instruction
stringclasses 5
values | input
stringlengths 230
19.6k
| output
stringlengths 40
405
|
---|---|---|
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে ইরানে দুই সপ্তাহেরও কম সময়ে ৭৭ জন মারা গেছে। বিচার বিভাগীয় মুখপাত্র গোলামাহোসেইন এসমাইলি বলেন, কোভিড-১৯ আক্রান্ত নয়, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই এদের মুক্তি দেয়া হয়। তবে পাঁচ বছরের বেশি দণ্ডপ্রাপ্তদের এই সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। একজন ব্রিটিশ এমপির দেয়া তথ্যমতে, ইরানে কারাবন্দী ব্রিটিশ-ইরানিয়ান দাতব্য কর্মী নাজানিন জাঘারি-র্যাটক্লিফ সম্ভবত শীঘ্রই মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যে ইরানের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে এমপি টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, 'আজ অথবা কালকের মধ্যে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে'। মিজ জাঘারি-র্যাটক্লিফের স্বামী শনিবার বলেন, তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী থাকা তার স্ত্রীর কোভিড-১৯ হয়েছে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। কিন্তু মিস্টার এসমাইলি সোমবার জোর দিয়ে বলেছিলেন, মিজ জাঘারি-র্যাটক্লিফ নিয়মিতভাবেই তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করছেন এবং 'তাদেরকে জানিয়েছেন যে তিনি সুস্থ আছেন'। গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ২০১৬ সালে মিজ জাঘারি-র্যাটক্লিফকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। যুক্তরাজ্যও বলে আসছে তিনি নির্দোষ। তেহরানের এভিন কারাগারে বন্দী রয়েছেন নাজানিন জাঘারি-র্যাটক্লিফ। বিশ্বজুড়ে ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে। গত বছর অসুখটি ছড়িয়ে পড়ার পর মারা গেছে ৩,১১০ জন। বেশিরভাগ মৃত্যুই হয়েছে চীনে। এই সংক্রমণে ইরানে ২ সপ্তাহেরও কম সময়ে ৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, নিশ্চিত আক্রান্তের সংখ্যা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো ৫০% বৃদ্ধি পেয়েছে। এ পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২,৩৩৬ জনে। যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরো বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইরানের সাথে সম্পৃক্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঘটনার উল্লেখ পাওয়া গেছে আফগানিস্তান, কানাডা, লেবানন, পাকিস্তান, কুয়েত, বাহরাইন, ইরাক, ওমান, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত। মঙ্গলবার নতুন করে করোনাভাইরাসে ৮৩৫ জন আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে ইরান। ইরানের উচ্চ পদস্থ অনেক কর্মকর্তাও ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি দেশটির জরুরী চিকিৎসা সেবা বিভাগের প্রধান পিরহোসেইন কোলিভান্দ আক্রান্ত হয়েছেন। পার্লামেন্টের ২৯০ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করে ২৩ জন আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। সোমবার দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা কাউন্সিলের এক সদস্য কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে বলে জানানো হয়। রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়, মোহাম্মদ মীরমোহাম্মদী নামে ৭১ বছর বয়সী ওই সদস্যের আয়াতোল্লাহ খামেনির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। বৃক্ষ রোপন কর্মসূচীতে হাতে প্লাস্টিকের গ্লাভস পরেন সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লাহ আলি খামেনি। বিশ্ব বন্যপ্রাণী দিবস উপলক্ষে একটি বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচীতে সর্বোচ্চ নেতা খামেনি দেশটির জনগণকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া সব পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। সাথে সরকারের অন্য সব বিভাগকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে তারা যাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সহায়তা করে। আয়াতোল্লাহ খামেনি জোর দিয়ে বলেন যে, ইরানের কর্তৃপক্ষ প্রাদুর্ভাবের মাত্রা সম্পর্কিত কোন তথ্য গোপন করেনি। তিনি বলেন: "আমাদের কর্মকর্তারা প্রথম দিন থেকেই নিষ্ঠা আর স্বচ্ছতার সাথে সব তথ্য প্রকাশ করছে। যাই হোক, যেসব দেশে এই প্রাদুর্ভাব আরো বেশি জটিল আকার ধারণ করেছে তারা তথ্য লুকানোর চেষ্টা করেছে।" তিনি বলেন যে ইরানের প্রাদুর্ভাব "বেশিদিন থাকবে না এবং বন্ধ হয়ে যাবে।" এদিকে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাইদ নামাকি জানিয়েছেন, বুধবার থেকে দেশজুড়ে ভাইরাস পরীক্ষা বা স্ক্রিনিং শুরু হবে। যাদের কোভিড-১৯ হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে এবং যারা স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ পাচ্ছেন না তাদের কাছে চিকিৎসা সেবাদানকারী দল পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়। সোমবার তেহরানে পৌঁছায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একদল বিশেষজ্ঞ যারা সোমবার ইরানে পৌঁছেছেন, তারা দেশটির স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যে তারা "প্রস্তুতি ও তৎপরতা কার্যক্রম পুনর্মূল্যায়ন করে দেখবে, বিশেষ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, পরীক্ষাগার এবং প্রবেশ পয়েন্টগুলো পরিদর্শন করবে এবং সেখানে কারিগরি সহায়তা দেবে।" যে বিমানটিতে করে ওই বিশেষজ্ঞ দলটি গিয়েছে সেখানে চিকিৎসা সরঞ্জাম, সুরক্ষামূলক যন্ত্রপাতি রয়েছে যা দেশটির ১৫ হাজার স্বাস্থ্যসেবা কর্মীকে সহায়তা দেবে। এছাড়া এক লাখ মানুষকে সেবা দেয়ার ও ভাইরাস পরীক্ষা করার কিটও বহন করা হয়েছে ওই বিমানটিতে। আরো খবর: করোনাভাইরাস: শিশুকে যেভাবে রোগটি সম্পর্কে বোঝাবেন ‘আমি আমার মাকে যে কারণে বিয়ে করলাম’ দিল্লিতে যেভাবে মুসলমানদের বাড়িঘর টার্গেট করা হয় বিয়ের মঞ্চ থেকে সরাসরি ক্রিকেট মাঠে গেলেন যে বর বিবিসি জরিপে শ্রেষ্ঠ বাঙালি: ১৪- অমর্ত্য সেন | Iran has temporarily released more than 54,000 prisoners in an effort to combat the spread of the new coronavirus disease in crowded jails. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | যে নারীরা নিয়মিত ফাস্টফুড খান কিন্তু ফলমূল কম খান, তারা গর্ভধারণ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন বলে বলছেন গবেষকরা ৫৫৯৮জন নারীর ওপর একটি গবেষণার পর দেখা গেছে, যারা ফাস্টফুড খান না, তাদের তুলনায় যারা সপ্তাহে চার বা আরো বেশিবার ফাস্টফুড খান, তাদের গর্ভধারণে অন্তত একমাস সময় বেশি লাগে। তাদের সন্তান ধারণ করতেও বেশি সময় লাগে বলে ওই গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা প্রমাণ করছে যে, ভালো খাবার খেলে গর্ভধারণের সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন বিয়ের উপহারে বোমা: রহস্য উদঘাটন হলো যেভাবে কার্ল মার্ক্সঃ কতটা ফলেছে তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী কী লিখে সাজা পেলেন ইসরায়েলি আরব কবি অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য আর আয়ারল্যান্ডের নারীদের কাছে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, প্রথম সন্তান ধারণের কয়েক মাস আগে তারা কোন ধরণের খাবার খেয়েছিলেন। গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, যে নারীরা মাসে তিনটার কম ফল খেয়েছেন, তাদের গর্ভধারণে নিয়মিত ফলাহারীদের তুলনায় দেড় মাস সময় বেশি লাগে। তারা দেখেছেন, যারা ফল কম খায় বা ফাস্টফুড বেশি খাচ্ছেন, তাদের অনেকে পুরো বছর জুড়ে চেষ্টা করেও গর্ভধারণ করতে পারেননি। তবে কোন যুগলের পুরুষ সঙ্গী যদি ফাটিলিটি চিকিৎসা নিয়ে থাকেন, তাদের এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। দ্রুত গর্ভধারণের জন্য ফল আর সবজি সহায়তা করে বলে বলছেন গবেষকরা গবেষণা দলের প্রধান, ইউনিভার্সিটি অব এডিলেডের অধ্যাপক ক্লারি রবার্টস বলছেন, ''এই পর্যবেক্ষণ বলছে যে, ভালো মানের খাবার খাওয়া আর ফাস্টফুড এড়িয়ে চলতে পারলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় এবং তাড়াতাড়ি গর্ভধারণ করা যায়।'' তবে অনেকে এর সমালোচনা করে বলছেন, এই গবেষণায় অল্প কিছু খাবারকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। কিন্তু গর্ভধারণে হয়তো আরো অনেক বিষয়ের প্রভাব থাকতে পারে। এমনকি বাবাদের খাবারের বিষয়ে এখানে তথ্য সংগ্রহ করা হয়নি। তারপরেও এই গবেষণাটির অনেক গুরুত্ব রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত নন, ইউনিভার্সিটি অব কুইন্সল্যান্ডের অধ্যাপক জিনো পেকোরারো বলছেন, ''সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা যা মনে করেন, এই গবেষণা সেটিকেই সমর্থন করেছে যে, যে যুগলরা সন্তান নিতে চান, স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তাদের জন্য সহায়ক হতে পারে।'' | Women who regularly eat fast food and not enough fruit are more likely to struggle to conceive, a study suggests. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | অনলাইন নির্ভর এক জীবন তরুণ-তরুণীদেরকে আরো উদ্বিগ্ন, অসম্পূর্ণ ও ভীত করে তুলতে পারে, বলছে গবেষণা। ডিচ দ্য লেবেল নামের একটি অ্যান্টি-বুলিয়িং বা পীড়ন-বিরোধী দাতব্য সংস্থা এই গবেষণাটি চালিয়েছে। এই গবেষণা জরিপে অংশ নেয়াদের মধ্যে ৪০%-ই বলছে, কেউ যদি তাদের সেলফিতে লাইক না দেয়, তাহলে তারা খারাপ বোধ করে। আর ৩৫% বলছে তাদের কি পরিমাণ ফলোয়ার বা অনুসারী তার উপর সরাসরি নির্ভর করে তাদের আত্মপ্রত্যয়ের ব্যাপারটি। প্রতি তিন জনে একজন বলছে তারা সারাক্ষণই সাইবার-বুলিয়িংয়ের বা পীড়নের আতঙ্কে থাকে। একজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে শিশুরা 'বৈরিতার সংস্কৃতির' মধ্যে বেড়ে উঠছে। দশ হাজার তরুণ তরুণীর উপর এই জরিপটি চালানো হয়। এদের বয়েস ছিল ১২ থেকে ২০ এর মধ্যে। এই জরিপে বেরিয়ে এসেছে সাইবার-বুলিয়িং ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে। ৭০% অংশগ্রহণকারী স্বীকার করেছে যে তারা অনলাইনে অন্যের উপর পীড়নমূলক আচরণ করে। ১৭% দাবী করেছে তারা অনলাইনে পীড়নের স্বীকার হয়েছে। অর্ধেকই বলেছে যে তারা অনলাইনে তাদের সাথে ঘটে যাওয়া খারাপ আচরণগুলো নিয়ে আলোচনা করতে চায় না। গবেষণায় আরো জানা যাচ্ছে, ঘৃণা ছড়ানোর জন্য সবচাইতে বেশী ব্যবহৃত সোশ্যাল মিডিয়া হচ্ছে ইনস্টাগ্রাম। আরো পড়ুন: ভূমিকম্প প্রবণ স্থানে গভীর গর্ত খুঁড়ছে কেন ভারতীয়রা? জার্মান গানের স্কুলে বহু ছেলে যৌন নির্যাতনের শিকার | US teenagers are ditching Facebook in favour of platforms such as YouTube, Instagram and Snapchat, a study says. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | 'গজনাইম' নামের এটি ম্যালওয়্যার দিয়ে এই অর্থ চুরি করা হতো। মোট ছয়টি দেশের সমন্বিত পুলিশি কর্মকাণ্ডে এই অপরাধী চক্রটি অবশেষে ভেঙে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জনকে পাকড়াও করে তাদের নানা ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। যেভাবে চুরি করা হতো অর্থ 'গজনাইম' নামের এটি ম্যালওয়্যার দিয়ে কম্পিউটারে প্রবেশ করে এই অর্থ চুরি করা হতো। দুটি ম্যালওয়্যারের হাইব্রিড এটি। এই ম্যালওয়্যার দিয়ে গোপনে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টের অনলাইন ব্যাংকিং-এর তথ্য চুরি করে হাতিয়ে নেয়া হতো অর্থ। এই চক্রের মুল শিকার ছিল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, আইনজীবীদের কোম্পানি, আন্তর্জাতিক কোম্পানি ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠান। অন্যান্য সাইবার অপরাধীদের এই ম্যালওয়্যার অর্থের বিনিময়ে ব্যাবহারের জন্য ভাড়া দেয়া হতো। খুব জটিল ও বিস্তৃত সাইবার অপরাধ ছিল এটি। অন্য অপরাধীদের কাছে এটি সম্পর্কে গোপন বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা ছিল। সাইবার জগতে দক্ষ ব্যক্তিরা এই চক্রের জন্য ভাড়ায় কাজ করতো। ছয়টি দেশের সমন্বিত পুলিশি অভিযান দা হেগে অবস্থিত ইউরোপিয়ান পুলিশের এজেন্সি ইউরোপোলের সদরদপ্তর থেকে এই অভিযানের বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে। আরো পড়ুন: আর্থিক খাতে সাইবার ক্রাইম ঠেকানো যাচ্ছেনা কেন? দেশে স্মার্টফোন ঝুঁকিতে - নিরাপদ থাকার উপায় বিশ্ব জুড়ে বড় ধরনের সাইবার হামলা খুব জটিল ও বিস্তৃত সাইবার অপরাধ ছিল এটি। আর এটি ঠেকাতেও লেগেছে জটিল সাইবার অপরাধ বিরোধী পুলিশি ব্যবস্থা। এর সাথে জড়িত ছিল যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, বুলগেরিয়া, জর্জিয়া, ইউক্রেইন ও মলদোভিয়ার পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রের পিটসবার্গে এই চক্রের দশজনকে অর্থ চুরি, কালোটাকা সাদা করা ও অর্থ পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। হেগে অবস্থিত ইউরোপিয়ান পুলিশের এজেন্সি ইউরোপোলের সদরদপ্তর পাঁচজন রাশিয়ান নাগরিককে এখনো খুঁজছে পুলিশ। যাদের একজন 'গজনাইম' নামের এই ম্যালওয়্যারটি তৈরি করেছেন। সেটির ব্যবস্থাপনা করতেন তিনি। চক্রের নেতা ও প্রযুক্তিগত সহযোগীর বিরুদ্ধে জর্জিয়াতে অভিযোগ আনা হয়েছে। বুলগেরিয়া থেকে একজনকে মার্কিন কর্তৃপক্ষের কাছে বিচারের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে। 'গজনাইম' যাতে সনাক্ত করা না যায় সেই কাজে যুক্ত একজনকে মলদোভিয়াতে বিচার করা হচ্ছে। জার্মানিতে দুজনের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। অন্যান্য খবর: মোদী সরকারের আমলে আতঙ্কে কেন মুসলমানরা? নিম্নমানের ৫২টি পণ্য: দোকানে বিক্রি হলে কী ব্যবস্থা? সর্পদংশন: 'হাতটা যেন হাতুড়ির আঘাতে চুরমার হয়ে যাচ্ছে' | An international crime gang which used malware to steal $100m (£77m) from more than 40,000 victims has been dismantled. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | পুলিশের কাছে একটি চিঠিতে সাত বছরের হানিফা জারা অভিযোগ করেছে যে, তার বাবা তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। পুলিশের কাছে একটি চিঠিতে সাত বছরের হানিফা জারা অভিযোগ করেছে যে, তার বাবা তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে, সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার করা উচিত। কারণ বাইরে খোলা স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করতে তার অনেক লজ্জা লাগে। এখনো অনেক ভারতীয় শৌচাগার সুবিধার বাইরে রয়েছে। ইউনিসেফের হিসাবে, ভারতের অন্তত পঞ্চাশ কোটি মানুষ ঘরের বাইরে মাঠেঘাটে বা খোলা স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করে থাকে। আরো পড়ুন: বাড়িতে টয়লেট নেই, তবু হেলিকপ্টার ভাড়া করে বিয়ে ভারতে লোকেরা টয়লেটে যায় না কেন? ভারতে ৭০ কোটি লোক প্রকাশ্যে মলমূত্র ত্যাগ করে ভারতে এবার খোলা জায়গায় মলত্যাগ নিয়ে চলচ্চিত্র পুলিশের কাছে লেখা হানিফার চিঠি তামিলনাডু রাজ্যের আম্বুর নামের একটি শহরে বাবা-মায়ের সঙ্গে বসবাস করে হানিফা। তাদের বাড়িতে কোন টয়লেট বা শৌচাগার নেই। হানিফা বিবিসি তামিল বিভাগকে বলেছে, তাদের বাড়ির আশেপাশের কয়েকজন প্রতিবেশীর এই সুবিধা রয়েছে। তাই বাড়িতে একটি শৌচাগার বানানোর জন্য সে তার বাবাকে বলেছিল। তখন সে নার্সারিতে পড়তো। ''বাইরে গিয়ে মলমূত্র ত্যাগ করতে আমার লজ্জা লাগে। যখন মানুষজন আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, তখন আমার খুব খারাপ লাগে।'' খোলা স্থানে পয়ঃনিষ্কাশনের ক্ষতি সম্পর্কে স্কুলে জানার পর সে এ বিষয়ে আরো বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। পুলিশের কাছে লেখা চিঠিতে হানিফা লিখেছে, তার বাবা তাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যদি সে ক্লাসে শীর্ষে ওঠে, তাহলে বাড়িতে শৌচাগার বানিয়ে দেবে। ''নার্সারি থেকে আমি আমার ক্লাসে সবচেয়ে ভালো ফল করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছি।'' সে লিখেছে। পুলিশ স্টেশনে হানিফা, তার বাবা ও মা ''আমি এখন দ্বিতীয় অবস্থানে আছি। কিন্তু তিনি শুধু বলেই যাচ্ছেন যে, তিনি টয়লেট বানাবেন। এটা একরকম প্রতারণা, সুতরাং তাকে গ্রেপ্তার করুন।'' হানিফার অনুরোধ, যদি তার বাবাকে গ্রেপ্তার করা না হয়, তাহলে পুলিশ যেন অন্তত তার কাছ থেকে দিনক্ষণ লেখা মুচলেকা নিয়ে রাখে যে, কবে তিনি বাড়িতে শৌচাগার বানিয়ে দেবেন। হানিফার বাবা এহসানুল্লাহ বিবিসি তামিলকে বলেছেন, তিনি আসলে শৌচাগারটি বানানোর কাজ শুরু করেছেন, কিন্তু পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে সেটির কাজ শেষ করতে পারেননি। কারণ এখন তিনি কর্মহীন। ''আরো খানিকটা সময় দেয়ার জন্য হানিফাকে আমি বলেছিলাম, কিন্তু সে আমার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ আমি আমার কথা রাখতে পারিনি।'' কিন্তু হানিফার মন তাতে গলেনি। ''একই বিষয় নিয়ে তাকে আমার কতদিন বলতে হবে? তিনি আমাকে একই অজুহাত দিয়ে যাচ্ছেন যে যথেষ্ট টাকা নেই। সেজন্য আমি পুলিশের কাছে গেছি।'' সোমবার মায়ের সঙ্গে সে তার স্কুলের কাছের পুলিশ স্টেশনে গিয়ে হাজির হয়। হানিফার বাবা এহসানুল্লাহ বলছেন, তিনি টয়লেট তৈরির কাজ শুরু করেছেন, তবে পর্যাপ্ত অর্থের অভাবে শেষ করতে পারেননি পুলিশ অফিসার এ ভালারমাথি বিবিসি তামিলকে বলছেন, ''ব্যাগ ভর্তি করে ট্রফি আর মেধার অনেক সার্টিফিকেট নিয়ে সে থানায় এসে সেগুলো টেবিলে সাজিয়ে রাখতে শুরু করে। এরপর সে আমাদের জিজ্ঞেস করে, তোমরা কি আমাকে একটি টয়লেট (শৌচাগার) দিতে পারবে? মি. ভালারমাথি বলছেন, তারা মি. এহসানুল্লাহকে ডেকে পাঠালে তিনি দ্রুত পুলিশ স্টেশনে হাজির হন। তিনি ভেবেছিলেন যে, তার স্ত্রী আর মেয়ে কোন বিপদে পড়েছে। কিন্তু কি কারণে তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছে, সেটা জেনে তিনি হতবাক হয়ে যান। হানিফার লেখা চিঠির বিস্তারিত পড়ে মি. এহসানুল্লাহ বলেন, কিভাবে আনুষ্ঠানিক চিঠি লিখতে হয়, সেটা তাকে পর্যবেক্ষণ করে করেই হয়তো হানিফা শিখেছে। কারণ গ্রামের মানুষজনকে মাঝে মাঝে অফিসের জন্য কাগজপত্র পূরণ করা বা চিঠি লেখার কাজে তিনি সহায়তা করে থাকেন। ''আমি কখনো ভাবিনি, এটা আমার দিকেই আবার ফিরে আসবে,'' তিনি বলছেন। হানিফার এই চেষ্টা পুলিশ কর্মকর্তাদের সহানুভূতি পেয়েছে। ''তার অভিযোগটি খুব সৎ এবং সরল, তাই আমরা সমস্যাটি সমাধানের চেষ্টা করেছি।'' বলছেন পুলিশ কর্মকর্তা ভালারমাথি। তার এই কর্মকাণ্ডে জেলা কর্মকর্তাদের টনক নড়েছে। এখন তারা হানিফা ও তার প্রতিবেশীদের জন্য পাঁচশোর বেশি শৌচাগার বানানোর জন্য অর্থসংগ্রহ শুরু করেছেন। ভারতের গ্রামেগঞ্জে মহিলা ও শিশুদের প্রকাশ্য স্থানে মলত্যাগ এখনও খুব স্বাভাবিক একটি ঘটনা (ফাইল চিত্র) ''তার অভিযোগটি দেখে আমরা খুবই খুশী হয়েছি। আমরা স্কুলে এরকম ক্লাসের আয়োজন করছি,যাতে ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে শৌচাগার বসানোর জন্য তাদের বাবা-মায়ের কাছে দাবি তোলেন।'' বলছেন সিটি কমিশনার এস পার্থসারথি। তিনি বলছেন, ক্লিন ইন্ডিয়া ক্যাম্পেইনে স্থানীয় মুখ হিসাবে তারা হানিফার ছবি অন্তর্ভুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন। ২০১৯ সালের মধ্যে ভারতের প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার স্থাপনের পরিকল্পনা করছে দেশটির সরকার, তবে অনেক স্থানে সেই পরিকল্পনা বাধার মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক একটি জরিপে জানা যাচ্ছে, প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসকারী ৮৯ শতাংশ ভারতীয় খোলা স্থানে মল মূত্র ত্যাগ করতে পছন্দ করে, কারণ তারা চায় না তাদের বাড়ির কাছাকাছি স্থানে শৌচাগার থাকুক। হানিফা বলছে, তার চিঠির ফলাফল দেখে সে খুবই খুশী। গত দশদিন ধরে সে তার বাবার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ রেখেছিল। তবে পুলিশ তাদের মধ্যে শান্তি স্থাপন করতে পেরেছে। হানিফা এবং তার বাবা অবশেষে পরস্পর হাত মিলিয়ে সন্ধি করেছে। | A seven-year-old Indian girl went to the police after her father broke his promise to build her a toilet. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | ইন্দোনেশিয়ায় সাম্প্রতিক সুনামিতে ২২০ জন নিহত এবং অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে ঐ ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী, যারা মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেছেন, বিবিসি'কে জানান তাদের অভিজ্ঞতা। বিবিসি নিউজ বাংলার অন্যান্য খবর: 'ভোটে লড়তে পারবেন জামায়াতের নেতারা' ইন্দোনেশিয়ায় ঘন ঘন সুনামি হয় কেন? 'পর্যবেক্ষণ এইভাবে কখনো নিরুৎসাহিত করা হয়নি' যুক্তরাজ্যে দেউলিয়া হয়ে বন্ধ হল গ্রামীণ ফাউন্ডেশন সুনামি আঘাত করার সময় একটি মঞ্চে পারফর্ম করছিলো ইন্দোনেশিয়ার জনপ্রিয় ব্যান্ড 'সেভেনটিন' 'নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না' সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার হওয়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় একটি রিসোর্টের তাঁবুতে বিশাল আকারের ঢেউ আঘাত হানছে। ঐ তাঁবুতে এক অনুষ্ঠানে গান গাইছিল ইন্দোনেশিয়ার বেশ জনপ্রিয় একটি রক ব্যান্ড 'সেভেনটিন।' ঢেউয়ের আঘাতে মঞ্চ তছনছ হওয়ার ভিডিও চিত্রে দেখা যায় ব্যান্ডদলের কয়েকজন সদস্যর আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাটি। হৃদয়বিদারক এক ইনস্টাগ্রাম ভিডিওতে গায়ক রিয়েফিয়ান ফাযারসিয়াহ জানান যে ব্যান্ডের বেসিস্ট এবং ম্যানেজার নিহত হয়েছেন এবং তিনজন সদস্য এবং ঐ গায়কের স্ত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। ঐ ব্যান্ডের এক নবীন সদস্য জ্যাক তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন যে স্টেজের অংশবিশেষ আঁকড়ে ধরে স্রোতের হাত থেকে বেঁচেছেন তিনি। "শেষ কয়েকটি মুহূর্তে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিলো", বলে জ্যাক তাঁর পোস্টে লেখেন বলে জানায় সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। সংবাদ সংস্থা এপি জানায়, ব্যান্ডটি তাঁদের একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, "স্রোত ফিরে যাওয়ার সময় আমাদের দলে অনেক সদস্যই পানিতে ধরে থাকার মতো অবলম্বন খুঁজে পাননি।" দোকান মালিক রুডি হেরদিয়ানসিয়াহ ঢেউয়ের আঘাতে জ্ঞান হারিয়েছেন অন্তত তিনবার 'বেঞ্চ আঁকড়ে ধরে ছিলাম' বানতেন প্রদেশের সিনাঙ্কা উপজেলার একজন দোকান মালিক রুডি হেরদিয়ানসিয়াহ বলেন 'সমুদ্র থেকে প্রকট এক শব্দ আসার' আগ পর্যন্ত শনিবারে সমুদ্র শান্তই ছিল। পানির উঁচু দেয়াল সমুদ্রতীরে তাঁর দোকানে আঘাত করলে ঢেউয়ের টানে ভেসে যান তিনি। এসময় অন্তত তিনবার অজ্ঞান হয়ে যান বলে মনে করতে পারেন তিনি। "আল্লাহর কাছে অসংখ্য কৃতজ্ঞতা যে তিনি আমাকে বাঁচিয়েছেন", বলেন তিনি। সৈকতে রুডি'র দোকানের অনেকাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয় মি. হেরদিয়ানসিয়াহ বলেন তিনি সুনামির সতর্কতা বার্তা শোনেননি; কিন্তু বেশ কিছুদিন আগে একবার সুনামি প্রস্তুতি মহড়ায় অংশ নিয়েছিলেন। "ঐ মহড়ায় অংশ নেয়ার কারণে আমি সচেতন ছিলাম। আমি কোনো কিছু ধরার চেষ্টা করছিলাম যা আমার জীবন বাঁচাতে পারে। শেষপর্যন্ত একটি বেঞ্চ আঁকড়ে ধরে ছিলাম।" 'আমি ভেবেছিলাম মারা যাবো' ১৬ বছর বয়সী আযকি কুর্নিয়াওয়ান জানান কারিতা সৈকতের একটি জনপ্রিয় রিসোর্ট পাত্রা কমফোর্ট হোটেলে আরো ৩০ জন শিক্ষার্থীর সাথে একটি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশ নিচ্ছিলেন তিনি। সেসময় হঠাৎ হোটেলের লবিতে থাকা লোকজন 'সমুদ্রের পানি বাড়ছে' বলে তীব্র চিৎকার শুরু করে। সংবাদ সংস্থা এপি'কে তিনি জানান, কী হচ্ছিল তা তিনি বুঝতে পারছিলেন না, কারণ কোনো ভূমিকম্প অনুভব করেন নি তিনি। সুনামির পর বানতেন প্রদেশের কারিতা সৈকত দ্রুতবেগে দৌড়ে পার্কিং লটে পৌঁছান আযকি। উদ্দেশ্য ছিল নিজের মোটর বাইকটি নিয়ে হোটেল থেকে বের হয়ে যাওয়া, কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন সবকিছু ততক্ষণে পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করেছে। "হঠাৎ করে প্রায় এক মিটার উঁচু এক ঢেউ আঘাত করে আমাকে।" "সমুদ্রসৈকত থেকে প্রায় ৩০ মিটার দূরে থাকা একটি বেড়ার দিকে ভেসে যাই আমি। আমি যখন ঐ বেড়া শক্ত করে ধরে রেখে স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই করছি, তখন বারবার মনে হচ্ছিল যে হয়তো আজই আমার মৃত্যু হবে।" কারিতা সৈকতে বেশকিছু দালান ব্যঅপক ক্ষদিগ্রস্ত হয়েছে সুনামিতে 'জঙ্গলের দিকে দৌড়ায় সাধারণ মানুষ' আসেপ পেরাংকাট নামের এক ব্যক্তি সংবাদ সংস্থা এএফপি'কে জানায়, শহরের ওপর দিয়ে সমুদ্রের ঢেউ যাওয়ার সময় জাভা'র কারিতা দ্বীপে পরিবার নিয়ে সময় কাটাচ্ছিলেন তিনি। "গাড়িগুলোকে প্রায় ১০মিটার দূরে সরিয়ে নিয়ে যায় ঢেউ; একই অবস্থা হয় বড় কন্টেইনারগুলোরও।" তিনি বলেন, "সমুদ্রের খুব কাছে অবস্থিত স্থাপনাগুলো তছনছ হয়ে গিয়েছে, গাছ এবং বৈদ্যুতিক খাম্বাগুলো সব ধ্বংস হয়ে গেছে। বাসিন্দাদের প্রায় সবাই জঙ্গলের দিকে দৌড়ে গিয়ে অবস্থান নেয়।" জাভা'র পানডেগলাং অঞ্চলের বাসিন্দা আলিফ মেট্রো টিভি'কে জানায় যে নিখোঁজ থাকা অনেক ব্যক্তির স্বজনরা এখনো তাঁদের আত্মীয়দের খুঁজছেন। 'ঢেউ ছিল দু'টি' আয়েস্টেইন লুন্ড অ্যান্ডারসন, নরওয়েজিয়ান ফটোগ্রাফার, পশ্চিম জাভা ক্রাকাতাউ আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ছবি তোলার জন্য সৈকতেই ছিলাম আমি। সেদিন সন্ধ্যায় আগ্নেয়গিরি থেকে বেশ কয়েকদফা অগ্ন্যুৎপাত হলেও ঠিক সুনামির আগে দিয়ে আগ্নেয়গিরি ছিল একদম শান্ত। অন্ধকারের মধ্যে হঠাৎই বিশাল এক ঢেউ আসতে দেখি এবং দৌড়াতে শুরু করি। প্রথম ঢেউটা অতটা শক্তিশালী ছিল না। আমি দৌড়ে হোটেলে চলে আসি আমার পরিবারের কাছে। হোটেল থেকে আমার স্ত্রী-পুত্রকে সাথে নিয়ে বের হই তখন দ্বিতীয় ঢেউটি আঘাত করে। এটি ছিল আরো অনেক ভয়াবহ আকারের। হোটেলের অন্যান্য মানুষের সাথে সাথে আমরাও দৌড়ে পাশের উঁচু জঙ্গলে আশ্রয় নেই। এখনও আমরা সেখানেই আছি। রাণী, আনইয়েরে সৈকতে যার একটি দোকান সুনামিতে ধ্বংস হয়ে গেছে 'সব ধ্বংস হয়ে গেছে' জাভা'র আনইয়েরে সমুদ্রসৈকতে একটি দোকান চালান রাণী; যেটি সুনামিতে তছনছ হয়ে গেছে। "সব শেষ হয়ে গেছে; আমাদের কাছে টাকাও নেই যে আমরা এগুলো নতুন করে বানাবো।" বছরের এই সময়টা পর্যটনের জন্য ভাল সময় হিসেবে বিবেচিত হয় এবং ঐ এলাকার মানুষের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পর্যটনই। সংসদ নির্বাচন: তরুণ ভোটারদের আগ্রহ কতটা? | More than 220 people were killed and 843 injured when a tsunami hit coastal towns on Indonesia's Sunda Strait on Saturday. Here, the survivors talk about what happened. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লাহোরে বিক্ষোভ হয়েছে মি. খান বলেছেন, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করেছে ওই পদক্ষেপ। তার আশঙ্কা, ভারত সেখানে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাতে পারে। ভারতের সংবিধানে যে অনুচ্ছেদের মাধ্যমে কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়া হয়েছিল, সেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের একদিন পরেও পুরো কাশ্মীর বিছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। কাশ্মীরের দাবি করে আসছে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই, তবে প্রতিটি দেশ তার একটি অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ভারতের অংশে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্নতাবাদী সহিংসতা বলছে, যার ফলে গত কয়েক দশকে কয়েক হাজার মানুষ মারা গেছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহায়তা করার জন্য পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করছে ভারত, যা বরাবরই নাকচ করে দিয়ে আসছে পাকিস্তান। তবে তারা বলছে, তার শুধুমাত্র স্বাধীনতাকামী কাশ্মীরের লোকজনকে নৈতিক আর কূটনৈতিক সমর্থন দিচ্ছে। আরো পড়ুন: কাশ্মীরের মর্যাদা এখন কী? উঠছে বহু আইনি প্রশ্ন 'কাশ্মীর বিচ্ছিন্ন, তার মধ্যেও চলছে বিক্ষোভ' এক নজরে কাশ্মীর ও ৩৭০ অনুচ্ছেদের ইতিহাস কাশ্মীর: অনুচ্ছেদ ৩৭০ কেন গুরুত্বপূর্ণ? ইমরান খানের আশঙ্কা, নতুন সিদ্ধান্তের ফলে কাশ্মীরিরা দাসে পরিণত হবে কী বলেছেন ইমরান খান? পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, তিনি সারা বিশ্বকে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানাতে চান। ''জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে, যা নিয়ে আমরা এখন পর্যালোচনা করছি, বিষয়টি আমরা সাধারণ পরিষদে তুলবো। প্রতিটি সম্মেলনে রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে আমরা কথা বলবো... গণমাধ্যমের কাছে আমরা তুলে ধরবো এবং সারা পৃথিবীর মানুষকে জানাবো,'' তিনি বলেছেন। মি. খান বলছেন, তার মনে হচ্ছে কাশ্মীরের ওপর থেকে বিশেষ মর্যাদা তুলে নেয়ার ফলে ভারত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ওই এলাকায় জনসংখ্যার কাঠামো পরিবর্তন করতে পারবে। ''আমার আশঙ্কা, (ভারত) এখন কাশ্মীরে জাতিগত নির্মূল অভিযান চালাবে।'' ''তারা স্থানীয় মানুষজনকে সরিয়ে দেবে এবং অন্যদের সেখানে নিয়ে আসবে এবং তাদেরই সংখ্যাগরিষ্ঠ করে তুলবে। ফলে স্থানীয়রা মানুষরা তাদের দাস হওয়া ছাড়া আর কিছু করার থাকবে না।'' এর আগে পাকিস্তানের ক্ষমতাশালী সেনাবাহিনী প্রধান বলেছেন যে, তার সৈন্যরা কাশ্মীরের মানুষের সংগ্রামে পাশেই থাকবে। ভারতের ওই পদক্ষেপকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে বর্ণনা করেছে প্রতিবেশী চীন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: 'একটা শ্রেণী হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে' ভারতের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ মারা গেছেন শ্বেতাঙ্গ চরমপন্থা দমনকে কি অবহেলা করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র? চীনা মুদ্রার দরপতন বিশ্বে কেমন প্রভাব ফেলবে বিশ্বের সবচেয়ে সামরিকায়নকৃত এলাকাগুলোর একটি কাশ্মীর কী ঘটছে কাশ্মীরে ভারত শাসিত কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দিতো সংবিধানের যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ, তা বিলোপের দুইদিন পরও কাশ্মীর কার্যত বাকি বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন। রোববার সন্ধ্যে থেকেই রাজ্যের টেলিফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেটের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছিল স্বায়ত্বশাসন কেড়ে নেওয়ার ফলে সেখানে বড় ধরনের বিক্ষোভ হতে পারে। কিন্তু এর মধ্যেই বিবিসি হিন্দির একজন সাংবাদিক আমীর পীরজাদা ভারতশাসিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগর ভেতর থেকে জানাতে পেরেছেন - সেখানে কী ঘটছে। টেলিফোনে তিনি বলছেন, কাশ্মীর এখন ক্রোধে ফুটছে। তার মধ্যেও বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ ও নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর পাথর ছোঁড়ার ঘটনা ঘটছে এবং স্থানীয় নেতাকর্মীদের আটকে রাখা হয়েছে বলে জানাচ্ছেন শ্রীনগর থেকে বিবিসির সাংবাদিক। ভারতের অন্যান্য প্রান্তে থাকা কাশ্মীরিরা নিজেদের পরিবারের সাথেও যোগাযোগ রাখতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন। সোমবার ৩৭০ অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি ঘোষণার আগে থেকে সেখানে হাজার হাজার অতিরিক্ত সেনা সদস্য পাঠিয়েছে ভারত। রাস্তায় সর্বত্র হাজার হাজার সেনা, পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী টহল দিচ্ছে। সকল রাস্তা বন্ধ। সবখানে জারি হয়েছে কারফিউ। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের ঐতিহাসিক ঘটনাক্রম | Pakistani PM Imran Khan has vowed to fight India's decision to revoke Indian-administered Kashmir's autonomy, including at the UN Security Council. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | সাংহাই, ১৯৮৫। সাদা কালো এই ছবিগুলোতে যে চীনকে তিনি ধারণ করেছিলেন, সেই চীনকে এখন খুঁজে পাওয়া দুস্কর হবে। মাত্র চার দশকে যে অভূতপূর্ব পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে গেছে চীন, এসব ছবি যেন তারই প্রামাণ্য দলিল। শ্লোগান: 'মাও জেদং চিন্তাধারা দীর্ঘজীবী হোক।" ১৯৮৫ সালে এই শ্লোগান মুছে ফেলা হচ্ছে। ওপরের ছবি সম্পর্কে এড্রিয়ান ব্র্যাডশ'র মন্তব্য: "চীনের বড় বড় রাস্তার মোড়ে মোড়ে যেসব সরকারি প্রপাগান্ডামূলক বোর্ড ছিল, সেগুলো একে একে ঢাকা পড়তে লাগলো বিজ্ঞাপনে। বেশিরভাগ বিজ্ঞাপন ছিল বিদেশি ইলেকট্রনিক সামগ্রীর, যেগুলো তখনো পর্যন্ত চীনের দোকানপাটে কিনতে পাওয়া যায় না।" "এর উদ্দেশ্য ছিল একদিন চীনের মানুষও যে এসব পণ্য কেনার মতো ধনী হতে পারবে, সে ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা।" সাংহাই, ১৯৮৫: রাস্তায় ট্রাইসাইকেল চালাচ্ছে দুই শিশু। "সে সময় চীনের সাংহাই এর মতো বড় নগরীতেও কোন বিদেশির দেখা সচরাচর পাওয়া যেত না। অথচ সাংহাই তখনো চীনের সবচেয়ে বেশি কসমোপলিটন নগরী।" বেইজিং, ১৯৮৫। রাস্তায় এক চীনা নাগরিকের সঙ্গে মোহাম্মদ আলীর মুষ্টিযুদ্ধের প্রস্তুতি। বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন মোহাম্মদ আলী ১৯৮৫ সালে চীন সফরে যান। তখন তার সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটিয়েছিলেন এড্রিয়ান ব্র্যাডশ'। সেই অভিজ্ঞতার পরই তিনি চীনে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। "আমাকে চীনে বেড়াতে যাওয়া যেসব মানুষের ছবি তুলতে বলা হয়েছিল, তাদের একজন ছিলেন মোহাম্মদ আলী। বেইজিং ভবিষ্যতে অলিম্পিক গেমস আয়োজনের যে স্বপ্ন দেখছিল, সেই লক্ষ্যে মোহাম্মদ আলীকে তারা যেন একজন সম্ভাব্য উপদেষ্টা হিসেবে গণ্য করছিল।" "তখনো পার্কিনসন্সের প্রাথমিক লক্ষণগুলো তাকে অতটা ম্লান করতে পারেনি। দুনিয়ার যে কেউ তাকে দেখলেই চিনতে পারে। আলী যেখানেই যাচ্ছিলেন সেখানেই লোকে তাকে দেখে হাসি আর উল্লাসে ফেটে পড়ছিল।" বেইজিং ১৯৮৫: এক রেস্টুরেন্টে প্রখ্যাত ফরাসী ব্রান্ড পিয়েরে কার্দার ফ্যাশন শো "এটি সম্ভবত চীনে সংস্কার শুরু হওয়ার পর প্রথম কোন ফ্যাশন শো। যারা এটি দেখতে এসেছিলেন, তাদের মুখের অভিব্যক্তি এবং চাহনিকে অমূল্যই বলতে হবে।" সাংহাই, ১৯৮৭: নদীতীর জুড়ে নির্মাণযজ্ঞ "সাংহাই নদীর অপর তীরের যে ভগ্নদশা, সেটা আমাকে সত্যিই অবাক করেছিল। সেখানে একটা ব্রিজ পর্যন্ত ছিল না। "এখন সেখানে অনেকগুলো ব্রিজ, টানেল। আছে আন্ডারগ্রাউন্ড রেল লাইন। আর সাংহাই এর আকাশরেখা এখন তো ম্যানহাটানের প্রতিদ্বন্দ্বী।" সাংহাই, ১৯৮৫: শিশুদের বিনোদন পার্ক "কে জানে, এই শিশুদের কেউ একজন হয়তো বড় হয়ে সত্যিকারের নভোচারী হয়েছে। সে সময় কারও কল্পনাতেই ছিল না একদিন এটা সম্ভব হবে।" চেংডু, ১৯৮৫: ওয়াকার দিয়ে হাঁটতে শিখছে এক শিশু "এই ছবিতে স্নেহের পরশ ছড়ানো যে মূহুর্তটি ধরা পড়েছে, সেটা অসাধারণ। কারণ এই ছবিতে যে দাদীমাকে দেখা যাচ্ছে, তিনি হয়তো এমন এক সময়ে জন্ম নিয়েছিলেন যখন চীনে মেয়েদের পা বেঁধে রেখে ইচ্ছে করে পঙ্গু করে দেয়া হতো।" সাংহাই, ১৯৮৫: একজনের পোর্টেবল মিউজিক প্লেয়ার দেখতে রাস্তায় ভিড় জমে গেল "ইলেকট্রনিক পণ্যসামগ্রী চীনে ছিল বিরাট সামাজিক মর্যাদার প্রতীক। আমি যেখানেই যেতাম, সেখানে লোকে আমার ক্যামেরার দাম জানতে চাইতো।" হেফেই, ১৯৮৬: কাদায় মাখামাখি রাস্তার ওপর একটি বাজার "চীনে রাস্তার ওপর যেসব বাজার বসতো, সেগুলোতে একেকটা পণ্যের বিরাট স্তুপ থাকতো। আর কেনার সময় দরকষাকষি করা যেত।" "বলা যেতে পারে এখান থেকেই শুরু হয়েছিল চীনের নতুন অর্থনৈতিক যুগ। কৃষকরা যদি বেশি উৎপাদন করতে পারতো, তারা অতিরিক্ত আয় করতে পারতো।" বেইজিং, ১৯৮৫: প্রচন্ড গরমে শরীর ঠান্ডা করতে খালে ঝাঁপ দিচ্ছে এক তরুণ। "১৯৮০র দশকে চীনে এয়ার কন্ডিশনিং এর কথা শোনাই যেত না। কাজেই গ্রীষ্মে যখন তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতো, লোকজন অনেক রাত পর্যন্ত বাইরে থাকতো আর জলাশয় পেলে সেখানে শরীর ডোবাতো।" বেইজিং, ১৯৮৫: ফরবিডেন সিটিতে 'দ্য লাস্ট এমপেরর', ছবির শ্যুটিং। "দ্য লাস্ট এমপেরর ছবির ব্যাপারে প্রাথমিক কিছু কাজ করতে পরিচালক বার্নার্ডো বেরটোলুচ্চি যখন প্রথম বেইজিং যান, তখন আমার সঙ্গে তার দেখা হয়। আমরা ইম্পেরিয়াল প্যালেসের চারপাশে যখন হাঁটছিলাম, তখন তিনি আমাকে ব্যাখ্যা করছিলেন, কিভাবে ছোটবেলায় চীনের ক্ষমতাচ্যূত এক সম্রাটের কাহিনী শুনে অভিভূত হয়েছিলেন। | British photographer Adrian Bradshaw arrived in Beijing in 1984, going on to spend three decades documenting China's changing culture. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | আজারবাইজানের আর্টিলারি আজারবাইজানের অন্তত একটি হেলিকপ্টার গুলি করে ফেলে দিয়েছে আর্মেনিয়ার বাহিনী। দুই তরফ থেকেই জানানো হয়েছে, এই লড়াইয়ে কিছু বেসামরিক মানুষ মারা গেছে। নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই দ্বন্দ্ব আবারও মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে কিন্তু কোন দেশের সামরিক শক্তি কতটা? বিশ্বে দেশগুলোর সামরিক শক্তির যে তালিকা প্রকাশ করেছে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার, তাতে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের শক্তির একটি ধারণা পাওয়া যায়। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২০ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বের ১৩৮টি দেশের মধ্যে আজারবাইজানের অবস্থান ৬৪, অন্যদিকে আর্মেনিয়ার অবস্থান ১১১-এ। আজারবাইজানের জনসংখ্যা ১ কোটি ৪৬ হাজার হলেও আর্মেনিয়ার জনসংখ্যা মাত্র ৩০ লাখ ৩৮ হাজার। আয়তনের দিক থেকেও যেখানে আর্মেনিয়া মাত্র ২৯,৭৪৩ বর্গকিলোমিটার, সেখানে আজারবাইজানের আয়তন প্রায় তিনগুণ ৮৬, ৬০০ বর্গকিলোমিটার। দুই দেশের মধ্যে সামরিক শক্তির প্রধান পার্থক্যগুলো কোথায়? সৈন্য সংখ্যা গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ইনডেক্স অনুযায়ী, আজারবাইজানের সশস্ত্র বাহিনীর মোট সদস্য ১ লাখ ২৬ হাজার। তাদের সংরক্ষিত বাহিনীতে রয়েছে ৩ লাখ কর্মী। সেই তুলনায় আর্মেনিয়ার সৈন্য সংখ্যা অর্ধেকের কম। দেশটিতে কর্মরত সৈন্য রয়েছে মাত্র ৪৫ হাজার। সংরক্ষিত সেনা সদস্য হিসাবে রয়েছে ২ লাখ সদস্য। ১৯৯০ এর দশকে আজারবাইজানের সেনা অভিযানকে ঠেকিয়ে দিয়েছিল আর্মেনীয়রা প্রতিরক্ষা বাজেট এই ইনডেক্সের তথ্য অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে সামরিক খাতের বাজেটেও অনেক পার্থক্য রয়েছে। আজারবাইজানের সামরিক বাজেট আর্মেনিয়ার প্রায় দ্বিগুণ। আজারবাইজান যেখানে সামরিক খাতে ব্যয় করে ২৮০ কোটি মার্কিন ডলার, সেখানে আর্মেনিয়া ব্যয় করে ১৩৮ কোটি মার্কিন ডলার। এয়ারক্রাফট আজারবাইজানের সামরিক বাহিনীতে মোট এয়ারক্রাফটের সংখ্যা ১৪৮টি। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার এয়ারক্রাফট রয়েছে ৬৪টি। এর মধ্যে আর্মেনিয়ার কোন যুদ্ধবিমান নেই, তবে হামলায় ব্যবহার উপযোগী অ্যাটাক এয়ারক্রাফট রয়েছে নয়টি। অন্যদিকে আজারবাইজানের যুদ্ধবিমান রয়েছে ১৭টি। এর বাইরে তাদের অ্যাটাক এয়ারক্রাফট আছে ১২টি। হেলিকপ্টার হেলিকপ্টারের সংখ্যার দিক থেকে আজারবাইজান এগিয়ে থাকলেও আক্রমণকারী হেলিকপ্টারের তালিকায় এগিয়ে রয়েছে আর্মেনীয়। আজারবাইজানের হেলিকপ্টার রয়েছে ৮৮টি, যার মধ্যে ১৭টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার। আর আর্মেনিয়ার হেলিকপ্টার রয়েছে ৩৭টি। তার মধ্যে ২০টি অ্যাটাক হেলিকপ্টার। সামরিক যান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, সাঁজোয়া যানের দিক থেকে অনেক এগিয়ে রয়েছে আজারবাইজান। তাদের ট্যাংক রয়েছে ৫৭০টি আর আর্মাড কার রয়েছে ১, ৪৫১টি। আর্মেনিয়ার ট্যাংকের সংখ্যা অনেক কম। তাদের মাত্র ১১০টি ট্যাংক রয়েছে। অন্যদিকে তাদের আর্মাড কারের সংখ্যা ৭৪৮টি। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশ-মিয়ানমার সামরিক শক্তির পার্থক্য কতটা? ভারত-পাকিস্তানের সামরিক শক্তির পার্থক্য কতটা? প্রতিবেশীদের তুলনায় বাংলাদেশের সামরিক ব্যয়ের চিত্র উত্তেজনা বাড়তে থাকায় আর্মেনীয় সংরক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের যোগ দেয়ার জন্য তলব করা হয়েছে আর্টিলারি আর্টিলারির দিক থেকেও এগিয়ে রয়েছে আজারবাইজান। দেশটির স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি গান রয়েছে ১৮৭টি আর ফিল্ড আর্টিলারি রয়েছে ২২৭টি। আর্মেনিয়ার স্বয়ংক্রিয় আর্টিলারি গান রয়েছে ৩৮টি আর ফিল্ড আর্টিলারি রয়েছে ১৫০টি। আজারবাইজানের যেখানে রকেট প্রজেক্টর রয়েছে ১৬২টি সেখানে আর্মেনিয়ার আছে অর্ধেকের কম, ৬৮টি। নৌযান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ইনডেক্স অনুযায়ী, আর্মেনিয়ার কোন রণতরী নেই। তবে আজারবাইজানের নৌ বাহিনীর মোট ৩১টি রণতরী রয়েছে। এর মধ্যে আজারবাইজানের একটি ফ্রিগেট, চারটি সাবমেরিন রয়েছে। আর্মেনিয়ার এসব কোন নৌযান নেই। এছাড়া আজারবাইজানের মাইন অপসারণে সক্ষম সাতটি যুদ্ধজাহাজ আর উপকূলে টহল দিতে সক্ষম ১৩টি পেট্রল বোট আছে। দুই দেশের কারোই বিমানবাহী রণতরী কিংবা ডেস্ট্রয়ার নেই। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বাংলাদেশে জনসংখ্যার প্রতি দশ লাখে ৩০ জনের করোনাভাইরাসে মৃত্যু 'কয়েক মিনিটেই' মিলবে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ফল এন-৯৫ মাস্ক কেলেঙ্কারি মামলায় জেএমআই চেয়ারম্যান গ্রেফতার বাসমতি চাল কার- ভারত ও পাকিস্তানের নতুন বিরোধ সহিংসতার জন্য উভয় পক্ষ একে অপরকে দায়ী করছে অন্যান্য আর্মেনিয়ায় মোট ১১টি বিমানবন্দর রয়েছে, যেখানে আজারবাইজানে রয়েছে ৩৭টি। আর্মেনিয়ার কোন বাণিজ্যিক জাহাজ নেই, তবে আজারবাইজানের বাণিজ্যিক জাহাজ রয়েছে ৩১৩টি। সড়কপথ, রেলপথ, বন্দরের দিক থেকেও আর্মেনিয়ার চেয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে আজারবাইজান। আজারবাইজান তেল সম্পদে সমৃদ্ধ। নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বড় একটি অংশ তারা রপ্তানি করে। তবে আর্মেনিয়ার তেল নেই। চাহিদার পুরোটাই তাদের আমদানি করতে হয়। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, সামরিক দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই রয়েছে রাশিয়া, চীন ও ভারত। শীর্ষ ১০দেশের মধ্যে আরো রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, মিশর এবং ব্রাজিল। সামরিক শক্তির দিক থেকে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ইনডেক্স অনুযায়ী, ১৩৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থা ৪৬তম। | Renewed hostilities have been raging between Armenian and Azerbaijani forces around the contested territory of Nagorno-Karabakh in the southern Caucasus. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডব ব্র্যাণ্ড আমেরিকার অপূরণীয় ক্ষতি করেছে প্রথম প্রতিক্রিয়া দেন নেটো জোটের সেক্রেটারি জেনারেল ইয়েন স্টলটেনবার্গ । তিনি টুইট করেন, “ওয়াশিংটনে ভয়ঙ্কর দৃশ্য। নির্বাচনী ফলাফলকে অবশ্যই মর্যাদা দিতে হবে।“ একটি জোটের শীর্ষ কর্মকর্তা সেই জোটেরই প্রধান এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশকে নিয়ে এমন মন্তব্য করবেন - এ কথা কেউ কি কখনো কল্পনা করেছিল? বোধ হয় না। আপনি হয়ত ধারণা করতে পারতেন যে বেলারুস বা ভেনেজুয়েলা নিয়ে মি. স্টলটেনবার্গ এ ধরনের কথা বলবেন। কিন্তু তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আমেরিকার গণতন্ত্র এবং রাজনীতি নিয়ে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের চারটি বছরে আমেরিকার মর্যাদা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে - তা নেটো কর্মকর্তার একটি টুইট দেখেই অনেকটা ইঙ্গিত পাওয়া যায়। এই সময়কালে বিশ্বে আমেরিকার প্রতিপত্তি এবং ‘সফট পাওয়ার‘ - অর্থাৎ মজবুত গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের ভিত্তির জোরে প্রভাব তৈরির যে ক্ষমতা - তার রক্তক্ষরণ বহুগুণে বেড়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছেন, ইরানের সাথে করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে আমেরিকাকে বের করে এনেছেন। তিনি বিদেশে সামরিক তৎপরতা কমিয়েছেন, কিন্তু বিকল্প হিসাবে কূটনীতির কোনো ব্যবস্থা করেননি। ফলে, ইসরায়েল, সৌদি আরব, তুরস্কের মত অনুসারীরাও এখন নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে শুরু করেছে। কারণ ডোনাল্ড ট্রাম্পের গতিবিধির ওপর তারাও ভরসা করতে পারছে না। মিত্রদের আস্থা ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে জো বাইডেনের জন্য সেই সাথে, মি. ট্রাম্প গণতান্ত্রিক বিশ্বের নেতাদের সাথে যতটা না উষ্ণতা দেখিয়েছেন - তার চেয়ে একনায়ক কর্তৃত্ববাদী নেতাদের বেশি কাছে টেনেছেন। ফলে একসময় আমেরিকাকে দেখে সারা পৃথিবীর গণতন্ত্র-কামীরা যেভাবে উৎসাহিত হতো তা চরমভাবে গোঁত্তা খেয়েছে। উল্টো আমেরিকার নিজের গণতন্ত্রের দুর্বলতা নগ্ন হয়ে পড়েছে। ‘অকার্যকর এবং বিভক্ত আমেরিকা‘ মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ইয়ান ব্রেমার বলছেন, “শিল্পোন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকা এখন রাজনৈতিকভাবে সবচেয়ে অকার্যকর এবং বিভক্ত একটি দেশে পরিণত হয়েছে।“ এই অবস্থার গুরুত্ব অনেক - কারণ মি. ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির কারণে বিশ্ব ব্যবস্থা গত চার বছরে দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চীন এবং রাশিয়া দুটো দেশেই ভাবছে, ট্রাম্পের শাসনামলে তাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি বেড়েছে। সেইসাথে, উদার রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ব্যবস্থার প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন জাতিসংঘ এবং তার অনেক সহযোগী প্রতিষ্ঠান, নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: ক্যাপিটল হিলে হামলা: নিরাপত্তা ব্যর্থতা নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে ট্রাম্প সমর্থক ও ডানপন্থীরা 'সশস্ত্র বিক্ষোভের' পরিকল্পনা করছে ক্যাপিটল হিলে হামলার পর কী হবে জো বাইডেনের অভিষেকের দিন ইতিহাস কীভাবে মনে রাখবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিদায়কে? ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিলেন, 'দুর্দান্ত সমর্থকদের' প্রশংসাও করলেন ট্রাম্প শিনজিয়াংয়ে চীনা সৈন্যদের টহল। চীনকে সামলানো জো বাইডেনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে সাইবার হামলা দিন দিন মহামারির মত বাড়ছে। প্যানডেমিক বা জলবায়ু পরিবর্তনের মত বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে যে ধরণের শক্ত পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল, মি. ট্রাম্প তার ধারে-কাছেও ছিলেন না। এটা সত্যি যে আমেরিকার নাক গলানোর কারণে অনেক সময় সমস্যা সমাধানের বদলে তা শতগুণে বেড়ে গেছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা এবং নিরাপত্তা নীতি এখন অনেকটাই অস্পষ্ট হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শীতল যুদ্ধের সময়কার অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির মত গুরুত্বপূর্ণ চুক্তিগুলো ধসে পড়েছে। অথচ হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মত নতুন নতুন বিপজ্জনক মারণাস্ত্র যেখানে তৈরি হচ্ছে, সেখানে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির গুরুত্ব বহুগুণে বেড়েছে। সেইসাথে, চীন যেভাবে দিনে দিনে খবরদারি-সুলভ আচরণ করছে এবং রাশিয়া যেভাবে মারমুখী হয়ে উঠছে - তা পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের বিষয়। আমেরিকার নেতৃত্ব এখন তাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে। কিন্তু সেই সময়েই গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প সমর্থকদের তাণ্ডব আমেরিকার প্রতিপক্ষরা যে রসিয়ে রসিয়ে উপভোগ করেছে - তাতে কোনো সন্দেহ নেই। নতুন একজন প্রেসিডেন্ট যখন ক্ষমতা নিচ্ছেন - তখন আমেরিকা কোভিড প্যানডেমিকের জেরে নাজেহাল। অন্যদিকে, প্রতিপক্ষ চীনের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। ফলে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং হয়ত যথার্থই মনে করছেন যে তার রাষ্ট্রব্যবস্থাই আমেরিকানদের চেয়ে শ্রেয়। মি. ট্রাম্পের 'আমেরিকা ফার্স্ট' নীতির কারণে বিশ্ব ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাশিয়া এখন আমেরিকার যতটা না কৌশলগত 'প্রতিদ্বন্দ্বী' - তার চেয়ে বেশি 'উৎপাত'। কিন্তু ট্রাম্পের সময়কালে রাশিয়ার পক্ষ থেকে হ্যাকিং এবং ভুয়া খবর ছড়ানোর প্রবণতা বহুগুণে বেড়ে গেছে। যে প্রশাসনের দায়িত্ব জো বাইডেন নিতে চলেছেন, তার নানা অঙ্গের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে হয়ত রুশরা গোপনে ঢুকে বসে রয়েছে। এই পাইরেসির মাত্রা কত - তা হয়তো কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবেন না , কিন্তু গোপনীয়তা যে ভেঙেছে তা নিয়ে কারো মধ্যেই কোনো সন্দেহ নেই। আমেরিকার মিত্ররাও বুঝতে পারছে যে নতুন প্রশাসনের জন্য কাজ করা সহজ হবেনা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা জি-সেভেন জোট জো বাইডেনকে সাদরে সম্ভাষণ জানাবে, কিন্তু সৌদি আরব, ইসরায়েল বা তুরস্কের মত দেশগুলো দ্রুত তাদের নীতি অদল-বদল করে সামঞ্জস্য বিধানের চেষ্টা করবে বা ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। তারা নতুন মার্কিন প্রশাসনের সাথে নতুন করে দর কষাকষির পরিকল্পনা করছে। নতুন মার্কিন প্রশাসনের প্রতি পশ্চিমা মিত্রদের হানিমুন কতটা দীর্ঘস্থায়ী হবে সেই নিশ্চয়তা দেয়াও কঠিন। মি. বাইডেন তার ইইরোপীয় মিত্রদের ওপর মি. ট্রাম্পের মতই শর্ত আরোপ করবেন হয়তো। তিনিও চাইবেন ইউরোপীয়রা যেন প্রতিরক্ষা বাজেটা বাড়ায়, নেটো জোটে বেশি পয়সা দেয়।। ইরান, চীন এবং রাশিয়ার ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ কৌশলের জন্যও ইউরোপীয়দের প্রতিশ্রুতি চাইবেন তিনি। আমেরিকার নেতৃত্বের ওপর আস্থা তৈরি করা নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য কঠিন হতে পারে কিন্তু নীতি বা কৌশলের ব্যাপারে এই কোয়ালিশন বা ঐক্য সহজ হবেনা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চীনের সাম্প্রতিক বিনিয়োগ চুক্তি তার জলজ্যান্ত প্রমাণ। বাইডেন হয়তো এই চুক্তি বিলম্বিত করতে চাইতেন। আমেরিকানরা মনে করছে যে চীন যেভাবে উইগর মুসলিমদের সাথে আচরণ করছে, হংকংয়ে যে নীতি অনুসরণ করছে বা অস্ট্রেলিয়াকে যেভাবে চাপের মধ্যে রেখেছে, তাতে চীনের সাথে এমন চুক্তি করা সঙ্গত হয়নি। ফলে, নীতি নিয়ে মতভেদ বা ইউরোপের নিজের নিরাপত্তা সার্বভৌমত্ব অর্জনের অভিলাষের কারণে ওয়াশিংটনের সাথে সম্পর্কে জটিলতা দেখা দেবে। ট্রাম্প-বাদ নিয়ে মিত্রদের উদ্বেগ সেই সাথে রয়েছে আরো একটি বড় সমস্যা, আর তা হলো অনেক দেশ এখন মনে করছে ট্রাম্প আপাতত সরে গেলেও ট্রাম্পিজম বা ট্রাম্প মতবাদ হয়তো পাকাপাকিভাবে চলে যাচ্ছেনা। তাদের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে মি. বাইডেন হয়ত চার বছরের জন্য একটি বিরতি নিশ্চিত করছেন, কিন্তু তার পর ট্রাম্প-বাদ নতুন শক্তিতে ফিরে আসবে। ফলে, মি. বাইডেনের ব্যাপারে খুব ভরসা কি তারা করবেন? অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এখন আমেরিকার বৈদেশিক সম্পর্কের জন্য সবচেয়ে বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকার গণতন্ত্র পুন:নির্মাণ করে অভ্যন্তরীণ বিরোধ মিটিয়ে ‘ব্রান্ড আমেরিকা‘ নিশ্চিত করতে পারলেই শুধু আমেরিকার শত্রু এবং মিত্ররা আমেরিকাকে আগের মত গুরুত্ব দেবে, তার নেতৃত্বকে সমীহ করতে শুরু করবে। তবে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি অনেকটা শাঁখের করাতের মতো। যদি মি. বাইডেন বৈদেশিক সম্পর্কে সাফল্য চান, মর্যাদা চান - তাহলে তাকে তার বিদেশ নীতির প্রতি দেশের জনগণের সমর্থন আদায় করতে হবে। কিন্তু সেই ভারসাম্য রক্ষা কঠিন। উদাহরণ হিসাবে চীনের কথা বলা যেতে পারে। সাধারণ আমেরিকানরা চাইবে, চীনা নীতি যেন এমন হয় - যাতে তাদের চাকরি ফিরে আসে বা নতুন সুযোগ তৈরি হয়। সেখানেই মি. বাইডেন সমস্যায় পড়তে পারেন, কারণ তিনি চীনের সাথে প্রতিযোগিতা করতেও চান, আবার সহযোগিতাও চান। | Many foreign leaders - and especially Washington's allies - will have watched the events this week on Capitol Hill with amazement and alarm. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | রোজা ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম মুসলিমরা বিশ্বাস করেন- স্বেচ্ছা নিয়ন্ত্রণ আর বেশি সময় ধরে প্রার্থনার ভেতর দিয়ে মুসলমানরা এ মাসে নতুন করে আত্মশুদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করেন। আপাতদৃষ্টিতে রোজা সহজ সরল একটি ধর্মীয় আচরণের বিষয়, কিন্তু এটি নিয়ে বেশ কিছু ভুল ধারণা বিদ্যমান যেগুলো নিয়ে মুসলিমদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। নীচে রোজা নিয়ে সেরকম ছটি খুব সাধারণ ভুল ধারণা তুলে ধরা হলো। ব্রিটেনে অ্যাডভান্সড (অগ্রসর) ইসলামি বিজ্ঞান এবং শারিয়া আইনের ছাত্র শাব্বির হাসান তার ধর্মীয় জ্ঞান প্রয়োগ করে এগুলোর বিশ্লেষণ করেছেন: মিসওয়াক ব্যবহার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও অনুমোদন করে 'দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়' অনেক মানুষ মনে করেন পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভেঙ্গে যায়। কিন্তু ইসলামি চিন্তাবিদরা বলেন, দাঁত ব্রাশ করলে রোজা ভাঙ্গে না। শাব্বির হাসান বলেন, অনেক মানুষ অতি সাবধানী। তাদের জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন তিনি,- "সবচেয়ে ভালো পরামর্শ অল্প পরিমাণ পেস্ট নিন। মিন্টের গন্ধ কম এরকম পেস্ট ব্যবহার করুন।" ভয় পেলে, গাছের সরু ডাল থেকে তৈরি মিসওয়াক বা দাঁতন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আরো পড়তে পারেন: একমাস রোজা রাখলে যা ঘটে আপনার শরীরে রোজা রেখে চুমু নিষিদ্ধ, অর্থাৎ অন্যের লালা মুখে ঢোকানো যাবেনা 'মুখের লালা পেটে ঢুকলে রোজা থাকে না' শাব্বির হাসান বলছেন, মুখের লালা পেটে ঢুকলে কোনো অসুবিধা নাই। "মুখের লালা পেটে ঢুকলে রোজা থাকে না- এই বিশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই, নিজের লালা গলাধঃকরণ করা খুব স্বাভাবিক একটি শারীরিক প্রক্রিয়া, এতে অবশ্যই রোজা ভাঙ্গে না।" তিনি বলেন, বরঞ্চ ইসলামে রোজার সময় মুখের লালা খাওয়া উৎসাহিত করা হয়েছে। তবে, তিনি বলেন, অন্যের মুখের লালা নিজের মুখে ঢুকলে রোজা থাকবে না। "রোজা পালনের সময় আপনি আপনার সঙ্গীকে চুম খেতে পারবেন না, অন্তরঙ্গ হওয়া যাবেনা। মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে আপনার আকাঙ্ক্ষাকে সংযত করা। সে কারণেই খাবার, পানীয় বা অন্তরঙ্গ সম্পর্ক বন্ধ রাখতে হবে।" দুর্নাম, গুজব রটালে রোজা ভেঙ্গে যেতে পারে 'শুধু খাবার অথবা পানি না খেলেই রোজা কবুল হয়ে যাবে' শুধুমাত্র খাবার মুখে দিলে বা পানি পান করলে রোজা ভেঙ্গে যাবে তাই নয়। আরো কিছু আচরণে রোজা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মি: হাসান বলছেন, "কিছু অপরাধ জিহ্বা দিয়ে হয়...আপনি যদি দুর্নাম রটান, গুজবে অংশ নেন বা কাউকে গালিগালাজ করেন, তাহলে রোজা কবুল নাও হতে পারে।" ভুল করে খেয়ে ফেললে রোজা ভাঙবে না 'অসাবধানতা-বশত কিছু খেয়ে ফেললে রোজা ভেঙ্গে যায়' আপনি যদি সত্যিই একদম ভুলে কিছু খেয়ে ফেলেন, তাহলেও আপনার রোজা বৈধ থাকবে, যদিনা আপনি বোঝার সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করে দেন। কিন্তু নামাজের আগে ওজুর সময় যদি আপনি অনিচ্ছাকৃত-ভাবে পানি খেয়ে ফেলেন তাহলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। কারণ এই ভুল এড়ানো সম্ভব। মি: হাসান বলেন, "এ কারণে রোজা রেখে অজু করার সময় গারগল না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়। আপনি শুধু কুলি করে পানি ফেলে দিন।" অসুস্থ থাকলে রোজা রাখা আবশ্যিক নয় 'ওষুধ খাওয়া যাবে না' মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন (এমসিবি) আন্তর্জাতিক গ্লুকোমা সমিতির সাথে যৌথ একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে- রোজা রেখেও কিছু ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। যেমন, চোখের ড্রপ। এমসিবি বলেছে, চোখের ড্রপ, কানের ড্রপ বা ইনজেকশনে রোজা ভাঙবে না। তবে যেসব ওষুধ মুখে দিয়ে খেতে হয়, সেগুলো নিষিদ্ধ । সেহেরির আগে এবং ইফতারির পর তা খেতে হবে। মি: হাসান বলেন, "প্রথম কথা আপনি যদি অসুস্থ থাকেন, তাহলে ভাবেতে হবে আপনি রোজা আদৌ রাখবেন কিনা?" "কোরানে পরিস্কার বলা আছে, আপনি চিকিৎসকের পরামর্শ মত চলুন।" অসুস্থ, অন্ত:স্বত্বা, দুর্বল, ভ্রমণকারীর জন্য রোজা আবশ্যিক নয় 'যে কোনো পরিস্থিতিতেই রোজা রাখতে হবে' ইসলামে শুধু প্রাপ্তবয়স্ক (সাধারণত ১৫ বছর) এবং সুস্থ ব্যক্তির রোজা ফরজ বা আবশ্যিক করা হয়েছে। এমসিবি বলছে - শিশু, অসুস্থ (শারীরিক এবং মানসিক), দুর্বল, ভ্রমণকারী, অন্তঃসত্ত্বা বা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এমন নারীর জন্য রোজা আবশ্যিক নয়। "যদি স্বল্প সময়ের জন্য কেউ অসুস্থ হন, তাহলে সুস্থ হওয়ার পর অন্য সময়ে তিনি ভাঙ্গা রোজাগুলো পূরণ করে দিতে পারেন, " মি হাসান বলেন। "যদি দীর্ঘস্থায়ী কোনো অসুস্থতা থাকে এবং রোজা রাখা সম্ভব না হয়, তাহলে রোজার মাসের প্রতিদিন ফিদা অর্থাৎ গরীবকে কিছু দান করুন।" ব্রিটেনে এই ফিদার পরিমাণ নির্ধারিত করা হয়েছে প্রতিদিন চার থেকে পাঁচ পাউন্ড। | The Muslim holy month of Ramadan starts this week and, across the globe, those who observe the Islamic faith will abstain from food and drink from sunrise to sunset. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | তালিকা থেকে বাদ পড়ার আশংকায় আসামের বহু মানুষ ভারতীয় সময় বেলা দশটায় এই তালিকা ওয়েবসাইট এবং এনআরসি সেবাকেন্দ্রগুলোতে প্রকাশ করা হয়। ১৯৫১ সালের পরে এই প্রথমবার ভারতের আসাম রাজ্যে নাগরিক পঞ্জী হালনাগাদ করা হয় যেন রাজ্যে বসবাসকারী অবৈধ বাংলাদেশিদের চিহ্নিত করা যায়। আজকের এই তালিকা প্রকাশের পর একমাস সময় দেওয়া হয়েছে দাবী বা আপত্তি জানানোর জন্য। সেইসব দাবী খতিয়ে দেখার পর পূর্ণ নাগরিক পঞ্জী তৈরি হবে। ২৫ মার্চ ১৯৭১ এর আগে যারা আসামে এসেছেন বলে নথি প্রমাণ পেশ করতে পারেন নি, তাদের নাম জাতীয় নাগরিক পঞ্জী থেকে বাদ গিয়েছে। অত্যন্ত জটিল একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই নাগরিক পঞ্জী চূড়ান্ত করা হয়, যার কারণে নথি প্রমাণ পেশ না করতে পেরে নিজভূমিতেও পরবাসী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। চূড়ান্ত তালিকায় নাম উঠবে কী না, এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আশঙ্কার মধ্যে আছেন বাংলাভাষী মুসলমানরা নিজেদের নাম নাগরিক পঞ্জীতে থাকা নিয়ে অনিশ্চিত বহু বাঙালী হিন্দু পরিবারও। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশীদের ঠেকানোর ডাক নাগাল্যান্ডের নেতার যে কারণে আসামের ৯০ লক্ষ মুসলমান আতঙ্কে হিন্দুদেরও নাগরিকত্ব দেওয়ার বিপক্ষে অসমীয়ারা যে কারণে নাগরিকত্ব নিয়ে শঙ্কায় আছে আসামের বাংলাভাষীরা শিলচরের দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ-র সম্পাদক তৈমূর রাজা চৌধুরী বলছিলেন, "যেভাবে গোটা প্রক্রিয়াটি চালানো হয়েছে, তা দেখে সন্দেহ হওয়ার অবকাশ আছে যে বাংলাভাষীদের বিরুদ্ধে একটা চক্রান্ত হচ্ছে। যাতে আসামে থাকতে গেলে একটি বিশেষ জনগোষ্ঠীর প্রভূত্ব মেনেই থাকতে হয়, সেই প্রক্রিয়া চলছে। আসলে গত কয়েকটি জনগণনায় ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বহু বাংলাভাষী মুসলমান, আগে যারা নিজেদের মাতৃভাষা অসমীয়া বলে উল্লেখ করতেন, তাঁরা এখন বাংলাকে মাতৃভাষা বলে জনগণনায় জানিয়েছেন। তাই আসামে বাঙালিদের সংখ্যাটা বেড়ে গেছে।" তবে যে শক্তিশালী ছাত্র সংগঠন অল আসাম স্টুডেন্টস ইউনিয়ন বা 'আসু'-র নেতৃত্বে আশির দশকে রক্তক্ষয়ী আসাম আন্দোলন হয়েছিল এবং যার পরিণতিই ১৯৮৫ এর আসাম চুক্তিতে সরকার সম্মত হয় জাতীয় নাগরিক পঞ্জী হালনাগাদ করতে। সেই সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "আমরা কখনই বাঙালি বিরোধী নই, আর এই প্রক্রিয়াটাও হিন্দু বিরোধী বা মুসলমান বিরোধী নয়। এটা অবৈধ বাংলাদেশীদের চিহ্নিত করার একটা প্রক্রিয়া। বহু অসমীয়া মানুষেরও নাম প্রাথমিক তালিকা থেকে বাদ গেছে।" এনআরসির প্রথম খসড়ায় নাম আছে কিনা জানতে এসেছেন একজন কোনও ব্যক্তি বা তাঁর পূর্বপুরুষ যে সত্যিই ১৯৭১ এর ২৫ মার্চের আগে থেকে আসামে বসবাস করছেন, তা প্রমাণের জন্য ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জী যেমন দেখা হচ্ছে, তেমনই ১৪-১৫টি নথি চাওয়া হচ্ছে। তথ্য মেলানো হয়েছে ভোটার তালিকার সঙ্গেও। পুরাণ ভোটার তালিকা ধরে তৈরি হয়েছে 'লিগ্যাসি ডেটা' আর বংশবৃক্ষ। নানা সময়ে একেকটি কর্তৃপক্ষের তৈরি করা ওইসব একাধিক তালিকায় সমন্বয় না থাকার অভিযোগ করছেন বহু মানুষ। যেমন ভোটার তালিকায় কোনও ব্যক্তির নামের বানান ভুল থেকে গেছে, তাই তিনি যে তাঁর পিতা মাতার সন্তান, সেটা প্রমাণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে। "আমার দাদুর নাম ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জীতে আছে, ১৯৬৬র ভোটার তালিকাতেও আছে। আমাদের জমি জায়গার দলিল, ব্রিটিশ সরকারকে খাজনা দেওয়ার রসিদ সব আছে। তবুও আমাদের গোটা পরিবারের কারও নাম ডিসেম্বরে প্রকাশ হওয়া আংশিক নাগরিক পঞ্জীতে নেই," বলছিলেন বাকসা জেলার বাসিন্দা, ছাত্র নেতা ইব্রাহিম আলি। বিপুল সংখ্যক বিবাহিত নারীরা এই কারণে শঙ্কিত যে, তাঁদের অনেকেরই জন্ম সার্টিফিকেট নেই। স্কুলেও পড়েন নি, তাই নেই সেই নথিও। দরিদ্র পরিবারের এইসব নারীদের নেই কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। আবার বিয়ের পরে পদবী পরিবর্তন করেছেন, অথচ 'লিগ্যাসি ডেটা' অনুযায়ী তাঁর বাবার পদবী আলাদা। এদিকে বাবারও মৃত্যু হয়েছে, তাই এখন প্রমান করাই কঠিন যে ওই নারীরা সত্যিই তাঁর পিতা-মাতার সন্তান এবং সত্যিকারের ভারতীয় নাগরিক। এরইসঙ্গে রয়েছে ভোটার তালিকায় যাদের 'ডি-ভোটার' বা সন্দেহজনক ভোটার বলে চিহ্নিত করেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। একটা সময়ে যদিও অসমীয়া জাতীয়তাবাদী সংগঠনগুলি দাবী করত যে রাজ্যে লক্ষ লক্ষ অবৈধ বাংলাদেশী বসবাস করছেন, এবং ভোটার তালিকায় নামও তুলে ফেলেছেন। ১৯৯৭ সাল থেকে শুরু হয় 'ডি-ভোটার' চিহ্নিতকরণ শুরিু হয়। কেউ পর পর বেশ কয়েকবার ভোট না দিলে অথবা অন্য গ্রামে চলে গিয়ে থাকলে তাদের 'ডি ভোটার' বলে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছিল। তাদের নামের তালিকা সীমান্ত পুলিশকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং মামলা রুজু হয় 'ফরেনার্স ট্রাইবুনাল' বা বিদেশী চিহ্নিতকরণের ট্রাইবুনালে। সেখানে নিজেকেই তথ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হয় যে তিনি সত্যিই বৈধ ভারতীয় নাগরিক। সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে আসামের রাজধানীতে বিক্ষোভ বঙ্গাইগাঁও জেলার বাসিন্দা ও সারা আসাম বাঙালী ছাত্র-যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট ভাওয়াল বিবিসিকে বলছিলেন, "ট্রাইবুনালে একদিন হাজিরা না দিলেই একতরফাভাবে 'বিদেশি' বলে রায় দিয়ে দেওয়া হয়। যে সীমান্ত পুলিশ হয়তো আগে নোটিশই ধরায়নি, 'ডি ভোটার'কে পলাতক বলে দেখিয়ে এসেছে, সেই পুলিশই রায় হওয়ার আধঘন্টার মধ্যেই খুঁজে পায় সেই মানুষটিকে। ছবি নিয়ে থানায় যেতে বলা হয় আর সেখান থেকে বন্দী শিবিরে।" বিদেশি বলে চিহ্নিত হয়ে যাওয়ায় প্রায় ৯০০ মানুষ আসামের বিভিন্ন বন্দী শিবিরে আটক রয়েছেন, যাদের বেশির ভাগই বৈধ নাগরিক বলে মনে করে মানবাধিকার সংগঠনগুলি। এরকম ঘটনাও বিবিসি এর আগে প্রতিবেদন করেছে, যেখানে ১০২ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে বিদেশি বলে চিহ্নিত করে বন্দী শিবিরে আটক রাখা হয়েছিল। কিছু অবশ্য সত্যিই বাংলাদেশি নাগরিক, যারা অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন। এরকম ৫২জনকে রোববারই বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে আসাম থেকে। তাদের নাগরিকত্ব বাংলাদেশ সরকার নিশ্চিত করার পরেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে আসাম সরকার। অন্যদিকে প্রাথমিকভাবে কয়েক লাখ মানুষকে 'ডি ভোটার' বলে চিহ্নিত করা হলেও সেই সংখ্যাটা ২১ বছর পরে নেমে এসেছে এক লক্ষ ১৩ হাজারের কাছে। 'ডি ভোটার' হয়ে যাওয়া ব্যক্তিরা জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলার আবেদন করারই সুযোগ পান নি। আবার আদালতের নির্দেশে ডি ভোটারদের পরিবারের অন্য সদস্যদের নামও জাতীয় নাগরিক পঞ্জীতে তোলা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। আবার বিদেশি ট্রাইবুনাল কাউকে বৈধ ভারতীয় বলে রায় দেওয়ার পরেও নির্বাচন কমিশন পুণরায় 'ডি ভোটার' নোটিশ পাঠিয়েছে, এমন নজিরও রয়েছে আসামে। আসাম রাজ্যের মুসলিমদের মধ্যেও রয়েছে এনআরসি নিয়ে ভীতি নাগরিক পঞ্জী তৈরী করার দায়িত্বে রয়েছেন আসামের যে কর্মকর্তা, সেই প্রতীক হাজেলা বিবিসিকে চূড়ান্ত খসড়া তালিকার ব্যাপারে কিছু তথ্য দিয়েছেন: • প্রায় তিন কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ নাগরিক পঞ্জীতে নাম তোলার আবেদন জানিয়েছিলেন। সঙ্গে জমা পড়েছে সাড়ে ছয় কোটিরও বেশী নথি। সমস্ত নথিই স্ক্যান করে ডিজিটাইজ করা হয়েছে। • ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যাচাইয়ের জন্য ৫ লক্ষ ৭৭ হাজার নথি পাঠানো হয়েছে। ৩৭টি দেশেও নথি গেছে তথ্য যাচাইয়ের জন্য। • ৪৮ হাজার কর্মী - অফিসার ২০১৫ সাল থেকে এই নাগরিক পঞ্জী প্রস্তুতের কাজ করছেন। • বৈধ নাগরিকদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য ৫৯ টি ভিন্ন ভিন্ন সফটওয়্যার তৈরী করা হয়েছে। নাগরিক পঞ্জী প্রকাশ নিয়ে যে অশান্তি ছড়াতে পারে, সেই আশঙ্কা করছে পুলিশ। তাই ২২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে রাজ্যে। সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছে সেনাবাহিনীকে। রয়েছে পুলিশী নজরদারীও। তবে গত কয়েকদিনে কেন্দ্রীয় সরকার আর রাজ্য সরকার বারে বারে প্রচার করছে যে, নাগরিক পঞ্জীর চূড়ান্ত খসড়ায় নাম না থাকা মানেই কাউকে বিদেশি অথবা অবৈধ বাংলাদেশি বলে চিহ্নিত করা নয়। নিজেদের নাগরিকত্বের দাবীর স্বপক্ষে প্রমান পেশ করার আরও একমাস সময় পাওয়া যাবে। আর এখনই কাউকে বিদেশি বলে আটক করা হবে না। | India has published the final version of a list which effectively strips about 1.9 million people in the north-eastern state of Assam of their citizenship. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ সহিংসতা বাড়ার শঙ্কা হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর জানায়, গত ৬ই জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলার ঘটনা সম্ভবত কিছু চরমপন্থীকে সাহসী করে তুলেছে। এক নির্দেশনা বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত এই দপ্তর সতর্ক করে যে "সরকারি ক্ষমতার ব্যবহারে হতাশ কিছু ব্যক্তি"র কাছ থেকে হুমকির শঙ্কা রয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট কোন হামলার পরিকল্পনা সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি বলে এতে উল্লেখ করা হয়। জো বাইডেনের নির্বাচনী জয়ের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়ার বিষয়ে যখন কংগ্রেসে অধিবেশন চলছিল, ঠিক তখনই ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালানো হয়। এর আগে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের বাইরে তার হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন এবং তার অপ্রমানিত অভিযোগ পুনরায় উল্লেখ করে বলেন যে তার কাছ থেকে নির্বাচন চুরি করা হয়েছে। আরো পড়ুন: সমর্থকদের তিনি বলেন: "আপনারা যদি শক্তভাবে লড়াই না করেন, তাহলে আপনাদের দেশই আর থাকবে না।" একদল মানুষ তখন ক্যাপিটল ভবনের দিকে ধাবিত হয় এবং তারা নিরাপত্তা রক্ষীদের হটিয়ে ভবনে প্রবেশ করে। ওই দাঙ্গায় ক্যাপিটলের একজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ ৫ জন মারা যায়। সহিংসতা উস্কে দেয়ার অভিযোগে এরই মধ্যে প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত করা হয়েছে মি. ট্রাম্পকে। আর সেনেটে তার বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী মাসে। নির্দেশনা বার্তাটি বুধবার প্রকাশিত হয়। হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর মনে করে যে বর্ধিত এই হুমকি "নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেয়ার কয়েক সপ্তাহ" পর্যন্ত বজায় থাকবে। এতে বলা হয়, "এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, আদর্শগতভাবে অনুপ্রাণিত কিছু সহিংস চরমপন্থী, যাদের সরকারি কর্তৃপক্ষ এবং প্রেসিডেন্ট পদের পরিবর্তন নিয়ে অভিযোগ রয়েছে, আর মিথ্যা বক্তব্যের কারণে তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তারা আরও উস্কানী পেতে পারে কিংবা সহিংসতা ঘটাতে পারে।" নির্দেশনা বার্তায় আরো বলা হয়, ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনার মাধ্যমে উদ্ভূদ্ধ কিছু "অভ্যন্তরীণ সহিংস চরমপন্থী" হামলা চালাতে পারে "নির্বাচিত কর্মকর্তা ও সরকারি দপ্তরে"। ক্যাপিটলের সহিংসতায় পাঁচজন নিহত হয়েছিলো হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দপ্তর জনসাধারণের জন্য গত এক বছরের মধ্যে এই প্রথম এমন একটি সতর্কতা জারি করলো। ক্যাপিটলে হামলা পুরো দেশকে হতবাক করেছে এবং কর্তৃপক্ষ এর সাথে সংশ্লিষ্টদের ধরতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছে। এই সহিংসতার সাথে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৪০০ সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং গ্রেফতার করা হয়েছে ১৩৫ জনকে। ক্যাপিটলে হামলাকারীরা টেলিগ্রামে প্রশংসিত হয়েছিলো লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে বিবিসি নিউজের রেগান মরিস জানান, মার্কিন সরকার আমেরিকাবাসীকে ওইসব "অভ্যন্তরীণ সহিংস চরমপন্থীদের" কাছ থেকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে, যারা ৬ই জানুয়ারির দাঙ্গা থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারে। দেশটির অনেকেই মনে করেন যে যারা ক্যাপিটলে হামলা চালিয়েছিল তারা "দেশপ্রেমিক" এবং তাদের গুণকীর্তন করা উচিত। টুইটার এবং ফেসবুকে নিষিদ্ধ হওয়ার পর অনেক ডানপন্থী সংগঠন সামাজিক মাধ্যম 'টেলিগ্রাম' ব্যবহার করতে শুরু করে। ক্যাপিটলে হামলাকারীদের স্বাধীনতাযোদ্ধা এবং বীর হিসেবে প্রশংসা করা হয়। চ্যাট স্ট্রিমগুলো ষড়যন্ত্র তত্ত্ব, কিউঅ্যাননদের পরিকল্পনা, ইহুদী বিদ্বেষ আর এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি সমর্থনে পরিপূর্ণ। সাইটগুলোতে কে আসল আর কে একটি যান্ত্রিক 'বট' সেটি বোঝা খুবই কঠিন। কিছু কিছু পোস্ট খুবই ঘৃণাপূর্ণ এবং আপত্তিজনক। আর অনেকেই ইতিহাস কিংবা বর্তমান দিনের বস্তুনিষ্ঠ তথ্য উপেক্ষা করে সহিংসতা ছড়াচ্ছেন। অনেক পোস্টদাতা ডোনাল্ড ট্রাম্পের সত্যিকার অনুসারী, যারা মনে করেন যে তারই এখনও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট থাকা উচিত। | US security chiefs have warned of a heightened threat of domestic terrorism from people unhappy with the outcome of the November election. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | জামাল খাসোগজি: নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে সৌদি সরকারের কঠোর সমালোচক জামাল খাসোগজিকে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভেতরে হত্যা করা হয়। সৌদি আরবের একদল এজেন্ট এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। তবে সৌদি আরবের সরকারি কৌঁসুলি দাবি করেন, কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণ এবং অনুমোদনের বাইরে গিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। মোট ১১ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে এই ঘটনার জন্য বিচারের মুখোমুখি করা হয়। জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ এই ঘটনাকে 'বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড' বলে বর্ণনা করেছিলন। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ কর্মকর্তা অ্যাগনেস ক্যালামার্ড এই ঘটনায় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংশ্লিষ্টতা তদন্তেরও আহ্বান জানিয়েছিলেন। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান অবশ্য এ ঘটনার সঙ্গে তার কোন সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছেন। তবে অক্টোবরে তিনি বলেছিলেন, সৌদি আরবের নেতা হিসেবে তিনি এ ঘটনার পূর্ণ দায়িত্ব নিচ্ছেন। কীভাবে জামাল খাসোগজি মারা যান যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান: তার ব্যাপারেও তদন্তের দাবি উঠেছে। মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট জামাল খাসোগজিকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল গত বছরের ২রা অক্টোবর ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার সময়। তিনি সেখানে গিয়েছিলেন তার তুর্কী বান্ধবীকে বিয়ে করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করতে। বলা হয়, সেখানে মিস্টার খাসোগজিকে হত্যার সময়ের কথাবার্তা গোপনে রেকর্ড করেছিল তুর্কী গোয়েন্দা সংস্থা। সেই রেকর্ডিং শুনে জাতিসংঘ কর্মকর্তা অ্যাগনেস ক্যালামার্ড মন্তব্য করেছিলেন, মিস্টার খাসোগজিকে সেখানে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। সৌদি আরবের ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর শালান শালান গত বছরের নভেম্বরে বলেছিলেন, এই হত্যার নির্দেশ এসেছিল জামাল খাসোগজির সঙ্গে আলোচনার জন্য ইস্তাম্বুলে পাঠানো একটি দলের নেতার কাছ থেকে। এই দলটিকে সেখানে পাঠান সৌদি আরবের গোয়েন্দা সংস্থার উপ-প্রধান। মিস্টার খাসোগজিকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে বা দরকার হলে জোর করে দেশে ফিরিয়ে আনতে বলা হয়েছিল এই দলটিকে। আরও পড়ুন: সৌদি আরবে জামাল খাসোগজি হত্যার বিচার শুরু খাসোগজিকে 'কোরবানির পশু' বলে বর্ণনা করেছিল এক ঘাতক খাসোগজি হত্যার কথা স্বীকার করেছে সৌদি আরব তদন্তকারীরা জানিয়েছিলেন, কনস্যুলেটের মধ্যে ধস্তাধস্তির পর মিস্টার খাসোগজির শরীরে ইনজেকশন দিয়ে বেশি মাত্রায় ড্রাগ প্রয়োগ করা হয়, এর ফলেই তিনি মারা যান। এরপর তার শরীর খন্ড-বিখন্ড করে স্থানীয় এক 'দালালের' হাতে তুলে দেয়া হয়। এখনো পর্যন্ত জামাল খাসোগজির দেহ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ডেপুটি পাবলিক প্রসিকিউটর শালান শালান দাবি করেছিলেন, এসবের কিছুই যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান জানতেন না। এ ঘটনার জন্য কারা দায়ী সৌদি আরবে এ ঘটনায় মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পাঁচজন উচ্চপদস্থ সৌদি কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হয়। এদের মধ্যে ছিলেন গোয়েন্দা সংস্থার উপ-প্রধান আহমেদ আসিরি এবং যুবরাজ মোহাম্মদের ঘনিষ্ঠ একজন সহযোগী সাউদ আল-কাহতানি। জামাল খাসোগজির হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ গত জানুয়ারিতে এই ঘটনায় রিয়াদের এক ফৌজদারি আদালতে ১১ ব্যক্তির বিচার শুরু হয়। এদের মধ্যে পাঁচজনের জন্য মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিলেন সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটর। কিন্তু এই ১১ জনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। তবে জাতিসংঘের কর্মকর্তা অ্যাগনেস ক্যালামার্ড জানিয়েছিলেন - যে পাঁচজনের জন্য মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি চাওয়া হয়েছিল, তারা হচ্ছেন ফাহাদ শাহিব আল-বালাউই, তুর্কি মুসারেফ আল-সেহরি, ওয়ালিদ আবদুল্লাহ আল-সেহরি, মাহেদ আবদুলআজিজ মুতরেব এবং ড: সালাহ মোহাম্মদ তুবাইগি। অভিযুক্ত ১১ জনের বাকী ছয়জন হচ্ছেন, মানসুর ওসমান আবাহুসেইন, মোহাম্মদ সাদ আল-যাহরানি, মুস্তাফা মোহাম্মদ আল-মাদানি, সাইফ সাদ আল-কাহতানি, মুফলি সায়া আল-মুসলিহ এবং আহমদ আসিরি। জাতিসংঘের অ্যাগনেস ক্যালামার্ড আসামীদের আইনজীবীদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। আইনজীবীরা আদালতে যুক্তি দেখিয়েছিলেন, রাষ্ট্রের কর্মচারী হিসেবে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ না মেনে তাদের কোন উপায় ছিল না। সৌদি পাবলিক প্রসিকিউটার জানিয়েছেন, সাউদ আল-কাহতানির ব্যাপারে তদন্ত করা হয়েছিল কিন্তু যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি, সে কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়নি। আহমদ আসিরির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল, কিন্তু একই কারণে তাকেও খালাস দেয়া হয়েছে। | A court in Saudi Arabia has sentenced five people to death and jailed three others over the murder of the journalist Jamal Khashoggi last year. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | আগুনে পুড়ে গেছে নটরডাম ক্যাথেড্রালের অনেক অমূল্য সম্পদ জরুরি বিভাগ আগুন নেভানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকর্ম এবং অমূল্য সম্পদগুলো ক্যাথেড্রাল থেকে রক্ষার চেষ্টা করছেন। তবে ভবনটির কাঠের চমৎকার কাজগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু ৮৫০ বছর পুরনো এই গোথিক ভবনটির আর কি বৈশিষ্ট্য রয়েছে? প্রথম রোজ উইন্ডো স্থাপন করা হয় ১২২৫ সালে রোজ উইন্ডো তেরশো শতকের পুরনো এই ক্যাথেড্রালে তিনটি রোজ উইন্ডো রয়েছে. যেটি এই ভবনটির সবচেয়ে বিখ্যাত বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি। আগুনের পর এর কোনটি এখন আর টিকে আছে কিনা, তা পরিষ্কার নয়। প্রথমটি স্থাপন করা হয় ১২২৫ সালে এবং সেখানে যেভাবে নানা রঙের কাচ বসানো হয়, তা সবার নজর কাড়ে। তবে কোন জানালাতেই আর প্রাচীন সেই রঙিন কাচগুলো নেই, কারণ আগের আগুনে সেসব নষ্ট হয়ে গেছে। নটরডাম দেখতে আসা বেশিরভাগ দর্শনার্থী ভবনের সামনের দুইটি গোথিক গম্বুজের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতেন দুই গম্বুজ নটরডাম দেখতে আসা বেশিরভাগ দর্শনার্থী ভবনের সামনের দুইটি গোথিক গম্বুজের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে থাকেন যেটি ক্যাথেড্রালের পশ্চিম ফটকে অবস্থিত। ১২০০ সালের দিকে পশ্চিম ফটকের কাজ শুরু হয়। তবে প্রথম টাওয়ারটি, উত্তর পাশে যেটি রয়েছে, সেটি বানাতে সময় লাগে ৪০ বছর। আর দক্ষিণ পাশের টাওয়ারটির কাজ শেষ হয় আরো দশবছর পরে, ১২৫০ সালে। দুইটি টাওয়ারই ৬৮মিটার উঁচু, যেখানে উঠতে ৩৮৭ পদক্ষেপ লাগে। এখান থেকে পুরো প্যারিস শহরটিকে চমৎকারভাবে দেখা যায়। সবচেয়ে বিখ্যাত হলো ভবনের ছাদের ওপর বসে থাকা একটি মূর্তি, যে শহরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। গার্গোয়েলস যারা ক্যাথেড্রালের সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে প্যারিস শহর দেখার জন্য উপরে উঠেছেন, তাদের এই ক্যাথেড্রালের আরেকটি আকর্ষণীয় উপাদান পার হয়ে যেতে হয়েছে, সেটা হলো গার্গোয়েলস। অনেক পশুর আকৃতি মিলিয়ে পৌরাণিক এই ভাস্কর্যটি তৈরি করা হয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলো ভবনের ছাদের ওপর বসে থাকা একটি মূর্তি, যে শহরের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। নটরডামের ঘণ্টা ঘণ্টা এই ক্যাথিড্রালে দশটি ঘণ্টা রয়েছে। সবচেয়ে বড়টির নাম ইমানুয়েল, যার ওজন ২৩ টন এবং সেটি বসানো হয়েছে ১৬৮৫ সালে। ২০১৩ সালে ৮৫০ বছরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন করতে গিয়ে উত্তর টাওয়ারে সবচেয়ে ছোট ঘণ্টাটি বসানো হয়। যদিও ফরাসি বিপ্লবের সময় আসল ঘণ্টাগুলোকে তরল করে কামানের গোলা বানানো হয়েছিল। তবে প্রতিকৃতি বসানোর সময় একেকজন সেইন্টের নামে একেকটি ঘণ্টার নামকরণ করা হয়। ভিক্টর হুগোর উপন্যাসের নায়ক কোয়াসিমোডো এরকম একটি ঘণ্টার বাদক হিসাবে কাজ করতেন। বামে এক বছর আগে তোলা গির্জার বুরূজের ছবি, আর ডানেরটি তোলা সোমবারে যখন এটি আগুনে পুড়ছিলো গোথিক স্পিয়ার নটরডামের আরেকটি বিখ্যাত স্থাপনা হলো ১২শত শতকে স্থাপিত গোথিক স্পিয়ার , যা অনেকটা পিরামিডের মতো উপরে উঠে গেছে। তবে সোমবারের আগুনে এটি ভেঙ্গে পড়েছে। ভবনের ইতিহাসে অনেকবার এটিতে পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে ফরাসি বিপ্লবের সময় এটি ভেঙ্গে ফেলা হয় এবং ১৮৬০ সালে পুনরায় নির্মিত হয়। পুরো ক্যাথেড্রালের এসব গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ নষ্ট হয়ে পাওয়াকে ফরাসি গোথিক স্থাপত্যকলার ওপর অপূরণীয় আঘাত বলে বিশেষজ্ঞরা বলছেন। শেষ চিহ্ন নটরডামকে মনে করা হতো প্যাশন অফ ক্রাইস্টের ভগ্নাবশেষের শেষ ঠিকানা, যার মধ্যে রয়েছে ক্রসের একটি টুকরো, একটি নখ এবং পবিত্র কাঁটার মুকুট। তবে এই মুকুটটি আগুন থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। নটরডামে আগুন দেখে অনেকে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন ফরাসিদের কাছে নটরডাম কতটা গুরুত্বপূর্ণ? বিবিসির সংবাদদাতা হেনরি আস্টিয়ার বলছেন, নটরডামের মতো আর কোন স্থাপনাই এভাবে ফ্রান্সকে প্রতিনিধিত্ব করে না। জাতীয় প্রতীক হিসাবে এর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বলা যেতে পারে প্যারিসের আরেকটি স্থাপনা ইফেল টাওয়ারকে, যেটি মাত্র একশো বছরের কিছু বেশি পুরনো, যদিও নটরডাম প্যারিসে দাঁড়িয়ে রয়েছে দ্বাদশ শতক থেকে। এই ভবনের নাম উঠে এসেছে ফ্রান্সের অন্যতম সেরা উপন্যাস, ভিক্টর হুগোর হ্যাঞ্চব্যাক অফ নটর-ডামে। ফরাসি বিপ্লবের সময় সর্বশেষ এই ভবনটি বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হয়। তখন ধর্মবিরোধী উগ্রবাদীদের হামলায় বেশ কয়েকজন সেইন্টের ভাস্কর্য কেটে ফেলা হয়। দুইটি বিশ্বযুদ্ধ সত্ত্বেও টিকে গিয়েছে ভবনটি। প্যারিসে বসবাসকারী যেসব জিনিস নিয়ে গর্ব করে থাকেন, এই ভবনটি তারই একটি। শুধুমাত্র পর্যটকদের কাছেই আকর্ষণীয় নয়, বছরে এখানে অন্তত ২০০০ ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। | A major fire has destroyed the roof of Notre-Dame cathedral in Paris, toppling its spire and leaving the remaining structure of the building in a weakened state. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | এরইমধ্যে আজ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৫ সপ্তাহের জন্য স্থগিত কার্যক্রম। ২৯৩ জন এমপি প্রধানমন্ত্রীর আনা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন যা প্রয়োজনীয় ভোটের সংখ্যার তুলনায় অনেক কম। এর আগে বিরোধী এমপিরা নিশ্চিত করে যে, ১৫ ই অক্টোবর আগাম নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আনা প্রস্তাবে সমর্থন দেবেন না তারা। বরঞ্চ তার আগে 'চুক্তিহীন ব্রেক্সিট' বন্ধে একটি আইন পাশের ওপর জোর দিচ্ছে তারা। মি. জনসন এটি অবজ্ঞা করলে তার বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেয়ারও হুঁশিয়ারি দেন এমপিরা। ব্রিটিশ মন্ত্রীরা এই আইনকে 'যাচ্ছেতাই' আখ্যা দিয়ে এটি রুখতে তারা তাদের চূড়ান্ত সীমা পর্যন্ত চেষ্টা করার কথা জানান। 'চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা' বর্তমানে, যুক্তরাজ্যের আইন অনুযায়ী, ব্রাসেলসের সাথে চুক্তি হোক আর নাই হোক, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার কথা রয়েছে। কিন্তু সোমবার রাজকীয় সম্মতি পাওয়া নতুন আইন অনুযায়ী, উনিশে অক্টোবরের মধ্যে এমপিরা চুক্তিসমেত অথবা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটে সম্মতি না দিলে প্রধানমন্ত্রীকে ২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি ব্রেক্সিট পেছানোর জন্য সময় চাইতে হবে। বিবিসির রাজনীতি বিষয়ক সম্পাদক লরা কুয়েন্সবার্গ বলেন, যদিও ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট বলেছে যে, তারা নতুন আইনের অবাধ্য হবে না কিন্তু তারা এটিকে পাশ কাটানোর কোন উপায় আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখছে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পার্লামেন্ট বন্ধ থাকার সময়টিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে চুক্তিতে পৌঁছানোর কাজে ব্যবহার করবে সরকার। একই সাথে চুক্তি ছাড়া ইইউ ত্যাগের বিষয়েও প্রস্তুতি নেয়া হবে। "এই পার্লামেন্ট আমার হাত বেঁধে দেয়ার জন্য যত চেষ্টাই করুক না কেন, জাতির স্বার্থে আমি একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করব," তিনি বলেন। "এই সরকার ব্রেক্সিট কার্যকরে আর বিলম্ব করতে চায় না।" "আমরা চাই না যে, ব্রেক্সিট নিয়ে জনগণের দেয়া জোরালো রায় হিসাব-নিকাশের স্রোতে মুখ খুবরে পড়ুক।" মি. জনসন পার্লামেন্টে এমপিদের বলেন যে, এর আগে মি. করবিন বলেছিলেন, ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কার্যকরে বাধ্যবাধকতার বিপক্ষে আইন হলে আগাম নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন দেবেন তিনি। "তার নিজের দেয়া যুক্তি অনুযায়ীই এখন নির্বাচনকে সমর্থন দেয়া উচিত।" পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে আনা মি. জনসনের এটি ষষ্ঠ প্রস্তাব যেটি এমপিদের ভোটে বাতিল হয়ে গেলো। মি. করবিন এমপিদের বলেন, "লেবার পার্টি নির্বাচনে আগ্রহী ছিলো- কিন্তু আমরা এটাও জানি যে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট কার্যকর করে আমরা আমাদের সম্প্রদায়ের জন্য চাকরি, সেবা কিংবা অধিকারগুলোকে ঝুঁকির মুখে ফেলতে চাই না।" আরো পড়তে পারেন: বরিস জনসন আইন না মানলে আদালতে যাবেন এমপিরা ব্রেক্সিট: এরপর কী হতে পারে? প্রধানমন্ত্রীকে হারিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিয়ন্ত্রণ এমপিদের আর তিনি এটাও বলেন যে, নিজের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সমালোচনা বন্ধ করতেই পার্লামেন্ট স্থগিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। লেবার, এসএনপি, লিবারেল ডেসোক্রেটস, গ্রিন পার্টি, ইন্ডিপেনডেন্ট গ্রুপ ফর চেঞ্জ এবং প্লাইড কিমরু সোমবার সকালে বৈঠক করে একমত হয় যে তারা নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন দেবেন না। বিবিসির লরা কুয়েন্সবার্গ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজের দেয়া ব্রেক্সিট কার্যকরের সময়সীমা কিছু দিন আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি কঠিন বলে মনে হচ্ছে। তাহলে কি এটা অসম্ভব? মোটেই নয়। কোন একটি চুক্তিতে পৌঁছানো এখনো সম্ভব। ১০ নং ডাউনিং স্ট্রিট বলছে, এটি এখনো তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে নর্দান আয়ারল্যান্ড নিয়ে গুঞ্জন এখনো একটি পিছুটান হিসেবে রয়ে গেছে। তবে ব্রেক্সিট কার্যকরের আশায় আজ রাতে অনেক এমপিরাই খোশ মেজাজে রয়েছেন। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, চুক্তিতে পৌঁছানোর ক্ষীণ একটি সম্ভাবনা এখনো রয়েছে। এদিকে কমন্সের স্পিকার জন বারকো বলেছেন যে, নির্বাচন কিংবা ৩১শে অক্টোবর যেটিই আগে আসুক না কেন, সেসময়ে তিনি স্পিকার এবং এমপি হিসেবে তার দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন। গত ১০ বছর ধরে এই দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এর আগে সোমবার, পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে আরো একটি পরাজয়ের মুখে পড়েন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। এর আগে, পার্লামেন্ট স্থগিত বিষয়ে সরকারি যোগাযোগ এবং চুক্তিহীন প্রস্থান পরিকল্পনার বিষয়ে গত ২৩ জুলাই থেকে বিভিন্ন নথি প্রকাশের পক্ষে আনা এক প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন এমপিরা। ৩১১টি ভোটের মধ্যে ৩০২টি ভোটই প্রস্তাবের পক্ষে পড়ে। সাবেক কনজারভেটিভ সদস্য ডমিনিক গ্রিভ, বর্তমানে স্বতন্ত্র এই এমপি যিনি এই প্রস্তাব আনেন, তিনি বলেন, নথি প্রকাশ খুবই জরুরী ছিলো কারণ এর মধ্য দিয়েই হাউজ এর ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে পারবে এবং এর ফলে জনগণের সাথেও যোগাযোগ করতে সুবিধা হবে। কিন্তু মন্ত্রী মাইকেল গভ, যিনি চুক্তিহীন ব্রেক্সিট প্রস্তুতির প্রধান হিসেবে কাজ করছেন তিনি বলেন, এরইমধ্যে তিনি ইইউ সিলেক্ট কমিটিকে ইয়োলোহ্যামার বা চুক্তিহীন-ব্রেক্সিট পরিকল্পনা সম্পর্কে জানিয়েছেন এবং তাদের সম্মতিই এ বিষয়ে যথেষ্ট বলে তিনি মনে করেন। ইয়োলোহ্যামার বিষয়ে ইইউ এর সিলেক্ট কমিটিকে প্রমাণ দেয়ার কথা জানান মাইকেল গভ অ্যাটর্নি জেনারেল জেওফ্রে কক্স এরমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংস-সহ কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত ইমেইল অ্যাকাউন্ট এবং মোবাইল সম্পর্কে প্রকাশ করতে সরকারি নির্দেশের আইনি বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ভোটের পর সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, প্রকাশ করার এই দাবিটি 'অভূতপূর্ব এবং অপ্রয়োজনীয়'। তিনি আরো বলেন, "যথা সময়ে এটির প্রভাব এবং প্রতিক্রিয়া দেখা যাবে।" এছাড়া লেবার নেতা জেরেমি করবিনের আনা একটি প্রস্তাব যেখানে সরকারকে আইনের শাসন মেনে চলার আহ্বান জানানো হয় সেটিও অনানুষ্ঠানিক ভোটে পাস হয়। তিনি বলেন যে, ব্রেক্সিট নিয়ে বর্ধিত যেসব আইন রয়েছে তা না মানার প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব আইনের শাসনের প্রতি হুমকি। পার্লামেন্ট স্থগিতের ব্ষিয়ে সরকারি নথি প্রকাশের পক্ষে রায় দেন এমপিরা প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, সরকার সব সময়ই আইনের শাসন সমুন্নত রাখবে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলাটা 'ত্রুটিপূর্ণ' এবং যুক্তরাজ্য ৩১শে অক্টোবর ইইউ ত্যাগে করার বিষয়ে যথাযথভাবেই সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাবে। ১৪ই অক্টোবর পর্যন্ত পার্লামেন্টের স্থগিতাদেশ সোমবারের পর থেকে কার্যকর হবে। তার মানে হচ্ছে, এই সময়ে মধ্যে এমপিরা নির্বাচন নিয়ে ভোট দেয়ার আর কোন সুযোগ পাবেন না। অর্থাৎ সবচেয়ে দ্রুত সময়ে মধ্যে হলেও আগামী নভেম্বরের আগে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না। অন্যদিকে, ব্রেক্সিট বিলম্ব বিষয়ে একটি পরিকল্পনা নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে। আর তা হলো - ইইউ এর কোন সদস্য এর মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে ভেটো দেয় কিনা তার উপর। আরেকটি উপায় হতে পারে যে, নতুন আইন অনুযায়ী ইইউকে মেয়াদ বাড়ানোর একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠানো এবং সাথে আরেকটি চিঠি পাঠানো যাতে বলা হবে যে,যুক্তরাজ্য আর দেরি করতে চায় না। তবে, যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারক লর্ড সাম্পশন বলেন, এ ধরণের পরিকল্পনা বৈধ নয়। "চিঠি পাঠিয়ে তা আবার বাতিল করার চেষ্টা আমার কাছে পরিষ্কারভাবেই আইনের লঙ্ঘন বলে মনে হয়," বিবিসি রেডিও ফোর-কে তিনি বলেন। নির্বাচন প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নেন লিবারেল ডেমোক্রেট এমপিরাও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মি. জনসন সোমবার সকালে প্রথমবারের মতো তিনি আইরিশ প্রধানমন্ত্রী লিও ভারাদকারের সাথে ডাবলিনে সাক্ষাৎ করেছেন। যুক্তরাজ্য ও ইইউএর মধ্যে ব্রেক্সিট চুক্তির একটি অন্যতম বিষয় হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত। মি. জনসন আয়ারল্যান্ডের সাথে সীমান্তে কঠোরতার বিপরীতে বীমা নীতির প্রত্যাহার চান। কারণ এটি কার্যকর হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে একক শুল্ক অঞ্চলের অধিভুক্ত হবে যুক্তরাজ্য এবং বর্তমান ও ভবিষ্যতে এটি ইইউ বাণিজ্য প্রতিযোগিতার বিধিমালার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। ইইউ এর একক বাজার ব্যবস্থার সাথেও যুক্ত থাকবে নর্দান আয়ারল্যান্ড। ইইউ এবং ইউকের যৌথ সম্মতির ভিত্তিতে এসব বিধিমালা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত এগুলো কার্যকর থাকবে। এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে একটি চুক্তি হতে পারে এবং ব্যাক-স্টপের বিকল্প খুঁজে পাওয়া সম্ভব। মি. জনসন বলেন, "চুক্তি ছাড়া ইইউ ত্যাগের সিদ্ধান্ত যাতে রাজি ছিলেন, তা হবে এক ধরনের ব্যর্থতা যার জন্য সবাই দায়ী থাকবে।" মি. ভারাদকার বলেন, ব্যাকস্টপের 'বিকল্পতে রাজি' আয়ারল্যান্ড। তবে তা হবে অবশ্যই বাস্তবতার সাতে সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি বলেন, "আমরা এখনো কোন প্রস্তাব পাইনি।" তিনি বলেন যে, ব্যাকস্টপের যেকোন বিকল্প যা শুধু নর্দান আয়ারল্যান্ডের সাথেই কার্যকর হবে তাতে রাজি তিনি। তবে পার্লামেন্টে মি. জনসনের মিত্র ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নিস্ট পার্টির এমপিরা বলেছেন, তারা এই পরিকল্পনার দৃঢ় প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। | MPs have rejected Prime Minister Boris Johnson's call for an early election for the third time. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | শিরিন আবদেল ওয়াহাব আরব বিশ্বে পরিচিত একজন তারকা তিনি দেশটির খুব জনপ্রিয় একজন শিল্পী একই সাথে দ্যা ভয়েস অব টিভি শো'র বিচারক। তিনি নীল নদের পানির পরিচ্ছন্নতা নিয়ে মজা করে একজন ভক্ত কে বলেছিলেন এই পানি পান করলে জীবাণু পান করা হবে। শিরিনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয় গত বছরের নভেম্বরে। এক বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাতে একটি কনসার্টে এই কথা বলার জন্য শিরিন অবশ্য ক্ষমা চেয়েছেন। সংগীতশিল্পী শিরিন কারাদণ্ড পেয়েছেন মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর দায়ে। কায়রোর একটি আদালত এই দণ্ড দিয়েছেন। মিসরের সংবাদমাধ্যম বলছে, জামিনের জামানত হিসেবে শিরিনকে পাঁচ হাজার মিসরীয় পাউন্ড দিতে বলেছেন আদালত। আরেকজন শিল্পী সায়মা লিখেছেন তাঁর মিউজিক ভিডিওতে কলা ব্যবহার করা নিয়ে তিনি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হবে এটা অনুমান করতে পারেননি দণ্ডর বিরুদ্ধে শিরিন আপিল করতে পারবেন। অন্যদিকে মিসরে আরেকটি মামলায় পপ সঙ্গীতশিল্পী লাইলা আমেরকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। লাইলা আমেরকে একটি উত্তেজক গান গাইবার দায়ে ব্যভিচার এবং নীতি নৈতিকতা বিবর্জিত কাজের অভিযোগে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আরো পড়ুন: মিশরে কেন মানুষ 'রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ' হয়ে যায় ট্রাম্পের জামাতার ক্ষমতা কেন খর্ব করা হল 'জওয়ানরা উল্লাস করছিল কে কতজনকে মেরেছে' | Egyptian singer Sherine Abdel Wahab has been sentenced to six months in prison for joking about the cleanliness of the River Nile. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | স্টিফেন হকিং ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে অধ্যাপক হকিং-এর ১৯৬৬ সালে পিএইচডি থিসিস প্রকাশ করা হয় গত সোমবার। প্রথম দিনেই এত লোক এটা পড়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন যে ওয়েবসাইটটি ক্র্যাশ করে। কেম্ব্রিজের একজন অধ্যাপক ড. আর্থার স্মিথ বলেন, 'এটা এক বিরাট ব্যাপার। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় যত গবেষণাপত্র আছে তার কোনটিই এত লোক দেখেন নি। হয়তো পৃথিবীর কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি।" 'এটি আমার মৌলিক কাজ' - গবেষণাপত্রে স্টিফেন হকিংএর হস্তাক্ষর কর্তৃপক্ষ বলছে, পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে লোকেরা এটি দেখেছেন। অন্তত ৫ লক্ষ লোক এটি ডাউনলোড করার চেষ্টা করেছেন। 'সম্প্রসারণশীল মহাবিশ্বের বৈশিষ্ট্য' নামের ১৩৪ পাতার এই থিসিসটি লেখার সময় স্টিফেন হকিং ছিলেন কেম্ব্রিজের ট্রিনিটি হলের পোস্ট গ্রাজুয়েটের ছাত্র। তার বয়েস তখন ছিল ২৪ বছর। থিসিসের প্রথম পাতা স্টিফেন হকিং-এর লেখা বই 'এ ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম' ১৯৮৮ সালের বেরুনোর পর তা এক কোটি কপিরও বেশি বিক্রি হয়েছে। তিনি ১৯৬৩ সালে মোটর নিউরন ডিজিজ নামে এক রোগে আক্রান্ত হন। তখন ডাক্তাররা বলেছিলেন যে তিনি আর দু' বছর বাঁচবেন। ওই রোগের ফলে স্টিফেন হকিং এখন হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন এবং কম্পিউটারের সাহায্যে কথা বলেন। তার বয়েস এখন ৮৪। তার জীবন নিয়ে ২০১৪ সালে 'দি থিওরি অব এভরিথিং' নামে একটি চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। | Stephen Hawking's PhD thesis was accessed more than two million times within days of it being made available to the public, it has been revealed. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | ২০১৪ সালে এক ভিডিওতে আবু বকর আল বাগদাদীকে মসুলের এক মসজিদে বক্তৃতা দিতে দেখা গেছে। ইরাকের মসুল শহরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস তাদের 'খেলাফত' প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে ঘোষণা দেয়। আইএস সেইসময় অনেক বড় বড় অঞ্চল তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু সেই সময় থেকেই এই জিহাদি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী লড়াই শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে তারা বিভিন্ন অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হারাতে শুরু করে। কিন্তু আবু বকর আল-বাগদাদী নামে আইএস এর ওই নেতা, যার সন্ধান পাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে রেখেছে-সেই ব্যক্তির এখন কোথায় বা কী করছে বা তার সঙ্গে কিছু ঘটেছে কিনা সে বিষয়টি এখনো রহস্যই রয়ে গেছে। আবু বকর আল-বাগদাদীর শেষবারের মতো প্রকাশ্যে আসার তিন বছর পার হয়েছে, কিন্তু গত কয়েক বছরে জঙ্গি গোষ্ঠী আইএস তাদের কথিত খেলাফতের একটা বিরাট অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। রুশ এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের দ্বিমুখী আক্রমণের মুখে তারা এখন বেশি চাপের মধ্যে আছে। ২০১৪ সালের ওই ভিডিওর পরে আল-বাগদাদীর কোনো কথা শোনা যায়নি। তবে গত বছর নভেম্বর মাসে যখন ইরাকি সেনাবাহিনী মসুল পুনর্দখলের লড়াই শুরু করে তখন আল-বাগদাদীর একটা অডিও বার্তা প্রকাশ করে আইএস। জঙ্গি গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয় আবু বকর আল-বাগদাদী অজ্ঞাত স্থান থেকে তাঁর অনুসারীদের আহ্বান জানিয়েছেন তারা যেন লড়াইয়ে পিছু না হটে। আর এরই মধ্যে এই রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই দাবিও করা হয় যে আইএস প্রধান আল-বাগদাদী হয়তো রাকায় চালানো রুশ বিমান হামলায় নিহত হয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল, গত ২৮ শে মে রাকায় ইসলামিক স্টেটের এক কথিত গোপন সভাস্থল লক্ষ্য করে রুশ বিমান হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় তিনশো ত্রিশ জনের মতো ইসলামিক স্টেট যোদ্ধা নিহত হয়। এদের মধ্যে হয়তো আবু বকর আল বাগদাদীও ছিল এবং সেটা যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে জানায় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আল বাগদাদীর মৃত্যু নিয়ে এরকম জল্পনা ওটাই প্রথম ছিলনা। এর আগেও কয়েকবার তার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছিল। তবে রাশিয়ার দিক থেকে আল-বাগদাদীর মৃত্যুর দাবি ওটাই ছিল প্রথম। এর আগে গণমাধ্যমে বেশ কয়েকবার এরকম খবর বেরিয়েছিল যে মার্কিন নেতৃত্বাধীন হামলায় বিমান হামলা বাগদাদী নিহত হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তা তখন জানিয়েছিলেন, বাগদাদী নিহত হয়েছেন কিনা সেটা তারা নিশ্চিত করতে পারছেন না। এমনকি গত সপ্তাহে ইরানের একজন কর্মকর্তা বলেছেন যে তিনি নিশ্চিত আল-বাগদাদী নিহত হয়েছেন। এর এই দাবি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা। তালেবান নেতা মোল্লা ওমরের মৃত্যুর খবরটি তালেবান ও আল-কায়েদা প্রায় দুই বছর পর্যন্ত লুকিয়ে রেখেছিল। আইএস এর কোনঠাসা পরিস্থিতিতে তাদের নেতা বাগদাদীর উপস্থিতি গোষ্ঠীটির অনুসারী ও বিরোধী বা শত্রু দুইপক্ষকেই ভাবিয়ে তুলেছে। এক বিস্ফোরণে ইরাকের আল-নুরি মসজিদটি বিধ্বস্ত হয়ে যায় আবু বকর আল বাগদাদী কে? আবু বকর আল বাগদাদীর আসল পরিচয় কী তা নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আল বাগদাদী তার আসল নাম নয় বলে মনে করা হয়। ধারণা করা হয় ১৯৭১ সালে বাগদাদের উত্তরে সামারা এলাকায় আল বাগদাদীর জন্ম। ২০০৩ সালে যখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ইরাকে সামরিক অভিযান চলে, তখন আল বাগদাদী বাগদাদের কোন একটি মসজিদের ইমাম ছিলেন বলে দাবি করা হয় কোন কোন রিপোর্টে। অনেকের বিশ্বাস, সাদ্দাম হোসেনের শাসনামলেই আল বাগদাদী জঙ্গি জিহাদীতে পরিণত হয়েছিল। তবে অন্য অনেকের ধারণা, যখন তাকে দক্ষিণ ইরাকে একটি মার্কিন সামরিক ক্যাম্পে চার বছর আটকে রাখা হয়েছিল তখনই আসলে আল বাগদাদী জঙ্গীবাদে দীক্ষা নেয়। এই ক্যাম্পে অনেক আল কায়েদা কমান্ডারকে বন্দী রাখা হয়েছিল। আল বাগদাদী পরে ইরাকে আল কায়েদার নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়। পরে অবশ্য ইরাকের আল কায়েদা নিজেদেরকে ২০১০ সালে 'ইসলামিক স্টেট অব ইরাক এন্ড লেভান্ট' বলে ঘোষণা করে। ২০১১ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র আল বাগদাদীকে সন্ত্রাসী বলে ঘোষণা করে। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য ২৫ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। আরো পড়ুন: শোবার ঘর থেকে বেরিয়ে এলো ২৭টি গোখরা সাপ মৃত্যুফাঁদ পেরিয়ে ইতালিতে যাওয়া এক বাংলাদেশীর গল্প বিয়ে রুখতে নিজের হাত কাটলেন নবম শ্রেণীর বিথী 'সৌদি আরব উগ্র ইসলামী মতবাদ ছড়াচ্ছে ' ২০১৪ সালে ইরাকের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আল বাগদাদীর এই ছবি প্রকাশ করে। | Three years ago, video emerged of the leader of so-called Islamic State (IS), Abu Bakr al-Baghdadi, commanding allegiance in a sermon at the Great Mosque of al-Nuri in Mosul. The Iraqi city had been freshly captured by the jihadist group and a "caliphate" declared. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | বিতর্কিত এই পবিত্র স্থানের ইতিহাস পর্যালোচনা করেছে বিবিসি নিউজ। ১৫২৮: কিছু হিন্দুদের মতে, হিন্দুধর্মের অন্যতম আরাধ্য দেবতা রাম যেখানে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন সেখানে একটি মসজিদ তৈরি করা হয়। ১৮৫৩: ধর্মকে কেন্দ্র করে প্রথমবারের মত সহিংসতার ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়। ১৮৫৩: ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক প্রশাসন দুই ধর্মের উপাসনার জায়গা আলাদা করার উদ্দেশ্যে বেষ্টনী তৈরি করে। বেষ্টনীর ভেতরের চত্বর মুসলিমদের জন্য এবং বাইরের চত্বর হিন্দুদের ব্যবহারের জন্য নির্ধারিত হয়। ১৯৪৯: মসজিদের ভেতর ইশ্বর রামের মূর্তি দেখা যায়। হিন্দুদের বিরুদ্ধে মূর্তিগুলো রাখার অভিযোগ ওঠে। মুসলিমরা প্রতিবাদ জানায় এবং দুই পক্ষই দেওয়ানি মামলা করে। সরকার ঐ চত্বরকে বিতর্কিত জায়গা বলে ঘোষণা দেয় এবং দরজা বন্ধ করে দেয়। ১৯৮৪: বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) নেতৃত্বে ইশ্বর রামের জন্মস্থান উদ্ধার এবং তার সম্মানের একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠন করে হিন্দুরা। তৎকালীন বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি (পরবর্তীতে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) ঐ প্রচারণরা নেতৃত্ব নেন। ১৯৮৬: জেলার বিচারক আদেশ দেন যেন বিতর্কিত মসজিদের দরজা উন্মুক্ত করে দিয়ে হিন্দুদের সেখানে উপাসনার সুযোগ দেয়া হয়। মুসলিমরা এর প্রতিবাদে বাবরি মসজিদ অ্যাকশন কমিটি গঠন করে। ১৯৮৯: বিতর্কিত মসজিদ সংলগ্ন জায়গায় রাম মন্দিরের ভিত্তি স্থাপান করে নতুন প্রচারণা শুরু করে ভিএইচপি। ১৯৯০: ভিএইচপি'র কর্মীরা মসজিদের আংশিক ক্ষতিসাধন করে। প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখর আলোচনার মাধমে বিতর্ক সমাধানের চেষ্টা করলেও তা পরের বছর বিফল হয়। ১৯৯১: অযোধ্যা যে রাজ্যে অবস্থিত, সেই উত্তর প্রদেশে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ১৯৯২: ভিএইচপি, বিজেপি এবং শিব সেনা পার্টির সমর্থকরা মসজিদটি ধ্বংস করে। এর ফলে পুরো ভারতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে হওয়া দাঙ্গায় ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। ১৯৯৮: প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির অধীনে জোট সরকার গঠন করে বিজেপি। ২০০১: মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঐ স্থানে আবারো মন্দির তৈরির দাবি তোলে ভিএইচপি। জানুয়ারি ২০০২: নিজের কার্যালয়ে অযোধ্যা সেল তৈরি করেন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি। সিনিয়র কর্মকর্তা শত্রুঘ্ন সিংকে নিয়োগ দেয়া হয় হিন্দু ও মুসলিম নেতাদের সাথে আলোচনার জন্য। ফেব্রুয়ারি ২০০২: উত্তর প্রদেশের নির্বাচনের তফসিলে মন্দির তৈরির বিষয়টি বাদ দেয় বিজেপি। ভিএইচপি ১৫ই মার্চের মধ্যে মন্দির নির্মানকাজ শুরু করার ঘোষণা দেয়। শত শত স্বেস্বচ্ছাসেবক বিতর্কিত স্থানে জড়ো হয়। অযোধ্যা থেকে ফিরতে থাকে হিন্দু অ্যাক্টিভিস্টদের বহনকারী একটি ট্রেনে হামলার ঘটনায় অন্তত ৫৮ জন মারা যায়। মার্চ ২০০২: ট্রেন হামলার জের ধরে গুজরাটে হওয়া দাঙ্গায় ১ হাজার থেকে ২ হাজার মানুষ মারা যায়। এপ্রিল ২০০২: ধর্মীয়ভাবে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত জায়গাটির মালিকানার দাবিদার কারা, তা নির্ধারণ করতে তিনজন হাইকোর্ট বিচারক শুনানি শুরু করেন। জানুয়ারি ২০০৩: ঐ স্থানে ইশ্বর রামের মন্দিরের নিদর্শন আছে কিনা, তা যাচাই করতে আদালতের নির্দেশে নৃতত্ববিদরা জরিপ শুরু করেন। অগাস্ট ২০০৩: জরিপে প্রকাশিত হয় যে মসজিদের নিচে মন্দিরের চিহ্ন রয়েছে, কিন্তু মুসলিমরা এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। হিন্দু অ্যাক্টিভিস্ট রামচন্দ্র পরমহংসের শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি বলেন তিনি মৃত ব্যক্তির আশা পূরণ করবেন এবং অযোধ্যায় মন্দির তৈরি করবেন। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে আদালতের সিদ্ধান্তে এবং আলোচনার মাধ্যমে এই দ্বন্দ্বের সমাধান হবে। সেপ্টেম্বর ২০০৩: বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পেছনে উস্কানি দেয়ায় সাত জন হিন্দু নেতাকে বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে রুল জারি করে একটি আদালত। তবে সেসময়কার উপ-প্রধানমন্ত্রী লালকৃষ্ণ আদভানির - যিনি ১৯৯২ সালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন - বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি। অক্টোবর ২০০৪: বিজেপি নেতা আদভানি জানান তার দল এখনও অযোধ্যায় মন্দির প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তা 'অবশ্যম্ভাবী। নভেম্বর ২০০৪: উত্তর প্রদেশের একটি আদালত রায় দেয় যে মসজিদ ধ্বংস করার সাথে সম্পৃক্ত না থাকায় মি. আদভানিকে রেহাই দিয়ে আদালতের জারি করা পূর্ববর্তী আদেশ পুনর্যাচাই করা উচিত। জুলাই ২০০৫: সন্দেহভাজন ইসলামি জঙ্গীরা বিস্ফোরক ভর্তি একটি জিপ দিয়ে বিতর্কিত স্থানটিতে হামলা চালিয়ে সেখানকার চত্বরের দেয়ালে গর্ত তৈরি করে। নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী'র হাতে নিহত হয় ছয়জন, যাদের মধ্যে পাঁচজনই জঙ্গি বলে দাবি করে নিরাপত্তা রক্ষীরা। জুন ২০০৯: মসজিদ ধ্বংস হওয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান করতে থাকা লিবারহান কমিশন তদন্ত শুরু করার ১৭ বছর পর তাদের প্রতিবেদন জমা দেয়। নভেম্বর ২০০৯: প্রকাশিত লিবারহান কমিশনের প্রতিবেদনে মসজিদ ধ্বংসের পেছনে বিজেপি'র শীর্ষ রাজনীতিবিদদের ভূমিকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয় এবং এনিয়ে সংসদে হট্টগোল হয়। সেপ্টেম্বর ২০১০: আল্লাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দেয় যে স্থানটির নিয়ন্ত্রণ ভাগাভাগি করে দেয়া উচিত। কোর্টের রায় অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশের নিয়ন্ত্রণ মুসলিমদের, এক-তৃতীয়াংশ হিন্দুদের এবং বাকি অংশ 'নির্মোহী আখারা' গোষ্ঠীর কাছে দেয়া উচিত। যেই অংশটি বিতর্কের কেন্দ্র, যেখানে মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল, তার নিয়ন্ত্রণ দেয়া হয় হিন্দুদের কাছে। একজন মুসলিম আইনজীবী বলেন যে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। মে ২০১১: ২০১০ সালের রায়ের বিরুদ্ধে হিন্দু ও মুসলিম দুই পক্ষই আপিল করায় হাইকোর্টের পূর্ববর্তী রায় বাতিল করে সুপ্রিম কোর্ট । নভেম্বর ২০১৯: সে জায়গাটিতে মন্দির তৈরির পক্ষেই চূড়ান্ত রায় দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট | The religious site where the Babri mosque was destroyed in 1992 in the northern Indian town of Ayodhya has been a flashpoint between Hindus and Muslims for years. BBC News looks at the troubled history of the disputed holy site. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | রাখাইনের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে আগে রোহিঙ্গাদের গ্রাম ছিলো এখন সেখানে তার কিছুই নেই মিয়ানমার সরকারের আয়োজিত এক সফরে গিয়ে বিবিসি অন্তত চারটি স্থান খুঁজে পেয়েছে যেখানে সুরক্ষিত স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। অথচ স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে এগুলো আগে ছিল রোহিঙ্গা মুসলিমদের বসতি। তবে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা গ্রামে এসব স্থাপনা তৈরির অভিযোগ নাকচ করেছেন সরকারি কর্মকর্তারা। ২০১৭ সালে সামরিক অভিযানের জেরে সাত লাখের রোহিঙ্গা মিয়ানমার ছেড়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশে পালিয়ে যায়। জাতিসংঘ একে জাতিগত নির্মূল কর্মকাণ্ডের 'টেক্সটবুক' উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। তবে নিজেদের বাহিনীর হাতে বড় মাত্রায় হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ নাকচ করেছে মিয়ানমার। মিয়ানমার, মূলত বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশ, সেনাবাহিনীর হাতে জাতিগত দমন এবং গণহত্যার অভিযোগ ধারাবাহিকভাবে অস্বীকার করে আসছে। তবে এখন তারা বলছে যে, তারা কিছু পরিমাণ শরণার্থী ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত। কিন্তু গত মাসে, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনের দ্বিতীয় চেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমারের অনুমোদিত ৩ হাজার ৪৫০ জন রোহিঙ্গার মধ্যে কেউই ফিরতে না চাইলে এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। তারা অভিযোগ তোলে যে, ২০১৭ সালে সংঘটিত নিপীড়নের জন্য কোন জবাবদিহিতা নেই এবং নিজেদের চলাফেরায় স্বাধীনতা ও নাগরিকত্ব পাওয়া নিয়েও কোন নিশ্চয়তা নেই। এই ব্যর্থতার জন্য বাংলাদেশকে দায়ী করেছে মিয়ানমার। তারা বলছে, তারা অনেক রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত ছিলো। এই বিষয়টি প্রমাণ করতেই বিবিসি-সহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের তাদের প্রস্তুতি পরিদর্শনের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। সাধারণত রাখাইনে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিস্তর কড়াকড়ি রয়েছে। আমরা সরকারি গাড়ি বহরে ভ্রমণ করি এবং পুলিশের তত্ত্বাবধান ব্যতীত ছবি তোলা ও সাক্ষাৎকার নেয়ার অনুমতি আমাদের ছিল না। তবে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে উচ্ছেদের অকাট্য প্রমাণ দেখতে পাই আমরা। স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণকারী প্রতিষ্ঠান অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট জানায়, ২০১৭ সালে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা গ্রামগুলোর মধ্যে কমপক্ষে ৪০ ভাগ গ্রাম পুরোপুরি গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। মিয়ানমারে কী দেখেছে বিবিসি? মিয়ানমারের সরকার আমাদের হ্লা পো কং নামে একটি ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে যায়। তারা দাবি করে যে, স্থায়ী আবাসে ফেরার আগে এই শিবিরটিতে ২৫ হাজার শরণার্থী দুই মাস ধরে থাকতে পারবে। এই শিবিরটি এক বছর আগে তৈরি করা হয়েছিলো। তবে এখনো এর অবস্থা করুণ। এরইমধ্যে এর টয়লেটগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ২০১৭ সালের সহিংসতায় ধ্বংস হওয় দুটি গ্রাম 'হ রি তু লার' এবং 'থার হায় কোন' নামে রোহিঙ্গা গ্রামেরউপর এই শিবিরটি তৈরি করা হয়েছে। ২৫ হাজার রোহিঙ্গা শরনার্থীকে আশ্রয় দিতে লা পো কং ট্রানজিট ক্যাম্প তৈরি করা হয়- তবে এটি করা হয়েছে দুটি রোহিঙ্গা গ্রাম গুঁড়িয়ে দিয়ে আমি যখন শিবিরটির পরিচালক সো শোয়ে অং-কে জিজ্ঞাসা করলাম যে গ্রাম দুটো গুঁড়িয়ে দেয়া হল কেন, তখন কোন গ্রাম গুঁড়িয়ে দেয়ার কথা অস্বীকার করলেন। কিন্তু যখন আমি দেখালাম যে স্যাটেলাইট চিত্রে এর প্রমাণ রয়েছে, তখন তিনি বললেন যে, তিনি কয়েক দিন আগে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারবেন না। এরপর কিয়েন চং নামে আরেকটি পুনর্বাসন শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয় আমাদের। সেখানে জাপান এবং ভারত সরকারের সহায়তায় বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য। তবে এই পুনর্বাসন শিবিরটি তৈরির জন্য মিয়ার জিন নামে একটি রোহিঙ্গা গ্রাম বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো। এই গ্রামটি ছিলো নতুন করে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষা পুলিশ বাহিনীর জন্য বানানো একটি ব্যারাকের পাশে। ২০১৭ সালে নিরাপত্তা বাহিনীর এই অংশটির বিরুদ্ধে ব্যাপক নির্যাতনের অভিযোগ তুলেছিল রোহিঙ্গারা। ক্যামেরার পেছনে মিয়ার জিন গ্রামটি গুঁড়িয়ে দেয়ার কথা স্বীকার করেন কর্মকর্তারা । ইন্টারঅ্যাক্টিভ মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া শরণার্থীরা যদি তাদের ফেলে আসা ভিটেয় না ফিরতে পারেন, তাদের হয়ত কেয়িন চং-এর মত ''পুনর্বাসন শিবির এলাকায়'' থাকার ব্যবস্থা করা হবে। এই এলাকাও তৈরি হয়েছে যেখানে আগে রোহিঙ্গা গ্রাম ছিল সেখানে। ২৩শে ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০১৭ মংডু শহরের বাইরেই অবস্থিত মিও থু গাই নামে একটি গ্রামে একসময় ৮ হাজার রোহিঙ্গার বাস ছিল। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে, আরেকটি সরকারি গাড়ি বহরে করে ভ্রমণের সময় ওই গ্রামটির ছবি তুলেছিলাম আমি। ওই গ্রামের অনেক বাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিলো, কিন্তু বড় দালানগুলো অক্ষত ছিল। আর যে গাছগুলো রোহিঙ্গা গ্রাম বেষ্টন করেছিলো সেগুলোও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিলো। কিন্তু এখন, মিও থু গাই গ্রামটির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বড় বড় সরকারি স্থাপনা আর পুলিশ কমপ্লেক্স ছাড়া কিছুই চোখে পড়েনি। এমনকি সেই গাছগুলোও নেই। আমাদের ইন দিন নামে আরেকটি গ্রামেও নিয়ে যাওয়া হয়। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ১০ জন বন্দী মুসলিম পুরুষকে হত্যাকাণ্ডের জন্য আলোচিত ওই গ্রামটি। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অল্প যে কয়টি নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করে এটি তার একটি। ইন দিন গ্রামের তিন-চতুর্থাংশ বাসিন্দাই ছিলো মুসলিম, বাকিরা রাখাইন বৌদ্ধ। এখন, মুসলিমদের কোন চিহ্ন নেই। রাখাইনরা চুপচাপ এবং শান্তিপূর্ণ। ইন্টারঅ্যাক্টিভ এই স্লাইড ব্যবহার করে দেখুন ইন দিন গ্র্রামের কতটা ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। অক্ষত রাখা হয়েছে শুধু রাখাইনের বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকাগুলো। মুসলিমরা যে অংশে থাকত সেখানে এখন তৈরি হয়েছে নতুন পুলিশ ব্যারাক। ১৯শে এপ্রিল ২০১৯ ২২শে সেপ্টেম্বর ২০১৭ কিন্তু যেখানে রোহিঙ্গারা থাকতো সেখানে গিয়ে দেখা গেলো যে, কোন গাছপালা নেই। তার পরিবর্তে রয়েছে কাঁটাতারের বেড়া আর বিশাল সীমান্ত রক্ষী পুলিশের ব্যারাক। রাখাইনের বৌদ্ধ বাসিন্দারা বলছে যে, প্রতিবেশী হিসেবে মুসলিমদের আর কখনোই মেনে নেবে না তারা। শরণার্থীদের জন্য এটা কী বার্তা দেয়? ২০১৭ সালের সামরিক বাহিনীর সহিংসতার অনেক দিন পরও চলমান ব্যাপক এই ধ্বংসযজ্ঞ ইঙ্গিত দেয় যে, খুব কম সংখ্যক রোহিঙ্গাই আসলে তাদের পূর্বের জীবনে ফিরতে পারবে। বড় আকারে শরণার্থী ফিরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি হিসেবে একমাত্র হ্লা পো কং-য়ের মতো জরাজীর্ণ ট্রানজিট ক্যাম্প এবং কিয়েন চংয়ের মতো পুনর্বাসন শিবিরই দেখানো হচ্ছে। তবে দু'বছর আগে শরণার্থীরা যে ধরণের মানসিক আঘাতের মধ্য দিয়ে গেছে তা থেকে খুব কম সংখ্যক শরণার্থীই বের হতে পেরেছে এবং তারা আসলে এ ধরণের ভবিষ্যতের আশা করেনি। এ বিষয়টি শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। ইয়াঙ্গুনে ফেরার পথে বাস্তুচ্যুত এক তরুণ রোহিঙ্গার সাথে দেখা হয় আমার। আমাদেরকে বলা হয়েছিল যে, অনুমতি ছাড়া রোহিঙ্গাদের সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে না বিদেশি নাগরিকরা। সাত বছর ধরে একটি আইডিপি ক্যাম্পে নিজের পরিবারের সাথে আটকা পড়েছে ওই তরুণ। ২০১২ সালে সিত্তে এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর এক লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার সাথে ঘর ছাড়া হয় সে। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ নেই তার। এমনকি অনুমতি ছাড়া ক্যাম্পের বাইরে যাওয়ারও সুযোগ নেই। বাংলাদেশে থাকা শরণার্থীদের উদ্দেশ্যে সে বলে, ঝুঁকি নিয়ে তারা যাতে বাংলাদেশে ফিরে না আসে। তাহলে তার মতো তারাও এ ধরণের ক্যাম্পে আটকে পড়বে। সরকার কি বলছে? রাখাইনে পাওয়া তথ্য সম্পর্কে সরকারের পক্ষ থেকে বক্তব্যের জন্য মিয়ানমার সরকারের মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করেনি সরকার। সরকারিভাবে, বাংলাদেশের সাথে যৌথ সমন্বয়ের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের পর্যায়ক্রমে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সম্মত মিয়ানমার সরকার। ইন দিন গ্রামে মুসলিম বাসিন্দারা এখন আর আগের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠ নয় কিন্তু দেশটির মন্ত্রীরা এখনো রোহিঙ্গাদের 'বাঙালী' বলে সম্বোধন করে থাকে। তাদের দাবি, গত ৭০ বছর ধরে অবৈধভাবে অভিবাসনের মাধ্যমে মিয়ানমারে গিয়েছে তারা। তবে এধরণের অভিবাসনের কোন ধরনের প্রমাণ নেই। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বাসিন্দা নয়, দেশটিতে প্রচলিত এমন বিশ্বাসের প্রতিফলনই এ ধরণের দাবির পেছনে কাজ করে। মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের আবেদন খারিজ করেছে এবং চলাফেরায় স্বাধীনতা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা রোহিঙ্গাদের জাতীয় সনাক্তকরণ কার্ড বা ন্যাশনাল ভেরিফিকেশন কার্ড দিতে রাজি, এটা ক্রমান্বয়ে নাগরিকত্ব প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উল্লেখ করে তারা। কিন্তু বেশিরভাগ রোহিঙ্গা এটা নিতে অসম্মতি জানিয়েছে কারণ তাহলে তাদেরকে নিজেদের বাঙালী বলে স্বীকার করে নিতে হবে। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে, রোহিঙ্গাদের উপর সামরিক নির্যাতন চলার সময়ে, মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং বলেন, ১৯৪২ সালের 'অসম্পন্ন কাজ' সম্পন্ন করছেন তারা। তিনি আসলে তৎকালীন রাখাইনে জাপানি ও ব্রিটিশ বাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধের দিকে ইঙ্গিত করেছেন। ওই যুদ্ধে রোহিঙ্গা এবং রাখাইনের বৌদ্ধরা বিপরীত পক্ষকে সমর্থন করেছিলো। সেসময়, তারা প্রায়ই একে অপরকে মারতো এবং যার কারণে বহু বেসামরিক মানুষ অভ্যন্তরীণ ভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলো। সেনাপ্রধান বলেন, তখন রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যে বন্যার স্রোতের মতো আসতে থাকে। যে এলাকাটি বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে সীমান্তে অবস্থিত। সীমান্তের মংডু এবং বুথিডং- এই দুটি জেলাই ছিলো মিয়ানমারে একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকা। অবশ্য ২০১৭ সালের সহিংসতার সময় ওই দুটি জেলায় বেশিরভাগ গ্রাম ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। রোহিঙ্গাদের গণ-বাস্তুচ্যুতির পর থেকে ওই এলাকায় মুসলিমরা যা মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ ভাগ তারা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। সহিংসতার বিষয়ে তদন্তে সরকারের অনাগ্রহ, চলাফেরায় স্বাধীনতা না দেয়া বা নাগরিকত্ব অস্বীকারের মতো বিষয়গুলো শরণার্থীদের ফিরতে অনুৎসাহী করবে। যার কারণে মুসলিম এবং অমুসলিমদের মধ্যে যে ভারসাম্য রয়েছে তার কোন উন্নতি হবে না। যার অর্থ করা যেতে পারে সেই "অসমাপ্ত কাজ" হয়তো এতদিনে শেষ হয়েছে। | Entire Muslim Rohingya villages in Myanmar have been demolished and replaced by police barracks, government buildings and refugee relocation camps, the BBC has found. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | তেহরানের এক বিক্ষোভকারী ইউক্রেনীয় বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের একজনের ছবি তুলে ধরেছেন। বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে দেশটির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিতে শোনা যায়। কিন্তু ইরানের ভেতরের এই সরকারবিরোধীতা কতটা প্রবল? কতটা শক্তিশালী সেখানকার বিরোধী দল? আন্দোলনকারীরাই বা কী চায়? আন্দোলনকারীরা কাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে? বিমান দুর্ঘটনায় আরোহীদের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ইরানের তেহরান শহর থেকে শুরু করে ইস্পাহানের মতো আরও কয়েকটি শহরে সাম্প্রতিক সময়ে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ মানুষ। তাদের বেশিরভাগই মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। প্রথমেই প্রকৃত ঘটনার বিষয়ে সত্যি না বলার জন্য তারা কর্তৃপক্ষের নিন্দা করে। তবে আন্দোলনকারীরা দেশটির সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ খামেনি এবং ইসলামী শাসনের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেয়। বিবিসির রানা রহিমপুর বলেছেন, "আন্দোলনকারীদের অনেকেই বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের চেনেন। যেহেতু তাদের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ছিল এবং বিদেশে ভ্রমণের সামর্থ্য ছিল।" কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তিত্বকে ঘিরে এই বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে, এমন কোন ইঙ্গিতও নেই। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইরানি অধ্যাপক ফাতেমেহ শামস বলছেন,"এটা বলা কঠিন যে, এখানে এমন কোন ব্যক্তি আছে, যাকে ঘিরে মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।" আয়াতুল্লাহ খামেনি ইরানের ইসলামী প্রজাতন্ত্রের রাজনৈতিক কাঠামোর শীর্ষে বসে আছেন। কী ধরণের বিরোধী রাজনীতি ইরানে অনুমোদিত? ইরানের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নির্বাচনের অনুমতি দেয়, তবে রাজনৈতিক দলগুলোকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের কঠোর সীমানার মধ্যেই কাজ করতে হয়। ২০১৬ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে, ইরানের গার্ডিয়ান কাউন্সিল প্রায় অর্ধেক প্রার্থীকে অযোগ্য ঘোষণা করেছিল। ই রানের ইসলামী ব্যবস্থার ব্যাপারে প্রার্থীরা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে কিনা সেটাই তদারকি করে এই গার্ডিয়ান কাউন্সিল বা অভিভাবক পরিষদ। আর আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য পার্লামেন্ট নির্বাচনের জন্য হাজার হাজার সম্ভাব্য প্রার্থীকে আবারও অযোগ্য ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে ৯০জন বর্তমান আইনপ্রনেতাও রয়েছেন। ইসলামী প্রজাতন্ত্রবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর যে কোনও প্রার্থী, যারা বিদ্যমান ব্যবস্থাকে পুরোপুরি পরিবর্তন করতে চান, তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোন অনুমতি নেই। গার্ডিয়ান কাউন্সিল যে কোনও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর ওপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে এবং পার্লামেন্ট থেকে পাশ হওয়া যে কোনও আইনকে ইরানের সংবিধান এবং ইসলামী আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে না হলে তাতে ভেটো দিতে পারে। ইরানের রাজনৈতিক কাঠামোর শীর্ষে থাকা আয়াতুল্লাহ খামেনি এই সংস্থার অর্ধেক সদস্য নিযুক্ত করেন। এই সুপ্রিম লিডার সশস্ত্র বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করেন এবং সুরক্ষা, প্রতিরক্ষা এবং প্রধান বৈদেশিক নীতি সম্পর্কিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। সুতরাং বাস্তবে, ইরানের প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট - তারা পরিবর্তনের পক্ষে থাকলেও -তাদের ক্ষমতা সীমিত। আবার ইরানের ভেতরে যে কুর্দি, আরব, বালুচিস এবং আজারবাইজানিদের মতো জাতিগত সংখ্যালঘুরা রয়েছেন, তাদের জন্য বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতেও আন্দোলন হয়। এসব বিরোধীদলের মধ্যে রয়েছে, ইরানিয়ান কুর্দিস্তান ডেমোক্রেটিক পার্টি- যারা একটি সশস্ত্র দল এবং যারা ইরান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে লড়াই করে আসছে। ২০০৯ সালে বিক্ষোভগুলো সরকারের চন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছিল। বিরোধীদের কি নেতা আছে? ইরানে বহু বছর ধরে একটি সংস্কারবাদী আন্দোলন চলছে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ খাতামিকে এর প্রধান ব্যক্তিত্ব হিসাবে দেখা গেছে। ১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকাকালীন মিস্টার খাতামি কিছু সামাজিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার নিয়ে এসেছিলেন এবং পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে কিছু প্রস্তাব রেখেছিলেন। রক্ষণশীল স্বার্থরক্ষার কারণে আরও বড় ধরণের পরিবর্তনগুলো আটকে দেয়া হয় এবং মিস্টার খাতামির গতিবিধি ও গণমাধ্যমের সামনে তার হাজির হওয়া সীমিত করার মাধ্যমে তাকে কোণঠাসা করা হয়। ২০০৯ সালে, এক বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কট্টরপন্থী মাহমুদ আহমাদিনেজাদ জয়লাভের পরে দেশটির সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ আসে। পরাজিত মীর হোসেইন মুসাভি এবং মেহেদী কারুবি ভোটের ওই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ জানান এবং তারা গ্রিন মুভমেন্ট হিসাবে পরিচিতি একটি দলের নেতা হয়ে ওঠেন। পুনরায় নির্বাচনের দাবীতে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে, তবে আয়াতুল্লাহ খামেনি জোর দিয়ে বলেন নির্বাচনের এই ফল যথাযথ। প্রতিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া সে বছর বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক তাণ্ডব শুরু হয় এবং বেশ কয়েকজন বিরোধী সমর্থক নিহত হন বলে জানা যায়। বিরোধী দলের শীর্ষস্থানীয় অনেক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। মিস্টার মুসাভি এবং মিস্টার কারুবি এক দশক পরেও গৃহবন্দী রয়েছেন। সাম্প্রতিককালে, অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতি নিয়ে ২০১৭ সালের শেষে এবং ২০১৮ সালের শুরুতে বিক্ষোভ হয়। দেশের কিছু অংশে বেকারত্বের মাত্রা বাড়তে থাকায় তরুণ জনগোষ্ঠী ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। উচ্চ মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষও উদারপন্থী হিসাবে বিবেচিত প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সরকারের অর্থনীতি পরিচালনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে যোগ দেয়। যারা বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিল তারা দেশটির নেতাদের বিরুদ্ধে শ্লোগান দেয়, এবং রাজতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানায়, ১৯৭৯ সালে যার পতন হয়েছিল। এই অস্থিরতার কারণে দেশটিতে রক্তাত্ব বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। আমির কবির বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেয়া কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবি জানায়। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে যে, ওই সহিংসতায় ৩০৪ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, তবে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ১৫০০ জন বলে দাবি করা হয়। ইরানী কর্তৃপক্ষ দুটি পরিসংখ্যান বাতিল করে দিয়েছে। দেশটিতে টানা পাঁচদিন ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। এতে সারা দেশের মধ্যে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। সাম্প্রতিক বিক্ষোভগুলোর একটি বৈশিষ্ট্য হল, এগুলো প্রায়ই নেতৃত্বহীন ছিল এবং মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ও বৈষম্যের মতো সমস্যা তৃণমূলকে ক্ষুব্ধ করে তুলেছিল। তবে, তীব্র অস্থিরতা সত্ত্বেও, সরকার তাদেরে নিয়ন্ত্রণে থাকতে পেরেছে। কারণ তারা বিরোধীদের বিরুদ্ধে দমনমূলক পদক্ষেপ সেইসঙ্গে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে এসেছে। আরো খবর: থামার আগে যে ক্ষতি করেছে মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আহমদীয়াদের মসজিদ ও বাড়িঘরে হামলা সেলাই মেশিন কিভাবে নারীকে মুক্তি দিয়েছিল পিতার সহায়তায় কিশোরীকে বছর ধরে ধারাবাহিক ধর্ষণ | There have been anti-government protests in the Iranian capital, Tehran, and other cities after the Iranian authorities admitted they had "unintentionally" shot down a Ukrainian International Airlines plane. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | অড্রে স্কুম্যান: 'অলৌকিকভাবে' জীবন ফিরে পেয়েছেন হৃদযন্ত্র ছ'ঘন্টা বন্ধ থাকার পরও। অড্রে স্কুম্যান নামের এই মহিলা থাকেন স্পেনের বার্সেলোনায়। তিনি স্পেনের পাইরেনিস পার্বত্য এলাকায় এলাকায় তার স্বামীর সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। সেখানে তারা তুষার ঝড়ের কবলে পড়েন। অড্রে স্কুম্যান এরপর মারাত্মক হাইপোথারমিয়ায় আক্রান্ত হন। তার হাঁটতে-চলতে অসুবিধা হচ্ছিল। তিনি অচেতন হয়ে পড়ে যান। তার হৃদযন্ত্র একদম বন্ধ হয়ে যায়। কোন হৃদস্পন্দনই পাওয়া যাচ্ছিল না। অড্রে স্কুম্যানের স্বামী রোহানের ধারণা ছিল তার স্ত্রী মারা গেছেন। ইমার্জেন্সি সার্ভিসের জন্য যখন তারা অপেক্ষা করছেন, তখন তিনি স্ত্রীর পালস পাচ্ছিলেন না। তার স্ত্রী শ্বাস নিচ্ছেন বলেও মনে হচ্ছিল না। হৃদস্পন্দনও বন্ধ ছিল। দুঘন্টা পর যখন উদ্ধার কর্মীরা এসে পৌঁছালেন, মিসেস স্কুম্যানের শরীরের তাপমাত্রা নেমে গেছে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। উদ্ধার কর্মীরা তাকে বার্সেলোনার এক হাসপাতালে নিয়ে যান। তিনি যে বেঁচে আছেন, তার কোন লক্ষণই পাচ্ছিলেন না তারা। হাসপাতালের ডাক্তার এডুয়ার্ড আরগুডো বলছেন, পাহাড়ের যে প্রচন্ড ঠান্ডার কারণে অড্রে স্কুম্যান অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন সেটাই হয়তো আবার তার জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, হাসপাতালে আনার পর তাকে দেখে মনে হচ্ছিল তিনি মারা গেছেন। ছঘন্টা হৃদযন্ত্র বন্ধ থাকার পর আবার কাউকে বাঁচিয়ে তোলার ঘটনা এর আগে শোনা যায়নি। "তবে তিনি যেহেতু হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন, আমাদের মনে হচ্ছিল অড্রের বেঁচে ওঠার একটা সম্ভাবনা আছে।" ড: আরগুডো বলছেন, অড্রে স্কুম্যান যখন অচেতন হয়ে পড়েছিলেন তখন হাইপোথার্মিয়াই তার শরীর এবং মস্তিস্ককে রক্ষা করেছিল। যদিও এই হাইপোথার্মিয়া তাকে প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। "যদি স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এত দীর্ঘ সময় তার হৃদযন্ত্র বন্ধ থাকতো, তাহলে কিন্তু তিনি মারা যেতেন।" সময়ের সঙ্গে যুদ্ধ অড্রে স্কুম্যানকে হাসপাতালে আনার পর ডাক্তাররা একটি বিশেষ মেশিন ব্যবহার করে তার শরীরের রক্ত বের করে এনে তাতে অক্সিজেন সঞ্চালন করেন। এরপর সেই রক্ত আবার তার শরীরে ফিরিয়ে দেয়া হয়। তার শরীরের তাপমাত্রা যখন ৩০ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায় তখন ডাক্তাররা একটি 'ডিফিব্রিলেটর' ব্যবহার করে হৃদপিণ্ড চালু করতে সক্ষম হন। তবে ততক্ষণে প্রায় ছয় ঘন্টা সময় পেরিয়ে গেছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: হায়দ্রাবাদ ধর্ষণে অভিযুক্তদের হত্যায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া 'বাংলা' লন্ডনের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহৃত ভাষা নয় টাকা দিয়ে কেন গোল্ডেন পাসপোর্ট কিনছেন বিত্তশালীরা মিসেস স্কুম্যানকে ১২ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। তিনি এখন সুস্থ, হবে হাইপোথার্মিয়ার কারণে তার চলাফেরায় হাতের অনুভূতিতে কিছু সমস্যা রয়ে গেছে। ডাক্তার আরগুডো বলেন, মিসেস স্কুম্যানের কিছু স্নায়বিক ক্ষতি হয়ে যায় কীনা সেটা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন ছিলেন। তবে যেভাবে তিনি সুস্থ হয়ে উঠলেন, সেটাকে অস্বাভাবিক ঘটনা বলে বর্ণনা করছেন তিনি। স্পেনের পাইরেনিস পার্বত্য এলাকায় ঘুরতে গিয়ে হাইপোথার্মিয়ায় আক্রান্ত হন অড্রে স্কুম্যান "কারও হদযন্ত্র এত দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকার পর আবার চালু হওয়ার এরকম ঘটনা আর নেই।" মিসেস স্কুম্যান সুস্থ হয়ে উঠার পর জানান, যে ছয় ঘন্টা তার হৃদযন্ত্র কাজ করেনি, সে সময়ের কোন স্মৃতি তার নেই। "হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে যখন আমি জেগে উঠি, তখন আমি জানতাম না আগের এক বা দুদিন ধরে কী হচ্ছিল।'' মিসেস স্কুম্যান এখন হাইপোথারমিয়ার ব্যাপারে পড়াশোনা করে বুঝতে পারছেন, তার বেঁচে উঠার ঘটনাটা কীরকম অবিশ্বাস্য। তিনি হাসপাতালের ডাক্তারদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাদের কাজের জন্য। "এটা একটা দৈব ঘটনা, তবে ডাক্তারদের কারণেই আমি বেঁচে গেছি।" | A British woman whose heart stopped beating for six hours has been brought back to life in what doctors have described as an "exceptional case". |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | লি জিংঝি তার ছেলে। ৩২ বছর পর মা-ছেলের আলিঙ্গন। প্রতি সপ্তাহান্তে জিংঝি এবং তার স্বামী তাদের শিশুপুত্র মাও ইনক নিয়ে কোন চিড়িয়াখানা বা শহরের কোন একটি পার্কে নিয়ে যেতেন। তারা থাকতেন মধ্যচীনের শাংজি প্রদেশের শিয়ান শহরে। তার স্মৃতিতে এরকম একটি বেড়ানোর স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। "সেসময় তার বয়স ছিল সাড়ে তিন বছর। আমরা ওকে শিয়ান শহরের চিড়িয়াখানায় নিয়ে গিয়েছিলাম। ও মাটিতে একটি কেঁচো দেখতে পেল। ও বেশ কৌতুহলী হয়ে উঠলো। কেঁচোটি দেখিয়ে বললো, মা, দেখ, একটা কেঁচো। আমি যখন ওকে চিড়িয়াখানা থেকে বের করে নিয়ে যাচ্ছি, ও তখন কেঁচোটি হাতে ধরে আমার মুখের কাছে নিয়ে এসেছে।" জিয়া জিয়া মাও ইন ছিল তার একমাত্র সন্তান। চীনের এক সন্তান নীতি তখন পুরোপুরি কার্যকর। কাজেই একের অধিক সন্তান নেয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না। তিনি চেয়েছেন তার ছেলে খুব ভালোভাবে পড়াশোনা করবে এবং সফল হবে। কাজেই তিনি তার ডাক নাম রাখলেন জিয়া জিয়া, যার মানে মহৎ। ঝিংজি বলেন, "জিয়া জিয়া ছিল খুব শান্ত এবং বাধ্য ছেলে। স্মার্ট। খুব বুঝদার। ও খুব একটা কাঁদতো না। ও ছিল খুবই প্রাণবন্ত এবং আদুরে। ও ছিল এমন এক শিশু যাকে যেই দেখতো সে-ই পছন্দ করতো।" ঝিংজি এবং তার স্বামী সকালে ছেলেকে একটি কিন্ডারগার্টেনে দিয়ে আসতেন। এরপর দিনের কাজ শেষে আবার সেখান থেকে তুলতেন। "প্রতিদিন আমার কাজ শেষ হওয়ার পর আমি আমার ছেলের সঙ্গে খেলতাম। আমি খুবই সুখী ছিলাম।" লি ঝিংজি এবং তার ছেলে মাও ইন (জিয়া জিয়া)) ঝিংজি কাজ করতেন একটি শস্য রফতানিকারক কোম্পানির সঙ্গে। যখন ফসল তোলার সময় হতো, তখন তাকে শহর ছেড়ে গ্রামে গ্রামে যেতে হতো খাদ্যশস্য সরবরাহকারীদের সঙ্গে দেখা করতে। জিয়া জিয়া তখন বাড়িতে তার বাবার সঙ্গে থাকতো। একদিন এরকম এক সফরে তিনি তার কর্মচারীদের কাছ থেকে একটি খবর পেলেন। তাকে দ্রুত ফিরে আসতে বলা হলো। "সেসব দিনে টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা মোটেই ভালো ছিল না", বলছিলেন ঝিংজি। "কাজেই আমার কাছে মাত্র ছয় শব্দের একটি টেলিগ্রাম এসেছিল। তাতে লেখা, বাড়িতে জরুরী দরকার, এক্ষুনি ফিরে আসো'। আমি জানতাম না কী ঘটেছে।" ঝিংজি দ্রুত শিয়ানে ফিরে আসলেন। সেখানে একজন ম্যানেজার তাকে সেই ভয়ংকর খবরটি দিল। "আমার নেতা আমাকে কেবল একটা কথাই বললেন, 'তোমার ছেলে নিখোঁজ।" আমার অন্তর যেন শূন্য হয়ে গেল। আমার মনে হচ্ছিল হয়তো আমার ছেলে কোথাও হারিয়ে গেছে। কিন্তু আমার একবারও মনে হয়নি, আমার ছেলেকে আর কখনো খুঁজে পাবো না।" ১৯৮৮ সালের অক্টোবর মাসের ঘটনা এটি। জিয়া জিয়ার বয়স তখন মাত্র ২ বছর ৮ মাস। জিয়া জিয়া জিংঝির স্বামী বলছিলেন, তিনি জিয়া জিয়াকে কিন্ডারগার্টেন থেকে তুলে নিয়ে আসেন। পথে তিনি থেমেছিলেন তাদের পারিবারিক মালিকানাধীন একটি ছোট্ট হোটেল থেকে ছেলের জন্য খাবার পানি সংগ্রহের জন্য। মাত্র এক-দুই মিনিটের জন্য হয়তো তিনি ছেলেকে বাইরে রেখে গিয়েছিলেন। যখন ফিরলেন, সেখানে জিয়া জিয়া নেই। জিংঝি ভেবেছিলেন, ছেলেকে দ্রুত খুঁজে পাওয়া যাবে। "আমি ভেবেছিলাম আমার ছেলে হয়তো হারিয়ে গেছে। ও হয়তো তার বাড়ির পথ খুঁজে পাচ্ছে না। কোন দয়ালু লোক হয়তো তাকে খুঁজে পাবে এবং আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনবে।" কিন্তু এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেল। কেউ তাকে খুঁজে পেল না, তখন জিংঝি বুঝতে পারলেন পরিস্থিতি বেশ জটিল। হোটেলটির আশে-পাশের এলাকায় গিয়ে তিনি জনে জনে জিজ্ঞেস করতে থাকলেন, জিয়া জিয়াকে কেউ দেখেছে কীনা। তিনি জিয়া জিয়ার ছবিসহ এক লাখ লিফলেট ছাপালেন। শিয়ানের রেল স্টেশন এবং বাস স্টেশনে গিয়ে তিনি লিফলেট বিলি করলেন। স্থানীয় কাগজে নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিলেন। কিন্তু কোন কাজ হলো না। "আমার মনে যে তখন কী তীব্র কষ্ট.. আমার কান্না পাচ্ছিল, আমার চিৎকার করতে কাঁদতে ইচ্ছে করছিল। আমার মনে হচ্ছিল, আমার হৃদয়টা ফাঁকা হয়ে গেছে।" ছেলের কাপড়-চোপড় দেখলে তখন তার কান্না পেত। ছেলের জুতা, খেলনা- এসব দেখে তার কান্না পেত। চীনে তখন শিশু পাচারের ঘটনা যে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা জানতেন না জিংঝি। চীনে এক সন্তান নীতি চালু হয় ১৯৭৯ সালে। এর উদ্দেশ্য ছিল চীনের দ্রুত বাড়তে থাকা জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করা এবং দারিদ্র বিমোচন করা। শহরে বাস করেন যেসব দম্পতি, তারা কেবল একটি সন্তান নিতে পারবেন। তবে যারা গ্রামাঞ্চলে থাকেন, তাদের প্রথম সন্তান যদি মেয়ে হয়, তাহলে তারা দ্বিতীয় একটি সন্তান নিতে পারবেন। যেসব দম্পতি আশা করেছিলেন যে তাদের একটি পুত্র সন্তান হবে এবং পরিবারের নাম ধরে রাখবে, বৃদ্ধ বয়সে তাদের যত্ম নেবে, তাদের সামনে পুত্র্র সন্তানের চেষ্টা করার আর কোন উপায় রইলো না। যদি তারা একের অধিক সন্তান নেন, তাদের বিরাট অংকের জরিমানা করা হবে। তাদের দ্বিতীয় সন্তানকে সব ধরণের সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। মনে করা হয়, সরকারের এই নীতির ফলে শিশু অপহরণ বেড়ে যায়। বিশেষ করে ছেলে শিশু। কিন্তু এর কিছুই আসলে জিংঝি জানতেন না। "কখনো কখনো টেলিভিশনে নিখোঁজ শিশুর সন্ধান চেয়ে বিজ্ঞপ্তি থাকতো। কিন্তু আমি জানতাম না যে এসব শিশুকে অপহরণ করে বিক্রি করে দেয়া হয়। আমার কেবল ধারণা ছিল, তারা আসলে হারিয়ে গেছে।" জিয়া জিয়া হারিয়ে যাওয়ার পর প্রথমেই তিনি দোষ দিলেন তার স্বামীকে। কিন্তু পরে তিনি উপলব্ধি করলেন, ছেলেকে খুঁজে পেতে হলে তাদের দুজনকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সময় যত গড়াতে লাগলো, তারা এটি নিয়ে এতটাই ঘোরের মধ্যে চলে গেলেন যে তারা আর কিছু নিয়ে কখনো কথা বলতেন না। চার বছর পর স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে গেল। জিংঝি কিন্তু কখনো তার ছেলেকে খোঁজা বন্ধ করেন নি। প্রতি শুক্রবার বিকেল কাজ শেষ করে তিনি ট্রেনে চেপে চলে যেতেন আশে-পাশের বিভিন্ন প্রদেশে। জিয়া জিয়াকে খুঁজতে। রোববার সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি ফিরতেন যাতে আবার পরদিন কাজে ফিরতে পারেন। যখনই তিনি কোন নতুন তথ্য বা সূত্র পেতেন, তার ছেলে জিয়া জিয়ার মতো দেখতে কোন শিশুকে কেউ দেখেছে, তিনি ছুটে যেতেন তদন্ত করতে। আরও পড়ুনঃ চীনের এক সন্তান নীতি,কেটির বদলে যাওয়া জীবন উইগর মুসলিম নারীদের জোর করে বন্ধ্যা করছে চীন- রিপোর্ট চীনের বিশাল জনসংখ্যা আরো বাড়তে শুরু করেছে যেবছর জিয়া জিয়া নিখোঁজ হয়েছিল, সেবছরই এরকম এক লম্বা সফরে যান জিংঝি। শাংজি প্রদেশের আরেকটি শহরে তাকে যেতে হয়েছিল অনেক দীর্ঘ বাস জার্নি করে। সেখান থেকে আরেকটি বাসে চেপে তিনি যাচ্ছিলেন এক গ্রামের দিকে। সেখানে নাকি এক দম্পতি শিয়ান শহরের এক শিশুকে দত্তক নিয়েছে, যে দেখতে অবিকল জিয়া জিয়ার মতো। সেই গ্রামে গিয়ে সারাদিন অপেক্ষায় ছিলেন তিনি। কখন গ্রামের লোক ফসলের ক্ষেত থেকে কাজ শেষে বাড়ি ফিরে, সেই অপেক্ষায়। কিন্তু সন্ধ্যায় তিনি জানতে পারলেন, এই দম্পতি নাকি ছেলেটিকে নিয়ে শিয়ান শহরে গিয়েছে। জিংঝি সাথে সাথে আবার ফিরতি পথ ধরলেন। পরদিন সকালে ফিরে আসলেন নিজ শহরে। এই দম্পতি যে ফ্ল্যাটটিতে ভাড়া থাকে, সেই ফ্ল্যাটটি খোঁজা শুরু করলেন। কিন্তু বাড়িওয়ালা জানালো, তারা মাত্র দুদিন আগে সেখান থেকে অন্য শহরে চলে গেছে। জিংঝি এবার দ্রুত ছুটলেন সেই শহরে। যতক্ষণে সেখানে পৌঁছালেন, তখন রাত হয়ে গেছে। কয়েক ঘন্টা ধরে তিনি শহরটির এক হোটেল থেকে আরেক হোটেলে ছুটছিলেন তাদের খুঁজে বের করার জন্য। শেষ পর্যন্ত তাদের হোটেলটি যখন খুঁজে পেলেন, ততক্ষণে সেই হোটেল ছেড়ে দিয়েছে তারা। কিন্তু এরপরও হাল ছাড়লেন না জিংঝি। তখন প্রায় মধ্যরাত। তিনি সেখান থেকে আরেক শহরে গেলেন এই লোকটির বাবা-মাকে খুঁজে বের করতে। সেখানেও তাদের পাওয়া গেল না। এবার তিনি স্ত্রীলোকটির নিজ শহরে যেতে চাইলেন। কিন্তু ততক্ষণে তিনি একটু ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। দুদিন ঘুমাননি। ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করেননি। একটু বিশ্রাম নিয়ে তিনি আবার ছুটলেন। এবার সেখানে পৌঁছে তিনি স্ত্রীলোকটি এবং তার শিশুটিকে খুঁজে পেলেন। কিন্তু তাকে হতাশ হতে হলো। তাদের দত্তক নেয়া শিশুটি জিয়া জিয়া নয়। "আমি ধরেই নিয়েছিলাম যে, এই শিশুটি জিয়া জিয়া। আমাকে হতাশ হতে হলো। আমার ওপর এর একটা বিরাট প্রভাব পড়লো। এরপর আমি যেন সারাক্ষণ আমার ছেলের গলা শুনতে পাচ্ছিলাম। আমার মায়ের ভয় হতে লাগলো যে, আমি হয়তো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি।" প্রতিদিন সকালে যখন তার ঘুম ভাঙ্গতো, প্রথমেই তার মনে হতো ছেলের কথা। রাতে তিনি স্বপ্ন দেখতেন, তার ছেলে 'মা','মা' করে কাঁদছে। তার এক বন্ধু ছিল ডাক্তার। তার পরামর্শে জিংঝি হাসপাতালে ভর্তি হলেন। "একজন ডাক্তার আমাকে এমন কিছু বলেছিল, যা আমার মনে বিরাট ছাপ ফেলেছিল। তিনি আমাকে বলেছিলেন, 'আমি তোমার শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসা করতে পারি। কিন্তু তোমার মনের চিকিৎসা, সেটা কিন্তু তোমার ওপর।' তার এই কথা নিয়ে আমি সারারাত ভাবলাম। আমি অনুভব করলাম যে এভাবে চলা সম্ভব নয়। আমি যদি আমার আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, আমি হয়তো উন্মাদ হয়ে যাব। আর আমি যদি পাগল হয়ে যাই, তাহলে তো আর আমার ছেলেকে খুঁজতে যেতে পারবো না। অথবা আমার ছেলে যদি ফিরে এসে দেখে তার মা পাগল হয়ে গেছে, সেটা তার জন্য খুবই বেদনাদায়ক হবে।" এরপর থেকে জিংঝি সচেতনভাবে চেষ্টা করতেন যাতে কোনভাবেই তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে না পড়েন। যাতে তিনি ছেলের সন্ধানে তার প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে পারেন। এদিকে জিংঝির বোন জিয়া জিয়ার সব কাপড়চোপড় আর খেলনা বেঁধে তুলে রাখলেন। কারণ এগুলো দেখলেই জিংঝির মানসিক যন্ত্রণা শুরু হতো। এরই মধ্যে জিংঝি উপলব্ধি করলেন, তিনি একা নন, তার মতো আরও বহু বাবা-মা তাদের নিখোঁজ সন্তানের খোঁজ করছে। শুধু শিয়ান শহরে নয়, চীনের আরও দূর-দূরান্তে। চীনের প্রায় সব প্রদেশের এরকম বাবা-মারা মিলে তখন তারা একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুললেন । তারা একে অন্যের কাছে লিফলেট ভর্তি ব্যাগ পাঠাতেন। এরপর এসব লিফলেট বিলি করতেন। এই নেটওয়ার্ক থেকে আরও অনেক সূত্রের সন্ধান পাওয়া গেল। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, কোনটি থেকেই আসলে জিয়া জিয়াকে খুঁজে পাওয়া গেল না। ছেলেকে খুঁজতে জিংঝি সব মিলিয়ে চীনের দশটি প্রদেশ সফর করেন। ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর যখন ১৯ বছর পেরিয়ে গেছে, জিংঝি একটি ওয়েবসাইটের জন্য স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ শুরু করলেন। এই ওয়েবসাইটের নাম, 'বেবি কাম হোম।' যেসব বাবা-মার সন্তান নিখোঁজ, তাদের নিখোঁজ সন্তানের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটিয়ে দেয় এই ওয়েবসাইট। "এরপর আমার আর নিজেকে নিঃসঙ্গ মনে হচ্ছিল না। আমাদের সন্তানদের খুঁজে পেতে কত কত স্বেচ্ছাসেবক যে এখানে কাজ করছিল। এদের কাজ আমাকে খুব নাড়া দিল", বলছিলেন জিংঝি। "আরেকটা সুবিধাও ছিল। আমি ভাবছিলাম, যদি আমার ছেলেকে খুঁজে নাও পাওয়া যায়, আমি অন্য ছেলেদের অন্তত তাদের নিজের পরিবারে ফিরে যেতে সাহায্য করতে পারবো।" এরপর ২০০৯ সালে চীন সরকার একটি ডিএনএ ডেটাবেজ স্থাপন করলো। যেসব দম্পতির সন্তান নিখোঁজ হয়ে গেছে তারা এবং যেসব ছেলে-মেয়ে মনে করে তাদের অপহরণ করা হয়েছিল তারা এখানে তাদের ডিএনএ রাখতে পারে। এটা ছিল এক বিরাট পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে এরকম অনেক নিখোঁজ রহস্যের মীমাংসা হয়েছিল। জিংঝি যত শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা শুনেছেন, তার বেশিরভাগই ছিল ছেলে শিশু। যেসব দম্পতি এরকম শিশু কেনে, তারা নিঃসন্তান। বা হয়তো তাদের কন্যা সন্তান আছে, ছেলে নেই। এদের বেশিরভাগই সাধারণত চীনের গ্রামাঞ্চলের। 'বেবি কাম হোম' ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য সংগঠনের মাধ্যমে জিংঝি এপর্যন্ত ২৯জন ছেলে-মেয়েকে তাদের বাবা-মার সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পেরেছেন। তিনি বলছেন, বাবা-মার সঙ্গে সন্তানদের পুনর্মিলনের এই দৃশ্য দেখার অনুভূতি বর্ণনা করা কঠিন। "আমি নিজেকে প্রশ্ন করতাম: এটা আমার ছেলে কেন হলো না? কিন্তু যখন আমি দেখতাম অন্য বাবা-মারা তাদের সন্তানকে আলিঙ্গন করছে, তখন আমার খুব ভালোও লাগতো। আমার মনে হতো, এদের যদি এরকম সৌভাগ্য হতে পারে, একদিন আমারও হবে। আমি আশাবাদী হয়ে উঠতাম। ওদের ছেলে-মেয়েকে ফিরে আসতে দেখে আমার আশা জাগতো, একদিন আমার ছেলেও আমার কাছে ফিরে আসবে।" তবে এরকম অনেক সময় আসতো, যখন তিনি একেবারেই নিরাশ হয়ে পড়তেন। "যখনই কোন সূত্র ধরে এগিয়ে দেখতাম যে আসলে সেটা ঠিক ছিল না, তখন হতাশ হতাম। কিন্তু আমি বার বার হতাশ হতে চাইছিলাম না। যদি আমি বার বার হতাশায় আক্রান্ত হই, আমার পক্ষে বেঁচে থাকা কঠিন হতো। কাজেই আমি আশা ছাড়লাম না।" তার বৃদ্ধা মাও তার মধ্যে আশা জাগিয়ে রাখতে সাহায্য করলেন। "আমার মা ২০১৫ সালে ৯৪ বছর বয়সে মারা যান। কিন্তু মারা যাওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি সবসময় জিয়া জিয়ার কথা মনে করতেন। একবার আমার মা আমাকে বললেন, তিনি স্বপ্ন দেখেছেন, জিয়া জিয়া ফিরে এসেছে। তিনি বলছিলেন, প্রায় ৩০ বছর হয়ে গেল, ওর এখন ফেরা উচিৎ।" মৃত্যুর আগে যখন তার মা অচেতন হয়ে পড়েছেন, তখন জিংঝি বুঝতে পারছিলেন, তার মা হয়তো জিয়া জিয়ার কথা ভাবছে। "আমি আমার মায়ের কানে ফিসফিস করে বলেছিলাম, মা চিন্তা করো না, আমি নিশ্চয়ই জিয়া জিয়াকে খুঁজে পাবো। এটি শুধু আমার নিজের ইচ্ছে পূরণের জন্য নয়, আমার মায়ের ইচ্ছেও আমি পূরণ করতে চেয়েছিলাম। আমার মা মারা গিয়েছিল ২০১৫ সালের ১৫ই জানুয়ারি। চন্দ্র বর্ষপঞ্জী অনুযায়ী, সেদিন ছিল জিয়া জিয়ার জন্মদিন। আমার মনে হলো ঈশ্বর যেন এভাবেই আমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, আমি যেন আমার জন্মদাত্রী মাকে এবং সেই সঙ্গে আমি যে সন্তানকে জন্ম দিয়েছি, তাদের কাউকে ভুলে না যাই। একই দিনে একজন বিদায় নিয়েছিলেন, আরেকজন জন্মগ্রহণ করেছিল।" তারপর এবছরের ১০ই মে, মা দিবস তিনি একটি ফোন কল পেলেন। এটি এসেছিল শিয়ান শহরের জননিরাপত্তা ব্যুরো থেকে। তারা একটি অসম্ভব ভালো খবর দিল: "মাও ইনকে খুঁজে পাওয়া গেছে।" "আমি বিশ্বাস করতে পারছিলাম না এটা বাস্তব", বলছিলেন জিংঝি। এপ্রিল মাসে তাকে একজন একটা তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি এমন একজনকে চেনেন, যাকে নাকি বহু বছর আগে শিয়ান থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পরিণত বয়সের একটা ছবি এই লোকটি জিংঝিকে দিলেন। জিংঝি এই ছবিটি পুলিশের কাছে নিয়ে গেলেন। ফেসিয়াল রিকগনিশন টেকনোলজি দিয়ে পুলিশ খুঁজে বের করলো ছবির লোকটিকে। তিনি থাকেন পাশ্ববর্তী প্রদেশ সিচুয়ানের চেংডু শহরে। প্রায় সাতশো কিলোমিটার দূরে। পুলিশ এই লোকটিকে একটি ডিএনএ টেস্ট করাতে রাজী করাতে পারলো। ১০ই মে এই ডিএনএ পরীক্ষার ফল জানা গেল। তার ডিএনএ মিলে গেল জিংঝির সঙ্গে। পরের সপ্তাহে পুলিশ আরেক দফা রক্তের নমূনা সংগ্রহ করে আবার ডিএনএ পরীক্ষা করলো। এবারও সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হলো, জিংঝি এবং এই লোকটি মা এবং ছেলে। "যখন আমি ডিএনএ পরীক্ষার ফল পেলাম, তখনই আমি সত্যি সত্যি বিশ্বাস করলাম যে আমার ছেলেকে খুঁজে পাওয়া গেছে।" অন্তত ৩০০ বার ভুল সূত্রের পেছনে ঘুরে, ৩২ বছর পর অবশেষে ছেলের জন্য জিংঝির অনুসন্ধানের সমাপ্তি ঘটলো। মা-ছেলের পুর্নমিলনের দিন নির্ধারিত হলো ১৮ই মে, সোমবার। জিংঝি নার্ভাস হয়ে পড়েছিলেন। তিনি বুঝতে পারছিলেন না, তার ছেলে তাকে কতটা অনুভব করবে। ছেলে এখন প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ, বিবাহিত। তার নিজের ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনের ব্যবসা আছে। "আমাদের দেখা হওয়ার আগে আমার মধ্যে অনেক দুশ্চিন্তা কাজ করছিল। ও হয়তো আমাকে স্বীকার করবে না, আমাকে গ্রহণ করবে না। হয়তো ওর মনে আর আমার জায়গা নেই, আমাকে একদম ভুলে গেছে। আমার ভয় লাগছিল, আমি যখন আমার ছেলেকে জড়িয়ে ধরতে যাব, ও হয়তো আমাকে জড়িয়ে ধরতে দেবে না। আমার মনে হচ্ছিল,যে ছেলেকে আমি ৩২ বছর ধরে খুঁজে বেড়াচ্ছি, আমার আলিঙ্গন এবং ভালোবাসা যদি সে গ্রহণ না করে, তখন আমি আরও বেশি কষ্ট পাব।" জিংঝি যেহেতু নিখোঁজ হয়ে যাওয়া ছেলে-মেয়েদের সমস্যা নিয়ে প্রায়শই টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দিতেন, তার ঘটনাটি অনেকেই জানতো। তাই ছেলেকে খুঁজে পাওয়ার খবরটি চীনের গণমাধ্যমে চাঞ্চল্য তৈরি করলো। যেদিন মা-ছেলের পুর্নমিলন ঘটলো, সেদিন চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশন (সিসিটিভি) এটি লাইভ সম্প্রচার করে। জিয়া জিয়া যখন শিয়ানের জননিরাপত্তা ব্যুরোর অনুষ্ঠান হলে ঢুকছেন, তিনি 'মা' বলে চিৎকার করে ডাকলেন তার মাকে। এরপর দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তার মাকে। মা, ছেলে, বাবা- সবাই তখন কাঁদছেন, সবার চোখে পানি। ৩২ বছর পর মা-ছেলের আলিঙ্গনের মূহূর্ত লাইভ দেখানো হয় টিভিতে "ছোটবেলায় ও ঠিক এভাবেই আমার দিকে দৌড়ে আসতো", বলছিলেন জিংঝি। জিংঝি পরে জানতে পেরেছিলেন, জিয়া জিয়াকে অপহরণের এক বছর পর সিচুয়ান প্রদেশের এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছিল ৬ হাজার ইউয়ানে। তার দত্তক বাবা-মা তার নতুন নাম রেখেছিল গু নিংনিন। একমাত্র সন্তান হিসেবে তিনি সেই পরিবারে বড় হন। সেখানে তিনি প্রাথমিক স্কুল, মাধ্যমিক স্কুলে যান। এরপর পড়াশোনা করেন চেংডুর কলেজে। আজব ব্যাপার হচ্ছে, তিনি টেলিভিশনে তার মা জিংঝিকে দেখেছেন। তার মনে হয়েছে এই নারী খুবই স্নেহময়ী। জিংঝি যখন টেলিভিশনে তার ছেলের ছোটবেলার ছবি দেখাচ্ছিল, তখন তার এটাও মনে হয়েছে, এই ছবির সঙ্গে তার ছোটবেলার ছবির অনেক মিল। কিন্তু তারপরও তাদের দুজনের মধ্যে যে কোন সম্পর্ক থাকতে পারে সেটা তার মনে হয়নি। কিন্তু যে লোকটি মা-ছেলের মধ্যে পুর্নমিলনের সূত্রটি ধরিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে চান না। বাবা এবং মায়ের সঙ্গে পুর্নমিলনের পর জিয়া জিয়া দুজনের এই পুর্নমিলনের পর জিয়া জিয়া একমাস শিয়ান শহরে পালাক্রমে তার মা এবং বাবার সঙ্গে থেকেছেন। এসময় মা-ছেলে তাদের পুরোনো ছবি দেখেছেন। তারা আশা করছিলেন, এসব ছবি দেখে জিয়া জিয়া তার শৈশবের কথা মনে করতে পারবেন। কিন্তু জিয়া জিয়া আসলে তার চার বছর বয়সের আগের কোন স্মৃতিই মনে করতে পারেন না। জিংঝি বলেন, "এই বিষয়টাই আমার জন্য সবচেয়ে বেশি কষ্টের। আমার ছেলে যখন ফিরে আসলো, আমি চেয়েছিলাম আমাদের সঙ্গে যখন ও ছিল, সে সময়ের একটা স্মৃতি যেন ও মনে করতে পারে। কিন্তু সেরকম কিছু এখনো ও মনে করতে পারেনি।" ছেলের সঙ্গে তোলা যে ছবিটি জিংঝির সবচেয়ে প্রিয়। একদিন শিয়ানের একটা সুন্দর জায়গায় বেড়াতে গিয়ে জিংঝি নিজেও উপলব্ধি করলেন, অতীতকে ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়। "সেদিন আমরা একটা পাহাড়ে বেড়াতে যাই। ফেরার সময় আমি বলি, জিয়া জিয়া, আসো, আমি তোমাকে কোলে করে নামাই। কিন্তু আমি তো এখন আর ওকে কোলে নিতে পারি না, ও তো অনেক বড়।" "আমার মনে হচ্ছিল, ও যদি আবার আমার কাছে ফিরে আসে, আমরা আমার নতুন করে শুরু করতে পারি, যখন ও শিশু ছিল তখন থেকে। আমরা আমাদের গত ৩২ বছরের শূন্যতা পূরণ করতে পারি। আমি আমার ছেলেকে বলছিলাম, জিয়া জিয়া, তুমি কি আবার একেবারে ছোট্টটি হয়ে যেতে পারো? তুমি আবার ২ বছর ৮ মাস থেকে শুরু করবে, আমি শুরু করবো ২৮ বছর থেকে। আসো, আমরা আবার নতুন করে জীবন শুরু করি। কিন্তু জিংঝি জানেন, এটা সম্ভব নয়। জিয়া জিয়া এখনো চেংডুতেই থাকেন। আর মা জিংঝি থাকেন শিয়ানে। অনেকেই তাকে উপদেশ দিয়েছে, তিনি যেন ছেলেকে শিয়ানে ফিরে আসতে রাজী করান। যদিও এরকমটা হলে জিংঝি খুশিই হবেন, কিন্তু ছেলের জীবনে তিনি জটিলতা সৃষ্টি করতে চান না। "ও এখন একজন পরিণত মানুষ। ওর নিজের চিন্তা-ভাবনা আছে। জিয়া জিয়া বিয়ে করেছে। তার নিজের পরিবার আছে। ওর জন্য আমার শুভকামনা, দূর থেকে। আমি এখন জানি আমার ছেলে কোথায় আছে। আমি জানি, ও বেঁচে আছে। তাতেই আমি খুশি।" মা আর ছেলের মধ্যে এখন প্রতিদিন কথা হয় উইচ্যাটে, চীনের সবচয়ে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ। "আমার ছেলের ব্যক্তিত্ব একদম আমার মতই। ও আমার জন্য অনেক ভাবে। আমিও ওকে নিয়ে অনেক চিন্তা করি। এত বছর পরেও এখনো আমার প্রতি ওর ভালোবাসা আছে। আমার মনে হয়, আমরা যেন কখনো বিচ্ছিন্ন হইনি। আমরা খুবই ঘনিষ্ঠ।" জিয়া জিয়া কোন সাক্ষাৎকার দিতে চান না। তার দত্তক বাবা-মার ব্যাপারে কোন তথ্যও পুলিশ প্রকাশ করছে না। ৩২ বছর আগে কে জিয়া জিয়াকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল, তাকে একদিন পুলিশ খুঁজে বের করবে বলে আশা করেন জিংঝি। তিনি চান, এই দুস্কৃতকারী সাজা পাক, যে তার ৩২ বছরের যন্ত্রণার জন্য দায়ী। এখন তিনি তার ফিরে পাওয়া ছেলের সঙ্গে নতুন স্মৃতি তৈরি করতে ব্যস্ত। পুর্নমিলনের পর তারা বহু ছবি তুলেছেন। তার প্রিয় ছবি হচ্ছে সেটি, যেটি তারা পুর্নমিলনের একদিন পর একসঙ্গে তুলেছিলেন। তখন তারা একটি পার্কে একসঙ্গে সময় কাটাচ্ছিলেন। সেই ছবিতে মা আর ছেলে পাশাপাশি, দুজনকে দেখে মনে হবে হুবহু একই চেহারা। দুজনের মুখেই পুর্নমিলনের খুশির আভা। জিংঝি বলছেন, গত কয়েক বছরে চীনা সরকার এবং চীনা গণমাধ্যমের প্রচেষ্টায় শিশু অপহরণের ঘটনা অনেক কমে এসেছে। কিন্তু এখনো অনেক পরিবার আছে, যারা তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে খুঁজছে। অনেকে তাদের জন্মদাতা পিতা-মাতাকে খুঁজছে। কাজেই জিংঝির সামনে এখনো অনেক কাজ। (এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত বেশিরভাগ ছবি লি জিংঝির সৌজন্যে) | Li Jingzhi spent more than three decades searching for her son, Mao Yin, who was kidnapped in 1988 and sold. She had almost given up hope of ever seeing him again, but in May she finally got the call she had been waiting for. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | বৃহস্পতিবার পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষ্য অনুযায়ী, পশ্চিমা সভ্যতার ভবিষ্যত ঝুঁকির মুখে রয়েছে। মি: ট্রাম্পের উদাহরণে পোল্যান্ড এমন একটি দেশ যে কিনা নিজ সভ্যতা ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রস্তুত, তবুও 'সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থা' হুমকি নিয়ে হুঁশিয়ারি বার্তাও দিবেন তিনি। জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে জার্মানি যাবার আগে বর্তমানে পোল্যান্ড সফরে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। জার্মানিতে শীর্ষ বৈঠকের আগে কেন তিনি পোল্যান্ড সফরে গিয়েছেন সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ১৯৪৪ সালে নাৎসি দখলদারদের বিরুদ্ধে ওয়ারস বিদ্রোহে প্রায় ২ লাখ পোলিশ নাগরিককে জীবন দিতে হয়েছিল। তাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধের সামনে আজই বক্তব্য রাখবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাঁর বক্তব্যে ইউরোপ ও আমেরিকার সম্পর্কের বিষয়ও উঠে আসবে। আগামীকাল শুক্রবার জার্মানির হ্যামবুর্গে জি-২০ সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথম সাক্ষাত হতে যাচ্ছে। আরো পড়ুন: 'অনেক মানুষকে গোপনে আটকে রেখেছে নিরাপত্তা বাহিনী' প্রেমে আর যৌনতায় আগ্রহ হারাচ্ছে জাপানী তরুণরা 'মা অসুস্থ, স্ত্রীর সঙ্গে দেখা হয়েছে ৮ বছর আগে, দেশে যেতে চাই' বনানীতে আবার জন্মদিনের কথা বলে 'ধর্ষণ' উত্তর কোরিয়ায় দরকার হলে সামরিক হস্তক্ষেপ: যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৪ সালে ওয়ারস বিদ্রোহে নিহতদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধের সামনে আজ ভাষণ দেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। | US President Donald Trump has argued that the future of Western civilisation is at stake in a keynote speech in the Polish capital Warsaw. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে এবং কোনরকম তথ্য প্রকাশ না করেই গত অগাস্ট মাসে স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের জন্য টিকার লাইসেন্স দেয় রাশিয়া। চিকিৎসা বিষয়ক সাময়িকী দা ল্যান্সেটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, যারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তাদের সবার শরীরে করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মতো অ্যান্টিবডি তৈরি হচ্ছে এবং বড় কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে এবং কোনরকম তথ্য প্রকাশ না করেই অগাস্ট মাসে স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের জন্য টিকার লাইসেন্স দেয় রাশিয়া। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর সক্ষমতা এবং নিরাপত্তা প্রমাণ করার জন্য এই পরীক্ষাটি খুবই ছোট আকারের। রাশিয়ার কাজের ধরণ নিয়ে পশ্চিমা বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলছেন, তারা হয়তো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছেন। তবে সমালোচনার বিপক্ষে পরীক্ষার ফলাফলকে স্বাগত জানিয়েছে মস্কো। গত মাসে প্রেসিডেন্ট ভ্লামিদির পুতিন বলেছেন, প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে টিকাটি। তার এক কন্যাকেও টিকা দেয়া হয়েছে। আরো পড়ুন: বাংলাদেশে রুশ ভ্যাকসিন তৈরির সম্ভাবনার কথা জানালেন মন্ত্রী করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে রাশিয়া কি লুকোচুরি করছে? করোনাভাইরাসের 'রুশ টিকার' পর সামাজিক মাধ্যমে পুতিন মিমের বন্যা রাশিয়ার টিকায় খোদ রুশদের কতটা আস্থা আছে? প্রতিবেদনে কী বলা হয়েছে? স্পুটনিক-ফাইভ নামের টিকাটির পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে গত জুন থেকে জুলাই মাসের মধ্যে। দা ল্যান্সেটের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৩৮জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবীর ওপর টিকার প্রয়োগ করা হয়েছে এবং তিন সপ্তাহ পরে তাদের আবার বুস্টার ডোজ দেয়া হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের বয়স ছিল ১৮-৬০ বছরের মধ্যে। তাদের পরবর্তী ৪২ দিন ধরে নজরদারিতে রাখা হয়। তাদের সবার শরীরে পরবর্তী তিন সপ্তাহের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে। বেশিরভাগের ক্ষেত্রে সাধারণ যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, তা হলো মাথা ব্যথা এবং হাড়ের সন্ধিস্থলে ব্যথা। তৃতীয় দফায় বিভিন্ন বয়সের ও ঝুঁকি শ্রেণীর ৪০,০০০ স্বেচ্ছাসেবীর ওপর পরীক্ষা করা হবে। সাধারণ সর্দিকাশি তৈরি করে, সেই অ্যাডেনোভাইরাসের উপাদান ব্যবহার করে রাশিয়ার এই টিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে বিবিসির স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিবেদক ফিলিপ্পা রক্সি বলছেন, যদিও যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে 'উৎসাহব্যঞ্জক, যথেষ্ট ভালো' বলে মন্তব্য পেয়েছে, কিন্তু এখনো এই টিকার সফলতার জন্য পরিষ্কারভাবে অনেকদূর যেতে হবে। যদিও দ্বিতীয় দফায় সব অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এটি করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম। সেই ক্ষমতার ব্যাপারটি এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। করোনাভাইরাস: সুস্থ হয়ে উঠতে কতদিন লাগে? নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস : কীভাবে বানাবেন আপনার নিজের ফেসমাস্ক আপনার কি দ্বিতীয়বার কোভিড ১৯ সংক্রমণ হতে পারে? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? 'হার্ড ইমিউনিটি' কী, এর জন্য কতটা মূল্য দিতে হবে? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় তিনি প্রশ্ন তুলে বলছেন, প্রাথমিক ফলাফল থেকে বলা যায় যে, স্বাস্থ্যবান মানুষজনের ভেতর টিকাটি ভালো কাজ করছে, যাদের বয়স ১৮-৬০ বছরের মধ্যে। কিন্তু বয়স্ক মানুষজন, যাদের বিশেষ স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে, তাদের জন্য এই টিকাটি কতটা কার্যকর? ''এটা শুধুমাত্র তখনি জানা যাবে যখন অনেক বেশি মানুষের ওপর, গণহারে মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হবে এবং তাদের জানানো হবে না যে, তাদের আসল টিকা দেয়া হয়েছে নাকি ডামি টিকা দেয়া হয়েছে। তখন শুধুমাত্র বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারছেন যে, ব্যাপক জনগোষ্ঠীর ওপর টিকাটি কতটা কার্যকর,'' বলছেন বিবিসির স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদদাতা। সেই সঙ্গে এখানে আরও স্বচ্ছতার প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি বলেন। টিকা তৈরিতে বহু গবেষণা চলছে সারা বিশ্বে। ''বিশ্ব জুড়ে এখন অনেক টিকার পরীক্ষা চলছে। কোন কোন স্থানে একটার চেয়ে আরেকটা ভালো কাজ করে, কোন কোন টিকা বিশেষ পরিস্থিতিতে এবং নির্দিষ্ট মানুষজনের ভেতর ভালো করছে। সুতরাং সবার জন্য কোনটা ভালো হবে, সেটা জানা জরুরি।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ট্রাম্প ও বাইডেনের অবস্থান কী ইরান ইউরেনিয়াম মজুদ সীমার চেয়ে '১০ গুণ' বাড়িয়েছে ১৩টি বাঁশের সাঁকোকে ব্রিজ দেখিয়ে টেন্ডার: ফাঁসের পর বাতিল, তদন্ত শুরু চীন-ভারত সঙ্কট: মস্কোতেই কি সমাধানের সূচনা হতে পারে টিকা তৈরিতে বহু গবেষণা চলছে সারা বিশ্বে। রাশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাশকো বলেছেন, নভেম্বর ডিসেম্বর মাস থেকে দেশটি আরও বেশি মানুষকে টিকা দেয়া শুরু করবে। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, বাজারে পুরোপুরি চালু করার আগে আরও পরীক্ষানিরীক্ষা করা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বিশ্বে ১৭৬টি টিকা আবিষ্কারের কাজ চলছে। এর মধ্যে মানব পর্যায়ের ট্রায়ালে রয়েছে ৩৪টি টিকা। তার মধ্যে আটটি রয়েছে তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার ধাপে। | Russian scientists have published the first report on their coronavirus vaccine, saying early tests showed signs of an immune response. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | অবসাদ নিরাময়ে কার্যকর অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট সোয়া এক লক্ষেরও বেশি মানুষের ওপর ৫২২টি পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে যে সাধারণ ঔষধের তুলনায ২১টি প্রচলিত অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট তীব্র অবসাদ দূর করতে সক্ষম। এ ধরনের ওষুধের দ্বারা আরও অনেক মানুষ উপকৃত হতে পারেন বলে স্বাস্থ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন 'ল্যানসেট'-এ প্রকাশিত হওয়া এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়। ইংল্যান্ডে ২০১৬ সালে এসব ওষুধের জন্য ছয় কোটি ৪৭ লক্ষ প্রেসক্রিপশন দেয়া হয়, যা ২০০৬ সালের তিন কোটি ১০ লক্ষ ব্যবস্থাপত্রের দ্বিগুণেরও বেশি। রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস বলেছে, এই গবেষণা "অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট সংক্রান্ত বিতর্কের অবসান" ঘটিয়েছে। গবেষণায় ব্যবহৃত ৫২২টি পরীক্ষা ছাড়াও অপ্রকাশিত বেশকিছু পরীক্ষার তথ্য সংযুক্ত করা হয়, যা থেকে প্রমাণিত হয় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে তীব্র অবসাদ দূর করতে অন্য যেকোনো চিকিৎসাপদ্ধতির চেয়ে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট বেশি কার্যকর। গবেষণা দলের প্রধান ও অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আন্দ্রেয়া সিপ্রিয়ানি বিবিসি'কে বলেন, "অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট কাজ করে কি-না, তা নিয়ে লম্বা সময় ধরে চলা বিতর্কের চূড়ান্ত সমাধান এই গবেষণা। " "সাধারণভাবে সুপারিশ করা অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট মাঝারি থেকে তীব্র অবসাদ নিরাময়ের ক্ষেত্রে কাজ করে, আর আমি মনে করি এটি রোগী ও চিকিৎসকদের জন্য খুবই ভাল খবর।" কার্যকারিতার বিচারে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট বিভিন্ন ধরনের ওষুধ সবচেয়ে বেশী কার্যকরী সবচেয়ে কম কার্যকরী নির্ভরযোগ্য প্রমাণ গবেষকরা বলেছেন এই গবেষণায় আবিষ্কৃত তথ্যের ভিত্তিতে চিকিৎসকরা রোগীদের সঠিক ওষুধ দিতে পারবেন। তবে তার অর্থ এই নয় যে সবারই ওষুধ পরিবর্তন করতে হবে। এর কারণ এই গবেষণায় বিভিন্ন বয়স ও লিঙ্গের ভিত্তিতে অবসাদের ধরন বিচার না করে ব্যক্তির ওপরে ওষুধের গড় প্রতিক্রিয়া বিচার করা হয়েছে। গবেষকরা বলেন, প্রাথমিক বিশ্লেষণের অধিকাংশ উপাত্তই আট সপ্তাহের চিকিৎসার ওপর ভিত্তি করে পাওয়া তথ্যের ওপর নির্ভর করে নেয়া হয়েছে। কাজেই দীর্ঘ সময় ধরে চলা অবসাদের ক্ষেত্রে এটি কার্যকর নাও হতে পারে। তাঁরা আরও বলেছেন, অবসাদ নিরাময়ের ক্ষেত্রে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্টই প্রথম চিকিৎসা হওয়া উচিত - বিষয়টি এমন নাও হতে পারে। ডা. সিপ্রিয়ানি বলেন, "যখন মানসিক চিকিৎসার মত কোন পদ্ধতি ব্যবহারের সুযোগ থাকে, তখন ওষুধ গ্রহণের বিষয়টি সবসময়ই এর পাশাপাশি বিবেচনায় নেয়া উচিত।" রয়্যাল কলেজ অব সাইকিয়াট্রিস্টস-এর প্রফেসর কার্মাইন প্যারিয়ান্তে বলেন, "এই প্রাথমিক বিশ্লেষণে অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্ট বিষয়ক প্রচলিত বিতর্কের অবসান হয়েছে। এই গবেষণায় পরিস্কারভাবে প্রমাণিত হয় এসব ওষুধ অবসাদ নিরাময় ও মনোভাব পরিবর্তনে সহায়ক।" "ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানির কাছে থাকা অপ্রকাশিত তথ্য পর্যালোচনা করা হয়েছে এই গবেষণায়। কাজেই এই গবেষণায় উঠে আসা তথ্য ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিগুলো দ্বারা প্রভাবিত হবে না।" ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের সাইকিয়াট্রিক এপিডেমোলজির প্রফেসর গ্লিন লেউইসের মতে এই গবেষণা অ্যান্টি-ডিপ্রেসান্টের কার্যকারিতার স্বপক্ষে "নির্ভরযোগ্য প্রমাণ" উপস্থাপন করেছে। তিনি আরো বলেন, "অ্যান্টি ডিপ্রেসান্ট মাঝেমধ্যে গণমাধ্যমে সমালোচিত হলেও এই গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে অবসাদগ্রস্ত মানুষের জন্য এটি কার্যকর।" | Scientists say they have settled one of medicine's biggest debates after a huge study found that anti-depressants work. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | মানবদেহের কোষে বিভি'র জীবাণু। প্লস বায়োলজি নামে এক জার্নালে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে বলা হচ্ছে যে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নারী দেহে এই রোগ বাসা বাঁধে। তবে বিভি কোন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ বা যৌনরোগ নয়। নারীর ভ্যাজাইনা বা যোনিতে সাধারণ যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে, সেখানে কোন ভারসাম্যের অভাব দেখা গেলে বিভি হতে পারে। যারা এই রোগের শিকার হন, তাদের দেহে বিভি'র কোন উপসর্গ নাও দেখা যেতে পারে। তবে তাদের যোনি থেকে দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসৃত হয়। মানুষের মুখে যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে তা নারীর যৌনাঙ্গে ছড়িয়ে পড়লে কী প্রভাব পড়ে, এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সেটাই দেখার চেষ্টা করেছেন। ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস কী? বিভি এমনিতে কোন সিরিয়াস অসুখ না। তবে যেসব নারী বিভি-তে আক্রান্ত হন, তারা অন্যান্য যৌনরোগের শিকার হতে পারেন এবং তাদের মূত্রনালিতে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে। সন্তানসম্ভবা নারীর ক্ষেত্রে বিভি-তে আক্রান্ত নারীর সন্তান স্বাভাবিক সময়ের আগেই জন্ম নেয়ার ঝুঁকি রয়েছে। কীভাবে জানবেন আপনার বিভি হয়েছে? বিভি নারী স্বাস্থ্যের একটা সাধারণ সমস্যা। যাদের ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হয়, তাদের যোনি থেকে এক ধরনের রস নিঃসৃত হয় এবং তাতে উৎকট আঁশটে গন্ধ থাকে। যোনি থেকে যে স্বাভাবিক রস বের হয়, বিভি হলে তার রঙ এবং ঘনত্বে পরিবর্তন দেখা যায়। সেই যোনি রস পাতলা পানির মত হয় এবং দেখতে অনেকটা ঘোলাটে সাদা হয়। আপনার বিভি হয়েছে কিনা, তা আপনার ডাক্তার বলে দিতে পারবেন। যোনি রসের নমুনা পরীক্ষা করে বিভি-র উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। পরীক্ষায় সংক্রমণের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট, জেল কিংবা ক্রিম ব্যবহার করে সংক্রমণ দূর করা হয়। নতুন গবেষণায় কী জানা যাচ্ছে? বিভি নেই যেসব নারীর, তাদের যোনিতেও বহু 'ভাল' ব্যাকটেরিয়া থাকে। এদের বলা হয় ল্যাকটোব্যাসিলাই। এরা পিএইচ লেভেল কমিয়ে যোনিপথের অ্যাসিডিক বা অম্ল ভাব ধরে রাখে। কিন্তু কখনও কখনও এই স্বাস্থ্যকর ভারসাম্যটি বিনষ্ট হলে যোনিতে অন্যান্য জীবাণুর বংশবৃদ্ধি বেড়ে যায়। এ রকমটা কেন ঘটে, তা পুরোপুরিভাবে স্পষ্ট না। তবে নীচের কারণগুলোর জন্য বিভি হতে পারে: আরও পড়তে পারেন: কুমারীত্ব পুনরুদ্ধার: কেন নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে? ভারতে ঋতুমতী নারীরা কেন জরায়ু ফেলে দিচ্ছেন? নারী স্বাধীনতা বলতে কী বোঝেন নারীরা এবং পুরুষেরা? প্লস বায়োলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে, মানুষের মুখ গহ্বরে মাড়ির রোগ কিংবা ডেন্টাল প্লেক থাকলে তাতে যে ব্যাকটেরিয়া দেখা যায়, তার কারণে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে। এই ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতিকর আচরণ সম্পর্কে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা মানুষের যোনি এবং ইঁদুরের ওপর এই গবেষণা চালিয়েছেন। তারা দেখেছেন, বিশেষ একটি ব্যাকটেরিয়া - ফুসোব্যাকটেরিয়াম নিউক্লিয়েটাম - বিভি'র সাথে সম্পর্কিত ব্যাকটেরিয়াগুলোর বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই গবেষণার সাথে জড়িত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. অ্যামান্ডা লুইস এবং তার সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, ওরাল সেক্স থেকে কোন কোন সময় নারীর যোনিতে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে, এই গবেষণা থেকে সেই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। দুটি নারীর মধ্যে লেসবিয়ান সম্পর্কসহ বিভিন্ন ধরনের যৌন সঙ্গমের ফলে বিভি হতে পারে - একথা বিশেষজ্ঞদের অজানা নয়। ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সেক্সসুয়াল হেলথ-এর মুখপাত্র অধ্যাপক ক্লডিয়া এস্টকোর্ট বলছেন, এই গবেষণার মধ্য দিয়ে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা আরও পরিষ্কার হবে। অন্য কোন সমস্যা থাকুক বা না থাকুক, ওরাল সেক্সের মাধ্যমে যৌনরোগের জীবাণু এবং নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া স্ত্রী অঙ্গে প্রবেশ করতে পারে। | Oral sex may create an environment for a common vaginal condition called bacterial vaginosis or BV, according to research in the journal PLoS Biology. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | টিবল্ট এখন হাত-পা নাড়াতে পারেন প্যারালাইসিস সারানোর উপায় ৩০ বছর বয়সী টিবল্ট বলছিলেন, 'মনে হচ্ছিলো, এটি যেন চাঁদে প্রথম মানুষ হাঁটার মতন মূহুর্ত'। দুই বছর আগে এক দুর্ঘটনায় প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে যাবার পর তিনি যখন প্রথম তার হাত-পা নাড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন তখন তার কেমন লাগছিলো সে কথাই বলছিলেন তিনি। রোবো-স্যুট পড়ে ল্যাব বা পরীক্ষাগারের ভেতরে তার নড়াচড়া, বিশেষ করে হাঁটা, এখনো ঠিক স্বাভাবিকতার পর্যায় পড়ে না। কিন্তু গবেষকরা আশাবাদী যে, একদিন এই স্যুট বা পদ্ধতি হয়তো রোগীদের জীবনমান পাল্টাতে পারবে। তবে, পক্ষাঘাতগ্রস্ত মানুষ যেন তাদের হাত ও বাহু নাড়া-পাড়া করতে পারে সে জন্য, ইতোমধ্যেই, তাদের শরীরের নার্ভ বা স্নায়ুগুলোকে 'রিওয়্যার' করা হয়েছে বা পুন:সংযোগ দেয়া হয়েছে। মিলার অনিরাময়যোগ্য রোগ সারাতে নতুন ওষুধ বানানো হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার অনেক রোগী এখন নিজে নিজেই খেতে পারছে, মেক-আপ করতে পারছে, তালায় চাবি ঘুরিয়ে খুলতে পারছে, টাকা গুণা-গুণতি করতে পারছে এবং কম্পিউটারে টাইপও করতে পারছে। একজন রোগীর জন্য বানানো অতুলনীয় ওষুধ মিলা মেকাভিচের চিকিৎসক রীতিমতো অসাধ্য সাধন করেছেন। মস্তিষ্কের এক গুরুতর রোগে আক্রান্ত এক মেয়ে শিশুর জন্য সেই চিকিৎসক এমন একটি ওষুধ বানিয়েছেন যেটি শুধু তার জন্যই তৈরি করা হয়েছে এবং এর জন্য তিনি সময় নিয়েছেন এক বছরেরও কম। মস্তিষ্কের দুরারোগ্য রোগ 'ব্যাটন ডিজিস'-এ আক্রান্ত হয় ৮ বছর বয়সী মিলা। বোস্টনে মিলার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তার ডিএনএ'র পুরো জিনোম সিকোয়েন্স করে তার জেনেটিক কোড বের করে এবং কোন জেনেটিক মিউটেশনের কারণে তার এই রোগ হলো সেটিও তারা বের করে ফেলতে সক্ষম হন। তার জেনেটিক মিউটেশনের ত্রুটি খুঁজে বের করতে সফল হবার পর চিকিৎসকরা মিলাকে সুস্থ করার বিষয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠে। এরপর তারা একটি বিশেষ ওষুধ তৈরি করে এবং মিলার উপরে পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে। পাশাপাশি, পরীক্ষাগারে কিছু প্রাণীর দেহেও ওষুধটি ব্যাবহার করা হয়। পরে ওষুধটি ব্যাবহারের জন্য মার্কিন ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন বা খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের অনুমতিও পায়। সাধারণত কোনো একটি ওষুধ ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রোগীদের হাত পর্যন্ত পৌঁছাতে-পৌঁছাতে সময় লাগে অন্তত দশ-পনেরো বছর। কিন্তু মার্কিন চিকিৎসকদের দলটি মিলার জন্য এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই ওষুধ তৈরিতে সক্ষম হয়। মিলা যদিও এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি কিন্তু এখন আগের চেয়ে বহু-গুণ ভালো রয়েছে। সু বারেলের শরীরে এখন আর তীব্র ব্যথা নেই জিন-সাইলেন্সিং ওষুধ নতুন ধরণের একটি ওষুধ—যেটিকে ডাকা হচ্ছে জিন-সাইলেন্সিং - নিরাময় অযোগ্য অসুখের চিকিৎসা করতে সমর্থ হয়েছে। জিন হচ্ছে শরীরের ডিএনএ-এর অংশ। জিনের মধ্যেই থাকে প্রোটিন যেমন হরমোন, এনজাইমের মতন বিভিন্ন প্রয়োজনীয় রসদের ব্লুপ্রিন্ট বা নীলনকশা। আমাদের আমাদের ডিএনএ সেলের নিউক্লিয়াসের ভেতরে বন্দী এবং সেলের প্রোটিন উৎপাদন প্রক্রিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন। যেজন্য আমাদের মানবদেহ 'শর্ট স্ট্র্যান্ড' বা ক্ষুদ্রাকৃতির 'জেনেটিক কোড' বা বংশানুক্রম তথ্যাদি ব্যাবহার করে। বার্তাবাহক এই জেনেটিক কোডের নাম 'আরএনএ'। কিন্তু নতুন এই জিন-সাইলেন্সিং ওষুধটি বার্তাবাহক আরএনএকে বিনাশ করে দেয়। এই ওষুধের বদৌলতেই, পরফিরিয়ায় আক্রান্ত সু বারেল এখন তার তীব্র ব্যথার আক্রমণ থেকে মুক্ত। এছাড়া ভিনসেন্ট ও নীল নিকোলাসও এমিলোইডোসিস রোগের চিকিৎসা হিসেবে এখন এই জিন-সাইলেন্সিং ওষুধ সেবন করছেন। ভিনসেন্ট আর নেইল জিন সাইলেন্সিং চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগ সারাতে ভাইরাস বিভিন্ন ধরণের ভাইরাসের একটা সমন্বয় বা ককটেলের বদৌলতেই প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল ইসাবেল কার্নেল হোল্ডাওয়ে। গুরুতর এক ব্যাকটেরিয়ার কারণে দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয় এই কিশোরী। তখন তার বাঁচার আশা ছিল এক শতাংশেরও কম। তার চামড়ায় পুঁজে ভরা কালো রঙের বড়-বড় ক্ষত দেখা দিচ্ছিলো এবং সেগুলো থেকে তার শরীরে ইনফেকশন বা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছিলো। তার লিভার অকার্যকর হয়ে পড়ছিল এবং তার শরীরের ভেতরে ব্যাকটেরিয়া জাঁকিয়ে বসে 'কলোনি' বা আবাস গেড়েছিল। তখন তার শরীরের ব্যাকটেরিয়াদের বিনাশ করতে গ্রেট ওরমোন্ড স্ট্রিট হসপিটালের ডাক্তাররা 'ফেজ থেরাপি' বলে একধরনের ভাইরাস ব্যাবহার করে। 'ফেজ থেরাপি' তখনো ছিল অপরীক্ষিত। 'ফেজ থেরাপি' কখনোই মূলধারার চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি। তাছাড়া, এন্টিবায়োটিক আবিষ্কারের পর 'ফেজ থেরাপি' যেন অনেকটা পিছনে পরে থাকা বিষয়। কিন্তু 'সুপারবাগ'—যেটি কিনা এন্টিবায়োটিক প্রতিরোধী শক্তিশালী জীবাণু— দেখা দেয়ার পর থেকে এখন আবার ফেজ-থেরাপি নিয়ে মনোযোগ বাড়ছে। ইসাবেলের ঘটনাটিও তেমনি একটি ঘটনা। শার্লট স্টিভেনসন নতুন পথে ক্যান্সার ওষুধ বেলফাস্টের দুই বছর বয়সী কন্যা শিশু শার্লট স্টিভেনসন। ক্যান্সারের নতুন আবিষ্কৃত বৈপ্লবিক ওষুধ ব্যবহার করে সে উপকৃত হয়েছে। লেরোটেকটিনিব নামের ওষুধটি এখন ইউরোপ জুড়ে ব্যাবহারের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই ওষুধটি এমনভাবে বানানো হয়েছে যেটি জেনেটিক অস্বাভাবিকতা আছে এমন টিউমারগুলোকে লক্ষ্য করে। শার্লটের শরীরের বিভিন্ন অংশ যেমন সারকোমা বা সংযোজক কোষ, মস্তিষ্ক, কিডনি, থাইরয়েডসহ এবং অন্যান্য ক্যান্সার পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়া ক্যান্সারের ইমিউনোথেরাপি ইতোমধ্যেই অন্যান্য সাফল্য অর্জন করেছে। ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়তে রোগীর ইমিউন সিস্টেম বা নিজের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এই ওষুধ ব্যবহৃত হয়। ত্বকের ক্যান্সার বা মেলানোমায় আক্রান্ত অর্ধেক রোগীই এখন সুস্থ হয়ে উঠছেন। অথচ মাত্র এক দশক আগেও তা ছিল দুরারোগ্য ব্যাধি। বছর দশেক আগেও বাস্তবতাটা ছিল এমন যে, মেলানোমা বা ত্বকের ক্যান্সার ধরার পড়ার পর ৫ বছর হবার আগেই বেশির ভাগ রোগী মারা যেতো। এমনকি কয়েক মাসের মধ্যেই বহু মানুষ মারা যেতো। আর মেলানোমা ধরা পড়ার পর ৫ বছর বেঁচে থাকার সংখ্যাটি ছিল প্রতি ২০জনে মোটে একজন। ডিএনএতে পরিবর্তন এনে রোগ সারানোর চেষ্টা ডিমেনশিয়া ঠেকাতে নতুন ওষুধ আলঝেইমার বা স্মৃতিভ্রমের মতন রোগের তীব্রতাকে কমিয়ে দিতে পারে এমন ওষুধ আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন একটি ওষুধ-প্রস্তুতকারী কোম্পানি। 'এডুকেনাম্ব' নামের এই ওষুধটি মানুষের মস্তিষ্কের ভেতরে জমা বিষাক্ত প্রোটিন দূর করতে পারে। গত অক্টোবরে এই ওষুধের ঘোষণাটি দেয়া হলে সেটি বিস্ময় তৈরি করেছিল। বায়োজিন কোম্পানির দেয়া লিখিত সেই ঘোষণায় বলা হয় যারা নিয়মিত সর্বোচ্চ মাত্রায় এই ওষুধ সেবন করছে তারা স্মৃতি ও শব্দ মনে রাখাসহ দৈনন্দিন কাজ যেমন বাজার-সদাই করা, কাপড়-চোপড় ধোওয়া এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজও ভালোভাবে করতে পারছে। এই ওষুধটিকে এখনো বাজারে ব্যাবহারের অনুমতি দেয়া হয়নি। যদি ওষুধটি অনুমোদন পায় তাহলে আধুনিক ওষুধের ইতিহাসে সেটি হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড পড়ার ব্যবস্থা উদ্ভাবিত হয়েছে নতুন ধরনের ডিমেনশিয়া ইতোমধ্যে বিশেষজ্ঞরা নতুন আরেক প্রকারের ডিমেনশিয়া বা স্মৃতি ভুলে যাওয়া রোগের সন্ধান দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগে হয়তো রোগটিকে ভুলভাবে নিরূপণ করা হচ্ছিলো। ডিমেনশিয়া হচ্ছে মস্তিষ্কের অনেক রোগের উপসর্গ এবং স্মৃতি ভুলে যাওয়াটাই এর প্রধান লক্ষণ। আলঝাইমার হলো ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে 'কমন' বা পরিচিত ধরণ। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরণের ডিমেনশিয়া রয়েছে যেমন ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া, ডিমেনশিয়া উইথ লিউই বডিস, ফ্রন্ট টেম্পোরাল ডিমেনশিয়া, পার্কিন্সন ডিজিস ডিমেনশিয়া ইত্যাদি। এই তালিকায় এখন নতুন যুক্ত হলো নাম 'লিম্বিক-প্রিডোমিনেন্ট এজ রিলেটেড টিডিপি-৪৩ এনসিফেলোপেথি' বা সহজভাবে বললে 'লেট'। আরো পড়ুন: ২০১৯ সালের ব্যতিক্রমী কিছু খবর কেন এত আতঙ্কিত উত্তর প্রদেশের মুসলিমরা উৎসবে নারীর নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত হলো? যুক্ত যমজদের আলাদা করা মাথায় জোড়া লাগানো ছিল দুই যমজ শিশু সাফা ও মারোয়া। তারা কখনোই পরস্পরের মুখ দেখতে পারেনি। এইরকম মাথা জোড়া লাগানো শিশু কত জন্ম নেয় তার কোনো অফিশিয়াল তথ্য না থাকলেও জানা যায়, আনুমানিক প্রতি আড়াই মিলিয়ন শিশু জন্ম নিলে হয়তো একটি ঘটনা এমন হতে পারে। অবশ্য, এসব ক্ষেত্রে জোড়া লাগানো শিশুরা একদিনের বেশি বাঁচে না। সাফা ও মারোয়াকে আলাদা করতে মাসের পর মাস ধরে কাজ করেছে হাসপাতালের শতাধিক মানুষ এবং করতে হয়েছে অনেকগুলো অপারেশন। মৃত্যুর পরেও জীবিত শূকরের মস্তিষ্ক ২০১৯ সালে যেন অস্পষ্ট হয়ে উঠেছে জীবন আর মৃত্যুর বিভেদ রেখা। একটি শূকরকে জবাই করার প্রায় ঘণ্টা চারেক পর তার মস্তিষ্কের একটি অংশকে পুনরায় জীবিত করা সম্ভব হয়েছে। গবেষণা বলছে, মস্তিষ্কের কোষের মৃত্যু প্রক্রিয়া আটকে দিয়ে মস্তিষ্কের কিছু অংশের যোগাযোগ পুনরায় স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল। অসুখ ঠেকাতে ইসাবেল কার্নেল ভাইরাস ব্যবহার করে চিকিৎসা নেন শিরশ্ছেদ করা মস্তিষ্কে কৃত্রিম রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে এই পুনরুজ্জীবন ঘটানো হয়। মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হবার মিনিট কয়েকের মধ্যেই মস্তিষ্কের অবনমন শুরু বলে যে কথাটি বিশ্বাস করা হতো, নতুন এই বিস্ময়কর আবিষ্কার সেই কথাটিকে চ্যালেঞ্জ করে এবং মস্তিষ্কের চিকিৎসায় নতুন পথ খুলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে। ডিএনএ-কে সম্পাদনা করার নয়া প্রযুক্তি ডিএনএতে থাকা যে কোডের কারণে নানান রোগ-বালাই হয় সেগুলো ৮৯ শতাংশ পর্যন্ত সারানো সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন এই প্রযুক্তির নাম 'প্রাইম এডিটিং'। প্রাইম এডিটিং-কে 'জেনেটিক ওয়ার্ড প্রসেসর' বলে অভিহিত করা হচ্ছে। প্রায় ৭৫ হাজার ভিন্ন-ভিন্ন মিউটেশন রয়েছে যেগুলো মানুষের দেহে রোগের কারণ হয়। গবেষকরা বলছেন, প্রাইম এডিটিং দিয়ে সম্পাদনার মাধ্যমে দশটার মধ্যে ৯টাই সারিয়ে তোলা সম্ভব। মানুষের চিন্তাকে কণ্ঠদান বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরণের ব্রেইন ইমপ্ল্যান্ট পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে যেটি মানুষের মনকে পড়তে পারে এবং সেটিকে কথায় রূপান্তর করতে পারে। এই পদ্ধতিতে প্রথমে একটি 'ইলেক্ট্রোড' মানুষের মস্তিষ্কে স্থাপন করা হয়। এই ইলেক্ট্রোডের কাজ হচ্ছে মানুষের ব্রেন থেকে ইলেক্ট্রনিক সিগন্যাল বা বৈদ্যুতিক নির্দেশনা গ্রহণ করে সেটি ঠোঁট, গলা, কণ্ঠনালী ও চোয়াল পর্যন্ত পৌঁছে দেয়া। তারপর শক্তিশালী কম্পিউটারের মাধ্যমে এই মুখ ও গলার মুভমেন্ট বা নড়াচড়া প্রত্যক্ষ করে বিভিন্ন শব্দ উৎপন্ন করবে। এটি হয়তো নির্ভুল নয়। সানফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার একটি টিম জানিয়েছে এই প্রযুক্তি মানুষকে, বিশেষ করে যারা কোনো রোগের কারণে কথা বলার শক্তি হারিয়েছে, আবার কথা বলার সুযোগ ফিরিয়ে দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে এ বছর ভেপিং বা ই-সিগারেট সেবন সংক্রান্ত রোগে ৫০জন মানুষ মারা গেছেন সিগারেট ছাড়তে ই-সিগারেট এবছর ই-সিগারেটকে ব্যাপক নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। ই-সিগারেট ব্যাবহারের ফলে ফুসফুসের জটিলতা-জনিত কারণে এবছর যুক্তরাষ্ট্রে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে ২,৪০০ জন আর এর মধ্যে মৃত্যু বরন করেছে ৫০জন। এক কিশোর ই-সিগারেট টানতে গিয়ে ফুসফুসে দম আটকে মরার অবস্থা তৈরি হয়। তবে, বিশেষজ্ঞরা ই-সিগারেটকে প্রকৃত সিগারেট বা তামাকের চেয়ে নিরাপদ বলে বর্ণনা করছেন। পাশাপাশি, ই-সিগারেট খেলে সিগারেট বা ধূমপান সহজে ছাড়া সম্ভব বলেও মনে করা হয়। দি নিউ ইংল্যান্ড মেডিকেল জার্নালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ধূমপান ছাড়ার পন্থা হিসেবে যারা ই-সিগারেট ধরেছিল তাদের ১৮ শতাংশই সফল হয়েছে। কিন্তু যারা প্রথাগতভাবে নানান পন্থা অবলম্বন করে ধূমপান চাড়তে চাইছিলো তাদের মধ্যে এই মাত্রা ছিল ৯.৯ শতাংশ। আরো যেসব চোখ-ধাঁধানো খবর * মায়ের গর্ভাবস্থাতেই শিশুদের হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের একটি ছবি প্রকাশ করে গবেষকেরা সাড়া জাগিয়েছেন। * হামের কারণে শরীরের ইমিউন সিস্টেমের উপরে এমনি ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে যা ইনফেকশন বা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়ার ক্ষেত্রে মানুষের শরীরকে দুর্বল করে দেয়। * ইটিং-ডিজঅর্ডার বা খাবার নিয়ে ঝামেলা বিষয়ে 'এনোরেক্সিয়া' নামে যে অসুখ রয়েছে সেটির বাস একই সঙ্গে শরীরে এবং মনে। ডিএনএ-তে কিছু পরিবর্তনের ফলে এটি হয়। * বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করে মানুষের সহ্যশক্তির সীমানা নির্ধারণ করেছেন। তাদের মতে, মানুষের সহ্য-ক্ষমতা ৩০০০-মাইল দৌড়ের সমান, যা টুর ডে ফ্রান্স এবং অন্যান্য অভিজাত ইভেন্টের সমান। * অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কলা, বাদাম ও ছোলার সমন্বয়ে বানানো ডায়েটে অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখে। * মানব-মস্তিষ্কের উপরে করা নতুন এক গবেষণার তথ্য বলছে, সারা জীবন ধরে মানুষের মস্তিষ্কের নতুন সেল তৈরি হতে থাকে। * হার্ট অ্যাটাকের পরে স্টেম সেলের যে ক্ষতি হয় সেগুলোকে সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে 'পাম্পিং প্যাচ' গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রোখে। * ম্যালেরিয়া ছড়ায় যে মশা, সেটিকে নিধনে একটি ফাঙ্গাস বা ছত্রাক— যেটি জেনেটিক্যালি মটিফায়েড, সেটি স্পাইডার টক্সিন উৎপন্ন করে— ভূমিকা রাখতে পারে। * এটি হয়তো বিস্ময়কর নাও ঠেকতে পারে, কিন্তু আমরা যে খাবার খাই এর ফলে ১১ মিলিয়ন মানুষ প্রতিবছর দ্রুত-মৃত্যু বরণ করছে। * বিজ্ঞানীরা ক্যান্সারকে এমনভাবে ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র অংশ বিভক্ত করে এর দুর্বলতাগুলো আত্মস্থ করেছেন এবং ক্যান্সার চিকিৎসার নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। *স্বাস্থ্যকর জীবন-যাপন করার মাধ্যমে যে কেউ তার জীবনে ডিমেনশিয়া হবার আশঙ্কা প্রায় তিন ভাগ কমিয়ে ফেলতে পারে। | It has been a remarkable year of promise in medical science - from inventing ways of treating the untreatable to reversing paralysis and keeping the brain alive after death. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | ইরানের আয়াতোল্লাহ খামেনী ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, এসব বিদেশি শক্তি সবসময় "দুঃখ দুর্দশা" বয়ে এনেছে এবং এখানে "অস্ত্র প্রতিযোগিতা" তৈরি করা উচিত নয়। সৌদি আরবের দুটি তেল স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলার পর সৌদি আরবে মার্কিন সৈন্যসংখ্যা বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র । এই দুটো দেশই এই হামলার জন্যে ইরানকে দায়ী করছে। ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা দীর্ঘদিনের, কিন্তু এবছর সেই উত্তেজনা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদেরকে প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে। কিন্তু সবশেষ সৌদি আরবের আবকাইক তেলক্ষেত্র ও খুরাইস তেল শোধনাগারে গত ১৪ই সেপ্টেম্বরের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর উপসাগরীয় অঞ্চলে নতুন করে যুদ্ধ শুরু হওয়ার আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর শুক্রবার বলেছে যে সৌদি আরবের অনুরোধে তারা সেখানে সৈন্য প্রেরণ করবে, তবে এই সংখ্যা হাজার হাজার হবে না। যুক্তরাষ্ট্র মূলত সৌদি আরবের বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার উপরেই জোর দেবে। ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি এর পর বলেছেন, বিদেশি শক্তি এ অঞ্চলে অতীতেও বিপর্যয় নিয়ে এসেছে এবং তিনি তাদেরকে এখান থেকে দূরে থাকতে বলেন। ইরানের রেভ্যুলিউশনারি গার্ড বাহিনী এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে। এতো শত্রুতার কারণ সৌদি আরব ও ইরান -শক্তিশালী দুটো প্রতিবেশী দেশ- আঞ্চলিক আধিপত্য বজায় রাখতে তারা বহু বছর ধরেই প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। বহু দশক ধরে চলে আসা এই শত্রুতা আরো তীব্র হয়েছে দুটো দেশের ধর্মীয় পার্থক্যের কারণে। এ দুটো দেশ ইসলাম ধর্মের মূল দুটো শাখার অনুসারী - ইরান শিয়া মুসলিম বিশ্ব এবং অন্যদিকে সৌদি আরব সুন্নি মুসলিম জগতের শীর্ষ শক্তি হিসেবে বিবেচিত। ধর্মীয় এই বিভাজন মধ্যপ্রাচ্যের বাকি মানচিত্রেও দেখা যায়। বাকি দেশগুলোর কোনটিতে হয়তো শিয়া আবার কোনটিতে সুন্নি অনুসারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাদের কেউ ইরানের সাথে, আবার কেউ সৌদি আরবের সাথে ঘনিষ্ঠ। ঐতিহাসিকভাবেই সৌদি আরব - যেখানে ইসলামের জন্ম হয়েছে - তারা নিজেদেরকে মুসলিম বিশ্বের নেতা বলে দাবী করে। কিন্তু ১৯৭৯ সালে এই দাবীকে চ্যালেঞ্জ করে ইরানের ইসলামি বিপ্লব। ইরান ও সৌদি আরবের শত্রুতার একটি উদাহরণ ইয়েমেনের যুদ্ধ। আরো পড়তে পারেন: সৌদিতে আঘাত হানে ১৮টি ড্রোন আর ৭টি ক্ষেপণাস্ত্র অস্থির মধ্যপ্রাচ্যে কি আরেকটি সর্বাত্মক যুদ্ধ আসন্ন? সৌদি তেল শোধনাগারের ওপর ড্রোন হামলা কিসের ইঙ্গিত এই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে ওই অঞ্চলে নতুন এক ধরনের রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয় - এক ধরনের বিপ্লবী মোল্লাতান্ত্রিক রাষ্ট্র - এবং তাদের একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে ইরানের বাইরেও এমন রাষ্ট্রের মডেল ছড়িয়ে দেওয়া। পরিস্থিতি কিভাবে এতো খারাপ হলো? গত ১৫ বছরে একের পর এক নানা ঘটনার জের ধরে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে বিভেদ বাড়তে বাড়তে আজকের পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে। ইরানের বিরোধী অন্যতম বৃহৎ শক্তি ছিলেন ইরাকি প্রেসিডেন্ট ও সুন্নি আরব নেতা সাদ্দাম হোসেন। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত সামরিক অভিযানে তাকে ক্ষমতা থেকে হটানো হয়। কিন্তু এর ফলেই ইরানের সামনে থেকে বড় একটি সামরিক বাধা দূর হয়, খুলে যায় বাগদাদে শিয়া-প্রধান সরকার গঠনের পথ। শুধু তাই নয়, এরপর থেকে দেশটিতে ইরানের প্রভাব বেড়েই চলেছে। এরপর ২০১১ সাল থেকে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। সরকারবিরোধী এসব আন্দোলন, যা 'আরব বসন্ত' নামে পরিচিত, পুরো অঞ্চল জুড়েই বিভিন্ন দেশকে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করে তোলে। এই টালমাটাল পরিস্থিতিকে সৌদি আরব ও ইরান নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশে তাদের প্রভাব বাড়ানোর উদ্দেশ্যে, বিশেষ করে সিরিয়া, বাহরাইন এবং ইয়েমেনে। এর ফলে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ, অবিশ্বাস ও শত্রুতা আরো বৃদ্ধি পেতে থাকে। ইরানের প্রভাব বাড়তে থাকায় মরিয়া হয়ে উঠেছে সৌদি আরব ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে শত্রুতা দিনে দিনে ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ আঞ্চলিক নানা লড়াই-এ বিভিন্নভাবে ইরান জয়ী হচ্ছে। বিশেষ করে এটা ঘটেছে সিরিয়াতে। সেখানে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরোধী বিভিন্ন বিদ্রোহী গ্রুপকে সমর্থন দিয়ে আসছিল সৌদি আরব, কিন্তু সিরিয়ার সরকারি বাহিনী রাশিয়া ও ইরানের সাহায্য নিয়ে তাদেরকে হটিয়ে দিতে সমর্থ হচ্ছে। তাই সৌদি আরব এখন মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে ওই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ইরানি প্রভাবের লাগাম টেনে ধরতে। কিন্তু সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সামরিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার কারণে সেখানে আঞ্চলিক উত্তেজনা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইরানের প্রভাব ঠেকাতে যেকোন ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আরো পড়তে পারেন: সৌদি আরবে হামলার ঝুঁকি ইরান কেন নেবে? নিষেধাজ্ঞা কী প্রভাব ফেলছে ইরান-বাংলাদেশ সম্পর্কে? তেল ক্ষেত্রে হামলার প্রতিশোধ নেবে সৌদি আরব সৌদি যুবরাজ এখন প্রতিবেশী ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের সাথে যুদ্ধ করছেন। এই যুদ্ধের একটি উদ্দেশ্য সেখানে ইরানি প্রভাব প্রতিহত করা। কিন্তু চার বছর পর মনে হচ্ছে, এই যুদ্ধ সৌদি আরবের জন্যে ব্যয়বহুল এক বাজিতে পরিণত হয়েছে। হুথিদের কাছে অস্ত্র সরবরাহ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইরান। কিন্তু জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি প্যানেলের দেওয়া কয়েকটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তেহরান হুথি বিদ্রোহীদেরকে অস্ত্র ও প্রযুক্তি দিয়ে বড় রকমের সাহায্য ও সমর্থন দিচ্ছে। অন্যদিকে, লেবাননেও আছে ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র শিয়া মিলিশিয়া গ্রুপ হেযবোল্লাহ - যারা শক্তিশালী একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, একই সাথে নিয়ন্ত্রণ করছে সশস্ত্র যোদ্ধাদের বিশাল একটি বাহিনীকে। অনেক পর্যবেক্ষক বিশ্বাস করেন যে ২০১৭ সালে লেবাননের প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরি সৌদি আরবে গেলে তাকে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য করেছিল সৌদি আরব। মি. হারিরি পরে সৌদি আরব থেকে লেবাননে ফিরে গেছেন ঠিকই, কিন্তু পদত্যাগের বিষয়টিকে তিনি স্থগিত করে রাখেন। পেছনে 'বাইরের শক্তির' খেলাও আছে বিবিসির বিশ্লেষক জনাথন মার্কাস বলছেন, এখানে বাইরের শক্তির খেলাও আছে। সৌদি আরবকে সাহস যোগাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, আর তেহরানকে নিয়ন্ত্রণে সৌদি আরবকে সমর্থন দিচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের একটি ভয় হচ্ছে, সিরিয়ায় ইরানপন্থী যোদ্ধারা জয়ী হতে থাকলে একসময় তারা তাদের সীমান্তের কাছে চলে আসতে পারে। ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে ২০১৫ সালে যে পরমাণু চুক্তি সই হয়েছিল ইসরায়েল ও সৌদি আরব তার তীব্র বিরোধিতা করে আসছিল। তাদের কথা ছিল, এরকম একটি চুক্তির মাধ্যমে পারমাণবিক বোমা বানানোর আকাঙ্ক্ষা থেকে ইরানকে বিরত রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। কারা তাদের আঞ্চলিক মিত্র? মোটা দাগে বলতে গেলে মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র শিয়া-সুন্নি বিভাজনে বিভক্ত। সৌদি শিবিরে আছে উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্যান্য সুন্নি দেশগুলো- সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিশর এবং জর্ডান। অন্যদিকে ইরানের সাথে আছে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ, লেবাননের হেযবোল্লাহ গ্রুপ। ইরাকের শিয়া নিয়ন্ত্রিত সরকারও ইরানের মিত্র, আবার একই সাথে তারা ওয়াশিংটনের সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের সাথে যুদ্ধে তারাও যুক্তরাষ্ট্রের উপর নির্ভরশীল। ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রোহানি বলেছেন, বিদেশি শক্তি সবসময় উপসাগরীয় অঞ্চলে "দুঃখ দুর্দশা" বয়ে এনেছে। সৌদি-ইরান শত্রুতার প্রভাব মধ্যপ্রাচ্য ও উপসাগরীয় অঞ্চলে এই দুটো দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে নানা কারণেই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দীর্ঘদিনের শীতল যুদ্ধের সাথে তুলনা করা যেতে পারে। ইরান ও সৌদি আরব একে অপরের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করছে না ঠিকই, কিন্তু বলা যায় যে তারা নানা ধরনের ছায়া-যুদ্ধে লিপ্ত রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন সংঘাতে তারা একেক গ্রুপকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিচ্ছে যেগুলোর একটি আরেকটির বিরোধী। এই সমীকরণের একটি প্রকৃষ্ট উদাহরণ হতে পারে সিরিয়া। উপসাগরীয় সমুদ্রপথেও পেশীশক্তি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। এই চ্যানেল দিয়ে সৌদি আরবের তেল পাঠানো হয় বিভিন্ন দেশে। সম্প্রতি এরকম বেশ কয়েকটি তেলের ট্যাংকারে হামলার জন্যে ওয়াশিংটন ইরানকে দায়ী করেছে। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তেহরান। সরাসরি যুদ্ধ লেগে যেতে পারে? এখনও পর্যন্ত ইরান ও সৌদি আরব প্রত্যক্ষভাবে বিভিন্ন যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। কিন্তু কখনো তারা নিজেদের মধ্যে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ার প্রস্তুতি নেয়নি। তবে সৌদি আরবের অবকাঠামোতে হুথিদের সাম্প্রতিক বড় ধরনের হামলা তেহরান ও রিয়াদের শত্রুতায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে। তার সাথে আছে উপসাগরীয় চ্যানেলে তেলবাহী জাহাজ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরির বিষয়টিও। অনেকেই মনে করছেন, এসবের ফলে এই দুটো দেশের উত্তেজনা হয়তো এখন আরো ব্যাপক সংঘাতেও রূপ নিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো বহু দিন ধরেই ইরানকে দেখে আসছে এমন একটি দেশ হিসেবে - যারা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। সৌদি নেতৃত্ব ইরানকে দেখছে তাদের অস্তিত্বের জন্যে হুমকি হিসেবে। আর যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান তো ইরানের প্রভাব ঠেকাতে প্রয়োজনীয় যেকোনো ব্যবস্থা নিতেই প্রস্তুত। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সৌদি আরব ও ইরান- এই দুটো দেশের মধ্যে যদি শেষ পর্যন্ত সরাসরি যুদ্ধ লেগে যায়, তাহলে সেটা হবে দুর্ঘটনাবশত, তাদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা কমই। | Iran's president has warned that foreign forces are threatening the security of the Gulf, after the US said it was deploying troops to the region. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এ প্রশ্নও উঠেছে যে এমন বৈঠক আসলেই আদৌ হয়েছে কিনা। সৌদি আরব ইতোমধ্যে খবরটা অস্বীকার করেছে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল-সউদ এক টুইট বার্তায় বলেছেন - "এরকম কোন বৈঠক হয়নি।" মি. নেতানিয়াহু এ খবরের ওপর কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছেন, তবে তিনি বলেন যে ''শান্তির বৃত্তকে আরো বড় করার জন্য'' তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। 'সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ এবং ইরান প্রশ্নে কথা হয়েছে' কিন্তু ইসরায়েলের 'আর্মি রেডিও'কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ইসায়েলের শিক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্ট দৃশ্যত এ বৈঠকের খবর নিশ্চিত করে বলেছেন, মি, নেতানিয়াহু ও যুবরাজ মোহাম্মদের বৈঠক এক দারুণ অর্জন। কিন্তু শুধু ইসরায়েলি মিডিয়া নয়, বরং অন্য কিছু সূত্র থেকেও ইতোমধ্যেই এ খবরটি দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল তাদের রিপোর্টে একজন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক ''সৌদি উপদেষ্টাকে'' উদ্ধৃত করে নেতানিয়াহু- প্রিন্স মোহাম্মদ বৈঠকে কী নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে তারও কিছু আভাস দিয়েছে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের রিপোর্টে বলা হচ্ছে নেতানিয়াহু এবং মোহাম্মদ বিন-সালমানের বৈঠকের (যাকে এমবিএস নামেও ডাকা হয়) কথা নিশ্চিত করেছেন একজন সিনিয়র সৌদি উপদেষ্টা। গোপন বৈঠকটিতে দু'দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং ইরান ইস্যুটি নিয়ে কথা হয় - কিন্তু কোন ঐকমত্য হয় নি, বলছেন ওই সৌদি উপদেষ্টা। বৈঠকটিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও-ও উপস্থিত ছিলেন। অতি গোপন এক বৈঠক এতই গোপনে ওই বৈঠকটির আয়োজন করা হয় যে ইসরায়েলে বিকল্প প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বেনি গানৎজ এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্যাবি আশকেনাজিকেও এ ব্যাপারে কিচ্ছু জানানো হয়নি। ইসরায়েল থেকে মি. নেতানিয়াহু এবং গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের প্রধান ইয়োসি কোহেনকে নিয়ে জেট বিমানটি তেলআবিব থেকে আকাশে ওড়ে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। রোববার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বৈঠক সৌদি আরবের লোহিত সাগর তীরবর্তী শহর নেওমের বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর বিমানটি প্রায় দু-ঘন্টা বসে ছিল। তারপর মাঝরাতে বিমানটি আবার ইসরায়েলে ফিরে আসে। এই টি-সেভেন সিপিএক্স বিমানটির মালিক ইসরায়েলি ব্যবসায়ী উদি এ্যাঞ্জেল। এই বিমানে করে নেতানিয়াহু একাধিকবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করতে গেছেন বলে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যম বলছে। ফ্লাইট-ট্র্যাকিং উপাত্ত থেকে একজন ইসরায়েলি সাংবাদিক এ ব্যাপারটা খেয়াল করেন যে নেতানিয়াহু ব্যবহার করেছেন এমন একটি বিমান ইসরায়েল থেকে সরাসরি ফ্লাইটে সৌদি শহর নেওমে গেছে। তার মাধ্যমেই এ খবরটা প্রথম ছড়ায়। মধ্যপ্রাচ্যের একটি গোয়েন্দা সূত্র মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, খুব অল্প কয়েকজন লোকই এ বৈঠকটির কথা জানতেন। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ইসরায়েলের সাথে শান্তিচুক্তি: আমিরাত ও বাহরাইনের পর কি সৌদি আরব? ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন সম্পর্কে আরব বিশ্ব, কতটা রয়েছে ফিলিস্তিনিদের জন্য আবেগ-সমর্থন উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সঙ্গে ইসরায়েলের শান্তি চুক্তি কেন গুরুত্বপূর্ণ সৌদি আরব-ইসরায়েল গোপন আঁতাতের কারণ কি ইসরায়েলের সাথে কিছু আরব দেশের 'গোপন মৈত্রী'? সবাই কি ব্যাপারটা গোপন রাখতে চাইছেন? সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সউদ এরকম কোন বৈঠক হবার কথা অস্বীকার করে বলেছেন, মাইক পম্পেওর সফরের সময় বৈঠকে আমেরিকান ও সৌদি কর্মকর্তারা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সৌদি আরব ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা সমর্থন করে, তবে তার আগে ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে একটি স্থায়ী এবং পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তি হতে হবে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও নিজেও একই দিনে সৌদি যুবরাজের সাথে তার বৈঠক নিয়ে একটি টুইট করেছেন, তবে তাতে ইসরায়েলির নেতার সাথে এমবিএসের বৈঠকের কোন উল্লেখই নেই। বিবিসির সংবাদদাতা লিজ ডুসেটও জানাচ্ছেন সৌদি আরবের উর্ধতন কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে ও জনান্তিকে এই ''অতিশয় স্পর্শকাতর'' খবরের কথা অস্বীকার করছেন। সৌদি আরব ও ইসরায়েল ঐতিহাসিকভাবে পরস্পরের বৈরি। তবে মধ্যপ্রাচ্যের সূত্রগুলো বলছে, বিভিন্ন সময় সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে গোপন যোগাযোগের কথা জানা যায়, তবে এত উচ্চ স্তরের নেতাদের কোনরকম সাক্ষাতের খবর এটাই প্রথম। তাহলে কেন এই বৈঠক হলো ? একটি কারণ অবশ্যই - মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও কৌশলগত বাস্তবতা। সৌদি আরব ও তার মিত্র দেশগুলো ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকেই ইরানকে তাদের বড় হুমকি হিসেবে দেখছে। এর পেছনে শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব যেমন আছে, তেমনি বিভিন্ন রাজপরিবার-শাসিত আরব দেশগুলো ইরান ও তার সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে তাদের প্রতি হুমকি বলে মনে করে। ফলে এ অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বাড়তে না দেয়া সৌদি আরব ও তার মিত্রদের একটি অন্যতম কৌশলগত লক্ষ্য। আর ইরানের কড়া ইসরায়েল-বিরোধী নীতি এবং বিশেষত তার পরমাণু কর্মসূচির কারণে দেশটিকে বড় হুমকি বলে বিবেচনা করছে ইসরায়েলও। ফলে ইরান এখন সৌদি আরব, তার মিত্র ও ইসরায়েল - সবারই অভিন্ন প্রতিপক্ষে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইন ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পর থেকেই এটা বলা হচ্ছিল যে এর পরই হয়তো আসবে সৌদি আরব। হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ শাউল ইয়ানাই বলছেন, নেতানিয়াহু একজন অভিজ্ঞ কূটনীতিক এবং ইসরায়েল হয়তো সবুজ সংকেত পেয়েই বৈঠকের খবরটি ফাঁস করেছে, এবং তারা চাইছে খবরটি সবাই জানুক। জো বাইডেনের জন্য বার্তা? মধ্যপ্রাচ্যের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে ওয়াশিংটন পোস্ট জানাচ্ছে, এই বৈঠক বাইডেন প্রশাসনের জন্য বার্তা দিচ্ছে যে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের সম্পর্ক উন্নত করার ক্ষেত্র এখন প্রস্তুত। নেওমে মাইক পম্পেওকে স্বাগত জানাচ্ছেন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটন পোস্টে এক নিবন্ধে বিশ্লেষক হেনরি অলসেন বলছেন, নেতানিয়াহু ও প্রিন্স মোহাম্মদের বৈঠকের খবর সবাই অস্বীকার করলেও সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে পুরোনো বৈরি দেশগুলোর সম্পর্ক স্থাপনের যে হাওয়া উঠেছে - তার সাথে এটা পুরোপুরিই সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি এটিকে "কার্যত: ইসরায়েল ও উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলোর ইরান-বিরোধী জোট" বলেও আখ্যায়িত করছেন - যা জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হবার পর মার্কিন মধ্যপ্রাচ্য নীতি কী হবে তার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। তার কথায়, সৌদি আরব ও উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলো প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সময় ইরানের সাথে শক্তিধর দেশগুলোর যে পরমাণু চুক্তি হয় তাতে বিচলিত হয়েছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে এনেছিলেন, তবে এখন জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হলে মার্কিন নীতিতে আবারো পরিবর্তন আসতে পারে। বিশ্লেষক হেনরি অলসেন বলছেন, সেই প্রেক্ষাপটেই সৌদি আরব ও উপসাগরীয় রাজতন্ত্রগুলো এমন একজন মিত্র চাইতে পারে যে ইরানের হুমকি মোকাবিলায় সক্ষম। ইসরায়েলের হাতে পরমাণু অস্ত্র আছে বলেই মনে করা হয়, এবং নেতানিয়াহুর সরকার ঘোষিতভাবেই ইরান-বিরোধী। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, এসব হিসেব-নিকেশের মধ্যে ফিলিস্তিন ইস্যুর সমাধান ঠিক কীভাবে হয় বা আদৌ হয় কীনা। | Saudi Arabia's foreign minister has denied that Israeli Prime Minister Benjamin Netanyahu flew to the Gulf kingdom on Sunday to secretly meet Crown Prince Mohammed bin Salman. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | শামীমা বেগমের বাবা আহমেদ আলী। আহমেদ আলী বলেছেন, তার মেয়ে "বুঝে করুক বা না বুঝে, সে ভুল করেছে"। তবে তিনি মনে করেন যুক্তরাজ্যের উচিত শামীমা বেগমকে দেশে ফিরতে দেয়া, যেখানে ফেরার পর শামীমাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। শামীমা সিরিয়া থেকে ব্রিটেনে ফেরার ইচ্ছা ব্যক্ত করার পরই, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে বলে জানান। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় একটি জেলা সুনামগঞ্জে বসে মি. আলী বিবিসিকে যখন এই সাক্ষাৎকার দেন, তখনো শামীমা বেগমের শিশু সন্তানটি মারা যায়নি। নাগরিকত্ব বাতিল ২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেট বাহিনীতে যোগ দিতে ১৫ বছর বয়সে শামীমা বেগম লন্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় যান। শামীমা বেগম ব্রিটেনে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ব্রিটিশ সরকার তার নাগরিকত্ব বাতিল করে। ফেব্রুয়ারিতে টাইমস পত্রিকাকে সাক্ষাৎকার দেবার সময় মিজ. বেগম নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, আইএসে যোগ দেয়া নিয়ে তিনি অনুতপ্ত নন, তবে "খিলাফতে"র দিন ফুরিয়ে আসছে বলে ধারণা। সন্তান জন্মের কিছুদিন পর বিবিসিকে মিজ বেগম বলেছিলেন, তিনি চান তার সন্তান যুক্তরাজ্যে বেড়ে উঠুক। কিন্তু নিউমোনিয়ায় ভুগে বৃহস্পতিবার তিন সপ্তাহর চেয়ে কম বয়সী শিশু জারাহ মারা গেছে। যেহেতু মিজ. বেগমের নাগরিকত্ব বাতিলের আগে শিশু জারাহ'র জন্ম, সে কারণে তাকে ব্রিটিশ নাগরিক বলে ভাবা হচ্ছে। আরো পড়তে পারেন: শামীমার সন্তানের মৃত্যু: সমালোচনার মুখে ব্রিটিশ মন্ত্রী ‘আইএস বধূ’ শামীমা বেগমকে নিয়ে কেন এতো হইচই? 'শামীমা বেগমের বিষয়টি বাংলাদেশের কোন বিষয় নয়' কী বলছেন শামীমার বাবা? মেয়ের কর্মকাণ্ড নিয়ে তার বাবা মি. আলী বলেছেন, "সে অন্যায় করেছে, আমি তার বাবা হিসেবে সবার কাছে ক্ষমা চাই।" "সে যা করেছে, সেজন্য আমি দুঃখিত। ব্রিটিশ জনগণের কাছে আমার অনুরোধ তাকে ক্ষমা করে দেয়া হোক।" ৬০ বছর বয়সী মি. আলী উল্লেখ করেন, তারা মেয়ে যখন সিরিয়া যায়, তখন সে আসলে শিশু ছিলো। "সে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিল, অত কিছু বুঝতে পারেনি। আমার মনে হয় কেউ তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে নিয়ে গেছে," তিনি জানান। "তবে, যাই করেছে সে ভুল করেছে, সেটা সে বুঝতে পারুক আর নাই পারুক।" তিনি ব্রিটিশ সরকার ও জনগণের কাছে তার মেয়েকে ফিরে আসার সুযোগ দেবার এবং সে ভুল করে থাকলে সেজন্য শাস্তি দেবার অনুরোধ জানান। তবে তার মেয়ে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ছে, তা তিনি জানতেন কিনা - বিবিসির এমন প্রশ্নের জবাবে মি. আলী জানান, "তার কোন ধারণাই ছিল না" এ ব্যাপারে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মি. আলী বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশে থাকছেন। লন্ডনে গিয়ে দুই-চার সপ্তাহ থেকে আসেন। "আমি বেশি সময় লন্ডনে থাকিনা, যে কারণে তার (শামীমা) সম্পর্কে বেশি কিছু জানিনা আমি," তিনি বলেন। "তার [শামীমার] সঙ্গে যখন থেকেছে, কথাবার্তা হয়েছে, তার আচরণে কখনো মনে হয়নি সে সিরিয়ায় আইএসে যোগ দিতে যেতে পারে।" 'অন্য দুনিয়ায় থাকেন শামীমার বাবা' সুনামগঞ্জের দিরাইতে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে জীবনযাপন করছেন মি. আলী। বাড়ির চারপাশে সারি সারি নারকেল আর আম গাছ। বাড়ির কাছেই ধানের ক্ষেত। সারাদিন পাখির ডাক শোনা যায়। শহর থেকে তার গ্রামে যাওয়ার রাস্তাটি ভাঙ্গাচোরা। কোলাহলপূর্ণ পূর্ব লন্ডনে মি. আলীর অন্য বাড়িটির তুলনায় এই বাড়িটিকে বলা যায় একেবারে বিপরীত পৃথিবীর কোন জায়গা। বিবিসি সাংবাদিক এথিরাজন আন্বারাসনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মি. আলীকে খুবই উদ্বিগ্ন, ভীত ও চিন্তিত দেখাচ্ছিল। বাংলায় দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি ভীষণ চিন্তিত। মেয়ে উগ্রপন্থার দিকে কিভাবে চলে গেল - তার কোন ধারণা নেই। কিন্ত একজনের পাসপোর্ট নিয়ে আরেকজন কিভাবে দেশত্যাগ করলো - ব্রিটিশ ইমিগ্রেশনের কাছে জানতে চান শামীমার বাবা। গণমাধ্যম থেকে দূরে থাকতে চান তিনি। | Shamima Begum's father has apologised to the British public for his daughter's decision to join the Islamic State group (IS). |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত : গাযায় কীভাবে ভেঙে পড়ল বহুতল ভবন; হামাসের পাল্টা আক্রমণ - ভিডিও ফুটেজ ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস ৩৮ ঘন্টা ধরে এক হাজারের ওপর রকেট ছুঁড়েছে বলে জানাচ্ছে ইসরায়েল। তারা বলছে বেশির ভাগ আক্রমণ হয়েছে তেল আবিবের ওপর। ইসরায়েলও ধ্বংসাত্মক বিমান হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার চালানো ইসরায়েলি হামলায় গাযার দুটি উঁচু টাওয়ার ব্লক বিধ্বস্ত হয়েছে। ইসরায়েলের বেশ কিছু শহরে ইসরায়েলি আরবরা সহিংস বিক্ষোভ করেছে। তেল আবিবের কাছে লড শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন চলমান সহিংসতায় তিনি "গভীরভাবে উদ্বিগ্ন"। ছয়জন ইসরায়েলি মারা গেছে এবং গাযায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে সোমবার থেকে সেখানে হামলায় এ পর্যন্ত ১৪টি শিশু সহ মোট ৫৩ জন নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে আরো ৩০০ জনেরও বেশি। সবশেষ ঘটনায় মারা গেছে একজন ইসরায়েলি নাগরিক। গাযা ভূখন্ডের উত্তরাঞ্চল থেকে ছোঁড়া একটি ট্যাংক-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র সীমান্ত এলাকায় একটি জিপে আঘাত করলে ঐ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। আহত হয়েছে আরও দুজন। জেরুসালেমের একটি এলাকায় ইসরায়েলি পুলিশ এবং ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের জেরে কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তেজনা বিরাজ করার পর এই লড়াইয়ের সূত্রপাত হয়েছে। ওই এলাকা মুসলিম এবং ইহুদি দুই ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র। আরও পড়তে পারেন: ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা বলছেন সংঘর্ষের পর বহু ফিলিস্তিনিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্মীরা জেরুসালেমের পুরনো শহরে লায়নস গেইটে স্ট্রেচারে করে একজন আহতকে নিয়ে যাচ্ছেন । গাযায় 'যা ঘটছে তা অবিশ্বাস্য' ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী বলছে ২০১৪র পর এটাই দু পক্ষের মধ্যে সবচেয়ে তীব্র গোলাগুলি বিনিময়ের ঘটনা। গাযা থেকে যে ১,০৫০ রকেট এবং মর্টার শেল ছোঁড়া হয়েছে, সেগুলির মধ্যে ৮৫০টি হয় ইসরায়েলের ভেতরে গিয়ে পড়েছে নয়ত ইসরায়েলের আয়রন-ডোম নামে আকাশপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সেগুলোকে প্রতিহত করেছে। বাকি ২০০টি গাযার সীমান্ত পার হতে পারেনি এবং গাযার ভেতরেই পড়েছে বলে জানাচ্ছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী । শহরের ভিডিও ফুটেজে রাতের আকাশ চিরে রকেটের আগুন দেখা যাচ্ছে। কোন কোন রকেট ইসরোয়েলের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে আকাশে বিস্ফোরিত হতেও দেখা গেছে। ফিলিস্তিনি মিসাইল ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে কাবু করতে যখন ঘনঘন ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ছিল, তখন তেল আবিব, আশকেল, মদিইন এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় বিয়ারশেবা-সহ যেসব শহরকে টার্গেট করে হামলা চালানো হয়েছে সেখান থেকে প্রচণ্ড আওয়াজ এবং বিমান হামলার সাইরেন সঙ্কেতের শব্দ শোনা যায়। জেরুসালেম পোস্ট পত্রিকার প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক সংবাদদাতা আনা আহরনহেইম বিবিসিকে বলেন: "রকেট হামলা ঠেকাতে শ'য়ে শ'য়ে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা আক্রমণ এবং আমাদের আশেপাশে রকেট আঘাত হানার আওয়াজ ছিল রীতিমত ভয়াবহ।" জেরুসালেমে ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করবে ইহুদি বসতি স্থাপনকারীরা, এ রকম হুমকির কারণে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ার জের ধরে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত গাযায় দুটি বহুতল ভবন ইসরায়েল গুঁড়িয়ে দেয়ার পর রকেট হামলার তীব্রতা বেড়ে যায়। ইসরায়েল বলছে তারা গাযায় রকেট নিক্ষেপ করার স্থানগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তাদের বক্তব্য গাযা নিয়ন্ত্রণকারী হামাস গোষ্ঠী রকেট ছোঁড়ার জন্য উঁচু ভবন, আবাসিক ভবন এবং অফিস ভবনগুলো ব্যবহার করছে। হামাস বলেছে, "শত্রু পক্ষ আবাসিক ভবনগুলো টার্গেট করায়" তারা ক্ষুব্ধ। জঙ্গী বিমান হামলা চালানোর আগে এই ভবনগুলো থেকে মানুষদের চলে যেতে বলা হয়েছিল, কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে তার পরেও বেসামরিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। গাযায় সাংবাদিক ফ্যাডি হানোনা টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করে দেখিয়েছেন কীভাবে বুধবার সকালে গাযায় একটার পর একটা বিস্ফোরণ হয়েছে। "যা ঘটছে তা অবিশ্বাস্য," তিনি বলেছেন। "আজ সকালে আমাদের যা অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা গত তিনটি যুদ্ধের সময় আমরা যেধরনের অবস্থার মধ্যে কাটিয়েছে তার থেকেও ভয়ানক যুদ্ধাবস্থা।" গাযা ভূখন্ড থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া রকেট প্রতিহত করতে ইসরায়েল তাদের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে মিসাইল ধ্বংস করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দুই পক্ষকেই উত্তেজনা হ্রাস করার আহ্বান জানিয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত টোর ওয়েন্সল্যান্ড বলেছেন দু পক্ষেই "পরিস্থিতি পুর্ণমাত্রার যুদ্ধের দিকে চলে যাচ্ছে"। মহাসচিব মি. গুতেরেস "শান্তি পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়াস দ্বিগুণ করার" আহ্বান জানিয়েছেন। আমেরিকার পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার আছে, তবে ফিলিস্তিনের মানুষেরও নিরাপত্তা ও নিরাপদে থাকার অধিকার আছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গাঞ্জ বলেছেন ইসরায়েলি আক্রমণ "সবে শুরু হয়েছে"। তিনি বলেছেন: "সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর ওপর প্রচণ্ড আঘাত হানা হয়েছে, এবং ইসরায়েলের ওপর হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তাদের ওপর আঘাত অব্যাহত রাখা হবে। "দীর্ঘমেয়াদে শান্তি ফিরিয়ে আনা হবে," তিনি বলেন। হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়ে এক টিভি ভাষণে বলেছেন, "যদি ইসরাইল সংঘাত তীব্রতর করতে চায় আমরা তার জন্য তৈরি আছি। আর তারা যদি থামতে চায় , তার জন্যও আমরা তৈরি।" ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাযা ভূখন্ডে বিমান হামলা চালিয়েছে জরুরি অবস্থা ইসরায়েলের লড শহরে ইসরায়েলি আরবদের বিক্ষোভ পুরো মাত্রার দাঙ্গায় রূপ নেয়। বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুঁড়তে থাকে এবং পুলিশ জবাবে স্টেন গান চালায়। সংঘর্ষে ৫২ বছর বয়সী এক বাবা এবং তার ১৬ বছরের কন্যা নিহত হয়। একটা রকেট এসে তাদের গাড়িকে আঘাত করলে তারা মারা যায়। ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারিৎজ-এর খবরে বলা হয় সংঘর্ষে আহত হয়েছে আরও প্রচুর মানুষ। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বিনিয়ামন নেতানিয়াহু লড শহরে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন মঙ্গলবার রাতে। ১৯৬৬ সালের পর এই প্রথম সরকার আরব সম্প্রদায়ের ওপর জরুরি আইন প্রয়োগ করল বলে জানাচ্ছে টাইমস অফ ইসরায়েল পত্রিকা। মি. নেতানিয়াহু শহরে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানাতে সেখানে গেছেন। তিনি বলেন প্রয়োজনে তিনি কারফিউ জারি করবেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে বলা হচ্ছে শহরে ইহুদিদের প্রার্থনাস্থল সিনাগগ এবং দোকানে আগুন দেয়া হয়েছে। রয়টার্স সংবাদ সংস্থা খবর দিয়েছে একজন আরব বাসিন্দা তার গাড়ি নিয়ে বের হলে তাতে পাথর ছোঁড়া হয়েছে। লড শহরের মেয়রকে উদ্ধৃত করে টাইমস অফ ইসরায়েল বলছে, "সেখানে পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণের বাইরে"। তিনি বলেছেন, "লড-এ গৃহযুদ্ধ বেঁধে গেছে।" ইসরায়েলের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল কেন্দ্র বেন গুরিয়ান বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার বিমান চলাচল কিছুক্ষণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়। ইসরায়েলের যেসব শহরে বড় আরব জনগোষ্ঠী বসবাস করেন সেসব শহর এবং পূর্ব জেরুসালেম এবং পশ্চিম তীরেও অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েলি বিমান হামলার পর গাযা সিটির দৃশ্য বিবিসির মধ্য প্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক জেরেমি বোওয়েন বলছেন পরিস্থিতি বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে এবং ইসরায়েল পরবর্তী পদক্ষেপ হিসাবে গাযায় সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত বিবেচনা করতে পারে। তিনি বলছেন যুদ্ধবিরতি এখন আসতে পারে একমাত্র বাইরের হস্তক্ষেপে, সম্ভবত সবচেয়ে ভাল ফল আসতে পারে মিশর হস্তক্ষেপ করলে। মি. বোওয়েন বলছেন ইসরায়েলের নাগরিকদের বিশ শতাংশ আরব। যেসব শহরে ইহুদি এবং ফিলিস্তিনিরা পাশাপাশি বাস করেন সেসব শহরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা এবং সম্পদের ওপর হামলায় উদ্বেগ বাড়ছে। সহিংসতার পেছনে কারণ পূর্ব জেরুসালেমে পাহাড়ের ওপর পবিত্র একটি স্থানে ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি পুলিশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে সহিংসতা বৃদ্ধির জেরেই ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে এই সংঘাত শুরু হয়। এই স্থানটি মুসলিম এবং ইহুদি দুই ধর্মের মানুষের কাছেই পবিত্র। মুসলিমদের কাছে এটি হারাম আল-শরিফ এবং ইহুদিদের কাছে এটি টেম্পল মাউন্ট। হামাসের দাবি ইসরায়েল সেখান থেকে এবং নিকটবর্তী মূলত আরব অধ্যুষিত শেখ জারাহ থেকে পুলিশ সরিয়ে নিক। সেখান থেকে ইহুদি বসতিস্থাপনকারীরা ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করতে চায়। হামাস এই পদক্ষেপ বন্ধ করার যে আলটিমেটাম দিয়েছিল, ইসরায়েল তা উপেক্ষা করলে হামাস রকেট নিক্ষেপ করতে শুরু করে। পূর্ব জেরুসালেমে পুলিশের সাথে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে চলা উপর্যুপরি সংঘাতের ফলে ফিলিস্তিনিদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ক্রমশই বাড়ছিল। এপ্রিলের মাঝামাঝি রমজান শুরু হবার সময় থেকেই এই উত্তেজনা শুরু হয়। এরপর শেখ জারাহ-র কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারের ভাগ্য নিয়ে আদালতের প্রত্যাশিত রায় এই ক্ষোভের আগুনে ইন্ধন যোগায়। আরও পড়তে পারেন: বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা জেরেমি বোওয়েন বলছেন দশকের পর দশক ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধের মূলে যেসব কারণ, সেগুলোর কোনো সমাধান এতদিনেও হয়নি বলেই ঘুরে ফিরে এই সংঘাত ঘটে। তিনি বলেন, "এবারের সংঘাতের কেন্দ্রে জেরুসালেম। রমজানের সময় পুলিশের বাড়াবাড়ি এবং আদালতের মাধ্যমে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উৎখাতের বিতর্কিত একটি তৎপরতা নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন দফার এই বিরোধ।" বহুদিন ধরেই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সন্দেহ দানা বেঁধেছে যে ইসারায়েলি দক্ষিণপন্থীরা জেরুসালেম থেকে ছলেবলে তাদের উৎখাত করতে বদ্ধপরিকর, এবং শেখ জারাহ থেকে ঐ পরিবারগুলোকে বাড়িছাড়া করার সিদ্ধান্ত সেই ছকেরই অংশ। | The deadly exchange of fire between Palestinian militants in the Gaza Strip and the Israeli military has escalated significantly, with the UN fearing a "full-scale war". |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | গবেষণাগারের প্রাথমিক পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই টিকা দেয়ার পর শরীরের ভেতরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার তৈরি হয়, সেটি নতুন ধরনটি শনাক্ত ও ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। তবে টিকা নেয়া মানুষদের ক্ষেত্রে এটি কতটা সত্যি, তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরও গবেষণার দরকার হবে। বেশ কয়েকটি দেশে দ্রুত হারে ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি। ধারণা করা হয় যে, করোনাভাইরাসের এই নতুন ধরনটি আগেরটির তুলনায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে সেটি আগের চেয়ে বেশি বিপজ্জনক নয় বলেই মনে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গত সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ধরনটি অন্তত ৭০ শতাংশ বেশি হারে বিস্তার ঘটাতে পারে। আরও পড়ুন: বাংলাদেশেও নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত, মিল আছে যুক্তরাজ্যে পাওয়া ধরনের সঙ্গে বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে নতুন ধরনের করোনাভাইরাস নতুন রূপ নিয়েছে করোনাভাইরাস: টিকায় কি আর কাজ হবে? ভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্তের পর বাংলাদেশে যেসব ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বর্তমানে বিশ্বে যে টিকাগুলো আবিষ্কার করা হয়েছে, সেগুলো করোনাভাইরাসের প্রথমদিকের ধরন ঠেকানোর চিন্তা করে তৈরি করা হয়েছে। তবে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, এটি নতুন ধরন ঠেকাতেও কাজ করবে, যদিও তা নিয়ে তারা পুরোপুরি নিশ্চিত নন। যদিও প্রাথমিক কিছু ফলাফলে দেখা গেছে, ফাইজারের টিকাটি যুক্তরাজ্যের নতুন ধরনের বিরুদ্ধে কার্যকরী। মডার্নার এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এমন আটজনের রক্তের নমুনা নিয়েছেন যারা মডার্নার টিকার দুইটি ডোজই গ্রহণ করেছেন। তাদের গবেষণার ফলাফলের এখনো বিশেষজ্ঞ পর্যালোচনা হয়নি, তবে ধারণা করা হচ্ছে যে, টিকাটি করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি শনাক্ত করতে পারে। টিকার কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যবহার করে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি ভাইরাসটিকে শরীরের কোষে প্রবেশে বাধা তৈরি করে। যে রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, সেখানে ভাইরাসের নতুন ধরনটি ঠেকাতে যথেষ্ট অ্যান্টিবডির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তবে সেটি যুক্তরাজ্যে ভাইরাসের নতুন ধরন ঠেকাতে যতটা সক্ষম বলে দেখা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া ধরনটি ঠেকাতে ততটা সক্ষম নয়। এখন মডার্না গবেষণা করে দেখছে যে, তৃতীয় আরেকটি ডোজ দেয়া হলে তা উপকারী হয় কিনা। সেই সঙ্গে অন্যান্য বিজ্ঞানীদের মতো তারাও পরীক্ষা করে দেখছে যে, টিকাটি নতুন করে তৈরি করা হলে তা নতুন ধরন মোকাবেলায় আরও কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে কিনা। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: টিকা নিয়ে সংশয়-অনাস্থা: জবাবে কী বলছে সরকার করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে যেভাবে নিবন্ধন করতে হবে কেন বিতর্কিত বাকশাল ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শেখ মুজিব? টিকা নেবার পর কোভিড সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা পেতে কত দিন লাগে? | Moderna's Covid vaccine appears to work against new, more infectious variants of the pandemic virus found in the UK and South Africa, say scientists from the US pharmaceutical company. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এছাড়া বয়স্ক লোকেরাও এই ভাইরাসে সহজেই আক্রান্ত হতে পারেন এবং তাদের জীবন এর ফলে হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখনও পর্যন্ত যে কয়েক হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, চীনসহ সারা বিশ্বে, তাদের বেশিরভাগই বৃদ্ধ রোগী। তাদের ছিল নানা রকমের স্বাস্থ্য সমস্যা, বিশেষ করে তারা হৃদরোগে ভুগছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে হৃদরোগের মতো বিশেষ কিছু অসুখে ভুগে থাকলে আপনি হয়তো করোনাভাইরাসের কথা ভেবে উদ্বিগ্ন হতে পারেন। এরকম মানুষের জন্যে এখানে বিশেষজ্ঞদের কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হলো: কাদের ঝুঁকি বেশি অসুখে ভুগলেই যে আর কারো চেয়ে আপনার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তা নয়। শুধু আপনাকে বাড়তি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আপনার দেহে যাতে এই ভাইরাসটির সংক্রমণ না ঘটে সেজন্যেই এসব সাবধানতা। কারণ আপনি আক্রান্ত হলে এর উপসর্গ গুরুতর রূপ নিতে পারে এবং আপনি সহসাই অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। এখনও পর্যন্ত মনে হচ্ছে, যারা একটু বয়স্ক অর্থাৎ যাদের রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং যারা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অসুখে ভুগছেন, করোনাভাইরাসে তাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যারা নিচের রোগগুলোতে ইতোমধ্যেই আক্রান্ত তাদের সাবধান থাকা জরুরি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে বেশিরভাগ মানুষই কিছুদিন পর সুস্থ হয়ে ওঠেন। স্বাভাবিক সর্দি কাশির মতোই প্রথম কয়েকদিন বিশ্রাম নিলে তারা সেরে ওঠেন। তবে কিছু কিছু মানুষের জন্যে এটা গুরুতর রূপ নিতে পারে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে, এই সংখ্যা যদিও অনেক কম, এই ভাইরাসটি প্রাণহানিরও কারণ হয়ে উঠতে পারে। কীভাবে নিরাপদ থাকবো করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্যে সাধারণ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এসব বিষয় মেনে চললেই আপনি খুব সহজেই ভাইরাসটিকে ঠেকাতে পারবেন। বলা হচ্ছে, আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি ও কাশি থেকে যে জলীয় পদার্থ নির্গত হয় তার মাধ্যমেই এটি ছড়িয়ে থাকে। ওই জলীয় পদার্থের সংস্পর্শে এলেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন। আমরা যখন হাঁচি কাশি দেই তখন সেই জলীয় পদার্থ টেবিলে চেয়ারে কিম্বা আমাদের হাতে এসে পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীর থেকে নির্গত ওই পদার্থের মধ্যেই থাকে করোনাভাইরাস। তার পর আমরা যখন হাত না ধুয়ে কিছু স্পর্শ করি তখন সেই ভাইরাসটি অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়ে। যেমন সিঁড়ির হাতল, দরজার হ্যান্ডল ইত্যাদি। একারণে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে যা যা করা জরুরি: আমি কি মুখে মাস্ক পরবো? ব্রিটিশ লাং ফাউন্ডেশন বলছে: "ভাইরাসটি থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আমরা মাস্ক পরার সুপারিশ করি না। এগুলো যে খুব একটা কার্যকর তার পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ নেই। এছাড়াও যাদের ফুসফুসের সমস্যা আছে তারা মুখে মাস্ক পরলে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে।" জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে? বেশিরভাগ মানুষই তাদের কাজে যেতে পারেন, যেতে পারেন স্কুল কলেজে এবং অন্যান্য জায়গাতেও যেখানে লোকজন আসা যাওয়া করে। আপনাকে তখনই ঘরের ভেতরে আলাদা হয়ে থাকতে হবে যখন ডাক্তাররা আপনাকে এভাবে থাকার উপদেশ দেবেন। অসুস্থ বোধ করলে কী করবো? করোনাভাইরাসের উপসর্গ হচ্ছে: এসব উপসর্গ থাকলেই নিশ্চিত করে বলা যাবে না যে আপনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। লন্ডনে রয়্যাল কলেজের একজন চিকিৎসক ড. জনাথন লিচ বলছেন, "সবচেয়ে জরুরি রোগীর আতংকিত না হওয়া। হয়তো দেখা যাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ ঠাণ্ডা কাশি বা ফ্লুতে আক্রান্ত হয়েছে, করোনাভাইরাসে নয়।" যদি মনে হয় যে আপনি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাহলে প্রথমেই হাসপাতাল, ক্লিনিক, ফার্মেসি কিম্বা ডাক্তারখানায় ছুটে না গিয়ে ফোনে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে পারেন। ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের একজন সিনিয়র নার্স ফিলিপা হবসন বলছেন, "আপনার শরীরে যদি উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে নিজেকে আর সকলের কাছ থেকে আলাদা করে রাখুন। এবং ডাক্তারকে ফোন করে পরামর্শ নিন। ভালো মতো খাওয়া দাওয়া করবেন, খেয়াল রাখবেন শরীর যাতে পানিশূন্য হয়ে না যায় এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম করুন।" আমি কি ওষুধ অব্যাহত রাখবো? অসুস্থ হয়ে পড়লেও স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে আপনি আগে থেকে যেসব ওষুধ খাচ্ছিলেন সেগুলো চালিয়ে যেতে হবে। অসুস্থ অবস্থায় আপনার যদি ওষুধ ফুরিয়ে যায় তাহলে বন্ধু বান্ধব বা পরিবারের কাউকে সেই ওষুধ এনে দেওয়ার অনুরোধ করুন। লন্ডনে ইম্পেরিয়াল কলেজের প্রফেসর পিটার ওপেনশ বলছেন, এরকম অসুস্থ লোকজনের ঘরে কমপক্ষে চার সপ্তাহের ওষুধ থাকা দরকার। ঘরে অতিরিক্ত কিছু খাবার দাবার রেখে দেওয়াও ভালো, তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। ফ্লু-র টিকা নিতে হবে? করোনাভাইরাস ফ্লুর মতো নয়। এটি একেবারেই আলাদা ধরনের ভাইরাস। ফ্লুর কারণেও আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন এবং কোন কোন ব্যক্তির বেলায় এই ফ্লু গুরুতর রূপ নিতে পারে। ফ্লু-র টিকা নেয়া থাকলে ভালো। বিশেষ করে যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি, শিশু, যাদের আগে থেকেই স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তারা ছাড়াও গর্ভবতী নারীরাও ফ্লু-র টিকা (ফ্লু জ্যাব) নিতে পারেন। শ্বাস কষ্ট বা হাঁপানি থাকলে? অ্যাজমা ইউকে নামের সংস্থা বলছে, ডাক্তারের পরামর্শ অনুসারে প্রতিদিন ইনহেলার (সাধারণত বাদামী) নিন। করোনাভাইরাসসহ অন্য কোনো ভাইরাসেও যদি আক্রান্ত হন তাহলে ইনহেলার অ্যাজমা অ্যাটাক থেকে আপনাকে রক্ষা করবে। তবে নীল রঙের ইনহেলারটিও সবসময় সাথে রাখুন। যদি দেখেন শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাচ্ছে তখন এটি ব্যবহার করতে পারেন। আপনার অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্ট যদি তীব্র হয় এবং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে তাহলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। ডায়াবেটিস থাকলে যারা টাইপ ওয়ান বা টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের বেলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ মারাত্মক রূপ নিতে পারে। তাদের বেলায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। ডায়াবেটিস ইউকে নামের একটি সংস্থার কর্মকর্তা ড্যান হাওয়ার্থ বলছেন: "যাদের ডায়াবেটিস আছে করোনাভাইরাস কিম্বা কোভিড-১৯ তাদের শরীরে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।" "আপনার যদি ডায়াবেটিস থাকে এবং কাশি, জ্বর এবং শ্বাস কষ্টের উপসর্গ থাকে, তাহলে আপনার রক্তে সুগারের মাত্রার ওপর সতর্ক নজর রাখতে হবে।" দীর্ঘদিনের স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে যারা দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন, যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসে সমস্যা এবং দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা দুর্বল হলে তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন এবং এই অসুস্থতা মারাত্মক রূপও নিতে পারে। ব্রিটেনে চিলড্রেন্স ক্যান্সার ও লিউকেমিয়া গ্রুপের পরামর্শ হচ্ছে: যেসব শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত তাদের পিতামাতার উচিত ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে কী করা উচিত এবিষয়ে পরামর্শ নেওয়া। ব্রিটিশ লিভার ট্রাস্ট বলছে, করোনাভাইরাসের ঝুঁকি কমানোর উপায় হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকার নিয়ম কানুন কঠোরভাবে অনুসরণ করা। তবে কারো শরীরে এসব উপসর্গ দেখা দিলে তাকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হয়েছে। গর্ভবতী নারীদের কি উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত? গর্ভবতী নারীদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি- এমন কথা বলার পক্ষে এখনও কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সংক্রমণ এড়াতে অন্যদের মতো তাদেরও পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার গাইড লাইন মেনে চলতে হবে। ধূমপায়ী হলে যুক্তরাজ্যে জনস্বাস্থ্য বিষয়ক একটি দাতব্য সংস্থা অ্যাশের প্রধান নির্বাহী ডেবোরা আর্নট বলছেন, যারা ধূমপান করেন তাদের উচিত করোনাভাইরাসের ঝুঁকি এড়াতে ধূমপান কমিয়ে ফেলা কিম্বা পুরোপুরি ছেড়ে দেওয়া। "ধূমপায়ীদের শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে। তাদের নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি যারা ধূমপান করেন না তাদের দ্বিগুণ।" তিনি বলেন, "ধূমপান ছেড়ে দেওয়া নানা কারণেই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। করোনাভাইরাসের কথা মাথায় রেখেই তাদের উচিত ধূমপান ছেড়ে দেওয়া। এতে তার দেহে তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।" ধূমপান ফুসফুস ও হৃদপিণ্ডের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় বলে তাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি থাকে। বয়স্ক হলে কি আলাদা থাকা দরকার? ব্রিটেনে কর্তৃপক্ষের উপদেশ হচ্ছে বয়স্ক লোকজনদের আলাদা থাকার প্রয়োজন নেই। বয়স্ক লোকজনদের নিয়ে কাজ করে এরকম একটি দাতব্য সংস্থা এইজ ইউকের একজন পরিচালক ক্যারোলিন আব্রাহামস বলেছেন, পরিবারের সদস্যদের উচিত তাদের বয়স্ক আত্মীয় স্বজনের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে নিয়মিত খোঁজ খবর রাখা। "তাদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে কোন উদ্বেগ থাকলে অথবা এবিষয়ে তথ্যের প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।" আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে করোনাভাইরাস: আপনার প্রশ্নের উত্তর করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন আক্রান্ত দেশ থেকে এলে ১৪ দিন বাড়িতে থাকুন - আইইডিসিআর | Coronavirus can affect anyone, but people with pre-existing health problems and older people are thought to be at greater risk of developing severe symptoms. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | গৃহযুদ্ধ শুরুর পর সিরিয়া ছেড়েছে দেশটির অন্তত ৫০ লাখ মানুষ সিরিয়ায় ২০১১ সালে গৃহযুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে প্রায় পঞ্চাশ লাখ মানুষ। মূলত তাদের বেশিরভাগই আশ্রয় নিয়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোতে। সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শরণার্থী এখন তুরস্কে যার সংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। আর লেবাননে আছে আরও প্রায় দশ লাখ। আর পাঁচ লাখেরও মতো শরণার্থীর জায়গা হয়েছে জার্মানিতে। এছাড়া ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে আছে অল্প কিছু শরণার্থী। আরো পড়ুন: যুদ্ধবিরতি সমঝোতার পরও সিরিয়ায় হামলা সিরিয়াতে প্রেম ও অন্য জীবনের ছবি আঁকেন যে শিল্পী সিরিয়া নিয়ে কি পরাশক্তিগুলোর মধ্যে যুদ্ধ বাধবে? সিরিয়া নিয়ে আসলে কি করতে চান ডোনাল্ড ট্রাম্প ? শরণার্থীদের অনেকেই বলছে তারা স্থায়ী ভাবে বিদেশে থেকে যেতে চায়না কিন্তু কি পরিবর্তন তারা আসা করছে? এ নিয়ে দ্যা কার্নেগী মিডল ইস্ট সেন্টার লেবানন ও জর্ডানে থাকা ৩২০ জন শরণার্থীকে নিয়ে সিরিজ সভা করেছে। এ থেকেই বেরিয়ে এসেছে তাদের চারটি প্রত্যাশার কথা। ১. সন্তানদের জন্য নিরাপত্তা শরণার্থীদের অনেকেই বলছে তারা স্থায়ী ভাবে বিদেশে থেকে যেতে চায়না। সংস্কৃতি পরিবর্তন ও বৈষম্যের ভয়েই এমনটি বলছে তারা। কিন্তু সিরিয়ায় ফিরে গেলে কেমন বিপদে পড়তে হবে সেটি নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। সিরিয়ার হোম শহর থেকে আসা আইশা যেমন বলছেন, "কেউ কি পায়ে হেঁটে মৃত্যুর দিকে যেতে পারে?" ২. সেনাবাহিনীতে বাধ্যতামূলক অন্তর্ভুক্তির অবসান বৈরুতের একটি ক্যাম্পে থাকেন তরুণ শরণার্থী হাসান। তার মতে, যারা সিরিয়া ছেড়ে এসেছে তাদের বিশ্বাসঘাতক বলে বিবেচনা করা হয় এখন। অন্য অনেকের মতো এই তরুণেরও উদ্বেগ যে দেশে ফিরলে তাকে বাধ্যতামূলক ভাবে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। সিরিয়ায় আঠারো বছর বয়স হলেই মিলিটারি সার্ভিসে যোগ দেয়া সব পুরুষের জন্যই বাধ্যতামূলক। লেবাননে এমন তাবুতেও বসবাস করছে অনেক সিরিয়ান ৩. ফেরার একটি ঘর চাই দেশটির অনেকেরই এখন আর মাথা গোঁজার জায়গা নেই। শহরগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। বাড়িঘরের অস্তিত্বও নেই অনেক জায়গায়। বিভিন্ন বাহিনীর যখন যাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে তারাই অনেক বাড়িঘর নিজেরা ব্যবহার করে। দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর অনেকের বাড়িঘরের কোন প্রমাণাদিও সাথে নেই। ৪. নিরাপদে থাকা ও নিরাপত্তা শরণার্থীদের অনেকেরই আছে বিভিন্ন বাহিনীর হাতে আটক হওয়া, পরিবারের সদস্য বা বন্ধুদের মৃত্যুর ঘটনা এবং ক্রমাবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা। তরুণ শরণার্থী তারেক তাই মনে করেন সিরিয়া ফেরার জন্য নিরাপদ নয়। কিন্তু এসব শরণার্থীরা সবাই চায় সিরিয়ার সমস্যার সমাধান হোক। তারা নাগরিক হিসেবে তাদের মর্যাদাও ফেরত চায়। জাতিসংঘের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব অনুমোদনের পরও ফেব্রুয়ারিতে হামলা চালানো হয় বিবিসি বাংলায় আরও পড়তে পারেন: লিভার চিকিৎসায় বাংলাদেশী চিকিৎসকদের উদ্ভাবন কীভাবে বদলে গেল ফয়সাল ও নাজিয়ার মরদেহ? পার্কের প্রেম ভালোবাসা প্রচার হলো টিভিতে জেলে গত রাত থেকে কিছুই খাননি সালমান খান | It is clear that Syria's refugees fled their homeland to escape its devastating war. But other than an end to the fighting, what would make them want to return home? |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | কোভিড-১৯ এর উৎস খুঁজে বের করতে ১০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীর একটি দল আগামী মাসে চীনের উহান শহর সফর করবেন এই বিষয়ে স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করার ব্যাপারে বেইজিং কখনোই খুব একটা আগ্রহ প্রকাশ করেনি। উহানে তদন্ত পরিচালনা করার অনুমতি পেতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও দীর্ঘদিন যাবত আলোচনা করতে হয়েছে চীনের কর্তৃপক্ষের সাথে। বিভিন্ন ধরণের প্রাণী বিক্রি করা হয়, উহান শহরের এমন একটি বাজার থেকে এই ভাইরাসটি সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে এর আসল উৎস কী, তা নির্ণয় করার প্রশ্নে শুরু থেকেই জটিলতা ছিল। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শুরু থেকেই চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে তারা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি শুরুতে গোপন করেছে। এই তদন্তের উদ্দেশ্য কী? তদন্তকারী দলের একজন জীববিজ্ঞানী সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কারো উপর দোষ চাপানোর উদ্দেশ্যে এই তদন্ত পরিচালনা করছে না, বরং ভবিষ্যৎ সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে কাজ করছে। জার্মানির রবার্ট কোক ইনস্টিটিউটের জীববিজ্ঞানী ফ্যাবিয়ান লিনডার্টজ বলেন, "কোন দেশ দোষী, তা খুঁজে বের করার জন্য এই তদন্ত নয়।" "আসলে কী হয়েছে, তা খুঁজে বের করা এবং সেই তদন্ত থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে আমরা ভবিষ্যৎ ঝুঁকি এড়াতে পারবো কিনা, সেই চেষ্টাই করবো আমরা।" আরো পড়তে পারেন: নতুন রূপ নিয়েছে করোনাভাইরাস: টিকায় কি আর কাজ হবে? হাসপাতালগুলো ফিরিয়ে দিল, মানুষ দুটি শেষ পর্যন্ত মরেই গেল টিকা আবিষ্কারক কোম্পানিগুলো কি শত শত কোটি ডলার মুনাফা করতে যাচ্ছে? বন্য প্রাণী বিক্রি করা হয়, উহান শহরের এমন একটি বাজার থেকে এই ভাইরসটি সংক্রমিত হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তিনি জানান, চার থেকে পাঁচ সপ্তাহের এই সফরে ভাইরাসের সংক্রমণ হওয়ার শুরুটা কীভাবে হয়েছিল এবং এটি উহান শহরেই উদ্ভূত হয়েছিল কিনা, তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন তারা। ভাইরাস সংক্রমণের শুরুর দিকে ধারণা করা হচ্ছিল হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি জীবিত প্রাণী বেচাকেনার বাজারে ভাইরাসটি প্রথমবার শনাক্ত হয় এবং সেখান থেকেই মানুষের দেহে আসে ভাইরাসটি। তবে কিছু গবেষণা থেকে ধারণা পাওয়া যায় যে মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে, এমন করোনাভাইরাস বহুকাল ধরেই বাদুড়ের দেহে উপস্থিত ছিল। ভাইরাসের খবর প্রচারে চীনের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া কী ছিল? জানুয়ারিতে চীনের নেয়া পদক্ষেপের প্রশংসা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হেলথ ইমার্জেন্সি প্রোগ্রামের প্রধান মাইক রায়ান মন্তব্য করেন যে 'কঠিন চ্যালেঞ্জ থাকলেও চীনের প্রতিক্রিয়া ছিল ব্যাপক।' বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল ভাইরাস সংক্রমণের হার কমিয়ে আনতে এবং ভাইরাসের জেনেটিক কোড সম্পর্কিত তথ্য জানাতে বেইজিং দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র সহ বেশ কয়েকটি দেশ চীনের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিল। চীন ভাইরাস বিষয়ক তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কতটা স্বচ্ছ ছিল, সেবিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল তারা। চীনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান গওডেন গালেয়া বিবিসিকে বলেন যে শুরুর দিকে ভাইরাস মোকাবেলায় 'ঘাটতি' থাকলেও ভবিষ্যতে কীভাবে সেগুলো দূর করা যায় বিশেষজ্ঞরা তা নিয়ে কাজ করছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অতিরিক্ত মাত্রায় 'চীন কেন্দ্রিক' আচরণ করছে বলে এক পর্যায়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পও সংস্থাটির সমালোচনা করেছিলেন। | A team of 10 international scientists will travel to the Chinese city of Wuhan next month to investigate the origins of Covid-19, the World Health Organization (WHO) has said. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | মিয়ানমারের ডি ফ্যাক্টো নেতা অং সান সু চি মিয়ানমারে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ ঠেকাতে ব্যর্থ হবার প্রতিক্রিয়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিলো কানাডার পার্লামেন্ট। মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে মিজ সু চির ভূমিকার স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৯১ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার জিতে ছিলেন। গত মাসে প্রকাশিত এক জাতিসংঘ প্রতিবেদনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দেশটির শীর্ষ ছয়জন সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত এবং বিচার হওয়া দরকার। আরো পড়তে পারেন: সু চি'র সম্মতিতে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নির্যাতন:জাতিসংঘ রোহিঙ্গা সংকট: 'সু চি'র পদত্যাগ করা উচিত ছিলো' গত এক বছরে অন্তত সাত লক্ষ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন নির্যাতনের শিকার হয়ে গত এক বছরে দেশ ছেড়ে অন্তত সাত লক্ষ মানুষ পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে। মিজ সুচিকে কানাডাতে যে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে, সেটি বাতিলে পার্লামেন্ট প্রস্তাব ওঠার আগের দিন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, মিজ সু চিকে নাগরিকত্বের সম্মান জানানোর প্রয়োজন আর আছে কি না, তা পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। তবে নাগরিকত্ব বাতিলের পরবর্তী পদক্ষেপসমূহ কি হবে সে নিয়ে তাৎক্ষনিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। যদিও, এ পদক্ষেপের কারণে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা মানুষের দুর্দশা লাঘব হবে না বলে মিঃ ট্রুডো উল্লেখ করেছেন। কানাডাতে এ পর্যন্ত মাত্র ছয়জন মানুষকে সম্মানসূচক নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে। ফলে এটি অত্যন্ত বিরল এক সম্মান ছিল মিজ সু চির জন্য। এর আগে অক্সফোর্ডসহ ব্রিটেনের কয়েকটি শহর তাকে দেয়া সম্মান প্রত্যাহার করে নিয়েছে। | Canadian MPs have voted unanimously to revoke the honorary citizenship of Myanmar's leader, Aung San Suu Kyi. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | সতেরোশোর বেশি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য নির্মিত ছবির অভিনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ২৫০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। আইনজীবীরা বলছেন, এই যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ২০০৪ সালের দিকে। ৬৭ বছরের এই পর্ন তারকার বিরুদ্ধে এর আগেই ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে চারজন নারীকে ধর্ষণ অথবা হামলার অভিযোগ রয়েছে। পর্নোগ্রাফির জগতে রন জেরেমি খুব বড় একটি নাম, যিনি চার দশক জুড়ে ১৭০০'র বেশি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য নির্মিত ছবিতে অভিনয় করেছেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ২৫০ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। রন জেরেমির আসল নাম রোনাল্ড জেরেমি হায়াত। তাকে গত জুন মাসে আদালতে হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল যে, তিনি ২৫ ও ৩০ বছর বয়সী দুইজন নারীকে ধর্ষণ করেছেন। এছাড়া আরও ৩৩ ও ৪৬ বছরের আরও দুজন নারীর ওপর হামলা করেছেন। সেই সময় এসব অভিযোগ নাকচ করে তার আইনজীবী বলেছিলেন যে, তার মক্কেল 'চার হাজারের বেশি নারীর উপপতি' এবং 'নারীরাই তার প্রতি নিজেকে বিলিয়ে দেয়'। তবে লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস জানিয়েছে, তাকে আদালতে হাজির করার পরবর্তী কয়েক দিনে তার বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার আরও কিছু অভিযোগ পেয়েছেন আইনজীবীরা। নতুন অভিযোগের মধ্যে রয়েছে ১৩ জন নারীর ওপর অন্তত ২০ বার ধর্ষণ এবং যৌন হামলার মতো অভিযোগ। ভুক্তভোগীদের বয়স হবে ১৫ থেকে ৫৪ বছর। আরো পড়ুন: করোনাভাইরাস এবং সেক্স: আপনার কী কী জানা প্রয়োজন আমি কেন যৌনপল্লীতে যেতে শুরু করলাম রন জেরেমির আসল নাম রোনাল্ড জেরেমি হায়াত। তাকে গত জুন মাসে আদালতে হাজির করা হয়। সর্বশেষ যৌন হামলার ঘটনা ঘটেছে এই বছর নববর্ষের দিনে হলিউডের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। ২০১৭ সালে রোলিং স্টোন ম্যাগাজিন প্রতিবেদন প্রকাশ করে যে, মি. জেরেমির বিরুদ্ধে অনেক নারী যৌন অসদাচরণের অভিযোগ এনেছেন, যার মধ্যে রয়েছে আপত্তিকর স্পর্শ, ডিজিটাল মাধ্যমে যৌন হয়রানি এবং যৌন হামলা। তবে ম্যাগাজিনকে তিনি বলেছিলেন যে, 'তিনি কখনোই কাউকে ধর্ষণ করেননি।' সবচেয়ে বেশি পর্নোগ্রাফিতে অভিনয় করার জন্য গিনেজ বুকের রেকর্ডে নাম উঠেছে মি. জেরেমির। ২০০১ সালে তাকে নিয়ে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করা হয়। বেশ কিছু কম্পিউটার গেম, হলিউডের সিনেমা এবং মিউজিক ভিডিওতেও তিনি অভিনয় করেছেন। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: ইউএই-ইসরায়েলের মধ্যে প্রথম ‘ঐতিহাসিক‘ ফ্লাইট লাদাখে চীনের সৈন্যরা আবারও সীমান্ত লঙ্ঘন করেছে: ভারত সৌদি-পাকিস্তান সম্পর্কে হঠাৎ অবনতি, কাশ্মীরই একমাত্র কারণ নয় ই-কমার্সে 'ক্যাশ অন ডেলিভারি'র সাথে অনাস্থার যে সম্পর্ক | Adult film star Ron Jeremy has been charged with sexual violence against 13 more women, including a 15-year old, prosecutors in Los Angeles say. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | রাজনীতির মাঠে পা ফেলার আগে তিনি ছিলেন বিশাল এক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের মালিক। তখনও তিনি তার নানা কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যের জন্য আলোচিত ও বিতর্কিত ছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও তাকে ঘিরে নতুন নতুন আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম হয়েছে। অতীত ইতিহাস ও অভিবাসনবিরোধী বক্তব্যের কারণে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিলো। কিন্তু অভিনব প্রচারণা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত টেড ক্রুজ ও মারকো রুবিওকে পেছনে ফেলে ইন্ডিয়ানা প্রাইমারির পর তিনি রিপাবলিকান দলের প্রার্থী মনোনীত হন। পরে নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী পেশাদার রাজনীতিবিদ হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আগাম সব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, জরিপ ও পূর্বাভাসকে ভুল প্রমাণ করে ছাড়েন ৭০ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিজয়কে ঘিরে অনেক সমালোচনা ও বিতর্ক হয়েছে। নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ উঠেছিল। ওই নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ কম ভোট পেয়েও যুক্তরাষ্ট্রের অভিনব নির্বাচনী ব্যবস্থা ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সফল রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভাজন সৃষ্টিকারী নীতি ও বক্তব্যের কারণে পরের চার বছরেও তার প্রচুর সমালোচনা হয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তাকে ইমপিচমেন্টের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ারও কথা উঠেছিল। এমনকি অনেক বিশ্লেষক বলেছিলেন যে তিনি এক বছরের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে। কিন্তু সবাইকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চার বছরের পুরো মেয়াদ পার করে ২০২০ সালের নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকান দল থেকে আবারও তিনি প্রার্থী হয়েছেন। শুরুর জীবন নিউ ইয়র্কে বিত্তশালী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ফ্রেড ট্রাম্পের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অর্ধেক স্কটিশ। কারণ তার মা মেরি ম্যাকলয়েডের জন্ম স্কটল্যান্ডে। ১৯৩০ সালে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে মেরি ম্যাকলয়েড চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে প্রথমে পরিচয় ও পরে পরিণয় হয় একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিল্ডার ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ফ্রেড ট্রাম্পের সঙ্গে। অত্যন্ত পরিশ্রমী এই দম্পতির ঘরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্ম নিউ ইয়র্ক শহরে, ১৯৪৬ সালে। পরিবারের অঢেল সম্পত্তি সত্ত্বেও তার পিতা চেয়েছিলেন তার সন্তানরাও তাদেরই কোম্পানিতে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে কাজ করবেন। স্কুলে দুষ্টুমি করতে শুরু করলে ১৩ বছর বয়সে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সামরিক একাডেমিতে। পেনসালভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করেছেন মি. ট্রাম্প। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বড় ভাই ফ্রেড জুনিয়র পাইলট হতে চাওয়ায় বাবার ব্যবসার হাল ধরেন তিনি। পরে ফ্রেড ট্রাম্প ৪৩ বছর বয়সে অ্যালকোহল আসক্তির কারণে মারা যান। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার ভাই-এর মৃত্যুর কারণে সারা জীবন তিনি অ্যালকোহল ও সিগারেট থেকে দূরে ছিলেন। মি. ট্রাম্প বলেছেন, পিতার কাছ থেকে দশ লাখ ডলার ঋণ নিয়ে তিনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেছিলেন। পরে তিনি তার বাবার কোম্পানিতে যোগ দিয়ে ব্যবসার বিপুল সম্প্রসারণ ঘটান। ডোনাল্ড ট্রাম্প- যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট রাজনীতিতে যার অভিজ্ঞতা ছিল না। ১৯৭১ সালে এই কোম্পানির নাম বদল করে তিনি নতুন নামকরণ করেন - ট্রাম্প অর্গানাইজেশন। তার বাবা ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় তিনি বলেছিলেন, "আমার পিতাই ছিলেন আমার অনুপ্রেরণা।" ব্যবসা সম্রাট দায়িত্ব গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের পারিবারিক ব্যবসায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। ব্রুকলিন ও কুইন্সে আবাসিক বাড়িঘর নির্মাণ থেকে তিনি সরে আসেন নিউ ইয়র্কের কেন্দ্রে ম্যানহাটনের মতো পশ এলাকায় রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়। ভগ্নপ্রায় কমোডোর হোটেলকে তিনি পরিণত করেন বিলাসবহুল গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে এবং ফিফথ এভিনিউতে নির্মাণ করেন ট্রাম্প প্রপার্টির বিখ্যাত ভবন ৬৮ তলার ঝকঝকে উজ্জ্বল ট্রাম্প টাওয়ার। তার কোম্পানির নির্মিত অন্যান্য সুপরিচিত ভবনের মধ্যে রয়েছে ট্রাম্প প্যালেস, ট্রাম্প ওয়ার্ল্ড টাওয়ার, ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলসহ আরো কিছু ভবন। মুম্বাই, ইস্তাম্বুল ও ফিলিপিনেও আছে ট্রাম্প টাওয়ার। ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু হোটেল ও ক্যাসিনোও তৈরি করেছেন। তার ওই ব্যবসা অবশ্য পরে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। বিনোদন জগতের ব্যবসাতেও তিনি এক সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মিস ইউনিভার্স, মিস ইউ এস এ এবং মিস টিন ইউ এস এ সুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন তিনি। ২০০৩ সালে তিনি এনবিসি টেলিভিশনে দ্য অ্যাপ্রেনটিস নামের একটি রিয়েলিটি শো চালু করেন। ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। এই শো দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এই শো এর বেশ কিছু অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শো ম্যান থেকে শোবিজেও সফল হয়েছেন তিনি। পরে তিনি ঘোষণা করেন যে এই অনুষ্ঠান করে তিনি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ (২১৩ মিলিয়ন ডলার) পেয়েছিলেন। রেসলিং ম্যাচও উপস্থাপনা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরো পড়তে পারেন: যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ২০২০: ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতি কী ও কীভাবে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার চাবিকাঠি কোন রাজ্যগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচন ২০২০: কে এগিয়ে- ট্রাম্প না বাইডেন? টিভি শো করেও তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। অর্থ-বিত্তের পাশাপাশি এসব অনুষ্ঠান থেকে তিনি প্রচুর নামযশও অর্জন করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েকটি বই লিখেছেন। এমন কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও মালিক হয়েছেন যারা নেকটাই থেকে শুরু করে বোতল-জাত পানি বিক্রি করে। কী নেই তার নামে- ট্রাম্প মর্টগেজ, ট্রাম্প শাটল, অনলাইন ট্রাভেল ওয়েবসাইট- গো ট্রাম্প, ট্রাম্প রেস্তোরা, ডোনাল্ড ট্রাম্প ডলস ইত্যাদি ইত্যাদি! ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থ বিত্তের পরিমাণ ৩৭০ কোটি ডলার। যদিও মি. ট্রাম্পের হিসেবে এর পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলার। তবে এর মধ্যে নিজেকে তিনি কয়েকবার অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন। একবার ১৯৮০-এর দশকের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে মি. ট্রাম্প বলেছিলেন, "আমি ফিফথ এভিনিউ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। টিফানির (কন্যা) সামনে ছিল এক ব্যক্তি। তার হাতে ছিল একটি ক্যান। আমি তখন তাকে বললাম তুমি কি জানো যে এই লোকটি আমার চেয়েও বিত্তশালী। আমার দিকে তাকিয়ে সে বললো তুমি কী বলছো? আমি বললাম রাস্তার ওপাশে যে লোকটি তার এখন আমার চেয়েও ৯০০ মিলিয়ন ডলার বেশি অর্থ আছে।" তবে তার এই সম্পদের পরিমাণ তার মেজাজ-মর্জির মতোই উঠা-নামা করেছে। স্বামী ও পিতা ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনবার বিয়ে করেছেন। স্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন তার প্রথম স্ত্রী - ইভানা জেলনিকোভা। তিনি ছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের একজন অ্যাথলিট, ফ্যাশন ডিজাইনার ও মডেল। এই দম্পতির তিন সন্তান- ডোনাল্ড জুনিয়র, ইভাঙ্কা এবং এরিক। পরে ১৯৯০ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যে যুদ্ধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল। তাদের এই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া নিয়ে তখনকার ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলোতে প্রচুর মুখরোচক গল্প প্রকাশিত হয়। এসব খবরে বলা হয় যে মি. ট্রাম্প তার স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন। যদিও তার সাবেক স্ত্রী ইভানা পরে এসব ঘটনাকে তুচ্ছ করে দেখিয়েছেন। প্রথম স্ত্রী ইভানার সঙ্গে মি. ট্রাম্প। পরে ১৯৯৩ সালে তিনি অভিনেত্রী মারলা মেপেলসকে বিয়ে করেন। তাদের এক কন্যা- টিফানি। এর ছ'বছর পর ১৯৯৯ সালে তাদের বিয়ে ভেঙে যায়। এর পরে ২০০৫ সালে তিনি তার বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়া ক্নাউসকে বিয়ে করেন। তিনিও একজন মডেল। এই দম্পতির ঘরে এক ছেলে- ব্যারন উইলিয়াম ট্রাম্প। তার প্রথম ঘরের সন্তানেরা এখন ট্রাম্প অর্গানাইজেশন পরিচালনা করেন। অনেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেজাজ-মর্জির কথা উল্লেখ করে তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবনী লিখেছেন এরকম একজন টিম ও ব্রায়ান বলেছেন, মি. ট্রাম্প আট দশজনের মতোই একজন সাধারণ মানুষ। "তিনি জাঙ্ক ফুড খেতে পছন্দ করেন, শুক্রবার রাতে টিভির সামনে বসে স্পোর্টস দেখেন। অনেক দিক থেকেই তার আচার আচরণ একজন কিশোরের মতো। কিশোর বয়সে তো অনেকেই অনেক সময় নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।" বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়া ও সন্তানদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। রাজনীতিতে অভিষেক ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৮৭ সালে একবার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচনে লড়াই করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ২০০০ সালে রিফর্ম পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি এই প্রতিযোগিতায় অংশও নিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে কিনা - এই প্রশ্নে ২০০৮ সালে যখন আন্দোলন শুরু হয় তখন তিনি তার অত্যন্ত সরব একজন সদস্য ছিলেন। এই প্রশ্ন ও বিতর্ক ছিল অবান্তর। কেননা মি. ওবামার জন্ম হাওয়াই রাজ্যে। এই বিতর্কে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প পরে কোন ধরনের ক্ষমা না চাইলেও বলেছিলেন বারাক ওবামার জন্ম নিয়ে যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছিল সেসবের কোন ভিত্তি নেই। ২০১৫ সালে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন যে তিনি হোয়াইট হাউজে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নামতে চান। "এই দেশটিকে আবার মহান করে তুলতে পারেন আমাদের এমন এক ব্যক্তির প্রয়োজন। আমরা সেটা করতে পারি," নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায় এই মন্তব্য করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। 'মেক আমেরিকা গ্রেট' এগেইন অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রকে আবার একটি শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে - এই স্লোগান নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েন মি. ট্রাম্প। বারাক ওবামার সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিতর্কিত এই নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলা, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ এবং মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ার বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মি. ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণাকে ঘিরেও প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। সেসময় এমন কিছু অডিও ফাঁস হয়েছে যেখানে মি. ট্রাম্পকে নারীদের সম্পর্কে অশোভন মন্তব্য করতে শোনা গেছে। এসময় তার দলেরও অনেকে মন্তব্য করেছেন যে মি. ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন। শুধু তাই নয়, জনমত জরিপেও তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন। কিন্তু মি. ট্রাম্প সবসময় তার সমর্থকদের বলেছেন, এসব জরিপ যে ঠিক নয় সেটা তিনি প্রমাণ করে দেখাবেন। এবং শেষে তা-ই হয়েছে। নির্বাচনের পরে ২০১৭ সালের ২০শে জানুয়ারি তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট রাজনীতিতে যার কোন অভিজ্ঞতা ছিলো না। প্রেসিডেন্ট হিসেবে চার বছর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তাকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এই লড়াই ছিল রাজনীতির মাঠ থেকে আদালত পর্যন্ত। নানা বক্তব্যের জন্যেও তিনি সমালোচিত হয়েছেন। যেমন মেক্সিকোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কথা বলতে গিয়ে একবার তিনি বলেছিলেন মেক্সিকো থেকে ধর্ষণকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসছে। বেশ কয়েকজন নারী তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। অনেকে তাকে একজন ভাঁড়, কমেডিয়ান হিসেবেও উল্লেখ করেন, কেউ কেউ তাকে বলেন মিথ্যাবাদী। আবার যেভাবে তিনি সহজ সরল ভঙ্গিতে সোজা সাপ্টা উচ্চারণ করেন সেটা অনেককে আকৃষ্টও করে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে তার শারীরিক অঙ্গভঙ্গি নিয়েও কথাবার্তা হয়। এমনকি কথা হয় তার চুলের রঙ ও স্টাইল নিয়েও। অনেকেই এই চুল আসল নাকি নকল এনিয়েও প্রশ্ন করেন। রিয়েল এস্টেট, ব্যবসা, রিয়েলিটি টিভি শো, উপস্থাপনা এবং রাজনীতি - সবকিছুতেই সফল ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সমর্থকরা তাকে ডাকেন- 'দ্য ডোনাল্ড।' এতো কিছুতে সফল হওয়ার পরেও তিনি কেন প্রেসিডেন্ট হতে চান? তার নামের পরিধি আরো বাড়ানোর জন্য? প্রথমবার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, "আমাদের দেশের একজন বড় নেতার প্রয়োজন। আর সেজন্যই আমি প্রার্থী হওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করছি।" এই ডোনাল্ড ট্রাম্পই অ্যাপ্রেন্টিস রাজনীতিবিদ থেকে হয়ে উঠেছেন একজন শীর্ষ রাজনীতিবিদ, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি- আমেরিকার প্রেসিডেন্ট! এখন হোয়াইট হাউজের টপ জবের জন্য ভোটাররা তাকে আরো চার বছরের মেয়াদে আবার হায়ার করবেন, নাকি গত চার বছরের পারফরমেন্স দেখে এবারই তাকে ফায়ার করে দেবেন- সেটা জানা যাবে তেসরা নভেম্বর। | Long before he was a contender for the US presidency, Donald Trump was America's most famous and colourful billionaire. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | ব্রেক্সিট নিয়ে বিতর্ক চলছে টানা দুই বছর ধরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ব্রিটেন নাকি এরকম রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মুখোমুখি আর হয়নি। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের আজকের এই ভোটের গুরুত্বকে এভাবেই তুলে ধরছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। ভোটের ফলাফলের পরিণতি কী হতে পারে ব্রিটেনের জন্য? বিবিসির ল্যরা কুনসবার্গ কতগুলো সম্ভাব্য দৃশ্যপটের কথা বলছেন। ১. এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে'র এই পরিকল্পনা পার্লামেন্টে পাশ হওয়ার বিন্দুমাত্র আশা কেউ দেখছেন না। কিন্তু যদি অলৌকিক কিছু যদি ঘটে যায় এবং সিংহভাগ এমপি যদি প্রধানমন্ত্রীর পাশে এসে দাঁড়ান, তাহলে পরিকল্পনামত তিন মাসের মধ্যে ব্রিটেন ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবে। রাজনীতিতে টেরিজা মে আরো বেশ কিছুদিন টিকে যাবেন। ২. তবে ভোটে হেরে গেলে, প্রধানমন্ত্রী মহাসঙ্কটে পড়বেন। তবে সঙ্কটের মাত্রা নির্ভর করবে পক্ষে-বিপক্ষে কত ভোট পড়ে তার ওপর। নিজের দলের এমপি-মন্ত্রীরা ছাড়াও বিরোধী লেবার পার্টি কতটা চড়াও হবে তা অনেকটাই নির্ভর করবে ভোটের ব্যবধানের ওপর। নানা নানারকম দাবি-দাওয়ার চাপে জেরবার হতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে। ৩. বড়মাপের হার হলে, টেরিজা মের সরকারের হাত থেকে সাংসদরা ব্রেক্সিট চুক্তির নিয়ন্ত্রণ হাতে নিয়ে নিতে পারে। কারণ ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টি এই চু্ক্তির ব্যাপারে মারাত্মকভাবে বিভক্ত । এমপিরা সে পথে গেলে সরকারের সাথে সংসদের সম্পর্কে মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা তৈরি হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী মে'র রাজনৈতিক ভবিষ্যত চরম হুমকির মুখে ৪. সিংহভাগ সাংসদ চান ব্রেক্সিট হলেও ইউরোপের সাথে যেন ঘনিষ্ঠ একটি সম্পর্ক থাকে। এই মতবাদের পক্ষেই পাল্লা ভারি। ভোটে হারলে, ব্রিটেন হয়তো সেই পথেই যাবে। একজন এমপি বিবিসিকে বলেছেন, "যত দেরি হবে, ব্রেক্সিটের ধার ততই কমবে।" ৫. যদি এমপিরা বাধা তৈরি না করে, তাহলে আজ রাতের ভোটে হারলে ব্রিটেন কোনো চুক্তি ছাড়াই ইইউ থেকে বেরিয়ে যাবে। ইউরোপ বিরোধী অনেক এমপিরা সেটিই চান এবং তারা কোনো ছাড় দিতে রাজী নন। অনেক মন্ত্রী আশা করছেন, চুক্তি-বিহীন ব্রেক্সিটের পথে এগুলে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন কিছু ছাড় দিতে পারে। ৬. ভোটে হারলে বিরোধী লেবার পার্টি জেরেমি করবিন কী করবেন, ধারণা করা এখনও মুশকিল। তিনি কি হুমকি মতো নতুন নির্বাচনের আশায় সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন। নির্ভর করবে ভোটের ব্যবধানের ওপর। এছাড়া, নতুন আরেকটি গণভোট দাবির জন্য দলের ভেতর তিনি চাপে রয়েছেন। লেবার নেতা জেরেমি করবিন ৭. এমপিদের যে অংশটি নতুন আরেকটি গণভোট চান, তারা অপেক্ষা করছেন দেখতে যে প্রধানমন্ত্রীর পরাজয় কত বড় হয়। ব্যবধান বেশি হলে, হামলে পড়বেন তারা। ২০১৬ সালে ব্রিটেনের জনগণ এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে রায় দেয়, তারপর গত আড়াই বছর ধরে বিতর্ক চলছে। অনিশ্চয়তা কাটেনি, আজ রাতের পরেও যে কাটবে সে সম্ভাবনা কম। | Prime Minister Theresa May has officially notified the European Union on Wednesday that the UK is leaving. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | শিল্পীর চোখে স্যামুয়েলের সাইকেল চালনা স্যামুয়েলের পরিবার ছিল অনেক বড়- তার পিতার চার স্ত্রীর ঘরে ছিল ১৭টি সন্তান। কিন্তু স্যামুয়েল সেদিন তাদের আয়ার সাথে ছিল একা। তার পরিবারকে বলা হয়েছিল যে সে বাড়ির বাইরে গেছে সাইকেল চালাতে। কিন্তু তার পরের ছয় বছর সে আর বাড়িতে ফিরেনি। তার সাথে পরিবারের আর কারো দেখাও হয়নি। শিশুর খোঁজে "তাকে খুঁজে পাওয়ার জন্যে হেন কিছু নেই যা আমরা করি নি," বলেন স্যামুয়েলের বড় বোন ফিরদৌসি ওকেজি। সেসময় ফিরদৌসির বয়স ছিল ২১। তার ভাই যখন নিখোঁজ হয়ে গেলো তখন তাকে এবিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। তিনি যখন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাড়িতে ফোন করতেন, তখন তার ভাই স্যামুয়েল দৌড়ে ফোনের কাছে চলে যেত। তাঁর সাথে ফোনে কথা বলতে খুব পছন্দ করতো স্যামুয়েল। কিন্তু দেখা গেল তিনি যখন বাড়িতে ফোন করছেন তখন আর তার ভাই ফোন ধরছে না। বাড়ির অন্যান্যরা ফোন ধরতে লাগলো। তখনই ফিরদৌসির সন্দেহ হয়েছিল যে কিছু একটা হয়েছে। কী হয়েছে সেটা জানতে ফিরদৌসি একদিন দুপুরবেলা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শেষ করে বাড়িতে গেলেন। সেসময় বাড়িতে ছিলেন তার পিতা যিনি একজন স্থপতি এবং হোটেল মালিক। তিনি আর ঘটনাটি তার মেয়ের কাছে গোপন রাখতে পারলেন না। সবকিছু খুলে বলতে হলো তাকে: কয়েক মাস হলো তার প্রিয় ছোট ভাইটার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্যামুয়েল হারিয়ে যাওয়ার আগে তার মায়ের সাথে। "আমার পিতার অভিযোগের পর প্রথম দিকে বাড়ির আয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তদন্তের পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়," বলেন ফিরদৌসি। স্যামুয়েলের এই নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর যতদিন সম্ভব তার মায়ের কাছ থেকেও গোপন রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। স্যামুয়েলের পিতার সাথে তার মায়ের বিচ্ছেদ হয়ে গেছে। তিনি থাকেন অন্য একটি শহরে। মা-ও তার খোঁজ নিতে বাড়িতে ফোন করতেন। স্যামুয়েলের বাড়িতে না থাকার ব্যাপারে প্রত্যেকবারই তাকে ভিন্ন অজুহাত দেওয়া হয়েছে। শেষ পর্যন্ত স্যামুয়েলের এক মামাকে দায়িত্ব দেওয়া হলো তার মাকে সবকিছু খুলে বলতে। পুলিশের তদন্তের পাশাপাশি স্যামুয়েলের খোঁজে তার পরিবার থেকেও পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হলো। ছোট ছোট দল গঠন করা হলো - যাদের কাজ ছিল রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে স্যামুয়েলকে খুঁজে বের করা। তারা এলাকার বন-জঙ্গল এমনকি খানাখন্দও খুঁজে দেখল, যদি সে ওখানে পড়ে গিয়ে থাকে, কিম্বা কেউ তাকে মেরে সেখানে ফেলে দিয়ে থাকতে পারে। স্যামুয়েলের খোঁজে তারা মুসলিম ধর্মীয় নেতাদের সাথেও আলোচনা করলো। তারপর একসময় তার পিতা সবাইকে অনুরোধ করলো 'তাদের ভাই মারা গেছে' এই সত্যটা মেনে নিতে। কারণ তাকে খুঁজে বের করার জন্য যা কিছু করার দরকার তার সবই তারা করেছে। সেই চিৎকার কিন্তু ফিরদৌসি তার ভাইকে খুঁজে বের করার চেষ্টা বাদ দিতে রাজি হন নি। বিশ্ববিদ্যালয়ে তার থিসিস তিনি তার হারিয়ে যাওয়া ভাইকে উৎসর্গ করলেন। স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণ করার এক বছর পর কাজের সন্ধানে তিনি চলে যান দক্ষিণের লাগোস শহরে। ধর্মান্তরিত হয়ে তিনি খৃস্টান ধর্ম গ্রহণ করলেন। নিয়মিত যেতে লাগলেন নাইজেরিয়ার ওগুন রাজ্যের গির্জা উইনারস চ্যাপেলে। এই গির্জায় প্রত্যেক ডিসেম্বর মাসে পাঁচদিনের একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় যেখানে সারা বিশ্ব থেকে এর সদস্যরা সেখানে যোগ দিতেন। ফিরদৌসি যখন তার হারিয়ে যাওয়া ভাইকে খুঁজে পেলেন- শিল্পীর চোখে। এই অনুষ্ঠানটি পরিচিত শিলো নামে। এতে যারা যোগ দেন তারা চাইলে সেখানে তাদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্রি স্ট্যান্ড বসাতে পারেন। ফিরদৌসির তখনও চাকরি হয়নি। ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসের ওই অনুষ্ঠানে তিনিও একটি স্ট্যান্ড বসাতে চাইলেন। তাতে তার মায়ের তৈরি করা কিছু কাপড়ের বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্যে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করলেন তিনি। ওরকম একটি ফ্রি স্ট্যান্ড বানাতে চেয়ারে বসে একজন কাঠমিস্ত্রির জন্যে অপেক্ষা করছিলেন তিনি। ঘুমে তার মাথাটা প্রায় ঢলে পড়েছিল তখন। কিছু একটার আওয়াজে জেগে উঠলেন তিনি। দেখলেন একজন ভিক্ষুক আল্লাহর নাম করে তার কাছে ভিক্ষা চাইছেন। ফিরদৌসি তখন চোখ তুলে তাকালেন। তিনি দেখলেন ওই ভিক্ষুক একজন বালকের কাঁধ ধরে দাঁড়িয়ে আছে। বালকটির পরনে ছিন্ন বস্ত্র। তাকে দেখেই চিৎকার দিয়ে উঠলেন ফিরদৌসি - মুখ বসে যাওয়া বালকটি আর কেউ নয়, তারই হারিয়ে যাওয়া ছোট ভাই। অপহরণ স্যামুয়েলের এখন বয়স ৩০ বছর। তাকে তার পরিবার থেকে কিভাবে চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সে সম্পর্কে তার কিছুই মনে নেই। "আমার শুধু ট্রেনে করে কোথাও যাওয়ার কথা মনে পড়ে।" তাকে একজন মহিলার কাছে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার ছিল একটা হাত। লাগোসের এক শহরতলিতে থাকতেন ওই মহিলা। ওই এলাকাতে বহু প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক বসবাস করতো। ওই মহিলা স্যামুয়েলকে ভাড়া করেছিল অন্ধ ভিক্ষুকদের পথ-নির্দেশক হিসেবে। এজন্যে তাকে দেওয়া হতো দিনে ৫০০ নাইরা বা পাঁচ ডলার। একজন অন্ধ ভিক্ষুকের একটি বালকের কাঁধ বা হাত ধরে চলাফেরা করার দৃশ্য নাইজেরিয়ার রাস্তাঘাটে খুবই স্বাভাবিক একটি দৃশ্য। বিশেষ করে সেসব রাস্তায় যেখানে প্রচুর গাড়ি চলে। তারা গাড়ির জানালায় টোকা মেরে মেরে ভিক্ষে করে। অথবা তাদেরকে মসজিদ কিম্বা গির্জার আশেপাশে ভিক্ষা করতেও দেখা যায়। স্যামুয়েল জানান পরে আরো পাঁচজন বালক ওই মহিলার সাথে যোগ দিয়েছিল যাদেরকেও ভাড়া দেওয়া হতো অন্ধ ভিক্ষুকদের কাছে। অন্ধ ভিক্ষুক ও তাদের গাইড। স্যামুয়েলের মনে হতো তাকে এমন কিছু দেওয়া হয়েছে বা এমন কিছু একটা করা হয়েছে যার ফলে ওই সময়ের কথা সে কিছুই মনে করতে পারছে না। সেসময় তার পরিবারের সদস্যদের কথাও তার মনে পড়েনি। "আমি ঠিক জানি না সেসময় আমার মধ্যে আবেগ বলে কিছু ছিল কিনা। আমি শুধু জানতাম যে একজন ভিক্ষুককে সাথে নিয়ে আমার বাইরে বের হতে হবে। অর্থ জোগাড় করতে হবে, খাবার থেতে হবে, ঘুমাতে হবে। তার পরের দিনও আমার ঠিক ওই একই কাজ ছিল," বলেন তিনি। দাসত্বের জীবন ভিন্ন ভিন্ন ভিক্ষুক তাকে ভাড়া করতো। কেউ ভাড়া করতো এক সপ্তাহের জন্যে আবার কেউ হয়তো এক মাসের জন্যেও। দিনের শেষে বালক স্যামুয়েল ভিক্ষুকের সাথেই রাস্তার কোন এক পাশে ঘুমিয়ে পড়তো। ওর কাজে খুশি হলে ভিক্ষুকরা তাকে হয়তো আরো কিছুদিনের জন্যে আবার ভাড়া করতো। "আমার জীবন ছিল একজন দাসের মতো। আমি কোথাও যেতে পারতাম না। কিছু করতে পারতাম না। আমাকে থাকতো হতো তাদের আশেপাশেই।" তাকে সবসময় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে হতো। ফলে তার কিছু বন্ধুও হয়েছিল, যারা ছিল ওই ভিক্ষুকদেরই ছেলে মেয়ে। কখনও কখনও তারা একসাথে খেলাধুলাও করতো। অন্ধ ভিক্ষুককে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন স্যামুয়েল, শিল্পীর তুলিতে। কখনও কখনও লোকেরা তাকে খাবার খেতে দিত। না হলে তারা রেস্তোরাঁর আশেপাশে ঘুরঘুর করতো এবং ফেলে দেওয়া খাবার ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে খেত। "আমি সবসময় ক্ষুধার্ত থাকতাম। কিন্তু দিনের বেলা যখন কাজে থাকতাম তখন খাওয়ার জন্য কোন ফুসরত ছিল না। লোকেরা যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজে চলে যেত তেমনি ওই ভিক্ষুকরাও সকালে ঘুম থেকে উঠে আমাকে নিয়ে ভিক্ষা করতে বের হয়ে পড়তো।" দিনের পর দিন সে এই কাজটাই করেছে। লাগোসের এমন কোন রাস্তা বাকি নেই যে রাস্তা ধরে সে হাঁটে নি। ভিক্ষুকদের ডান হাত কাঁধে নিয়ে সে চষে বেড়াত শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। কখনও কখনও তারা পাশের শহরেও চলে যেত। সীমান্ত পার হলেই আরেকটি দেশ বেনিন। কখনও যদি ভিক্ষুকরা খবর পেতেন যে কোথাও বড় রকমের দান খয়রাতের ঘটনা আছে তখন তারা স্যামুয়েলকে বললে স্যামুয়েল তাদের নিয়ে বাসে করে অনেক দূরেও চলে যেত। "অন্ধ মানুষ খুব স্পর্শকাতর হয়। তাদের শ্রবণশক্তি খুব প্রখর থাকে। কোন শব্দ হলেই তারা টের পেয়ে যায়। কখনও কখনও তারা আমার কাঁধ টিপে বলতো: ওখানে তো একজন আছে। তুই কেন ওই লোকটার কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছিস?" "তারা চেষ্টা করতো যতটা সম্ভব অর্থ রোজগার করতে।" অলৌকিক ঘটনা ২০০০ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনা। স্যামুয়েল সেসময় যে ভিক্ষুককে নিয়ে রাস্তায় বের হতো, তিনি উইনার চ্যাপেল গির্জার অনুষ্ঠানটির কথা শুনেছিলেন। ওখানেই তার বোনের সাথে দেখা হয়েছিল। ফিরদৌসি তখন চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু বোনকে দেখার পর একটা শব্দও করতে পারে নি স্যামুয়েল। এতদিন পর এভাবে হারিয়ে যাওয়া ভাইকে দেখতে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন ফিরদৌসি। "প্রথমে কিছুই বুঝতে পারিনি। কিন্তু আমার মনে হচ্ছিল তাকে আমি চিনি। কোন না কোনভাবে তিনি আমার পরিচিত," বলেন স্যামুয়েল। উইনারস চ্যাপেলের ডেভিড ওদেপো। কিন্তু এর মধ্যেই সেখানে লোকজন জড়ো হয়ে গেল। গির্জার কর্মকর্তারাও এসে হাজির হলেন। জ্ঞান ফিরে এলো ফিরদৌসির। সব ঘটনা শুনে গির্জার লোকেরা একে এক অলৌকিক ঘটনা বলে ঘোষণা করলেন। তারা সবাই মিলে স্যামুয়েলকে গির্জার এক কোণায় নিয়ে গেলেন। পানি দিয়ে ধুয়ে দিলেন তার শরীর। নতুন কাপড় দিলেন পরার জন্য। তারপর তাকে মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হলো। মঞ্চের সামনে তখন ৫০ হাজার মানুষ। ফিরদৌসির হাতে তখন একটা মাইক্রোফোন তুলে দেওয়া হলো। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বর্ণনা করলেন এই কিছুক্ষণ আগে তিনি কীভাবে তার এতদিনের হারানো ভাইকে ফিরে পেয়েছেন। সেখানে উপস্থিত সবাই তখন আনন্দে চিৎকার দিয়ে উঠেছিল। গির্জার প্রতিষ্ঠাতা ডেভিড ওয়েডেপো তখন স্যামুয়েলকে ধরে তার জন্যে প্রার্থনা করেন। ওই রাতে তারা গির্জার সামনে রাখা একটি গাড়ির ভেতরেই ঘুমিয়েছিলেন। কারণ ফিরদৌসি যেখানে থাকেন সেই জায়গাটা গির্জা থেকে অনেক দূরে। ফিরদৌসির মনে আছে ওই রাতে বারবার তার ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। এবং প্রতিবারই তিনি তার ভাইকে স্পর্শ করে নিশ্চিত হয়েছেন যে বালকটি আসলেই তার ভাই। উদ্ধার স্যামুয়েলের সাথে আরো যারা ছিল তাদেরকে উদ্ধার করার জন্যে সেদিন কিছু না করায় এখন অনুশোচনা হয় ফিরদৌসির। আসলে ছয় বছর পর ভাইকে পেয়ে তিনি আবেগে এতোটাই ভেসে গিয়েছিলেন যে তখন অন্যদের জন্যে কিছু করার কথা তার মনেই পড়েনি। কিন্তু স্যামুয়েল জানান, তাকে উদ্ধার করার সামান্য আগে ওই মহিলার কাছে আরো একজন বালক হাজির হয়েছিল। তিনি বলেন, প্রথম দিকে বাচ্চাটি শুধু কাঁদতো। কিছু খেতে দিলেও খেত না। তারপর কোন এক সময় সে একেবারে বোবা হয়ে যায়। কোন কথা বলতো না। স্যামুয়েলের ধারণা ওই ছেলেটিকে চুপ করিয়ে দেওয়ার জন্যেও হয়তো কিছু একটা করা হয়েছিল। বোন ফিরদৌসির সাথে স্যামুয়েল। "উন্নত দেশে এরকম ঘটনা ঘটলে আপনি পুলিশের কাছে যাবেন। কিন্তু এখানে পুলিশ আপনার কাছে অর্থ দাবি করবে। কিন্তু আমার তো কোন চাকরি ছিল না," বলেন ফিরদৌসি। কিন্তু এই গল্পের এখানেই শেষ নয়। ছয় বছর নিখোঁজ থাকার পর উদ্ধার হওয়া ১৬ বছর বয়সী ভাইকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতেও তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। সে আর তার বাবার কাছে ফিরে যায় নি। বরং তার পর থেকে সে বড় হয়েছে তার বোনের কাছেই। তার সারা শরীরে ফুসকুড়ি পড়ে গিয়েছিল। গা থেকে আসতো দুর্গন্ধও। স্যামুয়েলের ডান কাঁধটা এক বছরেরও বেশি সময়ের জন্য একপাশে ঝুলে থাকতো। তারপর এক্স-রে করা হলো, ফিজিওথেরাপি দেওয়া হলো। ডাক্তাররা বললো, বছরের পর বছর ভিক্ষুকদের হাতের চাপের কারণে তার কাঁধটা একদিকে বাঁকা হয়ে গিয়েছিল। স্যামুয়েলকে যখন তার মা প্রথম দেখলেন তখন তিনিও তার ছেলেকে চিনতে পারেন নি। তার একটি হাত উঠিয়ে একটা জন্মদাগ দেখার পরেই মা নিশ্চিত হয়েছিলেন যে হ্যাঁ, সে তারই সন্তান স্যামুয়েল। শিক্ষা টানা ছয় বছর ধরে পড়াশোনা না করায় স্যামুয়েল কিছুই পড়তে পারতো না। ফলে বোন ফিরদৌসি তার জন্যে স্কুল খুঁজতে শুরু করলো। খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে পড়লেন তিনি। সবাই বলতে লাগলেন প্রাইমারি স্কুলে যাওয়ার আর বয়স নেই স্যামুয়েলের। ফিরদৌসি যখন আশা ছেড়ে দেবেন ঠিক তখনই তার সাথে একজন স্কুল মালিকের দেখা হলো। সেদিন গির্জার ওই অনুষ্ঠানে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। ওই মহিলা তখন স্যামুয়েলকে স্কুলে ভর্তি করাতে রাজি হলেন। তার জন্যে স্কুলের বাইরে বাড়তি কিছু পড়াশোনারও ব্যবস্থার করলেন ফিরদৌসি। স্যামুয়েল আব্দুল রহিম। মাত্র তিন মাসের মধ্যেই স্যামুয়েল ক্লাস ওয়ান থেকে ক্লাস ফোরে উঠে গেল। এক বছরের মধ্যে সে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ভর্তি পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হলো। এর মাত্র তিন বছর পর সে বসে পড়লো বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতেও। সবাইকে অবাক করে দিয়ে তিনি ভর্তি হয়ে গেলেন জারিয়ার আহমাদু বেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। কিন্তু তার মেধাই তার জন্যে কাল হয়ে দাঁড়ালো। বন্ধ হয়ে গেল তার পড়াশোনা। কারণ অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তাদের অ্যাসাইনমেন্ট লিখে দেওয়ার জন্যে ধরতো স্যামুয়েলকে। পরীক্ষায় আরেক ছাত্রের জন্য উত্তর লিখে দেওয়ায় তাকে যখন বহিষ্কার করা হলো তখন তিনি চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। ক্ষোভ নেই বর্তমানে স্যামুয়েল একটি নির্মাণ কোম্পানির সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছেন। "কোনদিন আমি যদি আর্থিকভাবে স্বচ্ছল হতে পারি তাহলে আমি আবার পড়ালেখা শুরু করবো," বলেন তিনি। তার ইচ্ছা তিনি কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা করবেন। স্যামুয়েলের জীবনে যা ঘটেছে তার জন্যে খারাপ কিছু মনে হয় না তার। তিনি মনে করেন তার ওই দিনগুলিই তার জীবন গড়ে তুলেছে, তাকে শিখিয়েছে অন্যদের প্রতি বিনয়ী হতে। ওই ছয় বছরের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জেনেছেন ভিক্ষুক ও গাইডরা কতোটা ক্ষুধার্ত থাকেন। আর সেকারণে তিনি তাদেরকে কখনো অর্থ দিয়ে সাহায্য করেন না। "বরং আমি তাদেরকে খাবার কিনে দেই। কারণ তখনই আমি বুঝেছিলাম অর্থের চেয়ে আমাদের জন্যে খাবার কতোটা জরুরী ছিল। কারণ ভিক্ষুকদেরকে যে অর্থ দেওয়া হতো সেটা কখনোই আমার কাছে এসে পৌঁছাতো না।" স্যামুয়েল তার জীবনের এই গল্প এখন সবাইকে জানাতে চান কারণ তিনি মনে করেন এর ফলে লোকেরা হয়তো ভিক্ষুক ও তাদের শিশু গাইডদের প্রতি আরো বেশি সহানুভূতিশীল হবেন। আরো পড়তে পারেন: রূপপুর প্রকল্পে 'দুর্নীতি', ঢাকায় 'বালিশ বিক্ষোভ' বদলে গেল কিলোগ্রাম: ক্রয়-বিক্রয়ে কী প্রভাব ফেলবে? যে পাঁচ কারণে হুয়াওয়েকে নিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব উদ্বিগ্ন | Samuel Abdulraheem has no recollection of the day he was abducted, aged seven, from his family home in the northern Nigerian city of Kano. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | বিজ্ঞানীরা আশংকা করেন করোনাভাইরাসের মত মহামারি আগামীতে আরো হবে প্রাকৃতিক জগতে মানুষের অনুপ্রবেশ সেই প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করছে। এ কথা বলছেন সারা বিশ্বের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা - যারা কোথায় এবং কীভাবে নতুন রোগের বিস্তার ঘটে তা নিয়ে গবেষণা করেন। তাদের এই প্রয়াসের অংশ হিসেবে তারা একটি পদ্ধতি তৈরি করেছেন যাতে এসব রোগ বিস্তারে প্রক্রিয়ায় কী কী সাদৃশ্য দেখা যায় –তা চিহ্নিত করা সম্ভব, যাকে বলে প্যাটার্ন রিকগনিশন। এ পদ্ধতির ফলে পূর্বাভাস দেয়া সম্ভব যে কোন কোন বন্যপ্রাণী মানুষের জন্য সবচেযে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে এটি ভবিষ্যতের কোন রোগবিস্তারের জন্য প্রস্তুত থাকার যে বৈশ্বিক প্রয়াস, তার অংশ। রেমডেসিভির ওষুধের প্রচারণা নিয়ে সতর্ক হবার আহ্বান বিশেষজ্ঞদের ব্যবহৃত মাস্ক-গ্লাভস যত্রতত্র ফেলে যে ক্ষতি করছেন বাড়িতে বসে কোভিড-১৯ চিকিৎসা: যে ছয়টি বিষয় মনে রাখবেন যেসব ভুয়া স্বাস্থ্য পরামর্শ এড়িয়ে চলবেন নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে বাদুড় থেকে একাধিক ভাইরাসজনিত রোগ মানুষের মধ্যে ছড়িয়েছে “আমরা পাঁচটি বুলেট থেকে বেঁচে গেছি” "গত ২০ বছরে আমরা ৬টি বড় বড় হুমকির সম্মুখীন হয়েছি – সার্স, মার্স, ইবোলা, এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা, এবং সোয়াইন ফ্লু" - বলছিলেন লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ম্যাথিউ বেলিস। “আমরা পাঁচটি বুলেট এড়াতে পেরেছি, কিন্তু ছয় নম্বরটার হাত থেকে বাঁচতে পারিনি” – বিবিসিকে বলেন অধ্যাপক বেলিস। সবচেয়ে বড় কথা, তিনি বলছেন - এটাই যে আমাদের সম্মুখীন হওয়া শেষ মহামারি, তা মোটেও নয়। “আমাদের বন্যপ্রাণী থেকে মানবদেহে আসা রোগগুলোর দিকে আরো গভীরভাবে নজর দিতে হবে”, বলেন অধ্যাপক বেলিস। এ পরীক্ষারই অংশ হিসেবে তিনি এবং তার সহযোগীরা এমন একটি প্যাটার্ন-রিকগনিশন পদ্ধতি তৈরি করেছেন, যার সাহায্যে আমরা বন্যপ্রাণী থেকে আসা যত রোগের কথা জানি তার সবগুলোর উপাত্ত অনুসন্ধান করে দেখা যাবে। এ পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা হাজার হাজার ব্যাকটেরিয়া, প্যারাসাইট বা পরজীবী এবং ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। অধ্যাপক বেলিসের পদ্ধতি দিয়ে এই অণুজীবগুলো যেসব প্রজাতির প্রাণীকে সংক্রমিত করতে পারে - তার মধ্যে লুকিয়ে থাকা সূত্রগুলো চিহ্নিত করা যাবে। এই সূত্রগুলো দিয়ে আবার এটাও বোঝা যাবে যে কোন কোন অণুজীব মানুষের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। যদি এভাবে কোন প্যাথোজেন, অর্থাৎ রোগ-সৃষ্টিকারী অণুজীব চিহ্নিত হয় – তাহলে বিজ্ঞানীরা কোন রোগের প্রাদুর্ভাব হবার আগেই তা ঠেকানোর উপায় উদ্ভাবনের গবেষণা চালাতে পারবেন। অধ্যাপক বেলিস বলছেন, ঠিক কোন রোগ মহামারির চেহারা নিতে পারে তার গবেষণা সম্পূর্ণ অন্য ব্যাপার - কিন্তু আমরা এই প্রথম পদক্ষেপটির ব্যাপারে অগ্রগতি ঘটাতে পেরেছি। বনভূমির পাশে পশুপালনের খামার হতে পারে নতুন রোগের উৎস লকডাউনের শিক্ষা বিজ্ঞানীরা একমত যে বন ধ্বংস এবং বন্যপ্রাণীর আবাসসভূমিতে মানুষের ঢুকে পড়ার ফলে এখন ঘন ঘন এবং সহজেই প্রাণী থেকে মানুষে রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক কেট জোনস বলছেন, মানুষ যেভাবে ইকোসিস্টেমকে বদলে দিয়ে কৃষি বা বৃক্ষরোপণ করছে, তাতে জীববৈচিত্র কমে যাচ্ছে এবং মানুষের নানা সংক্রমণে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়ছে বলেই তারা তথ্যপ্রমাণ পাচ্ছেন। তিনি বলছেন, অবশ্য সব রোগের ক্ষেত্রেই এমন হচ্ছে তা নয়। "কিন্তু কিছু বন্যপ্রাণী যারা মানুষের উৎপাতের ব্যাপারে সবচেয়ে সহিষ্ণু – যেমন কিছু প্রজাতির ইঁদুর – তারা অনেক সময় রোগ সৃষ্টিকারী অণুজীব ছড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখছে।" “ফলে জীববৈচিত্র হারানোর ফলে এমন পরিবেশ তৈরি হচ্ছে যাতে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর ঝুঁকিপূর্ণ সংস্পর্শ বেড়ে যাচ্ছে। তাতে কিছু কিছু ভাইরাস, ব্যকটেরিয়া বা প্যারাসাইটের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাচ্ছে।“ এ ক্ষেত্রে কিছু রোগ বিস্তারের কথা বলা যায় - যেখানে মানুষ এবং বন্যপ্রাণীর ‘মধ্যবর্তী পর্ব’ বা ইন্টারফেসের এই যে ঝুঁকি - তা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। মানুষ আর বন্যপ্রাণীর মাঝখানের 'ইন্টারফেস' মালয়েশিয়ায় ১৯৯৯ সালে নিপাহ ভাইরাসের এক প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল। এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ যা এক ধরণের বাদুড়ের মধ্যে দিয়ে বাহিত হয়। এই সংক্রমণ ছড়িয়েছিল বনভূমির প্রান্তে থাকার একটি শূকরের খামারে। ফলের গাছে এসে জঙ্গলের বাদুড় ফল খেতো। তাদের আধা-খাওয়া ফল মাটিতে পড়লে তা খেতো শূকর। ওই ফলে লেগে থাকতো বাদুড়ের মুখের লালা – যা থেকে শূকরের দেহে সংক্রমণ হয়। এই সংক্রমিত শূকরের দেখাশোনা করতো খামারের ২৫০ জনেরও বেশি কর্মী। ফলে তাদের দেহেও দেখা দিল ভাইরাস সংক্রমণ। তাদের মধ্যে ১০০ জনেরও বেশি লোকের মৃত্যু হয়। কোভিড-১৯ ভাইরাসে মৃত্যুর হার সম্পর্কে এখনো গবেষণা চলছে। তবে অনুমান করা হয়, যত লোক করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয় তার প্রায় ১ শতাংশ মারা যায়। নিপাহ ভাইরাসের ক্ষেত্রে মারা যায় সংক্রমিতদের ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ। লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় ও কেনিয়ার আন্তর্জাতিক গবাদিপশু গবেষণা কেন্দ্রের অধ্যাপক এরিক ফেভরে বলছেন, যে সব এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাবের উচ্চ ঝুঁকি সেসব জায়গায় গবেষকদের সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল এবং ফার্মের মতো মানুষের কর্মকান্ড – এ দুয়ের মধ্যে যদি এরকম কোন ইন্টারফেসের অস্তিত্ব থাকে, তাহলে সেটা হয়ে উঠতে পারে নতুন রোগ ছড়ানোর হটস্পট। যেমন বনভূমির কাছে একটি পশুপালনের ফার্ম, বা যেসব বাজারে প্রাণী বেচাকেনা হয় – এগেুলোই হচ্ছে এমন জায়গা, যেখানে মানুষ আর বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলের পার্থক্য ঝাপসা হয়ে যায়। এগুলো থেকেই রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা বেশি। অধ্যাপক ফেভরে বলছেন, “আমাদের এরকম ইন্টারফেস কোথাও তৈরি হচ্ছে কিনা তার ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে, এবং অস্বাভাবিক কোন কিছু দেখলেই তার বাপারে পদক্ষেপ নেবার ব্যবস্থা থাকতে হবে।“ মানব বসতি আছে এমন জায়গায় প্রতি বছর তিন থেকে চার বার নতুন রোগের উদ্ভব হয়। শুধু এশিয়া বা আফ্রিকা নয়, ইউরোপ বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও এটা হচ্ছে।“ “নতুন রোগের ব্যাপারে নজরদারির গুরুত্ব এখন আরো বেড়ে যাচ্ছে। আমরা এখন পৃথিবীতে মহামারি ছড়ানোর জন্য প্রায় আদর্শ পরিবেশ সৃষ্টি করে ফেলেছি” – বলছেন অধ্যাপক বেলিস। অধ্যাপক ফেভরেও এ ব্যাপারে একমত। তার কথা – করোনাভাইরাসের মতো ঘটনা আগামীতে বার বার ঘটতে পারে। তিনি বলছেন, এ থেকে আমাদের শিক্ষা নেবার আছে যে কীভাবে মানুয়ের কর্মকান্ড প্রাকৃতিক জগতের ওপর প্রভাব ফেলছে । | We have created "a perfect storm" for diseases from wildlife to spill over into humans and spread quickly around the world, scientists warn. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | সেন্সর প্যাচ এই সেন্সর ক্রমাগত রোগীর অবস্থা তার চিকিৎসকের কাছে পাঠাবে। বিজ্ঞানীদের যে দলটি এটি তৈরি করছেন তারা বলছেন, চিকিৎসকরা দূরে বসেই সর্বক্ষণ রোগীর অগ্রগতি অবনতি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। ফলে তার আরোগ্য হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত একটি গবেষণার ফলাফল আমেরিকায় বিজ্ঞানীদের একটি সম্মেলনে প্রকাশ করা হয়েছে। লিজি ম্যাকানিচ নামে এক ডাক্তার দু বছর আগে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর বেশ ক সপ্তাহ ধরে নড়তে চড়তে বা কথা বলতে বা গিলতে পর্যন্ত পারছিলেন না। তার হাতে পরীক্ষামুলকভাবে এই সেন্সর পরানো হয়েছে। এই সেন্সর দেখতে ছোটো এক টুকরো প্লাস্টারের মতো যা চামড়ার সাথে লাগিয়ে দেওযা যায়। এরপর বিনা তারেই এই প্যাচটি চিকিৎসকদের কাছে তথ্য পাঠাতে পারবে। ডাক্তারের কাছে এভাবে সর্বক্ষণ পৌঁছুবে রোগীর তথ্য লিজি বিবিসিকে বলেন - এই সেন্সর দিয়ে স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীর কোনো পেশী কাজ করছে আর করছে না তা বোঝা যাবে। ফলে স্ট্রোকের কারণে শরীরের ঠিক কোথায় ক্ষতি হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে বোঝা যাবে। লিজির থেরাপিস্ট ক্রিস্টেন হোল বলেন, রোগীরা পরামর্শ মত কাজ করছে কিনা - তা বুঝতে এখন তাদের মুখের কথার ওপর ভরসা করতে হয়। "এখন এসব তথ্য আমি দুরে বসে এই সেন্সরের মাধ্যমে পেয়ে যাবো"। বিজ্ঞানীদের জন্য বড় যেটা চ্যালেঞ্জ ছিল তা হচ্ছে - একটি ছোটো নমনীয় প্যাচের মধ্যে প্রচুর সংখ্যায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ঢোকানো যেটা আবার রোগীদের জন্য অস্বস্তি তৈরি না করে। শিকাগোর নর্থ-ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন রজার্স, যিনি এই সেন্সর প্যাচ আবিষ্কার করেছেন, বলছেন, "মানুষ বুঝতেই পারবে না এই প্যাচের ভেতর এত কারিগরি রয়েছে।" এ বছরের শেষে পরীক্ষা পর্ব শেষ হলে এটির বাণিজ্যিক উৎপাদন হয়তো শুরু হবে। | Scientists in the US are developing wearable sensors to speed up the recovery of stroke patients. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদে হামলাকারীকে চেপে ধরে রেখেছে পুলিশ আহত ব্যক্তি, যার বয়স ৭০'এর কোঠায়, রিজেন্টস পার্কের কাছে লন্ডন সেন্ট্রাল মসজিদে হওয়া আক্রমণে আহত হয়েছেন। তবে পুলিশ এটিকে সন্ত্রাসী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করছে না। ভুক্তভোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। মসজিদে থাকা কয়েকজন পুলিশ আসার আগ পর্যন্ত নামাজ বাদ দিয়ে ২৯ বছর বয়সী আক্রমণকারীকে আটকে রাখে। এক বিবৃতিতে মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে আহত ব্যক্তি মসজিদের মুয়াজ্জিন - যিনি আযান দিয়ে থাকেন - এবং দুপুরের নামাজের কিছুক্ষণ পর স্থানীয় সময় ৩টার দিকে আক্রমণের শিকার হন। মসজিদের মহাপরিচালক ডক্টর আহমাদ আল দুবাইয়ান জানান যে হাসপাতালে থাকা মুয়াজ্জিনের সাথে স্বল্প সময়ের জন্য ফোনে কথা হয়েছে তার এবং তিনি বলেছেন যে তিনি সুস্থ আছেন। মসজিদের একজন উপদেষ্টা আয়াজ আহমাদ মন্তব্য করেছেন যে ছুরি হামলাটি 'প্রাণঘাতী হতে পারতো যদি মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মানুষজন বাধা না দিতেন।' মসজিদের ভেতর থেকে পাওয়া ছবি থেকে দেখা যায় যে লাল টুপিসহ পোশাক, জিন্স পরা খালি পায়ের একজন পুরুষকে পুলিশ কর্মকর্তারা চেপে ধরে রেখেছেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে চেয়ারের নীচে একটি ছুরি পড়ে আছে। আরো পড়তে পারেন: বাংলা ভাষা সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন? আয়ের কতটা সঞ্চয় করা উচিত? কীভাবে? একুশে ফেব্রুয়ারি: যেভাবে সূচনা হয়েছিলো ভাষা আন্দোলনের হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ লন্ডনের ফেইথস ফোরামের পরিচালক মুস্তাফা ফিল্ড সাংবাদিকদের জানান যে ভুক্তভোগীর 'ঘাড়ের কাছে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়।' তিনি বলেন: "জামাতে নামাজ পড়তে থাকাদের কয়েকজন নামাজ ছেড়ে হামলাকারীকে প্রতিহত করে।" হামলার প্রত্যক্ষদর্শী আবি ওয়াতিক জানিয়েছেন যে হামলাকারীকে এর আগেও মসজিদে দেখা গেছে। ৫৯ বছর বয়সী ওয়াতিক বলেন, "হামলাকারী মুয়াজ্জিনের পেছনে নামাজ পড়ছিলেন। সেখান থেকেই হঠাৎ আক্রমণ করেন।" তিনি বলেন যে হামলাকারী 'পুরোটা সময় নিশ্চুপ ছিলেন।' ডক্টর আল দুবাইয়ান বলেছেন: "এরকম ঘটনা ঘটায় আমরা খুবই দুঃখিত। আমরা আশা করছি যে এটি বিদ্বেষমূলক কোনো ঘটনা নয় বরং একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা।" পুলিশও ধারণা করছে যে এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। ঐ এলাকায় 'স্থানীয় জনসাধারণ ও নামাজ পড়তে আসা মানুষদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা' দিতে পুলিশ প্রহরা বাড়ানো হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ সুপারিন্ডেন্ট হেলেন হার্প জানিয়েছেন: "১৯ বছর বয়সী এক পুরুষকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে।" "তিনি মসজিদের ভেতরে প্রার্থনারত ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।" প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন টুইট করেছেন যে তিনি এই ঘটনায় 'গভীরভাবে দুঃখিত' এবং তিনি 'ভুক্তভোগী এবং ক্ষতিগ্রস্থদের সাথে সহমর্মিতা' জ্ঞাপন করেছেন। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানিয়েছেন যে মেট্রোপলিটান পুলিশ 'ঐ এলাকায় অতিরিক্ত জনবল' নিয়োগ করছে। তিনি টুইট করেছেন, "প্রত্যেক লন্ডনবাসী তাদের প্রার্থনার স্থানে নিরাপদ বোধ করার অধিকার রাখে।" | A man has been arrested on suspicion of attempted murder after a stabbing inside a central London mosque. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | নরেন্দ্র মোদী: ভারতে কোভিডের সুনামির পর তার ভাবমূর্তি কি অক্ষুন্ন আছে? একটি অস্ট্রেলিয়ান সংবাদপত্র এই একই খবর পুনঃপ্রকাশ করেছে সঙ্গে এক কঠোর সারমর্ম জুড়ে দিয়ে: "দম্ভ, উগ্র জাতীয়তাবাদ এবং আমলাতান্ত্রিক অদক্ষতা মিলে ভারতে তৈরি হয়েছে এমন এক বিরাট সংকট, যখন দেশটির নাগরিকদের সত্যি সত্যি দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম, আর তার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী জনতার ভিড়ে আত্মপ্রসাদে মগ্ন।" এসব খবর আর শিরোনাম অবশ্য ভারতে তিরস্কৃত হয়েছে। কিন্তু এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সযত্ন লালিত ভাবমূর্তিতে এটি বেশ বাজে আঘাত হেনেছে। ভারতে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বিশ্বজুড়ে সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনাম আর সোশ্যাল মিডিয়ার টাইমলাইন দখল করে আছে: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা বিভাগের বেড কিংবা চিকিৎসার জন্য অপেক্ষায় থাকতে থাকতে কীভাবে বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে, শ্বাস নেয়ার জন্য সংগ্রাম করছে; পরিবারগুলো কীভাবে মরিয়া হয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট- সবকিছুর জন্য হন্যে হয়ে ছুটছে; কীভাবে আরো বেশি সংখ্যায় আসা মৃতদেহ দাহ করার জন্য গণ দাহের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে, এমনকি কার পার্ককেও চিতায় পরিণত করতে হচ্ছে। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এসবের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে মিস্টার মোদীকেই দোষারোপ করা হচ্ছে- যিনি কিনা প্রায়শই নিজেকে একজন দক্ষ প্রশাসক হিসেবে তুলে ধরেন, কোন খুঁটিনাটি যার চোখ এড়ায় না। কিন্তু ভারতে প্রতিদিনই সংক্রমণ সংখ্যা যখন নতুন রেকর্ড গড়ছে, তখন মিস্টার মোদীর এই ভাবমূর্তি ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। আরও পড়ুন: ভারত কোভিড: মোদীর আসন বারাণসী বিপর্যস্ত, ক্ষোভে ফুটছে মানুষ মোদীর ভাষায় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ 'ভারতীয়দের দুঃখ সইবার পরীক্ষা' ভারতে চরম এই দুর্দশা তৈরি হলো কীভাবে 'মুখোশে ফাটল ধরেছে' রাষ্ট্রবিজ্ঞানী মিলন বৈষ্ণব বলেন, "দক্ষতাকে যদি তার প্রধান গুণ বলে দাবি করা হয়, অনেক মানুষই কিন্তু এখন এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। সমস্যা মোকাবেলায় সরকার যে কেবল অদক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বা কিছুই করেনি শুধু তা নয়, একই সঙ্গে তারা সংকটকে আরও গুরুতর দিকে নিয়ে যেতে ভূমিকা রেখেছে।" মিলন বৈষ্ণব বলছেন, মিস্টার মোদীই একমাত্র নেতা নন যিনি কোভিড সংকট মোকাবেলা করতে গিয়ে সব তালগোল পাকিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর পতনটা ঘটেছে অনেক সশব্দে, অনেক সুস্পষ্টভাবে। কারণ সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিংবা ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেয়ার বোলসোনারোর মতো তিনি কোভিডকে অস্বীকার করেন না। কিন্তু তারপরও মিস্টার মোদী এই সংকটের অনেক আগাম সতর্কতা অস্বীকার করে এটি প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছেন। মিস্টার মোদী গঙ্গা নদীর তীরে এক পবিত্র হিন্দু ধর্মীয় উৎসব করতে দিয়েছেন, যেখানে লাখ লাখ মানুষ কয়েক সপ্তাহ ধরে সমবেত হয়েছে পুণ্য স্নানের জন্য। তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এক মাস ধরে নির্বাচন করতে জেদ ধরেছিলেন। তারপর সেই নির্বাচনের সময় মাস্ক না পরেই বিরাট বিরাট সব জনসভায় যোগ দিয়েছেন, সেসব জনসভায় বিপুল মানুষের জনসমাগম দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। "বিশ্বের যেসব জায়গায় সম্প্রতি লকডাউন জারি করা হয়েছে, সেসব জায়গার মানুষ ভারতে এরকম অসাবধানতা আর অবজ্ঞার প্রদর্শন দেখে হতবাক হয়েছেন", বলছেন দ্য ইকনোমিস্টের ভারত সংবাদদাতা অ্যালেক্স ট্র্যাভেলি। দেশে-বিদেশে নিজের ভাবমূর্তি গড়ে তোলার জন্য মিস্টার মোদি বেশ সচেতন চেষ্টা চালান। এসব দৃশ্য অবশ্য মিস্টার মোদীর ব্র্যান্ডটিকেই মনে করিয়ে দিয়েছে। তিনি নিজেকে দেখাতে চান হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশের একজন শক্তিশালী এবং জনপ্রিয় নেতা হিসেবে। গত জানুয়ারিতে তিনি এমনকি ভারতকে একটি ব্যতিক্রমী দেশ বলেও বিশ্বের সামনে বড়াই করেছিলেন। "তার জাতীয়তাবাদী ঝোঁকের সঙ্গে একধরণের সুদক্ষ ব্যবস্থাপনার একটি ছবি সবসময় বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সামনে তুলে ধরা হতো। কিন্তু কোভিড সংকটে এই সুদক্ষ ব্যবস্থাপনা একেবারেই অনুপস্থিত ছিল," বলছেন স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক ক্রিস্টোফার ক্লারি। একজন জনতোষণকারী রাজনীতিক এবং অতন্দ্র প্রশাসক হিসেবে মিস্টার মোদী নিজের যে খ্যাতি তৈরি করেছিলেন, সেটি ক্ষয় হতে শুরু করে ২০১৭ সালে। সেবছর তিনি ভারতীয় রূপির নোট বাতিল করে বিপর্যয় ডেকে আনেন, কারণ ভারতে কোটি কোটি মানুষ নগদ অর্থ দিয়েই লেন-দেন করে। এরপর গত বছর তিনি কোভিডের বিস্তার ঠেকাতে রাতারাতি লকডাউন জারি করেন। এর ফলে লাখ লাখ মানুষ কাজ হারায়, অনেকের জীবন যায়। ভারতের অর্থনীতি এখনো এই লকডাউনের ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি। মিস্টার মোদীর যুক্তি ছিল, তিনি বড় কোন কল্যাণের জন্য এরকম পদক্ষেপ নিয়েছেন, অর্থনীতি থেকে কালো টাকা বের করে দেয়া কিংবা কোভিডকে পরাস্ত করা। "কিন্তু তার সর্বশেষ ভুল পদক্ষেপগুলোকে তিনি এই যুক্তি দিয়ে সহজে রক্ষা পাবেন না," বলছেন ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের রবি আগরওয়াল। "আপনি জিডিপি'র মতো সংখ্যার একটা ব্যাখ্যা দিতে পারেন, কিন্তু একজনের ভাই কেন মারা গেল সেটা তো ব্যাখ্যা করতে পারবেন না। ভারতীয়রা সবসময় বিশ্বাস করেছিল মোদী যদিও ভুল করেন, তারপরও তিনি তাদের জন্যই লড়াই করেন, তিনি তাদের ওপর আস্থা রাখেন।" রবি আগরওয়াল বলেন, এবার মানুষ মিস্টার মোদীর উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। "একটা ফাটল তৈরি হয়েছে, মিস্টার মোদীর ভাবমূর্তিতে এই ফাটল বেশ দৃশ্যমান।" যেভাবে মোদী ব্রান্ড তৈরি হলো এবং যেভাবে এর পতন "মোদী মিনস বিজনেস,"- ২০১২ সালে টাইম ম্যাগাজিন তাদের একটি সংখ্যার প্রচ্ছদ করেছিল এভাবে। ২০০২ সালে ভারতের গুজরাট রাজ্যে এক দাঙ্গায় নিহত হন প্রায় এক হাজার মানুষ, যাদের বেশিরভাগই ছিলেন মুসলিম। একটি ট্রেনে আগুনে ৬০ জন হিন্দু মারা যাওয়ার পর এই দাঙ্গা শুরু হয়। নরেন্দ্র মোদী তখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী এবং এই দাঙ্গা তিনি লাগাতে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং এ থেকে তিনি গায়ে কোন আঁচড় ছাড়াই বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। ২০১২ সাল নাগাদ গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী তার সমর্থকদের কাছে সুশাসন এবং কার্যকর প্রশাসকের এক উৎকৃষ্ট এবং আদর্শ প্রতীক হয়ে উঠেন। কোন কোন গণমাধ্যমে তাকে একজন 'নিঃসঙ্গ স্বৈরাচারী' বলেও বর্ণনা করা হচ্ছিল। তবে একই সঙ্গে প্রশংসা করা হচ্ছিল এই বলে যে, তার শাসনে গুজরাটের অর্থনীতি বিকশিত হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে। ১৩ বছর গুজরাটের নেতৃত্ব দেয়ার পর তিনি যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য লড়লেন, তখন এটাকে অনেকে দেখলেন ভারতের অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার এক সুযোগ হিসেবে। তার মতো একজন 'বিভাজন সৃষ্টিকারী' ব্যক্তিকে বেছে নিয়ে বিজেপি হয়তো ঝুঁকি নিচ্ছিল, কিন্তু একজন 'সোজা-সাপ্টা প্রশাসক' হিসেবে মানুষের কাছে তার একটা ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল। মিস্টার মোদীর জীবনী-লেখক এবং সাংবাদিক নীলাঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, "যেভাবে তিনি গুজরাট পরিচালনা করেছিলেন, সেটা সহজে অনেকের মন জয় করেছিল।" গুজরাটে নতুন নতুন সব রাস্তা, বিদ্যুতের লাইন, আমলাতান্ত্রিক লাল-ফিতার ঝামেলা কমিয়ে আনা এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো- এসব দেখে মুগ্ধ হন মধ্যবিত্ত এবং ধনী ভোটাররা। কিন্তু মিস্টার মুখোপাধ্যায় বলেন, একটি সমৃদ্ধ এবং কম জনসংখ্যার রাজ্যে এগুলো অর্জন করা সেরকম বড় কোন ব্যাপার নয়। আর গুজরাটের সামাজিক খাতে কিন্তু সেরকম বড় কোন অগ্রগতি হয়নি। "মিস্টার মোদীর দ্যুতি দেখে সবাই মোহিত হয়ে গেলেন। আমি নিজেও এই ভুল করেছি। তিনি একবার বলেছিলেন, আমাদের এখানে কোন লাল ফিতা নেই, আছে লাল কার্পেট। এখন যে ত্রাণসামগ্রী এসে পৌঁছাচ্ছে, তার জন্য লাল কার্পেট কোথায় বিছানো আছে?" (কিছু কিছু খবরে বলা হচ্ছে, এসব ত্রাণসামগ্রী এক শুল্ক বিভাগে আটকে পড়েছে)। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মিস্টার মোদীর বর্মতে যে আসলে অনেক ছিদ্র, সেটা এই সংকটে প্রকাশ পেয়ে গেছে। তারা বলছেন, যে ধরণের এক কেন্দ্রিক স্টাইলে তিনি দেশ চালান, সেটা হয়তো গত বছর সবাইকে আশ্বস্ত করেছে, কিন্তু এবার কিন্তু সেটা বেশ ফাঁপা বলে মনে হচ্ছে। এখন তিনি ব্যর্থতায় দায় চাপাচ্ছেন রাজ্যগুলোর ওপর। যেভাবে তিনি উদারহস্তে বিভিন্ন দেশে টিকা দান করার ঘোষণা দিচ্ছিলেন, সেটি এখন নিজেকে মহৎ বানানোর একটা লোকদেখানো অসাবধানী কৌশল বলেই মনে হচ্ছে। কারণ বিশ্বের সবচেয়ে বড় টিকা উৎপাদনকারী দেশ ভারতকে এখন সেই অঙ্গীকার ভঙ্গ করতে হচ্ছে। আর তিনি যেরকম সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সবকিছু চালান, যদিও অনেক ভোটার পছন্দ করে, সেটি সংকট সমাধানের জন্য অন্য রাজনৈতিক দলের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কুম্ভ মেলায় লাখ লাখ মানুষকে জড়ো হওয়ার সুযোগ দিয়ে সমালোচিত হন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মিস্টার আগরওয়াল বলেন, "তিনি সবকিছু্তেই তার নাম এবং তার ছাপ রাখতে চান। কাজেই যখন যখন কোন ভুল হয়, সেটার দায়ও তাকে নিতে হয়। গাছেরটাও খাবেন, তলারটাও কুড়াবেন, সেটা তো হয় না।" মিস্টার মোদী বিদেশেও তার এক বিরাট ব্রান্ড গড়ে তুলেছিলেন। একটি সংবাদপত্র লিখেছিল, "তার সেরাটা তিনি দেখাতে পারেন ভারতের বাইরে।" নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কোয়ার গার্ডেন্সে তাকে দেখে জনতা বিপুল হর্ষ-ধ্বনি দেয়। টেক্সাসে 'হাউডি, মোদী!' বলে যে সমাবেশে তিনি যোগ দেন, সেখানে এমনকি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও যেন তার আড়ালে ঢাকা পড়ে যাচ্ছিলেন। মিস্টার আগরওয়াল বলেন, "নিজের ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য তিনি যেরকম মরিয়া চেষ্টা চালান, তাকে সেজন্যে "ভারতের সবচেয়ে লোকদেখানো নেতা" নেতা বলেও বর্ণনা করা হয়। তার পেশিশক্তি-সর্বস্ব জাতীয়তাবাদ দেশে-বিদেশে ভারতীয়দের জন্য যেন এক ধরণের মলম হিসেবে কাজ করেছে। তিনি ভারতকে একটি পরাশক্তিতে পরিণত করার অঙ্গীকার করেছেন। মিস্টার আগরওয়াল বলছেন, কিন্তু এখন ভারতীয়দের মনে জ্বালা ধরে যাচ্ছে যখন তারা দেখছে থাইল্যাণ্ড, ভিয়েতনাম এবং বাংলাদেশের মতো দেশও কোভিডের বিরুদ্ধে অনেক ভালোভাবে লড়াই করছে। "বিদেশে থাকা ভারতীয়রা এখন খুবই বিব্রত। বন্ধুদের কাছে যে দেশটিকে তারা এক উদীয়মান শক্তি বলে তুলে ধরেছিলেন, সেই দেশটিকে এখন যেভাবে দেখানো হচ্ছে সেটা নিয়ে তারা বিব্রত।" মোদী কি ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন? মিস্টার বৈষ্ণব অবশ্য বলছেন, নরেন্দ্র মোদী এটা বার বার প্রমাণ করেছেন যে তিনি খুবই ব্যতিক্রমী এক রাজনীতিক, যিনি সব প্রতিকূলতার মোকাবেলা করে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন। "অতীতে অনেক অবিশ্বাস্য খারাপ অবস্থা থেকে তিনি আবার উঠে দাঁড়িয়েছেন, কাজেই এটা আবার যে ঘটবে না, সেটা আমি বলতে চাই না," বলছেন মিস্টার ট্রাভেলি। সরকার এরই মধ্যে তাদের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের কাজে লেগে গেছে। যেসব গণমাধ্যমে নেতিবাচক খবর যাচ্ছে, তাদের ওপর সরকার ক্ষুব্ধ। বিরোধী নেতাদের সঙ্গে সরকার বিবাদে জড়িয়েছে এবং কোভিড মোকাবেলায় সরকার ব্যর্থ বলে যারা টুইটারে সমালোচনা করছে, তাদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। সরকার দাবি করছে, ভারতকে হেয় করার আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। যেসব টুইট সরকার পছন্দ করছে না, সেগুলো সরিয়ে নিতে বলেছে টুইটারকে। এরপর সরকার সমর্থকরা এই টুইটারেই মিস্টার মোদীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে এবং তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে টুইট করা শুরু করেছেন। কোভিড সংকটে বাইরের দুনিয়া ভারতের যে ছবি দেখেছে, তা নিয়ে বিব্রত মিস্টার মোদীর প্রবাসী ভারতীয় সমর্থকরা। কিন্তু এত কাণ্ড যখন ঘটছে, তখন মিস্টার মোদী যে সবকিছুতে অনুপস্থিত, সেটা কিন্তু বেশ ভালোভাবেই ধরা পড়ছে। গত ২০ এপ্রিল তাকে কেবল একবার ভাষণ দিতে দেখা গেছে। "মহামারির শুরুতে মিস্টার মোদী জানতেন, ভারতকে এবং নিজেকে তিনি কীভাবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চান। তিনি নিজেকে একজন জেনারেল হিসেবে দেখাতে চেয়েছেন, যিনি তার জনগণকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু এখন সেরকম কোন ভূমিকা তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না। কোন ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়া কিংবা সাহায্যের আবেদন জানানোর কোন আগ্রহ তার নেই," বলছেন মিস্টার ট্রাভেলি। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর মিস্টার মোদী হাতে গোনা কয়েকটি বার সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি কখনো কোন সংবাদ সম্মেলন করেননি, এমনকি কোভিডের সময়ও নয়। মিস্টার মুখোপাধ্যায় বলেন, "তিনি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে চান না।" কিন্তু ভারতে সবার মনে এখন এই প্রশ্ন ছাড়া আর কিছু নেই। ভারতের দরিদ্র মানুষ, শোকে স্তব্ধ মধ্যবিত্ত, এমনকি ধনী লোকেরা, যাদের কেউই ভারতের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় যে বিরাট ফাঁক রয়ে গেছে, সেটা থেকে পালাতে পারেননি, তারা কেউই বুঝতে পারছেন না, কীভাবে প্রধানমন্ত্রী এরকমটা ঘটতে দিতে পারলেন। | "Modi leads India out of a lockdown and into a Covid apocalypse," declared a recent headline in the UK Sunday Times. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | ভাবিষ্যতে এমন প্রযুক্তি আসবে যা দিয়ে আপনি অতীত দেখতে পাবেন। এবার কল্পনা করুন এমন এক অরাজক ভবিষ্যতের যেখানে হ্যাকাররা আপনার সেইসব স্মৃতি হাইজ্যাক করে নিয়েছে এবং অর্থ না দিলে তা মুছে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। মনে হতে পারে এটি কষ্টকল্পিত কাহিনি, কিন্তু এমন পরিস্থিতি আপনার কল্পনার চেয়েও দ্রুত ঘটে যেতে পারে। মস্তিষ্কটা যদি খুলে দেখা যায় নিউরো টেকনোলজির ক্ষেত্রে অগ্রগতি আমাদের সেই সুযোগের কাছাকাছি এরই মধ্যে নিয়ে গেছে, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের স্মৃতিশক্তি বা মেমোরি বাড়াতে পারি। আর হয়তো কয়েক দশকের মধ্যেই আমরা স্মৃতিকে নিজের মতো করে সাজাতে বা ব্যাখ্যা করতে অথবা পুনরায় লেখার মতো অবস্থায় যেতে পারবো। মস্তিষ্ক পুন:স্থাপনের জন্যে এই প্রযুক্তির জোরালো ব্যবহার মস্তিষ্কের শল্য চিকিৎসকদের জন্যে হয়তো সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়াবে। বিশ্বজুড়ে প্রায় দেড়লাখ মানুষের ক্ষেত্রে ডিপ ব্রেন স্টিমুলেশন (ডিবিএস) ব্যবহার করা হয়ে থাকে কিছু সমস্যার মোকাবিলার জন্যে। তার মধ্যে পারকিনসন্স থেকে শুরু করে অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসওর্ডার (ওসিডি) রয়েছে। নিরাময়ের এমন পদ্ধতি ডায়াবেটিস বা স্থুলতা নিয়ন্ত্রণেও ব্যবহার করা হতে পারে। নিউরোটেকনোলজির গবেষণায় অগ্রগতির জন্য মস্তিষ্ক সম্পর্কে ধারণা আরও পরিষ্কার হচ্ছে। বিষন্নতা, স্মৃতিভ্রংশ বা টুরেট সিনড্রোমের মতো বিভিন্ন মানসিক ব্যাধির নিরাময়ের জন্যে এমন নানা প্রযুক্তির পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। আর এসব পদ্ধতিগুলো রয়েছে এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে, গবেষকরা অনুসন্ধান করে বের করার চেষ্টা করছেন যে আঘাত বা পীড়নের ফলে যদি স্মৃতিলোপ পায় তবে তা কীভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়। ইউএস ডিফেন্স অ্যাডভান্স রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি-র (ডিএআরপিএ) একটি প্রোগ্রাম রয়েছে যেখানে সেনাদের আঘাতের ফলে ব্রেন ইনজুরি হলে স্মৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। মেন্টাল সুপারপাওয়ার অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জিক্যাল সায়েন্সের নাফিল্ড বিভাগের গবেষক লরি পাইক্রফট ভবিষ্যতের কিছু সময়সীমা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলছেন, "আগামী দশ বছরের মধ্যে যদি বাণিজ্যিকভাবে স্মৃতি পুন:স্থাপনের মতো বিষয় ঘটে তবে আমি মোটেও অবাক হব না।" তার হিসেবে, আগামী ২০ বছরের মধ্যে প্রযুক্তি হয়তো এমন সুবিধা এনে দেবে যাতে করে মস্তিষ্কের সেই সব সংকেত ধারন করা যাবে যা স্মৃতি বা মেমোরি তৈরি করে। আর এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে এসে স্মৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতাও চলে আসবে বলে মনে করেন মি. পাইক্রফট। আরো পড়তে পারেন: শিক্ষা ব্যবস্থায় কোচিং নির্ভরতা কেন এ পর্যায়ে পৌঁছেছে? জামায়াত বিলুপ্ত করার পরামর্শ দিয়ে রাজ্জাকের পদত্যাগ 'আমার প্রজন্মকে উগ্রপন্থী বানিয়েছে সালমান রুশদী' ব্রেইনজ্যাকিং মস্তিষ্কের মাধ্যমে মানুষের আবেগ এবং আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। কিন্তু এই নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি যদি ভুল হাতে পড়ে তবে তার ফলাফল খুবই খারাপ হতে পারে বলে মনে করেন লরি পাইক্রফট। কল্পনা করুন যে, একজন হ্যাকার একজন পার্কিনসন্স রোগীর নিউরোস্টিমুলেটর-এর সূত্র জেনে ফেলেছেন এবং সেটি নিজের মতো করে সাজিয়ে ফেলেছেন। তখন সেই রোগীর চিন্তাশক্তিকে এবং আচরণকে সে প্রভাবিত করতে পারবে কিংবা তাকে পঙ্গুও করে ফেলতে পারবে। একজন হ্যাকার চাইলে ডার্ক ওয়েব-এর মাধ্যমে অর্থ দাবি করে বসতে পারে, আর যদি তা না পায় তবে সব স্মৃতি মুছে ফেলা বা নতুন করে স্মৃতি তৈরির হুমকিও দিতে পারে। ২০১২ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যালিফোর্নিয়ার বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক হেডসেট ব্যবহার করা হয় এমন একটি জনপ্রিয় গেমিং থেকে মানুষের ব্রেনওয়েভ পর্যবেক্ষণ করে ব্যাংক কার্ডের পিন নম্বরের মতো তথ্য বের করে ফেলেছিলেন। আপনার অতীতকে নিয়ন্ত্রণ "ব্রেনজ্যাকিং এবং স্মৃতি পরিবর্তন নিরাপত্তার জন্যে বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে", বলছিলেন সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা কোম্পানি ক্যাস্পারস্কির একজন গবেষক দিমিত্রি গ্যালভ। ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত ঝুঁকি কী কী হতে পারে তা নিয়ে ক্যাস্পারস্কি এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যৌথ ভাবে কাজ করেছিল। ব্রেইন ইমপ্ল্যান্ট ভবিষ্যতে যেভাবে বাড়বে। ''স্মৃতি বাজার: ভবিষ্যতে যেখানে সাইবার নিরাপত্তার ঝুঁকি আপনার অতীতকে নিয়ন্ত্রণ করবে'' এটি ছিল সেই যৌথ কাজের রিপোর্টের শিরোনাম। যেখানে বলা হয়েছে যে, এটি মোটেও অবাক হবার মতো বিষয় হবে না যে- ভবিষ্যতের কোনো এক নায়ক তার ইতিহাস আবার লেখার চেষ্টা করতে পারে দেশটির জনগণের স্মৃতিতে হস্তক্ষেপ ক'রে। অনুনমোদিত প্রবেশাধিকার ইন্টারনেটে সংযুক্ত এমন মেডিকেল ডিভাইসকে হ্যাক করা মোটেও গল্পে উল্লেখিত বিষয় নয়। ২০১৭ সালের ঘটনা, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ সাইবার নিরাপত্তার গোপনীয়তা জনিত ঝুঁকি বিবেচনা করে ৪ লাখ ৬৫ হাজার পেসমেকার পুনরায় ফিরিয়ে আনে। দেশটির ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) জানায়, অসাধু ব্যক্তিরা চাইলে ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করে হৃদযন্ত্রের গতি পরিবর্তন বা পেসমেকারের ব্যাটারি নিয়ন্ত্রণ করে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারতো। যদিও কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি সেবার, তবু এফডিএ বলছে যে, মেডিকেল ডিভাইসগুলো ক্রমাগত ইন্টারনেটের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে পড়ছে হাসপাতালের তথ্যভান্ডার বা অন্য মেডিকেল ডিভাইস বা স্মার্টফোনের সাথে। আর এরইসাথে বাড়ছে সাইবার অপরাধ জনিত ঝুঁকি। মস্তিষ্কের সঙ্গে কমপিউটারের সংযোগ নিয়ে এখন নিউরোটেকনোলজি খাতে প্রচুর গবেষণা চলছে। অনেক চিকিৎসাক্ষেত্রের জন্যেই এই সমস্যা রয়েছে এবং ক্যাস্পারস্কি মনে করেন যে, ভবিষ্যতে আরো অনেক ডিভাইসই এমনভাবে সংযুক্ত হবে এবং দূরবর্তী যন্ত্রের সাথে সেগুলো নিয়ন্ত্রণও করা যাবে। খুব জরুরি অবস্থাতেই কেবল ডাক্তারকে ডাকা হবে। সাইবার প্রতিরক্ষা সৌভাগ্যক্রমে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা তৈরি হওয়ায় মেডিকেল ডিভাইসগুলির নকশা এবং পরিকল্পনা এমনভাবে করা হচ্ছে যাতে করে তা ঝুঁকির পরিমাণ কমাতে পারে। তবে মি. গ্যালভের মতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো রোগী এবং চিকিৎসা সংশ্লিষ্টদের এমনভাবে প্রশিক্ষিত করে তোলা উচিৎ যাতে করে তারা সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে। যেমন হতে পারে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড নির্ধারন। তবে বাস্তব সমস্যা হলো একজন চিকিৎসককে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ হতে বলাও সম্ভব নয়। মি. পাইক্রফটের মতে ভবিষ্যতে মস্তিষ্ক পুন:স্থাপনের ক্ষেত্র আরো জটিল এবং ঝুঁকির পরিধি আরো বিস্তৃত হতে পারে। যদি না এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। প্রথম প্রজন্মের প্রতিস্থাপনের সমাধানগুলি বিকশিত না হলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের প্রতিস্থাপনগুলো অনিরাপদ থেকে যাবে এবং আক্রমণকারীরা সেই সুবিধা নেবে বলে গবেষক পাইক্রাফটের মত। | Imagine being able to scroll through your memories like an Instagram feed, reliving with vivid details your favourite life moments and backing up the dearest ones. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | কুর্দি বাহিনীর সাথে দামেস্কের চুক্তির পর তুর্কি সীমান্তের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী তার নির্ধারিত কয়েকটি ঘটনা আমেরিকার মিত্রশক্তি এবং সিরিয়ার কুর্দিদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। অন্যদিকে সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে বিরোধী শক্তি অর্থাৎ তুরস্ক, সিরিয়ার বাশার আল আসাদের শাসন ব্যবস্থা, এদের সমর্থক, রাশিয়া ও ইরান এবং জিহাদি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের জন্য। সিরিয়ার আট বছরের যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের চিত্র পূর্ণগঠন ও পরিবর্তন করেছে। আর গত এক সপ্তাহ ছিল নতুন আরেকটি বাঁক। সম্ভবত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বুদ্ধিমত্তা তাকে এ বিষয়ে আগেই আভাস দিয়েছিল। অথবা তার নিজের সহজাত প্রবৃত্তির উপর নির্ভর করার অভ্যাস, মধ্যপ্রাচ্যের জটিল পরিস্থিতির বিষয়ে তাকে মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্ত নিতে তাড়িত করেছে। বিদেশি অনুঘটক তুরস্কের সাথে সীমান্তের বেশ কয়েকটি ঘাঁটি থেকে সেনা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে যে, সিরিয়ার ভাগ্য দেশটির নিজস্ব জনগণ নয় বরং বিদেশিরা নির্ধারণ করবে। বারবার এ ধরণের হস্তক্ষেপ সিরিয়ার যুদ্ধকে উস্কে দিয়েছে এবং টিকিয়েও রেখেছে। সিরিয়ায় প্রভাব এবং শক্তির প্রতিযোগিতা সম্পর্কে লিখতে হলে এ যুদ্ধের শিকার মানুষদের ভোগান্তির বর্ণনার মধ্য দিয়ে তা শুরু করতে হবে। প্রতিটি সামরিক পদক্ষেপই বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ধ্বংস এবং মৃত্যু ডেকে এনেছে। এ ধরণের নির্দেশ যেসব নেতারা দিয়েছে তাদের সবার ওই মানুষদের ভোগান্তির ভিডিও দেখা বাধ্যতামূলক করা উচিত। এসব চিত্র অনলাইন কিংবা টেলিভিশনে খুঁজে পাওয়া খুব কঠিন কিছু নয়। ট্রাম্পের বর্ণিত সীমাহীন যুদ্ধাবস্থা থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত তুরস্ককে সিরিয়ায় সেনা অভিযানের সবুজ সংকেত দিয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেচেপ তাইপ এরদোয়ান বলেছেন, এসডিএফ বা সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে চান তিনি, কারণ তারা তার নিজের দেশের কুর্দি বিদ্রোহীদের মিত্র বাহিনী। তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সীমান্তের উভয় পার্শে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করা এবং ২০ মাইল জুড়ে একটি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল তৈরি করা। ওই এলাকায় তিনি ১০ লাখেরও বেশি সিরিয় শরণার্থীকে প্রত্যাবাসন করতে চান। আরো পড়ুন: তুরস্ককে প্রতিহত করতে কুর্দিদের সাথে সিরিয়ার চুক্তি আইএস'এর বিদেশি যোদ্ধাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে কারা? তুরস্কের অভিযানের শিকার কুর্দি জনগোষ্ঠী কারা? যুক্তরাষ্ট্র যখন সিরিয়ার কুর্দি এবং আরবদের প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র দিতে চাইলো আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করতে, তখন তাদের ভাবী- কুর্দি মিত্রদেরকে জঙ্গি হিসেবে দেখছিল আরেক ন্যাটো মিত্র দেশ তুরস্ক। তবে ভবিষ্যতে এ নিয়ে সমস্যা হতে পারে জেনেও একে না দেখার ভান করেছিল ওয়াশিংটন। আর এখন সেই ভবিষ্যতটিই চলে এসেছে, আর সমস্যাটিও বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে, মুষ্টিমেয় কিছু মার্কিন সেনা সিরিয়ার কুর্দিদের জন্য নিরাপত্তার প্রতীক হয়েছিলো। কট্টরপন্থী জিহাদি গ্রুপ আইএসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন মিত্র হয়ে উঠেছিল। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশ বিমান শক্তি এবং বিশেষ বাহিনীর সেনাদের পাঠালেও যুদ্ধক্ষেত্রে লড়েছে এবং প্রাণ দিয়েছে কুর্দি সেনারা। যখন কথিত ওই খিলাফতের ও আইএসের পতন হল, কুর্দিরা জড়ো হয়ে হাজার হাজার জিহাদি যোদ্ধাকে বন্দী করলো। পরিবর্তিত পরিস্থিতি সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত শহরে অভিযান অব্যাহত রেখেছে তুরস্ক ও মিত্রশক্তি তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কয়েকটি টুইট করতে যে সময় লাগে, তার চেয়েও কম সময়ে কুর্দিরা বুঝেছিল যে তাদেরকে বর্জন করা হয়েছে এবং এটি আমেরিকার সামরিক বাহিনীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছিল। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার কুর্দিদের বর্জন করার অভিযোগ নাকচ করে দেন। কিন্তু যেভাবে তুর্কিরা অগ্রসর হচ্ছে এবং আমেরিকানরা চলে যাচ্ছে, তাতে কুর্দিরা সেই আশ্বাস পাচ্ছে না। নিজের অস্থির ইতিহাসে আবারো বিদেশি শক্তির নিগৃহীত মিত্র শক্তি হিসেবে নিজেদের পেলো কুর্দিরা। তারা আবারো নিজেদের পুরনো শত্রু দামেস্কের দিকেই ফিরে গেছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: বাংলাদেশের রাজনীতিতে আবারও ভারত বিরোধিতা অভিজিৎ ব্যানার্জীর নোবেল নিয়ে বিজেপি কেন নিস্পৃহ সুন্দরবনে বনদস্যুরা কী আবার ফিরে আসছে? মানবাধিকারের নতুন সংজ্ঞা দিচ্ছেন অমিত শাহ? রোববার কুর্দি ঘোষণা করেছে যে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সাথে একটি চুক্তি সই করেছে তারা। চুক্তি অনুযায়ী, ২০১২ সালের পর থেকে তুরস্কের সাথে সীমান্তের যেসব এলাকায় দামেস্ক নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করতে পারেনি সেসব এলাকাতেও প্রবেশাধিকার পাচ্ছে আসাদ সেনারা। এটা বাশার আল আসাদের শাসন ব্যবস্থার জন্য একটি বড় জয়। উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে যেসব ঘাঁটি রক্ষণাবেক্ষণ করতো সেনারা সেগুলো থেকে দ্রুত সরে গেছে। আসাদের অনুগতরা সিরিয়ার পতাকা উত্তোলন করেছে। আমেরিকার মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক নীতির জন্য এই দিনটি ছিল একটি ভয়াবহ দিন। কুর্দিদের মিত্র বাহিনী, সিরিয়ার একাংশে তাদের নিজেদের পরিচালিত শাসনের নিরাপত্তা, সব মিলিয়ে যুদ্ধাবসানের খেলায় আমেরিকানদের একটা পক্ষ দিয়েছিল। এটা ছিল আসাদ সাম্রাজ্যের সমর্থক শক্তি: রাশিয়া ও ইরানকে দূরে রাখার একটি উপায়ও। আমেরিকানদের বিদায় এবং সিরিয় বাহিনীর অগ্রসর হওয়াটাও তাদের জন্য জয়। এর মধ্য দিয়ে জিহাদি চরমপন্থি ইসলামি স্টেটের পুনরুত্থানেরও একটি সুযোগ তৈরি হল। টেলিগ্রাম নামে একটি বার্তা পাঠানোর অ্যাপে তারা সিরিয়ায় নতুন করে সহিংসতা ছড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। তারা তাদের দখলকৃত এলাকা বা খিলাফত হারিয়েছে, কিন্তু যারা কারাগারের বাইরে ছিল তারা নিজেদেরকে স্লিপার সেলের অন্তর্ভুক্ত করে নতুন করে গেরিলা হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। আসাদের জন্য জয় জাতীয় পতাকা উড়াচ্ছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর এক সেনা সদস্য এখন কুর্দিরা ধুঁকছে, এই সুযোগে তারা কুর্দিদের কারাগারে আটক হাজার হাজার যোদ্ধাকে মুক্ত করার স্বপ্ন দেখছে। তাদের অনেকেই কুখ্যাত খুনি যারা আবারো বন্দুক এবং গ্রেনেড বহনের সুযোগ পেলে একটি বড় হুমকি হয়ে দেখা দেবে। আর এটা শুধু সিরিয়ার জন্য হবে না বরং তার আরো দূরেও ছড়িয়ে পড়বে। বস্তুত বলতে গেলে, পশ্চিমা সরকার গুলো নতুন করে আইএসের হুমকি সামলানোর বিষয়ে বেশ ভয়ে রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সংকট যখন ইউরোপের দরজার কড়া নাড়তে আসে ঠিক সেই মুহূর্তে অভিযান বন্ধ করতে তুরস্ককে আহ্বান জানায় পশ্চিমা সরকারগুলো। অনেক ন্যাটো সদস্যই সিরিয়া নতুন একটি দুঃস্বপ্নকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেখছেন। যারা রাশিয়ার সমর্থন নিয়ে আরেক ন্যাটো সদস্য তুরস্কের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে তারা। রাশিয়া বলছে যে তারা তুরস্কের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রেখে চলছে। কিন্তু যুদ্ধের চলমান পরিস্থিতিতে, ভুল বোঝার এবং ভুল সিদ্ধান্তের কারণে সংকট বাড়ার আশঙ্কা সব সময়ই থাকে। সম্ভবত গত সপ্তাহ যা ঘটেছে তা সিরিয়া যুদ্ধের সমাপ্তিকে অনেকটা সহজই করেছে। যুদ্ধের দুই প্রধান পক্ষ আমেরিকা এবং কুর্দিরা পুরো চিত্র থেকে মুছে গেছে। এবং প্রেসিডেন্ট আসাদ তার মিত্র দেশ রাশিয়া এবং ইরানকে নিয়ে সিরিয়ার ভয়াবহ যুদ্ধে নিজেদের জয়কে আরো পোক্ত করবে। | It has taken a week to reshape the map of the Syrian war, in the seven days since President Donald Trump used what he called his "great and unmatched wisdom" to order the withdrawal of US troops from northern Syria. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ২০২১ সাল নাগাদ মহাকাশে পাঠাতে চায় নাসা তারা আশা করছেন, পৃথিবীর কাছাকাছি অন্য কোন নক্ষত্রের অন্য কোন গ্রহের প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা, সেটি এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে খুঁজে পাওয়া যাবে। নাসা বলছে, আক্ষরিক অর্থেই এটি অতীত সময়ে নিয়ে যাবে, যার মাধ্যমে বিশ্বব্রক্ষাণ্ডের প্রথম ছায়াপথ তৈরির বিষয়ে তথ্য পাওয়া যাবে। যদিও সেসব দাবি এখন ততটা জোরালো নয়। তবে এখন বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাবল স্পেস টেলিস্কোপের এই উত্তরসূরির অনেক চমৎকার কিছু দেখাতে যাচ্ছে। কারণ এই টেলিস্কোপে এমন অনেক কিছুই রয়েছে, যা এর আগে আর মহাকাশে পাঠানো হয়নি। প্রায় দশ বিলিয়ন ডলার খরচ করে টেলিস্কোপটি তৈরি করা হয়েছে। এটিকে সংক্ষেপে ডাকা হচ্ছে 'জেডব্লিউএসটি' নামে। ধারণা করা হচ্ছে, মহাকাশের কোন নক্ষত্রের কোন গ্রহে প্রাণের উপযুক্ত পরিবেশ আছে কিনা, সেটি এই দূরবীনের মাধ্যমে সনাক্ত করা যাবে। ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের মহাকাশ বিজ্ঞানীদের একটি দল এই টেলিস্কোপ ব্যবহার করে মহাবিশ্বে প্রাণ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র তৈরির প্রস্তাবনা দিয়েছেন। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটিতে এমন অনেক নতুন উপাদান রয়েছে, যা এর আগে মহাকাশে পাঠানো হয়নি কিভাবে দূরের গ্রাহের জীবন টেলিস্কোপের মাধ্যমে সনাক্ত করা যাবে? ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের মহাকাশ বিজ্ঞানী জোসুয়া ক্রিসানসেন-টোটন এবং তার দল বোঝার চেষ্টা করছেন, প্রাণের চিহ্ন আছে, কাছাকাছি থাকা কোন নক্ষত্রের কোন গ্রহে এমন কোন নমুনা এই টেলিস্কোপটি সনাক্ত করতে পারে কিনা। ''পরবর্তী কয়েক বছর ধরে আমরা এই প্রাণ সনাক্তকরণ পর্যবেক্ষণটি চালাতে পারবো।'' বলছেন ক্রিসানসেন-টোটন। কারণ এই টেলিস্কোপটি আলোর ক্ষেত্রে এতটাই সংবেদনশীল যে, গ্রহের আবহাওয়ার ভেতর রাসায়নিক কোন নড়াচড়া থাকলে, এই দূরবীন সেটি সনাক্ত করতে পারবে। যেমন পৃথিবীর আবহ মণ্ডলে বেশ কয়েকটি গ্যাসের আস্তরণ রয়েছে। এর অনেক কিছু পৃথিবীর প্রাণের কারণে তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানীরা এখন সেসব গ্রহে এরকম গ্যাসের সন্ধান করবেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, পৃথিবীর জীবনের কারণে পৃথিবীতে একরকম গ্যাসের আবহ রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে যদি সব প্রাণ বিলুপ্ত হয়ে যায়, পৃথিবীর আবহও পরিবর্তন হয়ে যাবে। এতদিন ভাবা হতো, প্রাণের অস্তিত্ব হিসাবে অক্সিজেন বা ওজোন থাকতে হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে ধরে নিতে হবে, সেখানে থাকা প্রাণের জীবধারণ আমাদের মতোই হবে। কিন্তু সেটা হয়তো নাও হতে পারে। এ কারণে এখন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে আবহাওয়ায় রাসায়নিক অস্থিতিশীলতার ওপর-যেখানে নানা ধরণের গ্যাসের অস্তিত্ব থাকতে পারে এবং সেসব গ্যাস ওই গ্রহের জন্য কতটা স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি করছে। এসব বিশ্লেষণ করে হয়তো ভিনগ্রহের প্রাণীর সন্ধান মিলতে পারে। পৃথিবীতে এখন যে গ্যাসের আবহ রয়েছে, সব প্রাণ বিলুপ্ত হয়ে গেলে সেই আবহাওয়াও পাল্টে যাবে। অন্য গ্রহেরও এরকম গ্যাসের আবহ বিশ্লেষণ করতে চান বিজ্ঞানীরা কোথায় বিশেষভাবে নজর দিতে হবে? তথ্য বিশ্লেষণ করে মি. ক্রিসানসেন-টোটন বলছেন, এই টেলিস্কোপ দিয়ে তারা প্রথমে নজর দিতে চান ট্রাপিস্ট-১ নামের একটি নক্ষত্রের দিকে, যেদিন সূর্য থেকে ৩৯.৬ আলোকবর্ষ দূরে রয়েছে। ২০১৭ সালে এই নক্ষত্রটি বেশ আলোড়ন তৈরি করে, কারণ এটির পৃথিবীর মতো সাতটি গ্রহ রয়েছে। তার বেশ কয়েকটিতে তরল পানি রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা প্রাণ থাকার জন্য বেশ আদর্শ। এখন ওয়াশিংটনের বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ওই নক্ষত্রের ট্রাপিস্ট-১ই নামের চতুর্থ গ্রহটির মিথেন এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের মাত্রা এবং তার পরিবর্তনের কারণ বিশ্লেষণ করতে পারবে। প্রাণ আসলেই আছে কিনা, সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য এগুলো হয়তো খুবই ক্ষুদ্র নমুনা বা সংকেত হতে পারে। তবে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোনাথন লুনাইন বলছেন, ''তারা যে ক্ষেত্রটি বাছাই করেছে, সেটি এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে সহজেই যাচাই করা যেতে পারে।'' অনেক সময় অজৈব অনেক কারণ, যেমন আগ্নেয়গিরির উৎক্ষেপণের কারণে গ্যাসের পরিবর্তন হয়ে থাকে। সুতরাং ওই গ্রহে প্রাণ আছে কিনা, সেটি নিশ্চিত হওয়ার আগে এরকম অজৈব প্রভাবের বিষয়টিও বিজ্ঞানীদের মাথায় রাখতে হবে। অধ্যাপক ক্রিসানসেন-টোটন বলছেন, ''নিশ্চিত হতে হলে আমাদের অনেক পর্যবেক্ষণ করতে হবে, প্রতিটি ঘটনাকে খুঁটিয়ে দেখতে হবে।'' '' কিন্তু আমরা যদি এমন কিছু পাই, যা ঘটার জন্য অজৈব কোন কারণ বা ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে না, আমি মনে করি, সেটাই হবে একটি অসাধারণ আবিষ্কার।'' পৃথিবীর কাছাকাছি ট্রাপিস্ট-১ নামের নক্ষত্রের গ্রহগুলো। ই নামের গ্রহটিকে পর্যবেক্ষণ করতে চান বিজ্ঞানীরা আর কারা এরকম চেষ্টা করে যাচ্ছে? জেডব্লিউএসটি নামের এই টেলিস্কোপে আরো অনেক উপাদান থাকবে, যা আগামী কয়েক দশক ধরে কাছাকাছি নক্ষত্রগুলোর গ্রহগুলোকে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। হাওয়াই এবং চিলির ভূমিতে থাকা টেলিস্কোপ দিয়েও এ ধরণের পর্যবেক্ষণ চালানো হবে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির অ্যারিয়েল মিশনও অন্য নক্ষত্রগুলোর গ্রহগুলোকে পর্যবেক্ষণ করবে, যা ২০২০ সাল নাগাদ উক্ষেপন করা হবে। তবে অধ্যাপক লুনাইন বলছেন, '' আমি মনে করি মহাবিশ্বকে বোঝা এবং আবিষ্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা রয়েছি এবং জেমস ওয়েব আমাদের সেই পরবর্তী ধাপে নিয়ে যাবে।'' যুক্তরাজ্যের মহাকাশ বিজ্ঞানী অধ্যাপক জিলিয়ান রাইট বলছেন, '' মহাকাশে এর আগে এত বড় কোন কিছুর সুবিধা আমরা পাই নি। একটি টেলিস্কোপের ক্ষেত্রে বলা চলে, সেটি মহাবিশ্বের একটি জানালা খুলে দেয়। জেমস ওয়েবের ক্ষেত্রে এটা পুরোপুরি সত্যি।'' জেমস ওয়েব টেলিস্কোপটি নাসার নেতৃত্বে তৈরি করা হচ্ছে, তবে এর সঙ্গে ইউরোপিয়ান এবং কানাডিয়ান স্পেস এজেন্সিও রয়েছে। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ ২০২১ সাল নাগাদ মহাকাশে পাঠাতে চায় নাসা । | If it does launch as currently scheduled in 2021, it will be 14 years late. When finally in position, though - orbiting the Sun 1.5 million km from Earth - Nasa's James Webb Space Telescope promises an astronomical revolution. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | বুজায়নাপের সাথে কথা বলনে সরকারি কর্মকর্তা, ২০১৭ সালের ভিডিও থেকে নেয়া ছবি চীনে উচ্চ পর্যায়ের একটি জরিপ বিবিসি দেখতে পেয়েছে - যাতে এ তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দিয়ে চীনের পশ্চিমাঞ্চলের বাসিন্দাদের মধ্যে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর অনুপাত বদলে দেবার চেষ্টা হচ্ছে কিনা - এমন প্রশ্ন করা হলে সরকার তা অস্বীকার করছে। চীনা সরকার বরং বলছে, গ্রামীণ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা বেকারত্ব এবং দারিদ্র দূর করার লক্ষ্যে মানুষের আয় বাড়াতেই এসব চাকরি ও বদলির পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিন্তু বিবিসির পাওয়া সাক্ষ্যপ্রমাণে আভাস পাওয়া যায়, এই নীতিতে জোর খাটানোর উচ্চ ঝুঁকি রয়েছে এবং - গত কয়েকবছরে শিনজিয়াং প্রদেশ জুড়ে যেসব পুন:শিক্ষণ শিবির গড়ে তোলা হয়েছে - তার পাশাপাশিই এসব চাকরিগুলোর পরিকল্পনা করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের জীবনধারা ও চিন্তাভাবনায় পরিবর্তন আনার জন্য। এই জরিপটি আসলে শুধু চীনের উর্ধতন কর্মকর্তাদেরই দেখার কথা। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত: তা অনলাইনে এসে যায়। চীনের প্রপাগাণ্ডা রিপোর্ট, সাক্ষাতকার এবং বিভিন্ন কারখানা পরিদর্শনের ওপর ভিত্তি করে বিবিসি যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে - তার একটি অংশ হচ্ছে এই জরিপটি। উইঘুর শ্রমিকদের বদলির সাথে দুটি বড় পশ্চিমা ব্র্যান্ডের সংযোগ নিয়ে বিবিসি প্রশ্ন তুলেছে। কারণ এ ব্যাপারটা ইতোমধ্যেই বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থার সাথে এমনভাবে জড়িয়ে গেছে যে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে। গ্রামে একদল সরকারি কর্মকর্তা ২০১৭ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি-পরিচালিত টিভি চ্যানেলে একটি ভিডিও রিপোর্ট প্রচারিত হয়। রিপোর্টটি ২০১৭ সালে প্রচারিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে এটি দেখানো হয় নি। এতে দক্ষিণ শিনজিয়াংএর একটি গ্রামের কেন্দ্রস্থলে একদল সরকারি কর্মকর্তাকে একটি লাল ব্যানারের সামনে বসে থাকতে দেখা যায়। ব্যানারে দেখা যাচ্ছে - আনহুই প্রদেশে কিছু চাকরির বিজ্ঞাপন। আনহুই প্রদেশ এখান থেকে ৪০০০ কিলোমিটার দূরে। বুজায়নাপকে নিয়ে এ ভিডিওটি এখনো আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় দেখা যায় নি পুরো দুদিন পার হলো, কিন্তু এই গ্রাম থেকে একজনও এসব চাকরির ব্যাপারে আগ্রহ দেখায় নি। তখন কর্মকর্তারা বাড়ি বাড়ি যেতে শুরু করলেন। এর পর ভিডিওটিতে দেখা যায় - কিভাবে চীনের উইঘুর কাজাখ ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ব্যাপকভাবে শ্রমিক হিসেবে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে - অনেক সময় তাদের বাড়ি থেকে বহু দূরে। বুজায়নাপের পিতা ভিডিওতে এই কর্মকর্তারা কথা বলছেন একজন পিতার সাথে - যিনি স্পষ্টতই চান না যে তার মেয়ে বুজায়নাপ এত দূরে চাকরি করতে যাক। তিনি বলছেন, "নিশ্চয়ই এমন অন্য কেউ আছে - যে যেতে চায়। আমরা তো এখানেই উপার্জন করতে পারছি । আমাদের এই জীবন নিয়েই থাকতে দিন।" তখন কর্মকর্তারা সরাসরি ১৯ বছর বয়স্ক বুজায়নাপের সাথে কথা বলেন। তাকে বলা হয়, সে যদি এখানে রয়ে যায়, তাহলে ক'দিন পরই তার বিয়ে দিয়ে দেয়া হবে এবং আর কখনো সে এ জায়গা ছাড়তে পারবে না। "চিন্তা করে দেখুন, আপনি কি যাবেন?" তারা প্রশ্ন করছেন। রাষ্ট্রীয় টিভির সাংবাদিক এবং সরকারি কর্মকর্তাদের তীক্ষ্ম নজরের সামনে বুজায়নাপ মাথা নাড়লেন। তার পর বললেন, "আমি যাবো না।" কিন্তু তার পরও চাপ দেয়া হতে থাকলো, এবং শেষ পর্যন্ত বুজায়নাপ কাঁদতে কাঁদতে রাজি হলেন। বললেন, "আমি যাবো যদি অন্যরাও যায়।" ভিডিওটি শেষ হচ্ছে মা'র কাছ থেকে মেয়ের অশ্রুভেজা বিদায় নেবার মধ্যে দিয়ে। বুজায়নাপ এবং অন্যরা তাদের পরিবার এবং সংস্কৃতি পিছনে ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। 'চমকপ্রদ' ভিডিও মানবাধিকার ও সমকালীন দাসত্ব বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ হচ্ছেন শেফিল্ড হাল্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লরা মার্ফি। তিনি ২০০৪ থেকে শুরু করে বহুবার শিনজিয়াং গেছেন এবং কিছু দিন থেকেছেন। বিবিসিকে তিনি বলছেন, "ভিডিওটা সত্যি চমকপ্রদ। চীনা সরকার সবসময়ই বলছে যে লোকেরা স্বেচ্ছায় এসব কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে। কিন্তু এই ভিডিওতে স্পষ্টভাবে বেরিয়ে এসেছেযে এটা এমন এক পদ্ধতি যেখানে জোর খাটানো হচ্ছে এবং কাউকে এতে বাধা দিতে দেয়া হচ্ছেনা।" "এই ভিডিওতে অন্য যে ব্যাপারটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে তা হলো অসাধূ উদ্দেশ্য । যদিও একে বলা হচ্ছে মানুষের দারিদ্র্য মোচনের কথা, কিন্তু এখানে লোকের জীবনকে বদলে দেয়া হচ্ছে, পরিবারগুলোকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে, জনগোষ্ঠীকে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে নানা জায়গায়, বদলে দেয়া হচ্ছে তাদের ভাষা, পরিবারকাঠামো - যা আসলে দারিদ্র কমানোর চাইতে তা বরং বাড়িয়ে দিতে পারে।" উইঘুরদের ব্যাপারে চীনা নীতি কিভাবে পাল্টেছিল? বেজিংএ ২০১৩ সালে এবং কুনমিংএ ২০১৪ সালে পথচারী ও পরিবহনে যাত্রীদের ওপর দুটি নৃশংস আক্রমণে ঘটেছিল। এর জন্য উইঘুর ইসলামপন্থী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করা হয়। সেই থেকেই শিনজিয়াংএ চীনা নীতির পরিবর্তনের সূচনা। হুয়াফু কোম্পানির হোস্টেল - যাতে বুজায়নাপকে রাখা হয় চীনা প্রতিক্রিয়ার একদিকে ছিল বন্দীশিবির প্রতিষ্ঠা, অন্যদিকে চাকরির বদলি কর্মসূচি। এর মূল কথা ছিল: উইঘুরদের সংস্কৃতি ও ইসলামিক বিশ্বাসকে পরিবর্তন করে তার জায়গায় আধুনিক বস্তুবাদী পরিচয় এবং কমিউনিস্ট পার্টির প্রতি আনুগত্য চাপিয়ে দেয়া। চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে উইঘুরদেরকে চীনা হ্যান সংস্কৃতির অংশ করা। চীনা রিপোর্টটি ২০১৯ সালে ভুলবশত অনলাইনে প্রকাশ করে দেয়া হয়, তবে কয়েক মাস পরে আবার মুছে দেয়া হয়। নানকাই বিশ্ববিদ্যা্লয়ের একদল শিক্ষাবিদের লেখা রিপোর্টটিতে গণহারে শ্রমিকদের বদলিকে - উইঘুরদের চিন্তায় পরিবর্তন আনা এবং তাদের প্রভাব বিস্তার করে বাকি সমাজের সাথে যুক্ত করাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসেবে বর্ণনা করা হয়। উইঘুরদের চীনের অন্যত্র নিয়ে গেলে জনঘনত্ব কমবে বলেও বলা হয় রিপোর্টটিতে। এ রিপোর্ট বিশ্লেষণ করেছেন ড. এ্যাড্রিয়ান জেঞ্জ - ভিক্টিমম অব কমিউনিজম মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের একজন সিনিয়র ফেলো। তিনি রিপোর্টটিকে নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করেন। তার বিশ্লেষণে আইনী মতামত দিয়েছেন এরিন ফ্যারেল রোজেনবার্গ - যিনি যুক্তরাষ্ট্রের হলোকস্ট মিউজিয়ামের সাবেক উপদেষ্টা। তিনি বলছেন, নানকাই রিপোর্টটি জেরপূর্বক উচ্ছেদ ও নিপীড়নের মত মানবতার বিরুদ্ধে অপরাথের বিশ্বাসযোগ্য ভিত্তি তৈরি করেছে। চীনা সরকারি প্রতিক্রিয়া এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এই রিপোর্টটিতে লেখকদের নিজস্ব মত প্রতিফলিত হয়েছে এবং এর সারবস্তুর অনেক কিছুই 'বাস্তবসম্মত নয়।' রিপোর্টের সর্বত্রই কড়া নিয়ন্ত্রণের চিহ্ন দেখা যায়। নতুন চাকরিপ্রাপ্তরা শুরু থেকেই কেন্দ্রীভূত ব্যবস্থাপনার অধীনে চলে যায়। কখনো কখনো পূর্ব চীনের স্থানীয় পুলিশ ট্রেন ভর্তি উইঘুরদের দেখে এতই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে যে কখনো কখনো তাদের ফেরত পাঠানো হয়। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: উইঘুর নারীরা যেভাবে গণধর্ষণের শিকার হচ্ছেন চীনের বন্দী শিবিরে চীনে উইগর মুসলিম নির্যাতনের ব্যাপারে যা জানা গেছে চীনের মুসলিম বন্দী শিবিরগুলো এখন 'বৈধ' উইগর মুসলিম নারীদের জোর করে বন্ধ্যা করছে চীন- রিপোর্ট রিপোর্টে কোথাও কোথাও সতর্ক করা হয় যে শিনজিয়াংএর ক্ষেত্রে চীনের নীতি হয়তো বেশি কঠোর হয়ে গেছে - যেমন পুন:শিক্ষণ কেন্দ্রে যে পরিমাণ লোক আছে তা উগ্রপন্থার সাথে জড়িত এমন সন্দেহভাজনের চেয়ে অনেক বেশি। "পুরো উইঘুর জনগোষ্ঠীকেই দাঙ্গাবাজ বলে ধরে নেয়াটা ঠিক হবে না" - বলা হয় এতে। উইঘুর কর্মীরা আলাদা জায়গায় থাকে বুজায়নাপকে কাজ করতে পাঠানো হয়েছিল চীনের পূর্বাঞ্চলীয় আনহুই প্রদেশে হুয়াফু টেক্সটাইল কোম্পানিতে। এই কোম্পানিতে গেলে বিবিসিকে জানানো হয়, উইঘুর কর্মীরা বাড়ি ফিরে গেছে। আমাজনে এ কোম্পানির তৈরি বালিশের কেস পাওয়া যায়। তবে আমাজন বলছে, তারা জোরপূর্বক শ্রমিকদের কাজ করানোর ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর নীতি নেয়। সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গুয়াংজু প্রদেশের ডংগুয়ান লুঝু জুতা কারখানা - যারা স্কেচার্স কোম্পানির জন্য পণ্য বানায় - একজন শ্রমিক বলেছেন, সেখানেউইঘুর শ্রমিকদের আলাদা হোস্টেলে রাখা হয়। স্কেচার্সও বলেছে, তারা জোরপূর্বক শ্রমিকরা কাজ করানোর ব্যাপারে শূন্য সহিষ্ণুতা দেখিয়ে থাকে। তবে তারা ডংগুয়ান লুঝুকে সরবরাহকারী হিসেবে ব্যবহার করে কিনা - সে প্রশ্নের জবাব দেয়নি। ডংগুয়ান লুঝু নিজেও এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেনি। অনুসন্ধানের সময় সাংবাদিকরা কিছু কারখানায় উইঘুর শ্রমিকদের ওপর কিছু বিধিনিষেধের তথ্য পেয়েছেন।একটি কারখানার উইঘুর শ্রমিকদের একেবারেই বেরোতে দেয়া হয় না বলেও অভিযোগ উঠেছে। বুজায়নাপকে আবার দেখা গেল টিভি রিপোর্টে বুজায়নাপের গ্রাম থেকে বিদায়ের তিন মাস পর তাকে আরেকটি টিভি অনুষ্ঠানে দেখা যায়। সরকারি টিভির ওই রিপোর্টে দেখা যায় তিনি আনহুই-তে হুয়াফু টেক্সটাইল কোম্পানিতে কাজ করছেন। রিপোর্টে বুজায়নাপকে তার ভুলের জন্য বকাঝকা করা হচ্ছে এমন একটি দৃশ্য ছিল। তবে পরে তার সম্পর্কে বলা হয়, "এই ভীতু মেয়েটি আগে মাথা তুলে কথা বলতে পারতো না, কিন্তু এখন কাজে সে কর্তৃত্ব করতে পারছে। জীবনধারা পাল্টাচ্ছে, চিন্তাতেও পরিবর্তন আসছে।" | China's policy of transferring hundreds of thousands of Uighurs and other ethnic minorities in Xinjiang to new jobs often far from home is leading to a thinning out of their populations, according to a high-level Chinese study seen by the BBC. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | লাতিন আমেরিকায় এবং ক্যারিবিয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা সবাই জানে, কিন্তু ব্রিটেনের গোপন তৎপরতার কথা ছিল অজানা। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের গুপ্তচর সংস্থাগুলোর তৎপরতার কথা ব্যাপকভাবে প্রকাশ পেয়েছে। কিন্তু সেখানে যে ব্রিটিশরাও বেশ তৎপর ছিল, সে সম্পর্কে কমই জানা যায়। ইউনিভার্সিটি অব নটিংহ্যামের প্রফেসর রোরি করম্যাক বলেন, সম্প্রতি যেসব গোপন সরকারি নথি উন্মুক্ত করা হয়েছে, তাতে দেখা যায় লাতিন আমেরিকার অনেক দেশে ব্রিটিশরা নির্বাচনে প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করেছে এবং ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন বিপর্যস্ত করার চেষ্টা করেছে। লাতিন আমেরিকায় কমিউনিস্টদের প্রভাব ঠেকানোর চেষ্টা করছিল ব্রিটেন ১৯৬০ এর দশকের শুরু থেকে ব্রিটেন লাতিন আমেরিকায় নাটকীয়ভাবে তাদের গোপন তৎপরতা বাড়িয়ে দেয়। সেখানে তারা 'বিশেষ রাজনৈতিক কার্যক্রমের' আওতায় প্রপাগান্ডা চালাতে শুরু করে। নানা রকম জালিয়াতিরও আশ্রয় নেয়া হয়। এর লক্ষ্য ছিল জনমত প্রভাবিত করা, বিশেষ করে কমিউনিজমের বিরুদ্ধে। "এটি বেশ অবাক করা ব্যাপার। কারণ ইতিহাসবিদরা এতদিন মনে করতেন, ব্রিটিশরা কেবল মধ্যপ্রাচ্য আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতেই তাদের গোপন তৎপরতা চালাতো। তাদের ধারণা ছিল লাতিন আমেরিকার ব্যাপারটি ব্রিটিশরা সিআইএ'র হাতে ছেড়ে দিয়েছে", বলছেন প্রফেসর করম্যাক। 'ব্ল্যাক প্রপাগান্ডা' ১৯৬১ সালে রনি বারোজ বলে এক ব্রিটিশ কূটনীতিক ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দফতর এবং এমআই-সিক্সের হয়ে লাতিন আমেরিকা সফর করেন। লন্ডন থেকে তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় লাতিন আমেরিকায় গোপন তৎপরতা বাড়ানোর। তখন সেখানে বিশেষ করে যে 'ব্ল্যাক প্রপাগান্ডা' চালানো হয়, তার পেছনে যে ব্রিটেন আছে, তা গোপন রাখা হয়েছিল। এই ব্ল্যাক প্রপাগান্ডার মাধ্যমে সেখানে এমন সব ভুয়া জিনিসপত্র তৈরি করা হতো, যারা উদ্দেশ্যই ছিল জনগণকে বিভ্রান্ত করা। আর কারা এসব প্রচারের পেছনে আছে, সেটা নিয়েও মানুষকে বিভ্রান্ত করা হতো। আরও পড়ুন: মার্কিন ভাড়াটে সেনার নেতৃত্বে একজন প্রেসিডেন্টকে ধরতে এক উদ্ভট ষড়যন্ত্র কীভাবে উৎখাত হয়েছিল ইরানের মোসাদ্দেক সরকার ফিদেল ক্যাস্ত্রোকে হত্যার বিচিত্র সব পরিকল্পনা লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে বাণজ্যি বাড়ানোর চেষ্টা করছিল ব্রিটেন তখন বিশ্বে লাতিন আমেরিকার গুরুত্ব বাড়ছিল। কিন্তু সেখানে কমিউনিস্টদের প্রভাব যে বাড়ছে ,তারও অনেক লক্ষণ দেখা যাচ্ছিল। বিশেষ করে কিউবার বিপ্লবের পর। ব্রিটেন তখন সেভাবে লাতিন আমেরিকার দিকে মনোযোগ দিচ্ছিল না। সেখানে তাদের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রই সাধারণত সব কাজে নেতৃত্ব দিত। কারণ যুক্তরাষ্ট্র মনে করতো, এই এলাকায় প্রভাব খাটানোর এখতিয়ার তাদের। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রই সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিল। কিন্তু প্রফেসর করম্যাক বলেন, ব্রিটেন তারপরও এধরণের গোপন তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ওপর প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে। একই সঙ্গে লাতিন আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিও তাদের লক্ষ্য ছিল। "ব্রিটেন এসব গোপন তৎপরতা চালিয়েছে দুটি কারণে", বলছেন তিনি। "প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে একটু সুবিধা পাওয়ার জন্য, কারণ এই সম্পর্ক ক্রমশ একতরফা হয়ে পড়ছিল। দ্বিতীয়ত, ঐ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব কমে যাচ্ছে বলে যে ধারণা তৈরি হয়েছিল, সেটার সুযোগ নিয়ে সেখানকার ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক বাজার দখল করতে চাইছিল ব্রিটেন। ব্রিটেনের এই দুটি উদ্দেশ্যের মধ্যে আবার অনেক সময় দ্বন্দ্ব ছিল, তারা যেন একসঙ্গে যাচ্ছিল না।" ভেনেজুয়েলাকে একটা বড় 'পুরস্কার' বলে গণ্য করছিল ব্রিটিশরা লাতিন আমেরিকায় যারা এরকম প্রপাগান্ডা চালাচ্ছিল, ব্রিটেন তাদের সংখ্যা বাড়ায়। সেখানে এমআই-সিক্সের নতুন স্টেশন খোলা হয়। এর মধ্যে চিলে এবং ভেনেজুয়েলাও ছিল। (এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা ভেনেজুয়েলাকে এক 'বিরাট পুরস্কার' বলে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন "এই দেশটি বেশ সমৃদ্ধশালী এবং দেশটির সরকার বড় ধরণের বিনিয়োগের উৎস হতে পারে।") তবে ব্রিটেনের প্রধান লক্ষ্য ছিল প্রপাগান্ডা চালিয়ে কমিউনিজমকে ঠেকানো এবং সেখানে চার্চ, ট্রেড ইউনিয়ন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কাজ করা। এই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কলম্বিয়ায় একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হয়। চিলে এবং বলিভিয়ায় ইশতেহার বিলি করা হয়। স্থানীয় রেডিও স্টেশনগুলোর প্রযোজকদের ঘুষ দেয়া হয় যাতে সেখানে এয়ারটাইম পাওয়া যায় এবং এরকম প্রপাগান্ডার উদ্দেশ্যে তৈরি টেপ বাজানো হয়। এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা তখন গর্বভরে বলেছিলেন, "তাকে যদি এক লাখ পাউন্ড খরচ করতে দেয়া হয়, তাহলে তিনি আন্দিয়ান অঞ্চলের সব বেতার কথকদের কিনে ফেলতে পারেন।" ব্রিটেনের এই গুপ্তচররা বলিভিয়ার যাজকদের সঙ্গেও কাজ করেছেন। সেখানে তারা সোভিয়েত এবং কিউবান প্রপাগান্ডার জবাবে নানা ধরণের প্রচারপত্র বিলি করে পাল্টা প্রপাগান্ডা চালান। প্রেসিডেন্ট আরোসেমেনা কিউবার বিপ্লবের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন। ব্রিটিশরা তাকে পছন্দ করতো না। একুয়েডরেও তারা একই ধরণের তৎপরতায় লিপ্ত ছিলেন। সেখানে তারা যেসব যাজকদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তারা প্রেসিডেন্ট কার্লোস জুলিও আরোসেমেনা মনরির বিরুদ্ধে লোক জড়ো করার ক্ষমতা রাখতো বলে মনে করা হয়। ব্রিটিশরা প্রেসিডেন্ট কার্লোস জুলিও আরোসেমেনা মনরিকে "খুবই নীতিহীন এবং অবাঞ্ছিত চরিত্র" বলে মনে করতো। প্রফেসর করম্যাক এসব বিষয়ে যে প্রবন্ধটি লিখেছেন সেটির শিরোণাম, "দ্য কারেন্সি অব কভার্ট একশন: ব্রিটিশ স্পেশাল পলিটিক্যাল একশন ইন ল্যাটিন আমেরিকা, ১৯৬১-৬৪।" এটি প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব স্ট্রাটেজিক স্টাডিজে। এতে তিনি লিখেছেন, এই ব্রিটিশ গুপ্তচরদের ধারণা ছিল, এই যাজকরা চাইলে যে কোন সময় রাজধানী কিটোর রাস্তায় ৫ হাজার মানুষ জড়ো করার ক্ষমতা রাখে। বিশেষ করে ক্যাথলিক তরুণদের ওপর তাদের বেশ প্রভাব ছিল। ২০১৯ এবং ২০২০ সালে প্রকাশ করা গোপন নথিপত্রের ভিত্তিতে অধ্যাপক করম্যাক বলেন, বৃটিশ গুপ্তচররা তখন ট্রেড ইউনিয়নগুলোর মধ্যেও তাদের অনুচর ঢুকিয়ে দিয়েছিল। তারা অনেক ট্রেড ইউনিয়ন দখল করে নিয়েছিল অথবা এগুলোর সভায় বিঘ্ন ঘটাতে পেরেছিল। ১৯৬২ সালের এপ্রিলে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জোয়াও গোলা ওয়াশিংটনে জানান প্রেসিডেন্ট কেনেডির সঙ্গে দেখা করতে। কিন্তু পরে তাদের সম্পর্কে তিক্ততা তৈরি হয়। ব্রাজিলের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জোয়াও গোলাকে ব্রিটিশরা টার্গেট করেছিল। ব্রিটিশরা এমন কিছু জাল কাগজ তৈরি করে যাতে দেখানো যায় কমিউনিস্টরা ট্রেড ইউনিয়নগুলো দখল করে নিয়েছে। যাতে করে প্রেসিডেন্টের মনে এমন ভয় ঢুকিয়ে দেয়া যায় যে সেখানে তার অবস্থানকে কট্টর বামপন্থীরা নাজুক করে তুলছে। তবে এই কাজটি শেষ পর্যন্ত ব্রিটিশরা আর করেনি। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট জোয়াও গোলাকে ১৯৬৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। সালভাদর আলেন্দে ১৯৬৪ সালে চিলির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ান, কিন্তু হেরে যান এডুয়ার্ডো ফ্রেইর কাছে। ব্রিটিশকরা কয়েকটি ঘটনায় নির্বাচনেও প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে চিলেতে ১৯৬৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। ব্রিটিশদের আশংকা ছিল সেখানে সমাজতন্ত্রী সালভাদর আলেন্দে জয়ী হতে পারেন। একটি ব্রিটিশ গোপন নথিতে এ ব্যাপারে বলা হচ্ছে, "আলেন্দে একবার ক্ষমতায় আসলে এমন সম্ভাবনা আছে যে তাকে কমিউনিস্টরা তাদের ইচ্ছেমত বা অন্য কোনভাবে পরিচালনা করতে পারবে এবং শেষ পর্যন্ত চিলিতে হয়তো কিউবার মতো একটা সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।" তবে সেখানে ব্রিটিশদের তৎপরতাকে ছাড়িয়ে যায় মার্কিনীদের কর্মকাণ্ড। সেখানে দু বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র খরচ করেছিল ৩০ লাখ ডলার, যাতে করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করা যায়। প্রফেসর করম্যাকের বিশ্লেষণ হচ্ছে, ব্রিটেন আসলে "খুব সস্তায় বিশ্বে তাদের একটা ভূমিকা বজায় রাখার জন্য" এ ধরণের গোপন তৎপরতাকে ব্যবহার করছিল। | British intelligence engaged in a far more active programme of covert activity in Latin America in the 1960s than previously understood, it has been claimed. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | খারাপ আবহাওয়া থাকায় পুলিশ শুরুতে জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছে পৌঁছাতে পারেনি জাপানের মূল ভূখণ্ডের উত্তর পশ্চিমের সাদো দ্বীপে শুক্রবার ভেসে আসে জাহাজটি। পরে শনিবার কর্তৃপক্ষ জাহাজের ভেতরের অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারে। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া জাহাজটির গায়ে কোরিয়ান ভাষায় লেখা ছিল। জাহাজে থাকা মাথা দু'টি মৃতদেহগুলোর মধ্যে দু'জনের কিনা তা পুলিশ নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে জাপানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, জাহাজে পাওয়া দেহাবশেষগুলোর সবগুলোই 'আংশিকভাবে কঙ্কাল' হয়ে গেছে। এর ফলে মনে করা হচ্ছে যে, ভুক্তভোগীরা দীর্ঘ সময় যাবত সমুদ্রে অবস্থান করছিলেন। জাপানের উপকূলে উত্তর কোরিয়া থেকে আসা 'ভুতুড়ে জাহাজ' আবিষ্কারের ঘটনা একেবারেই নতুন নয়। এসব জাহাজ সাধারণত খালি থাকে বা সেখানে মানুষের দেহাবশেষ থাকে। ' আরো পড়তে পারেন: ইরানের জলসীমায় ব্রিটিশ জাহাজ চলাচলে হুমকি জাহাজ থেকে নবজাতক এবং মা'কে তুলে নিল বিমান উত্তর মেরুতে বরফ গলে জাহাজ চলাচলের পথ খুলছে? উত্তর কোরিয়া থেকে ভেসে আসা জাহাজ সাধারণত খুবই সাদামাটা হয়ে থাকে জাহাজের নাবিকদের মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ থাকে, শীতের সময় তীব্র ঠান্ডা বা খাবার না পাওয়া। এর আগের ঘটনাগুলোয় জাহাজে থাকা মৃত নাবিকরা আসলে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং আনের রাজত্ব থেকে পালিয়ে আসতে চেয়েছিল কিনা, তা যাচাই করার কোনো উপায় ছিল না। তবে এমন ধারণা করা হয় যে, অতিরিক্ত দারিদ্র্যই উত্তর কোরিয়ার নাবিকদের ঝুঁকি নিয়ে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যেতে বাধ্য করে। ২০১৭ সালে ভাসতে থাকা এরকম একটি জাহাজে একজন মাছ ধরা জেলেকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং তাকে উত্তর কোরিয়ায় ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত দেয়া হয়। জাপান ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে চলমান অস্থিরতার কারণে সাম্প্রতিক এই জাহাজ দুর্ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ব্যাহত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। শুকবার জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকারী সংস্থা এনএইচকে ভুলবশত খবর তৈরি করেছে যে, ত্রুটি শোধরানোর আগেই নিক্ষেপ করা হয়েছে উত্তর কোরিয়ার মিসাইল। পরে তারা ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করে এবং বলে যে প্রশিক্ষণ চলাকালীন ভুলবশত এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। নভেম্বরে উত্তর কোরিয়া ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা করার কথা বলে জাপানকে হুমকি দেয় এবং উত্তর কোরিয়ার মিসাইল পরীক্ষা সম্পর্কে ত্রুটিপূর্ণ খবর প্রচার করায় প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবেকে 'নির্বোধ' বলে সমালোচনা করেন। | Five corpses and two human heads have been discovered inside a shipwreck on the coast of Japan. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | মাথায় বাক্স পরা অবস্থায় পরীক্ষা দিচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা একজন কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, নকল ঠেকানোর জন্যই এই অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছিলেন তারা। কর্ণাটক রাজ্যের হাভেরিতে ভগৎ প্রি-ইউনিভার্সিটি কলেজে সম্প্রতি রসায়নের পরীক্ষা চলার সময় এ দৃশ্যের অবতারণা হয়। এতে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা কার্ডবোর্ডের বাক্স - যার সামনের দিকটা চারকোণা করে কাটা - তা মাথায় পরে পরীক্ষা দিচ্ছে, যাতে সে অন্য পরীক্ষার্থীরা খাতায় কি লিখছে তা দেখতে বা নকল করতে না পারে। একজন কর্মকর্তা এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমে কথা বলেছেন এবং দু:খ প্রকাশ করেছেন। এম বি সতীশ নামের ওই কর্মকর্তা বলেন, একটি অভিনব নকল-বিরোধী টেকনিক ব্যবহারের জন্য তিনি দু:খিত। আরো পড়তে পারেন: কেনিয়ায় পরীক্ষায় নকল ঠেকাতে ক্লিপবোর্ড নিষিদ্ধ ভারতে নকল রোধের স্বার্থে নগ্ন হয়ে পরীক্ষা পরীক্ষায় নকল ও প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে ফেসবুক বন্ধ কলেজ কর্তৃপক্ষ এ জন্য দু:খ প্রকাশ করেছে তিনি আরো জানান, অন্য কোথাও কোথাও এ পদ্ধতি ব্যবহার হয়েছে এ কথা শোনার পর 'পরীক্ষামূলক ভিত্তিতে' তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তার কথায়, ছাত্রদের অনুমতি নিয়েই এটা করা হয়েছিল এবং অনেক ছাত্রই তাদের নিজেদের বাক্স নিজেরাই নিয়ে এসেছিল। "কাউকে জোর করা হয় নি। কেউ কেউ ১৫ মিনিট পরই বাক্সটি খুলে ফেলে, কেউ ২০ মিনিট পর। আমরা নিজেরাই ১ ঘন্টা পর বাক্স খুলে ফেলতে বলেছিলাম। তবে শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা এস সি পীরজাদে বলেছেন, এ পদ্ধতি অমানবিক। টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, "আমি এ খবর দেখেই ওই কলেজে যাই, কর্তৃপক্ষকে এটা বন্ধ করতে বলি, এবং তাদের একটা নোটিশ দেই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার কথাও ভাবা হচ্ছে।" বিবিসি বাংলায় আরো খবর: ফেসবুক-মেসেঞ্জার হ্যাক হওয়া ঠেকাবেন যেভাবে ভোলায় হিন্দুদের বাড়ি, মন্দিরে হামলার ঘটনাও ঘটেছিল ক্রিকেটারদের ধর্মঘট ষড়যন্ত্রের অংশ - পাপন | An Indian school official has apologised after a bizarre set of images went viral showing students wearing cardboard boxes on their heads. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | এঙ্গেলা মের্কেল তার ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রাট দলের প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন শুক্রবার শুক্রবার ৭ই ডিসেম্বর এক আবেগময় বিদায়ী ভাষণে মিসেস মের্কেল তার দেশের ভেতরে এবং বাইরে জার্মানির উদার মূল্যবোধকে বাঁচিয়ে রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। সুদীর্ঘকাল এঙ্গেলা মের্কেল জার্মানির ক্ষমতায় আসীন রয়েছেন। নিজেকে তিনি একজন বিচক্ষণ ও বাস্তববাদী নেতা হিসাবে প্রমাণ করেছেন। একসময় তাকে বর্ণনা করা হতো ''জার্মানির রানি'' হিসাবে এমনকী কেউ কেউ তাকে ডাকতেন ''ইউরোপের সম্রাজ্ঞী'' বলে। আঠারো বছর তিনি তার দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন । আর পরপর চার মেয়াদে দেশটির চ্যান্সেলারের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দলের নেতৃত্ব এখন ছাড়লেও চ্যান্সেলার হিসাবে তার চতুর্থ মেয়াদ শেষ করবেন ২০২১ সালে। তখন দেশটির প্রধানের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন মিসেস মের্কেল। কাজেই ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতি জার্মানির নেতৃত্বে তিনি ২০১২ সাল পর্যন্ত থাকলেও এটা এক অর্থে হবে সাময়িক দায়িত্বপালন। মিসেস মের্কেলের ক্ষমতার শক্ত ভিত প্রথম নড়ে যায় যখন শরণার্থীদের জন্য জার্মানির উন্মুক্ত-দ্বার নীতির নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মুখে তাকে পড়তে হয়। তার এই নীতির ফলশ্রুতিতে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে দেশটির চরম ডান-পন্থীরা এবং তার দল প্রায় ৭০ বছরের নির্বাচনী ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ফল করে ২০১৭ সালে। মিসেস মের্কেল বলেছেন কোন রাজনৈতিক পদ নিয়ে তার ভবিষ্যত কোন পরিকল্পনা নেই। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে দুই জার্মানি একত্রিত হবার পর থেকে তিনি কোন না কোন রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এখন পর্যন্ত একাটার পর একটা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: টাইম ম্যাগাজিনের ২০১৫র সেরা ব্যক্তিত্ব এঙ্গেলা মেরকেল জার্মানির নির্বাচন: মের্কেলের ফাঁপা বিজয় জার্মানির নির্বাচনে এঙ্গেলা মের্কেলের দলের পরাজয় ধর্মযাজকের কন্যা থেকে রাজনীতির অঙ্গনে ১৯৫৪ সালের ১৭ই জুলাই জার্মানির হামবুর্গ শহরে এঙ্গেলা কাসনারের। যখন তার বয়স মাত্র দুমাস তখন তার বাবাকে পূর্ব জার্মানির এক ছোট্ট শহরের এক গির্জার ধর্মযাজকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। হেলমুট কোলের সরকারে মিসেস মের্কেল প্রথম দায়িত্ব নেন নারী ও তরুণ বিষয়ক মন্ত্রী হিসাবে কম্যুনিস্ট পূর্ব জার্মানিতে বার্লিনের উপকণ্ঠে এক গ্রাম এলাকায় বড় হয়েছেন এঙ্গেলা মের্কেল। পদার্থবিদ্যায় ডক্টরেট করে এঙ্গেলা কাজ নেন পূর্ব বার্লিনের একটি বিজ্ঞান অ্যাকাডেমিতে রসায়নবিদ হিসাবে। ১৯৭৭ সালে সহপাঠী ছাত্র উলরিখ মের্কেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। কিন্তু চারবছর পর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ১৯৮৯ সালের মধ্যে তিনি পূর্ব জার্মানিতে যে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গতিশীল হয়ে ওঠে তার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এঙ্গেলা। এরপর বার্লিন প্রাচীর যখন ভেঙে ফেলা হয়, তখন পূর্ব জার্মানিতে প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনের পর তিনি পূর্ব জার্মান সরকারের মুখপাত্র হিসাবে কাজ নেন। ১৯৮৯ সালে হঠাৎ করে সীমান্ত উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর পূর্ব জার্মানরা বার্লিন প্রাচীর বেয়ে উঠছে। ১৯৯০ সালে জার্মানির একত্রীকরণের দুমাস পর তিনি মধ্য দক্ষিণপন্থী ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রাট পার্টিতে (সিপিইউ) যোগ দেন। পরের বছর চ্যান্সেলার হেলমুট কোলের সরকারে তিনি মহিলা ও তরুণ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব নেন। মি: কোল অবৈধ অর্থ লেনদেনের এক কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়লে মিসেস মের্কেল ১৯৯৯ সালে তার পদত্যাগ দাবি করেন। ২০০০ সালে সিপিইউ দলের নেতা নির্বাচিত হন। ২০০৫ সালে তিনি জার্মানির প্রথম নারী চ্যান্সেলার হন। জার্মানিকে অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে টেনে তোলা তার রাজনৈতিক জীবনের গোড়াতে তাকে দেখা হতো অনাকর্ষণীয় প্রাদেশিক সাদামাটা একজন নেতা হিসাবে। কিন্তু প্রথম থেকেই সেই ভাবমূর্তি তিনি ঝেড়ে ফেলতে উদ্যোগী হন তার পোশাকআশাক ও চেহারার পরিবর্তন ঘটিয়ে। তিনি চুলের স্টাইল বদলান, উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরতে শুরু করেন। তিনি ১৯৯৮ সালে ইয়োকিম সয়ারকে বিয়ে করেন। তার প্রথম সরকার তিনি গঠন করেন মধ্য বামপন্থী সোসাল ডেমোক্রাটদের সঙ্গে একটা মহাজোট করে। মিসেস মের্কেলের চ্যালেঞ্জ বাড়ে যখন তাকে ইইউর 'প্রকারান্তরে নেতা' বলে বর্ণনা করা শুরু হয়। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি ব্যবসা-বান্ধব ফ্রি ডেমোক্রাট দলের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করেন। ইউরোপ যখন অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন তিনি ব্যয়সঙ্কোচের প্রতীক হয়ে ওঠেন। দক্ষিণ ইউরোপের উপর্যুপরি ঋণ সমস্যার মোকাবেলায় তিনি ব্যাপক বাজেট হ্রাস এবং কড়া নজরদারির সুপারিশ করেন। সমালোচকরা বলেন তিনি অর্থসঙ্কট সামাল দিতে বাড়তি অর্থসাহায্য দেবার ব্যাপারে প্রথমদিকে অনীহা প্রকাশ করেন। কিন্তু ইউরোজোনের আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে জার্মানিই পরে সবচেয়ে বড় ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। এবং ইউরোর প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য ইইউর প্রয়াসের পেছনে মূল ভূমিকা পালন করেন এঙ্গেলা মের্কেল। দলীয় কার্নিভালে মিসেস মের্কেলকে 'ব্ল্যাক উইডো' হিসাবে তুলে ধরে একটি ফ্লোট গ্রিস ও স্পেনে বিক্ষোভকারীরা ব্যয়সঙ্কোচন নীতি বলবৎ করার জন্য জার্মানিকে দোষারোপ করে এবং মিসেস মের্কেলকে হিটলারের সঙ্গে তুলনা করে। কিন্তু এই সঙ্কটের মধ্যে জার্মানির শক্ত অর্থনৈতিক অবস্থান, বেকারত্বের নিচু হার এবং বেশ ভাল মাত্রার রপ্তানি দেশের ভেতর তাকে জনপ্রিয় করে তোলে। জার্মানির মানুষ ব্যাপকভাবে মনে করে কঠিন সময়ে তিনি দেশের জন্য নিরাপদ একজন নেতা। ২০১৩ সাল নাগাদ ব্যয়সঙ্কোচ নীতি সম্পর্কে তিনি অপেক্ষাকৃত নমনীয় মনোভাব নেন। তিনি বলেন বেকারত্ব সমস্যা মোকাবেলার জন্য ইউরোপের শ্রমবাজার আরও উন্মুক্ত করা দরকার, যাতে তরুণরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কাজ খোঁজার সুযোগ পান। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: অনেক অভিবাসী নিয়ে ভুল করেছে জার্মানি- ট্রাম্প জার্মানি অভিমুখে শরণার্থীদের স্রোত অব্যাহত উন্মুক্ত দ্বার নীতি মিসেস মের্কেলের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আসে যখন অভিবাসী ও শরণার্থীরা তাদের গন্তব্য হিসাবে বিপুল সংখ্যায় পাড়ি জমায় সফল অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে। ২০১৫র জুলাই মাসে, দেখা যায় জার্মানিতে আশ্রয় পাবার জন্য কয়েকবছর ধরে অপেক্ষারত এক শরণার্থী নারীকে চ্যান্সেলার সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ এটাকে ভাল চোখে দেখেনি। তারা মনে করেছে তিনি সহমর্মিতা দেখান নি। কিন্তু দলে দলে নতুন শরণার্থী আসার স্রোত যখন বাড়তে থাকে তিনি জার্মানির সীমান্ত খুলে দেন। শরণার্থীরা ইইউর যে দেশ দিয়ে ইউরোপে ঢুকছে সেখানে তাদের আশ্রয়াপ্রার্থী হিসাবে নাম নথিভুক্ত করার ইইউ নীতি তিনি সাময়িকভাবে স্থগিত করে দেন। জাতিসংঘ তার এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গীর ভূয়সী প্রশংসা করে। তিনি টাইম সাময়িকীতে সেবছরের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি নির্বাচিত হন এবং তাকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের "প্রকারান্তর নেতা'' ঘোষণা করা হয়। লক্ষ লক্ষ জার্মান নাগরিক তার এই বার্তায় কণ্ঠ মিলিয়ে বলে "আমরা মানিয়ে নেব"। প্রাদেশিক নির্বাচনে দলীয় প্রচারাভিযানে "মিসেস মের্কেল- অনেক ধন্যবাদ'' ব্যানার । কিন্তু এই উন্মুক্ত-দ্বার নীতিকে সবাই স্বাগত জানায় নি। চরম দক্ষিণপন্থীরা এই নীতির বিরোধিতা করে প্রচারণায় নামে। দেশের পূর্বাঞ্চলে তারা ইসলাম-বিরোধী প্রচারণায় তৎপর হয়ে ওঠে। প্রচারণা পূর্বাঞ্চলের গণ্ডি পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যত্রও। এরপর নববর্ষের এক অনুষ্ঠানে অভিবাসীদের দিক থেকে যৌন হয়রানির অভিযোগ এবং গ্রীষ্মকালে ইসলামী চরমপন্থী গোষ্ঠির হামলা এই প্রচারণাকে শক্ত ভিত্তি দেয়। ধাক্কা খায় মিসেস মের্কেলের জনপ্রিয়তা। মিসেস মের্কেল স্পষ্ট করে না বললেও একরকম স্বীকার করতে বাধ্য হন তিনি ভুল করেছেন। তিনি বলেন, "যদি পারতাম ঘড়ির কাঁটা কয়েক বছর পেছনে নিয়ে যেতাম, শরণার্থীর ঢল সামাল দেবার জন্য দেশকে আগে সেপ্টেম্বর ২০১৭র সাধারণ নির্বাচনে মিসেস মের্কেলের সিডিইউ দল খুবই খারাপ ফল করে। ১৯৪৯সালের পর এটাই ছিল দলের সবচেয়ে শোচনীয় ফল, যা ছিল মিসেস মের্কেলের প্রতি জনসমর্থন তলানিতে যাওয়ার ইঙ্গিত। রক্ষণশীল সিডিইউ দলের প্রথম নারী চ্যান্সেলার হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন এঙ্গেলা মের্কেল। এরপর থেকে জোট গঠন ও নির্ভরযোগ্য সরকার গঠন নিয়ে নানা জটিলতার মুখোমুখি হয়েছেন মিসেস মের্কেল। প্রাদেশিক নির্বাচনগুলোতে দেখা গেছে ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রাট দলের প্রতি ও দলের নেতাদের প্রতি জনগণের আস্থা ও সমর্থনের অভাব। বেশ কয়েকমাস আগেই মিসেস মের্কেল ঘোষণা করেছিলেন দলের প্রধানের পদের জন্য তিনি আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। এবং বর্তমান মেয়াদের পর চ্যান্সেলার পদের জন্যও তিনি আর দাঁড়াবেন না। সমালোচকরা অনেকেই বলেছেন দলের খারাপ ফল থেকে এটা পরিষ্কার তার আগামীতে জেতার সম্ভাবনা সম্ভবত ক্ষীণ। কিন্তু কারণ যাই হোক ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রাট দলের তিনিই সবচেয়ে বেশি মেয়াদে থাকা দলীয় প্রধান এবং আধুনিক জার্মানিতেও তিনিই সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতাসীন নেতা। | German Chancellor Angela Merkel has given an emotional farewell speech to her ruling Christian Democrats (CDU), as she steps down as party leader. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | ২০০৮ সালের মাঝামাঝি ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন মি: মুশাররফ রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় তার বিরুদ্ধে এ রায় দেয় তিন জন বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত আদালত। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা এ মামলাটি ২০১৩ সাল থেকে ঝুলে ছিলো। মিস্টার মুশাররফ সামরিক অভ্যুত্থানে ১৯৯৯ সালে ক্ষমতা দখল করেন পরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ২০১৬ সালে তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবার অনুমতি দেয়া হয়েছিলো। বর্তমানে তিনি দুবাইতে অবস্থান করছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: জেনারেল মুশাররফ কি রাজনীতিতে আসছেন? একনজরে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের ইতিহাস ভারত-পাকিস্তানের সামরিক শক্তির পার্থক্য কতটা? জেনারেল মোশাররফের ফোনে আড়ি পেতেছিল ভারত জেনারেল পারভেজ মুশাররফ জেনারেল মুশাররফ ২০০৭ সালে সংবিধান স্থগিত করে জরুরি অবস্থা জারী করেন, উদ্দেশ্য তার শাসনামল প্রলম্বিত করা। আর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এই নিয়েই। এ মাসের গোড়ার দিকে হাসপাতালের বিছানায় শোয়া অবস্থায় একটি ভিডিও বিবৃতি প্রকাশ করেন জেনারেল মুশাররফ, যেখানে তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ 'ভিত্তিহীন'। তিনি পাকিস্তানের প্রথম সামরিক শাসক যাকে সংবিধান স্থগিত করবার জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হলো। মামলার বিস্তারিত: ২০০৭ সালের নভেম্বর মাসে জেনারেল মুশাররফ সংবিধান স্থগিত করে জরুরি আইন জারি করেন। এই ঘটনায় পাকিস্তানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। ইমপিচমেন্ট এড়াতে ২০০৮ সালে পদত্যাগ করেন জেনারেল মুশাররফ। ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন নওয়াজ শরীফ, যাকে ১৯৯৯ সালে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করেছিলেন জেনারেল মুশাররফ। পুনরায় ক্ষমতায় এসে ২০১৪ সালের মার্চ মাসে জেনারেল মুশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা চালু করেন মি. শরিফ। জেনারেল মুশাররফ যুক্তি দেন, মামলাটি ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ২০০৭ সালে তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা সরকার এবং মন্ত্রীসভা অনুমোদন করেছিল। কিন্তু তার এই যুক্তি নাকচ করে দেয় আদালত। পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, উচ্চমাত্রার রাষ্ট্রদ্রোহে (হাই ট্রিজন) অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যায়। ২০১৬ সাল থেকে দুবাইয়ে বাস করছেন জেনারেল মুশাররফ এবং বারবার তলব করা স্বত্বেও তিনি আদালতে হাজির হননি। জেনারেল মুশাররফের ক্যারিয়ার: ১৯৯৮ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। ১৯৯৯ সালের মে মাসের কারগিল যুদ্ধে সেনাবাহিনীর জড়িত থাকা নিয়ে তখনকার প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফের সাথে সম্পর্কে ফাটল ধরে জেনারেল মুশাররফের। এর ধারাবাহিকতায় ওই বছরই এক অভ্যুত্থান করে ক্ষমতায় আরোহণ করেন জেনারেল মুশাররফ। ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি এবং এই সময়ের মধ্যে বহুবার আততায়ীর হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছেন জেনারেল মুশাররফ। 'সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে' সমর্থন ও ভূমিকা পালনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ছিলেন জেনারেল মুশাররফ। তাকে উৎখাতের বহু প্লটও ব্যর্থ হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের 'সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে' সমর্থন ও ভূমিকা পালনের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সুপরিচিত ছিলেন তিনি। যদিও একারণে স্বদেশে ব্যাপক বিরোধিতার শিকার হতে হয় তাকে। রাষ্ট্রপতির পদ ত্যাগ করার পর ২০০৮ সালে দেশ ছাড়েন তিনি, কিন্তু ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবার জন্য আবারো ফিরে আসেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যর্থ হন। রাষ্ট্রদ্রোহের মামলার শুনানিতে মাত্র দুবার হাজিরা দিয়েছিলেন তিনি। এর আগে তার সময় কেটেছে হয় সেনাবাহিনীর একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নয়তো ইসলামাবাদের একটি খামারে। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের এপ্রিলে তিনি করাচিতে চলে আসেন। সেখানে দুবছর থাকার পর তিনি আবার দেশত্যাগ করেন। আরো খবর: মুক্তিযুদ্ধের সময় যেভাবে গঠিত হয়েছিল রাজাকার বাহিনী মুজিব পরিবারের সদস্যদের প্রাণ বাঁচান যে ভারতীয় সেনা কক্সবাজারে অস্ট্রেলিয়ান তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা ধর্ষণ মোকাবেলায় ভারতের বিচার ব্যবস্থা কতটা কার্যকর | A Pakistani court has sentenced former military ruler Pervez Musharraf to death in absentia for treason over his 2007 imposition of emergency rule. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পর ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়াতে থাকে। একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করার জন্য শতকরা ৯০ ভাগের বেশি মাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। সে হিসেবে ইরানের কাছে এখনও ওই পরিমাণে ইউরেনিয়াম নেই। তবে ২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানের এই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ৪% এর নিচে রাখার কথা ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তি থেকে সরিয়ে এনে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেন। এর পর থেকেই ইরান এই চুক্তি লঙ্ঘন শুরু করে। তবে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া এবং চীন সবাই আশা করে যুক্তরাষ্ট্র আগের অবস্থানে ফিরে আসবে। ইরান কী পরিকল্পনা করছে? আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানিয়েছে যে, ইরান ২০% পর্যন্ত বিশুদ্ধ পরমাণু সমৃদ্ধকরণের বিষয়ে তাদের পরিকল্পনার কথা ফর্দো ফুয়েল এনরিচমেন্ট প্লান্টকে জানিয়েছে। ইরানের এই পরমাণু সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পটি দেশটির একটি পাহাড়ের ভেতরে নির্মিত একটি স্থাপনা। সংস্থাটি আরও বলছে: "সংস্থাকে যে চিঠিটি ইরান দিয়েছে, সেখানে এই সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম কখন থেকে হবে তা বলা হয়নি।" ২০১৯ সালের পরমাণু চুক্তিতে শর্ত দেয়া হয়েছিল যে ইরান ৩.৬৭% এর বেশি বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করতে পারবে না, কিন্তু সেই শর্ত তারা লঙ্ঘন করেছে। তবে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা তখন থেকেই ৪.৫% পর্যন্ত স্থিতিশীল রয়েছে। তবে দেশটির শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিযাদে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় গত মাসে ইরানের পার্লামেন্ট পরমাণু সমৃদ্ধকরণের মাত্রা ২০% পর্যন্ত বৃদ্ধি করা বিষয়ক একটি আইন পাস করে। ওই বিলটিতে বলা হয়েছে হয়েছে যে, ইরানের তেল ও আর্থিক খাতের উপর নিষেধাজ্ঞাগুলো দুই মাসের মধ্যে শিথিল না করলে ইরানের সরকার ২০% বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কাজ আবারও শুরু করবে। নাতান্জ এবং ফর্দো ইরানের পরমাণু স্থাপনায় জাতিসংঘের পরিদর্শকদের যেন যেতে দেয়া না হয় সে বিষয়ে ওই আইনে আদেশ দেয়া হয়েছে। ইরানের বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কী? ইউরেনিয়াম হেক্সাফ্লোরাইড গ্যাস সেন্ট্রিফিউজে ঢুকিয়ে, পরমাণু ফিশনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত আইসোটপটি আলাদা করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হয়। এটি ইউ -২৩৫ নামে পরিচিত। স্বল্প-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামে, ইউ -২৩৫ এর ঘনত্ব সাধারণত ৩-৫% হয়। বাণিজ্যিকভাবে গড়ে ওঠা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় এই স্বল্প-সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, জ্বালানী উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের ঘনত্ব ২০% বা তার বেশি হতে পারে এবং এতো সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম গবেষণার চুল্লিগুলোয় ব্যবহৃত হয়। তবে অস্ত্র-গ্রেড ইউরেনিয়াম ৯০% বা তারও বেশি সমৃদ্ধ হতে হয়। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমাবদ্ধ করা কেন প্রয়োজন? পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ক্রমবর্ধমান থাকলে এটি দেশটির "ব্রেক-আউট টাইম" কমে যেতে পারে। তাত্ত্বিকভাবে "ব্রেক-আউট টাইম" বলতে পারমাণবিক বোমা বিকাশ করার সময়কে বোঝায়। ইরান জোর দিয়ে বলে আসছে যে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধুমাত্র শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে ইরান একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করছে এমন সন্দেহে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ ২০১০ সালে দেশটির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে স্বাক্ষরিত ২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার শর্তে দেশটির পরমাণু কর্মসূচি সীমাবদ্ধ করার কথা বলা হয়েছিল। চুক্তি পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কি রয়েছে? প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই চুক্তিকে "অপচয় এবং যাচ্ছেতাই" আখ্যায়িত করে ২০১৮ সালের মে মাসে চুক্তি থেকে সরে আসেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে এই চুক্তিতে ফিরিয়ে আনবেন। আরও পড়তে পারেন: পরমাণু সক্ষমতা বাড়াতে আইন পাস করলো ইরান পরমাণু বিজ্ঞানী হত্যার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করলো ইরান ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী আততায়ীর হাতে নিহত ফখরিযাদে হত্যাকাণ্ড: ইরান কেন এক্ষুণি প্রতিশোধ নেবার কথা বলছে না? প্রেসিডেন্ট ওবামার শাসনামলে এ নিয়ে সমঝোতা হয়েছিল- এবং ইরান যদি "পরমাণু চুক্তির শর্তগুলো কঠোরভাবে মেনে চলে" তবে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে বলে জো বাইডেন জানান। মি. বাইডেন, ২০শে জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন। তিনি গত বছর নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন যে "বিষয়টি অবশ্যই কঠিন" কিন্তু, "বিশ্বের ওই অংশে পারমাণবিক সক্ষমতা যেন শেষ হয়, সেটা নিশ্চিত করাই হবে আমাদের কাজ"। যুক্তরাষ্ট্র এই চুক্তিতে ফিরে এলে ইরান আবারও চুক্তিটি মেনে চলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। মিস্টার বাইডেন যদি ২০১৭ সালের মতো পরিস্থিতিতে ফিরে আসেন, তবে আমরাও তাই করব," ডিসেম্বরে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এমন বক্তব্য দিয়েছিলেন। | Iran intends to start enriching uranium to 20% purity, a global watchdog says - its most significant breach of an international nuclear deal so far. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | সাবেক রাষ্ট্রীয় আইনজীবী প্রিট ভারারা বলছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফোন কল প্রত্যাখ্যান করায় তাঁকে বরখাস্ত করা হয়। এবিসি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাতকারে প্রিট ভারারা বলেন, দেশটিতে নির্বাহী বিভাগ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগের যে স্বাধীনতা রয়েছে তার সীমা লংঘন করছিলো ফোন কলগুলো। মি: ভারারা বলেন তিনি তৃতীয় 'ফোন কল'টি প্রত্যাখ্যান করার পরই তাকে বরখাস্ত করা হয়। তার এই মন্তব্যের পর হোয়াইট হাউজের কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। মি: ওবামার নিয়োগপ্রাপ্ত আইনজীবী ছিলেন মি: ভারারা, যিনি ম্যানহাটানের শীর্ষ রাষ্ট্রীয় আইনজীবী হিসেবে কাজ করে গেছেন। তিনি বলছেন, 'এ কারণেই মি: ট্রাম্প আলাদা ধরনের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করছিলে' ২০১৬ সালের শেষের দিকে তাদের দুজনের সাক্ষাত হবার পর থেকে। কিন্তু মি: ভারারার মনে হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব গ্রহণের পর কোনো আইনজীবীর সঙ্গে কোনো ধরনের আলাদা সম্পর্ক গড়ে তোলা 'অসঙ্গত' বা 'অনুচিত'। "গত সাড়ে সাত বছরে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আমাকে একটা ফোনও করেননি"- বলছেন আইনজীবী প্রিট ভারারা। "কোনো প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে কোনো ফোন কল আশাও করা যাবে না কারণ বিচার ব্যবস্থারকে কোনো ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা সম্পর্ক এড়িয়ে চলতে হবে। এমন সীমাই বেঁধে দেয়া হয়েছে"-বলছিলেন সাবেক এই আইনজীবী। প্রিট ভারারার এই সাক্ষাতকারের মাত্র কদিন আগেই সাবেক এফবিআই প্রধান জেমস কোমি মার্কিন কংগ্রেসের এক শুনানিতে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার "আনুগত্য" চেয়েছিলেন। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটি অস্বীকার করেছেন এবং গোপন কথোপথন প্রকাশ করে মি: কোমি 'কাপুরোষোচিত' কাজ করেছেন বলে উল্লেখ করেন মি: ট্রাম্প। আরো পড়ুন: বিমান বোঝাই করে কাতারে খাবার পাঠালো ইরান সেমিফাইনালে বাংলাদেশ-ভারত প্রায় নিশ্চিত হিন্দু ও মুসলিম তীর্থযাত্রীদের ভর্তুকিতে ভারতে বৈষম্য? | A former leading federal prosecutor in New York has revealed he was sacked by Donald Trump after receiving several unusual phone calls from him. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ। নিরাপদ সড়কের দাবিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ছাত্র বিক্ষোভের প্রেক্ষাপটে মি: আলমকে আটক করা হয়। সে বিক্ষোভের সময় নিরাপদ সড়ক নিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ এবং হতাশার চিত্র ক্যামেরা বন্দি করেন মি: আলম। মি: আলম আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল এবং ফেসবুকে সরকারের ভূমিকা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেন। মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য তিনি এখন অভিযুক্ত। বিতর্কিত ইন্টারনেট আইনের আওতায় এখন তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিক্ষোভের পর সরকারের সমালোচক অনেককেই আটক করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে সামরিক শাসক এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের ছবি। ৬৩ বছর বয়সী মি: আলম বলেছেন তাকে পুলিশের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন, লেখক এবং কয়েকশ আলোকচিত্রী মি: আলমের মুক্তি চেয়েছেন। গত কয়েক দশক ধরে মি: আলম বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনাবলী তাঁর ক্যামেরা বন্দি করেছেন। তাঁর আলোকচিত্র বিশ্বের অনেক নামকরা সংবাদপত্র এবং ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছে। ঢাকায় সুপরিচিত ফটোগ্রাফির প্রতিষ্ঠান দৃক গ্যালারির প্রতিষ্ঠাতা তিনি। বাংলাদেশের একটি প্রজন্মের ফটোগ্রাফারদের প্রশিক্ষিত করার পেছনে তাঁর অবদান আছে। ১৯৯০ সালে এ ছবিটি তোলেন শহিদুল আলম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নূর হোসেন স্মরণে এ ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছিল। গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম ১৯৮০'র দশকের শেষের দিকে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতিতে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। গণআন্দোলন, হরতাল-ধর্মঘট এবং অস্থিরতার কারণে রাজনৈতিক পরিবর্তন আসে যার মাধ্যমে ১৯৯০ সালে জেনারেল হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান হয়। আরো পড়ুন: কেন বাংলাদেশের শহীদুল আলমের পাশে ভারতের রঘু রাই? রিমান্ড থেকে কারাগারে ফিরলেন শহিদুল আলম হাসপাতাল থেকে আবার ডিবি কার্যালয়ে শহীদুল আলম সে সময়ের নানা বিক্ষোভ এবং সহিংসতার ঘটনা শহিদুল আলম তাঁর ক্যামেরা-বন্দী করেছেন। প্রেসিডেন্ট এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের একজন সুপরিচিত কর্মী ছিল নূর হোসেন। এরশাদের পদত্যাগের খবরে ঢাকার রাস্তায় উল্লসিত জনতা। ১৯৮৭ সালে এক বিক্ষোভের সময় তিনি পুলিশের গুলিতে নিহত হন। গণতন্ত্রের সংগ্রামের জন্য শহীদ হবার কারণে তাকে এখনো স্মরণ করা হয়। ১৯৮৭ সালের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে নূর হোসেনের মৃত্যুর পর ৭২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। সে কর্মসূচীর আগে সরকার জরুরী অবস্থা জারী করে। ১৯৯০ সালে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো একত্রিত হয়ে জেনারেল এরশাদের পতনের জন্য আন্দোলন শুরু করে। ১৯৯১ সালে ভোট গ্রহণের একট চিত্র। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর মাসের চার তারিখ রাতে প্রেসিডেন্ট এরশাদ পদত্যাগ করেন। সে সময় ঢাকার রাস্তায় উল্লসিত মানুষের ছবি ক্যামেরায় ধারণ করেছেন শহিদুল আলম। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বদলের সে দিনের ছবিও তুলেছেন মি: আলম। বিতর্কিত 'ক্রসফায়ার' বিষয় নিয়ে ছবি তুলেছেন শহিদুল আলম। 'ক্রসফায়ার' হত্যাকাণ্ড শহিদুল আলম শুধু বাংলাদেশের সংঘাতময় রাজনৈতিক ইতিহাসই ক্যামেরা-বন্দী করেননি, তিনি নানা বিতর্কিত বিষয়ও তাঁর কাজের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাব-এর বিতর্কিত অভিযানের বিষয়গুলোও তুলে ধরেছেন। যেসব জায়গায় কথিত ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে সেসব জায়গা তুলে ধরেছেন শহিদুল আলম। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং মানবাধিকার কর্মীরা বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের নিন্দা জানিয়ে সেগুলো তদন্তের আহবান জানিয়েছে। ক্রসফায়ার নিয়ে একটি চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজনও করেছিলেন শহিদুল আলম। কিন্তু পুলিশ সেটি বন্ধ করে দিয়েছিল। এসব ছবিতে প্রকৃত হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি ততটা উঠে আসেনি। বরং কোন প্রেক্ষাপটে এবং কোথায় এসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে বা মৃতদেহ পাওয়া গেছে সেসব জায়গা তুলে ধরা হয়েছে। বন্যা এবং সাইক্লোন বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের নানা বিষয় শহিদুল আলমের আলোকচিত্রে উঠে এসেছে। বন্যা এবং সাইক্লোনের কারণে নগর জীবনের দুর্দশা, ফসলহানি, মানুষের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, মৃত্যৃ এবং বাস্তু-চ্যুত মানুষের ছবি উঠে এসেছে তাঁর ক্যামেরায়। ১৯৮৮ সালের বন্যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হিসেবে চিহ্নিত। রাজধানী ঢাকার একটি বড় অংশসহ দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে ছিল। তখন লক্ষ-লক্ষ মানুষ বাস্তু-চ্যুত হয়। | Renowned Bangladeshi photographer and activist Shahidul Alam has been jailed in the wake of mass demonstrations by young people earlier this month. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসি বাংলার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে এক শ্রেণীর মানুষ হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে "অপপ্রচার" চালাচ্ছে এবং এরা সেই মানুষ যারা "সারাক্ষণ খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আমাদের পেছনে" লেগেই আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে লন্ডন রয়েছে। সেখানে তিনি বিবিসি বাংলার মানসী বড়ুয়াকে দেওয়া দীর্ঘ এক সাক্ষাৎকারে গণতন্ত্র, ডিসেম্বর মাসের নির্বাচন, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি, পদ্মা সেতুতে কাটা মাথা সংক্রান্ত গুজব, বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা - এরকম নানা ইস্যুতে কথা বলেছেন। পুরো সাক্ষাতকারটি দেখুন বিবিসি বাংলার ইউটিউব চ্যানেলে: তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, বাংলাদেশে হেফাজতে নির্যাতনের ইতিহাস দীর্ঘদিনের। যা সকল সরকারের আমলেই দেখা গেছে। আওয়ামী লীগ সরকার এটি বন্ধে কী পদক্ষেপ নিয়েছে? জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, "এমন মানসিকতা আমাদের নেই এবং আমরা সেটি করি না। ঘটনাচক্রে কিছু ঘটতে পারে। বরং আপনি যদি গত দশ বছরে আমাদের অবস্থান দেখেন, আমরা কিন্তু অপরাধ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পেরেছি।" তিনি বলেন, "আপনি আমার নিজের কথাই চিন্তা করেন, যখন আমি আমার বাবা-মা সবাইকে হারালাম, গুলি করে মারা হল। কই আমি তো বিচার পাইনি। খুনিদের বিচার না করে তাদের ইনডেমনিটি দেয়া হল। অর্থাৎ অপরাধকে প্রশ্রয় দিলেন। উল্টো তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।" প্রধানমন্ত্রী বলেন,"যে দেশে অপরাধকে স্বীকৃতি দিয়েই একটা সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়, সেই দেশে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়ে। হেফাজতে মানুষ হত্যা করার সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী আমার দলের নেতা কর্মীরা।" বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: ‘থানায় থাকা ছেলে দু চোখ উপড়ানো অবস্থায় হাসপাতালে’ 'থানার বাইরেই ভাইয়ের কান্না শুনতে পাইতেছিলাম' আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীর বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতন অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা কিন্তু নির্যাতনের সংস্কৃতি বন্ধে কি করা হচ্ছে? - এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, "আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখন ঠিক ওইভাবে হেফাজতে মৃত্যু হয় না। নির্যাতনও সেভাবে করা হয় না।" তবে আন্তর্জাতিকভাবে অপরাধীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহে কিছু নিয়ম রয়েছে, এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে এর বাইরে কিছু করা হয় না। আওয়ামী সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতিকে হত্যার ঘটনার পর থেকে অপরাধকে প্রশ্রয় দেয়ার সংস্কৃতি শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে অসাংবিধানিক সরকারের সময় যারা বেশি সুযোগ ভোগ করেছে বা ক্ষমতাটা যারা উপভোগ করেছে, তারা কখনোই চায়নি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকুক। তিনি বলেন, "একটা শ্রেণী হেফাজতে মৃত্যুর বিষয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের মধ্যে কিছু আছে যারা অসাংবিধানিক সরকার, জরুরি অবস্থা অথবা মার্শাল ল' বা মিলিটারি রুলার আসলে তাদের খুব দাম বাড়ে। কাজেই তারা সারাক্ষণ খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আমাদের পেছনে লেগেই আছে।" সম্প্রতি পুলিশি হেফাজতে আটক ব্যক্তিদের নির্যাতনের বিষয়ে জাতিসংঘের একটি কমিটির মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ২০ বছর আগে বাংলাদেশ এই সম্পর্কিত একটি কনভেনশনে সই করে। কিন্তু সে বিষয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে একটি প্রতিবেদন দিয়েছে মাত্র ক'দিন আগে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সুপারিশ মেনে চলার আহবান জানিয়েছে। বিবিসি বাংলার মানসী বড়ুয়াকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে বিবিসি বাংলার প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, যেসব দেশ দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ তাদের একটি, কিন্তু এর সুফল সব পর্যায়ের মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে কিনা? "অবশ্যই পৌঁছচ্ছে," বলেন প্রধানমন্ত্রী। "সেই ভাবেই আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। ২০০৫ বা ২০০৬ সালের দিকে আমাদের দারিদ্রের হার ৪১ ভাগের উপরে ছিল। আজকে সেটা ২১.৪ ভাগে নেমে এসেছে। মাত্র ১০ বছরের মধ্যে আমরা সেটা অর্জন করতে পেরেছি। মানুষের মাথাপিছু যেখানে ৪০০/৫০০ মার্কিন ডলার ছিল, আজকে সেখানে প্রায় ২ হাজার মার্কিন ডলারে সেটি উঠে এসেছে। প্রবৃদ্ধি আমরা এখন ৮.১ শতাংশ অর্জন করতে পেরেছি। " বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাত এখন বেশ নাজুক অবস্থায় আছে এবং ঋণ খেলাপিরা হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে তা আর ফেরত দিচ্ছে না - এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে যতটা প্রচার হয় বিষয়টা ততটা না। "ঋণ নিয়ে সেটা ফেরত না দেয়া - এই কালচারটাও আমাদের এখানে শুরু হয় মিলিটারি ডিক্টেটরদের আমলে। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছি আমরা চেষ্টা করেছি, আমরা অনেক টাকা উদ্ধার করেছি। তারপরেও কিছু মানুষের প্রবণতা থাকে যে টাকা দিলে মনে হয় সেটি আর ফেরত দিতে হবে না" বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মান ও এর চর্চা কিভাবে হচ্ছে সেনিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের মান ও এর চর্চা কিভাবে হচ্ছে তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে শেখ হাসিনা বলেন যে দেশে এখন ৪৪টি প্রাইভেট টেলিভিশন আছে এবং তারা স্বাধীনভাবে কাজ করছে। "স্বাধীনতা না থাকলে তারা আমার বিরুদ্ধে বা সরকারের বিরুদ্ধে এত অপপ্রচার করছে কীভাবে।" গত ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচনে অনেক কেন্দ্রে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে এবং এ নিয়ে যে সমালোচনা রয়েছে, সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "সেটা এখন কোন কেন্দ্রে গোনার দিক থেকে হয়তো পেয়েছে। কোন কেন্দ্রে হয়তো হতে পারে।" তিনি বলেন, "কিন্তু আমাদের ট্রাইব্যুনাল আছে সেখানে মামলা করতে পারে, কোর্টে মামলা করতে পারে। নির্বাচন কমিশনও মামলা করতে পারেন। তারা তদন্ত করে দেখছেন।" প্রধানমন্ত্রী বলেন, "মানুষ যদি সত্যিই ভোট দিতে না পারতো, তাহলে তাদের ডাকে সাড়া দিয়ে মানুষ আন্দোলনে নামত এবং আমরা ক্ষমতায় থাকতে পারতাম না।" শেখ হাসিনা মনে করেন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ডেঙ্গু। ডেঙ্গু রোগের জীবাণুর বাহক এডিস মশার বিস্তার রোধে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের গাফলতির অভিযোগ উঠেছে। তবে সিটি কর্পোরেশনগুলো এডিস মশা সম্পর্কে একেবারেই কোন ব্যবস্থা নেয়নি বা মশা নিয়ন্ত্রণকে আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গণ্য করে সময়মত পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে এমন অভিযোগ মানছেন না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংবাদমাধ্যমে ডেঙ্গু বিষয়ক খবর অনেক বেশি প্রকাশিত হচ্ছে এবং এর ফলে মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ছে, আর সেটাই সমস্যা সৃষ্টি করছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, "একটু উচ্চবিত্ত যারা, সেইসব জায়গাগুলোতেই এর প্রকোপ বেশি। আমাদের সবসময় লক্ষ্য থাকে বস্তি এলাকা, ড্রেন এসব দিকে। মশা মারা কিন্তু নিয়মিত একটা ব্যাপার।" শুধু সিটি কর্পোরেশনকে দোষ না দিয়ে সব মানুষকে সতর্কতা অবলম্বন করতে আহবান জানান তিনি। মশার ওষুধ কেনায় দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে, তাও তিনি নাকচ করে দিয়েছেন। শেখ হাসিনা বলেন, "মশার ওষুধ কেনার ব্যাপারে টেন্ডার করা হয়। যারা টেন্ডারে উপযুক্ত হয়, তারা কিনে নিয়ে আসে এবং সেগুলো ব্যবহারও হয়। তবে কোন ওষুধ এডিস মশার উপরে কাজ করে, সেই ব্যাপারে বিভক্তিকরণ করা হয়নি বা সেই ধরনের সতর্কতা ছিল না।।" তাকে প্রশ্ন করা হয়ে যে সরকারি হিসেবেই বলা হচ্ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং এর সংখ্যা আরও বড় হবে বলে অনেকে মনে করেন। তাই কিভাবে ভবিষ্যতে মশা নিয়ন্ত্রণ আরও সুষ্ঠুভাবে করা যায়? বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ডেঙ্গু। এর জবাবে তিনি জানান যে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং সরকারের পাশাপাশি তাঁর দল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরকেও পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালাতে আহবান করা হয়েছে। "শুধু ঢাকা নয়, সমস্ত দেশেই একটা পরিচ্ছন্নতা অভিযান দরকার।" প্রধানমন্ত্রী বলেন, কারো ঘরের কাছে বা ঘরে কোথাও যদি পানি জমা থাকে এবং সেখানে মশার লার্ভা তৈরি হয়, তবে তাদের জরিমানা করা হবে। মানুষ যদি আগামীর জন্য প্রস্তুত থাকে, তবে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি হবে না বলে মনে করেন তিনি। পদ্মা সেতুতে মানুষের কাটা মাথা লাগার গুজব এবং এর জেরে ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে বেশ কজন মানুষের মৃত্যু বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি গুজবে কান না দেওয়ার জন্য সবার প্রতি আহবান জানান। লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিবিসির বাংলার সঙ্গে দীর্ঘ সময় কথা বলেন যারা গুজব ছড়াচ্ছে, এরকম কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। "পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। আপনিই বলুন আজকের দিনে, পদ্মা সেতুতে কাটা মাথা ও রক্ত লাগবে বলে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। রক্ত আর কাটা মাথা দিয়ে কি সেতু তৈরি হয়? এই গুজবটা যারা ছড়াচ্ছে, অপরাধী তো তারা।" পদ্মা সেতুর ব্যাপারে শুরু থেকেই একটা চক্রান্ত ছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি। | Bangladeshi PM Sheikh Hasina has firmly rejected demands by Islamists for a new anti-blasphemy law to punish those who defame Islam and Prophet Muhammad. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | কয়েক প্রজন্ম ধরে সহিসংতার শিকার হচ্ছে আফগানিস্তানের মানুষ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এ আলোচনাকে 'ঐতিহাসিক' আখ্যায়িত করে আলোচনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য দোহা উড়ে গেছেন। ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তালেবানের নিরাপত্তা চুক্তির পরই এ আলোচনা শুরুর কথা ছিলো। কিন্তু একজন বিতর্কিত বন্দী বিনিময় নিয়ে মতবিরোধের জের ধরে তা পিছিয়ে যায়। আফগান সরকারের একটি প্রতিনিধিদল ১১ই সেপ্টেম্বর শুক্রবার কাবুল ছেড়ে যায় শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে । উনিশ বছর আগে এ দিনটিতেই যুক্তরাষ্ট্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছিলো। প্রতিনিধি দলের নেতা আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহ বলেন তারা একটি ন্যায্য ও মর্যাদাপূর্ণ শান্তির সন্ধান করছেন। এর আগে ছয় জন বন্দির মুক্তি লাভের পর বৃহস্পতিবারই তালেবান ওই আলোচনায় যোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ইরান নিয়ে আতঙ্কিত ভারত, দুই মন্ত্রী তেহরানে তালেবানকে কীভাবে শান্তি আলোচনায় বসালো রাশিয়া আফগানিস্তানের ১৭ বছরের সংকটের অবসান হবে? কাতারে মুখোমুখি আমেরিকা ও তালেবান, পরিণতি কী আলোচনায় কি শান্তি ফিরবে আফগানিস্তানে? অগাস্টের কাবুলের একটি কারাগার থেকে তালেবান বন্দিদের মুক্তির প্রস্তুতি আলোচনা থেকে যা আশা করা হচ্ছে তালেবান ও আফগান সরকারের প্রতিনিধিদের মধ্যে এটাই সরাসরি প্রথম কোনো আলোচনা। তালেবানরা সবসময়ই আলোচনার আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করে আফগান সরকারকে আমেরিকার পুতুল আখ্যা দিয়ে আসছিলো। দু পক্ষই এখন সহিংসতার অবসান আশা করছে যা ১৯৭৯ সালে শুরু হয়েছিলো। আলাদা করে হলে এ আলোচনার সাথে যোগসূত্র আছে যুক্তরাষ্ট্র-তালেবান চুক্তির যেখানে বিদেশী সৈন্য সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে একটি সময়সীমার কথা বলা হয়েছে। এ সমঝোতায় পৌঁছাতে এক বছরেরও বেশি সময় লেগেছিলো এবং আফগান সরকারের সাথে তালেবানদের আলোচনার বিষয়টি আরও জটিল মনে করা হচ্ছিলো। অনেকে উদ্বেগে ছিলেন যে নারীদের অধিকারের বিষয়টি জলাঞ্জলি দেয়া হতে পারে। তবে এ আলোচনা হয়তো অনেক প্রমাণ দেবে যে কিভাবে জঙ্গি গোষ্ঠীটি নব্বই সালের পর থেকে পরিবর্তন হতে শুরু করেছে যখন তারা কঠিন শরিয়া আইনের প্রয়োগ করছিলো। আফগানিস্তানে জ্যেষ্ঠদের পরিষদ লয়া জিরগায় আলোচনা হয়েছে তালেবান বন্দি মুক্তির বিষয়টি বন্দি মুক্তি নিয়ে অচলাবস্থা সরকার ও তালেবান মধ্যস্থতাকারীদের মধ্যে মতবিরোধ হয়েছিলো কত বন্দি মুক্তি পাবে তার সংখ্যা ও তারা কারা কারা সেটি নিয়ে। আবার অব্যাহত সহিংসতাও তাতে ভূমিকা রাখছিলো। অন্যদিকে তালেবান যাদের মুক্তি চাইছিলো তাদের মধ্যে কয়েকজন বড় কিছু হামলার সাথে সম্পৃক্ত ছিলো। সরকারের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, "আমরা আমাদের জনগণের খুনিদের মুক্তি দিতে পারিনা"। ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী তিনজন আফগান যারা আমেরিকান সৈন্যদের মৃত্যুর ঘটনার জন্য দায়ী তাদের বিষয়টিও ছিলো। ফলে প্রক্রিয়াটি ধীর হয়ে পড়েছিলো। তবে অগাস্টে আফগান সরকার শেষ চারশ তালেবান বন্দিকে মুক্তি দিতে শুরু করে। তবে সবাইকে সরাসরি মুক্তি দেয়া হয়নি কারণ ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়া বলছে এর মধ্যে ছয় জন তাদের নাগরিকদের ওপর হামলার জন্য দায়ী। সব মিলিয়ে বন্দিদের মুক্তি ও দোহায় স্থানান্তরের পর আলোচনার পথ উন্মুক্ত হয়। | The first-ever peace talks between the Afghan government and the Taliban are under way in the Gulf state of Qatar. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | গত মাসেই তুরস্কের সেনাবাহিনী এবং তাদের সমর্থিত বিদ্রোহীদের সাথে কুর্দি মিলিশিয়াদের যুদ্ধ হয়েছে মোবাইল ফোনে তোলা কিছু ভিডিও প্রকাশ পাবার পর এ অভিযোগ উঠেছে - যাতে সৈন্যদের বর্বরতার ছবি ধরা পড়েছে। জাতিসংঘ তুরস্ককে সতর্ক করে দিয়েছে - তার মিত্রদের কর্মকান্ডের জন্য তুরস্ককেই দায়ী করা হতে পারে। তুরস্ক অবশ্য অঙ্গীকার করেছে যে তারা ব্যাপারটি তদন্ত করবে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দাড়িওয়ালা লোকেরা আল্লাহু আকবর বলে শ্লোগান দিচ্ছে। কুর্দি যোদ্ধাদের কিছু মৃতদেহ মাটিতে পড়ে রয়েছে, আর একজন লোক তার স্মার্টফোন দিয়ে ভিডিও করতে করতে বলছে, 'আমরা হচ্ছি ফায়লাক-আল-মাজদ্ ব্যাটালিয়নের মুজাহিদ।' একটু দূরে এক নারীর রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে, এবং একদল লোক পা দিয়ে দেহটি মাড়াচ্ছে। একজন বলছে, 'ও একটা বেশ্যা।' বীভৎস এসব ভিডিও ফুটেজের সাথে ইসলামিক স্টেট নামের উগ্র গোষ্ঠীর ভিডিওর অনেক মিল আছে। কিন্তু এই ভিডিওটির লোকেরা আইএস জঙ্গী নয়, বরং সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মি নামে একটি বিদ্রোহী জোটের যোদ্ধা। এদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও বেতন দেয় তুরস্ক - একটি নেটো জোটভুক্ত দেশ। এই বিদ্রোহী জোটটির কার্যক্রমও চলে তুরস্কের সেনাবাহিনীর কমান্ডের অধীনে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ভিডিওতে যে কর্মকান্ড দেখা যাচ্ছে তা যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে। বিবিসি বাংলায় আরো খবর: গণহারে শ্রমিক ফিরে আসার নেপথ্যে কি সৌদি 'ফ্রি ভিসা' বেঁটে পুরুষদের কী যৌনসঙ্গী পেতে সমস্যা হয়? ভারতের সাথে চুক্তি: প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবে বিএনপি অধ্যক্ষকে পানিতে নিক্ষেপ: যা ঘটেছিল সেদিন পেঁয়াজের দাম শিগগিরই কমছে না উত্তর সিরিয়ায় কোন এলাকা কার নিয়ন্ত্রণে: অক্টোবর ২০১৯ গত ২১শে অক্টোবর উত্তর সিরিয়ায় এই ভিডিওটি তোলা হয়। যে মহিলাটির মৃতদেহ পায়ে মাড়ানো হচ্ছে, তার নাম আমারা রেনাস। কুর্দি যোদ্ধা বাহিনী ওয়াইপিজে'র নারী বাহিনীর একজন সদস্য। সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট বাহিনীকে পরাজিত করার ক্ষেত্রে এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রেখেছে। সম্প্রতি সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনীর অভিযানের সময় আমারা রেনাস নিহত হন। গত ৯ই অক্টোবর তুরস্কের সেনাবাহিনী এবং তুরস্ক সমর্থিত সিরিয়ান বিদ্রোহীদের অভিযান শুরুর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহু ভিডিও বেরুতে থাকে। বলা হয় এসব ভিডিও, তুরস্ক-সমর্থিত বিদ্রোহীদের তোলা। এরকম একটি ভিডিওতে একজন অজ্ঞাতনামা যোদ্ধাকে আরবি ভাষায় চিৎকার করে বলতে শোনা যায়: "অবিশ্বাসী আর ধর্মদ্রোহী - আমরা তোদের মাথা কাটতে এসেছি।" আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, কালো পোশাক পরা এবং মুখোশধারী এক বিদ্রোহী একজন আতংকিত মহিলাকে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে ঘিরে আছে অন্য বিদ্রোহীরা। তাদের একজন ভিডিও করছে। আরেকজন চিৎকার করছে, 'শূয়োর'! আরেকজন বলছে, "ওকে শিরশ্ছেদ করার জন্য নিয়ে যাও।" আমারা রেনাস, তার মৃতদেহ পা দিয়ে মাড়াতে দেখা গেছে ভিডিওতে ধরা পড়া এই মহিলাটির নাম সিসেক কোবানে - একজন ওয়াইপিজে যোদ্ধা। এ ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায় এবং তীব্র ক্ষোভের জন্ম দেয়। এটি প্রকাশিত হবার কয়েকদিন পর তুরস্কের রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেখানো হয়, দুরস্কের একটি হাসপাতালে সিসেক কোবানের চিকিৎসা চলছে। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এসব ভিডিওতে যে কর্মকান্ড দেখা যাচ্ছে তা যুদ্ধাপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়া থেকে মার্কিন সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবার পরপরই কুর্দি-নেতৃত্বাধীন এসডিএফের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে তুরস্ক। সিরিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত জেমস জেফরি বলেছেন, অনেক লোক পালিয়ে গেছে কারণ তুরস্ক-সমর্থিত সিরিয়ান বিদ্রোহীদের ব্যাপারে তাদের ভয় আছে। জিহাদিদের বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নেয় নি তুরস্ক তুরস্কের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ আছে যে তারা সিরিয়ার জিহাদিদের বিরুদ্ধে খুব কমই ব্যবস্থা নিয়েছে। উত্তর পূর্ব সিরিয়ায় তুরস্কের সেনাবাহিনীর অগ্রাভিযান সাবেক মার্কিন বিশেষ দূত ব্রেট ম্যাকগার্ক বলছেন, "পৃথিবীর মোট ১১০টি দেশ থেকে ৪০ হাজার বিদেশী যোদ্ধা ইসলামিক স্টেটের হয়ে যুদ্ধ করতে সিরিয়া এসেছিল। তারা সবাই এসেছে তুরস্কের ভেতর দিয়ে।" তিনি বলেন, তিনি তুরস্ককে চাপ দেবার চেষ্টা করেছিলেন যেন আইএসকে ঠেকাতে তারা তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। "তুরস্ক বলেছিল তারা এটা করতে পারবে না। কিন্তু যেই কুর্দিরা সীমান্ত এলাকার একটা অংশ দখল করলো, তারা এমনভাবে সীমান্ত বন্ধ করে দিল যেন এটা একটা দেয়াল।" মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, তারা কথিত যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ সম্পর্কে তুরস্কের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন বলেছেন, তুরস্ক এরকম যে কোন অভিযোগ তদন্ত করবে। তবে অনেক কুর্দি অধিকার কর্মীরই তুরস্কের তদন্তের প্রতিশ্রুতির ওপর কোন আস্থা নেই। গত এক দশকে বিভিন্ন সময় এমন অনেক বিচলিত হবার মতো ছবি ও ভিডিও বের হয়েছে - যা দৃশ্যত তুর্কী সেনাবাহিনী বা নিরাপত্তা বাহিনীর তোলা এবং এতে বন্দী কুর্দি ভিন্নমতাবলম্বীদের হত্যার দৃশ্য দেখা গেছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়ুন: তুরস্কের অভিযানের শিকার কুর্দি জনগোষ্ঠী কারা? ট্রাম্পের যে সিদ্ধান্ত বদলেছে সিরিয়া যুদ্ধের চিত্র সিরিয়ায় কি ইসলামিক স্টেট ফিরে আসতে পারে? | Turkish-backed forces fighting Kurdish militias in north-east Syria have been accused of committing war crimes, with acts of brutality surfacing on mobile phone footage. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হলো। সবশেষ মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিলো এক সপ্তাহ আগে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছেন তিনজন। বাংলাদেশে এ নিয়ে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪জনে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই তথ্য জানিয়েছেন। মি. মালেক বলছেন, আমরা দেখেছি গ্রামে, বাজারে অনেকে ঘোরাফেরা করছেন, চায়ের দোকানে বসছেন। এটা ঠিক হচ্ছে না। আপনাদের অনুরোধ, আপনারা ঘরে থাকবেন, বাইরে বের হবেন না। গত ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে। এরপর ১৮ই মার্চ প্রথম ব্যক্তির মৃত্যুর কথা জানায় আইইডিসিআর। বুধবার প্রথম সংস্থাটি জানায় যে ঢাকায় সীমিত আকারে কম্যুনিটি সংক্রমণ হচ্ছে বলে তারা সন্দেহ করছে। মৃদু কমিউনিটি সংক্রমণ ন্যাশনাল পোলিও এন্ড মিজেলস ল্যাবরেটরির ভাইরোলজিস্ট ডা. খন্দকার মাহবুবা জামিল বলেন, মৃদু লেভেলে হলেও কমিউনিটি সংক্রমণ হচ্ছে। আইইডিসিআরের পরিচালক এর আগেই এই তথ্য জানিয়েছেন। ''বিভিন্ন স্থান থেকে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তাতে আমরা ততটা পজিটিভ পাচ্ছি না। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন যদি বেশি হতো,তাহলে এর সবগুলোতেই আমরা পজিটিভ দেখতে পেতাম। ফলে আমরা বলতে পারি, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হচ্ছে, কিন্তু সেটা মৃদু পর্যায়ে হচ্ছে।'' হটলাইনে নারীদের হয়রানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের হটলাইনের কল সেন্টারে কাজ করা দুইজন নারী কর্মী ফেসবুক পোস্টে তাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার বর্ণনা তুলে ধরেন। এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, ''কল সেন্টারে কেউ যদি অশালীন কথাবার্তা বলে থাকেন, সে বিষয়ে আমরা চিন্তা করছি যে, সেটা শালীনতা বিবর্জিত হলে তাদের ট্র্যাক করে (খুঁজে বের করে) ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।'' করোনা ভাইরাস: শত দুঃসংবাদের মাঝেও কিছু মন-ভালো করা খবর করোনাভাইরাস সম্পর্কে অজানা কিছু প্রশ্ন এবং উত্তর করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি মারা গেলে লাশ দাফনে ঝুঁকি আছে? নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কোথায়, কেন এতো প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? | Eleven more people have died in NI after contracting Covid-19. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | গত সপ্তাহ থেকে গাড়ি বহরে করে বিক্ষোভ শুরু হলেও শুক্রবারই তা রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছায় ক্ষমতায় আসার ১৮ মাসের মাথাতেই বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এই বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই জামিয়াত উলেমা-ই ইসলাম ফজল-উর-রেহমান এর সদস্য। এটি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় ইসলামী দলগুলোর একটি। ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিতে আসা ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে সারা দেশ থেকে এসেছেন তারা। কিন্তু যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ার মতো সেটি হচ্ছে এই বিক্ষোভে কোন নারী নেই। তবে নারীদের না থাকাটা ভুল করে হয়নি: গত রোববার আজাদি মার্চ বা মুক্তির বিক্ষোভের জন্য যে লিফলেট ছড়ানো হয়েছিলো তাতে নারীদেরকে বিক্ষোভে না এসে বরং ঘরে থেকে রোজা রাখতে ও দোয়া করার কথা বলা হয়েছে। আর এটা কাজও করেছে। বিবিসির উর্দু প্রতিবেদকরা বলেছেন, শুক্রবার জেইউআই-এফ এর গাড়িবহরে কোন নারী ছিল না। এর আগে আরো ৫ দিন দলে পাকিস্তান জুড়ে চলেছে গাড়ি বহরের এই বিক্ষোভ। আরো পড়ুন: ইমরান 'উস্কানি দিচ্ছেন'- ভারতের তীব্র প্রতিক্রিয়া বিশ ডলার নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ কীসের? ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করবে পাকিস্তান তারপর শুক্রবার অন্য বিরোধী দলগুলোর সাথে মিলে রাজধানীতে গণ বিক্ষোভের দিনেও আরেকটি নির্দেশ জারি হওয়ার কথা শোনা গেছে: আর তা হলো, এই ঘটনার সংবাদ সংগ্রহ করতে নারী সাংবাদিকদের উপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। অনেক নারী সাংবাদিক সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলেও তাদেরকে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। অনেকে আবার অভিযোগ করেছেন যে, তারা এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন যে ঘটনাস্থল ত্যাগ করা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় ছিল না। বিক্ষোভে অংশ নেয়া বেশিরভাগই জামিয়াত উলেমা-ই ইসলাম ফজল-উর-রেহমান এর সদস্য। "এক জন লোক এসে বলতে থাকলো যে নারীদের আসার অনুমতি নেই, নারীরা এখানে আসতে পারবে না। চলে যাও! ধীরে হলেও মিনিট খানেকের মধ্যে কয়েক জন পুরুষ আমাদের ঘিরে ধরে এবং এমন স্লোগান দিতে থাকে। যার কারণে আমাদেরকে বাধ্য হয়ে চলে আসতে হয়," এক টুইটে বলেছেন সাংবাদিক শিফা জে ইউসুফজাই। এ বিষয়ে খুব দ্রুতই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জেইউআই-এফ নেতা মওলানা ফজলুর রেহমান। তিনি বলেছেন, "নারীদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধা রয়েছে আমাদের" এবং "পূর্ণ ড্রেস কোড বা পোশাক নীতি" মেনে নারী সাংবাদিকরা বিক্ষোভে আসতে পারে, বলেছে সংবাদ সংস্থা এপিপি নিউজ। এরমধ্যে, খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলিতে জেইউআই-এফ নেত্রী নাইমা কিশোয়ার খান নারীদের অংশগ্রহণের নিষেধাজ্ঞার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নারীদের নিষিদ্ধ করা হয়নি এবং নারীদের কম অংশগ্রহণের বিষয়ে সাফাই দেন। "আপনি যদি সামরিক বাহিনীতে দেখেন, সামনের সারিতে পুরুষরা থাকেন এবং পেছনে থেকে চিকিৎসা সহায়তা দেন নারীরা," তিনি বিবিসি উর্দুকে বলেন। "আমাদের আন্দোলন যুদ্ধের মতোই, পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। যদি তা না হতো, তাহলে নারীদের পিছিয়ে রাখা হতো না।" বিবিসির উর্দু প্রতিবেদকদের মতে, যেসব নারীরা অংশ নিয়েছিলন তারা অন্য বিরোধী দলগুলো থেকে এসেছিলেন। তবে তাদেরকেও তেমন সামনে আনা হয়নি। বিবিসি বাংলার আরো খবর পড়ুন: হোয়াটস্ অ্যাপ: কিভাবে আড়ি পাতে গোয়েন্দারা অলসতা কি আসলেই খারাপ? ইসরায়েলি সফটওয়্যার দিয়ে কারা নজরদারি চালাচ্ছে ভারতে? সোশাল মিডিয়ায়, এ বিষয়ে আওয়াজ ওঠা শুরু হয়েছে। কিন্তু সাংবাদিক বেনজীর শাহ এ বিষয়টিকে অনেকটা বন্ধই করে দিয়েছেন। "আমি এটাকে ইতিবাচক ভাবেই দেখি," বিবিসি উর্দুকে তিনি বলেন। "দুই পুরুষ আর তাদের অহংকারের লড়াইয়ে যুক্ত হওয়ার দরকার নেই এদেশের নারীদের। আর এজন্যই এই বিক্ষোভ হচ্ছে যা মূলত দুই পুরুষের ক্ষমতার দ্বন্দ্ব।" গত মার্চেই নিজেদের নীতির পক্ষে আওয়াজ তুলেছিল দলটি "লেবাননে যেমনটা হচ্ছে সেরকম কোন সামাজিক পরিবর্তনের জন্য এই বিক্ষোভ হচ্ছে না, সেখানে নারী ও পুরুষ সমানভাবে অংশগ্রহণ করছে। জেইউআই-এফ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারকে অপসারণের চেষ্টা করছে এবং এর জন্য যে কোন কিছুকে ব্যবহার করতে পারে তারা যেমন ধর্ম।" "এদেশের নারীদের ইতিহাসের ভুল পক্ষে থাকার কোন দরকার নেই।" বিক্ষোভ আসলে কী নিয়ে? মিস্টার খানের জন্য এটি প্রথম কোন বড় চ্যালেঞ্জ। যার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী, মওলানা ফজলুর রেহমান এবং আরো কয়েকটি বিরোধীদল। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেধে দিয়েছে তারা। মিস্টার খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে যে ২০১৮ সালের নির্বাচনে তার জয় নিরপেক্ষ ছিল না। ২০১৮ সালের নির্বাচন পর্যবেক্ষণকারী ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি পর্যবেক্ষক দল নির্বাচনে কোন কারচুপির প্রমাণ পান নি। তবে নির্বাচনে অংশ নেয়া সব দলের "সমান সুযোগ ছিল না" বলে অভিযোগ ওঠে। অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে বিক্ষোভকারীরা মিস্টার খানের উপর অসন্তুষ্ট। যাদেরকে মিস্টার খান সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তাদের জন্য এই অবস্থা বৈরী পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অনেক নারী সাংবাদিক যারা বিক্ষোভের সংবাদ সংগ্রহে গিয়েছিলেন তাদেরকে বাঁধা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন "তারা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় আসেনি বরং অন্য কারো নির্দেশে এসেছে....তারা জনগণের জন্য কাজ করবে না, বরং তারা শুধু তাদের নির্বাচকদেরকেই খুশি করবে," মিস্টার রেহমান তার সমর্থকদের বলেন। যাই হোক, বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিক্ষোভের পেছনে মিস্টার রেহমানের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। একজন চতুর রাজনৈতিক নেতা, গত বছর নিজের আসন হারানোর আগ পর্যন্ত যিনি বছরের পর বছর ধরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। সংবাদের শিরোনামেও তিনি কোন নতুন নাম নন- নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাইয়ের ২০১২ সালে গুলিবিদ্ধ হওয়া নিয়ে সরাসরি সন্দেহ প্রকাশ করে এবং জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ধর্ম অবমাননার মামলায় অন্যায়ভাবে খ্রিষ্টান নারী আসিয়া বিবির বিচারে "গণআদালতের" আহ্বান জানিয়ে তিনি বেশ কয়েক বার আলোচনায় এসেছেন। আজাদি মার্চ বা বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন জেইউআই-এফ নেতা মওলানা ফজলুর রেহমান এএফপি কে কলামিস্ট আরিফা নুর বলেন: "তাকে একটি গেম থেকে বের করে দেয়া হয়েছে এবং তিনি মনে করেন যে তিনি তার ন্যায্য স্থানটি পাননি।" নারীদের না থাকাটা কী বোঝায়? খালি চোখে দেখলে এটা ভাল দেখায় না। কিন্তু এক্ষেত্রে জেইউআই-এফ খুবই আলাদা এবং নির্দিষ্ট। "আমি এটা বলবো না কারণ, ডান-পন্থী একটি দল থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে নারীদের, তার মানে হচ্ছে, সব কিছু মিলিয়ে আসলে নারীদেরকে পুরো রাজনীতি থেকেই বাদ দেয়া হয়েছে," মিস শাহ বিবিসিকে বলেন। "জেইউআই কখনোই নারী বান্ধব কোন দল ছিল না। তারা অনার কিলিং বিরোধী বিলের বিরোধিতা করেছে এমনকি নারী সুরক্ষা আইন এবং সম্প্রতি বাল্য বিবাহ বিরোধী আইনেরও বিরোধিতা করেছে তারা।" "আমাদের যে বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত তা হচ্ছে, অন্য তিনটি দল নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কী করছে বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল। ফেডারেল বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভায় নারী প্রতিনিধিত্বের সংখ্যা খুবই কম। পাঞ্জাবের প্রাদেশিক মন্ত্রীসভায় মাত্র দুই জন নারী রয়েছেন।" | The convoy of bearded protesters, waving black and white flags and dressed in mustard yellow, descended on Pakistan's capital Islamabad hoping to force Prime Minister Imran Khan from office less than 18 months into the job. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | ষোড়শ বেনেডিক্ট ২০০৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পোপ ছিলেন তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক পটপরিবর্তন ক্যাথলিকদের নৈতিকতাকে "শিথিলীকরণের" দিকে ঠেলে দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১৯৬০ দশকের যৌনতার বিপ্লব ক্যাথলিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমকামিতা এবং শিশু যৌন নিগ্রহের বিস্তার ঘটিয়েছে। তবে ধর্মতত্ত্ববিদরা এই চিঠির তীব্র সমালোচনা করেছেন - তাদের মতে এটি "দারুণ ত্রুটিপূর্ণ"। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: ক্যাথলিক চার্চে যাজকদের হাতে শিশুদের যৌন নির্যাতনের কাহিনি ঐতিহাসিক অন্যায়ের জন্য কি কোন রাষ্ট্রের ক্ষমা চাওয়া উচিত? ভ্যাটিকান বিশেষজ্ঞ জশুয়া ম্যাকএলউই ন্যাশনাল ক্যাথলিক রিপোর্টার-এ বলেন: "নিপীড়নের ঘটনাগুলো চাপা দেয়ার কাঠামোগত ব্যবস্থা কিংবা ভ্যাটিকানের ক্ষমতাশালী ডকট্রিন কার্যালয়ের প্রধান হিসেবে বেনেডিক্টের ২৪ বছরের দায়িত্ব পালনের বিষয়টি এই চিঠিতে উঠে আসেনি"। কিছু কিছু শিশু যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছিল ১৯৬০-এর দশকের আগের দশকগুলোয়। ক্যাথলিক ধর্মতত্ত্ববিদ জুলিও রুবিয়ো একটি টুইটে বলেছেন যে চিঠিটি "গভীরভাবে পীড়াদায়ক"। যাজকদের বিষয়ে কিছু বলা পোপ বেনেডিক্টের জন্য বেশ বিরল ঘটনা। গত প্রায় ৬০০ বছরের মধ্যে তিনিই হচ্ছেন প্রথম পদত্যাগকারী পোপ - যিনি সরে দাঁড়ান ২০১৩ সালে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি শিশুদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তদন্ত চাপা দিয়েছেন। সাবেক এই পোপ অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। পোপ বেনেডিক্ট বলেন, সমস্যাটির একমাত্র সমাধান হলো "প্রভু যিশুখ্রিষ্টের প্রতি আনুগত্য এবং ভালোবাসা"। যৌন কেলেঙ্কারীর ঘটনাগুলো রোমান ক্যাথলিক চার্চকে এরই মধ্যে প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছে। তবে যৌন নিপীড়নের বিষয়ে পোপ বেনেডিক্টের বিশ্লেষণ অনেকটাই ধর্মতত্ত্ব ও ঐতিহাসিক পটভূমি আশ্রয়ী, যা পোপ ফ্রান্সিস থেকে ভিন্নতর। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে চার্চে শিশুদের সুরক্ষা দেয়ার বিষয়ে একটি সম্মেলন হয়. তাতে যোগ দিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত একটি সম্মেলনে বর্তমান পোপ সংকট সমাধানে শুধু "সাধারণ এবং সুস্পষ্ট নিন্দা" প্রকাশ নয়, বরং "বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা" গ্রহণের আহবান জানান। পোপ বেনেডিক্ট তাঁর চিঠিতে লেখেন, যে সময়ে অনেকগুলো ঘটনা প্রকাশিত হয় তখন তিনি "চার্চের রাখাল হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করছিলেন" এবং তিনি "একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনার ক্ষেত্রে ভুমিকা" পালন করতে চেয়েছিলেন। জার্মান ক্যাথলিক ম্যাগাজিন ক্লেরুসব্লাট-এ প্রকাশিত চিঠিটিতে ৫,৫০০ শব্দ রয়েছে, আর এটি তিনটি ভাগে বিভক্ত। শিশু যৌন নির্যাতন "অনুমোদিত এবং যথাযথ" প্রথম ভাগে উপস্থাপন করা হয়েছে "প্রশ্নের বৃহত্তর সামাজিক পটভূমি", যেখানে ১৯৬০-এর দশককে এমন একটি সময় হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যখন "যৌনতার বিষয়ে এর আগের সময়ের সব ধরণের মানদণ্ড পুরোপুরি ধসে পড়ে"। সাবেক পোপ বেনেডিক্ট এর জন্য দায়ী করেন যৌন চলচ্চিত্র, নগ্ন ছবি এবং "সেই সময়ের পোশাক-আশাককে", যার ফলাফল "মনোগত ধস" এবং "সহিংসতা"। পোপ বেনেডিক্ট বলেন, যৌন বিপ্লবের ওই সময়ে "ক্যাথলিক অ্যাধ্যাত্বিক ধর্মতত্ত্বে ধস নামে, যার ফলে সমাজে যে পরিবর্তন হচ্ছিল তা মোকাবেলায় চার্চ অসহায় হয়ে পড়ে"। শিশুদের যৌন নিপীড়ন যৌন বিপ্লবের কারণেই "অনুমোদিত এবং যথাযথ হিসেবে" গণ্য হয়ে যায়। যৌন বিপ্লব ও "সমকামী চক্র" চিঠিতে এর পরে দেখা হয়েছে ওই সময়টি কীভাবে "খ্রিস্টীয় নৈতিকতার ধারণাকে শিথিল" করে দেয় - বিশেষ করে ক্যাথলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশপরা ক্যাথলিকতার ক্ষেত্রে "নতুন, আধুনিক কিছু আনতে" চেষ্টা করেন এবং যৌন বিপ্লব শিক্ষালয়গুলোতে "সমকামী চক্র" গড়ে উঠতে সাহায্য করে। তিনি দাবী করেন যে শিক্ষার্থীরা যাতে "বিশ্বাসের বিপরীত আচরণ ঠেকাতে" পারে সেজন্য একজন বিশপ তাদের অশ্লীল সিনেমা দেখিয়েছিলেন। 'এক পাদ্রী আমাদের নগ্ন হয়ে সাঁতরাতে বাধ্য করেন' "শিশু যৌন নিপীড়নের প্রশ্নটি, আমি যতদূর মনে করতে পারি, ১৯৮০'র দশকের দ্বিতীয়ার্ধের আগে তেমন জটিল অবস্থায় উপনীত হয়নি," লিখেছেন পোপ বেনেডিক্ট। ঈশ্বর বিহীন সমাজ "এর মাপকাঠি হারিয়ে ফেলে" চিঠিটি শেষ করা হয়েছে বিশ্বাসে প্রত্যাবর্তনের ডাক দিয়ে। "শিশুদের যৌন নিপীড়ন আজ এই অনুপাতে পৌঁছেছে কেন?" প্রশ্ন তোলেন পোপ বেনেডিক্ট। "চুড়ান্ত পরিণামে কারণ হলো ঈশ্বরের অনুপস্থিতি"। খারাপ স্বাস্থ্যের কারণে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে পদত্যাগ করেন পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট - বিদায়ের আগে একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, "কোন সমাজে ঈশ্বরের মৃত্যু" হলে এর মানে দাঁড়ায় "স্বাধীনতার অবসান" এবং এর সমাধান হলো "ঈশ্বরকে নিয়ে বেঁচে থাকা এবং তাঁর কাছে উপনীত হওয়া"। নিবন্ধের শেষে তিনি তাঁর উত্তরসূরী পোপ ফ্রান্সিসকে "আজও নির্বাপিত হয়নি এমন ঈশ্বরের আলো বারবার দেখানোর জন্য তিনি যা কিছু করেছেন" তার জন্য ধন্যবাদ জানান। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক চিঠিতে পোপ ফ্রান্সিস বলেছিলেন যে শিশুদের যৌন নিপীড়নের বিষয়টিতে চার্চ "সময়মত ব্যবস্থা নিতে পারেনি" এবং "ছোট বাচ্চাদের প্রতি কোন দরদ দেখায়নি; আমরা তাদের পরিত্যাগ করেছিলাম"। বিবিসি বাংলায় আরও খবর: মাদ্রাসা শিক্ষা: তদারকিতে ঘাটতি কওমী মাদ্রাসায় পুঁজিবাদের পথে রাশিয়ার মানুষের দুঃসহ অভিজ্ঞতা | Retired Pope Benedict XVI has published a letter which blames clerical sex abuse on the "all-out sexual freedom" of the 1960s. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | সৌদি অর্থনীতি সংকটে পড়েছে করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি সরকার দেশটিতে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) তিনগুন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারি কর্মচারিদের যে মহার্ঘ ভাতা দেয়া হতো, সেটি বন্ধ রাখা হচ্ছে। তেল সমৃদ্ধ সোদি আরবের অর্থনীতি করোনাভাইরাস মহামারির কারণে তীব্র সংকটে পড়েছে। তার বিশ্বে তেলের চাহিদা কমে যাওয়ার পাশাপাশি তেলের দামও পড়ে গেছে অনেক। সৌদি আরবে মূল্য সংযোজন কর চালু করা হয়েছিল মাত্র দুবছর আগে। মূলত তেল বিক্রির অর্থের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতা কমাতে সৌদি সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে অন্য অনেক দেশের তুলনায় এই করের পরিমান ছিল বেশ কম, মাত্র ৫ শতাংশ। এখন এক লাফে সৌদি আরবে মূল্য সংযোজন কর তিনগুন বাড়িয়ে করা হচ্ছে ১৫ শতাংশ। জুলাই মাস থেকে এই বর্ধিত হারে কর দিতে হবে। আর সরকারি কর্মচারিদের তাদের সংসার খরচ চালানোর জন্য যে ভাতা দেয়া হয়, সেটি জুন মাস থেকেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সৌদি আরবে সরকারি কর্মচারিদের মাস এক হাজার রিয়াল (২৬৭ ডলার) করে ভাতা দেয়া হতো। ২০১৮ সালে এই সরকার এই ভাতা চালু করেছিল তেলের দাম বৃদ্ধি এবং কর বৃদ্ধির কারণে যাতে সরকারি কর্মচারিরা দুর্ভোগে না পড়ে। অর্থনৈতিক সংস্কারের গতি এখন থমকে যেতে পারে সৌদি আরবের অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-জাদান এক বিবৃতিতে বলেছেন, “এসব পদক্ষেপ হয়তো খুবই কষ্টকর, কিন্তু স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে সৌদি আরবের আর্থিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য তা খুব প্রয়োজন।” সৌদি আরব সরকারের ব্যয় আয়ের তুলনায় ক্রমশই বাড়ছে। শুধু এবছরের প্রথম তিন মাসেই বাজেট ঘাটতি বেড়ে গেছে নয়শো কোটি ডলার। তেলের দাম যেভাবে বিশ্ববাজারে পড়ে গেছে, সেটাই এর কারণ। এ বছরের প্রথম তিন মাসে তেল বিক্রি থেকে সৌদি আরবের রাজস্ব এসেছে ৩ হাজার ৪শ কোটি ডলার। এটি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২২ শতাংশ কম। সৌদি আরবের বৈদেশিক মূদ্রার মজুদ কমছে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে। মার্চ মাসে যে গতিতে তাদের বৈদেশিক মূদ্রার রিজার্ভ কমেছে তার ফলে এটি ২০১১ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান দেশটিতে যে অর্থনৈতিক সংস্কারের চেষ্টা চালাচ্ছেন তা এখন করোনাভাইরাসের কারণে থমকে যাবে বলে মনে হচ্ছে। সৌদি সরকার গত বছর রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি আরামকোর শেয়ার বাজারে ছেড়ে প্রায় আড়াই হাজার কোটি ডলার তুলেছিল। সৌদি অর্থনীতি সংস্কার করে তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান যে নীতি নিয়েছিলেন, তাতে এটি ছিল অন্যতম প্রধান একটি বিষয়। করোনাভাইরাস নিয়ে আপনার যা জানা প্রয়োজন নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস থেকে নতুন করোনাভাইরাস কত দ্রুত ছড়ায়? কতটা উদ্বেগের? টাকার মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়াতে পারে কি? কোথায় কতোক্ষণ বেঁচে থাকে কোভিড-১৯ এর জীবাণু, নির্মূলের উপায় | Saudi Arabia is tripling its value added tax (VAT) as part of austerity measures to support its coronavirus-hit economy. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | বৃহস্পতিবার এক ভিডিও বিবৃতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এখন সময় এসেছে ক্ষত সারানোর এবং সমঝোতার‘ কারণ, বুধবার ক্যাপিটলে অর্থাৎ মার্কিন কংগ্রেস ভবনে তার সমর্থকদের নজিরবিহীন তাণ্ডব চলার সময় যে ভিডিও বার্তা এবং টুইট তিনি পোস্ট করেছিলেন - তার সাথে গতকালের বার্তার সুর ও বক্তব্য ছিল অনেকটাই আলাদা। ওয়াশিংটনের বিবিসির উত্তর আমেরিকা বিষয়ক সম্পাদক জন সোপলের ভাষায়, ‘ইউ টার্ন‘ অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মি. ট্রাম্প যেন উল্টো পথে হাঁটা শুরু করলেন। গতকাল তিনি মেয়াদ শেষে অর্থাৎ ২০ জানুয়ারিতে “মসৃণভাবে নিয়মমতো“ নতুন প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, “এখন সময় এসেছে ক্ষত সারানোর এবং সমঝোতার।“ বুধবারের তাণ্ডবে অংশ নেওয়া সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে তার কড়া ভাষার ব্যবহারে অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন। তিনি বলেছেন, অন্য সব আমেরিকানের মত তিনিও “অরাজকতা এবং ভাঙচুর“ দেখে ক্ষুব্ধ এবং ব্যথিত। মি. ট্রাম্প বলেন, “আমেরিকার গণতন্ত্রের পীঠস্থানে“ এই “ঘৃণ্য হামলার“ সাথে যারা জড়িত ছিল - তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে। অথচ তার ২৪ ঘণ্টা আগে তার ভিডিও বিবৃতিতে এই সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন “তোমরা স্পেশাল“ এবং “আমি তোমাদের ভালোবাসি।“ ওয়াশিংটনে একজন ট্রাম্প সমর্থক, জানুয়ারি ৬, ২০২১ সেই সাথে ঐ দিনই তিনি টুইট করেছিলেন, “যখন মহান দেশপ্রেমিকদের কাছ থেকে পবিত্র এবং বিপুল একটি নির্বাচনী বিজয় জঘন্য-ভাবে ছিনিয়ে নেওয়া হয়, তার পরিণতিতে এমন ঘটনাই ঘটে।“ অর্থাৎ পরোক্ষভাবে তিনি কংগ্রেস ভবনে ঐ তাণ্ডবকে সমর্থন করেন। যে কারণে টুইটার এবং ফেসবুক তার অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করে দেয়। চব্বিশ ঘণ্টার ব্যবধানে ভাষা ও ভঙ্গির এই বদলে প্রেসিডেন্টের কট্টর সমর্থকরা হয়ত বিস্মিত হচ্ছেন, ক্ষুব্ধ হচেছন। বিশেষ করে যারা বুধবার - তার ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়েই হয়তো - ক্যাপিটল হিলে ঢুকে পড়ে ভাঙচুর করার সাহস দেখিয়েছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের গতকালের বিবৃতির পর অনেক বিশ্লেষক বলছেন, নভেম্বর নির্বাচনের পর এই প্রথম তিনি পরোক্ষভাবে পরাজয় স্বীকার করলেন। যদিও মুখে তিনি তা বলেননি এবং একবারও জো বাইডেনের নাম বা তার তার বিজয়ের কথা মুখে আনেননি। প্রশ্ন হচ্ছে কেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সুর বদলালেন? ওয়াশিংটন থেকে বিবিসির জন সোপল বলছেন, দুটো সম্ভাব্য কারণ হতে পারে : এক, কংগ্রেস জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসাবে অনুমোদন করার পর মি. ট্রাম্প এখন বুঝতে পেরে গেছেন যে ফলাফল বদলানোর আর কোনো চেষ্টাই কাজ করবে না। তাই আপাতত ক্ষান্ত দিয়ে হোয়াইট হাউজ পরবর্তী কৌশল নিয়ে ভাবতে চাইছেন তিনি। ক্যাপিটল ভবনের ভেতর একদল ট্রাম্প সমর্থক, ০৬/০১/২০২১ দ্বিতীয় কারণ, বুধবারের ঘটনার পর নিজের দল এবং প্রশাসনের কাছ থেকে যে চাপ তার ওপর তৈরি হয়েছে তাতে সুর বদল করা ছাড়া কোনো বিকল্প হয়ত তার সামনে এখন নেই। প্রেসিডেন্টর “আচরণের“ প্রতিবাদে দুজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সহ দল এবং প্রশাসনের যেসব ব্যক্তি গত চার বছর ধরে তার সুরে কথা বলেছেন, তাদের অনেকেই তার কথা শুনছেন না। জন সোপল বলছেন, বিশেষ করে সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী উত্থাপন করে তাকে ক্ষমতাচ্যূত করার কথাবার্তা নিয়ে মি. ট্রাম্প হয়ত ঘাবড়ে গেছেন। অবশ্য মাত্র ১২ দিনের মধ্যে ইমপিচমেন্ট বা সংবিধানের ২৫ সংশোধনী এনে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা সম্ভব নয়। কিন্তু তার সরকারের ভেতর থেকেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার কোনো উদ্যোগও তার শাসনামলের ওপর একটি কলঙ্ক হিসাবে থেকে যেত যেটা হয়ত মি. ট্রাম্প চাইছেন না। বিক্ষোভাকরীদের মিছিল করে ওয়াশিংটনে কংগ্রেসের ভবন ক্যাপিটল-এ যাবার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে বলেন আপনারা "ঘরে ফিরে যান''। বিবিসির ঐ সংবাদাদাতা সোপল বলেন, বৃহস্পতিবারের বিবৃতর ভাষা, ভাষণ দেওয়ার ধরণ প্রমাণ করে ভেতর থেকেই প্রেসিডেন্ট প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছেন।“আপনি যদি ভিডিওটি খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন মি ট্রাম্প লেখা একটি বিবৃতি হুবহু পড়ার চেষ্টা করছেন। কেউ যেন তাকে বলে দিয়েছে যা লেখা আছে তা হুবহু পড়তে হবে। অনেকটা জিম্মিদেরকে যেভাবে বিবৃতি দেওয়ানো হয়, তেমন। ... বোঝাই যায় তিনি এমন সব শব্দ বলছেন, যেটা তিনি বলতে চাননা।“ ২০২৪ সালে ফেরার ইঙ্গিত তবে অনেক পর্যবেক্ষক বলছেন, মি. ট্রাম্প এবং তার ঘনিষ্ঠজনেরা হয়ত একটি কৌশল হিসাবেই রণে ভঙ্গ দেওয়ার পথ নিয়েছেন। তার সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে বিবৃতিতে তিনি মি. ট্রাম্প বলেন, “আমার অসামান্য সমর্থকবৃন্দ আমি জানি আপনারা হতাশ, কিন্তু আমি বলতে চাই আমাদের যাত্রা সবে শুরু হলো।“ জন সোপল বলছেন, “মি. ট্রাম্প হয়ত ইঙ্গিত দিলেন রাজনীতি থেকে তিনি সরে যাচ্ছেন না। চার বছর পর নির্বাচনে তিনি আবার আসবেন।“ এমন সম্ভাবনা কথার বেশ কিছুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে খোলাখুলি আলোচনা হচ্ছে। নিজে না হলেও মি. ট্রাম্পের পর তার পরিবারের কোনো সদস্য হয়তো ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হবেন। ২০২৪ সালে সেই সম্ভাব্য উত্তরসূরি মি. ট্রাম্পের মেয়ে ইভাংকার কথা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে কানাঘুষা চলছে। ক্যাপিটলে তাণ্ডবের সময় ইভাংকা ট্রাম্প হামলাকারীদের ‘দেশপ্রেমিক‘ বর্ণনা করে টুইট করেছিলেন যা কিছুক্ষণ পর তিনি মুছে ফেলেন। হেরে গেলেও নভেম্বরের নির্বাচনে প্রায় সাড়ে সাত কোটি ভোট পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার নির্বাচনে পরাজিত কোনো প্রার্থী এত ভোট কখনই পাননি। অনেক বিশ্লেষক বিশ্বাস করেন, করোনাভাইরাস দুর্যোগ সৃষ্টি না হলে, তিনি হেসে-খেলে জিতে যেতেন। গতকাল জনমত জরীপ সংস্থা ইউগভের এক জরীপ বলছে, ৪৫ শতাংশ রিপাবলিকান ভোটার মনে করেন - বুধবার কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা সঠিক ছিল। দলের মূল ভোটারদের মধ্যে তার অবিশ্বাস্য জনপ্রিয়তার কারণেই হয়ত রিপাবলিকান পার্টির নেতৃত্বের বিরাট অংশ এখনও ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যাওয়ার সাহস করছেন না। বুধবার ক্যাপিটল হিলে এমন তাণ্ডবের পরও জো বাইডেনের নির্বাচনী ফলাফল অনুমোদনের সময় কংগ্রেসের ১২০ জনেরও বেশি রিপাবলিকান সদস্য আপত্তি জানিয়েছেন। ট্রাম্পের সুরে সুর মিলিয়ে তারা বলেছেন, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। সুতরাং ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়ত এখনকার মত রণে ভঙ্গ দিচ্ছেন। কিন্তু তিনি বা তার প্রতিষ্ঠান-বিরোধী ,অপ্রচলিত, এবং লড়াকু রাজনীতি - আর রিপাবলিকান ভোটারদের মধ্যে তার বিপুল জনপ্রিয়তা যে অচিরেই উধাও হয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনা ক্ষীণ। আরও পড়তে পারেন: আমেরিকার কংগ্রেস ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের হামলায় বিশ্ব নেতাদের নিন্দার ঝড় আমেরিকার কংগ্রেস ভবনে হামলার ঘটনা কি এই প্রথম? মার্কিন কংগ্রেস ভবনের ভেতরে থাকা এক প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ ট্রাম্প সমর্থকরা যেভাবে ঢুকে পড়ে ক্যাপিটল ভবনে ইতিহাস কীভাবে মনে রাখবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিদায়কে? | US President Donald Trump's Twitter account briefly vanished on Thursday but has since been restored, the social media company said. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার পর আমেরিকাজুগে বিক্ষোভ দেখা যায়। সাতটি মুসলিম দেশের মানুষদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা, মার্কিন এক আদালত, সাময়িকভাবে স্থগিত করার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, এ ধরনে আইনি রুলিং এর কারণে যুক্তরাষ্ট্র খারাপ ও বিপজ্জনক মানুষে ভরে যেতে পারে। এরপরেই দেশটির বিচার বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে জানায় যে মিস্টার ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা স্থগিতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়েছে। এর আগে মিস্টার ট্রাম্প টুইটারে জানিয়েছিলেন, তথাকথিত বিচারক আইনের প্রয়োগ স্থগিত করেছে। তিনি তখন এটাও জানিয়ে দেন যে, এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হবে। মিস্টার ট্রাম্প টুইটারে জানিয়েছিলেন, তথাকথিত বিচারক আইনের প্রয়োগ স্থগিত করেছে। তিনি তখন এটাও জানিয়ে দেন যে, এই সিদ্ধান্ত বাতিল করা হবে। যদিও শুক্রবার আদালতের ওই আদেশের পর থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, যেসব ভিসা বাতিল করা হয়েছে সেগুলো পুনরায় বিবেচনা করা হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ জারির পর প্রায় ষাট হাজার ভিসা বাতিল করার কথা জানিয়েছিল পররাষ্ট্র দপ্তর। এছাড়া আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি এয়ার লাইনস তাদের ফ্লাইটে যাত্রী ওঠানো শুরু করে দেয়। এর আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে সিরিয়া, ইরাক, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন - এই দেশগুলোর লোকদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা নিষিদ্ধ করেন। এর পর সিয়াটলের একজন বিচারক ওই আদেশটি সাময়িকভাবে আটকে দেন। | A US appeals court has upheld a decision blocking President Donald Trump's revised "travel ban" on people from six mainly Muslim nations. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | বিক্ষোভের দৃশ্য মিনিয়াপোলিস সিটি কাউন্সিলের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যরা এই অঙ্গীকার করেছেন, যাকে যুক্তরাষ্ট্রে চলমান আন্দোলনের বড় অর্জন হিসেবে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় কাউন্সিলের তেরজন সদস্যের মধ্যে নয়জনই শহরে 'জননিরাপত্তার একটি নতুন মডেলে'র কথা বলছেন। মেয়র জ্যাকব ফ্রে আগে এ উদ্যোগের বিরোধিতা করে বিক্ষোভকারীদের দুয়ো শুনেছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: আমেরিকায় পুলিশ মানুষ হত্যা করলেও দোষী সাব্যস্ত হয় না কেন? আমেরিকায় পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার খতিয়ান যুক্তরাষ্ট্রে কেন কিছু প্রতিবাদ সহিংসতায় রূপ নেয় লন্ডনে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশ: বর্ণবাদের যাতাকলে ৩০ বছর কলিন পাওয়েল ওদিকে কলিন পাওয়েল একজন রিপাবলিকান, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সাবেক শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের একজন। তিনি বলছেন সামনের নির্বাচনে তিনি ট্রাম্পকে ভোটই দেবেননা। জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে গড়ে ওঠা বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনকে যেভাবে মোকাবেলা করছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার কঠোর সমালোচনা করে মিস্টার পাওয়েল বলেছেন প্রেসিডেন্ট 'সংবিধান থেকে সরে যাচ্ছেন'। অবশ্য মিস্টার ট্রাম্পও যথারীতি এর জবাব দিয়ে মিস্টার পাওয়েলকে 'অত্যন্ত অতিমূল্যায়িত' বলে খোঁচা দিয়েছেন। কলিন পাওয়েল সম্ভবত একমাত্র আফ্রিকান আমেরিকান যিনি যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের চেয়ারম্যান ছিলেন। বিক্ষোভ দমনে আর্মি নামানোর যে হুমকি দিয়েছেন মিস্টার ট্রাম্প দেশটির সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে এ নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে তাতে সর্বশেষ সংযোজন মিস্টার পাওয়েল। আফ্রিকান আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েড মিনিয়াপোলিসে পুলিশী হেফাজতে নিহত হন গত ২৫শে মে এবং তার মৃত্যুর জের ধরে দেশটিতে তীব্র বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন তৈরি হয়েছে। রোববার সিটি কাউন্সিলের তের জন সদস্য বিক্ষোভকারীদের সামনে এসে স্থানীয় পুলিশ বিভাগকে ভেঙ্গে দেয়ার অঙ্গিকার করেছেন এবং এর পরিবর্তে জননিরাপত্তায় নতুন মডেল তৈরির কথা বলেছেন যা সত্যিকার অর্থেই কমিউনিটিকে নিরাপদ রাখবে। এদিকে পরিস্থিতি কিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করায় নিরাপত্তামূলক কিছু পদক্ষেপ প্রত্যাহার করা হয়েছে। নিউ ইয়র্কে এক সপ্তাহ ধরে চলা কারফিউ তুলে নেয়া হয়েছে এবং মিস্টার ট্রাম্প বলেছেন ওয়াশিংটন ডিসি থেকে তিনি ন্যাশনাল গার্ডকে তুলে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আন্দোলনের প্রতি কয়েকটি শিশুর সংহতি কলিন পাওয়েল যা বলেছেন টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, "আমাদের একটি সংবিধান আছে এবং আমাদের সেটি অনুসরণ করতে হবে। প্রেসিডেন্ট ক্রমশ তা থেকে দূরে সরছেন"। সাবেক এই চার তারকা জেনারেল বলেন, ট্রাম্প যেভাবে কথা বলছেন আমেরিকার গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। "আমি নিঃসন্দেহে কোনো ভাবেই তাকে সমর্থন করতে পারি না"। উদারপন্থী রিপাবলিকান হিসেবে পরিচিত মিস্টার পাওয়েল ২০১৬ সালের নির্বাচনেও ট্রাম্পকে সমর্থন দেননি। প্রতিবাদ ছড়িয়েছে ইউরোপে, এটি মাদ্রিদের বিক্ষোভ ট্রাম্প যেভাবে জবাব দিলেন টুইটারে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প মিস্টার পাওয়েলকে মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে জড়ানোর জন্য দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, "কলিন পাওয়েল বলেননি ইরাকে মানববিধ্বংসী অস্ত্র আছে? তাদের ছিলোনা কিন্তু আমরা যুদ্ধে জড়িয়েছি"। শনিবার বিক্ষোভের সময় হোয়াইট হাউজের সামনে সেনা মোতায়েন করা হয় বিক্ষোভের কী অবস্থা সহিংস বিক্ষোভ এখন শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে রূপ নিয়েছে এবং রোববার কয়েকটি ইউরোপীয় দেশেও প্রতিবাদ হয়েছে। শনিবার বড় র্যালী হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি, শিকাগো ও স্যানফ্রান্সিককোতে। | A majority of Minneapolis City Council has pledged to dismantle the local police department, a significant move amid nationwide protests sparked by George Floyd's death last month. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | ইউক্রেনের এক পুরুষ বলছেন তার নারী সঙ্গীর দ্বারা মানসিক, শারীরিক নির্যাতনের পাশাপাশি তিনি যৌন নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন। সেই তুলনায় পরিবারের পুরুষ সদস্যের ওপর সহিংসতার বিষয়টি যেমন অনেক কম আলোচনায় আসে, তেমনি এ ধরণের ঘটনা খুব বেশি ঘটেও না। অনেক সমাজেই পুরুষদের জন্য পারিবারিক সহিংসতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার চল নেই, এবং অনেকক্ষেত্রে ভুক্তভোগীদের একাই লড়াইটা চালিয়ে যেতে হয়। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ইউক্রেনের এক তরুণ বিবিসি'র কাছে তার জীবনের ঘটনা বলেন। তার জবানিতেই তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা তুলে ধরা হলো এখানে। আমার প্রথমবার আমার বন্ধুরা কিছু সন্দেহ করেছিল কিনা জানি না। কিন্তু বাইরে থেকে দেখতে সবকিছু চমৎকার মনে হচ্ছিল। আমরা বন্ধুদের সাথে হাসিখুশিভাবেই দিনযাপন করছিলাম, আমাদের কোনো আর্থিক সমস্যাও ছিল না। এর মধ্যে পৃথিবীর অনেকগুলো দেশও ঘুরে আসি আমরা দু'জন। আমরা যখন অন্য কোথাও ভ্রমণ করতাম, তখন তাকে ভয় পেতাম না। সে মানুষের সামনে আমাকে নির্যাতন করে না। তবে ও যেন আমাকে একা না পায়, সেই বিষয়টা নিশ্চিত করা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারের পুরুষ সদস্যের ওপর সহিংসতার বিষয়টি যেমন অনেক কম আলোচনায় আসে, তেমনি এ ধরণের ঘটনা খুব বেশি ঘটেও না। মাত্র কিছুদিন আগে আমি বুঝতে পারি যে, আমার সাবেক স্ত্রী দশ বছর ধরে আমাকে ধর্ষণ করছে। ইরা আমার জীবনের প্রথম নারী ছিল। আমাদের বয়স যখন বিশের কোঠায়, তখন আমাদের পরিচয়। সেই আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। আমার বাবা-মা আমাকে বলে রেখেছিল যে কাউকে ডেট করা শুরু করলেই আমার ঘর থেকে বের হয়ে নিজের মত থাকতে হবে। অর্থাৎ সম্পর্কে জড়ালে আমার মাথার ওপর ছাদ থাকবে না। আত্মসম্মানবোধের ঘাটতি আমার মা সবসময় আমার চেহারা নিয়ে বিব্রত ছিল। তিনি মনে করতেন আমি দেখতে ভাল নই। এই কারণে আমার তীব্র আত্মসম্মানবোধ সঙ্কট ছিল। ইরার সাথে শুরুর দিকে যখন যৌনমিলন হতো, সেসময় আমার আগ্রহ ছিল যৌনসঙ্গমের। কিন্তু স্বেচ্ছায় হলেও আমাদের যৌনমিলন ঠিক স্বাভাবিক ছিল না। তা ছিল কষ্টকর এবং আগ্রাসী। প্রথমবার যখন আমরা মিলিত হই, সেটি পাঁচ ঘণ্টা স্থায়ী ছিল এবং শেষ হওয়ার পর আমার সারা শরীর ব্যাথা করছিল। তার একটা বাতিক ছিল যে যৌনসঙ্গমের শেষে আমার বীর্যপাত করতেই হবে। বীর্যপাত না হওয়া পর্যন্ত আমি সঙ্গম চালিয়ে যেতে হতো এবং গড়ে তা এক থেকে দুই ঘণ্টা স্থায়ী হতো। সেক্স উপভোগ্য হওয়ার কথা, কিন্তু আমার জন্য বিষয়টি সেরকম ছিল না। আমার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না এবং আমি ভাবতাম এটাই স্বাভাবিক, আর তাই যৌনমিলনে রাজী হতাম। কিন্তু কিছুদিন পরই আমি যখন তাকে 'না' বলা শুরু করলাম, তখনই আমি ধর্ষিত হওয়া শুরু করি। আরো পড়তে পারেন: পুরুষ নির্যাতন: কতটা ? সমাজ কি এড়িয়ে যাচ্ছে ? 'পুরুষ অধিকার' রক্ষায় আন্দোলনে নেমেছেন যারা ধর্ষণ: ছেলেশিশুরা কি মেয়েশিশুদের চেয়ে নিরাপদ সঙ্গীর দ্বারা নির্যাতনের ফলে হীনমন্যতায় ভুগতে শুরু করেন ইউক্রেনের ঐ তরুণ যেভাবে ফাঁদে পড়লাম একবার ব্যবসার কাজে আমার দীর্ঘদিনের জন্য বিদেশ যেতে হয়। আমার ভয় হয় যে কাজ শেষে দেশে ফিরে আমি হয়তো ইরাকে আর ফিরে পাবো না। তাই আমি তাকে আমার সাথে যাওয়ার প্রস্তাব দেই। এমনকি সফরে যাওয়ার আগে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাবও দেই আমি। সে বিয়ে না করলেও আমার সাথে সফরে যেতে রাজি হয়। আর সেখান থেকেই শুরু হয় মূল ঘটনা। সারাদিন কাজ শেষে আমি পরিশ্রান্ত থাকতাম, আর সে যৌনমিলন করতে চাইতো। প্রথমে কয়েকদিন রাজি হলেও পরে আমি যখন রাজি হতাম না, সে তখন বলতো, "এটা আমার চাহিদা, সুতরাং তোমার আমাকে দিতেই হবে। আমি বহুক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি।" তখন আমি বলতাম, "আমি ক্লান্ত। আমি বিশ্রাম নিতে চাই।" তখন সে আমাকে আক্রমণ করতো। নখ দিয়ে আমাকে আঘাত করতে থাকতো যতক্ষণ না পর্যন্ত আমি রক্তাক্ত হতাম। সে কখনও আমার মুখে আঘাত করতো না। এমন জায়গায় করতো যা পোশাকের নীচে থাকবে: যেমন বুকে, পিঠে বা হাতে। আমি কখনও প্রতিবাদ করতাম না কারণ আমি মনে করতাম একজন নারীকে আঘাত করা ঠিক কাজ নয়। আমি হীনমন্যতায় ভুগছিলাম এবং নিজেকে ক্ষুদ্র মনে হচ্ছিল। যৌনসঙ্গমের সময় সাধারণত সে আমার ওপরে থাকতো। হোটেলে একবার নিজের জন্য আলাদা রুমও নিতে চেয়েছিলাম আমি। কিন্তু আমি তাদের ভাষা বুঝতাম না, তাই শেষপর্যন্ত রুম নিতে পারিনি। কাজ শেষে হোটেলে ফিরে যেতে ভয় লাগতো আমার। তাই রুমে ফিরে না গিয়ে বিভিন্ন শপিংমলে ঘুরে বেড়াতাম। শপিংমল বন্ধ হওয়ার পর ঘুরতাম শহরের অলিগলিতে। শরৎকালের ঠান্ডা ও আর্দ্র আবহাওয়ায় এরকম ঘোরাঘুরির ফলে আমার ইউরিন ইনফেকশন, প্রোস্টেইটিস ও জ্বর হয়। কিন্তু এসব কিছুই ইরাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। সে যা চাইতো, তা আমার করতে হতো। সবচেয়ে খারাপ ছিল ছুটির দিনগুলো: শনিবার সকালে আর রবিবার রাতে হতো এটি। আমি ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার দিন গুনছিলাম। আমি ভেবেছিলাম ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার পর আমার আর ইরার সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু আমার ধারণা ভুল ছিল। দশ বছর সঙ্গীর কাছ থেকে বিচ্ছেদের চেষ্টা করে নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তি বিচ্ছেদের বিফল চেষ্টা ইউক্রেনে ফিরে যাওয়ার পর আমি আমার বাবা-মা'র সাথে থাকতে শুরু করি, ইরার সাথে যোগাযোগ করাও বন্ধ করে দেই। কিন্তু তার সাথে বিচ্ছেদের প্রচেষ্টা দীর্ঘায়িত হয় দশ বছর পর্যন্ত। আমি তার সাথে ঝগড়া করে সবকিছু থেকে তাকে ব্লক করে দিতাম, সে এলে ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখতাম। কিন্তু সে বন্ধ দরজার ওপারে বসে আমাকে স্বান্তনা দেয়ার চেষ্টা করতো, বলতো যে সব ঠিক হয়ে যাবে। আর প্রতিবারই আমি শেষপর্যন্ত তার কাছে ফিরে যেতাম। একা থাকাকে ভীষণ ভয় পেতাম আমি। শুরুর দিকে আমি তার সাথে ছাড়াছাড়ির অনেক চেষ্টা করলেও সময়ের সাথে সাথে আমার চেষ্টাও কমতে শুরু করে। পরে একপর্যায়ে আমি চেষ্টাই ছেড়ে দেই। সে আমাকে বিয়ে করতে চায়, এবং আমরা বিয়ে করিও। যদিও আমার বিয়ে করার কোনো আগ্রহ অবশিষ্ট ছিল না। ইরা সবার ব্যাপারে ঈর্ষান্বিত ছিল। আমার বন্ধু, পরিবার সবার ব্যাপারে। আমি যেখানেই যেতাম, আমার সবসময় তাকে ফোন করতে থাকতে হতো। সে সবসময় আমাকে প্রশ্ন করতো যে 'কেন কনফারেন্সে যেতে হবে আমার?' বা 'কেন আমি বন্ধুদের সাথে দেখা করি?' আমাকে ছাড়া সে কোথাও যেতে পারতো না - আমি যেন সব জায়গায় তার মনোরঞ্জন করার খেলনা ছিলাম। ইরার কোনো চাকরি ছিল না। আমার আয়েই আমাদের খরচ চলতো। দুই বেডরুমের একটা বড় অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া নেই আমরা। বাসার বড় বাথরুম ব্যবহারের অনুমতি ছিল না আমার। আমার সবসময় 'গেস্ট' বাথরুম ব্যবহার করতে হতো। প্রতিদিন সকালে সে ঘুম থেকে ওঠার আগে আমার অপেক্ষা করতে হতো, যেন আমি তার ঘুমের 'ব্যাঘাত' না ঘটাই। আমরা ঘুমাতামও ভিন্ন রুমে এবং আমার রুম বন্ধ করার ব্যবস্থা ছিল না। আমি এক মুহুর্তের জন্যও একা থাকতে পারতাম না। আমি যদি 'ভুল' কিছু করতাম, তখন সে আমার সাথে চিৎকার করতো এবং আমাকে মারতো। প্রায় প্রতিদিনই এরকম ঘটনা ঘটতো। যে কোনো বিষয়ে সে আমার দোষ দিতো। আমি সবসময় শুনে এসেছি যে তার কোন ধরণের পুরুষ পছন্দ এবং তার জন্য সেই পুরুষ কী কী করবে। সে যা করতে বলতো, শুধু তার রাগ থেকে বাঁচার জন্য আমি তাই করতাম। আমি দাবি করছি না যে আমি ত্রুটিমুক্ত। এসব থেকে দূরে থাকতে আমি দিনে ১০, ১২, ১৪ ঘণ্টা করে কাজ করতাম - এমনকি ছুটির দিনেও। এটা এমন কিছু না, এ ধরণের পরিস্থিতিতে কিছু মানুষ মদ্যপান করে - অন্যরা কাজ করে। যেভাবে বেরিয়ে আসার শুরু আপনি যখন ওরকম একটা পরিস্থিতিতে থাকবেন, তখন আপনার সাথে কী হচ্ছে তা ঠিক বুঝে উঠতে পারবেন না আপনি। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের পথও আপনি দেখতে পাবেন না, আবার কারো সাহায্যো চাইতে পারবেন না। আপনার মনে হতে থাকবে এই অবস্থা থেকে আপনার মুক্তির পথ নেই। হতাশায় ডুবে যাওয়ার মত একটা পরিস্থিতি তৈরি হবে। আমার ধারণা ছিল যে সম্পর্কের জন্য সবকিছু ত্যাগ করতে হয়। তাই আমি নিজেকে এবং নিজের ইচ্ছাগুলোকে ত্যাগ করেছিলাম। সেসময় এই ত্যাগকে স্বাভাবিকই মনে হয়েছিল। সম্পর্কের শুরুর দিকে সেক্স ভালো লাগলেো পরে একটা লম্বা সময় আমার আর সেক্স ভালো লাগতো না। কিন্তু শেষ তিন চার বছর সেক্সের কথা চিন্তা করলেই আমার প্যানিক অ্যাটাক হতো, আমি আতঙ্কিত হয়ে পড়তাম। যখনই ইরা আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমাকে ধরে আমার সাথে যৌনমিলনে উদ্যত হতো, তখনই এরকম হতো। আমার মধ্যে যখন আতঙ্ক তৈরি হতো, আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ঘর থেকে, কখনো বাড়ি থেকে দৌড়ে পালিয়ে যেতাম। ইরার বিশ্বাস ছিল আমার জন্যই আমাদের যৌনজীবনে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই কয়েক বছর পরপর আমাকে সেক্সোলজিস্টের কাছে নিয়ে যেতো সে। যখনই আমি বলতাম যে সেক্সের সময় আমার কিছু একটা পছন্দ হচ্ছে না, অথবা আমার সেক্স পছন্দ না - সে আমাকে বলতো যে আমিই আসল সমস্যা। আমাকে নির্যাতন ও ধর্ষণের ব্যাপারে আমি সাধারণত নীরব থাকতাম। আর চিকিৎসকের সাথে দেখা করার ঘটনাগুলোর মাধ্যমে ইরা নিজের যুক্তি প্রতিষ্ঠার একটা সুযোগ পেয়েছিল। ডিভোর্সের কিছুদিন আগে থেকে আমি যৌন সহিংসতার কথা মানুষকে বলা শুরু করি। আর বলা শুরু করার পর আমি আর থামিনি। যেভাবে সাহায্য পেলাম এক শরতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে আমার টানা জ্বর ছিল। ঐ পুরোটা সময় কেউ আমার খোঁজ খবর নেয়নি। তখনই আমার মাথায় আসে যে আমার জীবন আসলে অর্থহীন। আমি মারা গেলেো কেউ খেয়ালই করবে না। সেই মুহুর্তটায় একসাথে আতঙ্ক, দুঃখ আর নিজের উপর ধিক্কারের একটা মিশ্র অনুভূতি বোধ হয় আমার। আমার কারো সাথে এনিয়ে কথা বলতে ইচ্ছা করছিল - কিন্তু অমার কোনো ধারণা ছিল না কার সাথে কথা বলা যায়। এর কিছুদিন পর আমি আমার বাবা-মা'র বাসায় যাই কয়েকদিন একা থাকার জন্য। সেসময় তারা বাসায় ছিলেন না। সেসময় ইন্টারনেটে একটি ওয়েবসাইটে পরিচয় প্রকাশ না করে আমার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো জানাই আমি একজনকে। সেবারই প্রথম আমি কারো সাথে সেসব ঘটনা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করি। সেখান থেকে আমি সাহস পাই এবং ধীরে ধীরে নির্যাতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠি। আগে সেক্স করতে না চাইলে আমি চুপ করে থাকতাম এবং নির্যাতন সহ্য করতাম। কিন্তু ধীরে ধীরে আমি 'না' বলা শুরু করলাম। একপর্যায়ে আমি পারিবারিক একজন চিকিৎসকের সাহায্যও পাই। সেসময় আমি ও ইরা দু'জনই ঐ চিকিৎসকের সাথে একসাথে আলোচনা করতাম। ঐ সময়ই আমি প্রথমবার কোনো চিকিৎসকের সামনে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তুলতে সক্ষম হই। আর সেগুলো বলার পর ইরা ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। সে বলতে থাকে যে আমার অভিযোগ মিথ্যা। তবে ঐ ঘটনার পরপরই সে ডিভোর্সের পরামর্শ দেয়। আমিও সুযোগ হাতছাড়া করিনি। একমাস পর যেদিন ডিভোর্সের কাগজ হাতে পাই, সেটি ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিন। ডিভোর্সের পর একদিন আমি চিৎকার করে তাকে বলি, "তুমি আমাকে ধর্ষণ করছিলে?" সে উত্তর দিয়েছিল, "ধর্ষণ করছিলাম? তো কি হয়েছে!!" সেদিন তার কথার উত্তর দিতে পারিনি আমি, এখনও সেই উত্তর জানা নেই। তবে সে অন্তত স্বীকার করেছে অভিযোগ, যদিও এ নিয়ে হাসাহাসিই বেশি করেছে। পারিবারিক ও যৌন সহিংসতা বিষয়ক সাপোর্ট গ্রুপের সাহায্য পেলে ও তাদের সাথে কথা বলতে পারলে আমি হয়তো আগেই এই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে পারতাম, কিন্তু ইউক্রেনে এরকম সাপোর্ট গ্রুপ রয়েছে শুধু নারীদের জন্য। এমনকি ইউক্রেনে আমি প্রথম যেই সাইকোথেরাপিস্টের কাছে নিজের সমস্যার কথা বলি, তিনি হেসে দিয়ে বলেছিলেন, "তোমার স্ত্রী নারী আর তুমি পুরুষ। সে তোমাকে ধর্ষণ করতে পারে না।" ছয়বার সাইকোথেরাপিস্ট পরিবর্তন করার পর এখন আমি কিছুটা সাহায্য পাচ্ছি। আমার মানসিক ক্ষতি হয়তো কখনোই পুরোপুরি পুষিয়ে নেয়া যাবে না। কিন্তু আমি মনে করি আমি যেমন বছরের বছর চুপ ছিলাম, আমার গল্প পড়ে আমার মত অভিজ্ঞাতার অন্য একজন ব্যক্তি হয়তো সাহস করে সাহায্য চাইবে, কারো সাথে কথা বলবে। | More than one in three women worldwide have experienced physical or sexual violence, a report by the World Health Organization and other groups says. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | করোনাভাইরাস নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভীতি ছড়ানোর অভিযোগ করেছে চীন দ্যা পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটি বলেছে, জাতীয় জরুরি ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের আরও উন্নতি করতে হবে। এর মধ্যে বন্যপ্রাণীর বাজারে বড় ধরণের অভিযান চালানোর আদেশ দেয়া হয়েছে। সোমবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বিশ হাজার আর মৃত্যুর সংখ্যা ৪২৫। এর মধ্যে শুধু একদিনেই তিন হাজার মানুষের আক্রান্ত হবার খবর পাওয়া গেছে। দেশটির ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী সোমবার দিনই হুবেই প্রদেশে মারা গেছে ৬৪ জন। এ প্রদেশ থেকেই প্রাণঘাতী এ ভাইরাসটি ছড়াতে শুরু করেছে বলে মনে করা হয়। ওদিকে ২০০২-০৩ সাল সার্সে মৃত্যুর রেকর্ড ইতোমধ্যেই অতিক্রম হয়েছে। আবার চীনের বাইরে এপর্যন্ত অন্তত ১৫০ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ফিলিপাইনে একজনের মৃত্যুও হয়েছে। অন্য প্রাণী থেকে মানুষের দেহে রোগ ছড়াচ্ছে কেন? করোনাভাইরাস:কারা ঝুঁকিতে, শরীরে কেমন প্রতিক্রিয়া হয় করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরিতে অগ্রগতি কতদূর? করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া প্রথম ৯৯জন রোগীর স্বাস্থ্যের ব্যাখ্যা দেন চিকিৎসকরা চীনের পলিটব্যুরো যা বলছে চীনের সরকারি বার্তা সংস্থার দেয়া তথ্য অনুযায়ী স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠকে সভাপতিত্ব করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এখানে বলা হয়েছে, এ ঘটনা চীনের সরকারি সিস্টেমের জন্য একটি 'বিগ টেস্ট', যা থেকে শিক্ষা নেয়া জরুরি। রিপোর্টে বলা হয়, "মহামারি মোকাবেলায় ভুলত্রুটি আর ঘাটতি চোখে পড়েছে। আমাদের জরুরি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উন্নত করতে হবে এবং জরুরি বিপজ্জনক কাজগুলো মোকাবেলায় আরও দক্ষতা অর্জন করতে হবে"। একই সাথে বন্যপ্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং এজন্য বাজারে নজরদারি বাড়াতে হবে। মনে করা হয় হুবেই প্রদেশের উহান শহরের একটি বন্যপ্রাণীর বাজার থেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। উহান তাই এখনো সরকারি পদক্ষেপে অগ্রাধিকার পাবে ও আরও মেডিকেল স্টাফ উহানে পাঠানো হবে। রিপোর্টে বলা হয়েছে মহামারি প্রতিরোধে কর্মকর্তাদের পূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে এবং যারা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হবে তাদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এর মধ্যে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত এক কিশোরের মৃত্যুর পর দুজন কর্মকর্তাকে তাদের পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। ওই কিশোরের বাবাকে করোনাভাইরাস সন্দেহভাজন হিসেবে কোয়ারেন্টাইনে নেয়ার পর ওই কিশোরের মৃত্যু হয়। বাবা ছাড়া তাকে দেখভালের আর কেউ ছিলোনা। ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে উহানের সব গণপরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে মাঠের পরিস্থিতি সোমবার একদিনেই ৬৪ জনের মৃত্যু এখন পর্যন্ত এক দিনে বেশি মৃত্যুর রেকর্ড। এর আগের দিন ৫৭ জন মারা গিয়েছিলো। উহানে দ্রুততার সাথে দুটি নতুন হাসপাতাল করা হয়েছ, যদিও সেগুলো এখনো পুরোপুরি কার্যক্রম শুরু করেনি। ওই প্রদেশের সব মানুষের জন্যই মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে উপকরণ সংকট আছে এবং সেজন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একজন মুখপাত্র বলেছেন, "চীনের এ মূহুর্তে জরুরি ভাবে মেডিকেল মাস্ক, প্রটেকটিভ স্যুট ও নিরাপত্তা চশমা দরকার"। ওদিকে সাংহাইয়ের মতো কিছু শহরে নতুন বছরের ছুটি বাড়ানো হয়েছে, বন্ধ আছে স্কুলগুলোও। আবার হংকংয়ে পনের জন্য আক্রান্ত হওয়ার পর দেশটি চীনের সাথে ১৩টি সীমান্ত পথের দশটিই বন্ধ করে দিয়েছে। অন্য দেশগুলোর ভূমিকা জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর (যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, জাপান, যুক্তরাজ্য,ক্যানাডা, ফ্রান্স ও ইটালি)স্বাস্থ্য মন্ত্রীরা সোমবার বৈঠকে মিলিত হয়েছিলো। জার্মানি স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন তারা ভ্রমণ বিধিনিষেধ, ভাইরাল গবেষণা এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও চীনের সাথে সহযোগিতার বিষয়ে একমত হয়েছে। অনেক দেশ চীনের আক্রান্ত এলাকা থেকে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিয়েছে। নিজের নাগরিকদের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র যদিও চীন একে অতিরিক্ত আখ্যায়িত করে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ভীতি ছড়ানোর অভিযোগ করেছে। করোনাভাইরাস: লক্ষণ ও বাঁচার উপায় কী? সাম্প্রতিক কিছু ভ্রমণ বিধিনিষেধ: •যারা সম্প্রতি চীন ভ্রমণ করেছেন এমন ব্যক্তিদের প্রবেশাধিকার বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুর •চীনের মূল ভূখন্ড থেকে আসা ভ্রমণকারীদের ঢুকতে দিচ্ছে না নিউজিল্যান্ড ও ইসরায়েল •হুবেই থেকে আসা বিদেশীদের প্রবেশ বন্ধ করেছে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া •চীনের সাথে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করেছে মিসর, ফিনল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ইটালি •মঙ্গোলিয়া ও রাশিয়া (আংশিক) চীনের সাথে সীমান্ত বন্ধ করেছে •বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রুজ শিপ অপারেটর সোমবার ঘোষণা করেছে, চীনে গিয়েছেন এমন যাত্রী ও ক্রুরা জাহাজে উঠতে পারবেন না করোনাভাইরাস নিরাপত্তায় যে সতর্কতা প্রয়োজন কতটা প্রাণঘাতী এই ভাইরাস? বিশেষজ্ঞদের ধারণা, উহানে হয়তো আক্রান্তের সংখ্যা ৭৫ হাজারের মতো। ওদিকে ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের হিসেব বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে আক্রান্তের যে সংখ্যা বলছে কর্তৃপক্ষ, আসল সংখ্যা তার চেয়ে বহু বহুগুন বেশি হতে পারে। লানচেট মেডিকেল জার্নাল বলেছে যারা মারা গেছেন তারা শুরুর দিকেই আক্রান্ত হয়েছেন। এতে বলা হয় প্রথম ৯৯ রোগীকে উহানের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে এবং এর মধ্যে ৪০ জনের হৃদযন্ত্র দুর্বল ও রক্ত পরিবাহী শিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলো। আবার ১২ জনের ডায়াবেটিস ছিলো। তবে চীনের একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন করোনাভাইরাসের হালকা উপসর্গ থাকলে সুস্থ হওয়ার জন্য এক সপ্তাহও যথেষ্ট। | China's top leadership has admitted "shortcomings and deficiencies" in the country's response to the deadly coronavirus outbreak. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | বেইজিং বিমানবন্দরে যাত্রীরা প্রতিরক্ষামূলক মাস্ক পরেন। "চীনে কী হচ্ছে সেটার জন্য এই ঘোষণা দেয়া হয়নি বরং অন্যান্য দেশে যা ঘটছে সেটাই এই ঘোষণার মূল কারণ, " ডব্লিউএইচও- এর প্রধান টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইয়েসাস বলেছেন। উদ্বেগ রয়েছে যে এই ভাইরাস দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র তাদের নাগরিকদের বলেছে তারা যেন চীনে ভ্রমণ করতে না যায়। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর চার স্তরের সতর্কতা জারি করেছে - এর আগে আমেরিকানদের চীনে ভ্রমণের বিষয়টি "পুনর্বিবেচনা" করার আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছে যে চীনে যেসব মার্কিন নাগরিক আছে তারা যেন সতর্ক থাকেন। চীনে এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২১৩ জনের। ডব্লিউএইচও জানিয়েছে যে, অন্যান্য ১৮টি দেশে আরও ৯৮জন মানুষের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে চীনের বাইরে এখনও কারও মৃত্যু হয়নি। চীনের বাইরের দেশের যতো মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের বেশিরভাগ চীনের উহার শহরে ছিলেন, যেখান থেকে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। তবে জার্মানি, জাপান, ভিয়েতনাম এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মানুষে মানুষে-ভাইরাস সংক্রমণের আটটি ঘটনা ঘটেছে। ডব্লিউএইচও- এর প্রধান টেড্রোস অ্যাধনম ঘেব্রেইয়েসাস আরও পড়তে পারেন: কীভাবে এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস 'উহান থেকে বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে বিমান প্রস্তুত' যে দশটি রোগ প্রাণঘাতী হতে পারে জেনেভাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় ড. টেড্রোস ভাইরাসটিকে একটি "অভূতপূর্ব প্রাদুর্ভাব" হিসাবে বর্ণনা করেছেন, যাকে গিয়ে প্রতিক্রিয়াও "অভূতপূর্ব"। তিনি চীনা কর্তৃপক্ষের "অসাধারণ পদক্ষেপ" গ্রহণের প্রশংসা করেন এবং বলেছেন যে চীনে বাণিজ্য বা ভ্রমণ সীমাবদ্ধ করার কোনও কারণ নেই। "একটি বিষয় স্পষ্ট করে বলি, এই ঘোষণাটি চীনের প্রতি অবিশ্বাস বা অনাস্থার জন্য নয়," তিনি বলেন। তবে বিভিন্ন দেশ সীমান্ত বন্ধ করার পাশাপাশি বা ফ্লাইট বাতিল করার পদক্ষেপ নিয়েছে গুগল, আইকা, স্টারবাকস এবং টেসলার মতো সংস্থাগুলি । তারা তাদের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে বা কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে। এই ভাইরাস যদি এমন একটি দেশে প্রবেশ করে যাদের এমন প্রাদুর্ভাব মোকাবেলার সক্ষমতা নেই, তখন কী হবে? অনেক নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে এই ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে শনাক্ত করা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির দেখভাল করার সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। আশঙ্কা হল সেসব দেশে এই ভাইরাস অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং কিছু সময়ের জন্য বিষয়টি নজরে নাও পড়তে পারে। মনে রাখবেন এটি এমন একটি রোগ যা কেবল গত মাসে উদ্ভূত হয়েছিল - এবং ইতিমধ্যে চীনের প্রায় ১০ হাজার জনের এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। ২০১৪ সালে পশ্চিম আফ্রিকার ইবোলার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়- যা ছিল মানব ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব- সেখান থেকে বোঝা যায় যে এইরকম প্রাদুর্ভাব দারিদ্র্যপীড়িত দেশগুলোর ওপর কত ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। নভেল করোনাভাইরাস যদি এই জায়গাগুলিতে উল্লেখযোগ্য হারে ছড়িয়ে পড়ে তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা অবিশ্বাস্য রকমভাবে কঠিন হয়ে পড়বে। আমরা এখনও সেই পর্যায়ে নেই - আক্রান্ত হওয়ার ৯৯% ঘটনাই ঘটেছে চীনে। এবং ডব্লিউএইচও এতোটুকু নিশ্চিত হতে পারছে যে দেশটি সেখানকার এই প্রকোপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। তবে বৈশ্বিক জরুরী অবস্থা ঘোষণার মাধ্যমে ডব্লিউএইচও নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোয় তাদের নজরদারি চালাতে পারবে। যেন তাদের রোগ নির্ণয় করার পদ্ধতি জোরদার করা যায় - এবং এ ধরণের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় তাদের প্রস্তুত করা যায়। বর্তমানে যেখানে যেখানে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটছে তার একটি মানচিত্র। এই ঘোষণাটি কতটা অস্বাভাবিক? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর আগেও পাঁচবার বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে। কোন রোগ খুব দ্রুত এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার কারণে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি মুখে পড়লে এই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। বিশেষ করে যদি এই প্রাদুর্ভাবের এমন বড় কোন ঘটনা ঘটে যা বৈশ্বিক উদ্বেগের সৃষ্টি করে। সোয়াইন ফ্লু, ২০০৯ এইচ-ওয়ান-এন-ওয়ান ভাইরাসটি ২০০৯ সালে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল, এতে প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। পোলিও, ২০১৪ ২০১২ সালে পোলিও প্রায় নির্মূলের পর্যায়ে চলে গেলেও ২০১৩ সালে পোলিওর সংখ্যা আবার বেড়ে যায়। জিকা, ২০১৬ আমেরিকা অঞ্চলে জিকা রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার পরে ডব্লিউএইচও ২০১৬ সালে জনস্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। ইবোলা, ২০১৪ এবং ২০১৯ পশ্চিম আফ্রিকাতে প্রায় ৩০ হাজার লোক সংক্রামিত হওয়ায় এবং ১১,০০০ মানুষ এই ইবোলায় প্রাণ হারানোর কারণে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে প্রথম জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় ২০১৪ সালে আগস্টে। যা ২০১৬ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল। ডিআর কঙ্গোতে এই প্রাদুর্ভাব পুনরায় ছড়িয়ে পড়ায় গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে দ্বিতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। পশ্চিম আফ্রিকাতে ইবোলা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিলে সেটি ধরতে সময় লেগেছিল। চীন কীভাবে এই মহামারী মোকাবিলা করছে? তিব্বতে একজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার অর্থ হল এই ভাইরাস চীনের মূল ভূখণ্ড প্রতিটি অঞ্চলে পৌঁছে গিয়েছে। দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন অনুযায়ী ৯,৬৯২ জনের স্বাস্থ্য পরীক্ষায় এই ভাইরাসের উপস্থিতি সনাক্ত হয়েছে। প্রায় সমস্ত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে চীনের কেন্দ্রীয় হুবেই প্রদেশে। এজন্য সেখানে সবাইকে একপ্রকার আটক অবস্থায় রাখা হয়েছে। ছয় কোটি মানুষের এই প্রদেশটির উহান শহর থেকে এই প্রাদুর্ভাবের শুরু হয়। শহরটিকে চারিদিক থেকে কার্যকরভাবে আটকে রাখা হয়েছে এবং চীন ভাইরাসটির বিস্তার রোধে পরিবহনে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। হুবেইতে থাকা মানুষদের বলা হয়েছে তারা যেন ঘরের ভেতরে থেকেই সব ধরণের কাজ করেন। যতক্ষণ না পরিস্থিতি তাদের ফিরে আসার জন্য নিরাপদ হচ্ছে। এই ভাইরাসটি চীনের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলছে, যেটা কিনা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম,। কেননা অনেক দেশ ইতিমধ্যে তাদের নাগরিকদের খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া চীনে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিচ্ছে। বিমানের ভেতরে জীবাণুনাশক ওষুধ স্প্রে করা হচ্ছে। অন্যান্য দেশ কীভাবে সাড়া দিচ্ছে? উহান থেকে কয়েক শতাধিক বিদেশী নাগরিককে বের করে আনার কাজ চলছে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এবং নিউজিল্যান্ড- এই বের করে আনা মানুষদের থেকে সংক্রমন এড়াতে অন্তত দুই সপ্তাহের জন্য তাদের আলাদা করে রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই ১৪ দিন তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হবে, তাদের কেউ আক্রান্ত কিনা বোঝার জন্য। অস্ট্রেলিয়া তাদের মূল ভূখণ্ড থেকে ২,০০০ কিলোমিটার (১,২০০ মাইল) দূরে ক্রিসমাস দ্বীপের একটি আশ্রয় শিবিরে এই ফিরিয়ে আনা নাগরিকদের আলাদা করে রাখার পরিকল্পনা করছে। ওই শিবিরটি আশ্রয় প্রত্যাশিদের রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য সাম্প্রতিক ঘটনা: ইতালি রোমে দু'জন চীনা পর্যটক ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে চীনে যাওয়ার ফ্লাইট স্থগিত করে ইতালি। এর আগে একটি ক্রুজ জাহাজ থেকে ৬০০০ যাত্রীর নামার ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রেপ্রথম কারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরটি নিশ্চিত করে , শিকাগোর স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। মানুষ থেকে মানুষে ভাইরাস সংক্রমণের খবরটি ওই রাজ্য থেকে জানা যায়। প্রায় ২০০ মার্কিন নাগরিককে উহান থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে এবং কমপক্ষে ৭২ ঘন্টার জন্য তাদেরকে ক্যালিফোর্নিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে আলাদা করে রাখা হয়েছে। রাশিয়া রাশিয়া, তাদের পূর্বদিকে চীনের সাথে ৪,৩০০ কিলোমিটার (২.৬৭০ মাইল) সীমান্ত বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জাপান জাপানের দুটি ফ্লাইট ইতিমধ্যে টোকিওতে অবতরণ করেছে। জাপান এখন চীনের জন্য তাদের সংক্রামক রোগের পরামর্শের স্তর বাড়িয়েছে। ফ্রান্স প্রায় ২৫০জন ফরাসি নাগরিককে উহান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ভারত ভারত ভাইরাসটির প্রথম ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে - দক্ষিণে কেরালা রাজ্যের এক ছাত্র যিনি উহান শহরে পড়াশোনা করতেন, তার শরীরে এই ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে। ইসরায়েল চীনের সাথে সমস্ত ফ্লাইট সংযোগ নিষিদ্ধ করেছে ইসরায়েল। পাপুয়া নিউ গিনি পাপুয়া নিউ গিনি, "এশিয়ান বন্দর" থেকে সমস্ত ভ্রমণকারীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। | The new coronavirus has been declared a global emergency by the World Health Organization, as the outbreak continues to spread outside China. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়েছে কিন্তু এখনো অনেক প্রশ্ন রয়ে গেছে, যার উত্তর মেলেনি। ব্রেক্সিটের পরে যুক্তরাজ্য যেসব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে পারে, সেগুলো এখানে বর্ণনা করা হলো। ১. ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি করা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার মানে হলো, এখন ব্রিটেন ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্য চুক্তি করতে পারবে। সরকার দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে, ব্রেক্সিট উত্তর অন্তর্বর্তীকালীন সময় আর বাড়ানো হবে না। ২০২০ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হবে। এর মানে হলো, ইইউর সঙ্গে কোন চুক্তিতে পৌঁছানোর সময়সীমা বেশ কম। দরকষাকষির শর্তের ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ সম্মত হওয়ার পর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষদিকে থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। কোন একটি চূড়ান্ত চুক্তিতে পৌঁছানোর পর সেটাকে বাস্তবে রূপ দিতে এ বছরের শেষ নাগাদ বেশ কয়েকমাস লেগে যাবে। সুতরাং বাস্তবের বিচারে শুধুমাত্র একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য কয়েকমাস সময় থাকছে। কিন্তু তারপরেও অনেক ইস্যু আলোচনার জন্য থেকে যাবে। আরো পড়ুন: ব্রেক্সিট কার্যকর হচ্ছে আজ, কী কী পরিবর্তন আসবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়লো যুক্তরাজ্য ব্রেক্সিট: ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায়ের পর কী? ব্রেক্সিট নিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন ও তার উত্তর ৩১শে জানুয়ারি ২০২০ থেকে ব্রেক্সিট কার্যকর হয়েছে ব্রিটিশ সরকার পণ্যের ওপর 'শূন্য শুল্ক, শূন্য কোটা' চুক্তি করার ব্যাপারে কথা বলছে, যেখানে সীমান্ত কর, রফতানি ও আমদানির কোন সীমা থাকবে না। কিন্তু সুচারুভাবে বাণিজ্য অব্যাহত রাখতে হলে অনেকগুলো বিষয় নিয়েই সমঝোতা হতে হবে, যার মধ্যে সেবা খাত, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সেবা, খাবার ও পানীয় শিল্প এবং বিনোদনের মতো অনেকগুলো বিষয় রয়েছে। অবশ্যই একটি চুক্তিতে সম্মত হওয়া উভয় পক্ষের জন্যই দরকার, কিন্তু সেজন্য বিশাল কর্মযজ্ঞের দরকার হবে। মাছ ধরা, ন্যায্য প্রতিযোগিতা, ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিসসহ অনেক বিষয়ে বিরোধ তৈরি হতে পারে। ২০২০ সালের মধ্যে যদি কোন চুক্তি সম্পন্ন করা সম্ভব না হয়, তাহলে যুক্তরাজ্য-ইউরোপীয় ইউনিয়নের সম্পর্কে নতুন করে একটি টানাপড়েন শুরু হবে। ২. যুক্তরাজ্যকে নিরাপদ রাখা এগারো মাসের মধ্যে যদি একটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হয়ও, তাহলেও যুক্তরাজ্যকে অবশ্যই নিরাপত্তা প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার জন্য একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে হবে। যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুলিশ এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা একতম হয়েছেন যে, ব্রেক্সিট উত্তর সময়ে এরকম একটি বিষয়ে একমত হওয়া কঠিন হবে। ব্রেক্সিট মানে হলো ইউরোপোলে আর ভূমিকা রাখতে পারবে না যুক্তরাজ্য যেমন ইউরোপ জুড়ে সংগঠিত বড় অপরাধের ব্যাপারে যে সংস্থা তদন্ত সমন্বয় করে, সেই ইউরোপেলের ওপর এর মধ্যেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে যুক্তরাজ্য। এর মানে হলো, যুক্তরাজ্য যেসব বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে- ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে মানব পাচার বা অস্ত্র পাচার সম্পর্কে- যুক্তরাজ্যের উদ্বেগের আরো অবনতি হতে পারে। ব্রিটিশ পুলিশ কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত ইইউ সিস্টেম ব্যবহার করে বিদেশি নাগরিকদের অতীতের অপরাধের রেকর্ড সম্পর্কে জানতে পারে অথবা ওয়ান্টেড ব্যক্তিদের সম্পর্কে পুরো মহাদেশ জুড়ে সতর্ক বার্তা জারি করতে পারে। কিন্তু ভবিষ্যতে এই তথ্য পাওয়া যুক্তরাজ্যের জন্য কঠিন হয়ে উঠবে। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে তথ্য বিনিময় না করার ব্যাপারে ইউনিয়নের অনেক দেশের নির্দিষ্ট আইন রয়েছে। সরকার অবশ্য আরেকটু এগিয়ে চিন্তা করার চেষ্টা করছে। যেমন সরকার আশা করছে, ইউরোপিয়ান অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট পদ্ধতি থেকে এতদিন যুক্তরাজ্য যেরকম সুবিধা পেয়ে আসছে, একই রকম সুবিধা পেতে একটি আইন জারি করবে সরকার। এর ফলে ইউনিয়নের সঙ্গে কোন চুক্তি না হলেও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের অন্যদেশে বিচারের জন্য পাঠানো যাবে। উভয় পক্ষই এটা চায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, ২০২১ সালের্ জানুয়ারি মাসের মধ্যে কি এরকম একটি চুক্তি করা সম্ভব হবে? ৩. খাবারের চালান আসা অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা খামার থেকে শুরু করে মাছ ধরা, উৎপাদন থেকে খুচরা পর্যায় পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে খাদ্য ও পানীয় শিল্প থেকে বছরে ৪৬০ বিলিয়ন ডলার যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে যোগ হয়। এই শিল্পে কাজ করেন ৪০ লাখ মানুষ। এখন চিন্তা হলো, অন্তর্বর্তীকালীন সময় শেষ হওয়ার পর খাদ্য ও পানীয় গ্রাহক পর্যায়ে পৌঁছানোর জটিল প্রক্রিয়ায় কী ঘটবে? এই শিল্পের প্রতি তিনজনের একজন এসেছেন যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে। অনেকেই ইস্টার্ন ইউরোপের নাগরিক। খাদ্য ও পানীয় শিল্প থেকে বছরে ৪৬০ বিলিয়ন ডলার যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে যোগ হয়। অভিবাসীদের জন্য দেয়া নূন্যতম বেতনের বিষয়টি চালু করার মাধ্যমে তাদের এখানে আসা যদি বন্ধ হয়ে যায়, তখন কী হবে? বাণিজ্যের প্রসঙ্গ এলে সম্ভাবনা রয়েছে যে পণ্যগুলো সীমান্তে খুলে পরীক্ষা করে দেখা হবে। যার ফলে খরচ বাড়বে এবং তাজা খাবারের মেয়াদ কমে যাবে। খাদ্য উৎপাদকদের সংগঠন, ফুড এন্ড ড্রিংক ফেডারেশন বলছে, ইউরোপের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির ব্যাপারে 'উৎস নীতি' নিয়ে আরো একটি জটিল চ্যালেঞ্জ তৈরি হবে। কারণ যুক্তরাজ্যের উৎপাদকরা পণ্য তৈরির অনেক উপাদান ব্যবহার করে যার কিছু দেশের, কিছু বিদেশ থেকে আমদানি করা। ফলে এগুলো ইউরোপের উৎস আইনের সঙ্গে ঠিক খাপ খায় না। ৪. বিশ্বে নতুন ভূমিকা তৈরি করা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পরে বিশ্বে যুক্তরাজ্যের অবস্থান তৈরি করতে হলে ব্রিটিশ সরকারকে অনেক কাজ করতে হবে। সরকারের শ্লোগান, 'গ্লোবাল ব্রিটেন' বা বৈশ্বিক ব্রিটেন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে মন্ত্রীদের। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্কের যে সেতু হিসাবে কাজ করেছে ব্রিটেন, তা একদিকে সরিয়ে রাখতে হবে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জার্মান চ্যান্সেলন অ্যাঙ্গেলা মেরকেল এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন তার বদলে মন্ত্রীদের অবশ্যই একটি স্বাধীন বিদেশ নীতি তৈরি করতে হবে। এর মানে হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য থেকে কম সমর্থন পাওয়া। কারণ যুক্তরাজ্য এখন অন্য দেশের সমস্যার চেয়ে নিজের দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যার দিকে বেশি নজর দেবে। পররাষ্ট্রনীতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ থেকে বেরিয়ে কীভাবে ক্রমে শক্তিশালী হয়ে ওঠা চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করা হবে। ৫. প্রমাণ করা যে, সব যুক্তিতর্ক ঠিক ছিলো যারা ব্রেক্সিটের বিপক্ষে ওয়েস্টমিনিস্টার কলেজ গ্রিনের সামনে বিক্ষোভ করেছেন, তাদের অবস্থান এখন আর গুরুত্বপূর্ণ নয়। এমনকি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ভক্তকেও স্বীকার করতে হবে যে উত্তাপটি আবেগময় এবং রাজনৈতিক লড়াইয়ের বাইরে চলে গেছে গত কয়েক বছরের মধ্যে। মিঃ জনসনের পক্ষে এখন চ্যালেঞ্জ হ'ল জনসাধারণকে দেখানো যে সমস্ত বাধা, সমস্ত যুক্তি প্রকৃত পক্ষে মূল্যবান ছিল। কিন্তু সেটা সহজ হবে না। ব্রেক্সিটের পক্ষের লোকজন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ব্রাসেলস থেকে যুক্তরাজ্যের ফিরে পাওয়া শক্তি তুলে ধরতে আগ্রহী। ব্রেক্সিটের পক্ষের আন্দোলনকারীরা কিন্তু এখন যুক্তরাজ্য প্রস্থান লাউঞ্জে আছে- বিশেষ করে অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে পরিস্থিতি অনেকটা একই থাকবে। এমনকি যারা শুক্রবার রাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়া উদযাপন করতে শ্যাম্পেনের বোতল খুলেছেন, শনিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে তাদের খুব একটা আলাদা কিছু মনে হয়নি। এখন যখন ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়া বা থাকার বিতর্কের অবসান ঘটেছে, তখনো কিছু ভোটার বিশ্বাস করেন যে, যুক্তরাজ্য বোকামির পথে যাত্রা করছে। এখন বরং সবচেয়ে বড় আশঙ্কা রয়েছে যে, এই বছরের শেষের মধ্যে ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট একটি বাণিজ্য চুক্তি কার্যকর করতে পারে কিনা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন পুরোপুরি খুশি হবেন যদি শুক্রবারের পরে, বি-শব্দটি আর কখনও শোনা যায় না, তবে উভয় পক্ষের জনগণের কাছে এটি দেখানো দরকার যে এটি উপযুক্ত ছিল। তিনি এর মধ্যেই ইতিহাসের বইয়ে ঠাই করে নিয়েছেন, তবে সেই অধ্যায়ের এখনো সমাপ্তি ঘটেনি। | The UK might have left the EU but many questions remain unanswered. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেছে একটি ব্রিটিশ সংস্থা। হরমুজ প্রণালী দিয়ে তেলবাহী আন্তর্জাতিক জাহাজের যাতায়াতের নিরাপত্তার বিষয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় এবারের গ্রীষ্মে যুক্তরাজ্যে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা বাড়তি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে মোটরযান নিয়ে কাজ করা একটি ব্রিটিশ সংস্থা 'এএ'। যুক্তরাজ্য ইরানকে এর মধ্যে সতর্ক করেছে যে আটক করা ব্রিটিশ জাহাজ স্টেনা ইমপেরো যদি ফেরত দেয়া না হয় তাহলে 'কঠোর ' কূটনৈতিক পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে ইরানকে। তেলের যোগান বাধাগ্রস্থ হলে গ্রাহক পর্যায়ে বিশ্বব্যাপী পেট্রোলের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আরো পড়তে পারেন: ব্রিটিশ ট্যাংকার 'আটকের চেষ্টা চালালো ইরান' ইরান কেন ইউরেনিয়ামের মজুদ বাড়িয়েছে? 'যুদ্ধ বাধলে নিশ্চিহ্ন হবে ইরান', বলছেন ট্রাম্প ইরানের ওপর 'গুরুতর' নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা ট্রাম্পের জিব্রাল্টারে ইরানি তেলের ট্যাংকার আটকের প্রতিক্রিয়ায় ব্রিটিশ পতাকাধারী একটি তেলের ট্যাংকার আটক করে ইরান ইরান পরিস্থিতি কীভাবে তেলের দাম প্রভাবিত করতে পারে? জিব্রাল্টারে ব্রিটিশ সৈন্যদের দ্বারা ইরানের একটি তেলের ট্যাংকার জব্দ করার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইরান ব্রিটিশ পতাকাবাহী তেলের ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরো আটক করে। এর আগে বেশ কয়েকমাস যাবত ইরান আর যুক্তরাষ্ট্র একে অপরের বিরুদ্ধে পারস্য উপসাগরীয় অঞ্চলে আগ্রাসী ব্যবহারের অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ তুলে আসছিল। ঐ সময়ে হরমুজ প্রণালীতে ৬টি তেলের ট্যাংকারে আটকের ঘটনায় ইরানের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে দাবি করা হয়, যার ফলশ্রুতিতে ঐ অঞ্চলে মার্কিন ও ব্রিটিশ নৌবাহিনীর উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। হরমুজ প্রণালী দিয়ে পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ তেল সরবরাহ হয়। এখন এমনও আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইরান হয়তো তাদের দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত হরমুজ প্রণালীই বন্ধ করে দেবে। হরমুজ প্রণালী কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি অঞ্চল, যার মাধ্যমে পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সাথে জাহাজ চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। যদি তাই হয়, তাহলে পৃথিবীর মোট তেলের মজুদের এক পঞ্চমাংশ এবং মোট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদের এক চতুর্থাংশের সাথে বিশ্বের সংযোগ ছিন্ন হয়ে যাবে। অধিকাংশই মনে করেন, এই সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই পাওয়া সম্ভব। তবে ইরান যদি আসলেই প্রণালী বন্ধ করে দেয় (যেই হুমকি তারা এখনও দেয়নি), তাহলে তেলের দাম অনেকটা বৃদ্ধি পাবে - এরকম মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের চেম্বার অব শিপিংয়ের প্রধান ডেভিড বালস্টন। যুক্তরাজ্যের মোট তেলের ৫% এবং ১৩% প্রাকৃতিক গ্যাস হরমুজ প্রণালী হয়ে আসে জানিয়ে মি. বালস্টন বলেন, "হরমুজ প্রণালী বন্ধ হলে যুক্তরাজ্যে তেল ও গ্যাসের দাম যথেষ্ট পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।" আরো পড়তে পারেন: বরগুনা হত্যাকাণ্ড: মাদক, রাজনীতি আর ক্ষমতার চক্র ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্ত হচ্ছেন না রোনালদো প্রিয়া সাহাকে বরখাস্ত করলো ঐক্য পরিষদ ইরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ না করলে তেলের দাম খুব বেশি বৃদ্ধি পাবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা বর্তমানে তেলের দামের কী অবস্থা? গত কয়েক সপ্তাহে পারস্য উপসাগরে অস্থিরতার কারণে তেলের দাম সারা বিশ্বেই কিছুটা ওঠানামা করেছে, তবে তেরের দরের এই ওঠানামা খুব একটা বেশি পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন আলফা এনার্জি গ্রুপ কনসাল্টেন্সি নামের একটি পরামর্শ প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান জন হল। মি. হল মনে করেন তেলের বাজারের দামে খুব বেশি পরিবর্তন না আসার একটি কারণ ইরানের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে চলতে থাকা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুমকি, যেগুলো শেষ পর্যন্ত শুধু হুমকিই থেকে যায়। তবে পারস্য উপসাগরে অস্থিরতা বাড়লেও এবছর তেলের দামে খুব একটা পরিবর্তন হবে না বলে মনে করেন মি. হল। যুক্তরাষ্ট্রে তেলের উৎপাদন বৃদ্ধি, চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধীরগতির হওয়ায় তাদের তেলের চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়া - এরকম কয়েকটি কারণে এবছর বৈশ্বিক বাজারে তেলের মজুদ বেশি থাকবে, যার ফলে দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। | With tensions rising after Iran seized a British-flagged tanker in the Persian Gulf, oil prices have been volatile, sparking fears a jump in petrol prices could lie ahead. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | ট্রাম্প প্রশাসন সুদানের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিতে চাইছে। আঠারো মাস ধরে এক অহিংস আন্দোলন করে সুদানের দীর্ঘদিনের শাসক ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পর দেশটির গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা তখন সুতার ওপর ঝুলছে। যুক্তরাষ্ট্রের খাতায় সুদানের নাম তখনো সন্ত্রাসবাদে রাষ্ট্রীয় মদত দেয় এমন দেশগুলোর তালিকায়। কিন্তু যদি সুদান ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে এই তালিকা থেকে সুদানের নাম বাদ দেয়া হবে। এর ফলে সুদানের জন্য অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার অনেক পথ খুলে যাবে। সুদানের এই কাহিনী অনেক জটিল, এর পেছনে আছে ৩০ বছরের দীর্ঘ ইতিহাস। সুদানে যখন ইসলামপন্থী সরকার ক্ষমতায় এলো, তখন থেকে। উনিশশো উননব্বই সালে এক সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির। ক্ষমতায় এসেই তিনি খার্তুমকে পরিণত হরেন বিশ্বের জঙ্গি জিহাদি মতাদর্শের একটি কেন্দ্রে। আল-কায়েদা এবং অন্যান্য চরমপন্থী গোষ্ঠী সুদানে গিয়ে ঘাঁটি গাড়ে। তারা যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, মিশর, ইথিওপিয়া, উগান্ডা, কেনিয়া এবং অন্যান্য জায়গায় হামলা চালায়। তারপর ১৯৯৩ সালে যখন নিউ ইয়র্কে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে প্রথম সন্ত্রাসবাদী হামলা চলে, তারপর যুক্তরাষ্ট্র সুদানকে সন্ত্রাসবাদের রাষ্ট্রীয় মদতদাতা বলে চিহ্ণিত করে। সিআইএ-র সহযোগিতা সুদানের বিরুদ্ধে জারি হয় আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা। প্রতিবেশী দেশগুলো সুদানের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি সমর্থন জানায়। এর ফলে চাপ তৈরি হয় সুদানের ওপর। তখন তারা বাধ্য হয়ে তিন বছর পর ওসামা বিন লাদেন এবং অন্যান্য জিহাদিদের বহিস্কার করে। দু'হাজার এক সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পর সুদানের নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএ-র কাছে খুবই মূল্যবান হয়ে উঠে, তাদের মধ্যে সহযোগিতা শুরু হয়। এই সহযোগিতার বিনিময়ে সুদানের নাম সন্ত্রাসবাদে মদত যোগানো দেশের তালিকা থেকে বাদ পড়ার কথা। সুদান গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করার পরও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তোলা হয়নি কিন্তু মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যরা তখনো নানা কারণে খার্তুমের ওপর ক্ষিপ্ত। এর একটা কারণ তখনো সুদান সরকার দার্ফুরে যে যুদ্ধ চালাচ্ছে সেটি। সেখানে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আসছিল। কাজেই সুদানের নাম এই তালিকায় থেকেই গেলো। ওমর আল-বশিরের সরকার তখনো তলে তলে অনেক কিছু করছে: তারা ইরান এবং হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ইসরায়েলের যুদ্ধ বিমান অন্তত দু'বার সুদানের লোহিত সাগর উপকূলে গাড়ি বহরের ওপর হামলা করেছিল। এসব গাড়ি বহরে করে নাকি হামাসের জন্য অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ২০১৬ সালে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের চাপে ওমর আল-বশির বাধ্য হলেন ইরানের সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ ঘটাতে। কিন্তু সুদানে গত বছরের গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পরও যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান বদলাতে দেরি করছিল। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের কর্মকর্তারা চাপ প্রয়োগের জন্য তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী উপায়গুলো বহাল রাখতে চাইছিলেন। তারা একই সঙ্গে মনে করছিলেন, নতুন গণতান্ত্রিক শাসন বেশিদিন টিকবে না। সেনেটররা আটকে দিলেন কিন্তু সুদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা বজায় রাখলে সেটাতে বরং উল্টো ফল হতে পারে। কারণ এই নিষেধাজ্ঞার কারণেই বরং দেশটি একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হতে পারে। যতদিন সুদানের নাম কালো তালিকায় থাকবে, ততদিন দেশটির বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে। এর ফলে সুদান অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু হয়ে থাকবে। সুদানের বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্যের হাত-পাও যেন এই নিষেধাজ্ঞার কারণে বাঁধা পড়ে আছে। বিদেশি বিনিয়োগ আটকে আছে। সুদানের ৭,০২০ কোটি ডলারের যে বিপুল ঋণের বোঝা, যেটি দিনে দিনে আরও বাড়ছে, সেটা থেকে উদ্ধার করতে আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাংকেরও কিছু করার নেই। সুদানে ক্ষুধার সমস্যাও আঁতকে উঠার মতো: জাতিসংঘের হিসেবে দেশটির ৯৬ লাখ মানুষ মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তা সংকটে আছে। এরপর কোভিড-১৯ মহামারির কারণে সবকিছু বন্ধ হয়ে গেল। সুদানে বন্যা হলো। পরিস্থিতি যেন আরও খারাপের দিকে মোড় নিল। গণবিক্ষোভের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে হয় ওমর আল-বশিরকে এরকম একটি সংকট কেবল খাদ্য বিতরণ করে মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য দরকার ব্যাপক আকারে অর্থনৈতিক সহায়তা। আরও পড়ুন: সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সুদানের নাম সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য একটা সমঝোতার চেষ্টা চলছিল মার্কিন কংগ্রেসে। এই প্রচেষ্টাটি আটকে ছিল পূর্ব আফ্রিকা এবং ইয়েমেনে আল-কায়েদার হামলার শিকার হওয়া মানুষদের পরিবারের আপত্তির কারণে। তারা ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছিলেন। সুদান ৩৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে রাজী হলো। কিন্তু সেপ্টেম্বরে দুজন ডেমোক্রেটিক সেনেটর, চাক শুমার এবং বব মেনেনডেজ এই উদ্যোগ আটকে দিলেন। কারণ তারা চাইছিলেন, নাইন-ইলেভেনের ঘটনার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলো যাতে মামলা করতে পারে, সেরকম একটা সুযোগ খোলা রাখা। তখন ট্রাম্প প্রশাসন সুদানকে এখান থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটি প্রস্তাব দিল। অগাস্টের শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও খার্তুম সফর করলেন। তিনি সুদানের বেসামরিক প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লা হামদককে একটি প্রস্তাব দিলেন: সুদান যদি ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়, তখন কংগ্রেসে এই সমঝোতার পথে যেসব বাধা, সেগুলো অপসারণের চেষ্টা করবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত মাসে সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিয়েছে। সুদান আরব লীগের সদস্য। যদি তারাও একই সিদ্ধান্ত নেয়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর তারা হবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া ৪র্থ আরব রাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনের আগে যদি এটা ঘটে, তা হবে ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য এক বিরাট অর্জন। ট্রাম্প প্রশাসন আরবদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। অন্যদিকে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া হলে সেটি হবে সুদানের জন্য এক বিরাট এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এ বছরের বন্যা সুদানের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও সংকটজনক করে তুলেছে জেনারেলদের জন্য ভালো চুক্তি ইসরায়েলের সঙ্গে এরকম সমঝোতার ঘোরতর বিরোধী হচ্ছে ইসলামপন্থীরা। কিন্তু তারা এখন ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু শুধু ইসলামপন্থীদের কাছে নয়, সুদানের রাজনীতিতে সবপক্ষের কাছেই ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের বিষয়টি বেশ বিতর্কিত। বেসামরিক রাজনৈতিক জোটে অন্তর্ভুক্ত অনেক দলই মনে করে, যে কোন কিছুর আগে ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী হামদক জানেন যে, যদি তিনি ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার সিদ্ধান্ত নেন, তার বেসামরিক জোটে ফাটল ধরবে। সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তিনি বললেন, নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। এই নির্বাচন হওয়ার কথা তিন বছরের মধ্যে। যদিও মি. হামদক এবং তার বেসামরিক সরকারই দেশ চালাচ্ছেন, সুদানের প্রকৃত ক্ষমতা এখনো আসলে জেনারেলদের হাতেই। সুদানে যে 'ট্রানজিশনাল কাউন্সিল' বা অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদ আছে, তার প্রধান হচ্ছেন লে. জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। তার ডেপুটি হচ্ছেন লে. জেনারেল মোহাম্মদ হামদান ডাগুলো, যিনি মানুষের কাছে হেমেটি নামে পরিচিত। তাদের দুজনের অধীনেই সুদানের সেনাবাহিনী। সরকারের আর্থিক নিয়ন্ত্রণও আসলে তাদের হাতে। এই অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের পেছনে আছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মিশরের সমর্থন। ইসরায়েলের সঙ্গে যেসব কথাবার্তা চলছে, সেগুলো কিন্তু মূলত এই জেনারেলদের সঙ্গেই হচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারিতে জেনারেল বুরহান ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি এই কাজটা করেছেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী হামদককে না জানিয়েই। এই দুজনের মধ্যে আবার শীগগীরই দেখা হওয়ার কথা। জেনারেল বুরহান এবং জেনারেল হেমেটি যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সমঝোতার উদ্যোগকে তাদের জন্য একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন। এই জেনারেলরা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আকাঙ্খা পোষণ করেন, কিন্তু তারা সেটা চান গণতন্ত্রের ঝামেলায় না গিয়ে। যদি ইসরায়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতা করতে পারেন, তারা মনে করছেন, এটি সম্ভব। আর এজন্যেই সুদানের গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনকারীরা দাবি তুলেছেন, এরকম যে কোন সমঝোতা সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করে দেখতে হবে। গত বছর যখন প্রবল গণঅভ্যুত্থানের মুখে ওমর আল-বশির ক্ষমতাচ্যূত হন, তখন সামনে এসে দায়িত্ব নেন জেনারেল বুরহান এবং জেনারেল হেমেটি। দু'মাস পর তাদের বাহিনী প্রায় একশো বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করে। এটি তখন ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি করেছিল। এরপর যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় এই দুই জেনারেল একটি বেসামরিক মন্ত্রিপরিষদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগিতে রাজী হন। 'পৃথক ইস্যু' মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও গত আগস্ট মাসে সুদানের প্রধানমন্ত্রী হামদকরে সঙ্গে আলোচনা করতে যান মোদ্দা কথা হচ্ছে, সুদানের জেনারেলরা এই বেসামরিক প্রশাসনকে সহ্য করছে কেবল এই কারণে যে, তাদের একটা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দরকার। অপরদিকে এই জেনারেলরা যে নৃশংসতা এবং নীতিহীন আচরণ দেখিয়েছেন, সেজন্য সুদানের সাধারণ মানুষ তাদের ক্ষমা করেনি। তবে সুদানের আগের প্রজন্মের মানুষের মনে আছে 'অপারেশেন মোজেস' নামের এক অভিযানের কথা। ১৯৮৪ সালে সুদানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জাফর নিমেরি এবং ইসরায়েলের মধ্যে এক গোপন চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির অধীনে সুদানে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া ইথিওপিয়ান ইহুদীদের বিমানে করে তুলে নিয়ে যেতে পেরেছিল ইসরায়েল। এরপর অভিযোগ উঠেছিল, জাফর নিমেরি আসলে ইসরায়েলি গুপ্ত সংস্থা মোসাদের কাছ থেকে লাখ লাখ ডলার ঘুষ নিয়ে নিজের পকেটে ভরেছেন। সুদানে ওমর আল-বশিরের আমলে আমলা এবং ব্যবসায়ীদের যে আঁতাত গড়ে উঠেছিল, তারাই বিরাট বিরাট ব্যবসায়িক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করে। এসব ব্যবসায়িক আঁতাত দিনে দিনে আরও জোরালো হচ্ছে। সুদানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন অর্থ ফুরিয়ে যাওয়ায় কর্মীদের বেতন দিতে পারে না, তখন তারা এই জেনারেলদের কাছেই হাত পাতে। যদি এখন এই আমলা-ব্যবসায়ী আঁতাতকে আরও আশকারা দেয়া হয়, সুদানে এই জনগণের সম্পদ লুঠ করা দুর্নীতিতন্ত্রই বহাল থাকবে। তবে আরেকটি আরব রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ইসরায়েলিদের জন্য নিঃসন্দেহে এক বড় পুরস্কার। কিন্তু যে তরুণ ইসরায়েলি এবং মার্কিনীরা ১৫ বছর আগে দার্ফুরে সুদানের নৃশংসতার প্রতিবাদ করেছিল, তাদের কাছে নয়। যে জেনারেলরা এসব মিলিশিয়া বাহিনীর নেতৃত্বে ছিল, সেই নৃশংসতার জন্য দায়ী, তাদেরকে বৈধতা দেয়াকে এরা একটি ভুল নৈতিক পদক্ষেপ বলেই মনে করে। তবে মি. হামদকের অবস্থান বেশ যৌক্তিক। সুদানের নাম সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্রের তালিকা থেকে বাদ দেয়া এবং ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয়া - এই দুটি ইস্যু একেবারেই আলাদা। তিনি বলছেন, সুদানকে এখনই সন্ত্রাসবাদী দেশের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। কারণ সুদান তার দেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসবাদীদের অপসারণ করেছে। কারণ সুদানের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে। আর ইসরায়েল যদি একটি সত্যিকারের গণতান্ত্রিক আরব রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পায়, সেটাই হবে ইসরায়েলের জন্য সত্যিকারের পুরস্কার। অ্যালেক্স ডি ওয়াল হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফট্ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্লেচার স্কুল অব ল এন্ড ডিপ্লোমেসির ওয়ার্ল্ড পিস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক। বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: | With Sudan in desperate straits - a collapsing economy, hyperinflation looming and a nationwide food crisis - the administration of US President Donald Trump and the Israeli government have seen an opportunity. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | হোয়াইট আইল্যান্ড আগ্নেয়গিরিঃ হঠাৎ করে শুরু হয়েছে অগ্ন্যুৎপাত নিউজিল্যান্ডের হোয়াইট আইল্যাণ্ডের এই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ আগেও এর জ্বালামুখের কাছে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন কিছু পর্যটক। পুলিশ বলছে, সেখান থেকে ২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে অগ্ন্যুৎপাতের পর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সেখানে এখন উদ্ধার অভিযান চালানো যাচ্ছে না। উদ্ধার অভিযানে এখন সাহায্য করছে নিউজিল্যান্ডের সেনাবাহিনী। হোয়াইট আইল্যাণ্ড হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে জীবন্ত আগ্নেয়গিরিগুলোর একটি। নিউজিল্যান্ডের মানুষের কাছে এই আগ্নেয়গিরিটি হোয়াকারি নামে পরিচিত। ব্যক্তিমালিকানাধীন এই দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয়। অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার সময় সেখানে কত পর্যটক ছিল, তা এখনো অজানা। দ্বীপটি পর্যটকদের কাছে বেশি জনপ্রিয় কী ঘটেছে আগ্নেয়গিরিতে স্থানীয় সময় ভোর ২:১১ মিনিটে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছিল। পর্যটক মাইকেল শ্যাড একটি নৌকা থেকে অগ্ন্যুৎপাতের দৃশ্য ধারণ করেছিলেন। তিনি দ্বীপটি ঘুরে নৌকায় ফিরে আসছিলেন। তিনি বিবিসিকে জানান, অগ্ন্যুৎপাত শুরু হওয়ার মাত্র তিরিশ মিনিট আগে তিনি নিজে ঐ জ্বালামুখে ছিলেন। "আমরা যখন মাত্র নৌকায় উঠেছি, তখন কেউ একজন জানালো অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়ে গেছে।" নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন বলেছেন, দ্বীপে বেশ কিছু পর্যটক ছিল। তার মধ্যে নিউজিল্যান্ডের নাগরিক যেমন আছেন, তেমনি অনেক বিদেশিও আছেন। | A volcano has erupted in New Zealand, leaving five people dead and several unaccounted for, police have said. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | ক্যানডিডা অরিস হাসপাতাল রোগীদের মধ্যে ওষুধ প্রতিরোধী গুরুতর সংক্রমণ তৈরি করে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ভেন্টিলেটারে দেয়া হয়। কোভিড-১৯-এ সঙ্কটাপন্ন রোগীর প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় স্টেরয়েড ওষুধ দিয়ে তার চিকিৎসা করা হয়, যেটার বিকল্প ছিল না। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্টেরয়েড অন্যদিকে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। যা তৈরি করতে পারে নতুন সমস্যা। কলকাতার ওই রোগী দীর্ঘদিন আইসিইউ-তে থেকে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার পর যখন সুস্থ হয়ে বাড়ি যাবার পথে, তখন ডাক্তাররা দেখেন তার শরীরে ক্যানডিডা অরিস নামে একধরনের ছত্রাকের সংক্রমণ হয়েছে, যা প্রাণঘাতী এবং যা সারাতে ওষুধ কাজ করে না। ওষুধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়ে ওঠা এই ক্যানডিডা অরিস প্রথম আত্মপ্রকাশ করে এক দশকের বেশি আগে- ২০০৯ সালে এবং বিশ্বের সব দেশে হাসপাতালগুলোর জন্য এই সংক্রমণ হয়ে ওঠে বড় ধরনের শঙ্কার কারণ। পৃথিবীর যে কোন দেশেই মরণাপন্ন যেসব রোগীকে আইসিইউ-তে রাখা হয়, তারা কোনরকম সংক্রমণের শিকার হলে সেটা রক্তপ্রবাহে সঞ্চালিত হবার আশংকা থাকে সবচেয়ে বেশি এবং এধরনের ইনফেকশন থেকে মৃত্যুর হার প্রায় ৭০%। "কোভিড-১৯এর দ্বিতীয় ঢেউয়ে রোগীদের মধ্যে এধরনের সংক্রমণের ঘটনা অনেক বাড়তে দেখা যাচ্ছে। আইসিইউ-তে ভর্তি হতে হচ্ছে অনেক বেশি সংখ্যক রোগীকে এবং এদের অনেককেই খুব বেশি ডোজে স্টেরয়েড দিতে হচ্ছে। সেটা একটা কারণ হতে পারে," বলছেন মুম্বাইয়ের সংক্রামক ব্যধি বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ডা. ওম শ্রীবাস্তবা। আরও পড়ুন: কোন ধরনের ফাঙ্গাসের ইনফেকশন বেশি বাড়ছে? অ্যাসপারগিলাস জাতের ছত্রাক আক্রমণ করে ফুসফুসকে যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে - অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে অ্যাসপাগিলাস ফাঙ্গাস ভারতে করোনাভাইরাসের বিপর্যয়কর দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার পর গুরুতর অসুস্থ যেসব রোগীকে আইসিইউ-তে ভর্তি করতে হচ্ছে, তাদের মধ্যে ডাক্তাররা বিপজ্জনক ছত্রাক সংক্রমণের উর্ধ্বগতি লক্ষ্য করছেন। এর মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকোরমাইকোসিস-এর প্রাদুর্ভাবের কথা ইতোমধ্যেই খবরে এসেছে। এই ফাঙ্গাস বিরল, কিন্তু বিপজ্জনক এবং নাক, চোখ এবং খুবই গুরুতর পর্যায়ে মস্তিষ্কে আক্রমণ করে। ভারতে ইতোমধ্যেই ১২ হাজার কেস শনাক্ত হয়েছে এবং ২০০জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন চিকিৎসকরা বলছেন কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে অন্যান্য ফাঙ্গাসের সংক্রমণও বাড়ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আইসিইউতে এক সপ্তাহ বা ১০ দিন থাকার পর এটা ঘটছে। ক্যানডিডা প্রজাতির ছত্রাক দু ধরনের হয়- অরিস এবং অ্যালবিকান্স। এবং এই ক্যানডিডা ফাঙ্গাস থেকে মানুষের মৃত্যু হতে পারে। তৃতীয় আরেক প্রজাতির ফাঙ্গাস আছে যার নাম অ্যাসপারগিলাস। এর থেকে র্যাশ বা ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং এটা প্রধানত ফুসফুসকে আক্রমণ করে। এর থেকেও মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। পঞ্চাশ লাখের বেশি প্রজাতির ছত্রাক বা ফাঙ্গাস আছে যেগুলোর মধ্যে মানুষের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক হল ক্যানডিডা এবং অ্যাসপারগিলাস। এই দুই প্রজাতির ছত্রাকের সংক্রমণ হলে মানুষ মারা যেতে পারে। ক্যানডিডা একটা জীবাণু যেটা অনেক জিনিসের ওপর লেগে থাকতে পারে, যেমন বাথরুমে ব্যবহৃত প্লাস্টিকের পর্দায়, কম্প্যুটার স্ক্রিনে, ডাক্তারের স্টেথোস্কোপে এবং রেলের কামরার রেলিংয়ে। ডাক্তাররা বলছেন ক্যানডিডা অরিস (সংক্ষেপে সি. অরিস) ছত্রাকের সংক্রমণ রক্তপ্রবাহে ছড়িয়ে পড়ে। অনেকসময় তা শ্বাসতন্ত্র, কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র এবং শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোকে সংক্রমিত করে। চামড়াতেও সংক্রমণ হয়। অ্যাসপারগিলাস ছত্রাকও পরিবেশের মধ্যে থাকে। সাধারণত ঘর গরম করার জন্য হিটিং সিস্টেম বা এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেমের মধ্যে এই জীবাণু বাস করে। সাধারণ সময়ে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা এই ছত্রাকের বীজ আমাদের শ্বাসতন্ত্রে ঢোকা প্রতিহত করে। কিন্তু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চামড়া, রক্ত নালীর দেয়াল এবং শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন অংশের দেয়াল কোভিড-১৯ ভাইরাসের আক্রমণে দুর্বল ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যাওয়ায় এই ফাঙ্গাস শ্বাসতন্ত্রে ঢুকে পড়তে পারে অনেক সহজে। ভারতে করোনাভাইরাসের ভয়ঙ্কর দ্বিতীয় ঢেউয়ের তাণ্ডবে হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটগুলোতে রোগীর প্রচণ্ড চাপ তৈরি হয়েছে কোভিডে গুরুতর আক্রান্ত যেসব রোগীকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয় তাদের মধ্যে ২০% থেকে ৩০% এই ছত্রাক সংক্রমণের শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহারাষ্ট্র রাজ্যের ওয়ার্ধায় ১০০০ শয্যা বিশিষ্ট কস্তুরবা হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট ডা. এসপি কালান্ত্রি। সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ার কারণ কী কোভিড-১৯ রোগীদের মধ্যে অন্তত ৫% গুরুতর সংক্রমণের শিকার হন, যাদের আইসিইউতে রেখে নিবিড় পরিচর্যায় চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। এই চিকিৎসা অনেক সময় দীর্ঘ দিন ধরে চালানো প্রয়োজন হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যাদের জন্য ভেন্টিলেটার যন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যবস্থা করতে হয়, তাদেরই ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে সবচেয়ে বেশি। প্যানডেমিকের মধ্যে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে যেহেতু প্রচুর রোগী ভর্তি করা হচ্ছে, তাই সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন। তারা বলছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজ করতে হচ্ছে সাধারণ সময়ের চেয়ে অনেক বেশি। একদিকে এজন্য তাদের ক্লান্তি, অন্যদিকে একগাদা সুরক্ষা পোশাক পরে কাজ করার অসুবিধা ও বাড়তি চাপ, যেসব নল দিয়ে রোগীদের গুরুত্বপূর্ণ ওষুধগুলো দেয়া হয় সেগুলোর অতিরিক্ত ব্যবহার, হাতে ধোয়ার অভ্যাসে ঢিলে দেয়ার প্রবণতা এবং পরিচ্ছন্নতা ও জীবাণুমুক্ত করার প্রক্রিয়াও যথাযথভাবে না হওয়ার কারণে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। "এতদিন ধরে এই মহামারি চলার কারণে স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ক্লান্তি এবং একধরনের গা-ঢিলে দেয়া ভাব চলে এসেছে। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সেটাই প্রধান কারণ," বলছেন ডা. অরুণালোক চক্রবর্তী। তিনি মানব ও প্রাণীদেহে ছত্রাকের প্রভাব বিষয়ে আন্তর্জাতিক একটি সংস্থা ইন্টারন্যাশানাল সোসাইটি অফ হিউম্যান অ্যান্ড অ্যানিমাল মাইকোলজির প্রেসিডেন্ট। অন্য কারণও আছে। ভারতের একজন চিকিৎসক বলছেন কোভিডের সাথে সাথে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের আক্রমণ 'অনেকটা হেরে যাওয়া যুদ্ধে জেতার লড়াই" স্টেরয়েড এবং অন্যান্য ওষুধের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার। যা রোগীদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দিচ্ছে এবং কোভিড রোগীদের শরীরে অন্যান্য উপসর্গ থাকায় তাদের জন্য এই ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বাড়ছে। "শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম থাকলে এই ছত্রাকগুলো আক্রমণের সুযোগ পায়। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় এটাকে 'সুযোগসন্ধানী সংক্রমণ' বলা হয়," বলেছেন লস এঞ্জলেস-এর স্বাস্থ্য পরিষেবায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার প্রধান ড. যাচারি রুবিন। ড. রুবিন বলছেন এধরনের ফাঙ্গাস সাধারণত এইচআইভি/এইডস রোগীদের জন্য বড়ধরনের আশংকার কারণ হয়। "কোভিড-১৯ রোগের সাথে সাথে এই ফাঙ্গাসজনিত রোগ কিন্তু বিরল, কিন্তু ভারতে এটা ঘটছে বেশ ব্যাপকভাবেই।" শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া এই ফাঙ্গাসের আক্রমণ শনাক্ত করা সহজ নয়। পরীক্ষার জন্য ফুসফুসের একেবারে ভেতর থেকে নমুনা সংগ্রহের প্রয়োজন হয়। ওষুধও খুবই দামি। "এই ছত্রাক সংক্রমণের চিকিৎসা ডাক্তারদের জন্য খুবই দুশ্চিন্তার এবং হতাশার। একসঙ্গে তিন তিনটা বিপর্যয় কোভিড রোগীদের জন্য। প্রথমত কোভিড-১৯ রোগীর ফুসফুস ঝাঁঝরা করে দিয়েছে, তারপর তাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে ভাইরাস সংক্রমণের বিভিন্ন উপসর্গগুলো। এরপর যোগ হচ্ছে ফাঙ্গাসের সংক্রমণ," বলছেন ডা. কালান্ত্রি। "এটা অনেকটা হেরে যাওয়া যুদ্ধে জেতার লড়াই।" অ্যাসপারগিলাস ছত্রাকের বীজবহনকারী অংশ- যা শরীরের ভেতর এই ছত্রাকের বংশবৃদ্ধি ঘটিয়ে সংক্রমণ ছড়ায় ফাঙ্গাস সংক্রমণের উপসর্গগুলো কিছু কিছু ফাঙ্গাস থেকে সংক্রমণের উপসর্গগুলোর সাথে কোভিড-১৯ রোগীর লক্ষণগুলোর মিল রয়েছে। যেমন জ্বর, কাশি এবং নিঃশ্বাস নিতে না পারা। ক্যানডিডা ফাঙ্গাসের বাড়তি উপসর্গের মধ্যে রয়েছে সাদা রং-এর র্যাশ বা ক্ষত - যার জন্য একে অনেক সময় বলা হয় "সাদা ফাঙ্গাস"। নাক, মুখ, ফুসফুস, পাকস্থলি বা নখের গোড়ায় এই ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা যেতে পারে, যে র্যাশ অনেক সময় সাদা ছানার মত দেখায়। এই ফাঙ্গাসের সংক্রমণ শরীরে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে অর্থাৎ তা রক্তে চলে গেলে প্রায়ই রক্ত চাপ কমে যাওয়া, জ্বর, পেটে ব্যথা এবং মূত্রনালীর প্রদাহের মত উপসর্গ দেখা যায়। করোনাভাইরাস নিয়ে আরও পড়তে পারেন: করোনাভাইরাস: ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাতটি পরামর্শ | In May, a middle-aged-man suffering from Covid-19 was admitted in an intensive care unit (ICU) of a hospital in the eastern Indian city of Kolkata. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | পক্ষাঘাতগ্রস্থ মানুষের দেহে স্নায়ু সচল করার সম্ভাবনা দেখছেন গবেষকরা। সেসব রোগীরা এখন নিজেরাই নিজেদের খাবার খেতে পারছেন, মেক-আপ বা প্রসাধনী ব্যবহার করতে পারছেন, টাকা গোনা বা কম্পিউটারের টাইপও করতে পারছেন। ব্রিসবেনের ৩৬ বছর বয়সী পল রবিনসন বলছেন যে, এই উদ্ভাবনী অস্ত্রোপচার তাকে এমন এক ধরনের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে যেটি তিনি কখনো কল্পনাও করেননি। সম্পূর্ণ স্বাভাবিক কাজকর্ম করার ক্ষমতা হয়তো এর মাধ্যমে আনা সম্ভব নয়, তবে ডাক্তাররা বলছেন এতে করে জীবনের পরিবর্তন আনা সম্ভব। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: উপরের শূন্য ফ্ল্যাটে পড়ে ছিল ধর্ষিতা শিশুটির মৃতদেহ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ - কজন বিশেষজ্ঞের চোখে আধুনিক দাসত্ব: যুক্তরাজ্যে সংঘবদ্ধ চক্রের সাজা এই পদ্ধতিটি কিভাবে কাজ করে? মেরুদণ্ডে কোন আঘাত প্রাপ্তির ফলে মস্তিষ্ক থেকে কোন সংকেত শরীরের অন্য কোন অংশে আর যেতে পারে না। আর এই অবস্থার ফলেই পক্ষাঘাত বা প্যারালাইসিস হয়। যাদের বিশেষ করে কোয়াড্রিপ্লেজিয়া এফেক্ট ঘটে প্যারালাইসিসের ক্ষেত্রে তাদের বেশিরভাগ অঙ্গই সাড়া দেয় না। তবে কিছু ক্ষেত্রে তাদের উপরের বাহুর পেশী নাড়াচাড়া করার মতো অবস্থা থাকে। তখন মেরুদণ্ডের সাথে সেইসব সচল স্নায়ুগুলোর সংযোগ ঘটানো হয়। ফলে পেশীগুলো আবারো সাড়া দিতে পারে। মেলবোর্নের অস্টিন হেলথ এর ডা. নাতাশা ভ্যান জিল বলছেন, "আমার বিশ্বাস করি নার্ভ ট্রান্সফার সার্জারি প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্যে একটি দূর্দান্ত বিকল্প। প্রতিদিনের কাজগুলো করতে হাতের কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে দেবার সম্ভাবনা তাদের জীবনে আরো স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনে।" কারা এই উপকার পাচ্ছেন? পল রবসন ছিলেন এমন একজন রোগী। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাইকেল দূর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় তার ঘাড়ের কাছের মেরুদণ্ড। তাকে ফিরে যেতে হয়েছিল তার মা-বাবা'র কাছে এবং তার খাবার খাওয়ার মতো কাজগুলোর জন্যে তাদের সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। "আমার হাত বা হাতের আঙ্গুলগুলো নাড়াতে পারতাম না, বাহুতেও কোন শক্তি ছিল না। আর কাঁধ দূর্বল হয়ে পড়েছিল," বলছিলেন তিনি। সেবছরের ক্রিসমাসের দুই দিন আগে অস্ত্রোপচার করে তার স্নায়ু পুনঃসংযোগ ঘটানো হয়। এরপর আবার হাত নাড়ানোর পর্যায়ে যেতে তাকে নিতে হয় ফিজিওথেরাপি। পল বিবিসি'কে বলেন, "সম্প্রতি আমি আমার নিজের বাড়িতে ফিরে গেছি এবং একা স্বাধীনভাবে থাকতে শুরু করেছি। আমি কখনোই ভাবতে পারিনি যে এটি আবার সম্ভব হবে।" পল এখন হুইলচেয়ারে রাগবি খেলা শুরু করেছেন এবং পড়ালেখা করছেন ইঞ্জিনিয়ারিং-এ। কতটা নিয়ন্ত্রণ পুনরায় ফিরে পাওয়া যায়? কেউই এই চিকিৎসা পদ্ধতির পর হয়তো কনসার্টে পিয়ানো বাজাতে পারবে না, বলছেন ডাক্তাররা। ডা. ভ্যান জিল বলছেন, "আমরা হাতের একেবারে স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে পারিনি।" তিনি বলেন যে, দুটি বিষয়ে এখানে নিশ্চিত করা হয়, একটি হলো হাত খোলা এবং বন্ধ করা। সেই সাথে কনুই সামনে বাড়ানো কোনো কিছু ধরার জন্যে। ডা. ভ্যান জিল আরো বলেন, "সুতরাং আপনি আপনার হাত খুলতে পারবেন, কোন কিছুর জন্যে সামনে বাড়াতে পারবেন এবং এরপর সেটি ধরতে বা কোন কিছুতে খোঁচা দিতে পারবেন।" "আমরা খুব সুক্ষ্ম সমন্বয়ের চেষ্টা এখানে করিনি।" যাইহোক এর ফলেও বহু মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে। এটি কি সব ধরনের পক্ষাঘাতগ্রস্থদের ক্ষেত্রে কাজে আসে? সেটি নির্ভর করছে কী ধরনের আঘাত - তার ওপর। যদি আঘাতটি মেরুদণ্ডের খুব উপরের অংশে হয় যার ফলে পুরো শরীর পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়েছে, তবে সেটিকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়। গবেষকরা বলছেন, পৃথিবীজুড়ে অন্তত আড়াই লাখ মানুষের এমন ধরনের আঘাত থাকে যাকে পুনরুদ্ধার করা সম্ভব। সুতরাং এই সমস্যায় আক্রান্তদের একটি বড় অংশের জন্যেই সুখবর রয়েছে বলে মনে করেন ডা. নাতাশা ভ্যান জিল। এটি কি সবসময়েই সফল হয়? না। ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণায় দেখা গেছে, ৫৯ জনের মধ্যে ১৬ জনের ক্ষেত্রে এই স্নায়ু প্রতিস্থাপন সফল হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অস্ত্রোপচারের সফলতা নির্ভর করে কতদ্রুত এই চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। বলা হয়, আঘাতের ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে এই অস্ত্রোপচার করলে সবচেয়ে বেশি সাফল্য মেলে। | Nerves inside paralysed people's bodies have been "rewired" to give movement to their arms and hands, say Australian surgeons. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | এক বিবৃতিতে মি: কিম বলেন, "জাতিসংঘে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ধ্বংসের জুমকি দিয়েছেন , সে ভাষণের জন্য তাকে চড়া মূল্য দিতে হবে"। ওই বিবৃতিতে মি: ট্রাম্পকে মানসিক বিকারগ্রস্ত বলেও উল্লেখ করেন কিম জং উন। এর প্রতিক্রিয়ায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার টুইটারে কিমকে 'ম্যাডম্যান' বা 'উন্মাদ ব্যক্তি' বলে মন্তব্য করেছেন। মি: ট্রাম্প তার টুইট বার্তায় লিখেছেন "উত্তর কোরিয়ার কিম জং উন যে সত্যিকার অর্থেই একজন উন্মাদ ব্যক্তি, যে আসলে তার দেশের মানুষকে হত্যা করা বা তার মানুষ না খেয়ে মরছে তা মোটেও পরোয়া করে না। সে এমনভাবে তার কর্মের স্বাদ ভোগ করবে যেমনটা আগে কখনোই হয়নি"। এর আগে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে মি: ট্রাম্প বলেছিলেন, যদি আমেরিকাকে নিজেদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য করা হয় তবে তারা উত্তর কোরিয়াকে 'সম্পূর্ণ ধ্বংস' করে দেবে। তিনি কিমকে 'আত্মঘাতী মিশনে থাকা রকেট ম্যান' বলেও ব্যঙ্গ করেন। সাম্প্রতিক সময়ে এই দুই নেতা বেশ বাকযুদ্ধে মেতেছেন, উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় করছেন। নিজের বিবৃতির শেষে মি: কিম মি: ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন "আগুনের মাধ্যমে আমি নিশ্চিতভাবে এবং অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের ভীমরতিগ্রস্ত এই বৃদ্ধকে আমার হাতের মুঠোয় আনবো।" দুই নেতার এই বাকযুদ্ধের প্রতিক্রিয়া চীন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে "পরিস্থিতি জটিল ও সংবেদনশীল' হয়ে উঠেছে। "একে অপরকে হুমকি না দিয়ে প্রত্যেকের উচিত সংযমের মধ্যে থেকে আচরণ করা" বলেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখপাত্র। রাশিয়াও আচরণ নিয়ন্ত্রণ করার আহ্বান জানিয়েছে। ক্রেমলিন মুখপাত্র বলেছেন, "দুই দেশের মধ্যে যে উত্তেজনা চরমে উঠছে তাতে মস্কো উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে"। বিবিসি বাংলার আরো খবর: ৩ মাইল লম্বা বিয়ের শাড়ি পরে বিতর্কের মুখে দম্পতি নারীদের বোকা বলে নিষিদ্ধ হলেন সৌদি ইমাম রোহিঙ্গা শিশুদের ফেরত পাঠাবে না পশ্চিমবঙ্গ রোহিঙ্গাদের এইচআইভি, হেপাটাইটিস পরীক্ষার চিন্তা | Kim Jong-un has said remarks by "deranged" US President Donald Trump have convinced him he is right to develop weapons for North Korea. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | সমুদ্রের অগভীর পানিতে আটকে থাকা তিমি যুক্তরাষ্ট্রের এই ভ্রমণ বিষয়ক ব্লগার একজন বন্ধুর সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের রাকিউরা অথবা স্টুয়ার্ট দ্বীপে ট্রেকিং করছিলেন বা পায়ে হেঁটে ভ্রমণ করছিলেন। লম্বা যে সৈকতটি হওয়ার কথা অনেকটা মরুভূমির মতো, সেখানেই তারা দেখতে পেলেন অনেকগুলো জীবনের বেঁচে থাকার কঠিন লড়াই। আরো পড়ুন: ১৭ দিন পর মৃত শাবককে বিদায় জানালো তিমি বিক্ষোভের মুখে কবর থেকে তিমি উত্তোলন কুয়াকাটা সৈকতের তিমিটির কংকাল সংরক্ষণের চেষ্টা কুয়াকাটা সৈকতের তিমিটির কংকাল সংরক্ষণের চেষ্টা ''এটা ছিল হতবাক হয়ে যাওয়ার মতো একটি মুহূর্ত,'' তিমিগুলোর আটকে থাকা দেখে বলছেন লিজ কার্লসন ''এটা ছিল হতবাক হয়ে যাওয়ার মতো একটি মুহূর্ত,'' তিনি বিবিসিকে বলছেন, ''আমরা সন্ধ্যার দিকে সৈকতে এসে দেখতে পেলাম, অগভীর পানিতে কিছু যেন আটকে আছে।'' ''যখন আমরা বুঝতে পারলাম এগুলো তিমি, তখন সবকিছু ফেলে রেখে তাদের কাছে ছুটে গেলাম।'' তিনি এর আগে বুনো অবস্থায় তিমি দেখতে পেয়েছেন। "তবে এরকম কিছুর জন্য কখনো প্রস্তুত ছিলাম না। এটা ছিল ভয়াবহ একটা ব্যাপার।'' এটা একটি ছিল ভয়াবহ ব্যাপার। এই দু'জন তাৎক্ষণিকভাবে তিমিগুলোকে খানিকটা সহায়তার চেষ্টা করেন। তারা সেগুলোকে ঠেলে গভীর পানিতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ''কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি বোঝা গেল, এখানে আপনার আসলে করার কিছু নেই।" তিনি বলছিলেন, "এগুলো বিশাল আকারের প্রাণী। তারা একজন আরেকজনের উদ্দেশ্যে কাঁদছিল, কথা বলছিল - পরস্পরকে ছোঁয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু তাদের সাহায্য করার কোন উপায় ছিল না।'' বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: এরশাদ অসুস্থ, সরকারের সাথে আলোচনা করে কে? কে এই নতুন টেস্ট ক্রিকেটার সাদমান মনোনয়নপত্র জমা শেষ: সবার নজর খালেদা, জামায়াতের দিকে হুয়াওয়ে মোবাইল কোম্পানির বিরুদ্ধে আপত্তি কেন? সৈকতে আটকে থাকা একটি তিমি যখন এই তিমিগুলোকে কোনভাবেই তারা সাহায্য করতে পারছিলেন না, তখন অনেকটা বেপরোয়া ভাবে তারা সাহায্যের অন্য কোন উপায় খুঁজতে শুরু করেন। নিউজিল্যান্ডের দক্ষিণ উপকূলে স্টুয়ার্ট দ্বীপটি খুবই প্রত্যন্ত একটি দ্বীপ, তার মধ্যে যে সৈকতে তারা হাঁটছিলেন, সেটি আরো প্রত্যন্ত। এই যুগল গত দুইদিনে এখানে আর কোন পথচারীকে দেখতে পাননি, কিন্তু তারা জানতেন, প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে একটি ট্রেকার্স হাট আছে, যেখানে হয়তো কয়েকজন সংরক্ষণ কর্মীকে পাওয়া যেতে পারে। যদিও মোবাইল ফোনের কোন নেটওয়ার্ক নেই, তবে তাদের আশা, সেখানে হয়তো একটি রেডিও থাকতে পারে। লিজের বন্ধু, জুলিয়ান রিপোল সাহায্যের জন্য ওই হাটের উদ্দেশ্যে রওনা হলেন। 'আমার হৃদয় পুরোপুরি ভেঙ্গে গেলো' সৈকতে মৃত্যুর মুখে থাকা অনেক তিমির সামনে তখন একা লিজ কার্লসন। ''আমি কখনোই তাদের কান্না ভুলবো না, যখন আমি তাদের সঙ্গে, তাদের পাশে পানিতে বসে ছিলাম, তখন তারা যেভাবে আমাকে দেখছিল, যেভাবে বেপরোয়া হয়ে তারা সাঁতার কাটার চেষ্টা করছিল অথচ তাদের ওজন তাদেরকে বালুর আরো গভীরে গেঁথে ফেলছিল,'' ইন্সটাগ্রামে তিনি লিখেছেন। ''আমার হৃদয় পুরোপুরি ভেঙ্গে গিয়েছিল।'' নিউজিল্যান্ডে এর আগেও সৈকতে তিমি আটকে পড়ার ঘটনা ঘটেছে তখন ৩০ বছরের লিজ একটি শিশু তিমি দেখতে পান এবং সেটিকে ঠেলে গভীর পানিতে পাঠানোর চেষ্টা করেন। বড় তিমিগুলো নড়ানো একেবারেই সম্ভব না হলেও, ছোট এই তিমিটাকে তিনি গভীর পানিতে পাঠাতে সক্ষম হন। ''শিশুটিকে গভীর পানিতে পাঠানোর জন্য আমার সর্বশক্তি খাটাতে হলো। কিন্তু এরপরেও সে চলে না গিয়ে সৈকতের কাছাকাছি সাঁতার কাটতে লাগলো,'' তিনি বিবিসিকে বলছেন। ''জুলিয়ান যাবার পর, আমি শুধুমাত্র শিশু তিমিটির সঙ্গে সৈকতে বসে রইলাম।'' ''আপনি এই প্রাণীগুলোর ভয়ের ব্যাপারটি অনুভব করতে পারবেন। তারা আপনার দিকে তাকিয়ে আছে, আপনাকে দেখছে, তাদের চোখগুলো অনেকটা মানুষের চোখের মতো।'' নিউজিল্যান্ডের সৈকতে আটকে থাকা তিমি পরের কয়েক ঘণ্টায় অপেক্ষা করা ছাড়া তাদের আর কিছু করার ছিল না। ''আমি জানতাম, তাদের মৃত্যু ঠেকানোর হয়তো কেনা উপায় নেই,'' ইন্সটাগ্রামে লিখেছেন লিজ।, ''বালুতে আমার গোড়ালি ডুবিয়ে হতাশায় ডুবে ছিলাম, কাঁদছিলাম, আর আমার পেছনে অসংখ্য তিমি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।'' 'তাদের চোখে অশ্রু' কয়েক ঘণ্টা পরে জুলিয়ান একদল রেঞ্জারকে সঙ্গে নিয়ে ফিরে এলো। তারা পুরো পরিস্থিতিটা পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হলেন, কিন্তু রাত নেমে আসার কারণে তাদের তখন কিছু করার ছিল না। তখনো বেশিরভাগ তিমি সাগরের ঢেউয়ের মধ্যে ছিল এবং স্রোতও বাড়ছিল। তাই লিজ এবং জুলিয়ান যখন তাদের ক্যাম্প সাইটে ফিরে এলেন, তখন তাদের মধ্যে আশা কাজ করছিল যে, হয়তো কয়েকটি তিমি সাগরে ফিরে যেতে সক্ষম হবে। সৈকতে আটকে পড়ে মারা যাওয়া একটি তিমি কিন্তু পরদিন সকালে তারা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলেন, যা আরো ভয়াবহ। তখন স্রোত কমে গেছে এবং তিমিগুলো শুকনো বালুর ওপর আটকে রয়েছে। কয়েকটি এর মধ্যেই মারা গেছে এবং অন্যগুলো সৈকতে সূর্যের আলোয় কষ্ট পাচ্ছে। ''তাদের চোখে ছিল অশ্রু'' লিজ বলছেন, ''দেখে মনে হচ্ছিল, তারা কাঁদছে এবং তারা দুঃখের শব্দ করছিল।'' এটা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল যে, একটি তিমিকেও হয়তো বাঁচানো যাবে না। কেন তিমিগুলো সৈকতে এসে আটকে পড়ে, তা নিয়ে এখনো পরিষ্কার নন বিজ্ঞানীরা একটি তিমিকে সরাতে অন্তত পাঁচজন ব্যক্তির সহায়তা দরকার হয়। কিন্তু দ্বীপ এবং সৈকতটি এতোটাই প্রত্যন্ত যে, সময়মত কোন সাহায্য পাওয়ার আশা নেই। পুরো দ্বীপটিতে মাত্র কয়েকশো ব্যক্তি বসবাস করে। সুতরাং রেঞ্জারদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হল, যাকে তারা বলেন 'হৃদয় ভাঙ্গা সিদ্ধান্ত'। তখন একমাত্র বিকল্প হল, এই তিমিগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি আর কষ্টকর মৃত্যুর পথে ফেলে যাওয়া। নিউজিল্যান্ডের সংরক্ষণ দপ্তর বলছে, এর মানে হল তারা যেখানে আছে, সেখানে ফেলে যাওয়া এবং প্রকৃতিতে তার নিয়ম মতো কাজ করতে দেয়া। সংস্থাটি বলছে, এটা পরিষ্কার নয়, তিমিগুলো কেন এভাবে সৈকতে আটকে পড়েছিল। কোন একটি তিমির সৈকতে আটকে পড়া নিউজিল্যান্ডে নতুন নয়, কিন্তু এভাবে দলবেঁধে সৈকতে আটকে পড়ার ঘটনা বেশ দুর্লভ। এটা হয়তো বিভ্রান্তি হয়ে অগভীর পানিতে চলে এসেছিল এবং সৈকতে আটকে পড়ে। পাইলট তিমি সামাজিকতার কারণে বেশ পরিচিত। সুতরাং এমন হতে পারে, যখন একটি তিমি দিক ভুল করে সৈকতে এসে আটকে পড়ে, অন্য তিমিগুলো হয়তো তাদের উদ্ধার করতে এসে নিজেরাও বিপদে পড়েছিল। সমুদ্রের তলে তিমিরা যেভাবে একসঙ্গে হয় | "It was the worst night of my entire life." That's how Liz Carlson describes finding 145 whales beached and dying on a remote New Zealand beach. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | চার ধর্ষক ও হত্যাকারী অক্ষয় ঠাকুর, বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত এবং মুকেশ সিং নামের চারজনকে ২০১৩ সালে একটি আদালত ফাঁসির আদেশ দেয়। দিল্লির তিহার কারাগারে এই চারজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ২০১৫ সালের পর থেকে ভারতে এটি হচ্ছে একমাত্র ফাঁসি কার্যকরের ঘটনা। এই ঘটনায় নিহত তরুণী ভারতে 'নির্ভয়া' নামে পরিচিতি পেয়েছিল - আর চাঞ্চল্যকর সেই মামলার পর ভারতে বদলে গিয়েছিল ধর্ষণের সংজ্ঞা ও শাস্তিও। এর আগে নির্ভয়ার পরিবার যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করতে পাতিয়ালা হাউস কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলো। ২০১২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছরের তরুণী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করেছিল ওই চার জন। গণধর্ষণের পর শারীরিক নিপীড়ন চালিয়ে নগ্ন অবস্থায় চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল নির্ভয়াকে। নির্ভয়া এবং তার পুরুষ বন্ধুর উপর নৃশংস অত্যাচার চালায় তারা। সেই মামলায় আগেই ওই চার জনকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৩ বছর বয়সী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করে হত্যার দায়ে ছয় আসামির মধ্যে চারজনের ফাঁসির আদেশ দেয় দিল্লির ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ২০১৪ সালে দিল্লি হাইকোর্ট চারজনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে। ২০১৭ সালে সেই রায় পুনর্বিবেচনা করে দেখতে আদালতে আর্জি জানিয়েছিল অন্যতম অভিযুক্ত অক্ষয় ঠাকুর সিং। গত মাসেই অবশ্য তার সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে। | Four Indian men convicted of the gang rape and murder of a student in Delhi in 2012 have been hanged. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | পুরো ইটালি গত দুই সপ্তাহ ধরে অবরুদ্ধ রয়েছে এনিয়ে দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হলো করোনাভাইরাসের কারণে। ইতালিতে ৩৫ হাচার ৭১৩ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪ হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়া লোমবার্ডি অঞ্চলে একদিনে সর্বোচ্চ ৩১৯ জন মারা গেছে। করোনাভাইরাসে চীনের পরে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশ ইতলি। এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে অন্তত ৮ হাজার ৭৫৮ জন মারা গেছেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন চীনে। সারাবিশ্বে এখন পর্যন্ত দুই লাখের বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে, যার মধ্যে ৮০% এর বেশিই ইউরোপে ও পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে - বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যার অনেকাংশই এশিয়ার মধ্যে পড়ে। করোনাভাইরাস গাইড: আপনার প্রশ্নের উত্তর করোনাভাইরাস ঠেকানোর সুযোগ কতটা কাজে লাগিয়েছে বাংলাদেশ করোনাভাইরাস: লক্ষণ দেখা দিলে আলাদা থাকতে হবে কীভাবে করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে যেভাবে নিরাপদ রাখবেন করোনাভাইরাস ঠেকাতে যে সাতটি বিষয় মনে রাখবেন যে পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে করোনাভাইরাস অনেক দেশেই মানুষের মধ্যে সামাজিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখার জন্য কঠিন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রধান প্রধান অনুষ্ঠানগুলো বাতিল করা হয়েছে যেন সংক্রমণের হার কমে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ না পড়ে। বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস ঘেব্রেয়েসাস বলেন, "মহামারি নিয়ন্ত্রণে দেশগুলোকে অবশ্যই মানুষকে পরীক্ষা, চিকিৎসা এবং ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা মানুষ খুঁজে বের করার পাশাপাশি মানুষকে আলাদা (আইসোলেট) করতে হবে।" প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ইতলি অবরুদ্ধ পরিস্থিতিতে রয়েছে। সেখানকার সরকার ভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্ট করছে। সেখানকার মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হলেও মৃত্যুর সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইমার্জেন্সির পরিচালক মাইক রায়ান ধারণা করেছেন, ইতলির এই পরিস্থিতির কারণ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মধ্যে সংখ্যায় 'আশ্চর্য রকম' বেশি মানুষের মধ্যে সংক্রমণ হওয়া এবং জনসংখ্যায় বয়োবৃদ্ধ নাগরিকের সংখ্যা বেশি হওয়া। যুক্তরাষ্ট্রের কাইজার পারমানেন্টে গবেষণা কেন্দ্রে এরই মধ্যে মানুষের ওপর করোনাভাইরাসের প্রতিষেধকের প্রথম পরীক্ষা চালানো হয়েছে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটি নিশ্চিতভাবে কাজ করবে কিনা তা জানতে বেশ কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। জনশূন্য হয়ে পড়েছে ইটালির শহর, সড়ক, পর্যটন কেন্দ্রগুলো ইউরোপের অন্যান্য জায়গার পরিস্তিতি কী? স্পেনে এর মধ্যে ৫৯৮ জন মারা গেছে এবং ১৩ হাজার ৭১৬ জন সংক্রমিত হয়েছে। ফ্রান্সে সংক্রমিত হার অন্তত ১৬% বৃদ্ধি পেয়েছে মঙ্গলবার, দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ৭৩০ জনে। মৃত্যু হয়েছে ১৭৫ জনের, যাদের মধ্যে ৭% এর বয়স ছিল ৬৫ বছরের নিচে। যুক্তরাজ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৪'এ। জার্মানিতে এখন পর্যন্ত মারা গেছে ১২ জন এবং ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ১৯৮ জনের মধ্যে। টেলিভিশনে দেয়া এক বক্তব্যে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল জার্মানদের অনুরোধ করেছেন যেন তারা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলেন এবং মহামারি পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারকে সহায়তা করে। বেলজিয়ামে এখন পর্যন্ত ১৪ জন মারা গেছে এবং ১ হাজার ৪৮৬ জনের মধ্যে শনাক্ত করা গেছে রোগ। | The number of people dying from coronavirus in Italy has risen by 475 in one day to nearly 3,000 - the biggest increase since the outbreak. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | উইচ্যাট লোগো সাইবারস্পেস প্রশাসনের পক্ষ বলা হচ্ছে এই তিনটি প্ল্যাটফর্মে সন্ত্রাস-সম্পর্কিত বিষয়, গুজব এবং অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। প্রশাসন আরও বলছে এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা লংঘিত হচ্ছে। ইন্টারনেটের ওপর চীনা কর্তৃপক্ষের কঠোর সেন্সরশিপ রয়েছে। তারা নিয়মিতভাবে স্পর্শকাতর বিষয়বস্তু বন্ধ করে দেয় অথবা স্পর্শকাতর বিষয় কেউ খুঁজতে চেষ্টা করলে তা আটকে দেয়। ওয়েবো হচ্ছে টুইটারের মত মাইক্রোব্লগিং সাইট, উইচ্যাট তাৎক্ষণিক বার্তা পাঠানোর মেসেজিং অ্যাপ এবং বাইদু তিয়েবা একটি জনপ্রিয় অলোচনা ও বিতর্কের ফোরাম। এই তিনটি সাইটেই সক্রিয়ভাবে অংশ নেন চীনের কোটি কোটি মানুষ। চীনের সাইবারস্পেস প্রশাসন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে তারা এই তিনটি প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে সহিংসতা, সন্ত্রাস, মিথ্যে গুজব, অশ্লীলতা, পর্নোগ্রাফি এবং পাশাপাশি জাতীয় নিরাপত্তা ও জন নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ ও সমাজ বিরোধী কর্মকাণ্ড ছড়াচ্ছে। রয়টার্স বাইদুকে উদ্ধৃত করে বলছে তারা এর জন্য "দুঃখপ্রকাশ" করেছে এবং বলেছে তারা "সরকারের সঙ্গে সক্রিয় সহযোগিতা" করবে এবং ''আরও কঠোর নজরদারি বাড়াবে।" তবে উইচ্যাট আর ওয়েবোর মালিক সংস্থা টেনসেট-এর পক্ষ থেকে এখনও কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। চীনে ইন্টারনেট কনটেন্টের ওপর ইতিমধ্যেই সরকারের কড়া নজরদারি এবং সেন্সরশিপ আছে, কিন্তু পর্যবেক্ষকরা বলছেন জনপ্রিয় এই তিনটি সাইটের বিরুদ্ধে তদন্ত চালু করা হলে এই সাইট যারা চালায় তাদের দিক থেকেও বাড়তি নিয়ন্ত্রণ আরোপের তাগিদ বাড়বে বলে কর্তৃপক্ষ মনে করছে। গত মাসে চীন কর্তৃপক্ষ তারকাদের নিয়ে গালগল্পের ৬০টি জনপ্রিয় সাইট রাতারাতি বন্ধ করে দিয়েছিল এই অভিযোগে যে তাদের কনটেন্ট দেশটির ''সামাজিক মূল্যবোধের'' অবক্ষয় ঘটাচ্ছে। মে মাসে সরকার একটি নতুন বিধিমালাও জারি করেছে যার আওতায় কম্যুনিস্ট পার্টির অনুমোদন প্রাপ্ত সম্পাদকীয় কর্মকর্তাদের অনলাইন সংবাদ পোর্টালগুলোর ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক এক রিপোর্টে বলা হয় ইন্টারনেট স্বাধীনতায় সবচেয়ে বেশি হস্তক্ষেপ করে যেসব দেশ তার তালিকায় শীর্ষস্থান চীনের। ওই রিপোর্টে বলা হয় ইন্টারনেট ব্যবহার করে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ প্রকাশের সুযোগ সবচেয়ে বেশি মাত্রায় খর্ব করা হয়েছে চীনে এবং মত প্রকাশের জন্য কঠোর শাস্তির নজিরও চীনেই সবচেয়ে বেশি। চীন বিদেশি সামাজিক যোগাযোগ সাইটএবং অ্যাপস্ যেমন ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম এবং টুইটার বন্ধ করে দিয়েছে। গুগুলের মত সার্চ এনজিন চীনে বন্ধ, বহু বিদেশি সংবাদমাধ্যমের ওপরও চীনে বিধিনিষেধ রয়েছে। | China says it is investigating its largest social media platforms - Weibo, WeChat and Baidu Tieba - for alleged violations of cyber security laws. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | সাংবাদিক জামাল খাসোগজি "এটা শুধু ন্যায়বিচারই নিশ্চিত করবে না...একই ঘটনার পুনরাবৃত্তিও রোধ করবে," এক বিবৃতিতে বলেন তিনি। জামাল খাসোগজি হত্যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশের পর হাতিস চেংগিসের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি এলো। সৌদি আরব ইতোমধ্যেই ওই রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে। যুবরাজ মোহাম্মদ বিন-সালমান ওই হত্যাকাণ্ডে তার কোন ধরণের ভূমিকা থাকার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন। বিবিসি বাংলায় আরও পড়ুন: খাসোগজিকে 'কোরবানির পশু' বলে বর্ণনা করেছিল এক ঘাতক খাসোগজিকে খুন করা হয়েছে, নতুন সৌদি স্বীকারোক্তি খাসোগজি হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন কারা এই ১৫ জন? খাসোগজি হত্যার দায়ে সৌদি আরবে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড জামাল খাসোগজি (বাঁয়ে) হত্যার জন্য দায়ী করা হয় সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে (ডানে) - যা তিনি অস্বীকার করেন ২০১৮ সালের অক্টোবরে তুরস্কে সৌদি কনস্যুলেটে খুন হন সাংবাদিক জামাল খাসোগজি। তার মৃতদেহও খুঁজে পাওয়া যায়নি। ৫৯ বছর বয়সী মিস্টার খাসোগজি একসময় সৌদি সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন কিন্তু পরে রাজ পরিবারের সাথে তার দূরত্ব তৈরি হলে ২০১৭ সালে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান। সেখান থেকে তিনি প্রতিমাসে ওয়াশিংটন পোস্টে কলাম লিখতেন, যাতে মূলত সৌদি যুবরাজের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করা হতো। তবে প্রথম কলামেই তিনি আশংকা প্রকাশ করেছিলেন যে তাকে ভিন্নমত দমনের অংশ হিসেবে গ্রেফতার করা হতে পারে। হাতিস চেংগিস যা বলেছেন সোমবার দেয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, "একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে নিষ্ঠুর হত্যার যিনি নির্দেশ দিয়েছেন সেই যুবরাজকে কোন ধরণের বিলম্ব ছাড়াই শাস্তি দেয়া উচিৎ"। "যুবরাজকে শাস্তি না দেয়া হলে ..তা আমাদের সবাইকেই বিপদাপন্ন করে তুলবে এবং এটা হবে মানবতার ওপর একটি দাগের মতো"। মিস চেংগিস একজন তুর্কি শিক্ষাবিদ ও গবেষক। তিনি বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে যুবরাজ থেকে দূরত্বে থাকা এবং সৌদি আরবের ওপর নিষেধাজ্ঞার মতো শাস্তি দেয়ার আহবান জানান। ওদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরাসরি যুবরাজ মোহাম্মেদকে শাস্তি না দেয়ার সিদ্ধান্তের কারণে তার দলের মধ্য থেকেই সমালোচিত হচ্ছেন। | The fiancée of the murdered Saudi journalist Jamal Khashoggi has called for Saudi Arabia's crown prince to be "punished without delay" over his killing. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | যানবাহন পুড়েছে অনেক রোববার রাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২০ জন নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। গত এক দশকের মধ্যে চলমান ঘটনাবলীকে ভারতে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে। দেশটির বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ ও বিপক্ষ গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের সূচনা হয়েছিলো রোববার, যা পরে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয় বলে সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন। ছবি এবং ভিডিওতে সয়লাব হয়ে গেছে সোশ্যাল মিডিয়া। এসব ছবিতে দেখা গেছে, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি লাঠি-রড নিয়ে মুখোমুখি অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে সংঘর্ষকারীরা। বিবিসি নিউজ অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে মুসলমান ও হিন্দু - এই দুই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মানুষই আছেন। এছাড়া আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও অন্তত ১৯০ জন। বিবিসি সংবাদদাতারা বলছেন, আহতদের মধ্যে গুলিবিদ্ধসহ সব ধরণের হামলার শিকার ব্যক্তিরাই আছেন। দিল্লি থেকে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষ জানাচ্ছেন, মঙ্গলবারও পরস্পরের প্রতি পাথর নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক ভাংচুরের ঘটনা ঘটে দিল্লির উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে। তবে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ জাফরাবাদ মেট্রো স্টেশন ও মৌজপুর চক থেকে বিক্ষোভকারীদের জোরপূর্বক সরিয়ে দিয়েছে। নাগরিকত্ব আইনের পক্ষ-বিপক্ষের মানুষেরা এখানে পরস্পরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলো। দিল্লির সহিংসতা: 'এখানে দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি' শহরে ট্রাম্প, তবু যেভাবে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল দিল্লি অন্তত দুটি মসজিদে হামলা হয়েছে বুধবার সকাল নাগাদ পুরো এলাকায় পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। গভীর রাতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল সহিংসতা হয়েছে এমন কিছু এলাকা ঘুরে দেখেছেন এবং শীর্ষ পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। তিনি সিলমপুর, জাফরাবাদ, মৌজপুর এবং গোকুলপুরি চক এলাকা পরিদর্শন করেন। দিল্লিতে ব্যাপক সহিংসতার প্রেক্ষিতে আজ বৈঠকে বসতে যাচ্ছে নিরাপত্তা বিষয়ক কেবিনেট কমিটি। মিস্টার দোভাল এই কমিটির সামনে পরিস্থিতির বিস্তারিত তুলে ধরবেন। শুভজ্যোতি ঘোষ আরও জানাচ্ছেন যে স্কুল বন্ধ আছে এবং বোর্ডের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। ওদিকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় এবং জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ার শিক্ষার্থীরা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাড়ির সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করেছে মঙ্গলবার রাতেই। তবে পুলিশ জলকামান দিয়ে রাত সাড়ে তিনটা নাগাদ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তিন দিন ধরে চলছে সংঘর্ষ সহিংসতা আবার রাতেই এক নজিরবিহীন আদেশে হাইকোর্ট তিনদিন ধরে চলা সহিংসতায় আহতদের নিরাপদে হাসপাতালে নেয়া ও জরুরি চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসনকে। বিভিন্ন হাসপাতালের ডাক্তারদের পিটিশনের শুনানি হয়েছে রাতেই, বিচারপতি এস মুরলীধরের বাসায় দুজন বিচারপতির বেঞ্চে। ওদিকে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ পুলিশ ও অন্য কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে মঙ্গলবারই স্পেশাল পুলিশ কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া এসএন শ্রীবাস্তবও যোগ দিয়েছেন। তবে সহিংসতার ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে এখন তীব্র সমালোচনাও হচ্ছে বলে জানান শুভজ্যোতি ঘোষ। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসি সংবাদদাতারা বলছেন যে সংঘর্ষকারীদের কারও কারও হাতে বন্দুক দেখা গেছে। সহিংসতা হয়েছে মূলত উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে। এসব এলাকার সড়কগুলো এখন অনেকটা ধ্বংসস্তূপের মতো রূপ নিয়েছে, রাস্তায় পুড়ছে যানবাহন, উড়ছে ধোঁয়া - বলছিলেন বিবিসি হিন্দির সংবাদদাতা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী। হামলার মুখে অনেকেই বাড়িঘর ছাড়ছেন তিনি আংশিক পুড়ে যাওয়া মসজিদ দেখেছেন, যেখানে মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে কুরআনের পাতা। আরেকটি মসজিদেও হামলা হয়েছে মঙ্গলবার বিকেলে। ব্যাপক প্রচার হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে একদল লোক মসজিদের মিনারে উঠছেন। সংঘর্ষ হওয়া এলাকাগুলো দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্তের কাছে। এখানে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সাংবাদিকসহ অনেকেই টুইট করেছেন এই বলে যে হামলাকারীরা তাদের ধর্মীয় পরিচয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। একজন ফটো সাংবাদিক বলেছেন, তাকে তার প্যান্ট খুলে ধর্মীয় পরিচয় নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। তবে দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র এমএস রাধোয়া মঙ্গলবারই বলেছেন যে পরিস্থিতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে। তিনি জানান, পর্যাপ্ত পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। | Delhi remains on edge after three nights of rioting, with reports of Muslim homes and shops being targeted by violent mobs. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল উইলিয়াম বার ''এখন পর্যন্ত আমরা এমন জালিয়াতির প্রমাণ দেখতে পাইনি যা নির্বাচনের ফলাফল পাল্টে দিতে পারে,'' বলছেন দেশটির প্রধান এই আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা। পরাজয় স্বীকার না করা ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য তার এই অবস্থানকে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে। একদিকে যখন জো বাইডেনের বিজয়ের ফলাফলের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে, তখন পরাজিত হওয়া রাজ্যগুলোয় একের পর এক মামলা করে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী শিবির। যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জো বাইডেন পেয়েছেন ৩০৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট, যেখানে ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২৩২টি। ভোট পাওয়া দিক থেকে মি. ট্রাম্পের চেয়ে ৬২ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন মি. বাইডেন। তবে তেসরা নভেম্বরের নির্বাচনের পর থেকেই কোন তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই একের পর পর এক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ করে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যখন মি. বারের এই ঘোষণা এলো, তখনো মি. ট্রাম্প কোন তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই টুইটারে আবারো ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন। নির্বাচন নিয়ে একটি দাবি করা হয়েছে যে, ভোটিং মেশিনগুলো হ্যাক করে এমনভাবে প্রোগ্রামিং করা হয়েছে যে, সেটি ভোটের ফলাফল পাল্টে জো বাইডেনের পক্ষে নিয়ে গেছে। বিবিসি বাংলায় আরো পড়তে পারেন: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জালিয়াতির পাঁচ অভিযোগ কতটা সত্যি? শীর্ষস্থানীয় নির্বাচনী কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প ট্রাম্পের পরাজয় বিশ্বের দক্ষিণপন্থী ‘কঠোর নেতাদের’ জন্য কী অর্থ বহন করে? আমেরিকায় জো বাইডেনের জয়, যেসব সুবিধা পেতে পারে বলে বাংলাদেশ আশা করছে বিচার বিভাগ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ভোটিং মেশিন জালিয়াতির কোন প্রমাণ খুঁজে পায়নি যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে দেয়া একটি সাক্ষাৎকারে সেই দাবির প্রসঙ্গে মি. বার বলেছেন, বিচার বিভাগ এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এই দাবি তদন্ত করে ''এখন পর্যন্ত এর সপক্ষে কোন প্রমাণ খুঁজে পায়নি''। গত মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের আইন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে নির্বাচনে অনিয়মের বিষয়ে গ্রহণযোগ্য অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখার জন্য তিনি নির্দেশনা দেন। ''যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে সব কিছু সমাধানের একটি মাধ্যম হিসাবে ব্যবহারের প্রবণতা রয়েছে। কেউ যদি কিছু পছন্দ না করে, তখন তারা চায় যে, বিচার বিভাগ এসে সেটার তদন্ত করতে শুরু করুক,'' বলছেন মি. বার। তাকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অন্যতম মিত্র বলে মনে করা হয়। তার এই মন্তব্যের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি এবং জেনা এলিস একটি যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, ''অ্যাটর্নি জেনারেলের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি, অনিয়মের এবং পদ্ধতিগত জালিয়াতির যথেষ্ট প্রমাণের ব্যাপারে সেটা নিয়ে তদন্ত বা জ্ঞান ছাড়াই তিনি মতামত দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।'' উইলিয়াম বারের এই মন্তব্যের পর সিনেটে ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার বলেছেন, ''আমার ধারণা, এরপরে তিনিই হয়তো বরখাস্ত হতে চলেছেন।'' এর আগে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে 'অত্যন্ত ভুল' মন্তব্য করার জন্য সাইবার সিকিউরিটি এবং ইনফ্রাসট্রাকচার সিকিউরিটি এজেন্সি (সিসা) প্রধান ক্রিস ক্রেবসকে বরখাস্ত করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মি. ক্রেবস টুইটারে বলেছিলেন, ''নির্বাচনী পদ্ধতি জালিয়াতির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ৫৯ জন নির্বাচনী নিরাপত্তা কর্মকর্তা একমত হয়েছেন যে, আমাদের জানা মতে কোন ঘটনাতেই এরকম অভিযোগের ভিত্তি নেই এবং প্রযুক্তিগতভাবেও সেটা সম্ভব নয়।'' বিবিসি বাংলায় অন্যান্য খবর: বিনিয়োগের বদলে নাগরিকত্ব: কোন দেশে বেশি যাচ্ছেন বাংলাদেশিরা? ফ্রান্সের ইমাম ও মুসলিমরা ফরাসী মূল্যবোধের সনদ নিয়ে কতটা চাপে যে ১৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা হবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে ত্রিশ বছরের জেল - সুপ্রিম কোর্ট | US Attorney General William Barr says his justice department has found no proof to back President Donald Trump's claims of fraud in the 2020 election. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | নরওয়ের তরুণ ফুটবল সমর্থক: সুখী দেশের সুখী নাগরিক। জাতিসংঘের বিশ্ব সুখ রিপোর্ট 'আপেক্ষিক সুখ' মেপে থাকে - মানুষ কত সুখী আছে এবং কেন। এই রিপোর্ট অনুযায়ী, নরওয়ের সাথে ডেনমার্ক, আইসল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড এবং ফিনল্যান্ড তালিকার প্রথম পাঁচটি স্থানে আছে। তালিকার শেষে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের ওপরের চারটি স্থানে আছে বুরুন্ডি, তানজানিয়া, সিরিয়া এবং রোয়ান্ডা। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তান ৮০তম স্থানে থেকে সব চেয়ে সুখী। বাংলাদেশ ১১০ এবং ভারত ১২২তম স্থানে। সব চেয়ে অসুখী ১৪১তম স্থানে থাকা আফগানিস্তান। জাতিসংঘ ২০ মার্চ আন্তর্জাতিক সুখ দিবস উপলক্ষে এই রিপোর্ট প্রকাশ করে। এই রিপোর্টের জন্য প্রতি বছর ১৫০টি দেশে ১,০০০-এরও বেশি মানুষকে একটি সোজা, আপেক্ষিক প্রশ্ন করা হয়। 'একটি মই কল্পনা করুন, যার সিঁড়িগুলো শূন্য থেকে ১০ পর্যন্ত নম্বর দেয়া আছে,' প্রশ্নটি জিজ্ঞেস করে। আরো পড়তে পারেন: বাংলাদেশে জঙ্গি-বিরোধী অভিযান নিয়ে প্রশ্ন কেন? কীভাবে দুর্ধর্ষ জঙ্গি নেতা হয়ে উঠলেন মুফতি হান্নান? দক্ষিণ এশিয়ায় সব চেয়ে সুখী দেশ: ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাকিস্তানী সমর্থকদের আনন্দ। 'মই-এর সব চেয়ে উঁচু সিঁড়িটা আপনার জন্য সব সম্ভাব্য সব চেয়ে সুখকর জীবন, আর মই-এর সব চেয়ে নিচের সিঁড়িটি আপনার জন্য সব চেয়ে খারাপ জীবন। আপনার মতে আপনি এই মুহূর্তে মই-এর কোন সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে আছেন?' গড় ফলাফল হচ্ছে দেশটির স্কোর - নরওয়ের ৭.৪ থেকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের ২.৬৯. তবে রিপোর্টটি আর্থ-সামাজিক পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করেও দেখেছে একটি দেশ অন্য দেশের চেয়ে কেন বেশি সুখী। এই বিশ্লেষণে দেশের অর্থনৈতিক শক্তি (দেশজ সম্পদ) , সামাজিক নিরাপত্তা, গড় আয়ু, ব্যক্তি স্বাধীনতা, দুর্নীতি নিয়ে ধারনা। জাতিসংঘ এই রিপোর্ট পাঁচ বছর ধরে প্রকাশ করে আসছে, এবং প্রতি বছরই উত্তর ইউরোপের নরডিক দেশগুলো শীর্ষ অবস্থানগুলো দখল করেছে। রিপোর্টে দেখা যায় পশ্চিম ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার দেশগুলো সব চেয়ে সুখী। অন্যদিকে, সংঘাত গ্রস্ত দেশগুলো, যেমন সিরিয়া, ইয়েমেন এবং দক্ষিণ সুদান কম স্কোর পেয়েছে। | Norway is the happiest place on Earth, according to a United Nations agency report - toppling neighbour Denmark from the number one position. |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | সবচেয়ে বেশি ছড়িয়েছে যেসব তত্ত্ব ও দাবি, তার কয়েকটি খতিয়ে দেখেছে বিবিসি। ১. যোগ্যতা নিয়ে ভুয়া দাবি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জন্মস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন যে তাঁর জন্ম আমেরিকার বাইরে, তাই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালনে মি. ওবামা অযোগ্য - ঠিক একই রকম অভিযোগ তুলে মি. ট্রাম্প বলেছেন মিস হ্যারিসও ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালনের যোগ্য নন। মি. ওবামাকে নিয়ে তাঁর ওই বক্তব্য আমেরিকায় "বার্থার" বা "ওবামার জন্ম তত্ত্ব" হিসাবে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। সেই দাবি পরে ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়। মিস হ্যারিসের জন্ম আমেরিকায় ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের ওকল্যান্ডে। তার বাবা জ্যামাইকান এবং মা ভারতীয় বংশোদ্ভুত। কেউ আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করলে তিনি আমেরিকান নাগরিক হিসাবে বিবেচিত হন, ফলে প্রেসিডেন্ট বা ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালনে তাঁর কোন বাধা নেই। কিন্তু গত সাত দিনে অনলাইনে "কমালা হ্যারিস বার্থার" এই শব্দগুলো ব্যবহার করে তাঁর জন্ম নিয়ে কোন রহস্য আছে কি-না, তা খোঁজার হিড়িক পড়ে গেছে। গুগল ট্রেন্ডে অনেকে তাঁর জন্ম স্থান কোথায়, সে নিয়ে খোঁজখবর শুরু করেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার এই সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলের জন্ম কোথায়, তা নিয়ে ২০১৭ সাল থেকে অনলাইনে মানুষ খোঁজখবর নিচ্ছে বলে জানাচ্ছে মিডিয়া ম্যাটারস্ ফর আমেরিকা নামে একটি মুক্তমনা মিডিয়া পর্যবেক্ষণ সংস্থা। তাঁর জন্ম আমেরিকার বাইরে এমন দাবি সোশাল মিডিয়াতে আরও ছড়িয়েছে 'কিউআনোন' নামে ষড়যন্ত্র তত্ত্বে বিশ্বাসী একটি গোষ্ঠী। এই মতাদর্শে বিশ্বাসীরা মনে করেন যে সরকার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং সংবাদ মাধ্যমের উপরতলায় যেসব শিশু যৌন নিপীড়নকারী রয়েছে, তাদের ব্যাপারে গোপনে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন মি. ট্রাম্প। 2. মতাদর্শ ও পরিচয় নিয়ে ভুয়া দাবি দাবি করা হয়েছে মিস হ্যারিস ডানপন্থী মতাদর্শে বিশ্বাসী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর সাথে একাত্মতা দেখাতেন। আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে ভাইস-প্রেসিডেন্টের মনোনয়ন গ্রহণ করার আগে পর্যন্ত তিনি কখনও কৃষ্ণাঙ্গ বংশোদ্ভুত আমেরিকান হিসাবে নিজের পরিচয় তুলে ধরেননি। বিবিসি দেখেছে এটা সঠিক নয় - কারণ মিস হ্যারিস তার দ্বৈত বংশ পরিচয় সবসময় খোলাখুলিভাবে তুলে ধরেছেন। তাঁর আত্মজীবনীতে মিস হ্যারিস লিখেছেন: "আমার মা সবসময় সচেতন ছিলেন যে তিনি দু'টি কৃষ্ণাঙ্গ কন্যাকে বড় করছেন। "তিনি জানতেন, যে দেশকে তিনি এখন তাঁর স্বদেশ বলে বেছে নিয়েছেন, সেই আমেরিকায় তাকে মায়া (তার বোন) আর আমাকে আত্মবিশ্বাসী ও গর্বিত নারী হিসাবে বড় করে তুলতে হবে। তিনি এই লক্ষ্য অর্জনে বদ্ধপরিকর ছিলেন।" ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা লিখেছে: "হ্যারিস তাঁর ভারতীয় সংস্কৃতিকে বুকে নিয়ে বড় হয়েছেন, কিন্তু নিজেকে একজন আফ্রিকান-আমেরিকান হিসাবে তুলে ধরে তিনি গর্ব বোধ করেন।" বিভ্রান্তিমূলক ....একটি মিম ছড়ানো হয়েছে যেখানে এপি বার্তা সংস্থার দুটি খবর পাশাপাশি রেখে দেখানো হয়েছে ২০১৬ এবং ২০২০-এ সংস্থা তার পরিচয় লিখেছে দু'রকম। বিবিসি বলছে এই মিমের কারণে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। উপরের এই মিমটি ছড়ানো হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে, যেটি মিস হ্যারিসের পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। ফেসবুক আর টুইটারে এই মিম কয়েক হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে, যেটি তৈরি করা হয়েছে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) বার্তা সংস্থার দুটি খবর পাশাপাশি রেখে। একটিতে রয়েছে তাদের ২০১৬র শিরোনাম, যেটিতে বলা হয়েছে মিস হ্যারিস প্রথম ভারতীয় বংশোদ্ভুত সেনেটার হয়েছেন। দ্বিতীয়টি এপির সাম্প্রতিক শিরোনাম, আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসাবে তাঁর নাম ঘোষণার পর। এতে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে যে মিডিয়া মিস হ্যারিসকে কৃষ্ণাঙ্গ আমেরিকান হিসাবে তুলে ধরতে শুরু করেছে জো বাইডেনের রানিং মেট হিসাবে তার নাম ঘোষণার পর থেকে। অথবা বলার চেষ্টা হয়েছে যে মিস হ্যারিস এ পর্যন্ত নিজের ভারতীয় বংশ পরিচয়ের দিকটাই তুলে ধরেছেন এবং শুধু সেই পরিচয়েই পরিচিত হতে চেয়েছেন। কিন্তু বিবিসি ইতোমধ্যেই মিস হ্যারিসের আত্মজীবনীর যে উদ্ধৃতি দিয়েছে, তাতে এটা পরিষ্কার যে তিনি তাঁর কৃষ্ণাঙ্গ বংশ পরিচয় লুকানোর চেষ্টা করেননি। এছাড়াও ২০১৬ সালে সেনেটে তাঁর নির্বাচনের ওই খবর সংক্রান্ত এপি বার্তা সংস্থার পুরো রিপোর্টে মিস হ্যারিসকে ভারতীয় এবং আফ্রিকান বংশোদ্ভুত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ৩. মিস হ্যারিসকে লক্ষ্য করে আবার 'পিৎসাগেট' ষড়যন্ত্র পরেরটি হল ভুয়া 'পিৎসাগেট ষড়যন্ত্র তত্ত্ব' নতুন করে ছড়ানো, যেখানে জড়ানো হয়েছে মিস হ্যারিসের নাম। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় কয়েক হাজার লোককে বিনা সাক্ষ্যপ্রমাণে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এই অভিযোগে যে ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি পিৎসা রেস্তোরাঁর মাটির নিচের একটি ঘর থেকে হিলারি ক্লিনটন এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির উর্ধ্বতন কিছু সদস্য শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনকারীদের একটি চক্র পরিচালনা করছিলেন এবং তারা এর সাথে জড়িত। আবার সামনে এসেছে সেই পুরনো অভিযোগ। সোশাল মিডিয়াতে একটি ইমেল শেয়ার করে বলা হচ্ছে যে ওই ইমেলের মাধ্যমে কমালার বোন মায়াকে মিসেস ক্লিনটনের সম্মানে একটি পিৎসা পার্টিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিউআনোন ষড়যন্ত্র গোষ্ঠীর ফেসবুক এবং টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে এই গুজব ছড়ানো হচ্ছে এবং নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা তাদের একটি তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছে এই মিথ্যা তথ্য কমালা হ্যারিস মনোনয়ন পাবার একদিন পর ফেসবুকে ছয় লাখের বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এই ভুয়া ষড়যন্ত্র তত্ত্বের সমর্থনে কোন সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই। কিন্তু চরম ডানপন্থীরা ওই পিৎসা রেস্তোরাঁর ভুয়া পার্টির সাথে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম জড়িয়ে খবর ছড়ানো অব্যাহত রেখেছে। এই মিমে দেখা যাচ্ছে বারাক ওবামা জো বাইডেনের কানে কানে কিছু বলছেন। ছবির ওপরে লেখা হয়েছে "সোরোস এইমাত্র ফোন করেছিলেন - আপনার ভাইস-প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমালা হ্যারিস।" ৪. মিস হ্যারিসের সাথে জর্জ সোরোসকে জড়ানো মিস হ্যারিসের মনোনয়ন পাওয়ার সঙ্গে জড়ানো হয়েছে হাঙ্গেরিয়ান বংশোদ্ভুত জনহিতৈষী ধনকুবের জর্জ সোরোসকে - যেটি আরেকটি ভিত্তিহীন তত্ত্ব। ফেসবুকে একটি মিম কয়েক হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে, যেখানে বলা হচ্ছে মিস হ্যারিসকে মনোনয়ন দেবার নির্দেশ দিয়েছেন জর্জ সোরোস। বারাক ওবামা এবং জো বাইডেনের পুরনো একটি ছবির ওপর সে রকমই একটি বার্তা লিখে তা-ই বলার চেষ্টা হয়েছে। মি. সোরোস ডেমোক্রেটিক পার্টিতে প্রচুর চাঁদা দেন। কিন্তু তাই বলে ভাইস-প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের ব্যাপারে নাক গলানোর অধিকার তাকে দেয়া হয়েছে, এমন কোন তথ্য প্রমাণ নেই। তাঁর ছেলে মিস হ্যারিসকে টু্ইটারে অভিনন্দন জানিয়ে একটি বার্তা পোস্ট করেছেন। তাঁর পোস্টটি ডানপন্থীরা ব্যাপকভাবে শেয়ার করেছেন। কিন্তু তারমানে এই নয় যে মিস হ্যারিসের মনোনয়নের ব্যাপারে মি. সোরোসের কোন হাত আছে। রিপোর্টিংয়ে সহায়তা করেছেন অলগা রবিনসন। | Conspiracy theories and false claims about Kamala Harris have spread online since she was appointed as the Democratic Party's vice-presidential nominee by its presidential candidate, Joe Biden. |
প্রদত্ত বাংলা অনুচ্ছেদের ইংরেজি সারসংক্ষেপ কি? | গত কয়েক মাসে অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য বিষয়ক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বেশ কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্লুমবার্গ নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মি.ট্রাম্প বলেন, "তারা যদি কাজের ধারা পরিবর্তন না করে তাহলে আমি ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন থেকে নাম প্রত্যাহার করবো।" বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম নির্ধারণ করা ও সেসব নিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বের সমাধান করার উদ্দেশ্যে গঠন করা হয়েছিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। তবে আন্ত:দেশীয় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতির সমর্থক ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার। মি. ট্রাম্পের বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা প্রত্যাহারের হুমকির পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাণিজ্য নীতি আর বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মুক্তবাজার নীতির মধ্যকার আদর্শিক দ্বন্দ্ব আরো পরিষ্কার হলো। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করছে, এমন অভিযোগও তুলেছেন মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি রবার্ট লাইথিযার। আর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতির সমালোচনা করে আসছেন মি. ট্রাম্প। গতবছর ফক্স নিউজে এক সাক্ষাৎকারে মি. ট্রাম্প বলেন, "আমাদের বাদে আর সবাইকে সুবিধা দেয়ার জন্য গঠন করা হয়েছিল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা...সংস্থার প্রায় সব আইনি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হই।" গত কয়েকমাসে অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য বিষয়ক নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে বেশ কঠোর অবস্থান নিতে দেখা গেছে যুক্তরাষ্ট্রকে। সবচেয়ে বেশী আলোড়ন তুলেছে চীনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক 'বাণিজ্য যুদ্ধ', যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুইটি অর্থনৈতিক শক্তি বিশ্ববাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদানি হওয়া অনেক পণ্যের ওপর শুল্ক ধার্য করেছেন মি. ট্রাম্প। মার্কিন সিদ্ধান্তের জবাবে চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ধার্য করা শুল্কের সমান অর্থমূল্যের শুল্ক চীনও আরোপ করেছে তাদের দেশে আমাদানি করা মার্কিন পণ্যের ওপর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেছে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায়। চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন যে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম ভঙ্গ করছে, এমন আশঙ্কা করছেন তারা। আরও পড়তে পারেন: চীন-মার্কিন বাণিজ্য যুদ্ধ: আপনার কি কিছু এসে যায়? চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ, জিতবে কে? যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য যুদ্ধ কিভাবে আপনার ওপর প্রভাব ফেলবে? বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য সংস্থার যে বিভাগটি নিয়োজিত আছে, ঐ বিভাগের নতুন বিচারক নির্বাচন স্থগিত করে রেখেছে ওয়াশিংটন। এই অবস্থায় সংস্থার সদস্যদের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কার্যত কোনো ভূমিকা পালন করতে পারবে না সংস্থা। প্রথম দফায় চীনা পণ্যের ওপর মি. ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের পর জুলাইয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার কাছে প্রাথমিক অভিযোগ করে চীন। ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মাধ্যমেই আন্ত:দেশীয় বাণিজ্যের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিয়মগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সেসব নিয়মের ব্যতিক্রম হচ্ছে কি না তা পর্যবেক্ষণ করা ও বাণিজ্য নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে আন্ত:দেশীয় দ্বন্দ্বের মীমাংসা করা বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। | President Donald Trump has threatened to withdraw the US from the World Trade Organization (WTO), claiming it treats his country unfairly. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | বুধবার সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীগুলোর বিরুদ্ধে তুরস্ক অভিযান শুরু করার পর থেকে অনেক বেসামরিক মানুষ মারা গেছে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এর আগে জানায় যে, উত্তরাঞ্চলে সরকারি বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। গত সপ্তাহে শুরু হওয়া তুর্কি অভিযানের মূল উদ্দেশ্য কুর্দি বাহিনীগুলোকে সীমান্ত এলাকা থেকে উৎখাত করা। কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস বা এসডিএফ-এর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলো গত সপ্তাহে তীব্র বোমা হামলার শিকার হয়েছে। সীমান্তবর্তী দু'টি শহরে তুরস্কের বাহিনী শক্ত অবস্থান নিতে শুরু করেছে। সীমান্তের দুই প্রান্তেই বেসামরিক নাগরিকসহ অনেক যোদ্ধা নিহত হয়েছে। রবিবার কুর্দি কর্মকর্তারা বলেছেন বিদেশি ইসলামিক স্টেট যোদ্ধাদের পরিবারের প্রায় আটশো সদস্য যুদ্ধের সুযোগ নিয়ে উত্তরাঞ্চলের আইন ইসা ক্যাম্প থেকে পালিয়ে গেছেন। তুরস্কের আগ্রাসন এবং ঐ এলাকা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কারণ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পশ্চিমা জোটের প্রধান সহযোগীই ছিল এসডিএফ। আরো পড়তে পারেন: ভূমিকম্প মোকাবেলা: প্রতিশ্রুতি এবং বাস্তবতার ফারাক কোর্টের রায়ের পরও ক্ষতিপূরণ দিতে গড়িমসি ঐক্যফ্রন্ট 'ব্যর্থ', তবু জোট ভাঙতে চায়না বিএনপি সিরিয়ার কোন এলাকা এখন কার নিয়ন্ত্রণে কিন্তু তুরস্ক এসডিএফ'এর কুর্দি সেনাদের সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করে। তুরস্কের বক্তব্য, তারা সিরিয়ার ভেতরে অন্তত ৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত কুর্দিদের হটিয়ে 'নিরাপদ অঞ্চল' তৈরি করতে চায়। তুরস্কের ভেতরে থাকা ৩০ লাখের বেশি সিরিয় শরণার্থীকে ঐ অঞ্চলে পুনর্বাসিত করার পরিকল্পনার কথাও বলেছে তুর্কি কর্তৃপক্ষ। সমালোচকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এর ফলে ঐ অঞ্চলে বসবাসরত কুর্দিরা জাতিগত নিধনের শিকার হতে পারে। চুক্তি সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে? উত্তর সিরিয়ার কুর্দি নেতৃত্বাধীন প্রশাসন বলছে যে চুক্তি অনুযায়ী পুরো সীমান্ত জুড়ে সিরিয় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে। এই সেনা মোতায়েন এসডিএফ'কে 'তুরস্কের সেনা এবং ভাড়াটে বিদেশি সেনাদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে এবং সংঘাতপূর্ণ এলাকাগুলো মুক্ত করতে সহায়তা করবে' বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে তারা। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে: এই পদক্ষেপ আফ্রিনের মত যেসব সিরিয় শহর তুর্কি বাহিনীর অধীনে রয়েছে, সেসব শহর মুক্ত করতেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। তুরস্কের সেনাবাহিনী এবং তাদের সমর্থক সিরিয়ার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ২০১৮ সালে দুই মাসের এক অভিযানের পর আফ্রিন শহর থেকে কুর্দি যোদ্ধাদের বিতাড়িত করে। আরো পড়তে পারেন: সিরিয়ায় কি ইসলামিক স্টেট ফিরে আসতে পারে? আইএস'এর বিদেশি যোদ্ধাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে কারা? তুরস্কের অভিযানের শিকার কুর্দি জনগোষ্ঠী কারা? শোক প্রকাশ করছেন এক নারী কুর্দি যোদ্ধা এই চুক্তি কুর্দিদের জোট পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভূমিকা রাখতে পারে - বিশেষ করে ঐ এলাকায় দীর্ঘসময় ধরে থাকা মার্কিন সেনাবাহিনীর সমর্থন হঠাৎ শেষ হয়ে যাওয়ার পর। তবে সিরিয়ার সরকার কুর্দি বাহিনীদের সাথে কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। এসডিএফ প্রধান মাজলুম আবদি ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনের জন্য লেখা এক প্রতিবেদনে স্বীকার করেছেন যে, আসাদ সরকার ও তাদের রুশ মিত্রদের সাথে 'যন্ত্রণাদায়ক আপস' করবে তারা। তিনি লিখেছেন, "আমরা তাদের প্রতিশ্রুতি বিশ্বাস করি না। সত্যি বলতে কাকে বিশ্বাস করবো তা ঠিক করা খুবই কঠিন।" "কিন্তু আমাদের আপস এবং আমাদের মানুষের গণহত্যা - দু'টির একটি বেছে নিতে হবে। তাই আমরা আমাদের মানুষের ব্যাপারেই চিন্তা করেছি।" মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত সপ্তাহে হঠাৎই উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার কিছু অঞ্চল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেয়ার পরপর তুরস্ক সিরিয়ার সেসব অঞ্চলে আগ্রাসন চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। সিরিয়ার কারাগারে আইএস বন্দীদের নিয়ে উদ্বেগ কেন সেসময় মার্কিন বাহিনী প্রত্যাহারের বিষয়টিকে এসডিএফ 'পিঠে ছুরি চালানো'র সাথে তুলনা করেছিল। তুরস্ক এখন পর্যন্ত কতদূর অগ্রসর হয়েছে? তুরস্ক সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আরো শক্ত অবস্থান নিচ্ছে। রবিবার প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন যে তার বাহিনী ১০৯ বর্গকিলোমিটার এলাকা দখল করে নিয়েছে, যার মধ্যে ২১টি গ্রামও রয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন অন্যতম প্রধান সীমান্তবর্তী অঞ্চল রাস আল-আইন তুরস্কের নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদিও এসডিএফ বলেছে তারা তুরস্কের সেনাদের শহরের বাইরে হটিয়ে দিয়েছে। মি. এরদোয়ান বলেছেন তুরস্কের বাহিনী তাল আবইয়াদ শহরও ঘেরাও করে রেখেছে। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক পর্যবেক্ষক গ্রুপ সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, তুরস্ক ঐ এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। এসডিএফ'এর বিরুদ্ধে অভিযানে তুরস্কের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য রাস আল-আইন এবং তাল আবইয়াদ শহর দু'টি। এখন পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা: ঐ এলাকায় সংঘাতের ফলে হতাহতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। সীমান্তের দুই পাশেই বেসামরিক নাগরিকসহ সেনারাও নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা বলছে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার বেসামরিক নাগরিক এখন ভাসমান রয়েছেন এবং এই সংখ্যা বাড়তে পারে। ঐ অঞ্চলে তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত তারা। | The Kurds in Syria say the Syrian government has agreed to send its army to the northern border to try to halt Turkey's offensive against them. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | বর্তমানে হংকংয়ে টয়লেট টিস্যুর সংকট তৈরি হয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে মানুষের অতিরিক্ত কেনাকাটার কারণে হংকংয়ে টয়লেট টিস্যুর সংকট তৈরি হয়েছে। পুলিশ জানায়, ছুরি হাতে কয়েক জন ব্যক্তি মং কক জেলায় একটি সুপারমার্কেটের বাইরে এক সরবরাহকারী ব্যক্তির কাছ থেকে এসব টয়লেট টিস্যু হাতিয়ে নেয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশ দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে এবং চুরি হওয়া টয়লেট টিস্যুর কয়েকটি উদ্ধার করেছে। সোমবার সকালের দিকে মং কক জেলায় এই চুরির ঘটনা ঘটে। এই এলাকাটিতে "ট্রায়াড" বা সশস্ত্র গ্যাং থাকার ইতিহাস রয়েছে। অ্যাপলের ডেইলি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ৬০০ টয়লেট টিস্যুর রোল চুরি হয়েছে যার বাজারমূল্য ১,৬৯৫ হংকং ডলার বা ২১৮ মার্কিন ডলার। শহরটিতে টয়লেট টিস্যুর মজুদ ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার কারণে নতুন সরবরাহ আসার সাথে সাথে তা নেয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয় বাসিন্দাদের। যদিও সরকার নিশ্চয়তা দিয়েছে যে, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়নি তারপরও বাসিন্দারা টয়লেট টিস্যু জমা করে রাখতে শুরু করে। অন্যান্য গৃহস্থালি সামগ্রীও আতঙ্কের কারণে ব্যাপক হারে বিক্রি হয়েছে যেমন চাল, পাস্তা এবং পরিষ্কারক দ্রব্য। মুখে পড়ার মাস্ক এবং হাত পরিষ্কার করার দ্রব্য বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাওয়াটা রীতিমত দুষ্কর হয়ে পড়েছে। কারণ মানুষ নিজেদের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে এগুলো আগেই কিনে ফেলেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৭০০ মানুষ মারা গেছে। পুলিশের এক মুখপাত্র জানায়, "ছুরি হাতে নিয়ে তিন জন ব্যক্তি একজন সরবরাহকারী ব্যক্তিকে শাসিয়ে টয়লেট টিস্যুগুলো নিয়ে যায়।" কর্তৃপক্ষ অস্বাভাবিক কেনাকাটার জন্য অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া গুজবকে দোষারোপ করছে এবং জানিয়েছে যে, খাদ্য এবং গৃহস্থালির পণ্যের সরবরাহ স্থিতিশীল রয়েছে। এছাড়া সিঙ্গাপুরেও টয়লেট টিস্যু, হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্কের মতো পণ্যগুলো অস্বাভাবিক হারে ক্রয়ের মুখে পড়েছে। দেশটিতে ৭৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। করোনাভাইরাস যেভাবে পশ্চিমবঙ্গের চুলের ব্যবসায় আঘাত হানলো | Armed robbers in Hong Kong made off with hundreds of toilet rolls worth more than HKD1,000 ($130; £98). |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | বারাক ওবামা স্পটিফাইর অনেক গানের প্লে লিস্ট শেয়ার করেছেন স্পটিফাই এখন তাদের ওয়েবসাইটে এমন একটি চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়েছে, যেটি পাওয়ার যোগ্যতা একমাত্র প্রেসিডেন্ট ওবামারই আছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই কর্মখালির বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, "যোগ্য প্রার্থীর কমপক্ষে আট বছর কোন মর্যাদাশীল দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।" এছাড়াও "যোগ্য প্রার্থীকে অবশ্যই বন্ধুভাবাপন্ন এবং উষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গীর অধিকারী এবং নোবেল পুরস্কার বিজয়ী হতে হবে।" স্পটিফাই এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড্যানিয়েল এক টুইটারে এই বিজ্ঞাপনটির প্রতি প্রেসিডেন্ট ওবামার দৃষ্টিও আকর্ষণ করেছেন। "আমি শুনেছি আমি স্পটিফাই'তে কাজ করতে আগ্রহী। আপনি কি এই বিজ্ঞাপনটি দেখেছেন?" টুইটারে এই বার্তার নীচে তিনি বিজ্ঞাপনটির একটি লিংকও দিয়েছেন। বিজ্ঞাপনের কোথাও অবশ্য বারাক ওবামার উল্লেখ নেই। কিন্তু এতে প্রেসিডেন্ট ওবামার নির্বাচনী প্রচারণার পরিচিত শ্লোগানের শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীকে যেসব কাজ করতে হবে তার তালিকায় আছে স্পটিফাইর জন্য নতুন 'প্লে লিস্ট' এর আইডিয়া খুঁজে বের করা। ' "আপনার বার্থ ডে পার্টিতে কি কখনো কেনড্রিক লামার গান গেয়েছেন? আমরা আপনার কাছ থেকে শুনতে আগ্রহী।" উল্লেখ্য প্রেসিডেন্ট ওবামার ৫৫তম বার্থ ডে পার্টিতে কেনড্রিক লামারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল গান গাওয়ার জন্য। তিনি প্রেসিডেন্ট ওবামার সবচেয়ে প্রিয় র্যাপ শিল্পী। প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে মেয়ে মালিয়া। হোয়াইট হাউসের পার্টিতে ওবামা অনেক বিখ্যাত শিল্পীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। বিজ্ঞাপনটিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে অনেক তির্যক মন্তব্যও আছে। উল্লেখ্য প্রেসিডেন্ট ওবামা ২০১৫ সাল থেকে নিয়মিত স্পটিফাইতে তার প্রিয় গানের প্লে লিস্ট শেয়ার করছেন। তার প্রিয় শিল্পীদের তালিকায় আছেন নিনা সিমোন থেকে শুরু করে বব মার্লি। স্পটিফাই একটি সুইডিশ কোম্পানি। সুইডেনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূতের স্ত্রী নাটালিয়া ব্রেজিনস্কিকেই নাকি প্রেসিডেন্ট ওবামা গত সপ্তাহে মজা করে বলেছিলেন তিনি স্পটিফাইতে একটি চাকরির জন্য অপেক্ষা করছেন! নাটালিয়া ব্রেজিনস্কি এটি আবার টুইটারে পোষ্ট করেন। সেখানে তিনি জানান সুইডেন প্রেসিডেন্ট ওবামার খুব পছন্দের দেশ। শীঘ্রই তিনি সুইডেন সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। প্রেসিডেন্ট ওবামা আর এক সপ্তাহখানেক পরেই তাঁর মেয়াদ শেষে অবসরে যাচ্ছেন। এরপর তিনি কি করবেন তা এখনো জানা যায়নি। তবে এ নিয়ে যে নানা ধরণের আলোচনা চলছে তার মধ্যে কমিউনিটি সংগঠক, শিক্ষকতা, বা সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হিসেবে তিনি কাজ করতে পারেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা অবশ্য বলেছেন, তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হতে চান না। বরং তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির পরবর্তী প্রজন্মের নেতা তৈরি করা বা পারলে এনবিএ'র কোন বাস্কেটবল টিমের দায়িত্ব নিতে চান। | President Barack Obama recently joked that he was hoping for a job at Spotify when he leaves the White House. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | শনিবার রাতে ওই ভবনের একটি তলার বাসিন্দা ওই যুবককে কুমিল্লার মেঘনার গ্রামের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার গোয়েন্দা পুলিশ। ওয়ারী জোনের অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার বিবিসি বাংলাকে বলছেন, '' জিজ্ঞাসাবাদে সে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।'' অতিরিক্ত উপ- পুলিশ কমিশনার শাহ ইফতেখার বলছেন, ছাদ দেখানোর কথা বলে সে শিশুটিকে লিফট থেকে সবচেয়ে ওপর তলায় অবিক্রীত একটি শূন্য ফ্লাটের ভেতর নিয়ে যায়। সেখানে শিশুটিকে প্রথমে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। তাতে ব্যর্থ হয়ে শিশুটির মাথায় আঘাত করে অচেতন করে। ''এরপরে সে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। কিন্তু তার পরিচয় প্রকাশ পেয়ে যেতে পারে, এই ভয়ে শিশুটিকে হত্যা করে গলায় রশি বেধে ঝুলিয়ে রেখে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়, '' গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে জানাচ্ছেন মি. ইফতেখার। এ সময় বাড়ির দারোয়ান তাকে বেরিয়ে যেতে দেখে। তার বক্তব্যের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে এই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আরো পড়ুন: উপরের শূন্য ফ্ল্যাটে পড়ে ছিল ধর্ষিতা শিশুটির মৃতদেহ '৬ মাসে প্রায় ৪০০ শিশু ধর্ষণের শিকার' মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০১৮ সালে ধর্ষণের শিকার হওয়ার মোট ৩৪৫টি সংবাদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৩৫৬ এর আগে পুলিশ বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছিল যে, প্রাথমিক তদন্তে তারা জানতে পেরেছেন: প্রতিদিনের মত বিকালের দিকে মেয়েটি ওপর তলার একটি ফ্ল্যাটে তার সমবয়সী একটি শিশুর সাথে খেলতে বের হয়ে যায়। দরজা খুলে ঐ ফ্ল্যাটের শিশুটি পরিবারের সাথে বাইরে যাবে বলে খেলতে পারবে না জানালে, মেয়েটি বাসার উদ্দেশ্যে লিফটে ওঠে। "শিশুটি তার খেলার সঙ্গী মেয়েটিকে লিফটে উঠতে দেখেছে বলে জানিয়েছে।" পুলিশ এরপরের ঘটনার বর্ণনা পেয়েছে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির কাছ থেকে। এই ভবনের একটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দার আত্মীয় গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তি। একসময় সেই বাড়িতে এই ব্যক্তি নিয়মিতভাবে থাকলেও, কিছুদিন ধরে মাঝে মাঝে এসে থাকতেন। ওই বাসাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার শিশুটি মাঝে মাঝে খেলা করতে যেতো। শুক্রবার বিকালে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সাতবছরের ওই মেয়ে শিশুটি। সন্ধ্যার পরও ঘরে না ফিরলে খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে রাত আটটা নাগাদ শিশুটির রক্তাক্ত মৃতদেহ পাওয়া যায় ভবনের সবচেয়ে উপর তলায় একটি শূন্য ফ্ল্যাটের রান্নাঘরে। শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ময়না তদন্তের পর ডাক্তাররা তাদের রিপোর্টে বলেছেন, শিশুটিকে জবরদস্তি করে ধর্ষণ করা হয়েছে। তারপর গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছে। বিবিসি বাংলার অন্যান্য খবর: দেশব্যাপী বাড়ছে ডিমের দাম, কারণ কী? বিশ্বকাপে বাংলাদেশ - কজন বিশেষজ্ঞের চোখে পক্ষাঘাতগ্রস্থ মানুষের দেহে স্নায়ু সচল সম্ভব হবে? তেহরান পরমাণু চুক্তি: নতুন আলোচনার সম্ভাবনা | Police in India have arrested a man for allegedly raping and killing a four-year-old girl in Goa. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | ন্যাশনাল ইনস্টিউট অব অ্যানথ্রোপলজি এন্ড হিস্ট্রির তিন শিক্ষার্থী খুলিগুলো পরীক্ষা করছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে প্রত্নতত্ত্ববিদেরা ওই ভবনটিতে অন্তত সাড়ে ছয়শো মাথার খুলির সন্ধান পেয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে খনন যত এগুবে খুলির সংখ্যা আরো বাড়বে। ভবনের ওপরের দিকে বসানো খুলিগুলো নারী ও শিশুদের। এই আবিষ্কার দেখে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন এটি প্রাচী আজটেক সাম্রাজ্যের নরবলীর সংস্কৃতির অংশ এবং ওই আমলের সভ্যতা-সংস্কৃতি নিয়ে নতুনভাবে ভাবিয়ে তুলছে। ভবন খনন করছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা খুলি-নির্মিত ভবনটির ভাঙা ভাঙা অংশ দেখে মনে হয়, এটি নলাকৃতির ছিল। এখন যেখানে মেক্সিকোর রাজধানীর অবস্থান সেখানেই একসময় আজটেকের রাজধানী 'টেনোকটিটলান' ছিল, আর রাজধানীর প্রধান মন্দির ছিল 'টেম্পলো মায়োর'। স্পেনীয় দখলদার যোদ্ধারা এই মন্দির কাছাকাছি আরেকটি জায়গায় একসঙ্গে বিন্যস্ত এ রকম অনেক খুলি দেখে ভয় পেয়েছিলেন। কারণ সেগুলো প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগের মেসোআমেরিকান সংস্কৃতির চিহ্ন বহন করে। ইতিহাসবিদরা সে নিয়েও ভাবছিলেন। কিন্তু ২০১৫ সালে প্রত্নগবেষকেরা মেক্সিকো সিটির পুরনো অংশে যে খননকাজ শুরু করেছিলেন তা এখনো শেষ হয়নি। দলের জৈব নৃবিজ্ঞানী রদ্রিগো বোলানোস বলছেন "মাথার খুলি দেখে প্রথমে আমরা ভাবছিলাম কোনো তরুণ যোদ্ধার দেহাবশেষ। কিন্তু পরবর্তীতে যখন আমরা নারী ও শিশুদের মাথার খুলি পাই তখন বুঝলাম এরা যুদ্ধে যেতে পারে না।এটা সম্পূর্ণ নতুন। আমাদের কাছে এর কোনো রেকর্ডও নেই"। কিন্তু সেখানে নারী ও শিশুর অনেক খুলি দেখে মানুষকে বলি দেয়া বা উৎসর্গ করার সংস্কৃতির ইঙ্গিত মেলে। আজটেক ও অন্যান্য মেসোআমেরিকান সংস্কৃতির মধ্যে সূর্যের উদ্দেশ্যে নরবলি দেয়ার রীতি ছিল। নৃবিজ্ঞানী রাউল বারেরা বলছেন, খুলিগুলো ভবনে বসানোর আগে সেগুলো দেখার জন্য হয়তো জনসম্মুখে রাখা হয়েছিল। আরো পড়ুন: বাদশাহকে সৃষ্টিকর্তার সাথে তুলনা করায় সৌদি লেখক বরখাস্ত আরবদের হটিয়ে যেভাবে ইসরায়েল রাষ্ট্রের জন্ম হয়েছিল বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা এখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে | Archaeologists have excavated more sections of an extraordinary Aztec tower of human skulls under the centre of Mexico City. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | প্রিন্স তুর্কি, প্রিন্স সুলতান আর প্রিন্স সাইফ আল-নাসের তাদের তিনজনকেই অপহরণ করে সৌদি আরবে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছিল - এমন প্রমাণও রয়েছে। আর তারপর থেকে তাদের সম্পর্কে আর কিছু জানা যায়নি। সুলতান বিন তুর্কি বিন আব্দুলআজিজ ২০০৩ সালের ১২ই জুন সকালের ঘটনা। সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরের বাইরে একটি প্রাসাদে ঢুকতে দেখা যায় একজন সৌদি রাজপুত্রকে। তার নাম সুলতান বিন তুর্কি বিন আব্দুল আজিজ। আরো পড়ুন: জামাল খাসোগি: কে এই সৌদি সাংবাদিক খাসোগজি হত্যাকাণ্ডে সন্দেহভাজন কারা এই ১৫ জন? খাসোগজি হত্যাকাণ্ড: যে গল্পের শেষ নেই খাসোগজি হত্যা: 'বলির পাঁঠা' জেনারেল আসিরি? সঙ্গীদের সাথে যুবরাজ সুলতান বিন তুর্কি (মাঝে) প্রাসাদটিও রাজপুত্রের আত্মীয় প্রয়াত সৌদি বাদশাহ ফাহাদের। বাদশাহ ফাহাদের ছেলে রাজপুত্র আবদুলআজিজ বিন ফাহাদের সাথে সকালের নাস্তা খেতে প্রাসাদে যান সুলতান। একপর্যায়ে সৌদি সরকারের সমালোচক সুলতানকে নিজ দেশ সৌদি আরবে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন আব্দুলআজিজ। সুলতান ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানালে তখন আব্দুলআজিজ একটি ফোন করতে যান। তখন ঐ কক্ষে থাকা দ্বিতীয় ব্যক্তি, সৌদি আরবের ইসলাম ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রী শেখ সালেহ আল-শেখ, কক্ষ ছেড়ে চলে যান। কিছুক্ষণের মধ্যেই মুখোশ পরা কয়েকজন ঘরে ঢুকে এবং সুলতানকে চেতনাহীন করে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়। অজ্ঞান অবস্থাতেই সুলতানকে জেনেভা বিমানবন্দরে নেয়া হয় এবং সেখানে অপেক্ষারত একটি বিমানে ওঠানো হয় তাঁকে। অনেকবছর পর সুইজারল্যান্ডের একটি আদালতে ঠিক এভাবেই সেদিনের ঘটনা বর্ণনা করছিলেন সুলতান। পরে জেনেভার হোটেলে থাকা সুলতানের সঙ্গীসাথীদের জানানো হয় যে সুলতানকে রিয়াদ নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাই তাদের আর কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু সুলতান কী এমন করেছিলেন যেজন্য তাকে এভাবে অপহরণ করতে হলো? সৌদি আরবে ফেরত গিয়ে সুলতানের ভাগ্যে কি ঘটেছিল তা জানা না গেলেও ধারণা করা হয় তাঁকে কারাগারে এবং ঘরে বন্দী করে রাখা হয়েছিল। দীর্ঘসময় কারাগারে এবং বাড়িতে আটক থাকার পর সুলতানের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাতে সম্মত হয় রাজপরিবার। ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে সুইস আদালতে আব্দুলআজিজ বিন ফাহাদ এবং শেখ সালেহ আল-শেখ এর বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেন সুলতান। প্রথমবার কোনো সৌদি রাজপরিবারের সদস্যের আরেক রাজপরিবারের সদস্যের বিরুদ্ধে পশ্চিমা আদালতে মামলা দায়েরের ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। সেখান থেকে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ইউরোপ যান সুলতান। চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ইউরোপে পৌঁছানোর পর থেকেই সৌদি সরকারের সমালোচনা করে বিভিন্ন ইউরোপিয় গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে শুরু করেন সুলতান। তার সাক্ষাৎকারে রাজপরিবারের সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলেন তিনি। এরপর ২০১৬ সালে সুলতান এবং তাঁর ১৮ জন সফরসঙ্গীকে প্যারিস থেকে কায়রো নিয়ে যাওয়া হবে বলে একটি বিমানে উঠিয়ে রিয়াদে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে আর কোনে খোঁজ পাওয়া যায়নি সুলতানের। ২০০৩ সালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে যুবরাজ তুর্কি বিন বান্দার রাজপুত্র তুর্কি বিন বান্দার রাজপুত্র তুর্কি বিন বান্দার একসময় সৌদি পুলিশের একজন মেজর ছিলেন, যিনি রাজপরিবারের সদস্যদের পুলিশি সেবা দেয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। কিন্তু উত্তরাধিকারের দ্বন্দ্বে পরিবারের সদস্যদের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পরলে একসময় কারাদণ্ড দেয়া হয় তাকে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ২০১২ সালে প্যারিসে চলে যান তিনি। সেখানে গিয়েই সৌদি আরবের সংস্কার চেয়ে ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করা শুরু করেন তিনি। রাজপুত্র সুলতানের মত তুর্কিকেও আলোচনার মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে আলোচনার মাধ্যমে রাজপুত্র তুর্কির মন গলাতে পারেনি সৌদি সরকারি কর্মকর্তারা। ২০১৫ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত ইউটিউবে ভিডিও পোস্ট করে যান তুর্কি। সেবছরের শেষদিকে হঠাৎই উধাও হয়ে যান তিনি। তারপর এখন পর্যন্ত রাজপুত্র তুর্কি বিন বান্দার এর আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। যুবরাজ সউদ বিন সাইফ আল-নাসের রাজপুত্র সউদ বিন সাইফ আল-নাসের রাজপুত্র তুর্কি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কাছাকাছি সময় একই ধরণের পরিণতি হয় আরেকজন রাজপুত্রসউদ বিন সাইফ আল-নাসেরের। ইউরোপে বিলাসবহুল জীবনযাপনে উৎসাহী ছিলেন এই রাজপুত্র। ২০১৪ সাল থেকে টুইটারে সৌদি রাজতন্ত্রকে কটাক্ষ করে পোস্ট দেয়া শুরু করেন সৌদ। পরের বছর বাদশাহ সালমানকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশ্যে অজ্ঞাতনামা একজন সৌদি রাজপুত্রের লেখা দু'টি চিঠি ফাঁস হলে ঐ যুবরাজের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেন সৌদ। এক টুইটে ঐ চিঠির বিষয়বস্তুকে গুরুত্বের সাথে নিতে সৌদি জনগণকে আহ্বান জানান সৌদ। এর কিছুদিন পর থেকে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্টটি নিরব হয়ে যায়। জার্মানিতে পালিয়ে যাওয়া আরেকজন সৌদি রাজপুত্র খালেদ বিন ফারহানের ধারণা গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক বৈঠকের কথা বলে কৌশলে সৌদকে রিয়াদে ফিরিয়ে নেয়া হয়েছে। রাজপুত্র খালেদ বলেন, "সৌদি রাজতন্ত্রের সমালোচনা করা আমার চারজনই ছিলাম ইউরোপে, যাদের মধ্যে তিনজনকেই অপহরণ করা হয়েছে।" রাজপুত্র খালেদ আশঙ্কা করছেন নিকট ভবিষ্যতে তাঁকেও অপহরণ করা হতে পারে। জামাল খাসোগজি হত্যা: সৌদি সমালোচকরা যেভাবে গুম হয়ে যান | Between 2015 and 2017, three Saudi princes living in Europe disappeared. All were critical of the Saudi government - and there is evidence that all were abducted and flown back to Saudi Arabia… where nothing further has been heard from them. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আবুধাবীর ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ আল নাহিয়ান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ইসরায়েলী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আবুধাবীর ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ আল নাহিয়ান এক যুক্ত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, "এই ঐতিহাসিক অগ্রগতি মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির অগ্রযাত্রায় সাহায্য করবে" বলে তারা আশা করেন। তারা জানিয়েছেন, দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্কের বিনিময়ে ইসরায়েল পশ্চিম তীরের বিশাল ফিলিস্তিনি এলাকা ইসরায়েলের অংশ করে নেয়ার কাজ আপাতত স্থগিত রাখবে। ইসরায়েলের সঙ্গে এতদিন পর্যন্ত কোন উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্রের কোন কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে ঐ অঞ্চলে ইরানের প্রভাব বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন সংযুক্ত আরব আমিরাত ইসরায়েলের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ বাড়াচ্ছিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর মিস্টার নেতানিয়াহু হিব্রুতে টুইট করেছেন, "এক ঐতিহাসিক দিন" বলে। যুক্তরাষ্ট্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল ওতাইবা বলেছেন, "এটি ঐ অঞ্চলে কূটনীতির বিজয়।" তিনি একে আরব-ইসরায়েল সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে বর্ণনা করে বলেন, এর ফলে উত্তেজনা কমবে এবং অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হবে। সৌদি আরব-ইসরায়েল গোপন আঁতাতের কারণ কি ফিলিস্তিনি-ইসরায়েলি সংঘাতের মূলে যে দশটি প্রশ্ন ইসরায়েলের কাছে আরবরা কেন পরাজিত হয়েছিল? ইসরায়েলের সাথে কিছু আরব দেশের 'গোপন মৈত্রী'? এটি ইসরায়েলের সঙ্গে তৃতীয় কোন আরব রাষ্ট্রের শান্তি চুক্তি। এর আগে মিশর ১৯৭৯ সালে এবং জর্ডান ১৯৯৪ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে। সামনের দিনগুলোতে ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিরা বিনিয়োগ, পর্যটন, সরাসরি ফ্লাইট, নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি সহ নানা বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করার জন্য বৈঠকে বসবেন। | Israel and the Gulf state of Bahrain have reached a landmark deal to fully normalise their relations, US President Donald Trump has announced. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো যেদিন মি. ট্রুডো শপথ গ্রহণ করেন, তখন তিনি তার মন্ত্রিসভায় নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণের কারণে বিশ্বের সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হয়েছিলেন। যা তার দলের প্রধান গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য বলে তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। ''কারণ এটা ২০১৫ সাল'' হালকা হাসির সঙ্গে মন্তব্য করেছিলেন প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসা প্রধানমন্ত্রী। ওই তিনটা শব্দ সারা বিশ্বে খুব চমৎকার জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এটা ছিল মি. ট্রুডোর মধুচন্দ্রিমার শুরু। এরপরে প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বারাক ওবামার সঙ্গে সেলফি তুলেছেন, ভোগ ম্যাগাজিনের বিশেষ প্রতিবেদনের বিষয় হয়েছেন, যেখানে তাকে কানাডার রাজনীতির নতুন তরুণ মুখ বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আরো পড়ুন: যেভাবে বিখ্যাত হয়ে উঠলেন 'আফগান জাস্টিন ট্রুডো' বিশ্বনন্দিত ট্রুডো ভারতে এসে উপেক্ষিত কেন? প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো ও তার বাচ্চার কিছু ছবি যখন ভাইরাল আগা খানের বাড়িতে অবকাশ যাপন:তদন্তের মুখে ট্রুডো টরেন্টোতে ভক্তদের সঙ্গে ট্রুডো পরবর্তীতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন দক্ষিণের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হলেন, তখন রোলিং স্টোন ম্যাগাজিনের একটি প্রচ্ছদে প্রত্যাশা করা হয় যে, মুক্ত বিশ্বের নতুন নেতা হতে পারেন মি. ট্রুডো- যিনি আমেরিকান প্রেসিডেন্টের নতুন ধরণের জাতীয়তাবাদের বিপক্ষে, জলবায়ু পরিবর্তনের পদক্ষেপ নেয়ার ব্যাপারে জোরালো কণ্ঠ এবং সামাজিক নানা বিষয়, অভিবাসনের পক্ষে প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা ধারণ করেন। কিন্তু এটা ২০১৯ সাল এবং এখনকার ভোটাররা মি. ট্রুডোর লিবারেলকে আর চার বছর আগের মতো করে দেখেন না। তখন দেশটি প্রায় এক দশক ধরে রক্ষণশীল নেতা স্টিফেন হারপারের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে এবং ভোটাররা অনেকটা সংক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। ''তখন পরিবর্তনের জন্য সত্যিই একটা মনোভাব তৈরি হয়েছিল যে, হারপারের শাসন থেকে বেরিয়ে আসতে হবে, রক্ষণশীলদের ক্ষমতার অবসান ঘটাতে হবে আর সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে,'' বলছেন ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির রাজনৈতিক বিশ্লেষক লরা স্টিফেনসন। মি. ট্রুডোর প্রথম ফেডারেল কর্মসূচী ছিল জোরালো প্রতিশ্রুতি- বিনোদনের জন্য গাজাকে বৈধতা দেয়া, ক্ষমতা গ্রহণের এক সপ্তাহের মধ্যে ২৫ হাজার সিরিয়ান শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া এবং কানাডার নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর মতো পদক্ষেপ। ভোটাররা তার এসব ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে সমর্থন জুগিয়েছে, যা ছিল আগের প্রধানমন্ত্রী মি. হারপারের একেবারে বিপরীত। এ সপ্তাহে ফেডারেল কর্মসূচী শুরুর সময় মি. ট্রুডো তার বিজয়ী রাতের বক্তব্যে আবার ফিরে যান এবং আবারো মি. হারপারের সময় ফিরে আসার ব্যাপারে সতর্ক করে দেন, যাকে তিনি বর্ণনা করেছেন বছরের পর বছর ধরে চলা 'ব্যর্থ রক্ষণশীল নীতি'। ''কানাডার বাসিন্দারা একটি নতুন দলকে বাছাই করেছে, মানুষ এবং নিজেদের সমাজের পেছনে বিনিয়োগ করতে চাইছে, যে দল বুঝতে পারে যে, বিশ্বের সেরা দেশটিতে বসবাসের পাশাপাশি সেটিকে আরো সেরা করে তোলা যায়,'' তিনি বলেছেন। ''যদিও এখনো আমাদের অনেক কাজ করার বাকি রয়েছে, তবে গত চারবছর ধরে আমরা সবকিছু আরো উন্নত করার চেষ্টা করেছি এবং সেটা প্রমাণ করার মতো তথ্য আমাদের রয়েছে।'' তবে মি. ট্রুডো এসব দাবি করলেও তার সরকারের সময়কে নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন মিজ স্টিফেনসন। গত বছরের এসএনসি-লাভালিনের নৈতিকতাজনিত কেলেঙ্কারির বড় প্রভাব পড়েছে তার সমর্থনের ওপর। কানাডায় চার রাজনৈতিক দলের নেতা গত মাসে নৈতিকতা বিষয়ক একটি পর্যবেক্ষণ সংস্থা দেখতে পেয়েছে, কানাডার বৃহৎ প্রকৌশল কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনের ফৌজদারি মামলার ব্যাপারে সাবেক একজন মন্ত্রীকে অন্যায্যভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিলেন। অগাস্ট মাসে অ্যাঙ্গুস রেইড ইন্সটিটিউট বলেছেন, কানাডার মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ তার এই কাজকে অনুমোদন দিয়েছে আর ৬০ শতাংশ অনুমোদন করেনি। গত শরতে ওই ঘটনার সময় লিবারেল পার্টির জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যদিও দলটি কিছুটা সমর্থন ফিরে পেয়েছে এবং এখন জাতীয় নির্বাচনে রক্ষণশীল দলের সঙ্গে বেশ শক্ত লড়াই শুরু করেছে। তার যেসব সিদ্ধান্তে প্রগতিশীলরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন, সেসব সিদ্ধান্তের ব্যাপারেও মি. ট্রুডোকে ব্যাখ্যা করতে হবে। ট্রান্স মাউন্টেন ওয়েল পাইপলাইন সম্প্রসারণ প্রকল্পে তার সমর্থন দেয়া এবং পাইপলাইন অবকাঠামো ক্রয়ে অসন্তুষ্ট হয়েছে পরিবেশবাদীরা। এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউজ গ্যাস ২০০৫ মাত্রার নীচে নামিয়ে আনতে প্যারিস চুক্তিতে সম্মত হলেও, দেশটি সেই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এখনো যথেষ্ট কাজ করতে পারেনি। নির্বাচনী সংস্কারের বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি শুরুর পরপরই বাতিল করা হয়, যা অনেক বাম ঘরানার ভোটারকে ক্ষুব্ধ করেছে, যারা আশা করছিলেন যে, বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে হাউজ অব কমন্সে নির্বাচিত হওয়ার রীতির বদল হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে করা বিতর্কিত একটি অস্ত্র চুক্তি বাতিল না করার জন্যও মি. ট্রুডো সমালোচনার শিকার হয়েছেন। বিরোধী বামপন্থী দল এনডিপির নেতা জগমিৎ সিং মি. ট্রুডোর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেছেন, ''তার মিষ্টি কথা থাকলেও কোন প্রতিশ্রুতি নেই।'' তবে সাবেক লিবারেল নেতা বব রে বলছেন, মি. ট্রুডো অব্যাহতভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন, যার মাধ্যমে তিনি নিজের এবং কানাডার একটি পরিচিতি তুলে ধরেছেন। ''অন্য দলগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে বলা যেতে পারে যে, তিনি (জাস্টিন ট্রুডো) এটা বোঝাতে পেরেছেন যে, তিনি কে এবং তার দেশ কেমন? বিশ্বের অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গেও এ ব্যাপারে তুলনা করা যায়।'' তিনি বলছেন। অনেক সিরিয়ান শরণার্থীকে কানাডায় আশ্রয় দিয়েছেন মি. ট্রুডো রাজনীতিতে আর নতুন ছেলেটি নয় তার সরকার বেশ কয়েকটি অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন করেছে। গাজাকে বৈধতা দেয়া হয়েছে, কানাডার মানবাধিকার আইনের ফলে নারী-পুরুষের বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং লিঙ্গ সমতার ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক বিষয় আলোচনায় আনলে, উত্তর আমেরিকান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ব্যাপারে মেক্সিকো আর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গেছে কানাডা, যদিও যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের বাজারের ব্যাপারে রক্ষণশীল নীতি নেয়ার চেষ্টা করেছে। কানাডায় বেকারত্ব ইতিহাসের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন কম। এখন প্রশ্ন হলো, মি. ট্রুডো কি মধ্য-বাম এবং বামপন্থী প্রগতিশীল ভোটারদের তার নিজের এবং লিবারেল পার্টির সমর্থনে নিয়ে আসতে পারবেন, যেমনটা হয়েছিল চার বছর আগে। ''এখন আর তিনি নতুন মুখ নন,'' বলছেন মিজ স্টিফেনসন। ''তাহলে এখন ব্যাপারটা কেমন হবে?'' লিবারেল এবং কনজারভেটিভদের মধ্যে পরিষ্কার পার্থক্য বোঝানোর জন্য মি. ট্রুডো প্রতিটা সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছেন। তিনি এনডিপি, গ্রিন পার্টি, ব্লক কুইবেকোসিস দলগুলোকে লিবারেল পার্টির ব্যানারে নিয়ে এসে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি তিনি এই চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছেন যেন, লিবারেল ভোটাররা অবশ্যই ভোটকেন্দ্রে আসে। যদি প্রগতিশীলদের ভোট ভাগ হয়ে যায়, তাহলে তার সুবিধা পাবে রক্ষণশীলরা। কানাডায় গাজা বৈধ হওয়ার পর একটি গাজা বিক্রির দোকান কনজারভেটিভ প্রার্থীদের ব্যাপারে বিব্রতকর তথ্য বের করার ব্যাপারে বেশ মরিয়া হয় কাজ করছে লিবারেল পার্টির কর্মীরা। যার ব্যাপারে কনজারভেটিভ নেতা অ্যান্ড্রু স্কেহের নির্বাচনী প্রচারণার সময় ব্যাখ্যা দিয়েছেন। ''লিবারেল নেতাদের এখন প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে ভোটারদের বোঝানো যে, ভোট অনেক ভাগ হয়ে যাওয়ার মানে হলো কনজারভেটিভদের বিজয়ী হওয়া,''বলছেন মি. রে। কানাডার নির্বাচনের বাকি রয়েছে আর মাত্র পাঁচ সপ্তাহ। ২১ অক্টোবর ওই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যেটির জন্য এখন সবচেয়ে উত্তেজনাকর প্রচারণা চলছে। তবে মি. ট্রুডো বেশ কিছু সুবিধাও পাচ্ছেন। কনজারভেটিভদের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরেও, জরিপে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, ভোটার সমৃদ্ধ কুইবেক ও অন্টারিও প্রদেশে এগিয়ে রয়েছেন লিবারেল প্রার্থীরা। হাউজ অব কমন্সের ৩৩৮টি আসনের মধ্যে ১৯৯টি আসন রয়েছে এই দুইটি প্রদেশে। সাধারণত কানাডায় সংখ্যাগরিষ্ঠ কোন সরকারকে এক মেয়াদের পরে ক্ষমতা থেকে সরতে হয় না। জাস্টিন ট্রুডো (ডান দিকে, হাই তুলছে) একটি রাজনৈতিক পরিবারে বড় হয়েছেন। তার বাবা পিয়েরে ছিলেন কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী তবে নির্বাচনী প্রচারণার অনেক গুরুত্ব আছে। মি. রে বলছেন, মি. ট্রুডোর রাজনৈতিক প্রচারণার ব্যাপারে ব্যাপক সহজাত ক্ষমতা রয়েছে- কঠিন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী এবং ইস্যুর নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা রয়েছে। ''আমি মনে করি, যারা এই নির্বাচনের প্রচারণায় অবহেলা করবে, তারা বড় ধরণের ভুল করবে।'' অনেক সময় অপ্রত্যাশিত অনেক ঘটনা নির্বাচনী প্রচারণায় প্রভাব তৈরি করে, নেতাদের সক্ষমতার পরীক্ষা করে দেখে, শেষপর্যন্ত যার প্রভাব পরে ফলাফলে। ''এমন অনেক বিষয় রয়েছে, যা হয়তো মূল আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে পারে এবং আমি মনে করি, সেসব ঘটনায় দলগুলো কী করবে, সেটাই তখন ভোটারদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে,'' বলছেন মি. স্টিফেনসন। আরো খবর: বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের নিয়ে কেন এতো বিতর্ক? প্রাথমিক শিক্ষা: ৬৫% শিক্ষার্থী বাংলাই পড়তে পারেনা চিকিৎসায় অবহেলা: যেভাবে অভিযোগ করবেন বাংলাদেশে ছাত্র সংগঠনগুলোর আয়ের উৎস কী? | Four years ago, Justin Trudeau swept to power in a historic, come-from-behind victory, promising "real change". Can the Liberal Party leader convince Canadians to rally behind him and his party once again? |
দয়া করে এই বাংলা নিবন্ধটির সংক্ষিপ্তসার ইংরেজি প্রদান করুন | এডমন্টনের ওই স্মরণ অনুষ্ঠানে ২৩শ'র বেশি মানুষ অংশ নেয়। অ্যালবার্টা অঙ্গরাজ্যের এডমন্টনে অনুষ্ঠিত এক স্মরণ অনুষ্ঠানে একথা বলেন মি. ট্রুডো। ওই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহত ১৭৬ জনের মধ্যে ৫৭ জনই কানাডার নাগরিক। প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন, তিনি ইরানের কাছে জবাব চাইবেন। 'জবাব না পাওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না', বলেন মি. ট্রুডো। এরই মধ্যে 'ভুল' করে বিমানটি ভূপাতিত করার দায় স্বীকার করেছে ইরান। যদিও প্রথমদিকে তারা ক্রমাগত অস্বীকার করছিলো। 'জবাব না পাওয়া পর্যন্ত আমরা বিশ্রাম নেব না' - জাস্টিন ট্রুডো ইরানে দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ: বিমান ভূপাতিত করা নিয়ে 'মিথ্যে' বলায় ইরানে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে টানা বিক্ষোভ চলছে। বিধ্বস্ত বিমানের নিহত আরোহীদের মধ্যে একটি বড় অংশ ছিলেন ইরানের নাগরিক। রাজধানী তেহরান ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভকারীরা ইরানের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন। নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে সংঘর্ষ এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ারও খবর পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উত্তেজনা বাড়ার মধ্যেই প্রাথমিকভাবে অস্বীকার করলেও পরে "অনিচ্ছাকৃতভাবে" বিমানে আঘাত হানার কথা স্বীকার করে ইরান। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে যাওয়ার সময় গত বুধবার তেহরানের কাছে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। ইরাকে মার্কিন ঘাঁটি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পর পরই এ ঘটনা ঘটে। গত ৩ জানুয়ারি বাগদাদে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে যুক্তরাষ্ট্র হত্যার করার প্রতিশোধ হিসেবে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ইরান, কানাডা, ইউক্রেন, যুক্তরাজ্য, আফগানিস্তান এবং সুইডেনের নাগরিক রয়েছে। বিমান ভূপাতিত করার কথা স্বীকার করে নেয়ার পর ইরানের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করে ইরানিরা রবিবার বিক্ষোভে কী হয়েছিল? ব্যাপক হারে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন সত্ত্বেও নতুন বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। দাঙ্গা পুলিশ, মোটরবাইকে করে এলিট রেভল্যুশনারি গার্ডের সদস্য এবং সাধারণ পোশাকে নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিয়োজিত ছিলেন। এক ভিডিওতে দেখা যায় যে, প্রোপাগান্ডা বর্জনের প্রতীকী কার্যক্রম হিসেবে শহীদ বেহেশতী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাটিতে আঁকা যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পতাকায় পা না ফেলে তা এড়িয়ে যাচ্ছে বিক্ষোভকারীরা। সামাজিক মাধ্যমের কিছু ভিডিওতে দেখা যায় যে, বিক্ষোভকারীরা সরকারি বিরোধী স্লোগান দিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে: "তারা মিথ্যা বলছে যে আমাদের শত্রু আমেরিকা, আমাদের শত্রু এখানেই।" বিক্ষোভকারীদের অনেকেই নারী। সামাজিক মাধ্যমের ফুটেজে, তেহরানের আজাদি স্কয়ারে বিক্ষোভকারীদের হাতে তালি দিয়ে স্লোগান দিতে দেখা যায়। বিবিসি পার্সিয়ান সার্ভিস বলে, ওই বিক্ষোভকারীদের বাঁধা দেয় নিরাপত্তা বাহিনী, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। আধা-রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফার্স জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হাজারো মানুষ বিক্ষোভ করছিল। ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ এছাড়া অন্য শহরগুলোতেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিবিসির আরব সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক সিবাস্টিয়ান ইউশার বলেন, যারা বিক্ষোভ চালিয়ে নেয়ার কথা ভাবছেন তাদের মনে রাখতে হবে যে অতীতে নিরাপত্তা বাহিনী কিভাবে বিক্ষোভের ঘটনা সামাল দিয়েছে। শনিবার দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। তারা প্রাথমিকভাবে নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানাতে এটা করে। কিন্তু স্থানীয় সময় সন্ধ্যার দিকে বিক্ষুব্ধ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয় যাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। ইরানের বেশ কিছু সংবাদপত্র বিমান বিধ্বস্তে নিহতের জন্য স্মরণানুষ্ঠানের খবর ছেপেছে যেখানে শিরোনামে "লজ্জাজনক" এবং "অমার্জনীয়"র মতো শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু ইরানের সরকারপন্থী একটি সংবাদপত্র প্রশংসা করে সংবাদ ছেপেছে, যেখানে ভুল করে বিমান ভূপাতিতের কথা স্বীকার করে নেয়াকে 'সৎ' বলে উল্লেখ করা হয়েছে। নিহত কাসেম সোলেইমানির সমর্থনেও রাস্তায় নামে মানুষ রবিবার তেহরানে সোলেইমানিকে সমর্থন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিক্রিয়া কী ছিল? রবিবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, সরকারিবিরোধী বিক্ষোভকারীদের টার্গেট করা ইরানের উচিত হবে না। তিনি বলেছেন, "বিশ্ব দেখছে। আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র দেখছে।" এরই মধ্যে ইরানে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে তেহরানে গ্রেফতারের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। তারা একে "আন্তর্জাতিক আইনের ঘোর লঙ্ঘন" বলে উল্লেখ করেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব বলেন, রব ম্যাকায়ারকে একটি স্মরণানুষ্ঠান থেকে গ্রেফতার করা হয়, যেখানে তিনি বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতদের শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে ব্রিটিশ নাগরিকও ছিলেন। রবিবার যুক্তরাজ্যের দূতাবাসের বাইরে ব্রিটেনের পতাকা পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। আরো পড়তে পারেন: যুক্তরাষ্ট্রের চারটি দূতাবাস টার্গেট করেছিল ইরান, ট্রাম্প ইরান হামলা: সঙ্কটে কে জিতলো কে হারলো সোলেইমানি হত্যাকাণ্ড কেন আইএস-এর জন্য সুখবর ম্যাকায়ার বলেন, বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিতে শুরু করলে তিনি সেখান থেকে সরে যান এবং বিক্ষোভে তার কোন হাত নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়, ইরান রবিবার রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল "প্রচলিত আচরণ না মেনে অবৈধ র্যালিতে তার অংশগ্রহণের বিষয়ে" অভিযোগ জানাতে। রবিবার যুক্তরাজ্যের দূতাবাসের বাইরে ব্রিটেনের পতাকা পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। | Canadian Prime Minister Justin Trudeau has said he will seek "justice" for those killed on board a Ukrainian passenger plane downed by Iran. |
এই বাংলা প্রবন্ধটি ইংরেজি ভাষায় সংক্ষেপে অনুবাদ করুন | শামীমা বেগমের ইচ্ছে ছিল তার সন্তানের জন্ম হোক ব্রিটেনে। শুধু তাই নয়, নাগরিকত্ব কেড়ে নেবার এই বিষয়টিকে 'চরম পন্থা' বলেও অভিহিত করেছেন তিনি। মি. করবিনের মতনই একই মত দিয়েছেন ব্রিটেনের শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ডায়ান অ্যাবোট। শামীমার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেবার বিষয়টিকে মিজ অ্যাবোট তীব্র সমালোচনার চোখে দেখেছেন। কাউকে রাষ্ট্রবিহীন করা কেন বিধি বিরুদ্ধ? ইন্টারন্যাশানাল আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে যদি কোনো রাষ্ট্রই আইনসিদ্ধ নাগরিক বলে বিবেচনা না করে তবে সেই ব্যক্তি রাষ্ট্রবিহীন নাগরিক বলে বিবেচিত হবেন। কিন্তু ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশান অফ হিউম্যান রাইটস - যা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষের অধিকারকে উর্ধে তুলে ধরেছে - বলছে, পৃথিবীর প্রতিটি মানুষেরই কোন রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব পাবার অধিকার রয়েছে। ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশান অফ হিউমেন রাইটস স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করেছে যে, "কোনো ব্যক্তিকেই তার নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা যাবে না"। শামীমা কি বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পাবে? শামীমা বেগম, কট্টরপন্থার দিকে ঝুঁকে যাওয়ার আগে। আরও পড়তে পারেন: 'জীবনকে তুচ্ছ করে ব্যবসাকে প্রাধান্য দিলে এমনটা ঘটবেই" কীভাবে যোগ হয় বাংলা ভাষার অভিধানে নতুন শব্দ হিটলারের জন্মস্থানসহ বিশ্বের বিতর্কিত কিছু ঠিকানা শামীমা বেগমের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হলেও সে 'স্টেটলেস' বা রাষ্ট্রবিহীন নাগরিকে পরিণত হবে না বলেই তার ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হয়েছে বলে যুক্তি দিচ্ছে ব্রিটেনের হোম অফিস। এক্ষেত্রে ব্রিটেনের দিক থেকে বারবার বাংলাদেশে শামীমার নাগরিকত্ব পাওয়ার আইনি অধিকারের বিষয়টিকে সামনে আনা হচ্ছে। বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, 'ব্লাড লাইন' বা উত্তরাধিকার সূত্রে যে কোনো ব্যক্তি অন্য দেশে জন্মালেও বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাবার অধিকার রাখে। বাংলাদেশের আইন বলছে, বিদেশে জন্ম নেয়া বাংলাদেশী বাবা-মায়ের সন্তান যদি বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পাবার কোনো উদ্যোগ না নেয় তাহলে ২১ বছর বয়সে সেই ব্যক্তির বাংলাদেশী নাগরিকত্ব আপনা-আপনি খারিজ হয়ে যাবে। ব্রিটিশ হোম অফিস বলছে, শামীমার বয়স বর্তমানে ১৯। অর্থাৎ তার বয়স এখনো ২১ হয়নি। তাই, আইনত তার এখনো দ্বৈত্ব নাগরিকত্বের রয়েছে। অর্থাৎ শামীমার মা একজন বাংলাদেশী নাগরিক বলে মায়ের উত্তরাধিকার সূত্রে শামীমাও নাগরিকত্ব দাবি করার অধিকার রাখে। তবে, বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত হলেও শামীমা জীবনে কখনো বাংলাদেশে যান নি। নাগরিকত্ব নিয়ে কী বলছে বাংলাদেশ? ব্রিটেন নানাভাবে শামীমাকে বাংলাদেশী নাগরিকত্ব পাবার অধিকারী বলে উল্লেখ করলেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মিজ বেগম বাংলাদেশী নাগরিক নয়। তাই, তাকে বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেবার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। শামীমার সন্তানের নাগরিকত্ব কী হবে? শামীমা বেগমের সন্তান ব্রিটেনের নাগরিকত্ব ও প্রবেশাধিকার পাবে কিনা তা নিয়ে ব্রিটেনের হোম সেক্রেটারি সাজিদ জাভেদ স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, "অভিভাবকের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়া হলেও তার সন্তানের নাগরিকত্বের উপরে এর কোনো প্রভাব পড়বে না"। তবে, ব্রিটেনের সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক আইনের একজন বিশেষজ্ঞ লর্ড কার্লাইল বলছেন, শামীমার সন্তানও বাংলাদেশী নাগরিকত্ব বা নেদারল্যান্ডের নাগরিকত্ব পেতে পারে। কারণ শামীমার স্বামী একজন ধর্মান্তরিত ডাচ নাগরিক। | Shamima Begum, who left the UK to join the Islamic State group in Syria aged 15, has a "right to return to Britain", Labour leader Jeremy Corbyn has said. |
নিচের বাংলা লেখাটির একটি ইংরেজি সারসংক্ষেপ লিখুন | ইসলামিক স্টেট নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি কিন্তু এরপর সিরিয়ায় আইএসের ভবিষ্যত কী? আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক প্রোগ্রামের পরিচালক লীনা খাতিব আলোকপাত করেছেন তার ওপর। তিনি বলছেন, আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যুতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইএসের অস্তিত্ব ধ্বংস বা সম্পূর্ণ পতন নিশ্চিত হবে না। বরং কাছাকাছি সময়ে সিরিয়ার স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করবে আইএসের এখনকার ভবিষ্যত, তাতে দলটির নেতা থাকুক আর না থাকুক। আইএসের জন্য বাগদাদি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একজন নেতা ছিলেন, বিশেষ করে দলটি যখন একটি তথাকথিত রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করছিল। বাগদাদিকে হত্যার জন্য চালানো অভিযানের পর সেখানকার পরিস্থিতি যেহেতু খলিফা ছাড়া খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা যায় না, সে কারণে আইএস বাগদাদিকে জনসম্মুখে একজন শক্তিমান নেতা হিসেবে হাজির করেছিল। যে কারণে সিরিয়া এবং ইরাকে আইএসের পতনের পরেও এই গ্রুপের সমর্থকদের বিশ্বাস ছিল একদিন বাগদাদি আবার খিলাফত প্রতিষ্ঠা করবেন। সাংবাদিক এবং দাতা সংস্থার কর্মী, যারা সিরিয়ার ভেতরে আল-হোল ক্যাম্পে আইএস যোদ্ধাদের স্ত্রী ও বিধবাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিভিন্ন সময়, তারা জানিয়েছেন, বাগদাদির যেকোন বক্তৃতা তার সমর্থকদের উদ্দীপ্ত করতো। উত্তর সিরিয়ায় তুরস্ক অভিযান চালানোর পর, আইএসের সামরিক শক্তি অনেকটাই হ্রাস পেয়েছিল, কিন্তু তারা তৎপর ছিল। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় আইএসের স্লিপার সেল বা গোপনে কাজ করে এমন ছোট ছোট দল সুযোগ পেলেই হামলা চালিয়েছে, বিশেষ করে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর। হোমসের কাছে পালমিরার উত্তরে সোখানা মরুভূমিতে আইএস সিরিয় এবং রুশ স্থাপনার ওপর আলাদাভাবে হামলা চালিয়েছে। কেবল আইএসের নামে নয়, বহু সাবেক আইএস যোদ্ধা উত্তর পশ্চিম সিরিয়ায় স্থানীয় একটি জিহাদি দলে যোগ দিয়েছেন। ইদলিবে আইএস ঘনিষ্ঠ ঐ দলটির নাম হুরাস আল-দ্বীন, এটি আল-কায়েদার সাথে সরাসরি সম্পর্কিত একটি দল। এই দলটির সীমিত আকারে সামরিক শক্তি থাকলেও স্থানীয়দের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা কম। সিরিয়ায় আইএসের মূল কর্মকাণ্ড উত্তর-পূর্বে দেইর আল-যোওর এলাকায়, বিশেষ করে বসাইরার দক্ষিণে দিবানের দিকে। এ এলাকাটি নিয়ন্ত্রণ করে সিরিয় ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস এসডিএফ, কিন্তু এলাকাটি কুর্দি অধ্যুষিত হওয়ায় সেখানে নিজেদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই সংকটে রয়েছে এসডিএফ। সেখানকার বাসিন্দাদের বড় অংশটি বিভিন্ন আরব গোত্রের, যারা কেবল এসডিএফকেই নয়, বরং ঐ এলাকায় সক্রিয় সিরিয় সামরিক বাহিনী এবং ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া বাহিনীকেও প্রত্যাখ্যান করে আসছে। আল বাগদাদিকে হত্যার ঘোষণা দিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ার সরকার এবং ইরানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি এই গোত্রগুলো বিক্ষোভ করেছে। উত্তর সিরিয়ায় তুরস্কের অভিযানের আগে, দেইর আল-যোওরে সেখানকার আরব গোত্রসমূহ এবং এসডিএফের মধ্যে নিয়মিত বিবাদ সংঘর্ষ হতো। পরে সেখানে আইএসের তৎপরতা ক্রমে বাড়ে। কয়েক মাস আগে এসডিএফের এক চেকপয়েন্ট থেকে একজন আরব পথচারীকে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপরের দুই সপ্তাহে দেইর আল-যোওরে স্লিপার সেলের হামলার সংখ্যা বেড়ে যায়। তুরস্ক অভিযান চালানোর পর, ঐ এলাকায় এসডিএফ যেহেতু সরাসরি যুদ্ধে অংশ নেয়, তাদের অনুপস্থিতির এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগানোর চেষ্টা করে আইএস। সেখানে নিজেদের কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দেয় তারা, যদিও নতুন করে ভূমি দখলের চেষ্টা এবার তারা করেনি। এ সময় দলটি আইইডিএসের ব্যবহার করে, যা তেকে বোঝা যায় তাদের সামরিক সক্ষমতা ব্যাপক হ্রাস পেয়েছে। একই সঙ্গে মার্কিন প্রশাসন জানায়, দেইর আল-যোওরে আইএস বিরোধী আন্তর্জাতিক জোট সেখানকার তেলক্ষেত্রগুলো রক্ষার দায়িত্ব নিয়েছে, সেটাও আইএসের কলেবর না বাড়াতে পারার আরেকটি বড় কারণ। এখন কী করতে পারে দলটি? এখন বাগদাদির মৃত্যুকে কাজে লাগিয়ে আইএস তার সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনার প্রতিশোধের বার্তা দেবে। কিন্তু শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত দলটির যোদ্ধারা যুদ্ধ করে যাবে, এমন দৃঢ়প্রতিজ্ঞা এখনে আর তাদের মধ্যে নাও দেখা যেতে পারে। মৃত্যুর আগে সিরিয়ায় দলটির নেতা আবু আয়মান আল-ইরাকি মাত্র ছয়জন যোদ্ধাকে নিয়ে এসডিএফের বিরুদ্ধে লড়াই এ নেমেছিলেন। কিন্তু মাঝপথে সব কয়জন যোদ্ধা তাকে রেখে পালিয়ে যায়। আইএসের স্বর্ণ সময়ে এমন পরিস্থিতির কথা কেউ কল্পনাও করতে পারতো না। নতুন নেতা আসবে আইএসে? আইএস হয়তো শীঘ্রই বাগদাদির একজন উত্তরসূরি এবং একজন শীর্ষ নেতা চূড়ান্ত করবে। তবে দলটির কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, সিরিয়ার উত্তর-পূর্ব এবং উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলের পরিস্থিতি কেমন থাকে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, বাগদাদি ইদলিবে আছে, সেখানেই তাকে হত্যা করা হয়েছে, কারণ তিনি সেখানে আইএসকে সংগঠিত করার চেষ্টা করছিলেন। এদিকে ইদলিবের জিহাদি দল হুরাস আল-দ্বীন আল-কায়েদার প্রতি আনুগত্যের কারণে হায়াত তাহরির আল-শাম নামে আরেকটি ইসলামি দল থেকে আলাদা হয়ে যায়। কিন্তু এই দলটি কিংবা আইএস কেউই সেখানে ততটা জনপ্রিয় না হওয়ায়, এই প্রদেশে আইএস তাদের ঘাঁটি গড়ে তুলবে এমন সম্ভাবনা কম। এছাড়া উত্তর-পূর্বে সিরিয়ার সেনাবাহিনী নিজেদের উপস্থিতি বাড়াচ্ছে, যদিও তাদের ক্ষমতা খুবই সীমিত। তাদের সৈন্য সংখ্যা আর সামরিক যন্ত্রপাতির ঘাটতি যেমন আছে, তেমনি সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে ছোট কয়েকটি দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটাতেও হিমশিম খাচ্ছে তারা। উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার নিয়ন্ত্রণ এখনো কুর্দি যোদ্ধাদের হাতে। একমাত্র আইএস বিরোধী আন্তর্জাতিক জোট দেইর আল-যোওর ত্যাগ করলেই, আইএস ঐ এলাকা টার্গেট করতে পারে। এক্ষেত্রে তারা এসডিএফকে প্রত্যাখ্যানকারী আরব গোত্রসমূহের সহায়তা পাবে। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, এই জোট সেখানকার তেলক্ষেত্রগুলো ছেড়ে শীঘ্র নড়ছে না। কিন্তু মনে রাখা দরকার, বাগদাদির মৃত্যুকে যদি একটি প্রতীকী বিজয় হিসেবেও দেখা হয়, তবু সেখানকার স্থানীয় দলগুলোর কোন্দল ও অন্তর্দ্বন্দ্ব আইএসের কাজ করার সুযোগ বহুগুণ বাড়িয়ে দেবে। আরো পড়তে পারেন: সাকিব বনাম বিসিবি, বাংলাদেশের ক্রিকেটে নিয়মিত ঘটনা 'সেলফি থেকে জানলাম আমিই চুরি হওয়া শিশু' সৌদি আরব থেকে শ্রমিক ফেরত, চিন্তিত দূতাবাস | Abu Bakr al-Baghdadi, the leader of the jihadist group Islamic State (IS) and arguably the world's most wanted man, killed himself during a raid by US commandos in north-western Syria, President Donald Trump has said. |
এই বাংলা লেখাটির ইংরেজি সারাংশ প্রদান কর। | শিশুর জন্মের পর পারিবারিক ও অফিসের চাপে মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হন ডেভ এডওয়ার্ডস। তেত্রিশ বছর বয়সী এই বাবার পিতৃত্ব নিয়ে এভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়া যেতে পারে যে, প্রথমদিকে তিনি পিতৃত্ব কালীন ছুটি নিয়ে বাড়িতে সময় দিয়েছেন। খুব কম ঘুমিয়ে শিশুটির জন্মের পাঁচ সপ্তাহ পরে তিনি তার মানব সম্পদ বিভাগের চাকরিতে আবার যোগ দেয়ার সুযোগ পান। ''আমি সবসময়ে একটি চিন্তার মধ্যে থাকতাম যে, আমার সঙ্গী বাড়িতে একটি কাঁদুনে বাচ্চার সঙ্গে রয়েছে। আমি যে চাকরি করতাম, সেখানেও অনেক চাপ ছিল,'' অস্ট্রেলিয়ার ব্রিসবেনের বাসিন্দা এই পিতা বলছেন। কয়েক মাস পরে তিনি অনুভব করতে শুরু করেন তার ভেতরে অসহিঞ্চুতা এবং বিষণ্ণতা জেঁকে বসেছে। মি. এডওয়ার্ড পরবর্তীতে আবিষ্কার করেন যে, তিনি সেই হাতে গোনা কয়েকজন মানুষের অন্যতম, যাদের সন্তান জন্মের পরে মানসিক সমস্যার শিকার হতে হয়েছে। অ্যাডভোকেসি গ্রুপ পোস্টপার্টুম সাপোর্ট ইন্টারন্যাশনাল বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি সাতজন মায়ের মধ্যে একজন আর প্রতি দশজন পিতার মধ্যে একজন শিশু জন্মের পর বিষণ্ণতার মতো সমস্যার শিকার হয়। গ্রুপটি বলছে, অন্য উন্নত দেশগুলোতে এই প্রবণতা দেখা গেছে। যুক্তরাজ্যে অভিভাবক গ্রুপ এনসিটির গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন পিতা হওয়া ব্যক্তিদের অন্তত এক-তৃতীয়াংশ তাদের মানসিক সমস্যা নিয়ে চিন্তা করেন, যার মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক দায়-দায়িত্ব আর ঘুমের স্বল্পতার মতো বিষয়। যেমন মি. এডওয়ার্ডের কর্মক্ষেত্রের দায়-দায়িত্বের জন্য তার কাজটি আরো কঠিন হয়েছে। তার মনে পড়ছে, তিনি কম্পিউটারের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন, কিন্তু নিজেকে উদ্বিগ্ন লাগছে আর কাজে মন বসাতেও পারছেন না। 'আমি শুধু আশা করছিলাম যে, আবার কাজে ফিরে যাবো এবং বাবা হওয়ার আগের মতো করে কাজ করতে পারবো,'' বলছেন এই দুই সন্তানের পিতা। অনেক নারীর ক্ষেত্রে একই ধরণের ঘটনা শোনা যাবে। বাচ্চাদের যত্ন-আত্তির ক্ষেত্রে মা-রাই প্রধান ভূমিকা নিয়ে থাকেন এবং পেশা-পরিবারের মধ্যে সমন্বয় আনতে গিয়ে দীর্ঘ লড়াই করতে হয়। কিন্তু অনেক পিতাকেও এরকম সংগ্রাম করতে দেখা যায়, যেহেতু তার নিজের নিয়মিত চাকরির বাইরে অন্য কাজ অনেক বেড়ে গেছে। আরো পড়ুন: শুক্রাণু দানকারীই হবেন শিশুর বৈধ পিতা -অস্ট্রেলিয়া '২৫টি পরিবারে আমার ৩৫টি সন্তান, একটিও নিজের নয়' একা হাতে যারা সন্তান বড় করেন দুই সন্তানের সঙ্গে খেলছেন অ্যালেক্স লাগুনা 'চিন্তা বা উদ্বেগ বাড়ছে' সেন্টার ফর প্যাটারনাল লিভ লিডারশীপের প্রতিষ্ঠাতা অ্যামি বিকম মাইক্রোসফট ও ফিলিপস ৬৬-র মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, যেখানে তিনি পিতৃত্ব কালীন ছুটির ব্যাপারে প্রশিক্ষণ আর পরামর্শ দেন। তিনি বলছেন, সদ্য মা হওয়া নারীরা যেসব চাপ বোধ করতেন, তার অনেক কিছুই এখন পিতাকেও নিতে হচ্ছে। তাদের কাজটি এখন আর শুধুমাত্র সংসারে অর্থ আয় করার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। ''এখন আশা করা হচ্ছে, পিতারাও বাড়িতে সময় দেবে। এর ফলে তাদের চাপের পরিমাণ বাড়ছে, বিষণ্ণতার মাত্রা বাড়ছে এবং তাদের উদ্বেগের পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে। এর প্রভাব তাদের কর্মক্ষেত্রেও পড়ে।'' বলছেন মিজ বিকম। তাঁর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কোম্পানিগুলোকে পরামর্শ দেয় যেন তারা নতুন বাবা হওয়ার সময়টাতে কর্মীদের মানসিক অবস্থার যাচাই করে দেখে, যা শিশু গর্ভে আসার পর থেকে বাবা-মার মধ্যে অন্তত এক বছর পর্যন্ত থাকতে পারে। ''আমরা মায়েদের জন্য এটা এখন করছি, কিন্তু আমরা বাবাদের ক্ষেত্রে করার কথাও বলছি,'' তিনি বলছেন। পরিবর্তনের চিত্র অনেক কোম্পানি এখন নতুন পিতাদের এসব সমস্যা মোকাবেলায় সহায়তা করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। ''শিশুদের জীবনের সঙ্গে আগের তুলনায় এখন পুরুষরা অনেক বেশি জড়িত হচ্ছে। কিন্তু তাদের চাকরির কর্ম ঘণ্টায় কোন পরিবর্তন আসেনি।'' বলছেন কিরি স্তেজকো, প্যারেন্টস এট ওয়ার্কের প্রধান সেবা কর্মকর্তা। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য এবং হংকংয়ে নানা প্রতিষ্ঠানে বাবা-মাদের চাকরি ও পরিবারের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। ডেলোইট এবং এইচএসবিসির মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তিনি কাজ করার পরে তিনি বলছেন, চাকরি দাতারা এই ব্যাপারটিকে নারী ও শিশুদের ব্যাপার বলে নয়, বরং পরিবার ও অভিভাবকের বিষয় বলে দেখতে চাইছেন। বাস্তবতার দিক থেকে বলতে গেলে, এর আগে শুধুমাত্র নারীদের কথা চিন্তা করেই নানা ধরণের ব্যবস্থা ছিল। যেমন সদ্য জন্ম নেয়া শিশুর যত্নের জন্য ছুটি বা অফিসে সুবিধাজনকভাবে কাজ করার ব্যবস্থা করে দেয়া। অনেক পুরুষও এভাবে শিশুর যত্ন নিতে কাজের পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে চাইলেও, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখনো তা গ্রহণ করা হয় না, বলছেন মিজ স্তেজকো। অনেক পুরুষ মনে করেন, কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া বা এজন্য সহায়তার জন্য অনুরোধ করা হলে তা তাদের পেশাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলতে পারে। পাঁচ সন্তানের পিতা অ্যালেক্স লাগুনা ঠিক একই উদ্বেগে ভুগেছেন, যিনি এখন একটি ওয়েবসাইট চালু করেছেন, যার নাম 'বেটারড্যাডস'। এই ওয়েবসাইটে শুরুর দিকে পুরুষদের বিচ্ছেদের ব্যাপারে নানা পরামর্শ দেয়া হতো। কিন্তু এখন এখানে কর্মক্ষেত্র ও পরিবারের মতো বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা করা হয়। মি: লাগুনা বলছেন, কাজ থেকে বিরতি নেয়ার ক্ষেত্রে পুরুষরা অনেক সময় সমস্যায় ভোগেন। তারা তখন চিন্তা করেন, যাদের সঙ্গে তিনি কাজ করেন, তারা বিষয়টিকে কীভাবে নেবে? ''চাকরিকে না বলার ব্যাপারটি আসলেই বেশ শক্ত স্নায়ুর ব্যাপার'' বলছেন সিডনি ড্যাড। ৪৪ বছর বয়সী এই ব্যক্তি যিনি একটি আলোকসজ্জা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন, বলছেন যে, এখন যেভাবে আশা করা হচ্ছে, সেভাবে তার প্রজন্মের লোকজন পরিবার আর কাজের মধ্যে সমন্বয়ের কোন আদর্শ বা রোল মডেল দেখতে পাননি। ''আমাদেরই প্রথম এর মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে।'' তিনি বলছেন। চাকরিরত পিতাদের সহায়তায় কোম্পানিগুলোর এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে। আলোচনা শুরু করা চাকরিরত পিতাদের সহায়তায় কোম্পানিগুলোর এগিয়ে আসাকে স্বাগত জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনো অনেক কিছু করার বাকি রয়েছে। প্যারেন্টাল অ্যাংজাইটি এন্ড ডিপ্রেশন অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টেরি স্মিথ বলছেন, শিশুর জন্ম হওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানসিক সমস্যায় যে পুরুষরাও আক্রান্ত হতে পারে, এটা অনেক মানুষই জানে না-ফলে তাদের জন্য কোন সহায়তাও দেয়া হয় না। তিনি বলছেন, প্রথম পদক্ষেপ হওয়া উচিত এটাকে সত্যিকারের একটি অসুস্থতা বলে স্বীকৃতি দেয়া এবং এ নিয়ে অফিসে আলোচনা শুরু করা। সন্তানের জন্মের পর ওয়েলসের মার্ক উইলিয়ামসন মানসিক সমস্যায় পড়েন এবং উপলব্ধি করেন যে, বিক্রয় ও বাজারজাতকরণ প্রশিক্ষকের চাকরি করাটা তার জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। ফলে তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। এরপরে তিনি দাতব্য প্রতিষ্ঠান 'ফাদারর্স রিচিং আউটের' প্রতিষ্ঠা করেন যেটি যুক্তরাজ্য জুড়ে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে। ''এটা আসলে শুধুমাত্র বিষণ্ণতা নয়, পুরুষরা পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারেও ভুগতে পারে'' তিনি বলছেন। ''আপনি হয়তো এর মধ্যেই বাড়িতে মানসিকভাবে অসুস্থতার শিকার হয়েছেন, যার সবকিছু হয়েছে অনেকটা আকস্মিকভাবে। আর শিশুর জন্মের দুই সপ্তাহ পরেই তাকে আবার কাজে যোগ দিতে হচ্ছে।'' তিনি বলছেন, ব্যবস্থাপক এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের উচিত নতুন পিতা হওয়াদের জিজ্ঞেস করা যে, তাদের কেমন লাগছে এবং প্রয়োজনে সহায়তার ব্যবস্থা করা। এই মতের সঙ্গে একমত মি. এডওয়ার্ড। তিনি মনে করেন, কাজে ফেরার পর যদি তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তার একটু খোঁজখবর নিতেন, তাহলে তিনি অনেক উপকৃত হতেন। ''বাড়িতে কি অবস্থা, তোমার সঙ্গী এখন কেমন আছে, এরকম অনেক কিছু আমি শুনেছি, কিন্তু আমার ব্যাপারে কেউ কখনো জানতে চায়নি,'' তিনি বলছেন। জনসেবা খাতের এই কর্মী বলছেন, তিনি এখন খুব ভালো অবস্থায় রয়েছেন এবং অন্যদের সহায়তা করার চেষ্টা করছেন। ''কীভাবে নিজেদের দেখভাল করতে হবে, নতুন পিতাদের সেটা দেখিয়ে দেয়া খুব জরুরি, কারণ সেরকম কষ্টের কিছু মাস আমি পেরিয়ে এসেছি....এটা ভালো লাগার মতো কিছু নয় এবং আমি জানি, সেটা আমার কাজের ওপরেও অনেক প্রভাব ফেলে।'' তিনি বলছেন। | Dave Edwards says his son was born screaming and didn't stop for 12 months. |