নিদয়া জিজ্ঞাসা করে কহে বামা হাটের বিবরণ আল্ঞ৷ নিদয়ার ধরে আগে ধর্মকেতুর ভোজন । তনয়ে বাগুর জাল সুখে তুঞ্জে কিরাতনন্দন | খাওয়ায় ফুল্লরা বধূ নিদয়ার সফল জীবন । ব্যাধের উত্তম দৈব জে জন আছিল শৈব সে হইল কোলের বংশধর চিরাঁদন সাধুসঙ্গ ধর্মকেতু চিন্তে পুরহর। মুস্তপদে দয়া মন শুনে প্রভঙ্জন উপাখ্যান ছায়া সঙ্গে ধর্মকেতু ভাবিলেন মুস্ত হেতু বারাণসী করিল পয়ান । দল্পত্যে লোটায়্যা কান্দে মাসে মাসে পাঠান সম্বল সুধন্য আরড়৷ স্থান দ্বিজরাজ প্রকাশে মঙ্গল ॥ ফুল্লরা রন্ধন করে সমার্পয়।৷ বহুকাল খির খণ্ড দধি মধু বিপদ হইল ভঙ্গ [শিব ভাবে অনুক্ষণ কৈশপাশ নাহি বান্ধে শ্রীকবিকঙ্কণ গান ৭8 অনুদিন পশূ বধে বার মহাবল কুরুরণে সেনা জেন বধে বৃহম্ল। শুণ্ডে ধাঁর মাতঙ্গ গজ আছাড়িয়। মারে দস্ত উপাঁড়িয়। বীর আনে বোঝাভারে । চুবাঁড় মূলাইয়। হাটে কেয়ে ফুল্লরা কষাণ জেন হাটে দেই মুলার পশর৷ । তৃতীয় দিবস ; দিবা গীজুড়য়। পালে পালে আনয়ে চামরি লেজ কাটি গছায় ফুল্পর৷ বরাবার। ফুল্পরা পসার করে নগরে চাতরে হাতিয়া চামর বেচে চারি পণের দরে । ভল্লুক সীভায় গাড়ে ভয়ে ক্ষমান তাঁড়য়। মহিষ ধার উপাড়ে বিষাণ। সঙ্গার পসর৷ করে ফুল্লরা বাজারে পণমুলে সিঙ্গা-জোড় বেচে সিঙ্গাদারে । যন্ত্র আঁড় বাঘ মারি ছড়্যা লয় ছাল ব্যাপ্রনখ খুদ দিয়া কীনয়ে ছাওয়াণ । হাটে বাঘছাল বেচে ফুল্লরা রূপসী যত কীনঞা লয় কাপাড়ি সন্যাঁস। সরতে সরভে ধরে টুসাইয়া মুডে গণ্ডক বাঁধয়া কাণ্ডে খ়াবলে ছিগ্ডে। ফুল্পর৷ বেচয়ে খা দরে এক পণ ্রাহ্মণ সঙ্জন লয় কাঁরতে তর্পণ। বনে গিয়া জাল আঁড় ঝাড়ে মারে বাড়ী জালে পড়ে ছোট পশু পাই তাড়াতাড়ি । সসারু হারণ বরা লতাপাশে বান্ধে ঘর আইসে মহাবীর ভার কার কাদ্ধে। ফুল্লর৷ বারের তরে কর্যাছে রঙ্ধান অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৭৫ ঘরে হইতে ফুল্লরা বারের পাইল সাড়া সম্ত্রমে বাসতে দিল হারণের ছড়া । মোক৷ নারিকেলেতে পুরিয়৷ দিল জল ঝাট১ জল দিয়া কৈল ভোজনের স্থল । পাথালিল মহাবীর পদ পাণি মুখ ভোজন করিতে বৈসে মনের কৌতুক । সম্্রমে ফুল্লরা পাতে মাটিআ পাথরা " বেঞ্জনের তরে দিল নৌতুন খাপরা । ৪৫ মুচুড়িয়।৷ গোফ দুটা বান্ধে নিঞা ঘাড়ে এক শ্বাসে তিন হাও আমানী উজাড়ে। চারি হাড়ি মহাবীর থায় খুদ-জাউ সুপ ছয় হাড়ি তায় মিসাইয়া লাউ। বুড়ি দুই তিন খায় আলু ওল পোড়। সারি-কচু ঘণ্টে মিশা২ করঞ্জাও আমড়া । অল্প খাইয়৷ মহাবীর জায়ারে জজ্ঞাসে রঞ্জন কর্যাছ ভাল আর কাঁছু আছে। আনঞাছি হরিণ দিয়া দধি এক জা়ি তাহা দিয়া খাও নীর ভাত 'তিন হাড়। শযন কুচ্ছিত বীরের ভোজন বিকাল ছোট গ্রাস তোলে বীর জেন হাড়িযাঃ তাল । ভোজনসময়ে গলা করে ঘড়ঘড় কাপড় উষাষ করে জেন মরাই-বড় । ভোজন করিয়া সাঙ্গ কৈল আচমনে নিশাকাল হল বাঁর রাহল শয়নে। ওথা বার দিয়াছে গিরিশিখরে কেশরী ছোট বড় পশু জায় কারতে গোহারি। কান্দে গজঘট। রায়ে নিবোদএ দুঃখ তোমা সৌঁব দশনবর্জিত হৈল মুখ । মাহ আইল মুণ্ডে গলয়ে বুধির কহেন এতেক দুঃখ দেই মহাবীর । আর্দাস করএ জত চামরির ঘট। ভাবয়ে বিষাদ নেজ সভাকার কাটা । গণ্া বলয়ে আম বড় দুঃখ পাই খক়োব জালায় মোর মইল দুটি ভাই । কপি বলে রায় মোর করম বিশংসং কালকেতু ঠুঠারে যেচিল মোর বংশ । বারাসঙ্গা তুলারু ঘোড়ার্‌ ঢোলকান ধরণি লোটাইয়া কান্দে কার অভিমান । কাঁরল নিধন কালকেতু পরিবার বিফল জনম মাতা মৃত সুত দার । রাড হইয়৷ হারিণী কান্দয়ে উভরায় পতিসুখহীন হইনু জিতে না৷ জুয়ায়। ৪৩৬ পশুর কন্দন শুনি রাজা পণ্ঠানন তার সভাসদ এমন সময় প্রজ করে নিবেদন । অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকন্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৭৬ সুন সুন রাহ কাঁরহে বিদায় ছাড়ব তোমার বন পান্র আঁধকারী না সুনে গোহাঁর [বিপাকে তোঁজ জীবন । রানীগণ সঙ্গে থাক নানা রঙ্গে না কর দেশের বিচার একা কালকেতু পশুবধ হেতু নিত্য পাড়ে মহামার। একা মহাবীর লই তিন তির কুলিত৷ কাঠের ধনু পশুগণে কাল নিত পাতে জাল ধায় রথে জেন ভানু । ভুবনে বিখ্যাত মোর প্রাণনাথ কালকেতু মাইল বাণে দুটি আছে পো তারে মায়া মো না গেনু পাতির সনে । রূপ গুণ জুত মোর এই সত কালকেতু কৈল বধ হাট নিরমিনু বেসাইতে না পাইনু হরিল বিধি সম্পদ । তোমার কিন্করে বধে ছার নরে মনে না বাস লাজ যাঁদ পশুগণ না কর রক্ষণ কেন হৈলে মৃগরাজ । রাজা রঘুনাথ গুণে অবদাত রাঁসক মাঝে সুজান চন্ডীমঙগল রাচ চারু পদ শ্লীকবিকঙ্কণ গান ॥ ৭৭ পশুর ক্রন্দন শুনি রাজ পঞ্সামন কোটাল কোটাল ডাক ছাড়ে ঘনঘন । আসিয়া কোটাল নৃপে দিল দরশন ভয়ে কম্পমান তনু মুদিত লোচন। পশু মধ্যে তোমারে দেখিয়ে বড় লোক রায়বার তোমারে কারল আমি কোক । পশুগণে এক নর দেই মনব্যথা ভালমন্দ নাঁঞ দিস দেশের বারতা । আজী কালা যাঁদ না দেখাও মহাবাঁর খঞোতে কাটিয়৷ তোরে করিব দুই চির। সেই নিশা গেল তবে হইল প্রভাত পাত্র মিত্র সঙ্গে যুত্তি কৈল পশুনাথ । কোক শাদূলি আগে দুই সেনাপাঁত দাঁক্ষণে ধাইল তারা যেন বাযুগতি । গণ্ডক বারণ মহিষ তিন সেনাপাঁত পশ্চিমে ধাইল তারা জেন মেঘগতি । এমন সময় গণ দিলেন উত্তর তোমারে উচিত নয় নরের সমর । নরের সনে রণ রায় বড় পাইবে লাজ শুনিঞা হাঁসব সব দেশের সমাঝ । এমত১ শুনি সিংহ গণ্ডার ভারতী সমর কারতে তারে দিল অনুমতি । চন্দনতরুর তলে ঢালিলেন গ৷ চামরি ঢুলায় শ্বেত চামরের বা । চাঁরদিগে চর পাঠাইল সাবধান শুভক্ষণে কালকেতু করিল পয়ান। অভয়াচরণে মজজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ তৃতীয় দিবস দিবা ৭৮ প্রভাতে উঠিয। বার পৰে বাঙা ধড়। ধনুকে তুলিয। দিল মুবগার চড়া । জালদাড বান্ধিযা বা্জত কৈল কেশ বাঙা ধুল। মাখিযা গাষেব কৈল বেশ। প্রণাম কাবা বাঁব চণ্ডীব চবণে শৃভক্ষণে প্রবেশ কাঁবল গিযা বনে । কাননে থাকিষ। বাঘ৷ দেখে মহাবীব সাড়। মাবিযা বাঘা আইসে ধারে ধীব। চিবাদিন বোষে বাঘা হইযা দুনু তনু লাফ দিযা বাঘ। সে বাবে ধবে ধনু। বনু মুটাক বীব মাবে তাব মুণ্ডে ঝলকে ঝল'ক বন্ত পড়ে তাব তুণ্ডে। বস্তু মুটকি বীব মাবে তাব শিবে একু ঘাএ সেই বাঘা তেজিল শবীরে । বাঘ পাঁডল বণে হৈল বড শোক বাজস্থানে বার্তা দিতে চাঁললেন কোক । অভযাব চবণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুব সঙ্গীত || ৭৯ শুনি৷ কোকেব মুখে বাদেব মবণ কোপে সিংহবাজ চলে কাঁববারে বণ। নেঙ্গুড় বাহুলাষ সিংহ মাথাব উপব কলার বালুড়ি যেন কাম্পত কেশর । পশুবাজ সনে বাব জুঝে কালকেত দেবাসুবে বণ জেন হেল সুধা হেতু । ধাইল কুঞ্জববব বড়ই দুবন্ত মহাবীবেব গাযে আসি ঠেকাইল দত্ত । থব টাঙ্গি ধাঁব বাব কাটে কবিমু্ বালকে যেমন কাটে ইন্ষুর দণ্ড। ৪৭ পাঁড়ল সকল সেন। দেখে পশুপাতি ধাইল সমরতলে সমীরণগাঁত। দশনখে আচড়ে বীবের কলেবর শোণিত বাঁবের অঙ্গে পড়ে ঝরঝর। দেবাঁব বাহন সিংহ বিশালদশন কালকেতু চড় চাপড়ে কবে বণ । বন মুঠি বাঁব মাবে তাব মুখে দন্ত ভাঙ্গ বন্ত পড়ে ঝলকে ঝলকে । বণ ছাড় সংহ পালাষ তড়বাড় পাছু মহাবীব মারে ধনুকেব বাড়ি। ধনু'কব বাঁড় খাইযা সিংহ না ফিবে নেনুড় লোটায তাব ধরাণ উপবে। দেবীব বাহন বলা৷ নাহি মাবে বীব তৃষায আঞুর হৈয। পান কবে নীব। সেইদিন মহাবীব কাঁবল পযান অভযামঙ্গণ কবিকঙ্কণ গান ॥ ৮০ প্রভাতে পবিষা ধড়। শবাসনে দিযা চড়া খবখুব কাছে তিন বাণ শিবে বান্ধে জালদড়ি মহাবনে কবিল পযান। দূবে হৈতে দেখে চব কালকেতু এ আইসে বনে পথে আগুলিল সিংহ দুইজনে করে মহারণে । কেশবী বীবেতে রণ চমাকত দেবগণ ভূমিকম্প দুহার গর্জনে নাহ সিংহ বলে টুটে ঝড় বহে নিশ্বাসপবনে । মুখ মেলে জেন দা গোফ দুটা লাগ্যাছে শ্রবণে কানে ফটিকের কাঁড় কহে সিংহ বরাবর দুই পাশে বীরসঙ্গ অস্ত্র না গায ফুটে নথর আক্কত-ছুঁর ৪৮ দশনের কড়মড়ি জেন ঢাকে পড়ে বাঁড় কেতৃ-তারা উভয় লোচনে । কাপায়ে উন্মত্ত সটা বোম ছাড়ে মেঘঘটা জেন ফিরে বিজুল-সণ্রে ধায় আত শীঘ্রগাত নখে আচাঁড়ণ ক্ষিতি ক্ষণে ভূম্যে ক্ষেণেক অস্বরে । অসমসাহস বাল। ডাহনে মাতঙ্গ-মেল৷ বামে বাঘ সরভ ভল্লুক দুরন্ত সভার মুখে অন্তরে পরান কাপে দেখিয়৷ বীরের সেই মুখ । ঘন তোল। দেই গৌঁফে পেলিয়া পট্রিশ লোফে আগলয়ে সিংহের সরাণ ধাইতে বীরের দাপে ভয়ে বসুমতী কাপে ধুলায় লুকায় দিনমাঁণ । মার মার বাঁর ডাকে বাণ এড়ে ঝখকে ঝণকে সঘনে বাজায় জয়শঙ্খ মহাবাঁর ছাড়ে গুলি শ্রবণে লাগয়ে তালি দেবপুরে হইল আতঙ্ক । গগনে উঠিয়া দাপে বাঁরকে কেণরী ঝখপে হানতে চাপড় চায় বুকে উাঁড়য়া মাহস। ঢালে [সিংহের হানিল ভালে দারুণ মুঠাক মারে মুখে । সিংহ বড় রণে দড় বীরকে মারিল চড় লাফ দিয় উঠিল গগনে পাঁড়তে বারের গায় ঢালে লুকাইয়া জায় সিংহ রহে চাপিয়া চরণে | যাঁর পরাক্রমে নাহি টুটে কেশরা ঠেলিয়৷ উঠে জেন খাত উদয় তপন ধাইয়া রণের মাঝে সিংহের ধারল লেঞ্জে সর্প ধরে গরূড় জেমন। নেঞ্জে ধার দেই পাক [সিংহ জেন ফিরে চাক তথাঁপ সিংহের বড় বল তূলিয়৷ আছাড়ে ভূর শোণিত১ নিকলে মুগে দুই অঙ্গে বহে ঘারঁজল। চস্তীমঙ্গল পিছে মারি ধনু বাড়ি ' লইয়।৷ জায় তাড়াতাঁড় ভল্লুক প্রবেশ করে গাড়ে সরভ পালাইয়া জায় বার ধরে পাচ্ছু পায় পাক দিয়া তৃলিয়৷ কাছাড়েং । মাথায় লেঙ্গুল তুলি বাঘ আইলে মুখ মোন বাকসন। ফুল জেন দাড়। পেলিয়। মারিয়া টাঙ্গি বাঘের দশন ভাঙ্গি লেঞ্জে ধার দিল পাকনাড়া । ভঙ্গ দল পশুগণ সিংহ প্রবেশিল রণ মনে ভাবে লাজের পাক্যাল৷ কপাল বিশাল পাটা গগনে লাগ্যাছে ছ)৷ মুলার সমান দত্তগুল৷ । সিংহ চাহে কোপদৃষ্ে বীরের আচড়ে পিষ্ট কবচ কারল ছারখার বীর জমধর ধরে দুই বীরে যুদ্ধ করে অঙ্গে বহে শোঁণতের ধার। দুই কীরে কসাকসি জেন জুঝে রাহু শশী প্রথর নখর জ্ধধর ঠেকিয়৷ বীরের অঙ্গে অঙ্গ জেন জখতেন কিস্করত। বীর আকাড় কাঁরয়৷ আটি কুপায় ছাড়ল মহাবীরে সিংহ কমর কাছয়৷ জায় ন্রাসে পিয়ে সরোবরনীর কালকেতু রণজত৷ গেলা বীর নিজ নিকেতন হারুয়া জেও পশুগণ বিরাচল শ্রীকবিকল্কণ ॥ সিংহের নখর ভঙ্গে ভাঙ্গল পাজরকাঠি ঘন পাছু পানে চায় আনন্দে সরসচিত নিল সিংহের শবণ ৮১ দেবীর বাহন বাল নাঞ মারে বীর তৃষায় আকুল হইয়া পান কৈল নীর। নাস পালায় গণ্ শাল কুরঙ্গ সরভ ভল্গুক কোক মহিষ দল ভঙ্গ । তৃতীয় দিবস দিবা ট. ম.—৭ পশুগণ ধায় ভূঞে নাহ পড়ে পা বড় হদে হাতি গিয়৷ লুকাইল গা। বায় ভর কার ধায় তুলারু ঘোড়ারু উভকান করি ধায় আহড়ে সসারু। [িচক কণ্টক বনে লুকায় সজাবু ভূমে লেঞ্জ লোটাইয়া ধায় বনগবু । নকুল শেয়াল গ্যড়ে লুকাইল জন্থৃক আহড়ে বহড়ে কাঁপি মারে ঝাকিঝাক৯ । সব পশু উপনীত তমাল-তরুমূলে প্রদাক্ষণ নমস্কার বেঁড়িয়া দেউলে। দেউলের চাঁরাদকে করএ রোদন গযামঙ্গল গ।ণ শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ৮২ কান্দে সিংহ আদি পশু সঙার অভয। অপরাধ বিনে মাতা দূর কৈলে দয় । ভালে টিক! দিলা মাতা কৈলে মৃগরাজ কাব তোমার সেবা রাজ্য নাহি কাজ । সুখে রাজ্য কারতে আক্ষটি হইল কাণ কেন হেন দিলে মাত। বিষম জঞ্জাল । প্রাণের দোসর ভাই গেল পরলোক উদরের জ্বালা আর সোদরের শোক । হাতে গলে দাঁড় দিয়া বান্ধে দুই তোক গড়াগড়ি দিয়া কান্দে রায়বার কোক । দয়াময়ী পার কর অপার সংসার তোম। সঙরণে গে৷ বিপদ প্রাতকার । উইচারা খাই পশু নাম ভল্লুক নিউগি চউধার নহি না কাঁর তালুক । সাত পুন্ন মারলেক বাদ্ধ জালপাশে সবংশে মাঁজলাঙ মাত৷ তোমার আশ্বাসে । গ্রাতাঁদন মহাভয় বারের তরাসে মাগু মৈল পুন্ন মৈল দুটি নাতি শেষে । ৪৪৯ কান্দেরে ভল্লুক বুড়। করি আত্মঘাতি জরা-কালে হৈল মোর এতেক দুর্গাত। বরাটা চুচুড়।ও মুখা আমার ভক্ষণ কার হিংসা নাহ কার নাহি প্রয়োজন । ধরণী লোটাইয়৷ কান্দে বীর আদা-বর৷ অরুণ লোচনযুগে বহে জলধারা । সশুর সাশুঁড় মৈল দেওর ভাসুর পাত মইল রাঁতসুখ বাঁধ কৈন দূর । ছিল অভাগর এক পেটরাড় পো৷ পারব কেমতে তাহার মায়। মো । ধূণায ধূসর হইয়া কান্দএ বাঁঘনী মিছ বর দিয়। মাত। বধ কৈলে কেন । শ্যামপসুন্দর প্রভু কগললোচণ ভুরু কামধনু রূপ মদনমোহন । কানন করএ আল কপালের চান্দে স্মোঙার তাহার তনু প্রাণ মোর কান্দে । হস্তী বলে আত বড় মোর কলেবর লুকাইতে স্থল নাহি বারের গোচর । কি কার কোথায়ে জাই কোথা গেলে তাঁর আপনার দন্তদুটা আপনার আর । শৃ্ডে ধর মহাবীর উপাড়ে দশন এত অপমান মাত৷ সহে কোন জন । হুক হুক রবে কান্দে বনের মর্ক)ট িরাসে নাঁহক কাজ বাঁর সনে হট । বদ্ধীপতামহ ছিল রাম-সেনাপতি সাগর লঙ্িয়া আইল গগনে পদাতি। কি মোর দারুণ বিধি লিখল কপালে সাত পুন্র ধাঁর বীর বাধে ফাদ-জালে । বারাঁসঙ্গা তুলারু ঘোড়ারু ঢোলকান ধরণী লোটাইয়া কান্দে কার অভিমান । কেনি হেন জর্ম বিধি দিল পাপবংশে হরিণ ভুবনবৈরি আপনার মাসে । হেকুচি করিয় কান্দে সজারু সসারু দুঃখ না ঘুচিল মা সৌব কপ্পতরু। ৫০ গাড়ের ভিতর থাকি লুকাবারে জানি কি করি উপায় বাঁর গাড়ে দেই পানি । চারি পুত্র মৈল মোর আর দুটি বি গাগু মৈল তথি বুড়া জিয়া কাজ কাঁ। কান্দে নকুল সুত-দারার হাব্যাসে সণংশে মাঁজপাঙ মাত তোমার আশ্বাসে | পশুগণ সঙরে ওথা চত্ীর চরণ ধ্যানে জানিল মাতা পশুর রোদন । গদ্মারে জিজ্ঞাস দেবী নিলেন আরতি পশুগণে রক্ষিতে উাঁরিল৷ ভগবতী । বলে পদ্মাবতী মতা চণহ তুঁরিত বিজুবনে গিয়া মাতা পশুর কর হিত। উপনীত দেবী জথা পশর সমাজ লজ্জায় মূলন হইয়া বলে মৃগবাজ | আনের সেবক হইলে মধলোকে তরি তোমার সেবক হইয়। বিপাকেত মরি । অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৮৩ চণ্ডী জিজ্ঞাসেন পশুগণে একা কীর কালকেতৃ প্রাতাদন আইসে এই বনে । বলে বীর মুগরাজ নিবোদিতে বাঁস লাজ কালকেতু ভাঙ্গল দশন দয়া কর কৃপাময়ী পশুবধের হেতু তোমার বাহন হই রাজ্যে মোর নাহি প্রয়োজন । বাঁঘিনী বলেন কথা কালকেতু দিল বেথা ্বার্মীরে বাধল একবাণে দুইটি আছিল পো কালকেতু বাঁধল পরাণে। কান্দিযা মাহষী কয় কালকেতু লাগল বিবাদে তারে ঝড় মায়া মো নিবোদতে বাস ভয় চন্ডীমঙ্গল হই গো তোমার দাস বনে খাই পানি ঘাস বধ করে বান অপরাধে । ভূমে লোটাইয়৷ মাথা দন্ত দুটা হইল পাপ-হেতু একবাণে কারি অস্ত টা্গ দিয়া কাটে দন্ত হাটে নিঞা বেচে কালকেতু । " নাহি কার বিদণ্ড। বন মাঝে কার গো নিবাস কার হংসা নাহ কার কালকেতু হইল অরি গ্রাতাদন পাই গো তরাস। কহে গজ দুঃখকথা [নিবেদন করে গণ্ড কপি বলে শুন মা মামার জতেক ছ। ঠুঠবে বোচল মহাবীর হেন মোর লএ মন তোঁজব মিরাস বন প্রাণ দিব প্রবোশিয়া নীব। ন্গ-আদি পশুগণ সঙে কইল নিব্দেন তাভয় দিলেন মহামায। ব্রা্মণভূমের পতি নঘুনাথ নরপাতি জরচণ্ডী তারে করা দয়া ॥ ৮৪ পশুর শুনিয়৷ কথা হদয়ে ভাবিয়। ব্যথা চণ্ডী জিজ্ঞাসেন পশুগণে লাজে কার হেট মাথ। একে একে চন্ডীর চরণে । [সংহ তুমি মহাতেজ। তোর নখে পাষাণ বিদরে শুনিয়া তোমার র৷ [ক কারণে ভয় কর নরে। দোসর যমের দূত কহে পশু দুঃখকথা পশুমধ্যে তুমি রাজা কাপয়ে সকল গ৷ বীর খোর অস্তুত সমরে রহাএ রবিরথ দেখিয়৷ বীরের ঠান ভয়ে প্রাণ কম্পমান পালাইতে নাঁঞ দোখ পথ । তৃতীয় দিবস ; দিবা আদি-ক্ষেনত্রি তুমি বাঘ কে তোমার পায় লাগ পবন জিনিতে পার জোরে নখ তোর হাঁরাধার ভয় কেন কর তুমি নরে। মাঁদ গে। নিকটে পাই ঘাড় ভাঙ্গ রন্ত খাই কি কাঁরতে পারি আম দূরে বের্থ নহে তার বাণ একবাণে লয় প্রাণ দেখি বীর প্রাণ কাপে ডরে । গশুমধ্যে তুম গণ্ডা তোমার উত্তম পণ্ডা১ বিরোধ না কর কার সনে তুমি যাঁ মন কর নরে ৬য় কর কী কারণে। দশন বনের সার পর্বত চিবিতে পার কালকেতু মহাবীর দূরে হইতে মারে তর খড়ুগেতে কারবে তার কিং পশুব রোদন-ছন্দ গান কাব শ্রীমূকুন্দ তোমার পুণ্যের ফলে জি ॥ ৮৫ পশুর গোহারি শুনি সবমঙ্গলা আশ্বাস কাঁরয়া সিংহে দিলা কষ্ঠমাল। । আজি হইতে মনে কিছু না কাঁরহ ভয় না বধিব মহাবাঁর বালল নিশ্চয় । পশুগণে বর দিআ৷ উপায় চিস্তিলা ততক্ষণে সুবর্২-গোধিকারূপ হইলা। প্রভাত হইল বাঁর চণিল কাননে অভয়ামঙ্গল কবিকল্কণে ভনে ॥ ৮৬ খাঁর প্রভাতে পাঁরয়। ধড়। শরাসনে দিয়৷ চড়া খরখুর কাছে* [তন বাণ ৫১ শিরে বান্ধে জালদাড় কানে ফটিকের কাঁড় মহাবনে করিল পয়ান । ॥ দেখে কালকেতু সুমঙ্গল দক্ষিণে গণিকা দ্বিজ বিকাশত সরসিজ বায়ে শিবা পূর্ণ ঘটে জল । চোঁদকে হুলুই ধান কেহ জালে গৃহ মাঁনং দাধ দধি ডাকে গোযালিনী দেখিল রুচিরতনু বংস সাহত ধেনু পুরাঙ্গন৷ দেই জয়ধবান । দুর্ব। ধান্য কুন্দমালা হিরা নিলা মুতি পলা বামভাগে বার-নিতাস্বনী মৃদঙ্গ মন্দিরা বাধ কেহে। নাচে কেহো গায় শুনে বীর হার হার ধ্বাণ। দেখি বার সুললিত প্রবেশ কারল বন-আগে দখল রুচিরতনু আনন্দে সরসাঁচত রূপে জনি হেমভানু সুবর্ণ-গোধিকা বাম৩ ভাগে । সুবর্ণ-গোঁধিক৷ দেখি চিত্তে বর হইলা দুখী অযাক পাপ দরশন দেখিল মঙ্গল জত বাধ মোরে কৈণ বিড়ম্বন । গোধিক৷ যাক নয় কৃর্ন গণ্ডা শশক সৈলক সকলি হইল হত সকল পুরাণেঃ কয় কুপা কর গুণধাগ কমললোচন রাম তব নাম দুঃখনিবারক । যদি বা মারিয়া বাণ গোধিকার লই প্রাণ না ছুঞ্িব দিনমুখ-কালে যদি মুগ পাই আমি জানিব দেবত৷ তু নহে তোমা পোড়ৰ আনলে । মহা মিশ্র জগন্নাথ হদয়মিশ্রের তাত কবিচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চতীর আদেশ পাই বিরাঁচল শ্রীকাবকন্ধণ ॥ ৫২ ৮৭ কাননে প্রবেশে বাঁর গায়ে সানা১ তিন তির ঘন ঘন গোফে দেই তার পাঁতয়া বাগুরা-দড়। আগলে বনের সূড়৷ কাননে করিল মহামার । হাতে গাঁও ফিরে কালকেতু জাল-ফাদ বশে আড়ি ঝোপে ঝাড়ে মারে বাঁড় মুগবধ কারবার হেতু । ধাইয়। পর্বতে চড়ে নেহালয় ঝোপ ঝাড়ে দরী গার শখার কানন ধায় মগ-অনুপদি ঘাম অঙ্গে বহে নদী বেগবাতে কাপে তবুগণ। নিকু্জ ভাঙ্গিয়। দণ্ডে আহড় বিহড়ে ঢুণডে ঝাউ ঝিটি ঝাকন৷ গহন চৌঁদকে নেহালে আখি বাসা আছে প|াহ পাখী সন্তাপে বারের গোড়ে মন। দৌঁখ বার খুরনখ না চলে লোচনপথ আছে মৃগ দেখিতে ন৷ পায় দৈন) শোক দুঃখ খাও মৃগ পাঁখ হইল লুকিকায়। কাষ্ঠে কাষ্ঠে গলি শাঁখ পোড়ে উলু কাস্য৷ বেন৷ বন সব শোক দুঃখ খাও মায়ামূগী রূপে ততক্ষণ । কৃপাদৃষ্টি দল৷ ৮প্তী শুখান কানন দোঁখ বনে দেখা দিল চন্ডী নিশি দশি তুযা সৌব বাঁচল মুকুন্দ কাব নোৌতন মঙ্গল অভিলাষে উর গে৷ কাঁবর কামে দয়। কর [শবরামে চরলেখা যশোদ। মহেশে ॥ ৮৮ এ পাপ দারুণ মৃগ পবন জিনিঞা বেগ মোরে বিড়া্বতে কৈলা বাঁধ জেন রাম 'বিড়ান্বতে আইল কাননপথে মারীচ জেমন মায়ানাধি। চন্ডীমঙ্গল গাএ রত প্রচুর রজতের চার খুর হেমময় উভয় বিষাণ ইহার বেগের কথা উপামা জে দিব কোথা গাঁণতে ন৷ পারে হনুমান । বদার ফলের তুল্য নাসা-আগে অমূল! তাহাতে মুকুত৷ লম্বমান কণ্ঠে কনকহার ” . হহিরায় গাথান জাব কাব সঙ্গে দিব বা১ উপাম। হেন মোর লয় মনে পুঁসয়াছে কোন জনে এই হাঁরণী আঙপাষে লইয়৷ জে নামা ধন বিপাকে আইল বন আমার দুঃখের অবশেষে । এই মৃগ জবে ধার বোঁচয়৷ সম্বল কাঁৰ ফুল্লর৷ পাঁরিব মৃগছাল মাঁণ মাঁণক্য গত হেমময় মরফত পাইলে ঘুঁচিব দুঃখজাল । হেমময় মৃগ দোথ হেন আম মনে লি ধন মোরে মালণ প্রুর আম যাঁদ মণ কৰি পবন ধাঁরতে পাব হারিণা পালাব কও দুখ । বীর পুলকে 'দ্বগুণতনু ঘন ঘন গোফে দেই তোণ। বীর ছাড়ে হুহুঙ্কাব পোঁণয। পোফএ ধনু দিয়। ধনুটঙ্কার শরীরে মাখএ রাঙ্গ। ধূলা। মৃগ ক্ষণে ক্ষণে ভূমে পড়ে ক্ষেণে ক্ষেণে ধায় রড়ে মগ দেখি নাহি দেখি ছাষা ক্ষেণে চক্ত জেন ফিবে মুগ নহে জেন দেবমায়া। মৃগের দেখিয়। মুখ না কারতে পারিল সঙ্ধান আকর্ণ পুরিতেত শর দূর গেল বার-অভিমান। ক্ষণে জায় ক্ষেণে রয ক্ষেণেক তাওব করে কাণকেতু ভাবে দুখ কোথা গেল মৃগবব আমারে না করে ভয় যাঁদ বাণ না কার সঙ্জান তৃতীয় দিবস দিবা বাঁচযা ভ্্পদাঁ ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ চক্রবর্তী শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৮৯ অন্ভুত মাযামূগ দোথ মহাবীব গুণহাঁন কাব ধনু সম্বাবল তিব। কংসনদ জলে বাঁব কৈল গ্লানদান তৃষায আকুল বীব করে জলপান। পথে জাইতে মহাবাঁব খা বনফল মলিনবদনে চিন্তে ঘবেব সম্বল । দুঃখিনী ফুল্লবা মোব আছে প্র1তযাসে কি বপিব১ গিযা আমি ফুল্লবাব পাশ । (তিল লবণেব কাঁড ধাঁব দেও বুডি সশুবঘবেব ধান্য খাবি দুই আড। কিবাত পাডায বাঁস না মিলে উধাব হেন বন্ধুজন নাহি কেহ সএ ভাব। বিষম উদবেব জ্বালা মহাবীবে লাগে এক চক্ষে নিন্দ্রা যায আব চক্ষে জাগে । এথাই নবক স্বর্২ সুনি ভাগবতে নবক ভূঁ্জতে কালু আইল মবতে। সুকৃতি পুবুষ জিএ সুখডোগ হেতু দুঃখভোগ কবিবাবে জিএ কালকেতু । ধডাব আচলে পোছে 5 নযানেব নীব কাণ্চন-গোধিকা পুন দেখে মহাবীব। গোধিকা দোখয৷ বাঁব কবিছে তর্জন তোমাবে পোড়ায* আজ কারব ক্ষণ । যান্রাব সময দৌখযাছি তোব মুখ বনে বনে বেডাইযা পাইযাছি বড দুঃখ । জত দুঃখ পাইল আমি বনে বেডাইযা নেউল বদলে তোম। খাব পোড়াইযা । এমন বিচাব বাঁব মনেত ভাবি বাধিল গোধিক্য বীর জালদাঁড়ি দিযা । ৫৩ চারি পাষ বান্ধি তারে পেলিলং ধনুকে অভষা নাস্বিল উদ্ধপুচ্ছ হেট মুখে। ধনুকেব হুলে হেম-গোধিক৷ বান্ধিষা ঘবেবে" চলিল বাঁব বিষাদ ভাবিষ|। অভ্যাব চবণে মজুক নিজচিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুব সঙ্গীত ॥ ৬) ধনুকে চস্তেণ ৯তী হইয়া লম্বমাণ ব্যাধাক আইলাও ভাল দিতে ববদান । জেই কালে জন্মিলাঙ যশোদ। জঠবে কৃষ্ণ হেতু পাঁড়লাঙ পাপ কংস কবে১ সাবিলাঙ অনেক যত়ে শিশায নিপাত এডাইতে নাবিলাঙ আক্ষটির হাত। উদৃজোগ কাঁবল কংস কাঁবতে নিধন কৃষেব কারিল দৃব দারুণ বন্ধন । এই ৬্য হেতু কৈল গগনে নিবাস জালের বন্ধনে বড় গুনিণ২ তরাস। দেখগণে পূজা নিতে কবিল সন্ধান বীরেব বন্ধনে বড পাইল অপমান । কিছু * এক হদযে লাগযে বড় ডর অপমান কথা পাছে শুনেন শঙ্কর । সুবপতি জাবে নিতি পুজে বাঁধমতে হেন জন বন্দি হইলা আক্ষটিব হাথে । গোধিকা হইযা৷ আমি কৈল কোন কাজ দুঃেব উপরে দুঃখ বড় পাইল লাজ । গোধিকা লইয৷ গেল আপনার বাসা গোধিকার না ঘুচিল বন্ধনের দশা । গোধিক৷ চুপাঁড় ঢাকি চাঁপিল পাষাণে অভযামঙ্গল কবিকঙ্কণ ভনে ॥ ৫8 ৯১১) ফুল্পর৷ নাহিক বাসে আঞ্ষটি অহ্নের আশে পড়াঁসরে* জিজ্ঞাসে বারত৷ পড়শি বীরেরে বলে গেপাহাণে বাঁর চলে দূরে হইতে দেখয়ে বাঁনত৷ । বারে দোখ শুনাপাণি কপালে আঘাত হানি করে রাম। দেব স্মাঙরন বিধাতা আমারে দর্তী কৈল দৈবে দুঃখের ভাজন। জয়ন্ত ডাতারে রাণ্ডী কপালে আঘাত হানি কান্দে ঝাধনন্দিনী নিশ্বাসে মালন মুখঠান্দে দারৃণ দৈবেব গাঁত সকণনে দাখিদ্র পাতি পাঁড়নু সম্বলাচস্তা ফাদে । অন বন নাহি ঘরে বিভ৷ দিণ হেন বরে কর্ণবেদ জাত্যের বেভারে হাঁরিদ্রা চন্দন চুয়া কুমকুম ক্তুরি গুয়া পাইয়াছিলাঙ বিভার বাসরে। ফুল্রা করুণ+ ভাষে আলা বার সকাশে প্রয়তাষে বলেন বচন রঁচিয়। 'ন্্পদী ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুন্দ চক্রবর্তী শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ৯৭ ফুল্পরা বলেন বাসি মাংস না বিকায় আজি মহাবাঁর ষল সম্বণ উপায়। আছুয়ে তোমার সই বিমলার মাতা সেআড়ি লইয়া ভেট১ জাহ তুমি তথা । খুদ কিছু ধার নিহ সয়্ের ভবনে কাচড়া খুদের কাজ রাঁন্ধবে জতনে। রান্ধিবে মুড়্যাতিও সাক হাঁড়ী দুই তিন লবণের তরে চারি কড়া কর্য রিন। চন্ডীমঙগল সইকে দেহ গিয়া তওুলেরঃ ভার তোমার বদলে আমি কারব পসার। গোধিকারে বান্ধিআছি রাখি জালদড়া ছাল খসাইয়। 'প্রয়ে কর্য সিকপোড়া । সন্তরমে ফুল্লরা গেল সইয়ের দুয়ার সেআড়ি ভেট দিয়া সয়ে কৈল নমস্কার । আইস আইসঙ বলিয়া ডাকেন তারে সই দেখিতে লাগয়ে সাদ এতাদিন বই । বিধাতা কারিল মোরে দারিদ্রের কাস্তা চাঁর প্রহর কার সই উপরের চিন্তা । শিরে তৈল "দিয়া তার বাঁ্ধীল কবরী সরস সিন্দুর ভালে দিল সহচরী । আচল ভাঁরয়। সই দিল খই মুড়ি চাপিয়া বাঁসল দৌহে চোখাও” পাড় । ফুল্পরা দুকাঠা চালু মাগিল উধার কলি দিহ৯ বল্যা সই কৈল আর্গকার । আইসহ প্রাণের সই বৈস গো৷ বাহনি মোর মাথে গোটা কথে। দেখহ উাঁকনি। দুই সয়ে কথায় মাঁজয়া৷ গেল চিত ভশবতী লইআ কীঁছু শুনব" সঙ্গীত। অভয়াচরণে মজুক নিজ 1৯ত প্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৯৩ ুঙ্কারে ছওিয়া দাঁড় পারয়া পাটের সা সোল বংসরের হইল রাম। থগ্ভনগঞ্জন আখি অকলঙ্ক-শশিমুখা কেবা দিতে পারে রূগে সীমা । চারু বালিত ভুজে কনক-কন্কণ সাজে মাঁণময় কাণ্ঠন-নৃপ্র বিমল অঙ্গের আভা কোটি চান্দ মুখশোভা রাবর কিরণ করে দূর । তৃতীয় দিবস দিবা দৈধলিবালিত মাঝে সুবর্ণ-ফাঙ্কণী সাজে উরুযুগ রন্তাব সমান লিনতে কুঞ্জবকুন্ত কুচযুগ কবে দন্ত কিব৷ দিব বৃপেব উপাম। ণ নযানকোণে মদন এঁডিযা টোনে কাজল গবলভ্ত শব “কীকলাকশেব অস্ত শোভযে মদন-কুন্ত কববিযে শোভিত কেশব। এ|ঙ্গে চন্দনপক্ক অঙ্গদ বলয। শঙ্খ বাহৃবিড়ুষণ সুশোভন "কন অঙ্গুল ভাব মানিকেৰ মষ্ভাব দন্তবুঁচি ভুবনমোহন । * চক্র অনুগাম বিন্দু বিন্দু শোঠে ঘাম সন্দুব তিলক তিগবাবি ত ' বিযুক জুতি তাম্কুলেব বস তাঁথ নাসায মাণিক্য মনুহাবি। ।খ নানা অভবণে অবশেষে পডে মনে হুদযে কাচলি আচ্ছাদন চন কাব ভগবতী কাচলি নিমাণে মাত স্বর্গেব বিশাইযে স্মঙবম । “৮ নশ্ জগন্নাথ হদযাঁদিশ্রেব তাত কবিচন্দ্র হদষনন্দন ওহাব অনুজ ভাই চগ্তীব আদেশ পাই [বিবচিল শ্রীকবিকঙ্কশ ॥ ৯৪ বশাই কণচলি লেখে ভাবথপুরাণ দেখে লেখে নান৷ পুবাণেব সার কাঁথআ চাণ্ডকা ধ্যান তুলি ধবে সাবধান আগে লেখে বিষুঃ১ অবতার । প্রা যসাগবে লীন প্রথমে লিখিল মীন বেদ-উদ্ধাবণ অবতার ৫৫ ধারা রহায শিলা২ কৈল সত্যব্রতের উদ্ধার । নিজ বলে পিঠে কবি সুধা হেতু জলধি মন্থনে লিখে বৃর্ন অবতার গাব পিঠে ফিবে জার পিঠ কৈল পক্ষযোজনে | পিখিল বঝহমুর্ত প্রবোশল পাতালশাবঝব অবাণ উদ্ধাব কাব আবাঁপন জলেব উপবে। জলচর মাঝে থেল। ধাবল। মন্দার গার উদ্ধাব কবিতে খাত আদ পধানবে মারি 1লাঁথন নুসংহ৬ু আঙগব চণও ভানু ফটিকব শ্তন্তে অবতাব [হবণাক1শপু বুকে বিদ1বিত কৈল নখে নিজ দাসে? খণ্ডে অন্ধকাব । লিখিল ঝমনমৃর্তি ভুবনপাপন কাঁর্তি অসুবকুলেব হইপ কাল হইয। ভ্রিলোকেব গ্বামী মাগিল ন্রিপাদ ভামি দৈত্যবাজ লইল পাতাল। নিক্ষেত্ কূলে জন্ম লিখল পরুসরাম ভুজবলে কাঁবল দহনে বাব একাবংশাতি নিক্ষান্ত কারন খিতি দান কৈল মবীচিনন্দনে | [লিখে দুবাদলশ্যাম জানকাঁ সাহত রাম শিরে ছতর ধবেন লক্ষণ জাযাহবণেব হেতু সমুদ্রে বা্ধিল সেতু ভুজবলে মাবিল রাবণ। রূপে অভিনব কাম হলধর লিখে রাম প্রলম্ব ধেনুক বিনাশনে মুষ্টিক মারিযা বাঁবে হলাগ্রে যমুনানীরে প্রবেশ কবাল্য বৃন্দাবনে । ধাবা পাষও মতি নিন্দা করে বসুমতী বোদ্ধ-রুপি লিখে ভগবান দেখিযা৷ কলিব শেষ হইলা প্রভু কক্ষি-বেশ" শ্রীকৃষ লাখল সাবধান । ৫৬ হারতে অবানিভার যদুকুলে অবতাব মধ্যে লেখে যশোদানন্দন শৈশব শষনবঙ্গ কবিল শকটভঙ্গ পুতনাব কবিল নিধন হইয। গাবসম গাব ওণাবর্ত অসুবে মাবি দবপ দেখাপ্য বদনে যশোদা পথমঝঙ্গ জখল অজু ভঙ্গে লিখে বকা সুব বিনাশনে | লিখে বংমবৃপধারী বংসক অসুব মা [পিখে অঘাসুব বিনাশন বংস শিশুগণ লইঘ। ক্ুক্ষাণ কবিযা মাযা। হইলা প্রভু বংস শশুগণ । [নিখিল যমুন। হাদ কাল মাথ দিম। পদে তার কাবেণ বনমালী গোপগণে কবে বল বনমাঝে দাবানল পান কৈল কবিযা অগ্2াল । ইন্দ্রমখ-ভঙ্গকাবী [লখে গোবরধনধাবী গোকুলেব কাবল বক্ষণ ইন্দ্রের পবম গর্ব আপাঁন কাবল খর্ব নিবাবিযা। ঝড-বাঁধষণ। লাখল পবমধনয। বাধা আদি গোপকনযা লিখে বৃন্দ বাপনবেহাবি জতেক গোপেব নাযী সভাকাব মনহাবি নান৷ স্থানে লাখিল মুবাবি। আসিষ। মথুবাপুবী কুবলয গজে মাবি রঙ্গে চাণুর বিনাশন ভোজবংশ-অবতংসে মধ্যে লিখিল কংসে কৃষ্ণ তার কাবিল নিধন । জননী-জনক লোক ঘুচল সভাব শোক মথুবাৰ কবেন পালন রচিযা ন্রিপদী ছন্দ পাচাল কবিযা বন্দ 'বিরাঁচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ চন্ডীমঙ্গল ৯৫ ডানী দিগে বিশ্বকর্ম লিখে মুনিগণ কপালে চোউক১ ফোটা লোহিতববণ । দেবধাষ-জ্যেষ্ঠ লিখে সনতকুমাব নীললোহিত লিখে মনুজ তাহাব । ধবল দিঘল দাঁড় তপজপশীল লিখলেন 'পিত। পুন্ন কার্ম কাঁপল । দর্বাসা জৈমুনি গর্গ ভগু পবাশব বাঁশষ্ট আঙ্গবা লিখে ব্যাস মুনিবব। পোঁলস্ত কশ্যপ কথ গুলহ আঁসত নাবদ পর্বত ধোম্য শঙ্খ লিখিত । দণ্ড কমণ্ডল কুশ জটা শোভে চিত্র বামদেব জামদ্মি লিখে বিশ্বামিতর | লাখল গোঁতম মুনি মার্কগুনন্দন শৃকদেব তম্বব লাখল তপোধন । বামদিগে লাখল গবুড মহাবীর জটাউ সম্পাতী লিখে সুপর্ণ তিতিব। জলে তাম্নচুড লেখে চকোব চকোবী পেখম ধাঁবযা নাচে মউবা মউবী। নাবক সাবক লাখ লিখে চক্রবাক দেববা'প বিহঙ্গম লিখে শ্বেতকাক। পাযবা কপোত লাখ লিখে গ।ঙ্গাচল কুলিঙ্গ সালিকা ভেঠা টেঠাব কোকিল। উঁড়য। পাঁড়যা মৎস্য ধবে মংস্যরাঙ্গা ভুজঙ্গে ধাঁবয। খায ধুকুঁড়িযা কাকা । উাঁড়ঘা কমলে বৈসে খঞ্জনী খঞ্জন চাতক। চাতকী জল মাগে ঘনে ঘন। চটক কর্কট টিষা বাযস পেচক গুণ্ুব ভারই ভাউক 'লাখল বক। সংক্ষেপে লিখিযা পক্ষ লিখে পশুগণ কেশবী শাদূলি গা লুক বাবণ। ভালুক লিখিল দেববৃপি জান্থুবান অঙ্গদ সুগ্রীব বালি বাব হনুমান । কালিকাপুর পুথির আর একটি পৃষ্টা পল লাল তক টিলা নন্দলাল বস্তু অঙ্কিত তি তৃতীয় দিবস ; দিবা ৮ ম.—৮ পনস কুমুদ নীল আদ রামসেন৷ বনপশূ লিখে বিশাই হইয। একমনা । তুলাব্‌ ঘোড়াব্‌ কৃষণসার টোলকান চামার গবয মৃগ দিঘলবিষাণ | সসক সৈলক গোধা নকুল শুগাল তবক্ষ লিখিল কোক মৃগগণে কাল । াখল ববাহ কৃর্ম ইকিডা মুষিক জল জন্তু মকব লিখল চা'বাঁদক। কুম্তীর হাঙ্গব লিখে ঘাডযাল সুশুক বোহত আঁদ মংস্য লাখ বশাই প্রচুব | কাচলিব বামভাগে লিখে বৃন্দাবন পূর্বভাগে দোলাপাঁও কদম্বকানন । লাখিল আবরশালী যমুনাব তট* তালেব কানন লিখে ভাতীব নিকট । অশ্বথ পর্কটি জম্নু তিনক পনস টগব তুলসী দন৷ নারেঙ্গ বেতস । বঙ্গন চম্পক পাঁবজাত কুবুবক নিহালী বান্ধীল কববাঁব কুবুওক । লিখিল কালিযহ্দে ভূজঙ্গমগণ গোনষ খবিষ কালী উভ জাব ফণ। নয বোডা লিখল বিশাই সোল চিতি বাসুকী তক্ষক লিখে শেষ অহিপাতি ।5 বিতর কাচলি বিশাই দিল চাঁওকারে আশাবাদ পাইযা বিশাই গেল নিজ ঘবে। কশচাঁল পাঁবযা মাত। বাঁসলা দুযাবে শ্রীকবিকঙ্কণ গান ফুল্লরা আইসে ঘবে ॥ ৯১৬ সই গৃহে চালু সের কাযা উধার সম্ত্রমে ফুল্পরা আইসে কুঁড়যার দুষার । বামবাহু নাচে তার ঘোরে বাম আখ কুড়্যার দুযারে দেখে রাকাচন্দ্রমুখী । প্রণাম করিয়। রাম করয়ে জিজ্ঞাসা ৫৭ কোন জাতি কার জায়া কহ সতাভাষা। এত শুনি অভয়ার১ হৃদযে উল্লাস ফুললরারে অভযা করেন উপহাস । ইলাবৃত দেশে বাঁস জাতিএখ ব্রাঙ্গণী শিশুকাল হৈতে আমি ভ্রাম একাকিনী । বক্গবংশে জন্ম স্বামী বাপেব ঘোখাল সাত সতা গৃহে মোর বিষম জঞ্জাল । তুমি গে৷ ফুল্লবা যাঁদ দেহ অনুমাঁত এক স্থানে কথোকাল কার গ বসাঁতি। হেন বাক্য হইল যাঁদ অভধাব তুণ্ডে আকাশ ভাক্গযা পড়ে ফুল্পবাব মুণ্ডে। হৃদে বিষ মুখে মধু জিজ্ঞাসে ফুল্লব। দূবে গেল খুধা তৃষা বঞ্ধনেব ত্বা। অভযাব চবণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুব সঙ্গীত ॥ ৯৭ এ নব যৌবনে কেন আইলে পরবাস কহ ল সুন্দরি দ্রামতে নহে তরাস । জীনয। মুগরাজ হেলয়ে বসন্ত বায় ও রূপমাধর ভার-ভরে পিড়ে তায় । ছাঁড় মকরন্দে কত কত ধায় আল তোর মুখশশী সঘনে পড়ে বিজুলি । জান নীলাঁগরি মাত মল্লিকামালে ছাড়িযা ভবনে কেন এবেসার খিন তোর মাঝ তোর কুচাগাঁর তোর মুখ গন্ধে মূদুমন্দ হাসি তোমার কবরী ৫৮ বিধু কুতৃহাল কপালমওল তোর রূপসীম৷ ললাটে সন্দুর চন্দনের বিন্দু হেমলত৷ তনু কাজল গরল জনি গজমুত পন্ক 'বিষুবর কানে উজ্জল দিতে দন্ত শোভা শোভে অনুপাম বক্ষের কখচঁলি করে শঙ্খ দেখি কিবা আইলা উমা শুন শুন রামা সতা কহ মোরে সুস্ির বিজুলি ছাড়ি আইল কেশজালে । চণ্চল কুস্তল বদন বিধুমণ্লে কি দিব উপামা নাহ তিন লোকে মিলে । 'তামর করে দূর জেন প্রভাতের ভানু তাহে কিঝ ইন্দু ইথে অকলঙ্ক তনু। তোমার এ ধনু অপাঙ্গে মদনে জিনে বিষকে প্রবল ধরাঁস কিবা কারণে । তব দক্তপাত হাসিতে বিজ্জুল খেলে জানিঞা অধর নাসায় মাণিক্য দোলে । কনক বউলি শোভিছে তোর কুগুলে সৌদামিনী কিবা ছাড় আইল কেশজালে । কণ্ঠে মাঁণদাম তাড়১ মরকত তায় করে ঝলমলী শোভিছে অঙ্গছটায় | হেন মনে লাখ উর্বশী আইলা আপুনি রস্ভ। তিলোত্তম। কমলা কিবা ইন্দ্রাণী । নাহি লাখ তোমা কি হেতু ছাড়িলে বাড় কে আনিল তোরে ওষধে কার বিছাড়িত। চন্ডীমঙ্লল কিবা পাঁতর দোষ দৌখ হেন রোষ সত্য বল ঘোরে বাণী তোর এ বিরহভরে কোন ঘাটে খাবে পানী । পাতি যাঁদ মরে সাযুঁড়ি ননন্দ কিব৷ কৈল দ্বন সত্য কহ ল আমার তে।র সঙ্গে জাব অনেক |নন্দিব বুঝাব নান৷ প্রকারে । ফুল্লরার বাণী শুনিঞা ভবানী উত্তর দিলেন পাবতী শ্রীকাবিকল্পণ গীত রচন বদনে জার ভারতীঃ ॥ কি আর জিজ্ঞাসা কর আইলাঙ তোমার ঘব বীরের দোখতে নারি দুখ তুঁসব বারের *ন আজি হইতে বড় পাবে সুখ । এতক্ষণে পাঁর)য় কার আমার করম দুসি বাঁস গুপ্ত বারাণসা পাত মোর জনম-ভিখারি। গঙ্গ। নামে মোর সত ্কার্মী তারে ধরিল৷ মস্তুকে আম। পানে নাঞ চায় ভবন ছাড়ল এই পাকে । গঙ্গা বড় আউগঞ্জালি সদাই পাড়য়ে গালি স্বামীর সোয়াগ দরপে দেখিআ পাঁতির দোষ দয়া আমার ধন কি কব দুঃখের কথা বরণ গরল খায় উঠিল পরম রোষ' লাজে জলাঞ্জাল দিলাঙ তাপে। এই হেতু অপমান আঁভিমানে নাঁঞ২ মেলি আখি সাঁতনের সম্মান তৃতীয় দিবস ? দিবা বিবাহ দিলেন পিত৷ পিতৃকুলে হইলাঙ বিমুখ । হইলাঙ অবল৷ জাতি আঁহ সঙ্গে হইয়া গেল মেল। সাহতে না পার আম তাহে হেন সতিন প্রবল! । দাবুণ দৈবের গতি পণ্চ মুখে মোরে দেন গালী ঙাহে সতীনের জালা কত সহে অবল৷ পাঁরতাপে হইয়া গেলাঙ কালী । সকল জোগাব আমি না ঝাঁসহ তুমি মোরে ভিন থাকিব বীরের আগে আজ হইতে সম্পদের চিন। গায় মোর অভরণ দেখিআ দারুণ সতা৷ দারুণ দৈবের গতি (বি. মোর গ্বামী উগ্র আমার পাতি থাও পর জত তুমি গনব কাননভাগেও শতেক রাজার ধন ভুবন কিনিতে পারি ধনে সম্পদ বস্তর দিব শ্রীকাবকঙ্কণ রস ভনে ॥ ভন্তি কেবল নিব ০১৪১ বে আমি বলি ভাল ফ্মীর বসতি চল পারণ।মে পাবে বড় দুঃখ শৃন হেদে মূঢমাতি যাঁদ ছাড়ে নিজ পাঁভ কেমনে চাহিবে লোকমুখ । ধবামী বনিতার পাত ফ্কামী বনিতার গাত স্বামী বাঁনতার বিধাতা৷ বিনে দ্বামী অন্যঃ জন কেহ নহে সুখ মোক্ষ দাতা । দোষ দেখ নাক কাটে দণ্ডে রাজ! বনিতার পাতি শুন গো শুন গো সই ইতিহাসে কর অবগাতি১ । স্বামী পরম ধন সন্তোষে বসায় খাটে হিত-উপদেশ কই ৫৯ রাবণে বাধিয়৷ রাম সীতারে আনিল ধাম করাইয়া পরীক্ষ। দহন বনবাসে দতে তারে আদেশিলা সুমিত্রানন্দন। সাদ থাওয়াবার ছলে লইয়া গেলা লক্ষ্মণ কাননে কাননে এড়য়৷ সাঁতা আইলা বীর আপন ভুবনে । সকল পুরাণে শুনি লোকবাদ খণ্ডাবারে পণ্মাস গর্ভকালে শুনহ তাহার কথা ভূগু নামে মহামুনি রহ্ধার কুলের নন্দন রেণুক৷ রমণী তার সুত ভুবনের সার ক্ষোন্রযকুলের বিনাশন। রেণুকার দেখি দোষ সুতে আদেশিলা মহামুন মাএর কাটিল মাথা ত্রভুবনে জয় জয় ধ্বানি। দেখি গে উত্তম জাতি কোপ কর নিচের সমান আইলে পরের আশ আপনার কী সাধিতে মান। সাতানিও কন্দল করে দুগুণ বপিবে তারে অভিমানে ঘর ছাড় কেনি কোপে কইলে বিষপান আপনি তোজবে" প্রাণ সাঁতীনর কি হইবে হানি । ভগবতী মনে গুঁনি উঠিল পরম রোষ শানয়া বাপের কথ। দেবত৷ সমান ভাতি ছাড়িয়া পাঁতর বাস ফুল্পরার কথা শুনি উত্তর দিলেন মহামায়া রচয়। ন্লিপদী ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ 1শবরামে কর দেবা দয়া ॥ ১০০ শুন শুন মোর বাক্য ফুল্লরা সুন্দরি আইলাঙ বারের দুঃখ দেখিতে না পারি। কুলের বহুড়ি আঁম কুলের নন্দিনী আপনার ভাল মন্দ আপনি সে জানি । মোরে উপদেশে তোমার কিব৷ কাজ আপনি সে রক্ষ। কার আপনার লাজ । আছিলাও একাকিনী বাঁসয়৷ কাননে আ'নিল তোমার স্বামী বান্ধি নিজ গুণে । হয় নয় জিজ্ঞাসা করহ গিয়৷ কীরে বীর যাঁদ বলে তবে জাই অনান্তরে । আইলাঙ তোমার বাঁড় হিত কাঁরবারে কতেক নিঠুর বাণী বল বারে বারে। জে বল সে বল আমি বারে না ছাড়িব আপনার ধন দিয় দুঃখ নিবারিব । উচিত বচন যাঁদ বলিলা৷ ভবানী না যুঝিয়া দুঃখ ভাবে ব্যাধের নন্দিনী । বারমাসী দুঃখ রামা করে নিবেদন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ১০৯ বৈশাখে বসস্ত ধতু খরতর খরা তরুতল নাহী মোরে করিতে পসরা । পা পোড়ে খরতর রাবির কিরণ শিরে দিলে নাই আটে খুঞ্ার বসন । বৈশাখ হইল মোরে বিষ মাংস না বিকায় সভে করে নিরামীষ। ১। পাঁপিষ্ঠ জইট্ঠ মাস প্রচণ্ড তপন খণ্ড খণ্ড হইল মোর খুঞার বসন । পসরা এাঁড়য়৷ জল খাইতে না পার দেখিতে দেখতে চিলে লয় এক সারি। পাঁপষ্ঠ জ্যৈষ্ঠ মাস পাঁপিষ্ঠ জৈষ্ঠ মাস বেঙচের ফল খাইয়া করি উপবাস । ২। আধাঢ়ে পুরিল আসি নব মেঘ জল ভাল গেরস্তের নাঁঞ জোড়এ সম্বল । চন্ডীমঙগল ম্লাসের পসরা লৈয়। ভ্রম ঘরে ঘরে কিছু খুদ কুড়া মিলে উদর না পুরে । বড় অভাগ্য মনে গুনি বড় অভাগ্য মনে গুনি কত কত খায় জেণক নাঞ্ঞ খায় ফণী । ৩। শ্রাবণে বাঁরখে ঘন দিবস রজনী [সিতাসিত দুই পক্ষ একোই ন৷ জানি। ভুবন তাঁর আসি নব মেঘ জলে হেন কালে মৃগ মারে পাপ কর্ম ফলে । দুখে কর অবধান দুখে কর অবধান নাঁঞ ঝড় বাঁরের কুড়্যায আল্য ান। ৪। ভা্রুপদ মাসে রাম৷ দুরন্ত বাদল নদনদাঁ একাকার আট দিকে জল । মাংসের পসরা লৈয়া ফিরি ধরে ঘরে আনলে পোড়এ অঙ্গ ভিতরে বাহিরে । কত নিবেদিব দুঃখ কত মিবোদিব দুঃখ বিপাঁথ হইল স্বামী বিধাতা বিখুখ | &। আশ্বিনে আস্বিকা-পৃজা প্রাত ঘরে ঘরে মহিষ ছাগল মেষ দি উপচারে । উত্তমবসন বেশ করয়ে বনিতা অভাগ ফুল্লরা করে সন্বলের চিত্ত ৷ মাংস কেহ না আদরে শাংস কেহ না আদরে দেবীর প্রসাদ মাংস সভাকার ঘরে । ৬ । কাত্তক মাসেতে হৈল হিমের জনম জগ-জনে কৈল শীতনিবারণ বসন । নিযুন্ত করিল বাধ সভার কাপড় অভাগি ফুল্লর৷ পরে হারণের ছড় । দুঃখে কর অবধান দুঃখে কর অবধান জানু ভানু কৃশানু শীতের পরিত্রাণ । ৭। মাস মধ্যে মাইসর আপনে ভগবান হাটে মাঠে গৃহে গোঠে সভাকার ধান । উদর পুঁরয়া অল্প দৈবে দিল যাঁদ যম সম শীত তথ নিরমিল বিধি। কভ অভাগ্য মনে গুনি কত অভাগ্য মনে গুনি পুরাণ দোপাট। গায় দিতে করে টানি১। ৮। তৃতীয় দিবস : দিবা পৌঁষে প্রবল শীত সুখী জগজন তুলি পাঁড় পাছুঁড়ি শীতের নিবাবণ । হাবণ বদলে পাইল পুবাণ খোসলা উিতে২ সকল অঙ্গে বাঁবসএ ধুলা । বৃথা বনতা জনম বৃথা বনিত৷ জনম ধুলিভযে নাঁঞ মোল শযনে নযন।৯। নিদাবুণ মাঘ মাসে সদায কুজ্কাটি আন্ধাবে লুকাষ মৃগ ন৷ পায আঙ্ষণটি । ফুল্পবাব আছে কত কার্মব বিপাক মাঘ মাসে কিনিত তুলিতে নাঁঞ শাক। নিদাবুণ মাঘ মাস নিদাবুণ মাঘ মাস সর্বজন নিবামিষ কবে উপবাস 1১০ | ফান্নুনে দুগুণ শীত খবতব খবা খুদ সেবে বান্ধা দিল মাটিযা পাথবা । ফুল্পবাব আছে কত কর্মেব ফল মাটিয। পাথবা বিনে নাহি অন্য স্থল । দুঃখে কব অবধান দুঃখে কব অবধান আমানি খাবাব গর্ত দেখ বিদ্যমান 1১১।+ মধুমাসে মলষমাবুত মন্দ মন্দ মালতিষে মধু পান কবে মকবন্দ । বাঁনত৷ পুবৃষ অঙ্গ পিডএ মদন আমার পাঁডিত অঙ্গ উদব দহন । দুঃখ কাহব কাহাবে দুঃখ কাহব কাহাবে স্কামী সনে একশয্য। কোসেক অন্তবে ।১২। ফুল্লবাব কথা শুনি বলেন পাবতী আজ হৈতে দূর হইল দুঃখেব বিগতি । আজ হৈতে আমাব ধনে আছে তোমাব অংশ শ্লীকবিকঙ্কণ গান গাঁত ভূগুবংশ ॥ ১০৭ এমন শুনিএগা ফুল্লব। কবিল গমন গোলাহাটে বীবেব ঠাঞ দল দরশন । ৬১ বসিয। বহিষাছে বাব মাংসের পসারে গঞ্জিয়া ফুল্পবা কিনতু বলে উচ্চস্বরে । বিষাদ ভাবিযা৷ কান্দে ফুল্লবা রূপসী নযনের ঘামে ঘাঁমল মুখশশী । গদগদ বচনে বাঙ্গ। চক্ষে বহে নীর সাবস্মষ হইযা জিজ্জাসা করে বাঁর। সাসুডি ননাদ নাঁঞ নাঞ তোব সত ক৷ সনে কন্দল কাব চক্ষু কৈলে বাতা। সতা সত নহে প্রাণনাথ মোব সত ইবে ফুল্লবাবে হৈল বিমুখ বিধাতা । পাঁপিডায পাক উঠে১ মারবাব তবে কাহাব সোলস্য৷ কন্যা আনঞাছ ঘবে । এতাঁদনে মহাবীব পাপে গেল মন আজ হইত হইল তুমি লঙ্কাব বাবণ । বেস্তার্ঘ কাবব৷ বামা কহ সত্যভাষ। 1নথ্য। বাক্য হইলে২ কাটিব তোব নাসা । সত্য মিথ্য। বচান আপুনি ধর্ম সাক্ষি তিন দিবসেব ঠাদ দ্বাবে বস্য দেখি । এমন শুনিঞা বাঁব কাঁবল গমন আপনাব মন্দিবে গিযা দিল দরশন | চুপডি পসাব পাটি ছাড়লঙ ফুল্পরা মাথায কাঁবয। বামা মাংসের পসবা । ঙাঙ্গ্যা কুড। ঘবখান কবে ঝলমল দেখিবাবে পাইল তাব চবণকমল । প্রণাম কাঁবয৷ বাঁর করে নিবেদনৎ অভযামঙ্গল গান শ্রীকাবিকল্কণ ॥ ১০৩ আমি ব্যাধ নিচ জাতি তুমি রাম৷ কুলবতী পরিচষ মাগে কালকেতু ন্রিভুবনে এক ধন্যা কিবা দেব দ্বিজ কন্যা ব্যাধেব কুটিবে কিবা হেতু । ৬২ ব্যাধ হিংসক রাড় চোঁদকে পশুর হাড় এই ঘর সসান সমান কাহ আমি হিতবাণী ছুঁঞলে উচিত হয় প্লান । কিবা পথ-পাঁরশ্রমে আইপে দিকের দ্রমে আশ্বাস ছাড়িতে এই ঘর চল বন্ধুজন পথে ফুলরা চলুক সাথে গাছে লইয৷ জাব ধনৃশর । ছাড়িয়া ব্ধের বাস চণ খর্ধুজন পাশ থাকিতে থাকিতে দিননাথে যাঁদ হয় পাপ নিশা লোকে গাব দুর্ভায। রজনি বণ্টিবে কার সাথে । সীতা পরম সতী তর শুন দুর্গাত দৈবে ছিল৷ রাবণ৬বনে রণে রাম তারে হানি সতী জানকীরে আনি পুনুবার পাঠাইল কাননে । জেমন তিলক-পানি তেমত অপতা বাণী সত্য বাণী তিলক-চন্দন রজকের শৃনি কথা পরীক্ষা করাইয়া সীতা পুনর্বার পাঠাইল৷ কানন । পুরান বসন-ভাতি অবল৷ জনের জাতি রক্ষা পায় অনেক জতনে জথা তথা উপাস্থৃত দুহাকার অনেচিত হিত বিচাঁরয়া দেখ মনে। দৌখ গো উত্তম জাতি দেবত৷ সমান ভাতি তুয়৷ পদে কি বালিতে জানী শুনিএ বীরের কথা লাজে চণ্ডী হেট মাথা মুকুন্দ রচিল মিষ্টবাণী ॥ এই ঘরে ঠাকুরাণী ১০৪ মৌনব্রত কার যাঁদ রাঁহলা ভবানী ইসত কোপিত বীর বলে জোড়-পাণি১। চন্ডীমঙ্গল মাত৷ ছাড় এই স্থান মাতা ছাড় এই স্থান আগুনি সে রক্ষা কার আপনার মান । একাকিনী যুবাত ছাড়িলে নিঞ্জ ঘর উচিত বলিতে কোন না দেহ উত্তর । বড়ার বহুআরী তুমি বড় লোকের ঝ তোমার মোহন রূপে মোর লাভ কি। শতেক রাজার ধন অভরণ অঙ্গে মোহিনী হইয়৷ ভ্রম কেহ নাহি সঙ্গে । চোর খণ্ড হইতে কিবা নাঁঞ কর ভর চরণে ধরিয়৷ বাল ছাড়হ নিলয় । হিত উপদেশ বাল শুনহ বেভার নিকটে কালঙ্গরাজা বড়ই দুবার | আমার বচনে চল বড় পাবে সুখ রাজার গোচর হইলে পাবে বড় দুঃখ । এত বোলে চত্ভী যাদ না দিলা উত্তর ধর্ম সাক্ষি করে বীর জোড় কার কর। শরাসনে আকর্ণ পরত কৈল বাণ হাথে শরে রহে কালু চিত্রনিমাণ । থাঁড়তে ছুঁড়তে বাণ নাহি পারে বাঁর গুলুকে গার্ণত তনু চক্ষে বহে নীর। লইতে চাহে ফুল্লর৷ হাথের গণ্ডশর ছাড়তে না পারে বাণ হইল ফাফর। নিবোদতে মুখে নাহি নিকলে বচন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ১০৫ শরধনু স্তান্ভত দেখিয়৷ মহাবীরে বলেন করুণাময়ী মৃদুমন্দ স্বরে । আমি আইলাঙ ভগবতী তোমারে দিব বর লহ বর কালকেতু তেজ ধনু শর । মানিক-অঙ্গুর সপ্ত নৃপাঁতির ধন ভাঙ্গাইয়৷ কাটাইহ গুজুরাট বন। *নিজ মৃি ধরিতে অভয়! কৈল মন* রামজয়-সংকরণের চিত্র তৃতীয় দিবস দিবা বাসা সত জনে১ 'দিবে কড়ি চালু ধান পালিবে সকল প্রজ। পুত্রের সান ।২ এমন শুনিঞ কালু চন্ডীর বচন কৃতাঞ্জলি কার কাঁছু করে নিবেদন । হিংসামাত বাধ আমি আত নিচ জাতি মোর ঘরে কি কারণে আসব পাবতী । আদ্যাশান্তি মোর ঘরে নাহিক পাত্যারা শরস্তান্ভত জান হেন বুঝি পারা । আদ্যশান্তি বট যাঁদ নগেন্দ্রনন্দিনী নিবোঁদ তোমার পায় মোড় করি পাঁণ। নিজ-মৃর্ত ধারলে প্রবোধ জাই মনে সেই রূপে লোক তোমা পৃজএ আশ্বিনে | এমন শুনিয়। মাত। কালুর বচন নিজ মূর্তি ধারতে অভয়া কৈল ন। অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥৩ ১০৬ মাহ্বমার্দনী রূপ ধরেন চাঁওকা অষ্ট দকেতে শোভে অসষ্ট নায়িকা । [সংহ'পিষ্টে আরোপিল দক্ষিণ চরণ মহষের পিষ্টে১ বামপদ আরোপণ । বামকরে মহিষাসুরের ধার চুল সব্য করে বুকে তার আরোপিল শূল। পাশাঙ্কুশ ঘণ্টা খেটক শরাসন বাম পাঁচ করে শোভে পাঁচ প্রহরণ । অমি চর্ম শূল খ়া চক্র শিত শর আর পাঁচ অস্ত্র শোভে দাক্ষণ পাঁচ কর। বামদিকে কার্তিক দক্ষিণে লম্বোদর বৃষে আরোহণ শিব মস্তক উপর । দক্ষিণে জলাধিসুত৷ বামে সরম্বতী আনম্কন্দর দেবগণ করে স্তুতি । তপ্ত কলধোত 'জিনি অঙ্গের হইল আভা ইন্দীবর জিনি তিন লোচনের শোভা । চারি দিকে নম্ববান শোভে জটাজুট গগনমণ্ডণে তার লাগিআছে মুকুট । অঙ্গদ কঙ্কণ জুতা হইল দশভুজ। জেই রূপে অবাঁনমগ্লে পৈল পৃজ। ৷ দোখয়। চন্ডীর রুপ বাধের নন্দন উয়ে কম্পখান তনু মদত লোচন । ফুল্পর৷ পাড়ন মহাতলেতে মৃচ্ছিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১০৭ মৃছিত দেখিয়া বীরে বলেন ভবানী মূ? তেজ উঠ পুন তেজিয়। ধরণী । উঠ গো ফুল্পরা ঝিয়ে বলেন অভয় বিপদ করিল নাশ তোরে করি দয়া । কালকেতু বলে মাতা শুন নারায়ণী তেজ ভয়ঙ্কর রূপ নগের নন্দিনী । এত বলি স্তুতি বাণী কৈল মহাবীর দৌখতে দোঁখতে হৈল পূর্বের শরীর | অবাঁন গোটাইয়। বাঁর কৈন স্তুতিবাণী ফুপ্নরা রমণী দেই জয় জয় ধ্বনি । বীর হস্তে দেন চ্তী মানিক-অঙ্গুরি লইতে নিষেধ করে ফুল্লরা সুন্দরী । একটী অঙ্গীর হইতে হব কোন কাম সারিতে নারিবে প্রভু ধনের দুর্নাম । এই অঙ্গুরর মূল্য সাত কোটি টাকা কালকেতু লহ তুমি মু না কর বাকা১। ফুল্পরার অভিলায় বুঝিয়। পাবতী আর কীছ্ু ধন দিতে দিল অনুমতি । অভয়া বলেন কালু লহ সিকা ভার লহ খুঁড়ং কোদাল খন্ত। খুরধার । ৬৪ কোদাল খন্তা মাতা না পাইত 'নিয়ড়ে তুমি আজ্ঞা দিলে মাত৷ কোঁড়ব চেয়াড়ে। আগে আগে হইল মহামায়ার গমন পশ্চাতে চলিল বাঁর হাথে শরামন । দাড়িম্ততবুর তলে দিল৷ দরশন দ্বান দেখাইয়া মাত দিল ততগণ। চণ্ডী স্মপ্ারয়। বীর ভেজাল। চেয়াড় চেল! কাটী পেলে জেন পুখুরের পাড় । লোহার সীকলে ছিল সাত ঘড়া ধন চত্তী স্মঙরিয় বার তোলে ততগ্ষণ। ফুল্পর৷ ভারের পাঁছে করিল গমন ধন লইয়া মহাবীর জায় নিকেতন । আর ধন রাখিয়া চণ্ডী রন তর্তলে ফুল্পরা রহিল ঘরে ধন কার কোলে । আর বার আনে বাঁর দুই ঘড়া ধন দৌখয়া ফুল্লর। হেল হরফিত-মন | লঘুগতি মহাবীর পুনর্ধার জায় দুই দিগে বাঁর দুই কলসি বসায়। একঘড়া অবশেষে দৌখ মহাবীর নিতে নারে ডোঁড় ভার হইল অস্থির । মহাবীর বলে মাতা করৌ [নবেদন চাহিয়া চিস্তয়। দেহ আর এক ঘড় ধন। যাঁদ মোরে ধন দিলে সেবকবংসল একঘড়৷ ধন গো আপনি কাখে কর। অস্থির দেখিয়। বারে হাসেন অভয় ধন-ঘড়া কাখে কৈলা বাঁরে করি দয় । আগে আগে মহাবাঁর কাঁরল গমন পংসাত পার্বতী জান লইয়৷ তার ধন! চন্ডীমঙ্গল মনে মনে মহাবীর করেন জুগতি ধন-ঘড়া লইয়৷ পাছে পালায় পার্বতী । কালুর ভবনে গিয়া দিল দরশন চেয়াড়ে কুনঁড়িয়া পোতে সপ্ত ঘড়া ধন। চাঁওক৷ বলেন কালু ব্যাধের নন্দন নগরের মাঝে দিহ আমার ভবন। গৃঁজহ মঙ্ললবারে করাইহ* জাত গুছুরাট নগরেতে তুমি হইবে নাথ । আতি নিচ কুলে জন্ম জাতিতে চোহাড় কেহো না পরশ করে লোকে বলে রাড়। পুরোহিত কেবা৷ মোর হইব ব্লাক্ষণ নিচ উত্তম হয় পাইলে কিবা ধন। তোমার পুরোহিতেঃ পাবৎ আমার দরশন নিবেক তোমার দান উত্তম রাহ্মণ। এতেক বলিয়া হৈল চন্ডীর গমন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবকন্তণ ॥ ১০৮ দশ দণ্ডে হেমথালে কারয়া ভোজন খট্রায় নিদ্রা জায় বান্যা১ করিয়া শয়ন । বণিক-[সঅরে মাত৷ কহেন সপন কালী প্রভাতে আসব বার ব্যাধের নন্দন। অনুর সুমূল্য কাঁর বদলী দিহং ধন এতেক বলিয়৷ হইল চন্ডীর গমন । মহাবীর আইল যথা বণিকের ঘর গাইল পঁচা মুকুন্দ কাববর ॥৩ তৃতীয় দিবস নিশা পাল। বান্যা বড় দুঃশীল; ১০৭) নাম মুবাঁৰ শীল লেখা জোখা কবে টাকা-কড়ি গাইয। বাঁবেব সাড়া প্রবেশে ভিতব খাড়া ম।ংসেব ধারী২ ডেড বুঁড়। খুড়া খুড়া ডাকে কালকেতু কোথা হে বণিকবাজ বিশেষ আছএ ক।জ আম আইলাঙ সেই হেতু । " খনন বন শৃনি ঘবে নাহী সহব-পোতদাবও ' কাণ্ন তোমাব খুড়া কালি দিব মাংসের ধাব। আজ কাপকেতু জাহ ঘব ₹ঠ আনহ এক ভাব মিষ্ট কিছু আঁনহ বদব। ণ (গা শুন গো খু কিছু কার্য আছে ডোড় অঙ্গুবি ভ ঙ্গাইয৷ লব কাঁড ' শাণ জোহার খুঁড়ি কাল দিহ বাকি কড জাই অন্য বণিকেব বাঁড। দণ্ড চাবি কবহ বিলম্বন সহাসঃ কাঁবিষা বারী দেখি বাপা অঙ্গৰ কেমন । নেব পাইয৷ আশ জাইতে বারের পাশ ধায বানা খড়কিবং পথে এন বড় বৃতৃহলি কান্দে কাঁডব থলি হড়পি তয়াজু কবি হাথে । করে বাব বান্যাকেও জোহাব গেছেন খাতকপাড়া হাল ঝাঁক দিব ধাব আসি বলে বান্যানী ৮ ম—১ আস বলে বান্যান ঝন্যা বলে এাইাপায ইবে নাহী দেখি তোষ এ (তামাৰ কেমন বেভাব। উঠিয। প্রভাতকাণে কাননে বাখিএ৭ জালে হাথে শবে চাবি গব ভ্রমি সন্ধ্যাঝালে আইসে ঘবে এই হেতু নাহী আস আম । ভাঙ্গাইব একটী অঙ্গুবি হইয। মোৰ অন্কৃ্প বিপদসাগবে জেন তাঁব। ফুনবা পসবা কবে উঁচত কাঁবিবে মূল বানা প্রণাম করি জো খে বান] টড়াইযা পড়্যান কাচি দযা কৈন মান সোল পতি দুই ধান শ্রীকবিকঙ্কণ বস গান ॥ বীব দে অঙ্গীব ১১০ রাত প্রতি হইল বাঁব দশগণ্ডা দর দুই ধানের কডি তাহে পাঁচ গণ্ড। কব। অষ্ট পণ পাঁচ গণ্ড অঙ্গবর কাড় মাংসেব পিছিল৷ কাড়ি ধাঁব দেড় বুঁড়ি। ৬৬ একুনে হইল অষ্ট পণ আড়াই বুঁডি চালু ডাঁল কিছু লহ কিছু লহ কাঁড়। অশ্গুরির মূল্য শুনা ব্যাধেব নন্দন অশ্লুরি সকশ মিথা। সপ্ত ঘড়৷ ধন । কাপকেতু বলে খুড। মৃণ্য নাহী পাই জে জন অঙ্্ীব দিল দিব তার ঠাঁঞ ।১ বান॥ বনে দরে বাড়া হইল পণ্বট মোর সনে সদা কবি না পাবে কপট । ধর্মকেতু ভাষ্য সনে কইনু লেন দেন৷ তাহ। হইতে ভাইপো হইয়াছ অপিক সেয়ানা । কালকেতু বলে খুড়৷ না কব ঝগডা অন্তার লইয৷ জাব অন্য খাঁণকের পাড়া । হাথ বদল কারতে বান্যার গেল মন পদ্মাবতী সনে মাতা গগনে হাসন | এমন সময় হইল আকাশে ভারতী বারের লইতে ধন না কারহ মাত। সাত কোটি টাক! দেহ অঙ্গুরিব মূল চাওকা "দিয়াছেন বারে হইয়া অনুণূল | অকপটে সাত কোটি টাকা দেহ বীবে ৰাঁড়ব তোমার ধন অঙযার বরে। আকাশে ভারতী শুনে বান্যার নন্দন দৈব-যোগে অন্য নাহ করে সেই জন । হদয়ে চীন্তয়া বান্ বলেন মহাবীরে এতক্ষণ পরিহাস করিল তোমারে । সাত কোটি টাকা হয় অঙ্গুরির ধন তবে অনুমতি দিল ব্যাধের নন্দন । খন্যেং হইতে হারে মাপ্য৷ দিল তারে টাকা অকপটে দল ধন মু ন৷ কৈল বাকা । লেখ৷ করি দিল বারে অঙ্গারর ধন বলদ নাদায়া বার আনল ভবন। সবধন সম্বারয়া রাখে বার খন্য বায় কারবারে কিছু রাখলেন গুনোঃ । অভয়াচরণে মঙ্জুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ চন্ডীমঙ্গল ১১১ পাইয়। টাকার পাট চলে বীর গোলাহা) পাছু ধায় শতেক কিন্কর সেবক জোগায় পান বৈসে বার দু'লিচ। উপর । কানে কশম হাতে দ্বত মহাবীরে নোঙাইল মাখা জেব৷ ধরে আসি ঢাৎ বারের শুনিঞ৷ আইল কথা । আনন্দে পৃর্ণত মন কিনে বস্তু শত শত লেখ বিচাঁবঘা কেহে। দেখে সায কার বল্যা৯ দেই টাকা । কনকের সাজাকুড়া২ মাজকুড়।৩ হিরায় জাঁড়ত বিয়নি বিয়ে আন আইল কায়স্থ-সুৎ রাউত মাহৃত মাল ভাঙ্গায চন্ডীব ধ৭ কাগজে কায়স্থ শো বাঁচি প|টের গও। চন্দন ওরুর পিড়া লাম্বত মুকুত। চুং। কিনে দোণ। রঙে ভুষিত। পবাতিয়া টাঙ্গন আজ বাঞ্যি। কানশ বাদ গজ কিনে পর্বতের চুড়। নখমান মাতয়ার অঙ্গ কঙ্কণ হব কিনে বীর কনক সাপুড়া । যুদ্ধের জাশিয়৷ মর্ম নান।রত্র-ডাবত মুকুট অভেদ্য কিনিপ ধম কানণ মহিষা ঢাল তাঁড়পন্ত তরোয়াণ মুঠি জার বিচিত্র পুরট৬ । তবক বেলক টাঙ্গি ভিন্দিপাল সেল সাক ভুসাও ডাবুষ খরসান হিরামুঠি জমধর পটিশ থেটক শর কিনে বাঁর কামান কৃপাণ 1 পুরিতে জায়ার সাদ িনিল পাটের জাদ মণি-মুকুতা তাহে বৌড় হিরা নিলা মুতি পলা কলধোত কণ্ঠমাল কুগ্ুল কিনিল দ্বর্ণ-চুঁড়ি। তৃতীয় দিবস নিশ! পালা নিজোজয়া জনে জনে ধেনু মাহষ কনে বলদ কপোত কিনে খাসী শক) বিমান রথ কিনে বীর শত শত খাট পালঙ্গ কিনে দাসী । :1%1" মুসুরি মাষ ধান্যে নাহি দিশপাশ গুড় তিন মুগ বরবচী ০ন কানল ছোলা মূলাইয়। চিনির গোলা তৈল কিনে উমানিঞা ঘটি । নশ নীব নানা ধন গজ-পিষ্ঠে আরোহণ শিকেতন কাঁরল পষান 1, পপী ছন্দ গান কাব শ্রীমুধুন্দ চকখতাঁ শ্রীকানকস্কণ ॥ ১১৭ “5 [ীব ক।টে বন শন বেবুনিয়।৷ জন আইসে তারা দেশে দেশে হইতে 191 শুষ্ঠারি* ঝপাঁত টঙ্গী কিনেঃ রাশি রাশি কনে বাঁর সহাকারে দিতে । এদেশের জন নামে আইসে দামুগণ শতেক জনের আগুয়ান প*এ দেখ বাঁর জনে জনে দল গুয়। পান । ৩ "য়। দাক্ষণ দিশাও গাইল জন নামে ৬াসা" পণ্শত জনের অধিকারী 5।ধসষ। মহাবীর সব জনে করি স্থির দেখে বার জন সারি সারি। ? “মের বেরুনিয়৷ আইল দফর৮ মীঞ সঙ্গে জন দুই হাজার " ও কার* দুই কর বন কাটী বসায়১* বাজার । “৬ন কারয়।৷ জন সহম্র বেরুনিঞা৷ জন মনে বড় সুস্থির জপে পির পেগম্বর প্রবেশ কারল বন ৬৭ বন কাটে 'দিয়া গাড়া পাইয়৷ বেরুনিয়ার সাড়া ধায় বাঘ! কারয়৷ করুণ ।১১ কেহে। মুচ্ছ। হইয়৷ পড়ে কেহ বাঁরে নিবেদে অঞ্জাল রচিয়া গ্লিপদী ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ ব্রাহ্মণরাজার কুতৃহলী ॥ কদলী জেমন ঝড়ে ১১৩ মহাবীর তোমার বেবুনে নাকি সাদ কানন ভিতরে বাথ মাজ১ পাইয়াছিল লাগ হইয়।ছুল বড় পরমাদ । দোঁখযা বাধার কোপ ঝাটাপারা দুটা গোঁফ গগনে লাগা দুটা কান বিকট দশনগুল। মাঘমাস্যা জেন মূলা জুভাখান খাগ্ডার সমান । দেখিতে চণ্চলগাঁত নখ আচড়য়ে খিতি দেউটি-সমান পু)। আখ তাব ভাতি খিন গোঝ জেন দেখ মুগরাজ চপিতে উড়এ যেন পাখী । বিশ নখ জমপর দোখয়া লাগয়ে ডর নেঙ্গড়+ পাগ্যাছে তার শিরে কপা্ট-সমান বুঝ জম-সম ভীম মুখ ক্মারের চাক জেন ফিরে। পাইয়া বেরুনিঞ্গর সাড়া মোলয়া বিকট দাড়া বেরুনিঞা৷ জনে খাইতে ধায় আছে পরমাঞ&-বল তোমার পুণোর ফল বিদায় কারবঙ তুয়া পায়। বেরানঞ্ার কথ৷ শুনি মহাবীর মনে গুনি আশ্বাস কারন বাঁর জনে প্রণাম কাঁরয়৷ ভানু হাথে পইয়৷ শর-ধনু প্রবেশ কারণ বীর বনে। ৬৮ চণ্ডীমঙ্গল উঠিয়া পর্বতপাড়ে নেহালয়ে ঝোপঝাড়ে পাছু হয়৷ মহাবীর জুঁড়িল কপাণ পাইল বাঘার দরশন একঘায়ে বাঘারে করিল দুইখান । উমাপদহিত-চিত রাঁচল নৌতন গাঁত হরি হরি স্মগারিয়া বন কাটে জন চক্রবর্তী শ্রাকাবকঙ্কণ ॥ অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকম্কণ ॥ ১১৫ মহাবীর হাথে ধনু ফিরএ কানন ১১৪ বাঘ দোঁখ আকর্ণ পৃরিত কৈল বাণ আকর্ণ পুঁরয়। বীর করিল সঙ্ধান। মহাবীর দেখা বাঘ। নাঁঞ করে ভয় পথ আগুলিয়া বাঘ। মুখ মেলি রয় । লাফে লাফে ধায় বাঘা অণচড়িয়। খাতি শর হাতে বার বলে দেখিল দুর্মীত । সূর্য নাঁহ উদয় করে ভুবন আধার ভালমন্দ সভাকার করহ বিচার । ধন 'দিয়। সত্য কইল নগের নন্দিনী আজ হইতে আর নাহি বধিহ পরানী । মোর কীছু দোষ নাহি হইয় পবখান জানু ভূম্যে পাতিয়। ছাঁডিয়। দিল বাণ। সাঁঞ সাঞ কাঁরযা বাণ জায় তুগিতে বাণট। তুপিয়। বাঘ। চিবাইপ দাতে। জঁড়তে উত্তম ধীর লইন আর বাণ নাপ দিয়৷ ধরে বাঘ বীরের ধনুকখান । বর মুটাকি বার মারে তার মুড ঝলকে ঝলকে রন্ত পড়ে তার তুণ্ডে। মুটকির তেজ জেন তবকের গুলি একঘায়ে ভাঙ্গে বাঘার মাথার১ খুলি । বন কাটে বেরুনিঞা জন । শর নল খাকড়া ইকড়িং টাঙ্গ ওকড়। ধুথুরা৷ কাটে অপাঙ্গ আকড় কাটে সিঅলি নেহালী আরটিসর কাটসর কাটিল নাটা ভাদালী ভাষনাও চোরপাণাটা । ঝোকড়া ঝাউ কাটে আদাড়মালী । গুর্যাখন বিরতি কাণে সোমজাজি পেটারিআ৷ পুরলা৷ ভারদ।জ টার ঝণটি কাটিণ কালা নোয়। পাতা সিজ ঘোড়া সিজ গুড়কাউীল বাকস বেতস পানিসিআপি সাজাত্যা পাঁজ্যাত৷ কাটিল সবজয়া। নোয়াড়ি সেআড় বরুনা সাঁঞঃ বেউড় বাশের অবাধ নাঞ কেতক ধাতুীক কাটিল বামনহাটী সেআকুল ডাম!কুল 'সঙ্গারবেত কোদালীয়া কাটিয়। কারস খেত কুলিটা চালিত। কাটল বারাটিও । দেবধান গগড় ময়ন।” কীট সাল পানীচাকুল্যা৷ কাটিল নাটা৮ মুটকি খাইয়া বাঘ। পুনুরপি ধায় বেউচ সায়ড়া কাটিল আতা বজ্জ চাপড় মারে মহাবীরের গায় । পুড়্যাতি বিছাতি কারটিল বন-শণ মহাবীরের গায় তার নখ নাহ ফুটে উড়ম্বর িডরা* বন-বাগান চাপড় খাইয়া বীর বলে নাই টুটে। পড়াঁস পুন্যাজ ক।টিল ভুরোও১” | তৃতীয় দিবস নিশা পালা রং চাকন্দিআ কাসন্দিআ৷ নিসন্ধ্যা ভেলা তাল নারীকেল নগরে শোভা গোরোকচাঙাঁল কাটে কাসীমলা শঙ্কর পৃজিতে রাখিল বেলবন। চেণ্া১১ বহু বাস কািল মান্দা বটতরু রাখিল যষ্ঠীর ধাম আমড়া বয়ড়া হরিড়া ধব১২ চহাতরু রাখিল জনবিশ্রাম সুখান কাননে মেটাইল দব মূণ ঝান্ধল আনিয় থৈকর কুকুরছড়্যা কাটিল গামারি ।১ ৩ নৃপাত রঘুনাথ কৈন২২ অবধান ডেফল কাফল করন্দার বন দিয়া বুৃধন কৈল১* বহুমান করাঞ্জ মেওাদ১৪ কাটে আসন গীত গাইল ধুুন্দ কাঁববর ॥ বু মামুডি১৫ কাটিল বাবলা সিমুলি হাতিন আঙ্গন নিম পারুপি দেবদারু মারুল্য সিম তেউীড়ি দন্তি১৬ কাটিণ আওলা । মুর তরলা১ ভালুকা বাশ মুড়া উজাডুয়।১৮ করিল নাশ [সিমুলি সোননা১৯ কাটিল ধনিচ। সারষ করকট ধনচালিতা। কত মায়া জাণ আগ মায়াধার কে তোমা চানতে পারে ব্রহ্মার ধেধানে এ চারি' বয়ানে কখজোড়ে স্তুতি কবে। মানগড়্য। বাকুচি কুচাইলত৷ মাদ্যা সনাতণী শান্তবী১ ব্রহ্ধাণী কুসুম কাটিল নাটা বনবিচা। শঙ্তিরুপ তিন দেবে গল।ষ পাকড়ি খাঁদরের বন শাঙ্খণী গালনা ঝপালম।লিনী মহাকড়৷ কাল্যাকড়া উলু বেন৷ বন [তন লোকে তেখা সেবে। ধাণী* শ।কন্তবী গোরী দিগান্বরী ঙ|টি সাটি কাটিল আদাড়ে ম।ওুঁডি গতঁরি২* কাটে শতমূলী জযন্তী কাণী মঙ্গল ফলহীন আম জাম কাটিণ কুলি তুম গ্রকাপী সেবে পুণ/শালী নাদন চাবুকুল কাটিয়৷ উপাড়ে। হবতন্-হেমনালা | ঘণটুফুল ঘণটুকাল কাটিল কে দুর্গা ?শবা গা ৰ চপ্তী চণ্ডভীমা রি উকন]া বিরুন্য৷ ববাই লআ বালশাশাশরে।মাণ হড়কচ কড়কচ কাটে কামরাঙ্গা ভৈরবী ভাবতী বাণী বসুমতা কাটাল কদপি রাখিল গুআ ণ সংসার-দুঃখতারিণা । অশ্বথ রাখল মূল বান্ধিয় কৌধিকী কুমা রোগশোকহারা রাখিল রুদ্রাক্ষ জায়ফল লবঙ্গ । বারাহী 1বন্দুবসনী মালতী মল্লিকা নেহালী ঠাপা দৃষ্টে উপ্রচণ্া বাসুলী চামুণ্ত ভুজঙ্গকেসর রাখিল জবা শ্রীফল-শাখাবাসিনী । টকর২১ তুলসী রাখিল রাঙ্গন দক্ষমখহর। ভবদুঃখতরা করুণা কমলা ছোলঙ্গ টাব৷ মহাকালী বর্গভীম্না ৭০ ্ন্মা পুরন্দর হর দিবাকর বিশ্বকর্ম নিরমিঞ্া দিলেন কোদাল দিতে নারে তব সীমা । আড়ে দশ বেঙ দিঘে প্রমাণ বিশাল । যাদব-সোবিত। নন্দগ্োপসুতা জখন কোদাল ধরে বাঁর হনুমান শৃন্তনিশৃদ্ভনাশিনী বাসুকী নাগের শির হয় কক্ষমান। থেম গ রঙ্কিণী মাহযমাদনী নাঁঞ গাড়ি পাতে বীর না ধরে সিঅনি শঙ্করী সিংহবাহিনী অঞ্জলি কাঁরয়া হনুমান তোলে পানি । বিপদের কালে নরারাতাত গোড়াদাওয়া২ দিল বীর শুভক্ষণ বেলা । প্রাণনাথে কৈলে দয পোয়ালের কুণ্ড সম হনুমান তোলে চেলা । খাওয়া দুর্গাত রাখ ৮গবতী এমন পাঁচির দিল হইল চারি পাট দিয়। চরণের ছাযা । বাঞ্য।০ পাথর দিল বাঁর ঝানকাট্। রাজা রথুনাথ গুণে অব্দাত তাল সম উভ বীর কারল পাচির রাঁসক মাঝে সুজান পাথসের %।ও দিণ হনুমান ১হাবীর। তার সভাসদ রাঁচ চারুপদ মুডালী রিয়। তথ আরো পল কাট ্রীকাবকন্কণ গান চাঁর হালা খড়ে [িশাই হাইল চাশি পাট । পুরীর ভিতরে রচে চার চতুঃশাল।ঃ মাজ)। পিড়া খোগন। বান্ধে। দিয়। শিলা । অন্তঃপুরে সরোবর কাঁরল নিমাণ ১১৭ পাষাণে বান্ধণ তার ঘাট চাঁরখান। এত স্তুতি কৈল যাঁদ খাদ ঝাধের নন্দন উত্তরে খড়াক সিহহহধর পূরবদেশে কেলাসে হইল চর আর মন । পাধাণে রচিত ঘাট সান চারি পাশে । পদ্মাবতী বাঁল ডাক পাডে ঘনে ঘন সাতানৈআ রস্তেৎ বিসাই ধরে সুতা স্মরণ কাঁরতে পদ্র। আইলা ততণ। ইন্্রনীণ পাষাণে রচিত কৈল পোতা। গণনা কাঁরয়। গা বাঁলল চন সপ্ত মহলে তোপে চাঁওকার দেউল মহাবাঁর কাণকেতু করে স্মরণ । নানা চিএ লিখে বিশাই হইয়। অনুবূল । এমন শুনিএয চ্তী পদ্মার ভারতী নানারঃ দিয় তাঁথ রচিল পাক বিশ্বকর্মে পান য়া দিলেন আরতি । গান কাবি মুসুনদ প্রসন্ন চাকা ॥ মোর ব্রতে যদি বিশাই কর অবধান মহাবীরের নিজপুরী করহ নিমাণ। বিশ্বকর্ম শিরে ধরি চণ্ডীর আদেশ বেরুনিঞ৷। বেশে তথা কারণ প্রবেশ । টন তেনমতে প্রবেশ করিণ হনুঘান সিত পঞ্ম ভিয়োদশী গুরু তারা-জুত শশী বীরের তোলেন ঘর হইয়৷ নাবধান । তথ যোগ নাম আউদ্বান আওয়াস তৃলিল এক কোশ পরমান সুধন্য কার্তিক মাস বীর তোলে আওয়াস আপাঁন কোদাপী ধরে বীর হনুমান । বিশ্বকর্ম সঙ্গে হনুমান । তৃতীয় দিবস নিশ! পালা দেবকাবু বিশ্বকর্ম তাব পুন দাবুরক্গ শিবে ধবে চাঁডকার পান +"* জ্ঞাতি বন্ধু নাতি নানান কবএ নিম্াণ | উক্জ্বাগব দিনবাতি *ণ* ন মহাবাব নথে কবে দুই চিব শিলা তবু পরতসগথ "15 পত্র একাঁচিত সঙ্গে জ্ঞাত চাবাভিত গাবসম তুলিল নলয | )ব চোঁবি চতুঃশাল। মাঝে পিডা খো২-ঢালা পাবাণে বাঁচিত নাছ-বাট ৭৫ বহঙ্গ তাঁথ বৃপে জনী অমবাবতীও পাটশাল পুবট-কপাট । ১।-থাখেব পৃ পাশে বিবাঁচত বিষণুব দেউল ' | নিণা হিবা খাও আনল বিজুলি সমতুণ । ।*৬া?ণ দুর্গা-মেল। সহদ্ধাব পূর্বে জলাশয *ণী উগ্তবভাগে বিচটিএ কলস বেসে বাঁসতে শিষুব পাও তাব পিছে পাটশাল৷ জলহাব তাব আগে প্রতি বাড কুপেব সঞ্চন | * 1৯ধ্ব মাঝে শিবের চন্দিবং সাজে অনাথমণ্গ অনশালা৬ ণাড নেব তবে দিঘল মান্দব কবে প্রবাসী গণেব জথ। মেলা । ষ্ঠ ভান ভাব-বোঝ। নানা ইট কবএ নিষ্নাণ কুমাৰ পোডায গাজা ' "তরে ইট কাটে দেউল হুদুবা শটে সৌধময" কৈল পুবীখান । সু”) দাঁঘ-তট তাহাতে বিচি মট প্রাতমাদি কবিল নির্মাণ ]৮ ১ [হব নিলা খাও নবাঁমল দোলাপাও* ক'ম্বকানন সান্ধান | প শাম ববনালয দলীজ মাঁসদ নানা ছান্দে তুলিদেন সএ সএ ৭১ সুধন্য কৌসলকালা৯? তুলিল রন্ধনশালা বিবি চাখে বান্দি জথা বান্ধে১১ । অযোধ্য৷ সমান পুবী বিশাই নির্মাণ কার গৃৰ১২ দ্বাবে বঁচিল কপাট কাঁবষা চাঁওক৷ ধান শ্রীকবিকঙ্কণ গান বর্ণনা১* নগব গুজরাট ॥ ১১৯ দ্বাবকা সমান পুবী বিশাই কবিল নির্মাণ দুংজণে চত্তীন প্রসাদ পাইপ পান । পুরী দৌখ পবন বীবেন আভলাষ কেহ বাহ গ্রজুবাটে কেহ জায বাস১। [ানাদ ভাপিয। খাব শূণ্য দেখি পুরা এন্তাপনাশিনী দুর্গা স্মঙবে ঈশ্ববী । তুমি সত্ব তুমি বজ তুম তিন গুণ আবাধনে তুমি হাব হব তিনজন । িপ্রনাশিনী তোমা গায হবিবংশে বষেব কাবিনে বকা ভাও্ড।ইখা কংসে । মখুনা আনতশাশী বিশাল কখাশা তাথ পা কইলে হবি হইথা শ্বগালী | ধণ দিষা কাটাইলে গ্জবাট নন ক কাবণে এতণুপা তোলাইলে ভবন । প্রজাকে আনি্ত ন।বি আমাব সকাতি নগব বণাইতে মাতা উব গো ভগব্তী । এত স্ত্ীতি কৈল যাঁদ ব্যাধের নন্দন কৈলাসে চন্ডীব হইল অস্থির মন। পল্লাবতী বাল ডাক পাড়ে ঘনে ঘনে ম্ঙউবন কবিতে পদ্ম দিল দবশন | ণণনা কাঁবসা পদ্মা বলিল বচন কাণকেডু মহাবীব কবযে স্মঙবন। আবিলম্বে গেলা মাতা কাঁলঙ্গনগরে ্বগ্ন কহেন মাতা প্রতি ঘবে ঘবে। ৭২ নগর বসাষ বীব বনেব ভিতরে ধান গরু টাকা দোনা দেই সভাকারে । তোমারে ত বলি শন বুলন-মওল তথা গেলে তোমা সভাব অনেক কুশল | স্বপ্ন কহেন মাতা কোহা শাহী শুনে পদ্ধা বলেন চল গঙ্গা সিধানে । আঁবলম্বে চাঁললা গঙ্গার সাশসধানে অভযামঙ্গল কাবকঙ্কণে গানে ॥ পাঙ্গা সাধতে আপন কাম আইলাও তোমা ধাম বাহবে আমাব কিছু ভাব প্রাণের বাহনি গল্গে জাব দেশ কাঁলঙ্গ বাজাব । দদী সন্তাপ কব গে৷ মোৰ দূ ধারয়। উন্মন্ত-বেশ হাজাব কলিঙ্গ দেশ তবে বৈসে গুজবাট-পুব । হই গো বিষুর দাসী সেই প্রভু গাঁতি সভাকাব | হইয়৷ বিষ্ণুর অংশা কাব নাতি কাঁব হিংসা চল গো আমাব সঙ্গে বিষুপদ হইতে আসি কেন দেশ হাজাব বাজাব। পর-পাঁড়। দোখ লাগে ডব পরের দেখিয়৷ দুঃখ হই আম অশ্রমুখ তাবে বড় সদয়হদয় । কুম্ভীরমকরগণ জীব হিংসা অনুক্ষণ কিবা গুণে ধব তারে কোলে মহাপাপ জারে গায় সে জন তোমায়ে নায় কে তোমারে বৈষবী বলে। গবর না কর মোর আগে আসিয়া তোমার নীরে বালিঘাট ১ কাঁর মবে সেই বধ তোমায লাগে । পূর্বতপেব ফলে আসিযা আমার নীরে তনু তোঁজ আপন ইংসায় চন্ডীমঙ্গল মাহয ছাগল মেষ খাইয়া কইলে অবশেষ সেই বধ লাগয়ে তোমায়ে । নিচ পশু নাহী ছাড় বরা লী হই কারিলে রণ সমরে কারলে পান সুরা । তোরে আমি ভাল জানি তোমার না কার জল পান কোন মড়া পেলে কুলে কোন মড়। ভাসে জনে শ্মশানেতে তোমার অধিষ্টান । বধিলে অসুবগণ পিযাছাল জহ মু" ছাড় গঙ্গে আপন বড়াই উচিত বালব যাঁদি তোম। সম পাপ নদী ভুবন খুণজলে পাইতে নাঞ। দুহাব কন্দল শুনি পদ্মাবতী বলে বাণা চল জাব সমুদ্রের স্থান আজ্ঞ। দলে জলনিধি আসিব মকল নদা শ্রীকবিকঙ্কণ বস গান ॥ ১২১ কোপে কম্পমান তনু কষ্ছে সর্ব গ। যোজন যোজন বই পড়ে এক পা। নামষেকে উত্তরিলা সমুদ্রের ধাম সন্ত্রমে উঠিয়৷ সিষ্ধু করিল প্রণাম । পাদ) অধ্য মধুপক 'দিল আচমনী পৃজ। কাঁর সিদ্ধু তারে বলে দ্তুতিবাণী । অবাঁন লোটাইয়। সিন্ধু জোড় কার কর কিসের কারণে মাতা আইলে মোর ঘর। চিরাদন নাহ মাত।৷ আইস ভদ্রুকালী আমার আশ্রম আজি হইল পুণাশালী । মোর পুণ্যে তরু হীন হইল ফলবান আমার আশ্রমে দুর্গা তম বিদামান । পূর্বে পবিত্র আমি গঙ্গার মিলনে ততোধিক হইল তব পদ-দরশনে | তৃতীয় দিবস নিশা পালা চঁঁকা বলেন ভিক্ষা দেহ 'সিন্ধুপাঁত দেহ নদনদীগণ আমাব সংহতি । হাজাব বাজাব দেশ বসাব নগব ঘোষণ। বাঁখব বাঁবেব অবনি ভিতব । এমন শুনিএ৷ সিন্ধু চন্ডীব বচন হাথে হাথে নদনদাঁ১ কৈল সমর্পণ । প্রণাম২ কাঁবিষা দিন পুষ্পক বিমান ইন্দ্রের ভুবনে মাত৷ কাবিল পযান । সম্্রমে উঠিযা ইন্দ্র জোড কাঁণ কব [িসেব কাবণে মাতা আইলে মোৰ ঘব। নীণাম্ববে খাত লইষা মনে ভাব বাগ! মহেন্দ্র তোগ।ব নাজে নাই তুঁপ চাথা। পৃএশো?ক পুধন্দব কান্দিনা বিকণ সুবপুবে উঠে ক্ুন্দনের মহাঝোল | ৮ওঁকা বলেন শন বাপ পুবন্দব অধিশাম্ব আন্যা দিব তোমাব কোঙব। সাত দিবসেব তাৰ দেহ চাঁব মেঘে নীলাম্ব'বব কার্য কৰি আনা দিব বেগে । এন শুনিএন ইন্দ্র তীব ৭টন হাথে হাথে চাবি মেঘ কেল সমর্পণ | অঙযাণে ম্জুক নজ চি৩ শ্রীকাবকঙ্কণ গন মধব সঙ্গীত ॥ ১২৭ শুন শুন মেঘগণ কর ঝড়-বাঁরষণ কলিঙ্গে হইয৷ প্রাতকূল মাব মখভঙ্গকালে আকুল কবিলে জলে জেন নন্দ-গোপের গোকুল। পান লেহ মোব দ্রোণ শধবে আমার লোন শীঘ্র চল চাগকাব সঙ্গে পুগ্ডরীকে এঁবাবতে বিষি' কবি ডুবাবে কলিঙ্গে । দুই গজ লৈযা সাথে 9, ম.-১০ ৭৩ চল রে পুষ্কর মেঘ দুষ্কর তোমার বেগ সঙ্গে চল কুমুদ বামন তুমি যাঁদ মন কর প্রলয় কারতে পার কলিঙ্গের কোথায গণন । আন্ত১ মেঘবাজ করহ চঙীর কাজ লইবে অঞ্জন পুষ্পদস্ত ঝনঝন। বৃষ্টি শিলা সঙ্গে লৈয়া কর লীলা" কাঁলঙ্গপুবেব কব অন্ত । সন্বর্ত কবহ হিত কর গিয়া যথোচিত সাঝ্ভোম সংহতি লইয। মোব কার্ষে দেহ দৃষ্টি কালঙ্গে করহ বৃষ্টি জেমন বলেন মহাশাযা । গজ জোগা৯বে বাব নারষ মুষলধারি ঝট জাহ কলিঙ্গনগব প্রণযক।লেব মত ঝড়বৃষ্টি' অবিরত কালঙ্গেব না বাখিহ ঘব। চন্ডীব আদেশ পায লঘুগতি মেঘ ধায় পণ্টাশ পবন কাব ভর খেনেকে বাধুব বেগে গগন জুঁড়িল মেঘে চোৌঁঘোডে" কলিঙ্গনগর । মহামিশ্র জগলাথ হদযামশ্রের তাত কাবিন্দ্র হদযনন্দন তাহাব অনুজ ভাই চন্ডীব আদেশ পাই বিবচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ১২৩ ঈশানে উবিল মেঘ সঘনে চিকুর উত্তব পবনে মেঘ ডাকে দুরদুর | নামষেকে জোড়ে মেঘ গগনমণ্ডল চাবি মেঘে বারষে মৃষলধারে জল । কলিঙ্গে বাঁহয৷ মেঘ ডাকে ঘোর নাদ প্রলয গুনিষ। প্রজা! ভাবযে বিষাদ । ৭8 আজ্ঞ। দিল ভবানী হাড়হুড় দুরদুর বিপরাঁত ঝড় বিপাকে চতুর প্রজা উঠ্যা দিল রড়। ধুলি আচ্ছাঁদত হইল চারিভিত উলটিয়। পড়ে ঘর প্রজা চমকিত । চার মেঘে জণ দেই অস্ত গজরাজ গঘনে চিবুর পড়ে বেঙ্গ-তাঢক। বাজ । কাঁরকর-সশান বাঁরয়ে জলধারা জলে একাকার মহী পুখুর হইল হারা । ঘন বাজ'ধবান চার মেঘের গর্জন কার কথা শুনিতে না পায় কোন জন। পারচ্ছেণ ণাহী সন্ধ্যা দিবসরজনি স্মঙরে সকল লোক জনক জনানি১ । গর্ত ছাড়ি ভূজঙ্গ ভাঁপিয়। বূলে জলে নাহীক নিজনং২ স্থল কাঁণঙ্গ-মওনে। সাত দিন এলবৃষ্ি হয় নিরন্তর আন্ুক শস্ের কাজ হাজ্য। গেল শর । মাঝ্যায় পাঁড়ল শিল বিদারিয়৷ চাল ভাদ্রপদ মাসে জেন গড়ে গাক৷ তাল চণ্ডীর আদেশে ধায় বীর হনুমান মট হুদরা ভাঙ্গ্যা করে খানখান । চাঁরাঁদকে ধায় ঢেউ পর্বতবিশাল উঠে পড়ে ঘরগুল। করে দোলমাল । চগ্ডীর আদেশে ধায় নদনদাঁগণ অভয়ামঙ্গন গান শ্রীকবিকল্কণ ॥ ১২৪ চন্ডীর আদেশে ধায় নদনদীগণ কাঁলঙ্গ দেশের* সনে করিতে মিলন । ছাড়িয়। গগন-স্থিতি চলিল। মন্দাকিনী সঙ্গে মকরজাল প্রবলতরঙ্গ৷ ধাইল দুতপদ আমোদর দামোদর কুবাই দাবাইও ধাইল ঝুমঝুঁম ধাইল তারাজুলী খরতর-লহরী খালি জুলি সঙ্গে ধাইল বরুণ৷ ধাইল কু্তী ধাইল কাসাই চারাদগে জল বাজাইয়া দা সঙ্গে কাল্যাঘাই নদনদী দেখিয়। লালত ছন্দে চন্ডীমঙ্গল ছাড়িয়া পাতাল চলিলা ভোগবতী | ধাইল গল্গ। সঙ্গে দনকর-সুতা২ ষোল শয় মহান, রযূ ধায় বেগ, ধাইল দারুকেশ্বব সিলাই চত্দ্রভাগ। ধাইন দুই ভাই বগাটীর খালঃ ধায় বগা । কাঁরয়া দামাদাি ঘিআই মুগ্ডাই সঙ্গে ৃষ্কার৷ কুতৃহণাঁ রত্তা চলিলা রঙ্গে । ধাইল গোদাবধী কাল। ধায় দামোদর ঢলিলা রঙ্গে বৃড়। মস্তেশ্বর । গঙ্গা যমুনা অজয় সরদ্বতী কালা ধায় গোমতী সরম৷ কংসাবতী । মহানদী বড়াই খরস্রোতা বামন্যার৬ খানা হইল ধবল কালঙ্গ জুঁড়িয়।৷ ফেনা । মাকড়া" চও্ নঁড়িলা সত্বর হইয়া চাললা” মহামই হর্ণরেখা লইয়।। কৌতুকে অভয়া উত্ঠিল। কেশার-যানে দ্িজবর মুকুনে পাচালী-প্রবন্ধে ভনে ॥ তীয় দিবস নিশা পালা ১২৫ দুঃখিত কাঁলিঙগরায় হাথ ঘোড়। ভাস॥৷ বায় অট্টলায় উঠে রাগনাগণ হ/ণ প্রবেশে জণ রহতে নাঁহক স্থল থাট গালঙ্গ ভাসে নানা ধন। [খগা জের স্থিতি চান্তত কণিঙ্গপতি সাজন কাঁবয়া৷ আনে নায় +।ববাব সাহত রাজা আরোহণ করে দণ্ডরায । পাথথা। তোমার দোষ কারয়। তাঁরর প্‌জা কোন দেখ কৈল রোষ মজল তেমাব ত্নগদ শর ধৌত দেহ দান স।ধিবেো দ্বজের মান ঝাঁডবেক তোমার সম্পদ | প্জের বচণ শুনি নরপাতি মনে গুনি কনক-অঞ্জাণি ধিশ জঙ্গে সে গেলা নিজ স্থান রাজা সু[স্থক১ কম্মফলে । 7৭ &০ শীঁব দেখ দ্বিজগণে দিন নানা ধন পাঁচালী কাঁরিয়। বন্দ ণণ্ণদী পাইয়। মান বাজা সুশ্থিরমাত 1১যা |এরগশী ছন্দ বিবাচল শ্রীকাবকল্কণ ॥ ১৬ বিষাদ ভাবিয়া প্রজা করধে কুন্দন দুই চক্ষু হইল সভার ধারা শ্রাবণ । বুলন মণ্ডল খলে শুন মোর ভাই হাঁজিল বিণের শস্য তারে না রাই । মসহাত কাঁরশ রাজা দা খাটদড়ি১ প্রথম আঘনেং চাহ [তিন তেহাই কাঁড়। কেহে। কেহে। বশে ধন থুইয়।ছিল।ঙ চলে চালের সাহত ধন ভাস্য৷ গেল জলে । ৭৫ দেশমুখ বলে ভাই শুন মোর বোল সভে ভাস্যা গেল মোর কাপাস সাত ডোল। ভাঙঁ১ দত্ত বলে মোর কর্মের ফল আমার দুয়ারে জল হইল অথল৪ । উঠানে ডুবিয়। মরি না জানি সাতার জে ধাঁর মাগ্‌ মোর কারন উদ্ধার ।ৎ বুলন মণ্ডল গেল বীরের নগর গাহিল পাচালী মুকুন্দ কাবিবর ॥ ১২৭ শুন ভাই বুলন মণ্ডল আইস আমান পুব মস্তাপ কয়িব দূর কানে দব হেমকুগ্ুল । আমার নগরে বৈধ জত ভূমি চাষ চষ সাত সন বই দিয় কর হাল পাঁছে এক ত্ক। নাকরিহ কারে শঙ্কা পাটায়২ নিসান মোর ধর। নাঞ দিহ বাউড়ি রয়্যা বস দিহ কাঁড় ডাহদার নাহি দিব দেশে সেলামী বাসগাড় নানা ঝবে জত কাঁড় নাহ দহ গুজুরাট দেশে । পাবান পণক-জাত ওড়া-লোন সানা-ভাত ধানকাটী কলম-কসুরে জত বেচ চালু ধান তার নাহ নিব দান অঙ্ক নাহী বাড়াইব পুরে । জত বৈসে দ্বিজবর তার নাহি নিব কর চাষভুমি বাড়ি দিব দান হইয়া ব্রাহ্মণের দাস পরব সভার আশ জনে জনে সাধিব সম্মান । ডা দত্ত হেন কালে খোর অ।গে কেখ। পাব মানঃ দামিন/-নগরবাসী প্লীকাবকঙ্কণ রস গান ॥ আসিয়। মধুর বলে সঙ্গীতে আভলামী ৭৬ ১২৮ ভেট লৈয়। কাকল৷ পশ্চ।তে ভাড়ুর শাল। মাগু ভাড়,দন্ডের গমান ফোটা পাটা ১ মহাদন্ত শ্রবণে কণম খরগান* । হড়া জেড়ে কৌচা লঙ্ব প্রণাম করিয। ণাঁবে ভা, নিবেদন করে সম্বন্ধ পাতাইম। খুড়্য খুঙ। ছ'ড়া কম্বলে বাস খে মৃদু মৃদু হাসি ঘন ঘন সে বাহৃ-নাঙা । খুড়া আইণাওত গ্রাতিতাসে বাঁনতেন ,হোমাব দেশে আগেতে ডাকবে ভাড় দত্ত জতেক কাথেস্ত দেখ ভাঙর গশসং শিখ কুণে শীঃণ19।রে মহত্ব । কাহয়ে আপন তত্ব চামপহ।ডার দত্ত তিন কুণে আমাব শিপন ঘোষ-বউষের কন দুই নারী মোর ধন্যা মিত্রে কৈ কনা৷ বিতরণ । গঙ্গার দুকূল কাছে জতেক কায়েস্ত আছে মোর ঘরে করয়ে ভোজন ঝাঁর বস্ত্র অলঙ্কার দিয়া কার ঝবহার কেহে। নাহী করযে রন্ধন । বহুপাঁরবার ছ্লো দুই মাগু* চার শালা চার পুত বহিনি সাষুঁড়ি ছয় মাতা৬ আট চেড়ি এই হেতু ছয় ঝাড় থান্য দিঃশ নাহী দিব ঝাড়ি।" হাল বলদ 1দবে খুড়। দিবেহে বিছন-পুড়। ডান] খাইতে ঢেকি কুল দিবে আমি পান্তর তুম রাজ। আগে আন মোর পৃজ। অবশেষে ভাঙুরে জানিবে। ভাওুর বচন শুনি মহাবীর মনে গুনি ভাও্ুর করেন বহুমান দামিন্যা-নগরে বাসী শ্রীকবিকঙ্কণ রস গান ॥ সঙ্গীতের আভলাষী চন্ডীমঙ্গল ১২৯ সঘনে নাড়য়া শির গাওটি প্রবন্ধে ধীর ভণড় দত্ত কহে কানকথা২ জেই হেতু প্রজা বৈসে কাঁহ আমি সবিশেষেত একে এতে প্রজার বারতা । তাড়বাল। দিবে মান দিবে হে বলদ ৮" উচিত কহিতে কিবা ভয [জাণতে প্রজার মাথা গর নিবে এক ছি বান্দে বান্দ জেন প্রজা রয । জখন পাঁকবে খন্দ তবে বিষম ফন দারিদ্রের ধানে নিবে নাগা খাঠ্যা তেমাব ধন শা পাদায কোন জন বশেবে নাহী 95 গা । দেওয়ান ঘোবেব বেটা পহত আর 0 জারে বল বুণন নন [ বুঝিয়া৷ করহ কাজ ভানমন্দ তোমার সকপ 1৬ পরিত পুরান" কাচা চাখা বেচা হব দরেশমুখ শেখে নাঁঞি গাও ৪৬ ৬নত আমার ভা&। নফরের হ।থে খঁড়। বহুঁড়িজনের ভাড় পাবণামে দেই ১হাদুখে [ আম কায়েছের মুখ্য মোরে কর সহপ্-মওুল 1” তু খুড় জাহে গম থাকিতে সকল প্রজা কাহয়া দশ প্রকার সকপ। আগে মোর কর পৃজ। গহামিশ্র জগাথ হদয়শশ্রের তাত কবিচন্দ্র ধয়নন্দণ তাহার অনুজ ভাই বিরাচিল ভ্রীকাবকঙ্কণ ॥ চন্ডীর আদেশ পাই ১৩০ কলিঙ্গনগর ছাড়ি প্রজা লয় ঘর-বাড়ি নানা জ।!ত কীরের নগরে তৃতীয় দিবস নিশা পাল৷ বারের পাইয়া পান বৈসে ঘত মুসলমান ১ পশ্চিম দিগ নার দিল তারে । আইসে চাঁড়য়া তাজ সৈয়দ মোপন। কাজী খইরত দেয় বীর বাঁড় পরের পশ্চিম পাী বলায় হাসনহাটী এক-মুদনিয়।* ঘর-বাঁড় । [বইঃ লোহিত পা্ী পাচ বোর করয়ে নশাজৎ “পাপেমাণা৬ মালা ধনে [পরের মোক।মে দেই সাজ | পাপা [ধচার কবে ফজর সময়ে উঠি জপে পাঁর গেগযাবে 'শ |বশ বিরাদরে অনুক্ষণ পড়যে কোন ণসাই। কেহ 20১ [গিবের সাবান বটে সাজে নাজে দণঙি নিপান। ৬২ দাশীমবন্দ কা"বহ না কে মন্দ" প্রাণ গেলে রোজা ন'হাী ছাডি বমে কমুজ-বেশ শিবে নাহী রথে কেশ বৃক আহচ্ছাদিয়৷ বাখে দাড়ী। শা ছ।ড়ে আপন পথে সদাই ঢুপী দেই৮ মাখে ইজার পরয়ে দর নাড়ি দ।ব দেখে খালি মাথা তা এনে ন। কহে কথা সাঁরয়া দণ্ডের মারে বাড়ি ।১৭ মানা বেটনা১১ নিও বাঁসল সকল১২ শিএশ ভুঞ্জয়৷ কাপড়ে মুছে১হ হ।থ পুধান লোহানী স্পানী১৪ [বত গাঁ বিন হুনি১৬ পাঠান বামল ণানা জাত । ণসল অনেক মিঞা আপন ০বর নিঞা কেহে। নিকা কেহে। করে বিহা। মোণল। পড়াইয়া নিকা দান পায় সকা সকা দোয়া করে কলিমা পাঁড়য়া। করে ধার করা১" ছার মুরগী৯৮ জবাই১৯ কার দশ গণ্ড দরে পায় কাঁড় ণকাঁর জবাই জথা মোললাকে দেই মাথা দরে২ৎ পায়ে কাঁড় ছয় বুঁড়। ৭ জত শিশু মুসলমান কারয়।১ দলিজখান মকদ্দম পড়ায়ে পড়ানা২২ রচিয়। ত্রিপদী ছন্দ গান কাঁি শ্রীমুকুন্দ গুজর।টপুরের বর্ণনা ॥২৩ ১৩১ রোজা 'শেম জ শা জানিএন ঝেণাইণ গোলা তান কারয। কেছে। শাম ধরে জোলা। বণণে বাইয়া ধন বলাইশ আপার দিঠা বেথা নাম বশাহন১ শিঠাহারিও । মং) বোঁচয়। নাম খনাইপ কাবাডি শিবন্তব |গথ। কত শাহ রাখে দাড়। হিন্দু হইমা মুসলমান হয় গরগাল কান হইয়া মাগ্যা খায় পায় শিশাকাল। সানা ণা্ধয়া নাম ধরে সানাকর জাবন৫ উপায় তাপ পায় ততিঘর। প লৈয়া ফিরে কেহো নগরে নগরে তরকর হইয়া কেছে। ।নরমায় শরে । কাগজ কুটিয়া নাম ধায় কাগাতি* কপস্তর” হইয়া কেহে। ফিরে দিঝরাতি। শানাবড কারয়। বাঁপল মুখপনান সাবান হইয়। শুন হিন্দুর উঠান*। অভখাচরণে দ্জুক নিজাঁঠিত প্রীকাথকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ১৩২ পাইয। বীরের পান বৈসে জত কুলম্থান বীরের নগরে বিপ্রগণ শন বিচার করে আশিষ করিয়৷ বাঁরে নিত পায় ভূষণ চন্দন । ৭৮ কুলে শীলে নহে নিন্দ] মুখটী ।ত বন্দ! কণাজপ।ল গাঙ্গুণি ঘোবাল গুইতাঁও বৈসে হড় রাইগাঁঞ কেশরগড় ঘণ্েগ্করং বইসে কুণীড।লৎ । পরীসাতি পিতমণ্ড পোড়া বড়াল ঞুডমাল [ঝকবাডি খালখাও চোটথাঁও পলসএ দিগাড়ি পুসুণ্গাঞ সাঙ্গাড়ি কপপা বায়ান কড়িযাণ কুলস/ণ সিমুলাঁঞ কুলিডাণ পিপলাই বৈসে পূর্বগাঞি ধনে মানে অতিচও্ড পাবাঁন পিঢাসখণ্ড করলাট নিবসেদ পনণসাঞি | গালধ হিজপগাই মাক ভিঙ্ষসাঞ্ি কমোড়ি দানড়ি ভূবিষ্টা্প বটগ্রার্মী নন্দিগাই ভাটাতি পবসঁণঃ নালশী কাযাজ গিশীনাল। গাঁঞজ নাঞ্ী গোর আছে নাঁপল বাঙাবৎ কাণ্ছ বারেন্দ্র স্রাঙ্মাণ নয শত ব্যবহারে বড় রিতু [নিত গড়যে ফ্জ বেদাবদ্া মুখে আঁবরত | দেখিতে সুসারি সার সাবি খাঁর বিষ্ণুর সদন াক্মণেন শ।ওমারি নেতেব গতক৷ উড়ে গৃহশরে শোভে সুদর্শন । কোন দ্বিজে কহে কথা কনককলস চুডে কেহ হয় অধিষ্টাতা কেহো৷ পড়ে আগম* পুবান নানা দেশ হইতে আইসে পড়ুয। [ধ্যার আশে দেই বাঁর হয় গজ দান। মুর্খ বিপ্র বৈসে পুরে শিখিযা পূজার অনুষ্ঠান চন্দন তিলক পরে" নগরে যাজন করে দেব পৃজে ঘরে ঘরে ১পের পু্টলীপ বান্ধে টান । গোপ ঘরে দধিভাগ তোল ঘরে তৈল কুপী ভরি ময়র। ঘরে পায় খও চন্ডীমঙ্গল কোথাহ মাসরা৯ কড়ি কেহ দেই ডালি বাঁড় গ্রামবাজী আনন্দে সাতার ঘরে ঘরে শ্রাদ্ধ কযে গ্রামযাজী করি অধিষ্ঠান গুজুরাট নগরে সাঙ্গ কাঁব দ্বিজ কয কাহন দক্ষিণা হয হাথে স্ুশে দক্ষিণা ফুরান । গাল দিয় লণ্ডে ভণ্ডে বুলপাঁজি কারয়া বিচার জে নাহ গৌরব কবে জাবদ না পাখ পুরুষ্কার । ঘটক ব্রাহ্মণ দণ্ড সভায় বিড়ম্বে তাবে গুজুরাট এক পাশে গ্রহবিপ্রগণ বৈতে বর্ণ দ্বিজগণ মঠপাতি দী”কা ভাগ্বতী ধরে জৌতিয বিচ বকণ্ব নালকের লিখমে জাওযতি | গাথাধ পিঙ্গন জট কাপাড় সন্যাপী-ঘট। ঝুপাঁড় বান্ধিবা এক পাশে শাষে শানা তীর্থাঢহ এক পাশে গুজুবাটে বৈসে। তি্দা মাগে অনুদিন সদা গঘ হবিন।ম ভঁমি পাষ ইনাম বৈধধ বাঁসল গুঁজুরাটে বাথ কণগুলু লাঠি সদাই গোঙায় গীত-নাটে । আওজন১" ঘরবাঁড় কুণ তিপ নীর কার করে রাঁটয়া [পদ ছন্দ সুখে থাকী আবড়া নগরে । গলায তুলপী-কাঠি দেই বাব বাক্য পাঁড় গান কাব শ্রীমুকুন্দ ১৩৩ দেই বার বাসা ও প্রজা বেশে শতশত আপনার ছাঁড়ুয়। নিবাস (তসাঁন ইনাম বাড়ি প্রজা নাহি গনে কাড় সভাকার হৃদয়ে উল্লাস । তৃতীয় দিবস ; নিশ! পালা ক্ষেত্রি বৈসে ভানুবংশ সবলোক অবতংস চন্দ্রবংশ বৈসে মহাজন পুরান শ্রবণ আশে বাঁসল বিপ্রের পাশে অনুদন দ্বিজে দেই দান। দোসর জমের দূত বোস যত রজপুত মন্্ বৈসে রাজচক্রবর্তী এ দেবে অনুক্ষণ দ্বিজে দেই নানা ধন দেশে দেশে জাহার খেয়াত। বারয়া১ আখড়। ঘরে দণ্তযুদ্ধ কেহ কবে মল্লবিদ্যা গ্লাল চাগগারি নইযা দণ্ডকেরও বাড়া কেহ করেঃ মেল। পাড়া ঢাল পাতী কেহ জারে হাঁর। এ পুর গুজুরাটে অবিরত পড়য়ে পিঙ্গল নাথ দেই খাসা জোড়া নিত চিন্তে বীরের মঙ্গল | বেসে বৈশ্য মহাজন কীষকর্ম করে গোরম্ষণ নিবাস কারণ ভা্ে চড়িতে উত্তম ঘোড়া কৃফ সেবে অনুম্ষণ কেহ কলস্তর লয় কেহ বৃষে ধান। বর পালয়ানী বেচে কোন জন । কেছে। দর কার তেলা হিরা নিল। মত পলা অষেশ সফরে ভ্রাম আনে সম্জন করিয়া নায় শখ চন্দন ভার আনে । চাখর পামরি ভোট ন।ন। সফর যায় সকল্লাত গজঘোট পরি সতরঞ্জ লাখে লাখে এক বেচে আর কেনে নিত্য নিতা বাড়ে ধনে গুজুরাটে প্রজা বৈসে সুখে । ধৈপাক জনের তত্ব কর আঁদ বৈসে কুলম্থান দাণকায় কার যশ৬ নানাতন্ত্র করয়ে বাখান । উঠিয। প্লভাতকালে বসন মণ্ডত করি শিরে গুপ্ত সেন দাস দত্ত কেহে। প্রয়োগের বশ উধর্ব ফোটা কাঁর ভালে ৮১ ই পাঁরয়া উজ্জল ধুতি কাখে কার লয়া' পথ গুজুরাটে বৈদ্জন ফিরে । জার দেখে সাধ্য রোগ ওষধ করএ যোগ বুকে ঘা মারিয়া আগে ধায়” অসাধ্য দোঁখযা রোগ পালাইতে করে যোগ ন।ন। গলে করয়ে বিণায়। কপ্র পচন কার তবে জিয়াইতে গার ক্পুরের করহ সন্ধান রোগী সবিনয় বলে কপূর আনিতে চলে নেই পথে বৈদ্যের গালানন । বৈদাক জনের পাশে অগ্রদানিগণ বৈসে নিত্য করে রোগীর সন্ধান রাজকর ন।ই দেই বৈতরণী ধেনু নেই হেমণর্ভ তিন লয় গান। | নহামিশ্র জগন্নাথ হদয়মিশ্রের তত কাবিন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চন্ডীর আদেশ পাই বিরাঁটন শ্রীকাবকল্কণ ॥ ১৩৪ ডেট লইয়৷ দাধ মাও ঘৃত কুম্ধে বান্ধ গাছ কায়েস্থ আইলা মহাজন প্রণাম কিয় বারে নিজ নিবেদন করে সুখী হইলা ব্যাধের নন্দন । কায়েস্থ মিলিয়৷ ভাষে আইলাঙ তোমার পাশে গুজরাটে করব বসতি বিচার কারিযা তুমি দিবে ভাল বাড়ি ভূমি প্রজাগণে কর অবগতি । কোনজন সিদ্ধকুল দোষহান কায়েস্থের সভা প্রস্ন সভার৯ বাণী ভব্যজন নগরের শোভা । সাধ্য কেহ ধর্মমূ্ লিখাপড়া সভে জানী ৮৮৮০৭ পাল নিন্দা] অনেক কায়েস্থ মেলা দেখয়৷ তোমার খেল৷ আইলাঙ তোমার সনিধান কুলে শীলে হীনদে!য (েঠো মাহেশের২ ঘোষ বসু শিল্প কুলের প্রধান । তব গুণে হইয়া বান্দি পাল পালিত শন্দী সিংহ পেন দেব দন্ত দাপ ভঙ্গ বিষু রাহা নন্দ কর নাগ সোম চন্দ একস্থানে কারব নিবাস । বীর কর অবধান গ্রজাগণে দেহ পান ভাঁম বাড়ি কারযা চিহ্ি'তি কিছু দিবে ধান। বাড়ি বলদ কিনিতে কড়ি সাধন লইবে বিলান্িত। ত্যাগ কার কলিঙ্গে লক্ষ ঘর প্রজ৷ সঙ্গে একস্থানে করিব নিবাস [বিচার করিয়া তুমি দবে ভাল বাড়ি ভূমি শুনি বীরহদযে উল্লাস। ধার লহ লক্ষ তঙ্কা কারেহ না কর শঙ্কা দক্ষিণ আশায় কর বাস রাচয়া ত্রিগনদী ছন্দ গান কি শ্রীমুকুন্দ রঘুনাথ রাজার” প্রকাশ ॥ ১৩৫ নিবসে হলিক১ গোপ না জানে কপট কেপে খেতে উপজায়ং নান৷ ধন গুড় তিল মুগ মাষ গম সর্াৎ কাপাস সভার পৃর্ণত নিকেতন । তোল বৈসে কত জনা কেহ চাষা কেহ ঘনা িনিঞ। বেচয়ে কেহ তেল কামার পাঁতয়া শাল কৃঠারিঃ কোদাল ফাল গড়ে ট।ঙ্গ অঙ্গরখি সেল। লইয়া গুবাক পান বৈসে তান্ুলিগণ মহাবীরে নিতা দেই বিড়া চন্ডীমঙ্গল গুনাক সাহত পানে বিড়া বান্ধে সাবধানে কখন না পায় রাজপাঁড়া। কৃম্তকার গুজুরাটে হাড়ি কুঁড় গড়ে পিটে মৃদঙ্গ দগড় কাড়া পড়া শত শত এক জায় , গুজুরাটে তন্ুবায় ভুম খুনি ধুতি বোনে" গড়া । মালী নৈসে* গুজরাটে মালে সদাই খাটে মালা মউড় গডে ফুলঘর ফুলেব পুটলি বান্ধে সাজ দণ্ড কাঁর কান্ধে ফিরে তারা নগরে নগর । বারুই নিবসে পরে বোরজন৯ 'নপ্নাণ করে মহাবীবে নিত্য দেই পান বলে যাঁদ কেহ নেই বীরের দোহাই দেই অনুচিত না দেই বিধান ।৯ৎ নাপিত বইসে তথ কক্ষতলে করি কাত৷ করে ধার রসান দর্পণ আঘাব১১ নিবসে পুরে আপনার বিত্য করে অনুচিত না করে কখন । মোদক প্রধান রানা করে চিনি কারখানা খণ্ড নাড়ু করয়ে নিষ্মাণ পশর| করিরা শরে নগরে নগরে ফিরে শিশুগণ ধরয়ে জোগান । সরাক বৈসে গুজরাটে জীবজন্তু নাঁঞ কাটে সর্বকাল করে নিরামিস পাইয়৷ ইনাম বাড়ী বুনে নেত পাট সাড়ী দেখি বড় বারের হরিস। বৈসে যত গন্ধবানযা গন্ধ বেচে ধূপধুন। পসরা কাঁরয়৷ চলে হাটে শঙ্খবান্যা কাটে শঙ্খ কেহ তার করে রঙ্গ মিবানা৷ বৈসে গুজুরাটে । কাসাঁর পাতিরা শাল ঝারি খুরি গড়ে থাল বাটী ঘ্ী বট-লই১২ শিপ সাপুড় চুনাতি১৩ বাটা উরমাল ঘাঘর ঘণটা " সিংহাসন গড়ে পঞ্চদীপ । তৃতীয় দিবস : নিশ! পালা রজত কাণ্চন কষে সুবর্ণবাণক বৈসে পোড়ে ফোড়ে দোখয়া সংশয় কিছু বিচে কিছু কিনে নিত্য নিত্য বাড়ে ধনে পুর মধ্যে জাহার নিলয় । নিবসে পশাতোহর পুর মধ জার ঘর নির্মাণ করয়ে অভরণে দেখিতে দেখিতে জন হরয়ে পরের ধন হাত বদলিতে তারা জানে । পল্লব-গোপ বৈসে পুরে কান্ধে ভার বিকী করে বন ভাঙ্গা বসায় বাথ।ন রঁচিয়। ত্রিপদী ছন্দ গন কাব শ্রীমুকুন্দ মনোহর পাগাল নিষ্নাণ ॥ পাইয়া ইনাম খাতি বৈসে প্রজা নানাজাতি আনন্দিত বাঁবের নগরে বীর করে বহমান নাটগীত সভাকার ঘরে । দেই দিব্য পাঁরধান এংসা বেটে চষে চাষ কৈব্ত ধীবর১ দাস কলু নগরে পিড়ে* ঘানী বাইতি নিবসে পুরে পুরে ভ্রমে মাজীর বিকনি । নানাবাঁধি বাদ্য করে | পুর মধ্যে বৈসে নাড় নানাবর্ণে গড়ে চুড়ি জৌ দিয়া করয়ে গঠন নগরের একপাশে বহু সোৌগণ বৈসে সুরা তারা করে অনুক্ষণ । 1৩ বাগাঁদ নিবসে পুরে নানা অস্ত্র লৈয়৷ করে দশ বিশ পাইক করি সঙ্গে মাঠীয়।* নিবসে পুরে জাল বুনে মাছ ধরে কৌচগণ বৈসে নানা রঙ্গে । চ* ম.—১১ ৮১ নগরে করিয়। শোভা নিবসে অনেক ধোবা দড়ায় শুখায় নানা বাসে দরাঁজ কাপড় শিঞ্ে বেতন কারয়া জিঞে গুজরাটে বৈসে এক পাশে । শিউলি নিবসে পুরে গুড় করে বিবিধ বিধানে চিড়। কুটে মুড়িং ভাজে কেহ করে চিত্র নিমাণেও । পাটনি নগরে বৈসে রাত্রি দিন জলে ভাসে পার কারি লয় রাজকরে মাসি পুর গুজরাটে বৈসে জত জগাভাটে" ভিক্ষা মাগি বুলে ঘরে ঘরে। খাজুর কাটিয়া ফিরে ছুথার নগর মাঝে চৌদ্রীল চুনার মাঝি কোরক্গা দেখায় বাজি” মাল বৈসে পরের বাহিরে চণ্ডাল 'নবসে পুরে লবণ বিক্রয় করে পানিফল কেশুর পসারে । গোহাল্যে গাইয়া গীত কোয়ালি ফিরয়ে নিত এক ভিতে বাঁসল মারাটা। ফিরে তারা গৃজুরাটে সুলঙ্গে পিলুই কাটে ছানি ফৌড়ে চক্ষে দিয়! কাটা । দুরন্ত* কিরাত কোল হাটেতে বাজায় ঢোল জাতিজীবী১* বাঁসিল কেয়লা১, [ কেওরা বসিল হাড়ি ঘাস কাট্যা লয় কাঁড় সুশড়র ঘরেতে জার মেলা । মোজা পানাঞ জিন নিরমায়ে অনুদিন চামার বাঁসল এক ভিতে বিঅনি চালুনী ঝ"টা ডোম গড়ে ছাতা নাটা১২ কির্ত করে হরাষত চিতে । লম্পট পুরুষ আশে বারবধগণ বৈসে একভিতে তার অধিষ্ঠান নাটুয়া কলস্ত সঙ্গে বসল পরমরঙ্গে শ্লীকবিকঙ্কণ রস গান ॥ চতুর্থ দিবস দিনা ১৩৭ মস্কর৷ পুতিয়া বীর বান্ধে বনমালা১ হাটুয়া আনিয়৷ বার দিল তাড় বালা বেরুনিঞা। জন আনি বান্ধে নদী পানি জত জন আসিব বেবাজ হাট শুনি ।২ কেহ তৈল আনে কেহ আনে] খণ্ড দধি ভক্ষ-দ্ব্য বেচে উপহার নানাবিধি। এমন সময়ে ভাড় দত্ত হাটে আইসে পসারী পসার ঢাকে ভশড়ুর তরাসে। পসার লুটিয়া ভগড়; ভরয়ে চুপাঁড় ভাড়ু জত পাড়া করে কে তাহা সাঁহতে পাবে জত দ্রব্য লয় ভাড়্‌ নাঁঞ দেই কাঁড়। না জানি পালাইয়৷ জাব কথি। ল্ডে ভণ্ডে দেই গালি বলে শালামাল৷ শাক বাইগণ মূলা, হাটে 'ভিন্ন লয় তোল৷ আমি মহামণ্ডল আমার আগে তোলা । ঘরে আস্যা লয় তার বেটা টানাটানি করে ভাও হাটুয়া না ছাড়ে নিত্য তার বাহন রীড়ি লুটি কাঁরয়া লয় হাড়ি কেশে ধার কিল লাথ মারে তার ঘাড়ে । পিঠে চুন মাখিয়। হাটুয়। চলিল আর্দাসে ভাই বন্ধু পসার লইয়৷ চলে বাসে। অভয়াচরণে মজ্জুক নিজীচত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৩৮ মহাবীর রাজা কর ভগড়ু দত্ত লইয়া হের দেখ পিঠে চুন ভশড়ু দত্ত করে খুন সভে জাইব বিদায় হইয়া । ভাড়; জানে অনেক কলা টাক। সিক৷ নিত্য খায়ে১ ধুতি পরদ্ধন্থে ধরে ছল। কুমারে ধাঁরয়৷ আনে চেটা | চালু লয় চালুয়াতির* ঘরে কড়ি চাহতে তারে মারে গুয়া পান নিত্য লয় ঠেঞা নানাদেশে হইতে আইসেৎ সাধুজন তব দেশে নানাবাদ দেই তারে লেঠাত । ভাট পরাক্রমে নাহি টুটে গোপের পসার লুটে নিত্য ধরে ঘাসকর দায় তার বেটা বড় হুড় ময়রার লুটে গুড় নিবেদিতে নাহীক দ্বহায় । ন৷ পারে চষিতে? খোড়া সাত বাড় করে জোড়া আতরে পাঁতরে রোপে কল৷ ছাগল গাড়র পায় তাহারে মারিয়। খায় * নিত ধরে অপরাধ-ছল। । চতুর্থ দিবস দিবা ভার বেটার কাজ কাঁহতে বাসিয়ে লাজ জাতি লৈয়। গাঁড় জায় খেলা বুড়ি পানীকে জায় আহড়ে থাকিয়৷ তায় গাছে হইতে পেলিয়া মারে ঢেলা । প্রজার গোহারি” শুনি রোষজুত নৃপমণি দূত দিল ভাওযরে আনিতে রচিয়৷ ন্পদী ছন্দ পণচালী কারয়া বন্ধ গাররাজ-সুতার সঙ্গীতে৯ ॥ ১৩৯ দূতের বচনে ভাণ্ত আইসে লঘ্ুগতি জুঁড়িয়। উভয় পানি বাঁরে কৈল নাতি। বলে মহাবীর ভা কি তোর ব্যবহার কি কারণে নোট১ মোর বেবাজ বাজার হিত উপদেশ বলি শুন ভণড়, দত্ত আপানি কারিলে দূর আপন মহত্ব । ইনাম বাড়ি তোলা ঘরে তুমি কর ঘর ধান্য বাঁড় নাহি দেহ লাভঙ কলন্তর | কিসের কারণে খুড়া ধর মোর ছল৷ পূর্বাপর আছে মোর মওলিয়া তোলা । প্রজা নাহি মানে বেটা আপানি মণ্ডল নগর ভাঙ্গিল ঠকা কারিয়া কন্দল । মণ্ডল বলিতে তোর মুখে নাহি লাজ খর্ব হইয়া ধারবারে চাহ দ্বিজরাজ । [খুড়া জতগুল। প্রজ৷ ছিল আমার নফর আমার বচনে আল্য তোমার নগর । কাজ পায়্যা খুড়৷ মোর ঘুচাহ মণ্ডল দেখিয়াছি খুড়া হে তোমার ঠাকুরালী ।]৬ [তিন গোটা তির ছিল এক খানি বাশ হাটে হাটে ফুল্লরা পসার দিত মশস। দৈবদোষে আম যাঁদ আছিলাঙ কাঙ্গাল দেখিয়াছি খুড়৷ হে তোমার ঠাকুরাল । এমন শুনিঞা বীর ভাওুর বচন লাঘব করিয়৷ তারে দিল বিসঞ্জন।* তর্জন গর্জন কার ভাও্ড জায় পথে নামিষেকে উত্তরিল কেহ নাহি সাথে ।৮ হার দত্তের বেট। হও জয় দত্তের নাতি হাটে যাঁদ বেচাঙ বীরের ঘোড়া হাথি। তবে সুভাঁসত করঙ* গুজরাট ধরা পুনুবার হাটে মাস বেচাঙ ফুল্লরা । অনুক্ষণ চিন্তে ভা বারের বিপাক রাজভেট কাচকল। নিল পুইশাক। চুপাড়ি ভাঁরয়। নল কদলির মোচা ন্নীর১" বসন পরে ভূম্যে নাম্বে কৌচা। পাগখানি বান্ধে ভা নাহি ঢাকে কেশ কেসারআর৯১ তিলকে১২ রাঞ্জত কৈল বেশ। কৈফিতের পণাঁজখান নিল সাবধানে হি শ্রাত করিয়া১* কলম গোৌজে কানে। ভাওঁ দত্তের ছোট ভাই নাম তার শিবা প%শ১৪ বংসরে তার নাহী হয় বিভা । শাম; বাকো ছোট ভাইয়ের নিবারিল ক্রোধ বিভা নাহ হয় তার দুই পায়ে গোদ । ভাওু দত্ত বলে ভাই দঢ় কর হিয়। এবার মণ্ডল পাইলে আগে তোমার বিভা । ছোট ভাই লইল ভেটের আয়োজন ধীরে ধীরে ভণড়ু দত্ত কারল গমন । দক্ষিণে বিজইহাটি বামে গোলাহাট সম্মুখে মদনপুর সওয়া কোশ বাট। রাজার দুয়ারে গিয়৷ দিল দরশন নমস্কার কারি ভেট এড়ে ততক্ষণ । আইস আইস বলে তারে রাজপান্ুগণ অনেক দিবস নাহি আইস কি কারণ । অভয়ার চরণে মজুক নিজচিত প্রীকবিকল্বণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৮৪ ১৪০ জুড়িয়া উভয় পানি ভাও, দত্ত বলে বাণী খাঁতনাথ চরণে তোমার [দন গোঙায় মিছা কারে চোর খণ্ড না কর বিচার । কাননে বধিয়া পশু উপায় কারত বসু ফুল্লরা বোঁচত মাংস হাটে কোটাল ভ্রমিয়৷ দেশ কালকেতু রাজা গুজরাটে । পূর্বে পিত ভাণ্ডে বার ঘটী বাঠী সব হেমসয় চড়ে পর্বাতয়।৷ ঘোড়। ঘর তার কবের-নিলয়। মন নাহি দেহ রাজ্যে ন। দেখহ সাঁবশেষ এবে তার হেমঝার পারপান খাসা জোড়া ভণও্ড দত্ত জত কয় এক যাদ মিথ্য। হয় তবে কর প্রাণবধ দণ্ড কাহ আমি হিতবাণী মন দেহ নৃপমণি কালকেতু রিপু হইল চও। রঙ্ক দুঃখী নাহি চিনি হেমঘটে পিয়ে পানি নাটগীত সভাকার ঘরে ঘর ঘর জত আছে চণিব বাঁরের কাছে না থাকিব কলিঙ্গ-নগরে । বার কত ভাগ্যবান তথা লক্ষ্মী আধিষ্টান চাঁরাদগে পাথরের গড় দুয়ারেতে মাতা* হাি আছে তার দবারাতি কেবা তার হইব নিয়ড় । বার দেই দণ্ডপাটে রাজ্য করে গুজরাটে কার তরে নাহী করে শঙ্কা অযোধ্যা-সমান পুরী আমি কী বলিতে পার সুবর্ণের জেনমত লঙ্কা । স্মঙার তোমার গুণ সুধিব তোমার লোন১ আইলাঙ বারত৷ জানাঝ|রে রচিয়৷ ভ্রিপদী ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ করি আম্বকার পদ শিরে ॥ চন্ডীমঙ্গল ১৪১ ভাণ্ুর বচনে হইল নৃপাঁতির রোষ পান্রমত্র সভে বলে কোটালের দোষ। কোপে আজ্ঞাঙ করে রাজা লোহিত লোচন কোটাল কোটাল ডাক ছাড়য়ে সঘন। আসিয়৷ কোটাল নৃপে করিল জোহার কোট।লে বান্ধতে আজ্ঞ৷ হইল রাজার। বলে রাজ৷ কোটালিয়া খাও বৃত্তি-ভূমি দেশের বারত৷ বেটা নাহী পাই আমি 1১ এক রাজ্যে দুই রাজ৷ বড় আবিচার ধৃতি খায়্যা বুল বেটা কেটাল আমার । এমন শুনিঞ। সভে রাজার বচন সকরুণ ভাষে কছু করে নিবেদন । খলের বটনে নাহি করিও প্রমাণ প্রভাতে আনিঞ॥ দিব বীরের সন্ধান পান্রমিন্র সভে ধরি রাজার চরণ দূর কৈল কোটলের নিগুড় বন্ধন ।* চাল খাও এঁড়য়া জুগির ধরে বেশ বিভীঁতি মাখিয়া জট।ভার কৈল কেশ । যাত্রা কৈল কোটালিয়া শুভক্ষণ বেল্য প্রহরী জতেক পাইক সভে হইল চেলা। দক্ষিণ চরণ বান্ধে লোহার শিকলে ন্রিবঙ্ক মস্করা দণ্ড ধরে কেহ করে। কেশভার কৈল জট৷ গলে সিংহনাদ কি জানি শিবের পায় হয় অপরাধ । দক্ষিণে বিজইহাটি বামে গোলাহাট সমুখে মদনপুর সওয়া কোশ বাট । গুজরাটে নিশাচর দিল দরশন শিবের মণ্ডপে কৈল আঁজন আসন 18 ভিক্ষা ছলে ফিরে চেল৷ পুরে অষ্ট আশা কেহ গেল বীর জথা খোঁলছেন পাশা । মিষ্ট অন্ন-পানেতে পুরিয়া দিল থাল কপূর তাুল দিল ঘৃত পুষ্পমাল। চতুর্থ দিবস ; দিবা নিশাকালে নিশীশ্বর দেখল নগর পুরের নির্মাণ দেখি চিন্তেন অস্তরৎ। চাঁরাদগে রহে জত নফর চাকর দ্রমিয়। বুলিল তার৷ সহরে সহর। সুধাময় দেখি পুরী নেতের পতকা রাকাপাঁত বোঁড় জেন ফিরয়ে বলকা । হাঁথ ঘোড়া দেখে বাঁরেব সৈন্য সেনাপাঁতি শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর ভারতী ॥ ১৪২ দেখিয়া নগর চিন্তে নিশাশ্বর ভা কহে সত্যবাণী গুজরাট পুরে বীর রাজ্য করে আমি ইহা নাহি জানি । মাণর প্রকাশ তম করে নাশ নিশি দিস সম দোঁখ বারেব নগরে রজনি বাসরে তার৷ ভানু চন্দ্র সাক্ষি। জত বৈসে লোক তার, নাহি শোক সভার কৌশল বাসে সুগন্ধি চন্দন অঙ্গে বিলেপন মাল্য শোভে কেশপাশে । শঙ্খ বোন বাঁণা ভোঁর ভরে নানা বাদ্য বাজে ঘরে ঘরে হএ নাটগাঁতে দেখি ঘর ভিতে মঙ্গল প্রতিবাসরে | বারের সম্পদ দোঁখ দ্ুতপদ কহেন বাজার স্থানে কণ্ঠেতে কৃঠার মাগে পারহার শ্রীকবিকঙ্কণে ভনে ॥ ৮৫ ১৪৩ রায় দেখিলাঙ গুজুরাট প্রাতঘরে গাঁত নাট আঁভনব জেন দ্বারাবতী নাঁঞ ত!র ধরে ছায়া জেন দেখি ইন্দ্রের বসতি । প্রাত বাঁড় দেবস্থল দুই সন্ধ্যা হরিসঙ্কীর্তন দেখিলাউ১ অপরূপ প্রত বাঁড় হরে দেবমন। প্রাতঘরে সন্ধ্যাকালে মাঁণময় দীপ জলে শঙ্খ ঘণ্টা বাজে বাঁণ। বোন জগবম্প বাজে জোড় মুদঙ্গ বল্লাক বাজে সানি। পাঁওতে পাঁওতে কক্ষ মালের মালম২ শিক্ষা তাল নাট গাঁতের বাখান লই্য়৷ বাসুপি-পাত৷ অযোধা মথুর! মায়। বৈষবের অন্লজল সুগন্ধি অগোর ধূপ কাসর১ দুন্দুভি পড়া দেয়াসন চালে মাথা বাদ॥ রোজা পড়য়ে ঝণপান 1৩ আশ্রম চত্বর স্থল কেহ পাশা বুদ্ধ বল গুণজন ভাসে* গীতনাটে রঙ্ক দুঃখ নাহি প্রজা কোন চিন্ত। নাঁঞ গুজুরাটে । কানে নগ্রমানণ পোনা রাম যেন বাঁর রাজ নগরে নাগর জন৷ বদনে কর্পূর সনে পান চন্দনে চর্চিত তনু জেন দোখ হেমভানু তর বসন পাঁরধান। দ্বারে বান্ধা হাঁথ-ঘড় নিজোজিত চোঁদকে কামান তুরঙ্গ মাতঙ্গ রাঁথ যুদ্ধশীল সেনাপতি সেনাভরে মহাঁ কষ্পবান । বাঁরের প্রতাপ দেখি অনুমানে হেন লাথ তোমারে না ভয় করে বাঁর পাঁচালি করিয়৷ বন্দ পাথরে 'নিমাণ গড় রাঁচয়া ভ্িপদী ছন্দ চক্রবর্ত কাবিত্বে সুধীর ॥ ১৪৪ কোটালের মুখে শুনি কোপে রাজা লোহত লোচন সাজ সাজ ডাক ছাড়ে রায়ত মাহৃত নড়ে উত্তরোল ব্/ালিশ বাজন । কাট কাট বলি তাজে; গজঘণ্টা বাজে উতরোল কালকেতুর ধান কঁপিঙ্গন্পতি সাজে সাজ সাজ পড়ে ডাক দাম। দড়মসা ঢ।ক কাঁলঙ্গে উঠিল গণ্ডগোল । লইআ আইসে সেনাপতি শৃঙ্ডে বান্ধে লোহার মুদগর শেল শাবল জাঠে শত শত মত্ত হাথ মাহৃত হাথর পিঠে গগনে পুরয়ে আড়ম্বর। চা চারু মহাহয় রথে জুঁড়য়া বয় মহারথি জায় সাব সার ভিন্দিপাল খরসান ভূখণ্ড ভাবুস গদ। ধার২ । লয়া। লক্ষ ফরিকাল ঘনঘন পেল] খাও লোফে দুঃসহ সেনার ভার খাত ধরে একাকার ফাঁণপাত আদি লোক কাপে। আশি গণ্ডা বাজে ঢোল তের কাহন সাজে কোল করে ধরে কীড় তিন কাঠি তবক বেলক বাণ ধাইল মদন পাল চন্ডীমঙগল কোন ছার কালকেতু আপানি তাহার হেতু কেন নাধ কাঁরবে পয়ান রচিয়া ন্রিপদী ছন্দ পাঁচালি করিয়া বন্ধ শ্্রীকাবকঙ্কণ রস গান ॥ ১৪৫ পাত্রের বচনে রহে কলিঙ্গনূপতি আগুদলে যুবরাজ; ধায় লঘুগাত। ডানি দিগে ধায় কোটাল ভীমরথ রাজার জামাতা ধায় সেনা শতশত ।১ সাজ সাজ বলিয়া পাঁড়য়৷ গেল সাড়। আগুদলে জায় গজ পাখরিয়৷ ঘোড়া । রগাঁসংহ রণভীম ধায় রণঘাণ্টা৩ তিন ভাই কীড় বিদ্ধ দিয়া চুনের ফে।টা । পাইক প্রধান তিন ভাই আগুদল বাণবৃষ্টি করে জেন মেঘে পেলে জল । রাজার পুরোহিত ধায় বিষম করাল হয়-দলে আগুয়ান রাঘব ঘোষাল । [ তবক বেলক কাছে কামান কৃপাণ পৃষ্টদেশ তৃণেতে পৃর্ণত শোভে বাণ । 18 পথে জাইতে বিভাগ করিয়া নিল ঠাট চাঁরাঁদকে বোঁড়ল নগর গুজরাট । পারধান বীর-ধাড় মাথায়ে জালের দাঁড় সম্্রমে বীরের ঠাঁঞ নিবেদয়ে চর অঙ্গে লোৌপত রাঙ্গ মাটি । পাণ্ালিকা রচএ মুকুন্দ কাববর ॥ বাজন নপুর পায় বাঁর মুড়া৷ পাকি ধায় রায়বাশ ধরে খরসান শোলার টোপর 'শরে ঘন সিংহনাদ পুরে হা বাশে বান্ধে চামর নিশান । চতুরঙ্গ দল ধায় ধুলা উড়িল বায় সভামাঝে বসিয়া দশ দশা বলিয়া তিরোহিত হইল দিননাথ মহাবীর পাশা খেলে রাজার চরণে ধার বলে পান্র আঁধকারী এমন সময়ে চর জঁড়য়। দুই কর মন্তকে করিয়৷ জোড়হাথ । সচাকত হইয়া বলে। চতুর্থ দিবস দিবা বাহির হইয়৷ বাঁর দেখহ সত্বর আইসে কাহার ঠাট এবে লয় মতি কাঁলঙ্গ-ভূপাঁত বোৌঁড়লেক গুজরাট । বিষম আঁতবড় আইসে গজঘড় 1সন্দ্ুরে মাত মাথা 1সন্দুরিয়া মেঘ নদ আইল দ্ুতপদ গগন ছাড়িয়া এথা | দেখিয়াছি নিকটে লাক লাক শকটে কামান সব থরে থর দেখিয়া সন্ধান করি অনুমান আইসে কোন নৃপবর | হয়গজ-রব শুনি কাপয় মেদনী ঘোরতর আড়ম্বর কারকর পিঠে সেনাগণ উঠে দেখিয়। লাগয়ে ডর। বাদ্যের নাহী সীমা দুন্দুভি বাজে দাম৷ ঘন বাজে 'সঙ্গ৷ কাড়। সানি বাজে ঢোল চোঁদিগে গণ্ডগোল [িমিডিমি বাজয়ে পড়া । শতশত বাজে ঢাক পাইক লাখে লাখ কার কেহ ন্য শুনে বাণী রায়বাশ্যা৷ তবকী ঢালি ধানুকিৎ শ্রবণে কলকলি শুনি । হয়-পদতালি উড়াইছে ধূলি মিহর হইল। তত্ব মমত। কাঁর দূর ছাড় এই পুর শরণ করহ মহত্ব । চর মুখে ভাষা এড়িয়। পাশ কোপিয়। মহাবীর সাজে শ্রীকাবকম্কণ গীত আরোপণ চন্ডীর চরণসরোজে ॥ ৮৭ ১৪৭ সাজিল মহাবীর বিষম সমরধাঁর চর দেই নগরে ঘোষণা শত শত সলী পড়ে রায়ত মাহুত নড়ে শান পুরী ধায় সর্বজন । চেলনা১ পাঁরধান কোপে বাঁর কম্পমান কনক টোপর শোভে শিরে যুদ্ধের জানিঞ। মর্ম গায়ে আরোপিল চর্ম দুই দিকে কাছে জমধরে। দোয়াঁড়ং চেয়াড় বাণ তরয়ার খরসান ভূষাও ডাবুস চক্রবাণ জেই 'দিকে চাহে বীর কোপে দৃষ্টি হইয়। ধার কোকনদ-বুচির বয়ান । ধায় পাইক টাপাডাল ঢালে বাজে উরমাল পায়ে বাজে সোনার নপুর কার নাম সিংহরায় রাঙ্গা ধুলা মাখে গায় রণাসংহ পাইকের ঠাকুর । ধাবাড় পথের বাড় ঘন চৌথে চেয়াড় বাশে বান্ধে হাড়িয়া চামর রণ মাঝে দেই হান। বাহুমূলে বাধে বানা খেদাবাগ রণে অকাতর | মহামিশ্র জগন্নাথ হৃদয়ামশ্রের তাত কাবচন্দ্র হদয়-রঞ্জন তাহার অনুজ ভাই চাওকা-আদেশ পাই বিরাঁচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ১৪৮ পূদ্ধারে রহে কোটাল ভীমরথ রাউত মাহৃত রহে আর সেন। শত । নিয়োজল সেনাগণ দ্বার দক্ষিণে জার কোলাহলে লোক কিছুই না শুনে । ৮৮ পাশ্িম দ্বারে রহে সৈয়দ (উমরা১ গাজি জাহার ভিড়নে রয় সোল শয় তাজি। উত্তর দুয়ারে বহে বলাগল+-খান রণে ভঙ্গ দেই সেনা শ্রানি জার নাম৩। চার দ্বারে রাউত মাহৃত শত শত গুজরাটে ধায় [সেনা] আচ্ছাদিত* পথ । এমন সময়ে কালু ব্যাধের নন্দন প্রদক্ষিণ হইয়া বন্দে চত্ীর চরণ । অষ্ট তওুল দুঝ। চন্ডীর প্রসাদ মন্তকে ধরিয়া যুদ্ধে চলিলেন ব্যাধ পশ্চিম দুযারে গিয়। দিল দরশন রাজসেনা সঙ্গে বীর করে মহারণ । অভয়াচরণে মজুক নিজাচিত শ্লীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৪৯ বাঁর-বালা দুই ভুজে বীর কালকেতু ভুঝে পশ্চিম দুয়ারে দিল হান৷ রাউত মাহৃত গড়ে খর বহে রুধরের খানা । বায়ু বসে পণ্রভাগে শমন শরের আগে করালী ভৈরবী বৈসে ভূজে শাঞ্জনিতে বসে শেষ জতক্ষণ মহাবীর জুঝে । কালকেতু রণে জুঝে উলটি পালটি দেই হানা বাণ বৃষ্টি করে বার খর বহে রুধিরের ফেনা ।১ কদলী জেমন ঝড়ে ভৈরবি উন্মত্ত বেশ দানার নড়নে সাজে মেঘে জেন পেলে নীর রাজসেনা বার হানে মেলিয়৷ জুগনীগণে কৌতুকে গীথয়ে মুণ্ডমাল৷ রণে অলক্ষিত হই উরিলেন সর্যমন্গলা । চৌষটি জগিনি লৈয়া চন্ডীমঙ্গল রাজদলে দিতে হানা ধায় সোল কোটি দান চন্ডীর আদেশ ধার শিরে আনন্দে তরলমনা পয়ে মুধিরের পান কালকেতু সনে রণে ফিরে। চোঁদিকে রাজার ঠাট পরারুমে বীর নাহি টুটে, চত্ডী জারে স্বৃহায় বারের পাষাণকায় শেল সাঙ্গ গায় নাহী ফুটে । জার বাণে নাহী রাক বাণ এড়ে ঝণকে ঝণকং ভীমমল্ল রাজসেনাপতি আদপথেও লোফে দান৷ মহাবীর রণে অব্যাহতি । মহামিশ্র জগনাথ কবিচন্্র হদয়-নন্দন তাহার অনুজ ভাই বিরচিল শ্রীকবিকল্কণ ॥ ঘন ডাকে কাট কাট আনন্দে তরলমনা৷ হদয়ামশ্রের তত চন্ডীর আদেশ পাই ১৫০ পেল অস্ত্র লোফে বাঁর মারে মালশাট [বিপক্ষ নাশিয়। রণ জয় কারয়া সৈন্যে জড়ল কাট।১ চোঁদিকে ধশধণ বাজায় দামা তবকী তবকে রোল পাইক দেই উড়াপাক ঘন বাজে বির২-ঢাক কার কেহ নাঞ শুনে বোল। দক্ষিণ দুয়ারে বার জুঝিত তেজধাম রাবণের সনে জেন জুবেন শ্রীরাম । ডিওম ডস্বর পুয়য়ে অন্বর ঘন বাজে জগবম্প ঘন বাজে সানি রণজয়-বেনিঃ গুজরাটে উঠিল কম্প। চতুর্থ দিবস; দিবা কোটালেরে বারবর ছোড়য়ে খরশর মেঘে জেন পানি পসলা বাজিয় বারের গায় পাছু হইয়। পুনু জায় পুষ্পের জেমন মালা । কোটালের আগুদল ধাইল গজবল লোহার মুগুর শুঙ্ডে রুষিয়। বারবর করিল জরজর মুটাক মারিয়া তুণ্ডে। করিবর শুণ্ড ধারয়া মুণ্ডে মুটকি মারি দিল টান ছাগল তুও ভাঙল মুগ কাকাঁড় জেন খানে খান । ধরিয়৷ রণে তুরগ চরণে তুলিয়া দিল নাড়৷ অঙ্গ ছাড়র৷ তুরঙ্গ পাঁড়ল হাথে রহিল ফড়া। কালকেতু-লক্ষে বসুধ। কম্পে অষ্ট কুপাচল ফিরে ফণিগণ ছাড়িয়া মাঁণগণ পাঁড়ল ফাঁণপাতি-মাথা ঘোরে । বারের বিক্লম দেখিয়৷ নিরূপম নৃপাঁতিসেন৷ দিল ভঙ্গ শ্রীকাবকঙ্কণ গীত বিরচন দ্বিজবর নৃপাতির রঙ্গ ॥ ১৫১ উত্তর দুয়ারে বাদ্য বাজায় ডিম জুঝে জেন মহারণে কুরুবর ভীম । রণভিংহ রণভীম ধায় রণঝণটা তিন ভাই তির বিন্ধে দিয়া চুনের ফেণটা । পাইক প্রধান তিন পাই আগু রণ চ. ম.১২ বাণ বৃষ্টি করে জেন জল বাঁরষণ। টি সন্ধান পুরিয়া বাঁর ছাড়্যা দিল বাণ কাড়া। নিল কালকেতু হাথের কৃপাণ। আগু হইল পাইক রণে পাছু হইল ঘোড়া পাছু পানে নহৌ চায় কানে কানে জোড়া । সমরণ তারা নাহী জানে কোপে অশোয়ার পেলে বাণ কালকেতু লোফে । কামানিঞা কামান পাতিল থরেথরে তালফল সম গোল৷ পেলিল ভিতরে । গুরু স্মঙরিয়া তাহে ভেজাইল অনলে পাছুইয়।৷ পড়ে গোলা কোটালের দলে । আনোআনি গালাগালী দুই বার রোষে দুই বরে রণ জেন তুরঙ্গ মাহষে। ঝনঝন বাজে দুইার তরয়ার দুই দলে শিল পড়ে ধূমে অন্ধকার । কালকেতু বীর জানে সমরের সাধ মালে মালে রণ করে দুহা বিদ্ধাবিদ্ধি । মাঁণ হইতে রণ জেন কেশরী প্রসেনে মাংস হেতু রণ জেন সয়চান সয়চানে । দশনে দশনে জুঝে মাতঙ্গের গণ১ ঘোড়ায় ঘোড়ায় যুদ্ধ চরণে চরণ । কাড়াকাড়ি পাইক জুঝে কেহ ঢাল-মাথে গেলাঠোঁল পড়ে কেহ জায় যমপথে । রুধিরের নদীতে সাতরে ঘোড়া হাথ স্থল নাহী পায় রাঁথ ডুব্য। মরে তাঁথ।, বারের দাবড়ে পড়ে নৃপতির দল গজ-চাপনে যেমন ভাঙ্গে নল । আঠার ন্‌পাঁত যাঁদ আইসে গুজরাটে হেলায় বাঁসতে কালুরে নাহী আটে ! আমি ত নৃপতি সনে দিলাঙ উত্তর তে৷ ছার বেটার সনে নাঁহব স্মসর । সেবকের যোগ্য তোর নহে নৃপবর ধারতে বাঙন হইয়৷ চাহ সুধাকর। পিপিড়ার পাখ উঠে মরিবার তরে রাজপ্রহরণ তুঁঞ ধারাল সমরে | 9৪ জানি জানি ওরে বেটা রাজার নফর তে৷ সনে উচিত নহে আমার উত্তর । কাঠাঁরয়৷ বেটা ছিল কালিঙ্গ-নৃপতি ধন দিয়া রাজা তারে কৈল ভগবত । কাঁলঙ্গ-রাজার জানি সকল বারতা রণ ছাড়্যা জা বেটা লৈয়া নিজ মাথা । দুই বাঁরে গালাগালি দুহেঁ কম্পমান আকর্ণ পুরিয়। দুই বার এড়ে বাণ। তাড়িপন্ন খাও উভারিল বীরবর তুরঙ্গ সহিত পড়ে পান্র হরিহর। উত্তর দুয়ারে জয়ী হয়্য। মহাবীর পূর্বের দূরারে চলে সমর-সুধীর২ অভয়া৷ চরণে মজুক নিজচিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৯৫৭ পূর্ব দুয়ারে জুঝে বর বলাগল বীরের দাবড়ে সেনা পড়ে রণস্থল । বীরবর হবিবউন্ব। আর সেক সৈদউন্বা নৃপাতির সেনা তেজে বাট বীরের আগুয়ান হান হান শবে জোড়ে কাট । পু'রয়া সন্ধান [বিষম করবাল রাঘব ঘোষাল বাঁরবর-অঙ্গে করবাল ভঙ্গে ত্রিপুরা হাসেন রঙ্গে । রণেতে দুবরাজ সেনাপতি পায়্যা লাজ শমন সমান বাণ পুরে উভারে বাঁরবরে চর্মের উপরে বাণ ঘুরে । ভীমরথ ভীমমল্ল শেল সাঙ্গি উভারিল শিরে বাঁর চর্মে ধরে আর সেনাপতি শন্ব চণীমঙ্গল বারবর অঙ্গে শেল সাঙ্গ ভঙ্গে রঙ্গে শিবসিঞ্ঘ পুরে । এমন সময়ে বাঁর বলে বড় স্থির আগু হইয়া মারে মালসাট বীরের বিক্রম দেখিয়। নিরুপম যম সম জুড়িল কাট । * সমরে বারবর ধারয়া কাঁরকর মাথায় তুলিয়। দল পাক গেল শু ছিশড় হস্তি রণে পাঁড় তাতে সেনা মরে লাখে লাখ । বারের বক দেখিয়। নিরুপম নপাঁতির সেনা দিল ভঙ্গ শ্রীকবিকঙ্কণ কৈল গীত রচন দবিজবর নৃপতির রঙ্গ ॥ ১৫৩ রাজসেনা ভঙ্গ দিল ভাড়ু ভাবে দুঃখ আজ ভাগু,দত্তে হইল বিধাতা বিমুখ । পুত্রপরিবার১ মোর পাপ গুজরাটে গাঁলত কাকুড়ি জেন মোর বুক ফাটে । চিন্তায় চান্তত ভাও বিক্রমে বিশাল নিষ্ুর বচন বলে গার্জয়া কোটাল ।২ রাজ খেম খাও বেট কর রাজকাজ মদে মন্ত [হয়া] পাছু নাঞ গুণ লাজ। গায়ের গরবে ডাক বিক্ুমে স্মসর বড়াঞ কারাল তুঁঞ রাজার গোচর। সেনাপাঁত সামন্ত সভার বিদ্যমান বাঁর ধরিবারে বেটা আগে নিলি পান । তঙ্কা লক্ষ বাঁরের খাইয়৷ জাও ধুতি ভাড়ুদত্ত জিতে বেটা পলাইবে কাতি। ডাল ভাঙ্গে গাছ দাগে লোকে করে সাক্ষি কোটালে ভাঙুর বোলে লাগিল ভেলকী। চতুর্থ দিবুস দিবা তরাসে কোটাল পুনুৎ গুজুরাট বৌঁড় রহ রহ বিয়৷ দামায় পড়ে বাড়ি। সমর করিতে পুনু আইল কালকেতু ফুল্পরা বুঝায় তারে জীবনের হেতু । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকক্ঝণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৫৪ প্রাণনাথ শুনহ আমার উপদেশ । জে জন হারিয়৷ জায় পুনুরাঁপ আইসে তায় হেতু কিছু আছয়ে বিশেষ । যাঁদ আছে জবার সাদ তেঁজিয়।৷ রাজোর বাদ১ প্রাণ লইয়৷ জাহ মহাবীর আজি পূর্ণ হইল কাল সাজ্যা আইল মহাঁপাল তার বলে কেবা হয় স্থির। নখর-রঞ্জিত খুরু নাহী কাটে তাল-তবু ফুল্পরার শুনহ আর্দাস কাহ আমি সাঁবশেষ যাঁদ ন৷ ছাড়িবে দেশ রামায়ণ শুনহ হীতহাস। সুগ্রীবে জনিঞা রণে বালি না মারিল প্রাণে আরোপল হদয়ে পাষাণ বিষম সমরে ধার কিচ-কিন্দা আইল বীর জয়ঘণ্টা বাজাইয়া নিসান২। সুগ্রীব পলাইয়। জায় আশ্বাসিল রাম তায় সখাভাব দুহে 'রিঙ্কমুখে সুগ্রীব রামের তেজে বাল্যের দুয়ারে গর্জে ধায় বালী রণ অভিমুখে । কান্দিয়৷ এমন কালে বাল্যের রমণী বলে পাঁতব্রতা ঝনর-নন্দিনী আম কাঁর নিবেদন আজ না কারহ রণ হেতু কিছু মনে আমি গুনি। ৯১ জে জন তোমার ভয় রশ্বমুখে শ্থির নয় সেজন দুয়ারে দেই ডাক হেন লয় মোর মনে কোন রাজ। আইল বনে ছলে পাছে পাড়য়ে বিপাক । বাল্যে বিড়ম্বিল বিধি না ধরে জায়ার শুদ্ধি সমরে পাঁড়ল রাম-শরে বালী পাঁড়িল রণে রী পুর রাজ্য সনে সুগ্রীব হইল নৃপবরে । সুগ্রীব বানররাজ করিল রামের কাজ সবংশে মজিল লঙ্কেশ্বর ফুপ্পরার কথ৷ রখ কথোকাল জিয়া থাক না পাঁড়হ রাজার সমর | ফুল্পরার কথা শুন হিতাহত মনে গুনি লুকাইল বার ধানঘরে | রচিয়া ব্রিগাদী ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুন্দ সুখে থাকী আরড়াঃ নগরে ॥ ১৫৫ লইয়া রাজার ঠাট বোঁড় পুর গুজরাট কোটাল ভাবেন মনে মনে নাঞি শুনি সিঙ্গা কাড়। না পাই বারের সাড়া হেতু কিছু আছয়ে গহনে১। শঙ্কা কারয়া মনে নাহি রহে এক স্থানে নিরীক্ষয়ে চণ্গল নয়নে লুকাইয৷ রহে ব্যাধ ূ পাড়ে পাচ্ছে পরমাদ এই চিন্তা করি মনে মনে । দেই কোটাল লাপঝণপ হ্দয়ে অন্তরে কাপ আশ্বাস করয়ে সেনাগণে ধর্যা দিমু কালকেতত ভয় নাহী তার হেতু একেলা ধায় দিমু রণে। ৯২ আপন৷ বুঝাই নারে পরকে প্রবোধ করে ভয়ে অঙ্গ পুলুক পুটল; চলিতে না চলে পা মুখে না নিশ্বরে রা তরাসে কোটাল হাঁনবল। যাঁদ উচ্চস্থল পায় সত্বর উঠিয়৷ তায় আট দিকে করে বিলোকন উভ কার দুই শ্রুত গুজরাটে দেই মতি নিবারয়। বাধ্য-বাজন । কোটালের ভয় দোখ কহে হিত বিশেষ উপায় রচিয়৷ তিপধী ছন্দ হৈমবতী জাহারে স্বহায় ॥ ভাড়ুরদত্ত হইল দুঃখ গান কাঁবি শ্রীমুকুন্দ ১৫৬ বারি গড়ে রহ তোরা আসন কারয়া মোর বুদ্ধে মহাবীরে আনিব ধরিয়।। মোর সঙ্গে দেহ তুমি একটি ব্রাহ্মণ তার হাতে দেহ পান কুসুম চন্দন । রাজা দিয়াছে পান কুসুম প্রসাদ এমন বলিয়া আম ভাগ্তাইব ব্যাধ। ছল-বুদ্ধে দেখিয়া আসি বারের চারত সাড়া নাঞ পাই বেটা করে কোন রীঁত। আপনার দলে তুমি থাক সাবহিতে বীরের বুঁঝিয়৷ কাজ আসিব তৃরিতে। তোমা সনে নিবন্ধ করিল দুই দ্ এহ৷ বই বোঁড়হ পুর হইয়া প্রচণ্ড । ভাড়ুর জুগাতি লাগে কোটালের মনে আপনার ব্রাহ্মণ দিলেন তার সনে । ব্রাহ্মণ সহত ভা জায় সচকিত বাঁরের দুয়ারে গিয়৷ হইল উপনীত । এই দুই তন দ্বার ভাগুুদত্ত জায় দুয়া প্রহার কারে দেখিতে না পায়। চন্ডীমঙ্গল সভয় হইয়। জায় চারি পাঁচ গ্বার রাজলক্ষণ দেখে উদ্যান আপার। সপ্তম মহলে দেখে ফুল্লর সুন্দরী আগে পাছে বাঁস আছে পাঁচ সহচরা । খুঁড়ি খুঁড়ি বলি ভাও; করিল জোহার অঞ্জাল কাঁরয়া৷ বলে কপট র্যেবহার । অভয়ার চরণে মজুক নিজচিত শ্লীকাবকন্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ১৫৭ সুন গ সুন গ খুঁড়ি জেত কার্য ছিল তোঁড় আমি তাহা কৈল সমাধান খুড়া মোর কোথা গ্েল। এই শুভক্ষণ বেল৷ নেকু১ আস্য৷ নৃপাতির পান। নাহ করি নিবেদন কাটালে গহন বন এই হেতু রাজা কৈল রোষ বারের পাকাল্য। দোখ রাজ। [বড়] হইল৷ সুখী বীরে হইল৷ রাজার সন্তোষ । বারের ধনের বাদ বড় ছিল পরমাদ নাবড় কাঁহল রাজস্থান কারল অনেক ন্যায় খাগুল সকল দায় ভয় কিছু না কারিহ মনে । মনে পায় পারতোষ খোময়৷ সকল দোষ বীরকে কাঁরিব সেনাপাঁত গুজরাট জায়গিরী আর দিব মধুপুরি হবে তুমি বড় ভাগ্যবতী । আমার বচন শুন খুড়াকে ডাকিয়া আন মনে কিছু না কারহ শঙ্কা নিজ যাঁদ পর হয় তবে বিপক্ষের ভয় বিভীষণে নাশ কেল লঙ্কা । রথ পান্ত ঘোড়। হাথি যত বুদ্ধ-সেনাপতি “ বীর হইব সভার প্রধান চতুর্থ দিবস ; দিবা গান দিয়াছেন হাথে ব্রাহ্মণ দিলেন সাথে আঁবন্বম্বে কারতে পয়ান। অন্নদাতা বার দ্বামী তাহার সেবক আম মনে না কারহ মোরে আন থুড়া কৈল অপমান তারে মোর পিতৃজ্ঞান তার কার্ষে আমি সাবধান । ঠকের মধুর বাণী একটিত্তে রামা শুনি ধানঘরা কৈল বিলোকন সুচতুর ভাড়ুত্ বুঝল কার্ষের তত বিরচিল শ্রীকাবিকন্কণ ॥ ১৫৮ ভাড়ুর বিলম্বে কোটাল সানন্দে বোঁড়ল বাঁরের১ ঘর গড়ের আড়ন্বর শৃনিঞা বারবর বাহির হইল সত্বর । মুঠাকর ঘায় বীর জুঝে তায় দেখি কোটালের দলে ধারতে জেত জায় মারে মুষ্টি তায়ঃ পড়য়ে অবাঁনতলে । তোজয়া প্রাণভয় রণভীম রণজয় ধারতে ধায় দুই মাল দুই মুঠকির ঘায় দুহে গড়াগড়ি জায় শিরে ঘ৷ হানয়ে কোটাল। কোটালের আগুদল ধাইল গজবল লোহার মুদগর শৃঙডে রুসয়। বীরবর কারল জর্জর মুঠাক মায়া মুণ্ডে। ধরিয়া রণেৎ তুরঙ্গ চরণে মাথায় তুলিয়৷ দেই নাড়া অঙ্গ ছাড়িয়া তুরঙ্গ পাঁড়ল হাথে রহিল ফড়া । ৯৩ করিবর শুণে ধারয়া মুখে মুটকি মারিয়া দিল টান ছাগল শুও ভাঙ্গল মু কাকুঁড় জেন খানে খান। কোটালেরে বারবর মেঘে জেন পানি পসল৷ বাঁজয়৷ বারের গায় পুম্পের জেইছন মালা । ছোড়য়ে খরশর পাছু হইয়। পুনু জায় বীরের বিক্রম দোথয়া নিরুপম অভয়া চিন্তেন মনে ললিত প্রবন্ধে দ্বিজবর মুকুন্দে শ্রীকবিকন্কণ ভনে ॥ ১৫৯ চা্তত হইলা মাতা বসি সিংহাসনে মনেতে ভাবিতে পদ্া আইল ততক্ষণে । কি বুদ্ধি কাঁরব পারা কহ গো৷ উপায় কেমন প্রকারে বাঁর সুরপূরে জায় । বাঁরের সাপের কাল হইল অবসান সুরপু'র না জাইলে ইন্দ্রের অভিমান । বিংশতি বংসর হইল কাল নাঁঞ আর ইহার ভিতরে কর পূজার প্রকার১। এমন বিচার চণ্ডী করি পদ্দা৷ সনে হরিল বাঁরের বলবুদ্ধি সেইক্ষণে। চতুরঙ্গ দলে কোটালিয়! বাঁরে বেড়ে সৈনোর ঠেলাঠোল বাঁর ভূমে পড়ে [বশ বিশ জন তার ধাঁর এক হাত বাঁর ধরি কোটালে স্মঙরে বিশ্বনাথ । গজের শিকল দিয়া বান্ধে মহাবীরে বাথহাতা২ হাথে দিল গলায় জি্জিয়ে। কোটালের হদয়ে উরিল। মহামায়। বন্দী কর্যা মহাবাঁরে কৈল বড় দয়া । ৪6 এমন সময় আসি ফুল্পর। সুন্দরী গলায় কুঠারি বাদ্ধী করয়ে গোহারি। অভয়াচরণে মজুক নিজাচত শ্রকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৬০ না মার না মার বাঁরে নিদয়৷ কোটাল গলার ছিড়িয়া দিমু সতেম্বার হার । চুর নাহ করি কোটাল ডাকা নাহি দি ধন দিয়া গেলা দুর্গ হেমন্তের ঝি। গো-মাঁহষ লহ মোর অমূল্য ভাগ্ার নফর করিয়া রাখ স্বার্মী, আমার । দয়া কুৃলিতার ধনু তিন গোটা বাণ ধন লৈয়৷ তুমি মোর কর পারন্রাণ ৷ বিচার করিয়া দেখ দোষ নাহী কার নিজধন দিয়া চতী বসাইল পুরী । কার নাঁঞ লই রাজকর একপণ নাঁলয়৷ গজিয়৷ রাজা লকু জত ধন। নিশ্চয় বাঁধবে যাঁদ বারের পরাণ এক আসঘাতে আগে ফুল্পরারে হান। তবে সে কারহ বীরে প্রাণবধ দণ্ড বাপের পুণ্েতে মোরেং জাল্য। দেহ কুণ্ড। কুঞ্জরে নাঁদয়৷ লহ জত অ1ছে ধন ধন লৈয়৷ রাখ মহাবীরের জীবন । হাথিশালে হাথি লহ তুরঙ্গ পদাতি যত অস্ত্র আছে লহ যুদ্ধ-সেনাপতি । ফুল্পরার বিলাপ শুনিয়া নিশীশ্বর মধুর বনে তারে দিলেন উত্তর । অভয়াচরণে মজজুক 'নিজচিত প্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ চন্ডীমঙগঙল ১৬১ শুন গো আমার বাক্য ফুল্লরা সুন্দরী আমার শকাঁতি বাঁরে ছাড়িতে না পারি । পরের অধীন আমি নহি দ্বতন্তর লঘু দোষে গুরু দণ্ড করে নৃপবরু । কহি গো৷ তোমার আগে স্বরূপ বচন রাজাকে কহিয়া বীরের রাখাব জীবন । প্রবোধ ন৷ মানে রামা কান্দয়ে ফুল্লরা বাঁরে ধর্যা নিতে হইল কোটালের ত্বরা১ । হাথে বাঘহাথা দিল গলায় জিজর চরণে ডাওুকা 'দিয়৷ বান্ধে মহাবাঁরে | তুলিল কোটাল বীরে গজের উপর চোঁদকে বেছিত সেনা চলিল সত্বর । দক্ষিণে বিজইহাটি বামে গোলাহাট সমুখে মদনপুর সওয়া কোশ বাট । দিন অবশেষ কোটাল প্রবেশে কলিঙ্গে কাঁলঙ্গের লোক ধায় দেখিবার রঙ্গে । বার দিয়া বাঁসয়াছে কাঁলিঙ্গ-ভূপাঁত চাঁরাদগে ভূঞা রাজা শিরে রত্রছাতি। সভা কার বাঁসয়াছে কলিঙ্গ-ভূপাল ডানি ভাগে পুরোহত বিজয় ঘোষাল । বামভাগে মহাপান্র নরাঁসংহ দাস সমুখে পাঠকাসিংহ পড়ে ইতিহাস । রাজার সমুখে বৈসে সুপাওত-ঘটা পীতবাস পারধান ভালে দিব্য ফোটা । নয় পো২ ছয় নাতি আঠার ভাঁগনা গুঁণগণ গায় গাঁত বাজাইয়া বাঁণা। চারাঁদগে রাউত মাহৃত সেনাপাঁত মহলা করয়ে গজ তুরঙ্গ পদাতি । সামস্তের আধপাঁত ন্‌পাঁতির মাম। সভায় বাঁসয়া শুনে কোটালের দামা । [বচার করয়ে রাজা লইয়। সভাজন হেন বুঝ কোটাল 'জানঞা আইল রণ । চতুর্থ দিবস ; দিবা এমন বাঁলতে তথা আইসে নিশাপাতি বীর দেখি কোপে রাজা লোহিত-লোচন ভীষণ ভাষণে কিছু বলেন বচন। অভয়াচরণে মজুক নিজাচত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৬২ কোন দেশে নিবাস নিবস কোন গ্রাম তোমার রাজ্যের কিব৷ রাজাব আখ্যান । কেবা তথা মহাপান্র কেবা আঁধকারী কার তেজ ধর তুমি১ কার আল্ঞাকার । আম৷ নাহী চিন বেট। হইয়া প্রবল আঁচরাতে দিব তোরে অপরাধের ফল । গুজরাটে নিবাস নিবাঁসং চঙীপুর আমার রাজ্যের রাজা মহেশ ঠাকুর । আমি তথা মহাপান্র চণ্ডী অধিকারী তার তেজ ধার আম তার আজ্ঞাকারী । বিচার করিয়া রায় কর মোরে রোষ পরণামে জানবে কালুরত নাহি দোষ। কোন সাধু জনে বাধ পাল বহু ধন মোরে নাহি গোচরিয়া কাটাইলি বন। ধনের গরবে বেটা কর উপহাস কত কত সেনাপতি কৈলি মোর নাশ। ছু'ঞ্তে না জুয়ায় বেটা আত নিচজাতি সভা মাঝে বাঁসয়৷ কথার দেখ ভাতি । কোন সাধু জনে রায় নাহী কার বধ ধন দিয় চণ্ডী মোর বাড়াল্য সম্পদ । তার ধন দিয়। আমি কাটাইল বন নিজ ধন দিয় চণ্ডী বসাইল জন । মোর বোলে অবধান কর নৃপমাণ দোষ গুণ ভাবি জয়া* হেমস্তনন্দিনী | ৫ বারা ময়ীচি প্রজাপাতি পুরন্দর ধেয়ানে চরণ জার না পায় অন্তর । নিচ জাতি ব্যাধকে চণ্ডক। 'দিল ধন এমন কথায় রে পাত্যায় কোন জন । অবিলম্বে এই ব্যাধে দেহ গজতলে এমন বচন জেন কেহ নাঁঞে বলে । দেহ গজতলে রায় নিবারিতে পারি ভৃত্য অপচয়ে আঁধকারী মাহেশ্বরী+ । বেচ্যাছি আপন তনু অভয়ার পায় তোমার তাড়নে কালকেতু না ডরায় । অবধান কর রায় কার নিবেদন জনম হইলে হয় অবশ্য মরণ । য়াজার বচনে গজ আনে মহামত্ত চরণে ধরিয়া নূপে নিবেদয়ে পাত্র । অভয়াচরণে মজুক নিজচিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৬৩ পান্ন মিত্র পাঁওতে বুঝায় নরপাঁত বীরকে বধিতে তার৷ না দেই জুগাতি। রাজার তর্জনে বাঁর নাহী করে ভয় চাঁওকার তরে ভাব আছয়ে হৃদয় । চগ্ডীর চরণ বিনু নাহাঁ ভাবে আন বারকে বাধতে কেহু না দেই বিধান । সভার বচনে রাজা না বধিল বাঁরে বন্দি করা৷ থুইতে আজ্ঞা 'দিল কায়াগারে । দশ বিশ পোতা মাঝি বাঁরে লয়া। জায় একমুখা ঘরখান।১ প্রবেশ করায় । সওয়া৷ কোশ ঘরখানি একটি দুয়ার দিবস দুপরে দেখি ঘোর অন্ধকার | প্রবেশ করায় বারে আহ্ধারয়৷ কোণে শতশত বাঁন্দ জথা আছে পণে পণে। ৮১১৬ বন্দিগণ দেখি বার বলে ভাই+ ভাই উসারিয়। আবারয়া দিবে একটুক ঠাঞ্জি। হাঁড়ি দিয় মহাবীরে কৈল উভমুঞ। চারিদিগে পোত৷ মাঝি দিণ তুষের ধুয়]। জটে দড়ি দিয়া চালে বান্ধে মহাবীরে হাথে বাঘহাথাঃ দিন গলায় জ'ীজরে। বুকে তুল্য দিল পাচ সাঙ্গের পাথর পাথর চাপানে বীর করে থরথর । মনে ভাবে মহাবাঁর বড় পরমাদ ফুল্পরা স্মঙরণ কারি করয়ে বিষাদ । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত প্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৬৪ কান্দে বার রে ফুল্পরার মোহে দাবানল জান শ্বাস জলশয্যা লোচনের লোহে । মুখে গদগদ ভাষ তোর বাক্য না ধার চাওকার অঙ্গার আমি লইনু আপন মাথা খায়্য সুখেতে থাকিতে বাধ বিড়স্বিল দিয়া নিধি কে মোরে দিবেক পদছাযা । জেই কালে মাহেশ্বরী রয়্যাছিল আমার কুগীরে তুমি বৈলে অনুত্তর এই হেতু ছাড়িল আমারে । মজিলাঙ কারাগারে তোম। সমার্পল কারে ফুল্পর। হইলে অনাথনী মাংস বেচ্যা 'ছিনু ভাল [বিবাদ সাধিল কাত্যায়নী । কুলিতার ধনুখান তিন গোটা ছিল বাগ আঁছলাম আপনার দস্তে মনোহর বেশ ধার আমি জুঁড়িলাঙ শর এবে সে পরাণ গেল চন্ডীমঙ্গল কেব৷ চাহে সম্পদ ধন দিয়৷ কৈলে বধ ভগবতী আমারে বিড়ম্বে। স্মঙরে চাওকামন্তু গৃজার বিধানত্ মনে মনে গৃজে ভগবতী তেজিয়।৷ বিষাদমাতি মহাবীর করে স্তুতি হৃদয়ে ভাবিয়া হৈমবতী |, ধন। রাজা রঘুনাথ রূপে গুণে অবদাত রাহ্মণভুমের পুরন্দর হইয়া তার সঙাসদ বাঁন্দয়া চত্তীর পদ বিরচয়ে চন্ডীর কিন্কর ॥ ১৬৫ কএ কালকেতু মাত৷ রাক্ষবার তরে কৈলাস তোজয়া মাত৷ উর কারাগারে । তব ধন হেতু মাতা তব ধন হেতু দগধে কলিঙ্গ-রাজা বধে কালকেতু । কালী কান্ত কপাঁলান কপালকুগুলা কালরান্রি কঞ্জমুখী১ কত জান কল৷। কলিকালে কালুর কলুষ কর নাশ কলিঙ্গে কপট করি রাখ নিজ দাস। খরতর রাজা গে৷ জেমন খুরধার খণ্খও কলেবর করিল আমার । খেদ খণ্ডন কাঁর খল কর নাশ খাঁগয়৷ সকল দুঃখ রাখ নিজ দাস। গিরিজা গণেশমাতা গতি সভাকার গোকুল রাক্ষলে গোপকুলে অবতার । গহন নিগড়ে মাত। দগধে শরীর গলিত করহ মোর গলার জিঞ্জির। ঘোররূপা ঘোরতপা ভীষণভূষণাঃ ঘনরব কৈলে মাত। ঘণ্টার বাজন। । চতুর্থ দিবস; দিবা ঘনশ্বাস বহে মুখে গায় কাল-্যাম ঘরের সেবক মাত৷ স্মঙরে তুয়৷ নাম । চঞ্চল চেতন। আম চল্লিশ বন্ধনে চোরের চরিন্র হইল চাঁওকার ধনে । চড় চাপড়ে মাত৷ চণ্ড কর চুর । চরাচরগাঁত গ বন্ধন কর দৃর। ছল ধাঁরয়৷ রাজ। গে৷ ধনের ছলে বান্ধে ছলে ধন দিয়া বধ বিনি অপরাধে | ছেদন করবে রাজ। তব ধন ছলে ছায়৷ দিয়া রাখ মাত৷ চরণকমলে । জগতজনাঁন জযা জীবের জীবাঁন জন্ম-জরা-মৃত্যু-হরা জযান্ত জনান । জটাজুটমযাঁ জয়া যাা-শিরোম ণি জীবের জীবন জন।দন-স্বাহায়নি । ঝোর ঝঙ্কারে মাত৷ বধিতাঙ পশু ঝগড়৷ করাইলে মাত। 'দিয়৷ নিজ বসু। ঝনঝন। সম মাতা হইশ তব ধন ঝটিত করহ মাত৷ ঝগড়া মোন । টানাটান করে চুলে ধারয়৷ কোটাল ট্গ টার্গি কেহ হানে কেহ করবাল। টিটকার টাকার পাইল পরাজই টঙ্কার দিয়। মাত৷ উর কৃপামই | ঠক নাহ ঠাকুরাণি নহি ঠকসুত ঠাকুর করিয়া চোর কৈলে তরাশ্ত। ঠনঠন করিয়া রাজার ঠাট বিদ্ধে ঠাঁঞ দেহ ঠাকুরাণী চরণারাঁবন্দে । ডাখিনী হাকিনী মাত দক্ষের নন্দিনী৩ ডমরুমধ্যম-মাঞ্জা ডিগুম-বাদিনী । ডাক। নাহি দি নহি ডাকাতের সাথি ডাক চরণে কেন দুহাথে চামাতি। চ. মণ১৩ ৯৭ ঙ্গ ঢাঙ্গাতিঃ নহি আক্ষ্টীর জাতি ঢোল ঢামালি নাহি কার পরের যুবাঁতি। ঢেক৷ মারে একবারে শত শত জন ঢালিল তোমার পদে আপন জীবন । নিগুণ। ন্রিবিধি তার ননিলক্ষতারিনি ত্িশান্তরাপনি তুমি তরঙ্গনাশিনী । তুরিতে আরয়া লহ তাপিত তনয় ঘ্রাণ হেতু তুমি তোমা বিনে অন্য নয়। থর থর করে প্রাণ পাথর চাপনে থরহরি কাপে প্রাণ রাজার তাড়নে। থাকিয়। রাজার আগে বান্ধ। কর দূরে স্থির করি স্থাপ মোরে গুজরাট-পুরে । দুর্গা দুর্গ পরা তুমি দক্ষের দহত। দনুজদলনী মৃতিৎ তুমি বেদমাতা । দুর্জয় দক্ষিণাকালী দুরিতনাঁশিনী দুঃখী দাসে দয়৷ কর দুঃখ-বিনাশিনী । দূর ঝর দুর্গা মোর অকালমরণ দয়।৷ কর হরদারা৬ দীনের শরণ । ধীবণ ধারণাবতী" ধারের ধারণা ধারণী ধারিণী ধাতধরের” নন্দনা । ধাঁরয়া ধনের ছল ধরাপাতি বান্ধে ধন দিয়া বধ মাতা বান অপরাধে । নিধি নিত্য নারায়ণাঁ* নগের নন্দিনী 'নিশৃষ্ভনাশিনী নীলা নীলপতাকিনী । নিগমনির্ণয় নিতা নিদ্রা নিসুতিরনী নৃূপতিনিলয় ভয় ভাঙ্গহ ভবানী । নন্দগোপসুতা হইয়া বাখিলে গোকুল নৃপের সভায় মাতা হও অনুকূল । পশুপাঁত প্রজাপাঁত পুরুষ প্রধান পুরন্দর পল্মযোনি পাশী পারণাম । প্রাতাঁদন পুজে তোমা প্রকাতিরাপণী পশু সম ব্যাধ আমি 'কিবা পৃজ। জানি১, ৪৮ প্রণতবংসল৷ তুমি পরম মঙ্গলা । পাদপদ্ে দেহ স্থণ ভকতবংসল৷ | ফার কাঁর পশুগণে ফাদ পাতি বনে ফল বেচি ফল খাই কিবা কাজ ধনে। ফণিফণামাণ দিয়া ফের দিলে মোরে ফেকাটুড়ি১১ খাইয়া ফুল্পরা পাছে মবে। ুদ্ধিরূপা বন্ধহর৷ সংসারবান্ধিনী বন্দিশালে হও মাত। বঙ্ধনহারণী | বান্দ জিউ হৈল জেন জলে জলবিত্ব বান্ধা দূর কর মাতা জগতের বন্ধু। ভয়ঙ্কর৷ ভয়হর৷ ভৈরব ভারতী ভয়ঙ্করী ভয়হারী ভীম ভগবতী । ভদ্রকালী ভূতমতী ভমরিডুষণী ভূ্গতিভবনে ভয় ভাঙ্গহ ভবানী । মৃগাঙ্গ-মুকুটমৌলি-মস্তক-মালিনী মহিষমার্দনী মধুকৈউভনাশিনী । মহামেঘাসন৷ মেরুমন্দর-মান্দরা মহামায়। মহোদরী মাধবী ইন্দিরা। মহেশের অর্ধতনু মরালগমনা মধুপুরে কৈলে মধুবংশের মানন। । যক্ঞযোষা যুগন্ধরা যজ্ঞ-বিনাশনী যশোদানান্দিনী জয়া যমুনা যামিনী । যমের যাতন৷ হৈতে জর্মের যাতনা যশ গাই যাঁদ পুর আমার কামন।। রঙ্ক হইয়া আছিলাও রঙ্গবধে রত রত দিয়া রঙ্গরম করাইলে হত। রাজ। সনে কৈল রণ রক্ষা নাহ আর রাষ্কণী করহ রক্ষ1 তবে সে নিস্তার । লুটি গেল ঘর লগ্ডতও হইল গাঁর রক্ষা নাহি মাতা মোর জথা আছে নারী। পান্প। কারয়। সাথে চন্ডীমঙ্গল লোভমতি পাপা আমি লম্পট পাতকী লোভে লক্ষ ধন লৈয়া আমি কৈল কাঁ। ুদ্ধরূপা বুদ্ধিহরা বন্ধনহারিণা বাসুদেব-সহচরী নন্দের নন্দিনী । বিসঙ্কটে কৈলে বসুদেবের উদ্ধার ব্যাধের বালকে ডাকে ঝাটে ক্কর পার। শঙ্খনী শূলিনী শিবা শবরী শঙ্করী শর্বাণী শর্বরী শান্তরূপ। শাক । শশিশিরোমণি শৈনাশিখর-বাসনী শরণদা শান্তমূর্তি উরহ আপনি। যড়গুণ-ধারিণী শিণা শঙ্খিনী রাপণী সতী সত্যা পনাতণী সংসারমরণী । সবলোকে গায় তোম। সেবকবংসলা সেবক তাঁরতে উর সবমঙ্গলা । সকপ দেবের তুমি শারস্বরুপণী সরণ মাগয়ে কালু রক্ষ নারায়ণী । হার হর হরণ্গতের তুমি মৃণ হারয়। নন্দের ভয় রাখলে গোধুল । হরজায়া হৈমবতী হেমন্তণন্দিনী হয় অনুকূল মাত। হরেব ঘরণী। ক্ষোণর হরিলে ভার দৈত্য কেলে ক্ষীণ ক্ষেনেক উঁরয়৷ রাখ দাস আমি দাঁন। ক্ষমা কর ওগবতী ক্ষয় কর এর ক্ষেমহ দারুণ দোষ রক্ষ খেমস্করা । মহাবীর কৈল যাঁদ এত স্্ুতিবাণী। কৈলাসে জ।নিল মাত। হেমন্তনান্দনী। আঁবলম্বে কারাগারে উারলা অভয়া করগে। করুণাময়ী শিবরামে দয়া১২ ॥ ১৬৬ ' াঁরলা চর্তী কালঙ্গেতে বীর বাঁর ডাকে ঘনে ঘন চতুর্থ দিবুস ; দিবা হইয়। চণ্ডী অনুকূল নাহি বান্ধে কেশমূল সঙ্গে চলে জত দানাগণ। অবতার কারাগারে বন্ধন দেখিয়া বারে চাওক হইল লজ্জাবতী নযনে গলয়ে নীর কালকেতু মহাবীর কৈল তার চরণে প্রণাতি। কৈল দেণী বারে আশ্বাসন কার চণ্ডী অবলীলা ুতুষ্কারে খসাল্য বন্ধন । াঁহতে তোমার মুখ পাঁড়। পালে দুবদৃষ্ দোশে বুকের ঘুচাইল শিলা মনে বড় লাগে দুঃখ গ্রভাতে উঠিয়। রাজা আরোপিব গুজরাট দেশে । কারব তোমার গ্‌জ। শুন পুত কালকেতু পশুগণ বধ হেতু আঁঙ্লা তোমার আতিপাপ নাশ গেল এইকালে রাজার বন্ধনশালে মনে না করিহ অনুতাপ । ঘুঁচিল বন্ধন-ক্লেশ প্রভাতে চলিবে দেশ পিত৷ হইয়। পালা প্রজাগণ নিজ হস্তে নরপাতি ধাঁরব ধবল ছাতি প্রসাদ কারব নানা ধন। ৮াগকা বলেন জত নহে সে বারের মত পালাইতে চাহে ঘনে ঘন রাঁচয়। ৫রপদা ছন্দ গান কাঁি শ্রীমুকুন্দ মনোহর পাচালি রচন১ ॥ ১৬৭ কালকেতু বলে মাতা শুন ভগবতী কাথ ভার্গা। জাই যদি দেহ অনুমতি । দিআ কুলিতার ধনু তিন গোটা বাণ ধন লৈয়৷ তুমি মোর কর পরিত্রাণ । ৯৪ বন্ধন ঘুচায়য৷ তুমি চলিবে কৈলাস প্রভাতে উঠিয়া রাজা কারব বিনাশ । চাঁওকা বলেন বাছা না জাব আগার জাবদ তোমারে রাজা ন৷ করে পুরগ্ধার। এ বোল বাঁলয়৷ চন্ডী কাঁরল গমন ডান বামে দেখল অনেক বন্দিগণ । কৃপাদৃষ্টে সভাকার ঘুচাইল বন্ধন দুয়াবে বসিয়া আছে পোত-মাঝিগণ । তবক বেলক হাথে কামান কৃপাণ ডান বামে [শঙ্গ কাড়া টমক নিশান । কোপে আঁখ-গার চতী দিল দানাগণে একেক মাঁঝরে মারে তিন তিন জনে । নুচী কর্য। ঢাল খাণ্ড নিশেক সকল মৃছ'ত হইয়৷ মাঝি পাড়িয়। বকল। চাওক &লল নরপতির বসাত চৌষটি জগানি সঙ্গে চামুগ্ডা-মুরাঁত। গলে মুণ্ডমালা শোভে বিকটদশনা কাঁত-খর্পর হাথে লোহতলোচন৷ । বিভীষিকা অনেক দেখাল নৃপবরে সপন কহেন মাত। বাঁসয়৷ সিয়রে। রাজা বলাইযা বেটা কর অভিমান আমার সেবক বারে কর অপ্প জ্ঞান । তোমারে বিয়া বাঁরে ধরাইব ছাতা ফুল্পরার দাসী হইব তোমার বনিতা। অনেক সপন দেখাইল৷ মহামায়া মহাপান্র পুরোহিতের সিয়রে বাঁসয়া । রাম রাম স্মরনে উঠিল নৃপাঁত গ্রণ সঙ্গে গগনে রাহল। ভগবতী । প্রভাতে কারিয়।৷ সভ৷ রাজা দিল বার সভে মেলি স্বপ্নকথ৷ করয়ে বিচার । সভাজন শুনে রাজা কহেন সপন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ১০০ ১৬৮ আজি দেখিনু নিশি ভীষণ সপন পরমাই-বলে মোর রহল জীবন । দোঁখল ঠৈরবী ভীমা লোচন বিশাল কাঁত-খর্পর হাথে গলে মুওমাল। হান হান করিয়া আমার ধরে কেশ চৌধাঁট্র যোগিনী সঙ্গে ভয়ঙ্কর-বেশ। পিঠে লম্বমান তার শোভে জটাভার শঙ্খের কুগুল কানে ভীষণ আকার । পারধান সভাকার লোহিত বসন বাকসানা ফুল জেন দুদিকে দশন । বিভীতি ভূষণ শোভে সভাকার গায় চৌঁদকে জ্বাগাঁণগণ নাচিয়া বেড়ায় । গজ ঘোড়। কট্য। পিয়ে রুধিরের পান। নাচয়ে অবনিতলে প্রেত ভূত দানা । মড়ার আতের কেহ করিয়৷ উত্তার অঙ্গুলেতে আরোপিলা কেশ কুশাঙ্গুরি । তিলক করয়ে দান৷ হাড়ের চন্দনে তর্পণ করয়ে কেহে। কপাল-ভাজনে । মোরে গাধ৷ চাপাইয়া দিয় ওড়মাল পশ্চাতে ঢোলের বাদ্য বাজয়ে বিশাল । [পছেতে যোগিনীগণ দেই তাড়াতাঁড় নাগ পায। কেহে। মারে কসাঞ্জির বাঁড়১। গজ [পিঠে কালকেতু করে আরোহণ শিরে ছত্র ধরে ইন্দ্র আদি দেবগণ। আসিস করয়ে জত দেব-ধাষিগণ চোঁদকে মঙ্গলধ্বান শঙ্খের বাজন। রাজার বচন শুনি বলে সভাজন নর নহে কালকেতু ব্যাধের নন্দন । তার অপমানে চণ্ডী কৈল বিড়ন্বন। অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ চন্ডীমঙ্গল রাজার বচন শুনি সভাজন বলে বাণী কোপে রায় কৈলে অনোচিত আজকার শেষ নিশি সপনে দৌখল বিপরীত । অবধান কর নরপতি ঠক নাবড়ের বোলে এই হেতু সপনে দুর্থাতি। তমঙ্গল রাশি রাশি দেবীব কিঙ্করে মাল্যে সপনে তোমার ভয় বীর দেখিল জয় পুরস্কার কাঁরল ৬বানী দেখল অদ্তুত জত তাহ। ধা নাঁলব কত আর কিছু মনে নাহি গু'ণি। আপনার দিয়া ধন বসাইল নগর গুজরা/ চপ্তী কাটাইল বন আক্ষটীর কীবা দোষ মিছা কাজে কৈলে রোধ ভণড়,দত্ত কৈল এত নাট । কোন ছার বনভূমি তার তরে রায় তুমি মিছ। কাজে কারলে আবেশ ছোড়ান কাঁরয়া আনি কাহিয়৷ মধুরবাণী বাঁরকে পাঠাও নিজ দেশ । রথ তুরঙ্গম দোলা সকন্বাথ ঝারি থাল৷ বিডাষয়। ভূষণ চন্দনে বারের করিয়। পূজা গুজরাটে কর রাজ। চ্ডকা সন্তোষ হব মনে। পাত্রের বচন শুন নৃপতি হৃদয়ে গুণ কারাগারে কারল পয়ান বীরের বন্ধন ক্ষয় শ্রীকবিকঙ্কণ রস গান ॥ দেখি রাজা সাবম্ময় ১৭০ কারাগারে জাইতে রাজা চাহে ঘনে ঘন বন্ধন ঘুচান দেখে ব্যাধের নন্দন । চতুর্থ দ্বিবস ; দিবা রাজ। দেখি কালকেতু করিল উত্থান প্রণাম কারিতে রাজ্য না দেন বিধান | ভাই ভাই বাল রাজা কৈল আঁলঙ্গন প্রেমকথা৷ আলাপে বাঁসলা দুইজন । রাজ বলে বাঁর ক্ষেমা কর অপরাধ চণ্ডীর সেবক তুমি কর আশীবাদ । তুম মহারান্গা আমি ব্যাধের তনয় কেমনে আশিষ আমি করি মহাশয় । এই িবেদন আমি করি তুয়া ঠাঁঞ জেই ভিঙ্ষ। মাঁগ আমি তহা জেন পাই । বান্দঘর মহাবাঁর মাগ্য। নিল দানে বসন চন্দন দয়া কারল ছোড়াণে। অবান পোটাইয়া কান্দে গে।তা-মঁঝণণ র/জারে কাহল সব নাশর সপন । অঙ্গদ কঙ্কণ হার কুসুম চন্দনে পুরস্কার কৈল রাজা ব্যাধের নন্দনে । গজ তুরঙ্গম রথ ছিল বর-দোল। চন্দন-চৌখুরী দিল ঝারি কণ্ঠমালা । অভিষেক করাইল বসাইয়া খাটে আজি হইতে কালকেতু রাজা গুজরাটে । নিজ হস্তে ভালে টীকা দিল নরপাঁত জত ভুঞ৷ রাজ। মেলি ধরাইল ছাতি। গজাঁপচে চাপাইয়। দিলেন বিদায় অনুরজে১ নরপাত পাছু পাছু জায়। প্রবোশতে পুরে শোনে নারীর কুন্দন অনুমূত৷ হইতে চণ্যাছে রামাগ্ণ। বিরস বদনে বীর জজ্ঞাসে বারত। বাঁরকে গঞ্জিয়। তার৷ কহে কটু কথা। জেই জন মৈল তোম৷ সনে কার রণ অনুমৃত। হইতে জায় তার নারীগণ । কান ভর) শুনে বার নারীর কান্দনা কিঙ্ঈ-রাজার জত নাশ কৈল সেনা । লজ্জাভয়ে মহাবাঁর হেট কৈল মাথা একভাবে স্মঙারিল হেমন্তদুহত। | ১৪১ অভিপ্রায় বারের বুঝিয়া ভগবতী আকাশল্রিমানে বাস বলেন ভারতী । জিয়াইয়। দিব আমি জত সেনাগণ কহিল ভারতী নাহা শুনে অন্যজন । শনি বীর অনুমূত। কৈল নিবারণ মরা জিয়াইয়। দিব ব্যাধের নন্দন । ভগুসুতে ভগবতী কৈপ স্মঙ্রণ আইপ ভূগুসুত জথ বীর কৈল রণ। পথ সঙ্গে রাজা গানছু পাছুজায় বীএসঙ্গে রণস্থণে বৈমে দণ্তরায় । কৌতুকে বাঁসয়। দু'হে কহে মৃদু বাণী শীকাবকঙ্কণ গান অপূর্ব কাহনী ॥ ১৭১ উসনা কুশগাণি চান্তয়। সপ্জীবনি মান্ত্ুত কৈন কুণশজল [দলেন জার অঙ্গে উঠিল সেই মহাবল। জলের পাই ঝস উশনা দিল জণ মাথে করিয়৷ অঙভঙ্গে উঠিয়৷ দেই পাশ কাঁছিয়। বারবাণ কারয়। হান হান উঠিপ ধার খাও হাথে। উঠিণ পদাতি ধরিয়৷ ঢাল কাতি কালে কেহ িশোচন পদ।তি কেহ কান্দে কে মোর নিল শরাসন । আছিনু কাচা নিন্দে আনই কন্দ শির পড়িল জেই বাঁর জঁড়ণ তার কন্দ মুণ্ডে পাইয়। কুশজণ উঠিল গজবল পোহার মুদগর শুণ্ডে। একের শুন কথা থাইল লোচন-যুগলে [গিধিনি পায়া। মাথা ১৪২ নৌতন হইল তার লোচন-যুগ আর কেবল মন্ত্রের বলে । কাটা অশ্ব জত পাঁড়ল শতশত আনই কন! মাণহ শির শুরের কুশনীরে গধ্ধাণ পাইল শবার। গিগাপ উদ্গাবে কণিঙ্গ-রাজদেন। জঁতেক গেছে হান। জল দিল সাকার গায় মার মার কার বন ধাইণ সেনা সব রাজা পুনু নিবারিশ তায । রাজার খাও দেণ্য জিযাইয়া সর্ব সৈন। উশন। চালিল। বিমানে মঙ্গল বাচ্যগীত শ্রবণে সুরচিত শ্রীকাবকঙ্কণ ভণে ॥ ১৭২ ধনা ধন্য বীণের চরিত আনন্দিত দণ্ডবাধ মৃত সেন৷ প্রাণ পায় সভাজন পুলুকে পৃরিত। উঠিল সকল সেনা নৃত্যগীত সেনার জীবনে শঙ্খ বোন পড়া খোল রাজা আনন্দিত-মন। শিঙ্গ| কাড়৷ ঢাক ঢোল বাজয়ে দুন্দুভি বাদযাগণে । মঙ্গল-চামর ধরে মধূব মধুর স্বরে গায়নে মঙ্গল গায় গীঁত পাঁরিয়া উজ্জল যত কাখেতে পুরাণ-পুথি হাতে কুশে নাচে পুরোহিত । বীরকে বিদায় দিয়া নিজ সেনাগণ লয়া। জায় রাজা কলিঙ্গ-নগরে গুজরাটে জত লোক ঘুচিল সভার শোক বরকে দেখিতে আগ্‌ সরে । চণ্ডীমঙ্গল করি শুভক্ষণ বেল। চাঁড়য়া পাটের দোলা প্রবেশ করয়ে বার বাসে সন্্রমে ফুল্পরা আসি পির বদনশশী দেখি আনন্দিত রস ভাসে । বুপন-মণ্ডণ আদি প্রজা আইসে যথাবিধ নান ধন দিয়া কৈল নুতি হাটে বাচতরে মাঠে নাটগীত গুজরাটে সার সু্থব হইল মাতি। দথিজে বীর দেই দান সভাকার সাধে মান চন্দন কুসুম নানা বাসে ভাঙ্দত্ত হেন কালে শ্রীকনিকঙ্কণ রস ভাষে ॥ আসয়। মধুর বলে ১৭৩ ভেট লৈয়া বীঢকলা সাক বাইগন মুলা ভাড়ুদত্ত করিল পয়ান বাঝযা কার্ষের তত্ত নিবেদয়ে ভাড়ুদত্ত পণ্চাং কারয়া অবজান। তাড়ুদত্ত করয়ে জোহার প্রণাম করিয৷ বাঁরে ভা নিবেদন করে খুড়া দেখি ঘুঁচিল আন্ধার । ছ'়্া ক্লে বসি মুখে মৃদু মন্দ হাসি ঘন ঘন দেই বাহুনাড়া জেমন সুজদয় আম সকল জানহ তুমি অনোচিত নাঁঞ কার খুড়া। আছিলে গোপত বেশে প্রকাশ করাইল৷ দেশে সম্ভায করাইল নৃপমাণি নজ হস্তে নরপাঁত ধারল ধবল ছাতি ভূঞা রাজ৷ মধ্যে তোমা গণি । কোথা বার পাইল। ধন ঘুসিত সকল জন পরিবাদ ছিল লোক মাঝে চতুর্থ দিবস দিবা প্রকাশ করাইল আম বড় সুখ পাইবে তুমি খ্যাত হইব কাঁঙ্গ-সমাজে । জখন দুপর নিশা কার রাজা সন্ভাষা আনেক বুঝাইনু নরপতি ধাঁরয়৷ রাজার পায় খাগুল সকল দায় খুঁড় জানেন আমার প্রকৃতি । জেই আপনার হয় সেই কত পর নয আপ্ত কার জান্য ভাওুত্তে রাজার সভায় বাণী আমি সে কাঁহতে জান ভাড়ুদত্ত বাদত জগতে । খুড়া তুমি জে হইতে বন্দি আমি অনুক্ষণ কান্দি বহু তোমার নাহি খায় ভাত' দোঁখয়৷ তোমার মুখ পাসারল সব দুঃখ দশাঁদক হইল অবদাত । হইয়া রাজের চুড়। আমাবে রাজ্যের লাগে ভার সিংহাসনে বৈস খুড়া থাকহ পুরাণ শুনি প্রজ৷ জানে আমি জানি নফরের কর পুরস্কার । মহামশ্র জগন্নাথ হদয়মিশ্রের তাত কাবচন্দ্র হৃদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই গীর আদেশ পাই বিরচিল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ১৭৪ ভাড়ু রে আপন দোষে খাইলি আপনা রন বাঁড় কর দয়া চল জে ফাফর হইয়৷ ছাড়ি গুজরাটের বাসনা । তোর বড়১ বাপ ছিল লোকমুখে জগতে বিদিত তোর বাপ রাজ্য খ্যাত মুখদোষে শ্রবণবার্জ ত। অকালে লোটায়্য মইল নাম উজাড়দত্ত ১৪৩ জখন আঁছলে পূর্বে রী পুন্ন ম্নাভারে অকালে কুড়ায়্য। খালি হাটে জগতে নাহিক জ্ঞাতি জাতে/র নাহিক গ্মিতি কায়েস্ত বলাও গুজরাটে । হইয়। তুঁঞ রাজপৃত নিচ হয উচ্চ অতিলাধ বলাসি মৌলিক দত্ত সেবকেব জুগা নস খুড়া খুড়া বঙ্গ কস কুলের মাহমা কৈণি নাশ । খুড়া হই আমি নিচ জাতি তাতে তোমার কিবা ক্ষাত ধনগবে ঝল দাম শিয়রে কাঁশঙগ-র।য় গোহার করিয়। তায় খা1রজ করাব গারি ঘব। কাহারে ছাড়ব ঘব বাঁড় তোম। সনে কিবা পায় মুসহাতে জত হয় সদরে গাঁনঞা দিব কড়ি । শুঁনঞা ভার বোল কালকেতু উতরোল কোগে বলে আক্ষটি-নন্দন মুণ্ডাইমা ভগড়ুর মুণ্ডে অভঙক্ষ ভাঁরয়৷ ভূণ্ডে দুই গালে দেই কালি চুন। নিকটে নাপিত ছিল বীরের ইঙ্গিত পাইল করে ধার ভখড়ুরে নসায় রিয়া বিপদীছন্দ গান কার শ্রীমুকুন্দ হৈমবতী জাহারে সহায় ॥ ১৭৫ ভখড়ুদত্ত কপট প্রবন্ধে জত বলে শুন্যা বার কোপেতে অনল হেন জলে । দেহকম্প হইল বারের কাপে শরাসন ভীষণ ভাষায় কিছু বলেন বচন। বলে বীর ছাড় ঠকা কপট চাতুরি কলিঙ্গ-রাজার শান্ত কি কাঁরতে পারি । ১০৪ কাঁহতে জানিস ঠকা কপট প্রবন্ধ হৃদয় পুরিত বিষ সুখে মকরন্দ | ইবে সে জানিল জে নাবড় ভখড়ুদত্ত আপনি করিলি নঠ আপন মহত্। ইনাম বাড়ি তোল। ঘরে তুম কর ঘর গান্য বাড়ি নাহি দেহ লভ্য কলন্তর । এখন বলাসি বেটা রাজার নফর গোঁরব চানঞা দেহ তিনসাঁন কর। নগাঁরয়া মেলয। তোর! মার বেড়াবাড়ি জাবদ না দেই ঠক। তিনসান কাড়। হরিয়৷ নাঁপতে বীর দল আখ-ঠার মনের সন্ত।পে খুর আনে বোড়া-ধার | দড়াইয়৷ হৃকম পায় নাঁপতে৭ সুত ভণডুর ভিজায় মাথা দিয়া ঘোড়ার মত । আনাত থাকিতে পদতলে ঘষে খুর দেখিয়৷ ভগড়ুর প্রাণ করে দুরদ্ুর | দূরে হইতে শুনে খুরের ৮ড়চাড় নাক মোচলায়১ তার উপাঁড়ণ দাঁড়। বসন ভিজিয়া পড়ে শোণিতের ধার ভশড়, বলে খুড়া ক্ষেমা কর একবার । পাচ ঠাঁঞ ভশড়ুর রাখল জট ছল নগরিয়া মোল মুখে দেই চুনকালি। পুরের কোটাল ভণড়ুর শিরে ঢালে ঘোল পাছু গাঙ্ছু ভাওুঁর বাজায় কেহ ঢোল । মালাকার আনা গলে দিল ওড়মাল টিটিকার দেই জত নগরিয়৷ ছাবাল। পুরের বাহির করে মার্য৷ বেড়া বাড়ি কাল হাওড পেল্য। মারে কোণের বহুড়ি। ভাড়ুর লাঘবে বাঁর দুঃখ ভাবে বড়ি কুপা কার পুনধার দল ঘরবাঁড়। নুতন মঙ্গল কবিকঙ্কণে ভণে ঠক নাবড় এই কথা কর্ণ পাত্যা শুনে ॥ চন্ডীমঙ্গল ১৭৬ গুজরাটে কালকেতু খ্যাত হইল রাজা কত ভূঞা রাজা মোল করে তার পূজা । কোন রাজ। সম নহে করিতে সমর পরাজয় পায়্যা অন্য রাজ৷ দেই কর। গুজরাটে রাজত্ব করিণ বহুকাল অবনিমওলে যশ বাড়িশ বিশাল। পুষ্পকেতু নামে পুন্ন হইল মহাবল নানাবদ্যাবিশার? জেন বৃহল্নলং । বিহান বিকাল বাঁর গুনেন পুরাণ কৃষ্ণের করেন পূজা হয়/ সাবধান । পরিপূর্ণ হইল তার অভিশাপ-কাল ইন্দ্রের হৃদয়ে শোক বাড়ল বিশাল । কৃতাঞ্জজি পুরন্দর কবে নিবেদন গানক শমন আদি জত দেবগণ । অভয়াচ রণে মজুক নিজ চিত প্লীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৭০ প্রণাম করিয়া হরে ইন্দ্র নিবেদন করে নীলাম্বরে হও কৃপাময় আঁভশাপ-কাল গেল মুন্তর সময় হইল তবু সুত না৷ আইল নিলয় । দুঃখমতি পুলোমজ। কোলে তার নাহি প্রজা কত নিত্য শুনিব কীন্দনা না দেখিয়া নীলাম্বর শোকে হয়া জরজর বিধি দিল বিষম যন্ত্রণা । বালকের অল্প দোষ গুরু কৈলে অভিরোষ সীপ তারে দিলে নিদারুণ আপন সেবকজনে আন নিজ নিকেতনে নীলাম্বরে হও সকরুণ । চতুর্থ দিবস দিবা শুন শশিশিরোমণি অবিরত মনে গুনি কবে মোর আসিব কুমার আনাইব নিজ কাছে আর কিবা রোষ আছে মিথ্া। নহে বচন তোমার । শুন্য মোর সুরলোক আঁবরত বাড়ে শোক ঘর বন নীলাম্বর বিনে আন্ধার ঘরের বাতি বধ্‌ মোর ছায়াবতী কবে আর পাব দরশনে | ইন্দ্রের বচন শুনি প্রবোধিল শূলপাণি পার্বতীর হাথে দিল পান চল প্রিয়ে গুজরাট নীলাস্বরে আন ঝাট শ্রীকবিকঙ্কণ রস গান ॥ ১৭৮ শঙ্করে করিয়৷ নতি আবিলম্বে ভগবতী পন্না সঙ্গে গুজরাটে জান গিয়া অবশেষে নিশি বীরের শিয়রে বাস কহে চণ্ডী দিব্য-গেয়ান। ক্বপ্ন কহেন ভগবতী শুন পুন নীলান্বর আবলম্বে চল ঘর সঙ্গে লইয়৷ জায়া ছায়াবতী । ন৷ স্মঙর নীলাম্বর পিত৷ তোর পুরন্দর পুলোমজ! তোমার জননি ব্যাধকুলে অবাস্থিতি শাপে গুজরাটে স্থিতি ঝাটে চল তোঁজয়৷ অবান। বাপ দেবতার রাজা কাঁরত শিবের পূজা পুষ্প জোগাইতে নীলাম্বর দৌঁথ ধর্মকেতু ব্যাধ বাধ হইতে গেল সাধ তেই আইলে অবনি ভিতর। হইয়া বড় আকুল অভারে তুলিলে ফুল শ্রীফল কণ্টক ছিল তাঁথ চ* ম.-১৪ ১৪৫ হরের মস্তুকে ফুটে হর তোকে মনে টুটে শাপে গুজরাটে অবস্থিত । তেঁজিলে অমরলোক মাতা তোমার করে শোক মৃতসুত। জেমন কুরারি তোরে বড় মায়৷ মো নয়নে গলয়ে লে। ?খে জাগিল 'বিভাবরী । কেবল চণ্ডীর বর দুহে হইলা জাতিস্মর মাত৷ পিতা স্মঙারিয়৷ কীন্দে রচিয়া ত্রিপদী ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ মনোহর পাঁচালীর ছন্দে ॥ ১৭৯ রাম রাম স্মঙরনে পোহাইল রজাঁন শষ্য হইতে শুনে বার কুকিলের ধ্বনি । নিত্য নিয়ামত কর্ম কার সমাপন প্লান করি পরে বীর উত্তম বসন। পৃষ্পকেতু রাজা হব উঠিল ঘোষণ ঘরে ঘরে নাটগাঁত বালিশ বাজন। পুণে রাজ্য দিব বার মনে অভিলাষ শৃভক্ষণে করাইল গন্ধ-অধিবাস | আপুনি আইল তথা কালিঙ্গ-ভূপতি মহাপাত্র পরিবার কারষা সংহতি । আটাঁদকে বাজনায় হৈল গণ্ডগোল ঘন বাজে বীরকালি শিঙ্গ৷ কাড়া ঢোল। অভিষেক করাইল বসাইয়। খাটে আজি হইতে পুষ্পকেতু রাজ৷ গুজরাটে । দূত দিয়৷ আনাইল জাত ভূঞা রাজ। একে একে কালকেতু করে তার পূজা । নিজ হস্তে ভালে টিকা দিল নরপাঁতি জত ভূঞা রাজ! মেলি ধরাইল ছাতি । হেনকালে রাজাগণ করে নিবেদন কৃপাময় বাঁর তুমি দেবতানন্দন। তোমার তনয়ে কর আমা সমর্পণ তোমার সমান জেন করেন পালন । এমন শুনিয়৷ বর রাজার বিনয় সভাকারে সমর্পিল আপন তনয়। রাজাগণ মেলি সভে জোড় কৈল হাথ চন্ডীর সেবক তুমি কর আশাবাদ বুলন-মগ্ডল আদি জত প্রজাগণ পুজ্পকেতু হাথে হাথে কৈল সমপর্ণি। স্বর্গ জায় বলি বাঁর উঠিল ঘোষণা ঘরে ঘরে গুজরাটে উঠিল কান্দন৷ । হয় জুঁড় মাতুলি জুগায় পুষ্প-যান তাহে চাঁড় নীলাম্বর দ্বিজে দেই দান । বামভিতে রথে বৈসে ফুল্লর৷ সুন্দরী পরমরূপসী রাম জেন বিদ্যাধরী। পন্নাবতী সঙ্গে চণ্ডী আগে জান রথে সিদ্ধাগণে নমস্কার বার কৈল পথে । অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৮০ পুষ্পক বিমানে চাপ হৈল বার দেবরূপা লুকাইল মনুষ্যমুবাত ভূমে থুইয়৷ কীর্তি শেষ নীলাম্বর চলে দেশ সঙ্গে লয় জায়৷ ছায়াবতী | বায়ু-বেগে রথ জায় উভমুখে প্রজ৷ জায় পুষ্গকেতু উভরায় কান্দে গুজরাটে জত নারী কান্দে বুকে ঘা মারি কেশ বাস কেহ না বান্দে। জায় বীর বোমপথে মাতুলি সারথি রথে জিজ্ঞাসেন মায়ের বারত৷ কেমন আছেন তাত কহ সুরপুরের বারতা । ব্র্দশজনের নাথ চণ্ডীমঙ্গল অন্য জত দেবগণ কহ তার বিবরণ একে একে সভার কল্যাণ কেবা দেবতার রাজা করেন শিবের পৃজা কোন দেব কুসুম জোগান । মাতুলি কহেন কথ৷ কল্যাণে আছেন মাত। কল্যাণে আছেন পুরন্দর প্রাণে প্রাণে সভে ভাল তোমা দেখা হব আল এবে পুষ্প জোগান প্রবর । ঘরের কথায় মতি রথ চলে লঘুগাঁত উত্তারল মন্দাকিনী-জলে চণ্ডীর আদেশ পায় সঙ্গে ছায়াবতী জায়। প্লান দান কৈল কুতৃহলে । প্লান কার নীলাম্বর ধরে পূব কলেবর নাটুয়।৷ ফিরায় জেন বেশ বিমানে দম্পতি চড়ি বিমান গগনে উড়ি আগুবাড়ান১ আইল সুরেশ । ইন্দ্র আগ্ন দণ্ধর জলাধিপ নিশাকর ঈশান কুবের সমীরণ শিরে দিয়৷ দুর ধান নিছিয়। পেলিল পান প্রসাদ কারিল দেবগণ । দুর্বাস৷ জয়মুনি ্হ্ষপুন্ন বীণাপাণি বাঁসষ্ট আঙ্গিরা পরাশর কুশহস্তে লয়্যা দান উচ্চন্বরে বেদ গান প্রসাদ করিল নীলাম্বর । অশেষ দুরিত-খণ্ড নীলাম্বরে লয়্য৷ চণ্ডী চলিল৷ হরের সান্নধানে কপাদৃষ্টে হর চান নীলাম্বরে দিল পান পুনুরুপি কুসুম জোগানে । ধন্য রূজা রদ্ুনাথ রূপে গুণে অবদাত ্রাহ্মণভূমের পুরন্দর হইয়৷ তার সভাসদ বন্দিয়া চ্ডকা-পদ বিরচয় চণ্ভীর কিন্কর | চতুর্থ দিবস; দিব! ১৮১ পুনের বারত৷ পায়্য৷ শচী আনন্দিত উঠানে খাটাল্য১ পাট-কথুবারং ঠান্দা। আরোপল তাঁথ বিডীষত পূর্ণ ঘট রঁপল কদাল তু নৃত্য করে নট। পুরবধ নিছিয়া পেলিল শচী গান শৃতক্ষণে গৃহে দুহে কারণ পয়ান। নীলান্বর হইতে হইল গুজারঃ প্লকাশ সাঙ্গ হইল দেবার গৃজার হীতিহাস। ১৪৭ ্রীলোকের গৃজ। নিতে দেবী কৈল মাত গরাবতী সঙ্গে মাতা করেন জুগত। ডাকয়।৷ আনিল রত্মালা শাশমুধা পরমরূপসী কনা ইন্দ্রের নৃতাকাঁ। পান দিয়৷ ভগবন্তী দিলেন আরতি তোমার দেখিতে নাট চান পশুপতি। তাগুব দৌখতে দেবা দিল নিমনুণ ইন্দ্রের সভায় নৃত্য দেখে দেবগণ। অভয়া চরণে মনজত্ুক নিজ ঢিত শ্লীকবিকঙ্কণ গান মধুয় সঙ্গীত ॥ চতুর্থ দিবস ১৮২ ধার মনোহর লীল৷ নাচে রাম৷ রত্রমালা তাণ্ডব দেখেন দেবগণ তাঁতাঁন তাঁতাঁন তান মুদ্গ মন্দিরাধবনি ঘন বাজে 'কাক্কণী১ কন্কণ। হইয়া মুনি সাবহিত নারদে গায়েন গীত বাণাগুণে তবল অঙ্গুলি দোহার তুরে গায় টমক খমক বায় পিনাক বাজায়২ কুত্হলি। ভুবনমোহন কাছে ধুপদ তাও নাচে তালভঙ্গ দোঁখ রোষে বলেন ভধানী গ্রান মুনি রাধার বিষাদ যৌবন গরবে নাচ হইয়া আঁভমানী । মুখর নুপ্র শালি দেন ঘন করতালি ধর্সভায় নাচ হইয়া খলমতী দেবগণ বলে সাধুবাদ । মানব হইয়া জন্ম চল বসুমতী ূ কনকের গাড় রি রা রী টিরিরসা হেন বাক্য বৈল যাঁদ সবমঙ্গল৷ হির৷ নিলা মতি পল কলধোত কষ্ঠমালা িযিনাছি চা দোষ অনুরূপ কেন নাঞ দিলে সাপ পাঁত তাঁড়ত বর্ণে হেম-মুকলিক। করণে চণীর চরণে ধার করয়ে বিলাপ । কেশ-মেঘে পাঁড়ছে বিজলি অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত রজত পাসাঁল ছটিং পরে দিব্য তুলাকাঠি॥ শ্রীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ বাহৃবিভূষণ ঝলমাল। দেবীর আদেশে স্মর হাথে ফুল-ধনুশর হানে বীর সম্মোহিন বাণে রঃ অবশ হইল অঙ্গ কৈল তার তাল ভঙ্গ গান চণ্ডীর চরণে ধার কাদে স্বর্গ-বিদ্যাধরী অচৈতন্য হইয়া মায়া-মোহে ধুলায় ধূসর কান্দে কেশপাশ নাগ বান্দে রর বসন ভিজয়া গেল লোহে। তালভঙ্গ হেল রাম৷ লাজে হেটমথ কে দল দারুণ সাপ কিবা কৈল গুরু গাগ জত দেবগণ সভে হইল মনদুঃখি। আজি মোর না পোহাল রজনি চতুর্থ দিবস? নিশা রোযজ্জুত ভগবতী কেমনে এড়াব সাপবাণী । ফেমন দারুণ বেলা আইলাঙ তাওবশাল৷ হাছি জেঠি ন৷ পাঁড়ল বাধ বিধাতা দ্ডল মোরে ফিরিয়া না গেলাও পুরে জীবনে রহিল বড় সাধ। ভাই বন্ধু মাত পিত। জেবা মোর আছে যথ৷ উাঁদ্দঘশে সভারে পরনাম পাঁরহর আম বাল দিহ মোরে জল্যঞ্জাল জীবনে বিধাত৷ হেল বাম। হৈল মোর অবনাতি ক্ষেমঞা সকল দোষ হও মোরে পরিতোষ কৃপাময়ী কর অবধান অবনিমগুলে জাব তোমার কঙ্করী হব কারব পৃজার অনুষ্ঠান । শুনিঞা তাহার কথ। হদয়ে পরম বেথা সানুকম্পে বলেন বচন রাঁচয়। ব্রিপাদি ছন্দ পাচালি করিয়৷ বন্দ বিরচয় শ্রীকাবকন্কণ ॥ ১৮৫ আশ্বাস কাঁরয়া তারে বলেন পাধতী মোর আশীবাদে মণ্ডে হবে পুন্নবতী । ইছানি নগরে ঘর নাম লক্ষপতি হবেক তোমার মাত৷ নাম রল্ভাবতী । প্রথম বাঁনত৷ তার আছয়ে লহন।১ দ্বিতীয় বনিত৷ তার হবে সুলক্ষণা | এত বাক্য বৈল যদি সর্বমঙ্গলা দেখিতে দেখিতে ভস্ম হৈল রল্নমালা । রিতুবতী হইয়াছে রস্ত। বাইনানি বৈ যাঁদ হইল তার অষ্টম যামিনী । নবম দিবস রিতু হইল অবশেষ তার গর্ভে রত্লামাল। করিল প্রবেশ । ১৪০৯ প্রথম মাসের গর্ভ জানি ব৷ না জানি দুই মাসে জত লোক করে কানাকানি। ন্িতিয় মাসের বেল৷ ভূতলে শয়ন চার মাসে করে রাম মুৃত্তকাভক্ষণ। পাঁচমাসে রন্তাররতীয় না রুচে ওদন ছয় মাসে কাঁজ করঞ্জায় গেল মন। সাত মাসে বন্ধুগণ দেই তারে সাদ নয় মাসে প্রসববেদনা অবসাদ । সাধুর কিন্করী ডাক্যা আনিল পারাথ শুভক্ষণে হইল তার কন্যা রূপবতী |, ফৌড়ুয়া চালের খড় জালিল আতুঁড় গোমু স্থাঁপয়। দ্বারে পুজে ষফ্টি-বুড়ি । হুলাহু'লি দিয়া কইল নাঁড়র ছেদন [তিন দিনে কইল রাম৷ সুপদ্য পণচন। ছয় দিন ষষ্টিপূজ। কইল জাগরণে আটকলাইয়া তার কইল আট দিনে । নত্ব। কৈল নয় দিনে মনের হরিষে একুঁষিয়।৷ কৈল তার একইষ দিবসে । খুলন৷ বাঁলয়া নাম থুইল পূর্ণমাসে মাস দুই তিনে দিল উলটিয়া পাশে । সাত মাসে রস্ভাবতী করাইল ভোজন আট মাসে মুস্তা জিনি হইল দু দশন। বংসর পৃর্ণিত হৈল ফিরে স্থানে হ্থানে দুই বংসর গেল প্রমোদিত মনে । এক দুই তিন চারি বংসর জবে জায় কনাগণ সঙ্গে রাম ধূলায় খেলায় । করিল শ্রবণবেধ পণ্ণম বারষে মনোহর বেশ কন্য। দিবসে দিবসে ৷ অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকষ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ১৮৬ দেবীর ব্রতের তরে দেবকন্য বান্যাঘরে রস্তাবতী সফল মানিল ১১৪ দিতে নাঞ উপম। খুলনা রূপের সীম বদনে চান্দের করে আল। খুলনা বাড়ে দিনে দিনে হইল বংসর ছয় বরন লখিল নয় শোভা করে অলঙ্কার বিনে । মনের সফল মানি আনি ভূঙ্গারের পানি মল দূর করে রল্তাবতী জতনে বুঝ|ইয়৷ তায় অভরণ দেই গায় রূপের মঞ্জবী কলাবতী । ঠাচর চিকুর ছান্দে টাঁলিঞ৷ করবী বান্ধে বোঁড় নব মালতীর ফুলে সরস কুসুম ছাড়ি দ্রময়ে করবী বোঁড়ি মধুলোভে মত্ত অলিকুলে। [জিনিয়৷ রাঁবর ছটা কপালে সিন্দুর ফৌটা অধর জিনিঞা জব৷ ফুল রূপে শরুধনুবর নয়ান তাহার শর রহে রবি শাঁশ তার কোলে । গলে সতেশ্বার হার শোভে নানা অলঙ্কার করে শঙ্খ শোভে তাড়বাল৷ কুচ দাড়িম্বের ফল; মাঝা মুগরাজ তুল উরুযুগ জিনি রামকলা । গুরুয়া নিতন্ত ভরে নানারূপ বেশ ধরে চলে রাজহংসের গমনে চরণে মঞ্জীর বাজে স্র্গাবদ্যাধরী সাজে যৌবন বাড়য় দনে দিনে । নথে তম করে নাশ রস্ভার সফল আশ যৌবন দেখিয়া কলাবভী থুলন৷ শিশুর বেশে শ্রীকাবকঙ্কণ ভাষে চণ্ডীপদে কারয়া প্রণাত ॥ ১৮৭ খুলনার রূপ দৌথ বলে রপ্তাবতী আবার খুলন৷ কন্যা আন্ধারের বাতি । চন্ডীঙ্গলম খুলনার রূপে কারে 'দিব গ তুলনা ডাকিয়া রাঁবর রথ রাখয়ে খুলনা । বংশধর পুর্ন মোর সোমাঞ১ কোঙর খুলনার রূপে হইতে আল করে ঘর। এত দিন নাহি দেখি এ নব বরণ কামরূপা মোর ঘরে বাড়ে কোন জন । লক্ষপতি বলে মোর সফল মানস নাহ জান কন্যা মোর হয় কার বশ। কুলে শীলে দোষহাঁন লয় জেই জন তার ঘরে কন্যা যাঁদ কার সমর্পণ । জেন কারবর-দন্ত কনকে জাঁড়ত অকণক্কে দিতে সুতা এমত উচিত । অকুলীনে দিলে সুতা থাকয়ে গঞ্জন লোকে অপযশ গায় সুস্থ নহে মন । এমন বিচার সাধু করি সখা সনে সভার সাহত যুন্তি করে দিনে দিনে । আট দিগে ভাল বর খোজে লক্ষপাঁতি অবিরত তাই চিন্ত। সুস্থ নহে মাত। হেনরূপে দিনে দিনে বাড়য়ে খুল্লনা১ শ্রীকাবকঙ্কণ গান উজানি বর্ণনা ॥ ১৮৮ উজানি নগর আত মনোহর বিরুমকেশরী রাজ। শোল উপচারে নিত্যে পূজা করে কৃপ। কৈল দশভূজ। । জেন রঘু রাজা হেন পালে প্রজা কর্ণের সমান দাতা যুধিষ্টির বাণী শুকদেব জ্ঞানী১ প্রসন্ন মঙ্গলা মাত। । উজানির কথা গড় চাঁরাভিত৷ চৌদিকে বেউড় বাশ চতুর্থ দিবস ; নিশা রাজার সামন্ত যাঁদ ফিরে এক মাস পাথরের গড় কীঙগুর৷ পুরট-শোভ্য পাথর খিচনি চোঁদিকে মানিক-আভা । নগরে নাগর ভূষণভীষত গার জতেক পুরুষ পাঁড়িত বসম্ত-বায় । বিক্ুমকেশর তথা আছে সদাগর রাঙ্জার আদেশে জারে সুখী নৃপবর । লষ্যা শিশুগণ পায়রা উড়াতে জায় সঙ্গে শিশু শত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় ॥ ১৮৯ পায়রা উড়াতে জায় সাধু ধনপাতি জত নগাঁরয়। শিশু লইয়া সংহতি । মুকুন্দ মাধব বনমালী নারায়ণ রামকৃষ্ণ জগন্নাথ ভরথ লক্ষণ । কংসার গোপাল হারি শ্রীধর আজত হলধর জন দর্ন কুল-পুরুহিত । দামুদর গদাধর সুবল সুদাম হারহর পীতাম্বর আর শিবরাম । মথুরেশ হষাকেশ শ্রীপাত শ্রীনিবাস পুরুযোত্তম শ্যাম আইল কৃষ্ণদাস। অনস্ত অচ্যুত অক্কুর ভূগুরাম চতুভূ'জ চক্রপাণি আইল। বলরাম । ন৷ পায় অস্ত উচ্চতর বড় জেন দিনমুনি জেন বিদ্যাধরী মনোহর-বেশ মহা ধনুধর২ ধনপতি বৈসে বাণিকনন্দন লৈয়৷ পারাবত ১১১ মুরারি দৈত্যারি গোবিন্দ ভবানন্দ পায়রা উড়াইতে হইল সভার আনন্দ । জত নগরিয়া সদাগর লয়া। সাথে জতনে লইল সভে নিজ পারাবতে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৯০ লয়্যা নিজ পারাবত চলে ধনপাতি দত্ত উড়াইতে নগরিয়া সাথে কাঁর শুঙক্ষণ বেলা চড়িয়া৷ পাটের দোলা কিন্কর পঞ্জর লয়যা সাথে । খুঁড়মারা পাকশালিক৷ সেত।১ নেতা নয়নসুকা করট তামাট২সুলক্ষণ সৌজ মকরজ গোল৷ সাঙল৷ সুবল৷ সুভাসনা । পবন্য৷ বাতাস] হাস জাগ সন্দুরিয়া রণজয় কল্যান) কুমুদ কুখা ঘিরানঃ দিঘলমুখ। মনসুখা রাঙ্গ। দেউল্যা । সঙ্গ বাঘা রণজিত। সিন্কুমাট্যা গাঙরা। পাখরা সালিক। দোষল খড় পালা বিটল৷ রাঁতভূর৷ । গলাছিনা ডণসা-আখি নানাবর্ণে লইল পায়ার কারয়৷ চাওক ধ্যান রঘুনাথ নৃপাতিকেশরা ॥ [সখাঁরঅ। ঘনবোল। নটহ৷ খটনা বুড়া ডখসা কয়র কপালচিত৷ আভাঙ্গ। পবনমেড়া। বাকনা বকরেখি শ্রীকবিকঙ্কণ গান ১৯১ সখ৷ সঙ্গে ধনপাঁত পায়র৷ উড়ায় সদাগর আনন্দ পৃর্ণতমাতি ১১২ ছাড়িয়া পাটের দোলা একে একে করে খেলা পাঁড় থুয়া ভূষণ অন্বর | সঙ্গে ওঝা জনার্দন খেলে নগরিয়াগণ ধনপতি করিল নিশ্য় পায়ার রাখিয়া হাথে উড়াইব পারাবতে আগে জার আইসে তার জয় । নগরিয়া শিশু মেলি দেই ঘন করতালি সেতারে উড়ায় ধনপাতি তার পাছু ভাই জত উড়াইল পারাবত বাম হাথে রাখি পারাবতী উড়াইল পারাবতে দৈবে গগনপথে তাড়াতাড়ি 'দিলেক সয়চান পায়র৷ পরানভয় গগনে সুস্থির নয় আট দিকে কাঁরল পয়ান । ইছানি নগর পথে সেত৷ ধায় অন্তরিক্ষে উভমুখে ধায় সদাগর কাটা খেশচ। ভুকে পায় উ্ধ্বশ্বাসে সাধু ধায় সঙ্গে দনাই দ্বিজবর । পায়ারি রাখিয়৷ করে সেতা বলি উচ্চশ্বরে উভমুখে ডাকে ধনগতি পগার খন্দক খান৷ উলু কাস॥ নল বেন। নাহি সাধু করে অব্যাহতি । নাহি সাধু জায় পথে দনাঁঞ৯১ পাঁওত সাথে পাছু পাছু জায় অবহেলে সাতপাচ সখি মেলি খুল্লন৷ থেলায় ধু পারাবত পড়ল অঞ্চলে । পায়রা বসনে ঢাঁকি চোৌঁদিকে নেহালে সথ জায় রামা আপন ভবনে সদাগর জায় পাছে পায়রা তাহারে জাচে শ্ীকবিকঙ্কণ রস ভনে ॥ ১৯২ ধনি সুন্দার তোহে 'দিবেদন করি পারাবত লৈয়৷ মোর প্রাণ কৈলে চুরি। চন্ডীমঙ্গল অমূল্য পায়রা মোর জানে জগজন লুকাইয়। পায়রা রাখ ঢাকিয়া বদন। পারাবত দিয়া মোর রাখহ পিরিতি নহিলে জানাব রাজা বিক্রম ভূপাতি। সাধু ধনপতি আমি বাঁস উজবান রাজায় প্রজায় মানে বিদিত,অবনি | বানতা-জনের ঠাঁঞ্জ নিতে নারি বলে পরান বান্ধিয়া মোর রাখ্যাচ অণ্চলে । পাঁরচয় পায়্য৷ বলে খুল্পন৷ সুমতি জেঠার জামাতা মোর সাধু ধনপাঁতি। ইসত হাসিয়৷ রাম করে পারহাস পারাবত হেতু সাধু ছাড় তুমি আশ । আজিকার মত ছাড় মাষ১ অনুরোধ আপন। আপান সাধু করহ প্রবোধ । সুজন হইয়া কর খল তাড়াতাড় উভমুখে ধাব সাধু জেমত আহিড়ি। প্রাণভয়ে পায়রা মোর লইল শরণ প্রাণ দিয়া রক্ষ। কার অনুগত জন । দৈবে দিল পারাবত নাহি করি চুরি কি কারণে কর সাধু কপটচাতুরি। তুমি হে রাজার সাধু কে তোমার টুটা পারাবত লবে যাঁদ দ্যতে কর কুটা। পরিহাস ধনপাতি বুঝে কাধ্যগতি এই কন্যার পিত৷ বটে সাধু লক্ষপাঁতি। দনাই পাত সনে করেন জুপ্বাত শ্রীকবিকন্বর্গ গান মধুর ভারতী ॥ ১৯৩ এমন শুনিঞা সাধু তরুতলে বৈসে নগরে কন্যার কথা মানুষে জিজ্ঞাসে ৷ লোকমুখে শুনে সাধু খুল্পনার কথা সাধুর হদয়ে লাগে কামশর বেথ। । চতুর্থ দিবস নিশা দনাই পণ্ডত সঙ্গে কারন বিচার সম্বন্ধ কারয়া কর আমার উদ্ধার । এমন শুনিয়। 'দ্বিজ সাধুর বচন ত্বর৷ কার যান লক্ষপাঁতর ভবন । লক্ষপতির বাড়ি জবে গেলা পুরুহিত দেখি লক্ষপতি তারে হইলা হরাষিত। পাদ্য-অধা দিয়া দিল বাঁসতে আসন প্রণাম কয় বলে নিজ নিবে্দেন। পিত৷ সুত দুঁহতা৷ করয়ে পরন।ম জিজ্ঞাসা করয়ে দ্বিজ সবাকার নাম । বলে লক্ষপাঁত এই কুমার মইআই র/মব শ্রীহরি এন্জ দুই ভাই। এইত দুহিত৷ মোর খুন বৃপিণী ইহার খেলার সাঙ্গ পাঁচটী ভগিনী । ইহা শুনি িজবর বলে অভিরোধে কোনি বা আইনু সাধু তোমার নিবাসে১। বসন দক্ষিণা বাদ নাঁঞ দিলি দান ব্যবহার ঘুচাণ্যে সন্দেশ গুয়া পান। এত অনুযোগ শনি সাধু লক্ষপৃতি কর-জোড়ে অনুনয় করে ওঝ৷ প্রতি। এই কন্যার আমি নাহ দিল বিভা সম্বন্ধ করহ গুরু কুল বিচারিয়া । কত বর আইল সন্বন্ধ নাহ কৈল দেখ্য এতদিন আছে কনা৷ তোমার আঁপিক্ষা । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৯১৪ শুন হে অবৃধ লক্ষপাঁতি বার বংসরের সুতা তোর ঘরে আস্থিতা+ কেমনে আছহ শৃদ্ধমৃতি। গা/ বলে মোর বোলে অবধানে কর অবগাঁতি হৃদি কর এই কালে ৮" ম.-১৪ ১১৩ আমার বচন শুন যাঁদ নাহী নেহ পণ তবে কন্যা করাব মুকতি । সপ্ত বংসরের কনা বিভ। দিলে হয় ধন্য তার পুত্র কুলের পাবন আহরিয়। বর আন কহিয়৷ মধুর বাণী পণ |বনে করিব সমর্পণ । নবম বংসরে যাঁদ বর পাই যথাবিধি তনয়৷ করিয়ে সম্প্রাদান তার পুর দিলে জল সুরলোকে পাই স্থল [পগিতলোকে হয় বহুমান । ন। বুঝায় কেহ তোশা গত হইল দশ সম৷ তথাপি না৷ হৈণ কনা।দাণ পরবেশে একাদশে হয়ে মদন বৈসে নবনস হখ এক স্থান । ন৷ করি সে কর্ম ভাল এগার বংসর গেল অপযশ কাঁরলে সণয় দ্বাদশ নংসর বেল। রজন্বল। হয় বালা পুবুষেরে নাহ করে ভয়। পৃষ্পক জাবদ নয তাবদ পুরুষে ভয় নাহি বহে তাহার কামন। বর দোঁখ আঁভরাম যাঁদ করে কন্য৷ কাম পায় 'পিত নরকে যন্ত্রণা । দ্বিজের বন শুনি উচিত কারব ব্যেহার লক্ষপাতি বলে বাণী সপ্তগ্রাম বর্ধমান বর ভাল কুলবান মুবুন্দ রঁচিল গীত সার ॥ ১১৫ শন লক্ষপাঁতি সদাগর জত আছে গন্ধাবান্যা একে একে দিব গন্য খুল্পনার যোগ্য নাহা বর। যেব৷ চাদ সদাগর তার পো আছে বর বাস জার চস্পা১ নগরী ১১৪ মনসার সনে বাদ হৈল নান। পরমাদ জাতিনাশ কৈল বিষহরি। বর্থামানে ধুস দত্ত তারে জানে ষোল সতত মহাকুল বান্যার প্রধান বাসুলীর প্রাতদন্দীং [বষালাক্ষী কৈল অপমান । দ্বাদশ বংসর বান্দ মহাস্থান সাতগা তাতে বৈসে রাম দা তার শুন কুলের বাখান মড়ায় পুরিয়৷ বাঁড় বাস। দয়া লয় কাড়ি তার বাস শ্মশান সমান । হার দত্ত বড়সুলে তার সম নহে কুলে রাজ৷ তার কেল অপমান ফতেপুরে রাম কুও সেই বেটা নুন্যা ৬ও সেহ নহে তোমার সমান। কর্জনাতে হরি ল৷ নাহী পোষে বাপ মা প্রভাতে না লই তার নাম ভালুকীর সোম চন্দ দাক্ষাপথে শূলী তার বাম৩। জেবা বানা। আছে যথ। সভে হয় দোষের আকর গঙ্গার দুকুল পাশে খুল্লনার জুগ্য নাহী বর । তোমার কন্যার মত কুলে শীলে রূপে গুণঝান্‌ 'দ্বজের শুনঞা কথ। শ্রীকাবকঙ্কণ রস গান ॥ সে বড় কপট মন্দ জানি সভাকার কথা জতেক বণিক বৈসে বর ধনপাঁত দত্ত লক্ষপাতি হেট মাথ৷ ১৯৬ আমার বচনে সাধু কর অবগাতি তোমার কন্যার জুগ্য বর ধনপতি। গোঁড়ে বিখ্যাত জার স্থান উজবানি সাধু বৌন্ত ভূপাঁত-সভায় আগমানি ৷ চন্ডীমঙগল জেন রূপ তেন গুণ উত্তম ব্যেবহার দেব দ্বিজ গুরু১ ভন্ত শুদ্ধ সদাচার২ । তার অনুরূপ নারী থুল্পনা রু'পণী মদনের রাঁত জেন ইন্দ্রের ইন্দ্রাণী । সাধক পুরুষবর গোঁরবরণ পাঁরণত সুচতুর ভব্যলক্ষণ। আঁধক কাহব কিব৷ অবিজ্ঞার 1 জারে কন্য। দিয়াছে তোমার জ্যেষ্ঠ ভাই । ঘটকের মুখে শুনি বরের কীরতি সম্বন্ধ প্রসঙ্গে সায় দিল লক্ষপাতি। ব্রাহ্মণের সহিত লক্ষপতি জত ভনে কপাটের আহড়ে সকল রন্ত৷ সুনে । স্কামী গার্জিয়া রাম৷ করে অভিমান অভয়ামঙ্গল কানকঙ্কণ গান ॥ ১৯৭ প্রাণনাথ কোনি হেন দিলে অনুমতি হিতাহত মনে গণ কেনি ঝয়ে করাবে দুর্গাতি। পড়া সুন্য হইলে শিশু কন্য। দিবে দারুণ সাঁতিনে লহনারে নাঁঞ জান করুণ৷ তোমার নাহী মনে । তোমারে বুঝাব কী লহন৷ ভাইয়ের ঝি যাঁদ তুমি দিবে তারে সত৷ কেনি কৈলে হেন কাজ সয় করিলে লাজ লোক মাঝে ন৷ তুলিবে মাথা । খুল্পনা বান্ধিয়া গলে ঝশপ দিব গঙ্গাজলে নাহী দিব দারুণ সাতিনে দুরত্ত ঝিয়ের মোহ লক্ষপাতির ধাঁরয়৷ চরণে । নাহী লব কনা। পণ বায় করি নিজ বসু হেন বাক মুখে আন নয়নে গলয়ে লোহ্‌ চতুর্থ দিবস নিশ। না গুনিলে হেন কথা একাচার ভূখিল বাঁঘনী বিচারে হইয়। অন্ধ পদ-গলে "দিয় বন্ধ ভেট দিলে খুল্পন। হরিণী । দু তিন সতিন জার বিফল জীবন তার দিন ব্যের্থ না জায় কন্দলে গামার বচন ধর আনিএ॥ প্রথম বর জেন কন থাকে অশ্লজলে । জে ঘরে লহলনা সত ন-জুত জার ঘর আনিঞা এমন বর বিলম্বে করিবে কন্যা দান কন্যা পাবে কুতৃহল তুমি পাবে দানফল লোকে গাব অতুল সম্মান । ন্তার শানঞা কথা তিন আধ নাঁঞ বোথা শুন প্রযে আমার ঝটন |০পাও দ্বিজের সঙ্গে বাঁসয়৷ কথার রঙ্গে গণাইপাঙ ভবিষ্য গণন | ণক কাহপ মোরে দিবে দ্বিতীয় বরে বিচারয়ে বিধবা-লক্ষণ এত যাঁদ হইল গাত দিল রন্তা অনুমতি বিরচিশ শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ১৯৮ সম্বন্ধ প্রসঙ্গে সায় দিল রস্তাবতী নিমন্বুয়া জামাতারে আনে লক্ষপতি । বসাইল জায়া তারে লোহিত কম্বলে কেহ জল দেই কেহ চরণ পাখালে । আহড়ে থাকিয়। রস্ত। জামাত৷ নেহালে আইয় সুইয় আনিতে বিজয় দাসী চলে ত্রা হেতু নগরে নগরে জায় চেড়ি সৈ সাঙ্গাতিন ডাকা। জয় আনে বাড়ি বাড়ি। অমল। বিমল৷ চাপা কমলা ভারি ্র্ণরেখা পর্লাবতী রতি কলাবতী ।১ ১১৫ বল্পভা দুর্লভা রস্ত। সুভদ্রা যমুনা ভবানী তুলসী রানী শচী সুলোচনা । হির৷ তার৷ সরম্কতী মদনমঞ্জরী কৌশল্যা বিজয়৷ গোরা সুমন সুন্দরী । যশোদ। রোহিণা রাধা রুচী কাদস্বরী চিন্রলেখা সুধা চন্দ্রা সীতা মন্দোদরী । ত্বরা হেতু সভাকার বিপর্জয় বেশ আম্বাইল কেশভার ন৷ সম্বরে বেশ 7 এক চক্ষে কজ্জবল নুপুর এক পায় অর্থাকেশ মা্জ কেহো লঘুগাতি জায় । এক চক্ষে কোন জন দিয়াছে অঞ্জন এক বর্ণে কর্ণপূর ত্বরায় গমন । [শিশু কান্দে দু্ধ দতে নাহি করে মোহ কোন কোন আইয় চলে হাথকাখে পো। কড়িয়া জাঙ্গালে আইয় দিল বাহু-নাড়৷ আক্ষের কটাক্ষে ভাঙ্গি আনে সব পাড়া । সাধুর মন্দিরে সভে দিল দরশন পাদ্য অর্থ্য দিল রষ্ভা বাঁসতে আসন । বর দেখ্য। আইয়গণ আনন্দে মোহিত প্রশংসা প্রসঙ্গে নাচাঁড়ি গাব গীঁত। অভয়াচরণে মজজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৯০ সভে বলে খুল্পনার বর মিল্যাচে ভাল মদনমোহন রূপে ঘর করাচে আল । ১ এক যুবতী বলে সই মোর কর্ম মন্দ অভাগিয়৷ পাঁত মোর দুই চক্ষু অন্ধ । কোন দেশে দুঃখিনী নাহিক মোর পারা কোলে কাছে থাকি তবু সদাই করে হারা । আর জুবাঁত বলে পাঁতির বজত দশন সাক সুপ ঘণ্ট বিনা না করে ভোজন। ১৯৬ দ্র বেঞ্জন কাবা জেই দিন বান্ধি মাবযে পিঁডাব বাড়ি কোণে বস্যা কান্দি। আব জুবাতি বলে সই গোদ। মোব পতি কোযাজবেব ওষধ সদাই পাব কাঁতি। ভাদ্রমাসেব পাকুই বড দুববাব গোদে তৈল দিতি কত তুলিব নাকাব। আব যুবাঁত বণে মোব গ্কামী বড কানা আনেব সংসাব ভাল মোব অন্ধজনা | ধাবে ঠোব কই কথা দিনে পাঁতিব সনে বান্র হইলে সুষা। থাকি পশুব শ্মনে । এক জুবাতি বলে সই মোব কর্মেব দে|ষে খাট ভাতাব ঢঙ্গা মাগু দেখ্যা লোক হাসে। এক বমণি বশ আমি কৈন কোন কাজ আব জুবতি বলে মোব মুডে পড়ুক বাজ । এক বমণি বলে আম মন্দাব জাব আব বমি বলে গঙ্গাসাগবে মাবিব। এক বমাঁণ বলে আমি নাহ জাব ঘবে আব যুবতি বলে মোব প্রাণ কেন কবে। আইযব মিসালে বুড়ি ছিল এক জন ঝাডিযা ঝুঁডিযা বুডি বান্ধিল লোটন। পোষেব হয্যাছে পো তাব হয্যাছে ঝি পোবোগ তৈলে চুল পাক্যাছে বযেষ বটে কি। বৃপে গুণে নাতিনী সুন্দবী আছে খাব হেন ববে বিভা ঘা বাখি নিজ কবে। বব দেখ্য। আইযগণ খায মনকলা ধনপতি দত্তে সাধু দিল ববমালা । কুসুম চন্দন চুযা কবিয। ভূষিত সদাগব আইসে ঘবে কাঁরয। তুবিত। বাঁচা মধুব পদে একপাঁদ ছন্দ শ্বীকবিকঙ্কণ গাঁত গাইল মুবুন্দ ॥ ২০০ দোথ বুগ্কপ্ন বহু স্কন্দে৯ ডানি আখি বাহু [নিবস্তব কবে মনঃকথ। চন্ডীমঙল শৃনিঞা লোকেব মুখে শেল জেন বাজে বুকে প্রভু দিব নিদাবুণ সতা। কহ দুা জীবন উপায কানে তোব দিব হেম চন্তহ আমাব ক্ষেম জেমনে সম্বন্ধ ভাঙ্গ। জাম । খ.ডা হয্যা দেই সত কাবে বা কাবব আভিমান কাবে কব দুঃখকথ। বব মবণতাপ হযে বাহল সাল সৈযেবে কবহ সাবধান । গাঃণ। উড্ভাবাব প্যাজ গোল! প্রু৬ 1জ কাজ জপ এসব বাবতা সহ্যস্ক শির্ণয হইল ব সে হন মৈণা হবি হাব বিঃখ বিধাতা । একলা সাধব দাঝ। আছিশাঙ সতম্তণা নিতে দিতে আগুন গৃহিণী [বিধাতা আমাবে বাম মন পোডে শোকেব আগুনি । দাবানদে জেন বন গবে নব ধন-ধান শোকানলে পোডে মন আখিজল নিবাবিতে নাঁবি। গ্কামী দিব অনা জনে সণ্য কাঁবিযা ঘবগাবী । কাঁবলাও খাট পাড়ি, দুঃখ বাঁহল মনে বহু ব্খ কাব কডি সকল্লাথ নেহালি পামাঁব কুমকুম কস্তাবি গুযা কাবে দিব মান্দিব মশাবী । বন্ধনের অনুবোধে চন্দন কুসুম চুষা দুবলাব পবাবাধে লহন৷ বসই স্থানে জায সদাগব আইল বাসে হৈমবতী জাহাবে স্বহায ॥ শ্রীকবিকঙ্কণ ভাষে ২০১ লহন| লহন। বাল ডাকে সদাগব আভমানে সাধে রাম। ন। দেই উত্তর । চতুর্থ দিবস ঃ নিশা ইঙ্গিতে বুঝিয়। লহনার অভিমান কপট প্রবন্ধে সাধু লহনা বুঝান । রুপ নাশ কৈলে প্রিয়ে রন্ধনের শালে চিন্তামাণ নঠ কৈলে কাচের বদলে । ম্লান কারয়া শিরে ন৷ দেহ চিরুনি রৌদ্র নাহি পায় কেশে শিরে বিদ্ধে পানি । অবিরত এ চিন্ত৷ অন্য নাহী গণ রদ্ধনের শালে রূপ নাঁশলে পাদ্রনী । বারষা বাদলে আনলে দিতে ফু কপূর তাস্ুল বিনা সুখাইল মুশ। ধূমজুত আনলে সদাই চক্ষে লো দর্পণে বদন দেখ চক্ষে বাতঃ খো। ম।সি পাস মাতুলী বাহণি সাঁওনী নাহি কেহ রহে ঘরে হইয়া রান্ধীনি | যুন্ত যাঁদ লয় মনে কাহবে প্রকাশি রন্ধনের তরে আমি আন্য৷ দব দাসী । সদাগর বলে জত কপট প্রকাশ উত্তর ন৷ দেই রাখা ছাড়য়ে নিশ্বাস । দ্বোবলা" করিল স্থল বাঁসল ভোজনে অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণে ভনে ॥ ২০২ শিব স্মঙারিয়। কৈল দুই আমন লহন৷ কনক থালে জোগায় ওজন । সুবর্ণের বাটিতে দুবল৷ দেই ঘি হাঁসয়৷ পরিষে বাল৷ বাণিয়ার ঝি। স্মঙারল জগন্নাথ পরমপুরুষ সুরনদীর জলে সাধু করিল গণ্ডষ । প্রথমে শুকুত। ঝোল দল ঘণ্ট সাক প্রশংসা করয়ে সাধু বেঞ্জনের পাক । ঘুতে জবজব খায় মীন মাংস বড়ি বাদ করা খায় ভাজ! কই দুই বুড়ি। ১১৭ অস্থল খাইয়া পিঠা জল ঘণী ঘটী দধি খায় ফেনি তায় শুনি মটমটী । হাসিয়া পরষে রামা করে হেম থালা ললিত গমনে চলে বৈদগধি বালা । কটাক্ষে সাধুর মন হরিল লহন। ভোজন সঙ্কনে সাধু স্মরহতমন । ভোজন করিয়া সাঙ্গ কৈল আচমন কপূর তাসুলে কেল মুখের শোধন । চরণে প।উড়ি দিয়া করিল গমন পিনোদ মন্দির মাঝে করিল শয়ন । নিত্যকৃত্য কার রাম। চলে পতিস্থানে রাঁতিরসে সদাগর ধাঁরল বসনে। লহনার হদে সাধু বন্ধে পণ্বাণ হেনকালে লহন। করেন আঁভমান। মনদুঃখে তারে রামা করে নিবেদন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ২0৩ কপট সম্ভাষ তেজ পরিহাস সে সব আদর গেল কোন মূঢমাত দিনে জালে বাতি তাহে কীব৷ করে আল । দ্লী গতযৌবনে পুরুষ নির্ধনে কী বা আদরের চিন কামদেবে পাপ দুইজনে চাপ১ নাহ করে গুণহীন। কপটে প্রবীণ কুলিশকঠিন, দারুণ তোমার হিয়া সত্য কৈলে জত সব কৈলে হত কী মোর দোষ দেখিয়।। অঙ্গনা সমাঝে কিবা গৃহকাজে পাইলে মোর অনোচিত ১১৮ যাঁদ দিবে সত কে তার রক্ষিত৷ কেন ন৷ কৈলে হীঙ্গত। ন৷ করিল বিধি জনম অবধি নারীর যৌবনকাল শশীর উদয় মুণাল না৷ রয় মোর মনে রেল সাপ । থাকে পুণ্য অংশ কোলে হয় বংশ যাঁদ নহে তোক সুকৃতি সেই দম্পতি শুন্য দুই লোক দুহার কর্মের গাতি। রাম আঙিমানী শেষ নাশাথনি৩ কামবাণে সাধু অন্ধ লহন৷ নিদয় গাহয়া সময় সাধু করে বাহুবন্ধ । সাধু হাথে ধরে লহন৷ নিবারে চগল কঙ্কণপানি উদিত কামান মধ্যে পণ্চবাণ কন্দল ভাঙ্গে আপুনি । রাজ। রঘুনাথ গুণে অবদাত রাঁসক মাঝে সুজান তার সভাসদ রাঁচ চারুপদ শ্রীকবিকঙ্কণ গান ॥ ২০৪ শপরিতোষে লহনারে দিল পাট সাড়ি পাচ পল সোনা 'দিল পারবারে ছাড় ।) সাধু বলে প্রিয় তুমি আছ মোর মনে পূর্বে আছিলে জেন বিবাহের দিনে । রাম রাম স্মঙরনে রজান প্রভাত প্রণাত করিয়া সাধু স্মঙরে ভূতনাথ। আসি করিতে আইল৷ দনাই পা্ডত প্রণাম কাঁরয়। সাধু কারল ইঙ্গিত । ফালুন উত্তম মাস পুলকে পৃর্ণত মতি চণীম্ঙ্গল আখি ঠারে হইল কথা সঙ্গে গৃহ-ওঝা নানাদ্রব্যে পৃর্ণিত সাজিল ভার বোঝা। পাইল পাঁওত লক্ষপাঁতির সদন সন্রমে আনিএগ রম্ত৷ জোগায় আসন । লক্ষপতি আস বন্দে দ্বিজের চরণ নিবেদয়ে দ্বিজ তারে সব বিবরণ । গৃহ-ওঝ। করে মীনরাশ্যের কল্যাণ সভাবিদ্যমানে ওঝা পড়ে পাঁজিখান । সূর্য নমস্কার শাস্ত্রে কর অবগতি অদ্য রবিবার ছয় দণ্ড ষষ্ঠী তাঁথ। মৃগশিরা নয় দণ্ড বাঁণজ্যকরণ শুভযোগ দশ১ দণও দশম ফাল্গীন । পুনরাঁপ পাঁড় পশাজ শুন সাবধানে আগামী বংসর কথা গণক বুঝানে । সংক্লায়ন কপালে বংসর জাবে ভালে বড়ই সম্পদ তোমার দেখি এই কালে । বৈশাখে হইতে হইল লুপ্ত সম্বংসর শৃভকর্ম নাঁঞ আগে? বংসর তিতর। এবাক্য হইল যাঁদ গৃহ-ওঝার তুণ্ডে আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়ে লক্ষপতির মুণ্ডে। বৈশাখে হইব কন্যা বারতে প্রবেশ ফান্গুনে করহ লগ্ন কহিল বিশেষ । লগ্ন করেন ওঝা শুভক্ষণ গাঁন গাঁণঞা নির্ণয় কৈল উত্তরফন্তুনী । পূজা পাইয়৷ গেলা ওঝা আপন ভুবনে কহিল সকল কথা ধনপতি স্থানে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২০৫ নিয়োজত অধিবাস আনন্দিত হণ সদাগর কহে সাধু ধনপতি প্রয়ভাষে কহেন উত্তর । চতুর্থ দিবস নিশ। সাধু করে আয়োজন চারাঁদকে ধায় জন কীনে বেচে হাটে নানা ধন সাধুর আদেশ পায় ইছাঁন নগর জায় ঘটক পাঁওুত জনার্দন |. আঁধবাসের লয়া৷ সাজ চিল ঘটকরাজ কুলীন পাঁগুত পুরোহত আগু পাছু সার সারি সঙ্জ লয়ে জায় আর গায়নে মঙ্গল গায় গাঁত। তৈল নিন্দুর পান গুয়া বাটি ভর্যা গন্ধ ঢুয়া বদ দাড়িম্ব পচ কাণ্ঠা পাট ভর]া নিল খই ঘড়া ৬র৷ ঘুত দই সাঁজয়। সুরঙ্গ ?নল বাটা । খরপুলি গঙ্গাজল কান্দি কান্দ নারকল চিনির পুঁরয়। নিল গছ চালু ডাল মৎসরাশি জোড়ে জোড়ে নিল খাসী সাজীড়িয়া ভারে নিল মাছ। সর্ষব পুটলি ভর! বান্ধা। নিল কোল সরা সুতা নিল নাটাই সাহত। সুবঙ্গ পাটের সাঁড় লইল রঙ্গন-কাঁড় বিদমালা সুবর্ণে জড়িত । চিনী-টাপা মর্তমান কাঁড় লয় দিতে দান হরিদ্রায় রাঁঞ্জত বসন গোরোঢন। দল শঙ্খ চামর চন্দনগঙ্ক ফুলমাল। কজ্জল দর্পণ । কপালে জুডিয়া ফৌটা। বাঁসল পাওতঘটা সগল্লাথ পামরি কন্বলে কিথা কথুবায় বান্ধা উপরে টানায় চান্দা ধূপে আমোদিত কৈল স্থলে । মহামশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের তাত কাৰচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চণ্ডীর আদেশ পাই বিরচিল শ্রীকবিকম্বণ ॥ ১১৯ ২০৬ হেম পায় পণ চারি মানিল লহন৷ নারী দূর কৈল জত আভমান প্রেমবন্দ মুখে মুখে আলিঙ্গন কার সুখে যামিনী হইল অবসান। ধনপাত হুদয়ে উল্লাস বাঁসলা দুলিচা মাঝে নিজোজল নান৷ কাজে শৃভমুখে সুকোমল ভাষ । শয্যা তোঁজ ধনপাতি আনন্দে পূর্ণিত মতি ডাকা৷ আনি দনাই এাঙ্ষণ গুবু-গোবন বাবহার নিয়োজিত কৈল ভার দুই করে পাখালে চবণ আশীষ কাঁরল দ্বিজ শৃভ মুখসরাসিজ আয়োজন কৈল সমর্পণ । [কি কর কি কর ভায়্যা শৃতক্ষণ জায় বয়া। অবধানে শুন সদাগব বংসরেক নাহী বিভ। কেমনে ধরাঁস হিয়। লুপ্ত হব এক সম্বংসর | লক্ষপতি জায় সনে বিচার করয়ে মনে জ্ঞাতি বন্ধু পুরোহিত সনে গৃহবিপ্র আনি ঘরে লগ্ন বিচার করে জয়ধবনি বনিতাবদনে । শুভ 'তাঁথ নিয়োদাঁস রোহিণী সহিত শশী শুভ যোগ বণিজ্যকরণে লগ্নে আছয়ে জিব হইব পরম শুভ সায় দিল সেইত গণন । দ্বিজের বচন শুনি লক্ষপাতি মনে গুনি জ্ঞাতি বন্ধু আনে নিকেতনে আঁধবাসে দিল সায় শ্রীকাঁবকন্কণ গায় রামাগণে আনিল সদনে১ ॥ ২০৭ সকল দোষহাঁন হইল শুভ দিন ধরে কন্য। মনোহর বেশ ১৭ ০ হরিদ্রারাঁঞ্জত ধুতি পরাইল রস্তাবতী বৈসে রামা জনক সকাশে । খন্সনাব গন্ধ-অধিবাস জত-পুব নিতাদ্বনী বদনেতে জযধ্বনি বন্ত।বতী হদযে উল্লাস । লিখন কাঁবযা পাতি আনাইল জত জ্ঞাতি দেশে দেশে পাঠ্যায্যা বাতন লক্ষপাতিব বাসে নানা দেশেব বান্য। আইসে ব্যেঝা-ভাবে লা আযোজন । কোমল পলব-শিখা উপবে বসাল শাখা স্থাঙলে পাতিন নষ্যা ধান* উপবে ফুলে ঝাবা চাপল গনেশ-বাঝা২ দ্বিজগণ কবে বেদ গান । পটহ মৃদঙ্গ সানি শঙ্খ কাজে দোখাণ্ড বল্পকী * গজবম্প সাবি সাবি দগড কাসব বোন টমক খমক ভোঁর অঙ্গভঙ্গে নাচযে নৃত্তকী । গণপাঁত দিনপতি পুজা কবে বমাপতি? বিধি আশাপাঁত গ্রহগণে ্াঁপল মগ্থনষষ্ি সভাজন কাব ষষ্ঠী পূজা কাব মৃকুণ্-নন্দনে | দ্বিজগণে বেদগান মাহ গঞ্ধীশল। ধান ুর্বা পৃষ্প ফল ঘৃত দ্ধ রজত দর্পণ ক্ষোম ্বাস্তক 'সন্দুর হেম কজ্জল গোরোচন। যখাবিধি । সদ্ধার্থ চামর শঙ্খ ভুবনে উপামা-রঙ্ক পূর্ণ পানর প্রীদপ সহিত কায়। দ্বরভেদ ব্রাহ্মণ পড়ে বেদ সূ বান্ধে দনাই পাওত। পুঁজল প্রতিমারপা সাবন্রী বিজয৷ জয৷ তথা দ্বাহা দ্বধা দেবসেন। শাস্তি পুষ্টি ধৃতি ক্ষমা অনুকূল জতেক দেবত।। গৌরী পদ্মা মেধাবতী চন্ডীমঙ্গল ঘৃত দিয়া সাত ডোর! কাথে দিল বসুধারা কৈল নান্দিমুখেব বিধান জল সহে রন্তাবতী শ্রীকবিকঙ্কণ বস গান। সুবেশাতি শুদ্ধমাত ২০৮ ওষধ করিয়া বন্ত। ফিবে বাড়ি রাডি দোছোট কাঁবযা পরে তষবেব সাঁড । কাটা মাহষেব আনে নাসিকাব দাঁড় দুর্গা প্রদীপ পৃত্যা বাখিযাছে চোঁড়। সাধুব কপাপে জবে দিব পুনবসু খুল্লনাবে হব সাধু নাক-াবিন্ধ্যা পশু । আদেষ পাকাঁড় গাছ হাই আমলাতি আকুল বুস্তল কাব আনে মধ্যবাতি । ইহা দবশনে তার বশ হব পাতি পাছু জাব সাধু জেন গাই খাতুবতী । সাপেব আট্রুম্বি আনে খুজা বাদ্যাঘবে রাহত মংস্যের পিত মঙ্গল বাসবে। কাপাসেব খেতে হইতে আনিল গোমুও দাণ্ডাইয৷ সাধু তায রব দুই দণ্ড । খুল্লনা কবিব যাঁদ সাধ্যে১ অপমান মৌনে রহিব সাধু গোমুণ্ড সমান । বিমলা ব্রাহ্মণীর নাম নিলাবতীর সই আঙসরা আনে আর গদ্ধবের দই । নিশা মধ্যে আনিহ দেউলের পারটিকাল পুজিবে ধোবার পাটে জালি দিব জ্ঞান । ধনপাঁত লহনাতে বিচ্ছেদ-কন্দলে এ ফল মণ্ডল ভাগ্য সেই পাটিকালে । ওষধ করএ রষ্ত। খুল্পনার হিত লহনার তরে সেই হইল বিপাবত। সমাপিল খুল্পনার গস্ধ-অধিবাস উজানি আইল দ্বিজ হৃদয়-উল্লাস চতুর্থ দিবস নিশা সহাস বদনে কথা কহে দ্বিজবর শৃভক্ষণে ছান্দল টানায় সদাগর । আহদ্গিন৷ সমাজে চন্দন চৌকপুরে কুষুন চন্দন বিভোপসিত কলেবরে । তাস্বি পাত্যা গণক কাঁরল শুভক্ষণ চৌদকে পাঁওতঘট৷ আইল বন্ধুগণ। হেমঘটে গণাঁধপ কৈল আবাহন কাঁরল দনাই ওঝা স্বাস্তকবাচন । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ২০৯ সাধ ধনপতি মদন জান মাত বালা গান্ভারির পাঠে নে নিন্দে বিধু চৌঁদকে নববধূ মঙ্গল গায় নাছে বাটে । [দ্নণ পড়ে স্মৃতি আনন্দে ধনপাঁত চোঁদিকে জয়জয় ধ্বনি গল বস্তু জত করয়ে নিয়োজত মঙ্গল পড়৷ বাজে সান। সমাপ্ত করি কর্ম জে ছিল কুলধর্ম ব্াহ্মণে দিলেন দাঁক্ষণ৷ বরাত পুজি পু সাধুর ঘরে ভুঁ্জ চোঁদকে তথ সইবান। । গোধূলি হইল বেলা চাপিয়া চলে দোল। গলায় নাম্বে বনমাল। মুকুট 'শিরে রোগে কুমকুম অঙ্গে লেপে দু-করে হেম তাড়বালা । কেহ গায় গীত নাট কায়বার পড়ে ভাট কারবরশীপঠে বাজে দ্বামা টহাস্যকথা কুতৃহলে পদাতি বাঙ্গালি খেলে আগুদলে চলে রণভীমা । ্‌ ১. ম.—১৬ ১২১ আগে পাছে 'সঙ্গ৷ কাড়া আরোপ ধনুকে চড়া ডানি বামে ধাইল ধানকী রাঙ্গাধুলা মাখে গায় তার পিছে শতেক তবকী । নাহী পাক্যে দিশপাশ শতশত পড়ে দাবা সিলি লোহ ভাণ্ডে১ দারু সাজি ছোটায় আতসং বাজ এক কালে শতেক বিজুলি। জুঁড়িয়া কোশেক বাট ১মকিত ইছানি নগব নিজধলে সাবধান পবন 'জানএগ ধায় শতশত রায়বাশ বরযান্র চলে ঠাট সাধিতে আপন মান আগে ৮নে মইগাই কোঙর। দুই দলে আশাআলি চণাচুলি গালাগালি বরধাণী দেঢী না ছাড়ে থুন। খেলা ঢেলা-বৃষ্টি মেলিতে না পারে দৃষ্চ দুই দলে খুনাখুন পড়ে । বুঝিয়। কার্ষের গতি ধায় আইল লক্ষপাঁতি কন্দল ভাঙ্গল সমগ্জসে জামাতাব হাথে ধার লয় গেল নিজ পুরী শ্রীকাণকঙ্কণ রস তাষে ॥ ২৯০ প্রেম-লোচনজলে সাধু হইল অন্ধ কোলে করি জামাতার শিরে দিল গন্ধ । বসাইল জামাতারে লোহত কম্বলে কেহ জল দেই কেহ চরণ পাখালে । অঙ্গার অঙ্গদ হার ভূমণ চন্দন দিয় লক্ষপতি করে বরের বরণ। তবে রস্ত প্লী-আচার করে যথাবিধি বরের চরণে পাদ্য ঢাল্য দিল দাঁধ। রন্তা সুতা দিয়া জেশাখে বরের অধর তেনমত জেণখে পুনু দুইখানি কর। ১২২ সেই সুতা বাধ্য রাখে খুল্লনার বসনে সাধু রহিব জেন নিগুঢ বন্ধনে । আনিল আইবড়ার সুতা লাটাই সাঁহত সাতফের ফের৷ দিয়৷ কারল বেষ্টিত। সেই সুতা বান্ধা৷ থুইল খুল্পনার অগুলে গালাগাঁপ পিতে জেন মুখ নাহী চলে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২১১ সাধু করে কন্যাদান 'বিপ্রগণে বেদ গান নাচে গায় রঙ্গে বিদ্যাধরী সপ্তদ্বরা শঙ্খধবনি পটহ দুন্দুভি বেনি আনান্দিত ইছ্থানী নগরী । পাট চাঁড় রূপবতী প্রদক্ষিণ কার পতি শৃভমুখে দুইজনে ছামনি দিলেন পতির গলে আপনার কণ্ঠমালে রামাগণ দিল জয়ধ্বনি । অভয়ার প্রীত-ফলে করে কুশে খঙ্গাজলে সাধু করে কন্য-সম্প্রদান শয্যা ঝারি ধেনু থাল। দাসী গজ দোল। ঘোড়া দিয় জামাতার কৈল মান । বাজয়ে মঙ্গল পড়া দ্বিজে বাস্ধে গ্রন্থ বরকন্য। দেখি অবুন্ধৃতী বন্দিয়৷ রোহিণী সোম লাজহুনি কৈল হোম দুহে কৈল অনলে প্রণতি । দম্পত্য প্রবেশে ঘরে খিরখণও্ড ভোগ করে কুসুমশয়নে গেল রাতি রচিয়। ভ্রিপাঁদ ছন্দ গান কাবি শ্রীমুকুন্দ দামুন্যায় জাহার বসাত ॥ চন্ডীমঙ্গল ২১২ রাম রাম সঙরণে পোহাইল রাতি১ শয্যা তেজি প্রভাতে উঠিল ধনপাঁত। নিত্য নিয়ামত কর্ম কার সমাপন শয্যা-তোলা কাঁড় মাগে পরিহাসী জন । শৃনিঞ্া সহাসং সাধু আনন্দিত মন নফরে কাহল দিতে পণ্টাশ কাহন । জুয়া খেলা কৈল সাধু খুল্লনার সনে খুল্পনার জয় দেখি হাসে রামাগণে । তথা হেতে সদাগর আনন্দিত মনে বর্যাতিরে ত্বরা৷ কৈল উজানি গমনে | মাজুর পাতিয়। দল বাঁসতে কিস্করী সাধুর বামেতে বৈসে খুল্পনা সুন্দরী । মাথায় মকুট দিয়৷ বসিল দম্পাতি। কৌোতুকে জৌতুক দেয় জতেক যুবতি । মৃদঙ্গ পটহত বাজে বেনি জোড়া শঙ্খ টমক খমক সানি বাজে জ্লগঝম্প। কেহ নেত কেহ সেত কেহ পাট সাঁড় চন্দন কুসুম কেহ বাটা-ভর৷ কড়ি । বিদায় হইয়। বর-কন্যা চাপে দোলা পণর হাথে দিল সাধুর মাহলা । রাজপথে জায় সাধু নগরে নগর লহন৷ লইয়৷ কিনু সুনিব উত্তর । ছিট।৪ ফৌট। করিয়াছে ওষধ প্রবন্ধে প্রাণ উংকট সাধু বিকটাল গন্ধে । মনে মনে সদাগর করে অনুমান হৃদয়ে কারল তারে অল্প গেয়ান। মাথায় মকুট দিয়া বাঁসল দম্পাত। কোতুক যৌতুক দেই জতেক যুবতি । গড়িয়া আনিঞাছে কেহ রজত কাণ্চন কৌতুকে জৌতুক দেই জত বন্ধুগণ । কেহ সেত কেহ নেত কেহ দেই পাট সাড় চন্দন কুসুম দুর্ব৷ বাটা ভর্যা কাঁড়। চতুর্থ দিবস নিশা জত বন্ধুগণে সাধু করাল্য ভোজন বেবহার কৈন তারে দিয়া নান। ধন। বিদায় কাঁরয়া সাধু জ্ঞাতি বন্ধুগণে প্রভাতে চলিলা সাধু রাজসন্ভাষণে | ভার দশ দধি কল৷ চাপা মর্তমান দোখাও সরস গৃয়া বিড়বেন্ধা পান । গছে ভরা! নিল ভেট ঘৃত দশ ঘড়া খান দুই সগল্লাথ খান দশ গড়া । কিঙ্কর কাঁরয়। দিল দোলার সাজন আগে পাছে লইয়া পাকি শতশত জন | রাজার সভায় সাধু হৈপ উপনীত প্রণাম কবিযা ভেট এডে চারাভিত। হেন কালে খগান্তক ঝাধ আইল তথা সার শুক হাথে নৃপে মুঞ্াঁঞল মাথা । বিবারয়া কহ শুন তার পূর্বকথা শ্রীকাবকঙ্কণ গান পাচালির গাথা ॥ ২১৩ খগ। ক মৃগান্তক দুই ভাই যমান্তক উজবনি নগর নিবাসী গ্রতাতে কাননে চলে জাল ফাদ সাতনলে বিহঙ্গম বধে রাশি রাশি কবে থাঁর ধনু-শর ভ্রমে ব্যাধ নিরন্তর প্রাণ বধে বিবিধ প্রবন্ধে শব ুখে চাহে শাখী সাতনলা জাল আঠা ফান্দে। আঙ্জত১ তঙুল সনে কাননে কলাই বোনে রহে ব্যাধ ঝোড়ের২ আহড়ে গুণধ ১ ভদ্গণ আশে ঝণকে ঝশকে জালে বেসে নান৷ বহঙ্গম বন্দি পড়ে। চ'পাত কুঃকুভ কঙ্ক কলরাবা কুঁলঙ্গ কর বধে নানাজাতি পাখি কামী কোর কলবিষ্ক ১২৩ কালকষ্ঠ কুরাবকি কুরুব কাদ্ পাখি কারগুব খঞ্জন করট । চাতক তাঁথর ফিঙ্গ। টেষকানা মাছুরাঙ। নাবক সারস গাঙ্গচিল বলক৷ বর্তিকা হংস শেন ভাস করে ধ্বংস রাঙ্গচোঙ্গা৬ বাবই কোকিল। উধ্ব মুখে কপিপ্লে" বিদ্ধে বাধ সাতনলে বগাঁড়ি বিশ্বয়ে চকোরকে গুড়গুড় ভারই” ঘটা টুনটুনি তালচটা নানাবাধি ফন্দে বিদ্ধে বকে । হয়পুচ্ছ লোম ফান্দে কত সামুখোলেন বান্ধে দলাঁপাঁপ সরাল বাদুড় কাঠকোঠব পেচ৷ ঠীয়া কাদকৌচা৯ মহরিয়। সালিক ডাহুক১১ তামচুড়। ৃ শুক পক্ষ পড়ে জালে*২ ধরাঁণ লোটায়যা সারি কীন্দে রাঁচয়৷ ত্রিপাঁদ ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুন্দ মনোহর পাঁচালির ছান্দে ॥ দারুণ কর্মের ফলে ২১ শন রে অবুধ বাধ ি তোর জীবনে সাধ কোন কর প্রাণবধ পাপ অধর্ম কাঁরয়। নিত্য পরলোক পাবে পারতাপ। খুধা তষা দুঃখ সুখ পরে দেখ্য সেই অণুমানে সভাকার অস্তর্যামী ভজহ প্রমথস্বামী১ বহৃ২ পাঁরতোষ পাব মনে । নিতা বধ প্রাণিগণ পোষ বন্ধু দারাপত্য আপনার জেনরূপ অধর্মেতে দিয় মন কত কাঁড় পাও পক্ষমাংসে এতেক জীবের পাপে আত গুরুতর সাপে ১২৪ আচাম্বত মজিবে সবংশে । বধিযা অনেক জীব সণ্চয কবহ বিজ তুম মৈলে লয অন্যজন জবে জাবে যমপথে পাপপুণ্য জাব সাথে জত দেখ সব অকাবণ। জত দেখ ভাই বন্ধ সবে পাঁবতেব পিঙ্ক মৈলে কবে দিন৷ দুই শোক সুকৃতি দুষ্কূতি ফলে পাঁডবে ফমেব জালে ঢতনে চিম্তহ পরলোক । পক্ষমুখে নববাণী শৃনিঞ। বিস্ময গন শ্যাব বচন দশ মন বচিয। পাদ ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুন্দ চ্রণতী শ্রীকাবকষ্কণ ॥ ২১৫ শ্যাব বচান ব্যাধ হইয। ৬ন্তিবান বান্দ হইল পক্ষ জালে দিল জিউ দান। কাটিণ পাতন কাণ্ডে শুমাব বন্ধন কাব বসাইযা কবে অঙ্গেব মান । শতবান সোন। জনি চবণে আভা বজ্জেব প্রভাব জিন পালকব শোভা | আজি হোত শষ! তুমি হইলে মোৰ গৃবু ধর্মসণ্য শৃষ। তুমি কষ্পতবু। 'বফবজনেব সনে নিস্তাবিব জীব১ তোম। হইতে দূয হইল পাপচিন্ত নিজ । আব ন৷ কাবিব কভু প্রাণবধ পাপ দূব কেলে পাপচিন্ত জন্মদাতা বাপ। পক্ষ বলে লষয চল নৃপাঁতয পাশে সম্পদ বাডাব তোব জত আভলাষে । সাব শুক লযয। বাধ চলে বাজপথে পক্ষ দেখি নগাঁবিয। চলে ব্যাধ সাথে । চগ্ডীমঙ্গল কেহ বলে পক্ষমূল্য দিব চাবি পণ কেহ বলে একথানি লহ রে বসন। নগব্যাব কথ৷ ব্যাধ নাহী শুনে কানে দও্মাত্ে গেল ব্যাধ নৃপাঁতভবনে । দাবী সন্ভাষিযা ব্যাধ চলে বাজস্থানে সাবি সুযা ভেট দিয। হুইল নুতিমানে । সাব্যেব পাথেব আড়ে সুষা হৈল লুকি পক্ষেব চবিত্র দেখি নৃপাতি কৌতুকী । অঙযাচবণে ১জুক নিজ ঢিত প্রীকাবিকঙ্কণ গান মধুব সঙ্গীত ॥ ২১৬ বায হে সাবি শুযা কবে প্রাণপাত তোমাব চবণ দৌখি সফণ হইল আখি বড ধন্য তুমি খাতনাথ । শ্রীবংস ঝাজাব ঘবে কলধোত পঞ্জবে আিলাও সভাষ পাঁওত প্রাতীদন খাতনাথ অঙ্গে বুলাইত হাও চন্দনে কাবয৷ বিভীষিত। ব্রিভুবনে দুর্লভ শৃনিঞা। তোমাব সঙ জাহে নববস্ধেব বিচাব যুান্ত কাব জায। সনে আইলাও তোমার স্থানে দেখিতে তোমাব ব্যবহাব। পিযা নানা ফল-বস আসি দুহে তোমাব১ দেশ নান৷ কাব্য বিচাব প্রবন্ধে দ্রামতে তোমাৰ দেশ বান্ধ। গেলাঙ চর্মময ফান্দে। পবাণ বক্ষণ আশে কহিয। মধুর ভাষে এই ব্যাধ গুণেব সাগব আব না করিহ বধ বাড়াইব সম্পদ ' লইযা চল নৃপতি-গোচব। পাইল বহুত ক্লেগ চতুর্থ দিবস ; নিশা পক্ষ-মুখে নরবাণী নৃপাঁত বিস্ময় গুনি দিল ব্যাধে অনেক কাণ্চন রচিয়া ব্িপাঁদ ছন্দ পাঁচালি কাঁরয়। বন্দ বিরচিল শ্রীকাবকন্কণ ॥ ২১৭ প্রভলিকা১ কহে সুয়৷ রাজার সমাঝে রজার আদেশেতে পাঁওতগণ বুঝে । বিধাতা নির্মাণ ঘর নাহীক দুয়ার জ্ৃগি পুরুষ তাহে আছে অনাহার। জখন পুরুষ তাহে হয় বলবান বিধাতার ঘর ভাঙ্গ্যা করে খান খান । ১ ॥ শিরস্থানে নিবসে পুরের দুই সার ভালমন্দ সভাকার করয়ে বিচার । বিচার করিয়।৷ সেই রহে মৌনশালী পুরষ্কার করে তার মুখে দির কাল । ২] পাষাণ জানঞা দৃঢ়তর তার কায় তুঘার জানঞ শীতল লাগে বায়* জঁখন পার্থিবও সঙ্গে হয় দরশন সেইক্ষণে হয় তার অবশা মরণ । ৩॥ দেখিতে রূপস দুই মুখ এক কায় এক মুখে উগারয়ে আর মুখে খায় । মারলে জীবন পায় হতাশ পরশে বুঝ বুঝ পাত সভা মাঝে বৈস্যে। ৪ ॥ নীরেতে জনম তার নাঁর তার কায় নীর দোখলে পুনু হালেতে ডরায় । আপুনি বিকাইয়৷ চা পুরে চিন্তে হিত হেয়ালি পক্ষিতে বলে বুঝহ পাণ্ডত। ৫ ॥ বিষ্ণপদে সেব৷ করে বৈষ্ণব সে নয় গাছ পল্লব নয় অঙ্গে পত্র হয়। পাঁওত বাঁলতে পারে দুই চারি দিসে মূর্খ বালিতে নারেঃ বংসর চাল্লিশে । ৬ ॥ ১২৫ মন্তকে ধরিয়। আনে হয়্য। যত়বান অপরাধ বনে তার করে অপমান । অপমানে গুণ তার দূর নাহী জায় অবশ্য করিয়৷ দেই সম্ধল উপায় । ৭ ॥ বেগে ধায় রথ নাহাঁ চলে এক গা নাচয়ে সারাঁথ তাহে পসারিয়া গা । হেয়ালি-প্রবন্ধে পাত দেহ মাত অস্তারিক্ষে চলে রথ ভূতলে সারথি । ৮ ॥ তরু নয়ৎ বনে রয় নাহী ধরে ফুল ডাল পল্লব তার আত সে বিপুল। পবনে কাঁরয়। ভর করয়ে ভ্রমণ বনেতে থাকিয়া করে বনের দোষণ । ৯ ॥ মংস্য মকর নহে পান পান বুলে কুম্তীর হাঙ্গর নহে দেখিলে সে গলে । [গিলিয়। উগারে পুনু দেখে জগ" জন হেয়ালি-প্রবন্ধে প্ডিত দেহ মন । ১০ ॥ তৃষায় আকুল বড় জল খাইলে মরে প্নেহ না কারলে সে তিলেক নাহী ওরে । উগারয়ে অন) বস্তু অন্য করে পান সখ৷ সনে আলিঙ্গনে তেজয়ে পরাণ | ১১ ॥ জয়ন্ত জে মৌন সেই মৈলে ভাল ডাকে অঙ্গেতে নাহিক ছাল বিধির বিপাকে*। অবশ্য আনয়ে নর মঙ্গল বিধানে হেয়াণি-প্রবন্ধে কবিকঙ্কণ ভনে । ১২॥৷ রঙ্গে বৈসে চারি ভাই ভ্রমে নানা ঠাঞ্জি জীবনকালে ভিন ভিন্ন মরণে একু ঠাঞ্ি। হেয়ালি-প্রবন্ধে কবিকঙ্কণ ভনে পাঁওত বুঝিতে নারে মূখে কব জানে ॥ ১৩ ॥ ২১৮ শুন শুন দণ্ডরায় নিবোদ তোমার পায় দৈবদোষে বুদ্ধি গেল নাশ ১২৬ কুবুদ্ধি সুবুদ্ধ কারে শুনহ পুরাণ ইতিহাসে । পাক৷ খাজুরের গন্ধে লোহিত চরের ফান্দে দেখি, লোভে হইনু উতোরোল আছল বন্ধন দশা২ দৈব না লঙ্খিতে পারে দারুণ দৈবের ইচ্ছ। দৈবযোগ না গেল বিফল । ধর্মপু্ নৃপমি জথ| ভীম গদাপাণি গাণ্ডব ধরেন ধনপ্জয় কি কব পণ্যের লেখা বাসুদেব জার সখা তথ কেন হেল শনুভয় । সকল গুণের ধাম ভানু-বংশে রাজী রাম কোদও্ড ধরেন রঘুমাণি রাম সহ গেল৷ বন সাঁতা নিল৷ দশানন রামায়ণে এই কথা সুনি । চন্দ্রবংশে রাজা নল দৈবে তার কৈল বল পশ্চাতে হারল নিজ দোষে [নিজ রাজ্য পারহরি সঙ্গে দময়স্তী নারী কাননে কারল পরবেষে। চিন্ত৷ দুঃখে খিন দেহ দেখি না সন্তাষে কেহ উপবাস প্রথম বাসরে বাদ ছিল শনি সাথে আস দেখা দিল পথে হয়া মীন প্রবীণ শকুলে। চিন্ত। দুঃখে আত খিন দেন মহাদেবীর অগ্ুলে পাইয়৷ শকুল মীন কাঁহল পড়িয়া মাছে রাখহ আপন কাছে প্লান কার আসি নদীঁজলে । মংস্য পুড় চত্দ্রমুখা পাঙশে মলিন দৌখ পাখালিতে নিল সরোবরে শনহ দৈবের মায়া মংস্য গেল পলাইয়া রানী হেট মুখ লক্জাভারে। রাজা প্লান করি আইসে শুনি পোড়। মৎসা পলায়ন হদয়ে ভাবিয়৷ বেথা রাজা কৈন হেট মাথ৷ রানি কৈল মংস্য ভক্ষণ । মংস্য ভক্ষণ আশে চন্ডীমঙ্গল এই হেতু দুই জনে বিচ্ছেদ হইল মনে নিজ ভার্ষা তেজে নৃপমাণ বুদ্ধি-বাদ দৈব-দোষে শ্রীকবিকঙ্কণ ভাষে বনপবে এই কথা শুনি ॥ ২১৯ রাজা বলে হেন পক্ষ কতু নাঞ দেখি হেন বুঝি আজি মোরে বাঁধ হইলা সুখী । শোলবান সোনা জনি চরণের আভ। বঙ্জের প্রভাব জনি পালকের শোভ৷ । রাজ বলে ঝাট আন সুবর্ণ পঞ্জর ধৃত অন্ন দিয়া পক্ষ পাণিব সত্বর। এবোল শুঁনঞা পাত্র হেট কৈল মাথ৷ পঞ্জরের তরে কারিকর নাঞ এথ৷ । গৌড় পাটনে হয় পঞ্জর উৎপাতি তথারে পাঠাও রায় সাধু ধনপতি। পাত্রের ইঙ্গিত রাজা বুঝিল সত্বরে ধনপাত ভায়া জাহ গোঁড় নগরে । রাজার চরণে সাধু করে নিবেদন দুই জায়া ঘরে মোর নাহণী অপেক্ষণ আর জন জাউক গোঁড় পান তোমার চরণে এই কার নিবেদন । পাত্র মিত্র বলে ভাই না কর বিষাদ কাঁরতে রাজার কার্য নাহী অপরাধ । কালিদাস বলে বেটা কত সাধ মান বৈসহ রাজার রাজো খায় খেম নান । এতেক বচন যাঁদ বলে কালিদাস ধনপাঁত নিল পান পাইয়৷ নৈরাশ । পঞ্জরের তরে সোন৷ 'দলেন জুখিয়া চলিল সাধুর সুত বিদায় হইয়া। ঘরে জাইতে নৃপাঁতির নাহক আদেশ দূতমুখে লহনারে কাঁহল বিশেষ । চতুর্থ দিবস? নিশা! বিদায় করিয়া সাধু চলল সত্বরে প্রথমে করিল বাসা মজালিষপুরে বাধকপুরেতে গেল দ্বিতীয় দিবসে বিশ্রাম কাঁরয়া চলে নাশ অবশেষে বালীঘাটায় উত্তীরল দোলার ধাওনি রন্ধন ভোজন কাঁর গোঙাইল রজান । রাত্রি দিন চলে সাধু না করে বন্ধন খিরখণ্ড দাঁধ কল করয়ে ভক্ষণ । [সিতলপুরেতে গেল চতুর্থ দিবসে বড় গঙ্গ। পার হয়া গোঁড় প্রবেশে । রাজভেট িল সাধু সফরিয়া ভেড়া পর্বত্যা টাঙ্গন তাঁজ নিল দ্রব্য ঘোড়া । কান্দ দশ লইল বাওন নারিকেল ঘড়ায় ভরিয়া চিনি লাড়ু গঙ্গাজন | রাজার সভায় সাধু হইল উপনীত প্রণাম করিয়া ভেট থুইল চারি তিত। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকীবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২২০ রাজ৷ বলে সদাগর কোথায় তোমার ঘর কোন জাত কি নাম তোমার ছাঁড নিজ গৃহবাস কোন কারে পরবাস কোনি বা তোমার আগুসার । ছার্তধ আশ্রমে খ্যাতি উজান নগরে মোর স্থিতি গঙ্ধবাণক জাতি ১২৭ নিজ নিত্য অনুসারে আইলাও তোমার পুরে নাম মোর সাধু ধনপাতি। রাজা বড় কোতুকী পাইল উত্তম পাখি নিজোজিল সুবর্ণ পঞ্জরে কামল। ন। পাকা! তথ। আমারে পাগাইলে এথ। আগ্তঙাব করিয়া তোমারে । আনন্দিত নৃপমুনি ডাঁকয়। আনাইল। কাঁরকর সাধুব বচন শৃশি পান ফুন দিযা হাথে বসন বাঙ্ধাল্য মাথে গাঁড়বারে সুবর্ণ পঞ্জর । কামলা নুঙাঁঞ মাথা কব জোড়ে কহে কথ। নিবেদনে কর অবগান দশ নশ জনে বাঁস যদি গাঁড় দিবানাশি হব ছয় মাসেতে নিশ্নাণ । বন্ধ কারয়৷ কয় সুবর্ণ জুখিক। লয় কামল। পাতিশ কারখান। কেহ কাণ্ডে কেহ পোড়ে ঝেহ কেহ ফুল গড়ে সুবন্ধাণে কেহ টানে গুন। । কামিল দ্বাদশ জনা সভে হয়্য। দমন গড়ে তার৷ সুবর্ণপঞ্জর আজ কালি কর্যা ভাড়ে গোড়ে রাহল সদাগর । মহামশ্র জগন্নাথ কাবচন্দ্র ধয়-নন্দন তাহার অনুজ ভাই [বিরচিল শ্রীকা বকঙ্কণ ॥ মাপন ইচ্ছায় গড়ে হদয়ামশ্রের তাত চণ্ডীর আদেশ পাই পঞ্চম দিবস দিব ২১ সাধু গেশ গোড়পথে লহনার হাথে হাথে খুনেনা কারয়া সমর্পণ '্কামীব বচন সত্য জননী সমান নিত্য খুল্পন।র করেন পাপন । জবে দণ্ড ছয় বেণ। কুঙ্কূমে তুলিয়। মল৷ নারায়ণ তৈশ দিয়। গায় হইয়। প্রথণের সখী [শরে দিয়। অমলকি তোল। জলে ঘ্নান করায়। বসনে লহনা নারী অঙ্গের তোপযে বার পাঁরবারে জোগায বসন করেতে চিরুনী ধার অঙ্গে দেই ভূষণ চন্দন । জবে বেল। দণ্ড দশ হেম-থালে ছয় রস সাহত করায় অন্নপান কেশের মাজন। কার ভূগ্জয়ে খুল্পন৷ নারী কাছে থুইয়া হেম-ঝারী লহনার খুল্পন। পরান । পায়েস উদন পিঠ। পঞ্চাশ বেঞ্জন মিঠা অবশেষে খিরথও কলা পরসে লহন। নারী গায়ে বহে ঘর্মবারি পাখা ধার বিচয়ে দুবলা । অল্প খায় লজ্জ। কার যাঁদ ব৷ খুল্পনা নারী লহন। মাথার দেই কিরা দু সতিনে প্রেমবন্ধ দেখিয়া লাগয়ে ধন্দ সুবর্ণজাঁড়ত জেন হিরা । ভোজন কাঁরয়৷ নারী আচমন কারি ফিরা জল আনি জোগায় দুবল। খট্বায় পাতিয়। তুলি খাটায়া মসারা জালি শয়ন করিল শাঁশকলা । কপূরবাসিত গৃয। পান জোগায় দুয়া সুগান্ধ চন্দন দিয়া গায় সুগান্ধ মালতী ফুল ফিরে জাহে আলকুল মালাকারে আনিঞা৷ জোগায় । বিকালে বেঞ্জন দশ পারত চার রস ভোজন করেন কলাবতী কপূর তামুল খায়্যা দু-সাঁতনে থাকে শুয়া এক শয়নে দিবা রাতি। প্লেমবন্ধ দু-সাঁতনে দুবল। দেখিয়া মনে সাত পণচ ভাবে দুঃখমতি কাঁরয়৷ চাডক৷ ধ্যান দামুন্যায় জাহার বসতি ॥ শ্রীকাবকঙ্কণ গান ৯৬৬২ প্রেমবন্ধ দু-সাঁতিনে দেখিয়। দুবলা হৃদে কালকুট বিষ মুখে জেন তুল। । লহন৷ খুল্পনা যাঁদ থাকে এক মেলি পাটী কার মারব দুজনে দিব গালি । পঞ্চম দিবস: দিবা ১. ম.—১৭ জেই ঘরে দু-সতিনে না বাজে কন্দল সেই ঘরে রহে দাসী সে বড় পাগল । একে কাহতে নিন্দা জাব অন্যস্থান সে ধনি বাঁসিব জেন পরান সমান | এমন বিচার দাসী কার মনে মনে দণ্মান্র গেল লহনার বিদ্যমানে | করেতে চিরুনি ধার অণচড়য়ে কেশ লহনারে দুবলা শিখায় উপদেশ । অভয়াচরণে মঞ্জুক নিজ চিত শলীকবিকঙ্কণ গায মধুর সঙ্গীত ॥ ২৩ শুন গো শুন গো হের শুন গো লনা আপাঁন করলে নাশ ইবে সে আগন। । শিশুমৃতি ঠাকুরাণী নাঁঞ জান পাপ কি কারণে দুগ্ধ দিয়া পোষ কালসাগ নানা উপভোগ দিয়া পোযহ সতিনী আপনার কার্য নাশ করিশে আপনি । স|ঁপিনী বাঘিনী সতা পোষ নাহি মনে অবশেষে অই তোম। বাঁধব পরানে। কলাপির কল। 'জিনি খুল্পনার কেশ অর্ধপাক৷ চুলে তুমি কি কাঁরবে বেশ । খুল্লনার মুখশশী করে ঢলঢল মাছাত্যায় মীলন তোমার গঙস্থল । কদস্বকোরক 'জনী খুল্পনার স্তন গলিত তোমার কুচ হেলয়ে পবন । খিন মাঝা খুল্পনার জেন মধুকারি যৌবন বিহনে তুমি হবে ঘটোদরী । সাধু আসবেন গোঁড়ে থাকা কথে দিন খুল্পনার রূপে হব কামের অধীন । আঁধিকারী হবে তুমি রন্ধনের ধামে মোর কথ৷ তুমি গো জানবে পারণামে । ১২৯ নেউটিয়া আইসে ধন সুত বন্ধুজন পুনুরাঁপ নাহী আইসে জীবন যৌবন । দুবনার বচনে লহন৷ অভিমান কানে সোন। দিয়৷ তোর সাঁধব সম্মান | অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মপ,র সঙ্গীত ॥ ২২১ তোগ। বই প্রির সথি কেণ। আছে আর [বপদণাগরে দুয়। তুমি কর গার । জও উপদেশ বৈনে জীবন উপাধ (তোশা বিনে ইথে দের কে আছে সহায় |, আমাৰ গ।থুক কাঁঢ় তোমাব হউক মশ টাধ করিয়। হ্কাণী কর্যা দেহ বশ। আহয়ে আমার সই ব্রাঙ্মণী লীলাবতী তার ঠাঁঞ দুধ তুমি বাহ শীঘ্রগতি। পহনার বাক চলে চেড়ি দুঝলা ৬৪ নিল কান্দি দুই চান) টাগা কন | দুই ভার ডালি নিল দুই ভার বাঁড় সাত কাহন নিল বাছা ঘয়া ঘেশচ কড়ি । দুই ভার খণ্ড নিল দুই ভার দই পান নিল শত গৃছি গৃবাক গা নই । সুবর্ণরচিত নিল অঙ্গীর পাসুলি হিরায় জাঁড়ত নিল কনকৎ বউলি । দোছোট করিয়৷ পরে বার-হাত ভুনি দুবল৷ চলিত জেন কুঞ্জরগামিনী । গ। চার গুয়া নিল আপনার তরে একবারে দু দু" গুয়া দুয়া গালে ভরে। আগে পাছে চলে ভার মধ্যেত দুবলা পথে কথোগুল৷ নিল চম্পকের মালা । ধারে ধীরে চলে দুয়। দিয় বাহুনাড়। বামভাগে এড়াইল কায়েস্তের পাড়া । ১৩০ প্রবেশে ব্রাক্ষণ-পাড়া দুয়া হরাঁসিত বাড়র ওঝার ঘরে হৈল উপনীত । লীলা ঠাকুরাণী বলি ডাক দেই চেড়ি দ্বার বাক্যে রামা আইল দড়বড়ি। ভেট দিয৷ দুবলা তাবে নমঞ্কার করে আশীষ কারন লীলা দুষ। পায ধবে। [জিজ্ঞাসা করষে তারে সইব বাবত অনেক দিবস দুয। নাঁঞ্ আইস এথা | দুবলা কাহল তারে সব বিববণ . চিটাফোট। ওধধ নেহ পাঁরাত কারণ । দূবলার বাক্যে লীলা কবিল গমন লহনা আসিয়া কৈল চরণবন্দন। পাদ্য অধ্য দিয়া দণ বাঁসতে আসন কর্পূর তাস্ুল দল নান৷ আযোজন । লীলাবতী তাহার কুশল জিজ্ঞাসন অভযামঙ্গল গান শ্রীকবিকন্কণ ॥ ৫ জিজ্ঞাস কি আর কুশল বিচ।র কহিতে বিদবে বৃক ঘরে নাহী পতি তার উন্নাতি দুঃখের উপরে দুঃখ । প্রভু নাহী ঘরে প্রাণ কেন করে কি মোর ঘরকরণে রাত্রি দিন গুণি মোব প্রাণমাণ* রহিল কিবা কারণে । গড়াতে পঞ্জর গেল সদাগর তথা গেল চিরকালে২ নাহা জানি কথা কিবা হইল তথা কি মোর আছে কপালে । [ধক সাধুয়াল দুঃখে গেল কাল বেরুনিঞা ভাল জয়ে হাস-পরিহাস পতিমুখে সুধা পিয়ে | নারীর যৌবন জেমন জলের ফৌটা দুষ্ট কামশর দিনে দিনে তয় টুঁটা। তুম দেহ মন জে প্রভু আনিতে পাবে জুখিযা আপন প্রাণদান দেহ মোবে। হইয৷ আকলি পাজরা বা্ধণ ঘুণে খুলনা দারান কি সাধু নাহা পবানে । দিনে থাকী ভাপ দুঃসহ বিরহ-বেথা এ নবযৌবনী অই বডঙ মনঃ কথা । আইল কুক্ষেনে পাঁপনী অই দারুণী বিষম আরাতি ঘর ছাড়ে গুণমাণ* । এমন লহন৷ দেখি বলে লীলাবতী পাঁচালি প্রবন্ধ জারে তুষ্ট হৈমবতী ॥ খ্ত্৬ কেন গে৷ লহন। দেখিয়া এক সাঁতনী এ ছয় সাঁতনী সামর্থ মোর পরানি। চন্ডীমঙ্গল করে বার মাস কেবল অধন কবে জরজব প্রান গুণীজন তারে দিব সোন। কত মনে তুলি নিশাচর* গণি বাতি আইসে কাল দারুণ সতীন আমার ওবনে দিল নরপতি বিরহে বিমনা কাঁরল মুকুদ্' হয়্যাছু বিমন মনে নাহী গদি পঞ্চম দিবস : দিবা ফুলিয়৷ নগর বাপের কুলে মুখুটি নারায়ণ-সুত মহাকুল বন্দিঘটী | পদাকুল-জুত দেখয। মোর রমণে হাঁ কর দয়া দারুন ছয় সাঁতনে । 'প্গ বয়স হয় সাঁতনের ঘরে সাযাঁড় শনাঁদ আনার বচন পরে । এ।ধের গুণে জেন পঞ্জরের শুয়। এপ গেপে আশি আ/পান খাওয়ান গুয়। “বধের বশে পাতি ধূলা ঝাড়ে মুখে গেলে |গঙবাস জাঝ্দ না আমা দেখে। এাগ্য থাকে জার তারাই হয় সাতিণি গান কারয়। হেন কভু নাঁঞ শন শাণ মধূমতী ওষধ মাগে লহন। াঙ্সীণী সহাস মুকুন্দ কৈন রচনা | , ২২৭ শুন শুন লহন। উপদেশ খোর জে হব স্বামীর চিত্তের চোর। মোর বাপ-ঘর ভুবনে বাঁদত ভূখনে পঁজত বাপ দিল বিহা মোর পরবেশ ওধধেতে খান্দ, ধামী বোল শুনে চিআইয়। গ্কামী কাহণ বিশেষে করে উপবাস স্বামী বানতার করে দুই বিভ। লীলার ভারাথ কারণ আশ্বাস ঘরে সতম্কৰ আমি দেখিয়া গ্কামীর দোষ [বিনয়বচন [বনে ১৩১ হাসিয়া পরশে অলবণ রান্ধে দ্বামীর হৃদয়ে আপনা বান্ধে । কান্দিয়৷ পরশে কপূর চিনী নিম সম তিত নবযৌবনী | মুখর যদ্যাপ যৌবনবতী রূপে নিন্দে যাঁদ ভারতী রাঁতি। সুপুরুধ তাহে না করে কেপি জেন শিমুল কুসুমে১ না বসে আল । কালয়া কন্তুরি সুগান্ধ-রাজ। রূপ থাকিতে গুণের পূজা । আপ্রয়বাদিনী যৌবন ধন্দ দ্রমরে ন। বুচে কেতাঁক-গঞ্ধ | প্রযবাদণী-পাঁতির রাঁসক মন২ ক।লিয়। কন্তুর মন হরে জেন । কোকিল-সুক্করে কে নহে সুখাঁ জীবনে যৌবনে কেহ নহে দুঃখ । আপ্রয়রাঁদনী যৌবন রূপ পাঁতমন-্মৃগ ভ্রময় কূপ । সংক্ষেপে তোমারে কহি সকল মুখে বৈসে মধু মুখেও গরল । কুঁবাণী পাঁতর মন উচাটন শৃদ্ধ ভাবে গান কবিকঙ্কণ ॥ ১২৮ সই গো নাহি জানি বিনয় বচন অধীন আমার স্ক্যমী শিরে নিত আমার শাসন । কারিতাঙ অভিরোধ আমারে করিত। পারহার১ উপায় চিন্তহ মনে আমার দুখের প্রাতিকার । ১৩২ পূর্বে জানিতা আমি অধীন আমার স্বামী সব তেনে গোহাব রজনি দারুণ দৈবের মায়া আসি কোন পথ দিয়া শ।বিকেলে সান্ধাইল পানি । ফ্ামীর কর্ণিণ সেবা জেমণ পুজঙ, দেবা তথাপীহ না হৈল আমার । যুবতীজনের কোলে পুরুণ পড়ে ভোলে গাহণী হইখ। হেল গের। পূ্বেতে জানিতঙ যাঁদ বিষাদ পাঁড়ব বাধ কারতাঙ প্রকার প্রবন্ধ শুন গো শুন গো সই লোচনে দংশিল আঁহ কোনণখানে দিব তাগা-বন্দ। প্রয়-বাহুপত। পাণে বাদ্ধয়।ছুলাও বাসেত তাথ হইল দোয়জ বন্ধন আমার দিবস মন্দ শিখিল পূর্বের বন্ধ বান্ধ। বোঝা লৈণ অন) জনঃ । [ চিরদিনে দুহে দেখা কত দুঃখ দিব লেখা তুম মোর রাখহ সম্মন কূপ কর ঠাকুরানী করিয়৷ ওষধ পানি চরণকমলে দেহ স্থান । ডাকিয়। লহন৷ কান্দে কেশপাশ নাঁঞ বান্ধে আশ্বাস কবেন লীপাবতী ॥পনে আদেশ পান শ্রীকবিকঙ্কণ গান ॥[গনায় আজাহার বসাতি ॥1 ২২৯ জীবনে যোঝন বড়ই প্রীত আদের অক্ষরে দুইজনে নিত । জেই দুঃখ বড় রহিল মনে ন৷ গেল যৌবন জীবন সনে । যৌবন যদ্যাঁপি আঁনত্য জানি কোনমতে তবে ছাড়ত, প্রাণী । চণ্ডতীমঙ্গল যেকালে যৌবন কেল প্রয়াণ তা সনে না গেল প্রাণ অজ্ঞান । ভাবতে ভাবিতে জীবন গেল যৌবন ন৷ পাব ধরণীতল । নারীর যৌবন জলের ফৌটা হ|রাইয়। যৌবন রাখল খোটা। এতেক পহন। কাঁহপ যদ লীলাবতী বলে জে কৈপ বাঁধ । শ্রীকবিকঙ্কণ সরস গান যৌবন বিহনে না রহে মান ॥ ২৩০ মোর বোলে ণহন৷ কর অবধান ওধধ কারিয়া তোর সাধিব সম্মান । গান্ুকার কলাগাছ১ রাঁপবে অঙ্গনে : ঘুতের প্রদীপ তাঁথ দিবে প্রীতাঁদনে । নিরামিষ্য অন্ন খাবে তার পন্ত পাড়ি সাধু হব কি্কর খুল্লনা হব চোঁড়। পত্রিকা ভাসাইয়। আন্য হরিদ্রার মূল জতনে আহ শ্মশানের তিল ফুল। ইহা বাটা দিহ সাধু-খুল্লনার বসনে খুল্পন পড়িব সাধুর বিষ-নয়ানে। চুনে পানে খদিরে করিয়া তার খার গৃণ্যা২ বলদেব গাজা ওষধের সার। দুর্গার মুখের গো আনিহ হরিতাল গ্রহণেরঃ সময়ে আনিবে বেড়া জাল । দুইবস্তু কপালে ধাঁরবে সাবধানে সোহাগ বাঁড়ব তোর দুর্গার সমানে । আনিবে আটহালি কীঁট ফাঁণফণা হইতে বিদ মোড়াইয়৷ গো রাখিবে বামহাথে । বসুদেবসুত৷ দেবী কৃষের ভগিনী দ্রোপদী৬ হইল তার প্রবল সতিনী। পঞ্চম দিবস : দিবা ইহা ধাঁর দ্রৌপদী বশ কৈগ নাথ স্বামী ছাড়ি গেলা যথা ভাই জগন্নাথ । যত্রে আনিবে জোড়া অশ্বথের দল দুর্গ-প্রদীপের তাঁথ পাঁড়বে কজ্জল। লোচনে কজ্জল দিয়৷ চাঁহবে" একবার সাধুকে কাঁরয়৷ দিব কণ্ঠের হার । গারড়ের গালের গুয়া বকুলের পাত পারত কাঁরয়া দিব তোমাব প্রাণনাথ । একছতব্রের গাছ আন হাইহামলাতি শনি মঙ্গলবার জাগাবে নিশাবাতি । কাঙর-কামক্ষ্য মুখে বাটিবে প্রভাতে কপালে তিক নিলে প্রীত নানামতে | ওষধ প্রতাক্ষ আম দেখিল সাক্ষাৎ জার প্রেমে গোবিন্দ আনিল পাঁবিজাত। িশূলিয়ার পত্রে পাড়ি লইণে কালি কিয়া বিড়াল আনি দ্বারে দিহ বাপি । আনিবে বাইশ শা শুযুকেব তৈলে ঘুতের প্রদীপ জাল ভূীজবে কতৃহলে । শুকুনশকৃনি* হাড় আঁনিহ জতন আইবড়র চুলের জল আশী-হাটাধ লোন । ভূজঙ্গের ছাল মান্য নেউলের অণ্ড কেশার স্মরণ কাঁর দেখা গজম্ও্ড। লহন৷ ওষধ করে লীলার সংহতি সতিন বাহিয়। ভুঞ্জিতে ণিজ পতি । ছিনা জেগক আনি শ্বেত কাকের শোণিত কালয়। কুক্ধুর মার আন্য তার পিত্ত। কংসবের নখ আন কুম্তীরের দাত কোঠরের পেঁচা আন্য গোধিকার আত । বাদুড়ের পাক আন্য সজারুর কাটা তেমাথায় পুতিয়া কপালে নিবে ফৌট।। শঙ্খের মুটি জেটি মাক্ষিকার মুও জম।৯ গাড়রের সঙ্গ চাতকের তু । দিগন্বরী হইয়া কাঙ,র-মুখে বাটে অলাক্ষিতে পায় ফ্কামী শয়নের খাটে । ১৩৩ মালির মালণে ফুল আনিবে গুলাল শিরীষ বকুল কুন্দ পদ্ের মৃণাল । পণ ফুল সমতুল কারয়া আধান মন্ত্র পাঁড় স্কামীরে মারবে পণ বাণ । ধ্া্মী-সন্তোষের চান্দ রাখবে জতনে বাঘ-তৈল সনে তাহ। মাখিবে বদনে । ওধধ-প্রবঞ্জে মুবুন্দ বিশারদ বঙ।রে ন৷ করে গুণ মোইন-ওধধ ॥ ২৩১ ওধপ-প্রবন্ধ কিছু না লাগিণ মনে ভিতর মহণেতে বাঁসলা দুই জনে । খুলনার বৃপথাশ চস্তেন উপায় উপভোগ দূর হইলে রূপনাশ জায় । দুই জনে একত্রে বসা৷ করেন জুগাঁত কগপপ্রবন্ধে। পত্র পিখে লীলাবতী | ধ্াপ্ত আগে লিখিয়া লিখিশ ধনপতি অশেষ গৃণেব ধাম শহন। য্বতী । তোরে আশীর্বাদ 'প্রয়ে পরমা পিঝত কথে। দিন গোঁড়ে মোর হইবেক স্ভাতি। মোর সমাচাব ঘড় শ্রবণে১ শুনিবে মাপন কৃশন প্রিয়ে পিখিষা পাচাবে। নিজ ধন 'দিযা কর দুঃখ নিবারণ পঞ্জরের তরে কিছু পাঠাবে কাণ্খন | তোমারে সে লাগে প্রিয়ে মোর গৃহভার খুলনার নিহ তুমি অষ্ট অলঙ্কার । খল্পনার নিও তুমি জত অভরণ নিষুন্তু কারহ তারে ছেলি অপেক্ষণ। পারবারে দিহ খুঞ্য৷ উড়তে খোসলা শযন কাঁরতে তারে দিহ ঢেশিকশালাং । এক বংসরের তরে রাখাবে ছাগল নিষমিত অর্ধসের কারিহ সম্বল । ১৩৪ তোরে বাল প্রিয়ে মোর গ।লিবে আদেশ নাহী সত্য পালিবে* মুগ্ডাব তোর কেশ । [খল্পনারে বিভ৷ আমি কৈল পাপ ক্ষণে বিবাহের কালে রাহ আছিল লগনে । গাণঞা গণক মোরে কাহল বিচার খনন। ছাগল রাখে তবে প্রাতকার | 1১ নিশার-গণ কন্যা তারে বড় দোষ তার অপখানে গ্রহ হইব খত্তাধ । অবশা অবশ্য কার গুড়াইল গা শ্রী দিয় জো-মোহর দল পীণানতী | পণ লাখ লী্গাবতী কারণ ণমন পহন। ব্যেখহ।র কেশ পণ্যাশ কাহন । পত্র পিখি বিশ্ব কারল দিন সাও খুল্লমার হাতেতে পহন। দল পাত । | অভয়াচরণে মঞ্জুক শজ ৯ত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর পঙ্গীত ॥ 1 ৩২ সহ সঙ্গে এমও কাঁবয। শিচার হাথে গাঁত লহনার চক্ষে জনধার | খুল্লনা করিয়। কোলে ঝান্দেণ কপটে কেমনে তাঁরবে খাঁন বিখম সঙ্কটে । প্রভুর পত্রের তুমি শুনহ বেভাব ইথে তার ঠ।ঞ কেব। গাইব নিস্তার । বিবাহ কাঁরয়া স।ধু টুটায় সম্মান ইথে তার ঠা নারী কেএ পাগে গান । বাণ দোষে কারণেন সম্মান দূর কোনা দবসে খের গব করে ছুর। লহনার ঝোলেতে খংল্পন৷ পড়ে পাতি হাসেন খুল্পণা ছন্দ দেখি ভিঃি-ভাতি | বলে দাদ ইখে আম না কারি তরাস কে পিখিয়াছে পর্ন কার উপহ।স | চগ্তীমঙগল অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত প্লীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২৩৩ সাধুর ৬ম ভিনাঞ ছন্দ কে 1,1খন পাতি কপটবন্ধ১ । প্রতুর বোলে যাঁদ লিখে আন কেনা কবে তারে অল্প গেয়ান । কতেক লোক আছয়ে পাশে কে অনল পাতি তার আদেশে । প্রভুর সম্রে শত 'কঙ্কর গন্ন শৈয়া কেন না আইপ ঘর । গঞ্জব গড়াইতে না আটে সোন। সোনা শষা। গেশ ঘো তিন জনা । নিলম্ব না কৈশ এক তিলে আছিলে তুম পাশা রঙ্গং লিলে । ফ্কাশীর গাদেশে আইল বসতি হগণ রাহ পরা থুঞ্যা ধাতি। নাথায় মকটে আইন বাসে কৃভু নাহ বাঁস গাতির পাশে । কেএ দোষ মোর দোঁখশ পাত কোন দব মোরে লঘু আরতি । ফ্লাণীর শাসন রাজারে বড় বুঁঝয়৷ হেলি চরাইতে নড়। কত দেখাহ মোরে গাহণীপনা । আপনা চিনঞা থাক শহন]। তুঁঞি অলক্ষণ রাক্ষস-গানিত কোন গাপক্ষণে আহীন দাখুন* | দিলেন ভূপাতি বিষম আদেশ পঞ্জরের পাকে পাঁজর শেষ | অই দোমে হোল ছাগ-রাখাল আমা কি দোয দোষ কপাল । পঞ্চম দ্রিবস 2 দিব। রি তুমি আমি দুহে সাধুর নারা বলে নিল শিবোমণি কানের কনক সাধু বিনে হয দুহাব গারি। ললাটিক৷ নিল সাথ গলাব পদক। ধন লোভে তুম সাধুব দাবা বাজুন্দ নিপ হেম পাযেব পাসুলি তোমার আমি চোঁড় বাটী পাব৷। অঙ্গদ কঙ্কণ নল দিধা গালাগাশি। হেদে ল বাজি' আমা না ঘণাটা খ,ঞা। পবাইয। পা-সা)৬ কিল দূৰ গোঁববে দে মোব গাবিব বাটা । ঝাঞঙ্কাণ পইণ তাৰ বাঞ্গন-এপুব । আঁধক ধিক বলে ছোট হমা। শঙ্খ ভাঙ্গা। পণ হেএ-খানিকের গড়ি শনিস দুবা বধ্যাছি সম্য | শতেশ্ববী হাব নি কশবোত চুডি। কাল আইল বেটী মাথামউডি কন উদণশূন্য কৈতো দুই হাথ আম সনে আজ কবে হডঢাহডি। নান হাথ লোহামাধ* বাখিল আইযাত । ঝনঝন দুইজনে বাহনাড। হ7থ গাশ দি দিয়া কাবিণ “শন শুনি ধাইল বনিক*-পাডা। তষাধ আকণ বামা কবেন বোদন | হাথ খল্ননাব দৈব-ীবপাকে ধাইযা দুব | গণ হাথে জনঝাব বাঁজল বড সতিনেব নাক । সানকম্পে দূয। তাৰ মুখেখ দেই বাবি। কোপেতে লহনা আগন জলে দলাণে বলে বামা বিনযণচন সভ৷ সাক্ষি কাব ধাবল ছলে । তুগি না বাখাল দযা না ঝাহ জীবন । কেশাকেশি দুহে অঙ্গনে 'ফার ভনাচবাণ মক নিজ ত প্রবোধিতে দৃষ। দুহারে নাবে। পীকাবকঙ্কণ গাণ *ধব সঙ্গীত ॥ হইযা লহনা আগুন-কণা মুখে মাবে তিন বজব-ঠোনা । কে বলে সাতিনী ছোট নহে কাটা ২৩৫ এই মুখে চাহ গাবিব বাটা । কন্দল শুনি আল্যেণ সে ধাষ্যা হইয়া অচেতনা কান্দেন খুলনা উচিত না বল দু চক্ষু খা । ধাঁব দুবলাণ গায কটুবাক্যে সভে চাঁলল বাসে [বনাত তোবে কবি দন্তে তণ ধরি কন্দল প্রসঙ্গে মুকন্দ ভাষে ॥ বার্তা দেহ গিধ। মায় । হাম দুঃখমতি বিদেশ গেল পতি নিকটে নাহী বন্ধজন রি পাইযা শূন্য ঘবে লহন৷ বধ করে দুবলা রাখ জীবন | চুলে ধাঁর ?কল লাি মারে তার পিঠে অনাথা দেখিম। বারেক কর দয়া জ্যষ্ঠ মাসে গোহালা গোহালি জেন পিটে। চলহ ইছানি নগরে খুল্লন। জতেক দেই সাধুর দোহাই প্রাণের দুবলা যদি কর হেল৷ অনাথ১ দেখিয়া লহনার দয়! নাই । মোব বধ লাগে তোবে। ১৩৬ মুগাদ মোর মায় বিশেষ কাহয় তায় খ.ল্লন৷ মারণ মারণে খুল্পনা বিয়ে বাধ পাইলে কিবা নিধি থ।কহ পরম কণ্যাণে | কাঁহয মোর বা/9 [বন পরিত।পে আগুনে পেলিনে খানা দারুণ সাঁতনী লহণ। বাঁঘণী কেবণ যনের যন্ত্রণা । খুল্পনার দুঃখবাণী পপ এন গান কাঁন্দ করে পিবেদন দলেন অনুমাতি এক্ষণ ৬গাত গ1১ল শীকাণকন্কণ ॥ ৩৬ উপদেশ বাল অমি শুনহ জুগাতি গামার বচনে তুমি কর্য গবগাত। নদাগর নাহী ঘরে লহনা মুখর নিরস্ত করিয়। তোরে হইণ শতন্তরা | সাধুর সধবান তু থবের১ গুঁহণী ভিন্নপর নহ তুমি খুড়তাত বাহনী১ । কোন দোষে তোমার কারল অপমান দোষ দেখা। যাঁদ মোর কাটে নাক-কান। তৎকাল বারতা আমি দিতে নাহী পারি ছাগল রক্ষণ কর দনা দুই চারি । অন্য ছলে গিয়৷ আমি কাহব বারত৷ যত্ন কারয়া জেন লইয়া জায় পিতা । আমার বচন তুম শুন ইতিহাস রামের বচনে সীতি। গেল বনবাস্‌ । আমার বচন তুমি বুঝ অনুগৃণও আরবার লহন৷ পাড়য়ে* পাছে খুন । এমন শুনিঞ রামা দুয়ার ভারতী ছাগল রাখিব বা দিল অনুমতি । চন্ডীমঙ্গল অতয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২৩৭ গেলেন লহন। নারী সাধুকে খুল্পনা দেই গালি । লীলা ঠাকুরানী১ 'লখে দুবল। বারিয়। আনে২ ছোল । ধাঁসও চান্দা উানলি খুল্পনার বরাবরি পাটপঙাস দেখে সাঙাঁল বিল ধলি সুরেখা পিঙ্গলা কলাবতী চোঙর* ভোঙার ছাধ। আদনখি ভাঙ্গা-সঙ্গবাতি পাখার পাঙপি ঢেঙ্গি হাঁসি ডণপি বুড়ি রাগ কাল বুটি মহিশ! মঙ্গলি সুন্দরি কগ্তাবি জয়া ধানি খাটী জুঝাঁর 'পিঙ্গলি। ধান বুল হিরামাড়ি কমল! বিমল মায। ধরণী সবি দয়া ধাউীড় ঝগাড় মাড় সমাল পাগাল মুসানেজি বাগড়ি৬ দগড়ি গেড় সোন। রূপী রানী হড়ি হরিণী নেমালি বুড়ি বাঁজ।, সবাঁস নেউলি কালি চসালি বাল মালি সর্বানি* কপালী* কালমুখি চন্দান সমার১৭ ডগাঁস ঝাকাল কাঙ্গালি১ শশা আঙুল৷ বিমল৷ ডণসা-আখি । লিখিল তোত্তস ছ। বোক৷ তার কুড়িট। সাতটা লিখিল বিচা-বোক৷ জুঝারিয়া ভাঙ্গীসঙ্গা১ মদনমাতাল্য। ১৩ রণবাকা । চেড়িরে লহন। কয় দাগা১ঃ দেহ সভাকার গায় ইথে যাঁদ কেহ মরে আনিএঞ দেখাবে মোরে তবে নাহি খুল্পনার দায়'। কালমার৷ উভাসঙ্গ। যাঁদ বা বাল হয় সস পঞ্চম দিবস দিব! [ দুলাল সিংহেব সুতা হাব সুত নৃপবত্ণ *বডা উচিত ভুমি 'ণৃণ কাববা আশে ১ ম—১৮ দনা দেবী পাটমাত। কুলে শীলে গুণে অবদাত কাবন খহৃত যত্র বৈবিশৃনা দেন বঘুনাথ । পৃব্ষে পুবুষে স্বাণী সেবেন গোপাণ কামেশ্বব নৃশাতব আঞ্লাষে বঁচিল মৃকন্দ কাঁববব ॥ 7৯৭ ২৩1) খণানাবে দুবনা তাল হাথে শি সানিযা পাব খ,ঞ্জা খ,এন। সুন্দবী । শান্ত কাব দুবলা অঙ্গেব ঝাণ্ড ধান দুবনা বন্ধন কা'ব দৃঢ কাব ট্রাশ। ধাঁবে ধাঁবে জাষ বামা লইয। ছাগল ছাট হাথে ডান মাথে জেমন গাগণ। নানা শস্য দেখিয়া চৌদিকে জ।ণ ছো। (খতেব কৃথাণ সব (দর গালাণালি | উজানিব নিকটে অজখনদী পাব কোলেতে কবিয। বাা ছোপ কৈল পা? গাগল ছাগল জত চাঁবাঁদকে জা ফুটিল কূশেব কাটা বণ্ত পড়ে পা । প্রবেশ কাধল ছেলি* প্রহন কানন পহনা লইযা কিছু শুন বিববণ। দুবলাব হাথে ধাঁব বলেন লহন৷ এন দিযা দুষা মোব পুবহ কামন। । আমাব লাগুক কাঁড় তোব হউক যশ ওষধ কবিষা৷ দ্বার্মী কব দেহ বশ। তস্কা দশ লইয৷ তুমি জাও স্থানে স্থান সাধু সনে কব্য। দেহ একই পবাণ। দুবল৷ বলেন যাঁদ ভ্রাম দিনা চাবি তবে সে ওষধ আমি কব্াা দিতে পাব। ১৩৭ ওষধেব ছলে দুযা কাঁবষ িদায লঘুগতি ইছানি নগবমুখে ধায। প্রতাতে ছাড়িল হইল দ্বিতীষ প্রহর দুবলা পাইল গিযা লক্ষপতিব ঘব। দুবলাব সাড। পাষা। আইল বন্তাবতী ১বণে ধাবিযা দা কাবল প্রণতি । জিজ্ঞাসা কাবন তাবে ঝিষেব বাবত। বিবসবদনে দুঘা কহে সব কথা । খুননাবে সাধু বিভা কৈন পাপক্ষণে [বাহ কাল কেতু* আছিশ পগান। গাঁণএগ গণক তাব কহিণ ঝচিব [না হা বাখে ওব গ্রাঙকাৰ। এণার্ষণে বাপ তুমি কৰ 1৪ (তাম।1 জান।তা এয) গা প্রনাদ । | হেশ বাব। হেন বাঁশ দূবলাব তুণ্ডে আকাশ ভাঙগয। পড়ে বন্তাবতী-মুণ্ডে। | অভ্যাচবণে মঞ্জুক নিজ চিত শ্লীকাবকঙ্কণ গায মধব সঙ্গীত ॥ ২৩৭৯ কান্দে বন্ত। খুল্পনাব মোহে বসন ভিঁজিযা গেশ লোঠনেব লোহে । ঘুনিব পুত্তাঁপ ঝিযে আঙ্ধাবেব বাতি হেন ঝিযে কেব। মোব মাবে কিল লাখি। সাঁজিয। কাহাবে দিল সুবর্ণে ডাপি সাবেব খুলনা মোব কেব। দেই গালি । [বিভা দিল সদাগবে দৌখয। সুজনে ছাগন বাখিলে বাছা গহন কাননে । চল বে মইযা পুত উদ্দিশ কাঁবিতে গইধাই বলেন দুঃখ নাবিব দেখিতে । স্ফন্দন কবযে মোব ডানি ভুজ আখি ুংসিত সপন আমি দিন কথে! দেখি। ১৩৮ গরল মাহুর১ মোরে আন্য৷ দেহ দান খূল্পনার শোক হেতু তোঁজব পরাণ । হৃদয়ে রাহল মোর বড় শোক-সাল দনাই গাঁওত মোরে হয় আইল কাল । দুবলার হাথে ঝিয়ে কৈল সমর্পণ বিদায় দলেন তারে দয়। নানা ধন। উজানিতে আস দুয়া ভাণ্ডে লহনারে তিন দিবসে দুয়। আইল নিজ পুরে । অভয়াচরণে মঞ্্রক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গন মধুর সঙ্গীত ॥ ২৪০ অজ লয় আইন রাম। দিন অবশেশে অজাশালে অজাগণ করিল প্রবেশে । দুয়ারে দাণ্ডায় রাম। বুকে দিয়৷ হাথ লহনার আদেশে আনল কচুপাত। পাঁরসে লহনা রাম। করে গতায়াত টাটকা সরায় রাম! পারসয়ে ভাত । পুরান খুদের জাউ কিছু আছে কোন সকল বেঞ্জনে বাজি না দিয়াছে লোন । রান্ধ্যাছে১ পুড়্যাতি২ গিম।৷ কলাম কীচড়। কড়াই খুদের কীছুত তৃলিয়াছে বড়া । বাগ্যনের থার৷ লাউ কুমড়া বাকলাঃ গড়ই মাছের পোঁটা মুড়া তায়ৎ মেল । খলোর বেসার দিয়া জাল দিয়৷৬ দড় তৈল লোন নাহা তায় সাম্তলন বড়। উড়ন্বর ফল কিছু রান্ধ্যাছে" পিপ্ডিরা কাট-সিমের বেঞ্জনে পুরিয়া দিল সর । দুঃখে নাহা ভূঙঞ্জে রাম চক্ষে পড়ে জল কোপেতে লহন৷ চক্ষু কারল পাকল । খূল্পনারে তর্জিয়া লহনা কিছু বলে এতেক বেঞ্জন 'দিল ভাত নাহী চলে । চণ্ডীমঙ্গল দারুণহদয় বড় পাপমতি বাজি অবশেষে বড় সরা পুর॥ দিল কাঁজ। কিছু খায় কিছু পেলে খল্পনা সুন্দরী তণের শয্যাতে তার গেল বিভাবরী । প্রভাতে ছাগল লয়্যা কারল গমন মুকুন্দ রচিল গাঁত” দুঙ্গখৈর ভোজন ॥ ২১) প্রভাতে ছাগল লয়্য চলিল খুল্সন। আচে বান্ধন রামা৯ চালু অর্থ কোনা । ছাট হাথে ডাল মাথে ধীরে পীরে জায জল আনবার ছলে দরবল্লা গোড়ায় । কিন দুলা শুন খুল্পনা নারীজন কাঁন গিযাছিলাঙ তোমার বাপের ভবন । একত্রে ছিলেন তব ভাই মাত। পত। তাহ। সভায় কাহণ তোমার দুঃখকথা । ভাল মন্দ 1কছু না বলিল লক্ষপাতি মৌন কাঁর তব মাতা রাহল রপ্ভাবতী । দিলেন তোমার তরে কাঁড় চারি পণ দেখিল তোমার পিত। বড়ই কৃপণ । শুনিঞ খুল্পনা রাম৷ ছাড়য়ে নিশ্বাস দুবলারে বৈল নাঁঞ জাব পতৃবাস | খুল্লন৷ রাখেন ছেল পাপ জ্যৈষ্ঠ মাসে আগ্রসম পোড়ে অঙ্গ রবির প্রকাশে । আধাঢ়ে পারল মহাঁ নব মেঘজল ' ছাগল চরাইত্যে নাঁঞ পাঁরসর স্থল। শ্রাষণে বরিসে ঘন দিবসরজনি ছাগের চরণযোগ্য নাহিক অবনি।* [ সরোবর আড়ায় চরায় রামা ছা কোলে করি নালা পার করে দুঃখভাগি | ] ভাদ্রে রাখেন ছেলি ভিজে সর্ব গা অঙ্গুলির সান্ধতে পাকুইৎ কৈল ঘা। পঞ্চম দিবস দিবা ভাদ্রের বেগের বৃঝ্ি জেন লাগে সেল তিন দিন বাহ [জো লহনা দেই তেল । সুখ দুঃখ খুল্পনা শরত-কালে ভাবে আশ্বনে আসিব প্রভু দেবীর উৎসবে । নিকেতন পরাণনাথ কৈলে বসবাস আইল কার্তিক মাস হিমের প্রকাশ । তুধারি শাশির রিতু হিম চারি মাস খুনার শীত খণ্ডে রবির প্রকাশ । আইল বসন্ত রিতু প্রচ তখন অশোক কিংশুক ফুটে বাসাস্ত কা্চন । কেতুকি ধাতুঁকি ফুটে ঢম্পক কানন কৃসুম-পরাগে শ্বেত হৈ ঘলিগণ | লতায় বেষ্টিত রাঃ 'দাখবা অশোক খ্ননা বলেন তব তুম বড়লোক । সই সই বাপি কোনে কৈল লতা সরূপে কহ না ই তপ কৈলে কোথা । আমা হেতে তোমার জনম হেল ভাল তোমার সোহাগে সই বন হেল আল । মউর মউাঁর নাচে সুমধুর নাদ শুনি খুল্পনার চিত্তে বাড়য়ে বিষাদ | এক ফুলে মধু পিয়ে প্রমর দম্পতি সুমধর গায় গীত দুহে একগ্বাতি। অভয়াচরণে মঞ্জুক নিজ চিত শ্লীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪২ '!ঙ্গ মকরকেতু আইল বসন্ত রিতু তরুলতাগণ পল্লাব্ত “হয নদীর খুলে অশোক তরুর মূলে কামশরে রাম চমাকত। “তত পল্বগণ রাশার হরয়ে মন দোঁখ মনে ভাবেন খুঙ্লন। ১৩৯ বসস্ত আসিয়া কাঁবা আট দিকে কৈল শোভা ডালে দিয়া সিন্দুর-রচনা১ । মন্দ মন্দ প্রভঞ্জনে কুসুম পড়য়ে বনে অণ্ুলেতে ধরেন খুল্লনা হইয়৷ মদনের দাস প্রভু আসবেন বাস ভাব করে কামের অর্চনা২ । এক ফুলে মকরন্দ গান করে সানন্দ ধায় আল অপর কুসুমে এক ঘরে পায়) শান গ্রামযাজী দ্বিজ জান অন) ঘরে প্রবেশে সন্রমে । কোকিল গণ%ম গায় আল মকরন্দ খায় মন্দ মন্দ সুান্ধ পরনে তরু-৬শে সরিশুক আলঙ্গন মুখে মুখ দেখি রামা আকুল মদনে । দেখি কুসুমিত তবু কামশরে রাম৷ ভীরু গাঞ্জয়া বলয়ে সারিশুকে বসন্তের উপাখ্যানেও শ্রীকবিকষ্ষণ ভণে রাজ৷ রঘুনাথের কোতুকে ॥ ২৪৩ সাঁরশুক তুমি দিলে এতেক যন্ত্রণা আস্যে রাজ বিদামান পঞ্জরে সাধিলে স্থান অনািনী করিলে খুল্লনা। গোড় গেল প্রাণনাথ ছা% রাখ্য। খাই ভাত পরিতে না মিলে পরিধান সাঁতনে মরণ টশকে কেবল তোমার পাকে খুননার এত অপমান । আমার বধিতে প্রাণ আইলে কিবা এই স্থান পঞ্জরের বিলম্ব দেখিয়া পাত গেল নিরুদ্দেশ তথাঁপ ন। কুর মোরে দয়।। তনু হল অবশেষ ১৪৬ শাঁখয় ব্যাধের কল। করে ধার সাতনল। কাননে এডি জাণ ফান্দে তোমারে বধিয়। শুক ঘুচাব ধনের দুঃখ একাকিণী সার জেন কীন্দে। খাইয়া সাঁরর মাথা দেখ খোর দুঃখ নেখা মোর বধ পাঁগিল তোম।রে কর ধর্মে অবধান রাখহ আমার প্রাণ জাহ তুম গৌড় নগরে । আমারে করিয়৷ দয়া দুঃখেন বারত৷ লৈয়া দেহ মোর পাঁতিরে বারত। উড়্া জায় সারিশুক খুলনা ভাবয়ে দুঃখ মুণন্দ রচিল শদ্ধঃ গাথা ॥ ২৪৪ দ্রমরী ভ্রমর তোরে জ্রাড়ি কর ন| গাইয় মধুর গীত তোর মুদ্ব রা কামশর ঘা চিত্ত কৈল চমাকিত। সঙ্গে তোর বধূ পান কর মধু কি কব সুখের ওর অনাথ দেখিয়। ন।হ কর দয়। চিত্ত কৈণে মোর চোর । থাক এই বান সুখে মধু পানে প্রাতলতায় আতিত১ তুমি হয়া সুখী অন্যে কর দুঃখী এ তোর নহে উচিত । সঙ্গেতে অলিনী নিবাস নলিনী ন৷ জান বিরহ-ব্যেথা চিত্ত বিচলিত জাঁদ গাহ গীত খাও ভ্রগনরীর মাথা । সাপ দুধে মাতে পাপী কাল-পথে [বনয়-মাতন এর কারল বিনয় তুহু মাতোয়াল ধৃতুরার ফুলে হাঁড়রা৷ সুনাদ বিনয় রণ রাজা রঘুনাথ তার সভাসদ মধুদ্করে দিবানশ নন্দনকাননে বাস কে তোমারে বলে ভাল আর যদি কাড় রা তোর রবে কামশর জাতি অনুসারে রা সদাগর আছেন জথ। চন্ডীমঙ্গল ন৷ হইল সদয় কিসেরে বিনয় করি। হইলি মোরে কাল না শুন বিনয়বাণী কিবা মধু গলে মনে তাহা আম গন ৮লে যটপদ কোল সুনাদ পুরে করেন খল্লন৷ কর জোড় কার শিরে। গণে অব্দাও রাঁসক মাঝে সুজান রাঁচ চারুগদ শ্রীকাবকঙ্কণ গান ॥ ২৪৫ কোকিল রে কত কাড় সুললিত রা নিত উগারহ বিব বিরহ-জালেতে পোড়ে গা । সুখে থাক বারমাস কানের প্রধান সেনাপতি অন্তরে ঝাঁহরে কাণ বধ কৈণে অনাথা যুবাতি । মদনের মাথা খা বসন্তের শতেক দোহাই মোর অঙ্গ জরজব অনাথারে কার১ দয়। নাহা। নাহ চিন ঝাগমা কালসাপ কালিয়া-বরণ কেহ নাহী জায় তথ এই বনে ডাক অকারণ । পঞ্চম দিবস 2 দিবা খাঅ গ্কাদে নানা ফল উগারহ হণাহল অনাথার রসে দলে তিত মোর পতি আছেন জথ। কেন নাঁঞ জাও তথা এই বনে ডাক অনুষিত। আ'পয়। বসন্তকাণে প্রাতাদন দেহি যন্ুণ। বাঁসর। রসাশ-ডালে হেন বুঝি অনুখানে আইসে ?কবা এই বনে পকুরূপী হইয়া লহনা। [পণ জায় অন্য বনে এন আসর এনে জায় রামা অপর কাণন নঁচিয়া ত্রিপাঁদ ছনা পরান শ্রীকরণিকঙ্কণ ॥ গা, কারয়া বঙ্গ ৪৬ থহে শীতল বা সরোবর ণুশে দুঃখমতি খুল্লন। আসিয়া নর ভুলে । প্রচণ্ড তপনে গায় গড়ে ঘর্মজগা পল্লবশধ্যার রাম৷ শোয়ে তরুতশ । নিদ্রায় আকুল রাম নাহীক চেতন নবীন পল্লব লোঙে ধায ছেোলগণ । শিরীষকুসুম তনু আত অনুপাম বসন ভিজিয়৷ তার গায়ে পড়ে ঘাম । রথ আরোহণে চলে দেবী মাহেশ্বরী জয়৷ বিজয়া পদ্লা সঙ্গে সহচরী । অধোমুখী হয়্যা জান দ্খী ভগবতী কহেন তরুর তলে কাহার যুবাত। পরমরুপসী কন দেব-অবতার পারতে না মিলে বন্ত্র নাঞ অস্কার । পরাবতী বলে মাতা শুন নারায়ণ এই কন্য৷ রত্মাল। ইন্দ্রের নাচি। তালভঙ্গে সাপ দিয়া আনিলে আপনি ইবে অবধান না কর নারায়ণী । ১৪১ সাঁতনের হাথে রাম৷ পাঁড়িণ সঙ্কটে কাননে ছাগল রাখে তোমার কপটে। এমন শুনিয়া মাতা পদ্মার ভারাঁথ কপটে হইল তার মায়ের মুরতি। গবিধান শতাঁছড়া মলিন অস্বর গুয়া-পান বিনে তার মাঁলন অধর । এইরূপে শিয়রে বাঁসিয়। ৬গবতী কাণ্দিতে কান্দিতে কিছু বলেন ভারখি-। কও দুঃখ মাছে ঝিয়ে তোমার কপালে নর্শী ছাগল তোমার খাইল শ্রালে। তোর দুঃখ দোখয়া পাজরে মোর ঘুণ চা লহনা তোরে কারবেক খুন। এমন সপন দেখাইয়। মাহেশ্বরী নিজ ব্রতে নিয়ে।জিণ পণ বিদ্যাধরী ৷ বিদ্যাধধীগণ প্রত করে সরোববে ছাগল লুকায়্যা দেবী রাঁহল অস্বরে। শিল্রাঙ্গে উঠে বাণ খুলনা সুন্দরী ভূতলে পড়িযা কানে জননি ম্মঙার । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২৮৭ নিদয়। নিঠুর হয়া। শভাগীরে ছাড়িয়া ঘর গেণে না দিলে বোলান খায্যা খনার মাথ। শুন মোর দুঃখকথা তোর কোলে জাউক পরাণ । দুখে পায়্যা দশ মাস মোরে দিলে গরভবাস কোলে কাখে কারয়৷ পালন নিরূপেক্ষি এক দণ্ড পেলিলে অনলকুণ্ডে দুর্লভ হইল দরশন। দেখিয়৷ পাঁওত বরে দিলে মহাকুলধরে না গুনিলে লহনা সতিনী ১৪২ [বিচারে হইয়া অঙ্ক পদগলে দিয়া বন্ধ ভেট দিলে খুল্পন৷ হারিণী 1 এখান 'সিয়রে ছিলে ন। বাঁলয়া কোথা গেলে তুয়৷ পায় করিল বিদায় সর্বশী মরিণ যাঁদ মোব প্রাণ নিল বাঁধ জলদানে হইয দ্বহায়। জলে ঝণপ দিয়ে যাঁদ অভাগারে বাঘে নাহী খান ভুজঙ্গম করি কোলে সেই না মুখ মেলে নিদারণ প্রাণ নাহি জায় । উঠিয়। পর্বত-পাড়ে দরী গিরাঁশখর কানন এক ঠাঁঞ কারি ছাগ শৃখায় অগাণ নদা নেহালয়ে ঝোপঝাড়ে ন৷ পায়া। সর্বশী লাগ ধায়) বুলে হয়া অচেতন । মহামিশ্র জগন্নাথ কবিচন্জ হৃদয়-নন্দন তাহার মনুজ ভাই বিরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ হুদয়াসশ্রের তাত চণ্ডীর আদেশ পাই ২৪৮ অচেতন হয়া কান্দে হাবায়য৷ সর্বশী লোচনের জলেতে মিন মুখশশী । উছটে ছাগুপ নথ রন্তু পড়ে ধারে সবশী বলিয়া রাম কান্দে উচ্চন্বরে । উভরায়ে কান্দে রাম শিরে দিয়া হাথ বলে রাম৷ কোন পথে গেলে প্রাণনাথ । একে একে ভ্রমে রাম। সকল কানন কোথাহ না পায় সর্বশীর দবশন । কতদূর শুনিল স্মরণ হূলাহুলি খুল্লনা বলেন কেব৷ ছাগ দেই বলি। খরশ্বাস মুখে রাম৷ গেল সরোবরে জিজ্ঞাসে ছাগীর কথা জোড় কার করে। চণ্ডীমঙ্গল ইন্দ্রের নন্দিনী বলে নাহী দেখি ছাগা পরিচয় দেহ রাম৷ কেন দুঃখভাগী । উর্বশী-সমান রূপ জাতিয়ে পানী কিসের কারণে বনে ভ্রম একাকিনী । যাঁদ সত্য বল তবে খণ্ডাব সন্তাপ মিথ্যা বদি বল রাম দিব অভিশাপ । এ ঝেল শৃনিঞা রাম৷ দেই পরিচয় অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ গায় ॥ ২৪৯ [কি কারণ আর কুশন বিচার কাহতে বিদরে বুক ঘরে শাহাঁ পাতি সতার উদ্নতি নিত) দেই মোরে দুঃখ । গঞ্বান্য। জাতি উজবান স্থিতি স্বামী সাধু ধনপাঁতি । গড়াত্যে পঞ্জর গোঁড় নগর গেছেন রাজ-আরতি । কারয়। প্রহার অষ্ট অলঙ্কার সাতিন লইল বণে পাট সাড়ি নঞা মোরে দিল খুঞ নিজোজ ছাগ-রাখালে । কুবের-সনান স্বামী ধনবান ধন খায় জগজনে পারতে বসন ন। মিলে ওদন ছাগ রাখা। বুলি বনে। খুধা তৃষা বশে অবশ আয়াসে শৃয়্যাছনু তরুতলে হারাইল ছাগাঁ পাপা দুঃখভাগাঁ চায় বুলি স্থলে স্থলে কামসম বরে দেখি বড়ঘরে [বভ। দল বাপ-মায় পঞ্চম দিবস দিবা সতিন দুবার আমারে ছাগ রাখায় । মোর মাত পিত। লহন৷ কালসাপিনী একু সঙ্গে মেলা বাঁঘনী সঙ্গে হরিণী । নিরবাধ ফিরি বাঘে সাপে নাই খায় বঞ্সিল গোসাঞি সতিনে মোর বুঝায়। হইয়৷ মাকৃলি চাহ না১ পাইনু ছাগলে মদ ছাগি পাই নাহলে মারব জলে উদবে দহন তৈল বিনে ঘোরে মাথ। কি নিধি |নষ্ুর কারে কব দুঃখকথ। আপাঁন লহন। সন্ধযাকালে জত ছোল স্বশী হারায়। শুন আইনু হুলাহাল। লহনার ভয় জে আছে পাটপড়শী কহিলে উচিত লহন। পাপ রাক্ষসী । লহনার ভয় কেমন কাঁর উপায় হইয়৷ সদয় শ্রীকাবকঙ্কণ গায় ॥ ২৫০ আমার বচনে রাম৷ কর অবধান পাঁরচয় কাঁর শুন বাড়াব সম্মান । জেন খুরধার ন৷ গণিল সত রাহু শাঁশকলা। ঝোপ দরী গাব হেন জন নাঁঞ কত টিত্তে তুণি তবে ঘরে জাই পোড়ে অনুক্ষণ লবণ কপূর করয়ে গণনা বনে বাপ চা উচিত না কয় করে বিপরীত প্রাণ স্থির নয় দেহ পরিচয় উপরে ফুল-ঝারা ১৪৩ আমর! ইন্দ্রের সুতা এ পণ% ভাগনী চণ্ডীর কাঁরতে ব্রত আইনু অবনি । কমের উচিত এই ভারথ ভূমি১ বপদ নাঁশিবে যা পূজ। কর তুমি । পুঁজবে ৮ওক৷ প্রাত মঙ্গলবাসরে বিশধ-াগরে ৯তী হব কর্ণধারে | দুর্বাসার শাপে দুঃখী হইল সুরপাঁতি নানাবাধ উপচাবে পৃঁজস পার্বতী । সুরলোকে সুস্থর কারণ সুববাম় প্রথমে সম্মান পাইশ। হীন্দ্রর সভাখ | হৈণ গধুকেট৬ বর কর্ণমূনে ্দানে হানিতে ঞায় নিজ বাহুবলে । তাহারে নাশিণ দেবী নগেব নান্দিনী দেবলে।ক নবশোক করে স্ভুতিখাণী | ' এই বতফনে তোব আসিবেক পাত পাঁতির প্রেমেব ঠামে হবে পুরুব্তী। হারাইলে হোল পাবে ইথে নাঞ্ি আন লহন৷ ঝাসব তোরে প্রাণের সমান । এত শুন খুননার পহাস বদন কেশনে পাজব ৮ত্রী নাঞ আয়োজন | সভে মোঁণ দিণ তারে পুজোপকরণ গারবারে দিল তারে বিচিন্্ বসন। খুল্পন। করেন এও দেবকন্য৷ সনে অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ ভনে ॥ ২৫১ গোমঞ্জে লেপি সন্প অস্টদল পদ্ন লিখিল সুগাঁন্ধ চন্দনে মাঝেতে হেম-বার৷ করিল নানা আয়োজনে । ১৪৪ খুল্লনা পুজে চঙী শোক-দুঃখখা মেণিয়া ইন্দ্রের নন্দিনী কুমারীগণ মেলি দেই হুলাহুলি দঘনে দেই শঙ্খধবনি । কুমারী কহে পাপ খানা করে শা নাগ বিধি বিধানে আসন জন শব কাঁরল ধথ।বিধি মাতক। কল আবাহনে১ । [শাঁখর উধের্ব ব্যোম বামাখি* বিন্দু বিভীঘিত উপাঁর উধের সোম বিচার নান তন্তু দিপেন সিদু কানে কহে পুরোতিত* | অক্ষত মালা দীপ চন্দণ দিল ধুপ নৈবিদ্য বন্তা নরকনা মোদক রসাল আমান পুর থাণ আনিপ নানা বনফণ | দুর্বা আদি দলে খন কৃতৃহলে পুঁজন অফষ্ট নাষক। কাঁরয়৷ স্তীতিবাণী বান্যার নন্দিনী পুজেন গঙ্গলচাঁওকা । খুলনা পুষ্পপাণি টান্তণ নার।রণী কুমারী কহেন ধেয়ান |ষাড়শ উপচারে বাঁধ উপহাবে কারল পৃজার বিধান । প্রথমে লম্বোদর পুঁজিল দিবাকর রথাঙ্গপাঁণ উমাপতি ময়ুরবাহন পুঁজিল ষড়ানন পুঁজিল লন্মমী সরদ্কতী | অষ্ট তওুল দুর্ঝ জাক্বীজল-গভ কন বরাত বার অঞ্জলি সরাঁসজে ১ওক৷ রাম৷ গুজে নাচে গায় বিদ্যাধরী । গঞজার অবসানে ছাগল মেষ আনে শতেক দিল বালদান পূজার চার ভিতে শোণিত বহে স্রোতে চামুওা করে রন্তপান । খুনন। কৈল সতত উঁরিলা পার্যতী অভয়। বরদরাপনী শীকা কন্ধণ গীত বিরচন বদনে নাচে জার বাণী || ২৫২ জোড়হাথে খুলনা করেন স্ত্ীতিবাণী অভয়া বরদা চণ্ডী উারনা৷ আপনি । ্ান্মণীর বেশে তথা উরিলা ভবানী অভিপ্রায় বুঝি তারে বলে নারায়ণী । বরাহ্মণী বলেন কেন পুজহ অভরা এই ত কাননে চন্ডী বড়ই নিদয়া । না নিন্দ না রাহ্মণী তুমি না নিন্দ অভয় যদ মোর বর্মফলে দুর্গ করে দয়া । কি তোরে কাঁরব দয়া নিদয়া গার্যতী এবার বংসর হইতে করিল ভকাত। খুল্পনা বলেন বাধ এথাই লাগিল অগাগীর কপালে কিবা লিখন আছিল । ভবানী বলিয়৷ রাম কান্দিতে লাগিল আচম্বিতে ব্রাহ্মণী চতুর্ভুজ হইল । চতুর্ভূজ নিজ মূর্তি ধাঁরয়া পার্বতী জয়া বিজয়৷ সঙ্গে লক্ষমী সরদ্বতী ৷ মাগ ঝিয়ে খুল্পনা মাগিয়৷ লহ বর কামনা কারিব পূর্ণ অরণ্য ভিতর । অষ্ট তওুল দুর্বা নিতে নিতে নিঞা পুঁজিহ মঙ্গলবারে জয় জয় দিয়া । পুঁজব মঙ্গলবারে না জানি কোন দে তোমারে চিনিতে নার তুমি বট কে। আম৷ নাঁঞ চিন 'ঝিয়ে সাধুর রমণী আম ত মঙ্গলচণ্ভী বিপদনাশিনী । পঞ্চম দিবস দিবা কি বর মাগি জারে তুমি সুমঙ্গলী দর-সন্ধ্য। মিলুক অন্ন না হারিয়ে ছেলি। এই কোন বর ঝিয়ে করাব সম্মান মুখ। গৃহিণী ঘরে হবে পুতবান সকল ভাগ্ডাঁব মাতা বলহ পাবতী স্বামী ঘরে নাঁঞ কিসে হব পুত্রবরতী | হাঁসয়৷ বলেন মাত৷ মাগ ঝিয়ে বর তোর ফ্কামী আনিতে জাব গোঁড় নগর । ভাণ্ডাঁব করিয়। কথা কহ কুতৃহলী আছ্ুক পুন্নের কাজ না পাইল ছেলি। হাসিতে লাগিল। মাত৷ সেবকবংসল দানা হাকারিয়৷ জড় কারল ছাগল । ছাগল দেখিযা রামা চিত্তে উত্যেরোল সর্বশী বলিযা সত্বরে দিল কোল । জন্মে জন্মে তৃমি ছাগী হইস নিযোজন তোমা হইতে পাইল আম চণ্ডী-দরশন । মাগ ঝিয়ে খুল্পনা মাগিয়া লহ বর জে বর চাহিবে দিব অরণ্য ভতর। পুর্রবর না মাগব প্রভু নাঁঞ ঘরে [ক কাঁরব ধন বহু আছয়ে ভাগারে। যাঁদ বর দিবে মাতা সেবকবংসল অনুক্ষণ রহু মাত তব পদতল । বারি মরীচি জারে না পায় ধেয়ানে হেন বর খুল্লন৷ মাগিয়৷ লয় বনে। পণ বিদ্যাধরী গোরী তুললেন রথে কনকের বার৷ দিল খুল্পনার হাথে 1 জয় 'দিয়৷ খুল্পনা চাঁওক৷ পুজে বনে বিদ্যাধরীগণ জান আকাশ বিমানে । খুল্পনার তরে চণ্ভী হত উপদেশ লহনার সিয়রে কহেন নিশি-শেষ । চামুণ্া-মুরূতি হইল। গলে মুণমালা চোষটি যোগিনী সঙ্গে করে খেলা তরাসে সপনে রাম৷ হইল। কোপমতী লহন৷ ভছিয়৷ কিছু বলেন পার্বতী । ১. ম.-১১ 98৫ অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকবিকঙ্কণ গান মধুর চারত ॥ ২৫৩ তোরে লহনা বাপি হইলি কুলের কালি খুল্পনারে রাখাসি ছাগল জারে মাঁপল গতি তার কৈলে দুর্গাত গ্লামী আইলে পাবে প্রতিফল । সাঁতনে কারস ভিন্ন জাহ। হইতে কুনের প্রকাশ অধামে হইলে বাজ দিনে ভূপ্জ তিন সাজ সাঁতনের না৷ কর তবাস। ধারস বাজেন চস নিচন্তে আছজ ঘরে সাঁতন কাননে ফিরে জাতনাশে নাঁঞ তোর ভয় ব্যাঘ্র ভলগুক সনে সাঁতন ফিরএ বনে ক্লীবধে পাড়বে নিশ্চয় । সাহাগে কাঁরয়। দূর ভাবন কারয়৷ চুর বারেক আসুক ধনপাতি গরব কারণে জত তত রূপে হবে [তত মাতর মানেতে হব গতি । রাজ নাঁঞ করে বল জ্ঞাতি নাঁঞ ধরে ছল ধিক থাকুক এই ছার দেশে স্বামী জার লক্ষেশ্বর ধনপাত সদাগর নারী বোলে কাঙ্গালের বেশে । নাঞ তোর রূপ গুণ আপনি রাখিয় নিজ মান ক বোলে ভাণ্তাব তারে আমার ঝন শুন সাধু জিজ্ঞাঁসলে তোরে মোর আগে করো সমাধান । তোর সই লীলাবতী কপটে লিখিল পাতি অধোগতি জাগু লীলাবতী মদাগর আইলে দেশ ইহার উচিত পাবে শাস্ত। ঘুচিবেক লাসবেশ ১৪৬ কাঁর নান৷ পাঁরবন্ধ লেপহ কুঙ্কুমগন্ধ নাঁঞ নেউটিবেক যৌবন শুনিঞ। লহনা কান্দে চকবর্তী শ্রীক বিকঙ্কণ ॥ গান মানাহর হান্দে ৫৪ দবলা মোরে তুমি বল উপদেশ গণিতে গাঁনতে সে পজর হইল শেষ । কালি ছেলি লয় গেল প্রভাতে সাঁতিনী আজ বিষণ পদতলে ডাঁরএা তপান । আপনা খাইয়। তারে কৈল গপমানে আভমানে বান কিবা তোঁজপ পরানে। নির্জন কাননে তারে খাইল কিব। বাঘে চোর খণ্ড লম্পট খাইল কিবা নাগে । হেন বুঝি খুল্পনারে হেল সাপ-্দস্ক ভুবন ভরিয়৷ মোর রাহল কলঙ্ক । নিজ হাতে আরোপণ কর্যা মোরা শরে সমার্পয়া প্রাণনাথ গেল খুঞনারে । তারে বধ্য। বিমশ কুলের হইনু কালি আম হব স্বামীর চক্ষুর বাল। মারল খুল্লন। বানি পরৰতের চুড়। উদ্দিশ কারতে কালি আাবেন খুড়া। অবানি বিদরে যাঁদ পুরএ কামন৷ তাঁথ প্রবেশিয়া লজ খণ্ডাব লহন৷ । বৈশাখ অনল-বার নিরন্তর খর! মৃছ?য় মারল বনি হয় খুধাতুরা১ । পরের বচনে তারে দূর কৈন দর়। অন্নকষ্ট দিল তারে নিজ মাথ৷ খায়া। | দেখল ভৈরবী ভীম লোচনবিশাল কাত খর্পর হাথে গলে মুণ্ডখাল। হান হান করিয়া আমার ধরে কেশ চৌষট্রি যোগিনী সঙ্গে ভয়ঙ্কর বেশ । চন্ডীমঙগল খুল্লনার উদ্দশে লহন৷ চলে বন মধ্যপথে দু সাতিনে হইল দরশন | খুল্পন৷ কারয়৷ কোলে কান্দেন লহন। শীকাবিকঙ্কণ কৈল পণচালি রচনা ॥ ২৫৫ বান গে। হেরে। তোরে মাগো পরিহার অ।মার দিবস মন্দ তোমা সনে কেল ছন্র বান বল্যা গেম অপরাধ । কালি তম ছিলে কোথা আমার হদযে বোথা জাগরণে পোহাইল বজনি দেখিযা তোমার মুখ পাসারল সব দুঃখ কোল দেহ আসয়। বাহনি। মাঁজ হৈতে তুমি প্রাণ ইথে মোর নাহী আন বৌয়ভাব না কারিহ মনে জার সনে বারমাস এক ঘরে কাঁর বাম অবশ্য কন্দল তার সনে । কৌশল রামের মাত৷ কৈকেয়ী তাহ।র সত) দুহার কন্দলে সবন।ণ রাম গেলা বনবাস জথা দ্বন্দ তথাই বিনাশ । লহনার কথ৷ শুনি খুলনা সে মনে গুনি লহনার পাঁড়ল চরণে রঁচিয়া ন্রিপদ। ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুণ্ণ দুই জনে আইল নিকেতনে ॥ ২৫৬ হাঁরদ্র। চন্দন তৈল আনিল দুবল। খুল্লনার অঙ্গে দিয়। দূর কৈল মল। | আট দিগে নানা কর্ম করে দাসীগণ প্লান কার পরে রামা পবিধ বসন। পঞ্চম দিবল দিবা ফলমূলে উপহাব নোবিদ্য পাজলা কবিযা পুজেন ঘটে সবমঙ্গলা । পূজা সাঙ্গ কাব বাম৷ দিল বিসর্জন লহনা লইযা কিছু শুনহ বচন । বন্ধন কাবতে হইল পহনাব ত্বব৷ ঘৃত পুব॥ বাখে বাম৷ কুঁডযা৯ পাথবা। ঘুতে জনজব বান্ধে শাঁলতাব শাক কট তৈলে বাথুযা কবিশ দৃ পাক। খণ্ড মুগেব সুপ উভাৰ ভাববে আচ্ছাদন থালা খাণি দিলেন উপবে। কটু তৈলে বান্ধে বামা চিথলেব কোল বাহতে কুখুড৷ বাড আলু দিয। ঝোশ। [ বান্ধিল ছোলাব সুপ দিঘা তাঁথ খও্ড অণস তেজিষা জাণ দিল দুই দণ্ড। কটু তেলে কই মৎস্য ভাজে গণ্ডা দশ মুঠ্যে নিঙ্গাডযা তথ দিল আদধাবস। বদাঁব শকুল মীন বসাল মুসার পণ টাবি ভাজে বাম। সবশ-শফবাঁ । ১৪৭ কথোগুলি তোলে রামা চিঙ্গাড়র বড়া ছোট ছোট গোটা চাবি ভাজিল কুমুড়া। ]২ গণ্চাশ বেঞ্জন অন্ন কঁবিল বন্ধন থাণায ওদন বাচী ভবিযা বেঞ্জন। কিবা দিষ৷ বুই-মুড। দিল খুল্পনাবে দেখাবে পায বৌচা টাঙ্গেব উপবে। বৌচা বে বেবাল তাব সব তনু হাসা আদখান নেঞ্জ নাঁঞ দুটা চক্ষু ডাসা । বুই-যুগ্ডা লইযা বৌচা উভবডে ধায দুবলা ধাঁবযা ঠেঙ্গ৷ পশ্চাং গ্োডায । খাকু লইযা বুই-মুণ্ডা জাব জেবা ভোগ দুণণান তবে হইণ গ্রুশোক | জন কবিয। সাঙ্গ কইল আচমন কপূবতান্থুণ কইন মুখেব শোধন । পৃথক শয্যায দুহে কাবনা শষনে নিশাকালে দেখে বামা সাধুকে সপনে। চিযাইযা হতাশ কবে কোকিল-নিস্কনে অভযামঙ্গল কবিকঙ্কণে ভনে ॥ পঞ্চম দিবস নিশা ২৫৭ কহ দুয়া১ উপদেশ মোবে কামবৃপা হইয়া আশ খাঁদ হই বহঙ্গমী উড়া। বাই গউড় নগরে । দিনে থাকি গৃহে কাজে পাচ জনের মাঝে যামিনী আইসে মোরে কাশ জালায়ে মান্দর পথে প্রবেশ করয়ে কতে অই মোর খর শরজাল । সপনে দেখিল আমি একরে আছিল গ্বামী বাহু পসাঁরয়৷ দিল কোল সপনে পাইল নিধি মোরে বিড়ন্িল বাধ জত কিছু চরাচর তোমা নহে অগোচর চিআইল কোকিল-কোলাহল । থক ধর্মরাজার সমাজে | অবতার কাক-বুপে খ্লনার মুখে মুখে খুল্পনাব দুঃখ দোঁখ হইয়া চণ্ডী অধোমুখা কন চণ্ডী মধুবস বাণী বিণয় কিয় তারে খুল্লন। 'জিজ্ঞাস। করে উভে জুড়িয়া দুই পাণি। কহ কাক কুশলঝরতা জৌড়হাথে কার নতি কহ পূর্বনুখে মোর কথা । যাঁদ আসবেন পাত তোমার সমান পাঁখ এই গ্রামে নাহ দেখি আইপে কিবা মোর ভাগ্য ফলে যদ আসবেন পাতি উড জাও লঘুগাঁতি পুনবার বইস মোর চালে । যাঁদ আসবেন নাথ হেম-থালে করাব ভোজন পুরিব তোমার আশ দাসী হইয়। করিব সেবন । আদ জত মুনিবর্গ পঞ্টাশ বেঞ্জন ভাত সুবর্ণপপ্জরে বাস পরাশর ভূগু গ্গ _ গাহে তোমা বসন্তের রাজে গেল৷ মাত। গউড় নগরে গিয়। অবশেষ নাশ সধুর পিয়রে বাস স্বপ্ন কহেন সদাগরে । মহামশ্র জগন্নাথ হৃদয়ামশ্রের তাত কাঁবিচন্দ্র হুদ্য়নন্দন তাহার অনুজ ৬াই চণীর আদেশ পাই বিবচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ২৫৮ যামিনীর অবশেষে [ আপনি ] লহনার বেশে গেল৷ চণ্ডী সাধু সান্নধানে তার পাছু পদ্দ।বতী বাসিল৷ সাধুর সান্নিধানে । [নান্দিয়৷ বলেন সদাগরে ধাঁর খুল্লনার মূর্তি পঞ্চম দিবস নিশ। পাসুরিলে নিজ জায়া সুখে আছ গউড় নগরে । পাশায় গঙাইলে দিন হইলে নিজ কুলের কলঙ্ক মাইলে নৃপতির কাজে রাহলে পঞ্জর-বাজে বেউশ।১ জনের পাইয়৷ সঙ্গ । তোর নিন্দা করে রাজ। মুখ না দেখাইয় [নিজ] দোষে নৃপাতি মানল গোর পরপ্রী-লুব্ধ হইয়া মধাদা করাইলে হীন [সিথ। কর শিবপূজ। |নপন্ব দেখিয়া তোর লুটিয়া লইণ সব কোবে। /ই গাশে নারী কান্দে দেখিয়া চিয়াইল সদাগর কেশপাশ নাহী বাঞ্ছে *৩লে গডয়। কান্দে গন মনোহর ছান্দে রচিল মুকুন্দ কবিবর ॥ ২৫৯ ধপ্ন দেখিয়া উঠে সাধু ধনপাঁত আপনার শিরে সাধু করে আগ্তঘাতি১। মনে ভাবে সদাগর কিবা কৈণ কাজ সারিশুয়া-মস্তকে পড়ুক ঝাট বাজ । পক্ষ যাঁদ হইতাঙ উড়্া জাইতাম ঘর চিন্ত।-শোকে সাধুর হদয় জরজর । রাজভেট নিল সাধু সফাঁরয়৷ ভেড়া পবাতয়৷ টাঙ্গন তাজি নীলবর্ণ ঘোড়া । ভার দশ দধ কলা চাম্প৷ মর্তমান দোখওড সরস গুয়। বিড়াবিষ্ধা পান । রাজারে প্রণাম করে দিয় রাজ-ভেট বিদায় বলিলে রাজ! মাথা করে হেট । মাস এক থাক তারে বলে দণ্ডরায় রাজার বঢনে সাধু নাহি দেই সায় । পুরষ্কার সাধুরে করিল দণুরায় নানা ধন দিয়া তায় করেন বিদায় । ১৪৯ হাস। ঘোড়। খাস। জ্যেড়। নানা অভরণ চঁড়িবারে দিল তারে সসাজ বারণ। বন্দিয়া ভূপতি পান্ত পাণ্ডতসমাঝ শৃভক্ষণে ধনপাঁত চড়ে গজরাজ । চলিণ মালাতিপুর কলাহাট দিয়া সগাঁড় হোগলবাঁড় বামাদকে থুয় শিমুলিয়া বালিঘাট। বড়ান্যারং ভয় লঘুাত চে সাধু তিলেক ণ৷ রয় । গজ-পিগে সদাগর জায় বরা ত্বরা নাহী মানে সদাগর বসন্তের খর] 1 দুতগাঁত চলে সাধু ন। করে রপ্ধন। খিরথণ্ড দাধ কলা করয়ে ভক্ষণ । খুল্লন৷ গহণ। বিনে অন্য নাহী মানে হয় দিবসের পথ আইল দুইদিনে । উপনীত হইল সাধু রাজার দুয়ারে শুনি সাদুর কথ রাজ আগু সরে। পঞ্জর এাঁড়য়৷ সাধু নত কৈণ মাথা নৃপাত জিজ্ঞাসে তারে কণ্যাণবারতা । অঙযাচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ২৬০ ঙায়।॥ এতেক বিলম্ব কি কারণে হে উড়যা গেল সারশুক অকারণে পাইলে দুঃখ কলধোৌত পঞ্জর গঠনে । তুমি গেলে পরবাস দুঃখ পাইলে বারমাস দূর গেল পাশার কৌতুক দেখিতে লাগয়ে সাদ সারিসুয়। দিল এত দুঃখ । তেজিয়া ঘরের মায় অপেক্ষণ নাহী তব ঘরে কত হইল কার্য বাদ পাসরিনে নিজ জায়। ১৫০ লোকে দেই অনুযোগ কিণ। সাধেব হইল রোগ এই মোর ভাবনা অন্তরে । মরা৷ জাকু সারিশুয়া তোমার বালাই লইয়। তোম৷ বিনে মনে মাহা আন সফল হইল আশ আজ পোহাইল নিশ। দেখিলাঙ তোমার বয়ান । দুঃখ ভাবে দুই জীঁয়া লয় শা কর ায়। ঘরে গিয়৷ কর প্লান-দান রাজা সাধু পারহাসে প্রে আনন্দবসে শ্রীকাবকঙ্কণ পস গাণ ॥ ২৬১ পঞ্জার দেখিয়৷ রাজ৷ বলে সাধুবাদ সাধুকে দিলেন রাজা ভুষণ প্রসাদ । নৃূপাতচরণে সাধু করিয়া প্রণাম চিড়িয়া পাটের দোলা চলে নিজ ধাম । সঙ্গা কাড়। টমক বাজনে উতরোল দশ দিকে ভারল পাইকের কোণাহণ | বন্ধজন সন্ভাষেন নগরে নগর লহন। নইয়৷ কিছু শুনিব উত্তর । পতির আগাতি-বার্ড শুনি দূতমুখে দুবলারে বলে রাখা খিখাদে কৌতুকে । চিরাঁদনে প্রাণনাথ ঘরে আইপ খোর খুল্পনার যৌবন দেখিয়া হব ভোর । এড়িয়াছু কোথা মোর ওঁধধ উপায় প্রাণনাথে বশ কর1১ হইয়। স্বহায়। আমার লাগুক ধন তোর হকু যশ ওষধ করিয়া মোর ফ্কামি কর বশ । লহনার বচন শ্রবণ কর্যা চেড়ি আঁপলম্বে আনে তার ওষাধর পোঁড়। আন্বাল্য দুবল। তার দৃঢবন্ধ দড়া লহনার হাথে দিপ ওঁষধ-সাপুড়া । চন্ডীমঙ্গল লহনা শীতপ বাণি পৃঁরয়া ভূঙ্গারে নান! ওষধ রাম। মিশায় কপূরে। একে একে দুবল। দিলেন সাবধান ' ওধধ কাঁরয়া সাধ আপন সম্মান । পহনারে এমন কহিয়৷ প্রিয়কথা খুক্লনার কাছে দাশী হইল উপনীত । [হত উপদেশ তারে করে নিবেদন আস্বকামঙ্গণ গান শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ৭. ২৬ আর শুন ছোট ॥] সাধু আইল ঘরে ঝাঁরি হইয়া শুন তুমি বাজনা নগরে । আজি তোর পোহাইল দারুণ দুঃখনিশা আজ তোর ভবাণী সফল কৈল আশা । আপন বল্য৷ দুবলারে রাখিহ চরণে দুবল। আনের দাসী নহে তোম। বিনে । তোমার প্রাণের বোর পাপমতি বাজ সাধুর সাক্ষাতে তার বারি কর্য পাঁজ। দোষের মত যাঁদ নাহী করে প্রতিকার সাধু প্রবাস গেলে দুঃখ দিব আরবার । তুমি জত পাইলে দুঃখ মোর মনে ব্যেথ৷ তোমার হয় সাধুর সনে কব চারি কথা । দনার ছাট খু'ঞ্ঞার বাস নিহ বাসঘরে চক্ষুর বালি সাধুর করাব লহনারে । অলকাঁতিলক পর তুমি মোহন-কাজল সাধু ভেটিবারে নেহ ভূন্ধারের জল । এক বাঁলতে দশ বাঁলবে না করিবে তরাস উনু বুকে নাঁঞ করি সতিনের বাস। দুবলার বোলে হাসে খুল্লনা সুন্দরী প্রসাদ কারল তারে মানিক অঙ্গার । রিয়া মধুর পদে একপদা ছন্দ শ্রীকবিকঙ্কণ গীত গাইল মুকুন্দ ॥ পঞ্চম দিবস নিশ। ৬৩ খুল্পনার চরণে প্রণাম কারি চেড়ি মানিক ভাগায়ে আনে অভরণ-পোঁড় । অবধানে আন্বাইল দ্রবন্ন দাঁড় দোছোট কারিয়৷ পরে তসরের সাড়। দুবল। ম।ঞজয়ে কেশ ণয়। প্রসাধান বাম করে হেমদণ্ড রসের দাপান। কবরী বাঁঞ্ধল রাম৷ কুসুমের গাঙ। আধাটিয়া নবঘন জেন করে শোড৷। শ্রবণ উপরে পরে কনক-বউীল সজল জণদে জেন পড়িছে শুন । বাহুযুগে আরোগিল কনক-কেধৃব কানে গঠিত পরে বাজন-নৃপুব । মাঁণাবরাজত পরে মুখর |কঙ্কিণী পদে গদে শুনি মত্ত মরালের ধ্বনি । জানকের রসে করে অধর মাজন রসের দর্পণ তুল্য নেহানে বান। ডানি কবে নিল রামা রজতের ঝ।4 বাম করে নারায়ণ-তৈলে পুর্য৷ খর । কবরীতে আরো পিল মল্লিকার মালে হেন কালে আস্য৷ সাধু বৈসে পাটশ।নে । প্রণাম কাঁরয়। বন্ধুজন জায় ঘর গাহণী বাঁপয়া ডাক দিল সদাগর। থুল্পন৷ আইল তথা কুঞ্জরগামিনী পূর্বে জেমন ছিল ইন্দ্রের নাচান। দুবল৷ রাহল তথা কপাটের আড়ে ধারে ধীরে গেল রামা সাধুর নিয়ড়ে। অবাঁন লোটাইয়া তৈল-বাটি এড়ে খু'রি সাধুকে প্রণাম করে রূপবতী নারী । শিব শিব বলা। সদাগর কিছু বলে হেট মুখে খুল্পন। রাহল সেই স্থলে । উত্তর না দেই রাম৷ সাধু ভাবে মনে । অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণে ভনে ॥ ১৫১ ২৬৪ রাম৷ মাথ! তুণিয়া কহ কথ। ণাঁণবাবে কার ভয় দেহ মোরে পরিচয় শনের ঘুটক শনবোথা | 1৭18৫ কাঁপ-মান ফিরে তায় আলিজাল ণএয জ। তাথ দোলে বর্ময় কর্ণপ্র তিমির করয়ে দূর অচগুলা ব্ুঁপি কপালে । খন শবদ-ইন্দ্ তাঁথ দ্বেদ বিন্দু বিন্দু সুধাংশুমঙলে জেন তারা বাহ তো কেণপাশ কাঁধঝারে আইসে গ্রাস পণোব সগখ হইল পারা। হেন লখ মনুমানে ধরাঁস অপাঙ্গ গুণে কাজল গরপজুত বাণ তোগাব কার্ণকা ফান্দে মোর মন-মুগ বান্ধে কার তরে করাঁস সন্ধান । [জানএশ প্রতাতে রাবি সিন্দুর ফোটার ছবি তার কোশে চন্দনের চান্দা এ রূপমাধান তেন আমার শোচন-চোর হরিযা মন নিলি বাধা । তুহু আতি কশোপরী তথ তোর কুচাগারি রামরদ্ত। জান গুরুভার তোর কুচে অনুপাম মণিমুকুতার দাম মেরুশৃঙ্গে মন্দ।কিনী ধার । কত প্রশ্নভাষে সাধু ঝশীপয়া বদনাবিধু চলে রাম৷ ভিতর মহলে দুহার রাখতে প্রীতি চলে দাসী লঘুগতি পহনার ঠাঁঞ কিছু বলে। মহামিএ্র জগন্নাথ ধদয়মিশ্রের তাত কাধচদ্দ্র ধ্দয়নন্দন তাহ।র অনুজ ভাই চন্ডীর আদেশ পাই রাচল শীকবিকঙ্কণ ॥ ১৫২ ৬৫ আর সুন্যাচ ঝড় মা সতার চাঁরত হেন বুঝি সাধুর ঠাঞ কয় অনুচিত । জেই ক্ষণে পাইল সাধুর ভোঁরর সাড়। আনিল ভাণ্ডার হইতে অভরণ-পেড়া অঙ্গদ কঙ্কণ হারে ভূষিত কর্যা গা যৌবন-গরবে ভূঞ্ে নাহি পড়ে পা। জেই আইলে সদাগর আপনার বাসে মোহন সন্দ্ুর কাজল পরা বৈশে তার পাশে । বড় বনি গুরুজন জোষ্ঠ সতিন তাঁথ স্বামী ভেটিবারে জায় না লয় অনুমতি । মুখে মুখে কয় কথা অমুতের কণ। । কোথাহ না দৌঁখ মা এমন চাটাপনা৯ | ধীরে ধীরে কয় কথ ইসত হাসিয়া হেন বুঝি কয় কথা তোমারে গঞ্জিয়া । প্রথম সন্ভাষে [রামা] না বাসিল ডর হেন বুঝ অই তোমার লব বাসঘর । ওহার সবে গোরা গ। নহণি যৌবন গনগর্ধিত দেখ্যা বুকে না দেই বসন । ওবধ-পানি করা তুম ভেট প্রাণন।থে সতিনে বিচ্ছেণ কর॥ রাখ নিজ হাথে । অভয়চরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকীবিকষ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৬৬ দুবলার বচনে লহনা অভিমান মন দিয়৷ দুয়। মোর সাধহ সম্মান । তোম। বই প্রয় সাথ কে আছে আমার বিপদসাগরে দুয়া হও কর্ণধার । ওষধ করিয়।৷ মোর সাধহ সম্মান সাধু সনে কর্যা দেহ একই পরান। চন্ডীমঙ্গল লহনার চরণে প্রণাম কর্যা চোঁড় মানিক ভাগারে আনে ওষধের গোঁড়। অবধানে আম্বাইল দ্রড়বন্ধন দড়। লহনার হাথে দেয় ওষধ-সাপুড়া । একে একে ওষধের লয় পরিচয় ওষধপ্রবন্ধ গাব গাঁত %দ-ছুয়। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ২৬৭ লহনার চরণে প্রণাম করা চোঁড় মাঁনক ভাগ্ডারে আনে অভরণ-পেড়ি। দুবলা মায়ে কেশ পয়্ প্রসাধনি বাম করে হেমদণ্ড রসের দাপনি। আচাড়ল কেশভার নানা পারবন্ধে তৈনজুত হইয়া পড়ে লহনার কন্ধে। করবা বাঁদ্ধল রাম৷ নামে শুয়াঠুটী দর্পণে নেহালি দেখে জেন গুয়াগুটি । মাছ্যাত৷ দেখিয়া মুখে দর্পণে চাপড় বাছিয়।৷ পরয়ে মেঘডমুর কাপড় । জতনে পরয়ে রাম অঞ্জন [সন্দুর মার্জন কাঁরয়। পরে মাণিকর্ণপুর । কমরে দোয়াল১ বাদ্ধি হইল খঞ্জ্ুকায় মণিময় হার কুচযুগলে লোটায় । বসনে তুলিয়৷ রাম বান্ধে পয়োধর মোহন কীাচাল পরে তাহার উপর । লহন৷ বিকপ্প পানি পুরিয়। ভূঙ্গারে নানা ওষধ রামা মাখিয়৷ কপূরে। ভেট 'দিয়৷ সদাগরে করিল প্রণাত লহন৷ ভংণসয়া কিছু বলে ধনপাঁতি। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকন্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ পঞ্চম দিবস ; নিশ। ২৬৮ মোর দিব্য তোরে ক৷ দিয় পাঠাইীল জল আকুল পরান জিউ করে টলটল। এন মাত।৷ হাতি নিবার শাস্ত-অঙ্কুশে মাসয়া সে নারী হাঁথরে রাখিব কিসে। নেক সফর তেমত নাহী রূপসী ণ্। তিলোত্তন। কমল। কিব৷ উর্বশী । গাঁখতে হরিষ অমতে বিষে জাঁড়ত নাহীক পাওত বঁঝযা দুহার 'হিত্ব। বাসুরগণে গ্রীহরি হইল মোহিণা ৩ দেখিয়। শূলা লইয়। সঙ্গে ভবানী । দাখয়। মোহিনী আকুল হৈল।৷ মদনে বীর চপ্পিতে স্থির হব কার প্রাণে । শুন বাঁধ কথ৷ মোহিনী জার আখ্যান একা মীনকেতু কে করে তার সম্মান। দেব সুরপাতি হরিল গোঁতমদার৷ এ নব যুবাত গুরুজায়৷ লৈল তারা । ১, ম.-২০ সত্য কহ মোরে করে কামবাণ ছোটে দিবা রাতি শান্তি কৈল ছার দ্রাম নিবন্তব শী সত।ভাগা গরাঁশতে বম নিবাচয়ে চিত অগৃত বণ্টনে হৈল৷ কুতৃৎলী দেব শূলপাঁণ দেখিল ভারথে হরিল দুহিত। ধর্মনাশ হেতু তার শুন গাঁত ভজে নিশাপাতি ১৫৩ একাদশ দশে বংসর বয়সে [বিবাহ কারল তোম৷ ভালমন্দ জত তোমাতে 'বাদিত ইবে ছল কেন আম। । শুনি মধুমতী সাধুর ভারাথ বিনয় বলে লহন৷ বাঁচয়। সুছন্দ সুকাবি মুকুন্দ গচালি কৈল রচনা ॥ ৬৯ নো হাথ দিবা শিবে সমাপ্পয। খুল্পনারে গোড গেলে গড়াতে পঞ্জর তোমার চরণ সত] জনান সমান নিত্য পালিপাও এক সম্বংসর | নাহী রান্ধে নাহী বাড়ে নাহী কেশ আচড়ে আপগাঁন বঞ্ধন কাঁর কেশ শিরে দিয় আমলাঁক এাপনি উহার করি বেশ। ঘরে ঘরে বুলি চায়্য হইয়। প্রাণের সাখ হরিপ। কুনকুণ পয়া কারতে অঙ্গের মণ৷ দুর হির৷ নিলা মত পলা আপু পরাই কর্ণপূর। কলধোত কণ্ঠমাল৷ জবে বেল। ॥ও দশ হেম-থালে ছয় রস- জুত অননে সাধ বহুমান ১ ভুঙ্জাঁয় মধস্যের ঝেলে শয়ন করাই কোলে আপুনি জোগাই গুয়া-পান । খিরখণ্ড কণ। দি ভেট পাই নান। বাঁধ পুনর্বার না কারএ বাস সুখে থাকে নোর ঠাঞে নাহ গনে বাপ ভাই নাঁঞ গেল বাপের নিবাস । আপান ভাঙ্গায় তঙ্ক৷ কাহারে না করে শঙ্কা জত ইচ্ছ।২ তত করে ব্যয় ১৫৪ আম তারে] দেখি প্রাণ কার তরে নাহী করে ভয়। একেল৷ ঘরে কৃত আপান কাঁরহেত নিত খুল্লনার দুবল৷ কিন্করী চিয়াইয়া খাওয়াই ভাত কেবল তোমার ভয় কার। লহনার কথ শুনি প্রসাদ দিলেন নিজ হার গান কবি শ্রীমুবুন্দ আজ্ঞ। পাইয়া ব্রাহ্মণ রাজার ॥ খায় পরে করে দান শুনহে পরাননাথ মদাগর মনে গুণ রাঁচয়া এপদী ছন্দ ২৭০ হাসপরিহাস করে বাঁসয়। দম্পতী জিজ্ঞাসে ঘরের কথা সাধু ধনপাতি। লহন৷ বলেন নাথ তুমি পুণ্যবান্‌ তোমার কৃপায় মোর ঘরের কল্যাণ । চোওরেং 'জিজ্ঞাসে সাধু খুল্পনার কথ৷ লহনার হুদে লাগে কামশর বোথা । সাধু বলে প্রিয়ে তুমি যদি দেহ মন খুল্লন৷ রসইশালে করুক রঞ্জন । নিমন্ত্রণ দেহ প্রয়ে জত বন্ধুগণে অন্ন খাবে খুল্লনার প্রথম রন্ধনে । সদাগরে দেখিতে আইল কত জন সভাকারে দুঁয়াচোঁড় দিল নিমন্ত্রণ পান দিয়৷ সদাগর তারে দিল ভার কাহন পণ্মাশ লয়া চলহ রাজার | িনিতে বেচিতে যাঁদ নাঞ আটে কাঁড় তঙ্ক। দুই চাঁর লৈয় বণিকের বাড়ি । নিয়োজিল ধনপাঁত ভার দশ জন ধীরে ধীরে হাটে দুয়। কারল গমন । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ চণ্ডীমঙগল ২০১ দুবলা বাজার জায় পাছু ভার দশ১ ধায় কাহন গণ্টাশ লৈয়৷ কাঁড় কপালে চন্দন ঢুয়। হাথে পান মুখে গুয়া পরিধান তসরের শাড়ি । চলে দিয় বাহু-নাড়। উপনীত প্রথম বাজারে দ্বাজাত দেখি দুয়া এড়াইল গ্রাম-পাড়। হরষিত মন হয় কানতে লাগিল বোঝ৷ ভারে । লাউ কিনে কচি কুমড়া বিশ। দরে পলাকড়৷ পাক। আগ্র কিনে শয় মূলে [কানঞ। নবাত ফৌন বিশ। দরে কিনে চিনি পান কিনে সহস্রের দরে । মৃস্য দিয়৷ পণ দশ জয়ন্ত কানিল শশ জরট কম) কিনে বুই খর্সালা কিনে কই কামরঙ্গ কনে দুইপণ । কল৷ ঠাপা মর্তমান কপূর কিনিল শঙ্খ-ুন সাক বাগান সারি কু খাম-আলু [কিনে কিছু [বশা শত আট কিনে লোন। হঙ্গ জরা রসবাস [কানিল মহিষা দই সরস গুয়। মিঠা২ পান নরমত কনে তালরশাস চাঞ মেথি জোহানি মহরি মুগ মাষ বরবটী কানিল সবল পুঠি সের জুখ্যা লয় ফুলবাঁড়। পাঙ্কলঃ চিড়া কিনে সৌল পোন৷ কিনে দুয়া চোঁড় মান ওল কিনে সার দুগ্ধ কিনে ভার চারি পুজি দশ কানল কীকুড়ি। আট কাহনে 'কিনে খাসী তৈল সের দরে দেড় বুড় তোলা মূলে তেজপাত খর নিল বিশা সাত আদা বিশা দরে দেড় বুঁড়। রঙ্ধন-সপ্ধান জানে চতুর সাধুর দাসী পঞ্চম দিবস নিশ। জুড়ি দরে নারকল কুলি করঞ্জা পানিফল কাঠাল কিনিল দুই কুড়ি কিছু কিনে ফুলগ্রাভা সের দরে ঘৃতে ঘড়া ভার। নিমাণ কারত পিঠা বিশ দরে কিনে আটা খণ্ড কনে বিশা সাত আট দুবণা বেসাত্যে জ।নে অবশেষে হাড়ি কিনে মাগ্য। পয় তার কিনু ভাট । [কানিঞ৷ রন্ধন-সাজ" কিছু কিছু নিল” ব্যাজ হরিদ্র। চুপাঁড় ভার কিনে খায় খও দধি কল৷ চিড়া দধি দের ারিগণে । আসে পিছে ভাঁরগণ দুয়া আইসে নিকেতন উপনীত সাধুর মন্দিরে আগে ভেট দিল খাসা প্রণাম করিয়।৷ সদাগরে । | কৃত রাজপ্রয়া-সন্ সঙ্খনত পাসে রঘুপতি [বখ্যাত মাধব ওঝা কর্ণপুরে জাহার বসাত। করুন৷ কমলা৬ টাক৷ ম্লান কাঁর দুবলা চতুর সাধুর দাসী বেদগব আদ গোর সাবর্ণ গোত্রের রাজা সতগুণে মধুমত্ত বিরাদগর দত্ত আনাইল দামন। নগাঁর চান্তয়া আপন হিত করাইল পুরোহিত কারল গ্রামের অধিকারী 1৯ মহামশ্র জগন্নাথ হদয়ামশ্রের তত কাঝচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চণ্ডীর আদেশ পাই বিরাচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ১৩ হার কাঁড়র লেখা একে একে দিব বাগ৷ চোর নহে দুবলার প্রাণ ১৫৫ লেখ! পড়া নাহ জানি কাহব হদয়ে গনি এক দণ্ড কর অবধান। হাটমাঝে পরবোশি আসি হরি মহাজাসি ডাকে মীন-রাশ্যের কল্যাণ আসিয৷ আমারে গাঁ্জ শ্রবণ করাল্য পশা্জ১ তারে দল কাহনেক দান। কান্ধেতে কুশের বোঝা আঁসিয়৷ কুসাই ওঝা বেদ গাঁড় কাঁরল আশীব ইছযা তোমার যশ দার্ষণা ধারল বহুদিন । তারে দিল পণ দশ বাজাবে কপূর শাহা চাঞ) বুলি ঠাঞি ঠা তরতনে পাইন প৮ তোল পাঁচ কাহনের দর প৯শ কাহন ধর চাঁর কাহনের নিন কলা। আলু কচু সাক পাত আঁদ নান। বন্তুজাত নিল চার কাহন আফ্ট পণে তৈণ ঘি লবণ ছেন৷ পণচ কাহনের কিন্য। খাসী নিন আষ্ট কাহনে। প্রবেশ করিতে হাট আমি তথা রাজভাট কায়বার পড়ে উভহাথ ইহ্িয়। তোমার যশ কানা পাঁড়ণ পণ সাত। তারে দিল পণ-দশ হাটে ফিরে অনুিন সেক ফকীর উদাসীন বর তথ সপ্তদশ বুড়ি সঙ্গে তারি দশ জন তারে দিল দশ পণ আম খাইনু চার পণ কাঁড়। প্রাণভয় দুয়।১ কয় সাধু বলে নাঁঞ হয় দুল! কারল প্রাণপণ যাঁদ মিথ্যা হয় ভাষা কাটিহ দুয়ার নাস৷ বিরল শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥ ২৭৩ খাখী ভেট 'দিয়। দাসী কারল প্রণাম দুইটা সোনার গাঠ্যাং পাইণ ইনাম । ১৫৬ সদাগর বলে হেরো শুন বা দুবলা কি বলে জানিঞা আইষ তোমার ছোট মা। রন্ধন করিতে তারে নিতে বল পান এত বালি দুয় চেড়ি ধাঁরে ধীরে জান। কাহয়। সকল কথ পাইয়৷ বহু মান খুল্লনারে আনে দুয়া সধু বিদ্যমান । অগ্জণি করিয়৷ রাশ৷ লয় গুযা পান সেই কথায় লহনা গাতিষা আছে কান। তর্জন গর্জন করে অধরদশনে সাধুকে আসয়। রাম। কবযে গঞ্জনে। ,তামার চখণে আম কার নিবেদন দশ ঘবে দশ বন্ধু দিণে নিমন্ুণ । কেহ ছোচা কেহ বোচ। কেহ বা সরল কেহ বা সুজন আছে কেহ আছে খল । সভ।কার মন জেঁব৷ কারব রঞ্জন সেই গান নেগু আসি কাঁরতে রন্ধন । পান নিতে আম৷ সনে ন। কৈন বিচার র্ধনখাচার "টিং আনিব খাখার । নাঁঞ রাষ্ধে নাঞ বাড়ে ছুপায় না দেই ফু পর-রাহা৷ ভাত খাইয। চান্দ পারা মু। দশ ঘরের দশ ধন্ধ দিলে নিমন্ত্রণ যোবন দোখয়া সভে কাঁরব ভোজন | জহনার বোলে সাধু না করে সোয়াদ [ভিতর মহলে চলে ভাবিষা বিষাদ । ধুনন। গঙ্গর জলে কাব প্লান দান চাঁওক৷ পুজেন রাম৷ হয়া সাবধান । ফশমূল উগহার নৌবদ্য পাজলা কাঁরযা পুজেন ঘটে সর্বমঙ্গলা । রন্ধনের হেতু নিবেদয়ে একচিত্তে হেনকালে অভয়া আছিল৷ ইলাব্রতে । সুমেরু উপর আছে কৃমুদ ভূধর তাহার উপরে আছে বট তরুবর। এগার যোজন সেই তরুবর বট জার সুখে হর নাহা ছাড়েন নিকট । চন্ডীমঙ্গল তাহার কোঠরে আছে পাঁচখানিনদী তাঁথ বহে গুড় দুধ ঘৃত মযু দধি। তাহে ঝালি খেলে চণ্ডী সহ সথিগণে হেনকালে খুল্পন৷ পাঁড়য়া গেল মনে। খুল্লনার ভগবতী বুদ্ধ কার্ষ গতি পাচখানি নদী লৈয়। আইল শীঘ্রগাত। সেই পাঁচ নদী থুইল খুল্পনার পাশে বেঞ্জন অমৃত জার বাসের পরশে । চন্ডীকে দেখিয়। রাম। মুখে নাহী বোল শিরে আরোপিয়া পাঁণি চত্ভী দিলা৷ কোন । নখ-ইন্দৃভাসে দূর কৈন অন্ধকার করাব মল্লিকা মালে ভ্রমরে বঙ্কার । শরে হাথ দিয়া চণ্ডী কারল আশ্বাস উজানি মুহিব তোর সম্তপনের বাস। প্রথম সম্তশনে উঠে অমৃতের গন্ধ লহনার হৃদয়ে পাগিল বড় ধন্ধ । অওয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২৭৪ পাতর আদেশ ধরি রাষ্ধেন খুল্পন। নারী স্মঙারয়৷ সবনঙ্গলা লোন ঘৃত তৈল ঝাল অনুচরী জোগায় দুঝলা । বাগান কুমুড়া কচা কাচকল। তাহে মোচা; বেসার পিষালি ঘন কাঠি ঘুতে সম্ভলন তাঁথ দিয় হিমু জরা মেথি শুন্তার রন্ধন পরিপাটি । ঘুতে ভাজে পলাকাঁড় চিঙ্গাড়ি কাঠালাবিচি 'দিয়। ঘুতে নাঁলতার সাক কট তৈলে বাথুয়৷ পাক খণ্ডে পেলে ফুলবাঁড় ভায়া । আন নানা বন্তু হাব নট সাকে ফুলবাঁড় পঞ্চম দিবস : নিশ। দুগ্ধ লাউ দিয়। খণ্ড জাল দিল দুই দণ্ড গাতলন মহ্'রির বাসে মুগে সুপে ইক্ষুরস কই ভাজে গণ্ডা দশ মরিচ গুড় দিয়া আদারসে২। মুসারামশ্রিত মাষ রাষ্ে। দিয়া রসবাস হিঙ্গ জীরা বাসে সুবাসিত ভাজ্যা ঠিতলেব কোল কাতল৷ মাছের ঝোপ মান বাঁড় মারি ভাঁষত। বোদ।ণি হিপিঞ। সাক কাঠি দিয় ঘন পাক সান্তলন কৈল কু তৈলে কিছু ভাজে বালিকড়। খরৃসাণ। পুজি দশ তোলে । কারয়৷ কণ্টকহীন আম্রেতে শকুণ মীন খর পোন দিষ। ঘন কাঠি াঙ্গড়ার তেপে বড় রান্ধাষে পাকাল ঝষ দিয়া তেলের রস খরী রান্ধে জাল কাঁর ভাটি । কণা-বড়া মুগ-সাঙলি খিরোড়া খিরেব পুলি নানা ঠা রান্ধে অবশেষে আধ রান্ধে অবশেষে শ্রীকণিকঙ্কণ ৩াষে পাঁওত রম্ধন-উপদেশে ॥ ২৭৫ বিংশতি বেঞজন অন কারয়। রঙ্ধীনে দুবল। জানায় গিয়৷ সাধু সান্িধানে । আইস আইস বলে তারে চোঁড় দুবলা বিদগদ সদাগর করে কিছু ছল । চারি দণ্ড হব মোর আছে স্তবপাঠ বান্ধবে ভুজায় আগে জাব দূরবাট । অবশেষে গৃহস্থের উচিত ভোজন তার বোলে দুবল৷ ভুঙজায় বন্থুগণ । প্রশংসা করয়ে তারা সকল বেঞ্জনে শৃনি লহনার ভে লোচন-অঞ্জনে । ১৫৭ সমাঁপ ভোজন তার৷ করিল বিদায় তাস্ুল বসন হেম সাধু গৃহে পায়। বান্ধবে বিদায় দিতে হইয়। গেল মন্ধা। খুল্লন৷ রূপসী ওথা বাঁ আছে রাষ্ধ্য। । সন্ধ্যা সাঙ্গ কারয়।৷ করিল বহু স্তৃতি শালগ্রাম শিলা-জল পণ ধনপতি। দুবণা। জোগায় জল পাখালিল পা ভোজনমন্দিবে সাধ তুল্যা দিল গা । শন স্াঙীরয়া কৈল দুই আচমন খুন কনক-থ।লে জোগায় ওজন । স্মঙাঁর্ জগণাথ প্রথান পুরুষ সুবনদীব জলে সাধু কারন গণ্ুষ । প্রথনে সু ঝোল ঘণ্ট সাক সৃপ মীন মাংস ডোজনে আপন। বাসে ভূপ। ঘুতে জব জব খায় মীন মাংস বাঁড় বাদ কর্যা ভাজা কই খায় [তিন কুঁড়। অস্থল খাইযা পিঠা জণ ঘটী ঘটী দাধ খায ফেণি তায় করে মটমটী । মৌনে ডোজন সধু করে বাব মাস তোজন কারয়া সাধু করে উপহাল। জতেক বেঞ্জন খাইল প্রীত নাহা তথি )বা হইতে পাইল গ্রিয়ে বড়ই পিরাত। হাস্য হাসা। দিল রাম। শিজ অঙ্গ তোগ। তম্যে গড়াগড়ি দিয়া হাসয়ে দুবলা । হেট মুখে ধনগাতি পাহল বিমন। হিরা গুলিয়। অঙ্গে দিলেন খুল্লনা। হিছ। গাইয। সাধু করে অনুমান | হেন কালে মনে পড়ে পুথিি অভিধান । রজনি পর্যায় জান হরিদ্রা আখ্যান হেন বুঝি ছলে রাম দিল নিশা দান । ভোজন সঙ্কাঁণ আচমন কৃতৃহলে কপূরতান্থুল খায় হাসে খলখলে । সাধুর হীঙ্গত দাঁসী বুঝল সত্বরে শয্যা বিছাইতে গেল বিনোদ মান্দিরে। ১৫৮ অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকীবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ২৭৬ সাধুর ইঙ্গিত ধরে প্রবোশয়া বাসঘরে খাট করে ন্দনে ভাষত সুগন্ধি ধৃপের ধূমে আমোদিত কৈল ধামে দেখি লহনার উড়ে চিত। বাসঘরে বিছায় শয়ন চোঁদকে উচ্চ্িত স্থলে মণিময় দীপ জলে জেন দোখ ইন্দ্রের ভবন। নেয়াল কাঁরয়৷ আট১ প্রথমে বিছায় খাট তুলি মুসার সোঁজ ঝাপ কিত৷ কথুবায় বান্ধ উপরে টানায় চান্দ৷ বিছায় মালতি জুতি াপা। ধবল চামর বান্ধ। উপরে টানায় চান্দা প্রাতচালে মুকুতার ঝার৷ পাটের মসার বেড়।৩ তার মাঝে নানা৬ পাট ডোরা । দুই দিকে আলবাী জলে পুর গাড়ু ঘটী দুই দিকে এড়ে দুই পাখা বাট। ভর্যা পান গুয়। সুগাঁন্ধ চন্দন ঢুয়া কপূর পবঙ্গ তোলা লেখা । সুগান্ধ ফুলের মাল। ভারিয়৷ এড়িল থাল। অমৃত পুরয়। গঙ্গাজল জায়ফল রসবাসে এড়ে দাসী এক পাশে শঙ্খ কর্য। দিব্য নারকল। অঙ্কুর পাসুলি ছটি সুবর্ণ রগাঁড় কাঠি মাঁণ মুতি পলা হেম হার সাধু খুল্পনারে দিতে আনিঞাছে গৌড়-হৈতে তাহ। এড়ে গুপ্ত প্রকার। শষ্য বিছাইয়। দাসী বায় চাঁর গড়াগাঁড় জায় ভমে পান্বে গাট দড়াঃ ধারতে নাঁরন হাসি চন্ডীমঙ্গল সাধু আইসে নিকেতনে শ্লীকবিকঙ্কণ ভনে হৈমবতী জাহারে স্বহায় ॥ ২৭৭ চরণে পাউড়ি সাধু করিল গমন বিনোদ মন্দিরে গিয়া দিল দরশন । কপূরতাস্ুলে কৈল মুখের শোধন অঙ্গে আরোপিল সাধু কুমকুম চন্দন । পন্ননাও স্মঙারিয়া কারল শয়ন ডোজন করয়ে এথ৷ দাসদাসীগণ । রঞ্ধনে খুল্পন৷ আছে রসইর শালে সাধু সপ্তাঁষতে বাজ জায় হেন কালে। সদাগর জানি তারে মাগে আলিঙ্গন এই হেতু হরে চণ্ডী সাধুর জীবন । ভোজন কাঁরতে দুয়৷ ডাকে লহনারে গাঞ্জিয়া লহন। কিছু বলে উচ্চস্বরে । জে কালে রান্ধিতে ঢখটী নিল গুয়া পান বচনেক নাঞ মোরে কৈল অবধান । আমা সনে চার না কৈল গব কারি এখন খাইব তাত পেটে পারা মারি। বাঁস পান্ত ভাত ছিল সরা দুই তিন তাহা খায় লহনা কিনিঞা৷ আছে দিন । ঘরের প্রধান তুম বড় সভাকারে তোমার সকল মান কর কারে। চারি পাচ দুঃখ মোর হইয়া গেল জড় 1তিলকে আধিক ছোট কিসে আমি বড়। লহনা দুবল৷ মল জত কিছু ভনে কপাটের আহড়ে খুল্লনা সব শুনে । সম্রমে আঁসিয়। তার ধারল চরণ ঘঁচিল কন্দল দুহে কারিল ভোজন । এক জন সাহলে কন্দল জায় দূর বশেষে জানয়ে চক্তকতী হে ঠাকুর ॥ পঞ্চম দিবস নিশ। ২০৮ আনিল বেশের সাজ দুবল। বুঝিয়া কাজ মুগমদ কুমুকুমু চন্দনে ভাগ্ারে প্রবেশি চেড়ি খোলে অভরণ-পোঁড় লহন| বিষাদ ভাবে মনে । রসানদর্পণ করে নান। অলঙ্কার পরে রমণ-মোহন ধরে বেশ বিলাসিনী হএ বাল। হৃদয়ে মদন পরবেশ । সুবঙ্গ পাটের জাদে বাঁচন্র কববী বান্ধে মালতী মল্লিকা টাপা গাভ৷ কপালে দিন্দূব ফোট। চোঁদিগে চন্দন বিন্দু শোভা । গীত তঁড়িত বর্ণে হেমকলিক৷ ফর্ণে কেশ-মেখে পড়িয়ে বিজুলি বজত পাসুলি ছটী পরে দিব্য তুপাতোটি বাহুবিড়ষণ কলমি | পৰে দিব্য পাট সাড়ি কনকেব গাঁড় চুড়ি দু-করে কুলপাঁ শোভে শঙ্ হিরা নিল মুতি গল৷ কলেবরে মলয়জ গঙ্ক । নানা অলঙ্কার পরি ড|ঁন করে হেমঝারি বামকরে তান্কুল সাপুড়। নাহ জানে কামকলা প্রভাতে ভামুর ছটা কলধোৌত কণ্ঠগাল। কুঙ্জরগা!মনী জায় লহন৷ সুনিতে পাইল সাড়া । আসিয়া লহন৷ বধূ সুনাদ নুপুর পায় হদে বিষ মুখে মধু কহে হিত উপায় বন রাচয়া ত্রিপদী ছন্দ পণচালি কারয়। বন্ধ বরাচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ২৫৯ তুহ্‌ বালা খিনবল। নাহ জান রৃতিকল৷ ন৷ জাইহ প্রভুর নিকটে ১৫৯ রাহুর ভোখের বেলা জেন নব শাঁশকলা পাড়বে বিষম সঙ্কটে । রাতিরঙ্ক সদাগর চিরদিনে আইল ঘর জরজর মনমথ-শরে মদনে আকুল চিত নাহ গনে হিতাহিত তৃষাকুল বিরহের জরে । আকুল দোঁখয়া জায় নাহী সাধু করে দয়া বিনয়বচন নাহী শুনে সাধুর গজের শাঁল। নলিনী যেমন খেল। মুঢখাত তৃহু কামবাণে। ক জাবে সাধুব পাশে লীলারঙ্গে সাধু ভাসে চিবাঁদন বরহসাগরে কী আতশষ ভার তুহুল নৌতন তার কেমনে করিবে পার তারে । শুন গে। প্রাণেব সই আমি জান প্রভুর বারতা লহন। জতেক ভাষে শুনিঞা খুলপন। হাসে লহনাব হদএ লাগে বেথা । মহামিশ্র জগনাথ কাঁধচন্দ্র হদয়ণন্দন - তাহাব অনুজ ভাই বিরচিল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ অকপটে তোরে কই হদয়াসিশ্রের তাত চন্ডীর আদেশ পাই ২৮০ কোথারে চল্যাচ বেশ কার বল নিষ্ঠ। প্রাণসহচরা। বুঝ পারা জাবে বাসঘরে ভেটিবারে কান্ত সদাগরে । তোমার নাহিক ইথে দোষ শৃঙ্গার ভূঁজতে পাঁরতোষ । বড় দুঃখ শুঙ্গার সাগরে জেন শশকে১ বারণে রণ করে। ১৬৩০ ভেক জেন ধরে বিষধর মৃগপতি জেন কারকর। জেন ধরে মর্কটি মাক্ষিকা বার্জ জেন ধরয়ে মষকা। চিলে জেন ছুঞ॥ গয় মীন তেন তোর রাত সাতন। মোব ইবে হয়্যাচ গুবিণী ভয় বাসি জাইতে একাকিনী। লাজ ভয় নাহি তোর ঢণটি কেন বা বাললু খায়া। মাটি । অভয়ার কমলচরণ বিঝচয়ে শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৮১ শুনগো লহন। দাদ প্রাণের বাহনি রমণী রমণে মরে কোথাহ ন। শীন। আগে দেখ গ্ব্গে মঘ মহাবলবান কেমনে কাশিনী শচী দিল রাতধান। তবে দেখ রথুনাথ মহা শান্ত ধরে কেমনে কামিনী সীত৷ তার ঘর করে। সদাই মাদক দ্রব্য হরের ভক্ষণ ভবানী কেমনে সহে তার আপিঙ্গন। ভীঁম সম বলবান নাহী ন্রিভুবনে কেমনে দ্রৌপদী সহে তাহার রমণে। ন৷ বলনা বল দাদ নিষেধবচন আপনার প্রাণনাথ অঙ্গের ভূষণ । সহম্ যোজন পরি১ সুর্যের কিরণ সহিতে তাহার তাপ নারে অন্য জন। তার কোলে ছায়া সঙ্গে থাকেন শীতল প্রভুর প্রতাপ বানতারেং সুমঙ্গল | সহম্েক বাহ্‌ ধরে বাঁলর নন্দন কেমনে বাঁনত৷ তার সঙ্গে আলিঙ্গন । চন্ডীমঙ্গল দশমুখের চুম্বন সহেন মন্দোদরী ভিন্ন নাহি কৈল বাঁধ কৃমারীর পুরী । ডখস মসা নিবারণে পাটের মসারি অঙ্গরখী-বলেত কান্ত নিবারণ কাঁর। ভোজনের কালে আমি কর্যাছি হীঙ্গত ভাঙ্গতে তাহার সত্য নাহয় উচিত। শাঁনঞ। লহন। রাম। ছাড়য়ে নিশ্বাস শ্লীকবিক্কণ কৈল পাচাঁল প্রকাশ ॥ ২৮২ লহনার পদধূল নিলি রামা মাথে সুবর্ণ-সাপুড়। ঝারি দুবলার হাথে । দুবলা রীহল তথা কপাট আহড়ে ধীরে ধীরে চলে রামা সাধুর নিয়ড়ে । প্রবেশ করিল গৃহে স্মগরিয়া মঙঈগলা সম্পৃটের ঝাঁর খুয়্য। পাছু যায় দুবলা । বাড়ল অনন্থরঙ্গ দেখি প্রাণেশ্বরে অভয়। স্মঙরণ কার প্রবেশিল ঘরে। কী কারব কি বালব করে অনুমান না জানি সুরতি১ রসে কি হব নিদান। মানিনী হইয়৷ মান সাধুরে যাচনে দেখাইয়৷ মুখ রামা ঝণাপিল বসনে। নিদ্রায় আকুল সাধ্য নাহাক চেতন সুন্দরী বঁসিয়৷ দুঃখ ভাবে মনে মন। দুবলারে ডাক দিয়। আনে রূপবতী অচেতন দেখে রাম নাহ প্রাণ পতি । নাড়িয়। চাঁড়য়। দেখে প্রভু অচেতন অভয়। স্মরণ কার জুড়িল রোদন । মৃত পতি কোলে কার করেন ক্রন্দন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকস্কণ ॥ পঞ্চম দিবস: নিশা ২৮৩ মৃত পতি কোলে কার কান্দে খুল্পন৷ নারী চক্ষে বহে কালিন্দীর ধার বিধির দারুণ দণ্ড কজ্জলে মালন গণ্ড ধলায় লোটায় হেমহার | কেমন দারুণ বেল। পায়র৷ উড়াতে গেলা কোন পাপক্ষণে হইল দেখা কেবল উত্তর দুঃখ দেখিয়া আমার মুখ ভাদ্র চতুর্থার চান্দে লেখা । বা করিয়৷ আইলে রাজসন্তাধণে গেনে সায়-শুয়। হইয়। আইল কাপ গেল প্রভু দূর পথ না পৃরিল মনোরথ হৃদয়ে রাহল শোক-শাল । ১ওকা কাঁরল দয়। মাইশে পঞ্জব লয় মোর চান্দ হইল প্রকাশ তাখন দিঘলবাহু অকালমরণ রাহু দৈবে কৈন উদয়গরাস | খু.।ন। রাক্ষসগাঁণ হেন কথ। মনে জানি বিবাহ কাণলে পাপক্ষণে তার প্রাতকার হেতু ছাগল রাখন শিত। এই মোর ভালের লিখনে । খনম্থ করহ কিসে আনহ মাহুর বিষে দুবলা প্রাণের সহচরী ৷ দোখব লোকমুখ ঘুচাব মনের দুঃখ প্রঙাত ন। হয় বিভাবরী । পাঁতব্রতা শিবশান্ত দেখি খুলনার তান্ত সাধুকে চিয়ান কুতৃহলে তৌজয়৷ মনের বেথ৷ বসনে ঢাকিয়৷ মাথ। খুল্লনা লুকাইল খট্রাতলে । *হামিশ্র জগন্নাথ হদয়মিশ্রের তাত কবিচন্দ্র হৃদয় নন্দন তাহাব অনুজ ভাই চত্ীর আদেশ পাই বিরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ট' ম.-২১ ১৬১ ২৮৪ চিয়াইয়া উঠিল সাধু আছিল শয়নে আকুল করিল চিত্ত মনাসিজবাণে। উন্মন্ত হইয়া সাধু করে মহাখেদ চেতনাচেতন-শক্তি নাহী পরিচ্ছেদ | দোঁখতে দেখিতে হাথে হারাইল নাধ এত দুঃখ পুরুষের সৃজলেক বিধি । কহ খট্রা কোথা মোর খুরন। সুন্দরা কহ ন৷ প্রদীপ মোরে কোথা সহচরী । ঘ্বরুপে কহ না মোরে মধুকরবধূ কবারমান্লকামালে পিশে কিবা মধু । চিত্রের পৃত্তাল জত আছে গুহে ভিতে তাবে নিবেদয়ে সদাগর একাচত্তে । এতদিন এতকাল ছিনু পরবাসে স্বপ্নেতে খুল্লনা নারী থাকে মোর পাশে । প্রবাস ছাড়িয়া যাঁদ আইনু নিজ ঘর কি দির সুন্দরী মোরে কারন পাগর । খমন৷ লুকাইল ধনপাঁত নাহী জানে বিরহে আকুল সাধু হন কামনাণে । সহচরী চায়্যা সাধু শ্রময়ে ভবন খট্টাতনে শুনে সাধু নৃপুরনিস্বন । সত্বরে আ'সিয়৷ সাধু ধারল অণ্চল সন্্মে আইসেন রাগ। ছাড়ি খট্টাতল । বসন ছাড়াল্য রাম৷ পড়ি পদতলে বিনয় কাঁরয়া সদাগর কিছু বলে। অভয়াচরণে মঞ্জুক নিজ চত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২৮৫ [কি ঝাধি জস্মিল হিয়ার মাঝে চান্দের কর শর জেমন বাজে । জ্বর নহে অঙ্গে সদাই তাপ 'জীন্ভত মুখ কলেবর কাপ। ১৬২ অঙ্গে বদি লোপ চন্দনপঞ্ক দহে তনু জেন সাপের ডন্ক। শুখায় বদন নহে পিপাসা অন্নের গন্ধ না লয় নাসা । প্রাণের ডাকাতি পাপ বসন্ত কেতকীকুসুম কামের কুন্ত। ময়মত্ত-তৃণ অপাঙ্গবাণ কাজল গরল তাহে সন্ধান । তোর লোচন-খঞ্জন জোর* নিত) হরে পুনু লোচন মোর । ঘনঘন রস কোকিলগান ঝান জায় প্রাণ জগতপ্রাণ 1৩ মরমে বান্ধল রঙ্গ বকুল মধুকর-রব কণের শূল। ব্যাধ হরে তব অধররস বৈদ্য হয়া রাখ আপন যশ। করুণা তেজিয়া বিস্ধলে বাণ ব্যাধভয়ে রামা তুমি নিদান। তোমার যৌবনে মোর জীবন চিন্তরঙ্গে কার দুই জনে রণ । হারিল বাল পড়ে* পদতলে স্থির হব সেহ পুণোর ফলে । সাধু কহে জত গদৃগদ ভাষে শনএঃ সুন্দরী ইসত হাসে। দামুন্যাং নগরে চন্াদত্য সুর স্মরণে" জাঁড়মা করয়ে দূর । নন্দি পোপিনাথ জাহেও ঠাকুর কৌতুকে কাঁপ্পল* মুকুন্দ পুর। জনুবরসর* জেমন বাজে মনা কাল্নিকা কঙ্কণ গাজে ।১০ সাধুরে রাম পাঁরহার জাচে গায়েন মুকুন্দ অক্ষর-নাচে ॥ চন্ডীমঙ্গল ২৮৬ দাণ্ডায়। সাধুর পাশে খুললন। করুণ ভাবে জানিল তোমার জত দয়। তোমার কপট বাণী গাছ কাটা। ঢাল পানি গৌড় গেলে কন্দল জুবায়্যা । মুখে কর মধু বিষ কেবল কপট দি হদয় তোমার হলাহল কিনা পাইলে অপরাধ পরে পরে করাল্যে কন্দল । কারেহ না করে ভয় ফোঁল এত বিসম্বাদ সাধুজন জেব৷ হয় দোষ গুণ বুঝ করে ফল না বুঝি তোমার মতে শ্রী মার পরহাথে বিপরীত তোমার সকল । আইলাঙ তোমার বাস দেখিয়৷ নায়েক সদাগর কারা অনেক আশ বানতাসভায় লাজ লাাথ-কিলে ভাঙ্গল পাঞ্জর | ধর্মপথে তুয়। মাত আশায় পড়ুক বাজ তুম পুজ পশৃপতি প্রত্যাশ করয়ে জগজন অন্ন ন৷ উপরে পুরি এ তোমার বেভার কেমন । খুঞার বসন পার জগজনে তোম৷ জান কুবের সমান ধনী সাত নায়ে করহে বেপার তুম হেন জার দ্বা্মী ছাগলরাখাল আমি এই লাভে পুরিবে ভাণ্ডার । উছলে আমার বাণী শ্রাবণে জেমন পানি সমুদ্রের জেমন তরঙ্গ জত দুঃখ দিল সত কহিতে সকল কথা তোমার নিদ্রার হয় ভঙ্গ । দুবলা জেমন আছে থাকিব তোমার কাছে দূর কয় নারীর বাভার জানিহে তোমার গুণ কারবে আমারে খুন লহন৷ তোমার খুরধার । পঞ্চম দিবস নিশা না চাহিতে তোমার মুখ বিধি কৈল অধম অবলা সম্তাপে পোড়য়ে মন দাবানলে জেন বন বনে 'ফার কান্দিয়৷ বিকলা । কহিতে কাহতে দুঃখ ৃ্ছিত। পাঁড়ল মহীতলে রচিয়। ত্রিপদী ছন্দ গান কাবি শ্রীমুকুন্ণ ্াহ্মণরাজার কুতৃহলে ॥ কহিতে বিদরে বুক ধরণ না জায় বুক ০৭ দনা ছাট খুঞা বাস এঁড়য়৷ প্রভুর পাশ পত্র দিল বল্পভের করে নিকটে আনিয়া বাত সদাগর পড়ে পাতি ভাসে রামা লোচনের নীরে । সক্ষর-নিশান পাতি গৃহপ্রাতকার১ হাতি লহনারে লিখে ধনপাতি ধারয়া কুন্তলভার লবে অষ্ট অলঙ্কার পরিবারে দিবে খুঞ্ ধুতি । দিয়৷ তারে অশ্নকষ্ট যৌবন করিবে নষ্ নিয়োজহ ছেলি অপেক্ষণে পর্যঙ্ক তুলিক। পাড় নিহ অভরণ-পোড় দিহ তারে খোসলা উড়নে। শোয়ে অজার শালে অন্ন দিবে নিশাকালে পুরে জেন অর্ধেক উদর যাঁদ তারে হয় ব্যাধি আমার গৌরব সাধ ওষধ না দিহ ব্যাধিহর। বিবাঞ্জত২ তৈল গুয়া কুমকুমু কন্তুরি চুয়া অলবণ বেঞ্জন ঘুত দধি & এ কন্যা নিশাচরী নান৷ দুঃখ দিহ যথাবিধি। না বল আমার নারী ১৬৩ জোষ্ঠের তের দিন জায়া কৈল মানহীন সাক্ষি কর উজানি নগর সমাপ্ত কাঁরয়৷ পাতি অবশেষে করে ইতি গাইল মুকুন্দ কাঁববর ॥ ২৮৮ পত্র পড়ি পরম লাজ্জত সদাগর বলে প্রিয়ে নহে পত্র আমার অক্ষর । যাঁদ বা আমার পন্শে আছে অনুমতি করিবেন দণ্ড মোরে দেব পশুপতি। শতশত কার আমি শিবের সপদ . পাঁপিনী লহন৷ তোর করিল বিপদ । অপাঙ্গ তুলিয়।৷ ধর অযুতেক শর বিস্বিয়। ছাড়হ মোর মন-মৃগবর । কুলের বনিত। তুম কুলবতী জায়া আঁভরোষে প্রাণনাথে ছাড় কেন দয়া । সদাগর বলে রাম৷ তুমি পুণ্যবান কোপ দূর করহ যাঁমনী অবসান । তুয়া কুচযুগলকমলে দিয়া ভরা পার কর সদাগরে অসকাল বেলা । মুখ তুলি চাহ ধনি পরিহর মান সরস বদনে রামা খাও গুয়৷ পান। তোসার অধর "প্রয়ে পাবকের রসে মোর সম অলি তথ মধুলোভে বৈসে। ঝপট পত্রের কালি কারব বিচার লহনার নিহ তুমি অষ্ট অলঙ্কার । লহনারে প্রিয়ে তু'ঞ রাখাশী ছাগল নিয়মিক অর্ধসের কারহ সম্বল । শত শত ফুলে অলি মালতীর বন্ধ সাতাইস ভার্যায় রোহিণীনাথ ইন্দু। মোহিয়৷ সভার চিন্ত কাম রাঁতপতি তেন গে৷ খুল্পনা তুমি মোর প্রেমবতী । ১৬৪ এমন শুনিএ। রাম৷ সাধুর বচন বারমাসী দুঃখ রামা করে নিবেদন | অভয়াচরণে মন্রুক নিজ 1চত শ্রীকাধকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১১৮ প্রথম জৈষ্ে গেল৷ প্রভু গড়াতে পঞ্জর প্রবলা সাঁতনী ঘরে হইল সতন্তর | গল রাখতে পন্ন আইল জেই দণ্ডে আকাশ ভা্গয়া পড়ে খুননার মুণ্ডে। কত কাঁরব মিনাত কত করিব ?মনাতি কেশে ধর্য। লহনা মারিল কিল পাথ ।৯ প্রভু শুন সদাগর প্রভু শুন সদাগর জানায় তোমার পদে মুঞ জাইব নাইয়র । আষাটে গ্জয়ে ঘন নাচয়ে ময়ূর ননজল মদে মত্ত ডাকয়ে দাদুর । বড় অভাগ্য মনে গুনি বড় অভাগা মনে গুনি ছাগল চরাত্যে স্থান নাহীক অবানি। শ্রাবণে বাঁরয়ে ঘন দিবস রজনি সিতাসিত দুই পক্ষ একই না জান। কাননে রাখিয়ে ছেণি শিরে বৃক্ষপাত। ফির একাকিনী কারে কর দুঃখকথা | ছাগল চরাই লয়) পখূরের পাড়ে দারুণ ছাগল নাহ থাকয়ে নয়ড়ে। প্রচণ্ড বাদল ঝড় ভাব্রুপদ মাসে নদনদী একাকার কত বান আইসে। আছয়ে শুখান শুধু সরোবর-আড়া শতেক পসল৷ তাহে আইসে ছাগ-তাড়া । ভা্র-মাসের বৃ্িধার৷ বাজে জেন শেল তিন দিন বই জে লহন৷ দেই তেল। চণ্ডীমঙগল আশ্বনে করিল নাথ বড় মনোরথে শুনিল পঞ্জর লয়্যা তুমি আইস পথে । অন্বেষণং ব্রতে আরাধি ভগবতী অভাগ্যের ফলেতে না আইসে প্রাণপাঁত। লহন। পরয়ে প্রভু নানা অলঙ্কার বিনু তৈলে কেশ মোর হইল জটাভার | কার্তিক মাসেতে হৈল হিমের প্রকাশ জগজন কৈল শীত নিবারণ বাস। হয় মাস খুএম বাস হয়যা গেল গুড়া লহনা প্রসাদ কৈল একখানি মুড়া। দৃঃখে কর অবধান দুঃখে কর অবধান জানু ভানু কৃশানু শীতের পরিগ্রাণ। মাস মধ্যে মাইশর আপনে ভগবান হাটে মানে গোঠে গৃহে সভাকার ধান । উদর পুরিয়া অন্ন দৈবে দিল যাঁদ যখ সম শীত তাঁথ নিয়োজিল বিধি । অজাশালে আমার শয়ন অজাশালে আমার শয়ন অঙ্গে দিতে নাহ বাস খোসলা ওড়ন । পোঁষে করয়ে লোক নানা উপভোগ সভার বসন বাধ করিস সংযোগ | লহন। প্রসাদ কৈল পুরান খোসল। উড়িতে সকল অঙ্গে বাঁরসয়ে ধুলা । কত দুঃখ মনে গণ কত দুঃখ মনে গুণি ধালভয়ে শয়নে নয়ন নাহা মেলা । মাঘমাসে অনিবার সদাই কুঝটী তৃণ লোভে ধায় ছেলি না আইসে নেউচী। দৈবযোগে এক পাটিও খাইল শুগালে অবনি বিদরে যাঁদ প্রবেশি পাতালে। কত করিনু মিনতি কত কারনু মিনাত কেশে ধর্যা লহন৷ মারিল কীল লাথি। ফাল্গুনে দীঘল শীত মলয় পবন খণ্ড খণ্ড হইল মোর খুঞার বসন। পঞ্চম দিবস নিশা কাষ্ঠ কুড়াইয়৷। আনি গহন কাননে বিহান বিকাল জায় আগ্নির সেবনে । শয়ন ঢেকীশালে প্রভু শয়ন ঢেকীশালে নিদ্র। নাহি হয় খুদ্য। পিপীলিকার জালে । চৈত্রে চাতক জল মাগে জলধরে কমলে লোটয়ে মধু ভ্রমরী দ্রমরে । বনিতাপুরুষ-অঙ্গ পিড়য়ে মদন আমার পাঁড়িত অঙ্গ উদরদহন | নিদারুণ কর্মদোষে নিদারুণ কর্মদোষে বিধাত বিশ মোরে তুমি নাহী বাসে । শৃভচন্দ্র হইল মোর প্রবেশে বৈশাখ চণীর কৃপায় দূর হইল বিপাক। তোমার আগাতি-বার্তা পাইয়া লহন। দিন দুই চার মোর কারল মাননা। এবে আমি ছাগীগণ নাহ রাখি এবে আমি ছাগীগণ নাহা রাখি দিন কথ লহন৷ আমারে হইল সুখী । সাধু সঙ্গে খুল্পনা জতেক কিনতু ভনে কপাটের আহড়ে লহন৷ সব শুনে । সাধুকে ভাসতে রাম সাস্ত।ইল ঘর বারমাসী গাইল মুকুন্দ কবিবর ॥ ৯০ সদাগর লাজেতে পড়ুক বেনে বাজ হে তুই অপরূপ আল মুকুলে করহ কোল ধান ধনি বিদগধ-রাজ। পড়্যা শুন্যা হইলে ভোল৷ কামমদে মাতোয়াল৷ নৌতন যৌবনে হইলে ভোলে না বুঝিয়া রসগন্ধে লুবধ দ্রমর অন্ধে বৈসে জেন শিমুলের ফুলে । ১৬৫ দূর কারি লজ্জাতক তুহ্‌ সাধু রাত ছাড় কর বাল হে তোমারে১ রসহীন কাদস্বিনী চাতক যাচয়ে পানি আপন গৌরব করে দূরে । বোর তোর পণবাণ [বিলম্ব না সহে প্রাণ নলিনী তোমার সহচরা দারিদ্র যাচকজন শেষে লয় কৃপণ ধন কশোদরী বাপা এই নারী ।* তুহ্‌ রাঁতিকপানাধি ও না জানি বেদগধি কুতৃহল তরাসে চলা স্থির-সৌদামনী জেন আলিঙ্গন ঘন ঘন ধান ধান বৈধগধি লীলা । লহনা এতেক বলে শুন্য 'সাধু কোপে জলে ক্রোধে বলে ভাঙ্গমু দশনত শহনার হাথে পাতি আরোপিয়৷ ধনগাঁতি বিরারিল শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥ ১১ উজানী১ নগর মাঝে বৈসে জত প্রাণী ঘরে ঘরে আমি সভাকার লেখ৷ চিনি। পাপমতি হিংসাবতী তুহু ল দুঃশীল। কপটে লাখল পাতি তোর সই লীলা । বাঁজ চল ঘর ছাড়ি বাজি চল ঘর ছাড়ি দশন ভাঙ্গিমু মার্যা পাউড়ির কাড়ি । অভিমানে লহনা অনল সম জলে খুন্নেনারে গ্জিম৷ নিঠুর বাক্য বলে। খুল্লনা লইয়। তুমি সুখে কর ঘর বিদায় করিয়। আমি জাইব মাইয়র। কামাসন্দুরের নিত্য পরে মোহন ফৌটা অধরে তাস্তুলরাগ চুয়াচন্দন-ছটা১ । হাথে দর্পণ নিরন্তর নেহালে বদন গনগবিত দেখা বুকে না দেই বসন। ১৬৬ জাতি জুতি মল্লিক! টাপায় বান্ধে কেশ স্লামী ঘরে নাহীক কিসের লাসবেশ | যৌবনমদে পাছে করে কুলের খাখর এই হেতু নিল আমি অষ্ট অলঙ্কার । ছাগল চরাইতে আমি দিল দুঃখী জনে আপন ইচ্ছায় ছাগল লয় বোলে বনে । তোমার প্রসাদে ঘরে নাহাঁ কোন ধন আপন হাব্ব্যাসে দেখে ছাগের আলিঙ্গন | লহন৷ নিমেরে তিত এ হয়যাছে ভাল উহার রূপে তোমার বাসঘর করাছে আল । কাধ বৃঝ্য৷ লহনারে ভচ্ছে সদাগর সেই স্থান হইতে রাম৷ জায় অনান্তর । অপমান পায়্য। রাম। গেল অন্য স্থানে অভগ্নামঙ্গল কবিকঙ্কণ ভনে ॥ ৯২ খুল্পনারে বলে সাধু আন প্রিয়া পাশ তোমা সঙ্গে রসরঙ্গে গোঞ্াইব নিশা । মন্ত্রবলে সাগর পাশা কেল বশ ডাক দিয়া ধনপতি দান পেলে দশ | মনে ভাবে সদাগর পাঁচান প্রকার জোড় দিয়া বান্ধে সাধু ভিতর পাচার । খুল্লনা পেলিল পার্টী পাঁড়ল বামণ্ দুই পাচে বাদ্ধে রাম৷ করিয়া সুস। বিদু পেল্লা। সদাগর পেলিল চৌয়ার বান্ধিয়। খুল্লন পার্চী লয় আরবার । বিঘটিত হয়৷ পাটী পড়ে দুয়৷ চাঁর পা্টীর পড়নে বুঝে আপনার হারি। বুঝিয়। কার্ষের গতি সাধু বলে দুন সহায় দুবল! বলে না বাঁসহ গুণ। হারিলে শোধন কালে হবে পরমাদ 1খনতনু তুমি পাছে পায় অবসাদ । চণ্ডীমঙগল পাশাতে জিনিল সাধু মন্ত্রের বলে পণ দায় চাহে সাধু ধরিয়া অণুলে। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২৯৩ আলিঙ্গন গ্রেমরসে দুহে দুহা ভূজপাশে দুই তনু নাবিডবন্ধন তরলবলয় তুজে অনঙ্গ সঙ্গম জুঝে আঁভনব রাঁতএ মদন । শোভে আতি অনুপাম বিন্দু বিন্দু শোভে যাম উতোরোল সঙ্গম কৌতুকে স্থির-সৌদামিনী জেন আলিঙ্গন ঘনে ঘন দুই তনু নিবিড় পুলকে১ । ধৌত বসনবাস ঘামে পন্রাবলি নাশ চলাচণ মুখর নুপূর বিচলিত হইল বাস মুখে মন্দমন্দ ভাস কবাঁরবন্ধন গেল দূর। সাধু মদনের সখা অধরে কজ্জলরেখা কপালে 'সন্দুর বিভুষণ প্রমদার অঙ্গরাগ দুই অঙ্গে অপভাগ দুই তনু এক অপঘন। আয়াস অলস ঘুমে প্রেমালাপে বাসধামে কুতৃহলে গেল এক মাস সধে সঙ্গে সহবাসে প্রুষ-পরশরসে বনু কুসুম পরকাশ। ধন্য রাজ৷ রঘুনাথ রূপে গুণে অবদাত রান্মণভূমের পুরন্দর হইয়া তার সভাসদ বান্দিয়। চাঁণ্তকাপদ বিরচয় চন্ডীর কিন্কর | ষষ্ঠ দিবস দিবা ২৯৪ রাম রাম স্মরণে রজান প্রঠাত পাঁশম আশার কুলে১ গেল। নিশানাথ 1 কৃসুমশয্যায় সাধু ছিণা নিদ্রা-ভোলে নিদ্রা তোঁজ উঠে সাধু কোঁকলের রোলে অরুণ লোচনযুগে মালন অধর খাঁলতবসনে সাধু পালটে অস্বর । বারি হৈতে লহনার চক্ষে চক্ষে ভে) লজ্জায় লক্জত সাধু মাথা করে হেট । নিত) নিয়মিত কর্ম কার সমাপন অজয় নদের জলে করে ম্লানদান । একভাবে গৃজে সাধু শিবের চরণ অঙ্গে আরোপিল সাধু ভূষণচন্দন। ফুরাল্য যৌবন কাল ইবে সাঁতনের জাল আপনারে তৃণ সম বাঁস ওধধ কারন জত তত রূপে হেনু ভিত ঠাকুরানী হইয়৷ হইল দাসী । নানা দিকে নান কর্ম করে দাসগণ বায় কার বহ্‌ ধন সোঁবলাঙ গুণীজন অবধানে দেখে সাধু রাজপ্রয়োজন | ন হইল সোহাগসম্পদ এথ। নিয়মিত কর্ম করিয়া খুল্পনা কুল শীল গুণ 1ছল যৌবন গোড়ায় গেল চ্ডিক পৃজেন রামা কাঁরিয়। অনা । যৌবনের নিছনি ওষধ। কলমূল উপহারে নৈবেদা পাজল। যৌবন পরম ধন জাহাতে পাঁতির মন করিয়৷ পুজেন ঘটে সর্বমঙ্গল৷ | যৌবনের নিছান এসব: পৃজ। সাঙ্গ কার রামা দিল বিস্জন যৌবন মোহন ফাদ ওষধ বালির বাধ লহনা লইয়া ছু শুনিব বচন । শোভা পায় যৌবনে তাওবং । অভতাচরণে মনুক নিজ চিত সণয় কাঁরয়। গারি বাত লহন৷ নারী শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত। যৌবন গোড়ায়্যা গেল মান ২৯৫ যৌবন ঘুচিল যাঁদ শুখালয অগাদ নদাঁ দুবলা ঝশট আন্যা দেহ মোর সই এবে হেনু তুলার সমান। পেচারে আঁধক ভীত নিম সম হৈনু১ তিত যৌবনে নারীর মান উদকে নৌকার যান ইবে হইলাঙ বাসঘর-বই । নিশাকালে দীপের আদর ১৬৮ জত পর অলঙ্কার সকল দেহের ভার যৌবনের পশ্চাতে গৌরব । ফুরাল্য বারিষা কাল পাকিয়৷ পাঁড়ল তাল শূন্য গাছে না চাহে মানব যৌবন ওষাঁধফলে পাকিয়৷ পাঁড়িল তলে মরা গাছে কিসের গোরব। কপটের পরিবন্দে শৃনিএএ দুবল। কান্দে লীলারে আনতে দাপী প্রায় সদাগর আইল বাসে শ্রীকাবকঙ্কণ ভসে হৈমবতী জাহার সহায় ॥ ২১৬ নিত নিয়মিত কম কার সমাপন লহনা-দুয়ারে সাধু দিল দরশন | লহন৷ লহনা বলি ডাকে সদাগর কোপেতে লহনা তাহে না দেই উত্তর । ইঙ্গতে বুঝিতে লহনার অভিমান কপটপ্রবন্ধে সাধু লহন৷ বুঝান । সকালে কারয়৷ ম্লান করহ রন্ধন ব্যবস্থা কারয়। রান্ধ পণ্টাশ ব্ঞন । জেই দিন প্রিয়ে তুম না কর রন্ধন সেই দিন নহে মোর উদরপুরণ । লহনা বাঁলল নাথ তেজ পাঁরহাস সুয় জায়া রান্ধা৷ দেকু বেঞ্জন পণ্াশ । জীবনে আঁধক গুরু নবীন অঙ্গন বাসি ফুলে মধুকর ন৷ করে বাসনা । দূর কর আমারে কপট অনুরোধ খুল্লনা তোমারে নাথ করে পাছে ক্লোধ। জতেক বলহ প্রভু সকল কপট থুল্লনা দেখিয়া ইবে না আইস নিকট । লহনার বুঝ সাধু কোপের১ আবেশ মধুর বচনে তারে কহে উপদেশ । চন্ডীমঙগল শত শত ফুলে আল মালতীর বন্ধ সাতাইস ভার্যায় রোহিণীনাথ ইন্দু। আঁমঞ। সভার চিত্ত কাম রাঁতপাতি তেন গো লহনা তুমি মোর প্রেমবতী । এমন বলিয়া সাধু নানাবাধ সাম দূর কৈল লহনার ক্রোধের বরাম। শয়ন নির্বন্ধ কৈল শয়ন নিয়মে নান৷ কৃতৃহলে তিনে রহে নিজ ধামে। পায় রন্ধন দুহে করে বারমাস নান দেশের বান্যা আইসে কাঁরতে সন্ভাষ [ পুরুষ পরশ রসে গেল চারি মাস ] খুল্লনার স্বয়স্ত্ুকুসুম পরকাশ । গুরুবার মৃগাশরা তিথি একাদশী শৃভ ভূগু শুভযোগ সুতগ্থানে বসি। ভিতরে হুলুই শুনি জোড়া শঙ্খ বাজে গনপর্বিত শুন্য হেট মাথা কৈল লাজে । সখা সনে সাধু পাশা খেলে পাটশালে লহনা আসিআ তার শিরে জল চালে । একজানি দুইকানি নগরে বারত। খুল্লনার শুনে তারা উৎসবের কথা । সাধুর মন্দিরে আইসে পরিহাসি জন রামকৃষ্ণ জগন্লাথ হরি সনাতন । লুকায় ভিতরে সাধু পাটশাল ছাড়ি মেলিআ৷ গর্বিত ভাই ধরে তাড়াতাড়ি দামুদর দাস নামে সাধুর বিহাই সর্বকাল খেলার সা্গ পড়ুয়া ভাই । পাছু ছোট ভাই ধায় মাতুলনন্দন রামকৃষ্ণ জগন্নাথ ভরত লক্ষণ । সাধুর বিহাই আইসে নামে রাম দা আইলা স্যালিপাঁত ভাই জসমস্ত খা। কুচ্যামোড় কার হাথে কার জলচন্্র সাধুকে তাড়িয়৷ ধরে নহে পরতন্ত্র । লাজমান দূর গেল কাদার খেলায় কুলবধূ জল দেই সাশুড়ির গায় । ষষ্ঠ দিবস: দিব সভে মেলি সাধুর কাকালে দিয়া দড়। সাধুকে লইয়৷ তারা ফেরে পাড়া পাড়া । আর জত গ্রামণ্য নামে সপ্ধান্ধে তাই সভে মেল্য৷ সদাগরের বন্ত্র কাড়াা লেই । পর্পপত্র পর্যা সাধু বলে ধর ধর কত দূর জাবে মোরে করা। দগস্বর | নীলাস্বর দাসে তাড়্যা ধরে ধনপতি কেশরিশাবকে জেন ধরে মাত হাথি । অজয় নদীর জলে করেন বেহার জলধার। ছোটে জেন বিজুলি-সণ্টার । নামে গঙ্গাধর নান্দ জাত্যে তার৷ তাতি গ্রাম সম্বদ্ধে সাত ভাই সদাগরের নাতি । গুয়াল জড়াইআ৷ গায় দেই কাদা-জল হরিদ্রা জলে দনাঁঞ ওঝা পড়েন মঙ্গল । বহৃতর বেল। হইল বলে মুকুন্দ দাস জলখেলা সাঙ্গ হেল সভে জায় বাস। আন) দিল রাম৷ দাস তৈল হরিদ্র। ধুতি প্লান কর্যা চলে সভে আপন বসতি । বারি হয়া কুলবধ্‌ করে পানিখেলা আপনি উারলা তথ৷ সবমঙ্গণ। | অষ্ট নাঁয়ক৷ লইয়৷ দিয় হুলাহুপি চৌসটি যোগিনী সঙ্গে খেলেন বাবুল অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২১৭ সাধুর দুবলা চেঁড় গিয়। নগরিয়া-বাড়ি নিমন্ত্রণ দিল বন্ধুজনে রন্ধন ভোজন ছাড় চলহ সাধুর বাড় বিপর্যয় পাব অভরণে। কুলবধূ কামতন্ত বেজক মুরালিযন্ বালুক সাহত জল ভরে চ. ম._২২ ১৬৯ জল দেই জার অঙ্গে সেই নারী দেই ভঙ্গে আচ্ছাদন লোচন অন্বরে । শঙ্খ বাজে জোড়া সান চোঁদগে মঙ্গলধবনি জলখেলা করে রামাগণ হরিদ্র। কুমকুমু আনি তাহে মিসাইয়৷ পানি কুলবধূজনের বেসন । চাঁর পাঁচ বধ্‌ সনে লহনারে ধর্যা আনে অঙ্গে তার দেই কাদা-জন লীলাবতী ধায়) জায় আইয় ধরা৷ আনে তায় দুবনা হাসেন খপখল | কেহ হাসে কেহ গায় কেহ গড়াগাড়ি জায় কেহ নাটে 'দয়। করতালি কেহ ঝা লুকায় কোলে কেহ তারে ধর্যা তোলে শিরে তার দেই জল ঢাল। ধাঁরয৷ নারীর মায়া পদ্মা বিজয়। জয়। অনস্তরুপিণী নারায়ণী উাঁরলা সাধুর বাসে কৌতুকে ঢাশেন গায়ে পানি। বণিকবধূর বেশে দে1খগ। জলের ক্রীড়। কুলবধৃজন বুড়৷ নদননঙ্গল গাঁত গায় জল খেলে কুল কুলি লাজ পায়্যা পুরুষ পালায় । পৃরের হাব্যাসে বুঁড় গায় নাচে গড়াগড়ি জায় কুলবধৃজন মোঁপি ধাঁরয়। বেতের নাঁড় সাধুর ভাগার লোটে আনা। ঘৃত দাঁধ ঘটে ঢাঁলিয়৷ কর্ম খেলে তায়। সাত পাঁচ সাথ বো ধারয়। দুবল। চেড় বিবসন ক।রষ। নাচায় জলখেলা সাঙ্গ করি চলে সবে ঘরাঘার সাধুস্থানে নানা ধন পায় । মহামিশ্র জগন্নাথ হদয়মিশ্রের তাত কবিচদ্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চন্ডীর আদেশ পাই বিরাঁচল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ১৭০ ২৯৮ দশমী দগ্ধা১ তিথি শৃওক্ষণ-যোগ বাসবে সকল দোষহাঁন প্রথম বাসবে সঞ্চবেখ। শঙ্খ বোন কাঁণ। বাজযে ব্যালিশ বাজন। স্বাপ্তক বাচন ণণেশ কৈল আবাহনা । যজ্ঞের মও্পে চৌখুব পঁবযা চন্দান আবো'পি হেমবাবা বসাইল কনক-আসনে | কববিযা পুটহাত দিনেশ বিষ মহেশ্ববে পাবতী বাধ আব আনন্দে পুঁজে পুবহবে। চৌঁদিকে দাসগণ কবযে বিবিধ বচন। পুঁজযা দিঝাকব গোবীব কাঁবল অর্চনা । জতেক দেবগণ বাসব আদি লোকপালে ইছ্যা বসু পুফি চন্দন ধূপ দীপমালে । ব্রাহ্মণগণ মেলে আবাধে সুখে প্রজাপাঁত গ্রহশাস্তাবজ্ঞ বুঝষ। জৌতিষেব পুথি । লোহত পদ্রবাসে বাঁসল৷ সুন্দবী খুল্লনা যজ্রেব ধূম দেখি অনলে করিল বন্দনা । তনযলাভ তথ হইল শুভীদন খাসড ভোঁব শান। কবযে দ্বিজগণ টানাঞ চন্দ্রাতপে উপবে ফুপঝাব। আযাধি গণনাথ বাবিধ উপহাব গূজাব আযোজন গোবনধ গদাধব কাবল পৃজন অ্ন। কইল বষঠী অনলকুণ্ড জালে কবিশ গৃহষজ্ঞ পাঁবষ৷ পাতি পাশে লোহত হেল আঁখি বাঁচা নান৷ ছন্দ গোবী সঙ্গে বিপুধাবি চন্ডীমঙ্গল দল্পত্যে জুঁডি কব মাঁহবে দিল অধ্য দান পশচালি প্রবন্ধ শ্রীকাবকঙ্কণ গান ॥ ২১৯৯ দক্ষিণা শতেক ধেনু দিল সদাগব হোমেব তিলক ভালে দিল দ্বিজবব । বেদমান্ত্র আশীষ কবিল দ্বিজগণ কোতুকে জৌতুক দেই জত বন্ধুগণ খিব তিল পিঠাঁলিতে কবিষা মওুণী তাঁথ পবে থুষ্য। জায সাতটী পুত্তাল । তাঁলযা লইপ নাবী ধাঁবশ অঞ্চলে পাঁবহাসী জন দোঁখ হাসে বৃতৃহলে । বান্ধবজনেবে সাধু দিল পুবস্কাব বসন ভূষণ সোন। বৌপ্য অলঙ্কাব। সভাবে বিদাষ দিল পুবি আভিলাষ দিন গোঙাইণ সাধ্‌ কাব পরিহাস । নিবামিষ্য অন্ন দুহে কবিল ভোজন উপটি১ ডাবাব সাধু কৈন আচমন । কপ তাঝুলে কাঁর মুখেব শোধন বিনোদমন্দিবে দুহে কাবিল শযন । সুবপুবে কৈল হব কালিযদমন নাচে মালাধব নৃত্য দেখে দেবগণ। পারাবতী সঙ্গে চণ্ডী কাঁবযা [বচাব মালাধবের অঙ্গে রহে হইয৷ অহঙ্কাব। অভযাচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায মধুব সঙ্গীত ॥ ৩০০ গঙ্গা সাঁজষা তাঁর কৃষকথা-কুতৃহলে মন ষ্ঠ দিবস দিবা ভাবে সমাকুল চিত বিরচয়ে কালিয়দমন । শ্যামলসুন্দর তনু নারদে গায়েন গীত করাঙ্গুলে ধার বেণু আজানুলম্বিত বনমালা শ্রবণে কৃগুল দোলে কপালে বিজুলি খেলে বাহুযুগে হেম-তাড়বালা । প্রভু বিশ্বষ্তরকায় ডরে ভঙ্গ দেই ফাঁণগণ ফিরি ফার বনমালী বশোদ নন্দন বাম দেন গুণ করতাণি নাগবধ্‌ লইল শরণ। নৃত্য করেন মালাধর তাঁতনী তাতীন তিনী মৃদঙ্গ মান্দা পবাশ ঘন বাজে কঙ্কণ তরল। গণেশ পাখাজু-পাণি তাথই তাথই ধ্বনি নান্দ ভূগু ধরে করতাল হরি হর পদ্মযোন নাট দেখে মহামুনি হরিধ্বনি করে বহুকাল । যশোদানন্দন-কাচে ১ ধুতব তাণ্ডব নাচে ইন্দ্রের কুমার মালাধর মুখব নৃপুরশালা কাণি-মাখে দিয়৷ তালি দোঁখ আনান্দত পুরহর | একশত ফণাশালী মাথে আরোপেন মালাধর গলে শোভে গুঞ্জমাল গোর রাঁ্জিত কলেবর। নৃত্য করেন মালাধর হয়া সভে একতালি গান গীত গোবিন্দমঙ্গল । নত নহে জেই ফণ নম তারে কেল পদাঘাতে ফণী পড়ে তোঁজ ফণা খরশ্বাস মুখ নাসা হইতে । ভাবেতে আকুলকেশ আনন্দে নাচেন পঞ্চানন দারুময় কার কালি শিরে 1শিখিপুচ্ছজাল পণতানে কর্যা মোল নাটছলে নারায়ণ শত মুখে বহে ফেনা ধরিয়৷ নন্দের বেশ ১৭১ যশোদার বেশ ধার তাণ্ডব করেন গোরা পুলকিত তরুলতাগণ। নাটে তুষ্ট কির্তিবাসা দিল দিব্য কণ্ঠভূষা হাড়মালা বিভূতি ভূষণ কনক কুঁগুল হার হরায় গাথনি জার প্রসাদ করিল দেবগণ। মাণ-অভরণ মাঝে হাড়মাল নাহী সাজে দোখয়। হাসেন মালাধর সভাকার অন্ত্যামী বুঝিয়। গ্রমথত্বামী কোপদৃষ্টে বলে পুরহর। মহামিশ্র জগলাথ হৃদয়ামশ্রের তাত কবিচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চন্ডীর আদেশ পাই বিরাঁচল শ্রীকাঁবকন্ধণ ॥ ৩০১ কোপে কম্প-কলেবর ডাকিয়।৷ বলেন হর মৃঢমাত শুন মালাধর বুঝল তোমার মাত কেবল কপট ভন্তি তুহু* লোভি ধনের কঙ্কর। আমি অবধোৌত জন হরিভান্ত মোর মন সোনারূপা নাহী অভরণ দিল তোরে দিব্য মালা তারে কর অবহেল৷ এই মালা শ্রীনকেতন। এই মালার গুণ অবধান হয়া! শুন ছুঞ ছিল পূে দশানন ইহার তপের পাকে বাদত ভূবন-লোকে পরাজই হইল ন্রিভুবন। জতবার মৈল গোরী তাহার 'নসান, কার তার হাড়ে কৈল কণ্ঠহার জে জন পবশে হাড়ে তারে লক্ষ্মী নাহি ছাড়ে ভুবনে দুর্লভ এই সার। ১৭২ না চাঁহয়৷ ধনকাম তোমারে বিধাতা বাম হাড়মাণে কর উপহাস গোরব হরিপ তোর ধন লোভে তুহ্‌' ভোর আমারে দেখি না কর তবাস। নাহী কৈলে মাণন। ন। কারিলে বন্দন। ধারণ শ। কারণে মাণারে হৈয়ে প্রমোদত চিত না কারিল৷ ভীন্তুনিত মুমতি না ধারলে শিরে। ধনের করিয়৷ আশ জেই জন হরিদাস তার ভা কেবল বেপার জেন মাত তেন গাঁত কূলে জর্মহ বানিঞাণ । চশ ঝণট বসুমতী এত বাক্য হরতুণ্ডে কখারের পড়ে মু ভাঙ্গিয়া শতেক মহাীধর চরণে ধারিয়। হরে কুমার বিনয় করে গাইল মুকুন্দ কাঁববর ॥ ৩০২ চরণে ধারয়া স্তীত করে মাগাধর একবার অপরাধ ক্ষেম মহেশ্বর | তুমি অর্থ তুমি মোক্ষ তৃমি যোগ কাম বিফলজনম প্রভু তুমি জারে বাম। তুমি স্বর্গ তুমি সোম তৃঁমি হৃতাশন তুমি ইন্দ্র তম যম তুম গ্রভঞ্জন। বিশ্বনাথ নাম ধর ভুবনে 'বাঁদত লঘু দোষে গুরু দণ্ড নহে সমুচিত। এতেক স্তবন যদি কৈল মালাধর প্রসাদ কারয়। তারে বলে পুরহর। দেবমানে অবানতে রয় চারি মাস কর গিয়৷ পাবতীর ব্রতের প্রকাশ । আমার সেবক আছে নাম ধনপাতি তাহার বনিতা নাম খুল্পনা যুবাতি। চখ্ীমঙগল তাহার গঙে জন্ম লহ বচন আমার কয়া দেবীর কার্য আইস পুনুবার | এমন বচন ঘাঁদ বৈল স্মরারিপু দেখিতে দোঁখতে তার টুট্যা আইল বপু। অশয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩০৩ শিবের পন শুনি শালাধর মনে গুনি হৈল বাপ৷ বিাদিতমাঁত তোমার হাঙ্গিত পায়া৷ দাঙাইণ। মহামায়া দিল মোরে বিষম আরাত। কান্দে কুমার মালাধর গুরুভার মনের সন্তাপে দেখর্প পরিহরি জাইব মরতপুরা কেমনে গোঙাব নরলোকে। বান দোষে অবসাদ * দিলে মোরে দেব শূলপাণি আমার পরাণ বধে নাহী কার অপবাধ অভয়ার নিজ সাধে দুই নারী হইল অনাথনী পার। সনে কার ধ্যান যোগেতে ছাড়িল প্রাণ পড়িয়৷ রহিল কলেবরে উজাণি ণগরে স্থিতি খুল্লন। ত খতুবতী প্রবোশল তাহার জঠরে । তার দুই পাত্তা সঙ্গে হইল অনুমূত৷ তোঁজল আপম নিজ পুরা শোকেতে উন্মন্তবেশ উদাম মাথার কেশ আম্রপল্লব করে ধার। অভিষেকে পৃত কায় আগোর চন্দন গায় দু সাঁতনে করে চারু বেশ ্বগ্গগঙ্গার তীরে প্লান কাঁরয়া নারে অনলে করিল পরবেশ । ষষ্ঠ দিবস : দিবা একটির জিউ লয়যা দক্ষিণ পাটনে লৈ জর্মাইল সালবানের ঘরে উজ্ানী নগরে স্থিতি প্রবৌশল৷ বিরুমকেশরে । ধন্য প্লাজা রঘুনাথ রূপে গুণে অবদাও ্রাহ্মণভূষের পুরন্দর হেয়া তার সভাসদ বিরাচণ চণ্ভীর কিন্কর ॥ আর জিউ জয়াবতী বান্দর চতীর পদ ৩০৪ মন্তে আইল কুমার দেবীর আরতি মধুমাসে খুল্পন৷ হইল গর্ভবতী । সালবান-নৃপজায়৷ ছিল ধতুবতী তাহার উদরে জন্ম নিলা রূপবতী । দ্বিতীয় বনিতা তার উজ।নি নগরে জনম ল্ডিল নৃপরানির উদরে । দিনে দিনে বাড়ে গর্ভ দেবী-অনুবণে হর-সাপে তিনের জনম খিতিতলে। মধুমাস অপায় মাধব পরবেশ দনাই পণ্ডিত আসি বলে উপদেশ । নাশ্ন্দে রহিলে কেন বান্যার নন্দন এই মাসে হব তোমার গুরুপ্রয়োজন । সাধু বলে আইস ভায়া শুনি সব কথা কির্পে কারব শ্রাদ্ধ কোন তথ মৃতা । কিবা নাঞ কিব৷ চাই করহ বিচার তোমা অগোচর নাঞ্িঃ মোর কুলাচার । এত শুনি দনাঞ পাঁওত শষ্টমৃতি শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর ভারথি ॥ ১৭৩ ৩০৫ কি কর কি কর ভায়া পাঁজ দেখ্যা আইনু ধায়্যা শুনহে আমার নিবেদন ই সে সিত ভ্রয়োদশী খুড়া৷ হইল স্বর্গবাসী রাঁববার তার প্রয়েজন। করিয়া পাশার খেলা গোঙাঁঞলে এক সমা তথ বংসর তোমাৰ বাসে জ্ঞাতি বন্ধু নাহ আইসে ইথে মনে নাঁঞ মনঃকথা । তোম৷ জানে ধনে মানি পঞ্জব গড়াইতে গেলা এই পুরী উজবনি ধনপতি খাত সাগর রক্গাতেজে জেন বাব পাঁওত কুলীন কবি আসিব শতেক 'দ্বিজবর । তুমি লোকে খ্যাত দাতা শানঞ শ্রাদ্ধের কথা তোমার [পতার খ্যাত 'তাঁথ আসিব ব্রাহ্মণ ভাট কাঁড় চাহ পাটে পাট জোড় গড়া কত শত ধুতি । আল-চাণ্র ডাপি বাঁড় শতেক তঙ্কার কাড়ি চিড়া কল দি গুয়। পান জোড়ে জোড়ে চাহ খাসী জ্তঞাতি কুটুম্বের চাহি মান। আমি তব পুরাহত তব হিতে মোর চ৩ পিতৃকাষে দেহ ভা!য়্যা মন বান্ধব আনিতে ভাট ঘুত দুধ মংস্রাশি সেবক পাঠাও হাট করহ পিতার প্রয়োজন । পুরাহতের শুন বাণী দেশে দেশে পারায় বান জায় ভাট নানা স্থান ধনপাঁতি মনে গুন সাতগী বঙ্ধামান বরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৩০৬ দ্বিজমুখে শুনি সাধু পিতৃশ্রাদ্ধ শুদ্ধি সঙ্জপন্র সঞ্জোগ কারিল যথাবাধ । ১৭৪ দেশে দেশে আছে জত কুটুন্ব জ্ঞেয়াতি প্রত্যক্ষে সবারে পত্র লিখে ধনপতি । ব্যেবহারে সন্দেশ গুবাকে নিমন্ত্রণ ঘরে ঘরে বল্যা আইল কাওার খর্থন। বঙ্ধমান হৈতে বান্যা আইল ধুসদ্ত সর্জনে গায় জার কুলের মহত চাম্পা নগরীর আইল চান্দ সদাগর সঙ্গে লক্ষী গদাধর চাঁপয়৷ কুপ্জর । কর্জনার হার ল৷ দাস নীলাম্বর নয় ভাই নয় ঘোড়৷ অনেক লগ্কর । গনপুরের বান্য। আইল সনাতন চন্দ তার দুই সহোদর গোপাল গোবিন্দ । আইল বাসু ল৷ জার বাড়ি দশঘরা সেয়াখাল্যার বান্য। আইল শ্রীধর হাজরা । সাক হৈতে আইল বান] নাম শঙ্খ দত্ত রাতাঁদন বহে জার অস্ট-ঘেড়া রথ । বষ্ু কু আইল গায় পামরি আচলা সাত ভাই আইল চড় সাতখান দোলা । কায়াথ হইতে আইসে অরাবন্দ দাস রঘু দত্ত আইল জার জাড়গ্রামে বাস। ফতেপুর বড়শুল গ্রাম মহাস্থান তার বান্া আইল হরি চন্দ মতিমান । আইল গোপাল [দত্ত তেঘরির বান্যা রাত্রিদিন চলে বার্তনের কথা শুন্যা । সিতলপুরের দশ ভাই আইল রাম রায় কেহ আইসে তটে তারা কেহ আইসে নায় । রাম দত্ত আইল জার বাড়ি নাডু্া পাচড়ার বান্যা আইল চণীদাস খা । সাতর্গী হইতে বান্যা আইল রাম দা বিষুপুরের বানা৷ আইল জসমন্ত খা । আইল বাসু ল৷ জার বাড়ি খশড়ঘোষ কুল শীল বাবহারে জার নাহ দোষ । হালিসহরের বান্যা আইল প% জন রাম রঘু রাঘব কেশব জনার্দন | চন্ডীমঙ্গল গোতানের ধুস দত্ত আইল ছয় ভাই যাদব মাধব হরি শ্রীধর বলাই । সাধুর শ্বশুর আইল নিধি লক্ষপাতি নানা ধন লৈয়া আইল সাধুর বসতি । একে একে বণিকের কত নিব নাম সাত শয় বান্যা আইল ধনগাঁতর ধাম । কেহ নেই পদধূলি কেহ দেই কোল নমস্কারে আশীবাদে হইল গণ্ডগোল 1 সভারে বসায় সাধু লোহিত কম্বলে কর্পর তাষুল আনি দিল কুতৃহলে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত প্লীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত । ৩০৭ তিল তুলসী গঙ্গোদক কুশ বটু রন্তাত্মক বব দুঝ৷ কুসুম চন্দন অবধানে পুরোহিত কর্য। দেই নিয়োজত শ্রাদ্ধ করে বান্যার নন্দন । গ্কাগত অনুষঙ্ঞাবাণী১ দ্বিজ করে বেদধ্বান নিয়োজত কৈল কুশাসন দ্বিজগণ তার শিরে যজ্ঞেশ্বর কৈন আবাহন । কপাল জুঁড়িয়া ফৌটা সগল্লাথ পামরি কম্বলে কিত৷ কথুবায় বান্ধা যজ্ববেদ গান করে [নবসে পাঁগডতঘট। উপরে টীনায় চান্দ। ধূপে আমোদিত করে স্থলে । পাদ অধ্য ধূপ দীঁপে গন্ধ গঙ্গাজল সিপে দান করে কনক বসন বসন কাণ্চন জুত দান করে ভুজ্য শত করে কুশে ঝটু নিমন্ত্রণ। জার জত অভিলাষ পুরে সাধু তর আশ সোমা রূগ। বাস ধেনু দিয়া ষষ্ঠ দিবস; দিবা শত শত দ্বিজববে জে আইল সাধুব ঘব পুজে তাবে সন্তোষ কাঁবযা । অধ্য গন্ধ 'দিয৷ দান 'দ্বিজকবে সাবধান পান্র বুঝি কবে সম্প্রদান জথাবাধি পিওদান শ্রাজ হইল সমাধান বর্ষণে কবেন বহু মান । চন্দন নুসুম মালা ভাঁবিযা কনক থালা সাধু চলে বান্ধব পূজনে সদাগব মান ভাবে কাব পৃজা কাঁব আগ শ্রীকাবকঙ্কণ বস ভনে ॥ ৩০৮ সদাগব বলে আগে কবি কাব পৃজ। সভাবে অধিক বটে চান্দ মহাতেজ। । দুর্বাবাষি গোন্ন বটে কুলেব প্রধান ইহাব আগেতে পৃজ। কেবা পাব আন । এমন বিচাব সাধু কাব মনে মনে আগে জল দিল চান্দবান্যাব চবণে । কপালে চন্দন দিষা মাল্য দিশ গণে এমন সমযে শঙ্খ দত্ত কিছু বলে। বান্যাব সভা আমি আগে পাই মান সম্পদে মাঁজযা না কব অবধান । জে কালে বাপেব কর্ম কৈল ধুস দত্ত তাহাব সভাষ বান্যা হইল সোল শত। সোল শত আগে শঙ্খ দত্ত পাইল মান ধূস দত্ত জানে এহ] চন্দ মাতমান । ইহা শুন ধনপাঁত দিলেন উত্তব সেই কালে নাহ ছিল চাদ সদাগব। ধনে মানে কুলে শীলে &দ নহে বাক৷ বাঁহব মহলে জাব সাত২ মরাই টাকা । ইহা শুনি বলে কিছু নীলাম্বব দাস কলঙ্ক খওষে ধনে কুলেব প্রকাশ ১৭৫ ছয বধ জাব ঘবে নিবসযে বাড় ধনে হইতে চান্দ হইল সভামাঝে সাড় । চান্দ বলে জানি তোবে নীলাম্বব দাস তোমাব বাপে কিছু জানি ইতিহাস। হাটে হাটে তোব বাপ বেচিত আঙল। জতন+* কবিয৷ তাহা কিনিত অবলা । নিবন্তব হাথাহাথি বাববধূ্‌ সনে নাঁঞ ম্লান কব্য৷ বেটা বাঁসত ভোজনে । নীলাম্বব দাস বলে শুন বাম বাধ পসাব কাঁবত বাপা নহে প্রত্যবাষ | কডাব পুটাল বাঁ্ধ জাত্যেব বেভাব আঠা চো খাইলে নহে কুলেব খাখাব। ইবে তুমি না স্মঙব আপনাব কথ। সঙামাঝে কও কথ! ঘন নাড মাথা । বাম বায নীপাম্বব দাসেব শ্বশুব ধনপাঁও 'বিডস্বিষ। কহিষছে প্রচুব । জাতিবাদ নহে তাব জাদ হয বঙ্ক বান ছাগ বাখে জাব। তবে সে কলঙ্ক ।॥ কেহ তথা কিছু বলে কেহ দেই সাঘ বিড়াস্থতে হবিবংশ শুনে বাম বাষ । দ।মুন্য। নগবে প্রভু বাশচক্রা দিত্য শিশুকালি হৈতে তাব সেব৷ কৈল নিত) । স প্রভুবণ মনে ভাবি অনুক্ষণ চাওকামঙ্গল বে শ্রীকবিকন্কণ ॥ ৩০৯ বান বৈসে এক জা হবিবংশ পড়ে দ্বিজবব কেহ বা নিঠ.ব তাষে হেট-মুখে বহে সদাগব। কংস ঝল শুন ভাই নহি উগ্রসেনেব তনয শুনে সাধু রাম রায় [বিপক্ষ বণিক হাসে আপনাব দোষ গাই ১৭৬ দ্লামল্য দৈত্যের বংশ ভুবনে বখ্যাত কংস কি কারণে উগ্রসেনের ভয় । জন্মের ভাজন মাত। জার বাধ সেই পিত। সুতরূপে সেই ভিন্নকায় লোকে অপযশ গায় জাবজাত কংসবায [লিখ গেল যমের সভাষ | গুরান বসন ভাতি অবলা জনের জাতি রক্ষা পা অনেক যতনে জথা তথা উপাস্যিত দুহাকাব অনুচিত হিত বিচারঘা দেখ মনে । শৈশবে রক্ষিতা তাত যৌবনে পবাননাথ বৃদ্ধকালে তনয় রাক্ষত। বেদে নাহি দিয়া মন অন্তপুরে ন৷ রাখে বাঁনিতা। উদ্াসেন অভাজন রূপে জিনি দেবমায়া উগ্নসেনেব জায় মোর মাতা কেশিনী অঙ্গনা তার শন দৈবগাঁত হইযা বাম৷ ধতৃবতী জলখেলা১ করিল কামন৷ | সঙ্গে শত দাসীগণ জলবিহাবেতে মন দেখে রানি পৰতেব শোভা দমলয দৌখতে পায় কামশরে ভিন্নকায় কেশিনী দেখিয়া মনলোভ। । বুঝিয়। কার্ষের গতি দুমিল্য দানবপাতি ধরে উগ্রসেনের মুরাত থাকিয়া কাননভাগে তারে আলিঙ্গন মাগে নিকুঞ্জে ভূগিল দুহে রতি। দুঁমিল্য দৈত্যের ভরে রামা অনুমান করে এইজন নহে মোর পাতি কামরূপী কোন জন হরিল আমার মন কার সঙ্গে ভোগ কৈল রাঁতি। দমল্য সাতির ভয় তিল আধ নাহ রয় নাহি কহে হাস্যরস কথা সন্দেহ ভাবিয়া মনে আসি রামা নিকেতনে গ্কার্ী দোখ ভাবে মনে বোথা। চন্ডীমঙ্গল এ সব রহস্য বাণী আপিয়৷ নারদ মুনি কাহল আমারে উপদেশ অন্য নাহিলেশ চিতে উগ্রসেনে নাহি ভান্ত লেশ। বনে ফিরে জার নারাঁ তাহার বিফল গারি তবে কেন বিবাহের “সাদ জার অপেক্ষণ বিনে অবশ্য তাহার জাতিবাদ । দ্বিজে দিল হেমদান পাঠকে বন্ধন করে পুথি খলখন বান্য৷ হাসে হেটমুখে রহে ধনপাঁত ॥ সেই সময় হইতে জায়া ফিরে বনে বনে অধ্যয়ন সমাধান শ্রীকবিকঙ্কণ ভাষে ৩১০ কল্লহে আরাঁপ মন রাম দত্ত রামায়ণ শুনে ধনপতি বড়ন্থিতে অন্য বণিক জত রাম দত্তে অনুগত শৃনে রামায়ণ এক চিত্তে । সীতার উদ্ধার হেতু সমুদ্রে বান্ধিল সেতু পার হইল শ্রীরঘুনন্দন অঙ্গদ সুগ্রীব নল নীল হনু মহাবল বৌঁড়ল লঙ্কার উপবন। বিভীষণ পরাভবে রামের শরণ লে গড় বোঁড় কাঁপ দেই থান। বেহার উদ্যান ঘর ভাঙ্গে জত কাঁপবর তরুগণ ভাঙ্গে রাম-সেনা । ইহ। শুনি দশানন নিয়োজে রাক্ষমগণ ত্রিশির। নিকুস্ত ইন্্রজতে দেবাস্তক মহোদর নরাস্তক নিশাচর আঁতকায় আদি শত সুতে। বিষম সমরধীর সুগ্রীব অঙ্গদ নীল পনস কুমুদ হনুমান ষষ্ঠ দিবুস দিবা চড় চাপড়ে রণ করয়ে বানরগণ জাতু-সেনা তেজয়ে পরাণ । সুমিন্ানন্দন-বাণে ইন্দ্রজত পড়ে রণে পরাভবে চাস্তত রাবণ কুন্তকর্ণে প্রবোধিল রামবাণে সেই মইল দশানন করে মহারণ । সকল বিনাশ দেখি দশানন হয় দুঃখী রথে চাঁড় জুঝে রাম সনে রাবণে বিধাতা বাম প্রথম সমরে রাম মকুট কাটিল চক্রবাণে । রামের সাধিতে মান ইন্দ্র পাঠাইল যান জেই যানে সারাথ মাতুলি চড়ি রাম সেই যানে জুঝে রাবণের সনে দেখি দেবগণ কুতৃহলী । বাণে মহামন্ত্র পাড়ি রহ্মন্ত্র ধনুকে জুড়ি মাইল রাম রাবণের বুকে রথে হইতে বাঁর পড়ে কদলী জেমন ঝড়ে শোণিত [নকলে দশমুখে । রাবণ পাঁড়ল রণে ইন্দ্রের সন্তোষ মনে বিভীষণ বৈসে [সিংহাসনে কার শুভক্ষণ বেল। চাঁ়িয়৷ পাটের দোল। সীঁত। আইল রাম-সম্ভাষণে । সীতার বদন দেখি প্রভু রাম হৈল৷ দুঃখী হেটমুখে বলেন বচন রাচয়া বিপাঁদ ছন্দ পাচাল কাঁরয়। বন্ধ বিরচিণ শ্রীকাবকল্কণ ॥ ৩১৯ এক নিশ। জার নারী পরগৃহে থাকে অনুদন তাহারে গঞ্জয়ে সবলোকে। চিরাদন ছিলে সীত৷ রাবণভবনে আরোপিব রঘুকুলে কলঙ্ক কেমনে । চ. ম.২৩ ১৭৭ তোমারে জানকী গ জেমন আমি জানি ভুখিল বাঘের হাথে জেমন হারণী । সেতুবন্ধ বান্ধ্যা সীতা বধিল রাবণ উদ্ধারল জাহ এবে জাহ জথা মন। এত বাক্য হৈল জবে রঘুনাথের তুণ্ডে আকাশ ভাঙ্গিয়৷ পড়ে জানকীর মুণ্ডে। মৃ্ঘিত হইয়া সাঁত৷ পাঁড়িল ভূতলে সুমন্রানন্দন তার শিরে জল ঢালে । অনেক জতনে সীতা পাইল চেতন কৃপাময় রঘুনাথ বলেন বন । রাহতে আমার ঠাঁঞ যাঁদ আছে মতি অনলপরীক্ষা লহ যাঁদ বট সতী । এমন শুনিঞা সাঁত৷ রামের ভারতী পরীক্ষা লইতে সীতা কৈল অনুমাঁত। হংসবাহনে ব্রহ্ম হইল অধিষ্ঠান পরীক্ষা লইল সীত৷ সভা বিদামান। সকল দেবত৷ কৈল পুষ্পবাঁরষণ তাওব কাঁরল কাঁপসেন৷ বিভীষণ। পরীক্ষায় শুদ্ধ হয়া৷ জনকনান্দনী রাম সঙ্গে বাসঘরে বাল রজনী । অধ্যয়ন সমাধান 'দ্বজে বান্ধে পুথি শুনি হেটমুখ কার রহে ধনপতি। মুখর প্রখর বড় অলঙ্কার কুণ্ত সভামাঝে কহে কথ ঘন নাড়ে মুণ্ড। চতুর্দশ ভুবনের পাঁত রঘুনাথ রহ্ধা আদ দেব জারে করে প্রণপাত । তার জায়া বন্দি ছিল অপেক্ষণ বিনে পরীক্ষ। করাইয়। ঠারে আনল ভবনে। রাম রাজা হইতে কিবা সাধু ধনপাতি বনে ছাগল লৈয়া জার দ্রমিল যুৰতি। কোক ভল্লুক সনে১ শতেক মাতাল সেই বনে তার জায় ছাগল-রাখাল । দোষগুণ নাহি সাধু করিয়৷ বিচার খুল্পনার ঠাঁঞ করে ভোজন বে/ভার। উচিত বাঁলতে মোর কিবা আছে শঙ্কা পরীক্ষা নহাঁলে দিবে [এক] লক্ষ তন্কা। এতেক বচন যাঁদ বৈল অলঙ্কার বণিক-সমাঝ তার কৈল পুরস্কার । ুল্লনা পরীক্ষা লউক যাঁদ বল্যে সৃতি তবে নিমন্ত্রণে সভে 'দিব অনুমতি । ঝার হাথে ধনপাঁত ছলে ঘর চলে লহনা গঞ্জিয়। সদাগর কিছু বলে । শঙ্খ দত্ত বলে চল সভে ঘর জাই লক্ষপতি দত্ত দেই রাজার দোহাই । নাহী দোষ যাঁদ তবে একা ভ্রমে নারী গাঠেতে মাহুর বিষ খাইলে সে মার । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকল্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৩১২ বলে বানা শঙ্খ দত্ত রাজবলে তুহু' মন্ত জ্ঞাতিরে দেখাও রাজবল জ্ঞাত যাঁদ আভরোষে গরুড়ের পাক খসে ইহার উচিত পাবে ফল। গরুড় বিহগপাতি তার পুন সম্পাতি জ্ঞাতরে লাঁঙ্ঘল অহঙ্কারে উড়িয়া গগগনতলে পড়ে ভানুমগ্লে তর পাখ৷ পোড়ে রাবকরে। ধন লেই নৃপবর প্রাণ লেই দণ্ডধর জাতি লেই দেই বন্ধুজন রাজগর্বে হয়্যা মানী দশের না বোল শুনি সমরে পাঁড়িল দুযোধন । জারে নিন্দে দশ নর সেই যাঁদ নৃপবর তথাঁপ মাঁলন তার যশে রজকের শুনি কথা পরীক্ষা করাইয়৷ সীঁত। পুনুর্বার দিল বনবাসে। চন্ডীমগল রাজপান্ন ধনপাঁত আর বান্য। বৈসে খিডি সকল রাজার পরিবার [িলিয়া শতেক ভাই রাজা করে উচিত বিচার । বণিকসমাঝ বৈসে লক্ষপাঁত প্রিয় ভাষে শঙ্খ দত্ত নাহী দেই মন হয়্যা সাধু আভমানী বিরাঁচল শ্রীকাবিকল্কণ ॥ জাইব রাজার ঠা্িঃ লহনারে বলে বারী ৩১৩ লহন। কী কাজ কঁরিলি আমা খায়াযা খুল্লন৷ তোমার পাকে কাননে ছাগল রাখে বিপাক পড়িল আমা দিয়া । তোর অনুমতি লৈয়। কঁরল দোয়জ বিভা দা দিয়া কৈল সমর্পণ কপটে লিখিয়৷ পাতি মজাইলি মোর জাতি বংশে বংশে রহিল গঞ্জন। আপনার সুখ-শংসা সাঁতনে কারল হিংসা কাঁরলি কপট ব্যবহার তোমার দারুণ কোপ বসুমতী ভারালি খাখার । রাজ যাঁদ করে বল সর্প যদি খেদাড়িয়। খায় তুহু পাপসাত বাজ হইলি অপযশ-পাঁজ কহ মোরে কেমন উপায় । 1ক আর জীবনে ফল তেঁজব বিফল জীবলোক যাঁদ মরে ধনপতি তবে দু সাতিনে প্রীতি লহনার দূর হবে শোক। ধনবান জার পাতি সেই জায়৷ ভাগ্যবতী বিবাহ করয়ে দুই তিন কুলষশ কৈলি লোপ জ্তাঁতবন্ধু ধরে ছল আন্া। দেহ হলাহল ষষ্ঠ দিবস? দিবা এক বধু পুরবতী সভার উত্তম গাঁত সাঁতনের পুত্র নহে ভিন১। তোরে গর্ভভাগ্য নাহ যাঁদ করে গোসাঞ অন্য গে সুতের সণ্ঠার শুনিঞা পুরাণকথ। তোমারে দিলাঙ সত পরলোকে হব প্রাতিকার। [বিভ। কৈল পুন্ন-হেতু দ্ব্গ জাইতে ধর্মসেতু পরলোকে জলাপও-দাত। আর জত উপচার পুন্ন বিনু অন্ধক!র নরকে নাহীক পরিন্রাতা। অপুএক জার গার তার ধনে রাজ ভারি পরে নেই আওয়াস মিরাস শূন্য তার দুই লোক মরণে আধক শোক প্রথম বাসরে উপবাস । আত্মঘাতি করে ভালে কাতি দিতে চাহে গলে নিশ্বাস জিনিঞ। দাবানলে খুল্পনা আসিয়া কাছে পরীক্ষা লইতে ইচ্ছে সবিনয় সাধু কিছু বলে। মহামশ্র জগন্নাথ হৃদয়ামশ্রের তাও কবিচন্দ্র হৃদয়নন্দন তহার অনুজ ভাই চতীর আদেশ পাই বিরাঁচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৩১৪ তোরে বলি পরিয়ে বাঁস থাক গৃহে পরীক্ষায় নাহী কাজ ঠোঁকলে পরীক্ষে না দোখব১ চক্ষে ভুবন ভরিয়ে লাজ। যাঁদ থাকে দোষ নাহা মোর রোষ তুহু ল অবলা-জন দ্রমলি কাস্তারে কী দোযিব তোরে আমি গ্ধামী অভাজন। ১৭৪ শতেক বনিতা- মধ্যে পতিব্ততা ভাগ্যে পাই এক জন নারীর চরিতে শুন্যাছি ভারতে ইতিহাসে দেহ মন। শ্রসেন-সুতা নাম তার পৃথাং কন্যাকালে আনি ভানু বিদ্যা শিখ পূর্বে কর্ণ কইল গর্তে কর্ণ হইতে জার জানু। পা নৃপমন তাহার রমণী মন্্রমহীপতিসুত৷ আশ্বনীকুমারে আনি নিজাগারে হৈল দুই সুত-মাতা। পা্ড নৃপবরে 'বিভ। 'দিল তারে মাপে দূর গেল রাত তার শুন কর্ম ইন্দ্র বায়ু ধর্ম আনএ। কৈল সম্ভতি। দুপদনন্দিনী তার শুন বাণী পণ্চজন কৈল্য পতি গুরুর যুবতি পাশে নিশাপতি বৃধের তাহে সম্তাতি ।ৎ দূর কার শঙ্কা দয়া লক্ষ তক বাঙ্ধবে কারব বশ আরোপি শশাঙ্ক থাকয়ে কলঙ্ক ধন রহে দিন৷ দশ । শুন মধুমতী সাধুর ভারতী বিনয় বলে খুল্পন। রাচয়া সুছন্দ সুকবি মুকুন্দ পাঁচালি কৈন রচনা ॥ ৩১৫ অবোধ পরাননাথ বাঁলহে তোমারে আঁজ ধন দিলে দিবে বংসরে বংসরে। ১৮০ নিজ ধন দিতে দিতে তুমি হবে রঙ্ক ভুবন ভাঁরয়৷ মোর রহিব কলঙ্ক । সাধারণ নহহে জ্ঞানী বড়লোক সভায় কন্দল্দ্বন্দে খোটা দিব লোক । পরাক্ষা লইতে তুমি যাঁদ কর আন গরল ভাখয়া আমি তৌজ্রব পরান । খুল্পনারে ধনপতি বুঝল অপাপ হৃদয়ে সন্তোষ সাধু ঘুচিল সন্তাপ । পুনুর্বার সভারে করেন নিমন্ত্রণ অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥ ৩৯৬ পুনুরাঁপ ধনপাঁত করে নিমন্ত্রণ খুল্লনার রন্ধনে সভে কাঁরবে ভোজন । স্কপক্ষ বণিক তারে কাঁরল আশ্বাস হেটমাথ৷ কাঁর বলে নীলাস্বর দাস । দশমী দিবসে মোর গুরু-প্রয়োজন কেমনে আমিষ্য অন্ন করিব ভোজন । পূর্বেতে কড়ক ছিল ধনপতি সনে গাঙঠি কারল বান] তাঁথর কারণে । বড়ই চতুর জয়পাতির নন্দন ইঙ্গিতে বুবিয়া নিল বিপক্ষের মন। ভোজন কাঁরতে তোমা নাহি বাল আমি ব্াহ্মণে রান্ধিবে অন্ন করিবে দশমী । দশমী কারিয় তুম বাঁসহ সভায় তোমার প্রসাদে জেন যজ্ঞ সাঙ্গ হয় । গয়৷ গঙ্গ। কিয় দেখ্যাছি জগন্নাথ দড়াইয়াছি ভিন্ন গোত্রে নাহ খাব ভাত । ধনপাঁত কটু হয়া৷ বলে দুরাক্ষর বুয়া বলয়ে জেন গর্জে বিষধর । বায় পুরুষে জার লোনের বেপার সেই বেটা আমারে বলয়ে অহঙ্কার । চণীমঙ্গল হাটে নিঞা বেচে লোন কিনে ডোম হাড়ি ব্যায়াজের তরে ছুএ়। করে কাড়াকাড়ি । পণচ পণ বোঁচতে এক পণ করে চুর সভা মাঝে বসিয়া নুন্যার আটম্বরী । ধনপতি তারে যাঁদ বৈল নুন্যা ভণ্ড সভার ওকাঁল হয়৷ বলে রাম কুও। নীলাম্বর দাস তারে চাঁপলেক আখি হাত উঠাইয়৷ সভাজনে করে সাক্ষি। জাত বণিক লোন বোঁচ সবকাল কেহ লোন বেচে কেহ বেচয়ে বকাল। কালি তুমি বিভ। কৈলে রূপসী দেখিয়া বনে বনে বেড়াইল ছাগল রাখিয়া । শুখানর মংস্য আর নারীর ভ্রমণ তেপাস্তরে পায় ঘাদ রজত কাণ্চন। অযহে পাইলে ইহ। ছাড়ে কোন জন দোখলে ভুলয়ে ইথে মুনিজনার মন । খুল্লন৷ পরীক্ষ। লউক বণকসভায় অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ গায় ॥ ৩১৭ থুল্লন। রিপুর 'সম্ধু করিয়া মজ্জন ১ একভাবে পৃজে রাম চন্ডীর চরণ । ফলমূল উপহারে নৈবিদ্য পাজল। করিয়া পুজেন ঘটে সবমঙ্গলা । কিন্করী বাঁলয়া৷ মাত৷ যাঁদ থাকে দয়া বিষম সঙ্কটে আসিব মহামায়া । অবাঁন লোটায়॥ স্তুতি করে বারে বারে অন্তরে জানঞা চণ্ডী আইলা পৃজাগারে । নথ-ইন্দুভাসে দূর গেল অন্ধকার কবরি-মল্লিকামালে ভ্রমর ঝঙ্কার | চরণে পাঁড়ল রাম৷ মুখে নাহ বোল শিরে আরোপিয়া পাণি চণ্ডী দিলা কোল । যঠ দিবস দিবা খুল্পনারে চণ্ডিকার বড় মায় মোহ নেতের অশচলে পুছেন নয়নের লোহ । পরীক্ষা লইতে তারে দিল অনুমতি আশ্বাস কারল বিয়ে থাকিব সংহতি । এ বোল বলিয়৷ চণ্ডী রহিলা অস্থরে ধনপাতি পরীক্ষা মানিল উচ্চন্বরে । থুল্লন পরীক্ষা! লয় দেবীর আদেশে পণচালি প্রবন্ধে কবিকন্কণ ভাষে ॥ ৩১৮ সাধু ধনপাত দত্ত আনিঞ পাঁণ্তত শত সভারে বসায় 'দিব্যাসনে হয়্যা সভে কৃপানিধি বিচারে পরীক্ষ। শু ধর্মেরে কারয়া সচেতনে । সাধুজনের কর্ম বন্দন। করিয়া ধর্ম লিখে মন্ত্র অশ্বথের দলে আনএ পাঁথক দুই তার শিরে পর্ন থুই ডুবাইল সরোবর-জলে । থুপ্ননা পরীক্ষা নেয় কোন বান্য। কিছু কয় উজানি করয়ে ধন্য ধবনি অফ্ট-নায়িক লয় খুল্লনারে কারি দয়া রথে ভরে উাঁরিল৷ ভবানী । দুই জনে ক্রমে উঠে বিপক্ষের বল টুটে পরীক্ষায় খুল্লনার জয় ফিরাইয়া পুনু পাতে দিল পথকের মাথে পুনুর্ধার কাঁরয়৷ নিশ্চয় । অলঙ্কার দত্ত কয় জলের পরীক্ষা নয় পথিক সাঁহত ছিল সান১ তোঁজয়া কপট নিধি পরীক্ষা করিব যাঁদ পরীক্ষা করুক রাম৷ আন। সাধুর আদেশে মাল আনে সর্প জেন কাল দুই অশাখ করঞ্জা সমান ১৮১ রাখিল নৃতন ঘটে গর্জনে কলস ফাটে সর্প চালে চন্দ মতিমান। কনক-অঙ্নুরি তাঁথ পেলে বান্যা ধনপতি ধারসভ৷ করে হাহাকার ভুতলে পাতিয়া জানু প্রণাম করিয়। ভানু অঙ্গুরি তুলিল সাত বার। মাল নীলাম্বর দাসে রাম দ৷ নিঠুর ভাষে খুল্পনা গঞ্জিয়। কয় বথা কারয়৷ কপট ধন্দ২ সাপে দিলে মুখবন্ধ সর্প জেন হয় মহীলত।। আজ্ঞা দিল বুঁহতাল দ্বিজে দিল ঘৃতে জাল ঘূত হইল অনল সমান ভয় নাহি করে সাঁতি আরোপ কাণ্ঠন তাঁথ তুঁলিল সভার বদামান। কাঁহছে মাধব চন্দ নাঁঞ নেয়াই নাহ দ্বন্ৰ বারলে অনল হয় জল তন্ক৷ দেকু এক লাক ঘুচাব সকল পাক পরাক্ষায় নাহি ফলাফল । আজ্ঞ৷ দিল বুঁহতাল কামার পাতিল শাল সাবন তইল হুতাশনে জেন প্রভাতের ভানু হইল সাবল তেনু সাধুর সন্দেহ বড় মনে। দ্বিজে মন্ত্র লিখি পাতে দিল থুল্লনার হাথে করে দিল অশ্বথের দল সাড়াঁসয়ে ধর্য। আনে খুল্লনার 'বিদামানে জবাপুষ্প সমান সাবল। থু্নন৷ অনলে কয় শন বহি মহাশয় থাক সর্বজীবের অন্তরে যাঁদ বা দুষ্কৃত পাপ উচিত কারবে দাপ নহে শান্ত হবে মোর করে। পাতে রাম দুই পা কামার সাবল আনি আরোপিল তার পাণিপুটে। কাঁর রাম। প্রাণপাত লাঁঙ্য়৷ মণ্ডলী সাত পেলাইল লৈয়। তৃণকুটে। ১৮২ চত্ীম্ল পুড়া গেল তৃণচয় ধনপাঁত তেজে ভয় ধুসার শুনিঞা কথ। মনে সাধু ভাবে বোথ। শঙ্খ দত্ত বলে কটু বাণী যুক্তি কৈল খুল্লনা সহিত বলিবারে কীবা ভয় সাবল-পরীক্ষ৷ নয় থুজ্যা সাধু কারিগরে জোগৃহ সজ্জ করে বাঁরলে সাবল হয় পানি । মুকুন্দ রচিল শুদ্ধ গত ॥ রোষজুত ধনপতি পুন দিল অনুমাত তুল। পরীক্ষার বিধানে খুল্লনা কাল তুল৷ হারিল বণিকগুল। রর শ্রীকাবকঙ্কণ রস ভনে ॥ নিযোজল ধনপাত শতেক কিন্করে কারিকর চায় তার৷ আট দিকে ফিরে। জত কারকর ছিল নগরে নগরে জোৌগৃহ নামে তার! হেটমাথা করে । বান্ধয়৷ বাশের আগে পাটের পাছড়। ৩১৯ ফিরাইল শত পল সুবর্ণ চাঙ্গড়া। ধুস দত্ত বলে ভাই তোর দায়ে আমি দাই নগরে নগরে তারা দিলেক ঘোষণা কাঁহ হিত উপদেশবাণী জৌগৃহ গড় নেকু শত পল সোনা । এ সব পরীক্ষা বাঝি১ এতে কেহ নহে রাজি দেবতা-পরীক্ষাকার্য দেবতা সে জানে ধারল সভার পদপাণি। জৌগৃহ কথা তার নাহি শুনে কানে । আন পরীক্ষা নাঞ মানি সভে করে কানাকানি হেন কালে জান চন্ডী গগন-ীবমানে না ঘুচল কুলের গঞ্জন দেখিয়া চাওক যুন্ত কৈল পরা৷ সনে । জৌঘর করিল সীতা সভে কহে সেই কথ। বিশ্বকর্মে ভগব্তী কৈল স্মঙয়নে তাঁথ সভাকার লয় মন। শ্রৃতিমাত্রে বিশ্বকর্ম আইল ততক্ষণে । তুমি আমি দুই তাই অবশ্য করনা চাহি অষ্টাঙ্গ লোটাইয়া বিসাই হৈল নুতিমান কাহতে করহ পাছে রোষ আশ্বাসয়।৷ অভয়া দিলেন গুয়া পান। জৌঘর করুক বধূ যশ অকলঙ্ক বিধু চাকা বলেন বাপ। বালহে তোমারে তবে সভে করিব নির্দোষ। মোর দাসী পরীক্ষ। লইব জউঘরে । বলে বনমালী চন্দ নাঁঞ নেয়াই নাঁঞ ছন্দ মোর ব্রতে বিসাই যাঁদ কর অবধান উচিত কাঁহতে চাহি কথা থুল্পনার জৌগৃহ করহ নির্মাণ। সীতা উদ্ধারিয়৷ রাম তবে সে আনিল ধাম বিশ্বকর্ম এত শৃনি লইলেন পান জোৌঘর কারল জবে সীত৷। স্মঙরন কারতে তথা আইল হনুমান । য়া অবানির রাজ। কাঁরল লোকের পৃজা আইস পুর বাঁল তারে চন্ডী দিলা ভার আপানি হইয়া ভগবান ঝাট নির্মাইয়। দেহ জৌয়ের আগার । জেই পথ কৈল হার তাহা দড়াইয়। ধার জেই ক্ষণে আদেশ কারল ভগবত সেই পথ কেব। করে আনা সেই ক্ষণে দুই জনে হইল নরাকাতি। দিবস : দিবা অঙ্গীকার কার দুহে চণ্ডী বিদ্যমানে সুবর্ণ চাঙ্গড়া আসি ধরে দুই জনে । গোঁরব কাঁয়া দুহার সাধু দিলা পান জৌগৃহ গড়ে তারা হইয়া সাবধান । আনলেন জত ছিল নগরের নাঁড় সাতানয়য।১ বন্দে বিশ্বকর্ম ধরে দড়ি ।২ সূত্র ধারয়। ভিত দিল চার পাট জৌ ঝান-কাট কৈল কপালি চৌকাট। জো ঝান-বাত৷ কৈল জৌয়ের ছিটনী সোল পাট দিয়া কৈল জৌয়ের ছায়নী । জৌঘর নির্মাইয়৷ কারল বিদায় দেখিয়। হরিষ হইল বিপক্ষসভায় । নীলাম্বর দাস বলে হৈল জৌঘর সাঁত হৈলে বাচিবে ইহার ভিতর । খুল্লনা চীন্তল তথা চন্ডীর চরণ বিষম সঙ্কটে মাতা করহ রক্ষণ । ফল মূল উপহার নৈবিদো পাজল৷ করিয়া পুজেন ঘটে সবমঙ্গল৷ । অবাঁন লোটায়্য৷ নাত করেন স্তবন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবকস্কণ ॥ ৩২১ নমহু নমহু বাঁণ প্রনমহে৷ নারায়াণ আঁধিষ্ঠান হও পৃজাঘটে বিপদে ম্মঙরে দাসী প্রাণ রাখ বিষম সঙ্কটে । প্রলয় দানব মারি দশের আঁধকারী সুরলোকে কাঁরলে সুস্থির মাহ্য রাক্ষস জন্ভ নাশিলে সভার দস্ত ঘিডুবনে তুমি মহাবাঁর । হইয়া বিপদনাশী ১৮৩ তোমায় কাঁরয়া পৃজ। জয়ী হইল রাম রাজা রাবণের করিল নিধন নিশাচরগণ-ভীতা আপনি রাখিলে সীতা রঘুনাথে আনিলে ভবন। বিশ্বরুগা বিষালাক্ষী অনন্তরাপণী রাজারশী ভাবে তুয়া শুদ্ধমতি রাখ সতিজন অবতংসে । মাঁণহরণের কালে নিরুদ্দশ হইল যদুপাঁত দৈবকী বুঝিণী মিলি দিয়া জয় হুলাহুলি তোমাকে কাঁরল বহু স্ৃতি। তুমি দিলে বরদান জয়ী হইল ভগবান সমরে জিনিল জামুবান জামুবতী কাঁর বিভ। [সমন্তক মাঁণ নিঞা আইল৷ দ্বায়ক। মহাস্থান। যশোদানান্দনী জয়। শশাঙ্ক শিখর [শবদূতী সমরাবিজয়ী লক্ষ্মী সেই জন মহাসাঁত প্রবোশিয়া পাতালে শিবা দুর্গ। মহামায়া নাশিলে সভার দগ্ত ঘিদিবে স্থাপিলে বসুম্তী । নীলপুরে তুমি নীলা পুরী কৈলে ঘাটশিলা রাষ্ষনী শৃলিনী ভয়ন্করা ধার বিষালাক্ষী নাম নৈমিযকাননে লিঙ্গহর৷ । খুলনার দুতি শুনি আস তথ নারায়ণী কৃপাময়ী শিরে দিল হাথ লোচনে প্রমদ বারি অবনী লোটায়। প্রাণপাত। খুন্নন৷ চিস্তিয়। ভয় আশ্বাস করেন হৈমবতী করিয়। চাকা ধ্যান দামুন্যায় জাহার বসাঁত ॥ সুরাসুর মহাজন বারাণসী কৈল ধাম করেন খুল্পন। নারী জোগৃহ-কথা কয় শ্রীকাবকঞ্কণ গান ১৮৪ ৩২৭ খুল্লনারে ভদ্রকালী চীন্তয়া কল্যাণ পল্লাবর্তী সঙ্গে দেবী করি অনুমান! ধনঞ্জয়ে ভগবতী কৈল স্মঙরন শতিমান্রে ধনঞ্জয় আইলা ততক্ষণ । গ্রাণপাত কাঁরয়৷ আগ্ন করল অরঞ্জাল [ক কারব আদেশ করহ ভদ্রুকালী । চাঁওকা বলেন পুন্ন বলিহে তোমারে মোর দাসী পরীক্ষা লইব জৌঘরে | হাথে হাথে তোমারে কারনু সমর্পণ জতনে কারহ ইহার ভয়নিবারণ । সতি দেখ্যা। হই আমি পরমশীতল বিশেষে তোমার আজ্ঞ৷ পরমমঙ্গল ॥ ইহা বাঁল ইন্ধনে জলিল স্কাহানাথ খুলপন৷ প্রতায়হেতু তাঁথ দিল হাথ । খুল্লনার হাথে অগ্নি তুষারশীতলে আছুক আনের কাজ শঙ্খের জৌ নাহ গলে । খুল্লনা আরোপি গলে তুলসীর মালা উপনীত হইল রাম! জথা জৌ-শালা । বণিকসমাঝে রামা লৈয়৷ অনুমতি জৌগৃহ প্রবেশ কাঁরল রূপবতী । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩২৩ খুল্লনা চন্ডীর পদ করিয়া ভাবনা সম্মুখ-দুয়ারে বাহ দিলেন খুল্পন৷ । দুয়ারে ভেজায়্যা আগ্নি প্রবৌশল ঘরে বাড়িতে লাগিল অগ্নি জৌঘর উপরে । সাঁত-দেহ দাহবারে হইল অনল তুরারশীতল হিম মৃণালশীতল । চণ্ডীমঙ্গল জৌগৃহে বাড়ে বাহ যোজনপ্রমাণ প্রলয় বৃঝিয়া সিদ্ধ ছাড়ে নিজস্থান। প্রথমে গগনতলে উঠে নীল ধুঙা চাতক খেচর জত হইল উভমুঙা । কলমে ক্রমে বাড়ে আগ্ম জুঁড়িল আয়াষা৯ পাঁথক চলিতে নারে পথে'লাগে দিশা ॥ উত্তরপবনে বাহ ডাকে হনহন আগর দফাল জেন ষণড়ের গর্জন ।২ সূর্যের রথের ঘোড়া হইল চলাচল ঘোড়ার চাপনে হেল সারাথ বিকল । লুকায় গগনবাসী মেঘের আহড়ে কেবা দিগন্তে গেল বহিচ্জুত ঝড়ে । চাল গল্যা পড়ে চারি-পাটি কাথ গলে চারিটা গলিত ধারা ধায়ঃ মহাঁতলে। শোকে ধনপতি দত্ত ঝশপ দিতে জায বন্ধ দশ মিলি তারে ধাঁরয়৷ রহায়। পরীক্ষা" দেখিতে আইল জত দেবগণ বিমান উভাইয়া চলে নিজ নিকেতন । অভয়াচরণে নজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত । ৩২৪ কান্দে ধনপতি করে আত্মঘাতি১ লোটায় ধরণাঁতলে মোল বন্ধু দশে বান্ধি ভুজপাশে না দেই জাইতে অনলে। গড়াইতে পঞ্জর গোঁড় নগর গেলাঙ আপনা খায় সহত বাঁঘনী খুল্পনা হরিণা উত্তর ন৷ পাইনু চায়্যা। আম অভাজন না কইল পালন ছাগল রাখিলে বনে যর দিবস দিবা সাহতে অপেক্ষা বিষম পরীক্ষা দিলাঙ যুবতিজনে । তোমা স্মগারয়া পোড়ে মোর হিয়৷ আইস প্রিয়ে একবার তোম। বিনে মোর ঘর হইল ঘোর জীবন ধার অসার। দয়। মহাশোক গেলে পরলোক কর প্রিয়ে মোরে সঙ্গি কৃষসার বিনে একাকী ভ্রমণে ন৷ পায় শোভা কুরঙ্গী। তুমি গেলে জথা আম জাব তথ ব্যাজ দিন৷ দুই তিন কাম্য কার তোরে মারব সাগরে নাহব তোমা বিহীন | বন্ধুজন কান্দে কেশ নাহী বান্ধে কান্দে সাধু লক্ষপতি কপটবচনা কান্দেন লহন৷ প্রবোধে লীল। যুবতী । রাজা রঘুনাথ গুণে অবদাত রাঁসক মাঝে সুজান তার সভাসদ রি চারুপদ শ্রীকীবিকঙ্কণ গান ॥ ৩২৫ আগ্র হতে উঠ পরিয়ে খুল্লনা সুন্দরী তোম।৷ বিহনে প্রাণ ধারতে না পারি। নিধূম হইল অগ্নি তাল হেন জলে খুল্লনা বাঁসয়া৷ আছে অভয়ার কোলে । ভালই আঁছনু 'প্রয়ে গোড়নগরে দেশেরে আইনু প্রিয়ে তোম। পোড়াবারে । কেমনে পুড়ল শঙ্খ শ্রীরামলঙ্ষমণ ফেমনে পুড়ল অঙ্গে পাটের বসন । চ. ম.-২৪ শুন গো খুল্লনা ১৮৫ নহলী যৌবন পুড়া৷ হইল ছারখার তে৷ হেন সুন্দরী 'প্রিয়ে না দোৌখব আর । ভাসে ধনপাতি দত্ত লোচনের জলে বন্ধু দশ মেলিয়া প্রবোধবাক্য বলে । কপটে কান্দয়ে রাম! লহনা বানানি প্রবোধ করয়ে লীল৷ বাড়ুরি ব্লাঙ্ষণী । খুলনা রহিল মোর বড় মায়া মোহ কপটপ্রকারে কান্দে চক্ষে নাহাঁ লোহ। শঙ্খদন্ত আদি জেবা আস্যাছিল এথ৷ অন্তরে গাঁণঞ৷ সভে হেট কৈল মাথা । নিধূম হইল আগ্ন টুট্া আইল শিখি খুল্লন ন৷ দেখি সাধু হইল বড় দুঃখী । সাধু ধনপাঁত কুণ্ডে পাঁড়বারে জায় ফুণ্ডের ভতরে রাম৷ ঈশ্বর ধেয়ায় । বার্যাল সুন্দরী রাম৷ জয় জয় দিয়া মন্তকে কুন্তন পানি পাঁড়ছে খাঁসয়া । সেইমতে ছিল শঙ্খ শ্রীরামলক্ষ্মণ মলি নাহী পড়ে অঙ্গে পাটের বসন। খুল্পন। দাগাইল গিয়া সভ। বিদ্যমানে বাণকসমাঝ তার পাঁড়ল চরণে ।১ বণকসমাঝ বলে নাহাঁ দিহ সাপ অপরাধ বোল বৈন অহঙ্কার পাপ। নীলাম্বর দাস বলে আমি তোমার ভাই ভাত খায়া৷ জাব আমি মান নাহ চাই। রাম দা আসিয়৷ বলে সকরুণ বাণী তুমি জে মানুষ নহ আমি ইহা জানি । অঞ্জলি কাঁরয়৷ সভে নিল নিমন্ত্রণ খুল্লন৷ রাঁ্ধলে সভে করিব ভোজন । অভয়াচরণে ম্জুক নিজ চিত শ্রীকাবকল্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৩২৬ উত্তমাধষণা খঞ্জান-গঞ্জনি রামা। ১৮৬ আল্য। বান্যাজাল মোরে হয়া কাল দুঃখ করাইতে তোম। । বলে বান্যাকুল থাব অশ্জল জদি একবারে পাই হইয়া প্রসন্ন জারে দিব অন্ন তার বাঁড়বেক আই । তবে জানি সতী একুবারে যাঁদ সতে অ্জল পাই কি কাঁরব বল প্রাতজ্ঞ। করিল তবে অন্নজল খাই । সাধুর বচন কারল স্মরণ সুন্দরী থুল্পন। নারী সর্বথা সম্ভারে দিব একেবারে অনজল আদ কার। সাধু গেল তথা শুনিএঞ। একথ। বলিল বণিককুলে এথা মূপবতী চিন্তে ভগবতী এবার রাক্ষবে মোরে । দাসীর ম্মঙজরনে মরত-ভুবনে ডারল৷ লোকের মাত। সভাকারে ধন্দ দেখাতে প্রবন্ধ আইলা হেমস্ত-সুতা । সাধু শ্লান কাঁর ঘৃতে পুর খুরি [মষ্ট অন্ন বন্ধুজনে তে মৃদুমন কারল ভোজন শ্রীকাবকল্কণ ভনে ॥ ৩২৭ বিপক্ষে বাচিল রামা অভয়ার বরে রন্ধন কারতে তারে বলে সদাগরে । স্মগুরিয়া ভগবততী বাঁসলা রন্ধনে দুবলা জোগায় দুধয জে চাহে জখনে । চন্ডীমঙ্ল, সাক সুপ রান্ধিয়া ওলায় ফুলবাঁড় ঘৃত 'দিয়। ভাঁজল উত্তম পলাকড়ি। কটু তৈলে কই মংস্য ভাজে পণ দশ মুঠ নিঙ্গাড়িয়া তাহে দিল আদার রস । থণ্ডে মুগের সুপে উভরে ডাবরে আচ্ছাদন থালখানি দিলেন“উপরে । কটু তৈলে ভাজে রাম৷ চিথলের কোল রোহিত কুমুড়াবড়ি আলু দিআ৷ ঝোল । বদার সকুল মীনে রসাল মুসুরি পণ দুই ভাজে রাম। সরল-শফরা । কথগুল। তোলে রাম। চিঙ্গড়ার বড়া কচি কচি গোটা দশ ভাজিল কুমুড়। । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥১ ৩২৮ পণ্চাশ বেঞ্জন অন্ন করিল রন্ধন দুবল। জানায় গিয়। সাধু সম্লিধানে । ভোজনে বাল জত জ্ঞাতিবন্ধু জন খু্ননা কনকথালে জোগায় ওদন । সুবর্ণের গাড়ুতে লহন৷ দেই ঘি হাসিয়া পরসে রামা বানিঞার বি । প্রথমে সুকৃত৷ ঝোল সুপ ঘণ্ট সাক প্রশংসা করয়ে সভে রদ্ধনের পাক। ভাজা মীন ঝোল ঘণ্ট মাংসের বেঞজন গন্ধে আমোদিত হইল সাধুর ভবন। প্রশংসা করয়ে সভে সকল বেঞ্জন শুনি লহনার খসে লোচনে অঞ্জন । দাঁধ পিঠা খান সভে মধুর পায়স ভোজন করিয়া সভে লাজে হেল বশ। ভোজন করিয়া সাঙ্গ কৈল আচমন কপ্র-তাযুলে কৈল মুখের শোধন । ষষ্ঠ দিবস; দিব হবাধাঁষ পাইল মান সায়বানি দোলা চন্দন চোখুরি দিল* ঝারি কষ্ঠমাল।। কাশ্যপ পাইল মান পাটের পাছড়৷ দুর্বারসী পাইল মান চড়নের ঘোড়া। কৌসিথি পাইল মান সুবর্ণের বারি সাতগীয়ের বান্য৷ পাইল বাচন্র পামার ।২ অঙ্গে অঙ্গে প্রাত সভে পাইল কাপড় বিত্তি বান লিখ্যা দিলেন গৌরব । বিদায় করিয়া সাধু জ্ঞাতিবন্ধুগণে প্রভাতে চিল সাধু রাজসন্তাষণে । বিপদসাগরে সদাগর হয় পার রাজসন্তাষণে চলে রাজার দুয়ার ।৩ ভার দশ দাঁধ কলা ঠাপ। মর্তমান দোখও সরস গুয়৷ বিড়বিষ্বা পান । গছে বান্ধ্যা নিল ভেট ঘৃত দশ ঘড়া সগল্লাথ খান দুই খান দশ গড়া । কান্দি দশ নিলেন বাঙন নারিকল ঘড়ায় পুঁরয়। নিল নাড়ু গঙ্গাজল। ভেট দিয়া নৃপবরে করিল প্রণাত হেন কালে পুরাণ শুনেন নরপাতি। পাঠক পুরাণ গায় জ্ঘৈষ্ঠমাহম। জৈোষ্ে চন্দনদান সুকাতির সীমা । মহাযোগ কাঁর [কহে। জট পৃর্ণমাশী ইহাতে পৃঁজিলে হারহর দ্বর্থবাসী। ইন্দ্র আদি দেব আইসে আগুবাড়ান দিব্য গায়নে তার গায় সন্ধান । জেই জন চন্দনে করে হারসঙ্কীতন ভারথমগডলে তার সফল জীবন । জেই জন চন্দনে করয়ে হারপৃ্জ। সাতাঁদন অবনিতে সেই হয় রাজা । 1শবের দুয়ারে জেবা করে শঙ্খধ্বনি অভিমত বরদানে শিব তার রিনি। চামর ঢুলায় জেব৷ হরি সান্নধানে স্বর্গলোক জায় সেই চাপিয়। বিমানে । ১৮৭ অধ্যয়ন সমাধান দ্বিজে বান্ধে পথ ভাণ্ডার চন্দন আন বলে নরপতি। চন্দনের তরে রাজ ভাগার ডাকিয়া আরাত দিলেন তার হাথে পান দিয়া। জে কিছু চন্দন ছিল ভাগার ভিতর ভাগার আনিঞ৷ দিল রাজার গোচর। ভাণ্ডার আসিয়৷ নৃপে করে নিবেদন পাচালি রচিল দ্বিজ শ্রীকাবকল্কণ ॥ ৩২৯ অবধান কর রায় নিবোঁদ তোমার পায় চন্দন নাহক এক তোল। জত সাধু ছিল রিনী ইবে তার৷ হইল ধনী সম্পদে মাতয়৷ হৈল ভোলা বিংশতি বংসর হইল জয়পাত দত্ত মইল ডিঙ্গ। ভর্যা আনিত চন্দন আর জত সদাগর তিলেক না ছাড়ে ঘর ন৷ পাই চন্দন-অদ্বেষণ। গজশালে গজ মরে হাত্যারা আঙ্গাম করে লবঙ্গ নাহিক জায়ফলে সন্ধ্যপ বহনে ঘোড়। শালে মরে জোড়া জোড় শঙ্খ নাহি বাজে পৃজাকালে। চামর্যা পামরি ভোট সকল্লাথ গজঘোট একখানি নাহিক ভাগ্ডারে শঙ্খ পারবার তরে রামাগণ সাদ করে পিত্তনভূষণ ঘরে ঘরে। ভাওারে নাহিক নীল। মসার নিকষশিলা মানিক বিদুম মুতিপলা জতেক চামর ছল সকল পুরান হইল উড়ে জেন সিমুলের তুলা । হিঙ্গ হিঙ্গুল দ্রা্ষা ঘনসার গজতক্ষা কুমকুম কন্তার গন্ধ ১৮৮ দিসী সাধু হইল বধূ না আইল বোদিসী সাধু দেখিতে দুর্লভ হইল গুয়া। আমার বচন শুন ধনপতি দত্তে আন পাটনেতে তারে দেহ পান রচিয়। নিপাদ ছন্দ পাঁচালি কারয়৷ বন্দ শ্রীকবিকম্কণ রস গান ॥ ৩৩০ কৃতাঞ্জল বলে সাধু রাজার চরণে দক্ষিণ পাটনে পাঠাও অন্য জনে । তোমার চরণে রায় কার নিবেদন শিশু-গারি মধ্যে মোর নাহ অপেক্ষণ | এ সাত পুরুষ মোর গেল বুহিতালে সেই সব 'িঙ্গ। আছে ভ্রমরার জলে । ফেমনে জাইব রাজা দক্ষিণ পাটন পানি-ভেদা হইয়৷ ডিঙ্গা হইল গুরাতম । পান্ন মিত্র বলে ভাই না কর বিষাদ । কাঁরতে রাজার কাধ্য নাহি অপরাধ । সভাজ্জন বলে সাধু কত সাধ মান বৈসহ রাজার রাজো খাও খেম নান ॥ অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৬৩১ রাজায় কাঁরয় নুতি বলে সাধু ধনপার্ত এবার পাঠাও অন্যজনে “জুড়ি উডয়পাণি সাবনয় বলে বাণী নৃপাঁতি বন নাহি শৃনে। [নঙ্ বাঁনতার কাজ লোকমুখে শুনিবে সকল কহিতে বাসয়ে লাজ চন্ডীম্ঙী হিংসার আয়ে!পাঁ মন শুন দৌথ নিকেতন সাঁতনেরে রাখাল্য ছাগলী । হৃদয়ে ভাবিয়। পাঁড়া নাহি সাধু লয় বিড় কেপে রাজ৷ লোহিতলোচন বুঝিয়া কার্ষের গতি লয় সাধু ধনপাঁত অঞ্জলি কাঁরয়া মাথে গান। আপন অঙ্গের জোড়া চাঁড়বারে দিল ঘোড়। কবজ প্রসাদ জমধর লক্ষ তঙ্কা ডঙ্গার ধন গায় দিল অভরণ বিদায় পাইল সদাগর। মহামিশ্র জগন্নাথ হৃদয়ামশ্রের তাত কাকিন্দ্র ঘদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চণীর আদেশ পাই বিরাচল শ্রীকবিকন্কণ ॥ ৩৩২ সংহল জাইতে সাধু পাইল আরতি লহন। দুবলা মুখে পাইল সালাতি। সুয়র১ দুখে হিয়ার সুখে কয় দুই চারি কথা বাজ চার পাঁচ ডাকা আনে তেজ্যা মনের বেথা । আর শুন্যাছ সিংহল জাত্যে সাধু সাজ্যাছে ডিঙ্গ। নাইয়। পাইকের কুলকুলা৷ ঘন বাজে সিঙ্গ। ৷ সুয়র চক্ষে চক্ষু পাঁড়িলে চক্ষে চক্ষে কথা আমার দিঠে দিঠ পড়িলে করে হেট মাথা । সোহাগধনে গবে১ না দেখে নয়নে দোষের মত শান্ত দতে বিধাত। সে জানে । সুয় দুয় সমান হইল ইবে [হইল] ভাল বিক্রমকেশরী জিয়৷ থাকুক চিরকাল । ওহার সবে গোরা গ৷ এ সে যুবতী এ পর্যাচে কল্পণহার 8 সে গর্ভবতি ।.. য় দিবস.ঃ দিবা হেলন দোলন চলন-ভাতি কে সাতে পারে ভাল হইল সাধু জায় সংহল নগরে । ওহার সবে রাঙ্গা সাকা এ সে বরনে গোর এ সে জানে স্ত্রীকল৷ মোহন চাতুঁরি। হাথে পান মুখে গুয়। ফিরে পাটি পাটি পাটপড়সী বলে জাতি না রাখিব "টি । নিষেধ না মানে ছাড় না মানে দোহাই সাড় চায়্য। বুলে জেন বাথানিঞা গাই । বেয়াজ দেখায় রূপ যৌবন সম্পদ দড় স্বামী হইলে আজি নাকে দিত পদ । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর চরিত ॥ ৩৩৩ ডুপাঁতি চরণে সাধু কাঁরয়৷ প্রণাম ত্বরা কার সদাগর জান নিজ ধাম । চিন্তায় 'চাস্তত সাধু অশুনয়ান ঝারি হাথে থুল্লন। আইল বিদ্যমান । সাধুর মলিন মুখসরোরুহ দেখি রাজদ্বায়ের বার্ত৷ জিজ্ঞাসে শশিমুখা । [বরসবদনে সাধু কাহল সকল আরতি পাইল প্রয়ে জাইতে 'সিংহল । এত বাকা হইল যাঁদ সদাগরের তুণ্ডে আকাশ ভাঙ্গিয়া পড়ে খুল্পনার মুডে । দুই চক্ষু হইল তার ধারা শ্রাবণ [হত উপদেশ সদাগরে নিবেদন । চিন্তায় চাস্তত রাম৷ অশ্রুলোচন অভয়ামঙ্গল গায় শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ৩৩৪ প্রাণনাথ সিংহল গ্রমনে নাহি সাধ ঘকীয় চন্দন শঙ্খ রাজস্থানে লইব প্রসাদ । দিয়। হব নিরাতন্ক ১৮৯, ভাঙারে আহয়ে নীল মসার নিকযাশিলা মানিক বিদ্ুম মরকতে জত আছে নিজাগারে দেহ নিঞ৷ নৃপবরে সুখে থাক নিজ জায়া সাথে। [একা] সমর্পিয়া মোরেঃ গেলে পঞ্জরের তরে গোঙাইলে তথা এক সম৷ সত৷ দিল জত দুঃখ ধরণ না জায় বুক আমার দুঃখের নাহি সীমা । জলে কুন্তীরের তয় কুলেতে শার্দলের চন দুষ্ট থণ্ড শত শত পথে জে জায় সিংহল দেশ সে পায় বত ক্লেশ কহিয়াছে মোর িত৷ তত্তে। জ।বে হে সাগর বায় সে পথে. ন৷ জিব নায় পরান-সঙ্কট নোনা-বায় কাঁহতে পরান ফাটে মকরে মানুষ কাটে ধিক থাকু সিংহল-উপায়। বু তামাঙ্গল আছে প্রাণাপড়াসিলখ মাছে তনু জার শতেক যোজন কি করে টমক সিঙ্গ। পক্ষে ছুঞ/া লয় ডঙ্গ। সেই দেশে সঙ্কট জীবন । উড্ভুব কংস্/বগুলা সসা জেন মসাগুল! জলোক৷ কুঞ্জরশুগ্ডাকার রাজা বড় পাপাচত্ত ছলে হর্য। লয় বিত্ত শুন্যাছ দেশের দুরাচার । থুন্ননা জতেক কয় শুন্। সাধু করে ভয় সাঁথমুখে শুনিল লহন৷ রাঁচয়৷ ত্রিপাদি ছন্দ গান কীব শ্রমুকুন্দ মনোহর পাচালি রচন। ॥ ৩৩৫ মনে বড় কুত্হল লোচনে কপট জল বৈসে রাম। সাধুর সকাশে কেমন দারুণ বেল। রাজসন্ভাষণে গেল৷ চিরাদন হইল পরবাসে। ১৪৯৩ কর প্রডু দড় বুক হৃদয়ে না ভাব দুখ কর গিয়া রাজার আরাতি না করা আসিতে ত্বরা সাত নায় দিয়। ভর) লাভ কর্যা আসিহ বসতি । জেই জন পরাধীন সে জন অবশ্য দীন সুখ দুঃখ নাহক বিশেষ রাজা মৃর্তিময় তম সাপ বাদে জেন যম রাজার সেবনে হব ক্লেশ। সুরা আছিল৷ রঙ্ক আনিতা চন্দন শঙ্খ সাজন কাঁরয়৷ সাত নায় বেচা কিন্যা হইলে ধনী ইহা ভালে আমি জানি [ক বুঝাব অবল। তোমায় । তঙ্কা চাহ প্রাতি হাটে বস্য। খাইতে নাঞ আটে যাঁদ হয় কুবেরের ধন [হত-উপদেশ বাঁল ফুরায় নদীর বালি আয় বিনে যাঁদ কার পণ। হন৷ জতেক ভাষে শুন্য সদাগর হাসে দৈবজ্ঞ আনিতে করে ত্বরা উমাপদ-ম্তাঁচত মুকুন্দ রচিল গাঁত চাওকা-পাঁচালি মনোহর! ॥ ৩৩৬ [সিংহল চাঁলবে নাথ দীধ পরবাস লাজ খগ্য। কাহ মোর গর্ভ ছয় মাস । মোর মনে লয় তথ! হব চিরকাল তোমার বান্ধবগণ বিষম করাল। গাঙটি ধাঁরয়।৷ তারা জাঁদ ধরে ছল সেই কালে কেবা মোর হব অনুকূল ॥ শুন হে পরাণনাথ বাঁলহে তোমারে পরাক্ষ্য লইতে কত পা বারে বারে । এমন শুনঞা সাধু খুল্পনার ভারাঁথ জয়পত্র 'লাখবারে দিল অনুমতি । চন্ডীমকল ফন্তি আগে লিখিয়া লাখল ধনপতি অশেষ মঙ্গলধাম খুল্পনা যুবতি । তোরে আশির্বাদ প্রয়ে পরম পিরিতি সন্দেহভঞ্জন-পন্র করিল 'লাখতী । জখন তোমার গর্ভ হইল ছয় মাস সেইকালে নৃপাদেশে কারন প্রবাস ৷ যদি কন্যা হয় শশিকল৷ নাম থুয়া উত্তম বংশজ দোখ ঝিয়ে বিভা দিহ। যাঁদ পুর হয় নাম থুইয় শ্রীপাত পড়াইয়া শুনাইয়৷ পুরে করিহ সুমাতি। এবার বংসরে যাঁদ নহে আগমন আমার ডীর্দশে জাবে দক্ষিণ পাটন। তিন নিদর্শম দিল বানিঞার বালা শ্রীমন্ত* অন্ুরি দিল গায়ের আচলা । পত্র লাখ সদাগর দিল তার হাথে বস্তি ্কাস্ত কার রাম। পত্র নিল মাথে। পন্ন লেয়। জায় রাম] আপনার বাসে খাঁড়বন্র খা আইসে সাধুর সকাশে । দৈবজ্ঞ পড়েন পশাজ রাশিচক্ পাতি যাত্রা গণিতে সাধু দিল অনুমতি । পখাঁজ বিচারেন দ্বিজ ভাবিয়। লক্ষণ শ্রবণাফদুনি যাত্রা ন। জাই দাক্ষিণ। অষ্টর্মী নাহল ভাল তাথ ব্যাতিপাত নিষেধ তরণীষাত্র। পাত প্লেতনাথ। কিত্তিক। নবমী যোগ নহে যাত্র। ভাল তাঁথ গ্রহস্পর্শ হল দশমীর কাল । দ্বাদশা বিফল যান ত্রয়োদশী, নয় [তাথ চতুর্দশী 'রস্ত। ভাল নাহ হয়। অতপর উদ যান্র। নাহ আস্তভাব এমন যাত্রায় গেলে নাহ হয় লাভ ॥ থাঁড়বন্দ্র থা বলে শুন মোর ভাষ ভাল যারা নাহি কহে এই ছয় মাস) এইত যান্নার সাধু শুন আভসন্ধি এমন যান্লায় গেলে লোকে হয় বন্দি । ঘষ্ঠ দিবস: দিবা এ বোল শুলঞ সাধু মুখ কইল বাকা নফরে হুকুম 'দিয়৷ মারে তারে ঢেকাখ। আভশাপ দিয়া ওঝ৷ চলিল নিলয় ধনপাঁতি যা কৈল গোধূলি সময় । অভয়াচরণে মন্গুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৩৭ পূর্বে হইতে আছে ডিঙ্গা ভ্রমরার জলে ডুবারু লইয়৷ সাধু গেল তার কুলে । জলদেবাঁত ঘটে কার আরোপ? জতনে ডুবারু গিয়৷ নাম্বে দুইজন । এক ডুবারুর শুন অদভূত কথ জলে ডুব দিলে জানে জলের বারত৷। আর ডুবারুর কিছু শুনিবে কথন এফেক ডুবেতে জায় একেক যোজন । প্রথমে তুলিল। ডিঙ্গ! নামে মধুকর সুদুই সুবর্ণে জাহার রইঘর। আর ডিঙ্গাখান তোলে নামে দুর্গাবর আখও চাঁপিয়া তার বাঁসব গাবর | তবে ডিঙ্গাখান তোলে নামে গুয়ারেখি দুপরের পথে জার মালুমকাঠ দৌথ। আর ডিঙ্গ৷ তুলল নামেতে শঙখচুর আসী গজ পানি ভাঙ্গয়। লয় কূল। আর ডিঙ্গ৷ তালিল নামে মধুপাল জাহে ভরা দিতে দুকৃল হয় আল । আর 'ডিঙ্গ! তুলিল নামে ছোটমুণি সেই নায়ে ভরা চালু বায়ন্ন পউটি ॥ মম ধুনা দিয়া গাইল সাত নায় আবিলষে সদাগর সাজন চাপায় । ১৯৯ সাভখানা ডিঙগগা ভাসে শ্রমরার জলে গোজে বান্ধা৷ এড়ে 'ডিঙ্গ৷ লোহার সিকলে। আবিলম্বে সাগর আইল নিকেতন ভাগ্ার-ঘরেতে গিয়া 'দিল দরশন জৌয়ের মোহর তার১ ছাব ঘুচাইয়। আড়ায় ভরিয়। ধন নিলেক মাঁপিয়। | নানা বস্ত্র সদাগর নিল রাশি রাশি ভ্রমরার় কূলে আইল হইয়৷ আভিলাষী ।২ অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাঁবকল্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৩৮ বদলাশে নান! ধন নায়ে দেই ভর্য আট দিক হইতে আনে কার বড় ত্বরা। কুরঙ্গ বদলে তুরঙ্গ পাব নারিকেল বদলে শঙ্খ বিডঙ্গ বদলে লবঙ্গ পাব শৃষ্ঠের বদলে টঙ্ক । প্রবঙ্গ ব'লে মাতঙ্গ পাব পায়র৷ বদলে সুয়া গাচ্‌ ফল বলে জায়ফল পাব বয়ড়ার বদলে গুয়।। সন্দুর বদলে হিঙ্গুল পাব গুঞ্জ। বদলে পল। পাটসোন বদলে ধবল চামর কাচের বদলে নীলা । [চিনির বদলে দানা-কপূর আলতার বদলে নাঠি সকল্লাথ পামরী কম্বল পাব বদল করিয়৷ পা্টি। হরিদ্র। বদলে গোরোচন! পাব সোলফার বদলে জিরা আকন্দ বদলে মাকন্দ পাব হরিতাল বদলে হির৷ । মাষ মষাঁর তুল মধুর বরবটী বাটুল৷ চিনা তৈল ঘি ঘটে বলদ শকটে সদাগর লইছে কিনা । গোধম কিনে খুঁড়য়া সাঁরস৷ মুগ তিল মাডুয়া ছোলা (িনিঞা বুতর পুরিল মধুকর লবণের পাঁতয়াগোলা। জগদবতংসে পালাধ বংশে নৃপাঁত রঘুরাম তার সভাসদ রাঁচ চারুপদ শ্রীকাবকন্কণ গান ॥ যষ্ঠট দিবস নিশা ৩৩৯ লহন৷ বাইন্যানি শতেক শআইয় আনি মঙ্গল দিয়া জয়ধ্বনি দুদুভি শঙ্খ বাঁণা মৃদঙ্গ ভেরি নান বাজনে পুজেন তরণাঁ। কাঁরয়া তানে সুর কুলের দ্বিজবর করিল স্বাস্তিক বাচন আরোপি হেমঘটে যুগল করপুটে গণেশ কইল আবাহন। নোব্দ্য নানা বাধ খণ্ড মধু দাঁধ শোল উপচারে চণ্ডী পুজেন খুল্পন। শর্করা গুঁর হেমথাল ্রদাক্ষণ কাঁর বারি করেন অর্চনা। মোদক রসাল আমান্নে পুরি থাল জগতজজননী জয়া কৃপা কর মোরে ভ্রালিল রত্রদীপমাল। সঙ্কটে তরিয়া নাথে আনবে মান্দরে। কাঁরয়া শুভক্ষণ চামর দর্পণ মধুকৈটভের ভয়ে ব্লন্মার শরণ তরীধবজ আগে বান্ধে দুর্বাসার সাপে দূর হইল দেবগণ । বাশ কেরআলে ই কুল কললোলে সুরলোকে সুস্থির করলে সুররায় পুজিল দিয়া পুষ্পগন্ধে। প্রথমে সম্মান পাইলে ইন্দ্রের সভায়। গাঠ্যার গাবরে গজল কর্ণধারে রাবণের বধহেতু সকল দেবত। বসন ভূষণ চন্দনে তোমারে বোধন কৈল অকালে বিধাতা। ঙ্গারে প্রদাক্ষিণ কাঁরয়া দু-সাতিন শোল উপচারে পঁজল রঘুনাথ আইল নিজ নিকেতনে। তবে রাবণ হইল সমরে নিপাত । শ্লীরবুনাথ গুণে অবদাত নানাবিধ সামবাদ করেন খুল্লনা রাঁসক মাঝে সুজান সদাগরে বার্তা দিতে চলিল লহনা। তার সভাসদ রাঁচ চারুপদ অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকন্কণ গান ॥ শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৪১ রি সদাগর তোমার সনে আছে বিরল কথ সাধু যায় কৈল দিন ন। কৈল বিচায় তোমার মোহিনী বাল শিক্ষা করে ডাইন-কল। খুল্লনার দশাঁদগ হইল অন্ধকার | নিত্য গুজে ডাঁকনী দেবত।। ষষ্ঠ দিবস নিশ। দুটা বারি জলগর্ভ। উপয্ে দিধল দুধা আগ্রসার তর উপরে দূর চন্দন চযা কুমকুম কন্তার গুয় পুজে প্রাত মঙ্গলবাসরে । আমান্ন নোবিদ্য দধি ফলমূল নানাবিধি অগোঁর চন্দন ধুপধুনা 'দিয়৷ শঙ্খ জয়ধবনি বধূ পূজে একাকিনী বন্ধুজন করে ঘানাধঘুন] । পায় লোহিত বাস আকুল কুত্তলগাশ বেড়) ফিরে "দয়া হুলাহ্লি দেখ্যাছি আপন চক্ষে কাঙর-কামিক্ষা মুখে দেই ওড়পুষ্পের অঞ্জলি । যাঁদ পায় গুণবতী মঙ্গল অষ্টমী তিথি যদি বা নবমী চতুর্দশী আইল এমন 'তাঁথ গৃজা তবে করে নাত উপবাসী রহে দিবানিশী । উচ্চবা১ প্রধান দোষ না কারহ মোরে রোষ আপনি করহ নিবারণ যাঁদ মিথ্যা হয় ভাষা কাটিহ আমার মাসা ন৷ করিহ আমারে দর্শন । কর হের প্রণিপাত শুন খুল্পনার নাথ কাঁহতে হৃদয়ে কার ভয় কিবা আম৷ সনে বাদে হিংস৷ হেতু চাঁওক। সাদে জাব আমী ছাড়িয়। নিলয় । লহনা জতেক বলে যান্রা তেঙ্য৷ সাধু চলে নাহি করে কুস্তল বন্ধন রাচয়া ত্রিপদী ছন্দ পাঁচালি করিয়া বন্ধ শ্রীকবিকঙ্কণ বিরচন ॥ ৪৬৪২ লহমার বচন শুনিঞ। ধনপাঁত ফেশ নাহি বাদ্ধে সাধু ধায় লঘুগতি। ঠ. ম.-২৫ রোগ শোক দুঃখ খাও দোখয়া সাধুর কোপ টিস্তিত লহমা বিধাতা আমার আজি পুরিল কামনা । স্বামীর সোহাগে তার গর্ব হইয়াছে বাঁড় দেখিব সুয়ের কিল ভুঞে গড়াগাঁড় । আগে আগে চলিল লহন। নারীজন তার পাছু চলে সাধু বান্যার নন্দন । গ্জাগৃহদ্বারে উপনীত ধনপাতি জয় দিয়। পুজে চণ্ডী খুল্লনা যুবতী । রোষজুত ধনপাতি দেখি সন্লিধানে ঘট ছাড়ি ভগবতী রাঁহলা গগনে । দৌখ ধনপাতি দত্ত জলে কোপানলে লাঁঙ্ঘয়। চণ্ডীর বাঁর ধরে তার চুলে । ভূতলে পাঁড়িয়৷ বাঁর গড়াগাঁড় জায় ' নিকট হইয়। সাধু ঠেলে বাম পায়। কেমন দেবত৷ বল পৃঁজস ঘটবারি ্্রীলিঙ্গ দেবত।৷ আমি পৃজ। নাহা কাঁর। কোপজুত ভাষে কিছু বলে ধনপাতি অদেষ্টে আছিল মোর পাপিনী যুবাতি। কার কুলে নাহী দৌখ হেন পাপ বধূ এমন কোথায় কিব। কুলযশবিধু। বামপথি হইয়া করিস কার পৃজ। একথা শুনিঞ যাঁদ ছল ধরে রাজা । পুনবার জ্ঞাতিবন্ধু যাঁদ ছল ধরে কত না৷ পরীক্ষ। তোরে দিব বারে বারে। এমন শুনিঞ৷ রাম। সাধুর বচন অঞ্জাল কাঁরয়া তবে করে নিবেদন । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৪৩ শুন নাথ পুজার সন্ধান প্রাতাঁদন পুঁজ চণ্ডী ইচ্ছা কার তোমার কল্যাণ । ১৯৪ তুমি জাও পরবাস আমার হৃদয়ে ভ্রাস শূন্য হইল মোয় জীবলোক হইয়া সামাহত মতি পুজা কার হৈমব্তী তুমি জেন নাহী পাও শোক। জত দেখ মহাজন সভাকার প্রয়োজন শৃদ্ধভাবে পুজে মহামায়া হৈল। জারে প্রাতিকুল কেবল দুঃখের মূল কেহ তারে নাহি করে দয়া । ভারাবতারণ আশে আইলা বসুদেব-বাসে ইচ্ছাময় প্রভু ভগবান দেবকী আছিল৷ বান্দ বুঝিয়৷ কার্যের সান্ধি নন্দগৃহে কৈল অধিষ্ঠান। দারুণ কংসের ভয় বসুদেব স্থির নয় লুকাইল প্রভু নন্দাগারে আসি বসুদেব সাথে চড়িল৷ কংসের হাথে ভন্ন খাও উঠিল অম্বরে। শ্রীরাম রাবণে রণ সভয় দেবতাগণ বিধি কৈল অকালে বোধন চণ্ডী পুজ। কার রাম রাবণে বিধাত। বাম কারল সীতার উদ্ধারণ। খুল্লনার কথ শুনি ধনপাঁত বলে বাণী তুহু ল আমার সহচরী মোর ব্রতভঙ্গ কার হইলী কুলের কালী মায় পুজ্যা হইলী মোর এীর। এমন নিন্দিয়া নারী চরণে ঠেলিয়। বারি পুনু যাত্রা করে সদাগর ডোমচিল ফিরে মাথে কাটভার দেখে পথে গাইল মুকুন্দ কবিবর ॥ ৩৪৪ কোপে কম্প কলেবর মুখে গদগদ বর মুখরুচি মিহিরমণ্ডল চণ্ডীমঙগল শরে হৈতে খসে বাস আকুল কুম্তলপাশ লোচনযুগল উত্োরোল। শুন পল্পা৷ আমার ভারি দেহ গো নিসান 'সঙ্গ। ডুবাব সাধুর 'ডিঙ্গ। ধনে প্রাণে মজাব,ধনপাঁতি। মোর ঘট পায়ে ঠেলি দয়৷ জায় গালাগালি সহে কেবা এত অপমান আমার গৌরব সাধ ধনপতি দত্তে বধ উহার শোণিতে কার ম্লান । ডাকা৷ দেহ জত দান। ডিঙ্গায় দেউক হান৷ নুচী কর॥ লকু জত ধন কাণ্ডার বাঙ্গাল জত সকল করিয়া হত করহ আমার প্রয়োজন । চৌষট্রি যোগিনী ডাক ধনপাতি নাহী রাখ সাত ডিঙ্গ৷ কর হাহাকার আনিএ ধনার মাথ। ঘুচাহ মনের ব্যথা দোষের হউক প্রতিকার । কাঁরয়া আম! সনে হট লাঞ্ঘয়া আমার ঘট হেন পাপ সহ সহচর কোন ছার বান্য৷ জাতি মোর ঘটে মারে লাখি জিবেক আমার হয়া এর । আছুক পুজার কাজ সুরপুরে হইল লাজ না জাব শঙ্কর সান্নিধানে চণ্ডীর বচন শুনি পল্লাবতী বলে বাণী শ্রীকাবকঙ্কণ রস ভনে ॥ ৩৪৫ চণ্ডীর বচন শুনি বলে পররাবতী বুঝিতে তোমার কার্য নিত-শান্ত্রগাতি। পর্বাব্তী বলে মাতা শুন নারায়ণী বিচারে কারের 'সাদ্ধ হেন মনে গুনি। বিচারে কা্যোের 'সা্ধ আবচারে নাশ কোপ দূর কর হবে পুজার প্রকাশ । বষ্ঠ দিধস : নিশা ধনপাঁত দ্ত যাঁদ মরে এই হলে নাহব তোমার পূজা অবানমণ্ডলৈ। পূর্বের বিচার চাও পাসারলে কোন কি কারণে রক্ঈমালা আনিলে অবান । মালাধর কুমারে করাইলে গরবাস এইক্ষণে ধনপাতি ন৷ কারও বিনাস। নিজ দেশ ছাড়ি সাধু জাকু কথোদৃর তবে সদাগরে দুঃখ দিয়ার১ প্রচুর । ডুবাইব ছয় 'ডিঙ্গা৷ লইব রসাতল এক মধুকরে সাধু জাইব সংহল। পশ্চাত কহিয়া দিব জত আভসান্ধীং রাজদ্বারে ধনপতি করাইব বান্দ। সহসা করিয়ে যাঁদ বাদের প্রকার 1ক কারণে আমা সনে করহ বিচার। এমন বিচার যদি কহে পদ্মাবতী ক্রোধ নিবারণ চিন্তে করে ভগবত । সম্ত্রমে চণ্ডীর বারি তুলিল খুল্পনা জীবন্যাস দিয়া বার কারল অর্চনা । জগতজননী মাত৷ কৃপা কর মোরে সন্কটে তাঁরয়া নাথে আনিবে মন্দিরে মূর্খ আমার পাঁত তোমা নাহী ভে আম। দেখ্য। স্বামী রাখ পদসরাসজে । হুলাহুলি শঙ্খধবনি করে প্রাণপাত অপরাধ ক্ষেমি রাখ দাসীর আইয়াত। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৪৬ ক্ষোম অপরাধ কাঁরল প্রসাদ কৃপামই নারায়ণ [শরে হেমবারি নাচয়ে সুন্দরী দিয়া শঙ্খ জয়ধ্যনি। ১৪৫ পরল কামনা নাচেন ঘুল্লন। দিয়৷ ঘন করতালি দেই অনুরাগে চন্ডী-পদযুগে সুগান্ধ পু্প-অঞ্জলি। আদ্য৷ সনাতনী শান্তবাঁ) ত্রাহ্াণী শান্তরূপা তিন দেবে শঙ্খিনী শুন কপালমালিনী তিন লোকে তোম৷ সেবে। ধারী শাকন্তরী গোরী দিগস্বরী জয়ন্তী কালী মঙ্গলা তুমি ভদ্রকালী সেবে পুণাশালী হরতনুশহমমালা | শিবা দুর্গা ক্ষমা চন্ডী চণ্ভীমা বাল শশী-শিরোমাণ ভৈরবী ভারাথ বাণী বসুমতী সংসারদুঃখস্তারিণী । কৌশিকী কুমারী রোগ-শোকহারি বারাহী বিশ্ববাঁসিনী দুষ্টে উগ্রচণ্ডা বাযুল টামুন্ত। শ্রীফলশাখাবাহনী । দক্ষ-মথহরা ভবদুঃখপারা মহাকালিক৷ ভীম হ্ধা পুরন্দর হর! দবাকর দিতে নারে তব সীম! । যাদব-সৌবত। নন্দগোপসুত। শ্তানশুন্ভনাশিনী যশোদানন্দিনী মাহষমার্দনী শঙ্করী সংহবাহিনী। করিয়। আশ্বাস চলিলা কৈলাস নারায়ণী পদ্মাবতী সাধু হেনকালে ডিঙগ। মেলা চলে মুকু্দ গাইল-ভারাথ ॥ ১৪৯৬ ৩৪৭ ঘরে হৈতে ধনপতি কাঁরল গমন উভরায়ে খুল্পন৷ জে জুঁড়ল ক্রন্দন । বাহির হইতে সাধু বাঁজন উদ্ছ্‌টা নেতের আচলে লাগে সেয়াকুল-কাটা । যামার সময়ে ডোমচিল উড়ে মাথে কাঠুরিয়া কাটভার লৈয়া আইসে পথে । সুখান৷ চালেতে বস্যা কলবল্াফে১ কাউ যোগিনী* মাগয়ে ভিক্ষা আদখানি লাউ । জরট কমট মাছ কৈবর্ত লৈয়া জায় তৈল লঅ লঅ বাল তেলিয়া বোলায় । চললেন সদাগর দুঃখে কুতৃহলী বামে ভুজঙ্গম দেখে দক্ষিণে শুগালী । শ্রমরার ঘাটে সাধু দিল দরশন কাণ্ডারে বলয়ে আর কেন বিলম্বন ।৬ দেবদ্ধিজ গুরুজনে করিয়। প্রণাম স্বরায় সিংহলে সাধু কারল পয়ান। সভাকারে সমর্পণ কৈল গার ঘর শিব সঙরিয়৷ বৈসে নায়ের উপর ।* জ্ঞাতি বন্ধুজনে সাধু করিয়৷ মেলানি হরি হরি উচ্চস্বরে সভে করে ধ্বনি । ডাহিনে ললিতপুর বামেতে ইক্স্মান ইন্দ্রেশ্বর পূজা কৈল "দয়া পুষ্পপানি। বামভাগে নবদ্বীপ ডাহিনে পাড়পুর শাম্তিপুর পুরীখান রহে কথোদূর। নাইয়৷ পাইক গায় গাঁত শুনিতে কোতুক ডাহনে রহিল পুরাঁ আম্ুয়৷ মলুক । ঘন কেরয়াল পড়ে চলে তরা তরা ডানি ভাগে বহে পুরী নামে গুপ্তপাড়া ॥ নায়ের ধাওন দণ্ডে যোজনেক বাট ভ্তাহিনে বগা চণ্ডীগাছা কোদালিয়৷ ঘাট । বামভাগে হালিসহর ডাহিনে নিবিণী দন্দলের* কোলাহলে কিন্ুই ন! শুনি । চণ্ডীমঙল লক্ষলক্ষ জন একবারে করে ল্লান বাস হেম তিল ধেনু কেহ করে দান। গ্রান্ধ করে কোন জন জলের স্মীপ সন্ধাকালে কোন নর দেই ধুপ দাঁপ। রজতের সিপে কেহ করয়ে তণ গর্ভে যস্যা ফোন জন করয়ে মুণ্ডম । উন্ভবাহু কার বলে গঙ্গা নারায়ণ অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকল্পণ ॥ ৩৪৮ রাঢ়া মাঝে সপ্তগ্রাম আত অনুপাম ঘ্বিনা দুই সাধু তাহে কাঁরল বিশ্রাম । কিন্যা বেচ্য। নান৷ ধন নায়ে দিল ভরা বাহ বাহ বল্য ঘন নায়ে হৈল ত্বরা। কেরুয়াল বাহে নায়্য৷ হইয়৷ সনাকত ডানি ভাগে রহে পুরী নামে নিমাইতিথ । ঘন কেরুয়াল পড়ে জলে লাগে সাট নায়ের ধাওনি দণ্ডে যোজনেক বাট । বামভাগে খড়দহ করি সদাগরে বারভদ্রু বলি ডাক ছাড়ে উচ্চ্বরে । ডিঙ্গার ধাওনি পাইল কোঙরনগরে তাহ। বস্য। পুজে সাধু মৃত্তিকা-শঙ্করে । বাউ-বেগে ডিঙ্গা সব হইয়৷ গেল জড় বামভাগে ছন্রভোগ বাহে হাত্যাগড় । ডাহিনে মেদনমল্ল বামে বিরখান। কেরুয়ালের ঝটঝটী নদী জুড়্যা ফেন৷ ॥ দুরে শুনি মগরার জলের নিষ্কন আষাড়ে যেমন নব মেঘের গর্জন । পদ্মাবতী সঙ্গে যুন্তি করিয়া পাবতী আবিলম্বে মগরায় আইল ভগবতী । ছলিব সাধুরে আজ মগরার জলে আম। দ্বঙরলে সাধের রাখিব কুশলে । যু দিবস ; নিশা ১৯৩ নহিলে আমার ঘট লঙ্ঘনের ফলে 5৫০ ডুবাব সাধুরে আজ মগরার জলে । এমন বিচার চন্ডী কার পদ্মা সনে চণ্ডীর আদেশে ধায় নদনদাঁগণ চাঁর মেঘ মাগ্য। নিল ইন্দ্র বিদ্যমানে । মগরা নদীর সাথে কারতে মিলন । নদনদীগণ জন্ত কারল পয়ান আজ্ঞা দিল ভবানী চলিল ম্ন্দাকিনী অধ্বিকামঙ্গল কবিকল্কপ ভাম ॥ ছাড়িয়া গগমন্থিতি সঙ্গে মকর়জাল ছাড়া! পাছাল চলিলা ভোগবততী । প্রবলতরঙ্গা ধাইল গঙ্গা ভৈরবী বর্মনাশ। ধাইল দুতপদ সোল সয় মহানদ ৩৪৯ ধাইল বাহুদা বিপাশা । ঈশানে উরিল মেঘ সঘনে চিকুর আমোদর দামুদর ধাইল দারকেস্বর উত্তরে পবনে১ মেঘ ডাকে দুরদুর। সিলাই চত্দ্রভাগা নামষেকে জোড়ে মেঘ গগনমণ্ডল কুবাই দনাই ১ ধাইল দুই ভাই চার মেঘে বরিসে মুসলধারে জল । বগাঁড়র খাল বগা । নদী খেলে বৃষ্টি জলে উলে মগর৷ ধাইল বুমখুাঁম করিয়া দামাদামী কুল জুড়াা বহে জল একাকার ধার! । [ঘিয়াই মুগ্ডাই সঙ্গে ঝনঃঝন বৃষ্টি শিলা সঘনে বিজুলী ধাইল তারাজুঁলি গষ্কার৷ কুতৃহলী দেহারা পাতিল আঠার খালি ছুলী । রত্লাং চলিল রঙ্গে । চার মেঘে জল দেই অষ্ট গজরাজ খরতরলহার ধাইল গোদাবরী সঘনে চিকুর পড়ে বেঙ্গতড়কা বাজ । কান! ধায় দামোদর কাঁরকর সমান বাঁরষে জলধার খালি জুলি সঙ্গে চালিল৷ রঙ্গে জলে মহাঁ একাকার পুরী হইল হার! । বড়া মন্তেম্বর । পারাচ্ছিন্নৎ নাহী সন্ধ্যা দিবস রজনী ধাইল বরুণ। গঙগ।ঃ স্বমুন। নায়ের জতেক লোক স্মঙরে জৈমুনি। অজয় সরঘ্তী রইঘরে পড়ে শিল বিদারিয়া চাল ধাইল কুন্তী কান! ধায় গোমতাঁ ভাদ্রুপদ মাসে জেন পড়ে পাক৷ তাল । সরজু বংসাবতীঃ । চগ্জীর আদেশে বীর ধায় হনুমান ধাইল কসাই মহানদী বিড়াইৎ ডিঙ্গার ছাওনি ভাঙ্গা করে খানখান । থরম্রোত বামনার খান। ডিঙ্গায় ডিঙ্গায় বীর করে ডুসাড়ুসি চাঁরাঁদগে জল হইল ধবল কৌতুকে হাসেন মাত। সিংহরথে বাঁস। মগর৷ ভুড়্। বয় ফেনা ।৭ নদনদী সব জত কারিল পয়ান বাজাইয়া দাও মাকড়া চণ্ডী অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকন্কণ ॥ নাঁড়ল। স্বর হয়া৷ ১৪৯৮ সঙ্গে কাল্যাঘাই লইয়া সাতভাই স্বর্ণরেখা লৈয়া | ভাটীর নদাঁগণ ধাইল একমন নাকে জেন দিয়াছে সু চন্ডীর আদেশে পাইলে প্রবেসে জুড়া৷ ধায় বক্মপুর ।৯ কোতুকে অডয়া নদনদী দেখিয়। রহিলা কেশরিযানে ললিত ছন্দে দ্বিজবর মুকুন্দে পাঁচালি প্রবন্ধে ভনে ॥ ৩৫১ কাণ্ডার ভাই য়াখ ডিঙ্গা জেথা পাও স্থল এর হইল দেবরাজ বেঙতড়কা পড়ে বাজ বাঁরষে মুষলধারে জল। [ডিঙ্গা ফিরে জেন চাক নাহি জানি কিবা গ্রহফল নাহ জানি দিবা রাত ঝড়ে ডিঙ্গা হয়ে কাতি ঝলকে ঝলকে লয় জল । শিল বাজে জেন গুল বেগে জল জেন বাজে কীড় বিষম জলের ভয় ঝড়ে প্রাণ স্থির নয় ডখড়িয়া ধারতে নারে ডখড়। দুঃসহ১ বিষম ঝড়ে উপাড়িয়। গাছ পড়ে দুকুল হানিঞ৷ বয় খানা, আটমুখে বহে বায়ু রাশি রাশি কত বহে ফেনা । দেখরে ডিঙ্লার পাশে গিরিগুহা-বিকট দশন বিষম জলের ভয় আজি দেখি স্কট জীবন। বারেক জীবন রাখ ভাঙ্গল মাথার খুলি পবতসমান ঢেউ মকর কুষ্তির ভাসে তৃগ দুইখান হয় ঝড়ে আচ্ছাদন উড়ে বিছ্ি জলে 'ডঙ্গ। বুড়ে নাইয়৷ পাইক জড় হইল শীতে কেমনে নিস্তার পাই জলে আহ ভাসে শতে শতে। স্মঙরণ করহত গঙ। কহ কর্ণধার ভাই ডুবু ডুবু করে ডিঙ্গ অন্তকালে ভদ্র পশুপাত দারুণ দৈবের ফলে হইনু বন্দি মায়াজালে পশুপাতি বিনে নাহি গাঁত। পাঁড়িয়া বিষম ফান্দে মহেশ বলিয়া কান্দে উধ্ববাহু সাধু ধনপতি চাওকা শুনিতে পান দামুন্যায় জাহার বসাঁতি ॥ শ্রীকবিকক্ষণ গান ৩৫২ পন্ন। কেন আনাইলাঙ নদ নদী ডুবাইলে সাধুর নায় তখন কাঁরবে কোন বুদ্ধি হইয়। সাধু শুদ্ধমাত নিত্য পুজে পশুপাঁত একভাবে সেবকবৎসলে সাধু সনে কৈল বাদ কেন ব৷ ডুবাই ডিঙ্গ। জলে । শুন] ছ শঙ্কর স্থানে আগে ধনপতির গ্রণন শিলাবষ্ি বাজ পড়ে দুর হব আমার মানন। জেই পুজ। করে হর রহ্ধবধ সম তার বধ সদাগরে দিলে দুঃখ পদে পদে আমার বিপদ । মেঘে দেহ বিসর্জন শঙ্কর ধারব দায় হইল বড় পরমাদ দেবগণ বিদামানে সাধু যাঁদ মরে ঝড়ে তারে মোর লাগে ডর প্রভু না চাহিব মুখ জাকু নদনদীগণ মন্দিরে চলুক হনুমান [শিবপদে 'দিয়। মাত মহামিশ্র জগন্নাথ তাহার অনুজ ভাই ষষ্ঠ দিবন ; নিশা সুখে জাকু ধনপাতি অবিলম্বে জাউক পাটন হদয়মিশ্রের তাত কবিচন্ত্র হদয়নন্দন চণ্ডীর আদেশ পাই বিরাঁচল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ৩৫৩ চণ্ডীর বচন শুন বলে পদ্মাবতী বুঝিতে বিষম কার্য নীত-শান্্গতি । জলাধিপে ছয় ডিঙ্গা৷ কর সমর্পণ দিবে পশুপাঁত দায় ধারব জখন। শ্রীদাম সুদাম আদ গোপের বালক হইলেন বন্ধ।৷ জেন আপানি পালক। ক্ষণমান্র তার৷ জেন মানিল বংসর সেইরুপে রাখ তুমি নায়ের নফর । না হইব গ্বাদশ বংসর ভোক শোক এ কাধ্য কারলে মোর পরম সন্তোষ । বরুণেরে ডাক দিয়া বৈল ভগবতী ধনপাঁতির ছয় ডিঙ্গ। রাখ শীপ্রগাতি। দেখিতে দোখতে ডিঙ্গা ডুবে দুইখান হেনকালে মনে পড়ে বার হনুমান । স্মঙরন কাঁরতে মাত্র আইল মারুতি হাথে পান দিয় চণ্ডী দলেন আরতি । চণ্ডীর আদেশে ধায় পবননন্দন ভর দিয় ডুবাইল ভিঙ্গা দুইখান । চারখান 'ডিঙ্গা যাঁদ জলে ডুব্৷ গেল ধনপাঁত বলে মোর বিবাদ ঘুঁচিল। আর কা কাঁরব মোরে মগরার জল [তিন ডিঙ্গা লইয়া আমি জাইব সিংহল। ক্রোধত হইল পুনু বীর হনুমান এক লাথয়ে ডুবাইল আর দুইখান। হাসডিস্ব পারা জলে মধুকর ভাসে ঝলকে ঝলকে জল লয় তার পাশে। ঘুরুনিয়৷ ঝড়ে ডিঙ্গা ঘন বয় পাক সেই বায়ে ফিরে জেন কুমারের চাক ॥ ছয় ডঙ্গা ডুব গেল মনে লাগে তাপ শিব স্মঙারিয়া সাধু জলে দল বশপ। মহামায়া গগনে হাসেন খলখল চন্ডীর কৃপায় হইল এক আঠু জল। হাথে ধার তোলে তারে কাঙার বুলন নান৷ উপদেশে কৈল শোক নিবারণ । কুলে জল নাহা শুধু শুনি কুলকুল দুরে হইতে মাধবের দেখল দেউল। নান৷ কাব্যকথায় মাজয়৷ গেল চিত সঙ্কেতমাধবে ডিঙ্গ। হইল উপনীত। সাগরসঙ্গম দেখি কর্ণধারে রঙ্গ কাল কহিব [ তবে! সাগর প্রসঙ্গ । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৫৪ পূজা করি সঙ্কেতমাধবে প্রদক্ষিণ শোকাকুল সদাগর চলে রান্রিদিন । কোথাহ রন্ধন কোথা চিড়াখণ্ড দাধ দিবানিশি বাহে সাধু লবণজলধি ডানি ভাগে বন্দনা কারিয়৷ নীলাচনে উত্তরিল সদাগর সমুদ্রের কুলে । লোচন ভাঁরয়া সভে দেখে জগন্নাথ অবান লোটায়্। স্তুতি হইল প্রাণপাত। কানঞ" প্রসাদ অন্ন কারল ভোজন দিবানিশি চলে সাধু অন্য নাহী মন | বামেতে চড়ই গুহ৷ রহে কথদূর নায়ের ধাওনি পাইল কলযৌতপুর । ২০০ চদ্্রাসন্ধ দ্বীপখান রহে বাম ভিত জেশক-দহে গিয়৷ ডিঙ্গ। হইল উপনীত ॥ লহলহ করে জেগক জেন করিকর চুনজল পেল্যা তাঁথ দল সদাগর | র্প্রস্থ দ্বীপখান সাধু কইল বাম পঙ্খদহে একদিন করিল বিশ্রাম ।১ রমনক দ্বীপ খান রহিল দক্ষিণে সর্পদহে গিয়া ডিঙ্গ। দিল দরশনে । ঠাড়-ইফর মূল নৌকায় বান্ধয়। বুদ্ধবলে জায় সাধু সাপ-দহ বায়্য। ৷ বামভাগে দেখে সাধু লঙ্কার ময়াল উত্তারল সেতুবন্ধ রামের জাঙ্গাল। শ্রীরামচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঞ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৫৫ মহালে প্রবেশে সীতাকুলী হাড়খাল তেয়াগণ করিয়। চলে লঙ্কার মআল । চন্দ্রুড় পর্বত যক্ষ-রাজার দেশ সে ঘাটে সাধুর ডিঙ্গা কাঁরল প্রবেশ । অলঙ্ঘা সাগর রহিতে নাহা স্থল পাঁথকে 'জিজ্ঞাসে কত যোজন সিংহল। লোক মুখে শুনে সাধু সিংহলের কথ। হাদুয়া-দহেত গিয়া ডিঙ্গা হইল উপনীত । খরসান করাত বান্ধিয়৷ তার আগে দুইখান কার হাদ থুইল দুই ভাগে । দিবানিশী চলে সাধু 'তিলেক না রহে উপনীত ধনপাঁত হইল কালিদহে । পারাবর্তী সঙ্গে যুক্ত কাঁরয়৷ অভয়। সদাগরে ছলিবারে পাতিলেন মায়া । আপানি কাঁরল মায়। হরের বানিতা চৌষটরি যোঁগিনী হইল কমলের পাতা । চীমঙগল অল করল হইল গল্লা। কারবর হাসিতে লাগিলা শতদলের উপর । পুষ্পের ধনুকে মাত৷ পুরিয়। সন্ধান সাধুরঃ হৃদয়ে মারিল৷ পণবাণ। মোহ গেল ধনপাতি নয়ের উপর চেতন করাইল তারে গাঠ্যার গাবর । রাজপাদ্রনী দোৌখ কমলের বনে কন্যারে বান্ধিয়া নিলে রাখে কোন জনে । কর্ণধার বলে অবোধ সদাগর কোথা ন। দেখিলে কঞ্জে কামিনী কুঞজয়ে। বড়ই দুদ্ধর্য এই রাজা সালবান ধনাবন্তি লব আর বধিব পরাণ। ধনপতি বলে ভায়্য কর অবধান অভয়ামঙ্গল শ্রীকাবকঙ্কণ যান ॥ ৩৫৬ অপর্প দেখি আর শুন ভাই কর্ণধার কামিনী কমলে অবতার ধার রাম৷ বাম করে সংহারয়ে করিবরে উগারিয়। করয়ে সংহার । কনককমল-বুঁচ ্বাহা দ্বধা কিবা শচা মদনা সুন্দরী কলাবতী সরহতী কিবা রম৷ [চন্লেখা তিলোত্তমা সত্যভামা রল্ভ। অনুন্ধতী । রাজহংসবর জিনি চরণে নুপুর ধান দশনথে দশ ঠান্দস ভাসে কোষমদ-দপহর রাত তাহার কর তুলি চম্পক গরকাশে । বদন সরদ-ইন্দু অধর বিদ্বুক বন্ধ কুরঙ্গ খঙ্জন বিলোচন ষষ্ঠ দিবস নিশ। কোকনদ দর্পহর রাঁজত তাহার কর অঙ্গুলি চম্পক পরকাশে । অধর বিশ্বুক বন্ধু বদন সরদ-ইন্দু কুরঙ্গ খান বিলোচন প্রভাতভানুর ছটা কপালে সিন্দুর ফেণটা তনুরুচি ভুবনমোহন । বালা অতি কৃশোদরা ভার দুই কুচাগার নাবড় নিতম্বে অবতার বদন ঈষত মেলে কুঞ্জর উগারে গিলে জাগরণে সপন প্রকার। রামা ঈষত হাসে গগনমণ্ডল ভাসে দত্ত-পুংন্তি বিদিত বিজুলি বদনকমল-গন্ধে পরিহরি মকরন্দে কত কত শত ধায় আল। সাধুর বচন শুনি কর্ণধার বলে বাণী তুমি ধন্য দিবাগেয়ান অশেষ গুণের "সন্থ সকল বিদ্যার বনু আমি অন্ধ থাকিতে নয়ান। দোৌখ সাধু শশিমুখী কর্ণধারে করে সাক্ষী কর্ণধার করে নিবেদন করি-পর-শশিমুখা আম কিছু নাহি দৌখ বিরচিল শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥ ৩৫৭ শুনরে কাণ্ডার ভাই বপাঁরত দৌখ কহিব রাজার আগে সভে হইয় সাক্ষী । প্রমাণক যোজন গভীর বহে জল ইথে উপাঁজল ভাই কেমতে কমল । পবন জিনিএ। আত বেগে বহে নীর ইহাতে অবলা জন কেমনে হয় স্থির । কমালনী নাহি সহে প্লবঙ্গমের ভর তরঙ্গাহলোলে কনা। করে থরথর । চ, ম.-হ্৬ ৬১ নিবসে পদ্ধিনী তাঁথ ধরিয়া কু্জয় হরি হরি নলিনী কেমনে সহে ভর । হেলায় কামিনী উগ্যারয়ে গজ্নাথে [ পলাইতে চাহে গজ ধরে বাম হাতে । 1১ পুনুরাপ আনি তারে করয়ে গরাস দৌথয়া আমার হদে লাগিল তরাস। পুরুষ দেখিয়া রাম৷ নাহি করে লাজ বামকরে ধাঁরয়। গিলএ গজরাজ । থাঁদর তানুল রঙ্গ ওষ্ঠে নাহি ছাড়ে গজ গিলে কামিনী চোয়াল নাহা নাড়ে । অগাদ সাললে ভাসে 'বিচন্র কানন পণ্ুম গায় আল নাচে পিকুগণ । ক্ষণে উড়ে ক্ষণে বৈসে মত্ত মধুকর পরাগে ধূসর লতাতরুকলেবর । বিকশিত কুঞ্জবনে কুসুম মালাঁতি দামিনি মরুয়া ফুল ফোটে জাতি জুতি। ফুটিছে মাধবীলতা পলাশ কাণ্চন কুন্দকুসুম ফোটে বগ্র রঙ্গন । তাহার উপরে চন্দ্রাতপ মনোহর নেতের পতকা উড়ে সেতচামর । বেনন পাটের থোপ মুকুতার মাল 'বাচন্ত্ বন্ধানে তাহে সুরঙ্গ প্রবাল । তার মাঝে বিকাঁশত কমলকানন কামনী কমলে বাস সংহারে চারণ । উগারিয়। মত্ত করি ধরে বাম করে ইষত হাঁসয়। পুনু চৌঁদিগ নেহালে। ক্ষণে ক্ষণে হাসে রামা নাচে ভুজ তুলি পণ্চম গায় রাগ-রাগনী মেলি । রবাব মরুজ ডন্ফ করয়ে বাজন অঙ্গভঙ্গে নৃত্য করে বিদ্যাধরীগণ । কিবা রমা কিবা উষা৷ কিব৷ অবুস্ধৃতী ভবানী ভাবিনী কিবা লম্ষ্মী সরহ্কতী । ডাখিনী হাকিনী কিবা মুল্লকা জোগিনি কামের কামক্ষা কিবা ইন্দ্রের ইন্জাণী । ০২ বুঝিতে না পাঁর এই কন্যার চারত হেন বুঝি মোরে কিবা বাঁধাবড়ান্বত । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকল্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৫৮ কমল-কুগ্জর-কান্ত। দেখে সদাগর কেহ নাহি দেখে আর নায়ের নফর। নিমিষেক লাখতে না পারে ধনপাতি হৃদয়ে ভাবিয়া সাধু করেন জুগাতি। জেই কালে হইল প্রভু যশোদানন্দন শিশুলীল৷ কার কইল মৃত্তিকাভক্ষণ | যশোদার ঠাঞ্ রাম কইল নিবেদন যশোদ। ধাঁরয়। কৃফে করেন ভৎসন। কুবুদ্ধ করহ কেন মৃত্তিকাভক্ষণ না খাই মৃত্তিকা গালি দেহ অকারণ। যাঁদ মথ্যা হয় তবে মোলবে বদন যশোদ৷ কৃষের মুখে দেখে ন্রিভুবন । যাঁদ বিস্তারিত মুখ কইল চক্রপাণ বিশ্বর্ূপ বদনে দোঁখল নন্দরানি । সশৈল কানন সিন্ধু ধরণী মণ্ডল যশোদ। কৃষের মুখে দেখিল সকল । তেনরূপ দেখ৷ দিল কেমন দেবত। নাহলে মানুষ কিবা গিলে গজ মাতা । রাজার সভায় আছে [জত] সভাজন অবশ্য জানব তারা৷ এসব কারণ । এমন বিচার সাধু কার মনে মনে মসীপত্রে সদাগর করিল লিখনে। শিবকে প্রণাম কর্য।৷ সাধু উঠে তে বান্ধা৷ থুইল ডিঙ্গাথান রর্রমালার ঘাটে । চন্ডীমঙগল অভয়াচরণে মন্তুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৫৯ কুলে উঠা নায়া। পাইক বাজায় বাজন৷ সংহল নগরে চমকিত সফরে হইল সর্বজনা । বরঙ্গ ভোর দোসাঁর মোহার ঘন বাজে বিরকালি সংহ। কাড়া ঘন বাজে পড় শ্রাবণে লাগয়ে তাল । ঘন বাজে দামা চমকিত সর্বজন তবকী তবকে রোল পাইক দেই উড়্যা পাক ঘন বাজে বিরঢাক কেহ কার না শুনে বোল । 'ডাওম ডম্বু পুরয়ে অস্বর ঘন বাজে জয় জগবন্ষ ঘন জয়-সানি রণজয় যোন সংহলে উঠিল কন্ষ। পাইকের কল কল ভরিল সিংহল সিঙ্গা৷ কাড়। টমক নিশান সুঘট্ ভযঙ্কার সঘনে ছছন্দার গগনে হানে সাবান খেলে পাইক বাঙ্গাল কাণ্ডাফলা বিদ্বুলি কেহ বিদ্ধে পাঁতয়া বে মণ্ডল করিয়া ধায় রায়বাশিয়া কেহ ধায় ফিরাইয়া নেঞ্জা। খাটাইয়৷ তাম্্ঘর বাঁসল সদাগর পাঁরসর নদীর কুলে দাম। সিলি ঝশকে সিংহল কাপে পারজন রছে তরুতলে । ষষ্ঠ দিবস নিশা মধ্যাহ দিনকত কার়া ধনপাঁত শুনে সাধু আগম পুরাণ সচকিত সালবান আরড়া মহাস্থান ॥ শ্রীকাবকঙ্কণ গান ৩৬০ রদ্রমালার ঘাটে শুনি দামামার ধান পণপান্ন চমকিত হইল নৃপমুনি । কোটাল কোটাল ডাক পড়ে ঘনে ঘন আসিয়৷ কোটাল নৃপে দিল দরশন । কোটাল যুগল পাঁণ রহে নৃপ আগে ক্লোধমুখে কোটালেরে কহে নররাজে । নুট্যা দেশ খায় বেটা দেশের বিধাতা ভাল মন্দ নাহি দেহ দেশের বারতা । রত্লমালার ঘাটে শুন কিসের বাজন বার্তা জানাঞয়৷ বাট কর নিবেদন । ঘরদল হয় জাঁদ আইল মোর পুর পরদল হয় যাঁদ মার্য৷ কর দুর । যাঁদ বা বৌদশী হয় আন্য মোর ঠাঞ মার্য৷ দূর করা যাঁদ ন৷ মানে দোহাই । গজকন্দে কালু দও জায় ধাওয়াধাই কুলেতে উঠিতে সাধুএ দিলেক দোহাই । ঘরদল পরদল নাহি চাঁন তোম৷ প্রবেশিয়া রাজপুরে কেন বাজায় দাম৷। নাহ ঘরদল আম নাহ পরদল বৈদেশী সাধু আমি আস্যাছি সিংহল। রহিব তোমার দেশে যাঁদ প্রীত পাই নহিলে ভাসিব জলে কি করে দোহাই । সংহলে রহিবে যাঁদ জাহ রাজধাম জল মাঝে জাবে যাঁদ আমার ইনাম । মোর শিরে দায় যাঁদ হয় ডাকাচুরি। পণ্তাণ কাহন গণ আমার দিগারি। ২৩ তোয় দেশে আসা। আমী নাহী থাই জল কোন অপরাধে চক্ষু করিস পাকল । সাধু নহিস বেটা মিছা তোর ভরা চোররৃপে প্রবেশিয়া ডাক দিবি পার! । জেই চোর তার বাপে নাহিক পাত্যার৷ দেখহ সকল লোক আপনার পারা । প্রিয় বাক্যে কোটালে প্রবোধে কর্ণধার কোটালে ইনাম দিতে কৈল অঙ্গীকার । অতয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত | ৩৬১ কারয়া জুগাঁত সাধু ধনপাতি সখার লয় মন্তণ। আনন্দিত সদাগর ভেটিব সিংহলেশ্বর ডেটঘাট করিল জোজনা। কল! নিল মর্তমান মজা গুয়৷ পাকা পান আম্র পনস নারিকেল সালি তওুল গাছ বান্ধি নান৷ ফল খাস৷ দধি চিনী ফেণা নাড়ু গঙ্গাজল । বারমাস্য৷ পাকা তাল করুণা কমল৷ ভাল পিও খাজুর বড়ই রসাল রাজহংস পুর খাচা জোড়ে জোড়ে পায়রার ছা হরিণ লইল কালসার। ঠামঠুলি ঢাকিং আখি লইল সয়চান পাখি সিংহ ব্যান শিকার কুকুর ছাগ খাসী যুদ্ধ-ভেড়া জিনী সনে তাঁজ ঘোড়। অবনীতে নাহ পড়ে খুর। শাখপুচ্ছ বিরাজিত মণি-মুক্তাশবরচিত বাতপর শোভে রাঙ্গা-ডা্ন এক শত পঞ্চাশ ডেট নিল সাধু পরতেক কামান কৃপাণ রাঙ্গ। লাঠি। ৪০৪ আগুপাছু জায় ভার দেখা লোকে চমংকার রয়্া চাহে পাটনের লোক সদাগর পিছে নড়ে ডানি বামে বাধা পড়ে দুঃখ ভাবে সফরের লোক । তাড়বালা কানে সোন। নেত কথুবা বান্ধি বান আগে পাছে পাইক জোগান রাজার সভায় আসি প্রণাম করিয়া বাস শ্রীকবিকঙ্কণ রস গান ॥ ৩৬২ কার সম্ভাষণ বান্যার নন্দন রাখে বদলের সাজ আইস সদাগর কোন দেশে ঘর কহ ফেবা নৃপরাজ । কর অবগাঁত শুন নয়পাঁত গোঁড় দেশে মোর বাস বিরিমকেশরা সাজি সাত তার পাঠাইল তব পাশ। চামর চন্দন শঙ্খ আদ ধন নাহীক রাজভাগারে রাজ-আজ্ঞ। পায় আইনু সিন্ধু বায়্য তোমার এই সফরে । গন্ধবান্য। জাতি উজবানি শ্থিতি দত্তকুলে উতপাতি অজয়ের তটে গঙ্গার নিকটে বাঁস নাম ধনপাঁত। রাজ। মহাশয় চাপে ধনঞজয় প্রজার পালনে রাম গ্রতাপে নিঃসীম মল্লে জেন ভীম চোর খণ্ডে সবে বাম। চন্ডীমঙ্গল তেজে জেন রাঁব পাঁগুতে সংকর নারদ-সমান গানে সুমাত সুস্থির সত্যে যুধিটি সুরতরু সম দানে । 'বিদ্যাবিশারদ দস্তীর সম্পদ অশ্বের শিক্ষায় নল সর্বজন সুখী নাহ রঙ্ক দুঃখী রাজ্যে নাহী তার ছল। শুনি নরপাঁত সাধুর ভারাথ দ্রবোর জিজ্ঞাসে কথ। রচিয়া সুছন্দ শ্রীকাব মুকুন্দ চাঁওকামঙ্গল গাথা ॥ ৩৬৩ বাল আশে১ নানা ধন আন্যাছি সংহলে জে দিনে জে দিবে বদল শুন কুত্ৃহলে । কুরঙ্গ বদলে তুরঙ্গ দিবে নারিকেল বদলে শঙ্খ বিড়ঙ্গ বদলে লবঙ্গ দিবে সুণ্ট বদলে টঙ্ক। আকন্দ বদলে মাকন্দ দিবে পায়রা বদলে সুয়া গ্াছ-ফল বদলে জায়ফল দিবে বয়ড়ার বদলে গুয়া। সন্ধুর বদলে হিন্গুল দিবে গুঞ্জার বদলে পলা পাট সোন বদলে ধবল চামর কাচের বদলে নাঁল৷ । লবণ বদলে সৈম্ধবং দিবে সোলফার বদলে জরা প্রবঙ্গ বদলে কুরঙ্গ দিবে হারতাল বদলে হারা । চঞ্ের বদলে চন্দন দিবে পাগের বদলে গড়া শুক্তার বদলে মুস্ত। দিবে ভেড়ার বদলে ঘোড়া । মাষ মুসরি তুল মধুর বরবটী বাটুল৷ চিনা বলদে শকটে তৈল ঘি ঘটে সদাগর আন্যাছে 'কিনা। জগদবতংসে পালাধ বংশে নৃপাঁত রঘুরাম শ্রীকবিকল্কণ করয়ে নিবেদন অভয়। পুর তার কাম ॥ যষ্ঠ দিবস নিশা ৩৬৪ বদল করণে রাজ। কৈল অঙ্গীকার পণ্চাশ কাহন কৈল রন্ধন বেভার। সাধুরে তুষিল রাজা ভূষণ চন্দনে বিদায় পাইল সাধু রন্ধনে ভোজনে | আগ্নশর্ম। নামে দিক রাজপুরোহিত রাজার সভায় আঁ হইল উপনীত । আশীর্বাদ কারি দ্বিজ বাঁসল কন্বলে হাস-পারহাস কথ। কয় কুতৃহলে । চারি দিকে দৌখয়া ডেটের আয়োজন সহাস বদনে দ্বিজ নৃপে জিজ্ঞাসন। আজ ভেট-বস্ঠু রায় দেখ চারিভিতে মনোহর দ্ুব্য রায় আইল কোথ৷ হইতে । গোঁড়ে হইতে আইল সাধু নাম ধনপতি নান৷ ভেট দিয়৷ মোরে কৈল প্রণাত। ইহা শুন আগ্নশর্মা বলে আভরোষে পলাণ বসত কেন করে এই দেঁশে। বিধি-বেবস্থার বেল৷ আনি প্রাতাদন কার্ষকারণের বেল৷ আম উদাসীন । পণপান্র নিন্দি ওঝা মাথা কৈল হেট আমি সবে বাঁণত সভার কোলে ভেট। ইহ। বাঁল আগ্নশম্মা জায় সভ। ছাড় [িরাইল রাজপান্ন তার পাএ পাঁড়। রাজার আদেশে পুনু কালু দণ্ড জায় পূনুর্্পি আনে সাধু রাজার সভায়। পাওত 'জিজ্ঞাসে তারে পথের বারতা [িব৷ নায়ে আইলে তটে কহ সব কথা । অভয়াচরণে মজজুক নিজ চিত শ্রীকাবকন্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৬৫ জার আদেশ পায়া। সঙ্গে সাত তাঁর লৈয়। নদনদী-মহাসিন্ু-রয় ২১৫ জে দৌখল অপরূপ কাহতে পরানে কার ভয়। সঙ্গে শত শত নায় উপনীত ইন্দ্রানির ঘাটে ধোঁত হারপদদথা বাঁহল অলফনন্দা কুতৃহলে আইনু গীত নাটে। ডানি বামে জত গ্রাম তার কত নিব নাম উপনীত ন্িবিনির তীরে প্রভাতে করিয়া নান ঘটে পুর নিল গঙ্গানীরে। রাতাঁদন বাই নায় উপনাঁত মগরায় ঝড় বৃষ্টি হইল বহুতর দারুণ দৈবের ফল ছয় ডিঙ্গা গেল তল আইলাঙ এক মধুকরে। জাহ্বীসাগর-সঙ্গ বাহিনু পরান কার হাথে সিশ্গুকলে অবতার ডান ভাগে নীলাগাঁর দেখিলাঙ প্রভু জগন্নাথে । কেবল দুঃখের পদ বাহি নায় নান৷ চুদ উপনীত হইলাঙ [সংহলে সুধন্য সিংহল দেশ কালিদহে পরবেশ জল আচ্ছাদত শতদলে। ক৷লিদহের জলে কুমারী কমলদলে গজ গিলে উগারে অঙ্গনা আত কৃশোদরী বাল। শশিমুখী খ্জনলোচনা। অবধানে খুন ভূপ আইনু অজয় বায়্যা যথাবািধি পিগুদান পর্্বতসমান ভঙ্গ মত্ত গজ লয় লীলা সাধুর বচন শুনি রোষযূত নৃপমুনি চান মহাপান্রের বদন রাঁচয়৷ ভ্লিপদীছন্দ পাঁচালি কারয়া বদ বিরচিল শ্রীকবিকন্কণ ॥ ৩৬৬ সাধুর বনে সালবান রাজ। হাসে রাজার ইঙ্গিতে পানর উপহাসে ভাষে। ০৬ বিদেশে আসিয়া সাধেব লাগল তরাস কিব৷ ভাগ্যে তোমার ডিঙ্গা না কৈল গরাস | সাধু বলে স্থানগুণে কর উপালন্তঃ গজ-কন্যা বান্ধ্ায আনি করহ বিলম্ব । আঁনতাঙ বাদ্ধয়। গজ-কমল-কাঁমনী কেবল তোমার ভয় নৃপচূড়ামাণ। এখন শ্রীমুখে আজ্ঞা কর নৃপবর কমল-কুসুমে পারি ছায়্যা দিতে ঘর। রাজসভ। যোগ্য নহে এই সাধু ভও ধর্মশাস্ত্র বিচারে উচিত হয় দণ্ড। সাধু বলে ভণ্ড বল ঠাকুরালি-বলে প্রাতজ্ঞ। কাঁরয়৷ চল কালিদহের জলে । মথ। যাঁদ হয় রায় আমার বচন নুটী র্যা নিহ তুম বুহিতের ধন। যাঁদ মিথ্যা হয় বোল শুন নৃপবর কারাগারে রাখ্য বন্দি দ্বাদশ বংসর । রাজ। বলে যাঁদ সত্য তোমার বচন অর্ধরাজ্য দিব তোরে অর্াসংহাসন । রাজা সাধু দুহে কৈল প্রতিজ্ঞ পুরণ মসীপন্রে লিখন কারল সভাজন । সাজ সাজ বাঁল হইল রাজার ঘোষণা শ্রীকবিকঙ্কণ কৈল পাঁচালি রচন৷ ॥ ৩৬৭ অপন্ুপ কথা শুনি সালবান নৃপমুনি সাজ বল্য। দিলেক ঘোষণ৷ কমলে কাঁমনী বৈসে শুনি পুরে ধায় সর্বজন] । শৃঙ্গশঙ্খে হইল রোল কাড়৷ মৃদঙ্গ করতাল ডল মোহরি বাজে নান! বাদ্য বাজয়ে বিশাল । কুঞ্জর উগারি গ্রাসে অন্ত নাহি ঢাক ঢোল বারকালি তাহে সাজে চণ্ডীমঙগল গজ-পিঠে বাজে দাম সাঁজিল রাজার মাম। আড়ন্বরে পুঁরল গগন ধবল চামর ছটা উরমাল ঘাঘর ঘণটা গণস্থলে 'সিন্দুর মণ্ডন। কাঁর-পঠে নরপাঁত মাথায় ধবলছা'ত চাঁরাঁদকে ভূঞার পয়ান লইয়া আপন সেনা আগুদলে খানখান৷ ঘন সঙ্গ৷ টমক নিশান । রথ সনে সাজে রাঁথ বাঁরবর সেনাপাত রথ আগে গাউল গন্থল কনক কলস ছুড়ে নেতের পতক। উড়ে রথাঁশরে চামর ধবল । লইয়। আপন বল [ সাজিয়া তুরঙ্গদল ] ভূঞা রাজ। করিল পয়ান যবন কিরাত শক আগুদলে উজবক, খোরাসানী মোগল পাঠান। সাজ বল্য। পড়ে সাড়। আরোপা ধনুকে চড় ধানকী ধাইল বেড়াজাল গায় আরোপিল রাঙ্গি কাছিল লসান টাঙ্গি নয় শত চলে জেন কাল। সোনার নুপুর পায় বিরঘড়্যা পাইক ধায় রায়বাশ ধরে খরসান সোনার টোপর শিরে ঘন শুঙ্গনাদ পুরে বাশে দোলে চামর নিশান । পাইক রণে পরচও ধায় বার কালু দও বার শত সঙ্গে চোকনিঞা শুনি কথা অদভূত ধায় জত রজপুত কমলে কামিনী গজ শুন্য । কাশীরাজ চলে সাল রণকেতু রণমাল ুগন্ধর বাঁর পুরন্দর রাজার বিবাদ কাজে নব লক্ষ দল সাজে ধাল আচ্ছাঁদত দিবাকর । সাজ বল্য। গড়ে র৷ সাঁজিল রাজার মা কালিদহে দেখিতে কমল যষ্ঠ দিবস ; নিশা দাসদাসীগণ সঙ্গে চালল পরম রঙ্গে কেরুয়ালে সুবর্ণ ঘাগর। রাজ-আজ্ঞা শিরে ধার লীলাবতী আদ শত রানি ঘোড়ন-থাটুলী চড়ে রক্ষক সকল বেন্রপাণি। সঙ্গে নবলক্ষ দলে উত্তারলা নদীঁকৃলে নাবিক জোগায় নৌকা শয় নৃপতি চাঁড়য়া নায় উপনীত হইল কালিদয় । মহামিশ্র জগন্নাথ হদয়মিশ্রের তাত ককিন্দ্র হদয়নন্দন আহার অনুজ ভাই চন্ডীর আদেশ পায় বিরলচিল শ্রীকাবিকন্কণ ॥ চলে নৃপাঁতির নারী কমল দোৌঁখতে নড়ে কমল দেখিতে জায় ৩৬৮ কাঁলদহে উপনিত হইলা নরপতি চারাদিকে মহাপান্ন কাঁরয়৷ সংহতি । ধনপাঁত সদাগরে বলে নৃপবর দেখায় কামিনী কোথ৷ কমল কুঞ্জর। হাসিয়। সিদ্ধান্ত করে সাধু ধনপাত ধর্ম অবতার তুমি রাজা মহামাত । দেখিল জতেক আমি এক মিথ্যা নয় আঁছল কমল সে ঢাকিল তব নায় । জুয়ার ভাটি হউক টুটিয়া জাউক জল দিনা দুই চারি যাক দেখাব কমল । জতেক কহিল আমি এক নহে আন কাণ্ডার আমার সঙ্গে আছয়ে প্রমাণ । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকন্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ২৪৭ ৩৬৯ আইস হে কাণ্ডার সত্য বগ রে আমারে তুমি কি দেখ্যাছ কঞ্জ-কামিনী-কুঞ্জয়ে । সত্য বাকো স্বর্গে জাই মিথ্যায়ে নিবয়১ হেন পাপ হইতে কেহ নাঞ্ি করে ভয় । তীর্থ যজ্ঞ দানে হয় পিতার উদ্ধার মিথাবাক্যে নরকে নাহিক প্রাতিকার । পাঁ়য়৷ শুনিঞ পুর হয় সুপুরুষ গয়ায় পিও দান করে ধরে তিল কুশ। সেই পুণ্য পায় জেব৷ কহে সত্যবাণী কাঁহল পুরাণে শুক ব্যাস মহামুনি | . সত্যবাক্য সম ধর্ম নাহিক পুরাণে মিথ্যার সমান পাপ নাহি ন্রিভুবনে। অবনী বলেন আম সভাকারে বাহ জেই মিথ্যা বলেন তার ভার নাহ সাহ। ইন্দ্র আগ্ন দণ্ধর নৈরিত অবুণ রাজ-অঙ্গে বৈসে দেখি সব দেবগণ । সবজীবময় নৃপে জেই নর ভাগে পাঁরণামে জানিবে বিধাত। তার দণ্ডে। জলে দাণ্ডাইয়া বল পূর্মুখ হয় একানই পুরুষ তোমার আছে ডাগ্াইয়৷ । মিথ্য। বললে তার পাবে ফলাফল নরকে পাঁচব৷ জাব চন্দ্র দবাকর। রাজার বচন শৃনি বলে কর্ণধার আম নাঁঞ দেখি কঞ্জে কামিনী-কুঞ্জর। রাজ৷ বলে সাক্ষি হইয়া ধর্মাধিকরণী আপন সাক্ষিতে বেটা হারিল আপনা । সভা৷ সাক্ষি কার রাজ। বান্ধে সদাগরে রাজ-আজ্ঞায় নিশীশ্বর লুটে মধুকরে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত প্লীকবিকষ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৭০ আনিয়া নায়ের দড়। সাধে বান্ধে পিছমোড়া কোটালে গছায় নৃপবর তোঁজ দণ্ড কেরুয়ালে ঝশপ 'দিয়া পড়ে জলে নাইয়া পাইক পরাণে কাতর । বাজে-মহল হেল ডিঙ্গা ঘন রাজে রণাসঙ্গা রণভেরি দুন্দাভ নিসান রাজার প্রধান দেখে বলদে শকটে বহে ধন। জে জন পালাইয়৷ জায় বণে লয় বসন ভুষণ ধাঁরয়৷ সাধুর সাঙ্গ নোনের নাকানি চোঙ্গ 'দিয়৷ কাড়্া নিল জত ধন। গৌরব কারিয়া দূর. কাড়যা নিল কর্ণপূর কান্দিতে লাগিল সদাগর অঙ্গুরি অঙ্গদ বালা কলধোৌত কণ্ঠমালা নানাধন লুটে 'নিশীশ্বর ৷ ভাগডার-কাএস্ত লাখ তাড়াতাড় তারে জায় ধুলঞ৷ কুটীর ঘরে লৈয়া গেল সদাগরে পোত৷ মাঝি ঘন মার ঢেক। হাড় পদে পরবেশ ধরণী লোটায় কেশ বন্ধজন সনে নাহি দেখা । মৃত্যুশষ)। হইল ধুল। সহচরি ঢুলচুলা। উডভুষ নিদ্রায় হইল কাল দৈবগাতি বিপরীত কানে মশা গায় গীত চোঁদিকে ছুছার হইল জাল । ক্ষেনে দুঃখ ভাবি কান্দে ক্ষেনে কথ৷ কয় নিন্দে নিশ্বাস জানঞ৭ দাবানল রাচয়৷ ন্রিপদা ছন্দ পণচালি কাঁরয়। বন্দ দ্বিজরাজ প্রকাশে মঙ্গল ॥ ৩৭১ স্বপ্ন কহেন দুর্গ শিয়রে বাঁসয়। এবে মূঢ় ধনপাতি ভজ মহামায়া । চন্ডীলঙ্গল স্মরণ করহ যাঁদ ভবানি ভবানি কাঁলদহে দেখাব কার-কমল-কামিনী । কুবুকিয়৷ তোরে কত কহিব বিশেষ ধরাব ধবল ছাতি বাট্যা দিব দেশ । তুল্য দিব মগরায় ডুবা ছুয় না তাঁথ ভর৷ দহ হে জতেক ধন চা। মাণি মুন্ত। প্রবালে পুঁরয়া মধুকর কি্কর করিয়৷ দিব সংহল-ঈশ্বর ৷ তোরে আমি বালি সাধু কাঁরয়।৷ দড়ান চন্ডী ন৷ ভাঁজলে তোর নাহিক ছোড়ান। অপুরক তোর গারি সকল বিফল সঙ্ধু মাঝে ভেল। জেন করে টলটল । তুমি সাধু যাঁদ নাহ পুজ মাহেশ্বরী নুগিব ঘরের ধন বিক্লুমকেশরী । হাটে সুতা বোঁচবেন লক্ষপাঁতর ঝি সঙ্খেপে কহিল তোরে আর কব কি। এমনি নিশির শেষে দেখিয়। সপন একভাবে ম্মঙারল গজেন্দ্রমোক্ষণ । যাঁদ বন্দীশ্বালে মোর বার্যায় পরানী মহেশঠাকুর বিনু অন্য নাহ জানি। প্রাণ যাঁদ আমার বারযায় কারাগারে মহেশঠাকুর বিনে না ভজব কারে। লাজ পায়্যা অন্তরে রহিল ভগব্তী এবার বংসর বন্দী থাক ধনপাঁত। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৭৭ ধনপাঁত হইল বান্দি নূপাতির ঘরে ভিক্ষে জিয়ে নায় পাইক সংহল নগরে । সেই জন হইল শত লক্ষ আঁধকারী সিংহলে আসিয়৷ হইল কড়ার ভিখারি । ষষ্ঠ দিবস ; নিশা সমস্ত দিবস ভিক্ষা কাঁরয়া সিংহলে একস্থানে উপাস্থিত হয় সন্ধ্যাকালে । সাধুর পাচক দ্বিজ করয়ে রন্ধন সভাকার আগে ধনপাঁতির ভোজন । পশ্চাত কাণ্ডার সব করে অন্নপান গ্রামে গ্রামে করে তার৷ ভিক্ষার সন্ধান । কোন দিন লোন মিলে কোন দিন তেল অনুদিন সাধুর হদয়ে শোক-সেল। দুর গেল খির খণ্ড ঘৃত গুয়াপান খুধা পাইলে সাধু তত চিঘান। জেই জন নাহাঁ ভজে চণ্ডীর চরণ কদাচিত নহে তার দুঃখাঁবমোচন । সাধু বন্দি কাঁর যার কৈল মাহেশ্বরী ব্রতাঁঝয়ে আছে যথা খুল্পনা সুন্দরী । পর্প। সনে চাকা আইল তথাকারে হেনকালে লহন৷ জিজ্ঞ৷সে খুল্পনারে । অভয়াচরণে মন্জুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৭৩ বান ক সাধ খাইতে জায় মন কহ গে৷ খাওয়া লাজ আনিব সাধের সাজ ভাগারে নাহাঁক কোন ধন। সমা্ঁয়। হাথে হাথ " দূর গেল প্রাণনাথ তোমারে আমার বড় ডর আসিবেন আজিকালি আস্যা পাছে দেন গালি এই মোর ভাবন৷ অস্তর ৷ প্রথম গর্ভে ভর শৃয়া। থাক নিরন্তর সদাই বদনে উঠে হাই দনে দিনে বল টুটে ইসতে নেকার উঠে নাহি জানি কফ পভ বাই। চ. ম.-২৭ ২০৯ সাহত দূবলা সাথ লয়যা তৈল অমলাখ ল্লান কর গিয়া নদীজলে বল হবে অন্নমূল কার তেজে দিবে শুন দিনে দিনে দেখি থিনবলে । লহনার কথ! শুনি ুল্লনা বলেন বাণী আপনার শরীর সপ্টান রাচয়া ত্রিপাঁদ ছন্দ শ্রীকবিকঙ্কণ রস গান ॥ পাচালি করিয়া বন্দ ৩৭৪ দিদি গে ইবে বড় সঙ্কট পরান মাতাপিত৷ দুবন্তব স্বামী গেল৷ দেশান্তর তুমি সবে জীবন নিদান। উদর হইল ভারি উঠ্য। দাগ্ডাইতে নারি জাঁদ লক্ষ ধরা উঠি করে দুই চার চলি পা বললেশ নাহি কলেধর়ে। গর্ভের দেখিয়া ভর থুধা তৃষা নাহি এক মাস আপনার জায় মন জাদ পাই সে বেঞজন তবে খাই গ্রাস দুইচারি । লতা পাত বন-শাক থরজালে কর্য৷ পাক সান্তালবে জোয়ানি ফোড়ায়্যা হিঙ্গ জরা দিয়া মেথি বান বাল যাঁদ কর দয়া । নিধানি করিয়া খই তাঁথ দিয়া মস দই কুলি করঞ্া৷ প্রাণহেন বাসি | জাঁদ কিছু পাই সুখ প্রাণ পাই পাইলে আমসী । শকুল মংসোর পোন! গোটা কাসন্দি* দিবে তাঁথ কাপিয়ে সকল গা মনে বড় লাগে ডর সম্ভলন বাল তাঁথ আমে মসুরের সুপ দেখ জেমন সোন। ২১, হারদ্রা-রাঁজত কাজ উদর পুরিয়া ভূজি বন-সাকে বড় সুখ তাঁথ। ঘোলে মিসাইয়। লাউ দু'্ধী তিলে ওড়ে জাউ পিঠা কর খির-নারিকেলে রাঁটয়া৷ তিপাঁদ ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ ব্ান্মণরাজার কুতৃহলে ॥ ৭৫ সাফ তৃলিতে দুয়। ফিরে ধাঁড় বাড়ি ক'খে কবা৷ নিল দুযা রা্গন চুপাঁড় । নট্য। রাঙ্গা তোলে পাট পালঙ্গ নালিত৷ 'তিত পলতার ডগা তুলিন পলতঅ। সাজ্াতা পাজ্যাত৷ বন-পুই তুলে বল৷ িনচা কলমী শাক তোলে ডানিকল৷ । ফড়াা সাক তোলে দুয়া ফিরে খোতি খেত হরি সোলপা ধন্যা খিরপাই বেত । বাড়ি বাড়ি ফিরে দুয়া দয়া বাহুনাড়। ভগী ডগী তোলে পুই পুনুক। কাচড়া । কোমল কীকুঁড়-ডগা তুলিল করেল নাউডগ৷ তোলে কিছু কচি কাঁচ বলা। বাছ৷ ধুয়া শাক দুয়৷ কারল সাচনা লত৷ পাতা শাক আগে রাষ্ধিল লহন৷। রন্ধন করেন রাম কার বড় ত্বর৷ ঘণ্টে পুরা৷ এড়ে রামা কুঁড়য়। পাথর । ঘূতে জবজব রান্ধে নালিতার শাক কটু তৈলে বাথুয়৷ করিল দৃঢ় পাক। কটু তৈলে ভাজে রাম। চিথলের কোল রোহত কুমুড়া-বাঁড় আলু দিয়া ঝোল । ষদরী শকুল মীন আগ্নে মুসুরি পন দুই ভাজে রামা সরল সফাঁর। পণ্টাশ বেপ্ীন অন্ন কাল রন্ধন থালার ওদন বাটী ভাঁরয়। বেঞ্জন। চপ্জীমঙগল সাধ খান খুল্পনা নারাজন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবকন্কণ ॥ ০৭৬ প্রভাতে উঠিয়৷ বলে খুলনা সুন্দরী বেদনায় জ্ঞানহত হৈল বুঝি মাঁর। হেনকালে লহন৷ কাঁহল দুবলারে পার্থকে ডাকিয়া আন চলহ নগল্পে। সতকা১ ভবনে নিল খুল্লনার তয়ে জাইয়-সুয় আমাত্য আইল তার পরে । বেথায় আকুল রাম। ভবানী স্মঙরে প্রাণরক্ষা কর মাত।৷ বলে বারে বারে। সুতিকা১ ভবনে তথ আসি নারায়ণী খুল্লিনারে আসীষ দিলেন শিরে পাণি। থুল্লন। দোখল তারে ব্রাহ্মণীর বেশে চানল চাওক রামা আখির নিমেবে নোটাইয়া ধরে রাম৷ চতীর চরণ বিষম সঙ্কটে মাত] করহ রক্ষণ । কপটে চাঁওক৷ তার বাটীল ওষদ চণ্ডীর ওধদে তার খাঁন বিপদ । চাঁওক৷ স্মঙারিয়। রাম। দিল ধর্মশূল তলে পাঁড়ল তার গভের ফলফুল । উম৷ [উন] ডাকে শিশু পাড়য়। ভূতশে দৌখঝারে বন্ধুগণ ধায় কৃত্হলে । নবশশি জিনি মুখ পঙ্কজ-লোচন কুন্দেতে নির্মাইল জেন আভন্ন মদন । হরাঁসত দুয়। দাসী ধায় দ্লুতপদ দুয়ারে বান্ধিল জাল বেন্র উপানদ। ফৌঁড়িয়। চালের খড় জালিল আণতুড়ি গোমুণড থুইয়া দ্বারে পুজে যী বুড়ি। হুলাহুলি দিয়া কৈল নাড়ির ছেদন [তিন দিবসে দিল সুপথ্যৎ পাচন। ত্বভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকল্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ সগুম দিবস দিবা ৩৭৭ দুবল৷ গণকগণে সন্ত্রমে ডাকিয়া আনে দেখে তার৷ দীঁপিক৷ ভাঙ্কতী পৃল্পোধা পাওতগণে সর্বশাস্ত্রে বিচক্ষণে লিখে তারা শিশুর জাওয়াতি। মকরে ধরণীসুত বুধে চান্দ গুরুজুত মেষে লিখে প্রচও্ড কিরণে তুঙ্গঘরে বৈসে রাহু শিশুর কল্যাণ বহু বুধে লিখে গুরুর ভবনে । চাপ লগ্নে শনৈশ্চর তুলালগ্নে ভূগুবর মঙ্গল সুচারু করে কেতু সুযোগ কনকদ্ড ইথে জাত নহে ছন্দ ৩৭৮ পিতার উদ্দশ হয় হেতু । সপ্তদিনে সপ্ত ধাঁষ কারিয়া বন্দনা দ্বাদশ বংসর কালে ডিঙ্গা মেল্যা বাহতালে আটদিনে আটকলাইয়৷ করিল লহনা । সংহলে কারব পরবেশ নত্ত। কৈল নয় দিনে মনের হরিষে সালবান নৃপ দাও পার্নাবতী সনে চঙজী একইষা কাঁরল তার একইয দিবষে। করাইব পিতার উদ্দেশ । দিনে দিনে আন বেশ সাধুর নন্দন সকল বিদ্যায় ধীর সতাবাক্যে যুধিঠির কৌতুকে খুল্পনা দেই ভূষণ-চন্দন | দানে হব কর্ণের সমান দশ দণ্ডে হেমথালে করয়ে ভোজন শুকদেব সম জ্ঞানী কুবের সমান ধনী পুত্র মেলে জায় নিদ্রা বিনোদ শয়ন । দাঁধজীবা মার্কও সমান । মনে মনে বিচার করেন ভগবত সাত নায় দয় পনি হা রাজকন্যা বিভ৷ কর পদ্মাবতী সনে চণ্ডী করেন জুগতি । চী জারে কৃপাময়ী পৃজ। পাব ঠাঁঞ ঠা কৌধুকে মস্ত কোলে কারল পার্বতী টি রী হেনকালে মোরে দেহ বলে পদ্মাবতী । পে অভিনব কান : ইচ্ছায় শ্রীপতি নাম তস্তি দেখিবারে চণ্ডী রাঁহলা গগনে য়া সভে চলিলা৷ ভবনে পুত্র হারাইল খুল্পন৷ দেখিল সপনে । পুরোধা গণকগণ সভার তুসিল মন চিয়াইয়া খুপ্পনা দেখে কোলে নাহি পো শ্রীকাবকষ্কণ রস ভনে ॥ সভারে জিজ্ঞাসা করে চক্ষে পড়ে লোহ। খুলন৷ বিপর্দাসন্ধু কাবিযা৷ মজ্জন একভাবে পৃজে বাম৷ চ্ভীব চবগ। বিবৃপাক্ষী বিশালাক্ষী দেবী কাত্যাযনী মহাতপ৷ তুমি বলদেবেব ভাগনী । মধুকৈটবেব ভযে রক্ষাব শবণ দুর্ধবাসার সাপে দুঃখা হইল দেবগণ। সুবলোকে সুস্ছিব কবিল সুববায প্রথাম সম্মান পাইলে ইন্দ্র সভাষ । [িপদনাশিনী তোমা গায হারবধশে কৃষের করিলে কাজ ভাগ্ডাইযা কংসে । খুন ব এত স্তুতি শুনিঞা পার্্তী লহনাব খঠ্টাতলে থুইল শ্রীপাঁত। খট্রাতলে পুত্র পাইয৷ নাচেন খুল্পনা শ্রীকবিকঙ্কণ কৈল পাঁচালি বচনা ॥ ৩৪৯ অবে বাছা আয আয আয কিনাগি কান্দে মোর শ্রীমস্ত বায। আনব তুলিয। গগন-ফুল একেক ফুলের লক্গেক মূল । সে ফুল গাথযা পবাব হাব সোনার বাছা মোব ন! কান্দ আব। গগনমণ্ুলে আিব ফাদ বাদ্ধিয়া দিব তোবে শরদ-্ঠান্দ । কপালে দিব তোরে সে ঠান্দ ফোটা খেলাতে দিব বাছা৷ সোনার ভেটা। খাওযাব খিরখণ্ড পবাব ছুযা। কর্ূ্ব পাকা পান সরস গুষ৷ । রথ তুরঙ্গ দস্তী জৌতুক দিয়া রাজার দুই কন্য৷ করাব বিয়া । চন্ডীমঙ্গল শ্রীমন্ত চাপিবে বিনোদ নায় কন্তুরি কুমকুম চন্দন গাষ । সুখে নিদ্রা জান চামব-বায শ্রীকবিকঙ্কণ মুকুন্দ গাষ ॥ ৩৮০ দিনে দিনে বাড়ে শ্রীরপাঁত ফোধল চন্ডীব ক্রীড়া নাহি ব্যাঁধ নাহ পাঁড়া অন্ধকাব হরে দেহ-জুঁতি। দেহেব কনকবর্ণ গাধনি জিনিএা কর্ণ বিহঙ্গমবাজ জিনি নাসা বিকচ কমল আখি দী্ঘ যেন শাপশাখী কলকষ্ঠ জনি চাবু ভাযা । জননীর কোলে নিন্দে ক্ষেনে হাসে ক্ষেণে কান্দে সাধুসুত কবযে দেষাল! দোলাষ ক্ষেণেক দোলে ক্ষেণে লহনার কোলে ক্ষেণে কোলে কবযে দুবলা । মোঁনে ক্ষেণেক থাকে ক্ষণে ওঠা ওঙাডকে জননীব পরম কৌতুক পাত নৃপাতির দাস গেল৷ দী পববাস দেখিযা পাসবে সব দুঃখ । জননী লোচন ফাদ বদন সবদ-ঠাদ লোচন যুগল ইন্দাঁবব কপাল বিশাল পাটা সিংহ 'জিনি মাঝাশ্ছটা অভিনব জেন শাল্তধর। তিন চার জায মাস উলটীয়৷ দেই পাশ আনবেশ সাধুর নন্দন জায় মাস পাঁচ চারি রূপে অতি মনোহারা ছয়মাসে করাল্য ডোজন। সাত আট জায মাস দুই দস্ত পরকাশ আনবেশ দিবসে দিবসে সগুম দিবস : দিবা লহনা খুল্লন৷ মেলী দৃহে দেই করতালি দেখি আনন্দিত বসে ভাসে । হৈল একাদশ মাস বদনে ইসত হাস বারমাসে আইল জন্মীতীথ মাষের অঙ্গুলি ধা চলে পদ দুই চারি মুকুন্দ বাঁচল শৃদ্ধমৃত ॥ ৩৮১ একবংসযেব হইল সাধৃব নন্দনে কবতালি দিষ৷ ফিবে নাচা'য অঙ্গনে । দুবলা কিন্কবী গায কৃষ্ণের চবিত পুলুকে পৃণিত শিশু নাচে সানান্দত। কটিতটে লম্বম্যন১ কনকশিকলী মলবাকি পদযুগে কবে ঝলমলী । শার্দিলনখেব শোভে গলে মণিহাব চিলিতে চবণযুগে নুপৃব সপ্টাব। পবায পাটেব ধড়া দুবলা 'কিঙ্কবা ভাল নাচ২ বল্যা বলে খুল্পন। সুন্দবা । ক্ষণে পরিধান ধড়া ক্ষণে হয় পাগ কনকবুঁচিব অঙ্গে লাগ্যাছে পরাগ । মদনগঞ্জন বৃপ ভুবনবঞ্জনত দিনে দিনে আনবেশ সাধুব নন্দন । কৌতুকে খুল্পন৷ দেই ভূষণ চন্দন এক সমা নিবডিল দুই দবশন [তিন বংসবের জবে বাঁণঞ্ার বাল। শিশুগণ সঙ্গে কবে ভাগবত-খেল৷ । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় মধুব সঙ্গীত ॥ ৩৮২ ফামী আসবেন ঘরে কাঁরয়া কামন। প্রাতাদন ভাগবত শুনেন লহন!। ২১৩ দিনে দিনে ভাগবত শ্রবণের কালে কৃষকথ শুনে ছির! লহনার কোলে । নগরা৷ ছাওয়াল আনি নিত্য করে মেল৷ কৃষলীল৷ অনুবৃপ করে নান৷ খেল! । আনুবূপে রহে কেহ চবণ নিকটে কষেব আবেশে ছিরা ভাঙ্গল শকটে । পুতনার বেশে কেহ দেই বিষস্তরন স্তনপান কাব তার বধিল জীবন। মাতৃবেশে কেহ কোলে কাঁরল কৌতুকে বিশ্ববৃপ ছিরা তারে দেখাইল মুখে । যশোদাব বেশ ধাঁ কেহ করে কোলে সাঁহতে ন৷ পাবি ভব থুইল মহাঁতলে । তৃণাবন্ত হইয। কেহ তুলল গগনে কষ্ঠদেশ চাপা তার কাঁবল নিধনে । দধিভাও ভাঙ্গি হইল নন্দের নন্দন যশোদার বেশে কেহ করিল বন্ধন । বন্ধন-আশ্রষ কেহ হইল উদৃখল১ দুই শিশু হইল তথ অর্জন যমল। উদৃখল৯ টানি তাব৷ চলিল কাননে উপাড়যা পড়ে গাছ যমল অর্জনে । কেহ বস হইল কেহ বংসক অসুর কৃফবেশে 'ছিরা তারে মারা৷ করে দূর । কোন শিশু হইল বক ছিরা কৃষ্ণ বার দুই ঠোটে চিব্যা তাবে কইল দুই চীর | কাপ কাব কোন শিশু হয় অঘাসুর কোন গোপ শিশু হৈল বালক বাছুর । বাছুর বালক অঘ৷ করিয়া গরাস কৃফবেশে ছিরা তারে করিল বিনাশ । বাছুব ঝলক তথা জিল্নাইল শ্রীপতি সব শিশু মোলিয়৷ ভোজনে কৈল মতি! এমন কৃষের লীলা কার অনুসার শ্রীমন্ত খেলায় নিত্য মনে নাহ আর ' অভয়াচরণে মজজুক নিজ চিত শ্রীকাবকন্ধণ গান মধুর চরিত ॥ ২১৪ ৩৮৩ গড়াল্য দুপয় বেলা শুন ভায়া মোর নিবেদন সব শিশু কার মেল৷ চিড়া খও দধি কলা একু ঠাঞ্জ কারব ভোজন । কমলকুসুম-দলে ভোজন করয়ে শিশুগণ দ্বাদে খায় দধি খও হাসি হাঁস করয়ে ভোজন। গলা ছাওয়াল মেলে মধ্যদেশে বসিল শ্রীপাঁত হয়্যা সভে উভমুখি ভোজনে হইলা সুখা চাঁরাদকে বালক সংহতি । অঙ্গে গোধূলি-রেণু কটিতটে বেন্র বেণু অজানুলাম্থত বনমাল শ্রীমন্তের জত সঙ্গি ৃষয়সুখালা গলা কদস্ব তরুর মূলে খায় মানা বৃতুহলে কৃষের প্রসঙ্গে রঙ্গি পুলাকত গোয়াল-ছাওয়াল। বংসরূপী শিশুগণ প্রবেশে গহন বন শিশুগণ চমকিত মন শ্রীপাঁতি বলেন ভায়্যা সভে সুখে করহ ভোজন । বালক ভোজনমাত শ্রীপাঁত সভার গাঁত চঁলিল বাছুর অন্বেষণে রচিয়। রিপা ছন্দ পণচালি কাঁরয়া বন্দ বিরাচল শ্রীকবিকঙ্কণে ॥ আনিব বাছুর চায়্যা ০৮৪ কৃষকথা-আবেশিত হয়্য। স!ধু মন শ্রীপতি বাছুর চায়্যা বুলে বনে বন। মরসিংহ দাস তথা আসী ক্রহ্গা-বেশে হর্যা নিল শিশু পশু দিয়া মায়াপাশে | উভারয়ে লয় ভাগ চত্ীম্গ্গ ্গণেক ভাবিয়া মনে বুঝিল শ্রীপাঁড কার নহে এই কর্ম বিধাতার কীন্তি। কষের চরণে ছিরা আরোপিয়৷ মন মনময় করিল বালক বংসগ্ণ। নরাঁসংহ দাস পুনু আসী ব্লক্ষা-বেশে বাছুর বালক দেখে কৃষ্ণের সকাশে। পুনুরাপ গেল৷ ব্রহ্মা আপনার স্থানে আছয়ে বালক বংস দেখল নয়নে । পূনুরূপাঁ দেখে আসি চতুর্ভজ বেশে গ্রাকবিকল্কণ গান মধুরসভাসে ॥ ৩৮৫ শিশুগণ কার মেল। করে ভাগবত-খেল৷ কৌতুকে শ্রীমস্ত সদাগর জে জন খেলায় হারে সেই জন কাঙ্ধে করে অবধি ভাণ্তীর তরুবর। মূপে অভিনব কাম শ্রীপতি হইল রাম তার সঙ্গে গোবিন্দ মাধব মুকুন্দ শ্রীধর হরি বনমালী ত্রিপুরার নীলকণ্ঠ অচ্যুত যাদব । নারায়ণ দামোদর চক্রপাণি পাত স্বর বাসুদেব আঁজত বামন কংসএর দিবাকর চতুভূ'জ হরিহর, বংশীধর শঙ্কর শেখর । কাত্তক গণেশ হর স্থাণু শিব গুণাকর দৈত্যার যশোদানন্দন শ্রাদাম সুদাম হৈলং যাধির পুরন্দর* বৃকোদর* ভরথ লক্ষ্মণ । দুইকুলে দুই মুখ্য কার্যযবশে প্রতিপক্ষ দুহে পাড়ি থুইল উচ্চন্করে বসনে বদন ঢাকি চাপিল সভার আখি জে না চিনে সেই জন হারে। সপ্তম দিবস : দিবা নিশ্চয় কাঁরয়া পাড়্যে দুইজন শিশু তাড়ে কৃফসেনা পাইল পরাজয় বসনে বদন ঢাকি চাঁপল সভার আখি কেহ নাহি পান পরিচয় । প্রলঙ্বের বেশধর লয়্যা বান্য৷ গুণাকর কান্ধে তার চাঁড়িল শ্রীপাঁত অন্য বান্যা-শিশু জত গুণাকরে অনুগত শিশুকান্ধে ধায় লঘুগতি | ৫ প্রলম্বের গাছ জায় গুণাকর পাশ তাগ কার অবাঁপ ভাগুর রোষে রাম ঘোরদৃষ্ষি মস্তকে মারিল মুফি নাসাপথে গলয়ে বুধির | গুণাকর দাস পড়ে কদলী জেমন ঝড়ে শিশু মেল্যা জল ঢালে শিরে মেলি নগাঁরয়৷ ভাই গিয়া খুল্পনার ঠাঁঞ চুন মাখ্যা আদ্ধীষ করে। মহামিশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের ভাত কবিচন্জর হৃদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চত্তীর আদেশ পাই বিরচিল শ্রীকাবকন্ধণ ॥ ৮৬ কারয়৷ রোদন বলে শিশুগণ শুন শ্রীমন্তের মা তোমার তনয় লঙ্ঘে সভাকায় দেখ মারণের ঘা । সব শিশু মেলি একু সঙ্গে খোল শ্রীমস্ত বড় দুরস্ত দারুণ চাপড়ে সব দত্ত লড়ে লাঘবের নাহাঁক অন্ত । ভূবন্যা কিরণ দুইজনে হইল কানা চক্ষে দিল ধুলাগুড়। ২১৫ যাদব মাধয দুহার কি কব বাসু বানা হইল থোড়া। গুণাকর দাস তার প্রাণ শেষ দু-্চাঁর হইল মাথা কব কত আর করহ বিচার শুন সাঁতি পাত্তা খুল্লনা ঝাড়ি ধুলা হাথে দিল কলা তৈল মাখাইল গায় যাচয়া সুগ্ন্দ পাইলে মুকৃন্য সব শিশু ঘরে জায় ॥ ৩৮৭ লহনা খুল্পনা মৌল করেন জুগাতি শ্রীমন্তের কর্ণবেধে দুহে একমাতি। দুবনা ডাকিয়া আনে দনাই পাঁণ্ডত প্রণাম কারয়৷ 'দ্বিজে কাঁরল ইঙ্গিত। হেমঘটে গণাধিপ কাঁরয়া আহ্বান ফাঁরল দনাঞ ওঝা স্বাপ্তিকবাচন। নান৷ দেব পুজ। করে হইয়া সাবধান কাল ধল শত ছাগ দিল বলিদান। দুবলা ডাকি আনে আইয় শত জনে সুরঙ্গ সিন্কুর ভালে দিল টিকা সনে । সিঙ্ধুর বেষ্টিত দিল বিন্দু বিন্দু চুয়। আ'চল ভরিয়া খই পাকাপান গুয়।। পুজা পায়া৷ গেল সভে নিজ নিকেতনে অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণে ভনে ॥ ৩৮৮ করিল শ্রবণবেধ পণ্ম বাঁরসে মনোহর বেশ বালা দিবসে দিবসে । না জাইয় খেলাতে ছিরা নিসোধি তোমারে১ কত ন৷ প্রকারে দুঃখ দেহ দুঃখিনীরে। ১৬ রজানি প্রভাতে জা বানিয়ার বালা বেগর কন্দলে তোমার নাঁঞ হয় খেলা । অনেক হার্যাছি গো জিন্যাছি একবার এবার জানলে ঘর আসিব সকাল । খুল্লন৷ বলেন দুয়া শুন না বচন ডাক দিয় দ্বিজবরে আন নিকেতন । থুল্লনার বোলে দুয়।৷ চলিল তুঁরিত ডাক দিয়া আনে দুয়া কুল-পুরোহিত। 'দ্বজবর দৌখ রাম৷ করে নিবেদন অভয়ামঙগল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৩৮৯ তোমারে শপিয়া ঘর সাধু গেল দেশাস্তর ভাবি তুমি লভ্য১ অপচয়ে আচার বিনয় দীক্ষা জতনে করাইব শিক্ষা জাকু ছিরা তোমার নিলয়ে । শ্রীমন্তের চিন্তহ কল্যাণ জত চায় দিব ধন নিবেশ করিয়। মন সুতে মোর দেহ বিদ্যাদান। নগর্য। বালক সঙ্গে সদাই খেলে কড়। ডা্গে খেলে সদা টিক৷ কৌড় ভেটা হইয়া পাসার বশ পেলে বিত্তি বিদু দশ গঞ্জিক খেলায় সকটাও। তেপাত্য। বাঘচালি খেলে সাধু সাত। ধুলি সামরু সবই তনাতা কোনাকোনি নে্রব্ধীৎ সদাই খেলায় দ্বন্দ না জানি দিবসে থাকে কোথা । গৃহকার্যে নাহি চিত্ত ডুব৷ বাজ খেলে নিত্য নগর্য। বাক সনে মেল৷ তোজিয়৷ ওদন জল শিক্ষা করে বুদ্ধিবল নিরবাঁধ সাতাচ।র খেল। । টিক নাটিম পাতক।লি কনক সুন্দর সালি নিত্য ফিরে নগরে নগরে চীমল খেলায় ময়নাগুঁড় ফিরে বনিকের বাড়ি একদণড না বৈসে ঘরে । ঝালি খেলে চাপ্যা গাছ জলে খেলে মাছ মাছ জীবন মরণ নাহ গণে সাধু তোমার যজমান তোঁঞ কার অভিমান ছিরা রাখ আপন চরণে । শৃনি বাক্য খুল্পনার দ্বিজ কৈল অঙ্গীকার হাথে-খাঁড় দিল শুভক্ষণে দামিন্যা-নগরবাসী সঙ্গীত অভিলাষী শ্রীকবিকষ্বণ রস ভনে | ৩৯০ পড়য়ে সাধুর বাল। কখ আঠার ফলা আঙ্ক আহ্ক [সাদ্ধ বানান গুরুবাকো দিয়৷ কর্ণ চিনিল অনেক বর্ণ অফ্টশান্দ সুবন্ত পাঁনন। পড়ে দত্ত শ্রীয়পাঁত সান্ধমূল সান্ধবৃত্তি রাত্রি দিন করয়ে ভাবনা নিবিষ্ট করিয়৷ মন লিখে পড়ে অনুক্ষণ বিদ্যা বিনে নহে অন্যমনা ।১ পাঁড়িল ব্যাকর্ণ-টিকা গণবৃত্ত সমাসিকা অমর জুমর বর্ণ নান। জানতে সন্ধির তত পাঁড়ল উজ্জলদন্ত ছন্দ পড়্যা মানিলা মাননা । পাঁড়ল দুর্ঘট বৃত্তি ধার সভায় চন্রবস্তাঁ নিরন্তর করেন বিচার দবানাশ যরবান পড়ে ভট্টি আভিধান পুথি শোধে 'বাবধ প্রকার। দ্র কাব্য পাড়ি দুত মাঘ পড়ে মেঘদৃত নৈসধ কুমারসম্ভবে দিবানিশি নাহী জানি পড়ে রঘু ষ্বেত বোন ভারাঁব উত্তট জয়দেবে। সণ্ুম দিবস : দিবা কাব্যপ্রকাশ পাড় অভ্যাস কাঁরল বাড় রহ্কাবলী সাহত্যদর্পণে কাদস্বরী আখায়িকা পড়ে নানাশাস্ত্র চীকা প্রসম্নরাঘব রামগুণে । পাঁড়িল বামন দণ্তী কাঁবর কাঁবত্বথাও নানাহন্দে পড়িল পিঙ্গণ কার দুড় অরুরাগ গাঁড়ণ ভারাব মাঘ বন্ধুজনের বাড়ে কুত্হল। অব্যাহত বুদ্ধিগাত পড়ে বাল৷ সপ্তশতা পড়ে মুদ্রা মুরাঁর মালতী [হিতউপদেশ কথ। পাঁড়ল বাসবদত্তাও কামশান্ত্র দীপিকা ভাগ্বতী । বৈদ্যের বৈদ্যক জত [বিশেষ কাহব কত একে একে পাঁড়ল শ্রীপতি কাপিযা চাওকাধ্ান ভ্রীকবিকঙ্কণ গান দামুন/য় জাহার বাত ॥ ৩৯১৯ সমাপ্ত কারয়া আগে নজ অধ্ায়ন কৌতুকে শুনেন জত পড়েন আখ্যান । কেহ পড়ে বেদাঁবদ্যা আগমপুরাণ শ্লরীপাঁত সভার পাঠে করে অবধান । পৃ্পক্ষ করে সাধু সভ। বিদ্যমান আপনি দনাঞ ওঝা করে সমাধান । পুত্রবুদ্ধে অজামিল বৈল নারায়ণে বৈকুষ্ঠে চলিল দ্বিজ চাঁপয়৷ বিমানে । দ্বিজ হয়া৷ বহুকাল বেউস্যার সঙ্গ সে জনা পাইল মুন্ত এই বড় রঙ্গ । গজেন্দ্র পাইল মু্তি শ্রীহ রি-পরশে চতুর্ভূ্জ হয়৷ গেল বৈকুষ্ঠ-বাসে । দিয়া কষে পুতন। গরল স্তনপান রাক্ষরসী বৈকৃষ্ঠে গেল চাপিয়া বিমান । ঠ* ম-২৮ ২১৭ যশোদা দৈবকী দেবী পাইল জেই গতি সেই গতি পাইল পুতনা পাপমতি। মুচ্‌কুন্দ কাঁরল স্তব দেবকীনন্দনে লইল চরণধূলা কার প্রধক্ষিণে। সেই জনে মুন্ত নহে কিসের কারণে গর্ভবাস কিব৷ হেতু কৈণ নিজ মনে। পশুবধ-পাপ নাশে হইলা দ্বিজবর তবে মন্তপদ তারে দিশ গদাধর। শ্পনখ| দিতে আইল রামে আত্মদান তবে কেন লক্ষাণ কাটিল নাক কান। নবধা দানের মাঝে আত্মদান বড় এই কথা আমারে বুঝবে দড়দড় । বেযুস্যাগমন কিবা পশুবধ পাপ দুই কথা জতনে বুঝাবে মোরে বাপ। এমন শুনিঞ৭ দ্বি্জ সাধুর ঝচন সমাধান বুঝাঝারে ওঝ। কৈল মন। কৃষ-ইচ্ছ৷ বিনা কিছু নাঁঞ সমাধান হ।[সয়া বাঁণণ দ্বিজ সভ। বিদ্যমান । টাকার বিট।র গুরু না৷ বল ঝটিত কেন বা প্রতুব ইচ্ছ৷ হব অনুচিত । সক্বোধ হহল দ্বিজ স।ধুর বচনে অওয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণে ভণে | ৩৯৭ ্টাশ১ বংসত্র হইল আমার বয়েষ নিরন্তর পড়াই শান্র কার নহি বশ। [শিশু বুঝাবার তরে মীকার বিচার ইহা বই অপমান কিবা আছে আর। বাললে বচন নাহী প্রঝোশব পেট উচিত বলিলে তোর মাথা! হব হেট । উঁচত বালিতে কিবা মান-অপমান শাস্ত্রের বিচারে নাহী কর অবধান । ২১৮ গোত্রে দুর্বব রাষ দত্ত কুলেতে বানিঞ৭ ব্রা্মণের পারা নাহ বলালসেনিঞণ । মাথা হেট হবার কারণ আমী চাহি যাঁদ নাহী বল রাধাকান্তের দোহাই । পিতা দী্ধপরবাসে তোমার জনম নাহি জান আপনার জাতের মরম । মরা গেল ধনপাতি হইল বহু দিস২ মায়ের আইয়ত হাথে ভোজন আমিসত। জারুয়া টেগনে নাহাঁঃ শুনাঞ পুরাণ এই হেতু আমার এতেক অপমান । রাজার সভায় বাপা আছেন পসিংহলে বলহ নিষ্ঠুর ভাষ৷ পেতার বলে । ্রাহ্মাণ বাঁলয়৷ আম সাঁহ কটু কথ কাহব উচিত যদ নাহী পাঅ বেথা । উগ্ন ব্রাহ্মণ জাত গ্ভাবে চণল তমগুণে কহ কথ। হইয়। প্রবল । ছু'তে না জুয়ায় বেট৷ জারুয়া৷ ঢেমনে উগ্র বলিয়া নিন্দ। কারস ব্রাহ্মণে । আবিরোধে চল বেট। পাটসাল ছাড় মাথ৷ ভাঙ্গিমু মারা৷ পাউাড়র ঝাঁড়। ধনের গরব বেটা মোরে নাহি দেখা গৌরব চিনিয়া বেটা হেত। হইতে জা। পণ্টাশ কাহন কাঁড় খাও মাসে মাস আমী যাঁদ জারুয়া তোমার জাতিনাশ । বুঝয়া ন৷ কহ কা হইয়া পাঁওত কোপেতে বাধিত হইয়। বল অনুচিত । উঁচতাবিচারে নাহা পাঁরবাদ বল ঢেমনের ঘরে হে কেমনে খাও জল । থাকয়ে গঙ্গার জল বিষ্ুুর ভবনে চাহলে আনিঞ দেই দেঘর। ব্রাহ্মণ । পড়াইয়। বেতন খাই পঞ্চাশ কাহন তোম[র ঘরে জল থায় সে নয় ব্রাক্ষণ । ব্াহ্মণসভায় কত দেখ বাহুস্নাড়। বাঁসতে জচিত তোরে বেয়ুস্যার পাড়া । চন্ডীমঙ্গল য়েমন নিষ্ঠুর যাঁদ বলল ব্রাহ্ধণ শ্রীমন্তের দুই চক্ষু ধারা শ্রাবণ । রিয়া মধুরপদে একপদী ছন্দ শ্রীকবিকল্কণ গীত গাইল মুকুন্দ ॥ ৩৯৩ কোপে কক্ষমান তনু চলিল শ্রীপাঁত ব্রোধে গুরু পায়ে নাহী করিল প্রণৃতি। দুই চক্ষু হইল তার ধারা শ্রাবণ চলিতে শ্রীমস্ত দত্ত নাহ দেখে গন । নিমিষেকে উত্তীরল আপন ভবনে দুয়ারে কপাট দিয়৷ রাহল শয়নে | চিন্তায় চাস্তুত হইল অশ্ুলোচন লহন। বিনে জে নাহী দেখে অন্য জন। পণ্াশ বেগুন অন্ন করিয়া রন্ধন পুত্রের বিলম্ব দোঁখ সচকিত মন । প্রভাতে চলিল পুন্ন গুরুর মান্দর বিলম্ব দেখিয়। মোর প্রাণ নহে স্থির । ক্ষণেক রন্ধনশালে ক্ষণেক অঙ্গনে রাজপথ নেহালয়ে অশ্ুলোচনে । খুল্ননার আদেশ পাইয়া চলিল দুবল। আগে নেহাপয়ে দাসী পায়রার শালা । সই-সাঙ্গাতীন জত আছিল নগরে একে একে দেখে দুয়া সভাকার ঘরে । ন৷ পাইয়৷ আইল দুয়৷ নিজ নিকেতনে নিবেদন করে খুলনা বিদ্মানে । বার্তা ন৷ পাইয়। রাম৷ দুবলার তুণ্ডে আকাশ ভা্গয়৷ পড়ে খুল্লনার মুণ্ডে। দুবলা কারয়া সঙ্গে চলিল খুল্পন। কেন পড়াবারে দিনু খাইয়৷ আপন। । হাপুতির পুত্র মোর বালতির ভাড়া অন্ধজনের নাঁড় কুপণের কড়া । সণ্তম দিবস; দিবা তোমা বিনু আমার ডাড়াতো নাঞ ঠ1ঞ কোথা গেলে পাব পুন্ন কুমার ছিরাই । আপনার ছায়৷ দেখে শ্রীমন্ত সমান ১ চমাঁকয়া উঠে রাম৷ ডাকে ঘনে ঘন। নগরে দেখিয়৷ গেল পাঁডতের ঘরে চরণে ধারয়৷ রামা বলে দ্বিজবরে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকষ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৩১৪ ওঝা আর্দাস অবগতি কর কোথা গেলে পাব লাগ শ্রীপাঁত কোলের বংশধর । সেবক না লৈয়৷ সঙ্গি কাখে করি পথ খু্গ আইল শ্রীমন্ত পাঁড়বারে দুপর হইল বেলা ভাকিয়৷ ভাঙ্গল গলা চায় শ্রাম সুত অনুসারে । চাহল অনেক ঠা জথা খেলে সাঙ্গ ভাই কেহ নাহাঁ কাঁহল সন্ধান আমার বচন শুন শ্রীপাতি আমারে দেহ দান। আমার শ্রীমন্ত হার। কয় মোরে মহাভাগ ক্ষেম দিব দুইগৃণ জননী-লোচনতার৷ দবস দুপরে অন্ধকার সমর্গণ কৈল তোমা দাসীরে না দিলে ক্ষমা বিপদসাগরে কর পার । কত অন্তেবাসী১ থাকে জিজ্ঞাসল একে একে কাহতে পরান মোর ফাটে পথে পাইয়৷ কিবা থণ্টে . মাইল ফারসী 'দয়। কণ্ঠে কিবা ছিল আমার ললাটে । মোর মনে হেন লয় নিবোদিতে কার ভয় খেম নাহ পাঅ চার মাস ২১৯ বুঝল কার্য্ের সাঙ্গ গুপতে কর্যাছ বন্দি খেম নিতে কর্যাছ প্রয়াস। খুল্লন৷ জতেক বলে শুন দ্বিজ কোপে জলে কটুভাষে বলেন বচন রচিয়া ব্রিপদি ছন্দ পাচালি কয়া বন্দ বিরচিল শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥ ৩৯৫ চল দোচারিণী তোরে আমি জানি আপন গৌরব রাখ আপন বসাত গিয়াছে শ্রীপাঁত লক্ষ জন আছে সাখি। খুজিয়া নগর ভম নিরন্তর পুর চাঁহবার ব্যাজে কুলের রমণী কুলকলান্বনী জলাপ্জাল দিলি লাজে। ভ্রনিলি গহনে ছাগ রাখ বনে ঘামলি সেই অভ্যাসে আস ধনপাত মাকে দিব কাতি জাত রাখ চল বাসে। হদে কামবাণ লাজে নাহ মান মাতিয়া যৌবনমদে জেমন কাবাড় ফিরে বাড়ি বাড়ি চাহিয়৷ কাম-ওসদে পুর তোর ঘরে ভ্রমসী নগরে যৌবন করিয়া ডালি করের কন্কণে নেহাল দর্পণ [বমল কুলের কালী । তোর কটুবাণী অগ্মবরাষনী স্তর বল্যা না কৈল ক্রোধ হইত পুরুষ কারতু পোরুষ পিড়াঘাতে দিতু শোধ । ২০ দ্বিজের কুবাণী শুনিএা বান্যানি জাইতে না দেখে পথে পাচা প্রবন্ধ রাঁচল মুকুন্দ [হত ভাব রধুনাথে ॥ ৩৯৬ থুন্নন৷ চালল যাঁদি পুত্রের তবাসে আখি-ঠারে লহন৷ সইয়ের সনে হাসে । জাঁনএ] না কহে বাজি সাতিন-বিবাদে বাজ চাবি পাঁচ মেল্য হাসে১ মনের সাধে । আর শুনাছ খুল্পনা আছেন ভাল নাটে ঘরের পো ঘরে আছে চাহেন হাটে মাঠে হিয়ায় কাপড় নাহী দেয় আদুড় মাথার কেশ নগর চাতরে ফিরে বারবনিতার বেশ । বারেক আসুক সাধু কাহব সন্ধান পাটপড়শী আইয়-সুইয় হইয় পরমান। না মানে দমন ছুঁড়ি না মানে দোহাই সাড় চায়্যা বুলে জেন বাথানিঞা গাই । ওহার সবে রাঙ্গ৷ সাক। এ বরণে গুরি এ সে জানে গ্ত্িকল৷ মোহন চাতুরি। ব্যাজ দেখায় রুপ যৌবন সম্পদ মন্দিরে থাকলে পাতি নাকে দিত পদ । এ যুবতি এ সে পুতান্ত এহার হয়াছে বেটা দ্বন্বকন্দলে সদাই মোরে দেই বাজের খোটা। । এ সে ছোট আমী সে বড় ন৷ মানে দমন নাহ মানে হিতাহিত উপায় কেমন। দু বাহনে দু সাঁতনে থাকা একু বাসে আাঁখর তার পুর হার৷ মোরে ন৷ জিজ্ঞাসে। নগর চাতরে ফিরে কেহ নাঞ সঙ্গে পো চাহিবার ব্যাজে ছ্ভাড় আছে ভাল রঙ্গে । চগ্ডীমঙগজ সইয়ের সঙ্গে করে জত গঞ্জন লহন৷ কাথের আছড়ে থাকী সুনেন ঘুল্লনা । পুন্নের সন্ধান পায়্য৷ ধরে তার পায় অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ গায় ॥ ৩৯৭ বাছ৷ দূর কর দুয়ারের কপাট হারাইলে তুম বাপ৷ চায়) বুলি হয়্যা খেপা। নগর চাতর গোলাহাট । খাঁওয়। মনের দুঃখ তোম। 'বিনু ভুবন আন্ধার কাঁহয়৷ আমারে কথা আপাঁন করহ প্রতিকার । তোমা চার) বুলি দুঃখে কাটা-খেশচ। পায় ভুঁকে আকুল কাঁরয়া কেশপাশে পাঁরতাপে পোড়ে মন দেখিয়৷ সকল লোক হাসে । শুনিঞন মায়ের দোষ কিবা কৈলে আভরোষ প্রকাশল৷ কহ কিবা লাজে আমার জেমন মাত আমী বা জেমন সাত সবাদিত উজানি সমাঝে। জাচে রে জাচক জন তারে দিতে নাহি ধন কেন নাহি বল রে আমারে প্রপিতামহের বিত্ত জেমন তোমার চিত্ত বায় কর মানিক-ভাগারে। বিধি মোরে কৈল রঙ্ক আনিতে চন্দন শঙ্খ পিতা তোর গেল রে সিংহলে তুমি যাঁদ হবে বাম জীবনে নাহিক কাম প্লাণ দিব প্রবোশয়। জলে । করা নানা পরিবন্দে ডাকিয়া খুল্লনা কান্দে শ্রীমস্তের মনে লাগে ব্যেখ৷ জননী-ভকতিশীল ঘুচাইল্য কপাট খিল মুকুন্দ রচিল শুদ্ধ গাঁথা | হাঁসিয়৷ দেখাও মুখ ঘুচাহ মনের বেথ। দাবানলে জেন বন সপ্তম দিবস: দিবা ৩৯১৮ ভূঙ্গারে পুরিত রামা৷ আনে দিব্য বার চরণপাখালে তার দুবল৷ কিন্করী । নারায়ণ-তৈল রাম। দেই তার গায় সুবাসত জল আন প্লান করায় । না চাহে মায়ের মুখ নাহি করে মে। বসন ভিজিয়৷ তার চক্ষে পড়ে লো। পুনের ক্ুন্দনে কান্দে খুন্লনা সুন্দরী দুবল৷ আনিঞ৷ তার মুখে দেই বারি। 'জিজ্ঞাস৷ করেন তারে দুঃখের কারণ শ্রীপতি আপন দুঃখ করে নিবেদন । পাঁওতসমাজে আম জত পাইল শোক হেন মন করে মাতা তোঁজ জীবলোক । পাঁওতসভায় জেব৷ পায় পারিবাদ [বিফল জনম তার জীতে কেন সাদ । ইঙ্গিতে বুঝল তার দুঃখের নিদান কপট প্রকারে রামা করে সমাধান। জিজ্ঞাস৷ করহ পুন বিমাতার ঠাঞ সম্বন্ধে দনাই ওঝা আমার নন্দাই । এ বোল শুনিঞ। তার দুনু বাড়ে ক্রোধ বলে সে নিষ্ঠুর বাণী তেজি অনুরোধ । শঅভয়াচরণে ম্ুক নিজ চিত শ্রীকবকঙ্কণ রচে মধুর সঙ্গীত ॥ ৩৯৭৯ কহিতে উচিত কথা মনে পাছে পাও বোথা জেবা 'ছুল শ্রীরার কপালে সকল শাস্ত্রের মাঝে হেট মাথা কৈনু লাজে আর না বাঁসব পাটশালে । ২২১ গুরুসনে কৈল দ্বন্দ গুরু মোরে বৈল মন্দ লাজে নাহী করি নিবেদন বন পোড়ে দেখে জন জীবনে নাহিক প্রয়োজন । জারুয়া বলিয়া গালি করিল পাঁগুত তাপমান তোঁজব মনের দুঃখ কারব মাহুর বিষ পান। দনাঞ পাত মোরে কোনকালে মৈল ধনপতি মায়ের আইয়ত হাথে ভোজন আমিষ্য ভাতে মিছা হিন্দুকুলে১ উতপাতি। . ভাগ্ারে ভাঙ্গায় তঙকা থাও পর কর্য। বিলাস দূর গেল দ্বার্মী কর্তা শা লহ তাহার বার্তা লোক দিয়৷ না কর তবাস। তুমি গে বড়ার ঝি কেমনে উদরে দেহ ভাত হইয়া সাধুর কাস্তা দূর কৈলে তার চিন্তা লোকলাজে পর্যাছ আইয়াত হের আইস বড় মাত। কহি গো বিশেষ কথ। দেহ মোরে জত আছে ধন বাপের উদ্দশ-আশে জাইব সিংহল দেশে সাত নৌক৷ করিয়া সাজন। ঘুচাব মনের দুঃখ দেখিব পিতার মুখ তাঁর সাজ্যা চলিব সিংহলে পুনের শুনিএা কথ! হৃদয়ে ভাবিয়া বেঘ। খুল্লনা বিনয়ে কিছু বলে । মহামিশ্র জগন্নাথ কবিচন্দ্র হৃদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই বিরচিল শ্রীকবিকণ ॥ গুপ্তে পোড়য়ে মন মুখে জেন চুন-কালী ন৷ দেখিব লোকমুখ কাহল নিষ্টর করে দূর কর লোকশঙ্ক। তোমারে বুঝাব কাঁ হদয়ামশ্রের তাত চণ্ডীর আদেশ পাই ৮৬৬২ 8০০ জাবে রে সিংহল দেশ পাইবে বহুত ক্লেশ তরণী সরণী বহু দূর মাস দুই তিন ব্যাজে কাঁরয়৷ রাজার কাজে সাধু আসবেন নিজ পুর। অকারণে কর কোপ পাঠাইয়াছনু লোক কল্যাণে আছেন তোমার বাপ ভূপাঁতির মনোরথে গেলেন তরণী-পথে নিরন্তর কার পরিতাপ । ছিল 'ডিঙ্গা খান সাত লৈয়া। গেল প্রাণনাথ একখাণী নাহী অবশেষ [সংহল জলের পথ মিছা কর মনোরথ কাঁরবারে বাপের উদ্দেশ । যাঁদ শত কারিগর গড়ে এক সম্বংসর তবে ডিঙ্গা হয় একখান যাঁদ ডঙ্গা করে সঙ্জ কেবল ধনের কাধ্য অবলার কতেক পরান । জলে কুস্তীরের ভয় কুলেতে শার্দুলচয় দুষ্ট খণ্ড শত শত পথে জেজায় সংহল দেশ পায় বহুত ক্লেশ কাহয়াছে আমার পিতা তত্বে। জাবে রে সাগর বায় সে পথে না জিব নায়্যা গরানসঙ্কট নোন৷ বায় শুনিতে পরান ফাটে মকরে মানুষ কাটে [বক থাকু পিংহল উশায়। বহু তীমাঙ্গল আছে প্রাণ-পাঁড়াশীল মাছে তনু জার শতেক যোজন [কি করে টমক সঙ্গ পক্ষে ছুঞ্ণ লয় ডিঙ্গ। সেই দেশে সঙ্কট জীবন । উড্ভুষ কচ্ছব-কুলা সষ৷ জেন মশাগুল। জলোক৷ কুগ্ধর-শুওাকার রাজ। বড় পাপাচত্ত ছলে হর্য৷ লয় বিত্ত শুন্যাছি দেশের দুরাচার | চন্ডীলঙ্গল খুল্লনা জতেক বলে শুন্য। সাধু কোপে জলে অনুমতি না দেই ভোজনে থুল্লন৷ সুধীরমতি বুঝিয়। কার্যের গতি আজ্ঞ৷ দিল সিংহল গমনে। মহামিশ্র জগন্নাথ কাঁবচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই [বরাঁচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ হদয়ামশ্রের তাত চণ্ডীর আদেশ পাই ৪০১ খুল্লনা সিংহল জাইতে দিল অনুমতি পুলুকে পুরিত তনু কুমার শ্রীপাত। পরম কৌতুকে সাধু কারল ভোজন ফারয়৷ ডাবরে সাধু কৈল আচমন । কপৃ্‌র তাষ্ুলে কার মুখের শোধন মানিক-ভাগার হইতে আনে নানা ধন। বান্ধিয়া৷ বাশের আগে পাটের পাছড়া ফিরাইলে১ শত পল সুবর্ণ-চাঈড়া । বিষাণ দুন্দুভি বাদ্য করিয়৷ বাজনা কোটাল সাধুর বোলে দিলেক ঘোষণা । ঝট জেই সাত ডিঙ্গা করয়ে নির্মাণ শত পল সুবর্ণ-চাঙ্গড়া তার মান । হেনকালে জান চণ্ডী গগনাবমানে শুনিঞ] চাওক। যুন্ত কৈল পদ্মাসনে । বিশ্বকর্মে মহামায়। কৈল স্মঙরণ শ্রতিমান্রে বিশ্বকর্ম৷ আইল ততক্ষণ । তার পুন্ন দারুর্রহ্ধ আইল ঠার সাথে দিলেন চাওক গুয়া-পান তার হাথে । মোর বলতে বিসাই যাঁদ কর অবধান শ্রীমস্তের সাত ডিঙ্গ৷ করহ নির্মাণ। যাঁদ ভন্তি তোমার আছয়ে আম৷ প্রাত গড় ডিঙ্গা সাত-খান চারি প্রহর রাতি। সপ্তম দিবস দিবা তবে সে ত্বরায় ডিঙ্গা হয় গো নির্মাণ যাঁদ মোর সঙ্গে দেহ বাঁর হনুমান । প্রসঙ্গ করতে তথা আইল মারৃতি হাথে পান দিয়। চণ্ডী দিলেন আরাতি। চওীর চরণে তিনে করিয়া প্রণাতি আঁবিলম্বে বিশ্বকর্মা আইল বসুমতী । নরাকৃতি হৈয়া তিন জন হৈল বুড়া ধাঁরলেন শ্রীমন্তের সুবর্ণ-চাঈড়া। কোটাল আনিল তারে শ্রীমন্তের পাশে বিষ্বয় হইয়৷ তারে শ্রীমন্ত জিজ্ঞাসে। অভয়াচরণে ম্জুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৪০২ কহ কারিকর কোন দেশে ঘর পার ডিঙ্গা গাঁড়বারে অতি বলহীন দেখি তিন জন কারণ বল আমারে । বসনাবহীন পর্যাহু কৌপাঁন তাঁথ তোর শন-দড়ি শত [শর গায় কেশ উড়ে বায় অঙ্গে উড়ে তোর খাড়। নাহ শুন১ কানে না দেখ২ নয়নে পবনে দশন নড়ে ভোঙরা-বাতে শির জাহার আস্থির সে কেমনে ডিঙ্গা গড়ে জ।রে পাঁড়ে জরা জীবনে সে মরা কথা কহৎ পাইয়া ক্লেশ পুন পাঁরবার কেবা আছে আর কহ মোরে উপদেশ । যী অবলম্বন নাহ তোর দন্ত কার বাঁ পাড়নে ২ দৈনা-দু:খজালে এ জরাকালে বিফল ডিঙ্গা নির্মাণে হাসিয় উত্তর দিল কারিকর বসি পুরন্দর-গুরে যাঁদ দেহ ধন এই তিন জন পারি ডিঙ্গা গাঁড়বারে সাধু ভাবি মনে সেই তিন জনে নানা ধনে কেণ্য পৃজা পাঁচালি প্রবন্ধ গাইল মুকুন্দ প্রকাশে ব্রাহ্মণ রাজ ॥ 80৩ দেবত্বষ্টা১ 1বশ্বকর্ম তার পুর দারুরন্ম শিরে ধার চাঁওকার পান চার প্রহর রাত জালিয়া রতনের বাতি সাত ডিঙ্গ৷ করয়ে নির্মাণ হনুমন্ত মহাবীর নখে করে দুই চির কাঠাল পিয়াল তাল সালং গষ্ভাঁর তমাল ডহু নখে চির রাখে বহু দারুরদ্ষে জোগায় গজাল। শিলায় সানায়য৷ বাশি পাটি টাছে রাশি রাশি নান৷ ফুলে বিচিন্্র কলস পিত৷ পুতে দেহে অণটি গজালে গাথিয়৷ পা্ী গড়ে ডিঙ্া দৌখতে রূপস। প্রথমে করিল সজ দিঘে ডিঙ্গা শত গজ আড়ে গজ নিংশিতি প্রমাণ মকর-আকার মাথা গজেক অস্তরে বাতা মানিকে করিল চক্ষুদান। গড়ে ডিঙ্গা মধুকর মধ্যে জার রইঘর পাশে গুড় বাসিতে গাবর দিসারু বাঁসিতে পাট উপরে মালুম-কাট পাছে গড়ে মানিক-ভাগ্ডার ২২৪ গড়ে ডিঙ্গা সিংহমুখী নামে ডিঙ্গা গুয়ারোথ আর ডিঙ্গা নামে রণজয়া গড়ে ডিঙ্গা রণভীমা গড়নি পণনিও মহাকায়া । গড়ে ডিঙ্গা সর্ববধর৷ হিরামুনী চন্দ্রতারাঃ আর ডিঙ্গ৷ নামে নাটশালা বাছিয়৷ কাঠাল শাল ডিঙ্গাশরে বান্ধিল মুড্যাল।। শত ডিঙ্গা কার সাঙ্গে আনে ভ্রমরার গাঙ্গে কোলে কাখে কর্যা হণুখন নিশ। হইল অবসান শ্রীকাবকঞ্ষণ রস গান ॥ অপরূপ রূপসীম। গড়ে দণ্-কেরুয়াল সভে গেল নিজস্থান ৪093 চারি প্রহরে সাত 'ডিঙ্গ কারিয়৷ নির্মাণ বিশ্বকর্ম সাহত চাপল হনুমান । নিশি অবশেষে সধু দেখেন সপনে পিতাপুরে কোলাকুলি দক্ষিণ পাটনে । রাম রাম স্মাঙরনে পোহাইল্য রজান শষ) হইতে শুনে সাধু কোকিলের ধবনি। নাশ অবশেষ পূর্বাঁদগ প্রকাশ দননাথ-দরশনে তম গেল নাশ । নিত)ানয়ামিত কমন কার সমাপনে প্রঙাতে চাঁলল কারীকর অন্বেষণে । সাতথান ডঙ্গ। ভাসে ভ্রমরার জলে গেজ বান্ধ। আছে ডিঙ্গ৷ লোহার শিকলে । ডিঙ্গা দেখ্য৷ সদাগর করে অনুমান কোন দেব আস) ডঙ্গ৷ কারল নির্মাণ । সাঁদ্ধ হইল মোর কাখ সাধু সানান্দত দৈবজ্ঞ আনিতে লোক পাঠায় তুরিত। সৌভাগ্য যান্রক অতি চন্ডীমঙ্গল আসি তথা গ্রহ-ওকঝ৷ সাধু বিদামানে শুভযান্রা। বিচার করেন সাধু সনে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ 8০৫ সাধু অবিলম্বে চলহ পাটন দূর কর মন-কথা ঘঁচব মনের বেথা পিতাপুত্রে হব দরশনে | শৃভযোগ মৃগশিরা মেরুশৃঙ্গে জেন হিরা এয়োদশী তাথ শাঁনবার বাঁণজ)করণ তাঁথ ইহা বনু যাত্রা নাহ আর সাত [ডিঙ্গ। লয়) সাথে চলত জলের পথে মগরায ছলিব পার্বতী অচস্থিতে ঝড়বৃ্ি দিব চণ্ভী কৃপাদৃ্টি তথা সাধু পাব অব্যাহতি । দেখা আত বিপরীত কমলে কামিনী গিলে করী প্রাতজ্ঞ৷ রাজ৷ স্থানে হ৷র সভ৷ বিদ্যমানে উদ্ধার কারব মাহেশ্বরী | কাপিদহে উপনীত এই শুদ্ব-গণন অবধান হয়৷ শোন এই যান্লা বিভাহ-কারণ ঘুঁচিব মনের দুঃখ দেখবে পিতার মুখ কন্যা দিব সালবাহন । লয়া। জাবে জত ধন পাবে তার চারিগুণ পতাপুরে আসিবে কল্যাণে পরম রূপসী ধন্য বিক্রমকেশরী কন্য। পুরুষ্কার কর! দিব দানে । কয়) 'প্রয় সত্যভাষা ঘর জায় মহাজস। বসন কাণন পায় দান দা মিন)। নগরবার্সী সঙ্গীতের আঁভলাষী শ্রীকাবকঙ্কণ রস গান ॥ সপ্তম দিবস দিবা ৮. মি. ২১ ৪০৬ বদল আশে৯ নানা ধন নাএ দেই ভর! আট দিগে হইতে আনে কর বড় ত্বর৷ । কুরঙ্গ বদলে তুরঙ্গ পাব নারকেল বদলে শঙ্খ বিড়ঙ্গ বদলে লবঙ্গ পাব সুণ্টের বদলে টঙ্ক । কুরঙ্গং বদলে মাতর্গ পাব পায়রার বদলে শুয়া গাছফল বদলে জায়ফল পাব বয়ড়ার বদলে গুয়া। সন্দূর বদলে হিঙ্গুল পাব গুঞ্জার বদলে পলা পাটশণ বদলে ধবল ঠামর কাচের বদলে নিল । চিনির বদলে দানা-কপূর আলতায় বদলে নাটি সগল্লাথ পামাঁর কম্বল পাব বদল কাঁরয়া পাটি । হারদ্রা বলে গোরোচন৷ পাব পাগের বদলে গড়া সুস্তার বদলে মুস্তা পাব ভেড়ার বদলে ঘোড়া । চঞ্ের বদলে চন্দন পাব সোলফার বদলে জিরা আকন্দ বদলে মাকন্দ পাব হরিতাল বদলে হারা মাস মুসু'রি তঙুল বরবটি যব গোম মাড়ুয়া ছোলা তৈল ঘি ঘটে বলদে শকটে লবণের ভাঙ্গল গোলা । জগদবতংসে পালাঁধ বংশে নৃপাত রঘুরাম শ্রীকবিকঙ্কণ করে নিবেদন চণ্ডী পুর তার কাম ॥ 80৭ শৃক্ষণে নানা ধন নাএ দয়া ভর! রাজসন্তাষণে হইল শ্রীমন্তের ত্র] । ভার দশ দাধ কলা ঠাপা মর্তমান দোখাঁও সরস গুয়া বিড়বি্ধা পান । গছে বান্ধ্যা নিল ভেট ঘৃত দশ ঘড় সগল্লাথ খান দুই খান দশ গড়া । িন্কর করিয়া দিল দোলার সাজন আগে পাছে নায়্য। পাকি ধায় শত জন। আশ-গাড়ু পাশ, গাড়ু [সয়রে মেচলা পাতান পাতমছে তায় গামরি অশচলা। ২৫ বিচি দোলায় সাধু হেলিয়৷ চলে গা আশে পাশে পড়ে শ্বেত ঠামরের বা। জোগানিয় পাইক চলে সাধুর জোগানে ডানি বীমে মিঙ্গ। কাড়া টমক নিশানে। রাজসভায় সাধু হইল উপনীত প্রণাম কারয়া ভেট এড়ে চারি ভিত। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৪8০9৮ আইস বা দত্তের পে বৈস বা কম্বলে খুড়া ভাইপো! সম্বন্ধে নৃূপাত কিছু বলে। বিরহে তোমার মাত৷ হয়৷ গেল বুঁড় যুবক দেখিয়। তোমার করাইব সাধুঁড় । বিভার কারণ কিবা আন্যছ বেভার আজি কেন দৌখ এত ভেটের সন্ভার। তোমার আদেশে বাপ গেলেন পানে আনিবারে গেল শঙ্খ ঠামর চন্দনে | তোমার আসিষে যাঁদ বাবা আইল জিয়া পরম কল্যাণ রায় সেই মোর বিহা । চঁলব সিংহলে রায় চালব সংহলে বিদায় কারএ তব চরণকমলে । পাঠায়া। তোমার বাপে দুর্গম সিংহলে মন জেন পোড়ে মোর শোক-দাবানলে ॥ সপনে জাগিয়৷ বাপা কার মন দুঃখ হদয় সম্তেষ ইবে দোখ তুয়। মুখ । বড় দুঃখ লাগে মনে বড় দুঃখ লাগে মনে [সংহলগমন কথা না কারহ মনে। (সংহলে গেলেন বাপ! সাজিয়। তরি জীবন মরণ কথ। একুই না জানি। মাএর আয়/ত হাতে আমষ্য ভোজন কত ন! সাহর ব্রাতবন্ধুর গঞ্জন । ২২৬ চলির পাটন রায় চলিব পাটন দেখব লোচন ভরা বাপের চরণ । মাএর অন্ধের নাঁড় রাজীবলোচন তোম। বিনে অন্ধকার হব নিকেতন । বাপের উী্দঘশে জাইতে মাএর সংশয় লাভ চাহিতে মূলহ।র৷ কাঁহল নিশ্চয় । [সংহলে তোমার পিতা থাকে ভালে ভালে অবশ্য আসব সাধু কথ কাল গেলে। [পিত। ধর্ম পিত। স্বর্গ তপজপ পিত। তা মহাগুরু পিতা পরম দেবতা । [তাৰ ডাদ্দশ হেতু চলিব পান ইথে জাঁদ হয় মৃতু! পাব নারায়ণ । দেহ অনুমাত রায় দেহ অনুমতি বাপের ডীন্দঘশ আশে জাব লঘুগাত। আজ্ঞ৷ নাহি দেন রায় কার মায়া মে। শ্রীমন্তের নাহি রহে লোচনের লোহ । সাধু সাধু বলি রাজা দিল অনুমাতি শীকাবিকঙ্কণ গান মধুর ভারতী ॥ ৪০৯ শ্রীস্তের পিতৃভান্ত দেখয়। নৃপাঁত সাধু সাধু বণি রাজা দিল অনুমাত। অঙ্গে হৈতে উতারিয়। দিল খাসা জোড়া চড়িবারে দিল [ তারে ] পাখারয়। ঘোড়া । কবজ প্রসাদ পান দিল জমধর মাথে আরোপিল তার সুবর্ণ টোপর। আরোপল অঙ্গে তার ভূষণ চন্দন লক্ষ তঙ্ক। প্রসাদ করিল ডিঙ্গার ধন। ভপাতিচরণে সাধু কাঁরয়া বিদায় মাতায় সন্ত মাতায় ঘ্বাপয়া রাজার পায় । নৃপাতিচরণে সাধু কারিয়। প্রণাম তর৷ কার সদাগর চলে নিজধাম । চন্ডীমঙ্গল পাইলেন বিদায় জাদ রাজার সভায় অঞ্চলে ধাঁরয়া কিছু জননী বুঝায় । বাপের উীদ্দশে গুত্র চালবে সিংহল অপাতক হৃম্বচিন্ব (?) দেহ কুতুহল। [সিংহলের কথা শুনি বড় লাগে ব্রাস জে জন সিংহলে জায় নাহি আইসে বাস। জে জায় তরণী পথে বিষম সঙ্কটে রাঁ্দিন জলে ভাসে স্থল নাহাঁ তটে। শিশুমাত পুন্র তুমি না কারহ দন্ত যান্ন কর্যা এক মাস করহ বিলম্ব । তমু যাঁদ তব পিতা না৷ আইসেন ঘর তরণী সাজিয়৷ জাইয় সিংহল নগর । এমন বচন যাঁদ কাহল জননী শুনিঞ" শ্রীমন্ত তারে বলে জোড়পাণি। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৪১০ জননী গে৷ নিষেধ করহ অকারণে আছে বা নাহীক পিতা জাটনিব সকল কথা অন্বেষণ করিয়া পাটনে। দারুণ কর্মের গাত খুড়া জেঠ। নাহী জ্ঞাত কে ধরব করে তিলকুশ জলাপণ্ডে শ্রাদ্ধ মুখ্য অনুদন বাড়ে দুঃখ উপবাসা পুরাতন পুরুষ । একা উপদ্ধীপ সাত ভমিয়া খুজিব তাত অবশেষে প্রবোশিব লঙ্কা [বচারিয়। নান। তন লইব রামের মন্ত্র নিশা্চরে না কারব শঙ্কা ৷ সগুম দিবুল ; দিবা ২২৭ ি্চয় মানিন যাঁদ তোমারে বিত বিধি নহীলে উদিত শর্গা মলিন যেমন িণাঁ নাহী পিত। জীবে গো গবানে কিব৷ করে শত শত তারা। আসিয়া আপন দেশে পুল করিয়া কুশে গুনের শুনিঞা কথা হদয়ের তোঁজ বেথা করিব পিতার গারন্রাণে। বাঁসলেন অভয় গৃজজনে গুরুর ভরমা মিছা ঘ্ামীর করহ ইচ্ছ৷ রায় পাদ ছল গান ববি শ্রীমকু্দ মী বিনু যুবাকালে জরা চ্রবর্তা শ্রীকবিকন্কণে ॥ সগ্ডম দিবস নিশা-জাগরণ ৪১১ আরোপাঁ হেমঘটে দ্রমরা নদ তটে চাকা পুজেন খুল্লনা আরোপাঁ পদছায়া শ্রীমন্তে কর দয়া পুরহ আমার কামন। । প্রথমে লঙ্বোদর পুঁজল দিবাকর রথাঙ্গপাণি উমাপাঁত মউরবাহন পুঁজিল ষড়ানন পুঁজল লক্ষ্মী সরষ্তী । তগুল অঙ দুর্বা জাহবীজলগর্ভা ধেয়ান ধারণে কার পুন কাণ্চনাবরচিত বারি লনা বেদের বিধানে । অলস চাকা রাম পূজে নটর বরনে দেবার চরণে নাচে গায়ে বিদ্যাধরী । স্তব করে শ্রীপাত কাঁরয়৷ শৃভক্ষণ চামর দর্পন কাল প্রাণপাত পুঁজল গণনাথ তরাণধবজ আগে বান্ধে এ অষ্াঙ্গ নোটাইয়৷ খিতি। বংশ কেরআল ইন্ধন) করবাল 8550 অশেষ গুণধাম রাহ্মণভূমির পুরন্দর গুঁজল দআ পুষ্পগন্ধে । ররর গাঠার গাবর পাঁজল কর্ণধার ঁচর১ চারুগদ রচে মুকুন্দ কবিবর ॥ বসন ভূষণ চন্দনে ডিঙ্া প্রদক্ষিণ কাঁরল দু সাতন সন্ত্রমে সব সাঁথ সনে । নৌকায় দিয়। ভর! গমনে কাঁর তর ৪১২ শ্ীমন্ত চলিল [সংহলে অভয়া চ্থান দেহ চরণকমলে নি রনি ইরাক দূর কলে আশাবনদ লরি ই বৃধা জন্ম হইল মহিতলে। আসন ভূতগুদ্ধ কারন যথাবাঁধ পাত পুর জ্ঞাত বন্ধু সকল শোকের সিদু ন্যাস ধারল ধারণে কালচর বড় ভার ৯৭) 2১৮৯১৫-১৪)৮ ৪৮০৩ 551 &]ত 2১18 02185 া৮১১589)৮7 2৫) 21:2554-5815 5১15185 0189 1815 25৩ 05135 | স্য্দী।।াম টি 1১)1 ) 1. 0 | । ] শি এ ০ ৯ রি. ২ এ ২ এ চ ২ টি নখ খ্ তি ২ ৯৪ ১২, ২৬ 4 সগ্তম দিবস: নিশা জাগরণ সজীবে করয়ে গ্রাস ইথে মিথা। অভিলাষ মেহরত জথ সতম্তর। লাঙ্ঘয়া তোমার ঘটে ছ্লামী গেল বিসম্কটে পুনু কৈলে দাসীর আইয়াত হৈল বড় পরমাদ জীবনে নাহক সাদ দূর কর ভবগতাআত | তুমি বনে দিলে বর কোলে হইল বংশধর আছিল মনের অভিলাষ ন৷ পারল মনোরথ সুত জায় দূরপথ সুখে বাধ করিল নৈর।শ । গাঁতপুন্র-মায়ামোহে খুল্লনা ভাঁসল লোহে প্রবোধ করেন হৈমবতী রাঁচয়া ব্লিপাদ ছন্দ গান কাঁব শ্রীমুকুন্দ দামুন্যায় জাহার বসাঁত ॥ ৪১৩ থুল্লনারে চাণ্তকার বড় মায়ামোহ নেতের অশচলে পুছেন নয়ানের লে।। সিংহল জাইতে পুন্নে দেহ অনুমতি [বিপদে থাকিব তব পুন্রের সংহাতি। খুল্লনা বলেন মাত৷ এ চিন্ত। বড় [বিপদের কালে পুন্রে তম পাছে ছাড়। হাথে হাতে শ্রীমন্তে কারল সমর্পণ জাতপন্র অঙ্নুরি বাপের নিদর্শন । তওুল অষ্ দুর্ধা দিল তার হাথে 1বপদসাগরে জেন চঙ্জী হয় চিত্তে । পুষ্প 'দয়৷ চন্ডীপদে করাইল নমস্কার 1বপদে সময়ে তোম৷ কারবেন উদ্ধার । দেবাদ্বিজগুরুজনে করিয়া প্রণাম ত্বরায় সিংহলে সাধু কারন পয়ান। মায়ের চরণে সাধু কইল নমস্কার আশীর্বাদ কৈল রাম। রাজপুরস্কারঃ । ২২৯ গেলে 'িতাপুত্রে জেন হয় দরশন নেউটিয়া হইয় পুন্ন দেশেরে গমন । দুর্গপথে দুর্গা দেবী করিহ ম্মঙ্রণ অনেক সঙ্কটে তোমার রবেক জীবন। সর্বক্ষণ চীন্ত্য চন্ডী অষ্টাক্ষর পড়ুৎ ধন পুন যশ লক্ষ্মী পরমায়ু বাড়ু। বিমাতার পায়ে ছিরা হইল নমস্কার বাহু়িয়। দেশে পুনু না আইস আর । গেলে তোর পিতাপুতরে নৈয় দরশন পুনরাঁপ দেশে পুনু না কর গমন। কি বোল বাঁলতে সতাই জন্মাইলে দুঃখ পুনর্ঝার কেমনে চাহিব তুয়া মুখ । খুল্লন৷ বলেন বাছা শুন মোর বাণী বিপদে রাখবেন তোরে নগের নান্দিনী । সভ৷ সনে সন্ভাষ৷ করিল লঘুগাতি দেবী বলেন ভয় ন৷ ভাবিহ প্রীপাঁতি। খুল্লনা বলেন মাত৷ কর প্রাতিকার থাকিবে নৌকার আগে হয় কর্ণধার। রইঘর চাপিয়। বাঁপল সদাগর হাথে দণ্ড-কেরয়ালে বাঁসল গাবর | দাণ্ডাইয়া রহিল সভে ভমরার ঘাটে দুর্গাবরে কর্ণধার সাধুর নিকটে । কার হাথে কেরআল কার হাতে বাশ কার হাথে দণ্ড কার হাথে জগঝণপত | বাহ বাহ বাঁলয়৷ ডাকেন শ্রীপৃতি শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর ভারথি ॥ প্রথমে দ্রমরার জলে শ্রীমস্ত কোলাহলে পাঁজয়া মঙ্গলচন্ডী আই এড়াইয়। ভমরা-পানি কোলগ্রাম১ এড়াইয়। জাই। সম্মুখে উজবান ৩ ০ চাকদ৷ কুমারখাপা৷ এড়ায় সাধুর বাল। হাুহা়িং কৈল তেয়াগন কাণ্ডার মালুমক টে এড়াইয়৷ থান। হাটেও মুডুকায় দিল দরশন সমুখে হুসেনপুর দৌলতপুর বাহিল তখন কাণ্ডার মেলান বায় বাকুল্য৷ এড়াইয়৷ জায় কাকিলায় দিল দরশন। এড়াইল গাঙ্গবাড়াঃ ডাহনে রাহল কোঙরপুর কাণ্ডার হেলাম ঝয় বেলাড়৷ বাহিয়৷ জায় বেলভোবা কথ না ছগুর | হাটোড়। মেণান বায় আঙ্গারপুর বাঁনঞার বালা সোনালিয়া নবর্গী তাহারে কাঁরল বা উত্তারিল সাধু বাগ্যনকোলা । নোয়াহাটি* কতদূর পাথাইঘাটে* দিল দরশন পাইল গঙ্গার পানি গ্জ। কৈল গঙ্গার চরণ । মহামিশ্র জগন্নাথ কবিচন্দ্র হদয়নন্দন ঠাহার অনুজ ভাই [বরচিন শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ গড়পাড়া কত দূর ঘাট কুলীনপাড়। ঘরখি এড়াইয়৷ জায় সমুখে উধনপুর মহাসাধু মনে গুণ হৃদয়ামশ্রের তাত চর্তীয় আদেশ পাই ৪১৫ ডাহিনে লালতপুর বাহল ইন্দ্রান ইন্দেশ্বর পূজ কৈল য় পুষ্পপানি। ভাওসংহের ঘাটখান ডাহিনে এঁড়য়া মাঠ্যার সফরখান বামেতে ছাঁড়য়। । সঘনে কেরুয়াল পড়ে জলে লাগে সাট নিমেষেকে জায় সাধু যোজনেক বাট । চণ্ডীমঙ্গল বেলনপুরে ঘাটথান কার তেয়াগন পূস্থলির ঘাটে সাধু দল দরশন। দ্ুতগতি চলে সাধু নাহি করে হেল। কোথা হয় রন্ধনভোজন কোথাহ খণ্ড কলা পুরধুল১ সদাগর কার তেয়াগন নবাদ্ধপে ডিঙ্গা আসি দিল দরশন । চৈতন্চরণে সাধু করিয়া প্রণাম সেখানে রাহয়া সাধু কাঁরল বিশ্রাম ।২ বজনিপ্রভাতে সাধু মেলি সাত নায় নবাদ্বপ পাড়পুর বাঁহয়। এড়ায় | সমুদ্রগড় পাড়পুর* বায় ত্বরাতয়া নাহ মানে সঙগাগয় বসস্তের খরা । নাইয়া পাইক গাঁত গায় শুনিতে কোক ডাহিনে রাহল পুরী আমুয়৷ মলুক। বাহ বাহ বলিয়৷ পাঁড়য়।৷ গেল সাড়। বামে শান্তপুর ডাহনে গুপ্তপাড়। । উত্ব৷ বাহিয়৷ কিচীমার পাশে আসে মহেশপুরের ঘাটে সাধুর ডঙ্গ৷ ভাসে । বামভাগে হালিসহর ডাহিনে ন্রিবিনী দুই কুলের তপজপে কিছুই না শুন। লক্ষ নেক্ষ লোক এক কালে করে ঘ্লান বাস হেম তিল কুশ কেহ করে দান। রজতের সিপে কেহ করয়ে তপণ গভের ভিতরে কেহ করয়ে মুণ্ডন। শ্রান্ধ করে কোন লোক জলের সমীপে সন্ধাকলে কোন লোক দেই ধৃপদীপে। উভবাহু করি ডাকে গঙ্গা নারায়ণ সদাগরে কর্ণধার 'জিজ্ঞাসে কারণ । বুহত্র বান্ধিয়৷ কিছু বলে সদাগর গাইল পাঁচালি মুকুন্দ কবিবর ॥ ৪১৬ অঘধানে কর্ণধার শৃল পুরাণের সাম কাহব গঙ্গার উপদেশ সপ্ুম দিবস ; নিশা জাগরণ হরিপদে উতপাতি বহ্ধ-কমণ্ডলে স্থিতি হরশিরে বাস জার শেষ । এককালে পশুপাতি পণ মুখে কার শ্রুতি গান গাঁত হরি সম্মিধানে গীতে সমাপিল মন বাপ কৈণ কবঙ্গ-আধানে । আছল ব্রহ্মার পাশে দ্রব হইলা নারায়ণ রহ্গ-কমুুল বাসে পবিভ্র করিয়া ব্লক্গালোক ইন্দের সাধতে মান কশ্যপ মীনর হইল তোক। হইয়া ব্রাহ্মাণবটু ছয় বেদ অংশে পটু ধরি দণ্ড মেখলা আজনে নরিপাদ ধরণী দান আউল! দৈতারাজ্‌-ধাম অশ্বমেধ অবসান-াদনে । পাদ্য অধ্থ্য দিয়৷ বলি কহ দ্বিজ নিজ আঁওলাষে কাহলেন ভগবান আইলাঙ তোমার সকাশে । দন দিতে চান রায় নিল দান তিন পদ খাত ক্ষিত জুড়ি পদ একে আর পদে উধর্ব লোকে তৃতীয় বাঁলর মাথে স্থাতি। দেখি রক্ষা সসন্ত্রমে কৃপাসিন্ধু ভগবান বরপাদ ধরণী দান নাহ দেন দ্বিজ সায় হারপদ নিজ ধামে পাদা দিল কুমুণ্ুল ঠেলি কলুযহ।ঁরণী ব্রমে আইল গঙ্গ। ধ্রবধামে সুমেরু১ কৈল পুণ্যশালী । আঁসয়া গগনতলে উরলা কমকাঁগারশিরে হইল গঙ্গ। চারি ধারা পূর্ব যাম্য পশ্চিম উত্তরে । [িতানামে পূর্বধারা ক্রমে ভানু মণ্ডলে সকল কন্ব,হরা সকল পাতক হরাও ভদ্রা পাবান সুরধাঁন ধোঁত হার-পদদ্বনা জমুদ্বীপ নিস্তারকারিণী । দক্ষিণে অলকনন্দা [জজ্ঞাসিল কৃতাঞ্জলি ২৩১ পশ্চিমে ধবলধারা বঙ্ষ; নামে পুণাধারা পাবন্্ করিয়া কেতুমান উত্তরে মঙ্গল তারা ভদ্র৷ নামে শেষধার৷ ল্লানে করে পুণ। বিবান।ঃ প্রবাহ অবাঁধ কাঁর চাঁর হস্তে ধর হরি ভাগ্যমান বৈসে এই স্থলে ইথে যজ্ঞ করে জপ মত্ত হয় যদি মবে জলে । শুন গঙ্গ। অবতাব সুখী হইলা কর্ণধার কেবল অক্ষয় তপ লন কেন সাতন তর্পণে আচ্ছাদিয়। বৌতপটে শ্রীকাবকঙ্কণ রস ভনে ॥ জল নিল নৌতন ঘটে ৪১৭ কাঁঙ্গ তেলঙ্গ অঙ্গ বঙ্গ কল্নণট মহেন্দ্র মগধ মহারাষ্ট্র গুজরাট | বারেন্দ্র বন্দব বিন্ধ্য পিঙ্গল সফর উংকণ দ্রাবিড় রাড়া বিজযানগর। মথুর৷ দ্বারিক৷ কালী কাণ্চীপুর জয় প্রয়াগ কোরবক্ষেত্র গোদাবরী গয়। ॥ হট কাঙুর কৌচ হরেক্গ শ্রীহটু মানিকা ফটীকা লঙ্কা প্রলঙ্ব নাকুটন। ঝগন৷ মলয়৷ দেশ কুরুক্ষেত্র নাম বটেশ্বর আহুলঙ্কা স্থল সপ্তগ্রাম । িলাহটু মহাহটু হাস্তনা নগরাঁ আর সফর কত থাঁনবারে নারি। এ সব সফরে জত সদাগর বৈসে জঙ্গ ডিঙ্গা লইয়া তার৷ ঝাণিজ্যেরে আইসে। সপ্তগ্রামের বণিক কোথাহ না জায় ঘরে বস্য। সুখমোক্ষ নান ধন পায়। তীর্ঘ মধ্যে পুণ্য তীর্থ ক্ষাত অনুপাম সপ্ত-ধাষির শাসন বলায় সপ্তগ্রাম । ২৩২ কাগ্ডারের বচনে করিয়া অবগাঁতি তিবনিতে প্লান দান করেন শ্রীপতি অভয়াচরণে মনজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত [ ৪১৮ খাত মধ্যে সপ্তগ্রাম আত অনুপাম দিন দুই সাধু তাহে কাঁরল বিশ্রাম । কন্যা বেচ্যা নানা ধন ভর! দিল নায় বাহ বাহ বালয়৷ ঘন দাও বায়্যা জায় । নায়ে তুল্য সদাগর নিল 'মঠ। পানি বাহ বাহ বাঁলিয়। ডাকেন ফরমানি । গাঁরফা বাহিয়া সাধু বায় ভাগারথা কবতোয়৷ এড়াইয়৷ পাইল সরম্থতী । র্ষপুর পদ্মাবতী জেই ঘাটে মেল। বুড়া মন্তেশ্বর বায় বানিঞার বাল। । উপনীত হইল গিয়৷ নিমাঞ-তীর্ঘের ঘাটে নিমের গাছেতে জথা ওড় ফুল ফোটে । কেরুয়াল বায় নায় হইয়। একাঁচত্ত ডানি ভাগে রাহল পুরী নিমাঞ-তীর্থ। ত্বরায় চলয়ে তরী তীরের পয়ান বেতড় ছাঁড়য়। সাধু পাইল নবাসান। [হিমাঞ বামেতে রহে হিজবলির পথ রাজহংস কানঞ লইল পায়রাবত। বফুহরর দেউল ডাহনে এঁড়য়। শাকরাড়। বাহে সাধু মন্তেশ্বর দিয় । অমলঙ্ক১ দিয়! সাধু গেল ছন্রভোগে তায় রয় ম্লান দান ভোজন করেন রঙ্গে । লঘুগাত সদাগর ভ্ায় কালিপাড়া দুকূলে যারীর ঠট ঘন পড়ে সাড়া । সেই দিন সদাগর হাথ্যাগড়ে রয় রজ মিপ্রত্যাতে মেয় সাত নাম । চতীমঙগল ঘন কেরয়াল পড়ে জলে বাজে সাট একদণ্ডে চলে তাঁর যোজনেক বাট । দাক্ষণে মেদনমল্ল রামে বিরখানা কেরয়ালের ঝটঝট্য নদী জড় ফেনা । এক দুই লোক জলের মাঝে আইসে মগরার কথ সাধু তাহারে জিজ্ঞাসে । দূরে হইতে শুনি মগরার জলের নিষ্কন আষাঢের জেন নব মেঘের গর্জন । মুহান বাহিয়৷ সাধু কারি ত্বরাত্বরা প্রবেশ করিল সাধু দুর্জয় মগরা । পর্লাবতী সঙ্গে চণ্ডী কাঁরয়৷ বিচার শ্রীমন্তেরে বিড়ীস্বতে পাতেন অবতার । এমন বিচার কাঁর পান্নবতী সনে চার মেঘ মাগ্যা নিল ইন্দ্র বিদ্যমানে । নদনদীগণে মাত করিল ম্মঙরণ অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবিকঙ্কণ ॥ ৪১৯ ঈশানে ডাঁরল মেঘ সঘনে চিকুর উত্তরপবনে মেঘ ভাকে দুরদুর | নিমিষেকে জোড়ি মেঘ গগনমণ্ল চাঁর মেঘে বরিষে মুষলধারে জল । নদী মেঘে বিষ্টি জলে পথ হইল বারা জলে মহা একাকার পুখুর হৈল হারা । ঝনঝন বৃষ্টি-শল৷ সঘনে বিজলি দেহলা পাঁতল অঠার খালি জুল। চার মেঘে বাঁরষে অষ্ট গজরাজ সঘনে বিজ্ঞীল পড়ে বেঙ্বতড়ক৷ বাজ । কাঁরকর সমান বাঁরষে জলধারা জল মহা একাকার পুু'র হইল হারা। বল্ের নিনাদ বিনু কিছুই না শৃনি ম্মঙরে নায়ের লোক মুনি জয়মুনি | সপ্তম দিবস নিশ। জাগরণ রইঘরে পড়ে শিল বিদারয়া চাল ভাদ্দরপদ মাসে জেন পড়ে পাকা তাল । চণ্ডীর আদেশে ধায় বাঁর হনুমান ডঙ্গার ছাওননি ভাঙ্গ্যা করে খান খান। ডিঙ্গায় ডিঙ্গায় বীর করে ঢুসাঢাস কৌতুকে হাসেন জয়া সিংহরথে বমি । সাধু শ্রীয়পাতি বলে শুন কর্ণধার বিষম সঙ্কটে পাব কেমনে নিস্তার । নদনদীগণ জত করিল পয়ান অভয়ামঙ্গল কাবিকঙ্কণ গান ॥ ৪২০ চন্ডীর আদেশে ধায় নদনদীগণ মগর৷ নদীর সঙ্গে করিতে মিলন । আঙ্ঞ। দিল ভবানী চাঁলল মন্দাকনী ছাড়িয়া গগনাস্তি মবর-জাল ছাড়িয়া পাতাল চলিলা ভোগবতী । আমুদর দামুদর ধাইল দারুকেশ্বর [সলাই চন্দ্রভাগ। কুবাই দাবাই ধাইল দুই ভাই বগাঁড়র খাল ধায় বগা। প্রবলতরঙগ৷ ধাইল গঙ্গ। ভৈরবাঁ কর্মনাশা ধাইল দ্ুুতপদ শোল সয় মহানদ ধাইল বাহুদা বিপাশা। চালল বুমঝুমি কয়িয়া দামাদামি [ঘয়াই মুণ্ডাই সঙ্গে ধাইল তারা গুষ্কার৷ কৃতৃহলী রা বলিল রঙ্গে গা যমুনা ধাইন বরুণা অজয় সরহ্বতী উ, ম,—৩৩ ২৩৩ ধাইল কুস্তা বাফা ধায় গোমতী সরযূ বংশাবতী হরাবতী নরাবতী১ ধাইল লঘুগাতি কানা ধায় দামেদর খালিজুলি সঙ্গে চলিল রঙ্গে ২ মন্তেশ্বর | ধাইল কাসাই মহানদী 'বিড়াই খরস্রোতা বামনেরও খান। চাঁরাদকে জল হইল ধবল মগরা জুড়া৷ বয় ফেন৷। বঙ্জাইয়৷ দণ্ড মাকড়া চষ্তী পাঁড়ল সত্তর হয়া। সঙ্গে কাল্যাথাই লইয়৷ মহানৈ সুবর্ণরেখা লয়্যা । নদনদাঁ দেখিয়। কৌতুকে অভয়া উঠিল৷ কেশারযানে ললিত প্রবন্ধে দিজবর মুকুন্দে পাঁচালি প্রবন্ধে নে ॥ ৪২১ কাণ্ডার অরে ভাই রাখ ড়ঙ্গ| যথ৷ পাও স্থল এর হইল দেবরাজ বেঙ্গতড়ক৷ পড়ে বাজ বরিষে মুষলধারে জল । [শিল জেন পড়ে গুল ভাঙ্গয়ে মাথার খুলি বেগে জল জেন বাজে কা [বিষম জলের ভয় প্রাণ মোর স্থির নয় ডাঁওয়৷ ধারতে নারে দাও। দুঃসহ বিষম ঝড়ে গ্লাছ উপাড়িয়া৷ পড়ে দুকুল হানিঞ। বহে খানা কহ কর্ণধার ভাই কেমতে নিস্তার পাই রাশি রাশি কত বহে ফেন।। 3 ধড়ে আচ্ছাদন উড়ে বিডি জলে 'ডিঙ্গা ঘুড়ে নায় পাইক জড় হইল শীতে নাঞ দেখি প্রাতকার জলে আহ ভাসে শতে শতে । দেখ রে নায়ের পাশে কুন্তীর মকর ভাসে গিরিগুহা বিকট বদন কাগডার উপায় বল দেখিয়ে প্রবল জল আজি দেখি সঙ্কট জীবন তুষু ডুষু করে ডিঙ্গা স্মরণ করহ গঙ্গা অস্তকালে ভজ ভগবতী পাঁড়য়া বিষম ফান্দে হদয়ে ভাবিয়া শ্রীয়পতি ৷ মহামিশ্র জগন্নাথ কবিচন্ত্র হদয়নন্দন তাহায় অনুজ ভাই বিষচিল শ্রাকবিকন্তণ ॥ শুন ভায়া কর্ণধার ভবানী বলিয়৷ কান্দে হদয়মিশ্রের তাত উণ্ীর আদেশ পাই ৪২২ রক্ষ মাতা ভবানী বারেক কর দয়া তুমি না রাখিলে মোরে কে কাঁরব দয়া । রক্ষ মাতা ভবানী মগরার মকরে তুমি না রাখলে আর কে রাখবে মোরে । তোমা স্মঙরিয়া যান্রা। কারলাঙ আসিতে সমার্পয়৷ দিল মাতা তোমার হাথে হাথে । তবে কেন করে বল মগরার জল নিশ্চয় জানিল মোর জীবন বিফল। ভগব্তী বলি সাধু বশপ দিল জলে রথে ভরে অভয়৷ শ্রীমন্ত কৈল কোলে । মহামায়া গগনে হাসেন খলখল চণ্ডীর কৃপায় হইল এক-আটু জল। দুর্গা দুর্গা পরা তুমি দুর্গাতনাশিনী দুর্জয় দাক্ষিণাকালী নন্দের নন্দিনী । চণ্ডীমঙ্গল নিদ্রারূপা হয়্যা তুমি ভাঁগুলে প্রহরী জখন দেবকাঁ হইতে জন্মিলা শ্রীহরি। নানা অবতারে তুমি বিষ্ুসহায়িনী দুরতনাশিনী জয়া দুর্গাতনাশিনী। যমুন৷ আবশালী বম করালী তাঁথ পার কৈল৷ হরি হইয়া শুগালী । ভুব-ভার খণ্ডনে কৈলে আপন প্রকার কংসভয়ে কৃষ্ণে কইলে কাঁলিন্দীর পার । ঝড় বুষ্ি দুর হৈল চণ্ডীর কৃপায় ডঙ্গ৷ মেল্যা সদাগর দুতগতি জায় । ডানি বামে ছাড়ি জায় কত কত দেশ সঙ্কেত-মাধবে দেখে সোনার মহেশ । সদাগর কহে কিছু তার বিবরণ অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৪২৩ অবধানে কণধার শুন পুরাণের সার সগর-বংশের উপাখ্যান ঞ।র বল গজ অযুত যি হাজার সুত সাগরের করিল নির্মাণ । প্রিভুবন-অবতংসে আছিল মিহিরবংশে পৃথু নামে মহামহিপাল তার সুত হৈল বাহু রিপুচন্ডে জেন রাহু অবান পাঁলিল বহুকাল । পাপ গ্রহযোগ ফলে; পরাজই জরাকালে খিতি ছাড়ি গেল৷ বনবাস বনে মৈল মহাঁপাতি তার শশিমুখী সতী অনুমূত। কৈল অভিলাষ । তারে গর্ভবতী জানি আদি তথা গর্গ মুনি মরণ করিল নিবারণ নাঞি গেল স্বার্মী সনে গর্ভ কথা সতা শুনে গরল অন ফরায় ভোজন । সগ্তম দিবস ; নিশা! জাগরণ ভার গর্ভ দেব-অংশ গরলে নহিল ধ্বংস প্রসবিল রানি যথাকালে গরলযুত হইল সুত দৌখ মুনি কৌতুক সগ্রর আখ্যান কৈল ভালে । তিন লোকে খ্যাত কার্ড হইল নৃপাঁতর মৃত্তি আঁধষ্ঠান হইল িংহাসনে ১ও আদ তালজঙ্খ হইল জত বীরপুঙ্গ একা রাজা জই কৈন রণে। নিষেধ কারল মুনি নাঞ রাজা বধে প্রাণী মস্তক মুণ্ডনও কৈল রণে সেই কৃপাময় রাজ। সুতসম পালে প্রজা বিধাতার সম্ভোষ বড় মনে । কেশিনী সুমাত তার৷ অসমঞ্জ কেশিনীনন্দন তার সুত অংশুমান পিতামহ-ৃহতপরায়ণ। ভূপাতর দুই দারা খ্যাত সর্বগুণ-ধাম সুমাতর গুণযু্ত যঞ্চি হাজার সুত অযৃত কুঞ্জার মহাবল তসমণ্ডা কৈল দোষ বনবাস দিল প্রাতফস । দিল ওর্ব* অনুমতি অশ্বমেধে ছাড় দিল হয় অশ্ব হরি নিঞ ভাগে ইন্দ্র গেল আগ্ন নিলয় । যাঁদ হারাইল হয় সুতে নরপাঁত কয় গুন যাটি সহস্র কুমার ঘোড়৷ আনি দেহ মোরে মখভার তোমা সভাকার । চাহিয়৷ বুলি ঠাঞ ঠাঁঞি না পাই অশ্বের অন্বেষণে থুঁজতে ঘোড়ার নথ নিমিষ না চলে চোখং হয়"খোজ পাইল দাক্ষণে। সুলঙ্গে ঘোড়ার পথ সবে মেলি কোড়েন অবনী নৃপাঁত কাঁরল রোষ রিপুজই নরপাঁতি থুইল কাঁপল আগে পরাণে বাঁধবে চোরে যাটি হাজার ভাই দোঁথ সভে রোষজ্জুত ২৬৫ নৃপতিকুমায় জত প্রবোঁশ পাতালপথ দেখিল কাঁপল মহামুনি। অশ্ব দোখ তার কাছে কোপে নৃপসুত নাচে বকধ্যানে আছে ঘোড়াচোর এমত নিন্দিয়৷ তারে পিঠে শেলঘাত মারে কোপদৃষ্টে মুনি চাঅ ঘোর । মুনিদেহ-কোপানলে নৃপাঁতকুমার জলে একটী নাহল অবশেষ আঁসিয়৷ নারদ তথা সগর পাইল বড় ক্েশ। ডাক আনি অংশুমান চল রে অশ্বের অন্বেষণে অবিলম্বে অংশুমান গেল৷ কাঁপলের স্থান শ্রীকবকন্কণ রস গানে ॥ কাহল সকল কথা সগর দিলেন পান ৪২৪ রথ ছাড়ি গেলা শিশু কাপলের স্থানে অবনী লোটায্য। স্তত করে অনুমানে । অনবিজ্ঞ শিশু আমি কি বলতে জানি আপনার গুণে কপ কর মহামুনি । কে বাঁলতে পারে প্রভু তোমার মহত পরশিতে নারে তোম৷ তম-্রজ-সত্তে । আপনার পাপে মৈল সগরকুমার কৃপ৷ কর মুনি দোষ নাহক তোমার । অবনী লোটয় স্তুতি করে বারে বারে অনুগ্রহ কর মুনি তুমি কৃপাসারে । অংশৃমানে সুখী হয় মুনি দিল হয় উপদেশ কহি তারে মুনি মহাশয় । তোর পিতামহ ভস্ম হইল কোপানল্গে ২৬৬ গাঁত নহিবেক তার বনু গঙ্গাজলে মুনি প্রদক্ষিণ কার চলে অংশুমান ঘোড়া আনি দিল সগরের বিদ্যমান । অগ্বমেধ সাঙ্গ কৈল সগর নৃপাতি অংশুমানে রাজ্য দিয়া গেলা দিবাগাঁত । রাজ্য তেজি তপস্যা করেন অংশুমান ঘোড়া আনি দিল সগরের বিদ্যমান । সুতে রাজ্য দিয়া গেলা হয়া। 'দিব্যবান১ । তাংশুমানের পুর হইল দিলীপং ভপতি গঙ্গ হেতু তপস্যা করেন নরপাঁত। দিলীপ করিল তপ অযুত বংসর সুতে রাজ্য দয় স্বর্গ গেল৷ নৃপবর । বংশে রহিল দুই বিধবা রমনী নাহার তপস্যায় মৈল নৃপমণি । এফ দিন দুর্বাসা তপস্য। ধার জায় ভন্ভি দেখি দুষ্ট মম বর দিলা তায় । পৃণবর্তী হও তুমি আমার বচনে মুনি আশীবাদে রাম। দুঃখ ভাবে মনে । বংশে পুরুষ নাহি শুন মহাশয় অভাগ্য করিয়াছি কেমতে হবেক তনয় । মুনি বলেন কতু মিথ্যা নহে মোর বাণাঁ ধাতু কালে সঙ্গম জাইহ দু সাঁতনী । এতেক বলিয়৷ মম গেল৷ তপবনে সেই 'দিন সঙ্গম গেলেন দু সাঁতনে । দুই ভগে জনম লাভল ভগ্গীরথ সাপে বর অষ্টাবরু দিল দৃঢ় পথ । কুলের বৃত্তান্ত জানে ব্রাহ্মণের স্থানে বংশের বিবরণ জত জামে নিজ ধামে । গঙ্গাহেতু তপস্যা করেন সাবধানে গঙ্গা আনিবারে বাল। করিল গমনে ।৬ রাজ। তোঁজ তপস্যা করেন ভগীরথ প্রসন্ন জাহবী তারে হইলা দৃষ্টিপথ । ভগীরথে কন গঙ্গা বর মাগ রায় ভগগীরথ নিবেদন করেন অভিপ্রায় । চগ্তীমঙ্গল ক্ষ সাপে মৈল মোর পিভামহগণ আপনি হইলে তার উদ্ধারকারণ।। য়েমন শুনিঞ গঙ্গ৷ রাজার ভারাথ মহেশ মোবিতে তারে দিল অনুমাতি। আমার ধারণে প্রভু ঠিব মহাবল নহিলে ভুবন তোঁজ জাব রসাতল । মহাঁতলে জাইতে বড় ভয় কার রায় মহাপাপাঁ জন যাঁদ মোর জলে নায় । সেই পাতক খগ্ডাবারে কহ মেরে পথ শুনিয়। গঙ্গার বাণী বলে ভগীরথ। হরিভন্ত জন তোমার পরাঁশব জল সেই হেতু পাপ তোমায় না করিব বল। প্রসাদ কারয়৷ গঙ্গা দিল অনুমাঁত তপস্যায় হর তুষ্ট কৈল নরপতি । ₹পস্যায় হর তুষ্ট হইলা ভগীরথে অবনী আনিতে গঙ্গা হর কৈল মাথে। হরাশয় হইতে গঙ্গা আইসেন অবাঁন আগে ভগাঁরথ জান দিয়া শঙ্খধবনি | হিমালয় শিখরে উরিলা নারায়ণী গুহায় সান্তায়া৷ গঙ্গা না পান সরণী । সুর-নর দুঃখিত দেখিয়। ভগীরথে হিমালয় বিদারিতে বৈল এরারতে। গজ বলে যাঁদ গঙ্গ। দেন আলিঙ্গন গুহা বিদারিয়৷ তবে করা৷ দিব গন । গজের বচনে নিবোদল নরপাতি গঙ্গ আসিবারে তারে দিল অনুমতি । যাঁদ সহিবারে পারে জলের নিস্বন নিশ্চয় তাহারে তবে দিব আলিঙ্গন । এরাবত আসি গুহ। ভাঙ্গল দশনে জলবেগে পড়ে গজ সাতাশী যোজনে । আপন৷ নিন্দিয়৷ এরাবত মারে চড় শ্বাস পালটিতে মান্রে পাইল হাথ্যাগড়। চাঁওকার চরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকষ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ মগুম দিবস : নিশা জাগরণ ৪২৫ শুন রে কাণ্ডার ভাই তীর্ঘ বড় এই ঠাই কহিল পুরাণ-ইতিহাস সগরবংশের কর্ম শুনিলে বাড়য়ে ধর্ম না থাকে পাপের পরকাশ১ । আগে দেখাইয়া পথ চলে রাজ৷ ভগীরথ বাযুবেগে রথের পয়ান গাব করিতে ধরা সুরনদাঁ তীর্ঘবয়া আইল৷। সগর সান্নধান । আসি গঙ্গা সেই পথে জিজ্ঞাঁসল ভ্গারথে কোথ। মৈল সগরনন্দন ভগীরথ বলে বাণী সাঁবশেষে নারায়ণা আপাঁন করহ অন্বেষণ । ূ্ব-ীপতামহ কথা বিশেব না জানি মাতা মাহি কেহ পুরাতন লোক জত কিনতু চরাচর তোমা নহে অগোচর কুপা কার দূর কয় শোক । ভগগীরথে কৃপাময়ী চায়া৷ বুলে ঠাঁঞ ঠাঞ্ি জুঁড়িলেন অনেক যোজনে তনু ভস্ম হাড় নখে বৈকুষ্ঠ চলিল সুখে নিল গঙ্গা গগন বিমানে । সেইত সগরবংশ ন্সাপে হইল ধ্বংস অঙ্গার আছিল অবশেষ পবাঁশ গঙ্গার জলে বিমানে বৈকৃঠ চলে সভে হয়্যা চতুভূজ বেশ । শাবকী পুরুষ জত বর্গ চলে চড়া রথ উভবাহু নাচে ভর্গীরথ অমরেং দুন্দুভি বাজে ভগ্গারথ মহারাজে পুষ্প-ীবষ্টি হইল দৈববংও । তীর্থ বড় এই চ্ছান ইহাতে করহ প্লান ঝাট চল 'সিংহলনগর তপণ কারয়া জলে ডঙ্গ। মেলা সাধু চলে বিরমে গুকু্দ কবিধর ॥ ২৩৭ ৪২ প্রণাময়৷ সঙ্কেত-মাধবে প্রদক্ষিণ ডঙ্গ। বায় সদাগর চলে রামিদিণ । দক্ষিণে মেদনমন্ল বামে বিরখান। কেরআলের ছটছটি নদী জুড়্য ফেনা । কলাহাট ধুলিগ্রাম গশ্চাং কারয়া অ!ঙ্গারপুর গ্রামথান বাম দিকে থুয়্যা। গমন করিয়া গেল বিংশাতি দিবসে প্রবেশ কারন ডিঙ্গ। দ্রাবিড়ের দেশে । কনকরাঁচত রথ রূপার শিখর উড়ছে শতেক হাত নেত মনোহর । দিবানিশি চলে সাধু কুলে নাহ চ্থল. পথকে জিজ্ঞাসে কত দূরেত সিহল। ঘন কেরয়াল পড়ে জলে লাগে শাট এক দণ্ডে চলে তাঁর যোজনেক বাট । ম্নায়ের ধাগ্ডান পাইকের কোলাহল তাঁথ রাহি পুজে সাধু ভবানীশঙ্কর । ডান ভাগে বন্দন৷ করিয়৷ নীলাচলে উত্তরিল শ্রীপাতি সদুদ্রের কুলে । চাঁওকাচরণে মন্ত্রক নিজ চিত প্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪২৭ ধন্য ইন্দ্র রায় বশ্ব জার যশ গায় দ্রাবড়-ভূপাল যশোধন দক্ষিণ-জলধি কূলে অক্ষয়বটের মূলে আরোপিল দেব নারায়ণ । মুস্তপদ এই ঠাঞ শুন রে কাণ্ডার ভাই কাহব পুরাণ-ইতিহাস পণ্চক্রোশ নীলাগার ইহাতে কৈবলাপুরী ইথে মৈলে বৈকুষ্ঠে বাস। ২৬৮ পথে বা স্মাশানে মরে ভানাথঃ মণ্ডপ ঘয়ে জথা তথ৷ হই মহাস্থানে ইচ্ছ৷ কার জেবা জায় প্রসঙ্গে সে ফল পায় মুক্তি পায় দেহ-অবসানে । সুভদ্রা বলাই সাথে সুখে দেখ জগন্নাথে সমুখে গবুড় মহাবীর শৃচি হয়্যা কর ফৌঁটা প্রদক্ষিণ মাঁণকোঠ। বৈকুষ্ঠেৎ করহ মান্দর। সমুখে বিমলা সেবা জার পাদপদ্ব সোঁব তেজ নর সংসারবাসন। সঙ্গে গুহ লম্বোদর এই স্থানে আস হর হরি সেবে হয়া দৃঢ়মনা । মা্কঙেয-হুদে ক্লান সঙ্কুতটে পিগুদান পিতৃলোক উদ্ধার কারণ সেব ভাইও নিরন্তর ইন্ুম্-সরোবর বটবৃক্ষে দেহ আলিঙ্গন প্রবল চপলভঙ্গা শ্লান কর শ্বেতগঙ্গা শ্রীনীলমাধবে প্রণাত খিতিতে বৈকু্পুরী আমি কি বালিতে পারি সকল দেবত৷ ইথে স্থিতি । পরশ রোহিণী কুণ্ডে পাপ কর্ম ইথে খণ্ডে শুনহ কুণ্ডের ইতিহাস এই কুণ্ডে তেজে জীব সাক্ষাতে হইয়া শিব কাক মৈলে বৈকুষ্ঠে বাস। জেব। যোগে আভপাষী অন্তকালে বারাণসী পভে জেবা পাপ দিব্গাত সে গতি পুরুষোত্তমে বটমূলে যাঁদ করে স্থাতি। বাজারে বিকায় ভাত কোথাহ না শুনি হেন বোল বিসন্ধ। বিকায় হাটে আলু বড় শুস্তার ঝোল । খিরখণ্ড ছেন৷ নাড়ু ছেনাপান৷ ভরি গাড়ু খিরপুাল পল্নছেনা খায়া। এই কুণ্ডে বিশ্রামে ধন্য খের জগনাথ সুপ ঘণ্ট পুরি ঘটে চণীমঙ্গল বেতণা তোঁজয়া প্ডা কাঁনল অমৃত মণ্ড হাটে চাখ্যা বুলে স্বাদ পায়্যা । ছেনা-নাড়ু কাজ-বড়া আদ্রকে বার্তাকী পোড়া মান বেসারি আদা ঝালঃ নাবরা বেঞ্জন-রাজা ঘৃতে পটল ভাজ। মধুবুচি ব্যঞজন রসাল । তেজ ভাই মিছা যুক্তি নহে যজ্ঞ ভোজন-সমান কহি আমি করপুটে প্রসাদ চিত্তে না করিহ আন। কিন হে তোড়ানি মন্দা মরীচ সমান জার তার সন্যাসী কাপাড়-ঘটা* অন্ন মাগ্যা ফিরষে বাজারে । অন্নের বাজাব মধ্যে পণ্স্থরা বাদ্য বাজে যাট্যাতি বায়তি লয় তোলা সুগান্ধ মল্লিকা দনা কিনয়ে সহ জমা তুলসীকাষ্টের কণ্ঠমাঙ্গা । কি আর বুঝাব তোমা! ভোজন করেন জগন্নাথ ভোজনে অনেক ফল দবশনে কলুষ বিঘাত। প্রসাদ সুখান অন্ন ভেদ 'বিন৷ চারিবর্ণ দেশান্তরে বয় লৈয়৷ খায় খেত্রে বা খেঘ্রের বই ভঁঞ্জলে যমের নাঁঞ দায় । অযোধ্যা মথুর। মায়। কাশী কাণ্পী অবাস্ত দ্বণরিক। হরিপদ আর জত [বিশেষে কহিব কত এই পুরী মুন্তর সাধিকা। বড় ধন্য এই গার ইহাতে বাঁসয়া হাঁর পদাঁব লভিলা জগন্নাথ বিস্তার উৎকলখণ্ডে কত কব এক দণ্ড চল ভাই কার প্রণিপান্ত। ভুজিয়৷ সদেহ মুস্তি কুকুর-বদন ওঠে পথশ্রমহরা জোন্দা অজানুলাস্ত জটা জে অন্ন বান্ধেন রম।* প্রসাদ গঙ্গার জল এই অন্ন সুধামই যথ! হরি-পদছায়। সগ্তম দিবস নিশা জাগরণ কয়াড় অনুজ জাত মহাসিএ জগন্নাথ একভাবে সৌবল গোপাল কবিত্ব মাগিল বর মনু জাঁপ দশাক্ষর মীন-মাংস ছাড়ি বহুকাল । [ মহামিশ্র জগন্নাথ হৃদয় মিশরের তাত কবিচন্দ্র হদয়নন্দন ভাহার অনুজ ভাই চণ্ডীর আদেশ পাই বিরাচিল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ] ৪২৮ নীলমাধবে সাধু প্রণাম কাঁরয়। বটবৃক্ষে মদাগর অ।লিঙ্গন দিয়া । হাটেত কিনিঞ খায় প্রসাদ-ভাত লোচন ভায়া সভে দেখে জগন্নাথ । কিনিয়া প্রসাদ-অন্ন নায়ে দিল ভরা বাহ বাহ করিয়। ঘন পড়ে ত্বর। | ডাহনে চড়ইগুহ। রহে কত দুর ডিঙ্গার ধায়নী পাইল কলধোতপুর ।১ স্বর্ণময় দ্বীপখান রহে বাম ভিতে জেণকদহে 'ডিঙ্গ৷ আসি হইল উপনীতে । লহলহ করে জেশক জেন কাঁরকর চুন গুড়াইয়। তাঁথ দিল কর্ণধর। হরিনামে দ্বীপখান রহে বাম ভিতে সর্পদহে 'ডঙ্গা তবে হইল উপনীতে । ঠাদড়-ইসর মুল ভিঙ্গায় বান্ধিয়া বলবুদ্ধে চলে সাধু ডিঙ্গ। খেয়াইয়৷ । 'ডিঙ্গার ধায়ান পাইল কোঙরনগর তাথ রাঁহ পৃজে সাধু ভবানীশঙ্কর । হাদিয়া-দহেত 'ডিঙ্গা হইল উপনীত দেখি কর্ণধার হইল বড়ই চান্তত। নসান কাটারি নৌকার আগেতে বান্ধিযা যুদ্ধবলে গেল সাধু হাঁদ কাটিয়। । ২৬৯ সাধু বলে ভালং পার হৈল বুহিতাল দেখিবারে পাইল শ্রীরামের জাঙ্গাল। এই জাঙ্গাল বান্ধ্া হইল সীতার উদ্ধার সেই পাকে রাবণের সমরে সংহার। সদাগর কহে কিছু তার বিবরণ অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ] ৪২৯ শুন সেতুবদ্ধের১ ঘটন শুনিলে কলুষ নাশ যম সঙ্গে নহে দরশন। ন্রিভুবন-অবতধাস আঁছল মিহিরবংশে দশরথ মামে নরপতি সুত সম ফাঁর প্রজা অযোধায় যাহার বসাঁত। রূপে জিনি দেবমায়া কোশল্য সুমিন্রা কেকই কৌশলনন্দন হার বনভূমি নিশাচর-জয়ী । রঘুবংশে ইতিহাস অবনী পালেন রাজা নৃপতির 'তিন জায়া রাম রূপে অবতার ভরথ কেকই-সুত রূপে গুণে অদ্ভুত সুমিন্রানন্দন দুই ভাই জমক লক্ষ্মণ তার অনুজর্মা সমর-বিজই | চাঁর পুর বল-তেজ। দেখি আনন্দিত রাজা নৃূপাঁত আছেন সিংহাসনে যজ্ঞের কারণে রাম গেলা বিশ্বামিত চ্ছান মুনি দশরথ সন্ধানে । শতু্ পুত্র আর মুনির ঝন শুনি পাঠাইল রঘুমুনি শ্রীরাম লঙ্ষমণ মুন সনে পথে তাড়ক৷ মারি মুনিরে কৌতুক কার দুহে কৈল যজ্ঞের পালনে । ২৪০ সঙ্গে কার নিজ যজ্ঞ মুনি ভাবে কর্মবিজ্ঞ দুহে গেল জনক সদনে তথা রাম মথ স্থলে নৃপাঁতর কুতৃহলে হরধনু করিল ভঞ্জনে । দেখি রাজা অদ্ভূত অযোধ্যায় পাঠাইল দূত দিযা চারু হয় দিব্য যান শনুঘ ভরথ সাথে আইল৷ রাজ! দশরথে জনক করিল বহু মান। ভুবনে এক ধনা রামে দিল সীতা কন্যা কাঙ্কাণকঙ্কণ-বভূষিত সীতানুজা তিন সুত। রামানুজে দিল তথা সবিনয়ে জনক ভূপতি । চারি পুর্নবধ্‌ সাথে চড় চাঁর দিব্যরথে অযোধ্যায় চলিল মহামতি হরধনু-ভঙ্গ শুনি রুষিল ভর্গব মুনি আগুলিল৷ রামে শীঘ্রগতি । পরশুরামের দর্প শ্রীরাম করিল খর ্বর্গপথ রুধি এক শরে মঙ্গল দুন্দ্রাভ বোন শঙ্খ পড়া বাজে সানি রাম আইলা অযোধ্/নগরে । রামে অনুগত প্রজা দেখি দশরথ রাজ [সংহ|সন দিতে কৈল মন দারুণ কেকমীত পাকে কাননে পাঠাইল তাকে সঙ্গে গেলা জানকী লক্ষণে । শরধনু করি হাথে চলিল কাননপথে (িরাতের কারিতে নিধন বাস কারি পণ্চবটী সূর্ণনখার নাক কাটি বধ কৈল খর জে দৃষণঃ | সূর্পনথা গিয়। লঙ্কা সীতার কাহল রূপ-কথা মারাঁচ সহায় কার দশাননে দিল শঙ্কা রাক্ষসের আঁধকারা আইল বীর রাম-কুড়্যা যথা । মুন-হেম মৃগবেশে সীতার নিকট দেশে নাচয়ে মারীচ নিশাচর চন্ডীমঙ্গল সাঁতার সাধতে কাম শয়ধনু হাথে রাম অনুপাঁদ হইল৷ রঘুবর । গিয়া রাম কথো দুরে পড়ে বীর বিয়া লক্ষণে রামের সঙ্কট বুঝি | পাঠাইল ল্গমণ সন্ধানে । শূন্য দেখি নিকেতন সীত৷ লৈয়৷ গেলা দিব্যানে সমরে জট।উ মার রাক্ষসের অধিকারী থুইল সীতা অশোক কাননে । মৃগ মারি আসি রাম শূন্য দেখি নিজ ধাম মাছিত পড়িল মাহতলে হৃদয়ে পরম বোথ। জটাউ পাইল কথ কালে । গেলা পক্ষী মুন্তিঃ ধামে কৈল রাম তার উধ্বগতি দ্রমিতে কাননপথে সুগ্রীব বানর সাথে মৈ্তত। করিল রঘুপতি । দুই জনে একস্থলে ভাসে লোচনের জলে দুহে দুখ কৈপ িবেদনে এক শরে বালি বাঁধ দুখে গেলা সিখর কাননে । রামের সাধিতে কাজ পাঠাইলে সীতা-অন্বেষণে হেলে সিন্ধু পার হয়্যা সীতার বারত৷ লৈয়া ” লঙ্কা পুঁড় আইলা রামস্থানে। মারীচ বাঁধল শরে সীত৷ শোকাসিন্ধু মাজ আসি তথা দশানন দুই ভাই চায়্য। সাঁত৷ কহিয়৷ সকল রামে সুগ্রীবের কাধ্য সাঁধ হনুমান কাঁপরাজ জেমত আছেন সীত। দৃতমুখে শুনি কথা সঞ্জেগ করিল কপি বলে রামের সাধিতে কাজ শুভক্ষণে কাঁপরা্জ উত্তারল সমুদ্র কুলে । মিলি কাঁপগণ জত শিল। তরু পর্বত আনিএ৷ নলের এড়ে পাশে নলের পরশে ভাসে দেখি কপিগণ হাসে সেতুবন্ধ হইল একমাসে। সপ্তম দিবস নিশা জাগরণ পার হইতে জান রাম বিভীষণ কহে কাম বিভীষণে দিল সিংহাসন লইয়া কাঁপ আঁধকারী পার হইলা বাঁধতে রাবণ । মীতার উদ্ধার হেতু সমদদ্র বান্ধল সেতু পার হইল শ্রীরদ্ুনন্দন [বভীষণ মেত্র কারি সঙ্গে সুগ্রীব নল নাল হনু কপবলগ বৌঁড়ল লঙ্কার উপবন। শুনিএা সেতুবন্ধ কর্ণধারে লাগে ধন্দ সেতুভঙ্গ গেল কোন কালে রাঁয। ভ্রিপাঁদ ছন্দ ্রাহ্মা-রাজার কুতৃহলে ॥ গান কবি শ্রীমুকুন্দ ৪৩০ পার হইয়া প্রভু রাম বোঁড়িল৷ লঙ্কার ধাম বারে দ্বারে নিযোজল১ সেনা যুস্ত কারয়া চ্ির পাঠাইল অঙ্গদ বাঁর রাবণেরে কাঁরতে গঞ্জনা । অঙ্গদ বারের বেলে পাঁচে সেন! করিবারে রণ কবিয। অনেক মান ইন্দ্রাজতে দিল পান সঙ্গে দিল লক্ষ সেনাগণ । রাক্ষম বানরে রণ ইন্দ্রীজত উঠিল আকাশে মায়া বৃপে কার রণ দুই ভাই বান্ধে নাগপাশে। জয় কার সংগ্রাম ইঞ্জাজত গেল৷ ধাম মুস্ত রাম গরুড় স্মঙরনে সম্গে সেনা লক্ষ লহ রাম তারে কারল নিধনে । আনিএএ আপন, পাথে নরাস্তক দেবান্রযাঁর দশানন কোপে জলে পড়ে জত সেনাগণ মারিল বানরগণ পাঠাইল বিরুপাক্ষ মহোদয়, মোহপাশে ট, ম.সত৬ ত্প সংগ্রাম করিত জার দেখি রখে ফেহ নহে স্থির! একে একে কারি রণ শুনিঞা রাক্ষস-আধিপাতি সংহতি অনেক সেন রণ করে রামের সংহতি । রাম তারে করি রাগ কাটেন রাম অর্থচন্সবাণে রণেতে পাইষা লাজ কুন্তকর্ণে জাগাইল তখনে | কুন্তকর্ণ কাঁর রণ রাম তারে কাঁরল নিধন ইন্দ্রাজত আইল রণে তবে তারে বাঁধল৷ লক্ষণ । সকল বিনাশ দেখি রথে চাঁড় জুঝে রাম সনে রাবণে বিধাতা বাম মুকুট কাটিল চক্তবাণে। বামের সাধিতে মান জেই যানে সারাঁথ মাতুলী চড় রাম সেই যানে দেখ দেবগণ কুতৃহলী । বাণে মহীমন্ত্র পাঁড় মাইল রাম রাবণের বুকে রথে হৈতে বাঁর পড়ে শোণিত নিকলে দশমুখে । রাবণ পাড়িল রণে ইন্দ্রের সম্তোষ মনে বিভীষণ বৈসে [সিংহাসনে পাইয়৷ শৃভ-ক্ষেণ বেলা চাড়িয়। পাটের দোল। সীত। আইল রাম [ব্দামানে। প্রভু রাম হইল৷ দুঃখাঁ পরাক্ষ দিবারে কৈল মন | আসি তথ দেবগণ তাহা কৈল নিবারণ ফেলা রাম দেশেরে,পয়ান। ঘাঁশির। অতিকায় বাধল। রাস্গণ বাজে রাজ-বাজনা মুকুট সহিত পাগ ভঙ্গ দিল রাক্ষসয়াঙ মারিল বানরগণ পড়িল রাক্ষদগণে দশানন হইয়। দুঃখী প্রথম সমরে রাম ইন্জ পাঠাইল যান জুঝে রাবণের সনে গার ধুকে ভুড়ি কদলী জেমন কড়ে সাঁতার বদন দেখি ২৪২ টণ্তীমঙ্গল রাম চড়িয়। পুষ্পকযানে ধাক্ষ কাঁপ সেনা সনে ৪৩২ নিজ দেশে করিল গমন সেতুবন্ধ, সদাগর পশ্চাং কাঁয়া বধিয়া রাক্ষসনাথে দেশে যাইতে এই পথে চঁলিলেন সদাগর বহর মোলয়া। সমুদ্র করিল নিবেদন । চত্জকূটৎ পর্ঝবত যক্ষরাজার দেশ বার মাধবের সুত রূপে গুণে অদ্ভূত সে ঘাটে সাধুর চ্ডিঙ্গ৷ কাল প্রবেশ । বার বাকুড়া ভাগাবান মোহানেতেত সীতা-কুলি প্রবেশে হাড়* খাল উার সুত রঘুনাথ রাজগুণে অবদাত তেয়াগন করিয়৷ চলেন লঙ্কার ময়াল। ্রীকবিকম্কণ রস গান ॥ অলঙ্খ সাগর রাঁহতে নাহি চ্ছল পাঁথকে জিজ্ঞাসে কত দূরেত সিংহল। রানদিন চলে সাধু তিলেক না রহে রর উপনীত শ্রীপাঁত শ্রীকালিদহে। জেই পাকে সেতৃভঙ্গ সুনিলে বাড়য়ে রঙ্গ পদ্মাবতী সনে যুন্ত কারয়৷ অভয়া অবধানে শুন কর্ণধার শ্রীপাঁতিরে ছালবারে পাতিলেন মায় । এই পথে জাইতে রাম নিবেদন কৈল কাঙ্গ আপাঁন করিল মায়৷ হরের বানিত। প্রণাত করিয়া পারাবায় । চৌষটী যোগিনী হৈল কমলের পাতা। শূম রাম কমললোচন অমল। কমল হইল পল্ন। কাবিবর মোঝ মুণ্ডে পাড়ি বাজ সাধিলে আপন কাজ হাসিতে লাগলা শতদলের উপর না ঘুচাইলে আমার বন্ধন । | কুসুমের ধনু মাত।৷ পুরিয়া সন্ধান আমি চিরকালবন্তাঁ সগররাজার কীর্তি শ্ীমন্তের হৃদয়ে মারিল পণ্টবাণ। তুমি হে সগরবংশধর মোহ গেলা শ্রীপাঁত নায়ের উপর রাবণে কারয়া কোপ নিজ্জ কীর্ত কর লোপ চেতন। করাইল তারে গাঠ্যার গাবর। শগালেতে লী্ঘব সাগর । রাজপদ্রিনী দেখি কমলের বনে তুমি করা৷ দিলে গন পার হইব মৃষাগণ কন্যায় ধারয়া লইলে রাখে কোন জনে । জনপদ হব প্রেতকুল কাণ্ডার বলয়ে হে অবুধ সদাগর ধর্মপথে দিয়া দৃ্ষি রাখহ আপন সৃষ্টি কোথা না দেখিলে তুমি কামিনী-কুঞ্জর। আমার বন্ধন কর দূর । বড়ই দু্ধী্য রাজা সালবাহন আমা লাঁজ্ঘ হনুমান সাঁহলাঙ অপমান ধনাবন্ত* লইবেক আর বাঁধবে জীবন ।" | কেবল তোমার অনুরোধ অভয়াচরণে মজজুক নিজ 'চিত মোর জত উপবন নুটি কৈল কাঁপগণ শ্রীকবিকষ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ তোম। দেখি না করিল ক্রোধ । সমুদ্রের শুনি কথা, শ্রীরাম লাগিয়ে বোথা আজ! দিল মুমিঘানন্দনে টি লক্ষাণ ধনূর চুলে [তিনটা পাথর তোলে শ্রী বলে ভায়। . দেখ রে সফল নায়া শ্রীকাঁবক্কণ রস ভমে ] রাখ ভি পুতিন আলান সঞ্চগ দিবল নিশা জাগরণ দেখ দোখ১ শতদল আতাঁবপরীত বল্ল তটে পাটে ঠেকে ডিঙ্গাথান। শুন কর্ণধার ভায়া দেখ রে সকল নায় মনোহর কমল-উদ্যান ধন্য সিংহলের রাজা কিবা করে শিবগৃজা কিব। পৃজা করে ভগবান । শত রন্তু নাল পাঁত শতদলে বিকাসিত কহলায় কুমুদ কোফনদ হেন লয় মোর জ্ঞান দেবতার উদ্যান দোঁখ কু বু্গুমমন্পদ । নাহি জানি কিবাৎ হেতু একাকালে ছয় তু গ্রীষ্ম হিম শিশিয বসন্ত সঙ্গে মকরকেতু বারধা শারদ খাতু বিরহী-জনের হইল অন্ত। রাজহংস করে কেলি কৌতুকে কমল তুলি প্রিয়ামুখে করে আয়োপণ চ%পুটে বাস্ধিঃ মাছে লার়ম। সারসী নাচে উড়াা বৈসে খঞ্জনী খঞ্জন। ডাহুক৷ ডাহ্ুকী নাচে চক্রবাকী চক্রবাকে বদনে বদনে আলিঙ্গন সঙ্গে চার পাঁচ জামি তাগুব করয়ে কামী মন্দমন্দ মেঘের গর্জন । হেন মের লয় মাত বিধাতার হেন কার্ড অপরূপ দখ কালিদহে কমল কুমুদ ফোটে কার কাস্ত নাই টুটে চিগেঙ্ছ লহয়। বায়ু বহে। মধুকর সনে বধূ বিকচ কমলে মধু পান কারি গায়ে সুলগিত গাতে সমাহিত মন দুই কূলে মৃগণ রহে জেন চিত্রের 'লাখত । কমল-পরাগে গৌর আমার লোচন-চৌর ফিরিফার বুলে আলকুল কেনেফে দাড়ায় বৈসে সাললে কৈরব ভাসে ূ দিন? রানের [ভিত খুল। হও দেখিয়া সফল শোভ সাধুষে লাগল লোড অভয়া পৃজিব খঙালে কমলে কামনী দোখ সুকুসুম 'ধিফচ কমলে । পুনু সাধে মেলে আঁখ উগার গিলয়ে করিবর পূর্ণতপের ফলে দুখে সাধু মুদে আখি নবালে শপিমুখা শ্রীমন্ত দেখিয়া বলে দেখ ভায়া। গাঠার গাবর । সাধু বচন শুনি ক্শধার বলে বাদী তুমি ধন্য দিব্য-গেয়ান সকল বিদ্যার বন্ধ অশেষ গুণের সিদ্ধ আম অন্ধ থাকিতে নয়ান। দেখ সাধু শাশমুখী কর্ণধারে করে সাক্ষী কর্ণধার করে নিবেন করাঁ পর শাশমুখী আমি কিছু নাহি দেখি বিরচিল শ্রীকীববন্ধণ ] 8৩৪ অপয়ূগ দৌখ আর শুন ভাই ফণধায কামিনী কমলে অবতার ধার রামা বাম করে উগারয়। করয় সহার। কনক-কমলরুচি মদনমঞ্জরী কলাবতী সরম্কতী কিব৷ রম। সভাভাম৷ রস্তা অমুস্থতী। রাজহংসরব জান দশনথে দশচাদ ভাদে কোকনদ দর্পহর অঙুলি চষ্পক পরকাশে। রাজহংস-মন্দগাতি হেম জনি দেহভুতি গ্বুস্ত চালু পয়োধরে সংহারয়ে কাঁরবননে দ্বাহ। স্বধা [কিবা খচী চিন্ললেখা তিলোত্ম। চরণে নুপূরধ্যান বেড় তাহার কর, 6 ভাছে শোতে! জনুপাম / মুনিমুকুতায় দাম জেন গ্গ। সুমেরুশিখয়ে দুই করে শোভে শঙ্খ ভুবনে উপাম রষ্ক মুনিময় গঠিত কন্কণ হাসিতে বিদ্ভুর খেলে কপোলে কুস্তল দোলে তনুরুচি ভুবনমোহন । হেমময় হারছলে কিবা উহার গলে স্থির হয়া। সৌদামিনী বৈসে নিমুপাম পরকাশ মন্দমধূর হাস ভঙ্গি নব শিখিবার আসে । রামা অতি কূশোদরী তাঁথ ভার কুচগিরি নিবিড় নিতম্ব অবতার বদন ঈষং মেলে কুঞ্জর উগারে গিলে জাগরণে সপন-প্রকাশ । বামা ঈষং হাসে গ্রগনমণ্ডল ভাসে দস্তপংস্তি বাদত বিজ্াল বদনকমল-গন্ধে পরিহরি মকরন্দে কতকত শত ধায় আল । বন্ধুক কুসুমছটা কপালে 'সন্দুরফোটা প্রভাতকালের জেন রা অধর বিস্বুক-জুঁতি দত্ত মুকুতার পাতি দুহার বদনে করে চুরি। [তিলফুল জিনি নাস ব্ঘূকি জনি" ভাষ। ভুরুযুগ চাপ-সহোদর খঞ্জনগঞ্জস আখি অকলঙ্ক শশিমুখী শিরোরুহ আসত চামর। কপালে সিন্দুরকিনদু লব তার বিন্দু বিন্দু তাহে শ্মেভে চন্দনের বিন্দু করয়৷ [তিমির মেল। ধাঁরয়। কুস্তল ছলা। বন্দি করিল রবি-ইন্দু। দোঁখ সাধু শশমুখী কর্ণধারে করে সাক্ষী কর্ণধার করে নিব্দেন করী পদ্য শশমুখী আমি কিছু ন্যাহ দোখ বিরচিল, শ্রীকাঁবকঙ্কগ | ৪৩৫ শুন রে কাগডার ভাই বিপরীত দেখি কাহব রাজার আগে সভে হইয় সাক্ষা। প্রমাণিক যোজন গুভীর বহে জল ইথে উপজিল ভাই কেমনে কমল। পবন জিনিয়া অতি বেগে বহে নীর কেমতে অবলাজন ইথে হয় গ্থির ৷ কমলিনী নাঁঞ সহে প্রবঙ্গমের ভর তরঙ্গের হিল্লোলে কন্য।৷ করে থরথর নিবসে পানী তাহে ধারয়৷ কুঞ্জর হার হরি নাঁলনী কেমনে সহে ভর । পুরুষ দেখিয়া রাম। নাহ করে লাজ বাম করে ধারয়া গিলয়ে গজরাজ । হেলায় কামনী উগারয়ে যৃথনাথে পালাইতে চাহে গজ ধরে বাম হাথে । পুনুরুপি রাম তায় করয়ে গরাস দেখিয়া আমার হদে লাগিল তরাস। খাঁদর তামুল বঙ্গ ওষ্ঠে নাহি ছাড়ে গজ গিলে কামিনী চোয়াল নাহি নাড়ে অগাধ সাঁললে ভাসে বিচিন্ন কানন পণ্ণম গায় অলি নাচে পিকুগণ। ক্ষণে উড়ে ক্ষণে বৈসে মত্ত মধুকর পরার্গে ধূসর লতা-তরু-কলেবর । বিকাঁসত কুঞ্জবনে কুসুম মালতী দামিনী মরুয়া ফুল ফুটে জাতি জুতি । ফুটিছে মাধবীলত। পলাশ কাণ্ন কুন্দকুসুম ফুটে বকুল রঙ্গন। তাহার উপর চন্দ্রাতপ মনোহর নেতের পতক৷ উড়ে স্বেতচামর । বেনন পাটের থোপ মুকুতার মাল, যাঁর বন্ধানে তাহে সুরঙগ প্রবাল । তার মাঝে বিকাঁসত কমলফানন কামিনী কমলে বাঁস সংহারে বার । সগ্ম দিবস : নিশা জাগরণ ২৪৫ উগারিয়। মন্ত্র কারবরে বাম করে গোঁজে বান্ধি রাখি ভিক্লা লোহার শিকলে ঈষং হাঁসিয়৷ পুনু চৌদক নেহালে। বাদা করি সদাগর উঠিলেন কুলে । ক্ষেপে ক্ষেণে হাসে রামা নাচে ভুজ তুলি রত্রমালার ঘাটে শুনি দামামার ধ্বনি পণম গায় রাগ-রাগিনী মেলি। গণ পাত্রে চমকিত হেল নৃপমুনি। রবাব মরু বল্প করয়ে বাজন অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত অঙ্গে ভঙ্গে নৃত্য করে বিদ্যাধরীগণ । শ্লীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ কিবা উমা কিবা উষা কিব৷ অবুন্থৃতী ভৈরবী ভবানী কিবা লক্ষ্মী সরহ্বততী । যাক্ষণী শার্খনী; কিবা ডাখিনী যোগিনী রি কামের কামিনী কিবা ইন্দ্রের ইন্দ্রাণী । কুলে উঠা নায়া। পাইক বাজার বাজনা বুঝিতে না পারি এই কন্যার চাঁরত িংহলনগরে চমকিত সফরে হইল সর্ধবজনা । হেন বুঝি মোরে কিবা বিধাবড়ান্বত। ঘন বাজে দাম। চমকিত সব গা১ তবকী তবকে রোল পত্রে তুলি নিল সাধু কাঁরযা লিখন পাইক দেই উড়া পাক ধন ধাজে বাঁর ঢাক কাহব রাজার আগে সব বিবরণ । কেহ না শুনে বোল । কমল কুঞ্জর কান্ত। দৌখ সদাগর বরঙ্গ ভোর দোসাঁর মহরি ঘন বাজে বীরকালি কেহ নাহি দেখে আর নায়ের নফর। 1সঙ্গ। কাড়। ঘন বাজে পড়া কর্ণে লাগিল তাল । নিমিষেকে লাক্ষিতে না পারেন শ্রীপতি ডাওমডনুর পূরয়ে অস্বর ঘন বাজে জগবষ্প হদয়ে ভাবিয়া সাধু করেন জুগাত। বাজায় সানি রণজয় বেনি সিংহলে উঠিল কম্প। জে কালে হইল প্রভু যশোদানন্দন কোন পাঁক বাঙ্গাল খাণ্ড। ফরকায় বিজলি বালাক্রীড়া কার কৈল মৃত্তিক। ভক্ষণ | কেহ কেহ ববান্য়া বেজা যশোদা ধারয়া কৃ্ণে কাঁরল। [ ভংসন | মুণ্ডাল কারয়। ধায় রায়বাশিয়া কুবুদ্ধি করহ কেন মৃত্তিক৷ ভক্ষণ । কেহ ধায় ফিরাইয়৷ নেঞ্জা। যাঁদ বিস্তারিত মুখ কৈল চকরপাণি পাইকের কলবল ভারল সিংহল বিশ্বরূপ উদরে দৌখল নন্দরানি । সঙ্গা কাড়া৷ টমক নিসান সাঁলল পর্বত সিন্ধু ধরগামগ্ুল সুভয়ন্তরী সঘনেং ুছুন্দার গগনে যশোদা কৃষের গর্ভে দেখল সকল | নেহালয়ে শাখিবাণ। তেনমত ছলে মোরে কেমন দেবত। খাটাইয়। তন্বৃ-্ঘর বাঁসল সদাগর নহে বা কামিনী হইয়৷ গিলে গজ মাত । পাঁরসর নদীর কূলে পরলে তাল নিল সাধু করিয়া লিখন দিবানিশি ডাকে সিংহল কাপে কাঁহব রাজার আগে সব বিবরণ । পাঁরজন রহে তরুতলে । বাহ বাহ ক্রিয়া ডাকেন সদাগর সধ্যাহ দিন কাত কাঁরল শ্রীপাত নজাদগ* হইল রাজ! সিংহল নগর শুনে সাধু আগমপুরাণ অজয় বিজয় দিয়া করিল গমন আঁকাবকষ্কণ করয়ে নিবেদন রয়মালার ঘাটে গিয়া দিল দরশন । আরফ়া মহান্থান ॥ ৪৩৭ রক্লমালার ঘাটে শনি দামামার ধ্বনি পণ পাত্রে চমরিত হইল নৃপমুন। কোটাল কোটালপ ডাক পড়ে ঘনে ঘন আসিয়া কোটাল নৃপে দিল দরশন | আঁসয়া কোটাল নপে নোঙাঞল মাথা রোযযুত নরপতি কহে কিনতু কথা । নুট্যা দেশ খায় বেটা দেশের বিধাতা গল অন্দ নাঞ দিস দেশের মারত্ম ॥ রমালার ঘাটে মুনি রিসের রাজন বার্ক। জানিঞ। শান কর নিবেদন । ঘরদল হয় যদি আন) মোর পুর পরদল হয় যদি মারা কর দূর । বৈদেশী বদি হয় আন্য মোর ঠাঁঞ মারা৷ দূর কর যাঁদ ন৷ মানে দোহাই । গজস্কন্ধে কালু-দওড জায় ধাওয়াধাই কূলেতে উঠিতে সাধে দিলেক দোহাই । ঘরদল পরদল নাহি চিনি তোম। প্রবোশ রাজার পুরে বাজায় দামাম। ॥ নাহ ঘরদল আম নাহ পরদল বোদশী সাধু আম আস্যাছি সিংহল ॥ রহিব তোমার দেশে যদি সুখ পাই নাহলে ভাঁসব জলে 'কি করে দোহাই । [সংহল জাইতে যাঁদ চাসী রাজধাম জাঁব যাদ আন আগে আমার ইনাম । মোর শিরে দায় যাঁদ হয় ডাকাচুার পণ্যাশ কাহন চাই আঙার দিগারি। তোর দেশে আস্য। আমি নাহি খাই দ্বল কোন অপরুধে চন্কু কারস পাকল । সাধু নহষ টঙ্গ বেটা মিছা তোর ভর সাধুরপে প্রবেশিয়। ডাক! দিবি পার । তু বলে জেই চোর নাহিক পাত্যার। দেখহ সকল, লোক আপনার গার) ।৯ প্রতবাফ্যে ফোটালে গ্রবোধে ক্ষার অবিলঞ্ধে চলে সাধু রাজার দুয়ায়। অভয়াচরণে মনজুক নিজ চিত শ্রীকবিকল্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৩৮ ফান্দি কান্দি লইল বায়ন-নারিকল ঘড়ায় পুরিয়। চিনি লাড়ু গঙ্গাজল। জোড়ে জোড়ে নিল খাসী জুধারিয়া ভেড়া পর্বাতয়া টাঙ্গন তাজ নিল 'দিব্য ঘোড়া । ভার দশ দাঁধ কলা ঠাপা ম্তমান দোখও সরস গুয়। বিড়বিষ্ধা৷ পান। গছে বাস্ধ্যা ভেট নিল ঘৃত দশ ঘড়া খান দশ সগল্লাথ খান দশ গড়া 'কিন্কর কাঁরয়৷ দিল দোলায় সাজন তুরিত গমনে সাধু কারিল গমন । বরুণের সাজাকুড়।৷ কনক আকুড়া হিরামুখি নামে জায় চন্দনের পুড়া । উপরে ছাওনি দল পাটের পাছড়া৷ চারাদকে শোভে গজমুকুতার ঝার! । ময়ূরপাখের তায় লাগছে ছাওনি বেনন পাটের খোপ রসের দাপনি। দোলার উপরে সদাগর হেলে গ। ডানি বামে লাগে শ্বেত চামরের বা। নান দুব্য ভেট লৈয়। করিল গমন আগে পাছে ধায় পাইক শতশত জন । রাজার সভায় গিয়। হইল উপনীত প্রণাম করিয়। ভেট এড়ে চারি ভিত । বামদিগে এড়ে সাধু বদলের সাজ পরিচয় চাহেন নপতি মহারাজ । অভয়চরণে হুক নিজ চিত ভ্রীকদিধাডণ গলা অধুয় সাত ৪ সপ্তম দিবস নিশা! জাগরণ ৪৩২১ কর অবগাতি শুন নরপাঁত গোঁড় দেশে মোর বাস বিরমাকেশরী সাজি সাত তাঁর পাঠাইল তব পাশ চামব চন্দন শঙ্খ আদি ধন নাহিক রাজভাগ্ারে বাজ্জ-আজ্মা পায়া। আইনু সিন্ধু বাধ্য তোমার এই সফরে । গঙ্গবানা। জ্ঞাতি উজবনি স্থিতি দত্তকলে উৎপাত অজ্ঞাযব তাট গঙ্গার নিকটে বাঁস নাম শ্রীযপাতি রাজ্ঞা মহাশয় চাপে ধনঞয় প্রদ্ার পালনে রাম প্রতাপে নিসসীম মল্লে জেন ভীম চোর-খ্ে ভান ধম। পতাপ নির্মাল জেন গঙ্গাজঙল সদাই কু্ণ ধেয়ানে শনেন অভিরথ পুরাণ ভারথ দ্বিজে দেই হেমদান । বিদ্যাবিশারদ দস্তীর সম্পদ অশ্ের শিক্ষায় নল সর্বজন সুখী কেহ নহে দুঃখী রাজ্যে নাহি তার ছল। সাধুর ভারাঁথ শুনি নরপাতি দ্রবোর জিজ্ঞাসে কথা রায় সুছন্দ গাইল মুকুন্দ চঞ্জীর মঙ্গলগাথা। ॥ 88০9 বদলাশে নানাধন আন্যাছি সিংহলে জে দিলে জে বাল হয় শুন কুতৃহলে । হ্৪৭ কুরঙ্গ বালে তুরঙ্গ দিবে নারিকেল কালে শঙ্খ বিড়ঙ্গ বদলে লবঙ্গ দিবে সুষ্ঠের বলে টক । কুরঙ্গ বদলে মাতঙ্গ দিবে পায়রার বদলে শুয়া গাছফল বদলে জায়ফল 'দিবে বয়ড়ার বালে গুয়া । সিন্দুর বদলে হিনুল দিবে গুঞ্জার বদলে পল পাট-শণ বদলে ধবল চামর কাচের বদলে নীলা । লবণ বদলে সৈন্ধব১ দিবে জোয়ানি বদলে জিরা শকন্দ বদলে মাকন্দ দিবে হারিতাল বদলে হিরা । চঞের বদলে চন্দন দিবে পাগের বদলে গড়। সুস্তার বদলে মুন্ধ। দিবে ভেড়ার বদলে ঘোড়া । মাষ মুসার তুল বদাঁর বরবটী বাটুলা চিনা বলদে শকটে তৈল ঘি ঘটে সদাগর আনিঞাছে টা গোধ্ম খুড়্া মুগ মাষ মাড়ুয়া। তিল যব আন্যাছি ছোল। কিনিঞা বহৃতর আনিঞাছে সদাগর লবণের পাতিনা গোল৷। জগদবতংশে পালাধবংশে নৃপাঁত রঘুরাম শ্রীকবিকল্কণ করযে নিবেদন অভয়া পুর তার কাম ॥ ৪৪১ বদলের সঙ্জ রাজ কৈল অঙ্গীকার শতেক কাহন দিল রন্ধন বেভার। সাধুকে তুঁষিল রাজ। ভূষণ-চন্দনে বিদায় কারল সাধে রন্ধন-ভোজনে । আগ্রশর্ম। নামে দ্বিজ রাজপুরোহিত রাজার সভায় আস হইল উপনীত । আশীবাদ করি দ্বিজ বাঁসিল কন্ধলে হাসপারহাস কথা কন বুত্হলে। চতুর্দিগে দেখিয়া ভেটের আয়োজন সহাসবদনে কথ৷ নৃপে জিজ্ঞাসন। আজ ভেট-দুব্য রায় দেখি চারিভিতে মনোহর দ্রব্য নান আইল কোথা হইতে । তি গোড় হইতে জাইল নাম সাধু শ্রীপাতি নানা দুব্য ডেট দিয়া কারল বসতি । ইহ। শুনি অগ্নিশর্মা বলে অভিরোষে ব্রাঙ্ষণ বসত কেন করে এই দেশে । বিধিব্যবন্থার বেলা আরমী প্রাতাদিন কার্্যকারণের বেলা আমি উদাসীন । পণ্পান্ন নিন্দি ওঝা মাথ! কৈল হেট আম সবে বাত সভার কোলে ভেট । এত বাল আগ্রশর্ম৷ জান সভা ছাড়ি নিবেদন কৈল পান্ন তার পালনে পাড় । নৃপাঁতর আজ্ঞা পুনু কালু-দণ্ড পার পুনুর্বার আনে সাধু রাজার সভায় । পাগুত জিজ্ঞাসে তারে পথের) বারতা কিধ৷ নায়ে তড়ে আইলে সাধু কহ কথা । অঞজাল কারয়া সাধু কয়ে নিষেদগ অভয়ামঙ্গল গাম শ্রীকবিকষষণ ॥ 88২ রাজার হুকুম পায়া৷ সঙ্গে সাত তাঁর লৈয়া নদ নদী বায়া। রয়াকর জে দখল অপরূপ কাঁহতে পরানে কার ডর । সঙ্গে সাত তাঁর লৈয়। আইলাঙ অজয় বায় উপনীত ইন্দ্রাণীর তটে ধোঁত-হারিপদদন্থা বাঁহলান্চ অলকনন্দা কুতৃহলে আইলা গীঁতনাটে । ডানি'বামে জত গ্রাম নিব তার কত নাম উপনীত ্িবান্ন তীরে প্রভাতে করিয়া ্লান ঘটে গূরঃ) নিল গঙ্গানীয়ে। জাহবীসাগরস্দন্ন পার্থিঠসমান ভঙ্গ সাহলাও প্রাপক হাথে অধধানে শুন ভূপ বধাধাধ 1পগুদান চীদজল ভানিতাগে নীলাগার সিম্মকূলে অবতার দেখলাও প্রতু জগাাথে। কেবল দুঃখের পদ ১ উপনাঁত হইলাঙ সিংহলে সুধন্য সিংহল দেশ কালিদহে পরবেশ জল আচ্ছাদিল শতদলে । কালিদহের জলে গজ গিলে উগারে অঙ্গনা অতি কুশোদরী বালা মাতঙ্গ জিনিয়া লীলা শশিমুখী খঞনলোচন। । সাধুর ঝন শুন চাহে মহীপান্রের বদন রিয়া ব্রিপাঁদ ছন্দ বিরচিল শ্রীকাবিকষ্কণ ॥ বাহিলাঙ নান চুদ কুমারী কমলদলে নরপাতি মনে গুনি পাঁচালি কাঁরয়। বন্দ 88৪৩ সাধুর বচনে সালবান নৃপ হাসে রাজ।র ইঙ্গিতে পান্ত উপহাসে ভাষে। বিদেশে আঁসয়। সাধু পাইল তরাস কি ভাগে উহার ডিঙ্গ৷ না করিল গ্রাস। সাধু বলে স্থানগুণে কর উপলম্ব গজ-কন। বান্ধ্া/ আনি করহ বিলম্ব। শ্রীমুখের আজ্ঞ। যাঁদ কর ন্‌পবর কমলকুসুমে আমি ছায়া দিব ঘর । রাজসভার জুগ্য নহে এই সাধু ভগ ধর্মশাসত্রে বিচার উচিত হয় দণ্ড। সাধু বলে ভণ্ড বল ঠাকুরালি বলে ১ প্রাতজ্ঞা কারয়৷ চল কালিদহ জলে। যাঁদ থা হয় তবে নুটি কাঁরহ ধন মসানে কোটাল "দিয়া বধিব জীবন । রাজ। বলে ধত্য যদি তোমার' বান আকা) দিক তোরে ভর্জামংহচামা সপ্তম দিধস নিশা জাগরণ সুশীল কাঁরব দান ইথে নাহি আন প্লাতঞ কাঁরল রাজ। সালবাহন। রাজ। সাধু কৈল যাঁদ প্রৃতিজ্ঞা-পুরন মসীপয়ে লিখন কারল সভাজন | সাজ সাজ বাল হইল রাজার ঘোষণা শ্রীকাবকঙ্কণ গান কাঁরয়া ভাবন। | 888 অপবৃপ কথ! শুনি সালবান নৃপমুনি সাজ বলা। দিলেক ঘোষণ চতুবঙ্গ দল সাজে সমরে দুন্দুভ বাজে শুনি পুবে ধাষ সবজনা । গজাপিঠে বাজে দাম সাঁজল বাজার মাম। আড়ন্ববে পুবিয। গগন ধবল চামরছুটা। উবমাল ঘাঘর ঘা গওচ্ছলে সিন্দুবমণ্ডন। পাইক রণে প্রচণ্ড ধাষ বাঁর কালু-দ্ বার শত সঙ্গে চোকানঞা ধায় ভুঞ রাজার দূত কমলে-কামিনী কথা শুঞা। গান্ন্গণ চলে কাল নরকেতু রণমাল সুগন্তীর বাঁর পুরন্দর বাজাব বিবাদকাজে - ধুলি আছাদিল দিবাকর । বাজ-আজ্ঞ। শিরে ধার চলে নৃপতিব নারী সারি দিয়। আগে বেরপাণিং কমল দেখিতে নে ঘোড়ন-খাটল চড়ে একদু হইয়া সব রানী । সঙ্গে নব লক্ষ দলে উত্তরিল নদীর কূলে নাইয়া জোগায় নৌকা শয় নূপতি চাঁড়য। নায় উপনা হইল কালিদয় । শুন কথ অদ্ভূত নব লক্ষ দল সাজে কমল দেখিতে জায় 6, ম.-৩২ ২৪৮, মহাসি্র জগাধাথ হাদয়ামিয়ের ভাত কিন হদয়ন্দন | তাহার অনুজ ভাই [বরচিল শ্রীকবিকপ্ধণ ॥ চতীর' জারশ পাই 88৫ কালিদহে উপনীত হইলা নৃপাতি চারদিগে পণ্টপান্ন কায়৷ সংহতি শ্রীপাঁত সদাগরে কীষ্ছু বলে নপবর দেখাষ কমলে কোথা কামিনীকুঞ্জর । মিথ্যা বাকা হইল তোর রাজ-বিদামানে অপরাধ মাগ্য। লহ রাজার চরণে। মিথ্যাবচনে সাধু শুন প্রতিকার , বাজার বচনে দোষ কর অঙ্গীকার । ভারিষা শীধান্ত করে সাধু শ্রীষপাতি ধর্ম*অবতাব তুমি রাজ-মহামাত। দেখিলাঙ জত আমি এক মিথ্যা নয় উচিত কাঁহল আমি শুন মহাসয়। অভয়াচরণে মঞ্জুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ 88৬ রায় আবচারে না কাঁরহ রোষ বিচারে পাওত তুমি তোমায় বুঝাব আমি সাধু জনের নাঞি দোষ । দেখতে অলগ কাজ আপুনি সিংহলরাজ সাঁজ আইলে চতুরঙ্গ দলে শশিমুখী লাজভয় ছাড়্য। গেল কালিদছ গজ নুকাইল শতদলে । কেরুয়ালের টানাটানী তল-উদ্' মারল পানী ছিড়িল বল ডশী-পাত। ২৫০ [বিষম জলের রয় তৃণ দুইখান হয় ভাস্যা গেল ডণটি-পাতা কোথা । তোমার মাতঙ্গ-বল আচ্ছাদন কৈল জল কবালিত কৈল নাশ শুণডে রাজবল নব লক্ষ কেহ নহে মোর পক্ষ আমারে না৷ বলা রাজা ভগ্ডে। ছিল ভূঙ্গ সরাঁসজে সরাঁসজ খাইল গজে অলিকুল উড়ে ঝ'কে ঝণকে আমি বৈদিশি সাধু তোঁম অকলঙ্কবিধু ছলে নাহি করিহ বিপাকে । সংহলে জতেক দেখি সকল তোমার সাক্ষি মোর সবে জন। দুই চারি শাখ সর্পে বিসম্বাদ বড় হইল পরমাদ শুন আঁকণ্চনের গোহারি। সাধুর বচন শুন নরপাঁত মনে গুনি কর্ণধারে কারল প্রমাণ রচিয়া ভ্রিপাদ ছন্দ পাচাঁল কাঁরল বন্ধ চক্রবর্তী শ্রীকাঁবকল্কণ ॥ 88৭ কহ কর্ণধার সত্য বল রে আমারে তুমি কী দেখ্যাচ কন্যা-কামিনী-কুঞ্জরে । সত্য বাঁললে স্বর্গ জায় নরক মিথ্যায়১ এই হেতু পাপ কেহ নাঞ করে ভয় । পাড়িয়া শুনিয়। পুর হয় সুপুরুষ গয়ায় পিগুদান করে ধরে তিল কুশ । সতা বাণী শুনি অধর্ম না শুনি পুরাণে সত্য সমান নাহী তিন ভুবনে । অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকবিকল্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ চন্ডীমঙ্গল 89৮ কাঁহল পুরাণে শুক ব্যাস মহামুনি ইন্দ্র অগ্নি যম ধর্ম নোরত বরুণী । রাজ অঙ্গে বৈসে জত ধনঞ্জয় পবন মিথ্য৷ বাক্য কাহিয়।৷ করহ বিড়্বন। সর্বজীবময় নূপ জেই নৃপে ভাণ্ডে পাঁরণামে জানিবে বিধাতা তারে দণ্ডে। রাজার বচন শুনিএা কহে কর্ণধার আম নাহি দেখি কন্যা-কামিনী-কুঞ্জর । সভা সাক্ষি কাঁর রাজা বান্ধে সদাগর রাজবাক্যে নিশীশ্বর নুটে মধুকর । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকবিকম্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪8৯ কান্দে রে বাঙ্গাল ভাই বলে হেয়ই হেয়ই ডুবিল হাদুর ভিঙ্গা হিউ পাইব কই। এক বাঙ্গাল কান্দে হইয়া বিমন৷ এ কাঁডিয়া নিল মোর হিঙ্গের ঘোটন৷ । আর বাঙ্গাল বলে ভাই মোরে কিন৷ হইল পোস্ত খাবার হোলাটী সেই ভাস্যা গেল |. নান্দয়া এাঁড়নু হাগলাইনু ডাইল দেস হাড় হাদু সনে পরান হারাইল ।১ আর বাঙ্গাল বলে ভাই মোর কিনা হইল কাল গুরি দু মাগু দেশেতে রহিল । আর বাঙ্গাল বলে হিন্দু বড়ই পাথার পাইনু হোলায় লাগ এঁডত তাহার। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ সগুম দিবল নিশা! জাগরণ 8৫০ মোরে কৃপা কর নারায়ণী গো । আনিঞা নায়ের দড়া বান্ধে সাধে পদমোড়া কোটালে গছায় বারবর তেজি দণ্ড-কেরয়ালে ঝশপ দদিয়। পড়ে জলে নাইয়। পাইক পরানে কাতর । বাজেমহল হৈল ডিঙ্গ। ঘন বাজে রণাঁসঙ্গ। রণভোর দুন্দুভি বাজন রাজার প্রধানে১ দেখে ভাগার কায়েম্ত লিখে বলদ-শকটে লয় ধন। জে জন পলাইয়া জায় তাড়।তাড়ি ধরে তায় বলে লয় বসন ভূষণও ধারয়৷ সাধুর সঙ্গী লবণ নাকান চা্গঃ দিয়ে কেড়ে লয় সর্বধনৎ | গৌরব করিয়। দূর কাড়া৷ নিল কর্ণপুর কান্দিতে লাগিল সদাগর অঙ্ার অঙ্গদ বাল৷ কলধৌত-কণ্ঠমাল। নানাধন নুটে নিশীশ্বর । দবস দুপরে ডাকা সাধুরে মারয়ে ঢাকা লৈয়৷ জায় দক্ষিণ মশানে প্রাণ রক্ষিবার আশে সাধু কহে মৃদু ভাষে শ্রীকাবকঙ্কণ রস ভনে ॥ ৪৫১ এ রাজ। ধার তুয়। পায় দোষ ক্ষেম রায় সত্গুণে দেহ মন আম শিশুমাত তোমি নরপাঁত ধর্মধাম যশোধন । জয় পরাজয় রর দৈবদোষে হয় হেতু তাছে ভগবান সেই কৃপাময় সর্ধ জীবে কয় তবে কাঁ'ষান অপমান । এই কলেবর ৫১ প্রাধন লৈয়। জাইনু সিন্ধু বায়া শুনিঞ। তোমার যশ অপমান কোপ মিথ্যা বলে লোক : না হইয় কোপের বশ। অপ্প অপরাধে এত পরমাদ তোমার উচিত নয়ে হইয়। কিঙ্কর চুলাব চামর প্রাণ রাখ নৃপরায় । ঘৃত্যুসহচর আয়ু সমাগত শেষে কীর্তি সদাতনী রাখ নৃপমুনি দয়। প্রাণদান দাসে। শুনিএ। বিনয় না হইল সদয় ত্পাঁত দৈবের দোষে কেশে কোতোযাল শ্রীকবিকস্কণ ভাষে ॥ ধরে জেন কাল ৪৫২ কাকালে নায়ের দড়া পিছে মারে ঢেকা দিবস দ্রপরে হইল সাধুর নায়ে ডাক|। সবিনয়ে বলে সাধু কোটালের পদে. খানিক সহায় হও বিষম বিপদে । শ্রীমন্তের ছিল কাঁছু গুপ্ত নিজ কোষ ধন দিয়া কোটালে কাঁরল পাঁরতোষ । ধৃতি পাইয়। কালু-দও সরসবদন সদাগর তারে কিছু করে নিবেদন । ভুবনে দুর্লভ বড় মনুষ্য-জনম অপ্প বয়েস কালে ডাকা দিল যম । প্লান-ধ্যান১ করি যাদি দেহ অনুমতি হাঁসয়। ইঙ্গত তবে দিল নিশাপাঁতি। সরোবর বোঁড়িয়া রহে পাইকের ঘটা ল্লান কাঁর পরে গঙ্গামৃ্তকার ফোটা । ৫২ যব তিল কুশ কেহ আনিল তুলসী তর্পণে সন্তোষ কইল দেব-পিতৃস্ধাঁষ । থনঘন ডাক দেই নিশির ঈশ্বর তুরিতে হানিঞ। জাই কত বিলম্ব কর । ইঙ্গিতে কোটাল কহে নিদারুণ কথা এখাঁন মারবে তুমি কি করে দেবত। । ূর্য-অধ্ধ্য দিয়। সদাগর উঠে কূলে অষ্ট তওুল দুর্ঝ। পাইল পাগের আচলে ॥ খুব্বনার সত্য কথা সাধু কৈল মনে পুনুর্বার ধরে সাধু কোটাল-চরণে । একদও বিলম্ব কাঁরয়৷ মোরে হান তোমার প্রসাদে করি মন্ত্র ম্মঙরন । কোটাল সাধুব বোলে 'দিল অনুমতি হৃদয়ে ভাবিষা সাধু পৃজেন পাবতী ॥ অবাঁন লোটায়্যা স্তুতি করে সদাগর রচিল পাঁচাঁল মুকুন্দ কাঁববর ॥ 8৫৩ পুনু প্লানে সদাগর-অঙ্গে হইল জ্যোতি বঞণ স্মরনে শুঁচি হইল শ্রীপাঁত। ভূতশুদ্ধ অঙ্গন্যাস শরীরশোধন ুর্ববাক্ষত শিরে মুখে মন্ু ্মঙুরন । স্মিরকলেবর সাধু হইল একমতি একভাবে সদাগর পুজেন পার্বতী । দুর্গাতনাশনী দুর্গা জগতের মাতা শৈলনন্দিনী শিবা দেবের দেবতা । দেবশতু নাশিয়। অমরে কৈলে দয়া ইন্দ্রের ইন্দ্র্ব ম৷ তোমার পদছায়। । [নজভুজ বলে বধ কৈল দেত/রাজ লঁভিলে যশ পুনু দেবতা-সমাজ । সেবকে সদয় হয়া উরিলে কাঁজঙ্গে রাজাথ্ড লইয়া রাজা পুজিল হড়ঙ্গে। তোমারে পুঁছিয়া ঘটে বলি ভাক্ষয়া নৃপাতির রিপু কৈলে নাশ বিজুবনে পশুগণে হইলে পুপ্রকাশ । বিদ্যমান হইয়৷ পশ্গণে দিলে বর গোধিকা হইয়া গেলা আক্ষর্টীর ঘর। ধন দিয়া উারলে বাঁরের গুজরাটে রাজ-ঘরে মহাবীরে রাখিলে সঙ্কটে । ছেলি অপেক্ষণে মোর মায়ে হইলে দয়া দাসীর তনয় রাখ দিয়া পদছায়া পণ মাস ছিলাঙ মায়ের গর্ভবাসে দেশান্ত;র আইল বাপ দার্থ পরবাসে । সেই সব ছাড়য়। হদে লাঁভল গেয়ান লোকের মন্দ-বচনে মোর বাড়ে অপমান। জাতপন্র বাপের অঙ্গুরি নিদর্শন তোমা স্মঙারয়৷ আইলাঙ দক্ষিণ পাটন। সমুদ্রে খিয়ানু নৌকা বড় গ্রাতআশে দেশাস্তরে আইল 'ছির৷ বাপের ীর্দশে। পিতাপুন্নে সিংহলে নইল পরিচয় ধনবিত্ত১ গেল মোর জীবন সংশয় । মগবায় হইল মহা ঝড়বৃ্ি থাওল সকল দুঃখ তব শুভদিষ্টি । কালিদহে কুমারী দেখল শতদলে পুনরাঁপ২ দৈবদোষে লুকাইল জলে । বাধ প্রাতিকূল নৃপাতি করে বল তব নাম অনুকূল বিপদ-সকল। মর্ডে স্মঙ্রন করে দাসীর বালক কৈলাসে পার্ধতীর কপালে টনক। অভয়াচরণে মজ্ুক নিজ চিত শ্রীকবিকস্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ 86৫8 উর চণ্ডী রাখিতে কিন্কর আইল আগি বিনঙ্কটে বাইয়। নদ নদী রয়াফর। সপ্তম দিবস; নিশ। জাগরণ অমরকূলের দর্পে দৈবকী সপ্ধম গর্ভে হইলা প্রভু ক্ষিতভার-নাশে হরিতে কসের ভীতি যোগনিদ্ ভগবর্তী থুইল এড়ীয়া নন্দ-বাসে১ । অবতরি যদ্দুবংশে কপটে ভাঙুলে কংসে রাঁহল। বসুদেবের সদনে বিপদে স্মগুরে দাস পুর চণ্ডী অভিলাষ রাখ চন্ডী অকালমরণে । ভোজরাজ-অবতংসে শ্রীহার কাঁরয়৷ অংসে২ বসুদেব গেল নন্দাগার অগাধ যমুনার জল মাঘ! পাত দিলে স্থল শিবার্‌পে নদী হইলে পার । যশোদানান্দনী জয়া শিবা দুর্গ মহামাযা শঙ্করী শিখরী শিবদৃতী মহিষ রাক্ষস জন্ত সভার হরিলে দগ্ত দিবে স্থাঁপলে বসুমতী । ক্ষাতভার-নাশ হেতু অমঙ্গল ধর্মাকেতু যাদব পৃজিল নন্দসুত। নাম হইল বনমালী কুমুদ। কর্ণিক। কালি অস্ত লোকগাল কইল পুজা । ধাব বিশালাক্ষী নাম বারাণসী কৈলে ধাম নৈমিষকাননে লিঙ্গধর৷ নীলপুরে তুমি নীল পুরী কইলে ঘাটশিল। রাষ্কণীর্পথা ভয়ঙ্কর। । কে জানে তোমার তত্ব তুমি রজ তুম সত্ব বেদমাত৷ সাব্তীরুপণী অজ আদ্য মহামায়। শঙ্করী শক্করপ্রয় জাম শিশু কি বাঁলতে জানি। সাধু কইল এত শত বারা টলে ভগবতী আসন করয়ে টলটল মুখে হইতে খসে পান শ্রীকবিকষ্কণ গান মনোহর নৌতন মঙ্গল ॥ ২৫ 86৫ কালী কান্ত কপালিনী কপালবুগুল। কালরা্ি কফআখি কত জান কলা! কাঁলকালে আমার কলুষ কর নাশ সংহলে কপট কাঁর রাখ নিজ দাস। কাতায়নী কালরাম্ি কপালমালিনা কুমুদা কার্ণক কৃফা কালি কপািনী । কংসানুজ। কংসহর৷ কমললোচন৷ কামদ৷ কামিক্ষ। [ সব ] কর্ম-বিমোচন।। কৃপামই কৃপা কর কাতর কিন্করে কালিদহে কেনে দেব বিড়ান্বল মোরে । খড়গিনী খেটকধর! খড়ুগপতাকিণী . থণাবখাগনী দেখ খগুনকারণা । খুরপ্রধারণী [ তুমি ] বাগ-বিধারিণী খলাসুরে ধর্ব কইলে সমরে আপনি । খেদ-খগুনকার খেদ কর নাশ খাওয়া সকল দুঃখ রাখ নিজ দাস। গোপসুত৷ গুণময়ী গোপালভাঁগিনী গোকুলে গোমতী তুমি গগনবাসিনী । গণমাত৷ গণেশ্বরী গোরা গান্ধারী গীতগাথ। গণাধিপা গোকিদানুচারী । ঘোররূপা ঘোরতপা৷ ঘোষণভূষণ। ঘনরব কৈলে [ ঘন ] ঘণ্টার বাজনা । ঘোর রাজ! নাঞ করে জাবত ঘাতন ঘটিত করহ গৌরী তাবত জীবন। চামুণ চাণ্ডক৷ চও চণ্ডবিনাশিনী চ্দ্রড়াগুনি টের শিখরবাসিনী । চন্দরহাস১ লইয়া মাত৷ উর গো মশানে চৌর-তুল্য দাসে মাতা কর পরিন্াণে। ছায়। ছন্দমই তৃমি 'ছিদ্ুবিঘাতিনী ছাড়িয়া কৈলাস হও ছিদ্রবিনাশিনী । জগতজননা জয়। শিবের জীবন জদ্মজর়ামৃত্াহর! জয়ভীজঘন । ৫৪ জটাজ্‌টবতী জে যান্রিক-শিরোমুনি জীবের জীবন জনার্দনসহায়িনী । জয়৷ বিজয়া লৈয়৷ উর গে। মসানে জীবনে কাতর 'ছরা মাগে পরিন্রাণে । ঝনঝনা আমারে পড়িল পোষমাসে ঝখপ দিতে চাহি জলে কাটে তব দাসে। ঝণট কাট বলিয়৷ কোটাল ছাড়ে ডাক ঝটিত টীরয়া মাত খণ্ডাহ বিপাক । ঝোর-বঙ্কারান আইনু বাতি ] নদী রয় ঝকড়৷ বান্দিলে মোরে পাপ কািদয় । টানাটানি করে চুলে ধাঁরয়৷ কোটাল টন্ক টার্গ কেহ হানে কেহ করবাল । টীটকার টাকরে পাইল পরাজই টষ্কার দিয়া রণে উরহ কৃপামই | টানি টনক বলে নৃপতির ঠাট টুটাহ রাজার বল রণে জাউক কাট । ঠক কোটাল বেটা না শুনে বিনয় ঠেকিল দাসীর পো৷ দূর কর ভয়। ঠারাঠার করে গো কোটাল হানিবারে ঠাঞ্জ দেহ ঠাকুরাণী চরণপঞ্জরে | ডাম্মকাকে বাধ মোরে কৈল বিড়ম্বন ডাক৷ হইল 'ডঙ্গ। নুচী গেল প্র।ণধন । ডাওমাডম্বরু মাত৷ ভরিয়। মশানে ডাকাতে ড'টীয়৷ মাত৷ কর পারন্নাণে । চঙ্গ বেট হান বল॥ বলয়ে কোটাল ঢাক ঢোল [পঠে বাজে গলে ওড়মাল। ঢেক৷ মারে একবারে শতশত জন ঢাঁলল তোমার পদে আপন জীবন । ভবদা। দ্রেলোক্যতারা তিলোকতারিণা শান্ত তারিণী তুমি তুরঙ্গনাশিনি। তুঁরতে তারিয়া তোল তাঁপত তনয় ঘ্রাণহেতু তুমি তোমা বিনে অন্য নয় । থর থর করে প্রাণ দেখিয়া কোটাল থাক থাক বলে ঘন লোফে করবাল। চ্তীমঙ্গল থাঁক কোটালের আগে বান্ধা কর দৃয়ে স্থির করি চাপ মোরে উবানিপুরে। দুর্গা পরা দৈন্যহর৷ দীনদয়াবতী দুরস্তদানবখাঁণ্ড দেবগণ-পাতি। দুর্জয় দাক্ষণাকালী দুঁরিতনাশিনী দুঃখদাসে কর দয় দুর্গাতনাশিনী । দূর কর দুর্গা মোর অকালমরণ দ্ধ দবে দাহহরা১ দীনের শরণ । ধিষণাধারণাবাঁত ধাঁরের ধারণা ধরণী ধারণী ধারী ধরের নন্দনা । ধনধান/ধর৷ ধন্যহেতু ধর ত্বর৷ ধরাপাঁতি-ভয়াতুর মসানে গোচর!। নাঁধ নুদাঃ নারায়ণী নগের নন্দিনী নিশুন্তভনাশিনী নীলা নীলপতাকিনী । নন্দগোপের সুত। হয়া রাখলে গোকুল নৃূপের ভয়েত মাতা হও অনুকূল । পশুপতি প্রজাপাতি পুরুষ প্রধানে পুরন্দর পদ্মযোনি পাশী পরমানে । প্রাতাদন পুজে তোমা প্রকৃতিরাপণী পশুসম শিশু আম কিবা পৃজা জান । প্রণতবংসল৷ তুমি পরমমঙ্গল। পাদপন্মে দেহ চ্ছল সেবকবংসল।। ফলফ;লে জলে রাম পুজিল কাননে তার পৃজ। নিলে মাতা রাবণ নিধনে ।৯ ফেরু-ভক্ষ হইল ছিরা৷ তোমা পুঁজি ঘটে ফণ্ণী সম কালমুখে রাখ গ সঙ্কটে । " বলার্‌ পুঁজিয়া বলদেবের ভাগনা বসুদেব-সহচরী নন্দের নন্দিনী । বিসঙ্কটে কৈলে ব্গুদেবের উদ্ধার কংসভয়ে কষে কৈলে কালিন্দীর পার । ভয়ঙ্গর৷ ভয়হর! ভৈরবী ভাবিনী ভদুকালী ভূতমতী ভ্রমরী ভীষণী। ভয়করা ভয়হরা ভীম ভঙ্গবতি নগুম দিবস নিশ! জাগরণ ভূপাঁতডুবনে ভয় ভাঙ্গহ পর্বাতী । মুগা্ষমুকুটমুনি-মন্তকপালিনী মহিষমাদিনী মধুকৈটভ-নাশিনী । মহামেরুসনা মেরুমন্দর-মন্দিরা মহামায়। মহোদরি মাধাবি ইন্দিরা । মহেশের অর্ধতনু মরালগমনা মধুপুরে কৈলে মধুবংশের মানন। । যজ্জজুব৷ যুগন্ধর। যজ্ঞাবনাশানি যশোদানন্দিনী জাতা যমুনা যামিনী । যমের যাতনা হইতে যন্ত্রণ৷ যাতন। যশ গাই যাঁদ পুর আমার কামনা । রণজয়া রণপরা রঙ্কিণী বঙ্গিনী রণাঙ্গনে হইলে রঘুনাথের রক্ষিণী । রাক্ষসের রণে যখন রাম হইল। জই রাবণের বধ হেতু তুমি কপামই। ললিত৷ ললিতকান্তা লোলবসনা লক্ষ্মীর বিনাশ হেতু তোমার করুণা । লাভ হেতু আইলাঙ মাত৷ তোমা পুঁজি ঘটে লক্ষ হয়া রাখ মোরে বিষম সঙ্কটে । বলার্‌ পুঁজয়। বলদেবের ভগিনী বসুদেব সহোচারি নন্দেব নান্দনী । বিসঙ্কটে কৈলে বসুদেবের উদ্ধার কংসভয়ে কৃষে কৈলে কালিন্দীর পার। শঙ্খনী শৃলিনী শিবসহচরী শঙ্কর শর্ববাণী সর্বরী শত্তিরূপা শাকন্তরা । শশাশরোমাঁণ শৈলাশখরবাসিনী শরণদা শাস্তি মুন্ত কর গো৷ আপুনি । ষড়গুপধারিণী ড়সী সতী বুপণা সতি সতা-সনাতনী সংসারসরাণ। সধলোকে গায় তোমা সেবকবংসলা সেবক তাঁরতে উর সর্বমঙ্গল। । হুরহরহিরণাগর্ডের তুমি মূল হইয়৷ নন্দের সুতা রক্ষিলে গোকুল । ২৫৫ ক্ষিতর হরিলে ভার দৈতা কৈলে জগ ক্ষেনেক ধারয়া রাখ আমি দীন হাঁন। শ্রীপাতি এতেক যাদ কৈল সুতিবার্ণা বৈলাসে জানিল মাতা হেমস্ত্নন্দিনী । মুখে হইতে গলিত বহিয়৷ পড়ে পান অভয়ামঙ্গল কবিকল্কণ গান ॥ ৪৫৬ পল্প। আজ কেন দোখ অমঙ্গল মুখে হইতে খসে পান স্থির নহে মোর প্রাণ আসন করয়ে উলটল। আইস পরা প্রিয়সাঁখ এমন করযে কি কারণ অমর-ভুজঙ্গ-নরে গন্য। মোরে কহ দোখ কে মোরে স্মরণ করে গন্যা ঝণট কর নিবেদন । ুক্ষা ধৃত নাঁঞ উড়ে ক্ন্দন করয়ে ডান আখি কিবা মোরে হয় হানি আজি বড় বিপরীত দেখি । খাইতে দশন লাগে জিবে গ্রমনে উছট লাগে নখে ভোজনে বিষম জাই মনে বড় দুঃখ পাই কালপেচা ডাকে চারভিতে | শুনিঞ। চণ্ডীর বাণী পল্লাবতী মনে গুনি বিচারে জ্যোতিষ নান৷ পুথিি দূর কৈলে মায় মে। তোমার দাসীর গে। মসানে লইল শ্রীপাতি। গয়। কালিদহের জলে মায়া কৈলে বিষম সঞ্চটে, খুলনা মারব শোকে গৃজ। নইব নরলোকে ছিরা মইল তোমার কপটে। কপালে টনক নড়ে হেন মনে অনুমানি মন উচাটন ইবে বাঁসয়। কমলদলে ২৫৬ শুনিএ। পর্যার বাণী রোষযুত নারায়ণী প্রভাতে-অরুণবিলোচনা কালঘাম বহে মুখে মুকুট গগনে ঠেকে গ্রলয়বদন ঘোরম্বন। । ধারয়া বিশাল কায়। হইল। দেবী মহাকায়৷ কপালে ঠেকিছে দিনমুনি কোপে কম্ফমান তনু ভুরুযুগে বাষ১ ধনু গগন পুরিল ঘোর ধবাঁন। সমারুঢ়-মহাগজ। দেবা হইল দশতুজ। কর-ধরি নান প্রিয়বাণ শূল ধনু আঁদ পাশে পাঁরঘ তোমর পাশে 1সথর সমর শরাসন । গায়ে আরোপিল রাঙ্গ ভূসাঁও ডাবুস টাঙ্গি তবক বেলক চক্রবাণ করে লইল 'ভিন্দিপাল যমদণ্ডও করবাল ফাঁঞ-ফট্ু কামান কৃপাণ। চণ্ডী কৈল অটুহাস দেবগণে লাগে নাস নিনাদে ভরিল ব্রিভুবন জেন দৈত্যবধকালে [মাল যত দিগপালে দল তারে নিজ নিজ ধন। চন্ডীর ক্রোধের কালে মাল যত দিগপালে নান৷ অগ্ত্র কৈল সমর্পণ নিজ্জ শূল হইতে আনি শূল দিল শূলপাণি চক্র হইতে চক্র নারাঘণ । শঙ্খ দিল জলেশ্বব শান্ত দিল বৈশ্বানর২ নাগপাশ দিল অস্ভুবতী কামুক অক্ষয়গুণ বাণপূর্ণ দুই টোন চাঁওকারে দিল সদাগাতি। বন্ধ আন লঘৃগ্‌ত ব দিল সুরপাতি ঘও দিলং এরাবত হইতে কালদণ্ড হইতে যম দণ্ড দিল অনুপাম দিল দক্ষ অক্ষয়মাল। হাথে। অধনত কার মাতা কমুগল দিল ধাত। লোমক্‌পে বাস দবাকর চতীমগল রোষযুত করবাল ঈমর্পণ কৈল কাল অবনী লোটার়া। কলেবর । খিরাসন্ধু দিল হার অজয় অমর আর ড়ামনন কনককুগুল দিল মুকুটের শোভ। অর্চন্ডর ইন্দু-আভা বাহুযুগে অঙ্গদর্মগন । নুপুর মরালভাষ৷ দিল দিব্য কণ্ঠভূষা আর নানা রতন ভূষণ রড্লময অঙ্গুরি সকল অঙ্গুলি ভরি পদানুলে পাসুলি রতন । টার্গ দিল বশ্বকর্ম অস্ত্র অভেদ্য মর্ম দিল নানাবাধ প্রহরণ দিলেন ভরিয়৷ গলা অমর পঙ্কজমাল। উর্বশী কার বিভূষণ। [বিমল শোভাব সন্প জলানিধ দল পদ্প কেশারবাহন হিমবান দিলেন পুরিয়। পৃজা চষক যখের* রাজ। তাহাতে অক্ষয় সুধাপান । শেষ দিল নাগহার মহামুনি ভূষণ জাব সেই প্রভু ধরিল ধরণা আন্বকাচরণ সোব রচিল মুকুন্দ কবি প্রকাশল দ্বিজ নৃপমুনি ॥ - ৪৫৭ কোপে লোহিত আখি চাণ্ডক৷ বলেন সাথ শুন পঞ্প। আমার বচন রাজারে বধিয়া আজি ছিরারে ধরাব রাজ)১ ঝট কর সেনার সাজন । আমার সেবক ভ্রমে যাঁদ নিঞ। থাকে যমে বড়াঞ কাঁরব তার দূর দয়ার বত ক্রেশ টব তাহার দেশ জালাইব সংজমানিপুর | ূ মগ্ুস দিবস ; নিশ। জাগরণ চোঁদিগে দুদ্দুভি বাজে চোঁষটি যোগনী সাজে আগু দলে চন্ডীর পয়ান রণস্পড়া বাজে ঢাক ধার দান। ঝণাকে ঝগক ধার তরু পৰত পাষাণ । করে ধার আস খাখ৷ ভাহন দিগে উগ্র বাম দিগে ধায় চগডবতী পবিয়। লোহিত ধুতি বাম দিগে শিবদূতী কৌশিকী কাঁলিক৷ লঘুগতি। সজল জলদধবান শিবা শত নিনাদনী ীপ্রয়৷ কঙ্কালমালিনী । আইল৷ দেবা চত্জ্ুড় মাহেশ্বরী বৃষারুঢ়া ভুজঙ্গবলয ভ্রিশুলিনী। আইলা রাজহংসরথে করজাপ্য শুল হাতে হ্মাণী বাদিনী চওমুখী বেদাবদ্যাগণ সঙ্গে সমরপ্রসঙ্গ রঙ্গে আনন্দে নাচয়ে 'প্রয়সাখ । আইল! দেবা বিদ্যমানে কুমারী সমররণে শান্তিহন্ত। ময়ূরবাহিনী বৈফবী গরুড়রথে শঙ্খ চকু গদা হাথে আইল৷। পাশধব৷ বিধাতিনী । বারাহী খেটকধরা আইল দেবী হিরণ্যাক্ষ হর৷ বারবাণ-মুসলধারণী আইল৷ চাঁওকার সঙ্গী হইয়া দেবী নারাঁসংহী নথায়ুধ নসিংহরূপিণী । সহম্রাক্ষি মহেন্দরাণী আইল৷ দেবী বস্ত্রপাণি আরোহণ কাঁর এরাবতে রগবঙ্গে অনুগত বেতাল-ভৈরবা জত সভে আইলা চাকার সাগে। শত ুতিপালি কপালমালিনী কলা [সংহষানে করালবদন। মুখে অটুট হাস করে ধার আপপাশ খটাঙ্গধারপী ঘোরহন। । ্বীপচর্ম পাঁয়ধান শুষ্ক মাংস বিভূষণা বিস্তারব্দনা ভয়ঙ্কর টা ম.সস6৩ ২৫৭ জির্ভালোলা ঘোরমুখী ধা! লোহিত*আখি 'িনাদে ভারিল দিগতারা | ধাইল ত্রিকুটি দানা জাগু দলে দেই হানা ইফ সম বিকটুদখন। কালো ধলো কেহ রাঙ্গ। দামা বব! বাজার সিঙ্া কাড়া পড়া বাজায় বাজন। গলে নাদ্বে হাড়মাল , কান হাথে তাল সাঙ্গ অজানুলগ্িত জটাভার | হাথে লোহার বাড়ি বৃকে আঙ্ছাদয়ে দাড়ি চাঁওকায়ে করয়ে জোহার । সমরে দুন্দুভি বোন রগপড়৷ বাজে সানি কোলাহল হইল সুরপুয়ে যুন্ত দিল দেবরাজ সাধিতে চণ্ডীর কাজ পাঠ!ইল নারদ মুনিবরে । মহামিশ্র জগাথ হদয়মিশ্রের তাত কবিন্্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই বিরচিল ভ্রীকবিকষ্কণ ॥ চন্ডীর আদেশ পাই 8৫৮ ইত্ড্ের আদেশে মুনি চাপিয়া বিমানে দগ্ডমান্ে আইল চাওকার বিদামানে । চকারে দেবখাষ নুতি কৈল মাথা আশীর্বাদ কৈল তারে হেমন্ত্দুহিত। । চাঁওকারে জিজ্ঞাসা করেন মহামুনি কহ গো এমন বেশে কোথারে সাজনি। তোমার ক্রোধের কালে প্রলয় সমান কার তরে ইনা বেশে কর্যাু পয়ান। এত যদি জিজ্ঞাসা করেন মহামুঁন নিজ প্রয়োজন তারে কাহল ভবানী । এতেক সাজনি কিন্্ার মানুষের রূপে গরুড় সাজয়ে কিষ৷ মশকের রখে। ৫৮ তোমার সমরে হরি হর দিল ভঙ্গ গারড়ের সনে কিব জুঝয়ে মাতঙ্গ । সালবান নৃপে ধরি দিব এক জনে কোন কার্য্যে কর তুম এতেক সাজনে। বনে চল মাগে! ভিখ সিংহল নগরে আপনার সেনাগণ রাখ কত দূরে । ভিক্ষা কাঁর মাগ বৃদ্ধবাহ্মণীর বেশে যাঁদ নাঞ দেয় তবে বন করা শেষে। সাধু কার নিল মাত। নারদের উপদেশ সেই ক্ষণে হইল৷ বৃদ্ধব্রা্ষণীর বেশ । নয়ানগালত মল১ গায়ে শত শির অতি আবিলম্বে মাতা মান ধারে ধার পিত যুগল ভুরু গালতদশনা২ মায়াপাশে পারগ্রহ চণললোচন৷ । বাতে হইতে কাকাল বাক৷ হইয়৷ জান ডেড়ু উঝটের ঘায়ে চণ্ডী জান গড়াগাঁড়। বাম কাখে নিল মাত৷ রঙ্গন চুপাঁড় দক্ষিণ করে নিল মাত।৷ শিঙ্গ৷ বেত-নাঁড় । করে নিল কুসুমচন্দন দুর্ববা ধান বেদমন্ত্রে শ্রীমস্তের কারতে কল্যাণ । সংহতি কাঁরয়া সেনা থুইল একম্থানে সেই ক্ষণে উত্তরিলা দক্ষিণ মসানে । নারদের বাক্য যদ মানিল ভবানী বন্দিয়া ইন্দ্রের সভা গেল মহামুনি আম্বকাচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৬৯ হাথে নাড়ি কাখে ঝুঁড় উচ্চম্বারে বেদ পাড় [বিনয় বলেন ধীরে ধাঁরে করজোড়ে কৃতগর্ভ।১ আরোপিয়৷ কোটালের শিরে। কুসুম চন্দন দুর্বা চন্ডীমঙ্গল আইলাঙ তোমার সান্নধানে চিরজীযব হও তুমি অক্ষয় ধনের স্বামী এই শিশু মোরে দেহ দানে । জরাধূত হেল তনু বসতে ধারয়ে জানু ভূমি ধরি উঠিয়ে জতনে হেন জন নাহিকোলে * হাথে ধার মোরে তোলে সোদর সারাথি বন্ধুজনে । নাতিটি হইয়াছে হারা দেখিনু তাহার পার আইলাঙ তোমার সন্ধানে , চিনল আপন নাতি কোটাল পাইলে কাত ৃ পিতার পুণ্যেতে দেহ দানে । পাইয়৷ অনেক রেশ অঙ্গ বঙ্গ কলিঙ্গ উংকল গর্ত লাহুর ভিল্ি অবশেষে আইনু সিংহল। দারুণ কর্মের গতি দরিদ্র আমার পতি ধৃতুরায় পাগল দিগান্বর ভিক্ষায় পরম ক্লেশ নিবাস কুমুদ মহীধর । অবলম্বে নাহ ঠাঁঞ প্রাণনাথ কইল বিষপান দারুণ দৈবের দোষে দুটি পুত্র নাহ পোষে কত দুঃখ সহে আর প্রাণ । বাড়ুক তোমার মান নৃপের মুখের পান বাঁড়িবেক তোর পরমাই দিশ। লাগে জাইতে পথে ছিরা দেহ মোর সাথে আঁশস কাঁরয়া ঘরে জাই । শিশুমতি মোর নাতি নহে ঢ্গ বাটপাড় চোর কুপণজনের কাড় দান দিয়া প্রাণ রাখ মোর। পাতি মোর কুলে বন্দ কুলে শীলে নহে নিন্দা বিদ্বপন্ধে জার অধিষ্ঠান চাহিনু অনেক দেশ চাহিনু অনেক পল্লি সবে ধন বুড় বৃষ সমুদ্রে ডুবিল ভাই নাহি জানে চঙ্গাতি অন্ধজনের নড়ি ই নগ্তম দিবস : নিশা জাগরণ অঙ্গীঁণ গোতের রাজ পিতা মোর মহাতেজ। নাম হিমকেতু মতিমান। রাহ্মণী জতেক ভণে কোটালিয়া নাহি শুনে হদয়ে ভাবেন ভগবতী রক্ষিতে কিন্বরজন , সবিনয় নিবেদন শ্রীকাবকষ্ষণ ইহ গাঁত॥ 8৬০ আমি পরাধীন অভিবড় ক্ষীণ বিশেষে রাজার দায় ধাঁ তুয়৷ পায় ক্ষেম এই দায় বধ্য জনে ছাড় আশ । কর্ণ বাল আদি জত যশনাঁধ আছিল ধরণীপাল সুখভোগ জত গাঁণব তা কত সকলি হরিল কাল। দান দিল জত সব হইল হত ঘবর্গপুরে হইল স্বামী বিধি সনে বাদ বড় পরমাদ সে ভাগ্য না কইল আমি । এই সাধু ভগ রাজ৷ কবে দণ্ড মিথ্যাবচনের দোষে রাজার বচনে আনিল মসানে বাদ্ধয়া নায়ের পাশে । রাজ। সালবান কর্ণের সমান জে চাহ তাহ] পাই দানে কষ্পতরু তোঁজ হানজনে ভাঁজ নায়ড়া-তলায় সাধ মানে । কোটালের বাণী শুনিএর ত্াহ্মণী চাছেন পল্মার মুখ বুঝয়। ইঙ্গিত পল্প। বলে হিত জাঁচঙ্গ। বড়ই দুঃখ ।- পাজপতান্থানে ২৫৯ নিতে জাবে দানে দেখ। 'দিবে কত জনে শুনিঞা পার্বতী শ্রীকাবকষ্কণ ভনে ॥ ৪৬১ শ্রীপতি বাঁসয়া আছেন বকুলের তলে সভ। বিদ্যমানে দেবী শ্রীমস্ত কৈল কোলে । শ্রীমন্ত করিয়া কোলে বাঁসল৷ ভবানী ভাই সঙ্গে কোটালিয়া করে কানাকানি। সেত৷ বলে নেত৷ ভাই দেখ বিপরীত বুঝতে ন৷ পাবি ভাই বুড়ির চারত।. অকম্মাং আইল বুড়ি দক্ষিণ মসানে আঁত খরসান বুড়ি চাহে চারি পানে। সকল বচনে বুড়ি ছাড়ে হুহুষ্কার দিবস দুপরে হইল ঘোর অন্ধকার । নাহ দান দিতে বুড়ি সাধু কইল কোলে রাজার বিপদ আজ নিব বলে ছলে । একেল৷ আইল বুঁড় হইল দুইজন কোপে ওষ্ঠ কাপে দোখ লোহিত লোচন। বামানর বোলে যাঁদ ছাড়ি রাজ-এীর সবংশে বাঁধব প্রাণে নৃপাঁতিকেশরী | যাঁদ ব হানিঞ জাই রাজ-রিপুজন মশানে বুঁড়র ঠা না রবেক জীবন । কেমন দেবত৷ আইল এই বৃদ্ধবেশে নাঞি পরিচয় দেই চক্ষুর নিমিষে । চক্ষে নাহি দেখে বুড়ি নাঁঞ শুনে কানে কেমনে আইল বুঁড়ি দাক্ষণ মসানে। কোটালে গাঁঞ্য়৷ বলে নেব কোটালিয়া শ্রীমস্তের জটে ধয় বামনী ঠোঁলয়।। কোপে পদ্মা১ দিল সিংহনাদের নিশান আন্বকামঙ্গল কাবকম্বণ গান ৬০ ৪৬২ কোটাল খানিক জীবন রাখ ধার তুয়া পায় খেম এই দায় সুকাতিসরণ দেখ । নেহ মোর হার কর্ণের অলঙ্কার অঙ্গার অঙ্গদ বালা ছাড়হ কৃম্তণ পিঙ গঙ্গাজল দেহ তুলসীর মাল৷ ঘোর তরআর দেখায় কতবার প্রাণে ভয় বড় লাগে পুণ্যে দেহ মন কার নিবেদন বাঁল কিছু তুয়া আগে। লোকে ভাবে দুঃখ সাধু প্রমুখ বাঁসল বসন পাতি হানে কোতোয়াল ভাঙ্গে তরয়াল দুঃখ ভাবে নিশাপাঁত। কুজ্ঞানি এই বুঁড় কমে কইল ডোঁড় ভাঙ্গিল আমার অসি নান। অস্ত্র ধার দুষ্ট সাধু মারি কিসের বিলম্ব বাঁস। রাজা রঘুনাথ গুণে অবদাত রাঁসক মাঝে সুজান তার সভাসদ রচি চারুপদ শ্রীকাবকম্কণ গান ॥ ৪৬৩ পশারল বোঁদশী সাধু বধিবারে গুরিয়। সন্ধান ডাকে হান হান কেহ ধায় ছানিবারে। দশাবিশ বারবর ধায় নৈয়া জমধর শ্লীমন্তে করতে গুড়া চন্ডীমল শ্রীমস্তের অঙ্গে একে একে ভঙ্গে জেন আসায় ভূরকুণড। হইয়া কৌতুকি ধাইল ধানাক আরপে শ্রীমন্তের গায় শ্রীমস্তের অঙ্গে বাগ কত ডঙ্গে বরবর ফেলফেল চায়। গুঁরয়া বেলকি ধাইল ধানকা বাছিয়৷ মারিতে কাড়া গুরিয়া সঙ্ধগান মারিতে চোখ বাণ ধনুকের 'ছাগুল চড়া । করে ধাঁ সাঙ্গী ধায় রণরঙ্গী তোমর টাঙ্গি শেল শ্রীমন্তের অঙ্গে একে একে ভঙ্গে বাঁরগণ চাহে ভেল ভেল। শ্রীমস্তে বেড়য়। ধায় রায়বাশিয়া পদাতিক শয়ে শয় ভাঙ্গল রায়বাশ পদাতিকগণে ভ্রাস শ্রীমন্তের হইল জয়। জগদবতংসে পালাধ বংশে নৃপাতি রঘুরাম শ্রীকাবকঙ্কণ করয়ে নিবেন অভয়৷ পুর তার কাম ॥ 8৬৪ সাধু হইল বন্ত্কায় নান৷ অস্ত্র ভাঙ্গা জীয় পাইক কান্দে মাথায় হাথ দিয়া কোটালিয়৷ কোপমান ঘম ডাকে হান হান দূর কর বামনী ঠোঁলয়া । বুঁড় গৌরব রাখহ আপনায় হইল অনেক বেলা রাজকার্ষে ন্যাহ হেলা | ঝণট ছানো বৈদদিশী কুমায়। সপ্তম দিবস : নিশা জাগরণ বুড় মাগ্যা বুলে কড়া কড়া পারধান শত-ছেঁড়া মানুষ লইতে চাহে দানে কোথা হইতে আপি বুঁড় সর্বকার্ষে কৈল ডোঁড় অঞ্ লোকপাল পরমাণে । কাখে কার রঙ্গন-ঝুঁড়ি মসানে প!তিল নান! মায়া জতেক বিনয় কই নাহি জায় মসান ছাড়িয়৷ । হাথে নড় কাখে ঝুড়ি প্রবোধ বচন নাহি মানে সব মিথ্যা জত কয় আগে হান বুঁড়িবে মসানে । শিখিয়। ডাঞন-কল। জানয়ে অনেক ছল। বুড়ি আপন চিনিঞা৷ জাহ বাস শেল সাঙ্গী কাড় খাণ্ড পাইকের জতেক ভাণ্। সকল করিলি বুড়ি নাশ । মোর বোল শুন নেক এথা হইতে ঝণট কর দূর থাঁকলে বুড়ির আগে কাড় খাও শেল ভাঙ্গে কুজ্ঞানি বুঁড় জে প্রচুর । কোটালের আজ্জ৷ পায় পেলিলেক বামন ঠেলিয়। বঁচয। শ্লিপা্দ ছন্দ গান কাঁর শ্রীমুকুন্দ আম্বকার আদেশ পাইয়। | আইল বামনী বুড়ি বামনী বলিয়। সই কোথার বড়াই বুড়ি অকারণে কর ভয় বুড়রে মারিয়৷ ঢেক। নেব কোটালিয়া ধায় ৪৬৫ কোটাল রে দুঃখ পাইল) নিজ্জ কর্ম দোষে জানঞা ইন্কিয়গণ ন৷ সেবিনু নারায়ণ কারেহ মা রাখিনু সন্ভোষে । ইলম যজঞয় কৃণে বসুধ। ব্রাহ্মণতু্ে দন্প্রদানে না কইল আহত ২৬১ ফাঁত-সাঁতিজন প্রাত না কইল প্রেমতন্তি এই হেতু পণ্যম দুর্গাতি । আছিল বৈকুষ্ঠপুরী জয়বিজয় দুই ভাই হইয়া কৃষের সঙ্গী বারিষ্িতনয় লঙ্খি বৈকুষ্ঠে না পাইল ঠাঁঞি।১ দ্বিজে নাঁঞ দিল দান দিনে দিনে পরমাঞ শেষ লাঞ্ঘয়া কাঁপল খাষি রামায়ণে শুন হীতহস। পাত্রে নাহি দিল দান দাবিদ্রু হইলাঙ এই দোষে জীবে না কাঁরল কৃপ৷ এই হেতু খিনতপ৷ ঘরে ঘরে বুলি ভিক্ষা-আশে । ্‌ ্রাহ্মণীর কথ শুন কোটালিয়৷ কহে বাণী সকরুণে করে নিবেদন রচিয়৷ ন্িপাঁদ ছন্দ বিরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ বৈষুষ্ঠনাথের দ্বারী না কইল গুরু মান দূর্যবংশ ভগ্মরাশি অপানে কারল মান গান কবি শ্রীমুকুন্দ ৪৬৬ আইনু ভিক্ষের আশে নাঞ দিলি ভিক কিসের কারণে বেটা বল ধিকাধিক। ্রা্মণী ঠেঁলিলে বেটা জাবে রে আপ্পাই প্রথম রণে পড়িবে ভোমর৷ দুী ভাই । ব্রাহ্মরণার তরে জেন বঙ্গ কুবচন অনুমানে বুঝি তোর নিকট মরণ । " বুঁড়ি আইীসষ আমার পিতৃশ্রান্ধ-দিনে মাগিয়া লইষ বুড়ি জে [বা] তোর মনে । দূর কর বিবাদ বুড়ি মানুষের কথ৷ এহা কেব৷ দিতে পারে কার দুই মাথা । মসান তেঁজিয়। বুঁড় ঝাট চল পুর গৌরব করিব দূর ধারয়া চিকুর । ২৬২ কোপে চণ্ডী বাজাইল নিসানের ঘণটা ধাইল দানা দুই ভাই নামে রণঝশাটা । * নেব কোটালের ঘাড়ে মারে ঘাড়হাত করের প্রহারে তারা ছিতিষ। লয় মাথা । জ্ুঝে রে দানব সব কোটালের ঠাটে হান হান শব্দ করে গগনতল ফাটে । মার মার বলিয়া কোটাল ছাড়ে ডাক দুইদলে রণপড়। বাজে বারঢাক। ঝণকে ঝণকে তবক পৃরিয়। এড়ে গল রণঝখট ওধা করে মাথায় ভাঙ্গে খুলি । রণে পদ্মাবতী দিল দুন্দভনিসান আট দিগের জত দানা বোঁড়ল মসান | * শ্রীমস্তে ধারতে জায় গজাপঠে থির অস্তারক্ষে দান৷ তাব ছিগিয়া পেলে শির । দানাঘটী বিরথট। দেয় গালাগালি ভাঙ্গে দানা টাকরে ঘোড়ার মুখনালি । দুইদলে কাড়াকাড়ি বারষয়ে বাণ জরতী১ বামনী ডাক ছাড়ে হান হান । রচিয়।৷ মধুর পদে একপাদি ছন্দ শ্রীকবিকঙ্কণ গীঁত গাইল মুকুন্দ ॥ ৪৬৭ জর্তী৯ বামনী বেশে জুঝেন ভবানী ঘরদল পর্দল দুকুটীকুটিলা কড়মাড় দত্ত কৃত-বনমালা* বাজায় মাদল কার কেহ ন৷ শুনে বাণী । পঙ্গসজটিলা পাঁরধান চারবসন৷ সমরে দুরস্তা অভয়া ভীষণদশনা । পলি তজটিল৷ আভিনব জলধরল্নাদ। চতীমত শতশত ডাখিনী সঙ্গে বামনি ছাড়িয়া কুলমর্য্যাদা । থালতবসনা চণ্চললোচন। অজানুলাম্ত জটা রণভুমে কালী । বিষম করাল জলধর জিনিএগ ছটা । বোঁড়য়। মসান পাইকেরৎ চাপান ঘনবাজে দামামা পড়া রণমদ মাতল্সা কাল বেতালা খাইতে ধায় মেলিয়া দাড়া । ু্ঠকামুঠাক দৃই দলে কাটাকার্টী কাব কেহ নাঞ শুনে বোল পাইল মরণা না চিনে আপন। পরঠাট বনু পাঁড়ল ভূলে । খরতর দিষ্টে গজবরু-পিষ্টে মাহুত সারয়ে কুস্ত পরিঘ ভুযুক্তি ধারয়৷ চণ্ডী বাড়িয়া ভাঙ্গল দন্ত । করিবর-শুঙ্ডা ধারিয়। চামুা ঘন দেই গগনে পাক গজবর-চাপনে পাঁড়ল মসানে পদাতিক লাখে লাখ । বেধাবোঁদ্ধ জমধর পাঁড়ল বাঁরবর গদাহাথে পাড়িল গা ঢালী পাইক তবকাঁ পাঁড়ল ধানকী বেগে বহে রুধরের নদী । সেতাই নেতাই কোটাল দুই ভাই পড়ে মহাঁষিয়। ঢালে আকাশে মামুদা আছিল কৃমুদা ধারয়৷ পুরিল গালে । পাঁড়ল সেনাগণ কোটাল্য৷ তেজে রণ চলিল নৃপাতির ঠার্জে রিয়া সুষন্দ শ্রীকাবি মৃহুনদ কাঁবচন্ডের ভাই ॥ সপ্তম দিবস নিশা জাগরণ 88৮ নিবোদি তোমার পায় প্রাণ লৈয়৷ পলাহ নৃপমুনি তোমারে কাঁহয়ে দড় আহড়ে আহড়ে নড় জাবদ না দেখে সে বামুনি। তোমার আদেশ পায়্যা বোদাঁস সাধুরে লৈয়া হানিবারে গেলাঙ মসানে নাহি দেখি নাহি শুনি সাধুরে লইতে চায় দানে । তোমার অলঙ্ঘ্য বাণী বামুনীরে নাহি দিল দানে তুষ্কার ছা়িয়। বুঁড় যোজনেক বাটে জুড়ি তার সেন। বোঁড়ল১ মসানে। বামনী দিলেক হানা পাঁড়ল আমার সেন৷ একটী নাহিক অবশেষ তোমায় বারতা দিতে রাহযাছিলাঙ২ এক ভিতে মড়ায় কাঁরয়া পরবেশ । বাড় ধরণী ধাঁরয৷ উঠে রণে জেন তারা ছুটে একগাছি নাহি কাচ৷ কেশ না শুনিতে পায় কানে নাঁঞ দেখে লোচনে অকস্মাং করিল প্রবেশ । বৌদশী সদাগরে বসাইল হাঁনবারে বারিলেক বুড়ি আসি বাণ না লাগে কুশের লেক কে সাহতে পারে তার রণ। হাথে নাঁড় কাথে ঝুঁড় আইল বামুনী বুড়ি কোন নৃপতির হয়া চর হেন লয়ে মোর মনে কোন রাজ। আইপ রণে রক্ষিতে শ্রীমন্ত সদাগর। অপরূপ কথ শুন “সাজ বলি পড়িল ঘোষণ। চতুরঙ্গ গল সাজে সমরে দুন্দুভি বাজে শুনি পুরে ধায় সর্বজনা । অবগাতি কর রায় আইল বৃদ্ধর্রাহ্মণী তুমি বিপু নৃপমুনি দোখলাঙ পরতেক সালবান নৃপমুনি ০১ গজপাঁষ্ঠে বাজে দাম মাজিল গাজার মানা আড়ারে পুরির। গগন ধবলচামর-হটা উয়াল ছাথর ঘণটা গওস্থুলে সিন্দ্রম্জন। কোটালের কথ৷ শুনি রোমবৃজ্জ নৃপঘথানি কোপে রাজ। পরত অন্তর + ঘন পাক দেই গৌফে দশনে আধর চাপে রচিল মুকুন্দ কবিষর ॥ ৪৬৯ কোটালের বাকা শুনি কাপে সব গ৷ সাজ সাজ বালয়। দামাষ পড়ে ঘা । চলিলা জে যুবরাজ রাজার আরতি লেখাজোখা নাহি জত চলে সেনাপতি । আস্বেস্থ দুলিয়। চোঁদল১ করে কান্দে ধরণী কাম্পত হইল রাজবল-নাদে । রায়বোন গজবোনিৎ বাজে রুদ্রুবীণা দগড় দগড়ি বায়ে শত শত জনা হাথির গলায় ঘণ্টা বাজে শুনি ঠনঠাঁন কংষ করতাল বাজে বিপারত ধ্বনি । জয়ঢাক বীরঢাক ব্যালিষ বাজন। প্রলয়সময়ে জেন পাঁড়ছে ঝঞ্ঝন। । হাথে দাম! কাড়৷ ঢোল তবল নিষান দাম দড়মসা বাজে বাদ্য সিঙ্কুআন। [বিষম তবলে ঘন আরোপিয়ে কাটি গুরুজ কামান হাথে শেল পার্টী পা্টী। জবানিএ] আসোমার জবন সওয়ার ঘোর রূপে জবন সব করে মার মার । পবাতয়। অশ্থে শোভে রডের বিশ্বুকি কণ্ঠেতে সোনার হার করে বিধাঁিধাঁ । ঢালি পাইক সব সাজে হাথে খার্ডা ঢা ডানী বামে অস্ত্র শোভে বিরুমবিপাল। ২৬৪ ধানকী পাইক সাজে হাথে ধনু-শরে কচীদেশে তরোয়ার বড মনোহরেত। ঢোকাঁনঞ। পাইক ঢোকন শোভ। করে হাওয়। চামর বান্ধে বাশের উপরে। বিচিন্ন পামার গায় পারিজ।তমাল৷ বোরবেশে ধায় পাইক জানে যুদ্ধকন। । ভাম অজুনি চলে কক দুবার [ভড়নে চলিল জঙ্গিঃ বাইষ হাজার। রাজার বেট৷ দুবরাজ ঠাটের আগুয়ান সগড়ে ভীঁড়য়া লৈল বাচন্র কামান । [িষম কামানেৎ ঘন আরোপয়ে কাঠি খোজামিঞ৷ সাজে হাথে রাঙ্গা লাঠি। হলহল করে জত হস্তিকের শু পাঁপালকার সাঁর৬ জেন পাইকের মুণ্ড। বারই বরুজে জেন নিছিয়। পেলে পান পাখারয়।৷ ঘোড়া লাগল কানে কান। ডাহন দিগে কোটাল নাঁড়ল ভীমমনপ রাজার জামাত জ্বায় নামে বারশল্য । সাজ ষাজ বালয়৷ পাড়য়। গেল সাড়। আগু দলে সাজে গজ পাখুরিয়া ঘোড়া। কেহত বেলক কাছে কামান কৃপাণ কার পাঁষ্দেশেতে পূর্ণিত শোতে বাণ। রণাঁসংহ রণভীম ধায় রণসাটা [িনভাই তি বেদ্ধে 'দিয়৷ চুনের ফৌটা । পাইকের প্রধান তিন ভাই আঙযান বাণবৃষ্ি করে জেন জল-বাঁরষণ । পথে জাইতে তিদ ভাই বাঁছয়া লৈল ঠাট" আগুদলে সেনাপাঁত আগুলিল বাট । দক্ষিণ মশামে শিয়। দিল দরশন মসাম বোঁড়ম। ধায় বাজ-মেনাগণ । দেখিয়া ফাফর হৈল কুমার শ্লীপাত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর ভারি ॥ চণ্ডীমঙ্গল 8৭০ মাত৷ ঝাট ছাড়ি চল গো৷ সিংহল তুমি গো অবল৷ জাতি আমি নহি রণে কৃতী কেন প্রাণ হারাবে বিফল । সহজে অবলা শুদ্ধ তাহে তুমি আতিবৃদ্ধ নাহ দেখ শুন চক্ষু কানে পদাতি সারাথ রাঁথ কত আইসে সেনাপাতি সমর কাঁরবে কার সনে । কপালে সিন্দূরছটা আইসে মাহৃতঘটা সিন্দুরিয়৷ জেন কাদস্িনী গজপাঁঠে দাম৷ ঘণ্টা দেখা লাগে উংকষ্ঠা কেমনে থাকিবে একাকিনী । দোখ লাগয়ে ধন্কা তুরগ তবল-বন্ধা আশোয়ার কবচমাঁগুত চোঙর ভোঙর মাথে কৃপাণ কামান হাথে কত কত সমরপাণ্ডত। মাথায়ে ধবল ছাতি গজপাঁঠে নরপাত চারাদগে ভূঞার পয়ান শত শত বাজে দামা নাহিক তাহার সীমা মাত। ঝট ছাড়ি চল গো মসান। মাথায় সুরঙ্গ ডালি তবকাঁ ধানকা ঢালি পাইক আইসে কাহনে কাহনে জীবন কাঁরয়৷ পণ আইসে করিতে রণ সমর কাঁরবে কার সনে। আচ্ছাদিয়া মাহতলল আইসে মাতঙ্গ-বল বারভূঞা। আইসে সেনাপাতি চৌঁদিকে বৌড়ল রথ পলাইতে নাহ পথ না দেখি জীবন অব্যাহত । আট দিকে আগুবালি পড়ে ঘন্তর দাবা সিলি ধুলি আচ্ছাদিল দিনমুনি মেঘের গর্জন শুনি বড় কামানের ধ্বনি রঃ রব শুনি কাপয়ে মৌদনী। সপ্তম দিবস নিশা জাগরণ শ্রীমন্তের শুনি কথা বাঁলল। শিখারসুত৷ দূর কর মনের বিষাদ একাকিনী রণে জন্ত মহিষ রাক্ষসা শুন্ত অকারণে গণ পরমাদ । মহামিশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের তাত কাঁবচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চন্ডীর আদেশ পাই বিরচিল শ্রীকাবকষ্কণ ॥ ৪৭১ বচন বলিতে তথা হইল বিলম্ব রাজসেন। বেগে ধায় করি১ মহাদন্ত । চ্ডকারে প্রণাম করিল আট গোল। পদ্মার নিকটে করে আপন মহলা । মহল৷ করয়ে দান। নামে ধুর্মনাষ পৌঁঢী চালের ভাত করে এক গ্রাস । আইল মহাবীর নামে কালু খাঁটু সমরের মাজে জুজে পাত্য৷ দুই আটু। আর দানা আইল তার নামে তালজজ্ঘ বারমাস যুদ্ধ করে রণে ন৷ দেয় ভঙ্গ । কিচাকচ করে দানা নামে আচাতুয়া নরশির খায় জেন সরসিয়া গুয়া । আইসে দানা সেনাপাতি নামে মহানাল নরপতি সনে যুদ্ধ করে অবিশাল। [ মহল৷ করয়ে দানা আউট-বেতাল দন্তগুল৷ মেলে জেন পাজাল কোদাল । ]২ নিবেদন করে দান। নামে সিংহমুড়াৎ উপবাসী আছি খাইয়। আঠাসি কোটি মড়া। সত্যযুগে পরশুরাম জবে কৈল রণ মাংস খাইয়া উদর পারল তিন কোণ । জবে দেবাসুরে রণ হইল ব্রেতাযুগে মাংস খাইয়৷ উদর পুরিল দুই ভাগে । চ. ম.—9৪ ২৬৫ ্বায়াপরে হইল কুরুপাগুবের রণ মাংস খাইয়৷ উদর পরল এক কোণ। উপবাসী আছি গ কল্যের কট। দিন নক খসা মাত হইয়াছি খিন। হাসিয়া ভবানী সভাকারে কৈল মান সংগ্রাম কারতে সভাকারে দিল পান। অন্বকার চরণে মজুক নিজ চিত শরীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৭২ প্মইকে পাইকে দেখ্যা কাড়ে কাড়ে কথা; আগু হইল ফারকালং ঢালে দিয়ী মাথা । তবকী ছাড়য়ে গুলি বড়ই দৃঃশীলৎ চৈত্রমাসে জেন ঘন বাঁরষয়ে শিল। রাজসেন৷ দেবীসেন। হইল মহারণ দুই দলে কাটাকাণী শুনি ঠনঠন । দুই দলে হাথাহাথি বোঁড়িল মসান আউট বেতাল ডাক ছাড়ে হান হান । [শশা তরু করে ধাঁর পেলিয়। মারে দানা ঢোকনিএ ঢালিয়৷ দেই নৃপতির সেনা । [সংহজোড়। নামে দান আছিল গগনে করে হইতে লইল সভাকার ঢোকনে । আগুয়াইল তবকী নামে রণাঁজতা সংহ বাঘা দুই ভাই রহে একাভিতা। মেঘে জল [ জেন ] দুহে বারসয়ে বাথ কাড়িয়া লইল দান৷ ধনু দুইখান। কামানিঞ। কামান পাতিল থরে থর তাল সম গুলি তাহে ভাঁরয়৷ ভিতর । গুরু স্মঙারয়।৷ রণে জালিল অনল পাছু হইয়। পড়ে গাল নৃপাঁতির দল । ন্‌পাঁতর দলে গুলি খাইয়। বুলে তালি হাসেন চাঁওক। দেখা ঠাটের বিকুলি ২৬৬ পুঁড়য়া মরয়ে সেন পুরোহিত রাহ্মণ বরুণের মন্ত্র ওঝ৷ করেন ম্মঙউ্রণ। মন্ত্র চিন্তন ফলে স্রোতে বহে জল রাজার সমরতলে নিভাইল অনল । পাছু হইল পাইকগণ আগু হইল ঘোড়া পাছু পানে নাহি ফিরে কানে কানে জোড়া । সমরে মরণ তারা নাহি জানে কোপে আশোয়ার ছুটায় ঘোড়। দানাগণে লোফে । গজে গজে উপনীত হইল জেই দণ্ডে করাট চাপড় মাব ছিওিয়৷ নেয় মুণ্ড। বারঘটা আদি জত আঁসয়াছিল দানা সমরে জানল তার৷ নৃপাতির সেনা ।৪ ব্রাহ্মণী প্রভৃতি জান মান্লিকা মণ্ডলী সভারে জঁঝতে আজ্ঞা দিল ভদ্রুকালী রণে ধার চণ্ডী বৃদ্ধরাহ্মণীর বেশ ধবলচামর জিনি লম্বমান কেশ । রুচির ধবলতনু জলধর জিনি সন্দুর তিলক ভালে পুরে দিমমুনি 1 পাতালের নাগলোক হইল আস্থির যুদ্ধের ঘোড়া ছিগিয়। দড়৷ হইল অধীর । সপ্তদ্বীপা বসুমতী করে টলটল ভুজঙ্গ চল হইল অচল সচল৫ । রত্বকুণডল কর্ণে করে ঝলমালি রাকাসুধাকর জেন অচল। বিজুলি । নাসকার দুইটা পুড়৷ জেন শাঁশকল৷ অজানুলান্বত গলে না্বে মুণ্ডমাল। | অভয়াচরণে মঞ্জুক নিজ চিত শ্রীকিবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ 86৭৩ চণ্নাদ চাওক ছাড়েন চগবাণে [িনলোকে কার কথ কেহ নাহি শুনে ।১ শোঁণতের খালি-্জল চন্ডীমঙ্গল রতনের কুগুল কানে করে ঝলমাল রাকাসুধাকর মাঝে২ পাড়ছে বিজ্ঞুল । পাঁলত ভুরু দুটাও জেন শাশকল৷ অজানুলম্বিত গলে দোলে বনমালা। কাত্যায়নী তীক্ষু বা.কাছেন সত্বর তরিশূল পরশ সাঙ্গ শূল যমধর । ধাইতে চরণ দুটা পড়ে কোশে কোশে মাতৃগণে সভে ধায় ব্রাহ্মণীর বেশে । রুচিরবরণ তনু জলধর জনি সন্দুর তিলক ভালে পুরে দিনমূনি । বরাহী খেটকধর৷ ঘণ্ধরনাদিনী আশ্বনী তর্জন কাঁর ধাইল ইন্দ্রাণী । চা মুখে ব্রহ্মাণণী কবেন শঙ্খধবনি। সংহল নগরে বড় পরমাদ শুনি । রণে পাণজন্যঃ শঙ্খ বাজান বৈষবী বিজয়া রণেতে সঙ্গ বাজান শান্তবী । পদাত হইয়া রণে জুঝেন অভয়া ধারলেন সভে বৃদ্ধবরাহ্মণীর মায়া । বাহন ছাঁড়য়৷ সভে ধান মহীতলে যুগান্ত-ভীষণ ঝড় উড়ল সিংহলে । অভয়াচরণে মঙ্জুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ 8৭৪ অকালে বারা হইল দাক্ষণ মসানে পুঁরয়া বহে কুলি সিংহল পুরিল বানে। পুরিয়া অন্বরে কালিক৷ কাদশ্বিনী১ পুরিল অন্বর আঁভনব জলদধবনি ৷ সপ্তম দিবস নিশ! জাগরণ খরতর ধারা বাঁরষে নিপুরা হয় গজ দাদুর ধ্বনি উড়য়ে পাওুর গাহুলে চামরং দেখিয়া হাসেন ভবানী কোমারী রঙ্গে জুগিনী সঙ্গে করা ধার দেই পাক দুন্দুভিনিষ্বন নবধনগঞ্জন আঙ্গে মউরের ডাক । বামনী দিল হানা পালায় নপসেন৷ কার কেহ না লয় সঙ্গ | “মামা-নিষ্কন নবঘনগঞর্জন ভয়ে দিনহংস৷ ভঙ্গ । তবকী ছোড়ে গুলি শ্রবণে লাগে তালি মেঘে যেন বাঁরসয়ে নীর ৷ শোণিতনীরে ভাগসিয়৷ ফিরে বামান হাসে খনখল । খাণা-ফল৷ ঝলমলা চোঁদিকে বিজলি দাবা-শিলি পড়য়ে বাজ কাটা গণ্ডা গণ্ডা কারকরমুণডা ভময়ে হয়-্গজও মাঝ । ধার খর খাণ্ড কাটেন চামু। [সংহলের জত দল শোঁণতের পান৷ আলগছে দান৷ পিয়ে জেন চাতকে জল । খরতর নখরে হয় গজ বিদরে নাসংহ্ীপণী শিব শোণিতের ত্টান কাচ সম বলনি নরশির কমঠের৪ সোভা । বাবাহী রণে ধান নপাতি তেজে রণ ধায় জেন কান্দাশক বধের জলময় সাতরে শয় শয় ফুর্টীল পুণুরীর ৷ কুঁড়য়। অরুণে গজে গজে দশনে পুতি আগলে নাল। ২৬৭ মাছে জেন বাড়ে পাড়ে ছেচি দান ঝাড়ে দশ বিশ গাথে মুগুমাল।। জগদবতংসে গারধি বংশে নরপতি রঘুরাম শ্লীকাবকন্কণ করয়ে নিবেদন অভয়৷ পুর তার কাম ॥ ৪৭৫ জ্রগিনি-সমরে নাশ হইল রাজসেনা আগুপাছু আগুলিয়। পথে খায় দানা । মসানে ফিরয়ে দান।৷ আতী বড় খিন পুখুর-গাবালে জেন মুগ্ডাইল মীন। সমরে জুগিনিগণ ছাড়ে সিংহনাদ [সংহল নগরে বড় হইল পরমাদ । আইল হাস্তির পিঠে রাজ৷ সালবান পণপান্র সঙ্গে ছিল পাইক প্রধান। হয়-গজ বলে রাজা বোড়িল মসান হেমময়দণ্ড ছাত। চামর 'নিসান। জোড়। দাম। সিঙ্গা কাড়া রাজে রণপড়। চোদিকে ধান'কি ধায় চাপে দিয়া চড়।। মসানে লোফয়ে রাজ। তাড়পত্র গাজা হানিল সমরতলে লোহুময় গণ্ডা । রুষিয়া আইল সেন৷ জুগানির রথে ভুজঙ্গ পড়য়ে জেন গরুড় দর্শনে । আজ্ঞ৷ দিল দানাগণে বুষিয়া অভয়া পণ্চপান্রে রাখ মহাঁপালে কর দয় । আমার ক্লুতের হেতু রাখ সালবান জতনে রাখিহ দান৷ তাহার পল্কান । ঘরদল পরদল কিন নাহি চিনে মসানে অণধুলি লগে মর নয়ানে । দশনে দশনে জুঝে মাতঙগগণ ঘোড়ায় ঘোড়ায় যুদ্ধ চরণে চয়ণ। ২৬৮ কাটাকাটি ভুঝে সেন। হেট ঢাল-মাথে ঠেলাঠেলি পড়ে কেহ জায় যমপথে । রুধিরের নদীতে সাতার ঘোড়া হাথি স্থল নাহি পায় রাথ বুঁড়ি মরে তথি। কাঁলকালে রণ নাহ পাইয়াছিল দানা উলটী পালচী রণতলে দেই হানা । জয়ন্ত মানুষ দান। গিলে বাছে বাছ ক্সান ধরয়ে জেন উজানের মাছ । গজদন্ত-গদাপাণি ফিরে দানাগণ মাঁরয়া গদার বাঁড় বধয়ে জীবন । গজপাঁটে তুলিল শ্রীমন্ত সদাগরে ধবলচামর ছাত৷ ধরাইল শিরে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৭৬ জুঁড়য়। কোশেক বাট মুনসীব সবমঙ্গলা বাঁসল প্লেতের হাট জোড়৷ দাম। বাজে কালি চোঁদিগে লঙ্বিত মুণগমাল। । বাজন৷ বাজায় ঢুলি অপরূপ প্রেতের বাজার কেহ কাটে কেহ কোটে কেহ জুখ্য৷ ভাগ বাটে কেহ করে মাংসের বেপার । ফুলঘরা ওড় ফুল মালার লক্ষেক মুল দত্ত কাটি গাথে কুন্দমাল। মাল৷ গাথে নানাভাতি লোচনপঙ্কজ-পাতি পিচাশী মালিনি মহাবলা। মাংসপাঁঠ। রসপানা কৌতুকে কিনয়ে দানা ঘটে রন্তু মদের পসারে কোন িচাশের ঝি মনুষা-মাথার ঘি বেচয়ে কিনয়ে ভারে ভারে ॥ চন্ডীমঙ্গল মাংস বেচে কাচ। রান্ধা কেহ কিনে দিয়া বান্ধ। নরমাথা ঝুন৷ নারিকল পিচাশ-পিচাশীগুল। গজদন্তে বেচে মুল। কুড়ি-মুলে নখ-পানিফল । হাড়ে ঘটি হাড়ে বাটি নর-আটুচাকী রুটি হয়-জিভ্যা কলার পসার কোন পিচাশের বেটা অও্ডঁকোষে খেলে ভেঙটা জোড়ে জোড়ে কিনয়ে কুমার । উত্তার জাতের নাড় কঞ্জরচ্মের শাড়ি চম্নময পাটেব পসার পটুক৷ ঘোড়ার নাড়ি মাপ্য৷ গজ লয় কাঁড় প্রেত-ঠাতি কবয়ে বেপার । কোমল হাড়ের চিড়া সরস চমের বিড়া ঘটে প্র তোলে মজ্জা-্দধ কেহ বা বসায় ঘোল কেহ রান্ধে ভাজা ঝোল মাংসভক্ষণ উপচার বাঁধ । ঘোধো। ঘোরধো১ ডাকে শিবা বাসী মড়া করে টানাটানি কারয়। চঁকা ধ্যান পাবতুষ্ট। জাহারে ভবানী ॥ মসানে ভীষণরব। শ্রীকাবকঙ্কণ গান ৪৭৭ কাট। কন্ধে নুকাইল জত ছিল বুড়া মরা-ছুলা৷ পাত্যাছিল ভূপাতির খুড়।। পেলাইয়৷ চামর ছাতা পালায় কাশীরাজ সাম্বরাজ৷ পালাইল পায়্যা বড় লাজ। অনুসাম্থ পালাইল সাধের সহোদর ঢাল খাও পেলাইয়৷ পালায় পুরন্দর । প্রাণভয়ে পালাইল জত নৃপসেনা আগু পাছু আগৃঁলিয়৷ পথে খায় দান] । পিত৷ পুন্ন খুড়।৷ কেহ ন৷ দেখে ভূপাঁত ভাসিয়া লোচনজলে করে আত্মঘাতি । গগ্ুম দিবস : নিশা জাগরণ আজি শূন্য হইল মোর হাথি-ঘোড়াশাল বান্ধবের শোণিতে বহে নদীখাল। কোথ। হইতে সাধু মোরে হয়া। আইল কাল দুই কানে কুণ্ল হইল হাথে হইল থাল। দানাগণের কোলাহলে কিছুই না শুনি মার মার করা৷ কোপে খেদাড়ে বামনী । পার দামুদরে কিছু নিবেদয়ে রায় এমন সঙ্কটে কার কেমন উপায়। রাজার বচনে মুক্তি বলে দামোদর বিপদের গ্রাতকার শুন নৃপবর | পাঁরহার মাগ করবাল বান্ধী গলে প্রণাম করহ বৃদ্ধব্রাহ্ষণী-পদতলে । পানের চনে রাজা হিত চীন্ত মনে পাঁড়ল নৃপাত বৃদ্ব্রাহ্মণী-চরণে । অঞ্জলি করিয়া স্তুতি করে নুপমুনি মৃঢজনে কুপামই জগতজনাঁন। প্রাণপাত কার পুনু করিল অঞ্জলি সংহল পাব হইল ভব পদধাীল। মোর ভাগ্যে সিংহলে করিলে পরবেশ নহ১ গ মানুষ চক্ষে না দোখ 1বশেষ। কমলা ভারতী 'িব৷ ইন্দ্রের ইন্দ্রাণী মহাম্বধা ধৃতি কিবা শঙ্করগাহণী । ভাল হইল মৈল মোর চতুরঙ্গ দল - দেখিলাম মাত। তোমার চরণকমল । দেহ পাঁরচয় মাত৷ অজ্ঞান আমি অন্ধ কৃপা কাঁর ঘুচাইলে মনের মোর ধন্ধ । এত স্তুতি কৈল যাঁদ [সংহল-নৃপাত আশ্বাস করিয়। তারে বলেন পাবতী । অভয়াচরণে মঙ্জুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ 8৭৮ দূর কার অভিমান অকপটে 'দিব পরিচয় শুন রাজ সালবান ২৬৯ খাণডয়।৷ তোমার শ্লাস রাখিল আমার দাস আর তুমি না করিহ ভয় । অজ আদা মহামায়। শঙ্করী শঙ্বরজায়া যোগনিদ্র/! বিষ্ণুর নয়ানে প্রকৃতি ভারাঁত-কল৷ সকম আমার লীলা আমা গায় পুরাণ প্রধানো আমি সৃষ্টি আমি স্থিতি সকল আমার কীর্তি নুয়ী বিদ্যা অনাঁদ বাসন! যোগনিদ্রা কালরান্ি গাইল ন্িভুবনধাতী ক্রিয়াশান্ত সংসারবাসনা । সলিলে ডুবিল মহা আশ্রম করিল আহি শয়ন কাঁরল৷ নারায়ণ সেই অবসানকালে প্রভুর শ্রবণমূলে দুই দৈতে হইল মহারণ। মধু কৈটভ নাম দুহ দৈত্য অনুপাম বিধাত। কারল বিড়ন্ধন নাভিপদ্লে প্রজাপতি কারল আমার স্তুতি আম তার হইলাঙ শরণ । পাযওকুলের পক্ষ বারাগিতনয় দক্ষ আম তার হইলাঙ দুঁহত। তথ৷ নাম হইপ সৃতি [বিভা কৈল পশৃপাত সুরলোকে হইলাঙ মোহত। । পিতৃমুখে পতিকুৎসা শুনিএ] তোঁজনু ইংস। [পতৃকুলে বিবাদদায়িনি তেঁজিলাঙ সেই অঙ্গ দক্ষযজ্ঞ-বনাশকারিণী মেনকা-উদরে জাত। তপস্য কারনু হর-হেতু আম৷ বিবাহের তরে ইন্দ্র পাঠাইল স্মরে হর-কোপে মৈল মীনকেতু । মহিষ রাক্ষস জন্ভ বাধয়৷ রাখিনু ত্রিভুবন আদ্যশান্ত মহামায়। হইলাঙ হরের জায় পৃজ৷ মোর কৈল ব্রিভুবন। কৈল তার মথ ভঙ্গ হইলাঙ শিখারিসুতা রন্তরবাজ মহাদস্ত ২৭০ আইন বাঁপজ্যের আশে শ্রীমস্ত তোমার দেশে কোন দোষে নুটি কৈলে ধন ধন লয্ন্যা লহ গ্রাণ কর তার অপমান এই হেতু কৈল মহারণ। তোমার 'বিনয়ে রায় ক্ষেমল সকল দায় মোর দাসে দেয় কন্যাদান শুনিঞ চন্ডীর বাণী রাজা কৈল জোড়পাণ শ্রীকাবকঙ্কণ রস গান ॥ ৪৭৯ মোর বোলে অবধান কর্‌ গো পাত ইবে সে জানিল তব সেবক শ্রীপাঁত। জানিতাঙ জাদ আমি এমত বিচার কারতাম তোমার দাসের পুরষ্কার । অবিচারে আমারে কাঁরলে অভিরোষ উচিত বিচার কর নাহি মোর দোষ । সভাতে তোমার দাস হইল পরাজই পাঁওতে জিজ্ঞাস জেব৷ বাঁলআছে এই । মিথ্যাবোল বলে সাধু রাজার সভায় শিশুজন দেখি আমি ক্ষোমলাঙ দায়। টিটকার দিয়া মোরে বলে কুবচন সাক্ষি নাহী আনে বেটা কাণ্ডার থূর্ঘন১। ন৷ মাগল পরাজই কাঁরয়া অঞ্জলি কন্যা দিতে বল গ তোমার ঠাকুরালি । রাজার ঝচনে লাজ পাইল পাবতী পন্াবতী সঙ্গে দেবী করিল! জুগতি । হাসিয়া রাজারে কিছু বলিল পার্বতী দঢ় কা প্রাতজ্ঞ। করহ নরপাত।, কালিদহে দেখ যাঁদ কমলের বন তাঁথ বসা কন্যা ষাদ গিলয়ে বারণ । সভাজন গেলি যদি দেখ বিদ্যমান তবে মোর শ্রীমন্ডে সুশীল কর দান । চখীঃ়তল এমন সুনিঞা রাজ চত্তীর ভারাতি প্রীতজ্ঞ৷ করিল রাজা কন্যা*অনুমাতি । রাজার বচনে দেবা দিল অনুমতি ভুবনমোহন তথ৷ সজল পারর্তী । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ 8/০ মাযাময় হইল নদ তাঁথ বহে কালিহ্দ দুকুল হানিএ। বহে জল কমল কুগ্জর তায়ে চণ্ল দেখিল৷ রায়ে অলিকুল করে কোলাহল। দেখ রায় কালিদহ-জলে ভুবনমোহন নারী গিলিয়া উগ্বারে করী আরিষ্ঠান হইয়া কমলে । কন]। কনকরুচি ঘ্নাহা স্বাধা কিবা শচা মদনমঞ্জরী কলাবতী সরষ্কতী কিবা রমা চিন্নলেখা 'তিলোত্তম৷ সত্যভামা রস্ত! অবুন্ধৃতী । কলাপি জিনিয়। কেশ পাএ শোভে কনকনুপুর প্রভাতে ভানুর ঠেটা রাবির কিরণ করে দূর । বালা অতি কশোদরা নিবিড় নিতম্বে অবতার বদন ইসত মেলে কুঞ্জর উগারি গিলে জাগরণে স্বপ্ন-প্রকাশ | কন্যার ইসত হাসে দস্তপধন্ত বিদিত বিজ্ভাল বানকমলশ্পান্ধে' কত কত শত ধায় আল । ভুবনমোহন বেশ কপালে দিন্দুর-ফোটা ভার দুই কুচাগাঁর গগণমণ্ডল ভাগে পারহদ্ধি মবরন্দে নপ্ধম দিবস; নিশ। জাগরণ কিব৷ সে তাহার গলে স্থির হয়৷ সৌদামনী বৈসে নিরুপম পরকাশ ভাঙ্গ নব শাখবার আশে । পন্পরে কার ভর গিলে রাম৷ কাঁরবর দেখি বাজা হইল নমস্কার গান্রমিন্র পুরুহিত সভে হইল চমকিত শ্রীমন্তেরে কৈল পুরুদ্কাব | হইয়া রাজা সবিনয় কুতারি বন্ধন কার গলে নণময় হার-ছলে মন্দ মধুর হাস মাগা নিল পরাজয় ৮পুকার সুচারন্ মুকুন্দ রচিল গাঁত বাহ্মণরাজার কুতুহলে ॥ তোমার বচন মাথে নিল আমি জোড়হাথে সুশীল। করিল সমর্পণ বেদের উচিত ধর্ম তুমি সবজনের শরণ। নেহ গ অভয়া পান জেবা ছিল দৈবের ঘন কমর কুপ্তার বাল সকলি তোমার লীল৷ তুম মোরে কৈলে বিড়ম্বন। মাজ আম শোকাঁসন্থ থুড়৷ জেঠা তনয় সোদর জ্ঞাতবন্ধু মেল জত তাপে শুখাইল কলেবর। বাঁচল আমারে বিধি ছয় মাসে পোড়ে বন্ধুগণে ভরত মেল বন্ধুলোক কত নিবারব শোক প্রবোধ পরান নাহি মানে । বাকো কর অবধান দিব আমি কন্যাদান [বিভা দিব বংসরেক বই আদেশ করহ কন সুশীলা১ কারব দান মারল অনেক বন্ধু লখন কারিব কত চিত। শত জালি যাঁদ ২৭১ সম্তাপ কারয়৷ দূর পবিত্র করহ পুর আধষ্ঠান কর কৃপামই । কি কাহব মনস্তাপ জাবদ না করি সাপগুন বংসরেক যাঁদ জায় তবে শুচি মোর কায বিলম্বে করিব কন্যাদান। রাজার শৃনিঞা কথা শ্রীমন্তেরে বলিল ঝন রাঁচয়৷ ত্িপাদি ছন্দ পাচালি করিয়া বন্দ বিরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ রণে মৈল খুড়া বাপ হৃদয়ে ভাবিয়া বেখ্যা ৪৮২ শুনিঞ৷ রাজার কথা বলেন পাবতী বংসরেক সংহলে থাকহ শ্রীয়পাতি। আরোপয়া রাজার কর আপনার মাথে তোমায় সমর্পিয়৷ জাব নূপাতির হাতে। সুশীল৷ কাঁরয়। বিভ৷ জাইঅ উজবনি প্রকাশ কাঁরহ মোর ব্লতের কাহিনী । এতেক বচন যাঁদ বাঁলল৷ পাধতী অশুমুখে নিবেদন করেন শ্রীয়পাতি। কৈলাম গমনে মাত। যদি কর ত্বরা চাঁলবে আমারে বই কাঁরয়া মগরা । আপনি ন৷ জান মাত। এতেক প্রমাদ চাঁলিব উজানি বিবাহের নাহাঁ সাদ। রাজা অবিচারি পান্ন বড়ই নিষ্ঠুর সভার পাঁগত জেন নসানের খুর। আগুনের কণ৷ জেন কোটাল প্রচও ভুমি গেলে ছিরা না থাকিব একদও। লোটাইয়৷ ধরে সাধু চার চরণ চাকা চাহেন পপ্লাবতীর বদন । উভয়সঙ্কট 'বিচারিয়া পল্লাবতী হনুমানে আনিবারে দিল অনুমতি । ২৭২ গঙ্থমাদন জদি জায় হনুমান বিসাল্যকরুনন হইলে সেন৷ পায় প্রাণ । পর্লাবতী সঙ্গে চাও কারএ অনুমান স্মরণ কারতে মাত্ত আইল হনুমান । আইস পুরন বাঁল তারে চাঁণড দিল পান অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ গান ॥ ৪৮৩ হনুমান ঝাট আন বিসাল্যকরুনি তোমারে সহায় কার সমরসাগরে তাঁর সীতা উদ্ধারিল রঘুমাণি। আইস পুন্ন হনুমান লহ রে আমার পান শীঘ্র চল গঙ্ধমাদনে মৃতসঞ্জীবনী আদি আন দিব্য মহোৌধধি প্রাণদান দেহ সেনাগণে । রাবণ পুত্রের শোকে লহ্্মণবীরের বুকে শেলথাতে বধিল জীবন রামের কাঁরলে মান লক্ষণের পারন্রাণ আন্য। [দলে গন্ধমাদন । আস্থিসঞ্জীবনি নাম আছে তাহে অনুপাম ভাঙ্গা অস্থি জোড়৷ জায় ক্রোধ কাঁরবেন হর আবলম্বে জাব ঘর হও পুত্র আমার সহায় । কুবেরের অনুচর আছে যক্ষ নিরম্তর ওষধের কারয়া রক্ষণ তোম। বিনে কোন বীর যক্ষের সমরে স্থির বিলম্ব করহ অকারণ । দেবীর আদেশ পায় বাঁর হনুমান ধায় এক লাফে পণ্টাশ যোজন আানিলেন গিরিরাজ সাঁধল চন্ডীর কাজ খবরীচন, স্্রীকীববঙ্ধ*। ৬ চণীমঙ্গল ৪8৮৪ হনুমান আন্য। দিল বিশল্যকরণী মৃত্যুসর্জীবনী নাম অস্ফিসগ্টারিণী । আজ্ঞ৷ দিল বাচীবারে চণ্ডী কৃপানিধি জয়াবিজয়া পা বাটেন মহৌধাঁধ । তিন ওষধ থুইল নৌতন কলসে জিয়ে মৃত্যুসেন৷ সব জলের পরসে । প্রথমে দিলেন জল দুবরাজের গায় ্রাহ্মণী ব্রাহ্মণী বাল কুমার পালায় । ওষধ-পরসে জিয়ে নৃপাঁতির বাপ সিংহল নগরের লোকের ঘুচিল পারিতাপু। জে জনের অঙ্গে লাগে ও্ষধেব বাস অঙ্গমোড়। দিয়া দেই উলটীয়া পাশ । জলাবন্দু দল চণ্ডী গজবল-মুণ্ডে জিয়। উঠে মৃত্যুহস্তি মুদগর লয়া। শুণ্ডে। কাটা গিয়াছিল রণে জত জত ঘোড়া ওঁষধ-পরসে কন্ধ মুণ্ডে লাগে জোড়া । গাধান শকুনি১ জার খাইল লোচন ওষধ-পরসে তার হইল নৌতন । জেই জন মৈল রণে গিলিল রাক্ষসে ওধধের তেজে তারা মুখে হইতে আইসে। নিজ বলে জিয়া উঠে ন্পতির মামা সান্ব রাজা জিয়া উঠে জোড়া বাজে দামা। ধবলছন্র রে জয়ে রাজ। যুগন্ধর উঠিল রাজার ভাই বাঁর পুরন্দর । জয়া উঠে ওষধ-পরসে দিকপাল৷ বদর্ত নূপাতি জয়ে নূপতির শালা । ওষধ-পরসে জিয়ে নংপাতির দল সামন্ত উঠিল জিয়া আইল চতুর্মলং । পদাতি উঠিল জিয়৷ তের কাহম কোল ঢেমচা টমক গিঙ্গ। বাজে জয়-ঢোল। পূ্বেধ দিয়াছল ব্রাহ্মণেরে পাকনাড়া এই হেতু নেব বেটান হইল বাসী মু মগ্ুম দিঝুস নিশ। জাগরণ ট গ, -*ত৫ নেব কোটাল নাহ 'জিয়ে রাজ! দুঃখমাত চাওকারে বলে রাজ৷ করিয়া প্রণাত। নেব কোটালিয়৷ মোর জ্ঞাতের প্রধান অশুচে কেমনে আমী 'দিব কন্যাদান। এমম সুনিঞ্ চণ্ডী রাজার ভারতী পদ্মাবতী সঙ্গে চণ্ডী কাঁরয়৷ জুগাঁত। চ্ডীর আদেশ পায় কুমার শ্রীপাত নেব কোটালের ঘাড়ে মারে তিন লাখি। ২৭৩ আখ কচালিয়া উঠে নেব কোটাল কুস্তল বন্ধন কার ধরে আসি ঢাল । কোপে নেব কোটালিয়৷ বলে কটু বাণী আগু হান্য৷ পেল রণে জরতী ব্রাঙ্ষণী । নেব কোটালের চুলে ধাঁর দগুরায় সমর্পণ কৈল নিঞ৷ অভয়ার পায়। অভয়াচরণে মন্জুক নিজ চিত শ্রীকবিকষ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ অষ্টমদ্িবস দিবা 8৮৫ মৃত্যু-সেনা পায় প্রাণ নাচে রাজা সালবান চোঁদিগে নাচয়ে সেনাপতি প্রজা পান্র পুরোহত নাচে হয় সানন্দিত ধরণী লোটায় করে স্তুতি । অপরাধ ক্ষেম ভগবাঁত হার হর প্রজাপাঁতি ন৷ জানে তোমার স্তুতি নর কী জানিব মূঢমাত। িরীটিনী কুগালনী কালী কান্তি কপালিনী কুমুদ। কার্ণক৷ কামেশ্বার খড়াগিনী থেটকধর খলদৈত্য দর্পহর৷ খগেন্দ্রবাহন সহচরী । গণমাত৷ গণেশ্বরী গয়। গঙ্গা গোদাবরী গ্োপকন্যা গায়ত্রী গান্ধারী । ঘোর ঘণ্টা-নিনাদিনী ঘম্মরাস্যা পতাফকিনী ঘৃণাময়ী ঘোর ঘনেশ্বরী । চামুণ্ডা চ্ডক। চওড। প্রচণ্ডা দানব-ঘণ্ চণ্ডবতী চরাচরগাঁতি ছলের জননি ছায়া ছল দৈত্য মহামময়। নিদ্রাহরা তুমি রুদ্রবতি । জগতজননি জয়া জীবের জীবন মায়া জয়ঙ্কার জয়পতা'কান ঝটীত করিয়া কাজ রাখিলে সিংহলরাজ মহারণে ঝর্ধর-নাদিনি । টক্কারে কারঞা। কোপে টানঞা টনক-রূপে টলবল করাল্যে অসুরে ঠক দৈতাগণে হানি ঠাঁঞ দেহ ঠাকুরানি সুরগণে চরণপুদ্ধরে । উারয। নন্দের ঘরে দারুণ কংসের ডরে কফের করিলে ভয় দূর দৈবকীর কোলে হইতে তোম! ধাঁর পায়ে হাথে বাধতে তুলিপা কংসাসুর ৷ ছাড়াইয়।৷ কংসের হাথে চড় অলক্ষিত রথে গগনে হইলে অঞ্ভুজা নাম হইল বনমালী কুমুদা৷ কার্ণকা কালী অষ্ট লোকপাল কইল পুজা । সুশীলা আমার কন এত 'দিনে হইল ধন তোমারে করিল সমর্পণ বিবাহ করাহ তার সকল তোমার ভার শুভাঁদন কর শুভক্ষণ। মহামিশ্র জগন্নাথ হদয়ামশ্রের ভাত কবিচ্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চণ্জীর আদেশ পাই 1বরাচল শ্রীকাবিকল্কণ ॥ অই্ম দিবস : দিবা ৪৮৬ চন্ডীর আদেশে বাঁসল পর্াবতী ডানি করে নিল ঘাড় বাম করে পুথি। সপ্তশলা১ আঁদ লগ্ন কারয়া বিচার [বিবাহের লগ্ন পল্প। কৈল সারোদ্ধার। নঙ্গত্র রেবতী শুভ যোগ রাববার ইহা বই বিবাহের লগ্ন নাহ আর। পন্রাবতী সঙ্গে চণ্ডী কাঁরয়া জুগতি নৃূপবরে বিবাহের দল অনুমাতি। সুশীলার বিভ৷ খাল পাঁড়ল ঘোষণা ঘবে ঘবে নাটগীত ব্যালিষ বাজন। চাঁওক৷ বলেন বাপু শুনহ শ্রীপাতি কাল বিভ৷ কারবে সুশীল রূপবতী । নিবামিষ্য কব আজি থাকহ নিএরমে [বিবাহ করাইয়৷ কালি জাব নিজ ধামে। এমন শুনিএন৷ সাধু চাঁণ্ডব চরণ অগ্রলি কারা তারে কবে নিবেদন । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকাবকঙ্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৮৭ অভয়৷ বিবাহের না কব জতন তবে আমি হই সুখাঁ তোমা বিনে কে মোর শরণ । কৃপা কর কৃপানিধি পিতার চরণ দেখি সেবক বাঁলয়৷ যাঁদ রাখ মোর বাপের জীবন কহ গে৷ উপায় কথা আপান করহ অন্বেষণ বাপের উদ্দেশে ত্বরা জীবন য়ণ নাহ জানি শোকে জরজর হয়! কেমনে করিব বিভ। ফেব৷ মোর ধরে খাষে পাঁনি। কেমনে দোখব পিত। সাত নায় 'দিয়৷ ভর 9৫ শিতা নিউগশ গেল ভাল-মন্দ না জান দারতা মায়ের আইয়াত হাথে , ভোজন.আমিষ্য ভাতে কাতিবন্ধু ধরে ছল-কথা । বাপের উদ্দেশ আশে আইলা, সিংহল দেশে ন। পাইল ত্তাহায় অন্বেধণ গুবুবাকয হদে শাল শ্পিতা বিনে নিফল জীবন । একা উপদ্বীপ সাত ভ্রমিয়। খুঁজব তাত অবশেষে প্রবেশিব লঙ্কা বিচারয়া নানাতন্ 'নিশাচরে না কারব পঙ্কা ৷ নিউদ্দিশ হইল বাপ নহে মুচি আমার জনান দেখিযা দাসীর পো। দূর কৈলে মায় মোহ কেমনে লইবে পুষ্প-পানি। গণক কাহয়াছে মোরে পর্পত। তোর কারাগারে আছে বন্দি গ্বাদশ বধসর [পিত। করে নান্দমুখ পদতলে রাখহ' কিযে । শ্রীমন্তের শুনি কথা মনেতে ভাবিয়া বাথা চান পর্াবতীর বদন রাচয়। ত্রিপাঁদ ছন্দ পচাল কারয়৷ বন্দ বিরচিল শ্রীকাঘকন্ধণ ॥ দ্বাদশ বংসর হইল গলে দিব করবাল লইব রামের মন্ত্র নিরন্তর পারতাপ তবে বিবাহের সুখ ৪৮৮ শ্রীমন্তের বোলে চর্তী ভাবিয়। দবব।দ দুরবাধান্য নৈয়া নূপে কৈন আশীর্বাদ । চিরজীবাঁ হও রায় পরসকল্যাণ কৃফের পাঁর়িতে দেহ বালান । হাজিয়া নূপাত দিল দাত ধর বন্দি দোথয়। শ্রীপাতি হইল স্থায়েঞ্গানান্দ। ২৭ পোত৷ মাঝি আন্য। দেয় বান্দ শয় শয় একে একে সাধু তার লয় পরিচয় । শতেক কামার বৈশে স্বাধুর নিকটে বন্দির ড"ও্ুঁক৷ তারা ছেয়ানিতে কাটে নামগোত বন্দির জিজ্ঞাসে বারে বারে সভারে বিদায় দেই কাঁর পুরস্কারে । দাঁড় নখ কেশ তার মুণ্ডায়ে নাঁপত নানাধনে বন্দিগণে করলা ভূষিত । পথের সম্বল দিল চালু দুই মান কাহনেক কড়ি দিল ধুতি এক খান । মন্তকে বেষ্টিত দিণ পাটের পাছড়। মনুষ্য বাঝয়া কারে দিল খাশ৷ জোড়া । সাত ঘর বন্দি গেল করা৷ আশাবাদ আন্ধার কোণে ধনপতি ভাবয়ে বিষাদ । সকল বান্দর সাধু খণ্ডাইল দাওুঁক। কিবা বলি দিয় মোরে গাঁজব চাঁওক। এমন বিচার সাধু কার মনে মনে মুসামাটী গায় দেই আং্কারিয়া কোণে। প্রাণভয়ে লঘু লঘু ঘন ছাড়ে শ্বাস মুখে ধুলি ওড়ে তার হয়ে তরাস। ন৷ পাইয়৷ বন্দিশালে পিতুদরশন চণীবিদ/মানে সাধু করেন রোদন । অগয়াচরণে মজুক নিজ 19ত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৮৯ কাগ্ডার ভাই আর ন৷ জাইব উজাবনি ধারহে তোমার পায় কাঁহঅ আমার মায় শ্রীমন্তের ডুবিল তরণী । কাণ্ডার ঝশট চল তৌঁজয়া সিংহল করহ বৈষব বেশ চলহ আপনা দেশ ভিক্ষা কর পথের সম্বল । চন্ডীম্গঃ অবনী লোটাইয়া কান্দে কেশপাশ নাহি বান্ধে বাপ বাপ ডাকে উভরায় না দেখিনু তুয়া মুখ হৃদয়ে রাহল দুখ না বাঁসনু রাজার সভায় । থাগুয়ে সকল মান্য ৃ সাগরে কারয়া২ কাম্য পূজা কার সঙ্কেতমাধবে ভুঞ্জিব সংসারসুখ দোখব বাপের মুখ পুনুরাপি হইয়৷ মানব । জত ছিল কুলদর্প তাঁথ হইল কালসর্প ঘটক পাঁণডত জনার্দন জাত হিংসা পরিবাদ দৈবে কৈল পরমাদ কে কাঁরব কলঙ্কভপ্রন ৷ সাধুর ক্ুন্দন শুন পোত। মাঝি মনে গান দেউটী ধারল বাম করে দশ বিশ মাঝ মেলি উকটে মুসার ধূলি প্রবোশলা ধালআ। কোঠারে । মহামিশ্র জগন্নাথ হদয়ামশ্রের তাত কিচন্দ্র হদয়নন্দণ তাহার অনুজ ভাই চন্ডীর আদেশ পাহ খুললাহল ধ্শিলযগললেক্রণে 1 8৯০ দশ বিশ পোতা মাঝি হইয়৷ এক মেলি ছয় বন্দিঘরে উকটিল মুসা-ধুল। অবশেষে প্রবেশিল ধুলিয়৷ কোঠার সওয়া৷ কোশ ঘরখানি একটী দুয়ার । আহল বিহল খোজে আন্ধারয়। কোণ কিচিকিচি করে তথা ছুছ৷ পনে পন। খুজিতে খুজিতে বান্ধির বুকে গড়ে পা অন্নকষ্টে ছাড়ে বন্দি বিপারত রা। বান্দ পাইক সব ধরে তার চুল [নিন সা 101 খাজা) জোনাল ঠভাটী এগামমাজপািআ ও আই্টম দিবস দিবা দারুণ প্রহার তাঁথ উদরের জ্ঞাল। খরশ্বাস বহে তার কর্ণে লাগে তালা । দুই পোতা মাঝি তার ধরে দুই নড়া শ্রীমস্তের আগে পেলে জেন বাসী মড়া। কাশিতে হাচিতে ছিও্ে শত-ছপ্তা ধড়ী শ্রীমন্তের বিদামানে জায় গড়াখাড় । লম্বমান দাঁড় আচ্ছাদয়ে নাভিদেশে বিঘত-প্রমাণ নখ জটাভার কেশ । তৈল-বিনু কলেবর গায উড়ে খাঁড় সদাগর আচ্ছাদন ন৷ ছাড়ে ধুকাঁড়। দুই তিন ডাকে দেই একটী উত্তর বান্দ দোঁখ সদাগর দুঃাখত অন্তব। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৯১ স্মঙার মায়ের কথা তেজে সাধু মনে বেথ৷ অনীমীথ লোচনযুগল তোজ অন্য পরসঙ্গ নেহালে বান্দর অঙ্গ আনন্দে লোচনে বহে জল । দেখিয়া বন্দির ঠান সদাগর অনুমান হেন বুঝি এই মোর বাপ যাত্রায় শ্রীকাল বাম গুঁরল আমার কাম ঘুচিল মনের পারতাপ । জননী কাঁহল মোর জনক কনকগোঁর বামনাসা উপরে আচিল দীর্ঘ জেন শালশাখা [িকচকমল আঁথ হৃদয়ে আছয়ে ছয় তিল। শবপূজ প্রীতাঁদন কপালে প্রণামচিন বামদণ্ড ঈষং উজ্জল বহঙ্গন জিনী নাসা কোকিল 'জানঞ। ভাষা শুতিপাত পবনে চণ্চল। ২৭৭ কুটিল কুস্তল নীল গায়ে আছে সাত তিল কষ্ঠতলে আছে তিন রেখা১ চন্ডীর হয়্যাছে ক্রোধ এই হেতু পায়ে গোদ বান্দশালে পাবে তার দেখা । সিংহ জিনা মধাদেশ চারু লোমাবলী আছে বুকে ক্রোধ কৈল নারায়ণী বাম চক্ষে হইল ছানি বসন্তের চিহ্ন আছে মুখে। জরুড় দক্ষিণ করে কুস্তল সকল 'শিরে সদাই রুদ্রাক্ষমাল৷ গলে [বিদায় বিলম্ব দেখি ধনপাঁত অশুমুখী অঞ্জলি কাঁরয়। কিছু বলে। মহামিশ্র জগন্নাথ হয়ামশ্রের তাত কবিচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই বিরাঁচল শ্রীকবিকষ্কণ ॥ অজানুলাম্ত কেশ চণ্ডীর অদেশ পাই ৪৯৭২ ধর্ম অবতার তুমি রাজার জামাতা উদ্ধারিলে বন্দিগণে হয়া তার পিতা । গুণের সাগর তুমি দয়ার শরণ সর্বকর্ম হইতে ফল তোম। দরশন । তুম শিশুমত আমি বৃদ্ধ শূদ্রজাতি এই হেতু রায় তোমায় ন৷ কৈল প্রণাতি। তোম৷ হইতে দূর হইল আমার বিষাদ মহাদেব পুজিয়৷ করিব আশীর্বাদ । নাশ্ছিদ্রে কাঁরহ রাজ] দীর্ঘ পরমাই পিত। মাত। সুখে থাকুক হইয় সাত ভাই। চিরাদন রায় আমি আছিলাঙ বন্দি কোথা গেল দুঃখ হইল হদএ আনন্দি। কৃপাময় রায় তুম অনাথসহায় বাপ হেয়! বান্দগণে দিলে হে বিদায় । ২৭৮ শখের সম্বল দিলে পারতে বসন ঘুসিব তোমার যশ মকল ভুবন । দেহ একখানি ধুতি পথের সম্বল মহাদেবে পূজা কার চিন্তিব মঈল । ঝটিত বিদায় দেহ পথ বহুদূর বন্দিশালে দুঃখ আম পাইয়াছ প্রচুর ॥ বিদায় বিলম্বে মোর মনে লাগে ধন্দ শিবের কৃপায় মোর দূর কর বন্দ। এতেক বচন যাঁদ বলিলেক বান্দ শ্রীপাঁত জিজ্ঞাসে তারে পাইয়া আনান্দি । চপ্তীর চরণ চিত্তে ভাবি অনুক্ষণ অভয়ামঙ্গল রচে শ্রীকাঁবকন্কণ ॥ ৪৯৩ কহ কহ অহে বন্দি তোমি কোন জাতি [ক নাম তোমার কোন দেশে অবাস্থৃতি । কোন কুলে উৎপাত কিবা অভিধান তোমার দেশের রাজ। কি তাহার নাম । বন্দি দেহ পরিচয় বন্দি দেহ পাঁরচয় পুরষ্কার করি তোম৷ কাঁরব নির্ভয়। গঙ্ধবণিক জাতি দেশ গৌড় নাম বসাঁত* মঙ্গলকোট উ্জবর্নী গ্রাম । দত্তকুলে উৎপাত নাম ধনপাঁত বিক্ুমকেশরী মহাপালেয় ক্ষেয়াত। দুঃখ পাইল বন্দিশালে দুঃখ পাইল বন্দিশালে দারুণ বাধ লেখ৷ আঁছল কপালে । বাপ-পিতামহের কহ না বন্দি নাম কতেক দিবস বন্দি তৌঁজয়াছ গ্রাম । কি গোন্ন তোমার বান্দ মাত। কার ঝাঁ কহ মাতামহ তার কুল বটে কাঁ। তোমারে দেখিয়া মোর বড় উঠে দয় পারচয় দেহ মোরে কপট তেজিয়।। চন্ধীরঙগল রঘুপাত পিতামহ গিত। জয়পাঁত ভুরনে রাঘিত বর্ধমান উবাস্থিতি। গোত্র দুর্্যাধাষ যোর মাতা চত্জমুখী মাতামহ সোমচন্দ গোবর ফৌসাক। কয় জায়া তোমার ছায়ার কিবা শাম কতেক দিবস বাদ ছাড়িয়া গ্রাম । দুঃখ পাইলে প্রচুর দুঃখ পাইলে প্রচুর এথা হইতে উজ্ানি নগার কত দূর । শ্বশুর আমার বটে নিধি লক্ষপাতি ইছানি নগর দুই ভাইর বসাঁতি। গোর কশ্যপ তার দত্তকুলে হ্থান দুই জায় লহনা খুল্লন। অভিধান । বন্দি দ্বাদশ বংসর বান্দি দ্বাদশ বংসর এ তিন মাসের পথ উল্জানি নগর। উজানি নগর বহু দিবসের পথ [সিংহলে আইলে বন্দি কিবা মনোরথ । অকপটে কহ বান্দ নিজ অভিসান্ধি কি কারণে দ্বাদশ বংসর আছ বন্দি। কহ আপন বারত৷ কহ আপন বারত৷ দুঃখ লাগে শুনিঞ। তোমার দুঃখ কথা । রাজার ভাগারে নাহী শঙ্খ চন্দন তরণী সাজিয়া আইনু দক্ষিণ পাটন। কালিদহে শতদলে বাসয়া সুন্দরী গ্রাস করয়ে পুনু উগারিয়৷ কবরী । দৌখ কৈল রাজা সনে প্রীতজ্ঞাপুরণ পরাজই কারাগারে 'নিগুড় বন্ধন । যদি বন্দি হইলে সাধু দৈবের ঘটন পুন নাহী উদ্দিশ কয়য়ে ঠক ফষারণ। শ্বগুর মাতুল বন্ধু নাহ করে দয়৷ কেমনে উদরে 'অনন দেই দুই জায়া। কহ না স্বরূপ বান্দ কহ ন৷ দ্বরূপ কি কারণে অন্বেষণ নাহী করে ভূপ। ভাগ্য নাহী করি রায় কোথ। পাব পো হ্বগুর মাতুল বন্ধু নাহি করে মোহ । অষ্টম দিবস: দিবা কি দুসিব সহজে অবল৷ দুই জায় গ্রহদোষে নরপতি নাহি করে দয়া । কি জিজ্ঞাস মহাশয় কি জিজ্ঞাস মহাশয় তনয় সোদর বন্ধু তুমি কৃপাময় । যাঁদ পন্ন নাহী বান্দ নাহীক দ্াহত৷ অপেক্ষণ বনে আছে কেমনে বনিতা । ছাড়লে মন্দির বন্দি কেমন সাহসে কেমনে যুবাঁত জায়া শূন্য ঘরে বৈশে। বন্দি কহ না বিশেষ বন্দি কহ না বিশেষ [সংহল আসিতে কেন নিলে নৃপাদেশ । নাহী পুন্র বন্ধ] মোর প্রথম যুবতি কনিষ্ঠ বনিত৷ মোর ছিল গর্ভবতী । জখন তাহার গর্ভ হইল ছয় মাস সেই কালে নৃপাদেশে কৈল পরবাস । ঘয়ে সকল অবলা ঘরে সকল অবলা পুরাতন চোঁড় মাত্র আছয়ে দুবল। পুন্নকন্য। হইল কিবা একই ন৷ জানি কাহতে কহিতে বান্দর চক্ষে পড়ে পানি । চাওকাচরণে মন্ভুক নিজ চিত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৯৪ পিতৃ পারচয়ে সাধু পরম মুচ্ছিত দাঁড়ি নখ চুল তার মুণ্ডায়ে নাপিত । কেহ মাথে তৈল দিয়৷ আচড়ে চিকুর কুমকুমে অঙ্গের মল৷ কেহকরে দূর । নারায়ণ-তৈল কেহ করয়ে মর্দন প্রসাধনী লৈয়৷ করে জা বিমোচন । কেহে। কেহে৷ জল বৈধ আনে ভারে ভারে প্লান করে সদাগর জল দেই শিরে। পাঁরবারে কোন দাস জোগায় বন জোগায় কিন্কর কেহ বিচিত্র আসন । ২৭৯ কেহ আন দেই শিবপুজার আয়োজন সাধু বলে মোর বাসে করিবে ভোজন । বান্দ বলে উদর পুরিয়া অন্ন থাই অদেষ্টের ফল পাছে জে করে গৌঁসাঞ্ি। পণ্টাস বেঞজন অন্ন কারল রন্ধন সাধু সঙ্গে সুখে বন্দি করিল ভোজন । আচমন কার দুহেঁ বাঁসল৷ কন্ধলে কপূর তামুল পান খান কুতৃহলে । হেনকালে শ্রীয়পাঁতি দিলেন উত্তর পড়িতে জানহ কিছু বাঙ্গলা অক্ষর । সাধুর আদেশে বাঁ্ধ পন্ন লৈয়া করে গাব দূর কাঁর পর্ন পড়ে ধাঁরে ধারে । স্বাস্ত আগে গড়িআ। পড়িল ধনগাঁতি, অশেষ মঙ্গলধাম খুল্পন। জুবাতি। তোরে আশীবাদ প্রয়ে পরমাপরিত সন্দেহভঞ্জন পর কারল লিখিত। জখন তোমার গর্ভ হইল ছয় মাস সেই কালে নৃপাদেশে করিল প্রবাস। যাঁদ কন) হয় শশিকল। নাম থুইয় উত্তমবংশ দোখয়৷ ঝিয়ে বিভা দিয়। যাঁদ পুত্র হয় নাম থুইবে শ্রীপতি পড়াইয়। সুনাইয়৷ ত!রে করাবে সুমাতি । যঁদি পুন্ন হয় সেই ইসত প্রবল তরণী সাজয়৷ তারে পাঠাবে সিংহল। এই নিয়মে পর্ন দিলাঙ তোমারে পন্ন পাঁড়য়৷ ধনপাতি কান্দে উচ্চন্বরে। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৯৫ কান্দে সাধু ধনপাতি পন্র লৈয়৷ করে বসন ভিজিল তার লোচনের জলে । জয়পন্ ছিল মোর সপ্তম মহলে কেমনে আইল পর দুর্গম সিংহলে । পত্রীনদর্শন এই মানিক-অঙ্ুরি রাজ৷ নুটী কৈল কিব৷ উজবান পুরী । এ তিন মাসের পথ পুরী উজবনি অনেক দিবসে আস সাজিয়া তরণী । না জানি কেমনে পন্ন আইল বিপাকে আরোহণ করে মন কুমারের ঢাকে। কার তরে সণয় কার ঘর-গারি কোথ। গেল খুল্পনা লহন৷ দুই নারী । দারুণ দৈবের ফলে বিধাত। পাসাঁও ধনপাত জিতে দুই জায়া হইল রাগ । সধনে নিশ্বাস ছাড়ে শিরে মারে হাত স্মঙরে শঙ্কর ্রলোচন বিশ্বনাথ । [পতার ব্ুন্দনে শ্রীয়পাত দত্ত কান্দে মুকুন্দ রঁচিল গীঁত মনোহর ছান্দে ॥ ৪৯৬ না কান্দ না কান্দ বাপ আমী তোমার ঝশধর তোমার উদ্দশ আশে আইলাঙ [সংহল দেশে আজি মোর প্রসন্ন বাসর। কার শুভক্ষণ বেল৷ পায়রা উড়াইতে গেলা নগারয়৷ মেলি কুতুহলে ইছানি নগর পথে বেগে ধায় পারাবতে থুল্লনার পাঁড়ল অঞ্চলে । বিবাহেরে দিলে মন গেলে লক্ষপাঁতির ভবনে ুল্পনা বিবাহ কাঁর আইলে আপন পুরী পাছে গেল৷ রাজসন্ভাষণে । রাজ। পাইল সার সুর৷ তোমারে 'দলেক গুয়া আনিবারে সুবর্ণ পঞ্জরে দূর কর পারতাপ সঙ্গে ওঝ। জনার্দন চণডীমঙ্গল সমার্পর়া মোর মায়ে গেলে বাপা গোউড় নগরে । বংসর বিলম্ব তথ। ছাগ রাখে মোর মাত৷ কাননে চাকা দিল বর কেবল চ্তীর দয়া আইলে পঞ্জর লয় কথো দিন সুখে কৈলে ঘর। লহনা সাধিল মান তুমি ঘর আইলে পূজার ফলে স্বামীর সৌভাগ্যবতী পাতি সঙ্গে ভুর্জল রাত মন্দিরে রহিলা কুতৃহলে । জ্ঞাত বন্ধু ধরে ছল পারক্ষায় মাতা শুদ্ধমাত সাঁজয়া ত তাঁরবরে রাজা দিল বিষম আরাত। শুন পূর্ব ইতিহাস নিদর্শন তিনে জয়পাতি মাত। পুজে ভদ্রকালী তার ঘট পায়ে টাল [সংহলে আইলে লঘুগাঁত। চত্তী-লঙ্ঘনের ফলে বান্ধা গেলে বান্দশালে আমাব হইল উৎপাত পোসেন পালেন মাতা জতনে পড়ায় নান৷ পৃঁথ । গুরু সনে কৈল কি গুরু মোরে দিল গালি ভণ্ড বাল ব্রাহ্মণসভায় তোমার উদ্দেশ যত্ন লইয়া রাজার রত্রং ভরা দিয় আইনু সাত নায়ে। ঝড়বৃঞ্চি মগরায় বিষমসঙ্কট নায় কালিন্দহে হইনু উপনীত [বিকচ কমলদলে বাঁস রাম। গজ গিলে উগারয়ে দোথ বিপরীত । প্রাতজ্ঞ। রাজার স্থানে হার সভ। বিদ্যমানে কোটাল বধিতে নয়ে প্রাণ চন্ডীর চরণ সেবি ্রাহ্মাণীর বেশে দেবা মসানে দিলেন প্রাণদান । সও্ড মায়ের পায়ে চণী দিল বরদান নাহি লয় অন্লজল শঙ্খ চন্দনের তরে মাতার আর্দাস শুনান পুরাণ-কথ। অষ্টম দিবস; দিব! নৃপাঁত কারল মান নি কন্যা দিব দান বন্দিঘর মাগ্যা নিল দানে তোমার চরণ দেখ [বিভা কার জাইব উজানি। পুত্রের শুনিঞা কথ। ধনপতি তেজে ব্যেথা সকরুণে বলেন বচন রঁচয়। ভ্রিপাঁদ ছন্দ 'বিরাঁচল শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ সফল হইল আখি পাচালি কারয়া বন্দ ৪৯৭ তোরে আমী কাহ দড় সংহলিয়া ঠক বড় দয়ার নাহীক লবলেশ বিভাহে নাহীক কাজ আবিলম্বে চল জাই দেশ । নৃপাঁত অধর্মশীল দয়া নাহি এক তিল নিষ্ঠুর সভার জত লোক দারুণ কৃপণ ভও সভায়ে পাইবে লাজ লঘুদোষে গুরুদও পর-রস্ত খাইতে জেন জেশক। বেদপাথ হয় খণ্ড সভার পাত ভণ্ড অধর্মে ধর্মের অধিকারী, মিথ] দিয়। পরে দুঃখ অপরাধ বিনে হয় বোর । বচন বিষের কণ। মহাপানন ষমের সমান না দোঁখ এমন পুরী দেখিতে দৌখতে চুর কি কহিব তাহার বাখান। কোটালিআ৷ দেই ফাস রা্ধাভাতে পোতে বাশ পর ধন খায় ঢেষ৷ দিয়া বপ্য ধন প্রন্জা হরে এ দুঃখ কাঁহব কারে কত দুঃখ সহে গাপ হিয়া । ধমে ন। করিয়া শঙ্কা নু্চী কৈল লক্ষ তঙ্কা অন্নবস্তর দুর্লভ আমারে হইলং আপনার সুখ সভ। মাঝে থাটুপনা ট, ম.স্ত৬ ২৮৬ বারমাস ভিক্ষা কাঁর পোত। মাঝি তাতে এীর মাঁজলাও বিপদসাগরে । [সিংহলের ভোগ জত (বিশেষ কহিব কত উপভোগ করাছ মসানে তোর পরমাঞ-বলে মোর শিবপূজা-ফলে জিয়৷ আছ তুমি রে কল্যাণে । কুল মোর দুর্বাধাষ মোর কুল সভে ঘুষি দেশে করাইব সাত বিভ। সিংহলিয়৷ দুয়াচার ভারতভুমের পার* চারি মাস দু কর হিয়। । জরত দোষ দেই তাত শ্রীমস্ত জুড়িয়া হাথ মাগ্যা নিল বাপের চরণে রাঁচয়৷ ন্িপাঁদ ছন্দ গাঁচাল করিয়। বন্দ প্রীকবিকষ্কণ রস ভনে ॥ ৪৯৮ নৃপাত সালবান সুশীল! দিতে দান করিল শুভক্ষণ বেলা আরোপাঁ হেমকুন্ত করিল কর্মারস্ত তুরিতে বাঁন্ধল ছান্দল।। নৃপতির আভলাষ কন্যার অধিবাস কাঁরল বেদের বিধানে কপালে জুঁড় ফোটা চৌদগে 'দ্বজঘটা বেদ গায়ে উচ্চ গানে । কারল জোড়হাথ আরাধি গ্ণনাথ দিনেশ বিষ মহেশ্বর বারাণ্থি আদি সুরে বাবিধ উপচারে আনন্দে পুজে নৃপবর। সুশীলা রূপবতী হারাুত ধুতি পাঁরয়। বাঁসল আসনে ২৮২ কাঁরয়। শুভ-ভেদ ব্রাহ্মণে পড়ে বে? কন্যার গন্ধ-অধিবাসনে । মহাঁ গন্ধাশিলা দুরবা পুষ্পমালা ধান্য ফল ঘৃত দধি স্বাস্তক 'সন্দুর কজ্জল কপূর শঙ্খ দিল যথাবিধি। রজত দর্পণ চামর পরমান সন্ধার্থ তাগ্ গোরোচন। করেতে বাদ্ধি সূ প্রশঙ্ব দাঁপপান্ন আঁশস কারিল যোজন । কারয়৷ প্রেমভন্তি গাঁজল পাবতী দিলেন বসুধারা-দান পরম ফোতুক কাঁরল নান্দিমুখ সুকাঁব মুকুন্দ গান ॥ ৪৯৯ রাজ৷ কয়ে কন্যাদান বিপ্রগণে বেগান গায় নাচে রঙ্গে বিদ্যাধরা সপ্তষ্বর৷ শঞ্খধবান পটহ দুন্দুভ বেনি আনান্দত নৃপাঁতির পুরী । পাটে চড়ে রূপবতী ্রদাক্ষণ কৈল পাতি দুইজনে সম্মুখে ব্রাহ্মণী দিলেন পাঁতির গলে আপন কষ্ঠমালে রামাগণ দিল জয়ধ্বনি । অভয়ার গ্রাতফলে করে কুশে গঙ্গাজলে রাজা করে কন্যাসম্প্রদান শষ্য ঝারি ধেনু থাল। রথ গজ ঘোড়৷ দোলা দিয়। জামাতার কৈল মান। বাজে মঙগল-পড়া দ্বজ বান্ধে গ্রন্তুড়। বরকন)৷ দেখে অনুন্ধতী বান্দিয়া রোহিণী-দোম চত্ীমঙ্গল লাজ-্হুনি কৈল থোম দুহে কৈল অনলে প্রণতি। দষ্পত্য প্রবেশে ঘরে 1খরখণ্ড ভোগ করে কুসুমশয়নে গেল রাত রচিয়া ভ্রিপাদ ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুন্দ১ দামিন্যায় জাহার বসতি । ৫00 শ্রীমস্তেরে রাজা যাঁদ দিল কন্যাদান নান ধনে জামাতার সাধিল সম্মান । ভোজন করিল সাধু খিরথণ্ড ঝোলে পুষ্পঘরে শুইল সাধু রাজকন্যা কোলে । মনে মনে বিষাদ ভাবেন ভগবতী পন্লাবতী সঙ্গে দেবী কাযা জুগাতি। খুল্লন৷ দুখিনী মোর হইল ব্রতদাসী পাতিপূন্ন হইল তার সিংহলে প্রবাসী । কি বুদ্ধ কারব পদ্ম! কহ গে উপায় কেমন উপায়ে সাধু নিজ দেশে জায় । পান্নাব্তী বলে মাত শুন ভগবতী দথনী হইয়। ধর থুল্লনা-মুরৃতি । সাধুর শিয়রে বাঁস কহ গে সপন কহিবে রাজার পাঁড়াদুঃখ নিবেদন । এমন শুনএ মাত। পদ্মার ভারাঁথ কপটে হইল৷ দেবী খুল্লন৷ যুবতী । পারধান শতছিও্ড। মালন অন্বর গুয়াপান 'বিনে দেবীর মলিন অধর । উপনীত। হৈলা গে সাধুর বাসঘরে হ্ষপ্ন কহেন দেবাঁ বসিয়া 'শিয়রে। অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকাবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ অষ্টম দ্বিবল দিবা ৫০১ চিঅ পুর সিয়য্লে জননী রাজভোগে পাঁত-ভোলে কামিনী তোমার কোলে পাসরিলে অভাগি খুল্লনি দুঃখ পাইয়। দশ মাস তোকে দিলাঙ গর্ভবাস পুষলাঙ বড় মনোরথে পড়াইল 'দিয়া বিত্ত জানাইল ধর্মের তত যৌবনে তোজলে ধর্মপথে । বাপের উদ্দিশে ত্বরা সাত নায়ে দিয়া ভরা [সংহলে আইলে লঘুগাঁত বিলম্ব দেখিয়া তোর নুটী গেল বিত্ত-বসাঁত। নৃপাতি মানিল চোর রাজা নিল ধন-্ঘর আশ্রয় কারল পর দু সতিনে সুতা বোঁচ হাটে পরের ভানিঞা ধান দু সতিনে রাখি প্রাণ সুইয়া নিদ্রা জাহ হেম-খাটে। কি কব দুঃখের কথা হের দেখ বুখু মাথ। শত-ছও কান পাঁরধান যৌবনে হইলাঙ বুঁড় সপ্ত শির দেখ বিদ্যমান । তোর পিত। মহাধন্য বামকরে আয়্মাত লোহার উরে আমার জাল। ঘন কর্ণে লাগে তাল৷ তৈল বিনে কেশ জটাভার ।২ মাজ আম শোকাসিন্ধ ভূপাত তোমার বন্ধ সাষুঁড়ি তোমার পাটরানি শালা তোর দুবরাজ পাসারলে অভাগি জননি। হেম-থাটে জাহ ঘুম যেমন রোহণী-সোম রাজকন্যা কোলে কুতুহ'লি আমি জত কৈল ইচ্ছা ম্মঙারয়৷ দিহ জলাজাল। গায়ে দেখ ওড়ে খাঁড় আমার অ্থাঙ্গ শূন্য সাধিলে আপন কাজ সকাল হইল মিছা ৮৪ মায়ের করুণাবাণা শ্ীমন্ত সথনে মুনি উঠলে সাধু ভৌজয়া৷ শয়ন ভূতলে পাঁড়য় কান্দে চক্রবর্তী শ্রীকবিকল্কণ ॥ গান মনোহর ছান্দে ৫০২ কান্দে সাধু শ্রিয়পাত জনর্নার মোহে বসন ভিজিল তার লোচনের লোহে । এখনে আছিণে মাত। সিয়রে বাঁসয় ক্লোধযুত হয়্যা গেলে না গেলে বাঁলিয়। । দখল সপন জত সকল স্বরূপ আমার বিলম্বে ঘরে নুটী কৈল ভূপ। কেনি বা চাঁওক৷ মোরে রাখিল মশানে সাগরে প্রবেশ কার তোঁজব পরাণে। তেজে সাধু অঙ্গদ কঙ্বগ কর্ণপূর অনুর কণ্ঠের মালা৯ সব করে দূর । সঘনে 'নশ্বাস ছাড় শিরে মারে ঘা গদগদ-ভাষে ডাকে কোথ৷ গেলে মা। চিয়াইলা সুশীল। রাম৷ স্বামীর কন্দনে অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ ভনে ॥ ৫০৩ স্বামীর ক্রন্দনধ্বনি শুনি রাজনন্দিনী উঠে রাম। আকুল অস্তরে সঘনে নিশ্বাস ছাড় সকরুণ হয়্য। কিছু বলে। প্রাণনাথ কি কারণে করহ রুন্দন রাজার জামাত৷ তুমি বিশেষে আমার স্থামী কে বলিতে পারে কুন । মায়ের মলিনমূর্তি আপনার অপকীর্তি দেখল সপনে আঁবশাল পাঁতর চরণে পাড় ২৮৪ তাহ। না কাহব কত কাঁহতে হদয়ে বাজে শাল । শোকে জরজর হইল কায় অবসান হইল নিশ। ঝট মোরে করহ বিদায় । অকারণে কর ভয় দেখল অদ্ভুত জত কার রাজসম্ভাষ সপন ষ্বর্প নয় শুন নাথ মোর নিবেদন সাধহ 'দ্বজের মান আজ শুন গজেন্দ্রমোক্ষণ১ । কলধোত কর দান অকারণে ভাব নাথ দুঃখ বিভারাতি অমঙ্গল ছাড় লোচনের জল ভূঙ্গারে পাখাল ঠান্দমুখ । দান দিব জত শান্ত শৃনবে গজেন্্রমুন্ত প্রাতকারে অবশা কল্যাণ মরমে পবম বোথা তবে ঘুচে মনঃকথা যাঁদ মাতা দেখি বিদামান। গমনে না কব্য প্রিষে বাদ মায়ের হাবাসে মার তবরায়ে সাজিয়। তাঁর দুর কর মনের বিষাদ । তোমার বদনঠান্দ মোর মন-মুগফাদ তিল আধ না দোখলে মরি দেশের বারতা আনা সাত 'দনে উজবনি পাঠাইয়৷ দানবকেশরী । বিদায়ের কথা কর দৃব সুনহ আমার বাণী সুখ পাবেন ঠাকুরানি ধন আমি পাঠাইব প্রচুর । আমার আচ্ছির মন পাঠাইবে অনাজন ইথে নহে আমার পাঁবাত যাঁদ জাবে আমা-সনে বিচার কারয়া মনে ঝাট মোরে দেহ অনুমাত। পিতৃবাসে থাকহ রূপসী মায়ের হাবাসে ত্বরা সাত নায়ে দিয়া ভরা দোঁখব মায়ের মুখশশী । চন্ডীমঙ্গল হইয়৷ মোরে কূপানিধি বিলম্ব না কর যদি সংহলে রহিবে বারমাস সিংহলের ভোগ জত করাইব সুবাদত দাসী বলি রাখবে আর্দাষ । মহামিশ্র জগন্লাথ হদয়মিশ্রের তাত কাবচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চত্ীর আদেশ পাই বিরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ 08 বৈশাখে দুরস্ত রিতু সুখের সময় প্রচণ্ড তপনতাপ তনু নাহী সয়। চন্দনাদ তৈল অঙ্গে সুশীতল ধারি সীঙলি১ গামছ। দিব ভূষিত২ কন্তার। পুণ্য বৈশাখ মাস পুণা বৈশাখ মাস দান দিয়। পৃবিবে দ্বিজের অভিলায । নিদারুণ জোষ্ঠ মাসে প্রচণ্ড তপন পথ পোড়ে খরতর রাবর কিরণ । শীতল চন্দন শ্বেতচামরের বা বিনোদমন্দিরে থাক না চড়িহ না। নিদাঘ জৈষ্ঠ মাসে নিদাঘ জৈষ্ঠ মাসে পরব উদর মিস্ট আমনের রসে । আযাড়ে গর্জয়ে ঘন নাচয়ে মউর নদজলমদ-মত্ত ডাকয়ে দাদুর । আমার মান্দরে থাক না৷ চঁলিহ পুর শালি-অন্ন মধু থণ্ড ভুঞ্াব প্রচুর । আাড়ের সুষহেতু আষাড়ের সুখ হেতু নিদাঘ বরিস৷ হিম একা তিন রিতু । সঙ্কট সময় বড় ধারা শ্রাবণ সাধ লাগে অঙ্গে দিতে রবির কিরণ 1 অষ্টম দিবস : দিবা জলধর বরিষয় আট দিগে বায় [বিনোদ মন্দিরে থাক ন৷ চাড়হ নায়ে। গুঁরুব তোমার আভলাষ পুরিব তোমাব অভিলার নিউরিষ ঘুখান। মন্দিরে নাথ বাস। ভাদ্রপদ মাসে বড় দুরস্ত বাদল নদনদী একাকার আট দিগে জল । ডউশস-মশ৷ নিবারণে পাটের মসারা চামর বাতাস দিব হয়া। সহচরী । প্রাণনাথ সৌধত৩ ঘরে কর বাস প্রাণনাথ সৌধত ঘরে কর বাস আর না কবিহ দূব বাণিজ্যের আশ । আশ্িনে আন্বক।পৃজা কারবে হারিষে শোলে৷ উপচারে ছাগ মেষ মাহষে। তত ধন দিব আমী জত দেহ দান' [সংহলের লোক জত সাধবে সম্মান । আমী বুঝাব রাজায় আমী বুঝাব রাজার আনাইব জননি তব সন্ত-মায়। বিষ্টি টুটাইয়। আইল কাণ্তক মাসে দিবসে দিবসে হয়ে হিমের প্রকাশে | তুণি পাঁড় পাড় কাঁরব নিয়োজত অর্থরাজ্য দিব বাপে করায় ইঙ্গিত । পুণা কাঁ্তক মাস পুণ্য কার্তিক মাস দান দয়৷ পরবে মনের আভলাষ। সকল নূতন শস অগ্রহায়ণ মাস ধান চালু সারসাতে পুরিবে আওবাস। রাজাকে মানিয়া দিব শতেক খামার' ধান চালু সারসাতে পরবে হামার । পুণ্য মাইসর মাস পুণ্য মাইসর মাস িফল্‌ জনম তার জার নাহা চাষ । [ তুলি তুলবচী তৈল তাদ্ল তপন তরুণী তপনতোয় তনর বসনে । ) ২৮৫ পোঁষে গোঙাইব নাথ অষ্ট প্রকারে মংস্য মাংস মধু মুলা নানা উপহারে। সুখে গোঙাইব হিম সুখে গোঙাইব হিম উজানি নগর জেন বাসিবে নিম । মাঘ মাসে প্রভাতে করিয়৷ প্লানদান সুপাঠক আন দিব সুনিবে পুরাণ । মিষ্ট অন্ন পায়স জোগাব 'দিসাঁদিসং আনন্দে করিবে মাঘ মাসেও নিরামীষ । মাঘ মাসে রাহবে কুত্হলে মাঘমাসে রহিবে কুত্হলে শীতল জোগাব আমী বিহানবিকালে । ফ.মুনে ফুটিল নাথ মম উপবনে তাঁথ দোলমণ্ণ নাথ কাঁরব নিশ্নাণে। হার কুমঃকুম চুয়৷ কার সুবাসিভ' ফাগুদোলে আনন্দে গোঙাব নিতে নিত। মাঁথ মোঁল গাইব গীত সাঁখ মোল গাইব গীত আনন্দে শুনিবে নাথ” শ্রীকৃষচারত । মধুমাসে মলয়মারুত মন্দ মন্দ মালতীয়ে মধুকর পাঁয়ে মকরন্দ । মালাতি মল্লিক ঠাপা বিছায়য। শয়নে মধুমাসে গোঙাইব মুদিত রানীদনে। মোহন মধুমাসে মোহন মধুমাসে মদনমন্দিরে বেশ মদন-আওআসে । সুশীলার বিনয় শুনিঞ সদাগর হেট মুখে শ্রীয়পতি দিলেন উত্তর । স্ব উপভোগ মোর মায়ের চরণ বায়মাসী গিত গান শ্রীকবিকল্কণ ॥ ৫০0৫ ন৷ লাগিল সুশীলার মোহন-গ্রবন্ধ গ্কামীর গমনে তার মনে লাগে ধন্দ। আত ক্ষেপ সদাগরে নাহ করে ভূষা [সংহলেতে শ্রীয়পাঁত যাত্রা করে উষা। ৮৬ সুশীলার থসিয়া পড়ে গায়ের অলঙ্কার নয়নে গলয়ে জেন কালন্বীর ধার । দ্বা্মীর গমনে রামা পরম আকুলি মায়ে বার্তা দিতে জায়ে নাহি বান্ধে চুলি। গদগদ ভাষে কহে পাতির গমন মুন্যা পাটরানি হইল বিরসবদন । জাম]ত। রাখিতে রানি উপায় চীস্তয়া সেয়ানি নামেতে চেড়ি১ আনে ডাক দিয়। । প্রসাদ করিয়া রানি তারে দিল। পান নিযুন্ত কারল জাইতে জামাতার স্থান । আমার বচনে তুমি কহ গিয়। কথা সংহল ছা়িয়। জেন না জায় জামাত । দাসী জায় লঘুগতি দাসী জায় লঘুগতি জেখানে ধসিয়৷ আছে সাধু শ্রীয়পাঁত। করে ধার আঙলা সুগান্ধ তৈল-বাটী সাধু ব্দিমানে আইল পাটরানির চেটি। সাধুর নিফটে [ চেটি ] বলে সাঁবিনয় ঘরে হৈতে বাহির না হবে দিন নয়। সুন রাজার জামাত৷ শুন রাজার জামাত পারচয় দিল সুশীলার উপমাত৷ । যান! কাঁরয়াছি আম জাইতে উজবনি বাহার হবার কি দোষ কাঁহলে সে জানি । আর কী বিলম্ব দেখ চড়ি গিয়৷ নায়ে শাশুঁড়র ঠাঁঞ ঝাট করহ বিদায় । আম জাই নিজ ধাম আম জাই ?নজ ধাম সাযুঁড়িরে ঝাট গিয়৷ জানাহ প্রণাম । সালবাহন-কুলে সাধু আছে পরম্পরা [ভা করা৷ নয় দিন নাহা লয় খরা । ন৷ কাঁরবে নয় দিন ভানু-দরশন জতনে পাঁলিহ পাটরানির ঝচন। ঝাট চল যাসথর়ে ঝাট চল বাসবরে১ দুবরাজ আসা পাচ্ছে অপমান করে পরস্পর আছে মোর কুলের নিয়ম ভানু-দযশন বিন ন৷ কার ভোজন । চধীমঙজ আছয়ে নিয়ম যদি ভানু-্দরশন সাযাঁড় তোমার কাঁছু করে নিবেদন । মোর কুলে পরম্পর আছে এ আচারং বিভ৷ কর্যা এক মাস নহে নদী পার। যদি করহ ত্বরা রায় যাঁদ কর ত্বরাও “এক বংসর বই পার হইবে মগরা | মণিমুন্ত। প্রবাল দক্ষিণাবর্ত শঙ্খ চামর চন্দন হিরা মাণিকের রষ্ক | পিতাপুত্রে নরপাতি পাঠাইল সিংহল বিলম্ব দেখিয়া রাজা যাঁদ করে বল। যাঁদ কি কার নিয়ম যাঁদ কি কাঁর নিয়ম গুণে কষ্পতরু রাঙজ৷ দোষে হয় যম । অনুমাত রাখ জামাই হইয়৷ প্রবোধ বিক্রমকেশাঁর রায় না কারব ক্রোধ। রাজবোলে বিলম্ব কারব দুই মাস বিলম্ব হইলে রাজ করে সবনাশ। নৃূপতি পাঠাইল শঙ্খ আনিতে চন্দন হইল নিয়মভঙ্গ সঙ্কট জীঁবন। আছে দেবের প্রহার আছে দৈবের প্রহার মছ। বোলে দুঃখ এথা পাইল আপার । বাট্য দিব রাজ্য রাজা দ্বিগুণ-্প্রমাণ পুনু সু্শীলা তোমারে দব দান। অল্প বয়েসে জামাঞ্জ হইয়াছ ঢেটা শ্বশুরের ছলে দিতে পার কত খোটা৷ । ইবে জানিলাঙ নিশ্চয় ইবে জানিলাঙ নিশ্চয় জামাত৷ ভাগিন। কভু আপনার নয় । কথার প্রবন্ধে আমর৷ বটী ঢাট [সংহূলে সজ্জন নাহী সবগুল। খাট । শুন বড় রান শুন বড় রানি তবে প্রাণ পাই যাঁদ জাই উজবনি। চৌঁড় সঙ্গে সাধু ্রীয়পাঁত জত ভনে ফপাটের আহড়ে থাকি রানি দব শুনে । রচিয়া মধুর পদে একপাঁদ ছন্দ শ্রীকবিকঙ্কণ গীত গাইল মুকুন্দ ॥ অইম দিবস; দিবা ৫০৬ না লাগিল পাটরানির মোহন -প্রবন্ধ জামাতার গমনে লাগিল মনে ধন্দ। সত্বরে চলিল রাণি নৃপ সান্লধানে সন্্মে নৃূপাতি গেল৷ জামাতার চ্থানে । বৃদ্ধ শ্বশুরের বাপু পুয় অভিলাষ বিলম্ব ন৷ কর যাঁদ রহ চার মাস। এতেক বচন যাঁদ কাঁহল৷ নৃপাতি শ্রীপাঁত বলেন তারে করিয়। প্রণতি । জননি স্মঙার হইল মন উচ্চাটন নিরোধ না৷ কর রায় ছাড়িব পান । রাহবারে 'সংহলে বলেন নৃপবর অনুমতি তাহাকে ন৷ দেয় সদাগর । পণ্পান্র সনে রাজ কারয়৷ বিচার ধনপাতি দত্তের করিল পুরস্কার । রথ তুরঙ্গম দিল ঝাঁর খুরি দোল। চন্দন-চোখু'রি দিল রত্ন-ক্ঠমালা । ধনপাঁত দত্তে কিছু িবেদয়ে রায় চাওকামঙ্গল কাবিকল্কণ গায় ॥ ৫০৭ কান্দে রাজ৷ সালবান মোহে হয়্যা অজ্ঞান বেহাইর ধরিয়া চরণ ভুঁড়িয়।৷ উভয় পাণি সুশীল। কারয়৷ সমর্পণ । বিধাতা কারল হট পাইলে অন্নের কষ্ট তৈল বিনু কেশ হইল জটা ূ্‌ দুঃখ পাইলে বহুকাল মরমে রাহল সাল সুশীল 'ঝিয়ের থুইল খেখটা । দবাদশবংসর বন্দি তোম৷ কৈল নিরানন্দি ইবে গুনি হদয়ে বিষাদ বলে সবিনয় বাণী ২৮৭ [ বেহাই হইবে তুমি কেমনে জানিব আমি না করতাম এত পরমাদ । 1১ তুমি বন্দি উপবাসী আমি ভোগে আভলাষী কেবল করিল বিষপান তুমি শিবপরায়ণ তোমার অনেক গুণ না করিহ মোরে অভিমান । হইয়া তুমি নিরাতন্ব জত ইচ্ছা! ভরা দেহ নায়ে লিখন আছিল ভালে দুঃখ পাইলে বান্দশালে না কহিহ নৃপতিসভাএ । সনঞ। রাজার কথ। তেজে সাধু দুঃখ-বেথা সাঁবনয়ে বলেন বচন উমাপদহতচিত চক্রবর্তী শ্রীকাবিকন্কণ ॥ টামর চন্দন শঙ্খ রচিল নুতন গাঁত ৫০0৮ রাজায় কারয়া নাতি বলে সাধু ধনপাঁত তোমার নাহাঁক অপরাধ বশ নহে নিজ লোক এই হেতু পাইল শোক কারাগারে হইল অবসাদ । হবাদশ বংসর হইতে গৃজা কাঁর একচিত্তে বংশে বংশে মৃত্তিকা-শঙ্কর দারুণ আমার জায়া নিত্য পুজে মহামায়া বামপাথি হয়া সতস্তর | সুরধুনি-জলগভ অষ্ট ততুল দূ্ব হেম-বাঁর [ করে ] আরাধন শান-মঙ্গলবারে পুজে নিত্য উপচারে ছাগ মেষ দিয়। বলিদান। যাঁদ মোর জায় প্রাণ দেবতার ন৷ কার অর্চন হইয়৷ রামা অর্থাঙ্গ জায়। হয়া হইল অভাজন । মহাদেব বিনু আন কৈল মোর ব্রতভঙ্গ ১৮৮ সেই মায়া দেবতা মোরে দিলেক বেথ৷ ডুবাইল মোর ছয় নায় দেখা দিয়া হইল এঁর কমলে কামিনী করা পরাজয়ী তোমার সভায় | সাধিতে মুস্তর পদ্থ নাহ কইল জীব হিংসা শুনি প্রভঞ্জন-উপাখ্যান সাধুর বচন শুনি নরপাঁত মনে গুণি পুরুষ্কারে কাঁরল সম্মান । ধন্য রাজা রঘুনাথ রাজগুণে অবদাত পাঁওত রাঁসক সুজান হইয়। তার সভাসদ রচিল মধুর পদ চ্তবর্তী শ্রীকাবকঙ্কণ | ৫০৯ রাম রাম স্মঙবমে পোহাইল রাত শষ্য তৌঁজ প্রভাতে উঠিল। নরপাঁত। শয্যাতোল৷ কাড় মাগে পারহাসী-জন সাধু আজ্ঞ৷ কৈল দিতে পণ্চাশ কাহন । মাথায় মুকুট তথ বাঁসল দম্পাতি কৌতুকে জৌতুক দেই জতেক যুবতী । কনক রতন হারা মানিকের ভূষণ কৌতুকে জৌতুক দেই জত বন্ধুগণ । পাটনের লোকে দিল হেমময় হার; চরণে নুপুর কেহ দেন সুঝঙ্কার । নানাধনে জামাতারে কৈল পুরুষ্কার দিলেন দাঁক্ষণাবর্ত শঙ্খ ভারে ভর। চামর চন্দন দিল হিরা মুতি পলা জামাতারে 'দিল কনকের কণ্ঠমাল৷। বদায় কারয়৷ বরকনা। চাপে নায় [পিতৃমাতৃপদে শিলা হইলা বিদায় । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্লীকাবকন্কণ গায় মধুর সঙ্গীত ॥ চণ্ডীমঙ্গল ৫১০ সুশীল করিয়া কোলে পাটরানি কান্দে উভরায় ইন্দ্রাণী সমান কন্যা কারে দান দিল ধন্যা কে তোমা বিদেশে লয়্যা জায় । বিদেশে রে ফাটে মোর বুক পুসিয়। পালিয়া বালা কারে সাজ্য। দিল ডালা আর ন৷ দোঁখব ঠাদমুখ । আন্ধার-ঘরের দাঁপ . জাবে বিয়ে আর দ্বীপ লুপ্ঠ হইল দরশন আমার দুরত-কর্ম এক দেহে পুনু জম বিধাতার দারুণ লিখন । খিতিতলে ঢাল গা কপালে হাঁনিল ঘ। নাহী দেবী কেশপাশ বান্ধে বানির ক্ুন্দন সুনি জত পুরানিতান্বনী ভাসিয়া৷ লোচনজলে ধরণি লোটায়া। সভে কান্দে। উপদেশ কহে লোক নিবারে রানির শোক শৃভক্ষণে শিল৷ চাপে নায় রচিয়] ব্রিপদি ছন্দ সাধু হরিষে ঘর জায় ॥ গান কাব শ্রীমুকুন্দ ৫১১ বাহ বাহ বল] ঘন ত্বরা হইল নায় দুকুলের লোক সুমীলার মুখ চায়। কান্দে দুকুলের লোক সুশীলার মোহে বসন ভাঁজল তার লোচনের লোহে । বাযুবেগে ডিঙ্গ! সব হয়। গেল দূর বাহুঁড়িয়া আইল সডে আপনায় পুর । পিতাপুরে উপনীত হইল কালিদহে কালিদহ নিন্দিয়া ধনগাতি কাঁছু কছে। অষ্টম দিবস ; দিবা জানিলাঙ তোমারে কপট কালিহুদ বিবাদ সাধিলে মোর করাইলে বিপদ । কমল কৃঞ্জর কান্ত৷ দেখাইলে মোর নৃপতিমন্দিরে বান্দ রাখিলে কারাগারে । অগস্তয মনর যাঁদ দরশন পাই তার পদযুগ সৌব তোমারে শুখাই । নিজ নিবেদন তারে কহিল শ্রীপাতি 'ডিঙ্গা মেলা। সদাগর চলে লঘুগাত। অনেক প্রবন্ধে হাদ।দহ হইল পার সেতুবন্ধ দেখে সাধু লঙ্কার দুরার । পণ্টজন্য দ্বীপখান সাধু কৈন বাম শঙ্খদহে একাধন কৈন বিশ্রাম । ঠান্দড় ইষের মূল নৌকাতে বান্ধয়৷ বুদ্ধিবলে জায় সাধু সাপদহ বায় । মন্দহরি দ্বীপখান সাধু কৈন বাম ভিতে জেশকদহ গিয়৷ ডিঙ্া হইল উপনীতে । লহ লহ করে জেগক জেন করিকর চুনগুড়। পেল তায় দিন কর্ণধার । বামভাগে বন্দনা কাঁরয়৷ নীলাচলে উত্তারল সদাগর সমুন্রের কূলে । লোচন ভাঁরয়।৷ সবে দেখে জগন্নাথ প্রসাদ বেঞ্জন তথা কিন) খায় ভাত । কোথাহ রন্ধন ভোজন চিড়া খও দাঁধ দিবানিশি বাহে সাধু লবণজলধি । ঘন কেরআল পড়ে সুনি ঝটঝট একদণ্ডে চলে তাঁর যোজনেক বাট । কুলে জল নাহী শুধু শুন কুলকুল দূরে হৈতে মাধবের দোঁখল দেউল | নানাকাবাকথায় মজিয়৷ গেল চিত, সঙ্কেত-মাধবে ডিঙ্গা হইল উপনীত। কোথাহ রন্ধন কোথ৷ চিড়া খণ্ড দধি রান ীদিন চলে সাধু হইয়া একবুদ্ধি। [পিতাপুন্রে উপনীত হইল মগরায় অভয়ামঙ্গল কাবিকষ্কণ গায় ॥ চ, ম.—৩৫ ২৮৯ ৫১২ মগর৷ নিজ নীরে দেহ মোরে হ্থান স্মঙরণ কারলে তোম৷ তুমি মোরে হৈলে বাম। কাঁরলে বিস্তর অপমান । ভাসিয়৷ তোমার জলে আমারে করিলে বিপরীত সকলি করিলে হত অন্যে জায় কুতৃহলে নায়ের নফর জত মজাইলে ছয় বৃহিত। শুনিঞ॥ আমার নাম আসিব সভার পরিজন আমা জাইব গ্রাম জে জনের মৈল গ্বামী তারে কাঁ বলিব আমী কি বলিয়৷ রহাব রোদন । নানারঙ্গে গাতরসে আইলাঙ লাভের আশে বিনাশ কাঁরলে মোর মূল [বিদেশে মারিয়া পর ঘোষণা গাহল বুকে শূল। কিব৷ লৈয়৷ ঘর জাই এক নায়ে আঠার ভাগিনা মৈল ছয় ভাই-পো৷ তারে বড় মায়া মো+ [বাধ দিল বিষম যন্ত্রণা । তুমি পুত্র চল ঘরে আম প্রবেশিব নীরে দুই মায়ে দেখয সমভাবে শিবের কারয়। পৃজা স্ভাষ কাঁরহ রাজ তোমারে সকল ভার লাগে। ৰাপের শুনিঞ। কথ শ্রীন্তেরে লাগে বাথা দুহার লোচনে বহে জল রচয়। ত্রিপাদি ছন্দ দ্বিজরাজ প্রকাশে মঙ্গল ॥ সদাগর আইল ঘর মৈল সোমদন্ত ভাই পাঁচালি করিয়া বন্ধ ৫১৩ এমন বালিয়া সাধু করে আত্মঘাতী মগরার জলে ঝশপ দিল ধনপাতি। ৯০ জেই ক্ষণে সদাগর ঝখপ দিল নারে আকাশ ভাঙ্গিয়৷ পড়ে শ্রীমন্তের শিরে। মহামায়। গগনে হাসেন খলখল চন্ডীর কৃপায় হইল এক-আটু জন । শ্রীণন্ত চিন্তিল তথা চণ্ডীর চরণ বিষমসঙ্কটে মাতা করহ রক্ষণ । মধুকৈটভের ভয়ে ব্রন্ধার শরণ দুর্বাসার সাপে মুস্ত হইল দেবগণ । সুরলোকে সুস্থির কারলে সুররায় প্রথমে সম্মান পাইলে ইন্দ্রের সভায় । হৈলে গো নন্দের সুত৷ যশোদাজঠরে তোম। দিয়৷ বসুদেব ভাগুল কংসেরে। দেবাহত হেতু গে। গোকুলে পরকাশ কংদ হৈতে কৃষ্ণের কারলে ভয় নাশ । এতেক 'বনয় যাঁদ বলিল শ্রীপাঁত আভগ্রায়ে বুঝিয়া আইলা ভগবতী । পান্নাবতী সঙ্গে চণ্ডী করিয়। জুগতি বরুণেরে ডাকিয়া বলিল ভগবতী । চ্ী বিদ্যমানে আসি মাথে নিল পান ধনপতি ছয় 'ডিঙ্গ৷ দিল বিদ্যমান । কাণ্ডার বাঙ্গাল ছিল মায়ক শয়নে যোগনিদ্রা তোঁজ তারা পাইল চেতনে। ক।গার বাঙ্গাল বলে ধনপাত ভায়।। ঝড় বিষ্টি দূর হইল চল জাই বায় । নিজ বিবরণ তারে কহে ধনপতি ডঙ্গা মেল্যা সদাগর চলে লঘুগাতি। অভয়াচরণে মজুক নিজ [চত শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৫১৪ দেশের হাব্যাসে ধনপতি দন হেল কপ্প কষ্প তরণী ধাওয়ান লঘুগাত | কণ্টক সমান তপ্প চন্ডীমঙ্গল উপনাঁত মগরায় দিবানাশি ডঙ্গা। বায় দূরপথ ক্ষণেকে নিয়ড় ঝাজএ টমক 'সিঙ্গ। বাযুবেগে চলে ডিঙ্গ। উত্তারল৷ সাধু হাথ্যাগড় । কালিঘাটা মহাস্থান দুইকূলে বেসাইম হাটে ডানিবামে জত গ্রাম রন্ধন ভোজন হানু ঘাটে । কৌঙরনগর বাম আকনায় বিশ্রাম উত্তারল৷ সাধু নিমাঞ্ী-তীর্থে পাযাণে রচিত ঘাট দুকুলে যাতীর ঠাট নান৷ দ্রব্য কিনে নান। রাঁতে। তার কত লব নাম কাঁলকাত। কুচিনান ১ তার কত লব নাম ডানি বামে জত গ্রাম বায়ুবেগে পাইল ভ্রিবিনী বিশ্রাম কারয়া তথি প্লান করে ধনপতি ডিঙ্গা ভরে নান। দ্রব্য কিনি। বাহে ডিঙ্গা নিরন্তর ডানি ভাগে হালিশহর বামে কোদালিয়। গৃপ্তপাড়। আদ্মুয়া মনুক দয়া সদাগর জায় বায়্যা বাহ বাহ ঘন পড়ে সাড়া। শান্তপুর কথ দূর ডাহীনে নদ্যা পাড়পুর বায়ুবেগে পাইল ইন্দ্রাণী গ্রাবর ভাট্যারি গায় অজয় বাহিয়া জায় যোজনেক রহে উজবনি । বুঝয়৷ কার্ষের তত্ব বলে ধনপতি দত্ত কর্ণধার চল নিজ পুরে লহন৷ খুষ্বনা জথ। কহিবে সকল কথা পুরুবধূ উর্ঘানের তরে। মহামিশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের তাত কাবিচন্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চতীর আদেশ পাই বিরাচল শ্রীকাবকন্কণ ॥ ভঙ্ম দিধল দিবা ৫১৫ আদেশিল ধনপতি জাইতে কর্ণধারে দণুমান্নে কর্ণধার আইল নিজ পুরে। হাস্ামুখে কহে পুরে কল্যাণ-বারত৷ আইল শ্রীপাত দত্ত উদ্ধারিয়া পিতা । বেগে পাইল কর্ণধার সাধুর আওযাস নাহ জিজ্ঞাঁসতে বার্ত। কহে মন্দভাষ । বায়ুবেগে ধায় বত নগরে নগরে নান। ধনে বন্ধুগণ তোষে কর্ণধারে। অন্তঃপুর হইতে আইল লহনা থুল্লনা বার্তা জিজ্ঞাসয়। তার কারল মাননা। খুবন৷ বলেন সুন সুন কর্ণধার কত দূরে আইসে মোর শ্রীমন্ত কুমার । শ্রীপাতি তোমার পূত্ন ভুবনে বাঁদত এখনে দৌখবে পুতুবধূর সাহত । শুভবার্ত৷ পাইয়। রাম। হইল আনন্দিত। উঠানে খাটাইল্য পাট কথুবার কিত।১। আরোপল দধি-বিভাষিত পূর্ণঘট রুপিল সফল তরু নৃত্ত করে নট । দুবলা ডাঁকয়৷ আনে আইয় শতজন ডঙ্গা মঙ্গীলতে রাম কারল গমন । দূরে হইতে জননিরে দেখিল শ্রীপতি সন্ত্রমে আঁসয়া পদে কারল প্রণাতি। সত্বরে আসিয়া রাম৷ পুন কৈল কোলে আঁভিষেক করাইল লোচনের জলে । শতশত চুম্বন কৈল পুন্রবধূ-মুখে [ডগা মঙ্গলীল রাম৷ পরম কৌতুকে । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকন্বণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৫১৬ ডল৷ তোঁজ চাপে দোলা অঙ্গে শোভে রতনভূষণ সঙ্গে রাজসুতা সিল ২৯১ জগবস্প সানি জোড় আগে পিছে বাজয়ে বাজন। গায়নে মঙ্গলগাঁত গায় উজ্জানর জত লোক বরকন্য। দোখিবারে ধায় । আত্বাইল কুন্তলভার একপদে আরোপা নৃপুর কাহার নৃপুর হাতে * কোন ধনী আইসে বহুদূর । এককর্ণে অবতংস নাহী জানে কুলবধৃজন ধায় কোন শশিমুখী কেহ পাঁর চগ্চল বসন। আঁবরোধে কোন নারী বার না হইতে পারি আনামথে১ দেখে সচাঁকিতং গবাক্ষে আরোপা নে বরকন)। অঙ্গের বিজুতৎ । নগরের পড়ুয়া ভাই প্রেমাস্ত্রে পারত বিলোচন কেহ নাচে কেহ গার বাজয়ে মঙ্গল-পড়া ঘুচিল মভার শোক না জানে পাঁড়ল হার খাঁলত বসন মাথে উপরে বসনভ্রংশ কজ্জলিত এক আখি লোচনের পানগান্ন ্রীমন্তের মুখ চাই পুলকে পৃর্ণিতকায় দেই জৌতুক নানা ধন। প্রণমঞ গুরুজন সাধু আইল নিকেতন মাত আইল সন্্রমে উন্ৃর্থিতে শিরে দিয়। দুবাধান নিছয়া পেঁলিল পান শুতক্ষণে লইল! গৃহেতে । পাছু ধনপাত দত্ত লয়) সিংহের বিনত বলদে শকটে আনে ঘরে জিজ্ঞাসে স্বামীর কথা [নিজ পাত চিনিতে ন পারে। রাজগুণে অবদাত লহনা খুল্পনা তথা ধন্য রাজা রঘুনাথ সুপাওত রসিক সুজান হইয়া তার সভাসদ চক্রবর্তী শ্রীকাবিকষ্কণ ॥ চিল মধুর পদ হনিৎ ৫১৭ শুন গো শুন গে মা বাপার দৈবের ঘা বিদেশের কব সব কথ। রোগ-শোক-দুঃখ-থাওড পূজা ন৷ কাঁরল চা তোঁঞ হইল পঞ্চম অবস্থা । চন্ডীর হয়্যাছে ক্রোধ এই হেতু পায়ে গোদ গায়ে দাদু কেশ নাহী মাথে অন্নকষ্টে গাযে শির ন্রিসায় না পাইল নীর এত দুঃখ ধরিয়৷ বিপথে । বাপের উদ্দিশ আশে গেলাও সিংহল দেশে বান্ধ। গেনু শমনের পাশে ভয়ঙ্কর সিদধুজলে গেলাঙ সঙ্কটস্থলে কেবল্প তোমার উপদেশে । সস্ভাষয়৷ মহাঁপালে কাহিব উত্তরকালে সংহলের জত বিবরণ যাঁদ হয় পঞ্চমুখ তবে নিবোঁদয়ে দুঃখ বিরচল শ্রীকাবকল্কণ ॥ ৫১৮ শকটে আরপাঁ শঙ্খ-চন্দনের ভরা রাজসন্ভাষণে হইল শ্রীমস্তেব ত্বরা। ভার দশ দাধ কলা ঠাপা মন্তমান দোখণ্ড সরস গৃয়া বিড়াবি্কা পান । গছে বান্ধ্া নিল ভেট ঘৃত দশ ঘড় সগল্লাথ খান চার খান দশ গড়া । কিন্বর কাঁরয়৷ দিল দোলাব সাজনী আসে পাসে বান্ধ্া দিল বিচিত্র দাপনি। আসগাড়ু পাসগাড়ু সিয়রে মেচলা ১ পাতনী পাত্যাছে তাঁথ পামার আচলা । বিচন্ন দোলায় সদাগর হেলে গ৷ আসে পাসে পড়ে স্বেত-চামরের বা। চন্ডীমঙ্গল জোগানিঞ পাইক সাধুর ধারল জোগান ডানী বামে 'সিঙ্গা কাড়া টমক নিশান । আগে পাছে নায়া। পাইব বাঙ্গালি খেলায় দ্ড মুহরি ভেরি নানা যন্ত্র বায়ং। রাজার সভায় সাধু হইল উপনাঁত প্রণাম করিয়। ভেট এড়ে চারভিত। সভারে প্রণাম করে সাধু শ্রীয়পাতি সিংহলের বিবরণ জিজ্ঞাসে নৃপাতি। অঞ্জলি করিয়৷ সাধু করে নিবেদন মভয়ামঙ্গল গান শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ৫১৯ জিজ্ঞাসল নরপাঁতি সিংহলের কথা বড় কার্য বৈলে তুমি উদ্ধাবিয়৷ পিতা । বলে সাধু শ্রীপাঁত রাজার ইঙ্গিতে দুই মাস বাইয়া জাই নৌকা-পথে । জল 'বিন। বিশ্রাম কাঁরতে নাহী স্থল দিন-অবশেষে যাজ। পাইল সিংহল। কালীদহ নামে তথা আছে এক হ্‌দ তাঁথ ফুটে কমল কহ্‌লার১ কোকনদ কমলের দলে বাঁস পরমসুন্দরী ক্ষেনে গ্রাস করে ক্ষেনে উগারয়ে করী । জাগরণে সপনপ্রকার অপরূপ প্রতিজ্ঞ। করিল আমী সিংহলের ভূপ। প্রাতিজ্ঞাতে পরাজয়ী রাজা নিল ধন মসানে কোটাল নিল বধিতে জীবন। বম সঙ্কটে পৃজা৷ কৈল ভগবতী চাঁওক। উররিল। হয় ব্রাহ্মণী জরতা । আম৷ ভিক্ষা কৈল চণ্ডী না দিল কোটাল এইহেতু চত্ী রগ কৈল অবিশাল। পরাজয়ী কৈল রাজ। কনা অঙ্গীকার বন্দি দান লৈয়া কৈল পিতার উদ্ধার । অষ্টম দিবস ; দিব কনা। বিভা দিল রাজা হরধিত হয়া বিদায় হইয়া আইনু নৌক৷ বায়৷ । এতেক বচন যদি বালল শ্রীপতি থলখল হাসে তথ৷ পান্ত দাশরাথি। রাম ওঝার পু নাম দামুদর উজানতে পদবী আচাধরজ্লাকর । ডাক্যা বলে এই কথা কোথাহ না সনি মনুষ্যের তরে রণ কাঁরল। ভবানী । আছিল র।/জ।র পান্ন নাম ফুটভাষ শ্রীমন্তের বোলে তার উবজিল হাসি। বারা মরীচ প্রজাপাঁত পুরন্দর ধ্যানে চরণ জার ন৷ পায় অন্তর । সদা কাঁর বুলে বেটা পাটনে পাটনে ইহারে চাঁওকা দেখা দিল কোন গুণে । হাসে জত লোক মুখে আরোপি বসন শ্রীমন্তের বোলে ন৷ পাতায় কোনজন । ফুটভাষী পাত্র বলে সুনহ গোসাঞ [বিদেশে চন্ডীর কৃপা দেশে কেন নাঁঞ। শ্রীমন্তে চন্ডীর কৃপা দোঁখ সবজন এথা যাঁদ দোখ কর্জে কামনী-বারণ নরপাঁত বলে সুন পান্র দাশরি এই যাঁদ সত্য তবে দিব জয়াবতী । রাজ৷ সাধু দুহে কৈল প্রতিজ্ঞা-পৃরণ মাঁসপত্রে লিখন কারিল সভাজন । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৫২০ ক্রোধিত হইল রাজ৷ সাধুর বচনে মিথ্যা কথ। কহে বেট। মোর বিদযমানে । উত্তর মসানে বাঁল দেহ শ্রীয়পাতি নহে কমল-কামিনী-গজ দেখাকু সম্প্রাত । ২৯৩ একে কোটালিয়৷ তাহে রাজ-আজ্ঞা পায় হাথে ধার সদাগরে সভা হইতে লয়। ঢেকা মারি লয়া৷ জায় বাঁধতে মসানে সাধু বলে নরপাতি ক্লোধ অকারণে । তোমার ভরস৷ কার বিদেশেরে জাই মোর দৈব-দোষে হে তোমার কৃপা নাঞি। শ্লীযন্ত 'চান্তল রক্ষ। কর মহামায়। উজানিরে আসিয়া আমারে কর দয়। । বিরুমকেসরি হইল 'সিংহলের রাজ। উজানিতে আসিয়৷ লহ ন৷ মোর পুজা । তোম। বিনে আমার নাহীক প্রাতিকার সেবক বাঁলয়া মাতা করহ উদ্ধার । দুর্বসার সাপে দুঃখী হইল সুরপতি শোল উপচার দিয় পুজিল পার্বতী ॥ সুরলোকে সুস্ছির করিলে সুররায় প্রথমে সম্মান পাইলে ইন্দ্রের সভায় । রাবণের বধ হেতু মিলিয়৷ দেবতা অকালে বোধন কৈল আসিয়। বিধাতা । শোড় উপচারে তোম। পুজি রঘুনাথ তবে রাবণের কৈল সবংশে নিপাত । হৈল মধুকৈটভ হার কর্ণমূলে বঙ্ধারে হানিতে জায় নিজ বাহুবলে । নাভিপন্বে বিধাত৷ পৃজিল ভগবতী দুই অসুরের বধে কৃষ্ণ দিলে মতি শ্রীমন্তের এত স্তুতি সুনিঞ৷ পাবতী শ্রাতমান্রে উরিল৷ গগনে ভগবরতী । আপনি কাঁরল মায় হরের বনিত৷ চৌসটি জুগিনী হইল কমলের পাত।। অমল কমল হৈল পল্লা করিবর হাঁসতে লাগিল শতদলের উপর ॥ চাওকাচরণে মঞ্জুক নিজ চিত শ্রীকাবিকক্কণ গায় মধুর সঙ্গীত খ৪ মায়াময় হইল নদ তাঁথ বহে কালিহুদ দুকুল হানিয়। বহে জল কমল কুঞ্জর তায় চণ্টল দাক্ষিণা বায় আঁলকুল করে কোলাহল । দেখে রাজ। কালিদহের জলে ডুবনমোহন নারী [গাঁলয়। উগারে কার অধিষ্ঠান কারয়া কমলে । কনককমল-বুচী স্বাহ। স্বাধা কিবা শচী মদনমঞ্জরী কলাবতী সরপ্বতী কিবা রমা সত/ভাম৷ রস্ত। অনুন্ধৃতী | কলার্পা জানএ। কেশ পায়ে শোভে কনকনুপুর প্রভাতে ভানুর ছটা কপালে সিন্দুর-ফৌট। রাঁধর কিরণ করে দূর। বালা আত কৃশোদরী নাঁবড়ীনতম্বঃ আতভার বদন ইসত মেলে কু্জর উগারি গিলে জাগরণে ম্বপনপ্রকার | রাম৷ ইসত হাসে গগনমণ্ডর ভাসে দস্তপূংস্ত বিদিত বিজলি পাবিহরি মকরন্দে কত কত শত ধায় আল। [কিবা সে উহার গলে স্থির হৈয়। সৌদামিনী বৈসে নিরুপাম। পরকাশ মন্দমধুর হাস ভাঙ্জ নব শাখবায় আশে । পন্পপতে কার ভর [গিলে রাম কারিবর দেখ রাজ। হইল চমংকার* পার মির পুরোহত শ্রীমন্তে কাঁরল নমস্কার । চিলেখা তিলোত্তমা ভুবনমোহন বেশ ভার দুই কুচাগিরি ব্দনকমল-গন্ধে মাণময় হার ছলে সভে হৈল। চমাকিত চন্ডীমঙ্গল হয়া রাজ সবিনয় মাগ্া। নিল পরাজয় কুঠারি বন্ধন কার গলে চাকার সুচারত মুকুন্দ রাঁচল গত ব্রা্নণরাজার কুতুহলে ॥ ০৬, নৃপতি পুণযবান জয়াবতী দিতে দান কাঁরল শুভক্ষণ বেলা আরোপাঁ হেমকুস্ত কারল কর্মারস্ত তুরিতে বাদ্ধিল ছান্দল৷ । নৃপাতর অভিলাষ কন্যার অধিবাস করেন বেদের বিধানে কপালে জড় ফৌট। চৌঁদগে দ্বিজঘটা সঘনে বেদ উচ্চ গানে জয়৷ রূপবতী হরিদ্রাজুত ধাঁত পরিয়৷ বসল আসনে । জতেক বিপ্রমুনি কাঁরল বেদধবনি কন্যার গন্ধাধিবাসনে ৷ মহী গন্ধ শিলা দুর্বা পুষ্পমাল। ধান্য ফল ঘৃত দধি ্বাপ্তক সিন্দুর কজ্জল কর্ণপুর শঙ্খ দিল যথাবিধি। বান্ধণ করে মৃতু প্রশস্ত দীপপানর মন্তকে করিল বন্ধনা সুবর্ণ সাথ শিরে অঙ্গুরি দিয়া করে আশীষ করিল যোজনা । রজত দর্পন তান গোরোচেন। সদ্ধার্থ চামর পরমানে মোদক দিয়া লাজ পুজিল চেদিরাজ কন্যার গন্ধাধিবাসনে । নৈবিদ্য দিয়। সভ্ুরি মাতৃক। গৃজ। কার দিলেন বসুধায়৷ দান আষ্টম দিবস দিবা বসুর পূজা আদি কাঁরল যর্থাবাঁধ নান্দমুখের বধান। কাখেতে হেম-ঝাঁর রাজার সুন্দরী জল সহে ঘরে ঘরে শতেক আইয় মিলি দেই হুলাহুলি মঙ্গলসূন্ন বান্ধে করে১ । আঁধবাস আদ শ্রীমস্ত যথাবিধি কারল বেদের বিধানে রচিয়৷ নানাছন্দ পাঁচালি প্রবন্ধ সুকাব মুকুন্দ ভনে ॥ ৫২৩ বাজ করে কন্যাদান বিপ্রগণে বেদগান গায় নাচে রঙ্গে বিদ্যাধরী সপ্তদ্বর৷ শঙ্খধবনি পট্ুহ দুন্দাভ বোন আনন্দিত নৃপতির পুরাঁ। পাটে &ড়ে রূপবতী প্রদক্ষিণ কার পাতি শুভমুখে দুইজনে ছামনী দিলেন পাঁতর গলে আপনার কণ্ঠমালে রামাগণে দিল জয়ধ্বনি । অভয়ার প্রীতফলে করে কুশে গঙ্গাজলে রাজা করে কন্যাসম্প্রদান শয্যা ঝাঁর ধেনু থালা কলধোত কষ্ঠমাল। দিয়।৷ কৈল জামাতার মান। বাজয়ে মঙ্গল-পড়া। দ্বিজে বান্ধে গ্রস্তচড়া বরকন্য। দেখে অবুষ্কৃতী বান্দিয়।৷ রোহিণী-সোম লাজ-হোনি কৈল হোম দুহে কৈল অনলে প্রণাতি। দষ্গত্য প্রবেশি ঘরে খির খণ্ড ভোগ করে রাত গেল কুসুমশয্যায় রাঁচয়া পাদ ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ হৈমব্তী জাহার স্বহায় ॥ ২৯৫ ২৪ রামরাম ম্মঙরণে পোহাইল নিশা কোক পণ্ম গায় রবির প্রকাশ। নিত্যনিয়ামিত কর্ম কার সমাপন শ্বশুরচরণে সাধু বিদায় মাগেন । মাথায় মকুট দয়া বাঁসল। দম্পাত কৌতুকে জৌতুক দেই জতেক যুবতী । মৃদক্গ মঙ্গল-পড়া বাজে জোড়া শঙ্খ টমক খমক বেনী বাজে জগবম্প। গড়ায় আন্যাছে কেহ রজত কাণ্চন কৌতুকে জৌতুক দেই জতেক বন্ধুগণ। কেহ নেত কেহ শ্বেত কেহ পাট সাড় চন্দন কুসুম দুর্বা বাটাভর৷ কাঁড়। দায় করিয়৷ বরকন্য। চাপে দোলা পণ্চরর দিল হাথে রাজার মহিলা । রাজপথে জায় সাধু নগরে নগর ধনপাতি লয়্য। কিছু শুনিব উত্তর । ধ্যানে ধনপাঁত পূজে মৃত্তিকা-শঙ্কর চ্ডকা রহিল! তার অর্ধকলেবর । ডান ভাগে সিংহ রহে বাম ভাগে বৃষ পিঠে বাম ভাগে চণ্ডী দক্ষিণে মহেশ । অন্ধ ফেখট। হরিতাল অর্ধেক সিন্দুর দক্ষিণের কর্ণে আহি বামে কর্ণপুর ৷ বাম হাথে চুড়ি সবে৷ ভুজঙ্গবলয় কেবল বাঁলতে হর ধ্যানে নাহা রয় । অর্ধনারীশ্বর১ বিন! না রহে ধেয়ান [বপরীত দেখি সাধু করে অনুমান । দুইজনে একতনু মহেশ-পাধতী ন৷ জানিয়।৷ এত দুঃখ পাইল মূঢ়মতি। চর্মচক্ষে আমি তোম। নাহী চান মা এই হেতু আমার ডুবাইলে সাত না। অভাগিয়৷ তোমার হয়যাছে প্রাতদান্ এই হেতু দ্বাদশ বধসর 'ছিনু বন্দি। ২৯৬ দোষ ক্ষম। কাঁর মাতা লহ পুষ্পজল অন্তকালে চরণকমলে 'দিহ স্থল । পৃজ। সাঙ্গ কার সাধু দিল বিসর্জন শুভক্ষণে বরকন্য। আইল নিকেতন। উলুর্থানের ডালী করে করিয়া খুল্লন৷ জয় [দয়া পুত্রবধূ কারল অর্টনা। গ্কামীরে সুশীলা কীছু করে অভিমান অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ গান ॥ ৫২৫ কান্দে সিলা রাজার নান্দিনী আকুল কুন্তলভার না জানে পাঁড়ল হার স্বামীরে গাঁঞ্য়। বলে বাণী । জম্ম হইল সুখস্থলে ছিনু মা-বাপের কোলে নাহী জান দুঃখের বারত। প্রথম বয়সে দুঃখ ধরণ ন৷ জায় বুক কোন দোষে 'দিলে মোরে সতা ৷ ভাই বন্ধু মাতা পিতা জেবা মোর আছে যথা সব ছাড় গোড়াইলাগ তোমারে আমি জত কৈল ক্ষেম তুঁমি দূর কৈলে প্রেম দুই কুল নহীল সিলারে। তোমার জতেক ভাষ কেবল বাগুরা-ফাস+ ঘাটী আহিড়ীর জেন রিত হাম মুগী ক্ষীণবল। না বুঝি তোমার ছল। জত বৈলে সব বিপরীত। অসাধুর বোল কিবা কেবল কুমের গ্রীবা প্রবেশয়ে ভিতরে বাহারে সুকাতির জত বদং জেমত কু্ধীরের রদৎ মদৃগুরে ন৷ প্রবেশে অন্তরে । চিরকাল থাক জিয়৷ আর কর সাত বিভা সিল মাগে সিংহলে বায় চত্তীমঙ্গল বাল প্রভু শুন কাম অন্তরে নহাবে বাম সাজন করিয়। দেহ নায়। [সিল ভাসে শোকানলে শ্রীমস্ত করুণে বলে না বালহ আর মিথ্যাভাষী রাজা কারে কন্যাদান আমি কি সাধিব মান সত৷ নহে জয়া তব দাসী । আনি ভূঙ্গারের বার পাখালে খুষ্লন৷ নারী প্রেমবতী বধূর বন রচি়৷ ত্িপাদি ছন্দ পাঁচালি করিয়া বন্দ বিরাঁচল প্লীকবিকম্বণ | ৫২৬ মাথায় চন্ডীর বার নাচয়ে খুল্লনা নারাঁ নান। ধন বিলায় ভাগারে মৃদঙ্গ মঙ্গল-পড়া শঙ্খ বাজে জোড়া জোড়া ঘন দেই জয় জয়কারে১ । দুই জায় দুই পাশে শ্রীস্ত বাঁসল বাসে জৌতুক দেই বন্ধুজন বসন কাণ্ন হার দিয় কৈল ব্যবহার কেহ দেই রতনভূষণ । হিরা 'নিলা ঘুভী পল। ভরিয়া কনকথালা চন্দন কুসুম দুরধা ধান জর্তী ব্রাহ্মণীবেশে উরি সাধুর বাসে চ্ডকা আইলা দিতে দান । চতুর সাধুর বাল। বুবয়। চাণ্ডির ছলা দণ্ডবং হইলা চরণে মায়েরে কাহলা বাণী এই রূপে ঠাকুরানি মোরে রক্ষা কারল মশানে। | মুনিঞন পুনের কথা ুল্লনা পুলকযুত। বসাইল কনক-আসনে দিল রাম৷ হাথ-্সান ধনপাত তেজে মান দণ্ডবত পড়িল চয়ণে। অষ্টম দিবুস ; দিব শ্মঙারয়। প্ৰ দুঃখ সাধুরে গঞ্জয়া বলে বাণী তুমি পুরুষের রাজ শান্তর কারবে পূজা কেবা তোর ঘরে খাব পান । দোখয়া চণ্ডীর রোষ কারতে তাহার তোষ মায়ে পোয়ে পড়ে পদতলে যাঁদ নাহী কর ক্ষেম। মায়ে পোয়ে কাঁত দব গলে। তোমার কিন্করী আমি কুমাত আমার স্বামী সুমৃতকুমতিরূপ। তুমি । কুমাতি সুমাত জত দূর কর সে সকল তুমি খল্পনার ভয় হরি সন্দুর কজ্জল দল দান রাঁচয়া ন্রপাঁদ ছন্দ গান কাব শ্রীমুকুন্দ নায়েকেরে করহ কলাণ ॥ কৈল চণ্ডী হেটমুখ এই সাধু মূঢুসীম। তোমার মায়ার পথ কৃপা কার মাহেশ্বরী ৫২৭ লাজ খণ্যা কাঁহ মাত। আপন মরম তুমি কী ন৷ জান মাত। স্তীর ধরম। সতী মানে পাতি নারায়ণ সমতুল পরের পুরুষ জেন 'সিমুলের ফুল। রুগী জার পাঁত তরে রূপে কাজ কিব। তাহা হইতে ভালে জয়ে বনিতা বিধবা । ূর্বস্কামী ছিল মোর হেমকলেবর ইবে কাছে সুইতে নারি অঙ্গে পালি জর। কাঁহতে কাহতে রাম৷ দৃষ্টে ভাসে জলে কৃপাময়ী অভয় খুল্লনা কেল কোলে । খুল্লনারে কৃপাময়ী সদয়হদয়। কঙ্করী সম্বন্ধে সদাগরে কৈল দয়।। জেইক্ষণে সদাগরে নিবারিল ক্রোধ সেইক্ষণে পদযুগে ঘুচে তার গোদ । চ* ম.-৩৮ ২৯৭ সদাগরে কৃপ৷ দৃষ্টি হইল! ভবানী সেইক্ষণে ঘুচে তার লোচনের ছানি । হাসিয়া অভয়া চাহিলেন কৃপাদৃষ্টে সেইক্ষণে কুজ তার ঘুচাইল পৃষ্টে । চাকার পদধাঁল গায়ে মাথে সাধু ততক্ষণে ঘুচিল গায়ের হাথ দাদু । সদাগরে ভগব্তী কৃপাবলোকন ধনপতি হইল জেন আঁভন্নমদন | খুল্লনারে ভগবতী সদয়হদয়া কর গো করুণাময়ী শিবরামে দয়া ॥ ৫২৮ ূ শ্রবণমঙ্গল কথা দেবীর পুজার গাথা বিপদে পরম প্রতিকার এই বত-ইতিহাস সুনলে কলুষনাশ কলিকালে হইল প্রচার । নাহী ছিল ব্রিভূবন ছিল৷ এক৷ নারায়ণ অন্ধকার পারে ভগবান তার পাইয়৷ কৃপাদৃষ্টি করিল ভূবন সৃষ্ি এই হেতু হইল নিষ্নাণ। পাষণকুলের পক্ষ বিরিগিতনয় দক্ষ তার আমি হইলাঙ দুহিত তথা নাম হইল সতী বিভ৷ কৈল পশুপাতি সুরলোকে হইলাঙ মেহতা । পিতৃমুখে পতিকুৎস। শৃনিঞা তোজনু ইচ্ছ। পিতুকুলে বিপদদায়নী তোঁজলাঙ সেই অঙ্গ কৈল্য তার মখ ভঙ্গ দক্ষযজ্ঞাবনাশ-কারিণী । মেনকা-উদরে জাতা হইলাঙ শখারসুভা তপস্য। কারল শিবহেতু মোর বিবাহের তরে ইন্দ্র পাঠাইল ম্মরে হর-কোপে মৈল মীনকেতু । ২৯৮ কংসনদীর কুলে তমালতরুর মূলে বিশ্বকর্মে দেহারা নির্মাণ হইয়া অপক্ষিত রূপে ্বগ্ন কহিয়া ভূপে পূজ। নিল নৃপতির স্থান । পূজা লয় জাই বাস পশু কৈল আর্দাস তার পূজা লইল বিজুবনে পশুর লইয়। গৃজা সিংহেরে করিল রাজ। স্1পলাঙ দণ্ডক-কাননে । বাসব পুজয়ে হর ফুল জোগায় নীলাম্বর সাপে জম্ম ব্যাধের ভবনে নাম থুইল কালকেতু দিনের সম্বল হেতু প্রতিদিন বধে পশুগণে । পশুর রোদন শুনি নানাবাধ কাকুবাণী অভয় দিলা সেই বনে আপনী গোধিক। বেশে অবতার বনদেশে মহাবীরে দিল দরশনে | আম আসি দিতে বর দারদ্র বারের ঘর কোপে বাদ্ধি থুইল চারি পদে ধার আমি নিজবৃপ বন্ধন করিল লোপ খণ্ডাইল বারের আপদে । মোরে সত্যে দয়া মন কাটাইল্য গহনবন বসাইল নগর গুজরাট নগর চাতর মাঠে নাটগীত গুজরাটে চৌরাশী বাজার গোলাহাট । বন্দী কৈল ক্ষাতপাল শাপাস্ত হবার কাল নু কাহয়। নৃপবরে বসাইলা নৃপতি পাটে পুনু রাজা গুজুরাটে আম৷ পুঁজ গেল৷ সুবপুরে। ইন্দ্রের নৃত্যকী বালা দেবকন্যা রত্মালা তালভঙ্গে লইলাম খাত কৈল তোরে উপধাম থুস্বন৷ থুইল নাম মাত। রষ্ত। বাপ লক্ষপাঁত। সথা সনে কার মেল। দ্বাদশ বংসর বেলা পায়রা উড়ায়ে ধনপাতি চন্ডীমঙগল সয়চানে দলে হান নিজ গৃহে পথ-কানা তোমার অঞ্চলে কৈল স্থিতি। তোরে দেখি ধনপাঁতি বিবাহের কৈল মতি সম্বন্ধ করিল বিচারিয়া দ্বিজ আসি উজবনী ধনপাঁত কৈল তোম৷ বিয়া । রাজ। পাইল শারি-শুয়। পঞ্জর আনিতে গুয়া সাধু গেল৷ গোঁড় পাটনে ছাগল রাখিলে বনে অসস্তোষ পায় মনে সাধু আনি দিল নিকেতনে। ছলিয়৷ আনিল স্বর্গে জন্মাইল তোম৷ গর্ভে মালাধর ইন্দ্রের নন্দন ছাগল রাখাইল্য তোরে পাঁরখায় রাখিল তখন । নাহী লয়ে নিমন্ত্রণ তুমি মোরে কৈলে স্বঙরণে মোর সনে করি হট কাঁহল সকল বাণী জ্ঞাতবন্ধু ছলে ধরে সাধু অসম্ভোষ"মন চরণে লঙ্খিয়৷ ঘট তোমা দেখি কৈল পার্রাণে । [সিংহলে চলিল পাত শুনি সাধু দিল নিদর্শন দৈবদোষে ধনপাঁত মোর ঘটে মাইল লাখ তোমা দেখ্যা দিল জিউ দান। ঝড়বৃ্চি সাত নায়ে নহ ক্ফুট গর্ভবতী উপনীত মগরায় [বিপদে কারল অব্যাহতি কালীদহে অবতার কমলে কামিনী করী দোঁখলেক সাধু ধনপাঁত। গিয়। সাধু রাজধানী রাজ৷ সনে আসি কালিদহে নৃপাত ক্লোধিত মন বন্দী কর্যা রাখে কারাগৃহে । কেবল আমার কীড়া নাহা কৈল প্রাণপাঁড়া দ্বাদশ বংসর দিল দুঃখ শৃদ্ধভাবে দল বর কহিল কৈতববাণ্ণী ন৷ দেখি কমলবন কোলে হইল বংশধর দখলে পুত্রের ঠাদমুখ । অষ্টম দিবস; দিব নাম হইল শ্রীয়পতি মদনদুন্দর গুণধর গুরু সনে কৈল কলি জারুয়া বাঁলয়৷ রয়াঝর। বাপের ডার্ছশে আশে ভর! দয়! সাত তারবরে কালীদহে উপনীত পাড় অনেক পুথ গুরু তারে দিল গালি চাঁলল 'সিংহল দেশে হয়্যা দেখে বিপরীত কামিনী গলয়ে করিবরে। গেল সাধু রাজধানী কারল প্রতিজ্ঞাবাণী রাজা সনে আসি কালিদহে ন৷ দেখি কমলবন নৃপাঁত ক্লোধিতমন হানিধারে কোটালেরে কছে। ছিরা কৈল স্মগুরণ আমি আসি ততক্ষণ তোমার পূন্নের কৈল রক্ষা রাজার সইন্য দলে চৌসটি জুগিনী মেলে যুদ্ধ কৈল তোম। ঝিয়ে দেখ্যা । তোরে দিতে বর মাগ্যা ধনপাঁত বান্দ নাগা পিতাপুত্রে হইল পরিচয় ব্রভুবনে একধন্যা বিভ৷ দিল রাজকন্য। নানাধন 'ডিঙ্গার সয় । উপনীত মগরায় তুলয৷ দিল ছয় নায় আন্য। 'দিল পুন্বধূ পাত শুন গে বানায় ঝি কন্য। দিল বিক্রমভূপতি । শ্রীকাবকল্কণ গায় অবশেষ আছে কি অষ্টমঙ্গল। সায় অমর সাগর মুনিবরেং জালিয়৷ ঘ্বতের বাতি গায়েন প্রসাদের আদরে ॥ চারিগ্রহর রাতি নারাঁদ পুরাণ-মত কলির চার জত গুন বিয়ে খুলনা সুন্দরী ২৯৯ তুঁম গো পরম শু তেজ মাহভোগরুচি অবিলম্বে চল সুরপুরী । মহাঘোর কলিকাল নিচ হব মহাঁপাল সর্ভোগে নিচের সাধন সঙ্গদোষে পাবে দুঃখ লোক ধর্মে পরামুখ কলিযুগে বেদের নিন্দন। অন্ধ আদি১ জত জন রাজধর্মে পরায়ণং সম্ভাষ ছাড়ব সর্বজন কৃত হইয নর পরপাঁড়া নিরস্তর বেদানন্দা কারব ত্রাণ । ধম নাহী পাব স্থান অপান্নে সভান্ন মান ষোড়শ বংসরে হব জরা বিদ্যায় ন। 'দিয়৷ মাত সভে.'জাব অধোগতি কুলবধ্‌ হব মৃতস্তরা | উগ্রবাহু হব দ্বিজ পারহারি ধর্ম নিজ সভে হব শূদ্রের সমান বাড়বেক কাম কোপ অনুদিন ধর্মলোপ টুটিবেক জপ তপ দান। বৃথা মাংসে আভরুঁচি না হব ত্রাঙ্মণ শুচি কাঁরব ধর্মের উপহাস লোভে আবির্ভূত মাত বিকর্মে সভায় গাঁতি পরাম্নে সভার আভলাষ। ব্রাহ্মণ নহিব ভব্য লোহা লাক্ষা লোন গব্য বিক্রয়ে স্চিব বহু ধন অধামক হব নর দুই তিন জাতো ঘর জায় ধন সেই কুলজন । অধার্মিক হব বিশ্ব রা্মণ শুদ্রের শিষ্য ভিক্ষাজীবাঁ হব সর্বলোক দুর্ভিক্ষ দুষ্কর ব্যাধি অকালমরণ আদি পাড়ায় সভার হব শোক । আপনার হিত-শংসা কেবল পরের হিংসা সভার ধাইব তাহে মন পাপমাঁত নর মাঝে দেবকন্য৷ নাহী সাজে বিলম্ব করহ অকারণ । ৩০০ কাল অধন্নের পান্ত পিতৃহিংস৷ করে পুন গুরুহিংসা করে ছান্ুগণ দারুণ কলির গতি বনিত৷ হিধাসব পাতি এই হেতু অকালমরণ । ন:পাঁত লবেক ধন গ্রাম ছাড় প্রজাগণ প্রবোশব পরতকানন রাজা ন৷ কারব রক্ষা গ্রজ৷ ফল মূল-ভঙ্ষ্য পরধনে সভাকার মন । ন। জানঞা পর্বাদশ* অজ। গাবি করিব দোহন দ্বজ খাব মংস্য মাংস খিতি হব হাঁনফল। গ্রজা পাব করজালা দারিদ্র হইব সর্ধঙ্জন। শুন ঝিয়ে উপদেশ [বিষম কাঁলর শেষ পাচ অন্দে নারী গর্ভবতী বিষম কালির কাজ সঙ্গদোষে পাবে লাজ শেষে হইব অনেক দুর্গাতি। জত হব কলি-বাঁ্ধ নহিব লোকের শুদ্ধি হরিভন্তিহীন হব নর বিষম কাঁলর কথ! শুনিতে লাগয়ে বেথা অনাবৃষ্টি শতেক বংসর | মহামিশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের তাত কাঁবচন্দ্র হদয়নন্দন তাহার অনুজ ভাই চত্ডীর আদেশ পাই বিরাঁচল শ্রীক বিকঙ্কণ ॥ ৫৩০ আগমপুরাণে জত আছে কলিগুণ তোমারে কাহব ঝিয়ে সাবধানে শুন । জেই ধর্ম হয় সত্যে দ্বাদশবৎসরে ঘ্রেত। যুগে সেই ধর্ম এক সম্বংসরে । স্বাপরেতে সেই ধর্ম হয় এক মাসে সেই ধর্ম হয় কলো রজানদিবসে । চন্ডীমঙ্গল ধ্যান কার হারপদ পাই সত্যযুগে ব্লেতাযুগে হরিপদ পাই জপযাগে । দ্বাপরে বৈকুষ্ঠ পাই পুজিয়৷ গোপালে হরিনামে হরিপদ পাই কলিকালে। ঘোর কাঁলিকালে জেবা হারনাম লয় মৃত্যুকালে নাহা তার শমনের ভয় । নারায়ণপদে জেব৷ করে নমস্কার কলি নাহী বাধে তারে তরয়ে সংসার । অহোরান্রি করে জেবা হরিসংকীর্তন ভারতমগ্ুলে তার সফল জীবন। [শবপৃজ। করে জেব৷ দেবীপরায়ণ আপনা সহায় তারে লক্ষমীনারায়ণ। চপ্তীর চরণ ধার বলেন খুর্থন। সন্দেহ ঘুচায়া। মোর পুরহ কামন] | হারনামগুণ গায়্যা ন্িভূবন তাঁরল নাম শৈয়া অজামীল বৈকুষ্ঠবাসী হৈল। হরিনাম হরিকথা কলুষনাশিনী শুনিয়” চার মুখে বান্যার নন্দিনী । লোচনে শ্রবণে দেখ ছ-মাসের পথ শুন কহ কিছু হারনামের মহত্ব । অভয়া বলেন ঝিয়ে শুন ইতিহাস হারনামগুণ দেখাইল কির্ভবাস। একাঁদন ভিক্ষাছলে দেব ব্রিলোচন বলদে চাঁড়য়া৷ গেল দেবের ভবন । বৈকৃষ্ঠে করিয়৷ ভিক্ষা সভার ভবনে অবশেষে গেল৷ হর বিষণ সন্লিধানে । আলিঙ্গন প্রেমরসে দুহে কৃতুহলে নান৷ ধনে ভিক্ষা দিল মহেশের থালে। পাঁরজাতমাল। দিল খিরদক বাস বিদায় কারয়া শিব আইল৷ কৈলাস। ঘনঘন বাজে সিঙ্গ৷ বাজান ডমরু গুহ গজানন বলে আইল মোর গুরু। মালাগলে দেখ্য। গুহ বলে বাপ বাপা অই মাল৷ দিবে মোরে যাঁদ থাকে কৃপা । অষ্টম দিবন দিবা ডাঁকয়া গণেশ দেন মাথার শপথ এ মাল৷ দিয়৷ মোর পুর মনোরথ । মাল৷ হেতু দুই ভাই বাঁজিল কন্দল বাটা নাহা নেন মালা চাহেন সকল । [শিশুর আকটী হর ভাঙ্গতে নাঁরয়। প্রবোধ করেন হর উপায় সৃজিয়া। সর্বতীর্থ কার জেবা আইসে এই স্থান সেই জন বিনু মালা নাহী পায় আন। এই মালার গুণ বিবারয়৷ শুন শতেক বংসরে মাল। নহে পুরাতন । এই মাল 'শরে ধরে সীমান্তন জেঝ৷ স্বামীর সৌভাগ্য সেই না হয় বিধবা । হরয়ে পালিত জর অকালমরণ ব্যাধ আদ নাহী হয় সাপের দংশন । সাধু বল্যা সভান কৈল অঙ্গীকার মউর উড়াই গুহ গেল৷ হারিদ্বার । তমূলুপ্তে বিষুহার দেখে বর্গীভম। কপালমোচনে প্লান সুকৃতির সীম। । তথা হৈতে গেলা গৃহ দক্ষিণ প্রীয়াগ ইহা৷ শুনি গণেশের বাড়ে অনুরাগ ॥ ন্রিবান পাইয়। পৃজা কৈল সপ্তধাষ সাগরসঙ্গম প্লান কৈল উপবাসী বায়ুবেগে ময়ূর চাঁলল৷ নীলাচলে উত্তারল। ষড়ানন সমুদ্রের কুলে । লোচন ভরিয়া দেখে প্রভু জগন্নাথ প্রসাদ বেঞ্জন তথ৷ কিনা খায় ভাত । স্তেবন্দ প্রীয়াগ দক্ষিণ-বারাণসী নানাতীর্ঘ দ্রমে বার মনে আভিলাষী । অযোধ্য। মথুর৷ মায়। কাশী বৃন্দাবন নানাতীর্ঘ করা ভ্রমে দেব ষড়ানন । মৃষিকবাহন মনে কাঁরয়া ভাবন। লইল হরির নাম হয়া দ্রটমনা। সকল তীর্থের ফল পাইল হারনাষে কারিল সকল তীর্থ বস্যা নিজধামে ॥ ৩০১ সর্বজীর্থ সম হয় হরিসন্ধীর্ভন ইহাত নির্ণিয়া৷ গেলা যথা পল্ঠানন ! মহেশ বলেন বাপ তনু তোর ছোট কেমনে এসব তীর্থ বর্যা আইলে বট । হরিকথ। প্রেমালাপে দুহে কৃতুহলে কৃপ। কার দিল মালা গণেশের গলে । বেলী অবশেষে আইল দেব ষড়ানন মালা গলে দেখি হইল৷ চমকিতমন। বিচারে হারল তথা দেব ষড়ানন অভয়ামঙ্গল গান শ্রীকাবিকস্কণ ॥ ৫৩১ চগকার চরণ খুল্পন। ধার মাথে দুই বধ্‌ তনয় করিল রাম। সাথে 1 মোহজাল কাটিল পাইয়। 'দিব্জ্ঞান মহেন্দ্র পাঠায়া৷ দিল আকাশাবিমান । স্বর্গ জাব বলি রাম৷ উঠিল ঘোষণ। থরে ঘরে উজানীতে উঠিল ক্ুন্দনা । হয় জুঁড় মাতুলি জোগায় পুষ্পঞ্জান তাহে চাড়ি শ্রীমন্ত দবিজেরে দেই দান ॥ হেনকালে ধনপাঁত বলে সাঁঝনয় শূন্য করি জাবে মাত। আমার নিলয় । পুন্নুবধূ জায়। স্বর্গে জাব তোম। সনে কি কার্য কারব মাতা বিফল জীবনে । হান কন অভয়। সাধুরে প্রিয়ভাষে মোর মোর বলিতে অবনী দেবা হাসে ॥ অবনীমণ্ডলে ছিল জত মহ্ঁপাল তনু ভূম ধন তার সম্বরুল কাল। পৃথু পুরুরবা আদি নহুষ ভরথ মান্ধাত৷ সগর রাম দুন্দাভি ভরত ॥ “অজু খটাঙ্গ রঘু ন্গ ভগীরথ তুণবিন্দু যযাতি শান্তনু মহারথ ॥ ৩৬৭ হিরণ্যকাসপরপুন্ন রাবণ তারক নমুচি শল্য সা মগধ দশরথ । [বিশেষ কাঁহব কত শুন ধনপাঁত খাতিতলে উৎপাত খাঁতিতলে মৃতি। বাঁদয়া নাচায় জেন কাণ্ঠের পুন্তলী সেইরূপ সংসারনাচে কৃ করে কেলী। মনেতে ভাবিয়৷ দেখ কেহ কার নয় পাঁথকে পাঁথকে জেন পথের পাঁরচয়। স্ত্রী পুত্র ভাই আপন। কেব৷ বলে আগুন থাকতে কেন তার৷ সব চলে । লহনার গর্ভে হব বংশের স্টার তাহ। লয়া সুখে ঘর কর পুনবার ৷ জ্ঞান পায় ধনপাঁত রাঁহল মাঁন্দরে বায়ুবেগে রথখান চাঁলল পুষ্করে । মন্দাঁকনী-জলে প্লান কৈল চাঁর জনে নিজ স্বর্গ পায়্যা ভে রাহল। নিজ স্থানে । ইন্্রালয়ে ইন্দ্রসুত-বধূর পয়ান দেখিয়া সন্মে শচী করেন সম্মান । সুতরধূ নিছিয়। পেলিল শচা পান শুভক্ষণে লয় দোহে কারিল পয়ান। শুনি হরাষত ইন্দ্র অমরনগরী চাঁগুকারে স্তব কৈল লল্ম্য। সুরপুরী । ই্্রপূজ লয় মাত গেলেন কৈলাস শ্্রীকাবকল্কণ গান ত্রিপুরার দাস ॥ অভয়াচরণে মজ্ুক নিজ চত। এই স্বাদে সাঙ্গ অভয়ার গীত ॥১ ৫৩৭ ক্ষেম গ অভয়া দাসে কর দর। গচ্ছ গচ্ছ নিজ ধাম দোষ কর ক্ষেম। শনুকুলে হবে বাম । আসি সম। সম৷ চন্ডীমন্গল দিন-নিশ। আটে গীঁতবাদ্যে নাটে ভালমন্দ হইল জেব৷ দোষ নাহা লবে গুণ আদয়িবে করে” দণ্ডবং সেবা ।১ পৃজ্রা অন্টাদন তত্বমন্ত্রহীন দোষ ক্ষেমি কর দয়। তুমি গো জননী বালকের বাণী মোরে ক্ষেম মহামায়া ।৭ মহেশে পাবতী কহেন ভারতী কৈলাসাঁশখরে গিয়। খাতিতলে গিয়। নিজ পৃজা লয়্য আইনু নরে করি দয়া । ধনপাঁত আদ পুজে যথাবাঁধ খাতপাত নূপগণ এ তিন ভুবন হয়া। দৃঢ়মন পৃজ। কৈল দেবগণ [ ন্রিসন্ধা। পূজেন হর গৌর গুহ লম্বোদয় খাওলাঙ সকল দুর্গাত তোমার সেবক জনে কৈল মোর অচ্চনে ভুবনে 'বাদত হৈল গাঁত কার আম প্রাণপাত তেজ জোগ ভূতনাথ শ্রবণমঙ্গল গুণধাম । তোমার সেবকজন। কৈঙ্গ মোর অর্চনা তুবনে বাদিত হৈল নাম। হরগোরী প্রিয় ভাষে প্রবোশিল৷ কৈলাসে চামর ঢুলান পদ্মাবতী সমাপ্ত হইল গীত জগজনে পায় প্রীত মুকুন্দ রিল শ্রদ্ধামাত ॥৪ ] [ শকে রস রস বেদ শশাঙ্ক গাঁগতা কত দিলে 'দিল। গাঁত হরের বাঁনত। । অভয়ামঙ্গল গীত গাইল মুকুন্দ । আসোর সহিত মাত। হইবে সানন্দ ॥ গল্লা-বন্দন মা-পুথির মধ্যে একটি সংখ্যাহান পাতায় নিষ্ে-উদ্বৃত গঙ্গা-বন্দন! কাঁবতাটি পাওয়া গিয়াছে । উনবিংশ শতাব্দীর মধ ভাগ হইতে “শশুবোধক' নামে যে সর্যার্থসাধক পাঠীগ্রন্থটি বটতলা প্রেসে ও অন্য করুপ্রচারিত হইয়াছিল তাহাতে মুদ্রিত হইয়া এই কবিতাটি একদা দেশের সর্ব সুজ্ঞাত ছিল। শিশুবোধক উদ্ধত পাঠে ভনিতা৷ ছিল সাধারণত কবিচন্ত্রের দৈবাং কবকল্কণের । কবিতাটি কাবর জোষ্ঠ ভ্রাতার রচনা হইলে মুকুন্দরামের কাবামধ্যে স্থান পাওয়া অসন্তব নর, এবং গায়ক-লিপিকরের মুখে ও হাতে মুকুন্দরামের ভনিত৷ যুন্ত হওয়াও বিচিত্র নয়। কিন্তু মুকুন্দরামের বড় ভাই বাংলায় কিছু লিখিয়াছিলেন 'িন। আমরা জানি না। কাঁবতাটি সুললিত এবং মুকুন্দরামের রচনার মতোই ইহার ছাদ । একদা চন্ডীমঙ্গল ের অন্তর্গত থাকাও বিচিন্ন নয়। পাঠে তন্তব শব্দের বানান শুদ্ধ করিয়া দেওয়া গেল । শ্রীপ্রীহরি: ॥ নমো গঙ্গায়ৈ নম: ॥ অথ বন্দন। ॥ বন্দো মাতা সুরধনী আগম-পুরাণে শুনি শতেক যোজনে থাকে গঙ্গা গঙ্গ৷ বলি ডাকে পাঁতিতপাবনী পুরাতনী পবিন্লতা হরিসন বড় বিষুপদে উপধান দ্রবময়ী তব নাম নাম উচ্চারণ ফলে িষ্ুর ভবনে চলে সুবাসুরনরের জনণী | নাঞ দেখে যমের নগর । রহ্ধকমণ্ডলু-বাসে আছলে ব্রহ্মার পাশে গতপ্রাণি মৃত্যুকায়া পিতা মাত সুত জায়া পাব কারয়৷ ব্রহ্মপুরী স্বস৷ ভ্রাতা বন্ধু য়া পেলে জীবে দেখি দুরাশয় নাঁশবারে ভবভয় দারা সুত ঘৃণ করে প্লান কার আইসে ঘরে অবাঁন আইলে সুরেশ্বরী । সেকালে আপনি কর কোলে । সুর্ধবংশে ভগীরথ আগে দেখাইয়৷ পথ তব জলে মৃত্যু হয়] তোমারে আনিল মহীতলে ... . লাগে তটে মহাবাধি দুরাচারী পরশি তোমার বারি হাতেতে চামর ধার জত স্বর্ণ বিদ্যাধরী গ্বকায় বৈকুষ্ঠপুরী চলে । _ সেবে আসি তাহার নিকটে । নিষ্নল তোমার জল ভক্ষণে অনেক ফল হারার সরট কমট হয়া দরশনে সর্বপাপ হরে কিবা মুস সুনের তনয় শিরে ধরি শূলপাণি আপনারে ধন্য মানি কোটি হস্তিবর হয়া এ মাহমা বুঝব কি] নরে। 1 8 সাগরসঙ্গম নাম কেবল কৈবল্যধাম কাঁট পতঙ্গ পক্ষ গৃধ আদি জীব লক্ষ বাঁধ বিষুঃ বালতে ন। পারে সকল তোমার সমতুল ক্মহত্যা আদি পাপ দেয় মরিতে বাপ মহাব্যাধি দুরাচার গ্ালিত মকরেতে ল্লান যাঁদ করে । ৪ 6 2 নিজ কে জতিবাদি' কেবল কৈবল্যরাশি তোমার মহিম। জত [ আমি বা বলিব কত] যমের দায় নাহ হয় বিচারিয়া৷ অনেক পুরাণ ইচ্ছা কার জেব৷ নরে কামন। করিয়া মরে দামিন্যা-নগরবাসী [ সঙ্গীতের অভিলাষাঁ ] অনায়াসে নাশে ভবভয় । শ্রীকবিকম্কণ রস গান ॥ ট, ম.—৩৯ পাঠাস্তর ও মন্তব্য ১ এই ছন্র কয়টি রামজয় সংস্করণ ছাড়। সর্বন্ই পরবতী গণেশ-বন্দনা ছব্রগুলির সঙ্গে সংযুস্ত । অথচ এ চার ছতর ব্রহ্ম-বন্দন।, গণেশ- বন্দনার অংশ হইতে পারে না । সেই কারণে পৃথক পদ রূপে নির্দেশ করিলাম । ৩ আদর্শ পুথতে তৃতীয় পত্রটি নাই । চতুর্থ পরের প্রথমেই আছে সরম্কতী-বন্দনার শেষ আট ছন্র । সুতরাং বিনষ্ট পন্রুটিতে চৈতন্য-বন্দণা সম্পূর্ণ এবং সরস্বতী-বন্দনার পূর্ব অংশ ছিল বাঁলয়৷ অনুমান কারয়াছ। আদর্শ-পুথ ছাড়। প্রায় সব পুথিতে রাম-বন্দনা পাওয়া যায়। আদর্শ-পুথির লুপ্ত পরে রাম-বন্দন। পদটি থাক৷ সম্ভব নহে । বাম-বন্দন। পদটি উদ্ধৃত কারলাম । আনন্দে বন্দিব রাম মৃন্তদাত। জার নাম প্রভু রাম কমললো৯ন অযোধ্যায় পাত রাম নব-দুবাদণশ্যাম প্রণমহো কৌশলযানন্দন প্রণমহে। প্রভু রাম মন্ত্রী জার জান্বুঝন মিত্র জার গুহক চগ্ডাল রপু জার দশানন সদা সত্যপরাষণ জার কী সমুদ্রে জাঙ্গাল । লঙ্গ্মী জার উপনীত শ্রীরাম-বাঁনিত৷ সাত সঙ্গে জার অনুজ লক্মণ সদাশিব-বন্দনা পদ আদর্শ ও অপর কোন কোন পুথিতে নাই, রামজয় সংস্করণে এবং অন্যান্য অনেক ছাপ বইয়েও নাই । গোঁহাচী আস দেব পুরন্দরে ধাঁরলেক দণ্ড শিরে সেবে জারে পবননন্দন। বাঞ্চা কার নিরম্তর হই শ্রীরামকিন্কর পাক্ষরাজ জাহার বাহন কস্পতরু-সম দাত। প্রজাব পালনে পিতা অশেষ গুণের নিকেতন । ধনুবাণ করে ধার ডরেতে পলায় আঁব অনুগত জনে কৃপাবান রঘুনাথ-পদযুগে একান্ত ভকাঁত মাগে চক্রবর্তী শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ ৩ ॥ পুথতে আছে গণেশ-বন্দনার পরেই । গোহাটী পাথর পাঠ উদ্ধৃত কাঁরতেছি। সম্পুট কাঁরয়৷ কর বন্দে। প্রভু মহেশ্বব বৃষভবাহনে শূলপাঁণ হেম ইন্দু কুন্দ কিবা জানয়। অঙ্গের আভা চবণে মঞ্জীর করে ধ্বানি। আঁজনরচিত মাঝে রতন 'কাঙ্কান সাজে ভূজঙ্গ বাঁলয়া১ যোগপাট। সুরঙ্গ অরুণাবনদু অধর শরদ-ইন্দু নীলকষ্ঠ শিরে শোভে জটা । ূ জটায়ে মাঁননী গঙ্গে অধ-অঙ্গং সাতিসঙ্গে [বভীতিভূষণ কলেবরে কণ্ঠে শোভে হাড়মালে চারু চন্দ্রয়েথ ভালে অঙ্গদ বলয়া৷ শোভে করে। রাগতালমান-ভেদ সঙ্গে কার চারি বেদ বদনে শাচয়ে জার বাণী শিঙ্গ। রাম ধবাঁন করিও ডমরু বোলয় হ'রি জার গানে হৈল মন্দাকিনী। প্রণমহে। ভূতনাথে ভবেশ ভবানীপতে ভবভীম ভন্তপরায়ণ ভবভয়ে কর কৃপ৷ ভীতি ভঞ্জ মহাতপা ভবনাথ ভবানীভরণ। নিরঞ্জন নৈরাকার [নগম-পুরাণে সার নিগৃঢ় নিয়ম নারায়ণ রোগ-শোক-জন্ম-জর! দৈনা-দুঃখ-পাপ-হরা মুকজদাত৷ পাঁতিতপাবন। | পাঠীস্তর ও মন্তব্য ৩৪০৭ নীরজ-নয়নকোণে পাঁপষ্ঠ অধম পানে চরণসরোজে অলি উনমত কুতুহলা কৃপ। কার চাহ পণ্টানন বরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ২॥ [ পাঠান্তর ১ নায়ক। ২ অজাগর। ও 'সঙ্গা রামকৃষ্ণ ধ্বনি | ] ভগবতীর (বা চন্ডীর) বন্দনা অনেক পুথিতেই আছে। গৌ-পুথি অবলম্বনে পাঠ উদ্ধৃত কারতেছি। ভানতায় 'কাবকন্কণে, স্থানে 'দৈবকীনন্দনে' পাঠ কোন কোন পুথিতে পাইয়াছ। বিন্ধ্যাবলাসিনী ভৈরবাঁ ভবানী নয়নের কোণে আছে কত তৃণে নগেন্দ্রনান্দিনী চন্ডী মহেশমোহিনী ইষু বাঁণ। সপ্তদ্থর৷ কুটিল কস্তলে মালতার মালে বাজয়ে দুন্দুি দাও । দ্রময়ে দ্রমরশিশু। গ্ছল-কমলদল শিরে শাশকলা তারকের মাল তাঁথ শোভে নখচন্দ্ [শিশেতে চন্দনাবিন্দু চরণে চন্ডীর ললাটফলকে অলক ঝলকে চলে গজগতি-মন্দ। হোঁর কলাস্কনী ইন্দু। কাঁর-আর জান নবাঁনতধর জিনি কলেবর কটিতে কাঙ্কণী বাজে আননে ইসদ হাসে জান করিকর চরণে রতন অঙ্গে অভরণ নিতম্ব রশনাসাজে । দখো। দিশে পরকাশে। নাভি সরোবর এহ তালমানে উর গো গায়নে তনুপুহ।জুরথ দাম বন্দি বেদদীতি মতে উচ্চ কুচগার পূর্ণ কর কাম আইস এহি ধাম করী করে জলপান। কূপ৷ কর গিরিসুতে । জিনি শতদল ব্যাস মুনি লোমশ গায়ে তুয়া জস অধরে বিষুক জোর নিবোঁদ তব চরণে পরিহরি রীড়া চতীর চর মধুর সঙ্গীত নয়ন খগ্জার জোর । শ্রীকাবকঙ্কণে ভনে ॥ ৬ ॥ শুকদেব-বন্দন৷ ব্গবাসী সংস্করণে আছে। পৈয়ালি পুথিতেও ছিল। এই পুথির ১-৭ পাত। নষ্ট হইয়। গিয়াছে, তবে বিষ তালিকায় উল্লিখত আছে। বন্দে। শুকদেবের চরণ জেই মুনি সর্বজন প্রবেশ কারল কোপে বন। জেই মুনি নিরুপম লিখন নিগমের সার প্রকাশিল ভাগবত সংসারের জীব জত সভাকার কারল উদ্ধার । শিশুকালে বনবাস তোঁজ সব আঁভলাষ উপনয়ন আদি ছাড়িয়া ৩০৮ পুর বলি ব্যাস ডাকে উত্তর না দল তাকে তপোবনে প্রবেশ করিয়া । বিবসন কণেবরে শুকদেব কত দূরে তারে দোখ বিদ্যাধরীগণে অঙ্গে নাহ দ্যে ঝস তার পাছে চলে ব্যাস অবিলম্বে চীর পারধানে । দেখ এত অস্ভুত কহে পরাশরসুত লাজ কেন কর বধ্জনে চণ্রীমঙ্গল মোর পুরু গুণধান নবীনজলদ-শ্যাম দেখি কেন ন৷ পর বসনে। তবে বিদ্যাধরী ব্যাসে হাসিয়। মধুর ভাষে ভেদবুদ্ধি না৷ আছে তাহার ্রীপুরুষে ভেদবান কভু নহে দিব্যজ্ঞান বুঝিয়াছি চার তোমার । এমত তাহার গুণ শৃনিয়৷ ত তপোধন ত্যাজলেন সুতের বিরহে গোবিন্দ-পদারবিন্দ বিগাঁলত মকরন্দ অলি কাধকঙ্কণে গাহে ॥ চণীমঙ্গলের আঁধকাংশ পুথতে এবং কোন কোন ছাপা বইয়ে বন্দনা-ভাগের শেষে সর্বদেব-বন্দন৷ বা দিগ্‌-বন্দনা নামে একটি পয়ারে গাথ। দীধ পদ থাকে । এমন পদ গায়নদের ব্বহারার্থে রচিত। যে অঞ্চলের পুথ সে অগুলের প্রধান প্রধান গ্রামদেব- দেবীর উল্লেখ থাকিবেই । গ্রামদেখতাব উতননখের বিশেষত্ব হইতে আন্দাজ কর৷ যায় পুথর কতকটা বয়স । আমাদের গৃহাত আদর্শ পুথিতে এমন পদ নাই। কারলাম। ধুথমে বন্দিলাঙ গণপাত বিদ্বরাজে আবাহন করে লোক জারে শুভ কাজে । বিষুর চরণ বন্দো জোড় করি কব পরম হরিসে বন্দে। দেব মহেশ্বর । প্রণাত করিয়। বন্দো৷ গোরাঁর চরণ অবনি লোটায়া। বন্দে। প্রচণ্ড তপন । পঞ্চদেব বান্দলাঙ জোড় করি হাথ উড়িষ্যায় বন্দে। প্রভু দেব জগন্নাথ । বোড়োর বাসুদেব বন্দে করিয়া প্রণাত আকনায় রাধাবল্পভের চরণে কাঁর নাত। ধরাঁণ লোটায়/৷ বন্দে দ্বাদশ গোপাল জাহারে ভজলে সুখ পাই চিরকাল । ভুবনেশ্বর বন্দিলাঙ জোড় কার কর চন্দ্রকোনায় গড়পাঁত বন্দে মল্লেশ্বর। সমুদ্রের মধ্যে বন্দো৷ লক্ষ্মীর ভুবন জাহারে তুলিয়া নিতে নারিল রাবণ। একান্ত বন্দিলাঙ মহাদেব টাড়েশ্বর গৌরী সঙ্গে হর জথ। এককলেবর । মা-পুথব সঙ্গে খুচবা দুই পাতার পুথতে প্রাপ্ত পদটি নমুনা হিসাবে এখানে উদ্ধৃত বারানসে শিব বন্দো সাগরে মাধব গয়ার গদাধর বন্দ গোকুলে যাদব । বৃন্দাবনচন্দ্র বন্দো৷ জোড় করি হাথ অযোধ্যায় রামচন্দ্র কার প্রাণপাত। গঙ্গাদেবী বান্দলাঙ আর সপ্তধাষ গগনমগ্লে আমি বন্দো৷ রাবশশী । এককালে দেবতার পদে নমস্কার তারপর বন্দে জত দেবী অবতার । কাঙুরে কামক্ষাা বন্দো জোড় কার পাণি জাহার মাহমা খাত হইল অবনী। জাজপুরে বিরজায় বন্দিলাঙ চরণ নম্ব.মান হয়া৷ তার লইলাঙ ম্মরণ। স্যাখালায় বন্দিলাঙ উত্তরবাহিনী মৌলায় সিদ্ধাপট বন্দিলাঙ রঙ্কিণী। বালিডাঙ্গায় বন্দিলাঙ মাত৷ জয়-বাসুলি পাড়া-আত্বুয়ায় বান্দিলাঙ দেবী কামার-বুড়ী । বালিয়ায় বন্দিলাঙ সিংহবাহিনী অনাথ দেখিয়া দয় কর্যাছ আপুনী। পাঠাস্তর ও মন্তব্য মহানাদে মহাদেবে বান্দলাঙ মাথে উনকোটি দেবতা সঙ্গে দেব দেবনাথে । বন্দো বিসালাক্ষী মাত। বিক্লমপুরে শ্রীরাজবল্লাব বন্দো নত কার শিরে। রাজবলহাটেতে মায়ের আদ্য স্থান উদয়নারণে বন্দো৷ বড় কৃপাবান । কাতি কর্পর হাথে গলে মুণ্ডগাল৷ চাঁপয়৷ সিংহের পিঠে সমরে উারলা । ইন্দ্র আঁদ দেবগণ মাহম। ন। জানে কূপ৷ করি গুণদত্তে রাখলে মসানে । মাজ্জারবাহিনী যষ্ঠী বন্দো তালপুরে বেতড়ে বেতাই বন্দো ভাগীরথী-তীরে। গোপীনাথপুরে বন্দো দেবী বিশবেশ্বরী কৃতাঞ্জলি হয় বন্দে। দেবী মহেশ্বরী । ব্যাস আদি কবি বন্দো বালিকি জৈমুনি মন্দাকিনী বন্দো সুরপুরনিবাসিনী । পরিহার মাগি দেবী ভৈরবাীর পদে ধকৃ যজু সাম আদি বন্দো অথবেদে ॥ ধর্মরাজ আদি কার চতুর্দশ যম হারণে বান্দলাঙ উনপণ্টাশ পবন । রাশিচক্রে বন্দিলাঙ নবগ্রহগণ এককালে সভাকার বন্দিলাঙ চরণ । কৈলাস পর্বতে ভগবতী কার পুজা তবে ত বন্দি আমি দেবা অফ্টভুজ। । মাথায় বান্দব তবে অভয়৷ পার্বতী জোড়কর কার বন্দো গোকুলে গোমতী । শতশত দেবীগণের জানি না নাম এককালে সভাকার চরণে প্রণাম । বন্দে দেব বিষ্ুটহার তমলুক সিম। তাহার নিকটে বন্দে দেবাঁ বগ্াভম। । গরুড় বন্দিনু আর বাঁর হনুমান জার পৃষ্ঠে অনুক্ষণ বিষু। আধষ্ঠান। খাঁষ সব বান্দলাঙ বিশেষে নারদ জাহারে স্বহায় লোক পায় হরিপদ । ৩৪৬৪ কাম-রাঁত বন্দিলাঙ গন্ধমাদনে বিজয়। বান্দলাঙ আমি নন্দের ভবনে । জসর সমাঝে বন্দো কালিকার পদ জাহার সমুখে আছে জমুনার হৃদ । কালিঘাটে কালিকার চরণ বন্দিয়া সর্ব সিদ্ধপাঁঠ বন্দো হরাঁসত হয়্য। । হাসনহাটিতে বন্দো৷ দেবা বিষহারি অষ্টনাগ বান্দিলাঙ নেত সহচরী । চমুপাইনগরে স্থিতি দিন ছয় দণ্ড সঙ্গে কালীপাঁতি নাগ তক্ষক প্রচণ্ড। মাসে মাসে মনসা জান নাইবারে গঙ্গা পথে বিশ্রামের স্থান নারিকেলডাঙ্গা । জোড়হস্ত হয়্যা বন্দো চৌষটি যোগিনী নারায়ণগড়ে আমি বন্দিলাঙ রন্ধাণী। শুভা মঙ্গলচণ্ভী বন্দো মঙ্গলকোঠে [নিরবধি ভূত দানা জার পিছে খাটে । বান্দলাঙ বেতার গড়ে সর্বমঙ্গলা দৈত্যগণ কাটিয়া গলায় মুণ্মাল৷ | জোডুরের ভগবতী আমতার মেলাই পুরাসের ঘণটু বন্দো খেপুতের খেপাই । মৎস্য কৃর্ম বরাহাদি দশ অবতার একে একে পদাঘুজ বন্দিলাঙ সভার । সঙ্কেতমাধবে বিষণ হর বৈদ্যনাথে বৃন্দাবনচন্দ্র বন্দে। আর কাশীনাথে । বিভূতিভূর্যণ বন্দ দেব মহেশ্বর বামদেব ধলদেব আর গঙ্গাধর । তীর্থ সব বান্দলাও ক্ষাততলে জথা ভকতি কারিয়। বন্দে৷ অনন্ত দেবতা । গ্রামের দেবত। যত নত কার ভালে সত সত নতি সভাকার পদতলে । জনক-জননী বন্দে। গুরুর চরণ প্রণাত কারয়৷ বন্দে৷ জতেক ব্রাহ্মণ । ডাকানি জুগিনি বন্দো আর বিপ্রসভা ক্ষেমিবে সরল দোষ মোরে কার কৃপা । ৩১০ চন্ডীমঙ্গল দামন্যায় বান্দলাঙ ঠাকুর চক্রাঁদত্য চন্ডীর মঙ্গল গাই নাঁঞ অপরাধ । তাহার চরণ সৌঁব রচিল কবিত্ব। বিনি দোষে আমার আসরে করে ঘা নিজ নিজ বাহন কারয়। নিজ সঙ্গে শিক্ষাগুরুর মাথায় পাখালে বাম পা। আসরে আসিয়া উর গীতনাটরঙ্গে | সেই মোর ভাঁগান জে আম তার ভাই রাগমানতাল আম কিছুই না জান, ঘরে জাঁদ চাহ ঘ! চন্ডীতে দোহাই । আপনার গাঁতে লোকে রঞ্জাবে আপান। বন্দনা বন্দিতে ভাই এড়াইয়। জায় গীতের ভালমন্দ মাত মোর নাঁঞ দায় শত শত গ্রাণপাত ত৷ সভার পায়। নিবেদন করিলাঙ তোমার রাঙ্গা পা । অভয়ামঙ্গল কবিকঙ্কণ গায় ডাখিনি যোগিনি মাত। মাগি গ প্রসাদ হার হরি বল ভাই বন্দন। হৈণ সায় ॥ ১ ॥ দামিনের পুথিতে গণেশ-বন্দনার পরেই এই সূর্য-বন্দন৷ পদটি আছে । আর কোন পুথিতে সূর্ধ-বন্দন। দৌখ নাই। কাবির শিশৃকাল হইতে সৌবত দেবত। চক্দত্য বিষু-সূধ বাঁলয়া উপাসিত ছিল, মনে হয়। পদটির রচনায় নুটি আছে তবুও খৌলিক হওয়া সম্ভব । বন্দো কমলিনীবন্ অশেষ গৃষ্ণর সু | দয়াবঝান দিনপাতি দশাদস দেই জ্যোতি জগত-আধিপ নিরঞ্জন অনুদিন সুমেরু উপর করবর পদ্মধর অবুণাঙ্গ রুচবর ক্ষিত পালনের তরে ফিবে প্রভু নিরন্তরে দাঁপ্ত করে সকল ভূবন। তৈলযস্ত্রে জেন বৃষবর | করে ধার মাঁণবর আঁদদেব রথোপর অন্ন শস্য দানে দীনে প্রণপাত প্রদক্ষিণে সপ্ত অশ্ব রথে নিয়োজিত গৃজ। কাঁর করে সঙরণ দ্বাদশ আঁদত্যবর পৃজা করো নরন্তর তব নাম দ্বি-অক্ষং জপ করে সেই নর অর্থদান করে সুপ্জিত। সরবত্রে রক্ষহ সেই জন। মোহধ্বাস্ত-নাশকাবা ছায়৷ সংজ্ঞ৷ দুই নারী মহামশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের তাত কাশ্যপসগো ধিলোচন কবিচন্দ্র হদয়নন্দন অন্ধ কুষ্ঠ ব্যাঁধভয় জে জন শরণ লয় তাহার অনুজ ভাই চণীর আদেশ পাই তার দুঃখ হয় বিমোচন । বিরচিল শ্রীকবিকঙ্কণ | ূরধ-বন্দনার পদ মাধবানন্দের ও রামদেবের রচনাতেও আছে। মনে হয় চত্তীদেবী একটা সূর্য-দৈবতের পারমগুলে ছিল । মার্কগেয়-পুরাণে চণ্ডীক।হিনার অস্তভূন্তি এখানে লক্ষণীয়। সূর্য-উপাসকের৷ জ্যোতষের ব্যবহাব কারতেন। মুকুন্দও জোতিষ ভালে৷ জানিতেন। সূর্য-বন্দন৷ পদটি মুকুন্দের রচন। হওয়৷ অসম্ভব নয়। ৬ এই পদটি মুকুন্দরামের কাব্যের সর্বজন পরিচিত অংশ । ইহা হইতে এঁতিহাঁসকের৷ ষোড়শ শতাব্দীর মধ্য ও শেষভাগে পশ্চিমবঙ্গের রাজনোতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা সম্বন্ধে তাহাদের সিদ্ধান্তের উপাদান সংগ্রহ করিয়াছেন। কবিকঙ্কনের কালনির্ণযও এই পদে উীল্লাখত মানসিংহকে ধাঁরয়। হইয়াছে । ভুমিকায় আম আভ্যন্তরীণ প্রমাণে দেখাইয়াছ যে মুকুন্দ যখন তাহার কাব্য রচনা কাঁরতোঁছলেন তখন এই পদটি লেখা হয় নাই। পদটির অংশাবশেষ মূল কাব্যের কোন কোন ভানিতার পরিবার্ধিত রূপ এবং বাকি অংশ সংযোজন ও প্রচ্ষেপ। অর্থাং পরে ভাবিয়৷ চিন্তিয়৷ বড় কারয়া লেখা । এই প্রক্ষেপ সব মুকুন্দরামের কৃত না হইতে পারে, তবে প্রাচীন । পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩১১ আদর্শ পুথতে এবং আরও দুই একটি পুথিতে এটি আছে সর্বপ্রথম পদ রূপে । অন্যান্য পুথিতে আছে বন্দনামালার শেষে । একটি পুথিতে ( ক ৬১৪১) আবার অধিকন্তু সর্শেষেও আছে । দুএকটিতে (যেমন দামিন্যার পুথিতে ) একবারেই নাই, সে গ্থানে আছে অন্য একটি পদ। এই পি সর্বপ্রথম প্রকাশ করিয়াছিলেন অশ্বিকাচরণ গুপ্ত । অন্য একটি পুথতে (স ৩৪ ) “ধানসী রাগ" চিহুত ৬ সংখ্যক পদটি আগে দিয়া দান পুথর পদটি পরে সাম্নাবষ্ট আছে। এই পুথি হইতে পদটির পাঠ উদ্ধৃত কারতোঁছ। [১ অর্থাৎ ধিনা ধন)? । গঠনীয়। ধ্বনি ধ্বনি১ কালকালে রত্ব। নদীর কুলে দামুন্যা নগরবাঁস বন্দাঘটি বাগালপাসি অবতার কারিল৷ শঙ্কর কুলক্লমা তিন মহাশয় । ধার চক্রাদিত্ নাম দামুন্যা করিল ধাম নিজ বৃত্তি অনুপদ্য কায়েস্থ রাহ্মণ 'বদ্য তীর্থ কৈল৷ সেই ত নগর । দামুন্যাতে বৈসে কবিরাজ বুঝিয়৷ তোমার তত দেউল দিল ধুসদত্ত কুলে শালে গুণে বাড়া সুধন্য দক্ষিণ-রীড়া কথো দিন তথায়ে বেহার সুপণ্ডিত সুকাব সমাজ । কে জানে তোমার মায় দেবকুল ছাড়িয়া কাজড়ি কুলের জার মহামিশ্র অলঙ্কার চলদলে করিল সঞ্টার । শব্দকোষ কাব্যে পুনিধান হরিনন্দী ভাগ্যবান শিবে দিল ভূমিদান কয়াঁড় কুলের রাজ। সুকাতি তপন ওঝা মাধব ওঝ৷ ধামাতিকরান তসু সুত উমাপতি নামং। দামুন্যার লোক জত শিবের চরণে রত তসু সুত শ্ুতকমা সুকীত মাধব শরম! সেই পুরী হরের ধরণী । তার তনয় সহোদর গঙ্গ৷ সম নিরমল তোমার চরণজল উদ্ধব পুরন্দর নিত্যানন্দ মহেশ্বর পান কৈল। শিশুকাল হৈতে গভেশ্বর মহেশ সাগর। সেই পুণ্যের ফলে কবি হেয়া শিশুকালে বাসুদেব অনুজ তারও মহামিশ্র জগন্নাথ রচিলাম তোমাব সঙ্গীতে । একভাবে পৃজিল শঙ্কর নামদা বিখ্যাত স্থান দত্তবংশ সত্যবান তসু সুত গুণবান গণরাজামিশ্র নাম কল্পতরু নাম উমাপতি কবিচন্দ্র তার বংশধর । অশেষ পুণ্যের কন্দ নাগ খষি সর্বানন্দ অনুজ মুকুন্দশরম। সুকাবি কৃতকর্ম। সেই পুরী সঙ্জনবসতি। নান। শান্তর বিদয়ঃ বিদ্বান কাটাদিয়। বন্দ্যঘাটী বেদান্ত নিগম পাটি রচিয়। [পাদ ছন্দ পাচালি কারয়৷ বন্দ কূসাল পাঁওত মহাশয় ২ পাঠ 'তসু সুত নাম উমাপাঁত' । “রক্ষ পুর পোঁত্ে তিনয়ান' দাকিন্যার পুথি; কলিকাত। বিশ্বাবদ্যালয় ১৩২৬ সংস্করণ । ] কবিতাটি যে প্রাচীন শ্রীকবিকঙ্কণ রস গান ॥ ৩ “বাসুদেব অনুজাত' পঠনীয় । ॥ “বিদ্যায়! শহে তার প্রমাণ “বৈদ)” “কাঁবরাজ উল্লেখ । প্রথম কাবতাটিতে পাঠাস্তর পাওয়া যায় অজস্র । তাহার মধ্যে যে গুলির কিছু বৈচিত্য আছে তাহ। নির্দিষ্ট হইল। ভীমকায়ও কিছু দেখানে। হইয়াছে । ' অঞ্টামতে, ক ৬১৪১ (প্রথম বারে)। ২ টাকাকের দ্রব্য দশ আনা'। ৩ ঘুক্তি কার, 'জুতিয়া” | পিস্ভীর' মর? । 'গান্ভারর ক ৬১৪১। দদামুন্যা'। ৬ “রামানন্দ”, 'রামনাথ' 'রামানধি' । 'তোল গাঁয়ে”, চন্ডীমঙ্গল ” “ভাই নহে উপযুন্ত' । "দিল" পা, গো, স ৩৪। ১৭ “বৃত্তি আ। 'কৈল ১১ “জাতিকুল সেহ কৈল রক্ষা' গোঁ। ১২ “ভেউটায়? | ৩১২ 'ভেনোয়', | 'ভাঈলায়ে' গো । হিত' (সেনাপতে গ্রামের পুথি, রামগতি ন্যায়রত্ব )। ১৩ ম্মাতুল পুরী” 'বাতন গার? । ১৪ “নারায়ণ! । ১৫ কুচওা', “কৃচট্যা। । 'গোথড়া, সেনাপতে পুথি। ১৬ 'কিরি আদরক' | ১৭ 'পৃথুরি-পাড়া' গো । ১* পোড়া? ; “দাড়া গোঁ। ১৯ '্রসঙ্থেে আ । “প্রবন্ধে! | ১ থ্খুদায় পাঁরশ্রমেণ আ। ২১ “মা কৈলে' গো। ২২ 'আপনে' গো । ২৩ 'বাঁড়য়াছ' পড়্যাছি', 'পড়েছা", 'পাঁড়য়াছিলাঙ | ২৪ 'জপিবারে নিত গৌ। ১৫ “আড়রায়। । ২৬ অতঃপর এই কয় ছন্নে আ.পুথর পাঠ শেষ তোঁঞ হেতু না জায় খাঁওত । পূর্বজনম ফলে কান্ত আছল ভালে বির5এ শ্রীকাবকঙ্কণ ॥ গাড়য়৷ কাবন্ত বাণী সহস্থে জুগল পাণি ২৭ 'থাঁওল", 'ভাঙ্গিল'। 'আঙ্গিল' (স ৩৪)। ২৮ 'শিশুপাঠ'। শশশুপাশে” 'সুতপাশে |. ২৯ বিহুগুণে' | 'রূপে গুণে (সেনাপতে )। ৩০ অতঃপর একটি পুথির (কালিকাপুরের অত্যন্ত খাত পথ, স ৩৪) এই আতিরিস্ত ছবরগুল সাঁবশেষ উল্লেখযোগ্য আমন নূতন ধান কত আছে স্থানে স্থান বীর মাধবের সুত রূপে গুণে অবদাত বাঁন্ধলো ধাগালি সাজনুনি বীর বাকুড়। ভাগ্যবান থাকিতে এ সব ধান ন৷ কাঁরয়া অনুমান তার সুত রঘুনাথ রাজগুণে অবদাত আগুয়ান কাল্যা ধান বুনি। বার ভূইঞা জার করে মান। ি আর কহিব কাজ কাঁহতে বড়ই লাজ কানে সোনা করে বাল। গলে দিল কষ্ঠমাল৷ গীত না কায়। মৈল ছাল্যা করাঙ্গুল রতনভূষণ শুন রঘু নরপাত দুঃখে কর অবগাঁত শিরে পাগ্ পরিতে জোড়। দিল চড়নের ঘোড়া আকালে বিকাল্য মোর হাল্য । গায়নের জত অভরণ। সঙ্গে গোপালদাস নন্দি সে জানে সপন-সান্ধ মহা মিশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের তাত অনুদিন করয়ে জতন কাঁকন্দ্র হদয়নন্দন [নিতা দেয় অনুমতি রঘুনাথ নরপাঁত. তাহার অনুজ ভাই চঙ্জীর আদেশ পাই গায়নেরে দিলেন ভূষণ । বিরচিল শ্রীকাবকল্কণ ॥ ৩১ গডাসাল”, "ডামাল', 'মডাল', 'গোপালদাস' । গো-পুথির আতীরন্ত পাঠ ও আরও কিনতু পাঠান্তর এখানে উল্লেখযোগ্য । দশম ছরের মধ্য অংশ 'পুর| টাকা করে কম" । ৩৩ অতঃপর পাঠ গৌ-পুথির। দ্বাদশ ছত্রের পাঠাস্তর ইনছাফ ন। করে রাজ। মিলিয়া সফল প্রজা প্রজাগণ পলাইবার খোজ পেয়্যে চৌকিদার . পলাইতে যুন্ত কৈল মনে গ্রামের চৌপাসে দিল থানা পাঠাস্তর ও মন্তব্য | ৩১৩ প্রজাহৈল ব্যাকুল বেছে দাও কদালি প্রড়ু গোপীনাথ নন্দী বিপাকে হইল বন্দী টাকাকের দ্রব্য দশ আন। | কোন হেতু নহে পরি্রাণে সহায় শ্রীমন্ত খা চন্ডীবাড়জার গা! যুস্তি কৈল গাঁরব খার সনে। সেনাপতে গ্রামের পুথিতে (রামগতি ন্যায় কর্তৃক উদ্ধৃত) আতীরন্ত কিছু ছতর আছে দ্বাদশ ছন্রের পরে কোতালিয়৷ বড় পাপ সজ্জনের কালসাপ আথালি পাথালি কাঁড় লেখা জোখা নাহ্‌ দোঁড় কাঁড় কারণে বহু মারে যত দিয়া যেবা নিতে পারে । পঁচিশ ছত্র নাই । তংপারবর্তে ছাব্বিশ ছ্ঃ গোথরা ছাঁড়িয়। যাই সঙ্গে রামানন্দ ভাই আড়রায় গিয়। উপনীত । সাতাশ-আটাশ ছবুদ্বয় নাই । বান্রিশ ছত্রের পর আতিরি্ত যেই মন্ত্র দিল দীক্ষা সেই মন্ত্র কার শিক্ষ। হাতে কাঁর পন্মসী আপনে কলমে বাঁস মহামন্্র জপ নিত্য নিত্য নান৷ ছাদে লেখান কাবত্ব। ৭ ৯ এই দুই ছু আ-পুথতে নাই । ২ তুমি রমা তুমি রাণী যোগানদ্রা নারায়ণী' । ৩ “বেদরূপা বীজমন্ত্র | * 'রামা'। 'রোহিণী' গৌঁ। ৬ হইয়া নন্দের সুতা না কাঁহএ সব কথা চক্রবর্তা শ্রীকাবকঙ্কণ' আ.। ৮ ১ “অন্ধকার পারে ভগবান' আ। ৯. ১ বেছিং আ। ২ 'বৈসে' আ। ৩ অলক আ। * দুহার বন করে চুর আ। * শুকুটকুগুল' আ। ৬ 'রাঁচয়। ত্র্পাঁদ ছন্দ পাচাঁল কাঁরঅ। বন্দ বিরাঁচল শ্রীকাবকল্কণ” ॥ আ। ১০ ১ “দেবকায়' অআ। ১১ ১ মহাদন্ত | ১৩ ১ আদর্শ পুথিতে সর্যদা “দিগাস্বর' ও দগান্তর' । ২ একই ছত্রে দুই রকম বানান । ১৪ ১ 'শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১৬ ভনিতা আদর্শ পুথতে এই রূপ ঃ “মাত্র বাহন সঙ্গে ক্ষেণেক থাঁকিলা রঙ্গে জান দোব জজ্ঞের সদনে দামিন্যা নগরবাসী সঙ্গীতের অভিলাষী বিরচিল শ্রীকবিকল্কণ ॥: ১৮ ১ পাঠ 'হাড়মাল' । ২ শীবভাসত বদন” আ। ২০ ১ সেনা । ৭ 'গগনে' আ। ২১ ৯ একটি বটতল৷ সংস্করণে (১৩১৬ ) ভঙ্গ ছন্রটির এই পূর্ণরূপ পাইয়াছি। লয়ে নানা রুদ্র কুদ্ধ বাঁরভদ্র চলে যজ্ঞ নাশিবারে। ৮, ম.—৪০ ৩১৪ চন্ডীমল ২ আদর্শ পথতে এইখানে অন্য পাঠ ঢুঁকিয়৷ গোলমাল কারয়াছে। একটি দ্বতত্্র পাঠের নূতন পদও যোগ কর! হইয়াছে । সে পদটি ব্ধা কর্তৃক শিবের স্তব, এবং দক্ষের জীবনলাভের 'বস্ৃততর যর্ণনা। এই সঙ্গে আরও একটি পাঠে সতীর মৃতদেহ-সন্ধে শিবের ভূপর্যটন বার্ণত ( বঙ্গবাসী সংদ্করণ দুষ্ট )। ঘট কুণ্ড' আ৷ | ২২ এমন দক্ষের সন যজ্ঞ বিনাশন' ( ম।)-এই পাই গ্রহণীয়। কোন কোন পুথিতে সপ্তম ছন্ন হইতে পাঠ অন্যরকম । ইহাতে দক্ষের প্রীত অনুগ্রহ বিস্তুতভাবে বার্ত। আরা (১৩৭- ১৪ ক) ও পৈয়ালি পথ (১২ ক-১৩ ক) অবলম্বনে এই অংশ উদ্ধৃত হইল। এমন দক্ষের যজ্ঞ শুনিয়। বিনাশ ব্রহ্মার বচন শুনি শিবের হৈল সুখ বিধাতা আইল৷ আর দেব শ্রীনিবাস । কহিতে লাগিল হর জত মনদুখ । স্তুতি করে দেবগণ বোঁড়য়া শঙ্করে তুমি না জানহ ব্রহ্গা দক্ষের চরিত মনের সন্তোষে প্রভু চলে তপস্যারে। জত অহঙ্কার কৈল তোমাতে বিদিত। অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত বাবে বাবে সহিলাম তোমার মুখলাজে শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ন৷ দলেক যজ্ঞভাগ দেবতাসমাজে | বাপঘব বাঁলয৷ আপনি গেলা সতী তুম দেব নিরঞ্জন তম অহঙ্কার মন তুমি দেব পুরুষ প্রধান পাদ্য-অর্থ্য না দিলেক পাপিষ্ঠ দুর্মীত। [তন লোক আঁধকার পরমকারণ সার যন্ভাগ না দিলেক বাঁসতে আসন তুমি দেব ব্রহ্মগেয়ান। এই অভিমানে সতী তোঁজল জীবন । তে।মার মহত্ব জত বালিয়ে বংসর শত বড় মনস্তাপ পাই তাঁর মরণে তবু কিবা বাঁলবারে পাঁর ক্ষোমল সকল দোষ তব দরশনে । আঁত বড় আঁভমানে জজ ভোমান নে এতেক বাঁলয়৷ গোসাঞ দেব ন্রিলোচন না জানিঞা হৈল অহঙ্কারী । চলিল ব্রহ্মার সঙ্গে দক্ষের সদন | করপুটে মাঁগ বর জিয়াও অমর-নর পুরীখড দেখিএ অঙ্গার-আস্িময় বারেক দক্ষেরে কার দয়া অন্তরে হইলা প্রভু সদয়হদয় । ভুঞ্হ যজ্ঞের ভাগ লোকের হকু অনুরাগ আসন করিয়৷ বসলেন যোগাসনে উপাঁজব দেবী মহামায়। । প্রাণসঞ্ীবানি বিদা। ভাবে মনে মনে। ক্ষার বচন শুনি বলে দেব শূলগাঁণ ক্ষ জয়াবারে প্রভু কৈলা অনুবন্ধ তোমার বচনে হৈল সুখী মুণ্ড বিনে কেবল নাচিয়া বুলে কন্ধ। [জিবেক অমর-নর দক্ষ হবে নরেশ্বর ক্ষেনে ওঠে ক্ষেনে বৈসে ক্ষেনে জায় রড়ে পুন উপাঁজব চন্দরমুখী । পাশে পাশে ঠোঁকয়ে ঘুরয়ে ওঠে পড়ে। মহামশ্র জগন্নাথ হৃদয়মিশ্রের তাত দক্ষের দুর্গীত দোথ সব লোক হাসে কাবচব্দ্র হদয়নন্দন করজোড়ে বলে ব্র্ধা শঙ্করের পাশে । তাহার অনুজ ভাই চতীর আদেশ পাই তোমার শ্বশুর দক্ষ হয় গুরুজন নিসিজি দোষ বিনর্ষিয়া কেন কর বিড়্বন। পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩১৫ নাঞ্কক শ্রবণ গোসাঞ নাঞ নাক মুখ আকাশে দুন্দুভি বাজে পুষ্প-বরিষণ বিনি মুডে শরীর জীবনে না সুখ। রত্রময় পুরীথান হৈজ ততক্ষণ । দ্মার বচন শুনি বলে চন্দ্র বর্ষা বিষু। দুইজনে হয়া। হরষিত দক্ষের কন্ধেতে জোড় ছাগলের মুড়। বালতে লাগিল তার৷ জগতবিদিত। নন্দীর বচন কু নাঁঞ হবে আন দক্ষযজ্ঞে সতী যাঁদ তেজিল! জীবন আর কিছু ন। বালহ কৈল সান্িধান । শঙ্করে বিচ্ছেদ শান্ত হইবে কেমন। কাট-ছাগলের মুড ছিল যজ্জঘরে সে কালে শুনে সভে অস্তারক্ষবাণী লাগিল দক্ষের কন্ধে শঙ্করের বরে। হেমন্তের ঘরে জন্ম লভিল৷ ভবানী । সেই আধিকার দক্ষের সেই ত সম্মান এমতে দক্ষের যজ্ঞ বিনাশ করিয়া দৈত্য-দানম জিয়৷ ওঠে জার জেই স্থান । পৃণ্যবান দোথ হিমালয়ে কৈল দয়া । ভূগু গর্গ পরাশর জত মুনিজনা তুষারাশখর-ভাগ্য নিবেদিব কি গন্ধপুষ্প দিয়া কৈল শিবের অর্চনা। ভুবনজননী হৈল৷ তার ঘরে ঝি।.. “সতপক্ষে জেমন বাড়েন শাশকলা”_ এই ছন্রের পর ভগিত৷ ছতু দিয়৷ আরাও পুথিতে (১৬ ক) "স্থাপনা পালা সমাপ্ত" । ২৩ ১ কুণ্টিত। আ। ২ রণচাণ্চলা আভা নয়ন তাদূক শোভ। নবনিল বিদ্যুত জৌবন' আ। ২৪ শেষ চার ছন্রের স্থানে আ-পুথিতে আছে দুইটি ছন্র অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত রাঁতর বিষাদ গাইল চন্ডীর গাঁত ॥ ২৬ ১ 'প্রাণেশ্বরে' আ। ২ “ইবে না কেনে দেখি' আ। ৩ “শবেক' গো । ৪ 'শোকানলে দেহ জলে কেবল করের ফলে' আ। ৫ 'কাঁর' আ। ৬ 'পারতোষ' আ। ২৭ ১ “শুন রাতিবাত' আ। ২/ এই কাঁবতাটি আদর্শ পুথিতেই আছে। বষ্ঠ ছন্্ে 'থাকি' পঠিতব্য, চতুর্দশ ছন্রে গার" বাদ যাইবে, পঞ্চদশ ছত্রে “৪ বাদ যাইবে। ২১ ১ পরজানি সময়ে কৈল কুসেতে শয়ন” আ। ২ করে মূর্য/নিরক্ষণ' | ও 'আপিধান' আ। &"গোরীতরে দিলেন উত্তরী আ। আরা পাথতে ভনিত। ছন্র 'মুকুন্দ রচিল গোরীর লো ককের ভাষা” (১৮ খ)। ৩০ ১ 'কহ?। ১ ন। দেখি তাই বন্ধুজন গৃহান করে িক্ষে জনম জাবে দুঃখে তোমারে দৈবাবিড়ন” |. ৩ 'গুণমহি' আ। 'রূপমই' । ॥ “এই গাঁত' আ। শেষ দুই ছত্রের আগে আরা পুথিতে অতিরিন্ত (১৯ ক) চল গে৷ গুণবতী কে তোরে দিল মতি সে বোলে কার ভর তপস্যা নিরস্তর নাতিনি ছলে উপহাসে সুনারী ভজে সুপুরুষে ৩১ ৯ “সত্তরে চলিলা গোরা' আ। * 'শৃনিঞ্া আনন্দ হইল মুনির হিমালয়' আ। ৩২ ৯ 'ফল'। ২ 'দীপপন্র' আ। ও বন্ধনীশ্মিত পাঠ আনুমানিক । ৩১৬ চণ্ডীমঙ্গল পঞ্চদশ হইতে বাইশ ছত্র (“আনিলা৷ আইঅগণ...."কেকই পা্তী”) মা-পুথিতে নাই । তাহার গ্থানে আছে, পদটির শেষে এই নূতন পদ যাহ। অধিকাংশ পুথিতেই পাওয়া যায় | মেনকার আদেশে চাঁলিলা জয়৷ চোঁড় ত্বরাহেতু সভাকার বিপর্যয় বেশ সৈ সেঙ্গাতিন মিতিন নাতিন ডাক্যা আনে বাড়ি । আধাল্য কবাঁরকেহ না'ঞ বান্ধে কেশ। অমলা বিমলা ঠাপা কমল ভারতী এক চক্ষে কোন আয্য দিয়াছে অঞ্জন স্বর্ণরেখ৷ কলাবতাঁ রতি পন্লাধতী। এক কর্ণে কর্ণপুর ত্বরায় গমন । বন্পভ। দুর্লভ। রষ্ত। সুভদ্রা যমুন। এক পদে কোন আয় দিয়াছে নৃপুর চরিত তুলসী-রানি শচী সুলোচনা । কপালে সিন্দুর নাহি সীমন্তে সিন্দূর | হিরা তার৷ সরপৃতী মদনসুন্দরা শিশু কান্দে দুদ্ধ দিতে নাঞ মায়৷ মে। কৌশল্য৷ 'বিজয়। জয়া সুমিতরা সুন্দরী । কোন আয়্য আইলা তার হাথে কাখে পো। যশোদ৷ রোহণী রাধা বৃপি কাদস্বরী কাঁড়য়। জাঙ্গালে আয় দল বাহুনাড়৷ ্বর্ণরেখা সুধা তারা পরমসুন্দরী | আঁখর কটাক্ষে সে ভাঙ্গয়া আইল পাড়া। বরণ কারিতে আয় করিল গমন আম্বকামঙ্গল গান শ্রীবকল্কণ ॥ ২৬ ॥ ৩৩ ১ “বর সম্মুখ" । ২ চক্ষু খাচ্ষু কন্যার বাপ' গো । ৩ 'সীংহনাদ' আ। আরাস্তি পুথিতে পদটির শেষাংশ এই রূপ (২০ ক)ঃ নারদ১ ডাকিয়া বলে শুন হেদে মাই সত্বরে দেখিব নার সত্বরে দৌথব গারি তোমার জামাত। দেখ লাঙ্গট মধাই । মনে মনে ভাবে পশৃপাতি। মামার সাশুঁড়ি বঠ মোর বঠ আই ধরিয়৷ ছাওালবেশ ঘরে কেল প্রবেশ তোমার সাহত ঘর কাঁয়বারে চাই। হামাকুঁড়ি দিয় তাঁথ বুলে হাসিয়৷ মেনক। বলে শুন ওহে নাতি কেহে। ঠেলে কেহো৷ পেলে কেহে। করে ধরি তোলে তোমার মামার দেখি কুস্থিত আকাতি। টানাটানি কেহে। করে চুলে । উলঙ্গ হইল শিব আমি গুরুজন নড়া ধর্য। তোলে জত নোথ হেন সরে তত নাঁঞ লাজ বাসে ধিক থাকুক জীবন । মুখ চায় দন্ত মোল হাসে অভয়াচরণে ইত্যাঁদ ॥ কার সুত। কেবা আনে কোলে নিতে কেহে টানে তাহার পর এই পদ বৈসে গিয়া ভবানীর পাশে । শুনিঞ। মেনকার কথা লাজে শিব হেট মাথা বাঁসয়। উমার কোলে কোথাহ ন৷ চলে বুলে মনে মনে হাসে ত্িলোচন ভর লাগে আত গুরুতর অবোধ নারীর জাত না বুঝে আমার গাঁত করে ধার দেবা পেলে তিলার্ধ নাঞিক চলে নিন্দা করে মোরে অকারণ । হাথ দেই কুচের উপর । গৌনীমুখ দরশনে বিলম্ব না সহে মনে দুরন্ত ছাগাল দোঁখ বিজয়। দেবীর সা মেনক৷ পাসত হৈল তাঁথ সত্বরে জানায় দেবগাণে ৩১৭ গাঠীস্তর ও মন্তব্য কার শিশু আইল ঘরে বাঁসয়৷ উমার কোলে শুনিঞা মেনক। সতী চলি গেলা প্রজাপাঁত বিড়ম্বনা করে পূরজনে । শশূরুপে জথ। মিলোচন কেহো নাঞ চিনে তহে বজ্রের সমান কায়ে কহে ব্দ্ধা করজোড়ে চতুমুখে ভাত গড়ে বুঁঝবারে না তার মাত ১০5504255 কোন বা অসুরজন করে আসি বিদু্ন তুমি জে সংসারসার তোম। বিনে কেব৷ আর মারিবারে কারল। শকাঁত। তুমি দেব অনস্তমুরীত বিজয়ার কথ শুনি দেবগণ অনুমান 47 88 হাথে অস্ত্রে আইলা সত্বর রি মেনক৷ জতেক বৈন সব দোষ আমি কৈল দেবত৷ অসুর নর যক্ষ রক্ষ বিদ্যাধর সাফি ছালিতে নাজ আমে শিশু দৌখ রুসিলা অন্তর । শৃমিয। শঙ্কর হাসে দেবতার অস্ত্র খসে দেবতা-অসুরগণ সবে হৈল।৷ কোপমন পুষ্পবৃ্টি আকাশে বাঁরষে। বৌঁড়য়া রাঁহল চাঁব পাশে ছাওালের বেশ ছাড় সেই দেব ব্রিপুরার অস্ত্র তুলি বঙ্কারে বিষম ভাবুকি মারে ভুবনমোহন ধরে বেশে তথাপি না জায় বাঁস হাসে। রহিলা ছান্দল৷ মাঝে চড়িয়। বৃষভরাজে দেখি ইন্দ্র পরাজয় মেনক৷ পাইল ভষ মেনক৷ ত মনে মনে হাসে। নিবেদয়ে রক্ষার চরণে অভয়ার চরণে ইত্যাদি ॥ কোন লাজ কিবা গতি বুঝতে না পার মাত কহ ব্রন্ধা বাসয় ধেয়ানে। তাহার পর মেনকার বোল শুনি ব্রহ্মা মনে মনে গণি নন্দ বলে শুন প্রভু শুন শূলপাণি কহিলেন জতেক উত্তর মদনমোহন-বেশ ধর ন। আপনি। তুমি জে নির্ববৃদ্ধিনার নিন্দা কৈলে ব্রিপুরারি আছিল বা্রের চর্ম হইল বসন তে কারণে ছলে মহেশ্বর। অঙ্গের বিভূতি হৈল ভূষণ চন্দন । [ পাঠ ১নন্দী। ২ আমার। ৩ভয়। ৪ গুনতর। বেসধরে।] ৩৪ এই পাঁতিনিন্দ৷ পদটির ছোটখাট বহু পাঠান্তর আছে । ১ “কোলে পঠিতব্য। ৩৬ ১ শ্রোতি আ। ৩৮ ১ 'সরমুলে' আ। ২ “সকল গুণের অসু'আ। ও “গৌরী সঙ্গে রাহল৷ নিবাসে* আ। ৩৯ ১ 'খেজাড় মাগে মা। ২ “সস্ভাপোনা' মা। ৩ 'ধারিল' আ। ৪ “তোমার ঘর আসিতে পথে পুত জাব কীটা+ মা। ধাবংশ ছত্রের পর আতিরিস্ত মা-পুথিতে প্রেত ভূত পিশাচ মিলিয়। জার সঙ্গ লোকলাজে দ্বামি মোর কিছুই না কয় সাসগুঁড়ি হইয়া কত বাটযা। দিব ভাঙ্গ । জামাঞ্ের পাকে ঘরে হৈল সাপের ভয়। তোমার কর্মের ফলে ভ্বামি বামপাঁথ তাঁথ সত সুরা তোরে না দিল দুর্গাত। ৩১৮ 8০ ১ “ফিরেন মা। ২ 'পটী' আ। ৪১ ১ “কোড়া? মা। ২ 'গৈল পত্রে মা। ৩ মর্তা আ। আটনিশ ছন্ের পরে আতীরন্ত মা-পুথতে আছিল ভিক্ষার বাকী পালি দশ ধান গণেশের মুষায় করিল জলপান। ৪২ ১ 'মকুন্দ' (মোকুন্দ ) আ৷ (প্রায় সবদা )। ৪৩ ১ 'জটাধুর' আ। ২ “পুনুর্ববার' আ। ৪৪. ১ 'রচিব'মা। ২ এই ছত্াংশ আ-পুথিতে বাদ গিয়াছে । আরা পুথিতে ভনিতা (২৮ ক)ঃ চণীপদ-সরোরুহে ৪৬ ১ এই অংশ আ-পুথতে বাদ পাঁড়য়াছে। ৪৭ ১ 'গজবস্প' আ। ২ “সভাসত' আ। ৪৯ “সরস গরস হয় করষ' অ। ২ “কালাচর আ। ২ “কাঁরব সুপরামর্ষ' আ। চষ্ীমঙাল শ্রীজুত কাবকল্কণে কৃপ। জারে কারল৷ স্বপনে ॥ আরাঁও পুথিতে (৩০ খ-৩১ ক) এই পদ দ্বিখাগত করিরা মধ প্রক্ষেপ দিয়। তিন পদ করা হইয়াছে। ষষ্ঠ ছন্ের পর অদ্ভুত দৌখল বিজ্ুবন মনোহর অদ্ভুত নন্দনবন সৃজল। শঙ্কর । অভয়াচরণে মজুক নিজ চিত শ্রীকাবকন্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ পুটাঞ্জাল পদ্মাবতী সতত পরিহার এই বিজ্ভুবন শুনি পথবীর সার । জে কিছু কাহতে জানি আপ্ত উপাস্তর ইন্দ্রের নন্দনবন কহে দিগান্বর | নন্দনবনের শোভ। প্রমোদে ভুলিয়৷ সকল গাছের ফলন লইল তুলিয়। । দ্বিতীয় নন্দনবন সৃজিল শঙ্কর আভিলাষে গদগদ হরিষ অন্তর । [নিভৃত নদীর তাঁরে মনোহর স্থলে আরোপিল৷ বিজুবনে হর-কুতুহলে । ভুলিয়া গেলেন প্রভু ভাঙ্গড়৷ গোমাঞ কাননে সকল আছে পশুপক্ষ নাঞ। তারাপতি বিনে জেনো না শোভে অলঙ্গ নগের কি শোভ। যাঁদ না থাকে পতঙ্গ । বিসারবিহীন জল নিম্ষল কাসার আধেয় না হৈলে ধিক জীবন অসার। ধেয়ানে বসিল৷ দেব হাথে কার ধার ৫) বিনান্বত পক্ষগণ করে আত্মনাদ । সারেস কোফিল কাক বোলে অপ্রমাদ দেখিয়। শঙ্কর বন ঘুচিল বিষাদ । কেশাঁর কুঞ্জর বাঘ বাঘের বাঘিনি মহীসর্প অজগর সাপের সাপনি। বরাহ ভ্গুক বনে বিড়াল বানর খুগাল গউন৷ বোঁজ পাখার পাখর। পাঠীস্তর ও মন্তব্য ৩১৯ সরভ মহিষ শুনি কটাসি কটাস রড়ে প্রেবেশিল পশু আগম কাননে বনপশু বহুগণ গাঁণল হৃতাশ। সৃষ্টি রাখলে নাশ ধাষিরে সসানে। বাঘ ডাস গণ্ডা নকুল কালসার শ্রীকবিকন্কণ দ্বিজ একপদী ভনে সসারু গারড় বৃষ মৃষিক মার্জার । প্রবাল গাথল জেনে। মুকুতার সনে ॥ পক্ষচয় হেরিয়া হাসিল মহাকাল শঙ্কর সকাশে চণ্ডী জান জান শুভবেশে বিমানে থাকিয়া দিল সঘনেতে তালি। অংশ রূপে পৃজ৷ নিল কাঁলঙ্গের দেশে । বিজুবন নিকটে জতেক পশুগণ পথে জাইতে চণ্ডী সনে হৈল দরশন। 60 ১ প্ঘন্টা' আ। ২ স্বামী" আ। ৩ 'শরন' আ। সতেরে৷ ছন্নে িড়ান", পাঠান্তরে 'বরুতান' ( আরাও )। ৫১ ১ পোজে' আ। ২ জীবন সময়।' আ। পজবন্যাসে দিয়া" মা। ৩ ণ্ক'মা। ৪ নহে? । ৫২ ১ "স্মরম্মর' আ। পপুরঃসর' মা। “সমসর' পঠিতব্য। ৫৩ ১ ঠভবশ্ব' আ। “ভাঁবস্যাতি' মা। অতঃপর ম৷ ও আরা পুথতে আতারত্ব পদ ঃ উপদেশ কহিয়৷ চলিলা মহামুনি প্রভাতে উঠিয়া পুন্ন কর গঙ্গা়ান ইন্ড্রেতে বিদায় হয় চাললা আপান। উপহার কর শবপৃজার বিধান । সুরলোক সাঁহত উঠিল সুরপাত শচীরে দিলেন ভার চন্দনের তরে চরণে ধারিয়। ইন্দ্র কারলা প্রণাত। পৃষপ তুলিতে গান দিলা নীান্বরে। পুনবার সভাতে বাঁসল৷ সুররায় বিনা রি দেহ জার নাবষট করিল চিত্ত শিবের পূজায় 855 জেঠিরব নীলাম্বর শুনিল৷ শ্রবণে বৃহস্পতি বাঁসল লইয়৷ পাজিপুথি দৈববশে অনা নাঁঞ শূনে কোন জনে । বিচার কারল গুবুবার শুভ তিথি বুকে হাথ দিয়া নিবে নীলা বিচার কারয়। বৈল্য কাল শুভাদন বাধা পাঁড়ল মোর মস্তক উপর। গুণ বহু আছয়ে সকল দোষহান। পুষ্প তোল! বিনে অন্য কাঁরব আরাতি মহেশ পৃজিয়ে ইন্দ্র হেল ভন্তিমান রোষজুত হয়্যা কিছু বলে সুরপাতি। জয়স্তে ডাকিয়৷ ইন্দ্র হাথে দিল পান । অভয়ার চরণে ইআদি ॥ ১৭ ॥ ৪৯ ॥ ৫৬ ১ *দু'বুটি' আ। ২ “কুমার হরিষ মনে ধুলিকদস্ব তোলে বনে" মা । ৩ 'আছু” মা। & ভেদ্ুকালা' পবসালিম্বা' মা। * বৃহতি'মা। *পতিলক'মা। পগ্তলামা। "সাল তোলে ঘাটু ফুল" ম। ১* 'কির্ণিকার' আ। ১১ শবিরসবা? মা। ১২ “ছিদ্রাক্ষা' মা। ১৩ রকত জুগল সোনা" মা। 6৮ মা-পুথতে নবম পদের পর আতীরক্ত ঃ রূপাঁস হরানি জায় তড়ঙ্গে তড়ঙ্গে পানু গোড়াইয়। বার ধায় তার সঙ্গে । ৩২০ ৬৩ ৬৪ ৬৫ সুন প্রাণনাথ কাঁহ তোমারে কাহয়ে সাধ মনে লাজ বাসি ইবে প্রাণ মোর কেমন করে । পান্ত ওদনে বাঞ্জন বাসী । বাথুয়। টণ্টনি তৈলের পাক ডগী ডগী হয় ছোলার শাক।. ৬৬ এই পদে মা-পুথিতে দ্বিতীয় দিবসের নিশা পালা শেষ । ৬৭ ১.'পশুপাত' আ ২ 'অনক্ষণ বেথা বাড়ে আ। ৬ ধাতিমা। * 'দুহেতে প্রফুল যুত” মা । মা-পুথিতে এই পদে “তৃতীয় দিবসের দিবা পালা আরম্ভ” । আ-পুথতে “বৃহস্পাঁতবারের গীত আর্ত” । ৬১ ১ খেলে টিক ডণাঁড় ভাটা” মা। . ২ 'ছোবায” মা। . ৩ “চৌতালি মা। ণক ছাল্যা হয়যান্ছে কোলে' মা। ৭০ ১ 'বাঁরল সঞ্জমকেতু ঠার সরাঁসজ' আ। ২ ধনুকে খেয়াতি' মা । ৭১, ৭২ মা-পুথিতে একটি পদ । ৭১ ১ তাম্রপান্র আ। ৭২ ১ 'ীথ্যা। মা।. ২ 'গাটিছড়? মা। ৩ পবদায়? মা। ৭৩. ১ “সন্ধান অর্জনে বির' মা। ২ ধারে উধারে' আ। ৩ সম্বল মা। 5 শনাশ্চান্ত' মা। 'দজ্জ? মা। আরা পুথতে ভনিতা “দুধন্য-"**""হৈমরতীশঙ্কর মঙ্গল, ॥ঃ ৭৫ ১ 'ঝাটি মা! ২ পমশা' আ। ৩ “করন্দা' মা। ৪ 'তেঅগঠিয়া তাল' মা। ৫ শবশেষ' আ। ৭৭ ১ এমং আ। ৮০, ৮১ পদ দুইটির মধ্যবতী এই পদটি (আরাও পুথি ৪৯ ক, খ) আছে চাঁলল মহাবীর লইয়া চাপশর কেশরীর দস্তে মেদর্নী কম্পে পারয়। সুরঙ্গ ধড়। লাঙ্গুল বাহুলায় শিরে ৃ ধূনায় ধূসর হইয়৷ সত্বর করাল বদন [বিশাল লোন উভভু করি বান্ধেন চুড়। । সঘনে ডাকে উচ্চ্বরে | ” দেখিয়। গজেন্দর ঝাপিল মৃগেন্দ ধারয়৷ বারণ করয়ে তর্জন দেখল বীরবর-রাজে নিশ্বাস প্রলয়ঝড় চলিল বাঁরবর লইয়৷ খরশর দশন জে-গুলা জিনিঞাত মূলা উপনীত 'বাঁপনের মাঝে । সধনে করে কড়মড় । আরাও পুথিতে ভনিত৷ রচিয়৷ ত্িপদী ছন্দ ১ এই ছত্ের স্থানে নীলমাঁণ সংস্করণের পাঠ এইরূপ শুন গে৷ ব্াহ্মীণ পায়ে তব বর হইয়াছে পণ সুত। পাঁতর মনের ব্যথা গান কবি শ্রীমুকুন্দ চক্রবর্তী আহ্বকার দাস ॥ সফল কর মোর আশ করিব তোমার দ্যস। ঘটক পাঠায় স্থানে স্থানে মা-পুথিতে অতঃপর যে পদটি প্রাক্ষপ্ত হইয়াছে তাহা খুল্পনার সাধভক্ষণেরই পাঠান্তর। এই কাঁবতার আরন্ত ৩২১ পাঁঠাস্তর ও সস্তব্য দেখি সীরবর রাসঙা সন্বর বিকট দ্গন ভাগির ফান সন্ধান পৃরিল চাপে রকত পাঁড়িল তুণ্ডে। করিয়া তর্জন ছাঁড়িয়া বারণ আঁতবেগে বাঁর মারিল খর তির মৃগাধিপ সাজে কোপে । রণেতে উঠিল ধুলা সিংহের তর্জন পায়্যা পশুগণ রবির কিরণ হরিল তখন প্রাণভয়ে পলাইয়া জায় অবসান হৈল বেলা । আক্ষটীনন্দন করয়ে তক্জন দু ২ ত নবাঁন সনরে প্রবীণ আঁতিবেগে মৃগ ধায় । সন্ধান জিনিঞা জুঝে হ'হুত দদ্তে পশুগণ কম্পে ছাঁড় বাঁর ডাক দিল উড়া পাক খিতি কার টলবলগ লইয়৷ পশুর রাজে। বন্্রনখ মারে বারের শরীরে জগদবতংসে পালাধর বংশে বার হাসে খলখল। নৃপাঁত রঘুরাম বীর মহাতেজ। ধার পশুরাজ। শ্রীকাবকন্কণ করে নিবেদন মুটকি মারিয়৷ মুডে অভয় পুর তার কাম ॥ ৮০ ৯ 'সুনিত' আ। ২ ধরিয়া পাছাড়ে" মা । ৮১ ১ 'মারয়ে ভাবুকি' মা । ৮২ ১ "হাতে দড়ি পায়ে দড়ি গলে দিয়া তোক' আ। ২ দয়াময়ী” আ। /৪ কাঁবতাটি কথোপকথনাত্বক । ৯ খাণ্ডা আ। ২ অতঃপর অনেক পুথিতে ও ছাপ৷। সংস্করণে এই আতীরন্ত পাঠ আছে বাঁরের অস্ত্রের বেগে বাশ দশন ভাঙ্গে কালকেতু বড় রাড়ে যলেতে ফেলয়ে গাড়ে পশুগণে মহামারী করে। পাঁড়লে উচিতে লাহ পারি তুমি হস্তী মহাশয় তোমার কিসের ভয় জানে বহু কুসন্ধান গাছে উঠে মারে বাণ বন্দরসম তোমার দশন নর মধ্যে আমি তারে হারি। তব কোপে জেই পড়ে যমপথে সেই নড়ে খসয়ে যেমন তারা সেই রূপ ধাও বরা কেবা ইচ্ছে তব দরশন । তোর দন্তে ক্ষিত জয়দর দুই চারি ক্রোশ জায় তবে মোর লাগ পায় কালকেতু এক৷ নর সবে ধরে তিন শর উলটিয়। শৃণ্ড মোর খেচে কি কারণে তারে কর ড় । মোর পিঠে মারে বাড়ী লয়ে জায় তাড়াতাঁড় নিবেদন কার মাতা শুনহ বাঁরের কথা ছাগলের মূল্যে লয়ে বেচে। পশু মায়ে বাবিধ প্রকারে শুন হে মহিষ বাণী মানুষ তোমার পানি জানয়ে অনেক তন্ত্র এড়য়ে বড়শা যন্ তুমি হও যমের যাহন বিন অপরাধে পু মারে। তুমি যাঁদ মনে কর পর্বত চিরিতে পার তুমি ধাও নিশিদিস পবন জিনিয়া শশ নর ভয় কর কি কারণ। কালকেতু কি কারতে পারে চট ম..৮৪১ ৩২২ বার কালকেতু কাল বনবেড়া পাতে জাল জীয়ন্তে বেয়ে ঘরে ঘরে । সবজান তুমি শিবা ভক্ষণ তাহার কিবা কালকেতু হৈতে কিব৷ ভয় শিবার ঘৃতের হেতু নিত্য বধে কালকেতু বৈদাজনে করয়ে বিক্লষ | তুলারু ঘোড়ারু মৃগ পবন জিনিয়। বেগ কালসার বাঁর মহাশয় যদ্যাপ মনেতে কর পবন জানিতে পার কি কারণে নরে কর ভয়। ব্রাহ্মণড়মের পাতি চন্ডীমঙগল জাহারে কেশরী ডরে তাড়য়৷ কুগ্জর ধরে আমর! তাহার ঠাই মশা কৃপা কর কৃপাময়ী তোমার শরণ লই [চরাদন তোমার ভরসা । কপ বলে শুন ম৷ " আমার সকল ছা হাটেতে বৌচল মহাবীর হেন, মোর লয় মন তাঁজি গো৷ নিবাস-বন প্রাণ দিব প্রবেশিয়। নীর। মগ আদি পশুগণ সব কৈল নিবেদন অভয় দিলেন মহামায়া রঘুনাথ নরপাঁতি জয়দুর্গ৷ তারে কর দয়। ॥ ৮৫ পদটির পুষ্ঠতর পাঠ আরাও পুথি হইতে (৫২ ক-খ) উদ্ধৃত কার। পশুর বচন শুনি সবমঙ্গল। আশ্বাস কাঁরয়। সিংহে 'দিল কণ্ঠমাল। । আজি হৈতে মনে কিছু না করিহ ভয় না বাঁধব মহাবাঁর বালনু নিশ্চয় । বর পায় একভতে গেলো মহারাজ উপনীত হৈল 'গিয়। হাঁথর সমাঝ । হাথিরে সদয় হৈয়।৷ বলিল অভয়া নিরাতষ্ধে অরণ্যে বসত কর গিয়া । বর পায় হাথ সব কাঁরল গমন ব্াপ্র ভল্লুক তথা দিল দরশন । পরমসুন্দর ব্যাঘ্র গায়ে ভাল রেখা সুন্দর আকার জেনে৷ বিভ্রয়ে জদ্ুকা । বাঘেরে সদয় হয়া বলেন অভয় নিরাতন্ক অরণ্য বসত কর গিয়া ॥ বর পায় ব্যাপ্র সব চলিল। হরিসে উপনীত হল গিয়। বনের মাহিষে । মহিষ বলেন আমি যমের বাহন বনে মহাবীর আসি করে মহারণ । ১ 'কাচে' আ। ২ “ঘৃতমুন'আ। খ“সবা' মা। ৮৭ ১ 'বুকে সান্যা' মা বুকে সানে' আরা । কি কাহব মহামায়৷ নিজ দুঃখকথ। বিষাণ উপাড় মোর নাড়া কৈল মাথা । মহিষে সদয় হৈয়া কহেন পার্বতী নিরাতঙ্কে অরণ্যেতে করহ বসাত। চলিল মহিষঘটা করিয়৷ মেলানি জুলজুন কাঁরয়া চাহে জত রাঙ্গা মোন । মেনি সব বলে মাত৷ করম বিশেষ মহাবীর ুটারে বেচিল মোর বংশ । পড়ায় শুনায়য। ঠুটা তুলা। লয় কান্ধে ঘরে ঘরে কাঁড় খায় প্রকার প্রবন্ধে । ঠুটার গুতাতে বাছ। বড় দুঃখ পায় এই সুখ আনন্দে চুঠার কান্দে জায় । কৃপা কার মহামায়৷ বলেন সভায় আমার বচনে সভে হবে নুকি-কায় । পশূরে সদয় হেয়। সর্বমঙ্গলা সেইখানে সুবর্ণগোধিকা বৃপ হৈলা। প্রভাত হইল বাঁর চালল কাননে অভয়ামঙ্গল কবিকষ্কণে ভনে ॥ & 'শাস্্রেতে' মা। দুঃখের পারক' মা। পাঠান্তর ও মন্তব্য ৩২৩ ৮৮ ১ শদবত' আ। ২ 'অমৃলা ধন মা। ও 'পুরিআ' আ। অতঃপর মা-পুথতে এই আঁতারন্ত কবিতাটি আছে বাঁসয়া তরুর তলে ভাঁসয়৷ লোচনজলে ডোড় সম্বল নাঞ থাকে ঘরে বিষাদ ভাবেন কালকেতু [তন বাণ শরাসন বিনে আর নাঁঞ ধন কোন দেবা দল সাপ কিবা পশুবধ-পাপ বাধ দিতে ধারে বা উধারে। দুঃখ আমি পাই সেই হেতু। সঘনে নিশ্বাস ছাড়ে অচেতনে ভূমে পড়ে হৈল ব্যাধকুলে জন্ম পশুহিংসা কুলধর্ম রাহয়৷ ক্ষণেক নিদ্রাভোলে বোঁচয়া সম্বল আম করি ক্ষণেক বিলাপ কার উঠা। পান করে বারি দুর্গম কাননে ভ্রাম মৃগ না পাইল আমি মুখ মুছে ধড়ার আচলে। সম্বলে কেমন বুদ্ধ কাঁর। হাথে করি ধনুশর ধারে ধারে জান ঘর নিবিধি-প্রকার লোক কার হেন নাঞি শেক সুবর্ণ-গোধিক৷ পথে দেখে দুঃখ পাই নিবাসি ভুবনে তঞ্জন গর্জন করে বান্ধে বীর গোধিকারে পাপভোগ ভুঞ্িবারে বাধ জম্মাইল মোরে ধনুকেতে লঙষমান রাখে । পশু মার বাবধ বিধানে । যাত্রাকালে তোম৷ দৌখ ধনে ফাঁর হেনু দুখ অনুদন বনে ফিরি ঝোপ ঝাড় দরী গিরি নফুল বদলে তোমা খাব গায়ে ছড় কীটা ফুটে গায় পঁ়িলে আমার হাথে এড়াবে কেমন মতে গও্ডক সাদ্ধুল হরি বনে কত বধ করি জিম মইয় পোড়াইব। তথাপি পরান নাহি জায় । অধর্ম সণয় করি অনুধদিন বনে ফিরি এমন বাঁরের কথ। শুনি ভুবনমাতা ধিক থাকু আমার জীবনে মনে ভাবে কি বুদ্ধ কাঁরব কাহারে মাগিব ধার কে মোরে কারব পার মাহয-অসুর জন্ত নাশিল সবার দদ্ভ প্রাণ পোড়ে সম্বল বধিহনে। বাঁর হস্তে কেমনে এড়াব। জোঁদন জতেক পাই সেইদিন তত খাই মহামিশ্র ইত্যাঁদ ॥ ২১ ॥ ৮৪ ॥ ৮৯ ১ “কি বলা দাণ্ডাব'মা। ২ “এসব নরকবৃদ্ধ'মা। . ত'মোছে'মা। *'পুড়িয়া' আ। 'তুলিল' মা। ৬ প্টাঙ্গিয়া মা। " 'ঘরকে' মা। ৯০ ১ “কৃষহেতু ছলিলাম পাপ ফংসামুরে আ। ২ দেই আ। ৩ গানল মা। এই, মা। আরাও পা থতে পদটি ভাঙ্গিয়া দুইটি হইয়াছে। ৯১ ১ "্পড়ীসকে' মা। ২ করুণা মা। ও "আসিয়া বিয়ের পাশে' আ। ৯২ ১ ফল' মা। ২ তার আ। ও বনাত' মা । 'নালিত' । “সয়োরে দেহত গিয়। চাথের কিন্তু' মা । ৫ দ্উতারিয়া' মা। ৬ “আইস্য আইসা' আ। “আস্য আস্য'মা। ৭ তারে আ। ৮ “চোখাওয়া, মা। শদব? আ। ১৭ 'সুনহ' আ। ৃ ৯৩ ১ “কোকিলের সর অস্ত আ। ৩২৪ চন্ডীমঙ্গল ৯৪ আদর্শ পুথতে অবতার-বিববণ বিপর্যস্ত ভাবে আছে । ধকৃফ'আ। ২ "বহুত লীলা আ। ৩ প্রচ আ। ॥ ডা আ। অতঃপব দুইছত্র মা-পুথিতে নাই । ১৩-১৪ পদ দুইটি আবাও পুথতে একটি পদ । ১৫ ১ শতলক' মা। ২ “যমুনা নিকট' আ। ও অতঃপর আ-পুথতে এই ভনিতাপদে শেষ শ্রীকাবকম্কণ গান পাচালির গত চাঁব সাতে লিখল আটাশপদী গীঁত ॥ আবা পুথতে ভানতা শ্রীকাবকঙ্কণ গান কাচাল-নামত চাঁব সাতে লিখিল আটাসি পদ গীত ॥ ৯৬ আরা পুথতে প্রান্তে আতীবন্ত এই দুই পদ আছে কালি তুলিয৷ অঙ্গে দিল মাহেশ্বরী ধেযানে না পায জারে দেব প্রজাপাঁত বীর-কুড়্। মর্ধে বৈসে দেবী মাহেশ্ববী । কেমনে বার্ণ তাবে মনুষা-আকৃতি। ৯ 'হাস্যসুখে অভযা” আ। ২ 'বন্দ/ঘটি স্থিতি' মা। ৩ 'জাত্যেতে' মা। ১৭ ১ হার আ। ২ 'অহল্যা' আ। ৩ 'ষধে আমি ছাড়ি আ। & গ্যহায় জারে পার্বতী" আ। তেইশ-চাঁব্বশ ছন্ু দুইটির পাঠীস্তব গৌ-পুথিতে আমি বাঁল তোম। কার বোলে রামা কী হেতু ছাঁড়িলে পাঁত সতা কহ মোরে কে আনিল তোরে ওষধ কৈবে বিজাতি । ১৮ ১ সোষা মা। ২ 'লোকলাজে নাহি" মা। ৩ 'দর্বকাল সমভাবে' মা। ১৯ ১ 'অবধান, আ। ২ “সাধিলে' আ। ৩ সাঁতিন' আ। ১০০ ভানিত ছ্যস্থযের আগে আরা পথতে (৬৯ খ) এই চার আতীরন্ত ছর আছে পাশে বাঁসয়। বামা কহে দুঃখবাণী ভেরেগ্ডার খামখান আছে মধ্যঘরে ভাঙ্গ। কুড়াঘরখানি পাতের ছামনি । প্রথম বৈশাখ মাসে নিত্য ভাঙ্গে বড়ে। ছ্ চাবটি মা ও গো পুথতে পরবর্তী বারমাসি পদের গোড়া আছে। এই দুই প্থতে বারমাসের দুঃখবর্ণনার আরম্ভ আযাঢ় মাস হইতে, শেষ জ্যেষ্ঠ মাসে। ১০১ ১ শঁদতে টানাটানি' নীলমাঁণ। ২ উঠিতে' আ। ৩ “কাননে তুলিতে জাই” মা। মা-পুথির পাঠ ঃ রামা শুন মোর বাণী রাম শুন মোর বাণী ফোন সুখে আমদেতে হুইবে ব্যাঁধান। পাঠীস্তর ও মন্তব্য ৩২৫ ৯১০২ ১০৪ ১০৫ মা-পুথির পাঠ ফুল্লরার আভিলাষ বুঝিয়৷ পার্যতী আশ্বাস করিয়া তারে বলেন ভারতী । ১ ধপাঁপালক। পাখ ধরে মা। ২ পমথ্যা হৈলে চেয়াড়ে" মা । ৩ ছাড়িয়া" মা। * মা-পুথিতে আতীরন্ত পাঠ আগে আগে চিল ফুল্লর৷ নারীজন নিজ নিকেতনে গিয়। দিল দরশন পম্চাতে চালল কালু ব্যাধের নন্দন । দেখিবারে পাল্য দুটি অভয়চরণ। শরগাঁও এড়ি বর কারল প্রণাম” ম | ১ “জোড় কার' গা । ২ পঁসয়রে' মা। “ভানু” ম। | মা-পুথিতে পদটির আরম্ভ এইবুপ বীর আর না জুড়িহ শরগা্ সুসাণ্চিত শরধনু দোখ মহাবারে . বাছা আমি আল্যাঙ শুভ মঙ্গলচন্ডী । কহেন করুণামই মৃদুমন্দ ছ্বরে। ১ 'বসাইয় প্রজাগণ' গোঁ । ২ এই দুই ছত্রের স্থানে মা-পুথির পাঠ শনি কুজ বারে পুজ পাতাইয়্য জাত গুজরাট নগরের তুমি হবে নাথ। এই দুই ছত্রের পাঠ আ-পুথিতে নিজ মুর্তি ধারতে অভয়। কৈল মাত শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর ভারাথ ॥ গৌ-পুথিতে শেষ চার ছত্র এইরূপ (৫১ খ-৫২ ক)ঃ এমত শুনিয়। চণ্ডী কালুর-বচন অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত শতনাম কাঁহতে চাঁগুক৷ কৈল৷ মন। প্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১০৯ ॥ তাহার পর এই শতনাম পদ আছে (অন্য কোন কোন পুথিতে এ পদের পাঠান্তর পাওয়৷ যায়) ঃ ব্যাধের নন্দন শুন হে বচন ' শুভা শুভষ্করী শুভ আমি কার এঁহ মোর শত নাম তোমারে করিনু দয়৷ | এ তিন ভুবনে কেব৷ নাহি জানে হ্ধাণ বাদিনী নাঁসংহি রুগ্রাণী সব ঠাই মোর ধাম । কোমারা শান্তরুপণী মঙ্গলচাগক। চামুণ চর্চিকা জয়ঙ্করা জয়া শঙ্করী অভয় চওবতী মহামায়া বেদবত্তী মারায়ণী । ৩২৬ কালী কপালিনী কোসিকী ভবানী শ্যামা জলোদরাঁ গুগ। মহোদয়ী বৈষবা শিববনিতা গোদাবরী তপহ্থিনী । গোঁরী শাকন্তারি গঙ্গ। সুরেশ্বরী যক্ষিণী ব্রিজটা নেতা ত্রিপুটা আমি আদ্য৷ বেদমাতা৷। ত্রিপুরা দ্বারবাঁসনী গোকুলে গোমতাঁ দক্ষগৃহে সতী তার বাণী ধৃত গায়ত্রী সাবিরী জয়ম্তী হস্তিনাপুরে ভৈরবী ঘোররূপিরণী। ভয়ঙ্করী ভীম উগ্রচা বাম কামাক্ষ। 'কিরাতী ক্ষেমা সরহ্কতী যোগমায়। নন্দাারে । ছন্রমন্ত। মহাতেজা যমুনা যোগিনী যশোদানন্দিনী নিপুরসুন্দরী ঘ্রেলোক্য-ঈশ্বরী যোগনিদ্রা যশপ্রদা সহত্্রাক্ষী দশভূজা । মূড়াণি আহ্বকে পুষ্ঠী বৃন্দারিকে অপর্ণ। নীলাঙ্গী বগলা মাতঙ্গী রূ্র্তী ধাঁর গদা । মহাবিদযা জগম্মাতা শিবা শিবদূতী [বিজন পার্বতী চত্ডী মোর নাম ভুবনে উপাম বিকুপ্রয়ে বশালাক্ষী শুনহ নামের কথা । খড়াগিনী শুলিনী খেউকধারিণী রাজ। রঘুনাথ গুণে অবদাত দক্ষসুত৷ আমি দাক্ষী । রাঁসক মাঝে সুজান [বমল। কল্যাণী কাস্ত কাত্যায়নী তার সভাসদ রচি চারুপদ কার্তকী কামরাপণী শ্রীকবিকঙ্কণ গান ॥ ১১০ ॥ তাহার পর একটি আতীরন্ত পদ ঃ কালকেতু বলে মা গো এই বুঝি মনে তোমারে চরণ বান্দ জোড় কৈরে পাণি। শতনাম শুনে শিখিয়াছ কারো স্থানে । আমার ভাগ্যের তবে সিমে পার নাই ব্যাধকুলে জন্ম মোর হিংসাময় ধর্ম প্রপন্তনা কর যাঁদ শিবের দোহাই | প্‌ বাঁধ মাংস বোঁচ এহি-মার কম। ও চরণে জ্বোড়-করে করি নিবেদন বরঙ্গ৷ জি দেবে জায়ে ধ্যানে নাহি পায় কৃণে কৈরে তবে মাত। দেহ দরশন। হেন জন কি কারণে আসিবে এথায় । নিজ মূর্তি চিনিতে প্রবোধ নহে মনে তবে যাঁদ কৃপা কৈলে শিখরনান্দনী জোহ রূপে নরে তোম৷ পৃজয়ে আশ্বিনে । সোঁহ রূপে যাঁদ দেখা দিযে গে৷ নিশ্চয় - তবে সে আমার মনে হইবে প্রত্যয় |." ১০৬ ১ পপ্রচ্টে' আ। ২ 'মাতা' আ। ১০৭ ১ “ফুল্পরা নয়৷ মূল্য মুখ কৈল বাকা' আরা । ৭ 'মুড়' আরাি। “মুঁড়'মা। পার আ। ১০৮ আ-পুথিতে ও মা-পুথতে এইখানে যৃহস্পাঁতিষারের (তৃতীয় দিবসের ) দিপা পালা সমাপ্ত । ১ ধ্বীর' অ।। পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩২৭ ১০৯ ৯১০ ১ দুবিল' মা। ২ ধারয়ে' মা। 5 “ঘরেতে নাহক পোতদার' মা। ॥& “সরস'মা। শখাঁড়ীকর' মা। ৬ বান্যারে' মা। ৭ এড়িয়ে মা । ১ অতঃপর আতরিস্ত মা ও অন্যান্য অনেক পুথিতে ঃ বাঁর সোনা নয় রুপ। নয় এ বেঙ্গা পিত্ত, মাজিয়া ঘাসিয়া বাঁর কর্যাছ উদ্জল। ২ থঞ্জে' কালকাত। পুথি । খুনে গোঁ । ৩ 'বলদে নাদিয়া মা। ৪ গগুণে। আ। এই পদে গো-পুথিতে 'বুধবারের পালা সমাপ্ত” । ১১০-১১১ এই দুই পদের মধ্যে আতীরস্ত এই পদটি আছে অনেক পুথতে ঃ আড়ি উমানিঞা ছাল৷ করে বৈশাগণ গুজুরাটে আল্য সভে বাঁরের লয়্যা ধন। ছাল৷ উভারয়। সভায় করিল বিদায় বিদায় হইয়। তার নিকেতন জায় । সর্ব ধন সম্বারয়৷ বাঁর রাখে খুনে বদলে আনিতে হৈল বীরের গমন গোলাহাট নগরে গিয়া দিল দরশন | যাদব মাধব হারি শ্রীধর অস্থুত প% শত বলদ তার আছয়ে মজুত । বলদ প্রতি এক পোন করিল ফুরান বীরের সঙ্গে পণ ভাই কাঁরল পয়ান। বায় করিবারে বাঁর কিছু রাখে গুনে । আগে আগে পণ ভাই কারল পয়ান অভয়ার চরণে মজবুক নিজ চিত তার পাছে চলে কালু বাধের নন্দন । শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ আর়াও (৬৭ খ-৬৮ ক)। ১১১ ১ বোন্যা' মা। “বেন্যা' গো । ২ “াচাকুড়া ম।। ও “গীজকুড়' আ। ৪ 'কুড়াা আ, মা। 'কিরবাল' মা। ৬ 'রুপটা আ। * “সর্া আ। ১১২ ১ কাদদা” গো । ফারদা” আরাণ্ড। ২ 'কুড়াইর" | 'কুড়াল' গো । ১ 'বাইষ' আ। “বানা” মা। বাগ' গোঁ। “দা? ম। | 'দাবা গোঁ । '“দামবন+ পৈয়াল। ৬ আশা মা। "ভাসা গো । ৮ জাফর মা। বুটী- জুত' মা, গোঁ। ১ “বনকাটে পাতিয়া' মা, গো। ১১ গসুনিয়া কুঠারের নাদ মনে গনি বিষাদ ধায় বাঘা কাঁরয়া কারণ” ম৷। ৃ এই পদে গোহাটী পুথতে (৫৫ থ-৫৬ ক) ২১৫ জন বেরুনিয়ার নামের এই ফর্দ আছে ঃ কালু মালু কেতু মায় কালিয়া খড়কু দয়া কোন৷ বোন। শ্রীদাম সুদাম আগর নাগর চুলা পছ৷ কুড়্যা দুখু দলী সনাতন রঘু বাঞ্চারাম । উদা সুদা বসা জন্তি শিব জিব ছবি কান্ত নাকার কেকার গেনকাটা। রাম সাম জয় হুচ৷ [সমু বিজু বলী বোচ। ভগল মণল খোলাকুটা । কাঙ্গালু কাকরু গুনা কৃ কাল নন্দ ধন। মোহন ময়ালু লখা। ছুয়া [বদেস্যা বহুল কালা নন্দি বন্দি গন্দ ভোল৷ মনস৷ মাকুরু দোপারিয়া। রামহার বিশ্বনাথ গঙ্গারাম বৈদানাথ জাদু মধু বাসু কাসু সাধু আকাল কালুরা দেবু কিনা দিনা বানা ছাবু তোরত তিলক তিতা রাধু। গুদ 'ছিরা সত্যবান কালি হাল 'সিতারাম জগাই মাদাই 'বিস৷ বাস্যা অনত জগত ধান মদন সামার্‌ মনি চেঙ্গ বেঙ্গ বানি কৃপা কাসা৷ । ৩২৮" ১১৩ ১১৪ ১১৫ গয়ায় ॥ কামাল জামাল গুলু সরিফ জারফ ঝুলু সাদুল্পা বাদুল্লা কালে মাদারি গোলামী আলে ফাঁবদ জাঁরদ হাব মামুদ মনযুব নাবি ঈযার্‌ পিয়ার্‌ হাবু ঈমান্দি মরান্দি কাবু উজাল সুজাল সফাঁ করমা খুজালু নফা আলু মালু জালু নাটু দিদার দালল ভেটু হাববুল্ল। ইমামবকৃস ফুলমামুদ ফকীরবকৃস মৈন্যা রিত। রৈফ। হবু বুদ্যা৷ সেব্‌ নরু করু [সয়ালু পিয়ালু কৈপা৷ আমাধু দোমামু হেপ। ফকীর মামুদ গোলামুদ্দ গলাম গতুষ ফকীরউদ্দি রছুল মাকুল গাঁজ কাসীম হাসীম হাঁজ জুড়ন তুফানি খেলু হবিব জঞ্জালু বিল বেরুনিয়। একে একে সবাকার নাম লিখে [বরের আদেশ মাথে কুঠার হইয়ে হাথে 'হোর' মা। ২ 'লাঙগুড়। মা। “কারয়ে' মা। * 'উকটিয়া কোড়ে ঝাড়ে উঠিল পর্বতপাড়ে মা ১ একঘায়ে ভাঁঙ্গল বাঘার মাথার খুঁল' আ। চন্ডীমঙ্গল হাসন হুসেন কাসী মালী সাকালু মোমন জাফর আঁলি। কাদের কুতুব খয়েনুলা ক্যামুদ্দ বজার্দ সয়েফুলল। ৷ আসক খালল"হেমাতুলা বকযু নেক আতাউল্লা। ৷ মছরফ মোকীম নেওআজ আলি গোৌঁস পাজু নাটক! মামুদালি। রহমু রহমত ফরমান হারঢ়া হটুআ৷ হরমান। হিঙ্গন 'ঝিঙ্গন জলবিল রমূজান কোরবান আবিরিল। মাহিনা দিলেক জনে জনে বন কাটে হরাষত-মনে | এই পদটির বহু পাঠভেদ পাওয়া যায়, বশে কাঁরয়৷ বৃক্ষলতার নামাবলীতে ৷ অন্য রূপান্তরও আছে। ব্গবাসী (তৃতীয়) পদটির এই পাঠ পাই মহাবীর হাতে গণ্তী বফরয়ে কানন বন কাটে শতশত বেরুনয়া জন । শর নল খাগড়া ইকাঁড় টাঙগ ওকড়া যুতুরা আর কাটি আগাঙ্গ । আকড় কাটিল আর নেহালি সেহালি কাটিল বোকন৷ ঝাউ আর আদাড়মাল। আটি-শর পাটি-শর কালিকে-নাট। ভাদুল্যা আনুলা৷ চোরপালিতার কাটা। গর্যাখান বৃহতী কাটিল সোমরা্জী পাটারয়। পুরুনিয়া কাটে ভযদ্বাজী । ঘোড়াসন্জ পাতাঁসিজ্জ কাটে সবজয়। ঝোপ ঝাটি কাটিলেক আর কাল্যানুয়। । কেতডী ধাতকী কাটিলেক বামনহাটি কুঁলিত। চালতা আর কাটল বরাটি। সংঞ্করণে এই মন্তব্য আছে, “এই [িষয়টী কোন কোন পুথতে একাবল্ী ছন্দে লাখত আছে। নীলমণি সংস্করণে (পৃ ৪৮) শেয়াকুল ডোমকুল কাটে শিঙ্গাবেত কোদাল-কুড়ালে কাটি কাঁরলেক ক্ষেত । দেবধান গড়গড় ময়নার কাটা শালপান কাটে আর চাকুলিয়৷ জটা । একাবলী ॥ বঙূচি সেহড়। কাটে আতাও পড়াঁশি পুণ্যাশি কাটে তুরাগ । পুঞাতি বি্ছাতি কাটে অসন ডুমুর পাওর৷ বন-বেগুন। চাকুন্দা৷ কাসুন্দ্য। নাঁসন্দা ভেলা গোরক্ষচাকল্যা গিয়। শ্যামলা । চিন্টা বুবীজ কাটে মান্দারী কাটিল কুকুরছিটা গান্ভারী ৷ পাঠীস্তর ও মন্তব্য আমড়া বহেড়া হারতকী ধব শুকান কাননে মেটায় দব। ডেফল কাফল করঞ্জা বন করান্দি সহিন্দী কাটে অসন। এরও মামাঁড় কাটে বাবল৷ তেউীঁড় দ্ডকা কাটে আমল৷ | বসন ছাতিম কাটিল নিম পারুলি দেবদারু মকমশীশম । মুগর তরল। ভালুক৷ বাশ মূল উপাঁড়য়। কারল নাশ । [মাল শিনিত৷ কাটে ধানচা কুসুম কাটিল নাট বনাবচা । শিরীষ কর্কট বনচালিত৷ গড়্যা কুলকুঁচ কুচুই লতা । পলাশ পাকড়ি খাঁদর বন মহাকাল্য খড়া করে নিধন । ভাটি সাটি আর কাটে আর্দাড় লাঙ্গলিয়৷ ডহু কাটিল বাঁড়। ১ “সরল' মা। ২ 'ইকড়া” মা। কুড়িয়।” মা। * “বরাটী” মা। * “দেধান গড়গড় ময়না” মা। মা। ১১ পচা মা। ১২ বিহেড়। হরিড়া ধর' ম।। হরিড়। বহেড়। রাখাল-সস। ফুলহীন দেখিয়া কাটে বাকসন৷ কোকিলাক্ষের কার্টিল কানন । হোগল হেঁতাল চামার ফস। দেবছাট বিরছাট জুগল সোনা ১৪ 'মাহন্দি মা। ১* 'গোক্ষার মামুরি' মা। মাগুরী পাওুরী কাটে শতমূলী ফলহান জাম কাটিল কুালি। রাখে জামরুল দ্রাক্ষ৷ লবঙ্গ “'রাখিল আর কামরঙ্গ । কাটাল কদলী রাখিল গুয়া অশ্বথ রাখিল মূল বান্ধিয়া করুণ কমল ছোলঙ্গ টাব৷ ভুজঙ্গকৈশর রাখিল জবা । শঙ্কর প্জিতে রাখে বিহ্ববন করাবর কুন্দ করিল স্থাপন । টগর তুলসী রাথল রঙ্গন বক শেফালিক। রাখল কাণ্চন। তাল নারিকেল থাকিল রোপা মালতী মল্লিকা রাখিল ঠাপ|। বটতরু রাখে ষণ্ঠীর ধাম মহাতরু রাখে জনাবশ্রাম । মূল বাঞ্ধিবারে আনে থৈকর গাইল মুকুন্দ নামে কাঁববর ॥ “ভাদুল্য। ভারুল্যা” বঙ্গ । “ৃহতি' মা। & “কোদাগ্যে 'জটা' বঙ্গ। * শপড়ির্যা' মা। ১০ 'ভূসপ্ত' ১৩ অতঃপর ম! পুথিতে অতিরিষ্ত সাল পেয়াসাল তমাল অজ্জুন ১৭ ভঙ্থা আ। ১৮ এমুড়া উপড়্যা” ম। ১৯ পঁসমুল "সোনা' মা। ২* 'মাহু পাহুরি' মা। ২১ 'তসর+ মা। ২২ “নৃপাত রঘুনাথ কারল' বঙ্গ । ২২ 'কারিল' আ। ১১৬ ১ 'ধান্রিকা' আ। ১১৭ ১ 'ন। পাতে পিয়নি' মা। ৭ “গোড়া রদা” মা। পঠনীয় । * 'অন্দর' মা। ১১৮ ১ অতঃপর মা পুথিতে আঁতীরন্ত আদেশ কারল ভিম। রচিল প্রথম সিম পারক্ষ৷ খুলেন হনুমান ট, ন.-৮৪৭ ৪ চতুর্শালা” আ। 'সাতানৈ আরভে' করাতে পাথর কাটী প্রাচিরের পারপামী [নিরমিল ঘ্।ারিক৷ সমান ॥ ০৩, চণীমঙগল [ পরিক্ষা _ পারখা, খুলেন-থু'ড়েন। ২ 'কাচ' মা। ও 'দ্বারাবীত' মা। ৫ 'মওপ'মা। ৬ ভাতশালা” মা।. * পাঠ “সৈদময়' | *মাপুথি হইতে। * 'রাসাঁপণী” মা। ৯ “কৌসলকলা' মা। ১১ ণবধি চাখে খান বাদি রান্ধে' মা। ১২ 'পুরীদ্ারে' আ। “সংহদ্ধারে' আরা । ১১৯ ১ দ্বর্ণবাস আ। ১২০ ১ 'ঝলিঘট' মা, আরা । ১২১ ১ 'পান দিয়া আ। ২ 'প্রমাণ' আ। ১২২ ১ থিলহক' আ। ২ 'লইয়। করহ খেলা আ। * পুপ্রাতিক' মা। ৪ “চৌষড়েতে' মা। ১২৩ ১ 'কপিঙ্গের জত লোক স্মঙরে জৈমুনি' মা। ২ "নঙম' মা। ১২৪ ৯ 'নগর' আ। ২ “ভৈরবী কর্মনাশ।' আ। ৩ 'দনাই” মা। “বগড়ির খানা' মা। “রত্রানু, মা। * 'বামনের' আ। * 'মাকড়াই' মা । ৮ 'লইআ' আ। ১২৫ ১ 'সুকৃতি' ম৷। ১২৬ ১ "খাটের দাঁড়' আ। ২ 'মাসেতে আ। ৩ ভাডু'আ। & 'অস্থল' আ। মা পুথর অতিরিন্ত পাঠ ঃ সব প্রজাগণ মোল করয়ে বিচাব মসাত কাঁরল রাজ। 'দিয়৷ খাট দাঁড় কলিঙ্গরাজার ঠাঁঞ ন৷ পাব নিস্তার । প্রথম আঘনে চাহি তিন তেহাই কাঁড়। বুলন-মগুল সনে জত গ্রজাগণ তেসান ইনাম ঘর গুজুরাটপুব বিরলে বাঁসয়া৷ সভে করে নিবেদন । তোমাব সকল প্রজা তুমি সে ঠাকুর । এ দেশে বসত না'ঞ চাস নদীকুলে কলিঙ্গ তোঁজয়। সভে করিল প্রয়াণ হাঁজব সকল সস্য বরষার কালে । বুলন-মণ্ুল চলে হইয়৷ প্রধান । ১২৭ ১ পতন'মা। ২ পাট্রায়'মা। ৩ ভাডু'আ। * 'লব পান' মা। ১২৮ ১ গচট্যা ফৌটা' মা। ২ করসান' আ। ৬ আমু বড়ামা। ৪৫ বহিবমা। ৫ প্্রীীআ। * "জামাতা, আ। ৭ স্থান দিবে না লবে কাঁড়' মা। ১২৯ ১ গাঙঠে আ। গাঙ্গুটি (ক ৬১৪১)। পপাওট” আরাও। ২ “কানে কথা' আ। ৩ 'পাঁরশেষে' আ। ৪ মা পুথতে আতীর্ত তোমার পুণ্যের ফলে আমার উদ্যোগ বলে কহ আমি সারদ্ধার আমাকে আরোপি ভার বসাব নগর গুজুরাটে আপনি বাঁসয়৷ থাক খাটে। 'ভেটের' আ। তমাপুথি। "'পরিদুপনেরমা। ৮ মাপুথ। ১৩০. ১ 'মুছলমান' আ। ২ 'আইসেন' আ। ৩ একেক মুদনের' আ। & “ছায়া” মা। 'নেমাজ" মা। ৬ পছালিম!লী' মা। " চন্দ আ। প্ৰন্্' আরাড। ৮ দশরেখা টুপিমা। ৯ পৃ়কার' আ। ১০ 'সাঁঞ কাটার বাড়ি মারে শিরে' আ। ১১ “আপন টবর' মা। ১২ 'অনেক' মা। ১৩ পপুছে' মা। ১৪ সুয়ানি লোহানি পানী” আ। ১৫ “কুড়ানি' মা । ১৬ পবটনি হান' মা। “দাবানি লোহানি আর লোদানি সুরয়ানি চার রামজয় । ১৭ নয়া” মা। ১৮ “কুখুড়া? মা। ১৯ 'জভেই” মা। ২০ দানে আ। ২১ 'তুলিয়া দলজখান' মা। ২২ “কোরান আঘন পড়না আ। ২৭৬ 'মুসলমানে ইহা। নাঁঞ মানা । পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩৩১ ১৩১ ১৩৭ ১৩৩ ১৩৪ ১৩৫ ১০৬ ১৩৭ ১৩৮ ১৩৯ ১৪০ ১৪১ ১ মুগুরি' মা। ২ ধিরাইল' মা। তধপঠার' মা। ॥ কাবারি। আ। দম্বল'মা। * "পটিলয়া। মাগে' মা। * কাত মা। ৮ গগায়ক' মা। ৯ “বয়ান? মা। ১ পরে' আ ২ থণ্ডে্বরী' আ। ৎ “কুলিন্যাল' ম৷ | 'কর্ণপুরি বৈসে' মা। 'বাড়র' আ। ৬ ভারথ' মা। এ “করে মা। ৮ বোচকা'মা। ৯ 'মাসড়া। মা । ১৭ “আয়তন, মা। ১ তুলিয়া মা। ২ জনি চাপকারি' আ। 'গাঁড়। গো । তধারয়া দণ্ডের মা। & খেলে যা। ৫ 'কালে কিন্য। রাখে মা। ৬ মনিকাম করে রস'মা। * 'কক্ষতলে কার পুথি মা। ৮ বুকে ঘা মারিয়া বর্যাদায়' গো । 'আশ। দেয়' পৈয়ালি । “অঙ্গ দায়” আরা । ৯ 'পয়ান। মা। ১ 'সভারে' মা। ২ আকনার' মা। ৩ আওয়াসে' মা। * 'রাজ৷ কৈল মঙ্গল, মা। ৯ “সদ'আ। ২ ডিপার্জয়ে' মা। ৩ “সরিসা'মা। কাটার মা। 'কোদালি' মা। ৬ পাজয়েখ আ। " বুনে মা। ৮ 'মালাকার' মা। ৯ 'বুরুজ' আ। ১* 'অনোচিত না করে কখন'মা। ১৯ 'আগুরি' মা। ১২ 'বড় হা । 'ঘড়া হাঁড়' গৌ। 'ছুনালু” ম।। ১ দুই জাতি বৈসে দাস মা।. ৭ 'পাতেমা। ও আদর্শ পৃথিতে নাই । মাপুথি হইতে । * 'মাছিয়া। বঙগ। মা-পুথতে 'মাচিয়া'ও পড়া যায়। . ৫ 'খই'মা। * 'শকট কানে বঙ্গ। " 'রাজভাটে' মা। ৮ কোর ভরদ্বাজী' বঙ্গ। ৯ 'পুরস্ত'মা। ১৭ 'জায়াজীবী'মা। ১১ 'কোয়লা' আ। ১২ 'টোক। ছাতা” আ। জি ১ বীশে বান্ধে মালা, আ। ২ আতীরন্ত পাঠ পৈয়ালি পুথিতে মধ্যখানে হাট-ঘরা বাঁর বান্ধাইল নানাজাতি কাড়৷ ঢোল বাজতে লাগিল। ১ 'পায়' আ। ২ 'পলাকড়া' ম৷। ৩ লয় ঠেটা, মা। ৪ 'চালুকী' মা। ধনবান জত বৈসে' মা। ৬ 'নেঠা' মা। চলিতে মা। ৮ বিন আ। ১ লুট? মা। ২ 'আপনি সে রক্ষা কাঁর' মা। ও'লহ'মা। 'মগ্লর' আ। বলাতে মা। ৬ আতীরিস্ত পাঠ, ম। পুথি হইতে । * 'দেস ছাড়া দুর বাল বাঁলল বচন মা। ৮ ণনজ আলয়েতে। মা। 'তবে সে কারব বাস মা । ১০ “মাগুর গো । 'মাণ্থের' মা। ১১ 'কেসাইয়ের, মা। ১২ পতলক পরি' আ। ১৩ 'হরি স্ঙীরয়া সে মা। ১৪ চাস আ। 'পাঁচশ' বঙ্গ। ১ "দ্বারে মাহৃভ' আ। ৭ “সোধিতে আইলাঙ নুন' মা। ১ অতঃপর আতিরিক্ত (মা, পৈয়ালি) অকারণে খাও বেটা কোটালি মাহিন্য মাগুকে শুনাহ 'সিংহ। দগড়ি বাজনা । ২ অতঃপর সংযোজনীয় মা-পুথির পাঠ প্রভাতে কোটাল নৃপাঁতির সমাদেশে লোকমুখে শুনি গিবপরায়ণ বাঁর বিচার করয়ে তথা জাবে কোন বেশে । খা ঢাল ছাড় বেশ ধারিল যোগীর। চণীমঙ্ল ৩৩২ ও এমঙ্কর' আ। ॥ আতারন্ত পাঠ মা-পৃথিতে 'ভিক্ষাছলে ফিরে চেলা নগরে নগর অনুচর হয়্যা কেহ ফিরে ঘরে ঘর । “চন্তে নিশীগ্বর, আ। ৬ 'উড়য়ে' মা। ১৪২ আ-পুথি অনুসারে এই পদে “বৃহস্পতিবার নিশি সমাপ্ত” । ১ “কার মা। ২ দ্দ্রঢ়পদ? মা। ১৪৩ আদর্শ পুথতে নাই। ১ “কাপড় মা ২ 'মালত্ব* আ। ৩ “তানে' (বা “তালে? ) মা। ১৪৪ ১ কাল কাল বাঁল শাজে' আ। ২ খর ছুরি' মা। ১৪৫ ১ 'দুবরাজ' মা। ২ এই দুই ছন্রের পাঠাস্তর মা-পুথতে ডানি দিগে ধাইল কোটাল ভীমমল্ল রাজার জামাত৷ সাজে নাম বাঁরসন্ব | * 'রণঝণটা? মা। ৪ আতীরন্ত মা-পুথিতে। ১৪৬ ১ 'পাতিয়া' মা। ২ “কারবর ঘণ্টা শুনি উতকষ্ঠা হদযে? মা। ৩ 'ফরিকাল ধানকি' মা। ১৪৭ গো-পুথতে পদটির মৃলাবান্‌ রূপান্তর পাই । রণে সাজে মহাবাঁর বিষম সমবে ধাঁর কেহ লষে চাপ ঢাল ঢালে বান্ধে উরমাল চরে দেয়ে নগরে ঘোষণা পায়ে বাজে সোনার নপুর সাজ সাজ ডাক পড়ে রাহৃত মাহৃত লড়ে কোন পাকী সিজ্ঘা বায়ে রাঙ্গ। ধুলি মাথে গায়ে উত্তয়োল ব্যাল্লিষ বাজন। । নরসিংহ! পাকার ঠাকুর । বার কাছে পাঁরধান কোপে হৈষে কম্পমান ধাউীড়িয়। পাকী রাড় জোড়ে খর চেওয়াড় কনকটোপর শোভে শিরে বাসে বান্ধে হাড়িয় চামর যুদ্ধের জানিয়ে মর্ম গায়ে আরোপিল চর্ম রণমাঝে দেয়ে হানা বাহুমূলে বান্ধে বানা দুই দগে কাছে জমধরে । রণমাঝে না হয় কাতর। বীবের আদেশ পায় লক্ষে লক্ষে সেনা ধায় মহামিশ্র জগল্লাথ হৃদয়মিশ্রের তাত কর্ণাল ভেউর রণে বাজে কাবিচন্দ্র হদয়নন্দন [সাঁনিএ কৈল কেশ সকলে উত্তম বেশ তাহার অনুজ ভাই চাঁওকা-আদেশ পাই শতে শতে মহাবাঁর জুঝে। বিরাঁচল শ্রীকবিকল্কণ ॥ ১৫৩ ॥ ১৪৮ ১ 'সৈদ উমর' মা। ২ 'রণাগল ( ব। 'রণাগন? ) খা ম। ও “এর সুন্য। জার বা' মা । ১৪৯ ১ উপরের চার ছন্র আদর্শ পুথিতে নাই । * 'রাজদল [ নাহি ] রাখে বাগ এড়ে ঝণকে ঝণকে' মা। ১ “আগুলিয়া' মা । পাঠান্তর ও মন্তব্য ৩ 'অর্ধপথে' মা । উত্তর দুয়ারে বল বাজায় 'ডাগ্ুম বীর তাঁথ জুবে জেন কুরুরণে ভীম । তাঁড়পন্ত খা উসারিল বীরবর তুরঙ্গ সাহত পড়ে পান্ন হারহর । আসত নৃপাঁত তবে দিতাম উত্তর তোচ্ছার বেটার সনে হইলাঙ সৌসর । সেবকের যোগ্য নয় তোর নৃপবব বাঙন হইয়৷ বেট৷ ধর সুধাকর । আড়াআড়ি গালাগালি দুই বীর রুসে দুই বারে রণ জেন শার্দূল মহিষে । মাণহেতু রণ জেন কেশরী প্রসেনে মাংসহেতু যুদ্ধ জেন সয়চানে সয়চানে । বীরের দাবড়ে পড়ে নৃপতির দল গজবর চাপানে জেমন ভাঙ্গে নল। উত্তর দুয়ারে জয়ী হয়্যা মহাবীর পূর্বের দুয়ারে চলে সমরসুধীর । অভয়ার চরণে ইতি ॥ ১৪ ॥ ১৪৬ ॥ সঘনে ডাকয়ে মার মার বারের সংহতি দান। মোলয়া যোগিনীগণে ক্রোধজুত ব্যাধের নন্দন ধায় বার অনুপাঁদ বেগবাতে কাপে তরুগণ। [তিন দুয়ারের ঘড় ॥ নুটে' (বা 'লুটে') আ। অতঃপর মা-পুথিতে আতীরন্ত এই দুইটি পদ আছে 'ক্ষাতি কল্পে পদ-ঘায় রাজবলে দেই হান। জুঝে কোটালের সনে [ ঘামে | অঙ্গে বহে নদী পুলকে পারত তনু পোঁলয়৷ লোফয়ে ধনু ধুলা মাথে গোৌফে দেই তোলা দেই ধনুশ-টঙ্কার ছাড়ে বীর হুষ্কার শরীরে মাখয়ে রাঙ্গা ধুলা প্রবোশ বিপক্ষ-বাড়ে খরসান বাণ এড়ে বিহ্ধিয়া করয়ে জরজর তুরঙ্গ মাতঙ্গ রাথ যুদ্ধ করে সেনাপতি নিমিষেকে বধে বারবর । রাজার কোটাল বাঁর ভীমরথ মহাবাঁর [ অগণ্য ] সেনার আঁধকারী ঘন ডাকে হান হান সঘনে কৃপাণ বাণ মারে সভে বারের উপার। বজ্র সমান কায় অস্ত্র নাহা ফুটে গায় চণ্ডীর তনয় মহাশয় অসধ্থ্য বিপক্ষ বলে কাটে সেনা হইয়া নির্ভয় । বার ধরে আস] ঢাল জেন কালাস্তক কাল আথালি পাথালি জোড়ে কাট রাউত মাহৃত পড়ে জেন রপ্তাবন ঝড়ে শেষ কৈল নৃপতির ঠাট। জেমন জুথপজুথ সংহারে কেশার-সুত গজ জেন গঙ্কজকাননে কালকেতু সেইরূপ জত পাঠাইল ডভূপ কাঁরল সকল সেনাগণে সুখী বাঁরে কৃপাময়ী চলে বার দুয়ার দক্ষিণে দাক্ষণ দুয়ারে জড় শ্্রীকাবকঙ্কণ রস ভনে ॥ ১৫ ॥ ১৪৭ ॥ রণজয় কয়িব ৩ “জোবে' মা। ১৫০ ১ “বিপক্ষ মারিব ২ “জয়ঢাক' মা। ১৫১ ১ পাঠ “তুরঙগমগণ' । সহিন্যে জুঁড়ির কাট" মা । ২ শরপুস্তক সাহত চলে পূরবদুরারে, *. জয়ঢাক বাদা বাজে বীরের নগরে ।' আ। প্রবেশিয়৷ একা দলে পৃৰের দুয়ারে জয়ী ৩৩৩ ৩৩৪ ১৫২ ১৫৩ ৯৫৪ ১৫৫ ১৫৭ ১৫৮ ১৫৯ ১৬০ ১৬১ ১৬২ ১৬৩ ১৬৫ ১৬৬ ১৬৮ ১৭০ ১৭৩ ১৭৪ ১৭৫ ১৭৬ ১৮০ ১৮১ ১৮২ ১৮৫ ১৮৬ ৯৮৭ চন্ডীমঙ্গল এই পদের শেষে আ-পুথিতে আছে “নিশা পালা সাঙ্গ' । আরা পুথতেও এই পৰে “বৃহস্পাঁতবারের নিশাপালা সান্ধ'। ১ পরিবার মৈল' মা। * আতারন্ত ম-পথতে | ও রয় মা। ১ পাঠ 'আশ' |. ২ শীবষাণ, আ। . ৩ অর্থাধ ধাষ্যমূক। “হযমুথে মা। * আড়রা' মা। ১ গননে' আ। "গহন মা। ২ 'পুলকে পটল" মা। ১ নেনু' মা। ২ বাথ আ। ১ 'বেঁড়িলেক মহাবীরের' আ। ২ “গজের মা। ৩ ধাঁরতে জে জন' আ। 'মুঠকির ঘায়' মা। ৫ 'বলে' আ। 'চাহি পৃজার প্রচার মা। ২ হাথ-বাগা' মা। ১ 'ষামিরে মা। ২ তোমার আ। বারো ছন্রের পাঠাস্তর লক্ষণীয় ঃ 'নাঁলিয়। গনিয়া" আরাি। 'গজেতে নাদদিয়া' পৈয়াল। 'নাগাড়া ভাড়িয়ে' গৌঁ। ১ তারা আ। ২ পুন মা। ১ বাধ আ। ২ পাঠ 'শনবস | . ১ কাহার মা। হ "শুন" মা। “তার আজ্ঞ৷ পায়্। আম কাটায়্যাছি' মা। ৬ 'দুর্গা। | * 'লভ্য-অপচয়-ভাঁব দেবী মাহেশ্বরী” মা। ৮ 'আনিল মাহুতি' মা। ১ একমুঁখ ঘরখানে' মা). ২ 'শুনামা। ৩ ওসরা নিবাসে দেহ" মা। 'হাথবাঘা+ মা । 'হাতকাড়' গো । “সাত মা। এই 'চৌতিসা' পদটি মা-পুথিতে আছে সধাক্ষপ্ত-আকারে । ১ 'কপালিনী” আ। ২ 'ঘোষণভাসনা' মা। ৩ পাঠ গৌ-পুথির । 'ডাখিনি ডাখান-মাত। ডমমুবাদিনী' আ। & 'ডাঙ্গাতি আ। দুতি' আ। ৬ 'দরকরা দরহরা, আ। * ধারণা ধুতি গৌঁ। ৮ ধুতিধরের' আ। * ধনধনিয়া ভাল মা গ্নো' গো । . ১০ প্রকৃতিনাশিনী” আ। ৯১ ফেকাতঁও মা। ১২ 'কুপামই রঘুনাথ দেবে কর দয়া” মা] । ৯ শবরচয়ে শ্রীকবিকল্কণ' আ। ১ /কেহ লাগ পায়য। মোরে কস্য। মারে বাড়' মা। ১ “অনুবার্জ আ। ১ 'গুনি' আ। /৪ ১ 'বুড়' আ। ১ নাক মোচলায় ? “নাক সুণ্ডে কস্যা তার উপাড়য়ে মা। ২ ঠিক নাবড় জত কান' মা। ১ "রাম আ। ২ শীবহন্বল? আ।। ১ 'আগুবাড়ি' মা । ১ 'টানাল্য' মা। ২ 'কথোবার' মা। ও ব্রিতের' মা। 'তরল'মা। ২ পাঠগো। পঁপনাকী ঠাক আ। ও পচুটিমা। ৪ 'তুলাগুটি? ম। ১ 'লোহনা' সৌ। ২ 'করন্দায়' ম। ১ ফুল' হইবে। ১ 'মআই+ মা। পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩৩৫ ১৮৮ 'সুনি' আ। ২ মহাধনুধর-বর মা। ১৯০ সো-পুথিতে পায়রার তালিক৷ দীর্ঘতব এবং উদ্ধৃতির যোগ্য। তুঁড়িমারা পাকসাকা সেতা নেত৷ নঅনসুক৷ বাকামুখা মনসুখা বসন্ত ধবলমুখ। করট তামাট সুলক্ষণ কিনা মুখা বিনোদ মর্দন সৌজ মখরজ গোল। [সিখারআ ঘনবোল। পাগল পাঙস্যা জা অগ্রনি আমারি সআ। সাউন ষুল।১ সুভাসন। ঠাদ। মুরদা গগনমোহন।। পাতাস্যা পবন* হাস নাট খাটা বড়া ডাসা থর্বছটা রণভঙ্গ দিঘনখ! ডউড়ন্গ জাগসিন্ধুআ৩ রণজয়। জঙ্গবলা কোকিল! কওডবোলা নিলঙ্গ মুদামুখ।ঃ ঘিরিনি* দিঘলমুখা সালিকা দোসাল খড় আভঙ্গ। পাবনা মুড়া। মেনিমুখা রাঙ্গা নেউীলিয়।৬ । পাটল বিউল” রজিলাল*। সিঙ্গা বাগান ১০ রণজিত। কয়রা কপালাচিতা মখা১১ মাট্য। পাওস্যা পাখর চোউরা ভোঙর৷ মেঘ সাবঙ্গ পবনবেগ। তুরকি মিসাই হারতোরা। পাথার পাঙীস টঙ্গি হাঁস [ ডখাঁস] বুঁড় রাঙ্গ ১২ নানাবর্ণে লইয়া পাআঁর করিয়া চণ্ডীর ধান শ্রীকাবকঙ্কণ গান রঘুনাথ নৃপাঁতকেশরা ॥ ২০৮ ॥ [ অনান্র পাঠাস্তর লক্ষণীয় . ১ “সঙরা সুবলা" |. ২ “পবনা বাতাস্যা' |. ৩ 'জাগ সিন্দরয়া। কিল্ান্যা কুমুদসুখা” । পঁদয়ান্যা' (বা পদয়াল্যা)। ৬ দেউলিয়া" । ৭ “আভাঙ্গ পবননেড়” । ৮ "পালা বিটলা!। * 'কষ্ঠরোলা'. ১০ পসংহা বাঘা” |. ১১ পসন্ধ'। ১২ “সাঙাল বিমাঁল ধলি ধাঁস চান্দা উসাবালি | ] ১৯১ ১ জনাই” মা। ১৯২ ১ "মাংস মা। 'মাংষের সো। ১৯৩ ১ পনজ বাসে' আ। ১৯৪ ১ হে”আ। ২ 'অবাহতা" মা। ১৯৫ ১ চম্পাই' মা। ২ পপুজ। দন্দি' মা। ধদক্ষ্যাপথে শূন্য তার ধাম' আ। অতঃপর আতীঁরন্ত আ পাথতে দানে বলি কন সম উচ্চ আঁভলাষ নাটক নাটিক৷ জানে কাব; আভলাষ। ১৯৬ ১ 'জ্ঞাত' আ। ম৷ পুথিতে পদটির পাঠাস্তর জনার্দন বলে সুন সুন সদাকর দেব দ্বিজ গুরু জ্ঞাত সেবাতে তংপর ধনপাঁত তোমার কন্যার জোগ্য বর। পাত জেন প্রধান জানেন নৃপবর । বাকের প্রধান বিমল কুলে শীলে কাব্যশাস্ত্র নাটকাদ জানয়ে সমস্ত দর্যারসি কুলে ঘাটি নাঞ এক তিলে । যত্ন কার কৈল তারে করহ পাত্রোস্ত। রূপে জেন কামদেব অশ্থিনীকুমার ঘটকের বোলে লক্ষপতি সদাগর দানে হরিঞ্চদ্দ্র বলি কর্ণ অবতার। সায় দিল সর্বথা কারব সেই বর। ৩৩৬ চণ্ডীমঙ্গল ১৯৮ ১.মা পুথিতে অতঃপর এই মন্তব্য আছে “সবের বিবাহের কালে জেইমত সেইমত এখানে গাইবে" (১০২ খ)। ১৯৯ ১ মা পুথতে অতঃপর এই মন্তব্য আছে “সিবের বিবাহের সেইমত পাঁতীনন্দা গাইবে" । তাহার পর ভাঁনত ছন দুইটি দিয়া পদ শেষ হইয়াছে । ২০০ ১ ফন্দেআ। ২ “পোড়া মা। ২০১ ২ণফকামা। ও গুখামা। 5 বিহোমা। * দদুবলা' মা। ২০৩ ১ “তাপ আ। ২ ধন্য আ। ৩ নাশ খান” আ। ২০৪ ১ 'সাত'মা। ৩ বৈশাখ মা। ৪ 'আর'মা। ২০৫ + “কথুরায়' আ। ২০৬ ১ প্রবসে' আ। ২০৭ ১ “কোমল পল্লবশাখা উপরে বসাইল্য শিখ! শান্ত নব পাঁতল আধান' আ। ২ ধারা” আ। ও 'পনকী” আ। * “হরপ্রাতা আ। ২০৮ ১ 'করিব সাধুর' আ। ২০৯ ১ “লোহত ভাঙ্গে আ। ২ 'আবয়ার' আ। ২১২ ১ 'রজান' আ। ২ 'স্বহাস আ। ও পপট্ুহআ। পচটা'মা। ৬ বটকাল, ম। ২১৩ ১ “ভুজ্জিত' আ। ২ “ঝাড়ের, আ। ৩ 'লোভেতে' আ। ৪ “কুরবৌক' আ। “টেসকনা' মা । াসকোনা' সো। ৬ 'রাঙ্গচুয়া' ম৷ | 'রাঙগটুনি? সে।। ৭ “বৃক্ষে ডালে' আ। ৮ 'ভারত' আ। ৯ “সামুখাল' সে৷। ১* “কাদ। খোঁচা” ম। ১১ 'পানকৌড় বধে' মা, সে।। মা, সো, আরা ইত্যাদি পুথিি অনুসারে সারী জালে পাঁড়য়াছিল। তদনুসারে এই সব পুথিতে এক ঝা তদাধিক আঁতারন্ত পদ আছে। মা ও সো গুথর পাঠ দৈবকর্মের ফলে সারিক৷ পড়িল জালে রাঁচয়। ন্লিপাঁদ ছন্দ গান কবি শ্রীমুকুন্দ ধরণি লোটায়া৷ সুক কান্দে মনোহর পাঁচালি প্রবন্ধে ॥ ৩০ ॥ তাহার পর এই আতরিন্ত পদ, ম। পুথিতে সার বলে সুন সুয়। আমার বচন সারর বরহে সুয়া পড়ে ব্যাংজালে এই দুষ্ট ব্যাধ পাছে বধয়ে জীবন । দুইজন বান্দ হৈল দুরাদৃষ্ট-ফলে । দুর কর গ্রাণনাথ অ[মার মমতা দুইজন বান্দি হয়া করেন রোদন বিবাহ কারহ তুমি অপর বাঁনত৷। হেন কালে ব্যাধ আস দিল দরশন । জালদাঁড় দিয় কৈল দুহারে বন্ধন হেন কালে সুয়। তারে বাঁলছে বচন । অভয়ার চরণে ইীতি ॥ ৩১ ॥ ২০৭ ॥ স। পুথিন্তে ঃ জালেতে গাঁড়আ৷ সারি কান্দএ করুণা করি ভালেতে বসিআ৷ সুক হদঞ ভাবিআ৷ দুখ সুত৷ কান্দে সার-মুখ চাঞা কালে সুআ বিষাদ ভাবিঞা। শাঠান্তর ও মন্তব্য আস্য পরিয়ে মোর পাসে উড়া। জাই নিজ বাসে তুআ৷ বিনে ভুবন আন্ধার তুমি পাঁড়লে ব্যাধজালে এই মোর ছিল ভালে কে মোরে কাঁরব নিস্তার । এবে বাঁধ হল্য বাম ন৷ গাঁণলে পাঁরণাম লুব্ধ-তক্ষে হইলে বিভোলা তোমার প্রেমের ছান্দে পাঁড়ব অঙ্ষুটি-ফান্দে ব্রেথা আর বাঁহআ। একল৷। তে!মা বিনে প্রিয়ে মোর সকল হইল ঘোর দিবসে ধামিনী হৈল প্রায় আস্য প্রয়ে এ বোরত দুহে হোঞ্ে হরাঁসিত উড জাই নিজ নিজালয় । জ্ঞাত বন্ধুজন ছাড়ি [বদেশে আইনু উড় ইথে বিধি পাঁতিল বিবাদ দারুণ দৈবের গতি তুমি সে পাঁড়লে তাথ আমার জীবনে নাহ সাদ। তুম প্রিয়ে জাবে জথা আম সে জাইব তথ। কর প্রিয়ে আমারে সংহতি তুমি মোর প্রাণাপ্রয়ে তে৷ বিনু না ধার হিএ অঅ ব্যাধ পাড়িল দুর্গাতি। এই সে অজয়-কুলে ছিলাঙ দোহে কুতৃহলে মাতা পিত৷ সব তেআগিঞ্া তুমি তাঅ হলে বান্দ আমি অনুক্ষণ কান্দি .এত বাল পড়ে মুরাছিঞা । সুআর অনিত দেখি কহে সারি সুধামুখি সুন নাথ আমার ভারাথ রাঁচঞ ন্িপাঁদ ছন্দ গান কাঁব শ্রীমুকুন্দ বদনেতে জার সরম্বতী ॥ সুকের কুন্দন সুনি সারি কিছু কঅ . প্রাণ লঞ্জে জাহ তুমি সুন মহাসয় । ৫ জে সি আমার লাগআ কেন হারাবে পবান রী লাগি পুরুষ মরে এ নহে বিধান। থগুকপালি আমি তুমি সুপুরুষ শ্রা্ধীপও দান 'দিহ ধার 'তল কুশ। তোম। হেন গ্বামি মোর হএ জম্মে জম্মে আমি সে বণ্িত হৈলাম জেব৷ ছিল কর্মে । [জঞ৷ থাক প্রাণনাথ কাননভিতরে আম হেন কত নারী মিলিব তোমারে | সন্তরে কাহ নাথ তোঁজ এই বন এই দুষ্ট ব্যাধ পাছে বধএ জীবন। দূর কর প্রাণনাথ আমার মমত। জতনে বিবাহ কর অপর বনিতা । তুমি নাথ থাকিলে পুন হব গ্রিহচার আমি জয়্যা। থাকিলে প্রভু কিবা হত্য আর। কি মোর পুণোর ভাগ্য তুমি আছ জিত সুন্দরী দেখিআ নাথ পুন কর বিআ। নিজ দেশে গিআ৷ প্রভু কহিবে বারত। জতনে কহিবে মোর জথা মাত৷ পিতা । বিধাতা কাঁরল মোরে অকালমরণ দুরাদৃষ্টফল কভু না জাঅ খণ্ডন । এত বাল জালে সারি বিষাদ ভাবিতী। কান্দিতে লাগল সারি মনস্তাপ পাঞ্া । গৃপ্তবেশে আজি আছিলাঙ বহু কালে জায়ার বিরহে সুক পড়ে ব্যাধজজালে | দুই জনে বান্দ হৈল৷ পৃবাদৃষ্ট ফলে পরস্পর দুইজনে দুখ হইঞা বলে । হেনকালে ব্যাধ আসি দিল দরশন জালটানা দিআ৷ কৈল সভার বন্ধন । এমন সময়ে সুআ বলএ বচন সচকিত হঞা সুনে আক্ষটিনন্দন | অভয়ার চরণেতি ॥ ২১৪ ৯ বুঝিয়। প্রথম যাম” আ। ৭ "প্রভূ আ। ১৫ ১ 'বৈফবজনের সঙ্গে নিন্তারেতে রব' মা । “বৈফবজনার সঙ্গ নিস্তারের বীজ' সো । ১৬ “তোমা আ। ৃ * ম.-৪৩ চগ্তীমঙগল গে * ৫ র ২১৭ প্রহেলিকার সংখ্যা সব পুথিতে ও ছাপা বইয়ে সমান নয় । আদর্শ-পুথিতে ১৩, মা-পুথতে ১৩, আরা পুথিতে ১৪, সো-পুথতে ২৩, গো-পথতে ২০, পৈয়ালি পুথিতে ১২, রামজয় সংগ্করণে ১৫, নীলমাণি সংস্করণে ১৫, বঙ্গবাসী সংস্করণে ২১। মা, সো৷ ও পৈয়ালি পৃথিতে অতারন্ত একটি অথবা দুইটি সংস্কৃত প্রহেলিকা সর্বাগ্রে আছে। এগুলির পাঠ শুদ্ধ কাবা উদ্ধত করিতোহ । সো পুথ উতভো পাদৌ কটী নাস্ত দ্বিবাহ্‌ ! কর] বর্জতঃ। ্স্ধোপবি শিরো নান্তি যো জানাতি স] পর্ডিতঃ॥ মা পুথি একজঙ্ঘীঁ কটী নাস্ত দো বাহু করপাঁড়তঃ। শু নাস্ত মুণ্ডং বিস্ব। যে৷ জানাতি স] পাওতঃ ॥ ১ ॥ উভো! পাদৌ কী নান্ত ঘ্বো বাহু করবর্জিতঃ স্বন্ধোপার শিরে। নাস্ত যো জানাঁত স] পাঁওতঃ ॥২॥ পৈয়ালি পুথি উভো পাদৌ কটী নাস্তি দ্বৌ বাহ্‌ কববর্জিতঃ | স্বন্ধোপরি শিরে৷ নাস্ত যো জানাতি স পাতঃ ॥ য এবাদৌ স এবান্তে মধ্যে ৬বাতি মধ্যমঃ | অন্রার্থ। যেন বুধ্স্তে তস্মৈ তাপ দাঁয়তে ॥ আ-পুথির হেঁয়ালিগুলি প্রায় সব পুথিতেই আছে। তৃতীয়টি পাইয়াছি শুধু পৈয়ালি পুথিতে। অফ্টম প্রহোলকাটির সংস্কৃত রূপ পাওয়া যায় আনন্দধরের এবং কুশললাভের “মাধবানল-কথা*য়, পর্বতাগ্নে রথে যাতি ভূমৌ তিষ্ঠতি সারথিঃ । চলতে বায়ুবেগেন পদমেকং ন গচ্ছতি ॥ মজমুদার সম্পাদিত, গায়কবাড় ওরয়েপ্টান সিরিজে প্রকাশিত (১৯৪২) গ্রন্থ দ্রষ্টব্য গো ও আরা পথ হইতে আতীরন্ত কয়েকটি গ্রহে লিকা উদ্ধৃত কাঁরতোঁছ। জম্ম হৈতে গাছ বায় রুধির ভক্ষণ, বিষম হেঞালি ইহা বুঝে কোন জন । রন্ত-মাংসে জন্ম নয় দুই সহোদর, জীবজন্তু নহে সেই রাজার চাকর ॥ আরাও ১২, গো ২০॥ নাঁড়লে ন৷ নড়ে সেই ডাকে বপরীত হেঞালি প্রবন্ধে পাণ্তত দেহ চিত ॥ আরা ১৩। ধরিতে পতঙ্গ নহে পরতের প্রায়, ব্ান্্ ভল্লুক নহে পাঁথক ডরায় । জলধর নহে সেই বারখয়ে পানি, শ্রীকীবকল্ঝণ গান অপূর্ব কাহিনী ॥ আরাও ১৪। একবর্ণ নহে সে অনেক বর্ণ কায় প্রবল জীবন সেই ন৷ ধরে জীবন আপনে বুঝিতে নারে পরেরে বুঝায় । ইয়ালি প্রবন্ধে কহে শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ গো ১২॥ শ্রীকীবকঙ্কণ গায়ে হে'য়ালি রাঁচত মকরেতে জম্ম তার মকরেতে স্থিতি বারো মাস ব্রিস দিন রঙ্ধনে প্তত ॥ গো ১১॥ মংসের উদরে সোহ বাড়ে নাত নিতি। একঘরে জম্ম তার দুই সহোদর ভেড়ায় বদলে তারে উভারে প্রচুর একনাম ধরে সেই দুই কলেবর। প্রীকবিকষ্বণ ভনে হিয্লালি মধুর ॥ গো ১৯ | পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩৩৯ ২১৮ ২২৪ ত্৫ ত্ত্৬ ২২৭ ২২৮ ২৯ ৩০ ২৩১ ২৩৩ ২৩৪ ২৩৬ ৩৭ ২৩৮ ২৩৯ ২৪০ ২৪১ ২৪২ ২৪৩ ১ প্রহেলিক' আ। ২ “বায়ে আ। ৩ "পৃথিবী পয়াল। এপারে আ। ৫ হয় আ। ৬ ড়াপ' সো। খ'জন'আ। ৮ভযষেআ। শবপাশে আ। ১ দেখ আ। ২ 'দানুন দৈবের দশা আছিল বন্ধন ইন্ছা” আ। ১ 'পাকা' মা।. ৩ 'জঙ্গুরী মা । * "পাচ? মা। ১ প্রাণমুনি। আ। ২ শনশাচার' মা । ৩ মনে আ। 'গুনমুনি আ। ১ ভবনে মা। ২ বাদ্ধ' আ। আ-পুখিতে এটি পালার অষ্টম পদ, মা-পাঁথতে সপ্তম । সো-পুথিতে নাই। ১ শশমুণের ফুলে মা | ২ পৃয়ঝান পাত রাঁসক রণ' মা। হদয়ে আ। * 'দাহভাবে, মা। আ-পৃথিতে নবম পদ, মা-পৃথিতে অস্টম | ১ ধর্পড়ি পাঙীঁড় কারত প্রহার মা |. ২ জোনে' মা। “সবসুখে গৌ। ৩ পাশে আ। * 'জেন লয় মনে' মা। ৫ বন্ধনীস্ছিত অংশ মা পুথি হংতে। পদটি মা-পুথিতে ও গৌ-পুথিতে নাই । সো-পুথিতেও নাই । আ.-পুথিতে পাদার এপ্তন পদ । ১ 'কশগাছ আন আ। ২ 'কুড মা । “ফুনিয়া স ১৯৭৪ (চ)। ৭ 'উপরাগ! মা। ৭ 'রাখিবে' আ। ৬ 'দুপাদ' আ। ৭ চামামা। ৮ শিক বন্তুখান' আ। ধৃত গ্রাঠ বঙ্গবাপী হইতে | জুমা আ। ১ দূতবদনে' আ.। 'অজ।ণালা' মা। *পালিপোমা। ॥ বন্ধণীধৃত অংশ মা-পুথি হইতে । 'ইতাইল' মা। ৬ মা-পাথ হইতে । ১ কিপট প্রবন্ধণ আ। ২ "দাশ ণিদে'আ। ৩ রাক্ষসগুনি আ। দধুনি' আ। বাজারি' আ। ৬ *বান্যার মা। ৭ “আইল” আ। ১ আকুল' মা । ২ “লোহাগাছি। মা । ৩ মাথে' আ। * “সবাংশে দ্ুহেতে হও সাধু আ। ২ খুডতাত্য বনি মা। ৩ অনাগুণ” আ। ও 'করয়ে মা। ১ 'ভাওারে কায়েস মা । ২ গিনিয়াদেই' মা। ৩ ধুসি গো । বিংসি মা। চোরাঙ্গ' গো । দ্রামরী! গো । ৬ বঙ্গান' আ। ৭ মাড় আ। ৮ "সারে মা। ৯ 'কাঁপলা' মা। ১৭ “চোঙার' আ। ১১ 'বৈরাগি মেশাঁল' আ। ১২ অঙঙ্গরঈ)' মা। ১৩ 'মদনমাতাল" আ। ১৪ দাগ'মা। ১৭ বন্ধনীন্থিত অংশ বঙ্গবাসী হইতে । এই মূল্যবান ভনিত৷ পরে একবার গো-পুথতে, দুইবার সো আর একবার স ১৯৭৪ ) পুথতে আছে। ১ "ছাঁগ' আ। ২ রাহু? মা | ২ “মউরা' মা। ১ দ্বান্ধ্যাচে, আ। ২ “সাগিড়া" ম]। ৩ কুঁড়া” মা। ৪ “কুমড়ার বেকলা' আ। “তাল্ন কর্যাচে' আ। ৬ দয়াছে আ। "রাখছে আ। ৮ 'জীকাবকঙ্কণ গান? । * ১ য়া আ। ২ ডালি? ম। ৬ মুনা ভাল মন্দ আ। ৪ 'সতাসিত দুই পক্ষ একই না জানি আ। 'পদাঙ্গুলি পাকুই শাওঞ্তা আ। ৬ 'বলবান বাঁধ তথা করিল নৈরাস' মা । ১ 'অচ্চনা' আ। ২ 'অচ্চনাআ। ৩ "উপাক্ষণে' আ। ১ "গীত? মা। ৩৪০ চণ্ডীমঙ্গল ২৪৩-২৪৪ পদ দুইটির মাঝখানে অতিরিস্ত কিন্তু প্রত্যাশত পদ (আরাঙি ১৩০ খ)ঃ ২৪৪ ২৪৫ ২৪৭ ২৪, ২৫০ ২৫১ ২৫৪ ৫৬ ২৫৭ ২৫৮ ৫৯ ২৬৯ ২৬২ মন্দ মন্দ বহে হেম দক্ষিণ পবন মউর৷ মটর নাচে সুমধুর নাদে অশোক 'কিংসোকে রাম। দেই আলিঙ্গন । শানএর খুলনা-চিন্তে বাড়য়ে বিষাদে । লতায় বেষিত বাম দেখিয়। অশোক এক ফুলে মধু পিয়ে গ্রমরদ্পাতি খুঃন। বলেন সই তুমি বড়লোক । সুমধুর গাঁত গায় দোহে একাচাতি। সই সই বণ্যা রাম কোলে কৈল লত৷ বিনয় করিয়। কিছু বলেন খুল্পনা খুল্লন৷ বলেন সই তপ কৈলে কেথা। জুঁড়িয়। উভয় পাণি করিল মানন। । আম। হৈতে তোমার জনম হৈল ভাল অভয়ার চরণে মজুক নিজ চিত তোমার সোয়াগে সই বন কারল আল । প্লীকবিকদ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ১ 'জডাঁত' মা। ১ “তোর' মা। ১ এই পদে সো-পাথতে (৩৮ ক) ও স ১৯৭৪ (চ) পুথিতে ভাঁনতা, "দুলালাসিংহের সুতা” ইত্যাদি । ১ “চায়া৷ বুলি বৃলি স্থানে আ। চায় বুঁলি রসতলে' ম]। ২ 'চাহ্যা পাইনু" তা। ১ “পূজার ফালতে হয় ভারথেব স্কামী' আ। ২ 'পৃজক করণ” আ। “ইন্দ্রের কুমারী পাশেতে হেমঝ/র সুগান্ধ গঙ্গাজলে প্লান আ। ২ “'আখিমা। ৩ “পুরহৃত' আ। ॥ 'গরুড়বাহন পৃঁজল লক্ষী সরস্কতী' মা। অতঃপর মা-পুথিতে ভনিতা দয় পদ শেষ । ১ হেন বুঝি পারা' আ। ১ প্বণ্টে পুরিয়। রাখে মারিয়া আ। মা-পুথি। আরাও পুথিতে (১৩৬ ক-খ) দুইটি পদ। প্রথম পদ “কহ কাক কুশল বারতা” হইতে “ধর্ম রাজার সমাজে", এবং তাহার পর ঃ | খুল্লনার স্ুতিবাণী কাকরৃপি নারায়ণী উঁড় গেলে৷ গোউড় নগরে কামবাণ পণ%শরে খুল্পনা বিষাদ করে গাইল মকুন্দ কাবিবরে ॥ দ্বরতীয় পদ “কহ দুয়া উপদেশ মোরে." ”। চতুর্থ ছন্রের পর দুদ্ধহ মদনবাণে আপনা সে তর্ভ জানে সিতল চন্দন হলাহল বোর কুসুমবাণ আকুল করায় প্রাণ পতি বিনে জীবন বিফল। মহামিশ্র ইত্যাদ ॥ ১ "রাম আ। ১ ধানিকা' মা। ঠ 'আত্মঘাতি' মা। ২ উড়ানিঞার' আরা পুথি । 'বড়ালিয়ার' স ১৯৭৪ (5)। “বড় বাঘের সো। '“ব্ড়ালোর। নীলমাণ। ৩ "নতি আ। ১ কর মা। ১ আলুয়ামু আ। ২ “সফল' অ। পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩৪১ অতঃপর সো-পুথিতে (8৫ খ ) এই আঁতরিন্ত পদটি আছে মান্দর প্রবেশে সাধু নান বাদ্য বাজে চণল জলচর [ফরয়ে সত্বর স্থির নহে গাঁললের মাঝে । [ডমাডম দড়মসা পুরল দশাঁদশ। দামা বাজে ধেশ ধেশ ধেশ বাজএ রসাল মূদঙ্গ করতাল শিক্গা বাজে তেও তেও তেঙ। দগড়ে রগড়ে দুরদুর নিকলে পড়এ ডিমডিম কাঠি করএ দুরদুর বাজএ নপুর বাজয়ে নানা পাঁরপা্টি। তেমচা টমাক বাজএ খমাক বাজএ কাড়া জয়ঢাক গভীর ভয়ঙ্কর ঘন বাজে ছুছুন্দর নিকটে না সুনি ডাক। ঝজার মুহা বাজএ ধুসাঁর খমক বাজএ খোল নদ্ান ঘনঘন ঘণ্টা টনটন পটগ রণজয় ঢোল । ভেরুত অনেক বাজএ ঢাক ঢাক করতাল বাজএ ডক্ শঙ্খ সুকিন্তন করএ অনুক্ষণ নগবে উপজিল কম্প। সঙ্গীত-রসময় শুনিতে সুখাশয় অভয়ামঙ্গল-ভাষ শ্রীকাবকঙ্কণ করএ নিবেদন ব্িপুর৷ পুরহ আশ ॥ ২৬৪ সো-পুথিতে (8৮ ক) এই পদের শেষ আতীরন্ত কর ছন্র ও ভনিত। মূল্যবান । “মেরুশূঙ্গে' মন্দাকিনী ধার।” অতঃপর শুন রাম৷ সত্য বাণী বুঝ প্রায় মোহিনী দোহার রাখিতে প্রীতি জায় দাসী লঘুগাঁত ছলিতে আইল কিবা মারে লোহনার ঠাঁঞ কিছু বলে। মনেতে রহিল ব্যথা ন৷ কহিলে কোন কথ দুলাল সিংহের সুতা দনাদেবী পাট-মাতা এই মোর চিন্তিত অন্তরে । কুলে শীলে গুণে অবদাত সাধু আঁত প্রিয়ভাষী খুল্পন৷ ঈষং হাঁস তার সুত নৃপরতর করিল অনেক যত মুখবিধু চাপিঞা অঞ্চলে বোরশল্য দেব রঘুনাথ । গো-গজ-বাহন-অরি তার পৃষ্ঠে ভর করি আড়রা তরিআ৷ ভূমি পুরুষে পুরুষে স্বামী জাঅ রাম ভিতর মহলে । সেবেন গোপাল কামেশ্বর মনে অনুমান কার সন্ত্রমে চলএ নারী নৃতন কাঁবত্বরসে নৃপতির অভিলাষে হাঁসয়৷ হাসিয়া কৃতৃহলে গাইল মুকুন্দ কাবিবর ॥ ২৬৫ ১ েটাপোনা' মা। *ঢাটিপনা' সো । ১ 'সতিন' আ। “সভারে' সো। ২৬৫, ২৬৬, ২৬৭ আরাগু পৃথিতে একটি পদ (১৪৮ খ-১৪৯ ক)। ২৬৭ ১ “দুয়ালে' মা। “লোহার ক,কাল' নীলমাণ । সে-পুথতে ছুটি এই রূপ 'দোলাঅ কাকলি বাজি হৈল কুবফাঅ' । অতঃপর সো-পুথিতে যে পদটি আছে সেটি মূল রচনায় ছিল বালিয়৷ মনে কার । পদটি উদ্ধত কাঁরতোঁছ। ভনিত৷ মূল্যবান, বীর-বাফুড়ার উল্লেখ আছে বাঁলয়। । করে কার হেমঝারি কে আনি জোগাঅ বারি হেমমাণি মনে বান্ধে মনমথবাণে বিদ্বে কহ কথা৷ স্বরূপকথনে মরমে মারিআ৷ মৃগ আনে । ৩৭২ চন্ডীমঙ্গল উদাধদুীহতা .পাঁত তার কর্ণে উপনিতি ষটপদ-বাহন সখা লক্ষেক জোজনে রেখ। হঞা জার নিধনের আশ দুই লক্ষে জাহার উদঅ তাহার ধহনে নিন্দি আঁতগুরুতর মন্দ এই ভঅ পাঁরসনে গগন ছাড়িঞ৷ কেনে করবে মন্দির প্রকাশ । বদনকমলে আঁস রয়। হরিসুত হবজা। আরোহণ বিড়ান্বআ এত ভাবে ধনপাতি ,. মকুন্দ করএ নাত মধ্য তনু উরু গুবু ওার গিরিজার চরণকমলে ১লিতে বশনা বাজে [৬৩৭ মহনে সাজে বীর-বাঞ্কুড়া কার ছন্দ মূরধে লাগএ ধন্দ ন৷ জানিল এ রমণি কার। পাঁওত বুঝএ কুত্হলে ॥ ২৬৮ ১ 'নাহীক পাঁশ' আ। গো-পাথতে পদটির ভনিত৷ এইরূপ (৪৯ খ)ঃ সাধুর ভারত সুনি দুষ্থমতি বিনঅ বলে লোহন৷ শ্রীকাবকন্কণ গিত আরোপন সার কারি সেবন। ॥ ২৬৯ ১ "সাধিব ম্মান' আ। ২ ইংসা'আ। হু কাবয়ে' এ। ২৭১ ১ 'পশ্চাং কিন্কণ' আ। গো-পাথত “দুলা হাটেবে জ।অ পাছু দশ ভারি । ২ বাঙ্গাল মা। ৩ বাছা" মা। বাছ]' সেো। ৪ পাকা এ * মূলে ম। | ৬ সথুর' আ। ৭ বেঞ্জন সাক' আ। ৮ 'অঞ্জালতে নয়' মা। ৯ শা-পুথি প্‌ ১৩৫ কখ। সো-পুথ পৃ ৫০ খ-৫১ ক। ততীয়-চতুর্থ ছত্্ের স্থানে সো-পু!থতে আছে দুতগাঁত দুআ। জায় দু|তরি লোক চায় দোঁখ দুআ সার সার হাতে বস্যা ঘোর ঘোর এ আস্যা সাধুঘরের দাই মনে মনে ভাবএ দুবলা বুঝঞ। এমন কাজ জার আঙ্তে অনাজ কেনে দুআ নান ভাত মনে মনে করি জুন্তি ভালবন্তু আস্তরে দুকাই। স্ময়ারল সধমঙ্গলা । সপ্তম ছত্রে “শশ' স্থানে 'ঝষ' (সো) পঠিতবা। অষ্টম ছত্রে 'পণ দুই” পঠিতব্য। সো-পুঁখতে পদটির ভাঁনত। সাবশেষ ূল্যবানূ (৫০ খ-৫১ ক)। এই পুথর পাঠাস্তর 'সঙ্কর তরণ উমাপাতি' “সত্যগুণ মধুমন্ত', 'কাঁরঞা কৃতসত)” 'কারলা দেশের অধিকারী; | ২৭২ ১ পাঁজ' আ। ২ 'হদয়ে গানঞা মা। ২৭৩ ১ প্বাটা' মা ২ 'বেটি' মা। রন্ধন খণচর ছুঁড়ি' সে।। ২৭৪ ১ 'বাগ্যন কুমুড়া কসা কা৮কণ।৷ ভাল সসা' মা। ২ গগুড়াইয়া আদরসে' মা। দ্বিতীয় ছন্নে 'বসুজাল' (সে ) পঠিতব্য। ২৭৬ ১ “দাঁড় টানাইয়৷ ডা? মা। ২ 'তুলিয়া পামার স্তেজাপা। মা। ৩ 'মুনার বেড় আ। “গজ ডেড়' আ। ৬ 'মাঝে' আ। | ২৭৭ শেষ ছত্র সো-পুথিতে 'বসেসে জানাল চক্রবাস্ত ঠাকুর ॥ ২৭৮ ১ “কনক রগাঁড়' আ। ২৮০ ১ “শমনে' আ। পাঠ আনুমানিক । ২৮১ ১ পরা মা। ৭ 'বলেনঠারে আ। ৩ *অঙ্গ নিবারণে' আ। পাঠাস্তব ও মন্তব্য ২৮২ ১ 'যুবাথ' আ। ২৮৪ আরাও পুথতে (১৪৫ ক) শেষ আট ছরেয হানে ৩৪৩ খুল্লনা চাহিযা সাধু১ হইল বিকল৷ কেমন সুন্দাব সাধু হারাইলে কোলে আখ ঠার দিযা হাঁস কহিল দুবলা । শ্রীকবিকল্কণ গান খুল্লনা খট্রাতলে ॥ [ ১ পাঠ 'বামা। ? অতঃপব দুইটি ছোট পদ নযন না কর বাকা তোব বোলে লাগে শঙ্কা শ্রীকবিকঙ্কণ কাঁরল অর্পণ কালাখোপা পাটেব থোপ লোলে দেবী অভাব ববে ॥ তোব বোলে গৃনাগাঁন মধুব বিষয জানি মন মদনে দুই বাজিল দ্বন্ৰ দ্রমবা পাঁডল গিযা ভোলে । আকুল মগ্নে পাড়ল ধন্দ। শ্রবণেব বিমল কনক আদি কমল মানান রমাণ না বৈসে পাশে ক্ঠোত গজমাঁত সাজে না মানে আবাঁত নাহ বতিরসে । পাব বসন কবি পবিধান বিমল কমল বাপে কবতলে চলিতে নপ্ব বাজে । [পন কঠিন ত হিদয সধ্যা ছলে । কাম কামেস্ববে জুড়া৷ সাধু তোবে সেই ত পুবুষ মদন বিকসা আপাঙ্গ পাঁওত ওবে বালাব হিদযে অজাভিলাসা। লঙ্জা এডি রামা৷ কবে নিবেদনে অভযাচবিন্ন কঙ্কণ ভনে ॥ ২৮৫ ১ “কোব' আ। ২ 'জোব' আ। ২৮ ২৮৯ ২৯০ ২১৩ ২১৪ সো-পুথিতে ছদ্ধষেব পাঠ তোব মুখ গঞ্জন খঞ্জন জোব লভ্য হবে তোব লোচন মোব। ও এই দুই এবং আবও কিছু ছু ছু মা-পুথিতে নাই । * 'হাবিল জুবাত পাঁড়ল” সো। ৭ 'দামিন্যাঅ' সো।। ৬ 'গোপাঁকান্ত জাত্যে ঠাকুব' আবাও। * এই ও পবেব ছন্ন সো পুথিতে নাই । ৮ 'রচিল' সো। 'কুপিত' আরা । * মা-পুথি । 'জনুনরবর বাজন' আরাি। ১* এই ছয ছত্র মা, সো ও আবা পুথিতে আছে। '্নাই কাম্নিকা' সো। এনা মার্ঘিক' মা। “মোনাই মার্ঘক' আবাণি। ১ ধ্শীপ্রগাত কবে আ |. ২ পবভাববী' আ। ৩ “অবশা অবশা আ। “অবশেষে দেখে সো। ১ সো-পাঁথতে এই দুই ছ্ নাই । ২ “অনাসন' আ। * ছাগ' 2 ৪ থুদি আ। 'কসরবে' আ। ৬ “দেখি' আ। ১ গাড় কর বানতার তরে', আ। ১ 'পুর্ঘক মণ্ডকে আ। ১ “কোণে গো। ৩১৩ ৩১৪ ৩১৫ ১'নমের আধক গো । ২ 'যৌবনেব পশ্চাতে গৌরব? গে । গো-পুথিতে ভনিত৷ দুলালসিংহের সুতা দনাহেবী পাটমাত। তাব আজ্ঞা পরমান মুকুন্দ করয় গান 'জুর্তী আ। ২ চগরে আ। ৯ “ফিবিঘা" আ। ১ “কাছে আ। ১ "দলে সাপ, আ। ১ জগজনে' আ। ১ “সমাগং অলঞ্খয বাণী” আ। ২ "শান্ত? সে।। ১ 'শতআ। ২ 'জতুক' আ। ৩ 'য়েঠ্যে চোপা খেলো হয+ সো। সো। “কার' আ। সো-পথর (৬৮ ক খ) আরপ্ত এমত দোখআ রাম সীতার বদন ইসত কোপিত রাম বলেন ঝচন। ১ দসেই বনে চোব খণ্ড" সো। ১ "ভন্ন' আ। ১ 'দেখি আ। ১ পপ্রতা মো। কস্তা' আ। ও দেব সুরপতি তারশৃনগাতি হরিল গৌতমদারা এ নব জুবাত দৌঁখ নিশাপতি গুরুপতী হরে তারা ।' সো-পথ। সো-পঁথতে পদটি দীঘতর .খুল্লনারে ধনপতি বুঝিল অপাপ হদয়ে সম্তোষ সাধু ঘৃচিল সন্তাপ । ল্লান কাঁর গঙ্গাজলে রামা হৈলা শুচি পটবন্ত্র পরে রাম। ইনদুকুন্দ-বুচি । ফলমূল নৈবেদ্য উপহার পাজল৷ কারঞ পৃজেন ঘটে সবমঙ্গল। । অবনি লোটাঞ৷ স্তুতি করেন বারেবার কৈলাস ছাড়িঞা মাত৷ আস্য পৃজাগার। সত্য কার আরাতি বনে দিলে বর পাইলু তোমার বর পাঁত আলা ঘর। চন্ডীমঙ্গল যঘুনাথ তাহার নন্দন চক্রবর্তী শ্রীকবিকন্কণ ॥ ৬০৭ ॥ ৪ “কাননে ছাগল রাখে তবে সে কলঙ্ক' বাসঘরে প্রভুসনে করাল্যে মিলন বিপদসম্পদ-হেতু তোমার চরণ । জ্ঞাতি ধারল ছল অন্ন নাহ খাঅ ' পরীক্ষা কর জ্ঞাতির সভার । সুবর্ণেব থালিতে দিলেন অঙ্গ বাল সধনে অভয় বালি দেই হুলাহুলি। শ্াতমান্রে গগনে উরিল৷ ভগব্তী শ্থেত-মাছি ধূপে কৈল ঘটে অবাস্থাতি। নখ-ইন্দুপরসে দূর হৈল অন্ধকার করবাঁ-মল্লিকামালে ভ্রমর ঝকার । চরণে পাড়য়। রামার মুখে নাহ বোল শিরে আরোপিয়। পাি চণ্ডী দিল৷ কোল ।... পাঠীস্তর ও মন্তব্য ৩৪৫ ৩১৭ ১ “মাঞ্জনা' আ। ৩১৮ ১ গান' আ,সো। ২ “কপাট বন্দ আ। গো-পুথিতে (১৩৪ ক-১৩৫ ক) তুলা পরীক্ষা ও জতুগৃহ পরীক্ষার মধ্যে পলে৷ পরীক্ষা আছে। এই কাহিনী-অংশটুকু আর কোথাও পাই নাই। নিম্বে উদ্ধৃত হইল। বেন্যে হরিদত্ত কয এসব পরীক্ষা নয় সত্য কৈরে তগাবতী বনে দিলা বর পরীক্ষার সুনহ বিধান পাইয়ে তোমার বর স্বামী এল ঘর। পন্দোতে করিয়া বারি আনুক সাধুর নারা বাসরে স্বামীর সঙ্গে করিল। মিলন উরে নার বিপদ সম্পদ দুর্গা তোমার চরণ। ঠাপ উট তোমার চরণ বিনে অন্য নাহি জানি পরীক্ষা কাঁরবে বারে বারে 057758588 নাত রি এমত কাঁরয়ে স্তুতি কারল গমন ভ্রমরা নদীর তীরে দিল দরশন । মর্যাদা করহ সভাকারে। পলো ভৈরে জল তোলে খুল্পনা বেনোনি টাকা দেও একলক্ষ তবে সবে হবে গঙ্গ কদাচিত পলো-মধ্যে নাহি রহে পানি । 1ক কারণে কব তুমি ব্যাজ ক্লন্দন কৈরেছে রাম। সঙ্কটে ঠোঁকয়। কাঁহতে কিসেয় মান নহে জাব নিজ স্থান এবার দাসীরে রক্ষে কর মহামায়া । পরীক্ষা সহিতে নাহি কাজ। এহি পরীক্ষার দায় না তারিবে মোকে তবে সাধু ধনপাঁত দিল তাঁথ অনুমতি আর ন৷ দেখাব মুখ উজানির লোকে । যথাবাঁধ করে আয়োজন এত বৈলে খুল্লনা৷ জলে ঝাপ দিল সুনিয়ে খুল্লনা সতী মনে চিন্তে ভগবতী চ্তীর কৃপায় রামা প্রাণে না মরিল। গান করে শ্রীকাবকন্কণ ॥ উজানি সহিতে কান্দে হয়ে অচেতন বারে। কাঠী 'তিন চাক পলোর নিষ্নাণ আনিয়া দিলেন পলে। খুল্পনার স্থান । পলে। দেখি খুল্লনা ভাবেন মনে মনে ইহার মধোতে জল রাহবে কেমনে । উজানি নগরেতে জতেক লোক বৈসে পরীক্ষা দেখিতে এসে পরম হারষে । এড়িয়ে কোলের শশু চলিল রমণী এমন সুন্যেছ কবে পলো-মধ্যে পানি । পলো মাথে কৈরে রামা ধীরে ধাঁরে জায় দড় করি অভয়ার চরণ ধিয়ায় । ডুভার-খগুনহেতু হৈল৷ অবতার কংসহেতু কৃফকে কোইল৷ কালিন্দীর পার। চ. ম.—85 একান্ত ডুবিয়৷ মৈল সেই নারীজন । কপট কারয়ে কান্দে লহন৷ বেন্যেনি ভাল হেল ডুব্যে মেল দারুণ সাঁতান। থুল্লনারে দয়। (করে দেবী মাহেস্রী গঙ্গার ভূঝনে গেল৷ রথে ভর কারি। দেখ্যে গঙ্গ। দেবী তানে কৈল অ্যুখান পাদ্য অধ দিয়ে দিল বাঁসতে আসন । পাঙ্গ। বলে ব্রহ্ধ। জারে ধ্যানেতে ন৷ পায় [কসের কারণে ভগ্ন আসিলে এথায় । চতী বলে গঙ্গ। দিদি কর নিবেদন খুল্পন। আমার দাসী জানে সবজন । সাঁতিনের পাকে বনে রাখিল ছাগল এএ কারণে জ্ঞাত-বন্ধু ধৈরে আছে ছল । ৩৪৬ অনুকূল হও দাদ মোর ব্রত তরে উদ্ধার করহ গাঁয়ে সেই খুল্লনারে। হাঁসিয়৷ চলিলা গঙ্গ৷ মকর-বাহনে গঙ্গা দুর্গ কৌতুকে আসিল সেই খানে । গলে বন্ত্র বাদ্ধি রাম। পাঁড়য়। ভূতলে চন্ডীমঙগল জলের মধ্যেতে আছে খুল্লন৷ সুন্দরী উঠ বাছ। বৈলে ডাক দিল মাহেশ্বরী চাঁওকার বাক্য সুন্যে চক্ষু মেলে চায় উভয়ের পদযুগ দোখবারে পায়। বাছা বৈলে গঙ্গাদেবী তুলে৷ নিল কোলে । ওঠ ওঠ আর বাছা না কান্দহ আর এহ বৈলে পলো-মধ্যে কারল৷ সণ্টার । দুর্গ বৈলে পলো লৈয়ে উঠিল খুল্লনা বণিকসভায় এল হয়ো হর্ষমন। | শির হৈতে পলোখানি রাখে নামাইয়ে ধনপাত সাধু দল ঝাঁর বাড়াইয়ে । সপ্তবার ঢালে রাম৷ সপ্তবার ভরে চন্ডীর কৃপায়ে এক বিন্দু নাহি পড়ে । ১ বাজ আ। কৃষদত্ত বলে হৈল পরীক্ষায় জয় শঙ্খদত্ত বলে ছার পরীক্ষা এ নয় । সোনা হয় রূপা হয় পোড়ালে সে চিনী আগ্রতে পোড়ায়ে লও তোমার বেন্যেনি । আগ্ন-পোড়েয়ে জেন সীতা হৈল সতী এমন সাহস তুম কর ধনপাতি। অভয়ার পাদপদ্ধে মজাইয়। চিত শ্লীকবিকঙ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৩২৬ ॥ ৩১৯ সো-পুথতে নাই । পাঁরবর্তে এই চার ছনন পরবর্তাঁ পদের আরপ্তে যুস্ত হইয়াছে ৩২০ ধুসদত্ত বলে ভাই শুন ধনগাঁত জোউর পরাক্ষা ইহার শুদ্ধমাতি । ১ সাত নঞা” সো । ২ অতঃপর সো-পুথতে এইর্প (পূ ৭২খ) সাত হাথ গত্ত কোড়ে দেখিতে সুন্দর জৌএর দেউল দিল অতি মনোহর । জোএর আড়ানি দিল জোএর 'দিল কাট জোএর সাড়ক দিল জোএর কপটে । জোএর খাচান দিল জোএর বান্ধান সোনপাট দিআ৷ কৈল ঘরের ছাওনি। ঘর গড়া বিশ্বকর্থা করিল বিদাঅ ঘর দেখে হরাঁসত বিপক্ষ সভাঅ । নীলাম্বরদাস বলে হৈলা জোউ ঘর সাত হৈলে বাচিবে ইহার ভিতর। ধূসদত্ত বলে সাত বটএ জুবাত ইহাতে রাখিব মাতা অভআ পার্বাত। তঙ্কা। দিলে নাহি হব কুলের ভঞ্জন বংশে বংশে ভায়্য। তোমার রাহব গঞ্জন । অলঙ্কারদন্ত বলে আম ইহ জানি এখনি মারব পুড়্া খুল্পন। বান্যানি। সুন। বান্য। ধূসদত্ত কর্মে দেই হাথ কেন হেন বানি ভায়। বলহ নিধাত। কথো ঝ৷ সুবুর্ধি থাকে কেহো কটু ভাসে খুল্পনা আইল হেথা জতুগৃহবাসে । পাঁরখ৷ লহতে রাম৷ আইল পুনর্বার শ্লীকবিকষ্কণ গান পাঁচালির সার & বিষাদ ভাবিঞা কান্দে খুল্লনা রমানি কেমতে তরিব আমি জোএর আগুনি । [তিলএক অনলে মাঁজল লঙ্কাদেস কেমনে জোএর ঘর কারব প্রবেস। পাঠীস্তর ও মন্তব্য ৬৪৭ ৩২৩ ৩২৪ ৩২৫ ৩২৮ উভরাঅ কান্দিছে খুল্লনার বাপ মা খুল্লনা বলেন জদি ম৷ ডরাই অনন্গে বি ঝি বাঁলঞা উচ্চম্বরে কাড়ে রা। অভাগির কলঙ্ক রহিব দুই কুলে । র্ভ। বলেন বিএ কেনে মরিবে আগুনি মা প্রবোধঞ। তবে খুলান৷ সুন্দরী থাঁকবে আমার গৃহে হইয়া গ্রিহিনি। দুর্গাতনাসিনি দুর্গ ম্মঙরে ইদ্বার | না৷ দিব জাইতে ঝিএ রাখিব ধাঁরঞ শান্তরূপা ভগবাঁতি সুন মহামায়া এত বালি কান্দে রাম৷ ধূলাঅ লোটাঞ । বারেক করহ রক্ষা দিআ পদছাআ | নানা বিধিমতে স্তুতি করএ খুল্লন। শ্রীকবিকঙ্কণ গান পাঁচালি-রচন। ॥ & 'তমে ক্রমে উঠে অগ্নি জুড়ি দর্শাহষা” সো । 'আকাশ' গো । ২ 'আদস কারিঞ। জেন আসাড়ে গজ্জন” সো । আদেক মেঘে জেন' গো । ও “জেল্যে পড়ে গৌ। ৪ এভত্তি পড়ে আ। ণবপক্ষ' পাঠ। ১ “সরে হানে ঘাতি' সে । ভাঁনত৷ ছতব সো-পুথতে নাই, সুতরাং ৩২৭-৩২৮ একই পদ । ১ 'পাইল' সো । ২ 'ভরদ্বাজ ধাষ পাইল... গোঁ। ৩২৭-৩২৮ আরা পুথতেও (১৬৩ ক-খ ) একটি পদ। ৩৩২ ৩৩৪ ৩৩৬ ৩৩৭ ১ গার্ভে' আ। ১ পমার্ঁযা মোর তরে আ। . ২ প্রাণিবধাশিল' সো । ৩ দুঞণ? আ। ১ "সুমন্ত সো। ৩ পাকা? সেো।। + 'জোএর ঢাকন তার মুহর ভাঁঙগআ? সো। ২ বড় সুখি” আ, সৌ। ৩৩৬-৩৩৭ আরা পুথিতে একটি পদ । ৩৩৮ ৩৪১ ৩৪৫ ৩৪৬ ৩৪৭ ৩৪৯ পদটি সো-পুথিতে নাই। ১ “উচ্চ গাছ" আ। “উচ্য বা" সো। 'উচ্চর' আরা পুথি । 'উচ্চারা' গো । ১ ধদবত' সো । ২ 'জত আছে সান্ধ' সো। ৯ “স্ভুরি' আ। ১ 'করলউ' সো । “কুরলয়ে' মা । “কুরালয়ে' গো । ২ অর্ধখানা লাউ ভিক্ষা করয়ে জোগান' পৈয়ালি পুথি। ৩ “এখানে বিশ্রাম কর কাণ্ডার বূলন' আ। সো-পুথতে অতঃপর ভিত! 'দিয়৷ পদ শেষ এবং রাঁববার দিবা পালা সমাপ্ত । আরা পুথিতেও এইপদে পালা শেষ । গৌ-পুথিতে টান৷ চলিয়াছে ঃ ছইঘর চাপিয়ে বসীল সদাগর কার হাতে কেরুয়াল কার হাতে বাশ হাতে দণ্ড-কেরুয়াল বাঁষল গাবর । কার হাতে দণ্ড কারে হাথে আছে ফাস। ৪ '্যানীর আ। ১ উত্তর বরুণ' আ। উত্তর পড়নে সো। 'উত্তর পবনে আরা । ২ 'পারপূর্ণ/ আ। 'আবিশ্রান্ত' সো। “'আবচ্ছেদে' আরাগডি। ৩৪৮ ৩৫০ ৩৫১ ৩৫২ ৩৫৩ ৩6৪ ৩৫৫ ৩৫৭ ৩৬১ ৩৬৩ ৩৬৬ ৩৬৭ ৩৬৯ ৩৭২ চণ্ডীমঙ্গল ১ 'দানাই? গো । ২ 'রহাই গো। ৩ বংশ ধায় মহোদর” গৌ। * “কালিন্দী যমুনা গৌ। এ 'কংসাবর্তী' আ। বংসাবতী গো । ৬ গলিত খিরপাই গো । * গৌ-পুথ ঃ চলল আন্রেই ধাইল 'ছিরাই ঘোরতর বেগ হয়ে নিজ গণ লইয়া ধাইল করতোয়া র্ণরেখা সঙ্গে লয়ে । হরিস অভয় মগরা দেখিয়। রহে আকাশাবিযানে ললিত প্রবন্ধে গাইল শ্রীমুকুন্দ শ্রীকাববস্কণ ভণে ॥ ৩৫৯ ॥ * অতঃপর আ-পুথ ঃ বলুক বামনী বামনা রামানি] দারুকেশ্বর খিরনদী গঙ্গা ত খাঁড় সঙ্গে ধাইল রঙ্গে বামন নদী । ৯ সো-পুথি উলঙ্গ পএ জাঅ বামুনি খাঁড় ধাঅ দারুকেশ্বর খিরনদী গঙ্গুড়ি খাঁড় সঙ্গে ধাহীন মহারঙ্গে তবে ধায় বাঙুন নদাঁ। * দুগ্বহ' আ। 'দুরস্ত' সো। ২ দুকুল বাহয়া হানে খানা সো। ৩ “করয়ে' আ। ১ কিরহ পয়ান' আ। ১ “ধুন যুঁন' আ। প্রক্ষেপ এবং পদচ্ছেদ গায়নের । আরা পুথিতে এইখানে পদচ্ছেদ করিয়। সাগরসঙ্গম উপাখ্যান বর্ণিত। ভনিতা “মহামিশ্র ইত্যাদি" হইতে বোঝা যায় যে এখানে পয়ার পদে ব্রিপদী ভনিতা-যোগ দ্বাভাবিক নয়। সাগরসঙ্গম উপাখ্যান চার পদে, তিনটি দ্িপদী একটি পয়ার (পৃ ১৭৪ খ-১৭৭ ক)। ১ আ-পুখতে আতাবিস্ত মন্দহরি দিপখান সাধু কইল বাম রমনক দিপখান সাধু কইল বাম। ১ চন্্রকুট সো । ২ দক্ষা'আ। ৩ হাথাদহে' আ। & 'মহেশের আ। ৭ কুঞ্জ আ। ১গোঁ। আ পুথিতে ছাড়। ১গোঁ। “কুথ। লককা পায়রা ছা আ। ১ 'বদলাসে' আ। ২ 'সৈম্ধপ' আ। ১ “উপালম্ব' আ। ১গোৌঁ। 'কুরুবক' আ। ২ পসংহনাদ' আ। ১ 'নরক' আ। এই পদে সো-পুথিতে "রবিবারের [ নিশ। পাল ] সমাপ্ত । সোমবারের 'দবাপালরপ্ত । লোহনার ভাসা” । সো.পুথিতে (এবং আরা পুথিতে ) ৩৭৩ পদের পরে যে পদটি আছে তাহা দুলার প্রাতি খুব্ননার উত্তি। আর গোঁ-পুথতে ৩৭৩ পদ নাই আছে দুবলার প্রাঁত খুল্পনার উত্তি পদটি । পদটি এই (সো-পুথ অবলম্বনে ) পাঠাস্তর ও মন্তব্য শুন দুবল। কাঁহ তোমারে ইবে মোর প্রাণ কিবা১ করে কাঁহ নিজ সাধ শুনহ দাসি কহেন খুল্পনা ইসত হাসি । বাথুআ টনটানি তেলের পাক লহলহ আর ছোলার শাক । [মিন চটচটিং কুমুড়া বাঁড়ৎ সরল সফাঁর ভাজ। চিঙ্গড়ি। যাঁদ পাই আর মহিসা দই চিনি ফিনি তাহে মিসাঞা খই। পাকা ঠাপা কল৷ কারঞা জড় খাইতে সাধ কর্যাছে বড়। কনকের থালে উদন সাল কাজির সাঁহত করিয়া মেলি । হেন কাঞ্জি ভু্জি মনেত ভায়ঃ চাক৷ চাকা মূল বাগ্যন তাঅ। থোড় উড়স্বরে ইচিলি মাছে পাইলে মুখের আরুচি ঘুচে । [হআ ধকধাক অন্তরে ভোখ মুখে নাহি চলে এ বড় শোক। [ পাঠান্তর ১ “মন কেমন । ২ চড়চড়ি' শুন দিদি কাহএ তোমায় বাণী গাইল পাঁচালি সাধের কাহিনী ॥ | ৩ “কুমুড়ার বাড়!। * শ্লীকাবিকঙ্কণ পাঁচালি ভনে” । (আরা )] ৩৭৪ ১ 'গোটায়ে কাসান্দ? গো । “গোটা জাম মার্ঘ' আ। ৩৭৫ পৈয়ালি পুথিতে সাধ-ভক্ষণ পদটির শেষ অংশ এইরূপ (১৪৭ খ)ঃ ভোজনের হ্ছান কার দুবলা চলিল নমন্ত্রণে আয়োগণে ডাকিয়া আনিল। আইলা কাণ্ান শোন৷ মাধাঁব মালাতি দগ্লামই সবসন্ধি কুত্তি সরষ্কীতি। শদ্ধাবাতি সুন্দর দৈবাক সুলোচন৷ দয়৷ দুর্গ৷ শচী শিব৷ মল্লিক মদন। সোহাগি সম্পাঁদ পাদ খুঁদি ইন্দুমুখি পাঁান পরুসি রূপা জসী মগআখি। ৬৪৯ মনে কার সাধ খাইতে মিঠ। চিনি নারিকেল-্ঠাছিরং পিঠা । দুদ্ধে গুড়ে তিলে মিসাঞা লাউ দাধর সাঁহতে খুদের জাউ । আমড়। নয়াড়ি আর চালিন্দ৷ আমাঁস আমড়া কুলি করন্দা বাঁসতে উঠিতে ফিরএ মাথ। ঘন উঠে হাই কাহতে কথা সাঁতি সাধে যদি বাড়াই পা আঘ্বাইয়া পড়ে সকলি গা । শুন দুআ দাঁস বলি অপর চিড়া কল৷ আর দুধের সর । ঝুন৷ নারিকেল চিনির গুড়া কাঁহল আপন সাধের চুড়া। প্রভু পরবাসে নাহক ঘরে সে সাধিব মান কহিব কারে । কি কাহব আঁধক জে উঠে মনে লাজ খাঁণ্ড কাঁহব লোহনার স্থানে ।" এমন মনেতে কার ভাবন৷ লোহনার আগে কহে খুল্পনা । 'ছাঁঞ? | “ছাঁঞ্ের | ৬ সথি'। এই সুভ সাঁথগণ আইল! তৃরিত সাধুর মান্দরে আস হৈল উপনীত। পাদধাবনের জল দুবল৷ আনল পায় জল দিয়৷ সুভে ভোজনে বদিল। লহনা কনক-থালে জোগায় ওদন চাঁরদিগে বাটী পুরি পরসে বেঞ্জন। তার মাঝে খুল্লনা বাঁসল রূপবতী থালে বাড়া অন্ন ধর্য৷ দিল অনা সতী । ৩৬৫ ০ আসিয়া পরসে রামা বণিফের ঝি কাণনের বাটিতে দুবলা দেয় ঘি। চন্ডীমঙ্গল ভোজন কারর। সাঙ্গ কৈলা আচমন কপৃরতান্ুলে কৈল মুখের শোধন । বিদায় হইয়া সভে গেল৷ নিজ ঘর লহনা ভোজন তবে কৈলা তৎপর । অভয়ার চরণে ইত্যরদি ॥ অতঃপর একটি নৃতনপদ, সাধে প্রাপ্ত উপহার বর্ণন৷ খুল্লনার সাধে জার৷ করিল ভোজন থুল্লনারে সাধ তার৷ দেয় জনে জন। কেহ দেয় সাদ! সাঁড় কেহ দেয় ডুরে কেহ দেয় চন্দ্রকোন৷ কেহ পদাম্পুরে । বরাহনগরে সাড়ি কেহ বালুচর কেহ মালদই দিলা কেহ বাগমারি। কেহ বা ঢাকাই দিলা কেহ দিলা জার কেহ বা কাশীঙ্কার কেহ দিলা মির্জাপুরি । নানা দেশের নান৷ বদ্ত্র পাইলা খুল্পণ। শ্রীকাবকঙ্কণ গান সাধের বর্ণন৷ ॥ কেহ দেয় দোরহাট। কেহ গুলামার৷ কেহ ভঁ়িদয়া। দিল কেহ ব৷ খাটরা । ০৭৬ ১ 'সোতকা' আ। ২ 'সুপত/ আ। ৩৮১ “লন্বমান' আ। ২ 'চানআ। ৩ অতঃপর আতারন্ত ছন্র খুল্পনার বন্দি হৈল লোচন-খঞ্জন' । ৪ গারি' সো, পৈয়ালি পুথি । অতঃপর সো-পুথর ভনিতা-্ছত্র শূল্লনার হৈল প্রত লোহনার হেল দুদ্ধ শ্রীকাঁবকন্কণ গান রাজার কৌতুক ॥ ৩৮২ খুল্পনার ভাগবত শ্রবণ লইয়। পুথিগুলির মধো অনৈক্য আছে। সো ও গো-পুথি অনুসারে ভাগবত-শ্রবণের উদ্যোগ কারয়াছিন লহনা সখী লীলাবতীর (বা নীলাবতীর) উপদেশে | খুল্পনার কোলে শিশু দেখিয়৷ অপুন্রক লহনার মনে ক্ষোভ হইয়াছিল । সে ক্ষোত খুল্পনার কাছেই প্রকাশ কাঁরয়াছিল। সোপু১৭ক। গো ৩৮৮ শুইএ] নলিমাঁদলে থুল্পন। তোমার জাঁবন হল্য সার মোর কলেবর জলে পাঁত-পুনন নাহি কোলে বিধাত৷ আমারে ছলে জলাদিলে নহে প্রাতকার দশাদগ হৈল অন্ধকার । স্বামী পরম ধন স্কামী বিনে অনা জন ত শঞ্খচন্দনের তরে গেলা প্রভু সিংহলেরে পাঁত বিনে জীবন অসার । দিব থাঁক গৃহে কাজে পচজনার মাঝে তথা হৈল পণ্টম বংসর যামিনী এসএ মোরে কাল বাধ কৈল বিড়ান্বত হেন মোর লএ চিত জালা-মন্দিরের পথে প্রবেশ করএ কতে প্রাণে নাহি জএ সদাগর । না অশোক কিংশুক ফুল হল] লোচনের শূল লহ এ টানা ফেতকিকুসুম কামকুত্ত নি বোর কুসুমবাণ আকুল কার প্রাণ বৌরি কোঁকিলিরব টি ঝাট নাশ জাউক বসন্ত । মন জরে বন-দাবানলে । পাঠাত্তর ও মন্তব্য ৩৫১ কত তাপ করে সি তবে মই নিলাবাঁত পাপ খণ্ডাবার তরে বালল মধুর ছয়ে হেন কালে আসিলেক তথা ভারথের শুন কিছু কথা ।১ মহামিশ্র জগন্নাথ ইত্যাঁদ ॥ [ ১ সো-পুথতে এই দুই ছঘ্রের পাঠীন্তর জত দুষ্থ ভাবে সতি আল্যা তবে নিলাবাতি তাপ খণ্ডাবার তরে কহিল মধুর গ্ধরে লোহনার সৈ আইল৷ তথা ভারাথ রচিল গাঁত গাথা ॥] ১ উদখল' আ। ৩৮৫ ১ পুরহর আ। ২ থর আ। ৩ 'বৃকোদর' আ। শবহন্ধর আ। ৩৮৯ ১ লিব্ঃআ। ২ ধবপাণ্চিকা' সো, গৌঁ। শবরপ্িকা' আগণ্ডি। ৩ 'সটকাটা” আ। “সটকা” আরা | “ছোকাটা। (পৈয়ালি। ৪ 'পাতি খেলে বাগচালি জু খেলে পেলে বালি পুরানান্দি দোআ তেআ। কাতা' সো। পাতি খেলা রাখচালী জুয়া খেলে কুলী কুলী নান্দিপুরে দোহাতিয়। কাতা গৌঁ। “পাতি খেলে বাধচালি দুব৷ খেলে ফেলে বাল পরমুট পলুইতে কাতা' পৈয়ালি পুথি। * “টিকা লাটিম বালি কনক কুন্দ খেলে সালি” সো। ৩৯০ ১ অতঃপর সো-পুথি পড়এ শ্রীমন্ত দত্ত শব্দের জানিতে তত পড়এ রাঁক্ষত-টীক। ন্যাস কোশ কাশিকা রাধিদিন করিয়া ভাবনা গ্রণবৃত্তি দর্শন বর্ণন। [নাবিষ্ট করিয়া মন লেখে পড়ে অনুক্ষণ জানতে শের তত পাঁড়ল উজ্জলদত্ত দিনে দিনে কাঁরয়। মাননা। বিদ্যা বিনে মহে অন্য মনা । “সমাসিকা (আ) স্থানে ন্যাস কাশিক।' পঠিতব্য । পৈয়ালি পুথির সম্পূর্ণ পাঠ উদ্ধৃত কাঁরতোছ। কখ আঠার ফল৷ পাঁড়ল। সাধুর বাল। কাবত্বের অনুরাগ পাঁড়ল৷ ভারাব মাথ আঙ্ক আস্ক 'সাদ্ধি-বানান বন্ধজনে বাড়ে কৃতৃহল। গুরুবাক্যে দিয়। মন চিনল। অনেক বর্ণ জয়মিনি ভাগবত কাব্য পড়ে মেঘদূত পাঁড়ল৷ পালিল৷ শৃক্ষণ। নৈষধ কুমারসন্ভব পড়য়ে শ্রীপতিদত্ত বুঝিতে শাস্ত্রের তত দিবানিশি নাহ জানি পড়ে রঘু সেতবানি রািদন করিয়া ভাবন। । রাঘব ভাট জয়দেব । নাবষ্ট কারয়া মন লিখে পড়ে অনুক্ষণ অব্যাহত বুদ্ধগাঁত পড়ে দুই সপ্তশতী দিনে দনে বাড়য়ে ধারণা । পড়ে মুদ্রা মুর।রি মালতী ব্যাকরণ পড়ে টীকা জমর করয়ে শিক্ষা হিত-উপদেশকথা পাঁড়ল বাসবদত্ত। গণবৃত্তি বর্ণ গাড়ে নান। কাঁলিন্দিকা দীপিকা ভান্বতী । জানিতে শব্দের তত্ব পাঁড়িলা অনেক শাস্ত্র কাব্প্রকাশ পাড়ি অভ্যাস করল ঝাড়ি বিদ্যা বিনা নহে অনামন! | অধ্টাদশ-বর্গ অভিধানে পড়ে ছন্দমঞ্জরিকা কবিত্ব কাঁরতে শিক্ষা দিবানাশ নাহি জানে পড়ে সাধু সাবধানে নান! ছাদে পাড়ল 'পিঙ্গল মহানাটক রাষায়ণে । ৩৫২ আয়ুবেদের মত পাঁড়ল৷ বৈদ্যক জত দ্রব্যগুণে নাড়র প্রকাশ ধ্বস্তার আদি জত কাশীরাজ চত্রদত্ত অবশেষে পড়ে দেবদাস । ১ 'পচাসী আ। ২ পদষী' আ। ৩ আমিঙ্বী, আ। পঠিতব্য | “দেহ? সো।। ৩৯৩ শ্রীমন্তের পানে আ। শ্রাপাতি নেহালে' সো। ৩৯৪ ১ 'অন্তেদাসী আ। ০৯৬ ১ মেলা তারা হাসেন' আ। ৩৯২ চণ্ডীমঙ্গল য্জুবেদের মত শৃদ্রের আচার জত পাঁড়য়৷ হইল জ্ঞানবান দাঁমন্য-নগরবাস সঙ্গীতের আভিলাষ শরীকবিকষ্কণ রস গান ॥ ১৫১ ক-খ ॥ & “বেদুআ। ঢেমন জনে+ মো৷। 'নাহী” (আ) 'আমি ৩৯৯ ১ বান] কুলে' সো। ৪০১ ১ ধঁফরাইতে' আ। ৪০২ ১ শুনে আ। ২ দেখে আ। * কহে? আ। 8০৩ ১ 'দেবদুছ্টি' আ। 'দেবদারু' সো। ২ “কাটাল তমাল সাল পিয়াসাল” আ। ৩ পঞ্চম সো। ॥ গহরামুখি চন্দ্রকরা? সো। ৪8০৬ ১ বলাসে' । ২ প্রবঙ্গ' আ, সে। ৪১০ আ-পুথতে পালার এই শেষ পদটির সংখ্য। ৩৪। তবে মার্জনে (২০৪ ক) পূর্বপদের অনুবৃন্তর মতে এই পদটি আছে ? চলিব পানে মাত।৷ ইথে নাহ আন সঙ্গে আইয়গণ লৈয়৷ ভ্রমরার তটে যান্নাকালে বিরোধ না কর অকল্যাণ । আম্শাখা মাগ্তত আরোপিল ঘটে। যাঁদ পিতাপুত্রে মোর হয়ে দরশন চন্দনের অষ্টদল 'লাঁখল সুন্দরী পুনুর্ববার কারব পুনু চরণবন্দন । তার মাঝে আরোঁপিল কনকের বাঁরি। মনের হারষে তম স্থির কর মতি চারাঁদগে জয় জয় জত আইয়গণ তব পুণ/ফলে দেশে আসিব শ্রীপাত। লোকে বলে ধন্য ধন্য বান্যার নন্দন । গণকের কথা হৈল খুল্লনার মনে অম্পকালে জায় সাধু দক্ষিণ পাটন একভাবে পৃজে রাম। চতীর চরণে। কেমনে ইহার মাত ধাঁরব জীবন । অভয়ার পৃজ। রাম৷ কৈল আরম্ভণ ছাগ মেষ আদি আনে পৃজার তরে শোড় উপচারে আনে পৃজার কারণে । গাইল পাচালি মুকুন্দ কাববরে ॥ ৩৬ ॥ পালা সমাপ্ত ॥ যে আদর্শ হইতে পদটি তোল! হইয়াছিল তাহার এই পালার পদসংখ্যা ছিল ৩৬ । ৪১৩ ১ 'রাজপারবার আ। ২৭'পড়আ। ২ "ফাস' গো, আরা । ৪১৪ ১ 'কোগ্রাম আসো। “কোগ্রামণ আরাি। 'কৌলগ্রাম গো । ২ 'হাড়িমুড় সো। 'হাড়ি়া+গৌ। * "্যাট' সো, গৌ, আরা & “গাঙ্গনাড়া' সো । 'গাঙ্গরাড়া আরাগ্ি। "িঙ্গাড়। গো । 'সোনাঞ গ্রাম" সো । 'বুনাঞ্ানগর' আরা । 'আমালিয়৷ নবগ্রাম' গোৌ। ৬ 'নৈঘাটি' সো। 'নইহাটী' আরা, গৌ। * 'সাকাই ঘাট' সো । 'সাখাইথাট' আরাও । 'সাথার হাট' গৌ। পাঠান্তর ও মন্তব্য ৩৫৩ পিতাপুন্রের যান্রাপথ একই | প্রথমে অজয়, তাহার পর ভাগীরথী, তাহার পর গঙ্গার একাধিক শাখা বাহিয়৷ সাগরসঙ্গম, তথা হইতে নদী ও সমুদ্র পথে সিংহল । ধনপাতির কুযাল্া, শ্রীপাঁতর সুযান্ ৷ তাই মুকুন্দ শ্রীপাঁতর যাত্রাবর্ণনায় কিছু মুখর হইয়াছেন । যান্রার প্রথম দৌড় অজয়-ভাগীরথী সঙ্গম পর্যন্ত । অল্পন্থপ্প ইতরাঁবশেষ থাকলেও এই দৌড়ের পথ্থচিহ্ন গ্রামগুলর নামে মোটামুটি একা আছে। তিনটি পুথ ধারয়া মিল ও অমিল দেখাইতোছি । সো-পুথি কোগ্রাম, চাকন্দা, কুমারখালা, হাড়িমুঁড়ি, থান। ঘাট, মুখা, হুসেনপুর, কেওটপাড়া, দৌলতপুর, কাকনা, গাঙ্গনাড়া, জাতিঘাট, কুলিপাড়া, কোঙরপুর, বাকনৃনা, রসই, বেলড়া, হাটাড়, চরাখ, আঙ্গারপুর, সোনাঞ গ্রাম, বাগ্যনকোলা, উদ্ধারণপুর, নৈঘাটি, স্লাকাইঘাট | আরাও পথ কোগ্রাম, চাকদ, কুমারখালা, হাত্যাগড় (1), থানাঘাট, মুড়াকাটা, উদনপুর, গড়পোতা, দৌলতপুর, কাঁকনা, গাঙ্গরাডা, ঘাট কুলীনপাড়া, কোঙরপুর, বাকসা, বেলড়া, হাটারে, চরাক, আঙ্গারপুর, “যুনাঞা নগর গা,” বাগ্যনকোলা, উদনপুর, নইহাটী, সাথাইঘাট | গোৌ-পুথি কৌলগ্রাম, চাকদা, কুমারখালা, হাড়িয়া, থানাঘাট, মৌলা, হুসনপুর, গড়পাড়া, দৌলাংপুর, বাকসা, কাকনা, গঙ্গাড়া, ঘাট কুলীনপাড়া, কুঙরপ্র, বাকুল্যা, বেলেড়া, আটারি, চরাঁখ, অঙ্গারপুর, আমালিয়া, নবগ্রাম, বাগনকোলা, উধনপুর, নইহাঠী, সাখারি-হাট । ৪১৫ ১ “সুরোধানি” সো । পূর্বধূল্য' আরাগি। “পৃবচ্ছলি গৌ। ২ এখানে গো, সো ও আরা পুথতে চৈতন্যবনদনা পদটি আছে। গোৌ-পুথিতে বন্দনার আগে পদটি এইভাবে শেষ হইয়াছে (পৃ ১৭০ খ)ঃ ফলমূল উপহার ভোগরাগ দিয়ে শ্রীচৈতন্য সেব৷ কৈল শন্তিভাব হৈয়ে । গৌরাঙ্গচরণে স্তুতি করেন সদাগর অভযামঙ্গল গান আত মনোহর ॥ ১ “মির্জাপুর' পাঁঠিতব্য । ৪১৬ ১ পপ্তথাষ আরা । ২ ইন্দ্র এ । আমি হৈল ব্রতধারা' এ । ৪ "ন্লানে জার পুণ্য আভিলাষ' এ । ৪১৭ সপ্তগ্রামে বাণিজ্যে আগত সদাগরদের দেশের ব৷ নগরবন্দরের নামের একটু বড় তাঁলিক। রহিয়াছে পৈয়ালি পুথিতে। কাঁলঙ্গ তেলেঙ্গ রঙ্গ অলঙ্গ কর্ণাট ন্রহট্ট কাঙর কৌচ হারঙ্গ শ্রীহটু মহেন্দ্র মগদ গয়া আর গুজরাট । মানিকা ফটিক৷ লঙ্কা প্রলয়া নাকুট। নরেন্দ্র বন্দর বিন্দু পিঙ্গল সফর রাঙ্গন ববড় দেশ দূর সহম্ নাম উৎকল দ্রাবিড় আর বিজয়নগর । বটেশ্বর আহুলঙ্কা স্থান সপ্গ্রাম । মথুরা দ্বারকা কাশি কপ্পতরু মায়৷ শিবাহট্ট মহারাট্‌ হাস্তিনা-নগরি লয়ক অনায়ক গোদাবাঁর কায়। । আর সহরের কথা কাহিবারে নারি । ৪১৮ ১ -অস্তুলঙ্গ । ৪২০ ১ 'নবাবতী” আ। ২ দ্ষুড়া” অন্যত্র । “বামনার অনাত্র |. বন্ধে? পঠিতব্য। ৪২৩ ১ 'পাপসহযোগ কালে আ ২ “সভাসনে আ। ৩ মগ্ডন' আ। 5 পদর্া গৌ। পথ আ। ৪২৪ ১ লাদবাজ্ঞান 2 ২ "দঘ্বিপ' | ৩ অতঃপর এইখানে আদর্শ পুথতে অন্য পঁথর বিস্তারিত কাঁহনীর টুকর। সংযুক্ত আছে চ, ম.—৪৫ ৩৫৪ চগ্ীমঙল ইন্্র হর ত্রদ্থা সেবিল জগন্নাথে এতেক বলিয়৷ গেল বরহ্ধা সান্নধানে আইল ব্রক্ধলোকে নারায়ণ জগন্নাথে । জল নাহি ফিরে ব্ক্গ। সকল ভুবনে । মায় পাতিয়। জল করিল সংহার কুমুণও্লে ছিল৷ গঙ্গ। দিলা রাঙ্গ। পায় জল পাইলে গঙ্গ৷ নাহি দিব আর। গঙ্গ লয়া। ভগাঁরথ হইল বিদায় ॥ ৪২৫ ১ 'পরগ্কার' আ। ২ 'ঙ্গল গৌ। ৩ করে দেব জত, গো । ৪২৭ ১ গো-পুথির পাঠ । ২ 'বৈকুণ্ডে আ। ৩ নেবেতায় আ। & ঝোল, আ। “পলাকাড়' গৌ, সে৷ ইত্যাদি। ৬ ণ্ঘড়।আ। " ব্রামা' আ। ৪২৮ ১ নীলাচল হইতে সেতুবন্ধ পর্যন্ত নৌধান্রায় তীরভূমির উল্লেখে গপ্পকথার কষ্পন। অবলান্বত । আ-পুথিতে নীলাচলের পর— চড়ইগুহা, কলধোতপুর, জেশকা-দহ, সর্প-দহ, কোঙুরনগর ও হাদিয়া-দহ উীল্লাখত। এই পুথর মার্জিনে (২১২ ক, খ) দুইটি পাঠান্তর 'লাঁপবদ্ধ আছে । একটিতে পাই—রমস্তক দ্বীপ, অগর্ধম দ্বীপ, চন্দ্রসর্প দ্বীপ ও সর্ণমণ্ণ দ্বীপ। অপরটিতে আছে— চিলিকা-চুনের দ্বীপ, ঝালিধাটা বানপুর, ফিরাঙ্গির দেশ, চি্গড়া-দহ, কীকড়া-দহ, কোঙরনগর, কুন্তীর-দহ ইত্যাদ। সো-পুথিতে আছে—চাঁলকাচুলের ডাঙ্গ বালি-ঘাটা, বানপুর, 'ফিরাঙ্গীর দেশ, চিঙ্গাড়ি-দহ, কাকড়া-দহ, সর্প-দহ, কুস্তীর-দহ, কাঁড়-দহ, শঙ্খ-দহ, হাঁদিয়া-দহ । গৌ-পুথতে—চিলীকুচলের ডাঙ্গা, রাডিঘাটা, বানপুর, ফিরাঁঙ্গর দেশ, চড়ই গুহা, আরাকানপুর, চন্দ্রহ'রির দ্বীপ, অবাস্তর দেশ, রামনক দ্বীপ, চিঙ্গাড়র দহ ইত্যাদ। আরা পুথিতে—চিলকাচলির ডাঙ্গা, ঝুঁড়িঘাটা, বানপুর, কারাঙ্গির দেশ, চাঙ্গাড়য়া-দহ, কাখড়া-দহ, সাক-দহ, জেণক-দহ, কু্ভীরয়া-দহ, কড়ি-দহ, মন্দহারণক দ্বীপ, রমনক দ্বীপ । সেতুবন্ধের কাছে 'লঙ্কার ময়াল,” তাহার পর আ-পুথিতে ষক্ষরাজার দেশ চন্দ্রহরি দ্বীপ, তাহার পর কালিদহ । আবার পুথিতে- চিন্রকূট পর্বত, হাদয়া-দহ, কালিদহ । সে-পুথিতে—চত্রকুট পর্বত, "হাড় খাল” সীতাকুলি- লঙ্কার ময়াল, তাহার পর কালিদহ । গৌ-পুথতে-চদ্দ্রকূট পর্বত, সিতাকূলি, কালিদহ । ২ 'ভালে' পঠিতব্য। ৪২৯ ১ সেতবন্ধের আ | . ২ 'সম্ৃষ্ট' গো । ৩ কেকই” আ। ৪ খিয়ের ধুষন' আ। ধুসন' গো । হরি' গোঁ । 8৩০ ১ 'নজ নিজ' আ। ৪৩২ ১ সেতবন্ধ' আ। ২ চন্দ্রুড়' আ। ও 'মহনেতে” আ। ॥ হাথ্া' আ। ৬ ধনবিত্তি' আ। " আতীরন্ত ছত্ন ঃ 'শ্রীপাঁতি বলেন ভাই কর অবধান? সো । | ৪৩৩ ১ “দেখা লিখি' আ। ২ “না' আ। ৩ "ক' আ। ৪ “বন্দু আ। ৫ “ক্ষেণেকে কৈরব বৈসে ভাসে দাড়ায় বৈসে' আ। ৪৩৫ 'সক্ষিণি' আ। ২ 'নকট' গো। ৪৩৬ ১ 'স্যাম'আ। ২ সুভট্র সনে ; ৪৩৭ ৫ অতঃপর কোন কোন পুথিতে (আরা, পৈয়ালি ইত্যাদি ) শ্রীমস্তের টোপর ফেলার কাহিনী আছে । এ কাহিনী প্রাক্ষিপ্ত নয়। অন্য পুথিতে (আ-পুথি, সো-পুথি ইত্যাদি ) এ কাহিনী বর্জত বলিয়াই মনে হয়। আ-পুথির মার্জিনে অনা পাঁথ হইতে এই কাঁহনী উদ্ধত আছে (২১৮ ক) ভিন্ন ভিন্ন হাতের লেখায়, সুতরাং ভিন্ন ভিন্ন পুথির। উপরের মার্জনে আরঘ্ত, তাহার পর চার দিক ঘুরিয়া তুঁঞ যাঁদ বটস লক্ষের সদাগর জলের উপরে ফেল। লক্ষের টোপর ॥ ৬ ॥ পাঠাস্তর ও মন্তব্য 'ছয় পাতে টোপর ফেলা” শ্রীমন্ত টোপর ফেলে হাসিয়। অভয়৷ বলে হোরো পদ্মাবতী দেখ জলে নিরুদ্ধি সাধুর পুন বুদ্ধি নাহি তিলমান্র টোপর পেলে কোটালের বোলে । ওহার মাত। খুল্পন। গৃজ। করে নয়ন কৃপা কার বর দিনু বনে লক্ষ তঙ্কার ধন নষ্ট করে অকারণ ইহা আমি দেখব কেমনে । ক্ষেমঙ্কার রূপ ধাঁর অধরে টোপর কার ভগব্তী গেলেন উীড়ুয়। জেখানে খুল্লন৷ নারী বাঁসয়াছে একেশ্ববী টোপর দিলেন ফেলাইয়৷ টোপর দেখি সম্মুখ বদরে মায়ের বুক এই বটে ঝাছার টোপর টোপর আনিল জে মোরে দেখা দেকু সে ককু মোরে বাছার কুশল । মা-পুথির মধ্যে একটি পাতায় পদাংশ ও পদ আছে কোটাল বলেন যাঁদ হও সদাকর সোনার টোপর পেল জলের উপর শ্রীয়পাঁতদত্ত নহে ধনের কাতর সোনার টোপর পেলে জলের উপর । ৫৫ খুল্পন। আম আইনু সিংহল হইতে নিরবাঁদ কান্দ তুমি দোঁখতে না পাঁর আমি আইলাম [ তোরে ] বার্তা দিতে । আমারে বিদায় দে শ্রীন্ত সেখানে একেলা না জানি কোনখানে বাদ করে কার সনে রাখবারে চাহি সেই বেলা । থুল্লন৷ জানল দড় অভয়৷ প্রসন্ন বড় সেই পু দিয়াছ আপানি হাথে দিয়। গুণনিধি পুনু হরা৷ লও যদি তোমায় আর কি বালব আমি । এতেক বাঁলয়৷ মাত। জান দেবা শৈলসুত৷ আঁবলম্বে কৈলাসাঁশিখরে ৮গীর চরণে চিত গ্রাইল নূতন গাঁত শ্রীকবিকম্কণ রস ভনে ॥ ধর গ টোপর সে দেবী বলে শ্রীমন্ত ছাওয়ালবুদ্ধ হয় পাটনে করিল লক্ষ তঙ্কা অপচর। পর্লাবতী বলিয়৷ ডাকেন ভগবতী শ্রীকবিকঙ্কণ গান মধুর ভারতী ॥ ২৫ ॥ শ্রীমন্ত টোপর পেলে হাঁসিয়৷ চাঁওকা বলে টোপর লইয়৷ সাথে জাই গো উজানি-পথে হেরে৷ পান্প। দেখহ জতনে আসি খুল্লনারে প্রবোধিয়। অবোধ খুল্পনা-পুর বুদ্ধি নাহ তিলমান্র ক্ষেমঙ্করী রূপ ধাঁর অধরে টোপর কারি টোপর পেলে কোটালবচনে । ভগ্বতী চাঁলিল উড়িয়া... পন্নাবতী করি সঙ্গে জান চন্ডী নান রঙ্গে উপনীত শ্রীমন্ত গোচর। মহামিশ্র ইত্যাদ ॥ ২৬ ॥ আরা পৃথিতে ভনিতাপদের পাঠ ঃ খুল্পন। প্রবোধ করি চলিলেন মহেশ্বরী আন্বকার সুচরিত মুকুন্দ গাইল গাঁত সঙ্গে সহচরী পদ্মাবতী সুখী রঘুনাথ নরপাত ॥ ৩৫৬ চন্ডীমঙ্গল পৈয়ালি পৃথিতে (১৬৯ খ)ঃ এত বালি ভগবতী উড়ে গেলা লঘুগাঁতি মনে করে সদাগর ভেটিব সিংহলেশ্বর উপনীত হইল সিংহলে ভেট সাজ অনুচরে বলে। মহামিশ্র ইত্যাদি ॥ 980 ১ “সন্ধাপ' আ। ৪৪২ ১ পথ আ। ২ 'মাতঙ্গজগাঁত' আ। ৪8৭-৪৪৮ আসলে পদ দুইটি এক ছিল। কোন কোন পুথিতে তাহাই আছে । 9৪৯ ১ আ-পুথির মার্জিনে আছে 'কাঁরয়া ভাবন। বাঙ্গাল কান্দান গান শ্রীকবিকল্কণ ॥ ৫ |" এই পদটির কিছু ন৷ কিছু রূপান্তর প্রত্যেক পুথিতেই আছে। দাঁ্ধতম পাঠ রহিয়াছে গো-পুথিতে। উদ্ধৃত কাঁরতোঁছ (১৮৬ খ-১৮৭ ক)। দাঁড় কান্দে মাঝ কান্দে করে হায় হায় পূর্দেশী কেরুয়াল কান্দে উভরায় । গলায় বাঙ্গাল সব ফেলাইয়ে সোল। হেঁটমাথা কৈরে রয় কাকতাঁলি মল৷ । বাঙ্গাল কান্দে রে হুড়ুই বাপই বাপই কুক্ষেণে আইয়া পরান বিদেশে হারাই । আরে ভাই দেশে আর জাবাম কেস্ায় [িদেশেতে মান গেল কি এবে উপায়। আরাল্যাম সব দন দেশেতে আইয়। আর ন৷ দোখলাম মাগু পোল৷ দেশে আইয়। । ইষ্ট মিত্র কোটদ্বেরে লাগে মায়৷ মে কোত৷ রৈল মাগু মর কোতা রৈল পো। এক বাঙ্গাল কহে বাই আরত বাচলাম ন। পোলা সব গরে রৈল তারে দেখলাম না। কাণ্ডার বাঁদ্ধ কেন্দে বলে বাই বাই এবারে বাচিলে বাই চল দেশে জাই । মাচী কাইয়া আইলাম হাদুর অঙ্গতি কেন্বায় বাচবাম বাই পল্যাবাম কতি। শিশুমাত হাদু নাহ বোজে ইতাইত রাজার হবায় কেন কয় বিপরীত । কবর্দক হেতু পবাদীন জেই জন আর বাঙ্গাল বলে তারে৷ বিফল জীবন । আর বাঙ্গাল বলে বাই গণ্রে নাই বল আমার জীবন দন এড় রে হন্দল। আর বাঙ্গাল বলে বাই ব্রেতা৷ কর দ্বন্ পুরুষ সাতের মর আরাল্য কাসন্দ। আর বাঙ্গাল বলে বাই হইল অনাত হর্বব দন গেল মর হৃকুতার পাত। আর বাঙ্গাল বলে বাই জীবনে হুতাশ জীবনে ক।তর বড় আড়ায়ে বাতাস। আর বাঙ্গাল কেন্দে বলে কি কাঁরব এর গণ্রে দতে চিন্য ঝুচী দুসে গেল পারা । আর বাঙ্গাল কান্দিয়ে কৈরেছে আয় আয় বাত কাইতে মাটীয়। পাতর। বাস্য৷ জায় । আর বাঙ্গাল বলে বাই কৈতে বড় লাজ অল্দগুার বাসা গেল জীবনে কি কাজ। অল্লাদগুড়। হুন্তাপাত৷ হিদল হিগুই মজাইনু হর্বব দন কেমনে কুলাই । উকটা মাছ ছিল কিছু গাঙ্গ্ে বাসা। গেল কিন মার্ল না."ডাকল। বাঁঙগলো । আর বাঙ্গাল কেন্দে কহে এল মোর আনি লাউল বাঙ্গিয়া গেল কিসে খাইবাম পাণি। আর বাঙ্গাল কহে বাই এই এল গাঁত দাক্ষণ পাটনে মৃত্যু বিদাতা লিখিতি। দুবাত জৌবনবাত তোঁজলাম রূসে আর বাঙ্গাল বলে দোখ পাই গ্রহ-দৃষে । কেন আজ রাহলাম খাইয়া আপন। বিপাকে মজিল মোর হর্ব অগ্কাপোনা। পাঠান্তর ও মন্তব্য ৩৫৭ আর বাঙ্গাল কেন্দে বলে আরানু জীবন বাঙ্গালের রুন্দনে সাধুর ম্লান মন কেহ নাহ বোজে জেই আমরার বচন । সজলনয়নে সাধু জুড়িল ক্রন্দন । অভরার চরণে মজুক নিজ যিত শ্রীকবিকগ্কণ গান মধুর সঙ্গীত ॥ ৪৫৮ ॥ ৪৫০ ১ “লোনের 'নিকারি চাঙ্গ' । ৪৫৫ অনেক পুথিতে (যেমন সো-পুথ, আরাও পথ ইত্যাদ) এই মাতকা-স্তবটি অন্যরূপে, ছোট এবং নিপদী ছন্দে, পাওয়া যায়। গৌ-পুথিতে পরপর দুইটি পদই আছে, প্রথমে শ্রিপদী পদ, পরে পয়ার। সো-পুথিতে একটি আছে তষে সে ব্রিপদী দীর্ঘতর (১৩১ ক-খ, ১৩২ ক)। এখানে উদ্ধত হইল (“চোঁতিস অক্ষরে স্তব ”)। করপুটে বলে বাণী কৃপা কর নারায়ণ ঢাল খাণ্ড ঢোল ঢাকে ঢুকি নাহি ?পএ বুকে কালরূপা কৈলাসবাসিনি ঢোল ছাড় ঢামালিনি মা। খন ছাড় খমুগ্ডলে ক্ষিত আসি খাও খলে আনে কি বালব আমি নিজগুণ আন তুমি খড়গ-হস্তে খর্পরধা রাণি । আনাইলে আপনে 'সংহলে গিরিজা গণেশমাত। গোকুলে গারর সুত৷ তুমি নাহ তরাইলে তরাসে তৃষায় মৈলে গেলা গে গোবিন্দ রাঁখবারে । তুলাঁস না পাবে ক্ষিততলে। ঘন ঘন ঘণ্টারবে 5005556 স্থিতি কার বর্ত কাঁর স্থাঁপআ৷ রাখলে হার ঘূণা কেনে ঘরের নফরে। স্থির নহে মধুরার পাত উমা কাতায়নি গোর উচ্থুর হইলে মার দৈবযোগে কৈল বল দামোদরে দাবানল উর উম! উিত চপলে দূর কৈলে দহনদুর্গাতি। চোরের চাঁরপ্ন ভাল চাঞা চাঞ প্রাণ গেল ধারআ ধনুক-শর ধবংমিলে অসুরবর চিত্তে চান্ত চরণযুগলে | ধরাধার-সুতা আঁবিধানে ছল ছুতা৷ তুমি মাত। ছায়া রূপে সমাস্থৃত৷ নমো নমে নারায়ণি নরে না পালিবে কিনি ছিদ্র ছাড় ছাওয়ালের প্রাত নভ ছাড়ি নাম গ মসানে । জটাজুট-প্রয় উন্না জগতজনানি আমা প্রজাপতি-নাভপদে পার্ববাত পৃজিল শবে রাখ যুগে থাকুক ক্ষেআতি। প্রভূপাকে পাইল পরানি ঝন ঝন আস হাথে ঝগড় ঝাটের মাথে ফটিকে ফারটিআ হরি ফাফর নফরে মারি ঝাট উর হেমন্তের ঝ ফুরাল্য তোমার ফুলপানি। ইহতে ইসান বার অপাঙ্গ হঙ্গত করি বাপ বলা বায় তার বিদেশে বিপাকে মরি ইহ পদে নিবোঁদব কি। বারি বিন বিদরএ বুক টষ্কারে টানিঞা চাপে টুটালে অসুরন্দাপে ভালে গো৷ ভবানি ভোলে, ভোলানাথ কার কোলে টুকি টেকে প্রাণ টানাটানি ভাঙ্গহ সৃষ্টির ভয়দুখ | ঠন ঠন বিশ্বে ঝণ ঠেঁকল৷ ঠকের ঠাম মাআমই তুমি মাতা মাতৃরূপে সমাস্থিতা ঠাঁঞে দিঞ। রাখ ঠাকুরাণি। মা মেন মরিব মোর লাগি [ডগর রাজার ঘটা ডাগর ডিগর গোটা যুস্ত কার যুদ্ধ করি যুদ্ধ কর সাকন্বরী উরে কাষ্প তারে হালে গ৷ যশোমতি তুম যথা যোগি। চন্ডীমঙ্গল ৩৫৮ রাম-রুপে রাবণেরে নৈরাশ কাঁরলে তারে সাত সনাতান সত্ত সব্বানি শর্ববানি নিত রক্ষ। কৈলে শ্রীরাম লঙ্্মণে সাঁখ সনে উর গো রক্ষিতে। লক্ষণে লভিলে মান লক্ষি কৈলে উপাদান হরাসনে হৈমবাঁতি হেরাহেরি হর্ষমাত লাঁ্ঘব সাগর হনুমানে । হিতহেতু হেরস্তজনান বাদ নাহি বিষ্ণু সনে বাণ-যুদ্ধ বাণে ক্ষেঅ ক্ষেমা কৃপাদৃষ্টি * ক্ষেম ক্ষেম৷ কর সৃষ্টি বিনাশিলে দিগস্বার বেশে ক্ষেঅ ক্ষেম৷ উর-গ আপানি। শৈলসুত৷ শাকন্তরী শৃস্তে নিশৃদ্ধে মার খুল্লনার তনঅ জবে চোঁতিস অক্ষর স্তবে শিবশান্ত কৈলে বিশেষে । শুনি তুষ্ট হেমন্ত-তনআ ঘড় ধতু নাহি জানি ষষ্ট কালে সনাতাঁন মুকুন্দ রচিল গীঁত দোঁব হৈল৷ হরাঁসত সাজ কর শটের চরিতে রঘুনাথ দিল প্রকাসিআ ॥ পদটি যথার্থই চৌতিশা । উ-উ (উমা_ঙূমা, উমা), এই (ইহতে-ঞঞিহতে, ইহতে ) এবং ণ-আন (আনে, আনাইলে)। গোৌ-পুথিতে পদটি যথার্থই “একনি স্তুতি” । পয়ার পদটি কালকেতুর চোঁতিশার সঙ্গে তুলনীয় । পুথতে পুথতে পাঠান্তব যথেষ্ট আছে। ৪৫৮ ১ 'লোলিত দেবীর আ। ২ গল বদনা” আ। ৪৫৯ ১ “কার পূ্া' আ। ৪৬১ ১ 'পন্মাবতী” আ। ৪৬৩ ১ ধধানকী" আ। ৪৬৫ ১ এই পদে আ-পুথিতে ক্রিয়াপদ উত্তম পুরুষের 'আছিনু 'পাইলাঙ । ৪৬৬ ৯ 'জ্রাত' আ। ৪৬৭ ১ 'জরাতি' আ। ২ ক্রিতনরমালা” আ। ৩ “পাইক দল' আ। ৪৬৮ ১ “জুঁড়িল' আ। ২ "পড়্যাছিনু' আরাও । ৪৬৯ ১ “চৌদুলি চৌদল” আ। ২ গজবেনি' আ। ৩ 'মারকরে' আ। & "চতুরঙ্গ আ। *বারইর বরজে' আ। ৬ 'লখে আ। ৭ কাট আ। ৪৭১ ১ 'রাজসেন৷ দেবসেনা করে' আরা । ২ আরাগ পুথি হইতে । ৩ ফেঁতামুড়” আরাও । ৪৭২ ৯ “পাইকে দেখ কাড়ের কথা' আ। ২ ণ্যাঁল পাইক' আ। ৩ “জেমন আনল" আরাগু। * অতঃপর পদটি গৌ-পুথতে এইরুপ সপ্তুদ্ধীপা বসুমাতি করে টলমল অষ্ট কুলাচল আদি কীপয় সকল । পাতালের নাগগণ হইল অস্থির সাহতে ন৷ পারে ধরাধর নহে দ্র | দানা নিবারণ-মন্ত্র পড়ে পুরোহিত রণ ছেড়ে দানা সব হৈল একভিত। রক্মাণ্ণী প্রভ়ীত জত মাতৃকামণ্ডলী সবাকারে রণ আজ্ঞ। কৈল ভদ্রুকালি । রচিয়ে মধুর পদ একপাঁদ ছন্দ শ্রীকাবকল্কণ গান গাইল মুকুন্দ ॥ 8৮৪ ॥ পাঠীস্তর ও মন্তব্য ৩৫৯ “অচলাচল' আ। ৪৭৩ “তনলোকে চমংকার হইল এ ভুবন' আ। ৩ চলিতচরণ দুটা* আ। ৪ “পঞ্চবর্ণ, আ। 'রণেতে বিজয় শিঙ্গা' পঠিতব্য | ৪৭8 ১ “কালিকা দক্ষিণী আ। ২ 'গাহুল গম্বর' আরা । ৩ গণ গণ্ডা কাটা কাবিবর মুগ ভমনে ভুজরাজ' অ]। & শোণিতের টাল কাট সয় বাঁল নরাঁশর কমলের' আ। পাঠ আরা পাথর । 'বরাত পুরয়া আগলে আ। ৪৭৬ আরা পুথিতে আরম্ভে এই দুই ছন্র অতীরিন্ত আছে পাঁড়ছে সইন্য জত শুনিতের বহে নদ মসান সসান অবতার সসঙ্ক। মাঁক্ষক৷ বেড়ে প্রেত আশ্রয় করে করে মাংস শুনিত আহার। ১ “ক্ষেক ক্ষে'ক' আরা । ৪৭৭ ১ নহি" আ। ৪৭১৯ ১ 'বুলন' আরাও । ৪৮১ ১ 'ঁসল্যা” অ।। 8৮৪. ১ 'যুকীনি' আ। ২ “চতুমুল” আ। ৪৮৬ ১ “সপ্তশলাক।' আরা । ৪৮৯ ১ খণ্ডে বাবাধর জামা আ। ২ সাগরে আ। ৪৯১ ১ 'ভালে আছে সাত তিল কষ্ঠতলে আছে সপ্ত রেখা, আরাও । ২ সো-পুথতে ছানির উল্লেখ-সমান্বত ছন্ দুইটি নাই। ৪৯৩ ১ 'রসীক' আ। ৪১৫ গো-পুথিতে পদটির শেষ ছন্রগুলি এইরুপ কেন বর আমারে রাখিলে কারাগারে, আনলে প্রবেশী কিবে প্রবেশী সাগরে । কান্দে ধনপাতিদত্ত পরিবার-মোহে, বসন ভিজল তার লোচনের লোহে । বাপের রুন্দনে কান্দে কুমার শ্রীপাতি, শ্রীকাবকঙ্কণ গান মধুর ভারাতি ॥ ৫০৯ ॥ ২"চত্ত' আ। এই পাঠ স্বীকার কাঁরলে 'যন্র স্থানে 'তত্ত' ধারতে হয়। ৪৯৬ পদটির পঞ্চম ছন্রে গৌ-পুথির ২১২ পত্র শেষ । বাকি পাত পাওয়৷ যায় নাই। পদটির পরে আ-পুথর শেষ ছতের পরে এবং মার্জনের চার দিকে এই পদটি লেল! আছে ঃ শ্রীমন্তের তুণ্ডে যাঁদ হেন হৈল বোল সত্বরে সদাগর পুন্ন কৈল কোলে প্রেম-আনন্দে সাধু হেল উতরোল । শ্রীমস্ত ভাঁসল প্রেম-লোচনের জলে। কণ্ঠে কণ্ঠে দিয়৷ দুহে করিল রোদন কোকনদ হইল দুই দুহার বদন ।"". অভয়াচরণে ইত্যাদি ॥ ৮৭ ॥ ৪৯৭ ১ বেদ গাঁড় ছয় অঙ্গ সতায় পাঁওত ঢক্গ অধর্ম ধের আধকারী' আরাণি। ২ গনত্য দিয়। পরে দুখ ইচ্ছে আপনার সুখ এ । ৩ “দায়' আ। ৪৯৯ ৯ “পাঁচালি কাঁরয়া বন্দ” আ। টিসু চন্ডীমঙ্গল &০১ ১ 'জননী' আ। ২ “তোর পিতা মহাধন্য আমার অষ্টাঙ্গ শূন্য বাম হাথে লোহা নিদর্শন শোকে নাহী চক্ষে দেখ ইচ্ছিয়। তোমারে সীখ ইংসা কার তোমার কল্যাণ ।' আ। &০২ ১ “অঙ্গদ বালা আ৷ 6০৩ বঙ্গবাী সংস্করণে উপসংহার অংশ হরিস্মরণ-মাহাত্যোর প্রসঙ্গে দেবীর উীন্তিতে গজেন্দ্রমোক্ষণের কথা এইভাবে আছে ঃ শন ঝিয়ে হয়ে সাবধান কাহ আঁম ইতিহাস শৃনিলে কলুষনাশ গজেন্দ্রমোক্ষণ উপাখ্যান । কার গজ মনোরথ সঙ্গে নারী শত শত জলববীড়া কাঁরল কামন৷ আঁস সরোবর জলে খেল৷ করে কুতৃহলে চারদিকে বেষ্টিত অঙ্গন । [লিখন আছিল ভালে আঁসয়৷ এমত কালে বুস্তীরে ধাঁরল আচম্বিত [নিজ পাঁরবার যত এককালে শত শত টানে সবে হয় সাঁবাম্মিত। গজ কহে ওহে ভাই ইহাতে নিস্তারণ নাই বিনা প্রভু দেব ভগবান ভষে ভাব গজপতি নানাবিধ করে সতত আস হরি কৈল পারন্রাণ ॥ &08 ১ অথবা “সীঙাঁন” । ২ পপ্রশীত' আ। ৩ "মধু আ। আরাণ পথ হইতে । পনতে নিত, আ। ৬ নাথ মান আ। " “্সুভাসীত” আ। ৮ আনন্দ হইয়া গাব আ। ৫০৫ ১ ণসআন ঢাটি নামে দাস আরা । . ২ শীবষমাচার, আ। ৩ আ-পুাথতে দবিরুন্ত নাই । ৫০৭ ১ আরাঙু পুথি হইতে । ৫০১ ১ পাট নেও হার বাস গ্বর্ণহার আ। ৫১১ ১ 'মন' আ। &১২ ১ মোহ' আ। ৫১৪ ৯ 'কুলিগ্রাম' সো। ৫১৫ ১ “চান্দা, আ। ৫১৬ ১ 'অনীমুখে' আ। ২ 'কুলবধ্‌। আ। ৩ বাতি” আ। &১৮ ১ 'মেখলা' আ। ২ "গায় আ। ৫১৯ ১ কর্থার আ। ২ 'পরাজই' আ। ৩ 'কুঞ্জে আ। &২১ ১ নতম্বের' আ। ২ নমস্কার আ। ৫২২ ১ তওুল মঙ্গল বাসরে আ। ৫২৪ “অর্থিনারীশ্বারর' আ। ৫২৫ ১ বাস আ। ২ রদ আ। ৩ শিদ আ। &২৬ ১ 'দেই জয়কারে' আ। ৫২৮ ১ 'শ্ত্রীমমর সোমের মান্দরে' আ। অমর সামর মান্দরে' সো । “অমর সাগর মুনি বরে' নাঁলমণি | ৫২৯ ১ 'পশু আঁদ' আরাও । 'অপ্প আয়ু সো) ২ “রাজা অধর্পরায়ণ' পাঠিতবা পাঠাস্তর ও মন্তব্য ৩৬১ কোন কোন পুথিতে ও ছাপাগ্রস্থে দ্বর্গগমন কালে বিষুদূত ও যমদূতের ঝগড়া-বর্ণন। আছে । আমাদের বিবেচিত কোন পুথিতে তাহা নাই। ৫৩১ আদর্শ পুথতে পদসংখা। ১২০ ( জাগরণ পালার )। এইটিই কাবাকাহিনীর শেষ পদ । পরের পদটি কবির উন্ত এবং সেই পদটিই সবশেষ । ৫৩২ আদর্শ পাথর সর্বশেষে পদটির (“ক্ষেম গ""'সেবা” ) সাঁহত অন্য পাঠের দুইটি পদ মাঁশিয়। গিয়াছে । ১ অতঃপর আদর্শ পুথর এই শেষ পদটির পাঠ আরা পুথি হইতে উদ্ধৃত হইল । তন্্মন্ত্র বাঁধ ন্যাস ভূতশুদ্ধি জেব৷ হৈল মোর জ্ঞানে অনুকম্পামই আদ তুমি তুই দোষের নাঁসনি পুনে । তোমার হীঙ্গতে সাখয়। সঙ্গীতে আত্ম৷ কৈল সমর্পণ দোষগুণ ভারি তুমি মাহেশ্বরী কার তোমা স্মঙরণ। তেপাস্তর বিলে তুমি আজ্ঞ৷ কৈলে সঙ্গীত হইল নির্মাণ কাবা নবরসে দোষ অপযশে জে জন ন৷ জানে এই আপান তুম প্রমাণ । অজ্ঞ আম অন্ধ দূর কর বন্ধ তন্তুমন্হীন প্জ। অষ্টাদন মুখখজনে কৃপামই । জে হৈল মোর সকতি জগতবতংসে পালধি বংশে কাঁরয়া অঞ্জলি হরি হরি বল নৃপতি রঘুরাম দয়৷ কর ভগবাঁত। তার সভাসদ রি চারু পদ বুধ শুরুবারে আরাধে তোমারে শ্রীকবিকঙ্কণ গান ॥ সো ও আরাও পুথিতে এই পদেই পুথি শেষ । ২ আ-পুথতে প্রথম পদটি এই পর্যন্ত । ও “মহেশে পার্তী“'পৃূজ। কৈল দেবগণ"—এই পর্যন্ত আর একটি পদের অংশ । ৪ পাঠান্তরে কাহিনীর আরও একটু জের টান। হইয়াছিল । চ্তী কৈলাসে গিয়া শিবের কাছে হ মত্যলোকে তার কাধকলাপের রিপেট 'দিয়াছলেন । সেই রিপোর্টের এক পাঠান্তরের পদাংশ উপরের চার ছত্র। আর এক পাঠান্তরের পদাংশ হইল এই ছয় ছন্ (“ন্রিসন্ধ্া। পৃজেন হর-"..."মুকুন্দ রচিল শুদ্ধমতি ॥”)। এই পাঠীন্তর গৃহীত হইয়াছিল নীলমণির সংগ্করণে । পদটির আরপ্ত ও শেষ এখানে উদ্ধৃত কারতোঁছ । বিবরণটি দুবলার বেসাতির বার্ড ম্মরণ করায় । অবতাঁর বসুমতী পূজা লয়ে ভগবতী তুমি ত যাহার ভর্তা অদর্শন তার কর্তা বাঁসলেন হর সন্ধানে হব আমি ভুবনপৃজিত।। কৈল তারে প্রণিপাত বর দিল ভূতনাথ ছাঁ়িয়।৷ কৈলাস গিরি গেলেম হেমস্তপুরী জিজ্ঞাসল তাহার কল্যাণে । পাইলাম অতুল সম্মান শুনিয়া শিবের বাণী যুঁড়য়। উভয় পাঁণি পৃজ। পাই যে যে দেশে নিবোঁদব সাঁবশেষে নিবেদয়ে শিখরদ্রীহত। ূ একদও কর অবধান।... শেষ গিয়। নৃপাঁতির স্থান সবাকার বিদামান গ্রতিজ্ঞায় সাধু হারে রহে বন্দী কারাগারে করে সাধু প্রাতজ্ঞাপ্রণ নিল রাজ। যত ছিল ধন। চ, ম,—৪৬ ৩৬২ চন্ডীমঙ্গল শুনিয়। চন্ডীর বাণী রোষযুত শূলপাণি রঠিয়৷ খ্রিপদাঁ ছন্দ গাচালি কারয়া বন্ধ কটুভাষে বলেন বচন বিরাঁচল শ্রীকবিকঙ্কণ ॥ ধনপাতির নির্যাতন শুনিয়৷ কুদ্ধ হইয়। শিব চাঁগিয়৷ যাইতে উদ্যত হইলেন। পরের পদ, আরম্ত গোঁরী কত বা সাহিব বারে বারে যে জন সেবক মোর সেজন বিপক্ষ তোর যুগে যুগে বিড়ন্ আমারে ঃ শেষ শিক্গ৷ ডুর মাল শূলহাতে বাঘছাল কারয়৷ প্রণতি স্তুতি কাহলেন ভগবতী বলদে করিল আরোহণে মোর কিছু শুন নিবেদন রোষযুত দেখি হর যুঁড়িয়। উভয় কর খালাস করেছি তারে কেন রোষ কর মোরে চণ্ডী তার পড়িল চরণে । তার হেতু ন। কর চিন্তন । মহাঁমশ্র জগনাথ ইত্যাদ ॥ শবকে শান্ত কারতে পাবৰতী বাললেন (পরের পদ ) আগে ধনপাঁতদত্ত কৈল নিজ দোষ হাসিয়৷ জিজ্ঞাসে তারে দেব পশুপাতি । চিরাঁদন তারে না থুইনু অভিবোষ । কহ প্রিয়ে কেমনে আছেন ধনপতি অপুন্রক ধনপতি কৈনু পু্নবান তাহার গৌরব কৈলে আমার পাঁরিতি। পুরষ্কার কৈনু তার করিয়া ছোড়ান। অতঃপর কহ ৮ওী পৃজার বারতা এতেক বচন যাঁদ বলিল পার্বতী শ্লীকাবকঙ্কণ গান মঙ্গলের গাথা ॥ পধতী বালিয়৷ চাঁললেন ( পরের পদ এবং এই পাঠান্তরের শেষ পদ ). পণ্চমাস গভবতী খুল্পন] উত্তমমৃতি হয়ে বড় অভিলাষা সদাগর দেশে আস সদাগর রাহল বিদেশে গেলেন রাজার সন্টাষণে খুললনার গর্ভবাসে দেব মালাধর বৈসে শুনিয়া সাধুর কথ। ভূপতি পুলকযুত। প্রসব হইল দশমাসে 1" শ্রীমন্তে করিল কনাদানে । পদটির অবাঁশষ্ট অংশ আ-পুথতে উদ্ধৃত । বন্ধনীস্থিত দীর্ঘ ব্রিপদী ছয় পধান্ত পাঠান্তরের শেষ পদ । এইটি আদর্শ-পুথর ১২১ সংখক পদ। পাঁরিশেষে লিপিকরের বস্তব্য যথাযথ উদ্ধৃত হইল । যদসাঙ্গং কৃতং কর্ম জানত৷ বাপ্যঞজানত৷ | সাঙ্গং ভবতু তৎসবং শ্রীহরিনামানি কীন্তনাং ॥ ১॥ জথ৷ দ্ুষ্টং ত্বথ। লিখিতং লিক্ষকে নাস্তী দোসক। ডাঁমস্যাঁপ রণে ভঙ্গং মুনীম% মতিদ্রম ॥ ১ ॥ সকাব্দা ১৬।৩৮ ॥ সক ॥ সন ১১২৪ সাল। মাহ ১৭ আশাঢ় রোজ রবিবার বেল। ১ এক প্রহরের কালে সমাপ্তি হইল মোকাম রাধানগর পাঁড়ুয়া। পরগনে ভূরশীট তালুক শ্রীজুক্ কিত্তিচ্দ্র রায়ের । আমীন শ্রীজুত বাবু লালবেহারি। ত্য ভেজয়া আমীন শ্রীযূত কৃষচন্ড্র রায় বাদসাহা শ্রীল শ্রীযুত ফরকসাহাজি ॥ পুস্তক শ্রীগণেশ দেব সর্মানশ্য স্থাক্ষরীমদং ॥ বড় ঘরের দক্ষিণ উসারায় পাঠান্তর ও মন্তব্য ৩৬৩ সমাপ্ত হইল পুস্তক। কাছে বাঁসয় শ্রীযুক্ত রামসরণ রায়চৌধুরী । যেষারজী ॥ তথা শ্রীযুক্ত সদাণীব চাট্রোপাধ্ায় মহাশয় সাাকিম দিগলগ্রাম ॥ কৃচ্ছেণ লাথতং গ্রন্থ, যশ্চোরয়াতি দুর্মাতিঃ [1 ] সৃকরী তস] মাত। | স্যাং] পিত। চ তস্য গার্ড ॥ বন্ধনীস্থিত পদ পৈয়ালি পুথিতে এবং রামজয়ের ও নীলমাঁণির সংস্করণে আছে । পদটিতে আরও কয়েকটি ছন্ন পাওয়া যায়, ফলশ্ুতি কলিকালে চাঁওকার হইল প্রকাশ আসোরে সাহত মাত৷ হবে বরদায় যার যেব৷ মনোরথ পৃরে তার আশ । যে জন শুনায় আর যেই জন গায়। ব্রাহ্মণ শুনিলে ধর্মশাস্ত্রেতে ভাজন সন্কল্প কারয়।৷ আর যে জন গাওয়ায় যুদ্ধেতে পারগ ষে শুনিবে ক্ষাুগণ। একাস্ত হইয়৷ মাতা তারে বরদায় । বৈশেতে শৃনিলে হয় বাঁণিজ্যেতে মাত এই গীত যেই জন কাঁরবে শ্রবণ শৃদ্রেতে শৃনিলে সুখ মোক্ষ পায় গাঁত। বপদে রাখিবে দুর্গা আর পঞ্ঠানন। সর্বলোক হার বল হয়ে সানান্দিত সমাপ্ত হইল এই যোল পাল। গান. সমাপ্ত হইল এই অভয়ার গাঁত। অভয়াচরণে ভনে শ্রীকবিকম্কণ | শব্দার্থ [ ক্রিয়া-ধাতু হাইফেন-চিহিত। ফারসী শব্দ তারক৷ চিহ্যুন্ত । বন্ধনীমধ্যে পষ্ঠাসংখ্যা ] অক্ষয়মাল৷ ( ২৫৬ )5 অক্ষমাল৷ অগোর অগুরু অঙ্গজনু অঙ্গজাত অঙ্গন্যাস পৃজায় বাঁসয়া পূজকের অঙ্গশাদ্ধি অনুষ্ঠান আজতবল্লভ৷ ৫ লক্ষ্মী অট্রুলা সৌধচূড়। আতিত (১৪০) আঁতাঁথ অদ্যতনী নবীন৷ অধন মূল্যহীন বত অনবিজ্ঞ আবিজ্ঞ অনিত অনুচিত আচরণ অনুগুণ (১৩৬) ঃ মনস্থির অনুস্তর অসঙ্গত বাক্য অনুপাঁদ ঃ পশ্চাদৃগামী অনুবঞ্জ-ঃ সঙ্গে সঙ্গে আস। অনুমানে (২৩৫ ) সসম্মানে অনুবল সহায় অনোঁচত অনুচিত অপাঙ্গ,-্গি আপাঙ গাছ অপেক্ষণ পাহারা অবজান অবজ্ঞ অবতংস কর্ণাভরণ । শ্রেষ্ঠ ( মালা, চুড়। অর্থ হইতে ) অবদাত শুভ্র, উজ্জল অবধোত বৈরাগাঁ অভার ঃ ভারি; প্রচুর ; অনির্বাচিত আঁভরথ অবিরত আঁভডিরোষ বিরন্তি অমলাঁখ আমলকী অযান্রিক 8 অশুভ যাত্রা-লক্ষণ অরুণে (২৬৭) রন্তে অলিনী ॥ ভ্রমরী গলঙ্খ ( অলঙ্খ ) আকাশ অশুচে অশোচে * অশোয়ার ( 5 অসুমার ) অসংখা অশ্বনা অর্চনা অফ্টমঙ্গলা আট দিনের অনুষ্ঠানের মঙ্গলসমাপ্তি, তদুচিত বন্দন। অফ্টশান্দ ঃ অবশ্/পাঠা আটটি শবরূপ অস্থল ঃ অথল, অতল আস্ত আববাহত৷ অংশ রূপে কুমারী রূপে অহি ঃ সর্প অংস কাধ আই মাতৃবং মান্য । আয়ু আইবড়া ঃ অবিবাহত পুরুষ আইয়াত সধবা-অবস্থা, সধবা-চিহ আইদিষ আসিও, আসিস আউচ ফুল, গাছ বিশেষ আউগ্জালি দুবিনীত। আউদ্ধান আয়ুষ্মান্‌ ( নক্ষতুযোগ ) আওয়ার আবাসগৃহ আওয়াস,-বাস আবাসম্থান আকটী নাছোড় আবদার । আক্ষটি শিকারজীবী আখণড অখগ্ডিত * আখন শিক্ষক আগম প্রাচীন শাপ্ । গভীর আগু পুরোব্তী আগুবালি আগুয়ান আঘন অগ্রহায়ণ আঘার জাতিবিশেষ ৩৬৬ আঙুন। আমলকাঁ আঙসর৷ কাচা মাটির সরা আঙ্গন৷ ঃ গাছ বিশেষ * আঙ্গাম (১৮৭) হাঙ্গাম আঙ্গল ঃ দায়িত্ব লইল আছু দ্র' আউচ আট-শর ঃ গুচ্ছতৃণ বিশেষ আটন। দ্র বেটনা আতম্বরী ঃ আত্মগ্ আটবলি, -ট-৫ এ'টুলি আঠ্য। শস্ত (থোড় ) আড়-ঃ গোপনে পাত। আড় দ্রবামান বিশেষ । বাধ, পুকুরের পাড় আড়ানি খড়ের ছাউনির নীচে আড়াআড়ি কাঠ ব৷ বাশ আড় দ্ুব্যমান বিশেষ । বেতের চুপড়ি আতাও গাছ বিশেষ আতায়ি গাছ বিশেষ আত-ক্ষেপে অধর্ষে আতুঁড় গর্ভের ফুল আসাদ আচ্ছাদন কাঁরয়া আথালি পাথাল এদিকে-ওাঁদকে, স্ব আদরে (৬০) আগ্রহ করিয়। নেয় আদাড়মালি, আদড়ে গাছ বিশেষ আদস অদৃশ্য আদ-ক্ষোত্র মুখ বীর আদুড় ॥ অনাবৃত আদেক অদেখা, অদৃশ্য আদা-বর। আদিবরাহ আপ্রুক আদ। আদেষ (১২০) কুন্থান (শজাত ) আন (১৯ ) অন্য, অনাথ আনই (১০১) বিক্ষিপ্ত * আনাত ক্ষুর শানাইবার চামড়া আনু আইনু, আসলাম চন্ডীমঙগল আনোআ অন্যোন্যে 'আন্ধারিয়। অগ্ধকারময় আপ্তঃ আত্ম ; আত্মীয়ত। আবারিয়া অনাবৃত করিয়া আবুধ নির্বোধ আমসি, -সী ঃ শুখনে৷ আমের ঢুকর৷ আমাত্য সহচর-সহচরা আম্রসার আমশাখা আয়াষা দিগন্ত আয়্যাত দ্রু' আইয়াত আরাঁত কর্মভার আরপ-, -রো- পৃজ। করা, অর্পণ কর৷ আরুচা অরুচি আর্জনে উপার্জনে * আর্দাস, -্দা-ঃ নিবেদন আল, আলো . উজ্জল, প্রসন্ন আলগছে না ছু'ইয়। আলবাটি পিকদানি আলাআি আড়াআড়ি, বিরোধ আলান হস্ত্রী নৌকা ইত]াঁদ বাধিবার খুটি আঁলশ্ব ঃ আলস] আলুয়া-ঃ প্রসারিত, শিথিল হওয়া আপ্পাই অল্পায় আল্য আসিল আলেয আসলে আম্বা-ঃ দ্রু' আলুয়া- আশ-গাড়ু ঃ পাশ-বালিস * আশোয়ার অশ্বরোহী আন্ধাস শ্বাস। -ছাড়িতে বিশ্রাম করিতে আস-গাঁড় দ্র" আশ গাড়ু আসাঁড়য়৷ আষাঢ় মাসের আসন ঃ বৃক্ষ বিশেষ * আসোমার,-য়ার অসংখ্য আস্তভাব অস্তগত হওয়। শব্দার্থ আহড়ে িহড়ে আড়ালে আবডালে আহরিয়। ঃ হারে, দরিদ্র আঁহড়ি,-ড়ী দ্র" অক্ষটি আকড় গাছ, ফুল বিশেষ আকাঁড়ি বাহুবন্ধন আকুড়ি বরুশীয দও আচল। উত্তরীয় : অঞ্চল আট-ঃ পর্যাপ্ত হওয়া আঠ্যা দ্র' আঠা আতুড়ি দ্র আতুড়ি আধাল অন্ধকার (কোণ ) আশী-হাটা মাছের হাট , ইকড়া, "ড় গুচ্ছ তৃণ বা গুল বিশেষ ইকিড়া দ্র' ইকড়ু। ইকিড়া (৫৭ ) ইতর প্রাণী, কাঁট হীক্গিচা হিংচে শাক ইচিলি চিংড়ি মাছ ইচ্ছে (১৭৯) ৪ ইচ্ছ৷ করে ইতাইল ( চিঠি ) শেষ কাঁরল * ইনাম ঃ বখাশশ ইন্দ্রীঃ হীন্দিয় * ইন্ছাফ ন্যায়াবচার * ইন্ধন (২২৮)৪ মুখ্য অংশ ইবে এখন ইষ লাঙনের ফাল ইযু ঃ বাণ ইসতে একটুকুতেই ইসর মূল দ্র' চান্দড় উইচারা উই পিপডে উকট- উটকানে। উঁকিনি উকুন উগ্বার-ঃ উদ্‌গার করা . উচিত (১৩৭) মনোরম (ভূমি) উচ্চরা আচারভ্রষ্ঠতা ৩৬৭ উকন] দ্র' উকল্যা উকল্যা, -ধু ঃ গন্ধতৃণ [বিশেষ উদ্ুর ঃ পড়ন্ত বেল উজাড়-ঃ নির্মূল করা উজানি ঃ স্রোতের প্রাতকুল গাত উজ্জাগর বিনিদ্ু উজ্জলদত্ত উ” কৃত অমরকোষের টীকা ও গণপাও উঠান (৭৭) বিবরণ, তালিক। উড়-ঃ দেহ আবৃত করা উড়ন আববণ, পরিধান উড়ম্বর ডুমুর উড়া উড়ন্ত । "পাক উড়ানিঞ৷ ঃ দ্র বড়ালিয়। উড্ভুষ ঃ এ্টুলি। ছারপোকা উদন ভাত উঁদত (১১৮) উদ্যত উদৃভট প্রকীর্ণ শ্লোক উধার ঃ সুদে ধার দেওয়। উপাধান উপাদান, উৎপাত্ত উনু বুকে ঃ হীন সাহসে উপনীত। ঃ পারণীতা উপমাত। ধারী উপানদ জুতা উবজিল ঃ উপাজল, উৎপন্ন হইল উবলম্ব ঃ উপালন্ত), ভং'সন। উভ উধধ্ব, উচ্চ । -কান উধর্বকর্ণ। "১মুঙা 8 উধবমুখ । রুড়ে ঃ জোর দৌড়ে । "রায় ঃ উচ্চকণ্ঠে 'উভর- ঢালা, নিঙ্গেপ কর। উভা-ঃ উঁচানো উভার-ঃ দ্র' উভর উমান-ঃ ওজন করা উর-ঃ অবতীর্ণ হওয়া * উরমাল, ু"ঃ ঘুর, দুষ্ট উলটি ডাবর িকদানি ৩৬৮ উলুর্থ-(_উম্ব-) ববণ করিয়৷ লওয়া। উলুর্থতে উলুর্থান (- উলৃথান ) বরণ উশনা, -স- শুকাচার্য উশ্চারা ঃ দ্রু” উচ্চর। উসার-ঃ স্থান ছাড়য়৷ দেওয়া ; বিস্তার কর৷ * একাছয়৷ একখণ্ড (দলিল) একট্কি ঃ একটু একার্তসা প্রসূতির একব্রিশ দিনের শদ্ধ-অনুষ্ঠান। একাত্রশ অক্ষরে স্তব। এক-মুদীনিয়। এক-ছাউনির ( ঘরবাড়ি ) একুনে মোট একুষিয়া প্রসূতির একুশ দিনের শবৃদ্ধি-অনুষ্ঠান এড়-ঃ রাখ , পারত্যাগ কবা এর ঃ শনু ওকড়া ঃ শরজাতীয় আগাছ। বিশেষ ওড় ঃ জবা ওড়ন দ্র" উড়ন ওড়ালোন লবণ-কর ওধা-ঃ তাড়। দিয়৷ গমন | "- করে ওম ঃ তাপ ওলা-ঃ নামানো ওসর-ঃ দ্র উসার- কইনু ঃ করিলাম কইল কারল। ককু কহুক, বলুক কঙ্ক ঃ সারস পাক্ষী বশেষ কচ৷ কাঁচ? * কুমুড়। কচাল-ঃ মোচড়ানো কাহল কঞ্জ ঃ পদ্য কটাস, কটাঁস বনাবড়াল কটু তৈল সধের তেল কড়ক ৫ বিরোধ কড়কচ দ্র করকচ কড়া (২১৮) সামান্য সয় চণ্ডীমঙ্গল কড়াই শন্ত করিয়া ভাজা কাঁড় (৫১) কানবাল। কাঁড়য়। জাঙ্গাল ঃ ছোট রাস্ত। কড়া৷ খেলাবিশেষে কাষ্ঠখ্ড। শাক বিশেষ কতি (৯০) কোথায় কংসব ঃ কচ্ছপ কনক ঃ ফুল বিশেষ কন্দ কাধ কন্দর ফুল বিশেষ কায়িক কর্ণাভরণ কপালি কপাট-লাগাইবার কাঠ কাঁপঞ্জল তিতির-শ্রেণীর পাঁখ কবজ কবচ, বর্ম কমঠ কচ্ছপ কমল। লেবু বিশেষ কমূফ-ঃ কাপা কমুজ-বেশ কম্বোজদেশীয পোষাক করঙ্গ ঃ কমওলু করঞ্জা, -পি ফুল, ফল ( অশ্ল) ও গাছ বিশেষ করট কাক করাও সাজি করভ ঃ উট; উটের বা হাতির ছান। * কর! ছুরি ঃ একধার ছুরি করন্দ। ৪ বৃক্ষ বিশেষ করাট চাপড় (২৬৬) দ্র ঘাড়হাত। করুণ উদ্যোগ | ধায় বাঘ করিয়া - (৬৭) করুণা লেবু বিশেষ কর্কট কাকড়া । পক্ষী বিশেষ কর্ণ-বেদ কর্ণভেদ কন্নাল একরকম বাশি কার্ণক কর্ণাভরণ কলধৌত সোনা, রূপ। কলন্ত কালোয়াত * কলস্তর (৭৮, ৮৩, ১০৭ ) সুদ, ব্যাজ শব্দার্থ * কলন্তর কলন্দর, যাযাবর ফকীর সম্প্রদার কলবিষ্ক কোকিল কলাপা ময়ূর কলি বিবাদ। কাঁল কাঁণকাল। কলর (২৬৫) কলিকালের কষ্প কপ্প যুগ যুগ কাণ্পিল রাঁচল * কালিম৷ ঃ কল্মা, মুসলমাম ধর্মের মূলমন্ু কসাঞ্জের বাড়ি চাবুকের আঘাত কংষ ঃ কাস (বাদ্য) কহ্‌লার ঃ শালুক ফুল কাউ কাক কাকুবাণী কাতরোন্ত * কাগাতি, কগুতি কাগজ তৈয়ারী-বৃত্তজীবী * কাুরা চলে কোঠ। কাচ &৭ কাছ কাচ অভিনয়ে পান্রসজ্জা কাচা ঃ আটপৌরে কাগড় কাছ-ঃ ( কোমর ) আটিয়া পঞ্ কাছাড়-ঃ সবলে নিক্ষেপ কর কাজী ঃ ১ক আমানি কাট ঃ হত্যা । জুঁড়িল - কাট ঃ কাটা । " ছাগলের কাঠ-দা কুডুল; কাটারি কাট-শর কাঠির মত শর গাছ কাট-শিম ঃ বুনো শিম-লত। কাঠ৷ দ্রঝের পরিমাণ বিশেষ কাড়া-পড়া ঃ ঢাক বিশেষ (বাদ্য) কাও ঃ বাণ কাণডা-ফলা ঃ খঙ্ল-ফলক কাণ্ডার ঃ কর্ণধার, নাবিক * কাত।ঃ ক্ষুর (নাপিতের) * কাতি ঃ কাটার, খাড়। * কাত একপেশে ভাব চ, ম.-৪৭ ১৬৯ কাদদা ৮ কাঠ-দা কাদস্ব ঃ কলহংস কান-কথা ফুসপানি কান দিগান্তর (১০) দিগএদগস্তরেও শুত কান্দিশিক ঃ দিশাহারা কপ আভনয় ক,পাড়, ড় যোগী ভিখারী, সন্নযাসী বিশেষ কাফন ভৈষজ্য গাছ বিশেষ কাঝাঁড় মুসণমান শ্রেণী বিশেষ কামাচার (১৬) কানডাবাপন্ন * কান নঃ ধনু। আগেয়াস্্ * কামানিঞ্া গোলন্দাজ কাঁখল৷ কাবু শিল্পী, গড়নদার কামী পায়রা , চড়াই ক।মের (২০১) কাঙুর (কামিক্ষা ) কায়বার মঙ্গল-প্রশান্ত কারওব ৫ একজাতীয় হাস * কফরম। 'নতাপ্রাপ্ত রাজকর্ষচারী ক।০।1১ত ফণ ও গাছ বিশেষ ক।নসার ব হারণ বিশেষ কলা ফুল বিশেষ কপ (২৬৮) কালোচিত ( অর্থং বারকালি ) ক।াণ হাও ছুঁতে হাড় ক।পয়৷ (১৩১) কালে রঙ প্রসাধন দুব্য কালয়৷ কৃষ্ণবর্ণ কালী কৃষ্ণব্ণ। দেবী । কৃষবর্ণ (কেউটে) সাপ কাল্য কড়া গাছ ও ফুল বিশেষ ক।ল্যাধান কেলে (কেলেস ) ধান কাল) নোয়। ঃ গাছ বিশেষ ( কৃষ্ণ লবলা 2) কাসন্দা,-ন্দিয়। & গাছ বিশেষ কাসীমল৷ গাছ বশেষ কাস কেশে, কাশ-ঝাড় কহন ঃ ষোল পন (সংখ্যা ) কাকাড় কাকুড় ৩৭০ কাক। দু" কঙ্ক কাচড়া অল্প শাক বিশেষ কাঁচ ওজনের মান, কুঁচ 2 কাজ ঃ দ্র" কাজী কাঠি এক ধবণেব পুত কাড় দ্র" কাণ্ড কাডাকাডি ঃ পরস্পর বাণবৃ্ কাথ ঃ দেওযাল কান (৭৭) কান৷ কাসড় কাসর কাসার ঃ জলাশয িচক ঃ বাশ বিশেষ * কিতাপী পাঠান গোষ্ঠী বিশেষ * [কতা বন্ত্রথণ্ড, ঠাদোযা কিয় ঃ কেয়া ফুল ির৷ শপথ, দিবা কার্ত (৮১) বিবাহে ব্যবহত মঙ্গল বন্তু বিশেষ কুঃকুভ ( _কুকুভ ) বুনো হাস কুখুড়৷ মুরগি কুজ্জানী, -নি আঁভচারকারী কুচ্যামোড় জলক্ষেপণ বস্ত্র বিশেষ কুজবার মঙ্গলৰার কুঞ্জরে নাঁদযা (৯৪) হস্তী হাকাইা কুড়-ঃ খনন কৰা কুড়া (৬) বিঘ। কুড়া (_ঝুঁড়া ) চালের খোসাব গুশড কুঁ়য়া, কুড়্যা কুঁড়ে ঘর কুঁড়য়া মালসা ৷ "সপাথর৷ মালস৷ থাল৷ কুণ্ড (৭০) ঃ স্তূপাকারে রাক্ষিত বস্তু কুম্ত বর্শা কুন্দ ফুল বিশেষ কৃন্দে তক্ষণ যন্ত্রে কুপী বাশের চোঙা ; তৈলাধার পাত্র কুঁবদার (-কোবদার ): ফুল ও বৃক্ষ বিশেষ চন্ডীমঙ্গল কুরুবক ঃ বৃক্ষ ও ফুল বিশেষ কুরণ্টক, ওক বৃক্ষ ও ফুল বিশেষ কুরর, -রি ঃ পক্ষী বিশেষ কুরলয়ে ঃ কর্কশ শব্দ করে কুরা-বাঁক পক্ষী বিশেষ কুলজনী কুলনাবা * কুলাপঃ খিল লাগানে। ৷ শঙ্খ (১০৮) কুলি, -লী কুল (ফল) কুলি (২৬৬) সবু নাল৷ কাল কুলি ঃ গাঁনতে গাঁলিতে কালঙ্গ পক্ষী বিশেষ কুলিত৷ ঃ বৃক্ষ বিশেষ কুঁড, কুঁড়য়া ঃ মালস৷ কপ দ্র" কৃপা কেনি ঃ কেন কেরয়োল, -বু- দাড় । দ্র করবাল (২২৮) কেশুব এক জাতীয খাসের মূল ( সুখাদ্য ) কেসারআ, কেপাই (৮৩) রভীন চূর্ণ বিশেষ (981101819 01 17011) কৈফিতের (৮৩ ) উপযুন্ততাব (প্রমাণ গ্ববৃপ ) কৈবল্য মুন্ত , পুণ্য কোক নেকডে বাঘ কো'কিনাক্ষ ঃ ফুল ও গাছ বিশেষ কোট ঃ কেষ্ট কোঠার কে ষ্ট'গাব, একদুযাবি সুদৃঢ় ঘর কোড- দ্রু" কুড- কেনা (১৩৮ ) পাঁরমাণপান্র বিশেষ কোষ (জ্বর ) বেদনাথটিত, তাড়স * কোযালি ঃ মুসলমান শ্রেণী বিশেষ, তদ-বত্তি * কোর (১২৩) পক্ষী বিশেষ কোরঙ্গা ঃ জাতি বিশেষ, বাঁন্ত বাজ দেখানে। কোল (সর )ঃ হীড়র ঢাকা কোল (২৭২) কোল-জাতীয় সৈনিক * কোলমকাল। পারপাি রন্ধ নশালা শবার্থ কোশ (২৬৬) ক্লোশ কোড় (২১৬) কড়ি? কোশল (৮৫) কুশল কৌসলকাল৷ (৭১) দ্র" কোলমকাল৷ ক্ষেন দ্র' খেম ক্ষেমঙ্করী শঙ্খচিল * খইরং দান, খয়রাত থঞ্জে দ্র খন্যে খড়কি, -গী পিছনের বা পাশের দ্বার থণ্ট, থণ্ড, খণ্ড ৫ বাটপাড় খও্ড ঃ চাপ গুড, চাপ (ক্ষীর) খণ্ড, খণ্ডা- ঃ ধ্বংস করা খা (৩৯) খণ্ডনকারিণী থাঁগ (৭১)৪ টুকরা * খদা (৬) প্রবণন।, কুপণত৷ , অনুদার খন্যে (হইতে ) খনি, ভূতলে গুপ্তস্থান * খমক, "কি খঞ্জানর মতো বাদযযন্ু খরথুর ঃ তীক্ষধার * খরসান (৭৬)৪ বাপির পুটুলি (ব্লটিঙ ) খরসান (৬৬, ৮৬) তীক্ষ ও শাণিত । খর৷ প্রথর রৌদ্র খাঁরষ গোখরো সাপ থাট ঃ খর্বকায় ; ছোট । "দড়ি । কম মাপের দড়ি খাটুপন৷ প্রবকের ব্যবহার, নীচতা৷ থাণ্ড খাড়। থাপর৷ পাতল৷ মৃংপান্র খাম ঃ স্তদ্ত, খুটি খামার খেত হইতে শস্য তুঁলবার স্থান থায় (২০৩, ২৪৬ ) খাও থার। বৌটা ( বেগুনের ) * খারজ বাঁহভূতি, বিতাঁড়ত থাঁলিঃ খাল।”“ভীল খালি (১০৩) খাইলি * খাসা ঃ উৎকৃষ্ট |" জোড়া 6০ 2 চা খাখার ঃ কলঙ্ক, নিন্দ। থাচর অবিনীত, অপটু। রক্ধন—ছুখড় খাট প্রঝক; নীচ 1খন ক্ষীণ, দুবল খিয়া- ঃ নৌক। বাওয়া খিরখও্ড খিরের নাড়ু খিরদক বাস গরদ বন্ধ খরী ঃ রাবাঁড় খিল ভূমি অনাবাদ জমি খীরি দ্র” খির্গী খুঙ্গ ঃ লাখবার সরঞ্জাম-পান্র খুঞ খুঞ৷ গাছের পাতার সুতায় বোন কাপড় খুঁড় (৬৩) খেঁড়বার হাতিয়ার খুঁড়য়। শাক বি.শষ খুঁদ, "দ্য ক্ষুদ্র খুনি (৮০) দ্র" খুঞস খুনে ঃ দ্র খন্যে খুরপ্রধারণী খুরপা ( অগ্ ) ধারণকারণী খুরুঃ খুর খেজাড়ি ঃ মুড়ি ? খেওক ছোট গদা ; গাল খোত্র বাঁর; ক্ষত্রিয় খেদ- তাড়৷ দেওয়া, তাড়ানে। খেদা বিতাড়ন খেদাড়- বিতাড়ন কর৷ থেম বৃত্তি, ভাতা । "*নান ঃ লাখরাজ ভুমি খেম- ক্ষম। করা খোঃ খেয়া; পিছুটি ক খোজ, -জা মান) বাও, প্রভু খোল বাদ্য যন্ত্র মৃদ্গ খোসল! পাটের ব৷ শণের বস্ত্র, চট খোটা (২৫) ভরসনায় কটু হাঙ্গত গ্রউন। গোকণ মুগ গছ বাকের ভার ৩৭২ গছ।- নাস্ত করা গজগম৷ গজগাঁত গজঘটা,-ঘড় হাস্তিবাহিনাঁ গাজঘোট হস্তীর আবরণ গজবম্প হস্তী-পৃষ্ঠে বাদ বিশেষ গজবেনি হাতি পিঠে বাজন। (বাশি)? গজমুতি উৎকৃষ্ট মুস্তা গঙা- দ্ু গোঙা- গঞ্জ- ৬সন। কর * গাঁফা তাস খেল। গড়া থান কাপড় গড়া-ঃ সময় কাটিয়৷ যাওয়া শাঁড়ঃ গঠিত ।-১ছাড় গণগবিত পরিজন ও গুরুজন গণবাত্ত ধাতুপাঠের টীক৷ গণা ফুল বিশেষ । যুগল গনা, নাই গণেশ গণ্ডক, -ও। ঃ গণ্ডার গাঁও, -তী দ্র" গাঁও গদী গদাধারী সোনক গন চল৷ পথ গণেশ-বারা গণেগপৃজার ঘট গবয় গয়াল, মৃগ [বিশেষ * গর"ণল ধর্ম,স্তর হইতে মুনলমান গার্বিত গুরুজন ( সংসারে, নারীর পক্ষে ) গ্রাঃ [ সংখ্যা নির্দেশক শব্দ | চারি গুয়। ; “নই নব্বইটা গা-ঃ নৌকায় রঙ লাগ।নো।, কালাপাতি করা । গাইল (১৯১) গাউল গম্থন বাশের আগায় ধবজ। [নসানধারী পদাতিকবৃন্দ গাওটি, -ঠি, গাঙ্গুটি শোনা কযা কনাঘু'স। গাজ-ঃ উচ্ধ্বনি করা গাজ৷ গেঁজ , পৃষ্ঠক্ষত। বলদের * গাঞ্জিঃ গ্রামনামোদৃভূত পদবাঁ গাঠার গাট বাধার মতো শ্রেণীবদ্ধ ভাবে কর্সরত । "গাবর গাড়, শ্ড়া গর্ত চন্ডীমঙ্গল গাড়র গাড়ল, ভেড়া গাড়ি গর্ত ; জলাশয় গণ্ডি ধনু গাবর ঃ জোয়।ন নাবিক গাভা থেশপায় পর ফুল গারড় ভেড়া, গাড়ল গারড় গাবুড়ী, সর্পবৈদ্য গারি ঃ ঘর-সংসার গার্যাল গৃহস্থ-মধাদ। গাহুলে (২৬৭) ধবজাদঙ্ে গাধান শকুনি [গিমা ক্ষুদ্র শাক বিশেষ গুড়। নৌকার পাটাতন গুড়া- গুট।নো, শেষ কবা গুড়ুব ঃ পক্ষী বিশেষ গুণা-, -না-ঃ টিস্ত। করা গুণী জন রোজ। গুণে (৬৬) থালতে গুণ্যা (১৩২) ভারবাহী গুনাগুনি ঃ পবম্পর গুণগুণ করিয়৷ ঝলিয়। : মনে ভাঁবয়। গুঘা ঃ সুপার * গুবুজ বড় গদা। কামান * গুলাল ফুল ও গাছ বিশেষ গুলি আক্রমণ (মল্লাবদ্যায় )। দ্র" চাপগার গুহ। কাঁতকেয় গৃণ। (১২৭) দাঁড় (হাপর টানার ) গৃহ-মণি (৫১) মঙ্গলদীপ গোঙা- কল কাটানো শোচর- জ্ঞাপন কর গোটা (কা।ন্দি)ঃ গুড় (৷ চর্ণ) গৃথানে। আম গোড়া- অনুবতাঁ হওয়া গোড়া- ঃ গড়াইয়। যাওয়। গোড়। দাওয়। কোদালেব প্রথম পাড় গোড়া-রদ। ভিত্তি প্রস্তর- ( বা ইহাঁক-) খণ্ড শব্দার্থ গোদা গোদ-ব্যাধিযুস্ত গোনস এক জ্বাতীয় বড় সাপ গোলা আড়ত । "চিনির - গোল৷ রগ্াপুত্র (এখানে দানা )। "আট (২৬৫) গোলাহ!ট পাইকারি বাজার গোহারি দুঃখপ্রাতিকার প্রার্থন৷ গোহাল৷ গয়ল। গোহালি গোয়াল গেহাল্ে (৮১) গোহারি দেশের কাহিনী-গাঁত ্রন্তু়া গাটছড়। গ্রাথণ্য ঃ গ্রামভার বস্তি ঘটকালী ঘটকের ক'জ ঘড় সৈনা-ঘটা ঘাঁড় (২৭৫) ঘটিকা-যন্্ ঘাঁড়য়াল থেছে। কুমীর ঘন৷ তৈলকাী ঘনেশ্বরী ঃ ঘাতকদের নেত। ঘরাঘার নিজ নিজ গৃহে থলঘাঁসি ফুল বিশেষ ঘস্মরাস্যা বিবৃতবদন। ঘাঘর ঘুঙ,র ( বাজন। ) ঘাটী (২৭) নটি, কনতি ঘাড়হাত৷ হাত কঠিন করিয়া কাটারির মতো৷ আঘাত কর ঘানাঘুনা৷ কানাঘুন৷ ঘখট। ঘণ্ট। (বাদ্য) [থয়। চকচকে ; বি-রঙা | দু" ঘেচ ঘুরুনয়া, -লি- ঘুনি (জল, ঝড় ) ঘুষ ঘোষিত ঘৃণাময়ী ৫ সদয়হণয় ঘেশচ কৌচকনো, তোবড়ানো | িয়। * কাঁড় ঘোড়ন-খাটুলী ঢাক! ডুলি ঘোড়৷ সিজ ॥ দ্র" নুড়া সিজ ঘোড়ারু ঘোড়ার মতে। বড় একজাতীয় হরিণ ঘোর ভীষণ । -” রাজা ঘেষণভূবণ। শব্দকারী অলঙ্কার-পারহিত৷ চঞ চুয়া, তরল গন্ধদ্রবা বিশেষ চড়ক ঃ উজ্জল । "- ফোটা । * ধুতি চটচটি ঃ চষ্চাঁড় ( বঞ্জন) চড়। ঃ ধনুকের ছিল৷ চতুর্মল (২5২) চারজন মল্লেবীর চন্দ্রহাস উজ্জল বাকা তলোয়ার চরণ-নিছান পা-প।হ। চলাচল (১৮৪) ঃ চলিতে অসমর্থ ১লদল ঃ অশ্বথ বৃক্ষ চবকঃ পানপানু চাক (৪৮) ৮1কা, চক্র চাতর ঃ চত্বর চান্দড় ইসর মূ। ণাছ বিশেষ শিকড় চান্দা 8 উ।দোযা চাপগারি, -গড়ি মল্লযুদ্ধে চাপিয়৷ ধর চাপান ভিড, ভিড়ের চাপ চাপাঢা। ঢালে ঢাক। দেহ চামগ্রুলি চর চক্ষুবন্ধ চানাতি চর্মবন্জু চ লু ঃ চাউল চলুয়াতি (৮২) ধান ভ'ন৷ যাহাদের বৃত্ত &ছ দ্র ছাঁঞ [চিঅ, চিয় জাগে। চিআ- ঃ জাগ।, জাগানে। চিকুর বিদু!তের |ঝাঁশক িটাফেখ)। (১৩০) ছিট। ফে।)। 6। দ্র চে) 19ন [হু চিনা চিনা বাদাম চিয়াড় দ্র চেয়াড় চুচুড়। তৃণ বিশেষ চুটি দ্র" ছটি চুনাতি,নালগু (পানের ) চুন রাথবার পান্ত ৩৭৪ চুনার চুন করা যাহাদের জীবিকা চুপাঁড়, -ব- ছোট ঝুড়ি চুলচুল্য৷ দংশনকারা কীট বিশেষ চেণ্ট তেতুল গচ্ছ চেটা (৮২) সঙ্গের ভারবোঝ৷ চেতি রাজ বাস্ত্ুদেবত। চে(ও)য়াড় তীক্ষধার বাশের ছাল চেলনা (৮৭ ) হাফপ]ণ্টের মতে। জাজ্ঘয়া চেল। (৬৪) শস্ত মাটির চাপ চোঙর ভোঙর চামরের মতে থুপ-যুন্ত চক্রাকার শিরপ্রাণ (2?) চোপ। খোসা চোয়াড়, -হা- বন্যা জাতি বিশেষ চৌ-কপুরে (১২১) চুয়৷ ও কপূর সাহত চৌখও ঃ চতুষ্কোণ চোখুরি, -রী থুর৷ দেওয়া ছোট ধাতুপান্র চৌখো৷ (৮৭) চোথা, তীক্ষু চোৌথোড়ে (৭৩ ), চৌঘড়েতে চারাদক ঘেরায় চৌতুন।, চৌতাঁন একপরেণের টপ চৌদুল (৮১) জাতি বিশেষ চৌদল চতুর্দোল ছইঘর দ্র রইঘর ইছন্দাঁর ( হ দুছুন্দার )ঃ ছু'চো ; ছুচোবাজি ছুটি ঘুন্টি দেওয়। পদাঙ্গুরী ছড় - ৫ ছাড়ানো, টান। ছড়, ডা গাল ছড় ঃ আচড় দাগ । ছল (২০৪) ঠকবাজি ছা শাবক, ছান। ছঞ পিঠার পর ছাট গাহের সরু ডাল ( ছাতার ঝ৷ ছাঁড়র মতে৷ ঝাবহত ) হাব মোহর, সাল ছামান, -য়- ছাউনি ; বিবাহে শুভদৃষ্টি অনুষ্ঠানের জ্থান, সেই অনুষ্টান গায়ে” * [ছাঁলমালী উপলক্ষ্যহান ছুছুন্দর ছু'চে৷ বাজি , হাউই ছুঞ়্া, ছু'ঞা ঃ ছেণ মারিয়। ছেচা-ঃ তুিয়। জল বাহির কর) ছেয়ানি ঃ ছেনি ছেলি ঃ ছাগল ছোবা-ঃ লেলাইয়। দেওয়। ছোঁচা লোভী নীঁচ ব্যস্ত জই ঃ জয়ী; জয় জউ ঃ গাল। জগবম্প, -ঝশপ ঝড় ঢাক বিশেষ * জগতি পৃজাদ্থান, প্জামগ্প জগ। ভাট যোগী ভাট (রায়-ভাটের বিপরীতে ) * জাঙ্গ? সোনক জ)-ঢুলি স্থানে স্থানে চুলের গুচ্ছ রাখিয়। মাথ। কামানে। জট] ফুল ও গাছ বিশেষ জড় (১৯৮) জমাট জ()নু জন্ম জনু 'র-সর ঃ কামের শ্রেষ্ঠ শর জবন মুসণমান সৈনিক জবানিঞ। ৪ যবনদেশের, আরবাঁ (গেড়া ) * জভেই ঃ জবাই জম”র ঃ দুই ফল! কাটারি * জমা (১৩৩) শৃঙ্গহীন (ভেড়া ) জকি শুগালী জয় (১) সভায় পঠিত পুরাণ আখ্যান জয়পন্ত্ (১৯০), -পাঁতি ঃ জন্মপন্র জরট জলচর বিশেষ ; বৃদ্ধ জর)তী আতবৃদ্ধা জলযন্ত্র পিচকার জলসাই ঃ জলসাৎ, অন্তর্জীল জলহার গৃহসংলগ্ন জলাশয় জাউ : পেয় মও জাওঙ1ঞ জামাই জাওয়াতি ঃ জদ্মপাত্রক৷ শব্দার্থ জাকু ঃ জাউক, যা'ক জাচিএ অনুগ্রহ, প্রার্থনা, যাচ্‌এর জাঠ দীর্ঘ কাষ্ঠদণ্ড, বড় লাঠি জাঠি ঃ লাঠি জাড় ঃ জালা (মাটির ) জাত (৬৪) উৎসব-অনুষ্ঠান জাত-সেনা যাদু (রাক্ষস ) সৈনা জাতি ফুল ও গাছ বিশেষ জাতিবাদ ঃ জন্মঘটিত অপবাদ * জাদঃ জাঁরর অথব। রেশমের ফিত।, থোপনা * জানদার ঃ গোয়েন্দা জানী ঃ গুণী, রোজ। জাব (২০৭) যাবং জাবক আপত জামির ঃ গোড়া লেবু জায় ঃ সমাহার । এক ** * জায়াগরী ঃ ভুসম্পান্তর আঁধকার জারজাত, জারুয়।৷ 8 অবৈধ-জাত জশত- ঃ টেপা, পেষণ কর! [জি ঃ বাচিয়৷ থাক৷ [জ (৫১) জীবত আছ [জউ প্রাণ; প্রাণী জিন-ঃ জয় কর * জন, -নী ঃ ঘোড়ার পালান জান্তিত হাইতোলা জী- দ্র জি- দুআ. যোগ্য হওয়া, উঁচত হওয়৷ জুখ- দু জেখ- জুঝা-ঃ বিবাদ লাগানে। জুড়ি যুগ্ম, জোড়া । ** দরে জুত ঃ যুস্ত ; উপযুস্ত জবীত দুতি জতিঃ যুস্ত 'জত যুখী ফুল ৩৭৫ জুথপজুথ যৃথোপধুথ, বড়দল ছোটদল জুভাখান জিহ্বাখান জুমর জুমর নন্দীর ব্যাকরণ * জুমা দু জম! জুলি ঃ সঙ্কীর্ণ জলনাল৷ জেঠি টিকটিকি জেত, -স্তঃ যত জেমুনি জৈমিনি জোগান ঘনিষ্ঠ অনুগমন জোউ দ্র" জো জোগানিয়া ঃ অনুচর সেবক জোড়- ঃ জোট জোড়, -ড়া পারধেয় বসন-যুগা জোন্দা 8 অমগ্বাদশবাশষ্ট জোয়ানি ঃ জোয়ান (মসল!) জোর (১৬২) জোড়। * জোঞ৷ ঃ মুসলমান তাতি জোহার [ উচ্চের প্রতি প্রীতিসন্ভাণ জেশখ- ঃ নান্ততে ওজন কর! জো ঃ গাল৷ ' "ঘর; "*-মোহর ঝগড়, -ড়া বিবাদ, যুদ্ধ । "ঝাটের সাথে ঝগড। (৯৭) ৪৫ বিপদ ঝটঝচী ঝটঝট শব ঝনঝন৷ বজজধবনি ঝনকাট দ্ু' ঝানকাট ঝাকন। ঝোপঝাড় ঝাঁক-ঝাক ঃ উীঁক-ঝুরি ঝাট দ্র' ঝশট ঝাট গোলম।ল, ঝঞ্জাট । ঝাটি ঃ গুল বিশেষ ও তাহার ফুল ঝান বিবর্ণ ্লান। "জায় প্রাণ ঝানকাট ছাচার ব। দরজা প্রান্তের কাঠ ঝানবাতা ঃ ছাচায় চের। বাশের দার্ঘ খও ঝালি দৌড়ঝণাপ খেল। ৩৭৬ ঝট শীঘ ঝণটি ৪ দ্রু ঝাটি ঝাপা আবরণ ( অলঙ্কার, বত ) ঝখপান সাপ খেলানে। অনুষ্ঠান (মন্ত্র)। পড়য়ে” (৮৫) ঝট, -টী ঃ গুল বশেষ ও তাহার ফুণ ঝুপড়ি তৃণকুটীর ঝোর বঙ্কার ঝেপঝাড় টক্ক সোহাগ টঙ্গ (১৭) খন্ত টনক? কপাপের হাড় (নাঁড়লে কপালে রেখা পড়ে ) টনটান, টণ্টান শুখনে। ব্যঞ্জন ( শাক ) * টবরঃ হাতিয়ার টাকার ঃ ঘুণস টাঙ্গ মাচা, টঙ টা্গ, -্গঃ শরজাতীয় তৃণ বিশেষ ট]াঙ্গ ছেদন-অস্ত্র বিশেষ টাঙ্গন ভুটানি ঘোড়া টাটক। মাটির গড়া । -সবায় টাঝ৷ পাতিলেবু টাপিঞ। উচু' করিয়া, চূড়া ঝাঁধয়া ৮গক- প্রতীক্ষা কর! টিক, -ক। লক্ষ্য (শিশু করীড়ায় ) টিক।, টীক৷ রজ-তিলক টুকিটেকে অল্পের জন্য । ** প্রাণ টানাটানি টুট-ঃ বিরন্ত হওয়া । মনে টুটে (১০৫) টুটা- কমানে। কমিয়া যাওয়া | টুটাইয়া। টুসা- ঃ ঢু" মার টোক৷ তালপ।তার টপ ( ছ।তার মতে। ) 01ঠ।র ঃ পক্ষী বিশেষ টেসকান৷ ঃ পঙ্মী বিশেষ টোন তৃণ, শরাধার ঠক প্রব্ক ঠক প্রবণক ব্যস্ত ঠনঠনি দ্র টনটান চগ্ামঙ্গল ঠাকুর প্রভু ঠাকুরাল, -লী প্রভূত ঠাট সজ্জিত সৈন্যবাহিনাঁ ঠান ঃ প্রকাশমান রূপ, সংস্থান ঠাম ঃ তেজ, প্রভাব চু, -0 অকুশলহস্ত ব্যন্তি , বাদর খেলায় যাহারা ঠেটা ঠাট, তেজ । ভানুর- ঠেঠা 2 দুষ্ট বাতি ডগি ঃ উদভিদের কোমণ শীর্ষ, ডগা ডঙ্ক ঃ সর্পাঘ।ত ডম্ক ঃ ছোট চোল, খঞ্জান ডষ্বর, -বুঃ ডমবু ডস্ুর ডুমুর ডাইন ( ডাঁঞন ) কলা ডাকিনীবদা। ডাক ঃ ডাকাতি ডাগর ঃ বড় । ডগর গোট। ডাঙ্গ ডাণ্ডা, ডাঙ (খেলার ) ড1ট দৃঢ়, টান ডাণ্ডিযা ঃ দড়ী (নৌকার) ডাণ্ুকা পায়ের বোড ডানিকল৷ শাক বিশেষ ডানী ঃ ডাহিন, দাক্ষিণ তাঁড়-পন্র ঃ তালপাতার মতো |” তরোয়াল তাণ্ডব উদ্দাম নৃত্য তান ন্তরাণ। অঙ্গুলির- তামচুড় পানকোৌ়ি তাঙ্বঃ গণকেব ঘাড় * তার (৫২) দ্বাদ তালা, -ল (8) শির্গম-রোধ তাল ঃ কালা । বুলে”৮( ২৬৫) তালি ঃ হাতে হাতে (অথব৷ পায়ে পায়ে ) করা শব * তালুক ঃ জমিদারি গ্রাম ও ভূমি তাসন তান। সৃতায় মাজন দেওয়া 1তত ঃ তিন্ত ব্যঞ্জন শব্দার্থ ডাবুস ডাঙস ডালি গুচ্ছাকার শিরন্তাণ-ভুষণ। মাথায় সুরঙ্গ -. ডাল (২৬) ডাল (বাঞ্জন) ডশাড়িয়া দু" দাতডয়া ডগসা অপক্ক (ফল); অপক ফলের রঙ [ডগর উচ্চ, বড়, প্রধান ডাঁও( ম)ঃ বাদ্যযন্ত্র বিশেষ, ডাঁওমাডস্বর ডিম ডস্বরু (অথবা ডাগুমের আড়ম্বর ) ডাম্মকাকে। 'ডিস্বিকা, বুদৃবুদ ? * ডাঁহদার গ্রামগুচ্ছের শাসনকর্তা ডুবারু ডুবুরি ডেড়, ডোঁড় আঁতীরন্ত, অসম ঢ্গ ঃ প্রতারক ঢ0)ঙ্গাঁতি ঃ প্রতারকের ব্যবসায় , প্রতারক ঢাক। দু ঢেক। ঢাট ধুষ্ট ঢাটাপন। ঃ ধৃষ্টত। ঢাটিপনা ধুষ্ট নারীর আচরণ ঢামাঁল ঃ অশালীন আচরণ ঢামালিনি অশোভন আচরণকা'রণী ঢালি ঃ ঢাল-ধরা ষেদ্ধ। ঢালিয়। ঢাল-ধারী সোনিক টখটি দ্রার্বনীতা ঢুকি ঃ (এক) ঢেশক (জল) ঢুও-, ঢু'ড় খুশজয়। বেড়ানে। ঢেক৷ ঃ ধারা ঢেট। ধৃষ্ট ঢেমচ। ঢাক-ঢোল ধরণের বাদ্য বিশেষ ঢেমন জারজ ঢেষা অকারণ বিদ্বেষ, ঈষা ঢে'টাপোনা ধুষ্ট পুরুষের আচরণ ঢোল দ্রু' চৌল ।”ছাড় ঢোলকান ; হাঁরণ বিশেষ ( নম্নকর্ণ ) ঢোল লম্পট-আচরণ চ, ম.—৪৮ ৩৭৭ তড়ঙ্গ ঃ তাঁড়ং তিড়ং লাফ তত্ব ঃ অগ্রকাশ, অন্বেষটব্য | মিহির হইল তত্ত্বে (৮৭) তঁথ সেখানে তপন ফুল বিশেষ তপনতোয় গরমজল তপনি (১৪৬) সূর্য * তপাষ, "সঃ খোজ * তধকঃ বন্দুক * তবকী বন্দুকধারী সৈন্য | * তবাস দ্র তপাষ * তবশ ঢাক বিশেষ * তথ্বুঃ তাবু তরক্ষু ঃ নেকড়ে বাঘ তরঙ্গ ৫ দ্র তড়ঙ্ তরঙ্গনাঁশিনী ঃ বিপদতরঙ্গে নিস্তারকারিণী তরল তল্লা (বা তলুদা ) বাশ তর! ঃ ত্বরা ।-জুত তবরাধুন্ত * তরাজু (৬৫) এক পাল্লার ওজনধাড়ি তর্জন হাকানো । আশ্বনী”-কার তপ্প ঃ শহঃ। ওসু তাহার তাইল (১৮১) উত্তপ্ত কারল * তাগা-বন্দ ঃ শন্ত বাধন তাজ- ঃ তর্জন গর্জন কর! * তাজিঃ আরবা ঘোড়। তাড় দৃঢ়বদ্ধ অলঙ্কার তাড়-বালা আট বালা (হাতে, পায়ে অথবা কানে ) তাড়- ঃ তাড়। দেওয়া, তাড়া কর৷ তাড়াতাঁড় এদকে ওঁদকে তাড়া দেওয়।৷ অথবা পাওয়া তাড়-পন্তু ঃ তালপাতার মতো ।” তরোয়াল তাগুব ঃ উদ্দাম নৃত্য তান ভ্রাথ। অঙ্গুলর” তামচুড় পানকোড় তাম্ব গণকের ঘাড় ৩৭৮ * তার (৫২) তা, গৌোফ পাকানো তার (২০/) স্বাদ তালা, -লি (৪৮) নির্গম রোধ তালি কালা (হইয়া)। বুলে- (২৬৫) তালি হাতে হাতে (অথব৷ পায়ে পায়ে ) শব কর * তালুক জমিদারি গ্রাম ও ভূমি তাসন তানা সৃতায় মাজন দেওয়া [তিত ' তিত্ত ব্ঞজন তাঁথর তিতির পাখি * তিন-সনি তিন বছরের পাওনা তিনাতা (২১৬) শিশু কড়া বিশেষ ? * তিরকর ঃ বাণ-নমাণকারী [িলক ঃ বক্ষ বিশেষ তুন্দ ভু তুয়া ঃ তোমাকে, তোমার তুরঙ্গনাশান (5 তরঙ্গনাশিনী ) বিপদনীশনী তুলবটী ঃ তুলার তোষক তুলা ওজন ।—পরীক্ষ। তুলাকাঠি (১০৮), -কোটি (১৫৮), "গুটি হস্ত বা পদ ভূষণ বিশেষ তুলারু রোমশ হারণ বিশেষ তুলি ঃ তুলার লেপ, তোসক তুলিকা, -য়া তুলার তোসক তেনু সেইমত তেপাত্য। (২১৬) শিশু-কীড়। বিশেষ তেমচা দ্র ঢেমচা তেয়াগন পরিত্যাগ তোঁলয়৷ তৈলব্যবসায়ী * তেসান দু তিন-সাঁন তেহাই 'তিন ভাগের এক ভাগ তোক সন্তান তোক হাড়কাট, কঠিন পাশ তোড়ানি পাস্ত। ভাতের পানীয় ।”মন্দ। চন্ডীমঙ্গল তোমর ? বর্শা বিশেষ তোল৷ গৌঁফ মোচড়ানো তোলা ওজন-পাঁরমাণ বিশেষ তোলা (হাটে) বিনামূলো পাওনা (ঝ৷ গ্রহণ ) তুই ত্ুয়ী | ন্রিকুটি ঃ তিন কোটী ন্িবঙ্ক ঃ তেবড়া |—মন্করা দও 'ন্লক্ষ তারিণী ভ্রেলোকাতারিণী ন্িষা তৃষা ত্রিসক ভ্রিশাখ, তিনশাখ। (বা ফলা) যুক্ত শ্রশূলিয়। তোশিরা মনসা গাছ ? থাকহে থাকে, থাঁকবে থানা অনড় স্থিতি ; ঘণটি থাপ ঃ ছোট গুচ্ছের মতো । থৈকর ঃ রাজমিস্ দগড়, -ঁড় ঢাক বিশেষ দর্ধী তাথ অশুভ দিন দন্ত দ্র ডস্ক দড়মসা ঢাক [বিশেষ দড়া- ঃ দৃঢ় কবা, মন স্থির করা দণ্ড ঃ দণ্ডনায়ক, কোটাল। কালু ২. দণ্ডক প্রহার, শান্তি । দণ্ডকের দণ্ডপাট দণুদাত৷ রাজার আসন দণ্তরায় ঃ দণ্ডমুত্তের কর্তা, রাজ দাণ্ড দ্রু' ডিও দনা দমনক (গাছ ও ফুল) দর্তী ? হস্তী দফাল আস্ফালন দব (৬৯) বনাগ্ন " দরে ঃ মূল্য অনুপাতে দার নেয়ার দর্বব্য দবে (২৫৪) অত্যাচারীর আঁ গ্রকাণ্ডে * দলিজ, -লী- দরদালান, তোরণ সি শবার্থ দয্ুনি দসুযু (নারী ) * দাগে (১০) দাগ দেয় * দাগা গোড়া ছাপ দাড়া বিকট দাত দাগড ঃ দাড় দাদু ঃ দাদ। হাথ্য। * দাদুর বে * দানীষবন্দ বিচক্ষণ দাপ ঃ দর্প, তেঙজ-প্রকাশ দাপান দর্পণ দাবড় দাপট, আক্রমণ দাবা-গণ বুনো লোক * দাবা শিলিঃ বারুদপোরা গুলি, পটকা * দাম। দামামা, বড় ঢাক দামিনি দ্ু* দূন। দামুগণ প্র দাবা-গণ ধ|ারদ্র দারিদ্র * দারু (১২১) বারুদ দাড়া ঃ নাল দণ্ড । শালুক-” দাড়। (২৬২) বিকট দক্ত টাত্য। (৭০) দেওয়ালের উপরে ছাউানর আধার কাষ্ঠথও * দিগাঁর বিশেষ কর; প্রাপা দঘ(ল) দীর্ঘ, দৈধয দিন-কতি দিনকৃত্য [দনমুন দিনমাঁণ, সূরধ দিনহংস। (2 দিন-অংশ। ) বেলা, দিবালোক দব্বি দাবা, শপথ [দিয়ার ঃ দেওয়। হোক (১৯৫) দিয়া (২৫৬) দিশপাশ চারপাশে স্থান দিস, -সি, -সে দিবস, দিবসে । দিসাদিস [দিসারু ঃ দিকৃনির্ণয়কারী দীপক। জ্যোতিগ্রন্থ বিশেষ দুমাতুর ঃ জুয়াচোর, শঠ । ** শ্লোক ৩১৭৯ দুইবচী, -বু-ঃ দোপাটি ফুল পুন্দল ঢেউয়ের গর্জন দুবরাজ যুবরাজ দুয। দুই (পাশার চাল) দুয়ারি দারোয়ান দুয়ালে দ্র' দোয়াঁড় দুঁরিত-কর্ম পাপকর্ম দুর্গ মেলা চন্ডীমণ্ডপ দুর্গাবর [ নৌকার নাম ] দুরঘটশ্বৃত্ত ঝাকরণের বই শরণ-রচিত দুর্বাবাঁষ ঃ দুর্বাসা ধাঁষ দুর্বাক্ষত দূর্বা ও ধান দুলাল ফুল ।বশেষ * দুলিচা ঃ দূভাজ গাঁলিচ। দুর্ঘিল দুরস্ত দস দাত দে (১৪৪) দেবত। দেউটি, -টীঃ দীপ দেকু ঃ দেউঠ্র, দিক দেখাকু দেখাউক, দেখাক দেখায় (২৬০ )) দেখাও দেখর।। দেবমন্দিরে নিযুক্ত পৃজারা দেঁড় দ্রু' ডোঁড় দেয়াসিন ঃ দেবমান্দরে নিযুক্ত পৃজারণী দেশমুখ গ্রামের প্রধান প্রজা দেষ (২১৮) দাও, দিস্‌ দেহ)লা, -হার৷ নবজ্বাত শিশুর অবোধ হাসি-খেলা দেহার৷ দেবমন্দির দৈব অদৃষ্ট, ভাগ্য দোখাঁও বাদ্য বিশেষ ( বাঁগ। জাতীয়) দোখাড (১২৩) দ্বিথাগত দোছোট দো-পালটা দোপাটা ঃ দুই ভান্গ ( অর্থবা জোড়া ) পারধেয় ৮৩০ দোয়জ 'দ্বিতীববাব দোয়াজিয়৷ দ্বিতীয়বার বিবাহিত (বর) * দোয়া আশীর্বাদ দোয়াডি দুই ফলা (বাকাঠি)যুন্ত॥ *চেয়াড় বাণ দোলপাণ্ড দোল-মণ দোলমাল মালার মতে। দোলানে। দোলা মনুষ্যবাহা যান দোহার (১০৮) সহকারী গায়ক দুমিল্য দুমিল (অসুরের নাম ) দ্বত (৬৬)৪ দোয়াত দ্বাদশ, দ্বায়াদশ যোগাঁর লাঠি দ্বিন৷ দুই দিন দুই ধাঁড়, -ড়ী পাঁরধান বন ধনঞ্জয় (৩৬) আগ্ন ধান (৮৬) ধনা-ধবনি ধনুক দেশন। অস্ত্রাবদা। ধন্য ধনে (শাক ) ধব গুলা বিশেষ ধর্মশূল প্রসব বাথা ধাউীড়য়৷ দ্রুতগামী ধাওন দ্ুতগমন ধাওয়াধাই দৌড়াদৌড়ি ধাগাঁল কাদ। জমিতে বীজ ছড়াইয়৷ যে ধানের চাষ, আছড়। ধান ধান (৪১) দ্র:ুতগমন ধান (৬৫) ওজনের পরিমাণ বিশেষ ধানকাটী (৭৫) ধান কাটার কালে দেয় আতারস্ত কর ধানঘর, -রা 8 গোলা-ঘর, মরাই-বাঁড় ধানকী, -কি, -নুকি ধনুর্ধারী যোদ্ধা ধাবাড় (৮৭) দ্রুতগামী সৈন্য ধামাতিকরনি ধর্মাধকরাণক ধার ঃ খণ ধারণী ঃ শরীররক্ষা মন্ত্র, তাহার শাস্ত চপ্তীম। ধারণাবতী প্রজ্ঞাব্তী ধারিণী (৯৭) পৃথবাঁ ধীষণ ধিষণ, প্রজ্ঞা ধুকাড় ছেঁড়া কাথা ধুকুড়িয়া ঃ এক জাতীয় সারম (কঙ্ক) ধৃত ঃ সাদা পারধান বর ধুতি (৬, ৯০) উপাঁর পাওনা, ঘুস ধালকদস্ব ফুল ও গাছ বিশেষ ধাঁলয়৷ ধালময ধুসার (মুহা ) দুই সারি ছিদ্যুন্ত (বাশি) ধাঁতধর (৯৭) অচলাগাঁর, হিমালয় ধ্বনি ধবনি ধন্য ধন্য নই (১২৯) নব্বই নইল না হইল নক (২৬৫) নখ নখর-রাঁজত (খুবু ) নরুন নগ ঃ বৃক্ষ । নগেব কি শোভ। নগারয়া, -র্যা নগরবাসী * নজদগ ঃ নিকট নটিযা, -টয। নটে শাক নঠ ঃ বিনষ্ট নড়-ঃ সরিয়া যাওয়।, দুত গমন কবা নড়া হাত (সমগ্র) নাঁড় ঃ পাঁথকের লাঠি নাড় ঃ জাতি বিশেষ (জীবিক। গালার কাজ ) নাঁতমান বিনয়া নত্বা, নত্তা নবজাতকের নবম দিনের অনুষ্ঠান নদ (৮৭)ঃ ব্রহ্মপুত্র * নফর চাকর, কর্মচারী * নবাত গুড়ের পাটালি নম্ববান লম্বমান নর্তা ঃ দ্র' নত্তা নায় গাঁণয়া ঃ নল দিয়। মাপিয়া এবং গণন৷ কারয়া , যথেচ্ছভা। শব্দার্থ নসান তীক্ষধার ।—কাটার ।-দর্পণ । নসানের খুর। নহয় না হও নাঃ নোঁকা। নাএ, নায়ে নায় ( সপ্তমী-তৃতীয়। ) নাওাড়া নৌকা-শ্রেণী নাইয়র ঃ বিবাহত নারীর পিতৃগৃহ নাইয়া নাবিক নাকানি চোঙ্গ নাকান চোবানি নাকার বমনেচ্ছা নাগা (৭৬) ক্কোকের খরচ।। নিবে* নাগেশ্বর ফুল ও গাছ বিশেষ নাচাঁড় নাচেব ঢঙ নাগ্য। ঃ লাগিয়া, জনয নাছ বাট সদর বাস্তা (বাড়িব) নাট নৃতা-আভিনয নাটা (৮১) নাটাই নাটা ফুণ ও ফল বিশেষ (রন্তবর্ণ ) । নাঠি (১৯১) নাটা ফণ নাড়। ঃ নেডা। কেল মাথা নাড়ি ঃ নাড়িব মতো দাঁড় । দড়- নাতন পৌধী, দৌহত্রী নাথ। নোথ ঃ লাখ কীল নাদন বৃহৎ বৃক্ষ বিশেষ নাদাঁযা ঃ হাকাইয। নান্দিমুখ বিবাহ প্রভৃতি শুশ্কার্ষের আদ্/কৃত্য বিশেষ নাপ (৬৮) লাফ নাবড় খলপ্রকাত নাবর৷ নিরামিষ ঝঞজন বিশেষ * নারেঙ্গ কষুপ্রাকার কমল৷ লেবু নিউগী ? নিয়োগী, রাজানযু্তের পদবী নিউারষ : বৃদ্টিহীন , সেতসেতে নয় নকল- নির্গত হওয়। নিকষ শিল কষ্িপাথর নিকার চীঙ্গ দ্র নাকান চোষ্গি ১৮১ শনক্ষাত ক্ষাতিয়বিহীন ধনক্ষে ত্র (৫৫) অক্ষতির নিগুড় (৮৪) নিগড়, অর্থল, বোঁড় নিঘ্ন ঃ অধীন 1নাঁচন্দ নিশ্চিন্ত নিছ- নি্মচ্ছন করা, আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা করা (নারীকৃত) শহান নির্মঞন বন্ধু, গামছা) গ্রাতকার নিজোজ- নিয়োগ কর! [শত ঃ প্রতহ, নিতা। নিতে নিতে নিতশান্ত্র গাত নীতশান্ত্রের পথ নিত্য (১২৭) নিত্যকৃত্য নিত ধুবস্থিতা! নিধি, নত্যে (৬) নৃত্য, নাটনীতে [নদাঘ প্রথর গ্রীষ্ম নিদান ঃ হেতু । জঙ্কট কাল (১৬০) নিদোষ দোষহাঁনতা নিদ্রু-ভুলে নিদ্রাবশে [নধান, -নী ধান-বিহীন নিন্দ- ৫ নিদ্রা যাওয়া িন্দাযে নিদ্রায় (অথবা নিদ্রা যায়) [নিপাতক পাপা, অত্যাচারী নিবাড়-ঃ নিধাহ হওয়া, শেষ কর৷ নিবন্ধ (৯২) দৃঢ় সান্ধ নবস- বাস করা নিয়োজ- নিয়োগ কর নিমোগ্ন, -ম হাত মুখ ধোওয়া ; ম্লান) আতাঁথর আনুষ্ঠানিক অভঃর৫ন৷ [নশাচর-গণ রাক্ষসগণ (পুরুষ) নিশাচর-গণ রাক্ষসগণ (কন্যা) * নিশান, -সা- আক, চিহ্ন, রেখা [নশাপতি, নিশীশ্বর প্রহরী-প্রধান, কোটাল নিষ্ঠ। ঠিকমত । বন-(১৫৯) নিসন্ধ্যা নিসিন্দে গাছ ৩৮২ নিসান সঙ্কেত ধবনি নিযতনী নিষুপ্তকারিণী | নিদ্রা নাঁত শাস্ত্র নীতিশাগ্ নীলকষ্ঠ (৩১) আরণ্য পশু বিশেষ নুকাইল ঃ লুকাইল নুকি ঃ লুক্বায়ত। কায়- নুটি, -টী লুট নুট-ঃ লুট কর! নুদ্য স্তবনীয় নুনি ঃ ননী নুন্যা লবণ ঝবসায়ী ।-ভগ্ড অসাধু স্বণ বিক্লেত৷ নউট- 'ফিবিয়া আস! নেকার ঃ দ্র ন্যকার নেকু, নেগু লউক, নিক নেঙ্ুড় লেজ * নেজা বশ নেঠ৷ ঝঞ্জাট নেত রেশাম (ও উৎকৃষ্ট সত) বন নেঘববন্ধ কানামাছি ( শিশুরীড়। ) * নেব ঃ রোখালো, সাহসী ।-,কোটালিয৷ * নেমাজ ঃ নমাজ * নেয়াল, -হাল নেযার নেহাল- নিরীক্ষণ করা নেহালী, -লী নবমল্লিক। নৈবিদ্) নৈবেদ্য নৈয় (২২৯)ঃ যাঁদ না হয় নৈয়া লইয়া নৈরিত নৈর্ধত নোট (৮৩) লুট কর নোন। বায় লবণার্দু বায়ুতে নোয়াঁড়, -উ- গাছ বিশেষ (লবর্পী), তাহার ফুল ও ফল (অল্প) নৌতন ॥ নূতন চণ্ডীমঙগল ন্যাস (১৪৪) অঙ্গন্যাস ন্যাস কাশিক৷ বৃত্তির চীক। জিনেন্্রবুদ্ধ কৃত পউটি খাদ্য শস্যের পারমাণ বিশেষ পক্ষ (৫৬) পক্ষী পণ্ান (২২৪) সুঠাম কর! পম অবস্থ৷ চরম দুর্গাত পণ্ক-জাত (৭৫) পাচ শতাংশ ইত্যাঁদ কর-সমূহ পণ্জকা-চীকা ঃ মৈন্রেয় রাক্ষিত রচিত তত্বপ্রদীপ (কাঁশকাবিবরণ- পাঞ্জকার টীক। ) পটুক৷ কোমরবন্ধ পট (5১) মোট। কঠিন বর পটিশ ফলা-যুস্ত বর্শ পড়া ঃ পটহ, নাগবা পড়ান। পাঠ্য বিষয পড়্যান বাটখারা পড়ু (২২৯) পাড়ও, পড় হউক পণ্ড জ্ঞান পংসাত পণ্চাং পদতালি ঃ পায়ে পায়ে ঠচুঁকিয়। শব্দ পর (৬৫) প্রহর পর-রাহ্া৷ ঃ অপরের রন্ধন করা পরমাই, -মাঞ্জ আয়ু পরাজই (৯৭) পরাজয় পরি (১৫৯) উপাঁর পারখায় (২৯৮) পরীক্ষায় পারঘ ঃ লৌহদ্ পারণাম (৯৭) যম পাঁরবন্দ ঃ প্রবন্ধ, প্রকার, প্রচেষ্টা পারষ-, -স- পারবেশন করা পাঠিত (১২৮) পরিবেশিত পারসন প্রশ্ন পারহ()র ঃ ক্ষমা পর্কটি ॥ পাকুড় গাছ শব্দার্থ পর্বাদশ পর্বের উদ্দেশ ; পর্বের দিব পরত্যা পাহাড়ে (ঘোড়।) পলত। পটোল গাছের পাতা পল৷ প্রবাল পলাকড়া, -ড়ি ঃ পটোল পলো জলে চাঁপিয়৷ মাছ-ধরার ঝুঁড় বিশেষ পশে (১৭১৯) 2 উপভোগ করে পশ্যতোহর দবর্ণকাব গসর-, -শ- অগ্রসর হওয়। পসরা (বহনযোগ্য ) আধারে সীঁজ্জত বিক্লেয় দুব্য । ২ কর- বিক্রয় কর পশার, -সা- ঃ (বিক্লুষের জন্য) হাটে বাজারে দ্রব্য, হাটে বাজারে দোকান শ্রেণী । মাংসের পসারে (৯১) পসারী হাটে বাজারে পসার দয 'বিক্রুষকাবী পসল৷ বৃষ্টিব তড়প। পাই ঃ ক্ষুধতম মুদ্রা পাউীড় খড়ম, জুত। পাক ? পাখা, পক্ষ পাক ঘুরপাক, চঞ্জাবত চত্রান্ত | নাড়। ঃ ঘুরপাক খাওয়ানে। পাকাঁড় ঃ পাকুড় গাছ পাকন রাঙা পাকাল্যা পাকনাড়া, পাকদেওয়া, ঘোরানো। পাকাল্য। (৯২) ৫ বীরত্ব, পাইকাঁগার পা, -কী পাইক, পদাতিক। পাক্যেঃ পাইক দ্বারা পাথ (১২৪) পক্ষ পাখর, “র পাঁখ পাখারয়া, -খু- যুদ্ধ সাজে সাঁজ্জত ( ঘোড়া ) পাখা পাখোয়াজ পাগ মাথায় পারবার সৃহ্ষম বসন পাঙশ (১২৬): পাশ গাঙ্কাল্প পাঁকাল মাছ পাছাড়- পিছন হইতে ধারয়া আছাড় দেওয়। পাদাঁড়ি উত্তরীয় পাঞছুয়া- পিছু হাটা পাজাতা। বুনো শাক বিশেষ পাজাল (কোদাল ) দ্র" পাটুআ (কোদাল ) পাঞ্জল। অঞ্জলিবদ্ধ পাণি পাট পট্রবন্ত্র । সাজ পটুবন্ত্র সঙ্জা পাট (৬৬) গোলাকার বড় মৃৎপান্র পাট (৭0) কাদ। অথবা ইঁটে গাথনির সার পাট-কথুবা চট, পাটের মোট। কাপড় পাট-মাত৷ রাজরাণী পাটন বাণিজ্য স্থান, বাণিজ্য কর্ম পাটন ( কাড় ) ভূপাতিত কারী নিহননকারী পাটল। ফুল বিশেষ পাট। চওড়া । ফৌটা (৭৬) গাটি, -টী গ্রাম-সহরের পাড়া, হাটের সারি পাটি, -টী ঘাস ব৷ পাতায় বোন৷ আস্তরণ পাটিকাল ইটের টুকরা পাটী পাশার চালন-কাঠ পাটী (১২৮): পাঁরপাটি পাটুআ (কোদাল )ঃ কাদামাটি পাট কারবার কোদাল পাড়ি (১১২) পাড়, টান। উচ্চ দ্থান পাড় তোসক, গদি। তুলি”, পাড় (২১৪, ২১৫) খেলার বাজি পাতকাপি শিশুক্ীড়। বিশেষ পতন ( কাড়) দ্র পাটন (কাড়) পাত।৷ সিজ ঃ পাতা-যুন্ত মনসা গাছ পাতা- বাবস্থা করা । পাতাইয়৷ জ।ত পাতি পন্ু, চিঠি পাতুলি পাঁতিবার বস্ত্র, আস্তরণ পাত্যায় (২১৩) বিশ্বাস করে পাত্যার৷ বিশ্বাস স্থাপন পাথর পাথরের ঝ মাটির থাল। পাথী পেতে, ছোট পান্ন (বোন ) পাদ্য পা ধুইবার জল ( আতাথ অভ্যর্থনায় ) 6৮৪ পান তান্বল। | কর্মভারের চিহ ]-দে- কর্মভার দেওয়া ।”*নে-ঃ কর্মভার নেওয়। পান জুতা পানা- ধারাবর্ষণ করা পানিকল। ফুল বিশেষ পানি সিউল ফুণ বিশেষ পানিন পাণিনি ( ব্যাকরণ ) পাস্ত জলে ভিজাইয়৷ রাখা পাবড়া ঃ ছোট্ট কাষ্ঠদও পারন। ব্লত-উপবাস অন্তে আহার * পামার সৃচিকর্ম-অলঙ্কৃত পারাঁথ প্রসবকারিণী ধাশ্রী পার৷ (১৩৫) [ কথার মান্রা ] পার্থি, -থি দ্র' পারথি পার্বনি (৭৫) উৎসবকাণও্ড উপলক্ষ্যে দেয় কর পালঙ্গ পাল শাক পালয়ানী দ্রব্য কানয়। বাছাই কািয়া বিকুয় ব্যবসায় পালি (ত)ঃ পে!যা। তাড়সে উৎপন্ন ।সজর পাশা-সার পাশার ঘুটি ও কাঠি পাশ-গাড়ু পাশ-বালিস পাশী (৯৭) বরুণ পাসগড়ি ঃ দ্রু' পাশ গাড়ু পাসর-, -সু- বিস্মৃত হওয়। পাসলি, -সু- পদাভরণ বিশেষ পাকই, -কু- হাজ। (কাট) পাচ- ( সৈনা, চর) প্রেরণ করা পীচ গা ঃ পাঁচটা পাঁচান প্রেরণ কার্য; পাশার কাঠি চালানো পাচার পাশার দান বিশেষ, পাঞ্জা পাঁজল। পাচ ফনের নৈবেদয * পাঁজ। ঃ রাজকর্মচারী বিশেষ, মোহর-রক্ষক পাঁজ ঃ গুটানে৷ পথ (লম্ব। এক ফালি কাগজে লেখ। ) [প- পান করা চন্ডীমঙ্গণ পিকু ঃ কোকিল পিছিলা ঃ আগেকার ।”ধার পিঙ্গল অবহট্ঠ গ্লোক [পচাষী পিশাচী পিঠাহারী মুসলমান সম্প্রদায় বিশেষ (পিঠ বিব্রয়কারী ) পিড়-ঃ পাঁড়িত হওয়া, পীড়ন করা পিড়৷ পিড়া, বাঁসবার পাট পাঁওক। বোঁদ পাওুর৷ (১৩৮) আনাজ বিশেষ পিত (১২০) পিত্ত পিয়াল বৃক্ষ বিশেষ পিলুই প্রীহ। পুঁজয়। পৃজিতা। বলারু- পুখুর-গাবালে পুথুরের জলহাঁন গর্ভে পুড়। গোলাকার শস্যাধার ৷ গহ্বর নাসিকার "* (২৬৬) পু্জি একন্ন করিয়৷ রাখা ; আজল৷ পুটশ পুটলি; সমূহ । পুলুক পুড়যাতি শাক বিশেষ পুতান্ত গুপ্নবতী পুর (১৬২) পুরোহিত পুরহর শিব পুলুক পুলক পুলে।মজ। ইন্দ্পড়ী পেটরাড় গভিণাঁ অবস্থায় বিধবা পোঁড় ছোট বাকৃশ, পেটিক। পোড়গ তেল কাবরাজ তৈল * পোতদার মুদ্রার কারবারী বেনে পোত৷ 'ভীন্ত; ভাত্ত-ঘর কারাগার ৷ "মাঝি কারাগারের প্রহরী পোনা । বড় মাছের চারা পোয়াল খড়, খড়ের টুকর৷ পোরোগ ঃ দ্র পোড়ক তেল পৌটা নাড়শ্ছ্ীড় (চুনো মাছের ) শবারথ পোঁচী ঃ দ্র” পউটি প্রচেতা বরুণ প্রাতজ্ঞা-পুরণ প্রতিজ্ঞা টুন্ত (ফুরন ) প্রাতয়াসে প্রত্যাশায় প্রবোধ- প্রবোধ দেওয়া, জাগানে। প্রভালক৷ ঃ হেয়ালি প্রমদ প্রমোদ প্রমাণিক অপর্যাপ্ত, অগাধ প্রসাধনি চিরুনি প্রাণপিড়াসিল প্রাণি-বধকারী প্রীয়াগ প্রয়াগ প্লবঙ্গ( ম)৪ ব্যাঙ * ফজর ঃ প্রভাত ফড়া পা (সমগ্র) ফন্দ ফাদ, কৌশল ফন্দে ম্পান্দিত হয় ফরকায় ঃ আমন্ষালন করে * ফরমান হুকুম * ফারকাল ঃ বাঁহনীর সৈনিক ফাগুদোল বসম্তকালের দোল-উৎসৰ ফাঞ-ফটু তুবাঁড় বোম। ফ।ফর (১০৩) নিঃস্ব, দুর্দশাগ্রস্ত ফার (১৮) চারাঁদক দেখা ( শিকার কার্যে ) * ফান দ্র" ফোন ফুঁড় (৪০) ফাড়িয়। ফুণঘর, -ঘরা ফুলের তোড়। ফেকাতুড়, -তুঁও ভেবাচেক৷ * ফেনিঃ বাতাস। ফের কপটতা, পণ্যাচ ফেরা ঘের, পা ফোড়ায়া। ঃ ফোড়ন দয় বই ঃ ব্যতীত বই (6৪, ২৭১) তফাতে, বাইরে, পরে বউাল কর্ণাভরণ বিশেষ 6, ম.—৪৯ ৬৮৫ বউযের (৭৬) বসুর * বকর ছাগমেষ বকাল বন্ধাল, মদ তৈয়ারির মসলা বগাঁড় বকজাতীয় পক্ষী বিশেষ ব৪-ঃ কাল যাপন কর ঝ9- ঠকানো, দুঃখ দেওয়া বট (৬৬) ওজনপারমাণ বিশেষ বটলই পিতল কাসার মতে৷ সিগ্রধাতু বিশেষ বড় বাপ (১০৩) ৪ পিতামহ বাড়ি (১০৪) অভিশয় বড়ান (৫০) মৃগ বিশেষ ? বড়ালিয়ার ঃ জলদাস্যুর বড়ানোর দ্র বড়ালিয়ার বাত্ত (২১৬): দ্র বিত্ত বদ (২১৬) বাকা বদলাশে বদল আশায় বন বনা। "গবু, বরা শবাগ্যন, শন বনমাণা পর্রপুষ্প-বিরচিত মাল। বনি ভগিনী * বন্দ ঃ জোত দফা । বন্দেবন্দে বন্ধক বান্ধুলি ফুল ববাই ঃ বাবুই ঘাস বযান বদন বর- বরণ করা, বন্দন। কর! * ববঙ্গ ; বরগৌ, শিঙ্গ। বরটয। দ্র” বরাটা বরদায় ঃ বরদাত। বর৷ বরাহ বরাটা তৃণ বিশেষ বরুজ বোরজ ( পানের ) বরুণ, "গা বৃক্ষ বিশেষ বরুতান মৃগ বিশেষ বার্জ ঃ বোঁজ, নেউল বার্তক৷ পক্ষী বিশেষ ৩৮৬ বল দাবা, দাবার ঘটি বলকা বকপাংন্ত বলদ, -দে নাদীয়। (৬৬ ) বলদ হাকাইয়া বান (২৬৭) শোভা বলা শাক বিশেষ বলা. নিজেকে প্রচার কর৷ বলাগন দ্র বলাগল বলাগল (১০) ঃ বলে অস্ত্রগণ্য বলারু বলরূপা দেবা বালিয়৷ বলবান বন্ধবাস বন্ধন বসন বন্ধাক, -কী বীণ৷ বিশেষ বল্লালসেনিঞণ বল্লালসেনের মর্াদাপ্রাপ্ত ব্রাহ্মণকুলের অন্তর্গত বহিয়া (১৩৩) অগ্রাহ্য কারয়া। সাঁতন ” বহুআরী গৃহবধূ, পুরী বনুড়ী ঃ অল্পবয়সী বধূ বহুদিস বহুদিবস বাঃ বায়ু বা-ঃ বাজানো । বাধে বাইতি (৮১) বাদ্যকর, জাত বিশেষ বাইনানি বেনে-বউ বাউাড় (৭৫ ) দাদন, আগ্রিম খাজনা বাওন আমন্ত্রণ-উপহার, বায়না বাকল৷ চোকলা। খোল। বাকস গাছ বিশেষ ও তাহার ফুল বাকসন৷ ফুল বিশেষ, বক ফুল বাকুঁড় আবাস গুহ বাখান (৬) প্রশংস। বাথান- গ্রশংস৷ কর! বাগহাতা দ্র' বাথহাথা বাগুর। পশৃপক্ষী-্ধরা জাল বাগ্যন বেগুন বাঘচালি শিশুরীড়া, বাঘবান্দ বাঘনখ বাঘের নথ হার কাঁরয়। পরা, অলঙ্কার চন্ডীমঙগল বাধনলা৷ ফুল বিশেষ বাঘহাত।৷ হাতকাঁড় বাঙন দ্র" বাওন বাঙ্গাল (খেলা ) লাঠি বা তরোয়াল ঘুরানো * বাজেমহল বাজেয়াপ্ত | বাট পথ বাট- ভাগ কাঁরয়া দেওয়৷ । বাট) বাটা কৌটা, বাটি ( চেপটা ) বাটুল ঃ গুলাতর গুলি বাটুল৷ মটর কলাই বাড়-ঃ বাঁড় মারা, আঘাত করা । বাড়য়। ভাঙ্গল বাড়। সীমানার খু-টি, বেড়া । লাঠি বাড়ি, -ডীঃ লাঠির আঘাত, প্রহার বাঁড় (৭৬) ধান ইত্যাঁদ শস্য ধার দেওয়া (সুদ সমেত শস্য পাঁরশোধনীয ) বাত রোগ বিশেষ | খে বাত-পন্ন ব্জনী বাতা (২২৬) জোড় বা জোর দিবার জন্য সরু লম্বা পাত (বাশের অথব৷ ধাতুর ) বাথান গোঠ, গোরু রাখিবার উনুুস্ত প্রশস্ত স্থান বাথানিঞা (গাই ) গর্ভধারণোংসুক বাথুয়। বেতো, শাক বিশেষ বাদল আঁশ্ম্রান্ত বর্ষণ, বর্যার দন বাদিয়া, বাদ্য বেদে, যাহাদের জীবিকা সাপ ধরা ও সাপ খেলানে। * বাদে (১৯০) ব্যতীত বানা বিশিষ্ট চিহ্ন, লাঞ্থুন পতাক। ঝান্দি চাকরানী বান্ধলো বেনো৷ জাঁমিতে যে ধান রোয়। হয়, বীধুলি বান্ধুলী ফুল ও গাছ বিশেষ বানিয়া, বান্য। বেনে। বান্যাজাল বণিকগণ বান্যানী বেনের নারী * যাবে (৭৫) দফায় বামাথি (২৫১) বাম অক্ষি ? শব্দার্থ বায় (৬) বাহে, (নোঁক।) চালায় বায় (৫১) বাজায়, বাজানো হয় বায়াত দ্র" বাইতি বার (8৫)ঃ প্রকাশ্য রাজসভ। বার-ঃ মন্ত্র বলে করা । বারিলে (১৮২), বারিলেক বারমাসী বংসরব্যাপী বারসিঙ্গ৷ শাখাযুন্তশূঙ্গ হারণ বিশেষ বারণ হস্তী বার ১ জলপূর্ণ বড় ঘট, কলসাঁ ( পূজার ) বারাটি দ্র" বরাটা বাঁর ঃ জলপূর্ণ ছোট ঘট ( প্জার ) বাঁর বাহির বার্তন শুভ সংবাদ, আমন্ত্রণ বাতা বার্তন বেতন, বাঁত্ত। ২ ভীম চাকরান জাম বার্াকী বেগুন বার্যাল বাহির হইল বালাতি বালপুন্রবতী (বিধবা ) বালিকড়া মাছ বিশেষ, বেলে? বাঁলঘ()ট গঙ্গা আত্মহত্যা বালুঁড় কলা তাল ইতর কাও হইতে উদ্ভৃত দীর্ঘপর বাল্যে (৯১) বালীকে বালোর (৯ )৪ বালীর বাশী কুডুলের মত একপ্রকার ছেদম অস্ত্র, বাস বাবধনু ইন্দ্রধনু বাষুলি চামুণড। বাস- অনুভব করা বাস (১০১) সুগন্ধ । বাসে (২৭) গন্ধে বাসীস্তকা ফুল বিশেষ বাসবঃ ইন্দ্র বাসাড়ি অস্থায়ী নিবাসকারী বাঁস ঃ পূরবাদনে প্রস্তুত বাসি, "সী দ্র বাশী বাসুলি-পাত। চণ্ডী (বা চামুণ্ড। )*সাজ (নৃত্য) বাহুলা-ঃ উর্ধে তুলিয়া ঘোরানো ৩৬৮৭ বাজ, -জি, -ঝি বন্ধ্যা (নারী) বাট-ঃ ভাগ করিয়। দেওয়। বাট। (১৩৫) অংশ, ভাগ বাশগাড়ি ঃ ভূসম্পত্তি দখল লইবার কালে দেয় কর [বিঅনি বাজনী বিকটাল বিটকাল, বিশ্রী বিকান ঃ বিক্রয় বিকস্প পানি ওষধ মিশানে। জল বিগতি দুরশ। বিচ-ঃ বাতাস কর। 1ব১()-বে,ক। ই বাঁজনিষেকের জনা পাঁলত পণ গবচার বিচার করা বিচেত বৃদ্ধিদ্রষট ববছন-পুড়া বীঁজধানের গোল। গোলাকার ) ছাড় (৫৮) উচ্চাটন [বিজ বিচি, বাজ বিজাতি ঃ দ্র বিজ্ঞা়ি বিজুত দীপ্তি, সৌন্দর্য বিজু-বন মরুক্তার, নির্জন অরগ্য [বিজ্ঞান (২) অসং জ্ঞান বিট্রানি ঃ পাঠান গোষ্ঠী বিশেষ [িড়া) (পানের ) খালি। "বাঙ্ধা, “বিষ্বা। খাল বরা পান) বড়ঙ্গ ভৈষজ্য উদৃভিদ বিশেষ বা্ত পাশার দান বিশেষ [বত ঃ বিত্ত, ধন বদ গুটি, দানা । "দাড়ি ঃ ডালিম দানা । -*মাল। পুঁতির মালা বিদণ্ডা বিতগু, বিবাদ বিদ্ধ ঃ পাশায় দান বিশেষ বিনয়-মাতন বিনয়ে খুশি । "এর [বপথি কুমার্ণগামী বিপণ্িকা ভ্রীড়। আমোদ [বিপাক বিপদ ৩৮৮ বিমারিষ চিন্তা বিমর্ষিয়। বাছিয়া, বিচার করিয়া বিঘ্বুক) পাকা তেলাকুচা (ফল ) বিয়ানি দ্র" বিঅনি বিবাত বৃহতী গাছ ও ফুল । বিবকালি যুদ্ধকালোচত * বিরাদর ভাই, আত্মীষ বারাণিকা ; দ্রু' বিপাণ্িকা বিরতি বার্তন বাত্ত বেতন * বিলাত (৬) একের পদে অন্যের নিয়োগ, একের সম্পান্ততে অপরকে অধিকার দান বিশংস (8৫) অধন্য [িশ। দরে কুঁড়ি হিসাবে বিশাই বিশ্বকর্স বিষলাঙ্গলিয়া ফুল বিশেষ বিষালাক্ষী চত্তী , মনসা বিসঙ্কট বিষম সঙ্কট বিসসোল। ফুল বিশেষ বিহাণ বিকাল সকাল সন্ধযা বাঁজপূর লেবু বিশেষ বারকাণি দ্র' বিরকালি বীরঘড়0) বাঁরসমূহ বীরধাঁড় মল্পের অধোবাস বারঢাক জয়ঢাক বারপুঙ্গ বীরপুঙ্গব বীরবান। বিজয়-পতাকা, বিজয়ী মল্লের লাঞ্থন বার-বাল। মল্লের (যোদ্ধার) বৃস্তের ভূষণ বুড়ঃ ডুবয়া যাওয়। বুড়ি পচগণ্ডা। কড়ি ছয় বুল-ঃ থুরয়। বেড়ানো বুহতাল পোতাধাক্ষ , নৌসার্থ বৃহত, বর চাঁযান বৃহননল ঃ অঞ্জন ( যিনি স্্ীরূপে বৃহামল। ) বেউচ দ্র বেঙ্চ চন্ডীমলগল বেউস্ বেশ্যা বেকল৷ চাকলা। টুকর৷ । কুমুড়ার * বেগর বিনা বেঙচ বৈছি গাছ ওফল * বেঙতড়কা মণ্ঁক-পতি ; বেঙের লাফানো বেঙ্‌ঃ প্রস্থ, ব্যাস বেঙতড়পা দ্র" বেঙতড়কা বেঙ্গ৷ বঙ্গ ধাতুর খাদ মিশানো। "পিতল কাস। বেজক মুরলিযন্ত্র বাশ-নলের পিক্ষকারি বেজা, -ঞা লক্ষ্য (বিধবার) বেটন৷ পাগাড়, কোমরবন্ধ , আসবাব বেড়াবোড় চারাদক তারয়। বেত বিবাদ, বিতঙ বেদপথি ঃ শাস্ত্-অনুগত, শুদ্ধাচারা বেদুয়৷ জারজ বেনন বিনুনি করা বেন। গন্ধতণ বিশেষ বোন বাশের বাশি বেনি (২১৬) বেরীসংহার নাটক বেপারি সওদাগর বেবাজ শুক্বহীন। "হাট বেবুসা বেস বেভার কুুন্বিতাব্যবহারে উপহার বেয়াজ ঃ ছল -বের বার। পাঁচ * বেরুনিঞা,-য়া 'দিন-মজুর বেরুণে (৬৭) বেরুনিয়াগিরিতে বের্থঃ বার্থ * বেলক খনৃতা, খনতা-বাণ ; সেই অস্ত্রধারী পাইক * বেনাক, -কীঃ বেলক-বাণধারী যোদ্ধা বেসাশ কেনা-বেচা কর! বেসার বেসন, চর্ণ অথবা বাটা মসলা বেঁজ। দু বেজা বৈল বালল শবার্থ বোআলি, -দা-ঃ বোয়াল মাছ বোক। মন্দা ছাগল, পশঠ। বোড়াস্ধার ভোতা বোধন নিদ্রাভঙ্গ করা ( অনুষ্ঠান ) বোনে (১২৩) ছড়ায় বোরজ পান-চাষের ছায়া মওপ ক্ষেত্র বোল" কথা বলা বোল-ঃ ঘুরিয়া৷ বেড়ানে। বোলান কথাবার্ত। ব্ভার ঃ আচরণ ব্যাজ বিলম্ব ব্যয়া)জ ঃ মুনাফা, লাভ ব্যান) বান্যা, বেনে ব্যারায় বাহির হয ব্যালস বিয়াল্লিস , বহুসংখ্যক ভান্তীনত ঃ 'নিতা ভান্ত, ভান্তনীতি ভদ্দুকলা ফুল বিশেষ ভম (২১৯) ভ্রমণ কর ভমারিভূষণী ভূষিত৷ দ্রামরী ( যোগিনী ) ভরা নোবাণিজ্য-পথ্য ভা-ঃ ভালে। লাগা । ভায় ভাঙ্গড়-মাতি ভাঙখোরের মতে। বুদ্ধ যাহার ডাচা ধান ভানিয়। চাল করা ( উপজীবিক। ) ভাট স্তুতি-পাঠক ভাটগার ঃ ভাটিয়াঁল গান ভাও()- ঠকানে। ভাগুর ছল ঝ।কা, ছল বাবহার ভাগারি কোষাগারের কর্মচারী ভাণ্তীর বুন্দাবনের এক বটবৃক্ষ ভাদালী, -লিয়। গাধাল গাছ ভান-ঃ ধান হইতে চাল কর। ভাবন হাবভাব ভারই পক্ষী বিশেষ ভারদ্বাজি ॥ বুনো কাপাস ও ফুল ৩৮৯ ভারাধতারণ ভার-হরণার্থে অবতার ভার যাহা লঘু নহে ; সমৃদ্ধ; মুটিয় ভালুক৷ একজাতীয় বাশ ভাস ঃ পক্ষী বিশেষ ভাগ্কতী জোতিষশান্ধের গ্রন্থ বিশেষ ভাগের ঃ ভাঙের ভাড়। সম্বল, মূলধন ভাড়ে (১২৭) ঠকায় ভাতি বাহ্যাকীত 'ভিড়- চাপা, চাপানো ভিড়ন 'শিড় করা, সঙ্গে যাওয়া ভিনাঁঞ ভিন্ন-ই িন্দিপাল ঃ অস্ত্র বিশেষ (হাতে অথবা নলে তীরে ছোড়া, তাঁরে কিংবা গুলভাইয়ে পাথর ছোঁড়া ভুক- বিদ্ধ হওয়। ভুখাও্ডঃ দ্র” ভূষাও ডুজা-, -ঞ- খাওয়ানো ভুজ্য ভোজ্য; ভূজ্য ভূঞা ভুমিজ, আদিবাসন্দা ভুনি ঃ রেশমি বন ভুব-ভার , পৃথবাঁর ভার ভীঁমচাম্পা তুইঠাপা ফুল ভুরুকৃও। ভূরুণ্তী ফুল (11611011010]) [7010]) ) ভূষাও, -স- অস্ত্র বিশেষ (আগ্রনিক্ষেপক 2) ভূতগুদ্ধ ঃ পূজার আরম প্জারী কর্তৃক দবব্যাদির ( পণ্ভূতের ) শোধন ক্রিয়া (মন্ত্রপড়া ) ভূগুবংশ পৌরাণিক আথ্যানগ্রন্থ (অজ্ঞাত ) ভূগুসুত শুকরাচার্য ভেউর (৫০) ঃ ফেউ, হেঁড়েল ভেট সাক্ষাংকার, উপায়ন। -* ঘাট ঃ ডেটঘটা ভেটা ঃ ভাটা, শিশুক্ীড়ায় কাঠের গোলাকাতি খ্ড (ভেট। ঃ পক্ষী বিশেষ 'ভোক ক্ষুধা ভোঙরা-বাত ১ অঙ্ক-কাপ। বাতব্যাধি ৩৯০ ভোট পাহাড় দেশের কম্বল (মূল্যবান ) ভ্রময় (১৩১) ভ্রমণ করে মআল দ্র ময়াল মউর বিবাহ-অনুষ্ঠানে কন্যার মুকুট * মবদ্দম (৭৭) মখদৃম, মহাশয় মকরকেতু কামদেব মকুট মুকুট মথ যন্ত্র মঙ্গল- ( অভার্থনায় ও বিদায়ে) মঙ্গল অনুষ্ঠান করা (সধবা নারীর দ্বারা )। মট (৭১, ৭৪) মঠ মণিবান্যা জহুর মণ্ডল মুখ্য প্রজা মণ্ডল মুখ্য প্রজার অধিকার মণ্ডালয়৷ মুখ্য প্রজার প্রাপ্য ( তোলা ) মদগুর (- মুদুগর ) ঃ মুগুর মদন ফুল বিশেষ মধুমাস চৈত্র মধুর ঃ মৌর মনাই, -ঞ মনোজ্ঞ মনুহার মনোহর ময়নাগুঁড় (২১৬) শিশুক্তিয়া বিশেষ ময়াল সমীপবর্তী স্থান মরাই ধানের গোল। (গোলাকৃতি নয় ॥ মু ঃ মুর মরুবক, মনুয়া গাছ ও ফুল বিশেষ মর্কটি মাকড়সা মল বাকি বাক মল মল (২২) অঙ্গ-মল। মব্বিক মল? মাঁললক৷ জোড় জোড়া মল্লিকা, বেলফুল * মসহাত, মসাত জারপ মসার (১৮৭) পান্না, নীলা মসারী জালি জালের মসারি চতীমঙগত * মাঁসদ মসাঁজদ মসীপন্র কালি ও দোয়াত, কালির দোয়াত মন্কর৷ (৮২) পৃজা-উৎসব উপলক্ষ্যে টাচ্ছিত বংশদণ্ড ; সন্ন্যাসীর দত্ত মস্যা (দই ) দু" মহিষ মহত (১২) মহত্ব * মহলা (৯৪) মহড়া মহাকড়া, কালা মাকাল গাছ মহাপান্ন রাজমন্ত্রী, রাজপারিষদ মহামত্ত (১৫) মাহৃত মাহষা,+সা মহিয-দুপ্ধজাত, মাহষ-চর্মীনাপ্নত মহাজসি বড় জ্যোতিষী মহাঁলতা কেঁচো মহাঁষয়া মহিষচর্ম নির্মিত * মাইসর বছরের প্রথম মাস, অগ্রহায়ণ মাকন্দ আম মাগু ভাষা । মাণ্থের ঃ ভাষার মাচিয়া, -ছয়া (বাঁসবার) চৌকি, মণ্ট মাছাত্য৷ মেছেত৷ মাজকুড়া (৬৬) মধ্য শিখর মাজা গৃহতল মাঝি (৮১) জাতি বিশেষ মাঝি ঃ দ্রু' পোতা মাঝ্য দ্র' সাজা। মাঞ্জ মাঝা, কোমর মাটি(য়) মাটির জলপান্র ্কাঠীয়া জাতি বিশেষ মাড়ুয়া ছোট ছোলার মতে কলাই মাতা মত্ত (হস্তী) মাতুলি মাতাল (ইন্দ্রের সারথী'র নাম ) মাতুলী ঃ মামী মাতুলুঙ্গী বড় লেরু মাতে (১৪০) খুশি হয় মানি 8 মাতৃ, মাত। শব্দার্থ মাথা-মউীড় সদ্যোববাহত৷ মুকুট পর! (মেয়ে ) মানিকা মাতৃকা, চন্ডীর সহায়ক দেবীবৃন্দ মান ওজন, পরিমাণ (৬৫)। পাঁরমাণ বিশেষ (২৭৬) মান ঃ মান-কচু মান্দার মাদার গাছ মায়ক (২৯০) মায়া-ঘটিত । -শয়নে মায়া ঃ স্রীলোক। "দেবতা (২৮৮) মারাটা জাতাবশেষ, মারাঠা মার্কগু মার্কগেয় মাল (৬৬, ৮৪) পালোয়ান, যোদ্ধা, মন্ল মাল (৮১) জাতি বিশেষ, সাপুড়ে মালতী (২১৭ )ঃ মালতীমাধব নাটক মালম (৮৫) মল্লাবিদ্যা মালশাট, -সাট ঃ মল্লের আম্ম্োট মালু-কঠ নৌযানে দিশারির দাড়াইবার স্থান মাশ, মাষ মাংস মাসরা, -ড়া মাসিক দেয় (বুঁত্ত, বেতন) মাহৃত হাস্তচালক, হস্ত্যারোহী সোনক মাহুর তীব্র বিষ * মিঞা মুসলমান ভদ্রলোক মিত মিত্র * ?মরাস নিবাস মুঃ মুখ। মুঞ্ডে 5 মুখে । মুখের মুখের মুকুলিক৷ ঃ পুষ্পমুকুলাকাত কর্ণাভরণ মুগদি বোক। মেয়ে * মুগার মুসলমান শ্রেণী বিশেষ মুটাক মুঠ । গুষ্যে 8 মুঠায় মুঠকামুঠাক ঘু'সঘুণস মুঠকী দু" মুটকি মুঠি (৬৬) হাতল মুড় মাথা মুড়া (৬৯) মুল মুড মুগ ; প্রান্তহীন (কাপড় )। ** সিজ পাতাহীন মনস৷ গাছ ০৯১ মুড়াইল দ্র" মুণ্ডাইলে মুড়ালী (৭০), মুড়াল্যা ঃ সৌধের অথবা নৌষানের শীর্ষ; চাকার কেশবনধ মুড়য। পাকি (৮৬) অগ্রগামী সৈনিক মুড়্যাতি শাক বিশেষ মুণ্ডা- ঃ মাথা নেড়া করা, কামানো মুণ্ডাইল (২৬৭) মওনাকারে একন্িত মুত ঃ মুক্তা মুতয়ার (৬৬)ঃ মুস্তাছড়। ধুথা ঘাস বিশেষ ও তাহার মূল মুদন চানের মাথা | এক মুদনের মুদ্া (২১৭) মুদ্রারাক্ষদ নাটক * মুনসীব কাজ দিবার কর্তা মুনিঃ মণি । নৃপ- ; দিন” মুনিকায় (৭৯; -মৃলিকায় ) জাঁড়বাঁড়র ব্যবহারে মুরগায চড় মুর্গাঘাসের ছিল৷ মুরজ পাখোয়াজ মৃদঙ্গের মতে। বাদ্য বিশেষ সুরার (২১৭) মুরার মিশ্রের অনর্থরাঘব নাটক মুর্গাগুণ দ্র' মুরগার চড়। মুলক (২০১) শঙ্খনী মুসার মশার * মুসহাতে (১০৩) দ্র” মসহাত মুস0) ইদুর । "মাটি ইদুর মাটি মুসুণি টিকৃটাক মুহ-ঃ মুগ্ধ করা মুহান মোহানা মূর্বা দীর্ঘ ঘাস বিশেষ মূলা-ঃ পাইক রি ভাবে দর করা মুকওু-নন্দন মার্কতেয় মুৃ্তকা-শঙ্কর মাটির গড়। [শবালঙ্গ মেঙাঁদ মেহদি গাছ মেচল৷ মোরছল, ময়ূরের পেখম মেটা- মিলিত কর।, লাগানো * মেধা (৩১) গ্রামের প্রধান, মির্ধ। ৩৯২ মোন রাঙা-মুখ বাদর মেলা সমাগম, মিলিত হওয়া মেল! (১৩৮) প্রচুর মেল পাড়া ( মল্ক্লীড়ায় ) আকাঁড়িয়া ধরা ও আছাড় দেওয়। মেলান, -নি ঃ ছাঁ়য়৷ যাওয়া, বিদায়, বিদায়-ব্যবহার মেলি ঃ মিলিয়া, মিলিত ; একর মেলে (8২) গঙ্গে মো মোহ মোকা শুন্যগর্ভ ? "নারিকেলেতে (৪৫) মোকাম নিবাসস্থান মোচলা-ঃ মোচড়ানো * মোজা (৮১) গোড়তোলা জুতা * মোললা মোল্লা মোহন-প্রবন্ধ ভুলাইবার প্রচেষ্টা মোহিতা (২৬৯, ২৯৭) -মাঁহতা, পঁজতা মোর ময়ূর মৌল মহুয়৷ ফুল যজ্ঞজুষা দ্র" যজ্যযোষ। যজ্ঞযোষ। যজ্ঞের শান্ত (প্রতীক ) যমধর দ্র জমধর যান্নিক শুভযান্রা লক্ষণ যুগ যুগল । —মুটকি যোগাঁনতর৷ দ্র" মাঁয়ক শয়ন যোগপাটা যোগাসনে বাঁসিবার বন্ধনী (যোগাঁ সাজ ) রইঘর নৌধানের কেবিন রক্ষিত মৈত্য়ে-রাক্ষিত, তত্প্রদীঁপ ও ধাতুপ্রদীপের রচয়িত। রগড় দ্ুততল । বাজায় রগড়ে রগাঁড় রঙীন। ** কীঠি রঘু ঃ রঘুবংশ কাব্য রঙ্ক নিঃছ, ক্ষুধার্ত রাক্কণী ঃ চামুওা রঙ্গ রঙ। করে” (৮০) রঙ্গ শিকার ভ্রীড়া । ““বধে। “রসে রঙ্গন গাছ বিশেষ ও ফুল। রান চন্ডীমঙ্গল রঞ্জা-ঃ খুসি করা রড়ঃ দুতগতি, দৌড় রতি ওজনের মারা রদ্াকর (২৯৯) অগাধ বিদ্বান, ( গুরু) রথাঙ্গগাণি ঃ বিষু। রদ ঃ হাতির দাত র্ধন-খাচর দ্র" থাচর রমণ পাত রম্তাত্যক কল৷ গাছের ছাল, পেটো রয় (২০৫) বেগ, তীব্রগাতি রসপান৷ রন্ত পানীয় রসবাস (৩৮) [ গর্ভিনীর সপ্তম মাসের অনুষ্ঠান ] রসান দর্পণ, রসের দাপনি কাচের আরাঁস, সেই রকম উজ্জল পাথর বহা- থামানে।, আটকানো রাঃ শব্দ, ডাক রাউত অশ্বারোহাঁ যোদ্ধ। রাক (৮৮) রক্ষা রাকাপাঁত পূর্ণচন্তর রাখাশী রাখাইতেছ রাঙ্গ (২০৬) রাঙ। জামা, আঙ্গিয়া রাজভাট ঃ রাজার স্তীতপাঠক (জীবিকা ) রাড় ঃ ববর। লোকে বলে * (৬৪) রাণড, -গঁ 8 বিধবা, অনাথ বিধবা রাত ঃ রন্তবর্ণ রাম-কুড়্যা রামের কুীর রায়বার দ্র" রাজভাট ৃ রায়বাশ বর্শফলক-যুন্ত লাটিয়ালের লাঠি রায়বাশ্যা বর্ণাফলকযুস্ত লাঠিয়াল যোদ্ধ। রায়বোনি (-হয়বোন ) ঘোড়ার উপর বাদ্যভাগ রায়ত দু” রাউত রায়য()টি মার্বেল (পাথর) রপকা নির্ধন রঃ ধু, সরল শবার্থ রিতু ঃ খতু [রন ঃ খণ রাস, -সাঁঃ খাষ রিশ্বমুখ, -ম্ব- ঃ ধাষামূক রুই-মুণা রুই মাছের মুড়া * রোজ (৬) দিনমজুবি লআঃ দ্র লোআ৷ লকু ঃ লউক লথ- লক্ষ্য করা, মন কর৷ লঙ্ঘ- ঃ লঙ্ঘন করা, অতাচার কর! লণ্ডে ভণ্ডে (৭৮, ৮২) জবরদাস্ত কাবা লবণিঞা 8 লবণ 'বিকলেত। লসান দ্র নসান নাড়ু গঙ্গাজল গঙ্গাজলি নাড়ু লাজ-হোি, -হুণি খই দিয়া হোম লাজের (৪৮) লেজেব লাল(৬ নাল )ঃ চাষের জাম লুক অদৃশ!। ১ কায লুবধ লুগ্ধী চার (শিকাবে) লেক রেখা, দাগ । কুশের ৯ লেখা-জোখা (২০) হিসাব পারমাণ লেঙ্ুড় লেজ লেঠ। (৮২) ঝঞ্জাট লো চোখের জল লোআ ছোট গাছ বিশেষ লোট- লুট কৰা লোন লবণ লোহ চোখের জন * লোহানি পাঠান গোষ্ঠী বিশেষ শকুল শোল মাছ শাঙখনী দ্বিতীয় শ্রেণীর সুন্দরী নারী ; শঙ্খধারণী অপদেবতা শরভ মৃগাঁবশেষ ; অফ্টপদ কাম্পাঁনক জীব শাঁকিনী চত্ীর অনুচরী যোগিনী নায়ক ( অন্যতম ) শাল শলা, নিদারুণ বেদনা চ, ম.-৫০ ৩৪৯৩ শালভপ্জি ঃ পুত্তালকা শালুক-নাড়৷ শালুকের নরম ডণটা শিউলি খেজুর গাছের রস করে যাহার ( মুসলমান ) শিখার শিখর , পর্বত শাখ আগ, অগ্লিশখ! | ময়ূর শিঞ্ে সেলাই করে শিপ কোশাকৃশি শিল : তুবড়িতে নিক্ষিপ্ত গোলা শিশ মাথার অগ্রভাগ । শিশেতে (সপ্তমী ) শীতল ঃ ঠাণ্ড ফল ও পানীয়। -জোগাব (২৮৫) শীদান্ত সিদ্ধান্ত শৃষ্ঠ সু'ট, শুখনে। আদা-জাতীয় শিকড় শুভ ভেদ বিশুদ্ধ উচ্চারণ, বোৌদক স্বর শুখন শুষ্ক জলাশয । শুখানর (যষ্ঠী ) শুয়৷ শুক পক্ষী শূল ঃ বেদনা, প্রসববেদন। শৃূলী শিব শোড় ঃ যোড়শ শ্রীকালি (২৭৭) শৃগালী শ্রীফল বেল এ্রুতপাঁল, -পাত (২৭৭) কানের পাতা শুপ ঃ যন্কাধে ব্যবহৃত কাঠের হাতা । শ্রুপের (১৩) ষড়সী ঃ ষোড়শী ষাঠ্যারা নবজাতকের ষষ্ঠ দিনে আতুড়ঘরে কৃত যুগপ্রস্থ ্বগপ্রস্থ ? দ্বণপ্রস্থ ? সইন্য ঃ সৈন্য * সইবানা ঃ সামিয়ান। * সওয়ার ঃ অশ্বারোহী সকটা শিশুক্রীড়া বিশেষ * সকনাত, -ঘ্বাথ পশমি বর সক্ষর নিশান দ্ধ অক্ষর চিহং সগড় শকট সন্কল- ঢুকানো, শেষ কর! সঙ্কুল- একত্র জড় করা ৩৯ সংক্রায়ন সংক্ক।স্তি সঙ্গতি উপায়, সম্বল সজ ঃ সজ্জ, দ্রব্য (বিক্রেয়) সষ্টান (২০৯)৪৫ সংস্থান, অবস্থা সঞ্জমদাঁক্ষ। সংযম-উপদেশ সতজনে (৬৩ ) সং ব্যাক্তকে সতবর্গ গাছ বিশেষ * সদর রাজভাগ্ার সত।, সতিন, -তীন, "তিনি সপড়ী সন্ত মাতা) সং-ম। সদা (৬৬) সওদ। সদাগতি বায়ু সদাবাঁর গচ্ছ ও ফুল বিশেষ, শতাবরী সদায় সদাই * সনাকত (১৯৬) অবাহত সম্ততি (১৭৯) পুনুজন্ম সম্ভল(ন) সাতলানে। সন্ধান (১০২) সংযোগ, জোড় সান্ধবৃত্তি (ব্যাকরণে ) সান্ধসূতরের ব্যাথ্য৷ সন্ধিমূল (ব্যাকরণে) সন্ধি-সৃর সপ্তশতী (১) সাকণ্েয়-চন্ডী ; (২) হালের গাথাসপ্তশতী ও গোবর্ধনের আর্ধাসপ্তশতী কাব্য সপ্তশলা সপ্তশলাকা, জৌতাষক রেখাচিন্্ (শুভক্ষণ বিচারের জনা) সপ্তদ্থর৷ সপ্ততন্ত্রী বীণা * সফর বিদেশে বাণিজ্াকর্ম * সফর-খান বাণিল্য যাত্রায় আস্তান। * সফারিয়। বিদেশে হইতে আমদানি সভাজন সভায় সমবেত বান্তি সভান (৩০১) সকলকে সমসর সমান, তুল্য সমভাষা দ্রু' সন্ভাষা সমা বংসর সমাঁসক৷ (২১৬) ঃ 'কাশিকা' পঠিতব্য চন্ডীমঙ্ সামাহত সমাহিত সম্ভর- সংবরণ কর! সাশ্বধান বিবেচনা সম্ভাপোন৷ সম্ভাবনা সন্ভায়্য। প্রবেশ করিয়া সন্ভাঝ৷ (৬) (প্রীতি ও কুশল ) সম্ভাষণ সম্মোহন সম্মোহন সয়চান বাজপাখি সরট কৃকলাস সরভ দ্র' শরভ সবজান সবজ্ঞ সসাজ সাজ সমেত সসারু ঃ খরগোস সহ)-ঃ সাধা- ( আনুষ্ঠানিক ) সহিন্য সৈন্য । সাঁহনো ( তৃতীয়া-সপ্তমী ) সংজমনিপুর যমালয় সার্গাতয়।৷ (৩৪) সাঙ্গা-কর৷ সাঙাল পাটের বোনা 2 দ্র সীঙলি সংহার-ঃ ধ্বংস করা, খাওয়। সাঙ্গ মানুষের সাহায্য । পাঁচ সাঙ্গের পাথর পাঁচ জনে যাহা বহিতে পারে সাঙ্গাতিন সখা * সাঙ্গ ঃ সঙ্গীন। সাজনুনি লম্বাটে, রঙ শাদা এক রকম ধান সাঁঞ শমী (বৃক্ষ ও ফুল) সাট সট্‌ সট্‌ শব্দ সাড়৷ মারিয়া নিঃশব্দে সাতনল, -লা পাঁখ-ধর৷ আঠাকাঠি সাতাচার (২১৬) শিশুক্রীড়া বিশেষ সাতাধীল (২১৬) শিশুরীড়। বিশেষ সাত। নয়৷ সাত নয় অর্থাং তেষট্টি । *, বন্দে: সাদ (৫৪) সাধ, বাসনা সাধ, -দ নবম মাসে গর্ভিণীর অনুষ্ঠান সাধ" ঃ নির্বাহ কর৷ সরে শব্দার্থ সাধন খণশোধ । *লইবে বিলন্বিত সাধুয়াল বাঁণজ্য ঝ/বসায় সাধে, ধ্যে, -ধ্ব সাধুকে সাধ্বানি সাধুর স্ত্রী * সান (৭০) পাথর ধাধানো ৷ ঘাট” সান], সানে সানায়া। সান-ঃ সন্নদ্ধ করা । সানা- শাণ দেওয়া । * সানা ঠাতের চির সানা থানাদার পাইক * সানাকব ঃ সানা-নিম্নাণ ব্যবসায়ী সানা-ভাত (৭৫) থানাদার পাইকের বায় বাবদ প্রজার দেয় কর সানাতি (১৮৮) টের, জানান * সান সানাই সান্তল-ঃ সাতলানে। সাঙ্জাইল প্রবেশ করিল সাবক পক্ষী [বিশেষ সাপঙসে আঘাতফলে সাম শামা বাক্য সাস্ভ। প্রবেশ কর৷ সায় শেষ সায় (২৩১) সম্মতি দ্বীকৃত সায়ড়। শেওড়। গাছ * সায়বান সাময়ান। যুক্ত সার-ঃ বাগানে গুছানো, প্রস্তুত করা সারল৷ চণ্ডী, সারদা সার (8৫) কচু বিশেষ সারোর সাঁরক৷ পাখির সাল শল্য । শোক-” সালিকা শালিক পাখি, সারকা সাচন। প্রস্ততি, প্রস্ৃত লাজ সঞ্ধ্যাদীপ সাজড় দু সাছুড়- সীজুড়- একসঙ্গে বাধ। ( বহনের জন্য) ৩৯৫ * ঠাজাকুড়া, -চা- মধ্য-কুণ্ড ( ভারসম ) সাঁঞ শমী বৃক্ষ ঠ্াড়ক খড়ের ছাউনিতে আড়াির নীচে দাঁত বাতা (বাশের খণ্ড) গাতর-ঃ সুথে দিন কাটানে। স্লাতণ(ন)-ঃ সাতলানে। সপুড়া হাতবাকৃস সীভা-ঃ প্রবেশ কর! [সআন সেচপান্ [সিখিবাণ আগ্নবাণ [সাদ্ধ বানান যুস্তাক্ষর (লাঁপ) 1সঙ্গাদার শৃঙ্গবাদক [সপ কোশাকুশি ধসমন্তক স্যমমন্তক সমল শিমুশ গাছ সয়াকুলি সেয়াকুল [সিয়াড়া দু" সায়ড়া * [সারান 2 সান (লী হাউই 2 [সংহনাদ (১৪) শিঞাধবনি সংহনাদ (৪) যোগীর আভরণ, বিশেষ [সংহ'পিয়। সিংহলের লোক [সংহা শিঙ। সীল শিউলী-রঙা? দ্র" সাঙাল। "গামছা (২৮৫) সুতা শুখনে। শাকের বাঞ্জন মুঘট ভয়ঙ্কার ঘোর আতসবাছি সুষট শুট সুন কুকুর ৭ সুনের তনয় সুপ পাতল৷ ডাল (বেঞ্জন ) সুভট সঘনে ॥ দ্র" সুঘট ভয়ঙ্কার সুভাসিত (৮৩ ) সুব্যবাস্থিত, সুশাসত সুয। শুক পন্মী সুয়ের (৯৯৩): প্রয় পল্ীর সুর দেবত। + সুরানি পাঠান গোষ্ঠী বিশেষ ৩৯৬ সুশুক শুনুক সুসণ্চিত সুনিরবাচিত । "শরধনু সুস্থক (৭৫)? স্বত্তিপ্রাপ্ত সুড়া সঙ্ধীর্ণ পথ, সুড়ঙ্গ ূর্্যমাণ ফুল বিশেষ সেআড়ি ফল ও বৃক্ষ বিশেষ সোঁজ শয্যা সেবাঁত সেউতি ফুল সেল দ্র' শেল * সেলামী (৭৫ ) আতীরন্ত খাজন৷ (বায়নার মতে ) সৈলক ঃ সজারু সোন-পাট শণ ও পাট সোয়াগ-দরপে সোভাগ্য দর্পে সোলসা। যোড়শবর্ষাঁয়। সোলপা, -ফ৷ সুলপো শাক * সোলেমালী দ্র ছিলিমালী সৌগণ শুশড়রা সোল পোন৷ শোল মাছের ছান৷ গল (৬১) স্থালী, পা * স্পানী ইসৃপাহানী, পাঠান গোষ্ঠী বিশেষ স্ফন্দন স্পন্দন ঘহায় & সহায় ্বহায়ন সাহায্য ; পূজা শ্)হায়ানি সাহায্যকারিণী, সহায়শস্তি স্বেতবন্ধ সেতুবন্ধ হবাস)স্মর দ্র" সমসর স্মরণ-হুলাহুল দেবত৷ স্মরণ পূর্বক আনন্দধ্বনি স্মরহর শিব স্যামলতা ফুল বিশেষ হকু ঃ হউক হট জেদ, অকারণ [বিরোধ হড়াঁপ বাকৃস বিশেষ হব্য ধাঁষ (১৮৭) হব্যাদ ? হরিড়া হরীতাঁক চণীম্গ হরিসন আনন্দ হলিক চাষা, কৃষাণ হৃস্তকের হাতির । "শুভ হাই-হামলাতি (১৩৩)৪ আমলকী তৈল হাকিনী চন্ডীর যোগিনী অনুচরী বিশেষ হাজ-ঃ জলমগ্ন হইয়৷ শস্যাদ নষ্ট হওয়া * হাজরা হাজার সৈন্যের নায়ক, রাজকর্মচারী বিশেষ হাজ।- ঃ জনমগ্ন করাইয়া শস্যাদি নষ্ট কর৷ হাট-ঘব৷ হাটের ঘর হাটুয়। হাটে ক্রয়বিক্রষকারী হাড়-খাল ঃ সঙ্কীর্ণ জলপথ হাড়ি হাড়কাট হাঁড়িযা প্রকওড। -তাল হাণ্ডিয়া প্রকাণ্ড । চামব হাতার হস্তিপালক হাথবাগ। হাতকড়। হাথ-সান হাতছানি হাথি-কড়া হাস্তশাবক হাথি-ঘড় হাস্তবাহিনী হাথ্য। বৃহং, হাতির মত। *-দাদু হাঁদ গ!জ, জলজ তৃণগুম্ম হান-ঃ আঘাত করা, ধ্বংস কর! হানিঞা হান। দিয়া, সবলে ঢুকিয়। * হানু ঃ খাবারের দোকান । "ঘাটে হাব্যাস ব্যাকুল অভিলাষ হামার শস্যাগার হাল৷ [ সংখ্যাসমক্টি-বাচক শব্দ ] চারি "খড়ে হার অনুপাত । হারে মাপা দিল হারুয়া পরাজিত * হাল-বাকি উপাচ্ছিত ও বাকি-পড় প্রদেয় হাল্য। হেলে গোরু হাসন (৬৬ ) হাসা ( অথবা, হাস্য করিল) [হঙ্গ ঃ হিও (বৃক্ষনিধাস, মসল। ) শবার্থ হনচা, হিলি / হং। শাক হিরামুঠি হীরা ধাধানো ডি হরাধার হীরার মতে৷ কঠিন ধার হুড় (৮২) অত্যাচারী * হুদয়া, "দু- (৭১, ৭৬)? অনাথমণ্প * হান ঃ পাঠান গোষ্ঠী বিশেষ ৩৯৭ হুলা-; লোলাইয়া দেওয়৷ হুলাহালি, হুলুই উলু-উলু ধ্বনি হেকুঁচি হেঁচকি হেতৃ-অন্তরায-গাঁত সৃষ্টি ও সংহার করা হেদে [সম্বোধন সূচক ] হের, রো [ মনোযোগ আকর্ষণকারী অবায় ] অশুদ্ধি-সংশোধন ভাঁমকা ও অন্যান্য অংশে পৃষ্ঠা ও ছর উী্লাথত, মূল গ্রন্থের ক্ষেত্র প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্য। যথাক্রমে পদ ও ছন্র নির্দেশক | বন্ধনী-মধ্যে অশুদ্ধ শব্দ । ভুমিকা পৃষ্ঠা ৭ ছত্র ২১৯ উপাখ্যান (উপাখান ) রি ৪ ৮ ৩১ চেষ্টা (চেষ্ঠা) ৮ ঠ পি ও ৪ ভাড়ু(ভডু) ্ ট ১. ১, ১১ শচী (শাচী) ১ ১০ 9১৫ ব্রাহ্মণ (ব্রাহ্মাণ ) রঃ ১, ১৮ পাদচঠীকার সংখ্যা ১ ২৮ ছন্বর ২১ মুকুন্দের (মুকুন্দরামের ) ১১ বাখানে (বাঘানে ) ৯১২২ বল (ষল) ৪১৮ অধিষ্ঠান (আঁধষ্টান ) ৯৫২ চড়ক (চোউক) ৬১৩ রায়জাদা (রামজাদ। ) 4” কুরুগ্তক (কুরুওক ) ৮২ পরমপুরুষ (পরমপুনুষ ) ১০১ পাপিষ্ঠ (পাপিষ্ঠ) ৯৩৭ হীঙ্গত (ইঙ্গিত ) ১০৯২৪ কাঁড়র (কাড়ির) ২৩১৮ অতসী (অতনী) ১১৪১১ পরমান ( পবমান ) ২৫৩৬ মুচ্কুন্দে (মুচকুন্দে ) ১২৪২২ মন্তেশ্বর (মন্তেম্বর ) *৮ করয়ে (কবয়ে ) ১২৮৬ খুড়া (খুড়্য) ৩১২০ পসারে (পাসরে) ১৩৫১৬ ভুনি (ভূমি) ৩৩২৩ পঁবনে দশন (পবন দশনে ) ১৪০২১ আধিষ্ঠান (আধিষ্টান ) ৪০৩২ গৌরী (গৌরী) ১৪১১৭ ঢাল (চাল) ৪৬২ ভগবতী (ভপবতী ) ১৪৭৯৩ চাপাঢান (ঠাপাডাল ) ১৩ কৃপাময়ী (কুপাময়ী ) ১৫৫২১ ভাড়ুদত্ত (ভখড়ুরদত্ত ) ৪৬৩* কা্কনী (কিস্কিনী) ১৯২২৮ শ্রীকাবিকঙ্কণ (শ্রীকাবিকঙ্কর্গ ) ৫০১১ 'ীস্তবে ( চান্তবে) ২০৭২৬ ক্ষেম (ক্ষোম) ৫২৩ পশজ (পাঁজ) ২০৮১ বাড়ি বাঁড় (রাড় রাঁড়) ৫৪২৮ পাড়ে (পড়ে) ২৯ চন্দন-চোক পুরে (চন্দন চোঁকপুরে ) ৬৩৩* ন্রিপর্দী (ভ্রিপদী ) ২২০২১ জুখিয়। (জুখিক। ) ৭৯১ বাঘের (বাদের ) পৃষ্ঠ। ১৩১ পদ সংখ্যা ১২৮ স্থলে ২২৮ হইবে। ৮০৭ জত (জেও ) ২৩০৩৭ ভাজিবে রাই সারসা ( আনিবে বাইশ বিসা ) ৯০১ চিন্তেন (চিনতেন) ২৫১৩ পূজার (পার ) অশুদ্ধি-সংশোধন বৌরভাব (বৈয়িভাব ) "বাজে (-বাজে ) নিবারয়ে (নিবাচয়ে ) কার তবাস ( করিএ বাস ) চেড়িরে (চোগুরে ) পন দুই (দুইপণ ) টাবা (টাকা) বহু দিস (বহুদিন) -খাচর (-খাচার ) লহনার (জহনাব ) [বিশেষে (বশেষে ) ভানুর ( ভামুর ) করণে (ফর্ণে) ঝলমাল (কলমাল ) করা (কবাঁ) বাললু (বিলিলু) [বিরচয়ে শবিবচয়ে ) থুয়্)৷ ( খুয়॥ ) সারি (সায়ি) গোপাঁনাথ (পোপিনাথ ) জাবকের (পাবকের) কারল (করিস) বাড়ি (কড়ি) নাইয়র ( মাইয়র ) খাখার ( খাখর ) ফলমূল (কলমূল ) -গবিত (-পরিত ) জলয্ত্র ( জলচন্দ্র ) অনন্ত (অনন্ত ) করিয়৷ (করিষা ) -ভুমের (-ভুবের ) বন্দিয়। (বন্দির ) রস্তাত্বক ( রস্ভাত্বক ) পাপমাতি (পাপসতি ) জাত (জার) পশে (পাশে) পরীক্ষা ( পরীক্ষা ) সানাত (সালাত ) পরীক্ষা ( পরীক্ষ্য ) শিবে (শবে) যোজনেক ( ষোজনেক ) ১৮ বাদ যাইবে বারণ (চারণ ) ঢোকনিঞা ( চোকনিঞা ) [বরচিল (বিব্রীচল ) কুঞ্জরে ( কু্জয়ে ) নিরয় (নিবয়) বাজে (রাজে) বহ্ধ। ( কঙ্গা ) খেলায় সদাই (সদাই খেলায় ) অনুরাগ ( অরুরাগ ) স্তন (স্তন) ক্রোধে (ব্রোধে) রঘৃনাথে ( রধুনাথে ) আহড়ে ( আছড়ে ) প্রাণ (প্লাণ) অপমান ( তাপমান ) হণ (শন) পুন (গু) বিসঙ্কটে ( বিসম্কটে ) ধুবধামে ( প্রবধানে ) লক্ষ (লহ) সুমিত (মুগিত। ) ঢোকনিঞা চোকনিঞ ) শুন্য ( শুঞ ) নাল (নাশ) নৃপাত (তৃপতি) কোতোয়াল (কোতোযাল ) কোন (কেনে) জন্ম (জম্ম) ঢঙ্গ (চঙ্গ) তরঙ্গ-( তুর ) ভয়ঙ্কর] ( ভয়ঙ্গর৷ ) শিলা (শিশা ) ব্রতের (ক্লুতের) খণ্ড (-ঘণ্ড) ৪১৫১৫ ৫১৬২৫ ২৮৬৭ পাঠান্তর ও মন্তব্য চন্ডীমঙ্গল মহামায়। (মহামময়া ) চাকে (ঢাকে) তসর (তনর) আতিক্ষেপে (আত ক্ষেপ) স্মরনে (স্মঙবমে ) সন্্রমে ( সন্্মে ) নিমন্ত্রণ (নিমগ্ণ) গৃঃ ৩১৭ পাদটীকা ৩৯ দ্বাবিংশ (ঝাবিংশ ) এ ৩৮১ খুল্লনার (শূল্পনার ) এ ৫৩২ রিপোর্ট (রিগেট ) শব্দার্থ আবারিয়া৷ আবৃত কারিয়া ( অনাবৃত কাঁরয়া ) খেজাড়ি পান্নু ভরা খাদ্য (মুঁড়ি) বটলই কাসার বাসন (পিতল কামার মতো মিশ্রধাড়ু বিশেষ ) মোক ঃ ( শসা) মুস্ত (শূনাগর্ভ 2) রন্ভাত্বক ( রষ্ভাতাক ) লাঠিয়ালের ( লাটিয়ালের )
কামিনী রায়
এরা যদি জানে কামিনী রায় এদেরও তো গড়েছেন নিজে ভগবান্, নবরূপে দিয়েছেন চেতনা ও প্রাণ; সুখে দুঃখে হাঁসে কাঁদে স্নেহে প্রেমে গৃহ বাঁধে বিধে শল্যসম হৃদে ঘৃণা অপমান, জীবন্ত মানুষ এরা মায়ের সন্তান॥ এরা যদি আপনারে শেখে সম্মানিতে, এরা দেশ-ভক্ত রূপে জন্মভূমি-হিতে মরণে মানিবে ধর্ম বাক্য নহে —দিবে কর্ম; আলস্য বিলাস আজো ইহাদের চিতে পারেনি বাঁধিতে বাসা, পথ ভুলাইতে॥ এরা হতে পারে দ্বিজ—যদি এরা জানে, এরা কি সভয় সরি' রহে ব্যবধানে? এরা হতে পারে ,বীর, এরা দিতে পারে শির, জননীর, ভগিনীর, পত্নীর সম্মানে, ভবিষ্যের মঙ্গলের স্বপনে ও ধ্যানে। এরা যদি জানে॥ উচ্চ কূলে জন্ম ব'লে কত দিন আর ভাই বিপ্র রবে তব এই অহংকার? কৃতান্ত সে কুলীনের রাখে না তো মান, তার কাছে দ্বিজ শূদ্র পারীয়া সমান। তার স্পর্শে যেই দিন পঞ্চভূতে দেহ লীন বাহ্মণে চণ্ডালে রহে কত ব্যবধান?
কামিনী রায়
কত ভালবাসি কামিনী রায় জড়ায়ে মায়ের গলা শিশু কহে আসি,— “মা, তোমারে কত ভালোবাসি!” “কত ভালবাস ধন?” জননী শুধায়। “এ-ত।” বলি দুই হাত প্রসারি’ দেখায়। “তুমি মা আমারে ভালবাস কতখানি?” মা বলেন “মাপ তার আমি নাহি জানি।” “তবু কতখানি, বল।” “যতখানি ধরে তোমার মায়ের বুকে।” “নহে তার পরে?” “তার বাড়া ভালবাসা পারি না বাসিতে।” “আমি পারি।” বলে শিশু হাসিতে হাসিতে!
কামিনী রায়
কর'না জিজ্ঞাসা কামিনী রায় মোরে প্রিয় কর'না জিজ্ঞাসা, সুখে আমি আছি কি না আছি। ডরি আমি রসনার ভাষা ; দোঁহে যবে এত কাছাকাছি, মাঝখানে ভাষা কেন চাই ; বুঝবার আর কিছু নাই ? হাত মোর বাঁধা তব হাতে, শ্রান্ত শির তব স্কন্ধোপরি, জানিনা এ সুস্নিগ্ধ সন্ধ্যাতে অশ্রু যেন ওঠে আঁখি ভরি। দুঃখ নয়, ইহা দুঃখ নয়, এইটুকু জানিও নিশ্চয়। নীলাকাশে ফুটিতেছে তারা, জাতি যুথী পল্লব হরিতে ; অতি শুভ্র, অত্যুজ্জ্বল যারা, আসে চলি আঁধার তরীতে। ভেসে আজ নয়নের জলে কি আসিছে, কে আমারে বলে? (২) সুখ সে কেমন যাদুকর, তাকাইলে হয় অন্তর্ধান, ডাকিলে সে দেয় না উত্তর, চাহিলে সে করে না তো দান। দুঃখ যে হইলে অতীত সুখ বলি হয়গো প্রতীত ! সুখ সাথে আছে, কি না আছে, কোন নাই প্রশ্ন মিমাংশার, চলিছে সে পার্শ্বে কিবা পাছে ; সুখ দুঃখ চেনা বড় ভার ; আমরা দুজনে দু'জনার, পিছে পাছে দৃষ্টি কেন আর? ওগো প্রিয় মোর মনে হয়, প্রেম যদি থাকে মাঝখানে, আনন্দ সে দূরে নাহি রয়। প্রাণ যবে মিলে যায় প্রাণে, সঙ্গীতে আলোকে পায় লয়, যত ভয়, যতেক সংশয়।
কামিনী রায়
কর্তব্যের অন্তরায় কামিনী রায় কে তুমি দাঁড়ায়ে কর্তব্যের পথে, সময় হরিছ মোর ; কে তুমি আমার জীবন ঘিরিয়া জড়ালে স্নেহের ডোর, চির-নিদ্রাহীন নয়নে আমার আনিছ ঘুমের ঘোর? দু'নয়ন হ'তে দূরস্থ আলোকে কেন কর অন্তরাল? কেমনে লভিব লক্ষ্য জীবনের পথে কাটাইলে কাল? আমার রয়েছে কঠোর সাধনা, ফেলনা মায়ার জাল | তোমারে দেখিলে গত অনাগত যাই একেবারে ভুলে মুগ্ধ হিয়া মম চাহে লুটাইতে তোমার চরণমূলে, ফেলে যাও তারে, দলে যাও তারে, নিওনা, নিওনা তু'লে | তোমার মমতা অকল্যাণময়ী, তোমার প্রণয় ক্রূর, যদি লয়ে যায় ভুলাইয়া পথ, লয়ে যাবে কত দূর? এই স্বপ্নাবেশ রহিবার নয়, চলে যাও হে নিষ্ঠুর |
কামিনী রায়
ডেকে আন্ কামিনী রায় পথ ভুলে গিয়াছিল, আবার এসেছে ফিরে, দাঁড়ায়ে রয়েছে দূরে, লাজে ভয়ে নত শিরে ; সম্মুখে চলে না পদ, তুলিতে পারে না আঁখি, কছে গিয়ে, হাত ধরে, ওরে তারে আন্ ডাকি। ফিরস্ নে মুখ আজ নীরব ধিক্কার করি, আজি আন্ স্নেহ-সুধা লোচন বচন ভরি। অতীতে বরষি ঘৃণা কিবা আর হবে ফল? আঁধার ভবিষ্য ভাবি, হাত ধরে লয়ে চল্। স্নেহের অভাবে পাছে এই লজ্জানত প্রাণ সঙ্কোচ হারায়ে ফেলে—আন্ ওরে ডেকে আন্! আসিয়াছে ধরা দিতে, শত স্নেহ-বাহু-পাশে বেঁধে ফেল্ ; আজ গেলে আর যদি না-ই আসে। দিনেকের অবহেলা, দিনেকের ঘৃণাক্রোধ, একটি জীবন তোরা হারাবি জীবন-শোধ। তোরা কি জীবন দিবি? উপেক্ষা যে বিষবাণ, দুঃখ-ভরা ক্ষমা লয়ে, আন্, ওরে ডেকে আন্।
কামিনী রায়
দিন চলে যায় কামিনী রায় একে একে একে হায়! দিনগুলি চলে যায়, কালের প্রবাহ পরে প্রবাহ গড়ায়, সাগরে বুদ্বুদ্ মত উন্মত্ত বাসনা যত হৃদয়ের আশা শত হৃদয়ে মিলায়, আর দিন চলে যায়। জীবনে আঁধার করি, কৃতান্ত সে লয় হরি প্রাণাধিক প্রিয়জনে, কে নিবারে তায়? শিথির হৃদয় নিয়ে, নর শূণ্যালয়ে গিয়ে, জীবনের বোঝা লয় তুলিয়া মাথায়, আর দিন চলে যায়। নিশ্বাস নয়নজল মানবের শোকানল একটু একটু করি ক্রমশঃ নিবায়, স্মৃতি শুধু জেগে রহে, অতীত কাহিনী কহে, লাগে গত নিশীথের স্বপনের প্রায় ; আর দিন চলে যায়!
কামিনী রায়
পাছে লোকে কিছু বলে কামিনী রায় করিতে পারি না কাজ সদা ভয় সদা লাজ সংশয়ে সংকল্প সদা টলে,- পাছে লোকে কিছু বলে। আড়ালে আড়ালে থাকি নীরবে আপনা ঢাকি, সম্মুখে চরণ নাহি চলে পাছে লোকে কিছু বলে। হৃদয়ে বুদবুদ মত উঠে চিন্তা শুভ্র কত, মিশে যায় হৃদয়ের তলে, পাছে লোকে কিছু বলে। কাঁদে প্রাণ যবে আঁখি সযতনে শুকায়ে রাখি;- নিরমল নয়নের জলে, পাছে লোকে কিছু বলে। একটি স্নেহের কথা প্রশমিতে পারে ব্যথা,- চলে যাই উপেক্ষার ছলে, পাছে লোকে কিছু বলে। মহৎ উদ্দেশ্য যবে, এক সাথে মিলে সবে, পারি না মিলিতে সেই দলে, পাছে লোকে কিছু বলে। বিধাতা দেছেন প্রাণ থাকি সদা ম্রিয়মাণ; শক্তি মরে ভীতির কবলে, পাছে লোকে কিছু বলে।
কামিনী রায়
মাতৃপূজা কামিনী রায় যেইদিন ও চরণে ডালি দিনু এ জীবন, হাসি অশ্রু সেইদিন করিয়াছি বিসর্জন। হাসিবার কাঁদিবার অবসর নাহি আর, দুঃখিনী জনম-ভূমি,—মা আমার, মা আমার! অনল পুষিতে চাহি আপনির হিয়া মাঝে, আপনারে অপরেরে নিয়োজিতে তব কাজে ; ছোটখাটো সুখ-দুঃখ—কে হিসাব রাখে তার তুমি যবে চাহ কাজ,—মা আমার, মা আমার! অতীতের কথা কহি' বর্তমান যদি যায়, সে কথাও কহিব না, হৃদয়ে জপিব তায় ; গাহি যদি কোন গান, গাব তবে অনিবার, মরিব তোমারি তরে,—মা আমার, মা আমার! মরিব তোমারি কাজে, বাঁচিব তোমারি তরে, নহিলে বিষাদময় এ জীবন কেবা ধরে? যতদিন না ঘুচিবে তোমার কলঙ্ক-ভার, থাক্ প্রাণ, যাক্ প্রাণ,—মা আমার, মা আমার!
কামিনী রায়
সুখ কামিনী রায় নাই কিরে সুখ? নাই কিরে সুখ?— এ ধরা কি শুধু বিষাদময়? যতনে জ্বলিয়া কাঁদিয়া মরিতে কেবলি কি নর জনম লয়?— কাঁদাইতে শুধু বিশ্বরচয়িতা সৃজেন কি নরে এমন করে'? মায়ার ছলনে উঠিতে পড়িতে মানবজীবন অবনী 'পরে? বল্ ছিন্ন বীণে, বল উচ্চৈঃস্বরে,— না,—না,—না,—মানবের তরে আছে উচ্চ লক্ষ্য, সুখ উচ্চতর, না সৃজিলা বিধি কাঁদাতে নরে। কার্যক্ষেত্র ওই প্রশস্ত পড়িয়া, সমর-অঙ্গন সংসার এই, যাও বীরবেশে কর গিয়ে রণ ; যে জিনিবে সুখ লভিবে সেই। পরের কারণে স্বার্থে দিয়া বলি এ জীবন মন সকলি দাও, তার মত সুখ কোথাও কি আছে? আপনার কথা ভুলিয়া যাও। পরের কারণে মরণের সুখ ; 'সুখ' 'সুখ' করি কেঁদনা আর, যতই কাঁদিবে ততই ভাবিবে, ততই বাড়িবে হৃদয়-ভার। গেছে যাক ভেঙ্গে সুখের স্বপন স্বপন অমন ভেঙ্গেই থাকে, গেছে যাক্ নিবে আলেয়ার আলো গৃহে এস আর ঘুর'না পাকে। যাতনা যাতনা কিসেরি যাতনা? বিষাদ এতই কিসের তরে? যদিই বা থাকে, যখন তখন কি কাজ জানায়ে জগৎ ভ'রে? লুকান বিষাদ আঁধার আমায় মৃদুভাতি স্নিগ্ধ তারার মত, সারাটি রজনী নীরবে নীরবে ঢালে সুমধুর আলোক কত! লুকান বিষাদ মানব-হৃদয়ে গম্ভীর নৈশীথ শান্তির প্রায়, দুরাশার ভেরী, নৈরাশ চীত্কার, আকাঙ্ক্ষার রব ভাঙ্গে না তায়। বিষাদ—বিষাদ—বিষাদ বলিয়ে কেনই কাঁদিবে জীবন ভরে'? মানবের মন এত কি অসার? এতই সহজে নুইয়া পড়ে? সকলের মুখ হাসি-ভরা দেখে পারনা মুছিতে নয়ন-ধার? পরহিত-ব্রতে পারনা রাখিতে চাপিয়া আপন বিষাদ-ভার? আপনারে লয়ে বিব্রত রহিতে আসে নাই কেহ অবনী 'পরে, সকলের তরে সকলে আমরা, প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।
কামিনী রায়
সে কি? কামিনী রায় 'প্রণয়?' 'ছি!' 'ভালবাসা—প্রেম?' 'তাও নয়।' 'সে কি তবে?' 'দিও নাম, দিই পরিচয়— আসক্তি বিহীন শুদ্ধ ঘন অনুরাগ, আনন্দ সে নাহি তাহে পৃথিবীর দাগ ; আছে গভীরতা আর উদ্বেল উচ্ছ্বাস, দু'ধারে সংযম-বেলা, ঊর্দ্ধে নীল আকাশ, উজ্জ্বল কৌমুদীতলে অনাবৃত প্রাণ, বিম্ব প্রতিবিম্ব কার প্রাণে অধিষ্ঠান ; ধরার মাঝারে থাকি ধরা ভুলে যাওয়া, উন্নত-কামনা-ভরে ঊর্দ্ধ দিকে চাওয়া ; পবিত্র পরশে যার, মলিন হৃদয়, আপনাতে প্রতিষ্ঠিত করে দেবালয়, ভকতি বিহ্বল, প্রিয় দেব-প্রতিমারে প্রণমিয়া দূরে রহে, নারে ছুঁইবারে ; আলোকের আলিঙ্গনে, আঁধারের মত, বাসনা হারায়ে যায়, দুঃখ পরাহত ; জীবন কবিতা-গীতি, নহে আর্তনাদ, চঞ্চল নিরাশা, আশা, হর্ষ, অবসাদ। আপনার বিকাইয়া আপনাতে বাস, আত্মার বিস্তার ছিঁড়ি' ধরণীর পাশ। হৃদয়-মাধুরী সেই, পূণ্য তেজোময়, সে কি তোমাদের প্রেম?—কখনই নয়। শত মুখে উচ্চারিত, কত অর্থ যার, সে নাম দিও না এরে মিনতি আমার।'
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০১ – সৈন্যদর্শন, অর্জুনবিষাদ কালীপ্রসন্ন সিংহ গীতা – প্রথম অধ্যায় – সৈন্যদর্শন ধৃতরাষ্ট্র কহিলেন, “হে সঞ্জয়! কৌরব ও পাণ্ডবগণ সংগ্রামভিলাষে ধর্মভূমি কুরুক্ষেত্রে সমবেত হইয়া কি করিয়াছিল?” সঞ্জয় কহিলেন, “মহারাজ! রাজা দুর্য্যোধন পাণ্ডবসৈন্য ব্যূহিত অবলোকন করিয়া দ্রোণাচার্য্য-সমীপে গমনপূর্বক কহিলেন, “আচার্য্য! ঐ দেখুন, আপনার শিষ্য ধীমান ধৃষ্টদ্যুম মহতী পাণ্ডবসেনা ব্যূহিত করিয়াছে। যুযুধান, বিরাট, মহারথ দ্রুপদ, ধৃষ্টকেতু, চেকিতান, বীর্য্যবান্‌ কাশিরাজ, পুরুজিৎ কুন্তীভোজ, নরোত্তম শৈব্য, বিক্রমশালী যুধামন্যু, বীর উত্তমৌজা, অভিমন্যু অ মহারথ দ্রৌপদীর পঞ্চপুত্র, এই সকল শৌর্য্যশালী, মহারথ, ভীমার্জুন সমকক্ষ, মহাধনুর্দ্ধর বীরপুরুষগণ ঐ ব্যূহিত সেনামধ্যে সন্নিবিষ্ট আছে! আমাদিগের যে সকল প্রধান সেনানায়ক আছেন, আপনাকে অবগত করাইবার নিমিত্ত তাঁহাদিগের নামও কীর্ত্তন করিতেছি, শ্রবণ করুন। আপনি, ভীষ্ম, কর্ণ, অশ্বত্থামা, বিকর্ণ, সমদত্তপুত্র ভুরিশ্রবা ও জয়দ্রথ এবং অন্যান্য নানাবিধ অস্ত্রশস্ত্রসম্পন্ন যুদ্ধবিশারদ বীরপুরুষগণ আমার নিমিত্ত প্রাণদানে অধ্যবসায়ারূঢ় (উদ্যত) হইয়াছেন। আমাদিগের এই ভীষ্মপালিত সৈন্য অপরিমিত (অধিক হইলেও অল্প কার্য্যক্ষম); কিন্তু ভীমরক্ষিত পাণ্ডবসেনা পরিমিত (অপেক্ষাকৃত অল্প হলেও অধিক কার্য্যক্ষম)। এক্ষণে আপনারা সকলে স্ব স্ব বিভাগানুসারে সমুদয় ব্যূহদ্বারে অবস্থানপূর্বক পিতামহ ভীষ্মকে রক্ষা করুন।’ “তখন প্রতাপবান্‌ কুরুবৃদ্ধ ভীষ্ম রাজা দুর্য্যোধনের হর্ষবর্দ্ধনার্থ সিংহনাদ সহকারে উচ্চস্বরে শঙ্খধ্বনি করিলেন। পরক্ষণেই শঙ্খ, ভেরী, পণব, আনক ও গোমুখ (গোয়ুখাকৃতি শঙ্খসদৃশ বাদ্য) সকল আহত (বাদিত) এবং তাহা হইতে তুমুল শব্দ প্রাদুর্ভূত হইল। “এদিকে কৃষ্ণ ও অর্জুন শ্বেতাঙ্গযুক্ত রথে সমারহ হইলেন এবং বাসুদেব পাঞ্চজন্য শঙ্খ, অর্জুন দেবদত্ত শঙ্খ, ভীমকর্মা ভীমসেন পৌণ্ড্র নামে মহাশঙ্খ, রাজা যুধিষ্ঠির অনন্তবিজয় শঙ্খ, নকুল সুঘোষ শঙ্খ, সহদেব মণিপুষ্পক শঙ্খ এবং কাশিরাজ শিখণ্ডী, মহারথ ধৃষ্টদ্যুম্ন, বিরাট সাত্যকি, দ্রুপদ, দ্রৌপদেয়গণ ও অভিমন্যু–ইঁহারা সকলে পৃথক পৃথক শঙ্খধ্বনি করিতে লাগিলেন। এই তুমুল শব্দ ভূমণ্ডল ও নভোমণ্ডল প্রতিধ্বনিত করিয়া ধার্ত্ত্রাষ্ট্রগণের হৃদয় বিদারিত করিল। “হে রাজন! অনন্তর ধনঞ্জয় এই সমারদ্ধ যুদ্ধে ধার্ত্তরাষ্ট্রগণের যথাযোগ্যরূপে অবস্থিত দেখিয়া নিজে শরাসন উত্তোলনপূর্বক বাসুদেবকে কহিলেন, ‘হে অচ্যুত! উভয়ে সেনার মধ্যস্থলে রথ স্থাপন কর; দুর্বুদ্ধি দুর্য্যোধনের প্রিয়াচরণবাসনায় যে সকল ব্যক্তি আগমন করিয়াছেন, তাহাদিগের মধ্যে কাহারা যুদ্ধ করিবেন, আমাকে কাহাদিগের সহিত যুদ্ধ করিতে হইবে এবং কে যোদ্ধুকাম (যুদ্ধাভিলাষী) হইয়া অবস্থান করিতেছেন, তাঁহাদিগকে নিরীক্ষণ করিব’।” সঞ্জয় কহিলেন, “হে ভারত! অর্জুনের এই কথা শুনিয়া হৃষীকেশ উভয় সেনার মধ্যস্থলে ভীষ্ম, দ্রোণ ও সমস্ত নৃপতিগণের সম্মুখে রথস্থাপন করিয়া কহিলেন, ‘হে পার্থ! ঐ সমস্ত কৌরবগণ সমবেত হইয়াছেন, অবলোকন কর।’ অর্জুনবিষাদ “ধনঞ্জয় উভয় সেনার মধ্যে তাঁহার পিতৃব্য (পিতার সহোদয় বা জ্ঞাতি ভ্রাতা–জ্যাঠা-খুড়া), পিতামহ, আচার্য্য (গুরু–অস্ত্রগুরু), মাতুল, ভ্রাতা, পুত্র, পৌত্র, সখা (সহচর–মিত্র), শ্বশুর ও মিত্রগণ অবস্থান করিতেছেন দেখিলেন। অর্জুন সেই সমস্ত বন্ধুগণকে অবলোকন করিবামাত্র কারুণ্যরসবশংবদ (করুণার বশবর্তী) ও বিষণ্ণ হইয়া বাসুদেবকে কহিলেন, ‘হে মধুসূদন! এই সমস্ত আত্মীয়গণ যুদ্ধার্থী হইয়া আগমন করিয়াছেন দেখিয়া আমার শরীর অবসন্ন, কম্পিত ও রোমাঞ্চিত হইতেছে; মুখ শুষ্ক হইয়া যাইতেছে; গাণ্ডীব হস্ত হইতে স্রস্ত (স্খলিত) হইয়া পতিত হইতেছে; সমুদয় ত্বক দগ্ধ হইতেছে; আমার আর অবস্থান করিবার সামর্থ নাই; চিত্ত যেন উদভ্রান্ত (অত্যন্ত বিচলিত) হইতেছে; আমি কেবল দুর্নিমিত্তই নিরীক্ষণ করিতেছি। এই সমস্ত আত্নীয়গণকে নিহত করা শ্রেয়স্কর (মঙ্গলজনক) বোধ হইতেছে না। হে কৃষ্ণ! আমি আর জয়, রাজ্য ও সুখের আকাঙ্খা করি না। যাঁহাদিগের নিমিত্ত রাজ্য, ভোগ ও সুখের কামনা করিতে হয়, সেই আচার্য্য, পিতা, পুত্র, পিতামহ, মাতুল, শ্বশুর, পৌত্র, শ্যালক ও সম্বন্ধিগণ সকলেই এই যুদ্ধে জীবন ও ধন পরিত্যাগে কৃতসঙ্কল্প হইয়া অবস্থান করিতেছেন; তবে আমাদিগের আর রাজ্য, ধন ও জীবনে প্রয়োজন কি? ইঁহারা আমাদিগকে বধ কইলেও আমি ইঁহাদিগকে বিনাশ করিতে ইচ্ছা করি না; পৃথিবীর কথা দূরে থাকুক,ত্রৈলোক্যরাজ্য লাভ হইলেও আমি ইঁহাদিগকে বিনাশ করিতে ইচ্ছা করি না। হে জনার্দ্দন! ধার্ত্তরাষ্ট্রদিগকে নিহত করিলে আমাদিগের কী প্রীতি হইবে? এই আততায়ীদিগকে বিনাশ করিলে আমাদিগকেই পাপভাগী হইতে হইবে; অতএব সবান্ধবে ধার্ত্তরাষ্ট্রগণকে বধ করা কোনক্রমেই আমাদিগের কর্তব্য নহে। হে মাধব! আত্মীয়গণকে বিনাশ করিয়া আমরা কী প্রকারে সুখী হইব? ইহাদিগের চিত্ত লোভ দ্বারা অভিভূত হইয়াছে বলিয়া ইহারাই যেন কুলক্ষয়জনিত দোষ ও মিত্রদ্রোহজনিত (বান্ধবহিংসাজনিত) পাতক দেখিতেছে না; কিন্তু আমরা কুলক্ষয়ের দোষ দর্শন করিয়াও কি নিমিত্ত এই পাপবুদ্ধি হইতে নিবৃত্ত হইব না? কুলক্ষয় হইলে সনাতন কুলধর্ম বিনষ্ট হয়; কুলধর্ম বিনষ্ট হইলে সমস্ত কুল অধর্মে পরিপূর্ণ হইয়া উঠে; কুল অধর্মপূর্ণ হইলে কুলস্ত্রীগণ ব্যভিচার দোষে দূষিত হয়; কুলস্ত্রীগণ দূষিত হইলে বর্ণশঙ্কর (নীচজাতি) সমুৎপন্ন হয়; এই বর্ণশঙ্কর কুল ও কুলনাশকদিগকে নিরয়গামী (নরকগামী) করে; কুলনাশকদিগের পিতৃগণের পিণ্ড ও উদকক্রিয়া (শ্রাদ্ধতর্পণাদি) বিলুপ্ত হয়; সুতরাং তাঁহারা পতিত হইয়া থাকেন। কুলনাশক ব্যক্তিদিগের বর্ণসঙ্করের হেতুভূত এই সমস্ত দোষে জাতিধর্ম ও সনাতন কুলধর্ম বিনষ্ট হইলে মনুষ্যগণকে চিরকাল নরকে বাস করিতে হয়। হা! কি কষ্ট! আমরা এই মহাপাপের অনুষ্ঠানে অধ্যবসায়ারূঢ় হইয়া রাজ্যসুখের লোভে আত্মীয়দিগকে বিনাশ করিতে উদ্যত হইয়াছি। আমি প্রতীকারপরাঙ্মুখ (প্রতিবিধানে পশ্চাৎপদ) ও শস্ত্রহীন হইলে যদি রাজ্যসুখলোভে স্বজনবিনাশসমুদ্যত শস্ত্রপাণি (শস্ত্রধারী) ধার্ত্তরাষ্ট্রগণ আমাকে যুদ্ধে বিনাশ করে, তাহাও আমার কল্যাণকর হইবে’।” সঞ্জয় কহিলেন, “ধনঞ্জয় এইরূপ কহিয়া শর ও শরাসন পরিত্যাগপূর্ব্বক শোকাকুলিতচিত্তে রথে উপবেশন করিলেন।”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০২ – বিষাদনাশক সাংখ্যযোগ, কর্মযোগ প্রশংসা কালীপ্রসন্ন সিংহ দ্বিতীয় অধ্যায় – বিষাদনাশক সাংখ্যযোগ সঞ্জয় কহিলেন, “ভগবান্‌, বাসুদেব কৃপাবশংবদ, অশ্রুপূর্ণলোচন, বিষন্নবদন অর্জুনকে কহিলেন, ‘অর্জুন! ঈদৃশ বিষম সময়ে কি নিমিত্ত তোমার এই অনার্য্যসেবিত, স্বর্গপ্রতিরোধক (স্বর্গগমনে বাধাজনক), অকীর্তিকর মোহ উপস্থিত হইল? হে পার্থ! তুমি ক্লীবতা (কাপুরুষতা–দৌর্বল্য) অবলম্বন করিও না; ইহা তোমার উপযুক্ত নয়। হে পরন্তপ! অতিতুচ্ছ হৃদয়দৌর্বল্য দূরীভূত করিয়া উত্থিত হও।’ “অর্জুন কহিলেন, ‘ভগবন্‌! আমি কী প্রকারে পূজনীয় ভীষ্ম ও দ্রোণের সহিত শরজাল দ্বারা প্রতিযুদ্ধ করিব? মহানুভব গুরুজনদিগকে বধ না করিয়া যদি ইহলোকে ভিক্ষান্ন ভোজন করিতে হয়, তাহাও শ্রেয়ঃ; কিন্তু ইহাদিগকে বধ করিলে ইহকালেই রুধিরলিপ্ত অর্থ ও কাম উপভোগ করিতে হইবে। ফলতঃ এই যুদ্ধে জয় ও পরাজয়ের মধ্যে কোন্‌টির গৌরব অধিক, তাহাও বুঝিতে পারিতেছি না, কেন না, যাঁহাদিগকে বিনষ্ট করিয়া আমরা স্বয়ং জীবিত থাকিতে অভিলাষ করি না, সেই ধার্ত্তরাষ্ট্রগণই সম্মুখে উপস্থিত। কাতরতা ও অবশ্যম্ভাবী কূলক্ষয়জনিত দোষে আমার স্বাভাবিক শৌর্য্যাদি অভিভূত ও আমার চিত্ত ধর্মান্ধ (ধর্মানুরোধে বহির্দৃষ্টিরহিত) হইয়াছে। এই নিমিত্ত তোমাকে জিজ্ঞাসা করিতেছি, যাহা আমার পক্ষে শ্রেয়স্কর হয় বল, আমি তোমার শিষ্য, তোমার শরণাপন্ন হইয়াছি, আমাকে উপদেশ প্রদান কর। ভূমণ্ডলে অকণ্টক (বাধাবিহীন) সুসমৃদ্ধ রাজ্য ও সুরগণের আধিপত্য প্রাপ্ত হইলেও আমার ইন্দ্রিয়গণ এই শোকে পরিশুষ্ক হইবে। আমি এমন কিছুই দেখিতেছি না, যাহাতে আমার শোকাপনোদ হইতে পারে’।” সঞ্জয় কহিলেন, “অতএব আমি যুদ্ধ করিব না’ শত্রুতাপন গুড়াকেশ (ইন্দ্রিয়জয়ী) অর্জুন হৃষীকেশ-সম্মুখে এই বলিয়া তূষ্ণীম্ভাব অবলম্বন করিলেন। “হে ভারত! তখন হৃষীকেশ সহাস্য-আস্যে উভয় সেনার মধ্যবর্তী বিষণ্ণবদন অর্জুনকে কহিলেন, ‘হে অর্জুন! তোমার মুখ হইতে পণ্ডিতগণের ন্যায় বাক্য সকল বিনির্গত হইতেছে, অথচ তুমি অশোচ্য বন্ধুগণের নিমিত্ত শোক করিয়া মূর্খতা প্রদর্শন করিতেছ। পণ্ডিতগণ, কি জীবিত, কি মৃত কাহারও নিমিত্ত অনুশোচনা (শোকের অযোগ্য) করে না। আমি পূর্বে যে কখনও ছিলাম না, এমন নহে; এই রাজগণও ছিলেন না, এমন নহে; অতঃপর আমরা সকলে থাকিব না, এমনও নহে। এই দেহ যেমন কৌমার, যৌবন ও জরা প্রাপ্ত হয়, জীবাত্মাও তদ্রূপ দেহান্তর প্রাপ্ত হইয়া থাকেন; ধীরব্যক্তি তদ্বিষয়ে মুগ্ধ হয়েন না। বিষয়ের সহিত ইন্দ্রিয়গণের যে সম্বন্ধ, তাহাই শীত, উষ্ণ ও সুখ-দুঃখের কারণ; সেই সম্বন্ধ কখন উৎপন্ন হয়, কখন বিনষ্ট হয়, অতএব তুমি এই অনিত্য সম্বন্ধ-সকল সহ্য কর। এই সম্বন্ধ-সকল যাঁহাকে ব্যথিত করিতে পারে না, সেই সমদুঃখসুখ (সুখ-সুঃখে তুল্যজ্ঞানী) ধীর পুরুষ মোক্ষলাভের যোগ্য। যাহা কখন ছিল না, যাহা কখন হয় না এবং যাহা বিদ্যমান আছে, তাহারও কখন অভাব হয় না, তত্ত্বদর্শী পণ্ডিতগণ ভাব ও অভাবের এইরূপ নির্ণয় করিয়াছেন। যিনি এই দেহাদিতে ব্যাপ্ত হইয়া আছেন, তাঁহার বিনাশ নাই; কোন ব্যক্তি সেই অব্যয় পুরুষকে বিনাশ করিতে সমর্থ হয় না। হে ভারত! তত্ত্বদর্শীপণ্ডিতগণ কহিয়াছেন, এই সকল শরীর অনিত্য; কিন্তু শরীরী জীবাত্মা নিত্য, অবিনাশী (বিনাশহীন) ও অপ্রেমেয়; অতএব তুমি যুদ্ধ কর। যিনি মনে করেন, এই জীবাত্মা অন্যকে বিনাশ করে এবং যিনি মনে করেন, অন্যে এই জীবাত্মাকে বিনাশ করে, তাঁহারা উভয়েই অনভিজ্ঞ; কেন না, জীবাত্মা কাহাকেও বিনাশ করেন না এবং জীবাত্মাকেও কেহ বিনাশ করিতে পারে না। ইঁহার জন্ম নাই, মৃত্যু নাই; ইনি পুনঃ পুনঃ উৎপন্ন ও বর্দ্ধিত হয়েন না; ইনি অজ (জন্মরহিত), নিত্য, শাশ্বত (অক্ষয়) ও পুরাণ; শরীর বিনষ্ট হইলে ইনি বিনষ্ট হয়েন না। যে পুরুষ ইঁহাকে অবিনাশী, নিত্য , অজ ও অব্যয় বলিয়া জানেন, তিনি কি কাহাকে বধ করেন, না বধ করিতে আদেশ করেন? যেমন মনুষ্য জীর্ণ বস্ত্র পরিত্যাগ করিয়া নূতন বস্ত্র গ্রহণ করে, সেইরূপ দেহী (আত্মা) জীর্ণ দেহ পরিত্যাগ করিয়া অভিনব (নূতন) দেহান্তর পরিগ্রহ করেন। ইহা শস্ত্রে ছেদিত (ছিন্ন), অগ্নিতে দগ্ধ, জলে ক্লেদিত (ক্লিণ্ণ–ক্লেদযুদ্ধ) বা বায়ুতে শোষিত (শুষ্ক) হন না। ইনি নিত্য, সর্বগত, স্থিরভাব, অচল ও অনাদি; অতএব অচ্ছেদ্য, অদাহ্য, অক্লেদ্য ও অশোষ্য। ইনি চক্ষুরাদির অগোচর, মনের অবিষয় (অনুভব) ও কর্মেন্দ্রিয়ের অগ্রাহ্য। অতএব তুমি এই জীবাত্মাকে এবম্প্রকার (এইরূপ) অবগত হইয়া অনুশোচনা পরিত্যাগ কর। “হে মহাবাহো! যদি জীবাত্মা সর্বদা জন্মগ্রহণ ও মৃত্যুমুখে প্রবেশ করিয়া থাকেন বলিয়া তাঁহাকে জাত ও মৃত বোধ কর, তাহা হইলে ত ইহার নিমিত্ত শোক করা কর্তব্যই নহে; কেন না, জাত ব্যক্তির মৃত্যু ও মৃত ব্যক্তির জন্ম অবশ্যম্ভাবী ও অপরিহার্য্য; অতএব ঈদৃশ বিষয়ে শোকাকুল হওয়া তোমার উচিত নয়। ভূতসকল উৎপত্তির পূর্বে অব্যক্ত (অপ্রকাশ) ছিল; ধ্বংসসময়েও অব্যক্ত হইয়া থাকে; কেবল জন্মমরণের অন্তরালসময়ে (মধ্যাবস্থায়–মধ্য সময়ে) প্রকাশিত হয়; অতএব তদ্বিষয়ে পরিবেদনা (শোক) কী? কেহ এই জীবাত্মাকে বিস্ময়ের সহিত বর্ণন করেন, কেহ বিস্ময়ের সহিত শ্রবণ করেন, কেহ শ্রবণ করিয়াও বুঝিতে পারে না। হে ভারত! জীবাত্মা সর্বদা সকলের দেহে অবধ্যরূপে অবস্থান করেন, অতএব কোন প্রাণীর নিমিত্ত শোক করা উচিত নয়। “তুমি স্বধর্মের প্রতি দৃষ্টিপাত করিলে আর এ প্রকার বিকম্পিত (বিচলিত) হইবে না; ধর্মযুদ্ধ ব্যতীত ক্ষত্রিয়ের আর শ্রেয়স্কর কর্ম নাই। হে পার্থ! যে সকল ক্ষত্রিয় যদৃচ্ছাক্রমে (স্বেচ্ছায়) উপস্থিত অনাবৃত(মুক্ত) স্বর্গদ্বারস্বরূপ ঈদৃশ যুদ্ধ লাভ করে, তাহারাই সুখী। যদি তুমি এই ধর্মযুদ্ধ (ধর্মসঙ্গত যুদ্ধ) না কর, তাহা হইলে স্বধর্ম ও কীর্তি হইতে পরিভ্রষ্ট ও পাপভাগী হইবে; লোকে চিরকাল তোমার অকীর্তি কীর্তন করিবে; সম্ভাবিত (প্রথিতযশা–সম্মানিত) ব্যক্তির অকীর্তি মরণ অপেক্ষাও অধিকতর দুঃসহ। যে সকল মহারথ তোমাকে বহুমান (যথেষ্ট সম্মান) করিয়া থাকেন, তাঁহাদিগের নিকট তোমার গৌরব থাকিবে না; তাঁহারা মনে করিবেন, তুমি ভয়প্রযুক্ত সংগ্রাম-পরাঙ্মুখ হইয়াছ। তাঁহারা তোমার কত অবক্তব্য কথা কহিবেন এবং তোমার সামর্থ্যের নিন্দা করিবেন; ইহা অপেক্ষা অধিকরত দুঃখ আর কী আছে? সমরে বিনষ্ট হইলে স্বর্গ প্রাপ্ত হইবে; জয়লাভ করিলে পৃথিবী ভোগ করিবে; অতএব যুদ্ধের নিমিত্ত কৃতনিশ্চয় (কর্তব্য-বিষয়ে) হইয়া উত্থান (উদ্যম) কর; সুখ-দুঃখ, লাভ-অলাভ ও জয়-পরাজয় তুল্য জ্ঞান করিয়া যুদ্ধে প্রবৃত্ত হও; তাহা হইলে পাপভাগী হইবে না। কর্মযোগ প্রশংসা “হে পার্থ! যে জ্ঞান দ্বারা আত্মতত্ত্ব সম্যক্‌ প্রকাশিত হয়, তাহা তোমার নিকট কীর্ত্তন করিলাম; এক্ষণে কর্মযোগবিষয়িণী (কর্মযোগসম্পর্কিত) বুদ্ধি অবগত হও; এই বুদ্ধি প্রাপ্ত হইলে তুমি কর্মরূপ বন্ধন হইতে বিমুক্ত হইবে। কর্মযোগের অনুষ্ঠান বিফল হয় না। তাহাতে প্রত্যাবায়ও (পাপ) নাই, ধর্মের অত্যল্প অংশও মহদ্‌ভয় হইতে পরিত্রাণ করে। হে কুরুনন্দন! কর্মযোগবিষয়ে সংশয়রহিত বুদ্ধি একমাত্র (একাগ্র–একরূপ) হইয়া থাকে; কিন্তু প্রমাণজনিত (বেদোক্ত কর্মকাণ্ডত্মক বিধিনিষেধের অধীন) বিবেকরহিত ব্যক্তিদিগের বুদ্ধি অনন্ত ও বহুশাখাবিশিষ্ট। যাহারা আপাত-মনোহর (বর্তমান রম্য–উপস্থিত উপাদেয়) শ্রবণরমণীয় বাক্যে অনুরক্ত, বহুবিধ ফলপ্রকাশক বেদবাক্যই যাহাদিগের প্রীতিকর, যাহারা স্বর্গাদি ফলসাধন কর্ম ভিন্ন অন্য কিছুই স্বীকার করে না, যাহারা কামপরায়ণ, স্বর্গই যাহাদিগের পরমপুরুষার্থ, জন্ম, কর্ম ও ফলপ্রদ, ভোগ ও ঐশ্বর্য্যলাভের সাধনভূত নানাবিধ ক্রিয়াপ্রকাশক বাক্যে যাহাদিগের চিত্ত অপহৃত হইয়াছে এবং যাহারা ভোগ ও ঐশ্বর্য্যে একান্ত সংসক্ত (অত্যন্ত আসক্ত), সেই বিবেকবিহীন মূঢ় ব্যক্তিদিগের বুদ্ধি সমাধি বিষয়ে সংশয়শূন্য হয় না। হে অর্জুন! বেদসকল সকাম ব্যক্তিদিগের কর্মফল-প্রতিপাদক; অতএব তুমি শীতোষ্ণ ও সুখদুঃখাদি-দ্বন্দ্বসহিষ্ণু (রাগ-বিরাগ সহনশীল) ধৈর্য্যশালী, যোগক্ষেমরহিত ও অপ্রমাদী নইয়া নিষ্কাম হও। যেমন কূপ, বাপী, তড়াগ প্রভৃতি জলাশয়ে যেমন প্রয়োজন সিদ্ধ হয়, একমাত্র মহাহ্রদে সেই সকল প্রয়োজন সম্পন্ন হইয়া থাকে, সেইরূপ সমুদয় বেদে সে সকল কর্মফল বর্ণিত আছে, সংশয়রহিত বুদ্ধিবিশিষ্ট ব্রহ্মনিষ্ঠ ব্রাহ্মণ একমাত্র ব্রহ্মে তৎসমুদয়ই প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। কর্মেই তোমার অধিকার হউক, কর্মফলে যেন কামনা না হয়; কর্মফল যেন তোমার প্রবৃত্তির হেতু না হয় এবং কর্মপরিত্যাগে তোমার আসক্তি না হউক। হে ধনঞ্জয়! তুমি আসক্তি পরিত্যাগ পূর্ব্বক একান্ত ঈশ্বরপরায়ণ (ঈশ্বরনিষ্ঠ) হইয়া সিদ্ধি ও অসিদ্ধি উভয়ই তুল্য জ্ঞান করিয়া কর্মসকল অনুষ্ঠান কর, পণ্ডিতেরা সিদ্ধি ও অসিদ্ধি উভয়ের তুল্যজ্ঞানই যোগ বলিয়া নির্দ্দেশ করিয়াছেন। সংশয়রহিত বুদ্ধি দ্বারা অনুষ্ঠিত কর্মযোগই শ্রেষ্ঠ; কাম্যকর্মসমুদয় সাতিশয় অপকৃষ্ট (হীন), অতএব তুমি কর্মযোগের অনুষ্ঠান কর; সকাম ব্যক্তিরা অতি দীন। যাঁহার কর্মযোগ বিষয়িণী বুদ্ধি উপস্থিত হয়, তিনি ইহজন্মেই পরমেশ্বরপ্রসাদে সুকৃত ও দুষ্কৃত উভয় পরিত্যাগ করেন। অতএব তুমি কর্মযোগের নিমিত্ত যত্ন কর। ঈশ্বরের আরাধনা দ্বারা বন্ধনহেতু কর্মসকলের মোক্ষসাধনতাসম্পাদক (মুক্তি-সাধনশক্তি সংসাধক) চাতুর্য্যই (নিপূনতাই) যোগ। কর্মযোগবিশিষ্ট মনীষিগণ (বোধশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিগণ) কর্মজনিত ফল পরিত্যাগ করেন; সুতরাং জন্মবন্ধন হইতে বিনির্ম্মুক্ত হইয়া অনাময়পদ (দুঃখাদিরহিতপদ) প্রাপ্ত হয়েন। যখন তোমার বুদ্ধি অতি গহণ (দুস্ত্যজ্য) মোহ হইতে উত্তীর্ণ হইবে, তখন তুমি শ্রোতব্য (শ্রবণযোগ্য) ও শ্রুত বিষয়ে বৈরাগ্য লাভ করিবে; তৎসম্বন্ধে তোমার আর কিছুই জিজ্ঞাস্য থাকিবে না। তোমার বুদ্ধি নানাবিধ বৈদিক ও লৌকিক বিষয়শ্রবণে উদ্‌ভ্রান্ত হইয়া আছে; যখন উহা বিষয়ান্তরে আকৃষ্ট না হইয়া স্থিরভাবে পরমেশ্বরে অবস্থান করিবে, তখনই তুমি তত্ত্বজ্ঞান লাভ করিবে।’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে কেশব! সমাধিস্থ (পরমেশ্বরে নিবিষ্টচিত্ত) স্থিতপ্রজ্ঞ (স্থিরবুদ্ধি) ব্যক্তির লক্ষণ কী? তাঁহার বাক্য, অবস্থান ও গতি কী প্রকার?’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে পার্থ! যিনি সর্বপ্রকার মনোগত কামনা পরিত্যাগ করেন, যাঁহার আত্মা আত্মাতেই সন্তুষ্ট থাকে, তিনিই স্থিতপ্রজ্ঞ। যিনি দুঃখে অক্ষুব্ধচিত্ত, সুখে স্পৃহাশূন্য এবং অনুরাগ, ভয় ও ক্রোধ-বিবর্জিত, সেই মুনি স্থিতপ্রজ্ঞ। যিনি পুত্র, মিত্র প্রভৃতি সকলের প্রতি স্নেহশূন্য, যিনি অনুকূল বিষয়ে অভিনন্দন (অনুরাগ) ও প্রতিকূল বিষয়ে দ্বেষ করে না, তাঁহারই প্রজ্ঞা নিশ্চলা ও তিনিই স্থিতপ্রজ্ঞ। কূর্ম (কচ্ছপ) যেমন আপন অঙ্গসকল সঙ্কোচন করে (ভিতরের দিকে গুটাইয়া লয়), সেইরূপ যিনি বিষয় হইতে ইন্দ্রিয়গণকে প্রত্যাহরণ (প্রত্যানয়ন) করেন, তাঁহারই প্রজ্ঞা নিশ্চলা ও তিনিই স্থিতপ্রজ্ঞ। যিনি ইন্দ্রিয়দ্বারা বিষয় গ্রহণ না করেন, বিষয়সকল তাঁহার নিকট হইতে নিবৃত্ত হইতে পারে; বিষয়াভিলাষ নিবৃত্ত হয় না; কিন্তু স্থিতপ্রজ্ঞ ব্যক্তি পরমেশ্বরকে দর্শন করিয়া বিষয়বাসনা হইতে বিনির্মুক্ত হইয়া থাকেন। হে কৌন্তেয়! ক্ষোভজনক ইন্দ্রিয়গণ যত্নশীল বিবেকী পুরুষের চিত্তকেও বলপূর্বক হরণ করে; এই নিমিত্ত যোগশীল ব্যক্তি তাহাদিগকে সংযমপূর্বক মৎপরায়ণ (ভগবানে একান্ত নিষ্ঠ) হইয়া থাকিবেন। এইরূপে ইন্দ্রিয়গণ যাঁহার বশীভূত থাকে, তাঁহারই প্রগা নিশ্চলা ও তিনিই স্থিতপ্রজ্ঞ। প্রথমে বিষয়চিন্তা, চিন্তা হইতে আসক্তি, আসক্তি হইতে অভিলাষ, অভিলাষ হইতে ক্রোধ, ক্রোধ হইতে মোহ, মোহ হইতে স্মৃতিভ্রংশ, স্মৃতিভ্রংশ হইতে বুদ্ধিনাশ, বুদ্ধিনাশ হইতে বিনাশ উপস্থিত হয়। যিনি আত্মাকে বশীভূত করিয়াছেন, তিনি রাগদ্বেষবর্জ্জিত আত্মপ্রসাদ লাভ করেন, আত্মপ্রসাদ থাকিলে সকল দুঃখ বিনষ্ট হয়। প্রসন্নাত্নার বুদ্ধিই আশু নিশ্চল হইয়া উঠে। অজিতেন্দ্রিয় ব্যক্তির বুদ্ধি নাই; সুতরাং সে চিন্তা করিতেও পারে না; চিন্তা করিতে না পারিলে শান্তি হয় না; শান্তিহীন ব্যক্তির সুখ কোথায়? যে চিত্ত স্বেচ্ছাচারী ইন্দ্রিয়গণের বশীভূত হয়, সেই চিত্ত বায়ু কর্তৃক সমুদ্রে ইতস্ততঃ-বিঘূর্ণিত নৌকার ন্যায় জীবাত্মার বুদ্ধিকে বিষয়ে বিক্ষিপ্ত করে। অতএব হে মহাবাহো! যাঁহার ইন্দ্রিয়গণ বিষয় হইতে নিগৃহীত (সংযমবলে বিমুখ) হইয়াছে, সেই ব্যক্তিরই প্রজ্ঞা নিশ্চলা ও তিনিই স্থিতপ্রজ্ঞ। অজ্ঞান-তিমিরাবৃতমতি ব্যক্তিদিগের নিশাস্বরূপ ব্রহ্মনিষ্ঠাতে জিতেন্দ্রিয় যোগিগণ জাগরিত থাকেন এবং প্রাণিগণ যে বিষয়নিষ্ঠাস্বরূপ দিবায় প্রবোধিত থাকে, আত্মতত্ত্বদর্শী যোগীদিগের সেই রাত্রি। (রাত্রিতে নিদ্রা ও দিনে জাগরণ, ইহা লোকের স্বাভাবিক। অজ্ঞানরূপ অন্ধকারে যাহাদের বুদ্ধি আবৃত, ব্রহ্মনিষ্ঠা তাহাদের পক্ষে রাত্রি, তাহাতে তাহারা নিদ্রিত, সুতরাং দেখিতে পায় না। যোগিগণের তথাবিধ রাত্রি দিবাস্বরূপ হয়, তাহাতে তাঁহারা জাগরিত; সুতরাং দর্শনে সমর্থ। প্রাণিগণ বিষয় নিষ্ঠারূপ দিবাতে জাগরিত–বিষয়ভোগে ব্যাপৃত থাকে; আর আত্মদর্শীরা তাহাতে নিদ্রিত, ভোগবিরত থাকেন।) যেমন নদী-সকল সর্বদা পরিপূর্ণ স্থিরপ্রতিষ্ঠ (চাঞ্চল্য রহিত) সমুদ্রে প্রবেশ করে, ভোগ সকল সেইরূপে যাহাকে আশ্রয় করিয়া লীন হইয়া যায়, তিনিই মোক্ষ লাভ করেন; ভোগার্থী ব্যক্তি তাহা প্রাপ্ত হইতে পারে না। যিনি কামনা-সকল পরিত্যাগপূর্বক নিস্পৃহ, নিরহঙ্কার ও মমতাবিহীন হইয়া ভোগ্য বস্তুসমুদয় উপভোগ করেন, তিনি মুক্তিলাভ করিয়া থাকেন। হে পার্থ! ব্রহ্মজ্ঞাননিষ্ঠা এই প্রকার; ইহা প্রাপ্ত হইলে সংসারে আর মুগ্ধ হইতে হয় না। যিনি চরমসময়েও এই ব্রহ্মজ্ঞাননিষ্ঠায় অবস্থান করেন, তিনিও পরব্রহ্মে লয় প্রাপ্ত হয়েন।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০৩ – কর্মযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ তৃতীয় অধ্যায় – কর্মযোগ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে কেশব! যদি তোমার মতে কর্ম অপেক্ষা জ্ঞানই শ্রেষ্ঠ হয়, তবে আমাকে এই মারাত্মক কর্মে কী নিমিত্ত নিয়োজিত করিতেছ? তুমি কখন জ্ঞানের, কখন বা কর্মের প্রশংসা করিয়া আমার বুদ্ধিকে মুগ্ধপ্রায় করিতেছ; এক্ষণে যাহাতে আমার শ্রেয়োলাভ হয়, এমন এক পক্ষ নিশ্চয় করিয়া বল।’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে পার্থ! আমি পূর্বেই কহিয়াছি যে, ইহলোকে নিষ্ঠা দুই প্রকার;–এক, শুদ্ধচেতাদিগের (নির্মল হৃদয়) জ্ঞানযোগ; দ্বিতীয়, কর্মযোগীদিগের কর্মযোগ। পুরুষ কর্মানুষ্ঠান না করিলে জ্ঞান প্রাপ্ত হয় না এবং জ্ঞান প্রাপ্ত না হইলে কেবল সন্ন্যাস দ্বারা সিদ্ধি লাভ করিতে পারে না। কেহ যখন কর্ম না করিয়া ক্ষণমাত্র অবস্থান করিতে সমর্থ হয় না; পুরুষ ইচ্ছা না করিলেও প্রাকৃতিক (স্বাভাবিক) গুণসমুদয়ই তাহাকে কর্মে প্রবর্তিত করে। যে ব্যক্তি কর্মেন্দ্রিয়সকলকে সংযম করিয়া মনে মনে ইন্দ্রিয়ের বিষয়সকল স্মরণ করে, সেই মূঢ়াত্মা কপটচারী বলিয়া কথিত হয়। হে অর্জুন! যে ব্যক্তি মনোদ্বারা জ্ঞানেন্দ্রিয়গণকে বশীভূত করিয়া আসক্তি পরিত্যাগপূর্বক কর্মেন্দ্রিয় দ্বারা কর্মানুষ্ঠান করে, সেই ব্যক্তিই শ্রেষ্ঠ। অতএব তুমি নিয়ত কর্ম অনুষ্ঠান কর; কর্মত্যাগ করিলে শরীরযাত্রা নির্বাহ হইবে না। যে কর্ম বিষ্ণুর উদ্দেশে অনুষ্ঠিত হয় না, লোকে তদ্দ্বারাই বন্ধ হইয়া থাকে; অতএব হে কৌন্তেয়! তুমি আসক্তি পরিত্যাগ করিয়া বিষ্ণুর উদ্দেশে কর্মানুষ্ঠান কর। পূর্বে প্রজাপতি প্রজাগণকে যজ্ঞের সহিত সৃষ্টি করিয়া বলিয়াছেন,–হে প্রজাগণ! তোমরা যজ্ঞদ্বারা উত্তরোত্তর বর্দ্ধিত হও; যজ্ঞ তোমাদিগের কামনা পরিপূর্ণ করুক। তোমরা যজ্ঞ দ্বারা দেবগণকে সংবর্দ্ধিত কর; দেবগণও তোমাদিগকে সংবর্দ্ধিত করুক; এইরূপ পরস্পর সংবর্দ্ধিত হইয়া তোমাদিগকে অভিলষিত ভোগ্যসকল প্রদান করিবেন। যে ব্যক্তি দেবগণপ্রদত্ত ভোগ্যসকল তাঁহাদিগকে প্রদান না করিয়া উপভোগ করে, সে চোর। সাধুগণ যজ্ঞাবশিষ্ট ভোজন করিয়া সর্বপ্রকার পাপ হইতে মুক্ত হয়েন; কিন্তু যাহারা কেবল আপনার নিমিত্ত পাক করে, সেই পাপাত্মগণ পাপই ভোজন করিয়া থাকে। প্রাণিগণ অন্ন হইতে, অন্ন পর্জ্জন্য (বারিবর্ষণকারী মেঘ–বৃষ্টি) হইতে, পর্জ্জন্য যজ্ঞ হইতে, যজ্ঞ কর্ম হইতে, কর্ম বেদ হইতে এবং বেদ ব্রহ্ম হইতে সমুদ্ভব হইয়াছে; অতএব সর্বব্যাপী ব্রহ্ম নিয়তই যজ্ঞে প্রতিষ্ঠিত আছেন। যে ব্যক্তি ইহলোকে বিষয়াসক্ত হইয়া পূর্বোক্ত প্রকারে প্রবর্তিত কর্মাদি চক্রের অনুবর্তী না হয়, তাহার আয়ু পাপময় ও জীবন বৃথা। “আত্মাতেই যাঁহার প্রীতি। আত্মাতেই যাঁহার আনন্দ এবং আত্মাতেই যাঁহার সন্তোষ, তাঁহাকে কোন কর্ম অনুষ্ঠান করিতে হয় না; কর্মানুষ্ঠান করিলেও তাঁহার পুণ্য হয় না, কর্ম না কইরলেও তাঁহার পাপ হয় না এবং তাঁহাকে মোক্ষের নিমিত্ত ব্রহ্মা অবধি স্থাবর পর্যন্ত কাহারও আশ্রয় গ্রহণ করিতে হয় না। পুরুষ আসক্তি পরিত্যাগ করিয়া কর্মানুষ্ঠান করিলে মোক্ষ লাভ করেন; অতএব তুমি আসক্তি পরিত্যাগ করিয়া কর্মানুষ্ঠান করল জনক প্রভৃতি মহাত্মগণ কর্ম দ্বারাই সিদ্ধি লাভ করিয়াছেন। শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি যাহা আচরণ করেন, ইতর ব্যক্তিরা তাহারই অনুষ্ঠান করিয়া থাকে এবং মান্য (কর্মপ্রবর্তক ও কর্মনিবর্তক যে শাস্ত্রকে প্রমাণরূপে গ্রহণ) করেন, তাহারা তাহারই অনুবর্তী হয়, অতএব তুমি লোকদিগের ধর্মরক্ষণার্থ কর্মানুষ্ঠান কর। দেখ, ত্রিভুবনের মধ্যে আমার অপ্রাপ্য কিছুই নাই; সুতরাং আমার কোন প্রকার কর্তব্যও নাই; তথাপি আমি কর্মানুষ্ঠান করিতেছি। যদি আমি আলস্যহীন হইয়া কখন কর্মানুষ্ঠান না করি, তাহা হইলে সমদুদয় লোকে আমার অনুবর্তী হইবে; অতএব আমি কর্ম না করিলে এই সমস্ত লোক উৎসন্ন হইয়া যাইবে এবং আমিই বর্ণসঙ্কর ও প্রজাগণের মলিনতার হেতু হইব। অতএব মূর্খেরা যেমন ফলপ্রত্যাশী হইয়া কর্ম করে, তদ্রুপ বিদ্বানেরা আসক্তি পরিত্যাগ করিয়া লোকদিগের ধর্মরক্ষণের নিমিত্ত কর্ম করিয়া থাকেন। বিদ্বান ব্যক্তি কর্মাসক্ত অজ্ঞদিগের বুদ্ধিভেদ উৎপন্ন না করিয়া স্বয়ং সর্বপ্রকার কর্মানুষ্ঠানপূর্বক তাহাদিগকে কর্মানুষ্ঠানে প্রবৃত্ত করিবেন। সকল প্রকার কর্মই প্রকৃতির গুণস্বরূপ ইন্দ্রিয়গণ কর্তৃক নিষ্পন্ন হইতেছে; কিন্তু অহঙ্কারবিমূঢ়মতি (অহঙ্কারে মোহাপন্ন) ব্যক্তি আপনাকে ঐ সকল কর্মের কর্তা বলিয়া মনে করিয়া থাকে। ইন্দ্রিয়গণই বিষয়ে প্রবৃত্ত হইতেছে জানিয়া গুণকর্মবিভাগের তত্ত্বজ্ঞ ব্যিক্তি বিষয়ে আসক্ত হয়েন না। যাহারা প্রকৃতির সত্ত্ব প্রভৃতি গুণে সাতিশয় মুগ্ধ হইয়া ইন্দ্রিয় ও ইন্দ্রিয়ের কার্য্যে আসক্ত হয়, সর্ব্বজ্ঞ ব্যক্তি তাদৃশ অল্পদর্শী মন্দমতিদিগকে বিচালিত করিবেন না। “তুমি আমাতে সমুদয় কর্ম সম্পর্পণ করিয়া, আমি অন্তর্যামী পুরুষের অধীন হইয়া কর্ম করিতেছি, এই রূপ ভাবিয়া, কামনা, মমতা ও শোক পরিত্যাগপূর্বক যুদ্ধে প্রবৃত্ত হও। যাহারা শ্রদ্ধাবান ও অসূয়াশূন্য হইয়া নিরন্তর আমার মতের অনুসরণ করে, তাহারা সকল কর্ম হইতে মুক্ত হয়। যাহারা অসূয়াপরশব হইয়া অনুষ্ঠান না করে, সেই সকল বিবেকশূন্য ব্যক্তি সমুদয় কর্ম ও ব্রহ্মবিষয়ে মুগ্ধ হইয়া বিনাশ প্রাপ্ত হয়। জ্ঞানবান ব্যক্তিও স্বীয় স্বভাবের অনুরূপ কর্ম কইয়া থাকেন; অতএব যখন সকল প্রাণীই স্বভাবের অনুবর্তী, তখন ইন্দ্রিয় নিগ্রহ করিলে কি হইতে পারে? প্রত্যেক ইন্দ্রিয়েরই স্ব স্ব অনুকূল বিষয়ে অনুরাগ ও প্রতিকূল বিষয়ে দ্বেষ আছে; ঐ উভয়ই মূমূক্ষুর (মুক্তিকামীর) প্রতিবন্ধক (বাধাসৃষ্টিকারক); অতএব উহাদের বশবর্তী হইবে না। সম্যক্‌ অনুষ্ঠান পরধর্ম অপেক্ষা কিঞ্চিৎ অঙ্গহীন স্বধর্মও শ্রেষ্ঠ; পরধর্ম অতি ভয়ানক; অতএব স্বধর্মে মরণও শ্রেয়স্কর।’ “অর্জুন কহিনে, ‘হে বাসুদেব! পুরুষ ইচ্ছা না করিলেও কে কাহাকে বলপূর্বক পালাচরণে নিয়োজিত করে?’ “বাসুদেব কহিলেন, ‘হে অর্জুন! এই কামই ক্রোধরূপে পরিণত, রজোগুণ হইতে সমুৎপন্ন দুষ্পুরণীয় (অনায়াসে যাহার পূরণ হয় না–পর পর আশা আকাঙ্খা বাড়িতেই থাকে। অতি অধিক আহারী ব্যক্তির যেমন পেট কিছুতেই ভরে না) ও অতিশয় উগ্র; ইহাকেই মুক্তপথের বৈরী বলিয়া জানিবে। যেমন ধূম হইতে অগ্নি, মল দ্বারা দর্পণ (আয়না) ও জরায়ু দ্বারা গর্ভ আবৃত তাহকে, সেইরূপ জ্ঞানিগণের চির-বৈরী, দুষ্পূরণীয়, অনলস্বরূপ কাম জ্ঞানকে আচ্ছন্ন করিয়া রাখে। ইন্দ্রিয়, মন ও বুদ্ধি ইহার আবির্ভাবস্থান (উৎপত্তিস্থান); এই কাম আশ্রয়ভূত ইন্দ্রিয়াদি দ্বারা জ্ঞানকে আচ্ছন্ন করিয়া দেহীকে বিমোহিত করে; হে অর্জুন! অতএব তুমি অগ্রে ইন্দ্রিয়গণকে দমন এবং জ্ঞান ও বিজ্ঞানবিনাশী পাপরূপ কামকে বিনাশ কর; দেহাদি বিষয় অপেক্ষা ইন্দ্রিয়গণ শ্রেষ্ঠ; ইন্দ্রিয়গণ অপেক্ষা মন শ্রেষ্ঠ; মন অপেক্ষা সংশহরহিত বুদ্ধি শ্রেষ্ঠ; যিনি সেই বুদ্ধি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, তিনিই আত্মা। হে মহাবাহো! তুমি আত্মাকে এইরূপ অবগত হইয়া এবং মনকে সংশয়রহিত বুদ্ধি দ্বারা নিশ্চয় করিয়া কামরূপ দুরাসদ (দুর্জয়) শত্রুকে বিনাশ কর।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০৪ – জ্ঞানযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ চতুর্থ অধ্যায় – জ্ঞানযোগ “ভগবান বলিলেন, ‘আমি পূর্বে আদিত্যকে এই অব্যয়যোগ কহিয়াছিলাম; তৎপরে আদিত্য মনুকে ও মনু ঈক্ষ্বাকুকে কহিয়াছিলেন এবং নিমিপ্রভৃতি রাজর্ষিগণ পরম্পরাগত (পূর্বাপর ধারাবাহিকরূপে আগত) এই যোগবৃত্তান্ত অবগত হইয়াছিলেন, অনন্তর কালক্রমে উহা বিলুপ্ত হইয়াছিল, আজি আমি তোমার নিকটে সেই পুরাতন যোগবৃত্তান্ত কীর্তন করিলাম; তুমি আমার ভক্ত ও সখা; তন্নিমিত্ত আমি তোমাকে এই রহস্য কহিলাম।’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে কেশব! আদিত্য জন্মগ্রহণ করিলে পর তোমার জন্ম হইয়াছিল; অতএব আমি কী প্রকারে অবগত হইব যে, তুমি অগ্রে তাঁহাকে এই যোগবৃত্তান্ত কহিয়াছিলে?’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! আমি অনেকবার জন্মগ্রহণ করিয়াছি; তোমরাও বহু জন্ম অতীত হইয়াছে; তুমি তাহার কিছুই জান না; কিন্তু আমি তৎসমুদয়ই অবগত আছি। আমি জন্মরহিত, অনশ্বর (বিনাশরহিত) স্বভাব ও সকলের ঈশ্বর হইয়াও স্বীয় প্রকৃতিকে আশ্রয় করিয়া আত্মমায়ায় জন্মগ্রহণ করি। যে যে সময়ে ধর্মের বিপ্লব (বিরুদ্ধ ভাবের উদ্ভব) ও ধর্মের প্রাদুর্ভাব হয়, সেই সেই সময়ে আমি আত্মাকে সৃষ্টি করিয়া থাকি। আমি সাধুগণের পরিত্রাণ, অসাধুগণের বিনাশ ও ধর্মের সংস্থাপনের নিমিত্ত যুগে-যুগে জন্মগ্রহণ করি। হে অর্জুন! যিনি আমার এই অলৌকিক জন্ম ও অলৌকিক কর্ম যথাযথ অবগত হইতে পারেন, তিনি শরীর পরিত্যাগ করিয়া আমাকে লাভ করেন; তাঁহাকে পুনরায় জন্মগ্রহণ করিতে হয় না। অনেকে আসক্তি, ভয় ও ক্রোধ পরিত্যাগ করিয়া একাগ্রচিত্ত, একাগ্র আশ্রিত এবং জ্ঞান ও তপস্যা দ্বারা পবিত্র হইয়া আমার সাষুজ্য (সংযোগ–সাম্য) লাভ করিয়াছে। হে পার্থ! যাহারা যেরূপে আমাকে ভজনা করে, আমি তাহাদিগকে সেই প্রকারেই অনুগ্রহ করি। যে যাহা করুক, সকলেই আমার সেবাপথে আগমন করিতেছি। মনুষ্যলোকে অচিরকালেই কর্মসকল সফল হয়; এই নিমিত্ত কর্মফলাকাঙ্খী মনুষ্যেরা প্রায়ই ইহলোকে দেবতার অর্চনা করিয়া থাকে। আমি গুণ ও কর্মের বিভাগানুসারে (ব্রাহ্মণগণের সত্ত্বগুণ অধিক, তাঁহাদের কার্য্য ইন্দ্রিয়দমনপূর্বক যোগতপস্যাদি। রজোবহুল ক্ষত্রিয়গণের কার্য্য যুদ্ধাদি দ্বারা রাজ্যশাসন-পালন। বৈশ্যগণ রজোমিশ্রিত তমঃপ্রধান, তাঁহাদের কার্য্য বানিজ্য ও কৃষি-গোরক্ষাদি। শূদ্র কেবল তমঃপ্রধান, ব্রাহ্মণাদি ত্রিবর্ণের সেবা দ্বারা সাহায্যই তাহাদের কার্য্য। জাতি দেখিয়া গুণকর্মের এইরূপ কল্যাণকর বিভাগ–গুণ দেখিয়া জাতিবিভাগ নহে) ব্রাহ্মণ প্রভৃতি চারি বর্ণ সৃষ্টি করিয়াছি; তথাপি আমি সংসারবিহীন; আমাকে কর্তা মনে করিও না। কর্ম আমাকে স্পর্শ করিতে পারে না; কর্মফলেও আমার স্পৃহা নেই। যে ব্যক্তি আমাকে এইরূপ অবগত হইতে পারে, তাহাকে কর্মবন্ধনে বন্ধ হইতে হয় না। পূর্বতন মুমুক্ষুগণ আমাকে এই প্রকারে অবগত হইয়া কর্ম অনুষ্ঠান করিতেন; অতএব তুম প্রথমে পূর্বতনদিগের অনুষ্ঠিত কর্ম অনুষ্ঠান কর। “ইহলোকে বিবেকিগণও কর্ম ও অকর্ম-বিষয়ে মোহিত হইয়া আছেন; অতএব তুমি যাহা অবগত হইয়া সংসার হইতে মুক্ত হইবে, আমি তোমাকে সেই কর্মের বিষয় কহিতেছি, শ্রবণ কর। কর্মের গতি অতি দুরবগাহ, অতএব বিহিত কর্ম, অবিহিত কর্ম ও কর্মত্যাগ এই তিনের তত্ত্ব অবগত হইতে হয়; যিনি কর্ম বিদ্যমান থাকিতেও আপনার কর্মশূন্য এবং কর্মত্যাগ হইলেও কর্মযুক্ত বলিয়া বোধ করেন, তিনিই মনুষ্যের মধ্যে বুদ্ধিমান, যোগী এবং সকল কর্মের অনুষ্ঠাতা। যাঁহার সমুদয় কর্ম নিষ্কাম, পণ্ডিতগণ তাঁহাকে পণ্ডিত বলিয়া থাকেন; তাঁহার কর্মসমুদয় জ্ঞানাবলে (জ্ঞানরূপ অগ্নিতে) দগ্ধ হইয়া যায়। যিনি কর্মফলে আসক্তি পরিত্যাগপূর্বক চিরতৃপ্ত হইয়া থাকেন এবং কাহারও আশ্রয় গ্রহণ করেন না, তিনি কর্মে সম্যক্‌ প্রবৃত্ত হইলেও তাঁহার কিছুমাত্র কর্ম করা হয় না। যিনি কামনা ও সর্বপ্রকার পরিগ্রহ পরিত্যাগ করেন, যাঁহার মন ও আত্মা বিশুদ্ধ, তিনি কেবল শরীর দ্বারা কর্মানুষ্ঠান করিয়া পাপভাগী হয়েন না। যিনি যদৃচ্ছালাভে সন্তুষ্ট, শীত, উষ্ণ ও সুখদুঃখাদি দ্বন্দ্বসহিষ্ণু ও বৈরবিহীন এবং যিনি সিদ্ধি ও অসিদ্ধি তুল্য জ্ঞান করেন, তিনি কর্ম করিয়াও কর্ম বন্ধনে বদ্ধ হয়েন না। যিনি কামনা পরিত্যাগ করিয়াছেন, রাগাদি হইতে মুক্ত হইয়াছেন এবং যাঁহার চিত্ত জ্ঞানে অবস্থান করিতেছে, তিনি যজ্ঞার্থ কর্মানুষ্ঠান করিলে কর্মসকল বিলয় হইয়া যায়। স্রুক্‌স্রুবাদি পাত্রসকল ব্রহ্ম; হবনীয় (আহুরিত নিমিত্ত প্রদত্ত) ঘৃতাদি ব্রহ্ম, অগ্নিও ব্রহ্ম ও যিনি হোম করেন, তিনিও ব্রহ্ম; এই প্রকার কর্মস্বরূপ ব্রহ্মে যাঁহার সমাধি হইয়াছে, তিনি ব্রহ্মকে প্রাপ্ত হয়েন। কতকগুলি যোগী সম্যক্‌রূপে দেবযজ্ঞই (দেবতার উদ্দেশ্যে যজ্ঞই) অনুষ্ঠান করেন; কোন কোন যোগী পূর্বোক্ত প্রকারে ব্রহ্মরূপ অগ্নিতে যজ্ঞরূপ উপায় দ্বারা যজ্ঞাদি কর্মসকল (কর্মত্যাগরূপ) আহুতি প্রদান করিয়া থাকেন; কেহ কেহ সংযমরূপ অগ্নিতে শ্রোত্রাদি ইন্দ্রিয়গণকে, আর কেহ কেহ ইন্দ্রিয়রূপ অগ্নিতে শব্দাদি বিষয় সকল আহুতি দিয়া থাকেন। কেহ কেহ ধ্যেয় বিষয় (পদার্থ) দ্বারা উদ্দীপিত আত্মধ্যানরূপ যোগাগ্নিতে জ্ঞানেন্দ্রিয়ের কর্ম, কর্মেন্দ্রিয়ের কর্ম ও প্রাণবায়ুর কর্মসকল আহুতি প্রদান করেন। দৃঢ়ব্রত যতিগণ দ্রব্যদান, চান্দ্রায়ণাদি ব্রত, সমাধি, বেদপাঠ ও বেদজ্ঞান, এই কয়েকটি যজ্ঞ অনুষ্ঠান করিয়া থাকেন। কেহ কেহ প্রাণবৃত্তিতে অপানবৃত্তিকে আহুদি প্রদান করিয়া পূরক (নাসিকাপথে অভ্যন্তরে), অপানবৃত্তিতে প্রাণবৃত্তিকে আহুতি প্রদান করিয়া রেচক (অভ্যন্তরে পূরিত বায়ুর নিঃসরণ) এবং প্রাণ ও অপানের গতিরোধ করিয়া কুম্ভকরূপ (অভ্যন্তরে বায়ু রোধক) প্রাণায়াম করেন; আর কেহ কেহ নিয়তাহার (সংযত-আহার) হইয়া প্রাণবৃত্তি সমুদয়কে প্রাণবৃত্তিতেই হোম করিয়া থাকেন। এই সকল যজ্ঞবেত্তা যজ্ঞ দ্বারা নিষ্পাপ হইয়া যজ্ঞশেষরূপ অমৃত ভোজন করিয়া সনাতন ব্রহ্মকে লাভ করেন, কিন্তু যজ্ঞহীন ব্যক্তির পরলোকের কথা দূরে থাকুক, ইহলোকও নাই। এবংবিধ ভূরি ভূরি (বহু বহু) যজ্ঞ বেদ দ্বারা বিস্তারিত হইয়াছে, তৎসমুদয়ই কর্ম হইতে উৎপন্ন; তুমি ইহা অবগত হইয়া মুক্তিলাভ কর। ফলের সহিত সমুদয় কর্ম জ্ঞানের অন্তর্ভূত আছে, অতএব দ্রব্যময় দৈবযজ্ঞ অপেক্ষা জ্ঞানযজ্ঞই শ্রেষ্ঠ। “হে ধনঞ্জয়! তুমি প্রণিপাত, প্রশ্ন ও সেবা দ্বারা জ্ঞান শিক্ষা কর, তত্ত্বদর্শী জ্ঞানীরা তোমাকে তাহার উপদেশ প্রদান করিবেন। জ্ঞানলাভ করিলে তুমি আর এ প্রকার বন্ধুবধাদিজনিত মোহে অভিভূত হইবে না, তুমি আপনাকে সমুদয় ভূতকে অভিন্ন অবলোকন করিয়া পরিশেষে পরমাত্মাকে আত্মায় অভিন্ন দেখিবে। যদ্যপি তুমি সকল পাপী অপেক্ষা অধিক পাপী হও, তথাপি সেই জ্ঞানরূপ ভেলা দ্বারা সমস্ত পাপ হইতে উত্তীর্ণ হইবে। হে অর্জুন! যেমন প্রজ্বলিত হুতাশন কাষ্ঠ-সমুদয় ভষ্মাবশেষ করে, সেইরূপ জ্ঞানাগ্নি ন্যায় শুদ্ধিকর আর কিছুই নাই, মুমুক্ষু ব্যক্তি কর্মযোগে সিদ্ধি প্রাপ্ত হইয়া আপনা হইতেই আত্মজ্ঞান লাভ করে। যে ব্যক্তি গুরুর উপদেশ শ্রদ্ধাবান, গুরুশুশ্রূষাপরায়ণ ও জিতেন্দ্রিয়, তিনি জ্ঞান লাভ করিয়া অচিরাৎ (১) মোক্ষপদ প্রাপ্ত হয়েন; কিন্তু জ্ঞান ও শ্রদ্ধাবিহীন সংশয়াত্মা ব্যক্তি বিনাশ প্রাপ্ত হয়, সংশয়াত্মার এই লোক ও পরলোক কিছুই নাই এবং সুখও নাই। হে ধনঞ্জয়! যিনি যোগ দ্বারা কর্মসকল ঈশ্বরে সমর্পণ ও জ্ঞান দ্বারা সংশয়চ্ছেদ করিয়াছেন, কর্মসকল এই অপ্রমত্ত ব্যক্তিকে বদ্ধ করিতে পারে না। অতএব হে ভারত! আত্মজ্ঞানরূপ অসি দ্বারা হৃদয়নিহিত, অজ্ঞানসম্ভূত! সংশয় ছেদ করিয়া কর্মযোগ অনুষ্ঠান কর এবং উত্থিত হও।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০৫ – সন্ন্যাসযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ পঞ্চম অধ্যায় – সন্ন্যাসযোগ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে কৃষ্ণ! তুমি কর্মসন্ন্যাস (কর্মত্যাগ) ও কর্মযোগ (ফলত্যাগপূর্বক কর্মাচরণ) উভয়ের কথাই কহিতেছ, এক্ষণে উভয়ের মধ্যে যাহা শ্রেয়স্কর, তাহা অবধারিত করিয়া বল।’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! কর্মত্যাগ, কর্মযোগ উভয়ই মুক্তির কারণ, কিন্তু তন্মধ্যে কর্মযোগই শ্রেষ্ঠ। যাঁহার দ্বেষ নাই ও আকাঙ্খা নাই, তিনিই নিত্য-সন্ন্যাসী, কারণ, তদৃশ নির্দ্বন্ধ পুরুষেরাই অনায়াসে সংসারবন্ধন হইএ মুক্তিলাভ করেন। মূর্খেরাই সন্ন্যাস ও যোগ উভয়ের ভিন্ন ভিন্ন ফল কহে; কিন্তু পণ্ডিতেরা এরূপ কহেন না; বাস্তবিকও যিনি সন্ন্যাস ও যোগ এই উভয়ের একটিমাত্র সম্যক্‌ অনুষ্ঠান করেন, তিনি উভয়েরই ফলপ্রাপ্ত হয়েন। সন্ন্যাসীরা মোক্ষনামক যে স্থান লাভ করেন, কর্মযোগীরাও সেই স্থান প্রাপ্ত হয়েন; যিনি সন্ন্যাস ও যোগ উভয়ই একরূপ দেখেন, তিনিই যথার্থদর্শী কিন্তু কর্মযোগযুক্ত ব্যক্তি সন্ন্যাসী হইয়া অচিরাৎ ব্রহ্মলাভ করেন। যিনি যোগযুক্ত হইয়া বিশুদ্ধচিত্ত হয়েন, যাঁহার দেহ ও ইন্দ্রিয়গণ বশীভূত, যাঁহার আশা সকল ভূতের আত্মাস্বরূপ, যিনি লোকযাত্রা নির্বাহার্থ কর্ম অনুষ্ঠান করিলেও তাহাতে লিপ্ত হয়েন না। পরমার্থদর্শী (ব্রহ্মদর্শনকারী) কর্মযোগী দর্শন, শ্রবণ, স্পর্শ, ঘ্রাণ, অশন (ভোজন) গমন, শয়ন, আলাপ, ত্যাগ, গ্রহণ, উন্মেষ (চক্ষুর পাতা খোলান) ও নিমেষ (চক্ষুর পাতা বোজান) করিয়াও মনে করেন, আমি কিছুই করিতেছি না, ইন্দ্রিয়গণই স্ব স্ব বিষয়ে প্রবৃত্ত হইতেছে। যিনি আসক্তি পরিত্যাগপূর্বক ব্রহ্মে কর্মফল সমর্পণ কইয়া কর্ম করেন, পদ্মপত্রে জলের ন্যায় তাঁহাতে পাপ লিপ্ত হয় না। কর্মযোগিগণ চিত্তশুদ্ধির নিমিত্ত কর্মফলে আসক্তি পরিত্যাগ করিয়া শরীর, মন, বুদ্ধি ও মমত্ববুদ্ধি (‘আমি’ ‘আমার’ জ্ঞান)-বর্জিত ইন্দ্রিয়দ্বারা কর্মানুষ্ঠান করেন। পরমেশ্বরপরায়ণ ব্যক্তি কর্মফল পরিত্যাগ করিয়া কৈবল্য (কেবল—একরূপতা) প্রাপ্ত হয়েন; কিন্তু ঈশ্বরনিষ্ঠাবিমুখ (ঈশ্বরে বিশ্বাসহীন) ব্যক্তি কামনাবশতঃ ফলপ্রত্যাশী (ফলাকাঙ্খী) হইয়া বদ্ধ হয়। জিতেন্দ্রিয় দেহী (জীবাত্মা) মনে মনে সমুদয় কর্ম পরিত্যাগ করিয়া নবদ্বারবিশিষ্ট দেহপুর সুখে অবস্থান করেন। তিনি স্বয়ং কর্মে প্রবৃত্ত হয়েন না ও অন্যকেও প্রবৃত্ত করেন না। বিশ্বকর্তা (বিশ্বের বিধাতা) ঈশ্বর জীবলোকের কর্তৃত্ব ও কর্মসকল সৃষ্টি করেন না এবং কাহাকেও কর্মফলভোগী করেন না, স্বভাবই তৎসমুদয়ের প্রবর্তক। ঈশ্বর কাহারও পাপ বা পুণ্য গ্রহণ করেন না, জ্ঞান অজ্ঞান আবৃত হয় বলিয়া জীবসকল মোহাবিষ্ট হইয়া থাকে। যাঁহারা জ্ঞানদ্বারা আত্মার অজ্ঞানকে বিনাশিত করিয়াছেন, তাঁহাদিগের ব্রহ্মজ্ঞান আদিত্যের ন্যায় প্রকাশিত হয়। ঈশ্বরে যাঁহাদিগের সংশয়রহিত বুদ্ধি, ঈশ্বরেই যাঁহাদিগের আত্মা, ঈশ্বরেই যাঁহাদিগের নিষ্ঠা এবং ঈশ্বরেই যাঁহাদিগের পরম আশ্রয়, তাঁহারা জ্ঞানদ্বারা নিষ্পাপ হইয়া মোক্ষলাভ করেন। “ ‘পণ্ডিতগণ বিদ্যা ও বিনয়সম্পন্ন ব্রাহ্মণ, গো, হস্তী, কুক্কুর ও চণ্ডালকে তুল্যরূপে রেখেন। এইরূপ যাঁহাদিগের মন সর্বত্র সমভাবে অবস্থান করেন, তাঁহারাই জীবনাবস্থাতেই সংসার জয় করেন এবং নির্দোষ ব্রহ্ম সর্বত্রই সমভাবে আছেন, সুতরাং সমদর্শী (তুল্যদৃষ্টিসম্পন্ন) ব্যক্তিরাও ব্রহ্মভাব প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। যিনি ব্রহ্মবিৎ হইয়া ব্রহ্মে অবস্থান করেন, তিনি প্রিয়বস্তু প্রাপ্ত হইয়া হর্ষযুক্ত বা অপ্রিয় বস্তু প্রাপ্ত হইয়া উদ্বিগ্ন হয়েন না; কেননা, তিনি মোহ হইতে মুক্ত হইয়া স্থিরবুদ্ধি লাভ করিয়াছেন। যাঁহার চিত্ত বাহ্যবিষয়ে আসক্ত হয় না, তিনি অন্তঃকরণে শান্তিসুখ অনুভব করেন, পরিশেষে ব্রহ্মে সমাধিলাভ করিয়া অক্ষয় সুখ প্রাপ্ত হয়েন। যেসকল সুখ বিষয় হইতে উৎপন্ন হয়, তাহা দুঃখের কারণ ও বিনশ্বর; পণ্ডিতগণ তাহাতে আসক্ত হয়েন না। যিনি ইহলোকে শরীর পরিত্যাগের পূর্বে কাম ও ক্রোধের বেগ সহ্য করিতে পারেন, তিনিই যোগী ও তিনিই সুখী। আত্মাতেই যাঁহার সুখ, আত্মাতেই যাঁহার আরাম ও আত্মাতেই যাঁহার দৃষ্টি, সেই ব্রহ্মনিষ্ঠ যোগী ব্রহ্মে লয়প্রাপ্ত হয়েন। যাঁহারা পাপকে বিনাশ করিয়াছেন, সংশয়কে ছেদন করিয়াছেন, চিত্তকে বশীভূত করিয়াছেন এবং সকলের হিতানুষ্ঠানে ব্যাপৃত আছেন সেই তত্ত্বদর্শিগণই মোক্ষলাভ করেন। যেসকল সন্নাসী কাম ও ক্রোধ পরিত্যাগ করিয়া চিত্তকে আয়ত্ত্ব করিয়াছেন এবং আত্মতত্ত্ব অবগত হইয়াছেন, তাঁহারা ইহকাল ও পরকাল উভয়ত্রই মোক্ষলাভ করেন। যে মোক্ষপরায়ণ মুনি মন হইতে বাহ্যবিষয়সকল বহিষ্কৃত, নয়নদ্বয় ভ্রুযুগলের মধ্যে সংস্থাপিত, নাসার অভ্যন্তরচারী প্রাণ ও অপানবৃত্তিকে সমভাবাপন্ন করিয়া ইন্দ্রিয়, মন ও বুদ্ধি বশীভূত এবং ইচ্ছা, ভয় ও ক্রোধ দূরপরাহত (একান্ত ত্যাগ) করিয়াছেন, তিনিই জীবন্মুক্ত। মানবগণ আমাকে যজ্ঞ ও তপস্যার ভোক্তা এবং সকল লোকের মহেশ্বর ও সুবৃহৎ জানিয়া শান্তি লাভ করেন।’ ”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০৬ – ধ্যানযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ ষষ্ঠ অধ্যায় – ধ্যানযোগ “‘হে অর্জুন! যিনি ফলে বিতৃষ্ণ (আকাঙ্খারহিত) হইয়া কর্তব্যকর্ম অনুষ্ঠান করেন, তিনিই সন্ন্যাসী এবং তিনিই যোগী; কিন্তু যিনি অগ্নিসাধ্য ইষ্ট (যজ্ঞ) ও অনগ্নি পূর্ত প্রভৃতি পরিত্যাগ করিয়াছেন, তিনি সন্ন্যাসীও নহেন যোগীও নহেন। পণ্ডিতেরা যাহা সন্ন্যাস বলিয়া নির্দেশ করিয়াছেন তাহাই যোগ, অতএব কর্মফল পরিত্যাগ না করিলে কেহ যোগী হইতে পারে না। যে মুনি জ্ঞানযোগে আহরণ করিতে ইচ্ছা করেন, কর্মই তাঁহার সহায়, আর যিনি তাহাতে আরোহন করিয়াছেন, কর্মত্যাগই তাঁহার সহায়। যিনি সর্বপ্রকার সঙ্কল্প পরিত্যাগ করিয়া ইন্দ্রিয়ের ভোগ্য ও ভোগসাধন কর্মে আসক্ত না হয়েন, তিনিই তখন যোগারূঢ় বলিয়া উল্লিখহিত হইয়া থাকেন। আত্মা দ্বারা আত্মাকে সংসার হইতে উদ্ধার করিবে, তাহাকে অবসন্ন করিবে না, কারণ, আত্মাই আত্মার বন্ধ এবং আত্মাই আত্মার রিপু। যে আত্মা আত্মাকে জয় করিয়াছে, সেই আত্মাই আত্মার বন্ধু, আর যে আত্মা আত্মাকে জয় করিতে অসমর্থ হইয়াছে, সে আত্মাই শত্রুর ন্যায় আত্মার অপকারে প্রবৃত্ত হয়। শীত, উষ্ণ, সুখ, সুঃখ, মান ও অপমান উপস্থিত হইলে কেবল জিতাত্মা প্রশান্ত ব্যক্তির আত্মাই সাক্ষাৎ আত্মভাব অবলম্বন করে। যাঁহার আত্মা জ্ঞান ও বিজ্ঞানে পরিতৃপ্ত হইয়াছে, যিনি নির্বিকার ও জিতেন্দ্রিয় এবং যিনি লোষ্ট্র (মাটির ডেলা), প্রস্তর ও কাঞ্চন সমজ্ঞান করেন, সেই যোগীই যোগারূঢ় বলিয়া উল্লিখিত। যিনি সুহৃৎ, মিত্র, অরি, উদাসীন, মধ্যস্থ, দ্বেষ্য, বন্ধু, সাধু, সকলকেই সমজ্ঞান করেন, তিনি সর্বাপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। “যোগী ব্যক্তি নির্জনে নিরন্তন অবস্থান এবং আশা ও পরিগ্রহ পরিত্যাগপূর্বক অন্তঃকরণ ও দেহ বশীভূত করিয়া চিত্তকে সমাধান (সমতাযুক্ত) করিবেন। জিতচিত্ত ও জিতেন্দ্রিয় ব্যক্তি আত্মশুদ্ধির নিমিত্ত একাগ্রমণে পবিত্র স্থানে ক্রমান্বয়ে কুশ, অজিন ও বস্ত্র দ্বারা প্রস্তুত, অনতি-উচ্চ, অনতি-নীচ, স্থিরতর আসন সংস্থাপন করিয়া তাহাতে উপবেশন; শরীর, মস্তক ও গ্রীবা সম ও সরলভাবে ধারণ এবং দৃষ্টিকে অন্যান্য দিক্‌ হইতে আকর্ষণপূর্বক স্বীয় নাসিকার অগ্রভাবে সন্নিবেশিত করিয়া যোগ অভ্যাস করিবে। যোগী ব্যক্তি প্রশান্তত্মা (স্থির), নির্ভয়, ব্রহ্মচারী, সংযতচিত্ত ও মৎপরায়ণ হইয়া আমাতেই চিত্ত অর্পণপূর্বক অবস্থান করিবে। সংযতচিত্ত যোগী এইরূপে অন্তঃকরণকে সমাহিত করিলে আমার সারূপ্যরূপ (সারূপ্য = রূপতা?–রূপসাম্য) মোক্ষপ্রধান শান্তি লাভ করে। হে অর্জুন! অতিভোজনশীল বা একান্ত অনাহারী এবং অতিনিদ্রালু (অত্যন্ত নিদ্রাসেবী) বা একান্ত নিদ্রাহীন ব্যক্তির সমাধি হয় না। যাঁহার আহার, বিহার, কর্মচেষ্টা, নিদ্রা ও জাগরণ নিয়মিত, তিনিই দুঃখ-বিনাশক সমাধি লাভ করিতে পারেন। যখন বশীভূত চিত্ত সর্বপ্রকার কাম্যবিষয়ে নিষ্পৃহ হইয়া আত্মাতেই অবস্থান করে, তখনই তাহা সমাহিত (সমাধিস্থ) বলিয়া উল্লিখিত হয়। জিতচিত্ত যোগী ব্যক্তির চিত্ত আত্মযোগানুষ্টানকালে নির্বাত-নিষ্কম্প (বায়ুবিহীন স্থান-স্থিত কম্পনরহিত) দীপের ন্যায় নিশ্চল হইয়া থাকে। যে অবস্থায় চিত্ত যোগানুষ্ঠান দ্বারা নিরুদ্ধ হইয়া উপরত হয়, যে অবস্থায় বিশুদ্ধ অন্তঃকরণ দ্বারা আত্মাকেই অবলোকন করিয়া আত্মাতেই পরিতৃপ্ত হয়, যে অবস্থায় বুদ্ধিমাত্রলভ্য, অতীন্দ্রিয়, আত্যন্তিক সুখ উপলব্ধি হয়, যে অবস্থায় অবস্থান করিলে আত্মতত্ত্ব হইতে পরিচ্যুত হইতে হয় না, যে অবস্থা লাভ করিলে অন্য লাভকে অধিক বলিয়া বোধ হয় না এবং যে অবস্থা উপস্থিত হইলে গুরুতর দুঃখও বিচলিত করিতে পারে না, সেই অবস্থার নামই যোগ; যাহাতে দুঃখের সম্পর্কও নাই, তাহাই বিশেষরূপে অবগত হইবে এবং অধ্যবসায়সহকারে ও নির্বেদশূন্যচিতে অভ্যাস করিবে। মনকে আত্মাতে নিহিত করিয়া স্থির বুদ্ধি দ্বারা অল্পে অল্পে বিরতি অভ্যাস করিবে; অন্য কিছুই চিন্তা করিবে না। চঞ্চল স্বভাব মন যে যে বিষয়ে বিচরণ করিবে, সেই সেই বুষয় হইতে তাহাকে প্রত্যাহরণ করিয়া আত্মার বশীভূত করিবে। প্রশান্তচিত্ত, রজোবিহীন (মলশূন্য), নিষ্পাপ, জীবন্মুক্ত (জীবিতাবস্থায় মুক্ত–কামনা-বাসনাবিহীন জীবিতাবস্থা) যোগী নিরতিশয় সুখ লাভ করেন। নিষ্পাপ যোগী এই প্রকারে মনকে সর্বদা বশীভূত করিয়া অনায়াসে ব্রহ্মসাক্ষাৎকারজনিত সর্বোৎকৃষ্ট সুখ প্রাপ্ত হয়েন। সর্বত্র ব্রহ্মদর্শী, সমাহিতচিত্ত ব্যক্তি সকল ভূতে আত্মাকে ও আত্মাতে সকল ভূতকে অবলোকন করেন। যে ব্যক্তি আমাতে সকল বস্তু ও সকল বস্তুতে আমাকে দর্শন করে, আমি তাহার অদৃশ্য হই না; সে ব্যক্তিও আমার অদৃশ্য হয় না। যে ব্যক্তি আমার সহিত একীভূত (এক) হইয়া আমাকে সর্বভূতস্থ (সকল প্রাণীতে বিদ্যমান) মনে করিয়া ভজনা করে, সে যে কোন প্রকার বৃত্তি অবলম্বন করুক, আমাতেই অবস্থান করে। হে অর্জুন! যে ব্যক্তি আপনার সুখ-দুঃখের ন্যায় সকলের সুখ-দুঃখ দর্শন করে, সেই শ্রেষ্ঠ যোগী।’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে মধুসূদন! তুমি আত্মার সমতারূপ যে যোগের কথা উল্লেখ করিলে, মনের চঞ্চলতানিবন্ধন আমি ইহার দীর্ঘকাল স্থায়িত্ব দেখিতেছি না; মন স্বভাবতঃ চঞ্চল, ইন্দ্রিয়গণের ক্ষোভকর, অজেয় ও দুর্ভেদ্য; যেমন বায়ুকে নিরুদ্ধ করা অতি কঠিন, মনকে নিগৃহীত করাও সেইরূপ দুষ্কর বোধ হইতেছে!’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! চঞ্চলস্বভাব মন যে দুর্নিগ্রহ (বশে আনা দুঃসাধ্য), তাহাতে সংশয় নাই; কিন্তু অভ্যাস ও বৈরাগ্য দ্বারা তাহাকে নিগৃহীত করিতে হয়। যাহার চিত্ত অবশীভূত, যোগ লাভ করা তাহার পক্ষে দুর্ঘট। যে যত্নশীল ব্যক্তি অন্তঃকরণকে বশীভূত করিয়াছে, সে ব্যক্তি যথোক্ত উপায় দ্বারা যোগলাভ করিতে সমর্থ।’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে কৃষ্ণ! যে ব্যক্তি শ্রদ্ধাবান্‌ কিন্তু যত্নহীন ও যোগভ্রষ্টচেতাঃ (যোগ হইতে স্খলিত চিত্ত), সে যোগসিদ্ধি প্রাপ্ত না হইয়া কি অবস্থা প্রাপ্ত হয়? হে মহাবাহো! সে কি যোগ ও কর্ম উভয় হইতে ভ্রষ্ট, নিরাশ্রয় ও ব্রহ্মলাভের উপায়ে অনভিজ্ঞ হইয়া ছিন্ন-মেঘের ন্যায় বিনাশ প্রাপ্ত হয় না? হে কৃষ্ণ! তুমি আমার এই সংশয় ছেদন কর; তোমা ভিন্ন আর কেহ এই সংশয় ছেদন করিতে সমর্থ হইবে না।’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে পার্থ! যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি কি ইহলোকে, কি পরলোকে কুত্রাপি বিনষ্ট হয় না; কোন শুভকর্মকারীই দুর্গতি প্রাপ্ত হয় না, যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি পূণ্যকারীদিগের প্রাপ্য লোকে বহু বৎসর অবস্থান করিয়া সদাচার ও ধনসম্পন্নদিগের গৃহে অথবা বুদ্ধিমান যোগীদিগের বংশে জন্মগ্রহণ করে; যোগীদিগের কুলে জন্ম অতি দুর্লভ। যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি সেই জন্মে পৌর্বদেহিক (পূর্বজন্মলব্ধ) বুদ্ধি লাভ করে এবং মুক্তিলাভবিষয়ে পূর্বজন্ম অপেক্ষা অধিকতর যত্ন করিয়া থাকে। যোগভ্রষ্ট ব্যক্তি কোন অন্তরায়(১)বশতঃ ইচ্ছা না করিলেও পূর্বজম্মকৃত অভ্যাসই তাকে ব্রহ্মনিষ্ঠ করে। তখন তিনি যোগজিজ্ঞাসু (২) হইয়াই বেদোক্ত কর্মফল অপেক্ষা সমধিক ফল লাভ করেন। নিষ্পাপ যোগী অধিকতর যত্নসহকারে অনেক জন্মে সিদ্ধ হইয়া পরিশেষে পরম গতি প্রাপ্ত হয়েন। হে অর্জুন! যোগী তপস্বী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, জ্ঞানী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ এবং কর্মী অপেক্ষাও শ্রেষ্ঠ; অতএব তুমি যোগী হও। হে পার্থ! যে ব্যক্তি আমাতে অন্তকরণ সম্পর্পণ করিয়া শ্রদ্ধাপূর্ব্বক আমাকে ভজনা করেন, তিনি আমার মতে সকল যোগী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠতম।’ “
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০৭ – জ্ঞানবিজ্ঞানযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ সপ্তম অধ্যায় – জ্ঞানবিজ্ঞানযোগ “ভগবান্‌ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! তুমি আমার প্রতি অনুরক্ত ও আমার আশ্রিত হইয়া যোগাভ্যাসপূর্বক যে প্রকারে আমাকে সম্পূর্ণরূপে অবগত হইতে পারিবে, তাহা শ্রবণ কর। আমি যে অনুভবসহকৃত (অনুভবের সহিত আচরিত) জ্ঞান সম্যক্‌রূপে কীর্তন করিতে প্রবৃত্ত হইতেছি, ইহা বিদিত হইলে, শ্রেয়োবিষয়ে (মুক্তিরূপ মঙ্গল সম্বন্ধ) আর কিছুই জ্ঞাত হইতে অবশিষ্ট থাকে না। সহস্র সহস্র মনুষ্যমধ্যে কোন ব্যক্তি আত্মজ্ঞানের নিমিত্ত যত্নবান হয়; আর যত্মশীল সিদ্ধ ব্যক্তিগণের মধ্যে কোন ব্যক্তি প্রকৃতরূপে আমাকে জ্ঞাত হইতে সমর্থ হয়। আমার মায়ারূপ প্রকৃতি ভূমি, জল, অনল, বায়ু, আকাশ, মন, বুদ্ধি ও অহঙ্কার, এই আট প্রকারে বিভক্ত এতদ্ভিন্ন আমার একটি জীবস্বরূপ পরা (সর্বশ্রেষ্ঠ) প্রকৃতি আছে, উহা এই জগৎ ধারণ করিয়া রহিয়াছে। হে পার্থ! স্থাবরজঙ্গমাত্মক ভূত-সমুদয় এই ক্ষেত্র (প্রকৃতি) ও ক্ষেত্রজ্ঞ(জীবাত্মা)স্বরূপ প্রকৃতিদ্বয় হইতে সমুৎপন্ন হইতেছে। অতএব আমিই এই সমস্ত বিশ্বের পরম কারণ ও আমিই ইহার প্রলয়কর্ত্তা (লয়কারক); হে ধনঞ্জয়! আমা ভিন্ন ইহার সৃষ্টি-সংহারের (উৎপত্তির উপসংহারের–প্রবাহনিবৃতির) আর শ্রেষ্ঠ স্বতন্ত্র কারণ নাই। যেমন সূত্রে মণি সকল গ্রথিত থাকে, তদ্রুপ আমাতেই এই বিশ্ব গ্রথিত রহিয়াছে। হে অর্জুন! আমি সলিলে রসরূপে, চন্দ্র-সূর্য্যে প্রভাবরূপে, সমুদয় বেদে ওঁকাররূপে, আকাশে শব্দরূপে, মনুষ্য সকলে পৌরুষরূপে, পৃথিবীতে পবিত্র গন্ধরূপে, অনলে তেজোরূপে, সর্বভূতে জীবনরূপে ও তপস্বিগণে তপস্যারূপে অবস্থান করিতেছি। হে পার্থ! তুমি আমাকে সর্বভূতের সনাতন (নিত্য–ক্ষয়রহিত) বীজ বলিয়া বিদিত হও। আমি বুদ্ধিমানদিগের বুদ্ধি, তেজস্বীদিগের তেজ, বলবানের দুরাকাঙ্খাশূন্য বল ও সর্বভূতের বল ও ধর্মানুগত কাম। যে সমস্ত সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক ভাব আছে, তাহা আমা হইতে উৎপন্ন এবং আমারই অধীন; কিন্তু আমি কদাচ ঐ সকলের বশীভূত নহি। জগতীস্থ (ব্রহ্মাণ্ডস্থিত) সমুদয় লোক এই ত্রিগুণাত্মক (সত্ব, রজঃ ও তমঃ–এই ত্রিগুণগঠিত) ভাবে বিমোহিত হইয়া আমাকে ইহাদের অতিরিক্ত অবিনাশী বলিয়া বিদিত হইতে সমর্থ হয় না। “অলৌকিক গুণময়ী নিতান্ত দুস্তরা আমার এক মায়া আছে; যাহারা আমাকে আশ্রয় করে, তাহারাই ঐ মায়া অতিক্রম করিতে সমর্থ হয়। ঐ মায়া কর্তৃক যাহাদিগের জ্ঞান অপহৃত হইয়াছে এবং যাহারা অসুরভাব অবলম্বন করিয়াছে, সেই সমস্ত দুষ্কর্মকারী নরাধম মূর্খ কদাচ আমাকে প্রাপ্ত হয় না। আর্ত্ত (পীড়িত–কাতর), আত্মজ্ঞানাভিলাষী, অর্থাভিলাষী ও জ্ঞানী, হে অর্জুন! এই চাই প্রকার পুণ্যবান লোক আমার আরাধনা করিয়া থাকে; তন্মধ্যে অতিমাত্র ভক্ত ও যোগযুক্ত জ্ঞানীই শ্রেষ্ঠ। আমি জ্ঞানবানের এবং জ্ঞানবান্‌ আমার একান্ত প্রিয়। পূর্বোক্ত চারি প্রকার উপাসকই মোক্ষ প্রাপ্ত হইয়া থাকেন; কিন্তু আমার মতে জ্ঞানীই আত্মস্বরূপ; তিনি মদেকচিত্ত (একমাত্র ভগবানেই অর্পিতচিত্ত) হইয়া আমাকে একমাত্র উত্তম গতি অবধারণ করিয়া আশ্রয় করিয়া থাকেন। বহুজন্ম অতিক্রান্ত হইলে জ্ঞানবান্‌ ব্যক্তি বাসুদেবই এই সচরাচর বিশ্ব, এইরূপ বিবেচনা করিয়া আমাকে প্রাপ্ত হয়েন; কিন্তু তাদৃশ মহাত্মা নিতান্ত দুর্লভ। অন্য উপাসকেরা স্বীয় প্রকৃতির বশীভূত ও নানা প্রকার কামনা দ্বারা হতজ্ঞান হইয়া প্রসিদ্ধ (গতানুগতিক–রুচিকর) নিয়ম অবলম্বনপূর্বক ভূত, প্রেত প্রভৃতি ক্ষুদ্র দেবতাদিগের আরাধনা করিয়া থাকে। যে যে ভক্ত শ্রদ্ধাসহকারে যে কোন দেবতার অর্চনা করিতে অভিলাষ করেন, আমিই তাঁহাদিগকে সেই অচলা শ্রদ্ধা প্রদান করিয়া থাকি, তাঁহারা সেই শ্রদ্ধাসহকারে সেই সকল দেবতার আরাধনা করিতে প্রবৃত্ত হন; তৎপরে আমা হইতেই হিতকর অভিলষিতসকল প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। কিন্তু সেই সমস্ত অল্পবুদ্ধি ব্যক্তিদিগের দেবতালব্ধ (দেবতা হইতে প্রাপ্ত) ফল-সমুদয় ক্ষয় হইয়া যায়। দেবযাজী ব্যক্তিরা দেবতা প্রাপ্ত হয়, আর আমার ভক্তগণ আমাকেই প্রাপ্ত হইয়া থাকে। আমি অব্যক্ত; কিন্তু নির্বোধ মনুষ্যেরা আমার অব্যয় ও অতি উৎকৃষ্ট স্বরূপ অবগত না হইয়া আমাকে মনুষ্য, মীন ও কূর্মাদিভাবাপন্ন মনে করে। আমি যোগমায়ায় প্রচ্ছন্ন হইয়া আছি, সকলের সমক্ষে কদাচ প্রকাশমান হই না; এই নিমিত্ত মূঢ়েরা আমাকে জন্মহীন ও অব্যয় বলিয়া অবগত নহে। হে অর্জুন! আমি ভূত, ভবিষ্যত ও বর্তমান এই তিন বিষয়ই বিদিত আছি, কিন্তু আমাকে কেহই জ্ঞাত নহে। হে অর্জুন! জন্মগ্রহণ করিলে ভূতসকল ইচ্ছাদ্বেষসমুত্থিত শীতোষ্ণাদিদ্বন্দ্ব নিমিত্ত মোহে বিমোহিত হইয়া থাকে; কিন্তু যে সমস্ত পুণ্যাত্মাদিগের পাপ বিনষ্ট ও শীতোষ্ণাদি দ্বন্দ্ব-নিমিত্ত মোহ অপগত হইয়াছে, সেই সমস্ত কঠোর-ব্রতপরায়ণ মহাত্মারাই আমার আরাধনা করেন। যাঁহারা আমাকে আশ্রয় করিয়া জরা-মৃত্যু হইতে বিনির্মুক্ত হইবার জন্য যত্ন করেন, তাঁহারাই সমগ্র অধ্যাত্মবিষয়, নিখিল কর্ম ও সনাতন ব্রহ্ম অবগত হইতে সমর্থ হয়েন। যাহারা অধিভূত, অধিদৈব ও অধিযজ্ঞের সহিত আমাকে সম্যক্‌ বিদিত হইয়াছেন, সেই সমস্ত মহাহিতচিত্ত ব্যক্তি মৃত্যুকালেও আমাকে বিস্মৃত হয়েন না।’ ”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০৮ – অক্ষরব্রহ্মযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ অষ্টম অধ্যায় – অক্ষরব্রহ্মযোগ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! ব্রহ্ম, অধ্যাত্ম ও কর্ম কাহাকে বলে? অধিভূত ও অধিদৈবই বা কি? মনুষ্যদেহে অধিযজ্ঞ কিরূপে অবস্থান করিতেছে? সংযতচিত্ত ব্যক্তিরা মৃত্যুকালে কি প্রকারে ব্রহ্মকে বিদিত হয়েন?’ “বাসুদেব কহিলেন, ‘হে অর্জুন! যিনি পরম, অক্ষয় ও জগতের মূল কারণ, তিনিই ব্রহ্ম। সেই ব্রহ্মের অংশস্বরূপ জীব, দেহ অধিকার করিয়া অবস্থান করিলে তাহাকে অধ্যাত্ম বলা যায়। যাহাতে ভূতগণের উৎপত্তি ও বৃদ্ধি সম্পন্ন হইয়া থাকে, তাহা যজ্ঞকর্ম। বিনশ্বর (বিনাশশীল) দেহাদি পদার্থ ভূত-সকলকে অধিকার করিয়া থাকে; এই নিমিত্ত উহাকে অধিভূত বলা যায়। সূর্যমণ্ডলবর্তী বৈরাজ পুরুষ দেবতাদিগের অধিপতি বলিয়া তাঁহকে অধিদৈবত বলা যায়। আর আমিই এই দেহে যজ্ঞের অধিষ্ঠাত্রী দেবতারূপে অবস্থান করিতেছি, এই নিমিত্ত অধিযজ্ঞ বলিয়া অভিহিত হইয়া থাকি। যিনি অন্তকালে আমাকে স্মরণ করিয়া কলেরব পরিত্যাগপূর্বক প্রয়াণ করেন, তিনি নিঃসন্দেহ আমার স্বরূপ প্রাপ্ত হয়েন। হে অর্জুন! যে ব্যক্তি একান্তমনে অন্তকালে যে যে বস্তু স্মরণ করিয়া দেহত্যাগ করে, সে সেই বস্তুর স্বরূপ প্রাপ্ত হইয়া থাকে; অতএব তুমি সকল সময়ে আমাকে স্মরণ কর ও সমরে প্রবৃত্ত হও। আমাতে মন ও বুদ্ধি সমর্পণ করিলে আমাকেই প্রাপ্ত হইবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। হে অর্জুন! অভ্যাসরূপ উপায় অবলম্বন করিয়া অনন্যমনে সেই দিব্য পরমপুরুষকে চিন্তা করিলে তাঁহাতেই লীন হয়। যে ব্যক্তি মৃত্যুকালে অবিচলিত-চিত্তে ভক্তি ও যোগবলে ভ্রুযুগলের মধ্যে প্রাণবায়ু সমাবেশিত করিয়া পুরাতন, বিশ্বনিয়ন্তা (ব্রহ্মাণ্ডপরিচালক), সূক্ষ্ম হইতে সূক্ষ্ম, সকলের বিধাতা, অচিন্তরূপ, আদিত্যের ন্যায় স্বপ্রকাশ, অজ্ঞানান্ধকারের উপর (অজ্ঞানরূপ অন্ধকারের অতীত অবস্থা) বর্তমান, দিব্য পরমপুরুষকে চিন্তা করে, সে তাঁহাকে প্রাপ্ত হয়। হে অর্জুন! বেদবেত্তারা যাঁহাকে অক্ষয় বলিয়া থাকেন এবং বিষয়াসক্তিশূন্য যতিগণ যাঁহাতে প্রবেশ করেন ও যাঁহাকে বিদিত হইবার নিমিত্ত ব্রহ্মচর্যানুষ্ঠানের প্রবৃত্ত হয়েন, আমি সেই প্রাপ্য বস্তুলাভের উপায় সংক্ষেপে কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর :– “যে ব্যক্তি ইন্দ্রিয়দ্বার-সমুদয় সংযত, হৃদয়কমলে মনকে নিরুদ্ধ ও ভ্রুমধ্যে প্রাণবায়ু সন্নিবেশিত করিয়া যোগজনিত ধৈর্য অবলম্বন এবং ব্রহ্মের অভিধান (১) ওঁ এই একাক্ষর উচ্চারণ ও আমাকে স্মরণ করিয়া কলেরব পরিত্যাগপূর্বক প্রয়াণ করেন, তিনি পরম গতি লাভ করিয়া থাকেন। যিনি অনন্যমনে সতত আমাকে স্মরণ করেন, সেই সমাহিত যোগী আমাকে অনায়াসে লাভ করিতে সমর্থ হয়েন; মহাত্ম্রারা আমাকে প্রাপ্ত হইয়াও মোক্ষরূপ পরম সিদ্ধি লাভ করিয়া দুঃখের আলয় অনিত্য পুনর্জন্ম প্রাপ্ত হয়েন না। প্রাণিগণ ব্রহ্মলোক অবধি সমুদয় লোক হইতেই পুনরায় প্রতিনিবৃত্ত হয়; কিন্তু আমাকে প্রাপ্ত হইলে আর জন্মগ্রহণ করিয়ে হয় না। সহস্র দৈব যুগে ব্রহ্মার এক দিন এবং ঐরূপ সহস্র যুগে এক রাত্রি হয়। যাঁহারা ইহা বিদিত হইয়াছেন, সেই সর্ব্বজ্ঞ ব্যক্তিরাই অহোরাত্রবেত্তা (দিবারাত্রির পরিমাণ বিষয়ে বিজ্ঞ)। ব্রহ্মার দিবস হইতে ব্যক্ত চরাচর ভূত-সকল প্রাদুর্ভূত হইয়া থাকে; আর রাত্রি উপস্থিত হইলে সেই কারণরূপ অব্যক্ত পদার্থে সমস্ত বস্তু বিলীন হইয়া যায়। সেই ভূতসমূহ ব্রহ্মার দিবসাগমে বার বার জন্মগ্রহণ করিয়া রাত্রিসমাগমে বিলীন হয় এবং পুনরায় দিবসাগমে কর্মাদিপরতন্ত্র ও সমুৎপন্ন হইয়া পুনরায় রাত্রিসমাগমে বিলীন হইয়া থাকে। সেই চরাচরের কারণরূপ অব্যক্তি অপেক্ষাও পরতর (নিগূঢ়) অতিশয় অব্যক্তি সনাতন আর একটি ভাব আছে; উহা সমস্ত ভূত বিনষ্ট হইলেও কদাচ বিনষ্ট হয় না। অতীন্দ্রিয় ও অক্ষয় ভাবকেই পরমপুরুষার্থ বলিয়া নির্দিষ্ট করিয়া থাকেন; উহাই আমার স্বরূপ; উহা প্রাপ্ত হইলে মনুষ্যের আর বিনিবর্তন হয় না (ফিরিয়া আসে না–ব্রহ্মেই লীন হইয়া থাকে)। হে অর্জুন! সেই পরম-পুরুষকে একান্ত ভক্তি দ্বারা প্রাপ্ত হওয়া যায়; ভূতসকল তাঁহার অভ্যন্তরে অবস্থান করিতেছে এবং তিনিই এই বিশ্বে ব্যাপ্ত হইয়া রহিয়াছেন। যোগীরা যে কালে গমন করিলে আবৃত্তি (জন্মবন্ধন) ও যে কালে গমন করিলে অনাবৃত্তি (সংসারনিবৃত্তি–মোক্ষ) প্রাপ্ত হইয়া থাকেন, আমি সেই কালের বিষয় কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর;–যে স্থানে দিবস শুক্লবর্ণ (সত্ত্বময়) ও অগ্নির ন্যায় প্রভাসম্পন্ন এবং ছয় মাছ উত্তরায়ণ (মাঘ মাস হইতে আষাঢ় মাস পর্যন্ত), ব্রহ্মবেত্তারা তথায় গমন করিয়া ব্রহ্ম প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। আর যে স্থানে রাত্রি, ধূম ও কৃষ্ণবর্ণ (রজঃ ও তমোময়) এবং ছয় মাস দক্ষিণায়ণ (শ্রাবণ হইতে পৌষ মাস পর্যন্ত); কর্মযোগীরা তথায় চন্দ্রপ্রভাশালী স্বর্গ-লাভ (পিতৃলোক) কইয়া নিবৃত্ত হয়েন। জগতের শুক্ল ও কৃষ্ণবর্ণ দুইটা শাশ্বত গতি আছে; তন্মধ্যে একতর দ্বারা অনাবৃত্তি ও অন্যতর দ্বারা আবৃত্তি হইয়া থাকে। হে পার্থ! যোগী ব্যক্তি এই দুইটি গতি অবগত হইয়া কদাচ বিমোহিত হয়েন না; অতএব তুমি সকল কালে যোগানুষ্ঠানপরায়ণ হও। শাস্ত্রে বেদ, যজ্ঞ, তপস্যা ও দানে যে ফল নির্দিষ্ট আছে, জ্ঞানীরা সেই নির্ণীত তত্ত্ব অবগত হইয়া তদপেক্ষা শ্রেষ্ঠ ফল লাভ করেন এবং জগতের মূল বিষ্ণুপদ প্রাপ্ত হইয়া থাকেন।’ ”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ০৯ – রাজবিদ্যা-রাজগুহ্যযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ নবম অধ্যায় – রাজবিদ্যা-রাজগুহ্যযোগ “ভগবান্‌ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! তুমি অসূয়াশূন্য; অতএব যাহা অবগত হইলে সংসারবন্ধন হইতে মুক্ত হইবে, আমি সেই গোপনীয় উপাসনাসহকৃত ঈশ্বরজ্ঞান কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। এই উৎকৃষ্ট জ্ঞান বিদ্যাশ্রেষ্ঠ, রাজগণেরও গোপনীয়, অতি পবিত্র, প্রত্যক্ষফলদ, ধর্মানুগত ও অব্যয়; ইহা অনায়াসেই অনুষ্ঠান করা যাইতে পারে। যাহারা এই ধর্মে বিশ্বাস না করে, তাহারা আমাকে প্রাপ্ত না হইয়া মৃত্যুসমাকুল সংসারপথে নিয়ত পরিভ্রমণ করিয়া থাকে। হে অর্জুন! আমি অব্যক্তরূপে সমস্ত বিশ্বে ব্যাপ্ত রহিয়াছি; আমাতে ভূত-সকল অবস্থান করিতেছে; কিন্তু আমি কিছুতেই অবস্থিত নহি, আর আমাতেও কোন ভূত অবস্থান করিতেছে না; আমার এই ঐশিকী (ঐশী–নিয়তি বিষয়িণী) অঘটনঘটনাচাতুরী (অসম্ভব-সম্ভবকারিণী নিপুণতা) নিরীক্ষণ কর। আমার আত্মা ভূতসকল ধারণ ও পালন করিতেছে; কিন্তু কোন ভূতেই অবস্থান করিতেছে না। যেমন সমীরণ সর্বত্রগামী ও মহৎ হইলেও প্রতিনিয়ত আকাশে অবস্থান করে, তদ্রুপ সকল ভূতই আমাতে অবস্থান করিয়া রহিয়াছে জানিবে। হে অর্জুন! কল্পক্ষয়কালে (ব্রহ্মার স্থিতিকালের অবসানে–মহাপ্রলয় সময়ে) ভূতগণ আমার ত্রিগুণাত্মিকা মায়ায় লীন হয় এবং কল্পপ্রারম্ভে আমি পুনরায় উহাদিগকে সৃষ্টি করিয়া থাকি। আমি স্বীয় মায়ায় অধিষ্ঠিত হইয়া জন্মান্তরীণ (পূর্ব পূর্ব জন্মের) কর্মানুসারে প্রলয়কালবিলীন (প্রলয়কালে লয়প্রাপ্ত) কর্মাদিপরবশ (স্ব স্ব ধর্মের অধীন) ভূত-সমুদয় বারংবার সৃষ্টি করিতেছি; কিন্তু আমি সেই সকল সৃষ্টি প্রভৃতি কর্মের আয়ত্ত (অধীন) নহি; আমি সকল কর্মেই অনাসক্ত হইয়া উদাসীনের ন্যায় নিরন্তর অবস্থান করিয়া থাকি। মায়া আমার অধিষ্ঠান (আশ্রয়) মাত্র লাভ করিয়া এই সচরাচর বিশ্ব সৃষ্টি করিতেছে এবং আমার অধিষ্ঠান নিমিত্তই এই জগৎ পুনঃ পুনঃ উৎপন্ন হইতেছে। আমি সকল ভূতের ঈশ্বর; আমি মানুষ-বিগ্রহ পরিগ্রহ করিয়াছি বলিয়া বিফল আশাসম্পন্ন, বিফল কর্মপরায়ণ, বিফল জ্ঞানযুক্ত বিচেতন, মূঢ় ব্যক্তিরা আমার পরম তত্ত্ব অবগত না হইয়া আমাকে অবজ্ঞা করিয়া থাকে; কারণ, তাহারা রাক্ষসী , আসুরী ও মোহিনী (মোহকারিণী রাক্ষস ও অসুরসম্বন্ধীয়া) প্রকৃতি আশ্রয় করিয়া আছে। কিন্তু মহাত্মগণ দৈবী প্রকৃতি আশ্রয়পূর্বক আমাকে সকল ভূতের কারণ ও অব্যয়রূপ অবগত হইয়া অনন্যমনে আরাধনা করেন; সতত ভক্তিযুক্ত ও বহিত হইয়া আমার নাম কীর্তন করেন, যত্নবান ও দৃঢ়ব্রত হইয়া আমাকে নমস্কার করিয়া থাকেন এবং প্রতিনিয়ত সাবধান হইয়া ভক্তিসহকারে আমার উপাসনা করেন। আর কেহ তত্ত্বজ্ঞানরূপ যজ্ঞ, হেক অভেদ ভাবনা, কেহ পৃথক ভাবনা দ্বারা, কেহ বা সর্বাত্মক বলিয়া ব্রহ্মরুদ্রাদিরূপে আমাকে আরাধনা করিয়া থাকেন। দেখ, আমি যজ্ঞ, স্বধা, ঔষধ, মন্ত্র, আজ্য, অগ্নি ও হোম; আমি এই জগতের পিতা, পিতামহ, মাতা ও বিধাতাল আমি জ্ঞেয়, পবিত্র, ওঁঙ্কার, ঋক্‌, সাম ও যজু; আমি কর্মফল, ভর্তা (পালনকর্তা), প্রভু, সাক্ষী, নিবাস, শরণ, সুহৃৎ, প্রভব, প্রলয়, আধার, লয়স্থান ও অব্যয় বীজ। হে অর্জুন! আমি তাপপ্রদান এবং বৃষ্টিরোধ ও বৃষ্টি প্রদান করি। আমিই অমৃত, মৃত, সৎ ও অসৎ। “ত্রিবেদবিহিত কর্মানুষ্ঠানপর (কর্মানুষ্ঠাননিরত), সোমপায়ী বিগত পাপ মহাত্মগণ যজ্ঞ দ্বারা আমার সৎকার করিয়া সুরলোকলাভের অভিলাষ করেন, পরিশেষে অতি পবিত্র সুরলোক প্রাপ্ত হইয়া উৎকীইষ্ট দেবভোগ্যসকল উপভোগ করিয়া থাকেন। অনন্তর পুণ্যক্ষয় হইলে পুনরায় মর্ত্যলোকে প্রবেশ করেন। এইরূপে তাঁহারা বেদত্রয়বিহিত কর্মানুষ্ঠানপর ও ভোগবিলাষী হইয়া গমনাগমন (জন্ম-মৃত্যুরূপ সংসারে আগমন–সংসার হইতে গমন) করিয়া থাকেন। যাহারা অনন্যমনে আমাকে চিন্তা ও আরাধনা করে, আমি সেই সকল মদেকনিষ্ঠ ব্যক্তিদিগকে যোগক্ষেমপ্রদান করিয়া থাকি। যাহারা শ্রদ্ধা-ভক্তিসহকারে অন্য দেবতার আরাধনা করে, তাহারা অবিধিপূর্বক আমাকেই পূজা করিয়া থাকে। আমি সকল যজ্ঞের ভোক্তা ও প্রভু; কিন্তু তাহারা আমাকে যথার্থতঃ বিদিত হইতে পারে না; এই নিমিত্ত স্বর্গভ্রষ্ট হইয়া থাকে। দেবব্রতপরায়ণ (যজ্ঞাদিনিষ্ঠ) ব্যক্তিরা দেবগণ, পিতৃব্রতনিষ্ঠ ব্যক্তিরা পিতৃগণ ও ভূতসেবকেরা ভূত-সকলকে এবং আমার উপাসকেরা আমাকেই প্রাপ্ত হয়। যিনি ভক্তিসহকারে আমাকে ফল, পত্র, পুষ্প ও জল প্রদান করেন, আমি সেই মহাত্মা ব্যক্তির সমুদয় দ্রব্য ভক্ষণ ও পান করিয়া থাকি। হে অর্জুন! তুমি যে কিছু কর্ম অনুষ্ঠান, যাহা ভক্ষণ, যাহা হোম, বে বস্তু দান ও যেরূপ তপঃসাধন করিয়া থাক, তৎসমুদয় আমাকে সমর্পণ করিও; তাহা হইলে কর্মজনিত শুভাশুভ ফল হইতে বিমুক্ত হইবে এবং কর্মার্পণরূপ (কর্মফলত্যাগরূপ) যোগযুক্ত হইয়া আমাকে লাভ করিবে। আমি সকল ভূতে একরূপ; কেহ আমার শত্রু বা মিত্র নাই। যাহারা ভক্তিপূর্বক আমার আরাধনা করে, তাহারা আমাতেই অবস্থান করিয়া থাকে। যদি দুরাচার ব্যক্তিও অনন্যমনে আমার উপাসনা করে, সে সাধু; তাহার অধ্যবসায় অতি সুন্দর; সে অবিলম্বে ধর্মপরায়ণ হইয়া নিরন্তর শান্তি লাভ করে এবং তাহার বিনাশ নাই। অতি পবিত্র ব্রাহ্মণ ও ভক্তিপরায়ণ রাজর্ষিগণের কথা দূরে থাকুক, যাহারা নিতান্ত পাপাত্মা, যাহারা কৃষি প্রভৃতি কার্যে নিরত বৈশ্য ও যাহারা অধ্যয়নবিরহিত শূদ্র, তাহারা এবং স্ত্রীলোকেরাও আমাকে আশ্রয় করিলে অত্যুৎকৃষ্ট গতি লাভ করিতে পারে। হে অর্জুন! তুমি এই অনিত্য অসুখকর লোক প্রাপ্ত হইয়া আমাকে আরাধনা ও নমস্কার কর; আমাকে মন সমর্পণপূর্বক আমার প্রতি ভক্তিপরায়ণ হও এবং সর্বদা আমার পূজা কর। তুমি এইরূপে আমাতে আত্মা সমাহিত করিলে আমাকে লাভ করিবে।’ “
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১০ – বিভূতিযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ দশম অধ্যায় – বিভূতিযোগ “ভগবান্‌ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! তুমি আমার বাক্যশ্রবণে নিতান্ত প্রীত হইতেছে; এক্ষণে আমি তোমার হিতবাসনায় পুনরায় যে সমস্ত উৎকৃষ্ট বাক্য কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। মহর্ষি ও সুরগণও আমার প্রভাব অবগত নহেন; আমি সকল বিষয়েই তাঁহাদিগের আদি। যিনি আমাকে অনাদি, জন্মবিহীন ও সকল লোকের ঈশ্বর বলিয়া জানেন, তিনি জীবলোকে মোহবিরত ও পাপ হইতে বিমুক্ত হইয়া থাকেন। আমি বুদ্ধি, জ্ঞান, ব্যাকুলতা, ক্ষমা, সত্য, দম, শম, সুখ, দুঃখ, জন্ম, মৃত্যু, ভয়, অভয়, অহিংসা, সমতা, তুষ্টি, তপঃ, দান, যশঃ ও অযশ। আমা হইতেই প্রাণীগণের ভিন্ন ভিন্ন ভাব উৎপন্ন হইতেছে। পূর্বতন সনকাদি চারিজন ও ভৃগু প্রভৃতি সাতজন মহর্ষি এবং মনুসকল (স্বায়ম্ভুবপ্রমুখ) আমারই প্রভাবসম্পন্ন ও আমারই মন হইতে সমুৎপন্ন হইয়াছেন। তাঁহারা এই লোক ও প্রজা সৃষ্টি করিয়াছেন। যিনি আমার এই বিভূতি ও সর্বজ্ঞতাদি ঐশ্বর্য্য (সমস্ত জানিবার শক্তি) সম্যক্‌ বিদিত হইয়াছেন, তিনি সংশয়রহিত জ্ঞানপ্রাপ্ত হয়েন, সন্দেহ নাই। পণ্ডিতেরা আমাকে সকলের কারণ ও আমা হইতে সমস্ত প্রবর্তিত জানিয়া প্রীতমনে আমার অর্চনা করেন। তাঁহারা আমাতে মনঃ ও প্রাণ সমর্পণ করিয়া আমাকে বিদিত হয়েন এবং আমার নাম কীর্তন করিয়া একান্ত সন্তোষ ও পরম শান্তিলাভ করিয়া থাকেন। আমি অনুকম্পা প্রদর্শন করিবার নিমিত্ত তাঁহাদিগের বুদ্ধিবৃত্তিতে অবস্থিত হইয়া দীপ্তিশীল জ্ঞানপ্রদীপদ্বারা অজ্ঞানান্ধকার নিরাকরণ (দূর) করিয়া থাক।’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! ঋষিগণ, দেবর্ষি নারদ, অসিত, দেবল ও ব্যাসদেব তোমাকে পরম ব্রহ্ম, পরম ধাম, পরম পবিত্র, শাশ্বত, পুরুষ, দিব্য, আদিদেব ও জন্মবিহীন বলিয়া থাকেন এবং তুমিও আপনাকে ঐরূপ নির্দেশ করিলে। এক্ষণে তুমি যেরূপ কহিতেছ, আমি তদ্বিষয় অনুমাত্রও (অতি অল্প পরিমাণও) সন্দেহ করি না। দেব ও দানবগণ তোমাকে সম্যক্‌ অবগত নহেন; তুমি আপনিই আপনাকে বিদিত হইতেছ। হে দেবদেব! হে ভূতভাবন (প্রাণীগণের উৎপাদন কারক)! তুমি যে সমস্ত বিভূতিদ্বারা এই লোকসমুদয় ব্যাপ্ত করিয়া রহিয়াছ, এক্ষণে সেইসকল দিব্যবিভূতি সম্যক্‌রূপে কীর্তন কর, আমি কিরূপে তোমাকে সতত চিন্তা করিয়া অবগত হইতে সমর্থ হইব এবং কোন্‌ কোন্‌ পদার্থেই বা তোমাকে চিন্তা করিব? এক্ষণে তুমি পুনরায় সবিস্তার আপনার ঐশ্বর্য্য ও বিভূতি কীর্তন কর; তোমার এই অমৃতোপম বাক্য শ্রবণ করিয়া কিছুতেই আমার তৃপ্তিলাভ হইতেছে না।’ “বাসুদেব বলিলেন, ‘হে অর্জুন! আমার বিভূতির ইয়ত্তা নাই; অতএব প্রধান প্রধান বিভূতিসকল কীর্তন করিতেছে, শ্রবণ কর। হে অর্জুন! আত্মা ও সকল প্রাণীর অন্তঃকরণে অবস্থান করিতেছি। আমি সকলের আদি, মধ্য, ও অন্ত; আমি আদিত্যগণের মধ্যে বিষ্ণু, জ্যোতির্মণ্ডলীর মধ্যে সমুজ্জ্বল সূর্য্য, মরুদ্‌গণের মধ্যে মরীচি ও নক্ষত্রগণের মধ্যে চন্দ্র। আমি বেদের মধ্যে সাম, দেবগণের মধ্যে ইন্দ্র। ইন্দ্রিয়সমুদয়ের মধ্যে মন ও ভূতগণের মধ্যে চৈতন্য। আমি রুদ্রগণের মধ্যে শঙ্কর, যক্ষরাক্ষসের মধ্যে কুবের, বসুগণের মধ্যে পাবক, পর্বতের মধ্যে সুমেরু, পুরোহিতগণের মধ্যে সর্বপ্রধান বৃহস্পতি, সেনানীদিগের মধ্যে কার্তিকেয় জলাশয়সকলের মধ্যে সাগর। আমি মহর্ষিগণের মধ্যে ভৃগু, বাক্যসকলের মধ্যে ওঁকার, যজ্ঞসমুদয়ের মধ্যে জপযজ্ঞ, স্থাবরগণের মধ্যে হিমালয়, বৃক্ষসমূহের মধ্যে অশ্বত্থ, দেবর্ষিগণের মধ্যে নারদ, গন্ধর্বগণের মধ্যে চিত্ররথ ও সিদ্ধসমুদয়ের মধ্যে মহামুনি কপিল। আমি অশ্বগণমধ্যে অমৃতমন্থনোদ্ভূত (অমৃতমন্থনকালে সমুদ্র হইতে উত্থিত) উচ্চৈঃশ্রবা, মাতঙ্গমধ্যে ঐরাবত, মনুষ্যমধ্যে রাজা, আয়ুধমধ্যে বজ্র ও ধেনুগণমধ্যে কামধেনু। আমি উৎপত্তিহেতু কন্দর্প (কাম), সবিষ ভুজঙ্গগণের মধ্যে বাসুকি, নির্বিষ ভুজঙ্গগণের মধ্যে অনন্ত, জলচরসকলের মধ্যে বরুণ, পিতৃগণের মধ্যে অর্য্যমা, নিয়ামকদিগের (শাসনদ্বারা সপথে প্রবর্তক) মধ্যে যম ও দৈত্যগণের মধ্যে প্রহ্লাদ। আমি গণনাকারীদিগের মধ্যে কাল, মৃগগণের মধ্যে মৃগেন্দ্র (সিংহ) পক্ষিমধ্যে বৈনতেয়, বেগবানদিগের মধ্যে পবন, শস্ত্রধারীদিগের মধ্যে দাশরথি রাম, মৎস্যগণমধ্যে মকর ও স্রোতস্বতীর (নদীর) মধ্যে জাহ্নবী। আমি সৃষ্টপদার্থ সকলের আদি, অন্ত ও মধ্য, বিদ্যাসকলের মধ্যে আত্মবিদ্যা, বাদিগণের বাদ, অক্ষরসকলের মধ্যে আকার, সমাসমধ্যে দ্বন্দ্ব। আমি অনন্ত কাল, সর্বতোমুখ (সকল দিকেই মুখবিশিষ্ট—সর্বত্র অস্তিত্বসম্পন্ন) বিধাতা, সর্বসংহারক মৃত্যু ও অদ্ভুদয়লাভের যোগ্য প্রাণীদিগের অদ্ভুদয় (মঙ্গল)। আমি নারীগণমধ্যে কীর্তি, শ্রী, বাক্‌ (বাক্য), স্মৃতি, মেধা, ধৃতি ও ক্ষমা। আমি সামবেদের মধ্যে বৃহৎ সাম, ছন্দের মধ্যে গায়ত্রী, মাসের মধ্যে মার্গশীর্ষ (অগ্রহায়ণ), ঋতুর মধ্যে বসন্ত, প্রভারকদিগের দ্যূত ও তেজস্বীদিগের তেজঃ। আমি জয়, ব্যবসায় ও সত্ত্ববানদিগের সত্ত্ব। আমি বৃষ্ণিবংশীয়দিগের মধ্যে বাসুদেব, পাণ্ডবমধ্যে ধনঞ্জয়, মুনিদিগের ব্যাস ও কবিগণের মধ্যে শুক্র। আমি শাসনকর্তাদিগের দণ্ড, জয়াভিলাষীদিগের নীতি, গোপ্য বিষয়ের মধ্যে মৌনভাব, জ্ঞানবান্‌দিগের জ্ঞান ও সকল ভূতের বীজ। হে অর্জুন! এই চরাচর ভূত আমা হইতে স্বতন্ত্র নহে; সুতরাং আমি দিব্যবিভূতির ইয়ত্তা নাই। হে পার্থ! আমি সংক্ষেপে এই বিভূতিবিস্তার (ঐশ্বর্য্যের বিস্তৃত বৃত্তান্ত) কীর্তন করিলাম; বস্তুতঃ যে যে বস্তু ঐশ্বর্য্যযুক্ত ও প্রভাববলসম্পন্ন, সেই সমস্তই আমার প্রভাবের অংশদ্বারা সম্ভূত হইয়াছে। হে অর্জুন! আমি একাংশদ্বারা বিশ্বসংসারে ব্যাপ্ত হইয়া অবস্থান করিতেছি; অতএব এক্ষণে আমার বিভূতির বিষয় পৃথকরূপে জানিবার প্রয়োজন নাই।’ “
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১১ – বিশ্বরূপদর্শন কালীপ্রসন্ন সিংহ একাদশ অধ্যায় – বিশ্বরূপদর্শন “অর্জুন কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! তুমি আমার প্রতি অনুগ্রহ প্রদর্শন করিয়া যে পরম গুহ্য আত্মা ও দেহ প্রভৃতির বিষয় কীর্তন করিলে, তদ্দ্বারা আমার ভ্রান্তি দূর হইয়াছে। হে পদ্মপলাশলোচন! আমি তোমার মুখে ভূতগণের উৎপত্তি, প্রলয় এবং তোমার অক্ষয়মাহাত্ম্য সবিস্তর শ্রবণ করিলাম। হে পুরুষোত্তম! তুমি আপনার ঐশ্বররূপের (ঈশ্বরাত্মকরূপ–ঐশ্বর্য্যযুক্তরূপ) বিষয় যেরূপ কীর্তন করিলে, তাহা আমি দর্শন লাভ করিতে অভিলাষ করি; হে যোগেশ্বর! এক্ষণে তুমি যদি আমাকে তাহা দর্শন করিবার উপযুক্ত বিবেচনা করিয়া থাক, তাহা হইলে সেই অব্যয় রূপ প্রদর্শন কর।’ “বাসুদেব কহিলেন, ‘হে অর্জুন! তুমি আমার নানাবর্ণ ও নানাপ্রকার আকারবিশিষ্ট শত শত সহস্র সহস্র রূপ প্রত্যক্ষ কর। অদ্য আমার কলেরবে আদিত্য, বসু, রুদ্র ও মরুদ্‌গণ, অশ্বিনীকুমারদ্বয়, অদৃষ্টপূর্ব অত্যাশ্চর্য্য বহুতর বস্তু-সকল দর্শন কর। হে অর্জুন! সচরাচর বিশ্ব এবং অন্য যে কিছু অবলোকন করিবার অভিলাষ থাকে, তাহাও নিরীক্ষণ কর। কিন্তু তুমি এই চক্ষু দ্বারা আমার রূপ প্রত্যক্ষ করিতে সমর্থ হইবে না; এক্ষণে আমি তোমাকে দিব্যচক্ষু প্রদান করিতেছি; তুমি তদ্দ্বারা আমার অসাধারণ যোগ অবলোকন কর।’ ” সঞ্জয় কহিলেন, “হে মহারাজ! অনন্তর মহাযোগেশ্বর হরি পার্থকে বহুমুখ ও বহুনয়নসম্পন্ন, দিব্যালঙ্কারে অলঙ্কৃত, দিব্যায়ূধধারী, দিব্য মাল্য ও অম্বরে পরিশোভিত, দিব্যগন্ধচর্চ্চিত (উত্তম গন্ধে অনুলিপ্ত), সর্বতোমুখ, অদ্ভুতদর্শন, পরম ঐশ্বর রূপ প্রদর্শন করিলেন। যদি নভোমণ্ডলে এককালে সহস্র সূর্য সমুদিত হয়, তাহা হইলে তাহার তৎকালীন তেজঃপুঞ্জের উপমা হইতে পারে। ধনঞ্জয় তখন তাঁহার দেহে বহু প্রকারে বিভক্ত, একস্থানস্থিত, সমগ্র বিশ্ব নিরীক্ষণ করিয়া সাতিশয় বিস্মিত ও পুলকিত হইলেন। পরে কৃতাঞ্জলিপুটে তাঁহাকে নমস্কার করিয়া কহিলেন, ‘হে দেব! আমি তোমার দেহমধ্যে সমস্ত দেবতা, জরায়ুজ ও অণ্ডজ প্রভৃতি সমস্ত ভূত, পদ্মাসনস্থিত ভগবান্‌ ব্রহ্মা এবং দিব্য মহর্ষি ও উরগগণ অবলোকন করিতেছি। হে বিশ্বেশ্বর! আমি তোমার বহুতর বাহু, উদর, বক্ত্র ও নেত্রসম্পন্ন অনন্ত রূপ নিরীক্ষণ করিলাম; কিন্তু ইহার আদি, অন্ত ও মধ্যে কিছুই দেখিতে পাইলাম না। আমি তোমাকে কিরীটধারী, গদাচক্রলাঞ্ছিত (গদা ও চক্রচিহ্নে চিহ্নিত), প্রদীপ হুতাশন ও সূর্যসঙ্কাশ, নিতান্ত দুর্নিরীক্ষ্য এবং অপ্রমেয় নিরীক্ষণ করিতেছি। তুমি অক্ষয়, পরব্রহ্ম, জ্ঞাতব্য বিশ্বের একমাত্র আশ্রয়, নিত্য, সনাতন-ধর্মপ্রতিপালক পরমপুরুষ। তোমার আদি নাই, মধ্য নাই ও অন্ত নাই। তুমি অনন্তবীর্য ও অনন্তবাহু; হুতাশন তোমার মুখমণ্ডলে সতত প্রদীপ্ত হইতেছে; চন্দ্র ও সূর্য তোমার নেত্র; তুমি স্বীয় তেজঃপ্রভাবে এই বিশ্বকে সন্তপ্ত করিতেছ এবং একাকী হইয়াও অন্তরীক্ষ ও সমস্ত দিগ্বলয় ব্যাপ্ত করিয়া রহিয়াছ। তোমার এই ভীষণ অত্যদ্ভুত রূপ নিরীক্ষণ করিয়া এই লোকত্রয় ব্যথিত হইতেছে। সকল সুরগণ শঙ্কিতমনে তোমার শরণাপন্ন হইতেছেন। কেহ কেহ বা ‘আমাদিগকে রক্ষা কর’ বলিয়া কৃতঞ্জলিপুটে প্রার্থনা করিতেছেন; সিদ্ধ ও মহর্ষিগণ ‘স্বস্তি’ বলিয়া তোমার স্তুতিবাদে প্রবৃত্ত হইতেছেন। রুদ্র, আদিত্য, বসু, সাধ্য, মতুৎ পিতৃগণ, গন্ধর্ব, যক্ষ, অসুর, বিশ্বদেব ও সিদ্ধগণ এবং অশ্বিনীকুমারদ্বয় সাতিশয় বিস্মিত হইয়া তোমাকে দর্শন করিতেছেন। আমি এই সমস্ত লোক-সমভিব্যাহারে তোমার বহু নয়ন ও অনেক মুখসম্পন্ন, বহু বাহু, বহু ঊরু ও বহু চরণসংযুক্ত, অনেক উদরপরিশোভিত ও বহুদংষ্ট্রাকরাল (ভীষণ দন্তসমন্বিত) আকার নিরীক্ষণ করিয়া নিতান্ত ব্যথিত হইতেছি; আমি তোমার নভোমণ্ডলস্পর্শী, বহু-বর্ণসম্পন্ন, বিবৃতানন, বিশাললোচন ও অতি প্রকাণ্ড মূর্তি সন্দর্শন করিয়া কোনক্রমেই ধৈর্য ও শান্তি অবলম্বন করিতে সমর্থ হইতেছি না। আমার অন্তঃকরণ নিতান্ত বিচলিত হইয়াছে। হে জগন্নাথ! তুমি প্রসন্ন হও, তমার কালাগ্নিসন্নিভ দংষ্ট্রাকরাল মুখমণ্ডল অবলোকন করিয়া আমার দিগ্‌ভ্রম জন্মিয়াছে; আমি কিছুতেই সুখলাভ করিতে সমর্থ হইতেছি না। “মহাবীর ভীষ্ম, দ্রোণ, কর্ণ ও ধার্ত্তরাষ্ট্রেরা অন্যান্য মহীপালগণ ও আমাদিগের যোদ্ধৃবর্গ সমভিব্যাহারে সত্বর তোমার ভয়ঙ্কর আস্য বিবরে প্রবেশ করিতেছে; তন্মধ্যে কাহার উত্তমাঙ্গ চূর্ণীকৃত এবং কেহ বা তোমার বিশাল দশনসন্ধিতে (দাঁতের ফাঁকে) সংলগ্ন হইয়াছে। যেমন নদীপ্রবাহ সাগরাভিমুখে প্রবাহিত হইয়া থাকে, তদ্রুপ এই সকল বীরপুরুষেরা তোমার অতি প্রদীপ্ত মুখমধ্যে প্রবেশ করিতেছেন। যেমন সমৃদ্ধ বেগশালী পতঙ্গসকল বিনাশের নিমিত্ত অতি প্রদীপ্ত হুতাশনমধ্যে প্রবিষ্ট হয়, তদ্রুপ এই সমস্ত লোকেরা বিনিষ্ট হইবার নিমিত্ত তোমার মুখমধ্যে প্রবেশ করিতেছে। তুমি প্রজ্বলিত মুখ বিস্তার করিয়া এই সমুদয় লোককে গ্রাস করিতেছ এবং তোমার প্রখর তেজ বিশ্বকে পরিপূর্ণ করিয়া লোক-সকলকে সন্তপ্ত করিতেছে। হে দেবাদিদেব! আমি তোমাকে নমস্কার করি; তুমি প্রসন্ন হও। আমি তোমার কোন বৃতান্তই অবগত নহি; এক্ষণে তুমি কে, তাহা কীর্তন কর; আমি তোমাকে বিদিত হইতে অভিলাষী হইয়াছি।’ “বাসুদেব বলিলেন, ‘হে অর্জুন! আমি লোকক্ষয়কারী ভয়ঙ্কর সাক্ষাৎ কালরূপী হইয়া লোক-সকলকে বিনাশ করিতে প্রবৃত্তি হয়াছি। এক্ষণে কেবল তোমা ব্যতিরেকে প্রতিপক্ষীয় বীরপুরুষ সকলেই বিনষ্ট হইবেন; অতএব তুমি যুদ্ধার্থ উদ্যুক্ত হইয়া শত্রুগণকে পরাজিত করিয়া যশোলাভ ও অতি সমৃদ্ধ রাজ্য উপভোগ কর। হে অর্জুন! আমি পূর্বেই ইহাদিগকে নিহত করিয়া রাখিয়াছি; এক্ষণে তুমি এই বিনাশের নিমিত্তমাত্র হও। হে অর্জুন! আমি দ্রোণ, ভীষ্ম, জয়দ্রথ ও কর্ণ প্রভৃতি বীরগণকে বিনষ্ট করিয়া রাখিয়াছি; তুমি ইহাদিগকে সংহার কর; ব্যথিত হইও না; অনতিবিলম্বে সংগ্রামে প্রবৃত্ত হও; তুমি অবশ্যই শত্রুদিগকে পরাজয় করিতে সমর্থ হইবে।’ ” সঞ্জয় কহিলেন, “তখন অর্জুন কম্পিতকলেরবে ও কৃতাঞ্জলিপুটে কৃষ্ণকে নমস্কার করিয়া ভীতমনে ও গদ্‌গদ্‌বচনে কহিলেন, “বাসুদেব! তোমার নাম কীর্তন করিলে সকলে যে নিতান্ত হৃষ্ট ও একান্ত অনুরক্ত হইয়া থাকে, সিদ্ধগণ যে তোমাকে নমস্কার করিয়া থাকেন এবং রাক্ষসেরা যে ভীত হইয়া চতুর্দিকে পলায়ণ করিয়া থাকে, তাহা যুক্তিযুক্ত। তুমি ভগবান্‌ ব্রহ্মা অপেক্ষা গুরুতর ও জগতের আদিকর্তা এবং ব্যক্ত ও অব্যক্তের মূলকারণ অবিনাশী ব্রহ্ম; এই নিমিত্তই সকলে তোমাকে নমস্কার করিয়া থাকে। তুমি আদিদেব, পুরাতন পুরুষ ও বিশ্বের একমাত্র বিধান (আধার); তুমি বেত্তা (সর্বজ্ঞ), বেদ্য (জ্ঞেয়) ও পরম তেজ; হে অনন্তমূর্তি! তুমি এই বিশ্বের সর্বত্রই বিরাজমান আছ। তুমি বায়ু, যম, অগ্নি, বরুণ, শশাঙ্ক (চন্দ্র), প্রজাপতি ও প্রপিতামহ (ব্রহ্মা)। হে সর্বেশ্বর! আমি তোমাকে সহস্র সহস্রবার নমস্কার করি; আমি তোমার সম্মুখে নমস্কার করি; আমি তোমার পশ্চাতে নমস্কার করি; আমি তোমার চতুর্দিকেই নমস্কার করি। তুমি অনন্তবীর্য ও অমিতপরাক্রমসম্পন্ন; তুমি সমুদয় বিশ্বে ব্যাপ্ত রহিয়াছ; এই নিমিত্ত সকলে তোমাকে সর্বস্বরূপ বলিয়া কীর্তন করিয়া থাকে। আমি তোমাকে মিত্র বিবেচনা করিয়া ‘হে কৃষ্ণ! এ যাদব! হে সখা!’ বলিয়া যে সম্বোধন করিয়াছি এবং তুমি একাকীই থাক বা বন্ধুজনসমক্ষেই অবস্থান কর, বিহার, শয়ন, উপবেশন ও ভোজন সময়ে তোমাকে যে উপহাস করিবার নিমিত্ত তিরস্কার করিয়াছি, এক্ষণে তুমি সেই সকল ক্ষমা কর; আমি তোমার মহিমা অবগত না হইয়া প্রমাদ বা প্রণয়পূর্বক ঐরূপ ব্যবহার করিতাম। তুমি স্থাবরজঙ্গমাত্মক জগতের পিতা, পূজ্য ও গুরু, ত্রিলোকমধ্যে তোমা অপেক্ষা সমধিক বা তোমার তুল্য প্রভাবসম্পন্ন আর কেহই নাই; অতএব আমি দণ্ডবৎ পতিত হইয়া তোমায় প্রণাম করিয়া প্রসণ্ন করিতেছি; যেমন পিতা পুত্রের, মিত্র মিত্রের ও স্বামী প্রিয়তমার অপরাধ সহ্য করিয়া থাকেন, সেইরূপ তুমিও আমার অপরাধ মার্জনা করিবে, তাহাতে সন্দেহ নাই। আমি তোমার অদৃষ্টপূর্ব (যাহা পূর্বে কখনও দেখা যায় নাই, তদ্রুপ) রূপ নিরীক্ষণ করিয়া নিতান্ত সন্তুষ্ট হইয়াছি; কিন্তু আমার অন্তঃকরণে ভয়সঞ্চার হইতেছে। হে কৃষ্ণ! তুমি প্রসন্ন হইয়া পূর্বরূপ ধারণ ও আমাকে প্রদর্শন কর, আমি তোমার কিরীটসমলঙ্কৃত গদা-চক্রলাঞ্ছিত সেই চতুর্ভূজ মূর্তি অবলোকন করিতে ইচ্ছা করি।’ “বাসুদেব কহিলেন, ‘হে অর্জুন! আমি প্রসন্ন হইয়া যোগমায়া-প্রভাবে তোমাকে তেজোময় অনন্ত বিশ্বরূপ পরম রূপ প্রদর্শন করিয়াছি; তোমা ব্যতিরেকে আর কেহই ইহা পূর্বে নিরীক্ষণ করেন নাই। তোমা ব্যতিরেকে মনুষ্যলোকে আর কেহই বেদাধ্যয়ন, যজ্ঞানুষ্ঠান, দান, ক্রিয়াকলাপ ও অতি কঠোর তপস্যা দ্বারা আমার ঈদৃশ রূপ অবলোকন করিতে সমর্থ হয়েন না। তুমি ইহা নয়নগোচর করিয়া ব্যথিত ও বিমোহিত হইও না; এক্ষনে ভয় পরিত্যাগপূর্বক প্রীতমনে পুনরায় আমার পূর্বরূপ প্রত্যক্ষ কর।’ ” সঞ্জয় কহিলেন, “এই বলিয়া বাসুদেব নিতান্ত ভীত অর্জুনকে পুনরায় স্বকীয় সৌম্যমূর্তি প্রদর্শনপূর্বক আশ্বাস প্রদান করিলেন। “তখন অর্জুন কৃষ্ণকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, ‘হে জনার্দন! আমি এক্ষণে তোমার প্রশান্ত মানুষ-মূর্তি নিরীক্ষণ করিয়া প্রকৃতিস্থ হইলাম।’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! তুমি আমার যে নিতান্ত দুর্নিরীক্ষ্য মূর্তি অবলোকন করিলে, দেবগণ উহা নেত্রগোচর করিবার নিমিত্ত নিয়ত অভিলাষ করিয়া থাকেন। কিন্তু কেহই বেদাধ্যয়ন, দান, তপঃ ও যজ্ঞানুষ্ঠান দ্বারা আমার ঐ মূর্তি প্রত্যক্ষ করিতে সমর্থ হয় না; অনন্যসাধারণ ভক্তিপ্রদর্শন করিলেই আমাতে এইরূপে জ্ঞাত হইতে পারে এবং আমাকে দর্শন ও আমাতে প্রবেশ করিতে সমর্থ হয়। হে অর্জুন! যে ব্যক্তি আমার কর্মানুষ্ঠান করে, যে আমার ভক্ত ও একান্ত অনুরক্ত, যে পুত্র-কলত্র প্রভৃতি পরিবারের সহিত আসক্তিরহিত, যাহার কাহারও সহিত বিরোধ নাই এবং আমিই যাহার পরমপুরুষার্থ, সেই ব্যক্তিই আমাকে প্রাপ্ত হইয়া থাকে।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১২ – ভক্তিযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ দ্বাদশ অধ্যায় – ভক্তিযোগ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! যাহারা ত্বদ্‌গতচিত্তে (অনন্যমনে–একমাত্র ভগবানে মন রাখিয়া) তোমার উপাসনা করে এবং যাহারা কেবল অক্ষয় ও অব্যক্ত ব্রহ্মের আরাধনা করিয়া থাকে, এই উভয়বিধ লোকের মধ্যে কাহারা শ্রেষ্ঠ যোগী বলিয়া নির্দিষ্ট হয়?’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! যাহারা ত্বদ্‌গতচিত্তে (অনন্যমনে–একমাত্র ভগবানে মন রাখিয়া) তোমার উপাসনা করে এবং যাহারা কেবল অক্ষয় ও অব্যক্ত ব্রহ্মের আরাধনা করিয়া থাকে, এই উভয়বিধ লোকের মধ্যে কাহারা শ্রেষ্ঠ যোগী বলিয়া নির্দিষ্ট হয়?’ “বাসুদেব কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! যাহারা আমার প্রতি নিতান্ত অনুরক্ত ও নিবিষ্টমনা হইয়া পরম ভক্তিসহকারে আমার উপাসনা করিয়া থাকে, তাহারাই আমার মতে প্রধান যোগী; আর যাহারা সর্বত্র সমদৃষ্টিসম্পন্ন, সর্বভূতে হিতানুষ্ঠাননিরত ও জিতেন্দ্রিয় হইয়া অক্ষয়, অনির্দেশ্য (নির্দেশের অতীত–‘ইহা এই’ এই প্রকার পরিচয়ের বহির্ভূত), অব্যক্ত, অচিন্তনীয়, সর্বব্যাপী, হ্রাসবৃদ্ধিহীন, কূটস্থ (হৃদয়স্থ–হৃদয়ের অন্তঃস্তরস্থ) এবং নিত্য পরব্রহ্মের উপাসনা করে, তাহারা আমাকেই প্রাপ্ত হয়। দেহাভিমানীরা অতি কষ্টে অব্যক্ত গতি লাভ করিতে সমর্থ হয়; অতএব যাহারা অব্যক্ত ব্রহ্মে আসক্তমনা হয়, তাহারা অধিততর দুঃখভোগ করিয়া থাকে; যাহারা মৎপরায়ণ হইয়া আমাকে সমস্ত কার্য সমর্পণপূর্বক একান্ত ভক্তিসহকারে আমাকেই ধ্যান ও উপাসনা করে, আমি তাহাদিগকে অচিরকালমধ্যে এই মৃত্যুর আকর সংসার-সাগর হইতে উদ্ধার করিয়া থাকি। “হে অর্জুন! তুমি আমাতে স্থিরতর রূপে চিত্ত আহিত (সংন্যস্ত) ও বুদ্ধি সন্নিবেশিত কর; তাহা হইলে পরকালে আমাতেই বাস করিতে সমর্থ হইবে। যদি আমার প্রতি চিত্ত স্থির রাখিতে না পার, তাহা হইলে আমার অনুস্মরণরূপ অভ্যাসযোগ দ্বারা আমাকে প্রাপ্ত হইতে অভিলাষ কর। যদি তদ্বিষয়েও অসমর্থ হও, তাহা হইলে তুমি আমার প্রীতিসম্পাদনার্থ ব্রত, পূজা প্রভৃতি কার্য-সকল অনুষ্ঠান করিলেও মোক্ষলাভ সমর্থ হইবে। যদি ইহাতেও অশক্ত হও, তাহা হইলে একমাত্র আমারই শরণাপন্ন হইয়া সংযতচিত্তে সকল কর্মফল পরিত্যাগ কর; কারণ, বিবেকশূন্য অভ্যাস অপেক্ষা জ্ঞান শ্রেয়স্কর; জ্ঞান অপেক্ষা ধ্যান শ্রেয়স্কর; ধ্যান অপেক্ষা কর্মফলপরিত্যাগ শ্রেয়স্কর, কর্মফল পরিত্যাগ করিলে শান্তিলাভ হয়। যে ভক্তিপরায়ণ ব্যক্তি দ্বেষশূন্য, কৃপালু, মমতাবিহীন, নিরহঙ্কার, সমদুঃখ-সুখ, ক্ষমাবান্‌, সতত প্রসন্নচিত্ত, অপ্রমত্ত, জিতেন্দ্রিয় ও দৃঢ়নিশ্চয়, যিনি আমাতেই মন ও বুদ্ধি সমর্পণ করিয়াছেন এবং সুখ ও দুঃখ সমান জ্ঞান করেন, তিনিই আমার প্রিয়; লোক-সকল যাঁহা হইতে উদ্বিগ্ন হয় না, যিনি লোকদিগকে উদ্বিগ্ন করেন না এবং যিনি অনুচিত হর্ষ, অমর্ষ, ভয় ও উদ্বেগশূন্য, তিনি আমার প্রিয়। যিনি নিস্পৃহ, শুচি, দক্ষ, পক্ষপাতরহিত ও আধিশূন্য এবং যিনি সকাম কর্মসকল পরিত্যাগ করিয়াছেন, তিনিই আমার প্রিয়। যিনি শোক, হর্ষ, দ্বেষ, আকাঙ্খা ও পূণ্য-পাপ পরিত্যাগ করিয়া ভক্তিমান্‌ হয়েন, তিনিই আমার প্রিয়। যিনি সর্বসঙ্গ পরিত্যাগপূর্বক শত্রু ও মিত্র, মান ও অপমান, শীত ও উষ্ণ, সুখ ও দুঃখ, নিন্দা ও প্রশংসা তুল্যরূপ বিবেচনা করিয়া থাকেন, যৎকিঞ্চিত লাভে সন্তুষ্ট হয়েন, কোন স্থলেই প্রতিনিয়ত বাস করেন না এবং স্থিরমতি ও স্থিরভক্তিসম্পন্ন হইয়াছেন, তিনিই আমার প্রিয়। যিনি মৎপরায়ণ হইয়া পরম শ্রদ্ধাসহকারে উক্ত প্রকার ধর্মরূপ অমৃত পান করেন, তিনিই আমার প্রিয়।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১৩ – ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ ত্রয়োদশ অধ্যায় – ক্ষেত্র-ক্ষেত্রজ্ঞযোগ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! আমি প্রকৃতি, পুরুষ, ক্ষেত্র, ক্ষেত্রজ্ঞ, জ্ঞান ও জ্ঞেয়, এই কয়েকটি বিষয় শ্রবণ করিতে অভিলাষ করি।’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! এই শরীরই ক্ষেত্র বলিয়া অভিহিত হয়; যিনি ইহা বিদিত হইয়াছেন, তিনি ক্ষেত্রজ্ঞ; আমি সকল ক্ষেত্রেরই ক্ষেত্রজ্ঞ; ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের যে বৈলক্ষণ্য-জ্ঞান (বিশেষ ধারণা), তাহাই আমার অভিপ্রেত যথার্থ জ্ঞান। এক্ষণে ক্ষেত্র যে প্রকার ধর্মবিশিষ্ট, যে সমস্ত ইন্দ্রিয়বিকারযুক্ত, যেরূপে প্রকৃতি-পুরুষের সংযোগে উদ্ভূত হয়, যেরূপে স্থাবরজঙ্গমাদিভেদ বিভিন্ন হয়, স্বরূপতঃ যেরূপ এবং যে প্রকার প্রভাবসম্পন্ন, তাহা সংক্ষেপে কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। বশিষ্ঠ প্রভৃতি ঋষিগণ হেতুবিশিষ্ট নির্ণীতার্থ (যাহার অর্থ নির্ণীত হইয়াছে) বহুবিধ বেদ, তটস্থলক্ষণ (কল্পিত নিদর্শনে প্রকৃত নির্ণয়) ও স্বরূপলক্ষণ (সহজ পরিচয়) দ্বারা উহা নিরূপিত করিয়াছেন। পঞ্চমহাভূত, অহঙ্কার, বুদ্ধি, মূল প্রকৃতি, একাদশ ইন্দ্রিয়, পাঁচ ইন্দ্রিয়বিষয়, ইচ্ছা, দ্বেষ, সুখ, দুঃখ, শরীর, জ্ঞানাত্নিকা মনোবৃত্তি ও ধৈর্য্য–এই কয়েকটি ক্ষেত্রধর্ম। হে অর্জুন! উক্ত ধর্মবিশিষ্ট ইন্দ্রিয়াদি বিকারশালী ক্ষেত্র সংক্ষেপে কীর্তন করিলাম। অমানিতা, অদাম্ভিকতা, অহিংসা, ক্ষমা, আর্জব, আচার্য্যোপাসনা, শৌচ, স্থৈর্য্য, আত্মসংযম, বিষয়বৈরাগ্য, নিরহঙ্কারিতা এবং জন্ম, মৃত্যু, জরা, ব্যাধি, দুঃখ ও দোষের বারংবার সমালোচনা, প্রীতিত্যাগ এবং পুত্র, কলত্র ও গৃহাদির প্রতি অনাসক্ত এবং ইষ্ট ও অনিষ্টাপাতে সমচিত্ততা, আমার প্রতি অব্যভিচারিণী (অনন্যা), ভক্তি, নির্জনে অবস্থান, জনসমাজে বিরাগ, আত্মজ্ঞানপরায়ণতা এবং তত্ত্বজ্ঞানার্থদর্শন (যথার্থ তত্ত্বজ্ঞানে দৃষ্টি), ইহাই জ্ঞান; ইহার বিপরীত অজ্ঞান। “এক্ষণে জ্ঞেয় বিষয় কীর্তন করি, শ্রবণ কর। উহা বিদিত হইলে লোকে মোক্ষ প্রাপ্ত হয়। অনাদি ও নির্বিশেষস্বরূপ ব্রহ্মই জ্ঞেয়; তিনি সৎও নহেন, অসৎও নহেন; সর্বত্রই তাহার কর, চরণ, কর্ণ, চক্ষু, মস্তক ও মুখ বিরাজিত আছে। তিনি সকলকে আবৃত করিয়া (সমস্ত ব্যাপিয়া) অবস্থান করিতেছেন। তিনি ইন্দ্রিয়বিহীন, কিন্তু সমস্ত ইন্দ্রিয় ও রূপ, রস প্রভৃতি ইন্দ্রিয়ের গুণ সকল প্রকাশ করেন; তিনি আসক্তিশূন্য ও সকল বস্তুর আধার; তিনি নির্গুণ, কিন্তু সর্বগুণপালক (সকল গুণের পোষক); তিনি চরাচর এবং সকল ভূতের অন্তরে ও বহির্ভাগে অবস্থান করিতেছেন। তিনি অতি সূক্ষ্মত্ব প্রযুক্ত অবিজ্ঞেয়; তিনি অতি সন্নিকৃষ্ট ও দূরবর্তী; তিনি ভূতমধ্যে অবিভক্ত থাকিয়া বিভক্তের ন্যায় অবস্থান করিতেছেন। তিনি ভূতদিগের ভর্তা (প্রভু–পালক), তিনি প্রলয়কালে সমুদয় গ্রাস করেন, সৃষ্টিকালে নানা রূপ পরিগ্রহ করিয়া উৎপন্ন হইয়া থাকেন। তিনি জ্যোতিষ্কমণ্ডলীর জ্যোতি ও অন্ধকারের অতীত; তিনি জ্ঞান, তিনি জ্ঞেয়, তিনি জ্ঞানপ্রাপ্য। তিনি সকলের হৃদয়ে অবস্থান করিতেছেন। হে অর্জুন! আমি তোমার নিকট ক্ষেত্র, জ্ঞান ও জ্ঞেয়, এই তিনটি সংক্ষেপে কীর্তন করিলাম। আমার ভক্তগণ ইহা অবগত হইয়া আমার ভাব হৃদয়ে বদ্ধমূল করিতে সমর্থ হয়। “প্রকৃতি ও পুরুষ উভয়ই অনাদি; দেহ ও ইন্দ্রিয়াদি বিকার এবং সুখ-দুঃখাদি গুণ-সমুদয় প্রকৃতি হইতে সমুদ্ভূত হইয়াছে। শরীর ও ইন্দ্রিয়গণের কর্তৃত্ব-বিষয়ে প্রকৃতি এবং সুখ-দুঃখ-ভোগ -বিষয়ে পুরুষই কারণ বলিয়া নির্দিষ্ট হইয়াছেন। পুরুষ দেহে অধিষ্ঠান করিয়া তজ্জনিত সুখ-দুঃখ ভোগ করেন। ইন্দ্রিয়গণের সহিত তাঁহার সম্পর্কই সৎ ও অসৎ যোনিতে জন্মগ্রহণের একমাত্র কারণ তিনি এই দেহে বর্তমান থাকিয়াও দেহ হইতে ভিন্ন; কারণ, তিনি সাক্ষিস্বরূপ, অনুগ্রাহক, বিধানকর্তা, প্রতিপালক, মহেশ্বর ও অন্তর্যামী। যে ব্যক্তি এইরূপে পুরুষ ও সমগ্র গুণের সহিত প্রকৃতিকে অবগত হয়েন, তিনি শাস্ত্রসম্মত পথ (বিধিনিষেধ) অতিক্রম করিলেও মুক্তিলাভ করিয়া থাকেন। কেহ কেহ ধ্যান ও মন দ্বারা দেহমধ্যে আত্মাকে সন্দর্শন করে; কেহ কেহ বা প্রকৃতি-পুরুষের বৈলক্ষণ্যরূপ যোগ দ্বারা, কেহ কেহ বা কর্মযোগ দ্বারা তাঁহাকে নিরীক্ষণ করিতে সমর্থ; কেহ কেহ বা আত্মাকে বিদিত না হইয়া অন্যের নিকট উপাসনায় প্রবৃত্ত হয়, সেই সমস্ত শ্রুতিপরায়ণ ব্যক্তিরা মৃত্যুকে অতিক্রম করিয়া থাকে। হে অর্জুন! ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের সংযোগে স্থাবরজঙ্গমাত্মক সমুদয় পদার্থই উৎপন্ন হয়; সেই সমস্ত পদার্থ বিনাশ প্রাপ্ত হইলেও ঈশ্বর কদাচ বিনষ্ট হয়েন না; তিনি সকল ভূতে নির্বিশেষরূপে (তুল্যভাবে) অবস্থান করিতেছেন। যিনি পরমেশ্বরকে ঐরূপ দেখেন, তিনি যথার্থই দেখিয়া থাকেন। লোক-সকল সর্বভূতে সমভাবে অবস্থিত ঈশ্বরকে নিরীক্ষণ করিলে অবিদ্যা দ্বারা আত্মাকে বিনষ্ট করে না; এই নিমিত্ত মোক্ষপদ প্রাপ্ত হয়। প্রকৃতি সর্বপ্রকার কর্মসম্পাদন করেন, কিন্তু আত্মা স্বয়ং কোন কর্ম করেন না; যিনি ইহা সন্দর্শন করিয়াছেন, তিনি সম্যগ্‌দর্শী। যখন লোকে একমাত্র প্রকৃতিতে অবস্থিত ভূতসকলের ভিন্ন ভাব প্রত্যক্ষ করে, তখন সেই প্রকৃতি হইতেই পূর্ণব্রহ্ম প্রাপ্ত হইয়া থাকে। এই অব্যয় পরমাত্মা দেহে অবস্থান করিলেও অনাদিত্ব নির্গুণত্বপ্রযুক্ত কোন ধর্মানুষ্ঠান করেন না এবং কোন প্রকার কর্মফল দ্বারাও কদাচ লিপ্ত হয়েন না। যেমন আকাশ সকল পদার্থে অবস্থান করিলেও কোন পদার্থ দ্বারা উপলিপ্ত হয় না, তদ্রুপ আত্মা সকল দেহে অবস্থান করিলেও দৈহিক গুণ-দোষ দ্বারা কখনই লিপ্ত হয়েন না। হে অর্জুন! যেমন সূর্য একমাত্র হইলেও সমস্ত বিশ্বকে সুপ্রকাশিত করেন, তদ্রুপ একমাত্র আত্মা সমস্ত দেহ প্রকাশিত করিয়া থাকেন। যাহারা জ্ঞানচক্ষু দ্বারা ক্ষেত্র ও ক্ষেত্রজ্ঞের অন্তর (প্রভেদ) এবং ভৌতিক প্রকৃতি হইতে মোক্ষোপায় বিদিত হয়েন, তাঁহারা পরমপদ প্রাপ্ত হইয়া থাকেন।’ “
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১৪ – গুণত্রয়বিভাগযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ চতুর্দশ অধ্যায় – গুণত্রয়বিভাগযোগ “ভগবান বলিলেন, ‘হে অর্জুন! আমি পুনরায় উৎকৃষ্ট জ্ঞান কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। মহর্ষিগণ ইহা অবগত হইয়া দেহান্তে মোক্ষলাভ করিয়া থাকেন এবং ইহা আশ্রয় করিলে আমার সারূপ্য প্রাপ্য হইয়া সৃষ্টিকালেও জন্মগ্রহণ করেন না ও প্রলয়কালেও ব্যথিত হয়েন না! হে অর্জুন! মহাপ্রকৃতি আমার গর্ভাধানস্থান; আমি তাহাতে সমস্ত জগতের বীজ নিক্ষেপ করিয়া থাকি; তাহাতেই ভূতসকল উৎপন্ন হয়। সমস্ত যোনিতে যে সকল স্থাবরজঙ্গমাত্মক মূর্তি সম্ভূত হয়, মহৎ প্রকৃতি সেই মূর্তি-সমুদয়ের যোনি এবং আমি বীজপ্রদ পিতা। প্রকৃতি-সম্ভূত স্বত্ত্ব, রজঃ ও তম এই তিনটি গুণ দেহের অভ্যন্তরে অব্যয় দেহীকে আশ্রয় করিয়া আছে। তন্মধ্যে সত্ত্ব-গুণ নির্মলত্ব প্রযুক্ত নিতান্ত ভাস্বর (উজ্জ্বল) ও নিরুপদ্রব; এই নিমিত্ত উহা দেবীকে সুখী ও জ্ঞানসম্পন্ন করে। রজোগুণ অনুরাগাত্মক এবং অভিলাষ ও আসক্তি হইতে সমুদ্ভূত; উহা দেবীকে কর্মে নিবন্ধ করিয়া রাখে। সত্ত্বগুণ প্রাণীগণকে সুখে মগ্ন, রজোগুণ কর্মে সংসক্ত এবং তমোগুণ জ্ঞানকে তিরোহিত করিয়া প্রমাদের বশীভূত করে। সত্ত্বগুণ রজঃ ও তমকে, রজোগুন সত্ত্ব ও তমকে, তমোগুণ রজঃ ও সত্ত্বকে অভিভূত করিয়া উদ্ভূত হইয়া থাকে। যখন সত্ত্বগুণ পরিবর্দ্ধ্বিত হয়, তখন এই দেহে সমুদয় ইন্দ্রিয় দ্বারা জ্ঞানরূপ প্রকাশ জন্মে। রজোগুণ প্রবৃদ্ধ হইলে লোভ, প্রবৃদ্ধি, কর্মারম্ভ, স্পৃহা ও অশান্তির সঞ্চার হইয়া থাকে। তমোগুণ প্রবৃদ্ধ হইলে অপ্রকাশ, অপ্রবৃত্তি, প্রমাদ ও মোহ জন্মিয়া থাকে। সত্ত্বগুণ পরিবর্দ্ধিত হইলে যদি কেহ কলেরব পরিত্যাগ করে, সে হিরণ্যগর্ভোপাসকদিগের (ব্রহ্মার উপাসকগণের) প্রকাশময় লোকসকল প্রাপ্ত হয়। রজোগুণ পরিবর্দ্ধিত হইলে যদি কাহারও মৃত্যু হয়, তাহা হইলে কর্মাসক্ত মনুষ্যযোনিতে তাহার জন্ম হইয়া থাকে; আর যদি কেহ তমোগুণ পরিবর্দ্ধিত হইলে দেহ ত্যাগ করে, তাহা হইলে তাহার পশ্বাদিযোনিতে জন্ম হয়। সাত্ত্বিক কর্মের ফল সুনির্মল সাত্ত্বিক সুখ; রাজস কর্মের ফল দুঃখ এবং তামস কর্মের ফল অজ্ঞান। সত্ত্ব হইতে জ্ঞান, রজ হইতে লোভ এবং তম হইতে প্রমাদ, মোহ ও অজ্ঞান সমুত্থিত হইয়া থাকে। সাত্ত্বিক লোক ঊর্দ্ধে ও রাজসিক লোক মধ্যে অবস্থান করেন এবং জঘন্য-গুণসঞ্জাত (নিন্দিত গুণ হইতে জাত) প্রমাদ-মোহাদির বশীভূত তামসিক লোক অধোগতি লাভ করিয়া থাকে। মানব বিবেকী হইয়া গুণসকলকে সমস্ত কার্যের কর্তা বলিয়া নিরীক্ষণ করিলে এবং গুণ হইতে অতিরিক্ত আত্মাকে অবগত হইলে ব্রহ্মত্ব প্রাপ্ত হইয়া থাকে। দেহী দেহসমুদ্ভূত এই তিনটি গুণ অতিক্রম করিয়া জন্ম-মৃত্যু-জরা-জনিত দুঃখ-পরস্পরা হইতে পরিত্রাণ লাভ করিয়া মোক্ষ প্রাপ্ত হয়।’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে বাসুদেব! মনুষ্য কোন্‌ সকল চিহ্ন ও কিরূপ আচারসম্পন্ন হইলে এই তিনটি গুণ অতিক্রম করিতে সমর্থ হয়?’ “বাসুদেব কহিলেন, ‘হে অর্জুন! যিনি প্রকাশ, প্রবৃত্তি ও মোহ স্বতঃ-প্রবৃত্ত হইলে দ্বেষ করেন না, যিনি উদাসীনের ন্যায় আসীন (স্থির) হইয়া সুখ-দুঃখাদি গুণকার্য দ্বারা বিচলিত হয়েন না, প্রত্যুত (বাস্তবিক) গুণসকল স্বকার্যেই ব্যাপৃত আছে, তৎসমুদয়ের সহিত আমার কোন সংস্রব নাই, এইরূপ বিবেচনা করিয়া ধৈর্য অবলম্বন করিয়া থাকেন, যিনি সমদুঃখসুখ, আত্মনিষ্ঠ ও ধীমান্‌, যিনি লোষ্ট্র, প্রস্তর ও কাঞ্চন সমদৃষ্টিতেই দর্শন করেন, যাঁহার প্রিয় ও অপ্রিয় উভয়ই একরূপ, যিনি আত্মনিন্দা, আত্মপ্রশংসা, মান ও অভিমান এবং শত্রু ও মিত্র তুল্যরূপই বিবেচনা করিয়া থাকেন আর যিনি সর্বকর্মত্যাগী (দৃষ্ট ও অদৃষ্টফলজনক কর্মবিষয়ে উদ্যমপরিত্যাগী), তিনিই গুণাতীত। যে ব্যক্তি অসাধারণ ভক্তিযোগ সহকারে আমাকে সেবা করেন, তিনি উক্ত সমস্ত গুণ অতিক্রম করিয়া মোক্ষলাভে সমর্থ হয়েন। হে অর্জুন! আমি ব্রহ্ম, নিত্য, মোক্ষ, শাশ্বত ধর্ম ও অখণ্ড সুখের আস্পদ।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১৫ – পুরুষোত্তমযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ পঞ্চদশ অধ্যায় – পুরুষোত্তমযোগ “ভগবান্‌ বলিলেন, ‘হে অর্জুন! সংসাররূপ এক অব্যয় অশ্বত্থ (সংসারকে অশ্বত্থবৃক্ষে রূপক করা হইয়াছে। ‘শ্ব’ শব্দের অর্থ পরবর্তী প্রভাতকাল। ইহার সহিত স্থিতিবোধক ‘খ’ শব্দযোগে সংসারের অল্পকালস্থায়িত্ব নির্ণীত হইয়াছে; তাহার সহিত আবার অভাবার্থ ‘অ’ যোগ হওয়ায় নিষ্কর্ষার্থ হইয়াছে–অতটুকু অল্পকালও যাহার স্থায়িত্ব নাই। বস্তুতঃ সংসার সেইরূপই ক্ষণভঙ্গুর।) বৃক্ষ আছে, ঊর্দ্ধে উহার মূল এবং অধোদিকে উহার শাখা; বেদসমুদয় উহার পত্র; যিনি এই অশ্বত্থবৃক্ষ বিদিত হইয়াছেন, তিনি বেদবেত্তা। ঐ বৃক্ষের শাখা অধঃ ও ঊর্দ্ধদেশে বিস্তীর্ণ হইয়াছে, উহা সত্ত্বাদিগুণদ্বারা পরিবর্দ্ধিত হইতেছে এবং রূপ, রস প্রভৃতি বিষয়সকল উহার পত্র বলিয়া নির্দিষ্ট হইয়াছে। ঐ বৃক্ষের ধর্মাধর্মরূপ কর্মপ্রসূতি (কার্য্যপরস্পরা) সকল অধঃপ্রদেশে জীবলোকে বিস্তীর্ণ হইতেছে। এই বৃক্ষের রূপ নিরীক্ষিত (উপলব্ধ–জ্ঞানের বিষয়ীভূত) হয় না; ইহার আদি নাই, অন্ত নাই এবং ইহা কিরূপে অবস্থান করিতেছে, তাহাও অবগত হওয়া যায় না। এই বদ্ধমূল অশ্বত্থবৃক্ষ সুদৃঢ় নির্মমত্বরূপ (মমতাশূন্যরূপ) শস্ত্রদ্বারা ছেদন করিয়া উহার মূলীভূত বস্তু অনুসন্ধান করিবে। উহা প্রাপ্ত হইলে পুনরায় প্রত্যাবৃত্ত হইতে হয় না। ‘যাঁহা হইতে এই চিরন্তনী (অনন্তকালস্থায়ী) সংসারপ্রবৃত্তি বিস্তৃত হইয়াছে, আমি সেই আদিপুরুষের শরণাপন্ন হই,’ এই বলিয়া তাঁহার অনুসন্ধান করিয়ে হইবে। যাঁহারা অভিমান, মোহ ও পুত্রকলত্রাদির প্রতি আসক্তি পরিত্যাগ করিয়াছেন এবং সুখ ও দুঃখ হইতে বিমুক্ত হইয়াছেন, সেই সমস্ত আত্মজ্ঞানপরায়ণ, নিষ্কাম, অবিদ্যাশূন্য মহাত্মারা অব্যয় পদ প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। যাহা প্রাপ্ত হইলে পুনর্বার প্রতিনিবৃত্ত হইতে হয় না; চন্দ্র, সূর্য্য ও হুতাশন যাঁহাকে প্রকাশিত করিতে সমর্থ হয়েন না; তাহাই আমার পরম পদ। এই জীবলোকে সনাতন জীব আমারই অংশ, ইনি প্রকৃতিবিলীন (প্রকৃতিতে লয়প্রাপ্ত) পঞ্চ ইন্দ্রিয় ও মনকে আকর্ষণ করেন। যেমন বায়ু কুসুমাদি হইতে গন্ধ গ্রহণপূর্বক গমন করিয়া থাকে, সেইরূপ যখন জীব শরীর লাভ ও শরীর পরিত্যাগ করে, তখন পূর্বদেহ হইতে ইন্দ্রিয়সমুদয় গ্রহণপূর্বক গমন করিয়া থাকে। এই জীব শ্রোত্র (কর্ণ), চক্ষু, ত্বক্‌, রসনা, ঘ্রাণ ও মনোমধ্যে অধিষ্ঠিত হইয়া বিষয়সমুদয় উপভোগ করে। বিমূঢ় ব্যক্তিরা দেহান্তরগামী, দেহাবস্থিত বা রূপাদি বিষয়ের উপভোগে লিপ্ত, ইন্দ্রিয়যুক্ত জীবকে কদাচ নিরীক্ষণ করিতে সমর্থ হয় না; জ্ঞানচক্ষুঃসম্পন্ন মহাত্মারাই উহা অবলোকন করিয়া থাকেন। যোগী ব্যক্তিগণ যত্নবান হইয়া দেহে অবস্থিত জীবকে সন্দর্শন করিতে পারে না। চন্দ্র, অনল ও নিখিল ভুবনবিকাশী (বিশ্বের প্রকাশকর) সূর্য্য আমারই তেজে তেজস্বী। আমি ওজঃপ্রভাবে (তেজোযুক্ত শক্তি প্রভাবে) পৃথিবীতে প্রবেশ করিয়া ভূতসকলকে ধারণ এবং রসাত্মক চন্দ্র হইয়া ওষধিসমুদয়ের (বৃক্ষলতাদি) পুষ্টিসাধন করি। আমি জঠরাগ্নি (উদরস্থ পাকাগ্নি) হইয়া প্রাণ ও অপান বায়ুসমভিব্যাহারে দেহমধ্যে প্রবেশপূর্বক চতুর্বিধ ভক্ষ্য পাক করিয়া থাকি। ” ‘আমি সকলের হৃদয়ে প্রবেশ করিয়া আছি, আমা হইতেই স্মৃতি, জ্ঞান ও উভয়ের অভাব জন্মিয়া থাকে। আমি চারিবেদদ্বারা বিদিত হই এবং আমি বেদান্তকর্তা ও বেদবেত্তা। ক্ষর ও অক্ষর এই দুইটি পুরুষ লোকে প্রসিদ্ধ আছে, তন্মধ্যে সমুদয় ভূতই ক্ষর ও কূটস্থ পুরুষ অক্ষর। ইহা ভিন্ন অন্য একটি উত্তম পুরুষ আছেন, তাঁহার নাম পরমাত্মা; এই অব্যয় পরমাত্মা ত্রিলোকমধ্যে প্রবেশ করিয়া সমস্ত প্রতিপালন করিতেছেন। আমি ক্ষর ও অক্ষর, এই দুই প্রকার পুরুষ অপেক্ষা উত্তম, এই নিমিত্ত বেদ ও লোকমধ্যে পুরুষোত্তম বলিয়া কীর্তিত হইয়া থাকি। যে ব্যক্তি মোহশূন্য হইয়া আমাকে পুরুষোত্তম বলিয়া বিদিত হয়, সেই সর্ববেত্তা, সর্বপ্রকারে আমার আরাধনা করে। হে অর্জুন! আমি এই পরম গুহ্য শাস্ত্র কীর্তন করিলাম, ইহা বিদিত হইলে লোক বুদ্ধিমান ও কৃতকার্য্য হয়।’ “
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১৬ – দৈবাসুরসম্পদবিভাগযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ ষোড়শ অধ্যায় – দৈবাসুরসম্পদবিভাগযোগ “ভগবান বলিলেন, ‘হে অর্জুন! যাহারা দৈবসম্পদ্‌ লক্ষ্য করিয়া জন্মগ্রহণ করে, তাহারা অভয়, চিত্তশুদ্ধি, আত্মজ্ঞানোপায়ে (আত্মজ্ঞানসাধনে) পরনিষ্ঠা (ঐকান্তিকভাব), দান, দম, যজ্ঞ, স্বাধ্যায়, তপ, ঋজুতা, অহিংসা, সত্য, অক্রোধ, ত্যাগ, শান্তি, অখলতা, প্রাণীর প্রতি দয়া, অলোলুপতা (নির্লোভতা), মৃদুতা, হ্রী, অচপলতা (অচাঞ্চল্য), তেজ, ক্ষমা, ধৃতি, শৌচ, অদ্রোহ ও অনভিমানিতা এই ষড়বিংশতি গুণপ্রাপ্ত হইয়া তাহারা দম্ভ, দর্প, অভিমান, ক্রোধ, নিষ্ঠুরতা ও অজ্ঞানে অভিভূত হয়। দৈবসম্পদ লক্ষ্য করিয়া জন্মগ্রহণ করিয়াছ, অতএব শোক করিও না। “‘হে অর্জুন! ইহলোকের দৈব ও আসুর এই দুই প্রকার ভূত সৃষ্ট হইয়াছে; দৈব বিষয় বিস্তারিতরূপে কহিয়াছি; এক্ষণে আসুর বিষয় কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। আসুরভাব লোক সকল ধর্মে প্রবৃত্তি ও অধর্ম হইতে নিবৃত্তির বিষয় অবগত নহে; তাহাদিগের শৌচ নাই, আচার নাই ও সত্য নাই; তাহারা জগৎকে সত্য ও ধর্মাধর্ম ব্যবস্থাবর্জিত, ঈশ্বরশূন্য, ধর্মাধর্মাবাসনাবশে অনুৎপন্ন কেবল কেমহেতুক স্ত্রী-পুরুষ সম্ভূত কহে। সেই সকল অল্পবুদ্ধি লোক এইরূপ জ্ঞান আশ্রয় করিয়া মিলনচিত্ত, উগ্রকর্মা ও অহিতকারী হইয়া জগতের ক্ষয়ের নিমিত্ত সমুদ্ভূত হয়; দম্ভ, অভিমান, মদ, অশুচিব্রত (অপবিত্র কার্য্য) ও দুষ্পূরণীয় কামনা অবলম্বন এবং মোহবশতঃ অসৎ প্রতিগ্রহ করিয়া ক্ষুদ্র দেবতার আরাধনায় প্রবৃত্ত হয়; আমরণ অপরিমেয় চিন্তাকে আশ্রয় করিয়া থাকে; কামোপভোগই পরম পুরুষার্থ বলিয়া নিশ্চয় করে; শত শত আশাপাশে বদ্ধ ও কামক্রোধের বশীভূত হইয়া কামভোগার্থ অন্যায়পূর্বক অর্থসঞ্চয়ের চেষ্টা করে; আজি আমার এই মনোরথ পূর্ণ হইল ও এই মনোরথ পরিপূর্ণ হইবে, আমি এই শত্রুকে বিনাশ করিয়াছি, অন্য শত্রুকেও বিনাশ করিব, আমি ঈশ্বর, আমি ভোগী, আমি সিদ্ধ, আমি বলবান, আমি সুখী, আমি যাগ করিব, দান করিব ও আমোদ করিব, এই প্রকার অজ্ঞানে বিমোহিত, অনেকবিধ চিত্তবিভ্রম ও মোহজালে আচ্ছন্ন এবং কামভোগে আসক্ত হইয়া অতি কুৎসিত নরকে নিপতিত হয়। অহঙ্কার, বল, দর্প, কাম, ক্রোধ ও অসূয়া আশ্রয় করিয়া আপনার ও পরের দেহে আমার দ্বেষ করে এবং আপনা আপনি সম্মানিত, অহঙ্কৃত ও ধন-মান-মদে প্রমত্ত হইয়া দম্ভসহকারে অবিধিপূর্বক নামমাত্র যজ্ঞের অনুষ্ঠান করে। আমি সেই সমস্ত দ্বেষপরবশ, ক্রুর-স্বভাব, অশুভকারী নরাধমকে নিরন্তর সংসারে আসুরযোনিমধ্যে নিক্ষেপ করি। তাহারা আসুরযোনি প্রাপ্ত হইয়া আমাকে লাভ করিতে পারে না, সুতরাং অধম গতি প্রাপ্ত হইয়া থাকে। “‘কাম, ক্রোধ ও লোব, নরকের এই ত্রিবিধি দ্বার। অতএব এই তিনটি পরিত্যাগ করিবে। যে ব্যক্তি নরকের এই ত্রিবিধি দ্বার হইতে মুক্ত হইয়াছেন, তিনি আপনার কল্যাণ আচরণ করেন এবং তৎপরে পরমগতি প্রাপ্ত হয়েন। যে ব্যক্তি শাস্ত্রবিধি পরিত্যাগ করিয়া স্বেচ্ছাচারে প্রবৃত্ত হয়, সে সিদ্ধি প্রাপ্ত হয় না, সুখ প্রাপ্ত হয় না ও পরম গতি প্রাপ্ত হয় না। অতএব কার্য্যাকার্য্য-ব্যবস্থা-বিষয়ে শাস্ত্রই তোমার প্রমাণ। তুমি শাস্ত্রোক্ত কর্ম অবগত হইয়া তাহার অনুষ্ঠান কর।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১৭ – শ্রদ্ধাত্রয়বিভাগযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ সপ্তদশ অধ্যায় – শ্রদ্ধাত্রয়বিভাগযোগ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে কৃষ্ণ! যাহারা শাস্ত্রবিধি পরিত্যাগ করিয়া শ্রদ্ধাসহকারে যজ্ঞ অনুষ্ঠান করে, তাহাদের শ্রদ্ধা সাত্ত্বিক কি রাজসিক অথবা তামসিক?’ “কৃষ্ণ কহিলেন, ‘হে অর্জুন! দেহিগণের স্বাভাবিক শ্রদ্ধা তিন প্রকার;–সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক। তাহাদের বিবরণ শুন। সকলের শ্রদ্ধাই সত্ত্বগুণের অনুযায়িনী, পুরুষও সত্ত্বময়; তন্মধ্যে পূর্বে যিনি যেরূপ শ্রদ্ধাবান ছিলেন, পরেও সেইরূপ শ্রদ্ধাবান হইবেন। সাত্ত্বিক লোক দেবগণের, রাজসিকেরা যক্ষ ও রক্ষোগণের এবং তামসিকগণ ভূত ও প্রেতসমূহের পূজা করিয়া থাকে। “‘যে সকল হীনচেতাঃ ব্যক্তি দম্ভ, অহঙ্কার, কাম, রাগ ও বলসম্পন্ন হইয়া শরীরস্থ ভূতগণকে ক্লেশিত করিয়া অশাস্ত্রবিহিত ঘোরতর তপস্যা করে, তাহারা আমাকেই ক্লেশিত করিয়া থাকে। তাহাদিগকে অতিশয় ক্ররস্বভাব বলিয়া জানিবে। সকলের প্রীতিকর আহার তিন প্রকার, যজ্ঞ তিন প্রকার, তপ তিন প্রকার এবং দান তিন প্রকার; তাহাদের এই প্রভেদ শুন। আয়ুঃ, উৎসাহ, বল, আরোগ্য, সুখ ও রুচিবর্দ্ধন, রস ও স্নেহযুক্ত, দীর্ঘকাল স্থায়ী, মনোহর আহার সাত্ত্বিকদিগের প্রীতিকর। অতি কটু, অতি অম্ল, অতি লবন, অত্যুষ্ণ, অতি তীক্ষ্ণ, অতি রুক্ষ, অতি দাহী এবং দুঃখ, শোক ও রোগপ্রদ আহার রাজসিকগণের অভিলষিত এবং বহুক্ষণে পক্ক, গতরস, দুর্গন্ধ, পর্য্যুষিত, উচ্ছিষ্ট, অপবিত্র ভোজ্য তামসদিগের প্রীতিকর। “‘ফলাকাঙ্খাশূন্য ব্যক্তিরা একাগ্রমনে কেবল কেবল কর্তব্য জ্ঞানে যে অবশ্য-কর্তব্য যজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন, তাহাই সাত্ত্বিক। হে অর্জুন! ফললাভ বা মহত্বপ্রকাশের নিমিত্ত যে যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হয়ম তাহাই রাজসিক। বিধি, অন্নদান, মন্ত্র, দক্ষিণা ও শ্রদ্ধাশূন্য যজ্ঞ তামসিক বলিয়া কীর্তিত হয়। “‘দেব, দ্বিজ, গুরু ও প্রাজ্ঞ ব্যক্তির পূজা, শুচিতা, ঋজুতা, ব্রহ্মচর্য্য ও অহিংসা শারীরিক তপঃ; অভয়, সত্য, প্রিয় ও হিতকর বাক্য এবং বেদাভ্যাস বাঙ্ময় তপ; চিত্তশুদ্ধি, অক্রুরতা, মৌন, আত্মনিগ্রহ (ইন্দ্রিয়সংযম) ও ভাবশুদ্ধি মানসিক তপ। ফলকামনা পরিত্যগা করিয়া পরম শ্রদ্ধা সহকারে যে তপ অনুষ্ঠিত হয়, তাহাই সাত্ত্বিক; সৎকার, মান, পূজা, লাভ ও দম্ভ প্রকাশের নিমিত্ত অনুষ্ঠিত তপ রাজসিক, এই তপস্যা অনিয়ত (নিয়মরহিত–বিধিনিষেধের অননুমোদিত) ও ক্ষণিক। যে তপস্যা দুরাগ্রহ (দুরভিসন্ধি-প্রণোদিত) ও আত্মপীড়া দ্বারা অথবা অন্যের উৎসাদনার্থ (উচ্ছেদের জন্য) অনুষ্ঠিত হয়, তাহাই তামসিক। “‘কেবল দাতব্য জ্ঞানে দেশ, কাল ও পাত্র বিবেচনা করিয়া অনুপকারী ব্যক্তির প্রতি যে দান, তাহাই সাত্ত্বিক; প্রত্যুপকার বা স্বর্গাদির উদ্দেশে ক্লেশসহকারে যে দান অনুষ্ঠিত হয়, তাহাই রাজসিক; অনুপযুক্ত স্থানে, অনুপযুক্ত কালে ও অনুপযুক্ত পাত্রে সৎকারবর্জিত তিরস্কারসহকৃত যে দান, তাহাই তামসিক। “‘ব্রহ্মের নাম তিন প্রকার; ওঁ, তৎ ও সৎ; পূর্বে এই ত্রিবিধ নাম দ্বারা ব্রাহ্মণ, বেদ ও যজ্ঞ সৃষ্ট হইয়াছিল; এই নিমিত্ত ব্রহ্মবাদীদিগের বিধানোক্ত যজ্ঞ, দান ও তপ ওঁকার উচ্চারণপূর্বক অনুষ্ঠিত হইয়া থাকে। মুমুক্ষু ব্যক্তিগণ ফলাভিসন্ধি পরিত্যাগ করিয়া ‘তৎ’ উচ্চারণপূর্বক নানাবিধ যজ্ঞ, তপ ও দানক্রিয়ার অনুষ্ঠান করিয়া থাকেন। হে অর্জুন! অস্তিত্ব, সাধুত্ব ও মঙ্গলকর্মে সৎ শব্দ প্রযুক্ত হইয়া থাকে। যজ্ঞ, তপ ও দান এবং ঈশ্বরোদ্দেশে অনুষ্ঠিত কর্মও সৎ শব্দে অভিহিত হয়। অশ্রদ্ধাসহকৃত হোম, দান, তপস্যা ও অন্যান্য কর্ম অসৎ বলিয়া নির্দিষ্ট হয়। তৎসমুদয় ইহলোকে বা পরলোকে সফল হয় না।’”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
গীতা – অধ্যায় ১৮ – মোক্ষযোগ কালীপ্রসন্ন সিংহ অষ্টাদশ অধ্যায় – মোক্ষযোগ “অর্জুন কহিলেন, ‘মহাবাহো! আমি সন্ন্যাস ও ত্যাগের প্রকৃত তত্ত্ব পৃথকরূপে শ্রবণ করিতে অভিলাষ করি, তুমি তাহা কীর্তন কর।’ “বাসুদেব কহিলেন, ‘হে অর্জুন! পণ্ডিতেরা কাম্যকর্মের ত্যাগকেই সন্ন্যাস এবং সকল প্রকার কর্মফল ত্যাগকেই ত্যাগ কহিয়া থাকেন। কেহ কেহ কহেন, ক্রিয়াকলাপ দোষের ন্যায় পরিত্যাগ করা বিধেয়। অন্যেরা কহিয়া থাকেন, যজ্ঞ, দান ও তপস্যা এই কএকটি কার্য্য কোনরূপেই পরিত্যগা করা কর্তব্য নহে। এক্ষণে প্রকৃত ত্যাগ কিরূপ, তুমি তাহা শ্রবণ কর। তামসাদিভেদে ত্যাগ তিন প্রকার। যজ্ঞ, দান ও তপস্যা কদাচ ত্যাগ করা কর্তব্য নহে, ইহার অনুষ্ঠান করাই শ্রেয়স্কর। এই কয়েকটি কার্য্য বিবেকীদিগের চিত্তশুদ্ধির কারণ। হে পার্থ! আমার নিশ্চিত মত এই যে, আসক্তি ও কর্মফল পরিত্যাগ করিয়া এই সমস্ত কার্য্য অনুষ্ঠান করাই শ্রেয়ঃ। “‘নিত্যকর্ম পরিত্যাগ করা কর্তব্য নহে; কিন্তু মোহবশতঃ যে নিত্যকর্মত্যাগ, তাহা তামস বলিয়া পরিকীর্তিত হয়। নিতান্ত দুঃখজনক বলিয়া কায়ক্লেশ ও ভয়প্রযুক্ত যে কর্ম পরিত্যাগ করা, তাহা রাজস ত্যাগ বলিয়া অভিহিত হইয়া থাকে। রাজসত্যাগী পুরুষ ত্যাগফললাভে সমর্থ হয় না। আসক্তি ও কর্মফল পরিত্যাগ করিয়া কর্তব্যবোধে যে কর্মানুষ্ঠান, তাহা সাত্ত্বিক ত্যাগ বলিয়া উক্ত হইয়া থাকে। সত্ত্বগুণসম্পন্ন মেধাবী ও সংশয়রহিত ত্যাগী ব্যক্তি দুঃখাবহ বিষয়ে দ্বেষ ও সুখাবহ বিষয়ে অনুরাগ প্রদর্শন করেন না। দেহী নিঃশেষে সমস্ত কার্য্য পরিত্যাগ করিতে সমর্থ হয় না; কিন্তু যিনি কর্মফলত্যাগী, তাঁহাকেই ত্যাগী বলা যাইতে পারে। কর্মের ইষ্ট, অনিষ্ট, ইষ্টানিষ্ট এই ত্রিবিধ ফল অভিহিত হইয়া থাকে। যাঁহারা ত্যাগী নহেন, তাঁহারা পরলোক প্রাপ্ত হইলে ঐ সমস্ত হলে লাভ করেন। কিন্তু সন্যাসীরা উহা লাভ করিতে কদাচ সমর্থ হয়েন না। হে অর্জুন! সকল কর্মের সিদ্ধি-বিষয়ে কর্মবিধিশূন্য বেদান্তসিদ্ধান্তে শরীর, কর্তা, পৃথকবিধকরণ (বিভিন্ন উপাদান–উপকরণ), পৃথক পৃথক চেষ্টা ও দৈব এই পাঁচ প্রকার নির্দিষ্ট আছে। ন্যায্য বা অন্যায্যই, মনুষ্য কায়, মন ও বাক্য দ্বারা যে কার্য্য অনুষ্ঠান করে, এই পাঁচটিই তাহার কারণ; এই কারণ অবধারিত হইলে যে অসংস্কৃত বুদ্ধি বশতঃ নিরুপাধি আত্মার ক্ররতৃত্ব নিরীক্ষণ করে, সেই দুর্মতি কখন সাধুদর্শী নহে। যিনি আপনাকে কর্তা বলিয়া মনে করেন না, যাঁহার বুদ্ধি কার্য্যে আসক্ত হয় না, তিনি লোক-সমুদয়কে বিনষ্ট করিয়াও বিনাশ করেন না এবং তাঁহাকে বিনাশজনিত ফলভোগও করিতে হয় না। জ্ঞান, জ্ঞেয় ও পরিজ্ঞাতা (জ্ঞানের উদ্বোধক) কর্মে প্রবৃত্তিসম্পাদনের হেতু; আর কারণ, কর্ম ও কর্তা ক্রিয়ার আশ্রয় হইয়া থাকে। সাঙ্খ্য শাস্ত্রে জ্ঞান, কর্ম, ও কর্তা প্রত্যেকে সত্ত্বাদি গুণভেদে তিন প্রকার নির্দিষ্ট হইয়াছে। হে অর্জুন! আমি এক্ষণে তাহা কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। “‘লোকে যে জ্ঞান দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন ভূতগণের মধ্যে অভিন্নরূপে অবস্থিত ও অব্যয় পরমাত্মতত্ত্ব প্রত্যক্ষ করে, তাহাই সাত্ত্বিক জ্ঞান। যে জ্ঞান দ্বারা পৃথক পৃথক পদার্থ পৃথকরূপে জ্ঞাত হওয়া যায়, তাহা রাজসিক জ্ঞান আর একমাত্র প্রতিমাদিতে ঈশ্বর পূর্ণরূপে বিদ্যমান আছেন, এইরূপ অবাস্তবিক (কাল্পনিক–অপ্রকৃত) অযৌক্তিক তুচ্ছ জ্ঞান তামসিক বলিয়া অভিহিত হইয়া থাকে। “‘কর্তৃত্বাভিমান বিরহিত নিষ্কাম ব্যক্তি কর্তৃক অনুরাগ ও বিদ্বেষ পরিত্যাগপূর্বক অনুষ্ঠিত নিত্য কর্মই সাত্বিক; সকাম ও অহঙ্কারপরতন্ত্র ব্যক্তি কর্তৃক অনুষ্ঠিত বহুল আয়াসকর কর্ম রাজসিক। আর ভাবী শুভাশুভ, বিত্তক্ষয়, হিংসা ও পৌরুষ পর্য্যালোচনা না করিয়া মোহবশতঃ যে কার্য্য অনুষ্ঠিত হয়, তাহাই তামসিক। “‘অনাসক্ত, নিরহঙ্কার, ধৈর্য্য ও উৎসাহসম্পন্ন এবং সিদ্ধি ও অসিদ্ধিবিষয়ে বিকারবিরহিত কর্তাই সাত্ত্বিক; অনুরাগপরায়ণ, কর্মফলপ্রার্থী, লুব্ধপ্রকৃতি, হিংস্রক, অশুচি ও হর্ষশোকসন্বিত কর্তাই রাজসিক। আর অনবহিত (অনভিনিবিষ্ট–অসাবধান) বিবেকবিহীন, উদ্ধত, শঠ, পরাবমানী (পরের অপমানকারী), অলস, বিষাদযুক্ত ও দীর্ঘসূত্রী (চিরক্রিয়–আজ কাল করিয়া যে কার্য্যে বিলম্ব করে) কর্তাই তামসিক। “‘হে অর্জুন! গুণানুসারে বুদ্ধি ও ধৈর্য্যের ত্রিবিধ ভেদ নির্দিষ্ট হইয়া থাকে; আমি উহা সম্যকরূপে পৃথক পৃথক কীর্তন করিতেছি, তুমি তাহা শ্রবণ কর। যে বুদ্ধি দ্বারা প্রবৃত্তি, নিবৃত্তি, কার্য্য, অকার্য্য, ভয়, অভয়, বন্ধ ও মোক্ষ অবগত হওয়া যায়, তাহা সাত্ত্বিকী; যে বুদ্ধি দ্বারা ধর্ম, অধর্ম, কার্য্য ও অকার্য্য প্রকৃতরূপে অবগত হওয়া যায় না, তাহা রাজসী; আর যে বুদ্ধি অজ্ঞানান্ধকারাচ্ছন্ন (অজ্ঞানরূপ অন্ধকারে আবৃত) হইয়া অধর্মকে ধর্ম ও সমস্ত পদার্থ বিপরীতরূপে প্রতিপন্ন করে, তাহা তামসী। “‘যে ধৃতি চিত্তের একাগ্রতা নিবন্ধন জন্য বিষয় ধারণ না করিয়া মন, প্রাণ ও ইন্দ্রিয়ের কার্য্য-সমুদয় ধারণ করে, তাহা সাত্ত্বিকী। যে ধৃতি প্রসঙ্গতঃ ফললাভের অভিসন্ধি করিয়া থাকে, তাহা রাজসী। আর অবিবেচক পুরুষ যাহার প্রভাবে স্বপ্ন, ভয়, শোক, বিষাদ ও গর্ব পরিত্যাগ করিতে পারে না, তাহাই তামসী ধৃতি। “‘হে অর্জুন! যে সুখে অভ্যাস বশতঃ আসন্ত হইতে হয় এবং যাহা লাভ করিলে দুঃখের অবসান হইয়া থাকে, এক্ষণে সেই ত্রিবিধ সুখের বিষয় কীর্তন করি, শ্রবণ কর। যাহা অগ্রে বিষের ন্যায় ও পরিণামে অমৃতের ন্যায় প্রতীয়মান হয় এবং যদ্দ্বারা আত্মবিষয়িণী বুদ্ধির প্রসন্নতা জন্মে, তাহা সাত্ত্বিক সুখ; বিষয় ও ইন্দ্রিয়াদির সংযোগ বশতঃ যাহা অগ্রে অমৃততুল্য, পরিবেশে বিষতুল্য প্রতীয়মান হয়, তাহা রাজস সুখ; আর যে সুখ অগ্রে এবং পশ্চাতে আত্মার মোহ সম্পাদন করে, যাহা নিদ্রা, আলস্য ও প্রামাদ হইতে সমুত্থিত হয়, তাহা তামসিক সুখ। পৃথিবী বা স্বর্গে এই স্বাভাবিক গুণত্রয়-বিরহিত কোন প্রাণী কদাচ দৃষ্টিগোচর হয় না। এই স্বভাবপ্রভব গুণত্রয় দ্বারা ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্রদিগের কর্মসমুদয় বিভক্ত হইয়াছে। শম, দম, শৌচ, ক্ষমা, আর্জব, জ্ঞান, বিজ্ঞান ও আস্তিক্য, এই কয়েকটি ব্রাহ্মণের স্বাভাবিক কর্ম। শৌর্য্য, তেজ, ধৃতি, দক্ষতা, সমরে অপরাঙ্মুখতা, দান ও ঈশ্বরভাব এই কয়েকটি ক্ষত্রিয়দিগের স্বাভাবিক কর্ম। কৃষি, গোরক্ষণ ও বাণিজ্য এই কয়েকটি বৈশ্যের স্বাভাবিক কার্য্য এবং একমাত্র পরিচর্য্যাই শূদ্রজাতির স্বাভাবিক কার্য্য। মানুষ স্ব স্ব কর্মনিরত হইয়া সিদ্ধি লাভ করিয়া থাকে। এক্ষণে স্বকর্মনিরত ব্যক্তিদিগের যেরূপ সিদ্ধিলাভ হয়, তাহা শ্রবণ কর। যাঁহা হইতে সকলের প্রবৃতি প্রাদুর্ভূত হইতেছে, যিনি এই বিশ্বসংসারে ব্যাপ্ত হইয়া রহিয়াছেন, মনুষ্য স্বকর্ম দ্বারা তাঁহাকে অরচনা করিয়া সিদ্ধি লাভ করিয়া থাকে। সম্যক অনুষ্ঠিত পরধর্ম অপেক্ষা অঙ্গহীন স্বধর্মই শ্রেষ্ঠ; কেন না, স্বভাববিহিত কার্য্য অনুষ্ঠান করিলে দুঃখভোগ করিতে হয় না। হে অর্জুন! যেমন ধূমরাশি দ্বারা হুতাশন সমাচ্ছন্ন থাকে, তদ্রুপ সমস্ত কার্য্যই দোষ দ্বারা সংস্পৃষ্ট আছে; অতএব স্বাভাবিক কার্য্য দোষযুক্ত হইলেও কদাচ পরিত্যাগ করিবে না। আসক্তিবিবর্জিত, জিতেন্দ্রিয় ও স্পৃহাশূন্য মনুষ্য সন্ন্যাস দ্বারা সর্বকর্মনিবৃত্তিরূপ সত্ত্বশুদ্ধি প্রাপ্ত হইয়া থাকেন। হে পার্থ; সিদ্ধ পুরুষ যাহাতে ব্রহ্ম প্রাপ্ত হয়েন, এক্ষণে সেই জ্ঞাননিষ্ঠার বিষয় সংক্ষেপে কীর্তন করিতেছি, শ্রবণ কর। মনুষ্য বিশুদ্ধ বুদ্ধিসংযুক্ত হইয়া ধৈর্য্য দ্বারা বুদ্ধি সংযত করিবে; শব্দাদি বিষয়ভোগ পরিত্যাগ করিয়া রাগ ও দ্বেষ-বিরহিত হইবে; বাক্য, কায় ও মনোবুদ্ধি সংযত করিয়া বৈরাগ্য আশ্রয়, ধ্যান ও যোগানুষ্ঠানপূর্বক লঘু আহার ও নির্জনে বাস করিবে; অহঙ্কার, বল, দর্প, কাম, ক্রোধ ও পরিগ্রহ (প্রতিগ্রহ–অর্থাদি গ্রহণ) পরিত্যাগপূর্বক মমতাশূন্য হইয়া শান্তভাব অবলম্বন করিবে। এইরূপ অনুষ্ঠান করিলে তিনি ব্রহ্মে অবস্থান করিতে সমর্থ হইবেন। তিনি ব্রহ্মে অবস্থিত ও প্রসন্নচিত্ত হইয়া শোক ও লোভের বশীভূত হয়েন না; সকল প্রাণীর প্রতি সমদৃষ্টিসম্পন্ন হয়েন এবং আমার প্রতিও তাঁহার দৃঢ়ভক্তি জন্মে। তিনি ভক্তিপ্রভাবে আমার স্বরূপ ও আমার সর্বব্যাপিত্ব সম্যক অবগত হইয়া পরিণামে আমাতেই প্রবেশ করেন। লোকে আমাকে আশ্রয় করিয়া কর্মসমুদয় অনুষ্ঠান করিয়া আমারই অনুকম্পায় অব্যয় শাশ্বত পদ প্রাপ্ত হইয়া থাকে। হে অর্জুন! তুমি মনোবৃত্তি দ্বারা সমস্ত কর্ম আমাতে অবলম্বন করিয়া সতত আমাতে চিত্ত সমর্পণ কর; তাহা হইএল তুমি আমার অনুগ্রহে দুস্তর দুঃখসকল উত্তীর্ণ হইতে সমর্থ হইবে; কিন্তু যদি অহঙ্কারপরতন্ত্র হইয়া আমার বাক্য শ্রবণ না কর, তাহা হইলে নিঃসন্দেহে বিনাশ প্রাপ্ত হইবে। যদি তুমি অহঙ্কারপ্রযুক্ত ‘যুদ্ধ করিব না’। এইরূপ অধ্যবসায় করিয়া থাক, তাহা হইলে উহা নিতান্ত নিষ্ফল; কারণ, প্রকৃতিই তোমাকে যুদ্ধে প্রবৃত্ত করিবে। হে অর্জুন! তুমি মোহবশতঃ এক্ষণে যে কার্য্যে প্রবৃত্ত হইতেছ না, তোমাকে ক্ষত্রিয়সুলভ শূরতার (শৌর্য্যের–বীরত্বের) বশীভূত হইয়া তাহা অবশ্যই অনুষ্ঠান করিতে হইবে। যেমন সূত্রধার দারুযন্ত্রে আরূঢ় কৃত্রিম ভূতসকলকে ভ্রমণ করাইয়া থাকে, তদ্রুপ ঈশ্বর ভূতসকলের হৃদয়ে অবস্থান করিয়া তাহাদিগকে ভ্রমণ করাইতেছেন। এক্ষণে তুমি সকল বিষয়ে তাঁহারই শরণাপন্ন হও; তাঁহার অনুকম্পায় পরম শান্তি ও শাশ্বত স্থান প্রাপ্ত হইবে। “‘হে অর্জুন! আমি এই পরম গুহ্যজ্ঞানের বিষয় কীর্তন করিলাম, এক্ষণে ইহা সম্যক আলোচনা করিয়া যেরূপ অভিলাষ হয়, তাহার অনুষ্ঠান কর। তুমি আমার একান্ত প্রিয়; এই নিমিত্ত তোমাকে পুনরায় পরম গুহ্য হিতকর বাক্য কহিতেছি, শ্রবণ কর। তুমি আমাতে চিত্ত সমর্পণ এবং আমার প্রতি ভক্তিপরায়ণ হইয়া আমার উদ্দেশে যজ্ঞানুষ্ঠান ও আমাকে নমস্কার কর। তুমি আমার অতিশয় প্রিয়পাত্র, এই নিমিত্ত অঙ্গীকার করিতেছি, তুমি আমাকে অবশ্যই প্রাপ্ত হইবে। তুমি সমস্ত ধর্মানুষ্ঠান পরিত্যাগ করিয়া একমাত্র আমারই শরণাপন্ন হও; আমি তোমাকে সকল পাপ হইতে বিমুক্ত করিব। এক্ষণে তুমি আর শোকাকুল হইও না। “‘আমি তোমাকে যে সকল উপদেশ প্রদান করিলাম, তুমি ইহা ধর্মানুষ্ঠানশূন্য, ভক্তিবিহীন ও শুশ্রূষাবিরহিত ব্যক্তিকে বিশেষতঃ যে লোক আমার প্রতি অসূয়াপরবশ হইয়া থাকে, তাহাকে কদাচ শ্রবণ করাইও না। যে ব্যক্তি ভক্তিপরায়ণ হইয়া আমার ভক্তগণের নিকট এই পরম গুহ্য বিষয়ে কীর্তন করিবেন, তিনি নিঃসন্দেহ আমাকে প্রাপ্ত হইবেন, এই নরলোকে তাঁহা অপেক্ষা আমার প্রিয়কারী ও প্রিয়তম আর হইবে না। যে ব্যক্তি আমাদিগের এই ধর্মানুগত সংবাদ অধ্যয়ন করিবে, তাহার জ্ঞানযজ্ঞ দ্বারা আমারই অর্চনা করা হইবে। যে মনুষ্য অসূয়াপরবশ না হইয়া পরম শ্রদ্ধা সহকারে এই সংবাদ শ্রবণ করিবে, সে সর্বপাপবিমুক্ত হইয়া পুণ্যকর্মাদিগের শুভলোকসকল প্রাপ্ত হইবে। হে ধনঞ্জয়! তুমি কি একাগ্রমনে এ সংবাদটি শ্রবণ করিলে? এবং ইহা দ্বারা কি তোমার অজ্ঞানজনিত মোহ অবগত হইল?’ “অর্জুন কহিলেন, ‘হে কৃষ্ণ! তোমার অনুগ্রহে মোহান্ধকার নিরাকৃত (অপগত–দূরীকৃত) হওয়াতে আমি স্মৃতি লাভ করিয়াছি, আমার সকল সন্দেহই দূর হইয়াছে, এক্ষণে তুমি যাহা কহিলে, আমি অবশ্যই তাহার অনুষ্ঠান করিব।’” সঞ্জয় কহিলেন, “মহারাজ! আমি বাসুদেব ও অর্জুনের এইরূপ অদ্ভূত ও লোমহর্ষণ কথোপকথন শ্রবণ করিলাম। ব্যাসদেবের অনুগ্রহে সাক্ষাৎ যোগেশ্বর কৃষ্ণের মুখে এই পরম গুহ্যযোগ শ্রবণ করিয়াছি। হে রাজন! কৃষ্ণ ও অর্জুনের এই পবিত্র ও অদ্ভূত সংবাদ যতই স্মরণ করিতেছি, ততই পুনঃ পুনঃ হৃষ্ট ও সন্তুষ্ট হইতেছি। আমি বাসুদেবের সেই অলৌকিক রূপ বারংবার স্মরণপূর্বক পুনঃ পুনঃ বিস্ময় ও হর্ষসাগরে ভাসমান হইতেছি; এক্ষণে আমার বোধ হইতেছে, যে পক্ষে বাসুদেব ও অর্জুন অবস্থান করিতেছেন, তাঁহাদিগেরই রাজ্যলক্ষ্মী জয়, অদ্ভুদয় ও নীতি লাভ হইবে।” বৈশম্পায়ন কহিলেন,–পদ্মনাভ ভগবান বাসুদেবের নিজ মুখপদ্ম হইতে যাহা বিনিঃসৃত, একমাত্র সেই গীতাই উত্তমরূপে পাঠ করা কর্তব্য; অন্যান্য শাস্ত্র পাঠের আর আবশ্যক কী? কারণ, গীতা সর্বশাস্ত্রময়ী, হরি, সর্বদেবময়, গঙ্গা সর্বতীর্থময়ী, মন্ত্র সমস্ত দেবতায় অধিষ্ঠিত। গীতা, গঙ্গা, গায়ত্রী এবং গোবিন্দ এই চারিটি গকারপূর্ব পদার্থ যাঁহার হৃদয়ে বিদ্যমান, তাঁহার পুনর্জন্ম হয় না। গীতায় ছয় শত কুড়ি শ্লোকে ভগবান কৃষ্ণের উত্তর উক্তি, সাতান্ন শ্লোকে অর্জুনের প্রশ্ন প্রকটন, সাতষট্টি শ্লোকে সঞ্জয়ের সংসাব-বিবরণ এবং একটিমাত্র শ্লোকে ধৃতরাষ্ট্রের গীতোক্ত বিষয়ে উপষ্টম্ভ সঙ্কলিত আছে। মহাভারতের সারসর্বস্ব গীতারূপ অমৃত উদ্ধৃত করিয়া কৃষ্ণ অর্জুনের মুখে অর্পন করিয়াছেন। ভগবদগীতাপর্বাধ্যায় সমাপ্ত।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০১ কলিকাতায় চড়ক পার্ব্বণ কালীপ্রসন্ন সিংহ কলিকাতায় চড়ক পার্ব্বণ “কহই টুনেয়া—— শহর শিখাওয়ে কোতোয়ালি”——-টুনোয়ার টপ্পা। হে শারদে! কোন দোষে দুষি দাসী ও চরণতলে, কোন্ অপরাধে ছলিলে দাসীরে দিয়ে এ সন্তান? এ কুৎসিতে! কোন লাজে সপত্নী-সমাজে পাঠাইব, হেরিলে মা এ কুরূপে—দুষিবে জগৎ—হাসিবে সতিনী পোড়া; অপমানে উভরায়ে কাঁদিবে কুমার সে সময় মনে য্যান থাকে; চির অনুগত লেখনীরে। ১২০২ সাল। কলকাতা সহরের চারদিকেই ঢাকের বাদ্দি শুনা যাচ্চে, চড়কীর পিঠ সড় সড় কচ্চে, কামারেরা বাণ, দশলকি, কাঁটা ও বঁটি প্রস্তুত কচ্চে,–সর্বাঙ্গে গয়না, পায়ের নূপুর, মাতায় জরীর টুপী, কোমোরে চন্দ্রহার আর সেপাইপেড়ে ঢাকাই শাড়ী মালকোচা করে পরা, ছোপানে তারকেশ্বরে গামছা হতে, বিল্বপত্ৰ-বাঁধা সূতা গলায় যত ছুতর, গয়লা, গন্ধবেণে ও কাঁসারীর আনন্দেরর সীমা নাই—“আমাদের বাবুদের বাড়ী গাজন!” কোম্পানীর বাংলা দখলের কিছু পরে, নন্দকুমারের ফাঁসী হবার কিছু পূর্ব্বে আমাদের বাবুর প্রপিতামহ নিমকের দাওয়ান ছিলেন। সেকালে নিমকীর দাওয়ানীতে বিলক্ষণ দশ টাকা উপায় ছিল; সুতরাং বাবুর প্রপিতামহ পাঁচ বৎসর কৰ্ম্ম করে মৃত্যুকালে প্রায় বিশ লক্ষ টাকা রেখে যান—সেই অবধি বাবুরা বনেদী বড়মানুষ হয়ে পড়েন। বনেদী বড়মানুষ কবলাতে গেলে বাঙ্গালী সমাজে যে সরঞ্জামগুলি আবশ্যক, আমাদের বাবুদের তা সমস্তই সংগ্রহ করা হয়েচে–বাবুদের নিজের একটি দল আছে, কতকগুলি ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত কুলীনের ছেলে, বংশজ, শ্রোত্রিয়, কায়স্থ, বৈদ্য, তেলী, গন্ধবেণে আর কাঁসারী ও ঢাকাই কামার নিতান্ত অনুগত–বাড়ীতে ক্ৰিয়ে-কৰ্ম্ম ফাঁক যায় না, বাৎসরিক কৰ্ম্মেও দলস্থ ব্রাহ্মণদের বিলক্ষণ প্রাপ্তি আছে; আর ভদ্রাসনে এক বিগ্রহ, শালতগ্রামশিলে ও আকব্বরী মোহরপোরা লক্ষ্মীর খুঁচীর নিত্য সেবা হয়ে থাকে। এদিকে দুলে, বেয়ারা, হাড়ি ও কাওরারা নূপুর পায়ে, উত্তরী সূতা গলায় দিয়ে নিজ নিজ বীর-ব্রতের ও মহত্বের স্তম্ভম্বরূপ বাণ ও দশমকি হাতে করে প্রত্যেক মদের দোকানে, বেশ্যালয়ে, ও লোকের উঠানে ঢাকের ও ঢোলের সঙ্গতে নেচে বেড়াচ্ছে। ঢাকীরা ঢাকের টোয়েতে চামর, পাখীর পালক, ঘণ্টা ও ঘুঙুর বেঁধে পাড়ার পাড়ায় ঢাক বাজিয়ে বাজিয়ে সন্ন্যাসী সংগ্রহ কচ্চে; গুরুমহাশয়ের পাঠশালা বন্ধ হয়ে গিয়েচে–ছেলের গাজনতলাই বাড়ী করে তুলেছে, আহার নাই, নিদ্ৰা নাই, ঢাকের পেচৌনে পেচোনে রোদে রোদে রপ্টে রপ্টে বেড়াচ্ছে; কখন বলে “ভদ্দেশ্বরে শিব মহাদেব” চীৎকারের সঙ্গে যোগ দিচ্চে। কখন ঢাকের টোয়ের চামর ছিঁড়ছে; কখন ঢাকের পেছনটা দুম দুম করে বাজাচ্চে–বাপ মা শশব্যস্ত, একটা না ব্যায়রাম কল্লে হয়! ক্রমে দিন ঘুনিয়ে এলো, আজ বৈকালে কাঁটা ঝাঁপ। আমাদের বাবুর চার পুরুষের বুড়ো মূল সন্ন্যাসী কাণে বিল্বপত্র খুঁজে, হাতে এক মুটো বিল্বপত্র নিয়ে ধুকতে ধুকতে বৈঠকখানায় উপস্থিত হলো; সে নিজে কাওরা হলেও আজ শিবত্ব পেয়েছে, সুতরাং বাবুকে তারে নমস্কার কত্তে হলো; মূলসন্নাসী এক পা কাদা শুদ্ধ ধোপ ফরাসের উপর দিয়ে গিয়ে বাবুর মাথায় আশীৰ্ব্বাদী ফুল ছোঁয়ালেন,–বাবু তটস্থ! বৈঠকখানায় মেকাবি ক্লাকে টাং টাং টাং করে পাঁচটা বাজলো, সূর্যের উত্তাপের হ্রাস হয়ে আসতে লাগলো। সহরের বাবুরা ফেটিং, সেলফ ড্রাইভিং বগী ও ব্রাউহ্যামে করে অবস্থাগত ফ্রেণ্ড, ভদ্রলোক বা মোসাহেব সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে বেরুলেন; কেউ বাগানে চল্লেন। দুই চারজন সহৃদয় ছাড়া অনেকেরই পেছনে মালভরা মোদাগাড়ী চল্লো; পাছে লোকে জাতে পারে, এই ভয়ে কেউ সে গাড়ীর সহিস-কৌচম্যানকে তকমা নিতে বারণ করে দেছেন। কেউ কেউ লোকাপবাদ তৃণজ্ঞান বেশ্যাবাজী বাহাদুরীর কাজ মনে করেন। বিবিজ্ঞানের সঙ্গে একত্রে বসেই চলেছেন, খাতির নদারং–কুঠিওয়ালারা গহনার ছক্কড়ের ভিতর থেকে উঁকি মেরে দেখে চক্ষু সার্থক কচ্চেন। এদিকে আমাদের বাবুলের গাজনতলা লোকারণ্য হয়ে উঠলো, ঢাক বাজতে লাগলো, শিবের কাছে মাথা চালা আরম্ভ হলো; সন্ন্যাসীরা উবু হয়ে বসে মাথা ঘোরাচ্ছে, কেহ ভক্তিযোগে হাঁটু গেড়ে উপুড় হয়ে পড়েছে–শিবের বামুন কেবল গঙ্গা জল ছিটুচ্চে। প্রায় আধ ঘণ্টা মাথা চালা হলো, তবু ফুল আর পড়ে না; কি হবে! বাড়ীর ভিতরে খবর গেল, গিন্নীর পরস্পর বিষণ্ণবদনে “কোন অপরাধ হয়ে থাকবে” বলে একেবারে মাথায় হাত দিয়ে রসে পড়লেন—উপস্থিত দর্শকেরা “বোধ হয় মূলসন্ন্যাসী কিছু খেয়ে থাকবে, সন্ন্যাসীর দোষেই এইসব হয়” এই বলে নানাবিধ তর্কবিতর্ক আরম্ভ কল্লে; অবশেষে গুরু-পুরুত ও গিন্নীর ঐক্যমতে বাড়ীর কর্ত্তাবাবুকে বাঁধাই স্থির হলো। একজন অমুদে ব্রাহ্মণ ও চার পাঁচজন সন্ন্যাসী দৌড়ে গিয়ে বাবুর কাছে উপস্থিত হয়ে বল্লে—“মোশায়কে একবার গা ভুলে শিবতলায় যেতে হবে, ফুল তো পড়ে না, সন্ধ্যা হয়।”-–বাবুর ফিটন্ প্রস্তুত, পোষাক পরা, রেশমী-রুমালে বোকো মেখে বেরুচ্ছিলেন—শুনেই অজ্ঞান কিন্তু কি করেন, সাত পুরুষের ক্রিয়ে-কাণ্ড বন্ধ করা হয় না; অগত্যা পায়নাপেলের চাপকান পরে সেই সাজগোজ সমেতই গাজনতলায় চল্লেন—বাবুকে আসতে দেখে দেউড়ীর দারোয়ানেরা আগে আগে সার গেঁথে চল্লো; মোসাহেবেরা বাবুর সমূহ বিপদ মনে করে বিষণ্ণবদনে বাবুর পেচোনে পেচোনে যেতে লাগলো। গাজনতলায় সজোরে ঢাক-ঢোল বেজে উঠলো, সকলে উচ্চস্বরে “ভদ্দেশ্বরে শিবো মহাদেব” বলে চীৎকার কত্তে লাগলো; বাবু শিবের সম্মুখে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম কল্লেন।—বড় বড় হাতপাখা দুপাশে চলতে লাগলো। বিশেষ কারণ না জানলে অনেকে বোধ কত্তে পারতো যে আজ বাবু বুঝি নরবলি হবেন। অবশেষে বাবুর দু-হতি একত্র করে ফুলের মালা জড়িয়ে দেওহলো, বাবু কাঁদ কাঁদ মুখ করে রেশমী রুমাল গলায় দিয়ে একবারে দাঁড়িয়ে রইলেন, পুরোহিত শিবের কাছে ‘বাবা ফুল দাও, বাবা ফুল দাও’ বারংবার বলতে লাগলো, বাবুর কল্যাণে একঘটি গঙ্গাজল পুনরায় শিবের মাথায় ঢালা হলো, সন্ন্যাসীরা সজোরে মাথা ঘুরুতে লাগলো, আধঘণ্টা এইরূপ কষ্টের পর শিবের মাথা থেকে একবোঝা বিল্বপত্র স’রে পড়লো। সকলের আনন্দের সীমা নাই, ‘বলে ভদ্দেশ্বরে শিবো’ বলে চীৎকার হতে লাগলো, সকলেই বলে উঠলো “না হবে কে—কেমন বংশ!” ঢাকের তাল ফিরে গেল। সন্ন্যাসীরা নাচতে নাচতে কাছের পুকুর থেকে পরশু দিনের ফ্যলা কতকগুলি বইচির ডাল ভুলে আনলে। গাজনতলায় বিশ আঁটী বিচালি বিছানো ছিল, কাঁটার ডালগুলো তার উপর রেখে বেতের বাড়ি ঠ্যাঙ্গান হলো; কাঁটাগুলি ক্রমে সব মুখে মুখে বসে গেলে পর পুরুত তার উপর গঙ্গাজল ছড়িয়ে দিলেন, দুইজন সন্ন্যাসী ডবল গামছা বেঁধে তার দুদিকে টানা ধল্লে–সন্ন্যাসীরা ক্রমান্বয়ে তার উপর ঝাঁপ খেয়ে পড়তে লাগলো। উঃ! শিবের কি মাহাত্ম্য! কাঁটা ফুটলে বলবার যো নাই! এদিকে বাজে দর্শকের মধ্যে দু’ একজন কুটেল চোরা-গোপ্তা মাচ্ছেন। অনকে দেবতাদের মত অন্তরীক্ষে রয়েছেন, মনে কচ্চেন, বাজে আদায়ে দেখে নিলুন, কেউ জানতে পাল্লে না। কিন্তু আমরা সব দেখতে পাই। ক্রমে সকলের ঝাঁপ খাওয়া ফুলো; একজন আপনার বিক্রম জানাবার জন্য চিৎ হয়ে উল্টো ছাঁপ খেলে; সজোরে ঢাক বেজে উঠলো। দর্শকেরা কাঁটা নিয়ে টানাটানি কত্তে লাগলেন—গিন্নীরা বলে দিয়েছেন—“ঝাঁপের কাঁটার এমনি গুণ যে, ঘরে রাখলে এ জন্মে বিছানায় ছারপোকা হবে না।” এদিকে সহরে সন্ধ্যাসূচক কাঁসর-ঘণ্টার শব্দ থামলো। সকল পথের সমুদয় আলো জ্বলা হয়েছে। ‘বেলফুল’, ‘বরফ’, ‘মালাই’, চীৎকার শুনা যাচ্চে। আবগারীর আইন অনুসারে মদের দোকানের সদর দরজা বন্ধ হয়েছে, অথচ খদ্দের ফিচ্চে না। ক্রমে অন্ধকার গা-ঢাকা হয়ে এলো; এ সময় ইংরাজী জুতো, শান্তিপুরে ডুরে উড়ুনি আর সিমলের ধুতির কল্যাণে–রাস্তায় ছোটলোক ভদ্দরলোক আর চেনবার যো নাই। তুখোড় ইয়ারের দল হাসির গরবা ও ইংরাজী কথার ফরবার সঙ্গে খাতায় খাতায় এর দরজায়, তার দরজায় ঢু মেরে বেড়ে বেড়াচ্ছেন। এঁরী সন্ধ্যা জ্বালা দেখে বেরুলেন আবার ময়দা-পেষা দেখে বাড়ী ফিরবেন। মেছোবাজারের হাঁড়িহাটা, চৌরবাগানের মোড়, যোড়াসাঁকোর পোদ্দারের দোকান, নতুন বাজার, বটতলা, সোণাগাজির গলি ও আহিরীটোলার চৌমাথা লোকারণ্য— কেউ মুখে মাথায় চাদর জড়িয়ে মনে কচ্চেন, কেউ তাঁরে চিনতে পারবে না। আবার অনেকে চেঁচিয়ে কথা কয়ে কেসে হেঁচে লোককে জানান দিচ্ছেন যে, “তিনি সন্ধ্যার পর দুদণ্ড আয়েস করে থাকেন।” সৌখীন কুঠিওয়ালা মুখে হাতে জল দিয়ে জলযোগ করে সেতারটি নিয়ে বসেছেন। পাশের ঘরের ছোট ছেলেরা চীৎকার করে বিদ্যাসাগরের বর্ণ পরিচয় পড়ছে। পীল-ইয়ার ছোকরারা উড়তে শিখচে। স্যাকরারা দুর্গাপ্রদীপ সামনে নিয়ে রাংঝাল দিবার উপক্রম করেছে। রাস্তার ধারের দুই একখানা কাপড়, কাঠ-কাটরা ও বাসনের দোকান বন্ধ হয়েছে; রোকেড়ের দোকানদার ও পোদ্দার ও সোনার বেনের তহবিল মিলিয়ে কৈফিয়ং কাটচে। শোভাবাজারের রাজাদের ভাঙ্গা বাজারে মেছুনীরা প্রদীপ হাতে করে ওঁচা পচা মাচ ও লোণা ইলিশ নিয়ে ক্রেতাদের—“ও গামচাকাঁধে, ভাল মাচ নিবি?” “ও খেংরা-গুঁপো মিন্সে, চার আনা দিবি” বলে আদর কচ্ছে—মধ্যে মধ্যে দুই একজন রসিকতা জানবার জন্য মেছুনী ঘেঁটিয়ে বাপান্ত খাচ্চেন। রেস্তহীন গুলিখোর, গেঁজেল ও মাতালেরা লাঠি হাতে করে কাণা সেজে “অন্ধ ব্রাহ্মণকে কিছু দান কর দাতাগণ” বলে ভিক্ষা করে মৌতাতের সম্বল কচ্চে। এমন সময় বাবুদের গাজতলায় সজোরে ঢাক বেজে উঠলো, “বলে ভদ্দেশ্বরে শিবো।” চীৎকার হতে লাগলো; গোল উঠলো, এবারে ঝুল-সন্ন্যাস। বাড়ীর সামনের মাঠে ভারা টারা বাঁধা শেষ হয়েচে; বাড়ীর ক্ষুদে ক্ষুদে হবু হুজুরের দারোয়ান চাকর ও চাকরাণীর হাত ধরে গাজনতলায় ঘুরঘুর কচ্চেন। ক্রমে সন্ন্যাসীরা খড়ে আগুন জ্বেলে ভারার নীচে ধল্লে; একজনকে তার উপর পানে পা করে ঝুলিয়ে দিয়ে তার মুখের কাছে অগুনের উপর গুঁড়ো ধুনো ফেলতে লাগলো; ক্রমে একে একে অনেকে ঐ রকম করে দুল্লে, ঝুলসন্ন্যাস সমাপন হলো; আধ ঘণ্টার মধ্যে আবার সহর জুড়লো, পূর্ব্বের মত সেতার বাজতে লাগলো, বেলফুল, বরফ ও মালাই যথামত বিক্রী করবার অবসর পেলে; শুক্রবারের রাত্রি এই রকমে কেটে গেল। আজ নীলের রাত্তির, তাতে আবার শনিবার। শনিবারের রাত্তিরে সহর বড় গুলজার থাকে। পানের খিলির দোকানে বেলণ্ঠন আর দেয়ালগিরী জ্বলচে। ফুরফুরে হাওয়ার সঙ্গে বেলফু্লের গন্ধ ভুরভুর করে বেরিয়ে যেন সহর মাতিয়ে তুলচে। রাস্তার ধারেই দুই একটা বাড়ীতে খেমটা নাচের তালিম হচ্ছে, অনেকে রাস্তায় হাঁ করে দাঁড়িয়ে ঘুঙুর ও মন্দির রুণু রুণু শব্দ শুনে স্বর্গসুখ উপভোগ কচ্চেন; কোথাও একটা দাঙ্গা হচ্ছে। কোথাও পাহারাওয়ালা একজন চোর ধরে বেঁধে নে যাচ্চে–তার চারিদিকে চার পাঁচ জন হাসচে আর মজা দেখচে এবং আপনাদের সাবধানতার প্রশংসা কচ্চে; তারা যে এক দিন ঐ রকম দশায় পড়বে, তায় ভ্রুক্ষেপ নাই।। আজ অমুকের গাজনতলায় চিৎপুরের হর; ওদের মাঠে সিঙ্গির বাগানের পালা; ওদের পাড়ার মেয়ে পাঁচালী। আজ সহরের গাজনতলায় ভারী ধূম-চৌমাথার চৌকীদারদের পোহাবারো। মদের দোকান খোলা না থাকলেও সমস্ত রাত্তির মদ বিক্রী হবে, গাজা অনবরত উড়বে, কেবল কাল সকালে শুবেন যে-“ঘোষেরা পাতকোতলার বড় পেতলের ঘটীটি পাচ্ছে না,” “পালেদের একধামা পেতলের বাসন গেছে” ও “গন্ধবেণেদের সর্ব্বনাশ হয়েছে।” আজ কার সাধ্য নিদ্রা যায়—থেকে থেকে কেবল ঢাকের বাদ্যি, সন্ন্যাসীর হররা ও “বলে ভদ্দেশ্বরে শিবো মহাদেব’ চীৎকার। এ দিকে গির্জ্জার ঘড়িতে টুং টাং ঢং টুং টাং ঢং করে রাত চারটে বেজে গেল–বারফটকা বাবুরা ঘরমুখো হয়েচে। উড়ে বামুনেরা ময়দার দোকানে ময়দা পিষতে আরম্ভ করেছে। রাস্তার অলোর আর তত তেজ নেই। ফুরফুরে হাওয়া উঠেছে। বেশ্যালয়ের বারাণ্ডার কোকিলেরা ডাকতে আরম্ভ করেছে; দু’ এক কাকের ডাক, কোকিলের আওয়াজ ও রাস্তার বেকার কুকুরগুলোর খেউ ঘেউ রব শোনা যাচ্চে, এখনও মহানগর যেন নিস্তব্ধ ও লোকশূন্য। ক্রমে দেখুন,–“রামের মা চলতে পারে না,” “ওদের ন-বউটা কি বজ্জাত মা” “মাগী হেন জক্কী” প্রভৃতি নানা কথার আন্দোলনে রত দুই এক দল মেয়েমানুষ গঙ্গাস্নান কত্তে বেরিয়েছেন। চিংপুরের কসাইরা মটনচাপের তার নিয়ে চলেছে। পুলিসের সার্জ্জন, দারোগা জমাদার প্রভৃতি গরীবের যমরা রোঁদ সেরে মস্ মস্ করে থানায় ফিরে যাচ্ছেন। গুড়ুম করে তোপ পড়ে গেল! কাকগুলো কা কা করে বাসা ছেড়ে ওড়বার উজ্জুগ কল্লে। দোকানীরা দোকানের ঝাঁপতাড়া খুলে গন্ধেশ্বরীকে প্রণাম করে, দোকানে গঙ্গাজলের ছড়া দিয়ে, হু কার জল ফিরিয়ে তামকি খাবার উজ্জ্বল কচ্চে। ক্রমে ফরসা হয়ে এলো–মাছের ভারীরা দৌড়ে আসতে লেগেচে–মেছুনীরা ঝগড়া কত্তে কত্তে তার পেছু পেছু দৌড়েচে। বদ্দিবাটির আলু, হাসমানের বেগুন বাজরা বাজরা অসচে, দিশী বিলিতী যমেরা অবস্থা ও রেস্তমত গাড়ী পাল্কী চড়ে ভিজিটে বেরিয়েছেন। জ্বরবিকার, ওলাউঠার প্রাদুর্ভাব না পড়লে এদের মুখে হাসি দেখা যায় না। উলো অঞ্চলে মড়ক হওয়াতে অনেক গো-দাগাও বিলক্ষণ সঙ্গতি করে নেছেন; কলিকাতা সহরেও দু-চার গো-দাগাকে প্রাকটিস কত্তে দেখা যায়, এদের অষুধ চমৎকার; কেউ বলদের মত রোগীর নাক ফুঁড়ে আরাম করে; কেউ শুদ্ধ জল খাইয়ে সারেন। শহুরে কবিরাজেরা আবার এঁদের হতে এককাটি সরেশ; সকল রকম রোগেই সদ্য মৃত্যুশর ব্যবস্থা করে থাকেন–অনেকে চাণক্য-শ্লোক ও দাতাকর্ণের পুঁথি পড়েই চিকিৎসা আরম্ভ করেছেন। টুলো পূজুরি ভটচাজ্জিরে কাপড় বগলে করে স্নান কত্তে চলেচে; আজ তাদের বড় ত্বরা, যজমানের বাড়ী সকাল সকাল যেতে হবে। আদবুড়ো বেতোরা মর্ণিং-ওয়াকে বেরিয়েছেন। উড়ে বেহারারা দাঁতন হাতে করে স্নান কওে দৌড়েচে। ইংলিশম্যান, হরকরা, ফিনিক্স এক্সচেঞ্জ গেজেট, গ্রাহকদের দরজায় উপস্থিত হয়েছে। হরিণমাংসের মত কোন কোন বাঙ্গালা খবরের কাগজ বাসি না হলে গ্রাহকেরা পান না—ইংরাজী কাগজের সে রকম নয়, গরম গরম ব্রেকফাষ্টের সময় গরম গরম কাগজ পড়াই আবশ্যক। ক্রমে সূৰ্য্য উদয় হলেন। সেক্সন্‌-লেখা কেরাণীর মত কলুর ঘানির বলদ বদলী হলো; পাগড়ীবাঁধা দলের প্রথম ইনষ্টলমেন্টে—শিপ-সরকার ও বুকিং ক্লার্ক দেখা দিলেন। কিছু পরেই পরামাণিক ও রিপুকৰ্ম্ম বেরুলেন। আজ গবর্ণমেন্টের অফিস বন্ধ; সুতরাং আমরা ক্লার্ক কেরাণী, বুককিপার ও হেড রাইটারদিগকে দেখতে পেলাম না। আজকাল ইংরাজী লেখাপড়ার আধিক্যে অনেকে নানা রকম বেশ ধরে অফিসে যান- পাগড়ী প্রায় উঠে গেল—দুই এক জন সেকেলে কেরাণীই চিরপরিচিত পাগড়ীর মান রেখেচেন; তারা পেন্সন নিলেই আমরা আর কুঠিওয়ালা বাবুদের মাথায় পাগড়ী দেখতে পাব না; পাগড়ী মাথায় দিলে, আলবার্ট-ফেশনের বাঁকা সিঁথেটি ঢাকা পড়ে, এই এক প্রধান দোষ। রিপুকৰ্ম্ম ও পরামাণিকদের পাগড়ী প্রায় থাকে না থাকে হয়েছে। দালালের কখনই অব্যাহতি নাই। দালাল সকালে না খেয়েই বেরিয়েছে। হাতে কাজ কিছু নাই, অথচ যে রকমে হোক না, চোটাখোর বেণের ঘরে ও টাকাওয়ালা বাবুদের বাড়ীতে একবার যেতেই হবে। “কার বাড়ী বিক্রী হবে,” “কার বাগানের দরকার,” “কে টাকা ধার করবে,” তারই খবর রাখা দালালের প্রধান কাজ, অনেক চোটাখোর বেণে ও ব্যাভার-বেণে সহুরে বাবু দালাল চাকর রেখে থাকেন; দালালেরা শীকার ধরে আনে—বাবুরা আড়ে গেলেন! দালালী কাজটা ভাল, “নেপো মারে দইয়ের মতন” এতে বিলক্ষণ গুড় আছে। অনেক ভদ্রলোকের ছেলেকে গাড়ী-ঘোড়ায় চড়ে দালালী কত্তে দেখা যায়। অনেকে “রেস্তহীন মূচ্ছুদি” চার বার “ইন্সলভেট” নিয়ে এখন দালালী ধরেছেন। অনেক পদ্মলোচন দালালীর দৌলতে “কলগেছে থাম” ফেঁদে ফেল্লেন। এরা বর্ণচোরা আঁব, এঁদের চেনা ভার, না পারেন, হেন কর্ম্মই নাই। পেশাদার চোটাখোর বেণে–ও ব্যাভার-বেণে বড়মানুষের ছলনারূপ নদীতে বেঁউতি-জলি পাতা থাকে; দালাল বিশ্বাসের কলসী ধরে গা ভাসান দে জল তাড়া দেন; সুতরাং মনের মত কোটাল হলে চুনোপুঁটিও এড়ায় না। ক্রুমে গির্জ্জের ঘড়িতে ঢং ঢং ঢং করে সাতটা বেজে গেল। সহরে কাণ পাতা ভার। রাস্তায় লোকারণ্য, চারিদিকে ঢাকের বাদ্যি, ধুনোর ধোঁ, আর মদের দুর্গন্ধ। সন্ন্যাসীরা বাণ, দশলকি, সূতো, শোণ, সাপ, ছিপ, বাঁশ, ফুঁড়ে, একেবারে মোরিয়া হয়ে নাচতে নাচতে কালঘাট থেকে আসছে। বেশ্যালয়ের বারাণ্ডা ইয়ারগোচর ভদ্রলোকে পরিপূর্ণ; সখের দলের পাঁচালী ও হাপ-আখড়াইয়ের দোহার, গুল্গার্ডেনের মেম্বই অধিক— এঁরা গাজন দেখবার জন্য ভোরের বেলা এসে জমেছেন। এদিকে রকমারি বাবু বুঝে বড়মানুষদের বৈঠকখানা সরগরম হচ্ছে। কেউ সিভিলিজেশনের অনুরোধে চড়ক হেট করেন; কেউ কেউ নিজে ব্রাহ্ম হয়েও— “সাত পুরুষের ক্রিয়াকাণ্ড” বলেই চড়কে অমোদ করেন; বাস্তবিক তিনি এত বড় চটা। কি করেন, বড়দাদা সেজোপিসে বর্তমান– আবার ঠাকুরমার এখনও কাশীপ্রাপ্তি হয় নাই। অনেকে চড়ক, বাণ ফোঁড়া তলোয়ার ফোঁড়া, দেখতে ভালোবাসেন। প্রতিমা বিসর্জনের দিন পৌত্তূর, ছোট ছেলে ও কোলের মেয়েটিকে সঙ্গে নিয়ে ভাসান দেখতে বেরোন। অনেকে বুড়ো মিন্সে হয়েও হীবেবসান টুপী, বুকে জরীর কারচোপের কর্ম্মকরা কাবা ও গলায় মুক্তার মালা, হীরের কষ্ঠ, দু’হাতে দশটা আংটা পরে “খোকা” সেজে বেরুতে লজ্জিত হন না; হয়ত তাঁর প্রথম পক্ষের ছেলের বয়স ষাট বৎসর–ভাগ্নের চুল পেকে গেছে। অনেক পাড়াগেঁয়ে জমিদার ও রাস্তার মধ্যে মধ্যে কলিকাতায় পদার্পণ করে থাকেন। নেজামত আদালতে নম্বরওয়ারী ও মৎফরেষ্কার তদ্বির কত্তে হলে, ভবানীপুরেই বাসার ঠিকানা হয়। কলিকাতার হাওয়া পাড়া-গাঁয়ের পক্ষে বড় গরম। পূর্ব্বে পাড়াগেঁয়ে কলিকাতায় এলে লোণা লাগত, এখন লোণা লাগার বদলে আর একটি বড় জিনিস লেগে থাকে—অনেকে তার দরুণ একেবারে আঁতকে পড়েন; ঘাগিগোছের পাল্লায় পড়ে শেষে সর্ব্বস্বান্ত হয়ে বাড়ী যেতে হয়। পাড়াগেঁয়ে দুই এক জন জমিদার প্রায় বারো মাস এইথাতেই কাটান; দুপুরবেলা ফেটিং গাড়ী চড়া, পাঁচালী বা চণ্ডীর গানের ছেলেদের মতন চেহারা, মাথায় ক্রেপের চাদর জড়ান, জন দশ-বারো মোসাহেব সঙ্গে, বাঈজানের ভেড়ুয়ার মত পোষাক, গলায় মুক্তার মালা; দেখলেই চেনা যায়, ইনি একজন বনগাঁর শিয়াল রাজা, বুদ্ধিতে, কাশ্মীরী গাধার বেহদ্দ–বিদ্যায় মূর্ত্তিমান মা! বিসর্জন, বারোইয়ারি, খ্যামটা-নাচ আর ঝুমুরের প্রধান ভক্ত। মধ্যে মধ্যে খুনী মামলার গ্রেপ্তারী ও মহাজনের ডিক্রীর দরুণ গা-ঢাকা দেন। রবিবার, পাল-পার্ব্বণ, বিসর্জন আর স্নানযাত্রায় সেজে-গুজে গাড়ী চোড়ে বেড়ান। পাড়াগেঁয়ে হলেই যে এই রকম উনাপঁজুরে হবে, এমন কোন কথা নাই। কারণ, দুই-একজন জমিদার মধ্যে মধ্যে কলিকাতায় এসে বিলক্ষণ প্রতিষ্ঠা ও প্রশংসা নিয়ে যান। তারা সোণাগাছিতে বাস করেও সে রঙ্গে বিব্রত হন না; তাঁদের চালচুল দেখে অনেক সহুরে তাক হয়ে থাকেন। আবার কেউ কাশীপুর, বোঁড়স্যা, ভবানীপুর ও কালীঘাটে বাসা করে চব্বিশ ঘণ্টা সোণাগাছিতেই কাটান! লোকের বাড়ী চড়োয়া হয়ে দাঙ্গা করেন; তার পরদিন প্রিয়তমার হাত ধরে যুগলবেশে জ্যেঠা খুড়া বাবার সঙ্গে পুলিসে হাজির হন, ধারে হাতী কেনেন। পেমেণ্টের সময় ঠ্যাঙ্গাঠাঙ্গী উপস্থিত হয়-পেড়াপীড়ি হলে দেশে সরে পড়েন–সেথায় রামরাজ্য! জাহাজ থেকে নূতন সেলার নামলেই যেমন পাইকরে ছেঁকে ধরে, সেই রকম পাড়াগেঁয়ে বড়মানুষ সহরে এলেই প্রথমে দালাল-পেস হন। দালাল বাবুর সদর মোক্তারের অনুগ্রহে বাড়ী ভাড়া করা, খ্যামটা নাচের বায়না করা প্রভৃতি রকমওয়ারি কাজের ভার পান ও পলিটীকেল এজেন্টের কাজ করেন। বাবুকে সাতপুকুরের বাগান, এসিয়াটিক সোসাইটির মিউজিয়ম- বালির ব্রিজ,–বাগবাজারের থালের কলের দরজা–রকমওয়ারি বাবুর সাজানো বৈঠকখানা—ও দুইএক নামজাদা বেশ্যার বাড়ী দেখিয়ে বেড়ান। ঝোপ বুঝে কোপ ফেলতে পারলে দালালের বাবুর কাছে বিলক্ষণ প্রতিপত্তি হয়ে পড়ে। কিছুকাল বড় আমোদ যায়, শেষে বাবু টাকার টানাটানিতে বা কৰ্ম্মান্তরে দেশে গেলে দালাল এজেন্টি কৰ্ম্মে মক্‌রর হয়। আজকাল সহরে ইংরাজী কেতার বাবুরা দু’টি দল হয়েছেন; প্রথম দল উঁচুকেতা সাহেবের গোবরের গস্ত, দ্বিতীয় “ফিরিঙ্গীর জঘন্য প্রতিরূপ”; প্রথম দলের সকলি ইংরাজী কেতা, টেবিল-চেয়ারের মজলিস, পেয়ালা করা চা, চুরোট, জগে করা জল, ডিকাণ্টরে ব্রাণ্ডি ও কাচের গ্লাসে সোলার ঢাকনি, সালু মোড়া; হরকরা ইংলিশম্যান ও ফিনিক্স সামনে থাকে, পলিটিক্স ও ‘বেষ্ট নিউস অব দি ডে’ নিয়েই সর্ব্বদা আন্দোলন। টেবিলে খান, কমডে হাগেন এবং কাগজে পোঁদ পোঁছেন! এঁরা সহৃদয়তা, দয়া, পরোপকার, নম্রতা প্রভৃতি বিবিধ সদগুণে ভূষিত, কেবল সর্ব্বদাই রোগ, মদ খেয়ে খেয়ে জুজু, স্ত্রীর দাস–উৎসাহ, একতা, উন্নতীচ্ছা একেবার হৃদয় হতে নির্ব্বাসিত হয়েছে; এঁরাই ওল্ড ক্লাস।। দ্বিতীয়ের মধ্যে—বাগাম্বর মিত্র প্রভৃতি সাপ হতেও ভয়ানক, বাঘের চেয়ে হিংস্র; বলতে গেলে এরা একরকম ভয়ানক জানোয়ার। চোরেরা যেমন চুরি কত্তে গেলে মদ ঠোঁটে দিয়ে গন্ধ করে মাতাল সেজে যায়, এরা সেইরূপ স্বার্থসাধনাৰ্থ স্বদেশের ভাল চেষ্টা করেন। “কেমন করে আপনি বড়লোক হব,” “কেমন করে সকলে পায়ের নীচে থাকবে,” এই এঁদের নিয়ত চেষ্টা—পরের মাথায় কাঁটাল ভেঙ্গে আপনার গোঁফে তেল দেওয়াই এঁদের পলিসী, এঁদের কাছে দাতব্য দূর পরিহার- চার অনার বেশী দান নাই। সকালবেলা সহরের বড়মানুষদের বৈঠকথানা বড় সরগরম থাকে। কোথাও উকীসের বাড়ীর হেড কেরাণী তীর্থের কাকের মত বসে আছেন। তিন-চারিটি “ইকুটী, দুটি “কমন লা” আদালতে ঝুলচে। কোথাও পাওনাদীর বিল- সরকার উটুনোওয়ালা মহাজন খাত, বিল ও হাতচিঠে নিয়ে তিন-চার মাস হাঁটচে, দেওয়ানজী কেবল আজ না কাল কচ্চেন। ‘শমন’, ‘ওয়ারিন’ ‘উকিলের চিঠি’ ও ‘সফিনে’ বাবুর অলঙ্কার হয়েছে। নিন্দা অপমান তৃণজ্ঞান, প্রত্যেক লোকের চাতুরী, ছলনা মনে করে অন্তর্দ্দাহ হচ্চে। “র‍্যায়সা দিন নেহি রহেগা” অঙ্কিত আঙ্গটী আঙ্গুলে পরেচেন; কিন্তু কিছুতেই শান্তিলাভ করতে পাচ্চেন না। কোথাও একজন বড়মানুষের ছেলে অল্পবয়সে বিষয় পেয়ে, কান্নেখেকো ঘুঁড়ীর মত ঘুরচেন। পরশুদিন “বউ বউ,” “লুকোচুরি” “ঘোড়ঘোড়া” খেলেচেন, আজ তাঁকে দেওয়ানজীর কূটকচালে খতেনের গোঁজা মিলন ধত্তে হবে, উকীলের বাড়ীর বাবুর পাকা চালে নজর রেখে সরে বসতে হবে, নইলে ওঠসার কিস্তিতেই মাত! ছেলের হাতে ফল দেখলে কাকেরাও ছোঁ মারে, মানুষ তো কোন ছার;—কেউ “স্বর্গীয় কৰ্ত্তার পরম বন্ধু”, কেউ স্বর্গীয় কৰ্ত্তার “মেজোপিসের মামার খুড়োর পিসতুতো ভায়ের মামাতো ভাই” পরিচয় দিয়ে পেস হচ্চেন। “উমেদার”, কন্যাদায় (হয়ত কন্যাদায়ের বিবাহ হয় নাই) নানা রকম লোক এসে জুটেছে, আসল মতলব দ্বৈপয়ানহ্যদে ডোবা রয়েছে, সময়ে আমলে আসবে। ক্রমে রাস্তায় লোকারণ্য হয়েছে। চৌমাথার বেণের দোকান লোকে পুরে গেছে। নানা রকম রকম বেশ–কারুর কফ ও কলারওয়ালা কামিজ, রূপোর বগলেস আঁটা শাইনিং লেদর; কারো ইণ্ডিয়া রবর আর চায়না কোট; হাতে ইষ্টিক, ক্রেপের চাদর, চুলের গার্ডচেন গলায়; আলবার্ট ফেশানে চুল ফেরানো। কলিকাতা সহর রত্নাকরবিশেষ, : না মেলে এমন জানোয়ারই নাই; রাস্তার দু পাশে অনেক আমোদগেলা মহাশয় দাঁড়িয়েছেন, ছোট আদালতে উকীল, সেক্সন রাইটার, টাকাওয়ালা গন্ধবেণে, তেলী, ঢাকাই কামার আর ফলারে যজমেনে বামুনই অধিক–কারু কোলে দুটি মেয়ে–কারু তিনটে ছেলে। কোথাও পাদরী সাহেব ঝুড়ি ঝুড়ি বাইবেল বিলুচ্ছেন–কাছে ক্যাটিকৃষ্ট ভায়া—-সুবর্ব্ব চৌকীদারের মত পোষাক—পেনটুলেন, ট্যাংট্যাঙে চাপকান, মাথায় কালো রঙ্গের চোঙ্গাকাটা টুপী। আদালতী সুরে হাত-মুখ নেড়ে খ্রীষ্টধৰ্ম্মের মাহাত্ম্য ব্যক্ত কচ্চেন–হঠাৎ দেখল বোধ হয় যেন পুতুলনাচের নকীব। কতকগুলো ঝাঁকাওয়ালা মুটে, পাঠশালের ছেলে ও ফ্রিওয়ালা একমনে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছ। ক্যাটিকৃষ্ট কি বলচেন, কিছুই বুঝতে পাচ্ছে না। পূর্ব্বে বওয়াটে ছেলেরা বাপ-মার সঙ্গে ঝগড়া করে পশ্চিমে পালিয়ে যেতো, না হয় খ্রীষ্টান হতো; কিন্তু রেলওয়ে হওয়াতে পশ্চিম পালাবার বড় ব্যাঘাত হয়েছে আর দিশী খ্রীষ্টানদের দুর্দশা দেখে খ্রীষ্টান হতে ও ভয় হয়। চিৎপুরের বড় রাস্তায় মেঘ কল্লে কাদা হয়—ধূলোয় ধূলো; তার মধ্যে ঢাকের গটরার সঙ্গে গাজন বেরিয়েছে। প্রথমে দুটো মুটে একটা বড় পেতলের পেটা ঘড়ি বাঁশ বেঁধে কাঁধে করেছে–কতকগুলো ছেলে মুগুরের বাড়ী বাজাতে বাজাতে চলেছে—তার পেচোনে ‘এলোমেলো নিশানের শ্রেণী। মধ্যে হাড়ীরা দল বেঁধে ঢোলের সঙ্গতে “ভোলা বোম ভোলা বড় রঙ্গিলী, লেংটা ত্রিপুরারি শিরে জটাধারী ভোলার গলে দোলে হাড়ের মালা,” ভজন গাইতে গাইতে চলেছে! তার পেচনে বাবুর অবস্থামত তক্‌মাওয়ালা দরোয়ান, হরকরা সেপাই। মধ্যে সর্ব্বাঙ্গে ছাই ও খড়ি-মাখা, টিনের সাপের ফণার টুপী মাথায়, শিব ও পার্বতী-সাজা সং। তার পেচনে কতকগুলো সন্ন্যাসী দশলকি ফুঁড়ে ধূনো পোড়াতে পোড়াতে নাচতে নাচতে চলেছে। পাশে বেণের জিবে হাতে বাণ ফুঁড়ে চলেছে। লম্বা লম্বা ছিপ, উপরে শোলার চিংড়িমাছ বাঁধা। সেটকে সেট ঢাকে ড্যানাক ড্যানাক করে রং বাজাচ্চে। পেচনে বাবুর ভাগ্নে, ছোট ভাই বা পিসতুতে ভেয়েরা গাড়ী চড়ে চলেছে—তারা রাত্রি তিনটার সময় উঠেছেন, চোক্‌ লাল টকটক কচ্চে, মাথা ভবানীপুরে, কালীঘেটে ধূলোয় ভয়ে গিয়েছে। দর্শকেরা হাঁ করে গাজন দেখছেন, মধ্যে মধ্যে বাজনার শব্দে ঘোড়া খেপচে–হুড়মড় করে কেউ দোকানে কেউ থানার উপর পোড়চেন, রৌদ্রে মাথা ফেঁটে যাচ্চে-তথাপি নড়চেন না। ক্রমে পুলিসের হুকুমত সব গাজন ফিরে গেল। সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট রাস্তায় ঘোড়া চড়ে বেড়াচ্ছিলেন, পকেট-ঘড়ি খুলে দেখলেন, সময় উতরে গেছে, অমনি মার্শাল ল জারি হলো, “ঢাক বাজালে থানায় ধরে নিয়ে যাবে” ক্ৰমে দুই-একটা ঢাকে জমাদারের হেতে কোঁৎকা পড়বামাত্রেই সহর নিস্তব্ধ হলো। অনেকে ঢাক ঘাড়ে করে চুপে চুপে বাড়ী এলেন—দর্শকের কুইনের রাজ্যে অভিসম্পাত কত্তে কত্তে ফিরে গেলেন। সহরটা কিছুকালের মত জুড়লো। বেণোরা বাণ খুলে মদের দোকানে ঢুকলো। সন্ন্যাসিরা ক্লান্ত হয়ে ঘরে গিয়ে হাতপাখায় বাতাস ও হাঁড়ি হাঁড়ি আমানি খেয়ে ফেল্লে। গাজন তলায় শিবের ঘর বন্ধ হলো–এ বছরের মত বণিফোঁড়ার আমোদও ফুরালো। এই রকমে রবিবারটা খেতে দেখতে গেল। আজ বৎসরের শেষ দিন। যুবত্বকালের এক বৎসর গেল দেখে যুবক-যুবতীরা বিষণ্ণ হলেন। হতভাগ্য কয়েদীর নির্দিষ্ট কালের এক বৎসর কেটে গেল। দেখে আহ্লাদের পরিসীমা রহিল না। আজ বুড়োটি বিয়ে নিলেন, কাল যুবটি আমাদের উপর প্রভাত হবেন। বুড়ো বৎসরের অধীনে আমরা যেসব কষ্ট ভোগ করেছি, যেসব ক্ষতি স্বীকার করেছি–আগামীর মুখ চেয়ে, আশার মন্ত্রণায়, আমরা সেসব মন থেকে তারই সঙ্গে বিসর্জ্জন দিলেম। ভূতকাল যেন আমাদের ভ্যাংচাতে ভ্যাংচাতে চলে গেলেন বর্তমান বংসর স্কুল মাষ্টারের মত গম্ভীর ভাবে এসে পড়লেন–আমরা ভয়ে হর্ষে তটস্থ ও বিস্মিত! জেলার পুরাণ হাকিম বদলা হলে নীল-প্রজাদের মন যেমন ধুকপুক করে, স্কুলে নতুন ক্লাসে উঠলে নতুন মাষ্টারের মুখ দেখে ছেলেদের বুক যেমন গুরু গুরু করে—মড়ুঞ্চে পোয়াতীর বুড়ো বয়সে ছেলে হলে মনে যেমন মহান সংশয় উপস্থিত হয়, পুরাণর যাওয়াতে নতুনের আসাতে আজ সংসার তেমনি অবস্থায় পড়লেন। ইংরেজরা নিউইয়ারের বড় আদর করেন। আসামীকে দাঁড়াগুয়া পান দিয়ে বরণ করে ন্যান–নেশার খোয়ারির সঙ্গে পুরাণকে বিদায় দেন। বাঙ্গালীরা বছরটি ভাল রকমেই যা আর খারাবেই শেষ হোক, সজনেখাঁড়া চিবিয়ে, ঢাকের বাদ্দি আর রাস্তার ধূলো দিয়ে, পুরাণকে বিদায় দেন। কেবল কলসী উচ্ছুগ্‌গুকর্ত্তারা আর নতুন খাতওলারাই নতুন বৎসরের মান রাখেন! আজ চড়ক। সকালে ব্রাহ্মসমাজে ব্রাহ্মরা একমেবাদ্বিতীয় ঈশ্বরের বিধিপূৰ্ব্বক উপাসনা করেচেন—আবার অনেক ব্রাহ্ম কলসী উচ্ছুগ্‌গু করবেন। এবারে উক্ত সমাজের কোন উপাচার্য্য বড় ধুম করে কালীপূজো করেছিলেন ও বিধবা বিবাহে যাবার প্রায়শ্চিত্ত উপলক্ষে জমিদারের বাড়ী শ্রীবিষ্ণু স্মরণ করে গোবর খেতেও ত্রুটি করেন নি। আজকাল ব্রাহ্মধর্মের মর্ম্ম বোঝা ভার, বাড়ীতে দুর্গোৎসবও হবে আবার ফি বুধবারে সমাজে গিয়ে চক্ষু মুদিত করে মড়াকান্না কাদতে হবে। পরমেশ্বর কি খোট্টা, না মহারাষ্ট্র ব্রাক্ষ্মণ যে, বেন ভাঙ্গা সংস্কৃত পদ ভিন্ন অন্য ভাষায় তারে ডাকূলে তিনি বুঝতে পারবেন না—অডিড় থেকে না ডাকূলে শুতে পাবো না? ক্ৰমে কৃশ্চানী ও ব্রাহ্মধৰ্ম্মের আড়ম্বর এক হবে, তারি যোগাড় হচ্চে। চড়কগাছ পুকুর থেকে তুলে, মোচ বেন্ধে মাথায় ঘি-কলা দিয়ে খাড়া করা হয়েছে। ক্রমে রোদ্দুরের তেজ পড়ে এলে চড়কতলা লোকারণ্য হয়ে উঠলো। সহরের বাবুরা বড় বড় জুড়ী, ফেটিং ও ষ্টেট ক্যারেজে নানা রকম পোষাক পরে চড়ক দেখতে বেরিয়েছেন; কেউ কাঁসারীদের সঙের মত পাল্কীগাড়ীর ছাদের উপর বসে চলেচেন! ছোটলোক, বড়মানুষ ও হঠাৎবাবুই অধিক। অ্যাাং যায়, ব্যাং যায়, খলসে বলে আমিও খাই–বামুন-কায়েতরা ক্রমে সভ্য হয়ে উঠলো দেখে সহরে নবশাক, হাড়ীশাক, মুচিশাক মশায়েরাও হামা দিতে আরম্ভ কল্লেন; ক্রমে ছোট জেতের মধ্যেও দ্বিতীয় রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্যাসাগর ও কেশব সেন জন্মাতে লাগলো -সন্ধ্যার পর দু-খানি চাপাটি ও একটু ন্যাবড়ানোর বদলে-ফাউলকারী ও রোল রুটি ইণ্ট্রডিউস হলো। শ্বশুবাড়ী আহার করা মেয়েদের বাঁ-শাক বেঁধান চলিত হলো দেখে বোতলের দোকান, কড়ি গণা, মাকু ঠেলা ও ভালুকের লোমব্যাচা কোলকাতায় থাকতে লজ্জিত হতে লাগলো। সবকামান চৈতনফক্কার জায়গায় আলবার্ট ফেসান ভর্ত্তি হলো। চাবির থলে কাঁধে করে টেনা ধুতি পরে দোকানে যাওয়া আর ভাল দেখায় না; সুতরাং অবস্থাগত জুড়ী, বগী ও ব্রাউহাম বরাদ্দ হলো। এই সঙ্গে সঙ্গে বেকার ও উমেদারি হালোতের দু-একজন ভদ্রলোক, মোসাহেব, তকমা-আরদালী ও হরকরা লেখা যেতে লাগলো। ক্ৰমে কলে-কৌশলে, বেণেতা বেসাতে টাকা খাটিয়ে অতি অল্পদিন মধ্যে কলিকাতা সহরে কতকগুলি ছোটলোক বড় মানুষ হন। রামলীলে, স্নানযাত্রা, চড়ক, বেলুনওড়া, বাজি ও ঘোড়র নাচ এঁরাই রেখেছেন–প্রায় অনেকেরই এক-একটি পাশবালিশ আছে—“যে অজ্ঞে” ও “হুজুর আপনি যা বলচেন, তাই ঠিক” বলবার জন্য দুই এক গণ্ডমূর্খ ববাখুরে ভদ্রসন্তান মাইনে করা নিযুক্ত রয়েছে। শুভ-কর্মে দানের দফায় নবডঙ্কা! কিন্তু প্রতি বৎসরের গার্ডেন ফিষ্টের খরচে চার-পাঁচটা ইউনিভারসিটি ফাউণ্ড হয়। কলকেতা সহরের অমোদ শীগগির ফুরায় না, বারোইয়ারি-পূজার প্রতিমা পূজা শেষ হলেও বারো দিন ফ্যালা হয় না। চড়কও বাসি, পচা, গলা ও ধসা হয়ে থাকে—সেসব বলতে গেলে পুঁথি বেড়ে যায় ও ক্রমে তেতো হয়ে পড়ে, সুতরাং টাটকা–চড়ক টাটকা-টাটকাই শেষ করা গেল। এদিকে চড়কতলায় টিনের ঘুরঘুরী, টিনের মুহুরী দেওয়া তল্‌তাবাশের বাঁশী, হলদে রং-করা বাঁখারির চড়কগাছ, ছেঁড়া ন্যাকড়ার তইরি গুড়িয়া পুতুল, শোলার নানাপ্রকার খেলনা, পেল্লাদে পুতুল, চিত্তির-করা হাড়ি বিক্রী কত্তে বসেছে; “ড্যানাক ডানাক ড্যাডাং ডাং চিংড়িমাছের দুটো ঠ্যাং” ঢাকের বোল বাজচে; গোলাপী খিলির দোনা বিক্রী হচ্ছে। একজন চড়কী পিঠে কাঁটা ফুঁড়ে নাচতে নাচতে এসে চড়কগাছের সঙ্গে কোলাকুলি কল্লে –মৈয়ে করে তাকে উপরে তুলে পাক দেওয়া হতে লাগলো। সকলেই আকাশ পানে চড়কীর পিঠের দিকে চেয়ে রইলেন! চড়কী প্রাণপণে দড়ি ধরে কখন ছেড়ে পা নেড়ে নেড়ে ঘুরতে লাগলো। কেবল “দে পাক দে পাক” শব্দ, কারু সৰ্ব্বনাশ, কারু পৌষমাস। একজনের পিঠ ফুঁড়ে ঘোরান হচ্ছে, হাজার লোক মজা দেখচেন। পাঠক! চড়কের যথাকিঞ্চিৎ নক্মার সঙ্গে কলিকাতার বর্তমান সমাজের ইন্সাইড জানলে, ক্রমে আমাদের সঙ্গে যত পরিচিত হবে ততই তোমার বহুজ্ঞতার বৃদ্ধি হবে, তাতেই প্রথম কোট করা হয়েছে “সহর শিখাওয়ে কোতোয়ালি।”
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০২ কলিকাতার বারোইয়ারি-পূজা কালীপ্রসন্ন সিংহ কলিকাতার বারোইয়ারি-পূজা   “And these what name or title e’er they bear, —I speak of all–” Beggars Bush. সৌখীন চড়ক-পার্ব্বণ শেষ হলো বলেই যে দুঃখে সজনেখাঁড়া কেটে গেলেন। রাস্তার ধূলো ও কাঁকরেরা অস্থির হয়ে বেড়াতে লাগলো। ঢাকীরা ঢাক ফেলে জুতো গড়তে আরম্ভ কল্লে। বাজারে দুধ সস্তা (এতদিন গয়লাদের জল মেশবার অবকাশ ছিল না), গন্ধবেণে ভালুকের রোঁ বেচতে বসে গেলেন। ছুতরেরা গুলদার ঢাকাই-উড়ুনিতে কাঠের কুঁচো বাঁধতে আরম্ভ কল্লে। জন্ম-ফলারে যজমেনে বামুনেরা আদ্যশ্রাদ্ধ, বাৎসরিক সপিণ্ডীকরণ টাকতে লাগলেন—তাই দেখে গরমি আর থাকতে পাল্লেন না; “ঘরে আগুন”, “জল ডোবা” ও “ওলাউঠো” প্রভৃতি নানারকম বেশ ধরে চারদিকে ছড়িয়ে পড়লেন। রাস্তার ধারের ফোড়ের দোকান, পচা নিচু ও আঁবে ভরে গেল। কোথাও একটা কাঁটালের ভুতুড়ির উপর মাছি ভ্যান ভ্যান কচ্চে, কোথাও কতকগুলো আঁবের আটি ছড়ান রয়েছে, ছেলেরা আঁটি ঘষে ভেপু করে বাজাচ্চে। মধ্যে একপলা বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় চিৎপুরের বড় রাস্তা চুলারের পাতের  মত দেখাচ্ছে—কুঠিওয়ালারা জুতা হাতে করে, বেশ্যালয়ের বারাণ্ডার নীচে আর রাস্তার ধারের বেণের দোকানে দাঁড়িয়ে আছে—আজ ছক্কড়মহলে পোহাবারো। কলকেতার কেরাঞ্চি গাড়ী বেতো রোগীর পক্ষে বড় উপকারক, গ্যালবানিক শকের কাজ করে। সেকেলে আশমানী দোলদার ছক্কড় যেন হিন্দুধৰ্ম্মের সঙ্গে সঙ্গেই কলকেতা থেকে গা-ঢাকা হয়েছে— কেবল দুই একখান আজও খিদিরপুর, ভবানীপুর, কালীঘাট অর বারাসতের মায়া ত্যাগ কত্তে পারেনি বলেই আমরা কখন কখন দেখতে পাই। “চার অনা!” “চার অনা!” “লালদীঘি!” “তেরজরী!” “এস গো বাবু ছোট আদালত!” ব’লে গাড়োয়ানেরা সৌখীন সুরে চীৎকার কচ্চে; নববধ্বাগমনের বউয়ের মত দুই এক কুঠিওয়ালা গাড়ীর ভিতর বসে আছে।—সঙ্গী জুটচে না। দুই-একজন গবর্ণমেন্ট অফিসের কেরাণী গাড়োয়ানদের সঙ্গে দরের কষাকড়ি কচ্চেন। অনেকে চ’টে হেঁটেই চলেছেন—গাড়োয়ানের হাসি টিটকিরির সঙ্গে “তবে ঝাঁকামুটেয় যাও, তোমাদের গাড়ী চড়া কৰ্ম্ম নয়।” কমপ্লিমেন্ট দিচ্চে। দশটা বেজে গেছে। ছেলেরা বই হাতে ক’রে রাস্তায় হো হো কত্তে কত্তে স্কুলে চলেছে। মৌভাতি বুড়োরা তেল মেখে গাছ কাঁধে করে অফিমের দোকান ও গুলীর আড্ডায় জলে। হেটো ব্যাপারীরা বাজারে বেচা-কেনা শেষ করে খালি বাজরা নিয়ে ফিরে যাচ্চে। কলকেতা সহর বড়ই গুলজার—গাড়ীর হরুবা, সহিসের পয়িস পরিস শব্দ, কেঁদো কেঁদো ওয়েলার ও নরম্যাণ্ডির টাপেতে রাস্তা কেঁপে উঠচে—বিনা বাঘাতে রাস্তায় চলা বড় সোজা কৰ্ম্ম নয়। বীরকৃষ্ণ দার ম্যানেজার কানাইধর দত্ত এক নিমখাসা রকমের ছক্কর ভাড়া করে বারোইয়ারি পূজার বার্ষিক সাধতে বেরিয়েছেন। বীরকৃষ্ণ দাঁ কেবলচাদ দার পুষ্যিপুত্তর, হাটখোলায় গদী, দশ-বাবোটা খন্দ মালের আড়ত, বেলেঘাটায় কাঠের ও চুণের পাঁচখানা গোলা, নগদ দশ বারো লাখ টাকা দাদন ও চোটায় খাটে। কোম্পানীর কাগজের মধ্যে মধ্যে লেন-দেন হয়ে থাকে; বারো মাস প্রায় সহরেই বাস, কেবল পুজোর সময় দশ-বারো দিনের জন্য বাড়ী যেতে হয়। একখানি বগী, একটি লাল ওয়েলার, একটি রাঁড়, দুটি তেলী মোসাহেব, গড়পারে বাগান ও ছ-ডেড়ে একু ভাউলে ব্যাভার, আয়েস ও উপাসনার জন্যে নিয়ত হাজির। বীরকৃষ্ণ দাঁ শ্যামবর্ণ, বেটেখেঁটে রকমের মানুষ, নেয়াপাতি রকমের ভুঁড়ি, হাতে সোনার তাগা, কোমরে মোটা সোনার গোট, গলায় একছড়া সোনার দু-নরী হার, আহ্নিকের সময়, খেলবার তাসের মত চ্যাটালো সোনার ইষ্টিকবচ পরে থাকেন, গঙ্গাস্নানটি প্রত্যহ হয়ে থাকে, কপালে কণ্ঠায় ও কানে ফোঁটাও ফাঁক যায় না। দাঁ মহাশয় বাঙ্গালা ও ইংরাজী নামসই কত্তে পারেন ও ইংরেজ খদ্দের আসা যাওয়ায় দু-চারটে ইংরাজী কোম্পানীর কনট্যাক্টে ‘কম’ আইস, ‘গো’ যাও প্রভূতি দুই-একটা ইংরজী কথাও আসে; কিন্তু দাঁ মহাশয়কে বড় কাজকর্ম্ম দেখতে হয় না, কানাইধন দত্তই তার সব কাজকর্ম্ম দেখেন, দাঁ মশায় টানা-পাখায় বাতাস খেয়ে, বগী চড়ে, আর এসরাজ বাজিয়েই কাল কাটান। বারো জনে একত্র হয়ে কালী বা অন্য দেবতার পূজা করার প্রথা মড়ক হতেই সৃষ্টি হয়—ক্রমে সেই অবধি “মা” ভক্তি ও শ্রদ্ধার অনুরোধে ইয়ারদলে গিয়ে পড়েন। মহাজন, গোলদার, দোকানদার ও হেটোরাই বারোইয়ারি-পূজোর প্রধান উদযোগী। সংবৎসর যার যত মাল বিক্রী ও চালান হয়, মণ পিছু এক কড়া দু কড়া বা পাঁচ কড়ার হিসাবে বারোইয়ারি খাতে জমা হয়ে থাকে, ক্রমে দু-এক বৎসরের দস্তুরি বারোইয়ারি খাতে জমলে মহাজনদের মধ্যে বর্ধিষ্ণু ও ইয়ারগোচের সৌখীন লোকের কাছেই ঐ টাকা জমা হয়। তিনি বারোইয়ারি-পূজের অধ্যক্ষ হন—অন্য চাঁদা আদায় করা, চাঁদার জন্য ঘোরা ও বারোইয়ারি সং ও রং-তামাসার বন্দোবস্ত করা তাঁরই ভার হয়। এবার ঢাকার বীরকৃষ্ণ দাঁ-ই বারোইয়ারির অধ্যক্ষ হয়েছিলেন, সুতরাং দাঁ মহাশয়ের আমমোক্তার কানাইবন দত্তই বারোইয়ারির বার্ষিক সাবা ও আর আর কাজের ভার পেয়েছিলেন। দত্তবাবুর গাড়ী রুনু রুনু রুনু ছুনু ছুনু করে নুড়িঘাটা লেনের এক কায়স্থ বড়মানুষের বাড়ীর দরজায় লাগলো। দত্তবাবু তড়াক ক’রে গাড়ী থেকে লাফিয়ে পড়ে দারোয়ানদের কাছে উপস্থিত হলেন। সহরের বড়মানুষের বাড়ীর দরোয়ানের খোদ হুজুর ভিন্ন নদের রাজা এলেও খবর নদারক! “হোরির বক্সিস”, “দুর্গোৎসবের পার্ব্বণী”, “রাখী পূর্ণিমার প্রণামী” দিয়েও মন পাওয়া ভার। দত্তবাবু অনেক ক্লেশের পর চার অন কবলে একজন দারোয়ানকে বাবুকে এংলা দিতে সম্মত কললেন। সহরের অনেক বড়মানুষের কাছে “কর্জ্জ দেওয়া টাকার সুদ” বা তাঁর “পৈতৃক জমিদারী” কিনতে গেলেও বাবুর কাছে এংলা হ’লে হজুরের হুকুম হ’লে, লোক যেতে পায়; কেবল দুই-এক জায়গায় অবারিতদ্বার! এতে বড়মানুষদেরো বড় দোষ নাই, ‘ব্রাহ্মণপণ্ডিত’, উমেদার’, ‘কন্যাদায়’, ‘আইবুড়ো’ ও ‘বিদেশী ব্রাহ্মণ’ ভিক্ষুকদের জ্বালায় সহরে বড়মানুষদের স্থির হওয়া ভার। এদের মধ্যে কে মৌতাতের টানাটানির জ্বালায় বিব্রত, কে যথার্থ দায়গ্রস্ত, এপিডেপিট করলেও তার সিদ্ধান্ত হয় না! দত্তবাবু আর ঘণ্টা দরজায় দাঁড়িয়ে বইলেন; এর মধ্যে দশ-বারোজনকে পরিচয় দিতে হলো, তিনি কিসের জন্য হজুরে এসেছেন। তিনি দুই একটা বেনাড়া রকমের দরোয়ানি ঠাট্টা খেয়ে গরম হচ্ছিলেন, এমন সময় তাঁর চার অলি দাদুনে দরোয়ান ঢিকুতে ঢিকুতে এসে তাঁরে সঙ্গে করে নিয়ে হজুরে পেশ কললে। পাঠক। বড়মানুষের বাড়ীর দরোয়ানের কথায়, এইখানে আমাদের একটি গল্প মনে পড়ে গেল; সেটি না বলেও থাকা যায় না। বছর দশ-বারো হলো, এই সংবের বাগবাজার অঞ্চলের একজন ভদ্রলোক তার জন্মতিথি উপলক্ষে গুটিকত ফ্রেণ্ডকে মধ্যাহ্নভোজনের নিমন্তন্ন করেন। জন্মতিথিতে আমোদ করা হিন্দুদের পক্ষে ইংরেজদের কাপি করা প্রথা নয়; আমরা পুরুষপরম্পরা জন্মতিথিতে গুড়-দুধ খেয়ে তিল বুলে, মাছ ছেড়ে, (যার যেমন প্রথা) নতুন কাপড় পরে, প্রদীপ জ্বেলে, শাক্ বাজিয়ে, আইবুড়ো ভাত খাবার মত–কুটুম্ব-বন্ধু বান্ধবকে সঙ্গে নিয়ে ভোজন করে থাকি। তবে আজকাল সহরের কেউ কেউ জন্মতিথিতে বেতর গোচের অমোদ করে থাকেন। কেউ যেটের কোলে ষাট বৎসরে পদার্পণ করে আপনার জন্মতিথির দিন গ্যাসের আলোর গেট, নাচ ও ইংরেজদের খানা দিয়ে চোহেলের খানা দিয়ে চোহেলের একশেষ করেন; অভিপ্রায়, আপনারা আশীৰ্বাদ করুন, আর ষাট বছর এমনি করে আমোদ কত্তে থাকুন, চুলে ও গোঁফে কলপ দিয়ে জরির জামা ও হীরের কণ্ঠী পরে নাচ দেখতে বসুন—প্রতিমা বির্জন–স্নানযাত্রা ও রথে বাহার দিন। অনেকের জন্মতিথিতে বাগান টের পান যে, আজ বাবুর জন্মতিথি, নেমন্তন্নেদের গা সারতে আফিসে একহপ্তা ছুটি নিতে হয়। আমাদের বাগবাজারের বাবু সে রকমের কোন দিকেই যান নি, কেবল গুটিকতক ফ্রেণ্ডকে ভাল করে খাওয়াবেন, এই তাঁর মতলব ছিল। এদিকে ভোজের দিন নেমন্তন্নেরে এসে একে একে জুটলেন, খাবার-দাবার সকলি প্রস্তুত হয়েছিল, কিন্তু সেদিন সকালে বাদলা হওয়ায় মাছ পাওয়া যায় নি। বাঙ্গালীদের মাছটা প্রধান খাদ্য, সুতরাং কর্ম্মকর্ত্তা মাছের জন্য উড়ই উদ্বিগ্ন হতে লাগলেন; নানা স্থানে মাছের সন্ধানে লোক পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু কোন রকমেই মাছ পাওয়া গেল না।–শেষ একজন জেলে একটা সে দশ-বারো ওজনের রুইমাছ নিয়ে উপস্থিত হলো। মাছ দেখে কৰ্ম্মকর্ত্তার আর খুসীর সীমা রইলো না। জেলে যে দাম বলবে, তাই নিয়ে মাছটি নেওয়া যাবে মনে করে জেলেকে জিজ্ঞাসা কল্লো, “বাপ, এটির দাম কি নেবে? ঠিক বল, তাই দেওয়া যাবে।” জেলে বল্লে, “মশাই! এর দাম বিশ ঘা জুতো।” কৰ্মকর্ত্তা বিশ ঘা জুতো শুনে অবাক হয়ে রইলেন। মনে কল্লেন, জেলে বাদলা পেয়ে মদ খেয়ে মাতাল হয়েছে, নয়ত পাগল। কিন্তু জেলে কোন ক্রমেই বিশ ঘা জুতো ভিন্ন মাছটি দিবে না, এই তার পণ হলো। নিমন্তুন্নে, বাড়ীর কর্তা ও চাকর-বাকরেরা জেলের এ আশ্চর্য্য দাম শুনে তারে কেউ পাগল, কেউ মাতাল বলে ঠাট্টা-মস্করা কত্তে লাগলো; কিন্তু কোন রকমেই জেলের গো ঘুচলো না। শেষে কর্ম্মকর্ত্তা কি করেন, মাছটি নিতেই হবে, আস্তে আস্তে জেলেকে বিশ ঘা জুতো মাত্তে রাজী হলেন, জেলেও অম্লানবদনে পিঠ পেতে দিলে। দশ ঘা জুতো জেলের পিঠে পড়বা মাত্র জেলে “মশাই! একটু থামুন, আমার একজন অংশীদার আছে, বাকী দশ ঘ সেই খাবে, আপনার দরোয়ান–দরজার বসে আছে, তারে ডেকে পাঠান। আমি যখন বাড়ীর ভিতরে মাছ নিয়ে আসছিলেম, তখন মাছের অর্ধেক দাম না দিলে আমারে ঢুকতে দিবে না বলেছিল, সুতরাং আমিও অর্ধেক বখরা দিতে রাজী হয়েছিলেম।” কর্ম্মকর্ত্তা তখন বুঝতে পাললেন, জেলে কিজন্য মাছের দাম বিশ ঘা জুতো চেয়েছিল। দরোয়াজীকে দরজায় বসে আর অধিকক্ষণ জেলের দামের বখরার জন্য প্রতীক্ষা করে থাকতে হলো না; কর্ম্মকর্ত্তা তখনি দরোয়ানজীকে জলের বিশ ঘার অংশ দিলেন। পাঠক বড়মানুষেরা! এই উপন্যাসটি মনে রাখবেন। হুজুর দেড়হাত উঁচু গদীর উপরে তাকিয়ে ঠেস দিয়ে বসে আছে, গা আদুর! পাশে মুন্সীমশায় চসমা চোখে দিয়ে পেস্কারের সঙ্গে পরামর্শ কচ্চে—সামনে কতকগুলো খোলা থাতা ও একঝুড়ি চোতা কাগজ, আর একদিকে পাঁচজন ব্রাহ্মণপণ্ডিত বাবুকে “ক্ষণজন্ম”, “যোগভ্রষ্ট” বলে তুষ্ট করবার অবসর খুঁজচেন। গদীর বিশ হাত অন্তরে দুজন বেকার ‘উমেদার’ ও একজন বৃদ্ধ কন্যাদায় কাঁদো কাঁদো মুখ করে ঠিক ‘বেকার’ ও ‘কন্যাদায়’ হালতের পরিচয় দিচ্চেন। মোসাহেবের খালি গায়ে ঘুর-ঘুর কচ্ছে, কেউ হুজুরের কাণে কাণে দু-চার কথা কচ্চেন—হুজুর ময়ূরহীন কার্ত্তিকের মত আড়ষ্ট হয়ে বসে রয়েছেন। দত্তবাবু গিয়ে নমস্কার কললেন। হুজুর বারোইয়ারি-পূজার বড় ভক্ত,পূজার কদিন দিবারাত্রি বারোইয়ারিতলাতেই কাটান। ভাগ্নে, মোসাহেব, জামাই ও ভগিনীপতি বারোইয়ারির জন্য দিনরাত শশব্যস্ত থাকেন। দত্তবাবু বারোইয়ারি-বিষয়ক নানা কথা কয়ে হজুরি সবষ্ক্রিপসন হাজার টাকা বিদেয় নিলেন! পেমেন্টের সময় দাওয়ানজী শতকরা দু টাকার হিসাবে দস্তুরী কেটে ন্যান, দত্তজা ঘরপোড়া কাঠের হিসাবে ও দাওয়ানজীকে খুশী রাখবার জন্য তাতে আর কথা কইলেন না। এদিকে বাবু বারোইয়ারি পূজার ক-রাত্রি কোন্‌ কোন্ রকম পোষাক পরবেন, তার বিবেচনায় বিব্রত হলেন। কানাইবাবু বারোইয়ারি-বই নিয়ে না খেয়ে বেলা দুটো অবধি নানা স্থানে ঘুরলেন, কোথাও কিছু পেলেন, কোথাও মস্ত টাকা সই মাত্র হলো; (আদায় হবে না, তার ভয় নাই), কোথাও গলা ধাক্কা, তামাসা ও ঠোনাটা-ঠানাটাও সইতে হলো। বিশ বচ্ছর পূর্ব্বে কলকেতার বারোইয়ারির চাঁদা-সাধারা প্রায় দ্বিতীয় অষ্টমের পেয়াদা ছিলেন–ব্রহ্মোত্তর জমির খাজানা সাধরি মত লোকের উনোনে পা দিয়ে টাকা আদায় কত্তেন, অনেক চোটের কথা কয়ে, বড়মানুষেদের তুষ্ট করে টাকা আদায় কত্তেন। একবার এক বারোইয়ারি-পাণ্ডারা এক চক্ষু কাণা এক সোণার বেণের কাছে চাঁদা আদায় কত্তে যান। বেণেবাবু বড়ই কৃপণ ছিলেন, “বাবার পরিবারকে” (অর্থাৎ মাকে) ভাত দিতেও কষ্ট বোধ কত্তেন, তামাক খাবার পাতের শুকনো নলগুলি জমিয়ে রাখতেল; একবৎসরের হলে ধোপাকে বিক্রী কত্তেন, তাতেই পরিবারের কাপড় কাচার দাম উসুল হতো। বারোইয়ারি-অধ্যক্ষেরা বেণেবাবুর কাছে চাঁদার বই ধল্লে, তিনি বড়ই রেগে উঠলেন ও কোন মতে এক পয়সাও বারোইয়ারিতে বাজে খরচ কত্তে রাজি হলেন না। বারোইয়ারির অধ্যক্ষের ঠাউরে ঠাউরে দেখলেন, কিন্তু বাবুর বাজে খরচের কিছুই নিদর্শন পেলেন না; তামাক গুলি পাকিয়ে কোম্পানীর কাগজের সঙ্গে বাক্সমধ্যে রাখা হয়—বালিসের ওয়াড়, ছেলেদের পোষাক বেণেবাবু অবকাশমত স্বহস্তেই সেলাই করেন—চাকরদের কাছে (একজন বুড়ো উড়ে মাত্ৰ) তামাকের গুল, মুড়ো খেংরার দিনে দুবার নিকেশ নেওয়া হয়—ধুতি পুরণো হলে বদল দিয়ে বাসন কিনে থাকেন। বেণেবাবুর ত্রিশ লক্ষ টাকার কোম্পানীর কাজ ছিল; এ সওয়ায় সুদ ও চোটায় বিলক্ষণ দশ টাকা আসতো; কিন্তু তার এক পয়সা খরচ কত্তেন না; (পৈতৃক পেসা)। খাঁটি টাকায় মাকু চালিয়ে যা রোজগার কত্তেণ, তাতেই সংসারনির্ব্বাহ হতো; কেবল বাজে খরচের মধ্যে, একটা চক্ষু, কিন্তু চসমায় দুখানি পরকলা বসানো। তাই দেখে, বারোইয়ারির অধ্যক্ষেরা ধরে বলেন, “মশাই! আপনায় বাজে খরচ ধরা পড়েছে, হয় চসমাখানির একখানি পরকলা খুলে ফেলুন, নয় আমাদের কিছু দিন।” বেণেবাবু এ কথায় খুসী হলেন; অনেক কষ্টে দুটি সিকি পর্যন্ত দিতে সম্মত হয়েছিলেন। আর একবার বারোইয়ারি-পূজোর এক দল অধ্যক্ষ সহরের সিঙ্গিবাবুদের বাড়ী গিয়ে উপস্থিত; সিঙ্গিবাবু সে সময় অফিসে বেরুচ্ছিলেন, অধ্যক্ষেরা চার-পাঁচ জনে তাহাকে ঘিরে ধরে ‘ধরেছি, ধরেছি’ বলে চেঁচাতে লাগলেন। রাস্তায় লোক জমে গেল, সিঙ্গিবাবু অবাক্–ব্যাপারখানা কি? তখন একজন অধ্যক্ষ বল্লেন, “মশায়! আমাদের অমুক জায়গায় বারোইয়ারিপূজোয় মা ভগবতী সিঙ্গির উপর চড়ে কৈলাস থেকে আসছিলেন, পথে সিঙ্গির পা ভেঙ্গে গেছে; সুতরাং তিনি আর আসতে পাচ্ছেন না, সেইখানেই রয়েছেন; আমাদের স্বপ্ন দিয়েছেন যে, যদি আর কোন সিঙ্গির যোগাড় কত্তে পার, তা হলেই আমি যেতে পারি। কিন্তু মহাশয়! আমরা আজ একমাস নানা স্থানে ঘুরে বেড়াচ্চি, কোথাও আর সিঙ্গির দেখা পেলেন না। আজ আপনার দেখা পেয়েচি, কোন মতে ছেড়ে দেবো না–চলুন, যাতে মার আসা হয়, তাই তদ্বির করবেন। সিঙ্গিবাবু অধ্যক্ষদের কথা শুনে সন্তুষ্ট হয়ে, বারোইয়ারির চাঁদায় বিলক্ষণ দশ টাকা সাহায্য কল্লেন। এ ভিন্ন বারোইয়ারির চাঁদা-সাধা বিষয়ে নানা উদ্ভট কথা আছে। কিন্তু এখানে সে সকলের উত্থাপন নিষ্প্রয়োজন। পূৰ্ব্বে চুঁচড়োর মত বারোইয়ারি-পূজা আর কোথাও হতো না, “আচাভো’, ‘বোম্বোচাক’ প্রভৃতি সং প্রস্তুত হতে; সহরের ও নানাস্থলের বাবুরা বোট, বজরা, পিনেস ও ভাউলে ভাড়া করে সং দেখতে যেতেন। লোকের এত জনতা হতো যে, কলপাত এক টাকায় একখানি বিক্রী হতো, চোরেরা আণ্ডীল হয়ে যেতো; কিন্তু গরীব, দুঃখী গেরস্তোর হাঁড়ি চড়তো না। গুপ্তিপাড়া, কাঁচড়াপাড়া, শান্তিপুর, উলো প্রভৃতি কলকেতার নিকটবর্তী পল্লীগ্রামে ক’বার বড় ধুম করে বারোইয়ারি-পূজো হয়েছিল। এতে টক্করাটক্করিও বিলক্ষণ চলেছিল। একবার শান্তিপুরওয়ালারা পাঁচ লক্ষ টাকা খরচ করে এক বারোইয়ারি-পূজো করেন; সাত বৎসর ধরে তার উজ্জুগ হয়, প্রতিমাখানি ষাট হাত উঁচু হয়েছিল। শেষে বিসর্জ্জনের দিনে প্রত্যেক পুতুল কেটে কেটে বিসর্জ্জন কত্তে হয়েছিল, তাতেই গুপ্তিপাড়াওয়ালার ‘মার’ অপঘাতমৃত্যু উপলক্ষে গণেশের গলায় কাচা বেঁধে এক বারোইয়ারি পূজো করেন, তাতেও বিস্তর টাকা ব্যয় হয়! এখন আর সে কাল নাই; বাঙ্গালী বউমানুষদের মধ্যে অনেক সভ্য হয়েচেন। গোলাপজল দিয়ে জলশৌচ, ঢাকাই কাপড়ের পাড় ছিঁড়ে পরা, মুক্তাভস্মের চূণ দিয়ে পান খাওয়া, এখন আর শোনা যায় না। কুকুরের বিয়েয় লাখ টাকা খরচ, যাত্রায় নোট প্যালা, তেল মেখে চার ঘোড়ার গাড়ী চড়ে ভেপু বাজিয়ে স্নান কত্তে যাওয়া, সহরে অতি কম হয়ে পড়েছে। আজ্ঞা হুজুর, উঁচু গদী, কার্ত্তিকের মত বাউরি-কাঁটা চুল, একপাল বরাখুরে মোসাহেব, রক্ষিত বেশ্যা আর পাকান কাছা–জলস্তম্ভ আর ভূমিকম্পের মত—’কখনোর’ পাল্লায় পড়েছে! কায়স্থ, ব্রাহ্মণ বড়মানুষ (পাড়াগেঁয়ে ভুতেরা ছাড়া প্রায় মাইনে-করা মোসাহেব রাখেন না; কেবল সহরে দু’চার বেণে বড়মানুষই মোসাহেবদের ভাগ্যে সুপ্রসন্ন। বুক-ফোলান, বাঁকা সীঁথি, পইতের গোছা গলায়, কুঁচের মত চক্ষু লাল, কাণে তুলোয় করা আতর (লেখাপড়া সকল রকমই জানেন, কেবল বিস্মৃতিক্রমে বর্ণপরিচয়টি হয় নাই) আমরা খালি বেণে বড় মানুষ বাবুদের মজলিশে দেখতে পাই। মোসাহেবী পেশা উঠে গেলেই, ‘বারোইয়ারি’, ‘খেমটা’, ‘চেহেল’ ও ‘ফররার’ লাঘব হবে সন্দেহ নাই। সন্ধ্যা হয় হয় হয়েচে–গয়লারা দুধের হাঁড়া কাঁধে করে দোকামে যাচ্ছে। মেছুনীরা আপনাদের পাটা, বঁটি ও চুবড়ি ধুয়ে প্রদীপ সাজাচ্ছে! গ্যাসের আলো-জ্বালা মুটেরা মৈ কাঁধে করে দৌডুচ্চে, থানার সামনে পাহারাওয়ালাদের প্যারেড (এঁরা লড়াই করবেন, কিন্তু মাতাল দেখে ভয় পান) হয়ে গিয়েছে। ব্যাঙ্কের ভেটো কেরাণীরে ছুটি পেয়েছেন। আজ এ সময়ে বীরকৃষ্ণ দাঁর গদীতে বড় ধূম—বাবোইয়ারির অধ্যক্ষেরা একত্র হয়ে কোন কোন রকম সং হবে, কুমোরকে তারি নমুনা দেখাবেন, কুমোর নমুনো-মত সং তৈয়ের করবে, দাঁ মহাশর ও ম্যানেজার কানাইধন দত্তজা সমুনোর মুখপাত! ফৌজদুরী বালাখানা থেকে ভাড়া করে এনে, কুড়িটি বেল লণ্ঠন (রং-বেরং—সাদা, গ্রিন, লাল) টাঙ্গান হয়েছে। উঠোনে প্রথমে খড়, তার উপর দরমা, তার উপর মাদরাজি খেরোর জাজিম হাসচে। দাঁড়িপাল্লা, চ্যাটা, কুলো ও চালুনীরে, গণিগব্যাগ ও ছেঁড়া চটের আশপাশ থেকে উঁকি-ঝুঁকি মাচ্চে—আর তারা ঘরজামাই ও অন্নদাস-ভাগ্নের দলে গণ্য। বীরকৃষ্ণবাবু ধূপছায়া চেলীর জোড় এবং কলার-কপ ও প্লেটওয়ালা (ঝাড়ের গেলাশের মত) কামিজ ও ঢাকাই ট্যার্চ্চা কাজের চাদরে শোভা পাচ্ছে, রুমালখানি কোমরে বাঁধা আছে—সোনা চাবি-শিক্লী, কোঁচা ও কামিজের উপর ঘড়ির চেনের অফিসেয়েটিং হয়েছে। পাঠক! নবাবী আমল শীতকালের সূর্যের মত অস্ত গেল। মেঘন্তের রৌদ্রের মত ইংরেজদের প্রতাপ বেড়ে উঠলো। বড় বড় বাঁশঝাড় সমূলে উচ্ছন্ন হলো। কঞ্চিতে বংশলোচন জন্মাতে লাগলো। গবো মুন্সী, ছিরে বেণে ও পুঁটে তেলী রাজা হলো। সেপাই পাহারা, আনা-সোটা ও রাজা খেতাপ, ইণ্ডিয়া রবরের জুতো ও শান্তিপুরের ডুরে উড়ুনির মত রাস্তায় পাঁদাড়ে গড়াগড়ি যেতে লাগলো। কৃষ্ণচন্দ্র, রাজবল্পভ, মানসিংহ, নন্দকুমার, জগৎ শেঠ প্রভৃতি বড় বড় ঘর উৎসন্ন যেতে লাগলো, তাই দেখে হিন্দুধৰ্ম্ম, কবির মান, বিদ্যার উৎসাহ, পরোপকার নাটকের অভিনয় দেশ থেকে ছুটে পালালো। হাফ-আখড়াই, ফুল-আখড়াই পাঁচালী ও যাত্রার দলেরা জন্মগ্রহণ কলে, সহরের যুবকদল গোধুরী, ঝকমারী ও পক্ষীর দলে বিভক্ত হলেন। টাকা বংশগৌরবকে ছাপিয়ে উঠলেন। রামা মুদ্দফরাস, কেষ্টা বাগদী, পেঁচো মল্লিক ও ছুঁচো শীল ককেতার কায়েত-বামুনের মুরুব্বী ও সহরের প্রধান হয়ে উঠলো। এ সময়ে হাফ আখড়াই ও ফুল-অখিড়াইয়ের সৃষ্টি ও এই অবধি সহরের বড়মানুষেরা হাফ-আখাড়াইয়ে আমোদ কত্তে লাগলেন। শামবাজার, রামবাজার চক ও সাঁকোর বড় বড় নিষ্কর্মা বাবুর৷ এক এক হাফ-আখড়াই দলের মুরুব্বী হলেন। মোসাহেব, উমেদার, পাড়াস্থ ও দলস্থ গেরস্তগোছ হাড়হাভাতেরা সৌধীন দোহারের দলে মিশলেন। অনেকের হাফ-আখড়াইয়ের পুণ্যে চাকরী জুটে গেল। অনেকে পূজুরী দাদাঠাকুরের অবস্থা হতে একেবারে আমীর হয়ে পড়লেন—কিছুদিনের মধ্যে তকমা বাগান, জুড়ী ও বালাখানা বনে গেল! আমরা পূর্ব্বে পাঠকদের যে বারোইয়ারি-পূজোর কথা বলে এসেচি, বীরকৃষ্ণ দাঁর উজ্জুগে প্রথম রাত্রি সেই বারোইয়ারিতলায় হাফ-আখড়াই হবে, তার উজ্জুগ হচ্ছে। ধোপাপুকুর লেনের দুইয়ের নম্বর বাড়ীটিতে হাফ-আখড়াইয়ের দল বসেচে-বীরষ্ণেবাবু বগী চ’ড়ে প্রত্যহ আড্ডায় এসে থাকেন। দোহারেরা কুঠি থেকে এসে হাত-মুখ ধুয়ে জলযোগ করে রাত্রি দশটার পর একত্রে জমায়েৎ হন–ঢাকাই কামার, চাষাধোপা, পুঁটেতেলী ও ফলারে বামুনই অধিক। মুখুয্যেদের ছোটবাবু অধ্যক্ষ। ছোটবাবু ইয়ারের টেক্কা, বেশ্যার কাছে চিড়িয়ার গোলাম ও নেশায় শিবের বাবা! শরীর ডিগ্‌ডিগে, পুইতে গোচ্ছা ক’রে গলায়, দাঁতে মিশি, প্রায় আধহাত চেটালো কালা ও লালপেড়ে চক্ৰবেড়ের ধুতি পরে থাকেন। দেড়ভরি আফিম, দেড়শ ছিলিম গাঁজা ও একজালা তাড়ী রোজকী মৌতাতের উঠনো বন্দোবস্ত। পাল-পার্ব্বণে ও শনিবারে বেশী মাত্রা চড়ান! অমাবস্যার রাত্রি–অন্ধকারে ঘুরঘুট্টি–গুড় গুড় করে নড়ছে না, মাটি থেকে যেন আগুনের তাপ বেরুচ্চে, পথিকেরা এক একবার আকাশ-পানে চাচ্ছেন, আর হন্ হন্ করে চলেচেন-কুকুরগুলো খেউ ঘেউ কচ্চে, দোকানীরে ঝাঁপড়া বন্ধ করে ঘরে যাবার উজ্জুগ কচ্চে,–গুডুম করে “নটার” তোপ পড়ে গেল। পোপাপুকুর লেনের দুইয়ের নম্বরের বাড়ী আজ বড়ই ধূম। ঢাকার বীরকৃষ্ণবাবু, চকবাজারের প্যালানাথবাবু, দলপতি বাবুয়ো ও দু-চার গাইয়ে ওস্তাদও আসবেন। গাওনার সুর বড় চমৎকার হয়েছে–দোহারেরাও মিলে ও তালে দোরস্ত। সময় কারুরই হাত-ধর নয়–নদীর স্রোত্রে মত, বেশ্যার যৌবনের মত ও জীবের পরমায়ুর মত, কারুরই অপেক্ষা করে না! গির্জ্জের ঘড়িতে ঢং ঢং ঢং করে দশটা বেজে গেল, সোঁ সোঁ করে একটা বড় ঝড় উঠলো, রাস্তার ধূলো উড়ে যেন অন্ধকার অরো বাড়িয়ে দিলে–মেঘের কড়মড় কড়মড় ডাক ও বিদ্যুতের চমকানিতে ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলেরা মার কোলে কুণ্ডুলী পাকাতে আরম্ভ কল্লে–মুষলের ধারে ভারী একপসলা বৃষ্টি এলো। এদিকে দুয়ের নম্বরের বাড়ীতে অনেকে এসে জমতে লাগলেন। অনেকে সকলের অনুরোধে ভিজে ঢ্যাপঢ্যাপে হয়ে এলেন। চারডেলে দেয়ালগিরিতে বাতি জ্বলচে—মজলিস জক জক কচ্চে–পান, কলাপাতের এঁটো নল ও থেলো হুঁকোর কুরুক্ষেত্তর! মুখুয্যেদের ছোটবাবু লোকের খাতির কচ্চেন––‘ওরে’ ‘ওরে’ ক’রে তার গলা চিরে গ্যাচে। তেলী, ঢাকাই কামার ও চাষাধোপা দোহারেরা একপেট ফির্নি মেটো, ঘণ্টো ও আটা-নেবড়ান-লুসে, ফরসা ধুতি-চাদরে ফিট হয়ে বসে আছেন, অনেকের চক্ষু বুজে এসেচে–বাতির আলো জোনাকী-পোকার মত দেখছেন ও এক একবার ঝিমকিনি ভাঙলে মনে কচ্চেন, যেন উড়চি। ঘরটি লোকারণ্য—সকলেই খাতায় খাতায় ঘিরে বসে আছেন—থেকে থেকে ফুক্কুড়ি টপ্পাটা চলচে,—অনেক সেয়ানা ফরমেসে জুতো-জোড়াটি হয় পকেটে, নয় পার নীচে রেখে চেপে বসেচেন;–জুতো এমনি জিনিস যে, দোহারদলের পরস্পরেও বিশ্বাস নাই! চকবাজারের প্যালানাথবাবুর অপেক্ষাতেই গাওনা বন্ধ রয়েছে, তিনি এলেই গাওনা আরম্ভ হবে। দু-একজন ধরতা দোহার প্যালানাথবাবুর আসবার অপেক্ষায় থাকতে বেজার হচ্চেন–দু-একজন “তাই ত” বলে দাদার বোলে বোল দিচ্চে; কিন্তু প্যালানাথবাবু বারোইয়ারির একজন প্রধান ম্যানেজার, সৌখীন ও খোসপোষাকীর হদ্দ ও ইয়ারের প্রাণ! সুতরাং তার অপেক্ষা না কল্লে তাঁর অপমান করা হয়, ঝড়ই হোক, বজ্রাঘাতই হোক আর পৃথিবী কেন রসাতলে যাক না, তাঁর এসব বিষয়ে এমন সখ যে, তিনি অবশ্যই আসবেন। ধতা দোহার গোবিন্দবাবু বিরক্ত হয়ে নাকিসুরে ‘মনালে বঁদিয়া’ জিক্কুর টপ্পা ধরেছেন;–গাঁজার হুঁকো একবার এ থাকের পাশ মেরে ও থাকে গেল। ঘরের এককোণে হুঁকো থেকে আগুন পড়ে যাওয়ায়, সে দিকের থাকেরা রল্লা করে উঠে দাঁড়িয়ে কোঁচা ও কাপড় ঝাড়চেন ও কেমন করে আগুন পড়লো, প্রত্যেকে তারই পঞ্চাশ রকম ডিপোজিশন দিচ্চেন;—এমন সময় একখান গাড়ী গড় গড় করে এসে দরজায় লাগলো। মুখুয্যেদের ছোটবাবু মজলিস থেকে তড়াক করে লাফিয়ে উঠে, বারাণ্ডায় গিয়ে “প্যালানাথবাবু! প্যালানাথবাবু এলেন” বলে চেঁচিয়ে উঠলেন;–দোহারদলে হুররে ও রৈ-রৈ পড়ে গেল,–ঢোলে রং বেজে উঠলো। প্যালানাথবাবু উপরে এলেন–শেকহ্যাণ্ড, গুড ইভনীং ও নমস্কারের ভিড় ঢুকতে আধঘণ্টা লাগলো। চকবাজারের বাবু প্যালানাথ একহারা বেঁটেখেঁটে মানুষ, গত বৎসর পঞ্চাশ পেরিয়েচেন; বাবু বড় হিন্দু–একাদশী-হরিবাসর ও রাধাষ্টমীতে উপোস, উত্থানও নির্জলা করে থাকেন; বাবুর মেজাজ গরিব। সৌখীনের রাজা! ১২১৯ সালে সারবর্‌ন সাহেবের নিকট তিনমাস মাত্র ইংরেজী লেখাপড়া শিখে ছিলেন, সেই সম্বলেই এতদিন চলচে–সর্ব্বদা পোষাক ও টুপী পরে থাকেন; (টুপীটি এমনি হেলিয়ে হেলিয়ে পরা হয়ে থাকে যে, বাবুর ডান কাণ আছে কি না হঠাৎ সন্দেহ উপস্থিত হয়); লক্ষ্ণৌ ফ্যাশানে (বাইজীর ভেডুয়ার মত) চুড়িদার পায়জামা, রামজামা, কোমরে দোপাটা ও মাথায় বাঁকা টুপী, তাঁর মনোমত পোষাক। বাঈ ও খেমটা মহলে প্যালানাথবাবুর বড় মান! তাদের কোন দায়-দখল পড়লে বাবু আড় হয়ে পড়ে আফোতে তামায করেন, বাঈয়ের অনুরোধে হিন্দুয়ানী মাথায় রেখে কাছা খুলে ফয়তা দেন ও বাবোইয়ারির নামে তযবি পড়েন। মোসলমান-মহলেও বাবুর বিলক্ষণ প্রতিপত্তি! অনেক লক্ষ্ণৌয়ে পাতি ও ইরাণী চাপদাড়ি বাবুর বুজরুকি ও কেরামতের অনিয়ম এনসাফ করে থাকেন! ইংরেজী কেতা বাবুর ভাল লাগে না; মনে করেন, ইংরেজী লেখাপড়া শেখা শুদ্ধ কাজ চালাবার জন্য। মোসলমান-সহবাসে প্রায় দিবারাত্রি থেকে থেকে ঐ কেতাই এঁর বড় পছন্দ! সর্ব্বদাই নবাবী আমলের জাঁকজমক, নবাবী আমীরী ও নবাবী মেজাজের কথা নিয়ে নাড়াচাড়া হয়। এদিকে দোহারের নতুন সুরের গান ধল্লেন। ধোপাপুকুর রন্‌ রন্‌ কত্তে লাগলো; ঘুমন্ত ছেলেরা মার কোলে চমকে উঠলো কুকুরগুলো খেউ খেউ করে উঠলো;–বোধ হতে লাগলো যেন, হাড়ীরে গোটাকতক শূয়ার ঠেঙ্গিয়ে মাচ্চে! গাওনার নতুন সুর শুনে সকলেই বড় খুসী হয়ে ‘সাবাস! বাহবা!’ ও শোভান্তরীর বৃষ্টি কত্তে লাগলেন–দোহারের উৎসাহ পেয়ে দ্বিগুণ চেঁচাতে লাগলো,– সমস্ত দিন পরিশ্রম করে ধোপারা অঘোরে ঘুমুচ্ছিলো, গাওনার বেতরো আওয়াজে চমকে উঠে খোটা ও দড়ি নিয়ে দৌডুলো! রাত্রি দুটো পর্যন্ত গাওনা হয়ে, শেষে সে রাত্রের মত বেদব্যাস বিশ্রাম পেলেন–দোহার, সৌখীন বাবু অধ্যক্ষের অন্ধকারে অতিকষ্টে বাড়ী গিয়ে বিছানার আড় হলেন! এদিকে বারোইয়ারিতলায় সং গড়া শেষ হয়েচে। একমাস মহাভারতের কথা হচ্ছিলো, কাল তাও শেষ হবে; কথক বেদীর উপর ব’সে বৃষোৎসর্গের ষাঁড়ের মত ও বলিদানের মহিষের মত মাথায় ফুলের মালা জড়িয়ে রসিকতার একশেষ কচ্চেন, মূল পুঁথির পানে চাওয়া মাত্র হচ্চে, বস্তুতঃ যা বলছেন, সকলি কাশীরাম খুড়োর উচ্ছিষ্ট ও কোনটা বা স্বপাক। কথকতা পেশাটা ভাল–দিব্য জলখাবার, দিব্য হাতপাখার বাতাস; কেবল মধ্যে মধ্যে কোন কোন স্থলে আহার বিহারের আনুষঙ্গিক প্রহারটা সইতে হয়, সেইটেই মহান কষ্ট। পূৰ্ব্বে গদাধর শিরোমণি, রামধন তর্কবাগীশ, হলধর, পঞ্চানন প্রভৃতি প্রধান প্রধান কথক ছিলেন; শ্রীধর অল্পবয়সে বিলক্ষণ খ্যাত হন। বর্তমান দলে শাস্ত্রজ্ঞানের অপেক্ষা করেন না, গলাটা সাধা; চাণক্যশ্লোকের দু-আখর পাঠ ও কীর্তন-অঙ্গের দু’টো পদাবলী মুখস্থ করেই, মজুর কত্তে বেরোল ও বেদীতে বসে ব্যাস বধ করেন! কথা শোবার ও সং দেখবার জন্যে লোকের অম্ভব ভিড় হয়েছে–কুমোর, ভাওয়াল ও অধ্যক্ষেরা থেলো হুঁকোয় তামাক খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্চেন ও মিছে মিছে চেঁচিয়ে গলা ভাঙচেন! বাজে লোকের মধ্যে দু-একজন, আপনার আপনার কর্তৃত্ব দেখাবার জন্য, “তফাৎ তফাৎ কচ্চে, অনেকে গোছালো-গোছের মেয়েমানুষ দেখে, সঙের তরজমা করে বোঝাচ্চেন! সংগুলি বর্ধমানের রাজার বাঙ্গালা; মহাভারতের মত; বুঝিয়ে না দিলে মৰ্ম্ম গ্রহণ করা ভার! কোথাও ভীষ্ম শরশয্যায় পড়েচেল—অর্জ্জুন পাতালে বাণ মেরে ‘ভোগবতী’র জল তুলে খাওয়াচ্চেন। জ্ঞাতির পরাক্রম দেখে, দুর্য্যোধন ফ্যাল্ ফ্যাল্‌ করে চেয়ে রয়েচেন। সঙদের মুখে ছাঁচ ও পোষাক সকলেরই এরকম, কেবল ভীষ্ম দুধের মত সাদা, অর্জ্জুন ডেমাটিনের মত কালো ও দুৰ্য্যোধন গ্রীণ। কোথাও নবরত্নের সভা–বিক্রমাদিত্য বত্রিশ পুতুলের সিংহাসনের উপর আফিমের দালালের মত পোষাক পরে বসে আছেন। কালিদাস, ঘটকর্পর, ঝরাহমিহির প্রভৃতি নবরত্নেরা চারিদিকে ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েছেন—রত্নদের সকলেরই একরকম ধুতি, চাদর ও টিকি; হঠাৎ দেখলে বোধ হয়, যেন একদল অগ্রদানী ক্রিয়াবাড়ী চোকবার জন্য দরোওয়ানের উপাসনা কচ্চে। কোথাও শ্ৰীমন্ত দক্ষিণ মশানে চৌত্রিশ অক্ষরে ভগবতার স্তব কচ্চেন, কোথাও কোটালেরা ঘিরে দাঁড়িয়ে রয়েচে–শ্ৰীমন্তের শাখার শালের শামলা, হাক ইংরাজী গোছের চাপকান ও পায়জামা পরা; ঠিক যেন একজন হাইকোর্টের প্লীডার প্লীড কচ্চেন! এক জায়গায় রাজসূয় যজ্ঞ হচ্ছে—দেশ দেশান্তরের রাজারা চারিদিকে ঘিরে বসেচেন—মধ্যে ট্যানা-পরা হোতা পোতা বামুনরা অগ্নিকুণ্ডের চারিদিকে বসে হোম কচ্চেন। রাজাদের পোষাক ও চেহারা দেখলে হঠাং বোধ হয়, যেন একদল দরোওয়ান স্যাকরার দোকানে পাহারা দিচ্চে। কোনখানে রাম রাজা হয়েচেন;–বিভীষণ, জাম্বুবান, হনুমান ও সুগ্রীব প্রভৃতি বানরেরা, সহুরে মুচ্ছুদ্দি বাবুদের মত পোষাক পরে চারিদিকে দাঁড়িয়ে আছেন। লক্ষ্মণ ছাতা ধরেছেন—শত্রুঘ্ন ও ভরত চামর ব্যাঞ্জন কচ্চেন, রামের বাঁদিকে সীতা দেবী; সীতের ট্যার্চ্চা শাড়ী, ঝাঁপটা ও ফিরিঙ্গি খোঁপায় বেহদ্দ বাহার বেরিয়েছে। “বাইরে কোঁচার পত্তন ভিতরে ছুঁচোর কেত্তন” সং বড় চমৎকার—বাবুর ট্যাসেল দেওয়া টুপী, পাইনাপোলের চাপকান, পেটি ও সিল্কের রুমাল, গলায় চুলের গার্ডচেন; অথচ থাকবার ঘর নাই, মাসীর বাড়ী অন্ন লুটেন, ঠাকু্রবাড়ী শোন, আর সেনেদের বাড়ী বসবার আড্ডা। পেট ভরে জলখাবার পয়সা নাই, অথচ দেশের রিফরমেশনের জন্য রাত্রে ঘুম হয় না (মশারির অভাবও ঘুম না হবার একটি প্রধান কারণ)। পুলিস, বড় আদালত, টালার নীলেম, ছোট আদালতে দিনের ব্যালা ঘুরে বেড়ান; সন্ধ্যে-ব্যালা ব্রাহ্মসভায়, মিটিং ও ক্লাবে হাঁপ ছাড়েন, গোয়েন্দাগিরি, দালালী, খোসামুদী ও ঠিকে-রাইটরী করে যা পান, ট্যাসল-ওয়ালা টুপী ও পাইনাপোলের চাপকান রিপু কত্তে ও জুতো বুরুসে সব ফুরিয়ে যায়! সুতরাং মিনি মাইনের স্কুলমাষ্টারীও কখন কখন স্বীকার কত্তে হয়। কোথাও “অসৈরণ সৈতে নারি শিকেয় বসে কুলে মরি” সং;—“অসৈরণ সইতে নারি” মহাশয়, ইয়ং বাঙ্গালীদের টেবিলে খাওয়া, পেণ্টুলেন ও (ভয়ানক গরমিতেও) বনাতের বিলিতী কোট-চাপকনি পরা, (বিলক্ষণ দেখতে পান অথচ) নাকে চসমা, রাত্তিরে থানায় পড়ে ছুঁচো ধরে থান, দিনের বেলা রিফরমেশনের স্পিচ করেন দেখে–শিকেয় ঝুলচেন। এ সওয়ায় বারোইয়ারিতলায় “ভাল কত্তে পারবো না মন্দ করবো, কি দিবি তা দে,” “বুক ফেটে দরজা,” “ঘুটে পোড়ে গোবর হাসে,” “কাণা পুতের নাম পদ্মলোচন,” “মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়,” “হাড়-হাবাতে মিছরির ছুরি” প্রভৃতি নানাবিধ সং হয়েছে; সে সব আর এখানে উত্থাপন করার অবশ্যক নাই। কিন্তু প্রতিমের দু-পাশে “বকা ধার্ম্মিক” ও “ক্ষুদে নবাবের” সং বড় চমৎকার হয়েছে; বকা ধার্ম্মিকের শরীরটি মুচির কুকুরের মত নুদুর নাদুর–ভুঁড়িটি বিলাতী কুমড়োর মত–মাথা কামান চৈতন ফক্কা ঝুঁটি করে বাঁধা। গলায় মালা ও ঢাকের মত গুটিকতক সোণার মাদুলী—হাতে ইষ্টিকবচ–চুলে ও গোঁফে কলপ দেওয়া–কালাপেড়ে ধুতি, রামজামা ও জরির বাঁকাতাজ; গত বৎসর আশী পেরিয়েছেন–অঙ্গ ত্রিভঙ্গ! কিন্তু প্রাণ হামাগুড়ি দিচ্চে। গেরস্ত-গোচের ভদ্রলোকের মেয়েছেলের পানে আড়চক্ষে চাচ্ছেন—হরিনামের মালার ঝুলিটি ঘুরচ্চেন! ঝুলির ভিতর থেকে গুটিকতক টাকা বেমালূম আওয়াজে লোভ দেখাচ্চে! ক্ষুদ্র নবাব,–ক্ষুদ্র নবাব দিব্যি দেখতে—দুধে আলতার মত রং–আলবার্ট ফেশানে চুল ফেরানো–চীনের শূয়ারের মত শরীরটি ঘাড়ে-গর্দ্দানে হাতে, লাল রুমাল ও পিচের ইষ্টিক–সিমলের ফিনফিনে ধুতি মালকোঁচা করে পরা–হঠাৎ দেখলে বোধ হয়, রাজরাজড়ার পৌত্তর; কিছু পরিচয়ে বেরোবে “হৃদে জোলার নাতি!” বারেইয়ারি প্রতিমাখানি প্রায় বিশ হাত উঁচু–ঘোড়ায় চড়া হাইল্যাণ্ডের গোরা, বিবি, পরী ও নানাবিধ চিড়িয়া, শোলার ফুল ও পদ্ম দিয়ে সাজানো; মধ্যে মা ভগবতী জগদ্ধাত্রী-মুৰ্ত্তি–সিঙ্গি গায় রূপুলি গিলটি ও হাতী সবুজ মকমল দিয়ে মোড়া। ঠাকুরুণের বিবিয়ানা মুখ, রং ও গড়ন আসল ইহুদী ও আরমানী কেতা, ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বর ও ইন্দ্র দাঁড়িয়ে যোড়হাত করে স্তব কচ্চেন। প্রতিমের উপরে ছোট ছোট বিলাতী পরীরা ভেপু বাজাচ্চে হাতে বাদশাই নিশেন ও মাঝে খোড়াসিঙ্গিওয়ালা কুইনের ইউনিফরম ও ফ্রেষ্ট! আজ বাবোইয়ারির প্রথম পূজো, শনিবার—বীরকৃষ্ণ দাঁ, কানাই দত্ত প্যালানাথবাবু ও বীরকৃষ্ণবাবুর ফ্রেণ্ড আহিরীটোলার রাধামাধববাবুরো বেলা তিনটে পর্যন্ত বাবোইয়ারিতলায় হামরাও হয়েছিলেন;–তিনটে বড় বড় অর্ণা মোষ, একশ ভেড়া ও তিন-শ পাটা বলিদান করা হয়েছে; মুল নৈবিদ্যির আগা তোলা মোণ্ডাটি ওজনে দেড়মণ। সহরের রাজা, সিঙ্গি, ঘোষ, দে, মিত্র ও দত্ত প্রভৃতি বড় বড় দলস্থ ফোঁটা-চেলির জোড়, টিকি ও তিলকধারী উর্দ্দীপরা ও তকমাওয়ালা যত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের বিদেয় হয়েছে;–‘সুপারীস’, ‘আনাহূতো’, ‘বেদলে’ ও ‘ফলারেরা’ নিমতলার শকুনির মত টেঁকে বসে আছেন। কাঙ্গালী, রেয়ো, অগ্রদানী, ভাট ও ফকির বিস্তর জমেছিল; পাহারওয়ালারাই তাদের বিদেয় দেন, অনেক গরীব গ্রেপ্তার হয়। ক্রমে সন্ধ্যা হয়ে এলো–বারোইয়ারিলা লোকারণ্য; সহরের অনেক বাবু গাড়ী চড়ে সং দেখতে এসেছেন—স’ এলে অনেকে তাঁদের দেখচে। ক্রমে মজলিসে দু-একটা ঝাড় জ্বেলে দেওয়া হলো। সঙদের মাথার উপর বেললণ্ঠন বাহার দিতে লাগলো। অধ্যক্ষবাবুরা একে একে জমায়েৎ হতে লাগলেন। নল-করা থেলো হুঁকো হাতে করে ও পান চিবুতে চিবুতে অনেকে চীৎকার ও ‘এটা কর ওটা কর’ ক’রে হুকুম দিচ্চেন। আজ ধোপাপাড়ার ও চকের দলের লড়াই হবে। দেড় মণ গাঁজা, দুই মণ চরস, বড় বড় সাত গামলা দুধ ও বারোখানি বেণের দোকান ঝেঁটিয়ে ছোট বড় মাঝারি এলাচ, কর্পূর দারুচিনি সংগ্রহ করা হয়েছে; মিঠেকড়া ভ্যালসা অম্বুরি ও ইরানি তামাকের গোবর্দ্ধন হয়েচে। এ সওয়ায় বিস্তর অন্তঃশিলে সরঞ্জামও প্রস্তুত আছে;আবশ্যক হলে দেখা দেবে। সহরে ঢি ঢি হয়ে গেছে, আজ রাত্রে অমুক জায়গায় বারোইয়ারি পূজোর হাফ-আখড়াই হবে। কি ইয়ারগোচের স্কুল বয়, কি বাহাত্তুরে ‘ইনভেলিড’ সকলেই হাফ-আখড়াই শুনতে পাগল। বাজার গরম হয়ে উঠলো। ধোপারা বিলক্ষণ রোজগার কত্তে লাগলো। কোচান-ধুতি, ধোপদস্ত কামিজ ও ডুরে শান্তিপুরে উড়ুনীর এক রাত্রের ভাড়া আট আনা চড়ে উঠলো। চার পুরুষে পাঁচ পুরুষে ক্রেপ ও নেটের চাদরেরা, অকর্ম্মণ্য হয়ে নবাবী আমলে সিন্দুক আশ্রয় করেছিলেন, আজ ভলন্টিয়র হয়ে মাথায় উঠলেন। কালো ফিতের ঘুন্সি ও চাবির শিকলি, হঠাৎ বাবুর মত স্বস্থান পরিত্যাগ করে ঘড়ির চেনের অফিসিয়েটিং হলো–জুতোরা বেশ্যার মত নানা লোকের সেবা কত্তে লাগলো। বারোইয়ারিতলায় লোকারণ্য হয়ে উঠলো, একদিকে কাঠগড়া ঘেরা মাটির সং–অন্যদিকে নানা রকম পোষাক-পরা কাঠগড়ার ধারে ও মধ্যে জ্যান্ত সং। বড়মানুষের ট্যাসলওয়ালা টুপী চাপকান, পেটি ও ইষ্টিকে চালচিত্রের অসুর হতেও বেয়াড়া দেখাচ্ছেন। প্রধান অধ্যক্ষ বীরকৃষ্ণবাবু লক্কাই লাট্টুর লাটিম মত ঘুরে বেড়াচ্চেন, দু’কস দিয়ে পাজির ছবির রক্তদন্তী রাক্ষসীর মত পানের পিক গড়িয়ে পড়ছে। চাকর, হরকরা, সরকার, কেরাণী ও ম্যানেজারদের নিশ্বেস এ্যালবার অবকাশ নাই। ঢং ঢং ক’রে গির্জ্জের ঘড়ীতে রাত্রি দুটো বেজে গেল। ধোপাপাড়ার দল ভরপুর নেশায় ভোঁ হয়ে টলতে টলতে আসরে নাবলেন। অন্সেকে আখড়াঘরে (সাজঘরে শুয়ে পড়লেন। বাঙ্গালীর স্বভাবই এই, পরের জিনিস পাতে পড়লে শীগগির হাত বন্ধ হয় না; (পেট সেটি বোঝে না, বড় দুখের বিষয়!) দেড়ঘণ্টা ঢোল, বেহালা, ফুলোট, মোচাং ও সেতারের রং ও সাজ বাজলো, গোড়ার দু’শ বাহবা ও দু-হাজার বেশ দিলেন, শেষে একটি ঠাকরুণ বিষয় গেয়ে, (আমরা গানটি বুঝতে অনেক চেষ্টা কল্লেম, কিন্তু কোনমতে কৃতকার্য্য হতে পাল্লেম না) ধোপাপাড়ার দল উঠে গেল, চকের দল আসরে নাবলেন। চকের দলেরাও ঐ রকম করে গেয়ে শোভান্তরী, সাবাস ও বাহবা নিয়ে উঠে গেলেন—একঘণ্টার জন্য মজলিস খালি রইলো; চায়নাকোট, ক্রেপের, নেটের ও ডুরে ফুলদার ট্যারচা চাদরো  পিঁপড়ের ভাঙ্গা সারের মত ছড়িয়ে পড়লেন। পানের দোকান শূন্য হয়ে গেল। চুরোট তামাক ও চরসের ধুয়ায় এমনি অন্ধকার হয়ে উঠলো যে, সেবাবে “প্রোক্লেমেশনের” উপলক্ষে বাজিতে বা কি ধোঁ হয়েছিল। বড় বড় রিভিউয়ের তোপে তত ধোঁ জন্মে না। আধঘণ্টা প্রতিমেখানি দেখা যায় নি ও পরস্পর চিনে নিতেও কষ্ট বোধ হয়েছিল। ক্রমে হঠাৎ-বাবুর টাকার মত, বসন্তের কুয়াসার মত ও শরতেব মেঘের মত, ধোঁ দেখতে দেখতে পরিষ্কার হয়ে গেল। দর্শকেরা স্থির হয়ে দাঁড়ালেন, ধোপাপুকুরের দল আসোর নিয়ে বিরহ ধোল্লেন। আধঘণ্টা বিরহ গেয়ে আসোর হতে দলবল সমেত আবার উঠে গেলেন। চকবাজারেরা নাবলেন ও ধোপাপুকুরের দলের বিরহের উতোর দিলেন। গোঁড়ারা রিভিউয়ের সোজারদের মত দুল বেঁধে দু’ থাক হলো। মধ্যস্থেরা গানের চোতা হাতে করে বিবেচনা কত্তে আরম্ভ করেন–একদলে মিত্তির খুঁড়ো, আর একদলে দাদাঠাকুর বাঁধন্দার।। বিরহের পর চাপা কাঁচা খেউড়; তাতেই হার-জিতের বন্দোবস্ত, বিচারও শেষ; (মধুরেণ সমাপয়েৎ) মারামারিও বাকি থাকবে না। ভোরের তোপ পড়ে গিয়েছে, পূর্ব্বদিক্‌ ফরসা হয়েচে, ফুরফুরে হাওয়া উঠেচে-ধোপাপুকুরের দলেরা আসোর নিয়ে খেউড় ধলেন, “সাবাস! ‘বাহবা!’ ‘শোভান্তরী।’ ‘জিতা রও!’ দিতে দিতে গোড়াদের গলা চিরে গেল; এই তামাসা দেখতে যেন সূর্য্যদেব তাড়াতাড়ি উদয় হলেন। বাঙ্গালীরা আজো এমন কুৎসিত আমোদে মত্ত হন ব’লেই যেন—চাঁদ ভদ্রসমাজে মুখ দেখাতে লজ্জিত হলেন। কুমুদিনী মাথা হেঁট কল্লেন! পাখীরা ছি ছি ক’রে চেঁচিয়ে উঠলো! পদ্মিনী পাঁকের মধ্যে থেকে হাসতে লাগলো! ধোপাপুকুরের দল আসের নিয়ে খেউড় গাইলেন; সুতরাং চকের দলকে তার উতোর দিতে হবে। ধোপাপুকুরওয়ালার দেড়ঘণ্টা প্রাণপণে চেঁচিয়ে খেউড়টি গেয়ে থামলে, চকের দলেরা নাবলেন; সাজ বাজতে লাগলো। ওদিকে আখড়াঘরে খেউডের উতোর প্রস্তুত হতে লাগলো;–চকের দলেরা তেজের সহিত উতোর গাইলেন। গোঁড়ারা গবুম হয়ে “আমাদের জিত, আমাদের জিত।” করে চেঁচাচেঁচি কত্তে লাগলেন; (হাতাহাতি ও বাকি রইলো না) এদিকে মধ্যস্থেরাও চকের দলের জিত সাব্যস্ত কল্লেন। দুও! হো! হো! হুর্‌রে ও হাততালিতে ধোপাপুকুরের দলেরা মাটির চেয়ে অধম হয়ে গেলেন—নেশার খোয়ারি-রাত জাগবার ক্লেশ ও হারের লজ্জায় মুখুয্যেদের ছোটবাবু ও দু-চার ধরুতা দোহার একেবারে এলিয়ে পড়লেন। চকের দলের ঢোল বেঁধে নিশেন তুলে, গাইতে গাইতে ঘরে চল্লেন-কারু কারু শুধু পা মোজা পায়; জুতো কোথায়, তার খোজ নাই। ওগোড়রা আমোদ কত্তে কত্তে পেছু পেছু চল্লেন-বেলা দশটা বেজে গেল; দর্শকরা হাফ-আখড়াইয়ের মজা ত্বপূর লুটে বাড়ীতে এসে সুত, ঠাণ্ডাই, জোলাপ ও ডাক্তারের যোগাড় দেখতে লাগলেন। ভাড়া করা ও চেয়ে নেওয়া চায়নাকোট, ধুতি, চাদর, জামা ও জুতোর কাজ সেরে, আপনার আপনার মনিববাড়ী ফিরে গেল। আজ রবিবার। বারোইয়াবিতলায় পাঁচালী ও যাত্রা। রাত্রি দশটার পর অধ্যক্ষেরা এসে জমলেন; এখনো অনেকের ‘চোঁয়া ঢেকুর’ ‘মাথা-ধরা’, ‘গা মাটি মাটি’ সারে নি। পাঁচালী আরম্ভ হয়েচে-প্রথম দল গঙ্গাভক্তিতরঙ্গিণী, দ্বিতীয় দল মহীরাবণের পালা ধরেচেন, পাঁচালী ছোট কেতার হাফ-আখড়াই, কেবল ছড়া কাটানো বেশীর ভাগ; সুতরাং রাত্রি একটার মধ্যে পাঁচালী শেষ হয়ে গেল। যাত্রা। যাত্রার অধিকারীর বয়স ৭৬ বৎসর, বাবরিকাটা চুল, কপালে উল্কী, কাণে মাকড়ি! অধিকারী দূতী সেজে, গুটিবারো বুড়ো বুড়ো ছেলেকে সখী সাজিয়ে আসোরে নাবলেন। প্রথমে কৃষ্ণ খোলের সঙ্গে নাচলেন, তারপর বাসুদেব ও মণিগোঁসাই গান করে গেলেন। সকেষ্ট সখী ও দূতী প্রাণপণে ভোর পর্যন্ত ‘কালো জল খাবো না!’ ‘কালো মেঘ দেখবো না!’ (জামিয়ানা খাটিয়ে দিমু) কালো কাপড় পরবো না!’ ইত্যাদি কথাবার্ত্তায় ও নবীন বিদেশিনীর। গানে লোকেন্দ্র মনোরঞ্জন কল্লেন! থাল, গাড়ু, বড়, ছেঁড়া কাপড়, পুরাণ ___ ও পচা শালের গাদী হয়ে গেল। টাকা, আধুলী, সিকি ও পয়সা পর্যন্ত প্যালা পেলেন! মধ্যে মধ্যে ‘বাবা দে আমার বিয়ে’ ও ‘আমার নাম সুন্দরে জেলে, ধরি মাছ, বাউতি জালে,’ প্রভৃতি রকমওয়ারি সঙের রকমওয়ারি গানেরও অভাব ছিল না। বেলা আটটার সময় যাত্রা ভাঙলো, একজন বাবু, মাতাল, পাত্র টেনে বিলক্ষণ পেকে যাত্রা শুনছিলেন, যাত্রা ভেঙে যাওয়াতে গলায় কাপড় দিয়ে প্রতিমে প্রণাম কত্তে গেলেন, (প্রতিমে হিন্দুশাস্ত্রসম্মত জগদ্ধাত্রী-মূর্ত্তি)। কিন্তু প্রতিমার সিঙ্গি হাতীকে কামড়াচ্ছে দেখে, বাবু মহাত্মার বড় রাগ হলো, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বাবু করুণার সুরে– তারিণী গো মা কেন হাতীর উপর এত আড়ি। মানুষ মেলে টেটা পেতে তোমায় বেতে হতো হরিণবাড়ী।। সুর্কি কুটে সারা হতো, তোমার মুকুট যেত গড়াগড়ি।। পুলিসের বিচারে শেষে সঁপতো তোমায় গ্ৰানযুড়ি। সিঙ্গি মামা টেরটা পেতেন ছুটতে হতে উকীলবাড়ী।। গান গেয়ে, প্রণাম করে চলে গেলেন। সহরের ইতর মাতালদের (মাতালদের বড় ইতর-বিশেষ নাই, মাতাল হলে কি রাজা বাহাদুর, কি পালার বাপ, কি গোবরা প্রায় এক মূর্ত্তিই ধরে থাকেন। ঘরে ধরে রাখার লোক নাই বলেই আমরা নর্দমায়, রাস্তায়, খানায়, গারদে ও মদের দোকানে মাতলামি কত্তে দেখতে পাই। সহরে বড়মানুষ মাতালও কম নাই, শুদ্ধ ঘরে ধরে পুরে রাখবার লোক আছে বলেই তারা বেরিয়ে এখন মাতলামি কত্তে পান না। এদের মধ্যে অনেকে এমন মাতলামি করে থাকেন যে, অন্তরীক্ষ থেকে দেখলে পেটের ভিতর হাত-পা সেঁধিয়ে যায় ও বাঙ্গালী বড়মানুষদের উপর বিজাতীয় ঘৃণা উপস্থিত হয়। ছোটলোক মাতালের ভাগ্যে–চারি আনা জরিমানা–এক রাত্রি গারদে থাকা বা পাহারাওয়ালাদের ঝোলায় শোয়ার হয়ে যাওয়া ও জমাদারের দুই-এক কোঁৎকামাত্র। কিন্তু বাঙ্গালী বড়মানুষ মাতালদের সকল বিষয়ে শ্রেষ্ঠতা। পাখী হয়ে উড়তে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে মরা–বাবার প্রতিষ্ঠিত পুকুরে ডোবা, প্রতিমের নকল সিঙ্গি ভেঙ্গে ফেলে আসল সিঙ্গি হয়ে বসা, ঢাকীকে মার সঙ্গে বিসর্জ্জন দেওয়া, ক্যাণ্টনমেণ্ট, ফোর্ট, রেলওয়ে ষ্টেসন ও অবশেষে মদ খেয়ে মাতলামি করে চালান হওয়া, এ সব ত আছে। এ সওয়ায়, করুণা গান, বকসিস ও বক্তৃতার বেহদ্দ ব্যাপার। একবার সহরের শ্যামবাজার অঞ্চলের এক বনেদী বড়মানুষের বাড়ীতে বিদ্যসুন্দর যাত্রা হচ্চে। বাড়ীর মেজোবাবু পাঁচো ইয়ার নিয়ে শুনতে বসেচেন; সামনে মালিনী ও বিদ্যে “মদন আগুন জ্বলছে দ্বিগুণ, কল্লে কি গুণ ঐ বিদেশী” গান করে মুঠো মুঠো প্যালা পাচ্ছে-বছর ষোল বয়সের দু’টো (ষ্টেডব্রেড) ছোকরা সখী সেজে ঘুরে ঘুরে খেমটা নাচ্চে। মজলিলে রূপের গেলাসে ব্রাণ্ডি চলচে-বাড়ীর টিকটিকি ও শালগ্রাম ঠাকুর পর্যন্ত নেশীয় চুরচুরে ও ভোঁ! যাত্রায় কমে মিলনের মন্ত্রণা, বিদ্যার গর্ভ, রাণীর তিরস্কার, চোর ধরা ও মালিনী যন্ত্রণার পালা এসে পড়লে; কোটাল মালিনীকে বেঁধে মাতে আরম্ভ কল্লে। মালিনী বাবুদের দোহাই দিয়ে কেঁদে বাড়ী সরগরম করে তুল্লে। বাবুর চমক ভেঙ্গে গেল; দেখলেন, কোটাল মালিনীকে মাচ্চে, মালিনী বাবুর দোহাই দিচ্চে; অথচ পার পাচ্ছে না। এতে বাবু বড় রাগত হলেন, “কোন্ বেটার সাধ্যি মালিনীকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়,” এই বলে সামনের রূপের গেলাসটি কোটালের রগ তেগে ছুড়ে মাল্লেল; গেলাসটি কোটালের রগে লাগবামাত্র কোটাল ‘বাপ!’ বলে, অমনি ঘুরে পড়লো চারিদিক থেকে লোকেরা হাঁ হাঁ করে এসে কোটালকে ধরাধরি করে নিয়ে গেল। মুখে জলের ছিটে মারা হলো ও অন্য অন্য নানা তদ্বির হলো : কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না—কোটালের-পো এক ঘাতেই পঞ্চত্ব পেলেন। আর একবার ঠনঠনের ‘র’ ঘোষজাবাবুর বাড়ীতে বিদ্যাসুন্দর যাত্রা হচ্ছিল, বাবু মদ খেয়ে পেকে মজলিসে আড় হয়ে শুয়ে নাক ডাকিয়ে যাত্রা শুনছিলেন। সমস্ত বাত বেহু সেই কেটে গেল, শেষে ভোর ভোর সময়ে দক্ষিণ-মশানে কোটালের হাঙ্গামাতে বাবুর নিদ্রাভঙ্গ হলো; কিন্তু আসোরে কেষ্টোকে না দেখে বাবু বিরক্ত হয়ে “কেষ্ট ল্যাও, কেষ্ট ল্যাও’ বলে ক্ষেপে উঠলেন। অন্য অন্য লোকে অনেক বুঝালেন যে, “ধৰ্ম্ম অবতার। বিদ্যাসুন্দর যাত্রায় কেষ্ট নাই;” কিন্তু বাবু কিছুতেই বুঝলেন না; (কৃষ্ণ তাঁরে–নিতান্ত নির্দয় হয়ে দেখা দিলেন না বিবেচনায়) শেষে ভেউ ভেউ করে কাঁদতে লাগলেন। আর একবার এক গোস্বামী এক মাতাল বাবুর কাছে বড় নাকাল হয়েছিলেন; সেকথাও না বলে থাকা গেল না। পূর্ব্বে এই সহরে বেনেটোলায় দীপচাঁদ গোস্বামীর অনেকগুলি বড়মানুষ শিষ্য ছিল। বারসিমলের বোসবাবুর প্রভুর প্রধান শিষ্য ছিলেন। একদিন আমতার রামহরিবাবু বোসজাবাবুরে এক পত্র লিখলেন যে, “ভেক নিতে আমার বড় ইচ্ছ, কিন্তু গুটিকতক প্রশ্ন আছে; সেগুলির যতদিন পূরণ না হচ্ছে ততদিন শাক্তই থাকবো।” বোসজী মহাশয় পরম বৈষ্ণব; রামহরিবাবুর পত্র পেয়ে বড় খুসী হলেন ও বৈষ্ণব-ধর্মের উপদেশ ও প্রশ্ন পূরণ করবার জন্যে প্রভু নদেরচাঁদ গোস্বামী মহাশয়কে তার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। রামহরিবাবুর সোণাগাছিতে বাস। দু-চার ইয়ার ও গাইয়ে বাজিয়ে কাছে থাকে; সন্ধ্যার পর বেড়াতে বেরোন—সকালে বাড়ী আসেন, মদও বিলক্ষণ চলে; দু-চারটা নিমখাসাগোচের দাঙ্গার দরুশ, পূলিসেও দুএক মোচলেকা হয়ে গিয়েছে। সন্ধ্যার পর সোণাগাছির বড় জাঁক; প্রতি ঘরে ধূনোয় ধোঁ, শাঁকের শব্দ ও গঙ্গাজলের ছড়ার দরুণ হিন্দুধৰ্ম্ম মর্ত্তিমন্ত হয়ে সোণাগাছি পবিত্র করেন। নদেরচাঁদ গোস্বামী, বোসবাবুর পত্র নিয়ে সন্ধ্যার পর সোণাগাছি ঢুকলেন। গোস্বামীর শরীরটি প্রকাণ্ড, মাথা নেড়া, মধ্যে তরমুজের বোঁটার মত চৈতনফক্কা সর্বাঙ্গে হরিনামের ছাপা, নাকে তিলক ও অদৃষ্টে (কপালে) একধাবড়া চন্দন। হঠাৎ বোধ হয় যেন কাগে হেগে দিয়েছে। গোস্বামীর কলকেতায় জন্ম, কিন্তু কখন সোণাগাছিতে ঢোকেন নাই (শহরের অনেক বেশ্যা সিমলের মা-গোঁসাইয়ের জুরিসডিক্সনের ভেতর)। গোস্বামী অনেক কষ্টে রামহরিবাবুর বাসায় উপস্থিত হলেন। রামহরিবাবু কুঠী থেকে এসে পাত্র টেনে গোলাপী রকম নেশায় তর হয়ে বসেছিলেন। এক মোসাহেব বায়ার সঙ্গতে ‘অব হজরত যাতে লণ্ডনকো’ গাচ্ছেন, আর একজন মাথায় চাদর দিয়ে বাঈয়ানা নাচের উজ্জ্বগ কচ্ছেন; এমন সময় বোসবাবুর পত্র নিয়ে গোস্বামী মশাই উপস্থিত হলেন। অমন আমদের সময়ে একটা ব্রকোদ (বৃকোদর) গোঁসাইকে দেখলে, কার না রাগ হয়? মজলিসের সকলেই মনে মনে বড় ব্যাজার হয়ে উঠলেন; বোসজার অনুরোধেই কেবল গোস্বামী সে যাত্রা প্রহার হতে পরিত্রাণ পান। রামহরিবাবু বোসজার পত্র পড়ে গোস্বামী মহাশয়কে আদর করে বসালেন। রামা, বামুনের হুঁকোটি জল ফিরিয়ে তামাক দিলে। (হুঁকোটি বাস্তবিক খাঁ সাহেবের) মোসাহেবদের সঙ্গে তার চোখ টেপাটিপি হয়ে গেল। একজন মোসাহের দৌড়ে কাছে দরজীর দোকান থেকে হয়ে এলেন। এদিকে গাওনা ও ইয়ারকি কিছু সময়ের জন্য পোষ্টপন হলো—শাস্ত্রীয় তর্ক হবার উজ্জুগ হতে লাগলো। গোস্বামী মহাশয় তামাক খেয়ে হুঁকো রেখে নানাপ্রকার শিষ্টাচার কল্লেন; রামহরিবাবুও তাতে বিলক্ষণ ভদ্রতা কল্লেন। রামহরিবাবু গোস্বামীকে বলেন, “প্রভু! বষ্টমতন্ত্রের কটি বিষয়ে আমার বড় সন্দেহ আছে। আপনাকে মীমাংসা করে দিতে হবে। প্রথম কেষ্টর সঙ্গে রাধিকার মামী সম্পর্ক, তবে কেমন করে কেষ্ট বাধাকে গ্রহণ কল্লেন?” দ্বিতীয়, “একজন মানুষ (ভাল দেবতাই হলো) যে, ষোলশত স্ত্রীর মনোরথ পূর্ণ করেন, এ কি কথা?” তৃতীয়, “শুনেছি, কেষ্ট দোলের সময়ে মেড়া পুড়িয়ে খেয়েছিলেন। তবে আমাদের মটনচপ খেতে দোষ কি? আর বষ্টমদের মদ খেতেও বিধি আছে, দেখুন, বলরাম দিনরাত মদ খেতেন, কেষ্টও বিলক্ষণ মাতাল ছিলেন।” প্রশ্ন শুনেই গোস্বামীর পিলে চমকে গেল, তিনি পালাবার পথ দেখতে লাগলেন। এদিকে বাবুর দলের মুচকি হাসি; ইসরা ও রূপোর গেলাসে দাওয়াই চলতে লাগল। গোস্বামী মনের মত উত্তর দিতে পারলেন না বলে, একজন মোসাহেব বলে উঠলো, “হুজুর! কালীই বড়; দেখুন–কালীতে ও কেষ্টতে ‘ক’ পুরুষের অন্তর, কালীর ছেলে যে কার্ত্তিক, তার বাহন ময়ূরের যে ল্যাজ কেষ্টোর মাথার উপর; সুতরাং কালাই বড়।” এ কথায় হাসির তুফান উঠলো, গোস্বামী নিজ স্বভাবগুণে গোঁয়ারতিমোয় গরম হয়ে, পিট্টানের পথ দেখবেন কি, এমন সময় একজন মোসাহেব গোস্বামীর গায়ে টলে পড়ে, তার তিলক ও টিপ জিভ দিয়ে চেটে ফেলে; আর একজন ‘কি কর। কি কর।’ ব’লে টিকিটি কেটে নিলেন। গোস্বামী ক্রমে শ্রাদ্ধ গড়ায় দেখে জুতো ও হরিনামের থলি ফেলে, চোচাদৌড়ে রাস্তায় এসে হাঁপ ছাড়লেন! রামহরিবাবু ও মোসাহেবদের খুসীর সীমা রইলো না। অনেক বড়মানুষ এই রকম আমোদ বড় ভালবাসেন ও অনেক স্থানে প্রায়ই এইরূপ ঘটনা হয়। কলকেতা সহরে প্রতিদিন নতুন নতুন মাতলামি দেখা যায়; সকলগুলি সৃষ্টিছাড়া ও অদ্ভুত! ঠকবাগানে ধনুকর্ণ মিত্তিরবাবুর বাপ, ন্যাট ড্রাইব মনকিসন কোম্পানীর বাড়ীর মুছুদ্দি ছিলেন, এ সওয়ায় চোটা ও কোম্পানীর কাগজেরও ব্যবসা কত্তেন। ধনুবাবু কালেজে পড়ে, একজামিন পাস করেছেন, লেকচার শোনেন ও মধ্যে মধ্যে ইংরজি কাগজে আর্টিকেল লেখেন। সহরে বাঙ্গালী বড়মানুষের ছেলেদের মধ্যে প্রায় অনেকে বিবেচনায গাধার বেহদ্দ; বুদ্ধিটা এমন সূক্ষ্ম যে, নেই বল্লেও বলা যায়; লেখাপড়া শিখতে আদবে ইচ্ছা নাই, প্রাণ কেবল ইয়ারকির দিকে দৌড়ায়, স্কুল যাওয়া কেবল বাপ-মার ভয়ে অষুদগেলা গোছ! সুতরাং একজামিন্ পাস করবার পূর্ব্বে ধনুকর্ণবাবু চার ছেলের বাপ হয়েছিলেন ও তাঁর প্রথম মেয়েটির বিবাহ পর্যন্ত হয়েছিলো। ধনুকর্ণবাবুর দু-চার স্কুলফ্রেণ্ডও সৰ্ব্বদা আসতেন যেতেন; কখন কখন লুকিয়ে-চুরিয়ে–চরসটা, মজমের বরফ খান, সিদ্ধিটে আসটাও চলতো; ইচ্ছেখানা, এক আদ্দিন শেরিটে, শ্যামপিটারও আস্বাদ নেওয়া হয়। কিন্তু কৰ্ত্তা স্বকলমে রোজগার করে বড়মানুষ হয়েছেন, সুতরাং সকল দিকে চোখ রাখেন ও ছেলেদের উপরেও সৰ্ব্বদা তাই করে থাকেন; সেই দব দবাতেই ইচ্ছেখানায় ব্যাঘাত পড়েছিল। সমরভেকেশনে কলেজ বন্ধ হয়েছে, স্কুল-মাষ্টারেরা লোকের বাগানে বাগানে মাছ ধরে বেড়াচ্ছেন। পণ্ডিতেরা দেশে গিয়ে লাঙ্গল ধরে চাষবাস আরম্ভ করেচেন; (ইংরেজী ইস্কুলের পণ্ডিত প্রায় ঐ গেছেরি দেখা যায়) ধনুবাবু সন্ধ্যার পর দুই-চার স্কুল-ফ্লেণ্ড নিয়ে পড়বার ঘরে বসে আছেন। এমন সময়ে কলেজের প্যারীবাবু চাদরের ভিতর এক বোতল ব্রাণ্ডি ও একটা শেরি নিয়ে, অতি সন্তর্পণ ঘরের ভিতর ঢুকলেন। প্যারীবাবু ঘরে ঢোকবামাত্রই চারদিকের দোর-জানলা বন্ধ হয়ে গেল; প্রথমে বোতলটি অতি সাবধানে খুলে (বেড়ালে চুরি করে দুধ খাবার মত করে) অত্যন্ত সাবধানে চলতে লাগলো ক্রমে ব্রাণ্ডি অন্তর্ধান হলেন। এদিকে বাবুদের মেজাজও গরম হয়ে উঠলো; দেরি-জানালা খুলে দেওয়া হলো, চেঁচিয়ে হাসি ও গররা চলতে লাগলো। শেষে শেরীও সমীপস্থ হলেন, সুতরাং ইংরেজী ইস্পিচ ও টেবিল চাপড়ানো চল্লো; ভয় লজ্জা পেয়ে পালিয়ে গেল। এ দিকে ধনুবাবুর বাপ চণ্ডীমণ্ডপে বসে মালা ফিরুচ্ছিলেন; ছেলেদের ঘরের দিকে হঠাৎ চীৎকার ও রৈ রৈ শব্দ শুনে গিয়ে দেখলেন, বাবু্রা মদ খেয়ে মত্ত হয়ে চীৎকার ও হৈ-হৈ কচ্চেন, সুতরাং বড়ই ব্যাজার হয়ে উঠলেন ও ধনুবাবুকে যাচ্চেতাই বলে গালমন্দ দিতে লাগলেন। কর্ত্তার গালাগালে একজন ফ্রেণ্ড বড়ই চটে উঠলেন ও ধনুও তার সঙ্গে তেড়ে গিয়ে একটা ঘুষো মাল্লেন! কৰ্ত্তার বয়স অধিক হয়েছিল, বিশেষতঃ ঘুষোটি ইয়ং বেঙ্গালি (বাঁদরের বাড়া); ঘুষি খেয়ে কর্ত্তা একেবারে ঘুরে পড়লেন, বাড়ীর অন্য অন্ত পরিবারের হাঁ হাঁ! করে এসে পড়লো। গিন্নী বাড়ীর ভেতর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে এলেন ও বাবুকে যথোচিত তিরস্কার কত্তে লাগলেন। তিরস্কার, কান্না ও গোলযোগের অবকাশে ফ্রেণ্ডরা পুলিশের ভয়ে সকলেই চম্পট দিলেন। এদিকে বাবুর করুণা উপস্থিত হলে মার কাছে গিয়ে বলেন, “মা, বিদ্দেসাগর বেঁচে থাক, তোমার ভয় কি? ও ওল্ডফুল মরে যাক না কেন, ওকে আমরা চাই নে; এবারে মা এমন বাবা এনে দেবো যে, তুমি, নূতন বাবা ও আমি একত্রে তিনজনে বসে হেলথ ড্রিঙ্ক করবো, ওল্ডফুল মরে যাক, আমি কোয়াইট রিফরমড বাবা চাই।” রামকালী মুখোপাধ্যায় বাবু সুপ্রিমকোর্টের মিসুয়ার্স, থিক রোগ এণ্ড পিকপকেট উকিল সাহেবদের আফিসে খাতাঞ্জী। অফিসের ফেরত রাধাবাজার হয়ে অসচেন ও দু’ধারি দোকান ফাঁক যাচ্ছে না। পাগড়ীটে এলিয়ে পড়েছে, ধুতি খুলে হুতুলি পুতুলি পাকিয়ে গেছে, পাও বিলক্ষণ টলচে, ক্রমে ঘোড়াসাঁকোর হাড়িহাটায় এসে একেবারে এড়িয়ে পড়লেন, পা যেন খোটা হয়ে গেড়ে গেল, শেষে বিলক্ষণ হবুচবু হয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। ঠাকুরবাবুদের বাড়ীর একজন চাকর সেই সময়ে মদ খেয়ে টলতে টলতে যাচ্ছিল। রামবাবু তাকে দেখে “আরে ব্যাটা মাতাল” বলে টলে সরে দাঁড়ালেন। চাকর মাতাল থেমে জিজ্ঞাসা কলে, “তুই শালা কে, আমায় মাতাল বল্লি?” রামবাবু বল্লেন, “আমি রাম।” চাকর বল্লে, “আমি তবে রাবণ।“ রামবাবু “তবে যুদ্ধং দেহি” বলে যেমন তারে মাত্তে যাবেন, অমনি নেশার ঝোঁকে ধুপুস করে ধরে গেলেন। চাকর মাতাল তার বুকের উপর চড়ে বসলো। থানার সুপারিণ্টেণ্ডেণ্ট সাহেব সেই সময় থানায় ফিরে যাচ্ছিলেন, চাকর মাতাল কিছু টিকে ছিল, পুলিসের সার্জ্জন দেখে রামবাবুকে ছেড়ে দিয়ে পালাবার উদ্যোগ কল্লে। রামবাবুও সুপারিণ্টেণ্ডেণ্টকে দেখেছিলেন, এখন বাবণকে পালাতে দেখে, ঘৃণা প্রকাশ করে বল্লেন, “ছি বাবা! এখন রামের হনুমানকে দেখে ভয়ে পালালে? ছি!” রবিবারটা দেখতে দেখতে গেল, আজ সোমবার। শেষ পূজোর আমোদ, চোহেল ও ফররর শেষ, আজ বাঈ, খেমটা, কবি ও কেত্তন।। বাঈনাচের মজলিস চূড়ান্ত সাজানো হয়েছে, গোপাল মল্লিকের ছেলের ও রাজা বেজেন্দরের কুকুরের বিয়ের মজলিস এর কাছে কোথায় লাগে! চকবাজারের প্যালানাথবাবু বাঈ-মহলের ডাইরেক্টর, সুতরাং বাঈ ও খেমটা নাচের সমুদায় ভার তাঁকেই দেওয়া হয়েছিল। সহরের নন্নী, নুন্না, মুন্নী, খন্নী ও টন্নী প্রভৃতি ডিগ্রী মেডেল ও সার্টিফিকেটওয়ালা বড় বড় বাজার ও গোপাল, শাম, বিধু, থুতু, মণি ও চুণি প্রভৃতি খেমটাওয়ালীরা, নিজ নিজ তোবড়া-তুবড়ি সঙ্গে করে আসতে লাগলেন। প্যালানাথবাবু সকলকে মা-গোঁসাইয়ের মত সমাদরে রিসিভ কচ্চেন, তাঁদেরও গরবে মাটিতে পা পড়ছে না। প্যালানাথবাবুর হীরের ওয়াচগাৰ্ডে ঝোলানো আধুলির মত মেকাবী হন্টিঙের কাঁটা ন’টা পেরিয়েছে। মজলিসে বাতির আলো শরতের জ্যোৎস্নাকেও ঠাট্টা কোচ্চে, সারঙ্গের কোঁয়া কোঁয়া ও তবলার মন্দিরের রুণু ঝুনু তালে, “আরে সাঁইয়া মোরারে তেরি মেরা জানিরে” গানের সঙ্গে এক তরফা মজলিস রেখেছে। ছোট ছোট ট্যসল হামামা ও তাজিরা এ কোণ থেকে ও কোণ, ও চৌকি থেকে ও চৌকি করে বেড়াচ্চেন, (অধ্যক্ষদের ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলে ও মেয়েরা) এমন সময়ে একখানা চেটে গুড় গুড় করে বারোইয়ারিতলায় ‘গড সেভ দি কুইন’ লেখা গেটের কাছে থামলো। প্যালানাথবাবু দৌড়ে গেলেন; গাড়ী থেকে জরি ও কিংখাপে মোড়া জড়ির জুতো শুদ্ধ একটা দশমুণী তেলের কূপো এ এক কুটে মোসাহেব নাবলেন; কুপোর গলায় শিকলের মত মোটা চেন, অঙ্গুলে আঠারটা করে ছত্রিশটা  আংটী। প্যালানাথবাবুর একজন মোসাহেব বড়বাজারের পচ্চুবাবু তূলোর ও পিসগুডসের দালাল, বিস্তর টাকা! “বেশ লোক” বলে চেঁচিয়ে উঠলেন; পচ্চুবাবু মজলিসে ঢুকে মজলিসের বড় প্রশংসা কলে, প্যালানাথবাবুকে ধন্যবাদ দিলেন, উভয়ে কোলা কলি হলো; শেষ পচ্চুবাবু প্রতিমা ও মাথালো মাথালো সঙেদের (যথা—কেষ্ট, বলরাম, হনুমান্ প্রভৃতি) ভক্তিভরে প্রণাম কল্লেন; আর বাঈজীকে সেলাম করে দু’খানি আমেরিকান চৌকি জুড়ে বসলেন। দু’টি হাত, এককুড়ি পানের দোনা, চাবির থোলো ও রুমালের জন্য আপাততঃ কিছুক্ষণের জন্য আর দুখানি চৌকি ইজারা নেওয়া হলো : কুটে মোসাহেব পচ্চুবাবুর পেছন দিকে বলেন, সুতরাং তারে আর কে দেখতে পায়? বড়মানুষের কাছে থাকলে লোকে যে ‘পর্বতের আড়ালে আছ’ বলে থাকে, তাঁর ভাগ্যে ভাই ঠিক ঘটলো। পচ্চুবাবুর চেহারা দেখে বাঈ অড়ে আড়ে হাসচে, প্যালানাথবাবু আতোর, পান, গোলাব ও তোররা দিয়ে খাতির কচ্চেন, এমন সময় গেটের দিকে গোল উঠলো—প্যালানাথবাবুর মোসাহেব হীরেলাল রাজা অঞ্জনারঞ্জন দেববাহাদুরকে নিয়ে মজলিসে এলেন। রাজা বাহাদুরের গিল্টিকরা পালা ভরা আশা সকলের নজর পড়ে এমন জায়গায় দাঁড়ালো! অঞ্জনারঞ্জন দেববাহাদুর গৌরবর্ণ, দোহারা–মাথায় খিড়কীদার পাগড়ী—জোড়া পরা–পায়ে জরির লপেটা জুতো, বদমাইসের বাদসা ও ন্যাকার সদ্দার। বাঈ রাজা দেখে কাচবাগে সরে এসে নাচতে লাগলো, “পুজোর সময় পরবস্তি হই যেন” বই তবজী ও শারাঙ্গের। বড় রকমের সেলাম বলে, বাজে লোকেরা সং ও বাঈ ফেলে কোন অপরূপ জানোয়ারদের মত রাজা বাহাদুরকে এক বৃষ্টি দেখতে লাগলেন। ক্রমে রাত্তিরের সঙ্গে লোকের ভিড় বাড়তে লাগলো, সহরের অনেক বড়মানুষ রকম রকম পোষাক পরে একত্র হলেন, নাচের মজলিস রন্ রন্ কত্তে লাগলো; বীরকৃষ্ণ দাঁর আনন্দের সীমা নাই, নাচের মজলিসের কেতা ও শোভা দেখে আপনা আপনি কৃতার্থ হলেন, তাঁর বাপের শ্রাদ্ধতে বামুন খাইয়েও এমন সন্তুষ্ট হতে পারেন না। ক্রমে আকাশের তারার মত মাথালো মাথালো বড়মানুষ মজলিস থেকে খসলেন, বুড়োরা সরে গ্যালেন, ইয়ার-গোচের ফচকে বাবুরা ভাল হয়ে বসলেন, বাঈরা বিদেয় হলো—খ্যামটা আসরে নাবলেন। খ্যামটা বড় চমৎকার নাচ! সহরের বড়মানুষ বাবুরা প্রায় ফি রবিবারে বাগানে দেখে থাকেন। অনেকে ছেলেপুলে, ভাগ্নে ও জামাই নিয়ে একত্রে বসে— খ্যামটার অনুপম রসাস্বাদনে রত হন। কোন কোন বাবুরা স্ত্রীলোকদের উলঙ্গ করে খ্যামটা নাচান—কোনখানে কিস না দিলে প্যালা পায় না–কোথাও বলবার যো নয়! বারোইয়ারিতলায় খ্যামটা আরম্ভ হলো, যাত্রার যশোদার মত চেহারা দু’জন খ্যামটাওয়ালি ঘুরে কোমর নেড়ে নাচতে লাগলো, খ্যামটাওয়ালারা পেছন থেকে “ফণির মাথার মণি চুরি কল্লি, বুঝি বিদেশে বিঘোরে পরাণ হারালি” গাচ্চে; খ্যামটাওয়ালির ক্রমে নিমন্তুন্নেদের সকলের মুখের কাছে এগিয়ে অগ্‌গরদানি ভিকিরির মত প্যালা আদায় করে তবে ছাড়লেন! রাত্তির দু’টোর মধ্যেই খ্যামটা বন্ধ হলো—খ্যামটাওয়ালির অধ্যক্ষ হলে যাওয়া-আসা কত্তে লাগলেন, বারোইয়ারিতলা পবিত্র হয়ে গ্যালো। কবি। রাজা নবকৃষ্ণ কবির বড় পেট্রন ছিলেন। ইংলণ্ডের কুইন এলিজেবেথের আমলে যেমন বড় বড় কবি ও গ্রন্থকর্ত্তা জন্মান, তেমনি তার আমলেও সেই রকম রাম বসু, হরু, নিলু, রামপ্রসাদ ঠাকুর ও জগা প্রভৃতি বড় বড় কবিওয়ালা জন্মায়। তিনি কবি গাওনার মান বাড়ান, তার অনুরোধে ও দেখাদেখি অনেক বড় মানুষ কবিতে মাতলেন! বাগবাজারের পক্ষীর দল এই সময় জন্ম গ্রহণ করে। শিবচন্দ্র ঠাকুর (পক্ষীর দলের সৃষ্টিকর্ত্তা) নবকৃষ্ণর একজন ইয়ার ছিলেন। শিবচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বাগবাজারের রিফরমেশনে রামমোহন রায়ের সমতুল্য লোক—তিনি বাগবাজারেদের উড়তে শেখান। সুতরাং কিছুদিন বাগবাজারেরা সহরের টেক্কা হয়ে পড়েন। তাদের একখানি পবলিক আটচালা ছিলো, সেইখানে এসে পাকি হতেন, বুলি ঝাড়তেন ও উড়তেন—এ সওয়ার বোসপাড়ার ভেতরেও দু’চার গাঁজার আড্ডা ছিল। এখন আর পক্ষীর দল নাই, গুখুরি ও ঝক্‌মারির দলও অন্তর্ধান হয়ে গেছে, পাকিরা বুড়ো হয়ে মরে গেছেন, দু-একটা অধমরা বুড়ো গোচের পক্ষী এখনও দেখা যায়, দল ভাঙ্গা ও টাকার খাক্তিতে মনমরা হয়ে পড়েছে, সুতরাং সন্ধ্যার পর ঝুমুর শুনে থাকেন। আড্ডাটি মিউনিসিপ্যাল কমিশনেররা উঠিয়ে দেছেন, অ্যাখান কেবল তার রুইনমাত্র পড়ে আছে। পূর্ব্বের বড় মানুষেরা এখনকার বড় মানুষের মত ব্রিটিশ ইণ্ডিান এসোসিয়েসন, এড্রুস, মিটিং ও ছাপাখানিক বিব্রত ছিলেন না, প্রায় সকলেরই একটি একটি রাড় ছিল, (এখনও অনেকের আছে) বেলা দুপুরের পর উঠতে, আহ্নিকের আড়ম্বরটাও বড় ছিলো—দুতিন ঘণ্টার কম আহ্নিক শেষ হতো না, তেল মাখতেও ঝাড়া চারঘণ্টা লাগতো —চাকরের তেল মাখানীর শব্দে ভূমিকম্প হতো—বাবু, উলঙ্গ হয়ে তেল মাখতে বসতেন, সেই সময় বিষয়-কৰ্ম্ম দেখা, কাগজ-পত্রে সই ও মোহর চলতো, আঁচাবার সঙ্গে সঙ্গে সূৰ্য্যদেব অস্ত যেতেন। এঁদের মধ্যে জমিদাররা রাত্তির দুটো পর্যন্ত কাছারি কত্তেন; কেউ অমনি গান বাজনা জুড়ে দিতেন। দলাদলির তর্ক কত্তেন ও মোসাহেবদের খোসামুদিতে ফুলে উঠতেন—গাইয়ে বাজিয়ে হলেই বাবুর বড় প্রিয় হতো, বাপান্ত কল্লেও বক্‌সিস পেতো, কিন্তু ভদ্দরলোক বাড়ী ঢুকতে পেতো না; তার বেলা লাঙ্গী তরওয়ালের পাহারা, আদব কায়দা! কোন কোন বাবু, সমস্ত দিন ঘুমুতেন-সন্ধ্যার পর উঠে কাজকৰ্ম্ম কত্তেন দিন রাত ছিল ও রাত দিন হতো! রামমোহন রায়, গুপিমোহন দেব, গুপিমোহন ঠাকুর, দ্বারিকানাথ ঠাকুর ও জয়কৃষ্ণ সিংহের আমোল অবধি এই সকল প্রথা ক্ৰমে ক্ৰমে অন্তর্ধান হতে আরম্ভ হলো, (বাঙ্গালীর প্রথম খবরের কাগজ) সমাচারচন্দ্রিকা প্রকাশ হতে আরম্ভ হলো। ব্রাহ্মসমাজ স্থাপিত হলো! তার বিপক্ষে ধর্ম্মসভা বসলো, রাজা রাজনারায়ণ কায়স্থের পইতে দিতে উদ্যোগ কল্লেন, সতীদাহ উঠে গেল। হিন্দুকলেজ প্রতিষ্ঠিত হলো। হেয়ার সাহেব প্রকাশ হলেন–ক্রমে সংকৰ্ম্মে বাঙ্গালীর চোখ ফুটে উঠলো। এদিকে বারোইয়ারিতলায় জামদার কবি আরম্ভ হলো; ভাল্কোর জগা ও নিম্‌তের রামা ঢোলে ‘মহিম্নস্তব’, ‘গঙ্গাবন্দনা’ ও ‘ভেটকিমাছের তিনখানা কাঁটা’, ‘অগ্‌গরদ্বীপের গোপীনাথ’, ‘যাবি তো যা যা ছুটে ছুটে যা’ প্রভৃতি বেল বাজাতে লাগলো; কবিওয়ালারা বিষমের ঘরে (পঞ্চমের চার গুণ উঁচু) গান ধল্লেন– চিতেন। “বড় বারে বারে এসো ঘরে মকদ্দমা করে ফাঁক! এইবারে গেরে, তোমার কল্লে সূর্পণখার নাক!” আস্তাই। ক্যামন সুখ পেলে কম্বলে শুলে, ব্ৰহ্মওর দেবত্তর বড় নিতে জোর করে এখন জারী গ্যাল, ভূর ভাংলো, তোমার আত্তো জুলুম চলবে না! পেনেলকোডের আইন গুণে মুখুয্যের পোর ভাংলো জাঁক। বে-আইনীর দফারফা বদমাইসি হলো খাক্॥ মোহাড়া। কুইনের খাসে, দেশে, প্রজার দুঃখ রবে না। মহামহোপাধ্যায় মথুরানাথ মুসড়ে গিয়েচেন। কংস-ধ্বংসকারী লেটোর, জেলায় এসেছেন। এখন গুমী গ্রেপ্তারী লাঠি দাঙ্গা ফোর্জ চলবে না। জমিদারী-কবি শুনে সহুরেরা খুশী হলেন, দু-চার পাড়াগেঁয়ে রায়চৌধুরী, মুন্সী ও রায়বাবুরা মাথা হেঁট কল্লেন, হুজুরী আমমোক্তারেরা চৌক রাঙ্গিয়ে উঠলো, কবিওয়ালার ঢোলের তালে নাচতে লাগলো। স্ক্যাভেঞ্জরের গাড়ী সার বেঁধে বেরিয়েচে। ম্যাথরের ময়লার গাড়ী ঠেলে সেনের ঘাটে চলেছে। বাউলের ললিত রাগে খরতাল ও খঞ্জনীর সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণের সহস্র নাম ও “ঝুলিতে মালা রেখে, জপলে আর হবে কি।” কেবল কাঠের মালার ঠকঠকী, সব ফাঁকি!” লোকের দোয়ারে দোয়ারে গান করে বেড়াচ্চে। কলুভায়া ঘানি জুড়ে দিয়েছেন। ধোপারা কাপড় নিয়ে চলেচে। বোঝাই-করা গরুর গাড়ী কোঁ-কোঁ শব্দে রাস্তা জুড়ে যাচ্ছে। ক্রমে ফরসা হয়ে এলো। বারোইয়াভিলায় কবি বন্ধ হয়ে গেল; ইয়ারগোচের অধ্যক্ষ ও দর্শকেরা বিদেয় হলেন, বুড়ো ও আধবুড়োরা কেত্তনের নামে এলিয়ে পড়লেন; দেশের গোঁসাই, গোঁড়া, বৈরাগী ও বষ্টব একত্র হলো;– সিমলের শাম ও বাগবাজারের নিস্তারিণীর কেত্তন। সিলের শাম উত্তম কিত্তনী—বয়স অল্প, দেখতে মন্দ নয়—গলাখানি যেন কাঁসি খনখন কচ্চে। কেত্তন আরম্ভ হলো–কিত্তনী “তাথইরা তাথইয়া নাচত ফিরত গোপাল ননী চুরি করি খাঞীছে আরে আরে ননী চুরি করি খাঞীছে তাথইয়া” গান আরম্ভ কল্লে; সকলে মোহিত হয়ে পড়লেন! চারিদিক থেকে হরিবোল ধ্বনি হতে লাগলো, খুলীরে হাঁটু গেড়ে বসে সজোরে খোল বাজাতে লাগলো। কিত্তনী কখন হাঁটু গেছে কখনো দাঁড়িয়ে, মধু-বৃষ্টি কত্তে লাগলেন—হরি-প্রেমে একজন গোঁসাইয়ের দশা লাগলো। গোঁড়ারা তাকে কোলে করে নাচতে লাগলো। আর যেখানে তিনি পড়েছিলেন, জিভ দিয়ে সেইখানেই ধূলো চাটতে লাগলো! হিন্দুধৰ্ম্মের বাপের পুণ্যে ফাঁকি দেখাবার মত ফিকির আছে, গোঁসাইগিরি সকলের টেক্কা। আমরা জন্মাবচ্ছিন্নে কখন একটি রোগা দুৰ্বল গোঁসাই দেখতে পাই নে! গোঁসাই বল্লেই একটা বিকটাকার, ধুম্বলোচন হবে, ছেলেবেলা অবধি সকলেরই এই চিরপরিচিত সংস্কার। গোঁসাইদের যেরূপ বিয়ারিং পোষ্টে আয়েস ও আহারাদি চলে, বড় বড় বাবুদের পয়সা খরচ করেও সেরূপ জুটে ওঠবার যো নাই। গোঁসাইরা স্বয়ং কেষ্ট ভগবান বলেই, অনেক দুর্লভ বস্তুও অক্লেশে ঘরে বসে পান ও কালীয়দমন, পূতনাবধ, গোবর্ধনধারণ প্রভৃতি কটা বাজে কাজ ছাড়া, বস্ত্রহরণ, মানভঞ্জন, ব্ৰজবিহার প্রভৃতি শ্রীকৃষ্ণের গোছালো গোছালো লীলাগুলি করে থাকেন! পেটভরে মাল্লো ও ক্ষীর লেসেন ও রকমারি শিষ্য দেখে চৈতন্যচরিতামৃতের মতে— “যিনি গুরু তিনি কৃষ্ণ না ভাবিও আন। গুরু তুষ্টে কৃষ্ণ তুষ্ট জানিবা প্রমাণ॥” “প্রেমারাধ্যা রাধাসমা তুমি লো যুবতী। রাখ লো গুরুর মান যা হয় যুকতি।” —প্রভৃতি উপদেশ দিয়ে থাকেন। এ সওয়ায় গোঁসাইরা অণ্ডরটেকরের (মুদ্দফরাস) কাজও করে থাকেন–পাঁচসিকে পেলে মন্ত্রও দেন, মড়াও ফেলেন ও বেওয়ারিস বেওয়া ম’লে এরা তার উত্তরাধিকারী হয়ে বসেন। একবার মেদিনীপুরে এক ব্রকোদ গোঁসাই খড় জব্দ হয়েছিলেন। এখানে সে উপকথাটিও বলা আবশ্যক। পূর্ব্বে মেদিনীপুর অঞ্চলে বৈষ্ণবতন্ত্রে গুরু-প্রসাদি প্রথা প্রচলিত ছিল—নতুন বিবাহ হলে গুরুসেবা না করে স্বামি-সহবাস করবার অনুমতি ছিল না। বেতালপুরের রামেশ্বর চক্রবর্ত্তী পাড়াগাঁ অঞ্চলে একজন বিশিষ্ট লোক! সুবর্ণরেখা নদীর ধারে পাঁচবিঘা আওলাৎ ঘেরা ভদ্রাসন বাড়ী, সকল ঘরগুলি পাকা, কেবল চণ্ডীমণ্ডপ ও দেউড়ির সামনের বৈঠকখানা উলু দিয়ে ছাওয়া। বাড়ীর সামনে দু’টি শিবের মন্দির, একটি শাণ-বাঁধানে পুষ্করিণী, তাতে মাছও বিলক্ষণ ছিল। ক্রিয়েকৰ্ম্মে চক্রবর্ত্তীকে মাছের জন্যে ভাবতে হতো না। এ সওয়ায় ২০০ বিঘা ব্রহ্মোত্তর জমি, চাষের জন্য পাঁচখানা লাঙ্গল, পাঁচজন রাখাল চাকর, পাঁচজোড়া বলদ নিযুক্ত ছিল। চক্রবর্ত্তীর উঠোনে দুটি বড় বড় ধানের মরাই ছিল, গ্রামস্থ ভদ্রলোকমাত্ৰেই চক্রবর্ত্তীকে বিলক্ষণ মান্য কত্তেন ও তার চণ্ডীমণ্ডপে এসে পাশা খেলতেন। চক্রবর্ত্তীর ছেলেপুলে কিছুই ছিল না, কেবল এক কন্যামাত্র; সহরের ব্ৰকভানু চাটুষ্যের ছেলে হরহরি চাটুয্যের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় বর-কনের বয়স ১০/১৫ বছরের বেশী ছিল না, সুতরাং জামাই নিয়ে যাওয়া, কি মেয়ে আনা কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল। কেবল পাল-পার্ব্বণে পিঠে-সংক্রান্তি ও ষষ্ঠবাটায় তত্ত্ব তাবাস চলতো। ক্রমে হরহরিবাবু কালেজ ছাড়লেন, এদিকে বয়সও কুড়ি-একুশ হলো, সুতরাং চক্রবর্ত্তী জামাই নেযাবার জন্য স্বয়ং শহরে এসে ব্রকভানুবাবুর সঙ্গে সাক্ষাৎ কল্লেন। ব্রকভানুবাবু চক্রবর্ত্তীকে কয়দিন বিলক্ষণ আদরে বাড়ীতে রাখলেন, শেষে উত্তম দিন দেখে হরহরিরে সঙ্গে দিয়ে পাঠালেন। একজন দারোয়ান, একজন সরকার ও একজন চাকর হরহরিবাবুর সঙ্গে গেল। জামাইবাবু তিন-চার দিনে তোলপুরে পৌঁছিলেন। গাঁয়ে সোর পড়ে গেল, চক্রবর্ত্তীর সহুরে জামাই এসেছে; গাঁয়ের মেয়েরা কাজকর্ম্ম ফেলে ছুটোছুটি জামাই দেখতে এলো! ছোঁড়ারা সহুরে লোক প্রায় দেখে নি, সুতরাং পালে পালে এসে হরহরিবাবুরে ঘিরে বোসলো। …চক্রবর্ত্তীর চণ্ডীমণ্ডপ লোকে রৈ-রৈ করে লাগলো; একদিকে আশপাশ থেকে মেয়েরা উঁকি মাচ্চে; একপাশে কতকগুলো গোডিমওয়ালা ছেলে ন্যাংটা দাঁড়িয়ে রয়েছে; উঠানে বাজে লোক ধরে না। শেষে আমাইবাবুকে জলযোগ করবার জন্য বাড়ীর ভিতরে নিয়ে যাওয়া হলো। পূর্ব্বে জলযোগের যোগাড় করা হয়েছে শিড়ে নীচে চারিদিপে চারটি সুপারি দেওয়া হয়েছিল; জামাইবাবু যেমন পিঁড়েয় পা দিয়ে বসতে যাবেন, অমনি পিঁড়ে গড়িয়ে গেল। জামাইবাবু ধুপ করে পড়ে গেলেন শালী-শালাজ-মহলে হাসির গর্‌রা পড়লো! জলযোগের সকল জিনিসগুলিই ঠাট্টাপোরা। মাটির কালো জাম, ময়দা ও চেলের গুঁড়ির সন্দেশ, কাঠের আক ও বিচালির জলের চিনির পানা, জলের গেলাসে ঢাকুনি দেওয়া আরসুলো ও মাকোড়সা, পানের বাটায় ছুঁচো ও ইঁদুর পোরা। জামাইবাবু অতিকষ্টে ঠাট্টার যন্ত্রণা সহ্য করে বাইরে এলেন। সমবয়সী দু’চার শালা সম্পর্কের জুটে গেল; সহরের গল্প, তামাসা ও রঙ্গেই দিনটি কেটে গেল। রজনী উপস্থিত—সন্ধ্যে হয়ে গিয়েছে–রাখালেরা বাঁশী বাজাতে বাজাতে গরুর পাল নিয়ে ঘরে ফিরে যাচ্ছে। এক-একটি পরমা সুন্দরী স্ত্রীলোক কলসী কাঁকে করে নদীতে জল নিতে আসচে–লম্পটশিরোমণি কুমুদরঞ্জন যেন তাদের দেখবার জন্যই বাঁশঝাড়ে ও তালগাছের পাশ থেকে উঁকি মাচ্ছেন। ঝিঁঝিপোকা ও ঈইচিংড়িরা প্রাণপণে ডাকচে। ভাম, খটাখ ও ভোঁদড়েরা ভাঙ্গা শিবের মন্দির ও পড়ো বাড়ীতে ঘুরে বেড়াচ্চে। চামচিকে ও বাদুড়েরা খাবার চেষ্টায় বেরিয়েছে; এমন সময় একদল শিয়াল ডেকে উঠলো–এক প্রহর রাত্রি হয়ে গেল। ছেলেরা জামাইবাবুর বাড়ীর ভিতর নিয়ে গেল, পুনরায় নানারকম ঠাট্টা ও আসল খেয়ে–জামাইবাবু নির্দ্দিষ্ট ঘরে শুতে গেলেন। বিবাহের পর পুনর্ব্বিবাহের সময়েও জামাইবাবু শ্বশুরালয়ে যান নাই। সুতরাং পাঁচ বৎসরের সময় বিবাহকালে বা স্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তখন দুইজনেই বালক-বালিকা ছিলেন। সুতরাং হরহরিবাবুর নিদ্ৰা হবার বিষয় কি? আজ স্ত্রীর সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ হবে, স্ত্রী মান করে থাকলে তিনি কলেজী এডুকেশন ও ব্রহ্মজ্ঞান মাথায় তুলে পায়ে ধরে মান ভাঙবেন এবং এরপর যাতে স্ত্রী লেখাপড়া শিখেন ও চিরহৃদয়তোষিকা হন, তার বিশেষ তদ্বির কত্তে থাকবেন। বাঙ্গালীর স্ত্রীরা কি দ্বিতীয়া “মিস ষ্টো, মিস টমসন ও মিসেস বরকরলি ও লেডী বুলুয়ার লিটন” হতে পারে না? বিলিতী স্ত্রী হতে বরং এরা অনেক অংশে বুদ্ধিমতী ও ধর্ম্মশীলা—তবে কেন বডি দিয়ে, পুতুল খেলে ঝকড়া ও হিংসায় কাল কাটায়? সীতা, সাবিত্রী, সতী, সত্যভামা, শকুন্তলা, কৃষ্ণাও তো এক খনির মণি? তবে  এঁরা যে কয়লা হয়ে চিরকাল “ফরনেসে” বন্ধ হয়ে পোড়েন ও পোড়ন, সে কেবল বাপ-মা ও ভাতারবর্গের চেষ্টা ও তদ্বিরের ত্রুটিমাত্র। বাঙ্গালীসমাজের এমনি এক চমৎকার রহস্য যে, প্রায় কোন বংশেই স্ত্রী-পুরুষ উভয়ে কৃতবিদ্য দেখা যায় না! বিদ্যাসাগরের স্ত্রীর হয়তো বর্ণ পরিচয় হয় নাই; গঙ্গাজলের ছড়া–সাফরিদের মাদুলী ও বালসির চন্নমেত্তো নিয়েই ব্যতিব্যস্ত! এ ভিন্ন জামাইবাবুর মনে নানা রকম খেয়াল উঠলো, ক্রমে সেইসব ভাবতে ভাবতে ও পথের ক্লেশে অঘোর হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। শেষে বেলা এক প্রহরের সময়ে মেয়েদের ডাকাডাকিতে ঘুম ভেঙ্গে গেল—দেখেন যে, বেলা হয়ে গিয়েছে— তিনি একলা বিছানায় শুয়ে আছেন। এদিকে চক্রবর্ত্তীর বাড়ীর গিন্নীরা বলাবলি কন্তে লাগলেন যে, “তাই তো গা! জামাই এসেচেন, মেয়েও ষেটের কোলে বছর পোনের হলো, এখন প্রভুকে খবর দেওয়া আবশ্যক।” সুতরাং চক্রবর্ত্তী পাঁজি দেখে উত্তম দিন স্থির করে, প্রভুর বাড়ী খবর দিলে–প্রভু তূরী, খুন্তি ও খোল নিয়ে উপস্থিত হলেন। গুরুপ্রসাদির আয়োজন হতে লাগলো। হরহরিবাবু প্রকৃত রহস্য কিছুমাত্র জানতো না, গোঁসাই দলবল নিয়ে উপস্থিত, বাড়ীর সকলে শশব্যস্ত! স্ত্রী নূতন কাপড় ও সর্ব্বালঙ্কারে ভূষিত হয়ে বেড়াচ্চে! সুতরাং তিনি এতে নিতান্ত সন্দিগ্ধ হয়ে একজন ছেলেকে জিজ্ঞাসা কল্লেন, “ওহে, আজ বাড়ীতে কিসের ধূম?” ছোকরা বল্লে, “জামাইবাবু, তা জান না, আজ আমাদের গুরুপ্রসাদি হবে।” “আমাদের গুরুপ্রসাদি হবে” শুনে হরহরিবাবু একেবারে তেলেবেগুনে জ্বলে গেলেন ও কি প্রকারে কুৎসিত গুরুপ্রসাদি হতে স্ত্রী পরিত্রাণ পান, তারি তদ্বিরে ব্যস্ত রইলেন। কর্ত্তব্যকৰ্ম্মের অনুষ্ঠান কত্তে সাধুরা কোন বাধাই মানেন না বলেই যেন দিনমণি কমলিনীর মনোব্যথায় উপেক্ষা করে অস্ত গেলেন। সন্ধ্যাবধূ শাঁক ঘণ্টা ও ঝিঁঝিঁ পোকার মঙ্গলশব্দের সঙ্গে স্বামীর অপেক্ষা কত্তে লাগলেন। প্রিয়সখী প্রদোষ দূতীপদে প্রতিষ্ঠিত হয়ে, নিশানাথকে সংবাদ দিতে গেলেন। নববধুর বাসরে অমোদ করবার জন্য তারাদল একে একে উদয় হলেন, কুমুদিনী স্বচ্ছ সরোবরে ফুটলেন—হৃদয়রঞ্জনকে পরকীয় রসাস্বাদনে গমনোদ্যত দেখেও, তাঁর মনে কিছুমাত্র বিরাগ হয় নাই। কারণ, চন্দ্রের সহস্র কুমুদিনী আছে, কিন্তু কুমুদিনীর তিনিই একমাত্র অনন্যগতি! এদিকে নিশানাথ উনয় হলেন—শেয়ালেরা যেন স্তব পাঠ কত্তে লাগলো—ফুলগাছেরা ফুলদল উপহার দিতে লাগলো দেখে আাদে প্রকৃতি সত্য হাসতে লাগলেন। চক্রবর্ত্তীর বাড়ীর ভিতর বড় ধূম। গোস্বামী বরের মত সজ্জা করে জামাইবাবুর শোবার ঘরে গিয়ে শুলেন। হরহরিবাবুর স্ত্রী নানালঙ্কার পরে ঘরে ঢুকলেন; মেয়েরা ঘরের কপাট ঠেলে দিয়ে ফাঁক থেকে আড়ি পেতে উঁকি মাত্তে লাগলো। হরহরিবাবু ছোঁড়ার কানে শুনে একগাছি রুল নিয়ে গোস্বামীর ঘরে শোবার পূর্ব্বেই খাটের নীচে লুকিয়ে ছিলেন; এক্ষণে দেখলেন যে, স্ত্রী ঘরে ঢুকে গোস্বামীকে একটি প্রণাম করে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলো; প্রভু খাটে থেকে উঠে স্ত্রীর হাত ধরে অনেক বুঝিয়ে শেষে বিছানায় নিয়ে গেলেন; কন্যাটি কি করে! বংশপরম্পরাগত “ধৰ্ম্মের অন্যথা কল্লে মহাপাপ” এটি চিত্তগত আছে, সুতরাং আর কোন আপত্তি কল্লে না—শুড় শুড় করে প্রভুর বিছানায় গিয়ে শুলো। প্রভু কন্যার গায়ে হাত দিয়ে বল্লেন, বল “অমি রাধা তুমি শ্যাম”; কন্যাটিও অনুমতিমত “আমি রাধা তুমি শ্যাম” তিনবার বলেচে, এমন সময় হরহরিবাবু আর থাকতে পালেন না, খাটের নীচে থেকে বেরিয়ে এসে “এই কাঁদে বাড়ি বলরাম” বলে রুলসই কত্তে লাগলেন। ঘরের বাইরে ন্যাড়া বষ্টমেরা খোলকত্তাল নিয়ে ছিল— গোস্বামীর রুলসইয়ের চীৎকারে তারা হরিবোল ভেবে দেদার খোল বাজাতে লাগলো। মেয়েরা উলু দিতে লাগলো; কাঁসোর ঘণ্টা শাঁকের শব্দে হুলস্থুল পড়ে গেল। হরহরিবাবু হঠাৎ দরজা খুলে ঘরের ভিতর থেকে বেরিয়ে পড়ে, একেবারে থানার দারোগার কাছে গিয়ে সমস্ত কথা ভেঙ্গে বল্লেন। দারোগা ভদ্রলোক ছিলেন, (অতি কম পাওয়া যায়); তারে অভয় দিয়ে সেদিন যথা সমাদরে বাসায় রেখে, তার পরদিন বরকন্দাছ মোতায়েন দিয়ে বাড়ী পাঠিয়ে দিলেন। এদিকে সকলের তাক লেগে গেল, ইনি কেমন করে ঘরে গিয়েছিলেন। শেষে সকলে ঘরে গিয়ে দেখে যে, গোস্বামীর দাঁতকপাটি লেগে গেচে, অজ্ঞান অচৈতন্য হয়ে পড়ে আছে, বিছানায় রক্তের নদী বচ্চে। সেই অবধি গুরুপ্রসাদি উঠে গেল, লোকের চৈতন্য হলো। প্রভুরাও ভয় পেলেন। আর একবার এক সহুরে গোঁসাই এক বেনের বাড়ী কেষ্টলীলা করে জব্দ হয়েছিলেন, সেটিও এই বেলা বলে নিই। রামনাথ সেন ও শ্যামনাথ সেন দুই ভাই, সহরে চার পাঁচটা হৌসের মুচ্ছুদ্দি। দিনকতক বাবুদের বড় জ্বলজ্বলা হয়ে উঠেছিল–চৌঘুড়ী, ভেঁপু, মোসাহেব ও অবিদ্যার ছড়াছড়ি। উমেদার, বেকার রেকমেণ্ড চিঠিওয়ালা লোকে বৈঠকখানা থৈ থৈ কত্তো, বাবুরা নিয়ত বাগান, চোহেল ও আমোদেই মত্ত থাকত্তেন, আত্মীয়-কুটুম্ব ও বন্ধুবান্ধবেই বাবুদের কাজকর্ম্ম দেখতেন। একদিন রবিবার বাবুরা বাগানে গিয়েছেন, এই অবকাশে বাড়ীর প্রভু,–খুন্তি, খোল ও ভেঁপু নিয়ে উপস্থিত, বাড়ীর ভিতর খবর গ্যালো। প্রভুকে সমাদরে বাড়ীর ভিতর নিয়ে যাওয়া হলো। প্রভু চৈতন্যচরিতামৃত ও ভাগবতের মতে লীলা দেখালেন। শেষে গোস্বামী বাড়ী ফিরে যান–এমন সময় ছোটবাবু এসে পড়লেন। ছোটবাবুর কিছু সাহেবী মেজাজ, প্রভুকে দেখেই তেলেবেগুনে জ্বলে গেলেন ও অনেক কষ্টে আন্তরিক ভাব গোপন করে জিজ্ঞেসা কল্লেন, “কেমন প্রভু! ভগবানের মতে লীলা দেখান হলো?” প্রভু ভয়ে আমতা আমতা গোছের “আজ্ঞে হাঁ’ করে সেরে দিলেন। ছোটবাবুর একজন মুখোড়া গোছের কায়স্থ মোসাহেব ছিল, সে বল্লে, “হুজুর। গোঁসাই সকল রকম লীলে করে চল্লেন, কিন্তু গোবর্ধনধারণা হয়নি, অনুমতি করেন তো প্রভুকে গোবর্ধন ধারণটাও করিয়ে দেওয়া যায়, সেটাও বাকী থাকে কেন?” ছোটবাবু এতে সম্মত হলেন, শেষে দরওয়ানদের হুকুম দেওয়া হলো–দরজার পাশে একখান দশ-বারো মণ পাথর পড়ে ছিল, জন কতকে ধরে এনে গোস্বামীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে, পাথরের চাপানে গোস্বামীর কোমর ভেঙ্গে গেল। এদিকে বারোইয়ারিতলায় কেত্তন বন্ধ হয়ে গেল, কেত্তনের শেষে একজন বাউল সুর করে এই গানটি পাইলে– বাউলের সুর আজব সহর কলকেতা। রাড়ী বাড়ী জুড়ীগাড়ী মিছে কথার কি কেতা। হেতা ঘুঁতে পোড়ে গোবর হাসে বলিহারি ঐকতা; যত বক বিড়ালে ব্রহ্মজ্ঞানী, বদমাইসির ফাঁদ পাতা। পুঁটে তেলির আশা ছড়ি শুঁড়ী সোনার বেণের কড়ি, খ্যামটা খানকির খাসা বাড়ী, ভদ্রভাগ্যে গোলপাতা। হদ্দ হেরি হিন্দুয়ানী,  ভিতর ভাঙ্গা ভড়ংখানি, পথে হেগে চোরাঙ্গানি, লুকোচুরির ফেরগাঁতা। গিন্টি কাজে পালিশ করা, রাঙ্গা টাকায় তামা ভরা, হুতোম দাসেস্বরূপ-ভাষে, তফাৎ থাকাই সার কথা। গানটি শুনে সকলেই খুসী হলেন। বাউলে চার আনার পয়সা বক্সিস পেলে; অনেকে আদর করে গানটি শিখে ও লিখে নিলেন। বারোইয়ারি পুজো শেষ হলো, প্রতিমখানি আট দিন রাখা হলো, তারপর বিসর্জ্জন করবার আয়োজন হতে লাগলো। আমমোক্তার কানাইধনবাবু পুলিশ হতে পাশ করে আনলেন। চার দল ইংরাজী বাজনা, সাজা তুরুকসোয়ার নিশেন ধরা ফিরিঙ্গি, আশা শোটা ঘড়ী ও পঞ্চাশটা ঢাক একত্র হলো! বাহাদুরী কাঠতোলা চাক একত্র করে, গাড়ীর মত করে, তাতেই প্রতিমে তোলা হলো; অধ্যক্ষের প্রতিমের সঙ্গে সঙ্গে চল্লেন, দু পাশে সংয়ের সার বেঁধে চল্লো। চিৎপুরের বড় রাস্তা লোকারণ্য হয়ে উঠলো; রাঁড়েরা ছাদের ও বারাণ্ডার উপর থেকে রূপোবাঁধানো হুঁকোয় তামাক খেতে খেতে তামাসা দেখতে লাগলো, রাস্তার লোকেরা হাঁ করে চলতী ও দাঁড়ানো প্রতিমে দেখতে লাগলো। হাটখোলা থেকে জোড়াসাঁকো ও মেছোবাজার পর্যন্ত ঘোরা হলো, শেষে গঙ্গাতীরে নিয়ে বিসর্জ্জন করা হয়। অনেক পরিশ্রমে যে বিশ পঁচিশ হাজার টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিলো, আজ তারি শ্ৰাদ্ধ ফুরুলো। বীরকৃষ্ণ দাঁ আর আর অধ্যক্ষের অত্যন্ত বিষণ্ণদনে বাড়ী ফিরে গেলেন। বাবুদের ভিজে কাপড় থাকূলে অনেকেই বিবেচনা কতো যে, বাবুরা মড়া পুড়িয়ে এলেন। বারোইয়ারি পূজোর সম্বৎসরের মধ্যেই বীরকৃষ্ণ দাঁর বাজার-দেনা চেগে উঠলো, গদী ও আড়ত উঠ গ্যাল, শেষে ইন্সল্‌ভেট গিয়ে ফরেশডাঙ্গায় গিয়ে বাস করেন; কিছুদিন বাদে হঠাৎ ঘর চাপা পড়ে মরে গেলেন! আমমোক্তার কানাইবন দত্তজা সুপ্রিমকোর্টে জাল সাক্ষ্য দেওয়া অপরাধে, সার রবার্ট পিল সাহেবের বিচারে চৌদ্দ বছরের জন্য ট্রান্সপোর্ট হলেন, তার পরিবারের কিছুকাল অত্যন্ত দুঃখে কাল কাটিয়ে শেষে মুড়িমুড়কির দোকান করে দিনপাত কত্তে লাগলেন; মুড়িঘাটা লেনের হুজুর কোন বিশেষ কারণে বারোইয়ারিপুজোর মধ্যে কাশী গ্যালেন। প্যালানাথবাবু একদিন কতকগুলি বাঈ ও মেয়েমানুষ নিয়ে বোটে করে কোম্পানীর বাগানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন; পথে আচমকা একটা ঝড় উঠলো, মাঝিরে অনেক চেষ্টা কল্লে, কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না, শেষে বোটখানি একেবারে একটা চড়ার উপর উল্টে পড়ে চুরমার হয়ে ডুবে গেল। বাবু বড়মানুষের ছেলে, কখন সাঁতার দেন নাই। সুতরাং জলের টানে কোথায় যে গিয়ে পড়লে তার অদ্যাপি নির্ণয় হয় নাই। মুখুয্যেদের ছোটবাবু ক্রমে ভারি গাঁজাখোর হয়ে পড়লেন, অনবরত গাঁজা টেনে তার যক্ষ্মাকাস জন্মালো, আরাম হবার জন্যে তারকেশ্বরের দাড়ি রাখলেন বাল্‌সীর চরণামৃত খেলেন, সাফরিদের মাদুলী ধারণ কল্লেন; কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না, শেষে বিবাগী হয়ে কোথায় যে বেরিয়ে গেছেন, আজও তার ঠিকানা হয় নাই। প্রধান দোয়ার গবারাম গাওনা ছেড়ে পৈতৃক পেশা গিল্টি অবলম্বন করে কিছুকাল সংসার চালাচ্ছিলেন, গত পুজোর সময় পক্ষাঘাত রোগে মরেচেন। পচ্চুবাবু, অঞ্জনারঞ্জন দেব বাহাদুর ও আর আর অধ্যক্ষ দোয়ারেরা এখনও বেঁচে আছেন। তাদের যা হবে, তা এর পরে বক্তব্য।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০৩ হুজুক কালীপ্রসন্ন সিংহ হুজুক সাধারণে কথায় বলেন, “হুনরে চীন” ও “হুজ্জুতে বাঙ্গাল” কিন্তু হুতুম বলেন “হুজুকে কলকেতা”। হেথা নিত্য নতুন হুজুক, সকল গুলিই সৃষ্টিছাড়া ও আজগুব। কোন কাজকর্ম্ম না থাকলে, “জ্যাঠাকে গঙ্গাযাত্রা” দিতে হয়, সুতরাং দিবারাত্র হুঁকো হাতে করে থেকে গল্প করে, তাস ও বড়ে টিপে, বাতকৰ্ম্ম কত্তে কত্তে, নিষ্কৰ্ম্মা লোকেরা যে আজগুব হুজুক তুলবে, তা বড় বিচিত্র নয়। পাঠক! যতদিন বাঙ্গালীর “বেটর অকুপেসন” না হচ্ছে, যতদিন সামাজিক নিয়ম ও বাঙ্গালীর বর্তমান গাহস্থ্যপ্রণালীর রিফরমেশন না হচ্ছে, ততদিন এই মহান্ দোষের মুলোচ্ছেদের উপায় নাই। ধৰ্ম্মনীতিতে যারা শিক্ষা পান নাই, তারা মিথ্যার যথার্থ অর্থ জানেন না, সুতরাং অক্লেশে আটপৌরে ধুতির মত ব্যবহার কত্তে লজ্জিত বা সঙ্কুচিত হন না।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০৪ ছেলেধরা কালীপ্রসন্ন সিংহ ছেলেধরা আমরা ভূমিষ্ঠ হয়েই শুলেম, সহরে ছেলেধরার বড় প্রাদুর্ভাব! কাবুলি মেওয়াওয়ালারা ঘুরে ঘুরে ছেলে ধরে কাবুলে নিয়ে যায়। সেথায় নানাবিধ মেওয়া ফলের বিস্তর বাগান আছে, ছেলেটাকে তারি একটা বাগানের ভিতর ছেড়ে দেয়, সে অনবরত পেটপুরে মেওয়া খেয়ে খেয়ে যখন একেবারে ফুলে উঠে রং দুধে আলতার মত হয়, এমন কি টুস্কি মাল্লে রক্ত বেরোয়, তখন এক কড়া ঘি চড়িয়ে ছেলেটাকে ঐ কড়ার উপর, উপরপানে পা করে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়; ক্রমে কড়ার ঘি টগবগিয়ে ফুটে উঠলে ছেলের মুখ দিয়ে রক্ত বেরুতে আরম্ভ হয় ও সেই রক্ত টোসা টোসা ঘিয়ের কড়ার উপর পড়ে; ক্রমে ছেলের সমুদায় রক্ত বেরিয়ে এলে নানাবিধ মেওয়া ও মিছরির ফোড়ন দিয়ে কড়াখানি নাবান হয়। নবাব ও বড় বড় মোসলমানরা তাই খান। আমরা এই ভয়ানক কথা শুনে অবধি একলা বাড়ার বাহিরে প্রাণান্তেও যেতাম না, ও সেই অবধি কাবুলীদিগের উপর বিজাতীয় ঘৃণা জন্মে গেল।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০৫ প্রতাপচাঁদ কালীপ্রসন্ন সিংহ প্রতাপচাঁদ আমরা বড় হলেম, হাতে খড়ি হলো। একদিন গুরুমহাশয়ের ভয়ে চাকরদের কাছে লুকিয়ে রয়েছি, এমন সময় চাকরেরা পরস্পর বলাবলি কচ্চে যে “বর্দ্ধমানের রাজা প্রতাপচাঁদ একবার মরেছিলেন, কিন্তু আবার ফিরে এসেছেন। বর্দ্ধমানের রাজত্ব নেবার জন্য নালিশ করেচেন, সহরের তাবৎ বড়মানুষরা তাকে দেখতে যাচ্ছেন–এবার পুরাণবাবুর সর্ব্বনাশ, পুষ্যিপুত্তর নামঞ্জুর হবে।” নতুন জিনিষ হলেই ছেলেদের কৌতূহল বাড়িয়ে দেয়; শুনে অবধি আমরা অনেকেরই কাছে খুঁটরে খুঁটরে রাজা প্রতাপচাঁদের কথা জিজ্ঞাসা কত্তেম। কেউ বলতো, “তিনি একদিন একরাত জলে ডুবে থাকতে পারেন!” কেউ বলতো, “তিনি গুলিতে মরেন নি-রাণী বলেছেন, তিনিই রাজা প্রতাপচাঁদ—ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে লকে কাণ কেটে গিয়েছিল, সেই কাটাতেই তার ভগিনী চিনে ফেল্লেন!” কেউ বল্লে, “তিনি কোন মহাপাপ করেছিলেন, তাই যুধিষ্ঠিরের মত অজ্ঞাতবাসে গিয়েছিলেন, বাস্তবিক তিনি মরেন নি; অম্বিকা কালনায় যখন তাঁরে দাহ কৰ্ত্তে অনা হয় তখন তিনি বাক্সের মধ্যে ছিলেন না, সুদু বাক্স পোড়ান হয়।” সহরে বড় হুজুক পড়ে গেল, প্রতাপচাঁদের কথাই সর্ব্বত্র আন্দোলন হতে লাগলো। কিছুদিন এই রকমে যায়—একদিন হঠাৎ শুনা গেল, সুপ্রিমকোর্টের বিচারে প্রতাপচাঁদ জাল হয়ে পড়েছেন। সহরের নানাবিধ লোক কেউ সুবিধে কেউ কুবিধে–কেউ বল্লে, “তিনি আসল প্রতাপচাঁদ নন”—কেউ বলে, “ভাগ্যি দ্বারিকানাথ ঠাকুর ছিলেন, তাই জাল প্রুব হলো। তা না হলে পরাণবাবু টেরটা পেতেন।” এদিকে প্রতাপদ জাল সাব্যস্ত হয়ে, বরানগরে বাস কল্লেন। সেথা জরুক হলেন— খানকি ঘুসকি ও গেরস্ত মেয়েদের মেলা লেগে গেল, প্রতাপচাঁদ না পারেন, হেন কৰ্ম্মই নাই। ক্রমে চলতি বাজনার মত প্রতাপচাঁদের কথা আর শোনা যায় না; প্রতাপচাঁদ পুরোণো হলো, আমরাও পাঠশালে ভর্তি হলেম।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০৬ মহাপুরুষ কালীপ্রসন্ন সিংহ মহাপুরুষ পাঠক! পাঠশালা যমালয় হতেও ভয়ানক—পণ্ডিত ও মাষ্টারকে যেন বাঘ বিবেচনা হচ্ছে। একদিন আমরা স্কুলে একটার সময়ে ঘোড়াঘোড়া খেলচি, এমন সময়ে আমাদের জলতোলা বুড়ো মালী বলে যে, “ভূকৈলেসে রাজাদের বাড়ী একজন মহাপুরুষ এসেছেন, মহাপুরুষ সত্যযুগের মানুষ, গায়ে বড় বড় আশেীদগাছ ও উইয়ের ঢিপি হয়ে গিয়েছে—“চোক বুজে ধ্যান কচ্চেন, ধ্যান ভঙ্গ হয়ে চক্ষু খুলেই সমুদয় ভস্ম করে দেবেন।” শুনে আমাদের বড় ভয় হলো। স্কুলে ছুটি হলে আমরা বাড়ীতে এসেও মহাপুরুষের বিষয় ভাবতে লাগলেম; লাট্টু, ঘুড্ডী, ক্রিকেট, পায়রা পড়ে রইলো—মহাপুরুষ দেখবার ইচ্ছা ক্রমে বলবর্তী হয়ে উঠলো; শেষে আমরা ঠাকুরমার কাছে গেলুম। আমাদের বুড়ো ঠাকুরমা রোজ রাত্রে শোবার সময় ‘বেঙ্গমা-বেঙ্গুমী’ ‘পায়রা রাজা’ ‘রাজপুত্তর, পাত্তরের পুত্তুর, সওদাগরের পুওর ও কোটালের পুত্তর চার বন্ধু ‘তালপত্তরের খাড়া জাগে ও পক্ষিরাজ ঘোড়া জাগে’ ও ‘সোণার কাটী রূপার কাটী’ প্রভৃতি কত রকম উপকথা কইতেন। কবিকঙ্কণ ও কাশীদাসের পয়ার মুখস্থ আওড়াতে—আমরা শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়তুম।–হায়, বাল্যকালের সে সুখসময় মরণকালেও স্মরণ থাকবে-–অপরিচিত সংসার—হৃদয়কমল কুসুম হতেও কোমল বোধ হতো, কলেরই বিশ্বাস ছিল, ভূত, পেৎনী ও ঠাকুর দেবতার নামে শরীর লোমাঞ্চ হতো—হৃদয় অনুতাপ ও শোকের নামও জানতো না—অমর বর পেলেও সেই সুকুমার অবস্থা অতিক্রম কত্তে ইচ্ছা হয় না। শোবার সময়ে ঠাকুরমাকে সেই মালীর মহাপুরুষের কথা বল্লেম—ঠাকুরমা শুনে খানিকক্ষণ গম্ভীর হয়ে রইলেন ও একজন চাকরকে পরদিন সকালে মহাপুরুষের পায়ের ধূলো আনতে বলে দিয়ে, মহাপুরুষের বিষয়ে আরও দু-একঃগর কল্লেন। ঠাকুরমা বললেন–বছর আশী হলে (ঠাকুরমার তখন নতুন বিয়ে হয়েচে) আমাদের বারাণসী ঘোষ কাশী যাবার সময়ে পথে জঙ্গলের ভিতর ঐ রকম এক মহাপুরুষ দেখেন। সেই মহাপুরুষও ঐ রকম অচৈতন্য হয়ে ধ্যানে ছিলেন। মাঝিরে ধরাধরি করে নৌকায় তুলে আনে। বারাণসী তাকে বড় যত্ন করে নৌকায় রাখলেন। তখন ছাপঘাটীর মোহনায় জল থাকতো না বলে, কাশীযাত্রীরে বাদাবনের ভিতর দিয়ে যেতেন আসতেন; সুতরাং বারাণসীকেও বাদ দিয়ে যেতে হলো। এক দিন বাদাবনের ভিতর দিয়ে গুণ টেনে নৌকা যাচ্ছে, মাঝি ও অন্য অন্য লোকেরা অন্যমনস্ক হয়ে রয়েছে, এমন সময়ে ঠিক ঐ রকম আর একজন মহাপুরুষ নৌকার গলুয়ের কাছে বসে ধ্যানে ছিলেন, এরি মধ্যে ডাঙ্গার মহাপুরুষও হাসতে হাসতে নৌকার উপর এসে নৌকার মহাপুরুষের হাত ধরে নিয়ে জলের উপর দিয়ে হেঁটে চলে গেলেন, মাঝি ও অন্য অন্য লোকেরা হাঁ করে রইলো! বারাণসী বাদাবন তন্ন তন্ন করে খুঁজলেন, কিন্তু আর মহাপুরুষদের দেখতে পেলেন না, এরা সব সেকালের মুনিঋষি, কেউ হাজার বৎসর তপিস্যে কচ্চেন, এঁরা মনে কলে সব কত্তে পারেন! আর একবার ঝিলিপুরের দত্তরা সোঁদরবন আবাদ কত্তে কত্তে ত্রিশ হাত মাটীর ভিতরে এক মহাপুরুষ দেখেছিল। তার গায়ে বড় বড় অশোদগাছের শেকড় জন্মে গিয়েছিল। আর শরীর শুকিয়ে চেলাকাঠের মত হয়েছিল। দত্তরা অনেক পরিশ্রম করে তারে ঝিলিপুরে আনে, মহাপুরুষও প্রায় এক মাস ঝিলিপুরে থাকেন, শেষে একদিন রাত্তিরে তিনি যে কোথায় চলে গেলেন, কেউ তার ঠিকানা কত্তে পাল্পে না!–শুনতে শুনতে আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম। তার পরদিন সকালে রামা চাকর মহাপুরুষের পায়ের ধুলো এনে উপস্থিত কল্লে; ঠাকুরমা একটি জয়ঢাকের মত মাদুলিতে সেই ধুলো পুরে, আমাদের গলায় ঝুলিয়ে দিলেন, সুতরাং সেই দিন থেকে আমরা ভূত, পেৎনী, শাঁকচুন্নী ও ব্রহ্মদত্তির হাত থেকে কথঞ্চিৎ নিস্তার পেলেম। ক্রমে আমরা পাঠশালা ছাড়লেম–কলেজে ভর্ত্তি হলেম–সহাধ্যায়ী দু-চার সমকক্ষ বড়মানুষের ছেলের সঙ্গে আলাপ হলো। একদিন আমরা একটার সময়ে গোলদীঘির মাঠে ফড়িং ধরে বেড়াচ্ছি, এমন সময় আমাদের কেলাসের পণ্ডিত মহাশয় সেই দিকে বেড়াতে এলেন। পণ্ডিত মহাশয় প্রথমে বড়মানুষের বাড়ীর রাঁধুনী বামুন ছিলেন, এডুকেশন কৌন্সেলের সুক্ষ্ম বিবেচনায়, সেন বাবুর সুপারিসে ও প্রিন্সিপালের কৃপায় পণ্ডিত হয়ে পড়েন। পণ্ডিত মহাশয় পান খেতে বড় ভালবাসতেন, সুতরাং সকলেই তাকে যথাসাধ্য পান দিয়ে তুষ্ট কত্তে ক্রটি কত্তো না; পণ্ডিত মহাশয় মাঠে আসবামাত্র ছেলেরা পান দিতে আরম্ভ কল্লে; আমরাও এক দোনা মিঠে খিলি উপহার দিলেম। পণ্ডিত মহাশয় মিঠে খিলি পছন্দ কত্তে; পান খেয়ে আমাদের নাম ধরে বলেন, “আরে হুতোম! আর শুনচো? ভূকৈলেসের রাজাদের বাড়ী যে একটা মহাপুরুষ ধরে এনেছিলো, ডাক্তার সাহেব তার ধ্যান ভঙ্গ করে দিয়েছেন;–প্রথমে রাজারা তার পায়ে গুল পুরিয়ে দেন, জলে ডুবিয়ে রাখেন, কিছুতেই ধ্যানভঙ্গ হয় নাই। শেষে ডাক্তার সাহেব এক আরক নিয়ে তার নাকের গোড়ায় ধল্লে তার চেতন হলো; এখন সেই মহাপুরুষ লোকের গলা টিপে পয়সা নিচ্ছে, রাজাদের পাখা টেনে বাতাস কচ্চে, যা পাচ্ছে, তাই খাচ্ছে, তার মহাপুরুষত্ব-ভুর ভেঙ্গে গেছে।” পণ্ডিত মহাশয়ের কথা শুনে আমরা তাক্‌ হয়ে পড়লেম, মহাপুরুষের উপর যে ভক্তিটুকু ছিল— মরিচবিহীন কর্পূরের মত–পরহীন ইথরের মত একেবারে উবে গেল। ঠাকুরমার মাদুলিটি তার পর দিনই খুলে ফ্যালা হলো; ভূত, শাঁকচুন্নী পেৎনীদের ভয় আবার বেড়ে উঠলো।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০৭ লালা রাজাদের বাড়ী দাঙ্গা কালীপ্রসন্ন সিংহ লালা রাজাদের বাড়ী দাঙ্গা আমরা স্কুলে আর এক কেলাস উঠলেম। রাধুনি বামুন পণ্ডিতের হাত এড়ানো গেল। একদিন আমরা পড়া বলতে না পারায় জল খাবার ছুটীর সময়ে গাধার টুপী মাথার দিয়ে, বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে কন্‌ফাইন্ হয়ে রয়েছি, মাষ্টার মশাই তামাক খাবার ঘরে জল খেতে গেছেন (তাঁর ক্ষিদে বরদাস্ত হয় না, কিন্তু ছেলেদের হয়); একজন বামুন বাবুদের বাড়ীর ছোটবাবুর মুখে শ্যামা পাখীর  বোল—“বক্‌ বকম্‌ বক বকম্‌” করে পায়রার ডাক ডেকে বেড়াচ্চেন ও পনি টাট্টু সেজে কদম দেখাচ্ছেন; এমন সময়ে কাশীপুর অঞ্চলের একজন ছোকরা বল্লে, “কাল বৈকালে পাকপাড়ায় লালাবাবুদের (শ্রী বিষ্ণু! আজকাল রাজা) লালা রাজাদের বাড়ী—এক দল গোরা মাতাল হয়ে এসে চার-পাঁচ জন দারোয়ানকে বর্‌শায় বিঁধে গিয়েছে, রাজারা ভয়ে হাসন হোসেনের মত একটা পুরোণো পাতকোর ভিতর লুকিয়ে প্রাণরক্ষা করেছেন।” (বোধ হয় কেবল গিরগিটের অপ্রতুল ছিল)। আর একজন ছোকরা বলে উঠলো “আরে তা নয়, আমরা দাদার কাছে শুনেছি, রাজাদের বাড়ীর সামনের গাছে একটা কাগ মেরেছিল বলে রাজাদের জমাদার, সাহেবদের মাত্তে এসে”; আর একজন ছোকরা দাঁড়িয়ে উঠে আমাদের মুখের কাছে হাত নেড়ে বল্লে, “আ রে না হে না, ও সব বাজে কথা! আমারও বাড়ী টালাতে, রাজাদের বাড়ীর পেছনে যে সেই বড় পগারটা আছে জান? তার পাশে যে পচা পুকুর সেই আমাদের খিড়কি। রাজাদের এক জন আমলার ভাই ঠিক বানরের মত মুখ; তাই দেখে একজন সাহেব ভেংচে ছিল, তাতে আমলাও ভেংচায়; তাতেই সাহেবরা বন্দুক পিস্তল নিয়ে দলবল সমেত এসে গুলী করে”। এইরূপে অনেক রকম কথা চলেছে, এমন সময়ে মাষ্টার বাবু তামাক খাবার ঘর থেকে এলেন, ছোটবাবুর পনি টাটুর কদম ও ‘বক বকম্‌’ বন্ধ হয়ে গেল, রাজারা বাঁচলেন—ঢং ঢং করে দুটো বাজলে কেলাস বসে গেল, আমরাও জল খেতে ছুটী পেলেম। আমরা বাড়ী গিয়ে রাজাদের ব্যাপার অনেকের কাছে আরও ভয়ানক রকম শুনলেম; বাঙ্গালা কাগজওয়ালারা, “এক দল গোরা বাজনা বাজিয়ে যাইতেছিল, দলের মধ্যে একজনের জলতৃষ্ণা পেয়েছিল, রাজাদের বাড়ী যেমন জল খেতে যাবে, জমাদার গলা ধাক্কা মারিয়া বাহির করিয়া দেয়, তাহাতে সঙ্গের কর্ণেল গুলী কত্তে হুকুম দেন” প্রভৃতি নানা আজগুবী কথায় কাগজ পোড়াতে লাগলেন। সহরের পূর্ব্বের বাঙ্গালা খবরের কাগজ বড় চমৎকার ছিল, ‘অমুক বাবুর মত দাতা কে!” “অমুক বাবুর মার শ্রাদ্ধে জোর টাকা ব্যয়, (বাবু মুচ্ছুদী মাত্র); “অমুক মাতাল জলে ডুবে মরে গেচে” “অমুক বেশ্রার নত খোয়া গিয়েছে, সন্ধান করে দিতে পাল্লে সম্পাদক তার পুরস্কারস্বরূপ তারে নিজ সহকারী করবেন” প্রভৃতি আল্‌ত কথাতেই পত্র পুরুতেন; কেউ গাল দিয়ে পয়সা আদায় কত্তেন, কেউ পয়সার প্রত্যাশায় প্রশংসা কত্তেন;–আজকালও অনেক কাগজে চোর গোপ্তান চলে! শেষে সঠিক শোনা গেল যে, এক জন দরওয়ানকে এক জন ফিরিঙ্গি শিকারী বাকবিতণ্ডায় ঝকড়া করে গুলী করে।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০৮ কৃশ্চানি হুজুক কালীপ্রসন্ন সিংহ কৃশ্চানি হুজুক পাক্‌পাড়ার রাজাদের হাঙ্গামা চুকতে চুকতে হুজুর উঠলো, “রণজিৎসিংহের পুত্র দলিপ–ইসুমন্ত্রে দীক্ষিত হয়েচেন; তাঁর সঙ্গে সমুদায় শিকেরা কৃষ্ণান হয়েচেন ও ভাটপাড়ার জনকতক ঠাকুরও কৃশ্চান হবেন!” ভাটপাড়ার গুরুগুষ্টিরে প্রকৃত হিন্দু; তাঁরা কৃশ্চান হবেন শুনে, অনেকে চমকে উঠলেন, শেষে ভাটপাড়ার বদলে পাতুরেঘাটার শ্রীযুক্তবাবু প্রসন্নকুমার ঠাকুরের পুত্র বাবু জ্ঞানেন্দ্রমোহন বেরিয়ে পড়লেন। সমধৰ্ম্মা কৃষ্ণমোহন কন্যা উচ্ছুগ্‌গু করে দিলেন, এয়োরও অভাব রইলো না। সহরে যখন যে পড়ত পড়ে, শীগগির তার শেষ হয় না; সেই হিড়িকে একজন স্কুলমাষ্টার, কালীঘেটে হালদার, একজন বেণে ও কায়স্থ কৃশান দলে বাড়লো–দু-চার জন বড় বড় ঘরের মেয়েমানুষও অন্ধকার থেকে আলোয় এলেন। শেষে অনেকের চালফুঁড়ে আলো বেরতে লাগলো, কেউ বিষয়ে বঞ্চিত হলে, কেউ কেউ অনুতাপ ও দুরবস্থার সেবা কত্তে লাগলেন। কৃশ্চানি হুজুক রাস্তার চলতি লণ্ঠনের মত প্রথমে আসপাশ আলো করে শেষে অন্ধকার করে চলে গেল। আমরাও ক্রমে বড় হয়ে উঠলেম–স্কুল আর ভাল লাগে না!
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.০৯ মিউটীনি কালীপ্রসন্ন সিংহ মিউটীনি পাঠকগণ! একদিন আমরা মিছেমিছি ঘুরে বেড়াচ্চি, এমন সময় শুনলেম, পশ্চিমের সেপাইরে খেপে উঠেচে, নানা সাহেবকে চাঁই করে ইংরেজদের রাজত্ব নেবে, দিল্লীর ন্যেড়ে চীফ আবার “দিল্লীশ্বরো বা জগদীশ্বরো বা” হবেন ভারি বিপদ! সহরে ক্রমে হুলস্থুল পড়ে গেল, চুনোগলি ও কসাইটোলার মেটে ইদ্‌রুস পিদ্‌রু স, গমিস ডিস প্রভৃতি ফিরিঙ্গিরে খাবার লোভে ভলিনটিয়ার হলেন, মাথালো মাথালো বাড়ীতে গোরা পাহারা বসলো, নানা রকম অদ্ভুত হুজুক উঠতে লাগল—আজ দিল্লী গেল—কাল কানপুর হারানো হলো, ক্রমে পাশাখেলার হার কেতের মত ইংরাজেরা উত্তরপশ্চিমের প্রায় সমুদয় অংশেই বেদখল হলেন—বিবি, ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলে ও মেয়েরা মারা গেল, ‘শ্রীবৃদ্ধিকারী’ সাহেবেরা (হিন্দু দেবতা পঞ্চানন্দের মত) বড় ছেলের কিছু কত্তে পাল্লেন না, ছোট ছেলের ঘাড় ভাঙ্গবার উজ্জুগ পেলেন–সেপাইদের রাগ বাঙ্গালীর উপর ঝাড়তে লাগলেন। লর্ড ক্যানিংকে বাঙ্গালীদের অস্ত্র-শস্ত্র (বঁটি ও কাঁটারিমাত্র) কেড়ে নিতে অনুরোধ কল্লেন! বাঙ্গালীরা বড় বড় রাজকৰ্ম্ম না পায়, তারও তদ্বির হতে লাগলো; ডাকঘরের কতকগুলি নেড়ে প্যায়দার অন্ন গেল, নীলকরেরা অনরেরী মেজেষ্টর হয়ে মিউটীনি উপলক্ষ করে (চোর চায় ভাঙ্গা ব্যাড়া) দাদন, গাদন ও শ্যামচাঁদ খেলাতে লাগলেন। শ্যামচাঁদ সামান্নি নন, তাঁর কাছে আইন এগুতে পারে না—সেপাইতো কোন ছার। লক্ষ্ণৌয়ের বাদশাকে কেল্লায় পোরা হলো, গোরারা সময় পেয়ে দু-চার বড় বড় ঘরে লুটতরাজ অরম্ভ কল্লে, মার্শাল ল জারি হলো, যে ছাপা যন্ত্রের কল্যাণে হুতোম নির্ভয়ে এত কথা অক্লেশে কইতে পাচ্ছেন, সে ছাপা-যন্ত্র কি রাজা, কি প্রজা, কি সেপাই পাহারা–কি খেলার ঘর, সকলকে একরকম দেখে, ব্রিটিশকলের সেই চিরপরিচিত ছাপা-যন্ত্রের স্বাধীনতা মিউটীনি উপলক্ষে, কিছুকাল শিকলি পরলেন। বাঙ্গালীরে ক্রমে বেগতিক দেখে গোপাল মল্লিকের বাড়ীতে সভা করে, সাহেবদের বুঝিয়ে দিলেন যে–“যদিও একশ বছর হয়ে গেল, তবু তারা আজও সেই হতভাগা ম্যাড়া বাঙ্গালীই আছেন—বহু দিন ব্রিটিশ সহবাসে, ব্রিটিশ শিক্ষায় ও ব্যবহারে আমেরিকানদের মত হতে পারেন নি। (পারবেন কি না তারও বড় সন্দেহ)। তাঁদের বড়মানুষদের মধ্যে অনেকে তুফানের ভয়ে গঙ্গায় নৌকো চড়েন না—রাত্তিরে প্রস্রাব কৰ্তে উঠতে হলে স্ত্রীর বা চাকর চাকরাণীর হাত ধরে ঘরের বাইরে যান, অন্দরের মধ্যে টেবিল ও পেননাইফ ব্যবহার করে থাকেন; যাঁরা আপনার ছায়া দেখে ভয় পান–তাঁরা যে লড়াই করবেন, এ কথা নিতান্ত অসম্ভব। বলতে কি, কেবল আহার ও গুটিকতক বাছালো বাছালো আচারে তাঁরা ইংরাজদের স্কেচমাত্র করে নিয়েছেন। যদি গভর্ণমেন্টের হুকুম হয়, তা হলে সেগুলিও চেয়ে পরা কাপড়ের মত এখনই ফিরিয়ে দেন—রায় মহাশয়ের মগ বার্চ্চিকে জবাব দেওয়া হয়—বিলিতী বাবুরা ফিরতি ফলারে বসেন ও ঘোষজা গাঁজা ধরেন, আর বাগাম্বর মিত্র বনাতের প্যাণ্টুলন ও বিলিতী বদমাইসি থেকে স্বতন্ত্র হন। ইংরাজের মাগ, ছেলে ও স্বজাতির শোকে একেবারে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন, সুতরাং তাতেও ঠাণ্ডা হলেন না–লর্ড ক্যানিংয়ের রিকলের জন্য পার্লিয়ামেণ্টে দরখাস্ত কল্লেন, সহরে হুজুকের একশেষ হয়ে গেল। বিলেত থেকে জাহাজ জাহাজ গোরা আসতে লাগলো—সেই সময়ে বাজারে এই গান উঠলো– গান “বিলাত থেকে এলো গোরা, মাথার পর কুরতি পরা, পদভরে কাঁপে ধরা, হাইল্যাণ্ডনিবাসী তারা। টামটিয়া টোপীর মান হবে এবে খর্ব্বমান, সুখে দিল্লী দখল হবে, নানা সাহেব পড়বে ধরা॥” বাঙ্গালী ঝোপ বুঝে কোপ ফেলতে বড় পটু; খাঁটি হিন্দু (অনেকেই দিনের বেলার খাঁটি হিন্দু) দলে রটিয়ে দিলে যে, “বিধবাবিবাহের আইনই পাশ ও বিধবাবিবাহ হওয়াতেই সেপাইরে খেপেচে। গবর্ণমেণ্ট বিধবাবিবাহের আইন তুলে দিয়েছেন—বিদ্যাসাগরের কৰ্ম্ম গিয়েছে—প্রথম বিধবাবিবাহের বর শিরিশের ফাঁসি হবে।” কোথাও হুজুক উঠলো, “দলিপ সিংকে কৃশ্চান করাতে, নাগপুরের রাণীদের স্ত্রীধন কেড়ে নেওয়াতে ও লক্ষ্ণৌয়ের বাদশাই যাওয়াতে মিউটীনি হলো।” নানা মুনির নানা মত! কেউ বল্লেন, সাহেবেরা হিন্দুর ধৰ্ম্মে হাত দেন, তাতেই এই মিউটীনি হয়েচে। তারকেশ্বরের মোহেন্তের রক্ষিতা, কাশীর বিশ্বেশ্বরের পাণ্ডার স্ত্রী ও কালীঘাটের বড় হালদারের বাড়ীর গিন্নীরে স্বপ্নে দেখেচেন, ইংরেজদের রাজত্ব থাকবে না! দুই এক জন ভটচাৰ্য্যি ভবিষ্যৎ পুরান খুলে তারই নজর দেখালেন! ক্রমে সেপাইয়ের হুজুকের বাড়তি কমে গ্যালো–আজ দিল্লী দখল হলো–নানা পালালেন–জং বাহাদুরের সাহায্যে লক্ষ্ণৌ পাওয়া হলো। মিউটীনি প্রায় সমুদায় সেপাইরে ফাঁসিতে, তোপেতে ও তলওয়ারের মুখেতে শেষ হোলেন—অবশিষ্টেরা ক্যানিংয়ের পলিসিতে ক্ষমা প্রার্থনা করে বেঁচে গ্যালেন। ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানী পুরোণো বছরের মত বিদেয় হলেন—কুইন স্বরাজ্য খাস প্রক্লেম কল্লেন; বাজী, তোপ ও আলোর সঙ্গে মায়াবিনী আশা ‘কুইনের খাসে প্রজার দুঃখ রবে না’ বাড়ী বাড়ী গেয়ে বেড়াতে লাগলেন; গর্ভবতীর যত দিন একটা না হয়ে যায়, তত দিন যেমন ‘ছেলে কি মেয়ে’ লোকের মনে সংশয় থাকে, সংসার কুইনের প্রোক্লেমেশনে সেইরূপ অবস্থায় স্থাপিত হলো। মিউটীনির হুজুক শেষ হলো–বাঙ্গালীর ফাঁসী-ছেঁড়া অপরাধীর মত সে যাত্রা প্রাণে প্রাণে মান বাঁচালেন; কারু নিরপরাধে প্রাণদণ্ড হলো, কেউ অপরাধী থেকেও জায়গীর পেলেন। অনেক বামুনে-কপাল ফলে উঠলো; যখন যার কপাল ধরে—ইত্যাদি কথার সার্থকতা হলো। রোগ, শোক ও বিপদে যেমন লোকে পতিগত স্ত্রীর মুল্য জানতে পারে, সেইরূপ মিউটীনির উপলক্ষে গবর্ণমেণ্টও বাঙ্গালী শব্দের কথঞ্চিৎ পদার্থ জানতে অবসর পেলেন; ‘শ্রীবৃদ্ধিকারীরা’ আশা ও মানভঙ্গে অন্তরে বিষম জ্বালায় জ্বলিতেছিলেন, এক্ষণে পোড়া চক্ষে বাঙ্গালীদের দেখতে লাগলেন–আমরাও স্কুল ছাড়লেম। আঃ! বাঁচলেম—গায়ে বাতাস লাগলো।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১০ মরা-ফেরা কালীপ্রসন্ন সিংহ মরা–ফেরা আমরা ছেলেবেলাতেই জ্যাঠার শিরোমণি ছিলেম; স্কুল ছাড়াতে জ্যাঠামি, ভাতের ফ্যানের মতন, উথলে উঠলো; (বোধ হয় পাঠকেরা এই হুতোমপ্যাঁচার নক্সাতেই আমাদের জ্যাঠামির দৌড় বুঝতে পেরে থাকবেন) আমরা প্রলয়-জ্যাঠা হয়ে উঠলেম—কেউ কেউ আদর করে ‘চালাকদাস’ বলে ডাকতে লাগলেন। ছেলেবেলা থেকেই আমাদের বাঙ্গালা ভাষার উপর বিলক্ষণ ভক্তি ছিল, শেখবারও অনিচ্ছা ছিল না। আমরা পূর্ব্বেই বলেছি যে, আমাদের বুড়ো ঠাকুরমা ঘুমোবার পূর্ব্বেই নানাপ্রকার উপকথা কইতেন। কবিকঙ্কণ, কৃত্তিবাস ও কাশীদাসের পয়ার আওড়াতেন। আমরাও সেইরূপ মুখস্থ করে স্কুলে, বাড়ীতে ও মার কাছে আওড়াতেম–মা শুনে বড় খুসী হতেন ও কখন কখন আমাদের উৎসাহ দেবার জন্যে ফি পয়ার পিছু একটি করে সন্দেশ প্রাইজ দিতেন; অধিক মিষ্টি খেলে তোৎলা হতে হয়, ছেলেবেলায় আমাদের এ সংস্কার ছিল; সুতরাং কিছু আমরা আপনারা খেতুম, কিছু কাগ ও পায়রাদের জন্যে ছাদে ছড়িয়ে দিতুম। আর আমাদের মঞ্জুরী বলে দিব্বি একটি সাদা বেড়াল ছিল, (আহা! কাল সকালে সেটি মরে গ্যাছে—বাচ্চাও নাই) বাকী সে প্রসাদ পেতো। সংস্কৃত শেখাবার জন্যে আমাদের এক জন পণ্ডিত ছিলেন, তিনি আমাদের লেখা-পড়া শেখাবার জন্যে বড় পরিশ্রম কত্তেন। ক্রমে আমরা চার বছরে মুগ্ধবোধ পার হলেম, মাঘের দুই পাত ও রঘুর তিন পাত পড়েই আমাদের জ্যাঠামোর সুত্র হলো; টিকী, ফোঁটা ও রাঙ্গা বনাতওয়ালা টুলো ভট্টাচাৰ্য্য দেখলেই তক্ক কৰ্ত্তে যাই, ছোঁড়াগোচের ঐ রকম বেয়াড়া বেশ দেখতে পেলেই তর্কে হারিয়ে টিকী কেটে নিই; কাগজে প্রস্তাব লিখি–পয়ার লিখতে চেষ্টা করি ও অন্যের লেখা প্রস্তাব থেকে চুরি করে আপনার বলে অহঙ্কার করি—সংস্কৃত কলেজ থেকে দূরে থেকেও ক্রমে আরও ঠিক একজন। সংস্কৃত কলেজের ছোকরা হয়ে পড়লেম; গৌরবলাভেচ্ছা হিন্দুকুশ ও হিমালয় পর্ব্বত থেকেও উঁচু হয়ে উঠলো—কখন বোধ হতে লাগলো, কিছুদিনের মধ্যে আমরা দ্বিতীয় কালিদাস হবো; (ওঃ বিষ্ণু, কালিদাস বড় লম্পট ছিলেন) তা হওয়া হবে না, তবে ব্রিটনের বিখ্যাত পণ্ডিত জনসন? (তিনি বড় গরীবের ছেলে ছিলেন, সেটি বড় অসঙ্গত হয়)। রামমোহন রায়? হাঁ, একদিন রামমোহন রায় হওয়া যায় কিন্তু বিলেতে মত্তে পারবো না। ক্রমে কি উপায়ে আমাদের পাঁচজনে চিনবে, সেই চেষ্টাই বলবর্তী হলো; তারি সার্থকতার জন্য আমরা বিদ্যোৎসাহী সাজলেম—গ্রন্থকার হয়ে পড়লেম—সম্পাদক হতে ইচ্ছা হলো—সভা কল্লেম—ব্রাহ্ম হলেম-তত্ত্ববোধিনী সভায় যাই—বিধবাবিয়ের দলাদলি করি ও দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, অক্ষয়কুমার দত্ত, ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত প্রভৃতি বিখ্যাত দলের লোকদের উপাসনা করি—আন্তরিক ইচ্ছে যে, লোকে জানুক যে, আমরাও ঐ দলের ছোট খাট কেষ্ট বিষ্টুর মধ্যে। হায়! অল্পবয়সে এক একবার অবিবেচনার দাস হয়ে আমরা যে সকল পাগলামো করেছি, এখন সেইগুলি স্মরণ হলে কান্না ও হাসি পায়; অবিরি এখন যে পাগলামী প্রকাশ কচ্চি, এর জন্য বৃদ্ধবয়সে অনুতাপ তোলা রইলো! মৃত্যু-শয্যার পাশে যবে এইগুলির ভয়ানক ছবি দেখা যাবে, ভয়ে ও লজ্জায় শরীর দাহ কত্তে থাকবে, তখন সেই অনন্য-আশ্রয় পরমেশ্বর ভিন্ন আর জুড়াবার স্থান পাওয়া যাবে না! বাপ-মার কাছে মার খেয়ে ছেলেরা যেমন তাঁদেরই নাম করে, ‘বাবা গো–মা গো, বলে কাঁদে, আমরা তেমনি সেই ঈশ্বরের অজ্ঞা লঙ্ঘননিবন্ধন বিপদে পড়ে তার নাম ধরেই,—পাঠক! তোমায় ভেংচুতে ভেংচুতে ও কলা দেখাতে দেখাতে তরে যাব। প্রলয় গৰ্ম্মিতে আমরা একদিন মোটা চাদর গায়ে দিয়ে ফিলজফর সেজে বেড়াচ্ছি, এমন সময়ে নদে অঞ্চলের একজন মুহুরি বল্লে যে, “আমাদের দেশে হুজুক উঠেছে, ১৫ই কার্ত্তিক রবিবার দিন দশ বছরের মধ্যের মরা মানুষরা যমালয় থেকে ফিরে আস্‌বে”—জন্মের মধ্যে কৰ্ম্ম নিমুর চৈত্র মাসে রাসের মত সহরের বেণেবাবুরা সিংহবাহিনী ঠাকরুণের পালায় যেমন ছোট আদালতের দু চার কয়েদী খালাস কবেন, সেই রকম স্বর্গের কোন দেবতা আপনার ছেলের বিবাহ উপলক্ষে যমালয়ের কতকগুলি কয়েদী খালাস করবেন; নদের রামশর্মা অচার্য্যি স্বয়ং গুণে বলেছেন। আমরা এই অপরূপ হুজুক শুনে তাক হয়ে রইলেম! এদিকে সহরেও ক্রমে গোল উঠলো ‘১৫ই কার্ত্তিক মরা ফিরবে।’ বাঙ্গালা খবরের কাগজওয়ালারা কাগজ পুরাবার জিনিস পেলেন—একটি গেরো দিলে পূর্ব্বের গেরোটি যেমন আল্গা হয়ে যায়, বিধবাবিবাহ প্রচার করাতে সহরের ছোট ছোট বিধবাদের বিদ্যাসাগরের প্রতি যে ভক্তিটুকু জন্মেছিল, সেটুকু সেই প্রলয় হুজুকে ঋতুগত থারমোমিটরের পারার মত একেবারে অনেক ডিগ্রী নেবে গিয়ে, বিলক্ষণ টিলে হয়ে পড়লো। সহরে যেখানে যাই সেইখানেই মরা ফেরবার মিছে হুজুক! আশা নির্ব্বোধ স্ত্রী ও পুরুষদলের প্রিয়সহচরী হলেন। জোচ্চোর ও বদমাইসেরা সময় পেয়ে গোছাল গোছাল জায়গায় মরা ফেরা সেজে যেতে লাগলো; অনেক গেরেস্তোর ধর্ম্ম নষ্ট হলো—অনেকের টাকা ও গয়না গেল। ক্রমে আষাঢ়ান্ত বেলার সন্ধ্যার মত–শোকাতুরের সময়ের মত, ১৫ই কার্ত্তিক নবাবিচালে এসে পড়লেন। দুর্গোৎসবের সময়ে সন্ধিপূজোর ঠিক শুভক্ষণের জন্য পৌত্তলিকেরা যেমন প্রতীক্ষা করে থাকেন, ডাক্তারের জন্য মুমূর্ষ রোগীর আত্মীয়েরা যেমন প্রতীক্ষা করে থাকেন ও স্কুলবয় ও কুঠিওয়ালারা যেমন ছুটীর দিন প্রতীক্ষা করেন—বিধবা ও পুত্রসহোদরবিহীন নির্ব্বোধ পরিবারেরা সেই রকম ১৫ই কার্ত্তিকের অপেক্ষা কবেছিলো। ১৫ই কার্ত্তিকই দিল্লীর লাড্‌ডু হয়ে পড়লেন—যাঁরা পূর্ব্বে বিশ্বাস করেন নি, ১৫ই কার্ত্তিকের আড়ম্বর ও অনেকের অতুল বিশ্বাস দেখে তাঁরাও দলে মিশলেন। ছেলেবেলা আমাদের একটি চিনের খরগোশ ছিল; আজ বছর অষ্টেক হলো, সেটি মরেচে–ভাঙ্গা পিঁজয়ের মাটী ঝেড়ে ঝুড়ে, তুলো পেড়ে বিছানা টিছানা করে তার অপেক্ষায় রইলেম। ১৫ই কার্ত্তিক মরা ফিরবে কথা ছিল, আজ ১৫ই কার্ত্তিক। অনেকে মরার অপেক্ষায় নিমতলা ও কাশীমিত্রের ঘাটে বসে রইলেন। ক্রমে সন্ধ্যা হয়ে গেল, রাত্রি দশটা বাজে, মরা ফির্‌ল না; অনেকে মরার অপেক্ষায় থেকে মড়ার মত হয়ে রাত্তিরে ফিরে এলেন; মরা ফেরার হুজুক থেমে গেল।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১১ আমাদের জ্ঞাতি ও নিন্দুকেরা কালীপ্রসন্ন সিংহ আমাদের জ্ঞাতি ও নিন্দুকেরা আমরা ক্রমে বিলক্ষণ বড় হয়ে উঠলেম, দু-চার জন আমাদের অবস্থার হিংসে কত্তে লাগলেন, জ্ঞাতিবর্গের বুকে ঢেঁকি পড়তে লাগলো–আমাদের বিপদে মুচ্‌কি হাসে ও আমোদ করেন, তাদের এক চোখ কাণা হয়ে গেলে যদি আমাদের দু চক্ষু কাণা হয়, তাতে এক চক্ষু দিতে বিলক্ষণ প্রস্তুত–সতীনের বাটিতে গু গুলে খেতে পারলে তার বাটিটি নষ্ট হয়, স্বয়ং না হয়, গু গুলেই খেলেন! জ্ঞাতি বাবু ও বিবিদেরও সেই রকম ব্যবহার বেরুতে লাগলো। লোকের আঁটকুড়ো হয়ে বনে একা থাকা ভাল, তবু আমাদের মতন জ্ঞাতির সঙ্গে এক ঘর ছেলে পুলে নিয়ে বাস করা কিছু নয়! আমাদের জ্ঞাতিরা দুর্য্যোধনের বাবা–তাদের মেয়েরা কৈকেয়ী ও সুর্পণখা হতেও সরেস! ক্ৰমে এক দল শক্র জন্মালেন, একদল ফ্রেণ্ডও পাওয়া গেল। যাঁরা শক্রর দলে মিশলেন, তাঁরা কেবল আমাদের দোষ ধরে নিন্দে কত্তে আরম্ভ কল্লেন। ফ্রেণ্ডরা সাধ্যমত ডিফেণ্ড কত্তে লাগলেন, শত্তুররা খাওয়া দাওয়া ও শোয়ার সঙ্গে আমাদের নিন্দে করা সংকল্প করেছিলেন, সুতরাং কিছুতেই থামলেন না; আমরাও অনেক সন্ধান করে দেখলুম যে, যদি তাদের কোন কালে অপরাধ করে থাকি, তা হলে অবশ্যই আমাদের উপর চটতে পারেন; কিছুই খুঁজে পেলুম না, বরং সন্ধানে বেরুলো যে, নিন্দুকদলের অনেকের সঙ্গে আমাদের সাক্ষাৎ পৰ্যন্তও নাই। লোকের সাধ্যমত উপকার করা যেমন কতকগুলির চিরন্তন ব্রত সেইরূপ বিনা দোষে নিন্দা করাও সহরের কতকগুলি লোকের কর্ত্তব্য কৰ্ম্ম ও ব্রতের মধ্যে গণ্য;—আমরা প্রার্থনা করি, নিন্দুকরা কিছুকাল বেঁচে থাকুন, তা হলেই অনেকে তাদের চিনে নেবেন ও বক্তারা যেমন বকে বকে শেষে ক্লান্ত হয়ে আপনা আপনিই থামেন এরা আপনা আপনি থামবেন। তবে অনেকের এই পো বলেই যা হোক–পেসাদারের কথা নাই।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১২ নানা সাহেব কালীপ্রসন্ন সিংহ নানা সাহেব মরা ফেরা হুজুক থামলে, কিছু দিন নানা সাহেব দশ বারো বার মরে গেলেন, ধরা পড়লেন, আবার রক্তবীজের মত বাঁচলেন। সাতপেয়ে গরু–দরিয়াই ঘোড়া–লক্ষ্ণৌয়ের বাদ্‌সা—শিবকেষ্টো বাঁড়ু্য্যে–ওয়েলস সাহেব–নীলবানুরে লঙ্কাকাণ্ডে লংএর মেয়াদ–কুমীর, হাঙ্গর ও নেকড়ে বাঘের উৎপাতের মত ইংলিশম্যান ও হরকরা নামক দুখানি নীল কাগজের উৎপত্তি—ব্রাহ্মধর্ম্মপ্রচারক রামমোহন রায়ের স্ত্রীর শ্রাদ্ধে দলাদলির ঘোঁট ও শেষে হঠাৎ অবতারের হুজুক বেড়ে উঠলো।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১৩ সাতপেয়ে গরু কালীপ্রসন্ন সিংহ সাতপেয়ে গরু সাতপেয়ে গরু বাজারে ঘর ভাড়া কল্লেন, দর্শনী দু পয়সা রেট হলো; গরু রাখবার জন্য অনেক গরু একত্র হলেন। বাকি গরুদের ঘণ্টা বাজিয়ে ডাকা হতে লাগলো, কিছুদিনের মধ্যে সাতপেয়ে গরু বিলক্ষণ দশ টাকা রোজগার করে দেশে গেলেন!
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১৪ দরিয়াই ঘোড়া কালীপ্রসন্ন সিংহ দরিয়াই ঘোড়া দরিয়াই ঘোড়াও ঐ রকম রোজগার কত্তে লাগলেন; বেশীর মধ্যে বিক্রী হবার জন্যে দু-চার মাথালো মাখালো থামওলা সেপাইপাহারা ও গোরা কোচম্যান (যেখানে অন্দর মহলেও ঘোড়ার সর্ব্বদা সমাগম) ওয়ালা বাড়ীতে গমনাগমন কল্লেন। কে নেবে? লাখ টাকা দর! আমাদের সহরের কোন কোন বড়মানুষের যে ত্রিশ চল্লিশ লাখ টাকা দর, পিঁজরেয় পূরে চিড়িয়াখানায় রাখবারও তাঁরা বিলক্ষণ উপযুক্ত; কিন্তু কৈ? নেবার লোক নাই। এখন কি আর সৌখীন আছে? বাঙ্গালাদেশে চিড়িয়াখানার মধ্যে বর্দ্ধমানের তুল্য চিড়িয়াখানা আর কোথাও নাই—সেথায় তত্ত্ব, বৃত্ন, লস্কার, উল্লুক, ভাল্লুক, প্রভৃতি নানা রকম আজগুবি কেতার জানোয়ার আছে, এমন কি, এক আধটির জোড়া নাই।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১৫ লক্ষ্ণৌয়ের বাদসা কালীপ্রসন্ন সিংহ লক্ষ্ণৌয়ের বাদসা দরিয়াই ঘোড়া কিছুদিন সহরে থেকে, শেষে খেতে না পেয়ে দরিয়ায় পালিয়ে গেলেন। লক্ষ্ণৌয়ের বাসা দরিয়াই ঘোড়ার জায়গায় বসলেন—সহরে হুজুক উঠলো, লক্ষ্ণৌয়ের বা মুচিখোলায় এসে বাস করচেন, বিলাতে যাবেন; বাদসার বাইয়ানা পোষাক, পায়ে আলতা।” কেউ বল্লে, “রোগা ছিপছিপে, দিব্বি দেখতে ঠিক যেন একটা অপ্সরা।” কেউ বল্লে, “আরে না, বাদসাটা একটা কূপোর মত মোটা, ঘাড়ে গদ্দানে, গুণের মধ্যে বেশ গাইতে পারে!” কেউ বল্লে, “আঃ।–ও সব বাজে কথা, যে দিন বাদসা পার হন, সে দিন সেই ইষ্টিমারে আমিও পার হয়েছিলেম, বাদশাহ শ্যামবর্ণ, একহারা, নাকে চসমা ঠিক আমাদের মৌলবী সাহেবের মত।” লক্ষ্ণৌয়ে বাদসা কয়েদ থেকে খালাস হয়ে মুচিখোলায় আসায় দিনকতক সহর বড় গুলজার হয়ে উঠলো। চোর বদমাইসেরাও বিলক্ষণ দশ টাকা উপায় করে নিলে; দোকানদারদেরও অনেক ভাঙ্গা পুরোণো জিনিষ বেধড়ক দামে বিক্রী হয়ে গেল; দুই এক খ্যামটাওয়ালী বেগম হয়ে গেলেন! বাদসা মুচিখোলার অৰ্দ্ধেকটা জুড়ে বসলেন। সাপুড়েরা যেমন প্রথম বড় বড় কেউটে সাপ ধরে হাঁড়ির ভেতর পূরে রাখে, ক্রমে তেজ-মরা হয়ে গেলে খেলাতে বার করে, গবর্ণমেণ্টও সেই রকম প্রথমে বাদসাকে কিছু দিন কেল্লায় পূরে রাখলেন, শেষে বিষ-দাত ভেঙ্গে তেজের হ্রাস করে, খেলতে ছেড়ে দিলেন। বাদসা ডম্বরু তালে খেলতে লাগলেন; সহরের রুদ্দর, ভদ্দর, সেখ, খাঁ, দাঁ প্রভৃতি ধড়িবাজ পাইকো মাল সেজে কাঁদুনী গাইতে লাগলেন–বানর ও ছাগলও জুটে গেল। লক্ষ্ণৌয়ের বাসা জমি নিলেন, দুই এক বড়মানুষ ক্ষ্যাপলা জাল ফেল্লেন—অনেক প্রত্যাশা ছিল, কিন্তু শেষে জলখানা পর্যন্ত উঠলো না–কেউ বল্লে, “কেঁদো মাছ।” কেউ বল্লে, হয় “রাণা’ নয় ‘খোঁটা’!
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১৬ শিবকৃষ্ট বন্দ্যোপাধ্যায় কালীপ্রসন্ন সিংহ শিবকৃষ্ট বন্দ্যোপাধ্যায় হুজুক রঙ্গে শিবকেষ্ট বাঁড়ুয্যে দেখা দিলেন। বাবু দিন কত বড় বেড়েছিলেন; আজ একে চাবুক মারেন, পাঠান ঠেকিয়ে জুতো মারেন, আজ মেডুয়াবাদী খোট্টা ঠকান, কাল টুপিওয়ালা সাহেব ঠকান-শেষ আপনি ঠকলেন! জালে জড়িয়ে পড়ে বাঙ্গালীর কুলে কালি দিয়ে, চোদ্দবছরের জন্য জিঞ্জির গেলেন। কোন কোন সায়েব পয়সার জন্য না করেন হেন কর্ম্মই নাই; সেটা শিবকেষ্টবাবুর কল্যাণে বেরিয়ে পড়লো–একজন “এম, ডি, এফ, আর, সি, এস” প্রভৃতি বত্রিশ অক্ষরের খেতাবওয়ালা ডাক্তার ঐ দলে ছিলেন।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১৭ ছুঁচোর ছেলে বুঁচো কালীপ্রসন্ন সিংহ ছুঁচোর ছেলে বুঁচো আমাদের সহরে বড়মানুষদের মধ্যে অনেকের অর্‌গুণ নাই, বর্‌গুণ আছে। “ভাল কত্তে পারবো মন্দ করবো, কি দিবি তা দে”! যে ভাষা আছে, এঁরা তারই সার্থকতা করেছেন—বাবুরা পরের ঝক্‌ড়া টাকা দিয়ে কিনে, ‘গায়ে মানে না আপনি মোড়ল’ হতে চান—অনেকে আড়ি তুলতেও এই পেশা আশ্রয় করেচেন! যদি এমন পেশাদার না থাকতো, তা হলে শিবকেষ্টোর কে কি কত্তে পাত্তো? তিনি কেবল ভাজকে ও ভাইপোকে ঠকিয়ে বিষয়টি আপনি নিতে চেষ্টা করছিলেন বৈ তো নয়। আমাদের কলকেতা সহরের অনেক বড়মানুষ যে, স্ত্রীকে ডাক্তার দিয়ে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলেও গায়ে ফুঁ দিয়ে গাড়ী ঘোড়া চড়ে বেড়াচ্ছেন, কৈ, আইন তার কাছে কল্কে পায় না কেন? শিবকেষ্টো যেমন জাল করেছিলেন, বোধ হয় সহরের অনেক বড়মানুষের ঘরে ও রকম কত পার হয়ে গ্যাছে ও নিত্যি কত হচ্ছে! সহরের একটি কাশ্মীরী মুখখু বড় মানুষ আক্ষেপ করে বলছিলেন যে, “সহরে আমার মত কত ব্যাটাই আছে, কেবল আমিই ধরা পড়েছিলাম।” শিবকেষ্টোর বিষয়েও ঠিক তাই।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১৮ জষ্টিস ওয়েলস কালীপ্রসন্ন সিংহ জষ্টিস ওয়েলস শিবকেষ্টোর মোকদ্দমার মুখে জষ্টিস ওয়েলস নতুন ইণ্ডেণ্ট হন। তাঁর সংস্কার ছিল, বাঙ্গালীদের মধ্যে প্রায় সকলেই মিথ্যাবাদী ও জালবাজ; সুতরাং মোকদ্দমা করবার সময়ে যখন চার পা তুলে বক্তৃতা কত্তেন, তখন প্রায়ই বলতেন, “বাঙ্গালীরা মিথ্যাবাদী ও বর্বরের জাতি!” এতে বাঙ্গালীরা অবশ্যই বলতে পারেন, “শতকরা দশ জন মিথ্যাবাদী বা বব্বলে হল যে আশী নব্বই জনও মিথ্যাবাদী হবেন, এমন কোন কথা নাই।” চার দিকে অসন্তোষের গুজগাজ পড়ে গেল, বড় দলের মোড়লেরা হাতে কাগজ পেলেন, ‘তেঁই ঘোঁটের’ যত মাথালো মাথালো জায়গায় ঘোঁট পড়ে গেল; শেষে অনেক কষ্টে একটি সভা করে সার চার্লস কাষ্ঠ মহাশয়ের নিকট দরখাস্ত করাই এক প্রকার স্থির হলো। কিন্তু সভা কোথায় হয়, বাঙ্গালীদের তো এক পদও সাধারণের স্থান নাই; টাউনহল সাহেবদের, নিমতলার ছাতখোলা হল গবর্মেন্টের, কাশী মিত্তিরের ঘাটে হল নাই; প্রসন্নকুমার ঠাকুর বাবুর ঘাটের চাঁদনীতে হতে পারে, কিন্তু ঠাকুর বাবুর পাঁচজন সাহেব সুবোর সঙ্গে আলাপ আছে, সুতরাং তাও পাওয়া কঠিন। শেষে রাজা রাধাকান্তের নবরত্নের নাট-মন্দিরই প্রশস্ত বলে সিদ্ধান্ত হলো। কাগজে বিজ্ঞাপন বেরুলো, “অমুক দিন রাজা রাধাকান্ত বাহাদুরের নবরত্নের নাটমন্দিরে ওয়েলস জজের মুখরোগের চিকিৎসা করবার জন্যে সভা করা হবে। ঔষধ সাগরে রয়েছে।” সহরের অনেক বড় মানুষ—তাঁরা যে বাঙ্গালীর ছেলে, ইটি স্বীকার কত্তে লজ্জিত হন; বাবু চুনোগলির আনড্রু পিদ্রুসের পৌত্তর বল্লে তারা বড় খুশী হন। সুতরাং যাহাতে বাঙ্গালীর শ্রীবৃদ্ধি হয়, মান বাড়ে, সে সকল কাজ থেকে দূরে থাকেন। তদ্বিপরীত নিয়তই স্বজাতির অমঙ্গল চেষ্টা করে থাকেন। রাজা রাধাকান্তের নাটমন্দির ওয়েলসের বিপক্ষে বাঙ্গালীরা সভা করবেন শুনে তারা বড়ই দুঃখিত হলেন; খানা খাবার কৃতজ্ঞতা প্রকাশের সময় মনে পড়ে গেল; যাতে ঐ রকম সভা না হয়, কায়মনে তাই চেষ্টা কর্ত্তে লাগলেন। রাজা বাহাদুরের কাছে সুপারিশ পড়লো, রাজা বাহাদুর সত্যব্রত, একবার কথা দিয়েছেন, সুতরাং উঁচুদলের সুপারিশ হলেও সহসা রাজী হলেন না। সুপারিশওয়ালারা জোয়ারের গুয়ের মত সাগরের প্রবল তরঙ্গে ভেসে চল্লো। নিরূপিত দিনে সভা হলো, সহরের লোক রৈ রৈ করে ভেঙ্গে পড়লো, নবরত্নের ভিতরের বিগ্রহ ও নাটমন্দিরের সামনের যোড় হস্ত-করা পাথরের গড়ুরেরও আহ্লাদের সীমা রহিল না। বাঙ্গালীদের যে কথঞ্চিৎ সাহস জন্মেছে, এই সভাতে তার কিছু প্রমাণ পাওয়া গেল। একবল সুপারিশওয়ালা বাবুরা ও সহরের সোণার বেণে বড়মানুষের এই সভায় আসেন নাই; সুপারিশওয়ালাদের থোঁতা মুখ ভোঁতা হয়ে গেল! বেণে বাবুরা কোন কাজেই মেশেন না, সুতরাং তাঁদের কথাই নাই। ওয়েলস হুজুকের অনেক অংশে শেষ হলো দশ লক্ষ লোকে সই করে এক দরখাস্ত কাষ্ঠ সাহেবের কাছে প্রদান কল্লেন; সেই অবধি ওয়েলসও ব্রেক হলেন।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.১৯  টেকচাঁদের পিসি কালীপ্রসন্ন সিংহ টেকচাঁদের পিসি টেকচাঁদ ঠাকুরের টেপী পিসি ওয়েলসের মুখরোগের তরে মিটিং করা হয়েছে শুনে বল্লেন, “ও মা, আজ কাল সবই ইংরিজি কেতা! আমরা হলে মুড়োমুড়ি নারকেলমুড়ি ও ঠনঠনের নিমকীতে দোরস্ত কত্তেম!” নারকেলমুড়ি বড় উত্তম, ওষুধ, হলওয়েলের বাবা! আমাদের সহরের অনেক বড়মানুষ ও দুই এক জেলার ধিরাজ মহারাজা বাহাদুর নিয়তই রোগভোগ করে থাকেন। দার্জিলিং, সিম্লে, সপাটু, ভাগলপুর ও রাণীগঞ্জে গিয়েও শোধরাতে পারেন না; আর তাদের অনুরোধ করি, নারিকেলমুড়ি ও ঠনঠনের নিমকীটাও ট্রাই করুন! ইমিজিয়েট রিলিফ।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২০ পাদ্রি লং ও নীলদর্পণ কালীপ্রসন্ন সিংহ পাদ্রি লং ও নীলদর্পণ নীলকর হাঙ্গামা উঠলো; শোনা গেল, কৃষ্ণনগর, পাবনা, রাজসাই প্রভৃতি নীলজেলার রেয়োতেরা ক্ষেপেছে। কে তাদের ক্ষ্যাপালে? কি উলুই চণ্ডী? না শ্যামচাঁদ? তবে–‘ম্যাজিষ্ট্রেট ইডেনের ইস্তাহারে’ ‘ইণ্ডিগো-কমিশনে’ ‘হরিশে’ ‘লংএ’ ‘ছোট আদালতে’ ‘কন্টাক্টরিতে’ অবশেষে গ্রান্টের রিজাইনমেন্টে রোগ সারতে পারেন? না! কেবল শ্যামচাঁদিরা সল্লে! নীলকর সাহেবের দ্বিতীয় রিভোলিউসন হবে বিবেচনা করে (ঠাকুঘরে কে? না আমি কলা খাইনি) গভর্ণমেণ্ট তোপ ও গোরা সাহায্য চেয়ে পাঠালেন! রেজিমেণ্টকে রেজিমেণ্ট গোরা, গণ্‌, বোট ও এম্পেশিয়াল কমিশনর চল্লো;–মফস্বলের জেলে আর নিরপরাধীর জায়গা হয় না, কাগজে হুলথুল পড়ে গেল ও আণ্টর ব্রেড অবতার হয়ে পড়লেন। প্রজার দুরবস্থা শুনতে ইণ্ডিগো-কমিশন বসলো, ভারতবর্ষীয় খুড়ীর চমকা ভেঙ্গে গেল। (খুড়ী একটু আফিম খান।) বাঙ্গালীর হয়ে ভারতবর্ষীয় খুড়ীর একজন খুড়ো কমিশনর হলেন। কমিশনে কেঁচো খুঁড়তে খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে পড়লো। সেই সাপের বিষে নীলদর্পণ জন্মালো; তার দারুণ নীলকর-দল হন্নে হয়ে উঠলেন—ছাইগাদা, কচুবন, ও ফ্যানগোঁজলা ছেড়ে দিয়ে ঠাকুর-ঘরে, গিরজেয়, প্যালেসে ও প্রেসে ত্যাগ কল্লেন! শেষে ঐ দলের একটা বড় হঙ্গেরিয়ান হাউণ্ড পাদরী লং সাহেবকে কামড়ে দিলে। প্যায়দারা পর্যন্ত ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট হয়ে মফস্বলে চল্লেন। তুমুল কাণ্ড বেধে উঠলো। বাদাবুনে বাঘ (প্ল্যানটারস এসোসিয়েসন) বেগতিক দেখে নাম বদলে ল্যাণ্ডহোল্ডারস এসোসিয়েশন তুলসীবনে ঢুকলেন। হরিশ মলেন। লংএর মেয়াদ হলো। ওয়েলস্ ধমক খেলেন। গ্রাণ্ট রিজাইন দিলেন—তবু হুকুক মিটলো না। প্রকৃত বাঁদুরে হাঙ্গমে বাজারে নানা রকম গান উঠলো; চাষার ছেলেরা লাঙ্গল ধরে, মূলো মুড়ি খেতে খেতে — গান সুর—“হাঃ শালার গরু; তাল টিটকিরি ও ল্যাজমলা।” উঠলো সে সুখ, ঘটলো অসুখ মনে, এত দিনে। মহারাণীর পুণ্যে মোরা ছিলাম সুখে এই স্থানে।। উঠলো খামার ভিটে ধান, গেল মানী লোকের মন, হ্যানো সোনার বাংলা গান, পোড়ালে নীল হনুমানে।। গাইতে লাগলো। নীরকরেরা এর উত্তরে ক্যাটল্‌ট্রেসপস বিল পাস করে, কেউ কোন কোন ছোট আদালতের উকীল জজদের শ্যামপীন খাইয়ে ও ঘরঘ্যাঁস করে, কেউ বা খাজনা বাজিয়ে, খেউরে জিতে কথঞ্চিৎ গায়ের জ্বালা নিবারণ কল্লেন। নীলবানুরে লঙ্কাকাণ্ডের পালা শেষ হয়ে গেল, মোড়লেরা জিরেন পেলেন; ভারতবর্ষীয় খুড়ী এক মৌতাত চড়িয়ে আরাম কত্তে লাগলেন। কোন কোন আশাসোটাওয়ালা খেতাবী খুড়ো, অনুরেরী চৌকিদারী, তথা ছেলেপুলের আসেসরী ও ডেপুটী ম্যাজেষ্ট্ররীর জন্য সাদা দেবতার উদ্দেশ্যে কঠোর তপস্যায় নিযুক্ত হলেন। তথাস্তু!! শ্যামচাঁদের অসহ্য টরচরে ভূত পালায়, প্রজারা খেপে উঠবে কোন কথা! মিউটীনি ও ক্লার্ক অ্যাকটের সভাতে তো শ্রীবৃদ্ধিকারীরা চটেই ছিলেন; নীলবানুরে হাঙ্গামে সেইটি বদ্ধমূল হয়ে পড়লো। বড় ঘরে সতীশ হলে, বড় বৌ ও ছোট বৌকে তুষ্ট কর্ত্তে কৰ্ত্তা ও গিন্নীর যেমন হাড় ভাজা ভাজা হয়ে যায়; শ্রীবৃদ্ধিকারী, সুইপিং ক্লাস ও নেটীভ কমিউনিটীকে তুষ্ট কত্তে গিয়ে, ইণ্ডিয়া ও বেঙ্গল গবর্ণমেণ্ট ও সেই রকম অবস্থায় পড়লেন।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২১ রমাপ্রসাদ রায় কালীপ্রসন্ন সিংহ রমাপ্রসাদ রায় হুতোমের পাঠক! আমরা আপনাদের পূর্ব্বেই বলে এসেছি যে, সময় কাহারও হাত ধরা নয়, সময় নদীর জলের ন্যায়, বেশ্যার যৌবনের ন্যায়, জীবনের পরমায়ুর ন্যায়; কারুরই অপেক্ষা করে না। দেখতে দেখতে আমরা বড় হচ্চি, দেখতে দেখতে বছর ফিরে যাচ্চে; কিন্তু আমাদের প্রায় মনে পড়ে না যে, ‘কোন্ দিন যে, মত্তে হবে তার স্থিরতা নাই।’ বরং যত বয়স হচ্চে ততই, জীবিতাশা বশবর্তী হচ্চে; শরীর তোয়াজে রাখচি, আরসি ধরে শোননুটীর মত পাকা গোঁপে কলপ দিচ্চি, সিমলের কালাপেন্ডের বেহ বাহারে বঞ্চিত হতে প্রাণ কেঁদে উঠচে। শরীর ত্রিভঙ্গ হয়ে গিয়েছে, চশমা ভিন্ন দেখতে পাইনে, কিন্তু আশা ও তৃষ্ণা তেমনি রয়েচে, বরং ক্রমে বাড়ছে বই কমছে না। এমন কি, অমর বর পেয়ে প্রকৃতির সঙ্গে চিরজীবী হলেও মনের সাধ মেটে কি না সন্দেহ। প্রচণ্ড রৌদ্রক্লান্ত পথিক অভীষ্ট প্রদেশে শীঘ্র পৌঁছিবার জন্য একমনে হন হন করে চলেছেন, এমন সময় হঠাৎ যদি একটা গেঁড়ি-ভাঙ্গা কেউটে রাস্তায় শুয়ে আছে দেখতে পান, তা হলে তিনি যেমন চমকে ওঠেন, এই সংসারে আমরাও কখন কখন মহাবিপদে ঐ রকম অবস্থায় পড়ে থাকি। তখন এই হৃদয়ের চৈতন্য হয়। উল্লিখিত পথিকের হাতে সে সময় এক গাছ মোটা লাঠি থাকলে তিনি যেমন সাপটাকে মেরে পুনরায় চলতে আরম্ভ করেন, আমরাও মহাবিপদে প্রিয়বন্ধুদের পরামর্শ ও সাহায্যের তরে যেতে পারি; কিন্তু যে হতভাগ্যের এ জগতে বন্ধু বলে আহ্বান করবার একজনও নাই, বিপৎপাতে তার কি দুর্দশাই না হয়। তখন তার এ জগতে ঈশ্বরই একমাত্র অনন্যগতি হয়ে পড়েন। ধৰ্ম্মের এমনি বিশুদ্ধ জ্যোতি-এমনি গম্ভীর ভাব যে, তার প্রভা-প্রভাবে ভয়ে ভণ্ডামো, নাস্তিকতা বজ্জাতি সরে পলায়—চারিদিকে স্বর্গীয় বিশুদ্ধ প্রেমের স্রোত বহিতে থাকে—তখন বিপদসাগর জননীর স্নেহময় কোল হতেও কোমল বোধ হয়। হায়! সেই ধন্য, যে নিজ বিপদ সময়ে এই বিমল আনন্দ উপভোগ করবার অবসর পেয়ে, আপনা আপনি ধন্য ও চরিতার্থ হয়েছে। কারণ, প্রবল আঘাতে একবার পাষাণের মর্ম ভেদ কত্তে পাল্লে চিরকালেও মিলিয়ে যায় না। ক্রমে ক্রমে আমরাও বড় হয়ে উঠলেম–ছলনা কু-আশায় আবৃত, আশার পরিসরশূন্য, সংসার সাগরের ভয়ানক শব্দ শোনা যেতে লাগলো। একদিন আমরা কতকগুলি সমবয়সী একত্র হয়ে, একটা সামান্য বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্ক কচ্চি, এমন সময়ে আমাদের দলের একজন বলে উঠলেন, “আরে আর শুনেছ? রমাপ্রসাদবাবুর মার সপিণ্ডীকরণের বড় ধূম। এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ; সহরের সমস্ত দলে, উদিকে কাশী-কৰ্ণাট পর্য্যন্ত পত্র দেওয়া হবে।” ক্রমে আমরা অনেকের মুখেই শ্রাদ্ধের নানা রকম হুজুক শুনতে লাগলেম। রমাপ্রসাদবাবুর বাপ ব্রাহ্মধর্ম্মপ্রচারক, তিনি স্বয়ং ব্রাহ্মসমাজের ট্রাষ্টি; মার সপিণ্ডীকরণে পৌত্তলিকতার দাস হয়ে শ্রাদ্ধ করবেন শুলে কার না কৌতূহল বাড়ে; সুতরাং আমরা শ্রাদ্ধের আনুপূৰ্ব্বিক নক্‌সা নিতে লাগলো। ক্রমে সপিগুনের দিন সংক্ষেপ হয়ে আসতে লাগলো। ক্রিয়াবাড়ীতে স্যা্করা বসে গেল–ফলারে বামুনেরা এপ্রেনটিস নিতে লাগলেন—সংস্কৃত কলেজের ফলারের প্রফেসর রকমারী ফলারের লেকচার দিতে আরম্ভ কল্লেন—বৈদিক ছাত্রেরা ভলমনস নোট লিখে ফেল্লেন। এদিকে চতুষ্পাষ্ঠীওয়ালা ভট্টাচার্য্যের চলিত ও অর্দ্ধ পত্র পেতে লাগলেন। অনাহূত চতুষ্পাঠীহীন ভট্টাচার্য্যের সুপারিশ ও নগদ অর্দ্ধ বিদায়ের জন্য রমাপ্রসাদবাবুর বাড়ী, নিমতলা ও কাশী-মিত্তিরের ঘাট হতেও বাড়িয়ে তুল্লেন–সেথায় বা কটা শুকুনি আছে। এঁদের মধ্যে অনেকের চতুষ্পাঠীতে সংবৎসর ষাঁড় হাগে, সরস্বতী পুজার সময়ে ব্রাহ্মণী ও কোলের মেয়েটি বঙ্গদেশীয় ছাত্র সাজেন, সোলার পদ্ম ও রাংতার সাজওয়ালা ক্ষুদে ক্ষুদে মেটে সরস্বতী অধিষ্ঠান হন; জানিত ভদ্দরলোকদের নেলিয়ে দিয়ে কিছু কিছু পেটে। ভট্টচার্য্যি মশাইদের ছেলেব্যালা যে কদিন আসল সরস্বতীর সঙ্গে সাক্ষাৎ, তারপর এ জন্মে আর তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় না; কেবল সংবচ্ছর অন্তর একদিন মেটে সরস্বতীর সঙ্গে সাক্ষাৎ। সেও কেবল, যৎকিঞ্চিৎ কাঞ্চনমূল্যের জন্য। পাঠকগণ! এই যে উর্দ্দি ও তকমাওয়ালা বিদ্যালঙ্কার, ন্যায়লঙ্কার, বিদ্যাভূষণ ও বিদ্যাবাচস্পতিদের দেখচেন, এঁরা বড় ফ্যালা যান না। এঁরা পয়সা পেলে না করেন, হ্যান কৰ্ম্মই নাই! সংস্কৃত ভাষা এই মহাপুরুষদের হাতে পড়েই ভেবে ভেবে মিলিয়ে যাচ্চেন। পয়সা দিলে বানরওয়ালা নিজ বানরকে নাচায়, পোষাক পরায়, ছাগলের উপর দাঁড় করায়; কিন্তু এর পয়লা পেলে নিজে বানর পর্য্যন্ত সেজে নাচেন! যত ভয়ানক দুষ্কৰ্ম্ম, এই দলের ভিতর থেকে বেরোবে, দায়মালী জেল তন্ন তন্ন কল্লেও তত পাবে না। আগামী কল্য সপিণ্ডন। আজকাল হিরে দলপতিদের অনকেই কুলপনা-চক্করের দলে পড়েছেন; নামটা ঢাকের মত, কিন্তু ভিতরটা ফাঁকা!–রমাপ্রসাদবাবু হবে প্রধান উকীল, সাহেব সুবোদের বাবুর প্রতি যেরূপ অনুগ্রহ, তাহাতে আর ও কত কি হয়ে পড়বেন; সুতরাং রমাপ্রসাদবাবু দলস্থ ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদিগের পত্র দিলে ফিরিয়ে দেওয়াটাও ভাল হয় না, কিন্তু প্রসাদবাবু ও *** প্রভৃতি নানা প্রকার তর্ক-বির্ক চলতে লাগলো। দুই এক টাটকা দলপতি (জোর কলমে মান-অপমানের ভয় নাই) রমাপ্রসাদবাবুর তোয়াক্কা না রেখে আপন দলে আপন প্রোক্লেমেশন দিলেন, প্রোক্লেমেশন দলস্থ ভট্টাচাৰ্য দলে বিতরণ হতে লাগলো। অনেকে দু নৌকায় পা দিয়ে বিষম বিপদে পড়লেন–শানকীর ইয়ারেরা ‘বারে বারে মুরগী তুমি’ দলে ছিলেন, চিরকাল মুখ পুঁচে চলেচে, এইবার মহাবিপদে পড়তে হলো। সুতরাং মিত্তির খুড়ো লিভ নিয়ে হাওয়া খেতে চান। চাটুয্যে শয্যাগত হয়ে পড়েন। দলপতির প্রোক্লেমেশন জুরির শমন ও সফিনে হতেও ভয়ানক হয়ে পড়লো। সে এই– “শ্রী শ্রীহরি শরণং। অসেস শাস্ত্ররত্নাকরপারবরপরম পূজনীয়— শ্রীল ভট্টাচাৰ্য মহাশয়গণ–শ্রীচরণেষু। সেবক শ্রী * চন্দর দাস ঘোষ ধৰ্ম্ম– সাষ্টাঙ্গে শত সহস্র প্রণীপাত পুরঃসর নিবেদন কার্য্যাণঞ্চাগে শ্ৰীশ্ৰীভট্টাচার্য্য মহাশয়দিগের আশীর্ব্বাদে এ সেবকের প্রাণগতীক কুসল। পরে যে হেতুক ঁরামমোহন রায়ের পুত্র বাবু রমাপ্রসাদ রায় স্বীয় মাতাঠাকুরাণীর একোর্দ্দিষ্ট শ্রাদ্ধে মহাসমারোহ করিতেছে। এই দলের বিখ্যাত কুলীন ও আমার ভগ্নিপতি বাবু ধিনিকৃষ্ট মিত্ৰজা মজকুর সম্যক প্রতিয়মাণ হইয়া জানিয়াছেন যে উক্ত রায় বাবু সহরের সমস্ত দলেই পত্র দিবেন সুতরাং এ দল ও পত্র পাঠাইবার সম্পূর্ণ সম্ভাবনা। কিন্তু আমাদের শ্রীশ্রী ঁ সভার দলের অনুগত দলের সহিত রায় মজকুবের আহার ব্যাভার চলিত নাই। সুতরাং তিনি পত্র পাঠাইলেও আপনারা তথায় সভাস্থ হইবেন না। সম্মতঃ শ্রীহবীস্বর ন্যায়লঙ্কারোপাধীক কাব্য সভাপণ্ডিতঃ। শ্রী * চন্দর দাস ঘোষ। সাং–নুড়িঘাটা। প্রক্লেমেশন পেয়ে ভট্টচার্য্যি ও ফলারের ডুব মাল্লেন; কেউ কেউ কন্তু নদীর মত অন্তঃশীলে বইতে লাগলেন; ডুবে জল খেলে শিবের বাবার সাধ্যি নাই যে টের পান; তবুও অনেক জায়গায় চৌকি, থানা ও পাহারা বসে গেল। কিছুতেই কেহ কিছু কোত্তে পাল্লেন না; টাকার খুসবো পাঁজ রসুনের গন্ধ চেকে তুল্লে—শ্ৰাদ্ধসভা পবিত্র হয়ে উঠলো। বাগবাজারের মদনমোহন ও শ্রীপাট খড়দর শ্যামসুন্দর পর্য্যন্ত ব্ৰজের রসে গড়াগড়ি দিতে লাগলেন। শ্রাদ্ধের দিন সকাল বেলা রমাপ্রসাদবাবুর বাড়ী লোকারণ্য হয়ে গেলো গাড়ীবারেণ্ডা থেকে বাবুর্চ্চিখানা পর্য্যন্ত ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের ঠেল ধরলো; এমন কি, শ্রীক্ষেত্রে রথযাত্রায় জগন্নাথের চাঁদমুখ দেখতেও এত লোকারণ্য হয় না। সপিণ্ডনের দিন সকালে রমাপ্রসাদবাবু বারাণসী গরদের জোড় পরে ভক্তি ও শ্রদ্ধার আধার হয়ে পড়লেন। ব্যালার সঙ্গে সভার জনতা বাড়তে লাগলো। এক দিকে রাজভাটেরা সুর করে বল্লালের গুণগরিমা ও আদিশূরের গুণকীর্ত্তন কত্তে লাগলো; একদিকে ভট্টাচার্য্যদের তর্ক লেগে গেল, দু দশ জন ভেরতমুখো কুলীন-দলপতিরা ভয় ও লজ্জায় সোয়ার হয়ে সভাস্থ হতে লাগলেন। দল দল কেত্তন আরম্ভ হলো, খোলের চাঁটিতে ও হরিবোলের শব্দে ডাইনিং রুমের কাচের গ্লাস ও ডিশের যেন ভয়ে কাঁপতে লাগলো; বৈমাত্রভাই ধূম করে মার শ্রাদ্ধ কচ্চেন দেখে জাতিত্বনিবন্ধন হিংসাতেই ব্ৰহ্মধৰ্ম্ম কাঁদতে লাগলেন; দেখে—আমিবিশন হাসতে লাগলেন। ক্রমে মাল চন্দন ও দানসামগ্রী উচ্ছুগগু হলে সভঙ্গ হলো। কলকেতার ব্রাহ্মণভোজন দেখতে বেশ—হুজুরেরা আঁতুরের ক্ষুদ মেয়েটিকেও বাড়ীতে রেখে ফলার কত্তে আসেন না—যার যে কটি ছেলেপুলে আছে, ফলারের নি সেগুলি বেরোবে! এক এক জন ফল রিমুখো বামুলকে ক্রিয়বাড়ীতে ঢুকতে দেখলে হঠাৎ বোধ হয়, যেন গুরুমশাই পাঠশালা তুলে চলেছেন। কিন্তু বেরোবার সময় বোধ হয়, এক একটা সর্দার ধোপা,লুচি মোণ্ডার মোটটি একটা গাধায় বইতে পারে না। ব্রাহ্মণরা সিকি, দুয়ানি ও আধুলি দক্ষিণা পেয়ে, বিদেয় হলেন, দই-মাখন এঁটো কলাপাত, ভাঙ্গা খুরী ও আঁবের আঁটীর নীলগিরি হয়ে গেল। মাছিরা ভ্যান ভ্যান করে উড়তে লাগলো—কাক ও কুকুরেরা টাঁকতে লাগলো। সামিয়ানায় হাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সুতরাং জল সপসপানি ও লুচি, মণ্ডা, দই ও আঁবের চপটে একরকম ভেপ্সো গন্ধ বা মাতিয়ে তুলে–সে?হ্ম ক্রিস্মেবীর ফেরত লোক ভিন্ন অন্যে হঠাৎ আঁচতে পারবেন না। এদিকে বৈকালে রাস্তায় কাঙ্গালী জমতে লাগলো, যত সন্ধতা হতে লাগলো, তই অন্ধকারের সঙ্গে কাঙ্গালী বাড়তে লাগলো। ভারী, কোনদার, উড়ে ও বেহার, রেয়ো ও গুলিখোরেরা কাঙ্গালীর দলে মিশতে লাগলো, জনতার ও! ও! রো! রো। শব্দে বাড়ী প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো। রাত্তির সাতটার সময়ে ক ঙ্গালীদের বিদেয় করবার জন্য প্রতিবাসী ও বড় বড় উঠানওরলি লোকেদের বাড়ী পোরা হলো; শ্রাদ্ধের অধ্যক্ষের থলে থলো সিকি, আধুলি, দুয়ানি ও পয়সা নিয়ে দরজায় দাঁড়ালেন; চলতি মশাল, লণ্ঠন ও ‘আও! অও। রাস্তায় রাস্তায় কাঙ্গালী ডেকে বেড়াতে লাগলো; রাত্তির তিনটে পৰ্যন্ত কাঙ্গালী বিদেয় হলো! প্রায় ত্রিশ হাজার কাঙ্গালী জমেছিলো, এর ভিতর অনেকগুলি গর্ভবতী কাঙ্গালীও ছিল, তারা বিদেয়ের সময় প্রসব হয়ে পড়াতে নম্বরে বিস্তর বাড়ে। কাঙ্গালী বিদেয়ের দিন দলস্থ নবশাখ, কায়স্থ ও বৈদ্যদের জলপান, ফলারে কেউ ফ্যালা যায় না, বামুন ও রেয়োদর মধ্যে যেমন তুখোড় ফুলারে আছে, কায়েত, নবশাক ও বদ্যিদের মধ্যেও ততোধিক। বরং কতক বিষয়ে এদের কাছে সার্টিফিকেটওয়ালা ফলারের কল্কে পায় না। সহরের কাবু বাড়ী কোন ক্ৰিয়ে-কৰ্ম্ম উপস্থিত হলে বাড়ীয় ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলেরা চাপকান, পায়জামা, টুপি ও পেটি পরে হাতে লাল রুমাল ঝুলিয়ে ঠিক যাত্রার নকীব সেজে, দলস্থ ও আত্মীয় কুটুম্বদের নেমস্তোর কত্তে বেরোন। এর মধ্যে বড় মানুষ বা শাসে-জলে হলে সঙ্গে পেশাদার নেমুন্তন্নে বামুন থাকে। অনেকের বাড়ীর সরকার বা দাদাঠাকুর গোছর পূজারী বামুনেও চলে। নেমন্তন্নে বামুন বা সরকার রামগোছের এক ফর্দ হাতে করে, কানে উডেন পেন্সিল গুঁজে পান চিবুতে চিবুতে নেমেন্তোনো বেরে যান—ছেলেটি কেবল “টু, কাপির” সইয়ের মতন সঙ্গে থাকে। আজকাল ইংরিজি কেতার প্রাদুর্ভাবে অনেকে সাপ্টা ফলার বা জোজে যেতে “লাইক” করেন না! কেউ ছেলে পুলে পাঠিয়ে সারেন, কেউ স্বয়ং বাগানে যাবার সময়ে ক্রিয়েবাড়ী হয়ে বেড়িয়ে যান। কিছু আহার কত্তে অনুরোধ কল্লে, ভয়ানক রোগের ভাণ করে কাটিয়ে দ্যান; অথচ বাড়ীতে এক ঝোড়া কুম্ভকর্ণের আহার তল পেয়ে যায়–হাতিশালের হাতী ও ঘোড়াশালের ঘোড়া খেয়ে ও পেট ভরে না। পাঠক! আমরা প্রকৃত ফলার দাম। লোহার সঙ্গে চুম্বকপাথরের যে সম্পর্ক, আমাদের সহিত লুচিরও সেইরূপ। তোমার বাড়ীতে ফলারটা আসটা জলে অনুগ্রহ করে আমাদের ভুলে না; আমরা মুনকে রঘুর ভাই। ফুলারের নাম শুনে, আমরা নরক ও জেলে পৰ্যন্ত যাই। সেবার মৌলুবী হালুম হোসেন খাঁ বাহাদুরের ছেলের সুন্নতে ফলার করে এসেছি। হিন্দুধৰ্ম্ম ছাড়া কাণ্ড বিধবা-বিয়েতে ৪ পাত পাতা গিয়েছে। আর কলকেতার ব্রাহ্মসমাজের জন্মতিথি উপলক্ষে ১১ই মাঘ পোপ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর দি ফাষ্টের বাড়ীতে যে বছর বছর একটা অনুক্ষেত্তর হয়, তাতেও প্রসাদ পেয়েচি। লল কথা ঐ ব্রাহ্মভোজের দিন ঠাকুরবাবুর মাঠের মত চণ্ডীমণ্ডপে ব্রাহ্ম ধরে না, কিন্তু প্রতি বুধবারে উপাসনার সময়ে সমাজে ন দশ বারোকে চক্ষু বুজে ঘাড় নাড়তে ও সুর করে সংস্কৃত মজিয়া পড়তে দেখতে পাই। বাকিরা কোথায়? তারা বোধ হয় পোষাকী ব্রাহ্ম। না আমাদের মত যজ্ঞির বিড়াল? এ সওয়ায় আমাদের ফলারের বিস্তর ডিপ্লোমা ও সার্টিফিকেট আছে; যদি ইউনিভার্সিটিতে বি এ, ও বিএলের মত ফলারের ডিগ্রী স্থির হয়, তা হলে, আমরা তার প্রথম ক্যান্ডিডেট। রমাপ্রসাদবাবুর মার সপিণ্ডনের জলপানে আড়ম্বর খিলক্ষণ হয়েছিল—উপচারও উত্তম রকম অহরণ হয়। সহরের জলপান দেখতে বড় মন্দ নয়; এক তো মধ্যাহ্নভোজন বা জলপান রাত্তির দুই প্রহর পর্য্যন্ত ঠেল মারে; তাতে নানা রকম জানোয়ারের একত্রে সমাগম। যারা আহার কত্তে বসেন, সেগুলির পা, প্রথম ঘোড়ার মত লাল বাঁধান বোধ হবে; ক্রমে সমীচীনরূপে দেখলে বুঝতে পারবেন যে, কর্ম্মকর্ত্তা ও ফলারের সঙ্গীদের প্রতি এমনি বিশ্বাস যে জুতো জোড়াটি খুলে খেতে বসতে ভরসা হয় না। শেষে কায়স্থের ভোজ মগডম্বরে সম্পন্ন হলো। কুলীনেরা পর্য্যায় মত রুই মাছের মুড়ো মুণ্ডী পেলেন—এক একটা আধবুড়ো আফিমখোর কুলীনের মাছের বুড়ো চিবানো দেখে ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলেরা ভয় পেতে লাগলো। এক এক সুনের পাত গো-ভাগারকে হারিয়ে দিলে! এই প্রকারে প্রায় পেনের দিন সমারোহের পর রমাপ্রসাদের মার সপিণ্ডনের ধুম চুলো-হুজুকদারেরা জিরতে লাগলেন! যে সকল মহাপুরুষ দলপতিরা সভাস্থ হন নাই, তারা আপনার আপনার দলে ঘোঁট পাড়িয়ে দিলেন–অনেক ভট্টাচাৰ্য বিদেয় নিয়ে ফলার মেরে এসেও শেষে শ্ৰীশ্ৰী ঁধৰ্ম্মসভার উমেদার প্রপৌত্রদের দলের দলপতির কাছে গঙ্গাজল ছুঁয়ে শলিগেরামে সান্নে দিব্বি কোত্তে লাগলেন যে, তিনি অ্যাদ্দিন শহরে আচেন, কিন্তু রমাপ্রসাদ রায় যে কে, তাও তিনি জানেন না; তিনি শুদ্ধ বাবুকেই জানেন। আর তার ঠাকুর (স্বর্গীয় তর্কবাচস্পতি খুড়ো) মরবার সময়ে বলে গিয়েছেন যে, “ধৰ্ম্ম অবতার! আপনার মত লোক অর জগতে নাই।” এ সওয়ায় অনেক শূন্য-উপাধিধারী হজুরেরা ধরা পড়লেন, গোবর খেলেন, শ্রীবিষ্ণু স্মরণ কল্লেন ও ভুরু কামালেন। কলকেতার প্রথম বিধবা বিবাহের দিন, বালি, উতেরপাড়া, অশ্বিকে ও রাজপুর অঞ্চলের বিস্তর ভট্টাচাৰ্য্য সভাস্থ হন—ফলার ও বিদেয় মাবেন। তার পর ক্রমে গা-ঢাকা হতে আরম্ভ হন; অনেকে গোবর খান, অনেকে সভাস্থ হয়েও বলে, আমি সের্দিন শয্যাগত ছিলাম। যতদিন এই মহাপুরুষদের প্রাদুর্ভাব থাক্‌বে, তত দিন বাঙ্গালীর ভদ্রস্থ নাই; গোঁসাইরা হাড়ি মুচি মুফরাস নিয়ে বেঁচে আছেন; এই মহাপুরুষের গোটকক হতভাগা গোমূখ কায়স্থ ব্রাহ্মণ দলপতির জোরে আজও টিকে আছেন, এরা এক এক জন হারামজাদকী ও বজ্জাতীর প্রতিমূর্ত্তি, এদিকে এমনি সজ্জা গজ্জা করে বেড়া যে, হঠাৎ কার সাধ্যি, অন্তরে প্রবেশ করে, হঠাৎ দেখলে বোধ হয়, অতি নিরীহ ভদ্রলোক; বাস্তবিক সে কেবল ভড়ং ও ভণ্ডামম!
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২২ রসরাজ ও যেমনকৰ্ম্ম তেমনি ফল কালীপ্রসন্ন সিংহ “রসরাজ” ও “যেমনকৰ্ম্ম তেমনি ফল!”  রমাপ্রসাদ রায়ের মার সপিণ্ডনে সভাস্থ হওয়ায় কোন কোনখানে তুমূল কাণ্ড বেধে উঠলো–বাবা ছেলের সঙ্গে পৃথক হলেন। মামী ভাগ্নেকে ছাঁট্‌লেন–-ভাগ্নে মামীর চিরঅন্ন-পালিত হয়েও চিরজন্মের কৃতজ্ঞতায় ছাই দিয়ে, বিলক্ষণ বিপক্ষ হয়ে পড়লেন! আমরা যখন স্কুলে পড়তুম, তখন সহরের এক বড়মানুষ সোণার বেণেদের বাড়ীর শম্ভুবাবু বলে একজন আমাদের ক্লাসফ্রেণ্ড ছিলেন; একদিন তিনি কথায় কথায় বলেন যে “কাল রাত্রে আমি ভাই অমাড় স্ত্রীকে বড় ঠাট্টা কড়েচি, সে আমায় বলে তুমি হনুমান্”; আমি অমনি ভস কড়ে বললুম তোর শ্বশুড় হনুমান!” ভাগ্নেবাবুও সেই রকম ঠাট্টা আরম্ভ কল্লেন। ‘রসরাজ’ কাগজ পুনরায় বেরুলো, খেউড় ও পচালের স্রোত বইতে লাগলো। এরি দেখাদেখি একজ সংস্কৃত কলেজের কৃতবিদ্য ছোকরা ব্রাহ্মধর্ম্ম ও কলেজ-এডুকেশন মাথায় তুলে যেমন কম্ম তেমনি ফুল নামে ‘রসরাজে’র জুড়ি এক পচালপোরা কাগজ বার কল্লেন—’রসরাজ’ ও ‘তেমনি ফলে’ লড়াই বেধে গেল। দুই দলে কৃত্বাস্ত্র ও সেনাসংগ্রহ করে, সমরসাগরে অবতীর্ণ হলেন —স্কুলবয়েরা ভূরি ভূরি নির্ব্বুদ্ধি দলবল সংগ্রহ কয়ে, কুরুপাণ্ডব যুদ্ধ ঘটনার ন্যায় ভিন্ন ভিন্ন দলে মিলিত হলেন। দুর্ঘদ্ধিপরায়ণ ক্যারাণী, কুটেরা ওবাজে লোকেরা সেই কষ্য রস পান করবার জন্য কাক, কবন্ধ ও শৃগাল শকুনির মত, রণস্থল জুড়ে রইলো! ‘রসরাজ’ ও ‘তেমনি ফলের’ ভয়ানক সংগ্রাম চলতে লাগলো—“পীর গোরাচাঁদের ম্যালা ‘পরীর জন্মবিবরণ’ ‘ঘোড়া ভূত’ ও ‘ব্রহ্ম-দৈত্যের কথোপকথন’ প্রভৃতি প্রস্তাবপরিপূর্ণ ‘রসরাজ’ প্রতিদিন পাঁচশ, হাজার, দু হাজার কপি নগদ বিক্রী হতে লাগলো। কিন্তু ‘ব্রাহ্মধৰ্ম্ম’ মাসে একখানাও ধারে বিক্রী হয় কি না সন্দেহ। ‘তিলোত্তমা’ ও ‘সীতার বনবাসের’ খদ্দের নাই। কিছুদিন এই প্রকার লড়াই চলচে, এমন সময়ে গবর্ণমেণ্ট বাদী হয়ে কদর্য্য প্রস্তাব লিখন অপরাধে ‘রসরাজ’ সম্পাদকের নামে পুলিসে নালিশ কল্লেন, ‘যেমন কর্ম্ম’ ও পাছে তেমনি ফল পান, এই ভয়ে গা ঢাকা দিলেন; ‘রসরাজের’ দোয়ার ও খুলীরে মূল গায়েনকে মজলিসে বেধে, ‘চাচা আপন বাঁচা’ কথাটি স্মরণ করে, মেদ্দোষ ও মন্দিরে ফেলে চম্পট দিলো। ভাগ্নেবাবু (ওরফে মিত্তির খুড়ো) সফিনের ভয়ে, অন্দরমহলের পাইখানা আশ্রয় কল্লেন—গিরিবর ক্ষেত্রমোহন বিদ্যারত্ন চামর ও নূপুর নিয়ে সৎসাহিত্য-গ্রন্থাবলী তিন মাসের জন্য হরিণবাড়ী ঢুকলেন। ‘পীর গোরাচাঁদের’ বাকি গীত সেইখানে গাওয়া হলো। পাতরভাঙ্গা হাতুড়ির শব্দ, বেতের পটাং পটাং ও বেড়ীর ঝুমঝুমানি মন্দিরে ও মৃদঙ্গের কাজ কল্লে–কয়েদীরা বাজে লোক সেজে ‘পীরের গীত’ শুয়ন মোহিত হয়ে বাহবা ও পালা দিলে; “খেলেন দই রমাকান্ত, বিকারে ব্যালা গোবর্দ্ধন”। যে ভাষা কথা আছে, ভাগ্নেবাবু (ওরফে মিড়ির খুড়ো) ও রসরাজ-সম্পাদকের সেইটির সার্থকতা হলো; আমরাও ক্রমে বুড়ো হয়ে পড়লেম, চসমা ভিন্ন দেখতে পাইনে।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২৩ বুজরুকী কালীপ্রসন্ন সিংহ বুজরুকী পাঠক! আমাদের হরিভদ্দর খুড়ো কায়স্ত মুখখী কুলীন, দেড় শ’ ছিলিম গাঁজা প্রত্যহ জলযোগ হয়ে থাকে; থাকবার নির্দ্দিষ্ট ঘরবাড়ী নাই, সহরে খান্‌কীমহলে অনেকের সঙ্গে আলাপ থাকায় শোবার ও খাবার ভাবনা নাই, বরং আদর করে কেউ “বেয়াই” কেউ জামাই” বলে ডাকতো। আমাদের খুড়া ফলার মাত্রেই পার ধূলো দেন ও লুচিটে সন্দেশটা বেঁধে আনতেও কসুর করেন না। এমন কি, তাগে পেলে চলনসই জুতা জোড়াটাও ছেড়ে আসেন না। বলতে কি, আমাদের হরিভদ্দর খুড়ো এক রকম সবলোট গোছের ভদ্দর লোক। খুড়ো উপস্থিত হয়েই এ কথা সে কথার পর বল্লেন যে, “আর শুনেছ, আমাদের সিমলে পাড়ায় এক মহাপুরুষ সন্ন্যাসী এসেছেন তিনি সিদ্ধ, তিনি সোনা তৈরী কত্তে পারেন—লোকের মনের কথা গুণে বলেন, পারাভস্ম খাইয়ে সেদিন গঙ্গাতীরে একটা পচা মড়াকে বাঁচিয়েছেন, ভারি বুজরুক!” কিন্তু আমরা ক’বার ক’টি সন্ন্যাসীর বুজরুকী ধরেচি, গুটিকত ভূতনাচার ভূত উড়িয়ে দিয়েছি, আর আমাদের হাতে একটি জোচ্চোরের জোচ্চুরী বেরিয়ে পড়ে। যখন হিন্দুধর্ম্ম প্রবল ছিল, লোকে দ্রব্যগুণ কিম্বা ভূতত্ব জানতো না, তখনই এই সকলের মান্য ছিল! আজকাল ইংরেজি লেখা-পড়ার কল্যাণে সে গুড়ে বালি পড়েছে। কিন্তু কলকেতা সহরে না দেখা যায়, এমন জিনিষই নাই; সুতরাং কখন কখন “সোণা-করা” “ছলে-করা” “নিরাহার” “ভূতনাবানো” “চণ্ডসিদ্ধ” প্রভৃতির পেটের দায়ে এসে পড়েন, অনেক জায়গায় বুজরুক দ্যাখান, শেষ কোথাও না কোথাও ধরা পড়ে বিলক্ষণ শিক্ষা পেয়ে যান।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২৪ হোসেন খাঁ কালীপ্রসন্ন সিংহ হোসেন খাঁ বছর চার পাঁচ হলো, এই সহরে হোসেন খাঁ নামে এক মোছলমান বহু কালের পর ঐ রঙ্গে ভয়ানক আড়ম্বরে দেখা দেন—তিনি হজরত জিনিয়াই সিদ্ধ; (পাঠক আরব্য উপন্যাসের আলাদিন ও আশ্চৰ্য্য প্রদীপের কথা স্মরণ করুন)—“মনে করেন, সেই জিনিষই জিনি দ্বারা আনতে পারেন, বাক্সের ভিতর থেকে ঘড়ি, আংটী, টাকা উড়িয়ে দেন, নদীজলে চাবির থলে ফেলে দিলে জিনির দ্বারা তুলে আনান” এই প্রকার অদ্ভুত কৰ্ম্ম কত্তে পারেন। ক্রমে সহরে সকলেই হোসেন খাঁর কথার আন্দোলন কত্তে লাগলেন—ইংরেজী কেতার বড়দলে হোসেন খার খবর হলো। হোসেন খাঁ আজ রাজা বাহাদুরের বাগানে বাক্সর ভিতর থেকে টাকা উড়িয়ে দিলেন, উইলসনের হোটেল থেকে খাবার উড়িয়ে আনলেন, বোতল বোতল শ্যামপিন, দোনা দোনা গোলাবি ধিলি ও দলিম কিসমিস্ প্রভৃতি হরেক রকম খাবার জিনিষ উপস্থিত কল্লেন। কাল–রায়বাহাদুরের বাড়ীতে কমলালেবু, বেলফুলের মালা বরফ ও আচার আনলেন। যাঁরা পরমেশ্বর মনিতেন না, তাঁরাও হোসেন খাঁকে মানতে লাগলেন! ভাষায় বলে, “পাথরে পূজিলে পাঁচে পীর হয়ে পড়ে;” ক্রমে হোসেন খাঁ বড় বড় কাশ্মীরী উললুক ঠকাতে লাগলেন। অনেক জায়গায় খোরাকি বরাদ্দ হলো। বুজরুকী দেখবার জন্য দেশ-দেশান্তর থেকে লোক আসতে লাগলো। হোসেন খাঁ “প্রিমিয়ম্‌” বেড়ে গেল। জুচ্চুরি চিরকাল চলে না। “দশ দিন চোরের, এক দিন সেধের”; ক্রমে দুই এক জায়গায় হোসেন খাঁ ধরা পড়তে লাগলেন—কোথাও ঠোনাকা ঠানাকা, কোথাও কানমলা; শেষ প্রহার বাকী রইলো না। যাঁরা তাঁরে পূর্ব্বে দেবতা-নির্ব্বিশেষে আদর করেছিলেন, তাঁরাও দু এক ঘা দিতে বাকী রাখলেন না। কিছুদিনের মধ্যেই জিনি-সিদ্ধ হোসেন খাঁ পৌত্তলিকের শ্রাদ্ধের দাগ ষাঁড়ের অবস্থায় পড়লেন; যাঁরা আদর করে নিয়ে যান, তারাই দাগী করে বাহির করে দেন, শেষে সরকারী অতিথিশালা আশ্রয় কোল্লেন–হোসেন খাঁ জেলে গেলেন! যিনি পাতাল আশ্রয় কল্লেন!
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২৫ ভূত-নাবানো কালীপ্রসন্ন সিংহ ভূত–নাবানো আর একবার যে আমরা ভূতনাবানো দেখেছিলেম, সেও বড় চমৎকার। আমাদের পাড়ার একজনের বড় ভয়ানক রোগ হয়। স্যাকরারা বিলক্ষণ সঙ্গতিপন্ন, সুতরাং রোগের চিকিৎসা কত্তে ত্রুটি কল্লে না, ইংরেজ-ডাক্তার বদ্দি ও হাকিমের ম্যালা করে ফেল্লে; প্রায় তিন বৎসর ধরে চিকিৎস হলো, কিন্তু রোগের কেউ কিছু কত্তে পাল্লে না। রোগ ক্রমশঃ বৃদ্ধি হচ্ছে দেখে বাড়ীর মেয়েমহল তুলসী দেওয়া-কালীঘাটে সস্তেন—কালভৈরবে স্তবপাঠ-তুক্‌তাক—সাফরিদ-নারাণ–বালওড়-বালসী— শোপুর–নুরপুর ও হালুমপুর প্রভৃতি বিখ্যাত জায়গার চন্নামেন্তো ও মাদুলি ধারণ হলো, তারকেশ্বরে হত্যে দিতে লোক গেল-বাড়ীর বড় গিন্নী কালীঘাটে বুক চিরে রক্ত দিতে ও মাথায় ও হাতে ধূনো পোড়াতে গেলেন—শেষে একজন ভূতচালা আনা হয়। ভূতচালার ভূতের ডাক্‌তারি পর্য্যন্ত করা আছে। আজকাল দু-এক বাঙ্গালী ডাকতার মধ্যে মধ্যে পেসেণ্টের বাড়ী ভূত সেজে দেখা দেন—চাদরের বদলে দড়ি ও পেরেক সহিত মশারি গায়ে, কখন বা উলঙ্গ হয়েও আসেন, কেবল মন্ত্রের বদলে চার পাঁচ জন রোজায় ধরাধরি করে আনতে হয়। এঁরা কলকেতা মেডিকেল কলেজের এজুকেটেড ভূত। ভূতচালা চণ্ডীমণ্ডপে বাসা পেলেন, ভূত আসবার প্রোগ্রাম স্থির হলো—আজ সন্ধ্যার পরেই ভূত নামবেন, পাড়ায় দু-চার বাড়ীতে খবর দেওয়া হলো—ভূত মনের কথা ও রুগীর ঔষধ বলে দেবে। ক্রমে সন্ধ্যা হয়ে গেল, কুঠীওয়ালারা ঘরে ফিল্লেন-বারফট্‌কারা বেরুলেন, বিগ্রহের উত্তরাঢ়ি কায়েতের মত (দর্শন মাত্র) সেতল খেলেন, গীর্জ্জের ঘড়ীতে ঢং ঢং ঢং করে নটা বেজে গেল, গুম করে তোপ পড়লো। ছেলেরা “বোমকালী কলকেতাওয়ালী” বলে হাততালি দে উঠলো,–ভূতনাবানো আসরে নাবলেন! আমাদের প্রতিবাসী, ভূতনাবানোর কথাপ্রমাণ ও বাড়ীর গিন্নিদের মুখে শুনে ভূতের আহার জন্য আয়োজন কত্তে ত্রুটী করে নাই; বড়বাজারের সমস্ত উত্তমোত্তম মেঠাই; ক্ষীরের নানারকম পেয় ও লেহ্যরা পদার্পণ কল্লেন। বোধ হয়, আমাদের মত প্রকৃত ফলারের দশ জনে তাদের শেষ কত্তে পারে না; রোজা ও তাঁর দুই চেলায় কি করবেন! রোজা ঘরে ঢুকে একটি পিঁড়েয় বসে ঘরের ভিতরে সকলের পরিচয় নিতে লাগলেন—অনেকের আপদমস্তক ঠাউরে দেখে নিলেন—দুই এক জন কলেজ বয় ও মোটা মোটা লাঠিওয়ালারা নিমন্ত্রিতদের প্রতি তাঁর যে বড় ঘৃণা জন্মেছিল, তা তাঁর সে সময়ের চাউনিতেই জানা গেল। রোজার সঙ্গে দুটি চেলামাত্র, কিন্তু ঘরে প্রায় জন চল্লিশ ভূত দেখবার উমেদার উপস্থিত, সুতরাং ভূত প্রথমে আসতে অস্বীকার করেছিলেন। তদুপলক্ষে রোজাও “কাল ও কৃশ্চানীর” উপলক্ষে একটু বক্তৃতা কোত্তে ভোলেন নাই—শেষে দর্শকদের প্রগাঢ় ভক্তি ও ঘরের আলো নিবিয়ে অন্ধকার করবার সম্মতিতে, রোজা ভূত আন্‌তে রাজি হলেন–চেলারা খাবার দাবার সাজানো থালা যে সে বসলেন, দরজায় হুড়কো পড়লো, আলো নিবিয়ে দেওয়া হলো; রোজ্য কোশা-কুশী ও আসন নিয়ে শুদ্ধাচারে ভূত ডাকতে বলেন। আমরা ভূতের ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে বারোইয়ারির গুদোমজাৎ সংগুলির মত অন্ধকারে বসে রইলেম! পাঠক! আপনার স্মরণ থাকতে পারে, আমরা পূর্ব্বেই বলেছি যে, আমাদের ঠাকুরমা ভূত ও পেতনীর ভয় নিবারণের জন্য একটি ছোট জয়ঢাকের মত মাদুলীতে ভূকৈলেসের মহাপুরুষের পায়ের ধূলো পূরে আমাদের গলায় ঝুলিয়ে দেন, তা সওয়ায় আমাদের গলায় গুটি বারো রকমারি পদক ও মাদুলী ছিল, দুটি বাঘের নখ ছিল, আর কুমীরের দাঁত, মাছের আঁশ ও গণ্ডারের চামড়াও কোমরের গেটে সাবধানে রাখা হয়। আর হাতে একখানা বাজুর মত কবচ ও তারকেশ্বরের উদ্দেশে সোণার তাগা বাঁধা ছিল। খুব ছেলেবেলা আমাদের একবার বড় ব্যায়রাম হয়, তাতেই আমাদের পায়ে চোরের সিধের বেড়ী পরিয়ে দেওয়া হয় ও মাথায় পঞ্চানন্দের একটি জট থাকে; জট্‌টি তেল ও ধুলোতে জড়িয়ে গিয়ে রাম ছাগলের গলায় নুন্নশীর মত ঝুলতো! কিন্তু আমরা স্কুলের অবস্থাতেই অল্পবয়সে অ্যাম-বিশেষণের দাস হয়ে ব্রাহ্ম-সমাজে গিয়ে একখানা ছাবান হেডিংওয়ালা কাগজে নাম সই করি; তাতেই শুনলেম যে আমাদের ব্রাহ্ম হওয়া হলো। সুতরাং তারই কিছু পূর্ব্বে স্কুলের পণ্ডিতের মুখে মহাপুরুষের দুর্দশা শুনে পূর্বোক্ত কবচ, মাদুলী প্রভৃতি খুলে ফেলেছিলাম! আজ সেইগুলি আবার স্মরণ হলো, মনে কল্লেম, যদি ভূত নাবানো সত্যই হয়, তা হলে সেগুলি পোরে আসতে পাল্পে ভূতে কিছু কত্তে পারবে না। এই বিবেচনা করে, সেইগুলির তত্ত্ব করে, কিন্তু পাওয়া গেল না—সেগুলি আমাদের পৌত্তরের ভাতের সময়ে একটা চাকর চুরি করে; চুরিটি ধরবার জন্য চেষ্টার ত্রুটি হয় নি। গিন্নী শনিবারে একটা সুপুরি, পয়সা ও সওয়া কুনকে চেলের মুদে বাঁধেন; ন্যেপীর মা বলে আমাদের বহুকালের এক বুড়ী দাসী ছিল, সে সেই মুদোটি নে জানের বাড়ী যায়, জান গুনে বলে দেয়, “চোর বাড়ীর লোক, বড় কালও নয় সুন্দরও নয়। শামবর্ণ, মানুষটি একহারা, মাজারি গোঁফ, মাথায় টাক থাকতেও পারে”–না থাকতেও পায়ে” জানের গোণাতে আমাদেরও চাকরটিকেই চোর স্থির করে ছাড়িয়ে দেওয়া যায়। সুতরাং সে মাদুলীগুলি পাওয়া গেল না, বরং ভূতের ভয় বেড়ে উঠলো। ব্রাহ্ম হলেও যে ভুতে ধরবে না, এটিরও নিশ্চয় নাই। সে দিন কলকেতার ব্রাহ্মসমাজের এক জন ডাইরেক্টরের স্ত্রীকে ডাইনে পায়—নানা দেশদেশান্তর থেকে রোজা আনিয়ে কত ঝাড়ান-ঝোড়ান, সরষেপড়া জলপড়া ও লঙ্কাপড়া দিতে ভাল হয়। অনেক ব্রাহ্মের বাড়ীতে ভূতচতুর্দ্দশীর প্রদীপ দিতে দেখা যায়। এদিকে রোজ খানিকক্ষণ ডাকতে ডাকতে ভূতের আসবার পূর্ব্বলক্ষণ হতে লাগলো। গোহাড়, ঢিল, ইট ও জুতো হাঁড়ি বাড়ীর চতুর্দ্দিকে পড়তে লাগলো। ঘরের ভেতর গুপ গুপ করে কে যেন নাচছে বোধ হতে লাগলো; খানিকক্ষণ এই রকম ভূমিকার পর মড়া করে একটা শব্দ হলো; ভূতের বসবার জন্য ঘরের ভিতর যে পিঁড়েখানা রাখা হয়েছিল, শব্দে বোধ হলো সেইখানি দুচীর হয়ে ভেঙ্গে গেল—রোজা সভয়ে বলে উঠলেন–শ্ৰীযুৎ এয়েচেন। আমরা ছেলেবেলা আমাদের বুড়ো ঠাকুরমার কাছে শুনেছিলেম যে ভূতে ও পেত্নীতে খোঁনা কথা কয় সেটি আমাদের সংস্কারবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল, আজ তার পরীক্ষা হলো। ভূত পিঁড়ে ফাটিয়েই খোঁনা কথা কইতে লাগলেন প্রথমে এসেই কলেজ-বয়দের দলের দুই একজনের নাম ধরে ডাকলেন, তাদের নাস্তিক ও কৃশ্চান বলে ডাক দিলেন। শেষে ভূতত্ত্ব নিবন্ধন ঘাড় ভাঙ্গবার ভয় পৰ্য্যন্ত দেখাতে ত্রুটি করেন নাই। ভূতের খোঁনা কথা ও অপরিচিতের নাম বলাতেই বাড়ীর কর্ত্তা বড় ভয় পেলেন জোড় হাত করে (অন্ধকারে জোড় হাত দেখা অসম্ভব কিন্তু ভূত অন্ধকারে দিব্বি দেখতে পান সুতরাং কর্ম্মকর্ত্তা অন্ধকারেও জোড় হস্তে কথা কয়েছিলেন, এ আমাদের কেবল ভাবে বোধ হলে ক্ষমা চাইলেন, কিন্তু ভূত সর মর্ডাণ্ট ওয়েলসের মত যা ধরেন, তার সমূলচ্ছেদ না করে ছাড়েন না। সুতরাং আমাদের ঘাড় ভঙ্গিবার প্রতিজ্ঞা অন্যথা হলো না, শেষে রোজা ও বুড়ো বুড়ো দর্শক ও বাড়ীওয়ালার অনেক সাধ্যসাধনার পর ভূত মহোদ ষষ্টীবাটায় আগত জামাইয়ের মত, যৎকিঞ্চিৎ জলযোগ কত্তে সম্মত হলেন, আমরাও পালাবার পথ আঁচতে লাগলেম। লুচির চটকানো চিবানোর চপ চপর ও সাপটা ফলারের হাপুর হুপুর শব্দ থামতে প্রায় আধ ঘণ্টা লাগলো, শেষে ভূত জলযোগ করে গাঁজা ও তামাক খাচ্ছেন, এমন সময়ে পাশ থেকে ওলাউঠো রুগীর বমির ভূমিকাত মত উঁকীর শব্দ শোনা যেতে লাগলো। ক্রমে উঁকীর চোটে ভুতের বাকরোধ হয়ে পড়লো–বমি! হুড় হুড় করে বমি! গৃহস্থ মনে কল্লেন, ভুত মহাশয় বুঝি বমি কচ্চেন; সুতরাং তাড়াতাড়ি আলো জ্বালিয়ে আনালেন! শেষে দেখি কি চেলা ও রোজা খোদই বমি কচ্চেন, ভূত সরে গেচেন। আমরা পূৰ্ব্বে শুনিনে যে, গেরস্তর অগোচরে একজন মেডিকেল কলেজের ছোকরা ভূতের জন্য সংগৃহীত উপচারে ‘টার্‌টার এমেটিক্’ মিশিয়ে দিয়েছিলেন; রোজা ও চেলারা তাই প্রসাদ পাওয়াতেই তাদের এই দুর্দশা, সুতরাং ভূতনাবানোর উপর আমাদের যে ভক্তি ছিল, সেটুকু উবে গেল! সুতরাং শেষে আমরা এই স্থির কল্লেম যে, ইংরেজি ভুতেদের কাছে দেশী ভূত খবরে আসে না। এ সওয়ায় আমরা আরও দুস্টারি জায়গায় ভূতনাবানো দেখেচি, পাঠকরাও বিস্তর দেখেছেন, সুতরাং সে সকল এখানে উত্থাপন করা অনাবশ্যক, ভূনানো ও ‘হোসেন খাঁ’ কেবল জুচ্চরী ও হুজুকের আনুষঙ্গিক বলেই আমরা উল্লেখ কল্লেম।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২৬ নাক-কাটা বঙ্ক কালীপ্রসন্ন সিংহ নাক–কাটা বঙ্ক হরিভদ্দর খুড়োর কথামত–এ সকল প্রলয় জুয়াচুরী জেনেও আমরা এক দিন সন্ধ্যার পর সিমলে পাড়ার বঙ্কবিহারিবাবুর বাড়ীতে গেলুম। বেহারিবাবু উকিলের বাড়ীর হেড কেরাণী—আপনার বুদ্ধি কৌশলেবলেই বাড়ী ঘর-দোর ও বিষয়-আশায় বানিয়ে নিয়েছেন, বাবা মাস ঘাঁতে ঘোঁতে ফেরেন–যে রকমে হোক, কিছু আদায় করাই উদ্দেশ্য। বঙ্কবেহারিবাবু ছেলেবেলায় মাতামহের অন্নেই প্রতিপালিত হতেন, সুত্রাং তার লেখাপড়া ও শারিরিক তদ্বিরে বিলক্ষণ গাফিলী হয়। একদিন মামার বাড়ী খেলা কত্তে কত্তে তিনি পাতকোর ভিতরে পড়ে যান,—তাতে নাকটি কেটে যায়, সুতরাং সেই অবধি সমবয়সীরা আদর করে “নাককাটা বঙ্কবেহারি” বলেই তারে ডাকতো; শেষে উকীল-বাড়ীতেও তিনি ঐ নামে বিখ্যাত হয়ে পড়েন। বঙ্কবহারিবাবুরা তিন ভাই, তিনি মধ্যম; তাঁর দাদা সেলারদের দালালী কত্তেন, ছোট ভাইয়ের পাইকেরের দোকান ছিল। তিন ভায়েই কাঁচা পয়সা রোজগার করেন, জীবিকাগুলিও রকমারী বটে! সুতরাং নানাপ্রকার বদমায়ের পাল্লায় থাকবে, বড় বিচিত্র নয়–অল্প দিনের মধ্যেই বঙ্কবেহারিবাবুরা সিমলের একঘর বিখ্যাত লোক হয়ে উঠলেন। হঠাৎ কিছু সঙ্গতি হলে, লোকের মেজাজ যেরূপ গরম হয়ে ওঠে, তা পাঠক বুঝতে পারেন; (বিশেষতঃ আমাদের মধ্যে কোন দুই একজন বঙ্কবেহারিবাবুর অবস্থার লোক না হবেন)। ক্রমে বঙ্কবেহারিবাবু ভদ্রলোকের পক্ষে প্রকৃত জোলাপ হয়ে পড়লেন। হাইকোর্টের অ্যাটর্নীর বাড়ীর পায়দা ও মালী পর্য্যন্ত সকলেই আইনবাজ হয়ে থাকে; সুতরাং বঙ্কবেহারিবাবু যে তুখোড় আইনবাজ হবেন, তা পূর্ব্বেই জানা গিয়েছিলো। আইন আদালতের পরামর্শ, জাল জালিয়াতে তালিমে, ইকুটীর খোচ ও কমলার প্যাঁচে-বঙ্কবেহারিবাবু দ্বিতীয় শুভঙ্কর ছিলেন! ভদ্দর লোকমাত্ৰকেই তাঁর নামে ভয় পেতে হত; তিনি আকাশে ফাঁদ পেতে চাঁদ ধরে দিতে পারেন, হয়কে নয় করেন, নয়কে হয় করেন; এমন কি টেকচাঁদ ঠাকুরের ঠক্ চাচাও, তাঁর কাচে পরামর্শ নিতেন। আমরা সন্ধ্যার পর বঙ্কবেহারিবাবুর বাড়ীতে পৌঁছিলাম। আমাদের বুড়ো রাম ঘোড়াটির মধ্যে বাতশ্লেষ্মার জ্বর হয়, সুতরাং আমরা গাড়ী চড়ে যেতে পারি নাই। রাস্তা হতে একজন ঝাঁকামুটে ডেকে তার ঝাঁকায় বসেই যাই, তাতে গাড়ীর চেয়ে কিছু বিলম্ব হতে পারে। কিন্তু ঝাঁকামুটে অপেক্ষা পাহারাওয়ালাদের ঝোলায় যাওয়ায় আরাম আছে। দুঃখের বিষয় এই যে, সেটি সব সময়ে ঘটে না। পাঠকেরা অনুগ্রহ করে যদি ঐ ঝোলায় একবার সোয়ার হন, তা হলে জন্মে আর গাড়ী-পাল্কী চড়তে ইচ্ছা হবে না; যাঁরা চড়েছেন, তাঁরাই এর আরাম জানেন—যেন স্প্রীংওয়ালা কৌচ! আমরা বঙ্কবেহারিবাবুর বাড়ীতে আরো অনেকগুলি ভদ্রলোককে দেখতে পেলেম, তাঁরাও “সোণা করার” বুজরুকী দেখতে সভাস্থ হয়েছিলেন। ক্রমে সকলের পরম্পর আলাপ ও কথাবার্ত্তা থামলে সন্ন্যাসী যে ঘরে ছিলেন, আমাদেরও সেই ঘরে যাবার অনুমতি হলো। সেই ঘরটি বঙ্কুবাবুর বৈঠকখানার লাগাও ছিল, সুতরাং আমরা শুধু পায়েই ঢুকলেম। ঘরটি চারকোণা সমান; মধ্যে সন্ন্যাসী বাগছাল বিছিয়ে বসেচেন; সাম্নে একটি ত্রিশূল পোত হয়েচে, পিতলের বাঘের উপর চড়া মহদেব ও এক বাণলিঙ্গ শিব সাম্নে শোভা পাচ্ছেন; পাশে গাঁজার হুঁকো-সিদ্ধির ঝুলি ও আগুনের মালসা। সন্ন্যাসীর পেছনে দু জন চেলা বসে গাঁজা খাচ্ছে, তার কিছু অন্তরে একটা হাপর, জাল হাতুড়ি ও হামাদিস্তে পড়ে রয়েছে—তারাই সোণা তইরির বাহ্যিক আড়ম্বর। আমাদের মধ্যে অনেকে, সন্ন্যাসীকে দেখে ভক্তি ও শ্রদ্ধার আধার হয়ে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম কল্লেন; অনেকে নিমগোছের ঘাড় নোয়ালেন, কেউ কেউ আমাদের মত গুরুমশায়ের পাঠশালের ছেলেদের ন্যায় গণ্ডার এণ্ডায় সার দিয়ে গোলে হরিবোলে সাল্লেন-শেষে সন্ন্যাসী ঘাড় নেড়ে সকলকেই বসতে বল্লেন। যে মহাপুরুষদের কৌশলে হিন্দুধর্মের জন্ম হয়, তারাই ধন্য। এই কন্ধকাঁটা। এই ব্ৰহ্মদত্তি! এই রক্তদন্তী কালী—শেতলা। ছেলেদের কথা দুরে থাকুক, বুড়ো মিলেদেরও ভয় পাইয়ে দেয়। সন্ন্যাসী যে রকম সজ্জা-গজ্জা করে বসেছিলেন, তাতে মানুন বা নাই মানুন, হিন্দু সন্তান মাকেই শেওরাতে হয়েছিল! হায়! কালের কি মহিমা—সে দিন যার পিতামহ যে পাথরকে ঈশ্বরজ্ঞানে প্রণাম করেছে—মুক্তির অনন্যগতি জেনে ভক্তি করেছে, আজ ত্যর পৌত্তর সেই পাথরের ওপোর পা তুলতে শঙ্কিত হচ্চে না। রে বিশ্বাস! তোর অসাধ্য কৰ্ম্ম নাই। যার দাস হয়ে একজনকে প্রাণ সমর্পণ করা যায়, আবার তারই কথায় তারে চিরশত্রু বিবেচনা হয়, এর বাড়া আর আশ্চর্য কি! কোন্ ধৰ্ম্ম সত্য? কিসে ঈশ্বর পাওয়া যায়? তা কে বলতে পারে! সুতরাং পূর্ব্বে যারা ঘোরনদী বজ্রে, জলে, মাটী ও পাথরে ঈশ্বর বলে পূজে গেছে, তারা যে নরকে যাবে, আর আমরা কি বুধবারে ঘণ্টাখানেকের জন্য চক্ষু বুজে ঘাড় নেড়ে কান্না ও গাওনা শুনে, যে স্বর্গে যাব–তারই বা প্রমাণ কি? সহস্র সহস্র বৎসরে শত শত তত্ত্ববিং ও প্রকৃতিজ্ঞ জ্ঞানীরা যারে পাবার উপায় অবধারণে অসমর্থ হলো, আমি যে সামান্য হীনবুদ্ধি হয়ে তাঁর অনুগৃহীত বলে অহঙ্কার ও অভিমান করি, সে কতটা নির্বুদ্ধির কর্ম্ম! ব্রহ্মজ্ঞানী যেমন পৌত্তলিক, কৃশ্চান ও মোছলমানদের অপদার্থ ও অসার বলে জানেন, তারাও ব্রাহ্মদের পাগল ও ভণ্ড বলে স্থির করেন। আজকাল যেখানে যে ধর্মে রাজমুকুট নত হয়, সেখানে সেই ধৰ্ম্মই প্রবল। কালের অব্যর্থ নিয়মে প্রতিদিন সংসারের যেমন পরিবর্তন হচ্চে, ধৰ্ম্ম, সমাজ, রীতি ও নিয়মও এড়াচ্চে না। যে রামমোহন রায় বেদকে মান্য করে তার সুত্রে ব্রাহ্মধৰ্ম্মের শরীর নির্মাণ করেছেন, আজ একশ বছরও হয় নাই, এরই মধ্যে তার শিষেরা সেটি অস্বীকার করেন-ক্ৰমে কৃশ্চানীর ভড়ং ব্রাহ্মধর্মের অলঙ্কার করে তুলেছেন-“আরও কি হয়! এই সকল দেখে শুনেই বুঝি কতকগুলি ভদ্রলোক ঈশ্বরের অস্তিত্বেই বিশ্বাস করেন না। যদি পরমেশ্বররের কিছুমাত্র বিষয়জ্ঞান থাকতো, তা হলে সাধ করে ‘ঘোড়ার ডিম’ ও ‘আকাশকুসুমের’র দলে গণ্য হতেন না। সুতরাং একদিন আমরা তারে একজন কাণ্ডজ্ঞানহীন পাড়াগেঁয়ে জমিদার বলে ডাকতে পারি। সন্ন্যাসী আমাদের বসতে বলে অন্য কথা তোলবার উপক্রম কচ্চেন, এমন সময়ে বঙ্কুবেহারীবাবু এসে ভূমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম কল্লেন—সে দিন বঙ্কুবেহারিবাবু মাথায় একটি জরীর কাবুলী তাজ, গায়ে লাল গাজের একটি পিরহান, “বেচে থাকুক বিদ্দেসাগর চিরজীবী হয়ে’ পেড়ে শান্তিপুরের ধুতি ও ডুরে উড়ুনী মাত্র ব্যবহার করেছিলেন, আর হাতে একখানি লাল রঙ্গের রুমাল ছিল—তাতে রিংসমেত গুটিকত চাবী ঝুলছিল। বঙ্কবেহারীবাবুর ভূমিকা, মিষ্টি আলাপ, নমস্কার ও স্যেকহ্যাণ্ড চুকলে পর, তার দাদা সন্ন্যাসীকে হিন্দীতে বুঝিয়ে বল্লেন যে, এই সকল ভদ্দর লোকেরা আপনার বুজরুকী ও ক্যারামত দেখতে এসেছেন; প্রার্থনা—অবকাশমত দুই একটা জাহার করেন, তাতে সন্নাসীও কিছু কষ্টের পর রাজী হলেন। ক্রমে বুজরুকীর উপক্রমণিকা আরম্ভ হলো, বঙ্কবেহারীবাবু প্রোগ্র্যাম স্থির কল্লেন, কিছুক্ষণ দেখতে দেখতে প্রথমে ঘটের উপর থেকে একটি জবাফুল তড়াক করে লাফিয়ে উঠলো। ঘটের উপর থেকে জবাফুল বর্ষাকালের কড়কটে ব্যাঙের মত থপসি করে লাফিয়ে উঠলো, সন্ন্যাসী তার দুহাত তফাতে বসে রয়েচেন—এ দেখলে হঠাং বিস্মিত হতেই হয়। সুতরাং ঘর শুদ্ধ লোক খণিকক্ষণ অবাক হয়ে রইলেন সন্ন্যাসীর গম্ভীরতা ও দর্পভরা মুখখানি তই অহঙ্কারে ফুলে উঠতে লাগলো। এমন সময়ে এক জন চেল এক বোতল মদ এনে উপস্থিত কল্লেদ দুর্ব হয়ে যাবে। পাছে ডবল বোতল বা অন্য কোন জিনিষ বলে দর্শকদের সন্দেহ হয়, তার জন্য সন্ন্যাসী একখানি নতুন সরায় সেই বোতলের সমুদায় মদটুকু ঢেলে ফেল্লেন, ঘর মদের গন্ধে তর্‌র্‌ হয়ে গ্যালো–সকলেরই স্থির বিশ্বাস হলো, এ মদ বটে। সন্ন্যাসী নতুন সরায় মদ ঢেলেই একটি হুঙ্কার ছাড়িলেন, ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলেরা আঁতকে উঠলো, বুড়োদের বুক গুর গুর কত্তে লাগলো; একজন চেলা নিকটে এসে জিজ্ঞাসা কল্লে, “গুরু! এ কটোরেমে ক্যা হয়?” সন্ন্যাসী, “দুধ হো বেটা!” বলে তাতে এক কুশী জল ফেলবামাত্র সরার মদ দুধের মত সাদা হয়ে গেল—আমরাও দেখে শুনে গাধা বনে গেলুম। এইরকম নানা প্রকার বুজরুকী ও কার্দ্দানী প্রকাশ হতে হতে রাত্রি এগারোটা বেজে গেল; সুতরাং সকলের সম্মতিতে বঙ্কবাবুর প্রস্তাবে সে রাত্রের মত বেদব্যাসের বিশ্রাম হলো; আমরা রামরকমের একটা প্রণাম দিয়ে, একটি উল্লুক হয়ে বাড়ীতে এলেম। একে ক্ষুধাও বিলক্ষণ হয়েছিল, তাতে আমাদের বাহন ঝাঁকামুটেটি যে রাৎকাণা, তা পূৰ্ব্বে বলে নাই; সুতরাং তার হাত ধরে গুটি গুটি করে আধ ক্রোশ পথ উজোন ঠেলে তাকে কাঠের দোকানে পৌঁছে রেখে, তবে বাড়ী যাই। দুঃখের বিষয়, আবার সে রাত্রে বেড়ালে আমাদের খাবারগুলি সব খেয়ে গিয়েছিল; দোকানগুলিও বন্ধ হয়ে গ্যাচে। সুতরাং ক্ষুধায় ও পথের কষ্টে আমরা হতভম্ব হয়ে, সে রাত্রি অতিবাহিত করি! আমরা পূর্ব্বেই বলে এসেছি, “দশ দিন চোরের এক দিন সেধের”। ক্রমে অনেকেই বঙ্কবাবুর বাড়ীর সন্ন্যাসীর কথা আন্দোলন কত্তে লাগলেন, শেষে এক দিন আমরা সন্ন্যাসীর জুচ্চরি ধত্তে স্থির প্রতিজ্ঞ হয়ে, বন্ধুবাবুর বাড়ীতে গেলেম! পূর্ব্বদিনের মত জবাফুল তড়াক করে লাফিয়ে উঠলো, এমন সময়ে মেডিকেল কলেজের বাঙ্গালা ক্লাশের একজন বাঙ্গাল ছাত্র লাফিয়ে গিয়ে সন্ন্যাসীর হাত ধরে ফেল্লেন। শেষে হুড়োমুড়িতে বেরুলো জবাফুলটি ঘোড়ার বালুঞ্চি দিয়ে, তাঁর নখের সঙ্গে লাগান ছিল! সংসারের গতিই এই! একবার অনর্থের একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র বেরুলে, ক্রমে বহুলী হয়ে পড়ে। বালুঞ্চি বাঁধা জবাফুল ধরা পড়তেই, সকলেই একত্র হয়ে সন্ন্যাসীর তোবড়া-তুবড়ি খানা-তল্লাসী কত্তে লাগলেন; একজন ঘুর্ত্তে ঘুৰ্ত্তে ঘরের কোণ থেকে একটা মরা পাঁটা বাহির কল্লেন। সন্ন্যাসী একদিন ছাগল কেটে প্রাণ দান দেন, সেই কাটা ছাগলটি সরাতে না পেরে, ঘরের কোণেই (ফ্লোরওয়ালা মেজে নয়) পুতে রেখেছিলেন, তাড়াতাড়িতে বেমালুম করে মাটী চাপাতে পারেন নাই, পাঁটার একটি সিং বেরিয়েছিল-–সুতরাং একজরে পায় ঠ্যাকাতেই অনুসন্ধানে বেরুলো; সন্ন্যাসী আমাদের সাক্ষাতে যে মদকে দুধ করেছিলেন, সেদিন তারও জাঁক ভেঙ্গে গেল, সেই মজলিসের একজন সব আসিষ্টাণ্ট সার্জ্জন বল্লেন যে, আমেরিকান (মার্কিণ আনীস) নামক মদে জল দেবা মাত্র সাদা দুধের মত হয়ে যায়। এই রকম ধরপাকড়ের পর বেহারীবাবুও সন্ন্যাসীকে অপ্রস্তুত করেন। আমরা রৈ রৈ শব্দে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে গেলেম, হরিভদ্দর খুড়ো সন্ন্যাসীর পেতলের শিবটি কেড়ে নিলেন, সেটি বিক্রী করে নেপালে চরস কেনেন ও তাঁরও সেইদিন থেকে এই রকম বুজরুক সন্ন্যাসীদের উপর অশ্রদ্ধা হয়। পূর্ব্বে এই সকল অদৃষ্টচর ব্যাপারের যে রকম প্রাদুর্ভাব ছিল এখন তার অংশে আধগুণও নাই। আমরা সহরে কদিন কটা উৰ্দ্ধবাহু, কটা অবধূত দেখতে পাই? ক্রমে হিন্দুধর্মের সঙ্গে সঙ্গে এ সকল জুয়াচ্চরীরও লাঘব হয়ে অসচে; ক্রেতা ও লাভ ভিন্ন কোন ব্যবসাই স্থায়ী হয় না; সুতরাং উৎসাহদাতা-বিরহেই এই সকল ধৰ্ম্মানুসঙ্গিক প্রবঞ্চনা উঠে যাবে। কিন্তু কলকেতা সহরের এমনি প্রসবক্ষমতা যে এখনও এমন এক একটি মহাপুরুষের জন্ম দিচ্চেন যে, তারা যাতে এই সকল বদমায়েসী চিরদিন থাকে, যাতে হিন্দুধৰ্ম্মের ভড়ং ও ভণ্ডামোর প্রাদুর্ভাব বাড়ে সহস্র সৎকাৰ্য্য পায়ের নীচে ফেলে তার জন্যই শশব্যস্ত! একজনেরা তিন ভাই ছিল, কিন্তু তিনটিই পাগল; একদিন বড় ভাই তার মাকে বলে যে “মা! তোমার গর্ভটি দ্বিতীয় পাগলা গারদ।” সেই রকম একদিন আমরাও কতো সহরকে “রত্নগর্ভা।” বলেও ডাকতে পারি–কলকেতার কি বড় মানুষ, কি মধ্যাবস্থ এক একজন এক একটি রত্ন!! এই দৃষ্টান্তে আমরা বাবু পদ্মলোচনকে মজলিসে হাজির কল্লেম।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২৭ পদ্মলোচন দত্ত ওরফে হঠাৎ অবতার কালীপ্রসন্ন সিংহ পদ্মলোচন দত্ত ওরফে হঠাৎ অবতার বাবু পদ্মলোচন ওরফে হঠাৎ অবতার ১১১২ সালে তাঁর মাতামহ নাউ-পাড়ামুষুলীর মিত্তিরদের বাড়ী জন্মগ্রহণ করেন। নাউপাড়ামুষুলী গ্রামখানি মন্দ নয়, অনেক কায়স্থ ও ব্রাহ্মণের বাস আছে, গাঁয়ের জমিদার মজফ্‌ফর খাঁ মোছলমান হয়েও গরু জবাই প্রভৃতি দুঙ্কর্মে বিরত ছিলেন। মোল্লা ও ব্রাহ্মণ উভয়কেই সমান দেখতেন—মানীর মান রাখতেন ও লোকের খাতির ও সেলামাল্কীর গুণা কত্তেন না; ফরাসীতে তিনি বড় লায়েক ছিলেন, বাঙ্গলা ও উর্‌দুতেও তাঁর দখল ছিল। মজফ্‌ফর খাঁ গায়ের জমিদার ছিলেন বটে, কিন্তু ধোপা-নাপিত বন্ধ করা, হুঁকা মারা, ঢ্যালা ফালা, বিয়ে ও গ্রাম ভাটীর হুকুম হাকাম ও নিষ্পত্তি করার ভার মিত্তিরবাবুদের উপরই দেওয়া হয়। পূৰ্ব্বে মিত্তিরবাবুদের বড় জলজলাট ছিল মধ্যে পরিবারের অনেকে মরে যাওয়ায় ভাগাভাগী ও বহু গোষ্ঠী নিবন্ধন কিঞ্চিৎ দৈন্যদশা পড়তে হয়েছিল; কিন্তু পূৰ্ব্বোপেক্ষা নিঃস্ব হলেও গ্রামস্থ লোকদের কাছে মানের কিছুমাত্র ব্যত্যয় হয়নি। পদ্মলোচনের জন্মদিনটি সামান্য লোকের জন্মদিনের মত অমনি যায়নি; সেদিন—হঠাৎ মেঘাড়ম্বর করে সমস্ত দিন অবিশ্রাম বৃষ্টি হয়–একটি সাপ আঁতুড় ঘরের দরজায় সমস্ত রাত্রি বসে ফোঁস ফোঁস করে, আর বাড়ীর একটি পোষা টিয়ে পাখী হঠাৎ মরে গিয়ে দাঁড়ে ঝুলে থাকে। পদ্মলোচনের পিতামহী এ সকল লক্ষণ শুভ নিমিত্ত বিবেচনা করে, বড়ই খুসী হয়ে আপনার পর্‌বার একখানি লালপেড়ে সড়িী ধাইকে বক্সি, দেন। অভ্যাগত ঢুলি ও বাজন্দরেরাও একটি সিকি আর এক হাঁড়ি নারকেল লাডু পেয়েছিল! ক্রমে মহা আনন্দে আট্‌কৌড়ে সারা হলো, গায়ের ছেলেরা “আটকৌড়ে বাট্‌কৌড়ে ছেলে আছে ভাল, ছেলের বাবার দাড়িতে বসে হাগ” বলে কূলো বাজিয়ে আটকড়াই, বাতাসা ও এক এক চকচকে পয়সা নিয়ে, আনন্দে বিদেয় হলো! গোভাগাড় থেকে একটা মরা গরুর মাথা কুড়িয়ে এনে আঁতুড়ঘরের দরজায় রেখে ‘দোরষষ্ঠী’ বলে হলুদ ও দূৰ্ব্বো দিয়ে পুজো করা হলো। ক্রমে ১৫ দিন ২০ দিন, তক মাস সম্পূর্ণ হলে গাঁয়ের পঞ্চাননতলায় ষষ্ঠীর পুজো দিয়ে আঁতুড় ওঠান হয়। ক্রমে পদ্মলোচন শুক্লতিথিগত চাঁদের মতন বাড়তে লাগলেন! গুলিদাণ্ডা, কপাটী কপাটী, চোর চোর, তেলি হাত পিছলে গেলি প্রভৃতি খেলায় পদ্মলোচন প্রসিদ্ধ হয়ে পড়লেন। পাঁচ বছরে হাতে খড়ি হলো, গুরু মহাশয়ের ভয়ে পদ্মলোচন পুকুরপাড়ে, নল বনে ও বাঁশবাগানে লুকিয়ে থাকেন, পেট কামড়ানি ও গা বমি বমি প্রভৃতি অন্তঃশীলে রোগেরও অভাব রইলো না; ক্রমে কিছুদিন এই রকমে যায়, একদিন পদ্মলোচনের বাপ মলেন, তাঁর মা আগুন খেয়ে গেলেন; ক্রমে মাতামহ, মামা ও মামাতো ভেয়েরাও একে একে অকালে ও সময়ে সল্লেন; সুতরাং মাতামহ মিত্তিরদের ভিটে পুরুষশূন্য প্রায় হলো। জমিজমাগুলি জয়কৃষ্ণের মত জমিদারে কতক গিলে ফেলে, কতক খাজনা না দেওয়ায় বিকিয়ে গেল। সুতরাং পদ্মলোচনকে অতি অল্পবয়সে পেটের জন্যে অদৃষ্ট ও হাতযশের উপর নির্ভর কত্তে হলো। পদ্মলোচন কলকেতায় এসে এক বাসাড়েদের বাসায় পেটভাতে ফাইফরমাস, কাপড় কোঁচানো ও লূচি ভাজা প্রভৃতি কৰ্ম্মে ভর্ত্তি হলেন—অবকাশ মত হাতটাও পাকান হবে—বিশেষতঃ কুঠেলরা লেখা-পড়া শেখাবেন, প্রতিশ্রুত হলেন। পদ্মলোচন কিছুকাল ঐ নিয়মে বাসাড়েদের মনোরঞ্জন করতে লাগলেন, ক্রমে দু-এক বাবুর অনুগ্রহপাপ্তির প্রত্যশায় মাথালে জায়গায় উমেদারী আর কল্লেন। সহরের যে বড়মানুষের বৈঠকখানায় যাবেন, প্রায় সর্ব্বত্রই লোকারণ্য দেখতে পাবেন; যদি ভিতরকার খবর দ্যান, তা হলে পাওনাদার, মহাজন, উঠনোওয়ালা দোকানদার, উমেদার, আইবুড়ো ও বেকার কুলীনের ছেলে বিস্তর দেখতে পাবেন—পদ্মলোচনও সেই ভিড়ের মধ্যে একটি বাড়লেন; ক্রমে অষ্টপ্রহর ঘণ্টার গরুড়ের মত উমেদারিতে অনবরত এক বৎসর হাঁটাহাঁটা ও হাজিরের পর দুচারখানা সই-সুপারিসও হস্তগত হলো; শেষে এক সদয়হৃদয় মুছুদ্দী আপনার হাউসে ওজোন সরকারী কর্ম্ম দিলেন। পদ্মলোচন কষ্টভোগের একশেষ করেছিলেন; ভদ্দরলোকের ছেলে হয়েও তাকে কাপড় কোঁচানো, লুচি ভাজা, বাজার করা, জল তোলা প্রভৃতি অপকৃষ্ট কাজ স্বীকার কত্তে হয়েছিল; ক্রমশঃ লুচি ভাজতে ভাজতে ক্রমে লুচি ভাজায় তিনি এমনি তইরি হয়ে উঠলেন যে, তার মত লূচি অনেক মেঠাইওয়ালা বামুনেও ভাজতে পাত্তো না! বাসাড়েরা খুসী হয়ে তারে ‘মেকর’ খেতাব দেয়। সুতরাং সেই দিন থেকে তিনি ‘মেকর পদ্মলোচন দত্ত’ নামে বিখ্যাত হলেন! ভাষা কথায় বলে “যখন যার কপাল ধরে–যখন পড়তা পড়তে আরম্ভ হয়, তখন ছাইমুটো ধল্লে সোণমুটো হয়ে যায়। ক্রমে পদ্মলোচন দত্তের শুভদৃষ্ট ফলতে আরম্ভ হলো, মুদী অনুগ্রহ করে শিপসরকারী কর্ম্ম দিলেন। সাহেবরাও দত্তজার বিলাকী ও কাজের হুসিয়ারিতে সন্তুষ্ট হতে লাগলেন পদ্মলোচন ততই সাহেবদের সন্তুষ্ট করবার অকসুর খুঁজতে লাগলেন—একমনে সেবা কক্সে ভয়ঙ্কর সাপও সদয় হয়; পুরাণে পাওয়া যায় যে, তপস্যা করে অনেকে হিন্দুদের ভূতের মত ভয়ানক দেবতাগুলোকেও প্রসন্ন করেছে! ক্ৰম সায়েবরা পদ্মলো:নর প্রতি সন্তুষ্ট হয় তার ভাল করার চেষ্টায় রইলন; একদিন হাউসের সদরমেট কর্ম্মে জবাব দিলে সায়েবরা মুছুদ্দীকে অনুরোধ করে পদ্মলোচনকে সেই কর্ম্মে ভর্ত্তি কল্লেন! পদ্মলোচন শিপসরকার হয়েও বাসড়েদের আশ্রয় পরিত্যাগ করেন নি; কিন্তু সদরমেট হয়ে সেখানে থাকা আর ভাল দেখায় না বলেই, অন্যত্র একটু জায়গা ভাড়া করে একখানি খেলার ঘর প্রস্তুত করে রইলেন। কিন্তু এ অবস্থায় তাঁরে অধিকদিন থাকতে হলো না। তাঁর অদৃষ্ট শীঘ্রই লুচির ফোসকার মত ফুলে উঠলো–বের জল পেলে কনেরা যেমন ফেঁপে ওঠে, তিনিও তেমনি ফাঁপতে লাগলেন। ক্রমে মুচ্ছুদ্দীর সঙ্গে সায়েবদের বড় একটা বনিবনাও না হওয়ায় মুচ্ছুদ্দী কৰ্ম্ম ছেড়ে দিলেন, সুতরাং সায়েবদের অনুগ্রহধর পদ্মলোচন, বিনা ডিপজিটে মুচ্ছুদ্দী হলেন। টাকায় সকলই করে! পদ্মলোচন মুচ্ছুদ্দী হবামাত্র অবস্থার পরিবর্ত্তন বুঝতে পাল্লেন। তার পরদিন সকালে খেলার ঘর বালাখানাকে ভাংচাতে লাগলো—উমেদার, দালাল, প্যায়দা, গদিওয়ালা ও পাইকার ভরে গেল। কেউ পদ্মলোচনবাবুকে নমস্কার করে হাঁটুগেড়ে জোড়হাত করে কথা কয়, কেউ ‘আপনার সোণার দোত কলম হোক’ ‘লক্ষপতি হোন’ ‘সম্বৎসরের মধ্যে পুওর সন্তান হোক’ অনুগতের হুজুর ভিন্ন গতি নাই’ প্রভৃতি কথায় পদ্মলোচনকে তুঁদুলে পাউরুটী হতেও ফোলাতে লাগলেন–ক্রমে দুরবস্থা দুষ্কর লোচ্চার মত মুখে কাপড় দিয়ে লুকুলেন–অভিমানও অহঙ্কারে ভূষিত হয়ে সৌভাগ্যযুবতী বারাঙ্গনা সেজে তাঁরে আলিঙ্গন কল্লেন, হুজুকদারেরা আজকাল ‘পদ্মলোচনকে পায় কে’ বলে ঢ্যাঁকা পিটে দিলেন, প্রতিধ্বনি রেও বামুন, অগ্রদানী ও গাইয়ে বাজিয়ে সেজে এই কথাটি সর্ব্বত্র ঘোষণা করে বেড়াতে লাগলেন–সহরে ঢি ঢি হয়ে গেল—পদ্মলোচন একজন মস্ত লোক। কলকেতা সহরে কতকগুলি বেকার জয়কেতু আছেন। যখন যার নতুন বোলবোলাও হয়, তখন তাঁরা সেইখানে মেশেন, তাঁকেই জগতের শ্রেষ্ঠ দেখান ও অনন্যমনে তাঁরই উপাসনা করে, আবার যদি তাঁর চেয়ে কেউ উঁচু হয়ে পড়েন, তবে তাঁরে পরিত্যাগ করে উঁচু দলে জমেন; আমরা ছেলেবেলা বুড়ো ঠাকুরমার কাছে ‘ছাঁদন দড়ি ও গোদা নড়ির’ গল্প শুনেছিলাম, এই মহাপুরুষেরা ঠিক সেই ‘ছাঁদন দড়ি গোদা নড়ি।’ গল্পে আছে, রাজপুত্তুর জিজ্ঞাসা কল্লো, “ছাঁদন দড়ি গোদা নড়ি! এখন তুমি কার?–না আমি যখন যার তখন তার?” তেমনি হতোমপ্যাঁচা বলেন, সহুরে জয়কেতুরাও যখন যার তখন তার!! জয়কেভু ভদ্দরলোকের ছেলে, অনেকে লেখাপড়াও জানেন; তবে কেউ কেউ মূর্ত্তিমতী মা। এঁদের অধিকাংশই পৌত্তলিক, কুলীন বামুন, কায়স্থ কুলীন, বেকার, পেনশুনে ও ব্রকোদই বিস্তর! বহুকালের পর পদ্মলোচনবাবু কলকেতা সহরে বাবু বলে বিখ্যাত হন। প্রায় বিশ বৎসর হলো সহরের হঠাৎ বাবুর উপসংহার হয়ে যায়, তন্নিবন্ধন ‘জয়কেতু’ ‘মোসাহেব’ ‘ওস্তাদজী’ ‘ভড়জা’ ‘ঘোষজা’ ‘বোসজা’ প্রভৃতি বরাখুরেরা জোয়ারের-বিষ্ঠার মত ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছিলেন, সুতরাং এখন পদ্মলোচনের “তর্পণের কোশায়” জুড়াবার জায়গা পেলেন। জয়কেতুরা ক্রমে পদ্মলোচনকে ফাঁপিয়ে তুল্লেন, পড়তাও ভাল চল্লো—পদ্মলোচন অ্যাম্বিসনের দাস হলেন, হিতাহিত বিবেচনা দেনদার বাবুদের মত গা ঢাকা হলেন। পদ্মলোচন প্রকৃত হিন্দুর মুখোস পরে সংসার-রঙ্গভূমিতে নাবলেন;–ব্রাহ্মণের পার্দ্ধলো খান–পা চাটেন—দলাদলির ও হিন্দুধর্মের ঘোঁটি করেন—ঠাকরুণ বিষয় ও সখীযংবাদ গাওনার পক্ষে প্রকৃত ব্লটীংপেপার; পদ্মলোচনের দোর্দ্দণ্ড প্রতাপ! বৈঠকখানায় ব্রাহ্মণ অধ্যাপক ধরে না, মিউটিনীর সময়ে গবর্ণমেণ্ট যেমন দোচোখখাত ভলেটীয়ার জুটিয়েছিলেন, পদ্মলোচন বাবু হয়ে সেইরূপ ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত সংগ্রহ কত্তে বাকি রাখলেন না! এসিয়াটিক সোসাইটির মিউজিয়মের মত বিবিধ আশ্চর্য জীব একত্র কল্লেন—বেশীর ভাগ জ্যান্ত!! বাঙ্গালী বদমায়েস ও দুর্ব্বুদ্ধির হাতে টাকা না থাকলে সংসারের কিছুমাত্র ক্ষতি কত্তে পারে না, বদমায়েশী ও টাকা একত্র হলে হাতী পর্য্যন্ত মারা পড়ে, সেটি বড় সোজা ব্যাপার নয়, শিবকেষ্টো বাঁড়ুয্যে পর্য্যন্ত যাতে মারা যান! পদ্মলোচনও পাঁচজন কুলোকের পরামর্শে বদমায়েসী আরম্ভ কল্লেন—পৃথিবীর লোকের নিন্দা করা, খোঁটা দেওয়া বা টিট্‌কারী করা তার কাজ হলো; ক্রমে তাতেই তিনি এমনি চোড়ে উঠলেন যে, শেষে আপনাকে আপনি অবতার বলে বিবেচনা কত্তে লাগলেন; পারিষদেরা অবতার, বলে তাঁর স্তব কত্তে লাগলো; বাজে লেকে ‘হঠাৎ অবতার’ খেতাব দিলে-দর্শক ভদ্দর লোকেরা এই সকল দেখে শুনে অবাক হয়ে ক্ল্যাপ দিতে লাগলেন। পদ্মলোচন যথার্থই মনে মনে ঠাউরেছিলেন যে, তিনি সামান্য মনুষ্য নন, হরি হরি, নয় পীর কিম্বা ইহুদিদের ভাবী মেসায়া!—তারই সফলতা ও সার্থকতার জন্য পদ্মলোচন বুজরুকী পর্য্যন্ত দেখাতে ত্রুটী করেন নাই। বিলাতী জিজেষ্ক্রাইষ্ট এক টুকরো রুটিতে একশ লোক খাইয়েছিলেন–কানা ও খোঁড়া ফুঁয়ে ভাল কত্তেন! হিন্দু মতের কেষ্টও পূতনা বধ, শকটভঞ্জন প্রভৃতি অলৌকিক কাৰ্য্য করেছিলেন। পদ্মলোচন আপনারে অবতার বলে মানাবার জন্যে সহরে হুজুক তুলে দিলেন যে, “তিনি একদিন বারো জনের খাবার জিনিসে একশ লোক খাইয়ে দিলেন।” কাণ খোঁড়ারা সর্ব্বদাই হবেড়ীর ধ্বজবজ্রাঙ্কুশযুক্ত পদ্মহস্ত পাবার প্রতীক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকেন, বুড়ী বুড়ী মাগীরা ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলে নিয়ে ‘হাতবুলানো’ পাইয়ে আনে, পদ্মলোচন এইরূপ নানাবিধ বুজরুকী প্রকাশ কত্তে লাগলেন। এই সকল শুনে চতুষ্পাঠীওয়ালা মহাপুরুষের মড়কের শকুনির মত নাচতে লাগলেন—টাকার এমনি প্রতাপ যে, চন্দ্রকে দেখে রত্নাকর সাগরও কেঁপে ওঠেন—অন্যের কি কথা! ময়রার দোকানে যত রকমারি মাছি, বসন্তি বোলতা আর ভোঁভূয়ে ভোমরা দেখা যায়, বইয়ের দোকানে তার কটা থাকে সেথায় পদার্থহীন উই পোকার—আন্‌সাড়ে আরুসুলার দল, আর দু একটা গোডিমওয়ালা ফচকে নেংটি ইঁদুর মাত্র। হঠাৎ টাকা হলে মোজ যে রকম গরম হয়, এক দম গাঁজাতেও সে রকম হয় না, হঠাৎ অবতার হয়েও পদ্মলোচনের আশা নিবৃত্ত হবে তারও সম্ভাবনা কি? কিছু দিনের মধ্যে পদ্মলোচন কলকেতা সহরের একজন প্রধান হিন্দু হয়ে পড়েন তিনি হাই তুল্লে হাজার ভুঁড়ি পড়ে–তিনি হাঁচলে জীব জীব জীব শব্দে ঘর কেঁপে উঠে! ‘ওরে ওরে ওরে!’ ‘হুজুর’ ও ‘যো হুকুমের’, হল্লা পড়ে গেল, ক্রমে সহরের বড় দলে খবর হলো যে, কলকেতার ন্যাচরাল হিষ্টীর দলে একটি নম্বরে বাড়লো। ক্রমে পদ্মলোচন নানা উপায়ে বিলক্ষণ দশ টাকা উপায় কত্তে লাগলেন, অবস্থার উপযুক্ত একটি নতুন বাড়ী কিনলেন, সহরের বড়মানুষ হলে যে সকল জিনিপত্র ও উপাদানের আবশ্যক, সভাস্থ আত্মীয় ও মোসাহেবের ক্রমশঃ সেই সকল জিনিস সংগ্রহ করে ভাণ্ডার ও উদর পুরে ফেল্লেন; বাবু স্বয়ং পছন্দ করে (আপন চক্ষে সুবর্ণ বর্ষে) একটি অবিদ্যাও রাখলেন। বেশ্যাবাজীটি আজকাল এ সহরে বাহাদুরীর কাজ ও বড়মানুষের এলবাত পোষাকের মধ্যে গণ্য। অনেক বড়মানুষ বহুকাল হলো মরে গেচেন, কিন্তু তাদের রক্ষিতার বাড়ীগুলি আজও মনুমেন্টের মত তাঁদে স্মরণার্থে রয়েছে—সেই তেতলা কি দোতলা বাড়ীটি ভিন্ন তাদের জীবনে আর এমন কিছু কাজ হয় নি, যা দেখে সাধারণে তাদের স্মরণ করে। কলকেতার অনেক প্রকৃত হিন্দু দলপতি ও রাজারাজড়ারা রাত্রে নিজ বিবাহিত স্ত্রীর মুখ দেখেন না। বাড়ীর প্রধান আমলা, দাওয়ান মুচ্ছুদ্দিরা যেমন হুজুরদের হয়ে বিষয় কৰ্ম্ম দেখেন—স্ত্রীর রক্ষণাবেক্ষণের ভারও তাঁদের উপর আইন মত অর্শায়, সুতরাং তাঁরা ছাড়বেন কেন? এই ভয়ে কোন কোন বুদ্ধিমান স্ত্রীকে বাড়ীর ভিতরের ঘরে পূরে চাবি বন্ধ করে বাইরের বৈঠকথানায় সারা রাত্রি অবিদ্যা নিয়ে আমোদ করেন, তোপ পড়ে গেলে ফরসা হবার পূর্ব্বে গাড়ী বা পাল্কী করে বিবিসাহেব বিদায় হন—বাবু বাড়ীর ভিতর গিয়ে শয়ন করেন।–স্ত্রীও চাবি হতে পরিত্রাণ পান। ছোকরাগোছের কোন কোন বাবুরা বাপ-মার ভয়ে আপনার শোবার ঘরে স্ত্রীকে একাকিনী ফেলে আপনি বেরিয়ে যান; মধ্য রাত্রি কেটে গেলে বাবু আমোদ লুটে ফেরেন ও বাড়ীতে এসে চুপি চুপি শোবার ঘরের দরজায় ঘা মারেন, দরজা খোলা পেলে বাবু শয়ন করেন। বাড়ীর আর কেউই টের পায় না যে, বাবু রাত্রে ঘরে থাকেন না। পাঠকগণ! যারা ছেলে বেলা থেকে “ধৰ্ম্ম যে কার নাম, তা শোনে নি, হিতাহিত বিবেচনার সঙ্গে যাদের সুদূর সম্পর্ক, কতকগুলি হতভাগা মোসাহেবই যাদের হাল” তারা যে এই রকম পশুবৎ কদাচারে রত থাকবে, এ বড় আশ্চাৰ্য নয়! কলকেতা সহর এই মহাপুরুষদের জন্য বেশ্যাসহর হয়ে পড়েছে, এমন পাড়া নাই, যেখানে অন্তত দশ ঘর বেশ্যা নাই, হেয় প্রতি বৎসর বেশ্যার সংখ্যা বৃদ্ধি হচ্ছে বই কমছে না। এমন কি, এক জন বড়মানুষের বাড়ীর পাশে একটি গৃহস্থের সুন্দরী বউ কি মেয়ে বার কবার যো নাই, তা হলে দশ দিনেই সেই সুন্দরী টাকা ও সুখের লোভে কুলে জলাঞ্জলি দেবে—যত দিন সুন্দরী বাবুর মনস্কামনা পূর্ণ না করবে, তত দিন দেখতে পাবেন, বাবু অষ্ট প্রহর বাড়ীর ছাদের উপর কি বারান্দাতেই আছেন, কখন হাসচেন, কখন টাকার তোড়া নিয়ে ইসারা কোরে দেখাচ্চেন। এ ভিন্ন মোসাহেবদেরও নিস্তার নাই; তাঁরা যত দিন তাঁরে বাবুর কাছে না আনতে পারেন, ততদিন মহাদায়গ্রস্ত হয়ে থাকতে হবে, হয় ত সে কালের নবাবদের মতে “জান বাচ্চা এক গাড়” হবার হুকুম হয়েচে! ক্রমে কলে কৌশলে সেই সাধ্বী স্ত্রী বা কুমারীর ধর্ম্ম নষ্ট করে শেষে তাড়িয়ে দেওয়া হবে—তখন বাজারে কশার করাই তার অনন্যগতি হয়ে পড়ে! শুধুই এই নয় সহরের বড় মানুষেরা অনেকে এমনি লম্পট যে স্ত্রী ও রক্ষিত মেয়েমানুষ-ভোগেও সন্তুষ্ট নন, তাতেও সেই নরাধম রাক্ষসদের কাম-ক্ষুধাও নিবৃত্তি হয় না—শেষে আত্মীয়া যুবতীরাও তার ভোগে লাগে।–এতে কত সতী আত্মহত্যা করে, বিষ খেয়ে এই মহাপাপীদের হাত এড়িয়েছে। আমরা বেশ জানি, অনেক বড়মানুষের বাড়ী মাসে একটি করে প্রাণহত্যা হয় ও রক্তকম্বলের শিকড়, চিতের ডাল ও করবীর ছালের নুন-তেলের মত উঠনো বরাদ্দ আছে। যেখানে হিন্দুধর্মের অধিক ভড়ং, যেখানে দলাদলির অধিক ঘোঁট ও ভদ্দরলোকের অধিক কুৎসা, প্রায় সেখানেই ভিতর বাগে উদোম এলো, কিন্তু বাইরে পাদে গেরো! হায়! যাদের জন্মগ্রহণে বঙ্গভুমির দুরবস্থা দূর হধা প্রত্যাশা করা যায়, যার প্রভূত ধনের অধিপতি হয়ে স্বজাতি, সমাজ ও বঙ্গভূমির মঙ্গলের জন্য কায়মনে যত্ন নেবে, না সেই মহাপুরুষেরাই সমস্ত ভয়ানক দোষ ও মহাপাপের আকর হয়ে বসে রইলেন; এর বাড়া আর আক্ষেপের বিষয় কি আছে? আজ একশ বৎসর অতীত হলো, ইংরাজের এ দেশে এসেছেন, কিন্তু আমাদের অবস্থার কি পরিবর্ত্তন হয়েছে? সেই নবাবী আমলের বড়মানষী কেতা, সেই পাকান কাচা, সেই কোঁচান চাদর, লপেটা জুতো ও বাবরী চুল আজও দেখা যাচ্চে; বরং গৃহস্থ মধ্যস্থ লোকের মধ্যে পরিবর্তন দেখা যায়, কিন্তু আমাদের হুজুরেরা যেমন, তেমনই রয়েচেন। আমাদের ভরসা ছিল, কেউ হঠাৎ বড়মানুষ হলে রিফাইণ্ড গোচের বড়মানুষীর নজীর হবে, কিন্তু পদ্মলোচনের দৃষ্টান্তে আমাদের সে আশা সমূলে নিৰ্ম্মল হয়ে গেল–পদ্মলোচন আবার কফিনচোরের ব্যাটা ম্যকমারা হয়ে পড়লেন, কফিনচোর মরা লোকের কাপড় চুরি কত্তো মাত্র–অবিদ্যা রেখে অবধি পদ্মলোচন স্ত্রীর সহবাস পরিত্যাগ কল্লেন, স্ত্রী চরে খেতে লাগলেন। পূৰ্ব্ব সহবাস বা তার হাতযশে পদ্মলোচনের গুটি চার ছেলে হয়েছিল; ক্রমে জ্যেষ্ঠটি বড় হয়ে উঠলো, সুতরাং তার বিবাহে বিলক্ষণ ধূমধাম হবার পরামর্শ হতে লাগলো! ক্রমে বড়বাবুর বিয়ের উজ্জুগ হতে লাগলো; ঘটক ও ঘটকীর বাড়ী বাড়ী মেয়ে দেখে বেড়াতে লাগলেন—“কুলীনের মেয়ে, দেখতে পরমা সুন্দরী হবে, দশ টাকা যোত্তর থাকবে এমনটি শীগগির জুটে ওঠা সোজা কথা নয়। শেষে অনেক বাছা-গোছা ও দেখা-শুনার পর শহরের আগড়োম ভোঁম সিঙ্গির লেনের আত্মারাম মিত্তিরের পৌত্তুরীরই ফুল ফুটলো! আত্মারামবাবু খাস হিন্দু, কাপ্তেনীর কৰ্ম্মে বিলক্ষণ দশ টাকা উপায় করেছিলেন, আত্মারামবাবুর সংসারও রাবণের সংসার বল্লে হয়–সাত সাতটি রোজগেরে ব্যাটা, পরীর মত পাঁচ মেয়ে, আর গড়ে গুটি চল্লিশ পৌত্তুর পৌত্তুরী; এ সওয়ার ভাগ্নে, জামাই কুটুম্বসাক্ষাৎ বাড়ীতে গিজ গিজ করে,–সুতরাং সৰ্বগুণাক্রান্ত আসামি পদ্মলোচনের বেয়াই হবার উপযুক্ত স্থির হলেন। শুভলগ্নে মহা আড়ম্বর করে লগ্নপত্রে বিবাহের দিন স্থির হলো; দলস্থ সমুদায়, ব্রাহ্মণেরা মর্য্যাদামত পত্রের বিদেয় পেলেন, রাজভাট ও ঘটকেরা ধন্যবাদ দিতে চল্লো; বিয়ের ভারী ধূম! সহরে হুজুক উঠলো পদ্মলোচনবাবুর ছেলের বিয়ের পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ–গোপাল মল্লিক ছেলের বিয়েতে খরচ করেছিলেন বটে, কিন্তু এতো নয়। দিন আসচে দেখতে দেখতেই এসে পড়ে। ক্রমে বিবাহের দিন ঘনিয়ে এলো বিয়েবাড়ীতে নহবৎ বসে গেল। অধ্যক্ষ ভট্টাচার্য্য ও দলস্থদের ঘোঁট বাদন সুরু হলো—ত্রিশ হাজার জোড়া শাল, সোণার লোহা ও ঢাকাই সাড়ী, দু লক্ষ সামাজিক ব্রাহ্মণ পণ্ডিতদলে বিতরণ হলো; বড়মানুষদের বাড়ীতেও ও শাল ও সোণাওয়ালা লোহা, ঢাকাই কাপড়, গেদরা কদ্দক, গোলাব ও আতর, এক এক জোড়া শাল সওগাদ পাঠান হলো! কেউ আদর কবে গ্রহণ কল্লেন, কেউ কেউ বলে পাঠালেন যে, আমরা টুলি বা বাজন্দরে নই যে, শাল নেবো! কিন্তু পদ্মলোচন হঠাৎ অবতার হয়ে শ্রীরামচন্দ্রের মত আত্মবিস্মৃত হয়ে ছিলেন, সুতরাং সে কথা গ্রাহ্য কল্লেন না। পারিষদ, মোসাহেব ও বিবাহেব অধ্যক্ষেরা বলে উঠলেন—বেটার অদৃষ্টে নাই। এদিকে বিয়েব বাইনাচ আরম্ভ হলো, কোথাও রূপোর বালা লাল কাপড়ের তকমাধরা ও উর্দ্ধী-পরা চাকরেরা ঘুরে বেড়াচ্ছে, কোথাও অধ্যক্ষেরা গড়ের বাজ্ঞা আনবার পরামর্শ কচ্চেন—কোথাও বরের সজ্জা তইরির জন্য দজ্জিরা একমনে কাজ কচ্চে—চারিদিকেই হৈ হৈ ও রৈ রৈ শব্দ। বাবুর দেওয়া শালে শহরের অর্ধেক লোকেই লালে লাল হয়ে গেল, ঢুলি ও বাজন্দরেরা তো অনেকের বিয়েতেই পুরাণ শাল পেয়ে থাকে, কিন্তু পদ্মলোচনের ছেলের বিয়ের সুন্দর লোকেও শাল পেয়ে লাল হয়ে গেলেন! ১২ই পৌষ শনিবার বিবাহের লগ্ন স্থির হয়েছিল! আজ ১২ই পৌষ, আজ বিবাহ। আমরা পূর্ব্বেই বলেছি যে, সহরে ঢি ঢি পড়ে গিয়েছিল, “পদ্মলোচনের ছেলের বিয়ের পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ।” সুতরাং বিবাহের দিন বৈকাল হতে রাস্তায় ভয়ানক লোকারণ্য হতে লাগলো, পাহারা ওয়ালারা অতি কষ্টে গাড়ীঘোড়া চলবার পথ করে দিতে লাগলো। ক্রমে সন্ধ্যার সময় বর বেরুলো;–প্রথমে কাগজের ও অব্বরের হাতঝাড়, পাঞ্জা ও সিঁড়ি ঝাড় রাস্তার দুপাশে চল্লো। ঐ রেশালার আগে আগে দুটি চলতি নবত ছিল; তার পেছনে গেট–দালান ও কাগজের পাহাড়ের উপর হরপার্ব্বতী, নন্দী, ষাঁড়, ভৃঙ্গী, সাপ ও নানারকম গাছ–তার পেছনে ঘোড়াপঙ্খী, হাতীপঙ্খী, উটপঙ্খী, ময়ূরপঙ্খীগুলির ওপরে বারোজন করে দাঁড়ি, মেয়ে ও পুরুষ সওদাগর সাজা ও দুটি করে ঢোল। তার আশে পাশে তক্তনামার উপর ‘মগের নাচ’ ‘ফিরিঙ্গির নাচ’ প্রভৃতি নানাপ্রকার সাজা সং! তার পশ্চাৎ এক শ’ ঢোল, চল্লিশটি জগঝম্প ও গুটি যাইটেক ঢাক মায় রোষোনচৌকী—শানাই, ভোড় ও ভেপু তার কিছু অন্তরে এক দল নিমখাসা রকমের চুনোগলীর ইংরেজী বাজনা। মধ্যে বাবুর মোসাহেব, ব্রাহ্মণ, পণ্ডিত, পারিষদ, আত্মীয় ও কুটুম্বরা। সকলেরই এক রকম শাল, মাথায় রুমাল জড়ান, হাতে একগাছি ইষ্টিক, হঠাৎ বোধ হয় যেন এক কোম্পানী ডিজার্মড সেপাই! এই দলের দুই ধারে লাল বনাতের খাশ গেলাস ও রূপোর ডাণ্ডিতে রেসমের নিসেনধরা তক্‌মাপরা মুটে ও ক্ষুদে ক্ষুনে ছোঁড়ারা; মধ্যে খোদ বরকৰ্ত্তা, গুরু-পুরোহিত, বাছালো বাছালো ভূঁড়ে ভূঁড়ে ভটচায্যি ও আত্মীয় অন্তরঙ্গরা; এর পেছনে রাঙ্গামুখোইংরেজী বাজনা, সাজা সায়েব-তুরুক-সওয়ার, বরের ইয়ারবস্ক, খাস দরওয়ানরা, হেড খানসামা ও রূপের সুখাসনখানির চারিদিকে মায় বাতি বেললণ্ঠন, টাঙ্গান, সাম্নে রূপোর দশডেলে বসান ঝাড়, দুই পাশে চামরধরা দুটো ছোঁড়া; শেষে বরের তোরঙ্গ, প্যাটরা, বাড়ীর পরামাণিক, সোনার দানা গলায় বুড়ী বুড়ী গুটীকত দাসী ও বাজে লোক; তার পেছনে বরযাত্রীর গাড়ীয় সার–প্রায় সকলগুলির উপয় এক এক চাকর ডবল বাতিদেওয়া হাত লণ্ঠন ধরে বসে যাচ্চে। ব্যাণ্ড, ঢাক, ঢোল ও নাগরার শব্দে, লোকের বল্লা ও অধ্যক্ষদের মিছিলের চীৎকারে কলকেতা কাঁপতে লাগলো; অপর পাড়ার লোকেরা তাড়াতাড়ি ছাতে উঠে মনে কল্লে ওদিকে ভয়ানক আগুন লেগে থাকবে। রাস্তার দুধারি বাড়ীর জানালা ও বারাণ্ডা লেকে পুরে গেল। বেশ্যারা “অহা দিব্বি ছেলেটি যেন চাদ!” বলে প্রশংসা কত্তে লাগলো। হুতোমুপচা অন্তরক্ষি থেকে নক্সা নিতে লাগলেন। ক্রমে বর কনের বাড়ী পৌঁছিল। কাকর্ত্তারা তাদর সওষণ করে বরুবাত্তোরদের অভ্যর্থনা কল্লেন–পাড়ার মৌতাতি বুড়ো ও বওয়াটে ছোঁড়ারা গ্রামভটির জন্য বরকর্ত্তাকে ঘিরে দাঁড়ালো –বর সভায় গিয়ে বসলো, ঘটকের ছড়া পড়তে লাগলো, মেয়েরা বার থেকে উঁকি মাত্তে লাগলো, ঘটকের মিত্তিরবাবুর কুলজী আউড়ে দিলে, মিত্তিরবাবু কুলীন, সুতরাং বল্লালী রেজেষ্টারীতে তাঁর বংশাবলী রেজেষ্টারী হয়ে আছে, কেবল দত্তবাবুর বংশাবলীটি বানিয়ে নিতে হয়। ক্রমে বরযাত্রী ও কন্যাযাত্রীরা সাপ্টা জলপান করে বিদেয় হলেন! বর স্ত্রী-আচারের জন্য বাড়ীর ভিতর গেলেন। ছাদনাতলায় চারিটি কলাগাছের মধ্যে আল্পনা দিয়ে একটি পিঁড়ে রাখা হয়েছিল, বর চোরের মত হয়ে সেইখানে দাঁড়ালে, মেয়েরা দাঁড়া-গুয়া পান বরণডালা, মঙ্গলের ভাঁড়ওয়ালা কুলো ও পিদ্দিম দিয়ে বরণ কল্লেন, শাঁখবাজানো ও উলু উলুর চোটে বড়ি সরগরম হয়ে উঠলো; ক্রমে মায় শ্বাশুড়ী এয়োরা সাতবার বরকে প্রদক্ষিণ কল্লেন–শ্বাশুড়ী বরের হাতে মাকু দিয়ে বল্লেন, “হাতে দিলাম মাকু একবার ভ্যা কর তা বাপু!” বর কলেজ বয়, আড়চোখে এয়োদের পানে তাকাচ্ছিলেন ও মনে মনে লঙ্কা ভাগ কচ্ছিলেন, সুতরাং “মনে মনে কল্লেন” বল্লেন—শালাজেরা কান মলে দিলে, শালীর গালে ঠোনা মাল্লে। শেষে গুড়চাল, __তাক, অষুদ বিষুদ ফুরুলে, উচ্ছুগ্‌গু করবার জন্য কনেকে দালানে নিয়ে যাওয়া হলো। শাস্ত্রমতে মন্ত্র পড়ে কনে উচ্ছুগ্‌গু হলেন, পুরুত ও ভট্টাচার্য্যেরা সন্দেশের সরা নিয়ে সল্লেন; বরকে বাসরে নিয়ে যাওয়া হলো। বাসরটিতে আমাদের চূড়ান্ত হয়। আমরা তো অ্যাতো বুড়ো হয়েছি, তবু এখনোও বাসরের আমোদটি মনে পড়লে, মুখ দে লাল পড়ে ও আবার বিয়ে কর্ত্তে ইচ্ছে হয়। ক্রমে বাসরের অমোদের সঙ্গেই কুমুদিনী অস্ত গেলেন। কমলিনীর হৃদয়রঞ্জন প্রকৃত তেজীয়ান হয়েও যেন তার মানভঞ্জনের জন্যই কোমলভাব ধারণ করে উয়দ হলেন। কমলিনী নাথের তাদৃশ দুর্দ্দশা দেখেই যেন সরোবরের মধ্যে হাসতে লাগলেন; পাখীরা “ছি ছি! কামোন্মত্তদের কিছুমাত্র কাণ্ডজ্ঞান থাকে না;” বলে চেঁচিয়ে উঠলো। বায়ু মুচকে মুচকে হাসতে লাগলেন–দেখে ক্রোধে সূৰ্য্যদেব নিজ মূর্ত্তি ধারণ কল্লেন; তাই দেখে পাখীরা ভয়ে দূর-দূরান্তরে পালিয়ে গেল। বিয়েবাড়িতে বাসি বিয়ের উজ্জুগ হতে লাগলো। হলুদ ও তেল মাখিয়ে বরকে কলাতলায় কনের সঙ্গে নাওয়ান এমন হলো, বরণডালায় বরণ ও কতক তুকতাকের পর বর-কনে গাঁটছড়া কিছুক্ষণের পর খুলে দেওয়া হলো। এদিকে ক্রমে বরযাত্রী ও বরের আত্মীয়-কুটুম্বরা জুটতে লাগলো। বৈকালে পুনরায় সেই রকম মহাসমারোহে বর-কনেকে বাড়ী নে যাওয়া হলো। বরের মা বর-কনেকে বরণ করে ঘরে নিলেন! এক কড়া দুধ দরজার কাছে আগুনের ওপর বসান ছিল, কনেকে সেই দুধের কড়াটি দেখিয়ে জিজ্ঞাসা কর। হলো “মা! কি দেখচো? বল যে আমার সংসার উৎলে পড়চে দেখছি।” কনেও মনে মনে তাই বল্লেন। এ সওয়ায় পাঁচ গিন্নীতে নানা রকম তুকতাক কল্লে পর বর-কনে জিরুতে পেলেন; বিয়েবাড়ীর কথঞ্চিৎ গোল চুকলো—ঢুলিরা ধেনো মদ খেয়ে আমোদ কত্তে লাগলো। অধ্যক্ষের প্রলয় হিন্দু; সুতরাং একটা একটা অগিতোলা দুর্গোমণ্ডা ও এক ঘটী গঙ্গাজল খেয়ে বিছানায় আড় হলেন-বর কনে আলাদা আলাদা শুলেন–অঞ্জ একত্রে শুতে নাই, বে-বাড়ীর বড়গিন্নীর মতে আজকের রাত–কালরাত্রির। শীতকালের রাত্রি শীগগির যায় না। এক ঘুম, দু ধুম, আবার প্রস্রাব করে শুলেও বিলক্ষণ এক ঘুম হয়। ক্রমে গুডুম করে তোপ পড়ে গেলো—প্রাতঃস্নানের মেয়েগুলো বকতে বকতে রাস্তা মাথায় করে যাচ্চে—বুড়ো বুড়ো ভটচায্যিরা স্নান করে “মহিম্নঃ পারন্তে” মহিম্নস্তব আ ওড়াতে আওড়াতে চলেছেন। এদিকে পদ্মলোচন অবিদ্যার বাড়ী হতে বাড়ী এলেন; আজ তার নানা কাজ! পদ্মলোচন প্রত্যহ সাত আট্টার সময় বেশ্যালয় থেকে উঠে আসেন, কিন্তু আজ কিছু সকালে আসতে হয়েছিল। সহরের অনেক প্রকৃত হিন্দু বুড়ো বুড়ো দলপতির এক একটি জলপাত্র আছে এ কথা আমরা পূর্ব্বেই বলেচি; এদের মধ্যে কেউ রাত্রি দশটার পর শ্রীমন্দিরে যান একেবারে সকাল বেলা প্রাতঃস্নান করে টিপ, তেলক ও ছাপা কেটে গীতগোবিন্দ ও তসর পরে হরিনাম কত্তে কষ্ট্রে বাড়ী ফেরেন–হঠাৎ লোকে মনে কত্তে পারে শ্ৰীযুত গঙ্গাস্নান করে এলেন। কেউ কেউ বাড়ীতেই প্রিয়তমাকে আনান; সমস্ত রাত্রি অতিবাহিত হলে ভোরের সময় বিদেয় দিয়ে স্নান করে পূজা কত্তে বসেন-যেন রাত্তিরে তিনি নন–পদ্মলোচনও সেই চাল ধরেছিলন। ক্রমে আত্মীয় কুটুম্বেরাও এসে জমলেন, মমসাহেবরা “হুজুর! কলকেতায় এমন বিয়ে হয় নি–হবে না” বলে বাবুর ল্যাজ ফোলাতে লাগলেন। ক্রমে সন্ধ্যার কিছু পূর্ব্বে ফুলশয্যার তত্ত্ব এলো, পদ্মলোচন মহাসমাদরে কনের বাড়ীর চাকর-চাকরাণীদের মহা অভ্যর্থনা কল্লেন, প্রত্যেককে একটি করে টাকা ও একখানি করে কাপড় বিদেয় দিলেন। দলস্থ ও আত্মীয়েরা কিছু কিছু করে অংশ পেলেন। বাকী ঢুলী ও রেশালার লোকেরা বক্সিস পেয়ে, বিদেয় হলো; কোন কোন বাড়ীর গিন্নী সামগ্রী পেয়ে হাঁড়ি পূরে শিকেয় টাঙ্গিয়ে রাখলেন; অধিক অংশ পচে গেল, কতক বেরালে ও ইঁদুরে খেয়ে গেল, তবু গিন্নীরা পেট ভরে খেতে কি কারেও বুক বেধে দিতে পাল্লেন না—বড়মানুষদের বাড়ীর গিন্নীরা প্রায়ই এই রকম হয়ে থাকেন, ঘরে জিনিষ পচে গেলেও লোকের হাতে তুলে দিতে মায়া হয়। শেষে পচে গেলে মহারাণীর খানায় ফেলে দেওয়া হয়, সেও ভাল। কোন কোন বাবুরও এ স্বভাবটি আছে, সহরের এক বড়মানুষের বাড়ীতে দুর্গাপূজার সময়ে নবমীর দিন গুটি ষাইটেক পাঁঠা বলিদান হয়ে থাকে; পুৰ্ব্ব পরম্পরায় সেগুলি সেই দিনেই দলস্থ ও আত্মীয়ের বাড়ী বিতরিত হয়ে আসছে। কিন্তু আজকাল সেই পাঁঠাগুলি নবমীর দিন বলিদান হলেই গুদামজাত হয়; পূজার গোল চুকে গেলে, পূর্ণিমার পর সেইগুলি বাড়ী বাড়ী বিতরণ হয়ে থাকে, সুত্রং ছয় সাত দিনের মরা পচা পাঁঠা কেমন উপাদেয়, তা পাঠক আপনিই বিবেচনা করুন। শেষে গ্রহীতাদের সেই পাঠা বিদেয় কত্তে ঘর হতে পয়সা বার কত্তে হয়! আমরা যে পূর্ব্বে আপনাদের কাছে সহরের সর্দ্দার মূর্খের গল্প করেচি ইনিই তিনি! এ দিকে ক্রমে বিবাহের গোল চুকে গেল; পদ্মলোচন বিষয়কৰ্ম্ম কত্তে লাগলেন। তিনি নিত্যনৈমিত্তিক দোল দুর্গোৎসব প্রভৃতি বার মাসে তের পার্ব্বণ ফাঁক দিতেন না, ঘেঁটু পূজাতেও চিনির নৈবিদ্য ও সখের যাত্রী বরাদ্দো ছিলো, আপনার বাড়ীতে যে রকম ধূম করে পূজো আচ্ছা করেন, রক্ষিতা মেয়েমানুষ ও অনুগত দশ বারো জন বিশিষ্ট ব্রাহ্মণের বাড়ীতে তেমনি ধূমে পূজো করাতেন। নিজের ছেলের বিবাহের সময়ে তিনি আগে চল্লিশ জন আইবুড়ো বংশজের বিয়ে দিয়ে দেন। ইংরেজি লেখাপড়ার প্রাদুর্ভাবে রামমোহন রায়ের জন্মগ্রহণে ও সত্যের জ্যোতিতে হিন্দুধর্ম্মের যে কিছু দুরবস্থা দাঁড়িয়েছিলো, পদ্মলোচন কায়মনে তার অপনয়নে কৃতসংকল্প হলেন। কিন্তু তিনি, কি তার ছেলেরা দেশের ভালোর জন্য একদিনও উদ্যত হন নি—শুভ কৰ্ম্মে দান দেওয়া দূরে থাকুক, সে বৎসরের উত্তর-পশ্চিমের ভয়ানক দুর্ভিক্ষেও কিছুমাত্র সাহায্য করেন নি, বরং দেশের ভালো করবার জন্য কেউ কোন প্রস্তাব নিয়ে তাঁদের কাছে উপস্থিত হলে তারে কৃশ্চান ও নাস্তিক বলে তাড়িয়ে দিতেন—এক শ বেলেল্লা বামুন ও দু শ মোসাহেব তাঁর অন্নে প্রতিপালিত হতো—তাতেই পদ্মলোচনের বংশ মহা পবিত্র বলে সহরে বিখ্যাত হয়। লেখা-পড়া শেখা বা তার উৎসাহ দেওয়ার পদ্ধতি পদ্মলোচনের বংশে ছিল না, শুদ্ধ নামটা সই কত্তে পাল্লেই বিষয় রক্ষা হবে, এই তাঁদের বংশপরম্পরার স্থির সংস্কার ছিল। সরস্বতী ও সাহিত্য ঐ বংশের সম্পর্ক রাখতেন না! ঊনবিংশতি শতাব্দীতে হিন্দুধৰ্ম্মের জন্য সহরে কোন বড়মানুষ তার মত পরিশ্রম স্বীকার করেন নাই। যে রকম কাল পড়েছে, তাতে আর কেউ যে তাদৃক যত্নবান হন, তারও সম্ভাবনা নাই। তিনি যেমন হিন্দুধর্মের বাহ্যিক গোঁড়া ছিলেন, অন্যান্য সৎকৰ্ম্মেও তার তেমনি বিদ্বেষ ছিল; বিধবাবিবাহের নাম শুনলে তিনি কানে হাত দিতেন, ইংরেজী পড়লে পাছে খানা খেয়ে কৃশ্চান হয়ে যায়, এই ভয়ে তিনি ছেলেগুলিকে ইংরাজী পড়াননি, অথচ বিদ্যাসাগরের উপর ভয়ানক বিদ্বেষ নিবন্ধন সংস্কৃত পড়ানও হয়ে উঠে নাই, বিশেষতঃ শূদ্রের সংস্কৃততে অধিকার নাই, এটিও তাঁর জানা ছিল; সুতরাং পদ্মলোচনের ছেলেগুলিও “বাপকা বেটা সেপাইকা ঘোড়া”র দলেই পড়ে। কিছুদিন এই রকম অদৃষ্টচর লীলা প্রকাশ করে, আশী বৎসর বয়সে পদ্মলোচন দেহ পরিত্যাগ কল্লেন-মৃত্যুর দশ দিন পূর্ব্বে একদিন হঠাৎ অবতারের সর্বাঙ্গ বেদনা করে। সেই বেদনাই ক্রমে বলবর্তী হয়ে তার শয্যাগত কল্লে–তিনি প্রকৃত হিন্দু, সুতরাং ডাক্তারী চিকিৎসায় ভারী দ্বেষ কত্তেন, বিশেষতঃ তাঁর ছেলেবেলা পর্য্যন্ত সংস্কার ছিল, ডাক্তার অষুধ মাত্রেই মদ মেশান, সুতরাং বিখ্যাত বিখ্যাত কবিরাজ মশাইদের দ্বারা নানা প্রকার চিকিৎসা করান হয়। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। শেষে আত্মীয়েরা কবিরাজ মশাইদের সঙ্গে পরামর্শ করে শ্ৰীশ্রী ঁভাগীরথীতটস্থ কল্লেন, সেখানে তিন রাত্তির বাস করে মহাসমারোহে প্রায়শ্চিত্তের পর সজ্ঞানে রাম ও হরিনাম জপ কত্তে কত্তে প্রাণত্যাগ করেন। পাঠক! আপনি অনুগ্রহ করে আমাদের সঙ্গে বহু দূর এসেছেন। যে পদ্মলোচন আপনাদের সম্মুখে জন্মালেন, আবার মলেন, শুদ্ধ তাঁর নিজের চরিত্র আপনারা অবগত হলেন এমন নয়, সহরের অনেকের চরিত্র অবগত হলেন। সহরের বড়মানুষদের মধ্যে অনেকেই পদ্মলোচনের জুড়িদার, কেউ কেউ দাদা হতেও সরেস! যে দেশের বড়লোকের চরিত্র এই রকম ভয়ানক, এই রকম বিষময়, সে দেশের উন্নতি প্রার্থনা করা নিরর্থক। যাদের হতে উন্নতি হবে, তাঁরা আজও পশু হতেও অপকৃষ্ট ব্যবহারের সর্ব্বদাই পরিচয় দিয়ে থাকেন তাঁরা ইচ্ছা করে আপনা আপনি বিষময় পথের পথিক হন; তাঁরা যে সকল দুষ্কৰ্ম্ম করেন, তার যথারূপ শাস্তি নরকেও দুষ্প্রাপ্য। জন্মভূমি-হিতচিকীর্ষুরা আগে এই সকল মহাপুরুষদের চরিত্র সংশোধন করবার যত্ন পান, তখন দেশের অবস্থায় দৃষ্টি করবেন; নতুবা বঙ্গদেশের যা কিছু উন্নতি প্রার্থনায় যত্ন দেবেন, সকলই নিরর্থক হবে। “আলালের ঘরের দুলাল” লেখক—বাবু, টেকচাঁদ ঠাকুর বলেন, “সহরের মাতাল বহুরূপী;” কিন্তু আমরা বলি, সহরের বড় মানুষের নানারূপী—এক এক বাবু এক এক তরো, আমরা চড়কের নক্সায় সেগুলিই প্রায়ই গড়ে বর্ণন করেচি, এখন ক্রমশঃ তারি বিস্তার বর্ণন করা যাবে-তারি প্রথম উঁচুকে দল খাস হিন্দু; এই হঠাৎ অবতারের নক্সাতেই আপনারা সেই উঁচুকেতার খাস হিন্দুদের চরিত্র জানতে পাল্লেন—এই মহাপুরুষেরাই রিফমেশনের প্রবল প্রতিবাদী, বঙ্গসুখ-সৌভাগ্যের প্রলয় কণ্টক ও সমাজের কীট। হঠাৎ অবতারের প্রস্তাবে পাঠকদের নিকট আমরাও কথঞ্চিৎ আত্ম-পরিচয় দিয়ে নিয়েছি; আমরা ক্রমে আরো যত ঘনিষ্ঠ হবো, ততই রং ও নক্সার মাঝে মাঝে সং সেজে আসবে;-আপনারা যত পারেন, হাততালি দেবেন ও হাসবেন!
কালীপ্রসন্ন সিংহ
১.২৮ মাহেশের স্নানযাত্রা কালীপ্রসন্ন সিংহ মাহেশের স্নানযাত্রা গুরুদাস গুঁই সেরুড় কোম্পানীর বাড়ীর মেট মিস্তিরি। তিরশ টাকা মাইনে, সওয়ায় দশ টাকা উপরি রোজগারও আছে। গুরুদাসের চাঁপাতলাঞ্চলে একটি খোলার বাড়ী আছে, পরিবারের মধ্যে বুড়ো মা, বালিকা স্ত্রী ও বিধবা পিসী মাত্র। গুরুদাস বড় সাখরচে লোক। মা দশ টাকা রোজগার করেন, সকলই খরচ হয়ে যায়। এমন কি, কখন কথন মাস কাবারের পূর্ব্বে গয়না খানা ও জিনিসটে পত্তরটাও বাঁধা পড়ে। বিশেষতঃ আষাঢ় শ্রাবণ মাসে ইলিশ মাছ ওটবার পূর্ব্বে ও ঢ্যালাফ্যালা পার্ব্বণে গুরুদাসের দু মাসের মাইনেই খরচ হয়। ভাদ্রমাসের আনন্দটি বড় ধূমে হইয়া থাকে। আর পিটে-পাৰ্ব্বণেও দশ টাকা খরচ হয়েছিল —ক্রমে স্নানযাত্রা এসে পড়লো। স্নানযাত্রাটি পরবের টেক্কা, তাতে আমোদের চূড়ান্ত হয়ে থাকে। সুতরাং স্নানযাত্রা উপলক্ষে গুরুদাস বড়ই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। খাওয়ারও অবকাশ রইল না; ক্রমে আরও পাঁচ ইয়ার জুটে গেল। স্নানযাত্রায় কি কি রকম আমোদ হবে, তাই তদ্বির ও পরামর্শ হতে লাগলো; কেবল দুঃখের বিষয় চাঁপাতলার হলধর বাগ মতিলাল বিশ্বেস ও হারাধন দাস, গুরুদাসের বুজুম্ ফ্রেণ্ড ছিলেন,–কিন্তু কিছুদিন হলো হলধর একটা চুরী মামলায় গেরেপ্তার হয়ে দু বছরের জন্য জেলে গেছেন, মতি বিশ্বাস মদ খেয়ে পাতকোর ভিতরে পড়ে গিয়েছিলেন, তাতেই তার দুটি পা ভেঙ্গে গিয়েছে, আর হারাধন গোটাকতক টাকা বাজার-দেনার জন্য ফরাসডাঙ্গায় সরে গেছেন; সুতরাং এবারে তাঁদের বিবাহে স্নানযাত্রাটা ফাঁক ফাঁক লাগছে কিন্তু তাহলে কি হয়–সংবৎসরের অমোদটা বন্ধ করা কোন ক্রমেই হতে পারে না বলেই নিতান্ত গর্মিতে থেকেও গুরুদাসকে স্নানযাত্রায় যাবার আয়োজন কত্তে হচ্ছে। এদিকে পাঁচ ইয়ারের পরামর্শে সকল রকম জিনিসের আয়োজন হতে লাগলো-গোপাল দৌড়ে গিয়ে একখানি বজরা ভাড়া করে এলেন। নবীন আতুরী, আনিস, রমও গাজীর ভার নিলেন। ব্রজ ফুলূরী ও বেগুন ভাজার বায়না দিয়ে এলেন–গোলাবী খিলীর দোনা, মোমবাতি ও মিটে-কড়া তামাক ও আর আর জিনিসপত্র গুরুদাস স্বয়ং সংগ্রহ করে রাখলেন। পূৰ্ব্বে স্নানযাত্রার বড় ধূম ছিল—বড় বড় বাবুরা পিলেস, কলের জাহাজ, বোট ও বজরা ভাড়া করে মাহেশ যেতেন; গঙ্গার বাচখেলা হতো। স্নানযাত্রার পর রাত্তির ধরে খেমটা ও বাইয়ের হাট লেগে যেতো! কিন্তু এখন আর সে আমোদ নাই–সে রাম নাই সে অযোধ্যাও নাই—কেবল ছুতোর, কাঁসারি, কামার ও গন্ধবেণে মশাইরা যা রেখেচেন! মধ্যে মধ্যে ঢাকা অঞ্চলের দু চার জমিদারও স্নানযাত্রার মান রেখে থাকেন; কোন কোন ছোকরাগোছের নতুন বাবুরাও স্নানযাত্রায় আমোদ করেন বটে! ক্রমে সে দিনটি দেখতে দেখতে এল। ভোর না হতে হতেই গুরুদাসের ইয়াররা সঙ্গে গুজে তইরি হয়ে তাঁর বাড়ীতে উপস্থিত হলেন। গোপাল এক জোড়া লাল রঙ্গের এষ্টকীং (মোজা) পরে দিয়েছিলেন, পেতলের বড় বড় বোতাম দেওয়া সবুজ রঙ্গের একটি কনুই ও গুলদার ঢাকাই উড়ুনী তার গায়ে ছিল; আর একটি বিলিতী পেতলের শিল আংটিও আঙ্গুলে পরেছিলেন—কেবল তাড়াতাড়িতে জুতোজোড়াটি কিনতে পারেন নাই বলেই শুধু পায়ে আসা হয়েছে। নবীনের ফুলদার ঢাকাইখানি বহুকাল বোপর বাড়ী যায় নি, তাতেই যা একটু ময়লা বোধ হচ্ছিলো, নতুবা তার চার আঙ্গুল চাটালো কালাপপড়ে ধোপদস্ত ধুতিখানি সেই দিন মাত্র পাট ভাঙ্গা হয়েছিল-মজাইটিও বিলক্ষণ দেবো ছিল। জরু সম্প্রতি ইয়ার্ডে কৰ্ম্ম হয়েছে, বয়সও অল্প, সুতরাং আজও ভাল কাপড়-চোপড় করে উঠতে পারেন নি, কেবল গত বৎসর পূজার সময়ে তার আই, ন’সিকে নিয়ে, যে ধুতি-চাদর কিনে দেয়, তাই পরে এসেছিলেন; সেগুলি আজো কোরা থাকায় তারে দেখতে বড় মন্দ হয় নি। আরো তাঁর ধুতি চাঁদারর সেট নতুন বল্লেই হয়–বলতে কি তিনি তো বেশীদিন পরেন নি, কেবল পুজোর সময়ে সপ্তমী পূজোর দিন পরে গোকুল দাঁয়ের প্রতিমে দেখতে গিয়েছিলেন—ভাসান দেখতে যাবার সময়ে একবার পরেন অর হাটখোলার যে সেই ভারী বারোইয়ারি পূজো হয়, তাতেই একবার পরে গোপালে উড়ের যাত্রা শুনতে গেছলেন—তা ছাড়া অমনি সিকের উপোর হাঁড়ির মধ্যে তোলাই ছিল। ইয়ারেরা আসবামাত্র গুরুদাস বিছানা থেকে উঠে দাওয়ায় বসলেন। নবীন, গোপাল ও ব্ৰজ খুঁটি ঠাসান দিয়ে উবু হয়ে বসলেন। গুরুদাসের মা চক্‌মকী, শোলা, টিকে ও তামাকের মেটে বাক্সটি বার করে দিলেন। নবীন চক্‌মকী ঠুকে টিকে ধরিয়ে তামাক সাজলেন। ব্রজ পাতকোতলা থেকে হুঁকোটি ফিরিয়ে এনে দিলেন; সকলেরই এক একবার তামাক খাওয়া হলো! গুরুদাস তামাক খেয়ে হাত-মুখ ধুতে গেলেন; এমন সময় ঝম্ ঝম্ করে এক পসলা বৃষ্টি এলো। উঠানের ব্যাংগুলো থপ থপ করে নাপাতে নাপাতে দাওয়ায় উঠতে লাগলো, নবীন, গোপাল, ব্রজ তারই তামাসা দেখতে লাগলেন। নবীন একটা সখের গাওনা জুড়ে দিলেন– “সখের বেদিনী বলে কে ডাক্‌লে আমারে।” বর্ষাকলের বৃষ্টি, মানুষের অবস্থার মত অস্থির! সৰ্ব্বদাই হচ্ছে যাচ্চে তার ঠিকানা নাই। ক্রমে বৃষ্টি থেমে গেল। গুরুদাসও মুখ-হাত ধুয়ে এসেই মারে খাবার দিতে বল্লেন। ঘরে এমন তইরি খাবার কিছুই ছিল না, কেবল পান্তাভাত আর তেঁতুল-দেওয়া মাছ ছিল, তাঁর মা তাই চারিখানি মেটে খোরায় বেড়ে দিলেন; গুরুদাস ও তাঁর ইয়ারেরা তাই বহুমান করে খেলেন। পূৰ্ব্বে স্থির হয়েছিল রাত্তিরের জোয়ারেই যাওয়া হবে; কিন্তু স্নানযাত্রাটি যে রকম আমাদের পরব, তাতে রাত্তিরের জোয়ারে গেলে স্নানযাত্রার দিন বেলা দুপুরের পর মাহেশ পৌঁছুতে হয়, সুতরাং দিনের জোয়ারে যাওয়াই স্থির হলো। এদিকে গির্জ্জের ঘড়িতে টুং টাং টুং টাং করে দশটা বেজে গেল। নবীন, ব্রজ, গোপাল ও গুরুদাস খেয়ে দেয়ে পানৃতামাক খেয়ে, তোবড়াতুবড়ী নিয়ে দুর্গা বলে যাত্রা করে বেরুলেন। তাঁর মা একখানি পাখা ও দুটি ধামা কিনে আনতে বল্লেন। তাঁর স্ত্রী পূর্ব্বের রাত্তিরে একটি চিত্তির করা হাঁড়ী, ঘুন্সি ও গুরিয়া পুতুল আনতে বলেছিল আর তার বিধবা পিসীর জন্য একটি খাজা কোয়াওলা কাঁটাল, কানাইবাঁশী কলা ও কুলী বেগুন আনতে প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন। গুরুদাসের পোষাকটিও নিতান্ত মন্দ হয় নি। তিনি একখানি সরেশ গুলদার উড়ুনী গায়ে দিয়েছিলেন, উড়ুনীখানি চল্লিশ টাকার কম নয়—কেবল কাঠের কুচো বাঁধবার দরুণ চার পাঁচ জায়গায় একটু একটু খোচা গেছল; তার গায়ে একটি বিলিতি ঢাকা প্যাটানের পিরাণ, তার ওপর বুলু রঙ্গের একটি রঙ্গের হাপ চাপকান; তিনি “বেঁচে থাকুক বিদ্দেসাগর চিরজীবী হয়ে” পেড়ে এক শান্তিপুরে ফরমেসে ধুতি পরেছিলেন। জুতো জোড়াটিতে রুপোর বক্‌লস্‌ দেওয়া ছিল। ক্রমে গুরুদাস ও ইয়ারেরা প্রসন্নকুমার ঠাকুরের ঘাটে পৌঁছিলেন। সেথায় কেদার, জগ, হরি ও নারায়ণ তাঁদের জন্য অপেক্ষা করে ছিল; তখন সকলে একত্র হয়ে বজরায় উঠলেন! মাঝীরা শুটকী মাছ, লঙ্কা ও কড়াইয়ের ডাল দিয়ে ভাত খেতে বসেছিল। জোয়ারও আসে নাই, সুতরাং কিছুক্ষণ নৌকা খুলে দেওয়া বন্ধ রইলো। কিন্তু পাঁচো ইয়ার নৌকায় উঠেই আয়েস জুড়ে দিলেন। গোপাল সন্তর্পণে জবাবির চৌপলের শোলার ছিপিটি খুলে ফেল্লেন। ব্ৰজ এক ছিলেম গাঁজা তইরি কত্তে বসলো—আতুরী ও জবাবীরা চলতে সুরু হলো, ফুলুরি ও বেগুনভাজীরা সেকালের সতী স্ত্রীর মত আতুরীদের সহগমন কত্তে লাগলেন–মেজাজ গরম হয়ে উঠলো—এদিকে নারাণ ও কেদার বাঁয়ার সঙ্গতে— “হেসে খেলে নাওরে যাদু মনের সুখে। কে কবে, যাবে শিঙে ফু’কে। তখন কোথা রবে বাড়ী, কোথা রবে জুড়ি, তোমার কোথায় রবে ঘড়ি, কে দেয় ট্যাঁকে। তখন নুড়ো জ্বেলে দিবে ও চাঁদ মুখে॥” গান জুড়ে দিলেন—ব্রজ গাঁজায় দম মেরে আড়ষ্ট হয়ে জোনাকি পোকা দেখতে লাগলেন; গোপাল ও গুরুদাসের ফুর্ত্তি দেখে কে! এদিকে সহরেও স্নানযাত্রার যাত্রাদের গরী ধূম পড়ে গেছে। বুড়ী মাগী, কলা বউয়ের মত আধ ঘোমটা দেওয়া ক্ষুদে ক্ষুদে কনে বউ ও বুকের কাপড় খোলা হাঁ-করা ছুড়ীরা রাস্তা যুড়ে স্নানযাত্রা দেখতে চলেচে; এমন কি রাস্তায় গাড়ী পাল্কী চলা ভার! আজ সহরে কেরাঞ্চী গাড়ীর ঘোড়ায় কত ভার টানতে পারে, তার বিবেচনা হবে না, গাড়ীর ভিতর ও পিছনে কত তাংড়াতে পারে, তারই তকরার হচ্চে;—এক একখানি গাড়ীর ভেতর দশজন, ছাতে দুজন, পেছনে এক জন ও কোচবাকসে দুজন, একুনে পোনের জন, এ সওয়ার তিনটি করে আঁতুড়ে ছেলে ফাও! গেরস্তর মেয়েরাও বড় ভাই, শ্বশুর, ভাতার, ভাদ্দর-বউ ও শাশুড়ীতে একত্র হয়ে গেছেন; জগন্নাথের কল্যাণে মাহেশ আজ দ্বিতীয় বৃন্দাবন। গঙ্গারও আজ চূড়ান্ত বাহার! বোট, বজরা, পিনেস ও কলের জাহাজ গিজগিজ কচ্চে; সকলগুলি থেকেই মাৎলামো, রং, হাসি ও ইয়ারকির গররা উঠচে; কোনটিতে খ্যামটা নাচ হচ্চে, গুটি ত্রিশ মোসাহেব মদে ও নেশায় ভো হয়ে রং কচ্চেন; মধ্যে ঢাকাই জালার মত, পেল্লাদে পুতুলের ও তেলের কুপোর মত শরীর, দাঁতে মিসি, হাতে ইষ্টিকবচ, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা, তাতে ছোট ছোট ঢোলের মত গুটি দশ মাদুলী ও কোমরে গোট, ফিনফিনে ধুতিপরা ও পৈতের গোচ্ছা গলায়-মৈমনসিং ও ঢাকা অঞ্চলের জমিদার, সরকারী দাদা ও পাতান কাকাদের সঙ্গে খোকা সেজে ন্যাকামি কচ্চেন। বয়েস ষাট পেরিয়েচে, অথচ ‘রাম’কে ‘আঁম’ ও ‘দাদা’ ‘কাকা’কে ও ‘দাঁদা’ বা ‘কাঁকা’ বলে–এরাই কেউ কেউ রঙ্গপুর অঙ্গলে ‘বিদ্যোৎসাহী’ কবলান। কিন্তু চক্র করে তান্ত্রিক মতে মদ খান ও বেলা চারটে অবধি পুজো করেন। অনেকে জন্মাবচ্ছিন্নে সূর্যোদয় দেখেছেন কি না সন্দেহ। কোন পিনেসে একদল সহুরে নব্যবাবুর দল চলেচে, ইংরাজী ইস্পিচে লিডনি মরের শ্রাদ্ধ হচ্ছে। গাওনার সুরে জমে যাচ্চে। কোন্ পান্সিখানিতে একজন তিলকাঞ্চুনে নবশাখবাবু মোসাহেব ও মেয়েমানুষের অভাবে পিসতুতো ভাই, ভাগ্নে ও ছোট ভাইটিকে নিয়ে চলেছেন–বাঁয়া নাই, গোলাবিখিলি নাই, এমন কি একটা থেলে হুঁকোরও অপ্রতুল। অথচ এম্নি সখ যে, পান্সির পাটাতনের তক্তা বাজিয়ে গুন্ গুন্ করে গাইতে গাইতে চলেচেন। যেমন করে হোক্, কায়ক্লেশে শুদ্ধ হওয়াটা চাই! এ দিকে আমাদের নায়ক গুরুদাসবাবুর বজরায় মাছিদের খাওয়া দাওয়া হয়েছে। দুপুরের নমাজ পড়েই বজরা খুলে দেবে। এমন সময়ে গোপাল গুরু দাসকে লক্ষ্য করে বল্লেন, “দেখ ভাই গুরুদাস! আমাদের আমোদের চূড়ান্ত হয়েছে, একটার জন্যে বড় ফাঁক ফাঁক দেখাচ্ছে, কেবল মেয়ে মানুষ নাই; কিন্তু মেয়েমানুষ না হলে তো স্নানযাত্রায় আমোদ হয় না!” ‘যা বল তা কও’—অমনি কেদার ‘ঠিক বলেচো বাপ! বলে কথার খি ধরে নিলেন; অমনি নারায়ণ বলে উঠলেন, “বাবা, যে নৌকাখানায় তাকাই সকলেই মাল-ভরা, কেবল আমরা ব্যাটারাই নিরিমিষ্‌ষি! আমরা যেন বাবার পিণ্ডি দিতে গয়া যাচ্চি।” গুরুদাসের মেজাজ আলি হয়ে গেছে, সুতরাং “বাবা, ঠিক বলেচো! আমিও তাই ভাবছিলেম; ভাই! যত টাকা লাগে, তোমরা তাই দিয়ে একটা মেয়েমানুষ নে এসো, আমি বাবা তাতে পেচপও নই, গুরুদাসের সাদা প্রাণ!” এই বলতে না বলতেই নারাণ, গোপাল, হরি ও ব্রজ নেচে উঠলেন ও মাঝিদের নৌকা খুলতে মানা করে দিয়ে মেয়েমানুষের সন্ধানে বেরুলেন। এ দিকে গুরুদাস, কেদার ও আর আর ইয়ারেরা চীৎকার করে– যাবি যাবি যমুনা পারে ও রঙ্গিণী। কত দেখবি মজা রিষড়ের ঘাটে শামা বামা দোকানী। কিনে দেবো মাথাঘষা, বারুইপুরে ঘুন্সীখাসা, উভয়ের পূরাবি আশা, ওলো সোনামণি॥” গান ধরেচেন, এমন সময় মেকিণ্টশ বরন্ কোম্পানীর ইয়ার্ডের ছুতরেরা এক বোট ভাড়া করে মেয়েমানুষ নিয়ে আমোদ কত্তে কত্তে যাচ্চিল, তারা গুরুদাসকে চিনতে পেরে তাদের নৌকা থেকে “চুপে থাক থাক রে বেটা কানায়ে ভাগ্নে। গরু চরাস লাঙ্গল ধরিস, এতে তোর এত মনে॥” গাইতে গাইতে হুররে ও হরিবোল দিয়ে, সাঁই সাঁই করে বেরিয়ে গেল। গুরুদাসেরাও দুউও ও হাততালি দিতে লাগলেন। কিন্তু তাঁর নৌকায় মেয়েমানুষ না থাকাতে সেটি কেমন ফাঁক ফাঁক বোধ হতে লাগলো। এদিকে বোটওয়ালারাও চেপে দুউও ও হাততালি দিয়ে, তার যথার্থ অপ্রস্তুত করে দিয়ে গেল। গুরুদাস নেশাতেও বিলক্ষণ পেকে উঠেছিলেন। সুতরাং ওর ঠাট্টা করে আগে বেরিয়ে গেল, ইটি তিনি বরদাস্ত কত্তে পানে না। শেষে বিরক্ত হয়ে ইয়ারদের অপেক্ষা না করে টলতে টলতে আপনিই মেয়েমানুষের সন্ধানে বেরুলেন; কেদার ও আর আর ইয়ারেরা– “আয় আয় মকর গঙ্গাজল। কাল গোলাপের বিয়ে হবে সৈতে যাব জল। গোলাপ ফুলের হাতটি ধরে, চলে যাব সোহাগ করে, ঘোমটার ভিতর খোটা নেচে ঝম্ ঝমাবে মল।” গান ধরে গুরুদাসের অপেক্ষায় রইলেন। ঘণ্টাক্ষণেক হলো, গুরুদাস নৌকা হতে গেছেন, এমন সময়ে ব্রজ ও গোপাল ফিরে এলেন। তাঁরা সহরটি তন্ন তন্ন করে খুজে এসেছেন, কিন্তু কোথাও একজন মেয়েমানুষ পেলেন না। তাঁদের জানত সহরের ছুটো গোছের বাচতে বাকী করেন নাই। কেদার এই খবর শুনে একেবারে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন (জয়কষ্টো মুখুজ্জে জেলে যাওয়াতে তাঁর প্রজাদের এতো দুঃখ হয় নাই, রাবণের হাতে রামের কাটা মুণ্ড দেখে অশোকবনে সীতে কত বা দুঃখিত হয়েছিলেন?) ও অত্যন্ত দুঃখে এই গান ধরে, গুরুদাসের অপেক্ষায় রইলেন। হৃৎপিঞ্জরের পাখী উড়ে এলো কার। ত্বরা করে ধর গো সখি দিয়ে পীরিতের আধার।। কোন কামিনীর পোষা পাখী, কাহারে দিয়েছে ফাঁকি, উড়ে এলো দাঁড় ছেড়ে, শিক্লীকাটা ধরা ভার।। এমন সময়ে গুরুদাসও এসে পড়লেন—গুরুদাস মনে করেছিলেন যে, যদি তিনিই কোন মেয়েমানুষের সন্ধান নাই পেলেন— তাঁর ইয়ারের একটা একটাকে অবশ্যই জুটিয়ে থাক্‌বে। এদিকে তার ইয়ারৈরা মনে করেছিলেন, যদিও তারাই কোন মেয়েমানুষের সন্ধান কত্তে পাল্লে না, গুরুদাসবাবু আর ছেড়ে আসবেন না। এদিকে শুরুদান নৌকায় এসেই, মেয়েমানুষ না দেখতে পেয়ে, মহা দুঃখিত হয়ে পড়লেন। কিন্তু নেশার এমন অনিৰ্বনীয় ক্ষমতা যে, তাতেও তিনি উৎসাহহীন হলেন না; গুরুদাস পুনরায় ইয়ারদের স্তোক দিয়ে মেয়েমানুষের সন্ধানে বেরুলেন। কিন্তু তিনি কোথায় গেলে পূর্ণমনোরথ হবেন, তা নিজেও জানে না। বোধ হয় তিনি যার অধীন ও আজ্ঞানুবর্তী হয়ে যাচ্চিলেন, কেবল তিনি মাত্র সে কথা বলতে পাতেন। গুরুদাসকে পুনরায় যেতে দেখে, তার ইয়ারেরাও তার পেছনে পেছুনে চল্লেন! কেবল নারায়ণ, ব্ৰজ ও কেদার নৌকায় বসে অত্যন্ত দুঃখেই— নিশি যায় হায় হায় কি করি উপায়। শ্যাম বিহনে সখি বুঝি প্রাণ যায়॥ হের হের শশধর অস্তাচলগত সখী প্রফুল্লিত কমলিনী, কুমুদ মলিনমুখী আর কি আসিবে কান্ত তুষিতে আমায়॥ গাইতে লাগলেন—মাঝীরা “জুয়ার বই যায়” বলে বারাম্বার ত্যক্ত কত্তে লাগলো, জলও ক্রমশ উড়েনচণ্ডীর টাকার মত জায়গা খালি হয়ে হটে যেতে লাগলো,–ইয়ারদলের অসুখের পরিসীমা রইল না! গুরুদাস পুনরায় সহরটি প্রদক্ষিণ কল্লেন—সিঁদুরেপটী শোভাবাজারের ও বাগবাজারের সিদ্ধেশ্বরীতলাটাও দেখে গেলেন, কিন্তু কোনখানেই সংগ্রহ কত্তে পাল্লেন না-শেষে আপনার বাড়ীতে ফিরে গেলেন। আমরা পূর্ব্বেই বলেছি যে, গুরুদাসের এক বিধবা পিসী ছিল। গুরুদাস বাড়ী গিয়ে তার পিসীরে বল্লেন যে, “পিসি! আমাদের একটি কথা রাখতে হবে।” তার পিসী বল্লেন, “বাপু গুরুদাস। কি কথা রাখতে হবে? তুমি একটা কথা বল্লে আমরা কি রাখবো না? আগে বল দেখি কি কথা?” গুরুদাস বল্লেন, “পিসি! যদি তুমি আমাদের সঙ্গে স্নানযাত্রা দেখতে যাও, তা হলে বড় ভাল হয়। দেখ পিসি, সকলে একটি দুটি মেয়েমানুষ নিয়ে স্নালযাত্রায় যাচ্চে, কিন্তু পিসি, শুদুই বা কেমন করে যাওয়া হয়? আমার নিজের জন্য যেন না হলো, কিন্তু পাঁচো ইয়ারের শুধু নিরিমিষ রকমে যেতে মন সচ্চে না—তা পিসি! অমোদ কত্তে কত্তে যাবো, তুমি কেবল বসে যাবে, কার সাদ্দি তোমারে কেউ কিছু বলে।” পিসী এই প্রস্তাব শুনে প্রথমে গাঁইগুঁই কত্তে লাগলেন, কিন্তু মনে মনে যাবার ইচ্ছাটাও ছিল, সুতরাং শেষে গুরুদাস ও ইরারদের নিতান্ত অনুরোধ এড়াতে না পেরে ভাইপোর সঙ্গে স্নানযাত্রায় গেলেন। ক্রমে পিসীকে সঙ্গে নিয়ে গুরুদাস ঘাটে এসে পৌঁছিলেন; নৌকার ইয়ারের গুরুদাসকে মেয়েমানুষ নিয়ে আসতে দেখে, হুরুরে ও হরিবোল ধ্বনি দিয়ে বাঁয়ায় দামামার ধ্বনি কত্তে লাগলো, শেষে সকলে নৌকোয় উঠেই নৌকো খুলে দিলেন। দাঁড়িরা কোসে ঝপাঝপ দাঁড় বাইতে লাগলো। মাঝি হাল বাগিয়ে ধরে জোরে দেদার ঝিঁকে মাত্তে লাগলো। গুরুদাস ও সমস্ত ইয়ারে– “ভাসিয়ে প্রেমন্ত্রী হরি যাচ্চ যমুনায়।। গোপীর কুলে থাকা হলো দায়। আরে ও! কদমতলায় বসি বাঁকা বাঁশরী বাজায়, আর মুচকে হেসে নয়ন ঠেরে স্কুলে বউ ভুলায়।। হরর্‌ হো! হো! হো!” গাইতে লাগলেন, দেখতে দেখতে নৌকাখানি তীরের মত বেরিয়ে গেল। বড় বড় যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই আজ দুপুরের জোয়ারে নৌকা ছেড়েছেন। এদিকে জোয়ারও মরে এলো, ভাটার সারানী পড়লো–নোঙ্গর-করা ও খোঁটায় বাঁধা নৌকাগুলির পাছা ফিরে গেল— জেলেরা ডিঙ্গি চড়ে বেঁউতি জাল তুলতে আরম্ভ কল্লে। সুতরাং যিনি যে অবধি গেছেন, তারে সেইখানেই নোঙ্গর কত্তে হলো—তিলকাকুন বাবুদের পান্সি, ডিঙ্গি, বজরা ও বোট বাজার পোট জায়গায়। ভিড়ানো হলো–গয়নার যাত্রীরা কিনের পাশে পাশে লগি মেরে চল্লেন! পেনেটি, কামারহাটি কিম্বা খড়দহে জলপান করে, খেয়া দিয়ে মাহেশ পৌঁছুবেন। কমে দিনমণি অস্ত গেলেন। অভিসারিণী সন্ধ্যা অন্ধকারের অনুসরণে বেরুলেন। প্রিয়সখী প্রকৃতি প্রিয়কার্যের অবসর বুঝে ফুলদামি উপহার দিয়ে বাসরের নিমন্ত্রণ গ্রহণ কল্লেন। বায়ু মৃদু মৃদু বীজন করে পশে দূর কত্তে লাগলেন; বক ও বালহাঁসেরা শ্রেণী বেঁধে চল্লো, চক্ৰবাকমিথুনের কাল সমর প্রদোষ, সংসারের সুখবর্দ্ধনের জন্য উপস্থিত হলো। হায়! সংসারের এমনি বিচিত্র গতি যে, কোন কোন বিষয় একের অপার দুঃখাবহ হলেও, শতকের সুখাস্পদ হয়ে থাকে। পাড়াগাঁ অঞ্চলের কোন কোন গাঁয়ের বওয়াটে ছোঁড়ারা যেমন মেয়েদের সাঁজ সকালে ঘাটে যাবার পূর্ব্বে, পথের ধারে পুরণো শিবের মন্দির, ভাঙ্গা কোটা, পুকুরপাড় ও ঝোপে ঝাপে লুকিয়ে থাকে—তেমনি অন্ধকারও এতক্ষণ চাবি দেওয়া ঘরে, পাতকোর ভেতরে ও জলের জালায় লুকিয়ে ছিলেন—এখন শাঁক-ঘণ্টার শব্দে সন্ধ্যার সাড়া পেয়ে বেরুলেন—তার ভয়ানক মূর্ত্তি দেখে রমণীস্বভাবসুলভ শালীনতায় পদ্ম ভয়ে ঘাড় হেঁট করে চক্ষু বুজে রইলেন; কিন্তু ফচকে ছুঁড়ীদের আঁটা ভার—কুমুদিনীর মুখে আর হাসি ধরে না। নোঙ্গোর-করা ও কিনারার নৌকোগুলিতে গঙ্গাও কথনাতীত শোভা পেতে লাগলেন; বোধ হতে লাগলো যেন গঙ্গা গলদেশে দীপমালা ধারণ করে, নাচতে লেগেচেন। বায়ুচালিত ঢেউগুলি তবলা-বাঁয়ায় কাজ কচ্চে–কোনখানে বালির খালের নীচে একখানি পিনেশ নোঙ্গোর করে বসেছেন—রকমারী বেধড়ক চলছে। গঙ্গার চমৎকার শোভায় মৃদু মৃদু হাওয়াতে ও ঢেউয়ের ঈষৎ  দোলায়, কারু কারু শ্মশানবৈরাগ্য উপস্থিত হয়েছে, কেউ বা ভাবে মজে পূরবী রাগিণীতে– “যে যাবার সে যাক সখী আমি তো যাবো না জলে। যাইতে যমুনাজলে, সে কালা কদম্বতলে, আঁখি ঠেরে আমায় বলে, মালা দে রাই আমার গলে!” গান ধরেচেন; কোনখানে এইমাত্র একখানি বোট নোঙ্গের কল্লে–বাবু ছাদে উঠলেন, অমনি আর আর সঙ্গীরাও পেচনে চল্লো; একজন মোসাহেব মাঝীদের জিজ্ঞাসা কল্লেন, “চাচা! জায়গাটার নাম কি?” অমনি বোটের মাঝী হজুরে সেলাম ঠুকে ‘আইগেঁ কাশীপুর কর্‌তা! এই রতনবাবুর গাট” বলে বক্সিসের উপক্রমণিকা করে রাখলে! বাবুর দল ঘাট শুনে হাঁ করে দেখতে লাগলেন; ঘাটে অনেক বৌ-ঝি গা ধুচ্ছিলো, বাবুদলের চাউনি, হাসি ও রসিকতার ভয়ে ও লজ্জায় জড়সড় হলো, দু একটা পোষ মান্‌বারও পরিচয় দেখাতে ত্রুটি কল্লে না–মোসাহেব দলে মাহেন্দ্রযোগ উপস্থিত; বাবুর প্রধান ইয়ার রাগ ভেঁজে– অনুগত অশ্রিত তোমার। রেখো রে মিনতি আমার। অন্য ঋণ হলে বাঁচিতাম পলালে, এ ঋণে না মলে পরিশোধ নাই! অতএব তার, ভার তোমার, দেখো রে করো নাকো অবিচার। গান জুড়ে দিলেন। সন্ধ্যা-আহ্নিকওয়ালা বুড়ো বুড়ো মিন্‌ষেরা, ক্ষুদে ক্ষুদে ছেলে, নিষ্কর্মা মাগীরা ঘাটের উপর কাতার বেঁধে দাঁড়িয়ে গেল; বাবুরাও উৎসাহ পেয়ে সকলে মিলে গাইতে লাগিলেন—মড়াখেকো কুকুরগুলো খেউ খেউ করে উঠলো, চরন্তী শোয়ারগুলো ময়লা ফেলে ভয়ে ভোঁৎ ভোঁৎ করে খোঁয়াড়ে পালিয়ে গেল। কোন বাবুর বজরা বরানগরের পাটের কলের সামনেই নোঙ্গোর করা হয়েচে, গাঁয়ের বওয়াটে ছেলেরা বাবুদের রঙ্গ ও সঙ্গের মেয়েমানুষ দেখে, ছোট ছোট নুড়ি পাথর, কাদা মাটীর চাপ ছুড়ে অমোদ কর্তে লাগলো, সুতরাং সে ধারের খড়খড়েগুলো বন্ধ কত্তে হলো–আরো বা কি হয়। কোন বাবুর ভাউলেখানি রাসমণির নবরত্নের সামনে নোঙ্গোর করেছে, ভিতরের মেয়েমানুষেরা উঁকী মেরে নবরত্নটি দেখে নিচ্চে। আমাদের নায়কবাবু গুরুদাস বাগবাজারের পোলের আসে পাশেই আছেন; তাঁদের বাঁয়ার এখনও আওয়াজ শোনা যাচ্চে, আতুরী ও আনীসদের বেশীর ভাগ আনাগোনা হচ্চে-আনীস ও রমেদের মধ্যে যাঁরা গেছলেন, তাঁরাই দুনো হয়ে বেরিয়ে আসছেন। ফুলূরী ও গোলাপী খিলিরা দেবতাদের মত বর দিয়ে অন্তর্ধান হয়েছেন, কারু কারু তপস্যার ফললাভও শুরু হয়েছে–স্নেহময়ী পিসী আঁচল দিয়ে বাতাস কচ্চেন; নৌকাখানি অন্ধকার। এমন সময়ে ঝম্‌ ঝম্ করে হঠাৎ এক পশলা বৃষ্টি এলো। একটা গোলমেলে হাওয়া উঠলো, নৌকোর পাছাগুলি দুলতে লাগলো—মাঝীরা পাল ও চট মাথায় দিয়ে, বৃষ্টি নিবারণ কত্তে লাগলো; রাত্তির প্রায় দুপুর! সুখের রাত্রি দেখতে দেখতেই যায়–ক্রমে সুখতারার সিঁতি পরে হাসতে হাসতে ঊষা উদয় হলেন, চাদ তার দিল নিয়ে অমোদ কচ্ছিলেন, হঠাৎ উষারে দেখে, লজ্জায় ম্লান হয়ে কাঁপতে লাগলেন। কুমুদিনী ঘোমটা টেনে দিলেন, পূর্ব্ব দিক ফরসা হয়ে এলো; “জোয়ার আইচে” বলে, মাঝারা নৌকা খুলে দিলে–ক্ৰমে সকল নৌকার সার বেঁধে মাহেশ ও বল্লভপুরে চলো। সকখানিই এখানে রং পোরা, কোন কোনখানিতে গলাভাঙ্গা সুরে– “এখনো রজনী আছে বল কোথা যাবে রে প্রাণ কিঞ্চিৎ বিলম্ব কর হো নিশি অবসান।। যদি নিশি পোহাইত, কোকিলে ঝঙ্কার দিত, কুমুদী মুদিত হতো শশী যেতে নিজ স্থান।” শোনা যাচ্চে। কোনখানি কফিমের মত নিঃশব্দ—কোনখানিতে কান্নার শব্দ কোথাও নেশার গোঁ গোঁ ধ্বনি। যাত্রীদের নৌকো চল্লো, জোয়ারও পেকে এলো, মালীরা জাল ফেলতে আরম্ভ কল্লে–কিনারায় সহরের বড়মানুষের ছেলেদের ট্রকপি ধোপার গাধা দেখা দিলে। ভটচায্যিরা প্রাতঃস্নান কত্তে লাগলেন, মাগী ও মিন্সেরা লজ্জা মাথায় করে কাপড় তুলে হাগতে বসেচে। তরকারীর বজরা সমেত হেটোরা বদ্দিবাটী ও শ্রীরামপুর চল্লো। আড়খেয়ার পাটুনীরে সিকি পয়সায় ও আধ পয়সায় পার কত্তে লাগলো। বদর ও দফর গাজীর ফকীরের ডিঙ্গের চড়ে ভিক্ষে আরম্ভ কল্লে। সূর্য্যদেব উদয় হলেন, দেখে কমলিনী আহ্লাদে ফুটলেন, কিন্তু ইলিশমাছ ধড়ফড়িয়ে মরে গেলেন; হায়! পরশ্রীকাতরদের এই দশাই ঘটে থাকে। যে সকল বাবুদের খড়দ, পেনিটি, অগিড়পাড়া, কামারহাটী প্রভৃতি গঙ্গাতীর অঞ্চলে বাগান আছে, আজ তাঁদেরও ভারী ধূম। অনেক জয়েগার কাল শনিবার ফলে গেছে, কোথাও আজ শনিবার। কারু কদিনই জমাট বন্দোবস্ত—আয়েস ও চোহেলের হদ্দ! বাগানওয়ালা বাবুদের মধ্যে কারু কারু বাচ খেলাবার জন্য পান্‌সী তইরি, হাজার টাকার বাচ হবে। এক মাস ধরে নৌকার গতি বাড়াবার জন্য তলায় চরবি ঘষা হচ্চে ও মাঝিদের লাল উর্দ্দী ও আগু পেচুর বাদসাই নিশেন সংগ্রহ হয়েচে-গ্রামস্থ ইয়ার দল, খড়দর বাবুরা ও আর আর ভদ্দরলোক মধ্যস্থ! বোধ হয়, বাদী মহীন্দর নফর-চীনেবাজারের ক্যাবিনেট মেকর—ভারী সৌখীন—সখের সাগর বল্লেই হয়। এ দিকে কোন যাত্রী মহেশ পৌঁছুলেন, কেউ কেউ নৌকাতেই রইলেন’; দুই একজন ওপরে উঠলেন—মাঠে লোকারণ্য, বেদীমণ্ডপ হতে গঙ্গাতীর পর্য্যন্ত লোকের ঠেল মেরেছে; এর ভিতরেই নানাপ্রকার দোকান বসে গেচে। ভিখিরীরা কাপড় পেতে বসে ভিক্ষা কচ্চে, গায়েনের গাচ্ছে, আনন্দলহরী, একতারা খঞ্জনী ও বাঁয়া নিয়ে বোষ্টমেরা বিলক্ষণ পয়সা কুড়ুচ্চে। লোকের হররা, মাঠের ধূলো ও রোদের তাত একত্র হয়ে, একটি চমৎকার মেওয়া প্রস্তুত করেছে। অনেকে তাই দিল্লীর লাড্ডুর স্বাদে স্বাদ করে সেবা কচ্চেন! ক্রমে বেলা দুই প্রহর বেজে গেল। সুৰ্য্যের উত্তাপে মাথা পুড়ে যাচ্চে, গামছা, রুমাল, চাদর ও ছাতি ভিজিয়েও পার পাচ্ছে না! জগবন্ধু চাঁদমুখ নিয়ে, বেদীর ওপর বসেচেন; চাঁদমুখ দেখে কুমুদিনীর ফোঁটা চুলোয় যাক, প্রলয়তুফানে জেলেডিঙ্গির তফরা খাওয়ার মত, সমাগত কুমুদিনীদের দুর্দশা দেখে কে! ক্রমে বেলা প্রায় একটা বেজে গেল। জগন্নাথের আর স্নান হয় না–দশ আনীর জমিদার ‘মহাশয়’ বাবুরা না এলে, জগন্নাথের স্নান হবে না। কিন্তু পচা আদা ঝাল ভরা তাঁদের আর আসা হয় না; ক্রমে যাত্রীরা নিতান্ত ক্লান্ত হয়ে পড়লো, আসপাশের গাছতলা, আমবাগান ও দরজা লোকে ভরে গেল। অনেকের সর্দ্দিগৰ্ম্মি উপস্থিত, কেউ কেউ শিঙ্গে ফোঁকবার যোগাড় কল্লেন; অনেকেই ধুতুরোফুল দেখতে লাগলো। ডাব ও তরমুজে রণক্ষেত্র হয়ে গেল, লোকের রল্লা দ্বিগুণ বেড়ে উঠলো, সকলেই অস্থির। এমন সময় শোনা গেল, বাবুরা এসেচেন। অমনি জগন্নাথের মাথায় কলসী করে জল ঢালা হলো, যাত্রীরাও চরিতার্থ হলেন। চিঁড়ে, দই, মুড়ি, মুড়কি, চাটিমকলা দেদার উঠতে লাগলো। খোসপোষাকী বাবুরা খাওয়া দাওয়া কল্লেন। অনেকের আমোদেই পেট ভরে গেছে, সুতরাং খাওয়া দাওয়া আবশ্যক হলো না। কিছু বিশ্রামের পর তিনটে বেজে গেল। বাচখেলা আরম্ভ হলো–কার নৌকা আগে গিয়ে নিশেন নেয়, এরই তামাসা দেখবার জন্য সকল নৌকোই খুলে দেওয়া হলো। অবশ্যই এক দল জিৎলেন, সকলে জুটে হারের হাত্তালি ও জিতের বাহবা দিলেন। স্নানযাত্রার আমোদ ফুরুলো। সকলে বাড়ীমুখো হলেন; যত বাড়ী কাছে হতে লাগলো, শেষে ততই গৰ্ম্মিবোধ হতে লাগলো। কাশীপুরের চিনির কল, বালির ব্রিজ, কেউ পার হয়ে প্রসন্নকুমার ঠাকুরের ঘাটে উঠলেন, কেউ বাগবাজার ও আহারীটোলার ঘাটে নাবলেন। সকলেরই বিষণ্ণ বদন—ম্লান মুখ; অনেককেই ধরে তুলতে হলো; শেষ চার পাঁচ দিনের পর আমাদের নাগাড় মরে ফিরতি গোলের দরুণ আমরা গুরুদাসবাবুর নৌকোখানা বেচে নিতে পাল্লেম না। ———- প্রথম ভাগ সমাপ্ত
কালীপ্রসন্ন সিংহ
২.১ রথ কালীপ্রসন্ন সিংহ রথ হে সজ্জন, স্বভাবের সুনির্মল পটে, রসের রঙ্গে,– চিত্রিনু চরিত্র—দেবী সরস্বতীর রবে। কৃপাচক্ষে হের একবার; শেষে বিবেচনামতে, যার যা অধিক আছে তিরস্কার’ কিম্বা ‘পুরস্কার’ দিও তাহা মোরে–বহুমানে লব শির পাতি। স্নানযাত্রার আমোদ ফুরুলো, গুরুদাস গুঁই গুলদার উঁড়ুনী পরিহার করে পুনরায় চিরপরিচিত র‍্যাদা ও ঘিস্‌কাপ ধল্লেন। ক্রমে রথ এসে পড়লো। ফ্যেতো র‍্যতো পরব প্রলয় বুড়ুটে; এতে ইয়ারকির লেশমাত্র নাই, সুতরাং সহরে রথ-পার্ব্বণে বড় একটা ঘটা নাই; কিন্তু কলিকাতায় কিছুই ফাঁক যাবার নয়। রথের দিন চিৎপুর রোড লোকারণ্য হয়ে উঠলে ছোট ছোট ছেলেরা বার্নীস করা জুতো ও সেপাইপেড়ে ঢাকাই ধুতি পোরে, কোমরে রুমাল বেঁধে চুল ফিরিয়ে চাকর-চাকরাণীদের হাত ধরে, পয়নালার ওপর, পোদ্দারের দোকানে ও বাজারের বারাণ্ডায় রথ দেখতে দাঁড়িয়েছে। আদবইসি মাগীরা খাতায় খাতায় কোরা ও কলপ দেওয়া কাপড় পোরে, রাস্তা জুড়ে চলেচে; মাটীর জগন্নাথ, কাঁটাল, তালপাতের ভেঁপু, পাখা ও শোলার পাখী বেধড়ক বিক্রী হচ্ছে; ছেলেদের দ্যাখাদেখি বুড়ো বুড়ো মিন্‌ষেরাও তালপাতের ভেপু নিয়ে বাজাচ্চেন, রাস্তায় ভোঁ পোঁ ভোঁ পোঁ শব্দের তুফান উঠেছে। ক্রমে ঘণ্টা, হরিবোল, খোল-খত্তাল ও লোকের গোলের সঙ্গে একখানা রথ এলো। রথের প্রথমে পেটা ঘড়ি, নিশান খুন্তী, ভেড়ং ও নেড়ির কবি, তারপর বৈরাগীদের দু-তিন দল নিমখাসা কেত্তন, তার পেছনে সখের সঙ্কীৰ্ত্তন পাওনা। দোহার-দলের সঙ্গে বড় বড় আটচালার মত গোলপাতার ছাতা ও পাখা চলেচে, আশে-পাশে কৰ্ম্মকর্ত্তারা পরিশ্রম ও গলদঘর্ম–কেউ নিশান ও রেশালার মিলে ব্যতিব্যস্ত, কেউ পাখার বন্দোবস্তে বিব্রত। সখের সঙ্কীর্তনওয়ালারা গোচসই বারাণ্ডার নীচে, চৌমাথায় ও চকের সামনে থেমে থেমে গান করে যাচ্চেন; পেছোনে চোতাদারেরা চেঁচিয়ে হাত নেড়ে গান বলে দিচ্চেন; দোহারের কি গাচ্ছেন, তা তারা ভিন্ন আর কেউ বুঝতে পাচ্ছেন না। দর্শকদের ভিড়ের ভিতর একটা মাতাল ছিল, সে বুথ দর্শন করে ভক্তিভরে মাতলামী সুরে– “কে মা রথ এলি? সর্বাঙ্গে পেরেক-মারা চাকা ঘুর-ঘুর ঘুরালি। মা তোর সামনে দুটো ক্যেটো ঘোড়া, চুড়োর উপর মুকপোড়া, চাঁদ চামুরে ঘণ্টা নাড়া, মধ্যে বনমালী। মা ভোর চৌদিকে দেবতা আঁকা লোকের টানে চল্‌চে চাকা, আগে পাছে ছাতল পাকা, বেহদ্দ ছেনালী।” গানটি গেয়ে, “মা রথ! প্রণাম হই মা!” বলে প্রণাম কল্লে। এদিকে রথ হেলতে দুলতে বেরিয়ে গেল; ক্রমে এই রকম দু চারখানা রথ দেখতে দেখতে সন্ধ্যা হয়ে পড়লো–গ্যাস-জ্বালা মুটের মৈ কাঁধে করে দেখা দিলে। পুলিসের পাশের সময় ফুরিয়ে এলো, দর্শকেরাও যে যার ঘরমুখো হলেন। মাহেশে স্নানযাত্রায় যে প্রকার ধুম হয়, রথে সে প্রকার হয় না বটে; তবু ফেলা যায় না। এদিকে সোজা ও উলটো রথ ফুরাল। শ্রাবণমাসে ঢ্যাল ফেলা পার্ব্বণ, ভাদ্র মাসের অরন্ধন ও জন্মাষ্টমীর পর অনেক জায়গায় প্রতিমের কাঠামোয় ঘা পড়লো, ক্রমে কুমোররা নায়েক বাড়ী একমেটে দোমেটে ও তেমেটে করে বেড়াতে লাগলো। কোলো বেঙ্গে “ক্রোড় কোঁ ক্রোড় কোঁ” শব্দে আগমনী গাইতে লাগলো; বর্ষা আঁবের আঁটি, কাঁটালের ভূঁতুড়ি ও তালের এঁসো খেয়ে বিদেয় হলেন–দেখতে দেখতে পূজো এলো।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
২.২ দুর্গোৎসব কালীপ্রসন্ন সিংহ দুর্গোৎসব দুর্গোৎসব বাঙ্গালা দেশের পরব, উত্তরপশ্চিম প্রদেশে এর নামগন্ধও নাই; বোধ হয়, রাজা কৃষ্ণচন্দরের আমল হতেই বাঙ্গালায় দুর্গোৎসবের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। পূর্ব্বে রাজা-রাজড়া ও বনেদী বড় মানুষদের বাড়ীতেই কেবল দুর্গোৎসব হত, কিন্তু আজকাল অনেক পুঁটে তেলীকেও প্রতিমা আনতে দেখা যায়; পূৰ্ব্বেকার দুর্গোৎসব ঔএখনকার দুর্গোৎসব অনেক ভিন্ন। ক্রমে দুর্গোৎসবের দিন সংক্ষেপ হয়ে পড়লো; কৃষ্ণনগরের কারিগরেরা কুমারটুলী ও সিদ্ধেশ্বরীতলা জুড়ে বসে গেল। জায়গায় জায়গায় রং-করা পাটের চুল, তবলকীর মালা, টীন ও পেতলের অসুরের ঢাল-তলওয়ার, নানারঙ্গের ছোবান প্রতিমার কাপড় ঝুলতে লাগলো; দর্জ্জিরা ছেলেদের টুপি, চাপকান ও পেটী নিয়ে দরোজায় দরজায় বেড়াচ্চে; ‘মধু চাই। শাঁকা নেবে গো!’ বোলে ফিরিওয়ালারা ডেকে ডেকে ঘুরছে। ঢাকাই ও শান্তিপুরে কাপুড়ে মহাজন, আতরওয়ালারা ও যাত্রার দালালেরা আহার-নিদ্রে পরিত্যাগ করেচে। কোনখানে কাঁসারীর দোকানে রাশীকৃত মধুপক্কের বাটী, চুমকী ঘটি ও পেতলের থালা ওজন হচ্ছে। ধূপ-ধুনো, বেণে মসলা ও মাখাঘষার একষ্ট্রা দোকান বসে গেছে। কাপড়ে মহাজনেরা দোকানে ডবল পর্দ্দা ফেলেচে; দোকানঘর অন্ধকারপ্রায়, তারি ভিতরে বসে যথার্থ ‘পাই-লাভে’ বউনি হচ্ছে। সিন্দুরচুপড়ী, মোমবাতি, পিঁড়ে ও কুশাসনের অবসর বুঝে দোকানের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে রাস্তার ধারে ‘অ্যাকুডক্টের’ উপর বার দিয়ে বসেচে। বাঙ্গাল ও পাড়াগেঁয়ে চাকরেরা আরসি, ঘুনসি, গিণ্টির গহনা ও বিলাতী মুক্তো একচেটেয় কিনচেন; রবরের জুতো, কনফরটার, ষ্টিক ও ন্যাজওয়ালা পাগড়ী অগুন্তি উঠচে; ঐ সঙ্গে বেলোয়ারি চুড়ী, আঙ্গিয়া, বিলাতী সোনার শীল আংটী ও চুলের গার্ডচেনেরও অসঙ্গত খদ্দের। এত দিন জুতোর দোকান ধূলো ও মাকড়সার জালে পরিপূর্ণ ছিল, কিন্তু পূজোর মোর্‌সমে বিয়ের কনের মত কেঁপে উঠছে, দোকানের কপাটে কাই দিয়ে নানা রকম রঙ্গিণ কাগজ মারা হয়েচে, ভিতরে চেয়ার পাতা, তার নীচে একটুকরা ছেঁড়া কারপেট। সহরে সকল দোকানেরই, শীতকালের কাগের মত চেহারা ফিরেছে। যত দিন ঘুনিয়ে আসছে, ততই বাজারের কেনা-বেচা বাড়চে; কলকেতা তত গরম হয়ে উঠছে। পল্লীগ্রামের টুলো অধ্যাপকেরা বৃত্তি ও বার্ষিক সাধতে বেরিয়েচেন; রাস্তায় রকম রকম তরবেতর চেহারার ভিড় লেগে গেছে। কোনখানে খুন, কোনখানে দাঙ্গা, কোথায় সিঁধচুরি, কোনখানে ভট্টাচাৰ্য্য মহাশয়ের কাছ থেকে দু ভরি রূপো গাঁটকাঁটায় কেটে নিয়েছে; কোথাও কোন মাগীর নাক থেকে নথটা ছিঁড়ে নিয়েছে; পাহারাওয়ালারা শশব্যস্ত, পুলিস বদমাইস্‌ পোরা চোরেরা পূজোর মোর্‌সমে দেদার কারবার ফালাও কচ্চে। “লাগে তা না লাগে তুক্কো” “কিনি তে হাতী লুটি তো ভাণ্ডার” তাদের জপমন্ত্র হয়েচে; অনেকে পার্ব্বণের পূর্ব্বে শ্রীঘরে ও বাঙ্কুলে বসতি কচ্চে; কারো পুজোয় পাথরে পাঁচ কিল; কারো সৰ্ব্বনাশ। ক্রমে চতুর্থী এসে পড়লো। এবার অমুক বাবুর নতুন বাড়ীতে পূজার ভারী ধূম! প্রতিপদাদিকল্পের পর ব্রাহ্মণ-পণ্ডিতের বিদায় আরম্ভ হয়েচে, আজও চোকে নাই—ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের বাড়ী গিস্‌গিস্‌ কচ্চে। বাবু দেড়ফিট উচ্চ গদীর উপর তসর কাপড় পরে বার দিয়ে বসেচেন, দক্ষিণে দেওয়ান টাকা ও সিকি আধুলির তোড়া নিয়ে খাতা খুলে বসেচেন, বামে হবীশ্বর ন্যায়ালঙ্কার সভাপণ্ডিত অনবরত নস্য নিচ্চেন ও নাসা-নিঃসৃত রঙ্গিণ কফজল জাজিমে পুঁচ্চেন। এদিকে জহুরী জড়ওয়া গহনার পুঁটুলী ও ঢাকাই মহাজন ঢাকাই শাড়ীর গাঁট নিয়ে বসেচে। মুন্সি মোশাই, জামাই ও ভাগনেবাবুরা ফর্দ্দ কচ্চেন, সামনে কতকগুলি প্ৰিতিমে-ফেলা দুর্গাদায়গ্রস্ত ব্রাহ্মণ, বাইয়ের দালাল, যাত্রার অধিকারী ও গাইয়ে ভিক্ষুক ‘যে আজ্ঞা’ ‘ধৰ্ম্ম অবতার’ প্রভৃতি প্রিয় বাক্যের উপহার দিচ্চেন; বাবু মধ্যে মধ্যে কীরেও এক আধটা আগমনী গাইবার ফরমান কচ্চেন। কেউ খোসগল্প ও অন্য বড়মানুষের নিন্দাবাদ করে বাবুর মনোরঞ্জনের উপক্রমণিকা কচ্চেন–আসল মতলব দ্বৈপায়ন হ্রদে রয়েচে, উপফুক্ত সময়ে তীরস্থ হবে। আতরওয়ালা, তামাকওয়ালা, দানাওয়ালা ও অন্যান্য পাওনাদার মহাজনেরা বাইরের বারাণ্ডায় ঘুরচে, পূজো যায় তথাচ তাদের হিসেব নিকেস হচ্ছে না। সভাপণ্ডিত মহাশয় সরপটে পিরিলীর বাড়ীর বিদেয় নেওয়া বিধবা-বিবাহের দলের এবং বিপক্ষপক্ষের ব্রাহ্মণদের নাম কাটচেন, অনেকে তার পা ছুঁয়ে দিব্বি গালচেন যে, তাঁরা পিরিলীর বাড়ী চেনেন না; বিধবা-বিয়ের সভায় যাওয়া চুলোয় যাক, গত বৎসর শয্যাগত ছিলেন বল্লেই হয়। কিন্তু বানের মুখের জেলেডিঙ্গীর মত তাদের কথা তল্ হয়ে যাচ্চে, নামকাটাদের পরিবর্তে সভাপণ্ডিত আপনার জামাই, ভাগনে, নাত-জামাই, দোত্তুর ও খুড়তুতো ভেয়েদের নাম হাসিল কচ্চেন; এদিকে নামকাটারা বাবু ও সভাপণ্ডিতকে বাপান্ত করে, পৈতে ছিঁড়ে, গালে চড়িয়ে শাপ দিয়ে উঠে যাচ্চেন। অনেকে উমেদারের অনিয়ত হাজরের পর বাবু কাকেও ‘আজ যাও’ ‘কাল এসো’ ‘হবে না’ ‘এবার এই হলো’ প্রভৃতি অনুজ্ঞায় আপ্যায়িত কচ্চেন–হজুরী সরকারের হেক্‌মত দেখে কে! সকলেই শশব্যস্ত, পূজার ভারী ধূম! ক্রমে চতুর্থীর অবসান হলো, পঞ্চমী প্রভাত হলেন—ময়ররা দুর্গোমণ্ডা বা আগাতোলা সন্দেশের ওজন দিতে আরম্ভ কল্লে। পাঁঠার রেজিমেণ্টকে রেজিমেণ্ট বাজারে প্যারেড কত্তে লাগলো, গন্ধবেণেরা মসলা ও মাথাঘষা বেঁধে বেঁধে ক্লান্ত হয়ে পড়লো। আজ সহরের বড় রাস্তায় চলা ভার, মুটেরা প্রিমিয়মে মোট বইচে; দোকানে খদ্দের বসবার স্থান নাই। পঞ্চমী এইরূপে কেটে গেল। আজ ষষ্ঠী; বাজারের শেষ কেনাবেচা, মহাজনের শেষ তাগাদা—আশার শেষ ভরসা। আমাদের বাবুর বাড়ীরও অপূৰ্ব্ব শোভা; সব চাকর-বাকর নতুন তক্‌মা, উর্দ্দী ও কাপড় পোরে ঘুরে বেড়াচ্চে, দরজার দুই দিকে পূর্ণকুম্ভ ও আম্রসার দেওয়া হয়েচে; ঢুলীরা মধ্যে মধ্যে বোশনচৌকী ও শানাইয়ের সঙ্গে বাজাচ্চে; জামাই ও ভাগনেবাবুরা নতুন জুতো নতুন কাপড় পোরে ফর্‌রা দিচ্চেন, বাড়ীর কোন বৈঠকখানায় আগমনী গাওয়া হচ্ছে, কোথাও নতুন তাসজোড়া পর্‌কান হচ্ছে, সমবয়সী ও ভিক্ষুকের ম্যালা লেগেছে, আতরের উমেদাররা বাবুদের কাছে শিশি হাতে করে সাত দিন ঘুরচে; কিন্তু বাবুদের এমনি অনবকাশ যে, দুফোঁটা আতর দানের অবকাশ হচ্ছে না। এদিকে সহরের বাজারের মোড়ে ও চৌরাস্তায় চুলী ও বাজান্দারের ভিড়ে সেঁধোনো ভার। রাজপথ লোকারণ্য; মালীরা পথের ধারে পদ্ম, চাঁদমালা, বিল্লিপত্র ও কুচো ফুলের দোকান সাজিয়ে বসেচে। দইয়ের ভার, মণ্ডার খুলী ও লুচি কচুরীর ওড়ায় রাস্তা জুড়ে গেছে; রেয়ো ভাট ও আমাদের মত ফলারেরা মিমো করে নিচ্ছে–কোথা যায়? ষষ্ঠী সন্ধ্যায় শহরের প্রতিমার অধিবাস হয়ে গেল; কিছুক্ষণ পরে ঢোল ঢাকের শব্দ থামলো। পূজো বাড়ীতে ক্ৰমে ‘আন রে, এটা কি হলো,’ কত্তে কত্তে ষষ্ঠীর শর্ব্বরী অবসন্না হলো; সুখতারা মৃদুপবন আশ্রয় করে উদয় হলেন, পাখীর প্রভাত প্রত্যক্ষ করে ক্রমে ক্রমে বাস পরিত্যাগ কত্তে আরম্ভ কল্লে; সেই সঙ্গে সহরের চারিদিকে বাজনা-বাদ্দি বেজে উঠলো, নবপত্রিকা স্নানের জন্য কর্ম্মকর্ত্তারা শশব্যস্ত হলেন—ভাবুকের ভাবনায় বোধ হতে লাগলো যেন সপ্তমী কোরমাকান নতুন কাপড় পরিধান করে হাসতে হাসতে উপস্থিত হলেন। এদিকে সহরের সকল কলাবউয়ের বাজনা-বাদ্দি করে, স্নান কত্তে বেরুলেন, বাড়ীর ছেলেরা কাঁসর ও ঘড়ী বাজাতে বাজাতে সঙ্গে সঙ্গে চল্লে : এদিকে বা কলাবউয়েরাও স্নানের সরঞ্জামে বেরুলো; আগে আগে কাড়া, নাগরী, ঢোল ও সানাইদারেরা বাজাতে বাজাতে চল্লো; তার পেছনে নতুন কাপড় পোরে আশাশোঁটা হাড়ে বাড়ীর দরোয়ালেরা; তার পশ্চাৎ কলাবউ কোলে পুরোহিত, পুঁথি হাতে তন্ত্রধারক, বাড়ীর আচার্য্য বামন, গুরু ও সভাপণ্ডিত; তার পশ্চাৎ বাবু। বাবুর মস্তকে লাল সাটিনের রূপোর রামছাতা ধরেচে! আশে-পাশে ভাগনে, ভাইপো ও জামাইয়েরা; পশ্চাৎ আমলা ফয়লা ও ঘরজামাইয়ে ভগিনীপতিরা, মোসাহেব ও বাভে চলে তার শেষে নৈবিদ্ধ, লাণ্টন ও পুষ্পপত্রি, শখ, ঘণ্টা ও কুশাসন প্রভৃতি পূজোর সরঞ্জাম মাথায় মালী। এই সকল সরঞ্জামে প্রসন্নকুমার ঠাকুর বাবুর ঘাটে কলাবউ নাওয়াতে চড়েন; ক্রমে ঘাটে পৌঁছিলে কলাবউয়ের পূজো ও আনের অবকাশে হুজুরও গঙ্গার পবিত্র জলে স্নান করে নিয়ে, শুব পাঠ কত্তে কত্তে অনুরূপ বাজনা-বাৰ্দির সঙ্গে বাড়ীমুখো হলেন। পাঠকবর্গ! এ সহরে আজকাল দু-চার এজকেটেড ইয়ংবেঙ্গলও পৌত্তলিকতার দাস হয়ে, পূজো-আচ্ছা করে থাকেন; ব্রাহ্মণভোজনের বদলে কতকগুলি দিলদোস্ত মদে ভাতে প্রসাদ পান; আলাপি ফিমেল ফ্রেণ্ডেরাও নিমন্ত্রিত হয়ে থাকেন। পূজোরো কিছু রিফাইণ্ড কেতা। কারণ, অপর হিন্দুদের বাড়ী নিমন্ত্রিত প্রদত্ত প্রণামী টাকা পুরোহিত-ব্রাহ্মণেরই প্রাপ্য; কিন্তু এদের বাড়ী প্রণামীর টাকা বাবুর অ্যাকাউন্টে ব্যাঙ্কে জমা হয়, প্রতিমের সামনে বিলাতী চরবীর বাতী জ্বলে ও পূজোর দালানে জুতা নিয়ে ওঠবার এলাওয়েন্‌স থাকে। বিলেত থেকে অর্ডার দিয়ে সাজ আনিয়ে প্রতিমে সাজান হয়–মা দুর্গা মুকুটের পরিবর্তে বনেট পরেন, স্যাণ্ডউইচের শেতল খান, আর কলাবউ গঙ্গাজলের পরিবর্তে কাৎলীকরা গরম জলে স্নান করে থাকেন। শেষে সেই প্রসাদী গরম জলে কর্ম্মকর্ত্তার প্রাতরাশের টী ও কফি প্রস্তুত হয়। ক্রমে তাবৎ কলাবউয়েরা স্নান করে ঘরে ঢুকলেন। এদিকে পূজো ও আরম্ভ হলো, চণ্ডীমণ্ডপে বারকোসের উপর আগাতোলা মোণ্ডাওয়ালা নৈবিদ্দ সাজান হলো। সঙ্গতি বুঝে চেলীর সাড়ী, চিনির থাল, ঘড়া, চুমকী ঘটী ও সোণার লোহা; নয় ত কোথাও সন্দেশের পরিবর্তে গুড় ও মধুপর্কের বাটীর বদলে থুরী ব্যবস্থা। ক্রমে পূজো শেষ হলো, ভক্তেরা এতক্ষণ অনাহারে থেকে পূজোর শেষে প্রতিমারে পুষ্পাঞ্জলি দিলেন। বাড়ীর গিন্নীরা চণ্ডী শুনে জল খেতে গেলেন, কারো বা নবরাত্রি। আমাদের বাবুর বাড়ীর পূজোও শেষ হলো প্রায়, বলিদানের উদযোগ হচ্ছে; বাবু মায় ষ্টাফ আদুড় গায়ে উঠানে দাঁড়িয়েচেন, কামার কোমর বেঁধে প্রতিমের কাছে থেকে পূজো ও প্রতিষ্ঠা করা খাড়া নিয়ে, কাণে আশীৰ্ব্বাদী ফুল গুঁজে, হাড়কাঠের কাছে উপস্থিত হলো, পাশ থেকে একজন মোসাহেব ‘খুঁটি ছাড়!’ ‘খুঁটি ছাড়!’ বোলে চেঁচিয়ে উঠলেন; গঙ্গাজলের ছড়া দিয়ে পাঠাকে হাড়কাঠে পুরে দিয়ে, খিল এঁটে দেওয়া হলো; একজন পাঠার মুড়ি ও আর একজন ধড়টা টেনে ধল্লে, অমনি কামার “জয় মা! মাগো!” বোলে কোপ তুল্লে; বাবুরাও সেই সঙ্গে “জয় মা! মাগো!” বলে, এতিমের দিকে ফিরে চেঁচাতে লাগলেন, দুপ্‌ করে কোপ পড়ে গেল—গীজা গীজা গীজা গীজা, নাক টুপ টুপ টুপ, গীজা গীজা গীজা গীজা নাক টুপ টুপ টুপ শব্দে ঢোল, কাড়ানাগর ও ট্যামটেমী বেজে উঠলো; কামার সরাতে সমাংস করে দিলে, পাঁঠার মুড়ির মুখ চেপে ধরে দালানে পাঠানো হলো, এদিকে একজন মোসাহেব সন্তর্পণে খর্পবের সরা আচ্ছাদিত করে প্রতিমের সম্মুখে উপস্থিত কল্লে। বাবুরা বাজনার তরঙ্গের মধ্যে হাততালি দিতে দিতে, ধীরে ধীরে চণ্ডীমণ্ডপে উঠলেন। প্রতিমার সামনে দানের সামগ্রী ও প্রদীপ জ্বেলে দেওয়া হলে আরতি আরম্ভ হলো; বাবু স্বহস্তে ধবল গঙ্গাজল-চামর বীজন কত্তে লাগলেন, ধূপ-ধূনোর ধোঁয়ে বাড়ী অন্ধকার হয়ে গেল। এইরূপ আধঘণ্টা আরতির পর শাঁক বেজে উঠলো—সবাবু সকলে ভুমিষ্ঠ হয়ে প্রণাম করে বৈঠকখানায় গেলেন। এদিকে দালানে বামুনেরা নৈবিদ্দ নিয়ে কাড়াকাড়ি কত্তে লাগলো। দেখতে দেখতে সপ্তমী পূজো ফুরালো! ক্রমে নৈবিদ-বিলি, কাঙ্গালীবিদায় ও জলপান বিলানোতেই সে দিনের অবশিষ্ট সময় অতিবাহিত হয়ে গেল; বৈকালে চণ্ডীর গানওয়ালারা খানিকক্ষণ আসর জাগিয়ে বিদায় হলো-জঙ্গী স্যাকরা চণ্ডী গানের প্রকৃত ওস্তাদ ছিল। সে মরে যাওয়াতেই আর চণ্ডীর গানের প্রকৃত গায়ক নাই; বিশেষতঃ এক্ষণে শ্রোতাও অতি দুর্লভ হয়েচে। ক্রমে ছটা বাজলো, দালানের গ্যাসের ঝাড় জেলে দিয়ে প্রতিমার আরতি করে দেওয়া হলো এবং মা দুর্গার শেতলের জলপান ও অন্যান্য সরঞ্জামও সেই সময়ে দালানে সাজিয়ে দেওয়া হলো-মা দুর্গা যত খান বা না থান, লোকে দেখে প্রশংসা কল্লেই বাবুর দশ টাকা খরচের সার্থকতা হবে। এদিকে সন্ধ্যার সঙ্গে দর্শকের ভিড় বাড়তে লাগলো। বাঙ্গাল দোকানদার, ঘুস্কী ও কসবী, ক্ষুদ ক্ষু. ছেলে ও আইসি ছোঁড়া সঙ্গে খাতায় খাতায় প্রতিমে দেখতে আসতে লাগলো। এদিকে নিমন্ত্রিত লোকেরা সেজেগুঁজে এসে টন্যাৎ করে একটা টাকা ফেলে দিয়ে প্রণাম কল্লে, অমনি পুরুত একছড়া ফুলের মালা নেমন্তুন্নের গলায় দিয়ে টাকাটা কুড়িয়ে ট্যাঁকে খুঁজলেন, নেমন্তন্নও হন্ হন্ করে চলে গেলেন। কলকেতা সহরে এই একটি বড় আজগুবি কেতা, অনেকস্থলে নিমন্ত্রিতে ও কর্ম্ম কর্ত্তায় চোরে কামারের মত সাক্ষাৎও হয় না, কোথাও পুরোহিত বলে দেন, “বাবুরা ওপরে; ঐ সিঁড়ি মশাহ যান না। কিন্তু নিমন্ত্রিত যেন চিরপ্রচলিত রীতি অনুসারেই “আজ্ঞে না, আরো পাঁচ জায়গায় যেতে হবে, থাক” বলে টাকাটি দিয়েই অমনি গাড়ীতে ওঠেন; কোথাও যদি কর্ম্মকর্ত্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়, তবে গিরগিটির মত উভয়ে একবার ঘাড় নাড়ানাড়ি মাত্র হয়ে থাকে—সন্দেশ মেঠাই চুলোয় যাক, পান তামাক মাথায় থাক, প্রায় সর্ব্বত্রই সাদর-সম্ভাষণেরও বিলক্ষণ অপ্রতুল; দুই এক জায়গায় কর্ম্মকর্ত্তা জরির মহল পেতে, সামনে আতরদান, গোলাবপাস সাজিয়ে, পয়সার দোকানের পোদ্দারের মত বসে থাকে। কোন বাড়ীর বৈঠকখানায় চোহেলের রৈ রৈ ও হৈচৈয়ের তুফানে নেমন্তুন্নেদের সেঁদুতে ভরসা হয় না-পাছে কর্ম্মকর্ত্তা তেড়ে কামড়ান। কোথায় দরজা বন্ধ, বৈঠকথানা অন্ধকার, হয় ত বাবু ঘুমুচ্ছেন, নয় বেরিয়ে গেছেন। দালানে জনমানব নাই, নেমনে কার সম্মুখে যে প্রণামী টাকাটি লেবন ও কি করবেন, তা ভেবে স্থির করতে পারেন না; কর্ম্মকর্ত্তার ব্যাভার দেখে এতিমে পর্য্যন্ত অপ্রস্তুত হন, অথচ এ রকম নেমন্তন্ন না কল্লেই নয়। এই দরুণ অনেক ভদ্দরলোক আজকাল আর ‘সামাজিক’ নেমন্তন্নে স্বয়ং যান না, ভাগ্নে বা ছেলেপুলের দ্বারাতেই ক্রিয়েবাড়ীর পুরুতের প্রাপ্য কিম্বা বাবুদের ওৎকরা টাকাটি পাঠিয়ে দেন; কিন্তু আমাদের ছেলেপুলে না থাকায় স্বয়ং গমনে অসমর্থ হওয়ায়। স্থির করেছি, এবার অবধি প্রণামীর টাকার পোষ্টেজ ষ্ট্যাম্প কিনে ডাকে পাঠিয়ে দেব; তেন তেমন আত্মীয়স্থলে (সেফ এরাইভ্যালের জন্য) রেজেষ্টরী করে পাঠান যাবে; যে প্রকারে হোক, টাকাটি পৌঁছান নে বিষয়। অধ্যাপক ভায়ারা এ বিষয়ে অনেক সুবিধা করে দিয়েছেন, পূজো ফুরিয়ে গেলে তাঁরা প্রণামীর টাকাটি আদায় কত্তে স্বয়ং ক্লেশ নিয়ে থাকেন; নেমন্তন্নের পূর্ব্ব হতে পূজোর শেষে তাদের আত্মীয়তা আরও বৃদ্ধি হয়; অনেকের প্রণামী চাইতে আসাই পূজোর প্রুফ। মনে করুন, আমাদের বাবু বনেদী বড়মানুষ; চাল স্বতন্তর, আরতির পর বেনারসী জোড় পরে সভাসদ সঙ্গে নিয়ে দালানে বার দিলেন; অমনি তক্‌মপরা বাঁকা দরওয়ানেরা তলওয়ার খুলে পাহারা দিতে লাগলো; হরকরা, হুঁকোবরদার, বিবির বাড়ীর বেহারা মোসাহেবের ঘোড়হস্ত হয়ে দাঁড়ালো, কখন কি ফরমাস হয়! বাবুর সামনে একটা সোণার অলিধোলা, ডাইনে একটা পান্না বসান সি, বায়ে একটা হীরে বসান টোপদার গুড়গুড়ি ও পেছনে একটা মুক্তো বসান পেঁচুয়া পড়লে : বার আঁস্তা কুড়ের কুকুরের মত ইচ্ছা অনুসারে আশে পাশে মুখ দিচ্চেন ও আড়ে আড়ে সামনে বাজেলকর ভিড়ের দিকে দেখচেন-লোক কোনটার কারিগরীর প্রশংসা কচ্চে; যে রকমে হোক লোককে দেখান চাই যে, বাবুর রূপো, সোণার জিনিষ অঢেল, এমন কিছু বসাবার স্থান থাকলে আরও দুটো ফুরসি বা গুড়গুড়ি দেখান যেতো। ক্রমে অনেক অনেক অনাহুত ও নিমন্ত্রিত জড় হতে লাগলেন, বাজে তোকে চু প পুরে গেল, জুতোচোরে সেই লাঙ্গা-তলোয়ারের পাহারার ভিতর থেকেও দুকু জুতো সহিতে কেলে। কচ্ছ জলে থেকেও ডাঙ্গা ডিমে প্রতি যেমন মন রাখে, সেইরূপ অনেকে মনে হলে বাবুর সঙ্গে কথাবার্ত্তার মধ্যেও আপনার জুতোর ওপোরও নজর রেখেছিলেন। কিন্তু উঠবার দেখেন যে, জুতোরাম ভাঙ্গা ডিমের খোলার মত হয় ত একপাটী ছেঁড়া চটি পড়ে আছে। এদিকে দেখতে দেখতে গুড়ুম করে নটার তোপ পড়ে গেল; ছেলেরা ‘ব্যোমকালী কলকেত্তাওয়ালী’ বোলে চেঁচিয়ে উঠলো। বাবুর বাড়ীর নাচ, সুতরাং বাবু আর অধিকক্ষণ দালানে বোসতে পাল্লেন না, বৈঠকখানায় কাপড় ছাড়তে গেলেন, এদিকে উঠানের সমস্ত গ্যাস জ্বেলে দিয়ে মজলিসের উদ্‌যোগ হতে লাগলো, ভাগ্নেরা ট্যাসল দেওয়া টুপী ও পেটী পোরে ফোপরদালালী কত্তে লাগলেন। এদিকে দুই-এক জন নাচের মজলিসি নেমন্তন্নে আসতে লাগলেন। মজলিসে তরফা নাবিয়ে নেওয়া হলো। বাবু জরি ও কালাবং এবং নানাবিধ জড়ওয়া গহনায় ভূষিত হয়ে, ঠিক একটি ‘ইজিপশন মমী সেজে’ মজলিসে বাস দিলেন—বাই, সারঙ্গের সঙ্গে গান করে, সভাস্থ সমস্তকে মোহিত কত্তে লাগলেন। নেমন্তন্নেরা নাচ দেখতে থাকুন, বাবু ফর্‌রা দিন ও লাল চোখে রাজা উজীর মারুন–পাঠকবর্গ একবার সহরটার শোভা দেখুন, প্রায় সকল বাড়ীতেই নানা প্রকার রং-তামাসা আরম্ভ হয়েচে। লোকেরা খাতায় পাতায় বাড়ী বাড়ী পূজো দেখে বেড়াচ্চে। রাস্তায় বেজায় ভিড়! মারওয়াড়ী খোট্টার পাল, মাগীর খাতা ও ইয়ারের দলে রাস্তা পুরে গেচে। নেমন্তন্নের হাতলণ্ঠনওয়ালা, বড় বড় গাড়ীর সইসেরা প্রলয় শব্দে পইস পইস কচ্চে, অথচ গাড়ী চালাবার বড় বেগতিক। কোথায় সখের কবি হচ্চে; ঢোলের চাটী ও গাওর চীৎকারে নিদ্রাদেবী সে পাড়া থেকে ছুটে পালিয়েছেন; গানের তানে ঘুমন্তো ছেলেরা মার কোলে ক্ষণে ক্ষণে চমকে উঠছে। কোথাও পাঁচালি আরম্ভ হয়েচে, বওয়াটে পিলইয়ার ছোকরারা ভরপুর নেশায় ভো হয়ে ছড়া কাটচেন ও আপনা আপনি বাহবা দিচ্চেন; রাত্রিশেষে শ্রাদ্ধ গড়াবে, অবশেষে পুলিসে দাক্ষিণা দেবে। কোথাও যাত্রা হচ্চে, মণিগোঁসাই সং এসেচে ছেলেরা মণিগোঁসাইয়ের রসিকতায় আহ্লাদে আটখানা হচ্ছে; আশে পাশে চিকের ভিতর মেয়েরা উঁকি মাচ্চে, মজলিসে রামমসাল জ্বলচে; বাজে দশর্কদের বাযুক্রিয়ায় ও মসালের দুর্গন্ধে পূজাবাড়ী তিষ্ঠান ভার! ধুপ-ধুনার গন্ধও হার মেনেচে। কোনখানে পূজোবাড়ীর বাবুরাই খোদ মজলিস রেখেচেন–বৈঠকখানায় পাঁচো ইয়ার জুটে নেউল নাচানো, ব্যাং নাপানো, খ্যামটা ও বিদ্যাসুন্দর আরম্ভ করেচেন; এক একবারের হাসির গর্‌রায়, শিয়াল ডাকে ও মদন আগুনের তানে–দালনে ভগবতী ভয়ে কাঁপচেন, সিঙ্গি চোরকে কামড়ান পরিত্যাগ করে, ন্যাজ গুটিয়ে পলাবার পথ দেখচে, লক্ষ্মী সরস্বতী শশব্যস্ত। এদিকে সহরের সকল রাস্তাতেই লোকের ভিড়, সকল বাড়ীই আলোময়। এই প্রকার সপ্তমী, অষ্টমী ও সন্ধিপূজো কেটে গেল; আজ নবমী, আজ পূজোর শেষ দিন। এত দিন লোকের মনে যে আহ্লাদটি জোয়ারের জলের মত বাড়তেছিল, আজ সেইটির একেবারে সারভাটা। আজ কোথাও ঘোড়া মোষ, কোথাও নব্বইটা পাঁটা, সুপারি আখ, কুমড়ো, মাগুরমাছ ও মরীচ বলিদান হয়েচে; কর্ম্মকর্ত্তা পাত্র টেনে পাঁচোইয়ারে জুটে নবমী গাচ্চেন ও কাদামাটী কচ্চেন; ঢুলীর ঢেলে সঙ্গত হচ্ছে, উঠানে লোকারণ্য, উপর থেকে বাড়ীর মেয়েরা উঁকি মেরে নবমী দেখছেন। কোথাও হোমের ধুমে বাড়ী অন্ধকার হয়ে গেছে; কার সাধ্য প্রবেশ করে-কাঙ্গালী, রেয়োভাট ও ভিক্ষুকের পূজোবাড়ী ঢোকা দূরে থাকুক, দরজা হতে মশাগুলো পর্য্যন্ত ফিরে যাচ্চে। ক্রমে দেখতে দেখতে দিনমণি অস্ত গ্যালেন, পূজোর আমোদ প্রায় সম্বৎসরের মত ফুরালো! ভোরাও ওক্তে ভয়রো রাগিণীতে অনেক বাড়ীতে বিজ্ঞয়া গাওনা হলো; ভক্তের চক্ষে ভগবতীর প্রতিমা পরদিন প্রাতে মলিন মলিন বোধ হতে লাগলো, শেষে বিসর্জ্জনের সমারোহ শুরু হলো—আজ নিরঞ্জন। ক্রমে দেখতে দেখতে দশটা বেজে গেল; দইকড়মা ভোগ দিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হলো; আরতির পর বিসর্জ্জনের বাজনা বেজে উঠলো। বামুনবাড়ীর প্রতিমারা সকলেই জলসই। বড়মানুষ ও বাজে জাতির প্রতিমা পুলিসের পাশ মত বাজনা বাদ্দির সঙ্গে বিলৰ্জন হবেন—এ দিকে এ কাজে সে কাজে গির্জ্জার ঘড়ীতে টুং টাং টুং টাং করে বারটা বেজে গেল; সূর্য্যের মৃদুতপ্ত উত্তাপে সহর নিমকি রকম গরম হয়ে উঠলো; এলোমেলো হাওয়ায় রাস্তার ধুলো ও কাঁকর উড়ে অন্ধকার করে তুল্লে। বেকার কুকুরগুলো–দোকানের পাটাতনের নীচে ও খানার ধারে শুয়ে জীব বাহির করে হাঁপাচ্চে, বোঝাই গাড়ীর গরুগুলোর মুখ দে ফ্যানা পড়চে-গাড়োয়ান ভয়ানক চীৎকারে “শালার গরু চলে না” বলে ন্যাজ মোলচে ও পাচলবাড়ি মাচ্চে; কিন্তু গরুর চাল বেগড়াচ্চে না, বোঝাইয়ের ভরে চাকাগুলি কোঁ কোঁ শব্দে রাস্তা মাতিয়ে চলেছে। চড়াই ও কাকগুলো বারান্দা আলম্বে ও নলের নীচে চক্ষু মুদে বসে আছে। ফিরিওয়ালারা ক্রমে ঘরে ফিরে যাচ্চে; রিপুকৰ্ম্ম ও পরামাণিকেরা অনেকক্ষণ হলো ফিরেচে; আলু পটোল! ঘি চাই! ও তামাকওয়ালারা কিছুক্ষণ হলো ফিরে গেছে। ঘোল চাই! মাখন চাই! ভয়সা দই চাই! ও মালাই-দইওয়ালারা কড়ি ও পয়সা গুণতে গুণতে ফিরে যাচ্চে। এখন কেবল মধ্যে মধ্যে পানিফল! কাগোজ বদল! পেয়ালা পিরিচ! ফিরিওয়ালাদের ডাক শোনা যাচ্চে–নৈবিদ্দি-মাথায় পূজোবাড়ীর লোক, পুজুরী বামুন, পটো বাজন্দার ভিন্ন রাস্তায় বাজে লোক নাই, গুপুস করে একটার তোপ পড়ে গেল। ক্রমে অনেক স্থলে ধুমধামে বিসর্জ্জনের উদযোগ হতে লাগলো। হায়! পৌত্তলিকতা কি শুভ দিনেই এ স্থলে পদার্পণ করেছিল। এতে দেখে শুনে, মনে স্থির জেনেও আমরা তারে পরিত্যাগ কত্তে কত কষ্ট ও অসুবিধা বোধ কচ্চি; ছেলেবেলা যে পুতুল নিয়ে খেলাঘর পেতেছি, বৌ বৌ খেলেছি ও ছেলে-মেয়ের বে দিয়েছি, আবার বড় হয়ে সেই পুতুলকে পরমেশ্বর বলে পুজো কচ্চি, তার পদার্পণে পুলকিত হচ্চি ও তার বিসর্জ্জনে শোকের সীমা থাকচে না–শুধু আমরা কেন, কত কত কৃতবিদ্য বাঙ্গালী সংসারের ও জগদীশ্বরের সমস্ত তত্ত্ব অবগত থেকেও, হয় ত সমাজ, না হয় পরিবার পরিজনের অনুরোধে, পুতুল পুজে আমোদ প্রকাশ করেন, বিসর্জ্জনের সময় কাঁদেন ও কাদা রক্ত মেখে কোলাকুলি করেন; কিন্তু নাস্তিকতায় নাম লিখিয়ে বনে বসে থাকাও ভাল, তবু “জগদীশ্বর একমাত্ৰ” এটি জেনে আবার পুতুলপূজায় আমোদ প্রকাশ করা উচিত নয়। ক্রমে সহরের বড় রাস্তা চৌমাথা লোকারণ্য হয়ে উঠলো, বেশ্যালয়ের বারাণ্ডা আলাপীতে পূরে গেল; ইংরাজী বাজনা, নিশেন, তুরুকসোয়ার ও সার্জ্জন সঙ্গে প্রতিমার রাস্তায় বাহার দিয়ে বেড়াতে লাগলেন–তখন ‘কার প্রতিমা উত্তম’ ‘কার সাজ ভাল’ ‘কার সরঞ্জাম সরেস’ প্রভৃতির প্রশংসারই প্রয়োজন হচ্ছে। কিন্তু হায়! ‘কার ভক্তি সরেস’ কেউ সে বিষয়ের অনুসন্ধান করে না–কর্ম্মকর্ত্তাও তার জন্য বড় কেয়ার করেন না! এদিকে প্রসন্নকুমার বাবুর ঘাট ভদ্দরলোক গোচের দর্শক, ক্ষুদে ক্ষুদে পোষাক পরা ছেলে, মেয়ে ও ইস্কুলবয়ে ভরেরে গেল। কর্ম্মকর্ত্তারা কেউ কেউ প্রতিমে নিয়ে বাচখেলিয়ে বেড়াতে লাগলেন—আমুদে মিনষেরা ও ছোঁড়ারা নৌকার ওপর ঢোলের সঙ্গতে নাচতে লাগলো, সৌখীন বাবুরা খ্যামটা ও বাই সঙ্গে করে বোট, পিনেস ও বজরার ছাতে বার দিয়ে বসলেন—মোসাহেব ও ওস্তাদ চাকরেরা কবির সুরে দু-একটা রংদার গান গাইতে লাগলো। গান “বিদায় হও মা ভগবতি। এ সহরে এসো নাকো আর। দিনে দিনে কলিকাতার মর্ম্ম দেখি চমৎকার।। জষ্টিসেরা ধৰ্ম্ম-অবতার, কায়মনে কচ্চেন সুবিচার। এদিকে বুলোর তরে রাজপথেতে চেঁচিয়ে চেয়ে চলা ভার।। পথে হাগা মোতা চলবে না, লহরের জল তুলতে মানা, লাইসেন্সটেক্স মাথটচাঁদা, পাইখানায় বাসি ময়লা রবে না। হেলথ অফিসর, সেতখানার মেজেষ্টর, ইনকমের আসেসর সাল্লে সবারে। আবার গবর্ণরের গুয়ে দষ্টি, সৃষ্টিছাড়া ব্যবহার। অসহ্য হতেছে মাগো! অসাধ্য বাস করা আর।। এই জীয়ন্তে এই ত জ্বালা মাগো!—মলেও শান্তি পাবে না, মুখাগ্নির দফা রফা কলেতে করবে সৎকার। হুতোমদাস তাই সহর ছেড়ে আসমানে করেন বিহার॥” এ দিকে দেখতে দেখতে দিনমণি যেন সম্বৎসরের পূজোর আমোদর সঙ্গে অস্ত গেল। সন্ধ্যাবধ বিচ্ছেদ-বসন পরিধান করে দেখা দিলেন। কর্ম্মকর্ত্তারা প্রতিমা নিরঞ্জন করে, নীলকণ্ঠ শঙ্খচিল উড়িয়ে ‘দাদা গো দিদি গো’ বাজনার সঙ্গে ঘট নিয়ে ঘরমুখো হলেন। বাড়ীতে পৌঁছে চণ্ডীমণ্ডপ পূর্ণঘটকে প্রণাম করে শান্তিজল নিলেন; পরে কাঁচাহলুদ ও ঘটজল খেয়ে পরস্পর কোলাকুলি কল্লেন। অবশেষে কলাপাতে দুর্গানাম লিখে সিদ্ধি খেয়ে বিজয়ার উপসংহার হলো। ক’দিন মহাসমারোহের পর আজ সহরটা খাঁ খাঁ কত্তে লাগলো—পৌত্তলিকের মন বড়ই উদাস হলো, কারণ, যখন লোকের সুখের দিন থাকে, তখন সেটির তত অনুভব কত্তে পারা যায় না, যত সেই সুখের মহিমা, দুঃখের দিনে বোঝা যায়।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
২.৩ রামলীলা কালীপ্রসন্ন সিংহ রামলীলা দুর্গোৎসব এক বছরের মত ফুরুলো; ঢুলীরা নায়েক বাড়ী বিদেয় হয়ে শুঁড়ির দোকানে রং বাজাচ্চে। ভাড়াকরা ঝাড়েরা মুটের মাথায় বাঁশে ঝুলে টুনু টুনু শব্দে বালাখানায় ফিরে যাচ্চে; যজমেনে বামুনের বাড়ীর নৈবিদ্দির আলো-চাল ও পঞ্চশস্য শুকুচ্চে, ব্রাহ্মণী ছেলে কোলে করে কাটি নিয়ে কাগ তাড়াচ্ছেন। সহরটা থমথমে। বাসাড়েরা আজও বাড়ী হতে ফেরেন নি, অফিস ও ইস্কুল খোলবার আরও চার পাঁচ দিন বিলম্ব আছে। যে দেশের লোকের যে কালে যে প্রকার হেম্মত থাকে, সে দেশে সে সময় সেই প্রকার কর্ম্মকাণ্ড, আমোদ-প্রমোদ ও কার-কারবার প্রচলিত হয়। দেশের লোকের মনই সমাজে লোকোমোটিবের মত, ব্যবহার কেবল ‘ওয়েদরকর্কের’ কাজ করে। দেখুন, আমাদের পূর্ব্বপুরুষেরা রঙ্গভূমি প্রস্তুত করে মল্লযুদ্ধে আমোদ প্রকাশ কত্তেন, নাটক ত্রোটকের অভিনয় দেখতেন, পরিশুদ্ধ সঙ্গীত ও সাহিত্যে উৎসাহ দিতেন; কিন্তু আজকাল আমরা বারোইয়ারিতলায়, নয় বাড়ীতে, বেদেনীর নাচ ও ‘মদন আগুনের তানে পরিতুষ্ট হচ্ছি; ছোট ছোট ছেলে ও মেয়েদের অনুরোধ উপলক্ষ করে পুতুল নাচ, পাঁচালী ও পচা খেউড়ে আনন্দ প্রকাশ কচ্চি, যাত্রাওয়ালাদের ‘ছকুবাবু ও সুন্দরের সং’ নাবাতে হুকুম দিচ্চি। মল্লযুদ্ধের তামাসা ‘দ্যাখ বুল বুল ফাইট’ ও ‘ম্যাড়ার লড়ায়ে’ পর্যবসিত হয়েচে। আমাদের পূর্ব্বপুরুষেরা পরস্পর লড়াই করেচেন, আজকাল আমরা সর্ব্বদাই পরস্পরের অসাক্ষাতে নিন্দাবাদ করে থাকি; শেষে একপক্ষের ‘খেউড়ে’ জিত ধরাই আছে। আমাদের এই প্রকার অধঃপতন হবে না কেন? আমরা হামা দিতে আরম্ভ করেই ঝুমঝুমি, চুষী ও শোলার পাখীতে বর্ণপরিচয় করে থাকি। কিছু পরে ঘুড়ি, লাটিম, লুকোচুরি ও বৌ বৌ খেলাই আমাদের যুবত্বের এনট্রান্স-কোর্স হয়; শেখে তাস, পাশা ও বড়ে টিপে মাৎ করে ডিগ্রী নিয়ে বেরুই! সুতরাং ঐগুলি পুরাণে পড়ার মত কেবল চিরকাল আউড়ে আসতে হয়; বেশীর ভাগ বয়সের পরিণামেব সঙ্গে ক্রমশঃ কতকগুলি আনুসঙ্গিক উপসর্গ উপস্থিত হয়। রামলীলা এদেশের পরব নয়, এটি প্রবল খোট্টাই! কিছুকাল পূর্ব্বে চীনকের সেপাইদের দ্বারা এই রামলীলার সূত্রপাত হয়; পূর্ব্বে তারাই আপনা-আপনি চাঁদা করে চীনকের মাঠে রাম-রাবণের যুদ্ধের অভিনয় কত্তো; কিছু দিন এ রকমে চলে, মধ্যে একেবারে রহিত হয়ে যায়। শেষে বড়বাজারের দু’ চার ধনী খোট্টার উদ্যোগে ১৭৫৭ শকে পুনর্ব্বার রামলীলার আরম্ভ হয়। তদবধি এই বার বৎসর রামলীলার মেলা চলে আসছে। কলকেতায় আর অন্য কোন মেলা নাই বলেই, অনেকে রামলীলায় উপস্থিত হন। এদের মধ্যে নিষ্কৰ্ম্মা বাবু, মাড়োয়ারী খোট্টা, বেশ্যা ও বেণেই অধিক। পাঠকবর্গ মনে করুন, আপনাদের পাড়ার বনেদী বড়মানুষ ও দলপতি বাবু দেড়ফিট উচ্চ গদির ওপর বার দিয়ে বসেছেন; গদির সামনে বড় বড় বাক্স ও আয়না পড়েছে, বাবুর প্রকাণ্ড আলবোলা প্রতি টানে শরতের মেঘের মত শব্দ কচ্ছে, আর মস্ক ও মূসব্বর মেশান ইরাণী তামাকের খোসবোয় বাড়ী মাত করেচে। গদির কিছু দূরে এক জন খোট্টা সিদ্ধির মাজুম, হজমীগুলি ও পালংতোড় প্রভৃতি ‘কুয়ৎ কি চিজ’ রুমালে বেঁধে বসে আছেন। তিনি লক্ষ্ণৌয়ের এক জন সম্পন্ন জহুরীর পুত্র, এক্ষণে সহরেই বাস; হয়ত বছর কতক হলে আফিমের তেজমন্দি খেলায় সর্ব্বস্বান্ত হয়ে বাবুর অবশ্য-পোষ্য হয়েচেন। মনে করুন, তার অনেক প্রকার হাকিমী ঔষধ জানা আছে। সিদ্ধি সম্পর্কীয় মাজুমও তিনি উত্তম রকমে প্রস্তুত কত্তে পারেন। বিশেষতঃ বিস্তর বাই, কথক ও গানওয়ালীর সহিত পরিচয় থাকায়, আপন হেকমত ও হুনুরীতে আজকাল বাবুর দক্ষিণ হস্ত হয়ে উঠেছেন। এর পাশে ভবানীবাবু ও মিসুয়ার্স আর্টফুল ডজরস উকীল সাহেবের হেডকেরাণী হলধরবাবু। ভবানীবাবু ঐ অঞ্চলের একজন বিখ্যাত লোক, আদালতে ভারী মাইনের চাকরী করেন; এ সওয়ায় অন্তঃশিলে কোম্পানীর কাগজের দালালী, বড় বড় ব্রাজা-রাজড়ার আমমোক্তারী ও মকদ্দমার ম্যানেজারী করা আছে। এমন কি অনেকেই স্বীকার করে থাকেন যে, ভবানীবাবু ধড়িবাজিতে উমিচাঁদ হইতে সরেস ও বিষয়-কর্ম্মে জয়কৃষ্ণ হতে জব্বর। ভবানীবাবুর পার্শ্বস্থ হলধরও কম নন–মনে করুন, হলধর উকীলের বাড়ী মকদ্দমার তদ্বিরে ফের-ফন্দীতে ও জাল-জালিয়াতে প্রকৃত শুভঙ্কর। হলধরের মোচা গোঁফ, মুসকের মত ভুঁড়ি, হাতে ইষ্টিকবচ, কোমরে গোট ও মাদুলি, সরু ফিনফিনে সাদা ধুতি পরিধান, তার ভিতরে একটা কাচ, কপালে টাকার মত একটা রক্তচন্দনের টিপ ও দাঁতে মিসি;—চাদরটা তাল পাকিয়ে কাঁধে ফেলে অনবরত তামাক খাচ্চেন ও গোঁপে তা দিয়ে যেন বুদ্ধি পাকাচ্চেন। এমন সময়ে বাবুর এ মজলিসে ফলহরিবাবু ও রামভদ্দরবাবু উপস্থিত হলেন; ফুলহরি ও রামভদ্দরকে দেখে বাবু সাদরসম্ভাষণে বসালেন, হুঁক্কাবরদার তামাক দিয়ে গেল; বাবুরা শ্রান্তি দূর করে তামাক খেতে খেতে একথা সে কথার পর বল্লেন, “মশাই, আজ রামলীলার ধূম! আজ শুনলেম লক্ষ্মণের শক্তিশেল হবে, বিস্তর বাজী পুড়বে, এখানে আসবার সময়ে দেখলেম, ও পাড়াদ রামবাবুর চৌঘুড়ী গেল। শম্ভুবাবু বগীতে লক্ষ্মীকে নিয়ে যাচ্চেন–আজ বেজায় ভিড়। মশাই যাবেন না?” তখনি ‘ভবানীবাবু’ এই প্রস্তাবের পোষকতা কল্লেন—বাবুও রাজী হলেন—অমনি ‘ওরে! ওরে কোই হ্যায়রে! কোই হ্যায়!’ শব্দ পড়ে গেল আশেপাশে, ‘খোদাবন্দ’ ও ‘আচ্চা যাইয়ে’ প্রতিধ্বনি হতে লাগলো–হরকরাকে হুকুম হলো, বড় ব্রিজকা ও বিলাতি জুড়ি তইরি কত্তে বল শীগগির। ঠাওরাণ, যেন এ দিকে বাবর ব্রিজকা প্রস্তুত হতে লাগলো, পেয়ারের আদালীরা পাগড়ী ও তকমা পরে আয়নার মুখ দেখচে। বাবু ড্রেসিং রুমে ঢুকে পোষাক পচ্চেন। চার-পাঁচ জন চাকরে পড়ে চল্লিশ রকম প্যাটার্নের ট্যাসিলদেওয়া টুপী, সাটীনের চাপকান, পায়জামা বাছুনি কচ্চে। কোনটা পল্লে বড় ভাল দেখাবে, বাবু মনে মনে এই ভাবতে ভাবতে ক্লান্ত হচ্চেন, হয় ত একটা জামা পরে আবার খুলে ফেল্লেন। একটা টুপী মাথায় দিয়ে আয়নায় মুখ দেখে মনে ধচ্চে না; আবার আর একটা মাথায় দেওয়া হচ্ছে, সেটাও বড় ভাল মানাচ্ছে না। এই অবকাশে একজন মোসাহেবকে জিজ্ঞাসা কচ্চেন, ‘কেমন হে! এটা কি মাথায় দেবো?’ মোসাহেব সব দিক বজায় রেখে, ‘আজ্ঞে পোষাক পল্লে আপনাকে যেমন খোলে, শহরের কোন শালাকে এমন খোলে না’ বল্‌চেন; বাবু এই অবসরে আর একটা টুপী মাথায় নিয়ে জিজ্ঞাসা কচ্চেন ‘এটা কেমন?’ মোসাহেব ‘আজ্ঞে এমন আর কারো নাই’ বলে বাবুর গৌরব বাড়াচ্চেন ও মধ্যে মধ্যে ‘আপ রুচি খানা ও পর রুচি পিন্না’ বয়েদটা নজীর কচ্চেন। এই প্রকার অনেক তর্কবিতর্ক ও বিবেচনার পর হয়ত একটা বেয়াড়া রকমের পোষাক পরে, শেষে পমেটম ল্যাভেণ্ডার ও আতর মেখে, অংটী চেন ও ইষ্টিক বেচে নিয়ে, দু ঘণ্টার পর বাবু ড্রেসিংরুম হতে বৈঠক খানায় বার হলেন। হলধর, ভবানী, বমিভদ্দর প্রভৃতি বৈঠকখানাস্থ সকলেই আপনাদের কর্ত্তব্য কৰ্ম্ম বলেই যেন ‘আজ্ঞে পোষাকে আপনাকে বড় খুলেচে’ বলে নানাপ্রকার প্রশংসা কত্তে লাগলেন; কেউ বল্লেন, হুজুর। এ কি গিদ্‌সনের বাড়ীর তইরি না?’ কেউ ঘড়ির চেন, কেউ আংটী ও ইষ্টিকের অনিয়ত প্রশংসা কত্তে আরম্ভ কল্লেন। মোসাহেবের মধ্যে যাঁহাদের কাপড়-চোপড়গুলি বাবুর ব্রিজকা ও বিলাতী জুড়ির যোগ্য নয়, তারা বাবুর প্রসাদি কাপড় চোপড় পরে কানে আতরের তুলল গুঁজে চেহারা খুলে নিলেন; প্রসাদি কাপড়-চোপড় পরে মোসাহেবদের আর আহ্লাদের সীমা রইলো না। মনে হতে লাগলো, বাড়ীর কাছের উঠনোওয়ালা মুদি মাগী ও চেনা লোকেরা যেন দেখতে পায় আমি কেমন পোষাকে হুজুরের সঙ্গে বেড়াচ্ছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, অনেক মোসাহেব সৰ্ব্বদাই আক্ষেপ করে থাকেন, তারা যখন বাবুদের সঙ্গে বড় বড় গাড়ী ও ভাল কাপড়-চোপড় পরে বেড়ান, তখন কেউ তাঁদের দেখতে পান না, আর গামচা কাঁদে করে বাজার কত্তে কেরুলেই সকলের নজরে পড়েন। এ দিকে টুং টাং টুং করে মেকাবী ক্লকে পাঁচটা বাজলো, ‘হুজুর গাড়ী হাজির’ বলে হরকরা হুজুরে প্রোক্লেম কল্লে। বাবু মোসাহেবদের সঙ্গে নিয়ে গাড়ীতে উঠলেন—বিলাতী জুড়ি কৌচম্যানের ইঙ্গিতে টপাটপ টপাটপ শব্দে রাস্তা কাঁপিয়ে বাবুকে নিয়ে বেরিয়ে গেল। এ দিকে চাকরের ‘রাম বাঁচলুম’ বলে কেউ বাবুর মচলন্দে গড়িয়ে পড়লো, কেউ হুজুরের সোনাবাঁধান হুঁকোটা টেনে দেখতে লাগলো–অনেকে বাবুর ব্যবহারের কাপড়চোপড় পরে বেড়াতে বেরুলো; সহরের অনেক বড় মানুষের বাড়ী বাবুদের সাক্ষাতে বড় আঁটাআঁটী থাকে, কিন্তু তাঁদের অসাক্ষাতে বাড়ীর অনেক ভাগ উদোম এলো হয়ে পড়ে। ক্রমে বাবুর ব্রিজকা চিৎপুর রোডে এসে পড়লো। চিৎপুর রোডে আজ গাড়ী-ঘোড়ার অসম্ভব ভিড়। মাড়ওয়ারী, খোট্টা ও বেশ্যারা খাতায় খাতায় ছক্কড় ও কেরাঞ্চীতে রামলীলা দেখতে চলেচে। যাঁরা যোত্রহীন, তাঁরাও সখের অনুরোধ এড়াতে না পেরে, হেঁটেই চলেচেন, কলকেতা সহরের এই একটি আজব গুণ যে, মজুর হতে লক্ষপতি পৰ্য্যন্ত সকলের মনে সমান সখ। বড় লোকেরা দানসাগরে যাহা নির্ব্বাহ করবেন, সামান্য লোকে ভিক্ষা বা চুরি পর্য্যন্ত স্বীকার করেও কায়ক্লেশে তিলকাঞ্চনে সেটির নকল কত্তে হবে। আন্দাজ করুন, যেন, এ দিকে ছক্কড় ও বড় বড় গাড়ীর গতিতে রাস্তার ধূলে উড়িয়ে সহর অন্ধকার করে তুল্পে। সূৰ্যদেও সমস্ত দিন কমলিনীর সহবাসে কাটিয়ে পরিশ্রান্ত নাগরেব মত ক্লান্ত হয়ে শ্রান্তি দূর করবার জন্যই যেন অস্তাচল আশ্রয় কল্লেন; প্রিয়সথী প্রদোষরাণীর পিছে পিছে অভিসারিণী সন্ধ্যাবধূ ধীরে ধীরে সতিনী শৰ্বরীর অনুসরণে নির্গত হলেন; রহস্যজ্ঞ অন্ধকার সমস্ত দিন নিভৃতে লুকিয়ে ছিল, এখন পাখীদের সঙ্কেবাক্যে অবসর বুঝে ক্রমশঃ দিকসকল আচ্ছাদিত করে নিশানাথের নিমিত্ত অপূর্ব্ব বিহারস্থল প্রস্তুত কত্তে আরম্ভ কল্লে। এ দিকে বাবুর ব্রিজকা রামলীলার রঙ্গভূমিতে উপস্থিত হলো। রামলীলার বঙ্গভূমি রাজাবাহাদুরের বাগানখানি পূৰ্ব্বে সহরের প্রধান ছিল, কিন্তু কুলপ্রদীপকুমারদের কল্যাণে আজকাল প্রকৃত চিড়িয়াখানা হয়ে উঠেছে। পূৰ্ব্বে রামলীলা ঐ রাজা বৰ্দিনাথ বাহাদুরের বাগানেতেই হতো; গত বৎসর হতে রহিত হয়ে রাজা নরসিংহ বাহাদুরের বাগানে আরম্ভ হয়েচে। নরসিংহ বাহাদুরের ফুলগাছের উপর যার পর নাই সখ ছিল এবং চিরকাল এই ফুলগাছের উপাসনা করেই কাটিয়ে গেছে; সুতরাং তার বাগান যে সহরের শ্রেষ্ঠ হবে, বড় বিচিত্র নয়? এমন কি, অনেকেই স্বীকার করেচেন যে, গাছের পারিপাট্যে রাজা বাহাদুরের বাগান কোম্পানীর বাগান হতে বড় খাট ছিল না; কিন্তু বর্ত্তমান কুমার বাহাদুর পিতার মৃত্যুর মাসেকের মধ্যে বাগানখানি অয়রান করে ফেল্লেন! বড় বড় গাছগুলি উবড়ে বিক্রি করা হলো, রাজা বাহাদুরের পুরাতন জুতো পর্য্যন্ত পড়ে রইলো না, যে প্রকারে হোক টাকা উপার্জন করাই কুমার বাহাদুরের মতে কৰ্তব্য কৰ্ম্ম। সুতরাং শেষে এই শ্রেষ্ঠ বাগান রামলীলার বঙ্গভূমি হয়ে উঠলো, ঘরে বাইরে বানর নাচতে লাগলো। সহরে সোয়োত উঠলো, এবার বদ্দিনাথের বদলে রাজা নরসিংহের বাগানের ‘রামলীলার।’ কিন্তু এবার গাড়ী-ঘোড়র টিকিট! রাজা বন্দিনাথের বাগানের রামলীলার সময়ে টিকিট বিক্রী করা পদ্ধতি ছিল না, রাজা বাহাদুর ও অপর বড়মানুষে বিলক্ষণ দুশ টাকা সাহায্য কত্তেন, তাতেই সমুদয় খরচ কুলিয়ে উঠতে। কিন্তু রাজা বদ্দিনাথ বৃদ্ধাবস্থায় দু-তিন বৎসর হলে দেহত্যাগ করায় রাজকুমার সুবুদ্ধি বাহাদুরের বাগানখানি ভাগ করে নিলেন—মধ্যে দেইজি পাঁচীল পড়লো; সুতরাং অন্য বড় মানুষেরাও রামলীলায় তাদৃশ উৎসাহই দেখালেন না, তাতেই এবার টিকিট করে কনক টাকা তোলা হয়। বলতে কি, কলিকাতা বড় চমৎকার সহর! অনেকেই রং-তামাসায় অপব্যয় কত্তে বিলক্ষণ অগ্রসর, টিকিট সত্ত্বেও রামলীলার বাগান গাড়ী-ঘোড়া ও জনতায় পরিপূর্ণ; লোকের বেজায় ভিড়! এ দিকে বাবুর ব্রিজক জনতার জন্য অধিক দূর যেতে পাল্লে না, সুতরাং হুজুর দলবলসমেত পায়দলে বেড়ানই সঙ্গত ঠাউরে গাড়ী হতে নেবে বেড়াতে বেড়াতে বঙ্গভূমির শোভা দেখতে লাগলেন। বঙ্গভূমির গেট হতে রামলীলার রণক্ষেত্র পর্য্যন্ত দুসারি দোকান বসেছে; মধ্যে মধ্যে নাগোরদোলা ঘুরচে-গোলাবি খিলি, খেলেনা, চানাচুর ও চিনের বাদাম প্রভৃতি ফিরিওয়ালাদের চীৎকার উঠছে; ইয়ারের দল খাতায় খাতায় প্যারেড করে বেড়াচ্চে; বেশ্যা, খোট্টা, বাজে লোক ও বেণের দলই বারো আনা। রণক্ষেত্রের চার দিকে বেড়ার ধারে চার পাঁচ থাক গাড়ীর সার; কোন গাড়ীর ওপর একজন সৌখীন ইয়ার দু-চার দোস্ত ও দুই একটি মেয়েমানুষ নিয়ে আমোদ কচ্চেন। কোনখানির ভিতরে চিনেকোট ও চুলের চেনওয়ালা চার জন ইয়ার ও একটি মেয়েমানুষ, কোনখানিতে গুটিকত পিলইয়ার টেক্কা জাঠা ইস্কুলের বই বেচে পয়সা সংগ্রহ করে গোলাবি থিলি ও চরসের মজা লুটচে। কতকগুলি গাড়ীতে নিছক খোট্টা মাড়োয়ারী ও মেড়ুঁয়াবাদী, ককগুলি খোসপোষাকী বাবুতে পূর্ণ। আমাদের হুজুর এই সকল দেখতে দেখতে থন্নুমলবাবুর হাত ধরে ক্রমে রণক্ষেত্রের দরজায় এসে পৌঁছিলেন—সেথায় বেজায় ভিড়। দশ-বারোজন চৌকীদার অনবরত সপাসপ করে বেত মাচ্চে; দশ জন সার্জ্জন সবলে ঠেলে রয়েছে, তথাপি রাখতে পাচ্চে না, থেকে থেকে “রাজা রামচন্দ্রজীকা জয়!” বলে খোট্টার ও রণক্ষেত্রের মধ্য হতে বানরেরা চেঁচিয়ে উঠচে। সকলেরই ইচ্ছা, রামচন্দ্রের মনোহর রূপ দেখে চরিতার্থ হবে; কিন্তু কার সাধ্য, সহজে রামচন্দ্রের সমীপস্থ হয়। হুজুর অনেক কষ্টেসৃষ্টে বেড়ার দ্বার পার হয়ে রণক্ষেত্রে প্রবেশ করে বানরের দলে মিশলেন। রণক্ষেত্রের অন্যদিকে লঙ্কা। মনে করুন, সেথায় সাজা রাক্ষসেরা ঘুরে বেড়াচ্চে ও বেড়ার নিকটস্থ মালা গাড়ীর দিকে মুখ নেড়ে হিঁ হিঁ করে ভয় দেখাচ্ছে। সাজা বানরেরা লাফাচ্ছে ও গাছপাথরের বদলে ছেঁড়াকুঁপো ও পাকাটি নিয়ে ছোঁড়াছুড়ি কচ্চে। বাবু এই সকল অদৃষ্টচর ব্যাপার দেখে যার পর নাই পরিতুষ্ট হয়ে বেড়ার পাশে পাশে হাঁ করে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন; আরো দু-চার জন বেণে বড়মানুষ ও ব্যাদড়ী বনেদীবাবুরা ভিতরে এসে বাবুর সঙ্গে জুটে গেলেন। মধ্যে মধ্যে দালাল ও তুলোওয়ালা ইনফুলুয়েনশল রিফর্মড খোট্টার দলের সঙ্গেও বাবুর সেখানে সাক্ষাৎ হতে লাগলো। কেউ ‘রাম রাম’ কেউ ‘আদাব’ কেউ ‘বন্দীগি’ প্রভৃতি সেলীমাল্কির সঙ্গে পানের দোনা উপহার দিয়ে, বাবুর অভ্যর্থনা কত্তে লাগলো; এঁরা অনেকে দুই প্রহরের সময়ে এসেছেন, রাত্রি দশটার পর ভরপেট রামলীলে গিলে বাড়ী ফিরবেন। রণক্ষেত্রের মধ্যে বাবু ও দু-চার সবস্‌স্ক্রাইবর বড়মানুষের ছেলেদের বেড়াতে দেখে, ম্যানেজার বা তার আসিষ্টেট দৌড়ে নিকটস্থ হয়ে, পানের দোনা উপহার দিয়ে রণক্ষেত্রের মধ্যস্থ দু-চার কাগজের সঙের তরজমা করে বোঝাতে লাগলেন। কত গাড়ী ও আন্দাজ কত লোক এসেছে, তার একটা মনগড়া মিমো করে দিলেন ও প্রত্যেক বানর ভালুক ও রাক্ষসের সাজগোজের প্রশংসা কত্তেও বিস্মৃত হলেন না। বাবু ও অন্যান্য সকলে “এ দফে বড়ি আচ্ছা হুয়া, আর বরস্ এসি নেহি হুয়া থা” প্রভৃতি কমপ্লিমেণ্ট দিয়ে ম্যানেজারদের আপ্যায়িত কত্তে লাগলেন। এ দিকে বাজীতে আগুন দেওয়া আরম্ভ হলো, ক্রমে চার পাঁচ রকম বাজে কেতার বাজি পুড়ে সেদিন রামলীলা বরখাস্ত হলো। রাম-লক্ষণকে আরতি করে ও ফুলের মালা দিয়ে প্রণাম করে, বাজে লোকেরা জন্ম সফল বিবেচনা করে ঘরমুখো হলো। কেরাঞ্চীর ঘোড়ারা বাতকৰ্ম্ম কত্তে কত্তে বহু কষ্টে গাড়ী নিয়ে প্রস্থান কল্লে। বাবু সেই ভিড়ের ভিতর হতে অতিকষ্টে গাড়ী চিনে নিয়ে সওয়ার হলেন–সেদিনের রামলীলা এই রকমে উপসংহার হলো। আমাদের এ সকল বিষয়ে বড় সখ, সুতরাং আমরাও একখানি ছ্যাক্‌ড়াগাড়ীর পিছনে বসে, রামলীলা দেখতে যাচ্চিলাম। গাড়ীখানির ভিতরে একজন ছুতোরবাবু গুটি দুই গেরম্বারী মেয়েমানুষ ও তাঁয় চার পাঁচ জন দোস্ত ছিল; খানিক দূরে যেতে না যেতেই একটা জন্মজেঠা ফচ্‌কে ছোঁড়া রাস্তা থেকে “গাড়োয়ান পিছু ভারি। গাড়োয়ান পিছু ভারি।” বলে চেঁচিয়ে ওঠায় গাড়োয়ান্ “কে রে শালা।” বলে সপাৎ করে এক চাবুক ঝাড়লে। ভিতর থেকে ‘আরে কে রে, ল্যে বে যাঁ, ল্যে বে যা, চৎকার হতে লাগলো। অগত্যা সেদিন আর যাওয়া হলো না; মনের সখ মনেই রইলো। শরতের শশধর স্বচ্ছ শ্যামগগনমাঝে নক্ষত্রসমাজে বিরাজ কচ্চেন দেখে, প্রণয়িনী বৃী মনভরে অবগুণ্ঠনবতী হয়ে রয়েছেন। চক্ৰবাদম্পতী কত প্রকার সাধ্যসাধনা কচ্ছে, কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে, সপত্নার দুর্দশা দর্শন করে স্বচ্ছ সলিলে কুমুদিনী হাসচে। চাঁদের চির অনুগত চকোর-চকোরী শর্বরীর দুঃখে ঐধিত হয়ে তারে তুড়ে ভৎসনা কচ্চে, ঝিঁঝিপোকা উইচিংড়ারাও চীৎকার করে চকোর-চকোরীর সঙ্গে যোগ দিতেছে; লম্পটশিরোমণির ব্যবহার দেখে প্রকৃতি সতী বিস্মিত হয়ে রয়েছেন; এ সময়ে নিকটস্থ রজনীরঞ্জন বড় অপ্রস্তুত হবেন বলেই যেন পবন বড় বড় গাছতলায় ও ঝোপ-ঝাপের আশে পাশে আস্তে আস্তে পা টিপে টিপে চলেচেন। অভিমানিনী মানবতী রজনীর বিন্দু বিন্দু নয়নজল শিশিরচ্ছলে বনরাজী ও ফুলদামে অভিষিক্ত কচ্চে। এদিকে বাবুর ব্রিজকা ও বিলাতী জুড়ি টপাপট শব্দে রাস্তা কাঁপয়ে ভদ্রাসনে পৌঁছিল। বাবু ড্রেসিংরুমে কাপড় ছাড়তে গেলেন, সহচরেরা বৈঠকখানায় বসে তামাক খেতে খেতে রামলীলার জাওর কাটতে লাগলেন এবং সকলে মিলে প্রাণ খুলে দু-চার অপর বড়মানুষের নিন্দাবাদ জুড়ে দিলেন। বাবুও কিছু পরে কাপড় চোপড় ছেড়ে মজলিসে বার দিলেন; গুডুম করে নটার তোপ পড়ে গেল। বোধ হয়, মহিমার্ণব পাঠকবর্গের স্মরণ থাকূতে পারে যে, বাবু রামভদ্দর হুজুরের সঙ্গে রামলীলা দেখতে গিয়েছিলেন। বর্ত্তমানে দু চার বাজে কথার পর বাবু রামভদ্দরবাবুকে দু একটা টপ্পা গাইতে অনুরোধ কল্লেন; রামভদ্দর বাবুর গান বাজনায় বিলক্ষণ সখ, গলাখানিও বড় চমৎকার! যদিও তিনি এ বিষয়ে পেশাদার নন, তথাপি সহরের বড়মানুষমহলে ঐ গুণেই পরিচিত। বিশেষতঃ বাবু রামভদ্দরের আজকাল সময় ভাল, কোম্পানীর কাগজের দালালী ও গাঁতের মাল কেনার দরুণ দশটাকা রোজগার কোচ্ছেন; বাড়ীর নিত্যনৈমিত্তিক দোল-দুর্গোৎসবও ফাঁক যায় না। বাপ-মার শ্রাদ্ধ ও ছেলে মেয়ের বিয়ের সময়ে দশজন ব্রাহ্মণ-পণ্ডিত বলা আছে। গ্রামস্থ সমস্ত ব্রাহ্মণ প্রায় বাবুর দল, কায়স্থ ও নবশাক ও অনেকগুলি বাবুর অনুগত। কৰ্ম্মকাজের ভিডের দরুণ ভদ্দরবাবুর বারোমাস প্রায় সহরেই বাস; কেবল মধ্যে মধ্যে পাল-পার্ব্বণ ও ছুটিটা আসটায় বাড়ী যাওয়া আছে। ভদ্দরবাবুর সহরের বাদুড়বাগানের বাসাতেও অনেকগুলি ভদ্দরলোকের ছেলেকে অন্ন দেওয়া আছে ও দুচার জন বড়মানুষেও ভদ্দরবাবুরে বিলক্ষণ স্নেহ করে থাকেন। রামভদ্দরবাবু সিমলের রায়বাহাদুরের সোণার কাটি রূপোর কাটি ছিলেন ও অন্যান্য অনেক বড়মানুষেই এঁরে যথেষ্ট স্নেহ করে থাকেন। সুতরাং বাবু অনুরোধ করবামাত্র ভদ্দরবাবু। তানপুরা মিলিয়ে একটি নিজরচিত গান জুড়ে দিলেন, হলধর তবলা-বাঁয়া ঠুকে নিয়ে বোলওয়াট ও ফ্যালওয়াটের সঙ্গে সঙ্গত আরম্ভ কলেন। রামলীলার নক্সা এইখানেই ফুরালো।
কালীপ্রসন্ন সিংহ
২.৪ রেলওয়ে কালীপ্রসন্ন সিংহ রেলওয়ে দুর্গোৎসবের ছুটীতে হাওড়া হতে এলাহাবাদ পর্য্যন্ত রেলওয়ে খুলেছে; রাস্তার মোড়ে মোড়ে লাল কাল অক্ষরে ছাপানো ইংরাজী বাঙ্গালায় এস্তাহার মারা গেছে। অনেকেই আমোদ করে বেড়াতে যাচ্চেন-তীর্থযাত্রীও বিস্তর। শ্ৰীপাট নিমতলার প্রেমানন্দ দাস বাবাজীও এই অকাশে বারাণসী দর্শন কত্তে কৃতসঙ্কল্প হয়েছিলেন। প্রেমানন্দ বাবাজী শ্রীপাট জোড়াসাঁকোর প্রধান মঠের একজন কেষ্টবিষ্ণুর মধ্যে; বাবাজীর অনেক শিষ্য-সেবক ও বিষয়-আশয়ও প্রচুর ছিল; বাবাজীর শরীর স্কুল ভুঁড়িটি বড় তাকিয়ার মত প্রকাণ্ড; হাত পাগুলিও তদনুরূপ মাংসল ও মেদময়। বাবাজীর বর্ণ কষ্টিপাথরের মত, হুঁকোর খোলের মত ও ধানসিদ্ধ হাঁড়ির মত কুচকুচে কালো। মস্তক কেশহীন করে কামান, মধ্যস্থলে লম্বাচুলের চৈতন্যচুটকি সর্ব্বদা খোঁপার মত বাঁধা থাকতো; বাবাজী বহুকাল কচ্ছ দিয়ে কাপড় পরা পরিহার করেছিলেন, সুতরাং কৌপীনের উপর নানারঙ্গের বহির্বাস ব্যবহার কভেন। সর্ব্বদা সর্ব্বাঙ্গে গোপীমৃত্তিকা মাখা ছিল ও গলায় পদ্মবীচি তুলসী প্রভৃতি নানা প্রকার মালা সৰ্ব্বদা পরে থাকত্তেন। তাতে একটি লাল বাতের বড় বালিসের মত জপমালার থলি পিতলের কড়ায় আবক্ষ ঝুলতে। বাবাজী একটি ভাল দিন স্থির করে প্রত্যুষেই দৈনন্দিন কাৰ্য্য সমাপন কল্লেন ও তাড়াতাড়ি যথাকথঞ্চি বাড়ীর বিগ্রহের প্রসাদ পেয়ে, দুই শিষ্য ও তল্পিদার ও ছড়িদার সঙ্গে লয়ে, মঠ হতে বেরিয়ে গাড়ীর সন্ধানে চিৎপুররোডে উপস্থিত হলেন। পাঠকবর্গ মনে করুন, যেন স্কুল অফিস খোলবার এখনো বিলম্ব আছে, রামলীলার মেলার এখনো উপসংহার হয়নি। সুতরাং রাস্তায় গহনার কেরাঞ্চী থাকবার সম্ভাবনা কি। বাবাজী অনেক অনুসন্ধান করে শেষে এক গাড়ীর আড্ডায় প্রবেশ করে, অনেক কষা-মাজার পর একজনকে ভাড়া যেতে সম্মত কল্লেন। এদিকে গাড়ী প্রস্তুত হতে লাগলো, বাবাজী তারি অপেক্ষায় এক বেশ্যালয়ের বারাণ্ডার নীচে দাঁড়িয়ে রইলেন। শ্রীপাট কুমারনগরের জ্ঞানানন্দ বাবাজী প্রেমানন্দ বাবাজীর পরম বন্ধু ছিলেন। তিনিও রেলগাড়ী চড়ে বারাণসী দর্শনে ইচ্ছুক হয়ে, কিছু পূর্ব্বেই বাবাজীর শ্রীপাটে উপস্থিত হয়ে, সেবাদাসীর কাছে শুনলেন যে, বাবাজীও সেই মানসে কিছু পূর্ব্বেই বেরিয়ে গেচেন। সুতরাং এরই অনুসন্ধান কত্তে কত্তে সেইখানেই উভয়ের সাক্ষাৎ হলো। জ্ঞানানন্দ বাবাজী যার পর নাই কৃশ ছিলেন; দশবৎসরের জ্বর ও কাসী রোগ ভোগ করে শরীর শুকিয়ে কঞ্চি ও কাঠির মত পাকিয়ে গেছিল, চক্ষু দুটি কোটরে বসে গেছে, মাংস-মেদের লেশমাত্র শরীরে নাই, কেবল কখন কঙ্কালমাত্রে ঠেকেচে; তায় এক মাথা রুক্ষ তৈলহীন চুল, একখানা মোটা লুই দুপাট করে গায়ে জড়ানো, হাতে একগাছা বেঁউড় বাঁশের বাঁকা লাঠি ও পায়ে একজোড়া জগন্নাথি উড়ে জুতো। অনবরত কালচেন ও গয়ের ফেলচেন এবং মধ্যে মধ্যে শামুক হতে এক এক টিপ নস্য লওয়া হচ্ছে। অনবরত নস্য নিয়ে নাকের নলি এমনি অসাড় হয়ে গেছে যে, নাক দিয়ে অনবরত নস্য ও সর্দ্দিমিশ্রিত কফজল গড়াচ্ছে, কিন্তু তিনি তা টেরও পাচ্চেন না, এমন কি, এর দরুণ তাঁরে ক্রমে থোনা হয়ে পড়তে হয়েছিল এবং আলজিভও খারপ হয়ে যাওয়ায় সর্ব্বদাই ভেটকী মাছের মত হা করে থাকত্তেন। প্রেমানন্দ জ্ঞানানন্দের সাক্ষাৎ পেয়ে বড়ই আদিত হলেন। প্রথমে পরস্পরে কোলাকুলি হলো, শেষে কুশল-প্রশ্নদির পর দুই বন্ধুতে দুই ভেয়ের মত একত্রে বারাণসী দর্শন কত্তে যাওয়াই স্থির কল্লেন! এদিকে কেরাঞ্চী প্রস্তুত হয়ে বাবাজীদের নিকটস্থ হলে, তল্পিদার তল্পি নিয়ে ছাদে, ছড়িদার ও সেবায়েৎ পেছোনে ও দুই শিষ্য কোচ বক্সে উঠলো। বাবাজীরা দুজনে গাড়ীর মধ্যে প্রবেশ কল্লেন। প্রেমানন্দ গাড়ীতে পদার্পণ করবামাত্র গাড়ীখানি মড় মড় করে উঠলো, সামনের দিকে জ্ঞানানন্দ বসে পড়লেন। উপরের বারাণ্ডায় কতকগুলি বেশ্যা দাঁড়িয়েছিল, তারা বাবাজীকে দেখে পরস্পর “ভাই একটা একগাড়ী গোঁসাই দেখেছিস! মিন্সে যেন কুম্ভকর্ণ!” প্রভৃতি বলাবলি করতে লাগলো। গাড়োয়ান গাড়ীতে উঠে সপাসপ করে চাবুক দিয়ে ঘোড়ায় বাস হ্যাঁচকাতে হ্যাঁচকাতে জিভে ট্যাক্ ট্যাক্ শব্দ করে চাবুক মাথার উপরে ঘোরাতে লাগলো, কিন্তু ঘোড়ার সাধ্য কি যে, এক পা নড়ে! কেবল অনবরত লাথি ছুড়তে লাগলো ও মধ্যে মধ্যে বাতকর্ম্ম করে আসোর জম্‌কিয়ে দিলে। পাঠকবর্গের স্মরণ থাকতে পারে যে, আমরা পূর্ব্বেই বলে গেচি, কলিকাতা আজব শহর। ক্রমে রাস্তায় লোক জমে গেল। এই ভিড়ের মধ্যে একটা চীনের বাদামওয়ালা ছোঁড়া বলে উঠলো, ‘ওরে গাড়োয়ান। এক দিকে একটা ধূম্মলোচন ও আর এক দিকে একটা চিম্‌ড়ে সওয়ারি, আগে পাষাণ ভেঙ্গে নে, তবে চলবে।’ অমনি উপর থেকে বেশ্যারা বলে উঠলো, ‘ওরে এই রোগা মিন্সেটার গলায় গোটাকতক পাথর বেঁধে দে, তা হলে, পাষাণ ভাঙ্গা হবে।’ প্রেমানন্দ এই সকল কথাতে বিরক্ত হয়ে ঘৃণা ও ক্রোধে জ্বলে উঠে, খানিকক্ষণ ঘাড় গুঁজে রইলেন; শেষে ঈষৎ ঘাড় উঁচু করে জ্ঞানানন্দকে বল্লেন, ‘ভায়া! সহরের স্ত্রীলোকগুলা কি ব্যাপিকা দেখেচো’ ও শেষে ‘প্রভো! তোমার ইচ্ছা’ বলে হাই তুল্লেন! জ্ঞানানন্দও হাই তুল্লেন ও দুবার তুড়ি দিয়ে একটিপ নস্য নিয়ে বল্লেন, “ঠিক বলেঁচো দা দাঁ, ওরাঁ ভঁর্তার কাঁছে উঁপদেশ পাঁঞি নাঁঞি, ওঁঞাদের রাঁমা রঁঞ্জিকার পাঁঠ দেঁওঞা উঁচিত।” প্রেমানন্দ রামারঞ্জিকার নাম শুনে বড়ই পুলকিত হয়ে বল্লেন, ‘ভায়া না হলে মনের কথা কে বলে? রামারঞ্জিকার মত পুঁথি ত্রিজগতে নাই। প্রভো তোমার ইচ্ছা জ্ঞানানন্দ এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে একটিপ নস্য নিয়ে অনেকক্ষণ চুপ করে থেকে মাথাটা চুল্কে বল্লেন, দাঁ দাঁ, শুঁনেছি বিবিরাঁ নাঁকি রাঁমারঁঞ্জিকা পঁড়ছেঁ। প্রেমানন্দ অমনি আহ্লাদে “আরে ভায়া, রামারঞ্জিকা পুঁথির মত ত্রিজগতে হান পুঁথি নাঞি! প্রভো, তোমার ইচ্ছা।” এদিকে অনেক কসলতের পর কেরাঞ্চি গুড়িগুড়ি চলতে লাগলেন; তল্পিদারেরা গাড়ীর ছাদে বসে গাঁজা টিপতে লাগলো! মধ্যে শরতের মেঘে এক পসলা ভারি বৃষ্টি আরম্ভ হলো, বাবাজীর গাড়ীর দরজা ঠেলে দিয়ে অন্ধকারে বারোইয়ারির গুদম্‌জাত সংগুলির মত আড়ষ্ট হয়ে বসে রইলেন। খানিকক্ষণ এইরূপে নিস্তব্ধ হয়ে থেকে জ্ঞানানন্দ বাবাজী একবার গাড়ীর ফাটলে চক্ষু দিয়ে বৃষ্টি কিরূপ পড়চে তা দেখে নিয়ে একটিপ নস্য নিলেন ও বারদুই কেসে বল্লেন, “দাঁ, দাঁ, এঁকটা সংকীৰ্ত্তন হঁক শুঁধু শুঁধু বসে কাল কাঁটান হচ্ছে ঞন্না।” প্রেমানন্দ সঙ্গীতবিদ্যার বড় ভক্ত ছিলেন, নিজে ভাল গাইতে পারুন আর নাই পারুন, আড়ালে ও নিজ্জনে সৰ্ব্বদা গলাবাজী কত্তেন ও দিবারাত্র গুগুণোনির কামাই ছিল না। এ ছাড়া বাবাজী সঙ্গীতবিষয়ক একখানা বইও ছাপিয়েছেন এবং ঐ সকল গান প্রথম প্রথম দু-এক গোড়ার বাড়ী মজলিস করে গায়ক দিয়ে গাওয়ানো হয়, সুতরাং জ্ঞানানন্দের কথাতে বই প্রফুল্লিত হয়ে মল্লার ভেজে গান ধনে পাঠশালার ছেলেরা যেমন ঘোষবার সময়ে সম্বার পোড়োর সঙ্গে গোলে হরিবোল দিয়ে গণ্ডায় এ বলে সায় দিয়ে যায়, সেই প্রকার জ্ঞানানন্দ প্রেমানন্দের সঙ্গীত শুনে উৎসাহিত হয়ে মধ্যে মধ্যে দুই একটা তান মারতে লাগলেন। ভাঙ্গা ও খোন, আওয়াজের একত্র চাকারে গাড়োয়ান গাড়ী থামিয়ে ফেলে, তল্পিদার তড়াক করে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে দরজা খুলে দেখে যে, বাবাজীর প্রেমোন্মত্ত হয়ে চৎকার করে গান ধরেচেন। রাস্তার ধারে পাহারাওয়ালারা তামাক খেতে খেতে ঢুলতেছিল, গাড়ীর ভেতরের বেতরে আওয়াজে চমকে উঠে কলকে ফেলে দৌড়ে গাড়ীর কাছে উপস্থিত হলো; দোকানদারেরা দোকান থেকে গলা বাড়িয়ে উঁকি  মেরে দেখতে লাগলো কিন্তু বাবাজীরা প্রভুপ্রেমগানে এমনি মেতে গিয়েছেন যে, তখনো তান মারা থামে নি। শেষে সহসা গাড়ী থামায় ও লোকের গোলে চৈতন্য হলো ও পাহারাওয়ালাকে দেখে কিঞ্চিং অপ্রস্তুত হয়ে পড়লেন। সেই সময় ব্লাস্তা দিয়ে একটা নগদ মুটে ঝাঁকি। কাঁধে করে বেকার চলে যাচ্চিল, এই ব্যাপার দেখে সে থমকে দাঁড়িয়ে ‘পুঙ্গির ভাই গাড়িমদ্দি ক্যালাবতী লাগাইচেন’ বলে চলে গেল। পাহারাওয়ালাকে কল্‌কে পরিত্যাগ করে আসতে হয়েছিল বলে সেও বাবাজীদের বিচক্ষণ লাঞ্ছনা করে পুনরায় দোকানে গিয়ে বসলো; রেলওয়ে ব্যাগ হাতে একজন সহুরে বাবু অনেকক্ষণ পর্য্যন্ত গাড়ীর অপেক্ষায় এক দোকানে বসেছিলে, বৃষ্টিতে তার রেলওয়ে টমিসে উপস্থিত হবার বিলক্ষণ ব্যাঘাত কতেছিল, এক্ষণে বাবাদের গাড়োয়ানের সঙ্গে ঐ অবকাশে ভাড়া-চুক্তি করে, হুড়মুড় করে গাড়ীর মধ্যে ঢুকে পড়লেন! এদিকে গাড়োয়ানও গাড়ী হাঁকিয়ে দিলে। তল্পিদার খানিক দৌড়ে দৌড়ে শেষে গাড়ীর পিছনে উঠে পড়লে। আমাদের নব্যবাবুকে একজন বিখ্যাত লোক বল্লেও বলা যায়; বিশেষতঃ তিনি সহরের নিকটবর্ত্তী একটি প্রসিদ্ধ স্থলে একটি ব্রাহ্মসভা স্থাপন করে, স্বয়ং তার সম্পাদক হয়েছিলেন, এ সওয়ায় সেই গ্রামেই একটি ভারি মাইনের চাকরী ছিল। নববাবু “রিফৰ্ম্মড ক্লাসের টেক্কা ও সমাজের রঙ্গের গোলামহরূপ” ছিলেন। দিবারাত্রি “সামগ্রী” কত্তেন, ও সর্ব্বদাই ভরপূর থাকত্তেন–শনিবার ও রবিবার কিছু বেশী মাত্রায় “কারগো” নিতেন, মধ্যে মধ্যে “বানচাল হওয়ারও বাকি থাকতো না। প্রতিষ্ঠিত ব্রাহ্মসমাজের “ফরণিচর” ও “লাইব্রেরীর” বই কিনতে বাবু ছুটি নিয়ে শহরে এসেছিলেন। ক দিন খোঁড়া ব্রহ্মের সমাজেই প্রকৃতির প্রীতি ও প্রিয়কাৰ্য্য সাধন করে, বিলক্ষণ ব্রহ্মানন্দ লাভ করা হয়। মাতাল বাবু গাড়ীর মধ্যে ঢুকে প্রথমে প্রেমানন্দ বাবাজীর ভুঁড়ির উপর টলে পড়লেন, আবার ধাক্কা পেয়ে জ্ঞানানন্দের মুখের উপর পড়ে পুনরায় প্রেমানন্দের ভুঁড়িতে টলে পড়লেন। বাবাজীরা উভয়ে তটস্থ হয়ে মুখ চাওয়াচাওয়ি কত্তে লাগলেন। মাতাল কোথায় বসবেন, তা স্থির কত্তে না পেরে মোছলমানদের গাজীমিয়ার ধ্বজার মত, একবার এ পাশ একবার ও পাশ কত্তে লাগলেন। বাবাজীরা যাতালবাবুর সঙ্গে, এক খাঁচায় পোয়া বাজ ও পায়রার মত বসবাস করুন ছক্কড়খানি ভরপুর বোঝাইয়ে নবাবী চালে চলুক; তল্পিদারেরা অনবরত গাঁজা ফুঁকতে থাক। এ দিকে বৃষ্টি থেমে যাওয়ায়, সহর আবার পূর্ব্বানুরূপ গুলজার হয়েচে। মধ্যাবস্থ গৃহস্থের বাজার কত্তে বেরিয়েচেন; সঙ্গে চাকর ও চাকরাণীরা ধামা ও চাঙ্গায়ী নিয়ে পেচু পেচু চলেছে, চিৎপুর রোডে মেঘ কল্লে কাদা হয়, সুতরাং কাদার জন্য পথিকদের চলবার বড়ই কষ্ট কচ্চে; কেউ পয়নালার উপর দিয়ে, কেউ খানার বার দিয়ে, জুতো হাতে করে কাপড় তুলে চলেছেন। আলু পটল! ঘি চাই! গুড় ও ঘোল! ফিরিওয়ালারা চীৎকার কত্তে কতে যাচ্চে; পাছে পাছে মেচুনীরা চুপড়ি মাথায় নিয়ে, হাত নেড়ে, হন হন করে ছুটেছে, কার সঙ্গে মেছোর কাঁধে বড় বড় ভেট্‌কী ও মৌলবীর মত চাঁপদাড়ী ও জামাজোড়া-পরা চিংড়িভরা বাজরা ও ভার। রাজার বাজার, লালাবাবুর বাজার, পোস্তা ও কাপুড়েপটি জনতায় পরিপূর্ণ। দোকানে বিবিধ সামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে, দোকানদারেরা ব্যতিব্যস্ত, খদ্দেরদের বেজায় ভিড়। শীতলঠাকুর নিয়ে ডোমের পণ্ডিত মন্দিরার সঙ্গে গান করে ভিক্ষা কচ্চে, খঞ্জনী ও একতারা নিয়ে বষ্টম ও নেড়ানেড়িরা গান কচ্চে; চার পাচজন ‘তিন দিবস আহার হয় নাই’ ‘বিদেশী ব্রাহ্মণকে কিছু দান কর দাতালোক!’ বলে ঘুরচে। অনেকের মৌতাতের সময় উত্তীর্ণ হয়েচে; অন্য কোন উপায় নাই, কিছু উপার্জনও হয় নাই, মদওয়ালাও ধার দেওয়া বন্ধ করেচে, গত কল গায়ের চাদরখানিতে চলেচে–আজ আর সম্বলমাত্র নাই। ম্যাথরেরা ময়লা ফেলে এসে মদের দোকেনে ঢুকে কসে রম টানছে, ও মুদ্দাফরাসদের সঙ্গে উভয়ের অবলম্বিত পেশার কোন্‌টা উত্তম, তারি তক্‌বার হচ্ছে। শুঁড়ি মধ্যস্থ হয়ে কখন মুদ্দাফরাশের কাজটাকে ম্যাথরের পেশা হতে শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন করে, মুদ্দাফরাশকে সন্তুষ্ট কচ্চেন; কখন ম্যাথরের পেশাটাকে শ্রেষ্ঠ বলে মানচেন! ঢুলি, ডোম, কাওয়া ও দুলে বেহারারা কুরুপাণ্ডবের যুদ্ধের ন্যায় উভয় দলের সহায়তা কচ্চে। হয় ত এমন সময়ে একদল ঝুমুর বা গদাইনাচ আসরে উপস্থিত হবামাত্র, তর্কাগ্নিতে একবারে জল দেওয়া হলো-মদের দোকান বড়ই সরগরম। সহরের দেবতারা পর্য্যন্ত রোজগেরে। কালী ও পঞ্চানন্দ প্রসাদী পাঁঠার ভাগা দিয়ে বসেছেন; অনেক ভদ্দরলোকের বাড়ী উঠনো বরাদ্দ করা আছে; কোথাও রসুই করা মাংসেরও সরবরাহ হয়; খদ্দের দলে মাতাল, বেণে ও বেশ্যাই বারো আনা। আজকাল পাঁঠা বড় দুষ্প্রাপ্য ও অগ্নিমূল্য হওয়ায় কোথাও কোথাও পাঁঠী পর্য্যন্ত বলি হয়; কোন স্থলে পোষা বিড়াল ও কুকুর পর্য্যন্ত কেটে মাংসের ভাগায় মিশাল দেওয়া হয়! যে মুখে বাজারের বসুইকরা মাংস অক্লেশে চলে যায়, সেথায় বিড়াল কুকুর ফেলবার সামগ্রী নয়। জলচর ও খেচরের মধ্যে নৌকা ও ঘুড়ি ও চতুম্পদের মধ্যে কেবল খাট খাওয়া নাই। পাঠকগণ! এতক্ষণ আপনাদের প্রেমানন্দ ও জ্ঞানানন্দের গাড়ী রেলওয়ে টরমিনসে পৌঁছুলে প্রায় দেখুন! আপনাদের বৈঠকখানার ঘড়ী নটা বাজিয়ে দিয়ে, পুনরায় অবিশ্রান্ত টুকটাক করে চলছে, আপনারা নিয়মাতিরিক্ত পরিশ্রম করে ক্লান্ত হন, চন্দ্র ও সূর্য্য অস্তাচলে আরাম করেন, কিন্তু সময় এক পরিমাণে চলচে, ক্ষণকালের তরে অবসর, অবকাশ বা আরামের অপেক্ষা বা প্রার্থনা করে না। কিন্তু হায়! আমরা কখন কখন এই অমূল্য সময়ের এমনই অপব্যয় করে থাকি, শেষে ভেবে দেখে তার জন্য যে কত তীব্রতর পরিতাপ সহ্য কত্তে হয়, তার ইয়ত্তা করা যায় না। এদিকে সেই ছক্কড়ের ভিতরে সেই ব্রাহ্মবাবুর শেষে থপ করে জ্ঞানানন্দের কোলে বসে পড়লেন; ব্রাহ্মবাবুর চাপনে জ্ঞানানন্দ মৃতপ্রায় হয়ে গুড়িশুড়ি মেরে গাড়ীর পেনেলসই হয়ে রইলেন; বাবু সরে সামলে বসে খানিক একদৃষ্টে প্রেমানন্দের পানে চেয়ে ফিক করে হেসে, রেলওয়ে ব্যাগটি পায়দানে নাবিয়ে, জ্ঞানানন্দের দিকে একবার কটাক্ষ করে নিয়ে পকেট হতে প্রেসিডেন্সি মেডিকেল হল লেবেল দেওয়া একটি ফায়েল বার করে, শিশির সমুদার আরকটুকু গলায় ঢেলে দিয়ে খানিক মুখ বিকৃত করে, রুমালে মুখ মুচে, জামার জেল হতে দু ডুমে সুপুরি বন্ধ করে চিবুতে লাগলেন। প্রেমানন্দ ও জ্ঞানানন্দ ব্রহ্মবাবুর গাড়ীতে ওঠাতে বড় বিরক্ত হয়েছিলেন এবং উভয়ে আড়ষ্ট হয়ে তার আপাদমস্তক নিরীক্ষণ কত্তেছিলেন, কারণ বাবুর একটি কালো বনাতের পেণ্টুলেন ও চাপকান পরা ছিল। তার উপর একটা নীল মেরিনের চায়নাকোট, মাথায় একটা বিভর হেয়ারের চোঙ্গাকাঁটা ট্যাসল লাগানো ক্যাটিকৃষ্ট ক্যাপ ও গলায় লাল ও হলদে জালবোনা কম্ফর্টার, হাতে একটা কার্পেটের ব্যাগ ও একটা বিলিতী ওকের গাঁট বাহির করা কেঁদো কোঁৎকা, এতদ্ভিন্ন বাবুর সঙ্গে একটা ওয়াচ ছিল, তার নিদর্শন স্বরূপ একটি চাবি ও দুটি শিল চুলের গার্ডচেনে ঝুলচে। হাতের আঙ্গুলে একটি আংটিও পরা ছিল, জ্ঞানানন্দ ঠাউরে ঠাউরে দেখলেন যে, সেটির ওপরে ওঁ তৎ সৎ’ খোদা রয়েছে। ব্রাহ্মবাবু আরকের ঝাঁজ সামলে প্রেসিডেন্সি ডাক্তারখানার লেবেল মারা ফায়েলটা গাড়ী হতে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে দেখলেন, প্রেমানন্দ ও জ্ঞানানন্দ একদৃষ্টে তার আপাদমস্তক নিরীক্ষণ কচ্চেন। সুতরাং কিঞ্চিৎ অপ্রস্তুত হয়ে একটু মুচকে হেসে জ্ঞানানন্দকে জিজ্ঞাসা কল্লেন, “প্রভু আপনার নাম?” জ্ঞানানন্দবাবুকে তার দিকে ফিরে কথা কবার উদ্যম দেখেই শঙ্কিত হয়েছিলেন, এখন প্রথম একবার একটিপ নস্য নিলেন, শামুকটা বার দুচ্চার টুকলেন, শেষে অতিকষ্টে বল্লেন, “আমার নাম পুঁচ করেচেন ঞ আমার নাম শ্রীজ্ঞানানন্দ দাস দেব, নিবাস শ্ৰীপাট কুমারনগর।” মাতালবাবু নাম শুনে পুনরায় একটু মুচকে হেসে জিজ্ঞাসা কল্লে, “দেব বাবাজীর গমন কোথায় হবে,” জ্ঞানানন্দ এ কথার কি উত্তর দিবেন তা স্থির কত্তে না পেরে প্রেমানন্দের মুখপানে চেয়ে রহিলেন। প্রেমানন্দ জ্ঞানানন্দ হতে চালাক চোস্ত ও ধড়িবাজ লোক; অনেকস্থলে পোড়খাওয়া হয়েচে, সুতরাং এই অবসরে বল্লেন, “বাবু আমরা দুই জনেই গোঁসাইগগাবিন্দ মানুষ। ইচ্ছা, বারাণসী দর্শন করে বৃন্দাবন যাব, বাবুর নাম?” মাতালবাবু পুনরায় কিঞ্চিৎ হাসলেন ও পকেট হতে দু ডুমো সুপুরি মুখে দিয়ে বল্লেন, “আমার নাম কৈলাসমোহন, বাড়ী এইখানেই, কৰ্ম্মস্থানে যাওয়া হচ্ছে।” প্রেমানন্দবাবুর নাম শুনে কিঞ্চিৎ গম্ভীর ভাব ধারণ করে বল্লেন, “ভাল ভাল, উত্তম!” ব্রহ্মবাবু পুনরায় জিজ্ঞাসা কল্লেন, “দেব বাবাজী কি আপনার ভ্রাতা?” এতে প্রেমানন্দ বল্লেন, “হাঁ বাপু, একপ্রকার ভ্রাতা বল্লেও বলা যায়; বিশেষতঃ সহধর্মী; আরো জ্ঞানানন্দ ভায়া বিখ্যাত বংশীয়—পূজ্যপাদ জয়দেব গোস্বামী ওনার পূৰ্ব্বপিতামহ।” মাতালবাবু এই কথায় ফিক করে হাসলেন ও প্রেমানন্দকে জিজ্ঞাসা কল্লেন, “উনি তো জয়দেবের বংশ, প্রভু কার বংশ? বোধ হয়, নিতাই চৈতন্যের স্ববংশীয় হবেন!” এই কথায় রহস্য বিবেচনায় প্রেমানন্দ চুপ করে গোঁ হয়ে বসে রইলেন; মনে মনে যে যার পর নাই বিরক্ত হয়েছিলেন, তা তাঁর মুখ দেখে ব্রাহ্মবাবু জানতে পেরে, অপ্রস্তুত হবার পরিবর্তে বরং মনে মনে আল্লাদিত হয়ে, বাবাজীদের যথাসাধ্য বিরক্ত কত্তে কতনিশ্চয় হয়ে, প্রেমানন্দের দিকে ফিরে বল্লেন, “প্রভু! দিব্বি সেজেচেন। সহসা আপনারে দেখে আমার মনে হচ্ছে, যেন কোথাও যাত্রা হবে, আপনারা সেজে গুঁজে চলেছেন। প্রভু একটি গান করুন দেখি, মধ্যে আপনাদের ভানের ধমকে তো একবার রাস্তায় মহামারী ব্যাপার ঘটে উঠেছিল; দেখা যাক, আবার কি হয়। শুনেচি, প্রভু সাক্ষাৎ তানস্থান।” প্রেমানন্দের সঙ্গে বাবুর এই প্রকার যত কথাবার্ত্তা হচ্ছে, জ্ঞানানন্দ ততই ভয় পাচ্চেন ও মধ্যে মধ্যে গাড়ীর পার্শ্ব দিয়ে দেখছেন, রেলওয়ে টরমিনস কত দূর; শীঘ্র পৌঁছুলে উভয়ের এই ভয়ানক বেল্লিকের হাত হতে পরিত্রাণ হয়। এদিকে ব্রাহ্মবাবুর কথায় প্রেমানন্দ বড়ই শঙ্কিত হতে লাগলেন; ছেলেবেলা তার মাতাল, ঘোড়া ও সাহেবদের উপর বিজাতীয় স্মৃণা ও ভয় ছিল; তিনি অনেকবার মাতালের ভয়ানক অত্যাচারের গল্প শুনেছিলেন, একবার একজন মাতালবাবু তার কপালের তিলকমাটির হরিমন্দিরটি জিভ দিয়ে চেটে নিয়েছিলো। কিছু দিন হলো—আর এক প্রিয়ত্যি একটা বেতো ঘোড়ার নার্থিতে অসময়ে প্রাণত্যাগ করেন। সুতরাং তিনি অতি বিনীতভাবে বল্লেন, “বাবু! আমরা গোঁসাইগোবিন্দ লোক, সঙ্গীতের আমরা কি ধার ধারি? তবে ‘প্রেমসে কহে রাধাবিনোদ’ হরিভক্তের প্রেমের তারই প্রেমে দুটো সংকীৰ্ত্তন করে মনকে শান্তা করে থাকি।” ক্রমে ব্রাহ্মবাবু সেই ক্ষণমাত্ৰসেবিত আরকের তেজ অনুভব কত্তে লাগলেন, ঘাড়টি দুলতে লাগলো, চক্ষু দুটি পাকলো হয়ে জিভ কথঞ্চিৎ আড় হতে লাগলো; অনেকক্ষণের পর ‘ঠিক বলেচো বাপ!’ বলে গাড়ীর গদী ঠেস দিয়ে হেলে পড়লেন এবং খানিকক্ষণ এই অবস্থায় থেকে পুনরায় উঠে প্রেমানন্দের দিকে ওৎ করে ঝুঁকতে লাগলেন ও শেষে তার হাতটি ধরে বল্লেন, “বাবাজি! আমরা ইয়ার লোক, প্রাণ গড়ের মাঠের মত খোলা! শোনো একটা গাই, আমিও বিস্তর ঢপের গীত জানি; প্রভুর সেবাদাসী আছে তো?” এই কথা বলে হা! হা! হা! হেলে টলে জ্ঞানানন্দের মুখের উপর পড়ে, হাত নেড়ে চীৎকার করে, এই গান ধরলেন,– চায় মন চিরদিন পূজিতে সেই পুতুলে। রং-চঙ্গে চক্‌চকে, সাধে কি ছেলে ভুলে।। ডাক রাং অভর চিক্‌মিক্‌ ঝিক্‌মিক্‌ করে। তায় সোণালী রূপালী চুমকি বসান আলো করে।। আহ্লাদে পেহ্লাদে কেলে, তামাকখেগো বুড়ো ফেলে। কও কেমনে রহিব, খেলাঘর কিসে চলে। চিরপরিচিত প্রণয় সহজে কি ভগ্ন হয়। থেকে থেকে মন ধায় চোরাসিঙ্গী পাটের চুলে।। শর্ম্মার সাহস বড়, ভুতের নামে জড়োসড়ো, ঘরে আছেন গুণবতী গঙ্গাজলে গোবর গুলে। সঙ্গীত শেষ হবার পূর্ব্বেই কেরাঞ্চী রেলওয়ে টরমিনসে উপস্থিত হলো! ব্রাহ্মবাবু টলতে টলতে গাড়ী থাম্‌বার পূর্ব্বেই প্রেমানন্দের নাকটা খামচে নিয়ে ও জ্ঞানানন্দের চুলগুলা ধরে, গাভী হতে তড়াক করে লাফিয়ে পড়লেন। আজ আরমাণি ঘাট লোকারণ্য : গাড়ী-পাল্কীর যেরূপ ভিড়, লোকেরও সেইরূপ রল্লা। বাবাজীর সেই ভিড়ের মধ্যে অতি কষ্টে কেরাঞ্চী হতে অবতীর্ণ হলেন। তল্পিদার ছড়িদার সেবাৎ ও শিষ্যেরা পরস্পরের পদানুরূপ ‘প্রোসেসন’ বেঁধে প্রভুদ্বয়কে মধ্যে করে, শ্রেণী দিয়ে চল্লেন। জ্ঞানানন্দ ও প্রেমানন্দ হাত ধরাধরি করে হেতে দুলতে যাওয়ায় বোধ হতে লাগলো যেন, একটা অরশুলা ও কাঁচাপোকা একত্র হয়ে চলেছে। টুনুনাং ণ্টাং টুনুনাং ণ্টাং করে রেলওয়ে ষ্টিম ফেরী ময়ূরপঙ্খীর ছাড়বার সঙ্কেত-ঘণ্টা বাজচে, থার্ডক্লাস বুকিং অফিসে লোকের ঠেল মেরেচে; রেলওয়ের চাপরাসীরা সপাসপ বেত মাচ্চে, ধাক্কা দিচ্চে ও গুঁতো লাগাচ্ছে; তথাপি নিবৃত্তি নাই। ‘মশাই শ্রীরামপুর!’ ‘বালি বালি!’ ‘বর্দ্ধমান মশাই।’ ‘আমার বর্দ্ধমানেরটা দিন না,’ ইত্যাদি রূপ শব্দ উঠচে, চারিদিকে কাঠের বেড়াঘেরা, বুকিং ক্লার্ক সন্ধিপূজার অবসরমতে ঝোপ বুঝে কোপ ফেলচেন! কারো টাকা নিয়ে চার আনার টিকিট ও দুই দোয়ানি দেওয়া হচ্ছে, বাকি চাবামাত্র ‘চোপ রও’ ও ‘নিকালো,’ কারো শ্রীরামপুরের দাম নিয়ে বালির টিকিট বেরুচ্চে, কেউ টিকিটের দাম দিয়ে দশ মিনিট চীৎকার কচ্চে, কিন্তু সেদিকে ভ্রূক্ষেপমাত্র নাই। কর্ত্তা কম্ফটর মাথায় জড়িয়ে ঝড়াক ঝড়াক করে কেবল টিকিটে নম্বর দেবার কল নাড়চেন, সিস দিচ্চেন ও উপরি পয়সা পকেটে ফেলছেন। পাইখানার কাটা দরজার মত ক্ষুদে জানালাটুকুতে অনেকে হুজুরের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না যে, কথা কয়ে আপনার কাজ সারবে! যদি কেহ চীৎকার করে, ক্লার্কবাবুর চিত্তাকর্ষণ কত্তে চেষ্টা করে, তবে তখনি রেলওয়ে পুলিসের পাহারাওয়াল ও জমাদারো গলা টিপে তাড়িয়ে দেবে। এদিকে সেকেণ্ডক্লাস ও গুড্‌স লগেজ ডিপার্টমেন্টেও এইপ্রকার গোল; সেখানে ক্লার্কবাবুরাও কতক এই প্রকার, কিন্তু এত নয়। ফাষ্টক্লাস সাহেব বিবির স্থলে সেখানে টুঁ শব্দটি নাই, ক্লার্ক রিক্তহস্তে টিকিট বেচতে আসেন ও সেইমুখেই ফিরে যান; পান তামাকের পয়সারও বিলক্ষণ অপ্রতুল থাকে। বাবাজীর নটবরবেশে থার্ডক্লাস বুকিং আফিসের নিকট যাচ্চেন, এমন সময় টনাং ণ্টাং টুনুনাং ণ্টাং শব্দে ঘণ্টা বেজে উঠলো, ফোঁস ফোঁস শব্দে ষ্টিমারের ষ্টিম ছাড়তে লাগলো। লোকেরা রল্লা বেঁধে জ্যেটি দিয়ে ইষ্টিমারে উঠতে লাগলো। “জলদি! চলো চলো!” শব্দে রেলওয়ে পুলিসের লোকেরা হাঁকতে লাগলো। বাবাজীরা অতি কষ্টে সেই ভিড়ের মধ্যে ঢুকে টিকিট চাইলেন। বুকিং ক্লার্ক বাবাজীদের চেহারা দেখে ফিক করে হেসে হাত বাড়িয়ে টাকা চেয়ে টিকিট কাটতে লাগলেন। এদিকে ঝ্যপ ঝ্যপ ঝ্যপ শব্দে ইষ্টিমারের হুইল ঘুরে ছেড়ে দিলে। এদিকে প্রেমানন্দ, “মশাই টিকিটগুলি শীঘ্ৰ দিন, শীঘ্র দিন, ইষ্টিম খুল্লো, ইষ্টিম চল্লো,” বলে চীৎকার কত্তে লাগলেন। কিন্তু কাটাকপাটের হুজুরের ভ্রূক্ষেপ নাই; সিস দিয়ে মদন আগুন জ্বচে দ্বিগুণ কল্লে কি গুণ ঐ বিদেশী গান ধরলেন। ‘মশাই শুনচেন কি? ইষ্টিম খুলে গেল, এর পর গাড়ী পাওয়া ভার হবে, এ কি অত্যাচার মশাই।’ প্রেমানন্দের মুখে বারবার এই কথা শুনে, ক্লার্ক ‘আরে থামো না ঠাকুর’ বলে, এক দাবড়ি দিয়ে অনেকক্ষণের পর কাটাদরজা হতে হাত বাড়িয়ে টিকিটগুলি দিয়ে দরজাটি বন্ধ করে পুনরায় ‘ইচ্ছা হয় যে প্রাণ সঁপে সই হইগে দাসী, মদন আগুন’ গান ধল্লেন। প্রেমানন্দ বল্লেন, ‘মশাই বাকী পয়সা দিন, বলি দরজা দিলেন যে?’ সে কথায় কে ভ্রূক্ষেপ করে? জমাদার ‘ভিড় সাফ করো, নিকালে নিকালো’ বলে ক্লার্ক সেই কাটগড়ার ভিতর থেকে চেঁচিয়ে উঠলেন; রেল-পুলিসের পাহারাওয়ালা ধাক্কা দিয়ে বাবাজীদের দলবলসমেত টর্‌মিনস হতে বার করে দিলে–প্রেমানন্দ মনে মনে বড়ই রাগত হয়ে মধ্যে মধ্যে ফিরে ফিরে বুকিং অফিসের দিকে চাইতে লাগলেন। এদিকে ক্লার্ক কাটাদরজার ফাটল দিয়ে, মদন আগুনের শেষটুকু গাইতে গাইতে, উঁকি মাত্তে লাগলেন। বাবাজীরা কি করেন, অগত্যা টরমিনস পরিহার করে, অন্য ঘাটে নৌকার চেষ্টায় বেরুলেন–ভাগ্যক্রমে সেই সময়ে পাশের ঘাটের গহনার ইষ্টিমারখানি খোলে নাই। বাবাজীরা আপনাপন অদৃষ্টকে ধন্যবাদ দিয়া অতিকষ্টে সেই ইষ্টিমারে উঠে পেরিয়ে পড়লেন। গহনার ইষ্টিমারে অসংখ্য লোক ওঠাতে বাবাজীরা লোকের চপটানে ছাপাখানার ‘হটপ্রেসের ফরমার’ মত ও পাটকষা ইঙ্কু কলের গাঁটের মত, জাত সহ্য করে, পারে পড়ে কথঞ্চিৎ আরাম পেলেন এবং নদীতীরে অতি অল্পক্ষণ বিশ্রাম করেই, এষ্টেশনে উপস্থিত হলেন। টুনুনাং টাং টুনুনাং স্টাং শব্দে একবার ঘণ্টা বাজলো। বাবাজীরা একবার ঘণ্টা বাজার উপেক্ষা করার ক্লেশ ভুগে এসেছেন। সুতরাং এবার মুকিয়ে তল্পিতল্পা নিয়ে ট্রেণের অপেক্ষা কত্তে লাগলেন-প্রেমানন্দ ঘাড় বাঁকিয়ে ট্রেণের পথ দেখছেন, জ্ঞানানন্দ নস্য লবার জন্য শামুকটা ট্যাঁক হতে বার করবার সময়ে দেখেন যে, তাঁর টাকার গেঁজেটি নাই; অমনি ‘দাঁদাঁ সর্ব্বনাশ হঁলো। আঁমার গেঁজেটি নাই’ বলে কাঁদতে লাগলেন। প্রেমানন্দ ভায়ার চীৎকার ক্রন্দনে যার পর নাই শোকার্ত্ত হয়ে, চীৎকার করে গোল কত্তে আরম্ভ কল্লেন; কিন্তু রেলওয়ে পুলিসের পাহারাওয়ালা ও জমাদাবেরা ‘চপরাও’, ‘চপরাও’ করে উঠলো; সুতরাং পাছে পুনরায় এষ্টেশন হতে বার করে দেয়, এই ভয়ে আর বড় উচ্চবাচ্য না করে, মনের খেদ মনেই সম্বরণ কল্লেন। জ্ঞানানন্দ মধ্যে মধ্যে দীর্ঘনিশ্বাস ফেলতে লাগলেন ও ততই নন্য নিয়ে শামুকটা খালি করে তুল্লেন। এদিকে হস্‌ হস্‌ হস্‌ করে ট্রেণ টরমিন্‌সে উপস্থিত হলো, টুনাং ণ্টাং, টুনাং ণ্টাং করে পুনরায় ঘণ্টা বাজলো; লোকেরা বল্লা করে গাড়ী চড়তে লাগলে, থার্ডক্লাসের মধ্যে গার্ড ও দুজন বরকন্দাজের সহায়তায় লোক পোরা হতে লাগলো; ভিতর থেকে ‘আর কোথা আসচো।’ ‘সাহেব আর জায়গা নাই!’ ‘আমার বুঁচকি! ‘আমার বুচকিটা দাও’ ‘ছেলেটি দেখো’, ‘আ মলো মিন্সে! ছেলের ঘাড়ে বসেছিস যে?’ ইত্যাদিরূপ চীৎকার হতে লাগলো, কিন্তু রেলওয়ে কর্ম্মচারীরা বিধিবদ্ধ নিয়মের অনুগত বলেই তাদৃশ চীৎকারে কর্ণপাত কল্লেন না। এক একখানি থার্ডক্লাস কাকড়ার গর্ত্তের আকার ধারণ কল্লে, তথাপিও মধ্যে মধ্যে দু-একজন এষ্টেশনমাষ্টার ও গার্ড গাড়ীর কাছে এসে উঁকি মাচ্চেন—যদি নিশ্বাস ফেলবার স্থান থাকে; তা হলে আরও কতকগুলো যাত্রীকে ভরে দেওয়া হয়। ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর যে সকল হতভাগ্য ইংরাজ ব্লাকহোলের যন্ত্রণা হতে জীবিত বেরিয়েছিলেন, তারা এই ইষ্ট ইণ্ডিয়ান কোম্পানীর থার্ডক্লাস দেখলে, একদিন, একদিন এদের এজেন্ট ও লোকোমোটিব সুপারিণ্টেণ্ডেণ্টকে সাহস করে বলতে পাত্তেন যে, “আপনাদের থার্ডক্লাস-যাত্রীদের ক্লেশ ব্লাকহোলবদ্ধ সাহেবদের যন্ত্রণা হতে বড় কম নয়!” এদিকে প্রেমানন্দ ও জ্ঞানানন্দও দলবল নিয়ে একখানি গাড়ীতে উঠলেন, ধপাধপ গাড়ীর দরজা বন্ধ হতে লাগলো ‘হরকরা চাই মশাই! হরকরা হরকরা-ডেলিনুসার। ডেরিনুস!’ এইরূপ চীৎকার কত্তে কত্তে কাগজ হাতে নেড়েরা ঘুরছে-–“লাবেল! ভাল লাবেল!” এই বলে লাল খেরোর দোবুজান কাঁধে হকার চাচারা বই বেচ্চেন। টুনুনাং ণ্টাং, টুনুনাং ণ্টাং করে পুনরায় ঘণ্টা বাজলো, এষ্টেশনমাষ্টার খুদে সাদা নিশেন হাতে করে মাথায় কার জড়িয়ে বেরুলেন; “অলরাইট বাবু! বলে গার্ড হুজুরের নিকটস্থ হলো ‘অলরাইট গুডমর্ণিঙ স্যার’ বলে এষ্টেশনমাষ্টার নিশেনটা তুল্লেন—এঞ্জিনের দিকে গার্ড হাত তুলে, যাবার সঙ্কেত করে, পকেট হতে খুদে বাঁশীটি নিয়ে সিসের মত শব্দ কল্লে; ঘটাঘট্‌ ঘটাস্‌ ঘড় ঘড় ঘটাস্‌ শব্দে গাড়ী নড়ে উঠে হস্‌ হস্‌ হস্‌ করে বেরিয়ে গেল। এদিকে বাবাজীরা চাটগাঁ ও চন্দননগরের আমদানী পেরু ও মোরোগের মত থার্ডক্লাসে বদ্ধ হয়ে বিজাতীয় যন্ত্রণাভোগ কত্তে কত্তে চল্লেন—জ্ঞানানন্দ বাবাজীর মুখের কাছে দু’জন পেঁড়োর আয়মাদার আবক্ষ-লম্বিত শ্বেতশ্মশ্রু সহ বিরাজ করায় রোসুনের সৌরভে জয়দেবের বংশধর যার পর নাই বিরক্ত হয়েছিলেন! মধ্যে মধ্যে আয়মাদারের চামরের মত দাড়ি বাতাসে উড়ে জ্ঞানানন্দের মুখে পড়ছে, জ্ঞানানন্দ ঘণীয় মুখ ফেরাবেন কি পেছন দিকে দুজন চীনেম্যান হাতরুমালে খানার ভাত ঝুলিয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেমানন্দ গাড়ীতে প্রবেশ করেচেন বটে কিন্তু তখনো পদার্পণ কত্তে পারেন নাই। একটা ধোপর মোটের সঙ্গে ও গাড়ীর পেনেলের সঙ্গে তার ভুঁড়িটি এমনি ঠেস মেরে গেছে যে, গাড়ীতে প্রবেশ করে অবধি তিনি শূন্যেই রয়েচেন! মধ্যে মধ্যে ভুঁড়ি চড়চড় কলে এক একবার কারু কাঁধ ও কারু মাথার ওপোর হাত দিয়ে অবলম্বন কত্তে চেষ্টা কচ্চেন, কিন্তু ওৎ সাবস্ত হয়ে উঠছে না, তার পাশে পাশে এক মাগী একটি কচি ছেলে নিয়ে দাঁড়িয়েছে, বাবাজী হাত ফ্যালবার পূর্ব্বেই মাগী ‘বাবাজী কর কি, আমার ছেলেটি দেখো’ বলে চীৎকার করে উঠচে, অমনি গাড়ীর সমুদায় লোক সেইদিকে দৃষ্টিপাত করায় বাবাজী অপ্রস্তুত হয়ে হাত দুটি জড়োসড়ো করে ধোপার বুঁচকী ও আপনার ভুঁড়ির ওপর লক্ষ্য কচ্চেন —ঘৰ্ম্মে সর্ব্বাঙ্গ ভেসে যাচ্চে। গাড়ীর মধ্যে একদল ‘গঙ্গাভক্তি-তরঙ্গিণী’ যাত্রার দল ছিল, তার মধ্যে একটা ফোচকে ছোঁড়া, ‘বাবাজীর ভুঁড়িটা বুঝি ফেঁসে যায়’ বলে, পাপিয়ার ডাক ডেকে ওঠায় গাড়ীর মধ্যে একটা হাসির গর্‌রা পড়ে গেল। “প্রভো! তোমার ইচ্ছা” বলে, প্রেমানন্দ দীর্ঘনিশ্বাস ফেলেন। এদিকে গাড়ী ক্রমে বেগ সম্বরণ করে থামলো, বাইরে ‘বালি! বালি। বালি!’ শব্দ হতে লাগলো। বালি একটা বিখ্যাত স্থান! টেকচাঁদের বালির বেণীবাবুও বিখ্যাত লোক —“আলালের ঘরের দুলাল” মতিলাল বালি হতেই তরিবত পান; বিশেষতঃ বালির ব্রিজটাও বেশ! বালির যাত্রীরা বালিতে নাবলেন। ধোপা ও গঙ্গাভক্তির দলটা বালিতে নাবায়, প্রেমানন্দও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। দলের ছোঁড়াগুলো নাব্বার সময় প্রেমানন্দের ভুঁড়িতে একটা করে চিমটি কেটে গেল। উত্তরপাড়া বালির লাগোয়া। আজকাল জয়কৃষ্ণের কল্যাণে উত্তরপাড়া বিলক্ষণ বিখ্যাত স্থান। বিশেষতঃ উত্তরপাড়ার মডেল জমিদারের নর্ম্ম্যাল স্কুল প্রায় স্কুলের কোর্সলেকচরের ডিগ্রী ও ডিপ্লোমা-হোল্‌ডার; শুনতে পাই, গুরুজীর দু-একটি ছাত্র প্রকৃত বেয়াল্লিশকর্ম্মা হয়ে বেরিয়েছেন। ক্রমে ষ্টেশনের রেলকাটা ঘণ্টা টুং টাং টাং আওয়াজ দিলে অরোহীরা টিকিটঘরের দরজা খুঁজে না পাওয়াতে কুলি, মজুর, চাপরাসী এবং আরোহীদের জিজ্ঞাসা কচ্চেন, “মশায়! টিকিট কোথায় পাওয়া যায়?” তার মধ্যে একজন বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ, বোধহয় কলিকাতার সিঙ্গি মহাশয়দের বাড়ীতে পূজার বার্ষিক এবং একখানি পেতলের থালা মায় চিনি সমেত পাবার প্রত্যাশায়, কলকাতায় আসছিলেন। তিনি বল্লেন, “এই ঘরে টিকিট পাওয়া যায়, তা কি তুমি জান না?” তাদের মধ্যে একটি নব্যবয়স্ক বালক ঠাকুরমার গলার একগাছি দানা এবং দাদা মহাশয়ের আমলের রূপার পুরাতন পৈঁচে, কাণের একটি পাশা ও কতকগুলি টাকা, কাপড়চোপড়, প্রভৃতি খাবার-দাবার, শিশি বোতল ইত্যাদিতে পূর্ণিত একটি ব্যাগ হস্তে দৌড়ে বাড়াচ্ছেন। প্রতুদিগের গাড়ীতে কিঞ্চিৎ স্থান দেখে অতি কুষ্ঠিতভাবে বল্লেন, “দয়াময় যদি অনুগ্রহ করে এই গাড়ীতে আমাকে একটু স্থান দেন?” বেচারীর অবস্থা ও উৎকণ্ঠিত চেহারা দেখিয়া জ্ঞানানন্দ ও প্রেমানন্দ বাবাজী বল্লেন, “বাবু, তুমি এই গাড়ীতে এস।” বালকটি অতি কুষ্ঠিতভাবে জিজ্ঞাসা কল্লেন, “মহাশয়! আপনারা কে এবং কোন বংশ?” তাতে জ্ঞানানন্দ ও প্রেমানন্দ উত্তর কল্লেন, “বাবু, আমরা বৈষ্ণব—নিত্যানন্দবংশ।” এই কথা শ্রবণমাত্র বালকটি গোস্বামী জ্ঞান করে সাষ্টাব্দ হয়ে তাদের পদধূলি নিতে উদ্যত হলেন; কিন্তু গলদেশে পৈতা দেখে বাবাজীরা নিষেধ করে বল্লেন, “হাঁ হাঁ, আমরা বৈষ্ণব, তুমি ব্রাহ্মণ দেখচি।” বালক বল্লে, “আপনারা বৈষ্ণব হউন, তাতে কোন ক্ষতি নেই, আপনাদের আচরণ দেখে আমার এতদূর পর্য্যন্ত ভক্তি জন্মেছিল যে, আপনাদের পদধূলি লই।” প্রেমানন্দ বল্লেন, “হাঁ-হাঁ-হাঁ বাপু, স্থির হও; বাপু, তুমি কোথায় যাবে, কোন ষ্টেশনে তুমি নাব্বে?” বালক। “আজ্ঞে আমি জামাই-ষ্টেশনে নাব্বো।” প্রেমা। “বাপু, জামাই-ষ্টেশন কোন জেলায়?” বালক। “প্রভু! আপনি এত বড় বিদ্যাদিগগজ, অদ্যাবধি জামাই-ষ্টেশন কাকে বলে জানেন না?” প্রেমা। “বাপু, আমাদের রেলে গতিবিধি অতি বিরল। কালে-ভদ্রে কখন কখন নবদ্বীপ অঞ্চলে গিয়া থাকি। কুলের মহাপ্রভু পাট এবং শ্রীপাট খড়দহে শ্যামসুন্দরের পাদপদ্ম দর্শন মানসে যাওয়া আসা হয়, এই মাত্র। তবে নূতন রেলগাড়ী খোলাতে বিশ্বনাথ এবং গোবিনজী গোপীনাথের শ্রীপাদপদ্ম দর্শন করবার মনন করেছি। তা এখন কত দূর কি হয়, তা বলিতে পারি না।” বালক রেলওয়ে হুইশিল ও গাজ মোশন কম দেখিয়া মনে মনে বিবেচনা কল্লে যে, এইবার আমার নিকটবর্ত্তী ষ্টেশনে নামিতে হইবে। পরে বাবাজীদের দিকে চেয়ে একটু মুচকি হেসে বলে, “জামাই-ষ্টেশন কাহাকে বলে এই দেখুন, যেখানে আমি নামিয়া যাইব, অর্থাৎ কোন্নগর ষ্টেশন। এই স্থানে অনেক ব্রাহ্মণ এবং কায়স্থের পুত্রকন্যার বিবাহ হয় এবং সময়ে সময়ে অনেক অফিসের কর্ম্মচারী জামাইবাবুরা এই ষ্টেশনে অবতীর্ণ হন, সেই কারণে কোন্নগর ষ্টেশনকে জামাই ষ্টেশন বলা হয়।” ক্রমে গাড়ী প্ল্যাটফরমে এসে পড়লো, চড়কগাছের মত মস্ত বাহাদুরী কাঠের উপরে ডান হাতে বাঁ হাতে তোলা দুখানি তক্তা এবং রেড, গ্রীন, হোয়াইট লাইটের প্ল্যাস দেওয়া ল্যাম্পগুলি যথাস্থানে রাখা হয়েচে। আরোহীরা নামিয়া গেল ও উঠিল। গার্ড একবার ব্রেকভ্যান থেকে নেমে এসে, ষ্টেশনমাষ্টার, বুকিং ক্লার্ক ও সিগনালারের সঙ্গে খানিক হাসি-মস্করা করে, রেলওয়ের চামড়ানির্ম্মিত লেটার ব্যাগ এবং পার্শ্বেল ইত্যাদি সমস্ত ব্রেকভানে তুলে নিয়ে বল্লেন, ‘ওয়েল হাউফার?’ কাল চাপকান পরা, মাথায় কাল টুপিতে “ই, আই, আর” লেখা, নিগুঁপো নাটাগড়ে আমদানী পাড়াগেঁয়ে বাবু ঈষৎ হাস্য করে বল্লেন, “চাপরাসি! ঠিক হয়, ঘণ্টা মারো।” ষ্টেশনমাষ্টারের অর্ডারে রেলকাটা তারে ঝোলান ঘণ্টা একটি লোহার হাতুড়ী দ্বারা আহত হয়ে টং টং টং করে আওয়াজ দিলে। ষ্টেশনমাষ্টার আপন গলার মালাগাছটি লজ্জাসহকারে আপন চাপকানের ভিতর গুঁজতে গুঁজতে অর্ডার দিলেন, ‘অলরাইট।’ সে অপ্রতিভ ভাবটি শুধু চাপানের প্রথমের বোতামটি ছিঁড়িয়া যাওয়ার জন্য ঘটেছিল, নচেৎ মালাগাছটি কেউ দেখতে পেত না। কাটা পোষাকের উপর দৃশ্যমান মালাগাছটি বাবুকে একটু লজ্জা দিচ্ছিল, তাইতে তিনি সেটি লুকোবার চেষ্টায় ছিলেন। ক্রমে রেলগাড়ী হুস্‌ হুস্‌ করে চলতে লাগলো। জ্ঞানানন্দ এবং প্রেমানন্দ বাবাজীদের যেন দোলায় চড়া ছেলের মত নিদ্রা আকর্ষণ হলো; কখনো বা ঘোর, কখনো বা জাগ্রত। এই প্রকার অবস্থায় রেলগাড়ী বরাবর চলে গিয়ে মধ্যবর্ত্তী ছোট ষ্টেশনে অল্পক্ষণ দাঁড়াল; সুতরাং সেখানে বেশী কলরব নেই বলে বাবাজীদের নিদ্রাভঙ্গ হলো না। তারপর যখন গাড়ী বর্দ্ধমানে পৌঁছে, সেই সময় বাবাজীদের নিদ্রা ভাঙ্গে। বর্দ্ধমান ষ্টেশন অতি প্রশস্ত এবং সেখানে বিস্তর জনতা; সেখানে অনেক লোকজনের আমদানী এবং ধানচাল প্রভৃতি মালামালে বেশী হিড়িক! সুতরাং গাড়ী সেখানে বেশীক্ষণ ধরে। ঐ গোলমালে বাবাজীদের নিদ্রাভঙ্গ হয়ে তখন চৈতন্য হলো। প্রেমানন্দ জ্ঞানানন্দকে বল্লেন, “ভায়া! এ কোথায় আসা গেল?” জ্ঞানানন্দ চক্ষুরুন্মীলন করিয়া কহিলেন, “দাঁদাঁ, কিছুই বুঝতে পাঁচ্ছি নাঞ।” “পান চুরুট পান চুরুট ডাব চাই! সীতাভোগ, মিহিদানা চাই, বৰ্দ্ধমেনে খাজা।” “বর্দ্ধমান–বর্দ্ধমান–বর্দ্ধমান!!” ইত্যাদিরূপ চীৎকার শুনে প্রেমানন্দ জিজ্ঞাসা কল্লেন, “এটা কোন ষ্টেশন বাবু।” বিক্ৰীওয়ালা। “মশায়! এটা বর্দ্ধমানরাজ; সীতাভেগ, খাজা, জলপান কিঞ্চিৎ চাই?” প্রেম। “বাপু, এখানে গঙ্গাজল পাওয়া যায়?” বিকীওয়ালা। (প্রভুত্ব চেহারা দেখিয়া) “প্রভু, এ স্থানে কি গঙ্গাজল মিলে? এখানে সমস্তই পুকুরের জল ব্যবহার হয়।” প্রেমা। “আচ্ছা তবে থাক্ বাবু।” জ্ঞানা। “দাঁদাঁ, শুঁনেছি বঁর্দ্ধমান রাঁজটা অঁতি সুঁন্দর স্থাঁন, রাঁজার কাঁণ্ড কাঁরখানা, ঠাকুরবাঁড়ী দেঁবালয় অঁতিথিশালা প্রঁভৃতি নাঁনারঁকম পুঁণ্যাহ কাৰ্য্য আঁছেঞ এঁবং তাঁহাঁর সঁহিত রাঁজার নিঁজ আঁমোঁদেঁর জন্যে গোঁলাবঁ বাঁগ, পঁশুশালা, কাঁচের ঘর প্রভৃতি নাঁনারকঁম দ্রষ্টব্য জিনিষ আঁছেঞ, এঁবং এঁবং ঞ আরও শুঁনিয়াছি, পূঁর্ব্ব রাঁজাদিগের খোদিঁত অঁতি বিস্তৃত পুষ্করিণী আঁছেঞ। এঁই সঁমস্ত আমাদিঁগের দেঁখা নিঁতান্ত আঁবশ্যকঞ; যঁখনঞ এঁতদূর এসেছি তঁখঁন এঁ জীবনে বোঁধ হঁয় আঁরর হঁবে নাঞ। প্রেমানন্দ বল্লেন, “ভায়া। যাহাদিগের দর্শন প্রার্থনায় এতদূর কষ্ট করে আসা গেছে, তাঁহাদিগের শ্রীপাদপদ্ম-দর্শনই মোক্ষ। যদি প্রভুর ইচ্চায় বেঁচে থাকা যায়, প্রত্যাগমনের সময়ে সমস্ত দ্রব্য দেখিয়া নয়নের সার্থকতা লাভ করে স্বদেশে যাব।” রেলওয়ের গাড়ী টুং টাং শব্দে সেখান থেকে ছাড়লো। জ্ঞানানন্দ বাবাজী, কথঞ্চিৎ নিদ্রাভ হওয়াতে খানা আওয়াজে, বেঞ্চির উপর শুয়ে একটি গান ধল্লেন। গান “যঁদি গৌঁর কৃঁপা কঁর আঁমায় আঁপনার গুণে। জঁগাই মাঁধাই উঁদ্ধারিতে স্থাঁন দিঁলে শ্ৰীচঁরণে। যঁদি প্রঁভু কৃপা কঁরে স্থান না দাঁও রাঙ্গাচঁরণে; এ নামে কঁলঙ্ক রঁবে তোঁমার এ তিন ভুঁবনে॥” এরূপ গান কর্‌তে কর্‌তে জ্ঞানানন্দ শামুক থেকে একটীপ নস্য নিয়ে ‘দীন দয়াময় প্রভু তোমার ইচ্ছা’ বলে শয়ন কল্লেন। ক্রমে রেলগাড়ী মধ্যবর্ত্তী ছোট ছোট ষ্টেশনে দু’ এক মিনিট থেমে, পূৰ্ব্বকার মত দু’ একজন গরীব রকমের বিক্রীওয়ালা দুটা একটা ডাক দিয়ে চলে গেল। চাপরাশীরা বেলকাটা ঘণ্টায় আওয়াজ দিলে, আরোহী অতি কম। বোধ হয় কোন ষ্টেশনে একজনও হয় না। এইরূপে যেতে যেতে গাড়ী জামালপুরে গিয়ে পৌঁছিলো। পাঠকগণ! জানবেন, এর মধ্যে এমন কোন বিশেষ ষ্টেশন নাই যার বর্ণনা আমরা করি। বাবাজীদের নামবার অবকাশ নাই। ক্রমে গাড়ী জামালপুরে এসে পৌঁছেছে; জামালপুরে গাড়ী অন্ততঃ আধ ঘণ্টা অবস্থান করবে; কারণ জামালপুর ষ্টেশনে ইঞ্জিন, কয়লা, জল ইত্যাদি বদল কত্তে হবে। ইত্যবসরে প্রেমানন্দ ও জ্ঞানানন্দ বাবাজী গাড়ী থেকে অবতীর্ণ হয়ে, একবার ষ্টেশন এবং পাহাড় পর্ব্বত আদির দৃশ্য দর্শন কত্তে গেলেন। গাড়ী অনেকক্ষণ সেখানে থামে। বাবাজীরা ইতস্ততঃ দর্শন করিয়া, গাড়ী ছাড়িয়া যাইবে বলিয়া, তাড়াতাড়ি ষ্টেশনে প্রত্যাগমন করিলেন। আসিয়া দেখিলেন, লালপেড়ে সাড়ীপরা, হাতে একগাছি সাদা শাঁখা একহাতে রুলি একটি স্ত্রীলোক উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতেছে। “ও মা আমার কি হলো, খোকার গলায় মাদুলি কৈ, সম্পূর্ণ কোথায়? ও পিসি। একবার দেখ! মেয়েটা এই যে খোকার হাত ধরে বেড়াচ্ছিল; ও সম্পূর্ণ ও সম্পূর্ণ”—-বলে স্ত্রীলোকটি উচ্চৈস্বরে চীৎকার কত্তে লাগলো। বাবাজীরা আপন কম্পার্টমেন্টে এসে উপস্থিত হয়ে গাড়ীর কাটা দরজা গিয়ে উঁকি মেরে দেখতে লাগলেন। গাড়ীও পূৰ্ব্বেকার মত হস হস করে চলতে লাগলো। বাবাজীরা যে সকল ইষ্টেশন পার হতে লাগলেন, সেই সকলেরই ইষ্টেশনমাষ্টার, সিগনেলার, বুকিংক্লার্ক ও এপ্রিন্টীসদের এক প্রকার চরিত্র, একপ্রকার মহিমা কেউ মধ্যে মধ্যে অকারণে পুলিসম্যান পুলিসম্যান করে চীৎকার করে, সহসা ভদ্দরলোকের অপমান কত্তে উদ্যত হচ্ছেন। কেউ দুটি গরীব ব্যাওয়ার জীবনসৰ্বস্ব পুটুলিটি নিয়ে টানাটানি কচ্চেন। কোথাও বাঙ্গাল গোচের যাত্রী ও কোমোরে টাকার গেঁজেওয়ালা যাত্রীর টিকিট নিজে পকেটে ফেলে পুনরায় টিকিটের জন্য পেড়াপেড়ি করা হচ্চে–পাশে পুলিসম্যান হাজির। কোন ষ্টেশনের ষ্টেশনমাষ্টার, কম্ফর্টার মাথায় জড়িয়ে চীনে কোটের পকেটে হাত পুরে বুক ফুলিয়ে বেড়াচ্চেন—এপ্রিণ্টীস ও কুলিদের ওপর মিছে কাজের ফরমাস করা হচ্ছে; হঠাৎ হুজুরের কম্যাণ্ডিং আসপেকট দেখে একদিন ‘ইনি কে হে?’ বলে অভ্যাগত লোকে পরস্পর হুইস্‌পর কত্তে পারে। বলতে কি, হুজুর তো কম লোক নন–দি এষ্টেশন মাষ্টার! সে সকল মহাত্মারা ছেলে-বেলা কলকেতার চীনে বাজারে “কম স্যার। গুড সপ স্যার। টেক্‌ টেক্‌ টেক্ নটেক্‌ নটেক্‌ একবার তো সী!” বলে সমস্ত দিন চীৎকার করে থাকেন, যে মহাত্মারা সেলর ও সোলজারদের গাড়ী ভাড়া করে মদের দোকান, ‘এম্পটিহাউস’ সাতপুকুর ও দমদমায় নিয়ে বেড়ান ও ক্লায়েন্টের অবস্থা বুঝে বিনানুমতিতে পকেট হাতড়ান; কাঁচপোকার আরসুলা ধরবার রূপান্তরের মত তাঁদের মধ্যে অনেকেই চেহারা বদলে ‘দি এষ্টেশন মাষ্টার’ হয়ে পড়েছেন, যে সকল ভদ্দরলোক একবার রেলট্রেণে চড়েছেন, যাদের সঙ্গে একবারমাত্ত এই মহাপুরুষরা কন্‌ট্যাকটে এসেছেন, তাঁরাই এই ভয়ানক কর্ম্মচারীদের নামে সর্ব্বদাই “কমপ্লেন” করে থাকেন। ভদ্দরতা এঁদের নিকটে যেন ‘পুলিসম্যানের’ ভয়েই এগুতে ভয় করেন। শিষ্টাচার ও সরলতার এঁরা নামও শোনেন নাই। কেবল লাল, সাদা, গ্রীন সিগন্যাল, এষ্টেশন, টিকিট ও অত্যাচারই এদের চিরাধ্য বস্তু। ইহাঁরা স্বজাতির অপমান কতেই বিলক্ষণ অগ্রসর ও দক্ষ। জামালপুর-টানেল পাহাড় ভেদ করে প্রস্তুত একটা রাস্তা; যেমন আমাদিগের দেশে মস্ত খিলানওয়ালা বাড়ীর নিচে দিয়ে অনেকদূর যেতে হয়, টানেল সেই প্রকার। তবে বাড়ীর লম্বা খিলেনপথে জল পড়ে না; এই টানেলের উপরিস্থিত নদ, নদী, বৃষ্টির জল এবং পাহাড়ের ঝরণা প্রভৃতির জল তাহার ভিতর চুয়াইয়া পড়ে, তাহাকেই টানেল কহে। ট্রেণ সেই টানেল অতিক্রম কবার সময়, জ্ঞানানন্দ বল্লেন, “দাঁদাঁ এ কি আশ্চর্য্যঁ দিঁনে রাতঁ। মেঁঘ নাঞি, বৃষ্টি নাঞি, এ অন্ধকারের ভিতর কোঁথায় যাঁচ্চিঞ?” প্রেমানন্দ বল্লেন “ভাই, এটা আমি কিছু বুঝতে পাচ্ছি না; তবে শুনেছিলাম যে, তিন পাহাড়ের ভিতর দিয়ে একটা রাস্তা আছে। এটা তবে তাই বুঝি! আহা, ইংরাজ বাহাদুরদিগের কি অসীম ক্ষমতা! আমাদের পূর্ব্বেকার রামায়ণ মহাভারত ইত্যাদি গ্রন্থে কথিত আছে, পুষ্পকরথ, এবং নানাপ্রকার অদ্ভুত ব্যাপার, যেমন হনুমানের গন্ধমাদন পৰ্ব্বত আনা, সাগরবন্ধন ইত্যাদি মহা মহা ব্যাপার আছে, তাহা সত্য হইলেও হইতে পারে। কিন্তু এরূপ অদ্ভুত ব্যাপার কদাচ কোথাও শোনাও যায় নাই, দেখাও যায় নাই, ধন্য ইংরাজের বলবুদ্ধি! প্রভু, সকলই তোমার ইচ্ছা। এই বলতে বলতে প্রেমানন্দ পুনরায় নিদ্রায় অভিভূত হলেন। গাড়ী মধ্যবর্ত্তী এষ্টেশনে মাঝে মাঝে থেমে, একেবারে মোগলসরাই এষ্টেশনে এসে পৌঁছুলো। পৌঁছবামাত্রই পুলিসম্যান, টিকিটকলেক্টর, ইঞ্জিনীয়ার প্রভৃতি, ম্যাথর, সুইপার এবং যাঁহারা গাড়ীর সমস্ত তদন্ত করেন, নিকটবর্ত্তী হয়ে, আপন আপা কাৰ্য্যে নিযুক্ত হলেন। বাবাজীরা নিজের পোটলা পুঁটলী নিয়ে, অতি যত্নের সহিত (হুঁকো কলকে ইত্যাদি কোন জিনিষের ভুল না হয়) সমস্ত দ্রব্য নিয়ে প্লাটফরমে নেমে ও রেখে হাঁপ ছাড়লেন। প্রেমানন্দ বল্লেন, “হা প্রভু বিশ্বনাথ! এইবার যদি অদৃষ্টক্রমে আপনার দর্শক পাই। এখনো বলতে পারি নে, যতক্ষণ কাশীধামে পৌঁছে আপনার মস্তকে গঙ্গাজল বিল্বপত্রাদি ছড়াইয়া প্রণিপাত না কত্তে পারি, ততক্ষণ বল্‌তে পারিনে।” সেখানে নৌকার মাঝী, মুটে, গঙ্গাপুত্র, পাণ্ডা, পূজারী ইত্যাদি সকলে আপন আপন খাতা সঙ্গে নিয়ে, কলিকাতাবাসী এবং অপরাপর স্থানবাসী বাবুদিগের পিতৃপিতামহাদি চৌদ্দপুরুষের নামস্বাক্ষরিত উইকাটা খাতা (কোনখানা বা সাদা কাগজ, কোনখানা বা হলদে কাগজ, কাহার বা লেখা বোঝা যায়, কাহার বা পড়া যায় না) নিয়ে, বাপ পিতামহের নামধাম জিজ্ঞাসা করে, আপনাপন যজমান সংগ্রহ কচ্চেন। এদিকে নৌকাওয়ালারা পুটুলি নিয়ে টানাটানি কচ্চে; কাহার পুটুলি এ নৌকা হতে ওদিকে গেছে, কাহার বা অজ্ঞাতসারে কে নিয়ে গেলে টের পাওয়া গেল না। পরে ভাড়ার জন্য নৌকাওয়ালাদের সহিত গেলযোগ কত্তে কত্তে ব্যাসকাশীতে (অর্থাৎ যাকে রামনগর বলে থাকে, কাশীব্র ও-পার, হয় ত সেইখানেতেই) অবস্থিতি কত্ত হলো। অনেক আকিঞ্চন এবং টানাটানির পর একখানি ময়ূরমুখওয়ালা নৌকো পেয়ে, পরমানন্দে জ্ঞানানন্দ ও প্রেমানন্দ সমস্ত দ্রব্যাদি নিয়ে সেই নৌকায় উঠলেন। নৌকায় আরোহণ করে গঙ্গার জল হস্তে নিয়ে, আপন আপন শিরে ছড়িয়ে, “সৰ্ব্বতীর্থময়ী গঙ্গা। সদ্যদুঃখবিনাশিনী, সুখদা মোক্ষদা গঙ্গা গজৈব পরম গতি। মাতঃ ভাগীরথি?” এই কথা বলে, কাশীর ওপারে প্রস্তরনির্ম্মিত অতি উচ্চ অট্টালিকা এবং ঘাটের সিঁড়ি সকল দর্শন করে, জ্ঞানানন্দ বাবাজী প্রেমানন্দ বাবাজীকে বল্লেন, “দাঁদাঁ! উঃ কতঁ উঁচুঁ বাঁড়ী সকঁলঞ, আরঁ কতঁ প্রশস্তঁ ঘাঁট, কঁলিকাঁতায়ঞ কিঁম্বা অঁন্যান্য দেঁশে দ্যাখাঁ গেঁছে বঁটেঞ কিন্তু এঁরূপ নয়ঞ।” প্রেমানন্দ বল্লেন, “ভায়া! দেখ পাহাড়ের দেশ, এ স্থলে মৃত্তিকা অতি বিরল; সুতরাং পাথরের বাড়ী, পাথরের ঘাট, পাথরময় কাশী, সমস্তই পাথরের।” এই কথা বলতে বলতে দশাশ্বমেধ ঘাটে নৌকা উত্তীর্ণ হলো; বাবাজীরা নৌকা থেকে অবতীর্ণ হতে না হতে, পুৰ্ব্বেকার মত পূজারী, পাণ্ডা কুলি ও যাত্ৰাওয়ালা প্রভৃতি সকলে নৌকোর নিকটে এসে কেউ পুটুলি টানছে, কেউ বা জিজ্ঞাসা কচ্চে, “মশাই, কোথা থেকে আসা হচ্ছে, আপনি কার যজমান, কার ছেলে, নিবাস কোথায়, পরিচয় দিন, তা হলে আমরা সকলেই জাতে পারব যে, আপনি কার যজমান।” প্রেমানন্দ বাবাজী বল্লেন, “মহাশয়! আমি অতি অল্প বয়সে পিতৃহীন, সুতরাং আমি জ্ঞাত নই যে, আমার বাপ পিতামহ কখন কাশীতে এসেছিলেন কি না। কারণ, তখন নৌকোতে আসতে হতো এবং আমার কেউ নেই যে, আমাকে বলে দিয়ে থাকবে যে, ফলনা অমুক তুমুক। অতএব আমি আর কিছুই জানি না।” এই কথা শুনে, দলমধ্যস্থ এক জন অতি বলবান পুরুষ, “তবে এ যজমান আমার, আমি একে সুফল দান করব।” এই কথা বলে, তিনি আপন ঝুলি হতে নারিকেল, আতপ চাল ইত্যাদি বাহির করে, বাবাজীদের হাতে দিয়ে বল্লেন, ‘আপনারা সমস্ত দ্রব্য এইখানে রাখুন’; এবং তাহার সঙ্গী গুণ্ডাদিগকে বল্লেন, “দেখ, খুব খবরদার।” অন্য অন্য পাণ্ডা প্রভৃতি ও পূজারিগণ যেন অতি দীন নেড়ি কুকুরের মত তফাৎ থেকে বিদ্রুপ টিটকিরি ইত্যাদি কত্তে লাগলো; পাণ্ডাজী নিজের গায়ের পাঞ্জাবী আস্তেন জামা এবং পাগড়ীটি গঙ্গাতীরে রেখে বাবাজীদিগকে জলে দাঁড় করিয়ে, যথাযোগ্য মন্ত্রপূত কল্লেন, এবং বল্লেন, “সুফলের দক্ষিণ দিয়ে মণিকর্ণিকার জল স্পর্শ কিম্বা অবগাহন করে চল বাবা বিশ্বনাথজীর পূজা করবে, ষোড়শোপচারে হইবে, না মধ্যবিত্ত?” বাবাজীরা বল্লেন, “আমরা অতি দীন-হীন গৃহস্থলোক, আমরা কি ষোড়শোপচারে বাবার পূজা কত্তে পারি? এর মধ্যে যেরূপ হয়, সংক্ষেপে বাবার যথাযোগ্য পুজা আপনি আমাদে করিয়ে দিবেন।” পাণ্ডাজী বল্লেন, “চলো চলো।” বাবাজীরা আপন আপন তল্পিতল্পা নিয়ে, পাণ্ডাজীর সুশিক্ষিত গুণ্ডাদ্বয় সমভিব্যাহারে বাবার মন্দিরে উপনীত হয়ে, ‘বাবা বিশ্বনাথ’ বলে সাষ্টাঙ্গে প্রণিপাত কল্লেন। পাণ্ডাজীর কৃপায় ফুল, বিল্বপত্র, গঙ্গাজল ইত্যাদি সমস্ত দ্রব্যের আয়োজন করা হয়েচে। পাণ্ডাজী, বাবার পুজো করিয়ে, “বাসা কি আমাদের বাড়ীতে লওয়া হবে, না আপন ইচ্ছায় করে নেবে; আচ্ছা আমার সঙ্গে এসো।” এই কথা বলে বাবাজীদের সঙ্গে নিয়ে, একটি দোকানে এসে তিন দিবসের জন্য ঘর ভাড়া করে দিলেন। বাবাজীরা লুচি এবং মিষ্টান্নভক্ত বেশী, সুতরাং ভাতের প্রত্যাশা রাখেন না। সমস্ত দিন ঘুরে ফিরে, কাশীর সমস্ত দেখে বেড়াতে লাগলেন। একজন যাত্রাওয়ালা বাবাজীদের নূতন চেহারা দেখে এসে বল্লেন, “আপনারা নূতন এসেছেন, বোধ হয় আজ কিম্বা কাল। আপনাদের এখনও কিছু দেখা হয় নাই, আসুন, আমি আপনাদের নিয়ে সমস্ত দেখিয়ে শুনিয়ে দিই। আপনারা কি এই বাড়ীতে থাকেন?” এই কথা বলে যাত্রাওয়ালা নিজ দলস্থ দু’ একটি সঙ্গীকে ইঙ্গিত করে দিয়ে, তাদের সঙ্গে নিয়ে চলে গেল। “এই দেখুন, বাবা বিশ্বনাথের মন্দি রাজা রণজিৎ সিংহের নিৰ্ম্মিত, এই দেখুন ‘সাণ্ডায়েল’–এই অন্নপূর্ণার মন্দির।” “এইবার চলুন দুর্গাবাড়ী দর্শন করে আসবেন। দুর্গাবাড়ী এই স্থান হতে কিঞ্চিৎ দূর, অতএব আপনারা পোঁটলা পুঁটলি যা কিছু আছে, সেই সমস্ত সমিভ্যারে নিয়ে চলুন। কারণ, এ স্থানে কার কাছে রেখে যাবেন?” যাত্রাওয়ালার এইরূপ কথা অনুসারে বাবাজীর। আপন পুটলি এবং জীবনসর্ব্বস্ব হরিনামের ঝুলি এবং মালা যাহার ভিতর খুঁজিলে বোধ হয় একখানি মনোহারির দোকান সমেত অবস্থিতি করে; চাই কি সময়ে দুটা চারটা মিষ্টান্নও পাওয়া যায়। কারণ, যদি হরিনাম কত্তে কত্তে গলা শুকিয়ে উঠে, এক আঁধটি বদনে ফেলে দিয়ে ‘হরেকৃষ্ণ’ বলে জল পান করে থাকে। যাত্রাওয়ালাদের সঙ্গে বাবার দুর্গাবাড়ী দর্শনে যাত্রা কল্লেন। পরে দুর্গাবাড়ী বানরের উৎপাতে এবং যাত্ৰাওয়ালাকে কৃপাতে বাবাজীদের দুর্দ্দশার কত দূর শেষ হলো, সে কথা আর আমরা অধিক লিখিতে পারলাম না। ।।সম্পূর্ণ।।
ক্ষেমানন্দ দাস
মনসা-মঙ্গল ক্ষেমানন্দ দাস শ্রীশ্রীরাধামাধব গতিঃ আস্তিকস্য মুনের্মাতা ভগিনী বাসুকেস্তথা । জবৎকারুমুনেঃ পত্বী মনসাদেবি নমোহুস্ত তে ॥ অথ মনস-মঙ্গল লিখ্যতে । বাম দুললিযারে যাদব দুলালিয়া । ওরে কত দিন বেড়াবে গোপাল হামাগুড়ি দিয়া ॥ নাঞি রে বিষ নাঞি রে নাঞি কালিয়ার গায় । ধরল ধূলিয়ার বিষ ধূলিতে লোটায় । হাটিতে জানিলে গোপাল খাত্যে(১) দিব ননী । ওরে করে দিব টাড়(২) বালা গলে হার মণি ॥ গোপালের করে তবে যশোমতি ধরে । চল দেখি বাছা ক্ষীর-সর দিব তোরে ॥ ( ১ ) পাত্যে—খাইতে । ( ২ ) টাঙ্ক-তড়িঙ্ক, হস্তালঙ্কার-ভেদ । গোপালে খায়াঞে(১) ননী রাণী আনন্দিত। আস্য আস্য(২) বাছা মোর শুন নন্দসুত ॥ এতেক বলিয়ে রাণী দেই করতাল । মগনে নাচয়ে তবে সুন্দর গোপাল ॥ শুন শুন ওরে বাছা মোর বোল রাখ । বাছা নাচিয়ে নাচিযে আস্য মা বলিযে ডাক ॥ ত্ৰিভঙ্গ হইয়ে নাচে হলধর হরি । ওবে তা দেখিধে অনন্দিত নন্দগো নবী | বাম বল জন্ম গেল বস্যে(৩) থাক মিছা । ও ভাই পলাইতে পথ নাঞি কাল আছে পিছা ৷ চৌদিগ্‌ বেড়িল জালে জেল্যা(৪) বড় দঢ় । সবাই মেল্যে(৫) ভজ রাম কিবা ছোট বড় ॥ বরষাতে পড়ে যেন আছায়া(৬) পাঁচীর । তেমনি পড়িবে কবে এ পাপ শরীর ॥ স্ত্রী পুত্র পরিবার কেহো নহে কার । দুঞাখি(৭) মুদিলে রে জগৎ অন্ধকার ॥ তেঞি বলি ওরে জীব শ্রীরামকে ডাক । ও ভাই ঘুমাইলে কোথা থাক মনে ভাব্যে(৮) দেখ ॥ (১) খায়াঞে—খাওয়াইবে । (২) আস্য আস্য—আইপ আইস । (৩) বস্যে—বসিয়ে । (৪) জেল্যা—জালুক । (৫) মেল্যে—মেলিয়ে । (৬) আছায়া—অনাচ্ছাদি। (৭) ঞাখি—আঁখি । (৮) ভাব্যে—ভাবিয়ে বা ভাবিয়। ধন কড়ি মালমাত্তা সব রইবে গাড়া(১) । আসিবে যমের দূত বান্ধিবে খাড়া খাড়া ॥ যমদূত আস্যে যখন বান্ধ্যে লয়ে যাবে । সীতারাম বিনে তখন কার দোহাই দিবে। বন্দিব শ্ৰীগণপতি শিবের নন্দন । একদন্ত স্থূলতনু মুষিকবাহন । বন্দো প্ৰভু রঘুনাথ কমললোচন। চন্দ্র সূর্য বন্দি আর বরুণ পবন। সাবধান হয়ে বন্দো গঙ্গা ভাগীরথী । যাহার পরশে ভাই হয় মোক্ষগতি ॥ বন্দো শিব ভোলানাথ করি নমস্কার । কালকূট বিষ যেই করিল সংহার ॥ স্বর্গে ইন্দ্ররাজ বন্দো পাতালে বাসুকি । গরুড় অরুণ বন্দো হইয়ে কৌতুকী ॥ গয়ায় গদাধর বন্দো প্রয়াগে মাধব । অযোধ্যাতে রাম বন্দো গোকুলে যাদব ॥ বন্দিব শ্ৰীনদ্যারচান্দ বড় গীত আশে । যার গুণে হুরিনাম হইল কাশে ॥ অড়োষ্যাতে(২) বন্দিব ঠাকুর জগন্নাথ । এমন কোথায়(৩) শুনিনাঞি বাজারে বিকায় ভাত ॥ ( ১ ) গাড়া—প্রোথিত । ( ২ ) অড়েষ্যাতে-উড়িষ্যাতে । ( ৩ ) কোথায়—কোথাও। নীলাচলের পথে যাত্যে বড় লাগে দুঃখ । সব দুঃখ দূরে যাবে দেখ্যে চান্দমুখ ॥ আঠারলালাতে যাত্যে খাঞে বেতের বাড়ি । বেতের বাড়ি খাঞে পাপী যায় গড়াগড়ি ॥ জগন্নাথের মুখ দেখি দুঃখ পাসরিল। কুলাচলে যাঞে যাত্রী গড়াগড়ি দিল । ধন্য রাজা ইন্দ্ৰদ্যুম্ন বলে বারেবার । যার গুণে মহা পাপীর হইল উদ্ধার ॥ আস্য মা মনসা দেবি ঘটে কর ভর | তোমার মঙ্গল গাইবেক অধম পামর ॥ আমার আসরে আস্যে দেবি মা মনসা | গায়ে দিবে বল মাতা তোমারি যে আশা ॥ আমার আসর ছাড়ে অন্যের আসরে যায়(১) । দোহাই মা শিবের গণেশের মাথা খায় ॥ মনসা বসিল আসি আমার আসরে । কাৰ্ত্তিক গণেশ আইল দুই সহোদরে ॥ বন্দো উমা কাত্যায়নী করিয়ে ভকতি । সাবধানে হঞা বন্দো দেবী সরস্বতী ॥ গ্রাম গ্রামের যত দেবী কোর‍্যে একতাল । শ্ৰীগুরুচরণে ভক্তি রন্থক সৰ্ব্বকাল ॥ শিক্ষা গুরু দীক্ষাগুরু করি নমস্কার । যাহার প্রসাদে জ্ঞান হবে সভাকার ॥ ( ১ ) যায়—যাও । খায়-খাও ইত্যাদি । সব গুরু বন্দো ভাই হেঁট (১) কর‍্যে মাথা । ঘরের গুরু বন্দিব আপন পিতামাতা ॥ রোহিণী যোগিনী বন্দো যক্ষ প্রেত ভূত। কার নাম জানি নাঞি আছেহ বহুত ॥ তুমি মোর ভগিনী তোমার আমি ভাই । আসরে করিলে ঘা মনসার দোহাই ॥ দোহাই ন মান যদি মোরে কর ঘা ৷ তবে শিক্ষা গুরুর মাথাতে পাখাল বাম পা ॥ বড় বড় গুরু বন্দো কামাখ্যা-কামিনী । তোমার সাক্ষাতে আমি কি বলিতে জানি ৷ বন্দনা করিতে ভাই হবে অনুক্ষণ । একত্রে বন্দিয়ে গাইব সব দেবগণ ॥ ব্রাহ্মণ বৈষ্ণব পদে করি নমস্কার । মনসা-মঙ্গল গীত করিব উচ্চার ॥ ক্ষেমানন্দ শিশু বলে করিয়ে মিনতি । আসরে করছ খেল দেবি পদ্মাবতি ॥ সদাগরের সিংহল যাত্র। শুভক্ষণে বন্দো দেবী মনসার চরণ । ওমা কপিলা(২) ছাড়িয়ে গো আসরে দেহ মন ॥ শুন শুন সৰ্ব্বজন করি নিবেদন । মনসার মঙ্গল গীত করহ শ্রবণ ॥ (১) হেঁট—অবস্থিত । (২) কপিলা—পীঠ, আয়তন । চান্দ সদাগর তার চম্পানগরে বাস । মনসার সঙ্গে তেঁহো করিল বিবাদ ॥ দেবী বলে চান্দ বাণ্যা আমার বাক্য ধর । কড়ারনা পুষ্প জলে যে মনসার সেবা কর । এতেক শুনিঞে চান্দ কোপ কৈল মনে । চেঙ্গমুড়া কাণী আমি পুজিব কেমনে। চান্দ বলে মোর দেব প্ৰভু ভোলানাথ । আর কোন দেবী নাঞি করি প্রণিপাত ॥ মনসার সঙ্গে বাদ চান্দ বেণ্যা কৈল । ছয় পুত্ৰ লয়ে চান্দ বাণিজ্যে চলিল ॥ যখন বাণিজ্যে যায় চান্দ সদাগর । পাঁচ মাস গর্ভে তখন বালা লখিন্দর ॥ সনকারে ডাক্যে চান্দ বলেন আপনে । সাবধান হয়ে তুমি থাকহ ভুবনে ॥ সিংঘলের(১) মুখে সাধু চলে শীঘ্ৰগতি । বাহ বাহ বলে নৌকা কিবা দিবারাতি ॥ ছয় পুত্র লয়ে চান্দ শীঘ্ৰগতি চলে। উপনীত হৈল গিয়ে পাটন সিংঘলে ৷ নৌকা লাগাইল সাধু সমুদ্রকিনারে । মনের কৌতুকে সাধু নাম্বিলা সত্বরে। রাজভেট লয়ে সাধু বিদায় হুইল । উত্তম স্থানেতে যাঞে বাস যে করিল। ( ১ ) সিংঘলের—সিংহলের । বাণিজ্যের আরম্ভ করিল সদাগর । বিকিকিনি করে সাধু নাঞি অবসর ॥ লবঙ্গ কর্পূর লেই সুগন্ধি চন্দন । সোণা রুপা লেই আর বস্ত্র আভরণ ॥ জোড় ধুতি লেই বেণ্যা চিকণ বনাত । আনন্দাই শাড়ী(১) চেলী মল্‌মল্‌ সহিত ॥ ছিট ওড়নী লেই গরভসুতী ডুর‍্যা । নীল শাড়ী লেই সাধু বড় যত্ন কর‍্যা ॥ পাট পাটাম্বর লেই সালমের থান । ভোটকম্বল লেই সাধু অতি অনুপাম ॥ হীর মণি মাণিক লেই রত্বের কঙ্কণ । চামর লইল তবে বণিকনন্দন ॥ ঘোড়া জোড় লেই সাধু মনের কৌতুকে । জয়িত্রী জায়ফল লেই যেখানে যে দেখে ॥ শঙ্খ লেই সিন্দুর লেই চান্দ সদাগর । নারীর ভুষণ লেই গন্ধ মনোহর ॥ তরবার বন্দুক কাটারী নিল কাঁচী ছুরী । ঢাল ফরি লেই সাধু অনুমান করি ॥ গুবাক নারীকেল আর মুগা(২) মতি নিল । ঔষধ কিনিঞে নিল যেখানে যে ছিল ॥ জীরামরিচ মেখি আর ধন্যা শুল্‌ফা নিল । কালজীর পঞ্চলবণ সত্বরে লইল ॥ ( ১ ) শাড়ী—নবোঢ়ার বক্স । ( ২ ) মুগা—প্রবাল । তুরী ভেরী লেই সাধু নাগরা নিশান । তীর কামান লেই বেণ্যা অতি অনুপাম ॥ এই ভাবে বারবৎসর বাণিজ্য করিল। নৌকা ভরা হৈল সাধু রাজার পাশে গেল ॥ সদাগর বলে রাজা দেশে যাব আমি । বিদায় হইয়ে যদি আজ্ঞা দেহ তুমি ॥ রাজা বলে নিজ দেশে যাহ সদাগর । বাণিজ্য হইল তোমার এ বার বৎসর ॥ রাজার স্থানে ৰিদায় হৈল চান্দ বেণ্যা । দেশকে যাইতে সাধু করিল মন্ত্রণা ॥ সাত নৌকা ধন লয়ে দেশেতে চলিল । বাহু বাহু বল্যে চান্দ বলিতে লাগিল ॥ নৌকা বাঞে(১) যায় সাধু দিবসরজনী । দেখি মনে কোপ কৈলা জগতজননী ॥ তখন মনসা দেবী কোন্‌ বুদ্ধি কৈল । চান্দকে ছলিতে দেবী ব্রাহ্মণী হইল ॥ নদীর কিনারে গেলা জগতজননী । ডাকিয়া বলিলা সাধু শুন মোর বাণী ॥ সাত নৌকা নিঞে যায় কিবা বটে ধন । শুনি চান্দ বেণ্যা তবে ক্রোধ কৈল মন ॥ রমণী বটহ তুমি পরিচয়ে কি কাজ । পথের মাঝে কথা কহ মুখে নাঞি লাজ ॥ ( ১ ) বাঞে—ৰাহিত করিয়া । কাহার বহুআরা তুমি কাহার বিআরী। কি কারণে হেথা তুমি আলো একেশ্বরী ॥ মনসা বলিল সাধু আমি সে ব্রাহ্মণী । কিছু ভক্ষ দেহু সাধু তোরে কহি বাণী ॥ অনুমান কর্যে চান্দ ভাবে মনে মনে । মনসা বলিয়। চান্দ জানিল আপনে ॥ চান্দ বলে নৌকায় ভাণ্ডারী আছে কেয় । এক কড়া কড়ি ইহারে ফেল্যে দেয় ॥ তা শুনি মনসা দেবীর অগ্নি জ্বলে গায়। পাকা এaাখি কর্যে দেবী চান্দের পানে চায় ॥ অনেক দূর হৈতে আইল তোর নাম শুন্তে । কৃপণ কৃপণ বাণ কহ এক কড় যাহ নঞে ॥ এক দিনের সেবা চালায় শুন সদাগর । ওরে এক ভিক্ষ মাগি আমি তোমার গোচর ॥ আমার পূজায় লাগে দধি দুগ্ধ ছেন । পুষ্প জল লাগে ওরে শুন চান্দ বাণ্য ॥ মিষ্টান্ন অনেক দেই কোন কোন জন । ভক্তি করি ফল জল দেই কোন জন ॥ চান্দ বলে দ্বন্দ্বে জেতে কোন প্রয়োজন । এক কড়া কড়ি লয়ে করহ গমন ॥ কড়ার ভিখারী তুমি লয়ে যায় কড়া । স্বন্দ্বেজ করিলে আর নাঞি পাবে বাড়া ॥ মনসা বলিল রে বtণ্য স্থির কর মন । পাছে এক দিন সাধু পূজিবে চরণ ॥ চান্দ বলে হেথা হৈতে করহ গমন । নতুবা ইহার ফল পাইবে এখন ॥ শুনিএও মনসা দেবী কোপ কৈল মন । নিশ্বাস ছাড়িয়ে মাত করিলা গমন ॥ মনসা চলিয়ে গেল সৰ্ব্বনাশ হৈল । মনসার নিশ্বাস যাঞে নৌকা প্রবেশিল । টলবল কবে নৌকা স্থির নহে জলে । নৌক সমেত চান্দের পুত্র রসাতলে চলে । ঘুবিযে দুবিযে ছয় নৌকা যে ডুবিল । দেখিয়ে চান্দেব প্রাণ আকুল হুইল ॥ চান্দ বলে এই ছিল আমার কপালে । এককালে ছয় ত্র ভুলে মৈল জলে ॥ ধিক্ ধিক tণ মে ব আছে কোন কাজে । আমি কোন লাজে দী ইব লোকমাঝে ॥ কেমনে ধবিব প্রাণ ছয়পু শোকে । নিদারুণ বিধি এই কবিল আমাকে ॥ চন্দ সদাগর কন্দে হইযে আকুল । নঞানের জলে ভাপে অঙ্গেব দুকূল ৷ আমি জলে বা পি দিযে তেজিব জীবন । কোন লাগে অামি আiব দেখাব বদন ॥ এতেক বলিয়ে সাধু জলে বা পি দিল । অগম দরিয়ার জল একহু হৈল। ডুবিয়ে ডুবিয়ে চান্দ বুলধে আপনে । দৈবের বিপাক চান্দের না হল মরণে ॥ ডুবিয়ে বুলয়ে চান্দ সমুদ্র ভিতরে। ঢেউএর হিল্লোলে তারে উঠাইল তীরে ॥ পাণ নাঞি গেল চান্দের ভাবে মনে মনে । নৌকায় যাইয়ে চান্দ চাপে ততক্ষণে ॥ নৌকায় বসিয়ে বে।্য কান্দিয়ে বিকল । কি করিতে কিপ হুৈল এই না কৰ্ম্মের ফল ॥ ছশ বধু আমার যে পূণ শশধর । বিশ্ব হইবে মধু আমির . গেtsর ॥ কেমনে যাইব আমি আt iন গৃহেন্তে । বধগণের দুঃখ আমি ন রিব দেখিহে ॥ এতেক ভাবিয়ে চান্দ কবয়ে রেদিন । পথের মধ্যে বাম সনে হৈল দরশন ॥ চম্পানগরে ঘর রাম সদাগর । শীঘ্ৰগতি গেল। রাম চান্দের গোচর ॥ রাম বলে চান্দ বেণী আছ হে কুশলে । চান্দ বলে ছয় মুত্র ডুবে মল জলে ৷ কি বল কি বল বলে রাম বেণ্য বৈল । বলিতে বলিতে চান্দ নৌকাতে পড়িল ॥ অচেতন হৈল চান্দ নৌকার উপরে। শীঘ্ৰগতি রাম বেণ্য উঠাল্য তাহরে ॥ রাম বলে চান্দ বেণ। না কর ক্ৰন্দন । দৈবের নিবন্ধ কেবা করিবে খণ্ডন ॥ স্থির হয় চান্দ বেণ্য যাহ নিজ ঘরে । এক পুত্র হৈল তোমার এ বার বৎসরে ॥ চান্দ বলে সত্য কথা বলহু অপিনে । ওহে সত্য কি আমার পুত্র হঞেছে ভুবনে ॥ রাম বলে সত্য তোমার হঞেছে নন্দন । নিজ দেশে যাহ সাধু না কর ক্ৰন্দন ॥ চান্দ বলে সত্য কথ। কহিবে সত্বরে পাছে মিথ্যা করিয়া রাম ভাণ্ডিছহ মোরে । রাম বলে সত্য কহি চান্দ সদাগর । হএেছে তোমার পুত্র বtল লখিন্দর ॥ পরম শুন্দর সেহ পূর্ণ শশধর । মিথ্যা নাঞি কহি আমি অবধান কর । দিংঘলে যাইব আমি চান্দ বেণtয় বলে। এত বলি রাম বেণ, শীঘ্ৰগতি চলে ॥ চান্দ বেণ্য নিজ দেশ চলিল আপনে । লখিন্দরের জন্ম শুনি আনন্দিত মনে ॥ ছয় পুত্রের শোক চান্দ পাসরে সকলে । আমি লখিন্দরের সম্বন্ধ করিব কুতুহলে। এতেক বলিয়ে চান্দ মন্ত্রণ করিল | নিজ দেশ মুখে সাধু নৌকা চালাইল ॥ পথে যাত্যে সাধু মনে ভাবয়ে সৰ্ব্বথা । কোথা গেলে কস্য পাব যাইব সে কোথা ॥ এতেক ভাবিয়ে সাধু চলিল তুরিত। ওরে উজানী নগরে যাঞে হৈল উপনীত ॥ নৌকা রহাইল সাধু গঙ্গার কিনারে। উজানী নগরে চান্দ উঠিল সত্বরে ॥ পখের মধ্যে জিজ্ঞাসে চান্দ সদাগব । এই গ্রামে ছিল এক সহ সদাগর ॥ তার ঘর কোনখানে দেখায় অামারে । সাক্ষাৎ করিয়ে যাব কহিল তোমারে ॥ লোকে দেখাই দিল সাহের এই ঘর বটে। সম্বাদ পাইয়ে সাহ আইল নিকটে ॥ সাধু বলে কোথা হৈতে আইলে তুমি ভাই । কোন দেশে ঘর তোমার তত্ত্ব যে সুধাই ॥ বেণ্য বলে মোর নাম চান্দ সদাগব ৷ নিবাস আমার বটে সুচম্পানগর ॥ পরিচয় পাঞে সাধু আনন্দিত-মন ৷ মোর ঘবে বিজ(১) চান্দ করহ এখন ॥ চান্দ বলে কহ ভাই তোমাব কি নাম । পরিচয় দেহ মোবে আমি বিদ।মান ॥ বেণ্য বলে মোর নাম সহি সদাগর । বণিক কুলেতে জয় অবধান কর । পরিচয পাঞে দুহু র আনন্দিত মন । সন্তাষ করযে দুহে অতি বিলক্ষণ ॥ সাহ বেণ্য লয়ে গেল চান্দ সদাগরে । চান্দে লয়ে সহি বেণ্য গেল নিজ ঘরে ॥ চরণ ধুইলা দুহে অঙ্গিন উপরে । পালঙ্কে উপরে তবে বসিলা সত্বরে ॥ ( ১ ) বিজ—গমন ও আগমন ( সন্ত্রমে ) । ভোজন করয়ে দুহে মনের কৌতুকে । ভোজন করিতে চান্দ বেহুলাকে দেখে ॥ পরম সুন্দর কষ্ঠ ইন্দ্রের অপসরা । তাহ দেখি জিজ্ঞাসিল চান্দ অধিকারী ॥ চান্দ বলে সাহ বেণ্য কহিয়ে তোমারে । কেব। এই কন্যা সাহু পবিচয় দেহ মোে সাহ বলে এই কন্য। আমার যে ছেল্য । স বিtঙ্গ সুন্দর কন্যা নাম যে বেতুল ৷ চান্দ বলে এই কন্যার বিভা হঞেছে কোথা পরম সুন্দরী কন্ত| তোমার দুহিতা ॥ সাহু বলে গেছিলাম বাণিজ্য করিতে । তথ। বার বৎসর গেল কহিল তোমাতে ॥ বভ। নাহি হয় কন্যার এবে বিভা দিব তোমাব সাক্ষাতে আর কতেক কহিব ॥ পরিচয় পাঞে চান্দ আনন্দিত-মন ৷ ভোজন করিয়৷ দোহেঁ কৈলা আচমন ॥ আচমন করি দেহে মুখশুদ্ধি কৈল । আনন্দেতে দুইজন পালঙ্কে বসিল ॥ চান্দ বলে সাহ বেণ করি নিবেদন । আমি এক কথা কহি মন দিয়ে শুন ॥ সাধু বলে কহ তুমি কি কথা কহিবে । চান্দ বেণ্য বলে পাছে অবজ্ঞা করিবে সাহু বলে কুটুম্বকে অবজ্ঞা কেবা করে। কি কথা কহিবে চান্দ কহ সে অামারে চান্দ বলে তোমার কম্ভ বেহুল সুন্দরী । মোর পুত্রে সম্বন্ধ করহ কৃপা করি ॥ সাহ বলে তোমার পুত্রের কিবা বটে নাম । চান্দ বলে মোর পুত্রের লখিন্দর নাম ॥ পরন শুন্দর সেই আমার কুমার । রূপে চন্দ্র নিন্দ করে কি বলিব আর ॥ সাহু বলে করণ কর্তব্য মোর বটে । পাত্র নঞে চান্দ বেণ্য অসিহ নিকটে ॥ এতেক শুনিঞে চান্দ বিদায় হইল । নৌকার নিকটে যাঞে দরশন দিল ॥ নৌকায় চাপিল তবে চান্দ সদাগর । দিবানিশি বাহে নৌকা নাঞি অবসর ॥ মনের হুরিষে যায় চান্দ সদাগর । উপনীত হৈল যাঞে সুচম্পানগর ॥ মনসার চরণতলে ক্ষেমানন্দ পায় । চান্দ সদাগর ভাবে কি হবে উপায় ॥ ses ses = {sx : s was চাদের দেশে প্রত্যাবর্তন ও লখিন্দরের বিবাহোদযোগ। দেশে আইল সদাগর বার্তা গেল ঘরে । সনক বেণ্যানী আস্তে নৌক নিবার তরে ॥ পূর্ব । ধান্য নিল আর সুগন্ধি চন্দন । ধূপ দীপ নিল আর যে লাগে যখন ॥ চান্দ বলে সেই কন্যা পরমসুন্দরী। রূপে আল করে যেন ইন্দ্রের অপসরী ॥ সনক বলিল চান্দ করিএ বিনতি । দৈবজ্ঞ ডাকিয়ে লগ্ন কর শীঘ্ৰগতি ॥ দৈবজ্ঞ ডাকিয়ে চান্দ আনিল সত্বরে । লগ্ন স্থির কর তুমি বাল৷ লখিন্দরে ॥ শুনিঞে দৈবজ্ঞ হৈল আনন্দিত-মন । পাজি খুলি লগ্ন দ্বিজ করে ততক্ষণ ॥ পাজি খুলি দ্বিজবর করএ গণন। অ ল মেষ উ ব বৃষ বলে ততক্ষণ ॥ দৈবজ্ঞ বলিল চান্দ শুনহে বচন । লগ্ন সারোদ্ধার হৈল করিএ গণন ॥ লগ্ন করি দ্বিজবর করিল গমন । চান্দ বেণ্য দিল তারে বস্ত্র আভরণ ॥ হেনকালে মনসা মা প্ৰগে কহে কোপে । লখিন্দরে বাসঘরে (১) খাবে কালসাপে ॥ এত শুনি চান্দ বেণ্য ভাবে মনে মনে । লোহার মন্দির বনাইব উজানী ভুবনে ॥ কামিলা(২) কামিলা বল্যে তিন হকি দিল । উত্তম কামিল আসি হাজির হইল ॥ যাহু যাহ কামিলারে উজানী নগরে । লোহার বাসঘর মন্দির বনাবার তরে ॥ ( ১ ) বাসর বা বাসরগ্ৰহ । ( २ ) চান্দ বেণ্য বলে ওহে শুন কামিলাসুত । এমন মন্দির বনাইঅ যেন ন রয় পথ ॥ এত শুনি কামিল সে করিল গমন । সাহের ভুবনে যাঞে দিল দরশন ॥ সাহ বেণা বলে ভাই কোথা তোমার ঘর । কামিলা বলে পাঠাইল চান্দ সদাগর ॥ সাহ বলে কোন কাজে পাঠাল্য তোমারে । কামিল বলে লোহার মন্দির বনাবার অরে। সাহ বলে কি করিব লোহার মন্দির। কামিল বলে শুন সহি মন কর স্থির ॥ চাদের কুলক্রম আছে শুন মোর ভাই । বরকল্প লোহার ঘরে রাখিব তথাই ॥ সাহ বলে ওরে কামিল কহিএ তোমারে । লোহার ঘর বনাও আমার হুজুবে(১) ॥ এতেক শুনিঞে কামিল অমুমতি পাইল । লোহার মন্দির বনাইতে আরম্ভিল ॥ সাতালী পৰ্ব্বত পরে মন্দির বনল্য । যেইমতে চান্দ বেণ্য আজ্ঞা করেছিল ৷ লোহার বনায় কামিলা লোহার ছায়নী । মেঝ্য ঘরে ঢালে দিল কঞ্চের ঢালনী ॥ সোলনা (?) দুয়ারে কামিল লোহার কপাট দ্বিল । মন্দির তৈয়ার করি চান্দের পাশে গেল ॥ ( ১ ) সম্মুখে । কামিল বলে চান্দ বেণ। শুন মোর বাণী । লোহার মন্দির চান্দ বনাইল আমি ॥ মন্দির বনল্যা চান্দ বহুত যতনে । মোরে বিদায় দায় চান্দ যাইব ভুবনে ॥ তাহ শুনি চান্দ বেণ্য৷ আনন্দিত হল্য । মনের কৌতুকে কামিলার বিদায় করিল। জাম জোড়া দিল চান্দ পাগ পটুক বালা । অনেক আভরণ দিল গলে কণ্ঠমাল ॥ মন্দির হুইল চান্দ আনন্দিত-মন ৷ নিমন্ত্রণ পত্র চান্দ লেখে জনেজন ॥ নিমন্ত্রণ পাঞে তবে বণিক সকলে । শীঘ্ৰগতি সব বেণ্য চান্দের ঘরে চলে ॥ রাম সাধু শুtম সাধু দুই সহোদরে । লক্ষণ নিমাঞি আইল চান্দের নগরে ॥ রূপ সনাতন আর &রখ বেণ্য। আল্য । গোপাল বণিক তবে সত্বরে চলিল । জয় বিজয় আল্য দুটা বেণ্যার নন্দন । রাধাকান্ত শ্রীকান্ত চলিলা ততক্ষণ ॥ কাশীনাথ বিশ্বনাথ আস্তেন কৌতুকে । শিবদত্ত বেণ্য। তবে আস্তেন চম্পাকে ॥ লক্ষপতি সাধু আইল উন্নমস্ত সহিতে । শঙ্খপতি বেণ্য আল্য চান্দের গৃহেতে ॥ ধনপতি সাধু আল্য দেখিতে সুন্দর । শাকু বাকু আইল দুটা বাণিজার কুণ্ডর ॥ রামদত্ত বেণ আইল চান্দের গোচর। ভৈরব বণিক আইল সুচম্পানগর ॥ গোবিন্দ বণিক আল অতি কুতুহলে। মাধব বণিক তথ। শীঘ্ৰগতি চলে ॥ যত যত বেণ্য আইল কত নিব নাম । সভাকারে চান্দ বেণ্য কৈল অভ্যর্থন ॥ আইল যতেক বেণ্য লেখা নাঞি তার । ত হ। দেখ্যে চান্দের মনে আনন্দ অপার । সব বণিক একে একে করিল গমন । সভাকারে চান্দ বেণ্য দিলেন আসন ॥ সিনান ভোজন তবে হৈল সভাকার । মুখশুদ্ধি দিয়ে চান্দ করে নমস্কার ॥ শুন শুন বন্ধুগণ বলিএ সভারে । লখিন্দরে বিভা দিব উজানী নগরে ॥ তাহা শুনি সব বেণ্য অনুমতি দিল । লগ্নপত্র চান্দ বেণ্য উজানী পাঠাল্য ॥ শুক্রবার পঞ্চমী তিথি দিন শুভক্ষণ । সেইদিনে সাহু বেণ্যা করিব গমন ॥ পত্র পাঠাইয়ে চান্দ কুটুম্বে কয় কথা । বিবাহের সরঞ্জাম করহ সৰ্ব্বথা ॥ তাহু! শুনি যত বেণ্য৷ আনন্দিত হৈল । বিবাহের সরঞ্জাম করিতে লাগিল । প ফ লয়ে গেল দূত উজানী নগরে । পল লয়ে দিল দৃত সাহ বেণ্যার করে ॥ প এ পঢ়ি সাছ বেণ আনন্দিত হৈল । আপনে সে এক পত্র চম্পকে পাঠালা ॥ পত্র লয়ে দূত আল্য সুচম্পানগরে। পত্র আন্তে দিল দূত চান্দের হুজুরে । পত্র পঢ়ি চান্দ বেণ্যার আনন্দিত মন । শুন গো সনক এই উজানীর লিখন ॥ গ্রামের মেয়া ডাক্যে আন আপনার ঘরে । মঙ্গল করহ সবে বালা লখিন্দরে ॥ এত শুনি সনক সে সত্বরে চলিল । আইমাইগণ(১) সব ডাকিয়ে আনিল ॥ আইল সকল মেয়t চান্দ লেণ্যার ঘরে । হরিদ্র পিঠালী মাখায় বালা লখিন্দরে ॥ মঙ্গল করিয়ে সব মেয়। ঘর গেল । চান্দ বেণ্য। তবে সব কুটুম্বে বলিল ॥ কালি সব বরযাত্রী করহ গমন । পরশ্ব শুক্রবারে লগ্ন করি নিবেদন ॥ বরযাত্রী বলে ভাল হউক বিহীন । উজানী নগরে কালি করিব পয়ান ॥ রামরাত্রি পোহাইল হইল বিছান । কুটুম্ব নিকটে চান্দ করিল পয়ান। সিনান ভোজন সভে করহ সত্বরে । উজানী নগর ভাই পথ বটে দূরে ॥ ( ১ ) মাতামহী ও পিতামহী পৰ্য্যায়ের স্ত্রীলোকগণ । বরযাত্রী স্নান ভোজন করিতে লাগিল । চান্দ বেণ্য গ্রামের মেয়া সকলি ডাকাল ॥ চান্দের ঘরে বাদ্য বাজে নাঞি লেখাজোখা । দামামা দগড় বাজে নাঞি তার সংখ৷ ॥ জয়চাক বাজে আর বাজে জয়ঢোল । মহাশব্দ শুনি যেন সমুদ্র কল্লোল ॥ তুরা ভেরী বাণী কাসী বাজে-অনুক্ষণ । নর্তকে করএ মৃত্য নাচে নটীগণ ॥ শীঘ্ৰগতি লখিন্দরে করহ বিদাই ॥ এত শুনি সনক বলিল মেয়াগণে । তুরিতে বিদায় কর আমার নন্দনে ॥ গ্রামের মেয়া যত সব আনন্দিত মনে । লখিন্দরে বিদায় করিল ততক্ষণে ॥ বর বরিয়াতী বিদায় করিল সব লোকে । পূর্ণিমার চন্দ্র যেমন তেমনি লখাইকে ॥ বরযাত্রী চলি যায় অতি বড় রঙ্গে । উজানী নগর গেল লখিন্দর সঙ্গে ॥ উজানী নগর যাঞে বাস যে করিল। গ্রামের লোক বর দেখি চমৎকার হৈল ॥ ধন্য ধষ্ঠ বেহুলার সফল জীবন । পূর্ণিমার চন্দ্ৰ পাইল চান্দের নন্দন ॥ অবিবাহ ছিল যখন মাতাপিতার ঘরে । তখন হেন বর ওগো গেছিল কোথাকারে ॥ ইমতে কাণাকণি করে মেয়াগণ । একদৃষ্টে চাহে সবে লখtএর বদন ॥ অধিবাস করিতে বসিল সদাগর । মঙ্গল তা বান্ধিলেক করের উপর ॥ লখিন্দরের অধিবাস কৈল সদাগর । অধিবাসের ভর গেল সাহ বেণীর ঘর। জলধার দিয়ে ভরি সাহ বেণ নৈল বেহুলার অধিবাস করিতে বসিল ॥ অধিবাস কৈল সাহু আনন্দিত মনে । বেহুলার করে স্থত। বান্ধিল তখনে ॥ বেহুলাকে ঘরে নিল যত মেয়্যাগণ । বেহুলার বেশ তার বনfএ তখন ॥ উবটন (১) হরিদ্র। মাখায় বেহুলার অঙ্গে । নানা বেশ বনাইল আতি বড় রঙ্গে ॥ নানা আভরণ পর।য আর পাটেব শাড়ী রূপে আল করে যেন ইন্দ্রেব অপসরী। যত মেয়্যাগণ সব আনন্দিত মন । হাস্ত পরিহাস সবে করএ তখন ॥ বরযাত্রী সব ( তবে ) চলিল সত্বরে । উপনীত হৈল গিয়ে সহ বেণ্যার ঘরে । পাত্র উলথিয়ে সাহ নিল নিজ ঘরে । নানামতে বাদ্য বাজে সাহের দুয়ারে । ( ১ ) অস্থলেপন, অঙ্গরাগ । লখিন্দরে লয়ে গেল করিয়ে সম্বরে । ছামনি (২৮) হইল তবে আঙ্গিন উপরে ॥ লখিন্দর দিল মালা বেহুলার গলে । বেহুল দিলেন মালা অতি কুতুহলে ॥ অগ্নি স্থাপন তবে পুরোহিত করে । যজ্ঞ আরস্তিল দ্বিজ আঙ্গিন উপরে। বেহুল বেণ্যানী বৈসায় লখিন্দরের বামে । পুরোহিত বাক্য পড়ে অতি অনুপামে ॥ সিন্দূর-দীনের বেলা কাছে এক ছেল্য । চমকি চমকি উঠে লখিন্দর বালা ॥ লখিন্দর সিন্দুর দিল বেহুলার মাথায় । পঞ্চফল দিয়ে দ্বিজ মন্ত্র যে বলায় ॥ লখিন্দর বেহুলায় তবে এস্থিবন্ধন কৈল । স্বন্ধি স্বস্তি বলি দ্বিজ বলিতে লাগিল ॥ পূর্ণাহুতির মন্ত্র তবে বলে দ্বিজবর । লখিন্দর বেহুলা গেল লোহার বাসঘর ॥ বিবাহ হইল সাহের আনন্দিত্ত মন । কুটুম্ব নিকটে সাহ করিল গমন । সাহ বলে নিবেদন করিএ সম্ভারে । পুৰ্ব্বাপর যেন আছে ভক্ষ্য-ব্যবহারে ॥ অনুগ্রহ করি বিজ কর সর্বজন । গলে বস্ত্র দিয়ে সাহ করে নিবেদন ॥ ( ১ ) ছায়ামগুপ । ভাল ভাল বলি সব কুটুম্ব বলিল । ভোজন করিতে সব সহরে চলিল ॥ হেনকালে রামদত্ত বলিল বচন । না বুঝিয়ে কোথা সব করিছ গমন ॥ বাসরে বেহুলার রন্ধন । (কুল) মর্যাদা করুক আগে বেণ্যার নন্দন তবে সে উহার ঘরে করিব গমন ॥ এত শুনি সাহু বেণ্য ভাবে মনে মন । বরযাত্রীর সম্মান কবিল ততক্ষণ ॥ সম্মান পাইয়ে সবে চলিল তুরিত । সাহের মন্দিরে যাঞে হৈল উপনীত p যার যেই বেভার ছিল তাইত করিল, আচমন করি সবে মুখশুদ্ধি কৈল ॥ সবাই চলিয়ে যায় বাসা করিবারে । চান্দ বেণ্য নিবেদন করিল সভারে ॥ চান্দ বলে নিবেদন শুন সৰ্ব্বজন । মন্দিরনিকটে সব করহ জাগরণ ॥ তাহ! শুনি জিজ্ঞাসিল সল বেণ্যাগণ । মন্দিরনিকটে রহি কিসের কারণ ॥ যতেক বৃত্তান্ত চান্দ কহিতে লাগিল । শুনি সকল বেণ্য। তবে ভাবিতে লাগিল ॥ বেহুলা লখাই ওখ মন্দিরে গমন । তা দেখিয়ে চান্দ বেণ্যা ভাবে মনে মন ॥ এইমতে রহে দুহে লোহার বাসরে । লখিন্দর বেহুল গুইল পালঙ্ক উপরে ॥ লখিন্দর বলে বেহুল কর অবধান । ক্ষুধাতে আমার এবে না রহে পরাণ ॥ অন্ন রান্ধিয়ে বেহুল দেহ শীঘ্ৰগতি । তবে মোর প্রাণ বাচে বেহুল " যুবতী ॥ বেহুল বলিল বেণ্য করি নিবেদন । আমি এত রাত্রে কোথা পাব অল্প-ব্যঞ্জন ॥ বেণ্য বলে অন্ন দেহ করিয়ে রন্ধন । তাহা শুনি বেহুল কন্যা ভাবে মনে মন ॥ অবোধ বেণ্যার পুত্র রাত্রে মাগে ভাত । কোথ। পাব হাড়ি চাউল কোথ৷ পাব কাঠ ॥ লখিন্দর বলে বেহুল শুনহ বচন । তুমি আখ-হাড়ির চাউল করহ রন্ধন। ছামনির হাড়ি চাপায় কহিএ যুগতি । ঘিএ ভিজাইয়ে পাগ জ্বাল শীঘ্ৰগতি ॥ প্রদীপে আগুন জ্বাল শুনলে বেহুলা । এত বলি ঘুমাইল লখিন্দর বালা ॥ বেহুল বেণ্যানী তবে ভাবএ সৰ্ব্বথা । আজি মোর বিভ হৈল তাহে কহে কথা ॥ কি করিব কি হুইব চিন্তএ উপায় । অবোধ বেণ্যার পুত্র অন্ন খাতে চায় ॥ বেহুল বলে অন্ন আমি রান্ধিব সত্বরে । ক্ষুধাতে শয়ন কৈল বালা লখিন্দরে ॥ এতেক বলিএ বেহুল ভাবিতে লাগিল । ছামনির হাড়ি বেহুল অাপনে চাপাল্য । আtখহাড়ির চাউল দালি রন্ধন করিল। রন্ধন করিএ বেণ্যানী ভাবিতে লাগিল ॥ বেণ্যার পুত্র ঘুমাইল পালঙ্ক উপরে। আমি নারী কুলবর্তী ডাকি কি প্রকারে ॥ এতেক বলিয়ে বেহুল সাহের নন্দিনী । অনুমান করি ছিটে ভূঙ্গরের পানি ॥ পানি ছিটি কুলবতী ভাবে মনে মন । লখিন্দরের নিদ্রাভঙ্গ হইল তখন ॥ উঠিয়ে বসিল বেণ্য পালঙ্ক উপরে । মুখে জল লখিন্দর নিলেন সত্বরে ৷ ভোজন করিল বেণ্য অতি শীঘ্ৰগতি । আচমন করাইল বেহুলা যুবতী ॥ আচমন করি বেণ্য মুখশুদ্ধি কৈল । পালঙ্ক উপরে বেণ্য শয়ন করিল ॥ বেহুলা সে সেই অন্ন করিল ভোজন । বাসঘরে সুখে নিদ্রা যায় দুইজন ॥ চান্দ বেণ্য মনে তবে উপায় চিন্তিল । লক্ষ লক্ষ মশাল চান্দ তখন জ্বলিল ॥ সিন্দুরের জাঙ্গাল বান্ধে কড়ি দিয়ে তাথে । তীরন্দাজ চালীদার রাখে মূথে যুখে ॥ এতেক রক্ষক দিল চান্দ সদাগরে । পিপীলিকার সাধা নয় যায় লোহার বাসঘরে ॥ হেস্তালের নড়ি চান্দ অাপনে লইল । ফরি তরবার নিঞে অপিনে দাণ্ডাল্য । আপনে রছিল চান্দ মন্দিরনিকটে । এইমতে থাকে সম্ভে করি একদৃষ্টে ॥ তখন মনসাদেবী কোন বৃদ্ধি কৈল । যত নাগগণে দেবী ডাকিয়ে আনিল ॥ যতেক বৃত্তান্ত দেবী কহিল আপনে । মূঢ় চান্দ বেণ্য বাদ কৈল মোর সনে। কোন কোন নাগ যাবে লোহার বাসরে । চান্দের পুত্ৰ লখিন্দরে ডংশিবার তরে। এতেক শুনিঞে নাগ ভাবয়ে অস্তরে । কি দোষে ভংশিব যাঞে বালা লখিন্দরে ॥ বড় বড় নাগ সব হে ঢ মাথা কৈল । তা দেখি মনসা মাত কান্দিতে লাগিল ॥ উত্তর না পাঞে দেবী ভাবে মনে মন । উচ্চৈঃস্বরে মনসা মা করেন ক্রমদন ॥ হেনকালে পাত্র ধোবিন(২৯) তথাকে আইল । কি হল্য কি হল্য বলে বার্তা জিজ্ঞাসিল ॥ মনসা বলিল ধোবিন সৰ্ব্বনাশ হুল্য। চান্দ বেণী সনে বাদ এবে সে পূরিল। ( ১ ) অষ্ঠাষ্ঠ মনসার ভাসান বা মনসামঙ্গলাখ্য পুঁথি ও মুজিত পূজকে 'নেত ধোবানী’ পাঠ আছে। লোহার বাসরে রাখে বালী লখিন্দরে । লক্ষ লক্ষ রক্ষক চান্দ দিলেক সত্বরে H সকল নাগগণে আমি ডাকীয়ে আনিল । যত বিবরণ সব নাগেরে কহিল ॥ তাহা শুনি যত নাগ হে স্ট মাথা কৈল । কোন নাগের তথা যাত্যে সাহস না হল ॥ বিষাদ ভাবিয়ে আমি কান্দিতে লাগিল । এই হেতু কান্দি আমি তোমারে কহিল ॥ ধোবিন বলে শুন মাত কহিএ যুগতি । কালীনাগে ডাকায়্যে আনহু শীঘ্ৰগতি ॥ কালি কালি বলি দেবী ডাকিতে লাগিল । তথাপি কালীর দেবী উত্তর না পাইল ॥ পাত্র খোবিন বলে মাতা করি নিবেদন । কালীদহে কালীনাগ আছএ এখন ॥ দূত পঠাইয়ে দায় শুন মা কমল । তবে সে মরিব মাগো লখিন্দর বালা । টে গড় ঢ়েমনা দেবী পাঠাইল আপনে । কালীনাগে ডাকো তোরা আনহু এখানে ॥ টোড় টেমন তবে করিল গমন । কালদহের কুলে যাঞে দিল দরশন ॥ একাদশী করো ছিল সেন্ট কালীনাগ । মহাগজে ধবে কালা করিবারে ভোগ ॥ গজে ধরি কালীনাগ গিলিবারে চাই । হেনকালে বলে চুণ্ড মনসার দোহাই ॥ দোহাই শুনিঞে কালী উৰ্দ্ধমাথা করে। টেtড় চেমনী তখন লুকাইল ভরে ॥ দেখিতে না পায় কালী ভাবে মনে মন । দোহাই শুনিল নাঞি দেখি কোন জন ॥ পুনরপি কালীনাগ গজে গিয়ে ধরে। টে ড়ে ঢ়েমনা দোহাই দিলেক সত্বরে ॥ এই মত তিন বার হস্তীকে ধরিল। টোড় ঢ়েমনা তিন বার দেবীর দোহাই দিল । ক্রোধে কালীনাগের গায়ে অগ্নি জ্বলিল । টে ড়ে ঢ়েমনা কালী খেদিয়ে চলিল ॥ পলাইয়ে যায় দোছে অতি বড় বেগে । উপনীত হৈল গিয়ে মনসার আগে ॥ মনসার সাক্ষাতে যাঞে করে নমস্কার । ওমা কালীনাগে আইসে মোরে করিতে সংহার ॥ মনসা বলিল বাছ না কর ভাবন । আসুক কালীনাগ ওরে করে। দিব মান ॥ মনসা সমীপে কালীনাগের আগমন। হেনকালে কালীনাগ উপনীত হৈল । মনসাকে দেখ্যে কালী প্রণাম করিল ॥ তখন সে কালীনাগ বলএ বচন । কি হেতু ডাকিলে মাত কহ বিবরণ ॥ মনসা বলিল কালী ডাকিল৷ তোমারে । তুমি গিয়ে ডংশ বাছ বালা লখিন্দরে ॥ কালীনাগ বলে আমি যাইব সেখানে । চলিতে নারিব আমি করি নিবেদনে ॥ ইহার উপায় মাতা করহ আপনে । তবে আমি বাসঘরে করিব গমনে ॥ মনসা উপায় তবে চিস্তেন আপনে । বিশাই বিশাই বল্যে দেবী ডাকে ততক্ষণে ॥ আইল বিশাই তবে মনসাগোচরে । কি কৰ্ম্ম করিব মাতা অtজ্ঞা দেহ মোরে ॥ এতেক শুনিঞে দেবী বলেন আপনে । শীঘ্ৰগতি পুষ্পক রথ বনাহ এখনে ॥ মনসার অজ্ঞা বিশাই শুনিয় আপনে । দেখিতে দেখিতে রথ বনাল্য তখনে ॥ রথ নঞে দিল বিশাই মনসাগোচর । কালীনাগ বিদায় তবে হইল সত্ত্বর ॥ ব'ট রথ চালায় ভাই অতি শীঘ্ৰগতি । সারথি চালায় রথ অতি পবনের গতি ॥ এই মতে কালীনাগ যায় কুতুহলে। উপনীত হৈল গিয়ে খুদাই বকুলতলে । সেখান হৈতে দেখে নাগ বড় কোলাহল । মশালের জ্যোতিতে পৃথিবী করে আলো ॥ কড়ির জাঙ্গাল দেখে সিন্দূর বিস্তার। হেস্তালের নড়ি নঞে আছে সদাগর ॥ তরবার ঝণক্যে আছে যতেক সিপাহী । একদৃন্টে যত লোক চতুর্দিকে চাহি। ঔষধের গন্ধে নাগ যাইতে না পারে। বকুলতলে কালনাগ ভাবে নিরস্তরে ॥ ধূলীনাগে কালীনাগ বলিল বচন। মন্দির দেখিয়ে তুমি আস্তহ এখন। ধূলী বলে কি হেতু সে পাঠাইছ মেরে । কালী বলে পাঠাই তোমায় পথ দেখিবারে ॥ ধূলী নাগ চলি যায় ধূলাতে মিশ্রিত। মন্দির নিকটে যাঞে হৈল উপনীত ॥ চতুৰ্দ্দিগে ধুলীনাগ ভালিয়ে(১) দেখিল । পথ না দেখিয়ে ধূলী ভাবিতে লাগিল । ধূলী বলে কালীনাগ শুনহ বচন । মন্দিরেতে পথ নাঞি করি নিবেদন ॥ তাহা শুনি কালীনাগ ভাবএ অস্তরে । কেমনে যাইব তবে লোহার বাসরে ॥ সেখান হৈতে কালীনাগ দূত পঠাইল । মনসায় কহিঅ কালী যাইতে নারিল ॥ দূত গিয়ে বার্তা দিল হইএ বিকলে। কালীনাগ রহিল খুদাই বকুলতলে ॥ অনেক রক্ষক আছে লেখ। জোখা নাঞি । অনেক মশাল বেড়ি আছএ তথাই ॥ (১) ভাল অর্থে দেখা। ভালিয়ে দেখিল—শুৎস্থক্যের সহিত চাহিয়া দেখিল । কড়ির জাঙ্গাল দেই সিন্দুর উপরে। পিপীলিকার সাধ্য নয় যায় লোহার বাস ঘরে ॥ নিমুহ(১) মন্দির তথা পথ না রাখিল । ধূলানাগ দেখি বার্তা কালীরে কহিল ॥ এতেক শুনিঞে দেবী কন্দে উভরায় । হেনকালে পাত্ৰ ধোবিন শুনিবাবে পায় ॥ মনসনিকটে ধোবিন আইল সত্বরে । কি হেতু কান্দিছ মাতা আজ্ঞা কর মোরে। মনসা বলিল ধোবিন সৰ্ব্বনাশ হৈল। চান্দ বাণ্য লোহার ঘরে অনেক উপায় কৈল ॥ ঔষধ রাখিল চান্দ কড়ি থরে থর । ঢালীদার বরকন্দাজ আছএ বিস্তর ॥ তাহা দেখি কালীনাগ ভাবিতে লাগিল । বকুলতলে আছে কালী দূতে বাৰ্ত্ত দিল । নিমুহ মন্দির তথা পথ মাত্র নাঞি । কি উপায় কোরি ধোবিন বার্তা যে সুধাই ॥ ধোবিন বলে শুন মাতা আমার বচন । কামিলারে শীঘ্ৰগতি ডাকহ এখন ॥ বিশাই বিশাই বোলো দেবী তিন ডাক দিল । মনসার সাক্ষাতে যাঞে উপনীত হৈল ॥ মনসা বলিল বিশাই কি কৰ্ম্ম করিলে। লোহার মন্দিরে বিশাই পথ না রাখিলে ॥ (১) মুখহীন অর্থাৎ ছিদ্ৰশুষ্ঠ দি প্রাণ ইচ্ছা আছে শুনরে বচন। চ @ */ লোহার মন্দিরে পথ করগা এখন ॥ তাহা শুনি কামিল সে সত্বরে চলিল । চান্দের নিকটে যাঞে দরশন দিল ॥ চান্দ বলে কামিলারে অামি বলি তোরে । কি কারণে এথা কামিল আইলে সত্বরে ॥ কামিল বলে চান্দ বেণ্য অামি তোরে বলি । লোহার মন্দিরে আমি রাখেছি বাটালী ॥ বtটালী আনিতে যাব কহি বরাবরে । চান্দ বেণ্যা বলে তবে যtহ সে সত্বরে ॥ কামিল চলিয়ে গেল লোহার মন্দিরে । মন্দিরের ঈশান কোণে ছেদ করিল সত্বরে ॥ ছেদ করি কামিল সে করিল গমন । চান্দের নিকটে যাঞে দিল দরশন ॥ চান্দের পাশে কামিল বিদায় হইলা তুরিত। মনসার সাক্ষাতে যাঞে হুইল উপনীত ॥ মনসায় স্ত্র ণাম কামিলা করিল আপনি । মন্দিরের ঈশানে ছেদ কর্যে এলাম আমি ॥ এতেক বলিয়ে কামিল বিদায় হয়ে গেল । তখন মনসাদেবী ভাবিতে লাগিল ॥ বিষাদ ভাবিয়ে দেবী কন্দে ঘনে ঘন । পাত্র ধোবিন নিতাই ধোবিন বলিল বচন ॥ ধোবিল বলিল মাত শুনহ আপনে । স্বগেতে মনসাদেবী করহ গমনে ॥ চারি খান মেঘ তুমি মাগ পুরন্দরে। তবে সে মরিব মাগো বালা লখিন্দরে ॥ এত শুনি মনসা মা সত্বরে চলিল । ইন্দ্রের সাক্ষাতে যাঞে দরশন দিল ॥ গলায় বসন নঞে ইন্দ্ররাজ কয়। কোন কার্ধ্যে আইলে মাত কিবা আজ্ঞা হয় ॥ মনসা বলিল ইন্দ্র আইল সত্বরে। এক ভিক্ষা দেহ ইন্দ্র কহিএ তোমরে ॥ ইন্দ্র বলে শুন মাত। আমার বচন । কিবা ভিক্ষ চাহ তুমি বলহু এখন ॥ মনসা বলিল ইন্দ্র কহি বরাবরে। চারি মেঘ ইন্দ্ররাজ ভিক্ষা দেহু মেরে ॥ জাবৰ্ত্ত সম্বর্ত আর দ্রোণ পুষ্কর। চারি মেঘে আপনে ডাকিল পুরন্দর ॥ চারি মেঘে ইন্দ্র তবে বলিল বচন । মমসার সঙ্গে তোর করহ গমন ॥ স্বগে হৈতে চারি মেঘ করিল গমন । মনসায় বলিল দেবি করি নিবেদন ॥ কোথাকে যাইব মাগো বলহ বচন ॥ দেবী বলে শুন মেঘ আমার বচন ॥ মনসা বলিল যাইবে মন্দির নিকটে। বৃষ্টিধারী কর গিয়ে কহিল তোমাকে ॥ এত শুনি মেঘগণ বিদায় হইল । দুৰ্দ্দর শবদে যাঞে দরশন দিল ॥ ঝড়-বৃষ্টি জলবৃষ্টি হয় অনুক্ষণ । যতেক মশাল জ্বলে নিড়ায় তৎক্ষণ ॥ লখিন্দরের সর্পাঘাত । শিলাবৃষ্টি হয় ভাই ঘন বরিষণ । য-তক রক্ষক পলাইল সৰ্ব্বজন ॥ রক্ষিগণ পলাইল পবন-গমনে । সিন্দূরেব জাঙ্গাল জলে ধুয়াল্য তখনে ॥ কড়ির জাঙ্গাল দুরে গেল ঔষধ ভাসিল । চান্দের মনেতে তবে বড় ভয় হৈল ॥ তথাপি সে চান্দ বেণ্য না যায় ছাড়িয়ে । হেস্তালের নড়ি নএে3 রহিল দা গুয়ো ॥ হেনকালে মেঘগণ বড় ক্ৰোধ কৈল । চাদের সম্মুখে দারুণ পাথর পেলিল ॥(১) চার্ল বেণ্যার মনে ভয় হইল তখনে । পলাইয়ে গেল চান্দ লইয়ে জীবনে ॥ যত লোক দুরে গেল একজন নাঞি । বকুলতলায় কালিনাগ চিন্তয়ে তথাই ॥ দূত পঠাইল কালি মনসা সাক্ষাতে । একেল মন্দিরে আমি নারিব যাইতে ॥ ( ১ ) ফেলিল । এতেক শুনিঞে দেবী উপায় চিণ্ডিল । যত নাগগণে দেবী বিদায় করিল ॥ যত নাগগণ সব করিল গমন । কালিনীগ কাছে যাঞে দিল দরশন ॥ কালিনাগ বলে খরিস শুন মোর বাণী । লোহার মন্দিরে ভাই যাহ সে আপনি ॥ কালির বচন শুনি খরিস চলিল । মন্দির নিকটে যাঞে দরশন দিল ॥ মন্দিরসামাঞে (১) খরিস ভাবে মনে মনে । কোন দোষে বাণীর পুত্রে করিব দংশনে ॥ এডেক বলিয়ে খরিস নিশ্বাস ছাড়িল । নিশ্বাস শুনিঞে বেহুলা চমকি উঠিল ॥ বেহুল বলিল খরিস শুনহ বচন । মন্দিরে আইলে ভাই কিসের কারণ ॥ খরিস বলিল কন্যা শুন মোর পাশ । মনসা পাঠাল্য লখাই করিতে বিনাশ ॥ কস্থা বলে ওহে ভাই শুনহ বচন । নৈরাশ করিবে ভাই কিসের কারণ ॥ আস্ত আস্ত ওহে ভাই খই দুগ্ধ খায়। খুবর্ণ হুড়পিতে নাগণ সুখে নিদ্রা যায় ॥ বেহুল দিল খই দুগ্ধ অমৃত সোসর। মনের কৌতুকে ভোজন কৈল নাগবর ॥ ( ১ ) প্রবেশ করিয়া । এতেক শুনিঞে তবে বেহুল রূপসী । সৰ্পের গলেতে দিল হুবর্ণ-সাড়াসী ॥ হুড়াপতে ভরিল সাপ মনের কৌতুকে । পালঙ্কের তলে লয়ে রাখিল তাহাকে ॥ বিলম্ব দেখিয়ে কালি মন কৈল রাগে । শঙ্খচূড়ে পাঠাইল অতি বড় বেগে ॥ রাতুল নয়ন সপের বিকট দশন । মন্দিরনিকটে যাঞে দিল দরশন ॥ মন্দির সামাঞে নগৈ ভাবে মনেমন । বেহুল বেণ্যানী তবে দেখিল তখন ॥ আস্ত আস্ত ওহে সাপ খই দুগ্ধ খায় । নিবেদন করি সাপ ঘরে ফিরে যায় ॥ এতেক শুনিয়ে সাপ লজ্জিত বদন । হেট মাথা করি দুগ্ধ করিল ভোজন ॥ তাহা দেখি মনে ভাবে বেঙ্কল রূপসী । সপের গলায় দিল স্থব সাড়াশী ॥ বন্ধ করি সেই নাগে রাখিল তথাই । হেনকালে আর সৰ্পে দেখিবারে পাই ॥ সন্ত্রমে উঠিয়ে তারে খই দুগ্ধ দিল । ভোজন করঞে তারে বান্ধিয়ে রাখিল ॥ হেনকালে কালনাগ চিস্তিল উপায় । এড়ালী নাগেরে তবে পাঠাল্য তথায় ॥ মন্দিরে সামাঞে নাগ ধীরে ধীরে চলে। বেহুল বেণানী দেখ্যে হইল বিকলে ॥ শুন শুন ওরে নাগ নিবেদন লায় । শু বর্ণবাটিতে নাগ খই দুগ্ধ খায় ॥ নাগ বলে আমি অtল্য লখাই মারিতে । তুমি কেনে বল কণ্ঠ খই দুগ্ধ খাতে ॥ এতেক শুনিঞে কস্ত করয়ে বিনতি | লখীয়ে খাইতে সাপ নহুেত যুগতি ॥ শুন শুন ওরে ভাই চিনি দুগ্ধ লেহ । মনের কৌতুকে মাগ ভোজন করহ ॥ কন্যার ভকতি দেখি নাগ ব্রাস পায় | স্তবর্ণবটিতে নাগ চিনি দুগ্ধ খায় ॥ এত্তেক দেখিয়ে বেহুল ভাবে মনে মন । এড়ালী নাগেরে বন্ধ করিল তখন ॥ বিলম্ব দেখিয়ে কালি চিস্তিল উপায়ু । পুনরপি আর এক নাগেরে পাঠায় ॥ সেই নাগ যেই ম ত্র বাসরকে যায় । বেহুলা বেণ্যানী শীঘ্ৰ বাঙ্গিল তাহtয় ॥ ক্রমে ক্রমে বহু নাগ করিল গমন । কেহো না ফিরিয়ে অল্য কালির সদন ॥ নিশি অবসান হৈল দণ্ড চারি আছে। বেহুল বসিল গিয়ে লখিন্দরের কাছে ॥ দৈবের বিপাক দে ; কে করে থ - ন । বেহুল বেণ না তথা ঘুমাল তখন ॥ সব লোক দূরে গেল কালি সে দেখিল । মন্দিরনিকটে আসে। দরশন দিল ॥ লোহার ঘর দেখে কালি ভাবিতে লাগিল । কেমনে যাইব আমি পথ না রাখিল ৷ তাল প্রমাণ ছিল নাগ শলিত হইল । পবন মারিয়ে নাগ বাসরে সামাল্য ৷ বাসরে সামাঞে নাগ ভাবে মনেমন । লখিন্দরের রূপ দেখি করয়ে ক্ৰন্দন ॥ লখাই চাহিতে বেহুল বড়ই সুন্দর। রূপেগুণে আল করে লোহার বাসর ॥ চান্দ-সদাগরস্তুত বড়ই সুন্দর। শিরে কেশ বাণিয়ার হাড়িয়া চামর ॥ গরুড় প্রহরী জাগে ময়ূর প্রহরী। শিঅরে বসিয়ে জাগে ওঝা ধন্বস্তুরি ॥ শিআর ছড়িয়ে নাগ পা-ভলে দাণ্ডাল্য । নিন্দের আলিসে বাণ্য দণ্ডে ( ১ ) লাথি মাল্য । চন্দ্র সূর্য বাপাহে তোমরা থাক সাক্ষী । মিনিদোষে বাণ্যার ছা(ও)য়াল দণ্ডে মাল্য লাথি ॥ সাক্ষী ত রাখিয়ে নাগ কামড় জুড়িল । সোণারবরণ লখা কালি যে হইল ॥ বেহুলার নিদ্ৰাভঙ্গ হুইল তখন । পালঙ্কে দেখিল তবে চান্দের নন্দন ॥ ধড়ফড় করে বেণ্য পালঙ্ক উপরে । তা দেখ্যে বেহুলা কন্য। কান্দে উচ্চৈঃস্বরে ॥ ( ১ ) । ফণায় । মনসার চরণ ধরি ক্ষেমানন্দ গায় । বেহুল বেণ্যানী ভাবে কি হবে উপায় ॥ বেহুলার বিলাপ। বালী লখিন্দর, বিষে জরজর, দেখি বেঞ্ছল। সুন্দরা । মুখে পড়ে লাল, অঙ্গ হৈল কাল মনেতে বিষাদ করি ॥ বেহুল বলে হয়, কি করি উপায়, শুন হুে বাণিয়াতে ; অদ্ভুত কথন, বাসরে মরণ, দেখি লাগে চমকিত ॥ কি করিব আমি, যুক্তি বল তুমি, অনাথা করিলে মোরে । লোকের গঞ্জনে, তেজিব জীবনে, ঝ tপ দিব যাঞে জলে ॥ সাধ ছিল মোরে, যাইতে চম্পারে, তাহে এই কৈল বিধি । , না পুরিল আশ, করিলে নৈরাশ, কোলে হীরালাম নিধি ॥ বিধবা হইয়ে, বচি কি নাগিয়ে, আমারে বfলবে কি ! ব সরেতে র ড়ী, হুঞেছে এ ছুড়ী, অভাগী সাধুর ঝি ॥ বেহুল সুন্দরী, যায় গড়াগড়ি, ধূলায় ভুষিত অঙ্গ । করয়ে বিলাপ, পাঞে মনস্তাপ, কেহ নাঞি তার সঙ্গ ॥ লখাএর পায়ে ধরি, বলয়ে সুন্দরী, কান্দি কান্দি কয় কথা । উত্তর না দিলে, পাথরে পেলিলে, অামার জীবন বৃথা ॥ দেখি তব মুখ, বিদরয়ে বৃক, কাল হৈল তব দেহু। গরুড় ময়ুরী, ७वीं थशखब्रि, কিছু না করিল কেহ ॥ বাসরে এখন, করিলে ভোজন, ক্ষুধাৰ্ত্ত হইয়ে তুমি । সঙ্গে লেহু অভাগিনী ॥ বেহুল আকুলি, করয়ে বিকুলি, শিয়রে দেখিল সাপ । আtছাড় খাইয়ে, পড়ে মুরছিয়ে, হায় কিবা হৈল বাপ ॥ দেখিয়ে বিকুলি, পলাইল কালি, ধাঞে আতি বড় বেগে । পবনের গতি, যথা পদ্মাবতী, উজরিল কালি নাগে ॥ দেবী কয় কথা, শুনহ সৰ্ব্বথা, কালি পালাইলে তুমি । কালি নাগ কয়, করিয়ে বিনয়, লখাএ দংশিল আমি ॥ আমার দংশনে, তেজিল জীবনে, বালা লখিন্দর মলা । দেখিয়ে কারণ, করিলা গমন, তবে আমি হেথা আল ৷ শুনিঞে কমলা, আনন্দিত হৈল, কালি নাগ হুৈল বিদায়। প্রণাম করিয়ে, চলিল ধাইয়ে, আনন্দিত মনে হয় ॥ কালিদহের তীরে, ধরিল হস্তরে, স্বখেতে আহার কৈল । করি জল পান, কল্পিল বিশ্রাম, আনন্দিত মন হৈল ॥ মনসা-চরণ, করিয়ে স্মরণ, আনন্দিত মনে গায় { যাই কৰ্ম্মে ছিল, ভাইত হইল, বাসরে লখাই সায় ॥ শুন সৰ্ব্বজন, বীর নিবেদন, ৰেঙ্কলী-খণ্ডের কথা । অবজ্ঞা করিলে, তবে খায় কালে, বেদের বচন গtথা ॥ হরি হরি বল, বৃথা জন্ম গেল, মিছ বস্তে থাক কি । বাসরে রোদন, করে ঘনেঘন, সহ বেণ,ার বেহুল বি ॥ বেহুল বেণjানী, আকুল-পরাণী, লখিন্দরের মুখ দেখি । ক্ষেমানন্দ ভণে, মনসা-চরণে পালটিতে নারি অঁখি ॥ বেহুলার মানদাসে গমন । সাপ সাপ বলি বেহ্বল চমকি উঠিল । এত দিনে লখিন্দরে বিধি বাম হৈল ॥ আনিঞে স্তবর্ণকারী মুখে ঢালে জল । আচম্বিতে বেণ্যার মুখে ভাঙ্গে গরল ॥ কান্দিয়ে অভাগী কস্ত আছাড়িয়ে বুক । আর না দেখিব আমি লখিন্দরের মুখ ॥ । কান্দয়ে অভাগী কস্য বড় উচ্চস্বরে । লখিন্দর দুর্লভ মল লোহার বাসরে ॥ পালঙ্কে বসিয়ে কন্দে বেহুল যুবতী । ন জানি তুল্য নাগ দংশেছে কত রাতি ॥ উত্তর দক্ষিণ পূৰ্ব্ব পশ্চিম সব কল্যাম হার । কার সনে যুক্তি করি কোলে স্বামী মরা ॥ কান্দিতে কান্দিতে বেহুলার ভাঙ্গে গল । অামায় পাথরে ফেলিয়ে যায় গো বাণিঞার বাল ॥ কোথা গেল চান্দ শ্বশুর অান ডাক দিয়ে । মরণকাল হৈল পুত্রের দেখ না আসিয়ে ॥ তাহ শুনি চান্দ বেণ্য আইল সেখানে । ক্ৰোধমুখে চান্দ বেণ বলয়ে আপনে ॥ উচ্চকপালী বেহুল লে চিরুণ-চিরুণ-দীতী । বাসরে খাইলে স্বামী না পোহল রাতি ॥ তাহ শুনি বেললা তবে করে নিবেদন । যাই মোর কৰ্ম্মে ছিল হুইল এখন ॥ ভাল হৈল চান্দ শ্বশুর দোষ দিলে মোরে । আর ছয় পুত্র তোমার কোন রোগে মরে। কোথা যান চান্দ শ্বশুর অান ডাক দিঞে । দিয়েছিলে সাধের শাখা লেছ না খসাঞে ॥ শাখা নিলে খাড়ু (১) নিলে না করিলাম মান । কি দোষে খসালে রাড়ীর দুটা কাণের সোণী ॥ এমন জানিতাম মা মনসা হবে বাদী। প্রাণনাখে নঞে গো পালাতাম রাতারাতি ॥ যেন রাজে। যাবে বেহুল সেই না রাজ্যে আছি । বারেক মনসার সেবা কল্যে তবে লখাই পাবি ৷ ( ১ ) ইস্তাভরণ ভেদ । বেহুল বলে চান্দ শ্বশুর মোর বাক্য ধর । রামকলার গাছ কাট্যে মঞ্জস ( ১ ) সজ্জা কর । তাহা শুনি চান্দ বাণ্য বলয়ে বচনে । বেহুলারে বলে চান্দ সক্রোধ বচনে ॥ ছয় পুত্ৰ মলা আমার ভাথেও আমি পারি। একলি কলার গাছ কাট্যে দিতে নারি ॥ ইহ বল্যে চান্দ বেণ্য করয়ে রেদিন । নিজ ঘরে যাত্যে সাধু ভাবে মনে মন ॥ চম্পাকে যাইব আমি কেমন প্রকারে ॥ বাল৷ লখিন্দর মল্য লোহার বাসর ঘরে ॥ এতেক ভাবিয়ে সাধু বলে সৰ্ব্বজনে । লখিন্দরে বন্ধুগণ করহ দাহনে ॥ বেহুল বেণ্যান তবে বলে বারেবার। লখtএর যেই গতি সেই গতি মোর ॥ লখিন্দরে দাহন না কর কদাচন। লখিন্দরে নঞে অtiম করিব গমন ॥ এত শুনি চান্দ ৰেণ্য নিজ দেশে গেল । যত বন্ধুগণ সব বার্তা জিজ্ঞাসিল ॥ চান্দ বলে লখা মৈল লোহার বাসরে । শুনিঞে সনক কান্দে করি হাহাকারে ॥ সনক বেণ্যানী কাদে পড়িয়ে ভূমিতে। হেন কেহ নাঞি তারে প্রবোধ করিতে ॥ (১) কতকগুলি পুস্তকে "মান্দাস” স্থলে “মঙ্কাস" পাঠ হয় লখিন্দর বলে সনক বেণ্যানী । কি উপায় করি চান্দ কহু ন! আপুনি ॥ লখিন্দরে দেখি ছয় পুস্তু পাসরিল । দারুণ বিধাতা মোরে এত দুঃখ দিল ॥ রজনী প্রভাত হুৈল উদয় দিনকরে । বেহুল বেণ্যানী তবে ভাবিল অস্তরে ॥ মান্দাস বনাবার যুক্তি করিল আপনে । মালদাস বনাঞে কষ্ট্য। ভাবে মনে মনে ॥ জয় মা মনসা বলি গমন করিল | মর লখিন্দর তবে কোলেত লইল । মালদাসে শুয়tল্য তবে লখিন্দর বাল | লখিন্দরে লয়ে ভাসে অভাগী বেহুল | হরি হরি বল্যে কণ্ঠা করিল গমন । দেখিয়ে যতেক লোক ভাবে মনেমন ॥ মান্দাস ভাসিয়ে যায় গাদুড়ির নীরে । বায়ুতে লইয়ে মালদাস লাগাইল তীরে ॥ হেনকালে শ্বেত কাক বলয়ে বচন । কোথাকারে যাহু কষ্ঠ কহনী এখন ॥ কাহার বহুআরা তুমি কাহার যে ঝি । তোরে জিজ্ঞাসিয়ে কন্তু মন্দাসেতে কি ॥ কাকের বচন শুনি বলয়ে যুবতী । চান্দ বেণ্য। আমার শ্বশুর লখিন্দর পতি ॥ সাহের নন্দিনী আমি নাম সে বেহুল । বাসরেতে মল্য পতি লখিন্দর বালা ॥ কন্যার বচন শুনি কাক বলে বাণী । কি হেতু মান্দাসে কন্যা কান্দহ আপুনি ॥ শুন শুন ওলো কন্যা বলিএ তোমারে । মড়াকে তুলিয়ে দায় আমার গোচরে ॥ উহাকে নইঞে আমি করিব ভক্ষণ । ঘরে ফিরে যাহ কন্যা শুনহ, বচন ॥ কন্যা বলে ওহে কাক করিএ• বিনতি । আমি ঘর যাব তুমি খাবে মোর পতি ॥ কেনে হেন বাক্য কাক বলহ আপনে । পরাণে তেজিব আমি তোমার সদনে ॥ তুমি সে ধাৰ্ম্মিক হয়, আমি হই সতী । হেন দুষ্ট কথা বল নহুেত যুগতি ॥ কাক বলে কন্য। তবে শুনহ উত্তর । ইহাকে খাইব আমি কহি বরাবর ॥ শুন শুন ওহে কাক করি নিবেদন । অনাথারে হিংস কাক কিসের কারণ ॥ লেহ লেহ ওহে কাক ভক্ষ্যদ্রব্য লেহু । অবলা দেখিয়ে কাক করুণা করহ ॥ আতপ তণ্ডুল ছিল সেই মান্দাসেতে। দধি দুগ্ধ চিনি মিশ্রিত করিল তাতে ॥ স্বর্ণখালে করি কন্থা। কাকে নিঞে দিল । মনের কৌতুকে কাক ভোজন করিল। সস্তুষ্ট হইল কাক করিয়ে ভোজন । রব মাগ ওলেী কস্তা কহএ এখন ॥ কস্থা বলে যদি দয়া করিলে আপনে । মোর পত্র নঞে যাহ উজানী ভুবনে ॥ পত্র লয়ে সেই কাক উজানী চলিল । সাহের মন্দিরে যাঞে দরশন দিল ॥ কা-ক' শব্দ করে কাক বসি দে{ওয়ালেতে । চুহিল(১) বেণ্যানী তখন পাইল শুনিতে ॥ আঙ্গিন বাহির হয়ে বলএ বেণ্যামী { বেহুলার তত্ত্ব কাক কিছু জান তুমি ॥ কাক বলে বেহুল আছে বালীচরের ঘাটে । পত্র দিয়ে পাঠাইল তোমাব নিকটে ॥ বেণ্যানী বলে পত্র দেহ আমার সাক্ষাতে । কি কথা কহিল বেহুল কহত তুরিতে। শুনহ বেণ্যানী এই আমার বচন । বেহুল বেণtণী যত কৈলা নিবেদন ॥ আমার প্রণাম কাক মা বাপেরে বোল্য । অভাগী বেহুল মাত পাথরে ভাসিল ॥ যদি মোর পতি বাঁচে যাইব তথাই । নতুবা সবার সঙ্গে আর দেখা নাঞি ॥ এতেক শুনিঞে বেণ্যানী কান্দে উচ্চৈঃস্বরে বধূগণ তার সঙ্গে কোলাহল করে ॥ ( ১ ) অধিকাংশ মনসার ভাসানের পুথি ও মুদ্রিত পুস্তকে “অমল।” পাঠ আছে, দুই একখানি মনসামঙ্গলে কমলা পাঠও দৃষ্ট হয়। কাক বলে শুন বেণ্যানী আমি শীঘ্ৰ যাব । যাবৎ না যাব আমি বেহুল রহিব ॥ সাহ বেণ্য পত্র লিখি পাetল্য তুরিত । বেহুলার সাক্ষাতে যাঞে হুৈল উপনীত ॥ বেত্বলাকে পত্র কাক দিল ততক্ষণ । পত্র পড়িয়ে কন্যা করএ রোদন ॥ বাপী মেরে কএেsছেন ফিরে ঘরে যাত্যে । লখাইকে ছাড়িয়ে আমি যাইব কি মতে ॥ হেনকালে বেহুলার যত ভ্রাতৃগণ । কান্দিতে কান্দিতে সব করিলা গমন ॥ বেহুলার সাক্ষাতে যাঞে দাণ্ডায়ে রহিল । অনেক বচন বেহুলায় বলিতে লাগিল ॥ চল চল ওগো বেহুল ঘরে ফির তুমি। তোমারে লইতে আমরা আইল আপুনি ॥ দৈবের নিৰ্ব্বন্ধ কেবা খণ্ডিবারে পারে। তুমি ঘর ফিরে চল রাখি লখিন্দরে ॥ বেহুল বলিল ভাই শুনহ উত্তর । আমি না ফিরিব ভাই শুনহ সত্বর ॥ কোন লাজে যাব আমি পিতার মন্দিরে। মান্দীসে রহিবে হেথা বালা লখিন্দরে ॥ যদি লখিন্দর বেণ্যায় বাচাইতে পারি। তবে ঘর ফিরে যাব কহি বরাবরি ॥ যদি না বাচাব ভাই চান্দের নন্দন । তোমারে কহিএ ভাই তেজিব জীবন ॥ ইহা শুনি যত ভাই কান্দিতে লাগিল । কান্দিতে কান্দিতে সবে ১,মন করিল ॥ পুত্ৰগণে দেখি তবে বলএ চুহিলা । সব শিশু আল্যে কোথা রহিল বেহুলা ॥ পুত্ৰগণ বলে মাতা নিবেদন করি। বালীচরের ঘাটে আছে বেউল হুন্দরী ॥ অষ্টাদশ ভাই মোরা নিবেদন কৈল । উচ্চৈঃস্বরে কান্দে কন্য। বাক্য না শুনিল । যতেক তোমার আজ্ঞা কহিল আদেশে । কিছুই না শুনে দেবী ছাড়এ নিশ্বাসে ॥ মাতাকে বলিহ ভাই মোর নিবেদন । যদি পতি বীচে তবে হবে দরশন ॥ এই মাত্র কথা মাত কহিল আমারে । পতি কোলে কর্যে দেবী কান্দে উচ্চস্বরে ॥ ক্ষেণে মুচ্ছ হয় ক্ষেণে পায় সে চেতন। ক্ষেণে ক্ষেণে দেখে বেহুল স্বামীর বদন ॥ চুহিলা বেণ্যানী শুনি বরে হায় হায় । আমাৱে ছাড়িএ বেহুলা কোথাকারে যায় ॥ পুত্র সব বলে মাত কহিএ তোমারে। দৈবের নিৰ্ব্বন্ধ কেবা খণ্ডিবারে পারে। অনেক প্রবোধ তবে জননীরে দিল । চুহিলা বেণ্যানী তবে মনেতে রহিল। শিব ডোমের সহিত বেহুলার কথোপকথন । হেখ। সে বেহুলা কন্থা ভাবে মনেমন । ; কান্দিতে কান্দিতে দেবী করিল গমন ॥ বালীচরের ঘাট হৈতে করিল গমন । কাক বিদায় হয়ে গেল আপন সদন ॥ কাকে বিদায় করি কন্ত সত্বরেতে যায়। ভাকুর মৎস্তেতে ধরে লখিন্দরের পায় ॥ অঙ্গুলি কাটিয়ে মৎস্ত জলে প্রবেশিল । তা দেখি বেহুল কন্থা কান্দিতে লাগিল ॥ অনেক রোদন কন্যা করিল সেখানে । যুদ্র মৎস্ত সেই কথা না শুনিল কাণে ॥ বেহুল বেণ্যানী বলে শুন মচ্ছরাজ । অনাথারে হিংস মচ্ছ ভাল নহে কাজ । মিনি দোষে মচ্ছরীজ হিৎসিলে আমারে । আমি শাপ দিল তোরে মারিব ধীবরে ॥ কান্দিতে কান্দিতে কন্যা চলিল তুরিত। খোড়া ডোমের কাছে যাঞে হৈলা উপনীত । ডোম বাল ওলে কস্য কোথা তোমার ঘর । কি হেতু রোন কর মাদাস উপর ॥ কন্তু বলে শুন ভাই কহি বরাবর। শ্বশুর আমার বটে চান্দ সদাগর ॥ সাহ বেণ্যার ঝি আমি নাম সে বেহুল । মালদাসেতে মরা পতি লখিন্দর বালা ॥ ডোম বলে ওলে কস্ত কহিএ তোমায়। কালি বিভ হৈল যেন হেন বুঝি প্রায় ॥ তোমার করেতে কন্যা মঙ্গলসূত্র আছে। কিমতে মরিল পতি কহন মোর কাছে ॥ কস্তা বলে ওহে ভাই কহিএ তোমারে । মোর পতি সাপে খাইল লোহার বাসঘরে ॥ এতেক কহিএ কস্যা করএ রোদন | জেম বলে ওলো কন্যা স্থির কর মন ॥ ন ওলো কন্যা বলিএ তোমায় । বিকুলি দেখি মোর প্রাণ যায়। না কর কন্যা এতেক রোদন । গব তোমার পতি কহিএ কারণ ॥ লখিন্দরের মুখ দেখি ক্ষেণে মুচ্ছ যায়। মান্দাস উপরে কন্যা পড়ি গেল তায় ॥ শিব বলে শুন কস্যা আমার বচন । শীঘ্ৰ আন লখিন্দরে বাচাব এখন ॥ এতেক শুনিঞে বেহুল মালদাস ফিরায় । ধৰ্ম্ম স্মঙরিঞে তেহো তার পাশ যায় ॥ তীরেতে মানদাস কস্যা লাগয় সত্ত্বর । শিবা বলে ওলো কন্থা অবধান কর । শাড়ীর অঞ্চল কন্যা ঘুচাহ আপনি । কেমন তোমার পতি দেখিব সে আমি ॥ শাড়ীর অঞ্চল ঘুচায় বেহুল সুন্দরী। লখিন্দরের রূপে নিন্দ করএ বিজুরী ॥ তাহ দেখে শিবা ডোম চিন্তিল উপায় । বেহুলাকে ঘরে নিব রাখিয়ে ইহায় ॥ . শিব বলে ওলো কন্থা শুন মোর বাণী । মর মানুষ কোথা বাচে অদ্ভুত কাহিনী । মড়াকে ফেলিয়ে দেহ জলের ভিতরে । তোমাকে নইঞে আমি যাইব সত্বরে ॥ তোর রূপ দেখি কন্যা পীড়িত মদনে । মুখ তুল্যে কথা কহু রাখহ জীবনে ॥ এই মতে তিন কন্যা আমি সে পাইল । এতদিনে বিধি মোরে সুপ্রসন্ন হৈল ॥ চল চল ঘরে তুমি সুচন্দ্র-বদনী । তোমার পাএতে কন্যা বিকাইল আমি ॥ কন্ত বলে ওরে ডোম শুনহ বচন । প্রাণ ইচ্ছা আছে যদি পালারে এখন ॥ প্রপঞ্চন(১) করি ডোম ডাকিলে আমারে। এমন কুচ্ছিত বোল কে সহিতে পারে। শিবা বলে কিছু মন্দ না বলিএ আমি । মড়াকে ফেলিয়ে কন্যা চলহ আপুনি ॥ কন্ত বলে ওরে ডোম শুনরে অবোধি । উচ্ছন্ন করিব তোরে সাক্ষী থাক্য বিধি । তুঞি নীচ জাতি হইল আমি হই সতী । দুষ্ট কথা মুখে বল এ নহে যুগতি ॥ যদি প্রাণ ইচ্ছ। অাছে শুনরে বর্বর্বর । নহে প্রাণ গেল তোর আমার গোচর ॥ ডোম বলে এত যদি আছএ শকতি । তবে কেনে কোলে কর্যে আছ মরা পতি ॥ ইহারে বাচাঞে কস্য যাহ নিজ ঘর । নতুবা তোমারে ধরি নইব সম্বর ॥ ডোম স্থির কর মন । বেহুল ধরিতে শিবা জলে ঝাপ দিল ॥ বেহুল বলে সাক্ষী থাক্য রবি শশী । মন্দাস ছুইলে ডোমায় করিব ভস্মরাশি ॥ অনাথ দেখিয়ে ডোম করএ শকতি । অবলারে করা দয়া দেব যদুপতি ॥ শুন শুন শিবা ডোম বলি তোর পাশ । অনাথ দেখিয়ে কেনে কর উপহাস ॥ যাহ ঘাহ ওরে ডোম ফিরে যাহ ঘরে। নতুবা তেজিবে প্রাণ আমার. গোচরে ॥ এতেক বলিয়ে কস্তা করএ রোদন । এক দৃষ্টে চাহে কন্যা লখাইএর বদন ॥ ডোমা বলে ওলে কস্ত কান্দিলে কি হব । লখিন্দরে জলে ফেলে তোমারে নইব ॥ তোমার রেদিন দেখি ভয় নাঞি করি । শীঘ্ৰগতি তোমারে নইব নিজ পুরী ॥ কন্যা বলে ওরে ডোমা খাইলে কি লাজ । আমার বিপত্য দেখে পথে পাড় ব্যাজ ॥ আশ্বাস আমারে দিয়ে আনিলে এখন । পথ রুদ্ধ কর ডোম! কিসের কারণ ॥. প্রাণ ইচ্ছা থাকে পথ ছাড়হ সত্বরে । নহে ভস্ম হবে আজি আমার গোচরে ॥ শিবা বলে কত ছল দেখাহু বেহুল । কান্দিলে কি শিবা যাবে হইয়ে বিভোল ॥ এত বলি চলে শিব মানদাস ধরিতে । বেহুল বেণ্যানী তারে লাগিল কহিতে ॥ শুন শুন ওরে ডোম কহিএ যুগতি । শীঘ্ৰগতি চলি যাহ আপন বসতি ॥ তব মুখ দেখি কন্যা রহিব হেথাই । আমীরে করহ দয়। রাখিয়ে য় খাই ॥ কন্ত বলে ওরে ডোম মরিলে এবার । তেঞি হেন দুষ্ট বল আমার গোচর ॥ দেব সাক্ষী কর্যে কন্য। কন্দে উচ্চৈঃস্বরে। শিব ডোম বলে ভয় দেখাহ কাহারে ॥ একাকী আছহ কস্তা তোর শক্তি কিবা । তোমারে অবশু ধরি নইবেক শিবা ॥ কন্থা বলে হিতবাক্য না শুনিলি কাণে । ভস্মরাশি হলি আজি আমার সদনে ॥ শিব বলে শুন ওলো বেহুল রূপসী । এই ভালী দিএ আমি কর ভস্মরাশি ॥ যদি ডালী ভস্ম হয় আমার গোচরে । নহে শীঘ্ৰ ধরি নিব কে রাখিতে পারে ॥ এতেক দেখিল বেহুলা সাহের নন্দিনী । ধৰ্ম্ম সাক্ষী কর্যে বেহুল হাতে নিল পাণি ডালীর উপরে জল সেচন করিল। ডোমার সাক্ষাতে ডালী ভস্ম হয়ে গেল ॥ তাহা দেখি শিবা ডোম মনে ভয় পায়। নদী হৈতে উঠি শিবা গড়াগড়ি যায় ॥ উচ্চৈঃস্বরে কান্দে ডোমা করে হায় হয়। অপরাধ হৈল মাত ক্ষমা কর দায় ॥ অজ্ঞান অধম দুষ্ট বলিল তোমারে। নিজ গুণে কর দয়া অধম পামরে ॥ শুন ওলো কন্যা তুনি শুনহ বচন । অপরাধ হৈল মাতা রাখহ জীবন ॥ বেহুল বলেন শিব যাহ নিজ ঘর। আমারে দিলেন দুঃখ দেব গদাধর ॥ এতেক শুনিঞে শিব বিদায় হইল । বেহুল বেণ্যানী তলে সত্বরে ঢলিল ॥ ক্ষেমানন্দ বলে ভাই মনসার পায়। মান্দাস লইয়ে বেহুল ভাসিয়ে বেড়ায় ॥ পাত্রধোবিনের সহিত বেহুলার সাক্ষাৎ । কান্দিতে কান্দিতে যায় বেহুল যুবতী । স্বগেতে থাকয়ে তাহ দেখে পদ্মাবতী ॥ মনসা বলিল ধোবিন কহিএ যুগতি । লখিন্দর বেতুলার কি হবেক গতি ॥ শুন শুন পা ধোবিন বলিএ তোমারে । মৰ্বভূমে পাছে নরে ন৷ সেবে আমারে । কি উপায় করি ধোবিন বলহ আমারে । বেহুল। নইঞে যায় বলি লখিন্দরে ॥ পারধোবিন বলে চিন্ত নীঞিখ তোমার । ইহার উপায় আমি করিব সত্ত্বর ॥ পাত্রধোবিন বিদায় হৈল মনসাগোচরে। সত্বরে চলিল ধোবিন নদীর কিনারে ॥ কাপড় কাচয়ে ধোবিন মনের কৌতুকে । হেনকালে মানদাসেতে বেল্লারে দেখে ॥ পাত্ৰ ধোবিন বলে কন্যা কোথা যাহ তুমি। লখিন্দরে নঞে ধোবিন ভাস্তে যাছি আমি ॥ ধোবিন বলে কোথা যাবে কহত আমারে । বেহুলা বেণ্যানী তবে কছিল সত্বরে ॥ ধোবিন বলে কি হৈল পরিচয় দে মোরে । বেহুল বলে মাল্য পতি লোহার বাসঘরে ॥ পাত্রধোবিন বলে কন্যা কহত আমারে । কিমতে মরিল কস্য লোহার বাসঘরে ॥ বেহুল বলে মোর পতি বাল৷ লখিন্দর । বাসরে খাইল সাপে অবধান কর ॥ ধোবিন বলে তবে তুমি যাইবে কোথারে। অগ্নিক্রিয় কর তুমি বলি লখিন্দরে ॥ বেহুল বলিল ধোবিন কহিএ তোমারে । লখিন্দরের যেই গতি সেই গতি মোরে ॥ ধোবিন বলে আস্ত কন্য। আমার গোচরে । তেীরে জিজ্ঞাসিব কিছু আগুহ সত্বরে ॥ বেহুল বলে এইমতে দুখ দিল ডোম । সেইমত পাছে দুঃখ তুমি দিবে রাম ॥ এত শুনি পাত্রধোবিন কহিল সত্বর । ডোমার মত আমি না হুইব বৰ্ব্বর ॥ অস্তি আস্ত ওলে৷ কন্তু তোর ভয় নাঞি । প্রপঞ্চন করি যদি দেবের দোহাই ॥ এত শুনি নামে কন্যা মান্দাস হইতে । মর স্বামী নিল কন্যা আপন কোলেতে ॥ ধোৰিনের আগে কন্য। প্রণাম করিল। লখিন্দরে দেখি ধোবিন কান্দিতে লাগিল ॥ পারধোবিন বলে কন্যা কহিএ যুগতি । চল যাব যথা কন্তু ব'চে তব পতি ॥ ফুলের মঞ্চেতে তবে রাখি লখিন্দরে। ধোৰিন চলিল তবে লয়ে বেহুলারে ॥ বাসঘরে মোর পতি খাইল যে কালে । অভাগী বেছল৷ মাগে৷ ভাসাইল জলে ॥ তোমার সাক্ষাতে আমি করিল গমন । মোর পতি বাচায় মাতা করি নিবেদন ॥ মনসা হাসিয়ে তবে বলেন বচন ॥ মর মানুষ কোথা বচে অদ্ভুত কথন। মোর সাধ্য নাঞি কন্যা বর্ণচত্যে তাহারে । চেংগমুড়া কাণী বলে তোমার শ্বশুৱে ॥ আমি কোন দেবতা আমারে মানে কে । যথা মন কষ্ঠা তুমি যাহ সে তথাকে ॥ তোর শ্বশুর কৃপণ বড় কি বলিব তারে । কড়ার পুষ্প জল চান্দ না দল আমারে। বেহুল বলিল মাত তেজ(১) অভিমান । লখিন্দর বাচাল্যে মাগে৷ হইব সম্মান ॥ অবষ্ঠ পূজিব শ্বশুর তোমার চরণ । অভিমান তেজ বচায় চান্দের নন্দন ॥ মনসা বলিল বাছা শুন গে। বেহুলা । তোর পত্তি মরিঞেছে লখিন্দর বালী ॥ যদি আমি বাচাইব চান্দের নন্দনে । পাছে মূঢ় চান্দ বাণ্য ন। সেবে চরণে ॥ বেহুল বলিল মাতা নিবেদন করি । অবষ্ঠ পূজিব মাগো চান্দ্র অধিকারী ॥ পাত্রখোবিন বলে মাত শুনগো কমল । বেহুলার বিনতি বড় বাচায় চান্দের বাল ॥ ধোবিনের বচনে দেবী প্রতিজ্ঞ করিল। লখিন্দরে বাচাইব বেহুলায় বলিল ॥ বেহুল বলে চল মাত পৃথিবী ভুবনে । শীঘ্ৰগতি চল মাতা করি নিবেদনে ॥ বেহুলার সঙ্গে মাতা করিল গমন । সমুদ্রের তীরে আসি দিল দরশন ॥ যেখানে ডুবেছে চান্দের পুত্র যে সকলে । বেহুল বেণ্যানী তথা হইল বিকলে ॥ নদীর কিনারে কন্থা চলিল তখন । মনসা বলিল কন্যা আস্তাহ এখন ॥ তোমার এখানে ছয় ভাণ্ডর ডুবো মল্য জলে । হেনকালে বেহুল সে জোড়করে বলে ॥ প্রাণদান দায় মাত ছয় সহোদরে । তবে গিয়ে বাচাবে সে বালা লখিন্দরে ॥ মনসা বলিল বাছা তোরে আমি বলি । লখিন্দরে বাচাইব না কর বিকুলি। ছয় ভাগুর থাকুক তোর সমুদ্রের জলে । এত বলি মনসা চলিল কুতুহলে । বেহুল বলিল মাত করি নিবেদন । &वtंीक्षtन् फ़ॉंश्च भोंख्।। 5iट्झद्न नष्फ़्न । বেহুলার বিকুলি দেখি ভাবে মনে মনে । বরুণেরে আজ্ঞা দেবী দিলা ততক্ষণে ॥ শুনহ বরুণ এই আমার বচন । শীঘ্ৰগতি ছাড়ি দেহ চান্দের নন্দন ॥ শুনিঞে বরুণ তবে দেবের আজ্ঞা পাল্য । ক্রমে ক্রমে ছয় পুত্র চান্দের ছাড়ে দিল ॥ উঠ উঠ বল্যে দেবী বলিতে লাগিল । একে একে ছয় নৌকা ভাসিয়ে উঠিল ॥ তাহ দেখি বেহুলার অনিন্দিত মন । লোটায়ে লোটায়ে ধরে মনসার চরণ ॥ মনসার চরণে আমার মজ্যে গেল মন । একে একে উঠে সব চান্দের নন্দন ॥ মনসার চরণে সবে কৈল নমস্কার । প্রণাম করি দাড়াইল দেবীর গোচর ॥ মনসা বলিল বাছ চলহ সত্বর । চল যথা পড়ি আছে বালা লখিন্দর । এতেক শুনিঞে তবে দেবীর বচন ; দেবীর সঙ্গেতে সব করিল গমন ॥ যেখানে মালঞ্চ মধ্যে বালা লখিন্দর। সেইখানে দেবী লয়ে গেলেন সম্বর। বেহুল বলিল মাতা করি নিবেদন । ওমা এই দেখ পড়্যে আছে চান্দের নন্দন ॥ এতেক শুনিঞে দেবী চারিপানে চায় । লখিন্দরে চিয়াইতে(১) চিস্তিল উপায় ॥ ১ ) চেতন সম্পাদন করিতে,—জীবনদান করিতে । এইমত দয়া মাগো করিবে সভায়। ডিঙ্গাসহ সদাগরের ছয় পুত্রের উদ্ধার। হরি বল জন্ম গেল বস্তে থাক মিছা । পলাইতে পথ নাঞি কাল আছে পিছ ॥ তেঞি বলি ওরে জীব বস্তে কর কি । এই বেলাতে ভজ হরি বিরল পাঞেছি, ८ब्र e डाँदै ॥ বেহুলা বলিল মাতা শুনগো কমলা । অস্থি মাত্র আছে মাগো চিয়ায় নখাই বালা ॥ মনসা বলিল কস্য বলিএ তোমারে । চান্দের পুত্র না বাচিব বালা লখিন্দরে। এত শুনি বেহুলার উড়িল পরাণু । ভূমিতে পড়িল কন্যা হয়ে অগেয়ান ॥ গড়াগড়ি ভুমে দেই মনসাগোচরে। মনেতে ভাবিয়ে কন্যা কন্দে উচ্চস্বরে ॥ হায় নখিন্দর বল্যে করএ ক্রমদন । কি উপায় করি এবে চান্দের মন্দন ॥ যদি বা থাকিতু কুঙর মাতা পিতার ঘরে । ওহে তবে কেনে এত দুঃখ হইব আমারে ॥ কোন লাজে যাব আমি পিতার ভুবনে । তোমার সঙ্গেতে নখাই তেজিব জীবনে ॥ অৰে সেবা হবে তোমার জগত সংসারে ॥ এতেক শুনিল মাতা দেবের বচন । বেহুলায় বলিল বাছা উঠ গো এখন ॥ হাতেতে ধরিলা তারে অনুগ্রহ করি । ছুরি হাখে করে বস্তে বেহুল সুন্দরী ॥ বেহুলা বলিল মাতা করি নিবেদন । তোমার সাক্ষাতে আমি তেজিব জীবন ॥ মনসা বলিল কস্তা না কর ক্রমদন । তোমার বিকুলি দেখি স্থির নহে মন ॥ বচিাব চাদের পুত্র বলিএ বচন । পাছে স্থা চান্দ বাঞ্চ না সেবে চরণ ॥ জোড়হাত করে তবে দাণ্ডায় তখনি । চান্দ সদাগর মাগো দিব পুষ্প পানি । এতেক শুনিঞে দেবী ভাবে মনে মন । লখিন্দরে চিয়াইতে বসিলা তখন ॥ बङ उपन्हि खएक्ल कब्रि दनिलl. कमलां । আমার আজ্ঞাতে উঠ লখিন্দর বালা ॥ মনসার মঙ্গলগীত শুনিতে সুন্দর। একমন হয়ে ভাই শুন সব নর ॥ ক্ষেমানন্দ শিশু বলে করি নমস্কার । শীঘ্ৰগতি চিয়ায় দেবি চান্দের কুমার। লখিন্দরের প্রাণদান । উঠ উঠ রে লখিন্দর আমি তোরে বলি । ও রে বেহুল বাণানী বাছারে কারছে বিকুলি ॥ তোর বাপ করিল বাদ রে মনসার সনে । তেঞি তোর হেন গতিরে বলেন আপনে ॥ জাড়চোখে চাহে চান্দরে মোচড়ায় দাড়ী। বলে কোমর জ্ঞাজিব সাপারে হেস্তালের বাষ্ট্ৰী ॥ কড়ার পুপজল বাছারে মাগিল তাঁহারে । চেঙ্গমুড়ী বল্যে চান্দরে গালি দিল মোরে। অনেক কহিলাম বাছারে হিত যে বচন । অহঙ্কার করে চান্দরে না শুনে তখন ॥ আমার সঙ্গেতে বাদ রে কৈল সদাগর । ওরে বাণিজ্য করিতে গেলরে সিংখল সক্ষর ॥ যখন বাণিজ্য করি সাধু আস্তেন দেশেতে। সাধুর পাশে গেলাম আমি ভিক্ষ যে মাগিতে ॥ এক কড়া করি দিতে রে বৈল সদাগর । पञां*ि ¢क्लॉथ दद्भा दक्विांट्स 65ञांभ बिछ ध्रुद्र ॥ আমার ক্রোধেতে বাছারে সর্বনাশ হল্য । তোর ছয় ভাই জলেরে ডুবিয়ে মরিল ॥ পথে আস্তে চান্দ বাণ্যারে ভাবে মনেমন । তোমার জনম শুনিরে আনন্দিত মন । তোমার সম্বন্ধ কৈলরে উজানী নগরে । সম্বন্ধ করিয়ে চান্দ রে হরিষ অস্তরে ॥ লোহার বাসরঘর বাছারে বনাল্য তোর বাপে । মনেতে করিল চান্দ রে কি করিব সাপে ॥ লোহার বাসঘরে বাছারে খাল্য তোরে কালে । ওয়ে বাসরে করিল রাড় রে অবলা ছা(ও)য়ালে। বেউলার বিকুলি দেখি রে আমি দয়া কৈল । তোর ছয় ভাই বাছারে বাচায়ে আসিল ॥ মূঢ়মতি চান্দ বাণ্য রে কি বলিব তারে। ছয় ভাই দাঁড়ায়ে তোর রে নদীর কিনারে । উঠ বাছা লখিন্দররে চল যাব ঘরে ॥ .তোর বাপ না পুজিল রে আমার চরণ। তেঞি তোর বাসঘরেরে হইল মরণ ॥ বেহুল বলিল মাতা আমি কহি এবে । অস্থিকে কহিলে মাতাগো তোমার কি হইবে ॥ কেনে ছল কর মাতা করি নিবেদন । দয়া করি লখিন্দরের মা দেহত জীবন ॥ এতেক শুনিঞে দেবী ভাবিতে লাগিল । छिंध्रांन-भल्ल भनज प्रों दक्विरङ लांकिॉल ? চিয়াম-মন্ত্র । দেবী বলে সাক্ষী থাক্য যত দেবগণ । মরা লখিন্দরের প্রাণদান দিব সে এখন ॥ छम्न निंद cछांलांमांथ ८छ् छघ्र कांगॆनांथ । ೪ಕ್ಷಿ বাণিয়ার পো হে আমার সাক্ষাৎ । कमछलूव्र खल भननां छिटप्लेन जां*८ब ।। বিজনীর বায়ে বিষ রে উড়াল্য গগনে ॥ পানিসার মন্ত্র । উড়ান মন্ত্র । সব বিষ দুরে ভাইরে গেল ততক্ষণ । লখিন্দর উঠিয়ে দেখে রে মনসার চরণ ॥ লখিন্দর বলে বেহুল কি কৰ্ম্ম করিলে । বাসর ছাড়িয়ে কেনেলো হেতাঁকে আনিলে ॥ ইনি কেবা বটেন কস্তা লো পরিচয় দে মোরে। কি কারণে হেত। অালি লে নদীর কিনারে ॥ বেহুল বলিল বাণ্য করি নিবেদন । বাসরে তোমার কুঙর হে গেছিল জীবন ॥ লখম্বর বলে বেহুল তোরে কহি বাণী । বা পরে কেমনে কন্যা লো মরে ছিলেঞি আমি ॥ অদ্ভুত কথন এই লো বাসরে মরণ । সত্য বল ওলো কন্যা শুনিব এখন ॥ বেহুলা বলিল বাশ্যা সাপের দংশনে । এই হেতু বাসরে তোমার গেছিল জীবনে । তোমারে লইয়ে বtণ্য আইল একেশ্বরে । একেশ্বরে ভাস্তে যাই হে গাঙ্গুড়ির জলে ॥ পথের বিপত্য যত করি নিবেদন । ভাকুর মচ্ছের গুণ হইল স্মঙরণ ॥ বেহুল বেণ্যানী বলে করিয়ে বিকুলী । ওমা লখিন্দরের মচ্ছরাজ খাইল অঙ্গুলি ॥ অঙ্গুলি আনিঞে দেহু করি নিবেদনে। নিৰ্ম্মল তোমার যশ গো রহিল ভুবনে ॥ এতেক শুনিঞে দেবী উপায় চিন্তিল । জালু মালু বল্যে দেবী তিন ডাক দিল ॥ জালু মালু দুই ভাই করিল গমন । মনসার সাক্ষাতে যাঞে বন্দিল চরণ ॥ জালু বলে শুন মাত গো কি কৰ্ম্ম করিব । কোন আজ্ঞা হয় মাতা কোথাকে যাইব ॥ দেবী বলে ভাকুর মৎস্ত গাঙ্গুড়ির জলে । শীঘ্ৰগতি জাল ফেল্যে ধর কুতুহলে। জালু বলে কোনমতে চিনিব তাছায় । দেবী বলে মৎস্ত পড়িবে আমার আজ্ঞায় ॥ জালু মালু জাল ফেলে গাঙ্গুড়ার জলে । সেই জালে মৎস্যরাজ লাগিল সত্ত্বরে ॥ মনসা গোচরে মৎস্ত জালু আনি দিল । মনসার আজ্ঞায় মৎস্ত অঙ্গুলিটা দিল ॥ লখিন্দরের পাএ অঙ্গুলি লাগাল্য তখন। তা দেখিয়ে বেহুলার আনন্দিত, মন ॥ শুন শুন লখিন্দর বচন আমার । পথের মধ্যে ধোবিনেরে করিল গোচর । অনেক আশ্বাস ধোবিন দিল সে অামারে । ক্রমদন না কর কন্থা কহিএ তোমারে ॥ ধোবিনের বচন আমি মস্তকে ধরিল । দেবতার সাক্ষাতে যাইতে মনেতে করিল a তোমারে মালঞ্চে রাখি করিল গমন । সেখানে ধরিল যাঞে হে মনসার চরণ ॥ আপনে আইলা দেবী মোরে কৃপা করে। দেখিতে দেখিতে প্রাণদান দিলা ছয় যে ভাগুরে ॥ তবেত আইল বাণ্য তোমার সদন । সত্য করাইল তাহে শুনহ বচন ॥ যদি শ্বশুর না পূজিব মনসা চরণ। তবে পুন মরে যাবে হে ভাই সাতজন । এত শুনি লখিন্দর আনন্দিত হৈল। অবঙ্গ আমার পিতা গে। সেবিব চরণ ॥ এত বলি সাত ভাই যায় গড়াগড়ি। আমায় কৃপা করে আস্ত মা জগৎ ঈশ্বরী ॥ মনসা বলিল বাছা যাব তোমার ঘরে । পাছে মুঢ় চান্দ বাখ্যা রে না সেবে আমারে। মূঢ়মতি চান্দ বার্ণ্য বড়ই কৃপণ । পাছে ঘরে গেলে বাছ রে বলে কুবচন ॥ লখিন্দর বলে মাত চল শীঘ্ৰগতি । অবশু সেবিব মাতা গো চান্দ অধিপত্তি । চান্দের পুত্র লয়ে তবে দেবীর গমন। স্বচম্পানগরে যাঞে দিল দরশন ॥ শুন শুন পদ্মাবতি বলিএ তোমারে । এইবার করিবে দয়া অধম পামরে ॥ ক্ষেমানন্দ শিশু বলে করিয়ে ভকতি । অামারে করুহু দয়া দেবি পদ্মাবতি ॥
গগন হরকরা
আমি কোথায় পাব তারে গগন হরকরা আমি কোথায় পাব তারে, আমার মনের মানুষ যেরে॥ হারায়ে সেই মানুষে তার উদ্দেশে দেশ বিদেশে, আমি দেশ বিদেশে বেড়াই ঘুরে। কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যেরে। লাগি সেই হৃদয়শশী সদা প্রাণ হয় উদাসী, পেলে মন হত খুশী, দিবা নিশি দেখিতাম নয়ন ভরে। আমি প্রেমানলে মরছি জ্বলে, নিভাই কেমন করে, মরি হায়, হায় রে- আমি প্রেমানলে মরছি জ্বলে, নিভাই কেমন করে, ও তার বিচ্ছেদে প্রাণ কেমন করে, বিচ্ছেদে প্রাণ কেমন করে দেখ না তোরা হৃদয়ে চিরে, দেখ না তোরা হৃদয় চিরে। কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যেরে। দিব তার তুলনা কি যার প্রেমে জগত্‍ খুশি, হেরিলে জুড়ায় আঁখি, সামান্যে কি দেখতে পারে তারে? তারে যে দেখেছে সেই মজেছে ছাই দিয়ে সংসারে, মরি হায়, হায় রে- তারে যে দেখেছে সেই মজেছে ছাই দিয়ে সংসারে, ও সে না জানি কি কুহক জানে, না জানি কি কুহক জানে অলক্ষে মন চুরি করে, ওরে অলক্ষে মন চুরি করে কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যেরে। কুল মান সব গেল রে তবু না পেলাম তারে প্রেমের লেশ নাই অন্তরে- তাইতো মোরে দেয় না দেখা সে রে। ও তার বসত কোথা না জেনে তায় গগন ভেবে মরে মরি হায়, হায় রে- ও তার বসত কোথা না জেনে তায় গগন ভেবে মরে। ও সে মানুষের উদ্দিশ যদি জানিস, মানুষের উদ্দিশ যদি জানিস কৃপা করি বলে দে রে, আমার সুহৃদ হয়ে বলে দে রে, ব্যথার ব্যথিত হয়ে বলে দে রে, কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যেরে। হারায়ে সেই মানুষে তার উদ্দেশে দেশ বিদেশে, আমি দেশ বিদেশে বেড়াই ঘুরে। কোথায় পাব তারে আমার মনের মানুষ যেরে।
চর্যাগীতি পদাবলী
১ রাগ [ পটমঞ্জরী ] চর্যাপদ লুইপাদানাম্ কাআ তরুবর পঞ্চ বি ডাল। চঞ্চল চীএ পইঠো কাল॥ ধ্রু॥ দিঢ় করিঅ মহাসুহ পরিমাণ। লুই ভণই গুরু পুচ্ছিঅ জাণ॥ ধ্রু॥ সঅল সমাহিঅ কাহি করিঅই। সুখ দুখেতেঁ নিচিত মরিঅই॥ ধ্রু॥ এড়ি এউ ছান্দক বান্ধ করণক পাটের আস। সুনুপাখ ভিতি লেহু রে পাস॥ ধ্রু॥ ভণই লুই আম্‌হে ঝানে দিঠা। ধমণ চমণ বেণি পিণ্ডি বইঠা॥ ধ্রু॥ ২ রাগ গবড়া চর্যাপদ কুক্কুরীপাদানাম্ দুলি দুহি পিটা ধরণ ন জাই। রুখের তেন্তলি কুম্ভীরে খাঅ॥ আঙ্গন ঘরপণ সুন ভো বিআতী। কানেট চোরে নিল অধরাতী॥ ধ্রু॥ সসুরা নিদ গেল বহুড়ী জাগঅ। কানেট চোরে নিল কা গই [ন] মাগঅ॥ ধ্রু॥ দিবসই বহুড়ী কাড়ই ডরে ভাঅ। রাতি ভইলে কামরু জাঅ॥ ধ্রু॥ অইসন চর্য্যা কুক্কুরীপাএঁ গাইড়। কোড়ি মঝেঁ একু হিঅহি সমাইড়॥ ধ্রু॥ ৩ - রাগ গবড়া চর্যাপদ বিরুবাপাদানাম্ এক সে শুণ্ডিনি দুই ঘরে সান্ধঅ। চীঅণ বাকলঅ বারুণী বান্ধঅ॥ ধ্রু॥ সহজে থির করি বারুণী সান্ধ। জেঁ অজরামর হোই দিঢ় কান্ধ॥ ধ্রু॥ দশমি দুআরত চিহ্ন দেখিআ। আইল গরাহক অপণে বহিআ॥ ধ্রু॥ চউশটি ঘড়িয়ে দেল পসারা। পইঠেল গরাহক নাহি নিসারা॥ ধ্রু॥ এক সে ঘড়লী সরুই নাল। ভণন্তি বিরুআ থির করি চাল॥ ধ্রু॥ ৪ রাগ অরু চর্যাপদ গুণ্ডরীপাদানাম্ তিয়ড্ডা চাপী জোইনি দে অঙ্কবালী। কমলকুলিশ ঘাণ্টি করহুঁ বিআলী॥ ধ্রু॥ জোইনি তঁই বিনু খনহিঁ ন জীবমি। তো মুহ চুম্বী কমলরস পীবমি॥ ধ্রু॥ খেপহুঁ জোইনি লেপ ন জাঅ। মণিকুলে বহিআ ওড়িআণে সমাঅ॥ ধ্রু॥ সাসু ঘরেঁ ঘালি কোঞ্চা তাল। চান্দসুজবেণি পখা ফাল॥ ধ্রু॥ ভণই গুণ্ডরী অম্‌হে কুন্দুরে বীরা। নরঅ নারী মাঝেঁ উভিল চীরা॥ ধ্রু॥ ৫ রাগ গুর্জরী চর্যাপদ চাটিল্লপাদানাম্ ভবণই গহণ গম্ভীর বেগেঁ বাহী। দুআন্তে চিখিল মাঝে ন থাহী॥ ধ্রু॥ দামার্থে চাটিল সাঙ্কম গঢ়ই। পার্গামি লোঅ নিভর তরই॥ ধ্রু॥ ফাড্ডিঅ মোহতরু পাটি জোড়িঅ। অদঅ দিঢ় টাঙ্গী নিবাণে কোরিঅ॥ ধ্রু॥ সাঙ্কমত চড়িলে দাহিণ বাম মা হোহী। নিয়ড়ি বোহি দূর মা জাহী॥ ধ্রু॥ জই তুম্‌হে লোঅ হে হোইব পারগামী। পুচ্ছতু চাটিল অনুত্তরসামী॥ ধ্রু॥ ৬ রাগ পটমঞ্জরী চর্যাপদ ভুসুকুপাদানাম্ কাহেরে ঘিণি মেলি অচ্ছহু কীস। বেটিল হাক পড়অ চৌদীস॥ ধ্রু॥ অপণা মাংসেঁ হরিণা বৈরী। খনহ ন ছাড়অ ভুসুকু অহেরি॥ ধ্রু॥ তিন ন চ্ছুপই হরিণা পিবই ন পানী। হরিণা হরিণীর নিলঅ ন জানী॥ ধ্রু॥ হরিণী বোলঅ সুণ হরিণা তো। এ বণ চ্ছাড়ী হোহু ভান্তো॥ ধ্রু॥ তরংগতে হরিণার খুর ন দীসঅ। ভুসুকু ভণই মূঢ়হিঅহি ন পইসই॥ ধ্রু॥ ৭ রাগ পটমঞ্জরী চর্যাপদ কাহ্নুপাদানাম্ আলিএ কালিএ বাট রুন্ধেলা। তা দেখি কাহ্নু বিমন ভইলা॥ ধ্রু॥ কাহ্নু কহিঁ গই করিব নিবাস। জো মনগোঅর সো উআস॥ ধ্রু॥ তে তিনি তে তিনি তিনি হো ভিন্না। ভণই কাহ্নু ভব পরিচ্ছিন্না॥ ধ্রু॥ জে জে আইলা তে তে গেলা। অবণাগবণে কাহ্নু কাহ্নু বিমন ভইলা॥ ধ্রু॥ হেরি সে কাহ্নি নিঅড়ি জিনউর বট্টই। ভণই কাহ্নু মো হিঅহি ন পইসই॥ ধ্রু॥ ৮ রাগ দেবক্রী চর্যাপদ কম্বলাম্বরপাদানাম্ সোনে ভরিতী করুণা নাবী। রূপা থোই নাহিক ঠাবী॥ ধ্রু॥ বাহতু কামলি গঅণ উবেঁসে। গেলী জাম বহু উই কইসেঁ॥ ধ্রু॥ খুণ্টি উপাড়ী মেলিলি কাচ্ছি। বাহতু কামলি সদ্‌গুরু পুচ্ছি॥ ধ্রু॥ মাঙ্গত চড়্‌হিলে চউদিস চাহঅ। কেড়ুআল নাহি কেঁ কি বাহবকে পারঅ॥ ধ্রু॥ বাম দাহিণ চাপী মিলি মিলি মাঙ্গা। বাটত মিলিল মহাসুহসাঙ্গা॥ ধ্রু॥ ৯ রাগ পটমঞ্জরী চর্যাপদ কাহ্নুপাদানাম্ এবংকার দৃঢ় বাখোড় মোড্ডিউ। বিবিহ বিআপক বান্ধণ তোড়িউ॥ ধ্রু॥ কাহ্নু বিলসঅ আসবমাতা। সহজনিলীবন পইসি নিবিতা॥ ধ্রু॥ জিম জিম করিণা করিণিরেঁ রিসঅ। তিম তিম তথতামঅগল বরিসঅ॥ ধ্রু॥ ছড়গই সঅল সহাবে সূধ। ভাবাভাব বলাগ ন[া]ছুধ॥ ধ্রু॥ দশবলরঅণ হরিঅ দশদিসেঁ। [অ]বিদ্যাকরিকুঁ দম অকিলেসেঁ॥ ধ্রু॥ ১০ রাগ দেশাখ চর্যাপদ কাহ্নুপাদানাম্ নগরবাহিরি রে ডোম্বি তোহোরি কুড়িআ। ছোই ছোই জাহ সো বাহ্মনাড়িয়া॥ ধ্রু॥ আলো ডোম্বি তোএ সম করিব মা সাঙ্গ। নিঘিন কাহ্ন কাপালি জোই লাংগ॥ ধ্রু॥ এক সো পদুমা চৌষঠ্‌ঠী পাখুড়ী। তহিঁ চড়ি নাচঅ ডোম্বী বাপুড়ী॥ ধ্রু॥ হা লো ডোম্বি তো পুছমি সদভাবে। আইসসি জাসি ডোম্বি কাহরি নাবেঁ॥ ধ্রু॥ তান্তি বিকণঅ ডোম্বি অবরনা চাংগেড়া। তোহোর অন্তরে ছাড়ি নড়পেড়া॥ ধ্রু॥ তু লো ডোম্বী হাঁউ কপালী। তোহোর অন্তরে মোএ ঘেণিলি হাড়ের মালী॥ ধ্রু॥ সরবর ভাঞ্জিঅ ডোম্বী খাঅ মোলাণ। মারমি ডোম্বি লেমি পরাণ॥ ধ্রু॥ ১১ রাগ পটমঞ্জরী চর্যাপদ কৃষ্ণাচার্য্যপাদানাম্ নাড়িশক্তি দিঢ় ধরিঅ খট্টে। অনহা ডমরু বাজই বীরনাদে॥ কাহ্ন কপালী যোগী পইঠ অচারে। দেহনঅরী বিহরই একাকারে॥ ধ্রু॥ আলি কালি ঘণ্টা নেউর চরণে। রবি শশী কুণ্ডল কিউ আভরণে॥ ধ্রু॥ রাগ দেষ মোহ লাইঅ ছার। পরম মোখ লবএ মুত্তাহার॥ ধ্রু॥ মারিঅ শাসু নণন্দ ঘরে শালী। মাঅ মারিআ কাহ্ন ভইল কবালী॥ ধ্রু॥ ১২ রাগ ভৈরবী চর্যাপদ কৃষ্ণপাদানাম্ করুণা পিহাড়ি খেলহুঁ নঅবল। সদ্‌গুরুবোহেঁ জিতেল ভববল॥ ধ্রু॥ ফীটউ দুআ মাদেসি রে ঠাকুর। উআরিউএসেঁ কাহ্ন ণিঅড় জিনউর॥ ধ্রু॥ পহিলেঁ তোড়িআ বড়িআ মারিউ। গঅবরেঁ তোড়িআ পাঞ্চজনা ঘালিউ॥ ধ্রু॥ মতিএঁ ঠাকুরক পরিনিবিতা। অবশ করিআ ভববল জিতা॥ ধ্রু॥ ভণই কাহ্নু আহ্মে ভাল দান দেহুঁ। চউষঠ্‌ঠি কোঠা গুণিয়া লেহুঁ॥ ধ্রু॥ ১৩ রাগ কামোদ চর্যাপদ কৃষ্ণাচার্য্যপাদানাম্ তিশরণ ণাবী কিঅ অঠকুমারী। নিঅ দেহ করুণাশূণমে হেরী॥ ধ্রু॥ তরিত্তা ভবজলধি জিম করি মাঅ সুইনা। মঝ বেণী তরঙ্গম মুনিআ॥ ধ্রু॥ পঞ্চ তথাগত কিঅ কেড়ুআল। বাহঅ কাঅ কাহ্নি ল মাআজাল॥ ধ্রু॥ গন্ধ পরস রস জইসোঁ তইসোঁ। নিংদ বিহুনে সুইনা জইসো॥ ধ্রু॥ চিঅকণ্ণহার সুণতমাঙ্গে। চলিল কাহ্ন মহাসুহসাঙ্গে॥ ধ্রু॥ ১৪ ধনসী রাগ চর্যাপদ ডোম্বীপাদানাম্ গঙ্গা জউনা মাঝেঁরে বহই নাঈ। তহিঁ বুড়িলী মাতঙ্গী পোইআ লীলে পার করেই॥ ধ্রু॥ বাহতু ডোম্বী বাহ লো ডোম্বী বাটত ভইল উছারা। সদ্‌গুরুপাঅপসাএ জাইব পুণু জিণউরা॥ ধ্রু॥ পাঞ্চ কেড়ুআল পড়ন্তে মাঙ্গে পিঠত কাচ্ছী বান্ধী। গঅণদুখোঁলে সিঞ্চহু পাণী ন পইসই সান্ধি॥ ধ্রু॥ চন্দ সূজ্জ দুই চকা সিঠি সংহার পুলিন্দা। বাম দাহিণ দুই মাগ ন চেবই বাহতু ছন্দা॥ ধ্রু॥ কবড়ী ন লেই বোড়ী ন লেই সুচ্ছড়ে পার করই। জো রথে চড়িলা বাহবা ণ জা[ন]ই কুলেঁ কুল বুড়ই॥ ধ্রু॥ ১৫ রাগ রামক্রী চর্যাপদ শান্তিপাদানাম্ সঅসম্বেঅণসরুঅবিআরেঁ অলক্‌খ লক্‌খণ ন জাই। জে জে উজূবাটে গেলা অনাবাটা ভইলা সোই॥ ধ্রু॥ কুলেঁ কুল মা হোই রে মূঢ়া উজূবাট সংসারা। বাল ভিণ একু বাকু ণ্ ভূলহ রাজ পথ কন্ধারা॥ ধ্রু॥ মায়ামোহসমুদা রে অন্ত ন বুঝসি থাহা। অগে নাব ন ভেলা দীসঅ ভন্তি ন পুচ্ছসি নাহা॥ ধ্রু॥ সুনা পান্তর উহ ন দীসই ভান্তি ন বাসসি জান্তে। এষা অটমহাসিদ্ধি সিঝই উজূবাট জাঅন্তে॥ ধ্রু॥ বাম দাহিণ দোবাটা চ্ছাড়ী শান্তি বুলথেউ সংকেলিউ। ঘাট ন গুমা খড় তড়ি ণ হোই আখি বুজিঅ বাট জাইউ॥ ধ্রু॥ ১৬ রাগ ভৈরবী চর্যাপদ মহীধরপাদানাম্ তিনিএঁ পাটেঁ লাগেলি রে অণহ কসণ গাজই। তা সুনি মার ভয়ঙ্কর রে বিসঅমণ্ডল ভাজই॥ ধ্রু॥ মাতেল চীঅগএন্দা ধাবই। নিরন্তর গঅণন্ত তুসেঁ ঘোলই॥ ধ্রু॥ পাপ পুণ্ণ বেণি তোড়িঅ সিকল মোড়িঅ খম্ভাঠাণা। গঅণটাকলি লাগি রে চিত্ত পইঠ নিবাণা॥ ধ্রু॥ মহারসপানে মাতেল রে তিহুঅন সএল উএখী। পঞ্চবিসঅনায়ক রে বিপখ কোবি ন দেখি॥ ধ্রু॥ খররবিকিরণসন্তাপে রে গঅণাঙ্গণ গই পইঠা। ভণন্তি মহিত্তা মই এথু বুড়ন্তে কিম্পি ন দিঠা॥ ধ্রু॥ ১৭ রাগ পটমঞ্জরী চর্যাপদ বীণাপাদানাম্ সুজ লাউ সসি লাগেলি তান্তী। অণহা দাণ্ডী একি কিঅত অবধূতী॥ ধ্রু॥ বাজই অলো সহি হেরুঅবীণা। সুনতান্তিধনি বিলসই রুণা॥ ধ্রু॥ আলি কালি বেণি সারি সুণিআ। গঅবর সমরস সান্ধি গুণিআ॥ ধ্রু॥ জবে করহা করহকলে চাপিউ। বতিশ তান্তিধনি সঅল বিআপিউ॥ ধ্রু॥ নাচন্তি বাজিল গান্তি দেবী। বুদ্ধ নাটক বিসমা হোই॥ ধ্রু॥ ১৮ রাগ গউড়া চর্যাপদ কৃষ্ণবজ্রপাদানাম্ তিনি ভুঅণ মই বাহিঅ হেলেঁ। হাঁউ সুতেলি মহাসুহলীলেঁ॥ ধ্রু॥ কইসণি হালো ডোম্বী তোহোরি ভাভরিআলী। অন্তে কুলিণজণ মাঝেঁ কাবালী॥ ধ্রু॥ তঁই লো ডোম্বী সঅল বিটালিউ। কাজণ কারণ সসহর টালিউ॥ ধ্রু॥ কেহো কেহো তোহোরে বিরুআ বোলই। বিদুজণ লোঅ তোরে কণ্ঠ ন মেলই॥ ধ্রু॥ কাহ্নে গাই তু কামচণ্ডালী। ডোম্বী ত আগলি নাহি চ্ছিণালী॥ ধ্রু॥ ১৯ রাগ ভৈরবী চর্যাপদ কৃষ্ণপাদানাম্ ভবনির্ব্বাণে পড়হ মাদলা। মণপবণবেণি করণ্ডকশালা॥ ধ্রু॥ জঅ জঅ দুন্দুহিসাদ উছলিআঁ। কাহ্ন ডোম্বীবিবাহে চলিআ॥ ধ্রু॥ ডোম্বী বিবাহিআ অহারিউ জাম। জউতুকে কিঅ আণুতু ধাম॥ ধ্রু॥ অহণিসি সুরঅপসঙ্গে জাঅ। জোইণিজালে রঅণি পোহাঅ॥ ধ্রু॥ ডোম্বীএর সঙ্গে জো জোই রত্তো। খণহ ন ছাড়অ সহজ উন্মত্তো॥ ধ্রু॥ ২০ রাগ পটমঞ্জরী চর্যাপদ কুক্কুরীপাদানাম্ হাঁউ নিরাসী খমণভতারি। মোহোর বিগোআ কহণ ন জাই॥ ধ্রূ॥ ফেটলিউ গো মাএ অন্তউরি চাহি। জা এথু চাহাম সো এথু নাহি॥ ধ্রূ॥ পহিল বিআণ মোর বাসনপূড়া। নাড়ি বিআরন্তে সেব বাপূড়া॥ ধ্রূ॥ জাণজৌবণ মোর ভৈলেসি পূরা। মূল নখলি বাপ সংঘারা॥ ধ্রূ॥ ভণথি কুক্কুরীপা এ ভব থিরা। জো এথু বুঝই সো এথু বীরা॥ ধ্রূ॥ ২১ রাগ বরাড়ী চর্যাপদ ভুসুকুপাদানাম্ নিসি অন্ধারী মুসঅ চারা। অমিঅভখঅ মুসা করঅ আহারা॥ ধ্রূ॥ মার রে জোইআ মুসা পবণা। জেণ তুটঅ অবণাগবণা॥ ধ্রূ॥ ভববিন্দারঅ মুসা খণঅ গাতী। চঞ্চল মুসা কলিআঁ নাশক থাতী॥ ধ্রূ॥ কাল মুসা উহ ণ বাণ। গঅণে উঠি চরঅ অমণধাণ॥ ধ্রূ॥ তাব সে মুসা উঞ্চল পাঞ্চল। সদ্‌গুরুবোহে করহ সো নিচ্চল॥ ধ্রূ॥ জবে মুসাএর চার তুটঅ। ভুসুকু ভণঅ তবে বান্ধন ফিটঅ॥ ধ্রূ॥ ২২ রাগ গুঞ্জরী চর্যাপদ সরহপাদানাং অপণে রচি রচি ভবনির্বাণা। মিছেঁ লোঅ বন্ধাবএ অপনা॥ধ্রু॥ অম্ভে ন জাণহূঁ অচিন্ত জোই‌। জাম মরণ ভব কইসণ হোই॥ধ্রু॥ জইসা জাম মরণ বি তইসো। জীবন্তে মঅলেঁ ণাহি বিশেসো॥ধ্রু॥ জা এথু জাম মরণে বি সঙ্কা। সো করউ রস রসানেরে কংখা॥ধ্রু॥ জে সচরাচর তিঅস ভমন্তি। তে অজরামর কিম্‌পি ন হোন্তি॥ধ্রু॥ জামে কাম কি কামে জাম। সরহ ভণতি অচিন্ত সো ধাম॥ধ্রু॥
জগদীশচন্দ্র বসু
কথারম্ভ জগদীশচন্দ্র বসু কথারম্ভ ভিতর ও বাহিরের উত্তেজনায় জীব কখনও কলরব কখনও আর্তনাদ করিয়া থাকে। মানুষ মাতৃক্রোড়ে যে ভাষা শিক্ষা করে সে ভাষাতেই সে আপনার সুখ-দুঃখ জ্ঞাপন করে। প্রায় ত্রিশ বৎসর পূর্বে আমার বৈজ্ঞানিক ও অন্যান্য কয়েকটি প্রবন্ধ মাতৃভাষাতেই লিখিত হইয়াছিল। তার পর বিদ্যুৎ-তরঙ্গ ও জীবন সম্বন্ধে অনুসন্ধান আরম্ভ করিয়াছিলাম এবং সেই উপলক্ষে বিবিধ মামলা-মোকদ্দমায় জড়িত হইয়াছি। এ বিষয়ের আদালত বিদেশে, সেখানে বাদ-প্রতিবাদ কেবল ইউরোপীয় ভাষাতেই গৃহীত হইয়া থাকে। এ দেশেও প্রিভিকাউন্সিলের রায় না পাওয়া পর্যন্ত কোন মোকদ্দমার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয় না। জাতীয় জীবনের পক্ষে ইহা অপেক্ষা অপমান আর কি হইতে পারে? ইহার প্রতিকারের জন্য এদেশে বৈজ্ঞানিক-আদালত স্থাপনের চেষ্টা করিয়াছি। ফল হয়তো এ জীবনে দেখিব না; প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান-মন্দিরের ভবিষ্যৎ বিধাতার হস্তে। বন্ধুবর্গের অনুরোধে বিক্ষিপ্ত প্রবন্ধগুলি পুস্তকাকারে মুদ্রিত করিলাম। চতুর্দিক ব্যাপিয়া যে অব্যক্ত জীবন প্রসারিত, তাহার দু-একটি কাহিনী বর্ণিত হইল। ইহার মধ্যে কয়েকটি লেখা মুকুল, দাসী, প্রবাসী, সাহিত্য এবং ভারতবর্ষে প্রকাশিত হইয়াছিল। শ্রীজগদীশচন্দ্র বসু বসু-বিজ্ঞান-মন্দির ১লা বৈশাখ, ১৩২৮
জগদীশচন্দ্র বসু
যুক্তকর জগদীশচন্দ্র বসু পুরাতন লইয়াই বর্তমান গঠিত, অতীতের ইতিহাস না জানিলে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ অজ্ঞেয়ই রহিবে। পুরাতন ইতিহাস উদ্ধার করিতে হইলে সেকালে সর্বসাধারণের দৈনন্দিন জীবন কিরূপে অতিবাহিত হইত, তাহা জানা আবশ্যক। লোকপরম্পরায় শুনিয়াছিলাম, দেড় হাজার বৎসর পূর্বের জীবন্ত চিত্র এখনও অজন্তার গুহামন্দিরে দেখিতে পাওয়া যায়। আজকাল পথ অনেক সুবিধা হইয়াছে; কিন্তু বহুবৎসর পূর্বে যখন অজন্তা দেখিতে গিয়াছিলাম, তখন রাস্তাঘাট বিশেষ কিছুই ছিল না। রেল-স্টেশন হইতে প্রায় একদিনের পথ। বাহন গোরুর গাড়ি। অনেক কষ্টের পর অজন্তা পৌঁছিলাম। মাঝখানের পার্বত্য নদী পার হইয়া দেখিলাম, পর্বত খুদিয়া গুহাশ্রেণী নির্মিত হইয়াছে; ভিতরের কারুকার্যের পরাকাষ্ঠা। গুহার প্রাচীর ও ছাদে চিত্রাবলী অঙ্কিত; তাহা সহস্রাধিক বৎসরেও ম্লান হয় নাই। দরবার চিত্রে দেখিলাম, পারস্যদেশ হইতে দূত রাজদর্শনে আসিয়াছে। অন্য স্থানে ভীষণ সমরচিত্র। তাহাতে একদিকে অস্ত্রশস্ত্রে ভূষিতা নারীসৈন্য যুদ্ধ করিতেছে। আর এককোণে দেখিলাম, দুইখানা মেঘ দুই দিক হইতে আসিয়া প্রহত হইয়াছে। ঘূর্ণায়মান বাষ্পরাশিতে মূর্তি ফুটিয়া উঠিয়াছে, তাহারা পরষ্পরের সহিত ভীষণ রণে যুঝিতেছে। এই দ্বন্দ্ব সৃষ্টির প্রাক্কাল হইতে আরব্ধ হইয়াছে; এখনও চলিতেছে, ভবিষ্যতেও চলিবে। প্রতিদ্বন্দ্বী আলো ও আঁধার, জ্ঞান ও অজ্ঞান, ধর্ম ও অধর্ম। যখন সবিতা সপ্তঅশ্বযোজিত রথে আরোহণ করিয়া সমুদ্রগর্ভ হইতে পূর্বদিকে উত্থিত হইবেন, তখনই আঁধার পরাহত হইয়া পশ্চিম গগনে মিলাইয়া যাইবে। আর-একখানি চিত্রে রাজকুমার প্রাসাদ হইতে জনপ্রবাহ নিরীক্ষণ করিতেছেন। ব্যাধি-জর্জরিত, শোকার্ত মানবের দুঃখ তাহার হৃদয় বিদ্ধ করিয়াছে। কি করিয়া এই দুঃখপাশ ছিন্ন হইবে, তিনি আজ রাজ্য ও ধনসম্পদ পরিত্যাগ করিয়া তাহার সন্ধানে বাহির হইবেন। আজ মহাসংক্রমণের দিন। অর্ধ-অন্ধকার-আচ্ছন্ন গুহামন্দিরের বাহিরে আসিয়া দেখিলাম, পর্বতগাত্রে প্রশান্ত বুদ্ধমূর্তি খোদিত রহিয়াছে। সুখ-দুঃখের অতীত শান্তির পথ তাঁহারই সাধনার ফলে উন্মুক্ত হইয়াছে। সম্মুখে যতদূর দেখা যায়, ততদূর জনমানবের কোন চিহ্ন দেখা যায় না। প্রান্তর ধূধূ করিতেছে। অতীত ও বর্তমানের মধ্যে অকাট্য ব্যবধান, পরপারের কোনো সেতু নাই। গুহার অন্ধকারে যাহা দেখিয়াছিলাম, তাহা যেন কোনো স্বপ্নরাজ্যের পুরী। অশান্ত হৃদয়ে গৃহে ফিরিলাম। ইহার কয় বৎসর পর কোনো সম্ভ্রান্ত জনভবনে নিমন্ত্রিত হইয়াছিলাম। সেখানে অনেকগুলি চিত্র ছিল; অন্যমনস্কভাবে দেখিতে দেখিতে হঠাৎ একখানা ছবি দেখিয়া চমকিত হইলাম। এই ছবি তো পূর্বে দেখিয়াছি– সেই গুহামন্দিরের প্রশান্ত বুদ্ধমূর্তি! চিত্রে আরও কিছু ছিল যা পূর্বে দেখি নাই। মূর্তির নীচেই একখানা পাথরের উপরে নিদ্রিত শিশু, নিকটেই জননী উর্ধ্বোত্থিত যুক্তকরে পুত্রের মঙ্গলের জন্য বুদ্ধদেবের আশীর্বাদ ভিক্ষা করিতেছে। যিনি সমস্ত জীবের দুঃখভার গ্রহণ করিয়াছিলেন, তিনিই মায়ের দুঃখ দূর করিবেন। অমনি মানস-চক্ষে আর একটি দৃশ্য দেখিলাম। বোধিবৃক্ষতলে উপবাসক্লিষ্ট মুমূর্ষু গৌতম। দুস্থজন দেখিয়া সুজাতার মাতৃহৃদয় উথলিত। দেখিতে দেখিতে অতীত ও বর্তমানের মাঝখানে মমতা ও স্নেহরচিত একটি সেতু গঠিত হইল এবং সেকাল ও একালের ব্যবধান ঘুচিয়া গেল। আমার পার্শ্বের একজন বিদেশী বলিলেন– দেখো, দেবতার মুখ কিরূপ নির্মম– একদিকে মাতার এত আগ্রহ, এত স্তুতি, কিন্তু দেবতার কেবল নিশ্চল দৃষ্টি! এই অবোধ নারী প্রস্তর-মূর্তির মুখে কিরূপে করুণা দেখিতে পাইতেছেন? তখন প্রকৃতির উপাসক জ্ঞানীদের কথা মনে হইল। এই অবোধ মাতা ও অজ্ঞাতবাদী বৈজ্ঞানিকদের মধ্যে কি এতই প্রভেদ? প্রকৃতিও কি ক্রূর নয়? তাহার অকাট্য পরিবর্তনীয় লৌহের ন্যায় কঠিন নিয়মশৃঙ্খলে কয়জন মমতা দেখিতে পায়? অনন্তশক্তি চক্র যখন উদ্ধতবেগে ধাবিত হয় তখন তাহা দ্বারা পেষিত জীবগণকে কে তুলিয়া লয়? সকলে প্রকৃতির হৃদয়ে মাতৃস্নেহ দেখিতে পান না। আমরা যাহা দেখি তাহা তো আমাদের মনের প্রতিকৃতি মাত্র। যাহার উপর চক্ষু পড়ে তাহা কেবল উপলক্ষ। কেবল প্রশান্ত গভীর জলরাশিতেই প্রকৃত প্রতিবিম্ব দেখিলে দেখা যায়। এই বিত্রস্ত জলরাশির ন্যায় সদা-সংক্ষুব্ধ হৃদয়ে কিরূপে নিশ্চল প্রতিমূর্তি বিম্বিত হইবে? যাঁহার ইচ্ছায় অনন্ত বারিধি বাত্যাতাড়নে ক্ষুব্ধ হয়, কেবল তাঁহার আজ্ঞাতেই জলধি শান্তিময়ী মূর্তি ধারণ করে। কে বলিবে ঐ অবোধ মাতার হৃদয় এক শান্তিময় করস্পর্শে কমনীয় হয় নাই? আমরা যাহা দেখিতে পাই না, পুত্রবাৎসল্যে অভিভূত ধ্যানশীলা জননী তাহা দেখিতে পান। তাঁহার নিকট ঐ প্রস্তর-মূর্তির পশ্চাতে স্নেহময়ী জগজ্জনীর মূর্তি প্রতিভাসিত! দেখিতে দেখিতে আমার মনে হইল যেন উর্ধ্ব হইতে অমৃত ক্ষীরধারা পতিত হইয়া মাতা ও সন্তানকে শুভ্র ও পবিত্র করিয়াছে। অনেক সময়ে এক অপূর্ণতা আসিয়া পৃথিবীর সৌন্দর্য ও সজীবতা অপহরণ করে। আলো ও অন্ধকার, সুখ ও দুঃখমিশ্রিত দৃশ্য অসামঞ্জস্যহেতু অশান্তিপূর্ণ হয়, অথচ আলো ও অন্ধকারের সমাবেশ ভিন্ন সুচিত্র হয় না। কেবল আলো কিংবা কেবল অন্ধকারে চিত্র অপরিস্ফুট থাকে। যে-দৃশ্যের কথা উল্লেখ করিলাম, উহার ন্যায় জীবনচিত্র অনেক সময় সৌন্দর্যহীন হয়। ঐ চিত্রের ন্যায় একটি শিশু কিংবা নারীর উর্ধ্বোত্থিত বাহুতে সমস্ত দৃশ্য পরিবর্তিত হইয়া যায়। আলো ও ছায়া, সুখ ও অপরিহার্য দুঃখ তখন স্ব-স্ব নির্দিষ্ট স্থানে সমাবিষ্ট হয়। তখন সেই দুইখানি উত্তোলিত যুক্তহস্ত হইতে কিরণরেখা অন্ধকার ভেদ করিয়া সমস্ত দৃশ্য জ্যোতির্ময় করে।
জগদীশচন্দ্র বসু
আকাশ-স্পন্দন ও আকাশ-সম্ভব জগৎ জগদীশচন্দ্র বসু দৃশ্য জগৎ ক্ষিতি, অপ, তেজ, মরুৎ, ব্যোম লইয়া গঠিত। রূপক অর্থে এ কথা লইতে পারা যায়। এ জগতে অসংখ্য ঘটনাবলীর মূলে তিনটি কারণ বিদ্যমান। প্রথম পদার্থ, দ্বিতীয় শক্তি, তৃতীয় ব্যোম, অথবা আকাশ। পদার্থ ত্রিবিধ আকারে দেখা যায়। ক্ষিত্যাকারে-অর্থাৎ কঠিনরূপে; দ্রবাকারে-অর্থাৎ অপ্‌রূপে; বায়বাকারে-অর্থাৎ মরুৎরূপে। জড় পদার্থ সর্বসময়ে শক্তি অথবা তেজ দ্বারা স্পন্দিত হইতেছে। এই মহাজগৎ ব্যোমে দোলায়মান রহিয়াছে। মহাশক্তি অনন্ত চক্রে নিরন্তর ঘূর্ণিত হইতেছে। তাহারই বলে অসীম আকাশে বিশ্বজগৎ ভ্রমণ করিতেছে, উদ্ভূত হইতেছে এবং পুনরায় মিলাইয়া যাইতেছে। সর্বাগ্রে দেখা যাউক, শক্তি কি প্রকারে স্থান হইতে স্থানান্তরে সঞ্চালিত হয়। রেলের স্টেশনে সংকেত প্রেরণের দণ্ড সকলেই দেখিয়াছেন। একদিকে রজ্জু আকর্ষণ করিলে দূরস্থ কাষ্ঠখণ্ড সঞ্চালিত হয়। এতদ্ব্যতীত অন্য প্রকারেও শক্তি সঞ্চালিত হইতে দেখা যায়। নদীর উপর দিয়া জাহাজ চলিয়া যায়; কলের আঘাতে জল তরঙ্গাকারে বিক্ষিপ্ত হইয়া নদীতটে বারংবার আঘাত করে। এ স্থলে কলের আঘাত তরঙ্গবলে দূরে নীত হয়। বাদ্যকরের অঙ্গুলিতাড়িত তন্ত্রীও এইরূপে স্পন্দিত হয়। এই স্পন্দনে বায়ুরাশিতে তরঙ্গ উৎপন্ন হয়। শব্দজ্ঞান বায়ুতরঙ্গের আঘাতজনিত। বাদ্যযন্ত্র ব্যতীতও সচরাচর অনেক সুর শুনিতে পাওয়া যায়। বায়ুকম্পিত বৃক্ষপত্রে, জলবিন্দুপতনে, তরঙ্গাহত সমুদ্রতীরে বহুবিধ সুর শ্রুতিগোচর হয়। সেতারের তার যতই ছোটো করা যায়, সুর ততই চড়া হয়। যখন প্রতি সেকেণ্ডে বায়ু ৩০,০০০ বার কাঁপিতে থাকে তখন কর্ণে অসহ্য অতি উচ্চ সুর শোনা যায়। তার আরও ক্ষুদ্র করিলে হঠাৎ শব্দ থামিয়া যাইবে। তখনও তার কাঁপিতে থাকিবে, তরঙ্গ উদ্ভূত হইবে; কিন্তু এই উচ্চ সুর আর কর্ণে ধ্বনি উৎপাদন করিবে না। কে মনে করিতে পারে যে, শত শত ধ্বনি কর্ণে প্রবেশ করিতেছে, আমরা তাহা শুনিয়াও শুনিতে পাই না? গৃহে বাহিরে নিরন্তর অগণিত সংগীত গীত হইতেছে; কিন্তু তাহা আমাদের শ্রবণের অতীত। জড়পদার্থের কম্পন ও তজ্জনিত সুরের কথা বলিয়াছি। এতদ্ব্যতীত আকাশেও সর্বদা অসংখ্য তরঙ্গ উৎপন্ন হইতেছে। অঙ্গুলিতাড়নে প্রথমে বাদ্যযন্ত্রে ও তৎপরে বায়ুতে যেরূপ তরঙ্গ হয়, বিদ্যুত্তাড়নেও সেইরূপে আকাশে তরঙ্গ উদ্ভূত হয়। বায়ুর তরঙ্গ আমরা কর্ণ দিয়া শ্রবণ করি, আকাশের তরঙ্গ সচরাচর আমরা চক্ষু দিয়া দেখি। বায়ুর তরঙ্গ আমরা অনেক সময়ে শুনিতে পাই না। আকাশের তরঙ্গও সর্বসময়ে দেখিতে পাই না। দুইটি ধাতুগোলক বিদ্যুদ্‌যন্ত্রের সহিত যোগ করিয়া দিলে, গোলক দুইটি বারংবার বিদ্যুত্তাড়িত হইবে, এবং তড়িদ্বলে চতুর্দিকের আকাশে তরঙ্গ ধাবিত হইবে। তার ছোটো করিলে, অর্থাৎ গোলক দুইটিকে ক্ষুদ্র করিলে, সুর উচ্চে উঠিবে। এইরূপে প্রতিমুহূর্তে সহস্র কম্পন হইতে লক্ষ, লক্ষ হইতে কোটি, এবং তাহা হইতে কোটি কোটি কম্পন উৎপন্ন হইবে। মনে করো, অন্ধকার গৃহে অদৃশ্য শক্তিবলে বায়ু বারংবার আহত হইতেছে। কিছুই দেখা যাইতেছে না, কেবল নিস্তব্ধতা ভেদ করিয়া গভীর ধ্বনি কর্ণে প্রবেশ করিতেছে। কম্পনসংখ্যা যতই বর্ধিত করা যাইবে, সুর ততই উচ্চ হইতে উচ্চতর সপ্তমে উঠিবে। অবশেষে সহসা কর্ণবিদারী সুর থামিয়া নিস্তব্ধতায় পরিণত হইবে। ইহার পর লক্ষ লক্ষ তরঙ্গ কর্ণে আঘাত করিলেও আমরা তাহার কিছুই জানিতে পারিব না। এক্ষণে বিদ্যুদ্বলে আকাশে তরঙ্গ উৎপন্ন করা যাউক; লক্ষাধিক তরঙ্গ প্রতি মুহূর্তে চতুর্দিকে ধাবিত হইবে। আমরা এই তরঙ্গান্দোলিত সাগরে নিমজ্জিত হইয়াও অক্ষুণ্ণ থাকিব। সুর ক্রমে উচ্চে উত্থিত হইতে থাকুক। প্রতি সেকেণ্ডে যখন কোটি কোটি তরঙ্গ উৎপন্ন হইবে, তখন অকস্মাৎ নিদ্রিত ইন্দ্রিয় জাগরিত হইয়া উঠিবে, শরীর উত্তাপ অনুভব করিবে। সুর আরও উচ্চে উত্থিত হইলে যখন অধিকতর সংখ্যক তরঙ্গ উৎপন্ন হইবে, তখন অন্ধকার ভেদ করিয়া রক্তিম আলোক-রেখা দেখা যাইবে। কম্পনসংখ্যার আরও বৃদ্ধি হউক– ক্রমে ক্রমে পীত, হরিৎ, নীল আলোকে গৃহ পূর্ণ হইবে। ইহার পর সুর আরও উচ্চে উঠিলে চক্ষু পরাস্ত হইবে, আলোকরাশি পুনরায় অদৃশ্য হইয়া যাইবে। ইহার পর অগণিত স্পন্দনে আকাশ স্পন্দিত হইলেও আমরা কোনো ইন্দ্রিয়ের দ্বারা তাহা অনুভব করিতে পারিব না। তবে তো আমরা এই সমুদ্রে একেবারে দিশাহারা! আমরা বধির ও অন্ধ! কি দেখিতে পাই, কি শুনিতে পাই? কিছুই নয়! দুই-একখানা ভগ্ন দিকদর্শনশলাকা লইয়া আমরা মহাসমুদ্রে যাত্রা করিয়াছি। পূর্বে বলিয়াছি, উত্তাপ ও আলোক আকাশের বৈদ্যুতিক স্পন্দন মাত্র। যে স্পন্দন ‘ত্বক দ্বারা অনুভব করি তাহার নাম উত্তাপ; আর যে কম্পনে দর্শনেন্দ্রিয় উত্তেজিত হয় তাহাকে আলোক বলিয়া থাকি। ইহা ব্যতীত আকাশে বহুবিধ স্পন্দন আছে, যাহা আমাদের ইন্দ্রিয়গণের সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য। হস্তী-দেহের বিভিন্ন অংশ স্পর্শ করিয়া অন্ধেরা একই জন্তুর বিভিন্ন রূপ কল্পনা করিয়াছিল; শক্তি সম্বন্ধেও আমরা সেইরূপ কল্পনা করি। কিয়ৎকাল পূর্বে আমরা চুম্বকশক্তি, বিদ্যুৎ, তাপ ও আলোককে বিভিন্ন শক্তি বলিয়া মনে করিতাম। এখন বুঝিতে পারিতেছি যে, এ সকল একই শক্তির বিভিন্ন রূপ। চুম্বকশক্তি ও বিদ্যুতের সম্বন্ধ সকলেই জানেন। তাপরশ্মি ও আলোক যে আকাশের বৈদ্যুতিককম্পনজনিত, ইহা অল্পদিন হইল প্রমাণিত হইয়াছে। আকাশ দিয়া ইহাদের তরঙ্গ একই গতিতে ধাবিত হয়, ধাতুপাত্রে প্রতিহত হইয়া একই রূপে প্রত্যাবর্তন করে, বায়ু হইতে অন্য স্বচ্ছ দ্রব্যে পতিত হইয়া একই রূপে বক্রীভূত হয়। কম্পনসংখ্যাই বৈষম্যের একমাত্র কারণ। সূর্য এই পৃথিবী হইতে নয় কোটি মাইল দূরে অবস্থিত। আমাদের উপরে বায়ুমণ্ডল ৪৫ মাইল পর্যন্ত ব্যাপ্ত তার পর শূন্য। দূরস্থ সূর্যের সহিত এই পৃথিবীর আপাততঃ কোনো যোগ দেখা যায় না। অথচ সূর্যের বহ্নিময় সাগরে আবর্ত উত্থিত হইলে, এই পৃথিবী সেই সৌরোৎপাতে ক্ষুব্ধ হয়– অমনি পৃথিবী জুড়িয়া বিদ্যুৎস্রোত বহিতে থাকে। সুতরাং যাহা বিচ্ছিন্ন মনে করিতাম, প্রকৃতপক্ষে তাহা বিচ্ছিন্ন নহে। শূন্যে বিক্ষিপ্ত কোটি কোটি জগৎ আকাশসূত্রে গ্রথিত। এক জগতের স্পন্দন আকাশ বাহিয়া অন্য জগতে সঞ্চালিত হইতেছে। সূর্যকিরণ পৃথিবীতে পতিত হইয়া নানা রূপ ধরিতেছে। সূর্যকিরণেই বৃক্ষ বর্ধিত হয়, পুষ্প রঞ্জিত হয়। কিরণরূপে আকাশ-কম্পন আসিয়া বায়ুস্থিত অঙ্গারক অণুগুলি বিচলিত করিয়া বৃক্ষদেহ গঠিত করে। অসংখ্য বৎসর পূর্বের সূর্যকিরণ বৃক্ষদেহে আবদ্ধ হইয়া পৃথ্বীগর্ভে নিহিত আছে। আজ কয়লা হইতে সেই কিরণ নির্মুক্ত হইয়া গ্যাস ও বিদ্যুদালোকে রাজবর্ত্ম আলোকিত করিতেছে। বাষ্পযান, অর্ণবপোত এই শক্তিতেই ধাবিত হয়। মেঘ ও বাত্যা একই শক্তিবলে সঞ্চালিত হইতেছে। সূর্যকিরণ লালিত উদ্ভিদ্‌ ভোজন করিয়াই প্রাণীগণ জীবনধারণ করিতেছে ও বর্ধিত হইতেছে। তবে দেখা যায় যে, এই ভূপৃষ্ঠের প্রায় সর্ব গতির মূলে সূর্যকিরণ। আকাশের স্পন্দন দ্বারাই পৃথিবী স্পন্দিত হইতেছে; জীবনের স্রোত বহিতেছে। আমাদের চক্ষুর আবরণ ক্রমে ক্রমে অপসারিত হইল। এক্ষণে আমরা বুঝিতে পারিতেছি যে, এই বহুরূপী বিবিধ শক্তিশালী জগতের মূলে দুইটি কারণ বিদ্যমান। এক, আকাশ ও তাহার স্পন্দন; অপর, জড় বস্তু। জড় পদার্থ বিবিধ আকারে দেখা যায়। এক সময়ে লৌহবৎ কঠিন, কখনও দ্রব, কখনও বায়বাকার, আবার কখনও বা তদপেক্ষা সূক্ষ্ণতররূপে দেখিতে পাওয়া যায়। শুন্যে উড্ডীন অদৃশ্য বাষ্প আর প্রস্তরবৎ কঠিন তুষার একই পদার্থ; কিন্তু আকারে কত প্রভেদ! গৃহমধ্যে নিশ্চল বায়ু দেখিতে পাওয়া যায় না। উহার অস্তিত্ব সহসা আমরা কোনো ইন্দ্রিয় দ্বারা উপলব্ধি করিতে পারি না। কিন্তু এই অদৃশ্য সূক্ষ্ম বায়ুরাশিতে আবর্ত উত্থিত হইলে উহা বিভিন্ন গুণ ধারণ করে। আবর্তময় অদৃশ্য বায়ুর কঠিন আঘাতে মুহূর্তমধ্যে গ্রাম জনপদ বিনিষ্ট হইবার কথা সকলেই জানেন। জড় পদার্থ আকাশের আবর্ত মাত্র। কোনো কালে আকাশ-সাগরে অজ্ঞাত মহাশক্তিবলে অগণ্য আবর্ত উদ্ভূত হইয়া পরমাণুর সৃষ্টি হইল। উহাদের মিলনে বিন্দু, অসংখ্য বিন্দুর সমষ্টিতে জগৎ, মহাজগৎ উৎপন্ন হইয়াছে। আকাশেরই আবর্ত জগৎরূপে আকাশ-সাগরে ভাসিয়া রহিয়াছে। জার্মান কবি রিক্‌টার স্বপ্নরাজ্যে দেবদূতের সাক্ষাৎ পাইয়াছিলেন। দেবদূত কহিলেন, ‘মানব, তুমি বিশ্ব-রচয়িতার অনন্ত রচনা দেখিতে চাহিয়াছ– আইস, মহাবিশ্ব দেখিব।’ মানব দেবস্পর্শে পৃথিবীর আকর্ষণ হইতে বিমুক্ত হইয়া দেবদূতসহ অনন্ত আকাশপথ যাত্রা করিল! আকাশের উচ্চ হইতে স্তর ভেদ করিয়া তাহারা ক্রমে অগ্রসর হইতে লাগিল। দেখিতে দেখিতে সপ্তগ্রহ পশ্চাতে ফেলিয়া মুহূর্তের মধ্যে সৌরদেশে উপনীত হইল। সূর্যের ভীষণ অগ্নিকুণ্ড হইতে উত্থিত মহাপাবকশিখা তাহাদিগকে দগ্ধ করিল না। পেরে সৌররাজ্য ত্যাগ করিয়া সুদূরস্থিত তারকার রাজ্যে উপস্থিত হইল। সমুদ্রতীরস্থ বালুকাকণার গণনা মনুষ্যের পক্ষে সম্ভব, কিন্তু এই অসীমে বিক্ষিপ্ত অগণ্য জগতের গণনা কল্পনারও অতীত। দক্ষিণে, বামে, সম্মুখে, পশ্চাতে দৃষ্টিসীমা অতিক্রম করিয়া অগণ্য জগতের অনন্ত শ্রেণী! কোটি কোটি মহাসূর্য প্রদক্ষিণ করিয়া কোটি কোটি গ্রহ, ও তাহাদের চতুর্দিকে কোটি কোটি চন্দ্র ভ্রমণ করিতেছে। ঊর্ধ্বহীন, অধোহীন, দিকহীন অনন্ত! পরে এই মহাজগৎ অতিক্রম করিয়া আরও দূরস্থিত অচিন্ত্য জগৎ উদ্দেশে তাহারা চলিল। সমস্ত দিক আচ্ছন্ন করিয়া কল্পনাতীত নূতন মহাবিশ্ব মুহূর্তে তাহাদের দৃষ্টিপথ অবরোধ করিল। ধারণাতীত মহাব্রহ্মাণ্ডের অগণ্য সমাবেশ দেখিয়া মানুষ একেবারে অবসন্ন হইয়া কহিল, ‘দেবদূত! আমার প্রাণবায়ু বাহির করিয়া দাও! এই দেহ অচেতন ধূলিকণায় মিশিয়া যাউক। অসহ্য এ অনন্তের ভার! এ জগতের শেষ কোথায়?’ তখন দেবদূত কহিলেন, ‘তোমার সম্মুখে অন্ত নাই; ইহাতেই কি তুমি অবসন্ন হইয়াছ? পশ্চাৎ ফিরিয়া দেখো, এ জগতের আরম্ভও নাই।’ শেষও নাই, আরম্ভও নাই। মানুষের মন অসীমের ভার বহিতে পারে না। ধূলিকণা হইয়া কিরূপে অসীম ব্রহ্মাণ্ডের কল্পনা মনে ধারণা করিব? অনুবীক্ষণে ক্ষুদ্র বিন্দুতে বৃহৎ জগৎ দেখা যায়। বিপর্যয় করিয়া দেখিলে জগৎ ক্ষুদ্র বিন্দুতে পরিণত হয়; অণুবীক্ষণ বিপর্যয় করিয়া দেখো। ব্রহ্মাণ্ড ছাড়িয়া ক্ষুদ্র কণিকায় দৃষ্টি আবদ্ধ করো। আমাদের চক্ষুর সমক্ষে জড়বস্তু মুহূর্তে মুহূর্তে কত বিভিন্ন রূপ ধারণ করিতেছে। অগ্নিদাহে মহানগর শূন্যে বিলীন হইয়া যায়। তাহা বলিয়া একবিন্দুও বিনষ্ট হয় না। একই অণু কখনও মৃত্তিকাকারে, কখনও উদ্ভিদাকারে, কখনও মনুষ্যদেহে, পুনরায় কখনও অদৃশ্য বায়ুরূপে বর্তমান। কোনো বস্তুরই বিনাশ নাই। শক্তিও অবিনশ্বর। এক মহাশক্তি জগৎ বেষ্টন করিয়া রহিয়াছে; প্রতি কণা ইহা দ্বারা অনুপ্রবিষ্ট। এ মুহূর্তে যাহা দেখিতেছি, পরমুহূর্তে ঠিক তাহা আর দেখিব না। বেগবান নদীস্রোত যেরূপ উপলখণ্ডকে বার বার ভাঙিয়া অনবরত তাহাকে নূতন আকার প্রদান করে, এই মহাশক্তিস্রোতও সেইরূপ দৃশ্য জগৎকে মুহূর্তে মুহূর্তে ভাঙিতেছে ও গড়িতেছে। সৃষ্টির আরম্ভ হইতে এই স্রোত অপ্রতিহতগতিতে প্রবাহিত হইতেছে। ইহার বিরাম নাই, হ্রাস নাই, বৃদ্ধি নাই। সমুদ্রের এক স্থানে ভাঁটা হইলে অন্য স্থানে জোয়ার হয়। জোয়ার ভাঁটা উভয়ই এককারণজাত; সমুদ্রের জলপরিমাণ সমানই রহিয়াছে। এক স্থানে যত হ্রাস হয়, অপর স্থানে সেই পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। এইরূপ জোয়ার ভাঁটা– ক্ষয় বৃদ্ধি–তরঙ্গের ন্যায় চতর্দিকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। শক্তির তরঙ্গেও এইরূপ– ক্ষয় বৃদ্ধি, প্রত্যেক বস্তু এই তরঙ্গ দ্বারা সর্বদা আহত হইতেছে– উপলখণ্ড ভাঙিতেছে ও গড়িতেছে। শক্তিপ্রক্ষিপ্ত ঊর্মিমালার দ্বারাই জগৎ জীবন্ত রহিয়াছে। এখন জড়-জগৎ ছাড়িয়া জীব-জগতে দৃষ্টিপাত করি। বসন্তের স্পর্শে নিদ্রিত পৃথিবী জাগরিত করিয়া, প্রান্তর বন আচ্ছন্ন করিয়া, উদ্ভিদ্‌-শিশু অন্ধকার হইতে মস্তক তুলিল। দেখিতে দেখিতে হরিৎ প্রান্তর প্রসূনিত। শরৎকাল আসিল, কোথায় সেই বসন্তের জীবনোচ্ছাস? পুষ্প বৃন্তচ্যুত, জীর্ণ পল্লব ভূপতিত, তরুদেহ মৃত্তিকায় প্রোথিত। জাগরণের পরেই নিদ্রা! আবার বসন্ত ফিরিয়া আসিল; শুষ্ক পুষ্পদলে আচ্ছাদিত, বীজে নিহিত, নিদ্রিত বৃক্ষ শিশু পুনরায় জাগিয়া উঠিল। বৃক্ষ, মৃত্যুর আগমনে জীবনবিন্দু বীজে সঞ্চয় করিয়া রাখিয়াছিল। সেই বিন্দু হইতে বৃক্ষ পুনজীবন লাভ করিল। সুতরাং দেখা যাইতেছে, প্রতি জীবনে দুইটি অংশ আছে। একটি অজর, অমর; তাহাকে বেষ্টন করিয়া নশ্বর দেহ। এই দেহরূপ আবরণ পশ্চাতে পড়িয়া থাকে। অমর জীববিন্দু প্রতি পুনর্জন্মে নূতন গৃহ বাঁধিয়া লয়। সেই আদিম জীবনের অংশ,বংশপরম্পরা ধরিয়া বর্তমান সময় পর্যন্ত চলিয়া আসিয়াছে। আজ যে পুষ্প-কলিকাটি অকাতরে বৃন্তচ্যুত করিতেছি, ইহার অণুতে কোটি বৎসর পূর্বের জীবনোচ্ছ্বাস নিহিত রহিয়াছে। কেবল তাহাই নহে। প্রতি জীবের সম্মুখেও বংশপরম্পরাগত অনন্ত জীবন প্রসারিত। সুতরাং বর্তমান কালের জীব অনন্তের সন্ধিস্থলে দণ্ডায়মান। তাহার পশ্চাতে যুগযুগান্তরব্যাপী ইতিহাস ও সম্মুখে অনন্ত ভবিষ্যৎ। আর মনুষ্য? প্রথম জীবকনিকা মনুষ্যরূপে পরিণত হইবার পূর্বে কত পরিবর্তনের মধ্য দিয়া আসিয়াছে! অসংখ্য বৎসরব্যাপী, বিভিন্ন শক্তিগঠিত, অনন্ত সংগ্রামে জয়ী, জীবনের চরমোৎকর্ষ মানব! আজ সেই কীটাণুর বংশধর, দুর্বল জীব স্বীয় অপূর্ণতা ভুলিয়া অসীম বল ধারণ করিতে চাহে। আকাশ হইতে বিদ্যুৎ আহরণ করিয়া স্বীয় রথে যোজনা করে। অজ্ঞান ও অন্ধ হইয়াও পৃথিবীর আদিম ইতিহাস উদ্ধার করিতে উৎসুক হয়। ঘনতিমিরাবৃত যবনিকা উত্তোলন করিয়া ভবিষ্যৎ দেখিবার প্রয়াসী হয়। যদি কখনও সৃষ্ট জীবে দৈবশক্তির আবির্ভাব সম্ভব হয়, তবে ইহাই সেই দৈবশক্তি। অধিক বিস্ময়কর কাহাকে বলিব? বিশ্বের অসীমতা, কিংবা এই সসীম ক্ষুদ্র বিন্দুতে অসীম ধারণা করিবার প্রয়াস– কোন্‌টা অধিক বিস্ময়কর? পূর্বে বলিয়াছি, এ জগতের আরম্ভও নাই, শেষ নাই। এখন দেখিতেছি, এ জগতে ক্ষুদ্রও নাই, বৃহৎও নাই। জীবনের চরমোৎকর্ষ মানব! এ কথা সর্ব সময়ের জন্য ঠিক নয়। যে শক্তি আদিম জীববিন্দুকে মনুষ্যে উন্নীত করিয়াছে, যাহার উচ্ছ্বাসে নিরাকার মহাশূন্য হইতে এই বহুরূপী জগৎ ও তদ্‌বৎ বিস্ময়কর জীবন উৎপন্ন হইয়াছে, আজিও সেই মহাশক্তি সমভাবে প্রবাহিত হইতেছে। ঊর্ধ্বাভিমুখেই সৃষ্টির গতি! আর সম্মুখে অন্তহীন কাল এবং অনন্ত প্রবাহিত হইতেছে। ঊর্ধ্বাভিমুখেই সৃষ্টির গতি! আর সম্মুখে অন্তহীন কাল এবং অনন্ত উন্নতি প্রসারিত।
জগদীশচন্দ্র বসু
উদ্ভিদের জন্ম ও মৃত্যু জগদীশচন্দ্র বসু মৃত্তিকার নীচে অনেক দিন বীজ লুকাইয়া থাকে। মাসের পর মাস এইরূপে কাটিয়া গেল। শীতের পর বসন্ত আসিল। তারপর বর্ষার আরম্ভে দুই-এক দিন বৃষ্টি হইল। এখন আর লুকাইয়া থাকিবার প্রয়োজন নাই। বাহির হইতে কে যেন শিশুকে ডাকিয়া বলিতেছে, ‘আর ঘুমাইয়ো না, উপরে উঠিয়া আইস, সূর্যের আলো দেখিবে।’ আস্তে আস্তে বীজের ঢাক্‌নাটি খসিয়া পড়িল, দুইটি কোমল পাতার মধ্য হইতে অঙ্কুর বাহির হইল। অঙ্কুরের এক অংশ নীচের দিকে গিয়া দৃঢ়রূপে মাটি ধরিয়া রহিল, আর এক অংশ মাটি ভেদ করিয়া উপরে উঠিল। তোমরা কি অঙ্কুর উঠিতে দেখিয়াছ? মনে হয় শিশুটি যেন ছোটো মাথা তুলিয়া আশ্চর্যের সহিত নূতন দেশ দেখিতেছে। গাছের অঙ্কুর বাহির হইলে যে অংশ মাটির ভিতর প্রবেশ করে, তাহার নাম মূল। আর যে অংশ উপরের দিকে বাড়িতে থাকে, তাহাকে বলে কাণ্ড। সকল গাছেই ‘মূল’ আর ‘কাণ্ড’ এই দুই ভাগ দেখিবে। এই এক আশ্চর্যের কথা, গাছকে যেরূপেই রাখ, মূল নীচের দিকে ও কাণ্ড উপরের দিকে যাইবে। একটি টবে গাছ ছিল। পরীক্ষা করিবার জন্য কয়েক দিন ধরিয়া টবটিকে উল্টা করিয়া ঝুলাইয়া রাখিলাম। গাছের মাথা নীচের দিকে ঝুলিয়া রহিল, আর শিকড় উপরের দিকে রহিল। দুই-এক দিন পরে দেখিতে পাইলাম যে, গাছ যেন টের পাইয়াছে। তাহার সব ডালগুলি বাঁকা হইয়া উপরের দিকে উঠিল ও মূলটি ঘুরিয়া নীচের দিকে নামিয়া গেল। তোমরা অনেকে শীতকালে অনেক বার মূলা কাটিয়া শয়তা করিয়া থাকিবে। দেখিয়াছ, প্রথমে শয়তার পাতাগুলি ও ফুল নীচের দিকে থাকে। কিছুদিন পরে দেখিতে পাওয়া যায়, পাতা ও ফুলগুলি উপর দিকে উঠিয়াছে। আমরা যেরূপ আহার করি, গাছও সেইরূপ আহার করে। আমাদের দাঁত আছে, আমরা কঠিন জিনিস খাইতে পারি। ছোটো ছোটো শিশুদের দাঁত নাই; তাহারা কেবল দুধ খায়। গাছেরও দাঁত নাই, সুতরাং তাহারা কেবল জলীয় দ্রব্য কিংবা বাতাস হইতে আহার গ্রহণ করিতে পারে। মূল দ্বারা মাটি হইতে গাছ রস শোষণ করে। চিনিতে জল ঢালিলে চিনি গলিয়া যায়। মাটিতে জল ঢালিলে মাটির ভিতরের অনেক জিনিস গলিয়া যায়। গাছ সেই সব জিনিস আহার করে। গাছের গোড়ায় জল না দিলে গাছের আহার বন্ধ হইয়া যায়, ও গাছ মরিয়া যায়। অনুবীক্ষণ দিয়া অতি ক্ষুদ্র পদার্থ দেখিতে পাওয়া যায়। গাছের ডাল কিংবা মূল এই যন্ত্র দিয়া পরীক্ষা করিলে দেখা যায় যে, গাছের মধ্যে হাজার হাজার নল আছে। এইসব নল দ্বারা মাটি হইতে গাছের শরীরে রস প্রবেশ করে। এ ছাড়া গাছের পাতা বাতাস হইতে আহার সংগ্রহ করে। পাতার মধ্যে অনেকগুলি ছোটো ছোটো মুখ আছে। অণুবীক্ষণ দিয়া এই সব মুখে ছোটো ছোটো ঠোঁট দেখা যায়। যখন আহার করিবার আবশ্যক হয় না তখন ঠোঁট দুইটি বুজিয়া যায়। আমরা যখন শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণ করি তখন প্রশ্বাসের সঙ্গে এক প্রকার বিষাক্ত বায়ু বাহির হইয়া যায়; তাহাকে অঙ্গারক বায়ু বলে। ইহা যদি পৃথিবীতে জমিতে থাকে তবে সকল জীবজন্তু অল্পদিনের মধ্যে এই বিষাক্ত বায়ু গ্রহণ করিয়া মরিয়া যাইতে পারে। বিধাতার করুণার কথা ভাবিয়া দেখ। যাহা জীবজন্তুর পক্ষে বিষ, গাছ তাহাই আহার করিয়া বাতাস পরিষ্কার করিয়া দেয়। গাছের পাতার উপর যখন সূর্যের আলোক পড়ে, তখন পাতাগুলি সূর্যের তেজের সাহায্যে অঙ্গারক বায়ু হইতে অঙ্গার বাহির করিয়া লয়। এই অঙ্গার গাছের শরীরে প্রবেশ করিয়া গাছকে বাড়াইতে থাকে। গাছেরা আলো চায়, আলো না হইলে ইহারা বাঁচিতে পারে না। গাছের সর্বপ্রধান চেষ্টা, কি করিয়া একটু আলো পাইবে। যদি জানালার কাছে টবে গাছ রাখ, তবে দেখিবে, সমস্ত ডালগুলি অন্ধকার দিক্‌ ছাড়িয়া আলোর দিকে যাইতেছে। বনে যাইয়া দেখিবে, গাছগুলি তাড়াতাড়ি মাথা তুলিয়া কে আগে আলোক পাইতে পারে, তাহার চেষ্টা করিতেছে। লতাগুলি ছায়াতে পড়িয়া থাকিলে আলোর অভাবে মরিয়া যাইবে, এইজন্য তাহারা গাছ জড়াইয়া ধরিয়া উপরের দিকে উঠিতে থাকে। এখন বুঝিতে পারিতেছ, আলোই জীবনের মূল। সূর্যের কিরণ শরীরে ধারণ করিয়াই গাছ বাড়িতে থাকে। গাছের শরীরে সূর্যের কিরণ আবদ্ধ হইয়া আছে। কাঠে আগুন ধরাইয়া দিলে যে আলো ও তাপ বাহির হয়, তাহা সূর্যেরই তেজ। গাছ ও তাহার শস্য আলো ধরিবার ফাঁদ। জন্তুরা গাছ খাইয়া প্রাণ ধারণ করে; গাছে যে সূর্যের তেজ আছে তাহা এই প্রকারে আবার জন্তুর শরীরে প্রবেশ করে। শস্য আহার না করিলে আমরাও বাঁচিতে পারিতাম না। ভাবিয়া দেখিতে গেলে, আমরাও আলো আহার করিয়া বাঁচিয়া আছি। কোনো কোনো গাছ এক বৎসরের পরেই মরিয়া যায়। সব গাছই মরিবার পূর্বে সন্তান রাখিয়া যাইতে ব্যগ্র হয়। বীজগুলিই গাছের সন্তান। বীজ রক্ষা করিবার জন্য ফুলের পাপড়ি দিয়া গাছ একটি ক্ষুদ্র ঘর প্রস্তুত করে। গাছ যখন ফুলে ঢাকিয়া থাকে, তখন কেমন সুন্দর দেখায়। মনে হয়, গাছ যেন হাসিতেছে। ফুলের ন্যায় সুন্দর জিনিস আর কি আছে? গাছ তো মাটি হইতে আহার লয়, আর বাতাস হইতে অঙ্গার আহরণ করে। এই সামান্য জিনিস দিয়া কি করিয়া এরূপ সুন্দর ফুল হইল? গল্পে শুনিয়াছি, স্পর্শমণি নামে এক প্রকার মণি আছে, তাহা ছোঁয়াইলে লোহা সোনা হইয়া যায়। আমার মনে হয়, মাতার স্নেহই সেই মণি। সন্তানের উপর ভালোবাসাটাই যেন ফুলে ফুটিয়া উঠে। ভালোবাসার স্পর্শেই যেন মাটি এবং অঙ্গার ফুল হইয়া যায়। গাছে ফুল ফুটিয়া রহিয়াছে দেখিলে আমাদের মনে কত আনন্দ হয়! বোধ হয় গাছেরও যেন কত আনন্দ! আনন্দের দিনে আমরা দশজনকে নিমন্ত্রণ করি। ফুল ফুটিলে গাছও তাহার বন্ধু-বান্ধবদিগকে ডাকিয়া আনে। গাছ যেন ডাকিয়া বলে ‘কোথায় আমার বন্ধু-বান্ধব, আজ আমার বাড়িতে এসো। যদি পথ ভুলিয়া যাও, বাড়ি যদি চিনিতে না পার, সেজন্য নানা রঙের ফুলের নিশান তুলিয়া দিয়াছি। এই রঙিন পাপড়িগুলি দূর হইতে দেখিতে পাইবে।’ মৌমাছি ও প্রজাপতির সহিত গাছের চিরকাল বন্ধুতা। তাহারা দলে দলে ফুল দেখিতে আসে। কোনো কোনো পতঙ্গ দিনের বেলায় পাখির ভয়ে বাহির হইতে পারে না। পাখি তাহাদিগকে দেখিলেই খাইয়া ফেলে। কাজেই রাত্রি না হইলে তাহারা বাহির হইতে পারে না। সন্ধ্যা হইলেই তাহাদিগকে আনিবার জন্য ফুল চারি দিকে সুগন্ধ বিস্তার করে। গাছ ফুলের মধ্যে মধু সঞ্চয় করিয়া রাখে। মৌমাছি ও প্রজাপতি সেই মধু পান করিয়া যায়। মৌমাছি আসে বলিয়া গাছেরও উপকার হয়। ফুলে তোমরা রেণু দেখিয়া থাকিবে। মৌমাছিরা এক ফুলের রেণু অন্য ফুলে লইয়া যায়। রেণু ভিন্ন বীজ পাকিতে পারে না। এইরূপে ফুলের মধ্যে বীজ পাকিয়া থাকে। শরীরের রস দিয়া গাছ বীজগুলিকে লালনপালন করিতে থাকে। নিজের জীবনের জন্য এখন আর মায়া করে না। তিল তিল করিয়া সন্তানের জন্য সমস্ত বিলাইয়া দেয়। যে শরীর কিছু দিন পূর্বে সতেজ ছিল, এখন তাহা একেবারে শুকাইয়া যাইতে থাকে। শরীরের ভার বহন করিবারও আর শক্তি থাকে না। আগে বাতাস হু-হু করিয়া পাতা নড়াইয়া চলিয়া যাইত। পাতাগুলি বাতাসের সঙ্গে খেলা করিত; ছোটো ডালগুলি তালে তালে নাচিত। এখন শুষ্ক গাছটি বাতাসের ভর সহিতে পারে না। বাতাসের এক-একটি ঝাপ্‌টা লাগিলে গাছটি থর-থর করিয়া কাঁপিতে থাকে। একটি একটি করিয়া ডালগুলি ভাঙিয়া পড়িতে থাকে। শেষে একদিন হঠাৎ গোড়া ভাঙিয়া গাছ মাটিতে পড়িয়া যায়। এইরূপে সন্তানের জন্য নিজের জীবন দিয়া গাছ মরিয়া যায়।
জগদীশচন্দ্র বসু
মন্ত্রের সাধন জগদীশচন্দ্র বসু প্রশান্ত মহাসাগরে অনেকগুলি দ্বীপ দেখা যায়। এই দ্বীপগুলি অতি ক্ষুদ্র প্রবাল-কীটের দেহ পিঞ্জরে নির্মিত হইয়াছে। বহু সহস্র বৎসরে অগণ্য কীট নিজ নিজ দেহ দ্বারা এই দ্বীপগুলি নির্মাণ করিয়াছে। আজকাল বিজ্ঞানের দ্বারা যে সব অসাধ্য সাধন হইতেছে, তাহাও বহু লোকের ক্ষুদ্র চেষ্টার ফলে। মানুষ পূর্বে একান্ত অসহায় ছিল। বুদ্ধি, চেষ্টা ও সহিষ্ণুতার বলে আজ সে পৃথিবীর রাজা হইয়াছে। কত কষ্ট ও কত চেষ্টার পর মনুষ্য বর্তমান উন্নতি লাভ করিয়াছে, তাহা আমরা মনেও করিতে পারি না। কে প্রথমে আগুন জ্বালাইতে শিখাইল, কে প্রথমে ধাতুর ব্যবহার শিক্ষা দিল, কে লেখার প্রথা আবিষ্কার করিল, তাহা আমরা কিছুই জানি না। এইমাত্র জানি যে, প্রথমে যাহারা কোনো নূতন প্রথা প্রচলন করিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন তাঁহারা পদে পদে অনেক বাধা পাইয়াছিলেন। অনেক সময় তাঁহাদিগকে অনেক নির্যাতনও সহ্য করিতে হইয়াছিল। এত কষ্টের পরেও অনেকে তাঁহাদের চেষ্টা সফল দেখিয়া যাইতে পারেন নাই। আপাততঃ মনে হয়, তাঁহাদের চেষ্টা একেবারে বৃথা গিয়াছে। কিন্তু কোনো চেষ্টাই একেবারে বিফল হয় না। আজ যাহা নিতান্ত ক্ষুদ্র মনে হয়, দুইদিন পরে তাহা হইতেই মহৎ ফল উৎপন্ন হইয়া থাকে। প্রবাল-দ্বীপ যেরূপ একটু একটু করিয়া আয়তনে বর্ধিত হয়, জ্ঞানরাজ্যও সেইরূপ তিল তিল করিয়া বাড়িতেছে। এ সম্বন্ধে দুই একটি ঘটনা বলিতেছি। একশত বৎসর পূর্বে ইটালি দেশে গ্যাল্‌ভানি নামে একজন অধ্যাপক দেখিতে পাইলেন যে, লোহা ও তামার তার দিয়া একটা মরা ব্যাঙকে স্পর্শ করিলে ব্যাঙটা নড়িয়া উঠে। তিনি অনেক বৎসর ধরিয়া এই ঘটনাটি অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। এরূপ সামান্য বিষয় লইয়া এত সময় অপব্যয় করিতে দেখিয়া, লোকে তাঁহাকে উপহাস করিত। তাঁহার নাম হইল, ‘ব্যাঙ-নাচানো’ অধ্যাপক। বন্ধুরা আসিয়া বলিতে লাগিলেন, ‘মরা ব্যাঙ যেন নড়িল, কিন্তু ইহাতে লাভ কি?’ কি লাভ? –সেই যৎসামান্য ঘটনা অবলম্বন করিয়া বিদ্যুতের বিবিধ গুণ সম্বন্ধে নূতন নূতন আবিষ্ক্রিয়া হইতে আরম্ভ হইল। এই একশত বৎসরের মধ্যে বিদ্যুৎ-শক্তির দ্বারা পৃথিবীর ইতিহাস যেন পরিবর্তিত হইয়াছে। বিদ্যুৎ দ্বারা পথ-ঘাট আলোকিত হইতেছে, গাড়ি চলিতেছে। মুহূর্তের মধ্যে পৃথিবীর এক প্রান্তের সংবাদ অন্য প্রান্তে পৌঁছিতেছে। সমস্ত পৃথিবীটি যেন আমাদের ঘরের কোণে আসিয়াছে– দূর আর দূর নাই। আমাদের স্বর বাড়ির এক দিক হইতে অন্য দিকে পৌঁছিত না। এখন বিদ্যুতের বলে সহস্র ক্রোশ দূরের বন্ধুর সহিত কথাবার্তা বলিতেছি। এমন–কি, এই শক্তির সাহায্যে দূর দেশে কি হইতেছে, তাহা পর্যন্ত দেখিতে পাইব। আমাদের দৃষ্টি ও আমাদের স্বর আর কোনো বাধা মানিবে না। মনুষ্য এ পর্যন্ত পৃথিবী এবং সমুদ্রের উপর আধিপত্য স্থাপন করিয়াছে; কিন্তু বহুদিন আকাশ জয় করিতে পারে নাই। ব্যোমযানে শূন্যে উঠা যায় বটে, কিন্তু বাতাসের প্রতিকূলে বেলুন চলিতে পারে না। আর এক অসুবিধা এই যে, বেলুন হইতে অল্প সময়ের মধ্যেই গ্যাস বাহির হইয়া যায়, এজন্য বেলুন অধিকক্ষণ শূন্যে থাকিতে পারে না। রেশমের আবরণ হইতে গ্যাস বাহির হইয়া যায় বলিয়া, বেলুন অধিকক্ষণ আকাশে থাকিতে পারে না। সোয়ার্জ নামে একজন জার্মান এই জন্য আলুমিনিয়াম ধাতুর এক বেলুন প্রস্তুত করেন। আলুমিনিয়াম কাগজের ন্যায় হালকা, অথচ ইহা ভেদ করিয়া গ্যাস বাহির হইতে পারে না। বেলুন যে ধাতু নির্মিত হইতে পারে, ইহা কেহ বিশ্বাস করিল না। সোয়ার্জ তাঁহার সমস্ত সম্পত্তি ব্যয় করিয়া পরীক্ষা করিতে লাগিলেন। বহু বৎসর নিষ্ফল চেষ্টার পর অবশেষে বেলুন নির্মিত হইল। বেলুন যাহাতে ইচ্ছানুক্রমে বাতাসের প্রতিকূলে যাইতে পারে সেজন্য একটি ক্ষুদ্র এঞ্জিন প্রস্তুত করিলেন। জাহাজে জলের নীচে স্ক্রু থাকে, এঞ্জিনে স্ক্রু ঘুরাইলে জল কাটিয়া জাহাজ চলিতে থাকে, সেইরূপ বাতাস কাটিয়া চলিবার জন্য একটি স্ক্রু নির্মাণ করিলেন। কিন্তু বেলুন নির্মিত হইবার অল্প পরেই সোয়ার্জের অকস্মাৎ মৃত্যু হইল। যাহার জন্য সমস্ত সম্পত্তি ও জীবন পণ করিয়াছিলেন তিনি তাহার পরীক্ষা করিতে পারিলেন না, এতদিনের চেষ্টা নিষ্ফল হইতে চলিল। সোয়ার্জের সহধর্মিণী তখন জার্মান গবর্নমেণ্টের নিকট বেলুন পরীক্ষা করিবার জন্য আবেদন করিলেন। জার্মান গবর্নমেণ্ট যুদ্ধে ব্যোমযান ব্যবহার করিবার জন্য ব্যগ্র ছিলেন, কেবল বিধবার দুঃখ কাহিনী শুনিয়া গবর্নমেণ্ট দয়া করিয়া বেলুনটা পরীক্ষা করিবার জন্য যুদ্ধ বিভাগের কতিপয় অধ্যক্ষকে নিযুক্ত করিলেন। নির্দিষ্ট দিবসে বেলুন দেখিবার জন্য বহু লোক আসিল। পরীক্ষকেরা আসিয়া দেখিলেন, বেলুনটি অতি প্রকাণ্ড এবং ধাতুনির্মিত বলিয়া রেশমের বেলুন অপেক্ষা অনেক ভারী। তারপর বেলুন চালাইবার জন্য এঞ্জিন ও অনেক কল বেলুনে সংযুক্ত রহিয়াছে। এরূপ প্রকাণ্ড জিনিস কি কখনও আকাশে উঠিতে পারে! পরীক্ষকেরা একে অন্যের সহিত বলাবলি করিতে লাগিলেন। এই অদ্ভুত কল কোনোদিনও পৃথিবী ছাড়িয়া উঠিতে পারিবে না। লোকটা মরিয়া গিয়াছে, আর তাহার বিধবা অনেক আশা করিয়া দেখাইতে আসিয়াছে; সুতরাং অন্ততঃ নামমাত্র পরীক্ষা করিতে হইবে। তবে বেলুনের সহিত অতগুলি কল ও জঞ্জাল রহিয়াছে, ওগুলি কাটিয়া বেলুনটিকে একটু পাতলা করিলে হয়তো ২/৪ হাত উঠিতে পারিবে। হায়! তাহাদিগকে বুঝাইবার কেহ ছিল না; বেলুন যিনি সৃষ্টি করিয়াছিলেন, পৃথিবীতে তাঁহার স্বর আর শুনা যাইবে না! যে সব কল অনাবশ্যক বলিয়া কাটিয়া ফেলা হইল তাহা আবিষ্কার করিতে অনেক বৎসর লাগিয়াছিল। ঐ সব কল দ্বারা বেলুনটিকে ইচ্ছানুসারে দক্ষিণে, বামে, ঊর্ধ্বে ও অধোদিকে চালিত করা যাইত। ইহার পর আর এক বাধা পড়িল। সোয়ার্জের অবর্তমানে বেলুন কে চালাইবে? অপরে কি করিয়া কলের ব্যবহার বুঝিবে? যে যাহা হউক, দর্শকদিগের মধ্যে একজন এঞ্জিনিয়ার সাধ্যমত কল চালাইতে সম্মত হইলেন। অদুরে বিধবা কলের প্রত্যেক স্পন্দন গণিতেছিলেন। বেলুন পৃথিবী হইতে উঠিতে পারিবে কি? মৃত কলের আশা ভরসা হয় এইবারে পূর্ণ হইবে, নতুবা একেবারে নির্মুল হইবে। কল চালানো হইল, অমনি বেলুন পৃথিবী ছাড়িয়া মহাবেগে শূন্যে উঠিল। তখন বাতাস বহিতেছিল, কিন্তু প্রতিকূল বাতাস কাটিয়া বেলুন ছুটিল। এতদিনে সোয়ার্জের চেষ্টা সফল হইল। কিন্তু লোকেরা যেসব কল অনাবশ্যক মনে করিয়াছিলেন, স্বল্পকালের মধ্যেই তাহার আবশ্যকতা প্রমাণিত হইল। বেলুন আকাশে উঠিল বটে, কিন্তু তাহা সামলাইবার কল না থাকাতে অল্পক্ষণ পরেই ভূমিতে পতিত হইয়া চূর্ণ হইয়া গেল। কিন্তু এই দুর্দশাতে সকলে বুঝিতে পারিলেন যে, সোয়ার্জ যে অভিপ্রায়ে বেলুন নির্মাণ করিয়াছিলেন তাহা কোনোদিন হয়তো সফল হইবে। দশ বৎসরের মধ্যেই তাহা সিদ্ধ হইয়াছে। জেপেলিন যে ব্যোমযান নির্মাণ করিয়াছিলেন তাহা যুদ্ধে ভীষণ অস্ত্র হইয়াছিল। যুদ্ধের পর এই ব্যোমযান আটলাণ্টিক মহাসাগর অনায়াসে পার হইয়াছে এবং তাহার পর হইতে ইয়োরোপ ও আমেরিকার ব্যবধান ঘুচিয়া গিয়াছে। ব্যোমযান গ্যাস ভরিয়া লঘু করিতে হয়, সুতরাং আকারে অতি বৃহৎ এবং নির্মাণ করা বহু ব্যয়সাপেক্ষ। পাখিরা কি সহজেই উড়িয়া বেড়ায়! মানুষ কি কখনও পাখির মতো উড়িতে পারিবে? বড়ো বড়ো পাখিগুলি কেমন দুই-চারিবার পাখা নাড়িয়া শূন্যে উঠে, তাহার পর পাখা বিস্তার করিয়া চক্রাকারে আকাশে ঘুরিতে থাকে। ঘুরিতে ঘুরিতে আকাশে মিলিয়া যায়। তোমাদের কি কখনও পাখির মতো উড়িবার ইচ্ছা হয় নাই? জার্মানি দেশে লিলিয়েনথাল মনে করিলেন, আমরা কেন পাখির মতো আকাশে ভ্রমণ করিতে পারিব না? তাহার পর পরীক্ষা করিতে আরম্ভ করিলেন। তিনি জানিতেন, এই বিদ্যা সাধন করিতে অনেক দিন লাগিবে। শিশু যেরূপ একটু একটু করিয়া অনেক চেষ্টায় হাঁটিতে শিখে, তাঁহাকেও সেইরূপ করিয়া উড়িতে শিখিতে হইবে। কিন্তু শিশু যেরূপ পড়িয়া গেলে আবার উঠিতে চেষ্টা করে, আকাশ হইতে পড়িয়া গেলে আর তো উঠিবার সাধ্য থাকিবে না, মৃত্যু নিশ্চয়। এত বিপদ জানিয়াও তিনি পরীক্ষা হইতে বিরত হইলেন না। অনেক পরীক্ষার পর নানাপ্রকার পাখা প্রস্তুত করিলেন এবং সেগুলি বাহুতে বাঁধিয়া পাহাড় হইতে ঝাঁপ দিয়া, পাখায় ভর করিয়া নীচে নামিতে লাগিলেন। একবার তাঁহার মনে হইল যে, দুইখানা পাখার পরিবর্তে যদি অধিক সংখ্যক পাখা ব্যবহার করা হয় তাহা হইলে হয়তো উড়িবার বেশি সুবিধা হইতে পারে। চেষ্টা করিয়া দেখিলেন তাহাই ঠিক। ত্রিশ বৎসর পর্যন্ত অতি সাবধানে তিনি এই সব পরীক্ষা করিতেছিলেন। জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয় গিয়াছে, এজন্য তাঁহার কার্য শেষ করিতে তিনি অত্যন্ত উৎসুক হইলেন। এখন যে কল প্রস্তুত করিলেন, তাড়াতাড়িতে তাহা পূর্বের মতো দৃঢ় হইল না। তিনি সেই অসম্পূর্ণ কল লইয়াই উড়িতে চেষ্টা করিলেন। এবার অতি সহজেই বাতাস কাটিয়া যাইতেছিলেন, দুর্ভাগ্যক্রমে হঠাৎ বাতাসের ঝাপ্‌টা আসিয়া উপরের একখানা পাখা ভাঙিয়া দিল। এই দুর্ঘটনায় তিনি প্রাণ হারাইলেন। কিন্তু তিনি পরীক্ষা দ্বারা যে সব নূতন তত্ত্ব আবিষ্কার করিলেন তাহা পৃথিবীর সম্পত্তি হইয়া রহিল। তাঁহার আবিষ্কৃত তত্ত্বের সাহায্যে পরে উড়িবার কল নির্মাণ করা সম্ভব হইয়াছে। মার্কিন দেশে অধ্যাপক ল্যাঙলি পাখা সংযুক্ত উড়িবার-কল প্রস্তুত করিলেন; তাহাতে অতি হালকা একখানা এঞ্জিন সংযুক্ত ছিল। পরীক্ষার দিন অনেক লোক দেখিতে আসিয়াছিল। কিন্তু কর্মকারের শৈথিল্যবশতঃ একটি স্কু ঢিলা হইয়াছিল। এঞ্জিন চালাইবার পর কল আকাশে উঠিয়া চক্রাকারে ঘুরিতে লাগিল। এমন সময় ঢিলা স্ক্রুটি খুলিয়া গেল এবং কলটি নদীগর্ভে পতিত হইল। এই বিফলতার দুঃখে ল্যাঙলি ভগ্নহৃদয়ে মৃত্যুগ্রস্ত হইয়াছিলেন। যাঁহারা ভীরু তাঁহারাই বহু ব্যর্থ সাধনা ও মৃত্যুভয়ে পরাঙ্মুখ হইয়া থাকেন। বীর পুরুষেরাই নির্ভীক চিত্তে মৃত্যুভয়ের অতীত হইতে সমর্থ হন। ল্যাঙলির মৃত্যুর পর তাঁহারই স্বদেশী উইলবার রাইট উড়িবার-কল লইয়া পুনরায় পরীক্ষা আরম্ভ করিলেন। উড়িবার সময় একবার কল থামিয়া যায় এবং আকাশ হইতে পতিত হইয়া রাইটের একখানা পা ভাঙিয়া যায়। ইহাতেও ভীত না হইয়া পুনরায় পরীক্ষা আরম্ভ করিলেন এবং সেই চেষ্টার ফলে মানুষ গগনবিহারী হইয়া নীলাকাশে তাহার সাম্রাজ্য বিস্তার করিতে সমর্থ হইয়াছে।
জগদীশচন্দ্র বসু
অদৃশ্য আলোক জগদীশচন্দ্র বসু সেতারের তার অঙ্গুলিতাড়নে ঝংকার দিয়া উঠে। দেখা যায়, তার কাঁপিতেছে। সেই কম্পনে বায়ুরাশিতে অদৃশ্য ঢেউ উৎপন্ন হয় এবং তাহার আঘাতে কর্ণেন্দ্রিয়ে সুর উপলব্ধি হয়। এইরূপে তিনের সাহায্যে এক স্থান হইতে অন্য স্থানে সংবাদ প্রেরিত ও উপলব্ধ হইয়া থাকে– প্রথমতঃ শব্দের উৎস ঐ কম্পিত তার, দ্বিতীয়তঃ পরিবাহক বায়ু এবং তৃতীয়তঃ শব্দবোধক কর্ণেন্দ্রিয়। সেতারের তার যতই ছোটো করা যায়, সুর ততই উচ্চ হইতে উচ্চতর সপ্তমে উঠিয়া থাকে। এইরূপে বায়ুস্পন্দন প্রতি সেকেণ্ডে ৩০,০০০ বার হইলে অসহ্য উচ্চ সুর শোনা যায়। তার আরও খাটো করিলে সুর আর শুনিতে পাই না। তার তখনও কম্পিত হইতেছে, কিন্তু শ্রবণেন্দ্রিয় সেই অতি উচ্চ সুর উপলব্ধি করিতে পারে না। শ্রবণ করিবার উপরের দিকে যেরূপ এক সীমা আছে, নীচের দিকেও সেইরূপ। স্থুল তার কিংবা ইস্পাত আঘাত করিলে অতি ধীর স্পন্দন দেখিতে পাওয়া যায়, কিন্তু কোনো শব্দ শোনা যায় না। কম্পন-সংখ্যা ১৬ হইতে ৩০,০০০ পর্যন্ত হইলে তাহা শ্রুত হয়; অর্থাৎ আমাদের শ্রবণশক্তি একাদশ সপ্তকের মধ্যে আবদ্ধ। কর্ণেন্দ্রিয়ের অসম্পূর্ণতা হেতু অনেক সুর আমাদের নিকট অশব্দ। বায়ুরাশির কম্পনে যেরূপ শব্দ উৎপন্ন হয়, আকাশ স্পন্দনেও সেইরূপ আলো উৎপন্ন হইয়া থাকে। শ্রবণেন্দ্রিয়ের অসম্পূর্ণতা হেতু একাদশ সপ্তক সুর শুনিতে পাই। কিন্তু দর্শনেন্দ্রিয়ের অসম্পূর্ণতা আরও অধিক; আকাশের অগণিত সুরের মধ্যে এক সপ্তক সুরমাত্র দেখিতে পাই। আকাশস্পন্দন প্রতি সেকেণ্ডে চারি শত লক্ষ কোটি বার হইলে চক্ষু তাহা রক্তিম আলো বলিয়া উপলব্ধি করে; কম্পন-সংখ্যা দ্বিগুণিত হইলে বেগুনি রঙ দেখিতে পাই। পীত, সবুজ ও নীলালোক এই এক সপ্তকের অন্তর্ভুক্ত। কম্পন-সংখ্যা চারি শত লক্ষ কোটির ঊর্ধ্বে উঠিলে চক্ষু পরাস্ত হয় এবং দৃশ্য তখন অদৃশ্যে মিলাইয়া যায়। আকাশ-স্পন্দনেই আলোর উৎপত্তি, তাহা দৃশ্যই হউক অথবা অদৃশ্যই হউক। এখন প্রশ্ন হইতে পারে যে, এই অদৃশ্য রশ্মি কি করিয়া ধরা যাইতে পারে, আর এই রশ্মি যে আলো তাহার প্রমাণ কি? এ বিষয়ের পরীক্ষা বর্ণনা করিব। জার্মান অধ্যাপক হার্টজ সর্বপ্রথমে বৈদ্যুতিক উপায়ে আকাশে ঊর্মি উৎপাদন করিয়াছিলেন। তবে তাঁহার ঢেউগুলি অতি বৃহদাকার বলিয়া সরল রেখায় ধাবিত না হইয়া বক্র হইয়া যাইত। দৃশ্য আলোক-রশ্মির সম্মুখে একখানি ধাতু ফলক ধরিলে পশ্চাতে ছায়া পড়ে; কিন্তু আকাশের বৃহদাকার ঢেউগুলি ঘুরিয়া বাধার পশ্চাতে পৌঁছিয়া থাকে। জলের বৃহৎ ঊর্মির সম্মুখে উপলখণ্ড ধরিলে এইরূপ হইতে দেখা যায়। দৃশ্য ও অদৃশ্য আলোর প্রকৃতি যে একই তাহা সূক্ষ্মরূপে প্রমাণ করিতে হইলে অদৃশ্য আলোর ঊর্মি খর্ব করা আবশ্যক। আমি যে কল নির্মাণ করিয়াছিলাম তাহা হইতে উৎপন্ন আকাশোর্মির দৈর্ঘ্য এক ইঞ্চির ছয় ভাগের এক ভাগ মাত্র। এই কলে একটি ক্ষুদ্র লণ্ঠনের ভিতরে তড়িতোর্মি উৎপন্ন হয়। এক দিকে একটি খোলা নল; তাহার মধ্য দিয়া অদৃশ্য আলো বাহির হয়। এই আলো আমরা দেখিতে পাই না, হয়তো অন্য কোনো জীবে দেখিতে পায়। পরীক্ষা করিয়া দেখিয়াছি যে, এই আলোকে উদ্ভিদ্‌ উত্তেজিত হইয়া থাকে। অদৃশ্য আলো দেখিবার জন্য কৃত্রিম চক্ষু নির্মাণ করা আবশ্যক। আমাদের চক্ষুর পশ্চাতে স্নায়ু-নির্মিত একখানি পর্দা আছে; তাহার উপর আলো পতিত হইলে স্নায়ুসূত্র দিয়া উত্তেজনা-প্রবাহ মস্তিষ্কের বিশেষ অংশকে আলোড়িত করে এবং সেই আলোড়ন আলো বলিয়া অনুভব করি। কৃত্রিম চক্ষুর গঠন খানিকটা ঐরূপ। দুইখানি ধাতুখণ্ড পরস্পরের সহিত স্পর্শ করিয়া আছে। সংযোগস্থলে অদৃশ্য আলো পতিত হইলে সহসা আণবিক পরিবর্তন ঘটিয়া থাকে এবং তাহার ফলে বিদ্যুৎস্রোত বহিয়া চুম্বকের কাঁটা নাড়িয়া দেয়। বোবা যেরূপ হাত নাড়িয়া সংকেত করে, অদৃশ্য আলো দেখিতে পাইলে কৃত্রিম চক্ষুও সেইরূপ কাঁটা নাড়িয়া আলোর উপলব্ধি জ্ঞাপন করে।
জগদীশচন্দ্র বসু
আলোর সাধারণ প্রকৃতি জগদীশচন্দ্র বসু এখন দেখা যাউক, দৃশ্য এবং অদৃশ্য আলোকের প্রকৃতি একবিধ অথবা বিভিন্ন। দৃশ্য আলোকের প্রকৃতি এই যে– ১. ইহা সরল রেখায় ধাবিত হয়। ২. ধাতুনির্মিত দর্পণে পতিত হইলে আলো প্রতিহত হইয়া ফিরিয়া আসে। রশ্মি প্রতিফলিত হইবারও একটা বিশেষ নিয়ম আছে। ৩. আলোর আঘাতে আণবিক পরিবর্তন ঘটিয়া থাকে। সেইজন্য আলো-আহত পদার্থের স্বাভাবিক গুণ পরিবর্তিত হয়। ফোটোগ্রাফের প্লেটে যে ছবি পড়ে তাহাতে রাসায়নিক পরিবর্তন ঘটে এবং ডেভেলপার ঢালিলে ছবি ফুটিয়া উঠে। ৪. সব আলোর রঙ এক নহে; কোনোটা আলো লাল, কোনোটা পীত, কোনোটা সবুজ এবং কোনোটা নীল। বিভিন্ন পদার্থ নানা রঙের পক্ষে স্বচ্ছ কিংবা অস্বচ্ছ। ৫. আলো বায়ু হইতে অন্য কোনো স্বচ্ছ পদার্থের উপর পতিত হইলে বক্রীভূত হয়। আলোর রশ্মি ত্রিকোণ কাচের উপর ফেলিলে ইহা স্পষ্টত দেখা যায়। কাচ-বর্তুলের ভিতর দিয়া আলো অক্ষীণভাবে দূরে প্রেরণ করা যাইতে পারে। ৬. আলোর ঢেউয়ে সচরাচর কোনো শৃঙ্খলা নাই; উহা সর্বমুখী; অর্থাৎ কখনও ঊর্ধ্বঃ কখনও বা দক্ষিণে বামে স্পন্দিত হয়। স্ফটিকজাতীয় পদার্থ দ্বারা আলোক-রশ্মির স্পন্দন শৃঙ্খলিত করা যাইতে পারে; তখন স্পন্দন বহুমুখী না হইয়া একমুখী হয়। একমুখী আলোর বিশেষ ধর্ম পরে বলিব। দৃশ্য ও অদৃশ্য আলোর প্রকৃতি যে একই রূপ, এক্ষণে সেই পরীক্ষা বর্ণনা করিব। প্রথমতঃ, অদৃশ্য আলোক যে সোজা পথে চলে তাহার প্রমাণ এই যে, বিদ্যুতোর্মি বাহির হইবার জন্য লণ্ঠনে যে নল আছে সেই নলের সম্মুখে সোজা লাইনে কৃত্রিম চক্ষু ধরিলে কাঁটা নাড়িয়া উঠে। চক্ষুটিকে এক পাশে ধরিলে কোনো উত্তেজনার চিহ্ন দেখা যায় না। দর্পণে যেরূপ দৃশ্য আলো প্রতিহত হইয়া ফিরিয়া আসে এবং সেই প্রত্যাবর্তন যে নিয়মাধীন, অদৃশ্য আলোকও সেইরূপে এবং সেই নিয়মে প্রতিহত হইয়া প্রত্যাবর্তন করে। দৃশ্য আলোর আঘাতে আণবিক পরিবর্তন ঘটিয়া থাকে। অদৃশ্য আলোকও যে আণবিক পরিবর্তন ঘটায় তাহা পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণ করিতে সমর্থ হইয়াছি।
জগদীশচন্দ্র বসু
আলোর বিবিধ বর্ণ জগদীশচন্দ্র বসু পূর্বে বলিয়াছি যে, দৃশ্য আলোক নানা বর্ণের। অনুভুতির দ্বারা বর্ণের বিভিন্নতা সহজেই করিতে পারি; কিন্তু বর্ণের বিভিন্নতা অনেকেই ধরিতে পারেন না। তাঁহারা বর্ণ সম্বন্ধে অন্ধ। বর্ণের বিভিন্নতা অন্য উপায়ে ধরা যাইতে পারে; সে বিষয় পরে বলিব। এইখানে বলা আবশ্যক যে, মানুষের দৃষ্টি-সীমার ক্রমবিকাশ হইতেছে। বহু পূর্বপুরুষদের বর্ণজ্ঞান সংকীর্ণ ছিল, তাহা অন্ততঃ এক দিকে প্রসারিত হইয়াছে। আর অন্য দিকেও কোনোদিন প্রসারিত হইবে। তাহা হইলে এখন যাহা অদৃশ্য তখন তাহা দৃশ্যের মধ্যে আসিবে। সে যাহা হউক, অদৃশ্য আলোর রঙ সম্বন্ধে কয়েকটি অদ্ভুত পরীক্ষা বর্ণনা করিব। জানালার কাচের কোনো বিশেষ রঙ নাই, সূর্যের আলো উহার ভিতর দিয়া অবাধে চলিয়া যায়। সুতরাং দৃশ্য আলোর পক্ষে কাচ স্বচ্ছ, জলও স্বচ্ছ। কিন্তু ইট-পাটকেল অস্বচ্ছ, আলকাতরা তদপেক্ষা অস্বচ্ছ। দৃশ্য আলোকের কথা বলিলাম। অদৃশ্য আলোকের সম্মুখে জানালার কাচ ধরিলে তাহার ভিতর দিয়া এইরূপ আলো সহজেই চলিয়া যায়। কিন্তু জলের গেলাস সম্মুখে ধরিলে অদৃশ্য আলো একেবারে বন্ধ হইয়া যায়। কিমাশ্চর্যমতঃপরম্‌! তদপেক্ষাও আশ্চর্যের বিষয় আছে। ইট-পাটকেল, যাহা অস্বচ্ছ বলিয়া মনে করিতাম তাহা অদৃশ্য আলোকের পক্ষে স্বচ্ছ। আর আলকাতরা? ইহা জানালার কাচ অপেক্ষাও স্বচ্ছ! কোথায় এক অদ্ভুত দেশের কথা পড়িয়াছিলাম; সে দেশে জলাশয় হইতে মৎস্যেরা ডাঙায় ছিপ ফেলিয়া মানুষ শিকার করে। অদৃশ্য আলোকের কার্যও যেন অনেকটা সেইরূপই অদ্ভুত হইবে। কিন্তু বস্তুতঃ তাহা নহে। দৃশ্য আলোকেও এরূপ আশ্চর্য ঘটনা দেখিয়াছি; তাহাতে অভ্যস্ত বলিয়া বিস্মিত হই না। সম্মুখের সাদা কাগজের উপর দুইটি বিভিন্ন আলো-রেখা পতিত হইয়াছে; একটি লাল আর একটি সবুজ। মাঝখানে জানালার কাচ ধরিলে উভয় আলোই অবাধে ভেদ করিয়া যায়। এবার মাঝখানে লাল কাচ ধরিলাম; লাল আলো অবাধে যাইতেছে, কিন্তু সবুজ আলো বন্ধ হইল। সবুজ কাচ ধরিলে সবুজ আলো বাধা পাইবে না; কিন্তু লাল আলো বন্ধ হইবে। ইহার কারণ এই যে, ১. সব আলো এক বর্ণের নহে; ২. কোনো পদার্থ এক আলোর পক্ষে স্বচ্ছ হইতে পারে, কিন্তু অন্য আলোর পক্ষে অস্বচ্ছ। যদি বর্ণজ্ঞান না থাকিত তাহা হইলেও একই পদার্থের ভিতর দিয়া এক আলো যাইতেছে এবং অন্য আলো যাইতেছে না দেখিয়া নিশ্চয়রূপে বলিতে পারিতাম যে, দুইটি আলো বিভিন্ন বর্ণের। আলকাতরা দৃশ্য আলোর পক্ষে অস্বচ্ছ এবং অদৃশ্য আলোর পক্ষে স্বচ্ছ, ইহা জানিয়া অদৃশ্য আলোক যে অন্য বর্ণের তাহা প্রমাণিত হয়। আমাদের দৃষ্টিশক্তি প্রসারিত হইলে ইন্দ্রধনু অপেক্ষাও কল্পনাতীত অনেক নূতন বর্ণের অস্তি দেখিতে পাইতাম। তাহাতেও কি আমাদের বর্ণের তৃষ্ণা মিটিত?
জগদীশচন্দ্র বসু
মৃত্তিকা-বর্তুল ও কাচ-বর্তুল জগদীশচন্দ্র বসু পূর্বে বলিয়াছি যে, আলো এক স্বচ্ছ বস্তু হইতে অন্য স্বচ্ছ বস্তুর উপর পতিত হইলে বক্রীভূত হয়। ত্রিকোণ কাচ কিংবা ত্রিকোণ ইষ্টকখণ্ড দ্বারা দৃশ্য ও অদৃশ্য আলো যে একই নিয়মের অধীন, তাহা প্রমাণ করা যায়। কাচ-বর্তুল সাহায্যে দৃশ্য আলোক যেরূপ বহুদূরে অক্ষীণভাবে প্রেরণ করা যাইতে পারে, অদৃশ্য আলোকও সেইরূপে প্রেরণ করা যায়। তবে এজন্য বহুমূল্য কাচ-বর্তুল নিষ্প্রয়োজন, ইট-পাটকেল দিয়াও এইরূপ বর্তুল নির্মিত হইতে পারে। প্রেসিডেন্সি কলেজের সম্মুখে যে ইষ্টনির্মিত গোল স্তম্ভ আছে তাহা দিয়া অদৃশ্য আলো দূরে প্রেরণ করিতে সমর্থ হইয়াছি। দৃশ্য আলো সংহত করিবার পক্ষে হীরকখণ্ডের অদ্ভুত ক্ষমতা। বস্তুবিশেষের আলো সংহত করিবার ক্ষমতা যেরূপ অধিক, আলো বিকিরণ করিবার ক্ষমতাও সেই পরিমাণে বহুল হইয়া থাকে। এই কারণেই হীরকের এত মূল্য। আশ্চর্যের বিষয় এই যে, চীনা-বাসনের অদৃশ্য আলোক সংহত করিবার ক্ষমতা হীরক অপেক্ষাও অনেকগুণ অধিক। সুতরাং যদি কোনোদিন আমাদের দৃষ্টিশক্তি প্রসারিত হইয়া রক্তিম বর্ণের সীমা পার হয় তবে হীরক তুচ্ছ হইবে এবং চীনা-বাসনের মূল্য অসম্ভবরূপে বাড়িবে। প্রথমবার বিলাত যাইবার সময় অভ্যস্ত কুসংস্কার হেতু চীনা-বাসন স্পর্শ করিতে ঘৃণা হইত। বিলাতে সম্ভ্রান্ত ভবনে নিমন্ত্রিত হইয়া দেখিলাম যে, দেওয়ালে বহুবিধ চীনা- বাসন সাজানো রহিয়াছে। ইহার এমন কি মূল্য যে, এত যত্ন? প্রথমে বুঝিতে পারি নাই, এখন বুঝিয়াছি ইংরেজ ব্যবসাদার। অদৃশ্য আলো দৃশ্য হইলে চীনা-বাসন অমূল্য হইয়া যাইবে। তখন তাহার তুলনায় হীরক কোথায় লাগে! সেদিন শৌখিন রমণীগণ হীরকমালা প্রত্যাখ্যান করিয়া পেয়ালাপিরিচের মালা সগর্বে পরিধান করিবেন এবং অচীনধারিণী নারীদিগকে অবজ্ঞার চক্ষে দেখিবেন।
জগদীশচন্দ্র বসু
সর্বমুখী এবং একমুখী আলো জগদীশচন্দ্র বসু প্রদীপের অথবা সূর্যের আলো সর্বমুখী; অর্থাং স্পন্দন একবার ঊর্ধ্বাধঃ অন্যবার দক্ষিণে বামে হইয়া থাকে। লঙ্কাদ্বীপের টুর্মালিন স্ফটিকের ভিতর দিয়া আলো প্রেরণ করিলে আলো একমুখী হইয়া যায়। দুইখানি টুর্মালিন সমান্তরালভাবে ধরিলে আলো দুইয়ের ভিতর দিয়া ভেদ করিয়া চলিয়া যায়; কিন্তু একখানি অন্যখানির উপর আড়ভাবে ধরিলে আলো উভয়ের ভিতর দিয়া যাইতে পারে না। অদৃশ্য আলোকও এইরূপে একমুখী করা যাইতে পারে। কিরূপে তাহা হয় বুঝাইতে হইলে নীতি-কথার বক ও শৃগালের গল্প স্মরণ করা আবশ্যক। বক শৃগালকে নিমন্ত্রণ করিয়া পানীয় দ্রব্য গ্রহণ করিবার জন্য বারংবার অনুরোধ করিল। লম্বা বোতলে পানীয় দ্রব্য রক্ষিত ছিল। বক লম্বা ঠোঁট দিয়া অনায়াসে পান করিল; কিন্তু শৃগাল কেবলমাত্র সৃক্কনী লেহন করিতে সমর্থ হইয়াছিল। পরের দিন শৃগাল ইহার প্রতিশোধ লইয়াছিল। পানীয় দ্রব্য থালাতে দেওয়া হইয়াছিল। বক ঠোঁট কাৎ করিয়াও কোনো প্রকারেই পানীয় শোষণ করিতে সমর্থ হয় নাই। বোতল ও থালার দ্বারা যেরূপে লম্বা ঠোঁট এবং চেপ্‌টা মুখের বিভিন্নতা বুঝা যায়, সেইরূপ একমুখী আলোকের পার্থক্য ধরা যাইতে পারে, তাহা লম্বা কিংবা চেপ্‌টা-ঊর্ধ্বধঃ অথবা এ-পাশ ও-পাশ।
জগদীশচন্দ্র বসু
বক-কচ্ছপ সংবাদ জগদীশচন্দ্র বসু মনে কর, দুই দল জন্তু মাঠে চরিতেছে– লম্বা জানোয়ার বক ও চেপ্‌টা জীব কচ্ছপ। সর্বমুখী অদৃশ্য আলোকও এইরূপ দুই প্রকারের স্পন্দনসঞ্জাত। দুই প্রকারের জীবদিগকে বাছিবার সহজ উপায়, সম্মুখে লোহার গরাদ খাড়াভাবে রাখিয়া দেওয়া। জন্তুদিগকে তাড়া করিলে লম্বা বক সহজেই পার হইয়া যাইবে; কিন্তু চাপ্‌টা কচ্ছপ গরাদের এ-পাশে থাকিবে। প্রথম বাধা পার হইবার পর বকবৃন্দের সম্মুখে যদি দ্বিতীয় গরাদ সমান্তরালভাবে ধরা যায়, তাহা হইলেও বক তাহা দিয়া গলিয়া যাইবে। কিন্তু দ্বিতীয় গরাদখানাকে যদি আড়ভাবে ধরা যায়, তাহা হইলে বক আটকাইয়া থাকিবে। এইরূপে একটি গরাদ অদৃশ্য আলোর সম্মুখে ধরিলে আলো একমুখী হইবে। দ্বিতীয় গরাদ সমান্তরালভাবে ধরিলে আলো উহার ভিতর দিয়াও যাইবে, তখন দ্বিতীয় গরাদটা আলোর পক্ষে স্বচ্ছ হইবে। কিন্তু দ্বিতীয় গরাদটা আড়ভাবে ধরিলে আলো যাইতে পারিবে না, তখন গরাদটা অস্বচ্ছ বলিয়া মনে হইবে। যদি আলো একমুখী হয় তাহা হইলে কোনো কোনো বস্তু একভাবে ধরিলে অস্বচ্ছ হইবে; কিন্তু ৯০ ডিগ্রি ঘুরাইয়া ধরিলে তাহার ভিতর দিয়া আলো যাইতে পারিবে। পুস্তকের পাতাগুলি গরাদের মতো সজ্জিত। বিলাতে রয়্যাল ইন্‌স্টিটিউসনে বক্তৃতা করিবার সময় টেবিলের উপর একখানা রেলের টাইম-টেব্‌ল, অর্থাৎ ব্রাড্‌শ ছিল, তাহাতে ১০ হাজার ট্রেনের সময়, রেল-ভাড়া এবং অন্যান্য বিষয় ক্ষুদ্র অক্ষরে মুদ্রিত ছিল। উহা এরূপ জটিল যে, কাহারও সাধ্য নাই ইহা হইতে জ্ঞাতব্য বিষয় বাহির করিতে পারে। আমি পুস্তকের তমসাচ্ছন্নতা কিছু না মনে করিয়া পরীক্ষার সময় দেখাইয়াছিলাম যে, বইখানাকে এরূপ করিয়া ধরিলে ইহার ভিতর দিয়া আলো যাইতে পারে না; কিন্তু ৯০ ডিগ্রি ঘুরাইয়া ধরিলে পুস্তকখানা একেবারে স্বচ্ছ হইয়া যায়। পরীক্ষা দেখাইবামাত্র হাসির রোলে হল্‌ প্রতিধ্বনিত হইল। প্রথম প্রথম রহস্য বুঝিতে পারি নাই। পরে বুঝিয়াছিলাম। লর্ড রেলী আসিয়া বলিলেন যে, ব্রাড্‌শর ভিতর দিয়া এ পর্যন্ত কেহ আলোক দেখিতে পায় নাই। কি করিয়া ধরিলে আলো দেখিতে পাওয়া যায়, ইহা শিখাইলে জগৎবাসী আপনার নিকট চিরকৃতজ্ঞ রহিবে। আমার বৈজ্ঞানিক লেখা পড়িয়া কেহ কেহ স্তম্ভিত হইবেন, দন্তস্ফুট অথবা চক্ষুস্ফট করিতে সমর্থ হইবেন না। তাহা হইলে বইখানাকে ৯০ ডিগ্রি ঘুরাইয়া ধরিলেই সব তথ্য একবারে বিশদ হইবে। আলো একমুখী করিবার অন্য এক উপায় আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইয়াছিলাম। যদিও এলোমেলোভাবে আকাশস্পন্দন রমণীর কেশগুচ্ছ প্রবেশ করে, তথাপি বাহির হইবার সময় একবারে শৃঙ্খলিত হইয়া থাকে। বিলাতের নরসুন্দরদের দোকান হইতে বহু জাতির কেশগুচ্ছ সংগ্রহ করিয়াছিলাম। তাহার মধ্যে ফরাসী মহিলার নিবিড় কৃষ্ণকুন্তল বিশেষ কার্যকরী। এ বিষয়ে জার্মান মহিলার স্বর্ণাভ কুন্তল অনেকাংশে হীন। প্যারিসে যখন এই পরীক্ষা দেখাই তখন সমবেত ফরাসী পণ্ডিতমণ্ডলী এই নূতন তত্ত্ব দেখিয়া উল্লসিত হইয়াছিলেন। ইহাতে বৈরী জাতির উপর তাহাদের প্রাধান্য প্রমাণিত হইয়াছে, ইহার কোনো সন্দেহই রহিল না। বলা বাহুল্য, বার্লিনে এই পরীক্ষা প্রদর্শনে বিরত হইয়াছিলাম। যে সব পরীক্ষা বর্ণনা করিলাম তাহা হইতে দেখা যায় যে, দৃশ্য ও অদৃশ্য আলোর প্রস্তুতি একই. আমাদের দৃষ্টিশক্তির অসম্পূর্ণতা হেতু উহাদিগকে বিভিন্ন বলিয়া মনে করি।
জগদীশচন্দ্র বসু
তারহীন সংবাদ জগদীশচন্দ্র বসু অদৃশ্য আলোক ইট-পাটকেল, ঘর-বাড়ী ভেদ করিয়া অনায়াসেই চলিয়া যায়। সুতরাং ইহার সাহায্যে বিনা তারে সংবাদ প্রেরণ করা যাইতে পারে। ১৮৯৫ সালে কলিকাতা টাউনহলে এ সম্বন্ধে বিবিধ পরীক্ষা প্রদর্শন করিয়াছিলাম। বাংলার লেফ্‌টেন্যাণ্ট গবর্নর স্যার উইলিয়াম ম্যাকেঞ্জি উপস্থিত ছিলেন। বিদ্যুৎ-ঊর্মি তাঁহার বিশাল দেহ এবং আরও দুইটি রুদ্ধ কক্ষ ভেদ করিয়া তৃতীয় কক্ষে নানাপ্রকার তোলপাড় করিয়াছিল। একটা লোহার গোলা নিক্ষেপ করিল, পিস্তল আওয়াজ করিল এবং বারুদস্তূপ উড়াইয়া দিল। ১৯০৭ সালে মার্কনি তারহীন সংবাদ প্রেরণ করিবার পেটেন্ট গ্রহণ করেন। তাঁহার অত্যদ্ভুত অধ্যবসায় ও বিজ্ঞানের ব্যবহারিক উন্নতিসাধনে কৃতিত্বের দ্বারা পৃথিবীতে এক নূতন যুগ প্রবর্তিত হইয়াছে। পৃথিবীর ব্যবধান একেবারে ঘুচিয়াছে। পূর্বে দূর দেশে কেবল টেলিগ্রাফের সংবাদ প্রেরিত হইত, এখন বিনা তারে সর্বত্র সংবাদ পৌঁছিয়া থাকে। কেবল তাহাই নহে। মনুষ্যের কণ্ঠস্বরও বিনা তারে আকাশতরঙ্গ সাহায্যে সুদুরে শ্রুত হইতেছে। সেই স্বর সকলে শুনিতে পায় না, শুনিতে হইলে কর্ণ আকাশের সুরের সহিত মিলাইয়া লইতে হয়। এইরূপে পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত অহোরাত্রি কথাবার্তা চলিতেছে। কান পাতিয়া তবে একবার শোনা। ‘কোথা হইতে খবর পাঠাইতেছে?’ উত্তর-‘সমুদ্র-গর্ভে, তিন শত হাত নীচে ডুবিয়া আছি। টর্পিডো দিয়া তিনখানা রণতরী ডুবাইয়াছি, আর দুইখানার প্রতীক্ষায় আছি।’ আবার এ কি? একেবারে লক্ষ লক্ষ কামানের গর্জন শোনা যাইতেছে, অগ্ন্যুৎপাতে যেন মেদিনী বিদীর্ণ হইল। পরে জানিলাম মহাসাম্রাজ্য চূর্ণ হইয়াছে, কল্য হইতে পৃথিবীর ইতিহাস অন্যরকম হইবে। এই ভীষণ নিনাদের মধ্যেও মনুষ্য-কণ্ঠের কত মর্মবেদনাধ্বনি, কত মিনতি, কত জিজ্ঞাসা ও কত রকমের উত্তর শোনা যায়। ইহার মধ্যে কে একজন অবুঝের মতো বার বার একই নাম ধরিয়া ডাকিতেছে– ‘কোথায় তুমি– কোথায় তুমি? কোনো উত্তর আসিল না-সে আর এই পৃথিবীতে নাই। এইরূপ দূরদূরান্ত বাহিয়া আকাশের সুর ধ্বনিত হইতেছে। মনে কর, কোনো অদৃশ্য অঙ্গুলি বৈদ্যুতিক অর্গ্যানের বিবিধ স্টপ আঘাত করিতেছে। বাম দিকের স্টপে আঘাত করাতে এক সেকেণ্ডে একটি স্পন্দন হইল। অমনি শূন্যমার্গে বিদ্যুৎ-ঊর্মি ধাবিত হইল। কি প্রকাণ্ড সেই সহস্র ক্রোশব্যাপী ঢেউ! উহা অনায়াসে হিমাচল উল্লঙ্ঘন করিয়া এক সেকেণ্ডে পৃথিবী দশবার প্রদক্ষিণ করিল। এবার অদৃশ্য অঙ্গুলি দ্বিতীয় স্টপ আঘাত করিল। এইবার প্রতি সেকেণ্ডে আকাশ দশবার স্পন্দিত হইল। এইরূপে আকাশের সুর ঊর্ধ্ব হইতে ঊর্ধ্বতরে উঠিবে; স্পন্দনসংখ্যা এক হইতে দশ, শত, সহস্র, লক্ষ, কোটি গুণ বৃদ্ধি পাইবে। আকাশ-সাগরে নিমজ্জমান রহিয়া আমরা অগণিত ঊর্মি দ্বারা আহত হইব, কিন্তু ইহাতেও কোনো ইন্দ্রিয় জাগরিত হইবে না। আকাশ-স্পন্দন আরও ঊর্ধ্বে উঠুক তখন কিয়ৎক্ষণের জন্য তাপ অনুভূত হইবে। তাহার পর চক্ষু উত্তেজিত হইয়া রক্তিম, পীতাদি আলোক দেখিতে পাইবে। এই দৃশ্য আলোক এক সপ্তক গণ্ডীর মধ্যে আবদ্ধ। সুর আরও উচ্চে উঠিলে দৃষ্টিশক্তি পুনরায় পরাস্ত হইবে, অনুভূতি শক্তি আর জাগিবে না, ক্ষণিক আলোকের পরই অভেদ্য অন্ধকার। তবে তো আমরা এই অসীমের মধ্যে একেবারে দিশাহারা, কতটুকুই বা দেখিতে পাই? একান্তই অকিঞ্চিৎকর! অসীম জ্যোতির মধ্যে অন্ধবৎ ঘুরিতেছি এবং ভগ্ন দিক্‌-শলাকা লইয়া পাহাড় লঙ্ঘন করিতে প্রয়াস পাইয়াছি। হে অনন্ত পথের যাত্রী, কি সম্বল তোমার? সম্বল কিছুই নাই, আছে কেবল অন্ধ বিশ্বাস; যে বিশ্বাসবলে প্রবাল সমুদ্রগর্ভে দেহাস্থি দিয়া মহাদ্বীপ রচনা করিতেছে। জ্ঞান-সাম্রাজ্য এইরূপ অস্থিপাতে তিল তিল করিয়া বাড়িয়া উঠিতেছে। আঁধার লইয়া আরম্ভ, আঁধারেই শেষ, মাঝে দুই একটি ক্ষীণ আলো-রেখা দেখা যাইতেছে। মানুষের অধ্যবসায়-বলে ঘন কুয়াশা অপসারিত হইবে এবং একদিন বিশ্বজগৎ জ্যোতির্ময় হইয়া উঠিবে।
জগদীশচন্দ্র বসু
পলাতক তুফান জগদীশচন্দ্র বসু পলাতক তুফান বৈজ্ঞানিক রহস্য কয়েক বৎসর পূর্বে এক অত্যাশ্চর্য ভৌতিক কাণ্ড ঘটিয়াছিল। তাহা লইয়া অনেক আন্দোলন হইয়া গিয়াছে এবং এ বিষয়ে ইউরোপ এবং আমেরিকায় বিবিধ বৈজ্ঞানিক পত্রিকায় অনেক লেখালেখি চলিয়াছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কিছু মীমাংসা হয় নাই। ২৮শে সেপ্টেম্বর তারিখে কলিকাতার ইংরাজি সংবাদপত্রে সিমলা হইতে এক তারের সংবাদ প্রকাশ হয়– সিমলা, হাওয়া আপিস ২৭শে সেপ্টেম্বর। “বঙ্গোপসাগরে শীঘ্রই ঝড় হইবার সম্ভাবনা।” ২৯শে তারিখের কাগজে নিম্নলিখিত সংবাদ প্রকাশিত হইল– হাওয়া আপিস আলিপুর। “দুইদিনের মধ্যেই প্রচণ্ড ঝড় হইবে। ডায়মণ্ড-হারবারে এই মর্মে নিশান উত্থিত করা হইয়াছে।” ৩০শে তারিখের যে-খবর প্রকাশিত হইল তাহা অতি ভীতিজনক– “আধঘন্টার মধ্যে চাপমান যন্ত্র দুই ইঞ্চি নামিয়া গিয়াছে। আগামীকল্য ১০ ঘটিকার মধ্যে কলিকাতায় অতি প্রচণ্ড ঝড় হইবে; এরূপ তুফান বহু বৎসরের মধ্যে হয় নাই।” কলিকাতার অধিবাসীরা সেই রাত্রি কেহই নিদ্রা যায় নাই। আগামীকল্য কি হইবে তাহার জন্য সকলে ভীতচিত্তে প্রতীক্ষা করিতে লাগিল। ১লা অক্টোবর আকাশ ঘোর মেঘাচ্ছন্ন হইল। দুই-চার ফোঁটা বৃষ্টি পড়িতে লাগিল। সমস্ত দিন মেঘাবৃত ছিল, কিন্তু বৈকাল ৪ ঘটিকার সময় হঠাৎ আকাশ পরিষ্কার হইয়া গেল। ঝড়ের চিহ্নমাত্রও রহিল না। তার পরদিন হাওয়া আপিস খবরের কাগজে লিখিয়া পাঠাইলেন– “কলিকাতায় ঝড় হইবার কথা ছিল, বোধ হয় উপসাগরের কূলে প্রতিহত হইয়া ঝড় অন্য অভিমুখে চলিয়া গিয়াছে।” ঝড় কোন্‌ দিকে গিয়াছে তাহার অনুসন্ধানের জন্য দিক্‌দিগন্তরে লোক প্রেরিত হইল; কিন্তু তাহার কোন সন্ধান পাওয়া গেল না। তার পর সর্বপ্রধান ইংরাজী কাগজ লিখিলেন– এত-দিনে বুঝা গেল যে, বিজ্ঞান সর্বৈব মিথ্যা। অন্য কাগজে লেখা হইল, যদি তাহাই হয় তবে গরিব ট্যাক্সদাতাদিগকে পীড়ন করিয়া হাওয়া আপিসের ন্যায় অকর্মণ্য আপিস রাখিয়া লাভ কি? তখন বিবিধ সংবাদপত্র তারস্বরে বলিয়া উঠিলেন– উঠাইয়া দাও। গবর্নমেন্ট বিভ্রাটে পড়িলেন। অল্পদিন পূর্বে হাওয়া আপিসের জন্য লক্ষাধিক টাকার ব্যারোমিটার, থার্মোমিটার আনানো হইয়াছে। সেগুলি এখন ভাঙা শিশি-বোতলের মূল্যেও বিক্রয় হইবে না। আর হাওয়া আপিসের বড় সাহেবকে অন্য কি কার্যে নিয়োগ করা যাইতে পারে? গবর্নমেন্ট নিরূপায় হইয়া কলিকাতা মেডিক্যাল কলেজে লিখিয়া পাঠাইলেন– “আমরা ইচ্ছা করি ভেষজবিদ্যার এক নূতন অধ্যাপক নিযুক্ত হইবেন। তিনি বায়ুর চাপের সহিত মানুষের স্বাস্থ্যসম্বন্ধ বিষয়ে বক্তৃতা করবেন।” মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ লিখিয়া পাঠাইলেন– “উত্তম কথা, বায়ুর চাপ কমিলে ধমনী স্ফীত হইয়া উঠে, তাহাতে রক্ত সঞ্চালনবৃদ্ধি হয়। তাহাতে সচরাচর আমাদের যে স্বাস্থ্যভঙ্গ হইতে পারে তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। তবে কলিকাতাবাসীরা আপাতত বহুবিধ চাপের নিচে আছে: ১ম বায়ু ২য় ম্যালেরিয়া ৩য় পেটেন্ট ঔষধ ৪র্থ ইউনিভার্সিটি ৫ম ইনকম ট্যাক্স ৬ষ্ঠ মিউনিসিপাল ট্যাক্স প্রতি বর্গইঞ্চি ” ” ” ” “ ১৫ পাউণ্ড ২০    ” ৩০    ” ৫০    ” ৮০    ” ১ টন বায়ুর ২/১ ইঞ্চি চাপের ইতর বৃদ্ধি ‘বোঝার উপর শাকের আঁটি’ স্বরূপ হইবে। সুতরাং কলিকাতায় এই নূতন অধ্যাপনা আরম্ভ করিলে বিশেষ যে উপকার হইবে এরূপ বোধ হয় না। তবে সিমলা পাহাড়ে বায়ুর চাপ ও অন্যান্য চাপ অপেক্ষাকৃত কম। সেখানে উক্ত অধ্যাপক নিযুক্ত হইলে বিশেষ উপকার দর্শিতে পারে।” ইহার পর গবর্নমেন্ট নিরুত্তর হইলেন। হাওয়া আপিস এবারকার মতো অব্যাহতি পাইল। কিন্তু যে সমস্যা লইয়া এত গোল হইল তাহা পূরণ হইল না। একবার কোন বৈজ্ঞানিক বিলাতের ‘নেচার’ কাগজে লিখিয়াছিলেন বটে; তাঁহার থিয়োরি এই যে, কোন অদৃশ্য ধূমকেতুর আকর্ষণে আবর্তমান বায়ুরাশি ঊর্ধ্বে চলিয়া গিয়াছে। এসব অনুমান মাত্র। এখনও এ বিষয় লইয়া বৈজ্ঞানিক জগতে ঘোরতর আন্দোলন চলিতেছে। অক্সফোর্ডে যে ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশনের অধিবেশন হইয়াছিল তাহাতে এক অতিবিখ্যাত জার্মান অধ্যাপক ‘পলাতক তুফান’ সম্বন্ধে অতি পাণ্ডিত্যপূর্ণ প্রবন্ধ পাঠ করিয়া সমবেত বৈজ্ঞানিকমণ্ডলীর বিস্ময় উৎপাদন করিয়াছিলেন। প্রবন্ধারম্ভে অধ্যাপক বলিলেন, তুফান বায়ুমণ্ডলের আবর্তমাত্র। সর্বাগ্রে দেখা যাউক, কিরূপে বায়ুমণ্ডলের উৎপত্তি হইয়াছে। পৃথিবী যখন ফুটন্ত ধাতুপিণ্ডরূপে সূর্য হইতে ছুটিয়া আসিল তখন বায়ুর উৎপত্তি হয় নাই। কী করিয়া অম্লজান, দ্বম্লজান ও উদ্‌জানের উৎপত্তি হইল তাহা সৃষ্টির এক গভীর প্রহেলিকা! যবক্ষারজানের উৎপত্তি আরও বিস্ময়কর। ধরিয়া লওয়া যাউক, কোনপ্রকারে বায়ুরাশি উৎপন্ন হইয়াছে। গুরুতর সমস্যা এই যে, কী কারণে বায়ু শূন্যে মিলাইয়া যায় না। ইহার মূল কারণ পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তি। আপেক্ষিক গুরুত্ব অনুসারে পদার্থের উপর পৃথিবীর আকর্ষণ বেশি কিংবা কম। যাহা গুরু তাহার উপরেই টান বেশি এবং তাহা সেই পরিমাণে আবদ্ধ। হালকা জিনিসের উপর টান কম, তাহা অপেক্ষাকৃত উন্মুক্ত। এই কারণে তৈল ও জল মিশ্রিত করিলে লঘু তৈল উপরে উঠিয়া আসে। উদ্‌জান হালকা গ্যাস বলিয়া অনেক পরিমাণে উন্মুক্ত এবং উপরে উঠিয়া পলাইবার চেষ্টা করে; কিন্তু মাধ্যাকর্ষণের টান একেবারে এড়াইতে পারে না। আপেক্ষিক গুরুত্ব সম্বন্ধে যে বৈজ্ঞানিক সত্য বর্ণিত হইল তাহা- যে পৃথিবীর সর্বস্থানে প্রযোজ্য এ সম্বন্ধে সন্দেহ আছে; কারণ ইন্ডিয়া নামক দেশে যদিও পুরুষজাতি গুরু তথাপি তাহারা উন্মুক্ত, আর লঘু স্ত্রীজাতিই সেদেশে আবদ্ধ! সে যাহা হউক, পদার্থমাত্রেই মাধ্যাকর্ষণবলে ভূপৃষ্ঠে আবদ্ধ থাকে। পদার্থের মৃত্যুর পর স্বতন্ত্র কথা। মানুষ মরিয়া যখন ভূত হয় তখন তাহার উপর পৃথিবীর আর কোন কর্তৃত্ব থাকে না। কেহ কেহ বলেন, মরিয়াও নিষ্কৃতি নাই; কারণ ভূতদিগকেও থিয়োসফিক্যাল সোসাইটি আজ্ঞানুসারে চলাফেরা করিতে হয়। পদার্থেও পঞ্চত্বপ্রাপ্ত হইয়া থাকে– পদার্থ সম্বন্ধে পঞ্চত্ব কথা প্রয়োগ করা ভুল; কারণ রেডিয়ামের গুঁতা খাইয়া পদার্থ ত্রিত্ব প্রাপ্ত হয়, অর্থাৎ আলফা, বিটা ও গামা এই তিন ভূ-তে পরিণত হয়। এইরূপে পদার্থের অস্তিত্ব যখন লোপ হয় তখন অপদার্থ শূন্যে মিলিয়া যায়। কিন্তু যতদিন পার্থিব পদার্থ জীবিত থাকে ততদিন পৃথিবী ছাড়িয়া পলায়ন করিতে পারে না। যদিও অধ্যাপক মহাশয়, পদার্থ কেন পলায়ন করে না, এ সম্বন্ধে অকাট্য বৈজ্ঞানিক যুক্তি প্রয়োগ করিলেন, তথাপি তুফান কেন পলায়ন করিল, এ সম্বন্ধে কিছুই বলিলেন না। এই ঘটনার প্রকৃত তত্ত্ব পৃথিবীর মধ্যে একজন মাত্র জানে– সে আমি। পরের অধ্যায়ে ইহা বিস্তৃতরূপে বর্ণিত হইবে। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ গত বৎসর আমার বিষম জ্বর হইয়াছিল। প্রায় মাসেক কাল শয্যাগত ছিলাম। ডাক্তার বলিলেনে– সমুদ্রযাত্রা করিতে হইবে, নতুবা পুনরায় জ্বর হইলে বাঁচিবার সম্ভাবনা নাই। আমি জাহাজে লঙ্কাদ্বীপ যাইবার জন্য উদ্যোগ করিলাম। এতদিন জ্বরের পর আমার মস্তকের ঘন কুন্তলরাশি একান্ত বিরল হইয়াছিল। একদিন আমার অষ্টমবর্ষীয়া কন্যা আসিয়া জিজ্ঞাসা করিল, “বাবা, দ্বীপ কাহাকে বলে?” আমার কন্যা ভূগোল তত্ত্ব পড়িতে আরম্ভ করিয়াছিল। আমার উত্তর পাইবার পূর্বেই বলিয়া উঠিল “এই দ্বীপ” –ইহা বলিয়া প্রশান্ত সমুদ্রের ন্যায় আমার বিরল-কেশ মসৃণ মস্তকে দুই-এক গোছা কেশের মণ্ডলী দেখাইয়া দিল। তারপর বলিল, “তোমার ব্যাগে এক শিশি :কুন্তল-কেশরী” দিয়াছি; জাহাজে প্রত্যহ ব্যবহার করিও, নতুবা নোনা জল লাগিয়া এই দুই-একটি দ্বীপের চিহ্নও থাকিবে না।” ‘কুন্তল-কেশরী’র আবিষ্কার এক রোমাঞ্চকর ঘটনা। সার্কাস দেখাইবার জন্য বিলাত হইতে এদেশে এক ইংরাজ আসিয়াছিল। সেই সার্কাসে কৃষ্ণকেশর- ভূষিত সিংহই সর্বাপেক্ষা আশ্চর্য দৃশ্য ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে জাহাজে আসিবার সময় আণুবীক্ষণিক কীটের দংশনে সমস্ত কেশরগুলি খসিয়া যায় এবং এদেশে পৌঁছিবার পর সিংহ এবং লোমহীন কুকুরের বিশেষ পার্থক্য রহিল না। নিরুপায় হইয়া সার্কাসের অধ্যক্ষ এক সন্ন্যাসীর শরণাপন্ন হইল এবং পদধূলি লইয়া জোড়হস্তে বর প্রার্থনা করিল। একে ম্লেচ্ছ, তাহাতে সাহেব! ভক্তের বিনয় ব্যবহারে সন্ন্যাসী একেবারে মুগ্ধ হইলেন এবং বরস্বরূপ স্বপ্নলব্ধ অবধৌতিক তৈল দান করিলেন। পরে উক্ত তৈল ‘কুন্তল-কেশরী’ নামে জগৎ-বিখ্যাত হইয়াছে। তৈল প্রলেপে এক সপ্তাহের মধ্যেই সিংহের লুপ্ত কেশর জাগিয়া উঠিল। কেশহীন মানব একং তস্য ভার্যার পক্ষে উক্ত তৈলের শক্তি অমোঘ। লোক-হিতার্থেই এই শুভ সংবাদ দেশের সমস্ত সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়। এমন-কি অতি বিখ্যাত মাসিক পত্রিকার সর্বপ্রথম পৃষ্ঠায় এই অদ্ভুত আবিষ্কার বিঘোষিত হইয়া থাকে। ২৮শে তারিখে আমি চুসান জাহাজে সমুদ্রযাত্রা করিলাম। প্রথম দুইদিন ভালোরূপেই গেল। ১লা তারিখ প্রত্যুষে সমুদ্র এক অস্বভাবিক মূর্তি ধারণ করিল, বাতাস একেবারে বন্ধ হইল। সমুদ্রের জল পর্যন্ত সীসার রঙের ন্যায় বিবর্ণ হইয়া গেল। কাপ্তানের বিমর্ষ মুখ দেখিয়া আমরা ভীত হইলাম। কাপ্তান বলিলেন, “যেরূপ লক্ষণ দেখিতেছি, অতি সত্বরই প্রচণ্ড ঝড় হইবে। আমরা কূল হইতে বহু দূরে-এখন ঈশ্বরের ইচ্ছা।” এই সংবাদ শুনিয়া জাহাজে যেরূপ ঘোর ভীতিসূচক কলরব হইল তাহা বর্ণনা করা অসম্ভব। দেখিতে দেখিতে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হইয়া গেল। চারিদিক মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকার হইল এবং দূর হইতে এক-এক ঝাপটা আসিয়া জাহাজখানাকে আন্দোলিত করিতে লাগিল। তারপর মুহূর্তমধ্যে যাহা ঘটিল তাহার সম্বন্ধে আমার কেবল এক অপরিষ্কার ধারণা আছে। কোথা হইতে যেন রুদ্ধ দৈত্যগণ একেবারে নির্মুক্ত হইয়া পৃথিবী সংহারে উদ্যত হইল। বায়ুর গর্জনের সহিত সমুদ্র স্বীয় মহাগর্জনের সুর মিলাইয়া সংহার-মূর্তি ধারণ করিল। তারপর অনন্ত ঊর্মিরাশি, একের উপর অন্যে আসিয়া একেবারে জাহাজ আক্রমণ করিল। এক মহা ঊর্মি জাহাজের উপর পতিত হইল এবং মাস্তুল, লাইফ-বোট ভাঙিয়া লইয়া গেল। আমাদের অন্তিমকাল উপস্থিত। মুমূর্ষু সময়ে জীবনের স্মৃতি যেরূপ জাগিয়া উঠে, সেইরূপ আমার প্রিয়জনের কথা মনে হইল। আশ্চর্য এই, আমার কন্যা আমার বিরল কেশ লইয়া যে উপহাস করিয়াছিল, এই সময়ে তাহা পর্যন্ত স্মরণ হইলে– বাবা, এক শিশি ‘কুন্তল-কেশরি’ তোমার ব্যাগে দিয়াছি। হঠাৎ এক কথায় আর-এক কথা মনে পড়িল। বৈজ্ঞানিক কাগজে ঢেউয়ের উপর তৈলের প্রভাব সম্প্রতি পড়িয়াছিলাম। তৈল যে চঞ্চল জলরাশিকে মসৃণ করে, এ বিষয়ে অনেক ঘটনা মনে হইল। অমনি আমার ব্যাগ হইতে তৈলের শিশি খুলিয়া অতিকষ্টে ডেকের উপর উঠিলাম। জাহাজ টলমল করিতেছিল। উপরে উঠিয়া দেখি, সাক্ষাৎ কৃতান্তসম পর্বতপ্রমাণ ফেনিল এক মহাঊর্মি জাহাজ গ্রাস করিবার জন্য আসিতেছে। আমি ‘জীব আশা পরিহরি’ সমুদ্র লক্ষ্য করিয়া ‘কুন্তল-কেশরি’ বাণ নিক্ষেপ করিলাম। ছিপি খুলিয়া শিশি সমুদ্রে নিক্ষেপ করিয়াছিলাম; মুহূর্তমধ্যে তৈল সমুদ্রে ব্যাপ্ত হইয়াছিল। ইন্দ্রজালের প্রভাবের ন্যায় মুহূর্তমধ্যে সমুদ্র প্রশান্ত মূর্তি ধারণ করিল। কমনীয় তৈল স্পর্শে বায়ুমণ্ডল পর্যন্ত শান্ত হইল। ক্ষণ পরেই সূর্য দেখা দিল। এইরূপে আমরা নিশ্চিত মরণ হইতে উদ্ধার পাই এবং এই কারণেই সেই ঘোর বাত্যা কলিকাতা স্পর্শ করে নাই। কত সহস্র প্রাণী-যে এই সামান্য এক বোতল তৈলের সাহায্যে অকালমৃত্যু হইতে রক্ষা পাইয়াছে, কে তাহার সংখ্যা করিবে?
জগদীশচন্দ্র বসু
অগ্নি পরীক্ষা জগদীশচন্দ্র বসু ১৮১৪ খৃস্টাব্দে ইংরেজ গবর্নমেণ্ট নেপাল রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। জেনারেল মার্নি কাটামুণ্ডু আক্রমণের জন্য প্রেরিত হইলেন। জেনারেল উড গোরক্ষপুরে ছাউনি করিয়া তরাই প্রদেশ আক্রমণ করিলেন। জেনারেল অক্টারলোনি নেপাল রাজ্যের পশ্চিম প্রান্তে অমরসিংহের সৈন্যের বিরুদ্ধে প্রেরিত হইলেন; আর জেনারেল গিলেস্প দেরাদুন হইতে কলুঙ্গা আক্রমণ করিতে অগ্রসর হইলেন। এইরূপে নেপাল রাজ্য চারি বিভিন্ন দিক হইতে একবারে আক্রান্ত হইল। নেপাল রাজ্যের সৈন্যসংখ্যা সমুদয়ে দ্বাদশ সহস্র; তাহার বিরুদ্ধে ইংরেজ গবর্নমেণ্ট ঊনত্রিশ সহস্র সৈন্য প্রেরণ করিলেন। যুদ্ধের কারণ কি, তাহা অনুসন্ধান করা এই প্রবন্ধের উদ্দেশ্য নয়– প্রয়োজনও নাই। অগ্নিদগ্ধ না হইলে স্বর্ণের পরীক্ষা হয় না। মনুষ্যও অগ্নি দ্বারা পরীক্ষিত হয়। প্রলয়কালে পৃথিবীর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বাসনা ও বন্ধন ঊর্ণনাভ-তন্তুর ন্যায় ছিন্ন হইয়া যায়; বীরপুরুষ তখনই মুক্ত হইয়া আপনার প্রকৃত রূপ প্রকাশ করেন। যুদ্ধ ঘোষণার সময় নেপাল সীমান্তপ্রদেশে কলুঙ্গা নামক স্থানে অল্পসংখ্যক একদল গোরক্ষ-সৈন্য ছিল। সৈন্যসংখ্যা তিনশত মাত্র। বলভদ্র থাপা তাহাদের অধিনায়ক ছিলেন। এস্থানে বহুদিনের পুরাতন একটি দুর্গের ভগ্নাবশেষ ছিল। অস্ত্রশস্ত্রের বিশেষ অভাব। কাহারও তীর, ধনু ও খুড়কি, কাহারও বা পুরাতন বন্ধুক– ইহাই যুদ্ধের উপকরণ। এতকাল যুদ্ধের কোনো সম্ভাবনা ছিল না, এইজন্য সৈনিকেরা তাহাদের পুত্রকলত্র লইয়া এই স্থানে বাস করিতেছিল। স্ত্রীলোক ও শিশুর সংখ্যা প্রায় দেড়শত হইবে। হঠাৎ একদিন সংবাদ আসিল যে, ইংরেজ যুদ্ধ ঘোষণা করিয়াছে এবং কলুঙ্গা আক্রমণ করিবার জন্য অগ্রসর হইতেছে। বলভদ্র এই সংবাদ পাইয়া পুরাতন ভগ্ন প্রাচীর কোনোপ্রকারে সংস্কার করিতে লাগিলেন। গোরক্ষ-সেনাপতি, স্ত্রীলোক ও শিশুগণ লইয়া বিব্রত এবং সৈন্য ও অস্ত্রাভাবে একান্ত বিপন্ন। এমন সময়ে ইংরেজ-সেনাপতি মাউব্রি পঁয়ত্রিশ শত সৈন্য ও বহুসংখ্যক কামান লইয়া সত্বর এই স্থান অবরোধ করিলেন। যে যুদ্ধে জয়ের আশা থাকে, সে যুদ্ধ অনেকেই করিতে পারে; কিন্তু যাহাতে পরাভব নিশ্চিত, সে যুদ্ধ যুঝিতে অমানুষিক বলের প্রয়োজন। দেখিতে দেখিতে ইংরেজ-সৈন্য দু্র্গের চারি দিক সেনাজালে আবদ্ধ করিল। বলভদ্র ভাবিতেছিলেন, তাঁহার প্রভু তাঁহাকে সুদিনে কলুঙ্গার সৈন্যাধ্যক্ষ করিয়া পাঠাইয়াছিলেন। এখন দুর্দিন উপস্থিত। আজ নিমকের পরীক্ষা হইবে। ২৫শ অক্টোবর রাত্রি দ্বিপ্রহরের সময় ইংরেজ-দূত বলভদ্রের নিকট যুদ্ধপত্র লইয়া আসিল। সমস্ত দিনের পরিশ্রমের পর বলভদ্র শয়ন করিতে গিয়াছিলেন, এমন সময় ইংরেজ সেনাপতির পত্র আসিল। পত্রে লিখিত ছিল, ‘এই অসম যুদ্ধে পরাভব স্বীকার করা বীরপুরুষের গ্লানিজনক নহে; গোরক্ষ-সেনাপতির বিনা রক্তপাতে দুর্গাধিকার ত্যাগ করাই শ্রেয়ঃ। উত্তরে গোরক্ষ-সেনাপতি ইংরেজ-দূতকে বলিলেন, ‘তোমাদের সুবাদারকে বলিও, আগামীকল্য যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি ইহার উত্তর পাইবেন।’ পরদিন প্রত্যুষে কামানের গোলা এই ধৃষ্টতার প্রত্যুত্তর লইয়া আসিল। চতুর্দিকে কামানের অগ্নির ধূম অপসারিত হইবার পূর্বেই ইংরেজ-সেনাপতি সমস্ত সেনা লইয়া দুর্গ আক্রমণ করিলেন। কিন্তু প্রস্তরস্তূপের পশ্চাতে এক অদম্য শক্তি প্রচ্ছন্ন ছিল, যাহা কামানের গোলা ভেদ করিতে পারে না। সেই মানসিক মহাশক্তি আজ চকিতে দেখা দিল এবং সুবাদার হইতে সামান্য সেনার হৃদয়ে প্রবেশ করিল। কেবল যোদ্ধার হৃদয়ে নহে– দুর্বল নারী ও নিরুপায় শিশুকেও সেই মহা অগ্নিশিখা উদ্দীপ্ত করিয়া তুলিল। ইংরেজ-সৈন্য পুনঃ পুনঃ আক্রমণ করিয়াও দুর্গ অধিকার করিতে অক্ষম হইল। পরিশেষে জয়ের আশা নাই দেখিয়া দেরাদুনে প্রত্যাবর্তন করিল। তাহার পর জানারেল গিলেম্পি দুর্গ ভগ্ন করিবার উপযোগী নূতন কামান এবং নূতন সৈন্যদল লইয়া মাউব্রির সহিত যোগ দিলেন। স্থির হইল, সৈন্যদল এক সময়ে চারি দিক হইতে দুর্গ আক্রমণ করিবে এবং কামানের গোলাতে দুর্গপ্রাচীর ভগ্ন করিয়া অবারিত দ্বারে দুর্গে প্রবেশ করিবে। ২৬ শে তারিখের নয় ঘটিকার সময় এই বিরাট আক্রমণ আরব্ধ হইল; কিন্তু অল্প সময়েই ইংরেজ-সৈন্য পরাহত হইয়া প্রত্যাবর্তন করিল। তখন জেনারেল গিলেম্পি স্বয়ং নূতন তিন দল সৈন্য লইয়া দুর্গ আক্রমণ করিলেন। একবারে বহুসংখ্যক কামান অগ্নি উদগীরণ করিয়া দুর্গে অনলপূর্ব গোলা নিক্ষেপ করিতে লাগিল। দুর্গের নামমাত্র যে প্রাচীর ছিল, এই ঝটিকায় তাহা আর রক্ষা পাইল না, গোলার আঘাতে প্রস্তরস্তুপ খসিয়া পড়িতে লাগিল। আক্রান্ত গোরক্ষ-সৈন্যের ভাগ্যলক্ষ্মী এখন লুপ্তপ্রায়। কিন্তু এই সময়ে সহসা এক অদ্ভুত দৃশ্য লক্ষিত হইল; ভগ্নস্থানে মুহূর্তমধ্যে এক প্রাচীর উত্থিত হইল। এই নূতন প্রাচীর সুকোমল নারীদেহে রচিত। গোরক্ষ-রমণীগণ স্বীয় দেহ দ্বারা প্রাচীরের ভগ্নস্থান পূর্ণ করিলেন। ইহার অনুরূপ দৃশ্য পৃথিবীতে আর কখনও দেখা যায় নাই। কার্থেজের রমণীরা স্বীয় কেশপাশ ছিন্ন করিয়া ধনুর জ্যা রচনা করিয়াছিলেন; কিন্তু রক্তমাংসে গঠিত জীবন্ত শরীর দিয়া কুত্রাপি দুর্গপ্রাচীর নির্মিত হয় নাই। কেবল প্রাচীর নহে-এই দুর্বল কষ্ট-অসহিষ্ণু দেহ বজ্রবৎ কঠিন ও রণে ভীষণ সংহারক অস্ত্র হইয়া উঠিল। এই সময়ে জেনারেল গিলেম্পি দুর্গপ্রাচীর অতিক্রম করিতে অগ্রসর হইলেন; কিন্তু অধিক দূর না যাইতেই বক্ষে গুলিবিদ্ধ হইয়া প্রাণত্যাগ করিলেন। তাঁহার অনুগামী সৈন্য তীর ও গুলির আঘাতে ছিন্নভিন্ন হইয়া পড়িল; ইংরেজ-সৈন্যের ভগ্নাবশেষ দেরাদুন প্রত্যাবর্তন করিল। ইহার পর দিল্লি হইতে নূতন সৈন্যদল ও বহুসংখ্যক কামান যুদ্ধস্থানে প্রেরিত হইল। ২৪শে নভেম্বর তারিখে এই নূতন সৈন্যদল পুনরায় কলুঙ্গা আক্রমণ করিল। এবার কামান হইতে গোলাপূর্ণ শেল অনবরত দুর্গে নিক্ষিপ্ত হইতে লাগিল। ভূমিস্পর্শমাত্র এই শেল ভীষণ রবে শতধা বিদীর্ণ হইয়া চতুর্দিকে মৃত্যুর করাল ছায়া বিস্তার করিতে লাগিল। এতদিন যোদ্ধায় যোদ্ধায় প্রতিযোগিতা চলিতেছিল; কিন্তু এখন মৃত্যু সর্বগ্রাসীরূপে সর্বত্র বিচরণ করিতে লাগিল-মাতার বক্ষে থাকিয়াও শিশু উদ্ধার পাইল না। একমাসের অধিককাল কলুঙ্গার অবরোধ আরম্ভ হইয়াছে। আহার্য সামগ্রী ফুরাইয়া গিয়াছে, যুদ্ধের উপকরণও নিঃশেষিত-প্রায়। এত বিপদের মধ্যেও যোদ্ধারা অবিচলিতচিত্ত। মুমূর্ষ শক্রকে সমূলে উচ্ছেদ করিবার জন্য সাগরোর্মির ন্যায় ইংরেজ-সৈন্য দুর্গোপরি বারংবার পতিত হইতে লাগিল; কিন্তু গোরক্ষ-সৈন্য অমানুষিক শক্তিতে যুদ্ধ করিতে লাগিল। বারুদ ফুরাইলে তীর-ধনু দ্বারা তাহা ফুরাইলে প্রস্তরনিক্ষেপে শত্রু বিনাশ করিতে লাগিল। এই অসম সংগ্রামে গোরক্ষদেরই জয় হইল। দুর্গাধিকারের কোনো আশা নাই দেখিয়া ইংরেজ-সৈন্য দেরাদুনে প্রত্যাগমন করিতে আদিষ্ট হইল। এমন সময়ে গুপ্তচর আসিয়া সংবাদ দিল যে, কলুঙ্গার দুর্গে পানীয় জল নাই। দুর্গের বাহিরে এক নির্ঝরিণী হইতে গোরক্ষেরা রাত্রির অন্ধকারে জল লইয়া যায়। এই জল বন্ধ করিতে পারিলেই তৃষ্ণাতুর শত্রু নিরুপায় হইয়া পরাভূত হইবে। নির্ঝরিণীর জল বন্ধ করা হইল। ইহার পর দুর্গমধ্যে যে ভীষণ যন্ত্রণা উপস্থিত হইল তাহা কল্পনারও অতীত–আহত ও মুমূর্ষ নরনারী এবং শিশুর ‘জল জল’ এই আর্তনাদ কেবল মৃত্যুর আগমনেই নীরব হইল। এ দিকে ইংরেজেরা শত্রুকে এইরূপ বিপন্ন দেখিয়া সিংহ-শিশুদিগকে জীবন্ধ শৃঙ্খলবদ্ধ করিবার জন্য সচেষ্ট হইলেন। দুর্গের চতুর্দিকে সৈন্যপাশ দৃঢ়ীকৃত হইল। অবরুদ্ধ দুর্গের বহির্গমন-পথে বহুসংখ্যক সৈন্য সন্নিবেশিত হইল। তাহারা দিবারাত্রি পথ অবরোধ করিয়া রহিল। গোরক্ষ-সৈন্যের সংখ্যা প্রথমে তিনশত ছিল, মাসাধিক কাল যুদ্ধের পর সত্তর জন মাত্র রহিল। চারি দিন পর্যন্ত ইহাদের কেহ একবিন্দু জল স্পর্শ করে নাই, অনশন ও তৃষ্ণা নীরবে সহ্য করিয়াছে–তাহারা এ সকল কষ্ট অকাতরে সহ্য করিতেছিল, কিন্তু নারী ও শিশুর আর্তনাদ ক্রমে অসহ্য হইয়া উঠিল। শক্রর হস্তে দুর্গ সমর্পণ করিলেই এই দারুণ কষ্ট শেষ হয়। কিন্তু হস্তে তরবারি শত্রুর পদে স্থাপন, প্রাণ থাকিতে হইবে না। জীবন থাকিতে কোনো উপায় নাই–জীবন দিয়াই বা কি উপায় আছে? সম্মুখে চারিদিক বেষ্টন করিয়া লোহিত রেখার জাল ক্রমে সংকীর্ণ হইতেছে। সেই রেখার মধ্যে মধ্যে অসিজ বর্ণ কামানের বিকট মূর্তি দেখা যাইতেছে। এই জালে কি আবদ্ধ হইতে হইবে? অথবা জীবনবিন্দু এই রক্তিমা ক্ষণিকের জন্য গাঢ়তর করিবে? তবে তাহাই হউক! রাত্রি দ্বিপ্রহরের সময় হঠাৎ দুর্গের দ্বার খুলিয়া গেল। দ্বার সঙ্গীন ও কামানের গোলার আঘাতে উবঘাটিত হয় নাই, আজ তাহা স্বতঃই উম্মুক্ত হইল। আত্মবলিদানে উন্মুক্ত সেই সত্তরটি বীর-মুষ্টিপ্রমাণ কৃষ্ণ মেঘের ন্যায়-অগণিত শত্রুদলের উপর পতিত হইল এবং অসির আঘাতে পথ কাটিয়া মুহূর্তে অদৃশ্য হইল। পরদিন প্রত্যুষে ইংরেজ-সৈন্য যোদ্ধৃ-পরিত্যক্ত দুর্গে প্রবেশ করিল। প্রবেশ করিয়া যাহা দেখিল, তাহাতে তাহাদের উল্লাস বিষাদে পরিণত হইল। এই কি দুর্গ-না শ্মশান? এই শবকবন্ধমণ্ডিত ভূমিতে কি প্রকারে মানুষ এতদিন বাস করিয়াছে? আহত, জীবিত ও মৃতের কি ভয়ানক সমাবেশ! এই যে সম্মুখে সুবাদারের মৃত শরীর পড়িয়া রহিয়াছে, ইহার ক্রোড়ে লুক্কায়িত চারি বৎসরের একটি শিশু কাঁদিতেছে। তাহার একটু অগ্রে একটি স্ত্রীলোক মৃতবৎ পড়িয়া রহিয়াছে, তাহার দুই ঊরু ভেদ করিয়া কামানের গোলা চলিয়া গিয়াছে। অদূরে বহু ছিন্ন হস্তপদ চতুর্দিকে বিক্ষিপ্ত দেখা যাইতেছে– এস্থানে শেল পড়িয়া বিদীর্ণ হইয়াছিল। নিকটে কয়েকটি শিশু রক্তাপ্লুত হইয়া ভূমিতে লুণ্ঠিত হইতেছে–এখনও তাহাদের প্রাণবায়ু বাহির হয় নাই। চতুর্দিকে কেবল ‘জল জল’ এই কাতর ধ্বনি! বলভদ্র সত্তরটি সঙ্গী লইয়া যেঁতগড়ের দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন। ইংরেজ-সৈন্য এই দুর্গ অবরোধ করিয়াছিল; কিন্তু অধিকার করিতে পারে নাই। তার পর বলভদ্র সৈন্যের আধিপত্য গ্রহণ করেন এবং নেপাল-যুদ্ধ শেষ হইলে স্বদেশে তাঁহার তরবারির আর আবশ্যক নাই দেখিয়া সঙ্গীদের সহিত রণজিৎ সিংহের শিখ-সৈন্যে প্রবেশ করেন। এই সময়ে রণজিৎ সিংহ আফগান-যুদ্ধে ব্যস্ত ছিলেন। একবার তাঁহার একদল সৈন্য বহুসংখ্যক আফগান কর্তৃক আক্রান্ত হয়। অনেকে পলায়ন করিয়া প্রাণরক্ষা করিল, কেবল সত্তরটি সেনা রণভূমি ত্যাগ করিল না। এই কয়টি সেনা শ্রেণীবদ্ধ হইয়া শত্রুর দিকে মুখ করিয়া অটল পর্বতের ন্যায় দাঁড়াইয়া রহিল। ইহারা অনেক বিপদের সময় পাশাপাশি দাঁড়াইয়াছে, আজ এই শেষবার সুবাদার ও সিপাহী এক শ্রেণী হইয়া দাঁড়াইল। দূর হইতে কামান গর্জন করিতেছিল। এক এক বার সেই জীমূত-নাদ পর্বত ও উপত্যকা প্রতিধ্বনিত করিতেছিল-সেই সঙ্গে শ্রেণীর মধ্যে এক একটি স্থান শূন্য হইতে লাগিল; কিন্তু শ্রেণী টলিল না। পরিশেষে পাশাপাশি সত্তরটি শবদেহ অনন্তশয্যায় শায়িত হইল। জলন্ত উল্কাপিণ্ড ধরায় পতিত হইয়া চিরশান্তি লাভ করিল। ইংরেজ-সৈন্য কলুঙ্গা অধিকার করিয়া দুর্গ সমভুমি করিল। এখন পূর্বদুর্গস্থানে বন্ধুর প্রস্তরস্তূপ দৃষ্ট হয়। সেই দারুণ যুদ্ধের লীলাভূমিতে এখন গভীর নির্জনতা বিরাজিত। মৃত্যুর এ পারেই ঝটিকা, পরপারে চিরশান্তি। মরণের পরপার হইতেই বোধ হয় কোনো শান্তিময় আত্মা এই রণস্থলে আবির্ভুত হইয়া জেতৃগণের বীরহৃদয়ে করুণ রস সঞ্চার করিয়া দিয়াছিলেন। যে স্থানে জেতা ও বিজিতের দেহধূলি একত্র মিশ্রিত হইতেছিল সেই স্থানে ইংরেজ দুইটি স্মৃতিচিহ্ন স্থাপিত করিল। ইহা অদ্যাপি দৃষ্ট হয়। একটি প্রস্তরফলক জেনারেল গিলেম্পি ও কলুঙ্গা-যুদ্ধে হত ইংরেজ-সৈন্যের স্মরণার্থে স্থাপিত; ইহার অদূরে দ্বিতীয় প্রস্তরফলকে লিখিত আছে: আমাদের বীরশত্রু কলুঙ্গা-দুর্গাধিপতি বলভদ্র এবং তাঁহার অধীনস্থ বীর সেনা যাঁহারা রণে জীবন তুচ্ছ জ্ঞান করিয়াছিলেন এবং আফগান কামানের সম্মুখীন হইয়া একে একে অকাতরে প্রাণদান করিয়াছিলেন– সেই বীরগণের স্মরণার্থে এই স্মৃতিচিহ্ন স্থাপিত হইল।
জগদীশচন্দ্র বসু
ভাগীরথীর উৎস-সন্ধানে জগদীশচন্দ্র বসু আমাদের বাড়ির নিম্নেই গঙ্গা প্রবাহিত। বাল্যকাল হইতেই নদীর সহিত আমার সখ্য জন্মিয়াছিল। বৎসরের এক সময়ে কূল প্লাবন করিয়া জলস্রোত বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হইত; আবার হেমন্তের শেষে ক্ষীণ কলেবর ধারণ করিত। প্রতিদিন জোয়ার ভাঁটায় বারিপ্রবাহের পরিবর্তন লক্ষ্য করিতাম। নদীকে আমার একটি গতিপরিবর্তনশীল জীব বলিয়া মনে হইত। সন্ধ্যা হইলেই একাকী নদীতীরে আসিয়া বসিতাম। ছোটো ছোটো তরঙ্গগুলি তীরভূমিতে আছড়াইয়া পড়িয়া কুলুকুলু গীত গাহিয়া অবিশ্রান্ত চলিয়া যাইত। যখন অন্ধকার গাঢ়তর হইয়া আসিত এবং বাহিরের কোলাহল একে একে নীরব হইয়া যাইত তখন নদীর কুলুকুলু ধ্বনির মধ্যে কত কথাই শুনিতে পাইতাম। কখনও মনে হইত, এই যে অজস্র জলধারা প্রতিদিন চলিয়া যাইতেছে ইহা তো কখনও ফিরে না; তবে এই অনন্ত স্রোত কোথা হইতে আসিতেছে? ইহার কি শেষ নাই? নদীকে জিজ্ঞাসা করিতাম ‘তুমি কোথা হইতে আসিতেছ? নদী উত্তর করিত ‘মহাদেবের জটা হইতে।’ তখন ভগীরথের গঙ্গা আনয়ন বৃত্তান্ত স্মৃতিপথে উদিত হইত। তাহার পর বড়ো হইয়া নদীর উৎপত্তি সম্বন্ধে অনেক ব্যাখ্যা শুনিয়াছি; কিন্তু যখনই শ্রান্তমনে নদীতীরে বসিয়াছি তখনই সেই চিরাভ্যস্ত কুলুকুলু ধ্বনির মধ্যে সেই পূর্ব কথা শুনিতাম ‘মহাদেবের জটা হইতে।’ একবার এই নদীতীরে আমার এক প্রিয়জনের পার্থিব অবশেষ চিতানলে ভস্মীভূত হইতে দেখিলাম। আমার সেই আজন্ম পরিচিত, বাৎসল্যের বাসমন্দির সহসা শূন্যে পরিণত হইল। সেই স্নেহের এক গভীর বিশাল প্রবাহ কোন্‌ অজ্ঞাত ও অজ্ঞেয় দেশে বহিয়া চলিয়া গেল? যে যায়, সে তো আর ফিরে না; তবে কি সে অনন্তকালের জন্য লুপ্ত হয়? মৃত্যুতেই কি জীবনের পরিসমাপ্তি! যে যায়, সে কোথা যায়? আমার প্রিয়জন আজ কোথায়? তখন নদীর কলধ্বনির মধ্যে শুনিতে পাইলাম, ন্তু।মহাদেবের পদতলে । স্তু চতুর্দিকে অন্ধকার হইয়া আসিয়াছিল, কুলুকুলু শব্দের মধ্যে শুনিতে পাইলাম, “আমরা যথা হইতে আসি, আবার তথায় ফিরিয়া যাই। দীর্ঘ প্রবাসের পর উৎসে মিলিত হইতে যাইতেছি।” জিজ্ঞাসা করিলাম, “কোথা হইতে আসিয়াছ, নদী?” নদী সেই পুরাতন স্বরে উত্তর করিল, “মহাদেবের জটা হইতে।” একদিন আমি বলিলাম, “নদী, আজ বহুকাল অবধি তোমার সহিত আমার সখ্য। পুরাতনের মধ্যে কেবল তুমি! বাল্যকাল হইতে এ পর্যন্ত তুমি আমার জীবন বেষ্টন করিয়া আছ, আমার জীবনের এক অংশ হইয়া গিয়াছ; তুমি কোথা হইতে আসিয়াছ, জানি না। আমি তোমার প্রবাহ অবলম্বন করিয়া তোমার উৎপত্তি-স্থান দেখিয়া আসিব।” শুনিয়াছিলাম, উত্তর পশ্চিমে যে তুষারমণ্ডিত গিরিশৃঙ্গ দেখা যায় তথা হইতে জাহ্নবীর উৎপত্তি হইয়াছে। আমি সেই শৃঙ্গ লক্ষ্য করিয়া বহু গ্রাম, জনপদ ও বিজন অতিক্রম করিয়া চলিতে লাগিলাম। যাইতে যাইতে কূর্মাচল নামক পুরাণপ্রথিত দেশে উপস্থিত হইলাম। তথা হইতে সরযূ নদীর উৎপত্তিস্থান দর্শন করিয়া দানবপুরে আসিলাম। তাহার পর পুনরায় বহুল গিরিগহন লঙ্ঘনপূর্বক উত্তরাভিমুখে অগ্রসর হইলাম। একদিন অতীব বন্ধুর পার্বত্য পথে চলিতে চলিতে পরিশ্রান্ত হইয়া বসিয়া পড়িলাম। আমার চতুর্দিকে পর্বতমালা, তাহাদের পার্শ্বদেশে নিবিড় অরণ্যানী; এক অভ্রভেদী শৃঙ্গ তাহার বিরাট দেহদ্বারা পশ্চাতের দৃশ্য অন্তরাল করিয়া সম্মুখে দণ্ডায়মান। আমার পথ-প্রদর্শক বলিল, “এই শৃঙ্গে উঠিলেই তোমার অভীষ্ট সিদ্ধ হইবে। নিম্নে যে রজতসূত্রের ন্যায় রেখা দেখা যাইতেছে উহাই বহুদেশ অতিক্রম করিয়া তোমাদের দেশে অতি বেগবতী, কুলপ্লাবিনী স্রোতস্বতী মূর্তি ধারণ করিয়াছে। সম্মুখস্থ শিখরে আরোহণ করিলেই দেখিতে পাইবে, এই সূক্ষ্ম সূত্রের আরম্ভ কোথায়।” এই কথা শুনিয়া আমি সমুদয় পথশ্রম বিস্মৃত হইয়া নব উদ্যমে পর্বতে আরোহণ করিতে লাগিলাম। আমার পথ-প্রদর্শক হঠাৎ বলিয়া উঠিল, “সম্মুখে দেখো, জয় নন্দাদেবী! জয় ত্রিশূল!” কিয়ৎক্ষণ পূর্বে পর্বতমালা আমার দৃষ্টি অবরোধ করিয়াছিল। এখন উচ্চতর শৃঙ্গ আরোহণ করিবামাত্র আমার সম্মুখের আবরণ অপসৃত হইল। দেখিলাম, অনন্ত প্রসারিত নীল নভোমণ্ডল। সেই নিবিড় নীলস্তর ভেদ করিয়া দুই শুভ্র তুষারমূর্তি শূন্যে উত্থিত হইয়াছে। একটি গরীয়সী রমণীর ন্যায়– মনে হইল যেন আমার দিকে সস্নেহে প্রশান্ত দৃষ্টিতে চাহিয়া রহিয়াছেন। যাঁহার বিশাল বক্ষে বহুজীব আশ্রয় ও বৃদ্ধি পাইতেছে, এই মূর্তি সেই মাতৃরূপিণী ধরিত্রীর বলিয়া চিনিলাম। ইহার অনতিদূরে মহাদেবের ত্রিশূল পাতালগর্ভ হইতে উত্থিত হইয়া মেদিনী বিদারণপূর্বক শাণিত অগ্রভাগ দ্বারা আকাশ বিদ্ধ করিতেছে। ত্রিভুবন এই মহাস্ত্রে গ্রথিত। কুমায়ূনের উত্তরে দুই তুষার শিখর দেখা যায়। একটির নাম নন্দাদেবী, অপরটি ত্রিশূল নামে খ্যাত। এইরূপে পরস্পরের পার্শ্বে সৃষ্ট জগৎ ও সৃষ্টিকর্তার হস্তের আয়ুধ সাকাররূপে দর্পন করিলাম। এই ত্রিশূল যে স্থিতি ও প্রলয়ের চিহ্নরূপী তাহা পরে বুঝিলাম। আমার পথ-প্রদর্শক বলিল, “সম্মুখে এখনও দীর্ঘ পথ রহিয়াছে। উহা অতীব দুর্গম; দুই দিন চলিলে পর তুষার নদী দেখিতে পাইবে।” সেই দুই দিন বহু বন ও গিরিসংকট অতিক্রম করিয়া অবশেষে তুষারক্ষেত্রে উপনীত হইলাম। নদীর ধবল সূত্রটি সূক্ষ্ম হইতে সূক্ষ্মতর হইয়া এ পর্যন্ত আসিয়াছিল, কল্লোলিনীর মৃদু গীত এতদিন কর্ণে ধ্বনিত হইতেছিল, সহসা যেন কোন্‌ ঐন্দ্রজালিকের মন্ত্রপ্রভাবে সে গীত নীরব হইল, নদীর তরল নীর অকস্মাৎ কঠিন নিস্তব্ধ তুষারে পরিণত হইল। ক্রমে দেখিলাম স্থানে স্থানে প্রকাণ্ড ঊর্মিমালা প্রস্তরীভূত হইয়া রহিয়াছে, যেন ক্রীড়াশীল চঞ্চল তরঙ্গগুলিকে কে ‘তিষ্ঠ’ বলিয়া অচল করিয়া রাখিয়াছে। কোন্‌ মহাশিল্পী যেন সমগ্র বিশ্বের স্ফটিকখনি নিঃশেষ করিয়া এই বিশালক্ষেত্রে সংক্ষুব্ধ সমুদ্রের মূর্তি রচনা করিয়া গিয়াছেন। দুই দিকে উচ্চ পর্বতশ্রেণী, বহুদূর প্রসারিত সেই পর্বতের পাদমূল হইতে উত্তুঙ্গ ভৃগুদেশ পর্যন্ত অগণ্য উন্নত বৃক্ষ নিরন্তর পুষ্পবৃষ্টি করিতেছে। শিখরতুষারনিঃসৃত জলধারা বঙ্কিম গতিতে নিম্নস্থ উপত্যকায় পতিত হইতেছে। সম্মুখে নন্দাদেবী ও ত্রিশূল এখন আর স্পষ্ট দেখা যাইতেছে না। মধ্যে ঘন কুজঝটিকা; এই যবনিকা অতিক্রম করিলেই দৃষ্টি অবারিত হইবে। তুষার-নদীর উপর দিয়া ঊর্ধ্বে আরোহণ করিতে লাগিলাম। এই নদী ধবলগিরির উচ্চতম শৃঙ্গ হইতে আসিতেছে। আসিবার সময়ে পর্বতদেহ ভগ্ন করিয়া প্রস্তরস্তূপ বহন করিয়া আনিতেছে। সেই প্রস্তরস্তূপ ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত রহিয়াছে। অতি দুরারোহ স্তূপ হইতে স্তূপান্তরে অগ্রসর হইতে লাগিলাম। যত ঊর্ধ্বে উঠিতেছি বায়ুস্তর ততই ক্ষীণতর হইতেছে; সেই ক্ষীণ বায়ু দেবধূপের সৌরভে পরিপূর্ণ। ক্রমে শ্বাস-প্রশ্বাস কষ্টসাধ্য হইয়া উঠিল, শরীর অবসন্ন হইয়া আসিল; অবশেষে হতচেতনপ্রায় হইয়া নন্দাদেবীর পদতলে পতিত হইলাম। সহসা শত শত শঙ্খনাদ একত্রে কর্ণরন্ধ্রে প্রবেশ করিল। অর্ধোন্মীলিত নেত্রে দেখিলাম– সমগ্র পর্বত ও বনস্থলীতে পূজার আয়োজন হইয়াছে। জলপ্রপাতগুলি যেন সুবৃহৎ কমণ্ডলুমুখ হইতে পতিত হইতেছে; সেই সঙ্গে পারিজাত বৃক্ষসকল স্বতঃ পুষ্পবর্ষণ করিতেছে। দূরে দিক আলোড়ন করিয়া শঙ্খধ্বনির ন্যায় গভীর ধ্বনি উঠিতেছে। ইহা শঙ্খধ্বনি, কি পতনশীল তুষার-পর্বতের বজ্রনিনাদ স্থিত করিতে পারিলাম না। কতক্ষণ পরে সম্মুখে দৃষ্টিপাত করিয়া যাহা দেখিলাম তাহাতে হৃদয় উচ্ছ্বসিত ও দেহ পুলকিত হইয়া উঠিল। এতক্ষণ যে কুজ্‌ঝটিকা নন্দাদেবী ও ত্রিশূল আচ্ছন্ন করিয়াছিল তাহা ঊর্ধ্বে উত্থিত হইয়া শূন্যমার্গ আশ্রয় করিয়াছে। নন্দাদেবীর শিরোপরি এক অতি বৃহৎ ভাস্বর জ্যোতিঃ বিরাজ করিতেছে; তাহা একান্ত দুর্নিরীক্ষ্য। সেই জ্যোতিঃপুঞ্জ হইতে নির্গত ধূমরাশি দিগ্‌দিগন্ত ব্যাপিয়া রহিয়াছে। তবে এই কি মহাদেবের জটা? এই জটা পৃথিবীরূপিণী নন্দাদেবীকে চন্দ্রাতপের ন্যায় আবরণ করিয়া রাখিয়াছে। এই জটা হইতে হীরককণার তুল্য তুষারকণাগুলি নন্দাদেবীর মস্তকে উজ্জ্বল মুকুট পরাইয়া দিয়াছে। এই কঠিন হীরককণাই ত্রিশূলাগ্র শাণিত করিতেছে। শিব ও রুদ্র! রক্ষক ও সংহারক! এখন ইহার অর্থ বুঝিতে পারিলাম। মানসচক্ষে উৎস হইতে বারিকণার সাগরোদ্দেশে যাত্রা ও পুনরায় উৎসে প্রত্যাবর্তন স্পষ্ট দেখিতে পাইলাম। এই মহাচক্রপ্রবাহিত স্রোতে সৃষ্টি ও প্রলয়-রূপ পরস্পরের পার্শ্বে স্থাপিত দেখিলাম। সম্মুখে আকাশভেদী যে পর্বতশ্রেণী দেখিতেছি, হিমাণুরূপ বারিকণা উহাদের শরীরাভ্যন্তরে প্রবেশ করিতেছে। প্রবেশ করিয়া মহাবিক্রমে উহাদের দেহ বিদীর্ণ করিতেছে। চ্যুত শিখর বজ্রনিনাদে নিম্নে পতিত হইতেছে। বারিকণারাই নিম্নে শুভ্র তুষার-শয্যা রচনা করিয়া রাখিয়াছে। ভগ্ন শৈল এই তুষার শয্যায় শায়িত হইল। তখন কণাগুলি একে অন্যকে ডাকিয়া বলিল, “আইস, আমরা ইহার অস্থি দিয়া পৃথিবীর দেহ নূতন করিয়া নির্মাণ করি।” কোটি কোটি ক্ষুদ্র হস্ত অসংখ্য অণুপ্রমাণ শক্তির মিলনে অনায়াসে সেই পর্বতভার বহিয়া নিম্নে চলিল। কোনো পথ ছিল না; পতিত পর্বতখণ্ডের ঘর্ষণেই পথ কাটিয়া লইল উপত্যকা রচিত হইল। পর্বতগাত্রে ঘর্ষিত হইতে হইতে উপলস্তূপ চূর্ণীকৃত হইল। আমি যে স্থানে বসিয়া আছি তাহার উভয়তঃ তুষার-বাহিত প্রস্তরখণ্ড রাশীকৃত রহিয়াছে। ইহার নিম্নেই তুষারকণা তরলাকৃতি ধারণ করিয়া ক্ষুদ্র সারিতে পরিণত হইয়াছে। এই সরিৎ পর্বতের অস্থিচূর্ণ বহন করিয়া গিরিদেশ অতিবর্তন করিয়া বহুল সমৃদ্ধ নগর ও জনপদের মধ্য দিয়া সাগরোদ্দেশে প্রবাহিত হইতেছে। পথে একস্থানে উভয় কূলস্থ দেশ মরুভূমি-প্রায় হইয়াছিল। নদীতট উল্লঙ্ঘন করিয়া দেশ প্লাবিত করিল। পর্বতের অস্থিচূর্ণ সংযোগে মৃত্তিকার উর্বরাশক্তি বর্ধিত হইল। কঠিন পর্বতের দেহাবশেষ দ্বারা বৃক্ষলতার সজীব শ্যামদেহ নির্মিত হইল। বারিকণাগণই বৃষ্টিরূপে পৃথিবী ধৌত করিতেছে এবং মৃত ও পরিত্যক্ত দ্রব্য বহন করিয়া সমুদ্রগর্ভে নিক্ষেপ করিতেছে। তথায় মনুষ্যচক্ষুর অগোচরে নূতন রাজ্যের সৃষ্টি হইতেছে। সমুদ্রে মিলিত বারিকণাকুল সর্বদা বিতাড়িত হইয়া বেলাভূমি ভগ্ন করিতেছে। জলকণা কখনও ভূগর্ভে প্রবেশ করিয়া পাতালপুরস্থ অগ্নিকুণ্ডে আহুতি স্বরূপ হইতেছে। সেই মহাযজ্ঞোত্থিত ধূমরাশি পৃথিবী বিদারণ করিয়া আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুবগাররূপে প্রকাশ পাইতেছে। সেই মহাতেজে পৃথিবী কম্পিত হইতেছে; ঊর্ধ্ব ভূমি অতলে নিমজ্জিত ও সমুদ্রতল উন্নত হইয়া নূতন মহাদেশ নির্মিত হইতেছে। সমুদ্রে পতিত হইয়াও বারিবিন্দুগণের বিশ্রাম নাই। সূর্যের তেজে উত্তপ্ত হইয়া ইহারা ঊর্ধ্বে উড্ডীন হইতেছে। ইহারাই একদিন অশনি ও ঝঞ্ঝা-বলে পর্বত-শিখরাভিমুখে ধাবিত হইয়া তথায় বিপুল জটাজালের মধ্যে আশ্রয় লইবে; আবার কালক্রমে বিশ্রামান্তে পর্বতপৃষ্ঠে তুহিনাকারে পতিত হইবে। এই গতির বিরাম নাই, শেষ নাই! এখনও ভাগীরথী-তীরে বসিয়া তাঁহার কুলুকুলু ধ্বনি শ্রবণ করি। এখনও তাহাতে পূর্বের ন্যায় কথা শুনিতে পাই। এখন আর বুঝিতে ভুল হয় না। ‘নদী, তুমি কোথা হইতে আসিয়াছ?’ ইহার উত্তরে এখন সুস্পষ্ট স্বরে শুনিতে পাই– ‘মহাদেবের জটা হইতে।’
জগদীশচন্দ্র বসু
বিজ্ঞানে সাহিত্য জগদীশচন্দ্র বসু জড় জগতে কেন্দ্র আশ্রয় করিয়া বহুবিধ গতি দেখিতে পাওয়া যায়। গ্রহগণ সূর্যের আকর্ষণ এড়াইতে পারে না। উচ্ছৃঙ্খল ধূমকেতুকেও একদিন সূর্যের দিকে ছুটিতে হয়। জড় জগৎ ছাড়িয়া জঙ্গম জগতে দৃষ্টিপাত করিলে তাহাদের গতিবিধি বড়ো অনিয়মিত বলিয়া মনে হয়। মাধ্যাকর্ষণশক্তি ছাড়াও অসংখ্য শক্তি তাহাদিগকে সর্বদা সন্তাড়িত করিতেছে। প্রতি মুহূর্তে তাহারা আহত হইতেছে এবং সেই আঘাতের গুণ ও পরিমাণ অনুসারে প্রত্যুত্তরে তাহারা হাসিতেছে কিংবা কাঁদিতেছে। মৃদু স্পর্শ ও মৃদু আঘাত; ইহার প্রত্যুত্তরে শারীরিক রোমাঞ্চ, উৎফুল্লভাব ও নিকটে আসিবার ইচ্ছা। কিন্তু আঘাতের মাত্রা বাড়াইলে অন্য রকমে তাহার উত্তর পাওয়া যায়। হাত বুলাইবার পরিবর্তে যেখানে লগুড়াঘাত, সেখানে রোমাঞ্চ ও উৎফুল্লতার পরিবর্তে সন্ত্রাস ও পূর্ণমাত্রায় সংকোচ। আকর্ষণের পরিবর্তে বিকর্ষণ, সুখের পরিবর্তে দুঃখ, হাসির পরিবর্তে কান্না। জীবের গতিবিধি কেবলমাত্র বাহিরের আঘাতের দ্বারা পরিমিত হয় না। ভিতর হইতে নানাবিধ আবেগ আসিয়া বাহিরের গতিকে জটিল করিয়া রাখিয়াছে। সেই ভিতরের আবেগ কতকটা অভ্যাস, কতকটা স্বেচ্ছাকৃত। এইরূপ বহুবিধ ভিতর ও বাহিরের আঘাত আবেগের দ্বারা চালিত মানুষের গতি কে নিরুপণ করিতে পারে? কিন্তু মাধ্যাকর্যণশক্তি কেহ এড়াইতে পারে না। সেই অদৃশ্য শক্তিবলে বহু বৎসর পরে আজ আমি আমার জন্মস্থানে উপনীত হইয়াছি। জন্মলাভ সূত্রে জন্মস্থানের যে একটা আকর্ষণ আছে তাহা স্বাভাবিক। কিন্তু আজ এই যে সভার সভাপতির আসনে আমি স্থান লইয়াছি তাহার যুক্তি একেবারে স্বতঃসিদ্ধ নহে। প্রশ্ন হইতে পারে, সাহিত্য-ক্ষেত্রে কি বিজ্ঞানসেবকের স্থান আছে? এই সাহিত্য-সম্মিলন বাঙালীর মনের এক ঘনীভূত চেতনাকে বাংলাদেশের এক সীমা হইতে অন্য সীমায় বহন করিয়া লইয়া চলিয়াছে এবং সফলতার চেষ্টাকে সর্বত্র গভীরভাবে জাগাইয়া তুলিতেছে। ইহা হইতে স্পষ্ট দেখিতে পাইতেছি, এই সম্মিলনের মধ্যে বাঙালীর যে ইচ্ছা আকার ধারণ করিয়া উঠিতেছে তাহার মধ্যে কোনো সংকীর্ণতা নাই। এখানে সাহিত্যকে কোনো ক্ষুদ্র কোঠার মধ্যে সীমাবদ্ধ করা হয় নাই, বরং মনে হয়, আমরা উহাকে বড়ো করিয়া উপলব্ধি করিবার সংকল্প করিয়াছি। আজ আমাদের পক্ষে সাহিত্য কোনো সুন্দর অলংকার মাত্র নহে– আজ আমরা আমাদের চিত্তের সমস্ত সাধনাকে সাহিত্যের নামে এক করিয়া দেখিবার জন্য উৎসুক হইয়াছি। এই সাহিত্য-সম্মিলন-যজ্ঞে যাঁহাদিগকে পুরোহিতপদে বরণ করা হইয়াছে তাঁহাদের মধ্যে বৈজ্ঞানিককেও দেখিয়াছি। আমি যাঁহাকে সুহৃদ ও সহযোগী বলিয়া স্নেহ করি এবং স্বদেশীয় বলিয়া গৌরব করিয়া থাকি, সেই আমাদের দেশমান্য আচার্য শ্রীযুক্ত প্রফুল্লচন্দ্র একদিন এই সম্মিলন-সভার প্রধান আসন অলংকৃত করিয়াছেন। তাঁহাকে সমাদর করিয়া সাহিত্য-সম্মিলন যে কেবল গুণের পূজা করিয়াছেন তাহা নহে, সাহিত্যের একটি উদার মূর্তি দেশের সম্মুখে প্রকাশ করিয়াছেন। পাশ্চাত্য দেশে জ্ঞানরাজ্যে এখন ভেদবুদ্ধির অত্যন্ত প্রচলন হইয়াছে। সেখানে জ্ঞানের প্রত্যেক শাখাপ্রশাখা নিজেকে স্বতন্ত্র রাখিবার জন্যই বিশেষ আয়োজন করিয়াছে; তাহার ফলে নিজেকে এক করিয়া জানিবার চেষ্টা এখন লুপ্তপ্রায় হইয়াছে। জ্ঞান-সাধনার প্রথমাবস্থায় এরূপ জাতিভেদ প্রথায় উপকার করে, তাহাতে উপকরণ সংগ্রহ করা এবং তাহাকে সজ্জিত করিবার সুবিধা হয়; কিন্তু শেষ পর্যন্ত যদি কেবল এই প্রথাকেই অনুসরণ করি তাহা হইলে সত্যের পূর্ণমূর্তি প্রত্যক্ষ করা ঘটিয়া উঠে না; কেবল সাধনাই চলিতে থাকে, সিদ্ধির দর্শন পাই না। অপর দিকে, বহুর মধ্যে এক যাহাতে হারাইয়া না যায়, ভারতবর্ষ সেই দিকে সর্বদা লক্ষ্য রাখিয়াছে। সেই চিরকালের সাধনার ফলে আমরা সহজেই এককে দেখিতে পাই, আমাদের মনে সে সম্বন্ধে কোনো প্রবল বাধা ঘটে না। আমি অনুভব করিতেছি, আমাদের সাহিত্য-সম্মিলনের ব্যাপারে স্বভাবতঃই এই ঐক্যবোধ কাজ করিয়াছে। আমরা এই সম্মিলনের প্রথম হইতেই সাহিত্যের সীমা নির্ণয় করিয়া তাহার অধিকারের দ্বারা সংকীর্ণ করিতে মনেও করি নাই। পরন্তু, আমরা তাহার অধিকারকে সহজেই প্রসারিত করিয়া দিবার দিকেই চলিয়াছি। ফলতঃ জ্ঞান অন্বেষণে আমরা অজ্ঞাতসারে এক সর্বব্যাপী একতার দিকে অগ্রসর হইতেছি। সেই সঙ্গে সঙ্গে আমরা নিজেদের এক বৃহৎ পরিচয় জানিবার জন্য উৎসুক হইয়াছি। আমরা কি চাহিতেছি, কি ভাবিতেছি, কি পরীক্ষা করিতেছি, তাহা এক স্থানে দেখিলে আপনাকে প্রকৃতরূপে দেখিতে পাইব। সেইজন্য আমাদের দেশে আজ যে-কেহ গান করিতেছে, ধ্যান করিতেছে, অন্বেষণ করিতেছে, তাঁহাদের সকলকেই এই সাহিত্য সম্মিলনে সমবেত করিবার আহ্বান প্রেরিত হইয়াছে। এই কারণে, যদিও জীবনের অধিকাংশ কাল আমি বিজ্ঞানের অনুশীলনে যাপন করিয়াছি, তথাপি সাহিত্য-সম্মিলন-সভার নিমন্ত্রণ গ্রহণ করিতে দ্বিধা বোধ করি নাই। কারণ আমি যাহা খুঁজিয়াছি, দেখিয়াছি, লাভ করিয়াছি, তাহাকে দেশের অন্যান্য নানা লাভের সঙ্গে সাজাইয়া ধরিবার অপেক্ষা আর কি সুখ হইতে পারে? আর এই সুযোগে আজ আমাদের দেশের সমস্ত সত্য-সাধকদের সহিত এক সভায় মিলিত হইবার অধিকার যদি লাভ করিয়া থাকি তবে তাহা অপেক্ষা আনন্দ আমার আর কি হইতে পারে?
জগদীশচন্দ্র বসু
কবিতা ও বিজ্ঞান জগদীশচন্দ্র বসু কবি এই বিশ্বজগতে তাঁহার হৃদয়ের দৃষ্টি দিয়া একটি অরূপকে দেখিতে পান, তাহাকেই তিনি রূপের মধ্যে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করেন। অন্যের দেখা যেখানে ফুরাইয়া যায় সেখানেও তাঁহার ভাবের দৃষ্টি অবরুদ্ধ হয় না। সেই অপরূপ দেশের বার্তা তাঁহার কাব্যের ছন্দে ছন্দে নানা আভাসে বাজিয়া উঠিতে থাকে। বৈজ্ঞানিকের পন্থা স্বতন্ত্র হইতে পারে, কিন্তু কবিত্ব-সাধনার সহিত তাঁহার সাধনার ঐক্য আছে। দৃষ্টির আলোক যেখানে শেষ হইয়া যায় সেখানেও তিনি আলোকের অনুসরণ করিতে থাকেন, শ্রুতির শক্তি যেখানে সুরের শেষ সীমায় পৌঁছায় সেখান হইতেও তিনি কম্পমান বাণী আহরণ করিয়া আনেন। প্রকাশের অতীত যে রহস্য প্রকাশের আড়ালে বসিয়া দিনরাত্রি কাজ করিতেছে, বৈজ্ঞানিক তাহাকেই প্রশ্ন করিয়া দুর্বোধ উত্তর বাহির করিতেছেন এবং সেই উত্তরকেই মানব-ভাষায় যথাযথ করিয়া ব্যক্ত করিতে নিযুক্ত আছেন। এই যে প্রকৃতির রহস্য-নিকেতন, ইহার নানা মহল, ইহার দ্বার অসংখ্য। প্রকৃতি বিজ্ঞানবিৎ, রাসায়নিক, জীবতত্ত্ববিৎ ভিন্ন ভিন্ন দ্বার দিয়া এক-এক মহলে প্রবেশ করিয়াছেন; মনে করিয়াছেন সেই সেই মহলই বুঝি তাঁহার বিশেষ স্থান, অন্য মহলে বুঝি তাঁহার গতিবিধি নাই। তাই জড়কে, উদ্ভিদ্‌কে, সচেতনকে তাঁহারা অলঙ্ঘ্যভাবে বিভক্ত করিয়াছেন। কিন্তু এই বিভাগকে দেখাই যে বৈজ্ঞানিক দেখা, এ কথা আমি স্বীকার করি না। কক্ষে কক্ষে সুবিধার জন্য যত দেয়াল তোলাই যাক্ না, সকল মহলেরই এক অধিষ্ঠাতা। সকল বিজ্ঞানই পরিশেষে এই সত্যকে আবিষ্কার করিবে বলিয়া ভিন্ন ভিন্ন পথ দিয়া যাত্রা করিয়াছে। সকল পথই যেখানে একত্র মিলিয়াছে সেইখানেই পূর্ণ সত্য। সত্য খণ্ড খণ্ড হইয়া আপনার মধ্যে অসংখ্য বিরোধ ঘটাইয়া অবস্থিত নহে। সেইজন্য প্রতি দিনই দেখিতে পাই জীবতত্ত্ব, রসায়নতত্ত্ব, প্রকৃতিতত্ত্ব, আপন আপন সীমা হারাইয়া ফেলিতেছে। বৈজ্ঞানিক ও কবি, উভয়েরই অনুভূতি অনির্বচনীয় একের সন্ধানে বাহির হইয়াছে। প্রভেদ এই, কবি পথের কথা ভাবেন না, বৈজ্ঞানিক পথটাকে উপেক্ষা করেন না। কবিকে সর্বদা আত্মহারা হইতে হয়, আত্মসংবরণ করা তাঁহার পক্ষে অসাধ্য। কিন্তু কবির কবিত্ব নিজের আবেগের মধ্য হইতে তো প্রমাণ বাহির করিতে পারে না! অজন্য তাঁহাকে উপমার ভাষা ব্যবহার করিতে হয়। সকল কথায় তাঁহাকে ‘যেন’ যোগ করিয়া দিতে হয়। বৈজ্ঞানিককে যে পথ অনুসরণ করিতে হয় তাহা একান্ত বন্ধুর এবং পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের কঠোর পথে তাঁহাকে সর্বদা আত্মসংবরণ করিয়া চলিতে হয়। সর্বদা আত্মসংবরণ করিয়া চলিতে হয়। সর্বদা তাঁহার ভাবনা, পাছে নিজের মন নিজকে ফাঁকি দেয়। এজন্য পদে পদে মনের কথাটা বাহিরের সঙ্গে মিলাইয়া চলিতে হয়। দুই দিক হইতে যেখানে না মিলে সেখানে তিনি এক দিকের কথা কোনোমতেই গ্রহণ করিতে পারেন না। ইহার পুরস্কার এই যে, তিনি যেটুকু পান তাহার চেয়ে কিছুমাত্র বেশি দাবি করিতে পারেন না বটে, কিন্তু সেটুকু তিনি নিশ্চিতরূপেই পান এবং ভারি পাওয়ার সম্ভাবনাকে তিনি কখনও কোনো অংশে দুর্বল করিয়া রাখেন না। কিন্তু এমন যে কঠিন নিশ্চিতের পথ, এই পথ দিয়াও বৈজ্ঞানিক সেই অপরিসীম রহস্যের অভিমুখেই চলিয়াছেন। এমন বিস্ময়ের রাজ্যের মধ্যে গিয়া উত্তীর্ণ হইতেছেন যেখানে অদৃশ্য আলোকরশ্মির পথের সম্মুখে স্থুল পদার্থের বাধা একেবারেই শূন্য হইয়া যাইতেছে এবং যেখানে বস্তু ও শক্তি এক হইয়া দাঁড়াইতেছে। এইরূপ হঠাৎ চক্ষুর আবরণ অপসারিত হইয়া এক অচিন্তনীয় রাজ্যের দৃশ্য যখন বৈজ্ঞানিককে অভিভূত করে তখন মুহূর্তের জন্য তিনিও আপনার স্বাভাবিক আত্মসংবরণ করিতে বিস্মৃত হন এবং বলিয়া উঠেন “যেন” নহে – এই ‘সেই’।
জগদীশচন্দ্র বসু
বিজ্ঞানে সাহিত্য – অদৃশ্য আলোক জগদীশচন্দ্র বসু কবিতা ও বিজ্ঞানের কি ঘনিষ্ঠ সম্বন্ধ তাহার উদাহরণস্বরূপ আপনাদিগকে এক অত্যাশ্চর্য অদৃশ্য জগতে প্রবেশ করিতে আহ্বান করিব। সেই অসীম রহস্যপূর্ণ জগতের এক ক্ষুদ্র কোণে আমি যাহা কতক স্পষ্ট কতক অস্পষ্ট-ভাবে উপলব্ধি করিয়াছি, কেবলমাত্র তাহার সম্বন্ধেই দুই একটি কথা বলিব। কবির চক্ষু এই বহু রঙে রঞ্জিত আলোক-সমুদ্র দেখিয়াও অতৃপ্ত রহিয়াছে। এই সাতটি রঙ তাহার চক্ষুর তৃষা মিটাইতে পারে নাই। তবে কি এই দৃশ্য-আলোকের সীমা পার হইয়াও অসীম আলোকপুঞ্জ প্রসারিত রহিয়াছে? এইরূপ অচিন্তনীয় আদৃশ্য আলোকের রহস্য যে আছে তাহার পথ জার্মানির অধ্যাপক হার্টজ প্রথম দেখাইয়া দেন। তড়িৎ-ঊর্মিসঞ্জাত সেই অদৃশ্য আলোকের প্রকৃতি সম্বন্ধে কতকগুলি তত্ত্ব প্রেসিডেন্সি কলেজের পরীক্ষাগারে আলোচিত হইয়াছে। সময় থাকিলে দেখাইতে পারিতাম, কিরূপে অস্বচ্ছ বস্তুর আভ্যন্তরিক আণবিক সন্নিবেশ এই অদৃশ্য আলোকের দ্বারা ধরা যাইতে পারে। আপনারা আরও দেখিতেন, বস্তুর স্বচ্ছতা ও অস্বচ্ছতা সম্বন্ধে অনেক ধারণাই ভুল। যাহা অস্বচ্ছ মনে করি তাহার ভিতর দিয়া আলো অবাধে যাইতেছে। আবার এমন অদ্ভুত বস্তুও আছে যাহা এক দিক ধরিয়া দেখিলে স্বচ্ছ, অন্য দিক ধরিয়া দেখিলে অস্বচ্ছ। আরও দেখিতে পাইতেন যে, দৃশ্য আলোক যেরূপ বহুমূল্য কাচ-বর্তুল দ্বারা দূরে অক্ষীণভাবে প্রেরণ করা যাইতে পারে সেইরূপ মৃৎ-বর্তুল সাহায্যে অদৃশ্য আলোকপুঞ্জও বহু দূরে প্রেরিত হয়। ফলতঃ দৃশ্য আলোক সংহত করিবার জন্য হীরকখণ্ডের যেরূপ ক্ষমতা, অদৃশ্য আলোক সংহত করিবার জন্য মৃৎপিণ্ডের ক্ষমতা তাহা অপেক্ষাও অধিক। আকাশ-সংগীতের অসংখ্য সুরসপ্তকের মধ্যে একটি সপ্তকমাত্র আমাদের দর্শনেন্দ্রিয়কে উত্তেজিত করে। সেই ক্ষুদ্র গণ্ডিটিই আমাদের দৃশ্য-রাজ্য। অসীম জ্যোতিরাশির মধ্যে আমরা অন্ধবৎ ঘুরিতেছি। অসহ্য এই মানুষের অপূর্ণতা! কিন্তু তাহা সত্ত্বেও মানুষের মন একেবারে ভাঙিয়া যায় নাই; সে অদম্য উৎসাহে নিজের অপূর্ণতার ভেলায় অজানা সমুদ্র পার হইয়া নূতন দেশের সন্ধানে ছুটিয়াছে।
জগদীশচন্দ্র বসু
বৃক্ষজীবনের ইতিহাস জগদীশচন্দ্র বসু দৃশ্য আলোকের বাহিরে অদৃশ্য আলোক আছে; তাহাকে খুঁজিয়া বাহির করিলে আমাদের দৃষ্টি যেমন অনন্তের মধ্যে প্রসারিত হয়, তেমনি চেতন রাজ্যের বাহিরে যে বাক্যহীন বেদনা আছে তাহাকে বোধগম্য করিলে আমাদের অনুভূতি আপনার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করিয়া দেখিতে পায়। সেইজন্য রুদ্রজ্যোতির রহস্যালোক হইতে এখন শ্যামল উদ্ভিদ-রাজ্যের গভীরতম নীরবতার মধ্যে আপনাদিগকে আহ্বান করিব। প্রতিদিন এই যে অতি বৃহৎ উদ্ভিদ-জগৎ আমাদের চক্ষুর সম্মুখে প্রসারিত, ইহাদের জীবনের সহিত কি আমাদের জীবনের কোনো সম্বন্ধ আছে? উদ্ভিদ-তত্ত্ব সম্বন্ধে অগ্রগণ্য পণ্ডিতেরা ইহাদের সঙ্গে কোনো আত্মীয়তা স্বীকার করিতে চান না। বিখ্যাত বার্ডন সেণ্ডারসন বলেন যে, কেবল দুই চারি প্রকারের গাছ ছাড়া সাধারণ বৃক্ষ বাহিরের আঘাতে দৃশ্যভাবে কিংবা বৈদ্যুতিক চাঞ্চল্যের দ্বারা সাড়া দেয় না। আর লাজুক জাতীয় গাছ যদিও বৈদ্যুতিক সাড়া দেয় তবু সেই সাড়া জন্তুর সাড়া হইতে সম্পূর্ণ বিভিন্ন। ফেফর প্রমুখ উদ্ভিদ-শাস্ত্রের অগ্রণী পণ্ডিতগণ এক বাক্যে বলিয়াছেন যে, বৃক্ষ স্নায়ুহীন। আমাদের স্নায়ুসুত্র যেরূপ বাহিরের বার্তা বহন করিয়া আনে, উদ্ভিদে এরূপ কোনো সূত্র নাই। ইহা হইতে মনে হয়, পাশাপাশি যে প্রাণী ও উদ্ভিদ-জীবন প্রবাহিত হইতে দেখিতেছি তাহা বিভিন্ন নিয়মে পরিচালিত। উদ্ভিদ-জীবনে বিভিন্ন সমস্যা অত্যন্ত দুরূহ– সেই দুরূহতা ভেদ করিবার জন্য অতি সূক্ষ্মদর্শী কোনো কল এ পর্যন্ত আবিস্কৃত হয় নাই। প্রধানতঃ এ জন্যই প্রত্যক্ষ পরীক্ষার পরিবর্তে অনেক স্থলে মনগড়া মতের আশ্রয় লইতে হইয়াছে। কিন্তু প্রকৃত তত্ত্ব জানিতে হইলে আমাদিগকে মতবাদ ছাড়িয়া পরীক্ষার প্রত্যক্ষ ফল পাইবার চেষ্টা করিতে হইবে। নিজের কল্পনাকে ছাড়িয়া বৃক্ষকেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করিতে হইবে এবং কেবলমাত্র বৃক্ষের স্বহস্ত-লিখিত বিবরণই সাক্ষ্যরূপে গ্রহণ করিতে হইবে।
জগদীশচন্দ্র বসু
বৃক্ষের দৈনন্দিন ইতিহাস জগদীশচন্দ্র বসু বৃক্ষের আভ্যন্তরিক পরিবর্তন আমরা কি করিয়া জানিব? যদি কোনো অবস্থাগুণে বৃক্ষ উত্তেজিত হয় বা অন্য কোনো কারণে বৃক্ষের অবসাদ উপস্থিত হয় তবে এইসব ভিতরের অদৃশ্য পরিবর্তন আমরা বাহির হইতে কি করিয়া বুঝিব? তাহার একমাত্র উপায়– সকল প্রকার আঘাতে গাছ যে সাড়া দেয়, কোনো প্রকারে তাহা ধরিতে ও মাপিতে পারা। জীব যখন কোনো বাহিরের শক্তি-দ্বারা আহত হয় তখন সে নানারূপে তাহার সাড়া দিয়া থাকে– যদি কণ্ঠ থাকে তবে চীৎকার করিয়া, যদি মূক হয় তবে হাত পা নাড়িয়া। বাহিরের ধাক্কা কিংবা ‘নাড়া’র উত্তরে ‘সাড়া’ নাড়ার পরিমাণ অনুসারে সাড়ার পরিমাণ মিলাইয়া দেখিলে আমরা জীবনের পরিমাণ মাপিয়া লইতে পারি। উত্তেজিত অবস্থায় অল্প নাড়ায় প্রকাণ্ড সাড়া পাওয়া যায়। অবসন্ন অবস্থায় অধিক নাড়ায় ক্ষীণ সাড়া। আর যখন মৃত্যু আসিয়া জীবকে পরাভূত করে তখন হঠাৎ সর্বপ্রকারের সাড়ার অবসান হয়। সুতরাং বৃক্ষের আভ্যন্তরিক অবস্থা ধরা যাইতে পারিত, যদি বৃক্ষকে দিয়া তাহার সাড়াগুলি কোনো প্ররোচনায় কাগজ-কলমে লিপিবদ্ধ করাইয়া লইতে পারিতাম। সেই আপাততঃ অসম্ভব কার্যে কোনো উপায়ে যদি সফল হইতে পারি তাহার পরে সেই নূতন লিপি এবং নূতন ভাষা আমাদিগকে শিখিয়া লইতে হইবে। নানান দেশের নানান ভাষা, সে ভাষা লিখিবার অক্ষরও নানাবিধ, তার মধ্যে আবার এক নূতন লিপি প্রচার করা যে একান্ত শোচনীয় তাহাতে সন্দেহ নাই। এক লিপি-সভার সভ্যগণ ইহাতে ক্ষুণ্ণ হইবেন, কিন্তু এই সম্বন্ধে অন্য উপায় নাই। সৌভাগ্যের বিষয় এই যে, গাছের লেখা কতকটা দেবনাগরীর মতো– অশিক্ষিত কিংবা অর্ধশিক্ষিতের পক্ষে একান্ত দুর্বোধ্য। সে যাহা হউক, মানস-সিদ্ধির পক্ষে দুইটি প্রতিবন্ধক– প্রথমত, গাছকে নিজের সম্বন্ধে সাক্ষ্য দিতে সম্মত করানো, দ্বিতীয়তঃ গাছ ও কলের সাহায্যে তাহার সেই সাক্ষ্য লিপিবদ্ধ করা। শিশুকে দিয়া আজ্ঞাপালন অপেক্ষাকৃত সহজ, কিন্তু গাছের নিকট হইতে উত্তর আদায় করা অতি কঠিন সমস্যা। প্রথম প্রথম এই চেষ্টা অসম্ভব বলিয়াই মনে হইত। তবে বহু বৎসরের ঘনিষ্ঠতা নিবন্ধন তাহাদের প্রকৃতি অনেকটা বুঝিতে পারিয়াছি। এই উপলক্ষে আজ আমি সহৃদয় সভ্যসমাজের নিকট স্বীকার করিতেছি, নিরীহ গাছপালার নিকট হইতে বলপূর্বক সাক্ষ্য আদায় করিবার জন্য তাহাদের প্রতি অনেক নিষ্ঠুর আচরণ করিয়াছি। এই জন্য বিচিত্র প্রকারের চিম্‌টি উদ্ভাবন করিয়াছি– সোজাসুজি অথবা ঘূর্ণয়মান। সূচ দিয়া বিদ্ধ করিয়াছি এবং অ্যাসিড দিয়া পোড়াইয়াছি। সে সব কথা অধিক বলিব না। তবে আজ জানি যে, এই প্রকার জবরদস্তি দ্বারা যে সাক্ষ্য আদায় করা যায় তাহার কোনো মূল্য নাই। ন্যায়পরায়ণ বিচারক এই সাক্ষ্যকে কৃত্রিম বলিয়া সন্দেহ করিতে পারেন। যদি গাছ লেখনী-যন্ত্রের সাহায্যে তাহার বিবিধ সাড়া লিপিবদ্ধ করিত তাহা হইলে বৃক্ষের প্রকৃত ইতিহাস সমুদ্ধার করা যাইতে পারিত। কিন্তু এই কথা তো দিবা-স্বপ্ন মাত্র। এইরূপ কল্পনা আমাদের জীবনের নিশ্চেষ্ট অবস্থাকে কিঞ্চিৎ ভাবাবিষ্ট করে মাত্র। ভাবুকতার তৃপ্তি সহজসাধ্য; কিন্তু অহিফেনের ন্যায় ইহা ক্রমে ক্রমে মর্মগ্রন্থি শিথিল করে। যখন স্বপ্নরাজ্য হইতে উঠিয়া কল্পনাকে কর্মে পরিণত করিতে চাই তখনই সম্মুখে দুর্ভেদ্য প্রাচীর দেখিতে পাই। প্রকৃতিদেবীর মন্দির লৌহ-অর্গলিত। সেই দ্বার ভেদ করিয়া শিশুর আবদার এবং ক্রন্দনধ্বনি ভিতর পৌঁছে না; কিন্তু যখন বহুকালের একাগ্রতা-সঞ্চিত শক্তিবলে রুদ্ধ দ্বার ভাঙিয়া যায় তখনই প্রকৃতিদেবী সাধকের নিকট আবির্ভূত হন।
জগদীশচন্দ্র বসু
ভারতে অনুসন্ধানের বাধা জগদীশচন্দ্র বসু সর্বদা শুনিতে পাওয়া যায় যে, আমাদের দেশে যথোচিত উপকরণবিশিষ্ট পরীক্ষাগারের অভাবে অনুসন্ধান অসম্ভব। এ কথা যদিও অনেক পরিমাণে সত্য, কিন্তু ইহা সম্পূর্ণ সত্য নহে। যদি ইহাই সত্য হইত তাহা হইলে অন্য দেশে, যেখানে পরীক্ষাগার নির্মাণে কোটি মুদ্রা ব্যয়িত হইয়াছে, সেই স্থান হইতে প্রতিদিন নুতন তত্ত্ব আবিষ্কৃত হইত। কিন্তু সেরূপ সংবাদ শোনা যাইতেছে না। আমাদের অনেক অসুবিধা আছে, অনেক প্রতিবন্ধক আছে সত্য, কিন্তু পরের ঐশ্বর্যে আমাদের ঈর্ষা করিয়া কি লাভ? অবসাদ ঘুচাও। দুর্বলতা পরিত্যাগ করো। মনে করো, আমরা যে অবস্থাতে পড়ি না কেন সে-ই আমাদের প্রকৃষ্ট অবস্থা। ভারতই আমাদের কর্মভূমি, এখানেই আমাদের কর্তব্য সমাধা করিতে হইবে। যে পৌরুষ হারাইয়াছে সে-ই বৃথা পরিতাপ করে। পরীক্ষাসাধনে পরীক্ষাগারের অভাব ব্যতীত আরও বিঘ্ন আছে। আমরা অনেক সময়ে ভুলিয়া যাই যে, প্রকৃত পরীক্ষাগার আমাদের অন্তরে। সেই অন্তরতম দেশেই অনেক পরীক্ষা পরীক্ষিত হইতেছে। অন্তরদৃষ্টিকে উজ্জ্বল রাখিতে সাধনার প্রয়োজন হয়। তাহা অল্পেই ম্লান হইয়া যায়। নিরাসক্ত একাগ্রতা যেখানে নাই সেখানে বাহিরের আয়োজনও কোনো কাজে লাগে না। কেবলই বাহিরের দিকে যাহাদের মন ছুটিয়া যায়, সত্যকে লাভ করার চেয়ে দশজনের কাছে প্রতিষ্ঠা লাভের জন্য যাহারা লালায়িত হইয়া উঠে, তাহারা সত্যের দর্শন পায় না। সত্যের প্রতি যাহাদের পরিপূর্ণ শ্রদ্ধা নাই, ধৈর্যের সহিত তাহারা সমস্থ দুঃখ বহন করিতে পারে না; দ্রুতবেগে খ্যাতিলাভ করিবার লালসায় তাহারা লক্ষ্যভ্রষ্ট হইয়া যায়। এইরূপ চঞ্চলতা যাহাদের আছে, সিদ্ধির পথ তাহাদের জন্য নহে। কিন্তু সত্যকে যাহারা যথার্থ চায়, উপকরণের অভাব তাহাদের পক্ষে প্রধান অভাব নহে। কারণ দেবী সরস্বতীর যে নির্মল শ্বেতপদ্ম তাহা সোনার পদ্ম নহে, তাহা হৃদয়-পদ্ম।
জগদীশচন্দ্র বসু
গাছের লেখা জগদীশচন্দ্র বসু বৃক্ষের বিবিধ সাড়া লিপিবদ্ধ করিবার বিবিধ সূক্ষ্ম যন্ত্র নির্মাণের আবশ্যকতার কথা বলিতেছিলাম। দশ বৎসর আগে যাহা কল্পনা মাত্র ছিল তাহা এই কয় বৎসরের চেষ্টার পর কার্যে পরিণত হইয়াছে। সার্থকতার পূর্বে কত প্রযত্ন যে ব্যর্থ হইয়াছে তাহা এখন বলিয়া লাভ নাই এবং এই বিভিন্ন কলগুলির গঠনপ্রণালী বর্ণনা করিয়াও আপনাদের ধৈর্যচ্যুতি করিব না। তবে ইহা বলা আবশ্যক যে, এই বিবিধ কলের সাহায্যে বৃক্ষের বহুবিধ সাড়া লিখিত হইবে; বৃক্ষের বৃদ্ধি মুহূর্তে মুহূর্তে নির্ণীত হইবে, তাহার স্বতঃস্পন্দন লিপিবদ্ধ হইবে এবং জীবন ও মৃত্যুরেখা তাহার আয়ু পরিমিত করিবে। এই কলের আশ্চর্য শক্তি সম্বন্ধে ইহা বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে, ইহার সাহায্যে সময় গণনা এত সূক্ষ্ম হইবে যে, এক সেকেণ্ডের সহস্র ভাগের এক ভাগ অনায়াসে নির্ণীত হইবে। আর এক কথা শুনিয়া আপনারা প্রীত হইবেন। যে-কলের নির্মাণ অন্যান্য সৌভাগ্যবান দেশেও অসম্ভব বলিয়া প্রতীয়মান হইয়াছে, সেই কল এ দেশে আমাদের কারিকর দ্বারাই নির্মিত হইয়াছে। ইহার মনন ও গঠন সম্পূর্ণ এই দেশীয়। এইরূপ বহু পরীক্ষার পর বৃক্ষজীবন ও মানবীয় জীবন যে একই নিয়মে পরিচালিত তাহা প্রমাণ করিতে সমর্থ হইয়াছি। প্রায় বিশ বৎসর পূর্বে কোনো প্রবন্ধে লিখিয়াছিলাম বৃক্ষজীবন যেন মানবজীবনেরই ছায়া। কিছু না জানিয়াই লিখিয়াছিলাম। স্বীকার করিতে হয়, সেটা যৌবনসুলভ অতি সাহস এবং কথার উত্তেজনা মাত্র। আজ সেই লুপ্ত স্মৃতি শব্দায়মান হইয়া ফিরিয়া আসিয়াছে এবং স্বপ্ন ও জাগরণ আজ একত্র আসিয়া মিলিত হইয়াছে।
জগদীশচন্দ্র বসু
উপসংহার জগদীশচন্দ্র বসু আমি সম্মিলন-সভায় কি দেখিলাম, উপসংহার কালে আপনাদিগের নিকট সেই কথা বলিব। বহুদিন পূর্বে দাক্ষিণাত্যে একবার গুহামন্দির দেখিতে গিয়াছিলাম। সেখানে এক গুহার অর্ধ অন্ধকারে বিশ্বকর্মার মূর্তি অধিষ্ঠিত দেখিলাম। সেখানে বিবিধ কারুকর তাহাদের আপন আপন কাজ করিবার নানা যন্ত্র দেবমূর্তির পদতলে রাখিয়া পূজা করিতেছে। তাহাই দেখিতে দেখিতে ক্রমে আমি বুঝিতে পারিলাম, আমাদের এই বাহুই বিশ্বকর্মার আয়ুধ। এই আয়ুধ চালনা করিয়া তিনি পৃথিবীর মৃৎপিণ্ডকে নানাপ্রকারে বৈচিত্রশালী করিয়া তুলিতেছেন। সেই মহাশিল্পীর আবির্ভাবের ফলেই আমাদের জড়দেহ চেতনাময় ও সৃজনশীল হইয়া উঠিয়াছে। সেই আবির্ভাবের ফলেই আমরা মন ও হস্তের দ্বারা সেই শিল্পীর নানা অভিপ্রায়কে নানা রূপের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করিতে শিখিয়াছি; কখনও শিল্পকলায়, কখনও বিজ্ঞানে। গুহামন্দিরে যে ছবিটি দেখিয়াছিলাম এখানে সভাস্থলে তাহাই আজ সজীবরূপে দেখিলাম। দেখিলাম, আমাদের দেশের বিশ্বকর্মা বাঙালী-বিত্তের মধ্যে যে কাজ করিতেছেন তাঁহার সেই কাজের নানা উপকরণ। কোথাও বা তাহা কবিকল্পনা, কোথাও যুক্তিবিচার, কোথাও তথ্যসংগ্রহ। আমরা সেই সমস্ত উপকরণ তাঁহারই সম্মুখে স্থপিত করিয়া এখানে তাঁহার পূজা করিতে আসিয়াছি। মানবশক্তির মধ্যে এই দৈবশক্তির আবির্ভাব, ইহা আমাদের দেশের চিরকালের সংস্কার। দৈবশক্তির বলেই জগতে সৃজন ও সংহার হইতেছে। মানুষে দৈবশক্তির আবির্ভাব যদি সম্ভব হয়, তবে মানুষ সৃজন করিতেও পারে এবং সংহার করিতেও পারে। আমাদের মধ্যে যে জড়তা, যে ক্ষুদ্রতা, যে ব্যর্থতা আছে তাহাকে সংহার করিবার শক্তিও আমাদের মধ্যেই রহিয়াছে। এ সমস্থ দুর্বলতার বাধা আমাদের পক্ষে কখনই চিরসত্য নহে। যাহারা অমরত্বের অধিকারী তাহারা ক্ষুদ্র হইয়া থাকিবার জন্য জন্মগ্রহণ করে নাই। সৃজন করিবার শক্তিও আমাদের মধ্যে বিদ্যমান। আমাদের যে জাতীয় মহত্ত্ব লুপ্তপ্রায় হইয়া আসিয়াছে তাহা এখনও আমাদের অন্তরের সেই সৃজনীশক্তির জন্য অপেক্ষা করিয়া আছে। ইচ্ছাকে জাগ্রত করিয়া তাহাকে পুনরায় সৃজন করিয়া তোলা আমাদের শক্তির মধ্যেই রহিয়াছে। আমাদের দেশের যে মহিমা একদিন অভ্রভেদ করিয়া উঠিয়াছিল তাহার উত্থানবেগ একেবারে পরিসমাপ্ত হয় নাই, পুনরায় একদিন তাহা আকাশ স্পর্শ করিবেই করিবে। সেই আমাদের সৃজনশক্তিরই একটি চেষ্টা বাংলা সাহিত্যপরিষদে আজ সফল মূর্তি ধারণ করিয়াছে। এই পরিষদকে আমরা কেবলমাত্র একটি সভাস্থল বলিয়া গণ্য করিতে পারি না; ইহার ভিত্তি কলিকাতার কোনো বিশেষ পথপার্শ্বে স্থাপিত হয় নাই এবং ইহার অট্টালিকা ইষ্টক দিয়া গ্রথিত নহে। আন্তরদৃষ্টিতে দেখিলে দেখিতে পাইব, সাহিত্যপরিষদ সাধকদের সম্মুখে দেব-মন্দিররূপেই বিরাজমান। ইহার ভিত্তি সমস্ত বাংলাদেশের মর্মস্থলে স্থাপিত এবং ইহার অট্টালিকা আমাদের জীবনস্তর দিয়া রচিত হইতেছে। এই মন্দিরে প্রবেশ করিবার সময় আমাদের ক্ষুদ্র আমিত্বের সর্বপ্রকার অশুচি আবরণ যেন আমরা বাহিরে পরিহার করিয়া আসি এবং আমাদের হৃদয়-উদ্যানের পবিত্রতম ফুল ও ফলগুলিকে যেন পূজার উপহার স্বরূপ দেবচরণে নিবেদন করিতে পারি।
জগদীশচন্দ্র বসু
নির্বাক জীবন জগদীশচন্দ্র বসু ঘর হইতে বাহির হইলেই চারি দিক ব্যাপিয়া জীবনের উচ্ছ্বাস দেখিতে পাই। সেই জীবন একেবারে নিঃশব্দ। শীত ও গ্রীষ্ম, মলয় সমীর ও ঝটিকা, বৃষ্টি ও অনাবৃষ্টি, আলো ও আঁধার এই নির্বাক জীবন লইয়া ক্রীড়া করিতেছে। কত বিচিত্র ঘটনার সমাবেশ, কত প্রকারের আঘাত ও কত প্রকারের আভ্যন্তরিক সাড়া এই স্থির, এই নিশ্চলবৎ জীবন প্রতিমার ভিতরে কত অদৃশ্য ক্রিয়া চলিতেছে! কি প্রকারে এই অপ্রকাশকে সুপ্রকাশ করিব? গাছের প্রকৃত ইতিহাস সমুদ্ধার করিতে হইলে গাছের নিকটই যাইতে হইবে। সেই ইতিহাস অতি জটিল এবং বহু রহস্যপূর্ণ। সেই ইতিহাস উদ্ধার করিতে হইলে বৃক্ষ ও যন্ত্রের সাহায্যে জন্ম হইতে মৃত্যু পর্যন্ত মুহূর্তে মুহূর্তে তাহার ক্রিয়াকলাপ লিপিবদ্ধ করিতে হইবে। এই লিপি বৃক্ষের স্বলিখিত এবং স্বাক্ষরিত হওয়া চাই। ইহাতে মানুষের কোনো হাত থাকিবে না; কারণ মানুষ তাহার স্বপ্রণোদিত ভাব দ্বারা অনেক সময় প্রতারিত হয়। এই যে তিল তিল করিয়া বৃক্ষশিশুটি বাড়িতেছে, যে বৃদ্ধি চক্ষে দেখা যায় না, মুহূর্তের মধ্যে কি প্রকারে তাহাকে পরিমাণের মধ্যে ধরিয়া দেখাইতে পারিব? সেই বৃদ্ধি বাহিরের আঘাতে কি নিয়মে পরিবর্তিত হয়? আহার দিলে কিংবা আহার বন্ধ করিলে কি পরিবর্তন হয় এবং সেই পরিবর্তন আরম্ভ হইতে কত সময় লাগে? ঔষধ সেবনে কিংবা বিষ প্রয়োগে কি পরিবর্তন উপস্থিত হয়? এক বিষ দ্বারা অন্য বিষের প্রতিকার করা যাইতে পারে কি? বিষের মাত্রা প্রয়োগে কি ফলের বৈপরীত্য ঘটে? তাহার পর গাছ বাহিরের আঘাতে যদি কোনোরূপে সাড়া দেয় তবে সেই আঘাত অনুভব করিতে কত সময় লাগে? সেই অনুভব-কাল ভিন্ন ভিন্ন অবস্থায় কি পরিবর্তিত হয়? সে সময়টা কি গাছকে দিয়া লিখাইয়া লইতে পারা যায়? বাহিরের আঘাত ভিতরে কি করিয়া পৌঁছে? স্নায়ুসূত্র আছে কি? যদি থাকে তবে স্নায়ুর উত্তেজনাপ্রবাহ কিরূপ বেগে ধাবিত হয়? কোন্‌ অনুকূল ঘটনায় সেই প্রবাহের গতি বৃদ্ধি হয়? কোন্‌ প্রতিকূল অবস্থায় নিবারিত অথবা নিরস্ত হয়? আমাদের স্নায়বিক ক্রিয়ার সহিত বৃক্ষের ক্রিয়ার কি সাদৃশ্য আছে? সেই গতি ও সেই গতির পরিবর্তন কোনো প্রকারে কি স্বতঃলিখিত হইতে পারে? জীবে হৃৎপিণ্ডের ন্যায় যেরূপ স্পন্দনশীল পেশী আছে, উদ্ভিদে কি তাহা আছে? স্বতঃস্পন্দনের অর্থ কি? পরিশেষে যখন মৃত্যুর প্রবল আঘাতে বৃক্ষের জীবনদীপ নির্বাপিত হয়, সেই নির্বাণ-মুহূর্ত কি ধরিতে পারা যায় এবং সেই মুহূর্তে কি বৃক্ষ কোনো একটা প্রকাণ্ড সাড়া দিয়া চিরকালের জন্য নিদ্রিত হয়? এই সব বিবিধ অধ্যায়ের ইতিহাস বিবিধ যন্ত্র দ্বারা অবিচ্ছিন্নভাবে লিপিবদ্ধ হইলেই গাছের প্রকৃত ইতিহাস উদ্ধার হইবে।
জগদীশচন্দ্র বসু
তরুলিপি জগদীশচন্দ্র বসু জীব কোনোরূপ আঘাত পাইলে চকিত হয়। সেই সংকোচনই জীবনের সাড়া। জীবনের পরিপূর্ণ অবস্থায় সাড়া বৃহৎ হয়, অবসাদের সময় ক্ষীণ হয় এবং মৃত্যুর পর সাড়ার অবসান হয়। বৃক্ষও আহত হইলে ক্ষণিকের জন্য সংকুচিত হয়; কিন্তু সেই সংকোচন স্বল্প বলিয়া সচরাচর দেখিতে পাই না। কলের সাহায্যে সেই স্বল্প আকুঞ্চন বৃহদাকারে লিপিবদ্ধ হইতে পারে। ইহার বাধা এই যে, বৃক্ষের আকুঞ্চনশক্তি অতি ক্ষীণ এবং সাড়া লিখিত হইবার সময় লেখনীফলকের ঘর্ষণে থামিয়া যায়। এই বাধা দূর করিবার জন্য ‘সমতাল’ যন্ত্র আবিষ্কার করিতে সমর্থ হইয়াছিলাম। যদি দুই বিভিন্ন বেহালার তার একই সুরে বাঁধা যায় তাহা হইলে একটি তার বাজাইলে অন্য তারটি সমতালে ঝংকার দিয়া থাকে। তরুলিপিযন্ত্রে লেখনী লৌহতারে নির্মিত এবং এই তারটি বাহিরের অন্য তারের সহিত এক সুরে বাঁধা। মনে কর, দুইটি তারই প্রতি সেকেণ্ডে একশত বার কম্পিত হয়। বাহিরের তার বাজাইলে লেখনীও একশত বার স্পন্দিত হইবে এবং ফলকে একশত বিন্দু অঙ্কিত করিবে। এইরূপে ফলকের সহিত ক্রমাগত ঘর্ষণের বাধা দূরীভূত হয়। ইহা ব্যতীত সাড়ালিপিতে সময়ের সূক্ষ্মাংশ পর্যন্ত নিরূপিত হয়; কারণ এক বিন্দু ও পরবর্তী বিন্দুর মধ্যে এক সেকেণ্ডের শতাংশের ব্যবধান।
জগদীশচন্দ্র বসু
গাছ লাজুক কি অ-লাজুক জগদীশচন্দ্র বসু পরীক্ষার ফল বর্ণনা করিবার পূর্বে তরুজাতিকে যে লাজুক ও অ-লাজুক, সসাড় ও অসাড় বলিয়া দুই ভাগে বিভক্ত করা হইয়াছে সেই কুসংস্কার দূর করা আবশ্যক। সব গাছই যে সাড়া দেয় তাহা বৈদ্যুতিক উপায়ে দেখানো যাইতে পারে। তবে কেবল লজ্জাবতী লতাই কেন পাতা নাড়িয়া সাড়া দেয়, সাধারণ গাছ কেন দেয় না? ইহা বুঝিতে হইলে ভাবিয়া দেখুন যে, আমাদের বাহুর এক পাশের মাংশপেশীর সংকোচন দ্বারাই হাত নাড়িয়া সাড়া দেই। উভয় দিকের মাংশপেশীই যদি সংকুচিত হইত তবে হাত নড়িত না। সাধারণ বৃক্ষের চতুর্দিকের পেশী আহত হইয়া সমভাবে সংকুচিত হয়; তাহার ফলে কোনো দিকেই নড়া হয় না। কিন্তু এক দিকের পেশী যদি ক্লোরোফর্‌ম দিয়া অসাড় করিয়া লওয়া যায় তাহা হইলে সাধারণ গাছের সাড়া দিবার শক্তি সহজেই প্রমাণিত হয়।
জগদীশচন্দ্র বসু
অনুভূতি কাল নিরূপণ জগদীশচন্দ্র বসু জীব যখন আহত হয় ঠিক সেই মুহূর্তে সাড়া দেয় না। ভেকের পায়ে চিমটি কাটিলে সাড়া পাইতে তার ন্যূনাধিক সেকেণ্ডের শত ভাগের এক ভাগ সময় লাগে। ইংরেজী ভাষ্যে এই সময়টুকু ‘লেটেণ্ট পিরিয়ড্‌’। ‘অননুভূতি-সময়’ ইহার প্রতিশব্দরূপে ব্যবহৃত হইল। বাহিরের অবস্থা অনুসারে অননুভূতি-কালের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। মৃদু আঘাত অনুভব করিতে একটু সময় লাগে, কিন্তু প্রচণ্ড আঘাত অনুভব করিতে বেশী সময়ের অপব্যয় হয় না। আর যখন শীতে জীব আড়ষ্ট থাকে তাহার অনুভূতি-কাল তখন দীর্ঘ হইয়া পড়ে। এমন-কি সে সময়ে কখনও কখনও একেবারেই অনুভবশক্তি লোপ পায়। গাছের অনুভূতি সম্বন্ধে এই একই প্রথা। লজ্জাবতীর তাজা অবস্থায় অননুভূতি-কাল সেকেণ্ডের শতাংশের ছয় ভাগ– উদ্যমশীল ভেকের তুলনায় কেবলমাত্র ছয় গুণ বেশি। আর একটি আশ্চর্য বিষয় এই যে, স্থুলকায় বৃক্ষ দিব্য ধীরে সুস্থে সাড়া দিয়া থাকে। কিন্তু কৃশকায়টি একেবারে সপ্তমে চড়িয়া বসে। মনুষ্যলোকেও ইহার সাদৃশ্য আছে কি না, আপনারা বিবেচনা করিয়া দেখিবেন। শীতে গাছের অননুভূতি-কাল প্রায় দ্বিগুণ দীর্ঘ হইয়া পড়ে। আঘাতের পর গাছের প্রকৃতিস্থ হইতে প্রায় পনেরো মিনিট লাগে। তাহার পূর্বে আঘাত করিলে অননুভূতি-সময় প্রায় দেড় গুণ দীর্ঘ হয়। অধিক ক্লান্ত হইলে অননুভূতিশক্তির সাময়িক লোপ, তখন গাছ একেবারেই সাড়া দেয় না। এ অবস্থাটি যে কিরূপ অবস্থা, আমার দীর্ঘ বক্তৃতার পর তাহা আপনারা সহজে হৃদয়ংগম করিতে পারিবেন।
জগদীশচন্দ্র বসু
সাড়ার মাত্রা জগদীশচন্দ্র বসু সময়ভেদে একই আঘাতে সাড়ার প্রবলতার তারতম্য ঘটে। সকাল বেলা রাত্রির নিশ্চেষ্টতা-জনিত গাছের একটু জড়তা থাকে। আঘাতের পর আঘাতে সে জড়তা চলিয়া যায় এবং সাড়ার মাত্রা ক্রমে বাড়িতে থাকে; সেটা যেন জাগরণের অবস্থা। গরম জলে স্নান করাইয়া লইলে গাছের জড়তা শীঘ্রই দূর হয়। বিকাল বেলা এ সব উল্টা হইয়া যায়; ক্লান্তিবশতঃ সাড়া ক্রমে ক্রমে হ্রাস পাইতে থাকে। কিন্তু বিশ্রামের জন্য সময় দিলে সেই ক্লান্তি চলিয়া যায়। আঘাতের মাত্রা বাড়াইলে সাড়ার মাত্রাও বাড়িতে থাকে; কিন্তু তাহারও একটা সীমা আছে। এ বিষয়ে মানুষের সহিত গাছের প্রভেদ নাই। আরও আশ্চর্ষের বিষয় এই যে, শীতকালে ঘা খাইলে যেমন সারিতে আমাদের অনেকটা সময় লাগে, শীতকালে গাছের আঘাত খাইয়া প্রকৃতিস্থ হইতে অনেক বিলম্ব ঘটে। গ্রীষ্মকালে যাহা পনেরো মিনিটে সারিয়া যায় তাহা সারিতে শীতকালে আধ ঘণ্টার অধিক লাগে।
জগদীশচন্দ্র বসু
বৃক্ষে উত্তেজনাপ্রবাহ জগদীশচন্দ্র বসু জন্তুদেহে এক স্থানে আঘাত করিলে আঘাতের ধাক্কা স্নায়ু দ্বারা দূরে পৌঁছে। স্নায়বীয় প্রবাহের কতকগুলি বিশেষ লক্ষণ আছে। প্রথমতঃ স্নায়বীয় বেগ বিবিধ অবস্থায় হ্রাস বা বৃদ্ধি পায়। উষ্ণতায় বেগ বৃদ্ধি এবং শৈত্যে বেগ হ্রাস পায়। এতদ্ব্যতীত বিদ্যুৎপ্রবাহে স্নায়ুতে কতকগুলি বিশেষ পরিবর্তন ঘটে। যতক্ষণ স্নায়ু দিয়া বিদ্যুৎপ্রবাহ বহিতে থাকে ততক্ষণ বিশেষ উল্লেখযোগ্য কোনো ঘটনা ঘটে না। কিন্তু বিদ্যুৎপ্রবাহ প্রেরণ এবং বন্ধ করিবার সময় কোনো বিশেষ স্থলে উত্তেজনা এবং অন্য স্থানে অবসাদ পরিলক্ষিত হয়। বিদ্যুৎপ্রবাহ বহিবার মুহূর্তে যে স্থান দিয়া বিদ্যুৎ স্নায়ুসূত্র পরিত্যাগ করে সেই স্থলেই স্নায়ু হঠাৎ উত্তেজিত হয়। এতদ্ব্যতীত যদি স্নায়ুর কোনো অংশে বিদ্যুৎপ্রবাহ চালনা করা যায় তবে সেই অংশ দিয়া আর কোনো সংবাদ যাইতে পারে না। কিন্তু বিদ্যুৎপ্রবাহ বন্ধ করিলে অমনি রুদ্ধ পথ খুলিয়া যায়, স্নায়ুসূত্র পুনরায় সংবাদবাহক হয়। যন্ত্রের সাহায্যে বৃক্ষদেহেও যে স্নায়বীয় সংবাদ প্রেরিত হয় তাহা অতি সূক্ষ্মভাবে ধরা যাইতে পারে এবং একই কলের সাহায্যে এক স্থান হইতে অন্য স্থানে সংবাদ পৌঁছিতে কত সময় লাগে তাহাও নির্ণীত হয়। স্নায়বীয় বেগ বৃক্ষদেহে ভেকদেহের তুলনায় মন্থর; কিন্তু নিম্নজাতীয় জন্তু হইতে দ্রুত। প্রাণী ও উদ্ভিদে নয় ডিগ্রি উষ্ণতায় স্নায়ুবেগ প্রায় দ্বিগুণ বর্ধিত হয়। বিদ্যুৎপ্রবাহের আরম্ভকালে বৃক্ষস্নায়ুর এক স্থান উত্তেজিত, অন্য স্থল অবসাদিত হয়। বিদ্যুৎপ্রবাহ-দ্বারা বৃক্ষের স্নায়বীয় ধাক্কা হঠাৎ বন্ধ হয়। স্নায়ু সম্বন্ধে যত প্রকার পরীক্ষা আছে, সমস্ত পরীক্ষা-দ্বারা জীব ও উদ্ভিদে যে এ সম্বন্ধে কোনো ভেদ নাই তাহা প্রমাণ করিতে সমর্থ হইয়াছি।
জগদীশচন্দ্র বসু
স্বতঃস্পন্দন জগদীশচন্দ্র বসু জীবদেহে অংশ বিশেষ একটি আশ্চর্য ঘটনা ঘটিতে দেখা যায়। মানুষ এবং অন্যান্য জীবে এরূপ পেশী আছে যাহা আপনা-আপনি স্পন্দিত হয়। যত কাল জীবন থাকে তত কাল হৃদয় অহরহ স্পন্দিত হইতেছে। কোনো ঘটনাই বিনা কারণে ঘটে না। কিন্তু জীবস্পন্দন কি করিয়া স্বতঃসিদ্ধ হইল? এ প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর এ পর্যন্ত পাওয়া যায় নাই। তবে উদ্ভিদেও এইরূপ স্বতঃস্পন্দন দেখা যায়। তাহার অনুসন্ধানফলে সম্ভবত জীবস্পন্দন-রহস্যের কারণ প্রকাশিত হইবে। শরীরতত্ত্ববিদেরা মানুষের হৃদয় জানিতে যাইয়া ভেক ও কচ্ছপের হৃদয় খেলা করেন। হৃদয় জানা কথাটি শারীরিক অর্থে ব্যবহার করিতেছি, কবিতার অর্থে নহে। সমস্ত ব্যাঙটিকে লইয়া পরীক্ষা সুবিধাজনক নহে; এজন্য তাঁহারা হৃদয়টিকে কাটিয়া বাহির করেন, পরীক্ষা করেন কি কি অবস্থায় হৃদয়-গতির হ্রাস-বৃদ্ধি হয়। হৃদয় কাটিয়া বাহির করিলে তাহার স্বাভাবিক স্পন্দন বন্ধ হইবার উপক্রম হয়। তখন সূক্ষ্ম নল দ্বারা হৃদয়ে রক্তের চাপ দিলেই স্পন্দন ক্রিয়া বহুক্ষণ ধরিয়া অক্ষুণ্ণ গতিতে চলিতে থাকে। এ সময়ে উত্তাপিত করিলে হৃদয়স্পন্দন অতি দ্রুতবেগে সম্পাদিত হয়; কিন্তু ঢেউগুলি খর্বকায় হয়। শৈত্যের ফল ইহার বিপরীত। নানাবিধ ভৈষজ্য দ্বারা হৃদয়ের স্বাভাবিক তাল বিভিন্ন রূপে পরিবর্তিত হয়। ইথার প্রয়োগে ক্ষণিকের জন্য হৃদয়স্পন্দন স্থগিত হয়, হাওয়া করিলে সেই অচৈতন্য অবস্থা চলিয়া যায়। ক্লোরোফরমের প্রয়োগ অপেক্ষাকৃত সাংঘাতিক। মাত্রাধিক্য হইলেই হৃদয়ক্রিয়া একেবারে বন্ধ হইয়া যায়। এতদ্ব্যতীত বিবিধ বিষপ্রয়োগে হৃদয়স্পন্দন বন্ধ হয়। কিন্তু এ সম্বন্ধে এক আশ্চর্য রহস্য এই যে কোনো বিষে হৃদয়স্পন্দন সংকুচিত অবস্থায়, অন্য বিষে ফুল্ল অবস্থায় নিস্পন্দিত হয়। এইরূপ পরস্পরবিরোধী এক বিষ দ্বারা অন্য বিষের ক্রিয়া ক্ষয় হইতে পারে। জীবের স্বতঃস্পন্দন সম্বন্ধে সংক্ষেপে এই কয়টি প্রধান ঘটনা বর্ণনা করিলাম। গাছেও কি এই সমস্ত আশ্চর্য ঘটনা ঘটিতে দেখা যায়? নানাবিধ পরীক্ষা করিয়া কোনো কোনো উদ্ভিদ-পেশীও যে স্পন্দনশীল তাহার বহুবিধ প্রমাণ পাইয়াছি।
জগদীশচন্দ্র বসু
বনচাঁড়ালের নৃত্য জগদীশচন্দ্র বসু বনচাঁড়াল গাছ দিয়া উদ্ভিদের স্পন্দনশীলতা অনায়াসে দেখা যাইতে পারে। ইহার ক্ষুদ্র পাতাগুলি আপনা-আপনি নৃত্য করে। লোকের বিশ্বাস যে, হাতের তুড়ি দিলেই নৃত্য আরম্ভ হয়। গাছের সংগীতবোধ আছে কি না বলিতে পারি না, কিন্তু বনচাঁড়ালের নৃত্যের সহিত তুড়ির কোনো সম্বন্ধ নাই। তরুস্পন্দনের সাড়ালিপি পাঠ করিয়া জন্তু ও উদ্ভিদের স্পন্দন যে একই নিয়মে নিয়মিত তাহা নিশ্চয়রূপে বলিতে পারিতেছি। প্রথমতঃ পরীক্ষার সুবিধার জন্য বনচাঁড়ালের পত্র ছেদন করিলে স্পন্দন ক্রিয়া বন্ধ হইয়া যায়। কিন্তু নল দ্বারা উদ্ভিদরসের চাপ দিলে স্পন্দন ক্রিয়া পুনরায় আরম্ভ হয় এবং অনিবারিত গতিতে চলিতে থাকে। তাহার পর দেখা যায় যে, উত্তাপে স্পন্দনসংখ্যা বর্ধিত, শৈত্যে স্পন্দনের মন্থরতা ঘটে। ইথার প্রয়োগে স্পন্দন ক্রিয়া স্তম্ভিত হয়; কিন্তু বাতাস করিলে অচৈতন্য ভাব দূর হয়। ক্লোরোফরমের প্রভাব মারাত্মক। সর্বাপেক্ষা আশ্চর্য ব্যাপার এই যে, যে বিষ দ্বারা যে ভাবে স্পন্দনশীল হৃদয় নিস্পন্দিত হয়, সেই বিষে সেই ভাবে উদ্ভিদের স্পন্দনও নিরস্ত হয়। উদ্ভিদেও এক বিষ দিয়া অন্য বিষ ক্ষয় করিতে সমর্থ হইয়াছি। এক্ষণে দেখিতে হইবে, স্বতঃস্পন্দনের মূল রহস্য কি। উদ্ভিদ পরীক্ষা করিয়া দেখিতে পাইতেছি যে, কোনো কোনো উদ্ভিদপেশীতে আঘাত করিলে সেই মুহূর্তে তাহার কোনো উত্তর পাওয়া যায় না। তবে যে বাহিরের শক্তি উদ্ভিদে প্রবেশ করিয়া একেবারে বিনষ্ট হইল তাহা নহে; উদ্ভিদ সেই আঘাতের শক্তিকে সঞ্চয় করিয়া রাখিল। এইরূপে আহারজনিত বল, বাহিরের আলোক, উত্তাপ ও অন্যান্য শক্তি উদ্ভিদ সঞ্চয় করিয়া রাখে; যখন সম্পূর্ণ ভরপুর হয় তখন সঞ্চিত শক্তি বাহিরে উথলিয়া পড়ে। সেই উথলিয়া পড়াকে আমরা স্বতঃস্পন্দন মনে করি। যাহা স্বতঃ বলিয়া মনে করি প্রকৃতপক্ষে তাহা সঞ্চিত বলের বহিরোচ্ছ্বাস। যখন সঞ্চয় ফুরাইয়া যায় তখন স্বতঃস্পন্দনেরও শেষ হয়। ঠাণ্ডা জল ঢালিয়া বনচাঁড়ালের সঞ্চিত তেজ হরণ করিলে স্পন্দন বন্ধ হইয়া যায়। খানিকক্ষণ পর বাহির হইতে উত্তাপ সঞ্চিত হইলে পুনরায় স্পন্দন আরম্ভ হয়। গাছের স্বতঃস্পন্দনে অনেক বৈচিত্র্য আছে। কতকগুলি গাছে অতি অল্প সঞ্চয় করিলেই শক্তি উথলিয়া উঠে; কিন্তু তাহাদের স্পন্দন দীর্ঘকাল স্থায়ী হয় না। স্পন্দিত অবস্থা রক্ষা করিবার জন্য তাহারা উত্তেজনার কাঙাল। বাহিরের উত্তেজনা বন্ধ হইলেই অমনি স্পন্দন বন্ধ হইয়া যায়। কামরাঙা গাছ এই জাতীয়। আর কতকগুলি গাছ বাহিরের আঘাতেও অনেক কাল সাড়া দেয় না; দীর্ঘকাল ধরিয়া তাহারা সঞ্চয় করিতে থাকে। কিন্তু যখন তাহাদের পরিপূর্ণতা বাহিরে প্রকাশ পায় তখন তাহাদের উচ্ছ্বাস বহুকাল স্থায়ী হয়। বনচাঁড়াল এই দ্বিতীয় শ্রেণীর উদাহরণ। মানুষের একটা অবস্থাকে স্বতঃ-উদ্ভাবনশীলতা অথবা উদ্দীপনা বলা যাইতে পারে। সেই অবস্থার জন্য সঞ্চয় এবং পরিপূর্ণতার আবশ্যক। কতকগুলি লক্ষণ দেখিয়া মনে হয় যে, সেই অবস্থা স্বতঃস্পন্দনের একটি উদাহরণ বিশেষ। যদি তাহা সত্য হয় তাহা হইলে সেই অবস্থা-অভিলাষী সাধক চিন্তা করিয়া দেখিবেন, কোন্‌ পথ-কামরাঙা অথবা বনচাঁড়ালের পদাঙ্ক অনুসরণ-তাঁহার পক্ষে শ্রেয়।
জগদীশচন্দ্র বসু
মৃত্যুর সাড়া জগদীশচন্দ্র বসু পরিশেষে উদ্ভিদের জীবনে এরূপ সময় আসে যখন কোনো এক প্রচণ্ড আঘাতের পর হঠাৎ সমস্থ সাড়া দিবার শক্তি অবসান হয়। সেই আঘাত মৃত্যুর আঘাত। কিন্তু সেই অন্তিম মুহূর্তে গাছের স্থির স্নিগ্ধ মূর্তি ম্লান হয় না। হেলিয়া পড়া কিংবা শুষ্ক হইয়া যাওয়া অনেক পরের অবস্থা। মৃত্যুর রুদ্র-আহ্বান যখন আসিয়া পৌঁছে তখন গাছ তাহার শেষ উত্তর কেমন করিয়া দেয়? মানুষের মৃত্যুকালে যেমন একটা দারুণ আক্ষেপ সমস্ত শরীরের মধ্যে দিয়া বহিয়া যায় তেমনি দেখিতে পাই, অন্তিম মুহূর্তে বৃক্ষদেহের মধ্য দিয়াও একটা বিপুল কুঞ্চনের আক্ষেপ প্রকাশ পায়। এই সময়ে একটি বিদ্যুৎপ্রবাহ মুহূর্তের জন্য মুমূর্ষ বৃক্ষগাত্রে তীব্রবেগে ধাবিত হয়। লিপিযন্ত্রে এই সময় হঠাৎ জীবনে লেখার গতি পরিবর্তিত হয়-ঊর্ধ্বগামী রেখা নিম্নদিকে ছুটিয়া গিয়া স্তব্ধ হইয়া যায়। এই সাড়াই বৃক্ষের অন্তিম সাড়া। এই আমাদের মূক সঙ্গী, আমাদের দ্বারের পার্শ্বে নিঃশব্দে যাহাদের জীবনের লীলা চলিতেছে তাহাদের গভীর মর্মের কথা তাহারা ভাষাহীন অক্ষরে লিপিবদ্ধ করিয়া দিল এবং তাহাদের জীবনের চাঞ্চল্য ও মরণের আক্ষেপ আজ আমাদের দৃষ্টির সম্মুখে প্রকাশিত করিল। জীব ও উদ্ভিদের মধ্যে যে কৃত্রিম ব্যবধান রচিত হইয়াছিল তাহা দূরীভূত হইল। কল্পনারও অতীত অনেকগুলি সংবাদ আজ বিজ্ঞান স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করিয়া বহুত্বের ভিতরে একত্ব প্রমাণ করিল।
জগদীশচন্দ্র বসু
নবীন ও প্রবীণ জগদীশচন্দ্র বসু বিশ্বমানবের জ্ঞানের পরিধিকে বিস্তৃত করিতে ভারতবর্ষ যাহা নিবেদন করিয়াছে, তাহার এক বিশিষ্টতা দেখা যায় এই যে, উহা সকল সময়ে ক্ষুদ্র ছাড়িয়া বৃহতের সন্ধান করিয়াছে। অন্য দেশে জ্ঞানরাজ্য এত বিভিন্নভাবে বিভক্ত হইয়াছে যে, তথায় সমগ্রকে এক করিয়া জানিবার চেষ্টা লুপ্তপ্রায় হইয়াছে। ভারতবর্ষের চিন্তাপ্রণালী অন্যরূপ। তাই তাহার কাব্য, তাহার সাহিত্য, জ্ঞানের অন্তর্নিহিত এই মহান সত্য ব্যক্ত করিবার চেষ্টা করিয়াছে। জ্ঞানের অন্বেষণে আকাশে ভাসমান ক্ষুদ্র ধূলিকণা, বিশ্বের অগণিত জীব ও ব্রহ্মাণ্ডের কোটি সূর্যের মধ্যে সেই একতার সন্ধান করিয়াছে। তাই বোধ হয়, আপনারা জ্ঞান ও সাহিত্যকে একে অন্যের অঙ্গ মনে করিয়া দুই বৎসর পূর্বে একজন বিজ্ঞানসেবীকে তাঁহার অজ্ঞাতে এই সাহিত্য-পরিষদের সভাপতিত্বে নিযুক্ত করেন। বিজ্ঞান সম্বন্ধে যাহা বলিবার আছে তাহা অন্য দিন বলিব। তৎপূর্বে পরিষদের ভবিষ্যৎ উন্নতিকল্পে কয়েকটি কথা আজ উত্থাপন করিব। যখন আপনারা আমাকে সভাপতিত্বে নিয়োগ করেন তখন এ সম্বন্ধে আমার আপত্তি জানাইয়াছিলাম। এক দিকে সময়াভাব ও ভগ্ন স্বাস্থ্য, অন্য দিকে পরিষদে কোনো কার্য করা সম্ভব হইবে কি না, এই সম্বন্ধে আশঙ্কা ছিল। শুনিয়াছিলাম, এখানে দলাদলি এত প্রবল এবং আর্থিক অবস্থা এরূপ শোচনীয় যে, ইচ্ছা সত্ত্বেও কেহ কিছু করিয়া উঠিতে পারেন না। এ জন্য অস্বীকার করিয়া লিখি। তাহা সত্ত্বেও যখন আপনারা আমাকে মুক্তি দেন নাই তখন স্থির করিলাম, সাহিত্য-পরিষদের জন্য যথাসাধ্য কার্য করিব এবং ইহার পূর্ণশক্তি বিকাশের জন্য চেষ্টিত হইব। যে মুমূর্ষ সে-ই মৃত বস্তু লইয়া আগলাইয়া থাকে; যে জীবিত তাহার জীবনের উচ্ছ্বাস চতুর্দিকে ব্যাপ্ত হয়। আমি দেখিতে পাইয়াছি যে, বর্তমান যুগে সমস্ত ভারতের জীবন প্রবাহিত করিয়া একটা উচ্ছ্বাস ছুটিয়াছে, যাহা মৃত্যুঞ্জয়ী হইবে। আমাদের সাহিত্য কেবলমাত্র পুরাতন গ্রন্থ প্রকাশ লইয়া থাকিবে না; বর্তমান যুগের নব নব সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, বিজ্ঞান প্রভৃতিকে একত্র করিয়া একটি জীবন্ত সাহিত্য গঠিত করিয়া তুলিবে। ইহাই আমি সাহিত্য-পরিষদের সর্বপ্রধান উদ্দেশ্য মনে করি। এই উদ্দেশ্যকে কার্যে পরিণত করিবার পথে যে বাধা, যে অন্তরায় আছে তাহা দূর করিতে হইবে। তাহার পর দেশের চিন্তাশীল মনীষীদিগের বিক্ষিপ্ত চেষ্টা যাহাতে একত্রীভূত করিতে পারা যায় তজ্জন্য যত্নবান হইতে হইবে। আরও ভাবিবার বিষয় আছে। যে দলাদলি হইতে পরিষদের উন্নতি পঙ্গুপ্রায় হইয়া উঠিতেছে, সেই দলাদলি হইতে পরিষদকে কিরূপে রক্ষা করা যায় এবং এই সব বাধা দূরীভূত করিয়া পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য– সাহিত্যের সর্বাঙ্গীন বিকাশ কিরূপে সাধিত হইতে পারে?
জগদীশচন্দ্র বসু
দলাদলি জগদীশচন্দ্র বসু জীবনের বহু বাধাবিপত্তি সহিত সংগ্রাম ও নানা দেশ পরিভ্রমণের ফলে জানিতে পারিয়াছি, সফলতা কোথা হইতে আসে এবং বিফলতা কেনই বা হয়। আমি দেখিয়াছি, যে অনুষ্ঠানে কর্তৃত্ব শুধু ব্যক্তিবিশেষের উপর ন্যস্ত হয়, যেখানে অপর-সকলে নিজেদের দায়িত্ব ঝাড়িয়া ফেলিয়া দর্শকরূপে হয় শুধু করতালি দেন, না হয় কেবল নিন্দাবাদ করেন, সেখানে কর্ম শুধু কর্তার ইচ্ছাতেই চলিতে থাকে। দেশের কল্যাণের জন্য যে শক্তি সাধারণে তাঁহার উপর অর্পণ করিয়াছিল, এমন এক দিন আসে, যখন সেই শক্তি সাধারণকে দলন করিবার জন্য ব্যবহৃত হয়। তখন দেশ বহু দূরে সরিয়া যায় এবং ব্যক্তিগত শক্তি উদ্দামভাবে চলিতে থাকে। ইহাতে দলাদলির যে ভীষণ বহ্নি উদ্ভূত হয় তাহা অনুষ্ঠানটিকে পর্যন্ত গ্রাস করিতে আসে। দলাদলির যে ভীষণ বহ্নি উদ্ভূত হয় তাহা অনুষ্ঠানটিকে পর্যন্ত গ্রাস করিতে আসে। দলপতি যদি তাঁহার সহকারীদিগকে কেবল যন্ত্রের অংশ মনে না করিয়া প্রত্যেকের অন্তর্নিহিত মনুষ্যত্বকে জাগরূক করিয়া তুলিতে চেষ্টা করেন তাহা হইলেই দেশের প্রকৃত কল্যাণ সাধিত হয়। এই কারণে সাহিত্য পরিষদে ব্যক্তিগত প্রাধান্যের পরিবর্তে সাধারণের মিলিত চেষ্টা যাহাতে বলবতী হয় সেজন্য বিবিধ চেষ্টা করিয়াছি। প্রতিষ্ঠিত কোনো সাহিত্য-সমিতিকে খর্ব করিয়া নিজেরা বড়ো হইবার প্রয়াস আমি একান্ত হেয় মনে করি বলিয়া প্রত্যেক সমিতির আনুকুল্য ও শুভ ইচ্ছা আদান-প্রদানের জন্য চেষ্টিত হইয়াছি। সাধারণ সদস্যদিগের উদ্যমের উপর পরিষদের ভাবী মঙ্গল যে বহুল পরিমাণে নির্ভর করে, এ কথা স্মরণ করাইয়া তাঁহাদিগকে লিখিয়াছিলাম- ‘পরিষদের সভাপতি, সম্পাদক ও কার্যনির্বাহক সভা সাহিত্য পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য সাধনের উপলক্ষ মাত্র!’ আরও লিখিয়াছিলাম যে, ‘সদস্যগণ যদি নিজেদের দায়িত্ব করিয়া নিঃস্বার্থ ও কর্তব্যশীল সভ্য নির্বাচিত করেন তাহা হইলেই পরিষদের উত্তরোত্তর মঙ্গল সাধিত হইবে। এ সম্বন্ধে তাঁহাদের শৈথিল্যই ভবিষ্যৎ-দুর্গতির কারণ হইবে।’ এই সহজ পথ অপেক্ষা রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে অবলম্বিত উপায় কি শ্রেয় হইবে? তথায় প্রতিযোগিতারই পূর্ণ প্রকাশ। সহযোগিতা কি আমাদের সাধনা নয়? রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে পক্ষ ও বিপক্ষের ভেদ প্রবল হইয়া উঠে। এক পক্ষ অন্য পক্ষের ছিদ্র অন্বেষণ করে ও কুৎসা রটায়, অন্য পক্ষও জবাবে এক কাঠি উপরে উঠেন। ইহার শেষ কোথায়? যে চিত্তবৃত্তির মহৎ উচ্ছ্বাসে সাহিত্য বিকশিত হয় তাহা কি এইরূপ পঙ্কে নিমজ্জিত হইবে? ‌ নবীন ও প্রবীণের মধ্যে একটা বৈষম্য আছে। তবে তাহাই বিসংবাদের প্রধান কারণ নহে। ব্যক্তিবিশেষের আত্মম্ভরিতাই প্রকৃতি দলাদলির কারণ; ইহা প্রবীণ বা নবীন কাহারও নিজস্ব নহে। প্রবীণ অতি সাবধানে চলিতে চাহেন, কিন্তু পৃথিবীর গতি অতি দ্রুত। যদিও বার্ধক্য তাহার শরীরে জড়তা আনয়ন করে, মন তো তাহার অনেক উপরে, সে তো চিরনবীন! মন কেন সাহস হারাইবে? অন্য দিকে নবীন, অভিজ্ঞতার অভাবে হয়তো অতি দ্রুত চলিতে চাহেন এবং বাধার কথা ভাবিয়া দেখেন না। যাঁহারা বহুকাল ধরিয়া কোনো অনুষ্ঠানকে স্থাপিত করিয়াছেন, তাঁহাদের সেই প্রয়াসের ইতিহাস ভুলিয়া যান। হয়তো কখনও প্রবীণের বহু কষ্টে অর্জিত ধন নবীন বিনা দ্বিধায় নিজস্ব করিতে চাহেন। প্রবীণ ইহাতে অকৃতজ্ঞতার ছায়া দেখিতে পান। সে যাহা হউক, ধরিত্রী প্রবীণকেও চায়, নবীনকেও চায়। প্রবীণ ভবিষ্যতের অবশ্যম্ভাবী পরিবর্তনে যেন উদ্বিগ্ন না হন, আর নবীনও যেন প্রবীণের এতদিনের নিষ্ঠা শ্রদ্ধার চক্ষে দেখেন। যে দেশে আমাদের সামাজিক জীবনে নবীন ও প্রবীণের কার্যকলাপের মধ্যে সামঞ্জস্য সাধিত হইয়াছে, সে স্থানেও কি একথা আমাকে বুঝাইয়া দিতে হইবে? পরিষদের কার্য সাধারণ সদস্যগণের নির্বাচিত কার্যনির্বাহক সমিতি দ্বারা পরিচালিত হয়। তাঁহারাই সাধারণের প্রতিভূ হইয়া আসেন; তাঁহাদের অধিকাংশের মতের দ্বারাই প্রতি বিষয় নির্ধারিত হইয়া থাকে। ইহা ব্যতীত কার্য সস্পাদনের অন্য উপায় নাই। যদি ইহাতে ব্যক্তিবিশেষের মত গৃহীত না হয় এবং তজ্জন্য যদি কেহ পরিষদের সকল কর্ম ত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইতে চাহেন তবে উহাকে ছেলেদের আবদার ছাড়া কি বলা যাইতে পারে? আর একটা কথা- অতীতের ত্রুটি সম্পূর্ণ মুছিয়া না ফেলিলে কোনো নূতন প্রচেষ্টা একেবারেই অসম্ভব। যে সব ত্রুটির কথা বলিলাম তাহা একান্ত সাময়িক। বাদানুবাদের অনেক কথা শুনিয়াছিলাম। অনুসন্ধান করিয়া জানিলাম, তাহার অনেকটা তিলকে তাল করিবার অভ্যাস হইতে। আমি উভয় পক্ষকেই, তাঁহাদের মধ্যে কি কি বিষয় লইয়া বিসংবাদ তাহা আমাকে জানাইতে অনুরোধ করিয়াছিলাম; পরে তাঁহাদের সহিত এ বিষয়ে আলোচনা করিয়াছি। দেখা গেল, বিবাদের প্রকৃত কারণ কিছু নাই বলিলেই হয়।
জগদীশচন্দ্র বসু
পরিষদ-গৃহে বক্তৃতা জগদীশচন্দ্র বসু যে সব বিষয়ের কথা উত্থাপন করিলাম তাহা কার্য করিবার উপলক্ষ মাত্র। সাহিত্যের সর্বাঙ্গীন উন্নতি এই পরিষদের মুখ্য উদ্দেশ্য। এতদর্থে প্রতিভাশালী মনীষীদের চিন্তার ফল সাধারণের নিকট উপস্থিত করিবার জন্য ধারাবাহিক বক্তৃতার ব্যবস্থা করিতে সমর্থ হইয়াছি। কিছুদিন পূর্বে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন এ স্থান পরিদর্শন করিতে আসেন। সেই কমিশনের বিদেশীয় সভ্যগণ ইহার কার্য লক্ষ্য করিয়া ইহাকে জাতীয় জীবন পরিস্ফুটনের এক প্রধান অঙ্গ বলিয়া মনে করিয়াছেন। ভারতবর্ষের অন্য প্রদেশে ভ্রমণকালেও দেখিলাম, আমাদের এই সাহিত্য পরিষদকে আদর্শ করিয়া তথায় অন্য পরিষদ গঠনের চেষ্টা হইতেছে। এ সবই তো আশার কথা –আশা ব্যতীত আর কি আমাদের সম্বল আছে? সম্মুখে যে ভয়ংকর দুর্দিন আসিতেছে তাহাতে আমাদের জাতীয় জীবন পর্যন্ত সংকটাপন্ন। দুর্দিনের মধ্যে কি আশা লইয়া তবে থাকিব? যে দুই একটি আশার কথা আছে, তাহার মধ্যে সাহিত্য পরিষদ অন্যতম। আমাদের অবহেলায় এই ক্ষীণ প্রদীপটি কি নিবিয়া যাইবে?
জগদীশচন্দ্র বসু
বোধন জগদীশচন্দ্র বসু শতাধিক বৎসর পূর্বে আমাদের বংশের জননী প্রপিতামহী দেবী তরুণ যৌবনে বৈধব্য প্রাপ্ত হইয়া একমাত্র শিশুসন্তান লইয়া ভ্রাতৃগৃহে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছিলেন। পুত্রের লালন পালন ও শিক্ষার ভার লইয়া প্রপিতামহী দেবী যখন নানা প্রতিকূল অবস্থার সহিত সংগ্রাম করিতেছিলেন তখন একদিন তাঁহার শিশুপুত্র শিক্ষকের তাড়নায় অন্তঃপুরে আসিয়া মাতার অঞ্চল ধারণ করিয়াছিল। যিনি তাঁহার সমুদয় শক্তি একমাত্র পুত্রের উন্নতিকল্পে প্রতিদিন তিল তিল করিয়া ক্ষয় করিতেছিলেন, সেই স্নেহময়ী মাতা মুহূর্তে তেজস্বিনীরূপ ধারণ করিয়া পুত্রের হস্তপদ বাঁধিয়া তাহাকে শিক্ষকের হস্তে অর্পণ করিলেন। ভাবিয়া দেখিলে আমাদের মাতৃভূমি আমার তেজস্বিনী বংশজননীর মতো। সন্তানদিগকে বিক্রম ও পৌরুষে উদ্দীপ্ত হইতে তাড়া দিয়া তিনি তাহাদের প্রতি আপনার গভীর বাৎসল্য প্রকাশ করিয়াছেন। তিনি তাঁহার পুত্রদিগকে অঙ্কে রাখিয়া আলস্যে কালহরণ করিতে দেন নাই; কিন্তু জগতের অগ্নিময় কর্মশালে তাহাদিগকে নিক্ষেপ করিয়া দিয়া দৃঢ়স্বরে বলিয়াছেন, ‘পৃথিবীর সংগ্রামময় কর্মক্ষেত্রে যখন যশঃ, বিক্রম ও পৌরুষ সংগ্রহ করিতে পারিবে তখনই আমার ক্রোড়ে ফিরিয়া আসিবে।’ মাতার আদেশ পালন করিবার জন্য বহু শতাব্দী পূর্বে দীপঙ্কর হিমালয় লঙ্ঘন করিয়া তিব্বত গমন করিয়াছিলেন। তাহার পর হইতে আধুনিক সময় পর্যন্ত বহু বাঙালী ভারতের বহুস্থানে গমন করিয়া কর্ম, যশঃ ও ধর্ম আহরণ করিয়াছেন। এই বিক্রমপুর বিক্রমশালী সন্তানের জন্মভূমি, মনুষ্যত্বহীন দুর্বলের নহে। আমার পুজা হয়তো তিনি গ্রহণ করিয়াছেন, এই সাহসে ভর করিয়া আমি বহুদিন বিদেশে যাপন করিয়া জননীর স্নেহময় ক্রোড়ে ফিরিয়া আসিয়াছি। হে জননী, তোমারই আশীর্বাদে আমি বঙ্গভূমি এবং ভারতের সেবকরূপে গৃহীত হইয়াছি। কি ঘটনাসূত্রে আমি এখানে সভাপতিরূপে আহূত হইয়াছি তাহা আমি এখনও বুঝিতে পারি নাই। কোন্‌ নিয়মে আমাদের দেশে কোনো এক সংকীর্ণ পথে খ্যাতনামা ব্যক্তিদিগকে বিসদৃশ কার্যে নিয়োগ করা হয় তাহার কারণ নির্দেশ করা কঠিন। যে যুক্তি অনুসারে ব্যবহারজীবীকে কলকারখানার ডিরেক্টার করা হয় সেই নিয়মেই লোকালয় হইতে দূরে লুক্কায়িত শিক্ষার্থী আজ রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে নিয়োজিত হইয়াছে। এই নির্বাচনের বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ আপনারা গ্রহণ করেন নাই। আপনাদের প্রীতিকর কিছু যে আমি বলিতে পারিব সে বিষয়ে আমার বিশেষ সন্দেহ আছে। যে বিষয়ে আমার কোনো অভিজ্ঞতা নাই সে বিষয়ে কিছু বলিতে উদ্যম করা ধৃষ্টতা মাত্র। আমি স্বীয় জীবনে যে অভিজ্ঞতা লাভ করিয়াছি কেবল সেই বিষয়েই কিছু বলিব। পৃথিবীর বহু দেশ ভ্রমণ করিয়া আমি ইহা উপলব্ধি করিয়াছি যে, আমাদের সমুদয় শিক্ষা-দীক্ষা কেবল মনুষ্যত্বলাভের উদ্দেশ্যে মাত্র। কি করিয়া আমরা দুর্বলের ক্রন্দন ও আবদার ত্যাগ করিয়া পুরুষোচিত শক্তিবলে স্বহস্তে স্বীয় অদৃষ্ট গঠন করিতে পারি, তাহাই যেন আমাদের একমাত্র সাধনা হয়।